২৫-০১-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - বাবা যেমন তোমাদের শৃঙ্গার (সুসজ্জিত) করেন, তোমাদেরও সেইরকমভাবে অন্যদেরও সুসজ্জিত করতে হবে, সারা দিন সেবা (সার্ভিস) করো, যারা আসবে তাদেরকে বোঝাও, চিন্তার কোন ব্যাপার নেই।
প্রশ্ন:-
এই জ্ঞান (নলেজ) শুধু মাত্র কোটির মধ্যে কেউ বোঝে বা ধারণ করে - এরকম কেন ?
উত্তর:-
কারণ তোমরা সবাই নতুন কথা শোনাও। তোমরা বল পরমাত্মা বিন্দুর মতো, আর এটা শুনেই সব বিহ্বল হয়ে পড়ে, তারা শাস্ত্রতে তো এসব কথা শোনেইনি। এত কাল ধরে যে ভক্তি করেছে তা আকর্ষণ করে, তাই এই জ্ঞান তাড়াতাড়ি বোঝে না। আবার এমনও দৃষ্টি গোচর হয় যে কেউ-কেউ যেন বহ্ণিপতঙ্গ সম, যারা বলে - বাবা আমরা অবশ্যই বিশ্বের অধিপতি হব। এরকম বাবাকে পেয়ে আমরা কি ভাবে ছেড়ে দিতে পারি ? সব কিছু উজার করে দেওয়ার জন্য উদ্দীপনার সঞ্চার হয়*।
গীত:-
দূর দেশের নিবাসী....
ওম্ শান্তি।
মিষ্টি মিষ্টি আত্মা রূপী বাচ্চারা ভালো করেই জানে যে আমরা হলাম যাত্রী। এটা আমাদের দেশ নয়। এই অসীমের নাটক হয় বৃহৎ মঞ্চে, কত বড় বড় আলো সেখানে সর্বদা জ্বলে। আত্মারা জানে যে আমরা সবাই হলাম অভিনেতা (এক্টর) আর নম্বর অনুযায়ী নিজের ভূমিকা অনুসারে নির্দিষ্ট সময় এখানে আসি - ভূমিকা মঞ্চস্থ করতে। প্রথমেই তোমরা ঘরে ফিরে গিয়ে আবার এখানে আসো। এটা খুব ভালো ভাবে বোঝার আর ধারণ করার ব্যাপার। নাটকে অ্যাক্টর থাকে, তারা একে অপরের বৃত্তিকে না জানলে তাদের কি বলবে ? তোমরা এরকম হতে পেরেছ ড্রামার আদি-মধ্য-অন্ত জেনেছ বলে। তাই এই পড়া সব থেকে আলাদা। বাবা হলেন বীজরূপ, নলেজফুল। যে রকম ওখানে কমন বীজ আর গাছ (ঝাড়) হয় তাকে তো জান। সর্বপ্রথম ছোট-ছোট পাতা নির্গত হয় তারপর বড় হতে হতে বৃক্ষ কত বৃদ্ধি পায়, কত সময় লেগে যায়। তোমাদের বুদ্ধিতে এই জ্ঞান আছে। বাবা হলেন স্বর্গের রচয়িতা, হেভেনলি গডফাদার। স্বর্গ (হেভেন) স্থাপন করার জন্য বাবাকে আসতে হয়। গাওয়াও হয় দূর দেশের নিবাসী... এই রাবণ রাজ্য অন্যের। রাবণ রাজ্যে রামকে আসতে হয়। তোমাদের বুদ্ধিতেই জ্ঞান আছে। আত্মাদেরকে বাবা বোঝান যে তোমরা সবাই হলে যাত্রী, এক সঙ্গে তো পার্ট করতে আসবে না। তোমাদের জানা আছে সবার প্রথমে আসে দেবতারা, ঐ সময় আর কেউ ছিল না। খুবই কম হয় প্রথমে, তারপর বৃদ্ধি পেতে থাকে। তোমরা আত্মারা সবাই শরীর ছেড়ে ওখানে (পরমধামে) আসো। বাবা-ই এই বুদ্ধি দেন।তোমাদের আত্মাদের এখন জ্ঞান(নলেজ) প্রাপ্ত হয়েছে।আমরা বীজ আর বৃক্ষের আদি-মধ্য-অন্তকে জানি। বীজ হল উপরে আর নীচে সমগ্র বৃক্ষ বিস্তৃত। এখন সম্পূর্ণ ভাবেই বৃক্ষ জরাজীর্ণ । তোমরা বাচ্চারা এই বৃক্ষের আদি-মধ্য-অন্তকে জেনে গেছ। পূর্বে ঋষি-মুনিদের জিজ্ঞাসা করা হত তারা রচয়িতা আর রচনার আদি-মধ্য-অন্তকে জানে কি না, আর তারা বলে দিত যে তারা না এটা জানে না ওটা জানে, রচয়িতা-রচনা কোনোটাই না। যখন তারা এত সব জানেই না তবে কিভাবে পরম্পরায় তাদের অস্তিত্ব থাকবে ? এই সব কথা ভালো ভাবে ধারণ করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না। পড়াশুনা তো করতে হবে। পড়াশুনা আর যোগবল দ্বারাই তোমরা পদ প্রাপ্ত করো। পবিত্র অবশ্যই হতে হবে। বাবা ব্যতীত আর কেউই পবিত্র করে তুলতে পারে না। বিনাশী ধন দান করলে তো রাজবংশে অথবা ভালো বংশে জন্ম নেয়। বাচ্চারা, তোমাদের অনেক বড় পরিবারে জন্ম হয়। নতুন দুনিয়া তো খুবই ছোট হয়ে থাকে। সত্যযুগে হল যেন দেবতাদের এক গ্রাম। প্রথমে বম্বে কত ছোট ছিল। এখন দেখ কত বর্ধিষ্ণু। আত্মারা সবাই নিজেদের ভূমিকা পালন করে, সবাই যেন যাত্রী। বাবা এক বারের জন্য যাত্রী হন। যদিও তোমরাও একই বারের যাত্রী। তোমরাও একই বার আসো। আবার বারংবার পুনর্জন্ম নিয়ে ভূমিকা পালন করতেই থাকো। এখন তোমরা অমরলোকে যাওয়ার জন্য অমর কথা শুনছ, যাতে ২১ জন্ম উঁচু পদ প্রাপ্ত করো। ২১ প্রজন্ম বলে না ! প্রজন্ম অর্থাৎ বৃদ্ধাবস্থা পর্যন্ত। আবার নতুন শরীর স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে নেবে। অকাল মৃত্যু হবে না। ওটা হলই অমরলোক। কালের(অকাল) নামও নেই। হঠাৎ মৃত্যু হবে না। তোমরা এক শরীর ছেড়ে দ্বিতীয় শরীর ধারণ করো। দুঃখের কোন ব্যাপার নেই। সার্পদের কি দুঃখ হয়?আরোই খুশীতে থাকে।এখন তোমাদের আত্ম-জ্ঞান প্রাপ্তি হয়েছে। আত্মাই সব কিছু করে। শরীর তো সম্পূর্ণ আলাদা। ওতে আত্মা না থাকলে তো শরীর চলতে পারত না। কিভাবে শরীর তৈরী হয়, আত্মা কিভাবে প্রবেশ করে। সব কিছুই হল বিস্ময়কর (ওয়ান্ডারফুল)।
বাবা বলেন মিষ্টি-মিষ্টি বাচ্চারা, তোমাদের স্বর্গ হল বিস্ময়কর দুনিয়া (ওয়ান্ডারফুল ওয়াল্ড)।রাবণ রাজ্যে সপ্তম আশ্চর্য (ওয়ান্ডার) দেখানো হয়। রাম রাজ্যে বাবার একটাই আশ্চর্য, যেটা অর্ধ-কল্প স্থায়ী হয়। মানুষ দেখেও নি, তবুও সকলের মুখ থেকে স্বর্গের নাম অবশ্যই নির্গত হয়। এখন তোমরা বুদ্ধি দ্বারা সেটা জান, কেউ-কেউ আবার সাক্ষাৎকারও করেছে। ব্রহ্মাবাবাও বিনাশ আর নিজের (শ্রীকৃষ্ণের) রাজধানী দেখেছিলেন। এখন এ হল যথার্থ গীতার উপাখ্যান (এপিসোড)। বাবা সর্বদা বলতে থাকেন - বাচ্চারা এটা হল পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ, যেখানে আমি এসে তোমাদের, অর্থাৎ বাচ্চাদের রাজযোগের শিক্ষা দিই আর এত উঁচু বানাই । দুনিয়াতে এই কথা কেউ জানে না। তোমরা খুব আরামে থাকো। এখানে মানুষের মৃত্যু হলে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখে, যাতে আত্মার অন্ধকার না হয়। সত্যযুগে এরকম ব্যাপার হয় না। সত্যযুগে সব আত্মাদের দীপ প্রজ্জ্বলিত থাকে। ঘরে ঘরে আলো থাকে। এখানে আবার মানুষ ঘরে ঘরে বাতি জ্বালায়।বাবা বলেন এই সব কথা বুদ্ধিতে ভালো ভাবে ধারণ করতে হবে। বাবা আর রাজধানীকে স্মরণ করতে থাকো। তোমরা জানো এতটা সময় আমরা রাজত্ব করেছি। যারা দীর্ঘকাল বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিল তাদের সাথেই বাবা বার্তালাপ করেন, পড়ান। বাচ্চারা জানে এই সময়ের (সত্যযুগের) কথা নিয়েই উৎসব পালিত হয়। শিব জয়ন্তী ভারতেই পালন করা হয়। শিব হলেন উচ্চতমের চেয়েও উচ্চ ভগবান। *উনি ভারতে কিভাবে আসেন, উনি স্বয়ং বলেছেন যে আমাকে প্রকৃতির আধার নিয়ে আসতে হয়, তবে তো বক্তব্য রাখতে পারি। তা না হলে কি ভাবে বাচ্চাদের জ্ঞান শৃঙ্গার করাবো* ? এখন তোমাদের শৃঙ্গার হচ্ছে। তোমরা আবার আরেক জনকে করাচ্ছ - মানুষ থেকে দেবতা করার জন্য। এটা খুবই সহজ। কিন্তু মানুষের বুদ্ধি এত নিস্তেজ হয়ে গেছে যে কিছুই বোঝে না। সময় লাগে। তোমরা প্রদর্শনীতে সব কথা ব্যাখ্যা করো। যারা এসেছে, তাদের যে ভাবে বোঝান হয়েছে, সবই ড্রামা। চিন্তার কোন ব্যাপার নেই। বাচ্চারা বলে, বাবা কত মাথা ঠুকি (কঠোর প্রচেষ্টা), বেরোয় কোটির মধ্যে কেউ। সে তো হবে। তোমরা বলো পরমাত্মা হলেন বিন্দু। শাস্ত্রে এইরকম কোনো কথাই নেই, মানুষ তাই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। তোমরাও প্রথমে মানতে না। কারো তো বুঝতে দু' বছরও লেগে যায়। চলে যায় আবার আসে (জ্ঞান মার্গে)। এত সহজে ভক্তি ছাড়তে পারে না, সেই দিকেই টানতে থাকে । এও ড্রামার অঙ্গ । তোমরা ব্রাহ্মণরা ছাড়া আর কেউই তা জানে না। বিশ্বরূপ (বিরাট রূপ) দর্শনের অর্থও বুঝেছ তোমরা। এ সব হলই তোমাদের ডিগবাজি খেলা । তোমরা চক্রে ঘুরতে থাকো। একে বিরাট নাটক বলা হয়। এর জ্ঞানও তোমাদের আছে। লৌকিক কলেজে তো কত কিছুই পড়ানো হতে থাকে, সত্যযুগে এরকম হয় না। সাইন্স বৃদ্ধি হতে থাকে, ওতে বিনাশ হবে। যদিও এখন তোমরা বোঝাবে কিন্তু বিরলই কেউকে পাবে যে বলবে এটা তো খুব ভালো কথা। এ তো রোজই বোঝা উচিত। যতই কাজ থাকুক তবুও তোমরা বলবে - আমাদের তো বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধীকার অবশ্যই নিতে হবে। এ তো অপরিসীম, অগুণিত উপার্জন।
বাবা বলেন - বাচ্চারা, আমার বুদ্ধিতে সমগ্র বৃক্ষের (কল্প বৃক্ষের) নলেজ আছে, তাই তোমরাও এখন বুঝছ। বাবা যা বোঝান সেটা খুবই যথার্থ (এক্যুরেট)। একটা সেকেন্ড মেলে না দ্বিতীয় সেকেন্ডের সাথে, কতো সূক্ষ্ম ব্যাপার এ সব । তোমরা কতো চক্র ঘুরেছ, এই ড্রামা উকুনের মতো চলতে থাকে (ধীর চলন)। একটা চক্রই ঘুরতে ৫ হাজার বছর লাগে। এতে সমস্ত খেলা চলতে থাকে। তোমাদের এটাও জানতে হবে। সেখানে গরুও ফার্স্টক্লাস হবে। তোমাদের যেমন পদ, তেমন আসবাবপত্র, তেমন অট্টালিকা। অনেক আড়ম্বর থাকে। খুশীও আত্মারই হয়। আমাদের আত্মা তৃপ্ত হল। তৃপ্ত পরমাত্মা তো বলা হয় না। বলে তোমার আত্মা তৃপ্ত হল ? হ্যাঁ বাবা, তৃপ্ত হল। এই সব খেলা তো চলে এসেছে। বাবা যা বোঝান সেটাও হল ড্রামার খেলা। এখন বাবা তোমাদের পুর্নযৌবন (রিজুবিনেট) দেন। তোমাদের কায়া কল্প বৃক্ষ সম হয়ে যায়। নামই হল অমরলোক। আত্মাও অমর, মৃত্যু গ্রাস করতে পারে না। বাবা তোমাদের আত্মাদের সাথে কথা বলেন। অকাল আত্মা যে এই(ভ্রুকুটি) সিংহাসনে বসে আছে, তার সাথে কথা বলেন। আত্মা এই কান দ্বারা শোনে। আমাদের আত্মাদেরই বাবা পড়াতে আসেন। বাবার দৃষ্টি সর্বক্ষণ আত্মাদের উপর থাকে। তোমাদেরকেও বাবা বোঝান সর্বদা ভ্রাতৃত্ব পূর্ণ দৃষ্টি রাখো। আমার ভাই-এর সাথে আমি কথা বলছি। সে ক্ষেত্রে অপরাধমূলক (ক্রিমিনাল) দৃষ্টি যেন না হয়। খুব ভালো করে এই অভ্যাসের দরকার। আমরা হলাম আত্মা, আমরা এতো জন্ম নিয়ে ভূমিকা পালন করেছি। আমরা পূণ্য আত্মা ছিলাম। আমরাই পবিত্র আত্মা হয়েছি। সোনাতেও খাদ পড়ে। যে আত্মারা পরে আসবে তাকে কি বলবে। অল্প বিস্তর সোনার হবে। যদিও পবিত্র হয়ে যায়, কিন্তু পাওয়ার তো কম, তাই না! একটি বা দুটি জন্ম নিলে, এতে কি হবে।
বাবা যে মুরলী চালান সেটি হল খাজানা । যতক্ষণ বাবা দেন ততক্ষণ তোমরা বাবাকে স্মরণ করতে থাকো। স্মরণের দ্বারাই তোমরা এভার হেল্দি হও। চুপ(সাইলেন্সে থাকা) করে বসে থাকাতেও অনেক লাভ আছে। মন্মনাভব, এর অর্থও কেউ জানে না। বাবা-ই সব কথার অর্থ বোঝান। এখানে সব হল অনর্থ। সবচেয়ে বড় অনর্থ হয় একে অপরের উপর কাম কাটারি চালালে, যার কারণে আদি-মধ্য - অন্ত দুঃখ পায়। সবচেয়ে ঘৃণ্য হিংসা এখানে, সেইজন্য একে নরক বলা হয়। স্বর্গ আর নরকের অর্থও বোঝে না। ওখানে (স্বর্গে) হল নম্বর ওয়ান, নরক হল নম্বর লাস্ট। তোমরা জানো যে আমরা হলাম এই বিশ্ব নাটকের অ্যাক্টার্স। তোমরা "নেতি নেতি" (এটা জানিনা, ওটা জানিনা) - বলবে না। তোমরা শ্রীমতের দ্বারা কত সুন্দর চিত্র তৈরী করো, যা মানুষ দেখলেই খুশী হয়ে যায় আর সহজেই বুঝে যায়। এই চিত্র তৈরী করাও ড্রামাতে স্থির হয়ে আছে। শেষ পর্যন্ত তোমরা স্মরণ করতেই থাকবে। সৃষ্টি চক্রও বুদ্ধিতে চলে আসবে। নতুন দুনিয়া কে তৈরী করে আর পুরানো দুনিয়া কে তৈরী করে, এ সবই তোমরা জান। সতো রজো তমোতে সবাইকে আসতেই হয়। এখন হল কলিযুগ। এটা কারোর জানা নেই যে বাবা এসে স্বর্গের মালিক করবেন। করোরই বুদ্ধিতে আসে না। এখন তো তোমাদের সমস্ত সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের নলেজ আছে। রচয়িতা বাবা এতে (ব্রহ্মার ভ্রুকুটিতে) বসে বোঝাচ্ছেন যে আমি হলাম তোমাদের, অর্থাৎ আত্মাদের পিতা। অসীমের টিচার আমি । এই সঙ্গম যুগ হল পুরুষোত্তম যুগ। সত্যযুগ বা কলিযুগকে পুরুষোত্তম বলা হবে না। সঙ্গম-এর মধ্যেই তোমরা পুরুষোত্তম হয়ে ওঠো, যখন বাবা এসে রাজযোগ শেখাতে থাকেন। দিনে দিনে বাচ্চারা, তোমাদের বোঝানো খুব সহজ হবে। বৃক্ষের বৃদ্ধি হতে থাকবে। বহ্নির উপর অনেক পতঙ্গ আসতে থাকে সমর্পিত হতে। এরকম বাবাকে কে ছেড়ে যেতে চাইবে। বলবে বাবা ব্যস্, আমরা তো আপনার কাছেই বসে থাকব। এই সব কিছু হল আপনার। এমন বাবাকে আমরা কেন ছাড়ব? অনেকের মধ্যেই উদ্দীপনা আসে। বাবার থেকে বিশ্বের বাদশাহী প্রাপ্ত হয়, তো আমরা কেন ছেড়ে দিয়ে যাব? যেখানে আমরা স্বর্গে গিয়ে বসব। যেখানে কোনো কালও (অকাল মৃত্যু) আসতে পারে না, কিন্তু বাবার শ্রীমত নিতে হবে । বাবা বলবেন এরকম করতে নেই। উদ্যম তো আসবে কিন্তু ড্রামাতে এরকম নেই যে সবাই এখানে মধুবনে এসে বসে যাবে। বাচ্চাদের মধ্যে উদ্দীপনা জাগে, কারণ জানা আছে যে সব কিছু শেষ হয়ে যাবে। যার পার্ট আছে সে শুনতে থাকবে। বাবা বলেন তোমরা এল.এল.বি...আই.সি.এস পড়ে কি পাও ? কাল শরীর ছেড়ে দিলে কি প্রাপ্ত হবে ? কিছুই না। ওটা হল বিনাশী বিদ্যা আর এটা হল অবিনাশী বিদ্যা, যে অবিনাশী বিদ্যা বাবা দেন। টাইম আর অল্পই আছে । তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান তোমরা এই জন্মেই হয়ে ওঠো, আর সেটা স্মরণের দ্বারাই হবে। তাই দেহের সকল ধর্ম ছেড়ে একমাত্র আমাকে (মামেকম্) স্মরণ করো। শরীরের কোনো ভরসা নেই। এই পাঠ পড়তেও কারো কারো মৃত্যু হয় । তাই বাবার কাজ হল বোঝানো। ঐ পড়াতে কি উপার্জন আর এই পড়াতে কি উপার্জন, সে তো তোমরা জানোই। শিববাবার ভান্ডারা সর্বদা ভরপুর থাকে। এত সব বাচ্চারা প্রতিপালিত হয়, চিন্তার কিসের । না খেয়ে মরতে পারে না। লৌকিক বাবাও যখন দেখে বাচ্চা খেতে পাচ্ছে না তখন নিজেও খায় না। বাচ্চাদের দুঃখ বাবা সহ্য করতে পারেন না। প্রথমে বাচ্চা, পরে বাবা - মা সবার পরে খায়, বাসি, তলানি যা বেঁচে থাকে তা-ই খায় । আমাদের ভান্ডারাও ওরকম।আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ, ভালবাসা আর সুপ্রভাত। ঈশ্বরীয় পিতা ওঁনার ঈশ্বরীয় সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার:-
১. ভাই-ভাই এর দৃষ্টি পাক্কা করতে হবে। আমরা আত্মা, আত্মা ভাইয়ের সাথে কথা বলছি - এই অভ্যাস করে ক্রিমিনাল দৃষ্টিকে পরিবর্তন করতে হবে।
২. বাবা যখন জ্ঞানের খাজানা দেন, স্মরণে বসে বুদ্ধি রূপী ঝুলিতে সেই খাজানা ভরতে হবে। চুপ করে বসে অবিনাশী উপার্জন জমা করতে হবে।
বরদান:-
ত্রিকালদর্শীর আসনে(সিটে) স্থিত(সেট) হয়ে সমস্ত কর্ম করতে সক্ষম শক্তিশালী আত্মা ভব
যে বাচ্চারা ত্রিকালদর্শীর সিটে স্থিত হয়ে সব সময় সব কার্য করে, সে জানে যে পরিস্থিতি তো অনেক রকমের হয়ে থাকে আর হবেও, সেটা নিজের দ্বারাই হোক, বা অন্য কারোর দ্বারা, মায়ার দ্বারাই হোক কিম্বা প্রকৃতির দ্বারা, সমস্ত প্রকারেরই পরিস্থিতি আসবে। এসেছেও, কিন্তু স্ব-স্থিতি শক্তিশালী হলে পর-স্থিতি তার সামনে কিছুই না। শুধু প্রত্যেক কর্ম করার আগে তার আদি-মধ্য-অন্ত তিন কালকে চেক করে(মিলিয়ে নিয়ে) বুঝে নিয়ে তারপর যা কিছু করবে তা শক্তিশালী হয়ে পরিস্থিতিকে পার করে নেবে।
স্লোগান:-
সর্ব শক্তি সম্পন্ন এবং জ্ঞান সম্পন্ন হয়ে ওঠাই সঙ্গম যুগের প্রালব্ধ।