০৫-১০-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি বাপদাদা মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - বাবা এসেছেন তোমাদেরকে সুন্দর ফুল (গুল গুল) বানাতে, তোমরা ফুল সম বাচ্চারা, কখনো কাউকে দুঃখ দিতে পারো না, সর্বদা সুখ দিতে থাকো"
প্রশ্ন:-
কোন্ একটি বিষয়ে বাচ্চারা, তোমাদেরকে খুব খুব সাবধান থাকতে হবে ?
উত্তর:-
মন-বাণী-কর্ম এবং নিজের বক্তব্যের উপরে খুব সাবধান থাকতে হবে। বুদ্ধি দিয়ে বিকারী দুনিয়ার সব লোকলজ্জা, বংশমর্যাদা ভুলতে হবে। নিজেকে নিরীক্ষণ করতে হবে যে, আমি কতখানি দিব্যগুন ধারণ করতে পেরেছি ? লক্ষ্মী-নারায়ণের মত আত্মিক দৃষ্টি হয়েছে ? কতখানি সুন্দর ফুল হতে পেরেছি ?
ওম্ শান্তি
শিববাবা জানেন যে, এইসকল আত্মা আমারই সন্তান। তোমরা বাচ্চারা, নিজেদেরকে আত্মা মনে করে, এই শরীরকে ভুলে, শিববাবাকে স্মরণ করতে হবে। শিব বাবা বলেন, আমি তোমাদেরকে পড়াই। শিব বাবাও নিরাকার, তোমরা আত্মারাও নিরাকার। এখানে এসে নিজ নিজ ভূমিকা পালন করো। বাবাও এসে নিজের ভূমিকা পালন করেন। এটাও তোমরা জেনে গেছো যে নাটকের নিয়ম অনুসারে বাবা এসে আমাদের গুল- গুল ফুল তৈরি করেন। তাই সব অবগুণগুলিকে ত্যাগ করে গুনবান হতে হবে। গুনবান কখনো কাউকে দুঃখ দেয় না। শুনেও না শোনার ভান করে না। কেউ দুঃখী হলে, তার দুঃখ দূর করে। বাবাও আসেন তো সমগ্র দুনিয়ার দুঃখ অবশ্যই দূর হবে। বাবা তো শ্রীমৎ দেন, যতখানি সম্ভব পুরুষার্থ করে সকলের দুঃখ দূর করতে থাকো। পুরুষার্থের দ্বারাই ভালো পদ পাওয়া যাবে। পুরুষার্থ না করলে পদ কম হয়ে যাবে। সেটাই আবার কল্প কল্পের ক্ষতি হয়ে যাবে। বাবা বাচ্চাদেরকে সমস্ত কথা বোঝাচ্ছেন। বাচ্চারা নিজের ক্ষতি করুক, এটা বাবা চান না। দুনিয়ার লোক লাভ আর ক্ষতির বিষয়ে জানে না, এইজন্য বাচ্চাদেরকে নিজের প্রতি দয়া করতে হবে। শ্রীমতে চলতে হবে। বুদ্ধি যদি এদিক-ওদিক চলে যায়, তবুও চেষ্টা করো আমি এরকম অসীম জগতের পিতাকে কেন স্মরণ করতে পারছি না, যে স্মরণের দ্বারাই উঁচু পদ পাওয়া যায়। অন্ততপক্ষে স্বর্গতে তো যেতে পারবে। কিন্তু স্বর্গে উঁচু পদ পেতে হবে। বাচ্চাদের বাবা-মা বলে যে, আমাদের সন্তান স্কুলে পড়াশোনা করে উঁচু পদ পাবে। এখানে তো কারোরই কিছু জানা নেই। তোমাদের সম্বন্ধীরাও এটা জানে না যে, তুমি কি পড়াশোনা করছো? লৌকিক পড়াশোনার বিষয়ে তো মিত্র-সম্বন্ধীরা সবাই জানে। এক্ষেত্রে কেউ জানে, আবার কেউ জানে না। কারোর বাবা জানলে তো ভাই-বোন জানেনা। কারোর মা জানলে তো বাবা জানেনা। কেননা এ হল বিচিত্র পড়াশোনা আর বিচিত্র শিক্ষক। নাম্বারের ক্রমানুসারে বোঝে, বাবা বোঝান, ভক্তিতো তোমরা অনেক করেছো। সেটাও নাম্বারের ক্রমানুসারে, যে বেশি ভক্তি করেছে, সেই এসে জ্ঞান নেয়। এখন ভক্তির রীতি-রেওয়াজ সম্পন্ন হয়েছে। আগে মীরার ক্ষেত্রে বলা হত, সে লোক-লজ্জা, বংশমর্যাদা ত্যাগ করেছিল। এখানে তো তোমাকে সমগ্র বিকারী কুলের মর্যাদা ত্যাগ করতে হবে। বুদ্ধির দ্বারা সব কিছুর সন্ন্যাস করতে হবে। এই বিকারী দুনিয়ার কিছুই ভালো লাগেনা। যারা বিকর্ম করে, তাদের একদমই ভালো লাগে না। তারা নিজেরাই নিজেদের ভাগ্যকে খারাপ করে। এইরকম কোনো বাবা হবে কি যে, বাচ্চাদের, কাউকে বিরক্ত করতে দেখা পছন্দ করবে বা পড়াশোনা না করলেও ভালবাসবে? তোমরা বাচ্চারা এখন জেনে গেছো যে, সেখানে এরকম কোনো বাচ্চা হবেই না। নামই হচ্ছে দেবী-দেবতা। কত পবিত্র নাম। নিজেকে চেক করতে হবে - আমার মধ্যে দিব্যগুন আছে? সহনশীলও হতে হবে। বুদ্ধিযোগের বিষয়। এই লড়াই তো খুবই মিষ্টি। বাবাকে স্মরণ করার ক্ষেত্রে কোন লড়াই আদির প্রয়োজন হয় না। তবে হ্যাঁ, এখানে মায়া বিঘ্ন ঘটায়। তার থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে। মায়ার উপর বিজয় তো তোমাদেরকেই পেতে হবে। তোমরা জেনে গেছো যে, কল্প-কল্প আমরা যা কিছু করে এসেছি, ঠিক সেই রকমই পুরুষার্থ চলছে যেটা কল্প-কল্প চলে এসেছে। তোমরা জেনে গেছো যে এখন আমরা পদ্মাপদম ভাগ্যশালী হচ্ছি আবার সত্যযুগে অনেক সুখে থাকবো।
কল্প-কল্প বাবা এইরকমই বোঝান। এটা কোনো নতুন কথা নয়, এটা অনেক পুরানো কথা। বাবা তো চান যে বাচ্চারা সম্পূর্ণ সুন্দর ফুল হয়ে যায়। লৌকিক বাবারও মনে এই আশা থাকে যে, আমার সন্তান যেন ফুলের মতো তৈরি হয়। পারলৌকিক বাবা তো আসেন-ই কাঁটা থেকে ফুল তৈরি করতে। তো এইরকম হতে হবে, তাই না ! মন- বাণী-কর্ম আর নিজের বলা কথার উপর খুব সতর্কতা চাই। প্রতিটি কর্মেন্দ্রিয়ের উপর সর্তকতা চাই। মায়া বড়-ই প্রবঞ্চক । তার থেকে সাবধান থাকতে হবে কারণ, তোমাদের গন্তব্য অনেক উঁচু। আধাকল্প আমাদের দৃষ্টি ক্রিমিনাল হয়ে গিয়েছিল। এই এক জন্মে তাকে সিভিল করতে হবে। যেরকম এই লক্ষী নারায়ণের আছে। এঁনারা সর্বগুণসম্পন্ন ছিলেন, তাই না ! সেখানে ক্রিমিনাল দৃষ্টি হবেই না। রাবণ-ই থাকবে না। এটা কোনো নতুন কথা নয়। তোমরা অনেকবার এই পদ পেয়েছো। দুনিয়ার তো এ বিষয়ে কোন জ্ঞান-ই নেই যে এরা কি পড়াশোনা করছে। বাবা তোমাদের সমস্ত আশা পূর্ণ করতে আসেন। অশুভ আশা রাবণের হয়। তোমাদের হচ্ছে শুভ আশা। কোনরকমের ক্রিমিনাল আশা যেন না থাকে। বাচ্চাদের তো সুখের সমুদ্রে ঢেউ খেতে হবে। তোমাদের অসীম সুখের বর্ণনা করা হয় না, দুঃখের বর্ণনা করা হয়, সুখের বর্ণনা খুব কমই করা হয়। তোমাদের সব বাচ্চাদের একটাই আশা থাকবে যে, আমি পবিত্র হবো। কিভাবে পবিত্র হবো? সেটাও তো তোমরাই জেনে গেছো যে, পবিত্র করার জন্য এক বাবা-ই আছেন, তাঁর স্মরণে থাকলেই পবিত্র হয়ে যাবে। প্রথম নাম্বারে নতুন দুনিয়াতে সম্পূর্ণ পবিত্র এই দেবী দেবতারাই হবেন। পবিত্রতায় দেখো কত শক্তি ! তোমরা পবিত্র হয়ে, পবিত্র দুনিয়ার রাজ্যপদ লাভ করো এইজন্যই বলা হয়ে থাকে এই দেবী-দেবতা ধর্মে অনেক শক্তি আছে। এই শক্তি কোথা থেকে প্রাপ্ত হয় ? সর্বশক্তিমান বাবার থেকে। ঘরে ঘরে তোমরা মুখ্য দু'চারটি চিত্র রেখে খুব সেবা করতে পারো। সেই সময় আসছে, যখন যুদ্ধ ইত্যাদি লাগবে, তখন তোমরা কোথাও যেতে আসতেও পারবে না।
তোমরা হলে ব্রাহ্মণ, সত্যিকারের গীতা শোনাও। জ্ঞান তো খুব সহজ, যার পরিবারের সবাই জ্ঞানে চলে আর শান্তিতে থাকে, তাদের কাছে তো এই জ্ঞান খুবই সহজ লাগে। দু'চারটি মুখ্যচিত্র ঘরে রেখে দাও। এই ত্রিমূর্তি, সৃষ্টি চক্র, কল্প বৃক্ষ আর সিঁড়ির চিত্রই যথেষ্ট। তার সাথে গীতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নয়, এই চিত্রটিও খুব ভালো। খুব একটা কঠিন কাজ তো নয়, এতে কোনো টাকা পয়সাও খরচ হয় না। চিত্র তো থাকেই। চিত্রগুলিকে দেখলেই জ্ঞান স্মৃতিতে আসতে থাকবে । ঘর যদি ছোটও হয় তাও চলবে, তাতে তুমি শুতেও পারো। যদি শ্রীমতে চলতে থাকো তাহলে তোমরা অনেকের কল্যাণ করতে পারবে। কল্যাণ করতেই থাকবে। তবুও বাবা মনে করিয়ে দেন - এইরকম ভাবেও তুমি করতে পারো...। মানুষ বাড়িতে ঠাকুরের মূর্তি বা প্রতিমা (বিশেষতঃ বাল কৃষ্ণের) তো রাখে, তাই না! এখানেও কিছু বোঝানোর মতো জিনিস আছে। জন্ম-জন্মান্তর তোমরা ভক্তি মার্গে মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে বেরিয়েছো, কিন্তু এটা জানা ছিল না যে, এঁনারা কে ? মন্দিরে দেবী প্রতিমার পূজা করা হয় তাকেই আবার জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। মানুষের মধ্যে কতো অজ্ঞানতা রয়েছে । পূজ্য দেবীকে পূজা করে আবার তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে সমুদ্রে ভাসিয়ে দেয়। গণেশকে, দেব দেবীকে, সরস্বতীকেও ভাসিয়ে দেয়। বাবা বসে বাচ্চাদের কল্প-কল্পের এই সমস্ত কথা বোঝাচ্ছেন। অনুভব করাচ্ছেন - তোমরা এসব কি করছো! বাচ্চাদের তো লজ্জা হওয়া উচিত, যখন বাবা এত বোঝাচ্ছেন, *মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা তোমরা এসব কি করছো ! একেই বলা হয় বিষয় বৈতরণী নদী। এরকম নয় যে, ওখানে কোনো ক্ষীরের সাগর থাকবে। কিন্তু প্রতিটি জিনিস সেখানে অতি মাত্রায় পাওয়া যাবে। কোনো জিনিসের জন্য পয়সা লাগবে না। টাকা পয়সা তো সেখানে হবেই না। সোনার মোহর থাকবে, যেখানে মহল তৈরি-ই হবে সোনা দিয়ে, সোনার ইঁট লাগবে। তাহলে এটাই সিদ্ধ হয় যে, সেখানে সোনা রূপোর কোনো মূল্য নেই। এখানে তো দেখো সোনা কত মূল্যবান। তোমরা জানো, বাবার এই এক এক কথা খুবই আশ্চর্য মন্ডিত। মানুষ তো মানুষই হয়, এই দেবতারাও তো মানুষ কিন্তু এঁনাদের নাম দেবতা। এঁনাদের সামনেই মানুষ নিজের খারাপ বিষয়গুলো উপস্থাপন করে - যেমন আমি পাপী, নিচ, আমার মধ্যে কোনো গুণ নেই। বাচ্চাদের বুদ্ধিতে এই উদ্দেশ্য আছে যে, আমরা এখন এই মানুষ থেকে দেবতা হচ্ছি। দেবতাদের মধ্যে দিব্য গুন আছে। এসব তো তারা বোঝে, মন্দিরেও যায় কিন্তু এটা বোঝেনা যে, এরাও মানুষ-ই আছে। আমরাও মানুষ কিন্তু এঁনাদের মধ্যে দিব্য গুণ আছে, আর আমাদের মধ্যে আসুরিগুণ আছে। এখন তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে, আমরা কতটা অবুঝ ছিলাম। এই মূর্তি প্রতিমার সামনে গিয়ে গুণগান করতাম, তুমি সর্বগুণসম্পন্ন....এখন বাবা বোঝাচ্ছেন, এসব তো অতীত হয়ে গেছে। এদের মধ্যে দৈবী গুণ ছিল, অনেক সুখ ছিল। তারাই এখন অনেক দুঃখী হয়ে পড়েছে। এই সময় সকলের মধ্যেই ৫ বিকারের প্রবেশ আছে। এখন তোমরা বিচার করো, কিভাবে আমরা উপর থেকে নামতে নামতে একদম জড় মূর্তি হয়ে গেছি। ভারতবাসীরা কত ধনী ছিল। এখন তো দেখো কাঁধে ভারী বোঝা তোলে। তো এইসব কথা বাবা ই এসে বোঝাচ্ছেন। আর কেউ এসব কথা বলতে পারবে না। ঋষি-মুনিরাও "নেতি-নেতি" বলে দেয় (এটাও না, ওটাও না, অর্থাৎ আমরা জানি না) । এখন তোমরা বুঝেছ যে, তারা তো সত্যই বলেছিল। তাঁরা না বাবাকে, না রচনার আদি-মধ্য-অন্তকে জানে। এখনোও কেউ জানে না, তোমরা বাচ্চারা ছাড়া। বড়-বড় সন্ন্যাসী, মহাত্মা কেউ ই জানেন না। বাস্তবে মহান আত্মা তো হলেন এই লক্ষী-নারায়ণ, তাই না। চির পবিত্র। এইসব বিষয় তো এই সন্ন্যাসীরাই জানেন না, তো অন্যরা কি করে জানবে? কত সহজ কথা বাবা বোঝাচ্ছেন, তবুও কোনো কোনো বাচ্চা ভুলে যায়। কেউ কেউ ভালোভাবে গুণ ধারণ করে তো মিষ্টি লাগে। বাচ্চাদের মধ্যে যত মিষ্টি গুণ দেখা যায়, ততই মন খুশিতে ভরে ওঠে। কেউ কেউ আবার বাবার নাম, বদনাম করে দেয়। এখানে তো আবার বাবা-শিক্ষক-সদ্গুরুর তিনজনেরই নিন্দা করে - সত্য বাবা, সত্য শিক্ষক এবং সদ্গুরুর নিন্দা করলে আবার তিন প্রকারের শাস্তি ভোগ করতে হবে। কিন্তু কোনো কোনো বাচ্চার মধ্যে এসব কিছু-ই বোধগম্য হয় না। বাবা বলেন যে, এরকমও অবশ্যই হবে। মায়াও কিছু কম নয়। আধাকল্পের জন্য তোমাদেরকে পাপাত্মা করে দেয়। বাবা-ই পুনরায় আধাকল্পের জন্য পূণ্য আত্মা তৈরি করেন। সেটাও আবার নাম্বারের ক্রমানুসারে তৈরি হয়। প্রস্তুতকারকও দুইজন আছে - রাম আর রাবণ। রামকেই পরমাত্মা বলা হয়। তারা মুখে রাম-রাম বলে, আবার তারাই শিবকে নমস্কার করে। কারণ তিনি পরমাত্মা। পরমাত্মার নাম গণনা করে। তোমাদের তো গণনা করার দরকার নেই। এই লক্ষী-নারায়ণ পবিত্র ছিলেন, তাই না ! এঁনাদের রাজত্ব ছিল, যেটা এখন অতীত হয়ে গেছে। তাকেই স্বর্গ, নতুন দুনিয়া বলা হয়। আবার যেমন বাড়ি পুরানো হয়ে গেলে, তা ভঙ্গুরপ্রবণ হয়ে যায়। এই দুনিয়াও এইরকম হয়ে গেছে। এখন হচ্ছে কলিযুগের অন্তিম সময়। কত সহজ কথা বোঝার জন্য। ধারণ করতে হবে আর করাতেও হবে। বাবা তো সবাইকে বোঝানোর জন্য যাবেন না। তোমরা বাচ্চারা সদা ঈশ্বরীয় সেবায় নিযুক্ত আছো। বাবা যে সেবা শেখাচ্ছেন, সেই সেবা-ই তোমাদের করতে হবে। তোমাদের হচ্ছে কেবলমাত্র ঈশ্বরীয় সেবা। তোমাদের নাম উঁচু করার জন্য বাবা জ্ঞানের কলস তোমাদের মাতাদের-ই দিয়েছেন। এমন নয় যে পুরুষরা পাবে না। সবাই তো প্রাপ্ত করে। এখন তোমরা বাচ্চারা জেনে গেছো যে, আমরা কত সুখী স্বর্গবাসী ছিলাম। সেখানে কোনো দুঃখ ছিল না। এখন হচ্ছে সঙ্গম যুগ। আবার আমরা সেই নতুন দুনিয়ার মালিক হতে চলেছি। এখন হচ্ছে কলিযুগ, পুরানো পতিত দুনিয়া, একদমই বুদ্ধিহীন মানুষ। এখন তো এসব কথাকে ভুলতে হবে। দেহ সহিত দেহের সর্ব সম্বন্ধকে ভুলে নিজেকে আত্মা মনে করো। শরীরে যদি আত্মা না থাকে, তাহলে শরীর কিছুই করতে পারেনা। ওই শরীরের প্রতি কত মোহ রাখে। শরীর দাহ হয়ে গেলে, আত্মা পুনরায় দ্বিতীয় শরীর ধারণ করে। তবুও মানুষ তার জন্য এক বছর ধরে হায় হতাশ করতে থাকে। এখন তোমাদের আত্মা শরীর ত্যাগ করলে অবশ্যই উচ্চ বংশে জন্ম নেবে নম্বরের ক্রমানুসারে। অল্প জ্ঞানযুক্ত আত্মা সাধারণ বংশে জন্ম নেবে, উঁচু জ্ঞানযুক্ত আত্মা উঁচু বংশে জন্ম নেবে। সেখানে সুখও অনেক বেশি হবে। আচ্ছা!
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১. বাবা যা কিছু শোনাচ্ছেন, সেসব শুনে, ভুলে যেওনা। গুনবান হয়ে সবাইকে সুখ দিতে হবে। পুরুষার্থ করে সকলের দুঃখ দূর করতে হবে।
২. বিকারের বশীভূত হয়ে কোনো বিকর্ম ক'রো না। সহনশীল হতে হবে। কোনো ক্রিমিনাল (অশুদ্ধ - বিকারী) আশা রেখো না।
বরদান:-
আমিত্ব ভাবকে "বাবা" কে সমর্পণ করে দিয়ে নিরন্তর যোগী, সহজযোগী ভব
যে বাচ্চাদের, বাবার প্রতি প্রতিটি শ্বাসে ভালোবাসা থাকে, প্রতিটি শ্বাসে বাবা-বাবা থাকে, তাদের যোগের জন্য পরিশ্রম করতে হয় না। স্মরণে থাকার প্রমাণ হলো - কখনো মুখ থেকে "আমি" শব্দ বেরোবে না। বাবা-বাবা ই বেরোবে। "আমিত্ব ভাব" বাবার মধ্যে সমায়িত হয়ে যাবে। বাবা হলেন আমাদের মেরুদণ্ড, বাবা-ই সব করিয়ে নেন। বাবা সদা সাথে থাকেন। তোমার সাথেই থাকবো, খাবো, চলবো, ফিরবো - এই স্মৃতিতে থাকলে তবেই বলা হবে সহজযোগী।
স্লোগান:-
আমি - আমি করা মানে মায়া রূপী বিড়ালকে আহবান করা।