১২-০৫-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ০৫-১২-৮৪ মধুবন
সম্পূৰ্ণ কামজিৎ হওয়া অর্থাৎ সীমিত পরিধির সকল কামনার ঊর্ধ্বে যাওয়া
আজ বাপদাদা তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ ভুজসকলকে দেখছেন l তোমরা ভুজসকলে তোমাদের স্নেহ আর শক্তি দ্বারা বিশ্ব পরিবর্তন করার কার্যে জুড়ে আছ l তোমরা একের ভুজসকল l এইজন্য সকলেরই একই আকাঙ্ক্ষা, নিজের ঈশ্বরীয় পরিবারের নিজেরই ভাই-বোনেরা, যারা তাঁর বাচ্চা হয়েও, বাবাকে এবং নিজের প্রকৃত পরিবারকে না জানার কারণে ভাগ্যবিধাতা বাবার থেকে ভাগ্য প্রাপ্ত করার ক্ষেত্রে বঞ্চিত, সেই ভাগ্যবঞ্চিত আত্মাদের পুনরুজ্জীবিত কর l কিছু না কিছু অধিকারের অঞ্জলি দ্বারা তাদেরও বাবার পরিচয় করাও,কারণ সম্পূৰ্ণ বংশাবলীতে
সবাই তোমরা প্রবীণ l তাছাড়া, গায়ন আছে প্রবীণ বাচ্চারা বাবার সমান l এই কারণে যারা প্রবীণ, তাদের অবোধ ছোট ভাই-বোনেদের প্রতি করুণা আর ভালোবাসা আপনা থেকেই এসে যায় l ঠিক যেমন, সীমিত পরিসরে, পরিবারের অগ্রজের পরিবারের প্রতি সবসময় খেয়াল থাকে, সেইরকমই অসীম জগতের পরিবারের তোমরা সব প্রবীণের এইরকম খেয়াল থাকে, তাই না? কত বড় পরিবার ! সমগ্র অসীম পরিবার তোমাদের সামনে থাকে? সবার প্রতি করুণার কিরণ, রূহানী আশীর্বাদের কিরণ, বরদানের কিরণ ব্যাপ্ত করা তোমরা সব মাস্টার সূর্য, তাই না ! যতক্ষণ পর্যন্ত সূর্য নিজে উঁচু থাকবে, তার কিরণ
চতুর্দিকে বিকশিত করতে সমর্থ হবে l নিচুতে চলে গেলে অর্থাৎ অস্তগামী হলে তার কিরণ চারিদিকে বিস্তৃত করতে অপারগ হয় l ঠিক একইভাবে, যখন তোমরা উঁচু থেকেও উঁচু বাবা সমান উঁচু স্থিতিতে স্থিত হও, তখনই অসীম জগতের কিরণ প্রসারিত করতে পার অর্থাৎ অসীম জগতের সেবাধারী হতে পার l তোমরা সবাই অসীম জগতের সেইরকমই সেবাধারী, তোমরা তাই নও কি? সকলের ইচ্ছাপূরণকারী কামধেনু তোমরা, তাই না? সবার মনোকামনা পূরণকারী তোমরা এখনও নিজেদের মনোকামনা পূর্ণ করাতে বিজি নও তো ? নিজের মনের কামনা পূর্ণ না হলে অন্যের মনোকামনা পূর্ণ কিভাবে করবে সবচেয়ে বড় কামনা ছিল বাবাকে পাওয়ার, যখন সেই শ্রেষ্ঠ কামনা পূরণ হয়ে গেছে, তখন সেই শ্রেষ্ঠ কামনায় সীমিত পরিধির অন্য সব ছোট ছোট কামনা অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে l এই শ্রেষ্ঠ, অন্তহীন কামনার কাছে কোনও সীমিত কামনা কি থাকতে পারে ? সীমিত পরিসরের এই কামনা মায়ার সাথে বিরোধিতা করতে দেয় না l সীমিত এই কামনা অসীম স্থিতি দ্বারা অসীম জগতের সেবা করাতে পারে না l সীমিত পরিসরের কামনাগুলো সূক্ষ্মভাবে চেক কর, সাধারণতঃ, প্রধান বিকার কামের লেশমাত্র অংশ বা বংশ আছে কিনা ! সেইজন্য কামনার বশবর্তী হওয়ার কারণে এর বিরোধিতা করতে পার না l অসীম জগতের মনোকামনা পূরণকারী হতে পার না l কামজিৎ হওয়া অর্থাৎ সীমিত পরিসরের কামনাজিৎ হওয়া l এইরকম মনস্কামনা পূর্ণকারী বিশেষ আত্মা তোমরা l মন্মনাভব স্থিতির দ্বারা মনের যে কোন সীমিত কামনা পূরণ করতে সমর্থ হবে অর্থাৎ সেইসব সমাপ্ত করে অন্যদের মনস্কামনা পূর্ণ করতে পারবে l এখন শব্দেরও ঊর্ধ্ব স্থিতিতে স্থিত থেকে বানপ্রস্থ অবস্থায় কামনাজিৎ অর্থাৎ বিশ্বের সামনে কামজিৎ হওয়ার স্যাম্পল হও l তোমাদের ছোট ছোট ভাইবোনেরা এই কামনা নিয়ে তোমরা সব প্রবীণের দিকে তাকিয়ে আছে l আহ্বান করছে - আমাদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ কর l আমাদের সুখ-শান্তির ইচ্ছা পূরণ কর l সুতরাং, তোমরা কি করবে ! নিজেদের ইচ্ছা পূরণ করবে নাকি তাদের ইচ্ছা পূরণ করবে ? সকলের হৃদয় থেকে উৎসারিত হতে দাও, কারও কিছু বলাতে নয় বা সংগঠনের মর্যাদার বায়ুমন্ডল অনুসারে নয়, বরং হৃদয় থেকে এই শ্রেষ্ঠ স্লোগান বার হতে দাও, *ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যা l*
কিছু কিছু বাচ্চা খুব চতুর l তারা সুচতুরের থেকেও চাতুর্যপূর্ণ l তাদের সীমিত পরিসরের ইচ্ছা হয়, কিন্তু বলবে, এটা এর মতো, এটা সেই মতো l এটা শুভ ইচ্ছা, সেবার জন্য ইচ্ছা l এই ইচ্ছা তাদের নিজের, অথচ সেবার বাহ্যিক রূপ দিয়ে দেয় l সেইজন্য বাপদাদা সহাস্যে, জেনে-শুনে, সবকিছু দেখে, তাদের চাতুরী বুঝেও কোন কোন বাচ্চাকে বাহ্যিকভাবে ইঙ্গিত দেন না l যতই হোক, ড্রামা অনুসারে অবশ্যই তারা ইঙ্গিত পায় l কিন্তু কিভাবে ? যখন তাদের সীমিত ইচ্ছাগুলো পরিপূর্ণ হয়, তা' হয় প্রাপ্তির বাহ্যিকরূপ, কিন্তু অভ্যন্তরীণ একটা ইচ্ছা আরও অনেক ইচ্ছা উৎপন্ন করে l তারা মনের মধ্যে নানান এলোমেলো দোটানার রূপে ইশারা পেতে থাকে l বাহ্যিকভাবে, সীমিত পরিসরের কিছু প্রাপ্তিতে যতই ভোজনপান বা গাইতে থাকুক কিন্তু সেটা শুধু তাদের মনে দ্বিধাগ্রস্ত ভাবকে লুকানোর প্রয়াস মাত্র l তাদের অন্তর্মন তৃপ্ত হবে না l তাদের স্বল্পমেয়াদী তৃপ্তি হবে, কিন্তু সদাকালের তৃপ্ত অবস্থা তাদের থাকে না বা *বাবাকে পেয়ে সবকিছু পেয়েছি* হৃদয়ের এই গীত তাদের মনে গুঞ্জরিত হয় না, তারা বাবাকেও বলে, আমি তোমাকে তো পেয়েছি, কিন্তু এও আমার অবশ্যই চাই l তাদের এই চাই, ওই চাই-এর চাহিদায় কখনো তারা তৃপ্ত হতে পারে না l এখন, সময়ানুসারে, সবার মধ্যে থেকে এক আওয়াজ বার হতে দাও, *"ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যা"*, তবেই তোমরা অন্যের ইচ্ছা পূরণ করতে পারবে l এখন, অল্প সময়ের মধ্যে, বিশ্ব অনুভব করবে, তোমরা শ্রেষ্ঠ আত্মারা প্রত্যেকে চৈতন্য ভান্ডার l তারা সব ভিক্ষুক রূপে আসবে l এই আওয়াজ বেরোবে, তোমরাই প্রাচুর্যের ভান্ডার ! এখনও তারা কাউকে খুঁজছে, কিন্তু স্পষ্টভাবে বুঝতে অপারগ যে সেই *বিশিষ্ট* কোথায়, কে তিনি ! যাই হোক, এখন সময়ের অ্যারো দেখাতে হবে l যেমন পথনির্দেশের জন্য চিহ্ন থাকে, যাতে দেখানো হয় কোনদিকে যেতে হবে, ঠিক একইভাবে, সবার এই অনুভূতি হবে, ঐখানে যাও l এইরকম উপচে পড়া ভান্ডার হয়েছ তোমরা ? সময়ও তোমাদের সহযোগী হবে, শিক্ষক নয়, বরং সহযোগী হবে l সময়ের পূর্বে সম্পন্ন স্বরূপে, পরিপূর্ণ ভান্ডার রূপে, ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যায় তৃপ্ত স্বরূপে বাপদাদা সব বাচ্চাদের দেখতে চান l কারণ এখন থেকে যদি এই সকল সংস্কারে নিজেদের পরিপূর্ণ না কর, তবে অন্তে সেই সব সংস্কারে পরিপূর্ণ হয়ে বহুকালের প্রাপ্তির অধিকারী হতে পারবে না l এই কারণে বিশ্বের জন্য তোমরা আধার মূর্ত ! তোমরা বিশ্বের নয়নমণি ! বিশ্বের কুলদীপক তোমরা ! তোমরা সব আত্মা যারা সর্বশ্রেষ্ঠ মহিমার আধিকারী, বিশ্বের সামনে এখন নিজেদের সম্পন্ন রূপে প্রত্যক্ষ হয়ে দেখাও l বুঝেছ তোমরা !
আগত বিশেষ সব সেবাধারী বাচ্চাদের বাপদাদা তাঁর স্নেহস্বরূপে, সস্নেহে স্বাগত জানাচ্ছেন l রাইট হ্যান্ড বাচ্চাদের সাথে সমতার হ্যান্ডশেক করছেন l সুস্বাগতম ! আচ্ছা-
যারা বিশ্বের মনোকামনা পূর্ণ করে, সদা সম্পন্ন সেই তৃপ্ত আত্মাদের, বিশ্বের আধারমূর্ত, সবসময় বিশ্ব কল্যাণের শ্রেষ্ঠ কামনায় স্থিত থেকে, বিশ্বের সামনে মাস্টার বিশ্বরক্ষক হয়ে সকলের রক্ষা করে, সর্বশ্রেষ্ঠ সেই মহান আত্মাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l
*মিটিংয়ে আগত ভাই-বোনেদের সাথে:-* সেবাধারী বাচ্চারা মনে মনে সেবার প্ল্যান আগে থেকেই বানিয়ে নিয়েছে, যাই হোক, সেগুলো কিভাবে সাকাররূপ দেওয়া যাবে সেই সম্পর্কে তোমরা মিটিংয়ে বলবে l যে সেবাই চলছে, সেই সব সেবাই বলবে সবচেয়ে ভালো l যেমন, সময় যত এগিয়ে আসছে, সময় সবার বুদ্ধিকে চঞ্চল করে তুলছে l এইরকম সময়ানুগ এমন শক্তিশালী প্ল্যান বানাও যাতে ভূমিতে লাঙল চালাতে পার, বীজ বপনের আগে সবসময় জমি চষা হয়, তাই না ! লাঙল দেওয়া হলে কি হয় ? মথিত হয় আর তারপরে যে বীজ বপন করা হয় তা' সহজেই বৃদ্ধি পায় l একইভাবে, এখন এই তরঙ্গায়িত গতির লাঙল চালাও l কোন তরঙ্গিত অবস্থা ? আজ যেমন বলা হয়েছে "কেউ আছে" - এটা সবার বোধগম্য হয়েছে, কিন্তু *ইনিই তিনি অথবা একমাত্র ইঁনিই সেই এক* - এই আলোড়নের হল এখনও ব্যবহৃত হয়নি l তারা এখন এই উপসংহারে পৌছেছে, অন্যরাও আছে এবং ইঁনিও আছেন l যেমনই হোক, এখন এমন তির চালাও যাতে তারা বলে, *ইঁনিই এক এবং একমাত্র l* এই টাচিং যে আত্মারা লাভ করবে, তাদের তোমাদের সামনে আসতে দাও l যখন এইরকম একটানা চাঞ্চল্যের অর্থাৎ নতুন চিন্তার উদ্ভব হবে, তখনই প্রত্যক্ষতা হবে l এর বিধি কি ? যখন তোমাদের বিভিন্নরকম প্রোগ্রাম থাকে, সবরকম বিধি প্রযুক্ত হয় l তোমরা কনফারেন্স করলে অন্যদের স্টেজে তোমরা আমন্ত্রিত হও, নিজেদের স্টেজও বানাও, যোগ শিবিরও থাকে l এই সমস্ত সুযোগ-সুবিধা মানুষকে কাছে নিয়ে এসেছে, আর তাদের যে সংশয় ছিল, তা' থেকে তারা নিরস্তও হয়েছে, কাছেও এসে গেছে l কিন্তু এখন উত্তরাধিকারের অধিকার নেওয়ার স্থিতিতে আসতে হবে l যারা বাহ্ বাহ্ করে সেইরকম তো হয়েছে, এখন তাদের উত্তরাধিকারী হতে হবে l এখন জোরালো এবং স্পষ্ট আওয়াজ শোনা যেতে হবে যে, *তোমরাই প্রকৃত পথ দেখাবে l তোমরাই বাবার সাথে মিলিত হতে তাদের সমর্থ বানাবে l তোমরা তাদের রক্ষা করবে, বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেবে না l সুতরাং, বিধি এবং বাতাবরণ এইরকম হতে হবে l* স্টেজের (স্থিতির) রূপরেখাও যেন এইরকম হয় এবং সকলের সঙ্কল্পও যেন একইরকম হয় l বাতাবরণের প্রভাব শক্তিশালী হওয়া উচিৎ l ভালোবাসার বাতাবরণ তো থাকে, কিন্তু তোমাদের এখন এর সাথে শান্তি আর শক্তি কমবেশি অ্যাড করতে হবে l দুনিয়ার হিসেবে তারা শান্তি অনুভব করে, কিন্তু শান্তির তীর তাদের এমনভাবে লাগতে হবে যাতে তারা শান্তির সাগরকে ছাড়া থাকতে না পারে l তোমাদের সঙ্গের রঙ সেই সময় পর্যন্ত তাদের ভালো লাগে, কিন্তু তারা যেন তোমাদের রঙে রঙিন হয়ে যায় এবং এই রঙই যেন তাদের ক্রমাগত টানতে থাকে, কাছে আনতে থাকে, সম্বন্ধে আনতে থাকে সেই স্থিরসঙ্কল্পের রঙ লাগাও l বলা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত তোমরা যা করেছ তা' সবচেয়ে ভালো করেছ, যদিও তোমরা স্বর্ণালঙ্কার তৈরি করেছ, কিন্তু এখন মণিরত্নখচিত হতে হবে l আজকের দুনিয়ায় তারা প্রত্যক্ষ প্রমাণ চায় l অতএব, প্রত্যক্ষ প্রমাণ হিসেবে তাদের শান্তি আর শক্তির অনুভব করাও l এমনকি, এক মুহূর্তের জন্য হলেও, অনুভব এমন যে অনুভবের শক্তি অবশ্যই তাদের ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধে নিয়ে আসবে l সুতরাং, প্ল্যান তো তোমরাই বানাবে l আর তোমরা সব বাচ্চার সাহস, উৎসাহ-উদ্দীপনায় বাপদাদা উৎফুল্ল হন l তোমরা বাচ্চারা সেবার উৎসাহে থাক l সেবার প্রতি তোমাদের গভীর নিষ্ঠা l সকলে নিশ্চয়ই ভাবছে যে এখন কিছু নতুনত্ব হওয়া প্রয়োজন l নতুনত্ব আনার জন্য, সবকিছুর আগে সকলের এক সঙ্কল্প হতে হবে, কেউ কিছু বললে সেটা সর্বস্বীকৃত হওয়া প্রয়োজন l এক সঙ্কল্পে সদা নিশ্চল থাক l যদি একটা ইঁট নড়ে যায় তবে সম্পূৰ্ণ দেওয়াল নড়বড়ে করে দেয় l এমনকি, সার্কমস্ট্যান্স অনুযায়ী অথবা অন্য কোন কারণে কোনও একজনের সঙ্কল্প দুর্বল হলে, তখন পুরো প্রোগ্রাম নিস্তেজ হয়ে যায় l সুতরাং, নিজে স্থিরসঙ্কল্পস্থিত হয়ে তারপরে ভাবো, আমাকে এটা করতেই হবে, সকলের সহযোগ আমাকে পেতেই হবে, এটা চেষ্টা করে দেখ l বাপদাদা তোমাদের সেবায় খুশি l এটা কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নয়, কিন্তু স্বর্ণালঙ্কার এখন মনিরত্নখচিত হতে হবে, যাতে দূর থেকে তারা আকৃষ্ট হয় l
বিদেশেও বাচ্চারা অনেক সাহসের সাথে চলে l তারা নিজেরাও নিজেদের মধ্যে হাসতে থাকে যে তাদের মাইক এখানে পৌঁছেছে, আওয়াজও হয়েছে, কিন্তু কেউ কেউ উপনীত হয়েছে সামান্য আওয়াজের সাথে l জোরালো আওয়াজের কেউ কেউ এখনো পর্যন্ত উপস্থিত হয়নি l তবুও তোমরা এতদূর পর্যন্ত পৌঁছে গেছ l তোমাদের ভালো সাহস আছে l আচ্ছা !
এখন তোমাদের পূজ্য স্বরূপ প্রত্যক্ষ হওয়া উচিৎ l পূজন যোগ্য, পূজারী নয় ! এঁরাই আমাদের ইষ্ট, আমাদের পূর্বজ, আমাদের পূজ্য এবং এঁদের থেকেই আমাদের সকল মনস্কামনা পূরণ হবে, লোকের এখন এই অনুভূতি হওয়া প্রয়োজন l তোমাদের বলা হয়েছে, সীমিত পরিসরের
সঙ্কল্প বা কামনা এখন সমাপ্ত হওয়া উচিৎ, শুধুমাত্র তখনই তরঙ্গ বিস্তৃত হবে l এখনও অল্প অল্প আমিত্বভাব আছে l আমার সংস্কার, আমার স্বভাব এটাও যেন সমাপ্ত হয়ে যায় l *যা বাবার সংস্কার, তা' সবই আমার l সেগুলোই অরিজিনাল সংস্কার, তাই নয় কি? ব্রাহ্মণের পরিবর্তনই বিশ্ব পরিবর্তনের আধার l* সুতরাং, এখন তোমরা কি করবে ? তোমাদের অবশ্যই ভাষণ দিতে হবে l কিন্তু তোমরা যখন বলতে শুরু করবে তারা আওয়াজের ঊর্ধ্বে চলে যাবে, বভাষণ এইরকম হতে হবে l বলতে তো হবে, তাই না ! তোমরা আওয়াজে আসবে, তারা আওয়াজের ঊর্ধ্বে যাবে l শুধু যেন কথন না হয়ে যায়, বরং অনুভবে পূর্ণ, এমন বোল হতে হবে l সকলের মধ্যে এই তরঙ্গকে তরঙ্গায়িত হতে দাও l যেমন, যখন কেউ কিছু শোনায় তো কখনো হাসির, কখনো কান্নার, কখনো বৈরাগ্যের তরঙ্গ খেলে যায়, সেইসবই টেম্পোরারি, তবুও সেই তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে l ঠিক একইভাবে, অনুভূতি হওয়ার তরঙ্গ যেন বিস্তৃত হয় l এটাই হতে হবে l যেমন, স্থাপনের প্রথম শুরুতে যখন ওম্ ধ্বনি গাওয়া হতো, তখন অনেকের সাক্ষাৎকার হতো, সেই তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ত l একইভাবে, সভাতে অনুভূতির তরঙ্গ বিস্তৃত হযে দাও l কারও শান্তির, কারও শক্তির অনুভূতি হতে দাও l এই তরঙ্গ বিস্তারিত কর l তাদের শুধুই শ্রোতা হতে দিও না, অনুভবের তরঙ্গ হতে দাও l যেমন, যে কেউই ঝর্ণার নিচে যাক, তার শীতলতার, ফ্রেশ হওয়ার অনুভব হবে, তাই না ! এইভাবে তাদেরও শান্তি, শক্তি, ভালোবাসা, আনন্দ এবং অতীন্দ্রিয় সুখের অনুভব করাও l আজ, সায়েন্সও তোমাদের ঠান্ডা-গরমের অনুভব করাতে সমর্থ ; সারা ঘরে একই তাপমানের তরঙ্গ ছড়িয়ে যাবে l সুতরাং, তোমরা এত শিবশক্তি, পাণ্ডব, তোমরা মাস্টার শান্তির, শক্তির এবং সবকিছুর সাগর, এই তরঙ্গ প্রসারিত করতে পার না ! আচ্ছা -
বিশাল বুদ্ধির কতজন এখানে একত্রিত হয়েছে l শক্তিসেনাও অনেক ! একই সময়ে এত শ্রেষ্ঠ আত্মাদের একসঙ্গে মধুবনে আসা কোন ছোট ব্যাপার নয় ! এখন তো তোমরা নিজেদের মধ্যে সাধারণ, সেইজন্য সবকিছু সাধারণ লাগে l তোমরা প্রত্যেকে কত মহান আত্মা ! এত এত মহান আত্মাদের এমন সংগঠন সারা কল্পে আর কোন সময়ে হতে পারে না l প্রতি একের মহত্ব কিছু কম নয় l তোমরা এখন পরস্পর পরস্পরকে সাধারণ মনে করছ, এরপরে তোমাদের যত অগ্রগতি হবে, একে অপরকে তার বিশেষত্ব অনুসারে বিশেষ আত্মা হিসেবে মনে করবে l এখন তোমরা লোকের সম্পর্কে তাদের বিশেষত্ব অপেক্ষা তুচ্ছ বিষয় বেশি নোট কর l বসে ভাবো তো, তোমরা এক -এক আত্মা কত ভক্তের পূর্বজ ! সবাই তো তোমরা ইষ্ট দেব-দেবী, তাই না ! একেকজন ইষ্ট দেবের কত ভক্ত হবে ! তোমাদের ব্যক্তিত্ব অর্থাৎ প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য কম নয়, তাই না ! এমনকি, এক মূর্তিরই অনেক মহত্ত্ব থাকে, যদি এত ইষ্ট দেব একসাথে আসে, তবে কি হবে ? তোমরা শক্তিশালী, কিন্তু তোমরা নিজেদের মধ্যে লুকিয়ে আছ, সুতরাং বিশ্ব থেকেও লুকিয়ে পড়বে ! বাস্তবে, প্রত্যেকের মূল্য অগণিত l বাপদাদা যখন বাচ্চাদের মহত্ত্ব দেখেন, তিনি গৌরবান্বিত হন যে প্রত্যেক বাচ্চা কত মহান l তোমরা নিজেদের কখনো বুঝতে পার, কখনো নয় l তা'নাহলে তো তোমরা অতি মহান, সাধারণ ব্যক্তিত্বের নও l যখন সামান্য প্রত্যক্ষতা হবে, তোমরাও বুঝতে পারবে তোমরা কে ! বাবা তোমাদের সেই মহত্ত্ব দেখেন l বাবার সামনে তোমরা সবাই প্রত্যক্ষ হও, তাই না! আচ্ছা- একটা ক্লাস এইরকম কর, প্রত্যেকের মহত্ত্ব কি ! আচ্ছা !
বরদান:-
অবিনাশী নেশায় থেকে রূহানী সুখানুভবে এবং উল্লাসের অনুভব করে ব্রাহ্মণ তথা ফরিস্তা ভব
তোমরা ব্রাহ্মণরা তথা ফরিস্তারা দেবতাদের থেকেও উঁচু, দৈবী জীবনে বাবার জ্ঞান ইমার্জ হবে না l পরমাত্ম মিলনের অনুভবও হবে না l সেইজন্য এখন সদা এই নেশা যেন থাকে যে দেবতার থেকেও উঁচুতে আমরা ব্রাহ্মণ তথা ফরিস্তা l এই অবিনাশী নেশা রূহানী সুখানুভব এবং উল্লাসের অনুভব করায় l যদি নেশা সবসময় না থাকে তবে কখনো আনন্দে থাকবে, কখনো বিভ্রান্তিতে l
স্লোগান:-
নিজের সেবাকেও বাবার সামনে অর্পণ করে দিলে তবে বলা হবে সমর্পিত আত্মা l