০৯-০৮-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা হলে চৈতন্য লাইট হাউস, তোমাদের বাবার পরিচয় সবাইকে দিতে হবে, পরমধাম গৃহের রাস্তা বলতে হবে"
প্রশ্ন:-
তোমরা যত উন্নতির শিখরে যেতে থাকবে, তখন অনেক আত্মারা কোন্ ডায়রেক্শন, কোন্ বিধিতে প্রাপ্ত করবে ?
উত্তর:-
তোমরা যত উন্নতির শিখরে এগিয়ে যেতে থাকবে, অনেকের এই ডায়রেক্শন প্রাপ্ত হবে যে, তোমাদের অর্থাৎ ব্রহ্মা কুমার-কুমারীদের কাছে গেলে তারা বৈকুন্ঠের প্রিন্স হওয়ার জ্ঞান প্রদান করবে।
ওম্ শান্তি।
আত্মাদের পিতা বাচ্চাদের জিজ্ঞাসা করছেন, সবাইকে তো আর জিজ্ঞাসা করতে পারে না। বাবা কন্যা নলিনীকে জিজ্ঞাসা করছেন যে, এখানে কি করা হচ্ছে ? কার স্মরণে বসেছো ? বাবার। শুধুই বাবার স্মরণে বসেছো না আর কিছু স্মরণে আসছে? বাবার স্মরণে তো বিকর্ম বিনাশ হবে, আর কি স্মরণ করছো ? এটা তো বুদ্ধির কাজ। তোমাদের অর্থাৎ আত্মাদের নিজ- নিকেতনে অর্থাৎ পরমধামে যেতে হবে, তাই পরমধাম গৃহকেও স্মরণ করতে হবে। আচ্ছা, আর কি করতে হবে? পরমধাম গৃহে গিয়ে কি বসে যেতে হবে ! বিষ্ণুর যে স্বদর্শন চক্র দেখায়। এর অর্থও বাবা এখন বুঝিয়েছেন। স্ব অর্থাৎ আত্মার দর্শন হয়, ৮৪ জন্মের চক্রের। তাই সেই চক্রও আবর্তন করার দরকার হয়। তোমরা জানো যে আমরা ৮৪ জন্মের চক্র পূর্ণ করে পরমধাম গৃহে যাব। আবার সেখান থেকে আসবে সত্যযুগে পার্ট প্লে করতে। আবার ৮৪র চক্র আবর্তিত হবে। বিষ্ণুর কোনো চক্র হয় না। সে তো সত্যযুগের দেবতা। বিষ্ণুপুরী বলো বা লক্ষ্মী-নারায়ণের পুরী বলো, স্বর্গ বলো। স্বর্গে লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য ছিলো। কেউ যদি রাধা-কৃষ্ণের বলে, তো এটা ভুল করে। রাধা-কৃষ্ণের রাজ্য তো হয় না। কারণ তারা দুজনে ভিন্ন-ভিন্ন রাজ্যের প্রিন্স-প্রিন্সেস ছিলো, রাজ্যের মালিক তো আবার স্বয়ংবরের পরে হবে। দেখো, এই যে বিষ্ণুর চক্র দেওয়া হয়েছে, সেই চক্র হলো তোমাদের। তাই এখানে যখন বসো, তো শুধুমাত্র শান্তিতে বসবে না, স্বর্গীয় উত্তরাধিকারকেও স্মরণ করতে হবে, এই চক্র হলো সেইজন্য। বাবা বলেন তোমরা লাইট হাউসও, বলে-চলে বেড়ানো লাইট হাউস। এক চোখে হলো শান্তিধাম, এক চোখে হলো সুখধাম। এই দুটিকে স্মরণ করতে হয়। স্মরণের দ্বারা পাপ খন্ডন হয়। পরমধাম গৃহকে স্মরণ করলে সেখানে চলে যাবে, আবার চক্রকেও স্মরণ করতে হবে। এই সমগ্র চক্রের নলেজ তোমাদেরই আছে। ৮৪ জন্মের চক্র চলেছে। এখন এই অন্তিম জন্ম হলো মৃত্যুলোকে। নূতন দুনিয়াকে বলা হয় অমরলোক। অমর অর্থাৎ তোমরা সর্বদা জীবন্ত থাকো। তোমাদের কখনো মৃত্যু নেই। এখানে তো বসে বসে হঠাৎ করে মৃত্যু হয়ে যায়। রোগ হয়, ওখানে মরণের ভয় নেই। কারণ ওটা হলো অমরলোক। তোমরা বৃদ্ধ হয়ে যাও, তবুও জ্ঞান থাকে আমরা গর্ভমহলে গিয়ে প্রবেশ করবো। এখন গর্ভজেলে যাই। সেখানে তো গর্ভমহল হয়। সেখানে তো পাপ করে না যে শাস্তি ভোগ করতে হবে। পাপ তো এখানে করে, যে কারণে শাস্তি ভোগ করে বাইরে বের হয় তো আবার পাপকর্ম শুরু করে দেয়। এটা হলো পাপ আত্মাদের দুনিয়া। এখানে তো দুঃখই হয়। সেখানে দুঃখের নাম থাকে না। তাই এক চোখে শান্তিধাম, দ্বিতীয় চোখে সুখধাম রাখো। যদিও তোমরা জন্ম- জন্মান্তর জপ-তপ ইত্যাদি করে এসেছো কিন্তু সেটা তো আর জ্ঞান হলো না। সেটা হলো ভক্তি। ওর মধ্যে কোনো যুক্তিও পাওয়া যায় না যে তোমরা ওরকম ভাবে সতোপ্রধান হতে পারো। কেউই জানে না। ব্যাস্, শুনেছে কৃষ্ণ--দেহ সহ ভগবানুবাচ....এটা হলো গীতার শব্দ, যা পড়ে শোনানো হয়। এইরকম বলে না যে, তোমরা এইরকম হও। শুধু পড়ে, ভগবান ঐরকম বলে গিয়েছিলেন, যখন পতিতকে পবিত্র করতে এসেছিলেন। গীতাতে শুধুমাত্র পরমপিতা পরমাত্মার বদলে কৃষ্ণের নাম দিয়ে দিয়েছে। এখন কৃষ্ণ তো হলো রথী। ওনার কি আর রথ চাই ? তিনি তো স্বয়ং দেহধারী। কৃষ্ণের নাম কে রেখেছিল? যেরকম ছোটবেলা সবারই কোনো নাম থাকে। বাবাকে তো কেবলই শিব বলা হয়। তোমরা আত্মারা জনম মরণে আসো আর শরীরের নাম পরিবর্তিত হতে থাকে। শিববাবা তো জন্ম মরণে আসেন না। উনি সার্বিক ভাবেই হলেন শিব। বিন্দু যখন দেওয়া হয় তখন বলা হয় শিব। বিন্দু আত্মা তো হলো একদম সূক্ষ্ম। যদি আত্মার সাক্ষাৎকার হয় তবুও কারোর বোধগম্য হয় না। দেবীকে দেখে খুশী হয়ে যায়। আচ্ছা, তারপর কি, প্রাপ্তি তো কিছু নেই, অর্থ নেই। শুধুমাত্র নৌধা ভক্তি করে, দর্শন করে, তো ওতেই খুশী হয়ে যায়। এছাড়া মুক্তি-জীবনমুক্তির তো ব্যাপারই নেই। সে সব হলো ভক্তি মার্গ (ভক্তির পথ)। এখানে এটা হলো জ্ঞান মার্গ (জ্ঞানের পথ)। এখানে বলতে গেলে সাক্ষাৎকার হয় ব্রহ্মার, তারপর শ্রীকৃষ্ণের হবে। বলবে, এই ব্রহ্মার কাছে যাও, তবে তোমরা কৃষ্ণ পুরী বা বৈকুন্ঠে যাবে।লক্ষ্মী-নারায়ণেরও সাক্ষাৎকার হতে পারে। এমন নয় যে, সাক্ষাৎকার হলো মানে সদ্গতি হয়ে গেল। এক্ষেত্রে শুধু ইশারা পাওয়া যায়, এখানে যাও। উন্নতির দিকে এগিয়ে গেলে অনেকের সাক্ষাৎকার হবে, ডায়রেক্শন পাওয়া যাবে। তোমাদের ত্রিমূর্তিও সংবাদপত্রে পড়ে, ব্রহ্মাকুমারীদের নামও পড়ে। তাই ব্রহ্মারই সাক্ষাৎকার হয় যে এনার কাছে এলে তোমাদের এই বৈকুন্ঠের প্রিন্স হওয়ার জ্ঞান প্রাপ্ত হবে। যেমন অর্জুনের বিষ্ণুর আর বিনাশের সাক্ষাৎকার হয়েছিল।
বাবা তোমাদের বলেন কি করে কমল ফুল সম হবে। কিন্তু তোমরা তো স্থায়ী থাকো না সেইজন্য অলংকার বিষ্ণুকে দিয়ে দিয়েছে। নয়তো দেবতাদের শঙ্খ ইত্যাদির দরকার কি আছে। মুখের দ্বারা শোনানোকে শঙ্খ ধ্বনি বলা হয়। কমলের রহস্যও বাবা বোঝান। তোমাদের অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের এই সময় কমল ফুলের সমান হতে হবে। গদা হলো পাঁচ বিকার রূপী মায়াকে জয় করার। বাবা উপায় বলে দেন মামেকম্ অর্থাৎ এক আমাকে স্মরণ করলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে। শ্রীমতে চলে পতিত-পাবন বাবাকে স্মরণ করো। একমাত্র বাবা ব্যাতীত পতিত-পাবন দ্বিতীয় আর কেউ নেই। বাবা বলেন আমাকে ডাকেই এই জন্য যে আমাদের সবাইকে এই শরীর থেকে মুক্ত করে পবিত্র দুনিয়াতে নিয়ে চলো। তাই বাবা-ই এসে সকল আত্মাদেরকে পতিত থেকে পবিত্র করেন, কারণ অপবিত্র আত্মারা তো পরমধাম গৃহে বা স্বর্গে যেতে পারবে না। বাবা বলেন পবিত্র হতে চাও তো আমাকে স্মরণ করো।স্মরণের দ্বারাই তোমাদের পাপ খন্ডিত হতে থাকবে। এটা আমি গ্যারান্টি করছি। ডাকে- হে পতিত পাবন এসো। আমাদের পবিত্র করে তুলে নূতন দুনিয়ায় নিয়ে চলো। তো যাবে কি ভাবে ? কতো সোজা কথা বলেন। বাবার সহজ নলেজ আর সহজ কথা। বলেন কাজ-কর্ম করতে-করতে আমাকে স্মরণ করো। যদি চাকরী ইত্যাদি করো, খাওয়ার তৈরী করো তাও স্মরণে থেকে, তখন ভোজনও শুদ্ধ হবে, সেই জন্য কথায়ও আছে যে ব্রহ্মা ভোজনের জন্য দেবতাদেরও বাসনা জাগে। এই কন্যারাও ভোগ নিয়ে যায় (বতনে)। ওখানে তো আনন্দসভা হয়। ব্রাহ্মণদের আর দেবতাদের মেলা বসে। তাঁরা ভোজন স্বীকার করতে আসেন। ব্রাহ্মণরা যখন ভোজন করে তখনও মন্ত্র জপে। ব্রহ্মা ভোজনের অনেক মহিমা আছে। সন্ন্যাসী তো ব্রহ্মকেই স্মরণ করে। ওদের ধর্মই হলো আলাদা। তারা হলো এই জগতের সন্ন্যাসী। বলে যে আমরা ঘর-বাড়ী পরিজন ইত্যাদি সবকিছু ছেড়েছি। এখন আবার ভিতরে ঢুকে পড়তে হয়। তোমাদের সন্ন্যাস হলো অসীম জগতের। তোমরা এই পুরানো দুনিয়াকেই ভুলে যাও। তোমাদের আবার যেতে হবে নূতন দুনিয়াতে। ঘর-গৃহস্থালীতে থেকেও বুদ্ধিতে এটা থাকে যে এখন আমাদের সুখধাম যেতে হবে শান্তি ধাম থেকে ঘুরে। শান্তিধামকেও স্মরণ করতে হয়। বাবাকে, শান্তিধাম আর সুখধামকে স্মরণ করে। এটা আমাদের অনেক জন্মের শেষের জন্ম। ৮৪ জন্ম সম্পূর্ণ হয়। সূর্যবংশীয় থেকে চন্দ্রবংশীয় আবার বৈশ্য, শূদ্র বংশীয় হও। সব লোকেরা বলে আত্মাই পরমাত্মা, আত্মার কোনো দাগ লাগে না কারণ আত্মাই হলো পরমাত্মা। বাবা বলেন- এটাও হলো ওদের উল্টো অর্থ। বাবা বসে আমিই সে এর অর্থ বোঝান। আমি আত্মা পরমপিতা পরমাত্মার সন্তান। সর্বপ্রথমে আমরা স্বর্গবাসী দেবতা ছিলাম তারপর চন্দ্রবংশী ক্ষত্রিয় হয়েছি, ২৫০০ বছর সম্পূর্ণ হয়েছে, আবার বৈশ্য শূদ্র বংশীয় বিকারী হয়েছি। এখন আমরা ব্রাহ্মণ টিকিধারী হচ্ছি। এখানে বসে আছি, যেন ৮৪জন্মের ডিগবাজির খেলা খেলছি। এই ডিগবাজিরও জ্ঞান আছে। আগে তীর্থে গেলে তখনও ডিগবাজি (দন্ডীকাটা) করে চিহ্ন দিতে দিতে যেত। এখন তো তোমাদের সত্যিকারের তীর্থ হল শান্তিধাম আর সুখধাম। তোমরা হলে রুহানী পান্ডা। সবাইকে রায় দাও - বাবাকে স্মরণ করলে তবে শান্তিধামে চলে যাবে। সাধু সন্ত ইত্যাদি সবাই শান্তিধামে যাওয়ার জন্যই পরিশ্রম করছে। কিন্তু কেউ যেতে পারে না। গেলে আবার সব দলবেঁধে একসাথে যাবে। বাবা বুঝিয়েছেন সত্যযুগে তো খুব কম হয় আবার বৃদ্ধি পেতে থাকে। দেবতারা নয়, তোমরা হলে স্বদর্শন চক্রধারী। কিন্তু এই সময় তোমাদের মায়ার সাথে যুদ্ধ চলছে। এই লড়াইতেও যাকে জোরদার মনে করে তো আবার তার কাছে গিয়ে শরণ নেয়। এখন তোমরা কার শরণ নাও ? স্ত্রী-পুরুষ দু'জনে বলে আমরা তোমার শরণে পড়ি। আমার তো এক শিববাবা, দ্বিতীয় কেউ নয়, সব আত্মাদের পিতা তো একজনই। ঐ একের বাচ্চা হও। সাধু সন্ত তো এক হলো না। অনেক ভগবান হয়ে যায়। যে গৃহ থেকে মুখ ফেরায় সে ভগবান, এরপর বড়-বড় বিত্তশালী, কোটিপতি গিয়ে তার শিষ্য হয় আর ফূর্তি করে ঘৃণ্য খাদ্য-পানীয়ের। তমোপ্রধান মানুষ যে। হিন্দুদের আবার নিজের ধর্মেরই ঠিকানা নেই।
বাবা বোঝান তোমরা বাস্তবে আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের হও, কিন্তু পতিত হয়ে গেছো, সেইজন্য নিজেকে দেবতা বলতে পার না। সেই ধর্মই প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। মানুষ এখন কতো বিকারী ক্রিমিনাল আই সম্পন্ন। এক মিনিস্টার বাবার কাছে এসেছিল, বলে - আমার তো ক্রিমিনাল আই হয়ে যায়। এখন বাবা বোঝান - বাচ্চারা, সিভিল আই হও। যতক্ষণ ক্রিমিনাল আই থাকে ততক্ষণ তোমরা হলে পতিত। নিজেদের ভাই-ভাই মনে করো ঐ ক্রিমিনাল দৃষ্টি উড়ে যাবে। আমরা আত্মারা হলাম ভাই-ভাই। এক বাবার থেকে স্বর্গীয় উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করি। আত্মার আসন হলো এই ভ্রূকুটি। একে বলা হয় অকাল তখ্ত অর্থাৎ অমর সিংহাসন। মৃত্যুঞ্জয় আত্মা এই সিংহসনে বিরাজমান। এটা তো হলো মাটির পুতুল। সমস্ত পার্ট আত্মাতেই ভরা থাকে। বাবা বলেন বাচ্চারা আমি পাঁচ হাজার বছর পরে আসি, তোমাদের উত্তরাধিকার দিতে। তোমরা জানো আমি আসি হেল্থ, ওয়েল্থ, হ্যাপিনেসের (স্বাস্থ্য, সম্পদ,খুশীর) উত্তরাধিকার নিয়ে। সত্যযুগে অপরিমিত ধন পাওয়া যায়। তোমরা একুশ প্রজন্ম দেবতা হও। বৃদ্ধাবস্থা ব্যাতীত কখনো কারোর মৃত্যু হয় না। এখানে তো বসে বসে হঠাৎ করে মৃত্যু হয়। গর্ভের ভিতরেও মারা যায়। সেখানে তো দুঃখের নামও নেই। ওকে বলা হয় সুখধাম, রাম রাজ্য। এটা হলো দুঃখধাম রাবণ রাজ্য। সত্যযুগে রাবণ হয়ই না।
তাই এই ৮৪ জন্মের চক্রও তোমাদের বুদ্ধির স্মরণে থাকে। অনেক খুশী থাকে। তোমরা জানো আমরা নূতন বিশ্বের অর্থাৎ সত্যযুগের মালিক হতে চলেছি। গীতাতেও ভগবানুবাচ আছে না- হে বাচ্চারা, দেহ সহ দেহের সকল সম্বন্ধকে ত্যাগ করো। নিজেকে আত্মা মনে করে মামেকম্ (একমাত্র আমাকে) স্মরণ করো। তোমাদের সত্যিকারের খুদা দোস্ত তিনিই। আল্লাহ্ আলাউদ্দিনের নাটক, হাতমতাই এর নাটক- সব এই সময়ের। এখন মানুষ কতো মাথা ঠোকে- বাচ্চা কম জন্ম নিক। অসীম জগতের পিতা কতো কম করে দেয়। সমগ্র বিশ্বে, সত্যযুগে নয় লক্ষ জন-সংখ্যা থাকে। তবে এতো কোটি কোটি মানুষ হয়ই না। সব মুক্তিধাম, শান্তিধামে চলে যাবে। এটা তো বিস্ময়ের ব্যাপার। এক দেবী- দেবতা ধর্মের ফাউন্ডেশন করে বাকি সব বিনাশ করে দেয়। এই ৮৪ জন্মের চক্র ভালো ভাবে বুদ্ধিতে বসাতে হবে। এটা হলো স্বদর্শন চক্র। এছাড়া চক্র দ্বারা কারোর গলা ইত্যাদি কাটতে হয় না। আবার শাস্ত্রে কৃষ্ণকে নিয়ে হিংসক কথা বলে দিয়েছে। সবাইকে স্বদর্শন চক্র দ্বারা মেরেছে। এটাও গ্লানি হলো যে। কতো হিংসক করে দিয়েছে। তোমরা ডবল অহিংসক হচ্ছো। কাম কাটারি করা এটাও হিংসা হলো। দেবতাদের তো পবিত্র বলা হয়। যোগবলের দ্বারা যখন বিশ্বের মালিক হতে পারে তো যোগবলের দ্বারা বাচ্চার জন্ম কেন হতে পারে না? সাক্ষাৎকার হয় এখন বাচ্চা হবে। বাবা তো মনে করেন এখন এই পুরানো শরীর ছাড়ব আর গোল্ডেন স্পুন ইন মাউথ (মুখে সোনার চামচ)। তোমরাও মনে করো আমরা অমরলোকে জন্ম নেব তো গোল্ডেন স্পুন ইন মাউথ হবে। গরীব প্রজাও যে দরকার। দুঃখের কোনো কিছু সেখানে হয়ই না। প্রজার কাছে কি আর এতো ধন দৌলত ইত্যাদি থাকে ! তবে হ্যাঁ, সুখ থাকবে, লম্বা আয়ু হবে। রাজা, রাণী, বিত্তশালী প্রজা সব যে দরকার। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার:-
১. বাবাকে স্মরণ করার সাথে সাথে খুশীতে থাকার জন্য চুরাশি জন্মের চক্রকেও স্মরণ করতে হবে। স্বদর্শন চক্র ঘোরাতে হবে। ভগবানকে নিজের সত্যিকারের মিত্র করতে হবে।
২. ডবল অহিংসক হওয়ার জন্য ক্রিমিনাল আই (বিকারী দৃষ্টিকে) পরিবর্তন করে সিভিল আই (শিষ্টাচারী-দৃষ্টি) করতে হবে। আমরা আত্মারা হলাম ভাই-ভাই, এই অভ্যাস করতে হবে।
বরদান:-
টেনশনের (দুশ্চিন্তা) কারণে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত দুঃখী আত্মাদের সাহস যুগিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া মাস্টার করুণাময় ভব
বর্তমান সময়ে অনেক আত্মাদের ভিতরে ভিতরে টেনশন থাকার জন্য দুঃখী আর দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়, সুচিন্তনের দ্বারা এগিয়ে যাওয়ার সাহস নেই। তোমরা তাকে সাহস প্রদান করো। যেমন কারোর পা না থাকলে কাঠের পা তৈরী করে দিলে চলতে পারে। সেইরকম তোমরা তাদেরকে সাহসের পা দাও। কারণ বাপদাদা দেখছেন অজ্ঞানী বাচ্চাদের ভিতরে কি অবস্থা, বাইরের শো তো খুব সুন্দর টিপটপ আছে, কিন্তু ভিতরে ভিতরে তারা খুবই দুঃখী। তাই মাস্টার করুণাময় হও।
স্লোগান:-
নির্মাণ (নিরহংকারী) হও, কোমলতা নয়, নির্মাণ বা নিরহংকারিতাই হলো মহানতা।