০৬-১০-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ১৮-০২-৮৫ মধুবন


সঙ্গমযুগ তন, মন, ধন আর সময় কালোপযোগী (সফল) করার যুগ

আজ বিশ্ব কল্যাণকারী বাবা নিজের সহযোগী বাচ্চাদের দেখছেন l প্রত্যেক বাচ্চার হৃদয়ে বাবাকে প্রত্যক্ষ করার গভীর আকাঙ্ক্ষা আছে l সকলের একই শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প এবং সকলে উৎসাহ-উদ্যমের সাথে এই কার্যে যুক্ত হয়ে আছে l এক বাবার প্রতি একমনা হওয়ার কারণে সেবার জন্যও একাগ্রতা আছে l দিন-রাত তাদের সাকার কর্মে বা স্বপ্নেও তারা শুধু বাবা আর সেবা দেখে, বাবা সেবা করতে ভালোবাসেন, সেইজন্য স্নেহী সহযোগী বাচ্চারাও সেবা করতে ভালোবাসে l এটা স্নেহের প্রমাণ অর্থাৎ স্নেহের বাহ্যিক প্রকাশ l এইরকম সহযোগী বাচ্চাদের দেখে বাপদাদাও পুলকিত হন l নিজেদের তন-মন-ধন, সময় কত ভালোবাসার সাথে সময়োপযোগী করে তুলছ তোমরা ! পাপের খাতা বদল করে তোমরা পুণ্যের খাতায় বর্তমানও শ্রেষ্ঠ বানাচ্ছ এবং ভবিষ্যতের জন্যও জমা করছ l সঙ্গমযুগ তো একের লক্ষ-কোটি গুণ জমা করারই যুগ l তন সেবায় নিয়োজিত করে ২১ জন্মের জন্য সম্পূৰ্ণ নিরোগী তন প্রাপ্ত কর l যেকোনো রকম দুর্বল তন হোক, রোগ হোক কিম্বা বচন-কর্মে সেবায় অপারগ হলেও অন্ততঃ মন্সা সেবা অন্তিম মুহূর্ত পর্যন্ত করতে পার l নিজেদের অতীন্দ্রিয় সুখ তোমাদের চেহারা এবং নয়নের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ করাতে পার, যাতে তোমার সম্পর্কে থাকা লোকে তোমাকে দেখে বলে, ইনি তো ওয়ান্ডারফুল পেশেন্ট ! এমনকি, ডাক্তারও যেন পেশেন্টকে দেখে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে l সাধারণতঃ, ডাক্তার পেশেন্টকে খুশি দেয় এবং পেশেন্টকে খুশি দেওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু দেওয়ার বদলে ডাক্তারকে সেটা নেওয়ার অনুভব করতে দাও l যত অসুস্থই হও, যদি দিব্য বুদ্ধি অনাময় বা পরিষ্কার হয়, তবে অন্তিম মুহূর্ত পর্যন্ত সেবা করায় তোমরা সমর্থ। কারণ তোমরা জান যে, এই তনের সেবা দ্বারা সেবার ফল ২১ জন্ম ধরে খেতে থাকবে l যেমন তোমরা তন দ্বারা কর, সেইভাবেই তোমরা মন দ্বারা সদা মনে স্বয়ং শান্তিস্বরূপ হয়ে, প্রতিটা সঙ্কল্পে সদা শক্তিশালী হয়ে, শুভ কামনা শুভ ভাবনার দাতা হয়ে সুখ-শান্তির শক্তির কিরণ বায়ুমন্ডলে ছড়িয়ে দিতে থাক l যখন তোমাদের রচনা সূর্য চারিদিকে প্রকাশের কিরণ ছড়াতে থাকে তো তোমরা সব মাস্টার রচয়িতা, মাস্টার সর্বশক্তিমান, বিধাতা, বরদাতা, ভাগ্যবান প্রাপ্তির কিরণ ছড়াতে পার না ? সঙ্কল্প শক্তি অর্থাৎ মন দ্বারা একস্থানে থেকেও চারিদিকে ভাইব্রেশন দ্বারা বায়ুমন্ডল বানাতে পার l অল্প সময়ের এই জন্মে মন দ্বারা সেবা করায় ২১ জন্ম মন সদা সুখ-শান্তির আনন্দে ভরে থাকবে l তারপরে, অন্যদের জন্য অর্ধেক কল্প ভক্তি দ্বারা, তোমাদের চিত্র দ্বারা মনের শান্তি দেওয়ার নিমিত্ত হবে l এমনকি, চিত্রও এমন হবে যে তাদের অনেক শান্তি এবং শক্তি দেবে l সুতরাং, তোমাদের এক জন্মের মনের সেবা দ্বারা সারা কল্পের জন্য, হয় চৈতন্য স্বরূপ দ্বারা অথবা চিত্রের মাধ্যমে তোমরা শান্তির প্রতিমূর্তি হবে l



একইভাবে, যারা ধন দ্বারা সেবার নিমিত্ত হয় তারা ২১ জন্ম অগুনতি ধনের মালিক হয়ে যায় l সেই সঙ্গে দ্বাপর থেকে এখন পর্যন্ত এইরকম আত্মা কখনও ধনের ভিখারী হবে না l ২১ জন্ম রাজ্যভাগ্য লাভ করবে এবং সেই ধন ধূলিসম হবে অর্থাৎ সেই ধন অনেক সহজে তারা প্রাপ্ত করবে l তোমাদের প্রজারও প্রজা অর্থাৎ প্রজার সেবকও অগুনতি ধনের মালিক হবে, যার জন্য তারা তাদের ৬৩ জন্মের কোনও জন্মে ধনের ভিখারী হবে না l মহা আনন্দে ডাল-রুটি খেতে পাবে l কখনও রুটির জন্য তাদের ভিক্ষা করতে হবে না l সুতরাং, এই এক জন্ম দাতার জন্য তোমাদের ধন কার্যকর করলে দাতা কি করবেন ? সেবাতে লাগাবেন l তোমরা তো বাবার ভাণ্ডারে দাও, না ? আর বাবা আবার সেটা সেবাতে লাগান l সুতরাং সেবার্থে বা দাতার জন্য ধননিয়োগ অর্থাৎ পুরো কল্প ভিখারী ভাব থেকে রক্ষা পাওয়া l এখন যতবেশি ধন কার্যকর করবে দ্বাপর থেকে কলিযুগ পর্যন্ত ততই আরামে খেতে থাকবে l অতএব, তন-মন-ধন, সময় কার্যকরী করে তুলতে হবে অর্থাৎ সফল করতে হবে l



যারা তাদের সময়, সেবায় নিয়োজিত করে সৃষ্টি চক্রের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সময় সত্যযুগে তারা প্রথমে আসে l তারা যেমন সতোপ্রধান যুগে আসে, ভক্তরা যে সময়ের গায়ন এখনও অব্যাহত রেখেছে l তারা স্বর্গের গায়ন করে, করে না ? সুতরাং যখন তারা সতোপ্রধান সময়ে আসে, তারা ১-১-১ এর সময়ে আসে অর্থাৎ সত্যযুগের প্রথম জন্মে তারা আসে l এইরকম শ্রেষ্ঠ সময়ের অধিকার নিয়ে, প্রথম নম্বর আত্মার সাথে তাদের জীবনকাল অতিবাহিত করবে l তারা এমন আত্মার সাথে পড়বে, খেলবে, ঘুরে বেড়াবে l সুতরাং, যারা সঙ্গমে সময়কে সফল করে তাদের সম্পূৰ্ণ, সোনালী, সুন্দর সময়ের অধিকার প্রাপ্ত হয় l

যদি তোমরা তোমাদের সময় কার্যকরী করে তুলতে অমনোযোগী হও, তবে প্রথম নম্বর আত্মা অর্থাৎ স্বর্গের প্রথম বর্ষে শ্রীকৃষ্ণের সাথে আসার পরিবর্তে পরে নম্বর অনুক্রমে অনুবর্তী হবে l এটাই সময়কে কার্যকরী করার মহত্ত্ব l কি দাও আর কি নাও তোমরা ? অতএব, সবসময় চারটি বিষয়ের চেক কর, তন-মন-ধন, সময় - এই চারটিই কি তোমরা যতটা উপযোগী করতে পার ততটা করছ ? এমন তো নয় যে যতটা করতে পার ততটা কার্যে লাগাচ্ছ না ! যথাশক্তি অনুযায়ী উপযোগী বানালে প্রাপ্তিও যোগ্যতা অনুযায়ীই হবে l সম্পূৰ্ণ হবে না l তোমরা ব্রাহ্মণ আত্মারা বার্তারূপে সবাইকে কি বলো ? সম্পূর্ণ সুখ শান্তি তোমাদের জন্মসিদ্ধ অধিকার l এটা তো বলনা যে যথাশক্তি অনুযায়ী তোমাদের অধিকার l সম্পূৰ্ণ অধিকারই বলো, তাই না l যখন সম্পূৰ্ণ অধিকার তোমাদের আছে, তখন সম্পূৰ্ণ প্রাপ্তি করাই ব্রাহ্মণ জীবন l অসম্পূর্ণ তো ক্ষত্রিয় l চন্দ্রবংশী অর্ধপথে আসে, তাই তো ! সুতরাং যথাশক্তি অর্থাৎ অসম্পূর্ণ ভাব এবং ব্রাহ্মণ জীবন অর্থাৎ সব বিষয়ে সম্পূৰ্ণ l সুতরাং বুঝেছ তোমরা ? বাপদাদা বাচ্চাদের সহযোগ দেওয়ার চার্ট দেখছিলেন l সহযোগী সবাই l যখন সহযোগী হয়েছ তখন সহজ যোগীও হয়েছ l তোমরা সবাই সহযোগী, সহজ যোগী, শ্রেষ্ঠ আত্মা l বাপদাদা প্রত্যেক বাচ্চাকে সম্পূৰ্ণ অধিকারী বাচ্চা তৈরি করেন l তাহলে তোমরা যথাশক্তি কেন হও ? নাকি মনে কর কেউ কেউই তো তেমন হবে ! অনেকেই সেইরকম হতে চলেছে l তোমরা কি তা' নও ? সম্পূৰ্ণ অধিকার পাওয়ার এখনও সময় আছে l তোমাদের বলা হয়েছিল; না - *টু লেট*- এর বোর্ড এখনও লাগানো হয়নি l যারা লেট এসেছে অর্থাৎ যারা পরে এসেছে তারা এগিয়ে যেতে পারে, সেইজন্য এখনও গোল্ডেন চান্স আছে l যখন টু লেট-এর বোর্ড টাঙানো হবে তখন গোল্ডেন চান্সের বদলে সিলভার চান্স হয়ে যাবে l সুতরাং তোমাদের কি করা উচিত ? গোল্ডেন চান্স নেবে, তাই না ? যদি গোল্ডেন এজেই না এলে তো ব্রাহ্মণ হয়ে কি করলে ? সেইজন্য বাপদাদা এখনও তোমরা সব স্নেহী বাচ্চাকে স্মরণশক্তি (স্মৃতি) দিচ্ছেন, এখন বাবার স্নেহের কারণে একের লক্ষ-কোটি পাওয়ার চান্স আছে l এখন যতটা দাও সেই অনুপাতে তোমরা লাভ কর না, সেটা হয় একের লক্ষ-কোটি গুনে l পরে তোমরা যতটা কর তার ওপরে হিসেব-নিকেশ নির্ভর করে - সেই অনুসারেই তোমরা পাও l যাই হোক, এখন ভোলানাথের পরিপূর্ণ ভাণ্ডার উন্মুক্ত l বাচ্চারা, তোমরা যত চাও যত ইচ্ছা নিতে পার l পরে বলা হবে এখন সত্যযুগের নম্বর ওয়ানের সীট খালি নেই l অতএব, বাবা সমান সম্পূৰ্ণ হও l মহত্ত্বকে জেনে মহান হও l ডবল বিদেশি গোল্ডেন চান্স তো নেবে, তাই না ! যখন এত একাগ্রতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছ এবং তোমরা স্নেহী, সহযোগী তখন সব বিষয়ে পূৰ্ণ লক্ষ্য স্থির রেখে সম্পূর্ণতার লক্ষণ ধারণ কর l যদি প্রবল অনুরাগ না থাকত তবে এখানে কীভাবে পৌঁছাতে ! যেভাবে উড়তে উড়তে পৌঁছেছ, সেভাবেই সদা উড়তি কলায় উড়তে থাক l শরীর দ্বারাও উড়তে থাকো (বাপদাদার স্নেহ আর সাথ মনকে হাল্কা করে দেয়, তখন শরীরের বোধ থাকে না, ফলে মনে হয় উড়ছি) আত্মাও যেন সদা উড়তে থাকে l এটাই বাপদাদার স্নেহ l আচ্ছা -



সদা সফলতা স্বরূপ হয়ে সঙ্কল্প এবং সময়কে যারা সফল করে, সর্বকর্মে সেবায় উৎসাহ-উদ্দীপনা রাখে, সদা নিজেকে সম্পন্ন বানিয়ে তাদের সম্পূৰ্ণ অধিকার প্রাপ্ত করে, তাদের দেওয়া গোল্ডেন চান্স সদা গ্রহণ করে, যারা ফলো ফাদার করে, এইরকম সুযোগ্য বাচ্চাদের, নম্বর ওয়ান বাচ্চাদের বাপদাদার স্নেহ-স্মরণ আর নমস্কার l



*কাঠমান্ডু তথা বিদেশি ভাই বোনেদের গ্রুপের সাথে বাপদাদার পার্সোনাল সাক্ষাৎকার-*



১) সবাই নিজেকে বিশেষ আত্মা অনুভব কর ? সমগ্র বিশ্বে এইরকম বিশেষ আত্মা কতসংখ্যক হবে ? *কোটির মধ্যে কেউ* এই যে গায়ন আছে, তারা কারা ? তোমরাই তো, না ! সুতরাং, সদা নিজেদের কোটির মধ্যে কিছু, আর সেই কিছুর মধ্যেও কিছুমাত্র, নিজেদের এমন শ্রেষ্ঠ আত্মা মনে কর ? কখনো স্বপ্নেও এমন ভাবতে পারনি, এত শ্রেষ্ঠ আত্মা হবে ! যাই হোক, সাকার রূপে তোমরা অনুভব করছ l সুতরাং, নিজেদের এই শ্রেষ্ঠ ভাগ্য সদা স্মৃতিতে থাকে ? *বাহ্ আমার শ্রেষ্ঠ ভাগ্য !* স্বয়ং ভগবান তোমাদের ভাগ্য বানিয়েছেন l ভগবান স্বয়ং ডিরেক্টলি তোমাদের ভাগ্যের রেখা টেনেছেন, এমনই শ্রেষ্ঠ ভাগ্য তোমাদের ! যখন এই শ্রেষ্ঠ ভাগ্য স্মৃতিতে থাকে তো খুশিতে তোমাদের বুদ্ধিরূপী পা এই ধরায় থাকে না l এইরকমই তো মনে কর, তাই না ! কার্যতঃ, ফরিস্তাদের পা-ও ধরণীতে থাকে না l তারা সদা ওপরে থাকে l তাহলে তোমাদের বুদ্ধিরূপী পা কোথায় থাকে ? নিচে মাটিতে নয় l দেহ-অভিমানও মাটি l তোমরা দেহ-অভিমানের মাটি থেকে ওপরে থাক l একেই বলে ফরিস্তা l তো তোমাদের কত টাইটেল- ভাগ্যবান, ফরিস্তা, হারানিধি, যত শ্রেষ্ঠ টাইটেল আছে তা' সবই তোমাদের l সুতরাং, এই খুশিতে নাচতে থাক l প্রত্যানীত হারাধন অর্থাৎ হারানিধি, ভূমিতে পা রাখে না, সদা দোলায় থাকে, কারণ ৬৩ জন্ম নিচে ভূমিতে থাকায় অভ্যস্ত থেকেছে l তার অনুভব তো করে দেখেছে, কীভাবে ধরণীতে মাটিতে থেকে ধুলো-মলিন হয়ে গেছে l আর এখন প্রত্যাবৃত্ত (ফিরে এসেছে এমন) হারানিধি যখন হয়েছ, তখন সদা ভূমির ওপরে থাক l ময়লা হ'য়োনা, সদা স্বচ্ছ রাখ l সৎ এবং স্বচ্ছ হৃদয়বান বাচ্চারা সদা বাবার সাথে থাকে, কারণ বাবাও তো স্বচ্ছ, তাই না ! সুতরাং বাবার সাথে যারা থাকে তারাও সদা স্বচ্ছ l খুব ভালো, মিলন মেলায় তোমরা পৌঁছে গেছ l একনিষ্ঠা মিলন উদযাপনের জন্য এখানে পৌঁছাতে তোমাদের সমর্থ বানিয়েছে l বাপদাদা বাচ্চাদের দেখে খুশি হন, কারণ বাচ্চারা যদি না থাকে তাহলে বাবাই বা একলা কী করবেন ! সুস্বাগত তোমাদের নিজের ঘরে l ভক্তরা যখন তীর্থযাত্রায় বের হয় তখন কত কঠিন রাস্তা পার (ক্রস) করে ! তোমরা তো কাঠমান্ডু থেকে বাসে এসেছ l আনন্দ করতে করতে এখানে পৌঁছে গেছ l আচ্ছা -



*লন্ডন গ্রুপ-* স্নেহ-সূত্রে বাঁধা তোমরা সবাই বাবার মালার দানা, তাই না ! মালার এত মহত্ত্ব কেন দেওয়া হয়েছে ? কারণ স্নেহের সূত্র সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ সূত্র l সুতরাং, স্নেহের সূত্রে তোমরা সবাই এখন বাবার হয়েছ আর এর স্মারকচিহ্ন হলো মালা l যাদের এক বাবা দ্বিতীয় কেউ নেই, তারাই মালার দানা হয়ে একই স্নেহসূত্রে গ্রথিত হয় l সূত্র এক কিন্তু দানা অনেক l সুতরাং, এটা এক বাবার স্নেহের লক্ষণ ! তো নিজেদের এইরকম মালার দানা মনে কর, তাই না ! নাকি মনে কর ১০৮-এ তো অল্প কিছুই আসবে ? কি মনে কর ? এই ১০৮ নম্বর শুধুই নাম মাত্র ! যারা বাবার স্নেহে সমাহিত তারা বাবার গলার মালার মোতি হয়েই আছে l যারা একভাবে একনিষ্ঠায় মগ্ন থাকে, তাদের এই মগ্ন অবস্থাই তাদের নির্বিঘ্ন করে তোলে এবং নির্বিঘ্ন আত্মাদেরই গায়ন ও পূজন হয় l সবচেয়ে বেশি গায়ন কে করে ? যদি কোনও বাচ্চার গায়ন না হয় তাহলে সেই বাচ্চা মুখ গোমড়া করবে, সেইজন্য বাবা প্রত্যেক বাচ্চার গায়ন করেন কারণ সব বাচ্চা এটা তাদের অধিকার মনে করে l এই অধিকার বোধের কারণে তারা মনে করে অবশ্যই সেটা তাদের নিজেদের অধিকার l বাবা এতই ফাস্টগতি যে আর কেউ এত ফাস্ট স্পীড নয় l এক সেকেন্ডে অনেককে তিনি পরিতুষ্ট করতে পারেন l তাইতো বাবা সবসময় বাচ্চাদের সাথে বিজি থাকেন আর বাচ্চারা বাবার সাথে বিজি থাকে l বাবার বিজনেসই বাচ্চাদের l



তোমরা অবিনাশী রত্ন হয়েছ, আর সেইজন্য অভিনন্দন ! ১০ বছর বা ১৫ বছর ধরে মায়ার ওপরে বিজয়ী থেকেছ - এইজন্য অভিনন্দন ! যাই হোক, সঙ্গমযুগের পুরোটাই জয়ী হয়ে থাক l সবাই তোমরা পরিপক্ক, সেইজন্য বাপদাদা এইরকম পরিপক্ক, অনড় বাচ্চাদের দেখে খুশি হন l নয়তো কোটিতে কয়েক, আর কয়েকের মধ্যেও কয়েক শুধুমাত্র তোমরাই কেন হয়েছ ? তোমাদের প্রত্যেকের নিশ্চয়ই কোনও বিশেষত্ব আছে ! কেউ এক ধরণের রত্ন, অন্যরা আরেক ধরণের l ভিন্ন ভিন্ন বিশেষত্বের ৯ রত্ন গাওয়া হয়েছে l প্রত্যেক রত্ন বিশেষ বিঘ্ন-বিনাশক l সুতরাং, তোমরাও সবাই বিঘ্ন-বিনাশক l



*বিদেশি ভাই বোনেদের স্মরণ স্নেহ তথা পত্রের রেসপন্স দিচ্ছেন*

বাবা সব স্নেহী বাচ্চাদের স্নেহ পেয়েছেন l সকলের হৃদয়ের উদ্যম আর উৎসাহ বাবার কাছে পৌঁছায় l উদ্যম-উৎসাহের সাথে তোমরা এগিয়ে যাচ্ছ, তো সদা অগ্রচালিত বাচ্চাদের ওপরে বাপদাদা এবং পরিবারের বিশেষ ব্লেসিং আছে l এই ব্লেসিংস দ্বারা তোমরা অগ্রচালিত হতে থাকবে এবং অন্যদেরও অগ্রচালিত করতে থাকবে l সেবায় তোমরা ভালো রেস করছ l যেভাবে তোমরা প্রবল উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে রেস করছ সেইভাবেই অবিনাশী উন্নতি করতে থাক l সুতরাং, ভালো নম্বর তোমরা এগিয়ে গিয়েই নেবে l তোমরা সবাই নিজেদের নাম ও বিশেষত্বের সাথে স্মরণ স্বীকার কর l এমনকি এখনও সব বাচ্চারা তাদের নিজ নিজ বিশেষত্বের সাথে বাপদাদার সমুখে, সেইজন্য লক্ষ-কোটি স্মরণ-স্নেহ l



*দাদী চন্দ্রমণিজী পাঞ্জাবে যাওয়ার জন্য বিদায় নিতে এসেছেন-*

সব বাচ্চাদের স্মরণ-স্নেহ দিও আর তাদের বিশেষ বার্তা দিও, তারা যেন উড়তি কলায় যায় l অন্যদের ওড়ানোর জন্য শক্তিশালী (সমর্থ) স্বরূপ ধারণ কর l বাতাবরণ যেমনই হোক, তোমাদের উড়তি কলার স্থিতি দ্বারা অনেক আত্মাদের ওড়ানোর অনুভব করাতে পার l সেইজন্য সবাইকে বিশেষভাবে স্মরণ করিয়ে দাও, স্মরণ আর সেবা যেন সদা একসাথে চলে l তারা সকলে হারানিধি, বিশেষ বাচ্চা l তারা ভালো বিশেষত্বযুক্ত আত্মা l প্রত্যেককে তাদের বিশেষত্ব সহ স্মরণ-স্নেহ স্বীকার করতে দাও l এটা ভালো, তোমরা ডবল পার্ট করছ l অসীম জগতের আত্মাদের এটাই লক্ষণ - যে সময় যেখানে আবশ্যক সেখানে পৌঁছানো l আচ্ছা !

বরদান:-

সেবায় বিঘ্নকে উন্নতির সিঁড়ি মনে করে অগ্রচালিত, নির্বিঘ্ন, প্রকৃত সেবাধারী ভব

সেবা ব্রাহ্মণ জীবনকে সদা নির্বিঘ্ন বানানোর সাধন যেমন, আবার সেবাতে বিঘ্নের পরীক্ষাও (পেপার) বেশি আসে l নির্বিঘ্ন সেবাধারীকে প্রকৃত সেবাধারী বলা হয় l বিঘ্নের উপস্থিতিও ড্রামাতে নির্ধারিত l বিঘ্ন আসবেই আর আসতেও থাকবে, কারণ এই বিঘ্ন বা পরীক্ষার পেপার তোমাদের অনুভাবী বানায় l এইগুলো বিঘ্ন না মনে করে তোমাদের অনুভবের উন্নতি সাধনের উপায় হিসেবে দেখ, এই ভাবের সাথে দেখলে উন্নতির সিঁড়ি অনুভূত হবে এবং সোজা উঁচুর দিকে আরোহণ করতে থাকবে l

স্লোগান:-

বিঘ্নরূপ নিয়োনা, বরং বিঘ্ন-বিনাশক হও l