২৩-০১-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - সর্বদা এই নেশাতেই থাকো যে ভগবান আমাদের পড়াচ্ছেন, আমাদের এই স্টুডেন্ট লাইফ হল সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ(দি বেষ্ট), আমাদের উপর এখন বৃহস্পতির দশা রয়েছে"
প্রশ্ন:-
কোন্ বাচ্চারা সকলের ভালবাসা প্রাপ্ত করে ?
উত্তর:-
যারা অনেকের কল্যাণের নিমিত্ত হয়, যাদের কল্যাণ হয়েছে তারা বলে যে, তুমি হলে আমাদের মা। তাই নিজেরা নিজেদের দেখো যে আমরা কতজনের কল্যাণ করতে পারছি ? বাবার (ঈশ্বরীয় সন্দেশ) সন্দেশ(ম্যাসেজ) কত আত্মাদের দিতে পারছি ? বাবাও হলেন দূত(পয়গম্বর)। বাচ্চারা, তোমাদেরও বাবার সন্দেশ দিতে হবে। সবাইকে বলো যে দু'জন পিতা রয়েছে। বেহদের পিতাকে স্মরণ কর আর অবিনাশী উত্তরাধিকারকে (বর্সা) স্মরণ কর*।
গীত:-
তুমি প্রেমের সাগর* ... তব প্রেমের এক বিন্দুর জন্য পিয়াসী মোরা........( তু প্যায়ার কা সাগর....)
ওম্ শান্তি*।
আত্মাদের (রুহানী) পিতা বসে আত্মা রূপী (রুহানী) বাচ্চাদের রোজ-রোজ বোঝান যে "বাচ্চারা আত্ম-অভিমানী হয়ে বসো। এরকম যেন না হয় যে বুদ্ধি বাইরে এদিকে-ওদিকে ঘুরতে থাকে । একমাত্র বাবাকেই স্মরণ করতে হবে। তিনিই জ্ঞানের সাগর, প্রেমের সাগর। কথিত আছে যে, জ্ঞানের এক ফোঁটাও অনেক" । বাবা বলেন, "মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা রুহানী বাবাকে স্মরণ করো, তবেই তোমরা এই অবিনাশী উত্তরাধিকার পেয়ে যাবে। অমরপুরী বৈকুন্ঠে চলে যাবে"। এছাড়া এইসময় তোমাদের মাথার উপর যে পাপের বোঝা রয়েছে তা নামিয়ে ফেলতে হবে। নিয়ম অনুসারে, বিবেক অনুসারে বাচ্চারা, তোমাদের বোঝানো হয়। যিনি উচ্চ থেকে উচ্চে ছিলেন তিনিই অন্তিমে নীচে তপস্যা করছেন। রাজযোগের তপস্যা একমাত্র বাবাই শেখান। হঠযোগ হলো সম্পূর্ণ আলাদা। ওটা হলো হদের(পার্থিব জগতের), আর এ হলো বেহদের। ওটা হলো নিবৃত্তিমার্গ, এ হলো প্রবৃত্তিমার্গ । বাবা বলেন, তোমরা বিশ্বের মালিক ছিলে। রাজা-রানী যেমন হবে প্রজা তেমনই হবে। প্রবৃত্তিমার্গের পবিত্র দেবী-দেবতা ছিল পরে আবার দেবতারা বাম-মার্গে(বিকারে) চলে যায়। সেসবেরও চিত্র রয়েছে। অত্যন্ত অশোভন (নোংরা) চিত্র বানায় যা দেখতেও লজ্জা করে, কারণ বুদ্ধিও সম্পূর্ণ ভ্রষ্ট হয়ে যায়। বাবার উদ্দেশ্যেই বলা হয় যে, তুমি হলে প্রেমের সাগর। এখন প্রেমের তো এক ফোঁটা হয় না। এ হল জ্ঞানের কথা। তোমরা বাবাকে জেনে বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার নিতে এসেছ। বাবা সদ্গতির-ই জ্ঞান দেন। শুধু শুনলেই কি সদ্গতিতে আসতে পারবে, না পারবে না। বাচ্চারা, এখান থেকেই তোমাদের নতুন দুনিয়ায় যেতে হবে। তোমরা জানো যে আমরাই বৈকুন্ঠের মালিক হই। এইসময় সমগ্র বিশ্বে রাবণের রাজত্ব। বাবা এসেছেন তোমাদের বিশ্বের রাজত্ব দিতে। তোমরা সকলেই বিশ্বের মালিক ছিলে। এখনও পর্যন্ত চিত্র রয়েছে। এছাড়া লক্ষ বছরের কোনো কথাই নেই। একথা সম্পূর্ণ ভূল। বাবাকেই সদা ন্যায়পরায়ণ(রাইটিয়স) বলা হয়। বাবার দ্বারাই সমগ্র বিশ্ব ধর্মনিষ্ঠ হয়ে যায়। এখন সব হল অধার্মিক(আনরাইটিয়স)। এখন বাচ্চারা, তোমরা বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার নিচ্ছ। এও কিন্তু ড্রামায় ফিক্সড হয়ে রয়েছে। জ্ঞান শুনতে-শুনতে তারা আশ্চর্য রকমভাবে শুনন্তী(শোনে), কথন্তী( অন্যদের জ্ঞান শোনায়), ভাগন্তী(তারপর হাত ছেড়ে চলে যায়) হয়ে যায়। ওহো! আমার মায়া, তুমিও কত শক্তিশালী যে বাবার কাছ থেকে বিমুখ করে দাও। শক্তিশালী কেন হবে না, আধাকল্প তো তার রাজত্বও চলে। রাবণ কি, তা তোমরা জানো। এখানেও কোনো কোনো বাচ্চারা বুদ্ধিমান, আবার কেউ কেউ অবুঝ।
তোমরা জানো যে এখন আমাদের উপর বৃহস্পতির দশা রয়েছে, তবেই তো আমরা স্বর্গে যাওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছি। মানুষের যে মৃত্যু হয়, কিন্তু তারা তো স্বর্গে যাওয়ার জন্য কোনো পুরুষার্থ করে না। শুধু এমনিই বলে যে, স্বর্গে গেছে। তোমরা জানো যে, সত্যি-সত্যিই স্বর্গে যাওয়ার জন্য আমরা পুরুষার্থ করছি অথবা স্বর্গের মালিক হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছি। এমন কখনও কেউ বলে না যে ইনি স্বর্গে যাচ্ছেন। বরং তারা বলবে যে এটা কি বলছ, মুখ বন্ধ কর। মানুষ তো পার্থিব (হদের) জগতের কথা শোনায়। বাবা তোমাদের অসীমের (বেহদের) কথা শোনায়। বাচ্চারা, তোমাদের অনেক পুরুষার্থ করা উচিৎ। নেশায় অত্যন্ত বিভোর হয়ে থাকা উচিৎ। যারা কল্প পূর্বে পুরুষার্থ করেছিল, যে পদ প্রাপ্ত করেছিল, তাই-ই পাবে। বাচ্চারা, অনেকবার তোমাদের মায়ার উপর জয় প্রাপ্ত করিয়েছি। পুনরায় তোমরা পরাজয় বরণও করেছো। ড্রামা এইভাবেই তৈরী হয়ে রয়েছে। তাই বাচ্চাদের অত্যন্ত খুশী হওয়া উচিৎ। তোমরা মৃত্যুলোক থেকে অমরলোকে যাচ্ছ। স্টুডেন্ট লাইফ ইজ দি বেস্ট( ছাত্র-জীবনই শ্রেষ্ঠ জীবন)। এইসময়ই হলো তোমাদের শ্রেষ্ঠ জীবন, একে কোনও মানুষ জানে না। স্বয়ং ভগবান এসে তোমাদের পড়ান, এটাই হলো সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ছাত্র-জীবন। আত্মাই পড়ায় আবার বলে যে এর নাম অমুক। আত্মাই শিক্ষক, তাই না। আত্মাই শুনে তা ধারণ করে। আত্মাই শোনে। কিন্তু দেহ-অভিমানের কারণে বুঝতে পারে না। সত্যযুগে বুঝতে পারবে যে আমরা অর্থাৎ আত্মারা এই শরীর প্রাপ্ত করেছি আর এখন বৃদ্ধাবস্থা। অতি শীঘ্র সাক্ষাৎকার হবে যে - এখন আমরা এই পুরোনো বস্ত্র পরিত্যাগ করে নতুন পড়ব। ভ্রমরীর উদাহরণও এখানকার। এখন তোমরা জানো যে আমরা হলাম ব্রাহ্মণী। ড্রামার পরিকল্পনা অনুসারে যারাই তোমাদের কাছে আসে তাদেরকে(জ্ঞানের) ভুঁ-ভুঁ করো, তাদের মধ্যেও আবার কেউ-কেউ কাঁচা থাকে, কেউ-কেউ নষ্ট(বিকারী)হয়ে যায়। সন্ন্যাসীরা তো এই উদাহরণ দিতে পারে না। ওরা কি কাউকে নিজের মতো তৈরী করবে, না করবে না। তোমাদের কাছে তো লক্ষ্যবস্তু ( এইম অবজেক্ট) রয়েছে। এই সত্যনারায়ণের কথা, অমরকথা...... এসব তোমাদেরই। একমাত্র বাবা-ই সত্য কথা শোনান। এছাড়া আর সবই মিথ্যা। ওখানে তো সত্যনারায়ণের কথা শুনিয়ে প্রসাদ খাওয়ায়। কোথায় তা হলো সীমিত জগতের (হদের) কথা, আর কোথায় এ হলো অসীমের (বেহদের) কথা। বাবা তোমাদের ডায়রেক্শন দেন। তোমরা নোট করো, বাকী যত বই, শাস্ত্র ইত্যাদি রয়েছে, এইসবই শেষ হয়ে যাবে। পুরানো কোনো জিনিসই থাকবে না। মানুষ ভাবে যে কলিযুগ শেষ হতে এখনও ৪০ হাজার বছর বাকী রয়েছে, সেইজন্য বড় বড় ঘর-বাড়ী ইত্যাদি তৈরী করতেই থাকে। খরচ করতেই থাকে। সমুদ্র কি ছেড়ে দেবে? এক ঢেউ-য়েই সব গ্রাস করে নেবে। না এই বোম্বে ছিল, আর না থাকবে। এই ১০০ বছরের ভিতরে এখন এইসব কি না কি বেরিয়েছে। পূর্বে ভাইসরয়(ব্রিটিশ রাজপ্রতিনিধি) ৪টি ঘোড়ায় টানা গাড়ীতে আসতেন। আর এখন অল্পসময়ের মধ্যে দেখো কি কি হয়েছে। স্বর্গ তো অনেক ছোট । নদীর ধারে তোমাদের মহল হবে।
বাচ্চারা, তোমাদের উপর এখন বৃহস্পতির দশা রয়েছে। বাচ্চাদের অত্যন্ত খুশী হওয়া উচিৎ যে আমরাই ধনবান হই। যখন কেউ সর্বস্বান্ত হয় তখন তাকে বলা হয় রাহুর দশা রয়েছে। তোমরা নিজেদের দশায় প্রফুল্ল থাকো। ভগবান অর্থাৎ বাবা আমাদের পড়ান। ভগবান আর কাউকে পড়ান কি? বাচ্চারা, তোমরাই জানো যে আমাদের এই ছাত্র-জীবনই সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। আমরা নর থেকে নারায়ণ, বিশ্বের মালিক হই। এখানে আমরা রাবণ রাজ্যে এসে আটকে(আবদ্ধ হয়ে) পড়েছি। পুনরায় যাই সুখধামে। তোমরা হলে সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণ। ব্রহ্মার দ্বারা স্থাপন হয়। একজনই কি হবে, না তা হবে না। অনেকেই হবে, তাই না। তোমরা খুদার( ভগবান) সেবাধারী ( খিদমতগার) হও। খুদা স্বর্গ স্থাপনের জন্য যে সেবা করেন, তোমরা তাতে সাহায্য কর। যারা অনেক সাহায্য(সেবা) করবে তারা উচ্চপদ প্রাপ্ত করবে। না খেতে পেয়ে কেউ মরবে না। এখানে তো ফকিরদের কাছেও যদি খোঁজ কর তবে হাজার-হাজার টাকা বেরোবে। তাই ক্ষুধার্ত হয়ে কেউ-ই মারা যেতে পারে না। আর এখানে তোমরা বাবার হয়েছ। যদিও বাবা গরীব তবুও কিন্তু যতক্ষণ না পর্যন্ত বাচ্চারা খাবার পায় ততক্ষণ নিজেও খান না, কারণ বাচ্চারা হলো উত্তরাধিকারী(ওয়ারিশ)। তাদের প্রতি ভালবাসা রয়েছে ওখানে (স্বর্গ) তো গরীবের কোনো ব্যাপারই নেই। প্রচুর আনাজ (সব্জি) থাকে। অগাধ ধন থাকে। ওখানকার লালন-পালন দেখো কত সুন্দর। তাই বাবা বলেন যে যখনই অবসর পাবে তখনই লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্রের সামনে গিয়ে বসো। রাতেও বসতে পারো। এই লক্ষ্মী-নারায়ণকে দেখতে দেখতে শুয়ে পড়ো। ওহো! বাবা আমাদের এরকমই তৈরী করেন। তোমরা এরকম অভ্যাস করে দেখো যে কত আনন্দ হয়। তারপর আবার সকালে উঠে অনুভব শোনাও। লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্র আর সিঁড়ির চিত্র সকলের কাছে থাকা উচিৎ। স্টুডেন্টরা জানে যে, আমাদের কে পড়াচ্ছেন। ওঁনার চিত্রও রয়েছে। সমগ্র বিষয়টিই হলো পড়ার উপর। স্বর্গের মালিক তো হবে। বাকী পদ প্রাপ্তির আধার হলো পঠন-পাঠনের উপর। বাবা বলেন, এই পুরুষার্থ করো যে - আমি হলাম আত্মা, শরীর নই। আমি বাবার কাছ থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার নিচ্ছি। বিশেষ কিছু কঠিন নয় । মাতাদের জন্য তো খুবই সহজ। পুরুষেরা তো কাজ-কর্মে চলে যায়। এই এইম- অবজেক্টের চিত্রের উপর তোমরা অনেক সার্ভিস করতে পার। অনেকের কল্যাণ করলে তারা তোমাকে অনেক ভালবাসবে, তারা বলবে যে তুমি তো আমাদের মা। জগতের কল্যাণের জন্য মাতা-রা, তোমরা নিমিত্ত হয়েছ । নিজেদের দেখতে হবে যে আমরা কতজনের কল্যাণ করেছি। কতজনকে বাবার সংবাদ দিয়েছি। বাবাও দূত(পয়গম্বর), আর কাউকে পয়গম্বর বলা যাবে না। বাবা তোমাদের ম্যাসেজ দেন যা তোমরা সকলকে শোনাও। অসীমের বাবা আর অবিনাশী উত্তরাধিকার স্মরণ কর, ৮৪-র চক্রকে স্মরণ কর। তোমরা হলে পয়গম্বর, বাবার সন্তান তাই সবাইকে বাবার সংবাদ দাও। সকলকে বলো তোমাদের দু'জন পিতা রয়েছে। অসীমের পিতা তো সুখ আর শান্তির আশীর্বাদ দিয়েছেন । আমরাই সুখধামে ছিলাম আর বাকী সবাই তখন শান্তিধামে ছিল। তারপরে আবার জীবনমুক্তিতে আসে। এখন আমাদের ফিরে যেতে হবে তারপর আবার সেখানে আমরাই বিশ্বের মালিক হব। কথাতেও রয়েছে, বাবা তোমার থেকে আমরা বিশ্বের রাজত্ব(বাদশাহী) পাই। সমগ্র ধরনী, সমুদ্র, আকাশ আমাদের হতে থাকবে। এইসময় আমরা বাবার কাছ থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার নিচ্ছি। তোমরা হলে গুপ্ত যোদ্ধা (ওয়ারিয়র্স), শিব-শক্তিসেনা। এ হল জ্ঞান কাটারী, জ্ঞান-বাণ । ওরা তো দেবীদের স্থূল হাতিয়ার দিয়ে দিয়েছে। ভক্তিমার্গে কত মন্দির বানানো হয়েছে, কত চিত্র ইত্যাদি রয়েছে, তবেই তো বাবা বলেন যে ভক্তিমার্গে তোমরা সব টাকা-পয়সা শেষ করে দিয়েছ। এখন এই সবই শেষ হয়ে যাবে, ডুবে যাবে। তোমাদের সাক্ষাৎকারও করিয়েছি যে ওখানে কিভাবে খনি থেকে হীরে-জহরত নিয়ে আসে কারণ সবকিছুই তো মাটির তলায় চাপা পড়ে যায়। বড়-বড় রাজাদের কাছে নীচে গুপ্ত রত্ন-ভান্ডার থাকে। ওই সবকিছুই নীচে চলে যাবে যা পরে তোমাদের কারিগররা গিয়ে নিয়ে আসবে। স্বর্গের দৃশ্য আজমীরে সোনী মন্দিরে গেলে দেখতে পাওয়া যাবে , তাই না। বাবা বলেছিলেন, মিউজিয়ামও এইরকমই তৈরী করো। স্বর্গের ফার্স্টক্লাস মডেল তৈরী করা উচিৎ। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে এখন আমরা নিজেদের রাজধানী স্থাপন করছি। পূর্বে কিছুই জানা ছিল না, এখন জানতে পারছি। এমনও নয় যে আমরা প্রত্যেকের ভিতরে কি আছে তা জানি। কোনো কোনো ন বিকারীও আসত। তাদের বলা হত, কেন আসো ? তখন বলত যে এখানে আসব তবে তো বিকার থেকে মুক্ত হবো। আমি অত্যন্ত পাপী আত্মা। তখন বাবাই বলেন যে, আচ্ছা তোমার কল্যাণ হোক। মায়াও অত্যন্ত প্রবল। বাবা বলেন বাচ্চারা, তোমাদের এই বিকারের উপর বিজয় প্রাপ্ত করতে হবে, তবেই জগৎজীত হবে। মায়াও কম নয়। এখন তোমরা পুরুষার্থ করে এইরকম লক্ষ্মী-নারায়ণের মতো হও। এঁনাদের মতো সৌন্দর্য আর কারও হতে পারে না। এটাই হলো প্রকৃত সৌন্দর্য (ন্যাচারাল বিউটি)। প্রতি ৫ হাজার বছর পরে স্বর্গের স্থাপনা হয়, পুনরায় ৮৪ জন্মের চক্রতে আসতে হয়। তোমরা লিখতে পারো, এ হলো বিশ্ব-বিদ্যালয় তথা হসপিটাল। একটি স্বাস্থ্যের(হেল্থ) জন্য আর একটি সম্পদের (ওয়েল্থের) জন্য। হেল্থ, ওয়েল্থ, হ্যাপিনেস - ২১ জন্মের জন্য এসে প্রাপ্ত করো। ব্যবসায়ীরাও নিজেদের বোর্ড লাগায়। ঘরেও বোর্ড লাগানো হয়। যারা সদা নেশায় বিভোর থাকবে তারাই এরকম লিখতে পারবে। যারাই আসবে তাদেরকেই বোঝাও -.তোমরা অসীমের (বেহদের) পিতার কাছ থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার নিয়েছিলে, পুনরায় ৮৪ জন্ম নিয়ে পতিত হয়েছো। এখন পবিত্র হও। নিজেকে আত্মা নিশ্চয় কর। বাবাকে স্মরণ করো। বাবাও এমনই করেন। তিনি(ব্রহ্মা) হলেন প্রথম নম্বরের পুরুষার্থী। অনেক বাচ্চারা লেখে যে, বাবা তুফান আসে, এমন এমন হয়। আমি লিখি, আমার কাছে তো সব তুফান প্রথমে আসে। আমি প্রথমে অনুভবী হই তবে তো বোঝাতে পারব। মায়ার কাজই তো হল এটা।
এখন বাবা বলছেন - মিষ্টি, অতি প্রিয় বাচ্চারা, এখন তোমাদের উপর বৃহস্পতির দশা রয়েছে। তোমাদের নিজেদের জন্মপত্রিকা(কোষ্ঠী) ইত্যাদি আর কাউকে দেখাবার প্রয়োজন নেই। বাবা সবকিছু বলে দেন। ওখানে আয়ুও বড় হয়। কৃষ্ণকেও যোগেশ্বর বলে। কৃষ্ণকে যোগ শিখিয়েছেন যোগেশ্বর, তাই এরকম হয়েছেন। কোনো মানুষ, সন্ন্যাসী ইত্যাদিদের যোগেশ্বর বলা যাবে না। তোমাদের ঈশ্বর যোগ শেখান, তাই তোমাদের যোগেশ্বর-যোগেশ্বরী নাম রাখা হয়েছে। এইসময় জ্ঞানশ্বর-জ্ঞানশ্বরী হলে তোমরাই। পুনরায় ওখানে গিয়ে রাজ-রাজেশ্বরও তোমরাই হবে। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ, ভালবাসা আর সুপ্রভাত। ঈশ্বরীয় পিতা ওঁনার ঈশ্বরীয় সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১. লক্ষ্য-বস্তুকে (এইম- অবজেক্টকে) সামনে রেখে পুরুষার্থ কর। লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্রকে সামনে দেখতে-দেখতে নিজে নিজের সাথে কথা বল যে, ওহো! বাবা তুমি আমাদের এরকমই তৈরী করছ। আমাদের উপর এখন বৃহস্পতির দশা রয়েছে।
২. নিজের সমান বানানোর জন্য ভ্রমরীর মতো জ্ঞানের ভুঁ-ভুঁ কর। খুদার সেবাধারী হয়ে স্বর্গ স্থাপনে বাবাকে সাহায্য করো।
বরদান:-
দেহ-ভানকে দেহী-অভিমানী স্থিতিতে পরিবর্তন করা বেহদের বৈরাগী ভব*।
ঈশ্বরীয় পথে চলতে-চলতে যদি বৈরাগ্য-বৃত্তি খন্ডিত হয় তবে তার মুখ্য কারণ হল নিজেকে দেহ ভাবা (দেহ-ভান) । যতক্ষণ পর্যন্ত না নিজেকে দেহ ভাবার থেকে বৈরাগ্য আসে ততক্ষণ পর্যন্ত অন্য কোনও বিষয়ে সদাকালের জন্য বৈরাগ্য আসতে পারে না। সম্বন্ধ থেকে বৈরাগ্য - এ কোনো বড় কথা নয়, সে তো দুনিয়াতেও অনেকের বৈরাগ্য চলে আসে, কিন্তু এখানে নিজেকে দেহ ভাবার ফলে যে ভিন্ন-ভিন্ন রূপের উৎপত্তি, প্রচ্ছন্ন রূপে উৎপন্ন হয়, সেগুলিকে জেনে, দেহে ভাবকে দেহী-অভিমানী স্থিতিতে পরিবর্তন করে দেওয়া - এটাই হল বেহদের বৈরাগী হওয়ার বিধি।
স্লোগান:-
সঙ্কল্প-রূপী পা যদি সুদৃঢ়( মজবুত) হয় তবে কালো মেঘের মতো বিষয়ও পরিবর্তিত হয়ে যাবে*।