১৪-০২-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা - ভারতবাসীদেরকে প্রমাণ করে বোঝাও যে শিব জয়ন্তী-ই হল প্রকৃত গীতা জয়ন্তী। গীতার দ্বারাই পরবর্তী কালে কৃষ্ণ জয়ন্তী হয়”
প্রশ্ন:-
যে কোনো ধর্ম কোন্ মুখ্য বিষয়ের ভিত্তিতে স্থাপিত হয় ? কোন্ কার্য অন্যান্য ধর্ম স্থাপকেরা করে না, কিন্তু বাবা করেন?
উত্তর:-
যেকোনো ধর্ম স্থাপনের জন্য পবিত্রতার শক্তি প্রয়োজন। সকল ধর্মই পবিত্রতার শক্তির দ্বারা স্থাপিত হয়েছে। কিন্তু কোনো ধর্ম স্থাপক-ই কাউকে পবিত্র বানায় না। কারণ, যখন ধর্ম-স্থাপন হয় তখন মায়ার রাজত্ব চলে, অর্থাৎ সবাইকে পতিত হতেই হবে। পতিতদেরকে পবিত্র বানানো কেবল বাবার-ই কর্তব্য। তিনিই পবিত্র হওয়ার শ্রীমৎ দেন।
গীত:-
এই পাপের দুনিয়া থেকে অনেক দূরে নিয়ে চল...
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা এখন বুঝে গেছে যে কাকে পাপের দুনিয়া বলে, আর কাকে পুণ্য অর্থাৎ পবিত্র দুনিয়া বলে। বাস্তবে এই ভারত-ই হল পাপের দুনিয়া এবং এই ভারত-ই পরবর্তী কালে পুণ্যের দুনিয়া বা স্বর্গ হয়। ভারত-ই এক সময়ে স্বর্গ ছিল এবং ভারত-ই এখন কাম-চিতাতে জ্বলে পুড়ে নরক হয়ে গেছে। ওখানে তো কাম-চিতা থাকবেই না, তাই কেউই কাম-চিতায় পুড়বে না। এমন নয় যে সত্যযুগেও কাম-চিতা ছিল। এটা তো বোঝার ব্যাপার। সবার আগে প্রশ্ন ওঠা উচিৎ - যে ভারত আজ এত পতিত-দুঃখী হয়ে গেছে, সেই ভারত নিশ্চয়ই কখনো পবিত্র-সুখী ছিল। বলা হয় আদি সনাতন হিন্দু ধর্ম ছিল। কিন্তু আদি-সনাতন ধর্ম কাকে বলা যাবে? আদি মানে কি, আর সনাতন মানেই বা কি ? আদি মানে সত্যযুগ। সেই সত্যযুগে কারা ছিল ? এটা তো সবাই জানে যে তখন লক্ষ্মী-নারায়ণই ছিল। কিন্তু ওরা নিশ্চয়ই কারোর সন্তান ছিল এবং পরবর্তী কালে সত্যযুগের মালিক হয়েছিল। ওরা সত্যযুগের স্থাপক পরমপিতা পরমাত্মার সন্তান ছিল। কিন্তু এখন আর নিজেদেরকে তাঁর সন্তান বলে ভাবে না। যদি সন্তান বলে মনে করত, তাহলে তো বাবাকে জানত। কিন্তু বাবাকেই জানে না। গীতাতে তো হিন্দু ধর্মের উল্লেখই নেই। গীতাতে তো ভারতভূমির নাম রয়েছে এবং এটাকেই হিন্দু মহাসভা বলা হয়। শ্রীমৎ ভগবৎ গীতা হল সকল শাস্ত্রের জননী। গীতা জয়ন্তী এবং শিব জয়ন্তী দুটোই পালন করা হয়। কিন্তু শিব জয়ন্তী কবে হয়েছিল, সেটা তো জানতে হবে। তারপরে কৃষ্ণ জয়ন্তী হয়। তোমরা বাচ্চারা এখন জেনে গেছ যে শিব জয়ন্তীর পরেই গীতা জয়ন্তী হয়। গীতা জয়ন্তীর পরে হয় কৃষ্ণ জয়ন্তী। গীতা জয়ন্তীর দ্বারা-ই দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপন হয়। এই গীতা জয়ন্তীর সাথে মহাভারতের যুদ্ধেরও কানেকশন রয়েছে। ওতে যুদ্ধের কথা আছে। লেখা আছে যে যুদ্ধক্ষেত্রে তিন রকমের সৈন্য ছিল - যাদব, কৌরব এবং পাণ্ডব। যাদবরা মুষল (মিসাইল) আবিষ্কার করে। মদ্যপান করে আর মুষল তৈরি করে। তোমরা জানো যে এখন ঐরকম মুষল আবিষ্কৃত হচ্ছে। ওরা নিজেদের বংশকেই ধ্বংস করার জন্য একে অপরকে হুমকি দিচ্ছে। ওরা সবাই খ্রিস্টান। ওই ইউরোপ নিবাসীরাই হল যাদব। এটা হল আরেকটা সভা। নিজেদের মধ্যে লড়াই করেই ওদের বিনাশ হয়। গোটা ইউরোপের-ই এই অবস্থা হয়। এর মধ্যে ইসলাম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকলেই আছে। এখানে আছে পাণ্ডব এবং কৌরবরা। কৌরবদেরও বিনাশ হয়েছিল। কেবল পাণ্ডবরাই বিজয়ী হয়েছিল। *কিন্তু এখন প্রশ্ন হল - যিনি সহজ যোগ এবং জ্ঞান শিখিয়ে রাজাদের রাজা বানিয়েছেন, সেই গীতার ভগবান আসলে কে ? তিনি কি শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন ? কিন্তু কৌরবরা তো কলিযুগে ছিল। কৌরব এবং পাণ্ডবদের সময়ে শ্রীকৃষ্ণ আসবে কিভাবে ? শ্রীকৃষ্ণের জয়ন্তী পালন করা হয়। তিনি তো সত্যযুগের শুরুতে ছিলেন এবং ১৬ কলা সম্পূর্ণ ছিলেন। শ্রীকৃষ্ণের পরে ত্রেতাযুগে ছিলেন ১৪ কলাযুক্ত রাম। কৃষ্ণ হলেন রাজাদের রাজা বা প্রিন্সদের প্রিন্স। বিকারী প্রিন্সরাও শ্রীকৃষ্ণকে পূজা করে। কারণ তারা জানে যে ইনি হলেন সত্যযুগের ১৬ কলা সম্পূর্ণ প্রিন্স, আর আমরা হলাম বিকারী প্রিন্স। প্রিন্সরাও নিশ্চয়ই এইরকম বলবে। এখন পুনরায় শিব জয়ন্তী আসছে। সবথেকে বড় মন্দির তো তাঁর-ই রয়েছে। ওটা হল নিরাকার শিববাবার মন্দির। তাঁকেই পরমাত্মা বলা হয়। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকরকে তো দেবতা বলা হয়। ভারতেই শিব জয়ন্তী পালন করা হয়। আর কয়েকদিন পরেই শিবরাত্রি। এটা সবাইকে প্রমাণ করে বোঝাতে হবে যে ভগবান শিবকেই জ্ঞানের সাগর অথবা দুনিয়াকে পবিত্র করতে সক্ষম পরমপিতা পরমাত্মা বলা হয়*। গান্ধীজিও এইরকম মহিমা করতেন। কিন্তু তিনি কখনো কৃষ্ণের নাম নিতেন না। সুতরাং আসল প্রশ্নটা হল - শিব জয়ন্তীকে গীতা জয়ন্তী বলা যাবে, না কি কৃষ্ণ জয়ন্তীকে গীতা জয়ন্তী বলা যাবে? কৃষ্ণ জয়ন্তী তো সত্যযুগে হয়। কিন্তু শিব জয়ন্তী কবে হয় সেটা কেউই জানে না। শিববাবা তো হলেন নিরাকার পরমপিতা পরমাত্মা। তিনি সঙ্গমযুগে নুতন দুনিয়ার রচনা করেছিলেন। সত্যযুগে শ্রীকৃষ্ণের রাজত্ব ছিল। তাহলে নিশ্চয়ই আগে শিব জয়ন্তী হয়। *যেসকল ব্রাহ্মণকুলভূষণ বাচ্চারা সেবারত থাকে, তাদেরকে এটা নিয়ে বুদ্ধি খাটাতে হবে যে কিভাবে ভারতবাসীদেরকে প্রমাণ করে বোঝাব যে শিব জয়ন্তী-ই হল আসল গীতা জয়ন্তী। এরপর এই গীতার দ্বারা-ই শ্রীকৃষ্ণ অর্থাৎ যিনি রাজাদের রাজা, তার জয়ন্তী হয়। কৃষ্ণ হলেন পবিত্র দুনিয়ার রাজা। ওখানে তার রাজত্ব ছিল। ওখানে নিশ্চয়ই শ্রীকৃষ্ণ জন্ম নিয়েই গীতা শোনায়নি। তাছাড়া সত্যযুগে তো ঐরকম মহাভারতের যুদ্ধ হওয়া সম্ভব নয়। এটা নিশ্চয়ই সঙ্গমযুগেই হয়েছিল। বাচ্চারা, তোমাদেরকে এই বিষয়টা নিয়ে ভালোভাবে বোঝাতে হবে। পাণ্ডব এবং কৌরবদের সভা সুপ্রসিদ্ধ। শ্রীকৃষ্ণকে পাণ্ডব-পতি রূপে দেখানো হয়েছে। মানুষ মনে করে, সেই হয়তো সহজ জ্ঞান আর সহজ রাজযোগ শিখিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এইরকম কোনো যুদ্ধ হয়নি। পরমপিতা পরমাত্মা যাদেরকে সহজ রাজযোগ শিখিয়েছিলেন, তারাই বিজয়ী হয়েছিল। তারাই ২১ জন্মের জন্য সূর্যবংশী এবং চন্দ্রবংশী হয়ে যায়। তাই আগে এই হিন্দু মহাসভাকে বুঝতে হবে। আরও অনেক সভা রয়েছে। যেমন - লোকসভা, রাজ্যসভা। কিন্তু মুখ্য হল এই হিন্দু মহাসভা। যাদব, কৌরব এবং পাণ্ডব নামক এই তিন রকম সৈন্য এই সঙ্গমযুগেই তৈরি হয়েছে। এখন সত্যযুগের স্থাপন হচ্ছে। শ্রীকৃষ্ণের জন্মের প্রস্তুতি চলছে। গীতাজ্ঞান নিশ্চয়ই সঙ্গমযুগেই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, কার পক্ষে সঙ্গমযুগে আসা সম্ভব ? কৃষ্ণের পক্ষে তো আসা সম্ভব নয়। সে কেন শুধু-শুধু পবিত্র দুনিয়া ছেড়ে এই পতিত দুনিয়াতে আসবে। তাছাড়া কৃষ্ণ তো এখন এখানে নেই। তোমরা জানো যে কৃষ্ণ এখন তার ৮৪তম জন্মে রয়েছে। কিছু লোক আবার বিশ্বাস করে যে কৃষ্ণ হল সর্বব্যাপী, ডাকলেই হাজির হয়ে যায়। কৃষ্ণের ভক্তরা তো বলে যে সব জায়গায় কেবল কৃষ্ণই বিরাজমান। কৃষ্ণই এইরকম রূপ ধারণ করেছে। যারা রাধাপন্থী, তারা বলবে রাধা-ই সকল স্থানে বিরাজমান, আমিও রাধা - তুমিও রাধা। অনেক রকম মত বেরিয়েছে। কেউ বলে ঈশ্বর সর্বব্যাপী, কেউ বলে কৃষ্ণ সর্বব্যাপী, কেউ বলে রাধা সর্বব্যাপী। বাবা এখন তোমাদের মতো বাচ্চাদেরকে এইসব বিষয় বোঝাচ্ছেন। বাবা হলেন ওয়ার্ল্ড অলমাইটি অথরিটি। তাই তোমাদের মতো বাচ্চাদেরকেও তিনি সেই অথরিটি দিচ্ছেন যে কিভাবে সবাইকে বোঝাতে হবে। হিন্দু মহাসভার লোকদেরকে বোঝাও। ওরাই এইসব বিষয় বুঝতে পারবে। ওরা নিজেদেরকে ধর্মীয় মনোভাবের মানুষ বলে মনে করে। গভর্নমেন্ট তো কোনো ধর্মকেই মানে না। ওরা নিজেরাই সংশয় মনোভাবাপন্ন হয়ে গেছে। কেবল পরমাত্মা শিব-ই হলেন জ্ঞানের সাগর। আর কাউকে জ্ঞানের সাগর বলা যাবে না। তিনি সম্মুখে এসে জ্ঞান দিলেই রাজত্ব স্থাপন হয়। একবার রাজত্ব স্থাপন হয়ে গেলে, বাবা পুনরায় সম্মুখে আসবেন যখন আমরা সেই রাজত্ব হারিয়ে ফেলবো। সুতরাং তোমাদেরকে এটা প্রমান করতে হবে যে পরমাত্মা শিব-ই হলেন জ্ঞানের সাগর এবং শিব জয়ন্তী-ই হল প্রকৃত গীতা জয়ন্তী। এটা নিয়ে একটা নাটক মঞ্চস্থ করতে হবে যাতে কৃষ্ণের কথা মানুষের বুদ্ধি থেকে বেরিয়ে যায়। নিরাকার শিব পরমাত্মাকেই পতিত-পাবন বলা হয়। যত রকম শাস্ত্র রয়েছে, সবগুলোই মানুষের মত অনুসারে, মানুষের দ্বারা বানানো হয়েছে। বাবার তো কোনো শাস্ত্র নেই। বাবা বলছেন, আমি তোমাদের সামনে এসে তোমাদেরকে ভিখারি থেকে রাজকুমার বানিয়ে দিই এবং তারপর আমি চলে যাই। কেবল আমিই তোমাদেরকে সামনে এসে এই জ্ঞান শোনাতে পারি। দুনিয়ায় যারা গীতা শোনায়, তারাও হয়তো গীতা পাঠ করে, কিন্তু সেখানে তো সম্মুখে ভগবান থাকেন না। বলা হয় - গীতার ভগবান সকলের সম্মুখে ছিলেন এবং স্বর্গ রচনা করে চলে গেছেন। কিন্তু দুনিয়ায় যে গীতা পাঠ করা হয়, সেটা শুনলে কি কেউ স্বর্গবাসী হতে পারে? মৃত্যুর সময়েও মানুষকে গীতাই শোনানো হয়, অন্য কোনো শাস্ত্র শোনানো হয় না। মানুষ মনে করে গীতার দ্বারা তো স্বর্গের স্থাপন হয়েছিল, তাই গীতা-ই শোনায়। সুতরাং সকল গীতা অভিন্ন হওয়া উচিত। অন্যান্য ধর্মগুলো তার পরে এসেছে। অন্য কেউই এইভাবে বলতে পারবে না যে তুমি স্বর্গবাসী হবে। মানুষকে গঙ্গাজল-ই খাওয়ানো হয়। যমুনার জল খাওয়ানো হয় না। যত মহিমা, সব কেবল গঙ্গাজলের। অনেক বৈষ্ণব সেখানে যায় আর বোতল ভর্তি করে গঙ্গাজল নিয়ে আসে। তারপর সেখান থেকে ফোঁটা ফোঁটা গঙ্গাজল মিশিয়ে পান করে যাতে সব রোগ ভালো হয়ে যায়। কিন্তু বাস্তবে এই জ্ঞান অমৃতের দ্বারা-ই ২১ জন্মের জন্য দুঃখের অবসান হয়। তোমাদের মতো চৈতন্য জ্ঞান গঙ্গাতে স্নান করলেই মানুষ স্বর্গবাসী হয়। তাই পরবর্তী কালে নিশ্চয়ই এইরকম জ্ঞান গঙ্গা তৈরি হবে। জলের নদী তো সবদিন-ই রয়েছে। জল খেয়ে কি কেউ কখনো দেবতা হয়ে যায় ? এখানে কেউ যদি একটুও জ্ঞান শোনে, তাহলেই স্বর্গের দাবীদার হয়ে যায়। এরা হল জ্ঞানের সাগর শিববাবার জ্ঞানগঙ্গা। শিববাবা-ই হলেন জ্ঞানের সাগর অর্থাৎ গীতা জ্ঞান দাতা, কৃষ্ণ নয়। সত্যযুগে একজনও পতিত মানুষ থাকবে না যাকে জ্ঞান দিতে হবে। ভগবান এসেই এইসকল কথা বোঝান। অর্জুন বা সঞ্জয়ের নাম খুবই বিখ্যাত। যারা লিখেছে তারা খুব ভালো লেখক। লেখার জন্য নিমিত্ত হয়েছে। এখন শিব জয়ন্তী আসছে। তাই এই কথাগুলো বড় বড় হরফে লিখতে হবে। শিববাবা হলেন নিরাকার। তাঁকেই জ্ঞানের সাগর অথবা কল্যাণকারী বলা হয়। পরমাত্মা শিববাবা-ই জ্ঞান দান করেন এবং করুণা করেন। এই জ্ঞান দেওয়াটাই হল করুণা করা। শিক্ষক করুণা করে শিক্ষা দিলে ব্যারিস্টার, ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি হয়ে যায়। সত্যযুগে কল্যাণ করার প্রয়োজন হবে না। সুতরাং সবার আগে এইটা প্রমাণ করতে হবে যে নিরাকার জ্ঞানের সাগর শিব জয়ন্তীকে গীতা জয়ন্তী বলা যাবে, না কি সত্যযুগের শরীর-ধারী কৃষ্ণ জয়ন্তীকে গীতা জয়ন্তী বলা যাবে? বাচ্চারা, এটাই তোমাদেরকে প্রমাণ করতে হবে।
তোমরা জান যে, যতজন পয়গম্বর (ঈশ্বরের দূত বা ধর্ম স্থাপক) আসে, তারা কেউই মানুষকে পবিত্র বানায় না। দ্বাপরযুগ থেকে মায়ার রাজত্ব চলে। তাই সকলেই পতিত হয়ে যায়। তারপর যখন মানুষ নাজেহাল হয়ে যায়, তখন ফেরৎ যেতে চায়। যে ধর্মের স্থাপন করা হয়, সেটাই ক্রমশঃ বৃদ্ধি পেতে থাকে। পবিত্রতার বলের দ্বারা-ই ধর্ম স্থাপন হয়। কিন্তু তারপরে অপবিত্র তো হতেই হবে। মুখ্য ৪টে ধর্ম রয়েছে। পরবর্তী কালে এইগুলো থেকেই বৃদ্ধি হয়। শাখা প্রশাখা বের হয়। শিব জয়ন্তী এবং গীতা জয়ন্তীর এই সম্পর্ক প্রমাণিত হলে বাকি শাস্ত্র গুলোর আর কোনো গুরুত্ব থাকবে না। কারণ সেগুলো সব মনুষ্য-সৃষ্ট। বাস্তবে গীতা-ই হল এই ভারতের একমাত্র শাস্ত্র। মোস্ট বিলাভেড বাবা কতই না সহজ ভাবে বোঝান। তাঁর মত হল সর্বশ্রেষ্ঠ মত। তাই তোমাদেরকে এটা প্রমাণ করতে হবে যে নিরাকার জ্ঞান সাগরের জয়ন্তীকে গীতা জয়ন্তী বলা উচিত, না কি সত্যযুগের শরীর-ধারী শ্রীকৃষ্ণের জয়ন্তীকে গীতা জয়ন্তী বলা উচিত? *এর জন্য বড় কনফারেন্স-এর আয়োজন করতে হবে।* এটা প্রমাণিত হয়ে গেলেই সকল পন্ডিত ব্যক্তিরা তোমাদের কাছে আসবে আর নিজেদের জীবনে এই লক্ষ্য ধারণ করবে। *শিব জয়ন্তী উপলক্ষ্যে কিছু না কিছু তো করতেই হবে, তাই না?* হিন্দু মহাসভার লোকদের বোঝাও। ওদের সংগঠন অনেক বড়। সত্যযুগে আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম ছিল। সভা কেবল এই সঙ্গমযুগেই হয়। আর অন্য কখনো সভা হয় না। আগে তো এটাই প্রমাণ করতে হবে যে বাস্তবে এই ব্রাহ্মণদের সভা অথবা পাণ্ডবদের সভাই হল আদি সনাতন সভা। পাণ্ডবরাই জয়ী হয়েছিল এবং স্বর্গবাসী হয়েছিল। এখন কোনো সভাকেই আদি সনাতন দেবী-দেবতাদের সভা বলা যাবে না। ওদের কেবল সার্বভৌমত্ব রয়েছে। আগের কল্পের সঙ্গমেও এইরকম সভা ছিল। এদের মধ্যেই পাণ্ডবদের একটা সভা ছিল যাকে আদি সনাতন ব্রাহ্মণদের সভা বলা হয়। কেউই এইসব কথা জানে না। কৃষ্ণের নাম থেকে ব্রাহ্মণ শব্দটা আসেনি। ব্রহ্মার সাথেই ব্রাহ্মণ কুলের সম্মন্ধ রয়েছে। ব্রহ্মার নাম থেকেই তোমরা ব্রাহ্মণ সভা বলো। এইসব বিষয় যে বোঝাবে, তাকেও অনেক বুদ্ধিমান হতে হবে। এরজন্য জ্ঞানের ভিত মজবুত হতে হবে। নিরাকার শিববাবা-ই হলেন গীতা-জ্ঞান-দাতা এবং দিব্য-দৃষ্টি-বিধাতা। এইসব কথা ধারণ করতে হবে এবং তারপর কনফারেন্স-এর আয়োজন করতে হবে। যারা মনে করে যে আমি প্রমাণ করে বোঝাতে পারব, তাদেরকে নিজেদের মধ্যে বসে আলোচনা করতে হবে। যুদ্ধক্ষেত্রেও মেজর, কমান্ডার ইত্যাদিরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে। এখানে যারা মহারথী, তাদেরকে কমান্ডার বলা হবে। বাবা হলেন ক্রিয়েটার এবং ডাইরেক্টার। তিনি স্বর্গের রচনা করেন এবং ডাইরেকশন দেন যে মহাসভা তৈরি করে এইসব বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখো। গীতার ভগবান আসলে কে? - এটা প্রমাণিত হয়ে গেলেই সবাই বুঝবে যে তাঁর সাথেই যোগযুক্ত হতে হবে। বাবা বলছেন, আমি তো গাইড রূপে এসেছি। কিন্তু তোমাকেও তো ওড়ার যোগ্য হতে হবে। ডানাগুলোকে মায়া ভেঙে দিয়েছে। যোগের দ্বারা-ই তোমরা আত্মারা পবিত্র হয়ে যাবে এবং উড়তে পারবে। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন, স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত। ঈশ্বরীয় পিতা ওঁনার ঈশ্বরীয় সন্তানদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১. জ্ঞানের অমৃতধারা দান করে সবাইকে নিরোগী বা স্বর্গবাসী বানানোর সেবা করতে হবে। মানুষকে দেবতা বানাতে হবে। বাবার মতো মাস্টার দয়ার সাগর হতে হবে।
২. জ্ঞানের শক্তিশালী ভিতের দ্বারা বুদ্ধিমান হয়ে শিব জয়ন্তী-তে এটা প্রমাণ করতে হবে যে শিব জয়ন্তী-ই হল প্রকৃত গীতা জয়ন্তী এবং গীতা জ্ঞানের দ্বারা-ই শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়।
বরদান:-
বাবার স্নেহ-কে অন্তরে ধারণ করে সকল আকর্ষণ থেকে মুক্ত থাকতে সক্ষম সত্যিকারের স্নেহের পাত্র ভব
বাবা সকল বাচ্চাকেই একইরকম স্নেহ করেন। কিন্তু বাচ্চারা নিজ শক্তি অনুসারে সেই স্নেহ-কে ধারণ করে। যে অমৃতবেলার আদি সময়ে বাবার স্নেহ-কে ধারণ করে নেয়, তার অন্তর পরমাত্ম-স্নেহতে মিশে থাকার কারণে অন্য কোনো স্নেহ তাকে আকৃষ্ট করতে পারে না। যে নিজের অন্তরে সম্পূর্ণভাবে স্নেহ ধারণ করে না, তার অন্তরে জায়গা খালি থাকার জন্য মায়া বিভিন্ন ভাবে অনেক রকমের স্নেহের দ্বারা আকৃষ্ট করে নেয়। তাই সত্যিকারের স্নেহের পাত্র হয়ে পরমাত্ম-স্নেহতে সর্বদা পরিপূর্ণ থাকো।
স্লোগান:-
যে দেহ, পুরাতন দৈহিক দুনিয়া এবং সম্বন্ধ গুলোর আকর্ষণ ছাড়িয়ে উপরে উড়তে পারে, সে-ই হল ইন্দ্রপ্রস্থ নিবাসী।