২৩-০৬-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ১৭-১২-৮৪ মধুবন


ব্যর্থ সমাপ্ত করার উপায় জ্ঞান মুরলি, শক্তিশালী সঙ্কল্পের ভান্ডার

আজ বাপদাদা সঙ্গমযুগী অলৌকিক আধ্যাত্মিক সমাবেশে মিলন উদযাপন করতে এসেছেন l এই আধ্যাত্মিক সমাবেশ, আধ্যাত্মিক মিলন সারা কল্পে এখনই তোমরা করতে পার l আত্মাদের সাথে পরম আত্মার এই শ্রেষ্ঠ মিলন, সত্যযুগীয় সৃষ্টিতেও হবে না, সেইজন্য এই যুগকে মহান যুগ, মহা মিলনের যুগ, সর্বপ্রাপ্তির যুগ, অসম্ভব থেকে সম্ভব হওয়ার যুগ, সহজ এবং শ্রেষ্ঠ অনুভূতির যুগ, বিশেষ পরিবর্তনের যুগ, বিশ্ব কল্যাণের যুগ, সহজ বরদানের যুগ বলা হয়ে থাকে l এমন যুগে তোমরা আত্মারা মহান পার্ট (ভূমিকা ) পালন করছ l এইরকম মহান নেশা সবসময় থাকে ? সমগ্র বিশ্ব তৃষাতুর চাতক, বাবাকে এক সেকেন্ড পলকমাত্র দেখার জন্য, সেই বাবার সেকেন্ডে অধিকারী হওয়া তোমরা শ্রেষ্ঠ আত্মা, এই স্মৃতি থাকে তোমাদের ? এই স্মৃতি নিজে থেকেই তোমাদের সমর্থ বানায় l সমর্থ অর্থাৎ ব্যর্থের সমাপ্তকারী l ব্যর্থ থাকলে সেখানে সমর্থ কোনকিছুই থাকতে পারে না l যদি তোমার মনে ব্যর্থ সঙ্কল্প থাকে, তবে সমর্থ সঙ্কল্প স্থির হতে পারে না l ব্যর্থ বারবার তোমাদের নীচে নিয়ে আসে l সমর্থ সঙ্কল্প সর্বশক্তিমান বাবার সঙ্গে মিলনের অনুভবও করায়, মায়াজিৎও বানায়, সফলতা স্বরূপ সেবাধারীও বানায় l ব্যর্থ সঙ্কল্প তোমাদের উৎসাহ-উদ্দীপনার সমাপ্তি ঘটায় l এমন সকলেই সদা *'কেন' 'কি'* -এর বিভ্রান্তিতে থাকে, সেইজন্য তুচ্ছ ব্যাপারে তারা নিজেদের প্রতি নিরুৎসাহ থাকে l ব্যর্থ সঙ্কল্প সদা সর্বপ্রাপ্তির ভান্ডার অনুভব করার ক্ষেত্রে তাদের বঞ্চিত করে l যাদের ব্যর্থ সঙ্কল্প চলে তাদের মনে প্রয়োজন এবং আকাঙ্ক্ষা আকাশচুম্বী অর্থাৎ অনেক উঁচু l "আমি এটা করব", আমি ওটা করব" এই ধরণের প্ল্যান তারা অতি দ্রুত অর্থাৎ তীব্রগতিতে বানায়, কেননা ব্যর্থ সঙ্কল্পের গতি ফাস্ট l সেইজন্য তারা অতি শ্রেষ্ঠ বিষয়ে ভাবে, কিন্তু সমর্থ না হওয়ার কারণে প্ল্যান আর প্র্যাকটিক্যালে বিশাল ফারাক হয়ে যায় l সেইজন্য তারা ভগ্নোৎসাহ হয়ে পড়ে l যাদের সমর্থ সঙ্কল্প থাকে তারা সদা যা ভাবে সেই অনুযায়ী সবকিছু করে l তাদের ভাবনা এবং কাজ দুটোই সমান হবে l তাদের সঙ্কল্প ধীর গতির হবে এবং তারা তাদের কর্মে সফল হবে l ব্যর্থ সঙ্কল্প প্রচন্ড ঝড়ের মতো অস্থিরতা তৈরি করে l সমর্থ সঙ্কল্প তোমাদের সদা বসন্তসম সজীব এবং সফল বানায় l ব্যর্থ সঙ্কল্প তোমাদের এনার্জি নষ্ট করায় অর্থাৎ আত্মিক শক্তি এবং সময় নষ্ট করানোর নিমিত্ত হয় l সমর্থ সঙ্কল্প সদা আত্মিক শক্তি অর্থাৎ এনার্জি জমা করতে তোমাদের সক্ষম করে তোলে l সময়কে ফলপ্রদ করে l ব্যর্থ সঙ্কল্প যদিও তোমার তৈরি, কিন্তু ব্যর্থ রচনা আত্মাকে অর্থাৎ রচয়িতার মর্মপীড়ার কারণ হয় অর্থাৎ মাস্টার সর্বশক্তিমান সমর্থ আত্মার মর্যাদা ধরে রাখতে অপারগ হওয়ায় লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় l সমর্থ সঙ্কল্পের মধ্য দিয়ে সদাসর্বদা তোমাদের শ্রেষ্ঠ মর্যাদার স্মৃতিস্বরূপ থাক l এই ফারাক তোমরা বুঝতে পার, তৎসত্ত্বেও কিছু কিছু বাচ্চা এখনো সঙ্কল্প আসে বলে অভিযোগ ব্যক্ত করে l এখনও কেন ব্যর্থ সঙ্কল্প, এর কারণ কি ? বাপদাদা যে সমর্থ সঙ্কল্পের ভান্ডার তোমাদের দিয়েছেন, তা'জ্ঞান মুরলি l মুরলির একেকটা মহাবাক্য সমর্থ খাজানা l এই সমর্থ সঙ্কল্পের ভান্ডারের মহত্ত্ব কম হওয়ার কারণে সমর্থ সঙ্কল্প ধারণ করতে তোমরা অপারগ হও l আর ব্যর্থ সঙ্কল্প চান্স পেয়ে যায় l সবসময় প্রতিটা মহাবাক্য মনন করতে থাকলে সমর্থ বুদ্ধিতে ব্যর্থ আসতে পারে না l যখন বুদ্ধি খালি থেকে যায় তখন শূন্য স্থান হওয়ার কারণে ব্যর্থের আগমন ঘটে l যখন তাকে প্রবেশের ছাড়পত্রই দেওয়া (মার্জিন) হবে না, তখন ব্যর্থ আসবে কিভাবে ? সমর্থ সঙ্কল্প দিয়ে বুদ্ধিকে বিজি রাখার সাধন না জানা অর্থাৎ ব্যর্থ সঙ্কল্পের আহ্বান l



বুদ্ধিকে বিজি রাখে, এমন বিজনেসম্যান হও l দিনরাত এই জ্ঞান রত্নরাজির বিজনেসম্যান হও l না ফুরসৎ হবে, না ব্যর্থ সঙ্কল্পের মার্জিন হবে l সুতরাং বিশেষ ব্যাপার হলো, *"বুদ্ধিকে সমর্থ সঙ্কল্প দ্বারা পরিপূর্ণ রাখা l"* এর আধার হলো রোজ মুরলি শোনা, তা' নিজের মধ্যে অন্তর্লীন করা এবং এর প্রতিরূপ হওয়া l এই তিন স্টেজেস l শুনতে খুব ভালো লাগে l না শুনে তোমরা থাকতে পার না l এটাও একটা স্টেজ l যারা এই স্টেজের তারা শোনার সময়টুকু পর্যন্তই শুনতে চায়, শোনার উৎসাহ থাকার কারণে সেই সময়ের জন্য সেই রসের আনন্দে থাকে l শোনার সময় তারা মেতেও থাকে, খুব ভালো, খুব ভালো ... এই গীতও খুশিতে গায় l যতই হোক, শোনা সমাপ্ত হওয়ার সাথে সাথেই সেই রসও সমাপ্ত হয়ে যায়, কারণ তারা অন্তর্লীন করেনি l অন্তর্লীন করার শক্তি দ্বারা বুদ্ধিকে শক্তিশালী সঙ্কল্পে সম্পন্ন না করলে ব্যর্থ আসতেই থাকবে l যারা অন্তর্লীন করে, তারা সদা পরিপূর্ণ থাকে, সেইজন্য ব্যর্থ সঙ্কল্প থেকে সরে থাকে l যাই হোক, প্রতিরূপ হয়ে ওঠা এবং শক্তিশালী হয়ে অন্যদেরও শক্তিশালী বানানোর স্টেজে হয় না l সুতরাং সেই দুর্বলতা থেকেই যায় l



ব্যর্থ থেকে তো তারা রক্ষা পায়, শুদ্ধ সঙ্কল্প থাকে, কিন্তু শক্তির প্রতিমূর্তি হয়ে উঠতে পারে না l প্রতিরূপসকল সদাই সম্পন্ন, সদা সমর্থ, শক্তিশালী কিরণে অন্যদেরও ব্যর্থ সমাপ্ত করে l অতএব, নিজেকে জিজ্ঞাসা কর, আমি কে ! যারা শোনে তাদের কেউ, নাকি শুনে অন্তর্লীন করে তাদের কেউ ! নাকি এর প্রতিরূপ হয়েছে, এমন কেউ ? শক্তিশালী আত্মা সেকেন্ডে ব্যর্থকে সমর্থে পরিবর্তন করে দেয় l তোমরা তো শক্তিশালী আত্মা, তাই না ? সুতরাং ব্যর্থের পরিবর্তন কর l যদি এখনও তোমাদের শক্তি এবং সময় ব্যর্থতেই নষ্ট কর, তবে কখন তোমরা শক্তিশালী হবে ? সুদীর্ঘ কালের সমর্থই দীর্ঘকালীন সম্পন্ন-রাজ্য শাসন করতে পারে l বুঝেছ !



এখন নিজের সমর্থ স্বরূপ দ্বারা অন্যদের সমর্থ বানানোর সময় l নিজের মধ্যেকার সবরকম ব্যর্থ সমাপ্ত কর l তোমাদের এই সাহস তো আছে, তাই না ? ঠিক যেমন মহারাষ্ট্র্ব, তোমরাও সেইরকমই মহান, তাই নও কি ? তোমরা মহা সঙ্কল্প কর, তাই তো ? তোমরা দুর্বল কোনো সঙ্কল্প কর না l তোমরা সঙ্কল্প করলে আর সেইরকমই ঘটল l একেই বলে মহান সঙ্কল্প l তোমরা এমনই মহান আত্মা, তাই না ? পাঞ্জাব থেকে আগত তোমরা কি ভাবছ ? পাঞ্জাবের তোমরা সাহসী, তাই না ! মায়ার নামক গভর্নমেন্ট কে সম্মুখ সমরে আহ্বান করছে তারা। ঈশ্বরীয় শক্তিধারীরা মায়াকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আহ্বান করছে l তোমরা মায়ার সাথে প্রতিযোগিতা কর, তাই না ? তোমরা ভীত হও না, নয় কি ? তারা যেমন বলে যে এটা তাদের রাজ্য, সেইজন্য তোমরাও মায়াকে দ্বন্দ্বযুদ্ধে আহ্বান কর, গর্জে ওঠো - তোমাদের রাজ্য আসতে চলেছে l তোমরা এমনই বীর আর সাহসী, তাই না ? পাঞ্জাব থেকে আগতরাও বাহাদুর l মহারাষ্ট্র থেকে আগতরা মহান এবং কর্ণাটক থেকে আগতদের বিশেষত্ব - তাদের মহান ভাবনা l ভাবনার কারণ এটাই যে তারা সহজে তাদের ভাবনার ফল লাভ করে l কর্ণাটক থেকে আগতরা তাদের ভাবনার মহান ফল খায়, সেইজন্য সদা খুশিতে নাচতে থাকে l সুতরাং যারা খুশির ফল খায় তোমরা সেই সৌভাগ্যবান আত্মা l সুতরাং মহারাষ্ট্র মহান সঙ্কল্পকারী আর পাঞ্জাব মহান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মহান রাজ্য অধিকারী, এবং কর্ণাটক মহান ফল খায় l তোমরা তিনই মহান হয়ে গেছ, তাই না ?



মহারাষ্ট্র অর্থাৎ সবকিছুতে মহান l প্রতিটা সঙ্কল্প মহান, তোমাদের স্বরূপ মহান, কর্ম মহান আর তোমাদের সেবা মহান l সবকিছুতে তোমরা মহান l সুতরাং, আজ তিন মহা নদী মিলিত হয়েছে, তাই না ! মহান নদীসমূহের মহাসাগরের সঙ্গে মিলন, সেইজন্য মিলন আসরে তোমরা এসেছ l আজ সমাবেশ উদযাপনও তো করতে হবে, তাই না ! আচ্ছা - এইরকম সদা সমর্থ, যারা সদা প্রতিটা মহাবাক্যের প্রতিরূপ হয়, যারা দীর্ঘকালের সমর্থ এবং অন্য আত্মাদের সমর্থ বানায় , সেই আত্মাসকলকে বাপদাদার সকল সমর্থ-সম্পন্ন স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l



*দাদীদের সাথে বাপদাদার সাক্ষাৎকারঃ-* এখানে মহামন্ডলী (দল) বসে আছে l প্রারম্ভে ওম্ মন্ডলী ছিল আর অন্তে মহামন্ডলী হয়েছে l এই মন্ডলী সকল মহান আত্মার, তাই না ! লোকে নিজেদের বলে মহামন্ডলেশ্বর, আর তোমরা নিজেদের বলো মহা সেবাধারী l মহামন্ডলেশ্বর বা মহামন্ডলেশ্বরী বলো না, বরং নিজেদের মহা সেবাধারী বলো l সুতরাং মহান সেবাধারীদের মহান মন্ডলী l মহা সেবাধারী অর্থাৎ প্রতিটা সঙ্কল্পের মাধ্যমে নিজে থেকেই সেবার নিমিত্ত হয়ে আছে l সব সঙ্কল্প দ্বারা সেবা হতেই থাকে l যারা স্বতঃ যোগী তারা স্বতঃ সেবাধারী হয় l শুধু চেক কর, সেবা নিজে থেকেই হচ্ছে ? তারপরে তোমরা অনুভব করবে সেবা ব্যতীত একটা সঙ্কল্প বা সেকেন্ড যেতে দেওয়া যাবে না l চলতে-ফিরতে সব কার্য করাকালীন প্রতিটা সেকেন্ডে প্রতিটা শ্বাসে সেবা মিশে আছে, একেই বলা যায় স্বতঃ সেবাধারী l তোমরা তো এইরকমই, তাই না ! এখন বিশেষ প্রোগ্রাম অনুযায়ী সেবার স্থিতি সমাপ্ত হয়েছে l স্বতঃ সেবার নিমিত্ত হয়ে গেছ l তোমরা অন্যদের সেই চান্স দিয়েছ l তারা প্রোগ্রামও বানাবে, সেইসব প্র্যাকটিক্যালিও করবে, কিন্তু তোমাদের সেবা এখন স্বতঃ সেবাধারীর l প্রোগ্রামের সময় পর্যন্তই শুধু সেবা নয়, সদাসর্বদাই প্রোগ্রাম l তোমরা নিরন্তর সেবার স্টেজে আছ l তোমরা এমনই মন্ডলী, তাই না ! শরীর যেমন বিনা শ্বাসক্রিয়ায় চলতে পারে না ঠিক একইভাবে আত্মা সেবা ব্যতীত থাকতে পারে না l শ্বাসক্রিয়া অটোম্যাটিক অনবরত চলতে থাকে, নয় কি ? সেবাও সেইরকম স্বতঃই চলতে থাকে l সেবাই যেন আত্মার শ্বাস l এইরকমই, তাই না ? কত ঘন্টা সেবা করেছ, সেই হিসেব করতে পার ? তোমাদের ধর্ম-কর্মই সেবা l তোমাদের চলাও সেবা, বলাও সেবা, তোমরা যা-ই কর সেটা সেবা, সুতরাং তোমরা স্বতঃ সেবাধারী, সদাসর্বদার সেবাধারী l তোমাদের মনে যে সঙ্কল্পই ওঠে, তা'তে সেবা মিশে থাকে l প্রতিটা উক্তিতে সেবা সমাহিত, কারণ ব্যর্থের অবসান হয়েছে l সুতরাং সমর্থ হওয়া অর্থাৎ সেবা l যারা এইরকম তাদের বলা হয় মহামন্ডলীর মহান আত্মা l আচ্ছা -



তোমাদের সাথীরাও বাপদাদার সামনে l ওম্ মন্ডলী, মহামন্ডলীর সবাই আদি থেকে সেবাধারী, সদা সেবাধারী l বাপদাদার সামনে মহামন্ডলীর সব মহান আত্মা l যারা পানের বিড়া উঠিয়েছে অর্থাৎ দায়িত্বের উদ্যোগ নিয়েছে, তারা তো মহান মন্ডলীরই, তাই না ! তোমরা পানের বিড়া উঠিয়েছ অর্থাৎ তোমরা দায়িত্ব নিয়েছ, নয় কি ? কোনকিছু না ভেবে সঙ্কল্প করার দৃঢ় সঙ্কল্প করেছ আর নিমিত্ত হয়ে গেছ l একেই বলা হয়ে থাকে মহান আত্মা l মহান কর্তব্যের নিমিত্ত হয়েছ l তোমরা অন্ততঃ এক্সাম্পল তো হয়েছ l এক্সাম্পল না দেখে বিশ্বের জন্য এক্সাম্পল হয়ে গেছ I তাৎক্ষণিক দান মহাপুণ্যের ! তোমরা এমনই মহান আত্মা l আচ্ছা l



*পাটিদের সাথে:-*

*১) মহারাষ্ট্র তথা পাঞ্জাব গ্রুপ* তোমরা বাচ্চারা সবাই নির্ভীক, তাই না ? কেন ? কারণ তোমরা সদা শত্রুহীন l তোমাদের কারও বিরুদ্ধে কোনরকম বৈরিতা নেই l সকল আত্মার প্রতি ভ্রাতৃভাবের শুভ ভাবনা, শুভ কামনা আছে l যে সকল আত্মার এইরকম শুভ ভাবনা, শুভ কামনা থাকে, তারা সদা নির্ভয়ে থাকে l তোমাদের ভয়ভীতি নেই l তোমরা নিজেরা যোগযুক্ত স্থিতিতে স্থিত হলে যে কোনও পরিস্থিতিতে অবশ্যই সেফ থাকবে l সুতরাং তোমরা সদা সেফ থাক, তাই না ? যারা বাবার সুরক্ষিত ছত্রছায়ায় থাকে তারা সদা সেফ থাকে l ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে গেলে তোমাদের ভয়ের উদ্রেক হয় l ছত্রছায়ায় তোমরা নির্ভীক l যত কিছুই কেউ করুক না কেন বাবার স্মরণ এক সুরক্ষিত দুর্গ l কেউ দুর্গের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না l এইরকম স্মরণের দুর্গে তোমরা সেফ থাক l এমনকি চঞ্চল পরিস্থিতিতেও তোমরা অনড়, ঘাবড়ে যাও না l যা কিছু দেখেছ তা'তো কিছুই না l সে তো শুধুমাত্র রিহার্সাল l রিয়্যাল (বাস্তব) তো আরও আছে l রিহার্সাল তো কোনকিছু যথাযথ বানানোর জন্য করা হয় l তাহলে তোমরা রমণীয় হয়েছ, বাহাদুর হয়েছ ? বাবার প্রতি তোমাদের একাগ্রতা আছে বলেই, কোনো সমস্যা থাকলেও এখানে পৌঁছে গেছ l তোমরা সমস্যাজিৎ হয়ে গেছ l একাগ্রতা নির্বিঘ্ন হওয়ার শক্তি দেয় l শুধু *'আমার বাবা'* এই মহামন্ত্র স্মরণে রাখ l এই মন্ত্র ভুলে গেলেই তোমরা পরাজিত হবে l এটাই স্মরনে থাকলে তোমরা সদা সেফ l



২) সদা নিজেদের অনড় অটল আত্মা অনুভব কর ? কোনও রকম চাঞ্চল্য তোমাদের অনড় অটল স্থিতিতে বিঘ্ন উৎপন্ন করতে পারে না l বিঘ্ন-বিনাশক আত্মারা সকল বিঘ্ন এমনভাবে পরাস্ত করে যেন বিঘ্ন নয় একটা খেলা মাত্র l সুতরাং, খেলা খেলতে তোমাদের আনন্দ হয়, তাই না ! কোনো পরিস্থিতিকে বশীভূত করা আর খেলা, ফারাক তো হবে, নয় কি ? যদি বিঘ্ন-বিনাশক আত্মা হও, তবে পরিস্থিতি খেলা অনুভব হবে l পাহাড় সর্ষে দানার মতো অনুভব হয় l তোমরা এইরকম বিঘ্ন-বিনাশক, ভীত নও l নলেজফুল আত্মারা আগে থেকেই জানে যে এই সবকিছু আসারই আছে, সবকিছু ঘটতেই হবে l যখন আগে থেকেই জানা হয়ে যায় তখন কোনও বিষয়ই বড় বলে মনে হয় না l অকস্মাৎ কিছু ঘটলে ছোট ব্যাপারও বড় মনে হয়, যখন আগে থেকেই তোমরা জান তখন বড় ব্যাপার তোমাদের ছোট বোধ হয় l সবাই তোমরা নলেজফুল, তাই না ? এমনিতে তো তোমরা নলেজফুল, কিন্তু যখন বিপরীত পরিস্থিতির সময় হয়, সেই সময় নলেজফুল হওয়ার স্থিতি তোমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় l অসংখ্য বার তোমরা যা করেছ, শুধু সেটাই রিপিট করছ l যখন নাথিং নিউ, সবকিছু সহজ l তোমরা সবাই দুর্গের সম্পূর্ণ পাকা ইঁট l প্রতিটা ইঁট খুব গুরুত্বপূর্ণ l একটাও ইঁট নড়ে গেলে পুরো দেওয়াল নাড়িয়ে দেয় l তোমরা সব ইঁট তো অনড়, কেউ যতই নড়ানোর চেষ্টা করুক, তারা নড়ে যাবে, কিন্তু তোমরা নড়বে না l এমন অনড় আত্মাদের, বিঘ্ন-বিনাশক আত্মাদের বাপদাদা রোজ অভিনন্দিত করেন, এইরকম বাচ্চারাই বাবার থেকে অভিনন্দিত হওয়ার অধিকারী l এমন অনড় অটল বাচ্চাদের দেখে বাবা এবং সারা পরিবার উৎফুল্ল l আচ্ছা !

বরদান:-

সমর্থ স্থিতির সুইচ অন করে ব্যর্থের অন্ধকার সমাপ্ত করে অব্যক্ত ফরিস্তা ভব

স্থূল লাইটের সুইচ অন করলে যেমন অন্ধকারের অবসান হয়, একইভাবে সমর্থ স্থিতি হলো সুইচ, এই সুইচ অন করলে ব্যর্থের অন্ধকার সমাপ্ত হবে l প্রতিটা ব্যর্থ সঙ্কল্প সমাপ্ত করার পরিশ্রম থেকে রেহাই পেয়ে যাবে l যখন তোমাদের স্থিতি সমর্থ হবে তখন মহাদানী-বরদানী হয়ে যাবে, কারণ দাতা হওয়ার অর্থই সমর্থ হওয়া l শুধুমাত্র সমর্থ যারা, তারাই দিতে পারে, আর যেখানে সমর্থ সেখানে সব ব্যর্থের অবসান l সুতরাং এটাই অব্যক্ত ফরিস্তার শ্রেষ্ঠ কার্য l

স্লোগান:-

যারা সত্যতার আধারে সকল আত্মাদের হৃদয়ের আশীর্বাদ প্রাপ্ত করে, তারাই ভাগ্যবান আত্মা l