02.12.2019
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
বিনাশের পূর্বে সকলকে বাবার পরিচয় দিতে হবে, নিজে ধারণ করে অন্যদের বোঝাও, তবেই
উচ্চপদ লাভ করতে পারবে"
প্রশ্নঃ -
রাজযোগী
স্টুডেন্টদের প্রতি বাবার ডায়রেক্শন কী ?
উত্তরঃ -
তোমাদের জন্য
(বাবার) ডায়রেক্শন হলো এই যে, এক পিতার সন্তান হয়ে পুনরায় অন্যের সঙ্গে হৃদয়ের
আদান-প্রদান কোরো না। প্রতিজ্ঞা করো পুনরায় আর পতিত হবে না। তোমরা সম্পূর্ণরূপে
এমন পবিত্র হয়ে যাও যে বাবা আর টিচারের স্মরণ যেন সর্বদা ও নিরবচ্ছিন্ন হয়ে যায় ।
একমাত্র বাবাকেই ভালবাসো, তাঁকেই স্মরণ করো, তবেই তোমরা অত্যন্ত শক্তি প্রাপ্ত করতে
থাকবে।
ওম্ শান্তি ।
আধ্যাত্মিক
পিতা বসে বোঝান। বোঝান তখনই যখন এই শরীর বর্তমান। সম্মুখেই বোঝান হয়। যা সম্মুখে
বোঝান হয় সেটাই আবার লেখনীর মাধ্যমে সকলের কাছে পৌঁছায়। তোমরা এখানে আসো সামনে (বসে)
শোনার জন্য। অসীম জগতের পিতা আত্মাদের শোনান। আত্মাই শোনে। সবকিছু আত্মাই করে --
তাই সর্বপ্রথমে এই শরীর দ্বারা নিজেকে আত্মা অবশ্যই মনে করতে হবে। কথায়ও রয়েছে যে,
'আত্মারা আর পরমাত্মা বহুকাল ধরে পৃথক হয়ে রয়েছে....'। সর্বপ্রথমে কারা বাবার কাছ
থেকে দূর হয়ে আসে এখানে নিজ ভূমিকা পালন করতে ? তোমাদের জিজ্ঞাসা করা হবে যে কতকাল
তোমরা বাবার কাছ থেকে দূরে ছিলে ? তখন তোমরা বলবে, ৫ হাজার বছর। সম্পূর্ণ হিসেব তো
রয়েছে, তাই না। বাচ্চারা, এ তো তোমরা জানো যে, নম্বরের ক্রমানুসারে কিভাবে আসে। বাবা,
যিনি উপরে (পরমধামে) ছিলেন, তিনিও এখন নীচে নেমে এসেছেন --- তোমাদের ব্যাটারী চার্জ
করতে। এখন বাবাকে স্মরণ করতে হবে। এখন বাবা সম্মুখে রয়েছেন, তাই না। বাবার
অক্যুপেশনের কথা ভক্তিমার্গের কেউ জানেই না। নাম, রূপ, দেশ, কাল-কে কেউ জানেই না।
তোমাদের তো নাম, রূপ, দেশ, কালের কথা সব জানা আছে। তোমরা জানো যে, এই রথের(ব্রহ্মা)
দ্বারা বাবা আমাদের সব রহস্য বোঝান। রচয়িতা এবং রচনার আদি, মধ্য, অন্তের রহস্য
বোঝান। এ অতি সূক্ষ্ম বিষয়। এই মনুষ্য সৃষ্টি-রূপী বৃক্ষের বীজ হলেন একমাত্র বাবা।
তিনি এখানে অবশ্যই আসেন। নতুন দুনিয়া স্থাপন করা ওঁনারই কাজ। এমন নয় যে, ওখানে (পরমধাম)
বসে স্থাপন করেন। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, বাবা এই শরীরের দ্বারা আমাদের সম্মুখে
বসে বোঝান। এও তো বাবার স্নেহ করাই হলো, তাই না। আর কেউই ওঁনার জীবন-চরিত (বায়োগ্রাফী)
জানে না। গীতা হলো আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের শাস্ত্র। এও তোমরা জানো -- এই
জ্ঞানের পরেই আসে বিনাশ। বিনাশ অবশ্যই হবে। আর যেসব ধর্মস্থাপকেরা আসে, তাদের
আগমনের পর বিনাশ হয় না। বিনাশের সময়ই হলো এটা, তাই তোমরা যে জ্ঞান পাও তা পুনরায়
লুপ্ত হয়ে যায়। বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে এসব কথা রয়েছে। তোমরা রচয়িতা আর রচনাকে
জেনে গেছ। দুটোই হলো অনাদি যা ক্রমশঃ চলে আসছে। বাবার আসার ভূমিকা(পার্ট) হলো
সঙ্গমযুগে। ভক্তি অর্ধকল্প চলে, জ্ঞান চলে না। জ্ঞানের প্রালব্ধ বা উত্তরাধিকার (বর্সা)
অর্ধকল্পের জন্য প্রাপ্ত হয়। জ্ঞান তো একবারই শুধুমাত্র সঙ্গমেই পাওয়া যায়। তোমাদের
এই ক্লাস একবারই চলে। এইকথা ভালভাবে বুঝে পুনরায় অন্যদেরকেও বোঝাতে হবে।
পদপ্রাপ্তির যোগ্যতা সম্পূর্ণ নির্ভর করে সেবার উপর। তোমরা জানো, পুরুষার্থ করে,
এখন নতুন দুনিয়ায় যেতে হবে। ধারণা করতে হবে আর অন্যদের-কেও বোঝাতে হবে -- এর উপরেই
তোমাদের পদমর্যাদা। বিনাশের পূর্বে সকলকে বাবার পরিচয় দিতে হবে আর রচনার
আদি-মধ্য-অন্তের পরিচয় দিতে হবে। তোমরাও বাবাকে স্মরণ কর যেন জন্ম-জন্মান্তরের পাপ
কেটে যায়। যতক্ষণ বাবা পড়াতে থাকেন, ততক্ষণ তাঁকে স্মরণ অবশ্যই করতে হবে। পড়ান যিনি,
তাঁর সঙ্গে যোগ রাখতে হবে, তাই না। টিচার যখন পড়ান তখন ওঁনার সঙ্গে যোগ তো থাকে।
যোগ ব্যতীত পড়বে কীভাবে ? যোগ অর্থাৎ যিনি পড়ান, তাঁকে স্মরণ করা। ইনি পিতাও,
টীচারও, সত্গুরুও। তিনরূপেই সম্পূর্ণভাবে স্মরণ করতে হবে। এই সত্গুরুকে তোমরা
একবারই পাও। জ্ঞানের দ্বারা সদ্গতি প্রাপ্ত হয়। ব্যস, তখন থেকে গুরু-প্রথা সমাপ্ত।
বাবা আর টিচারের রীতি-রেওয়াজ চলতে থাকে, গুরু-প্রথা সমাপ্ত হয়ে যায়। সদ্গতি লাভ হয়ে
গেছে, তাই না। বাস্তবিকই তোমরা নির্বাণধামে যাও, পুনরায় নিজেদের সময়ানুসারে নিজ
ভূমিকা পালন করতে আসবে। মুক্তি-জীবনমুক্তি দুটোই তোমরা প্রাপ্ত কর। মুক্তিও অবশ্যই
পাও। অল্পসময়ের জন্য ঘরে গিয়ে থাকবে। এখানে তো শরীরের মাধ্যমে ভূমিকা পালন করতে হয়।
পরে সব কুশীলবরাই (অ্যাক্টর) চলে আসবে। নাটক যখন সম্পূর্ণ হয় তখন সব অ্যাক্টর্সরাই
স্টেজে চলে আসে। এখনও সব অভিনেতারা স্টেজে এসে সমাবেত হয়েছে। কত ভয়ানক যুদ্ধ।
সত্যযুগ ইত্যাদিতে এত ভয়ানক যুদ্ধ হতো না। এখন কত অশান্তি। তাই এখন যেমন বাবার
সৃষ্টি-চক্রের নলেজ রয়েছে তেমন বাচ্চাদেরও এই নলেজ রয়েছে। বীজের তো এই জ্ঞান রয়েছে
যে --- আমাদের বৃক্ষ কিভাবে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে পুনরায় সমাপ্ত হয়ে যায়। এখন তোমরা
বসে আছো নতুন দুনিয়ার চারা রোপনের জন্য (স্যাপলিং) অথবা আদি সনাতন দেবী-দেবতা
ধর্মের চারাগাছ রোপনের জন্য। তোমরা জানো যে, এই লক্ষ্মী-নারায়ণ তাঁদের রাজ্য কিভাবে
পেয়েছে ? তোমরা জানো যে, আমরা এখন নতুন দুনিয়ার প্রিন্স হব। ওই দুনিয়ায় যারা থাকবে
তারা সকলে নিজেদের মালিকই বলবে, তাই না। যেমন, এখনও সকলে বলে যে, ভারত আমাদের দেশ।
তোমরা জানো যে, আমরা এখন সঙ্গমে দাঁড়িয়ে রয়েছি, শিবালয়ে যাব। ব্যস, এখনই যাব-যাব
করছি। আমরা গিয়ে শিবালয়ের মালিক হব। এটাই হলো তোমাদের এইম অবজেক্ট। যথা রাজা-রানী
তথা প্রজা, সকলেই শিবালয়ের মালিক হয়ে যায়। এছাড়া রাজধানীতে বিভিন্ন
স্ট্যাটাস(পদমর্যাদা) তো থাকেই। ওখানে কোন পরামর্শদাতা (উজীর) থাকে না।
পরামর্শদাতার প্রয়োজন তখন পড়ে যখন অপবিত্র হয়ে যায়। লক্ষ্মী-নারায়ণ বা রাম-সীতার
পরামর্শদাতা কখনো শোনো নি কারণ তাঁরা স্বয়ং সতোপ্রধান পবিত্র বুদ্ধিসম্পন্ন। পুনরায়
যখন পতিত হয়ে যায় তখন রাজা-রানী একজন পরামর্শদাতা রাখে রায় নেওয়ার জন্য। দেখ, এখনও
তো অসংখ্য পরামর্শদাতা রয়েছে।
বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, এ হলো অতি মজার খেলা। খেলা সর্বদা মজারই হয়। সুখও থাকে,
আবার দুঃখও থাকে। বাচ্চারা, তোমরা এই অসীম জগতের খেলাকে জানো। এতে কান্নাকাটি,
লড়াই-ঝগড়ার কোন কথাই নেই। গাওয়াও হয় যে, যা ঘটে গেছে তা বিগত, দেখ..... যা
পূর্ব-নির্ধারিত তারই পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এই নাটক তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে। আমরা এর
(নাটকের) অ্যাক্টর্স। আমাদের ৮৪ জন্মের ভূমিকা সঠিক, অবিনাশী। যারা যে জন্মে যে
অ্যাক্টিং করেছে তারা সেটাই করবে। আজ থেকে ৫ হাজার বছর পূর্বেও তোমাদের একথাই
বলেছিলাম যে নিজেদের আত্মা মনে কর। গীতাতেও এই শব্দ রয়েছে। তোমরা জানো যে, অবশ্যই
যখন আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম স্থাপন হয়েছিল, তখন বাবা বলেছিলেন দেহের সর্ব ধর্মকে
পরিত্যাগ করে নিজেকে আত্মা নিশ্চয় কর আর বাবাকে স্মরণ কর। 'মন্মনাভব'-র অর্থও বাবা
সঠিকভাবে বুঝিয়েছেন। ভাষাও একটাই। এখানে দেখ কত অসংখ্য ভাষা রয়েছে। ভাষা নিয়েও কত
শোরগোল হয়। ভাষা ব্যতীত তো কোন কার্য সম্পন্ন হতে পারে না। এমন-এমন ভাষা শিখে আসে
যে মাতৃভাষাই ভুলে যায়। যারা অনেক ভাষা শেখে তারা পুরস্কার পায়। যত ধর্ম তত ভাষা।
তোমরা জানো, ওখানে তো আমাদেরই রাজত্ব হবে। ভাষাও এক হবে। এখানে তো ১০০ মাইল পর-পর
একেক ভাষা। ওখানে একটাই ভাষা। এসব কথা বাবা বসে বোঝান, তাই বাবাকেই স্মরণ করতে থাকো।
শিববাবা ব্রহ্মার দ্বারা বোঝান। রথ তো অবশ্যই চাই। শিববাবা আমাদের পিতা। বাবা বলেন,
আমার বাচ্চারা তো অসীম জগতের। বাবা এঁনার মাধ্যমে পড়ান, তাই না। টিচারকে কখনো
আলিঙ্গন করে কী, না করে না। বাবা তোমাদের পড়াতে এসেছেন। রাজযোগ শেখান, তবে তো তিনি
টিচার হলেন, তাই না। তোমরা হলে স্টুডেন্ট। স্টুডেন্ট কখনো টিচারকে আলিঙ্গন করে কী ?
এক পিতার কাছে (নিজেকে) সমর্পণ করে আর অন্য কাউকে হৃদয় দিও না।
বাবা বলেন, আমি তোমাদেরকে রাজযোগ শেখাতে এসেছি, তাই না। তোমরা শরীরধারী, আমি অশরীরী,
উপরে বসবাসকারী। তোমরা বলো, বাবা আমাদের পবিত্র করতে এসো, তাহলে তো তোমরা পতিত, তাই
না। তাহলে আমাকে আলিঙ্গন কীভাবে করবে ? প্রতিজ্ঞা করে পুনরায় অপবিত্র হয়ে যায়। যখন
সম্পূর্ণ পবিত্র হয়ে যাবে তখন আবার তা স্মরণেও থাকবে। শিক্ষককে, গুরুকে স্মরণও করতে
থাকবে। এখন যদি অপবিত্র (ছি-ছি) হয়ে অধঃপতনে যায় তবে আরও শতগুণ দন্ড ভোগ করতে হবে ।
এঁনাকে(ব্রহ্মা) তো মাঝে দালাল-রূপে পেয়েছ, স্মরণ ওঁনাকে(শিব) করতে হবে।
বাবা(ব্রহ্মা) বলেন -- আমিও ওঁনার চতুর বাচ্চা, কিন্তু আমি কোথায় আলিঙ্গন করতে পারি
! তোমরা তো এই শরীরের দ্বারা মিলিত হও। আমি ওঁনাকে কীভাবে আলিঙ্গন করব ? বাবা বলেন
-- বাছা ! তোমরা একমাত্র পিতাকেই স্মরণ কর, ভালবাসো। স্মরণের দ্বারা অনেক শক্তি
প্রাপ্ত হয়। বাবা সর্বশক্তিমান। বাবার থেকেই তোমরা এত শক্তি পাও। তোমরা কত বলবান হয়ে
যাও। তোমাদের রাজধানীর উপর আর কেউ-ই বিজয় প্রাপ্ত করতে পারে না। রাবণ-রাজ্যই সমাপ্ত
হয়ে যায়। দুঃখ দেওয়ার মত আর কেউ থাকেই না। একে সুখধাম বলা হয়। রাবণ সমগ্র বিশ্বে
সকলকে দুঃখ দেয়। জানোয়ারও দুঃখী থাকে। ওখানে তো জানোয়ারদেরও পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা
থাকে। এখানে তো ভালবাসাই নেই।
বাচ্চারা, তোমরা জানো এই ড্রামা কিভাবে আবর্তিত হয়। এর আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বাবা-ই
বোঝান। কেউ সঠিকভাবে পড়ে, কেউ পড়ে না। পড়ে তো সকলেই, তাই না। সমগ্র দুনিয়াই পড়বে
অর্থাৎ বাবাকে স্মরণ করবে। বাবাকে স্মরণ করা -- এও তো পড়া, তাই না। ওই পিতাকে সকলেই
স্মরণ করে, তিনি হলেন সকলের সদ্গতিদাতা। সকলকে সুখ প্রদান করেন। তারা বলেও যে, এসে,
পবিত্র কর তাহলে অবশ্যই এখন পতিত। ওঁনার এটাই কাজ, তাই ওঁনাকে আহ্বান করা হয়।
তোমাদের ভাষাও সঠিক হওয়া উচিত। ওরা(মুসলিম) বলে 'আল্লাহ্', ওরা(খ্রিস্টান) বলে 'গড',
আবার গডফাদারও বলে। পরে যারা আসে তাদের বুদ্ধি তবুও ভাল থাকে। এত দুঃখ ভোগ করে না।
এখন তোমরা সম্মুখে বসে রয়েছ, কী করছ ? বাবাকে এই ভ্রুকুটিতে দেখ। বাবা আবার তোমাদের
ভ্রুকুটিতে দেখে। যার মধ্যে প্রবেশ করি তাঁকে কি দেখতে পারি ? তিনি তো পাশে বসে
রয়েছে, এ অতি বুঝবার মতো বিষয়। আমি এঁনার পাশে বসে রয়েছি। ইনিও বোঝেন যে, আমার পাশে
বসে রয়েছেন। তোমরা বলবে, আমরা সম্মুখে দু'জনকে দেখতে পাই। বাবা আর দাদা -- দুই
আত্মাকেই দেখ। তোমাদের মধ্যে এই জ্ঞান রয়েছে যে -- বাপদাদা কাকে বলে ? আত্মা সম্মুখে
বসে রয়েছে।ভক্তিমার্গে চোখ বন্ধ করে বসে শোনে। পড়া কি এভাবে কখনো হতে পারে, না পারে
না। টিচারকে দেখতে হবে তো, তাই না। ইনি তো বাবাও, টিচারও তাই সামনে থেকে দেখতে হয়।
সম্মুখে বসে রয়েছে আর চোখ বন্ধ, ঢুলে পড়ছে, এভাবে পড়া হয় না। স্টুডেন্ট টিচারকে
অবশ্যই দেখতে থাকবে। তা নাহলে টিচার বলবে, এ তো ঢুলতেই থাকে। এ যেন কেউ ভাং খেয়ে
এসেছে। তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে যে, বাবা এই শরীরে রয়েছেন। আমি বাবাকে দেখি। বাবা
বোঝান যে, এ কোন সাধারণ ক্লাস নয় -- যেখানে কেউ চোখ বন্ধ করে বসবে। স্কুলে কখনও কেউ
চোখ বন্ধ করে বসে কী ? আর কোন সত্সঙ্গ-কে স্কুল বলা হয় না। অবশ্যই সেখানে বসে গীতা
শোনানো হয় কিন্তু তাকে স্কুল বলা হয় না। তারা কী কোন পিতা যে তাদের দেখবে, না দেখবে
না। কেউ-কেউ শিবের ভক্ত হয় তখন তারা শিবকেই স্মরণ করে, শুধু তাঁর কথাই কর্ণগোচর হয়।
যারা শিবের ভক্তি করে তারা শিবকেই স্মরণ করবে। কোন সত্সঙ্গে প্রশ্ন-উত্তর ইত্যাদি
থাকে না, এখানে থাকে। এখানে তোমাদের আমদানি অনেক। আমদানি হতে থাকলে কখনও হাই উঠতে (ক্লান্তি)
পারে না। ধন প্রাপ্ত হয়, তাই না, তখন খুশীও হয়। হাই তোলা দুঃখের প্রতীক। রোগগ্রস্ত
বা দেউলিয়া হয়ে গেলে তখন হাই উঠতে থাকবে । ধন প্রাপ্ত হতে থাকলে তখন আর কোন হাই
উঠবে না। বাবা আবার ব্যাপারীও। রাতে স্টীমার আসত তখন রাতে জাগতে হতো। কোনো কোনো
মহিলা রাতে আসে, তাই শুধু মহিলাদের জন্যই খুলে রাখা হয়। বাবাও বলেন, প্রদর্শনী
ইত্যাদিতে মহিলাদের জন্য বিশেষদিন রাখো, তাহলে অনেকেই আসবে। পর্দার আড়ালে (ঘোমটার
আড়ালে) যারা থাকে তারাও আসবে। অনেকেই পর্দার আড়ালে থাকে। মোটরগাড়িতেও পর্দা দেওয়া
থাকে। এখানে এ হলো আত্মার কথা। জ্ঞান লাভ করলে (অজ্ঞানতার) পর্দা খুলে যাবে।
সত্যযুগে পর্দা ইত্যাদি থাকেই না। এ হলো প্রবৃত্তিমার্গের জ্ঞান, তাই না। আচ্ছা!
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এ
অতি মজার খেলা তৈরী হয়েই রয়েছে, এতে সুখ আর দুঃখের ভূমিকা ফিক্সড হয়ে রয়েছে তাই
এখানে কান্নাকাটি বা হা হুতাশ করবার কিছু নেই। বুদ্ধিতে যেন থাকে যে এই ড্রামা হল
পূর্ব-নির্ধারিত, সেটাই আবার রিপিট হচ্ছে । অতীত অতিক্রান্ত, তাই তাকে নিয়ে চিন্তন
করা উচিত নয়।
২ ) এ কোনো সাধারণ ক্লাস নয়, এখানে চোখ বন্ধ করে বসা উচিত নয়। টীচারকে সম্মুখে দেখতে
হবে। হাই তোলা উচিত নয়। হাই তোলা দুঃখের লক্ষণ।
বরদান:-
প্রসন্নতার আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বের দ্বারা সকলকে অধিকারী তৈরী করে তোলা গায়ন এবং
পূজন যোগ্য ভব
ব্যাখা :- যে সকলের
থেকে সন্তুষ্টতার সার্টিফিকেট নিতে পারে, সে-ই সদা প্রসন্ন থাকে, আর এই প্রসন্নতার
আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বের কারণে প্রখ্যাত অর্থাৎ গায়ন এবং পূজন যোগ্য হয়ে যায়।
তোমাদের অর্থাৎ শুভচিন্তক, প্রসন্নচিত্ত আত্মাদের দ্বারা সর্বজনের যে খুশীর,
সাহায্যের, শক্তির পাখনা, উৎসাহ-উদ্দীপনার পাখনা প্রাপ্ত হয় -- সেই প্রাপ্তি কাউকে
অধিকারী বানিয়ে দেয়, কেউ ভক্ত হয়ে যায়।
স্লোগান:-
বাবার থেকে বরদান প্রাপ্ত করার সহজসাধন হলো -- হৃদয়ের স্নেহ।