০৫-৪-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - বাবার প্রেম তো সব বাচ্চাদের প্রতি আছে, কিন্তু যারা বাবার উপদেশ অবিলম্বে মেনে নেয়, তাদের প্রতি বাবার টান থাকে। গুণবান বাচ্চাদের প্রতি বাবার প্রেমের আকর্ষণ থাকে"

প্রশ্ন:-

বাবা কোন চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছেন ?

উত্তর:-

সবাইকে ফুল (গুলগুল) বানিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চুক্তি (কন্ট্রাক্ট) একমাত্র বাবার। বাবার মতো কনট্রাক্টর আর কেউ নেই। উনিই সবার মোক্ষ লাভ করাতে আসেন। বাবা সার্ভিস ব্যাতীত থাকতে পারেন না। তাই বাচ্চাদেরও সার্ভিসের প্রমাণ দিতে হয়। যা কিছু শুনছো - তার অবহেলা করবে না।

ওম্ শান্তি।

আত্মাদের পিতা আত্মা স্বরূপ বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন - বাচ্চারা, নিজেদের আত্মা মনে করে বসো। এটা এক বাবা-ই বোঝান আর কোনো মানুষ কাউকে বোঝাতে পারবে না। নিজেকে আত্মা মনে করো- এটা পাঁচ হাজার বছর পরে বাবা নিজে এসে শেখাচ্ছেন। এটাও তোমরা অর্থাৎ বাচ্চারা জানো। কারোরই জানা নেই যে এটা হল পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ। বাচ্চারা, তোমাদের স্মরণে থাকে যে আমরা পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে আছি, এটাও মন্মনাভবই (মনে মনে স্মরণ করার যোগ্য হও) হলো। বাবা বলেন-আমাকে স্মরণ করো, কারণ এখন ফিরে যেতে হবে। ৮৪ জন্ম এখন সম্পূর্ণ হয়েছে, এখন সতোপ্রধান হয়ে ফিরে যেতে হবে। কেউ তো একদমই স্মরণ করে না। বাবা তো প্রত্যেকের পুরুষার্থ কে ভালো ভাবে জানেন। এদের মধ্যেও বিশেষ কেউ এখানে আছে বা বাইরে আছে। বাবা জানেন যদিও এখানে বসে দেখছি কিন্তু মিষ্টি মিষ্টি যে সার্ভিসেবেল বাচ্চারা আছে, তাদের স্মরণ করছি। দেখছিও তাদের, এরা কোন্ ধরনের ফুল, এদের মধ্যে কি-কি গুণ আছে? কেউ তো এমনও আছে যার মধ্যে কোনো গুণ নেই। এখন এদের কে দেখে বাবা কি করবেন। বাবা হলেন চুম্বক-পিওর আত্মা, তাই অবশ্যই আকর্ষণ করবেন। কিন্তু বাবা ভিতরে কি আছে জানেন, বাবা নিজের সমস্ত হিসাব-নিকাশ বলেন, তাই বাচ্চারাও বলে। বাবা বলেন আমি তোমাদের বিশ্বের মালিক করার জন্য এসেছি। তবুও যে যেমন পুরুষার্থ করবে। পুরুষার্থ যাই করো না কেন, সেটা জানা চাই। বাবা লেখেন- সবার অকুপেশন লিখে পাঠাও অথবা ওনাকে লিখে পাঠাও। যে সঠিক, বুঝদার ব্রাহ্মণী হয়, সে সব লিখে পাঠায়- কি ব্যবসা করছে, কি আমদানি করছে ? বাবা নিজের সব কিছু বলেন আর সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান শোনান। সবার অবস্থাকে জানে। কতো প্রকারের ভ্যারাইটি ফুল। (একেকটা ফুল দেখিয়ে) দেখো, কিরকম রয়্যাল ফুল। এখন এরকম সুগন্ধ, আবার যখন সম্পূর্ণ রূপে প্রস্ফুটিত হবে তখন ফার্স্ট ক্লাস শোভনীয় হয়ে উঠবে। তোমরাও এই লক্ষ্মী-নারায়ণের মতো যোগ্য হয়ে যাবে। তাই বাবা দেখতে থাকেন, এমন না যে সকলকে সার্চ লাইট দেন। যে যেমন, তেমনি আকর্ষণ করেন, যার মধ্যে কোনো গুণ নেই সেখানে কি আর আকর্ষণ করবেন। ঐরকম ভাবে ওখানে গিয়ে পাই-পয়সার পদ পাবে। বাবা প্রত্যেকের গুণকে দেখেন আর ভালোবাসাও দেন। ভালবাসায় চোখ ভিজে যায়। সার্ভিসেবেল এরা, কতো সার্ভিস করে। এদের সার্ভিস ব্যাতীত আরাম হয় না। কেউ তো আবার সার্ভিস করা জানেও না। যোগে বসে না। জ্ঞানের ধারণা নেই। বাবা মনে করেন- এ কি পদ পাবে। কিছুই লুকানো থাকতে পারে না। বাচ্চারা যারা খুব বুদ্ধিমান, সেন্টার সামলায়, তাদের একেক জনের হিসাব -নিকাশ পাঠানো দরকার। তবে বাবা বুঝবেন পুরুষার্থী কতোটা এগিয়েছে। বাবা তো জ্ঞানের সাগর। বাচ্চাদের জ্ঞান প্রদান করেন। কে কতটা জ্ঞান ধারণ করে, গুণবান হয়-সেটা শীঘ্রই জানতে পারা যায়। বাবার প্রেম সকলের প্রতিই আছে। এর উপর একটি গান আছে- তোমার কাঁটার উপরেও প্রেম, তোমার ফুলের উপরেও প্রেম। নম্বর অনুযায়ী তো হবে। তাই বাবার প্রতি কতো নিবিড় প্রেম (লভ) থাকা চাই। বাবা যা বলবেন সেটা অতি শীঘ্র করে দেখালে তো বাবাও বুঝবেন যে বাবার প্রতি প্রেম(লভ) আছে। তিনি আকর্ষণ অনুভব করবেন। বাবার আকর্ষণ এমনি যে একদম আটকে যাবে। কিন্তু যতক্ষণ না জং সরবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আকৃষ্টও হবে না। আমি এক-এক জনকে দেখি।



বাবার সেবার উপযুক্ত (সার্ভিসেবেল) বাচ্চা চাই। বাবা তো সেবার (সার্ভিসের) জন্যই আসেন। পতিত যে তাকে পবিত্র করে তোলেন, এটা তোমরা জানো, দুনিয়ার আর সকলে জানে না কারণ তোমরা সংখ্যায় খুব কম। যতক্ষণ যোগ না হবে ততক্ষণ আকর্ষণও অনুভব হবে না। সেরকম পরিশ্রম খুব কম করে। কোনো না কোনো ব্যাপারে আটকে পড়ে। এটা সেই সৎসঙ্গ নয় যে, যেখানে কিছু শুনলেই সেটাতেই সাধু সাধু করবে। সর্বশাস্ত্র মধ্যে শিরোমণি এক গীতা। *গীতাতেই রাজযোগ আছে।* বিশ্বের মালিক তো বাবাই। বাচ্চাদের বলতে থাকি গীতার মাধ্যমেই প্রভাব পড়বে, কিন্তু এর শক্তিও চাই। যোগবলের ধার ভালো থাকা চাই,যাতে কি না তোমরা দূর্বল। এখনো অল্প সময় আছে। বলা হয়- তুমি মধুর হলে অন্যেও তোমার প্রতি মধুর হবে... আমাকে ভালোবাসলে আমিও ভালোবাসবো। এ হল আত্মার প্রেম। এক বাবার স্মরণে থাকো, এই স্মরণেই বিকর্ম বিনাশ হবে। কেউবা তো একদমই স্মরণ করে না।বাবা বোঝান এখানে ভক্তির ব্যাপার নেই। এটা হলো বাবার রথ, এনার দ্বারা শিববাবা পড়ান। শিববাবা বলেন না যে আমার পা ধুয়ে জল পান করো। ব্রহ্মা বাবা তো পায়ে হাত দিতেও দিতেন না। পায়ে হাত দিয়ে কি হবে ? বাবা তো হলেন সবার মুক্তিদাতা। কোটির মধ্যে কেউই মাত্র এই কথা বুঝবে। পূর্ব কল্পে যে কোটির মধ্যে এক ছিল সেই বুঝবে। ভোলানাথ বাবা এসে সহজ সরল মাতাদের জ্ঞান দিয়ে জাগিয়ে তোলেন। বাবা একদম উচ্চ স্থানে চড়িয়ে দেন- মুক্তি আর জীবন মুক্তির মাধ্যমে। বাবা শুধুমাত্র বলেন, বিকার গুলি ত্যাগ করো। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে শোরগোল হয়। বাবা বোঝান-- নিজেকে দেখো, আমার মধ্যে কি কি অবগুণ আছে ? ব্যবসায়ীরা রোজ নিজেরা হিসাব-নিকাশ করে লাভ-লোকসান বের করে। তোমরাও হিসেব রাখো যে কতটা সময় অতি প্রিয় বাবা, যিনি আমাদের বিশ্বের মালিক করেন, তাঁকে স্মরণ করেছি ? দেখবে, কম স্মরণ করেছি তো নিজের থেকেই লজ্জা বোধ হবে যে এরকম করেছি, ঐরকম বাবাকে আমি স্মরণ করিনি ! আমাদের বাবা সব থেকে ওয়ান্ডারফুল ! সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে স্বর্গও সব থেকে ওয়ান্ডারফুল। ওরা তো স্বর্গকে লক্ষ বছরের বলে দেয় আর তোমরা বলবে ৫ হাজার বছর। কিরকম রাত-দিনের পার্থক্য। যারা খুবই পুরানো ভক্ত তাদের কাছে বাবা সমর্পিত হন, অনেক ভক্তির ফল স্বরূপে। ব্রহ্মা বাবা এই জন্মেও সঙ্গে গীতা রাখতেন আর নারায়ণের চিত্রও রাখতেন। লক্ষ্মীকে দাসী হয়ে থাকার থেকে মুক্ত করে দিয়ে কতো খুশীতে থাকেন। যেমন আমরা এই শরীর ত্যাগ করে সত্যযুগে গিয়ে দ্বিতীয় ধারণ করবো। বাবার মধ্যেও খুশী থাকে যে আমি গিয়ে সুন্দর প্রিন্স হবো। পুরুষার্থও করাতে থাকেন। বিনা পরিশ্রমে কিভাবে ঐ রূপ তৈরী হবে ? তোমরাও ভালো করে বাবাকে স্মরণ করলে স্বর্গের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করবে। কেউ তো না পড়ে, না দৈবী গুণ ধারণ করে। হিসেবই রাখে না। যে উঁচু পদ পাবে সেই সমগ্র হিসাব রাখবে। তা নয়তো শুধু মাত্র জাহির করবে। ১৫ - ২০ দিন পরেই লেখা ছেড়ে দেয়। এক্ষেত্রে তো পরীক্ষা ইত্যাদি সব হল গুপ্ত। প্রত্যেকের কোয়ালিফিকেশনকে বাবা জানেন। বাবার কথা অতি শীঘ্র মেনে নিলে তো বলা হবে আজ্ঞাকারী, অনুগত। বাবা বলেন এখন বাচ্চাদের অনেক কাজ করতে হবে। কতো ভালো ভালো বাচ্চারাও বিচ্ছেদ করে চলে যায়। শিব বাবা কখনোই কাউকে ডিভোর্স দেবেন না। তিনি তো ড্রামা অনুযায়ী এসেছেনই বড় চুক্তি (কন্ট্রাক্ট) নিয়ে। আমি হলাম সবচেয়ে বড় ঠিকাদার (কনট্রাক্টর)। সবাইকে ফুল বানিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যাব। বাচ্চারা তোমরা জানো পতিত কে পবিত্র করার মতো কনট্রাক্টর এক জনই আছেন। উনি তোমাদের সামনে বসে আছেন। কারোর কতো নিশ্চয় থাকে, কারোর একদমই না। আজ এখানে আছে, কাল চলে যাবে, এমনই আচার আচরণ । ভিতরে ভিতরে অবশ্যই মনে ডাক দেবে, আমি বাবার কাছে থেকে, বাবার হয়ে কি করছি। কিছু সার্ভিস না করলে কি পাবে। রুটি করা, সব্জি করা এ তো আগেও করতে। নতুন কিছু কোথায় করলে ? সার্ভিসের প্রমাণ দিতে হবে। কতো রাস্তা বলেছি।



এই ড্রামা বড় বিস্ময়কর (ওয়ান্ডারফুল) ভাবে রচিত হয়েছে । যা কিছু হচ্ছে তোমরা প্র্যাকটিক্যালে দেখছ। শাস্ত্রে তো কৃষ্ণের চরিত্র লিখে দিয়েছে, কিন্তু চরিত্র হল এক বাবার। উনিই সকলকে মোক্ষ লাভ করান। ওঁনার মতো চরিত্র কারও হতে পারে না। যে কোনো চরিত্রই ভালো হওয়া চাই। কাউকে হরণ করা, এটা করা ওটা করা (মাখন চুরি করে খাওয়া, মটকা ভেঙে দেওয়া) - এটা কোনো চরিত্র হল না। সকলের সদ্গতি দাতা হলেন একমাত্র বাবা। উনি প্রতি কল্পে এসে স্বর্গের স্থাপনা করেন। লক্ষ বছরের কোনো ব্যাপার নেই।



তাই বাচ্চাদের ঘৃণ্য অভ্যাস ত্যাগ করা উচিত। তা না হলে কি পদ প্রাপ্ত করবে ? দয়িতাও গুণ দেখে দয়িতকে ভালোবাসবে। দয়িতর ভালোবাসাও তার উপর থাকবে যে তাঁর সার্ভিস করতে থাকবে। যে সার্ভিস করে না সে আর কোন কাজের। এই বিষয়টি খুব ভালো ভাবে বুঝতে হবে ।বাবা বোঝান তোমরা হলে মহান ভাগ্যশালী, তোমাদের মতো ভাগ্যশালী কেউ নেই। *যদিও তোমরা স্বর্গে যাবে, কিন্তু প্রালব্ধ উচ্চ মানের করতে হবে। কল্প কল্পান্তরের ব্যাপার। পোজিশন কম হয়ে যায়। যা পাওয়া যায় সেটাই ভালো মেনে নিয়ে খুশী হলে চলবে না। খুব ভালো রকম পুরুষার্থ করা চাই*। সার্ভিসের প্রমাণ চাই- কত জনকে নিজের সমান তৈরী করেছ ? তোমাদের প্রজা কোথায় ? বাবা, ব্রহ্মা বাবা এবং টিচার সকলকে পুরুষার্থ করান। কিন্তু কারোর ভাগ্যে থাকলে তবে। *সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ তো এটা যে বাবা নিজের শান্তিধাম ছেড়ে দিয়ে পতিত দুনিয়া আর পতিত শরীরে এসেছেন*। তা না হলে তোমাদের রচয়িতা আর রচনার নলেজ শোনাবে কে ? এটাও কারোর বুদ্ধিতে বসে না যে সত্যযুগে রাম রাজ্য আর কলিযুগে হল রাবণ রাজ্য। রাম রাজ্যতে একটিই রাজ্য ছিল, রাবণ রাজ্যে অনেক রাজ্য আছে, সেই জন্য তোমরা মানুষকে জিজ্ঞাসা করো, তারা নরকবাসী না স্বর্গবাসী ? কিন্তু মানুষ এটা বোঝে না যে আমরা কোথায় আছি ? এটা হল কাঁটার জঙ্গল, ওটা হল ফুলের বাগান। তাই এখন ফাদার মাদার আর অনন্য বাচ্চাদের ফলো করতে হবে, তবেই উচ্চ মানের হবে। বাবা তো অনেক বোঝান। কিন্তু কিছু যারা বুঝতে পারার মতো তারা বোঝে। কেউ তো শুনে খুব ভালো রকম বিচার সাগর মন্থন করে। কেউ তো শুনে অবহেলা করে। যেখানে সেখানে লেখা পড়ে থাকে- শিববাবা স্মরণে আছে ? তাই উত্তরাধিকারও অবশ্যই স্মরণে আসবে। দৈবী গুণ হলে তো দেবতা হবে। যদি ক্রোধ থাকে, আসুরী অবগুণ থাকে তো উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে পারবে না। সেখানে কোন ভূত থাকে না। রাবণ না থাকলে রাবণের ভূত কোথা থেকে আসবে। দেহ অভিমান, কাম, ক্রোধ ...এ হল বড় ভূত। একে বের করার একটাই উপায় আছে- বাবার স্মরণ। বাবার স্মরণেই সব ভূত চলে যাবে।আচ্ছা !



মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।



*রাত্রি ক্লাস:-*



অনেক বাচ্চাদের ইচ্ছে হয় আমিও অন্যান্যদের নিজের সমান তৈরী করার সার্ভিস করি। নিজের প্রজা তৈরী করি। যেরকম আমাদের আর সব ভাইরা সার্ভিস করে, আমিও তেমন করি। এর মধ্যে মাতারা বেশী। কলসও মাতাদের উপরেই রাখা হয়। যদি এ হল প্রবৃত্তি মার্গ। দুটোই প্রয়োজন। বাবা জিজ্ঞাসা করেন ক'টি সন্তান তোমার ? দেখেন সঠিক উত্তর দিচ্ছে কিনা । ৫ টি হল নিজের আর এক হলো শিববাবা। কেউ তো বলার জন্যই বলে। কেউ সত্যিই তাঁকে সন্তান রূপে মানে। যারা উত্তরাধিকারী বলে মনে করে তারা বিজয় মালাতে গাঁথা হয়। যারা সত্যি-সত্যি উত্তরাধিকারী করে, তারা নিজেরাও উত্তরাধিকারী হয়। সত্য হৃদয়ে সাহেব সদয় হন... কিন্তু সবাই তো বলতে হয় তাই বলে দেয়। এই সময় পারলৌকিক বাবা-ই আছেন যিনি সকলকে উত্তরাধিকার দেন, সেইজন্য স্মরণও ওঁনাকেই করতে হয়, যার দ্বারা ২১জন্মের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। তোমাদের বুদ্ধিতে জ্ঞান থাকে যে এ সব কিছু থাকার নয়। বাবা প্রত্যেকের অবস্থা দেখেন যে সত্যি-সত্যি উত্তরাধিকারী করেছে না করবে বলে মনে করেছে। উত্তরাধিকারী করার অর্থ বুঝতে পারে। অনেকে আছে যারা বুঝতে পেরেও বাবাকে উত্তরাধিকারী করতে পারে না, কারণ হল তারা মায়ার বশ। এই সময় তোমরা হয় ঈশ্বরের বশ নয়তো মায়ার বশ। ঈশ্বরের বশ যে হবে সে উত্তরাধিকারী করে নেবে। মালা আটেরও হয়, ১০৮ এরও হয়। আট তো অবশ্যই বিস্ময়কর কাজ করে। সত্যিই তারা উত্তরাধিকারী করেই ছাড়বে। যদি উত্তরাধিকারী করে, উত্তরাধিকার তো নেয়ই। তবুও ঐরকম উচ্চ মানের উত্তরাধিকারী করেন যিনি তাঁর কর্মও ঐরকম উচ্চ মানের হবে। কোনো বিকর্ম যেন না হয়। যা কিছু বিকার সবই তো বিকর্ম হলো। *বাবাকে ছেড়ে দ্বিতীয় কাউকে স্মরণ করা- এটাও হলো বিকর্ম*। বাবা অর্থাৎ বাবা। বাবা তো মুখের আধার নিয়েই বলেন, অবিরত এক আমাকেই (মামেকম্ ) স্মরণ করো। ডায়রেক্শন তো পেয়েছ। তাই সম্পূর্ণ ভাবে স্মরণ করো- এর জন্য অনেক পরিশ্রম হয়। এক বাবাকেই স্মরণ করলে মায়া এত বিরক্ত করবে না। যেখানে মায়াও খুব শক্তিশালী। বোঝা যায়, মায়া খুব বিকর্ম করায়। বড় বড় মহারথীদেরও নীচে শুইয়ে দেয়। প্রত্যেক দিন সেন্টার সংখ্যায় বৃদ্ধি হচ্ছে। গীতাপাঠশালা বা মিউজিয়াম খুলতে থাকে। সমস্ত দুনিয়ার মানুষ বাবাকেও মানবে, ব্রহ্মাকেও মানবে। ব্রহ্মাকেই প্রজাপিতা বলা হয়। আত্মাদের তো প্রজা বলবে না। মনুষ্য সৃষ্টি কে রচনা করেন? প্রজাপিতা ব্রহ্মার নাম আসে, তিনি তো হলেন সাকার, উনি হলেন নিরাকার। উনি শাশ্বত। তাঁকেও (ব্রহ্মা) শাশ্বত বলা হবে। দু'জনের নামই হল হায়েস্ট। উনি আত্মাদের পিতা, উনি প্রজাপিতা। দু' জনে বসে তোমাদের পড়াচ্ছেন। কত হাইয়েস্ট বিষয় হল, তাই না ! বাচ্চাদের কতো নেশা চড়ে যাওয়ার কথা । কতো খুশী হওয়া উচিত । কিন্তু মায়া খুশী বা নেশাতে থাকতে দেয় না। ঐরকম স্টুডেন্ট যদি বিচার সাগর মন্থন করতে থাকে তো সার্ভিসও করতে পারে। খুশীও থাকতে পারে, কিন্তু এখনো বোধহয় টাইম আছে। যখন কর্মাতীত অবস্থা হয়, তখন খুশীতেও থাকতে পারা যায়। আচ্ছা!



আত্মা রূপী বাচ্চাদের আত্মাদের পিতার স্নেহ সুমন-স্মরণ ভালোবাসা আর গুড্ নাইট।

ধারণার জন্য মুখ্য সার:-

১. রোজ রাতে হিসাব-নিকাশ (পোতামেল) দেখতে হবে যে মিষ্টি বাবাকে সারা দিনে কতটা স্মরণ করেছি ? নিজেকে জাহির করার জন্য হিসেব রাখার দরকার নেই, গুপ্ত পুরুষার্থ করতে হবে।

২. বাবা যা শোনান, তার উপর বিচার সাগর মন্থন করতে হবে, সার্ভিসের প্রমাণ দিতে হবে। শুনে তা অবহেলা কোরো না। ভিতরে ভিতরে যা কিছু অবগুণ থাকুক না কেন তাকে চেক করে বের করে দিতে হবে।

বরদান:-

স্বার্থ, ঈর্ষা আর বিরক্তি ভাবের থেকে মুক্ত থাকতে সক্ষম ক্রোধ মুক্ত ভব

যদি কোনো নতুন প্রকারের চিন্তা ভাবনা মনে আসে, সেই সেবার জন্য নিজেকে অফার করো। কিন্তু সেই চিন্তা ভাবনার প্রচ্ছন্নে, সেই চিন্তা ভাবনাকে নিজের চাওয়ায় পরিবর্তিত করে ফেলো না। যখন সংকল্প ইচ্ছার রূপে বদলে যায় তখন বিরক্তি আসে। তাই নিঃস্বার্থ হয়ে তোমার বিচার ধারাকে রাখো, স্বার্থ রেখে নয়। আমি বলেছি তো হওয়া চাই- এটা ভেবো না, অফার করো, কেন বা কি-তে যেও না, নয় তো ঈর্ষা-ঘৃণা এক একটি তোমার সাথী রূপে উপস্থিত হবে । স্বার্থ বা ঈর্ষার কারণেও ক্রোধ জন্ম নেয়, এখন এর থেকেও মুক্ত হও।

স্লোগান:-

শান্তি দূত হয়ে সবাইকে শান্তি দেওয়া - এটাই হল তোমার অক্যুপেশন (বৃত্তি)।