১৬-০৮-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা ‐- তোমাদের খুশি হওয়া উচিত যে দুঃখহরণকারী, বাবা আমাদের সুখধামে নিয়ে যেতে এসেছেন, আমরা স্বর্গের পরী হতে যাচ্ছি"
প্রশ্ন:-
বাচ্চাদের কোন্ স্থিতি দেখে বাবা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হন না- কেন ?
উত্তর:-
কোনো কোনো বাচ্চা ফার্স্টক্লাস সুগন্ধ যুক্ত ফুল, কারো মধ্যে আবার বিন্দুমাত্র সুগন্ধ নেই, কারও অবস্থা খুব ভালো থাকে ( আত্মিক স্থিতি), কেউ বা মায়ার তুফানে পরাজিত হয়, এইসব দেখেও বাবা চিন্তাগ্রস্ত হন না। কেননা বাবা জানেন সত্যযুগের রাজধানী স্থাপন হতে চলেছে । তবুও বাবা শিক্ষা প্রদান করে বলেন ‐‐ বাচ্চারা, যতটা সম্ভব স্মরণে থাক, মায়ার তুফানে ভীত হয়ো না।
ওম্ শান্তি ।
অতীব মিষ্টি অসীম জগতের পিতা মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চাদের বসে বোঝান । এটা তো বুঝেছ তাইনা - অতি মিষ্টি থেকে মিষ্টি বাবা, ওঁনার কাছ থেকেই স্বর্গের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় । এখানে তো বেশ্যালয়ে বসে আছ। কত মিষ্টি বাবা, অন্তরে সেই অপার খুশি থাকা উচিত । বাবা আমাদের অর্ধকল্পের জন্য সুখধামে নিয়ে যান, দুঃখ হরণ করেন । একদিকে তিনি যেমন পিতা, অন্যদিকে শিক্ষকও । আমাদের সম্পূর্ণ সৃষ্টি চক্রের রহস্য বুঝিয়ে বলেন, যা আর কেউ ব্যাখ্যা করতে পারে না । এই চক্র কিভাবে, ৮৪ জন্ম কিভাবে অতিক্রান্ত হয় ‐‐ এই সমস্ত কিছুই তিনি খুব সহজভাবে বুঝিয়ে বলেছেন । তারপর সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন । এখানে তো থাকা যাবে না । সমস্ত আত্মাদের সাথে করে নিয়ে যাবেন । সময় খুব অল্প । বলাও হয় - অনেক সময় চলে গেছে, অল্প কিছু অবশিষ্ট আছে ....... সময় খুব কম, সেইজন্য বারংবার আমাকে স্মরণ কর, তবেই তোমাদের জন্ম-জন্মান্তরের পাপের যে বোঝা সঞ্চিত হয়ে আছে, তা সমাপ্ত হবে । যদিও মায়ার যুদ্ধ চলবে । *তোমরা আমাকে স্মরণ করতে বসবে, আর মায়া স্মরণ থেকে সরিয়ে দেবে, এও বাবা বলে দিচ্ছেন। সেইজন্য কখনও সে সব নিয়ে ভাববে না। যতই সংকল্প, বিকল্প, তুফান আসুক না কেন, সারারাত সংকল্পের জন্য ঘুম না হলেও ভীত হবে না । বাহাদুর (সাহসী) হতে হবে । বাবা বলেন, এসব অবশ্যই আসবে, স্বপ্নও দেখবে, কিন্তু এইসব বিষয়ে ভীত হবে না* । যুদ্ধের ময়দান এটা, তাইনা । সবই বিনাশ হয়ে যাবে । তোমরা যুদ্ধ করছ মায়াকে জয় করার জন্য, এর মধ্যে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ করার ব্যাপার নেই । আত্মা যখন শরীরে থাকে তখন শ্বাস-প্রশ্বাস চলে । এর জন্য শ্বাস -প্রশ্বাস বন্ধ করার চেষ্টা করা উচিত নয় । হঠযোগ ইত্যাদিতে কত পরিশ্রম করতে হয়, বাবার অনুভব আছে ( ব্রহ্মা বাবা)। অল্প-স্বপ্ন হঠযোগ শিখেছিলেন। কিন্তু সময়ও তো দরকার, তাইনা । যেমন আজকাল তোমরা বাচ্চাদের জন্য বলা হয় জ্ঞান তো অনেক আছে কিন্তু সময় কোথায়। এতো কারখানা আছে, এটা ওটা আছে......। বাবা তোমাদের বলেন ‐‐ মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, একমাত্র বাবাকে আর চক্রকে স্মরণ কর, তাহলেই হবে । এটা কি খুব কঠিন?
সত্যযুগে ‐ ত্রেতাতে সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের রাজ্য ছিল। তারপর ইসলাম, বৌদ্ধ ইত্যাদি ধর্ম বৃদ্ধি পেতে থাকে । ওরা তখন নিজেদের ধর্মকে ভুলে যায়, নিজেদের দেবী-দেবতা বলতে পারে না। কেননা অপবিত্র হয়ে পড়ে । দেবতারা তো পবিত্র ছিল । ড্রামার প্ল্যান অনুসারে ওরা তারপর নিজেদের হিন্দু বলে পরিচয় দেয় । বাস্তবে হিন্দু বলে কোনও ধর্ম নেই । হিন্দুস্তান নাম তো পরে এসেছে । প্রকৃত নাম হলো ভারত । বলাও হয়ে থাকে ভারত মাতাদের জয়, হিন্দুস্তান মাতাদের জয় তো বলা হয় না । ভারতেই এই দেবী-দেবতাদের রাজ্য ছিল । ভারতেরই মহিমা করা হয় । সুতরাং বাবা বাচ্চাদের বসে শেখান, বাবাকে কিভাবে স্মরণ করতে হয়। বাবা তো এসেছেনই ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে । কাদের নিয়ে যেতে এসেছেন ? আত্মাদের । তোমরা যত বাবাকে স্মরণ কর ততই পবিত্র হয়ে ওঠো । পবিত্র হলে সাজাও পেতে হবে না । যদি সাজা খাও, তবে পদও কম হয়ে যাবে । সেইজন্য যত স্মরণ করবে ততই বিকর্ম বিনাশ হতে থাকবে । অনেক বাচ্চা আছে যারা স্মরণ করতে ব্যর্থ হয়, বিরক্ত হয়ে ছেড়ে দেয়, এমনও আছে যুদ্ধ করে না ( মায়ার সাথে) । বোঝে যে রাজধানী স্থাপন হতে চলেছে । অনেকেই অসফল হবে । গরীব প্রজাও তো চাই, তাইনা । যদিও ওখানে কোনও দুঃখ নেই, কিন্তু গরীব আর বিত্তবান প্রতিটি স্তরেই থাকবে । এ হলো কলিযুগ, এখানে গরীব হোক বা বড়লোকই হোক, উভয়েই দুঃখ ভোগ করে থাকে । ওখানে গরীব - বড়লোক উভয়েই সুখে থাকে । ধনী বা দরিদ্র হওয়ার অনুভব থাকলেও দুঃখ লেশমাত্র থাকে না । অবশিষ্ট নম্বরানুসারে হবে তাই না! কোনও রোগ থাকবে না, আয়ু বৃদ্ধি হবে । এই দুঃখের ধামকে ভুলে যায় । সত্যযুগে তোমাদের দুঃখের কথা স্মরণেও আসবে না । দুঃখধাম আর সুখধামের কথা বাবা-ই এসে স্মরণ করিয়ে দেন । মানুষ বলে স্বর্গ ছিল, কিন্তু কবে ছিল, কেমন ছিল ? কিছুই জানে না । লক্ষ বছর বলার কারণে কারো স্মরণেই আসে না । বাবা বলেন, কাল তোমাদের সুখ ছিল, কাল আবার সুখ হবে । সুতরাং বাবা এখানে বসে তাঁর ফুলদের দেখেন । এই আত্মা সুন্দর ফুল, এ এইভাবে পুরুষার্থ করে । এই আত্মা স্পর্শবুদ্ধি সম্পন্ন নয়, পাথর বুদ্ধি । বাবার কোনও বিষয়ে চিন্তা থাকে না, তবে হ্যাঁ, তিনি ভাবেন যে, বাচ্চারা শীঘ্রই পঠন-পাঠন করে বিত্তশালী হয়ে উঠুক, অন্যদেরও পড়াশোনা করাতে হবে । ঈশ্বরীয় সন্তান তো হয়েছে, কিন্তু তাড়াতাড়ি ঈশ্বরীয় পাঠ পড়ে বিচক্ষণ হয়ে উঠুক, কতদূর নিজেরা পড়াশোনা করে অন্যদেরও করাচ্ছে, কতখানি সুগন্ধি ফুল হয়ে উঠেছে-‐ এসবই বাবা বসে প্রত্যক্ষ করছেন। কেননা এ হলো চৈতন্য ফুলেদের বাগান। সুগন্ধি ফুলদের দেখলেই কত খুশির অনুভব হয়। বাচ্চারা নিজেরাও বুঝেছে, বাবা স্বর্গের উত্তরাধিকার প্রদান করেন । বাবাকে স্মরণ করতে থাকলে পাপ কাটতে থাকবে । নয়তো সাজা খেয়ে তারপর পদ প্রাপ্ত হবে । একে বলা হয় শাস্তি ভোগের পর ভোজন লাভ। বাবাকে এমনভাবে স্মরণ করো যাতে জন্ম-জন্মান্তরের পাপ কেটে যায় । তার সাথে চক্রকেও জানতে হবে । সৃষ্টি চক্র ঘুরতেই থাকে, এ কখনোই বন্ধ হয় না । উঁকুনের মতো চলতে থাকে, উঁকুন সবচেয়ে ধীরে চলে । এই অনন্ত ড্রামাও অতি ধীরে ধীরে চলে । ঘড়ির কাঁটার মতোই টিক্ টিক্ করে চলে। ৫ হাজার বছরে প্রতিটি সেকেন্ড, মিনিট কত সময়ের জন্য হয়, তাও বাচ্চারা বের করে পাঠিয়েছে । লক্ষ বছরের বিষয় হলে কেউ-ই এর হিসেব বের করতে পারত না । এখানে বাবা আর বাচ্চারা বসে আছে । বাবা প্রত্যেককে বসে বসে দেখছেন ‐- এই বাচ্চারা কতটা বাবাকে স্মরণ করে, কতটা জ্ঞান ধারণ করেছে, অন্যদেরও কতটা কতটা বোঝাতে পারছে । খুব সহজ বিষয়, শুধু বাবার পরিচয় দিতে হবে । ব্যাজ তো বাচ্চাদের কাছে আছেই। সবাইকে বল, ইনি হলেন শিববাবা । যখন মানুষ কাশী যায়, তখনও শিববাবাকে স্মরণ করে । 'বাবা বাবা' বলে মাথা ঠুকতে থাকে । তোমরা হলে শালিগ্রাম । আত্মা ছোট্ট তারার মত, তার মধ্যে কত পার্ট সঞ্চিত হয়ে আছে । আত্মা ছোট, বড় হয় না, বিনাশও হয় না । আত্মা অবিনাশী, তার মধ্যে ড্রামার পার্ট সঞ্চিত হয়ে আছে । হীরা সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী পাথর (রত্ন)। এর মতো শক্ত পাথর অন্য কিছু হয় না । জহুরিরা সেটা জানে । আত্মার বিচার কর, কত ক্ষুদ্র অথচ তার মধ্যে অবিনাশী পার্ট সঞ্চিত হয়ে আছে । আত্মা কখনোই অবিনাশী ড্রামা থেকে বেড়িয়ে পড়ে না । দ্বিতীয় কোনও আত্মা হয় না । এই দুনিয়াতে এমন কোনো মানুষ নেই যাকে আমরা একাধারে বাবা, টিচার এবং সদ্গুরু বলতে পারি। ইনিই একমাত্র অসীম জগতের পিতা, এবং শিক্ষক যিনি সবাইকে শিক্ষা প্রদান করে বলেন, মনমনাভব । তোমাদেরও বলে থাকেন যদি অন্য কোনো ধর্মের কাউকে পাও তাকেও জিজ্ঞাসা কর আল্লাহ্কে স্মরণ কর তো ! আত্মারা সবাই ভাই-ভাই । এখন বাবা শিক্ষা প্রদান করে বলছেন মামেকম্ স্মরণ করলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে । বাবা হলেন পতিত-পাবন । এ কথা কে বলে? আত্মা বলে । যদিও মানুষ গীত গায় কিন্তু অর্থ কিছুই বোঝে না ।
বাবা বলেন ‐- তোমরা সবাই সীতা। আমি রাম । সমস্ত ভক্তদের সদ্গতি দাতা আমি । সবাইকে সদ্গতি প্রদান করি । অবশিষ্ট আত্মারা মুক্তিধামে চলে যায় । সত্যযুগে দ্বিতীয় কোনও ধর্ম হয় না, শুধুমাত্র আমরাই থাকি কেননা আমরাই বাবার কাছ থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার গ্রহণ করে থাকি । এখানে দেখো কত অসংখ্য মন্দির । এত বড় দুনিয়াতে কত অসংখ্য জিনিস রয়েছে । ওখানে এসব কিছুই থাকবে না । শুধুমাত্র ভারত থাকবে । এই রেল ইত্যাদি যানবাহনও থাকবে না । এই সবকিছুই বিনাশ হয়ে যাবে । ওখানে রেলের প্রয়োজনই নেই । ছোট শহর হবে । রেল তো প্রয়োজন দূর-দূরান্তের গ্রামে যাওয়ার জন্য । বাবা বাচ্চাদের রিফ্রেশ করছেন, ভিন্ন ভিন্ন পয়েন্টস বাচ্চাদের বুঝিয়ে বলেন। এখানে বসে আছ, বুদ্ধিতে সম্পূর্ণ জ্ঞান আছে । যেমন পরমপিতা পরমাত্মার মধ্যে সম্পূর্ণ জ্ঞান পরিপূর্ণ, যা তোমাদের কাছে ব্যাখ্যা করে থাকেন । উচ্চ থেকে উচ্চতর শান্তিধামের নিবাসী শান্তির সাগর বাবা । আমরা আত্মারা সবাই ঐ সুইট হোমের নিবাসী । শান্তির জন্য মানুষ কত মাথা ঠোকে । সাধুরাও বলে মনে কিভাবে শান্তি পাওয়া যায়। কতরকম যুক্তি রচনা করে থাকে । বলাও হয়ে থাকে ‐‐ আত্মা তো মন বুদ্ধি সহ থাকে, তার স্বধর্মই হলো শান্ত । মুখ তো নেই, কর্মেন্দ্রিয়ও নেই সুতরাং শান্তই হবে । আমরা আত্মাদের নিবাস স্থান হলো সুইট হোম, যেখানে সম্পূর্ণ শান্তি বিরাজ করে । ওখান থেকে প্রথমে আমরা আসি সুখধামে । এখন এই দুঃখ ধাম থেকে ট্রান্সফার হতে চলেছি সুখধামে । বাবা পবিত্র করে তুলছেন । কত বড় এই দুনিয়া । এত জঙ্গল ইত্যাদি কিছুই ওখানে থাকবে না, এতো পাহাড়ও থাকবে না । আমাদের রাজধানী থাকবে । যেমন স্বর্গের ছোট মডেল তৈরি করে তেমনই ছোট স্বর্গ হবে । শুধু অবাক হয়ে দেখ, কি হতে চলেছে । কত বড় সৃষ্টি, এখানে সবাই নিজেদের মধ্যে লড়াই করে চলেছে । তারপর এই সম্পূর্ণ দুনিয়া শেষ হয়ে যাবে, এসব কোথায় যাবে । সমুদ্র আর ধরিত্রীর বুকে চলে যাবে । এদের চিহ্নমাত্রও থাকবে না। সমুদ্রে যা চলে যায় তা সমুদ্র গর্ভে গিয়ে শেষ হয়ে যায় । সাগর গ্রাস করে নেয় । তত্ত্ব তত্ত্বতে, মাটি মাটিতে মিশে যায় । তারপর এই দুনিয়া সতোপ্রধান হয়ে ওঠে, ঐ সময়কে বলা হয় নতুন সতোপ্রধান প্রকৃতি । ওখানে তোমাদের ন্যাচারাল (প্রাকৃতিক) সৌন্দর্য হবে । লিপস্টিক ইত্যাদি কিছুই ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়বে না । সুতরাং তোমরা বাচ্চাদের কত খুশি হওয়া উচিত । তোমরা স্বর্গের পরী হয়ে ওঠো ।
জ্ঞান স্নান না করলে তোমরা পবিত্র হতে পারবে না । অন্য কোনো উপায় নেই । বাবা তো চির সুন্দর, তোমরা আত্মারা কালো হয়ে গেছ । প্রেমিক অতীব সুন্দর, মুসাফির যিনি এসে তোমাদের সুন্দর করে তোলেন । বাবা বলেন আমি এর মধ্যে (ব্রহ্মা বাবা) প্রবেশ করেছি, আমি কখনোই শ্যাম (অসুন্দর)হই না । তোমরা শ্যাম থেকে সুন্দর হয়ে ওঠো । চির সুন্দর তো একজন, মুসাফির বাবা । এই বাবাও শ্যাম থেকে সুন্দর হয়ে ওঠেন (ব্রহ্মা বাবা)।বাবা তোমাদের সবাইকে সুন্দর করে সঙ্গে করে নিয়ে যান । তোমরা বাচ্চাদেরও সুন্দর হয়ে অন্যদেরও সুন্দর করে তুলতে হবে । বাবা তো শ্যাম-সুন্দর হন না। গীতায় ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে, সেখানে বাবার পরিবর্তে কৃষ্ণের নাম লেখা হয়েছে, একেই বলে মস্ত ভুল । সম্পূর্ণ বিশ্বকে সুন্দর করে তোলেন যে শিববাবা উনি সর্বপ্রথম তাকেই পরিবর্তন করেন যিনি স্বর্গের প্রথম সুন্দর, তারই নাম গীতায় লিখিত হয়েছে । এই বিষয়ে কেউ-ই কিছু জানে না । ভারত আবার সুন্দর হবে । ওরা তো ভাবে ৪০ হাজার বছর পরে আবার স্বর্গ হবে আর তোমরা বলতে পারছ সম্পূর্ণ কল্প ৫ হাজার বছরের । সুতরাং বাবা এসে আত্মাদের সাথে কথা বলেন । উনি বলেন, আমি অর্ধকল্পের জন্য প্রেমিক হয়ে আসি । তোমরা আমাকে আহ্বান করে বলেছ ‐‐ হে পতিত-পাবন এসো, এসে আমরা আত্মাদের, প্রেমিকাদের পবিত্র করে তোল । সুতরাং ওঁনার শ্রীমতে চলা উচিত । মেহনত (পুরুষার্থ) করা উচিত । বাবা এমন বলেন না যে, তোমরা কাজকর্ম কোরো না । কখনওই বলেন না । সবকিছুই করতে হবে । গৃহস্থ পরিবারে থেকে, সন্তান এবং পরিবারের সবার প্রতি দায়িত্ব পালন করে নিজেকে আত্মা মনে করে আমাকে স্মরণ করো। কেননা আমি পতিত-পাবন । সন্তানের দায়িত্ব পালন কর কিন্তু আরও সন্তানের জন্ম দিও না । নয়তো সে সবই স্মরণে আসবে । পরিবারের সবাই থাকতেও তাদের ভুলে যেতে হবে। যা কিছু তোমরা দেখছ সবই শেষ হয়ে যাবে । শরীরও শেষ হয়ে যাবে । বাবার স্মরণে আত্মা পবিত্র হয়ে যাবে আবার নতুন শরীর প্রাপ্ত করবে । এ হলো বেহদের ( অনন্ত) সন্ন্যাস । বাবা নতুন ঘর নির্মাণ করছেন, সুতরাং এই পুরানো ঘর থেকে মন সরে যায় । স্বর্গে কি নেই, অপার সুখ সেখানে । স্বর্গ তো এখানেই হবে । দিলওয়ারা মন্দির হল সেই স্মারক চিহ্ন । যার নীচে বসে তোমরা তপস্যা করছ, স্বর্গ কোথায় দেখাবে ? ওরা ছাদের ( সিলিং) উপর স্বর্গ দেখিয়েছে । নীচে তোমরা বসে রাজযোগ তপস্যা করছ, উপরে তোমরা রাজত্ব করছ। কত সুন্দর ঐ মন্দির। উপরে অচলঘর, সেখানে সোনার মূর্তি এবং সর্বোচ্চ স্থানে গুরু শিখরকে দেখানো হয়েছে । গুরু সর্বোচ্চ শিখরে বসে আছেন। উচ্চ থেকে উচ্চতর হলেন সদ্গুরু। মাঝখানে ওরা স্বর্গকে দেখিয়েছে। সুতরাং এই দিলওয়ারা মন্দির সম্পূর্ণ স্মৃতি বহন করে চলেছে, তোমরা রাজযোগ শিখছ তারপর স্বর্গ ওখানে নির্মাণ হবে । ওখানে দেবতারা ছিল, তাইনা । তাদের জন্যই এখন পবিত্র দুনিয়া নির্মাণ হচ্ছে । আচ্ছা!
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার:-
১. এই চোখ দ্বারা সব কিছু দেখেও সব ভুলে যাওয়া অভ্যাস করতে হবে । পুরানো গৃহ থেকে, দুনিয়া থেকে মনকে সরিয়ে নিতে হবে । নতুন গৃহকে স্মরণ করতে হবে ।
২. জ্ঞান স্নান করে সুন্দর পরী হয়ে উঠতে হবে । যেমন বাবা সুন্দর গৌরকান্তি পথিক ( মুসাফির) তেমনই তাঁর স্মরণে আত্মাকে শ্যাম থেকে সুন্দর হতে হবে । মায়ার যুদ্ধে ভীত হওয়া উচিত নয়, বিজয়ী হয়ে দেখাতে হবে ।
বরদান:-
অনন্তের বৈরাগ্য বৃত্তি দ্বারা পুরানো সংস্কারের জাল থেকে সেফ থাকতে সমর্থ মাস্টার নলেজফুল ভব
পুরানো সংস্কারের কারণে সম্বন্ধ-সম্পর্কে সেবার কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হয় । সংস্কারই ভিন্ন ভিন্ন রূপে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করে। কোনও রকম আকর্ষণ কারও প্রতি থাকলে সেখানে বৈরাগ্য আসতে পারে না । সংস্কারের বিন্দুমাত্র অংশও যদি অন্তরে নিহিত থাকে তবে তা সময়ানুসারে বংশের রূপ ধারণ করে, পরবশ করে ফেলে। সেইজন্য নলেজফুল হও । বেহদের বৈরাগ্য বৃত্তি দ্বারা পুরানো সংস্কার, সম্বন্ধ, পদার্থ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হতে পারলেই সেফ থাকতে পারবে ।
স্লোগান:-
মায়ার প্রতি নির্ভয় হও আর নিজেদের সম্বন্ধের প্রতি নির্মাণ হও ।