২৩-০৯-১৯ প্রাতঃমুরলি ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা :- জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র সর্বদা উন্মোচিত থাকলে খুশিতে রোমাঞ্চিত হয়ে যাবে, খুশির পারদ সর্বদা ঊর্ধ্বে থাকবে"

প্রশ্ন:-

এইসময় মানুষের দৃষ্টি খুবই দুর্বল হয়ে গেছে, এইজন্য তাদের বোঝানোর জন্য কেমন যুক্তি চাই ?

উত্তর:-

বাবা বলছেন, তাদের জন্য তোমরা এমন বড় বড় চিত্র বানাও যা তারা দূর থেকে দেখেই বুঝে যায়। এই গোলকের (সৃষ্টিচক্রের) চিত্র তো খুব বড় হওয়া চাই। এটা হচ্ছে অন্ধের সামনে আয়নার মতো*।

ওম শান্তি ।

কথিতও আছে - "বাবার থেকে এক সেকেন্ডে জীবন মুক্তি" । বাকিরা তো সব জীবনবন্ধ অবস্থায় থাকবে। এই ত্রিমূর্তি আর গোলকের চিত্র - এই দুটিই হল মুখ্য। চিত্রগুলি অনেক বড় বড় হওয়া চাই। অন্ধদের জন্য তো বড় বড় আয়নার দরকার, তাই না, যাতে তারা ভালভাবে দেখতে পাবে। এখন সকলেরই দৃষ্টি দুর্বল হয়ে গেছে, বুদ্ধিও লোপ পেয়েছে। বুদ্ধি বলা হয় তৃতীয় নেত্রকে। তোমাদের বুদ্ধিতে এখন খুশি বিরাজ করছে। খুশিতে যাদের রোমাঞ্চিত হয় না, শিব বাবাকে স্মরণ না করলে বলা যাবে, জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র অল্প খোলা আছে, দৃষ্টি ঘোলাটে। বাবা বোঝাচ্ছেন - কাউকে বোঝাতে হলে জ্ঞানের বিষয় খুব শর্টে বোঝাও। বড় বড় মেলা ইত্যাদি হয়। বাচ্চারা জানে সেবা করার জন্য বাস্তবে একটি চিত্রই যথেষ্ট। যদি গোলোকের চিত্রও হয়, তাহলেও কোন অসুবিধা নেই। বাবা - ড্রামা আর ঝাড়ের অথবা কল্পবৃক্ষের আর ৮৪ জন্মের চক্রের রহস্য বোঝাচ্ছেন । ব্রহ্মার দ্বারা শিববাবার এই উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। এটাও একদম পরিষ্কার। এই চিত্রটিতেই সকল জ্ঞানের সার আছে। আর অন্যান্য সব চিত্রের দরকারই নেই। এই দুই চিত্র অনেক বড় হবে আর বড় বড় অক্ষরে লেখাও থাকবে - "জীবনমুক্তি দান পরমপিতা পরমাত্মার জন্মসিদ্ধ অধিকার এবং তা বিনাশের আগেই পাওয়া যাবে"। বিনাশ তো অবশ্যই হবে। ড্রামার প্ল্যান অনুসারে সবাই তা বুঝে যাবে। তোমাদের বোঝানোর দরকার থাকবে না। অসীম জগতের পিতার থেকে অসীম জগতের এই উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। এটা তো অবশ্যই স্মরণে রাখা চাই। কিন্তু মায়া তোমাদেরকে ভুলিয়ে দেয়। সময়ও অতিবাহিত হয়ে চলেছে। গীতও আছে না - "অনেক গেছে, মাত্র অল্পই বাকি আছে"। এর অর্থ এই সময়কার-ই। বাকি অল্প সময়ই অবশিষ্ট রয়েছে। স্থাপনার কার্য হয়ে চলেছে। বিনাশের জন্য অল্প সময়েই অবশিষ্ট আছে। অল্পের থেকেও অল্প অবশিষ্ট থাকবে। ভাবো, তাহলে কি হবে ? এখনও তো কেউ অজ্ঞাননিদ্রা থেকে জাগরিত হচ্ছে না। অন্তিম সময় জাগরিত হবে। ধীরে ধীরে তাদের চোখ বড় বড় হবে । এটা স্থূল নেত্র নয়, বুদ্ধিরূপী নেত্র। ছোট ছোট চিত্রতে এত মজা আসে না। বড় বড় চিত্রের দরকার। বিজ্ঞানও অনেক সাহায্য করবে। বিনাশের সময় পঞ্চতত্ত্বও সাহায্য করবে। বিনা কড়ি ব্যয়ে তোমাদেরকে কত সাহায্য করবে। তোমাদের জন্য একদম সাফাই করে দেয়। এটা একদম নোংরা দুনিয়া। আজমিরে স্বর্গের নিদর্শন আছে। এই দিলওয়ারা মন্দিরে স্থাপনার নিদর্শন আছে। পূর্বে তোমাদের এসব কিছুই বোধগম্য ছিল না। এখন তোমরা বুঝতে পেরেছো। যদিও মানুষ বলে যে, - আমরা তো জানতামই না যে, বিনাশ হয়ে যাবে, বুঝতেই পারিনি। একটা গল্প আছে না, বাঘ এসেছে....... বাঘ এসেছে....। কেউ বিশ্বাস করতো না। একদিন সব গরুকে খেয়ে নিল। তোমরাও বলতে থাকো - এই পুরানো দুনিয়ার বিনাশ হলো বলে । অনেক সময় চলে গেছে...আর অল্পই অবশিষ্ট আছে।



এই সমস্ত জ্ঞান তোমাদের, অর্থাৎ বাচ্চাদের বুদ্ধিতে থাকতে হবে। আত্মাই ধারণা করে। বাবার আত্মার মধ্যেও জ্ঞান আছে। তিনি যখন শরীর ধারণ করেন তখন জ্ঞান শোনান। অবশ্যই তার মধ্যে অনেক জ্ঞান আছে, তবেই তো তাঁকে "জ্ঞানের সাগর", "গডফাদার" বলা হয়। তিনি সমগ্র সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তকে জানেন। নিজেকেও জানেন, আর সৃষ্টিচক্র কিভাবে পুনরাবৃত্তি হচ্ছে সেই জ্ঞানও তাঁর আছে। এইজন্য ইংরেজীতে 'নলেজফুল' কথাটি খুব সুন্দর বলা হয়েছে। মনুষ্য সৃষ্টিরূপী বৃক্ষের বীজরূপ, তাই তাঁর মধ্যে সমস্ত জ্ঞান আছে। তোমরা এটা জানো পুরুষার্থের ক্রমানুসারে। শিববাবা তো হলেনই নলেজফুল। এটা ভালোভাবে বুদ্ধিতে থাকা চাই। এইরকম নয় যে, সবার বুদ্ধিতেই একইরকম ধারণা হবে। হয়তো ডায়রিতেও লেখে, কিন্তু ধারণা কিছু নেই। নামমাত্র লেখে। কাউকে কিছুই বোঝাতে পারে না। শুধু কাগজকেই বলে। কাগজ কি করবে। কাগজ দেখে তো কেউ বুঝতে পারবে না। এই চিত্র দ্বারা ভালোভাবে বুঝতে পারবে। বড়োর থেকেও বড় জ্ঞান, তাই অক্ষরও বড় বড় হওয়া চাই। বড় বড় চিত্র দেখে মানুষ বুঝবে এর মধ্যে অবশ্যই কিছু সার আছে। স্থাপনা আর বিনাশও লেখা আছে। রাজধানী স্থাপনা, এটা হচ্ছে পরমপিতা পরমাত্মার জন্মগত অধিকার। প্রত্যেক বাচ্চারই অধিকার হলো জীবনমুক্তি লাভ করা। বাচ্চাদের বুদ্ধিতে থাকবে যে সবাই জীবনবন্ধতে আছে, সবাইকে জীবনবন্ধ থেকে জীবনমুক্তিতে কিভাবে নিয়ে যাওয়া হবে? প্রথমে শান্তিধামে যাবে, তারপর সুখধামে। সুখধামকে জীবনমুক্তি বলা হয়। এই চিত্র অনেক বড় হওয়া চাই। মুখ্য চিত্র এটাই, তাই না। অনেক বড় বড় অক্ষরে লেখাও থাকবে। তবে তো মানুষ বলবে বি.কে. -রা এত বড় চিত্র বানিয়েছে, অবশ্যই কিছু জ্ঞান আছে। তো যেখানে যেখানে এত বড় বড় চিত্র দেখবে, সেখানে জিজ্ঞাসা করবে- এটা কি ? বলো- এত বড় চিত্র আপনাদের বোঝানোর জন্যই করা হয়েছে। এখানে পরিষ্কার লেখা আছে - অসীম জগতের রাজ্যপদ এদেরই ছিল। এ তো কালকেরই কথা। আজ সেটা নেই, কেননা ৮৪ বার পুনর্জন্ম নিতে নিতে নিচে এসে গেছে। সতোপ্রধান থেকে তমোপ্রধান তো হতেই হবে। জ্ঞান আর ভক্তি, পূজ্য আর পূজারীর খেলা। অর্ধেক - অর্ধেক করে পুরো খেলা চলছে। তো এইরকম বড় বড় চিত্র বানানোর সাহস চাই। সেবা করার শখ চাই। দিল্লিতে তো প্রতিটি কোণায় কোণায় সেবা করা দরকার। মেলা প্রভৃতিতে তো অনেক মানুষ যায়। সেখানে তোমাদের এই চিত্র অনেক কাজে আসবে। ত্রিমূর্তি আর গোলোকের চিত্রই হলো মুখ্য। এটা খুব ভালো জিনিস। অন্ধের সামনে আয়নার সমান। অন্ধদের পড়ানো হয়ে থাকে। পড়াশোনা তো আত্মা করে। কিন্তু ছোট অবস্থায় আত্মার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছোট হয়। তাই তাদের পড়ানোর জন্য চিত্র ইত্যাদি দেখানো হয়। তারপর একটু বড় হলে তো পৃথিবীর ম্যাপ দেখানো হয়। তারপর সেই সমস্ত ম্যাপ (নকশা) বুদ্ধিতে ধারণ হয়ে যায়। এখন তোমাদের বুদ্ধিতে সমগ্র ড্রামার চক্র আছে, এতসব ধর্ম আছে। কিভাবে নাম্বার অনুসারে ওপর থেকে নামে, আবার চলেও যায়। সেখানে তো একটাই আদি সনাতন দেবীদেবতা ধর্ম হবে। যাকে স্বর্গ বলা হয়। বাবার সাথে যোগযুক্ত হলে আত্মা পতিত থেকে পবিত্র হয়ে যায়। ভারতের প্রাচীন যোগ প্রসিদ্ধ আছে। যোগ অর্থাৎ স্মরণ। বাবাও বলেন আমাকে অর্থাৎ বাবাকে স্মরণ করো। বাবাকে এটা বলতেই হয়। লৌকিক বাবাকে এটা বলতে হয় না যে, আমাকে স্মরণ করো। বাচ্চারা নিজে থেকেই বাবা-মাম্মা বলতে থাকে। সেটা হলো লৌকিক মাতা-পিতা, এটা হচ্ছে পারলৌকিক। গীত আছে - "তোমার কৃপাতে গহীন সুখ পাওয়া যায়..."। যার গভীর দুঃখ হয়, সে-ই তখন এই গীত গায় । সুখের সময় তো বলার দরকার হয় না। দুঃখ হলে তবেই ডাকে। এখন তোমরা বুঝে গেছো, ইনি মাতা-পিতা। বাবা বলেন যে, প্রতিদিন আমি তোমাদের গুপ্ত রহস্য শোনাই। আগে জানা ছিল কি যে, মাতা পিতা কাকে বলা হয় ? এখন তোমরা জেনে গেছো, পিতা তো তাঁকেই বলা হয়। পিতার থেকেই উত্তরাধিকার পাওয়া যায়, ব্রহ্মা বাবার মাধ্যমে (উত্তরাধিকার দেন শিব বাবা) । মাতাও চাই, কেননা বাচ্চাদেরকে দত্তক নিতে হয়। এসব কথা কেউই বুঝতে পারবে না। তাই বাবা বারবার বলেন, মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, বাবাকে স্মরণ করো। জীবনের লক্ষ্য প্রাপ্ত হয়েছে। এখন তোমরা যেখানেই যাও, যদি বিদেশেও যাও, সাত দিনের কোর্স তো করেছো, বাবার থেকে সত্যযুগের অবিনাশী উত্তরাধিকার তো নিয়েছো। স্মরণের যাত্রাতেই আত্মা পবিত্র হবে। স্বর্গের মালিক হবে, এই লক্ষ্য তো বুদ্ধিতে আছে ! তারপর তো যেখানে খুশি যাও। সমগ্র গীতার জ্ঞান এই ব্যাজে আছে। কাউকে জিজ্ঞাসা করারও দরকার নেই যে, কি করব ? বাবার থেকে স্বর্গের উত্তরাধিকার নিতে হলে, বাবাকে অবশ্যই স্মরণ করতে হবে। তোমরা অনেকবার বাবার থেকে এই উত্তরাধিকার নিয়েছো। ড্রামার চক্র পুনরাবৃত্তি হতেই থাকবে। অনেকবার তোমরা শিক্ষকের কাছ থেকে পড়ে কোনো না কোনো পদ প্রাপ্ত করেছো। পড়ার সময় বুদ্ধিযোগ শিক্ষকের সাথেই থাকে, তাইনা! পরীক্ষা ছোট হোক বা বড়, আত্মাই তো পড়ে। এঁনার আত্মাও এখন পড়ছে। শিক্ষককে আর লক্ষ্য-বস্তুকে স্মরণ করতে হবে। সৃষ্টিচক্রের জ্ঞান বুদ্ধিতে রাখতে হবে। বাবা আর সত্যযুগকে স্মরণ করতে হবে। দিব্যগুণ ধারণ করতে হবে। যত যত ধারণ করবে ততই উঁচু পদ পাবে। ভালো ভাবে স্মরণ করলে এখানে আসার কি দরকার থাকে ! তবুও সবাই আসে। এইরকম শ্রেষ্ঠ বাবা, যাঁর থেকে অসীম জগতের উত্তরাধিকার পাওয়া যায়, তার সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য আসে। মন্ত্র নিয়েই সবাই আসে। সবাই তো অত্যন্ত উঁচু মন্ত্র পেয়েছো। জ্ঞান তো সব ভালোভাবে বুদ্ধিতে আছে।



এখন তোমরা বাচ্চারা বুঝে গেছো যে, বিনাশী অর্থের জন্য বেশি সময় নষ্ট করার দরকার নেই। সেসব তো মাটিতে মিশে যাবে। বাবার কি কিছু চাই ? কিছুই চাইনা। যা কিছু খরচা ইত্যাদি তোমরা করো, তা তো নিজের জন্যই করো। জ্ঞানপ্রাপ্ত করার জন্য এক পয়সাও খরচ করতে হয় না। কোনো গোলাবারুদ, ট্যাঙ্ক ইত্যাদি কেনার দরকার তো নেই যুদ্ধ করবার জন্য। তোমাদের লড়াই চলছে, সমগ্র দুনিয়ার থেকে গুপ্ত ভাবে। তোমাদের লড়াই দেখো কেমন ! একে বলা হয় যোগবল। সমস্ত বিষয় গুপ্ত। এখানে কাউকে মারার দরকার নেই। তোমরা শুধু বাবাকে স্মরণ করো। তাদের সকলের মৃত্যু ড্রামাতে নির্ধারিত রয়েছে । প্রত্যেক ৫ হাজার বছর পর তোমরা যোগবল জমা করার জন্য এই পড়াশোনা করো। পড়াশোনা সম্পূর্ণ হলে পুনরায় প্রালব্ধ চাই নতুন দুনিয়ার জন্য। পুরানো দুনিয়ার জন্য রয়েছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়। গীতও আছে না - "নিজের কুলের বিনাশ কিভাবে করে...."। কত বড় কুল। এতে সমগ্র ইউরোপ এসে যাবে। এই ভারত তো আলাদা ভাবে অবস্থান করছে। বাকি সব শেষ হয়ে যাবে। যোগবলের দ্বারাই তোমরা সমগ্র বিশ্বের ওপর বিজয় প্রাপ্ত করবে। এই লক্ষ্মীনারায়ণের মতো পবিত্রও হতে হবে। সেখানে ক্রিমিনাল দৃষ্টি হবে না। পরবর্তীকালে তোমাদের অনেক সাক্ষাৎকার হবে। নিজেদের দেশের নিকটে আসতেই গাছপালা চোখে পড়তেই মন খুশিতে ভরে যায় । তোমরাও এখন নিজের ঘরের সামনে এসে পৌঁছেছো। তোমরাও ঘরে চলে যাবে। পুনরায় সুখধামে আসবে। আর অল্প সময় আছে। স্বর্গ থেকে বিদায় নিয়েছিলে, কত সময় অতিক্রান্ত হল ? এখন পুনরায় স্বর্গ নিকটে আসছে। তোমাদের বুদ্ধি উপরে চলে যায়। সেখানে হল নিরাকার দুনিয়া, যাকে ব্রহ্মাণ্ডও বলা হয়ে থাকে। আমি সেখানকার নিবাসী। এখানে তোমরা ৮৪ জন্ম ধরে তোমাদের কর্মফল অনুযায়ী ভূমিকা পালন করে চলেছো। এখন আমি ফিরে যাচ্ছি। তোমরা বাচ্চারা হলে অলরাউন্ডার (শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পার্ট) । শুরু থেকে সম্পূর্ণ ৮৪ বার জন্ম তোমরাই নিয়েছো। যারা দেরীতে আসে তাদের অলরাউন্ডার বলা যাবে না। বাবা বুঝিয়েছেন, সর্বাধিক এবং সর্বনিম্ন কতজন্ম নাও। সর্বনিম্ন এক জন্ম পর্যন্ত। বাকিরা সবাই পরমধাম ফিরে যাবে। নাটক সম্পূর্ণ হলেই খেলা শেষ। এখন বাবা বোঝাচ্ছেন, - "আমাকে স্মরণ করো। অন্তিম সময় যাকে মনে পড়বে সেই মতোই গতি হবে।" তোমরা বাবার কাছে পরমধামে চলে যাবে। তাকে মুক্তিধাম বা শান্তিধামও বলা হয়। তারপর এখানে হলো সুখ ধাম। এখন এটা দুঃখধাম। উপর থেকে প্রত্যেক আত্মাই সতোপ্রধান তারপর সতঃ-রজঃ-তমোতে আসে। *এক জন্ম হলেও এই চারটি পর্যায়ে জীবন অতিবাহিত করতে হবে*। বাবা কত সুন্দর করে বাচ্চাদেরকে বসে বোঝান, তবুও বাচ্চারা স্মরণ করে না। বাবাকে ভুলে যায়। নম্বরানুসারেই সব কিছু হয়, তাই না ! বাচ্চারা জানে যে, নম্বর ক্রমানুসারে পুরুষার্থ অনুযায়ী রুদ্র মালা তৈরি হয়। কতো কোটির মালা হয়। অসীম জগতের এই মালা। ব্রহ্মার থেকে বিষ্ণু, বিষ্ণুর থেকে ব্রহ্মা- দুজনেরই পদবী দেখো, এ হল প্রজাপিতা ব্রহ্মারই নাম। অর্ধকল্প পর আবার রাবণ আসে। দেবতা ধর্ম, তারপর ইসলাম ধর্ম.....। মানুষ আদম-বিবিকেও স্মরণ করো আবার প্যারাডাইসকেও (স্বর্গ) স্মরণ করে। ভারত স্বর্গ ছিলো, বাচ্চাদের তো অনেক খুশি হওয়া চাই। অসীম জগতের বাবা, উঁচুর থেকেও উঁচু ভগবান, উঁচুর থেকেও উঁচু জ্ঞান শোনান। উঁচুর থেকেও উঁচু পদ পাওয়া যায়। সবার থেকে উঁচু শিক্ষক হলেন - বাবা। তিনি শিক্ষক, আবার সদ্গুরু হয়ে সাথেও নিয়ে যাবেন। এইরকম বাবাকে, কেন স্মরণে থাকে না ? খুশির পারদ চড়তেই থাকবে। কিন্তু যুদ্ধের ময়দানে, মায়া চিন্তা করার সময় দেবে না। তোমরা বারবার হেরে যাও। বাবা তো বলেন, - বাচ্চারা, স্মরণের দ্বারাই তোমরা মায়াজিৎ হতে পারবে। আচ্ছা -



মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপ-দাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতার ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-

১. বাবা যা কিছু শেখাচ্ছেন তা ব্যবহারিক জীবনে প্রয়োগ করতে হবে। শুধু কাগজে নোট করলেই হবে না। বিনাশের আগে জীবনবন্ধ থেকে জীবনমুক্তি প্রাপ্ত করতে হবে।

২. বিনাশী ধন-সম্পদের পেছনে নিজের সময় অধিক ব্যয় ক'রো না, কেননা এসব তো মাটিতে মিশে যাবে। সেইজন্য অসীম জগতের বাবার থেকে অসীম জগতের উত্তরাধিকার নিতে হবে আর দিব্য গুণও ধারণ করতে হবে।

বরদান:-

অথরিটি হয়ে সময় মতো সর্বশক্তিগুলিকে কার্যে প্রয়োগ করে মাস্টার সর্বশক্তিমান ভব

সর্বশক্তিমান বাবার দ্বারা যে সকল শক্তিগুলি প্রাপ্ত হয়েছে, সেগুলি যেরকম পরিস্থিতি, যেরকম সময় আর যে বিধি দিয়ে তোমরা কার্যে লাগাতে চাও, সেরকম রূপেই এই শক্তিগুলি তোমাদের সহযোগী হয়ে যাবে। এই শক্তিগুলিকে বা প্রভু-বরদানকে যেরূপে চাও, সেই রূপে ধারণ করতে পারো। এক মুহূর্তের জন্য এখনই শীতলতার রূপে বা এখনই জ্বালা স্বরূপের অনুভব । কেবল সময় মতো তা কার্যে পরিণত করবার অথরিটি হও। এই সর্বশক্তি তো হল তোমাদের, অর্থাৎ মাস্টার সর্বশক্তিমানদের সেবাধারী ।

স্লোগান:-

স্ব-পুরুষার্থ বা বিশ্ব কল্যাণের কাজে সাহস থাকলেই সফলতা তো হয়েই আছে।