১৭-০২-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ২২-০৪-৮৪ মধুবন


বিচিত্র বাবার থেকে বিচিত্র অধ্যয়ন তথা বিচিত্র প্রাপ্তি

আজ আত্মাদের বাবা (রূহানী বাবা) তাঁর আত্মা রূপী (রূহানী) বাচ্চাদের সাথে মিলিত হতে এসেছেন l রূহানী বাবা প্রত্যেক রূহ্-কে লক্ষ্য করছেন, তাদের প্রত্যেকের মধ্যে কতখানি রূহানী (আত্মিক) শক্তি আছে l আত্মারা প্রত্যেকে কতখানি খুশির প্রতিমূর্তি হয়ে উঠেছে ! রূহানী বাবা অবিনাশী খুশির ভান্ডার জন্মসিদ্ধ অধিকার হিসেবে বাচ্চাদের দিয়েছেন, তিনি লক্ষ্য করছেন যে তোমরা প্রত্যেকে নিজের উত্তরাধিকার এবং অধিকার কতদূর পর্যন্ত জীবনে প্রাপ্ত করেছ ! ভান্ডারের বালক তথা মালিক কি হয়েছ তোমরা ? বাবা দাতা, প্রত্যেক বাচ্চাকেই পূর্ণ অধিকার দেন l যতই হোক, বাচ্চারা সবাই নিজ নিজ ধারণার শক্তি অনুযায়ী অধিকারী হয় l বাবার সব বাচ্চার প্রতি একটাই শুভ সঙ্কল্প থাকে, প্রত্যেক আত্মারূপী বাচ্চা অনেক জন্ম ধরে সর্ব-ভাণ্ডারে সম্পন্ন হোক, পূর্ণ উত্তরাধিকারের অধিকারী হোক l এইরকম প্রাপ্তির জন্য বাচ্চারা কিভাবে তাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা বজায় রাখে, তা' দেখে বাপদাদাও পুলকিত হন l তোমরা প্রত্যেকে ছোট-বড়ো, বাচ্চা, যুবক বা বৃদ্ধ, মিষ্টি মিষ্টি মায়েরা, শিক্ষিত বা অশিক্ষিত, শারীরিকভাবে দুর্বল হলেও আত্মা কতো বলবান, তোমাদের প্রত্যেকের এক পরমাত্মার প্রতি কতো আকর্ষণ ! তোমাদের অনুভব হয়, পরমাত্মাকে জেনে তোমরা সবকিছু জেনে গেছ l বাপদাদাও এইরকম অনুভাবী আত্মাদের সদা এই বরদানই দিয়ে থাকেন, "হে বাচ্চারা, একনিষ্ঠায় মগ্ন তোমরা সদাসর্বদা স্মরণে প্রাণময় হয়ে থাকো l সদা সুখ-শান্তির প্রাপ্তিতে প্রতিপালিত হতে থাকো l অবিনাশী খুশির দোলায় দুলতে থাক আর বিশ্বের আত্মারূপী নিজের রূহানী ভাই সকলকে সুখ-শান্তি প্রাপ্ত করার সহজ উপায় শোনাও, যাতে তারাও পরমাত্মা বাবার থেকে তাদের আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকারের অধিকার নিতে সক্ষম হয় l এই একটা পাঠই সবাইকে পড়াও, আমরা সব আত্মা এক বাবার, একই পরিবারের, একই ঘরের l আমরা সবাই আমাদের পার্ট একই সৃষ্টিমঞ্চে অভিনয় করছি l আমরা সব আত্মার স্বধর্ম শান্তি এবং পবিত্রতা l" তোমরা স্ব-পরিবর্তন এবং বিশ্ব পরিবর্তন এই পঠন-পাঠনের মাধ্যমেই করছো, আর এটা যে ঘটবেই, তা' নিশ্চিত l এটা সহজ, তাই না ? কঠিন কিছু নয় l এমনকি লেখাপড়া জানেনা এমন ব্যক্তিও এই পাঠের মাধ্যমে নলেজফুল হয়েছে l কারণ, রচয়িতা বীজকে জেনে নিজে থেকেই রচয়িতা দ্বারা রচনাকে জেনে যাও তোমরা l সবাই তোমরা নলেজফুল, তাই না ? রচয়িতা আর রচনার সমগ্র পাঠ তোমরা শুধু তিন শব্দে অধিগত করেছ - আত্মা, পরমাত্মা আর সৃষ্টিচক্র l এই তিন শব্দের মাধ্যমে তোমরা কি হয়েছ ! কি সার্টিফিকেট পেয়েছ তোমরা ? তোমরা বি.এ. অথবা এম. এ.-এর সার্টিফিকেট পাওনি, কিন্তু ত্রিকালদর্শী, জ্ঞানস্বরূপ এই টাইটেল তো লাভ করেছো, নয় কি? আর তোমাদের সোর্স অফ ইনকাম কি হয়েছে ? কি পেয়েছ ? সত্য শিক্ষকের থেকে তোমরা জন্ম জন্ম ধরে অবিনাশী প্রাপ্তির গ্যারান্টি পেয়েছো l বাস্তবে, টিচার গ্যারান্টি দেয় না যে তোমরা সদা রোজগার করবে বা ধনবান থাকবে l তারা শুধু পড়াশোনা করিয়ে উপযুক্ত বানায় l তোমরা বাচ্চারা তথা গডলি স্টুডেন্টরা শিক্ষক বাবার থেকে বর্তমানের আধারে সত্য-ত্রেতাযুগে ২১ জন্মের জন্য সদাই সুখ, শান্তি, সম্পত্তি, আনন্দ, প্রেম, সুখদায়ী পরিবার লাভ করবেই l শুধু যে লাভ হবে তা' নয়, লাভ হবেই হবে l এই গ্যারান্টি আছে, কেননা বাবা অবিনাশী, শিক্ষক অবিনাশী l অতএব, অবিনাশী একাধিপতি দ্বারা প্রাপ্তিও অবিনাশী l খুশির এই গীতই তো গেয়ে থাকো, কিভাবে তোমরা সত্য বাবা, সত্য শিক্ষক দ্বারা সর্বপ্রাপ্তির অধিকার লাভ করেছ ! একেই বলা হয়ে থাকে বিচিত্র বাবা, বিচিত্র স্টুডেন্টস্ আর বিচিত্র পাঠ এবং বিচিত্র প্রাপ্তি l যে যতই লেখাপড়া জানা হোক, কিন্তু এই বিচিত্র বাবা আর শিক্ষকের পাঠ বা উত্তরাধিকার জানতে পারে না, চিত্র বানাতে পারে না l তাহলে তারা জানবে কিভাবে! এত উঁচুতম থেকেও উঁচু বাবা, শিক্ষক কি পড়ান ! কাকে পড়ান ! কতো সাধারণ তিনি ! এই পঠন-পাঠন মানুষকে দেবতা বানানোর, সদাসর্বদার জন্য চরিত্রবান বানানোর পাঠ l কে পড়ে সেই পাঠ ? যা অন্য কেউ পড়াতে পারে না, বাবা সেইসব পড়ান l যাদের দুনিয়া পড়ায় বাবা যদি তাদের পড়ান সেটা এমন কি বড়ো ব্যাপার ! আশাহীন আত্মাদের মধ্যে তিনি আশা জাগিয়ে তোলেন l তিনি অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করেন l এইজন্যই গাওয়া হয়েছে - ঈশ্বরই জানেন তাঁর গতি-মতি l এইরকম নিরাশ বাচ্চাদের আশাপূর্ণ হতে দেখে বাপদাদা খুশি হন l সুস্বাগতম ! বাবার ঘরের অলঙ্করণ, সুস্বাগতম ! আচ্ছা !



সদা নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তির অধিকারী অনুভবকারী শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, অন্যদের এক জন্মে অনেক জন্মের প্রাপ্তি করায় এমন জ্ঞানস্বরূপ বাচ্চাদের, যারা সদা এক পাঠ পড়ে ও পড়ায় এমন শ্রেষ্ঠ বাচ্চাদের, সদা বরদাতা বাবার বরদানে প্রতিপালিত হওয়া ভাগ্যবান বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l



*বর্তমান ব্রাহ্মণ জন্ম - হীরে তুল্য*



আজ, বাপদাদা তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ বাচ্চাদের দেখছেন l বিশ্বের তমোগুণী আত্মাদের তুলনায় তারা কতো শ্রেষ্ঠ আত্মা ! দুনিয়ার সকল আত্মা আহ্বানরত, লক্ষ্যহীনভাবে এদিকে ওদিক ঘুরে বেড়ানো অপ্রাপ্ত আত্মা l তাদের যতই বিনাশী প্রাপ্তি থাকুক না কেন, তবুও কোনও না কোনও অপ্রাপ্তি অবশ্যই থাকবে l তোমরা সব ব্রাহ্মণ বাচ্চাদের, সর্বপ্রাপ্তির দাতার বাচ্চাদের অপ্রাপ্ত কোনো বস্তু নেই l সদা প্রাপ্তিস্বরূপ তোমরা l স্বল্পকালীন সুখের সাধন, স্বল্পকালীন বৈভব, স্বল্পকালীন রাজ্য অধিকার তোমাদের না থাকা সত্ত্বেও বিনা কড়ির বাদশাহ তোমরা l "বেফিকর (চিন্তামুক্ত) বাদশাহ" l তোমরা মায়াজিৎ, প্রকৃতিজিৎ স্বরাজ্য অধিকারী l সর্বক্ষণ ঈশ্বরীয় পালনায় পালিত, খুশির দোলায়, অতীন্দ্রিয় সুখের দোলায় তোমরা দোল খাও l বিনাশী ধনসম্পদে ধনী হওয়ার পরিবর্তে তোমরা অবিনাশী ধনসম্পদে সম্পদশালী l রত্নজড়িত মুকুট নেই কিন্তু পরমাত্ম বাবার মাথার মুকুট তোমরা l রত্নজড়িত সজ্জাকরণ নেই কিন্তু জ্ঞানরত্ন ও গুণরূপী রত্নের অলঙ্করণে সদা অলঙ্কৃত তোমরা l যত বড়ই সর্বশ্রেষ্ঠ বিনাশী হীরে হোক বা সেটা যতই মূল্যবান হোক, জ্ঞানের এক রত্ন বা গুণের এক রত্নের তুলনায় তার কি ভ্যাল্যু আছে ! এই রত্নরাজির সামনে সেই হীরে পাথরসম, কারণ তা' বিনাশী l ন'লখা হারের তুলনায় তোমরা নিজেরাই বাবার গলার হার হয়ে গেছ l ঈশ্বরের গলার হার হওয়ার কাছে - ন'লখা হারই বলো বা নয় (৯) লক্ষকোটিগুণ বা অগণিত লক্ষকোটিগুণ মূল্যের হার, কিছুই নয় l ৩৬ প্রকারের ভোজনও এই ব্রহ্মা ভোজনের সামনে কিছু নয়, কেননা ডাইরেক্ট বাপদাদাকে ভোগ নিবেদন করে এই ভোজনকে তোমরা পরমাত্ম প্রসাদ বানিয়ে দাও l এমনকি, আজও এই শেষ জন্মে ভক্ত আত্মাদের কাছে প্রসাদের কতো ভ্যাল্যু ! তোমরা সাধারণ ভোজন খাও না l তোমরা প্রভু প্রসাদ খাচ্ছ, যার প্রতিটা দানা লক্ষ-কোটি থেকেও শ্রেষ্ঠ l এইরকম শ্রেষ্ঠ আত্মা তোমরা l এমন রূহানী শ্রেষ্ঠ নেশা থাকে তোমাদের? চলতে চলতে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব ভুলে যাও না তো ? নিজেকে সাধারণ মনে করো না তো ? শুধু শোনা বা শোনানো, তোমরা তো তেমন নও, তাই না ? স্বমান বজায় থাকে, এমন হয়েছো তোমরা ? যারা শোনে বা শোনায়, তারা তো অগুনতি l যাদের স্বমান থাকে তারা কোটির মধ্যে মুষ্টিমেয় মাত্র l তোমরা কে ? অনেকের মধ্যে আছো নাকি কোটিতে কয়েকের মধ্যে আছো ? প্রাপ্তির সময়ে অমনোযোগী হওয়া বাচ্চাদের বাপদাদা কোন ধরণের বোধবুদ্ধির বলবেন ? যে ভাগ্য লাভ হয়েছে, পাওয়া হয়েছে তা' অনুভব করেনি অর্থাৎ এই সময়ে মহান ভাগ্যবান হওনি তো আর কখন হবে ? সঙ্গমযুগে এই শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তির সময়, প্রতি পদে এই স্লোগান সদা স্মরণে রাখো, *"এখন নয় তো কখনো নয়"* বুঝেছো তোমরা ! আচ্ছা !



*আজ, গুজরাট জোন এসেছে,* গুজরাটের বিশেষত্ব কি ? গুজরাটের এটাই বিশেষত্ব যে ছোট-বড়ো সকলেই খুশিতে অবশ্যই নাচে l শারীরিকভাবে ছোট বা বড়ো সবাই ভুলে যায় l রাসের একাগ্রতা আর ভালোবাসায় তারা নিমজ্জিত হয় l সারারাত ধরে তারা বিভোর হয়ে থাকে l সুতরাং, ঠিক যেমন রাসের একাগ্রতায় তোমরা বিভোর হয়ে থাকো, তেমনই সদা জ্ঞানের খুশির রাসে অর্থাৎ জ্ঞানের খুশির নাচেও মগ্ন থাকো, তাই না ! এই অবিনাশী একাগ্রতায় মগ্ন থাকার ক্ষেত্রেও নম্বর ওয়ান অভ্যাসী তোমরা, তাই নয় কি ! সেবার বিস্তারও ভালো হচ্ছে l এইবার, মুখ্যস্থানের (মধুবন) নিকট সাথী উভয় জোনই এসেছে l একদিকে গুজরাট, অন্যদিকে রাজস্থান l উভয়ই নিকটবর্তী l সমস্ত কার্যের সম্বন্ধ রাজস্থান আর গুজরাটের সাথে যুক্ত l সুতরাং, ড্রামা অনুসারে, উভয় স্থানই সহযোগী হওয়ার গোল্ডেন চান্স লাভ করেছে l উভয়ই প্রতিটা কার্যে নিকট আর সহযোগী হয়ে রয়েছে l সঙ্গমযুগের স্বরাজ্যের রাজগদি তো রাজস্থানেই আছে, তাই না ! কতো রাজা তোমরা প্রস্তুত করেছ ? বলাই হয়ে থাকে - *রাজস্থানের রাজা* l সুতরাং রাজারা কি তৈরি হয়ে গেছে নাকি হচ্ছে ? রাজস্থানে রাজাদের শোভাযাত্রা বার হয় l সুতরাং রাজস্থান নিবাসীদের পূর্ণ শোভাযাত্রা প্রস্তুত ক'রে নিয়ে আসা উচিৎ, তবেই তো সবাই পুষ্প বর্ষণ করবে, নয় কি ? অনেক জাঁকজমকের সাথে তাদের শোভাযাত্রা বার হয় l সুতরাং কতো রাজার শোভাযাত্রা আসবে ? কমপক্ষে যেখানে সেবাকেন্দ্র আছে, সেখানের একজন করেও যদি রাজা আসে তবে কতো রাজা হয়ে যাবে! পঁচিশ জায়গা থেকে পঁচিশ রাজা আসলে তো শোভাযাত্রা সুন্দর হয়ে উঠবে, তাই না ! ড্রামা অনুসারে সেবার গদি রাজস্থানেই আছে l সুতরাং রাজস্থানেরও বিশেষ পার্ট আছে l রাজস্থান থেকেই সেবার জন্য বিশেষ ঘোড়াও বার হয়েছে, নয় কি ! ড্রামাতে পার্ট স্থিরীকৃত, এটা শুধু রিপিট হতে হবে l



*কর্ণাটকেও অনেক বিস্তার হয়েছে l* কর্ণাটকের যারা, তাদের বিস্তার থেকে সারে যেতে হবে l যখন মাখনের জন্য দুগ্ধ মন্থন করা হয়, তখন প্রথমে বিস্তৃত হয় তারপরে সার অংশ থেকেই মাখন নিষ্কাশিত হয় l সুতরাং কর্ণাটককেও বিস্তার থেকে এখন মাখন নিষ্কাশন করতে হবে l সারস্বরূপ হতে হবে এবং অন্যদেরও অনুরূপ বানাতে হবে l আচ্ছা -



যারা নিজের শ্রেষ্ঠ স্বমানে স্থিত, সর্বপ্রাপ্তির ভান্ডার, সদা সঙ্গমযুগীয় শ্রেষ্ঠ স্বরাজ্যের এবং মহান ভাগ্যের অধিকারী আত্মাদের, সদা রূহানী নেশা এবং খুশিস্বরূপ আত্মাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l



*গ্রুপের সাথে* - সবাই নিজেকে স্বরাজ্য অধিকারী শ্রেষ্ঠ আত্মা মনে করো ? স্বরাজ্যের অধিকার লাভ করেছ ? এমন অধিকারী আত্মারা শক্তিশালী হবে, তাই না ! রাজ্যকে সত্ত্বা বলা হয়ে থাকে l সত্ত্বা অর্থাৎ শক্তি l এমনকি, আজকের গভর্নমেন্টকেও বলা হয় - রাজ্য সত্ত্বা পার্টি l সুতরাং রাজ্যের সত্ত্বা অর্থাৎ শক্তি l সুতরাং স্বরাজ্য কতো বড়ো শক্তি!

এইরকম শক্তি প্রাপ্ত হয়েছে ? তোমার শক্তি অনুযায়ী সব কর্মেন্দ্রিয় কাজ করছে ? রাজা সদা নিজের রাজ্যসভা, রাজ দরবার তলব করে জিজ্ঞাসা করেন, রাজ্য কেমন চলছে ! সুতরাং তোমরা সব রাজ্য অধিকারী রাজার কারবার ঠিক চলছে নাকি কোথাও উত্থান-পতন ঘটে ? কখনও তোমার রাজ্য-কর্মচারী কৌশলে তোমাকে ভুলপথে চালিত করে না তো ? কখনো তোমার নয়ন তোমায় ছলনা করে, কখনো কান ভুল ধারণার সৃষ্টি করে, কখনো হাত, কখনো পা তোমার বিশ্বাস ভঙ্গ করে l এইভাবে তোমরা প্রতারিত হও না তো ? যদি রাজ্য সত্ত্বা ঠিক থাকে তাহলে প্রতিটা সঙ্কল্প প্রতি সেকেন্ডে লক্ষ-কোটির উপার্জন l যদি রাজ্য সত্ত্বা ঠিক না থাকে তাহলে প্রতি সেকেন্ডে লক্ষ-কোটি খোয়া যায় l প্রাপ্তিও একের লক্ষ-কোটি গুণ আর যদি পথভ্রষ্ট হও, তবে একের লক্ষ-কোটি গুন নষ্ট l যতটা তুমি লাভ কর, ঠিক ততটাই খুইয়ে ফেল l যথাযথ হিসাব l সুতরাং সারাদিনের রাজ্যের কর্মকাণ্ড দেখ l নয়নরূপী মন্ত্রী ঠিকঠাক কাজ করেছে ? সবার ডিপার্টমেন্ট ঠিক ছিল ? নাকি ছিল না ? এটা চেক করো ?নাকি ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড় ? কার্যতঃ, কোনো কর্ম করার পূর্বে নিজেকে চেক করে তবেই তোমার কর্ম করা উচিৎ l আগে ভাবো, পরে কর্ম করো l প্রথমে ক'রে আর পরে ভাববে, এটা নয় l টোটাল (সমগ্র) রেজাল্ট পাওয়া আলাদা ব্যাপার, কিন্তু জ্ঞানী আত্মা প্রথমে ভাববে তারপরে করবে l সুতরাং তোমরা কি ভেবে চিন্তে সব কাজ করো ? তোমরা আগে ভাবো নাকি পরে ভাবো l যদি জ্ঞানী আত্মা পরে ভাবে, তাকে জ্ঞানী বলা হবে না l এই কারণে তোমরা সর্বদা স্বরাজ্য অধিকারী আত্মা এবং এই স্বরাজ্য অধিকার থেকেই তোমাদের বিশ্ব রাজ্যের অধিকারী হতেই হবে l হবে কি হবে না সেটা কোশ্চেন নয় l যদি তোমাদের স্বরাজ্য অধিকার থাকে তাহলে অবশ্যই বিশ্ব-রাজ্যের অধিকার থাকবেই l সুতরাং কোনরকম জটিলতা নেই তোমাদের স্বরাজ্যে, তাই না ? দ্বাপর যুগ থেকে তোমরা জটিলাগারে অর্থাৎ সমস্যাসঙ্কুল স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছ l বর্তমানে সেই জটিলাগার থেকে তোমরা বেরিয়ে এসেছ, এখন কখনও আর কোনরকম জটিলতার আগারে পা রেখো না l এটা এমনই সমস্যাসঙ্কুল আস্তানা, যদি একবার পা রেখেছ তো গোলকধাঁধার খেলা হয়ে যাবে l তারপরে বেরিয়ে আসা কঠিন হয়ে যায়, সেইজন্য সদা এক রাস্তা, একের মধ্যে কোনো জটিলতা থাকে না l এক রাস্তা ধরে যারা চলে তারা সদা খুশি, সদা সন্তুষ্ট l



*ব্যাঙ্গালোর হাইকোর্টের জাজের সাথে বাপদাদার সাক্ষাৎকারঃ-*



আপনি কোথায় আছেন আর কি অনুভব করছেন ? অনুভব সবচেয়ে বড়ো অথরিটি l সবচেয়ে প্রথম অনুভব হল, আত্ম-অভিমানী হওয়ার l যখন আত্ম-অভিমানী হওয়ার অনুভব হয়, তখন নিজে থেকেই আপনি পরমাত্ম-স্নেহ, পরমাত্ম-প্রাপ্তির অনুভব করতে পারেন l আপনি যত অনুভব করেন, ততই শক্তিশালী হন l জন্ম-জন্মান্তরের দুঃখ থেকে নিষ্কৃতি দেওয়ার জাজমেন্ট প্রদানকারী আপনি, তাই না ? নাকি শুধু একই জন্মের দুঃখ থেকে নিষ্কৃতি দেওয়ার জাজ ? সে তো হল হাইকোর্টের বা সুপ্রিম কোর্টের জজ হওয়া l এই হল স্পিরিচুয়াল জাজ হওয়া l এই জজ হওয়ায় পঠন-পাঠনের বা সময়ের আবশ্যকতা নেই l আপনাকে শুধু দু'টো শব্দ অধ্যয়ন করতে হবে, আত্মা এবং পরমাত্মা l ব্যস্ ! এই শব্দদ্বয় অনুভব করতে পারলে আপনি স্পিরিচুয়াল জাজ হয়ে ওঠেন l বাবা অনেক জন্মের দুঃখ থেকে মুক্তি দেন, সেইজন্য বাবাকে সুখের দাতা বলা হয়, সুতরাং যেমন বাবা তেমন বাচ্চা l ডবল জাজ হয়ে আপনি অনেক আত্মার কল্যাণের নিমিত্ত হয়ে যাবেন l তারা আসবে একটা কেস-এর (case) জন্য আর অনেক জন্মের কেস জিতে তারা ফিরে যাবে l তারা খুব খুশি হবে l তাইতো বাবার নির্দেশ- *"স্পিরিচুয়াল জাজ হও"l* আচ্ছা - ওম্ শান্তি l

বরদান:-

সর্বশক্তিমান বাবাকে কম্বাইন্ড রূপে সাথে রেখে সফলতা-মূর্ত ভব

যে বাচ্চাদের সাথে সর্বশক্তিমান বাবা কম্বাইন্ড, তাদের সর্বশক্তিতে অধিকার আছে এবং যেখানে সর্বশক্তি আছে সেখানে সাফল্য আসবে না, এমন অসম্ভব l যদি তোমরা প্রতিনিয়ত বাবার সাথে কম্বাইন্ড না থাকো, তখন সফলতারও অভাব ঘটে l সদা তোমাদের সাথে কম্বাইন্ড সাহচর্যের দায়িত্ব যিনি পরিপূরণ করেন, সেই অবিনাশী সাথীকে যদি সদাসর্বদা সাথে রাখো, সফলতা তখন তোমাদের জন্মসিদ্ধ অধিকার কারণ সফলতা মাস্টার সর্বশক্তিমানের আগুপিছু ঘুরতে থাকে l

স্লোগান:-

প্রকৃত বৈষ্ণব তারাই, যারা বিকার রূপী নোংরা স্পর্শও করে না l