২২-০৯-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ৩০-০১-৮৫ মধুবন


মায়াজিৎ এবং প্রকৃতিজিৎ-ই স্বরাজ্য অধিকারী

আজ চতুর্দিকের রাজ্য অধিকারী বাচ্চাদের রাজ দরবার বাপদাদা দেখছেন। চারিদিকে হারানিধি অত্যন্ত স্নেহের অলৌকিক সেবাধারী অনন্য বাচ্চারা রয়েছে । এমন বাচ্চারা এখনও স্বরাজ্য অধিকারী রাজ্য দরবারে উপস্থিত রয়েছে। বাপদাদা এমন যোগ্য বাচ্চাদেরকে, যারা অত্যন্ত বিনম্র বা নিরহংকারী, উচ্চ স্বমান রয়েছে, এমন বাচ্চাদের দেখে অত্যন্ত পুলকিত হন। স্বরাজ্য দরবার সমগ্র কল্পে অলৌকিক, সকল দরবারের থেকে সম্পূর্ণ পৃথক আর অত্যন্ত মনোহর। এক একজন স্বরাজ্য অধিকারী, বিশ্ব রাজ্যের ফাউন্ডেশন, নতুন বিশ্বের নির্মাতা। এক একজন স্বরাজ্য অধিকারী দীপ্তিমান দিব্য তিলকধারী সকল বিশেষত্বে দীপ্তোজ্জ্বল অমূল্য মণিমাণিক্যে সুসজ্জিত রাজমুকুটধারী। সকল দিব্য গুণের মালা ধারণ করে, সম্পূর্ণ পবিত্রতার আলোক মুকুট ধারণ করা শ্রেষ্ঠ স্থিতির নিজ সিংহাসনে উপস্থিত রয়েছে। এমন সাজে সুসজ্জিত হয়ে রাজ দরবারে উপস্থিত রয়েছে। এমন রাজ দরবার বাপদাদার সামনে বর্তমান রয়েছে। প্রত্যেক স্বরাজ্য অধিকারীর সামনে কত পরিমাণে দাসদাসী রয়েছে ? প্রকৃতিজিৎ আর বিকারীজিৎ। বিকার ৫, প্রকৃতির তত্ত্বও হল পাঁচ । তো প্রকৃতিই দাসী হয়ে গেল না ! শত্রু সেবাধারী হয়ে গেল ! এমন আধ্যাত্মিক নেশায় থেকে বিকারকেও পরিবর্তন করে - কাম বিকারকে শুভ কামনা, শ্রেষ্ঠ কামনার স্বরূপে বদলে দিয়ে সেবাতে নিয়োজিত করে, এমন শত্রুকে সেবাধারী বানিয়ে দিতে পারে, তারা প্রকৃতির কোনো তত্ত্বের প্রতি বশীভূত হয় না। বরং প্রতিটি তত্ত্বকে তমোগুণী রূপ থেকে সতোপ্রধান স্বরূপে প্রদান করে নেয় । কলিযুগে এই তত্ত্ব গুলিই প্রবঞ্চনা করে আর দুঃখ দেয়। সঙ্গমযুগে তার পরিবর্তন হয়ে যায়। রূপ বদলে যায়। সত্যযুগে এই পাঁচ তত্ত্ব দেবতাদের সুখের উপাদান হয়ে যায়। এই সূর্য তোমাদের খাবার প্রস্তত করবে, তো ভান্ডারী হয়ে যাবে তখন, তাই না ! এই বায়ু তোমাদের ন্যাচারাল পাখা হয়ে যাবে। তোমাদের মনোরঞ্জনের উপাদান হয়ে যাবে। বায়ু প্রবাহিত হলে গাছের পাতা নড়বে আর গাছের ডালপালা এমন নড়বে, ডালপালার নড়ার কারণে নানান প্রকারের সুরধ্বনি স্বততঃই বাজতে থাকবে। তো মনোরঞ্জনের উপকরণ হয়ে গেল না ! এই আকাশ তোমাদের জন্য রাজপথ হয়ে যাবে। বিমান কোথায় চালাবে ? এই আকাশই তোমাদের পথ হয়ে উঠবে। এত বড় হাইওয়ে কোথাও আছে কী ? বিদেশে আছে ? যত মাইলই বানাক না কেন, আকাশ পথ তো তার কাছে ছোটই, তাই না ! এত বড় রাস্তা কোথাও আছে কী ? আমেরিকাতে আছে কী ? আর হবে অ্যাকসিডেন্ট রহিত রাস্তা । ৮ বছর বয়সের বাচ্চাও যদি চালায়, তবুও পড়বে না। তাহলে বুঝতে পেরেছো ! এই জল সুগন্ধী গন্ধদ্রব্যের কাজ করবে। ভেষজ গাছপালা, শিকড়বাকড়ের কারণে গঙ্গা জল যেমন আজও অন্য জলের থেকে পবিত্র, ঠিক তেমনি সুবাসিত ভেষজ শিকড়বাকড় থাকার জন্য জলও ন্যাচারাল সুগন্ধে ভরপুর হবে। এখানে যেমন দুধ দেহে শক্তি প্রদান করে, তেমনই সেখানকার জলই শক্তিশালী হবে, স্বচ্ছ হবে। সেইজন্য বলা হয় দুধের নদী বইবে। সবাই এখন থেকেই (শুনেই) আনন্দিত হয়ে উঠলে, তাই তো ? তেমনই এই পৃথিবী এমন শ্রেষ্ঠ ফল দেবে যে, যেমন যেমন প্রকারের স্বাদের চাও, ঠিক সেই রকম স্বাদের ফল তোমাদের সামনে হাজির হয়ে যাবে। এই লবণও সেখানে থাকবে না, চিনিও থাকবে না। এখন যেমন টক এর জন্য টমেটো রয়েছে, তৈরীই রয়েছে না ! টকের কাজ হয়ে যায়। তেমনই তোমাদের যেমন স্বাদ চাই, অনুরূপ ফল থাকবে। রস ঢালো আর সেই স্বাদ প্রস্তুত হয়ে যাবে। তো এই পৃথিবী এক তো শ্রেষ্ঠ ফল, শ্রেষ্ঠ অন্ন প্রদান করবার সেবা করবে, অন্যদিকে ন্যাচারাল সীন- সীনারি, যাকে বলা হয় প্রকৃতি, সেই ন্যাচারাল দৃশ্যাবলী, পাহাড়ও থাকবে। এমন সোজা পাহাড় থাকবে না। ন্যাচারাল বিউটি - ভিন্ন ভিন্ন রকমের পাহাড় থাকবে। কোনোটা পাখির রূপে, কোনোটা ফুলের রূপে থাকবে । এমন ন্যাচারাল গঠনবিন্যাস হবে। কেবল নামমাত্র হাত লাগাতে হবে। এমনই এই পাহাড় সেবাধারী হয়ে যাবে । কিন্তু কার সেবাধারী হবে ? স্বরাজ্য অধিকারী আত্মাদের সেবাধারী হবে। তাই এখন নিজেকে দেখো, ৫ বিকার শত্রু থেকে সেবাধারীতে রূপান্তরিত হয়েছে ? তবেই বলা হবে স্বরাজ্য অধিকারী । ক্রোধ অগ্নি যোগ অগ্নিতে বদলে যাবে। তেমনি লোভ বিকার, লোভ অর্থাৎ কামনা । সীমিত কামনা বদলে শুভ কামনা হয়ে যাবে যে - আমার প্রতিটি সংকল্প, বাণী, কর্মের দ্বারা আমি যেন নিঃস্বার্থ অসীমের সেবাধারী হয়ে যাই। আমি যেন বাবা-সম হয়ে যাই - এমন শুভ বাসনা অর্থাৎ লোভের পরিবর্তিত রূপ। তাকে শত্রু বানানোর পরিবর্তে সেবা কার্যে লাগাও । প্রত্যেকের মধ্যেই বেশ ভালোই মোহ রয়েছে। বাপদাদার প্রতি মোহ আছে তো ? তোমরা এক সেকেণ্ডও বাবার সাথে দূরে থাকতে চাও না - একে মোহ বলা যাবে, নাকি যাবে না ? কিন্তু এই মোহ সেবা করাবে। যারাই তোমাদের দু'নয়ন দেখবে, তারা তোমাদের দু'নয়নে সমাহিত বাবাকেই দেখবে। তোমাদের মুখ দিয়ে নিঃসারিত বাবার অমূল্য বোলই তারা কেবল শুনবে। তো মোহ বিকার সেবাতে নিয়োজিত হয়ে যাবে । বদলে গেল না ! ঠিক তেমনই অহংকার। দেহ-অভিমান থেকে দেহী-অভিমানী হয়ে যাবে। শুভ অহংকার অর্থাৎ আমি আত্মা বিশেষ আত্মা হয়ে গেছি। লক্ষ কোটি গুণ ভাগ্যবান হয়ে গেছি। নিশ্চিন্ত (বেফিকর) বাদশাহ হয়ে গেছি। এই শুভ অহংকার অর্থাৎ ঈশ্বরীয় নেশা সেবার নিমিত্ত হয়ে যায়। তো এইভাবে পাঁচটি বিকার বদলে সেবার উপযোগী হয়ে গেলে, শত্রু থেকে সেবাধারী হয়ে গেল না ! অতএব, এইভাবে চেক করো যে, মায়াজিৎ প্রকৃতিজিৎ কতদূর হয়েছ ? রাজা তখন হবে, যখন আগে দাসদাসী তৈরী হয়ে যাবে। যে নিজে দাসের অধীন হবে, সে রাজ্য অধিকারী কীভাবে হতে পারবে !



ভারতের বাচ্চাদের সাথে মিলন মেলার প্রোগ্রাম অনুসারে আজ হল শেষ দিন। তো মেলায় আজ অন্তিম ডুব দেওয়ার দিন। এর গুরুত্ব অনেক। এই মহান গুরুত্বপূর্ণ দিনে, ওই সঙ্গম মেলায় যখন যায়, মনে করে - সব পাপ ডুব দিয়ে ভস্ম করে সমাপ্ত করে যাবে। সুতরাং তোমাদের সকলের ৫ বিকারকে চিরকালের জন্য সমাপ্ত করবার সংকল্প করা, এটাই হল অন্তিম ডুব দেওয়ার মহত্ত্ব । তো সকলে পরিবর্তন করবার দৃঢ় সংকল্প করেছ ? ছাড়তে হবে না, বদলে দিতে হবে। শত্রু যদি তোমার সেবাধারী হয়ে যায়, তবে শত্রু পছন্দ ? নাকি সেবাধারী পছন্দ ? তো আজকের দিনে চেক করো আর চেঞ্জ করো, তবেই মিলন মেলার মহত্ত্ব। বুঝেছ, কী করতে হবে ? এমন ভাববে না যেন, চার (বিকার) তো ঠিক আছে, বাকি একটা যদি থেকেও গিয়ে থাকে, কোনো ব্যাপার না। কিন্তু এই এক-ই চারকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। এরা একে অন্যের সাথে সংযুক্ত, সেইজন্য রাবণের দশটি মাথাকে একসাথে দেখানো হয়। তাই অবশ্যই দশহরা পালন করে যেও। ৫ প্রকৃতির তত্ত্ব জিৎ এবং ৫ বিকার জিৎ, ১০ হয়ে গেল, তাই না ! তো বিজয়া দশমী পালন করে যেও। সমাপ্ত করে দগ্ধ করে ভস্ম সাথে করে নিয়ে যেও না। ভস্মও যদি সাথে করে নিয়ে যাও, তাহলে আবার ফিরে আসবে। ভূত হয়ে এসে যাবে। সেইজন্য সেটাও জ্ঞান সাগরে সমাপ্ত করেই যেও। আচ্ছা -



এমন সদা স্বরাজ্য অধিকারী, অলৌকিক তিলকধারী, রাজমুকুটধারী, প্রকৃতিকে যারা দাসী বানিয়ে দিতে পারে, ৫ শত্রুকে সেবাধারী বানিয়ে দিতে পারে, সদা নিশ্চিন্ত বাদশাহ, আধ্যাত্মিক নেশায় মত্ত বাদশাহ, এমন বাবার সম সদা কালের বিজয়ী বাচ্চাদেরকে বাপদাদার স্মরণের স্নেহ--সুমন আর নমস্কার।



* কুমারীদের সাথে অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎকার*



*১ )* এখন নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ কুমারী অনুভব করো ? সাধারণ কুমারীরা হয় চাকরীর ডালা বহন করে বেড়ায়, নয়ত দাসী হয়ে যায় । কিন্তু শ্রেষ্ঠ কুমারীরা বিশ্ব কল্যাণকারী হয়ে যায় । এমন শ্রেষ্ঠ কুমারী তোমরা, তাই তো ? জীবনের শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য কী হতে পারে ? সঙ্গদোষ বা সম্বন্ধের বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া, এই লক্ষ্যই থাকে তাই না ? বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যাওয়া নয়। কী করব বন্ধন রয়েছে যে, কী করব চাকরি করতে হবে, সেইজন্য বলা হয় বন্ধনে আবদ্ধ। তাই, না সম্বন্ধের বন্ধন, না জীবিকার ডালার বন্ধন। উভয় বন্ধন থেকে যে মুক্ত, সে-ই বাবার প্রিয় হয় । এমন নির্বন্ধন তো ? উভয় জীবনই তোমাদের সামনে রয়েছে। সাধারণ কুমারীদের ভবিষ্যৎ আর বিশেষ কুমারীদের ভবিষ্যৎ দুই'ই সামনে রয়েছে। তো দুটোকে দেখে নিজেই বিচার করতে পারবে। যেমন বলবে তেমন করবে, এই রকম নয়। নিজের জন্য নির্ণয় নিজেই নিজের জজ হয়ে নাও। শ্রীমৎ তো হল বিশ্ব কল্যাণকারী হও। সেটা তো ঠিকই, কিন্তু শ্রীমতের সাথে সাথে স্বেচ্ছায় নিজের উৎসাহে যে এগিয়ে যায়, সে-ই সর্বদা সহজেই এগিয়ে যেতে থাকে। কারো কথায় বা অন্যরা কী বলবে সে কথা ভেবে কিছুটা সেই লজ্জায়, যদি না হই তবে যদি লোকে বলে যে, এর তো মনের জোর নেই - অন্যদের চাপে পড়ে যদি কেউ পা বাড়ায়ও, তবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া তার পক্ষে পরিশ্রম সাপেক্ষ হবে। আর যারা নিজ উৎসাহে আসে, পরিস্থিতি কত বড়ই হোক না কেন, তার কাছে সেটা নিতান্তই সহজ মনে হবে। কারণ তার মনের উদ্দীপনা রয়েছে যে। তার নিজের উৎসাহ-উদ্দীপনাই তার পাখনা হয়ে যায়। কত বড় পাহাড়ই হোক, উড়ন্ত বিহঙ্গ তাকে সহজেই অতিক্রম করে নিতে পারে। আর যারা হাটছে বা চড়ছে, কতখানি পরিশ্রম করে আর কতটা সময় নিয়ে সেই পাহাড়কে অতিক্রম করবে ! তাই মনের উৎসাহ পাখনার কাজ করে। এই পাখনা বা ডানার সাহায্যে যে ওড়ে, তার কাছে ওড়া সব সময়ই সহজ। বুঝেছ ? তো শ্রেষ্ঠ মত হল বিশ্ব কল্যাণকারী হও, কিন্তু তাও নিজেই নিজের জজ হয়ে নিজের জীবনের নির্ণয় নাও। বাবা তো মতামত জানিয়েই দিয়েছেন, সেটা নতুন কোনো কথা নয়। এখন নিজে নির্ণয় নাও, তাহলে সর্বদা সফল হতে পারবে। সমঝদার ব্যক্তি সে-ই, যে ভেবে চিন্তে পা ফেলে। ভাবতেই থাকে, এমন নয় বরং এ বিষয়ে ভাবলো, বুঝলো আর ব্যাস্ করে ফেললো। একেই বলা হয় সমঝদার। সঙ্গমযুগে কুমারী হওয়া - এ হল প্রথম ভাগ্য। এই ভাগ্য তো তোমরা অবিনাশী ড্রামা অনুসারে পেয়েছ। এখন সেই ভাগ্যের উপরে ভাগ্য বানিয়ে যেতে থাকো। এই ভাগ্যকে কার্যে রূপদান করলে ভাগ্য বৃদ্ধি পেতেই থাকবে। আর এই প্রথম ভাগ্যকেই যদি খুইয়ে ফেলো, তবে তো সদাকালের সকল ভাগ্যকেই খুইয়ে ফেলবে। সেইজন্য বড়ই ভাগ্যবান তোমরা।নিজে ভাগ্যবান হয়ে এখন অন্য সেবাধারীদের ভাগ্যকেও তৈরী করার নিমিত্ত হও। বুঝেছ তোমরা !



*সেবাধারী (টিচারদের) বোনেদের প্রতি* : -

সেবাধারী অর্থাৎ সদাই যে সেবার আমোদে থাকে। তারা সদাই নিজের জীবনে আমোদের অনুভব করে। সেবাধারী অর্থাৎ মৌজ বা আমোদের জীবন। অতএব, এমন সদা স্মরণ আর সেবার আমোদে থাকো, তাই না ! স্মরণ করবার মধ্যেও কিন্তু আমোদ রয়েছে আর সেবার আমোদ রয়েছে। জীবনও যেমন আমোদের, যুগও তেমনই আমোদের। যে সদাই আমোদে থাকে, তাকে দেখে অন্যরাও তাদের নিজেদের জীবনে আমোদের অনুভব করে। যত বড় মানসিক চিন্তাগ্রস্ত ব্যক্তিই আসুক না কেন, আমোদে থাকা সেই আত্মা তাদেরকেও সেই দুশ্চিন্তা থেকে বের করে এনে আনন্দের মাঝে নিয়ে আসে। এমন সেবাধারী, যে আমোদে থাকে, সে সদা শরীরে মনে সুস্থ থাকে। আমোদে থাকা ব্যক্তি উড়তে থাকে, কেননা খুশীতে থাকে। এমনিতে তো বলাই হয় - এ তো খুশীতে নাচতেই থাকে। চলছে, কিন্তু যেন নাচছে। নাচতে থাকা মানেই অনেক উঁচুতে ওঠা। পা উঁচু হবে তবেই তো নাচবে, তাই না ! তাই আমোদে থাকা মানেই হল খুশীতে থাকা। সেবাধারী হওয়া, অর্থাৎ বাপদাদার থেকে বিশেষ বরদান নেওয়া। সেবাধারীর বিশেষ বরদান রয়েছে - এক, নিজের প্রতি অ্যাটেনশান, দ্বিতীয় হল বরদান । অর্থাৎ ডবল লিফ্ট। সেবাধারী হওয়া, অর্থাৎ সদা মুক্ত আত্মা হওয়া, জীবনমুক্ত অনুভব করা।



*২* সেবাধারীরা, তোমরা সদা সফলতা স্বরূপ হয়েছ ? সফলতা হল জন্মসিদ্ধ অধিকার ।অধিকার, সব সময়ই সহজে মেলে। পরিশ্রম করতে হয় না। তো অধিকারের রূপে সফলতার অনুভবকারী হয়েছ ? সফলতা হয়েই রয়েছে, এই দৃঢ় বিশ্বাস (নিশ্চয়) আর নেশা যেন থাকে। সফলতা আসবে কি আসবে না, এমন সংকল্প চলে না তো ? অধিকার যখন রয়েছে, তখন অধিকারীর যদি অধিকার প্রাপ্ত না হয়, এ হতেই পারে না। নিশ্চয় যদি থাকে, তবে বিজয় তো হয়েই রয়েছে। সেবাধারীর পরিভাষা এটাই। পরিভাষা যেটা, সেটাই হল প্র্যাকটিক্যাল। সেবাধারী অর্থাৎ সহজেই সফলতার অনুভবকারী।



*বিদায় নেওয়ার সময়* : - (সকলে গীত গাইল : না, এখনই যেও না, মন যে ভরেনি এখনও [ অভি না যাও ছোড়কর, দিল অভি ভরা নেহি]) বাপদাদা যতখানি প্রেমের সাগর, ততটাই অনাসক্তও। স্নেহমাখা কিছু কথা, সে তো সঙ্গমযুগেরই আমোদ। আমোদিত থাকো, খাও দাও, নাচো, তবে তা নিরন্তর হওয়া চাই। এখন যেমন স্নেহে নিমজ্জিত রয়েছ, এমনই নিমজ্জিত থাকো। বাপদাদা প্রতিটি বাচ্চার হৃদয়ের সঙ্গীত তো শুনতেই থাকেন। আজ মুখের গীতও শুনলেন। বাপদাদা শব্দকে দেখেন না, টিউনও দেখেন না, অন্তরের আওয়াজকে শোনেন। এখন তো সদা সাথেই রয়েছ তোমরা, সাকারেও এবং অব্যক্ত রূপেও, সদাই সাথে রয়েছ। এখন বিচ্ছেদের দিনেরও অবসান হয়েছে। এখন এই সঙ্গমযুগ তো পুরোটাই হল মিলন মেলা। কেবল এই মেলাতে এখন দৃশ্যপটের পরিবর্তন ঘটে - কখনো ব্যক্ত হয় কখনো অব্যক্ত। আচ্ছা - গুড মর্নিং।

বরদান:-

আত্মিক শক্তির আধারে (ভিত্তিতে) শারীরিক শক্তির অনুভবকারী সদা সুস্থ ভব

এই অলৌকিক জীবনে আত্মা এবং প্রকৃতি (শরীর) উভয়েরই সুস্থ থাকা আবশ্যক। আত্মা যদি সুস্থ থাকে, তবে শরীরের হিসাব-পত্র বা শরীরের রোগ ভোগ শূল থেকে কাটায় পরিণত হয়ে যাওয়ার কারণে, স্ব স্থিতির কারণে সুস্থ অনুভব করে। তাদের মুখের ভাষায়, চেহারায় অসুস্থতার কষ্টের চিহ্ন থাকে না। কর্ম ভোগের বর্ণনার পরিবর্তে কর্মযোগের স্থিতির বর্ণনা করতে থাকে। তারা তাদের পরিবর্তন শক্তির দ্বারা কষ্টকে সন্তুষ্টতায় পরিবর্তিত করে, সন্তুষ্ট থাকে আর সন্তুষ্টতার ঢেউ ছড়িয়ে দেয়।

স্লোগান:-

আন্তরিক ভাবে, তন দ্বারা, একে অপরকে ভালোবেসে সেবা করো, নিশ্চিত সফলতা লাভ হবে।