২৩‐০৫‐১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - বেঁচে থেকেও এই দুঃখধামকে ডিভোর্স (বিচ্ছেদ) দাও, কেননা তোমাদের সুখধামে যেতে হবে"
প্রশ্ন:-
বাবা বাচ্চাদের কোন্ ছোট্ট পরিশ্রমটি করতে দিয়ে থাকেন ?
উত্তর:-
বাবা বলেন- বাচ্চারা, কাম হলো মহাশত্রু এর উপরই তোমাদের বিজয় প্রাপ্ত করতে হবে। এটাই তোমাদের জন্য এই ছোট্ট একটি পরিশ্রম দিয়ে থাকি। তোমাদের সম্পূর্ণ পবিত্র হতে হবে। পতিত থেকে পবিত্র অর্থাত্ পারশ (দিব্য গুণ সম্পন্ন) হয়ে উঠতে হবে । যারা পারশ হবে তারা পাথর বুদ্ধি হতে পারে না । তোমরা বাচ্চারা এখন সুন্দর ফুল হয়ে উঠলে বাবা তোমাদের নয়নে বসিয়ে নিয়ে যাবেন।
ওম্ শান্তি ।
রূহানী বাবা রূহানী বাচ্চাদের বোঝান, এটা তো বাচ্চারা নিশ্চয়ই বুঝেছ যে আমরাই ব্রাহ্মণ, যারা দেবতা হবে সম্পূর্ণ রূপে নিশ্চিত তাইনা ! টীচার যাদের শিক্ষা প্রদান করেন নিজের সমতুল্য করে তোলেন । এটা তো দৃঢ় প্রত্যয়ের বিষয় ।
কল্পে-কল্পে বাবা এসে বোঝান, আমি নরকবাসীদের স্বর্গবাসী করে তুলি, সম্পূর্ণ দুনিয়াকে রচনা করার জন্য কেউ তো হবে তাইনা! বাবা স্বর্গবাসী করে তোলেন আর রাবণ এসে নরকবাসী করে তোলে। এই সময় হলো রাবণ রাজ্য, সত্যযুগ হলো রাম রাজ্য । রাম রাজ্যের স্থাপনাকারী যখন আছে তখন রাবণ রাজ্য স্থাপনাকারীও নিশ্চয়ই কেউ হবে। রাম ভগবানকে বলা হয়, ভগবান নতুন দুনিয়া স্থাপন করেন। জ্ঞান তো অনেক সহজ, এমন কোনও বড়ো বিষয় নয়, কিন্তু পাথর বুদ্ধি এমনই যে পারশ বা স্পর্শ বুদ্ধি হওয়া অসম্ভব বলে মনে করে । নরকবাসী থেকে স্বর্গবাসী হতে গেলে বড় পরিশ্রম করতে হয় কেননা মায়ার প্রভাব বিস্তৃত । কত বড় বড় বিল্ডিং ৫০ তলা, ১০০ তলা তৈরি করে, স্বর্গে এত বিশাল মহল হয় না । আজকাল এখানেও তৈরি করে চলেছে । তোমরা ভাবছ সত্যযুগে এমন মহল হয় না, যেমনটা এখানে তৈরি করে, বাবা স্বয়ং বোঝান এতো ছোট ঝাড় সম্পূর্ণ বিশ্বে থাকে (সত্যযুগে লোকসংখ্যা কম থাকে) যে, ওখানে অনেক তলা বিল্ডিং তৈরি করার কোনও প্রয়োজনই পড়ে না । প্রচুর পরিমাণে জমি পড়ে থাকে । এখানে তো জায়গাই নেই, সেইজন্যই জায়গার মূল্য কত বৃদ্ধি পেয়েছে । ওখানে জায়গার জন্য কোনও মূল্য দিতে হয় না । না মিউনিসিপ্যালিটির ট্যাক্স ইত্যাদি দিতে হয় । যার যত পরিমাণ জায়গা প্রয়োজন নিতে পারে। ওখানে তোমরা সর্ব সুখ লাভ করতে পার, শুধুমাত্র বাবার এই নলেজ দ্বারা । মানুষ ১০০ তলা বিল্ডিং ইত্যাদি যা কিছু তৈরি করে, তারজন্য তো অর্থ লাগে তাইনা, ওখানে কোনও অর্থের প্রয়োজন পড়ে না । অগাধ ধন-সম্পত্তি থাকে, টাকা পয়সার কোনও মূল্যই নেই । প্রচুর টাকা থাকলে তা দিয়ে কি করবে । সোনা, হীরে, মুক্ত দিয়ে মহল তৈরি করে । এখন তোমরা বাচ্চারা কত কি বুঝতে পারছ । সম্পূর্ণ বিষয়টি বুঝতে পারা আর না বুঝতে না পারার ব্যাপার । সতো বুদ্ধি আর তমো বুদ্ধি । সতোপ্রধান বুদ্ধি হয় স্বর্গের মালিক, তমোপ্রধান বুদ্ধি হয় নরকের মালিক । এটা তো স্বর্গ নয়, এ হলো রৌরব ( সবরকম খারাপের অতি অবস্থা) নরক । এখানে মানুষ অনেক দুঃখী সেইজন্যই ভগবানকে আহ্বান করে, তারপর ভুলে যায় । কত মাথা ঠোকে, কনফারেন্স ইত্যাদি করতে থাকে যাতে ঐক্য ফিরে আসে, কিন্তু তোমরা বাচ্চারা বুঝেছ ‐‐ এরা নিজেদের মধ্যে একতা আনতে পারবে না । এই সম্পূর্ণ সৃষ্টি রূপী বৃক্ষ জরাজীর্ণ হয়ে গেছে, নতুন করে আবার তৈরি হচ্ছে । তোমরা জান কলিযুগ থেকে সত্যযুগ কিভাবে তৈরি হয়। একমাত্র এই সময়ই বাবা এসে তোমাদের নলেজ দিয়ে থাকেন । তোমরা সত্যযুগবাসীরা তারপর কলিযুগ বাসী হয়ে ওঠো তারপর তোমরা সঙ্গমযুগ বাসী হয়ে সত্যযুগবাসী হয়ে ওঠো। তোমরা জিজ্ঞাসা করতে পার সবাই সত্যযুগে আসবে ? তা নয়, যে প্রকৃত সত্য নারায়ণ কথা শুনবে সেই স্বর্গে যাবে, বাকি সবাই শান্তিধামে চলে যাবে । দুখধাম তো হবেই না । সুতরাং এই দুখধামকে বেঁচে থেকেও পরিত্যাগ করা উচিত । বাবা যুক্তি তো বলে দেন, কিভাবে তোমরা ত্যাগ করতে পার । এই সম্পূর্ণ সৃষ্টিতে দেবী-দেবতাদের রাজ্য ছিল । এখন আবার বাবা আসেন স্থাপনা করতে । আমরা বাবার কাছ থেকে বিশ্বের রাজ্য গ্রহণ করতে চলেছি । ড্রামা প্ল্যান অনুসারে অবশ্যই পরিবর্তন হবে । এ হলো পুরানো দুনিয়া, একে সত্যযুগ কিভাবে বলবে ? মানুষ তো একদমই বোঝেনা সত্যযুগ কি । বাবা বুঝিয়েছেন এই নলেজের উপযুক্ত সেই হবে যে, অগাধ ভক্তি করে এসেছে । তাদেরই বোঝান উচিত । যারা এই কুলের নয়, তারা এটা বুঝবে না, সুতরাং শুধু-শুধু সময় নষ্ট কেন করবে । আমাদের পরিবার ভুক্ত না হলে কিছুই মানবে না । বলে দেয় আত্মা কি পরমাত্মা কি - এসব আমি বুঝতেই চাইনা । সুতরাং এমন আত্মাদের জন্য কেন পরিশ্রম করবে ? বাবা বুঝিয়েছেন- উপরে লেখা আছে ভগবানুবাচ, আমি আসি কল্পে-কল্পে পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে সাধারণ মনুষ্য শরীরে। যে নিজের জন্ম সম্পর্কে জানে না, আমিই বলে দিই। সম্পূর্ণ ৫ হাজার বছরের পার্ট কে প্লে করে আমি বলে দিই । যে প্রথম নম্বরে আসে তারই পার্ট হবে না ! শ্রী কৃষ্ণের জন্য মহিমাও করা হয় যে, ফার্স্ট প্রিন্স অফ গোল্ডেন এজ ( সত্যযুগের প্রথম প্রিন্স )। সে তারপর ৮৪ জন্মের পর কি হবে ? ফার্স্ট বেগার । বেগার থেকে প্রিন্স, আবার প্রিন্স থেকে বেগার। তোমরা বুঝেছ প্রিন্স টু বেগার কিভাবে হয় । তারপর বাবা এসে কড়ি থেকে হীরেতুল্য করে তোলেন। যে হীরেতুল্য হবে সে-ই আবার কড়িতুল্য হয়ে পড়বে। পুনর্জন্ম তো নিতেই হবে তাইনা! সর্বাধিক জন্ম গ্রহণ কে করে এটা তোমরা বুঝেছ । সর্বপ্রথম শ্রী কৃষ্ণকেই মানবে কেননা এটাই তার রাজধানী । অনেক জন্মগ্রহণ সে-ই করবে। এটা অনেক সহজ বিষয় কিন্তু মানুষ এইসবের প্রতি কোনও লক্ষ্যই করেনা। বাবা যখন বোঝান তখন অবাক হয়ে যায় । বাবা তোমাদের অ্যাকুরেট বুঝিয়ে বলেন যে প্রথমে আসবে, সে-ই শেষে যাবে । প্রথম হবে হীরেতুল্য, শেষে কড়ি তুল্য হয়ে পড়বে, তারপর আবার হীরেতুল্য হয়ে উঠতে হবে । পবিত্র হতে হবে, এতে কিসের কষ্ট ?
পারলৌকিক বাবা অর্ডিন্যান্স দেন- কাম ( মনোবিকার) মহাশত্রু। কার দ্বারা তোমরা পতিত হয়েছ ? বিকারে চলে যাও আর সেইজন্যই আহ্বান করে বলে থাক পতিত পাবন এসো, কেননা বাবা তো চির পারশ বুদ্ধি, উনি কখনোই পাথর বুদ্ধির হন না, কানেকশনও হয়েছে তাঁর সাথে যিনি প্রথম নম্বরে জন্ম গ্রহণ করেছেন । দেবতা অনেক, কিন্তু মানুষ কিছুই বোঝেনা।
ক্রিশ্চানরাও বলে থাকে ক্রাইস্টের ৩ হাজার বছর আগে স্বর্গ ছিল । ওরা শেষে এসেছিল সুতরাং ওদের শক্তিও ছিল । সবাই ওদের কাছ থেকেই শিখেছিল কেননা ওদের বুদ্ধি ফ্রেশ ছিল । বৃদ্ধিও ওদের হয়েছিল । ওরাও সতো, রজো, তমোর মধ্য দিয়ে আসে ! তোমরা জান ওরা সবকিছু বিলেত থেকে শেখে । তোমরা এটাও জান - সত্যযুগে মহল ইত্যাদি তৈরি করতে সময় লাগেনা । একজনের বুদ্ধিতে আসে ( মহল তৈরির ডিজাইন ) তারপর একের পর এক তৈরি করে বৃদ্ধি পেতেই থাকে। বুদ্ধিতে ধারণ হয়ে যায় তাইনা! সায়েন্সের বুদ্ধিতে দ্রুততার সাথে মহল তৈরি করতে শুরু করে দেয়। এখানে বাড়ি বা মন্দির তৈরি করতে ১২ মাস সময় লেগে যায় । ওখানে ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি সবাই কর্মকুশলতায় পারদর্শি হয় । ওটা হল গোল্ডেন এজ । পাথর ইত্যাদি তো থাকবেই না । এখান তোমরা বসে কল্পনা করতে থাক, আমরা এই পুরানো শরীর ত্যাগ করে ঘরে ফিরে যাব, ওখান থেকে তারপর সত্যযুগে এসে যোগবল দ্বারা জন্ম গ্রহণ করব। বাচ্চাদের খুশি কেন থাকবে না! চিন্তন কেন চলে না ! যারা ভীষণ সার্ভিসেবল বাচ্চা তাদের চিন্তন অবশ্যই চলে। যেমন ব্যারিস্টারী পাশ করার পর বুদ্ধিতে চলে ‐- আমি এটা করব, ওটা করব । তোমরাও বুঝেছ আমরা এই শরীর ছেড়ে এই ( দেবতা)হব। স্মরণেই তোমাদের আয়ু বৃদ্ধি হবে । তোমরা এখন অনন্ত (বেহদ) জগতের পিতার সন্তান । এই পদ ( গ্রেড) অনেক উচ্চ । তোমরা হলো ঈশ্বরীয় পরিবার ভুক্ত আর কোনও সম্বন্ধ নেই । তোমরা ভাই-বোনের থেকেও উচ্চ স্থানে বসিয়েছো।
ভাই-ভাই মনে করা, এটা খুব অভ্যাস করতে হবে । ভাইয়ের নিবাস কোথায় ? এই সিংহাসনে অমর আত্মা বাস করে । এই আসন সমস্ত আত্মাদের ক্ষয় হয়ে গেছে । সবচেয়ে বেশি ক্ষয় তোমাদের হয়েছে । আত্মা এই আসনে বিরাজমান । ভ্রুকুটির মধ্যবর্তী স্থানে কি আছে ? এটা বুদ্ধি দিয়ে বোঝার বিষয় । আত্মা খুব সূক্ষ্ম, নক্ষত্রের মতো । বাবা বলেন আমিও বিন্দু, তোমাদের থেকে মোটেই বড় নই। তোমরা জান আমরা শিববাবার সন্তান, এখন বাবার কাছ থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার নিতে হবে, সেইজন্য নিজেদের আত্মা ভাই-ভাই মনে কর । বাবা তোমাদের সামনে এসে শিক্ষা প্রদান করছেন । যেমন যেমন অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা চলতে থাকবে, বিঘ্নও ড্রামানুসারে আসতে থাকবে ।
এখন বাবা বলছেন-- তোমাদের পতিত হওয়া উচিত নয়, এটাই অর্ডিন্যান্স । আত্মা এখন তমোপ্রধান হয়ে গেছে, বিকার ছাড়া থাকতেই পারে না । যেমন গভর্নমেন্ট বলে মদ্যপান কোরনা, কিন্তু মাদক ছাড়া থাকতেই পারে না । তারপর আবার তাদেরই মদ্যপান করিয়ে বলা হয় অমুক স্থানে বোম্বস সমেত ঝাঁপিয়ে পড় । কত ক্ষয়ক্ষতি হয় । তোমরা এখানে বসে বিশ্বের মালিক হতে যাচ্ছ । ওরা ওখানে বসে বসে বোমা নিক্ষেপ করে ‐ সম্পূর্ণ বিশ্বকে বিনাশ করার জন্য । কত রকম প্রতিযোগিতা চলে ধ্বংসের জন্য । তোমরা এখানে বসে বসে বাবাকে স্মরণ করে বিশ্বের মালিক হয়ে যাও। যেভাবেই হোক বাবাকে অবশ্যই স্মরণ করা উচিত । এখানে হঠযোগ বা আসন ইত্যাদি করার কোনও প্রয়োজন নেই । বাবা কোনও কষ্ট দেন না । যেভাবেই পার বসে শুধু তোমরা স্মরণ কর যে, আমরা বাবার মোস্ট বিলাভড (প্রিয়) সন্তান । তোমাদের বাদশাহী এমনভাবেই প্রাপ্ত হয় ঠিক যেন মাখন থেকে চুল সরিয়ে নেওয়া । গাওয়াও হয়ে থাকে সেকেন্ডে জীবন মুক্তি । যেখানেই বসো, ঘোরো, ফেরো কিন্তু বাবাকে স্মরণ কর । পবিত্র না হলে কিভাবে যাবে ? নয়তো সাজা খেতে হবে । যখন ধর্মরাজের কাছে যাবে তখনই সবার হিসেব-নিকেশ মিটবে । যত পবিত্র হবে ততই উচ্চ পদ প্রাপ্ত হবে । অপবিত্র থাকলে শুকনো রুটি খেতে হবে । যত বাবাকে স্মরণ করতে থাকবে, পাপ কাটতে থাকবে। এখানে খরচের কোনও প্রশ্নই নেই । ঘরে বসে আছ, বাবার কাছ থেকে মন্ত্র নিয়ে নাও । এ হলো মায়াকে পরাজিত করার মন্ত্র-- মনমনাভব । এই মন্ত্র নিয়ে যাও ঘরে যেতে পার, মুখে কিছু বলার প্রয়োজন নেই । অল্ফ আর বাদশাহীকে স্মরণ কর । তোমরা বুঝেছ বাবাকে স্মরণ করলে আমরা সতোপ্রধান হয়ে যাব । পাপ বিনষ্ট হবে । বাবা ( ব্রহ্মা বাবা) নিজের অনুভবও শুনিয়ে থাকেন-- যখন খেতে বসি, ভাবি বাবাকে স্মরণ করে খাবার গ্রহণ করব কিন্তু চট করে ভুলে যাই, কেননা বলাও হয়ে থাকে যার মাথায় এত দায়িত্বের ভার•••• কত খেয়াল রাখতে হয়-- অমুক আত্মা অনেক সার্ভিস করে তাকে স্মরণ করতে হবে । সেবাধারী বাচ্চাদের বাবা খুব স্নেহ করেন । তোমাদেরও বলেন এই শরীরে যে আত্মা বিরাজমান তাকে স্মরণ কর । এখানে তোমরা শিববাবার কাছেই আস । বাবা পরমধাম থেকে নীচে নেমে এসেছেন । তোমরা সবাইকে বলেও থাক -- ভগবান এসেছেন, কিন্তু ওরা বোঝেনা । যুক্তি দিয়ে বোঝাতে হবে । লৌকিক আর অসীম জগতের দুইজন পিতা । এখন অসীম জগতের পিতা রাজ্য সিংহাসন দিচ্ছেন, পুরানো দুনিয়ার বিনাশ সামনে অপেক্ষা করছে । এক ধর্মের স্থাপনা, অনেক ধর্মের বিনাশ ঘটবে । বাবা বলেন মামেকম্ (একমাত্র আমাকেই) স্মরণ করলে তোমাদের পাপ ভস্মীভূত হয়ে যাবে, কেননা এ হলো যোগ অগ্নি, যার দ্বারা তোমরা তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে যাবে । এই উপায় বাবাই বলে দিয়েছেন । তোমরা বাচ্চারা জান-- বাবা সবাইকে সুন্দর ফুল বানিয়ে নয়নে বসিয়ে নিয়ে যান । উপার্জন অনেক । বাবাকে ভুলে গেলে লোকসান হবে অনেক । প্রকৃত ব্যবসায়ী হও। বাবাকে স্মরণ করলেই আত্মা পবিত্র হবে। তারপর এক শরীর ছেড়ে অন্য শরীর ধারণ করবে । সুতরাং বাবা বলেন-- মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, দেহী-অভিমানী হও । এই অভ্যাস যথার্থ রূপে গড়ে তুলতে হবে । নিজেকে আত্মা মনে করে বাবার কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করলে তরী পার হয়ে যাবে । শিবালয়ে চলে যাবে । ★ চন্দ্রকান্ত বেদান্তেও এই কথা আছে । নৌকা কিভাবে এগিয়ে চলে, তারপর মাঝপথে কোনও জিনিসের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে কিছু কিছু যাত্রী নেমে পড়ে, তারপর স্টীমার ওদের ফেলেই এগিয়ে চলে । এ হলো ভক্তি মার্গের শাস্ত্র, আবারও তৈরি হবে তোমরাও আবার পড়বে। তারপর আবার যখন বাবা আসবেন তখন এইসব পড়া ছেড়ে দেবে। বাবা আসেন সবাইকে নিয়ে যেতে । ভারতের উত্থান আর পতন কিভাবে হয়, খুব পরিষ্কার । এখানে শ্যাম আর সুন্দর হয় । ব্রহ্মা থেকে বিষ্ণু, বিষ্ণু থেকে ব্রহ্মা । একজনই তো শুধু হয় তাইনা! এটা সম্পূর্ণ রূপে বোঝাতে হবে । কৃষ্ণ সম্পর্কেও বোঝাতে হবে কখন সুন্দর আর কখন শ্যাম হয় । সে যখন স্বর্গে যায় তখন নরককে লাথি মারে । চিত্রে এটা পরিষ্কার, তাইনা ! তোমাদের রাজকীয় চিত্রও তৈরি করা হয়েছিল । আচ্ছা!
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ, সুমন স্মরণ আর সুপ্রভাত । আত্মা রূপী বাচ্চাদের প্রতি আত্মাদের বাবার নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১. বাবার অর্ডিন্যান্সকে (আদেশ) পালন করার জন্য আমরা আত্মারা ভাই-ভাই, ভ্রুকুটির মাঝখানে আমাদের নিবাস, আমরা অসীম জগতের পিতার সন্তান, এটা আমাদের ঈশ্বরীয় পরিবার-- এই স্মৃতিতে থাকতে হবে, দেহী-অভিমানী হওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে ।
২. ধর্মরাজের শাস্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিজের সমস্ত হিসেব-নিকেশ মিটিয়ে ফেলতে হবে । মায়াকে বশীভূত করার যে মন্ত্র পেয়েছ, তাকে স্মৃতিতে রেখে সতোপ্রধান হয়ে উঠতে হবে ।
বরদান:-
সদা সতর্ক থেকে সবার আশাকে পূর্ণ করতে সমর্থ মাস্টার মুক্তি-জীবনমুক্তি দাতা ভব
এখন সমস্ত বাচ্চাদের এই শুভ সঙ্কল্প জাগ্রত হওয়া উচিত যে সবার আশা পূর্ণ হবে । সবার ইচ্ছা যে জন্ম-মৃত্যু থেকে মুক্ত হয়ে যাওয়া, সুতরাং তার অনুভব করাও । এর জন্য নিজের শক্তিশালী সতোপ্রধান ভাইব্রেশন দ্বারা প্রকৃতি আর মনুষ্য আত্মাদের বৃত্তিকে পরিবর্তন কর । মাস্টার দাতা হয়ে প্রতিটি আত্মার আশাকে পূর্ণ কর । মুক্তি-জীবনমুক্তির দান প্রদান কর । এই দায়িত্বশীলতার স্মৃতি তোমাদের সবসময় এলার্ট করে তুলবে ।
স্লোগান:-
মুরলীধরের মুরলী শোনার জন্য দেহের সমস্ত চেতনাকে ভুলতে সমর্থরাই প্রকৃত গোপ-গোপিনী।