27.08.2019
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তোমরা ফিরে যেতে পারবে না, তাই বাবাকে স্মরণ করে আত্মার
ব্যাটারীকে চার্জ করো আর স্বাভাবিকভাবেই (ন্যাচারাল) পবিত্র হয়ে যাও"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা, বাবা
তোমাদের ঘরে যাওয়ার পূর্বে কোন্ কথা শেখান ?
উত্তরঃ -
বৎস, ঘরে
ফেরার পূর্বে জীবন্মৃত বা মরজীবা অবস্থা প্রাপ্ত করতে হবে, তাই বাবা প্রথম থেকেই
তোমাদের দেহ-অভিমানের উর্ধ্বে নিয়ে যাওয়ার অভ্যাস করান অর্থাৎ মৃত্যুবরণ করা শেখান।
উর্ধ্বে গমন অর্থাৎ মৃত্যুবরণ। যাওয়া আর আসার জ্ঞান তোমরা এখনই পাও। তোমরা জানো যে,
আমরা অর্থাৎ আত্মারা উপর থেকে আসি, আর এই শরীর দ্বারা নিজ ভূমিকা পালন করি। বাস্তবে
আমরা ওখানকার (পরমধাম) বাসিন্দা, এখন ওখানেই ফিরে যেতে হবে।
ওম্ শান্তি ।
নিজেকে আত্মা
নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করতে কোনো কষ্ট নেই, এতে দমে যাওয়া উচিত নয়। একেই বলা হয়
সহজ-স্মরণ। সর্বপ্রথমে নিজেকে আত্মাই মনে করতে হবে। আত্মাই শরীর ধারণ করে (নিজ)
ভূমিকা পালন করে। সব সংস্কারও আত্মাতেই থাকে। আত্মা স্বতন্ত্র। বাবা বলেন, নিজেকে
আত্মা নিশ্চয় করে আমাকে অর্থাৎ বাবাকে স্মরণ কর। এই নলেজ এইসময়েই তোমরা পাও, পরে আর
পাবে না। তোমাদের এই শান্তিতে বসার কথা দুনিয়া জানে না, একে বলা হয় ন্যাচারাল শান্তি।
আমরা অর্থাৎ আত্মারা উপর থেকে এসেছি, এই শরীর দ্বারা (নিজ) ভূমিকা পালন করতে।
বাস্তবে আমরা আত্মারা ওখানকার নিবাসী। তোমাদের বুদ্ধিতে এই জ্ঞান রয়েছে। এছাড়া এর
মধ্যে কোনো হঠযোগের ব্যাপার নেই, খুবই সহজ। এখন আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের ঘরে ফিরে
যেতে হবে কিন্তু পবিত্র না হলে যেতে পারবে না। পবিত্র হওয়ার জন্য পরমাত্মা পিতাকে
স্মরণ করতে হবে। স্মরণ করতে-করতেই পাপ খন্ডিত হয়ে যাবে। এতে কষ্টের কোন কথাই নেই।
যখন তোমরা হাঁটতে যাও তখনও বাবার স্মরণে থেকো। এখনই তোমরা স্মরণের দ্বারা পবিত্র হতে
পারবে। ওখানে ওটা হলো পবিত্র দুনিয়া। ওখানে ওই পবিত্র দুনিয়ায় এই জ্ঞানের কোন
প্রয়োজনই থাকে না কারণ ওখানে কোন বিকর্ম হয় না। এখানে স্মরণের দ্বারাই বিকর্ম বিনাশ
করতে হবে। যেমন এখানে চলো, ওখানেও তো তোমাদের আচার-আচরণ তেমনই ন্যাচারাল হবে।
পুনরায় একটু-একটু করে নীচে নামতে থাকো। এমনও নয় যে, ওখানেও তোমাদের এই অভ্যাস করতে
হবে। অভ্যাস এখনই করতে হবে, ব্যাটারি এখনই চার্জ করে নিতে হবে, পুনরায় ধীরে-ধীরে
ব্যাটারী ডিস-চার্জ হয়েই যাবে। ব্যাটারী চার্জ করার জ্ঞান এখন এই একবারই পাওয়া যায়।
সতোপ্রধান থেকে তমোপ্রধান হতে তোমাদের কতখানি সময় লেগে যায়। শুরু থেকে একটু-একটু করে
ব্যাটারী কম হতে থাকে, মূললোকে(পরমধাম) তো আত্মারাই থাকে। শরীর তো থাকে না। তাই
স্বাভাবিকভাবেই সেখানে অধঃপতন বা ব্যাটারী (চার্জ) কম হওয়ার কোন কথাই নেই। মোটর(গাড়ি)
যখন চলবে তখনই তো তার ব্যাটারী কম হতে থাকবে। মোটর যদি দাঁড়িয়ে থাকে তাহলে কি তার
ব্যাটারী চলবে, না চলবে না। মোটর যখন চলবে তখনই ব্যাটারী চালু হবে। যদিও মোটরে
ব্যাটারী চার্জ হতে থাকে কিন্তু তোমাদের ব্যাটারী এখন একবারই এইসময়েই চার্জ হয়। যখন
তোমরা এখানে পুনরায় শরীর দ্বারা কর্ম কর তখন একটু-একটু করে ব্যাটারী কম হয়ে যায়।
প্রথমে বোঝাতে হবে যে, তিনি হলেন সুপ্রীম ফাদার, যাকে সর্ব আত্মারাই স্মরণ করে। হে
ভগবান বলে, তিনি পিতা, আমরা তাঁর সন্তান। বাচ্চারা, এখানে তোমাদের বোঝান হয় যে,
ব্যাটারী কিভাবে চার্জ করতে হয়। ঘুরতে-ফিরতেও বাবাকে স্মরণ কর তবেই সতোপ্রধান হয়ে
যাবে। কোন কথা না বুঝলে জিজ্ঞাসা করতে পারো। যদিও খুবই সহজ। ৫ হাজার বছর পর আমাদের
ব্যাটারী ডিস-চার্জ হয়ে যায়। বাবা এসে সকলের ব্যাটারী চার্জ করে দেন। বিনাশের সময়
সকলেই ঈশ্বরকে স্মরণ করে। মনে কর বন্যা হয়েছে, তখনও যারা ভক্ত হবে তারা ভগবানকে
স্মরণ করবে কিন্তু সেইসময় ভগবানের কথা স্মরণে আসতে পারে না। মিত্র-সম্বন্ধী,
ধন-দৌলতই স্মরণে আসে। যদিও 'হে ভগবান'- বলে কিন্তু সেও বলতে হয় তাই বলে। ভগবান হলেন
পিতা, আমরা ওঁনার সন্তান। এ তো জানেই না। তারা সর্বব্যাপীর উল্টো জ্ঞান পায়। বাবা
এসে সঠিক জ্ঞান দান করেন। ভক্তির ডিপার্টমেন্টই আলাদা। ভক্তিতে ঠোক্কর খেতে হয়।
ব্রহ্মার রাত তথা ব্রাহ্মণদের রাত। ব্রহ্মার দিন তথা ব্রাহ্মণদের দিন। এরকম তো বলা
হয় না যে, শূদ্রদের দিন, শূদ্রদের রাত। এই রহস্য বাবা বসে বোঝান। এ হলো অসীম জগতের
রাত বা দিন। এখন তোমরা দিনের(প্রকাশ) দিকে যাত্রা করেছ, রাত সম্পূর্ণ হয়েছে। এই কথা
শাস্ত্রতে রয়েছে। ব্রহ্মার দিন, ব্রহ্মার রাত বলে কিন্তু জানে না। তোমাদের বুদ্ধি
এখন অসীম জগতে চলে গেছে। এমন তো দেবতাদেরও বলা যেতে পারে -- বিষ্ণুর দিন, বিষ্ণুর
রাত কারণ বিষ্ণু আর ব্রহ্মার সম্পর্কও বোঝান হয়। ত্রিমূর্তির অক্যুপেশন কি -- তা আর
তো কেউ-ই বুঝতে পারে না। ভক্তরা তো ভগবানকে কূর্ম-মৎস্য (অবতার) বা জন্ম-মৃত্যুর
চক্রতে নিয়ে গেছে। রাধা-কৃষ্ণ ইত্যাদিরাও মানুষ। কিন্তু দৈবী-গুণসম্পন্ন। এখন
তোমাদের এমন হতে হবে। পরের(দ্বিতীয়) জন্মে দেবতা হয়ে যাবে। ৮৪ জন্মের যে
হিসেব-নিকেশ ছিল তা এখন পূর্ণ হয়েছে। পুনরায় রিপীট হবে। এখনই তোমরা এই শিক্ষা
প্রাপ্ত করছ।
বাবা বলেন -- মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, নিজেদের আত্মা নিশ্চয় কর। ওরা(লৌকিকে) বলেও
যে, আমরা অভিনেতা। কিন্তু আমরা আত্মারা উপর থেকে কিভাবে আসি -- এটা জানে না। নিজেকে
দেহধারীই মনে করে নেয়। আমরা আত্মারা উপর থেকে আসি, পুনরায় কবে যাব ? উপরে যাওয়া
অর্থাৎ মারা যাওয়া, শরীর পরিত্যাগ করা। মৃত্যু কে চায় ? এখানে তো বাবা বলেছেন --
তোমরা এই শরীরকে ভুলতে থাকো। তোমাদের জীবন্মৃত অবস্থা (বাবা-ই) শেখান, যা আর কেউ
শেখাতে পারে না। তোমরা এসেছই নিজেদের ঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য। ঘরে কিভাবে যাবে -- সেই
জ্ঞান এখনই পাওয়া যায়। মৃত্যুলোকে এ তোমাদের অন্তিম জন্ম। অমরলোক সত্যযুগকে বলা হয়।
বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে এখন রয়েছে -- আমরা অতি শীঘ্র ফিরে যাব। সর্বপ্রথমে তো
মুক্তিধামে যেতে হবে। এই শরীর-রূপী বস্ত্র এখানেই ছাড়তে হবে। তবেই আত্মা ঘরে ফিরে
যাবে। যেমন, পার্থিব জগতের অভিনেতারা নাটক সম্পূর্ণ হয়ে গেলে বস্ত্রাদি ছেড়ে ঘরের
পোশাক পরে ঘরে ফিরে যায়। তোমাদের এখন এই বস্ত্র পরিত্যাগ করে ফিরে যেতে হবে।
সত্যযুগে তো অল্পসংখ্যক দেবতা থাকে। এখানে তো অগণিত মানুষ। ওখানে তো হবেই এক আদি
সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম। এখন নিজেদের হিন্দু বলে। নিজেদের শ্রেষ্ঠ ধর্মকে ভুলে গেছে
তবেই তো দুঃখী হয়ে পড়েছে। সত্যযুগে তোমাদের কর্ম, ধর্ম শ্রেষ্ঠ ছিল, এখন কলিযুগে
ধর্ম ভ্রষ্ট। বুদ্ধিতে কি আসে যে, আমরা কিভাবে অধঃপতনে গেছি ? এখন তোমরা অসীম জগতের
পিতার পরিচয় দাও। অসীম জগতের পিতা এসে নতুন দুনিয়া স্বর্গ রচনা করেন। বলেন, 'মনমনাভব'।
এ গীতারই শব্দ । সহজ রাজযোগের জ্ঞানের নাম দেওয়া হয়েছে 'গীতা'। এ হলো তোমাদের
পাঠশালা। বাচ্চারা এসে পড়া পড়ে, তাই বলা হবে যে, এ হলো আমাদের বাবার পাঠশালা। যেমন
কোন বাচ্চার বাবা যদি প্রিন্সিপাল হয়, তখন সে বলবে যে, আমি আমার বাবার কলেজে পড়ি।
তার মাও যদি প্রিন্সিপাল হয় তখন বলবে যে, আমার মা-বাবা দুজনেই প্রিন্সিপাল। দুজনেই
পড়ায়। আমার মাম্মা-বাবার কলেজ। তোমরা বলবে, আমাদের মাম্মা-বাবার পাঠশালা। দুজনেই
পড়ায়। দুজনেই এই আধ্যাত্মিক কলেজ বা ইউনিভার্সিটি খুলেছে। দুজনেই একত্রে পড়ায়।
ব্রহ্মা দত্তক নিয়েছে, তাই না। এ হলো অতি রহস্যময় জ্ঞানের কথা। বাবা কোন নতুন কথা
বোঝান না। কল্প-পূর্বেও একথা বুঝিয়েছিলেন। হ্যাঁ, নলেজ এত যে, তা দিন-দিন সূক্ষ্ম
হতে থাকে। দেখ, আত্মার কথা এখন তোমাদের কিভাবে বোঝান হয়। এত ছোট আত্মায় ৮৪ জন্মের
পার্ট ভরা থাকে। তা কখনো বিনাশপ্রাপ্ত হয় না। আত্মা অবিনাশী তাই তার ভুমিকা (পার্ট)
অবিনাশী। আত্মা কর্ণ দ্বারা শ্রবণ করছে। শরীর আছে তাই তার ভূমিকাও রয়েছে। শরীর থেকে
আত্মা পৃথক হয়ে গেলে তখন আর জবাব পাওয়া যায় না। এখন বাবা বলেন -- হে বৎসগন, এখন
তোমাদের ঘরে ফিরে যেতে হবে। এই পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ যখন আসে তখনই ফিরে যেতে হয়, এতে
মুখ্যতঃ পবিত্রতা চাই। শান্তিধামে পবিত্র আত্মারাই থাকে। শান্তিধাম আর সুখধাম দুই-ই
হলো পবিত্রধাম। ওখানে শরীর নেই। আত্মা পবিত্র, ওখানে ব্যাটারী ডিসচার্জ হয় না। এখানে
শরীর ধারণ করলে (আত্মা-রূপী) মোটর চালু হয়। মোটর দাঁড়িয়ে থাকলে পেট্রোল কি কম হয়ে
যায়, না হয় না। এখন তোমাদের আত্মাদের জ্যোতি অনেক কম হয় গেছে। সম্পূর্ণ নিভে যায়
না। যখন কেউ মারা যায় তখন প্রদীপ জ্বালানো হয়। তারপরে তাকে অতি সন্তর্পণে রাখা হয়
যেন নিভে না যায়। আত্ম-জ্যোতি কখনো নিভে যায় না, এ তো অবিনাশী। এইসব কথা বাবা বসে
বোঝান। বাবা জানেন যে, এরা অতি মিষ্টি বাচ্চা, এরা সকলেই কামচিতায় বসে জ্বলে-পুড়ে
ভস্ম হয়ে গেছে। পুনরায় এদের জাগরিত করে। সম্পূর্ণ তমোপ্রধান মৃতবৎ হয়ে পড়েছে। বাবাকে
চেনেই না। মানুষ এখন আর কোনো কর্মের নয়। *মানুষের মাটি (শরীরের ভস্ম) কোনো কার্যে
লাগে না। এমন নয় যে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ভস্ম কোনো কাজে লাগে, কিন্তু গরীবদেরটা নয়।
শরীর-রূপী মাটি তো মাটিতেই বিলীন হয়ে যায়, তা সে যেই হোক না কেন। কেউ জ্বালিয়ে দেয়,
কেউ কবর-বন্দী করে। পার্সিরা কুয়োর উপর রেখে দেয়, আর পাখিরা এসে মাংস খেয়ে নেয়।
তারপর হাড়-গোড় সব নীচে গিয়ে পড়ে। এগুলো তবুও কোন কার্যে লাগে। দুনিয়ায় তো অসংখ্য
মানুষ মারা যাচ্ছে। এখন তোমাদের নিজে থেকেই শরীর ত্যাগ করতে হবে। তোমরা এখানে এসেছই
শরীর পরিত্যাগ করে ঘরে ফিরে যেতে অর্থাৎ মৃত্যুবরণ করতে। তোমরা আনন্দের সাথে ঘরে
ফিরে যাও কারণ জানো যে, আমরাই জীবনমুক্তিতে যাবো*।
যারা যেমন ভূমিকা পালন করেছিল, শেষ পর্যন্ত সেটাই পালন করবে। বাবা পুরুষার্থ করাতে
থাকবে, সাক্ষী হয়ে দেখতে থাকবে। এ তো বুঝবার মতো বিষয়, এতে ভয়ের কোন কারণ নেই। আমরা
স্বর্গে যাওয়ার জন্য নিজেরাই পুরুষার্থ করে শরীর ত্যাগ করি। বাবাকে স্মরণ করতে হবে
তবেই অন্তিম সময়ে সদ্গতি হয়ে যাবে (অন্ত মতি সো গতি ), এতে পরিশ্রম আছে। প্রত্যেক
পড়াতেই পরিশ্রম আছে। ভগবানকে এসে পড়াতে হয়। অবশ্যই পড়া সর্বাপেক্ষা উর্ধ্বে (বড়),
এতে আবার দৈবী-গুণও চাই। লক্ষ্মী-নারায়ণের মতো এমন হতে হবে, তাই না। এঁনারা সত্যযুগে
ছিলেন। এখন আবার তোমরা সত্যযুগী দেবতা হতে এসেছ। এইম অবজেক্ট কত সহজ। ত্রিমূর্তিতেও
এ পরিষ্কার। এই ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শঙ্কর ইত্যাদির চিত্র যদি না থাকে তাহলে আমরা
কিভাবে বোঝাব। ব্রহ্মা তথা বিষ্ণু, বিষ্ণু তথা ব্রহ্মা। ব্রহ্মার অষ্টভুজা, শতভুজা
দেখান হয় কারণ ব্রহ্মার কত-কত সংখ্যক বাচ্চা রয়েছে। তাই ওরা এমন চিত্র তৈরী করে
দিয়েছে। তা নাহলে এত ভুজা বিশিষ্ট মানুষ হয় কি ? না হয় না। রাবণের ১০ মাথারও অর্থ
রয়েছে, এমন মানুষ কখনো হয় না। একথা বাবা-ই এসে বোঝান, মানুষ তো কিছুই জানে না। এও
এক খেলা, এও কেউ-ই জানে না যে, এই খেলা কবে থেকে শুরু হয়েছে। বলে দেয় পরম্পরা (বংশানুক্রমে)
থেকে। আরে, সেও কবে থেকে? মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চাদের বাবা পড়ান, তিনি টিচারও, আবার
গুরুও। তাহলে বাচ্চাদের কত খুশি হওয়া উচিৎ।
এই মিউজিয়াম ইত্যাদি কার ডায়রেক্শনে খোলে ? এখানে রয়েছেই তো মা, বাবা আর বাচ্চা।
অসংখ্য বাচ্চা রয়েছে। ডায়রেক্শন অনুসারে খুলতে থাকে। লোকেরা বলে, তোমরা বল যে
ভগবানুবাচ তাহলে রথের দ্বারা আমাদের সাক্ষাৎকার করাও। আরে, তোমরা আত্মার সাক্ষাৎকার
করেছ কি ? এত ছোট বিন্দুর সাক্ষাৎকার তোমরা কিভাবে করবে ! (সাক্ষাৎকারের) প্রয়োজনই
নেই। এখানে আত্মাকে জানতে হবে। আত্মা ভ্রুকুটির মধ্যভাগে থাকে, যার আধারেই এতবড়
শরীর চলে। এখন তোমাদের কাছে না রয়েছে লাইটের, না রয়েছে রত্নজড়িত মুকুট। দ্বিমুকুট
পাওয়ার লক্ষ্যেই তোমরা পুনরায় পুরুষার্থ করছ। প্রতি কল্পে তোমরা বাবার কাছ থেকে
উত্তরাধিকারের আশীর্ব্বাদ প্রাপ্ত কর। বাবা প্রশ্ন করেন, পূর্বে কবে মিলিত হয়েছ ?
তখন বলে -- হ্যাঁ বাবা, প্রতি কল্পেই মিলিত হয়েছি, কেন ? এইরকম লক্ষ্মী-নারায়ণ
হওয়ার জন্য। এরা সকলেই একই কথা বলবে। বাবা বলেন -- আচ্ছা, ভাল বলেছ, এখন পুরুষার্থ
কর। সকলেই তো আর নর থেকে নারায়ণ হবে না, প্রজাও তো চাই। সত্যনারায়ণের কথাও পাঠ হয়।
ওরা(লোকেরা) কথা পাঠ করে (শোনায়), কিন্তু বুদ্ধিতে কিছুই থাকে না। বাচ্চারা, তোমরা
জানো, ওটা হলো শান্তিধাম, নিরাকারী দুনিয়া। তারপর সেখান থেকে যাবে সুখধাম। একমাত্র
সেই পিতাই সুখধামে নিয়ে যাবেন। তোমরা যখন কাউকে বোঝাবে, তখন বল এখন ঘরে ফিরে যেতে
হবে। অশরীরী পিতাই তো আত্মাকে তার নিজের ঘরে নিয়ে যাবে। এখন বাবা এসেছেন, ওঁনাকে
কেউ জানে না। বাবা বলেন, আমি যে শরীরে আসি, সেও জানে না। রথও তো তিনি(ব্রহ্মা), তাই
না। প্রত্যেকটি রথেই আত্মা প্রবেশ করে। সকলের আত্মাই ভ্রুকুটির মধ্যস্থলে থাকে।
বাবাও এসে ভ্রুকুটির মধ্যস্থলে বসবে। তিনি অতি সহজভাবে বোঝান। একমাত্র পিতাই হলেন
পতিত-পাবন। বাবার সব বাচ্চারাই এক সমান। তাদের প্রত্যেকের নিজ-নিজ ভুমিকা রয়েছে, এতে
কেউ ইন্টারফেয়ার করতে পারে না। *আচ্ছা*!
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই
শরীর-রূপী বস্ত্র থেকে মোহ কাটিয়ে জীবিত অবস্থাতেই মৃত্যুবরণ (মরজীবা) করতে হবে
অর্থাৎ নিজের সমস্ত পুরানো হিসেব-নিকেশ চুকিয়ে ফেলতে হবে।
২ ) দ্বিমুকুটধারী হওয়ার জন্য ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠনে আরও পরিশ্রম করতে হবে। দৈবী-গুণ
ধারণ করতে হবে। যেমন লক্ষ্য, তেমনই শুভ বাণী, পুরুষার্থও তেমনই করতে হবে।
বরদান:-
সাফল্যকে(সিদ্ধি) স্বীকার করার পরিবর্তে সাফল্যের প্রত্যক্ষ প্রমাণ প্রদর্শনকারী
শক্তিশালী আত্মা ভব
ব্যাখা:-এখন তোমাদের
সকলের সফলতার প্রত্যক্ষস্বরূপ দেখা যাবে। কোনো খারাপ বা বেঠিক কার্যও তোমাদের দৃষ্টি
দ্বারা, তোমাদের সহযোগ দ্বারা সহজেই সমাধান হয়ে যাবে। তোমরা সাফল্য সম্পর্কে কোনো
কথা বলবে না যে, হ্যাঁ, এটা হয়ে যাবে। কিন্তু তোমাদের ডায়রেক্শন স্বতত:ই সফলতা
অর্জন করাতে সক্ষম হবে, তখন অতি শীঘ্রই প্রজা তৈরী হবে, সর্বদিক থেকে তারা বেরিয়ে
এসে তোমাদের কাছে আসবে। সাফল্যের এই (প্রত্যক্ষ) ভূমিকা(পার্ট) এখনই পালিত হবে
কিন্তু তোমরা এই সাফল্যকে গ্রহণ করবে না, প্রথমে তোমরা তেমন শক্তিশালী হয়ে ওঠো,
তবেই (সাফল্যের) প্রত্যক্ষতা হবে।
স্লোগান:-
অব্যক্ত স্থিতিতে স্থিত হয়ে মিলনোৎসব পালন করো, তবেই বরদানের ভান্ডার খুলে যাবে।