11.10.2019
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
অসীম জগতের অপার খুশীর অনুভব করতে হলে প্রতিক্ষণ বাবার সঙ্গে থাকো "
প্রশ্নঃ -
বাবার থেকে
কোন্ বাচ্চাদের অনেক-অনেক শক্তি প্রাপ্ত হয় ?
উত্তরঃ -
যাদের এই দৃঢ়
বিশ্বাস (নিশ্চয়) আছে যে, আমরা অসীম বিশ্বের পরিবর্তনকারী, আমাদের এই অসীম বিশ্বের
মালিক হতে হবে। আমাদের যিনি পড়ান, তিনি হলেন পিতা স্বয়ং বিশ্বের মালিক । এমন
বাচ্চাদের অনেক শক্তি প্রাপ্ত হয় ।
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি
আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে আত্মাদের পিতা, পরম পিতা পরমাত্মা বসে পড়ান এবং বোঝান, কারণ
বাচ্চারাই আবার পবিত্র হয়ে স্বর্গের মালিক হবে। সম্পূর্ণ বিশ্বের পিতা তো হলেন একজন-ই।
এই কথাটি বাচ্চাদের নিশ্চয় হয়। বাচ্চারা, সম্পূর্ণ বিশ্বের পিতা, সকল আত্মাদের পিতা
তোমাদের পড়াচ্ছেন। এত কথা বুদ্ধিতে বসে কি ? কারণ বুদ্ধি হল তমোপ্রধান, লোহার পাত্র,
লৌহ যুগ। বুদ্ধি থাকে আত্মায়। অতএব এত কথা বুদ্ধিতে আছে ? বুঝবার জন্য এতখানি শক্তি
প্রাপ্ত হয় যে যথাযথ ভাবে বোঝা যায় অসীমের পিতা আমাদের পড়াচ্ছেন, আমরা অসীম বিশ্বের
পরিবর্তন করি। এই সময় অসীম সৃষ্টিকে নরক বলা হয়। এই কথা জানো বা বুঝতে পারো যে গরিব
মানুষ নরকে আছে আর অন্যরা সন্ন্যাসী, ধনী মানুষ, উঁচু পদের অধিকারীরা স্বর্গে আছে ?
বাবা বোঝান এই সময় যে মানুষ মাত্র আছে সবাই নরকে আছে। এই সব হল বুঝবার কথা যে আত্মা
কত সূক্ষ্ম। এত সূক্ষ্ম আত্মায় সম্পূর্ণ নলেজ স্থির থাকে নাকি ভুলে যাও ? বিশ্বের
সর্ব আত্মাদের পিতা তোমাদের সম্মুখে বসে তোমাদের পড়াচ্ছেন। সারা দিন বুদ্ধিতে এই কথা
কি স্মরণে থাকে যে যথাযথভাবে এখানে বাবা আমাদের সঙ্গে আছেন ? কত ক্ষণ বসেন ? এক
ঘন্টা, আধা ঘন্টা কিংবা সারা দিন ? এই কথাটি বুদ্ধিতে রাখার জন্যেও শক্তি চাই।
ঈশ্বর পরমপিতা পরমাত্মা তোমাদের পড়ান। বাইরে যখন নিজের ঘরে থাকো তখন সেখানে সঙ্গে
নেই। এখানে প্রাক্টিক্যালে তোমাদের সঙ্গে আছেন। যেমন কোনও স্ত্রীর স্বামী বাইরে গেল,
স্ত্রী এখানে আছে তখন এমন বলবে কি স্বামী আমার সঙ্গে আছে। অসীমের পিতা তো হলেন একজন
-ই। বাবা তো সবার মধ্যে উপস্থিত নন তাইনা। বাবা নিশ্চয়ই একটি স্থানে বিরাজিত হবেন।
তো এই কথা কি বুদ্ধিতে থাকে যে অসীমের পিতা আমাদের নতুন দুনিয়ার মালিক হওয়ার
উপযুক্ত করছেন ? মনে মনে নিজেকে এতখানি যোগ্য বিবেচনা করো কি যে আমরা সম্পূর্ণ
বিশ্বের মালিক হতে চলেছি ? এই টি তো খুবই খুশীর কথা। এর চেয়ে বেশি খুশীর খাজানা তো
আর কেউ পায় না। এখন তোমরা জেনেছ এমন স্বরূপে পরিণত হচ্ছি। এই দেবতারা কোন স্থানের
মালিক সে কথাও বুঝেছ। ভারতেই দেবতারা বাস করে গেছেন। সম্পূর্ণ বিশ্বের মালিক হতে
চলেছি। এই কথা বুদ্ধিতে আছে ? সেই রকম চাল-চলন আছে ? সেই রূপ কথাবার্তার ধরন, সেসব
বুদ্ধিতে আছে ? কারো কোনো কথায় ক্রোধ করলে, কারো ক্ষতি করলে, কারো অপমান করলে,
তোমাদের এমন চলন নয় তো ? সত্যযুগে দেবতারা কখনও কারো গ্লানি করেন কি ? সেখানে গ্লানি
করার কুসঙ্কল্প আত্মাদের থাকবেই না। বাবা তো কত জোর দিয়ে বাচ্চাদের উপরে তোলেন।
তোমরা বাবাকে স্মরণ করো তাহলে পাপ বিনষ্ট হবে। তোমরা হাত উপরে তোলো কিন্তু তোমাদের
এমন চলন কি আছে ? বাবা বসে পড়ান, এই কথা বুদ্ধিতে দৃঢ় ভাবে থাকে ? বাবা জানেন
অনেকের নেশা সোডা ওয়াটারের মতো হয়ে যায় (নেশা ফুরিয়ে যায়)। সবার খুশীর পারদ এতো
ঊর্ধ্বে থাকে না। যখন জ্ঞান বুদ্ধিতে থাকবে তখন নেশা বাড়বে। বিশ্বের মালিক করতে
একমাত্র বাবা পড়ান।
এখানে তো সবাই হল পতিত, রাবণ সম্প্রদায়। কাহিনী আছে না - রাম বানরদের সেনা
নিয়েছিলেন। তারপরে এই এই কাজ করেছিলেন। এখন তোমরা জানো বাবা রাবণকে পরাজিত করে
লক্ষ্মী-নারায়ণ স্বরূপ প্রদান করেন। এখানে বাচ্চারা তোমাদের কেউ জিজ্ঞাসা করলে,
তোমরা চট করে বলবে আমাদের ভগবান পড়ান। ভগবানুবাচ, টিচার যেমন বলবে আমরা তোমাদের
ব্যারিস্টার বা অমুক তৈরি করব। নিশ্চয়ের সাথে পড়ায় এবং তারা সেই পদ প্রদান করে। যারা
পড়ে তারাও নম্বর অনুসারে থাকে তাইনা। তারপরে তারা পদও প্রাপ্ত করে নম্বর অনুসারে,
এও হল পড়াশোনা। বাবা মুখ্য উদ্দেশ্যটি সামনে দেখাচ্ছেন। তোমরা বুঝেছ এই ঈশ্বরীয় পাঠ
পড়ে আমরা এমন স্বরূপধারী হব। খুশীর কথা, তাই না। আই. সি.এস যারা পড়ে, তারাও বুঝবে -আমরা
এই পড়া করে এই কাজ করব, ঘর তৈরি করব, এমন করব। বুদ্ধিতে চলতে থাকে। এখানে আবার
বাচ্চাদের অর্থাৎ তোমাদের বাবা বসে পড়ান। সবাইকে পড়তে হবে, পবিত্র হতে হবে। বাবার
কাছে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে আমরা কোনও অপবিত্র কর্ম করব না। বাবা বলেন যদি কোনও
উল্টো কর্ম করলে উপার্জিত জমা ধন নষ্ট হয়ে যাবে। এই মৃত্যুলোক হল পুরানো দুনিয়া।
আমরা পড়া করি নতুন দুনিয়ার জন্য। এই পুরানো দুনিয়া তো শেষ হয়ে যাবে। পরিস্থিতি গুলি
এমন আছে। বাবা আমাদের পড়ান অমরলোকের জন্য। সম্পূর্ণ দুনিয়ার চক্র সম্পর্কে বাবা
বোঝান। হাতে কোনও পুস্তক ইত্যাদি নেই, মুখে মুখেই বাবা বোঝান। সর্ব প্রথম কথা যা
বাবা বোঝান - নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো। আত্মা হল ভগবান পিতার সন্তান। পরমপিতা
পরমাত্মা পরমধামে থাকেন। আমরা আত্মারাও সেখানেই থাকি। তারপর সেখান থেকে এখানে আসি
পার্ট প্লে করতে। এ হল অসীমের বৃহত্তর মঞ্চ। এই মঞ্চে প্রথমে পার্ট প্লে করতে
অ্যাক্টররা আসে ভারতে, নতুন দুনিয়ায়। এইরূপ তাঁদের অ্যাক্টিভিটি । তোমরা তাঁদের
মহিমা বর্ণনাও কর। তাঁদের কি মাল্টি-মিলিনিওর বলা হবে ? তাঁদের কাছে তো অপরিসীম
অগাধ ধন সম্পদ থাকে। বাবা তো এমনই বলবেন, তাইনা - এই লোকেদের কথাই। কারণ বাবা তো
হলেন অসীম জগতের পিতা। এইরূপও ড্রামায় নির্দিষ্ট আছে। অতএব যেমন শিববাবা তাঁদের এমন
ধনসম্পদশালী করেন, তেমনই ভক্তিমার্গে আবার বাবার (শিবের) মন্দির তৈরি করে পূজার
জন্য। সর্ব প্রথমে তাঁরই পুজো করা হয়, যিনি পূজ্য রূপে পরিণত করেন। বাবা রোজ রোজ
অনেক বোঝান, নেশা বৃদ্ধির জন্য। কিন্তু নম্বর অনুযায়ী, পুরুষার্থ অনুসারে যারা বোঝে,
তারা সার্ভিস করে, ফলে ফ্রেশ থাকে। অন্যথায় পুরানো বাসি হয়ে যায়। বাচ্চারা জানে,
যথার্থ ভাবেই তাঁরা ভারতে রাজত্ব করতেন, অন্য কোনও ধর্ম ছিল না। দৈবী ধর্ম-ই ছিল।
তারপরে অন্য অন্য ধর্ম এসেছে। এখন তোমরা বুঝেছ, এই সৃষ্টি চক্র কীরূপ পরিক্রমা করে।
স্কুলে মুখ্য উদ্দেশ্য তো চাই, তাইনা। সত্যযুগের আদি কালে তাঁরা রাজত্ব করতেন,
তারপরে ৮৪-র চক্রে এসেছেন। বাচ্চারা জানে, এ হল অসীম জগতের পঠন পাঠন। জন্ম
জন্মান্তর তো জাগতিক দুনিয়ার পড়াশোনা করেছ, এই অসীমের পড়াশোনায় দৃঢ় নিশ্চয় থাকা চাই।
সম্পূর্ণ সৃষ্টির আমূল পরিবর্তন করেন যিনি, রিজুভিনেট (মৃতবৎ অবস্থা থেকে তরতাজা করা)
করেন যিনি, অর্থাৎ নরককে স্বর্গে পরিবর্তনকারী পিতা, আমাদের পড়ান। এইটুকু নিশ্চিত
যে, মুক্তিধাম তো সবাই যেতে পারে। স্বর্গে সবাই আসবে না। এই কথা এখন তোমরা জানো,
বাবা আমাদের এই বিষয় সাগর বেশ্যালয় থেকে মুক্ত করেন। এখন হল সঠিক অর্থেইবেশ্যালয়।
কখন আরম্ভ হয়, সে কথাও তোমরা জেনেছ। ২৫০০ বছর হয়েছে যখন এই রাবণ রাজ্য আরম্ভ হয়েছে।
ভক্তি শুরু হয়েছে। সেই সময় দেবী-দেবতা ধর্মের মানুষ ছিলেন যারা, তারা-ই বাম মার্গে
এসে যায়। ভক্তির জন্য মন্দির নির্মাণ করে। সোমনাথের মন্দির কীরূপ বিশাল নির্মাণ করা
হয়েছে। হিস্ট্রি তো শুনেছ। মন্দিরে কি ছিল ! সুতরাং সেই সময় কতখানি বিত্তশালী ছিলেন
তারা ! শুধু একটি মন্দির তো ছিল না তাইনা। হিস্ট্রিতে কেবল একটি নাম (সোমনাথ) দেওয়া
হয়েছে। মন্দির তো অনেক রাজারা নির্মাণ করেছে। একে অপরকে দেখে পুজো তো সবাই করবে
তাইনা। অসংখ্য মন্দির ছিল। শুধু একটি মন্দির তো লুট করা হয় নি। অন্য মন্দির গুলিও
আশেপাশে ছিল। তখন গ্রাম দূরে দূরে থাকত না। একে অপরের কাছাকাছি থাকত, কারণ
যাতায়াতের জন্য ট্রেন ইত্যাদি তো ছিল না। খুব কাছে কাছে ছিল, পরে ধীরে ধীরে সৃষ্টি
বিস্তৃত হয়েছে।
এখন তোমরা বাচ্চারা পড়াশোনা করছ। বৃহত্তর পিতা তোমাদের পড়াচ্ছেন। এই নেশা তো থাকা
উচিত, তাইনা। বাড়িতে কখনও কান্নাকাটি করবে না। এখানে তোমাদের দৈব গুণ ধারণ করতে হবে।
এই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে বাচ্চাদের অর্থাৎ তোমাদের পড়ানো হয়। এ হল মধ্যিখানের সময়,
যখন তোমরা চেঞ্জ হও। পুরানো দুনিয়া থেকে নতুন দুনিয়ায় যেতে হবে। এখন তোমরা
পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে পড়াশোনা করছ। ভগবান তোমাদের পড়াচ্ছেন। তিনি সম্পূর্ণ দুনিয়াটি
পরিবর্তন করেন। পুরানো দুনিয়াকে নতুন করেন, যে দুনিয়ার মালিক তোমাদের হতে হবে। বাবা
বাচ্চাদের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তোমাদের যুক্তি বলে দেওয়ার জন্য । অতএব বাচ্চারা,
তোমাদের সেই মতামত অনুসারে চলতে হবে। এই কথা তো বুঝতে পেরেছো যে, আমরা এখানকার
বাসিন্দা নই। তোমরা কি আর জানতে যে আমাদের রাজধানী ছিল। এখন বাবা বুঝিয়েছেন -রাবণের
রাজ্যে তোমরা খুব দুঃখে আছো। একেই বলে বিকারী দুনিয়া। এই দেবতারা হলেন সম্পূর্ণ
নির্বিকারী। নিজেকে বিকারী বলে পরিচয় দেয়। এবারে এই রাবণের রাজ্য কবে আরম্ভ হয়েছে,
কি হয়েছে একটুও কারো জানা নেই। বুদ্ধি একেবারে তমোপ্রধান হয়ে গেছে। সত্যযুগে ছিল
পরশ বুদ্ধি, অতএব বিশ্বের মালিক ছিলে, অসীম সুখে ছিলে। তার নাম-ই ছিল সুখধাম। এখানে
তো অসীম দুঃখ আছে। সুখের দুনিয়া ও দুঃখের দুনিয়া কীরকম হয় - সে কথাও বাবা বুঝিয়েছেন।
কত সময় সুখ থাকে, কত সময় দুঃখ থাকে, মানুষ তো কিছুই জানে না। তোমাদের মধ্যেও নম্বর
অনুযায়ী বুঝতে পারে। একমাত্র অসীমের পিতা এই কথা বুঝিয়ে দেন। কৃষ্ণকে কি অসীমের পিতা
বলা হবে ? মন স্বীকার করে না। অথচ পিতা কাকে বলবে - সেই বোধও নেই। ভগবান বোঝান,
আমার গ্লানি করে, আমি তোমাদের দেবতায় পরিণত করি, আমার কত গ্লানি করেছে তারপরে
দেবতাদেরও গ্লানি করেছে, এমন বুদ্ধিহীন হয়েছে মানুষ । বলে ভজ গোবিন্দ ....। বাবা
বলেন - হে বুদ্ধিহীন, গোবিন্দ-গোবিন্দ, রাম-রাম জপ করে বুদ্ধিতে এই কথা নেই যে কার
ভজন করছে। পাথর-বুদ্ধিদের বুদ্ধিহীন বলা হবে। বাবা বলেন, এখন আমি তোমাদের বিশ্বের
মালিক করি। বাবা হলেন সকলের সদগতি দাতা। বাবা বোঝান, তোমরা নিজের পরিবারের কর্তব্য
কর্মে কতখানি আবদ্ধ থাকো ! ভগবান যে কথা বলেন সেসব বুদ্ধিতে ধারণ করা উচিত। কিন্তু
অসুরী মতানুযায়ী এমন জড়িয়ে আছে যে ঈশ্বরীয় মতানুসারে চলবে কীভাবে ! গোবিন্দ কে, কি
বস্তু, সে কথা জানে না। বাবা বোঝান, তোমরা বলবে বাবা আপনি তো অনেকবার আমাদের
বুঝিয়েছেন। এই রকম ড্রামায় নির্দিষ্ট আছে, বাবা আমরা আবার আপনার কাছে এই অবিনাশী
অধিকার প্রাপ্ত করছি। আমরা নর থেকে নারায়ণ অবশ্যই হব। স্টুডেন্টদের সর্বদা পড়াশোনার
নেশা থাকে, আমরা এমন হব। নিশ্চয় থাকে। এখন বাবা বলেন তোমাদের সর্বগুণ সম্পন্ন হতে
হবে। কারো সঙ্গে ক্রোধ ইত্যাদি করবে না। দেবতাদের ৫-টি বিকার থাকে না। শ্রীমৎ
অনুসারে চলা উচিত। শ্রীমৎ সবচেয়ে প্রথমে বলে নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো। তোমরা আত্মারা
পরমধাম থেকে এসেছ এখানে পার্ট প্লে করতে, এই তোমাদের শরীরটি হল বিনাশী। আত্মা তো হল
অবিনাশী। অতএব তোমরা নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো -আমি আত্মা পরমধাম থেকে এখানে এসেছি
পার্ট প্লে করতে। এখন এখানে দুঃখে থাকো, তাই তো বল মুক্তিধামে যাব। কিন্তু তোমাদের
পবিত্র করবে কে ? একজনকেই আহ্বান করা হয়, সেই পিতা এসে বলেন - আমার মিষ্টি মিষ্টি
বাচ্চারা, নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো, দেহ নয়। আমি বসে আত্মাদের বোঝাই। আত্মারা-ই ডাকে
- হে পতিত-পাবন এসে পবিত্র করুন। ভারতই পবিত্র ছিল। এখন আবার আহ্বান করে - পতিত থেকে
পবিত্র করে সুখধামে নিয়ে চলুন। কৃষ্ণের সঙ্গে তোমাদের প্রীতি তো আছেই। কৃষ্ণের
উদ্দেশ্যে সবচেয়ে বেশি ব্রত, জপ, তপ ইত্যাদি কুমারীরা, মাতাগণ করে থাকে। নির্জলা
উপবাস করে। যাতে কৃষ্ণপুরী অর্থাৎ সত্যযুগে যেতে পারে। কিন্তু জ্ঞান নেই, তাই এত বড়
বড় হঠ ইত্যাদি করে। তোমরাও এতটাই কর, কিন্তু কাউকে জ্ঞান শোনাতে নয়, নিজেই কৃষ্ণপুরী
যাওয়ার জন্য। তোমাদের কেউ বাধা দেয় না। তারা গভর্নমেন্টের সামনে উপবাস ইত্যাদি করে,
হঠ করে - বিরক্ত করার জন্য। তোমাদেরকে কারো সামনে ধর্ণা দিয়ে বসতে হবে না। কেউ
তোমাদের এইসব করতে শেখায়নি।
শ্রীকৃষ্ণ তো হলেন সত্যযুগের ফার্স্ট প্রিন্স। কিন্তু এই কথা কেউ জানতে পারে না।
কৃষ্ণকে তারা দ্বাপর যুগে নিয়ে গেছে। বাবা বোঝান - মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, ভক্তি
এবং জ্ঞান দুই-ই হল আলাদা জিনিস। জ্ঞান হল দিন, ভক্তি হল রাত। কার ? ব্রহ্মার দিন ও
রাত। কিন্তু এই কথাটির অর্থ না গুরুরা বোঝে, না তাদের শিষ্যরা । বাচ্চারা, জ্ঞান,
ভক্তি, বৈরাগ্যের রহস্য বাবা তোমাদের বুঝিয়েছেন। জ্ঞান দিন, ভক্তি হল রাত এবং তার
পরে হল বৈরাগ্য। তারা জানে না। জ্ঞান, ভক্তি, বৈরাগ্য শব্দ গুলি হল অ্যাকিউরেট,
কিন্তু অর্থ জানে না। এখন তোমরা বাচ্চারা বুঝেছ, বাবা জ্ঞান প্রদান করেন, ফলে দিন
হয়ে যায়। ভক্তি আরম্ভ হলে রাত বলা হয়। কারণ ধাক্কা খেতে হয়। ব্রহ্মার রাত হল
ব্রাহ্মণদের রাত, তারপরে হয় দিন। জ্ঞান দ্বারা দিন, ভক্তি দ্বারা হয় রাত। রাতে তোমরা
বনবাসে বসে আছো পরে দিনে তোমরা কত ধনী হয়ে যাও। আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
নিজেকে
জিজ্ঞাসা করতে হবে :-
১ ) বাবার কাছে এত যে খুশীর খাজানা প্রাপ্ত কর, সে কথা বুদ্ধিতে থাকে ?
২ ) বাবা আমাদের বিশ্বের মালিক করতে এসেছেন, অতএব আমার আচার-আচরণ এমন আছে ?
কথাবার্তার ধরন এমন আছে ? কখনও কারো গ্লানি বা অপমান করো না তো ? ৩ )- বাবার কাছে
প্রতিজ্ঞা করার পরেও কোনও অপবিত্র কর্ম হয় না তো ?
বরদান:-
অতীতকে শ্রেষ্ঠ বিধি দ্বারা পার করে স্মরণীয় স্বরূপ প্রাদান করে পাস উইথ অনার ভব
ব্যাখা: "পাস্ট ইজ
পাস্ট " তো হতেই হবে। সময় এবং দৃশ্য সবই পার হয়ে যাবে, কিন্তু পাস অনার হয়ে প্রতিটি
সঙ্কল্প বা সময়কে পার করো, অর্থাৎ অতীতকে এমন শ্রেষ্ঠ বিধি দ্বারা পাস করো, যে
অতীতের স্মৃতি মনে পড়লেই বাঃ বাঃ -এর অনুভব হয়। অন্য আত্মারা তোমাদের অতীতের স্টোরি
(কাহিনী) শুনে যেন শিক্ষা লাভ করে। তোমাদের অতীত, যদি স্মরণীয় - স্বরূপ হয়ে যায়,
তাহলে কীর্তন করবে অর্থাৎ কীর্তির গান গাইবে।
স্লোগান:-
স্ব
কল্যাণের শ্রেষ্ঠ প্ল্যান বানাও, তবেই বিশ্বের সেবায় সকাশ প্রাপ্ত হবে ।