০৫-০৫-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ২৬-১১-৮৪ মধুবন


প্রকৃত সহযোগীই প্রকৃত যোগী

আজ, মিলনের জন্য বাচ্চাদের স্নেহের প্রতি লক্ষ্য করছেন বাবা l *এক বল, এক ভরসা'র* ছত্রছায়ায় থেকে মিলনের উদ্যম-উদ্দীপনার কারণে কোনও চাঞ্চল্য তাদের একাগ্রতাকে টলাতে পারে না l তারা সব বাধা, ক্লান্তির পথ পরিবর্তন করে স্নেহের সহজ রাস্তা অনুভব করে এখানে পৌঁছে গেছে l একেই বলা হয়ে থাকে, *বাচ্চাদের সাহসী পদক্ষেপে বাবা সহায় l* যেখানে সাহস আছে, সেখানে পরম আনন্দও আছে l সাহস না থাকলে অপার আনন্দও নেই l এইভাবে যে বাচ্চারা সদা সাহস এবং তুরীয় আনন্দ অক্ষুণ্ন রাখে, তারা একরসস্থিত হয়ে নম্বর ওয়ান অর্জন করে নেয় l যত কঠিন পরিস্থিতিই হোক, সাহস আর উল্লাসের পাখায় ভর করে সেকেন্ডে উড়তি কলার উঁচু স্থিতিতে সবচেয়ে বড় আর অতি কঠিন পরিস্থিতিকে তাদের ছোট আর সহজ অনুভব হবে, কারণ উড়তি কলার সামনে সেই সবকিছুই খেলার ছোট ছোট খেলনা অনুভূত হবে l যত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি প্রতীয়মান হোক, সেগুলো ভয়ঙ্করের বদলে স্বাভাবিক অনুভব হবে l যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতি দৃঢ়চেতা করে তুলবে l পীড়াদায়ক পরিস্থিতি তোমাদের সামনে এলেও খুশির দামামা মর্মপীড়ার কোন দৃশ্যের অবতারণা হতে দেবে না, বরং শান্তি আর শক্তি দ্বারা তোমরা অন্যদের দুঃখ যন্ত্রণার অগ্নিতে শীতল বারিসম সকলের সহযোগী হবে l এমন সময়ে আশাহত আত্মাদের সহযোগ দেওয়া আবশ্যক l এই সহযোগের দ্বারাই তারা শ্রেষ্ঠ যোগের অনুভব করবে l তোমাদের এই প্রকৃত সহযোগকে সকলেই প্রকৃত যোগীর সহযোগ বলে গ্রহণ করবে l আর এইরকমই হাহাকারের সময় "প্রকৃত সহযোগীই প্রকৃত যোগী", এই প্রত্যক্ষতার সাথে তাদের অনুশীলিত প্রত্যক্ষফলের প্রাপ্তির দ্বারাই জয়জয়কার হবে l এই সময়েরই গায়ন - "এক ফোঁটার পিয়াসী . . . " এই এক সেকেন্ডের শান্তি আর শক্তির অনুভূতি রুপী ফোঁটা আশাহত আত্মাদের তৃপ্তি তথা পূর্ণতার অনুভব করাবে l এইরকম সময়ে এক সেকেন্ডের প্রাপ্তি তাদের এমন অনুভব করাবে যেন এক সেকেন্ডে অনেক জন্মের পূর্ণতা এবং প্রাপ্তি হয়েছে l যতই হোক, যে আত্মা বহুকাল ধরে সেই এক সেকেন্ডের শক্তিশালী স্থিতির অনুশীলনে রত, শুধুমাত্র সেই আত্মা তৃষ্ণার্তের তৃষ্ণা নিবারণে সক্ষম হবে l এখন চেক কর, এইরকম দুঃখ বেদনা,পীড়াদায়ক ভয়ঙ্কর বায়ুমন্ডলের মধ্যে সেকেন্ডে মাস্টার বিধাতা, মাস্টার বরদাতা, মাস্টার সাগর হয়ে এইরকম শক্তিশালী স্থিতির অনুভব করাতে পারবে তোমরা? এইরকম সময়ে 'এটা কি হচ্ছে'? এই দেখতে বা শুনতে যদি নিজেদের ব্যস্ত করে রাখ, তাহলেও সহযোগী হতে পারবে না l এইসব দেখার বা শোনার সামান্যতম ইচ্ছা, সকলের ইচ্ছা পূরণ করার শক্তিশালী স্থিতি বানাতে দেবে না, সেইজন্য সদা নিজে অল্পকালের *ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যা'র* শক্তিশালী স্থিতির এখন থেকে নিরন্তর অভ্যাস কর l তাদের প্রতিটা সঙ্কল্পে, প্রতিটা শ্বাসে অখন্ড সেবাধারী, অখন্ড সহযোগী তথা যোগী হও l যেমন খন্ডিত মূর্তির কোন মূল্য নেই, পূজন যোগ্য হওয়ার অধিকার নেই, ঠিক তেমনই সেবাধারী বা যোগী যদি অখন্ডতায় ব্যাপৃত না থাকে, তাহলে এইরকম সময়ে আত্মাদের অধিকার প্রাপ্ত করানোর অধিকারী হতে পারবে না, সেইজন্য এইরকম শক্তিশালী সেবার সময় নিকটস্থ হচ্ছে l সময় ঘন্টা বাজাচ্ছে l ভক্ত যেমন নিজের ইষ্ট দেব-দেবীকে জাগাতে, শোয়াতে, ভোগ অর্পণ করতে ঘন্টা বজায়, একইভাবে, সময় এখন ঘন্টা বাজিয়ে ইষ্ট দেব-দেবীকে অ্যালার্ট করছে l তোমরা জেগেই আছ, কিন্তু পবিত্র প্রবৃত্তিতে অধিক বিজি হয়ে গেছ l তৃষ্ণার্ত আত্মাদের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য এবং সেকেন্ডে অনেক জন্মের প্রাপ্তি আনে এমন শক্তিশালী স্থিতির অভ্যাসে প্রস্তুত হওয়ার জন্যে *সময়* ঘন্টা বাজাচ্ছে l প্রত্যক্ষতার পর্দা খুলতে তোমরা সব সম্পন্ন বিশেষ ইষ্ট আত্মাদের *সময়* আহ্বান করছে l বুঝেছ ! সময়ের ঘন্টা তো তোমরা সবাই শুনেছ, তাই না! আচ্ছা -



এইভাবে যারা সব পরিস্থিতিকে উড়তি কলা দ্বারা সহজে পরাস্ত ক'রে, সেকেন্ডে বহুকালের প্রাপ্তি দ্বারা পূর্ণ তৃপ্ত করিয়ে, অখন্ড সেবাধারী, অখন্ড যোগী, সদা মাস্টার দাতা, বরদাতা স্বরূপ, সদা ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যা'র স্থিতিতে সকলের মনোবাঞ্ছা পূরণ করে, সেইরকম মাস্টার সর্বশক্তিমান সমর্থ বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l



*(কানপুরের সমাচার গঙ্গাবোন বাপদাদাকে শুনিয়েছেন)* - তুমি সদা অনড় এবং অচল আত্মা l সবরকম পরিস্থিতিতে তুমি বাবার সুরক্ষার ছত্রছায়ার অনুভাবী, তাই না ? বাপদাদা সবসময় বাচ্চাদের সেফ রাখেন l তুমি বাবার থেকে সেফ্টির উপকরণ (সাধন) লাভ কর l এই কারণে তোমার সাথে সদা বাবার স্নেহের হাত এবং তাঁর সাহচর্য থাকে l তুমি আগেই *নাথিং নিউ'* - এই অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে গেছ l যাই ঘটুক, সেটা নাথিং নিউ ! যা ঘটছে, সেটা নাথিং নিউ l নিজে থেকেই তুমি নিরন্তর টাচিং লাভ করছ l রিহার্সাল চলছে l এমন সময়ে সেফটি এবং সেবার কার্যাদি সাধন কি ? তোমার প্রতিচ্ছবি কি হবে ? এর জন্য রিহার্সাল হয় ! ফাইনালে হাহাকারের মাঝে জয়জয়কার হবে l *অতি'র* পরে অন্ত এবং নতুন যুগের সূচনা হবে l এমন সময় না চাইতেই সবার মন থেকে এই *প্রত্যক্ষতার ঢক্কা নিনাদ* বাজবে l দৃশ্য হবে স্পর্শকাতর, কিন্তু প্রত্যক্ষতার দামামা বাজবে l সুতরাং, তুমি রিহার্সালের ঊর্ধ্বে উঠে গেছ l বেফিকর (নিশ্চিন্ত ) বাদশাহ রূপে তুমি তোমার পার্ট প্লে করেছ l খুব ভালো করেছ l এখানে পৌছেছ, এটা তোমার স্নেহের প্রতিচ্ছবি l আচ্ছা - ভাবনা থেকে তো ভাবনামুক্ত হয়েছই l যা হয়েছে, বাহ্, বাহ্ ! এতেও কারও কারও কল্যাণই হবে, এইজন্য দহনেও কল্যাণ, সুতরাং রক্ষা পেলেও কল্যাণ l মর্মান্তিক যন্ত্রণাতেও বলবে না, হায়, আমি পুড়ে গেছি ! না ! এতেও কল্যাণ l রক্ষা পেলে যেমন বাহ্ বাহ্ কর, বলো বাহ্ বেঁচে গেছি, দগ্ধ হলেও সেইরকমই বলবে বাহ্ বাহ্ ! একেই বলা হয়, একরস স্থিতি অর্থাৎ একমনা ! অন্যকে বাঁচানো তোমার কর্তব্য, কিন্তু যা কিছু দাহ্য (জ্বলার) বস্তু সেটা তো জ্বলেই যাবে l এতেও অনেক হিসেবনিকেশ আছে l তোমরা তো বেফিকর বাদশাহ ! একের বিনিময়ে লক্ষ লাভ, এটা ব্রাহ্মণের স্লোগান l কিছুই যায়নি, বরং পেয়েছ, তাই তো বেফিকর বাদশাহ l সম্ভবত, ভালো কিছু পাওয়ার আছে, সেইজন্য দহন হওয়াও খেলা, রক্ষা পাওয়া- সেটাও খেলা l দুটোই খেলা l লোকে তো দেখবে যে তুমি কতখানি নিশ্চিন্ত বাদশাহ হয়েছ, পুড়ে যাচ্ছ, তখনও নিশ্চিন্ত বাদশাহ তুমি l কারণ তুমি সুরক্ষিত ছত্রছায়ায় আছ l সেইসব লোকে দুশ্চিন্তায় পড়ে, কি হবে, কিভাবে হবে, কোথা থেকে আমাদের খাবার জুটবে, কিভাবে চলবে ! সেখানে বাচ্চাদের এইরকম কোন চিন্তাই নেই l আচ্ছা !



তোমাকে তো এখন প্রস্তুতি নিতে হবে, তাই না ! নিজের যাওয়া সম্পর্কে ভেবনা, বরং সবাইকে তোমার সঙ্গে নিয়ে যাবে সেটাই ভাবো l সবাইকে সাক্ষাৎকার করিয়ে, পূর্ণ পরিতৃপ্ত করে প্রত্যক্ষতার দামামা বাজিয়ে তারপরে যাবে l তার আগে কেন যাবে ! তুমি তো বাবার সঙ্গে একসাথে যাবে l এই মানসিক ভক্তি, মানসিক পূজা, প্রেমপুষ্প - এই অন্তিম দৃশ্য অতি ওয়ান্ডারফুল (বিস্ময়কর) l অ্যাডভান্স পার্টিতে কার পার্ট আছে, সেটা আলাদা ব্যাপার ! যেমনই হোক, এই সীন দেখা তো অতি আবশ্যক l অর্পিত কর্মভার যারা সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন করেছে তারা সবকিছু করেছে, সেইজন্য বাবা অন্তে এসে সবকিছু করেছেন, তাই নয় কি ? সুতরাং, এই ওয়ান্ডারফুল সীন কেন না বাবার সঙ্গে দেখতে দেখতে তাঁর সাথে ফিরে যাও ! মাত্র কতিপয়েরই এই পার্ট আছে l সুতরাং, চলে যাওয়ার কোনও সঙ্কল্প কোরো না l যদি চলে যাও তো সেটাও ভালো, আর যদি থেকে যাও এখানে তাও ভালই l যদি একা যাও, তাহলেও অ্যাডভান্স পার্টিতে সেবা করতে হবে l অতএব, যেতে হবে ভেবো না, ভাবো যে তোমাকে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে l আচ্ছা - এও এক অনুভব যুক্ত হয়েছে l যা কিছু হয়, তার সাথে তোমার অনুভবের ডিগ্রি যোগ হয়ে যায় l ঠিক যেমন অন্যদের পঠন -পাঠনে বড় ডিগ্রি থাকে, তেমনই অনুভব করার অর্থ ডিগ্রি বেড়েছে l



*পার্টির সাথে সাক্ষাৎকারঃ -*



তোমরা সবাই নিজেদের স্বরাজ্য অধিকারী মনে কর ? সঙ্গমযুগে এখন স্বরাজ্য, বিশ্বরাজ্য ভবিষ্যতে থাকবে তোমাদের জন্যে l স্বরাজ্য অধিকারীই বিশ্বের রাজ্যের অধিকারী হয় l সদা নিজেকে স্বরাজ্য অধিকারী মনে করে স্থূল কর্মেন্দ্রিয়কে কর্মচারী হিসেবে নিজের অধিকারে চালনা কর, নাকি কখনো কোন কর্মেন্দ্রিয় রাজা হয়ে যায় ! তোমরা নিজেরাই রাজা নাকি কখনো কখনো কর্মেন্দ্রিয় রাজা হয়ে যায় ? কখনো কোন কর্মেন্দ্রিয় কৌশলে ভুল পথে চালিত করে না তো ? যদি কারও কাছে প্রতারিত হও, তবে দুঃখ নিয়েছ l ছলচাতুরিই দুঃখ বয়ে আনে l যেখানে ছলনা নেই, সেখানে দুঃখও নেই l সুতরা স্বরাজ্যের খুশিতে, নেশায়, শক্তিতে থাক তোমরা l স্বরাজ্যের নেশা তোমাদের উড়তি কলায় নিয়ে চলে l সীমিত পরিধির নেশা নৈতিক অবক্ষয়ের কারণ, কিন্তু এই অসীম নেশা অনুপম অলৌকিক নেশা যা সুখের প্রাপ্তিলাভে তোমাদের সমর্থ বানায় l সুতরাং প্রকৃত রাজ্য হলো রাজার, আর প্রজার রাজ্য চরম বিশৃঙ্খলার রাজ্য l আদি থেকে রাজ্য রাজাদেরই থেকেছে l এখন লাস্ট জন্মে প্রজার রাজ্য l সুতরাং, তোমরা সবাই এখন রাজ্য অধিকারী হয়ে গেছ l অনেক জন্ম ভিখারী হয়ে থেকেছো এখন ভিখারী থেকে অধিকারী হয়ে গেছ l বাপদাদা সর্বদা বলেন, বাচ্চারা খুশি থাক, সফল আর উন্নতিশীল হও l নিজেদের যত বেশি শ্রেষ্ঠ আত্মা মনে করে শ্রেষ্ঠ কর্ম, শ্রেষ্ঠ বোল, শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প করবে এই শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্পের সাথে ততই শ্রেষ্ঠ দুনিয়ার অধিকারী হয়ে যাবে l এই স্বরাজ্য তোমাদের জন্মসিদ্ধ অধিকার, এটাই জন্মের পর জন্ম ধরে তোমাদের অধিকারী হতে সমর্থ বানাবে l আচ্ছা l



*অব্যক্ত বাপদাদার প্রেরণাদায়ক অমূল্য মহাবাক্য*

*১) সকলেই একটা বিষয়ের জন্য প্রতীক্ষা করছে, সেটা কি ?* প্রারম্ভে যে ধাঁধা ছিল, আমি কে ? সেটাই লাস্ট পর্যন্ত থাকবে l জানার জন্য সবাই প্রতীক্ষা করছে, ভবিষ্যতে আমি কে, অথবা মালাতে আমি কোথায় ? এই প্রতীক্ষা কবে শেষ হবে ? সবাই একে অপরের সঙ্গে আন্তরিক বার্তালাপ (রূহরিহান) করে কে ৮-এ থাকবে কে ১০০-তে থাকবে ! ১৬০০০ সম্পর্কে তো কোন কোশ্চেন নেই ! পরিশেষে এটাই যে আটে কে আর একশ'তে কে ! বিদেশিরা ভাবে, আমরা কোন্ মালায় থাকব ! যারা শুরুতে এসেছিল, তারা আবার ভাবে, 'লাস্টে যারা এসেছে তারা ফাস্ট যাচ্ছে l' আমরা জানিনা আমাদের স্থান আছে নাকি যারা শেষে এসেছে তাদের ! চূড়ান্ত হিসেব কি ? বই তো বাবার কাছে, তাই না? এখনো ফিক্সড কিছু হয়নি l তোমরা যখন আর্ট কম্পিটিশনে ছিলে, তখন ছবি কিভাবে পছন্দ করেছ? প্রথমে কিছু ছবি আলাদা করে বেছে নিয়ে, তারপরে তার থেকে ফার্স্ট, সেকেন্ড, থার্ড নম্বর দিয়েছ l প্রথমে মনোনয়ন করতে হয় তারপরে নম্বরানুক্রমে ফিক্স হয় l সুতরাং, এখন তারা মনোনীত হয়েছে, কিন্তু এখনো ফিক্স হয়নি l যারা শেষে আসে তাদের কি হবে ? সবসময়ই কিছু সীটস্ শেষ পর্যন্ত থাকে l এমনকি যখন রিজার্ভেশন চার্ট তৈরি হয়, সেখানেও লাস্ট মুহূর্ত পর্যন্ত কিছু কোটা রাখা হয়, কিন্তু

সেই কোটায় কিছুসংখ্যক, এবং সেই কিছুসংখ্যকের মধ্যে থেকে মাত্র কয়েকেরই প্রাপ্তি হয় l



আচ্ছা তোমরা সবাই কোন্ মালায় আছ ? নিজের মধ্যে আশা রাখ l কোনো না কোনো এমন ওয়ান্ডারফুল ব্যাপার হবে, যার আধারে তোমাদের সকলের আশা পূরণ হয়ে যাবে l অষ্ট রত্নের বিশেষত্ব এক বিশেষ বিষয়ের ওপর নির্ভর করে l অষ্ট রত্নের প্র্যাকটিক্যালি স্মারকচিহ্ন আছে, সুতরাং অষ্ট শক্তির সব শক্তি তাদের জীবনে প্র্যাকটিক্যালি দৃশ্যগোচর হবে l যদি একটা শক্তিও প্র্যাকটিক্যাল জীবনে কম দৃশ্যমান হয়, তবে যেমন মূর্তির একটা হাত ক্ষতিগ্রস্ত হলে পূজন যোগ্য হয় না, ঠিক সেরকমই একটা শক্তিও যদি কম দৃশ্যমান হয় তবে অষ্ট দেবতাদের লিস্টে ফিক্সড তা' এখনও বলা হবে না l দ্বিতীয়তঃ, অষ্ট দেবতাকে ভক্তদের বিশেষ ইষ্ট রূপে মানা হয়ে থাকে l ইষ্ট অর্থাৎ মহান পূজ্য l ইষ্ট দ্বারা ভক্তদের সর্বপ্রকার বিধি আর সিদ্ধি প্রাপ্ত হয় l এখানেও, যারা বিশেষ রত্ন হবে তারা সমগ্র ব্রাহ্মণ পরিবারের সামনে বিশেষ ইষ্ট অর্থাৎ প্রতিটা সঙ্কল্প আর আচরণ দ্বারা বিধি আর সিদ্ধির যারা মার্গ দর্শায়, এখনও তাদের সকলের সামনে সেইরকম মহান মূর্ত হিসেবে মান্য করবে l সুতরাং তাদের অষ্ট শক্তিও থাকবে আর পরিবারের সামনে ইষ্ট অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ আত্মা, মহান আত্মা, বরদানী আত্মার অবতার রূপে প্রতিভাত হবে l এটাই অষ্ট রত্নের বিশেষত্ব l আচ্ছা l



*২) দুনিয়ার ভাইব্রেশন দ্বারা অথবা সেফ থাকার সাধন-* সদা *এক বাবা দ্বিতীয় কেউ নয়* , যে এই গভীর বিশ্বাসে নিবিষ্টচিত্তে মগ্ন থাকে, সে মায়ার সবরকম আঘাত থেকে নিরাপদে থাকে l যেমন, যখন যুদ্ধের সময় বম্ব নিক্ষেপ করা হলে সবাই আন্ডারগ্রাউন্ড হয়ে যায়, আর তখন তাদের ওপর কোনো রকম প্রভাব পড়ে না, ঠিক একইভাবে, যখন তুমি একের গভীরে নিমগ্ন হও, তখন দুনিয়ার ভাইব্রেশন এবং মায়ার থেকে সুরক্ষিত থাকবে, সদা সেফ থাকবে l মায়ার সাহস হবে না আঘাত করার l বাবার প্রতি ভালবাসায় মগ্ন হয়ে যাও l



*৩) বাবার নিকটবর্তী হওয়া রত্নদের লক্ষণ -* যারা বাবার নিকটবর্তী তারা বাবার সত্য সঙ্গের রঙে রঙিন হয়ে থাকবে l সত্য সঙ্গের রঙ হলো রূহানিয়ত l সুতরাং, নিকটস্থ রত্নসমূহ রূহানী স্থিতিতে সবসময় স্থিত থাকবে l শরীরে থেকেও তারা স্বতন্ত্র, রূহানিয়তে স্থিত থাকবে l শরীর দেখেও তাদের দেখবে না, বরং আত্মা যা দৃশ্যগোচর নয়, তাই প্রত্যক্ষ হবে, এটাই তো চমৎকার ! যারা রূহানী নেশায় স্থিত, শুধুমাত্র তারাই বাবাকে তাদের সঙ্গী বানাতে পারে, কারণ বাবা হলেন রূহ্ অর্থাৎ আত্মা l



*৪) পুরানো দুনিয়ার সর্ব আকর্ষণের ঊর্ধ্বে থাকার যুক্তি-* সদাসর্বদা এই নেশাতে থাক যে আমরা অবিনাশী ধনভাণ্ডারের মালিক l বাবার ভাণ্ডার যা কিনা জ্ঞান, সুখ-শান্তি, আনন্দ - সেই সব গুণই আমাদের l বাচ্চা স্বতঃই বাবার প্রপার্টির মালিক হয় l অধিকারী আত্মার নিজের অধিকারের নেশা থাকে এবং সেই নেশায় সে সব কিছু ভুলে যায়, তাই না ! তার কোনকিছুর স্মৃতি থাকে না l শুধু একটাই স্মৃতি থাকতে দাও, বাবা আর আমি এই স্মৃতি দ্বারা অটোমেটিক্যালি পুরানো দুনিয়ার আকর্ষণের ঊর্ধ্বে চলে যাব l যারা সবসময় তাদের নেশা অক্ষুণ্ন রাখে, তাদের সামনে লক্ষ্য অতি স্পষ্ট প্রতীয়মান হবে l লক্ষ্য, ফরিস্তা ভাব আর দেবতা ভাবের প্রকাশ l



*এক সেকেন্ডের ওয়ান্ডারফুল খেলা, যার দ্বারা তোমরা পাস উইথ অনার হতে পার-* এক সেকেন্ডের খেলা হলো শরীরে আসা আর পরমুহূর্তে অব্যক্ত স্থিতিতে স্থির হওয়া l এই এক সেকেন্ডের খেলার অভ্যাস আছে তোমাদের ? তোমরা যখন যেমন চাও, সেই স্থিতিতে নিজেকে স্থির রাখতে পার l অন্তিম পেপার এক সেকেন্ডেরই হবে l যারা এই এক সেকেন্ডের অস্থিরতায় আসে তারা অকৃতকার্য হয়, যারা অনড় থাকে তারা পাস হয়ে যায় l এইরকম কন্ট্রোলিং পাওয়ার আছে ? এখন এইরকম অভ্যাস তীব্রগতিতে হওয়া প্রয়োজন l পরিস্থিতি যত অশান্ত, সেই অনুপাতে তোমাদের স্থিতি অতি শান্ত হবে l যেমন সাগরের গর্জন বাইরে শোনা গেলেও অভ্যন্তরে সাগর শান্ত l এইরকম অভ্যাস প্রয়োজন l যাদের কন্ট্রোলিং পাওয়ার আছে শুধুমাত্র তারাই দুনিয়াকে কন্ট্রোল করতে পারবে l যারা নিজেদের কন্ট্রোল করতে অপারগ, তারা বিশ্বরাজ্য কিভাবে শাসন করবে ? গুটিয়ে নেওয়ার শক্তি প্রয়োজন l এক সেকেন্ডে বিস্তার থেকে সার অংশে যাও আর এক সেকেন্ডে সারাংশ থেকে বিস্তারে চলে এসো এটাই ওয়ান্ডারফুল গেম l



*অতীন্দ্রিয় সুখের দোলায় দুলতে থাক-* সকল আত্মা তোমাদেরকে সুখে দুলতে দেখে দুঃখী থেকে সুখী হয়ে যাবে l তোমাদের নয়ন, মুখ, চেহারা সব যেন সুখ দেয়, এইরকম সুখদায়ী হও l যারা এমন সুখদায়ী হয়, তারা সঙ্কল্পেও কখনো দুঃখের তরঙ্গ অনুভব করে না l

বরদান:-

মন-বুদ্ধির একাগ্রতা দ্বারা সর্বসিদ্ধি প্রাপ্ত করে সদা সমর্থ আত্মা ভব

সর্বসিদ্ধি প্রাপ্ত করার জন্য একাগ্রতার শক্তি বাড়াও l একাগ্রতার এই শক্তি সহজে বিঘ্নমুক্ত করে, পরিশ্রম করার কোন আবশ্যকতা থাকে না l এক বাবা দ্বিতীয় কেউ নয় - এটা সহজে অনুভূত হয় এবং তোমাদের স্থিতি সহজে একরস স্থিতি হয়ে যায় অর্থাৎ একের গভীরে নিমজ্জিত হওয়া সহজ হয়ে যায় l সকলের প্রতি কল্যাণের বৃত্তি, ভ্রাতৃভাবের দৃষ্টি থাকে l কিন্তু একাগ্র হওয়ার জন্য এতটাই সমর্থ হও যাতে মন-বুদ্ধি সদা তোমাদের অর্ডার অনুসারে কাজ করে l স্বপ্নেও সেকেন্ড মাত্র চঞ্চলতা যেন না হয় l

স্লোগান:-

কমল পুষ্পসম বৈশিষ্ট্যপূর্ণ (পৃথক) হলে ঈশ্বরীয় ভালোবাসার যোগ্য হবে l