01.10.2019
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
কোনো খারাপ কথা শুনো না -- এখানে তোমরা সৎসঙ্গে বসে আছো, তোমরা মায়াবী কুসঙ্গে যাবে
না, কুসঙ্গে গেলেই সংশয়ের রূপে ঝিমুনি আসে''
প্রশ্নঃ -
এই সময় কোনো
মানুষকেই আধ্যাত্মিক বলা যাবে না -- কেন ?
উত্তরঃ -
কেননা সকলেই
দেহ - অভিমানী । দেহ - অভিমানীদের কিভাবে আধ্যাত্মিক বলা যেতে পারে । আধ্যাত্মিক
বাবা তো একই নিরাকার বাবা, যিনি তোমাদেরও দেহী - অভিমানী হওয়ার শিক্ষা দেন ।
সুপ্রীম টাইটেলও এক বাবাকেই দেওয়া যেতে পারে, বাবা ছাড়া আর কাউকেই সুপ্রীম বলা যাবে
না ।
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা,
তোমরা যখন এখানে বসো, তখন তোমরা জানো যে, বাবা আমাদের বাবাও, টিচারও আবার সদ্গুরুও
। এই তিনেরই প্রয়োজন হয় । প্রথমে বাবা, তারপর পড়ানোর জন্য টিচার, আর পরে হলো সদগুরু
। এখানে স্মরণও এইভাবে করতে হবে, কেননা এ তো নতুন কথা, তাই না । তিনি অসীম জগতের
পিতা অর্থাৎ সকলের পিতা । এখানে যেই আসবে তাকে বলা হবে, এই কথা স্মৃতিতে রাখো । এতে
কারোর যদি সংশয় থাকে, তাহলে হাত তোলো । এ তো অতি আশ্চর্যের কথা, তাই না । জন্ম -
জন্মান্তর তোমরা এমন কাউকে পেয়েছো কি, যাঁকে তোমরা বাবা - টিচার এবং সদগুরু মনে করতে
পারো । সেও আবার সুপ্রীম । অসীম জগতের বাবা, অসীম জগতের টিচার এবং অসীম জগতের সদগুরু
। এমন কাউকে কখনো পেয়েছো কি ? এই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ ছাড়া কখনো তাঁকে পাওয়া যায়
না । এতে কারোর যদি কোনো সংশয় থাকে তাহলে হাত তোলো । এখানে সকলেই নিশ্চয়বুদ্ধি হয়ে
বসে আছে । এই তিনই হলো মূখ্য । অসীম জগতের পিতা আসীম জগতের জ্ঞানই দান করেন । অসীম
জগতের জ্ঞান তো এই একটাই । জাগতিক জ্ঞান তো তোমরা অনেক পড়ে এসেছো । কেউ উকিল হয়,
কেউ সার্জেন হয়, কেননা এখানে তো ডাক্তার, জজ, উকিল আদি সবেরই প্রয়োজন । ওখানে তো
এসবের দরকার নেই । ওখানে দুঃখের কোনো কথাই নেই । তাই বাবা এখন বসে বাচ্চাদের অসীম
জগতের শিক্ষা প্রদান করছেন । অসীম জগতের বাবাই এই অসীম জগতের শিক্ষা প্রদান করেন,
তারপর অর্ধেক কল্প তোমাদের কোনো শিক্ষা গ্রহণের দরকার হয় না । তোমরা একইবার এই
শিক্ষা পাও, যা ২১ জন্মের জন্য ফলিভূত হয়, অর্থাৎ তার ফল পাওয়া যায় । ওখানে তো
ডাক্তার, ব্যরিস্টার, জজ ইত্যাদি থাকে না । এ তো নিশ্চিত, তাই না । বরাবর তো এমনই,
তাই না ? ওখানে কোনো দুঃখ থাকে না । কর্মভোগও থাকে না । বাবা বসে তোমাদের কর্মের গতি
বোঝান । যাঁরা গীতা পাঠ করেন, তাঁরা কি এমন কথা বলেন ? বাবা বলেন - বাচ্চারা, আমি
তোমাদের রাজযোগ শেখাই । ওখানে তো লিখে দিয়েছে - কৃষ্ণ ভগবান উবাচঃ, কিন্তু ওরা হলো
দৈবীগুণ সম্পন্ন মানুষ । শিববাবা তো কোনো নাম ধারণ করেন না । তাঁর দ্বিতীয় কোনো
নাম নেই । বাবা বলেন যে, আমি এই শরীর ধার হিসাবে নিই । এই শরীর রূপী গৃহ আমার নয়,
এও এনার (ব্রহ্মার) । জানলা দরজা (চোখ-মুখ) সবই আছে এখানে । বাবা তাই বোঝান, আমি
তোমাদের এই অসীম জগতের পিতা, অর্থাৎ সকল আত্মার পিতা, আমি আত্মাদেরই পড়াই । এঁকে বলা
হয় আধ্যাত্মিক পিতা অর্থাৎ আত্মাদের পিতা, আর কাউকেই আত্মাদের পিতা বলা হবে না ।
বাচ্চারা, তোমরা এখানে জানতে পারো, ইনি হলেন অসীম জগতের পিতা । এখন তোমাদের
আধ্যাত্মিক সম্মেলন হচ্ছে । বাস্তবে আধ্যাত্মিক সম্মেলন তো হয়ই না । ওরা তো প্রকৃত
আধ্যাত্মিক নয় । সকলেই দেহে ভাবে আবদ্ধ । বাবা বলেন - বাচ্চারা, তোমরা দেহী -
অভিমানী ভব । দেহের অহংকার ত্যাগ করো । এমন কেউ বলবেই না । আধ্যাত্মিক এই শব্দের
প্রয়োগ এখনই হয় । আগে ধর্মীয় সম্মেলন বলা হতো । এই আধ্যাত্মিক কথার অর্থ কেউই বুঝতো
না । আধ্যাত্মিক পিতা অর্থাৎ নিরাকারী বাবা । তোমরা আত্মারা হলে আধ্যাত্মিক সন্তান
। এই আধ্যাত্মিক পিতা এসেই তোমাদের পড়ান । এই বুদ্ধি বা জ্ঞান আর কারোর মধ্যেই হবে
না । বাবা নিজে বসেই বলেন যে, আমি কে । গীতাতে এই কথা নেই । আমি তোমাদের অসীম জগতের
জ্ঞান দান করি । এখানে উকিল, জজ, সার্জেন ইত্যাদির প্রয়োজন নেই কেননা ওখানে তো একদম
সুখই সুখ । ওখানে দুঃখের নাম - নিশানা নেই । এখানে আবার সুখের নাম - নিশানা নেই, একে
বলা হয় প্রায় লোপ অবস্থা । এখানে সুখ হলো কাক - বিষ্ঠার তুল্য । সামান্যতম সুখ পেলে
এই অসীম সুখের জ্ঞান কিভাবে দেওয়া যাবে । পূর্বে যখন দেবী - দেবতার রাজ্য ছিলো তখন
১০০ ভাগ সত্যতা ছিলো । এখন তো মিথ্যাই মিথ্যা ।
এ হলো অসীম জগতের জ্ঞান । তোমরা জানো যে, এ হলো মনুষ্য সৃষ্টি রূপী বৃক্ষ, যার বীজ
রূপ হলাম আমি । তাঁর মধ্যে ঝাড়ের সম্পূর্ণ জ্ঞান আছে । মানুষের মধ্যে এই জ্ঞান নেই
। আমি হলাম চৈতন্য বীজ রূপ । আমাকে বলে জ্ঞানের সাগর । জ্ঞানের দ্বারা এক সেকেণ্ডেই
গতি - সদগতি হয় । আমি হলাম সকলের বাবা । বাচ্চারা, তোমরা আমাকে চিনতে পারলে অবিনাশী
উত্তরাধিকার পেয়ে যাও, তবুও এ তো রাজধানী, স্বর্গেও তো নম্বরের ক্রমানুসারে অনেক
পদই আছে । বাবা তোমাদের একই পাঠ পড়ান । যারা পাঠ গ্রহণ করে তাদের মধ্যে নম্বরের
ক্রম তো থাকেই । এতে আর কোনো পড়ার প্রয়োজন থাকে না । ওখানে কেউই অসুস্থ হয় না ।
পাই পয়সা উপার্জনের জন্য কেউ পড়ে না । তোমরা এখান থেকে অসীম জগতের অবিনাশী
উত্তরাধিকার নিয়ে যাও । ওখানে এই কথা জানতেই পারবে না যে, এই পদ আমাদের কে দিয়েছে ।
এ কথা তোমরা এখনই বুঝতে পারো । জাগতিক জ্ঞান তো তোমরা পড়েই এসেছো । এখন অসীম জগতের
জ্ঞান যিনি পড়ান, তাঁকে জানতে পেরেছো, চিনতে পেরেছো । তোমরা জানতে পেরেছো, বাবা
যেমন বাবাও, আবার টিচারও, তিনি এসে আমাদের পড়ান । তিনি সুপ্রীম টিচার, তিনি আমাদের
রাজযোগ শেখান । তিনিই প্রকৃত সদগুরু । এ হলো বেহদের রাজযোগ । ওরা ব্যারিস্টারি বা
ডাক্তারিই শেখাবে, কেননা এই দুনিয়াই হলো দুঃখের (সত্যযুগে ডাক্তার বা ব্যারিস্টারের
দরকার পড়ে না, কারণ সে হল সুখের দুনিয়া) । ওইসব হলো জাগতিক পড়া আর এ হলো অসীম
জগতের পাঠ । বাবা তোমাদের অসীম জগতের এই পাঠ পড়ান । তোমরা এই কথাও জানো যে, বাবা,
টিচার, সদগুরু কল্প - কল্প আসেন আর তখন সত্য এবং ত্রেতা যুগের জন্য এই পাঠ পড়ান ।
এরপর প্রায় লোপ হয়ে যায় । ড্রামা অনুসারে সুখের প্রালব্ধ সম্পূর্ণ হয়ে যায় ।
অসীম জগতের বাবা বসে এই কথা বোঝান, তাঁকেই পতিত পাবন বলা হয় কৃষ্ণকে কি "ত্বমেব
মাতাচ পিতা" বা পতিত পাবন বলা হবে কি ? এর পদ আর ওনার পদের মধ্যে রাতদিনের তফাৎ ।
বাবা এখন বলছেন, আমাকে চিনতে পারলে তোমরা এক সেকেণ্ডে জীবনমুক্তি পেতে পারো । *এখন
যদি কৃষ্ণ ভগবান হতো, তাহলে যে কেউই ঝট করে চিনতে পারতো । কৃষ্ণের জন্ম কোনো দিব্য
বা অলৌকিক এমন কোনো মহিমা নেই* । কেবল পবিত্রতার মহিমা হয় । বাবা তো কারোর গর্ভ
থেকে বের হন না । তিনি মিষ্টি - মিষ্টি আত্মিক সন্তানদের বোঝান, আত্মারাই এই পাঠ
গ্রহণ করে । সংস্কার ভালো বা মন্দ, তা আত্মার মধ্যেই থাকে । আত্মা যেই অনুসারে কর্ম
করে, সেই অনুসারে শরীর প্রাপ্ত হয় । কেউ কেউ অনেক দুঃখ ভোগ করে, কেউ আবার অন্ধ বা
বধির হয় । মানুষ বলবে, অতীতে এমন কর্ম করেছে, তার এই ফল । আত্মা কর্ম অনুসারেই রোগী
শরীর ইত্যাদি প্রাপ্ত করে ।
বাচ্চারা, তোমরা এখন জানো যে - আমাদের গড ফাদারই পড়ান । ভগবানই আমাদের টিচার,
ভগবানই উপদেষ্টা । তাঁকে বলা হয় গড পরম আত্মা । একে মিলিয়েই পরমাত্মা বলা হয় অর্থাৎ
সুপ্রীম সোল । ব্রহ্মাকে তো সুপ্রীম বলা হবে না । সুপ্রীম অর্থাৎ উঁচুর থেকেও উঁচু,
পবিত্রর থেকেও পবিত্র । পদ তো প্রত্যেকেরই পৃথক । কৃষ্ণের যে পদ তা অন্য কেউই পেতে
পারে না । লৌকিকেও প্রধানমন্ত্রীর পদ অন্য কাউকে দেওয়াই হবে না । বাবার পদও আলাদা ।
ব্রহ্মা - বিষ্ণু এবং শঙ্করের পদও আলাদা । ব্রহ্মা - বিষ্ণু - শঙ্কর হলেন দেবতা,
শিব হলেন পরমাত্মা । দুজনকে মিলিয়ে শিবশঙ্কর কিভাবে বলা হবে ? দুজনেই তো আলাদা ।
মানুষ না বোঝার কারণে শিব শঙ্করকে এক বলে দেয় । নামও এমন রেখে দেয় । এই সব কথা বাবা
এসেই বোঝান । তোমরা জানো যে, ইনি হলেন বাবা, আবার টিচার এবং সদগুরুও । প্রত্যেক
মানুষেরই বাবাও থাকেন, আবার টিচারও থাকেন আবার সদগুরুও থাকেন । মানুষ যখন বৃদ্ধ হয়,
তখন গুরু করে । আজকাল তো ছোটো অবস্থাতেও গুরু করে দেয়, তারা মনে করে, গুরু যদি না
করা হয়, তাহলে অবজ্ঞা হয়ে যাবে । পূর্বে ৬০ বছরের পরে গুরু করা হতো । সে হলো
বাণপ্রস্থ অবস্থা । নির্বাণ অর্থাৎ বাণীর ঊর্ধ্বে মিষ্টি সাইলেন্স হোম, যেখানে
যাওয়ার জন্য তোমরা অর্ধেক কল্প পরিশ্রম করেছো, কিন্তু তা কোথায় কেউই জানতো না। তাই
যেতেও পারতো না । কিভাবে কাউকে রাস্তা বলে দেবে ? ওই একজন ছাড়া কেউই তো পথ বলে দিতে
পারে না । সকলের বুদ্ধি তো একরকম হয় না । কেউ যেমন শুধুই কথকথা শোনে, লাভ কিছুই
নেই । উন্নতিও কিছুই হয় না । তোমরা এখন বাগানের ফুল তৈরী হচ্ছো । তোমরা ফুল থেকে
কাঁটা হয়েছিলে, বাবা আবার তোমাদের কাঁটা থেকে ফুলে পরিণত করছেন । তোমরাই পূজ্য ছিলে,
আবার পূজারী হয়েছো । ৮৪ জন্ম নিতে নিতে তোমরা সতোপ্রধান থেকে তমোপ্রধান পতিত হয়ে
গেছো । বাবা তোমাদের সিঁড়ি সম্বন্ধে বুঝিয়ে বলেছেন । এখন আবার কি করে পতিত থেকে
পবিত্র হবে, এ কেউই জানে না । মানুষ এমন গানও করে, পতিত পাবন এসো, এসে আমাদের
পবিত্র বানাও, তাহলে কেন জলের নদী, সাগর ইত্যাদিকে পতিত - পাবন মনে করে সেখানে গিয়ে
স্নান করে । গঙ্গাকে তারা পতিত পাবনী বলে দেয়, কিন্তু নদী কোথা থেকে নির্গত হয়েছে
? সাগর থেকেই তো বের হয়, তাই না । তাহলে এ সবই সাগরের সন্তান তাই প্রত্যেকটি কথাই
খুব ভালো করে বোঝার ।
বাচ্চারা, এখানে তো তোমরা সৎসঙ্গে বসে আছো । বাইরে কুসঙ্গে যদি তোমরা যাও তাহলে
তোমাদের অনেক উল্টো কথা শোনাবে । তখন এইসব কথা ভুলে যাবে । কুসঙ্গে গেলে তোমরা
ঝিমাতে থাকো, তখনই সংশয় এসেছে জানতে পারা যায়, কিন্তু এই কথা তো ভুলে যাওয়া উচিত
নয় । আমাদের বাবা অসীম জগতের বাবা, তিনি টিচারও, তিনিই পার করে দেন, এই নিশ্চয়তার
সঙ্গেই তোমরা এখানে এসেছো । ওইসব হলো দেহের জন্য লৌকিক পড়া, লৌকিক ভাষা । এ হলো
অলৌকিক । বাবা বলেন যে, আমার জন্মও অলৌকিক । আমি শরীরের ধার নিই । এই পুরানো জুতো
ধারণ করি । সে-ই অনেক পুরানো, সবথেকে পুরানো এই শরীর রূপী জুতো । বাবা যার দেহের
আধার নিয়েছেন, তাঁকে লং বুট বলা হয় । এ কতো সহজ কথা । এ তো ভোলার কথা নয়, কিন্তু
মায়া এতো সহজ কথাও ভুলিয়ে দেয় । বাবা যেমন বাবাও, তিনি আবার অসীম জগতের শিক্ষা
দানকারী, যে শিক্ষা আর কেউই দিতে পারে না । বাবা বলেন, তোমরা প্রচেষ্টা করে দেখো,
কোথা থেকে এই শিক্ষা পাবে । সকলেই হলো মানুষ । তারা তো এই জ্ঞান দিতেই পারবে না ।
ভগবান একই রথ নেন, যাঁকে ভাগ্যশালী রথ বলা হয়, যাঁকে পদমাপদম ভাগ্যশালী বানানোর
জন্য বাবা প্রবেশ করেন । ইনি হলেন সম্পূর্ণ কাছের দানা । ইনিই ব্রহ্মার থেকে বিষ্ণু
হন । শিববাবা যেমন এনাকে বানান, তোমাদেরও এনার দ্বারা বিশ্বের মালিক বানান । রাজত্ব
স্থাপনের কারণে এখানে বিষ্ণুর সম্পূর্ণ স্থাপনা হয়, একেই বলা হয় রাজযোগ । এখন তো
এখানে সবাই শুনছে, কিন্তু বাবা জানেন, অনেকের কান দিয়েই তা বেরিয়ে যায়, কেউ যদি
ধারণ করে, তবেই অন্যদের শোনাতে পারে । এদেরই মহারথী বলা হয় । এরা নিজেরা শুনে তা
ধারণ করে, অন্যদেরও আগ্রহের সঙ্গে আনন্দ করে বোঝায় । বোঝানোর জন্য যদি মহারথী থাকে,
তাহলে ঝট করে বুঝতে পারবে । এরা ঘোড়সওয়ারের থেকে কম বুঝতে পারে, পেয়াদাদের থেকে আরো
কম বুঝতে পারে । বাবা তো একথা জানেনই যে, কে মহারথী আর কে ঘোড়সওয়ার । এতে
দ্বিধাগ্রস্ত হওয়ার কোনো কথা নেই, কিন্তু বাবা দেখেন যে, কোনো - কোনো বাচ্চা
দ্বিধায় পড়ে যায় তখন ঝিমাতে থাকে । তারা চোখ বন্ধ করে বসে থাকে । উপার্জনে কখনো
ঝিমুনি আসে কি ? তোমরা ঝিমাতে থাকলে কিভাবে ধারণা হবে ? হাই তোলা দেখে বাবা বুঝতে
পারেন যে, এ পরিশ্রান্ত । এই উপার্জনে কখনোই পরিশ্রম হয় না । হাই তোলা হলো উদাস
থাকার নিদর্শন । কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে অন্দরে যারা আটকে থাকে, তাদেরই তাদেরই অনেক
হাই আসে । তোমরা এখন বাবার ঘরে বসে আছো, তাই এখানে পরিবারও আছে, টিচারও এখানে হয়
আবার পথ বলে দেওয়ার জন্য গুরুও এখনেই হয় । এনাকে মাস্টার গুরু বলা হয় । তাই এখন
বাবার ডান হাত তো হতে হবে, তাই না, যাতে তোমরা অনেকের কল্যাণ করতে পারো । নর থেকে
নারায়ণ বানানোর কাজ ছাড়া অন্য কোনো কাজই লাভদায়ক নয় । সকলের উপার্জনই শেষ হয়ে যায়
। এই নর থেকে নারায়ণ বানানোর কাজ বাবাই শেখান । তাই তোমাদের কোন পাঠ পড়ার প্রয়োজন ।
*যার কাছে অনেক অর্থ আছে, সে মনে করে এখানেই স্বর্গ । বাপু গান্ধী রামরাজ্য স্থাপন
করেছিলেন কি ? আরে, এই দুনিয়া তো পুরানো, তমোপ্রধান, এখানে দুঃখ আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে,
একে কিভাবে রামরাজ্য বলা হবে* । মানুষ কতো অবুঝ । এই অবুঝদেরই তমোপ্রধান বলা হয় ।
বুঝদারদের বলা হয় সতোপ্রধান । এই চক্র ঘুরতেই থাকে, এতে বাবাকে প্রশ্ন করার কিছুই
নেই । বাবার দায়িত্ব হলো রচনা আর রচয়িতার জ্ঞান প্রদান করা । তিনি তো তা দিতেই
থাকেন । তিনি মুরলীতে সবই বোঝাতে থাকেন । এতে সমস্ত কথারই উত্তর পাওয়া যায় । বাকি
তোমরা কি জিজ্ঞেস করবে ? বাবা ছাড়া আর কেউই বোঝাতে পারবেন না, তাহলে কিভাবে জিজ্ঞেস
করবে । এ কথাও তোমরা বোর্ডে লিখতে পারো - ২১ জন্মের জন্য এভার হেলদি, এভার ওয়েলদি
হতে হলে এখানে এসে বোঝো । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন
আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদের জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বাবা যা শোনান, তা শুনে খুব ভালোভাবে ধারণ করতে হবে । অন্যকে আগ্রহের সঙ্গে শোনাতে
হবে । এক কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে বের করে দেবে না । উপার্জনের সময় কখনো হাই
তুলবে না ।
২ ) বাবার ডান হাত হয়ে অনেকের কল্যাণ করতে হবে । নর থেকে নারায়ণ বানানোর কাজ করতে
হবে ।
বরদান:-
আচার-আচরণে এবং চেহারায় পবিত্রতার শৃঙ্গারের ঝলক দেখিয়ে সুসজ্জিত মূর্তি ভব
পবিত্রতা হলো
ব্রাহ্মণ জীবনের শৃঙ্গার । প্রতি মুহূর্তে চেহারা এবং আচার-আচরণে যেন এই পবিত্রতার
শৃঙ্গারের অনুভূতি অন্যদেরও হয় । দৃষ্টি, মুখ, হাত এবং পায়ে যেন সদা পবিত্রতার
শৃঙ্গার প্রত্যক্ষ হয় । প্রত্যেকেই যেন এই বর্ণনা করে যে, এর চেহারায় পবিত্রতার
ঝলক দেখা যায় । নয়নে পবিত্রতার ঝলক, মুখে পবিত্রতার হাসি, আর কোনো জিনিসই যেন তাদের
নজরে না আসে - একেই বলা হয় পবিত্রতার শৃঙ্গারে সুসজ্জিত মূর্তি ।
স্লোগান:-
ব্যর্থ সম্বন্ধ - সম্পর্কও একাউন্টকে খালি করে দেয়, তাই ব্যর্থকে সমাপ্ত করো ।