৩১-১০-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি বাপদাদা মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - বাবা কাণ্ডারী হয়ে এসেছেন তোমাদের সকলের জীবন রূপী নৌকাকে বিষয় বৈতরণী থেকে নির্গত করে ক্ষীর সাগরে নিয়ে যেতে, তোমাদের এখন এই পার থেকে ওই পারে যেতে হবে"

প্রশ্ন:-

বাচ্চারা, তোমরা প্রত্যেকেরই পার্ট দেখে কারোরই নিন্দা করতে পারো না -- কেন ?

উত্তর:-

কেননা তোমরা জানো যে, এ হলো সম্পূর্ণ বানানো নাটক, এখানে প্রত্যেক অভিনেতা তার নিজের - নিজের অভিনয় করছে । কারোরই কোনো দোষ নেই । এই ভক্তিমার্গও আবার পাস করতে হবে, এতে সামান্যতম পরিবর্তন হতে পারে না ।

ওম্ শান্তি ।

বাচ্চারা এখন সামনে বসে আছে, ওরা যেখান থেকে আসে, ওখানে যখন নিজের সেন্টারে থাকে, তো তখন এমন বুঝতে পারবে না যে আমরা উঁচুর থেকে উঁচু বাবার সম্মুখে বসে আছি । তিনিই আমাদের শিক্ষক, আবার তিনিই আমাদের জীবন রূপী নৌকাকে পারে নিয়ে যান, যাঁকে গুরু বলা হয় । এখানে তোমরা বুঝতে পারো যে, আমরা সম্মুখে বসে আছি, তিনি আমাদের বিষয় সাগর থেকে নির্গত করে ক্ষীর সাগরে নিয়ে যান । পারে নিয়ে যাওয়া বাবা সম্মুখে বসে আছে, তিনি সেই এক শিববাবার আত্মা, যাঁকে সুপ্রীম অথবা উঁচুর থেকেও উঁচু ভগবান বলা হয় । বাচ্চারা, এখন তোমরা বুঝতে পারো, আমরা উঁচুর থেকেও উঁচু ভগবান শিববাবার সামনে বসে আছি । তিনি এই ব্রহ্মার শরীরে বসে আছেন, তিনিই তোমাদের পারে নিয়ে যান । তাঁর তো শরীর রূপী রথ অবশ্যই প্রয়োজন । না হলে তিনি শ্রীমত কিভাবে দেবেন ? বাচ্চারা, তোমরা এখন নিশ্চিত যে - বাবা আমাদের যেমন বাবা, তেমনই শিক্ষকও, আবার তিনিই পারে নিয়ে যান । আমরা আত্মারা এখন আমাদের নিজের ঘর শান্তিধামে যাবো । ওই বাবা আমাদের পথ বলে দিচ্ছেন । ওখানে সেন্টারে বসা আর এখানে সম্মুখে বসার মধ্যে রাত - দিনের তফাৎ । ওখানে এমন বুঝতে পারবে না যে, আমরা সম্মুখে বসে আছি । এখানে সমস্ত অনুভব আসে । আমরা এখন পুরুষার্থ করছি । যিনি পুরুষার্থ করান, তাঁর তো খুশীই থাকবে । আমরা এখন পবিত্র হয়ে ঘরে ফিরে যাচ্ছি । নাটকের অভিনেতারা যেমন বুঝতে পারে, এখন নাটক সম্পূর্ণ হয়েছে । বাবা এখন এসেছেন আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের নিয়ে যেতে । তিনি এও বোঝান, তোমরা কিভাবে ঘরে ফিরে যেতে পারো, তিনি যেমন বাবাও, তেমনি নৌকা পারকারী কাণ্ডারীও । যদিও ওরা গান গেয়ে থাকে তবুও কিছুই বুঝতে পারে না যে, নৌকা কাকে বলা হয়, এই শরীরকে কি নিয়ে যাবে ? বাচ্চারা, এখন তোমরা জানো যে, আমাদের আত্মাকে তিনি পারে নিয়ে যান । আত্মা এখন এই শরীরের সঙ্গে এই বেশ্যালয়ের বিষয় বৈতরণী নদীতে পড়ে আছে । আমরা প্রকৃতপক্ষে শান্তিধামের অধিবাসী ছিলাম, আমাদের পারে নিয়ে যাওয়ার জন্য অর্থাৎ ঘরে নিয়ে যাবার জন্য বাবাকে পেয়েছি । তোমাদের রাজধানী ছিলো, যা মায়া রাবণ সম্পূর্ণ ছিনিয়ে নিয়েছে । ওই রাজধানী আবার অবশ্যই ফিরিয়ে নিতে হবে । অসীম জগতের পিতা বলেন - বাচ্চারা, এখন তোমাদের ঘরকে স্মরণ করো । ওখানে গিয়ে আবার তোমাদের ক্ষীর সাগরে আসতে হবে এ হলো বিষ সাগর, ওখানে হলো ক্ষীরের সাগর আর মূল বতন হলো শান্তির সাগর । এই তিন ধাম । এ তো হলো দুঃখ ধাম ।



বাবা বোঝান -- মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো । কে তোমাদের বলছেন, তিনি কার দ্বারা বলেন ? সারাদিন 'মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চা' বলতে থাকেন । এখন তোমাদের আত্মা পতিত, তাই শরীরও এমনই পাবে । এখন তোমরা বুঝতে পারো, আমরা পাকা সোনার গয়না ছিলাম, এরপর খাদ পড়তে পড়তে নকল হয়ে গেছি । এখন এই খাদ কিভাবে নির্গত হবে, তাই এই হলো স্মরণের যাত্রার ভাট্টি । অগ্নিতে সোনা তো পাকা হয়, তাই না । বাবা বার বার বোঝান, এই বোঝানো, যা আমি তোমাদের দিই, প্রতি কল্পে আমি তা দিয়ে এসেছি । এ আমার পার্ট, আবার পাঁচ হাজার বছর পরে এসে বলি, বাচ্চারা, তোমরা পবিত্র হও । সত্যযুগেও তোমাদের আত্মা পবিত্র ছিলো, শান্তিধামেও পবিত্র আত্মারাই থাকে । সে তো হলো আমাদের ঘর । কতো মিষ্টি ঘর । যেখানে যাবার জন্য মানুষ কতো মাথা ঠুকতে থাকে । বাবা বোঝান যে, এখন সবাইকে যেতে হবে, তারপর আবার অভিনয় করার জন্য আসতে হবে । এ তো বাচ্চারা বুঝেছেই । বাচ্চারা যখন দুঃখী হয় তখন বলে - হে ভগবান, আমাকে তোমার কাছে নাও । আমাকে এখানে দুঃখে কেন ফেলে রেখেছো । তারা জানে যে, বাবা পরমধামে থাকেন । তাই বলে - হে ভগবান, আমাকে পরমধামে ডেকে নাও । সত্যযুগে কিন্তু এমন কথা বলবে না । ওখানে তো কেবল সুখই সুখ । এখানে তো অনেক দুঃখ, তাই তো ডাকে - হে ভগবান ! আত্মার তো স্মরণ থাকে কিন্তু ভগবানকে সম্পূর্ণ জানেই না । বাচ্চারা, এখন তোমরা বাবার পরিচয় পেয়েছো । বাবা থাকেন পরমধামে । মানুষ তার ঘরকেই মনে করে । এমন কখনোই বলবে না যে, রাজধানীতে ডাকো । রাজধানীর জন্য কখনোই বলবে না । বাবা তো রাজধানীতে থাকেনও না । তিনি শান্তিধামে থাকেন । সকলেই শান্তি কামনা করে । পরমধামে ভগবানের কাছে তো অবশ্যই শান্তি থাকবে, যাকে মুক্তিধামও বলা হয় । সে হলো আত্মাদের থাকার জায়গা, যেখান থেকে আত্মারা আসে । সত্যযুগকে ঘর বলা হবে না, সে হলো রাজধানী । এখন তোমরা এখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছো । এখানে এসে সামনে বসেছো । বাবা তোমাদের সঙ্গে 'বাচ্চা - বাচ্চা' বলে কথা বলেন । তিনি বাবার রূপে তোমাদের 'বাচ্চা - বাচ্চা' বলে ডাকেন, আবার শিক্ষক হয়ে সৃষ্টিচক্রের আদি - মধ্য - অন্তের রহস্য অথবা হিস্ট্রি - জিওগ্রাফি বুঝিয়ে বলেন । এইসব কথা কোনো শাস্ত্রে নেই । বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, মূলবতন হলো আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের ঘর । সূক্ষ্মবতন হলো দিব্যদৃষ্টির ব্যাপার । বাকি সত্যযুগ, ত্রেতা, দ্বাপর আর কলিযুগ তো এখানেই হয় । তোমরা অভিনয়ও এখানেই করো । সূক্ষ্মবতনে কোনো অভিনয় হয় না । এ হলো সাক্ষাৎকারের কথা । কাল আর আজ - এ কথা তো খুব ভালোভাবে বুদ্ধিতে থাকা উচিত । কাল আমরা সত্যযুগে ছিলাম তারপর ৮৪ জন্ম নিতে নিতে আজ এই নরকে এসেছি । বাবাকে এই নরকেই ডাকা হয় । সত্যযুগে তো অগাধ সুখ থাকে তাই কেউ সেখানে বাবাকে ডাকেই না । এখানে তোমরা শরীরে আছো, তাই কথা বলো । বাবাও বলেন - আমি সর্বজ্ঞ, অর্থাৎ এই সৃষ্টির আদি - মধ্য এবং অন্তকে জানি, কিন্তু কিভাবে তা তোমাদের শোনাবো ! এ তো চিন্তা করার মতো কথা, তাই লেখা আছে - বাবা রথের (শরীর ) সাহায্য নেন । তিনি বলেন, আমার জন্ম তোমাদের সদৃশ্য নয় । আমি এঁর মধ্যে প্রবেশ করি । তিনি এই রথেরও পরিচয় দেন । এই আত্মাও নাম - রূপ ধারণ করতে করতে তমোপ্রধান হয়ে গেছে । এই সময় সকলেই শিশু কারণ তারা বাবাকেই জানে না । তাই সকলেই বালক - বালিকা হয়ে গেলো । নিজেদের মধ্যে তারা যখন লড়াই করে তখন তো বলে ----তোমরা ছেলে - মেয়েরা, লড়াই ঝগড়া কেন করছো ? বাবা তাই বলেন, আমাকে তো সবাই ভুলে গেছে । আত্মাকেই বালক - বালিকা বলা হয় । লৌকিক বাবাও এমন বলেন, অসীম জগতের বাবাও বলেন, ছেলে - মেয়েরা, তোমাদের অবস্থা এমন কেন ? তোমাদের মতো অনাথদের এমন কি কেউ নেই যিনি তোমাদের বাবা মা ? তোমরা অসীম জগতের বাবাকে পেয়েছো, যিনি তোমাদের স্বর্গের মালিক করেন, যাঁকে তোমরা অর্ধেক কল্প ধরে ডেকে এসেছো, তাঁর জন্য মানুষ বলে, তিনি নুড়ি - পাথরে আছেন । বাবা এখন তোমাদের সামনে বসিয়ে বোঝাচ্ছেন । বাচ্চারা, তোমরা এখন বুঝতে পারো যে, আমরা বাবার কাছে এসেছি । এই বাবাই আমাদের পড়ান । আমাদের জীবন রূপী নৌকাকে তিনিই পারে নিয়ে যান, কেননা এই নৌকা অনেক পুরানো হয়ে গেছে । তাই বলা হয়, একে পার করো আর আমাদের নতুন দাও । এই পুরানো শরীর হলো বিপদজনক । কোথায় রাস্তায় অসুস্থ হয়ে যায় বা দুর্ঘটনা হয়ে যায় । তাই তোমরা বলো, আমাদের এই শরীর রূপী নৌকা পুরানো হয়ে গেছে, এখন আমাদের নতুন দাও । এই শরীরকে বস্ত্রও বলা হয় আবার নৌকাও বলা হয় । বাচ্চারা বলে - বাবা, আমাদের তো লক্ষ্মী - নারায়ণের মতো শরীর চাই ।



বাবা বলেন - মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা স্বর্গবাসী হতে চাও ? প্রতি পাঁচ হাজার বছর অন্তর তোমাদের এই বস্ত্র পুরানো হয় । তখন আমি আবার নতুন প্রদান করি । এ হলো আসুরী বস্ত্র । আত্মাও এখন আসুরী । মানুষ যখন গরীব হয় তখন বস্ত্রও তো গরীবদেরই পরিধান করবে । বিত্তবান হলে বস্ত্রও বিত্তবানদেরই পরিধান করবে । এই কথা এখন তোমরাই জানো । এখানে তোমাদের এই নেশা থাকে যে, আমরা কার সামনে বসে আছি । সেন্টারে যখন তোমরা থাকো, তখন তোমাদের এই অনুভূতি আসবে না । এখানে সামনে বসে থাকলে অনেক খুশী হয়, কেননা বাবা প্রত্যক্ষভাবে বসে বোঝান । এখানে কেউ বোঝাতে থাকলে বুদ্ধিযোগ কোথায় না কোথায় ভাগতে থাকবে । বলা হয় না --অপ্রয়োজনীয় কাজে আটকে গেছে । সময় কোথায় পাবে ? আমি এখন তোমাদের বোঝাচ্ছি । তোমরাও বুঝতে পারো - বাবা এই মুখের দ্বারা আমাদের বোঝান । এই মুখেরও কতো মহিমা । মানুষ গোমুখের থেকে অমৃত পান করার জন্য কোথায় না কোথায় গিয়ে ধাক্কা খায় । তারা কতো পরিশ্রম করে যায় । মানুষ বুঝতেই পারে না যে, এই গোমুখ কি ? কতো বড় বুদ্ধিমান ব্যক্তিও ওখানে যায়, এতে লাভ কি ? আরো বেশী করে সময় নষ্ট হয় । বাবা বলেন, এই সূর্যাস্ত আদি কি দেখবে ? এতে তো কোনো লাভই নেই । লাভ একমাত্র এই ঈশ্বরীয় পড়াতেই হয় । গীতাতে তো পড়াই আছে, তাই না । গীতাতে কোনো হঠযোগ ইত্যাদির কথা নেই । ওখানে তো রাজযোগ আছে । তোমরা এখানে এসেছো রাজত্ব নেওয়ার জন্য । তোমরা জানো যে, এই আসুরী দুনিয়ায় তো কতো লড়াই - ঝগড়া ইত্যাদি আছে । বাবা তো আমাদের যোগবলের দ্বারা পবিত্র করে এই বিশ্বের মালিক বানিয়ে দেন । দেব - দেবীদের হতে অস্ত্র - শস্ত্র দিয়ে দিয়েছে কিন্তু এখানে অস্ত্রশস্ত্র ইত্যাদির কোনো কথা নেই । কালীকে দেখো, কতো ভয়ানক তৈরী করে দিয়েছে । এই সবই তারা নিজের মনের ভ্রান্তিতে বসে বসে বানিয়েছে । দেবীরা এমন ৪ বা ৮ হাতের হয়ই না । এ সবই হলো ভক্তিমার্গের । বাবা তাই বোঝান - এ হলো অসীম জগতের নাটক । এখানে কারোরই কোনো নিন্দা ইত্যাদির কথা নেই । এই অনাদি নাটক বানানো আছে । এতে কিছুই তফাৎ হয় না । জ্ঞান কাকে বলা হয় আর ভক্তি কাকে বলা হয় - এ কথা বাবাই বোঝান । তবুও তোমাদের ভক্তিমার্গ থেকেই পাস করতে হয় । এমনভাবেই তোমরা আবার ৮৪ জন্মের চক্র ঘুরতে ঘুরতে নীচে আসবে । এ হলো অনাদি বানানো এক খুব সুন্দর নাটক, যা বাবা তোমাদের বোঝান । এই নাটকের রহস্য বুঝতে পারলে তোমরা এই বিশ্বের মালিক হয়ে যাও । এ তো আশ্চর্যের, তাই না । ভক্তি কিভাবে চলে আর জ্ঞান কিভাবে চলে, এই খেলা অনাদি কাল ধরেই বানানো আছে । এতে কোনো পরিবর্তন হওয়াই সম্ভব নয় । ওরা তো বলে দেয়, ব্রহ্মে লীন হয়ে গেছে, জ্যোতি জ্যোতিতে মিলিয়ে গেছে, এ হলো সঙ্কল্পের দুনিয়া, যার মনে যা আসে, তাই বলতে থাকে । এ তো বানানো এক খেলা । মানুষ তো বায়োস্কোপ দেখে আসে । তাকে কি সঙ্কল্পের খেলা বলা হবে ? বাবা বসে বোঝান - বাচ্চারা, এ হলো অসীম জগতের নাটক যা আবার হুবহু রিপিট হবে । বাবা এসেই এই জ্ঞান দান করেন, কেননা তিনি হলেন সর্বজ্ঞ । তিনি মনুষ্য সৃষ্টির বীজরূপ, তিনি চৈতন্য, তাঁর মধ্যেই সম্পূর্ণ জ্ঞান আছে । মানুষ তো লাখ বছরের আয়ু লিখে দিয়েছে । বাবা বলেন, সৃষ্টির আয়ু এতো হতেই পারে না । বায়োস্কোপ যদি লাখ বছরের হয়, তাহলে কোনো মানুষের বুদ্ধিতেই তা টিকতে পারবে না । তোমরা তো সম্পূর্ণ বর্ণনা করো । লাখ বছরের কথা কিভাবে বর্ণনা করবে । তাই সে সব হলো ভক্তিমার্গের কথা । তোমরাই ভক্তিমার্গে অভিনয় করে এসেছো । নানারকম দুঃখ ভোগ করে করে এখন অন্তিম সময়ে এসে পৌঁছেছো । সম্পূর্ণ বৃক্ষের এখন জর্জরিভূত অবস্থা । এখন তোমাদের ওখানে ফিরে যেতে হবে । তাই নিজেদের হালকা করো । ইনিও তো নিজেকে হালকা করে দিয়েছেন, তাই না । তাই সমস্ত বন্ধন যেন ছিন্ন হয়ে যায় । না হলে সন্তান, অর্থ, ব্যবসা, ক্রেতা, রাজা এবং রাজসম্পদ সবই স্মরণে আসবে । এইসব কাজ যখন ছেড়েই দিয়েছো তখন স্মরণে কেন আসবে ? এখানে তো সবকিছুই ভুলে যেতে হবে । এদের ভুলে ঘর আর রাজধানীকে স্মরণ করতে হবে । শান্তিধাম আর সুখধামকে স্মরণ করতে হবে । শান্তিধাম থেকে আমাদের আবার এখানে আসতে হবে । বাবা বলেন, তোমরা আমাকে স্মরণ করো, একেই যোগ অগ্নি বলা হয় । এ তো রাজযোগ, তাই না । তোমরা হলে রাজঋষি । পবিত্রকেই ঋষি বলা হয় । তোমরা পবিত্র হও এই রাজত্ব পাওয়ার জন্য । বাবাই তোমাদের সব সত্য বলেন । তোমরাও বুঝতে পারো যে, এ হলো নাটক । সব অভিনেতাদের অবশ্যই এখানে থাকা উচিত । এরপর বাবা সবাইকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন । এ তো ঈশ্বরের বরযাত্রী, তাই না । ওখানে বাবা আর বাচ্চারা থাকে, তারপর এখানে আসে অভিনয় করতে । বাবা তো সর্বদাই ওখানে থাকেন । আমাকে সবাই দুঃখের সময়ই স্মরণ করে । ওখানে আমি কি করবো । তোমাদের শান্তিধাম আর সুখধামে পাঠিয়েছি বাকি আর কি চাই । তোমরা সুখধামে ছিলে, বাকি আত্মারা সবাই শান্তিধামে ছিলো, তারপর নম্বর অনুযায়ী আসতে লাগে । এখন নাটক সম্পূর্ণ হয়ে এসেছে । বাবা বলেন -- বাচ্চারা, এখন আর গাফিলতি কোরো না । তোমাদের তো অবশ্যই পবিত্র হতে হবে । বাবা বলেন, ড্রামা অনুসারে এই অভিনয়ও হয়ে চলেছে । ড্রামা অনুসারে তোমাদের জন্যই আমি কল্প - কল্প আসি । নতুন দুনিয়াতে এখন যেতে হবে, তাই না । আচ্ছা ।



মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতাপিতা - বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মূখ্য সার :-

১. এখন এই সৃষ্টি রূপী বৃক্ষ পুরানো, জরাজীর্ণ অবস্থা প্রাপ্ত হয়েছে। আত্মাকে আবার ঘরে ফিরে যেতে হবে, তাই নিজেকে সর্ব বন্ধন থেকে মুক্ত করে হালকা করে নিতে হবে । বুদ্ধির সাহায্যে এখানকার সবকিছুই ভুলে যেতে হবে ।

২. অনাদি এই ড্রামাকে বুদ্ধিতে রেখে কোনো অভিনেতার নিন্দা করা উচিত নয় । এই নাটকের রহস্যকে বুঝে বিশ্বের মালিক হতে হবে ।

বরদান:-

বুদ্ধির সঙ্গ আর সহযোগিতার হাতের দ্বারা আনন্দের অনুভবকারী খুশীর সৌভাগ্যের অধিকারী আত্মা ভব

সহযোগের নিদর্শন যেমন হাতে হাত দেখানো হয় । তেমনই বাবার সদা সহযোগী হওয়া - এই হলো হাতে হাত আর সদা বুদ্ধির সঙ্গে সাথে থাকা অর্থাৎ মনের একাগ্রতায় বাবার সঙ্গে মগ্ন । সর্বদা এই স্মৃতি যেন থাকে যে, এই ঈশ্বরীয় বাগানে হাতে হাত রেখে একসাথে চলছি । এতে সদা আনন্দে থাকবে, সদা খুশী আর সম্পন্ন থাকবে । এমন খুশীর ভাগ্যের অধিকারী আত্মারাই সদা মস্তিতে আনন্দের অনুভব করে ।

স্লোগান:-

শুভেচ্ছার খাতা জমা করানোর উপায় হলো - সন্তুষ্ট থাকা আর সন্তুষ্ট করা ।