22.11.2019
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
এই সময় নিরাকার বাবা সাকার শরীরে প্রবেশ করে তোমাদের সুসজ্জিত করে তোলেন, তিনি একা
এ কাজ করেন না"
প্রশ্নঃ -
তোমরা বাচ্চারা
স্মরণের যাত্রায় কেন বসো ?
উত্তরঃ -
১) কেননা তোমরা জানো, এই স্মরণ দ্বারা আমাদের আয়ু বৃদ্ধি পায়, আমরা নিরোগী হয়ে উঠি
। ২) স্মরণ করলে আমাদের পাপ বিনষ্ট হতে থাকে, আমরা খাঁটি সোনায় পরিণত হই । আত্মা
থেকে রজো, তমো গুণী খাদ বেরিয়ে গিয়ে কাঞ্চন (পবিত্র) হয়ে ওঠে । ৩) স্মরণ দ্বারাই
তোমরা পবিত্র দুনিয়ার মালিক হতে পারবে । ৪) তোমরা সুসজ্জিত (জ্ঞানের দ্বারা) হয়ে
উঠবে । ৫) তোমরা বিত্তবান হয়ে যাবে, এই স্মরণই তোমাদের পদ্মগুণ ভাগ্যশালী করে তোলে।
ওম্ শান্তি ।
আত্মিক
বাচ্চাদের আত্মিক পিতা বোঝাচ্ছেন, এখানে বসে তোমরা কি করছ ? এমন নয় যে, শুধু
শান্তিতে বসে আছো । অর্থ বুঝে জ্ঞান যুক্ত অবস্থায় বসে আছ । বাচ্চারা, তোমাদের
জ্ঞান আছে বাবাকে আমরা কেন স্মরণ করি । বাবা আমাদের দীর্ঘায়ু করে তোলেন । বাবাকে
স্মরণ করলে আমাদের পাপ কেটে যাবে । আমরা খাঁটি সোনা হয়ে সতোপ্রধান হয়ে যাব ।
তোমাদের কতরকম ভাবে সুসজ্জিত করে তোলা হয় । তোমরা দীর্ঘায়ু হয়ে ওঠো । আত্মা কাঞ্চন
( পবিত্র) হয়ে যায় । এখন আত্মার মধ্যে খাদ পড়ে গেছে । স্মরণের যাত্রা দ্বারা ঐসব
খাদ যা রজো-তমোগুণী হয়ে সঞ্চিত হয়ে আছে সব বেড়িয়ে যাবে । এতোটাই তোমরা লাভবান হও ।
তারপর আয়ু ও বৃদ্ধি পায়। তোমরা স্বর্গের নিবাসী হয়ে বিত্তবান হয়ে যাবে । তোমরা
পদ্মগুণ ভাগ্যশালী হয়ে উঠবে সেইজন্যই বাবা বলেন মন্মনাভব, মামেকম স্মরণ কর । একথা
কোনও দেহধারীর জন্য বলেন না। বাবার তো শরীর নেই । তোমাদের আত্মা ও নিরাকার । বারবার
জন্ম নিতে নিতে পরশ বুদ্ধি থেকে পাথর বুদ্ধি হয়ে গেছে । এখন আবার কাঞ্চন হতে হবে ।
তোমরা এখন পবিত্র হয়ে উঠছ । জল দিয়ে স্নান তো জন্ম-জন্মান্তর ধরে করে আসছ, ভেবেছ
আমরা এতেই পবিত্র হয়ে যাব কিন্তু পবিত্র হওয়ার পরিবর্তে আরও পতিত হয়ে লোকসানের মুখে
পড়েছ, কেননা এ হলো মিথ্যে মায়া, সবার মধ্যে মিথ্যে বলার সংস্কার । বাবা বলেন, আমি
তোমাদের পবিত্র করে দিয়ে যাই, তারপর তোমাদের পতিত কে করে তোলে, এখন তোমরা অনুভব করছ,
তাইনা, কত গঙ্গা স্নান করে এসেছ কিন্তু পবিত্র হতে পারনি । পবিত্র হয়ে তবেই তো
পবিত্র দুনিয়াতে যেতে পারবে । শান্তিধাম আর সুখধাম হলো পবিত্র ধাম । এ তো হলো
রাবণের দুনিয়া, একে দুঃখধাম বলা হয় । এ তো সহজেই বোঝার বিষয় তাইনা ! এর মধ্যে
মুশকিলের কিছুই নেই, না কাউকে বোঝান মুশকিল । যার সাথেই দেখা হবে শুধুমাত্র তাকে এটা
বলো যে, নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো । আত্মাদের পিতা হলেন পরমপিতা
পরমাত্মা শিব । প্রত্যেক শরীরের আলাদা- আলাদা পিতা হয় কিন্তু আত্মাদের পিতা একজনই
বাবা । কত সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে বলেন আর হিন্দিতেই বোঝান (যাতে বুঝতে সুবিধা হয়, অন্য
কোনো আঞ্চলিক ভাষায় বললে সকলে বুঝবে না) । হিন্দি ভাষাই হলো প্রধান (যেহেতু অনেকে
বোঝে) । তোমরা পদ্মগুণ ভাগ্যশালী তো এই দেবী-দেবতাদেরই বলবে, তাইনা ! এরা কত
ভাগ্যশালী ! এটা কেউ-ই জানে না যে এরা স্বর্গের মালিক কিভাবে হয়েছেন । এখন বাবা এসে
তোমাদের একথা শোনাচ্ছেন । তোমরাও বুঝতে পেরেছ আমরা সহজ রাজযোগ দ্বারা পুরুষোত্তম
সঙ্গম যুগে এমন হয়ে উঠি । এখন হলো পুরানো দুনিয়া আর নতুন দুনিয়ার সঙ্গম । তারপর
তোমরা নতুন দুনিয়ার মালিক হয়ে যাবে । এখন বাবা শুধু এটাই বলেন দুটো শব্দ অর্থ সহ (
অর্থাৎ মানে বুঝে) স্মরণ করো । গীতায় আছে "মন্মনাভব" । শব্দ তো পড়ে কিন্তু অর্থ
কিছুই জানেনা । বাবা বলেন, আমাকে স্মরণ করো, কেননা আমিই পতিত-পাবন, আর কেউ এমনটা
বলতে পারে না । বাবাই বলেন আমাকে স্মরণ করলে তোমরা পবিত্র হয়ে পবিত্র দুনিয়াতে চলে
যেতে পারবে । সর্বপ্রথম তোমরা সতোপ্রধান ছিলে, তারপর পুনর্জন্ম নিতে নিতে তমোপ্রধান
হয়ে গেছো । এখন ৮৪ জন্মের পর আবার তোমরা নতুন দুনিয়ার দেবতা হতে যাচ্ছো ।
রচয়িতা আর রচনা দুই-ই এখন তোমরা জেনেছ । সুতরাং তোমরা এখন আস্তিক । পূর্বে
জন্ম-জন্মান্তর তোমরা নাস্তিক ছিলে । এইসব যা বাবা এসে শোনান আর কেউ-ই জানে না ।
যেখানেই যাও না কেন, কেউ তোমাদের এসব কথা শোনাবে না। *এখন দুজন বাবাই ( শিববাবা,
ব্রহ্মা বাবা) তোমাদের সুসজ্জিত করে তুলছেন । প্রথমে তো বাবা একা ছিলেন । শরীর ছিল
না । উপরে বসে তোমাদের সুসজ্জিত করা সম্ভব ছিল না । বলা হয় না -- ১আর ২ মিলে ১২ হয়,
এখানে প্রেরণা বা শক্তি ইত্যাদির কোনও কথা আসে না । উপর থেকে প্রেরণা দ্বারা মিলিত
হওয়া যায় না। নিরাকার যখন সাকার শরীরের আধার নেন, তখনই তোমাদের সুসজ্জিত করে তোলেন*
।
তোমরা বুঝেছ- বাবা আমাদের সুখধামে নিয়ে যান । ড্রামার প্ল্যান অনুসারে বাবা বাঁধা,
উনি বাচ্চাদের প্রতি কর্তব্য করে থাকেন । প্রতি ৫ হাজার বছর পরে তিনি আসেন বাচ্চারা,
তোমাদের জন্য । এই যোগবল দ্বারা তোমরা কত কাঞ্চন তুল্য হয়ে ওঠো । আত্মা আর শরীর দুই-ই
কাঞ্চন হয়ে ওঠে, তারপর ছিঃ ছিঃ হয়ে পড়ে । এখন তোমরা সাক্ষাত্কার করছো- এই পুরুষার্থ
দ্বারা এমনভাবে সুসজ্জিত হয়ে উঠবো । সত্যযুগে ক্রিমিনাল দৃষ্টি হয়না। সমস্ত অঙ্গ
আবৃত (ঢাকা) থাকে । এখানে দেখো ছিঃ ছিঃ কথাবার্তা রাবণ রাজ্যেই শেখে । এই
লক্ষী-নারায়ণের পোশাক দেখো কত চমত্কার । এখানে সবাই দেহ-অভিমানী । ওদের সৌন্দর্য
প্রাকৃতিক । বাবা তোমাদের এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সুন্দর করে তোলেন । আজকাল তো
খাঁটি গয়না কেউ পড়তেও পারেনা । কেউ পড়লেও তো লুট হয়ে যায় । সত্যযুগে ওসব হয়না । এমন
বাবাকে তোমরা পেয়েছ যিনি ছাড়া তোমরা এমন হতে পারবে না । অনেকেই বলে আমি তো ডায়রেক্ট
শিববাবার কাছ থেকেই গ্রহণ করি । কিন্তু উনি কিভাবে দেবেন, চেষ্টা করে দেখ ডায়রেক্ট
চাও । দেখো পাচ্ছ কিনা । এমন অনেকে বলে থাকে- আমি তো শিববাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার
প্রাপ্ত করব, ব্রহ্মাকে জিজ্ঞাসা করার কি দরকার আছে। শিববাবা প্রেরণার মাধ্যমে
আমাদের কিছু দেবেন । ভালো-ভালো পুরানো বাচ্চাদের ও মায়া এইভাবে কামড়ে ধরে । একজন কি
করবে । *বাবা বলেন আমি একা কিভাবে যাব ? মুখ ছাড়া কথা বলব কি করে । মুখের-ই তো গায়ন
আছে না ! গোমুখ থেকে অমৃত নেওয়ার জন্য কত ধাক্কা খায় । তারপর শ্রী নাথ দ্বারে গিয়ে
দর্শন করে, কিন্তু শ্রীনাথ দর্শন করে কি হবে । একে বলে ভূতপূজা । ওর মধ্যে আত্মা তো
থাকে না । ৫ তত্ত্ব দিয়ে পুতুল তৈরি করে রেখেছে অর্থাত্ মায়াকে স্মরণ করা হলো। ৫
তত্ত্ব হল প্রকৃতি, তাইনা । তাকে স্মরণ করলে কি হবে ? প্রতিটি পদার্থই প্রকৃতির
আধারে তৈরি হয়। সেখানে সতোপ্রধান প্রকৃতি এখানে হলো তমোপ্রধান প্রকৃতি । বাবাকে
সতোপ্রধান প্রকৃতির আধার কখনোই নিতে হয় না । এখানে তো সতোপ্রধান প্রকৃতি পাওয়া
সম্ভব নয়। বাবা বলেন এই যত সাধু-সন্ত আছে সবাইকে উদ্ধার আমাকেই করতে হয় । আমি
নিবৃত্তি মার্গে কখনোই আসিনা । এটা হলো প্রবৃত্তি মার্গ । সবাইকে বলি পবিত্র হও* ।
সত্যযুগে নাম-রূপ ইত্যাদি সবকিছু বদলে যায়, সুতরাং বাবা বুঝিয়ে বলেন, দেখো এই নাটক
কিভাবে তৈরি হয়েছে । একজনের চেহারা অন্যজনের সাথে মিলবে না। কোটি কোটি মানুষ, সবার
চেহারা আলাদা । যতই কেউ কিছু করুক না কেন একজনের সাথে অন্যজনের চেহারা কিছুতেই
মেলাতে পারবে না । একেই বলে ভাগ্য, একেই বলে চমত্কার । স্বর্গকে ওয়ান্ডার বলা হয়,
তাই না! কত সুন্দর, মায়ার ৭ ওয়ান্ডার ( সপ্তম আশ্চর্য), বাবার এক ওয়ান্ডার । ঐ ৭
ওয়ান্ডারকে দাঁড়িপাল্লার একদিকে রাখো, আর অপর প্রান্তে এই ওয়ান্ডার (বাবার) রাখো,
তাও দেখবে পাল্লার এইদিক (বাবার ওয়ান্ডার) ভারী হয়ে গেছে । একদিকে জ্ঞান, অন্যদিকে
ভক্তিকে রাখো, দেখবে জ্ঞানের পাল্লা ভারী হয়ে গেছে । এখন তোমরা বুঝেছ ভক্তি শেখানোর
জন্য প্রচুর মানুষ রয়েছে । জ্ঞান প্রদান করার জন্য একজনই আছেন তিনি বাবা । সুতরাং
বাবা বসে বাচ্চাদের পড়ান এবং সুসজ্জিত করে তোলেন। বাবা বলেন পবিত্র হও । বাচ্চারা
বলে ওঠে — না, আমরা পবিত্র হব না ।গরুড় পুরাণেও বিষয় বৈতরণী নদী দেখানো হয়েছে না !
কুমির, কচ্ছপ, সর্প ইত্যাদি সব একে অপরকে কামড়াচ্ছে । বাবা বলেন, তোমরা কত ধনহীন হয়ে
পড়ো। তোমরা বাচ্চাদেরই বাবা এসে বোঝান বাইরে কাউকে এভাবে সোজাসুজি বললে বিগড়ে যাবে
। বড় যুক্তি দিয়ে বোঝাতে হয় । কিছু বাচ্চাদের কথাবার্তা বলার কোনও ধারণাই থাকে না ।
ছোট বাচ্চারা খুব ইনোসেন্ট হয়, সেইজন্য ওদের মহাত্মা বলা হয় । কোথায় কৃষ্ণ মহাত্মা,
কোথায় এই সন্ন্যাসী। যাদের প্রবৃত্তি মার্গের মানুষ মহাত্মা বলে । সত্যযুগ
ভ্রষ্টাচার দ্বারা তৈরি হয় না । তাকে বলে শ্রেষ্ঠাচারী । এখন তোমরা শ্রেষ্ঠাচারী হয়ে
উঠছ । বাচ্চারা জানে এখানে বাপদাদা দু'জন একত্রে আছেন, নিশ্চয়ই তবে সুন্দর ভাবে
সুসজ্জিত করে তুলবেন । সবারই মনে তখন হবে, যিনি এই বাচ্চাদের এভাবে সুসজ্জিত করে
তুলেছেন আমরাও যাই তাঁর কাছে । সেইজন্যই তোমরা এখানে আস রিফ্রেশ হতে । মন চেষ্টা করে,
বাবার কাছে আসার।
যে সম্পূর্ণ নিশ্চয় বুদ্ধি হবে সে বলবে মারধর করো বা যা কিছুই করো না কেনো, আমি
কখনোই সাথ ছাড়ব না । কেউ তো বিনা কারণেই ছেড়ে চলে যায় । এটাও ড্রামার খেলা যা
পূর্বেই তৈরি হয়ে আছে । বাবা জানেন এ রাবণের বংশের । কল্পে-কল্পে এমনটাই হয়ে আসছে ।
তারপরও কেউ চলে আসে । বাবা বোঝান, হাত ছেড়ে দিলে পদ কম হয়ে যাবে । সামনে আসে,
প্রতিজ্ঞা করে ‐- আমরা এমন বাবাকে কখনও ছেড়ে চলে যাব না । কিন্তু মায়া রূপী রাবণও
কম নয় । ঝট করে নিজের দিকে টেনে নিয়ে আসে । তারপর আবার সামনে এলে তাকে বোঝানো হয়।
বাবা লাঠি দিয়ে তো মারবেন না । বাবা তারপরও ভালোবেসে বোঝান, তোমাকে মায়া গ্রহ গ্রাস
করতে যাচ্ছিল, ভালো হয়েছে যে বেঁচে ফিরে এসেছ । ঘায়েল হলে পদ কম হয়ে যাবে । যে সব
সময়ের জন্য একরস স্থিতিতে থাকবে সে কখনোই টলবে না। কখনও হাত ছাড়বে না । এখান থেকে
বাবাকে ছেড়ে আবারও মায়া রাবণের ফাঁদে পড়লে মায়া আরও তীব্র ভাবে গ্রাস করবে। বাবা
বলেন, তোমাদের কত ভাবে সুসজ্জিত করে তুলি। বোঝানো হয় ভালভাবে চলো । কাউকে দুঃখ দিয়ো
না । রক্ত দিয়েও লিখে দেয় অনেকে তারপর যেমনকার ঠিক তেমনটাই হয়ে যায় । মায়া ভীষণ
শক্তিশালী । কান-নাক ধরে ভীষণ ভাবে যন্ত্রণা দেয় । এখন তোমাদের জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র
প্রদান করছি সুতরাং ক্রিমিনাল ( কুদৃষ্টি) দৃষ্টি হওয়া কখনোই উচিত নয় । বিশ্বের
মালিক হতে গেলে কিছু পরিশ্রম তো করতেই হবে না! এখন তোমাদের আত্মা আর শরীর দুটোই
তমোপ্রধান হয়ে গেছে । খাদ পড়ে গেছে । এই খাদকে মিটাবার জন্য বাবা বলেন আমাকে স্মরণ
কর । তোমরা বাবাকে স্মরণ করতে পার না, লজ্জা হয় না তোমাদের? স্মরণ না করলে মায়ার
ভূত তোমাদের গ্রাস করে নেবে। তোমরা কত নিকৃষ্টতম হয়ে গেছ, রাবণ রাজ্যে এমন একজন ও
নেই যে বিনা বিকারে জন্মগ্রহণ করেছে। সত্যযুগে এইরকম বিকারের কোনও নামগন্ধই নেই,
কারণ রাবণ-ই নেই । রাবণ রাজ্য শুরু হয় দ্বাপর থেকে । পবিত্র করে তোলেন এক বাবাই ।
বাবা বলেন, বাচ্চারা এই একটা জন্মই তোমাদের পবিত্র হতে হবে তারপর বিকারের কোনও
বিষয়ই থাকবে না । ওটা হলো নির্বিকারী দুনিয়া । তোমরা জান এরা পবিত্র দেবী-দেবতা ছিল
তারপর ৮৪ জন্ম নিতে নিতে নীচে নেমে এসেছে । এখন পতিত হয়ে আহ্বান করে বলে শিববাবা
আমাদের এই পতিত দুনিয়া থেকে মুক্ত কর । এখন যখন বাবা এসেছেন তখন তোমরা বুঝতে পেরেছ
এসব পতিত কর্ম, আগে বুঝতে না কারণ তোমরা রাবণ রাজ্যে ছিলে। এখন বাবা বলেন সুখধামে
যেতে হলে ছি-ছি হওয়া ছাড়ো । অর্ধকল্প ধরে তোমরা নিকৃষ্ট হয়ে আছ, মস্তকে পাপের বোঝা
সঞ্চিত হয়ে আছে আর তোমরা গালিগালাজ ও করেছ অনেক । বাবাকে গালিগালাজ করলে অনেক পাপ
সঞ্চিত হয়, এটাও ড্রামার ভূমিকা ।
তোমাদের আত্মাও ৮৪ বার ভূমিকা পালন করার নিমিত্ত হয়েছে, সুতরাং সেই ভূমিকা পালন
করতেই হবে । প্রত্যেককে নিজ-নিজ ভূমিকা পালন করতে হবে, তবে তোমরা কান্নাকাটি করছ
কেন । সত্যযুগে কেউ কান্নাকাটি করে না । জ্ঞানের দশা সম্পূর্ণ হলেই আবার কান্নাকাটি,
মারামারি শুরু হয়ে যায় । মোহজীত হওয়ার কথা তোমরা শুনেছ । এটা তো একটা মিথ্যে
দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে । সত্যযুগে কারও অকাল মৃত্যু হয়না । মোহজীত করে তুলতে পারেন
একমাত্র বাবা । পরমপিতা পরমাত্মার তোমরা উত্তরাধিকারী, যিনি তোমাদের বিশ্বের মালিক
করে তোলেন । নিজেকে জিজ্ঞাসা কর আমরা আত্মারা কি ওঁনার উত্তরাধিকারী ? শরীরের
পড়াশোনায় কিছুই নেই । এখন তো পতিত মানুষদের মুখ দেখাও উচিত নয়, এমনকি বাচ্চাদের ও
দেখানো উচিত নয় । বুদ্ধি দিয়ে সবসময় মনে রাখতে হবে আমরা সঙ্গম যুগে আছি। এক বাবাকেই
স্মরণ করি, অন্য সবাইকে দেখেও দেখি না । আমরা নতুন দুনিয়াকেই দেখি । আমরা দেবতা হয়ে
উঠছি, ঐ নতুন সম্বন্ধকেই দেখি । পুরানো সম্বন্ধ দেখেও দেখি না । এসবই ভস্মীভূত হয়ে
যাবে । একা এসেছিলাম একাই ফিরে যাব । বাবা একবারই আসেন সাথে করে নিয়ে যেতে । একে
শিববাবার বরযাত্রী বলা হয়। সবাই শিববাবার সন্তান । বাবা বিশ্বের বাদশাহী দেন, মানুষ
থেকে দেবতা করে তোলেন । আগে বিষ নির্গত হতো এখন অমৃত উছলে পড়ছে । আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
নিজেকে সঙ্গম যুগ নিবাসী মনে করে চলতে হবে । পুরানো সম্বন্ধ দেখেও না দেখার ভান করে
থাকতে হবে । বুদ্ধিতে যেন থাকে একাই এসেছিলাম, একাই যেতে হবে ।
২ ) আত্মা আর শরীর দুই-ই কাঞ্চন তুল্য করে তোলার জন্য জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র দ্বারা
দেখার অভ্যাস করতে হবে । কু-দৃষ্টিকে সমাপ্ত করতে হবে । জ্ঞান আর যোগ দ্বারা নিজেকে
সুসজ্জিত করে তুলতে হবে ।
বরদান:-
বাবার ছত্রছায়ায় সদা আমোদ অনুভব করতে আর অন্যদেরও করাতে সমর্থ বিশেষ আত্মা ভব
যেখানে বাবার ছত্রছায়া
আছে সেই স্থান মায়ার থেকে সবসময় নিরাপদ । ছত্রচ্ছায়ার ভিতরে মায়া প্রবেশ করতে পারে
না, পরিশ্রম থেকে মুক্ত হয়ে যাবে । কেননা পরিশ্রম আনন্দের অনুভব করতে দেয় না ।
ছত্রছায়ার নীচে থাকা বিশেষ আত্মারা এই উচ্চ স্তরের ঈশ্বরীয় পাঠ পড়েও আনন্দে থাকে।
কেননা তারা নিশ্চিত যে আমরা কল্প-কল্প বিজয়ী হয়েছি, সফলতা অর্জন করেছি । সুতরাং
সবসময় আনন্দে থাকো আর অন্যদেরও আনোদে থাকার সন্দেশ দিতে থাকো । এটাই হল সেবা।
স্লোগান:-
যে ড্রামার রহস্যকে জানে না, সেই নারাজ অর্থাত্ হতাশ হয়ে যায় ।