১৪-০৬-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - এখানে তোমরা পরিবর্তন হওয়ার জন্য এসেছ, তোমাদেরকে আসুরি গুণ পরিত্যাগ করে দিব্যগুণ ধারণ করতে হবে, এটা হলো দেবতা হওয়ার শিক্ষা”
প্রশ্ন:-
কোন্ শিক্ষা তোমরা কেবল বাবার কাছ থেকেই গ্রহণ করো, যেটা অন্য কেউ দিতে পারবে না ?
উত্তর:-
মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার শিক্ষা, অপবিত্র থেকে পবিত্র হয়ে নুতন দুনিয়ায় যাওয়ার শিক্ষা কেবল বাবা ছাড়া অন্য কেউ দিতে পারবে না। বাবা-ই সহজ জ্ঞান এবং রাজযোগের শিক্ষা দ্বারা পবিত্র প্রবৃত্তি মার্গের স্থাপন করেন।
ওম্ শান্তি।
বাবা বসে থেকে বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন। বাস্তবে দুইজন পিতা রয়েছেন। একজন লৌকিক (হদের) পিতা এবং অন্যজন অসীম জগতের (বেহদের) পিতা। ইনিও পিতা, আবার তিনিও পিতা।অসীম জগতের বাবা এসে শিক্ষা দেন। বাচ্চারা জানে যে আমরা নুতন দুনিয়া অর্থাৎ সত্যযুগের জন্য পড়াশুনা করছি। এইরকম শিক্ষা তো অন্য কোথাও পাওয়া যাবে না। তোমরা বাচ্চারা অনেক সৎসঙ্গ করেছ। তোমরাও আগে ভক্ত ছিলে। নিশ্চয়ই অনেক গুরু করেছ, শাস্ত্র পড়েছ। কিন্তু বাবা এসেই এখন তোমাদেরকে জাগিয়েছেন। বাবা বলছেন, এখন এই পুরাতন দুনিয়ার পরিবর্তন হবে। এখন আমি তোমাদেরকে নুতন দুনিয়ার জন্য শিক্ষা দিচ্ছি। আমি হলাম তোমাদের টিচার। কোনো গুরুকে কখনো টিচার বলা যাবে না। স্কুলেও টিচার শিক্ষা দেয়, যার দ্বারা উঁচু পদপ্রাপ্তি হয়। কিন্তু ওই টিচাররা তো কেবল এই দুনিয়ার জন্যই শিক্ষা দেয়। তোমরা এখন জেনেছ যে আমরা যেসব পড়া পড়ছি, সেগুলো সব নুতন দুনিয়ার জন্য। সেই দুনিয়াকে গোল্ডেন এজেড ওয়ার্ল্ড বলা হয়। এটা তো তোমরা জানো যে এখন আসুরি গুণ পরিত্যাগ করে দিব্যগুণ ধারণ করতে হবে। এখানে তোমরা পরিবর্তন হওয়ার জন্যই এসেছ। সচ্চরিত্রের গুনগান করা হয়। দেবতাদের সামনে গিয়ে বলে - 'তুমি এত সুন্দর, আর আমি কত মন্দ'। তোমাদের সামনে এখন এইম অবজেক্ট (লক্ষ্য বস্তু) রয়েছে। বাবা ভবিষ্যতের জন্য নুতন দুনিয়াও স্থাপন করছেন এবং সেইসঙ্গে তোমাদেরকে শিক্ষাও দিচ্ছেন। ওখানে তো কোনো বিকার থাকবে না। তোমরাই রাবণের ওপরে বিজয়ী হও। রাবণ-রাজ্যে তো সকলেই বিকারী। যেমন রাজা-রানী, তার প্রজাও সেইরকম। এখন তো পঞ্চায়েতের রাজত্ব চলছে। এর আগে রাজা-রানীর রাজত্ব ছিল। কিন্তু ওরাও বিকারী ছিল। ওইসব পতিত রাজাদের কাছে মন্দিরও ছিল। ওরাও নির্বিকারী দেবী-দেবতাদের পূজা করত। ওরা জানত যে অতীতে এইসব দেবী-দেবতারা ছিল এবং এখন আর তাদের সেই রাজত্ব নেই। বাবা আত্মাদেরকে পবিত্র বানাচ্ছেন এবং স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে তোমরাই দিব্য শরীরধারী ছিলে। তোমাদের আত্মা এবং শরীর দুটোই পবিত্র ছিল। এখন পুনরায় বাবা এসে পতিত থেকে পবিত্র বানাচ্ছেন। সেইজন্যেই তোমরা এখানে এসেছ।
*বাবা বাচ্চাদের প্রতি নির্দেশিকা জারি করেছেন - কাম বিকার হল মহাশত্রু।* এটাই তোমাদেরকে আদি-মধ্য-অন্ত দুঃখ দিয়ে এসেছে। এখন তোমাদেরকে ঘর-গৃহস্থে থেকেই পবিত্র হতে হবে। এমন নয় যে দেবী-দেবতাদের নিজেদের মধ্যে ভালোবাসা থাকবে না, কিন্তু ওখানে কোনো বিকারী দৃষ্টিও থাকবে না। সম্পূর্ণ নির্বিকারী হবে। তাই বাবাও বলছেন, ঘর গৃহস্থে থেকেই কমল ফুলের মতো পবিত্র জীবনযাপন করো। অতীতে তোমাদের যেমন পবিত্র জুটি ছিল, ভবিষ্যতেও সেইরকম হতে হবে। প্রত্যেক আত্মা-ই বিভিন্ন নাম এবং রূপ ধারণ করে ভূমিকা পালন করে এসেছে। এখন এটা তোমাদের অন্তিম জন্ম। পবিত্রতার বিষয়েই অনেকে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যায়। বুঝতে পারে না যে কিভাবে কেবল সাথী হয়ে থাকা যায়। কেবল সাথী হয়ে থাকার অর্থই বা কি? বিদেশে যখন বৃদ্ধ হয়ে যায়, তখন একজন সাথী রাখার জন্য বিয়ে করে যে তার দেখাশুনা করবে। এইরকম অনেকেই আছে যারা ব্রহ্মচারী হয়ে থাকতে পছন্দ করে। সন্ন্যাসীদের কথা তো আলাদা, কিন্তু গৃহীদের মধ্যেও এমন অনেকেই আছে যারা বিয়ে করা পছন্দ করে না। *বিয়ে করা, তারপর সন্তানদের লালন পালন করা - এইরকম জাল বিস্তার কেন করব যাতে নিজেই ফেঁসে যাব ?* এখানেও এইরকম অনেকেই আসে যাদের ব্রহ্মচারী অবস্থায় ৪০ বছর হয়ে গেছে। এরপরে কি আর বিয়ে করবে? স্বাধীন ভাবে থাকতে পছন্দ করে। বাবা ওদেরকে দেখে খুশি হন। এরা তো বন্ধনমুক্তই আছে। বন্ধন বলতে কেবল শারীরিক বন্ধন রয়েছে। সেক্ষেত্রে দেহ সহ সবকিছু ভুলে কেবল বাবাকেই স্মরণ করতে হবে। যিশুখ্রিস্ট বা অন্য কোনো দেহধারীকে স্মরণ করতে হবে না। নিরাকার শিববাবা কোনো দেহধারী নন। ওঁনার নামই হল শিব। শিবের মন্দিরও আছে। আত্মাই ৮৪ জন্মের পার্ট প্রাপ্ত করেছে। এটা হল অবিনাশী ড্রামা। এতে কোনো পরিবর্তন হওয়া সম্ভব নয়।
তোমরা জেনেছ যে আগে আমাদের ধর্ম-কর্ম শ্রেষ্ঠ ছিল, কিন্তু এখন সেটা পতিত হয়ে গেছে। এমন নয় যে দেবতা ধর্মটাই বিনষ্ট হয়ে গেছে। এখনো গাওয়া হয় যে দেবতারা সর্বগুণ সম্পন্ন ছিল, লক্ষ্মী-নারায়ণ দু'জনেই পবিত্র ছিল। সেটা ছিল পবিত্র প্রবৃত্তি মার্গ। এখন অপবিত্র প্রবৃত্তি মার্গ রয়েছে। ৮৪ জন্ম ধরে বিভিন্ন নাম রূপ ধারণ করেছে। বাবা বলেন, মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা নিজেদের জন্মকেই জান না। আমি তোমাদেরকে ৮৪ জন্মের কাহিনী শোনাচ্ছি। তাহলে তো প্রথম জন্ম থেকেই বোঝাতে হবে। আগে তোমরাই পবিত্র ছিলে। এখন বিকারী হয়ে গেছ বলে দেবতাদের সামনে গিয়ে মাথা ঠুকতে থাকো। খ্রিস্টানরা যীশুখ্রিস্টের সামনে, বৌদ্ধরা বুদ্ধের সামনে এবং শিখরা গুরু নানকের দরবারে গিয়ে মাথা ঠুকতে থাকে। এটা থেকেই বোঝা যায় যে কে কোন্ ধর্মের। তোমাদের ক্ষেত্রে বলা হয় যে এরা হল হিন্দু। কেউই জানে না যে আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম কোথায় গেল। প্রায় লুপ্ত হয়ে গেছে। ভারতে তাদের অনেক ছবি রয়েছে। মানুষের অনেক মতামতও আছে। শিবেরও অনেক নাম রেখে দিয়েছে। আসলে তো তাঁর একটাই নাম - শিব। এমন তো নয় যে তিনি পুনর্জন্ম নিয়েছেন বলে তাঁর নাম পাল্টে গেছে। না, মানুষের অনেক মতামত হওয়ায় অনেক নাম রেখে দিয়েছে। শ্রীনাথ দ্বারেও লক্ষ্মী-নারায়ণ রয়েছে এবং জগন্নাথের মন্দিরেও সেই একই মূর্তি রয়েছে। কিন্তু আলাদা নাম রেখে দিয়েছে। তোমরা যখন সূর্যবংশী ছিলে তখন এইরকম পূজাপাঠ করতে না। তোমরা তখন সমগ্র বিশ্বের ওপরে রাজত্ব করতে, অনেক সুখী ছিলে। শ্রীমৎ অনুসারে তোমরা শ্রেষ্ঠ রাজত্বের স্থাপন করেছিলে। ওই দুনিয়াকে সুখধাম বলা হত। অন্য কেউ এইরকম বলতে পারবে না যে আমাকে বাবা মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার শিক্ষা দেন। দেবী-দেবতার নিদর্শনও আছে। নিশ্চয়ই ওদের রাজত্ব ছিল। ওখানে কোনো কেল্লা বা দুর্গ থাকবে না। কেল্লা বানানো হয় নিরাপত্তার জন্য। দেবী-দেবতাদের রাজত্বে কোনো কেল্লা থাকবে না। কারণ ওখানে আক্রমণ করার মতো কেউ থাকবে না। এখন তোমরা জানো যে আমরা সেই দেবী-দেবতা ধর্মেই ট্রান্সফার হচ্ছি। তার জন্য তোমরা রাজযোগের শিক্ষা গ্রহণ করছ। রাজত্ব পেতে হবে। ভগবানুবাচ- আমি তোমাদেরকে রাজাদের রাজা বানাচ্ছি। এখন আর কোনো রাজা-রানী নেই। কত লড়াই-ঝগড়া হচ্ছে। এটা হল কলিযুগ, লৌহযুগের সভ্যতা। তোমরা স্বর্ণযুগে ছিলে। এখন আবার পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে এসে পৌঁছেছ। বাবা তোমাদেরকে এক নম্বরে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছেন। তিনি সকলের কল্যাণ করেন। তোমরা জানো যে আমাদেরও কল্যাণ হয়, আমরা সবার প্রথমে সত্যযুগে আসি। বাকি ধর্মগুলো শান্তিধামে চলে যায়। বাবা বলেন, সবাইকে পবিত্র হতে হবে। তোমরা হলে পবিত্র দেশের নিবাসী, যাকে নির্বাণধাম বলা হয়। বাণীর থেকেও ওপরে অবস্থিত ওই দুনিয়ায় কেবল অশরীরী আত্মারাই থাকে। বাবা এখন তোমাদেরকে বাণীর ঊর্ধ্বে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউই এইরকম বলতে পারবে না যে আমি তোমাদেরকে শান্তিধাম বা নির্বাণধামে নিয়ে যাই। ওরা তো বলে যে আমি গিয়ে ব্রহ্মে লীন হয়ে যাব। তোমরা বাচ্চারা জানো যে এটা হল তমোপ্রধান দুনিয়া, এই দুনিয়াতে তোমরা কোনো স্বাদ পাবে না, তাই নুতন দুনিয়ার স্থাপন এবং পুরাতন দুনিয়ার বিনাশ করার জন্য ভগবানকে এখানে আসতে হয়। শিব জয়ন্তীও এখানেই পালন করা হয়। কিন্তু তিনি এসে কোন্ কর্তব্য করেন? কেউ কি বলতে পারবে ? যেহেতু জয়ন্তী পালন করা হয়, সুতরাং তিনি অবশ্যই আসেন। রথের ওপর বিরাজমান হন। দুনিয়াতে তো ঘোড়ার গাড়ির রথ দেখানো হয়। বাবা এই রথে বসে বোঝাচ্ছেন যে তিনি আসলে কোন্ রথের ওপর বসেন। বাচ্চাদেরকেই শোনাই। এরপর এই জ্ঞান লুপ্তপ্রায় হয়ে যাবে। এনার ৮৪ জন্মের অন্তিম জন্মে বাবাকে আসতে হয়। ইনি কোনো জ্ঞান দিতে পারবেন না। জ্ঞান হলো দিন আর ভক্তি হলো রাত্রি। ক্রমশ নীচে নামতে থাকে। ভক্তির অনেক রকমের প্রদর্শন রয়েছে। কুম্ভ মেলা থেকে শুরু করে কত রকমের মেলা হয়। কিন্তু এইরকম তো কেউই বলে না যে এখন তোমাদেরকে পবিত্র হয়ে নুতন দুনিয়াতে যেতে হবে। বাবা এসেই বলছেন যে এটা হল সঙ্গমযুগ। আগের কল্পে যে শিক্ষা গ্রহন করে তোমরা মানুষ থেকে দেবতা হয়েছিলে, এখন পুনরায় সেই শিক্ষাই গ্রহণ করছ। মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার গায়নও আছে। নিশ্চয়ই বাবা-ই ঐরকম বানাবেন। তোমরা জানো যে আমরা অপবিত্র গৃহস্থ ধর্মের ছিলাম, এখন বাবা এসে পবিত্র প্রবৃত্তি মার্গের পথিক বানাচ্ছেন। তোমরা খুব উঁচু পদ লাভ করো। সর্বশ্রেষ্ঠ বাবা তোমাদেরকে কতই না শ্রেষ্ঠ বানাচ্ছেন। বাবার দেওয়া মত হল শ্রী শ্রী অর্থাৎ সর্বশ্রেষ্ঠ। আমরা এখন শ্রেষ্ঠ হচ্ছি। কেউই এই শ্রী শ্রী কথার অর্থ বোঝে না। এই টাইটেল তো কেবল শিববাবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কিন্তু অনেকে তো নিজেকেই শ্রী শ্রী বলে দেয়। মালা জপ করা হয়। ১০৮ রত্নের মালা হয়। কিন্তু ওরা তো ১৬ হাজার ১০৮ এর মালা বানিয়ে দিয়েছে। অষ্টরত্ন তো এর মধ্যেই রয়েছে। চারটে যুগল দানা এবং শিববাবা। আটটা রত্ন এবং নবম হলাম আমি। ওদেরকে রত্ন বলা হয়। ওদেরকে বাবা ঐরকম বানায়। বাবার দ্বারা-ই তোমরা পরশ বুদ্ধি সম্পন্ন হচ্ছ। রেঙ্গুনে একটা জলাশয় আছে। কথিত আছে যে ওতে স্নান করলে পরী হয়ে যাবে। বাস্তবে এটাই হলো সেই জ্ঞানস্নান যার দ্বারা তোমরা দেবতা হয়ে যাও। ঐগুলো তো সব ভক্তিমার্গের কাহিনী। এটা তো হতেই পারে না যে জলে স্নান করলেই পরী হয়ে যাবে। এইগুলো সব ভক্তিমার্গ। কতরকমের কাহিনী বানিয়ে দিয়েছে। কিছুই বোঝে না। তোমরা এখন বুঝতে পারো যে এই দিলওয়াড়া কিংবা গুরুশিখর আসলে তোমাদেরই স্মৃতিচিহ্ন। বাবা অনেক উঁচুতে থাকেন। তোমরা জানো যে বাবা এবং আমরা আত্মারা যেখানে থাকি, সেটা হলো মূলবতন। সুক্ষবতন তো কেবল সাক্ষাৎকারের জন্য, ওটা কোনো দুনিয়া নয়। সুক্ষবতন কিংবা মূলবতনের ক্ষেত্রে বলা যাবে না যে ওয়ার্ল্ডের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়। কেবল একটাই ওয়ার্ল্ড রয়েছে। কেবল এই ওয়ার্ল্ডের জন্যই বলা যাবে যে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়। মানুষ বিশ্বশান্তি চায়। ওরা এটা জানে না যে আত্মার স্ব-ধর্মই হলো শান্তি। জঙ্গলে গিয়ে তো কখনো শান্তি পাওয়া সম্ভব নয়। তোমরা বাচ্চারা সুখ প্রাপ্ত করো, আর বাকি সবাই শান্তি প্রাপ্ত করে। যারা আসবে, তারা সকলেই আগে শান্তিধামে যাবে, তারপর সুখধামে আসবে। কেউ কেউ অবোধের মতো বলে যে আমি জ্ঞান শুনতে চাইনা, কারন আমি যদি পরের দিকে আসি তাহলে অনেকটা সময় মুক্তিধামে থাকতে পারব। মুক্তিধামে অনেকটা সময় থাকতে পারলেই ভালো। এখানে হয়তো সর্বাধিক দু-একটা জন্ম নিতে হবে। কিন্তু এটা কি কোনো ব্যাপার হলো? যেমন মশা জন্ম নেওয়ার কিছু সময় পরেই মরে যায়, সেইরকম একটা জন্মের জন্য এখানে এসে কি কোনো সুখ পাওয়া যাবে ? ওরা তো কোনো কর্মের নয়। ওদের তো যেন কোনো ভূমিকাই নেই। তোমাদের অনেক শ্রেষ্ঠ ভূমিকা রয়েছে। তোমাদের মতো সুখ তো কেউ চোখেও দেখবে না। তাই তোমাদেরকে অনেক পুরুষার্থ করতে হবে। অনেকে করছেও। আগের কল্পেও তোমরা পুরুষার্থ করেছিলে। নিজের পুরুষার্থ অনুসারে ফল পেয়েছিলে। পুরুষার্থ না করলে তো কোনো ফল পাবে না। পুরুষার্থ তো অবশ্যই করতে হবে। বাবা বলছেন, এভাবেই এই নাটক বানানো আছে। তোমরাও পুরুষার্থ করতে শুরু করবে। এমনি এমনি কিছুই হবে না। তোমাদেরকে অবশ্যই পুরুষার্থ করতে হবে। পুরুষার্থ ছাড়া কিছুই হবে না। কাশি হলে কি আপনা আপনি ভালো হয়ে যায়? ওষুধ খাওয়ার পুরুষার্থ তো করতেই হয়। অনেকে তো ড্রামার ওপর সবকিছু ছেড়ে দেয়। যা ড্রামাতে আছে সেটাই হবে। বুদ্ধিতে এইরকম উল্টোপাল্টা জ্ঞান বসানো উচিত নয়। এটাও হলো মায়াবী বিঘ্ন। অনেক বাচ্চা পড়াশুনাও ছেড়ে দেয়। এটাকে বলা হয় মায়ার কাছে পরাজয়। এটা তো যুদ্ধ। মায়াও খুব শক্তিশালী। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্যসার :-
১. শ্রেষ্ঠ রাজত্ব স্থাপন করার জন্য শ্রীমৎ অনুসারে চলে বাবার সহযোগী হতে হবে। দেবতারা যেমন নির্বিকারী, সেইরকম ঘর-গৃহস্থে থেকে নির্বিকারী হতে হবে। পবিত্র প্রবৃত্তি স্থাপন করতে হবে।
২. ড্রামার পয়েন্টকে উল্টোপাল্টা ভাবে ব্যবহার করা উচিত নয়। ড্রামার ওপরে সবকিছু ছেড়ে দিয়ে বসে গেলে চলবে না। পড়াশুনাতে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। পুরুষার্থের দ্বারা নিজের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি তৈরি করতে হবে।
বরদান:-
স্নেহের শক্তি দ্বারা মায়াবী শক্তিকে বিনষ্ট করতে সক্ষম সম্পূর্ণ জ্ঞানী ভব
স্নেহতে লীন হয়ে যাওয়াই হলো সম্পূর্ণ জ্ঞান। স্নেহই হলো ব্রাহ্মণ জীবনের বরদান। সঙ্গমযুগে স্বয়ং স্নেহের সাগর পাত্র ভর্তি করে স্নেহের হীরে-মানিক দিচ্ছেন। সুতরাং এখন স্নেহ সম্পন্ন হও। স্নেহের শক্তিতেই পাহাড় প্রমান পরিস্থিতিও পরিবর্তিত হয়ে জল হয়ে যাবে। মায়া যতই ভয়ঙ্কর কিংবা রাজকীয় রূপ ধারণ করে বিরোধিতা করুক না কেন, সেকেন্ডের মধ্যে স্নেহের সাগরে মিশে যাও। তাহলেই স্নেহের শক্তি দ্বারা সেই মায়াবী শক্তি বিনষ্ট হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
যে তন-মন-ধন এবং মন-বচন-কর্ম দ্বারা বাবার কর্তব্যে সদা সহযোগী, সে-ই প্রকৃত যোগী।