০১-০৫-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা -- তোমরা এখানে মনুষ্য থেকে দেবতা হওয়ার টিউশন(শিক্ষা) নিতে এসেছ, কড়ি থেকে হীরে-তুল্য হচ্ছো"

প্রশ্ন:-

বাচ্চারা, তোমাদের এই পড়াশোনার জন্য কোনো খরচা লাগে না -- কেন ?

উত্তর:-

কারণ তোমাদের বাবা-ই হলেন টিচার। বাবা বাচ্চাদের থেকে খরচ(ফী) কেমন করে নেবেন । বাবার সন্তান হয়েছ, কোলে এসেছ, তাতেই অবিনাশী উত্তরাধিকার পাওয়ার অধিকারী হয়ে গেছো। বাচ্চারা, তোমরা বিনা খরচে কড়ি থেকে হীরে-তুল্য দেবতা হয়ে যাও। ভক্তিতে তীর্থযাত্রা করে, দান-পূণ্য করে, তাতে শুধু খরচই খরচ। এখানে তো বাবা বাচ্চাদের রাজত্ব দেন। সম্পূর্ণ অবিনাশী উত্তরাধিকার বিনামূল্যে দেন। পবিত্র হও আর অবিনাশী উত্তরাধিকার নাও ।

ওম্ শান্তি ।

বাচ্চারা জানে যে, আমরা হলাম স্টুডেন্ট। বাবার ছাত্ররা, তোমরা কি পড়ছ ? আমরা মনুষ্য থেকে দেবতা হওয়ার টিউশন নিচ্ছি। আমরা আত্মারা, পরমপিতা পরমাত্মার কাছ থেকে টিউশন নিচ্ছি। এখন বুঝতে পেরেছি যে, জন্ম-জন্মান্তর ধরে নিজেকে দেহ মনে করেছি, আত্মা নয়। লৌকিক পিতা তো টিউশনের জন্য অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দেয়, সদ্গতির জন্যও অন্য স্থানে পাঠিয়ে দেয়। বাবা বৃদ্ধ হলে, তখন আবার তার বাণপ্রস্থে যাওয়ার ইচ্ছা হয়। কিন্তু বাণপ্রস্থের অর্থ কি তা কেউ জানে না। বাণীর উর্ধ্বে(ওপারে) আমরা কিভাবে যেতে পারি ? তা বুদ্ধিতে ঢোকে(বসে) না। এখন তো আমরা পতিত। তোমরা আত্মারা যেখান থেকে এসেছ, সেখানে তোমরা পবিত্র ছিলে। এখানে এসে (নিজ-নিজ) ভূমিকা পালন করতে-করতে পতিত হয়ে গেছো। এখন পুনরায় পবিত্র কে বানাবে ? আহ্বানও করে, হে পতিত-পাবন। গুরুকে তো কেউ-ই পতিত-পাবন বলতে পারে না। (লোকেরা) গুরু করে তথাপি একজনের প্রতি সম্পূর্ণ দৃঢ় বিশ্বাস না থাকার কারণে যাচাই করে, এমন যদি কোনো গুরু পাওয়া যেত, যে আমাদের নিজেদের ঘর বা বাণপ্রস্থ অবস্থায় পৌঁছে দিতে পারে, তারজন্য অনেক যুক্তি রচনা করে। যেখানেই শুনবে অমুকের খুব মহিমা, সেখানেই যাবে। আর যারা এই বৃক্ষের চারা(স্যাপলিং) হবে, তোমাদের জ্ঞানের তীর তাদের ঠিক লেগে যাবে। তারা মনে করে, এ তো পরিষ্কার কথা। তোমরাই সঠিকভাবে বাণপ্রস্থ অবস্থায় যাও, তাই না। এ কোন বড় কথা নয়। টিচারের কাছে স্কুলে পড়ানো কোন বড় কথা নয়। ভক্তরা কি চায় ? তাও কেউ জানে না। এখন তোমরা বাচ্চারা ড্রামার এই চক্রকে ভালমতন জেনে গেছো। তোমরা বোঝ যে, সদা বাবা-ই যথার্থ উত্তরাধিকার দিয়েছেন, যা এখনও আবার দিচ্ছেন। তোমরা আবার সেই অবস্থাতেই পুনরায় আসবে, বাচ্চারা, একমাত্র তোমরাই একথা বোঝ। তাই প্রথম মুখ্য বিষয় হলো, পবিত্র হওয়ার জন্য বাবাকে স্মরণ করতে হবে। লৌকিক পিতাকে তো সকলেই স্মরণে রাখে। আর পারলৌকিক পিতাকে জানেই না। এখন তোমরা বুঝতে পেরেছো যে, নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করা যেমন অতি সহজও, আবার কঠিন থেকে কঠিনও।





আত্মা অতি ক্ষুদ্র স্টার(তারা)। বাবাও একটি স্টার। তিনি হলেন সম্পূর্ণ পবিত্র আত্মা আর এ হলো সম্পূর্ণ অপবিত্র। সম্পূর্ণ পবিত্রের(পরমাত্মা) সঙ্গেই স্বর্গবাস....... সে তো একজনের সঙ্গ করলেই পাওয়া যেতে পারে। সঙ্গ তো অবশ্যই চাই। আবার কুসঙ্গও পাওয়া যায়, ৫ বিকার-রূপী রাবণের। তাদের বলা হয় রাবণ-সম্প্রদায়। তোমরা এখন রাম-সম্প্রদায়ভুক্ত হচ্ছো। তোমরা যখন রাম-সম্প্রদায়ের হয়ে যাবে তখন এই রাবণ-সম্প্রদায় থাকবে না। বুদ্ধিতে এই জ্ঞান রয়েছে। রাম বলা হয় ভগবানকে। ভগবানই এসে রাম-রাজ্য স্থাপন করেন অর্থাৎ সূর্যবংশীয় রাজ্য স্থাপন করেন। রাম-রাজ্যও বলা যাবে না, কিন্তু বোঝাতে সহজ হয় -- রাম-রাজ্য আর রাবণ-রাজ্য। বাস্তবে হলো সূর্যবংশীয়-রাজ্য। তোমাদের একটি ছোট বই আছে -- হীরে-তুল্য জীবন কিভাবে তৈরী হবে? বাস্তবে হীরে-তুল্য জীবন কাকে বলে -- শুধু তোমরা ছাড়া, অন্য মানুষেরা কি একথা জানে। তাই লেখা উচিৎ হীরের মতো দেব-তুল্য জীবন কিভাবে হবে? 'দেবতা' - শব্দটি যুক্ত করা উচিত । তোমরা অনুভব কর যে, আমরা হীরে-তুল্য জীবন এখানেই তৈরী করছি। শুধু বাবা ছাড়া আর কেউই তৈরী করতে পারে না। বই তো খুব ভাল, তাতে শুধু এই অক্ষরটি (দেবতা) যুক্ত কর। তোমরা আসুরী কড়ি-তুল্য জন্ম থেকে দৈবী হীরে-তুল্য জন্ম সেকেন্ডে প্রাপ্ত করতে পারো, কোন পয়সাকড়ি খরচা না করেই অর্থাৎ বিনামূল্যে। বাচ্চা, বাবার কোলে জন্ম নেয় আর অবিনাশী উত্তরাধিকার পাওয়ার অধিকারী হয়ে যায়। বাচ্চাদের কোনো খরচ লাগে কি ? কোলে আসা আর অবিনাশী সম্পদের উত্তরাধিকারী হয়ে যাওয়া। খরচা তো বাবা করেন, না কি বাচ্চারা ! এখন তোমরা কি খরচ করছ ? বাবার বাচ্চা হতে গেলে কি খরচা লাগে। না। যেমন লৌকিক পিতার সন্তান হতেও কোন খরচা লাগে না। এখানে তো বাবা স্বয়ং বসে পড়ান, আর পড়িয়ে তোমাদের দেবতা বানিয়ে দেন। তোমরা তো কোন ছোট বাচ্চা নও, বড়। বাবার হয়ে গেলে বাবা রায় (পরামর্শ) দেন, তোমাদেরকেই নিজেদের রাজধানী স্থাপন করতে হবে। তাই এখানে পবিত্র অবশ্যই হতে হবে। খরচ তো কিছুই লাগে না। গঙ্গায় স্নান করতে যায়, তীর্থস্থানে যায়, তখন খরচা তো করতেই হবে, তাই না। বাবার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস এসেছে, তারজন্য কি তোমাদের কিছু ব্যয় করতে হয়েছে? সেন্টারে তোমাদের কাছে যারা আসে, তোমরা তাদের বল যে, এখন অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার নাও, আর বাবাকে স্মরণ কর। তিনি তো পিতা হন, তাই না। বাবা স্বয়ং বলেন যে, আমার অবিনাশী উত্তরাধিকার যদি তোমাদের চাই তাহলে পতিত থেকে পবিত্র হতেই হবে, তবেই পবিত্র বিশ্বের মালিক হতে পারবে। তোমরা এও জানো যে, বাবা বৈকুন্ঠ স্থাপন করেন। সমঝদার বাচ্চারা সঠিকভাবে বোঝে। ওই(লৌকিক) পড়াশোনায় কত ব্যয় হয়, এখানে খরচা তো কিছুই নেই। আত্মা বলে, আমি অবিনাশী, এই শরীর বিনাশ হয়ে যাবে। সন্তানাদি সবকিছুই বিনাশ প্রাপ্ত হবে। আচ্ছা, তাহলে এতো যে টাকাপয়সা জমা করেছো সেগুলো কি করবে? কিছু চিন্তা তো রয়েছে, তাই না। কেউ যদি ধনবান হয়, মনে কর তার আর কেউ নেই, জ্ঞান প্রাপ্ত করার পর মনে করে এই অবস্থায় সে এই টাকাপয়সা কি করবে? পড়া হলো উপার্জনের উৎস(সোর্স অফ ইনকাম)। বাবা আব্রাহাম লিঙ্কন নামে এক ব্যক্তির কথা বলেছিলেন, যে অত্যন্ত গরীব ছিল। রাত্রি জেগে পড়াশোনা করত। পড়ে-পড়ে এতো হুশিয়ার হয়ে গিয়েছিল যে, সে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়ে গিয়েছিল। কিছু খরচ করতে হয়েছিল কি? কিছুই না। অনেকেই আছে যারা অত্যন্ত গরীব, তাদের কাছ থেকে সরকার পড়াশোনার জন্য কোন পয়সা(খরচা) নেয় না। এমন অনেকেই পড়ে, তারাও বিনামূল্যে পড়ে প্রেসিডেন্ট হয়ে যায়। কত বড় পদ প্রাপ্ত করে। এই গভর্নমেন্টও কোন মূল্য নেয় না। বোঝে যে, এই দুনিয়ায় তো সকলেই গরীব। যদিও কত ধনবান, লক্ষপতি, ক্রোড়পতি রয়েছে, তারাও বলে, আমরা গরীব। আমি তাদের ধনবান বানাই। যদিও ধন-সম্পদ অনেক রয়েছে, কিন্তু তোমরাই জানো যে, তা অল্পদিনের জন্য। এই সবকিছুই মাটিতে মিশে যাবে। তাহলে গরীবই তো হলো, তাই না। প্রাপ্তির সম্পূর্ণ আধারেই (ভিত) হলো পড়াশোনা। বাবা বাচ্চাদের থেকে পড়ার জন্য কি নেবেন ? বাবা তো বিশ্বের মালিক, বাচ্চারা জানে যে, ভবিষ্যতে আমরা এরকম হব। আমি আসি, এ(স্বর্গরাজ্য) স্থাপন করতে। ব্যাজের মাধ্যমেও এটা বোঝাতে হবে। নতুন-নতুন আবিষ্কার(ইনভেনশন) হতেই থাকে। শিববাবা বলেন, আমার যে আত্মা রয়েছে, তাতে আমার ভুমিকা(পার্ট) ফিক্সড হয়ে রয়েছে। যে বিকারী পতিত হয়ে গেছে, তাকেও বাবা এসে পবিত্র বানায়। এ তো জানো যে, ৫ হাজার বর্ষ পূর্বেও বাবার কাছ থেকে বিশ্বের রাজত্ব(বাদশাহী) নিয়েছিলে। মুখ্য কথা হলো, বাবা বলেন যে, মামেকম্ স্মরণ কর। সম্মুখে এসে বলেন। রথ(ব্রহ্মার শরীর) পেয়ে গেছে তাই বাবাও এসে গেছেন। অবশ্যই একটি রথ(শরীর) তো ফিক্সড থাকবে, তাই না। এ হলো পূর্বনির্ধারিত ড্রামা। চেঞ্জ হতে পারে না। (লোকেরা) বলে, এই জহুরী কিভাবে প্রজাপিতা ব্রহ্মা হবে। মনে করে, ইনি তো জহুরী ছিলেন। কিন্তু জহরত এক হয় ইমিটেশনের, আর এক রিয়্যাল(আসল)। এখানে বাবা যখন রিয়্যাল জহরৎ দিচ্ছেন তখন ওইসব(ইমিটেশন) কোন্ কার্যে লাগবে। এ হলো জ্ঞান-রত্ন। এর সামনে ওই হীরে-জহরতের কোন মূল্য নেই। যখন এই (জ্ঞান) রত্ন পান তখন তিনি বোঝেন যে, এই জহরতের ব্যবসা এখন আর কোন কার্যে আসবে না। এই অবিনাশী এক-একটি জ্ঞান-রত্ন লক্ষাধিক মূল্যের। তোমরা কত রত্ন পাও। এই জ্ঞান-রত্নই হলো সত্যিকারের (জহরৎ)। তোমরা জানো যে, বাবা এই রত্ন দেন তোমাদের ভান্ডার(ঝুলি) পরিপূর্ণ করার জন্য। এ (জ্ঞান) বিনামূল্যে পাও। কিছুই ব্যয় করতে হয় না। ওখানে(স্বর্গ) তো দেওয়াল, ছাদেও হীরে-জহরৎ লাগানো থাকে। ওইসবের মূল্য কি ? মূল্য তো পরে হয়। ওখানে তো হীরে-জহরতও তোমাদের কাছে কিছু নয়। এতে তো বাচ্চাদের নিশ্চয় হওয়া উচিত ।



বাবা বুঝিয়েছেন যে, এ হলো রূপও (জ্ঞানী), আবার বসন্তও (যোগী)। বাবার রূপ তো অতি ক্ষুদ্র। তাঁকে জ্ঞান-সাগর বলা হয়। এ হলো জ্ঞান-রত্ন, যার প্রাপ্তিতে তোমরা অনেক ধনবান হবে। এছাড়া কোন অমৃত বা জল ইত্যাদির বর্ষা হয় না। পড়ার মধ্যে জলের কোন ব্যাপার(কথা) নেই। পবিত্র হওয়ার সঙ্গে খরচের কোন কথা নেই। তোমরা এখন বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন হয়েছ। তোমরা বোঝ যে, একমাত্র (পরম) পিতাই হলেন পতিত-পাবন। তোমরা নিজেদের যোগবল দ্বারা পবিত্র হচ্ছো। তোমরা জানো যে, (আমরা) পবিত্র হয়ে পবিত্র দুনিয়ায় চলে যাব। এখন সঠিক কোনটা, এটা না ওটা? এইসমস্ত কথায় বুদ্ধির চিন্তন চলা উচিৎ। এই ভক্তির পার্টও ড্রামায় নির্ধারিত। বাবা বলেন, এখন তোমাদের পবিত্র হয়ে পবিত্র দুনিয়ায় যেতে হবে। যে পবিত্র হবে, সেই যাবে। যারা এখানকার চারা(স্যাপলিং) হবে, তারা ঠিক বেরিয়ে আসবে। বাকিরা কি বুঝতে পারবে, না বুঝতে পারবে না। তারা তো পাঁকেই(কাদা) আটকে থাকবে। পরে যখন শুনবে তখন বলবে যে, ওহো প্রভু, তোমার লীলা......তুমি পুরনো দুনিয়াকে কিভাবে নতুন কর। তোমাদের এই জ্ঞান সংবাদপত্রের মাধ্যমে অনেকেই পড়বে। বিশেষ করে এই (লক্ষ্মী-নারায়ণ) চিত্র সংবাদপত্রে দিয়ে দাও। আর লিখে দাও --- শিববাবা প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারা পড়িয়ে আমাদের স্বর্গের মালিক(লক্ষ্মী-নারায়ণ) বানিয়ে দেন। কিভাবে? স্মরণের যাত্রার মাধ্যমে। স্মরণ করতে-করতে তোমাদের খাদ(জং) বেরিয়ে যাবে। তোমরা দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে সকলকে এই রাস্তা বলে দিতে পার যে, বাবা বলেন, মামেকম্ স্মরণ কর, আর নিজেকে আত্মা নিশ্চয় কর। বারংবার(ঘড়ি-ঘড়ি) স্মরণ করিয়ে দেখো যে, তাদের চেহারায় কিছু পরিবর্তন হচ্ছে কি? নয়ন কি জলে ভরে উঠছে? তখন বুঝবে যে, বুদ্ধিতে ঢুকেছে(বসেছে)।প্রথমে-প্রথমে এই একটি কথাই বোঝাতে হবে। ৫ হাজার বছর পূর্বেও বাবা-ই বলেছিলেন যে, মামেকম্ স্মরণ কর। শিববাবা এসেছিলেন তবেই তো শিব-জয়ন্তী পালন করা হয়, তাই না। ভারতকে স্বর্গে পরিনত করার জন্য একথাই বুঝিয়েছিলেন যে, মামেকম্ (একমাত্র আমাকেই) স্মরণ কর তবেই তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে। ছোট-ছোট কন্যারাও এভাবেই বসে বোঝাও। অসীম জগতের পিতা শিববাবা এভাবেই বোঝান। 'বাবা' - এই অক্ষরটি অতি সুমিষ্ট। বাবা আর আশীর্ব্বাদ। এতটুকু নিশ্চয়তা তো বাচ্চাদের থাকতে হবে। এ হলো মনুষ্য থেকে দেবতা হওয়ার বিদ্যালয়। দেবতারা হয়-ই পবিত্র। এখন বাবা বলেন, নিজেকে আত্মা সুনিশ্চিত করে আমাকে স্মরণ কর, মন্মনাভব। অক্ষরটি তো শুনেছো, আর যদি না শুনে থাকো তাহলে বাবা শুনিয়ে দেন। বাবা বলেন, আমিই পতিত-পাবন, আমাকে স্মরণ করলেই তোমাদের মধ্যেকার খাদ বেরিয়ে যাবে আর তোমরা সতোপ্রধান হয়ে যাবে। এতেই পরিশ্রম হয়। জ্ঞানের ক্ষেত্রে তো সকলেই বলে যে, খুব ভাল, জ্ঞান ফার্স্টক্লাস কিন্তু প্রাচীন যোগের কথা কেউ জানেই না। পবিত্র হওয়ার কথা তো তোমরা শোনাও, তাও বোঝে না। বাবা বলেন, তোমরা সব পতিত তমোপ্রধাণ হয়ে গেছো। এখন নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে আমাকে স্মরণ কর। আসলে তো তোমরা আত্মারা আমার সঙ্গে ছিলে, তাই না। আমাকে তোমরা স্মরণও কর যে, ও গডফাদার এসো। এখন আমি এসেছি, তোমরা আমার মতে চলো। এ হলো পতিত থেকে পবিত্র হওয়ার মত। আমি হলাম সর্বশক্তিমান, সদা পবিত্র। তোমরা এখন আমাকে স্মরণ কর। একেই প্রাচীন রাজযোগ বলা হয়। জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজ-কর্ম ইত্যাদিও কর, তোমরা সন্তানাদিও সামলাও, তথাপি শুধুমাত্র বুদ্ধিযোগ আর সবকিছু থেকে সরিয়ে আমার সাথে যুক্ত কর। এটাই হলো সর্বাপেক্ষা প্রধান বিষয়(কথা)। আর এটাই যদি না বোঝে তার অর্থ হলো সে কিছুই বোঝেনি। জ্ঞানের ক্ষেত্রে বলা হয় যে, কেউ খুব ভাল জ্ঞান দান (ভাষণ) করে, পবিত্রতাও ভালই রয়েছে, কিন্তু আমরা পবিত্র কিভাবে হয়েছি? সর্বসময়ের জন্য (পবিত্রতা) চাই, একথা বুঝতে পারে না। দেবতারা তো সদা পবিত্র, তাই না, কিভাবে হয়েছে ? সবার প্রথমে এ'কথাই বোঝাতে হবে। বাবা বলেন, আমাকে স্মরণ কর। স্মরণের দ্বারাই পাপ দূর হয়ে যাবে আর তোমরা দেবতায় পরিণত হবে। *আচ্ছা*!



মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাত-পিতা বাপদাদার স্নেহ-স্মরণ ও সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-

১. নিজেকে গরীব থেকে ধনবান করার জন্য বাবার কাছ থেকে অবিনাশী জ্ঞান-রত্ন নিতে হবে, এই এক-একটি (জ্ঞান) রত্ন লক্ষাধিক মূল্যের, এর মূল্য যথার্থরূপে বুঝে পড়া করতে হবে। এই পড়া-ই হলো উপার্জনের উৎস(সোর্স অফ ইনকাম), এর দ্বারা উচ্চপদ লাভ করতে হবে।

২. রাম-সম্প্রদায়ভুক্ত হওয়ার জন্য একমাত্র পিতা, যিনি সম্পূর্ণ পবিত্র শুধু তাঁর সঙ্গই করতে হবে। কুসঙ্গ থেকে সদা দূরে থাকতে হবে। সর্বদিক থেকে বুদ্ধিযোগ সরিয়ে এনে একমাত্র পিতার সঙ্গেই তা জুড়তে হবে।

বরদান:-

নিজের মধ্যে সর্বশক্তিকে উদিত (ইমার্জ) রূপে অনুভবকারী সর্ব সিদ্ধি-স্বরূপ ভব

লৌকিকেও কারোর কাছে কোন বিশেষ শক্তি নিহিত থাকে, হতে পারে তা ধনের, বুদ্ধির, সম্বন্ধ-সম্পর্কের..... তখন তার এই দৃঢ় বিশ্বাস থাকে যে, এ(শক্তি) কত বড় ব্যাপার। সে তখন সেই শক্তির আধারে সিদ্ধি প্রাপ্ত করে নেয়। তোমাদের কাছেও তো সব শক্তি রয়েছে, অবিনাশী ধনের শক্তি সদা সঙ্গে রয়েছে, বুদ্ধিরও শক্তি রয়েছে, আবার পদেরও(পজিশন) শক্তি রয়েছে, সর্বশক্তিই তোমাদের মধ্যে নিহিত আছে, এগুলিকে শুধু জাগরিত (ইমার্জ) করে অনুভব কর তবেই সময়মতো বিধিপূর্বক সিদ্ধি প্রাপ্ত করে সিদ্ধি-স্বরূপ হয়ে যাবে।

স্লোগান:-

মনকে প্রভুর আমানত মনে করে তাকে সদা শ্রেষ্ঠ কার্যে নিবিষ্ট কর(লাগাও)।