৩০-০৬-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ১৯-১২-৮৪ মধুবন


"সর্বশ্রেষ্ঠ, সহজ তথা স্পষ্ট মার্গ"

আজ বাপদাদা সদা সাহচর্যের দায়িত্ব পূরণকারী তাঁর নিজের সাথীদের বিশেষভাবে দেখছেন l সাথী অর্থাৎ যে সদা সাথে থাকে, প্রতিটা কর্মে এবং সঙ্কল্পে যে সাহচর্যের দায়িত্ব পালন করে, প্রত্যেক কদমে কদম রেখে এগিয়ে যায় l এক কদমও নিজের মনমত বা পরমত

অনুসারে চলে না l এইভাবে যারা সদা সাথীর সাহচর্যের দায়িত্ব পালন করে, তারা সদা সহজ মার্গের অনুভব করে, কারণ বাবা, শ্রেষ্ঠ সাথী এই রাস্তায় পদবিন্যাস ক'রে (কদম রেখে) তা' স্পষ্ট আর পরিস্কার করে দেন l তোমাদের সবাইকে শুধু তাঁর বিন্যস্ত কদমে কদম রেখে চলতে হবে l রাস্তা ঠিক আছে, সহজ ও স্পষ্ট - এটা চিন্তা করারও আবশ্যকতা নেই l যেখানে বাবা তাঁর কদম রেখেছেন, সেটা শ্রেষ্ঠ রাস্তাই l শুধু কদম রাখ আর প্রতি কদমে লক্ষ-কোটি নাও l কত সহজ ! বাবা সাথী হয়ে সাহচর্যের দায়িত্ব পালনকারীদের জন্য সাকার মাধ্যম দ্বারা প্রতিটা কদমরূপী কর্ম প্রদর্শন করতে সাকার দুনিয়ায় অবতরিত হয়েছেন l তোমাদের জন্য এটা সহজ করতে তিনি সাকারকে তাঁর মাধ্যম বানিয়েছেন l সাকারে এটা ফলো করা বা তাঁর কদমে পদসঞ্চার করা তো সহজ, তাই না ! শ্রেষ্ঠ সাথী তাঁর সঙ্গীদের এমন সহজ মার্গ প্রদর্শিত করেছেন, কারণ *বাবা, সাথী* জানেন যে যাদের তিনি তাঁর সাথী বানিয়েছেন তারা লক্ষ্যহীন হয়ে অনেক ঘুরে বেড়িয়ে ক্লান্ত l তারা নিরাশ, নির্বল l খুব কঠিন মনে ক'রে তারা নিরুৎসাহ হয়েছে, সেইজন্য সর্বাপেক্ষা সহজ এটাই, শুধু কদমে কদম রেখে চলো l বাবা তোমাদের এই সহজ সাধন দেখান l শুধু তাঁর কদমে কদম রাখা তোমাদের কাজ। তোমাদের চালানো, এপার থেকে ওপারে পৌঁছে দেওয়া, প্রতি পদে বল ভরা, ক্লান্তি দূর করা এই সব তোমাদের সাথীর কাজ l শুধু অন্য কোথাও কদম রেখ না l পদক্ষেপ মাত্র, এটা তো কঠিন নয়, তাই না ! কদম রাখা অর্থাৎ সঙ্কল্প করা l সাথী যা বলবেন, যেভাবে তোমাদের চালাবেন, তোমরা শুধু সেইভাবে চলবে l নিজেদের মাথা (বুদ্ধি )খাটিও না l নিজেদের বুদ্ধি খাটানো মানেই দুর্ভাগ্যের আর্তনাদ ! সুতরাং তোমরা জান, কিভাবে তোমাদের কদম এই পথে রাখতে হবে, তাই না ! এটা কি কঠিন ? দায়িত্ববান সব দায়িত্ব নিচ্ছেন, তাহলে কিভাবে সবরকম দায়িত্ব তাঁর কাছে সঁপে দিতে হয় তোমরা জান না ? সাকার মাধ্যমকে যখন মার্গদর্শন স্বরূপ বানিয়ে স্যাম্পল হিসেবে রেখেছেন, তাহলে দর্শিত মার্গ অনুসরণ করা কঠিন হয় কেন ? সহজ সাধন শুধু এক সেকেন্ডের সাধন l সাকার রূপে ব্রহ্মাবাবা যেভাবে করেছেন, যা করেছেন তোমাদের সবাইকে সেটাই করতে হবে, ফলো ফাদার করতে হবে l



সব সঙ্কল্প ভেরিফাই কর l বাবার সঙ্কল্পের মতো আমারও কি একই সঙ্কল্প ? কপি করতে কি জান না ? দুনিয়াতে লোকে তোমাকে কপি করতে বাধা দেয় আর এখানে তো শুধু কপিই করতে হবে l তাহলে সহজ হলো নাকি কঠিন ? যখন সহজ, সরল, স্পষ্ট রাস্তা পেয়ে গেছ তো ফলো কর l অন্য রাস্তায় যাওয়াই বা কেন ? অন্য রাস্তা মানেই ব্যর্থ সঙ্কল্পরূপী রাস্তা l দুর্বলতা যুক্ত সঙ্কল্পের রাস্তা ! কলিযুগীয় আকর্ষণের বিভিন্ন সঙ্কল্পের রাস্তা l এইসব রাস্তা দিয়ে শেষ পর্যন্ত তোমরা এলোমেলো অবস্থার জঙ্গলে পৌঁছে যাও এবং তোমরা যেখান থেকেই বের হতে চেষ্টা কর, তোমাদের চারিদিকে কাঁটা থাকার কারণে, তোমরা বের হতে পার না l সেই কাঁটাগুলো কি ? 'কোথায় *কি* হবে' - এই *'কি'* -এর কাঁটায় কখনো কখনো তোমরা দুঃখিত হও l কখনো কখনো *কেন-র* কাঁটায়, কখনো আবার *কিভাবে'র* কাঁটায় তোমরা দুঃখিত হও l কখনো দুর্বল সংস্কারের কাঁটা লাগে l চারিদিকে কাঁটা আর কাঁটাই নজরে আসে l তখন তোমরা আর্তনাদ কর, সাথী তুমি এসে এখন বাঁচাও ! তাই সাথীও বলেন, কদমে কদম না রেখে অন্য রাস্তায় গেছই বা কেন ? যখন সাথী স্বয়ং সংস্পর্শে থাকার জন্য অফার করছেন, তবে সাথীকে কেনই বা ছেড়ে দাও ? সরে যাওয়া অর্থাৎ তোমাদের সাহচর্য ছেড়ে দেওয়া l কেন একা হও ? সীমিত পরিসরের সাহচর্যের আকর্ষণ সেটা যেকোন সম্বন্ধেরই হোক, অথবা কোন উপকরণ, তা' নিজের দিকে আকৃষ্ট করে, এই আকর্ষণের কারণ সেইসব উপকরণকে বা বিনাশী সম্বন্ধকে নিজেদের সাথী বানিয়ে নাও বা নিজেদের সহায়, আর তারপরে অবিনাশী সাথীর থেকে সরে যাও এবং তোমাদের সাহচর্য পথভ্রষ্ট হয় l অর্ধেক কল্প, সেই সীমিত পরিধির (লৌকিক) সহায়ককে প্রকৃত সহায় ভেবে অনুভব করেছ ? নাকি তা চোরাবালি ! তারা তোমাদের ফাঁদে আটকেছে নাকি পতন ঘটিয়েছে, নাকি তোমাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছে ? তোমরা সেটা খুব স্পষ্টভাবে অনুভব করেছ, তাই না ? তোমরা শুধুমাত্র এক জন্মের অনুভাবী নও, বরং ৬৩ জন্মের অনুভাবী তোমরা l তোমাদের আরও এক দুই জন্ম প্রয়োজন ? যারা একবার ভুলপথে চালিত হয় তারা দ্বিতীয়বার আর প্রতারিত হয় না l যারা বারংবার প্রতারিত হয় তাদের বলা হয় ভাগ্যহীন l এখন তো ভাগ্যবিধাতা এবং ব্রহ্মাবাবা নিজে সব ব্রাহ্মণের জন্ম পত্রিকায় শ্রেষ্ঠ ভাগ্যের দীর্ঘ রেখা টেনে দিয়েছেন, তাই না ! ভাগ্যবিধাতা তোমাদের ভাগ্য বানিয়েছেন l ভাগ্যবিধাতা তোমাদের বাবা হওয়ার কারণে প্রত্যেক ব্রাহ্মণ বাচ্চাকে ভাগ্যের পরিপূর্ণ ভান্ডারের উত্তরাধিকার দিয়েছেন l সুতরাং এই ব্যাপারে শুধু ভাবো যে ভাগ্য-ভান্ডারের মালিকের বাচ্চা, তার কি অভাব থাকতে পারে !



আমার ভাগ্য কি - এটা ভাবারও প্রয়োজন নেই, কারণ ভাগ্যবিধাতা তোমাদের বাবা হয়েছেন, সুতরাং বাচ্চাদের ভাগ্যের ধনদৌলতের কি অভাব হবে ? তোমরা ভাগ্যের ধনভাণ্ডারের মালিক হয়ে গেছ, তাই না ! এইরকম ভাগ্যবান কখনও ভুলপথে চালিত হতে পারে না l সেইজন্য সহজ রাস্তা হলো তাঁর কদমে কদম রাখা l তোমরা নিজেরাই নিজেদের বিভ্রান্তিতে ফেল, সাথীর সঙ্গ ছেড়ে দাও l শুধু এই একটা বিষয় স্মরণে রাখ, *আমরা শ্রেষ্ঠ সাথীর সাথে আছি l* ভেরিফাই কর, তাহলেই নিজের প্রতি নিজে স্যাটিসফাই থাকবে l বুঝেছ তোমরা সহজ রাস্তা কোনটা ! সহজকে কঠিন করে ফেল না l সঙ্কল্পেও কখনো কঠিন অনুভব ক'রনা l এইরকম দৃঢ় সঙ্কল্প কিভাবে করে তা' জান নাকি যখন তোমরা স্বস্থানে ফিরবে সেখানে গিয়ে বলবে এটা কঠিন ? বাপদাদা দেখেন যে নাম সহজ যোগী আর অনুভব করার ক্ষেত্রে কঠিন ! নিজেদের ভাবো অধিকারী অথচ এখনও অধীন হয়ে আছ ! ভাগ্যবিধাতার বাচ্চারা আরও ভাবে, ''জানিনা আমার ভাগ্যে আছে কি নেই ! হয়তো এটাই আমার ভাগ্য !" এইজন্যই নিজেকে জান আর সদা নিজেকে সবসময়ের সাথী মনে করে এগিয়ে চলো l আচ্ছা !



যারা সদা প্রতি কদমে কদম রাখে, ফলো ফাদার করে, সদা প্রতিটা সঙ্কল্প সাথীর সাথ অর্থাৎ সাহচর্য অনুভব করে, সদা এক সাথী দ্বিতীয় কেউ নেই - এইরকম অনুরাগে বিহ্বল, সদা সহজ যোগী, শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান আত্মাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l



*অব্যক্ত বাপদাদার পার্সোনাল সাক্ষাৎকার - কুমারীদের সাথে*

১) কুমারী অর্থাৎ অলৌকিক ব্যাপার l সাধারণ কুমারী নও, তোমরা অলৌকিক কুমারী l এই লোকের (জগতের) লৌকিক কুমারীরা কি করে আর তোমরা অলৌকিক কুমারীরা কি কর ? রাতদিনের ফারাক ! তারা দেহ-অভিমানে থেকে অন্যদেরও দেহ-অভিমানে ভূপাতিত করে ! আর তোমরা সদা দেহী-অভিমানী হয়ে নিজেও ওড়ো আর অন্যকেও ওড়াও, তোমরা এমনই কুমারী, তাই তো ! যখন বাবাকে তোমরা পেয়েই গেছ তো সর্ব-সম্বন্ধ এক বাবার সাথে, আগে শুধুই নামেমাত্র ছিল, কিন্তু এখন এটা প্র্যাকটিক্যাল l ভক্তিমার্গেও তোমরা অবশ্যই গাইতে, সর্ব-সম্বন্ধ সদাই এক বাবার সাথে, কিন্তু এখন প্র্যাকটিক্যালি তোমরা বাবার থেকে সর্ব-সম্বন্ধের রসলাভ করছ l তোমরা এইরকম অনুভব কর, তাই না ! যখন সকল রস এক বাবার থেকে লাভ হচ্ছে তখন তোমাদের সঙ্কল্প অন্য কোনোখানে যেতে পারে না l যারা এইরকম নিশ্চয় বুদ্ধি বিজয়ী রত্ন তাদের সদা গায়ন এবং পূজন হয় l তোমরা বিজয়ী আত্মা, সদা স্মৃতির তিলকধারী আত্মা, এই সচেতনতা থাকে তোমাদের ? তোমরা সব এত কুমারী কি চমৎকার করে দেখাবে ? তোমরা তোমাদের প্রতিটা কর্মের মাধ্যমে বাবাকে প্রত্যক্ষ করবে l তোমাদের প্রতি কর্মে বাবাকে দৃশ্যমান হতে দাও l কোনো উক্তি করলে এমন উক্তি কর, যাতে সেই উক্তিতে বাবা প্রতীয়মান হন l দুনিয়াতেও কেউ কেউ খুব ভালো বলে l তখন সবাই আশ্চর্য হয় এই ব্যক্তিকে কে শিখিয়েছে ! তাদের দৃষ্টি সেই ব্যক্তির দিকে যায় l একইভাবে তোমাদের প্রতি কর্মে যেন বাবা প্রত্যক্ষ হন ! এইরকম ধারণার প্রতিমূর্তি, দিব্যমূর্তি হওয়া তোমাদের বিশেষত্ব l বক্তা তো সবাই হয়, কিন্তু নিজের প্রতিটা কর্ম দ্বারা যারা ভাষণ দেয় তারা কোটির মধ্যে মুষ্টিমেয় মাত্র হয় l সুতরাং তোমরা এমন বিশেষত্ব দেখাবে, তাই না ? তোমাদের দৈবী কার্যকলাপের (চরিত্রের) মাধ্যমে বাবার চিত্র দেখাও l

আচ্ছা !



২) কুমারীদের এটা বড় গ্রুপ l সেনা প্রস্তুত হচ্ছে l তারা তো লেফ্ট রাইট করে, তোমরা সদা যা রাইট তাই কর l এই সেনা কত শ্রেষ্ঠ, শান্তি দ্বারা বিজয়ী হয়ে যাও l শান্তি দ্বারাই স্বরাজ্য প্রাপ্ত কর l তোমাদের কোনরকমভাবে বিচলিত হতে হয় না l তাহলে তোমরা সুদক্ষ শক্তি সেনার শক্তি, তাই তো ? তোমরা সেনাবাহিনী ছেড়ে যাও না l এমনকি তোমাদের স্বপ্নেও কেউ টলাতে পারে না l কখনও কারও সঙ্গ দ্বারা প্রভাবিত হও না l যারা বাবার সঙ্গে থাকে তারা অন্য কোনও সঙ্গ দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে না l সুতরাং তোমাদের পুরো গ্রুপ বাহাদুর গ্রুপ, তাই না ! যারা বাহাদুর তারা কি করে ? তারা যুদ্ধের ময়দানে যায় l সুতরাং তোমরা তো সবাই বাহাদুর কিন্তু এখনও ময়দানে যাওনি l সাহসী বীর যখন ময়দানে যায়, তোমরা দেখেছ নিশ্চয়ই বীরের বীরত্বে তারা কিভাবে ব্যান্ড বাজায় ! তোমরাও যখন ময়দানে যাবে তো খুশির ব্যান্ড বাজবে l কুমারীরা সদাই সৌভাগ্যবান l কুমারীদের সেবার জন্য খুব ভালো চান্স থাকে, আরও বেশি পেতে চলেছে কারণ করার জন্য সেবা তো অনেক আছে, কিন্তু সেবাধারী কম l যখন তোমরা সেবাধারীরা সেবার জন্য বের হবে তো কত সেবা হয়ে যাবে ! দেখব, কুমারীরা কত চমৎকার করে ! সাধারণ কাজ তো সবাই করে কিন্তু তোমরা বিশেষ কার্য করে দেখাও l কুমারীরা ঘরের অলঙ্করণ l লৌকিকে কুমারীদের তারা যেমনই মনে করুক, কিন্তু পারলৌকিক ঘরে কুমারীরা মহান l কুমারীরা যখন সেন্টারে থাকে তো সেখানে সৌন্দর্য বিদ্যমান l মাতাদের জন্যেও বিশেষ লিফ্ট আছে l প্রথমে মাতা গুরু l বাবা মাতা গুরুদের সামনে রেখেছেন এবং এই কারণে ভবিষ্যতে মাতাদের নাম আগে l আচ্ছা !



*টিচারদের সাথে :-* টিচার্স অর্থাৎ বাবা সমান l যেমন বাবা, তেমনই তোমরা নিমিত্ত সেবাধারী l বাবাও নিমিত্ত তো সেবাধারীও নিমিত্ত আত্মা l নিজেকে নিমিত্ত মনে করায় স্বতঃই বাবার সমান হওয়ার সংস্কার বিকশিত হয় l যদি নিজেদের নিমিত্ত না মনে কর তবে বাবার সমান হতে পারবে না l সুতরাং প্রথমে নিমিত্ত হতে হবে, আর তারপরই সদা স্বতন্ত্র থেকেও একের প্রিয় হতে হবে l এটা বাবার বিশেষত্ব, তিনি প্রিয়ও হন আবার স্বতন্ত্রও থাকেন l পৃথক হয়েও তিনি স্নেহময় l সুতরাং বাবার সমান অর্থাৎ অতি স্বতন্ত্রতা এবং অতি প্রিয় l অন্যদের সঙ্গে স্বাতন্ত্র বজায় রেখে বাবার ঘনিষ্ঠ হওয়া, এটা সমান হওয়া l এই দুই বিশেষত্ব বাবার l সুতরাং বাবার সমান সেবাধারীও এইরকম হয় l এই বিশেষত্ব সদা স্মৃতিতে রেখে সহজে সামনে এগিয়ে যাবে l পরিশ্রম করতে হবে না l যেখানে তোমরা সব নিমিত্তের অবস্থিতি, সেখানে সফলতা নিশ্চিত l সেখানে আমিত্বভাব হবে না l যেখানে আমিত্বভাব আছে সেখানে সাফল্য নেই l নিমিত্ত ভাবই সাফল্যের চাবি l যখন তোমরা সীমিত পরিসরের জাগতিক আমিত্ব-ভাব ছেড়ে দিয়েছ তো আবার কোথা থেকে 'আমার' আসে ! 'আমার' বলার বদলে বলো, *'বাবা বাবা'* , তাহলেই সদা সেফ থাকবে l এটা আমার সেন্টার নয়, কিন্তু বাবার সেন্টার l আমার ছাত্র (জিজ্ঞাসু ) নয়, বাবার l 'আমার' সমাপ্তি ঘটে আর 'তোমার' হয়ে যায় l 'তোমার' বলা অর্থাৎ ওড়া l সুতরাং নিমিত্ত শিক্ষক অর্থাৎ উড়তি কলার এক্সাম্পল l তোমরা যেমন উড়তি কলার এক্সাম্পল হও, অন্যেরাও তেমন হয় l যাদের জন্য তোমরা নিমিত্ত হও, না চাইতেও তাদের মধ্যে সেই ভাইব্রেশন নিজে থেকেই এসে যায় l সুতরাং নিমিত্ত শিক্ষক, নিমিত্ত সেবাধারী সদা স্বতন্ত্র, সদা অনুরাগী l যখনই তোমরা কোনও পেপারের সম্মুখীন হবে, তোমরা সেটাতে পাস করবে l নিশ্চয়বুদ্ধি বিজয়ী হয় l



*পাটিদের সাথে :-*

১) সদা নিজেকে ডবল লাইট ফরিস্তা অনুভব কর ? ফরিস্তা অর্থাৎ যাদের কাছে দুনিয়াই একমাত্র বাবা l এইরকম ফরিস্তা সদা বাবার প্রিয় l ফরিস্তা অর্থাৎ দেহ আর দেহ সম্বন্ধীয় সব সম্বন্ধের প্রতি কোনও আকর্ষণ থাকে না l নিমিত্ত মাত্র তোমরা দেহে থাক এবং দেহ সম্বন্ধীয়দের সাথে কার্যে আস কিন্তু মোহাবিষ্ট হও না, কারণ ফরিস্তাদের অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্ক হয় না l এক বাবার সাথেই ফরিস্তাদের সম্পর্ক থাকে l তোমরা এইরকম ফরিস্তা, তাই না ! এই মুহূর্তে কর্ম করার জন্য দেহে আস তো পরমুহূর্তেই দেহ থেকে আলাদা হয়ে যাও l ফরিস্তা এক সেকেন্ডে এখানে তো এক সেকেন্ডে ওখানে, কারণ তারা উড়তে পারে l কর্ম করার জন্য তারা দেহের আধার নেয় আর তারপরেই উপরে চলে যায় l এমন অনুভব কর তোমরা ? যদি কোথাও পিছটান থাকে, বন্ধন থাকে তবে বন্ধনযুক্ত কেউই উড়তে পারে না ; তারা নিচে নেমে আসবে l ফরিস্তা অর্থাৎ যারা সদা উড়তি কলায় স্থিত, নিচে-ওপরে হয় না l সদা উপরের স্থিতিতে থাকে l ফরিস্তাদের সংসারে থাকে l সুতরাং, যখন তোমরা ফরিস্তা স্মৃতিস্বরূপ হও তখন অন্য সব সম্পর্ক শেষ হয় l তোমাদের এইরকম অভ্যাস আছে, তাই না ? তোমরা কর্ম কর আর তারপরেই পৃথক হয়ে যাও l লিফ্টে তোমরা কি কর ? এক মুহূর্তে নিচে তো পরমুহূর্তে উপরে উঠে যাও l তোমরা নিচে এসে কর্ম কর আর তারপরে আবার সুইচ টিপে উপরে ওঠ l তোমাদের এইরকম অভ্যাস আছে l আচ্ছা - ওম্ শান্তি l



২) সবাই তোমরা আধ্যাত্মিক গোলাপ তাই না ! তোমরা জুঁইফুল নাকি গোলাপ ? ঠিক যেমন গোলাপ পুষ্প সব পুষ্পের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বলে খ্যাত, তেমনই আধ্যাত্মিক গোলাপ অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ আত্মা, (সঙ্কল্পে এবং অনুভূতিতে অতি উন্নত মানসিকতা ও রুচির অধিকারী) l আধ্যাত্মিক গোলাপ অর্থাৎ যারা সদা তাদের আধ্যাত্মিকতা বজায় রাখে, আধ্যাত্মিক নেশায় থাকে, সদা আধ্যাত্মিক সেবা করে, তোমরা এমনই আধ্যাত্মিক গোলাপ l বর্তমান সময় অনুযায়ী আধ্যাত্মিকতার প্রয়োজন আছে l আধ্যাত্মিকতা না থাকার কারণেই যত লড়াই ঝগড়া l সুতরাং আধ্যাত্মিক গোলাপ হয়ে আধ্যাত্মিকতার সুগন্ধি ছড়াও l এটাই ব্রাহ্মণ জীবনের অক্যুপেশন l সদা এই অক্যুপেশনে বিজি থাক l

বরদান:-

ব্রহ্মাবাবা সমান জীবনমুক্ত স্থিতির অনুভব করে কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত ভব

ব্রহ্মাবাবা কর্ম করাকালীনও কর্মবন্ধনের জালে আটকে পড়েননি l সম্বন্ধের দায়িত্ব পালনেও সম্বন্ধের বন্ধনে আবদ্ধ হননি l তিনি ধন আর সাধনের বন্ধন থেকেও মুক্ত থেকেছেন, তাঁর দায়িত্ব সামলানোর ক্ষেত্রেও তিনি জীবনমুক্ত স্থিতির অনুভব করেছেন l এইভাবে ফলো ফাদার কর l বিগত কোনও হিসেব-নিকেশের বন্ধনে বেঁধে যেও না l এমনকি কোনও সংস্কার, স্বভাব অথবা প্রভাবিত বা দমিত হওয়ার বন্ধনেও আটকে যেও না, তবেই বলা হবে, কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত, জীবনমুক্ত l

স্লোগান:-

নিজের আত্মিক বৃত্তি দ্বারা প্রবৃত্তির সকল পরিস্থিতি চেঞ্জ করে দাও l