28.12.2019 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠ যা বাবা এসে পড়ান, এতে প্রচুর উপার্জন করার আছে , সেইজন্য ভালোভাবে পড়াশোনা করো, পড়াশোনার সাথে যেন লিঙ্ক ছিন্ন না হয়"

প্রশ্নঃ -
বিনাশকালে যাদের বিপরীত বুদ্ধি হয়, তোমাদের কোন্ বিষয়টি তাদের কাছে হাস্যকর বলে মনে হয় ?

উত্তরঃ -
তোমরা যখন বলো, বিনাশ সামনেই, তখন ওরা তোমাদের কথা শুনে হাসে । তোমরা জানো, বাবা এখানে বসে থাকবেন না, বাবার ডিউটি হলো তোমাদের পবিত্র করে তোলা । যখন পবিত্র হয়ে যাবে এই পুরানো দুনিয়া বিনাশ হবে, নতুন দুনিয়া আসবে । এই লড়াই হলো বিনাশের জন্য । তোমরা দেবতা হতে যাচ্ছ, সুতরাং তখন এই কলিযুগের ছিঃ ছিঃ দুনিয়াতে আসতে পারো না ।

ওম্ শান্তি ।
রূহানী বাবা বসে রূহানী বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন । বাচ্চারা জানে আমরা কত নির্বোধ হয়ে গেছি । মায়া রাবণ আমাদের নির্বোধ বানিয়েছে । বাচ্চারা এটাও বুঝেছে যে, বাবাকে অবশ্যই আসতে হবে, কেননা নতুন সৃষ্টি স্থাপনা করতে হবে । ত্রিমূর্তির চিত্রও আছে, যেখানে লেখা আছে- ব্রহ্মা দ্বারা স্থাপনা, বিষ্ণু দ্বারা পালনা, শঙ্কর দ্বারা দ্বারা বিনাশ। কেননা করনকরাবনহার তো বাবা-ই, তাইনা । একজনই আছেন যিনি স্থাপন করেন এবং অন্যকে অনুপ্রাণিত করেন স্থাপনা করার জন্য। সর্বপ্রথম তবে কার নাম আসবে ? যিনি করান এবং তারপর যার দ্বারা করান । বাবাকে করনকরাবনহার বলা হয়, তাই না ! ব্রহ্মা দ্বারা নতুন দুনিয়া স্থাপন করেন তিনি । বাচ্চারা এটাও জানে, আমাদের যে নতুন দুনিয়া হবে, যা আমরা স্থাপনা করছি, এর নামই হলো দেবী-দেবতাদের দুনিয়া । সত্যযুগেই দেবী-দেবতা হয়, আর কাউকে দেবী-দেবতা বলা যায় না। ওখানে কোনও সাধারণ মানুষের অস্তিত্ব নেই । একটাই দেবী-দেবতা ধর্ম, অন্য কোনো ধর্ম থাকে না । এখন বাচ্চাদের স্মৃতিতে এসেছে প্রকৃতপক্ষে আমরাই দেবী-দেবতা ছিলাম, তার চিহ্নও আছে । ইসলাম, বৌদ্ধ, ক্রিশ্চান ইত্যাদি প্রত্যেক ধর্মের নিজ-নিজ চিহ্ন আছে । যখন আমাদের রাজ্য ছিল তখন অন্য কোনও রাজ্য ছিলনা । এখন অন্যান্য অনেক ধর্ম আছে কিন্তু আমাদের দেবতা ধর্মই নেই । গীতাতেও বড়ো বড়ো শব্দে লিখিত আছে, কিন্তু কেউই বুঝতে পারে না । বাবা বলেন বিনাশকালে কারো বিপরীত বুদ্ধি হয়, কারও বা প্রীত বুদ্ধি থাকে । বিনাশ তো এখনই হবে । বাবা আসেনই সঙ্গম যুগে, যখন পরিবর্তনের সময় । বাবা বাচ্চারা, তোমাদের পুরানো সবকিছুর ( পুরানো সংস্কার) পরিবর্তে নতুন জিনিস প্রদান করেন । তিনি একাধারে স্বর্ণকার, ধোপা এবং বড় ব্যবসায়ীও । খুব অল্প সংখ্যক বাচ্চারাই বাবার সাথে এই ব্যবসা করবে । এই ব্যবসায় অগাধ লাভ। ঈশ্বরীয় পড়াশোনাতেও অনেক লাভ হয় । মহিমাও আছে যে ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠনে উপার্জন হয়, সেটাও জন্ম-জন্মান্তরের জন্য উপার্জন । সুতরাং খুব ভালোভাবে পড়াশোনা করা উচিত আর পড়ানোও অতি সহজ । শুধু এক সপ্তাহ ভালোভাবে বুঝে নিতে হবে, তারপর যেখানেই চলে যাও না কেন, তোমাদের কাছে মুরলী পৌছে যাবে। সুতরাং যোগাযোগ কখনও ছিন্ন হবেনা । এ হলো আত্মার সাথে পরমাত্মার যোগাযোগ । গীতাতেও আছে বিনাশকালে যার বিপরীত বুদ্ধি হবে তার বিনাশ হবে আর যার প্রীত বুদ্ধি থাকবে সে-ই বিজয়ী হবে । তোমরা জানো, এই সময় মানুষ একে অপরকে মেরে ফেলছে । এর মতো ক্রোধের বিকার আর কিছুর মধ্যে হয়না । এটাও বলা হয় যে দ্রৌপদী ঈশ্বরকে আহ্বান করেছিল । বাবা বুঝিয়েছেন এই সময় তোমরা সবাই হলে দ্রৌপদী । ভগবানুবাচ, বাবা বলেন ‐‐ বাচ্চারা, এখন আর বিকারগ্রস্ত হয়োনা । আমি তোমাদের স্বর্গে নিয়ে যাব, তোমরা শুধু তোমাদের বাবাকে স্মরণ করো। এখন বিনাশের সময়, তাইনা। কেউ কারও কথা শোনে না, লড়াই করতেই থাকে । ওদের কত বলা হয় শান্ত থাকার জন্য কিন্তু শান্ত থাকে না । সন্তানদের ফেলে রেখে লড়াইয়ের ময়দানে চলে যায় । কত মানুষের মৃত্যু হয়েই চলেছে । কোনও মূল্য নেই মানুষের । যদি কোনো মূল্য থেকে থাকে, মহিমা করা হয় সে শুধুমাত্র দেবী-দেবতাদের । এখন তোমরা দেবী-দেবতা হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছ । বাস্তবে তোমাদের মহিমা এই দেবতাদের থেকেও বেশি । বাবা এসে তোমাদের পড়াচ্ছেন । কত উচ্চ এই পঠন-পাঠন । ঈশ্বরীয় পাঠধারীরা অনেক জন্মের শেষে এসে সম্পূর্ণ তমোপ্রধান হয়ে গেছে । আমি তো সবসময়ই সতোপ্রধান ।

বাবা বলেন, আমি বাচ্চারা, তোমাদের অবিডিয়েন্ট সার্ভেন্ট হয়ে এসেছি । ভাবো তোমরা কত নিকৃষ্ট হয়ে গেছ । বাবা এসেই তোমাদের সুন্দর করে তোলেন । ভগবান বসে মানুষকে শিক্ষা প্রদান করে কত শ্রেষ্ঠ করে তোলেন । বাবা স্বয়ং বলেন, আমি তোমাদের অনেক জন্মের শেষে এসে সবাইকে সতোপ্রধান করে তুলতে এসেছি । এখন তোমাদের শিক্ষা প্রদান করছি। বাবা বলেন, আমি তোমাদের স্বর্গবাসী বানিয়েছিলাম, তারপরও তোমরা নরকবাসী কিভাবে হয়েছ, কে বানিয়েছে ? গাওয়াও হয়ে থাকে বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি বিনাশ ঘটায়, প্রীত বুদ্ধি বিজয়ী হয় । যেমন প্রীত বুদ্ধি থাকবে অর্থাত্ ঈশ্বরের স্মরণে থাকবে, ততই তোমাদের লাভ হবে । এ হলো লড়াইয়ের ময়দান, তাইনা । কেউ-ই জানেনা যে, গীতায় কোন্ যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে । ওরা তো কৌরব আর পান্ডবদের যুদ্ধ দেখিয়েছে। কৌরব সম্প্রদায়, পান্ডব সম্প্রদায় দুই-ই আছে, কিন্তু তাদের মধ্যে কোনো যুদ্ধ হয়নি। পান্ডব তাদেরই বলা হয়, যারা বাবাকে জানে, বাবার প্রতি যাদের প্রীত বুদ্ধি ( ভালোবাসা) আছে । কৌরব তাদের বলা হয় যারা বিপরীত বুদ্ধির (বাবার প্রতি ভালোবাসা নেই )।

এই শব্দগুলো এখন ভালোভাবে বোধগম্য হয়েছে । এখন হলো সঙ্গম যুগ । তোমরা বাচ্চারা জানো নতুন দুনিয়া স্থাপন হতে চলেছে। বুদ্ধি দিয়ে কাজ করতে হবে। এখন দুনিয়া কত বড় । সত্যযুগে কত অল্প সংখ্যক মানুষ থাকবে । কল্প বৃক্ষ তো ছোট হবে, তাইনা । সেই বৃক্ষ পরে বৃদ্ধি পেতে থাকে । মানব সৃষ্টি রূপী এই উল্টো বৃক্ষ কেমন এটাও কেউ জানেনা । একে কল্প বৃক্ষ বলা হয়। বৃক্ষের নলেজ থাকা প্রয়োজন । এই বৃক্ষের নলেজ অতি সহজ, চট করে বলে দেওয়া যায় । এই বৃক্ষের নলেজই এমন কিন্তু এ হলো হিউম্যান বৃক্ষ । মানুষ নিজেদের বৃক্ষ সম্পর্কে কিছুই জানে না । বলাও হয়ে থাকে গড ইজ ক্রিয়েটর, তবে নিশ্চয়ই চৈতন্য তাইনা । বাবা সত্য, চৈতন্য, জ্ঞানের সাগর ।

ওঁনার মধ্যে কি জ্ঞান আছে তাও কেউ জানেনা। বাবা হলেন বীজরূপ, চৈতন্য । ওঁনার দ্বারাই সম্পূর্ণ সৃষ্টি রচনা হয় । সুতরাং বাবা বসে বোঝান মানুষের নিজেদের সৃষ্টি রূপী বৃক্ষ সম্পর্কে সবকিছুই অজানা, অন্যান্য ঝাড়কে ভালোভাবে জানে। বৃক্ষের বীজ যদি চৈতন্য হতো তবে তো বলত তাইনা, কিন্তু ঐ বৃক্ষ হলো জড় । এখন তোমরা বাচ্চারা রচনা আর রচয়িতার রহস্যকে জেনেছ । ইনিই সত্য, চৈতন্য এবং জ্ঞানের সাগর। চৈতন্য থাকলেই তো বাক্যালাপ করা যায় । মানব শরীর সবচেয়ে অমূল্য বলা হয় কিন্তু ওঁনার মূল্য বর্ণনা করা সম্ভব নয় । বাবা এসে আত্মাদের বোঝাচ্ছেন ।

তোমরা হলে রূপ বসন্ত ( যোগের মূর্ত প্রতীক এবং জ্ঞান রত্ন)। বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর । ওঁনার কাছ থেকেই তোমরা রত্ন ( জ্ঞানের) পেয়ে থাক । এ হলো জ্ঞান রত্ন, যে রত্ন গ্রহণ করে তোমরা ঐ রত্নও ঢের প্রাপ্ত করে থাক । লক্ষী-নারায়ণের কাছে দেখো কত রত্ন, ওরা হীরে-জহরত খচিত প্রাসাদে বাস করে । নামই হলো স্বর্গ । তোমরা যার মালিক হতে যাচ্ছ । কোনও গরিব ব্যক্তির আচমকা লটারি প্রাপ্ত হলে খুশিতে মাতোয়ারা হয়ে যায়, তাইনা । বাবা বলেন, তোমরা বিশ্বের বাদশাহী পেতে চলেছো, সুতরাং মায়া কতরকম ভাবে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে । আরও এগিয়ে গিয়ে তোমরা জানতে পারবে কত ভালো ভালো বাচ্চাদের ( জ্ঞানে চলা ) মায়া কিভাবে গ্রাস করেছে। সম্পূর্ণরূপে গ্রাস করে ফেলে । তোমরা সাপ তো দেখেছ‐‐ কিভাবে ব্যাঙ ধরে, যেমন হাতিকে বড় কুমীর (গ্রাহ) গ্রাস করেছিল । সাপ ব্যাঙকে সম্পূর্ণ খেয়ে ফেলে । মায়াও ঠিক তেমনই বাচ্চাদের গ্রাস করে শেষ করে দেয় তারা আর কখনও বাবাকে স্মরণ করেনা । যোগবলের শক্তি তোমাদের অনেক কম । সবকিছুই যোগের শক্তির উপর নির্ভর করছে । যেমন সাপ ব্যাঙকে গ্রাস করে, তোমরা বাচ্চারাও সম্পূর্ণ বাদশাহীকে গ্রাস ( অধিগ্রহণ) করে নাও । সম্পূর্ণ বিশ্বের বাদশাহী তোমরা সেকেন্ডেই প্রাপ্ত করে থাক । বাবা কত সহজ যুক্তি দিয়ে বলে দেন, কোনও অস্ত্রের প্রয়োজন পড়ে না । বাবা জ্ঞান যোগের অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে থাকেন । ওরা তো স্থূল হাতিয়ার ইত্যাদি দেখিয়েছে ।

তোমরা বাচ্চারা এই সময় বলে থাকো ‐- আমরা কি থেকে কি হয়েছি । তোমরা যা চাও বলতে পারো, কিন্তু আমরা অবশ্যই এমন ছিলাম । যদিও মানুষই ছিলে, কিন্তু গুণ আর অবগুণ তো থাকেই, তাইনা । দেবতাদের মধ্যে দৈবীগুণ থাকে, সেইজন্যই তাদের মহিমা করে বলা হয় — তোমরা সর্বগুণ সম্পন্ন....আমার মধ্যে কোনো গুণ নেই । এই সময় সম্পূর্ণ দুনিয়া গুণহীন হয়ে গেছে অর্থাত্ একজনও দৈবীগুণ সম্পন্ন নেই । বাবা যে গুণ প্রদান করতে এসেছেন, তাঁকে কেউ জানেই না সেইজন্যই বলা হয় বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি । সঙ্গম যুগে বিনাশ তো হবেই । যখন পুরানো দুনিয়া বিনাশ হয় আর নতুন দুনিয়া স্থাপন হয় । এই সময়কে বলে বিনাশ কাল । এ হলো অন্তিম বিনাশ তারপর অর্ধকল্প আর কোনও লড়াই ইত্যাদি হবে না । মানুষ তো কিছুই জানে না । বিনাশকালে ওদের বিপরীত বুদ্ধি, সুতরাং পুরানো দুনিয়ার বিনাশ তো হবেই। এই পুরানো দুনিয়াতে কত রকম বিপর্যয় হয়ে চলেছে। মৃত্যু হতেই থাকে । বাবা এই সময়ের কথা বর্ণনা করেছেন । পার্থক্য আছে, তাই না! আজ ভারতের এই অবস্থা, আগামী ভারত কেমন হবে ? আজ তোমরা এখানে আছ, আগামী কাল তোমরা কোথায় থাকবে ?

তোমরা জানো প্রথমে নতুন দুনিয়া কত ছোট ছিল । ওখানে প্রাসাদে অগাধ হীরে-জহরত ইত্যাদি ছিল। ভক্তি মার্গেও তোমাদের মন্দির কি কিছু কম আছে ! শুধু এক সোমনাথের মন্দির তো থাকবে না। একজন মন্দির নির্মাণ করবে তাকে দেখে অন্যরাও নির্মাণ করবে । এক সোমনাথ মন্দির থেকেই কত লুট হয়েছে । তারপর বসে নিজেদের স্মৃতিচিহ্ন তৈরি করেছে । দেওয়ালের গায়ে নানারকম পাথর লাগিয়েছে । এইসব পাথরের কতটুকু মূল্য হবে? একটুকরো হীরে তারও কত দাম । বাবা তো ( ব্রহ্মা বাবা) জহুরি ছিলেন, এক রতি হীরে ৯০ টাকা ছিল । এখন তো তার মূল্য হাজার টাকা হয়ে গেছে। পাওয়াও যায় না । কত মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে । এই সময় বিদেশেও অগাধ ধন ঐশ্বর্য রয়েছে, কিন্তু সত্যযুগের কাছে কিছুই নয় ।

এখন বাবা বলেন, বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি । তোমরা যখন বলো বিনাশ সামনেই, মানুষ শুনে হাসাহাসি করে । বাবা বলেন, আমি কতদিন এখানে বসে থাকব, এখানে থাকতে কি আমার খুব মজা হয় ? না, আমি সুখী, না দুঃখী । আমার ডিউটি তোমাদের পবিত্র করে তোলা । তোমরা দেবতা ছিলে, এখন এমন (অপবিত্র) হয়ে গেছ । তোমাদের আবার আমি শ্রেষ্ঠ করে তুলি । তোমরা জানো, আমরা আবার তমোপ্রধান হয়ে যাব । এখন তোমরা বুঝেছ আমরা দৈবী ঘরাণার ছিলাম, আমাদের রাজত্ব ছিল, হারিয়ে ফেলেছি। এরপর অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা আসতে থাকে । এখন এই চক্র সম্পূর্ণ হতে চলেছে । এখন তোমরা বুঝেছ লক্ষ বছরের কোনও প্রশ্নই নেই । এই লড়াই হলো বিনাশের । ওখানে (সত্য যুগে) খুব আরামে মৃত্যু বরণ করবে, কোনও কষ্ট হবে না । কোনও চিকিত্সালয় ইত্যাদি থাকবে না । কে বসে সেবা করবে আর কাঁদবে ! ওখানে এইসব নিয়ম নেই । ওখানে মৃত্যু সহজেই হয় । এখানে তো দুঃখী হয়ে মরে, কেননা তোমরা অনেক সুখ প্রাপ্ত করেছ সুতরাং দুঃখও তোমাদের দেখতে হবে । রক্ত নদী বইবে । ওরা ভাবে এই লড়াই একদিন শান্ত হয়ে যাবে কিন্তু শান্ত তো হবেনা । বলা হয় শিকারী শিকারের মৃত্যুর জন্য প্রার্থনা করে। তোমরা দেবতা হতে যাচ্ছ, সেইজন্য এই ছিঃছিঃ কলিযুগের দুনিয়াতে আসতে পারবে না । গীতাতেও আছে ভগবানুবাচঃ বিনাশও দেখো, স্থাপনাও দেখো । সাক্ষাত্কার হয়েছে না ! এই সাক্ষাত্কার সব অন্তিমে গিয়ে হবে — অমুকে ঐ করেছে, ঐ সময় কাঁদবে, অনেক অনুশোচনা হবে, সাজা হবে, মাথা ঠুকবে । কিন্তু কি করতে পারে ? এ তো ২১ জন্মের লটারি । স্মৃতি তো আসে, তাইনা । সাক্ষাত্কার ছাড়া কেউ সাজা পেতে পারে না । ট্রাইব্যুনাল বসে যে ! আচ্ছা !

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) নিজের মধ্যে জ্ঞান রত্ন ধারণ করে রূপ-বসন্ত হতে হবে । জ্ঞান রত্ন দ্বারা বিশ্বের বাদশাহীর লটারি প্রাপ্ত করতে হবে ।

২ ) এই বিনাশের সময় বাবার প্রতি প্রীত বুদ্ধি রেখে একজনকেই স্মরণ করতে হবে । এমন কোনও কর্ম করা উচিত নয় যাতে অন্তিমে গিয়ে অনুশোচনা হয় আর ভাগ্য হারাতে হয় ।

বরদান:-
অলসতা এবং অহঙ্কারকে ত্যাগ করে নিজের প্রতি মনোযোগী হয়ে বাবার কাছ থেকে সহায়তা গ্রহণের পাত্র হয়ে সহজ পুরুষার্থী ভব

কিছু কিছু বাচ্চা সাহস রাখার পরিবর্তে অনবধানতার কারণে অহঙ্কারী হয়ে বলে, আমি তো সবসময়ই বাবার সহযোগী । বাবা আমাকে সাহায্য করবেন না তো কাকে করবেন । এই অহঙ্কারের কারণে সাহসিকতার বিধি বা পদ্ধতিকে ভুলে যায় । কারো কারো মধ্যে নিজের প্রতি অ্যাটেনশন দেওয়ার অহঙ্কারও তৈরি হয়, সেইজন্য সাহায্য গ্রহণে বিঘ্ন সৃষ্টি হয় । তারা মনে করে আমি তো দীর্ঘ সময় ধরে যোগ করি, জ্ঞানী-যোগী আত্মা হয়ে গেছি। সেবার রাজধানী বানিয়ে ফেলেছে মনে করে। অতএব, এই প্রকারের অহঙ্কারকে ত্যাগ করে সাহসিকতার বাবার কাছ থেকে সহায়তা গ্রহণের পাত্র হয়ে ওঠো। তবেই সহজ পুরুষার্থী হতে পারবে।
 

স্লোগান:-
ব্যর্থ আর নেগেটিভ সঙ্কল্পকে পরিবর্তন করে বিশ্ব কল্যাণের কাজে লাগাও।