২৮-০১-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা -- তোমাদের এখন শান্তিধাম ও সুখধামে যাওয়ার উপায় মিলেছে, তোমরা বাবাকে স্মরণ করতে-করতে পবিত্র হয়ে, কর্মাতীত হয়ে নিজের শান্তিধাম চলে যাবে"

প্রশ্ন:-

বাবার স্নেহ ভালোবাসা কোন্ বাচ্চাদের প্রাপ্ত হয় ? বাবাকে সকলের কাছে প্রত্যক্ষ করাবে কিভাবে ?

উত্তর:-

যে বাচ্চারা বিশ্বস্ত, সার্ভিসেবল এবং খুব মিষ্টি স্বভাবের, কখনও কাউকে দুঃখ দেয় না, এমন বাচ্চাদেরকে বাবার স্নেহপূর্ণ স্পর্শ প্রাপ্ত হয়। বাচ্চারা যখন তোমাদের নিজেদের মধ্যে অনেক অনেক স্নেহ থাকবে, কখনও ভুল হবে না, দুঃখ দায়ী কথা বলবে না, সদা ভাই-ভাই এর আত্মিক (রূহানী) স্নেহ থাকবে তখন বাবাকে শো' করতে পারবে ।

গীত:-

আমাদের আশ্রয় দিয়েছেন যিনি...

ওম্ শান্তি ।

এই গীত তো বাচ্চারা অনেকবার শুনেছে। বাচ্চারা বুঝতে পেরেছে যে এই আবাগমনে আমরা কত পরিশ্রান্ত হয়েছি। ড্রামার প্ল্যান অনুযায়ী এক শরীর ত্যাগ করে অন্য ধারণ করেছি। সুখধামে নিজে থেকেই এক শরীর ত্যাগ করা হত, অন্যটি ধারণ করা হত - খুশীর অনুভূতি সহকারে। এখন বাবা খুশী সহকারে শরীর ত্যাগ করার জন্য বোঝাচ্ছেন। বাচ্চারা বুঝেছে আমরা আত্মারা পরম ধাম থেকে এসেছি, আমরা আত্মারা এখানে নিজ নিজ ভূমিকা পালন (পার্ট প্লে) করি। সর্বপ্রথমে আত্মার দৃঢ় বিশ্বাস (নিশ্চয়) হওয়া উচিত যে আমরা হলাম অবিনাশী আত্মা। বাচ্চাদের বোঝানো হয় সাহারা বা আশ্রয় একমাত্র বাবা-ই প্রদান করেন। বাবাকে স্মরণ করলে অনেক খুশীর অনুভূতি হয়। এইসব হল বোঝার বিষয় । প্ৰথমে সবাই থাকে শান্তিধামে, তারপরে সর্বপ্রথমে আসে সুখধামে। বাবা তোমাদের সাহারা প্রদান করেন। বাচ্চারা তোমাদের শান্তিধাম, সুখধাম এই এলো বলে। এটা তো নিশ্চিত যে আমরা আত্মারা এক শরীর ত্যাগ করে অন্যটি ধারণ করি। প্রথম থেকেই অবিনাশী পার্ট প্রাপ্ত হয়েছে। তোমাদের এই ৮৪ জন্মের পার্ট প্লে করতে হবে। বাবা বাচ্চাদের সঙ্গেই কথা বলেন, কারণ এই কথা গুলি তোমরা বাচ্চারা ছাড়া আর কেউ জানেনা। এই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগেই পুরুষোত্তম হওয়ার জন্যে বাবা পথ বলে দেন। আত্মার কোনো রকম ভয় থাকা উচিত নয়। আমরা তো অনেক উঁচু পদ প্রাপ্ত করি। তোমরা সবাই জন্ম গুলি জেনেছ। এটা হল শেষ জন্ম। আত্মা বুঝেছে আমরা সাহারা প্রাপ্ত করেছি শান্তিধাম-সুখধামে যাওয়ার জন্যে, তো খুশী ও আনন্দে যাওয়া উচিত। কিন্তু এখন এই জ্ঞানও প্রাপ্ত হয়েছে যে আত্মা হল পতিত, আত্মার উড়ে যাওয়ার পাখা ভেঙে গেছে । মায়া পাখা ভেঙে দিয়েছে তাই ফিরে যেতে পারেনা। পবিত্র অবশ্যই হতে হবে। সেখান থেকে নীচে তো এসে গেছে কিন্তু এখন নিজে নিজে ফিরে যেতে পারে না। সবাইকে পার্ট প্লে করতেই হয়। তোমাদেরও এমন বুঝতে হবে, আমরা হলাম অনেক উঁচু কুলের । এখন আমরা পুনরায় উঁচু বংশের রাজ্য ভাগ্য প্রাপ্ত করি। তখন আমরা এই শরীর নিয়ে কি করব। আমাদের তো সেখানে নতুন শরীর প্রাপ্ত হবেই। এইরূপ নিজের সঙ্গে কথা বলো। বাবা নিজের পরিচয় দিয়েছেন, রচনার আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বোঝান যে আত্মা-ই সতোপ্রধান সতো রজো তমো স্থিতিতে আসে। এখন আবার আত্ম অভিমানী হতে হয়। আত্মাকেই পবিত্র হতে হবে। বাবা বলেছেন শুধুমাত্র এক আমাকেই স্মরণ করো আর অন্য কাউকে স্মরণ কোরো না। ধন-সম্পদ, বাড়ি, সন্তান ইত্যাদিতে বুদ্ধি বিচরণ করলে কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত করতে পারবে না। তখন পদ মর্যাদা কম হয়ে যাবে এবং সাজা ভোগও করতে হবে। এখন আমরা আত্মারা ফিরে যাব। পবিত্র হয়ে ফিরতে হবে। বাবা এসেছেন পবিত্র করতে তো আমরা আনন্দের সাথে বাবাকে স্মরণ করব যাতে আমাদের বিকর্ম বিনাশ হয়ে যায়। নিজেরা স্মরণ করলে তবেই অন্যদের বললে তীর লাগবে। একেই বিচার সাগর মন্থন বলা হয়। সকাল বেলায় বিচার সাগর মন্থন ভালো হয় কারণ বুদ্ধি ভালো থাকে, রিফ্রেশ হয়। ভক্তিও সেই সময়েই করা হয়। গীত আছে রাম নাম স্মরণ করো প্রভাতে আমার মন .... ভক্তিমার্গে তো গান গাওয়া হত। এখন বাবার ডাইরেকশন হল সকাল-সকাল উঠে আমাকে স্মরণ করো। সত্যযুগে তো রাম নাম স্মরণ করা হয় না। এইসব ড্রামাতে নির্ধারিত হয়ে আছে। বাবা এসে জ্ঞান ও ভক্তির রহস্য বোঝান। প্ৰথমে তোমরা জানতে না তাই পাথরবুদ্ধি বলা হয়। সত্যযুগে এমন কথা বলবে না। এই সময়েই বলা হয় ঈশ্বর তোমাদের সদ্বুদ্ধি দিন। এখানকার গায়ন ভক্তিমার্গে প্রচলিত হয়। তো বাবা বাচ্চাদের খুব স্নেহ সহকারে বোঝান যে বাচ্চারা -- তোমরা আমাকে, বেহদের পিতাকে ভুলে গেছ। আমি-ই তোমাদের অর্ধকল্পের জন্যে অসীম অবিনাশী উত্তরাধিকার অর্থাৎ স্বর্গের অধিকার দিয়েছিলাম। তোমাদের অসীমের সন্ন্যাস আমি-ই করিয়ে ছিলাম, আমি-ই বলেছিলাম যে এই সম্পূর্ণ পুরানো দুনিয়া কবরে পরিণত হবে। যা শেষ হয়ে যাবে তোমরা সেসব কেন স্মরণ কর । আমাকে তোমরা আহবান কর যে, বাবা আমাদের পতিত দুনিয়া থেকে মুক্ত করে পবিত্র দুনিয়ায় নিয়ে চলো। পতিত দুনিয়ায় কোটি কোটি মানুষ আছে। পবিত্র দুনিয়ায় সংখ্যায় খুব কম থাকে। তো কালের কাল মহাকালকে আহ্বান করা হয়, তাই না ! ভক্তরা ভগবানকে ডাকে যে এসে ভক্তির ফল দিন। আমরা অনেক পরিশ্রান্ত। অর্ধকল্পের এই অভ্যাস ত্যাগ করতে পরিশ্রম লাগে। এইসবও ড্রামাতে নির্ধারিত রয়েছে। বাচ্চারা নম্বর অনুসারে পুরুষার্থ অনুযায়ী নিজের কর্মাতীত অবস্থাকে প্রাপ্ত করে - কল্প পূর্বের মতন। তারপরে বিনাশ হয়ে যাবে। এখন তো থাকবার জায়গাও নেই। আনাজ নেই, খাবে কি ভাবে। আমেরিকাতেও বলা হয় কোটি কোটি মানুষ খাদ্যের অভাবে মারা যাবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ (ন্যাচারাল ক্যালামিটিজ) তো হবেই। যুদ্ধ লাগলে আনাজ আসবে কোথা থেকে। যুদ্ধ বিগ্রহও খুবই ভয়ঙ্কর হয়। যা কিছু তাদের কাছে তৈরি আছে তারা সব বাইরে বের করবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগও কিছুটা সাহায্য করবে। তার আগেই কর্মাতীত অবস্থাকে প্রাপ্ত করতে হবে। শ্যাম থেকে গৌর বর্ণে পরিণত হতে হবে। কাম চিতায় বসে শ্যাম বর্ণ হয়েছ সবাই । এখন বাবা সুন্দর করছেন। আত্মাদের থাকার ঠিকানা তো একটাই, তাই না ! তোমরা এখানে এসে পার্ট প্লে কর। রাম রাজ্য ও রাবণ রাজ্য ক্রস কর।



এখন বাবা বলছেন পুরানো দুনিয়ার শেষ সময়, আমি আসি-ই শেষ সময়ে। যখন বাচ্চারা আহ্বান করে। পুরানো দুনিয়ার বিনাশ অবশ্যই হবে। কথায়ও আছে - "কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ" (মিরুয়া মউৎ, মলুকা শিকার), কিন্তু বাবার শ্রীমৎ অনুসারে না চললে সেই খুশী অনুভব হবে না। এখন তোমরা বাচ্চারা জানো আমাদের এই শরীর ত্যাগ করে অমরপুরীতে যেতে হবে। তোমাদের নামই হল শক্তি দল, শিব শক্তি। তারপরে তোমরা হলে প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমার ও কুমারী। শিবের তো সন্তান তোমরা, পরে(ব্রহ্মার সন্তান) হলে ভাই বোন । প্রজাপিতা ব্রহ্মা দ্বারা রচনা হয়। ব্রহ্মাকে গ্রেট গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদার বলা হয়। তো বাবা বসে আত্মাদের বোঝান। আত্মা-ই শরীর দ্বারা সবকিছু করে । আত্মার শরীরকে আহত করা হয়। তো আত্মা বলবে আমি এই শরীর দ্বারা অমুক আত্মার শরীরকে আহত করেছি। বাচ্চারা পত্রে লেখে - আমি আত্মা এই শরীর দ্বারা এই ভুল কাজ করেছি। পরিশ্রম আছে, তাই না ! এর উপরেই বিচার সাগর মন্থন করতে হবে। পুরুষদের জন্যে খুব সহজ। বোম্বাইতে সকালে অনেকে ঘুরতে যায়, তোমাদের তো একান্তে বসে বিচার সাগর মন্থন করতে হবে। বাবার মহিমা বর্ণনা করতে থাকো। বাবা সবই আপনার মহিমা। দেহধারীদের মহিমা কীর্তিত হয় না। বিদেহী উঁচু থেকে উঁচু হলেন ভগবান, তিনি কখনও নিজের দেহ ধারণ করেন না। নিজেই বলেন আমি সাধারণ দেহে প্রবেশ করি। ইনি নিজের জন্মগুলি জানেন না। তোমরাও জানতে না। ইনি এখন আমার দ্বারা জেনেছেন তো তোমরাও জেনেছ। সুতরাং এও হল প্র্যাক্টিস। বাবাকে স্মরণ করলে তোমাদের অনেক খুশী হবে। যখন নিজেদের আত্মা নিশ্চয় করব তখন আত্মাকেই দেখতে থাকব। তখন বিকারের কোনো কথা উঠতেই পারে না। বাবা বলেন অশরীরী ভব। তাহলে ক্রিমিনাল সঙ্কল্প উৎপন্ন হয় কেন । শরীর দর্শন করলেই পতন হয়। দেখতে হবে আত্মাকে। আমরা হলাম আত্মা, আমরা এই পার্ট প্লে করি। এখন বাবা বলেছেন অশরীরী ভব। আমাকে স্মরণ করো তো পাপ কেটে যাবে এবং স্মরণের যাত্রায় থাকলে পুণ্য ধন জমা হবে। সকালের সময়টি হল খুব ভালো। বাবা ব্যতীত আর কাউকে দেখবে না। এই লক্ষ্মী নারায়ণ হলেন এইম অবজেক্ট। "মনমনাভব" , "মধ্যাজি ভব" - এর অর্থ কেউ জানে না।



তোমরা বোঝাতে পারো - ভক্তি হলই প্রবৃত্তি মার্গের মানুষদের জন্য। তারা নিবৃত্তি মার্গের মানুষরা জঙ্গলে কি আর ভক্তি করবে। পূর্বে তো তারাও সতোপ্রধান ছিল, সেই সময় তাদের কাছে সবকিছু জঙ্গলে পৌঁছে যেত। এখন তো দেখো কুটির গুলি খালি পরে আছে কারণ তমোপ্রধান হওয়ার দরুণ তাদের কাছে আর কিছুই পৌঁছায়না। ভক্তদের শ্রদ্ধা নেই। তাই এখন ব্যবসা ইত্যাদিতে ব্যস্ত হয়েছে। কোটি পতি, পদম পতি। এখন এইসবই তো শেষ হবে। এমন তো নয় এই সোনা দিয়ে কোনো বাড়ি ইত্যাদি তৈরি হবে। সেখানে তো সবকিছু হবে নতুন। আনাজও হবে নতুন, নতুন দুনিয়ায় ফার্স্ট ক্লাস জিনিস থাকে। এখন তো ভূমি নষ্ট হয়েছে ফলে আনাজও পুরোপুরি উৎপন্ন হয় না। সেখানে তো সম্পূর্ণ ভূমি তোমাদের, সাগরও তোমাদেরই থাকে। সেখানে কত শুদ্ধ ভোজন খাওয়া হয়। এখানে তো দেখো পশুদেরও ভোজন রূপে স্বীকার করা হয়। সেখানে এমন কোনো ব্যাপার নেই। অতএব বাচ্চারা, তোমাদের বাবাকে অনেক ধন্যবাদ করা উচিত। তোমরা বাবাকে জানো আর তারপরে অন্যদেরও বল যে বাবা বলেছেন আমি সাধারণ বৃদ্ধ দেহে, এনার(ব্রহ্মা বাবার) বাণপ্রস্থ অবস্থায় প্রবেশ করি। বাণপ্রস্থ অবস্থায়-ই ফিরে যেতে হবে , এইটিই হল নিয়ম, ভক্তিমার্গেও এই নিয়মই চলছে। এইসব হল ধারণ করার কথা। কেউ তো ভালো ভাবে নোট করে ধারণ করে অন্যদের বলে দেয়। শুনতে খুবই আনন্দ অনুভব হয় কারণ এখন আশ্রয় বা সাহারা প্রাপ্ত হয়েছে।



তোমরা জানো প্রত্যেকটি আত্মা ভ্রুকুটি আসনে বিরাজিত । আত্মার উদ্দেশ্যেই বলা হয় ভ্রুকুটির মাঝে জ্বলজ্বল করে আশ্চর্য এক নক্ষত্র। এমন তো বলা হয় না পরমপিতা পরমাত্মা শিব জ্বলজ্বল করে। কিন্তু আত্মা জ্বলজ্বল করে। আত্মা আত্মা হল ভাই-ভাই, তাই বলা হয় হিন্দুস্তানী, পাকিস্তানী, বৌদ্ধ সবাই হল ভাই-ভাই। কিন্তু ভাই কথাটির অর্থ বোঝে না। তোমাদের নিজেদের মধ্যে কতখানি স্নেহ থাকা উচিত। সত্যযুগে পশুদের নিজেদের মধ্যেও অনেক স্নেহ থাকে। তোমরা হলে ভাই-ভাই তো কতখানি স্নেহ থাকা উচিত। কিন্তু দেহ অভিমানে এলে একে অপরের প্রতি বিরক্ত হয়ে যায়। তারপরে একে অপরের গ্লানি করে। এই সময় তো বাচ্চারা, তোমাদের নিজেদের মধ্যে ক্ষীরখন্ড হয়ে চলতে হবে। এই সময় যে তোমরা এইরূপ পুরুষার্থ কর ফলে - ২১ জন্ম ক্ষীরখন্ড হয়ে চল। যদি কোনো উল্টো কথা মুখ দিয়ে বেরিয়ে যায় তো অবিলম্বে বলা উচিত আই এম সরি কারণ আমাদের বাবার আদেশ আছে যে খুব মিষ্টি হয়ে থাকতে হবে। যারা আদেশ মানবে না তাদের বলা হবে ঈশ্বরের অবজ্ঞাকারী। কখনও কাউকে দুঃখ দেবে না। বাকি বাবা জানেন যদি সৈনিকের সার্ভিস হয় তাহলে সত্য কর্ম করতে কাউকে মারতেও হয়। মিলিটারি তে যারা থাকে তাদের যুদ্ধ করতে হয়। শুধুমাত্র নিজেকে আত্মা ভেবে মামেকম্ স্মরণ করো তো ভব সাগর পার হয়ে যাবে। এই পুরানো দুনিয়াতে কি আর দেখবে। আমাদের তো নতুন দুনিয়া দেখতে হবে। এখন তো শ্রীমৎ দ্বারা নতুন দুনিয়া স্থাপন হচ্ছে, এর জন্য আশীর্বাদের কোনো কথা নেই। টিচার কখনও আশীর্বাদ করেন না। টিচার তো পড়ান। যে যত পড়ে, সহবত্ (ম্যানার্স) ধারণ করে, তেমন পদ প্রাপ্ত করে। এতেও এমন আছে। নিজের রেজিস্টার নিজেকেই দেখতে হবে যে আমরা কিভাবে চলি। কেউ তো খুব মিষ্টি হয়ে চলে । সব কথায় রাজি থাকে। বাবা বলেছেন তোমরা নিজেদের মধ্যে কাছারী করে পরামর্শ করো যে কোনো ভুল তো হয় না ? কিন্তু যারা কাছারী করবে তাদের বুঝতে হবে - আমরা আত্মা, আমরা নিজের ভাইকে জিজ্ঞাসা করি এই শরীর দ্বারা কোনো ভুল হয় নি তো ? কাউকে দুঃখ দাও নি তো ? বাবা কখনও দুঃখ দেন না। বাবা তো সুখধামের মালিক করেন। বাবা তো হলেন দুঃখ হর্তা সুখ কর্তা। অতএব তোমাদেরও সবাইকে সুখ দিতে হবে। উল্টো কথা কখনও বলবে না। কখনও আইন নিজের হাতে নেবে না । তোমাদের কাজ হল রিপোর্ট করা। খুব মধুর হতে হবে। যত মধুর হবে তত বাবাকে প্রত্যক্ষ করবে। বাবা হলেন স্নেহের সাগর, তোমরাও স্নেহ ভাব দিয়ে বোঝাবে তবে তোমাদের বিজয় হবে। বাবা বলেন আমার প্রিয় বাচ্চারা কখনও কাউকে দুঃখ দেবে না। এমন অনেকে আছে যারা উল্টো পাল্টা ভুল কাজ করে, এর কথা ওকে লাগায়, ঈর্ষা করে, অন্যদের সাথে প্রতিযোগিতা করে... এই সবই হল বিকর্ম, তাইনা।



বাবা বলেন যারা খুব বিশ্বস্ত, সার্ভিসেবল বাচ্চা হবে তাদেরকে অবশ্যই আমার মিষ্টি লাগবে, আমি তাদের স্নেহ স্পর্শও দেব। অন্যদের নয়। তখন বলবে এদের বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়। তারা বড় লোক । এমনভাবে অনেক ক্ষতি করে। উল্টো পাল্টা কাজ করে অন্যের দোষ ধরে । বাবার কাছে সমাচার আসে অমুকে বিড়ি খাওয়া ছাড়ছে না .... বাবা বলেন তাদেরও বোঝাতে হয় যে তোমরা যোগ বল দ্বারা বিশ্বকে পবিত্র করতে পারো তবে এই সব ছাড়তে পারো না ? বাবাকে স্মরণ করো। বাবা হলেন অবিনাশী সার্জেন। এমন ওষুধ দেবেন যে সব দুঃখ দূর হয়ে যাবে। আচ্ছা !



মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ, ভালবাসা আর সুপ্রভাত। ঈশ্বরীয় পিতা ওঁনার ঈশ্বরীয় সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্যে মুখ্য সার :-

১. দেহ অভিমানে এসে একে অপরকে বিরক্ত করবে না, সব কথায় আনন্দে থাকতে হবে। কখনও অন্যের কথা লাগবে না, ঈর্ষা, বা প্রতিযোগিতা করবে না। কাউকে দুঃখ দেবে না। নিজেদের মধ্যে খুব মিষ্টি, ক্ষীরখন্ড হয়ে থাকতে হবে।

২. সকাল সকাল উঠে ভালোবেসে বাবাকে স্মরণ করতে হবে। নিজের সঙ্গে কথা বলতে হবে, বিচার সাগর মন্থন করে বাবাকে ধন্যবাদ জানাতে হবে।

বরদান:-

হৃদয় এবং মন দুইয়ের ব্যালান্স দ্বারা সেবা কার্য সম্পন্নকারী সদা সফলতার প্রতিমূর্তি ভব

অনেকবার বাচ্চারা সেবায় শুধুমাত্র বুদ্ধি ব্যবহার করে কিন্তু হৃদয় এবং মন উভয়কে মিলিয়ে সেবা কর, তাহলে সেবায় সফলতার প্রতিমূর্তি হয়ে হবে। যারা শুধু বুদ্ধি দিয়ে করে তাদের বুদ্ধিতে কিছুক্ষণ বাবার স্মরণ থাকবে যে হ্যাঁ বাবা-ই করাবেন কিন্তু কিছুক্ষণ পরে আবার সেই আমিত্ব ভাব এসে যাবে। আর যারা হৃদয় এবং মনের ভারসাম্য রেখে সেবা করে, তাদের হৃদয়ে সদা বাবার স্মরণ থাকে। অন্তর দিয়ে সেবা করার ফল তো প্রাপ্ত হয়ই আর যদি দুইয়ের ভারসাম্য থাকে, তাহলে তো সদা সফলতা থাকবে ।

স্লোগান:-

সীমার ঊর্ধ্বে (বেহদে) থাকো, তাহলে সীমিত (হদের) বিষয় স্বতঃতই সমাপ্ত হয়ে যাবে ।