১৮-০৮-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ১৬-০১-৮৫ মধুবন


ভাগ্যবান যুগে ভগবান দ্বারা উত্তরাধিকার এবং বরদানের প্রাপ্তি

আজ সৃষ্টি বৃক্ষের বীজরূপ বাবা বৃক্ষের ফাউন্ডেশন, তাঁর বাচ্চাদের দেখছেন, যে ফাউন্ডেশন দ্বারা সমগ্র বৃক্ষের বিস্তার হয় l বিস্তার করে এমন সারস্বরূপ বিশেষ আত্মাদের তিনি দেখছেন অর্থাৎ বৃক্ষের আধারমূর্তি আত্মাদের দেখছেন l ডাইরেক্ট বীজরূপ দ্বারা প্রাপ্ত সর্বশক্তি ধারণকারী বিশেষ আত্মাদের দেখছেন l সমগ্র বিশ্বের সকল আত্মাদের মধ্যে থেকে শুধু অল্প কিছু আত্মাদেরই এই বিশেষ পার্ট প্রাপ্ত হয়েছে l কত স্বল্পসংখ্যক আত্মা, যারা বীজের সাথে সম্বন্ধ দ্বারা শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তির পার্ট লাভ করেছে !



আজ বাপদাদা এইরকম শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান বাচ্চাদের ভাগ্য দেখছেন l বাচ্চাদের শুধুমাত্র এই দুই শব্দ যেন স্মরণে থাকে, *'ভগবান আর ভাগ্য* l প্রত্যেকে তাদের নিজ কর্ম অনুযায়ী ভাগ্য প্রাপ্ত করে l দ্বাপর থেকে এখন পর্যন্ত তোমরা সব আত্মাকেও কর্মের হিসেব নিকেশ অনুযায়ীই আসতে হয়, কিন্তু *বর্তমানের ভাগ্যবান যুগে ভগবান তোমাদের ভাগ্য দেন l* "শ্রেষ্ঠ কর্মরূপী কলম" দিয়ে শ্রেষ্ঠ ভাগ্যের রেখা টানার জন্য তিনি তোমরা সব বাচ্চাকে বিধি দিয়ে দেন, যে কলম দ্বারা শ্রেষ্ঠ, স্পষ্ট, জন্ম-জন্মান্তরের ভাগ্যরেখা তোমরা যেমন চাও টানতে পার l আর অন্য কোনো সময় এই বরদান নেই l এই সময়েই এই বরদান, যেমন চাই যত চাই ততই লাভ করতে পার l কেন ? ভগবান ভাগ্যের ভান্ডার তোমরা সব বাচ্চাকে দিলদরিয়া হয়ে দিচ্ছেন, তোমাদের পরিশ্রম ব্যতিরেকেই তা' দিচ্ছেন l এটা উন্মুক্ত ভান্ডার, তালা চাবি নেই l আর তা' এতই পরিপূর্ণ, অফুরান যে, তোমরা যে যত চাও ততই নিতে পার l অসীম জগতের উছলিত ভান্ডার l বাপদাদা সব বাচ্চাকে প্রতিদিন স্মরণ করিয়ে দেন, যতটা চাও ততটা নিতে পার!

তোমাদের সামর্থ অনুযায়ী নয়, বরং দরাজ হৃদয়ে নাও, কিন্তু উন্মুক্ত ভান্ডার থেকে, ভরপুর ভান্ডার থেকে l যদি কেউ সামর্থ অনুযায়ী নেয়, তবে বাবা কি বলবেন ? বাবাও সাক্ষীভাবে থেকে দেখতে দেখতে মৃদু হাসেন, কত আলাভোলা বাচ্চা অল্পতেই খুশি হয়ে যায় ! কেন ? ৬৩ জন্ম তোমাদের মধ্যে ভক্তের সংস্কার, সামান্যেই খুশি হওয়ার কারণে এখনও সম্পন্ন প্রাপ্তির বদলে অল্পকেই অনেক প্রাপ্তি মনে করে তা'তেই খুশি হয়ে যাও l



তোমরা ভুলে যাও যে এই সময় অবিনাশী বাবার থেকে সর্বপ্রাপ্তির সময় l বাপদাদা তবুও স্মরণ করিয়ে দেন, সমর্থ হও l এখনও 'টু লেট' হয়নি l তোমরা দেরীতে এসেছ, কিন্তু 'টু লেট'-এর সময় এখন নয়, সেইজন্য এখনও বাবার উভয় রূপ থেকে নেওয়ার সময় এটা। *বাবা রূপ থেকে উত্তরাধিকার, সদগুরুর রূপ থেকে বরদান লাভ করার সময় l* সুতরাং, বরদান এবং উত্তরাধিকারের রূপে তোমাদের সহজ শ্রেষ্ঠ ভাগ্য তৈরি করে নাও l তারপরে তোমাদের যেন আর ভাবতে না হয়, ভাগ্যবিধাতা ভাগ্য বিতরণ করেছেন অথচ আমি এতটুকু নিয়েছি l সর্বশক্তিমান বাবার বাচ্চারা 'যথাশক্তি অনুযায়ী' হতে পারে না l তোমাদের কাছে এখন বরদান আছে যে তোমাদের যা চাই তোমরা বাবার ভান্ডার থেকে অধিকার রূপে নিতে পার l যদি তোমরা দুর্বলও হও তবুও বাবার সহায়তায় তোমরা নিজেদের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ শ্রেষ্ঠ বানাতে পার, কারণ বাচ্চা সাহস করলে, বাবা সহায় হন l তোমাদের জন্য খুব কম সময় আছে, বাবার সহযোগ এবং ভাগ্যের খোলা ভান্ডার নেওয়ার l



এখন তোমাদের প্রতি তাঁর স্নেহের কারণে বাবারূপে, প্রতিটা মুহূর্তে, সবরকম পরিস্থিতিতে তিনি তোমাদের সাথী, কিন্তু কিছু সময় পরে সাথী হওয়ার পরিবর্তে তাঁর সাক্ষী হয়ে সবকিছু দেখার পার্ট শুরু হবে l তোমরা সর্বশক্তি সম্পন্নই হও বা তোমাদের সামর্থ অনুযায়ীই হও, তিনি এই উভয় স্থিতিই সাক্ষী হয়ে দেখবেন l অতএব, এই শ্রেষ্ঠ সময়ে বাপদাদার থেকে উত্তরাধিকারের ভাগ্যপ্রাপ্তি, বরদান, সহযোগ এবং সঙ্গ যা প্রাপ্তি হচ্ছে, তা' প্রাপ্ত করে নাও l প্রাপ্তির ব্যাপারে তোমরা অসতর্ক হ'য়োনা - এখনও এত বছর পড়ে আছে, সৃষ্টি পরিবর্তনের সময়কে প্রাপ্তির সময়ের সাথে গুলিয়ে ফেল না l এমন অসতর্কতা মূলক সঙ্কল্পে শুধু ভাবতে থেকে যেও না l তোমাদের ব্রাহ্মণ জীবনে সর্বপ্রাপ্তির এবং বহুকালের প্রাপ্তির এই বোল সদা স্মরণে রাখ, 'এখন নয় তো কখনও নয়', সেইজন্য তোমাদের শুধু দু'টো শব্দ স্মরণে রাখতে বলা হয়, *'ভগবান এবং ভাগ্য'* l তবেই তোমরা সদা পদমাপদম ভাগ্যবান থাকবে l বাপদাদাও নিজেদের মধ্যে অন্তরঙ্গভাবে খোলাখুলি আলাপচারিতা করেন, এইরকম পুরানো অভ্যাসে বাচ্চারা কেন বাধ্য হয় ! বাবা শক্তিধর বানান, কিন্তু বাচ্চারা তবুও বাধ্য হয়ে যায় l তিনি তোমাদের সাহসের পা-ও দেন, পাখাও দেন এবং সাথে সাথে তাঁর সঙ্গে উড়িয়ে নিয়ে যান, তবুও তোমরা উপর-নিচে, উপর-নিচে কেন হও ? সুখানুভবের যুগেও দিশাহারা হতে থাকবে ! একেই বলে, পুরানো অভ্যাসে বাধ্য হওয়া l তোমরা শক্তিধর (মজবুত) নাকি বাধ্য (মজবুর) ? বাবা তোমাদের ডবল লাইট বানান, স্বয়ং সব বোঝা ওঠানোর জন্য সাথ দেন, তবুও বোঝা ওঠানোর অভ্যাসের কারণে তোমরা সেই বোঝা উঠিয়ে নাও l তারপরে কোন্ গীত গাও, জান তোমরা ? *'কি, কেন, কিভাবে'* এই 'কি কে'-র গীত গাও l অন্য গীতও তোমরা গেয়ে থাক, 'গে গে'র গীত অর্থাৎ পরে 'করব', 'ভাবব', 'দেখব' এই 'ব' -'ব'র গীত গাও l এ তো ভক্তির গীত l যাদের অধিকার আছে তাদের গীত, 'আমি পেয়ে গেছি'! সুতরাং কোন্ গীত গাও তোমরা ? চেক কর, সারাদিন ধরে তোমরা কোন্ গীত গেয়েছ ! বাপদাদার তোমরা সব বাচ্চার প্রতি ভালোবাসা আছে, সেইজন্য এই স্নেহের কারণে তিনি ভাবেন, প্রত্যেক বাচ্চা সদা সম্পন্ন হোক, সমর্থ হোক, সদা পদমাপদম ভাগ্যবান হোক l বুঝেছ তোমরা ! আচ্ছা !



সময়ানুসার, যাদের উত্তরাধিকার এবং বরদানের সদা অধিকার থাকে, সদা ভাগ্যের খোলা ভান্ডার থেকে তাদের সম্পূৰ্ণ ভাগ্য বানায়, যথাশক্তিকে সর্বশক্তি সম্পন্ন হওয়াতে পরিবর্তন করে, শ্রেষ্ঠ কর্মের কলম দ্বারা সম্পন্ন ভাগ্যের রেখা টানে, সময়ের মহত্ত্বকে জানে, এমন সর্বপ্রাপ্তিস্বরূপ শ্রেষ্ঠ সব আত্মাকে সম্পন্ন বানাতে বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ এবং নমস্কার l



*পাটিদের সাথে বাপদাদার সাক্ষাৎকার -*

১) নিজের অলৌকিক জন্ম, অলৌকিক জীবন, অলৌকিক বাবা, অলৌকিক উত্তরাধিকার সদা মনে থাকে তোমাদের ? বাবা যেমন অলৌকিক, উত্তরাধিকারও অলৌকিক । লৌকিক বাবা সীমিত পরিসরের উত্তরাধিকার দেন, অলৌকিক বাবা দেন অসীম জগতের l সুতরাং, সদা অলৌকিক বাবা আর উত্তরাধিকারের স্মৃতি যেন থাকে l কখনো কখনো তোমাদের লৌকিক জীবনের স্মৃতিতে চলে যাও না তো ! তোমরা জীবন্মৃত, তাই না ? যেমন, কারও স্থূল শরীরের মৃত্যু হ'লে কখনও বিগত জন্ম স্মরণ করতে পারে না, ঠিক একইভাবে, যাদের জীবন অলৌকিক এবং জন্ম অলৌকিক তারাও তাদের লৌকিক জীবন স্মরণ করতে পারে না l এখন তো যুগই বদলে গেছে l দুনিয়া কলিযুগী, তোমরা সঙ্গমযুগী, সব বদলে গেছে l সুতরাং বর্ডার ক্রস কর না তো ? সদা এই স্মৃতি বজায় রাখ, তোমরা অলৌকিক জীবনপ্রাপ্ত, সদা সঙ্গমযুগী শ্রেষ্ঠ আত্মা l এখন তোমরা কি করবে ? সবচেয়ে বড় বিজনেসম্যান হও, এমন বিজনেসম্যান যে এক কদমে পদম অর্থাৎ লক্ষ-কোটি উপার্জন জমা করে l তোমরা সদাসর্বদা অসীম জগতের বাবার, সুতরাং অসীম জগতের সেবায় অসীম জগতের উৎসাহ-উদ্দীপনায় সামনে এগিয়ে চলো l



২) সদা ডবল লাইট স্থিতির অনুভব কর তোমরা ? ডবল লাইট স্থিতির নিদর্শন হলো সদা উড়তি কলা l যারা উড়তি কলার, তারা কখনও মায়ার দ্বারা আকৃষ্ট হয় না l যারা উড়তি কলায় তারা সদা বিজয়ী l উড়তি কলায় স্থিত সকলেই সদা নিশ্চয়বুদ্ধি নিশ্চিন্ত l উড়তি কলায় হওয়ার অর্থ কি ? উড়তি কলা অর্থাৎ সর্বাপেক্ষা উঁচু স্থিতি l উড়তে হলে তো উঁচুতেই যেতে হয়, তাই না ! নিজেদের উচ্চতম স্থিতিতে স্থিত আত্মা মনে ক'রে অগ্রচালিত হতে থাক l উড়তি কলায় হওয়া অর্থাৎ বুদ্ধিরূপী পা ধরণীর উপরে থাকে না l ধরণীর উপরে অর্থাৎ দেহ-ভাবের ঊর্ধ্বে l যারা দেহ-ভাবের ধরণীর ঊর্ধ্বে থাকে, তারা সদা ফরিস্তা, যাদের ভূতলের সাথে কোন সম্পর্ক নেই l তোমরা দেহভাবও জেনেছ, দেহী-অভিমানী স্থিতিও জেনেছ l যখন এই দুইয়ের মধ্যে প্রভেদ জেনেছ, তখন দেহ-অভিমানে তোমরা আসতে পার না l যা ভালো লাগে সেটাই তো করা হয়, তাই না ! সুতরাং সদা এই স্মৃতিতে থাক, 'আমিই ফরিস্তা' l ফরিস্তার স্মৃতি থাকাতে তোমরা সদা উড়তে থাকবে l তোমরা উড়তি কলায় চলে গেলে, নিচের ভূতল তোমাদের আকর্ষণ করতে পারে না, ঠিক যেমন, তোমরা যখন স্পেসে যাও ভূপৃষ্ঠের মাধ্যাকর্ষণ থাকে না, একইভাবে, তোমরা ফরিস্তা হয়ে গেলে দেহরূপী ধরণী তোমাদের আকর্ষণ করতে পারে না l



৩) সদা সহযোগী, কর্মযোগী, স্বতঃ যোগী, নিরন্তর যোগী হওয়ার স্থিতি অনুভব কর তোমরা ? যখন কোনকিছু সহজ হয় তা' নিরন্তর হয় l যদি সহজ না হয়, নিরন্তর হয় না l সুতরাং তোমরা নিরন্তর যোগী নাকি অন্তর থেকে যায় ! যোগী অর্থাৎ যে সদা স্মরণে মগ্ন থাকে l যখন তোমাদের সর্ব সম্বন্ধ বাবার সঙ্গে, তখন তো যেখানে সর্ব সম্বন্ধ সেখানে নিজে থেকেই স্মরণ হবে এবং সর্ব সম্বন্ধ আছে যখন তো একেরই স্মরণ হবে l যেহেতু, শুধুমাত্র এক, তো সদা স্মরণ থাকবেই, তাই না ? সুতরাং সর্ব সম্বন্ধে সদা *এক বাবা দ্বিতীয় কেউ নয়* l সর্ব সম্বন্ধে এক বাবা - এটাই নিরন্তর যোগী হওয়ার সহজ বিধি l যখন অন্য কোনো সম্বন্ধই নেই তো স্মরণ কোন্ দিকে যাবে ! সদা এই স্মৃতি বজায় রাখ, বাবার সঙ্গে সর্ব সম্বন্ধ থাকাকালীনই তোমরা সহজ যোগী আত্মা l সদা বাবা সমান প্রতি পদে স্নেহ আর শক্তির ব্যালেন্স রাখলে সফলতা নিজে থেকেই তোমাদের সামনে আসে l সফলতা তোমাদের জন্মসিদ্ধ অধিকার l বিজি থাকতে তোমাদের কাজ তো করতেই হবে, কিন্তু এক হলো পরিশ্রমের কাজ, আরেক হলো খেলার মতো l যখন বাবার থেকে তোমরা শক্তির বরদান লাভ করেছ, তখন তো যেখানে শক্তি, সেখানে সবকিছুই সহজ l শুধু পরিবার আর বাবার ব্যালেন্স হতে দাও, তখন নিজে থেকেই ব্লেসিংস প্রাপ্ত হয়ে যায় l যেখানে ব্লেসিংস সেখানে উড়তি কলা l এমনকি না চাইতেই সহজ সফলতা l



৪) সদা বাবা আর উত্তরাধিকারের স্মৃতি থাকে তোমাদের ? কে তোমাদের বাবা এবং কি উত্তরাধিকার তোমরা লাভ কর, সেই স্মৃতি নিজে থেকেই তোমাদের সমর্থ ক'রে তোলে l তোমরা এমন এক অবিনাশী উত্তরাধিকার লাভ করেছ যা এক জন্মে অনেক জন্মের প্রালব্ধ বানাতে পারে, এইরকম উত্তরাধিকার তোমরা আগে কখনও লাভ করেছ ? এখনই পেয়েছ তোমরা, কিন্তু পুরো কল্পে নয় l সুতরাং সদা বাবার এবং তোমাদের উত্তরাধিকারের স্মৃতির সাথে এগিয়ে চলো l উত্তরাধিকার স্মরণে থাকলে সদা খুশি থাকবে এবং বাবাকে স্মরণ করলে সে শক্তিশালী থাকবে l শক্তিশালী আত্মা সদা মায়াজিৎ থাকে, আর যেখানে খুশি আছে সেখানে জীবন আছে l যদি খুশি না থাকে তবে জীবন কি ! সেইরকম পরিস্থিতিতে জীবন থেকেও তা' জীবন না থাকার সামিল l বেঁচে থেকেও মৃত্যুর সমান l তোমাদের উত্তরাধিকার যত বেশি স্মরণে থাকবে ততই তোমরা খুশি থাকবে l সদা খুশি থাকে তোমাদের ? এইরকম উত্তরাধিকার কোটির মধ্যে স্বল্প সংখ্যকেরই লাভ হয় আর তোমরা তা' পেয়েছ l এই স্মৃতি কখনো ভুল না l যত বেশি স্মরণ, ততই প্রাপ্তি l সদা স্মরণ আর সদা প্রাপ্তির খুশি l



*কুমারদের সাথে -* কুমার জীবন শক্তিশালী জীবন l সুতরাং ব্রহ্মাকুমার অর্থাৎ আধ্যাত্মিকভাবে শক্তিশালী l শারীরিক শক্তিশালী নয়, বরং আধ্যাত্মিক শক্তিশালী l কুমার জীবনে তোমরা যা চাও করতে পার l সুতরাং তোমরা সব কুমার নিজেদের এই কুমার জীবনে নিজেদের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ বানিয়েছ, তোমরা কি বানিয়েছ ? আধ্যাত্মিক বানিয়েছ l ঈশ্বরীয় জীবনের সাথে তোমরা ব্রহ্মাকুমার হয়েছ তো কতো শ্রেষ্ঠ জীবন হয়ে গেছে ! এমন শ্রেষ্ঠ জীবন হয়ে গেছে যে সদাকালের জন্য দুঃখ থেকে, প্রবঞ্চনা থেকে, দিশাহীন হয়ে ঘুরে বেড়ানো থেকে দূরে সরে গেছ l অন্যথায়, শারীরিক শক্তির কুমাররা উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়াতে থাকে l লড়াই, ঝগড়া, দুঃখ দেওয়া, প্রতারণা করা .... এই সবই করে, তাই না ! সুতরাং তোমরা কতো ব্যাপারে রক্ষা পেয়েছ ! যেমন তোমরা নিজেরা রক্ষা পেয়েছ, ঠিক তেমনই অন্যদেরও রক্ষা করার উদ্যম থাকে l তোমরা সদা তোমাদের হমজিন্সকে অর্থাৎ তোমাদের সমবয়সী কুমারদের রক্ষা কর l যে শক্তি তোমরা লাভ করেছ, তা' তোমরা অন্যদেরও দাও l তোমরা তো অফুরান শক্তি লাভ করেছ, তাই না ? সুতরাং, সবাইকে শক্তিশালী বানাও l নিজেদের নিমিত্ত মনে করে সেবা কর l আমি সেবাধারী, না l বাবা করান, আমি শুধুই নিমিত্ত মাত্র l তোমাদের আমিত্বভাব থাকে না l যাদের আমিত্বভাব নেই তারাই যথার্থ সেবাধারী l



*যুগলদের সাথে -* তোমরা কি সদা স্বরাজ্য অধিকারী আত্মা ? স্ব-এর রাজ্য অর্থাৎ সদা অধিকারী l অধিকারী কখনও অধীন হতে পারে না l যেমন, যখন রাত, তখন দিন হয় না, আর যখন দিন তখন রাত হয় না l একইভাবে, অধিকারী আত্মারা কোনও কর্মেন্দ্রিয়ের, ব্যক্তির, বৈভবের অধীন হতে পারে না, এমন অধিকারী হয়েছ তোমরা ? যখন মাস্টার সর্বশক্তিমান হয়ে গেছ, তো তোমরা কি হয়েছ ? অধিকারী l সুতরাং, তোমরা সদা স্বরাজ্য অধিকারী আত্মা, এই সমর্থ স্মৃতি দ্বারা সদা সহজে বিজয়ী হতে থাকবে l স্বপ্নেও পরাজয়ের সঙ্কল্প মাত্র হতে দিও না l একেই বলা হয়ে থাকে, সদা বিজয়ী হওয়া l মায়া পলায়ন করেছে নাকি তোমরা তাকে তাড়াচ্ছ ? তোমরা এমনভাবে বিতাড়িত করেছ যাতে আর ফিরে না আসে ? যখন বিশেষ কারও ফিরে আসা তোমরা চাও না, তখন তোমরা বহুদূরে তাকে ছেড়ে দিয়ে আস l তবে কি এতদূরে বিতাড়িত করেছ ? আচ্ছা -

বরদান-

ব্রাহ্মণ জীবনে এক বাবাকে তোমার বিশ্বসংসার বানিয়ে স্বতঃ এবং সহজ যোগী হও

ব্রাহ্মণ জীবনে সকল বাচ্চার প্রতিজ্ঞা, *"এক বাবা, দ্বিতীয় কেউ নয় l"* যখন তোমার সংসারই বাবা, দ্বিতীয় কেউই নেই, তখন তো স্বতঃ আর সহজ যোগী স্থিতি সদাই থাকবে l যদি দ্বিতীয় কেউ থাকে তবে তোমাদের পরিশ্রম করতে হবে l বুদ্ধি অন্য কোথাও যেতে দিও না, সেখানেই থাকতে দাও l যদি এক বাবাই তোমার সবকিছু হয়, তবে বুদ্ধি কোথাও যেতে পারে না l এইভাবেই তোমরা সহজে সহজযোগী এবং সহজ স্বরাজ্য অধিকারী হয়ে যাও l তোমাদের চেহারায় আধ্যাত্মিকতার চমক একভাবে একরস থাকে l

স্লোগান:-

বাবা সমান অব্যক্ত এবং বিদেহী হওয়াই অব্যক্ত পালনার প্রত্যক্ষ প্রমাণ l