১০-০৪-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - এই ওয়ান্ডারফুল (বিস্ময়কর বা চমৎকার) পাঠ অসীম জগতের বাবা এসে পড়াচ্ছেন, বাবা আর তাঁর পঠন-পাঠের প্রতি কোনও সংশয় থাকা উচিত নয়, প্রথমে নিশ্চিত হতে হবে যে কে আমাদের পড়াচ্ছেন"
প্রশ্ন:-
তোমরা বাচ্চারা নিরন্তর স্মরণের যাত্রায় থাকার জন্য কেন শ্রীমত পেয়েছ ?
উত্তর:-
কেননা শত্রু রূপে মায়া এখনও তোমাদের পিছনে পড়ে আছে, যে তোমাদের অধঃপতন ঘটিয়েছে । এখনও সে তোমাদের পিছু ছাড়বে না, সেইজন্য অসাবধান হয়ো না । যদিও তোমরা সঙ্গম যুগে আছ কিন্তু অর্ধকল্প ধরে মায়ার বশীভূত ছিলে, সেইজন্যই এতো শীঘ্র মায়া ছাড়বে না । স্মরণ করা ভুলে যাওয়াতেই মায়া এসে বিকর্ম করিয়েছে। সেইজন্যই সাবধান হতে হবে । আসুরি মতে চলা উচিত নয় ।
ওম্ শান্তি ।
এখন বাচ্চারাও আছে, বাবা ও আছেন । বাবা অনেক বাচ্চাদের বলবেন 'ওহে বাচ্চারা, সব বাচ্চারাও তারপর বলে উঠবে 'ও বাবা '। এখানে বাচ্চা অনেক । তোমরা এখন বুঝেছ এই জ্ঞান আমরা আত্মাদের জন্যই । এক বাবার অসংখ্য বাচ্চা। বাচ্চারা জানে বাবা শিক্ষা প্রদান করতে এসেছেন । তিনি প্রথমে বাবা, তারপর শিক্ষক, তারপর গুরু । এখন বাবা তো বাবাই, যিনি পবিত্র হওয়ার জন্য স্মরণের যাত্রা শেখান । বাচ্চারা এও জানে এই পঠন-পাঠ বিস্ময়কর । ড্রামার আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বাবা ছাড়া আর কেউ বলতে পারবে না, তাই তাঁকে অসীম জগতের পিতা বলা হয় । এই দৃঢ় বিশ্বাস বাচ্চাদের মধ্যে গেঁথে আছে, এর মধ্যে সংশয়ের কোনও প্রশ্ন উঠতেই পারে না । অসীম জগতের এই পঠন-পাঠ, অসীম জগতের বাবা ছাড়া আর কেউ পড়াতে পারবে না । আহ্বান করা হয় বাবা এসো, আমাদের পবিত্র জগতে নিয়ে চল। কেননা এ হলো পতিত জগৎ । পবিত্র জগতে নিয়ে যান বাবা । ওখানে (সত্য যুগে ) তো বলবেই না বাবা এসো, পবিত্র জগতে নিয়ে চল । বাচ্চারা জানে আমরা আত্মাদের পিতা উনিই, তখনই দেহ ভাব ছিন্ন হয়ে যায় । আত্মা বলে উনি আমাদের পিতা । এখন এটা দৃঢ়তার সাথে নিশ্চয় হওয়া উচিত যে প্রকৃতপক্ষে বাবা ছাড়া এতো নলেজ আর কেউ দিতে পারবে না । প্রথমেই তো নিশ্চয় বুদ্ধি হওয়া প্রয়োজন । নিশ্চয়তা ও আত্মার বুদ্ধিতেই থাকে । আত্মাই এই জ্ঞান প্রাপ্ত করে, আমাদের বাবা ইনি । এই দৃঢ় বিশ্বাস বাচ্চাদের হওয়া উচিত। মুখে কিছু বলার প্রয়োজন নেই । আমরা আত্মারা এক শরীর ছেড়ে অন্য শরীর ধারণ করি । আত্মার মধ্যেই সংস্কার নিহিত রয়েছে ।
এখন তোমরা জেনেছ বাবা এসেছেন, আমাদের এমনই শিক্ষা প্রদান করান, এমনই কর্ম শেখান যাতে আমরা এখন আর এই জগতে আসব না । লৌকিক জগতের মানুষ বোঝে যে এই দুনিয়াতে আবার আসতে হবে । তোমরা এমনটা ভাবো না। তোমরা এই অমরকথা শুনে অমরপুরীতে যাও । অমরপুরী অর্থাত্ যেখানে সবসময় অমরত্ব থাকে (অকালে মৃত্যু হয় না)। সত্য যুগ-ত্রেতা হলো অমরপুরী । বাচ্চাদের কত খুশি হওয়া উচিত । এই পঠন-পাঠন বাবা ছাড়া আর কেউ পড়াতে পারে না । বাবা আমাদের পড়ান, বাকি যারা টিচার্স আছে তারা সাধারণ মানুষ । এখানে তোমরা যাঁকে পতিত-পাবন, দুঃখ হরণকারী, সুখ প্রদানকারী বলে থাক, সেই বাবা এখন তোমাদের সামনে শিক্ষা প্রদান করছেন । সামনে না আসলে রাজযোগ পাঠ কি ভাবে পড়াচ্ছেন ? বাবা বলেন তোমরা মিষ্টি বাচ্চাদের এখানে পড়াতে আসি । শিক্ষা প্রদান করার জন্য এনার (ব্রহ্মা বাবা) মধ্যে প্রবেশ করি। প্রকৃতপক্ষে ভগবানুবাচ যখন আছে, সুতরাং ওনার শরীর নিশ্চয়ই প্রয়োজন । শুধু মুখ নয় সম্পূর্ণ শরীর প্রয়োজন । বাবা স্বয়ং বলেন- মিষ্টি মিষ্টি রূহানী বাচ্চারা, কল্পে -কল্পে পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে সাধারণ শরীরে (ব্রহ্মা বাবা) আসি । খুব গরীব ও নয়, আবার খুব বিত্তবান ও নয়, সাধারণ । এটা তো তোমাদের, অর্থাৎ বাচ্চাদের দৃঢ় বিশ্বাস হওয়া উচিত- উনি আমাদের বাবা, আমরা আত্মা । আমরা আত্মাদের পিতা । সমগ্র পৃথিবীতে যত মানুষরূপী আত্মা আছে সবার পিতা তিনি তাই ওনাকে অসীম জগতের পিতা বলা হয় । শিব জয়ন্তী উদযাপন করে কিন্তু তার কারণ ও কেউ জানেনা । কাউকে জিজ্ঞাসা শিব জয়ন্তী কবে থেকে উদযাপন হয়ে আসছে ? বলবে আবহমান ধরে । সেটা ও কবে থেকে? কোনও তারিখ তো চাই । ড্রামা তো অনাদি, কিন্তু এই ড্রামার অন্তর্ভুক্ত যে ক্রিয়াকলাপ ঘটিত হয়েছে, তার তিথি -তারিখ তো চাই তাইনা ! এ তো কেউ জানেনা । আমাদের শিববাবা আসেন, সেই ভালোবাসা দিয়ে উত্সব পালন করেনা । নেহেরু জয়ন্তী ভালোবাসার সাথে উদযাপন করবে । স্মৃতি চারণে দু-চোখে জলও আসবে । শিব জয়ন্তী কেন পালিত হয় কারো জানা নেই । এখন তোমরা বাচ্চারা অনুভাবী হয়েছ । অনেক মানুষ আছে যারা কিছুই জানেনা । কত মেলা হয়। ওখানে যারা যায় তারাই বলতে পারবে প্রকৃত সত্য কি। যেমন বাবা অমরনাথের দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেছিলেন, ওখানে গিয়ে দেখ -- প্রকৃতপক্ষে কি হয় সেখানে। অন্যরা তো অপরের কাছ থেকে শুনে তারপর বলে। কেউ বলবে বরফের লিঙ্গ হয়, শুনে বলবে সত্যি । এখন তোমরা বাচ্চাদের অনুভব হয়েছে-কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল। এখনও পর্যন্ত যা কিছু শুনেছ-পড়েছ, সবই ভুল । গাওয়াও হয়ে থাকে ••••এ হলো মিথ্যে খন্ড, সত্য যুগ প্রকৃত খন্ড । সত্য যুগ, ত্রেতা, দ্বাপর অতীত হয়ে গেছে, এখন কলিযুগ চলছে। এটাও খুব কম সংখ্যকই জানে। তোমাদের বুদ্ধিতে সব ধারণা চলে। বাবার মধ্যে সম্পূর্ণ নলেজ আছে, ওনাকে বলা হয় জ্ঞানের সাগর । ওনার কাছে যে নলেজ আছে তা উনি এই শরীর (ব্রহ্মা বাবা) দ্বারা দিয়ে আমাদের সমতুল্য করে তুলছেন । যেমন টিচার ও সমতুল্য করে তোলেন, সুতরাং অসীম জগতের বাবা ও চেষ্টা করে নিজ সমান করে তোলেন । লৌকিক বাবা সমতুল্য করে তোলেন না । তোমরা অসীম জগতের বাবার কাছে এসেছ। উনি জানেন আমাকে বাচ্চাদের আমার মতো করে তুলতে হবে । যেমন টিচার নিজের মতো করে তোলেন, সেটাও নম্বরনুসারে হবে। এই বাবা ও বলে থাকেন নম্বরনুসারে হবে । আমি যে পঠন-পাঠ করিয়ে থাকি সেটা অবিনাশী । যে যত পড়বে তা ব্যর্থ যাবে না । ঈশ্বরীয় জ্ঞানে অগ্রসর হতে হতে স্বয়ং-ই বলবে আমি ৪ বছর আগে, ৮ বছর আগে কারও কাছ থেকে এই জ্ঞান শুনেছিলাম। এখন আবার এসেছি। কেউ ভীষণ ভাবে সংলগ্ন হয়ে পড়ে । পতঙ্গ তো আছে কেউ অগ্নিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে । কেউ বা অগ্নির চারদিক ঘুরে ফিরে যায় ।(পতঙ্গ রূপী আত্মা ঈশ্বরীয় নেশায় মত্ত হয়ে যাওয়া)। শুরুতে অনেক পতঙ্গ অগ্নির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল । ড্রামার প্ল্যান অনুসারে ভাট্টি তৈরি হওয়ার ছিল । কল্প-কল্প ধরেই এমনটা হয়ে আসছে । যা কিছু অতীতে হয়েছে, কল্প প্রথমেও এমনই হয়েছিল আবারও তাই হবে । এটাই দৃঢ়তার সাথে নিশ্চিত হও যে আমরা আত্মা, বাবা আমাদের পড়াচ্ছেন । এই নিশ্চয়ে অটুট থাকো, ভুলে যেও না । এমন কোনও মানুষ হবে না যে বাবাকে বাবা বলে স্বীকার করবেনা । যদিও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাও বুঝতে পারবে আমি বাবাকে ত্যাগ করেছি । ইনি অসীম জগতের পিতা, ওঁনাকে আমরা কখনোই ছেড়ে যাব না । শেষ পর্যন্ত সাথে থাকব। এই বাবা তো সবার সদ্গতি প্রদানকারী । ৫ হাজার বছর পর আসেন । এটাও তোমরা বুঝেছ, সত্য যুগে অল্প সংখ্যক মানুষ বাস করে । বাকি সমস্ত আত্মারা শান্তিধামে থাকে । এই নলেজও বাবা-ই শোনান আর কেউ শোনাতে পারেনা । কারো বুদ্ধিতেই ধারণ হবে না । তোমাদের, অর্থাৎ আত্মাদের পিতা তিনি। তিনি চৈতন্য বীজরূপ। কোন্ নলেজ দেবেন ? সৃষ্টি রৃপী বৃক্ষের । রচয়িতা নিশ্চয়ই রচনার নলেজই দেবেন । তোমরাও কি জানতে সত্য যুগ কবে ছিল তারপর কোথায় গেছে ?
এখন তোমরা সামনে বসে আছ, বাবা কথা বলছেন । দৃঢ়তার সাথে নিশ্চিত হও যে-ইনিই আমাদের, অর্থাৎ সমস্ত আত্মাদের পিতা, আমাদের শিক্ষা প্রদান করছেন । ইনি কোনও শরীরধারী শিক্ষক নন। এই শরীরে (ব্রহ্মা বাবা)শিক্ষা প্রদানকারী নিরাকার শিববাবা বিরাজমান । উনি নিরাকার হয়েও জ্ঞানের সাগর, মানুষ তো বলে ওঁনার কোনও আকার নেই । মহিমা করে গীত ও গেয়ে থাকে-জ্ঞানের সাগর, সুখের সাগর •••••। কিন্তু কিছুই বোঝেনা। ড্রামা অনুসারে অনেক দূরে চলে গেছে, বাবাই কাছে টেনে আনেন । এটা তো ৫ হাজার বছরের কথা । তোমরা বুঝেছ প্রতি ৫ হাজার বছর পরে বাবা আমাদের শিক্ষা প্রদান করতে আসেন । এই নলেজ আর কারও কাছ থেকে পাওয়া যাবেনা। এই নলেজ হলো নতুন সৃষ্টির জন্য । কোনও মানুষ এই নলেজ দিতে পারবে না কেননা ওরা তমোপ্রধান হয়ে গেছে । ওরা কাউকে সতোপ্রধান করে তুলতে পারবেনা। ওরা তো তমোপ্রধান হয়েই চলেছে ।
তোমরা এখন জেনেছ - বাবা আমাদের এনার মধ্যে প্রবেশ করে বলছেন- বাচ্চারা অসতর্ক হয়ো না, শত্রু এখনও তোমাদের পিছনে রয়েছে, যে তোমাদের অধঃপতিত করেছে । শত্রু এখনও তোমাদের পিছু ছাড়বে না । যদিও তোমরা সঙ্গম যুগে আছ কিন্তু অর্ধকল্প ধরে তোমরা শত্রুর বশীভূত ছিলে, সুতরাং এতো শীঘ্র সে তোমাদের ছাড়বে না, সাবধান না হলে । স্মরণে না থাকলে আরও বিকর্ম করাবে । তারপর ও কিছু না কিছু চড় এসে পড়বে (মায়ার)। এখন দেখ মানুষ কেমন নিজেকেই নিজে চড় কষায় । কত কি বলে দেয় । শিব - শঙ্করকে এক বলে দেয়, ওদের পদমর্যাদা সেটা কি ? কত পার্থক্য । শিব তো হলেন সর্বোচ্চ ভগবান, শঙ্কর দেবতা । তারপরও শিব-শঙ্কর একত্রে কিভাবে বলে ? দুজনের পার্টই আলাদা-আলাদা । এখানেও (লৌকিক জগতে) অনেকের এমন সব নাম আছে- রাধা কৃষ্ণ, লক্ষ্মীনারায়ণ, শিবশঙ্কর ••••• দুটো নামই একত্রে নিজের জন্য রেখেছে । সুতরাং বাচ্চারা বুঝেছে এই সময় পর্যন্ত বাবা যা কিছু বুঝিয়েছেন তা আবার রিপিট হবে । অল্প সময় বাকি আছে । বাবা তো বসে থাকবেন না । বাচ্চারা নম্বরনুসারে অধ্যয়ন করে সম্পূর্ণ কর্মাতীত হয়ে যাবে । ড্রামানুসারে মালা ও তৈরি হয়ে যাবে । কোন্ সে মালা ? সব আত্মাদের মালা তৈরি হবে তবেই ফিরে যাবে । মালা নম্বরনুসারে তোমাদের হবে । শিববাবার মালা অনেক বড়। ওখান থেকেই নম্বরনুসারে রোল প্লে করতে আসবে । তোমরা সবাই বাবা-বাবা বলে ডাক। সবাই এক মালার দানা। সবাইকে বিষ্ণু মালার দানা বলা হবে না,এসবই বাবা বসে পড়ান । সূর্য বংশী হতেই হবে । সূর্য বংশী-চন্দ্র বংশী যা অতীত হয়ে গেছে আবার তৈরি হবে । ঐ পদ পঠন-পাঠ দ্বারাই প্রাপ্ত হয়। বাবার শিক্ষা গ্রহণ ছাড়া ঐ পদ প্রাপ্ত হবে না । চিত্র আছে, কিন্তু কেউ এমন তত্পরতা দেখায় না যে ,আমরা এদের মতো হতে পারি। সত্য নারায়ণের কথা শোনে । গরুড় পুরাণে এমন সব আছে যা মানুষকে শোনানো হয়। বাবা বলেন এই বিষয় বৈতরণী নদী ভয়াবহ । মূলতঃ ভারতের জন্যই বলা হয় । বৃহস্পতির দশা ভারতের উপরই অবস্থান করছে ।বৃক্ষপতি ও ভারতবাসীদেরই পড়ান । অসীম জগতের বাবা বসে অসীম জগতের কথাই বোঝান । দশা অবস্থান করে । রাহুর দশা চলাকালীন বলা হয় দান দিলেই গ্রহণ থেকে মুক্ত হবে । বাবা ও বলে থাকেন এই কলিযুগের শেষে সবার উপরেই রাহুর দশা অবস্থান করছে । এখন আমি বৃক্ষপতি ভারতে এসেছি বৃহস্পতির দশা প্রতিষ্ঠা করতে । সত্য যুগে বৃহস্পতির দশা ভারতেই ছিল । এখন চলছে রাহুর দশা । এ সবই অসীম জগতের কথা । এসব কথা কোনও শাস্ত্র ইত্যাদিতে নেই । এসব ম্যাগাজিন ইত্যাদি তাদেরই ধারণা করাবে যারা প্রথমে কিছু না কিছু বুঝেছিল । ম্যাগাজিন পড়ে আরও ভালো করে বোঝার জন্য দৌড় লাগাবে। বাকিরা তো কিছুই বুঝবে না । যে অল্প পড়ে ছেড়ে দিয়েছে তার মধ্যেও অল্প জ্ঞানের ঘৃত অর্পণ করলে সে ও সজাগ হয়ে পড়ে । জ্ঞানকে ঘৃত (ঘি) বলা হয় । নিভে যাওয়া দীপক-কে ( প্রদীপ অর্থাত্ এখানে আত্মা) বাবা এসে জ্ঞানের ঘৃত অর্পণ করছেন । বাবা বলেন- বাচ্চারা, মায়ার তুফান এসে দীপকে (আত্মা) নিভিয়ে দেবে। বহ্নি পতঙ্গ কেউ মত্ত (ঈশ্বরীয় নেশায়) হয়ে পুড়ে মরবে ( সম্পূর্ণ সমর্পণ)। কেউ বা ঘুরে ফিরে চলে যাবে । প্র্যাকটিক্যালি এখন সেটাই হচ্ছে । নম্বরনুসারে সব পতঙ্গ । প্রথম- প্রথম তো সম্পূর্ণরূপে বাড়িঘর ছেড়ে চলে আসে বহ্নি পতঙ্গ রূপে । ঠিক যেন লটারি প্রাপ্ত হয়েছে । যা কিছু অতীতে হয়েছে তোমরা ও সেটাই করবে । যদিও চলে গেছ, এমনটা ভেবো না যে স্বর্গে যাব না । বহ্নি পতঙ্গ হয়ে দয়িতের প্রতি মত্ত হয়েছ, তারপর মায়া এসে হারিয়ে দিয়েছে, সুতরাং পদ কম হয়ে যাবে । ক্রমিকানুসারেই তো নম্বর হবে । অন্যান্য সৎসঙ্গে কারো বুদ্ধিতে এসব ধারণা হবেনা । তোমাদের বুদ্ধিতে আছে । বাবার সৃষ্টি নতুন দুনিয়াতে যাবার জন্য আমরা সবাই নম্বরনুসার পুরুষার্থ অনুসারে শিক্ষা গ্রহণ করছি । আমরা অসীম জগতের বাবার সামনে বসে আছি । এটাও জেনে গেছ আত্মা দৃশ্যমান হয় না । আত্মাকে দিব্য দৃষ্টি দিয়ে দেখতে হয় । আমরা আত্মারাও ছোট বিন্দু স্বরূপ । কিন্তু দেহভান ছেড়ে নিজেকে আত্মা মনে করা-এটাই হলো উচ্চ স্তরের পঠন-পাঠ । লৌকিকের পঠন-পাঠনে যে সাবজেক্ট ডিফিকাল্ট হয়, তাতে বিফল হয় । এই সাবজেক্ট তো কত সহজ । কিন্তু কারও কারও কঠিন (ডিফিকাল্ট) অনুভব হয় । এখন তোমরা বুঝেছ শিববাবা সামনে বসে আছেন । তোমরাও নিরাকার আত্মা কিন্তু শরীরের সাথে আছ । এইসব কথা অসীম জগতের বাবাই শোনান । আর কেউ শোনাতে পারেনা । তারপর কি করা উচিত? ওঁনাকে ধন্যবাদ দেবে ? না । বাবা বলেন এই অনাদি ড্রামা পূর্ব নির্ধারিত । আমি নতুন কথা কিছু বলিনা। ড্রামানুসারে তোমাদের পড়াই। ধন্যবাদ তো ভক্তি মার্গে দেওয়া হয় । শিক্ষক বলবে স্টুডেন্ট ভালো করে পড়লে আমার সুখ্যাতি হবে । স্টুডেন্টকে ধন্যবাদ জানানো হয় । যে ভালো ভাবে পড়ান, আর যে পড়ে তাকে ধন্যবাদ দেওয়া হয় । স্টুডেন্ট ও তারপর টিচারকে ধন্যবাদ জানায়। বাবা বলেন-মিষ্টি বাচ্চারা, বেঁচে থাক । এভাবেই সার্ভিস কর । কল্প পূর্বেও করেছিলে । আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন-স্মরণ ভালোবাসা আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১. সবসময় নেশা(ঈশ্বরীয়) আর দৃঢ় বিশ্বাস যেন থাকে যে আমাদের শিক্ষা প্রদানকারী কোনও শরীরধারী শিক্ষক নন।স্বয়ং জ্ঞানের সাগর নিরাকার শিববাবা শিক্ষক রূপে আমাদের পড়াচ্ছেন । এই পঠন-পাঠনের মাধ্যমেই আমাদের সতোপ্রধান হতে হবে ।
২. আত্মা রূপী দীপকে প্রতিদিন জ্ঞানের ঘৃত অর্পণ করতে হবে । জ্ঞান ঘৃত দ্বারা এমনই প্রজ্জ্বলিত করে তুলতে হবে যাতে মায়ার কোনও তুফান নাড়াতে না পারে । সম্পূর্ণ বহ্নি পতঙ্গ হয়ে সমর্পিত হতে হবে ।
বরদান:-
মন আর বুদ্ধিকে সকল ঝামেলার থেকে সরিয়ে মিলনমেলা উদযাপনকারী ঝামেলামুক্ত ভব
কিছু বাচ্চারা ভাবে এই ঝামেলা (ঝঞ্ঝাট, সমস্যা) মিটে গেলে আমার অবস্থা বা সেবা ঠিক হয়ে যাবে, কিন্তু ঝামেলা হলো পাহাড়ের সমান । পাহাড় সরবে না, কিন্তু যেখানে ঝামেলা আছে সেখান থেকে মন আর বুদ্ধিকে সরিয়ে নিয়ে বা উড়তি (উত্তরণ) কলার দ্বারা ঝামেলার পাহাড়ের অনেক ঊর্ধ্বে যদি চলে যাও, তখন পাহাড়ও তোমাদের কাছে দুরূহ অনুভব হবে না । ঝামেলার দুনিয়াতে ঝামেলা তো আসবেই, তোমরা তা থেকে মুক্ত হতে পারলেই মিলনমেলা উদযাপন করতে পারবে।
স্লোগান:-
এই অসীম নাটকে হিরোর ভূমিকা পালনকারীই হল হিরো পার্টধারী ।