০৭-০৬-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -- মায়াজীত হওয়ার জন্য গাফিলতি (অসচেতনতা) করা ছাড়ো, দুঃখ দেওয়া আর দুঃখ নেওয়া -- এটাই হলো অতি বড় গাফিলতি ; বাচ্চারা, যা তোমাদের করা উচিৎ নয়"
প্রশ্ন:-
আমাদের সব বাচ্চাদের প্রতি বাবার কি এমন এক আশা রয়েছে ?
উত্তর:-
বাবার আশা হলো এই যে, আমার সব বাচ্চারা যেন আমার সমান সদা পবিত্র হয়ে যায়। বাবা হলেন সদা সুন্দর (গৌরবর্ণ), তিনি এসেছেন বাচ্চাদের-কে শ্যাম থেকে সুন্দর বানাতে। মায়া কালো বানায় আর বাবা সুন্দর বানায়। লক্ষ্মী-নারায়ণ হলো সুন্দর (গৌরবর্ণের), তাই কালো পতিত মনুষ্য গিয়ে তাঁদের মহিমা-কীর্তন করে, আর নিজেকে অতি নীচ মনে করে। এখনই বাবার শ্রীমত পাওয়া যায় -- মিষ্টি বাচ্চারা, এখন সুন্দর সতঃপ্রধান হওয়ার পুরুষার্থ কর।
ওম্ শান্তি।
বাবা কি করছেন আর বাচ্চারা কি করছে ? বাবাও জানেন আর বাচ্চারাও জানে যে আমাদের আত্মা যা তমোপ্রধান হয়ে গেছে, তাদের সতোপ্রধান বানাতে হবে। যাকে স্বর্ণযুগীয় (গোল্ডেন এজেড্) বলা হয়। বাবা তো আত্মাদের দেখেন। আত্মাই মনে(খেয়াল) করে যে, আমার আত্মা কালো হয়ে গেছে। আত্মার কারণে শরীরও কালো হয়ে যায়। লক্ষ্মী-নারায়ণের মন্দিরে যায়, পূর্বে তো এতটুকুও জ্ঞান ছিল না। তারা দেখতো যে, এঁনারা তো সর্বগুণসম্পন্ন, গৌরবর্ণের(সুন্দর) আর আমরা তো কালো-ভূত(বিকারী)। কিন্তু জ্ঞান ছিল না। এখন লক্ষ্মী-নারায়ণের মন্দিরে যখন যাবে তখন বুঝতে পারবে যে, পূর্বে আমরা সর্বগুণসম্পন্ন ছিলাম, এখন কালো পতিত হয়ে গেছি। তাঁদের সম্মুখে গিয়ে বলে যে, আমরা কালো, বিকারী, পাপী। যখন বিবাহ করে তখন প্রথমে লক্ষ্মী-নারায়ণের মন্দিরে নিয়ে যায়। দুজনেই প্রথমে নির্বিকারী থাকে পরে বিকারী হয়ে যায়। তাই নির্বিকারী দেবতাদের সম্মুখে গিয়ে নিজেকে বিকারী পতিত বলে। বিবাহের পূর্বে এমন কথা বলবে না। বিকারে যখন যায় তখন মন্দিরে গিয়ে আবার তাঁদের(লক্ষ্মী-নারায়ণ) মহিমা করে। আজকাল তো লক্ষ্মী-নারায়ণের মন্দিরে, শিব মন্দিরেও বিবাহ সম্পন্ন হয়। অপবিত্র হওয়ার জন্য গাঁটছড়া বেঁধে দেয় । আর এখন তোমরা সুন্দর হওয়ার জন্য পবিত্রতার গাঁটছড়া বাঁধো (কঙ্কন পড়ো) তাই সুন্দর যিনি বানান সেই শিববাবাকে স্মরণ কর। তোমরা জানো, এই রথের ভ্রুকুটির মধ্যভাগে শিববাবা আছেন, তিনি সদা পবিত্র। তাঁর এটাই আশা যে, বাচ্চারাও যেন পবিত্র, সুন্দর হয়ে যায়। মামেকম্ স্মরণ করে পবিত্র হয়ে যাও। আত্মাকেই তার পিতাকে স্মরণ করতে হবে। বাবাও বাচ্চাদের দেখে উৎফুল্ল হয়ে যান। বাচ্চারা, তোমরাও বাবাকে দেখে বোঝ যে, এমনই পবিত্র হতে হবে। তবেই আমরা আবার লক্ষ্মী-নারায়ণ হব। বাচ্চারা, এই লক্ষ্যবস্তুকে(এইম অবজেক্ট) অতি সচেতনভাবে স্মরণ করতে হবে। এমন নয় যে, ব্যস্, বাবার কাছে এসে গেছি। পুনরায় লৌকিকে গেলে নিজের কাজ-কর্ম ইত্যাদিতেই ব্যস্ত হয়ে যাও তাই বাবা এখানে সম্মুখে বসে বাচ্চাদের বোঝান। ভ্রুকুটির মধ্যভাগে আত্মা থাকে। অকাল (অবিনাশী) আত্মার এ হলো সিংহাসন (তখ্ত), যে আত্মারা আমার বাচ্চা, তারা এই আসনে বিরাজমান। আত্মা স্বয়ং তমোপ্রধান হলে তখন আসনও তমোপ্রধান হয়ে যায়। এ হলো ভালভাবে বোঝার মতো বিষয়। লক্ষ্মী-নারায়ণের মতো এমন হওয়া কোনো মাসীর বাড়ি যাওয়ার মতো এত সহজ ব্যাপার নয়। এখন তোমরা বোঝো যে, আমরা এখন এমন হচ্ছি। আত্মা পবিত্র হয়েই যাবে। পুনরায় দেবী-দেবতা বলা হবে। আমরা স্বর্গের এমন মালিক হয়ে যাই। কিন্তু মায়া এমন যে- ভুলিয়ে দেয়। অনেকেই এখান থেকে শুনে যখন বাইরে যায়, তখন আবার ভুলে যায়। তাই বাবা ভালভাবে পরিপক্ক করান -- নিজেকে দেখতে হবে, দেবতাদের যত গুণ রয়েছে, শ্রীমত অনুসারে চলে আমরা কি তা ধারণ করেছি ? চিত্রও সামনে রয়েছে। তোমরা জানো, আমাদের এমন হতে হবে। বাবা-ই বানাবেন। অন্য কেউ-ই মনুষ্য থেকে দেবতা বানাতে পারে না। একমাত্র বাবাই বানাবেন। গাওয়াও হয় - মনুষ্য থেকে দেবতা বানাতে ভগবানের সময় লাগে না । তোমাদের মধ্যেও আবার নম্বরের ক্রমানুসারেই জেনে থাকে। এইসব কথা ভক্তরা জানে না। যতক্ষণ পর্যন্ত ভগবানের শ্রীমত না নেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কিছুই বুঝতে পারবে না। বাচ্চারা, তোমরা এখন শ্রীমত নিচ্ছ। একথা বুদ্ধিতে ভালভাবে রাখো যে আমরা শিববাবার মতানুসারেই বাবা-কে স্মরণ করতে-করতে এমন(দেবতা) হয়ে যাচ্ছি। স্মরণের দ্বারাই পাপ ভস্মীভূত হবে, এছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
লক্ষ্মী-নারায়ণ তো সুন্দর, তাই না। মন্দিরে তো শ্যামবর্ণের বানিয়ে রেখেছে। রঘুনাথ মন্দিরে রামকে কালো বানানো হয়েছে -- কেন ? কেউ জানে না। এ অতি সামান্য বিষয়। রাম হলো ত্রেতাযুগের। সামান্য পার্থক্য তো রয়ে যায়, ২ কলা কমে যায়, তাই না। বাবা বোঝান, শুরুতে ইনি ছিলেন সতোপ্রধান, অতিসুন্দর। প্রজারাও সতোপ্রধান হয়ে যায় কিন্তু শাস্তিভোগ করে হয়। যত বেশী সাজা, ততই পদপ্রাপ্তি কম হয়ে যায়। পরিশ্রম না করলে পাপস্খলন হয়না, পদও কম হয়ে যায়। বাবা তো পরিস্কার করে বোঝান। তোমরা এখানে এসে বসেছ গোরা হওয়ার জন্য। কিন্তু মায়া অতি বড় শত্রু, যে কালো করে দিয়েছে। মায়া যখন দেখে যে, এমন সুন্দর বানান যিনি, তিনি এসেছেন তখন মায়াও মোকাবিলা করে। বাবা বলেন, এ তো ড্রামানুসারে, তাকে আধাকল্পের ভুমিকা(পার্ট) পালন করতেই হয়। মায়া প্রতি মুহূর্তে বিপরীতমুখী করে অন্যদিকে নিয়ে যায়। লেখা আছে যে, মায়া আমাদের অত্যন্ত বিরক্ত করে। বাবা বলেন, এটাই যুদ্ধ। তোমরা সুন্দর থেকে কালো আবার কালো থেকে সুন্দর হয়ে যাও, এও এক খেলা। (তিনি) বোঝানও তাদেরকেই যারা সম্পূর্ণ ৮৪ জন্ম নিয়েছে। তাদের পা ভারতে এসেই পড়ে। এমনও নয় যে, সবাই ভারতেই ৮৪ জন্ম নেবে।
বাচ্চারা, এখন এইসময় তোমাদের কাছে অতি মূল্যবান। সম্পূর্ণ পুরুষার্থ করা উচিত - যে আমাদের এমন হতে হবে। অবশ্যই বাবা বলেছেন যে, শুধু আমাকে স্মরণ কর আর দৈবী-গুণ ধারণ করতে হবে। কাউকে দুঃখ দেবে না। বাবা বলেন, এখন আর এমন গাফিলতি কোরো না। বুদ্ধিযোগ একমাত্র বাবার সঙ্গেই যুক্ত কর। তোমরা প্রতিজ্ঞা করেছিলে, আমরা তোমার নিকটে সমর্পিত হয়ে যাব। জন্ম-জন্মান্তর ধরে প্রতিজ্ঞা করেছ -- তুমি যখন আসবে তখন আমরা তোমার মতানুসারেই চলব, পবিত্র হয়ে দেবতা হব। যদি যুগল তোমাদের সাথ না দেয় তবে তোমরা নিজেদের পুরুষার্থ কর। যুগল সাথ না দিলে জোড়া তৈরী হবে না। যে যতটা স্মরণ করেছে, দৈবী-গুণ ধারণ করেছে, তাদেরই জোড়া তৈরী হবে। যেমন দেখ, ব্রহ্মা-সরস্বতী ভাল পুরুষার্থ করেছে, তাই এদেরই জোড়া তৈরী হয়। এ অত্যন্ত ভালো সার্ভিস করে, স্মরণের যাত্রায় থাকে, এও তো গুণ, তাই না ! গোপেদের (ভ্রাতারা) মধ্যেও অত্যন্ত ভাল-ভাল বাচ্চারা রয়েছে। কেউ তো নিজেই বোঝে যে, মায়ার আকর্ষণ হয়। এই (মায়ার) শিকল ছিন্ন হয়ই না। প্রতি মুহূর্তে নাম-রূপের বাঁধনে আবদ্ধ করে ফেলে। বাবা বলেন, নাম-রূপের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না। আমার সঙ্গে আবদ্ধ(যুক্ত) হও, তাই না। যেমন তোমরা নিরাকার, তেমনই আমিও নিরাকার। তোমাদের নিজের সমান তৈরী করি। শিক্ষক তো নিজের সমানই তৈরী করবে, তাই না। সার্জেন, সার্জেনই তৈরী করবে। উনি হলেন অসীম জগতের পিতা, ওঁনার নামের অনেক মহিমা রয়েছে। আহ্বানও করা হয় -- হে পতিত-পাবন এসো। আত্মা আহ্বান করে, শরীর দ্বারা -- বাবা এসো, এসে আমাদের পবিত্র কর। তোমরা জানো যে, তিনি আমাদের কিভাবে পবিত্র বানাচ্ছেন। যেমন হীরে, তারমধ্যে কোনো কোনো হীরেতে কালো দাগ থাকে। এখানে সব আত্মাতেই খাদ(অ্যালয়) পড়ে গেছে। তা বের করে ফেলে সত্যিকারের সোনা হও। আত্মাকে অনেক পবিত্র হতে হবে। তোমাদের লক্ষ্যবস্তু তো পরিস্কার। আর কোনো সত্সঙ্গে এমন কথা কখনো বলবে না।
বাবা বোঝান, তোমাদের উদ্দেশ্যই হলো এমন হওয়া। এও জানো, ড্রামানুসারে আমরা আধাকল্প রাবণের সঙ্গ-তেই বিকারী হয়েছি। এখন এমন হতে হবে। তোমাদের কাছে ব্যাজও রয়েছে। এর উপর বোঝানো অতি সহজ। এ হলো ত্রিমূর্তি। ব্রহ্মার দ্বারা স্থাপনা কিন্তু ব্রহ্মা তো (স্থাপনা) করে না। তিনি তো (নিজেই) পতিত থেকে পবিত্র হন। মনুষ্যরা তো একথা জানেই না যে, এই পতিতই পুনরায় পবিত্র হয়। বাচ্চারা, এখন তোমরা বোঝ যে, এই পড়াশোনার লক্ষ্য অনেক উচ্চ। বাবা আসেন পড়ানোর জন্য। বাবার মধ্যেই জ্ঞান রয়েছে, তিনি কারোর কাছে পড়েন না। ড্রামা প্লান অনুসারে, তাঁর মধ্যেই জ্ঞান নিহিত রয়েছে। এমন বলা যাবে না যে, ওঁনার মধ্যে জ্ঞান এলো কিভাবে ? না, তিনি হলেনই নলেজফুল। তিনিই তোমাদেরকে পতিত থেকে পবিত্র করেন। মানুষ তো পবিত্র হওয়ার জন্য গঙ্গা ইত্যাদিতে স্নান করতেই থাকে। সমুদ্রেও স্নান করে। আবার পূজাও করে। (সাগরকে) সমুদ্র-দেবতা মনে করে। বাস্তবে নদীগুলো তো অবিরাম বয়েই চলেছে, সেগুলো তো ছিলই। এগুলোর কখনো বিনাশ হয় না। পূর্বে শুধু এগুলো (প্রকৃতির) নিয়মানুসারে বইত। বন্যা ইত্যাদির কোন নাম বা চিহ্নই ছিল না। কখনো মানুষ (বন্যায়) ডুবে যেত না। সেখানে তো মানুষই অতি অল্পসংখ্যক ছিল, পরে আবার তা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়েছে। কলিযুগের শেষপর্যন্ত কত মানুষ হয়ে যায়। ওখানে তো আয়ুও অতি দীর্ঘ হয়। সেখানে কত অল্পসংখ্যক মানুষ হবে। পুনরায় ২৫০০ বছরে কত বৃদ্ধি হয়ে যায়। বৃক্ষ(সৃষ্টি-রূপী ঝাড়) কত বিস্তার লাভ করে। সর্বপ্রথমে ভারতে আমাদেরই রাজত্ব ছিল। একথা তোমরা কিভাবে বলবে। তোমাদের মধ্যে কেউ-কেউ রয়েছে যাদের স্মরণে থাকবে যে, আমরা নিজেদের রাজ্য স্থাপন করছি। আমরা স্পিরীচুয়্যাল (আধ্যাত্মিক) যোদ্ধা, যাদের যোগবল রয়েছে। একথাও ভুলে যায়। আমরা হলাম মায়ার সঙ্গে লড়াই করা যোদ্ধা। এখন এই রাজধানী স্থাপিত হচ্ছে। যত বাবাকে স্মরণ করবে ততই বিজয়ী হবে। এইম অবজেক্ট হলোই এমন(লক্ষ্মী-নারায়ণ) হওয়ার জন্য। এঁনার দ্বারাই বাবা আমাদের এমন দেবতা বানান। তাহলে এখন কি করা উচিত ? বাবাকে স্মরণ করা উচিত । ইনি হলেন দালাল। গাওয়াও (স্মরণ) করা হয়, যখন সদ্গুরু-কে পেয়েছি দালালের রূপে। বাবা এই শরীর ধারণ করেন তাহলে ইনি তো (আত্মা-পরমাত্মার) মাঝে দালাল হয়ে গেলেন, তাই না। পুনরায় (তিনি) শিববাবার সঙ্গে তোমাদের যোগসূত্র স্থাপন করেন, তাই বাগদান ইত্যাদি বিষয়ের আর উল্লেখ কোরো না। শিববাবা এঁনার দ্বারা আমাদের আত্মাকে পবিত্র বানান। (তিনি) বলেন -- হে বাচ্চারা, আমাকে অর্থাৎ পিতাকে স্মরণ কর। তোমরা তো এমন কথা বলবে না -- বাবাকে অর্থাৎ আমাকে স্মরণ কর। তোমরা বাবার জ্ঞান শোনাবে -- বাবা এভাবে বলেন। একথাও বাবা-ই (তোমাদের) ভালভাবে বোঝান। ভবিষ্যতে অনেকেরই সাক্ষাৎকার হবে তখন হৃদয়ে(মনে) দংশন হবে। বাবা বলেন, এখন অতি অল্প সময় রয়ে গেছে। এই চোখ দিয়েই তোমরা বিনাশ দেখবে। যখন রিহার্সাল হবে তখন তোমরা দেখবে যে, এভাবে বিনাশ হয়। অনেকে এই চোখ দিয়েই দেখবে। অনেকের আবার বৈকুন্ঠের সাক্ষাৎকারও হবে। এইসবই অতি শীঘ্র হতে থাকবে। জ্ঞানমার্গে সবই হলো বাস্তব (রিয়্যাল), ভক্তিতে হলো নকল( ইমিটেশন)। শুধু সাক্ষাৎকারই করেছে, তৈরী হয়েছে কি ? না হয় নি। তোমরা তো এমন তৈরী হও। যা কিছু সাক্ষাৎকার করেছ, তাই আবার এই চোখ দিয়েও দেখবে। বিনাশ দেখাও মাসীর বাড়ি যাওয়ার মতো সহজ ব্যাপার নয়। এমন প্রশ্নও কোরো না। একজনকে অপরজনের সম্মুখে হত্যা করে। তালি তো দুই হাতেই বাজবে, তাই না। দুই ভাইকে পৃথক করে দেয় -- পরস্পর বসে লড়াই করে। ড্রামা এভাবেই নির্ধারিত হয়ে রয়েছে। এই রহস্যকে তারা জানে না। দুজনকে আলাদা করে দিলে তারা পরস্পরের সঙ্গে লড়াই করতে থাকে। তবেই তো তাদের বারুদ(বোমা) বিক্রি হবে। উপার্জন তো হচ্ছে, তাই না। কিন্তু ভবিষ্যতে এইসব দিয়ে কোন কাজ হবে না। ঘরে বসে বোমা ফেলবে আর সবশেষ, তারজন্য না তো মানুষের প্রয়োজন হবে, না অস্ত্রের প্রয়োজন হবে। তাই বাবা বোঝান -- বাচ্চারা, স্থাপনা তো অবশ্যই হবে। যে যত পুরুষার্থ করবে ততই উচ্চপদ পাবে। (বাবা তো) অনেক বোঝান, ভগবান বলেন যে, বাচ্চারা, কাম-কাটারীর(বিকার-রূপী অস্ত্র) প্রয়োগ কোরো না। কাম-বিকারের উপর বিজয়লাভ করে জগতজীৎ হতে হবে। সবশেষে অবশ্যই কারোর না কারোর তীর লাগবে। *আচ্ছা!*
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাত-পিতা বাপদাদার স্নেহ-স্মরণ ও সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদের জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১. এ অতি মূল্যবান সময়, এইসময়েই পুরুষার্থ করে বাবার উপর সম্পূর্ণ সমর্পিত (বলিহার) হতে হবে। দৈবী-গুণ ধারণ করতে হবে। কোনো প্রকারের গাফিলতি যেন না করা হয়। এক পিতার মতেই চলতে হবে।
২. লক্ষ্যবস্তুকে সামনে রেখে অত্যন্ত সচেতন হয়ে চলতে হবে। আত্মাকে সতঃপ্রধান পবিত্র বানানোর জন্য পরিশ্রম করতে হবে। ভিতরে যা কিছু দাগ রয়েছে, সেগুলোকে পরীক্ষা করে বের করে দিতে হবে।
বরদান:-
ব্রাহ্মণ জীবনে সদা খুশীর খোরাক খাওয়া আর খুশী বণ্টনকারী সৌভাগ্যশালী (খুশনসীব) ভব
এই দুনিয়ায় তোমাদের ব্রাহ্মণদের মতো সৌভাগ্যশালী আর কেউ-ই হতে পারে না, কারণ এই জীবনেই তোমরা সবাই বাপদাদার হৃদয়-সিংহাসনের অধিকারী হয়ে যাও। সদা খুশীর খোরাক খাও আর (সকলকে) খুশী বন্টন কর। এইসময়েই তোমরা চিন্তামুক্ত রাজা(বেফিকর বাদশাহ) হয়ে যাও। এমন নিশ্চিন্ত জীবন সারা কল্পেও আর কোনো যুগে পাবে না। সত্যযুগে নিশ্চিন্ত থাকবে, কিন্তু সেখানে জ্ঞান থাকবে না, এখন তোমাদের জ্ঞানও রয়েছে তাই হৃদয় থেকে এই কথা বেরিয়ে আসে যে, আমার মতন এমন সৌভাগ্যবান আর কেউ-ই নয়।
স্লোগান:-
সঙ্গমযুগের স্বরাজ্য অধিকারীই ভবিষ্যতের বিশ্ব-রাজ্যের অধিকারী হয়।