০৭-০৮-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -- সচেতন অবস্থায় থেকে বাবাকে স্মরণ করতে হবে, শূন্য (উদ্দেশ্যহীন) অবস্থায় চলে যাওয়া বা নিদ্রাচ্ছন্ন হয়ে যাওয়া -- এ কোনো যোগ নয়"
প্রশ্ন:-
তোমাদের চোখ বন্ধ করে (যোগে) বসতে কেন বারণ করা হয় ?
উত্তর:-
যদি তোমরা চোখ বন্ধ করে বসো, তাহলে দোকানের সমস্ত জিনিসই চোরে চুরি করে নিয়ে যাবে। মায়া-রূপী চোর বুদ্ধিতে কিছুই ধারণ করতে দেবে না। চোখ বন্ধ করে যোগ করতে বসলে নিদ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়বে, বুঝতেই পারবে না। তাই চোখ খুলে বসতে হবে। কাজ-কর্ম করতে-করতেই বুদ্ধির দ্বারা বাবাকে স্মরণ করতে হবে। এরমধ্যে হঠযোগের কোনো ব্যাপার নেই।
ওম্ শান্তি।
আত্মাদের (রুহানী) পিতা বাচ্চাদের বলেন, এও তো বাচ্চা, তাই না। দেহধারী সকলেই (বাবার) বাচ্চা। তাই আত্মাদের পিতা আত্মাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আত্মাই মুখ্য। এ তো ভালভাবে বোঝ। এখানে যখন সম্মুখে বসো তখন এমন নয় যে শরীরের থেকে পৃথক হয়ে (ন্যায়ারা) হারিয়ে যেতে হয়। শরীর থেকে পৃথক হয়ে হারিয়ে (অদৃশ্য) যাওয়া, এ কোনো স্মরণের যাত্রায় থাকার স্থিতি নয়। এখানে সচেতন (সজাগ) হয়ে বসতে হবে। চলতে-ফিরতে, উঠতে-বসতে নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করতে হবে। বাবা এমন বলেন না যে, এখানে বসে অচেতন (বেহুঁশ) হয়ে যাও। এমন অনেকেই রয়েছে যারা বসে-বসে অচেতন হয়ে যায়। তোমাদের সচেতন হয়ে বসতে হবে আর পবিত্র হতে হবে। পবিত্রতা ব্যতীত ধারণা করতে সমর্থ হবে না, কারো কল্যাণ করতে পারবে না, কাউকে বলতেও পারবে না। (যারা) স্বয়ং পবিত্র থাকে না আর অন্যদের বলে। তারা তো পন্ডিত। অতি চালাক(মিয়া-মিট্ঠু) হওয়া উচিৎ নয়, তখন আবার হৃদয়ের দংশন হবে। এমন মনে কোরো না যে, শূন্যাবস্থায় চলে যাই, তাই চোখ বন্ধ হয়ে যায়। এ কোনো স্মরণের স্থিতি বা অবস্থা নয়, এখানে সচেতন অবস্থায় থেকে বাবাকে স্মরণ করতে হবে। নিদ্রাচ্ছন্নতা কোনো স্মরণ নয়। বাচ্চাদের অনেক পয়েন্টস্ বোঝান হয়। শাস্ত্রে দেখানো হয়েছে --- সপ্তম স্বর্গে (সপ্ত-তলে) চলে যায়, আর এই দুনিয়ার বোধ থাকে না। তোমরা তো দুনিয়াকে জানো, তাই না। এ হলো ছিঃ ছিঃ দুনিয়া, বাবাকে কেউ জানে না। যদি বাবাকে জানতো তাহলে সৃষ্টি-চক্রকেও জেনে যেতো। বাবাই বলেন যে, এই চক্র কিভাবে আবর্তিত হয়, মানুষ কিভাবে পুনর্জন্ম নেয়। সত্যযুগে আয়ু দীর্ঘ হয়ে গেলেও কেউ কুৎসিত( যেমন বৃদ্ধাবস্থায় বলিরেখা পড়ে) হবে না। বাকি সন্ন্যাসীদের হলো হঠযোগ। চোখ বন্ধ করে, গুহায় বসে-বসে কু-রূপ ধারণ করে....। বাবা তোমাদেরই বলেন যে, গৃহস্থ ব্যবহারে থেকেও সচেতন থাকতে হবে। শূণ্যতায় চলে যাওয়া, এ কোনো অবস্থা নয়। কাজ-কর্মাদিও করতে হবে, গৃহস্থ ব্যবহারে থেকে পরিবারকে পালনও করতে হবে। শূন্যতায় যাওয়া উচিৎ নয়। কাজ-কর্ম করতে-করতে বুদ্ধির দ্বারা বাবাকে স্মরণ করতে হবে। অবশ্যই যখন কাজ করবে, তখন চোখ খুলে করবে, তাই না। কাজ-কর্মাদি সবকিছুই করতে থাকো। বুদ্ধিযোগ যেন বাবার সঙ্গে জুড়ে থাকে। এতে গাফিলতি করা উচিৎ নয়। দোকানে বসে যদি চোখ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে কেউ এসে জিনিসপত্র নিয়ে চলে যাবে আর জানতেও পারবে না। এ কোনো (সঠিক) অবস্থা নয়। আমরা দেহ থেকে পৃথক (ন্যায়ারা) হয়ে যাই, এসব হঠযোগীদের কথা। অলৌকিক শক্তির অধিকারীরাই (রিদ্ধি-সিদ্ধি) এমন করতে পারে। বাবা বসে ভালো ভাবে বোঝান, এতে চোখ বন্ধ করার কোনো প্রয়োজন নেই।
বাবা বলেন, বসে-বসে মিত্র, আত্মীয়-স্বজনকে যে স্মরণ কর, সেসব ভুলে যাও। এক পিতাকেই স্মরণ করতে হবে। স্মরণের যাত্রা ব্যতীত পাপমোচন হবে না। ভোগ নিবেদন করতে গিয়ে সূক্ষ্ম লোকে (বতনে) হারিয়ে যায়। এতে কি হয় ? যতসময় ওখানে থাকে তাতে বিকর্ম বিনাশ তো হয় না। শিববাবাকেও স্মরণ করতে পারে না। না বাবার বাণী(মুরলী) শুনতে পারে। তাই ক্ষতি হয়ে যায়। কিন্তু এও ড্রামায় নির্ধারিত তাই যায়। পরে এসে মুরলী শোনে। তাই বাবা বলেন, যাও আর তৎক্ষণাৎ চলে এসো, বসে থেকো না। সূক্ষ্ম লোকে গিয়ে খেলাধুলা করা বাবা বন্ধ করে দিয়েছেন। এও একধরণের উদ্দেশ্যহীনভাবে বিচরণ করা, তাই না। ভক্তিমার্গে উদ্দেশ্যহীন বিচরণ, রোদন - বিলাপ অনেক হয়, কারণ মার্গ তো অন্ধকারাচ্ছন্ন, তাই না। মীরা ধ্যানে বৈকুন্ঠে চলে যেতো। তা কি যোগ বা পড়াশোনা(জ্ঞান) ছিল ? না, তা ছিল না। সে কি সদ্গতি পেয়েছিল ? স্বর্গে যাওয়ার যোগ্য হয়েছিল ? তার জন্ম-জন্মান্তরের পাপমোচন হয়েছিল কি ? একদমই নয়। জন্ম-জন্মান্তরের পাপমোচন তো একমাত্র বাবার স্মরণের মাধ্যমেই হতে পারে। বাকি সাক্ষাৎকারাদি করে কোনো লাভ নেই। এ হলো শুধু ভক্তি। না রয়েছে স্মরণ, আর না রয়েছে জ্ঞান। ভক্তিমার্গে এসব শেখানোর মতন কেউ থাকে না, তাই সদ্গতিও হয় না। *যদিও অনেক সাক্ষাৎকার হয়, শুরুতে বাচ্চারা নিজেরাই চলে যেতো। মাম্মা-বাবাও কি যেতেন, না যেতেন না। শুরুতে ব্রহ্মা বাবার শুধু স্থাপনা আর বিনাশের সাক্ষাৎকার হয়েছিল। পরে তো আর কিছু হয় নি। আমি কাউকে পাঠাই না। হ্যাঁ, বসে বলে দিই, বাবা এদের রশি টানো। সেও যদি ড্রামায় থাকে তবেই রশি টানবে, আর তা নাহলে নয়। সাক্ষাৎকার তো অনেক হয়। যেমন প্রারম্ভে অনেক সাক্ষাৎকার হতো, অন্তিমেও অনেক সাক্ষাৎকার করবে।* "কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ" (শিকারের মৃত্যু শিকারীর জয় = মিরুয়া মউত মলুকা শিকার)। এত অগণিত মানুষ, এরা সকলেই শরীর ত্যাগ করবে। সশরীরে তো আর কেউ সত্যযুগে বা শান্তিধামে যাবে না। কত অগণিত-সংখ্যক মানুষ, সকলেরই বিনাশ হয়ে যাবে। এখন শুধু ব্রহ্মার দ্বারা এক আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা হচ্ছে। কন্যারা, তোমরা গ্রামে-গ্রামে গিয়ে কত সার্ভিস কর। এটাই বল যে, নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ কর। সন্ন্যাসীরা রাজযোগ শেখাতে পারে না। বাবা ব্যতীত রাজযোগ আর কে শেখাবে ? বাচ্চারা, বাবা এখন তোমাদেরকে রাজযোগ শেখাচ্ছেন। তারপর রাজত্ব পেয়ে যাবে। (ওখানে) তোমরা অসীম সুখে থাকো। ওখানে তো আর স্মরণ করার প্রয়োজন নেই। ওখানে সামান্যতম দুঃখও থাকে না। আয়ুও দীর্ঘ, শরীরও রোগমুক্ত হয়। এখানে কত দুঃখ। *এমনও তো নয় যে, বাবা দুঃখের জন্যই এই খেলা রচনা করেছেন। এই সুখ-দুঃখের, জয়-পরাজয়ের খেলা তো আদি-অনাদি*। এসমস্ত কথা সন্ন্যাসীরা জানেই না তাহলে বোঝাবে কেমন করে। তারা তো ভক্তিমার্গের শাস্ত্রাদি পড়ে। তোমাদের বলা হয় -- নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ কর। সন্ন্যাসীরা আবার আত্মা মনে করে ব্রহ্মকে স্মরণ করে। ব্রহ্মকে পরমাত্মা মনে করে, তারা হল ব্রহ্মজ্ঞানী। বাস্তবে ব্রহ্ম হলো নিবাসস্থল। যেখানে তোমরা আত্মারা থাকো, তারা বলে যে, ব্রহ্মতে বিলীন হয়ে যাবে। তাদের জ্ঞানই সম্পূর্ণ উল্টো। বাচ্চারা, এখানে অসীম জগতের পিতা তোমাদের পড়ায়। তারা বলে, ভগবান ৪০ হাজার বছর পর আসবে, একেই বলে অজ্ঞানতার অন্ধকার। বাবা বলেন, আমিই নতুন দুনিয়ার স্থাপনা আর পুরানো দুনিয়ার বিনাশকারী। আমি স্থাপনা করছি, আবার বিনাশও সম্মুখে দাঁড়িয়ে আছে। এখন তাড়াতাড়ি কর। পবিত্র হও তবেই পবিত্র দুনিয়ায় যেতে পারবে। এ হলো পুরানো তমোপ্রধান দুনিয়া। লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য কি আছে, না নেই। এঁনাদের রাজ্য নতুন দুনিয়ায় ছিল, এখন নেই। এঁনারাও পুনর্জন্ম নিয়েছেন। শাস্ত্রতে তো কি-কি সব লিখে রেখেছে। কৃষ্ণকে দেখানো হয়েছে অর্জুনের অশ্বচালিত রথে বসে রয়েছে। এমন তো নয় যে, অর্জুনের ভিতরে কৃষ্ণ বসে রয়েছে। কৃষ্ণ তো দেহধারী, তাই না, আর না লড়াই ইত্যাদির কোন কথা আছে। ওরা তো পান্ডব আর কৌরবদের সৈন্যদের বিভাজিত করে দিয়েছে। এখানে তো ওইসমস্ত কোন কথা নেই। ভক্তিমার্গে তো অসংখ্য শাস্ত্রাদি রয়েছে। সত্যযুগে এসব থাকে না। ওখানে তো জ্ঞানের প্রালব্ধ(প্রাপ্তি) অর্থাৎ রাজধানী রয়েছে। ওখানে সুখই-সুখ রয়েছে। বাবা নতুন দুনিয়া স্থাপন করেন, তাই নতুন দুনিয়া অবশ্যই সুখময় হবে, তাই না। বাবা কখনও পুরানো বাড়ী বানায় কি! বাবা তো নতুন বাড়ী বানান, সেই দুনিয়াকেই সতোপ্রধান দুনিয়া বলা হয়। এখন তো সবই তমোপ্রধান, অপবিত্র, রাবণের পর-রাজ্যে বসে রয়েছে।
রাম বলা হয় শিববাবাকে, রাম-রাম বলে রামের নামে দান দিতে থাকে। এখন কোথায় রাম আর কোথায় শিববাবা। বাচ্চারা, এখন শিববাবা তোমাদের বলেন, মামেকম্ (একমাত্র আমাকে) স্মরণ কর। যেখান থেকে এসেছ সেখানেই আবার ফিরে যেতে হবে, যতদিন না বাবাকে স্মরণ করে পবিত্র হবে ততদিন পর্যন্ত ফিরে যেতে পারবে না। তোমাদের মধ্যেও বিরলই কেউ-কেউ আছে যারা সঠিক রীতিতে বাবাকে স্মরণ করে। এ মুখে বলার মতন কথা নয়। ভক্তিতে মুখে রাম-রাম বলে। কেউ যদি তা না বলে তাহলে মনে করে এ নাস্তিক। কত চিৎকার(আওয়াজ) করে গান-বাজনা করে। বৃক্ষ(ঝাড়) যত বড় হয়, ভক্তির সামগ্রীও ততই বৃদ্ধি পেতে থাকে। বীজ কত ক্ষুদ্র। তোমাদের তো কোনো সামগ্রী নেই, কোনো আওয়াজ নেই। শুধু বলেন -- নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে আমাকে অর্থাৎ বাবাকে স্মরণ কর। মুখ দ্বারা বলতেও হবে না। লৌকিক পিতাকেও সন্তান বুদ্ধির দ্বারা স্মরণ করে। বসে 'বাবা-বাবা' বলে কি, না বলে না। তোমরা এখন জানো যে, আত্মাদের পিতা কে। আত্মারা সকলেই ভাই-ভাই। আত্মার আর কোন নাম নেই। কিন্তু শরীরের নাম পরিবর্তিত হয়ে যায়। আত্মা হলো আত্মাই। আর উনি হলেন পরম আত্মা। ওঁনার নাম হলো শিব। ওঁনার নিজের শরীর নেই। বাবা বলেন, আমারও যদি শরীর থাকত তাহলে পুনর্জন্মেও আসতে হতো। তাহলে তোমাদের সদ্গতি কে করত ? ভক্তিমার্গে আমাকে স্মরণ করে। সেখানে অনেক চিত্র রয়েছে। এখন তোমরা নরকবাসী থেকে স্বর্গবাসী হও, তাই না। জন্ম তো নরকেই হয়েছে, মৃত্যু হবে স্বর্গে যাওয়ার জন্য। এখানে তোমরা এসেছোই স্বর্গে যাওয়ার জন্য। যেমন কেউ ব্রিজ ইত্যাদি যখন তৈরী করে, তখন প্রথমে শিলান্যাস (ফাউন্ডেশন সেরিমনি) করে, তারপরে ব্রিজ তৈরী হয়ে থাকে। স্বর্গ স্থাপনের শিলান্যাস বাবা করে দিয়েছেন, এখন তৈরী হচ্ছে। বাড়ী তৈরী করতে সময় লাগে কি ? গভর্নমেন্ট যদি বানায় তবে এক মাসের মধ্যেই বাড়ী দাঁড় করিয়ে দেয়। বিদেশে বাড়ী রেডিমেড অবস্থায় পাওয়া যায়। স্বর্গে তোমাদের বুদ্ধি হবে সুগভীর, সূক্ষ্ম আর সতোপ্রধান। সায়েন্টিস্টদের বুদ্ধি তীক্ষ্ণ হয়। তারা শীঘ্রই সব বানাতে থাকবে, ওখানে প্রাচীরও রত্ন জড়িত হবে। আজকাল অতি শীঘ্র নকল জুয়েলারী তৈরী করে ফেলে এবং তা আসলের থেকেও অধিক উজ্জ্বল হয়। আজকাল মেশিনের দ্বারা অতি শীঘ্র বানিয়ে ফেলে। ওখানে বাড়ী তৈরী করতে দেরী হয় না, পরিস্কার ইত্যাদি করতেই সময় লাগে। এমন নয় যে, সোনার দ্বারকা সমুদ্রতল থেকে উঠে আসবে। তাই বাবা বলেন, খাও-দাও, আর শুধু বাবাকে স্মরণ কর তবেই বিকর্ম বিনাশ হবে, এছাড়া আর অন্য কোনো উপায় নেই। জন্ম-জন্মান্তর ধরে এইযে গঙ্গাস্নানাদি করে এসেছ কিন্তু কেউই তো মুক্তি-জীবনমুক্তি লাভ করে নি। এখানে বাবা পবিত্র হওয়ার যুক্তি বলেন। বাবা বলেন, আমিই পতিত-পাবন। তোমরা ডেকেছ, হে পতিত-পাবন বাবা এসো, এসে আমাদের পবিত্র কর। ড্রামা যখন সম্পূর্ণ হয় তখন সব অ্যাক্টরর্সদের স্টেজে থাকা উচিৎ। রচয়িতারও(ক্রিয়েটার) থাকা উচিৎ। সকলেই দাঁড়িয়ে পড়ে, তাই না। এও ঠিক তেমনই। সব আত্মারাই এসে যাবে তারপরে ফিরে যেতে হবে (সকলকে)। এখনও তোমরা তৈরী হওনি। কর্মাতীত অবস্থাই হয়নি তাহলে বিনাশ কি করে হবে। বাবা তো আসেনই তোমাদের নতুন দুনিয়ার জন্য পড়াতে, ওখানে কাল হয়ই না। তোমরা কালের উপরে বিজয়লাভ কর। বিজয় প্রাপ্ত কে করায় ? কালেরও কাল অর্থাৎ মহাকাল। তিনি কতজনকে সঙ্গে করে নিয়ে যান! তোমরা খুশি-খুশিতে যাও। বাবা এখন এসেছেন তোমাদের দুঃখ দূর করতে তাই তাঁর মহিমা কীর্তন করে - গডফাদার দুঃখ থেকে লিবারেট (মুক্ত) কর। শান্তিধাম, সুখধামে নিয়ে চলো। কিন্তু এ তো মনুষ্যরা জানে না যে, এখন বাবা স্বর্গ রচনা করছেন। তোমরা স্বর্গে যাবে, সেখানে (সৃষ্টি-রূপী) বৃক্ষ অতি ক্ষুদ্র হবে যা পরে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হবে। এখন আর সব ধর্ম রয়েছে, সেই এক ধর্মই নেই। নাম, রূপ, রাজ্য ইত্যাদি সবকিছু বদলে যায়। প্রথমে দ্বিমুকুটধারী, পরে এক মুকুটধারী হয়। সোমনাথ মন্দির তৈরী করা হয়েছিল, কত ধন-ঐশ্বর্য ছিল। সর্বাপেক্ষা বৃহৎ মন্দির একটিই ছিল যা লুণ্ঠন করে নিয়ে গিয়েছিল। বাবা বলেন, তোমরা পদ্মাপদম ভাগ্যশালী হয়ে যাও। প্রতি পদে-পদে তোমরা বাবাকে স্মরণ কর তবেই পদমগুণ একত্রিত হবে। এত উপার্জন একমাত্র বাবাকে স্মরণ করলে তবেই হবে। তাহলে এমন পিতাকে স্মরণ করতে ভুলে যাও কেন ? যত বাবাকে স্মরণ করবে, সার্ভিস করবে ততই উচ্চপদ লাভ করবে। ভাল-ভাল বাচ্চারা (মহারথী) চলতে-চলতে পড়ে যায় অর্থাৎ অধঃপতন হয়। মুখে কালিমা লেপন করে ফেললে উপার্জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বড় রকমের লটারী তোমরা হারিয়ে ফেলো। *আচ্ছা*!
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১. গৃহস্থ ব্যবহারে পরিবারকে লালন পালন করেও বুদ্ধিযোগ বাবার সঙ্গে যুক্ত রাখতে হবে। গাফিলতি করা উচিত নয়। পবিত্রতার ধারণার দ্বারা নিজের এবং সকলের কল্যাণ করতে হবে।
২. স্মরণের যাত্রা এবং পঠন-পাঠনের দ্বারাই উপার্জন হয়, ধ্যানে (ট্রান্সে) মগ্ন হয়ে ঘোরাফেরা করা, এতে কোনো লাভ হয় না। যতটা সম্ভব সচেতন থাকো, বাবাকে স্মরণ করে বিকর্ম বিনাশ করতে হবে।
বরদান:-
বাবার কাছ থেকে শক্তি গ্রহণ করে প্রতিটি পরিস্থিতির সমাধানকারী সাক্ষীদ্রষ্টা ভব
বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, অতির পরেই অন্ত হয়। তাই প্রত্যেক ব্যাপারেই আলোড়ন অতিমাত্রায় হবে, পরিবারেও তর্ক-বিতর্ক হবে, মনেও অনেক সমস্যা আসবে, ধনও কম-বেশী হবে। কিন্তু যে বাবার সঙ্গী হয়, সত্য হয়, তার হয়ে জবাব দেন বাবা। এমন সময়ে যদি মন বাবার দিকে থাকে, তাহলে নির্ণয়-শক্তির দ্বারা সব বাঁধা পেরিয়ে যাবে। সাক্ষীদ্রষ্টা হয়ে যাও, তবেই বাবার শক্তির দ্বারা প্রতিটি পরিস্থিতিকে সহজেই সমাধান করে ফেলবে।
স্লোগান:-
এখন সকল কিনারা ছেড়ে ঘরে ফেরার তৈয়ারী করো।