১৫-০৬-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -- এবারে এই ছিঃ ছিঃ কলুষিত দুনিয়ায় আগুন লাগবে, তাই দেহ সহ যা কিছু তোমরা আমার -আমার বল - সেসব ভুলতে হবে, সেসবের প্রতি মোহ রাখবে না"
প্রশ্ন:-
বাবা তোমাদের এই দুঃখধামের প্রতি ঘৃণা ধরিয়ে দেন, কেন ?
উত্তর:-
কারণ তোমাদের শান্তিধাম - সুখধাম যেতে হবে। এই নোংরা অপরিষ্কার দুনিয়ায় আর থাকার নয়। তোমরা জানো আত্মা শরীর থেকে বেরিয়ে ঘরে অর্থাৎ পরমধাম ফিরে যাবে, তাই এই শরীর গুলিকে কেন দেখবে ! কারো নাম-রূপের দিকেও যেন বুদ্ধি না যায়। কু চিন্তন করলে পদ ভ্রষ্ট হয়ে যাবে।
ওম্ শান্তি ।
শিববাবা নিজের বাচ্চাদের সঙ্গে, আত্মাদের সঙ্গে কথা বলেন। আত্মা-ই শোনে। নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করতে হবে। নিশ্চয় করে তারপরে এই কথা বোঝাতে হবে যে অসীম জগতের পিতা এসেছেন, সবাইকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। দুঃখের বন্ধন থেকে মুক্ত করে তিনি সুখের সম্বন্ধে নিয়ে যান। সম্বন্ধ সুখকে, বন্ধন দুঃখকে বলা হয়। এখন এখানকার কোনও নাম - রূপ ইত্যাদির প্রতি মোহ রেখো না। নিজের প্রকৃত গৃহ পরমধামে ফেরার জন্যে তৈরি থাকতে হবে। অসীম জগতের বাবা এসে গেছেন, সব আত্মাদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে, তাই কারো প্রতি মোহ রাখবে না। এইসব হল এখানকার ছিঃ ছিঃ বন্ধন। তোমরা ভাবো আমরা এখন পবিত্র হয়েছি তো আমাদের শরীরটাকে কেউ যেন স্পর্শ না করে অপবিত্র ভাবনা নিয়ে । সেসব চিন্তাও দূর হয়ে গেছে । পবিত্র না হয়ে ঘরে ফিরতে পারবে না । দন্ড ভোগ করতে হবে, না শোধরালে। এই সময় সব আত্মাই হল ভুল, বেঠিক। শরীরের সাথে ছিঃ ছিঃ কর্ম করে। ছিঃ ছিঃ দেহধারীদের প্রতি মোহ রয়েছে। বাবা এসে বলেন - এই সব কুচিন্তন সব ত্যাগ করো। আত্মাকে শরীর ত্যাগ করে ঘরে ফিরতে হবে। এই দুনিয়া হল অত্যন্ত ছিঃ ছিঃ দুনিয়া, এখানে তো আর আমাদের থাকবার নয়। কাউকে দেখার তোমাদের ইচ্ছেও হয় না। এখন তো বাবা এসেছেন স্বর্গে নিয়ে যেতে। বাবা বলেন - বাচ্চারা, নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো। পবিত্র হওয়ার জন্য বাবাকে স্মরণ করো। কোনো দেহধারীর প্রতি মোহ রেখো না। আকর্ষণ যেন একেবারেই না থাকে। স্ত্রী-পুরুষের খুব প্রেম থাকে। একে অপরকে ছেড়ে থাকতে পারে না। এখন তো নিজেকে আত্মা ভাই - ভাই নিশ্চয় করতে হবে। কুচিন্তন করা উচিত নয়। বাবা বোঝান - এখন এই হল বেশ্যালয়। বিকারের জন্যেই তোমরা আদি, মধ্য, অন্ত দুঃখ ভোগ করেছ। বাবা ঘৃণা ধরিয়ে দেন। এখন তোমরা স্টিমারে বসে আছো যাওয়ার জন্য। আত্মা বুঝেছে এখন আমরা যাচ্ছি বাবার কাছে। এই সম্পূর্ণ পুরানো দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য অনুভব হয়। এই ছিঃ ছিঃ দুনিয়া, নরক বেশ্যালয়ে আমাদের থাকবার নয়। তাই বিষের জন্যে কুচিন্তা করা খুব খারাপ । পদও ভ্রষ্ট হয়ে যাবে। বাবা বলেন আমি তোমাদের ফুলের মতো খুব সুন্দর দুনিয়ায়, সুখধামে নিয়ে যেতে এসেছি। আমি তোমাদের এই বেশ্যালয় থেকে বের করে শিবালয়ে নিয়ে যাব, তাই এখন বুদ্ধির যোগ থাকা উচিত নতুন দুনিয়ার প্রতি । কত খুশীর অনুভব হওয়া উচিত। অসীম জগতের পিতা আমাদের পড়ান, এই অসীম (বেহদের ) সৃষ্টি কিভাবে আবর্তিত হয়, সে কথা তো বুদ্ধিতে আছে। সৃষ্টি চক্রের কথা জানলে অর্থাৎ স্বদর্শন চক্রধারী হলে তোমরা চক্রবর্তী রাজা হবে। যদি দেহধারীর সঙ্গে বুদ্ধি যোগ যুক্ত করবে তো পদ ভ্রষ্ট হয়ে পড়বে। কোনও দেহের সম্পর্ক যেন স্মরণে না আসে। এই হল দুঃখের দুনিয়া, এখানে সবাই দুঃখ-ই দেবে।
বাবা ডার্টি দুনিয়া থেকে সবাইকে নিয়ে যান, তাই এখন নিজ নিকেতন বা পরমধামের সঙ্গে বুদ্ধি যোগ লাগাতে হবে। মানুষ ভক্তি করে - মুক্তিতে যাওয়ার জন্য। তোমরাও বল - আমরা আত্মা আমাদের এখানে থাকার নয়। আমরা এই ছিঃ ছিঃ শরীর ত্যাগ করে নিজের ঘর পরমধাম ফিরে যাব, এই দেহ টি তো পুরানো জুতো। বাবাকে স্মরণ করতে করতে এই শরীর থেকে মুক্ত হব। শেষ সময়ে বাবা ছাড়া আর অন্য কিছুই যেন স্মরণে না থাকে। এই শরীরও এইখানে ত্যাগ করতে হবে । শরীর ত্যাগ করলেই সবকিছু চলে যাবে। দেহ সহ যা আছে, তোমরা যা কিছু আমার-আমার বলো, সেসব ভুলে যেতে হবে। এই ছিঃ ছিঃ দুনিয়াতে আগুন লাগবে, তাই এই দুনিয়ার প্রতি মোহ রাখবে না। বাবা বলেন, মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, আমি তোমাদের জন্য স্বর্গের স্থাপনা করছি। তোমরা সেখানে গিয়ে থাকবে। এখন তোমাদের মুখ স্বর্গের দিকে আছে। বাবাকে, ঘর বা পরমধামকে, স্বর্গকে স্মরণ করতে হবে। দুঃখধামের প্রতি অরুচি হয়। এই দেহের প্রতিও অরুচি হয়। বিবাহ ইত্যাদি করার বা কি প্রয়োজন। বিবাহের পরে মোহ হয়ে যায় শরীরের সাথে। বাবা বলেন এই পুরানো জুতো গুলির প্রতি আকর্ষণ রেখো না। এ হল বেশ্যালয় । সবাই পতিত। এই হল রাবণ রাজ্য । এখানে কারো প্রতি মোহ রাখবে না, একমাত্র বাবা ছাড়া। বাবাকে স্মরণ না করলে জন্ম জন্মান্তরের পাপ ভস্ম হবে না। তারপরে দন্ড ভোগ করাও খুব কষ্টকর। পদও ভ্রষ্ট হয়ে যাবে। তাহলে এই কলিযুগী বন্ধন ত্যাগ করাটাই ভালো, তাইনা। বাবা সবার জন্য অসীম জগতের সব বিষয় বোঝাচ্ছেন। যখন রজোপ্রধান সন্ন্যাসী ছিলে তখন দুনিয়া এত নোংরা ছিল না। জঙ্গলে বাস করত। সবাই খুব আকৃষ্ট হত। মানুষ সেই খানে তাদের খাবার পৌঁছে দিত। নির্ভয়ে বাস করত। *তোমাদেরও নির্ভয় হতে হবে, এর জন্য বিশাল বুদ্ধি চাই*। বাবার কাছে এলে বাচ্চাদের খুশী অনুভব হয়। আমরা অসীম জগতের বাবার কাছে সুখধামের অবিনাশী অধিকার প্রাপ্ত করি। এখানে তো অনেক দুঃখ আছে। কত রকমের কঠিন সাংঘাতিক অসুখ ইত্যাদি হয়। বাবা তো গ্যারান্টি দিয়ে বলেন - তোমাদের সেখানে নিয়ে যাই, যেখানে দুঃখ, অসুখ ইত্যাদির নাম চিহ্ন নেই। অর্ধকল্পের জন্যে তোমাদের হেলদি বা সুস্থ করি। এখানে কারো সঙ্গে মোহ রাখলে অনেক দন্ড ভোগ করতে হবে।
তোমরা বোঝাতে পারো, তারা বলে ৩ মিনিটের সাইলেন্স। বলো, শুধু সাইলেন্স দিয়ে কি হবে। এইখানে তো বাবাকে স্মরণ করতে হবে, যার দ্বারা বিকর্ম বিনাশ হবে। সাইলেন্সের বর প্রদান করেন বাবা। তাঁকে স্মরণ না করলে শান্তি প্রাপ্ত হবে কিভাবে ? তাঁকে স্মরণ করলেই উত্তরাধিকার রূপী অবিনাশী স্বর্গের অধিকার প্রাপ্ত হবে। টিচাররা, তোমাদের এ বিষয়ে অনেক পাঠ পড়াতে হবে। একেবারে সতর্ক হয়ে যাওয়া উচিত, কেউ কিছু বলতে পারবে না । বাবার আপন হয়েছ তো উদরপূর্তির জন্যে খাবার তো পাবেই, শরীর নির্বাহের জন্যও অনেক কিছু পাবে। যেমন বেদান্তি কন্যা, পরীক্ষা দিল, তাতে একটি পয়েন্ট ছিল - গীতার ভগবান কে ? সে পরমপিতা পরমাত্মা শিবের নাম লিখে দিল তো তাকে ফেল করে দেওয়া হল। আর যারা কৃষ্ণের নাম লিখল, তারা পাস করল। কন্যাটি সত্য কথা বলল তারা না জানার দরুন ফেল করিয়ে দিল। তারপরে তাদের সাথে তর্কের দ্বারা প্রমাণ করে বলতে হল আমি সত্য লিখেছি। গীতার ভগবান হলেন নিরাকার পরমপিতা পরমাত্মা। কৃষ্ণ দেহধারী তো হতে পারে না। কিন্তু কন্যাটির ইচ্ছে ছিল এই আধ্যাত্মিক সার্ভিস করার তাই সে পড়া ছেড়ে দিল।
তোমরা জানো এখন বাবাকে স্মরণ করতে করতে নিজের শরীর ত্যাগ করে সাইলেন্সের দুনিয়ায় যেতে হবে। স্মরণ করলে হেল্থ - ওয়েলথ দুই-ই প্রাপ্ত হয়। ভারতে পীস-প্রপার্টি শান্তি-সমৃদ্ধি (পীস-প্রপার্টি) ছিল, তাই না। এমন কথা তোমরা কুমারীরা বসে বোঝাও তো কেউ তোমাদের নাম নেবে না। যদি কেউ সামনে এসে তর্কও করে, তোমরা যুক্তি সহকারে তার প্রত্যুত্তর দাও। বড় অফিসারদের কাছে যাও। তারা কি করবে ? এমন নয় যে তোমরা না খেয়ে মরবে। কলা দিয়ে, দই দিয়ে রুটি খেতে পারো। মানুষ পেটের জন্যে কত পাপ করে। বাবা এসে সবাইকে পাপাত্মা থেকে পুণ্যাত্মা বানান। এর জন্য পাপ করার, মিথ্যা বলার কোনও দরকার নেই। তোমরা তো ৩/৪ ভাগ সুখ প্রাপ্ত কর, ১/৪ ভাগ দুঃখ ভোগ কর। এখন বাবা বলেন - মিষ্টি বাচ্চারা, আমাকে স্মরণ করো, তাহলে তোমাদের জন্ম জন্মান্তরের পাপ ভস্ম হয়ে যাবে। আর কোনও উপায় নেই। ভক্তিমার্গে অনেক ধাক্কা খেয়েছ । শিবের পূজা তো ঘরেও করতে পার কিন্তু তবুও বাইরে মন্দিরে নিশ্চয়ই যাও। এখানে তো তোমরা ভগবান পিতাকে পেয়েছ। তোমাদের কোনও চিত্র রাখার প্রয়োজন নেই। বাবাকে তোমরা জানো। তিনি হলেন আমাদের অবিনাশী জগতের পিতা, বাচ্চাদের স্বর্গের বাদশাহীর অবিনাশী অধিকার দিচ্ছেন। তোমরা বাবার কাছে সেই অধিকার নিতে এসেছ। এখানে কোনও শাস্ত্র ইত্যাদি পাঠ করার ব্যাপার নেই। শুধুমাত্র বাবাকে স্মরণ করতে হবে। বাবা, আমরা ব্যস্ এলাম বলে। তোমরা পরমধাম ত্যাগ করেছ, কত সময় হয়েছে ? সুখধাম ছেড়ে এসেছ ৬৩ জন্ম হয়েছে। এখন বাবা বলেন শান্তিধাম, সুখধাম চলো। এই দুঃখধামকে ভুলে যাও। শান্তিধাম, সুখধামকে স্মরণ করো আর কোনও কঠিন কাজ নেই। শিববাবার কোনো শাস্ত্র ইত্যাদি পাঠ করার দরকার নেই।ব্রহ্মা বাবা সে সব পড়েছেন। তোমাদের তো এখন শিববাবা পড়াচ্ছেন। ইনিও অর্থাৎ ব্রহ্মাবাবাও পড়াতে পারেন। কিন্তু তোমরা সর্বদা নিশ্চয় রাখবে শিববাবার প্রতি । তাঁকে স্মরণ করলেই বিকর্ম বিনাশ হবে। মধ্যিখানে ইনিও (ব্রহ্মাবাবাও) রয়েছেন।
এখন বাবা বলেন সময় খুব কম, আর বেশি নেই। এমন চিন্তন করবে না যা ভাগ্যে আছে তাই হবে, তাই প্রাপ্ত হবে। স্কুলে পড়াশোনা করার জন্যে পরিশ্রম (পুরুষার্থ) করতে হয় কিনা। এমন বলো নাকি যা ভাগ্যে আছে সেটাই হবে ! এখানে না পড়লে সেখানে জন্ম-জন্মান্তর চাকরি ইত্যাদি করতে থাকবে। রাজত্ব প্রাপ্ত হবে না। তারপরে শেষে গিয়ে হয়ত বা রাজমুকুট প্রাপ্ত করবে, তাও ত্রেতা যুগে। মুখ্য কথা হল - পবিত্র হয়ে অন্যদের পবিত্র বানানো। সত্য নারায়ণের সত্য কাহিনী শোনানো খুব সহজ। দুই জন পিতা, দেহের (হদের ) পিতার কাছে পার্থিব সম্পত্তির অধিকার প্রাপ্ত হয়, অসীম জগতের (বেহদের) পিতার কাছে অসীমের অধিকার। অসীম জগতের পিতাকে স্মরণ করো তাহলে দেবতায় পরিণত হবে। কিন্তু তাতেও উঁচু পদের অধিকারী হতে হবে। পদ লাভের জন্য কতো মারামারি করে। শেষ কালে বম্বও তাদের এই কাজে সাহায্য করবে। এই এত ধর্ম কি আর তখন ছিল। আবারও থাকবে না। তোমরা তো রাজত্ব করবে, তাই নিজেদের উপরে দয়া তো করো - মিনিমাম উঁচু পদের অধিকারী তো হতে হবে। কন্যারা আট আনা দিয়ে বলে - আমাদের নামে একটি ইঁট লাগিয়ে দিও। সুদামার দৃষ্টান্ত শুনেছ কিনা। এক মুঠো চালের বদলে প্রাসাদ লাভ হয়েছিল । গরিবের কাছে আট আনা-ই আছে তো সে তো সেটাই দেবে, তাই না। তারা বলে, বাবা আমরা গরিব। এখন তোমরা বাচ্চারা প্রকৃত অর্থে উপার্জন কর। এখানে সবার উপার্জন হল মিথ্যা । দান - পুণ্য ইত্যাদি যা করে, সব পাপাত্মাদেরকে করে। তাতে পুণ্যের বদলে পাপ হয়ে যায়। যে দান করে তারই পাপ হয়ে যায়। এমন কর্ম করে সবাই পাপ আত্মা হয়ে যায়। পুণ্য আত্মা থাকে সত্যযুগে। ঐ দুনিয়া হল পুণ্য আত্মাদের দুনিয়া। সেই দুনিয়া তো বাবা-ই তৈরি করবেন। পাপ আত্মায় তো রাবণ পরিণত করে, আত্মা মলিন হয়ে পড়ে। এখন বাবা বলেন কুকর্ম কোরো না। নতুন দুনিয়ায় মলিনতা থাকে না। নামটাই হল স্বর্গ, তাহলে আর কি, স্বর্গ বললেই মুখে জল এসে যায়। দেবতারা সেই দুনিয়ায় ছিলেন, তাই তো তার স্মৃতি চিহ্ন রয়েছে। আত্মা হল অবিনাশী। অ্যাক্টরের সংখ্যা হল বিপুল । কোথাও তো বসে থাকে তারা, যেখান থেকে পার্ট প্লে করতে আসেন। এখন কলিযুগে কত অসংখ্য মানুষ আছে। এখন দেবী-দেবতাদের রাজ্য নেই। কাউকে বোঝানো তো খুব সহজ। বর্তমানে পুনরায় এক ধর্মের স্থাপনা হচ্ছে, বাকি সব শেষ হয়ে যাবে। তোমরা যখন স্বর্গে ছিলে, তখন অন্য কোনও ধর্ম ছিল না। চিত্রে রামের হাতে তীর ধনুক দেওয়া হয়েছে । সেখানে তীর ধনুকের তো কথাই নেই। এই কথাও তোমরা বুঝেছে। যে যা সার্ভিস করেছে কল্প পূর্বে, সেইটি এখনও করে। যে অনেক সার্ভিস করে, সে বাবার প্রিয় হয়। লৌকিক পিতার যে সন্তান ভালো ভাবে পঠন-পাঠন করে, পিতার স্নেহ তার প্রতি বেশি থাকে। যে ঝগড়াঝাটি করে খাবে তার প্রতি অত স্নেহ কি থাকবে ! সার্ভিসেবল বাচ্চারা বেশি প্রিয় হয়।
একটি গল্প আছে - দুইটি বেড়াল লড়াই করে। মাখন কৃষ্ণ খেয়ে নেয়। সম্পূর্ণ বিশ্বের বাদশাহী রূপী মাখন তোমরা প্রাপ্ত কর। অতএব এখন আর গাফিলতি করবে না। ছিঃ ছিঃ অর্থাৎ কলুষিত হবে না। এসবের পিছনে গিয়ে নিজের রাজত্ব হারিয়ে ফেলো না। বাবার ডাইরেকশন প্রাপ্ত করছ, স্মরণ না করলে পাপের বোঝা বাড়তে থাকবে, তারপরে অনেক দন্ড ভোগ করতে হবে। তখন চিৎকার করে কাঁদবে। তোমরা ২১ জন্মের বাদশাহী প্রাপ্ত কর। এতে ফেল হলে খুব কাঁদবে। বাবা বলেন - না পিতৃগৃহ, না শ্বশুর গৃহের কথা স্মরণ করবে। ভবিষ্যতের নতুন গৃহের কথা-ই স্মরণ করতে হবে।
বাবা বোঝান কাউকে দেখে লাট্টু হয়ে যেও না। ফুল হতে হবে। দেবতারা ছিলেন ফুল, কলিযুগে তোমরা কাঁটা ছিলে। এখন তোমরা সঙ্গম যুগে খুব সুন্দর ফুলে পরিণত হচ্ছ। কাউকে দুঃখ দেবে না। এখানে এমন স্বরূপে পরিণত হবে তবে সত্যযুগে যাবে। আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণ স্নেহ ও গুডমর্নিং। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্যে মুখ্য সার :-
১. শেষ সময়ে একমাত্র বাবা ছাড়া অন্য কেউ যেন স্মরণে না আসে তার জন্যে এই দুনিয়ায় কারো প্রতি মোহ রাখবে না। ছিঃ ছিঃ শরীর গুলি ভালোবাসবে না। কলিযুগী বন্ধন মেটাতে হবে।
২. বিশাল বুদ্ধি হয়ে নির্ভয় হতে হবে। পুণ্য আত্মা হওয়ার জন্যে কোনও পাপ এখন আর করবে না। পেটের জন্য মিথ্যে বলবে না। এক মুঠো চাল সফল করে প্রকৃত সত্য উপার্জন জমা করতে হবে, নিজের উপর দয়া করতে হবে।
বরদান:-
সদা স্নেহী হয়ে উড়তি কলার বরদান প্রাপ্তকারী নিশ্চিত বিজয়ী, নিশ্চিন্ত ভব
স্নেহী বাচ্চাদের বাপদাদার দ্বারা উড়তি কলার বরদান প্রাপ্ত হয়। উড়তি কলার দ্বারা সেকেন্ডে বাপদাদার কাছে পৌঁছে যাও, তাহলে মায়া যে রূপেই আসুক না কেন স্পর্শ করতে পারবে না। পরমাত্মার ছত্রছায়ার ভিতরে মায়ার ছায়া পড়তে পারবে না। স্নেহ, পরিশ্রমকে মনোরঞ্জনে পরিবর্তন করে। স্নেহ প্রতিটি কর্মে নিশ্চিত বিজয় অনুভব করায়, স্নেহী বাচ্চারা সব সময় নিশ্চিন্ত থাকে।
স্লোগান:-
নাথিং নিউ এর স্মৃতি দ্বারা সদা অচল থাকো তাহলে খুশীতে নাচ করতে থাকবে ।