০৭-০৫-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা- স্মরণের যাত্রায় থাকলে তোমাদের পাপ কেটে যাবে, কেননা স্মরণই হলো তলোয়ারের ধার, এখানে নিজেকে প্রতারিত কোরো না"

প্রশ্ন:-

বাচ্চাদের চরিত্র সংশোধনের জন্য বাবা কোন্ পথ বলে দেন ?

উত্তর:-

বাচ্চারা, সততার সাথে নিজেদের চার্ট রাখ। চার্ট রাখলেই চরিত্র সংশোধন হবে । দেখতে হবে সারাদিনে আমার স্বভাব কেমন ছিল ? কাউকে দুঃখ দিইনি তো ? অনাবশ্যক কথা বলিনি তো ? আত্মা মনে করে কতটা সময় বাবাকে স্মরণ করেছ ? কতজনকে তোমার সমতুল্য করে তুলেছি ? এভাবে যারা চার্ট রাখে তাদের চরিত্র সংশোধন হতে থাকে । যা করবে তাই পাবে, না করলে অনুতপ্ত হবে ।

ওম্ শান্তি ।

আত্মা রূপী বাচ্চাদের আত্মাদের বাবা বসে বোঝাচ্ছেন, কেননা উনি এখন সম্মুখে এসেছেন । এমনটা বলা যাবে না যে, সব বাচ্চারাই নিজের স্বধর্মে থেকে বাবাকে স্মরণ করে। বুদ্ধি এদিক-ওদিকে অবশ্যই চলে যায় । সেটা প্রত্যেকেই নিজেরা বুঝতে পারে। প্রধান বিষয় হলো সতোপ্রধান হওয়া । সেটা তো স্মরণের যাত্রা ছাড়া হওয়া যাবে না । যদিও বাবা অমৃতবেলায় উঠে যোগে বসে বাচ্চাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন। নম্বরনুসারে বাচ্চারা আকৃষ্ট হয়। স্মরণ দ্বারা শান্তিপূর্ণ ভাবে থাকে । দুনিয়াকেও ভুলে যায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো- সারাদিন কি করে ? ওটা তো হলো অমৃতবেলায় ঘন্টা, আধা ঘন্টার জন্য স্মরণের যাত্রা, যার দ্বারা আত্মা পবিত্র হয়ে ওঠে, আয়ু বৃদ্ধি পেতে থাকে । কিন্তু সারাদিনে কতটা সময় স্মরণে থাক ? কতখানি স্বদর্শন চক্রধারী হও ? এমন নয় যে, বাবা সবকিছু জানেন। নিজের অন্তর্মনকে জিজ্ঞাসা করতে হবে যে, আমি সারাদিন কি করেছি ? এখন তোমরা বাচ্চারা চার্ট লিখছ । কেউ ঠিক লেখে, কেউ ভুল লেখে । ভাবে আমরা তো শিববাবার সাথেই ছিলাম, শিববাবাকেই স্মরণ করছিলাম কিন্তু সত্যিই কি স্মরণে ছিলাম ?

সম্পূর্ণ সাইলেন্সে থাকলে এই দুনিয়াকেও ভুলে যায়। নিজেকে ঠকানো উচিত নয় যে, আমি তো শিববাবার স্মরণেই ছিলাম । দেহের সব ধর্মকে ভুলে যাওয়া উচিত । শিববাবা প্রচেষ্টা করে আমাদের সম্পূর্ণ দুনিয়াকে ভুলে যেতে সাহায্য করেন। বাবা বোঝান নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করতে হবে । বাবাও তো চেষ্টা করেন । সব আত্মারা বাবাকে স্মরণ করুক আর যেন কেউ স্মরণে না আসে । কিন্তু সত্যিই স্মরণে আসে বা আসেনা সেটা তো স্বয়ং চার্ট তৈরি করতে হবে । কতটা আমি বাবাকে স্মরণ করি ? যেমন দয়িত-দয়িতার দৃষ্টান্ত আছে । এই দয়িত-দয়িতা সম্পূর্ণ ভিন্ন । ওটা লৌকিক, আর এ হলো আত্মিক । দেখতে হবে - আমরা কতটা সময় দৈবীগুণে থেকেছি ! কতটা সময় বাবার সেবায় থেকেছি ? তারপর অন্যদেরও স্মরণ করিয়ে দিতে হবে । আত্মার উপর যে খাদ জমেছে তা স্মরণ ছাড়া মিটবে না । ভক্তি মার্গে অনেককেই স্মরণ কর, এখানে একজনকেই স্মরণ করতে হবে । আমরা আত্মারা ছোট বিন্দু । সুতরাং বাবাও অনেক ছোট সূক্ষ্ম এক বিন্দু স্বরূপ, কিন্তু অগাধ নলেজ । শ্রী লক্ষ্মী বা নারায়ণ হওয়া, বিশ্বের মালিক হওয়া এ কোনও মাসির বাড়ি যাওয়ার মতো সহজ নয়। বাবা বলেন নিজেকে মিয়া-মিঠ্ঠু (চালাক, সবজান্তা) মনে করে ঠকিও না। নিজের অন্তর্মনকে জিজ্ঞাসা কর- সারাদিন নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে কতটুকু স্মরণ করেছি, যে খাদ মুছে যাবে? কতজনকে বাবার সমতুল্য করে তুলেছি ? এই চার্ট প্রত্যেককে নিজের নিজের রাখতে হবে । যে করবে সেই পাবে, না করলে অনুতপ্ত হবে । দেখতে হবে সারাদিনে আমার স্বভাব কেমন ছিল ? কাউকে দুঃখ দিইনি তো বা অপ্রয়োজনীয় কথা বলিনি তো ? চার্ট রাখলেই স্বভাব পরিবর্তন হবে । বাবা তো পথ বলেই দিয়েছেন ।



দয়িত-দয়িতা একে অপরকে স্মরণ করে, স্মরণ করা মাত্রই সামনে এসে উপস্থিত হয় । দু'জন যদি মহিলাও হয় সাক্ষাত্কার হয়, দুজনেই যদি পুরুষও হয় তাও সাক্ষাত্কার হতে পারে । কিছু বন্ধু তাদের ভাইদের থেকেও আপন হয় । তাদের মধ্যে এতো ভালোবাসা তৈরি হয় যা নিজেদের ভাইদের প্রতিও থাকে না । একে অপরকে ভালোবাসার সাথে তুলে ধরে । বাবা তো অনুভাবী তাইনা, সুতরাং বাবা অমৃতবেলায় তোমাদের টেনে তোলেন । তিনি হলেন চির পবিত্র, তাই আকৃষ্ট করেন । বাবা তো অসীম জগতের তাইনা, তিনি জানেন বাচ্চারা তাঁর কতটা প্রিয়। সুতরাং তিনি অমৃতবেলায় তোমাদের টেনে তোলেন । এই স্মরণের যাত্রা অতি আবশ্যক । যেখানেই যাও, বেড়াতে যাও, উঠতে বসতে, খেতে জাগতে স্মরণ করতে পার। দয়িত-দয়িতা সর্বত্রই স্মরণ করে তাইনা । এটাও তাই। বাবাকে স্মরণ তো করতেই হবে নয়তো বিকর্ম কিভাবে বিনাশ হবে । অন্য কোনও উপায় নেই । এ হল খুব সূক্ষ্ম বিষয় । তলোয়ারের ধার নিয়ে চলতে হবে । স্মরণই হলো তলোয়ারের সেই ধার। প্রতিটি মুহূর্ত বলো স্মরণ ভুলে যাই। তলোয়ার কেন বলা হয় ? কারণ এর দ্বারাই পাপ কেটে যাবে । তোমরা পবিত্র হবে । এটা খুব সংবেদনশীল । যেমন ওরা (লৌকিক) আগুনের উপর দিয়ে হাঁটে, তোমাদের বুদ্ধিও যুক্ত হয়ে পড়ে বাবার সাথে । বাবা এখানে এসেছেন, আমাদের উত্তরাধিকারী করে তুলতে । তিনি উপরে নেই, এখানে এসেছেন । তিনি বলেন সাধারণ শরীরে আসি। তোমরা জান বাবা উপর (পরমধাম) থেকে নীচে নেমে আসেন । চৈতন্য হীরে এই উপযুক্ত পাত্রে বসে আছেন । শুধুমাত্র এতে খুশি হলে হবেনা যে ,আমরা বাবার সাথে বসে আছি। বাবা এটা জানেন তাই তোমাদের টেনে তোলার চেষ্টা করেন । কিন্তু এ তো আধা, পৌনে ঘন্টার জন্য । বাকি সারাদিন ব্যর্থ সময় নষ্ট করলে তাতে লাভ কি হবে । বাচ্চাদের নিজের চার্ট সম্পর্কে সচেতন হতে হবে । এমনটা নয়, আমি তো ভালো ভাষন দিতে পারি, চার্ট রাখার আমার কিই বা প্রয়োজন আছে । এই ভুল করা উচিত নয় । মহারথীদেরও চার্ট রাখা উচিত । মহারথী অনেক সংখ্যক নেই, গোনাগুনতি কিছু আছে । অনেকেরই নাম-রূপ ইত্যাদিতে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায় । লক্ষ্য অনেক উচ্চ । বাবা সবকিছুই বুঝিয়ে দেন, যাতে স্টুডেন্ট এমনটা না ভাবে যে বাবা অমুক পয়েন্টস বোঝান নি।

এটাই হলো প্রধান বিষয়- স্মরণ আর সৃষ্টি চক্রের নলেজ । এই সৃষ্টি চক্রের ৮৪ জন্মকে তো কেউ জানেনা - তোমরা বাচ্চারা ছাড়া । বৈরাগ্যও তোমাদের আসবে । তোমরা জান এই মৃত্যুলোকে এখন আর দীর্ঘদিন থাকা যায় না । চলে যাবার আগে পবিত্র হতে হবে । দৈবীগুণও অবশ্যই প্রয়োজন । নম্বরনুসারে তোমরা মালায় গাঁথা হবে, তারপর নম্বরনুসারে রাজধানীতে আসতে হবে । তারপর নম্বরনুসারেই তোমরা পূজিত হয়ে থাক। অনেক দেবতাদের পূজো করা হয়, কত কত নাম রাখা হয় । চন্ডিকা দেবীরও মেলা হয় । যে রেজিস্টার রাখে না, সে সংশোধিত হয় না । সুতরাং বলা হয় এতো চন্ডিকা । শুনেও না, মানেও না । এ হলো অনন্ত জগতের বিষয় । পুরুষার্থ না করলে বাবা ও বলবেন এতো বাবাকেও মানেনা। পদাধিকার কম হয়ে যাবে, তাই বাবা বলেন নিজের প্রতি যথেষ্ট লক্ষ্য রাখতে হবে । বাবা অমৃতবেলায় এসে কত চেষ্টা করেন স্মরণের যাত্রার জন্য । লক্ষ্য অনেক উচ্চ । নলেজকে তো সহজ সাবজেক্ট বলা হয় । ৮৪ চক্র স্মরণ করা অনেক বড়ো বিষয় নয়। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো স্মরণের যাত্রা, যাতে অনেকেই বিফল হয়। এটাই তোমাদের যুদ্ধ । তোমরা স্মরণ করতে বসো কিন্তু মায়া এসে ফেলে দেয় । নলেজে যুদ্ধের কোনও প্রশ্নই নেই । নলেজ হলো সোর্স অফ ইনকাম । এখানে পবিত্র হতে হয়, সেইজন্যই বাবাকে আহ্বান করে বলে পতিত থেকে পাবন করে তোল । এমন নয় যে এসে পড়াও। বলবে তুমি এসে পবিত্র করে তোল । সুতরাং এইসব পয়েন্টস বুদ্ধিতে রাখা উচিত । সম্পূর্ণ রাজযোগী হতে হবে ।



নলেজ তো খুবই সহজ । শুধুমাত্র যুক্তি দিয়ে বোঝাতে হয়। বাচনভঙ্গিও মিষ্টি হওয়া উচিত । তোমরা এই জ্ঞান প্রাপ্ত করেছ । সেটাও তোমরা তোমাদের কর্মানুসারে বলবে । শুরু থেকেই ভক্তি করেছ সুতরাং ভালো কর্মই করেছ সুতরাং শিববাবাও বসে ভালো করে বোঝান । যত বেশি ভক্তি করেছ, শিববাবাও তত বেশী সন্তুষ্ট হয়েছেন সুতরাং তোমরা ও দ্রুত জ্ঞানকে গ্রহণ করতে পারবে। মহারথীদের বুদ্ধিতে এইসব পয়েন্টস ধারণা হবে। যদি তোমরা লিখে রাখ তবে ভালো পয়েন্টসগুলোকে আলাদা করে রাখতে পারবে । পয়েন্টসের গুরুত্ব বুঝতে পারবে । বাবা সবসময় বলেন ভাষণ দেওয়ার আগে লেখ, তারপর বিচার কর । এভাবে পরিশ্রম কেউ করেনা। সব পয়েন্টস কারো স্মরণে থাকে না । ব্যারিস্টার মানুষরাও পয়েন্টস নোট করে রাখে ডায়রিতে। তোমাদের তো খুবই প্রয়োজন । বিষয় লিখে তারপর পড়া উচিত । সংশোধন করা উচিত । এটুকু পরিশ্রম না করলে জাম্প দিতে অসফল হবে । তোমাদের বুদ্ধিযোগ এদিক ওদিক বিভ্রান্ত হয়ে পড়বে । খুব অল্প সংখ্যক আছে যারা সহজ ভাবে চলে। সার্ভিস ছাড়া তাদের বুদ্ধিতে আর কিছুই থাকে না । মালায় আসতে হলে পরিশ্রম করতে হবে । বাবা তোমাদের উপদেশ দেন এবং সেটা তোমাদের হৃদয় স্পর্শ করে । যে স্মরণ করেনা সে নিজেই সেটা জানে। যদিও তোমরা তোমাদের ব্যবসা, কাজকর্ম ইত্যাদি করে থাক কিন্তু ডায়রি তো সবসময়ই পকেটে রাখা উচিত নোট করার জন্য । আলস্য করবে, নিজেকে চালাক মনে করবে, মায়াও কিছু কম নয়, চড় কষাতে থাকবে । লক্ষ্মী-নারায়ণ হওয়া কোনও মাসি যাওয়ার মতো সহজ নয়। বড় রাজধানী স্থাপন হতে চলেছে, কোটিতে কেউ-কেউ আসবে । বাবাও (ব্রহ্মা বাবা) অমৃতবেলায় দুটোর সময় উঠে লিখতেন তারপর পড়াতেন । পয়েন্টস ভুলে গেলে আবারও বসে দেখতেন-তোমাদের বোঝানোর জন্য । সুতরাং বোঝা যেত এখনও পর্যন্ত স্মরণের যাত্রা কতদূর হয়েছে । বলা হয় কর্মাতীত অবস্থা । অনাবশ্যক কারও প্রশংসা করা উচিত নয় । অনেক প্রচেষ্টা করতে হয়, কর্মভোগের কষ্টও আছে । বাবাকে তোমাদের স্মরণ করা উচিত । আচ্ছা, মনে কর মুরলী ব্রহ্মা বাবা নয়, শিববাবা বলছেন । তোমরা বাচ্চাদের সবসময় বোঝান শিববাবাই তোমাদের মুরলী শোনান, কখনও কখনও এই ব্রহ্মা বাবা শোনান। বাবা তো প্রকৃতপক্ষে যথার্থই বলবেন । এনাকে (ব্রহ্মা বাবা) তো সারাদিন অনেক খেয়াল রাখতে হয় । অনেক বাচ্চার দায়িত্ব পালন করতে হয় । বাচ্চারা নাম-রূপের ফাঁদে পড়ে নৈতিক অনিষ্ট করে ফেলে । বাবাকে অনেক বাচ্চাদের খেয়াল রাখতে হয়- বাচ্চাদের জন্য মহল বানাতে হবে, তার ব্যবস্থা করতে হবে । যদিও সবটাই ড্রামা । বাবারও ড্রামা, ব্রহ্মা বাবারও ড্রামা, তোমাদের ও ড্রামা । ড্রামা ছাড়া কোনো জিনিস হতেই পারে না । প্রতিটি সেকেন্ডে ড্রামা চলতে থাকে । ড্রামাকে স্মরণ করতে গিয়ে তোমরা অস্থির হবে না । অচল, অটল, দৃঢ় থাকবে । অনেক তুফান (মায়ার)আসবে ।কিছু বাচ্চা আছে যারা সত্যি বলে না। স্বপ্নও অনেক আসবে মায়ারূপে। প্রথমে যাদের আসত না তাদেরও আসবে । বাবা বুঝতে পারেন, বাচ্চাদের উত্তরাধিকার পাওয়ার জন্য স্মরণে পরিশ্রম করতে হয় । কেউ কেউ পরিশ্রম (পুরুষার্থ) করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে । লক্ষ্য অনেক উঁচু । তোমাদের ২১ প্রজন্মকে বিশ্বের মালিক করে তোলেন, সুতরাং পরিশ্রম তো করতেই হবে তাইনা । লাভলি বাবাকে স্মরণ করতে হবে । অন্তরে থাকে বাবা আমাদের বিশ্বের মালিক করে তোলেন । এমন বাবাকে তো প্রতিটি মুহূর্ত স্মরণ করা উচিত । সবচাইতে প্রিয় বাবা । এই বাবা তো অবাক করে দেন, বিশ্বের নলেজ প্রদান করেন। বাবা, বাবা, বাবা বলে অন্তর্মনে মহিমা করা উচিত । যে স্মরণ করবে, তার প্রতি বাবারও চেষ্টা থাকবে । এখানে আসেই বাবার কাছে রিফ্রেশ হওয়ার জন্য। সুতরাং বাবা বোঝান - মিষ্টি বাচ্চারা, ফাঁকিবাজি কোরো না । বাবা দেখেন সবাই সেন্টার থেকে এখানে আসে। বাবা বলেন আমি ওদের দেখি, জিজ্ঞাসা করি কতটা খুশি অনুভব করতে পেরেছ ? বাবা তো বাচ্চাদের কথা ভাবেন, তাইনা ! মুখ দেখেন বাবার প্রতি কতখানি ভালোবাসা আছে ? বাবার সামনে আসে সুতরাং বাবাও চেষ্টা করেন। এখানে বসে বসে সব ভুলে যায়। বাবা ছাড়া আর কিছুই নেই । সম্পূর্ণ দুনিয়াকে ভুলে যেতেই হবে । *এই স্থিতি বড় মিষ্টি আর অলৌকিক* । বাবার স্মরণে এসে বসলে দুচোখ জলে ভরে যায় । ভক্তি মার্গেও অশ্রুসজল হয়। কিন্তু ভক্তি মার্গ আলাদা, জ্ঞান মার্গ আলাদা । এ হলো প্রকৃত (সত্য) বাবার সাথে প্রকৃত প্রেম । এই বিষয়টিই আলাদা । এখানে তোমরা শিববাবার কাছে আস, নিশ্চয়ই তিনি রথে চড়ে আসেন। শরীরহীন আত্মা তো ওখানে (পরমধাম) মিলিত হতে পারে, এখানে তো সবাই শরীরধারী । জানে ইনি বাপদাদা । সুতরাং বাবাকেই স্মরণ করতে হবে । অনেক ভালোবাসার সাথে মহিমা করতে হয় যে, বাবা আমাদের কি দিচ্ছেন !



তোমরা বাচ্চারা জান, বাবা এসেছেন আমাদের জঙ্গল থেকে নিয়ে যেতে । মঙ্গলময় ভগবান বিষ্ণু বলা হয় তাইনা । সবার মঙ্গল প্রদানকারী, সবার কল্যাণ হয়। একজনই বাবা, সুতরাং তাঁকেই স্মরণ করা উচিত । আমরাও কেন কারও কল্যাণ করতে পারব না ! নিশ্চয়ই কোনো, দুর্বলতা আছে । বাবা বলেন *স্মরণে সেই শক্তি না থাকলে বাণীতেও আকর্ষণ কম থাকে । এটাও ড্রামা* । এখন ভালো করে শক্তি ধারণ কর। স্মরণের যাত্রাই পরিশ্রমের। আমরা আত্মা ভাইদের জ্ঞান প্রদান করি। বাবার পরিচয় দিই। বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার পেতে হবে । বাবা অনুভব করেন, প্রতিটি মুহূর্ত স্মরণ করতে তোমরা ভুলে যাও। বাবা সবাইকেই তাঁর সন্তান মনে করেন, তাইতো বাচ্চা-বাচ্চা বলে ডেকে ওঠেন। এই বাবা সবার, কি চমত্কার পার্ট এঁনার তাইনা ! খুব অল্প সংখ্যক বাচ্চা বোঝে এই শব্দ কার ! একমাত্র বাবাই বাচ্চা - বাচ্চা বলতে পারেন। বাবা বলেন আমি এসেছি বাচ্চাদের উত্তরাধিকার দিতে। বাবা সবকিছুই শুনিয়ে দেন । বাচ্চাদের কাছ থেকে আমাকে কাজ তো নিতে হবে তাইনা । এই নলেজ খুব বিস্ময়কর এবং মনোরঞ্জক । এই নলেজ অদ্ভুত এবং জটিল । বৈকুন্ঠের মালিক হওয়ার জন্য নলেজও তো এমনটাই চাই তাইনা !



আচ্ছা, প্রত্যেককে বাবাকে স্মরণ করতে হবে, দৈবীগুণ ধারণ করতে হবে । মুখ দিয়ে কখনও খারাপ কথা বলা উচিত নয় ।ভালোবাসা দিয়ে কাজ করাতে হবে । আচ্ছা!



মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ, সুমন স্মরণ আর সুপ্রভাত । আত্মাদের বাবার আত্মা রূপী বাচ্চাদের প্রতি নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-

১. অমৃতবেলায় উঠে একান্তে বসে ভালোবাসার সাথে বাবাকে স্মরণ করতে হবে । সম্পূর্ণ দুনিয়াকে ভুলে যেতে হবে ।

২. বাবার সমতুল্য হয়ে সবার কল্যাণকারী হতে হবে, যা কিছু দুর্বলতা আছে, সেগুলিকে দূর করে দিতে হবে । নিজের প্রতি পূর্ণ নজর দিতে হবে । নিজের রেজিস্টার নিজেকেই দেখতে হবে ।

বরদান:-

তিন স্মৃতির তিলক দ্বারা শ্রেষ্ঠ স্থিতি তৈরি করতে সক্ষম অচল-অটল ভব

বাপদাদা সব বাচ্চাদের তিন স্মৃতির তিলক দিয়েছেন, এক, স্ব-স্থিতি দ্বিতীয়, বাবার স্মৃতি আর শ্রেষ্ঠ কর্মের জন্য ড্রামার স্মৃতি । এই তিন স্থিতিতে যারা সবসময় থাকে তাদের স্থিতি শ্রেষ্ঠ। আত্মার স্মৃতির সাথে বাবার স্মৃতি আর বাবার সাথে ড্রামার স্মৃতি থাকা অতি আবশ্যক, কেননা কর্মে যদি ড্রামার জ্ঞান থাকে তবে উপর নীচ (স্থিতি) হবেনা । যেমনই ভিন্ন-ভিন্ন পরিস্থিতি আসুক না কেন, তাতে অচল-অটল থাকবে ।

স্লোগান:-

দৃষ্টিকে অলৌকিক, মনকে শীতল আর বুদ্ধিকে ক্ষমাশীল করে তোল* ।