১৬-০১-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা- আত্ম-অভিমানী হওয়ার অভ্যাস কর, তবেই বিকারী চিন্তা দূর হয়ে(উড়ে)যাবে, বাবা-ই স্মরণে থাকবে, আত্মা সতোপ্রধান হয়ে যাবে*"

প্রশ্ন:-

জগতের কোন্ রাস্তার কথা মনুষ্যদের একদমই জানা নেই ?

উত্তর:-

বাবার সাথে মিলনের বা জীবনমুক্তি প্রাপ্ত করার রাস্তা কারোর-ই জানা নেই। শুধুই শান্তি শান্তি করতে থাকে। কনফারেন্স করতে থাকে। জানে না যে বিশ্বে শান্তি কখন ছিল আর কিভাবে স্থাপিত হয়েছিল। তোমরা জিজ্ঞাসা করতে পারো যে তোমরা বিশ্বে শান্তি দেখেছো কি ? শান্তি স্থাপন কিভাবে হয় ? বিশ্বে শান্তি তো বাবার দ্বারাই স্থাপন করা হচ্ছে। তোমরা এসে বোঝো।

ওম্ শান্তি |

রুহানী বাবা বসে রুহানী বাচ্চাদের বোঝান। সবার প্রথমে এই দৃষ্টি পাকা কর যে আমরা হলাম আত্মা। আমরা ভাই-ভাইকে দেখি। যেমন বাবা বলেন, আমি বাচ্চাদের (আত্মাদের) দেখি। আত্মাই শরীরের কর্মেন্দ্রিয় দ্বারা শোনে, বলে। আত্মার আসন(তখ্ত) হলো ভ্রুকুটি। বাবা তো আত্মাদের দেখেন। এই ভাইও নিজের ভাইদের দেখে। তোমাদেরও ভাইদের দেখতে হবে। প্রথমেই এইরূপ দৃষ্টি পাকা করা উচিৎ। তবেই কু-চিন্তা(ক্রিমিনাল খেয়াল) আসা বন্ধ হয়ে যাবে। এইরকম অভ্যাস হয়েই যাবে। আত্মাই শোনে, আত্মাই নড়াচড়া করে। এইরূপ দৃষ্টি(আত্মিক) পাকা হলে আর সব চিন্তা চলে যাবে। এটাই হলো এক নম্বর সাবজেক্ট। এইভাবেই দৈবী-গুণও অটোমেটিক্যালি ধারণ হতে থাকবে। দেহ-অভিমানে এলেই কর্মেন্দ্রিয় অকার্য করে । দেহী-অভিমানী হওয়ার খুব প্রচেষ্টা কর তবেই তোমাদের শক্তি আসবে। সর্বশক্তিমান বাবার দ্বারাই আত্মা সতোপ্রধান হয়। বাবা তো সর্বদাই সতোপ্রধান। তাই সবার প্রথমে এই দৃষ্টিই পাকা হলে তখনই বুঝতে পারবে যে আমরা আত্ম-অভিমানী। আত্ম-অভিমানী আর দেহী-অভিমানীতে রাত-দিনের পার্থক্য। আমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের এখন ঘরে ফিরে যেতে হবে। আত্ম-অভিমানী হলেই আমরা পবিত্র, সতোপ্রধান হয়ে যাবো। এই অভ্যাস করলেই বিকারী চিন্তা দূর হয়ে যাবে।



মানুষ বলে থাকে - ধরণীর নক্ষত্র। অবশ্যই আমরা আত্মারা হলাম নক্ষত্র, এই শরীর ধারণ করেছি কর্ম করার জন্য। এখন আমরা তমোপ্রধাণ হয়েছি পুনরায় আমাদের সতোপ্রধান হতে হবে। বাবাকে পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগেই আসতে হয়। এরকম কখনই বলা হয় না যে ক্রাইস্টের শরীরে আসে। কারণ তিনি(ক্রাইস্ট) আসেনই রজোপ্রধান সময়ে। কোনো বুদ্ধ বা ক্রাইস্টের শরীরে ভগবান আসে, তা হতে পারে না। তিনি আসেন একবারই এবং নতুন দুনিয়া স্থাপন করতে তিনি পুরানো দুনিয়াতেই আসেন। তমোপ্রধাণ দুনিয়াকে সতোপ্রধান দুনিয়ায় পরিবর্তন করতে। তাহলে তিনি অবশ্যই সঙ্গমেই আসবেন। আর অন্য কোন সময়ে তিনি আসতে পারেন না। ওঁনাকে এসে নতুন দুনিয়া স্থাপন করতে হয়। ওঁনাকেই বলা হয় হেভেনলী গড ফাদার। ড্রামা অনুসারে সঙ্গমের নামই রয়েছে, কৃষ্ণকে তো বাবা বা পতিত-পাবন বলা যাবে না। তাঁর মহিমা সম্পূর্ণ আলাদা। বাবা বোঝান যে, যাকেই বোঝাবে সবার প্রথমে তাকে এইম- অবজেক্ট বোঝাও। ভারতে যখন লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজত্ব ছিল তখন এক ধর্ম ছিল, এক রাজত্ব ছিল। আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম ছিল। একটিই অদ্বৈত ধর্ম ছিল। হেভেন(স্বর্গ) স্থাপন করা তো বাবার-ই কাজ। কিভাবে করেন তাও পরিষ্কার। সঙ্গমেই বাবা এসে বোঝান যে দেহের সব ধর্ম ছেড়ে নিজেকে আত্মা মনে করো। লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্রের উপরেই সবকিছু বোঝাতে হবে। শিববাবার চিত্রও রয়েছে। মহিমা করার মতো অনেক ভাল-ভাল চিত্র রয়েছে। এ হলো নর থেকে নারায়ণ হওয়ার সত্যকথা। রাধা-কৃষ্ণের কথা নয়, সত্যনারায়ণের কথা। তোমাদের নর থেকে নারায়ণে পরিণত করেন। প্রথমে তো হবে ছোট বাচ্চা। ছোট বাচ্চাকে নর বলা হয় না। নর নারায়ণকে, নারী লক্ষ্মীকে বলা হয়। বাচ্চারা, তোমাদেরকে এই চিত্রের দ্বারাই বোঝাতে হবে। সন্ন্যাসী তো আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা করতে পারে না। শঙ্করাচার্য তো আসেনই রজোপ্রধান সময়ে। তিনি রাজযোগ শেখাতে পারেন না। বাবা আসেন সঙ্গমে। তিনি বলেন, (ব্রহ্মার শরীরে) অনেক জন্মের অন্তিম জন্মে তারও অন্তিম অবস্থায় আমি প্রবেশ করি। উপরে ত্রিমূর্তিও রয়েছে। ব্রহ্মা যোগে বসে আছেন, শঙ্করের তো কথাই আলাদা। ষাঁড়ের উপর সওয়ার হওয়া, এ হতে পারে না। বাবাকে তো এখানে এসেই বোঝাতে হয়। বিনাশও এখানেই হয়। লোকেরা বলে যে, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা হোক। তা তো হতেই হবে, তখন বুদ্ধিতে আসে। চিত্রের দ্বারা তোমরা খুব ভালভাবে বোঝাতে পারো। যারা শিবের বা দেবতাদের ভক্তি করে তাদের বোঝাতে হবে। তারা শীঘ্রই স্বীকার করে নেবে। বাকী যারা প্রকৃতি(নেচার) বা বিজ্ঞান ইত্যাদিতে বিশ্বাসী তাদের বুদ্ধিতে বসবে না। অন্য ধর্মাবলম্বীদের বুদ্ধিতেও আসবে না, যারা ধর্মান্তরিত(কনভার্ট) হয়ে গেছে, তারাই বেরিয়ে আসবে। তাদের জন্য দুশ্চিন্তা করার কি আছে। যারা দেবতা ধর্মের বা যারা অনেক ভক্তি করে তারা নিজেদের ধর্মে অত্যন্ত পাকা(অটুট বিশ্বাস) থাকবে। তাই যারা দেবতাদের পূজা করে সেই পূজারীদের বোঝাও, বড় বা ধণী ব্যক্তিরা কখনোই আসবে না। ধরো, এই যে বিড়লা, যিনি এতো মন্দির নির্মাণ করেন, তার কাছে জ্ঞান শোনার সময়ই নেই। সারাদিন বুদ্ধি ব্যবসা-বানিজ্যেই আটকে আছে। তারা অনেক টাকা-পয়সা পায়, তাই তারা মনে করে যে মন্দির বানানোর জন্যই তারা এই ধন প্রাপ্ত করেছে। এ হলো দেবতাদের কৃপা।



তোমাদের কাছে কেউ এলে, তখন লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্র তাদের দেখাও। বলো, তোমরা বিশ্বে শান্তি চাও কিন্তু বিশ্বে শান্তির রাজ্য এই দুনিয়াতে(স্বর্গ) ছিল। এই তারিখ থেকে এই তারিখ পর্যন্ত সূর্যবংশীয় রাজধানীতে অনেক শান্তি ছিল তারপর দুই কলা কম হয়ে যায়। মুখ্যত এই চিত্রের উপরেই সবকিছু। এখন তোমরা বিশ্বে শান্তি চাইছো। কোথায় যাবে? নিজ নিকেতনকে তো জানেই না। আমরা, আত্মারা হলাম শান্ত-স্বরূপ। আমরা মুলবতনে থাকি, ওটাই শান্তিধাম। তা এই দুনিয়ায় নেই। তাকে বলা হয় নিরাকারী দুনিয়া। এছাড়া বিশ্ব তো একেই বলে। বিশ্বে শান্তি নতুন দুনিয়ায় হবে। বিশ্বের মালিকেরা এখানে বসে আছেন। গরীবেরা এই কথা ভালভাবে বুঝতে পারে। কেউ বলে এই রাস্তা তো খুব ভাল, আমরা রাস্তা খুঁজতাম। রাস্তা জানাই নেই তাহলে খুঁজব কিভাবে ? এরকম কেউ-ই নেই, যার বাবা বা জীবনমুক্তির রাস্তা জানা আছে। শান্তি, শান্তি...... বলতেই থাকে কিন্তু শান্তি কবে ছিল, কিভাবে হয়েছিল, কেউ-ই জানে না, কত কনফারেন্স ইত্যাদি করে। তাদের জিজ্ঞাসা করা উচিৎ তোমরা কখনো বিশ্বে শান্তি দেখেছো যে বিশ্বে শান্তি কিভাবে স্থাপিত হয়? তোমরা প্রজারা(লোকেরা) পরস্পর কেন বিভ্রান্ত হয়ে পড়ো ! কত কনফারেন্স করতেই থাকো, কিন্তু উত্তর কোথা থেকেও পাওয়া যায় না। বিশ্বে শান্তি তো বাবার দ্বারাই স্থাপিত হচ্ছে। তোমরা বলো যে ক্রাইস্টের ৩ হাজার বছর পূর্বে হেভেন ছিল তাহলে সেখানেই শান্তি ছিল। যদি সেখানেও অশান্তি হতো তাহলে আর কোথায় শান্তি পাওয়া যাবে। ভালভাবে বোঝাতে হবে। এইসময় তো তোমাদের তারা এতো সময় ধরে কথা বলতে দেবে না কারণ এখনও ওদের শোনার সময় আসেনি। শোনার জন্যও সৌভাগ্য চাই। তোমরা পদমাপদম(লক্ষ কোটি গুণ) ভাগ্যশালী বাচ্চারাই বাবার থেকে শোনার অধিকারী। বাবা ছাড়া আর কেউই শোনাতে পারে না। বাচ্চারা, বাবা তোমাদেরই শোনান। এ হলোই রাবণ-রাজ্য তাহলে এখানে শান্তি কিভাবে হতে পারে। রাবণ-রাজ্যে সবাই পতিত। তারা আহ্বান (ডাকে) করে যে আমাদের পবিত্র বানাও। পবিত্র দুনিয়া তো এই লক্ষ্মী-নারায়ণের ছিল। রাম-রাজ্য আর রাবণ-রাজ্য কত পার্থক্য। সূর্যবংশীয়, চন্দ্রবংশীয় তারপর হয় রাবণ-বংশীয়। এই সময় হলো কলিযুগ, রাবণ সম্প্রদায়। বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও একে অপরের উপর গর্জন করতে থাকে। অত্যন্ত অহংকার থাকে যে আমি অমুক....অমুক। তাই এই লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্রের দ্বারা বোঝান অতি সহজ। বলো যে, এঁনাদের রাজ্যেও বিশ্বে শান্তি ছিল, আর অন্য কোনো ধর্ম ছিল না। বিশ্বে শান্তি সে তো এখানেই(স্বর্গে) হয়। তাই মুখ্য হলো এই চিত্র। বাকী অন্য অনেক চিত্রের উপরে বোঝালে মনুষ্যদের বুদ্ধি অন্যত্র চলে যায়। যা বোঝে তাও ভুলে যায়। তাই তো কথিত আছে যে, টু মেনি কুক্স...... (অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট)। যখন চিত্র অনেক হয়ে যায় তখন সেখানে হাসি-মজার মডেল বা কথোপকথন ইত্যাদি হতে থাকে আর তখন মূল কথাই বুদ্ধি থেকে বেরিয়ে যায়। বিরলতম ব্যক্তিই বুঝতে পারে যে বাবাই এই স্থাপনা করছেন। ৮৪ জন্মও এঁনারই হয়। অবশ্য একজনকেই দেখানো হয়। সকলকে কিভাবে দেখাবে। শাস্ত্রেও এক অর্জুনের নামই বলা হয়েছে, তাই না। স্কুলে শিক্ষক কি একজনকেই পড়ায়, তাই কি হয় ? এও হলো স্কুল। গীতায় স্কুলের কথা বলা হয়নি। কৃষ্ণ তো ছোট বাচ্চা, সে কি করে গীতা শোনাবে। এ হলো ভক্তিমার্গ।



তোমাদের এই ব্যাজও অনেক কাজ করতে পারে। এটা হল সব থেকে ভালো মাধ্যম । প্রথমে তাদেরকে শিববাবার চিত্রের সামনে নিয়ে আসা উচিৎ, আর তারপর লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্রের সামনে আনা উচিৎ। তোমরা শান্তি প্রার্থনা করো, আর তা প্রতিকল্পে বাবার দ্বারাই স্থাপন করা হয়। তোমরা এই চক্রকে জেনে গেছো। প্রথমে তোমরাও তুচ্ছ বুদ্ধির ছিলে। এখন বাবা তোমাদের বুদ্ধিকে স্বচ্ছ করেন। লেখা উচিৎ যে একমাত্র পরমপিতা পরমাত্মা ছাড়া আর কেউই কারো সদ্গতি করতে পারে না। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। একমাত্র বাবা-ই সবকিছু করছেন। স্মরণও তাঁকেই করা হয়। মুখ্য চিত্র হলো এই দুটি। যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা ঠিক মতো বুঝতে পারছে ততক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের সেখান থেকে নড়া উচিৎ নয়। যদি তারা এটা না বোঝে তাহলে তো আর কোনো কিছুই বুঝতে পারবে না। সময় নষ্ট হয়ে যায়। তাই যদি দেখো, তাদের বুদ্ধিতে প্রবেশ করছে না, তখন ছেড়ে দিতে হবে। এসব বোঝানোর মতো অত্যন্ত ভালো কাউকে চাই। যদি মাতা হয় তাহলে খুব ভাল, এতে কেউ আপত্তি করবে না। এখানে সবাই জানে যে কে কে বোঝানোর বিষয়ে অত্যন্ত পারদর্শী। মোহিনী রয়েছে, মনোহর রয়েছে, গীতা রয়েছে - অনেক ভালো ভালো বাচ্চারা রয়েছে। তাহলে প্রথমেই লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্রের দ্বারা সম্পূর্ণ পাকা করানো উচিৎ। বলো, এই বিষয়টিকে ভালো মতন বোঝো তবে তো শান্তির দুনিয়ায় যেতে পারবে। মুক্তি-জীবনমুক্তি দুই-ই প্রাপ্ত করবে। মুক্তিতে তো সকলেই যাবে তারপরে আবার আসবে নম্বরের ক্রমানুসারে ভূমিকা পালন করতে। আড়ম্বরের সাথে বোঝাতে হবে। প্রথম নম্বরে হলো এই চিত্র। বিশ্বের মালিক তারাই ছিলেন। এই বিষয়গুলো যিনি বিচক্ষণ কেবলমাত্র তার বুদ্ধিতেই বসে। যদিও তারা ভাল-ভাল বলে, তারপর তোমাদের পায়ে পড়ে। কিন্তু তারা বাবাকে জানেনি। তাদেরও মায়া ছাড়ে না। বাবা তোমাদের এতো উঁচুতে তোলেন তাই তাঁকে কতটা স্মরণ করা উচিৎ ! সেইজন্য বাবা বলেন, আমাকে স্মরণ করো তাহলে তোমাদের পাপমোচন হবে। সতোপ্রধান হয়ে যাবে। এখানে এলে খুশীতে তোমাদের রোমাঞ্চিত হয়ে যাওয়া উচিৎ । কারণ আমিই এ হতে চলেছি। আমি ভিতরে যাই আর এই লক্ষ্মী-নারায়ণকে দেখি, অত্যন্ত খুশী হই । ওহো ! বাবা আমাদের এই রকমই( লক্ষ্মী-নারায়ণ) তৈরী করেন। বাহ! বাবা বাহ! লৌকিকে বাড়িতে কারো বাবা যদি অত্যন্ত উচ্চপদাধিকারী হয় তখন তার সন্তানেরা অত্যন্ত খুশীতে থাকে যে আমার বাবা একজন উপদেশক ! তোমাদের কত খুশী থাকা উচিৎ যে বাবা আমাদের এইরকম তৈরী করছেন। কিন্তু মায়া ভুলিয়ে দেয়, অত্যন্ত বিরোধিতা করে। বাচ্চারা, তোমাদের অত্যন্ত খুশীতে থাকা উচিৎ, দৈব-গুণও ধারণ করা উচিৎ। আত্ম-অভিমানী ভব। পরস্পরকে ভাই-ভাই-এর দৃষ্টিতে দেখো, স্ত্রী-কেও আত্মারূপে দেখবে। তাহলেই ক্রিমিনাল আই(কু-দৃষ্টি) হবে না। মনে ঝড় তখনই ওঠে যখন তোমরা ভাই-ভাই-এর দৃষ্টিতে পরস্পরকে দেখো না, এতে অনেক পরিশ্রম আছে। ভালভাবে অভ্যাস করা উচিৎ। আত্ম-অভিমানী হতে হবে। কর্মাতীত অবস্থা তো পরে হবেই। সার্ভিস করা বাচ্চারাই বাবার হৃদয়ে স্থান পায় । যদি দেরীতেও আসে, তারাও জাম্প(গ্যালপ) করতে পারে। দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে। বাচ্চারা, তোমরা পূর্বের হিস্ট্রি তো শুনেছো যে এঁনারা কিভাবে ঘর-পরিবার ত্যাগ করেছিল। রাতে পালিয়ে গিয়েছিল। তারপর এতো বাচ্চাদের লালন পালন করা হয়েছিল। একেই বলা হয় ভাট্টি। তারপর আবার ভাট্টির থেকে নম্বরের ক্রমানুযায়ী এক-একজন বেরিয়েছিল। এ তো অতি আশ্চর্যের যে, বাবা কীভাবে আমাদের ওয়ান্ডারফুল স্বর্গের মালিক বানান। গড ফাদার তোমাদের পড়ান। তিনি কত সাধারণ ! প্রতিদিন বাচ্চাদেরকে তিনি কতো কিছু বোঝান আর বাচ্চাদেরকে জানান নমস্কার। বাচ্চারা, তোমরা আমার থেকেও উচ্চে চলে যাও। তোমরাই কাঙ্গাল থেকে দ্বি-মুকুটধারী (ডবল তাজধারী) বিশ্বের মালিক হও। বাবা তো অতি খুশী নিয়ে আসেন। অনেকবার এসেছেন। আজ তোমরা আমি অর্থাৎ পরমাত্মা রামের থেকে রাজ্য নাও আবার রাবণের কাছে রাজ্য হারাও, এও এক খেলা। আচ্ছা !



মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ, ভালবাসা ও সুপ্রভাত। ঈশ্বরীয় পিতা ওঁনার ঈশ্বরীয় সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-

১. আত্মাকে সতোপ্রধান করার জন্য একমাত্র সর্বশক্তিমান বাবার থেকেই শক্তি নিতে হবে। দেহী-অভিমানী হওয়ার পুরুষার্থ করো। আমরা আত্মারা হলাম ভাই-ভাই, এই অভ্যাস নিরন্তর করতে থাকো।

২. বাবা আর লক্ষ্যের(লক্ষ্মী-নারায়ণ) চিত্রের উপরে প্রত্যেককে বিস্তারিতভাবে বোঝাও। অন্য কথায় সময় নষ্ট কোরো না।

বরদান:-

সেবায় শুভ ভাবনা যুক্ত করে শক্তিশালী ফল প্রাপ্ত করে সফলতার প্রতিমূর্তি ভব

যে সেবাই করো তাতে যেন সকল আত্মাদেরও সহযোগের ভাবনা থাকে, খুশীর ভাবনা বা সদ্ভাবনা থাকে তবেই প্রতিটি কার্য সহজেই সফল হয়ে যাবে। যেমন পূর্বে যখন কেউ কোনো কার্য করতে যেতো তখন সম্পূর্ণ পরিবারের আশীর্ব্বাদ নিয়ে যেতো। তাই বর্তমানেও সেবায় এটি যুক্ত করা উচিৎ। কোনো কার্য শুরু করার পূর্বে সকলের শুভ- ভাবনা, শুভ- কামনা নাও। সকলের সন্তুষ্টতার শক্তিকে ভরে নাও তবেই শক্তিশালী ফল প্রাপ্ত করবে।

স্লোগান:-

বাবা যেমন আজ্ঞে হাজির মালিক(জী হাজির) বলেন তেমনই তোমরাও সেবায় আজ্ঞে হাজির, আজ্ঞে হুজুর করো তবেই পুণ্য জমা করতে পারবে।