০১-০৮-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি বাপদাদা মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - এখন তোমাদের ঘরে ফিরে যেতে হবে, অতএব বাবাকে স্মরণ করে নিজেদের চরিত্র সংশোধনের জন্য পরিশ্রম (পুরুষার্থ) কর"
প্রশ্ন:-
কোন্ বিষয় তোমাদের অজ্ঞতার পথে ঘুম পাড়িয়ে রাখে ? এর ফলে কি ক্ষতি হয় ?
উত্তর:-
কল্পের আয়ু লক্ষ বছর বলা, এটাই অজ্ঞতার পথে ঘুম পাড়িয়ে রাখার বিষয় । এর ফলেই জ্ঞান চক্ষু বিহীন হয়ে পড়েছে। ওরা ভেবেছে আত্মাদের ঘর অনেক দূরে । বুদ্ধিতেও আছে এখনও লক্ষ বছর রয়েছে, এখানেই সুখ-দুঃখের পার্ট প্লে করতে হবে। সেইজন্যই পবিত্র হওয়ার জন্য পরিশ্রম করে না । তোমরা বাচ্চারা জান ঘর এখন অনেক কাছে । এখন আমাদের পরিশ্রম (পুরুষার্থ) করে কর্মাতীত হতে হবে ।
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চাদের বাবা এখন ঘরের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন । যদিও ভক্তি মার্গেও ঘরকে স্মরণ করে কিন্তু ওখানে কবে যেতে হবে, কিভাবে যেতে হবে, কিছুটা জানে না । কল্পের আয়ু লক্ষ বছর বলার কারণে ঘরও ভুলে গেছে । ওরা ভেবেছে লক্ষ বছর ধরে এখানেই পার্ট ( ভূমিকা পালন) প্লে করতে হয়, সুতরাং ঘরকে ভুলে যায় । এখন বাবা এসে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন ‐- বাচ্চারা, ঘর তো খুব কাছেই, এখন যাবে নিজেদের ঘরে ! আমি তো তোমাদের, অর্থাৎ বাচ্চাদের আহ্বান শুনে এসেছি । যাবে আমার সাথে ? কত সহজ বিষয়, ভক্তি মার্গে ওরা তো জানেই না কবে মুক্তিধামে যাবে । মুক্তিকেই ঘর বলে । লক্ষ বছর বলার কারণে সব ভুলে যায় । বাবাকেও ভুলে যায় ঘরকেও ভুলে যায় । লক্ষ বছর বলার জন্য অনেক পার্থক্য হয়ে যায়। এ যেন অজ্ঞতার অন্ধকারে ঘুমিয়ে থাকা। কারো বুদ্ধিতেই আসে না । ভক্তি মার্গেও ঘরকে কতদূর বলে থাকে । বাবা বলেন বাঃ মুক্তিধামে তো এখন যেতে হবে । লক্ষ বছর ধরে তোমরা ভক্তি করবে এমনটা তো হতে পারে না । তোমরা তো জানোই না ভক্তি কবে থেকে শুরু হয়েছে । লক্ষ বছরের হিসেব করার তো দরকার-ই নেই । বাবাকে আর ঘরকে ভুলে যাওয়া এটাও ড্রামায় নির্ধারিত। কিন্তু ওরা নাটককে অযথা অনেক দূর টেনে নিয়ে গেছে । এখন বাবা বলছেন ‐‐ বাচ্চারা, তোমাদের ঘর খুব কাছেই, এখন আমি এসেছি তোমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে । ঘরে ফিরে যেতে হবে, সেইজন্য তো পবিত্র অবশ্যই হতে হবে । গঙ্গা স্নান ইত্যাদি অনেক করেছ কিন্তু পবিত্র হতে পারনি, যদি পবিত্র হতে তবে ঘরে চলে যেতে। কিন্তু নিজ গৃহ কোথায় তা জানা ছিল না, পবিত্রতা - তাও জানা ছিল না । অর্ধ কল্প ধরে সবাই ভক্তি করে আসছে সেইজন্য ভক্তিকে ছাড়তেই চায় না । এখন বাবা বলছেন ভক্তি সম্পূর্ণ হয়েছে । ভক্তিতে অপার দুঃখ । এমনটা নয় যে তোমরা বাচ্চারা লক্ষ বছর ধরে দুঃখ দেখে এসেছ, লক্ষ বছরের কোনও প্রশ্নই নেই । প্রকৃত দুঃখ তো তোমরা কলিযুগেই ভুগেছ। যেহেতু অত্যধিক বিকারে পুঁতিগন্ধময় হয়ে গেছ । প্রথমে যখন রজোতে ছিলে, তখনও কিছু বোধ ছিল, কিন্তু এখন তো সম্পূর্ণ নির্বোধ হয়ে গেছ । এখন বাচ্চাদের বাবা বলছেন, সুখধামে যেতে চাও তো পবিত্র হও । জন্ম-জন্মান্তর ধরে যে পাপ মস্তকে সঞ্চিত হয়ে আছে, তাকে স্মরণ দ্বারাই মেটাতে হবে । স্মরণে অগাধ খুশি অনুভব হবে । যে বাবা তোমাদের অর্ধকল্পের জন্য সুখধামে নিয়ে যান, তাঁকেই স্মরণ করতে হবে । বাবা বলেন তোমাদের লক্ষ্মী-নারায়ণের মতো হতে গেলে প্রথমে পবিত্র হতে হবে আর চরিত্র সংশোধন করতে হবে । বিকারকে বলা হয় ভূত, লোভও কিছু কম বিকার নয় । এই বিকার বড় অশুদ্ধ । মানুষকে সম্পূর্ণ মলিন করে তোলে। লোভও অনেক পাপ করিয়ে থাকে । ৫ বিকার খুব শক্তিশালী ভূত, এইসব কিছু ছাড়তে হবে । লোভকে ত্যাগ করা যেমন কঠিন, তেমনি কাম বিকার ত্যাগ করাও কঠিন হয়ে পড়ে । মোহ ত্যাগ করাও যতটা কঠিন হয়ে যায় তেমনি কাম বাসনা ত্যাগ করাও কঠিন হয়ে যায়। ছাড়তেই চায় না । বাবা তোমাদের সমস্ত জীবন ব্যাখ্যা করেছেন তারপরও মোহের তার জুড়ে থাকে । ক্রোধ ত্যাগ করতেও মুশকিল হয়, বলে থাকে বাচ্চাদের প্রতি ক্রোধ হয় । শব্দ ও ক্রোধেরই বলে থাকে, তাইনা ! কিন্তু কোনও রকমের বিকার যেন না থাকে, এর উপর-ই বিজয়ী হতে হবে ।
*বাবা বলেন যতদিন আমি থাকব, ততদিন তোমরা পুরুষার্থ করতে থাক । বাবা কত বছর থাকবেন ? বাবা অনেক বছর ধরে বসে বোঝাচ্ছেন, অনেক সময় দিয়েছেন । সৃষ্টি চক্রকে জানা অনেক সহজ । ৭ দিনে সম্পূর্ণ জ্ঞান বুদ্ধিতে ধারণা হয়ে যায় । কিন্তু জন্ম-জন্মান্তরের পাপ নাশ করতেই সময় লেগে যায় । এটাই কঠিন । সেইজন্যই বাবা সময় দেন* । মায়ার খুব বেশী বিরোধিতা হতে থাকে, সব ভুল করিয়ে দেয় । এখানে যখন বসো, সম্পূর্ণ স্মরণে থাকো না, চতুর্দিকে বুদ্ধি ছুটে বেড়ায়, সেইজন্যই সময় দেওয়া হয়, পুরুষার্থ করে কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত করতে হবে । পড়াশোনা অনেক সহজ । বিচক্ষণ বাচ্চারা ৭ দিনে সম্পূর্ণ জ্ঞান রপ্ত করে বুঝতে পারে ৮৪ চক্র কিভাবে ঘোরে । পবিত্র হওয়াই পরিশ্রমের। এর জন্য কত হাঙ্গামা হয়, মানুষ বুঝেছে এটাই সঠিক এবং আমরাই গ্লানি করে বলেছি ব্রহ্মাকুমারীরা ভাই-বোন বানিয়ে দেয় । কিন্তু বিষয়টি প্রকৃতপক্ষে সঠিক । যতক্ষণ প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান না হচ্ছি পবিত্র কিভাবে থাকব, বিকারী দৃষ্টি থেকে সাম্য দৃষ্টি কিভাবে হবে । এই যুক্তি যথার্থ- আমরা ব্রহ্মা কুমার-কুমারীরা তো ভাই-বোন হয়ে গেছি । এর মাধ্যমে অনেক সহযোগ পাওয়া যায় । সাম্য দৃষ্টি তৈরি করতে । ব্রহ্মারও কর্তব্য আছে । ব্রহ্মা দ্বারাই দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা বা মানুষ থেকে দেবতা তৈরি করা ।
বাবা আসেন-ই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে । সুতরাং বোঝানোর জন্য বাবাকে কত পরিশ্রম করতে হয়, বাবার পরিচয় দেওয়ার জন্যই সেন্টার খোলা হয় । অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে অনন্ত ঈশ্বরীয় উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করতে হবে । ভগবান তো নিরাকার । কৃষ্ণ দেহধারী, ওনাকে ভগবান বলা যায় না । বলাও হয় ভগবান এসে ভক্তির ফল প্রদান করবেন, কিন্তু ভগবানের পরিচয় নেই । তোমরা কত বোঝাও তারপরও বুঝতে চায় না। দেহধারী পুনর্জন্মে তো অবশ্যই আসবে । ওনার কাছ থেকে তো উত্তরাধিকার প্রাপ্তি হবে না, আত্মারা একমাত্র পরমপিতা পরমাত্মার কাছ থেকেই উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করতে পারে । মানুষ মানুষকে মুক্তি দিতে পারে না । এই অবিনাশী উত্তরাধিকার গ্রহণ করার জন্য তোমরা বাচ্চারা পুরুষার্থ করছ । বাবাকে পাওয়ার জন্য তোমরা কত ছুটে বেড়িয়েছ। সবার প্রথমে তো শুধুমাত্র শিবের পূজা করতে, অন্যদিকে যেতে না । সেটা ছিল অব্যভিচারী ভক্তি, অন্য কোনও দেবতার মন্দির ইত্যাদি ছিল না । এখন তো অসংখ্য চিত্র, মন্দির ইত্যাদি তৈরি করে চলেছে । ভক্তি মার্গে তোমাদের কত পরিশ্রম করতে হয়। তোমরা জান শাস্ত্রে গতি-সদ্গতির পথ বলে দেওয়া হয়নি, সে তো একমাত্র বাবাই এসে বলে থাকেন । ভক্তি মার্গে কত মন্দির তৈরি করে, বাস্তবে মন্দির শুধুমাত্র দেবী-দেবতাদের জন্য, অন্য কোনো মানবের জন্য মন্দির নির্মাণ হয় না। কেননা মানব হল পতিত । পতিত মানব পবিত্র দেবতাদের পূজা করে থাকে । যদিও সে মানুষ কিন্তু তার মধ্যে দৈবীগুণ আছে, যাদের মধ্যে দৈবীগুণ নেই তারাই পূজা করে । তোমরা স্বয়ং-ই পূজ্য ছিলে, তারপর পূজারি হয়ে গেছ । *মানবকে ভক্তি (পূজা) করা অর্থাত্ ৫ তত্ত্বকে ভক্তি করা, শরীর তো ৫ তত্ত্ব দিয়েই তৈরি । বাচ্চাদের এখন মুক্তিধামে যেতে হবে, যার জন্য এতো ভক্তি করেছ । এখন আমি নিজে সঙ্গে করে তোমাদের নিয়ে যাব । তোমরা সত্যযুগে চলে যাবে । বাবা এসেছেন পতিত দুনিয়া থেকে পবিত্র দুনিয়াতে নিয়ে যেতে, পবিত্র দুনিয়া হল দুটি- মুক্তি আর জীবনমুক্তি । বাবা বলেন ‐‐ মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, আমি কল্পে কল্পে সঙ্গম যুগে আসি । তোমরা ভক্তি মার্গে কত দুঃখ ভোগ কর । গীতও আছে না -- চারদিক ঘুরেও হয়েছি অনেক দূরে ...... কার কাছ থেকে দূরে সরে গেছ ? বাবার কাছ থেকে । বাবাকে পাওয়ার জন্য জন্ম-জন্মান্তর ধরে ছুটে বেড়িয়েছ, তবুও বাবার কাছ থেকে দূরে সরে গেছ। সেইজন্যই আহ্বান করে বলে - হে পতিত-পাবন এসো, এসে আমাদের পবিত্র করে তোল । বাবা ছাড়া আর কেউ পবিত্র করে তুলতে পারে না । ৫ হাজার বছরের এই খেলা। ড্রামানুসারে প্রত্যেকে পুরুষার্থ করছে ঠিক যেমন কল্প পূর্বে করেছিল, সেই অনুযায়ী রাজধানী স্থাপন হচ্ছে । সবাই তো একইরকম ভাবে পড়াশোনা করবে না । এ হলো পাঠশালা, তাইনা ! রাজযোগ পঠন-পাঠন হয় । যারা দেবী-দেবতা ধর্মের হবে, তারাই আসবে । মূলবতনে যত সংখ্যক আত্মা ছিল, হুবহু তাই হবে । কম বা বেশি হবে না । নাটকে ভূমিকা পালনকারী কুশীলবরা সঠিক সংখ্যায় আছে, কিন্তু মানুষ বুঝতে পারে না । যত সংখ্যক ছিল তারাই এসে হুবহু তাদের ভূমিকা পালন করবে । তারপর তোমরা চলে যাবে নব নির্মিত দুনিয়ায় । অবশিষ্ট আত্মারা চলে যাবে তাদের ঘরে (পরমধাম) । এখন কেউ যদি গণনা করতে পারে তো করুক, বাবা তোমাদের এখন গভীর অন্তর্নিহিত পয়েন্টস বুঝিয়ে দিচ্ছেন । শুরুতে যেভাবে বুঝিয়েছিলেন আর এখন যেভাবে বোঝাচ্ছেন দুটোর মধ্যে কত পার্থক্য । পড়াশোনা করতে সময় দরকার । রাতারাতি কেউ আই.সি.এস হতে পারে না । নম্বরানুসারে পড়াশোনাকে রপ্ত করে থাকে । বাবা কত সহজভাবে বুঝিয়ে বলেন যাতে মানুষের বুদ্ধিতে সহজেই ধারণা হয় । প্রতিদিন নতুন নতুন পয়েন্টস ব্যাখ্যা করে থাকেন । এখন বাবা বলেন, আমি পতিত-পাবন বাবাকে তোমরা আহ্বান করেছ , আমি এসেছি সুতরাং তোমরা এখন পবিত্র হয়ে ওঠো না ! নিজেকে আত্মা মনে করে "মামেকম্ স্মরণ" করলে তোমরা সতোপ্রধান হতে পারবে । তারপর এখানে আসতে হবে ভূমিকা পালন করার জন্য । বাবা বলেন, আত্মা পতিত হয়ে গেছে, সেইজন্যই পতিত-পাবন বাবাকে স্মরণ করে পবিত্র হওয়ার জন্য । চমকপ্রদ বিষয় এই যে এতো ছোট্ট আত্মা কত ভূমিকা পালন করে, একেই বলে অলৌকিকতা, যা চোখে দেখা যায় না । কেউ বলে, আমি পরমাত্মার সাক্ষাৎ পেতে চাই। বাবা বলেন এত ছোট বিন্দুকে তুমি সাক্ষাৎ কিভাবে করবে । আমাকে জানা যায়, কিন্তু দেখা মুশকিল । আত্মা কর্মেন্দ্রিয় ধারণ করে পার্ট প্লে করার জন্য। কতো ভূমিকা পালন করে, এটাই আশ্চর্যজনক । আত্মা কখনোই এই অবিনাশী ড্রামার থেকে বেড়িয়ে পড়ে না । এই ড্রামা পূর্ব নির্ধারিত । কবে সৃষ্টি হয়েছিল -- এ জিজ্ঞাসা করতে পার না । একে অনাদি বলা হয় । মানুষকে জিজ্ঞাসা কর রাবণকে কবে থেকে জ্বালিয়ে আসছ ? শাস্ত্র কবে থেকে পড়ছ ? ওরা বলবে এ অনাদি। কারণ ওরা জানেই না, বিভ্রান্ত হয়ে গেছে, তাই না! বাবা বসে বোঝান, ঠিক যেভাবে বাচ্চাদের পড়াতে হয় । তোমরা জান আমরা সম্পূর্ণ অবুঝ ছিলাম, এখন তোমরা সীমাহীনকে জেনেছ । ওটা হলো হদের ( সীমিত) অধ্যয়ন, আর এ হল ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠন, যা অনন্ত অসীম । অর্ধকল্প হলো দিন, অর্ধকল্প হলো রাত । ২১ জন্ম তোমাদের কিঞ্চিত দুঃখও অনুভব হবে না । বলাও হয় - এক চুলও তোমাদের ফাঁদে ফেলতে পারবে না । কেউ তোমাদের দুঃখের কারণ হবে না । নাম-ই তার সুখধাম । এখানে তো সুখ-ই নেই । প্রধান বিষয়-ই হলো পবিত্রতা। ভালো চরিত্রবান বাচ্চাদের প্রতিটি বিষয় পরিষ্কার করে বোঝান হয় । লাভ - লোকসানের ব্যাপার আছে, তাইনা ! বাবা বলেন, এখন তো লাভের কোনও প্রশ্নই নেই । এখন তো শুধু ক্ষতি আর ক্ষতিই হবে । বিনাশের সময় এগিয়ে আসছে। ঐ সময় প্রত্যক্ষ হবে যে কি কি ঘটছে । অনাবৃষ্টিতে আনাজের মূল্য কত বৃদ্ধি পায়, যদিও বলে থাকে ৩ বছর পরে অনেক আনাজ (শস্য) চাষ হবে, তারপরও বাইরে থেকে আনাজ আমদানি করা হয়ে থাকে । এমন সময় আসবে যখন একটা দানাশস্যও জুটবে না । এমনই প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসবে, একেই বলে ঈশ্বরীয় দুর্যোগ । বৃষ্টির অভাবে দুর্ভিক্ষ অবশ্যই হবে । সমস্ত তত্ত্ব দুষিত হয়ে গেছে । অনেক জায়গায় বৃষ্টি-ই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে ।
তোমরা বাচ্চারা জান, বাবা আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম স্থাপনা করছেন । তোমাদের লক্ষ্যই হল নর থেকে নারায়ণ হওয়া । বাবা সেটাই করছেন । এই অনন্ত ঈশ্বরীয় পাঠ বাবাই এসে পড়ান । যে যেমন পড়াশোনা করবে, তেমনই উচ্চ পদ প্রাপ্ত করবে । বাবা তো পুরুষার্থ করান । পুরুষার্থ কম করলে পদও কম হয়ে যাবে । টীচার-ই তো স্টুডেন্টসদের বোঝাবেন, তাইনা । অন্য কাউকে যখন তোমাদের মতো তৈরি করবে, তখনই বোঝা যাবে ভালো করে পড়াশোনা করে অন্যদেরও পড়াশোনা করাচ্ছে । প্রধান বিষয়-ই হল স্মরণ, মাথায় অনেক পাপের বোঝা সঞ্চিত হয়ে আছে। আমাকে স্মরণ করলেই পাপ ভস্ম হবে । এ হলো আধ্যাত্মিক যাত্রা (রূহানী ) । ছোট বাচ্চাদেরও বলো - শিববাবাকে স্মরণ করো । ওদেরও অধিকার আছে, ওরা এটা বুঝতে পারবে না যে নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করতে হবে । তা নয়, শুধুমাত্র শিববাবাকেই স্মরণ কর। পরিশ্রম (প্রচেষ্টা) করলে ওদেরও কল্যাণ হতে পারে । আচ্ছা!
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১. নর থেকে নারায়ণ পদ প্রাপ্ত করার জন্য অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে অসীম, ঈশ্বরীয় পাঠ পড়ে, অন্যদেরও পড়াতে হবে । নিজ সম গড়ে তোলার সেবা করতে হবে ।
২. লোভ, মোহের যে তার জুড়ে আছে তাকে অপসারণ করার জন্য পরিশ্রম (পুরুষার্থ) করতে হবে । নিজের চরিত্র এমন ভাবেই সংশোধন করতে হবে যাতে কোনও রকম বিকার ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে ।
বরদান:-
নিজের রাজ্য অধিকারী বা পূজ্য স্বরূপের স্মৃতি দ্বারা দাতা হয়ে দান করতে সমর্থ সর্ব খাজানা (সম্পদ) সম্পন্ন ভব
সদা এই স্মৃতিতে থাকো যে, আমি পুণ্য আত্মা, অন্যদের দান প্রদানকারী দাতা, গ্রহীতা নই, দেবতা । যেমন বাবা তোমাদের সব নিজের থেকেই দিয়ে থাকেন, ঠিক তেমনই তোমাদেরও মাস্টার দাতা হয়ে দান করতে হবে, চাইবে না । নিজের রাজ্য অধিকারী বা পূজ্য স্বরূপের স্মৃতিতে থাকো । এখনও পর্যন্ত তোমাদের জড় চিত্রের কাছে গিয়ে ওরা প্রার্থনা (যাঞ্চা করে) করে। বলে থাকে আমাদের বাঁচাও । সুতরাং তোমরা হলে রক্ষাকারী । রক্ষা কর, রক্ষা কর বলার জন্য তোমরা নও । সুতরাং দাতা হওয়ার জন্য স্মরণ দ্বারা, সেবা দ্বারা, শুভ ভাবনা, শুভ কামনা দ্বারা সর্ব সম্পদে সম্পন্ন হয়ে ওঠো ।
স্লোগান:-
আচার - আচরণ আর চেহারার প্রসন্নতাই হলো আত্মিক (রুহানী) ব্যক্তিত্বের চিহ্ন ।