২৭-১০-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ২৭-০২-৮৫ মধুবন
শিবশক্তি তথা পান্ডবসেনার বিশেষত্ব
আজ অমৃতবেলা থেকে বাবার সমুখে আগত দূরদেশী অথচ হৃদয়ের কাছে থাকা বিশেষ ডবল বিদেশি বাচ্চাদের বাপদাদা দেখছিলেন l বাবা আর দাদার নিজেদের মধ্যে আজ মিষ্টি রূহ্-রিহান অর্থাৎ অলৌকিক আলাপচারিতা হচ্ছিল l কোন্ বিষয়ে ? ব্রহ্মা বাবা বিশেষ ডবল বিদেশি বাচ্চাদের দেখে পুলকিত হয়ে বলেন, বাচ্চাদের এটা চমৎকারিত্ব ! এত দূর দেশবাসী হয়েও সদা সস্নেহে একমনা হয়ে থাকে, যেকোন উপায়ে বাপদাদার বার্তা সবার কাছে অবশ্যই পৌঁছে দেবে l সেইজন্য কোনো কোনো বাচ্চা ডবল কার্য করাকালীন লৌকিক এবং অলৌকিকে বিজি হয়েও নিজস্ব আরামের ব্যাপারে না ভেবে দিনরাত একনিষ্ঠভাবে সেই কার্যে রত থাকে l নিজেদের ভোজনপানেরও পরোয়া না করে সেবায় নিয়োজিত থাকে l যে পিওরিটির বিষয়কে লোকে আন-ন্যাচারাল জীবন মনে করে এসেছে, সেই পিওরিটিই জীবনাভ্যাস হিসেবে গড়ে তোলার জন্য, *ইমপিওরিটি ত্যাগ করতে সাহসের সঙ্গে, দৃঢ় সঙ্কল্পের সাথে, বাবার প্রতি ভালোবাসায়, স্মরণের যাত্রা দ্বারা শান্তিপ্রাপ্তির আধারে, পঠন-পাঠন এবং পরিবারের সঙ্গের আধারে* নিজের জীবনে সেই পিওরিটিই তোমরা ধারণ করেছ l লোকে যেটা কঠিন মনে করত, তোমরা সেটা সহজ করে নিয়েছ l ব্রহ্মাবাবা পান্ডবসেনাকে দেখে তোমরা সব বাচ্চার বিশেষভাবে মহিমা গাইছিলেন l কি বিষয়ে ? তোমাদের প্রত্যেকের হৃদয়ে আছে, "পবিত্রতাই যোগী হওয়ার প্রথম সাধন" l পবিত্রতাই বাবার স্নেহ অনুভব করার সাধন, পবিত্রতাই সেবাতে সাফল্যের আধার l এই শুভ সঙ্কল্প প্রত্যেকের হৃদয়ে দৃঢ়বদ্ধ l আর পাণ্ডবদের চমৎকারিত্ব এটাই, শক্তিদের সামনে রেখেও তোমরা নিজেদের অগ্রচালিত করতে উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে চলছ l পাণ্ডবদের তীব্র পুরুষার্থ যে তীব্র গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তাদের উত্তমরূপে উন্নতি ভালো মতোই দেখতে পাওয়া যাচ্ছে l তোমাদের মেজরিটি এই গতিতে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে l
শিববাবা বলেন - পান্ডব বিশেষ রিগার্ড দেওয়ার ভালো রেকর্ড দেখিয়েছে l সেইসঙ্গে তিনি মজাদার কথাও বলেছেন l মধ্যে মধ্যে তারা সংস্কারের খেলাও খেলে l যতই হোক, তবুও, উন্নতিসাধনে তাদের প্রবল উৎসাহের কারণে এবং বাবার প্রতি অতি স্নেহের কারণে, তারা বোঝে যে স্নেহের মধ্যে থেকেই তাদের পরিবর্তন বাবার প্রিয়, সেইজন্য তারা নিজেদের সমর্পণ করে দেয় l বাবা যা বলেন, যা চান তারা শুধুমাত্র সেটাই করবে l এই সঙ্কল্পের সাথে তারা নিজেদের পরিবর্তন করে নেয় l ভালোবাসা থেকেই তাদের পরিশ্রম, পরিশ্রম অনুভূত হয় না l স্নেহের কারণে কোনকিছু সহন করা, সহন করা মনে হয় না l সেইজন্য তবুও 'বাবা বাবা' ব'লে তারা সামনে এগিয়ে যাচ্ছে l এই জন্মের দেহের সংস্কার পুরুষত্ব অর্থাৎ শারীরিক ভাবে পুরুষ হয়েও, তবুও তারা নিজেদের ভালো পরিবর্তন করেছে l রচয়িতা বাবাকে তাদের সামনে রাখার কারণে নিরহঙ্কারী এবং নম্রতা ভাব, এই ধারণার লক্ষ্য আর লক্ষণ ভালোভাবে ধারণ করেছে আর এখনও করছে l দুনিয়ার বাতাবরণে তারা অন্যদের সাথে সম্পর্কে আসে কিন্তু তাদের স্মরণের একনিষ্ঠার ছত্রছায়া থাকার কারণে সেফ থাকার খুব ভালো প্রমাণ দিচ্ছে l পাণ্ডবদের সম্পর্কে শুনেছ তোমরা ! বাপদাদা আজ প্রিয়তম (মাশুক) হওয়ার পরিবর্তে প্রিয়তমা (আশিক) হয়ে গেছেন, সেইজন্য তোমাদের দেখে তিনি উৎফুল্ল l উভয়েরই বাচ্চাদের প্রতি বিশেষ স্নেহ আছে l সুতরাং আজ, অমৃতবেলা থেকে বাপদাদা বাচ্চাদের বিশেষত্ব এবং গুণের মালা জপ করেছেন l তোমরা সব ৬৩ জন্ম মালা জপ করেছ আর বাবা রিটার্ণে এখন মালা জপ করে তোমাদের রেসপন্স দিচ্ছেন l
আচ্ছা শক্তিদের কি মালা বাবা জপ করেছেন ? শক্তি সেনার সবচেয়ে বেশি বিশেষত্ব এটাই - বাবার স্নেহে নিমজ্জিত হয়ে প্রতি মুহূর্তে তাঁর প্রতি তোমাদের ভালোবাসায় এবং এক বাবার সাথে সর্ব সম্বন্ধের অনুভবে প্রবল একাগ্রতায় তোমরা অগ্রচালিত হচ্ছ l এক নয়নে বাবা, অন্য নয়নে সেবা, উভয় নয়নে সদা এইই সমাহিত হয়ে আছে l তোমাদের বিশেষ পরিবর্তন এটাই ছিল, তোমাদের যে অমনোযোগী ভাব, সহজে সংবেদনশীল ভাব ছিল তা' ত্যাগ করেছ l সাহসী তোমরা শক্তিস্বরূপ হয়েছ l আজ বাপদাদা বিশেষভাবে অল্পবয়সী শক্তিদের দেখছিলেন l এই যুবাবস্থায় অনেক রকমের অল্পকালীন আকর্ষণ ছেড়ে এক বাবার আকর্ষণে প্রবল উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে চলেছ l সংসারকে অসার সংসার অনুভব করে বাবাকে তোমাদের সংসার বানিয়েছ l তন, মন, ধন বাবা আর সেবায় নিয়োজিত করে প্রাপ্তির অনুভবে সোজা সামনের দিকে এগিয়ে উড়তি কলায় যাচ্ছ l তোমরা খুব ভালো ভাবে দায়িত্বের মুকুট ধারণ করেছ l কখনো কখনো ক্লান্তিবোধ করলেও, কখনো কখনো বুদ্ধিতে ভার অনুভব করেও বাবাকে ফলো করতেই হবে, বাবাকে প্রত্যক্ষ করতেই হবে এই দৃঢ়তার সাথে এইসব বিষয় সমাপ্ত করে আবার সাফল্যও লাভ করছ l সেইজন্য বাপদাদা যখনই বাচ্চাদের ভালোবাসা দেখেন তো তিনি বারবার এই বরদান দেন, "হিম্মতে বাচ্চা মদতে বাপ" অর্থাৎ 'সাহসী বাচ্চার সহায় বাবা' l সফলতা তোমাদের জন্মসিদ্ধ অধিকার তো আছেই, বাবার সাহচর্য থাকলে সব পরিস্থিতি তোমরা এমনভাবে বশীভূত কর যেন মাখন থেকে কেশ বার করছ l সফলতা বাচ্চাদের গলার মালা l সাফল্যের মালা তোমরা সব বাচ্চাকে স্বাগত জানাতে চলেছে l সেইজন্য বাচ্চাদের ত্যাগ, তপস্যা আর সেবাতে বাপদাদাও সমর্পিত হয়ে যান l স্নেহের কারণে কোনকিছু তোমাদের কঠিন অনুভব হয় না l এইরকমই হয়, তাই না ! যেখানে স্নেহ আছে, সেখানে স্নেহের দুনিয়ায় বা বাবার ভাষায় 'কঠিন' শব্দই নেই l শক্তি সেনার বিশেষত্ব কঠিনকে সহজ বানানো l প্রত্যেকের হৃদয়ে প্রবল উৎসাহ এটাই, সবচেয়ে বেশি আর শীঘ্রাতিশীঘ্র বার্তা দেওয়ার নিমিত্ত হয়ে বাবার সামনে রূহানী গোলাপের স্তবক নিয়ে আসা l বাবা যেমন তোমাদের বানিয়েছেন, ঠিক সেইভাবেই তোমাদেরও অন্যদের তৈরি করে বাবার সামনে নিয়ে আসা প্রয়োজন l শক্তি সেনা পারস্পরিক সহযোগিতায় সংগঠিতরূপে ভারতের থেকেও অধিক নতুন কোনও বিশেষত্ব বিদেশে গড়ার জন্য শুভ উদ্যমে আছে অর্থাৎ প্রবলভাবে তারা অগ্রহান্বিত l যেখানে সঙ্কল্প সেখানে সাফল্য অবশ্যই আছে l শক্তি সেনা প্রত্যেকে নিজের ভিন্ন ভিন্ন স্থানে বৃদ্ধি আর সিদ্ধি প্রাপ্ত করায় সফল হচ্ছে আর হতেও থাকবে l সুতরাং উভয়ের স্নেহ দেখে, সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে, বাপদাদা পুলকিত l প্রত্যেকের গুণ বাবা কত গায়ন করতে পারেন ! নয়তো, সূক্ষ্ম বতনে বাপদাদা প্রত্যেক বাচ্চার গুণ বর্ণন করছিলেন l এই সম্বন্ধে ভাবতে ভাবতে এই দেশের কিছু লোক বাদ থেকে যাবে, সেখানে বিদেশের লোকে তাঁকে চিনে তাদের অধিকার প্রাপ্ত করে নিয়েছে l সেই সমস্ত লোক দেখতে থেকে যাবে, আর তোমরা বাবার সঙ্গে ঘরে পৌঁছে যাবে l তারা আর্তনাদ করবে আর তোমরা তোমাদের বরদানের দৃষ্টি দ্বারা তবুও অঞ্জলিভর কিছু না কিছু দিতে থাকবে l
তাহলে শুনেছ আজ বাপদাদা বিশেষ কী করেছেন ? সারা সংগঠন দেখে বাপদাদা ভাগ্যবান বাচ্চাদের ভাগ্য বানানোর মহিমা গাইছিলেন l যারা দূরের তারা কাছের হয়ে গেছে আর যারা আবুতে কাছে থাকে তারা দূরের হয়ে গেছে ! কাছে থেকেও তারা দূরের, আর তোমরা দূরে থেকেও কাছে l তারা শুধুই দেখে আর তোমরা সদা হৃদয় সিংহাসনে থাক l কতো স্নেহের সাথে এখানে, মধুবনে আসার উপায় বার কর l প্রতি মাস তোমরা এই গীত গাও - বাবার সঙ্গে মিলিত হতে চাই, যেতে চাই l জমা করতে হবে l সুতরাং এই একাগ্রতাও মায়াজিৎ হওয়ার সাধন হয়ে যায় l যদি সহজে টিকিট পেয়ে যাও, সেই প্রবল আকাঙ্ক্ষায় বিঘ্ন বেশি হবে l যতই হোক, বিন্দু বিন্দু সঞ্চয়ে তোমরা সিন্ধু (তলাব) তৈরি কর l সেইজন্য তোমাদের বিন্দু বিন্দু সঞ্চয়নের মধ্যে বাবার স্মরণ মিশে আছে l এই কারণে ড্রামাতে যা হয় তা' কল্যাণকারী l যদি বেশি অর্থ পেয়ে যাও, তখন মায়া আসবে আর তোমরা সেবা ভুলে যাবে l সেইজন্য ধনবান, বাবার অধিকারী বাচ্চা হতে পারে না l
তোমরা উপার্জন কর আর সঞ্চয় কর l প্রকৃত উপার্জনের ধন সঞ্চয়ে বল আছে l প্রকৃত উপার্জনের ধন বাবার কার্যে সফল হচ্ছে l যদি এমনিতে ধন সমাগম ঘটে, তবে এর জন্য তন নিয়োজিত হবে না l আর তন ব্যবহৃত না হলে মনও নিচে-ওপরে অর্থাৎ চঞ্চল হবে l সেই কারণে তন-মন-ধন এই তিনই ব্যবহৃত হচ্ছে l এইজন্য সঙ্গমযুগে হওয়া উপার্জন ঈশ্বরীয় ব্যাঙ্কে সঞ্চয় করা, এমন জীবনই নম্বর ওয়ান জীবন l
উপার্জন করলে আর বিনাশী জাগতিক ব্যাঙ্কে জমা করলে তা' সফল হবে না অর্থাৎ সময়োপযোগী ধন হবে না l তোমরা শুধু উপার্জন করলে আর অবিনাশী ব্যাঙ্কে সঞ্চয় করলে, তখন এক পদমগুন হয়ে যায় l ২১ জন্মের জন্য সঞ্চিত হয় l হৃদয় দিয়ে যা কিছু কর তা' দিলারামের কাছে পৌঁছায় l যদি কেউ অন্যকে দেখানোর জন্য করে, তাহলে দেখানোতেই নিঃশেষিত হয় l দিলারামের কাছে পৌঁছায় না l সেইজন্য তোমরা ভালো, হৃদয় দিয়ে কর l যারা হৃদয় থেকে কিছুও করে, তারাও পদমাপদম পতি হয়ে যায় আর লোক দেখানো হাজার করলেও পদমাপদম পতি হয় না l হৃদয়ের উপার্জন, স্নেহের উপার্জন প্রকৃত উপার্জন l কিসের জন্য উপার্জন কর ? সেবার জন্য, নাকি নিজের আরামের জন্য ? সুতরাং এটাই প্রকৃত হৃদয়ের উপার্জন, যা একও পদমগুন হয়ে যায় l যদি নিজের আরামের জন্য রোজগার কর বা সঞ্চয় কর, তাহলে এখানে যদিও বা আরাম করবে কিন্তু ওখানে অন্যকে আরাম দেওয়ার নিমিত্ত হবে ! দাস-দাসীরা কী করবে ! রয়্যাল ফ্যামিলিকে আরাম দেওয়ার জন্যই তো হবে, নয় কি ! এখানে আরামে থাকা, ওখানে আরাম দেওয়ার নিমিত্ত হতে হবে, সেইজন্য যা কিছু তোমরা ভালোবাসার সাথে উপার্জন কর আর সেবাতে নিয়োগ কর, সেটাই সফল করছ l অনেক আত্মার আশীর্বাদ লাভ কর l যাদের নিমিত্ত হও, তারাই তোমাদের ভক্ত হয়ে তোমাদের পূজা করবে, কারণ সেই আত্মাদের তোমরা সেবা করেছ, সুতরাং সেবার রিটার্ণে তারা তোমাদের জড় চিত্রের সেবা করবে ! পূজা করবে ! ৬৩ জন্ম সেবার রিটার্ণ দিতে থাকবে l বাবার থেকে তো পাওয়া যাবেই, আবার সেই আত্মাদের থেকেও পাওয়া যাবে l যাদের কাছে বার্তা পৌঁছে দাও, আর তারপরে যারা অধিকারী হয় না, তারাও এইভাবে রিটার্ণ দেবে l যারা অধিকারী হয় তারা তোমাদের সম্বন্ধে আসে l কিছু আসে সম্বন্ধে, কিছু ভক্ত হয়ে যায় l কিছু হয়ে যায় প্রজা l ভ্যারাইটি রেজাল্ট বের হয় l বুঝেছ ! লোকেও তো জিজ্ঞাসা করে, তোমরা সেবার পিছনে কেন পড়ে আছ ? ভোজনপান কর আর আনন্দ কর l কি লাভ হয় তোমাদের দিনরাত এত সেবার পিছনে ছুটে বেড়াচ্ছ ! এরপরে তোমরা কী বলো ? যা আমরা পেয়েছি তা' অনুভব করে দেখ l শুধুমাত্র অনুভাবীই জানে এই সুখ ! এই গীতই তোমরা গাও, তাই না ! আচ্ছা l
যারা সদা স্নেহে সমাহিত হয়ে আছে, সদা ত্যাগকেই ভাগ্য অনুভব করে, সদা এক থেকে যারা পদমগুন বানায়, সদা বাপদাদাকে ফলো করে, বাবাকে সংসার অনুভব করে, এইরকম হৃদয় সিংহাসনাসীন বাচ্চাদের দিলারাম বাবার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l
*বিদেশি ভাই-বোনেদের সাথে পার্সোনাল সাক্ষাৎকার -*
*১ )* নিজেদের ভাগ্যবান আত্মা মনে কর ? তোমরা অন্ততঃ এত ভাগ্য তো বানিয়েছ যে ভাগ্যবিধাতার স্থানে পৌঁছে গেছ l বুঝতে পারছ এটা কোন্ স্থান ? শান্তি-স্থানে পৌছানোও ভাগ্য ! সুতরাং, ভাগ্য প্রাপ্ত করার এই পথও খোলা আছে l ড্রামা অনুসারে ভাগ্য প্রাপ্ত করার স্থানে তোমরা পৌঁছে গেছ l ভাগ্যের রেখা এখানেই টানা হয় l সুতরাং তোমরা নিজেদের শ্রেষ্ঠ ভাগ্য বানিয়ে নিয়েছ l এখন শুধু সামান্য সময় দাও l তোমাদের সময় আছে আর তোমরা তোমাদের সঙ্গ দিতেও পার l এর মধ্যে কোনও কঠিন ব্যাপারই নেই l কঠিন কিছু হলে সেই ব্যাপারে তোমাদের সামান্য ভাবতে হবে l যদি সহজ হয় তো কর l সেইরকম করলে তোমাদের জীবনে যে অল্পকালের আশা আকাঙ্ক্ষা আছে, তা' সবই অবিনাশী প্রাপ্তিতে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে l এই অল্পকালীন ইচ্ছার পশ্চাদ্ধাবন করা যেন নিজের ছায়ার পিছনে ধাবমান হওয়ার মতো l তোমরা যত তোমাদের ছায়া ধরার চেষ্টা করবে ততই সেটা সামনে এগিয়ে যাবে এবং তোমরা সেটা ধরতে পারবে না l কিন্তু তোমরা যদি এগিয়ে যাও তখন তা' নিজে থেকেই পিছনে পিছনে আসবে l সুতরাং এইরকম অবিনাশী প্রাপ্তির দিকে গেলে, বিনাশী বিষয়গুলো সব শেষ হয়ে যাবে l বুঝেছ ! সর্বপ্রাপ্তির সাধন এটাই l অল্প সময়ের ত্যাগ সদাকালের ভাগ্য প্রাপ্ত করতে তোমাদের সমর্থ বানায় l সুতরাং, সদা এই লক্ষ্যকে বুঝে অগ্রচালিত হও l এতে তোমরা অনেক খুশির খাজানা প্রাপ্ত করবে l জীবনে সবচেয়ে বড় খাজানা খুশি l যদি খুশি নেই তো জীবন নেই l সুতরাং, তোমরা অবিনাশী খুশির ভান্ডার প্রাপ্ত করতে পার l
*২ )* বাপদাদা বাচ্চাদের সদা সামনে এগিয়ে যাওয়ার উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখেন l বাচ্চাদের উদ্দীপনা বাপদাদার কাছে পৌঁছায় l বাচ্চাদের ভিতরে ইচ্ছা থাকে বিশ্বের ভি. ভি. আই. পি.-দের বাবার সামনে নিয়ে যাওয়ার, এই উৎসাহ-উদ্দীপনাও বাস্তবায়িত হয়ে যাবে, কারণ নিঃস্বার্থ সেবার ফল অবশ্যই পাওয়া যায় l সেবাই নিজের স্টেজ বানাতে তোমাদের সমর্থ করে তোলে l অতএব, এটা কখনও ভেবনা, সার্ভিস এত বড়, আর তোমার স্টেজ তো সেইরকম নয় ! যেমনই হোক, সার্ভিস তোমাদের স্টেজ বানিয়ে দেবে l অন্যদের সার্ভিসই স্ব-উন্নতির সাধন l সার্ভিস নিজে থেকেই তোমাদের শক্তিশালী অবস্থা বানাতে থাকবে l বাবার সহায়তা তো পেয়েই থাক, তাই না ! বাবার সহায়তা লাভ করতে করতে এবং তোমাদের ক্রমবর্ধিত শক্তি দ্বারা সেই স্টেজও হয়ে যাবে l বুঝেছ ! সেইজন্য এটা কখনও ভেব না এত সার্ভিস আমি কীভাবে করব, আমার স্টেজ তো সেইরকম নয় ! না l অবিরত করে যাও l বাপদাদার বরদান, তোমাদের সামনে এগিয়ে যেতেই হবে l সেবার মিষ্টি বন্ধনও এগিয়ে যাওয়ার সাধন l যারা হৃদয় দিয়ে অনুভবের অথরিটির সাথে বলে, তাদের আওয়াজ হৃদয়ে পৌঁছায় l অনুভবের অথরিটির বোল অনুভব করার প্রেরণা দেয় l সেবাতে এগিয়ে যেতে যেতে যে পেপার আসে, সেটাও সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাধন, কারণ তোমাদের বুদ্ধি তখন কাজ করে এবং স্মরণে থাকতে বিশেষ অ্যাটেনশন দেয় l সুতরাং, এটাও বিশেষ লিফ্ট হয়ে যায় l তখন তোমাদের বুদ্ধিতে সদা এটাই থাকে, বাতাবরণ কীভাবে শক্তিশালী বানানো যায় ! যে কোনও রকম বিঘ্ন আসুক না কেন, তোমরা সব শ্রেষ্ঠ আত্মার তা' থেকে সুবিধাই লাভ হয় l সেই বড় আকারও স্মরণের শক্তি থেকে ছোট হয়ে যায় l সেইসব যেন *কাগুজে বাঘ* l আচ্ছা !
বরদান:-
দীপমালায় যথার্থ বিধিতে নিজের দৈবী পদের আহ্বান করে পূজ্য আত্মা ভব
দীপমালাতে প্রথমে লোকে বিধিপূর্বক দীপ জ্বালাত, দীপ যাতে নিভে না যায় তার খেয়াল রাখত, ঘী ঢালত, বিধিপূর্বক আহ্বানের অভ্যাসে থাকত l এখন তো দীপের বদলে বাল্ব জ্বালায় l দীপমালার উৎসব পালন করে না, এখন তো মনোরঞ্জন হয়ে গেছে l আহ্বানের বিধি অর্থাৎ সাধনা সমাপ্ত হয়ে গেছে l স্নেহ সমাপ্ত হয়ে শুধু স্বার্থ থেকে গেছে, সেইজন্য যথার্থ দাতা রূপধারী লক্ষ্মী কারও কাছে আসেন না l কিন্তু তোমরা সবাই যথার্থ বিধিতে নিজের দেবী পদের আহ্বান কর, সেইজন্যই নিজেরা দেবী-দেবতা হয়ে যাও l
স্লোগান:-
সদা অসীম জগতের বৃত্তি, দৃষ্টি আর স্থিতি থাকলে তখনই বিশ্ব কল্যাণের কার্য সম্পন্ন হবে l