০৮-০৯-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ২৩-০১-৮৫ মধুবন
দিব্য জন্মের গিফ্ট - 'দিব্য নেত্র
আজ ত্রিকালদর্শী বাবা তাঁর ত্রিকালদর্শী, ত্রিনেত্রী বাচ্চাদের দেখছেন l দিব্য বুদ্ধি এবং দিব্য নেত্র, যাকে ত্রিনেত্র বলা হয়, সেই নেত্র কতদূর পর্যন্ত স্পষ্ট এবং শক্তিশালী হয়েছে এবং প্রত্যেকের দিব্য নেত্রের শক্তির পার্সেন্টেজ কি সেটাই বাপদাদা দেখছেন l বাপদাদা তোমাদের সবাইকে শতকরা ১০০ ভাগ শক্তিশালী দিব্য নেত্র জন্মের গিফ্ট হিসেবে দিয়েছেন l বাপদাদা কাউকে নম্বর অনুক্রমে শক্তিশালী নেত্র দেননি, কিন্তু প্রত্যেক বাচ্চা নিজের নিজের নিয়ম অনুযায়ী, পূর্বাহ্ণে নেওয়া সতর্কতা অনুযায়ী এবং অ্যাটেনশন অনুযায়ী এই দিব্য নেত্রকে প্র্যাকটিক্যাল কার্যে প্রয়োগ করেছে, সেইজন্য দিব্য নেত্রের শক্তি কারও সম্পূর্ণ শক্তিশালী, কারও দিব্য নেত্রের শক্তি পার্সেন্টেজে থেকে গেছে l বাপদাদার থেকে তোমরা এই তৃতীয় নেত্র, দিব্য নেত্র লাভ করেছ l ঠিক যেমন আজকাল সায়েন্সের সাধন দূরবীন দূরের বস্তুকে কাছে এবং স্পষ্ট অনুভব করায়, সেরকমই এই দিব্য নেত্রও দিব্য দূরবীনের কাজ করে l সেকেন্ডে তোমরা পরমধাম পৌঁছাতে পার, কতো দূরে ! কতো মাইল দূরে তা' তোমরা গুনতেও পারবে না, তবুও কতো কাছে আর স্পষ্টভাবে দেখা যায় l সায়েন্সের সাধন এই সাকার সৃষ্টির সূর্য, চাঁদ, তারাও তোমরা দেখতে পার l কিন্তু এই দিব্য নেত্র তিন লোক এবং তিন কাল দেখতে পারে l এই দিব্য নেত্রকে অনুভবের নেত্রও বলে l অনুভবের আঁখি, যে আঁখি দিয়ে ৫ হাজার বছরের সবকিছু এত স্পষ্ট দেখা যায় যে যেন গতকালের বিষয় l ৫ হাজার বছর আর গতকালের মধ্যে বিস্তর ফারাক ! তাহলে তোমরা দূরের যা কিছু সবই কাছে আর স্পষ্টভাবে দেখতে পাও, তাই না ! অনুভব করতে পার কাল তোমরা পূজ্য দেব আত্মা ছিলে আর আগামী দিনে আবারও হবে l আজ তোমরা ব্রাহ্মণ, আগামী দিনে দেবতা l সুতরাং, আজ আর কালকের ব্যাপার সহজ হয়ে গেল, তাই না ! শক্তিশালী নেত্রের বাচ্চারা নিজেদের 'ডবল মুকুটধারী' সাজে সজ্জিত স্বরূপ তাদের সামনে সদা স্পষ্ট দেখতে থাকে l ঠিক যেমন কেতাদুরস্ত পোশাক সামনে দেখলে মনে হয় এখনই এখনই পরে নিই, ঠিক সেইরকমই নিজেদের দৈবী শরীর রূপী বস্ত্র সামনে দেখছ, তাই না ? অর্থাৎ, কাল তোমরা এই বস্ত্র ধারণ করছই l এটাই দেখতে পাও তোমরা, পাও না ? এটা তৈরি হচ্ছে নাকি তৈরি হয়েছে এমনই সামনে দেখতে পাও ? যেমন, ব্রহ্মাবাবাকে দেখেছ তাঁর শ্রীকৃষ্ণ স্বরূপের ভবিষ্যৎ বস্ত্র কিভাবে তিনি সদা সামনে রাখতেন ! ঠিক সেইভাবে, তোমাদের শক্তিশালী নেত্র দিয়ে তোমরা তোমাদের বস্ত্র স্পষ্টভাবে সামনে দেখতে পাও ? এক মুহূর্তে তোমরা ফরিস্তা তো পরমুহূর্তে সেই ফরিস্তাই দেবতা l তোমাদের নেশাও আছে আর দিব্য নেত্র দ্বারা সাক্ষাৎ দেবতা স্বরূপের দৃষ্টিও আছে l তাহলে, তোমাদের নেত্র ততটা শক্তিশালী ? নাকি কিছু দেখার শক্তি কম হয়ে গেছে ? স্থূল নেত্রের শক্তি কম হয়ে গেলে যেমন স্বচ্ছ জিনিসও পর্দার অন্তরালে বা মেঘের অভ্যন্তরে মনে হয়, ঠিক একইভাবে, তোমাদের দেবতা তো হতে হবে, হয়েও তো ছিলে কিন্তু কি ছিলে, কেমন ছিলে - এই 'ছিল' পর্দার ভিতরে দৃশ্যমান নয় তো ? স্পষ্ট তো ? নিশ্চয়ের পর্দা এবং স্মৃতির মণিমালা দুইই শক্তিশালী, তাই না ! নাকি স্মৃতির মণিমালা তো ঠিক আছে, কিন্তু (পূর্বে দেবী দেবতা ছিলাম) পর্দা দুর্বল ! দু'য়ের একটিও যদি দুর্বল থাকে, তবে তা' স্পষ্ট হবে না l সুতরাং, চেক কর অথবা চেক করাও তোমাদের নেত্রশক্তির কোথাও ঘাটতি হয়নি তো ! জন্ম থেকে শ্রীমৎ রূপী সতর্কতা যদি অনুসরণ করে এসেছ তো তোমাদের নেত্র সদা শক্তিশালী হবে l শ্রীমৎ পালনে খামতি থাকলে তখন তোমাদের শক্তিও কম হবে l তারপরে শ্রীমতের আশীর্বাদ বলো, ওষুধ বলো বা শ্রীমতে সংযমপূর্বক থাকা বলো, যা-ই বলো সেটা করলে শক্তিশালী হয়ে যাবে l অতএব, এই নেত্র হলো দিব্য দূরবীন l
এই নেত্র শক্তিশালী যন্ত্রও, যার দ্বারা যে যেমন তার সেই আত্মিক রূপ এবং বিশেষত্ব তোমরা সহজভাবে স্পষ্ট দেখতে পার l শরীরের অভ্যন্তরে বিরাজমান গুপ্ত আত্মাকে এমনভাবে দেখতে পার ঠিক যেমন স্থূল নেত্র দ্বারা স্থূল শরীরকে দেখ l সেইরকম স্পষ্টভাবে আত্মাকে দেখতে পাও, নাকি শরীর দেখতে পাও ? তোমাদের দৈবী নেত্র দ্বারা একমাত্র দিব্য সূক্ষ্ম আত্মাই তোমরা দেখতে পার এবং প্রত্যেক আত্মার বিশেষত্বই শুধু দেখা যাবে l যেমন নেত্র দিব্য তেমনই বিশেষত্ব অর্থাৎ গুণও দিব্য l অপগুণ হলো দুর্বলতা l দুর্বল নেত্র দুর্বলতাই দেখে l যেমন, স্থূল নেত্র দুর্বল হলে কালো কালো দাগ নজরে পড়ে, ঠিক একইভাবে, দুর্বল নেত্র অপগুণের কালোভাবই দেখে l বাপদাদা তোমাদের দুর্বল নেত্র দেননি l তোমরা নিজেরাই তা' কমজোর বানিয়েছ l বাস্তবে এই শক্তিশালী যন্ত্ররূপী নেত্র ঘুরতে ফিরতে সবসময় ন্যাচারালভাবে শুধু আত্মিক রূপই দেখে l এটা দেখতে তোমাদের পরিশ্রম করতে হয় না যে শরীর নাকি আত্মা ! 'এটা নাকি ওটা' - এই সংশয়ই দুর্বল নেত্রের লক্ষণ l সায়েন্টিস্টরা যেমন শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপ (অনুবীক্ষণ যন্ত্র) দ্বারা সব জার্মস স্পষ্ট দেখতে পারে, ঠিক একইভাবে এই দিব্য শক্তিশালী দিব্য নেত্র মায়ার অতি স্বরূপকে স্পষ্ট দেখতে পারে l সেইজন্য জার্মসকে বাড়তে দেয় না, বরং ধ্বংস করে l কারও মায়ার রোগ থাকলে তারা আগে থেকেই জেনে সেইসব ধ্বংস করে সদা নিরোগী থাকে l
দিব্য নেত্র এমনই শক্তিশালী l এই দিব্য নেত্র দিব্য টিভিও l আজকাল টিভি সবারই খুব ভালো লাগে, তাই না ! একে টিভি বলো বা দূরদর্শন, এই টিভির মাধ্যমে স্বর্গের সব জন্ম তোমরা দেখতে পার, অর্থাৎ নিজের ২১ জন্মের দিব্য ফিল্ম দেখতে পার l তোমাদের রাজ্যের সুন্দর দৃশ্য দেখতে পার l প্রত্যেক জন্মের আত্ম-কাহিনী দেখতে পার l তোমরা তোমাদের রাজমুকুট, সিংহাসন, রাজ্যভাগ্য দেখতে পার l এটা তোমরা দিব্য দর্শন বলো বা দূরদর্শন, দিব্য দর্শনের নেত্র তো শক্তিশালী, না ? যখন তোমরা ফ্রী থাক, সেই সময় এই ফিল্ম দেখ, আজকালকার ডান্স দেখো না, সেটা ডেঞ্জার ডান্স l ফরিস্তাদের ডান্স দেখ, দেবতাদের ডান্স দেখ l স্মৃতির সুইচ ঠিক আছে, তাই না ? যদি সুইচ ঠিক না হয়, তবে ফিল্ম চালু করলেও কোনকিছুই দেখতে পাবে না l বুঝেছ, এই নেত্র কতো শ্রেষ্ঠ ! আজকাল যখন কোন বস্তু ইনভেনশন করে, সেইসবের অধিকাংশ (মেজরিটি ) এমনভাবে পরিকল্পিত হয় যাতে একটা বস্তু বিভিন্ন কাজে আসে l ঠিক সেইরকমই এই দিব্য নেত্র সফলভাবে অনেক কার্য সমাধা করে l মাঝে মাঝে বাপদাদা বাচ্চাদের দুর্বলতার অনুযোগ (কম্পলেন্ট) শুনে এটাই বলেন, দিব্য বুদ্ধি এবং দিব্য নেত্র লাভ করেছ, একে বিধিপূর্বক সদা ইউজ করতে থাক, তবে না থাকবে কোনকিছুর ব্যাপারে চিন্তা করার ফুরসৎ, না দেখার l না আর কিছু চিন্তা করবে, না কিছু দেখবে l সুতরাং, কোনও কম্পলেন্ট থাকতে পারে না l চিন্তা আর দেখা এই দুই বিশেষ আধার, কমপ্লিট হওয়ার বা কম্পলেন্ট করার l সবকিছু দেখা এবং শোনাকালীন সদা দিব্য ভাবে ভাবো, যেমন তোমার ভাবনা, তেমনই তোমার করণ হয়, সেইজন্য এই দুই দিব্য প্রাপ্তি সদা সাথে রাখ l সহজ, তাই না ! তোমরা শক্তিশালী, কিন্তু কি হয়ে যাও তোমরা ? যখন স্থাপনা শুরু হয়, তখন ছোট ছোট বাচ্চারা ডায়লগ (সংলাপ ) বলতো ভোলা ভাইয়ের সম্বন্ধে l তোমরা সমর্থ কিন্তু ভোলা ভাই হয়ে যাও l সুতরাং, ভোলা ভাই হ'য়োনা অর্থাৎ এতটাও আলাভোলা হ'য়োনা ! সদা শক্তিশালী হও এবং অন্যকেও শক্তিশালী বানাও l বুঝেছ - আচ্ছা l
যারা সদা দিব্য বুদ্ধি আর দিব্য নেত্র কার্যে প্রয়োগ করে, সদা দিব্য বুদ্ধি দ্বারা শ্রেষ্ঠ মনন, দিব্য নেত্র দ্বারা দিব্য দৃশ্য দেখতে মগ্ন থাকে, সদা নিজের ভবিষ্যৎ দেব স্বরূপ স্পষ্টভাবে অনুভব করে, সদা আজ আর কাল এমন নিকটস্থ অনুভব করে, সেই শক্তিশালী, দিব্য নেত্রপ্রাপ্ত ত্রিনেত্রী, ত্রিকালদর্শী বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l
*পার্সোনাল সাক্ষাৎকার*
১) *সহজ যোগী হওয়ার বিধি -* তোমরা সবাই সহজযোগী, তাই না ! সদা বাবার সাথে সর্ব সম্বন্ধের স্নেহে নিমজ্জমান l সর্ব সম্বন্ধের স্নেহই সবকিছু সহজ করে দেয় l যেখানে স্নেহের সম্বন্ধ, সেখানে সবকিছু সহজ, আর যা সহজ তা' অবিচল l তাহলে, এমন সব সহজযোগী আত্মা বাবার সকল স্নেহী সম্বন্ধের অনুভূতি কর ? উদ্ধবসম (কৃষ্ণ সখা তথা মন্ত্রী)
হয়েছ নাকি গোপীসম ? উদ্ধ্বব শুধু জ্ঞান বর্ণন করেছে, আর গোপী গোপিনীরা প্রভুপ্রেমের অনুভব করে l সুতরাং বিশেষত্ব হলো সর্ব সম্বন্ধের অনুভব থাকা l এই সঙ্গমযুগে এই বিশেষ অনুভব করাই বরদান প্রাপ্ত করা l জ্ঞান শোনা বা শোনানো আলাদা বিষয় l সম্বন্ধ পরিপূরণ করা এবং সম্বন্ধের শক্তি দ্বারা নিরন্তর একমনে মগ্ন থাকা আলাদা বিষয় l সুতরাং, *সদা সর্ব সম্বন্ধের আধারের সহযোগী ভব l*
এই অনুভব বাড়াতে থাক l একমনা হওয়ার এই অবস্থা গোপ গোপীদের বিশেষত্ব l একনিবিষ্ট হওয়া একটা আলাদা ব্যাপার, কিন্তু একনিবিষ্ট চিত্তে ভাব-বিভোর হওয়া এক শ্রেষ্ঠ অনুভব l
২) *উঁচু স্থিতি বিঘ্নের প্রভাবের ঊর্ধ্বে-* কখনো কোনও বিঘ্নের দ্বারা তোমরা প্রভাবিত হও না, তাই না ? কারও উঁচু স্থিতি হলে, সে তার উঁচু স্থিতি দ্বারা বিঘ্নের যে কোন প্রভাবের ঊর্ধ্বে হয়ে যায় l যখন কেউ স্পেসে যায় তো সে উঁচুতে যায়, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের প্রভাব থেকে ঊর্ধ্বে l এইভাবে যে কোনও বিঘ্নের প্রভাব থেকে তোমরা সদা সেফ থাক l যারা ভালোবাসায় ডুবে থাকে না, তাদের যে কোনরকম পরিশ্রমের অনুভব করতে হয় l সুতরাং, সর্ব সম্বন্ধের স্নেহের অনুভূতিতে থাক l স্নেহ আছে, কিন্তু সেটা এখন ইমার্জ হতে দাও l তোমরা অমৃতবেলায় বাবাকে শুধু স্মরণ ক'রে তারপরে তোমাদের কাজে বিজি হয়ে গেলে স্নেহ মার্জ হয়ে যায় l ইমার্জ রূপে রাখলে তোমরা সদা শক্তিশালী থাকবে l
*বাছাই করা বিশেষ অব্যক্ত মহাবাক্য*
সবার জন্য শুভচিন্তক হও l যে সকলের শুভচিন্তক, তার সকলের সহযোগ নিজে থেকেই প্রাপ্ত হয় l শুভ-চিন্তক-ভাবনা অন্যের মনে সহযোগের ভাবনা সহজভাবে নিজে থেকেই উৎপন্ন করে l স্নেহই সহযোগী বানায় l সুতরাং, সদা শুভ-চিন্তনে সম্পন্ন থাক, শুভ-চিন্তক হয়ে সবাইকে স্নেহী, সহযোগী বানাও l প্রয়োজনের সময় যারা যত সহযোগী হয়েছে - তাদের জীবন দ্বারা হোক বা সেবা দ্বারা, ড্রামা অনুসারে তারা বিশেষ শক্তি লাভ করে l নিজের পুরুষার্থ তো আছেই, উপরন্তু তারা এক্সট্রা শক্তি লাভ করে l সেবার প্ল্যানে সম্পর্কে অন্যদের যত কাছে আনবে, ততই সেবার প্রত্যক্ষ রেজাল্ট দেখা যাবে l বার্তা
(সন্দেশ) দেওয়ার সেবা তো তোমরা করেই আসছ, আর তা' তোমাদের ক্রমাগত করে যেতে হবে, কিন্তু বিশেষ এই বছর, শুধু বার্তাই দিও না, তাদের সহযোগী বানাতে হবে অর্থাৎ তাদেরকে সম্পর্কে কাছে নিয়ে আসতে হবে l শুধুমাত্র এক ঘন্টার জন্য বা ফর্ম ভরার সময় অবধি সহযোগী বানানো নয়, বরং সহযোগের মাধ্যমে তাদের সম্পর্ক সম্বন্ধের কাছে নিয়ে আসতে হবে l
তোমরা যে সেবাই কর, লক্ষ্য এটাই রাখতে হবে, তারা এমনভাবে সহযোগী হোক, তোমরা নিজেরা যেন 'মাইট' হয়ে যাও আর তারা 'মাইক' হয়ে যায় l সুতরাং, *সেবার লক্ষ্য 'মাইক' প্রস্তুত করা, যারা তাদের অনুভবের আধারে তোমাদের বা বাবার জ্ঞান প্রত্যক্ষ করবে l*
এমন মাইক প্রস্তুত কর, যে সহজে নিজে থেকেই অন্যের ওপরে প্রভাব বিস্তার করতে পারে l লক্ষ্য রাখ, তোমাদের এনার্জি ব্যয় করার পরিবর্তে অন্যের এনার্জি এই ঈশ্বরীয় কার্যের জন্য ব্যবহার করবে l সব দেশে যে কোন ক্ষেত্রে, সহযোগিতা করার ছোট- বড় সংগঠন তোমরা পেতে পার l বর্তমান সময়ে, এমন অনেক সংস্থা আছে, যাদের কাছে এনার্জি আছে, কিন্তু সেটা ইউজ করার পদ্ধতি তাদের জানা নেই l তাদের নজরেও এমন কেউ নেই যে তা' দিয়ে কাজ করে l তারা অনেক ভালোবাসার সাথে তোমাদের সহযোগ দেবে, কাছে আসবে l আর তোমাদের ন'লাখ প্রজাতেও বৃদ্ধি হয়ে যাবে l কিছু উত্তরাধিকারও বেরোবে, কিছু প্রজা বেরোবে l এখন পর্যন্ত যাদের সহযোগী বানিয়েছ তাদের উত্তরাধিকার বানাও l একদিকে উত্তরাধিকার বানাও, অপরদিকে মাইক বানাও l বিশ্ব- কল্যাণকারী হও l সহযোগিতার নিদর্শন রূপে যেমন হাতে হাত ধরে আসছে দেখানো হয়, তাই না ! অতএব, সদা বাবার সহযোগী হওয়াই হলো সদা তোমাদের হাত তাঁর হাতে রেখে বুদ্ধিতে সদা তাঁর সঙ্গে থাকা l
যে কোনও কাজ করো তো সেটা নিজে করার ক্ষেত্রেও উদারহৃদয় আর অন্যকে সহযোগী বানানোর ক্ষেত্রেও উদারহৃদয় হও l কখনও নিজের প্রতি বা সহযোগী আত্মাদের প্রতি, সাথীদের প্রতি সঙ্কুচিত হৃদয় হ'য়োনা l এইরকম গাওয়া হয়েছে যে উদারহৃদয় হ'লে ধূলাও সোনা হয়ে যায়, দুর্বল সাথী শক্তিশালী হয়, যে সাফল্য অসম্ভব তা'ই সম্ভব হয়ে যায় l এমন অনেক আত্মা, যারা চট করে সহজযোগী হবে না, কিন্তু তাদের সহযোগ নিতে থাক আর সহযোগী বানিয়ে যাও l সুতরাং, সহযোগের সাথে এগিয়ে যেতে যেতে সহযোগই তাদের সহজযোগী বানিয়ে দেবে l অতএব, সহযোগী আত্মাদের এখন স্টেজে নিয়ে এসো, তাদের সহযোগ সফল হতে দাও l
বরদান:-
ভূমি, নাড়ি এবং সময় সব কিছু বিবেচনা করে সত্যজ্ঞানকে সকলের কাছে প্রত্যক্ষ করিয়ে নলেজফুল ভব
বাবার এই নতুন জ্ঞান সত্য জ্ঞান, আর এই নতুন জ্ঞান থেকেই নতুন দুনিয়ার স্থাপনা হয়, এই অথরিটি এবং নেশা স্বরূপে ইমার্জ হতে দাও l কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে নতুন আসা কাউকে নতুন জ্ঞানের ব্যাপারে শুনিয়ে তাকে কিংকর্তব্যবিমূঢ় করে দিলে অর্থাৎ সব তালগোল পাকিয়ে ফেললে l ভূমি, নাড়ি আর সময় বিবেচনা করার পরে জ্ঞান দিও, এটাই নলেজফুল আত্মার লক্ষণ l আত্মার ইচ্ছা অনুমান কর, নাড়ি উপলব্ধি কর, ভূমি তৈরি কর, কিন্তু অন্তঃকরণে সত্যের নির্ভীকতার শক্তি অবশ্যই থাকতে হবে, তখনই সত্য জ্ঞান প্রত্যক্ষ করাতে পারবে l
স্লোগান:-
'আমার' বলা অর্থাৎ ছোট বিষয়কে বড় করা, সেখানে 'তোমার' বলা অর্থাৎ পাহাড়সম বিষয়কে তুলোয় পরিণত করা l