১৫-০৯-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ২৮-০১-৮৫ মধুবন
বিশ্ব সেবার সহজ সাধন মন্সা সেবা
আজ সর্বশক্তিমান বাবা তাঁর নিজের শক্তি সেনা, পাণ্ডব সেনা, আত্মাদের (রূহানী) সেনাকে দেখছেন l সেনার সব মহাবীর তাদের আত্মিক (রূহানী) শক্তি দ্বারা কতদূর পর্যন্ত বিজয়ী হয়েছে, তিনি তা' লক্ষ্য করছেন l বাবা বিশেষভাবে তিন শক্তি দেখছেন l প্রত্যেক মহাবীর আত্মার মন্সা শক্তি কতখানি স্ব-পরিবর্তনের জন্য এবং সেবার জন্য ধারণ হয়েছে ! ঠিক একইভাবে, বাচা শক্তি, কর্মণা শক্তি অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ কর্মের শক্তি কতখানি জমা করেছ ! বিজয়ী রত্ন হওয়ার জন্য এই তিন শক্তিই আবশ্যক l এই তিন শক্তির একটা শক্তিও যদি কম থাকে, তবে বর্তমান প্রাপ্তি এবং প্রালব্ধ কম হয়ে যায় l বিজয়ী রত্ন অর্থাৎ তিন শক্তিতে সম্পন্ন l বিশ্ব সেবাধারী তথা বিশ্ব রাজ্য অধিকারী হওয়ার আধার এই তিন শক্তির সম্পন্নতা l সেবাধারী হওয়া এবং বিশ্ব সেবাধারী হওয়া, বিশ্ব রাজন হওয়া বা সত্যযুগী রাজন হওয়া, এর মধ্যেও প্রভেদ আছে l সেবাধারী অনেক আছে, কিন্তু বিশ্ব সেবাধারী অল্প কিছুই l সেবাধারী অর্থাৎ যে নম্বরানুক্রমে এই তিন শক্তি নিজ যোগ্যতা অনুযায়ী ধারণ করে l বিশ্ব সেবাধারী অর্থাৎ যে তিন শক্তিতে সম্পন্ন l আজ, বাবা প্রত্যেকের মধ্যে তিন শক্তির পার্সেন্টেজ দেখেছেন l
সর্বশ্রেষ্ঠ মন্সা শক্তি দ্বারা কোনও আত্মা তোমাদের সমুখে হোক, কাছে হোক বা যত দূরেই হোক, সেকেন্ডে সেই আত্মাকে প্রাপ্তির শক্তি অনুভূতি করাতে পার l মন্সা শক্তি কোনও আত্মার মানসিক চঞ্চলতার স্থিতিও অনড় বানাতে পারে l মানসিক শক্তি অর্থাৎ শুভ ভাবনা, শ্রেষ্ঠ কামনা, এই শ্রেষ্ঠ ভাবনা দ্বারা সংশয়-বুদ্ধি যে কোনও আত্মাকে অনুরাগী ও সমর্পণ বুদ্ধির অর্থাৎ ভাবনাত্মক-বুদ্ধি বানাতে পার l এই শ্রেষ্ঠ ভাবনা দ্বারা যে কোনও আত্মার ব্যর্থ ভাব পরিবর্তন করে তোমরা তা' শক্তিশালী বোধে পরিণত করতে পার l শ্রেষ্ঠ বোধ দ্বারা যে কোনও আত্মার স্বভাবও তোমরা বদলাতে পার l শ্রেষ্ঠ ভাবনার শক্তির দ্বারা আত্মাকে ভাবনার ফলের অনুভূতি করাতে পার l শ্রেষ্ঠ ভাবনা দ্বারা ভগবানের কাছে নিয়ে আসতে পার l শ্রেষ্ঠ ভাবনা কোনও আত্মার ভাগ্যের রেখা বদলাতে পারে l শ্রেষ্ঠ ভাবনা ভীরু আত্মাকে সাহসী বানাতে পারে l শ্রেষ্ঠ ভাবনার বিধি অনুযায়ী যে কোনও আত্মার মন্সা সেবা করতে পার l বর্তমান সময় সাপেক্ষে মন্সা সেবা অতি আবশ্যক l কিন্তু মন্সা সেবা সে-ই করতে পারে, যার নিজের মানসিক স্থিতি অর্থাৎ যার সঙ্কল্প সদা সকলের প্রতি শ্রেষ্ঠ হবে, নিঃস্বার্থ হবে l পরোপকারের সদ্ভাবনা থাকবে l যারা তোমাদের অপবাদ দেয় তাদেরও উন্নতি সাধনের শ্রেষ্ঠ ভাবনা হবে l সদা দাতাভাবের ভাবনা হবে l সদা স্ব-পরিবর্তন এবং নিজের শ্রেষ্ঠ কর্ম দ্বারা অন্যকেও শ্রেষ্ঠ কর্মের প্রেরণা দিতে হবে l 'ইনি করুন তারপরে আমিও করব অথবা কিছু ইনি করুন কিছু আমি করব বা ইনি অন্ততঃ সামান্য কিছু তো করুন' - তোমাদের এই ভাবনার ঊর্ধ্বে হওয়া আবশ্যক l 'এটা কেউ করতে পারে না', তবুও দয়ার ভাবনা, সদা সহযোগের ভাবনা, সাহস বাড়ানোর ভাবনা থাকবে, একেই বলে মন্সা সেবাধারী l মন্সা সেবা এক স্থানে স্থিত থেকেও সর্বত্র তোমরা সেবা করতে পার, বচন এবং কর্ম দ্বারা সেবার জন্য শারীরিকভাবে তোমাদের যেতে হবে, কিন্তু মন্সা সেবা যে কোনও জায়গায় বসেও করতে পার l
মন্সা সেবা - আধ্যাত্মিক অয়্যারলেস সেট l যার দ্বারা দূরের সম্বন্ধ কাছের তৈরি করতে পার l দূরে বসে কোনও আত্মাকে বাবার হওয়ার উৎসাহ-উদ্দীপনা উৎপন্ন করার সন্দেশ (বার্তা) দিতে পার, যাতে সেই আত্মা অনুভব করবে যে তাকে কোনও মহান শক্তি ডাকছে অথবা কিছু অমূল্য অনুপ্রেরণায় সে উৎসাহিত হচ্ছে l ঠিক যেমন তোমরা সামনাসামনি কাউকে বার্তা দিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনায় নিয়ে আস l এইভাবে মন্সা শক্তি দ্বারাও সেই আত্মা একইভাবে অনুভব করবে যে সামনে বসে কেউ তার সঙ্গে কথা বলছে l যেমন, সায়েন্টিস্টরা এই সাকার সৃষ্টির ঊর্ধ্বে, পৃথিবীর ঊর্ধ্বে অন্তরীক্ষ যান অর্থাৎ উপগ্রহ রেখে তাদের কার্য শক্তিশালী বানাতে চেষ্টা করছে l তারা স্থূল (সাকার) থেকে সূক্ষ্মের দিকে যাচ্ছে l কেন ? কারণ সূক্ষ্ম অধিক শক্তিশালী l
*মন্সা শক্তিও অন্তর্মুখী l* যার মাধ্যমে যেখানে পৌঁছাতে চাও, যত তাড়াতাড়ি চাও পৌঁছাতে পার l সাইন্স দ্বারা পৃথিবীর আকর্ষণের উর্ধ্বে যারা যায়, তারা নিজে থেকেই লাইট (হালকা ) হয়ে যায় l ঠিক একইভাবে, যারা মন্সার শক্তিশালী স্থিতিতে থাকে নিজে থেকেই সদা ডবল লাইট স্বরূপ অনুভব করে l সেইরকম, মহাকাশ যানে যারা আছে তারা উঁচুতে থাকার কারণে পৃথিবীর যে কোনও অংশের ছবি তুলতে চাইলে তুলতে পারে, এইভাবে সাইলেন্সের শক্তির সাথে অন্তর্মুখিতার যান হয়ে মন্সা শক্তি দ্বারা যে কোনও আত্মাকে চরিত্রবান হওয়ার, শ্রেষ্ঠ আত্মা হওয়ার প্রেরণা দিতে পার l সাইন্টিস্টরা সবকিছুতে বহু সময় এবং প্রচুর অর্থ ব্যয় করে l সেক্ষেত্রে, তোমরা বিনা খরচে অল্প সময়ে অনেক সেবা করতে পার l আজকাল, তারা বিভিন্ন জায়গায় ফ্লাইং সসার দেখে l এই ব্যাপারে তোমরা সমাচার শোনো, তাই না ! সেটাও শুধু লাইটই দেখা যায় l এইভাবে, তোমরা সব মন্সা সেবাধারী আত্মাকে অন্যেরা ভবিষ্যতে অনুভব করবে, লাইটের বিন্দুর মতো কেউ এসেছেন, বিচিত্র অনুভব করিয়ে গেছেন l কে ছিলেন ইনি ? কোথা থেকে এসেছেন ? কি দিয়ে গেলেন, এই ধরণের চর্চা বেড়ে যাবে l সকলের নজর যেমন আকাশের নক্ষত্রের দিকে যায়, তেমনই ধরিত্রীর নক্ষত্র হিসেবে দিব্য জ্যোতি চতুর্দিকে অনুভব করবে l এমন শক্তি মন্সা সেবাধারীদের আছে l বুঝেছ তোমরা ? আরও অনেক মহত্ত্ব আছে, কিন্তু বাবা আজ শুধু এটুকুই শোনাতে চলেছেন l মন্সা সেবা এখন আরও তীব্র কর, তখনই ৯ লাখ তৈরি হবে l এখন গোল্ডেন জুবিলী পর্যন্ত সংখ্যা কত হয়েছে ? সত্য যুগের ডায়মন্ড জুবিলি পর্যন্ত ৯ লাখ তো প্রয়োজন, তাই না ! নয়তো বিশ্ব রাজন কার ওপরে রাজ্য-শাসন করবে ? *ন'লাখ তারা* গাওয়া হয়েছে, তাই না ! যখন নক্ষত্র রূপী আত্মাদের তারা অনুভব করবে শুধুমাত্র তখনই *ন'লাখ তারা'র* গায়ন হবে, সেইজন্য এখন তারাগণের অনুভব হতে দাও l আচ্ছা - চতুর্দিক থেকে আসা বাচ্চাদের মধুবন নিবাসী হওয়ার অভিনন্দন, আর মিলন উদযাপনের জন্যও অভিনন্দন l এই অবিনাশী অনুভবের অভিনন্দন সদা সাথে রাখ l বুঝেছ !
সদা মহাবীর হয়ে মন্সা শক্তির মহত্ত্ব দ্বারা যারা শ্রেষ্ঠ সেবা করে, সদা শ্রেষ্ঠ কামনার বিধি দ্বারা অসীম সেবায় সিদ্ধি প্রাপ্ত করে, নিজের উঁচু স্থিতি দ্বারা চারিদিকের আত্মাদের প্রেরণা দেওয়ার বিশ্ব সেবাধারী, সদা নিজের শুভ ভাবনা দ্বারা অন্য আত্মাদেরও ভাবনার ফল দেয়, এমন বিশ্ব কল্যাণকারী, পরোপকারী,বিশ্ব-সেবাধারী বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার l
*কুমারদের প্রতি অব্যক্ত বাপদাদার মধুর বিশেষ মহাবাক্য*
কুমার, ব্রহ্মাকুমার তো হয়েই গেছ, কিন্তু ব্রহ্মাকুমার হওয়ার পরে তোমাদের কি হতে হবে ? শক্তিশালী কুমার l l যতক্ষণ না পর্যন্ত শক্তিশালী হচ্ছ, বিজয়ী হতে পারবে না l শক্তিশালী কুমার সদা নলেজফুল এবং পাওয়ারফুল আত্মা হবে l নলেজফুল হওয়া অর্থাৎ রচয়িতাকে জানা, রচনাকেও জানা এবং মায়ার বিভিন্ন রূপকেও জানা l এভাবে যারা নলেজফুল এবং পাওয়ারফুল তারা সদা বিজয়ী l জীবনে নলেজ ধারণ করা অর্থাৎ নলেজকে অস্ত্র বানানো l সুতরাং, যারা অস্ত্রধারী তারা তো শক্তিশালী হবে, তাই না ! আজ মিলিটারি লোক কোন আধারে শক্তিশালী হয় ? তাদের অস্ত্র আছে বন্দুক আছে ব'লে তারা ভয়শূন্য হয়ে যায় l সুতরাং যে নলেজফুল হবে সে পাওয়ারফুল অবশ্যই হবে এবং মায়ার পূর্ণ নলেজও থাকবে l 'কি হবে, কিভাবে হবে, জানিনা মায়া কিভাবে এসে গেছে' - এর অর্থ তোমরা নলেজফুল হওনি l নলেজফুল আত্মা আগে থেকেই জানে l যারা মননশীল তারা নিজেদের রোগ সম্পর্কে আগে থেকেই জেনে যায় l যখন কারও জ্বর আসার থাকে তখন সে আগে থেকেই জানতে পারবে যে কিছু হচ্ছে, প্রথম থেকেই সে ওষুধ সেবনে নিজেকে ঠিক করে নেবে আর সুস্থ হয়ে যাবে l যারা অমননশীল তাদের জ্বরও আসবে, চলা-ফেরাও করবে আর জ্বর বেড়েও যাবে l এইভাবেই মায়া আসে, কিন্তু আসার আগে তোমাদের বুঝতে হবে এবং দূর থেকে তাকে তাড়িয়ে দিতে হবে l সুতরাং,ক্স তোমরা এমনই কুশলী শক্তিশালী কুমার , তাই না ! সদা বিজয়ী, না ! নাকি তোমাদের কাছেও মায়া আসে আর তাকে তাড়িয়ে দিতে টাইম নাও ? শক্তি দেখে শত্রু দূর থেকেই পালিয়ে যায় l তারা যদি আসে আর তোমাদেরকে তাদের পশ্চাৎদ্ধাবন করতে হয় তবে টাইমই ওয়েস্ট হয় আর দুর্বলতার অভ্যাস গড়ে ওঠে l কেউ বারবার অসুস্থ হলে সে দুর্বল হয়ে যায়, তাই না ! অথবা যদি কেউ বারবার তার পড়ায় ফেল করে অর্থাৎ অকৃতকার্য হয়, তবে বলা হবে সে পড়াশোনায় দুর্বল l একইভাবে, মায়া যদি বারবার আসে আর ক্রমাগত তোমাদের আঘাত করতে থাকে, তোমাদের পরাজিত হওয়া অভ্যাসে পরিণত হয় এবং বারংবার পরাহত হতে হতে তোমরা দুর্বল হয়ে যাবে l সেইজন্য শক্তিশালী হও l এইরকম শক্তিশালী আত্মা সদা প্রাপ্তির অনুভব করে, যুদ্ধে নিজের সময় নষ্ট করে না l তারা খুশির সাথে জয়োৎসব পালন করে l সুতরাং, কখনো কোনও রকম দুর্বলতা আসতে দিও না l কুমার-বুদ্ধি ভালো এবং তেজস্কর l অধর কুমার হওয়ায় বুদ্ধি ভাগ হয়ে যায় l কুমারদের মাত্র একটাই কাজ করতে হয়, তাদের শুধু নিজেদের জীবনের ব্যাপারে ভাবতে হয়, সেক্ষেত্রে অন্যদের তো কত দায়িত্ব থাকে l তোমরা দায়িত্বমুক্ত, যারা মুক্ত তারা এগিয়ে যাবে l যাদের বোঝা থাকবে তারা ধীরে ধীরে চলবে l
যারা মুক্ত তারা হালকা হবে এবং দ্রুতগামী হবে l সুতরাং, তোমরা দ্রুতগতিতে এগোচ্ছ, একরস স্থিত l সদা দ্রুতগতি অর্থাৎ একরস, একে নিবিষ্ট হওয়া l এমন হতে দিও না যে ছয় মাস পর যেমন ছিল সেইভাবেই চলছে, এটাকে তীব্রগতি বলা হবে না l যারা তীব্রগতি তারা আজ যা আছে কাল তার থেকেও এগিয়ে যাবে, পরশু তার থেকেও এগিয়ে যাবে, একে বলে - *ক্ষিপ্রগামী l* অতএব, সদা নিজেকে শক্তিশালী কুমার মনে কর l ব্রহ্মাকুমার হয়ে গেছ, শুধু যদি এই খুশিতেই থাক আর শক্তিশালী না হও, তখন কিন্তু বিজয়ী হতে পারবে না l ব্রহ্মাকুমার হওয়া খুব ভালো, কিন্তু যারা শক্তিশালী ব্রহ্মাকুমার তারা সদা কাছে l এখন যারা কাছাকাছি হবে, তারা রাজত্বের ক্ষেত্রেও কাছে হবে l বর্তমান স্থিতিতে নৈকট্য না থাকলে রাজত্বেও নৈকট্য হবে না l এই সময়ের প্রাপ্তি সদাকালের প্রালব্ধ তৈরি করে দেয়, সেইজন্য সদা শক্তিশালী l এইরকম শক্তিশালীই বিশ্ব কল্যাণকারী হতে পারে l কুমারদের মধ্যে শারীরিক শক্তিই হোক বা আত্মিক শক্তি, সে তো থাকেই l কিন্তু বিশ্ব কল্যাণের জন্য শক্তি আছে নাকি শ্রেষ্ঠ বিশ্বকে বিনাশকারী বানানোর কার্যে লাগানোর শক্তি আছে ? তোমরা তো কল্যাণকারী কুমার, তাই না ? অকল্যাণ সাধন তোমরা কর না l সঙ্কল্পেও সদা সকলের জন্য কল্যাণের ভাবনা হতে দাও l এমনকি, তোমাদের স্বপ্নেও সদা সকলের প্রতি কল্যাণের ভাবনা হতে দাও, একে বলা হয়ে থাকে - শ্রেষ্ঠ শক্তিশালী l কুমার তার শক্তি দ্বারা যা কিছু ভাবে, তা' করতে পারে l সেই সঙ্কল্প এবং কর্ম, দু'টোই যেন একসাথে হয় l এমন নয় যে সঙ্কল্প আজ করলে কর্ম পরে l সঙ্কল্প আর কর্ম একই সময়ে সাথে সাথে হতে দাও l এমন শক্তি প্রয়োজন l এমন শক্তিধর আত্মারাই অন্য অনেক আত্মার কল্যাণ করতে পারে l তাহলে সেবাতে সদা তোমরা সফল, নাকি দ্বন্দ্বের উৎপত্তি হয় ?
তোমাদের মনে, কর্মে নিজেদের মধ্যে সবসময় সবকিছুতে ঠিক l কোনকিছুতে মতবিরোধ না হয় ! সদা নিজেকে বিশ্ব-কল্যাণকারী কুমার মনে কর, তবেই যে কর্ম করবে তা'তে কল্যাণের ভাবনা মিশে থাকবে l আচ্ছা !
*বিদায়ের সময় অমৃতবেলায় বাপদাদা বাচ্চাদের স্মরণ-স্নেহ দিয়েছেন*
সব কার্য শুভ হোক l সব কার্য সদা সফল হোক l এই জন্য সব বাচ্চাকে অভিনন্দন l বাস্তবে, সঙ্গমযুগের প্রতিদিন শুভ, শ্রেষ্ঠ, যা উদ্যম-উৎসাহ দেয়, সেইজন্য প্রতিদিনের নিজ নিজ মহত্ত্ব আছে l আজ এই দিনে প্রতিটা সঙ্কল্পও মঙ্গলময় হতে দাও অর্থাৎ শুভচিন্তক রূপে হোক l কারও প্রতি মঙ্গল কামনা অর্থাৎ শুভ কামনা করে এমন সঙ্কল্প হোক l প্রতিটা সঙ্কল্প মঙ্গলম্ অর্থাৎ খুশি যেন নিয়ে আসে l সুতরাং, আজ এই দিনের এই মহত্ত্বের স্মৃতি প্রতিটা সঙ্কল্পে বোলে এবং কর্মে বিশেষভাবে রাখতে হবে l আর এই স্মৃতি থাকাই প্রতি সেকেন্ডে বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ স্বীকার করা l সুতরাং, এই সময় বাবা শুধু স্মরণ-স্নেহ দিচ্ছেন না ; কিছু প্র্যাকটিক্যালি করার জন্য অর্থাৎ স্মরণ-স্নেহ স্বীকার করে নেওয়া l সারাদিন আজ এই স্মরণ-স্নেহ নিতে থাক অর্থাৎ স্মরণে থেকে প্রতিটা সঙ্কল্প, বোল দ্বারা ভালোবাসার তরঙ্গে তরঙ্গিত হতে থাক l আচ্ছা - সবাইকে বিশেষ স্মরণ আর গুড মর্নিং l
*সম্মেলনের জন্য অব্যক্ত বাপদাদার বিশেষ সন্দেশ*
বাপদাদা বলেছেন, বাচ্চারা সম্মেলন করছে l সম্মেলনের অর্থ সম-মিলন l সম্মেলনে যারা আসে তাদের যদি বাবা সমান না-ও হয়, তোমাদের সমান নিশ্চয়বুদ্ধি তো অবশ্যই বানিও l যে-ই আসবে অবশ্যই কিছু হয়ে ফিরে যেতে হবে, শুধু কিছু বক্তব্য রেখেই ফিরে না যায় l এটা দাতার ঘর l সুতরাং, যারা আসে তাদের এটা ভাবতে দিও না যে তারা আমাদের সাহায্য করতে এসেছে অথবা আমাদের তারা সহযোগ দিতে এসেছে l বরং তারা যেন ভাবে, এই স্থান নেওয়ার স্থান, দেওয়ার নয় l এখানে, ছোট বড় যাদের সঙ্গেই তাদের দেখা হোক, তোমরা যারা সেই সময় সেখানে উপস্থিত থাকবে, তাদের এই সঙ্কল্প করতে হবে যে, তোমরা তোমাদের দৃষ্টি দ্বারা, বায়ুমন্ডল দ্বারা, সম্পর্ক-সম্বন্ধ দ্বারা 'মাস্টার দাতা' হয়ে থাকবে l তাদের সবাইকে অবশ্যই কিছু না কিছু দিয়ে তোমাদের পাঠাতে হবে l সবার এই লক্ষ্য যেন থাকে l যারা আসে তাদের রিগার্ড তো অবশ্যই দিতে হবে, কিন্তু এক বাবার জন্যও তাদের রিগার্ড হতে দাও l বাবা বলছিলেন, "আমার এত সব লাইট হাউস বাচ্চারা চতুর্দিক থেকে যদি মন্সা সেবা দ্বারা লাইট দেয় তবে সফলতা নিশ্চিত l সেই এক লাইট হাউস কত লোককে রাস্তা দেখায়, আর তোমরা লাইট হাউস মাইট হাউস বাচ্চারা অনেক চমৎকার করতে পার l* আচ্ছা !
বরদান:-
ঈশ্বরীয় সেবার বন্ধন দ্বারা নিকট সম্বন্ধে এসে রয়্যাল ফ্যামিলির অধিকারী ভব
ঈশ্বরীয় সেবার বন্ধন তোমাদের কাছের সম্বন্ধে নিয়ে আসে l যে যত সেবা করে, সেবার ফল ততই কাছের সম্বন্ধে আসে l এখানকার সেবাধারী ওখানে রয়্যাল ফ্যামিলির অধিকারী হবে l এখানে যত হার্ড (শ্রমসাধ্য) সেবা করে, সেই অনুযায়ী ওখানে আরামে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয় এবং এখানে যে আরাম করে ওখানে তাকে কাজ করতে হবে l প্রতিটা সেকেন্ডের এবং প্রতিটা কর্মের হিসাব-নিকাশ বাবার কাছে আছে l
স্লোগান:-
স্ব-পরিবর্তন দ্বারা বিশ্ব-পরিবর্তনের ভাইব্রেশন তীব্রগতিতে ছড়িয়ে দাও l