১৩-০৫-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা -- দেহী-অভিমানী বাবা তোমাদের 'দেহী-অভিমানী ভব'-র পাঠ পড়ান, দেহ-অভিমানকে পরিত্যাগ করাই হলো তোমাদের পুরুষার্থ"

প্রশ্ন:-

দেহ-অভিমানী হলে সর্বপ্রথমে কোন্ রোগ উৎপন্ন হয় ?

উত্তর:-

নাম-রূপের। এই রোগই বিকারী বানিয়ে দেয় তাই বাবা বলেন, আত্ম-অভিমানী হয়ে থাকার অভ্যাস কর। এই শরীরের প্রতি তোমাদের কোন আকর্ষণ(মোহ) থাকা উচিৎ নয়। দেহের আকর্ষণ থেকে মুক্ত হয়ে একমাত্র বাবাকেই স্মরণ কর তবেই পবিত্র হয়ে যাবে। বাবা তোমাদের জীবনবন্ধ থেকে জীবনমুক্ত হওয়ার যুক্তি বলে দেন। এটাই হলো (তোমাদের) পড়াশোনা।

ওম্ শান্তি ।

আত্মিক পিতা বলেন যে, আত্ম-অভিমানী অথবা দেহী-অভিমানী হয়ে বসতে হবে। কাকে স্মরণ করতে হবে ? বাবা-কে। বাবা ছাড়া আর কাউকে স্মরণ করবে না। যখন বাবার থেকে অসীম জগতের উত্তরাধিকার পাওয়া যায় তখন তাঁকেই স্মরণ করতে হবে। অসীম জগতের পিতা এসে বোঝান যে, দেহী-অভিমানী ভব, আত্ম-অভিমানী ভব। দেহ-অভিমানকে পরিত্যাগ করতে থাকো। আধাকল্প তোমরা দেহ-অভিমানী হয়ে রয়েছিলে, এখন আধাকল্প আবার দেহী-অভিমানী হয়ে থাকতে হবে। সত্যযুগ-ত্রেতাতে তোমরা আত্ম-অভিমানী ছিলে। সেখানে জানা থাকে যে, আমরা হলাম আত্মা, এখন এই শরীর বৃদ্ধ হয়েছে, এখন একে ত্যাগ করতে হবে। একে চেঞ্জ করতে হবে (সর্পের উদাহরণ)। তোমরাও পুরনো শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীরে প্রবেশ কর তাই তোমাদের এখন আত্ম-অভিমানী হতে হবে। কে বানায়? বাবা। যিনি সদাই আত্ম-অভিমানী। তিনি কখনও দেহ-অভিমানী হন না। যদিও একবারই আসেন, তাও দেহ-অভিমানী হন না কারণ এই শরীর তো অন্যের, ধার হিসাবে নেওয়া হয়েছে। তাই এই শরীরের প্রতি তাঁর নয়নের কোনো আকর্ষণ থাকে না। যিনি ধার(লোন) নেন তার কোন মোহ থাকে না। তিনি জানেন যে, এই শরীর তো তাঁকে ছাড়তে হবে। বাবা বোঝান যে -- বাচ্চারা, আমিই এসে তোমাদের পবিত্র বানাই। তোমরা সতোপ্রধান ছিলে পরে তমোপ্রধাণ হয়ে গেছ। এখন পুনরায় পবিত্র হওয়ার জন্য তোমাদের আমার সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপনের যুক্তি শেখাই। 'যোগ' শব্দ না বলে 'স্মরণ' শব্দটি বলাই যুক্তি-যুক্ত। স্মরণ করা শেখাই। বাচ্চারা বাবাকে স্মরণ করে। এখন তোমাদেরও বাবাকে স্মরণ করতে হবে। আত্মাই স্মরণ করে। বাচ্চারা, যখন রাবণ-রাজ্য শুরু হয় তখন থেকেই তোমরা দেহ-অভিমানী হয়ে যাও। পুনরায় বাবা এসে(তোমাদের) আত্ম-অভিমানী বানান। দেহ-অভিমানী হওয়ার কারণে নাম-রূপের আকর্ষণে আবদ্ধ হয়ে পড়ো, বিকারী হয়ে যাও। তা নাহলে তোমরা তো সকলে নির্বিকারী ছিলে। পুনরায় পুনর্জন্ম নিতে-নিতে বিকারী হয়ে গেছ। জ্ঞান কাকে বলে, ভক্তি কাকে বলে -- এ তো বাবা-ই এসে বোঝান। ভক্তি শুরু হয় দ্বাপর থেকে। যখন থেকে পাঁচ বিকার-রূপী রাবণের স্থাপনা হয়। ভারতকেই রাম-রাজ্য আর রাবণ-রাজ্য বলা হয়। কিন্তু জানে না যে, কত সময় পর্যন্ত রাম-রাজ্য আর কত সময় পর্যন্ত রাবণ-রাজ্য চলে। এইসময় সকলেই তমোপ্রধান, প্রস্তরবুদ্ধিসম্পন্ন। জন্মই হয় ভ্রষ্টাচারের ফলে তাই তো একে বিকারী দুনিয়া বলা হয়। নতুন দুনিয়া আর পুরানো দুনিয়ার মধ্যে রাত-দিনের পার্থক্য। নতুন দুনিয়ায় শুধু ভারতই ছিল। ভারতের মতো পবিত্রখন্ড তো (বাবা ছাড়া) আর কেউই তৈরী করতে পারে না। ভারতের মতো অপবিত্রও আর কোন স্থান হয় না। যা পবিত্র ছিল, তাই আবার অপবিত্র হয়ে পুনরায় পবিত্র হয়। তোমরা জানো যে, দেবী-দেবতারা পবিত্র ছিল। পুনরায় পুনর্জন্ম নিতে-নিতে অপবিত্র হয়ে গেছে। সর্বাপেক্ষা অধিক জন্ম ইনিই(ব্রহ্মা) নেন। বাবা বোঝান যে, আমি এঁনার অনেক জন্মের অন্তিম জন্মেরও অন্তিম লগ্নে এঁনার মধ্যে আসি। ইনিই প্রথম স্থানাধিকারী যিনি ৮৪ জন্ম সম্পূর্ণ করে যখন বাণপ্রস্থ অবস্থায় উপনীত হন তখন আমি এঁনার মধ্যে প্রবেশ করি ত্রিমূর্তি ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকরও রয়েছে, কিন্তু কেউই জানে না কারণ সকলেই তমোপ্রধান, তাই না। কারও বায়োগ্রাফী(জীবনচরিত) কোনও মানুষেরই জানা নেই। পূজা করে কিন্তু সবই হলো অন্ধশ্রদ্ধা। ভক্তিকে বলা হয় ব্রাহ্মণদের রাত আর সত্যযুগ-ত্রেতা হলো ব্রাহ্মণদের দিন। এখন ব্রহ্মা যদি প্রজাপিতা হন তবে তাঁর অবশ্যই সন্তানাদিও থাকবে, তাই না। এও বোঝান যে, ব্রাহ্মণদের কুল হয়, রাজবংশ হয় না। ব্রাহ্মণ হলো শিখা(টিকি)। শিখাও দেখতে পাওয়া যায়। আবার সর্বাপেক্ষা উচ্চে রয়েছেন (আমাদের) শিক্ষক পরমপিতা পরমাত্মা শিব। ওঁনার নামও সেই একই কিন্তু ভক্তিমার্গে তো অনেক নাম দিয়ে দিয়েছে। ভক্তিমার্গে আড়ম্বর অনেক বেশী। কত চিত্র, কত মন্দির, যজ্ঞ, তপ, দান, পুণ্য ইত্যাদি করে। (তারা) বলেও যে, ভক্তির দ্বারাই ভগবানকে প্রাপ্ত করা যায়। কারা পায় ? যারা সর্ব প্রথমে আসে, তারাই প্রথমে-প্রথমে ভক্তি শুরু করে। যারা ব্রাহ্মণ তারাই আবার দেবতা হয়, আবার তারাই যথা রাজা-রানী তথা প্রজা...... সর্বগুণসম্পন্ন, ১৬ কলা সম্পূর্ণ, সম্পূর্ণ নির্বিকারী, অহিংস পরমো দেবী-দেবতা ধর্মের ছিল। ভারতে যখন এক আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম ছিল তখন অগাধ ধনসম্পত্তি ছিল। বাবা স্মরণ করান -- প্রথমে-প্রথমে তোমরা দেবী-দেবতারাই ৮৪ জন্ম নাও। সবাই নেয় না। হয় শুধু ৮৪ জন্ম কিন্তু তারা আবার বলে দেয় যে ৮৪ লক্ষ জন্ম। কল্পের আয়ুও লক্ষাধিক বছর বলে দিয়েছে। বাবা বলেন, এ হলো ৫ হাজার বছরের ড্রামা। তাহলে এ হলো জ্ঞান। জ্ঞানসাগর একমাত্র শিববাবাকেই বলা হয়। উনি হলেন পার্থিব জগতের(লৌকিক) পিতা, আর ইনি হলেন অসীম জগতের পিতা। লৌকিক পিতা থাকতেও (লোকেরা) অসীম জগতের পিতাকে স্মরণ করে, কারণ তারা দুঃখী হয়ে যায়। পুনর্জন্ম নিতে-নিতে দুনিয়া পুরনো তমোপ্রধান হয়ে যায় তখন বাবা আসেন। সেকেন্ডে জীবনমুক্তি পাওয়া যায়। কার থেকে ? অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে। তাহলে অবশ্যই এখন জীবনবন্ধতে রয়েছে। এখন অপবিত্র তাই আবার পবিত্র হতে হবে। এ হলো এক সেকেন্ডের কথা। জ্ঞান হলো এক সেকেন্ডের কারণ পড়া তো তোমরা অনেক পড়ো। ওইসব মানুষ তো মানুষকেই পড়ায়। পড়ে তো আত্মা। কিন্তু দেহ- অভিমানের কারণে নিজেকে আত্মা মনে করতে ভুলে যায় আর বলে দেয় যে, আমি তো অমুক মিনিস্টার বা অমুক। বাস্তবে হলো আত্মা। আত্মা, মিস্টার-মিসেসের শরীরে তার নিজ ভুমিকা(পার্ট) পালন করে, একথা ভুলে যায়। তা নাহলে আত্মাই তো শরীরের দ্বারা নিজ ভুমিকা পলান করে। কেউ কেমন হয়ে যায় তো কেউ আবার অন্যরকম হয়।



বাবা বোঝান যে, এখন এই পুরানো দুনিয়া পরিবর্তিত হয়ে নতুন হয়। ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রী-জিওগ্রাফী অবশ্যই রিপীট হয়। নতুন দুনিয়া হলো সতোপ্রধান। ঘরও প্রথমে নতুন হয় তখন বলবে সতোপ্রধান পরে আবার তা পুরনো খোকলা (জরাজীর্ণ) তমোপ্রধান হয়ে যায়। এই অসীম জগতের নাটক বা সৃষ্টি-চক্রের নলেজকে বুঝতে হবে কারণ এ হলো পড়াশোনা। ভক্তি নয়। ভক্তিকে পড়াশোনা বলা হয় না কারণ ভক্তিতে লক্ষ্যবস্তু(এইম অবজেক্ট) বলে কিছু থাকে না। জন্ম-জন্মান্তর ধরে বেদ-শাস্ত্রাদি পড়তেই থাকো। এখানে তো দুনিয়াকে বদলাতে হবে, সত্যযুগ-ত্রেতায় ভক্তি থাকে না। ভক্তি শুরু হয় দ্বাপর থেকে। একথা বাবা এখানে বসে তাঁর আত্মা-রূপী সন্তানদের বোঝান। একেই বলা হয় আধ্যাত্মিক নলেজ বা আধ্যাত্মিক জ্ঞান। আধ্যাত্মিক নলেজ কে শেখাবেন? সুপ্রীম আত্মা অর্থাৎ পরমপিতাই শেখাবেন। তিনি তো সকলেরই, তাই না। লৌকিক পিতাকে কখনও পরমপিতা বলা যাবে না। পারলৌকিক-কেই পরমপিতা বলা হয়। তিনি হলেন পরমধাম নিবাসী। বাবাকে স্মরণও এভাবেই করা হয় -- হে গড, হে ঈশ্বর। বাস্তবে ওঁনার নাম একটিই। কিন্তু ভক্তিতে অনেক নাম দিয়ে দিয়েছে। ভক্তির বিস্তার অনেক। এসবই হলো মনুষ্য মত। এখন মানুষের চাই ঈশ্বরীয় মত। ঈশ্বরীয় মত, শ্রীমত। শ্রী-শ্রী ১০৮ -এর তো মালা হয়, তাই না। এই প্রবৃত্তি মার্গের মালাও তৈরী হয়। পুনরায় পুনর্জন্ম নিতে-নিতে সিড়ি নীচে নামতে-নামতে দেউলিয়া হয়ে যায়। বুদ্ধি খালি(বোধশূন্য) হয়ে যায় তাই মানুষ দেউলিয়া হয়ে যায়। যারা ১০০ শতাংশ সম্পন্ন ছিল তারাই এইসময় দেউলিয়া (রিক্ত)। বুদ্ধির তালা বন্ধ হয়ে রয়েছে। ওই তালা কে লাগিয়ে ছে ? গোদরেজের তালা লেগে যায়। ভারত যেমন প্রথম স্থানে ছিল, এর মতো আর কোন খন্ড ছিল না। ভারতের অনেক মহিমা। ভারত সর্বধর্মাবলম্বীদের কাছেই অনেক বড় তীর্থ। কিন্তু ড্রামা অনুসারে গীতাকে খন্ডিত করে দিয়েছে। এটা ভারত তথা সমগ্র দুনিয়ারই ভুল। ভারতেই গীতাকে খন্ডিত করা হয়েছে, যে গীতাজ্ঞানের দ্বারা বাবা নতুন দুনিয়া তৈরী করেন আর সকলের সদ্গতিও করেন।



ভারত সর্বাপেক্ষা উচ্চ এবং অত্যন্ত ঐশ্বর্যশালী খন্ড ছিল যা এখন পুনরায় তৈরী হচ্ছে। এ হলো উল্টো বৃক্ষ(ঝাড়), এর বীজ উপরে স্থিত। তাঁকে বৃক্ষপতি বলা হয়। বৃহস্পতির দশা বসে, তাই না। বাবা বোঝান, বৃক্ষপতি অর্থাৎ আমি যখন আসি তখন ভারতের উপর বৃহস্পতির দশা বসে। উচ্চ হয়ে যায়। পুনরায় যখন রাবণ আসে তখন রাহুর দশা বসে। ভারতের কি অবস্থা হয়ে যায়। ওখানে তো তোমাদের আয়ুও দীর্ঘ থাকে পবিত্র হওয়ার কারণে। আধাকল্প তোমরা ২১ জন্ম নাও। আর বাকি আধাকল্পে ভোগী হওয়ার কারণে তোমাদের আয়ু কম হয়ে যায় তাই তোমরা ৬৩ জন্ম নাও। এখন বাবা বোঝান যে, সতোপ্রধান হতে হবে তাই মামেকম্ স্মরণ কর। সব ধর্মাবলম্বীরাই এইসময় তমোপ্রধাণ। তোমরা সকলকেই এই জ্ঞান দিতে পারো। আত্মাদের পিতা তো একজনই। সকলেই ভাই-ভাই কারণ আমরা আত্মারা হলাম এক পিতার সন্তান। যদিও বলা হয় যে, হিন্দু-মুসলিম ভাই-ভাই কিন্তু এর অর্থ জানে না। আত্মা সঠিক বলে। সব ভাইদের পিতাই এক। বড় বাবাকেই (পরমাত্মা) অবিনাশী উত্তরাধিকার দিতে হবে। তিনি আসেনও ভারতে। শিব-জয়ন্তী পালন করে কিন্তু তিনি কবে এসেছিলেন -- তা কারোরই জানা নেই। তোমাদের যুদ্ধ হলো ৫ বিকারের সঙ্গে। কাম-বিকার হলো তোমাদের প্রথম শত্রু। রাবণকে জ্বালানো হয়। কিন্তু সে কে? কেন জ্বালানো হয়? কিছুই জানে না। দ্বাপর থেকে নীচে নামতে-নামতে এইসময় অপবিত্র হয়ে গেছ। একদিকে শিববাবাকে স্মরণ করে পূজা করে, অন্যদিকে আবার বলে যে, তিনি সর্বব্যাপী। যিনি তোমাদের বিশ্বের মালিক বানিয়েছেন তাঁকেই তোমরা মায়ার চক্রতে এসে গালি দাও। বাবা বলেন -- মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা আমাকে অগণিত জন্মে নিয়ে গেছ। আমাকে কণায়-কণায় বলে দিয়েছ। এই ড্রামাও পূর্ব নির্ধারিত। অসীম জগতের পিতার গ্লানি করে কত পাপ আত্মা হয়ে গেছ। এ হলো রাবণ-রাজ্য, তাই না।



এও তোমরা জানো -- এইসময় সকলেই ভক্ত। সকলের সদ্গতি কে করেন ? সত্যখন্ড যিনি স্থাপন করেন তিনিই সকলের পিতা। রাবণকে বাবা বলা হয় না। ৫ বিকার সকলের মধ্যেই রয়েছে। বিকারের দ্বারাই জন্ম হয় তাই ভ্রষ্টাচারী বলা হয়। দেবতাদের বলা হয় সম্পূর্ণ নির্বিকারী। এখন হলো সম্পূর্ণ বিকারী। পূজ্য দেবতারাই আবার পূজারী হয়। ওরা বলে যে, আত্মাই পরমাত্মা। বাবা বলেন, এটা ভুল। প্রথমে-প্রথমে তো নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করতে হবে। আত্মারা অর্থাৎ আমরা এইসময় হলাম ব্রাহ্মণকুলের, তারপরে আবার দেবতা কুলে যাই। এই ব্রাহ্মণকুল হলো সর্বোত্তম কুল। ব্রাহ্মণদের রাজবংশ হয় না। ব্রাহ্মণদের হয় শিখা(টিকি)। তোমরা হলে ব্রাহ্মণ, তাই না। সর্বাপেক্ষা উর্ধ্বে হলেন শিববাবা। ভারতে বিরাট রূপ (গীতায়) দেখান হয়। কিন্তু তাতে না ব্রাহ্মণদের শিখা রয়েছে, না সেই শিখার(ব্রাহ্মণদের) পিতা রয়েছে। অর্থ কিছুই বোঝে না। ত্রিমূর্তির অর্থও বোঝে না। তা নাহলে ভারতের রাজ-চিহ্ন(কোট অফ আর্মস) ত্রিমূর্তি শিবেরই হওয়া উচিৎ। এখন এ হলো কাঁটার জঙ্গল। তাই জংলী জানোয়ারদের রাজ-চিহ্ন (অশোকস্তম্ভে) বানিয়ে দিয়েছে। তাতে আবার লিখেছে 'সত্যমেব জয়তে'। সত্যযুগে তো দেখানো হয় যে, বাঘে-গরুতে একত্র হয়ে জল পান করছে। 'সত্যমেব জয়তে' অর্থাৎ বিজয়। (ওখানে) সকলে ক্ষীরখন্ড(মিষ্টিমধুর সম্পর্কে একত্রিত) হয়ে থাকে। নুন-পানী(তিক্ত সম্পর্ক) হয় না। রাবণ-রাজ্যে নুন-পানী আর রাম-রাজ্যে ক্ষীরখন্ড হয়ে যায়। তাই একে বলা হয় কাঁটার জঙ্গল। একে-অপরকে প্রথমসারির কাঁটা অর্থাৎ (কাম) বিকারের কাঁটায় দংশন করে। বাবা বলেন, কাম মহাশত্রু। এ আদি-মধ্য-অন্ত পর্যন্ত দুঃখ দিতেই থাকবে। নামই হলো রাবণ-রাজ্য। বাবা বলেন, এই ৫ বিকারের উপর বিজয় প্রাপ্ত করে জগতজীৎ হও। এই অন্তিম জন্মে নির্বিকারী হও। তোমরা তমোপ্রধান হয়ে গেছ, পুনরায় সতোপ্রধান পবিত্র হও। গঙ্গা কোন পতিত-পাবনী নয়। শরীরের ময়লা তো ঘরে বসেও জল দিয়ে পরিস্কার করতে পারো। কিন্তু আত্মা তো তাতে পরিস্কার হতে পারে না। ভক্তিমার্গে তো কত-কত সংখ্যক গুরু থাকে। সদ্গুরু একজনই, যিনি সদ্গতি করেন। তিনি সুপ্রীম পিতাও, সুপ্রীম শিক্ষকও আবার সুপ্রীম সদ্গুরুও। তিনিই তোমাদের সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের নলেজ শোনান। *আচ্ছা* !



মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাত-পিতা বাপদাদার স্নেহ-স্মরণ ও সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-

১. সতোপ্রধান হওয়ার জন্য বাবা ছাড়া আর কাউকে যেন স্মরণ করা না হয়। দেহী-অভিমানী হওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

২. সকলের সঙ্গে ক্ষীরখন্ড হয়ে থাকতে হবে। এই অন্তিম জন্মে বিকারের উপর বিজয়লাভ করে জগতজীৎ হতে হবে।

বরদান:-

প্রতিটি কর্মে বিজয়ের অটল বিশ্বাস (নিশ্চয়) আর নেশা রাখতে সমর্থ অধিকারী আত্মা ভব

বিজর আমাদের জন্মসিদ্ধ অধিকার -- এই স্মৃতিতে সদা উড়তে থাকো। যা কিছুই হয়ে যাক -- এই সুদৃঢ় বিশ্বাসে (নিশ্চয়ে) অটল হও। নেশার আধারই(ভিত) হলো দৃঢ় বিশ্বাসে। নিশ্চয় (দৃঢ় বিশ্বাস) কম, তো নেশাও কম। তাই বলা হয়, "নিশ্চয়বুদ্ধি বিজয়ন্তী"। নিশ্চয়ের ক্ষেত্রে 'কখনো-কখনো' শব্দ বলার মতো হয়ো না। অবিনাশী পিতা রয়েছেন তাই অবিনাশী প্রাপ্তির অধিকারী হও। প্রতিটি কর্মেই যেন বিজয়ের নিশ্চিত বিশ্বাস আর নেশা থাকে।

স্লোগান:-

বাবার স্নেহের ছত্রছায়ার নীচে থাকো তাহলে কোন বিঘ্ন সামনে দাঁড়াতে পারবে না।