২৮-০৪-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ১৯-১১-৮৪ মধুবন
অনন্তেরড০ (বেহদ) বৈরাগ্য বৃত্তির দ্বারা সিদ্ধিপ্রাপ্তি
আজ, বিশ্ব রচয়িতা তাঁর শ্রেষ্ঠ রচনা এবং রচনার পূর্বজ আত্মাদের লক্ষ্য করছেন l চতুর্দিকের পূর্বজ পূজ্য আত্মারা বাপদাদার সামনে l পূর্বজ আত্মাদের সহায়তায় বিশ্বের সকল আত্মাদের শক্তি আর শান্তি প্রাপ্ত হচ্ছে আর হতেও হবে l অনেক আত্মারা পূর্বজ পূজ্য আত্মাদের শান্তিদেব, শক্তিদেব হিসেবে আহ্বান ক'রে স্মরণ করছে l এইরকম সময়ে যারা শান্তিতরঙ্গ দাতার বাচ্চা হয়েছ, মাস্টার শান্তির সাগর, মাস্টার শান্তির সূর্যদেব হয়েছ, সেই তোমরা নিজেদের শান্তির কিরণ, শান্তিতরঙ্গ সকলকে দিচ্ছ ? এই বিশেষ সেবা করায় অভ্যস্ত হয়েছ ? নাকি অন্যসব বিভিন্নরকম সেবায় এত বিজি যে এই বিশেষ সেবার জন্য তোমাদের সময় নেই আর অভ্যাসেও ঘাটতি আছে l সময়ের উপযোগী সেবার প্রতিরূপ হয়ে উঠতে সমর্থ তোমরা ? যদি কেউ জলের জন্য পিপাসার্ত হয় আর তুমি উপাদেয় ভোজন দাও, তবে সে সন্তুষ্ট হবে কি? সেইরকম বর্তমান সময়ের শান্তি আর শক্তি আবশ্যক l তোমাদের মানসিক (মন্সা) শক্তি দ্বারা আত্মাদের মনের শান্তি অনুভব করাতে পার l বাণী দ্বারা তাদের কানে আওয়াজ পৌঁছে দিতে পার, কিন্তু বাণীর সাথে সাথে মানসিক শক্তি দ্বারা তোমরা তাদের মনে পৌঁছে যেতে পার l মুখের আওয়াজ শুধু কান আর মুখ পর্যন্তই থেকে যায় l বাণী দ্বারা সেবাতে শুধু বর্ণন শক্তি, কিন্তু মন দ্বারা সেবায় মনন শক্তি এবং মগ্ন (একাগ্র) স্বরূপ হওয়ার শক্তি উভয়ই প্রাপ্ত হয় l তারা হয়ে যায় শ্রোতা আর আর যারা কিছু হওয়ার, তারা হয়ে যায় l এই দুইয়ের মধ্যে প্রভেদ হয়ে যায় l সুতরাং সেবাতে সদা বচন আর মন্সা একসাথে হতে হবে l
বর্তমান সময়ে, বাবা ভারতবাসীর বিশেষ কি অবস্থা দেখছেন ? এখন তারা শ্মশান বৈরাগ্যের বৃত্তিতে ! যাদের এইরকম শ্মশান বৈরাগ্যের বৃত্তি, তাদের অনন্ত বৈরাগ্যের বৃত্তিতে অনুপ্রাণিত করার জন্য নিজেরা অনন্ত বৈরাগ্যের বৃত্তি ধারণ কর l নিজেকে চেক কর, কখনও স্বার্থসম্পন্ন ভাব আর কখনও বৈরাগ্য, উভয়ই সাথে সাথে চলে ? নাকি সদা অনন্তের বৈরাগী হয়েছ ? *অনন্তের বৈরাগী অর্থাৎ দেহরূপী ঘর থেকে ঘরছাড়া* l দেহও বাবার, তোমার নয় ! দেহভাব থেকে এতটাই ঊর্ধ্বে ! অনন্তের বৈরাগী কখনও সংস্কার, স্বভাব, সুযোগ সুবিধার উপকরণ (সাধন) কোনো কিছুর বশীভূত হবে না l সে স্বতন্ত্র মালিক হয়ে উপকরণ গুলিকে ব্যবহার করে সিদ্ধিস্বরূপ হয়ে যাবে l সাধনকেই বিধি বানাবে l সঠিক বিধি ব্যবহারে স্ব-উন্নতিতে সিদ্ধি প্রাপ্ত করবে l সেবাতে বৃদ্ধির সিদ্ধি প্রাপ্ত করবে l সে নামেমাত্র আধার নেবে, কিন্তু অধীন হবে না l আধারের অধীন হওয়া অর্থাৎ বশীভূত হওয়া l বশীভূত শব্দের অর্থই হলো, ভূতাবিষ্ট আত্মার পরবশ হওয়ার ও ভূত আত্মার দ্বারা বিচলিত হওয়ার অনুরূপ l এইরকমভাবে তোমরাও কোনও সুযোগ সুবিধার উপকরণ বা সংস্কার অথবা স্বভাব বা সম্পর্কের বশীভূত হয়ে যাও তখন ভূতগ্রস্ত আত্মার মতো অস্থির আর পরবশ হয়ে যাও l অনন্তের বৈরাগী সদা করানোর মালিকই (করাবনহার) সবকিছু তাকে দিয়ে করাচ্ছেন, এই নেশাতে আত্মহারা যোগীর (রমতা যোগী) থেকেও উপরে, উড্ডীয়মান যোগী হবে l যেমন জাগতিক বৈরাগী হঠযোগের বিধি দ্বারা ভূমি, অগ্নি এবং জল, সবকিছু থেকে উঁচু আসনধারী প্রতীয়মান হয় l তাদেরকে যোগের সিদ্ধিস্বরূপ মানা হয় l সেটা হলো হঠযোগের বিধি দ্বারা অল্পকালের সিদ্ধি l একইভাবে, যাদের অনন্তের বৈরাগ্যের বৃত্তি তারা এই বিধি দ্বারা দেহভাবের ক্ষেত্রভূমির উপরে থাকবে, মায়ার বিভিন্ন বিকার অগ্নির ঊর্ধ্বে এবং বিভিন্ন রকম সাধনের অসৎ সঙ্গের গড্ডলিকা প্রবাহে না চলে তারা নিজেদের সুরক্ষিত রাখবে এবং স্বতন্ত্র থাকবে l জলপ্রবাহ যেমন নিজের দিকে টেনে নিয়ে আপন গতিধারায় বয়ে নিয়ে চলে, সেইরকম কোনও রকম অল্পকালের প্রবাহ যেন নিজের দিকে তোমাকে আকৃষ্ট না করে l জলপ্রবাহের ঊর্ধ্বে থাকাকেই বলা হয় উড্ডীয়মান যোগী l এই সব সিদ্ধি অনন্তের উপরম (বৈরাগ্য) বিধি থেকে প্রাপ্ত হয় l
অনন্তের বৈরাগী অর্থাৎ প্রতিটা সঙ্কল্প, বোল এবং সেবাতে অনন্তের বৃত্তি, স্মৃতি, ভাবনা আর কামনা থাকা l প্রতিটা সঙ্কল্প সেবার প্রতি সমর্পিত হতে দাও l প্রতিটা বোলে নিঃস্বার্থ ভাবনা থাকতে দাও l তোমাদের প্রতিটা কর্মে এই ভাইব্রেশন সকলের অনুভব হতে দাও, করানোর মালিক তোমাকে দিয়ে করাচ্ছেন, একেই বলা হয়ে থাকে অসীম জগতের বৈরাগী l অনন্তের বৈরাগী অর্থাৎ স্বয়ং ভাবের সমাপ্তি l সবকিছুতে বাবা-ভাব হতে দাও l যেমন জপমালা বারংবার জপ কর, সেইরকম অভিন্ন স্মৃতিস্বরূপ হও l তোমাদের প্রতিটা সঙ্কল্পে, প্রতিটা শ্বাসে অসীম জগৎ আর বাবা যেন মিশে থাকে l সুতরাং সীমিত পরিধির তোমরা সব বৈরাগী, শ্মশান বৈরাগী আত্মাদের বর্তমান সময়ে শান্তি আর শক্তিদেব হয়ে অসীম জগতের বৈরাগী বানাও l
সুতরাং, বর্তমান সময়ে অনুসারে বাচ্চাদের রেজাল্ট কিরকম হয়েছে, সেই টি.ভি. বাপদাদা দেখেছেন আর বাচ্চারা ইন্দিরা গান্ধী সম্পর্কে জানতে টি. ভি. দেখেছে l সবই ঠিক আছে, তোমরা সেই সময়ের নলেজের জন্য বা সমাচার শোনার জন্য দেখেছ, 'কিন্তু কি হয়ে গেল' 'এখন কি হবে', এইরকম আবেগময় হয়ে দেখ না l নলেজফুল হয়ে প্রতিটা দৃশ্যকে কল্প পূর্বের স্মৃতিরূপে দেখ l সুতরাং, বাপদাদা বাচ্চাদের মধ্যে কি দেখেছিলেন ? অভিনয় মঞ্চে বাচ্চাদের দৃশ্যপটও চিত্তাকর্ষক ছিল l বাবা তিন রকম রেজাল্ট দেখেছেন l
১) অগ্রগামী হয়ে চলতে চলতে অমনোযোগের নিদ্রায় অবশ হওয়া আত্মারা l যখন হঠাৎ কোনো জোরে আওয়াজ হয় বা কেউ তাদের নাড়া দেয় তখন সুপ্ত অবস্থা থেকে জেগে ওঠে, কিন্তু তাৎক্ষণিক স্পর্শ - অনুভূতিতে তারা কিছু সময়ের জন্য জেগে উঠে বলে 'কি হলো' এবং ধীরে ধীরে আবার সেই অসতর্কতার নিদ্রায় নিদ্রিত ! 'এইরকম তো হয়ই', এইরকম ভাবনার চাদর জড়িয়ে শুয়ে পড়ে l 'এখন তো শুধু রিহার্সাল, ফাইনাল তো পরে হবে'- এই ভেবে মুখ পর্যন্ত চাদর মুড়ি দিয়ে দেয় l
২) যারা আলস্যের নিদ্রায় নিদ্রিত l এই সব কিছুই তো হওয়ার ছিল, হয়েছে ! পুরুষার্থ তো করছিই, ভবিষ্যতেও করব ! সঙ্গমযুগে তো পুরুষার্থ করতেই হবে l কিছুটা করেছি, আরও কিছুটা করে নেব l তারা জেগে উঠে অন্যদের দেখতে থাকে, যেমন চাদর থেকে মুখ বার করে কেউ কেউ দেখে নেয়, তখনও তার পাশে কে নিদ্রায় আছে ! যারা সুপরিচিত তারাও এমনই তীব্রগতিতে চলছে, যেমন আমরা চলছি l এইভাবে অন্যের দুর্বলতা দেখে ফলো ফাদারের পরিবর্তে সিস্টার্স এবং ব্রাদার্সকে ফলো করে, এমনকি তারা তাদেরও দুর্বলতা ফলো করে l যারা এইরকম সঙ্কল্প করে এবং আলস্য-নিদ্রায় নিদ্রিত, তারাও অবশ্যই জেগে ওঠে l তাদের উৎসাহ-উদ্দীপনার আধারে অনেকে আলস্য-নিদ্রা ত্যাগ করেছে, স্ব-উন্নতি এবং সেবার উন্নতিতে সামনে পদক্ষেপও করেছে l মানসিক চাঞ্চল্য তাদের চেতনাকে নাড়িয়ে দিয়েছে, আর তারা সামনে এগিয়েছে, কিন্তু তবুও আলস্যের সংস্কার মাঝেমধ্যে নিজের দিকে টানতে থাকে l তৎসত্ত্বেও, ভাবতরঙ্গ তাদের নাড়িয়ে দিয়েছে, অগ্রচালিত করেছে l
৩) অস্থির পরিস্থিতি দেখেও যারা অনড় থাকে l সেবার শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্পের সাথে, তারা সেবার বিভিন্ন প্ল্যানস বানায় এবং সেইসব পরিপূর্ণ করে l সমগ্র বিশ্বকে যারা শান্তি আর শক্তির সহায়তা দেয়, যারা নিজেরা সাহস বজায় রেখে অন্যদেরও সাহস জোগায়, এইরকম বাচ্চাদেরও বাবা দেখেছেন l যাই হোক, ক্ষণস্থায়ী উৎসাহ-উদ্দীপনার অথবা ক্ষণস্থায়ী তীব্র পুরুষার্থ বা দুর্বলতায় বৈরাগ্য বৃত্তির তরঙ্গে গমন ক'রনা l সদা পরিস্থিতিকে স্ব-স্থিতির শক্তি দ্বারা পরিবর্তন ক'রে বিশ্ব পরিবর্তকের স্মৃতি অক্ষুণ্ন রাখ l যখন বিপরীত পরিস্থিতি তোমাদের স্থিতিকে সম্মুখগতি করে বা বায়ুমন্ডল মাস্টার সর্বশক্তিমানকে চালনা করে, অথবা মানবাত্মার ক্ষণস্থায়ী শ্মশান বৈরাগ্য অল্পকালের জন্য অসীম জগতের বৈরাগী বানায়, সেগুলো পূর্বজ আত্মাদের কাজ নয় l যখন সময়, রচনা, মাস্টার রচয়িতাসকলকে অগ্রচালিত করে, তখন সেটা মাস্টার রচয়িতাগণের দুর্বলতা l তোমাদের শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প সময়কে পরিবর্তন করবে l সময় তোমরা সব বিশ্ব পরিবর্তক আত্মার সহযোগী l বুঝেছ ? সময়ের অপেক্ষায় থেকে, সময়ের ঝাঁকুনিতে যারা সম্মুখগতি হয়, তোমরা তো তারা নও, বরং তোমরা নিজেরা অগ্রচালিত হয়ে সময়কে কাছে নিয়ে আস l অনেকের কোশ্চেন উঠেছে, এখন কি হবে ? যাই হোক, এখন কোশ্চেনকে ফুলস্টপে পরিবর্তন কর অর্থাৎ নিজেকে সব সাবজেক্টে পরিপূর্ণ (ফুল) কর l এটাই ফুলস্টপ l এইরকম সময়ে কি হবে ? এই কোশ্চেন উঠতে দিও না, আমাকে কি করতে হবে- এই প্রশ্নের পরিবর্তে বরং এমন সময়ে আমার কি কর্তব্য হওয়া উচিৎ, সেই সেবায় নিজেকে নিয়োজিত কর l যেমন অগ্নি নিবারণকারী আগুন নেভানোর কাজে নিজেদের নিয়োজিত করে l তারা বলেনা, কি হয়েছে ! তারা তাদের সেবাতে নিযুক্ত হয়, তাই না ? একইভাবে আধ্যাত্মিক (রূহানী) সেবাধারীর কর্তব্য হলো নিজের রূহানী সেবায় নিয়োজিত হওয়া l দুনিয়ার লোকেও যেন স্বতন্ত্রভাব অনুভব করতে পারে l বুঝেছ তোমরা ! তবুও সময় অনুসারে তোমরা এখানে পৌছেই গেছ, তাই না ! পরিস্থিতি যেমনই হোক, ড্রামা অনুযায়ী মিলনমেলা উদযাপন হয়েই গেছে। তোমরা আরও লাকি হয়েছ যার জন্য এখানে পৌঁছে গেছ, তাই না ! তোমরা খুশি হয়েছ যে তোমাদের ভাগ্যে তোমরা এখানে পৌঁছে গেছ l সুস্বাগতম ! তোমরা সব বাচ্চা মধুবনের সৌন্দর্য l মধুবনের অলঙ্করণ মধুবনে পৌঁছেছে l মধুবনে শুধু বাবা নয়, বাচ্চারাও মধুবনে আছে l আচ্ছা -
চতুর্দিক থেকে যে বাচ্চারা তাদের সঙ্কল্প দ্বারা, স্নেহ দ্বারা, আকারী রূপে এখানে পৌঁছেছে, সেই সমস্ত বাচ্চাদের বাপদাদা সদা অচল ভব, সদা বেহদের বৈরাগী, সদা উড্ডীয়মান যোগী ভব'র উত্তরাধিকার এবং বরদান দেন l সদা অসীম জগতের স্মৃতিস্বরূপ, অসতর্কমূলক আলস্যের নিদ্রাজিৎ, সদা বেহদের স্মৃতিস্বরূপ এমন পূর্বজ এবং পূজ্য আত্মাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l
*দাদীজী এবং জগদীশ ভাই বাপদাদাকে তাঁদের বিদেশ যাত্রার সমাচার শুনিয়েছেন এবং স্মরণ আর ভালোবাসা দিয়েছেন*
তোমরা বার্তা দিয়ে সবাইকে অনুভব করিয়েছ l তাদের স্নেহ আর সম্বন্ধ বর্ধিত করেছ l এখন, তাদের অধিকার নেওয়ার জন্য তারা সামনে এগোবে l তোমাদের প্রতি পদে অনেক আত্মাদের কল্যাণের পার্ট স্থির হয়ে আছে l এই স্থিরীকৃত পার্ট দ্বারা তোমরা সকলের হৃদয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা জাগিয়েছ l খুব ভালো সেবা আর ভালোবাসার পার্ট প্লে করেছ l বাপদাদা করানোর মালিকও বটে আবার সাক্ষীদ্রষ্টা হয়েও লক্ষ্য করেন l তিনি তোমাদের দিয়ে এটা করিয়েছেন আবার তোমাদেরও লক্ষ্য করেছেন l বাচ্চাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা আর সাহসের জন্য বাপদাদা গৌরবান্বিত l ভবিষ্যতে আরও উচ্চরবে আওয়াজ হবে l সরবে এমন আওয়াজ হবে যে, সব কুম্ভকর্ণ চোখ খুলে দেখবে কি ঘটে গেছে ! অনেকের ভাগ্য পরিবর্তন হবে l তোমরা ভূমি প্রস্তুত করে, বীজ বপন করে ফিরে এসেছ l এখন শীঘ্রই ফলও ফলবে প্রত্যক্ষতার ফল অবশ্যই বেরোবে; সেই সময় সমাসন্ন l তোমরা সেখানে গিয়ে যে সেবা করেছিলে তার ফলস্বরূপ তারা নিজেরাই ছুটে এখানে আসবে l তাদের এমন অনুভব হবে যে দূর থেকে চুম্বক যেমন টানে সেভাবেই কেউ যেন তাদের টানছে l আদিতে যেমন অনেক আত্মাদের রূহানী টান ছিল, কেউ যেন তাদের টানছে, কোথায় যাবে ! সেইরকম এরাও টানে টানে চলে আসবে l তোমরা তো অনুভব করেছ রূহানী টান বাড়ছে, তাই নয় কি ? এই টানের বৃদ্ধি হতেই আত্মিক টানে তারা উড়ে এখানে চলে আসবে l সেই দৃশ্য এখন প্রতীয়মান হওয়ার মুখে l এখন এটা হওয়াই বাকি আছে l বার্তাবাহক বার্তা নিয়ে যায়, কিন্তু তারা নিজেরাই সত্য তীর্থে পৌঁছে যায়, এটাই লাস্ট সীন l এরজন্য ভূমি প্রস্তুত হয়ে গেছে, বীজও বপন করা হয়েছে, এখন তা' ফলশালী প্রায় l আচ্ছা - তোমরা উভয় দিকে গেছ l সকলের সাহস, পরমানন্দ, উৎসাহ-উদ্দীপনা বাপদাদার কাছে পৌঁছে যায় l সেবার জন্য মেজরিটির উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকার কারণে, তারা সহজেই মায়াজিৎ হওয়ার ক্ষেত্রেও সামনে এগিয়ে চলেছে l তোমাদের ফুরসৎ হলে মায়া আক্রমণও করে, কিন্তু তোমরা যখন মন থেকে বিজি থাক, ডিউটি হিসেবে নয়, তখন সেবায় অন্তর্মনে বিজি থাকার কারণে তোমরা সহজে মায়াজিৎ হয়ে যাও l সুতরাং, বাচ্চাদের উৎসাহ-উদ্যম দেখে বাপদাদা উৎফুল্ল হন l ওখানে সুযোগ সুবিধার উপকরণ সহজলভ্য, আর সেগুলো প্রাপ্তও হয়ে যায় l তাদের লক্ষ্য আছে, তারা পরিশ্রম করে এবং সাধনও সহজে প্রাপ্ত হয়, এই তিন বিষয়ের কারণে রেসে এগিয়ে তারা ভালো নম্বর নিচ্ছে l এটা ভালো l যাই হোক, এই দেশেও কেউ কম নয় l তোমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ উদ্যম-উৎসাহের আধারে এগিয়ে যাচ্ছ l এই দেশ থেকেই নাম ছড়িয়ে পড়তে হবে l বিদেশের সফলতাও এই দেশের ওপরে নির্ভর করে l এই ব্যাপারে তারা খুব সচেতন এবং তারা মনে করে যে নাম মহিমান্বিত করা তাদের ডিউটি l বিদেশের আওয়াজ দ্বারাই ভারতকে জাগরিত হতে হবে l তোমাদের লক্ষ্য স্থির, আর সেটা তোমরা পূরণও করছ l তোমরা তাদের তৈরি করছ, কিন্তু এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র বিদেশেই আওয়াজ পৌঁছেছে l বিদেশ থেকে আওয়াজ এই দেশে পৌঁছাবে, উড়ে উড়ে আসছে l এখন উড়ছে, আওয়াজ এখনও ভ্রাম্যমাণ! উড়তে উড়তে এখানে পৌছেই যাবে l এখন বিদেশে খুব ভালোভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, সেইসঙ্গে বিদেশ থেকে আওয়াজ দেশ পর্যন্ত পৌঁছান, এটাও হওয়ারই আছে l আচ্ছা- যে পার্ট তোমরা অভিনয় করেছ, সেটা ভাল করেছ l সদা সম্মুখগতি হওয়ার সহযোগ এবং বরদান আছে তোমাদের l প্রত্যেক আত্মার নিজস্ব পার্ট আছে l যতই তোমরা অনুভাবী হবে,ততই অনুভবের আধারে তোমরা অগ্রচালিত হবে l করানোর মালিক যা কিছুই যার মাধ্যমে করিয়েছেন, ড্রামা অনুসারে সবচেয়ে ভালো করিয়েছেন l নিমিত্ত ভাবের মাধ্যমে তিনি সেবা করিয়েই নেন l সুতরাং সেবা করতে তিনি তোমাদের অনুপ্রাণিত করেন এবং তোমরা নিমিত্ত হয়ে ওঠ, জমা হয় আর ভবিষ্যতেও জমা হতে থাকবে l আচ্ছা l
*পার্টির সাথে:-* তোমরা সদা মিলন মেলায় থাক, তাই না ! এই মিলনমেলা অবিনাশী মিলন মেলার অনুভব করায় l যেখানেই থাক না কেন তোমরা, মেলাতে থাক l মেলা থেকে কখনও দূরে থাক না l মেলা অর্থাৎ মিলন l সুতরাং সদা মিলনেরই মেলা l অতএব, এমন ভাগ্যবান কে হবে যে সদা মেলায় থাকবে ! সাধারণতঃ, মেলা বসে আর পরে মেলা ভাঙে, কিন্তু মেলাতে কেউ সবসময় থাকে না l তোমরা ভাগ্যবান আত্মারা সদা মেলায় থাক, সদা মিলনমেলা l মেলায় কি হয় ? মিলন আর দোলন l তোমরাও তো দোল খাও, তাই না ! সুতরাং তোমরা প্রাপ্তির দোলায় নিরন্তর দোল খাচ্ছ l একটা মাত্র দোলাই নয়, অনেক প্রাপ্তির অনেক দোলা l কখনো এক দোলায় দোলন, তো কখনো আরেক দোলায়, কিন্তু এই দোল খাওয়া মেলাতেই l এমন দোলা যে সবসময় তোমাকে সুখ আর সর্বপ্রাপ্তির অনুভব করায় l অনেক কোটির মধ্যে কতিপয় ভাগ্যবান আত্মা তোমরা ! আগে মহিমা শুনতে তোমরা অভ্যস্ত ছিল, এখন মহান হয়ে গেছ l আচ্ছা l
বরদান:-
শান্তির শক্তি দ্বারা অসম্ভবকে সম্ভব ক'রে সহজযোগী ভব
শান্তির শক্তি সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তি l শান্তির শক্তি থেকে অন্য সব শক্তির উদ্ভব হয়েছে l সায়েন্সের শক্তিও যে প্রভাব বিস্তার করে, সেই সায়েন্সও সাইলেন্সের শক্তি থেকে উদ্ভূত l সুতরাং, শান্তির শক্তি দ্বারা যেমন চাও করতে পার l অসম্ভবকেও সম্ভব করতে পার l দুনিয়ার লোকে যেটা অসম্ভব বলে, সেটাও তোমাদের জন্য সম্ভব এবং যেহেতু সম্ভব, তাই সহজও বটে ! শান্তির শক্তি ধারণ করে সহজযোগী হও l
স্লোগান:-
বাণী দ্বারা সকলকে সুখ আর শান্তি দিয়ে মহিমা যোগ্য হও।