11.12.2019
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
এই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ হলো পরিবর্তনের যুগ, তোমাদের এখন কনিষ্ঠ থেকে উত্তম পুরুষ
হতে হবে"
প্রশ্নঃ -
বাবার সাথে -
সাথে কোন্ বাচ্চাদের মহিমার গায়ন হয় ?
উত্তরঃ -
যারা টিচার হয়ে
অনেকের কল্যাণ করার নিমিত্ত হয়, বাবার সাথে সাথে তাদের মহিমাও করা হয় । করণ -
করাবনহার বাবা, বাচ্চাদের দিয়ে অনেকের কল্যাণ করান, তাই বাচ্চাদেরও মহিমা হয়ে যায়
। বলে থাকে --- বাবা, অমুকে আমার উপরে খুব দয়া করেছে, যাতে আমরা কি থেকে কি হয়ে
গেছি । টিচার হওয়া ছাড়া আশীর্বাদ পাওয়া যায় না ।
ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের পিতা
তাঁর আত্মিক সন্তানদের জিজ্ঞাসা করেন । তিনি বোঝানও আবার জিজ্ঞাসাও করেন । বাবাকে
এখন বাচ্চারা জানতে পেরেছে । যদিও কেউ সর্বব্যাপীও বলে কিন্তু তার পূর্বে তো বাবাকে
জানতে হবে, তাই না -- বাবা কে ? বাবাকে চিনে তারপর বলতে হবে যে, বাবার নিবাস স্থান
কোথায় ? বাবাকে জানেই না তো তাঁর নিবাস স্থান কিভাবে জানবে ? বলে দেয়, তিনি তো নাম
- রূপে পৃথক অর্থাৎ কোনো তিনি নেইই । তাহলে যে নেই, তাঁর থাকার জায়গা সম্বন্ধে
কিভাবে চিন্তা করা যেতে পারে ? বাচ্চারা, একথা তোমরা এখনই জানো । বাবা তো প্রথমে
নিজের পরিচয় দিয়েছেন, তারপর তাঁর থাকার স্থান সম্বন্ধে বুঝিয়েছেন । বাবা বলেন, আমি
তোমাদের এই রথের সাহায্যে পরিচয় দিতে এসেছি । আমি তোমাদের সকলেরই পিতা, যাঁকে
পরমপিতা বলা হয় । আত্মাকে কেউই জানে না । বাবার নাম - রূপ - দেশ - কাল যদি না থাকে
তাহলে বাচ্চারা কোথা থেকে আসবে ? বাবাই যদি নাম - রূপের থেকে পৃথক থাকেন, তাহলে
বাচ্চারা কোথা থেকে আসবে ? বাচ্চারা যখন আছে, তখন অবশ্যই বাবাও আছেন । তাই একথা
সিদ্ধ (প্রমাণিত) হয় যে, তিনি নাম - রূপ থেকে পৃথক নন । বাচ্চাদেরও নাম - রূপ আছে
। সে যতই সূক্ষ্ম হোক না কেন । আকাশ সূক্ষ্ম হলেও তার নাম তো আকাশ, তাই না । যেমন
এই মহাশূন্য সূক্ষ্ম, তেমনই বাবাও খুবই সূক্ষ্ম । বাচ্চারা বর্ণনা করে, এ এক
আশ্চর্য তারা, যিনি এনার মধ্যেও প্রবেশ করেন, যাঁকে আত্মা বলা হয় । বাবা তো থাকেন
পরমধামে, সে হলো তাঁর থাকার স্থান । উপরে তো দৃষ্টি যায়, তাই না । আঙ্গুল দিয়ে
উপরে ইশারা করে মানুষ স্মরণ করে । তাহলে যাঁকে স্মরণ করে, সে নিশ্চই কোনো বস্তু নয়
। পরমপিতা, পরমাত্মা তো বলা হয়, তাই না । তাও নাম - রূপ থেকে পৃথক বলা - একে
অজ্ঞান বলা হয় । বাবাকে জানা, একে জ্ঞান বলা হয় । তোমরা এও বুঝতে পারো, যে আমরা
পূর্বে অজ্ঞানী ছিলাম । বাবাকেও জানতাম না আর নিজেদেরও জানতাম না । এখন তোমরা বুঝতে
পারো, আমরা আত্মা, শরীর নই । আত্মাকে অবিনাশী বলা হয়, তাহলে অবশ্যই কোনো জিনিস,
তাই না । অবিনাশী কোনো নাম নয় । অবিনাশী অর্থাৎ যাঁর বিনাশ হয় না । তাহলে অবশ্যই
কোনো বস্তু । বাচ্চাদের খুব ভালোভাবে বোঝানো হয়েছে, মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চারা,
যাদের বাচ্চা - বাচ্চা বলা হয়, সেই আত্মারা হলো অবিনাশী । একথা আত্মাদের বাবা
পরমপিতা, পরমাত্মা বসে বোঝান । এই খেলা একইবার হয়, যখন বাবা এসে বাচ্চাদের নিজের
পরিচয় দেন । তিনি বলেন, আমিও অভিনেতা । আমি কিভাবে অভিনয় করি, একথাও তোমাদের
বুদ্ধিতে আছে । তিনি পতিত আত্মাদের নতুন পবিত্র বানান, তাই তোমরা ওখানে শরীরও ফুলের
মতো পাও । একথা তো বুদ্ধিতে আছে, তাই না ।
তোমরা এখন বাবা - বাবা বলছো, এই অভিনয় তো এখন চলছে, তাই না । আত্মা বলে বাবা এসেছে
- আমাদের মতো বাচ্চাদের শান্তিধামে নিজের ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ।
শান্তিধামের পরে হলো সুখধাম । শান্তিধামের পর দুঃখধাম হতে পারে না । নতুন দুনিয়াতে
সুখই সুখ বলা হয় । এই দেবী - দেবতারা যদি চৈতন্য হয়, আর এদের যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে,
তোমরা কোথায় থাকতে, তাহলে বলবে , আমরা স্বর্গের অধিবাসী । এখন এই জড় মূর্তিরা তো তা
বলতে পারবে না । তোমরা তো বলতে পারো, আমরা তো প্রকৃতপক্ষে স্বর্গে থাকা দেবী - দেবতা
ছিলাম, তারপর ৮৪ জন্মের চক্র অতিক্রম করে এখন সঙ্গম যুগে এসেছি । এ হলো পরিবর্তন
হওয়ার পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ । বাচ্চারা জানে যে, আমরা অনেক উত্তম পুরুষ হই । আমরা
প্রতি পাঁচ হাজার বছর অন্তর সতোপ্রধান তৈরী হই । সতোপ্রধানও নম্বর অনুসারেই বলা হবে
। তাই এই সম্পূর্ণ পার্ট আত্মাই পেয়েছে । অহম আত্মা অর্থাৎ আমি আত্মা - এই পার্ট
পেয়েছি । আমি আত্মাই ৮৪ জন্মগ্রহণ করি । আমি আত্মা উত্তরাধিকারী, উত্তরাধিকারী
সর্বদা পুত্রই হয়, কন্যা নয় । তাই এখন বাচ্চারা, একথা তোমাদের পাক্কা বুঝতে হবে
যে, আমরা সকল আত্মাই হলাম পুরুষ । সকলেই অসীম জগতের পিতার কাছে অবিনাশী উত্তরাধিকার
পায় । লৌকিক জগতের বাবার কাছে কেবল পুত্ররাই উত্তরাধিকার পায়, পুত্রীরা নয় ।
এমনও নয় যে আত্মা সর্বদা নারীই হয় । বাবা বোঝান যে, তোমরা আত্মারা কখনো পুরুষ কখনো
মহিলা শরীর ধারণ করো । এখন তোমরা সকলেই আত্মা পুরুষ । সব আত্মারাই এক বাবার থেকে
অবিনাশী উত্তরাধিকার পায় । সব বাচ্চারাই এখন বাচ্চা । সকলের বাবা হলেন এক । বাবাও
বলেন - হে বাচ্চারা, তোমরা সকলেই পুরুষ । আমার আত্মিক সন্তান তোমরা । তবুও এই অভিনয়
করার জন্য পুরুষ - মহিলা দুইই চাই । তখনই মনুষ্য সৃষ্টির বৃদ্ধি সম্ভব । এই কথা
তোমরা ছাড়া আর কেউই জানে না । যদিও বলে থাকে - আমরা সবাই ভাই - ভাই, তবুও বুঝতে পারে
না ।
তোমরা এখন বলো, বাবা আমরা অনেকবার তোমার থেকে এই অবিনাশী উত্তরাধিকার নিয়েছি । একথা
আত্মার দৃঢ় হয়ে যায় । আত্মা অবশ্যই তার বাবাকে স্মরণ করে - ও বাবা, দয়া করো । বাবা
এখন তুমি এসো, আমরা সকলেই তোমার সন্তান হবো । দেহ সহিত দেহের সব সম্বন্ধ ত্যাগ করে
আমরা আত্মারা তোমাকেই স্মরণ করবো । বাবা বুঝিয়েছেন যে, নিজেকে আত্মা মনে করে, আমি
তোমাদের বাবা, তোমরা আমাকে স্মরণ করো । বাবার থেকে আমরা কিভাবে অবিনাশী উত্তরাধিকার
পাই, আর প্রতি পাঁচ হাজার বছর অন্তর আমরা কিভাবে দেবতায় পরিণত হই, এও তো জানা চাই,
তাই না । স্বর্গের উত্তরাধিকার কার থেকে পাওয়া যায়, এ তোমরা এখনই বুঝতে পারো । বাবা
তো স্বর্গবাসী নন, তিনি বাচ্চাদেরই স্বর্গবাসী করেন । তিনি নিজেই নরকে আসেন, তোমরাও
বাবাকে এই নরকেই ডাকো, যখন তোমরা তমঃপ্রধান হও । এ তো তমঃপ্রধান দুনিয়া, তাই না ।
পাঁচ হাজার বছর পূর্বে যখন এনার রাজ্য ছিলো, তখন এই দুনিয়া সতোপ্রধান ছিলো । এই কথা,
এই ঈশ্বরীয় পড়া, এখনই তোমরা জানতে পারো । এ হলো মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার পড়া । এ কথা
বলা হয় যে, মানুষ থেকে দেবতা হতে সময় লাগে না -- বাচ্চা হলে আর উত্তরাধিকারী হয়ে
গেলে, বাবা বলেন, তোমরা সমস্ত আত্মারা আমার সন্তান । তোমাদের আমি অবিনাশী
উত্তরাধিকার প্রদান করি । তোমরা হলে ভাই - ভাই, তোমাদের থাকার জায়গা মূলবতন বা
নির্বাণধাম, যাকে নিরাকারী দুনিয়াও বলা হয় । সমস্ত আত্মারাই সেখানে থাকে । এই
সূর্য - চন্দ্রের থেকেও ওপারে তোমাদের সুইট সাইলেন্স ঘর আছে, কিন্তু ওখানে তো তোমরা
একেবারেই থেকে যাবে না । ওখানে থেকে গিয়ে কি করবে ? সে তো জড় অবস্থা হয়ে যাবে ।
আত্মা যখন অভিনয় করে, তখনই চৈতন্য বলা হয় । আত্মা চৈতন্য কিন্তু অভিনয় না করলে তো
জড় হয়ে গেলো, তাই না । তোমরা যদি এখানে দাঁড়িয়ে পড়ো, হাত - পা না চালাও তাহলে জড়
হয়ে গেলে, তাই না । ওখানে তো শান্তি স্বাভাবিক থাকে, আত্মারা যেমন জড় অবস্থায় থাকে
। কিছুই অভিনয় করে না ওখানে । শোভা তো এই অভিনয়েরই, তাই না । শান্তিধামে কি শোভা
থাকবে ? আত্মা সুখ - দুঃখের বাসনার ঊর্ধ্বে থাকে । ওখানে কোনো অভিনয়ই করে না তো
ওখানে থেকে কি লাভ ? প্রথম - প্রথম সুখের অভিনয় করতে হবে । প্রত্যেকেই প্রথম থেকে
চরিত্র পেয়ে গেছে । কেউ বলে, আমার তো মোক্ষ চাই । জলের বুদবুদে মিশে গেলাম, যেন
আত্মা নেই । কোনো পার্ট না করলে তো জড় বলা হবে । চৈতন্য হওয়া সত্বেও যদি জড় হয়ে পড়ে
থাকে তাহলে কি লাভ ? সবাইকেই তো অভিনয় করতে হবে । হিরো - হিরোইনের অভিনয়কেই মূখ্য
বলা হয় । বাচ্চারা, তোমরা হিরো - হিরোইনের পদবী পাও । আত্মা এখানে অভিনয় করে ।
প্রথমে সুখের রাজ্যে অভিনয় করে পরে রাবণের দুঃখের রাজ্যে যায় । বাবা এখন বলেন,
বাচ্চারা, তোমরা সবাইকে এই খবর দাও । টিচার হয়ে অন্যদেরও বোঝাও । যারা টিচার হয়
না, তাদের পদ কম হবে । টিচার হওয়া ছাড়া কার আশীর্বাদ কিভাবে পাবে ? কাউকে অর্থ দিলে,
খুশী তো হয়, তাই না । মনে মনে ভাবে বি.কে আমাদের কতো দয়া করছে, যে আমাদের কি থেকে
কি তৈরী করছে । এমনিতে তো এক বাবারই মহিমা করে -- বাঃ বাবা, তুমি এই বাচ্চাদের
দ্বারা আমাদের কতো কল্যাণ করো । কারোর দ্বারা তো হয়, তাই না । বাবা হলেন
করণকরালনহার, তিনি তোমাদের দ্বারা করান । তোমাদেরও কল্যাণ হয় । তোমরা আবার অন্যদের
কলম লাগাও । যে যতটা সেবা করে, সে তত উঁচু পদ পায় । রাজা হতে গেলে প্রজাও তো তৈরী
করতে হবে । এরপর যে ভালো নম্বরে আসে, সেও রাজা হয় । মালা তো তৈরী হয়, তাই না ।
নিজেকে প্রশ্ন করা উচিত, আমরা মালায় কতো নম্বরে আসবো ? নয় রত্ন তো মূখ্য, তাই না ।
মাঝে যিনি হীরে তৈরী করেন । হীরেকে মাঝে রাখেন । মালার উপরে তো ফুলও আছে তাই না ।
অন্তিম সময়ে তোমরা জানতে পারবে, কে মূখ্য দানা হবে, যে এই সাম্রাজ্যে আসবে । পরের
দিকে তোমাদের অবশ্যই সব সাক্ষাৎকার হবে । তোমরা দেখাবে, কিভাবে এরা সব সাজা ভোগ করে
। শুরুতে দিব্য দৃষ্টিতে তোমরা সূক্ষ্মবতনে দেখতে । এও গুপ্ত । আত্মা কোথায় সাজা
ভোগ করে -- এই পার্টও এই নাটকেই আছে । গর্ভ জেলে আত্মা সাজা ভোগ করে । জেলে
ধর্মরাজকে দেখে, তখন বলে বাইরে বের করো । রোগ ইত্যাদি হয়, সেও কর্মের হিসাব, তাই
না । এ সবই বোঝার মতো কথা । বাবা তো সঠিক কথাই শোনাবেন, তাই না । এখন তোমরা সেই
সঠিক তৈরী হও । সঠিক তাদেরই বলা হয় যারা বাবার থেকে অনেক শক্তি সঞ্চয় করে । তোমরা
তো বিশ্বের মালিক হও, তাই না । তোমাদের কতো শক্তি থাকে । হাঙ্গামা ইত্যাদি কোনো
কথাই নেই । শক্তি কম হলে কতো হাঙ্গামা হয়ে যায় । বাচ্চারা, তোমরা অর্ধেক কল্পের
জন্য শক্তি পাও । তাও পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে । তোমরা একরকম শক্তি পেতে পারো না
আর একরকম পদও পেতে পারো না । এও প্রথম থেকেই নাটকে নিহিত আছে । এই অনাদি ড্রামায়
নিহিত আছে । কেউ কেউ পরের দিকে আসে, এক বা দুই জন্ম নেয় তারপর শরীর ত্যাগ করে ।
দীপাবলীতে যেমন মশা রাতে জন্ম নেয় আবার সকালে মরে যায় । এ তো অগুণতি হয় । মানুষের
তো তবুও গণনা হয় । প্রথমদিকে যে আত্মারা আসে, তাদের আয়ু কতো বেশী থাকে । বাচ্চারা,
তোমাদের খুশী হওয়া উচিত যে, আমরা কতো বেশী আয়ু পাবো । তোমরা এই সৃষ্টিচক্রে
সম্পূর্ণ অভিনয় করো । বাবা তোমাদেরই বোঝান যে, তোমরা কিভাবে সম্পূর্ণ সৃষ্টিচক্রে
অভিনয় করো । এই ঈশ্বরীয় পাঠ অনুসারে উপর থেকে তোমরা আসো অভিনয় করতে । তোমাদের এই
পাঠ হলো নতুন দুনিয়ার জন্য । বাবা বলেন, আমি তোমাদের অনেকবার পড়াই । এই পাঠ অবিনাশী
হয়ে যায় । অর্ধেক কল্প তোমরা প্রালব্ধ ভোগ করো । ওই বিনাশী পাঠে অল্পকালের জন্য
সুখ ভোগ করা যায় । এখন কেউ যদি ব্যরিস্টার হয় তাহলে আবার পরের কল্পে ব্যরিস্টার
হবে । এও তোমরা জানো যে - সকলের যেমন পার্ট, তাই কল্প - কল্প হতে থাকবে । দেবতা হোক
বা শূদ্র, প্রত্যেকের অভিনয় তেমনই হয় যা কল্প - কল্প হতে থাকে । এতে কোনো তফাৎ হতে
পারে না । প্রত্যেকেই নিজের অভিনয় করতে থাকে । এ সম্পূর্ণ এক বানানো খেলা । মানুষ
জিজ্ঞেস করে পুরুষার্থ বড় নাকি প্রালব্ধ ? এখন পুরুষার্থ ছাড়া তো প্রালব্ধ লাভ
সম্ভব নয় । নাটকের নিয়ম অনুসারে পুরুষার্থের দ্বারাই প্রালব্ধ লাভ করা যায় । তাই
সম্পূর্ণ দায়িত্ব এই নাটকের উপরই এসে যায় । কেউ পুরুষার্থ করে, কেউ আবার করে না ।
যদিও এখানে আসে, তবুও পুরুষার্থ না করলে প্রালব্ধ লাভ সম্ভব নয় । সম্পূর্ণ দুনিয়াতে
যে নিয়মই চলে, সবই এই নাটকে বানানো আছে । আত্মার মধ্যে আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত প্রথম
থেকেই এই অভিনয় লিপিবদ্ধ আছে । তোমাদের আত্মার মধ্যে যেমন ৮৪ জন্মের পার্ট আছে,
যেমন কখনো হীরে তুল্য হয়, কখনো আবার কড়ি তুল্য । এই সব কথা তোমরা এখনই জানতে পারো
। স্কুলে যদি কেউ ফেল করে তখন তাকে বুদ্ধিহীন বলা হবে । ধারণা না হলে একে নানা
ধরণের ঝাড় বা বৃক্ষ অথবা নানা ধরণের চরিত্র বলা হয় । এই নানা ধরণের ঝাড়ের জ্ঞান
বাবাই বোঝান । তিনি কল্পবৃক্ষের উপরও বোঝান । বটবৃক্ষকে এর উদাহরণ হিসাবে বোঝানো
হয়েছে । এর শাখাপ্রশাখার অনেক বিস্তার হয় ।
বাচ্চারা বুঝতে পারে, আমাদের আত্মা হলো অবিনাশী, এই শরীর তো বিনাশ হয়ে যাবে ।
আত্মাই ধারণা অর্জন করে, আত্মাই ৮৪ জন্মগ্রহণ করে, এই শরীর তো পরিবর্তন হয় । আত্মা
একই থাকে, আত্মাই ভিন্ন - ভিন্ন শরীর ধারণ করে অভিনয় করে । এ তো নতুন কথা, তাই না ।
বাচ্চারা, তোমরা এখন এই জ্ঞান পেয়েছো । পূর্ব কল্পেও এইভাবেই বুঝতে পেরেছিলে । বাবা
এই ভারতেই আসেন ।
তোমরা সবাইকে খবর দিতে থাকো, এমন কেউই থাকবে না যে এই খবর পাবেনা । খবর পাওয়া
সকলেরই অধিকার । তারপর বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকারও নেবে । তারা কিছু তো শুনবেই,
কারণ তারাও যে বাবার সন্তান । বাবা বোঝান যে - আমি তোমাদের অর্থাৎ আত্মাদের পিতা ।
আমার কাছ থেকে তোমরা এই রচনার আদি মধ্য এবং অন্তকে জেনে এই পদ পাও, বাকি সবাই
মুক্তিতে চলে যায় । বাবা তো সকলেরই সদগতি করান । মানুষ গান করে -- আহা বাবা, তোমার
লীলা - কি লীলা ? কেমন লীলা? এ হলো পুরানো দুনিয়া পরিবর্তনের লীলা । এ কথা তো জানা
উচিত, তাই না । মানুষই তো জানবে, তাই না । বাচ্চারা, বাবা এসেই তোমাদের সব কথা
বুঝিয়ে বলেন । বাবা হলেন পূর্ণ জ্ঞানী । তোমাদেরও তিনি পূর্ণ জ্ঞানী তৈরি করেন ।
নম্বর অনুসারেই তোমরা এমন তৈরি হও । যারা স্কলারশিপ নেবে তাদের পূর্ণ জ্ঞানী বলা হবে
। আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি, হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপ-দাদার স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর ভালোবাসা এবং সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে
জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) সদা
এই স্মৃতিতে থাকতে হবে যে, আমরা আত্মারা হলাম পুরুষ, আমাদের বাবার থেকে সম্পূর্ণ
অবিনাশী উত্তরাধিকার নিতে হবে । মানুষ থেকে দেবতা হবার পাঠ পড়তে হবে এবং পড়াতে হবে
।
২ ) সম্পূর্ণ দুনিয়ায় যা অভিনয় চলছে, তা সবই বানানো নাটক, এতে পুরুষার্থ আর
প্রালব্ধ দুইই লিপিবদ্ধ আছে । পুরুষার্থ ছাড়া প্রালব্ধ লাভ সম্ভব নয়, এই কথা খুব
ভালোভাবে বুঝতে হবে ।
বরদান:-
পবিত্রতার গুহ্যতাকে জেনে জ্ঞান - সুখ - শান্তি সম্পন্ন হওয়া মহান আত্মা ভব
পবিত্রতার শক্তির
গুরুত্বকে বুঝে এখন থেকেই পবিত্র অর্থাৎ পূজ্য দেবাত্মা হও । এমন নয় যে অন্তিম সময়ে
হয়ে যাবে । এ হলো দীর্ঘদিনের জমা হওয়া শক্তি যা অন্তিম সময়ে কাজে আসবে । পবিত্র
হওয়া কোনো সাধারণ কথা নয় । ব্রহ্মচারী থাকে, পবিত্র হয়ে গেছে, কিন্তু পবিত্রতা হলো
জননী, সঙ্কল্পই হোক, বৃত্তি, বায়ুমণ্ডল বা বাণীই হোক, সম্পর্কে সুখ - শান্তির জননী
হওয়া -- একেই বলা হয় মহান আত্মা ।
স্লোগান:-
উচ্চ স্থিতিতে স্থিত হয়ে সর্ব আত্মাদের দয়ার দৃষ্টি দান করো, ভাইব্রেশন ছড়িয়ে দাও
।