20.12.2019
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
বাবা এসেছেন তোমাদের সর্ব খাজানায় ভরপুর (মালামাল) করতে, তোমরা শুধু ঈশ্বরীয়
মতানুযায়ী চলো, ভালো ভাবে পুরুষার্থ করে অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করো, মায়ার
কাছে হেরে যেও না"
প্রশ্নঃ -
ঈশ্বরীয় মত,
দৈবী মত ও মনুষ্য মত এই তিনটির মধ্যে মুখ্য প্রভেদ কি ?
উত্তরঃ -
1. ঈশ্বরীয়
মতানুযায়ী তোমরা বাচ্চারা নিজের ঘরে অর্থাৎ পরমধাম ফিরে যাও তারপরে নতুন দুনিয়ায়
উঁচু পদের অধিকারী হও।
2. দৈবী মতানুযায়ী তোমরা সদা সুখী থাকো। কারণ সেই মতও এই সময় বাবার কাছেই প্রাপ্ত
হয়। কিন্তু তবুও নীচে নেমে আসো।
3. মনুষ্য মত দুঃখী করে।
4. ঈশ্বরীয় মতানুযায়ী চলার জন্য সর্বপ্রথম যিনি পড়ান সেই পিতার উপরে দৃঢ় নিশ্চয় থাকা
উচিত ।
ওম্ শান্তি ।
বাবা তো অর্থ
বুঝিয়েছেন, আমি আত্মা হলাম শান্ত স্বরূপ। যখন ওম্ শান্তি বলা হয় তো আত্মার নিজের
ঘরের কথা স্মরণে আসে। আমি আত্মা শান্ত স্বরূপ। তারপরে যখন কর্মেন্দ্রিয় প্রাপ্ত হয়,
তখন টকি অর্থাৎ কথা বলায় সক্ষমতা আসে। কর্মেন্দ্রিয় প্রথমে ছোট তারপরে বড় হয়। এবারে
পরমপিতা পরমাত্মা তো হলেন নিরাকার। তাঁরও রথের অর্থাৎ দেহের প্রয়োজন টকি-তে আসার
জন্য। যেমন তোমরা আত্মারা হলে পরমধামের বাসিন্দা, এখানে এসে টকি হয়েছ। বাবাও বলেন,
আমি তোমাদের নলেজ প্রদান করার জন্য টকি হয়েছি। বাবা নিজের এবং রচনার আদি, মধ্য,
অন্তের পরিচয় দেন। এ হল আধ্যাত্মিক পড়াশোনা (রূহানী পড়াশোনা), ওসব হল দৈহিক জগতের
পড়াশোনা। তারা নিজেদের শরীর ভাবে। এমন কেউ বলবে না যে, আমরা আত্মা, এই কান দিয়ে শুনি।
এখন বাচ্চারা, তোমরা বুঝেছ, বাবা হলেন পতিত-পাবন, তিনিই এসে বোঝান - আমি কিভাবে আসি।
তোমাদের মতন আমি গর্ভে আসি না। *আমি এনার (ব্রহ্মার) মধ্যে প্রবেশ করি। তারপরে কোনো
প্রশ্নই ওঠে না। ব্রহ্মার দেহটি হল শিববাবার রথ। ব্রহ্মাকে মাতাও বলা হয়। সবচেয়ে
বিশাল নদী হল ব্রহ্ম পুত্র। অর্থাৎ এ হল সেই বিশাল নদী। জলের কথা নয়। এই হল মহানদী
অর্থাৎ সবচেয়ে বড় জ্ঞান নদী*। অতএব বাবা আত্মাদের বোঝাচ্ছেন, আমি তোমাদের পিতা।
যেমন তোমরা কথা বলো, আমিও কথা বলি। আমার পার্ট তো সবচেয়ে শেষে থাকে। তোমরা যখন
একেবারে পতিত হয়ে যাও, তখন তোমাদের পবিত্র করতে আসতে হয়। এই লক্ষ্মী-নারায়ণকে এমন
কে তৈরি করেন ? ঈশ্বর ব্যতীত অন্য কেউ তো হতে পারে না। অসীমের বাবা-ই স্বর্গের
মালিক বানান, তাইনা। বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর। তিনিই বলেন, আমি এই মনুষ্য সৃষ্টির
চৈতন্য বীজ। আমি আদি, মধ্য, অন্তকে জানি। আমি সত্য, আমি চৈতন্য বীজ রূপ, এই
সৃষ্টিরূপী বৃক্ষের নলেজ আমার মধ্যে আছে। একেই সৃষ্টি চক্র বা ড্রামা বলা হয়। এই
চক্র ঘুরতেই থাকে। জাগতিক দুনিয়ার ড্রামা দুই ঘন্টা চলে। এই ড্রামার রীল ৫ হাজার
বছরের। যে সময় পার হতে থাকে, ৫ হাজার বছর থেকে কম হতে থাকে। তোমরা জানো প্রথমে আমরা
দেবী-দেবতা ছিলাম তারপরে ধীরে-ধীরে আমরা ক্ষত্রিয় কুলে (ত্রেতায়) আসি। এই সম্পূর্ণ
রহস্য বুদ্ধিতে আছে, তাইনা। অতএব এই কথা স্মরণ করা উচিত। আমরা শুরু শুরুতে পার্ট
প্লে করতে আসি তখন আমরা দেবী-দেবতা ছিলাম। ১২৫০ বছর রাজত্ব করি। সময় তো পার হতে থাকে,
তাইনা। লক্ষ বছরের কথা নয়। লক্ষ বছরের কথা তো কেউ চিন্তা করতেও পারে না।
তোমরা বাচ্চারা বুঝেছ, আমরা এইরূপ দেবী-দেবতা ছিলাম তারপরে পার্ট প্লে করতে, বছরের
পর বছর পার করতে করতে এখন কতগুলি বছর পার করেছি। ধীরে ধীরে সুখ কম হতে থাকে। প্রতিটি
জিনিস সতোপ্রধান, সতো, রজো, তমো হয়। অবশ্যই পুরানো হয়। এ হল অসীমের কথা। এইসব কথা
ভালো ভাবে বুদ্ধিতে ধারণ করে তারপরে অন্যদের বোঝাতে হবে। সবাই তো একরকম নয়। নিশ্চয়ই
বিভিন্ন ভাবে বোঝাতে হবে। চক্র বোঝানো খুব সহজ। ড্রামা ও বৃক্ষের চিত্র হল মুখ্য।
নাম হল কল্প বৃক্ষ, তাইনা। কল্পের আয়ু কত বছরের, এই কথা কেউ জানে না। মনুষ্য মত
অনেক। কেউ কিছু বলবে, অন্য কেউ অন্য কিছু বলবে। এখন তোমরা অনেক মনুষ্য মতামত বুঝেছ
এখন এক ঈশ্বরীয় মতামতও বুঝতে পারছ। কত তফাৎ। ঈশ্বরীয় মতানুসারে তোমাদের আবার নতুন
দুনিয়ায় যেতে হবে অন্য কারো মতের দ্বারা। দৈবী মত বা মনুষ্য মত দ্বারা ফিরে যাওয়া
সম্ভব নয়। দৈব মতের আধারে তোমরা নীচে নেমে আসো, কারণ গুণ বা কলা কম হয়ে যায়। অসুরী
মত দ্বারাও নীচে নামো। কিন্তু দৈবী মতে সুখ, অসুরী মতে দুঃখ আছে। দৈবী মত এসময়
বাবার দ্বারা প্রদান করা হয় তাই তোমরা সুখী থাকো। অসীমের পিতা কত দূর থেকে আসেন।
মনুষ্য ধন উপার্জনের জন্য বাইরে যায়। যখন অনেক ধন একত্রিত হয় তখন ফিরে আসে। বাবাও
বলেন বাচ্চারা, আমি তোমাদের জন্য বিশাল খাজানা নিয়ে আসি। কারণ জানি তোমাদেরকে অনেক
কিছু দিয়েছিলাম। সেসব তোমরা হারিয়েছ। আমি তোমাদের সঙ্গেই কথা বলি, যারা
প্র্যাক্টিক্যালী হারিয়েছে। ৫ হাজার বছরের কথা তোমাদের মনে আছে, তাইনা। তোমরা বলো -
হ্যাঁ বাবা, ৫ হাজার বছর পূর্বে আপনার সঙ্গে দেখা হয়েছিল, আপনি উত্তরাধিকার
দিয়েছিলেন। এখন তোমাদের মনে পড়েছে যথাযথভাবে অসীমের পিতার কাছে অসীমের উত্তরাধিকার
প্রাপ্ত হয়েছিল। বাবা, আপনার কাছে নতুন দুনিয়ার রাজত্বের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত
হয়েছিল। আচ্ছা, আবার পুরুষার্থ করো। এমন বলবে না বাবা মায়ার ভূতেরা আমাদের হারিয়ে
দিয়েছে। দেহ-অভিমানের পরেই তোমরা মায়ার কাছে হেরে যাও। লোভ কর, ঘুষ নাও। কোনও রকম
অসমর্থতা থাকলে অন্য কথা। বাবা জানেন লোভ ব্যতীত পেট পূজা হবে না, অসুবিধা নেই। যতই
খাও, কিন্তু কোথাও জড়িত হয়ে মরবে না, নাহলে তোমাদেরই দুঃখ হবে। টাকা পেলে খুশী হবে,
কোথাও পুলিশ ধরে নিলে জেলে যেতে হবে। এমন কাজ কোরো না, তার দায় দায়িত্ব আমার নয়।
পাপ করলে জেলে যেতে হয়। সেখানে তো জেল ইত্যাদি হয় না। অতএব ড্রামার প্ল্যান অনুযায়ী
কল্প পূর্বে তোমরা যে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত কর, ২১ জন্ম সেইসব আবার নেবে। পুরো
রাজধানী তৈরি হয়। গরিব প্রজা, ধনী প্রজা। কিন্তু সেখানে দুঃখ নেই। বাবা এই বিষয়ে
গ্যারান্টি দেন। সবাই একরকম তো হতে পারেনা। সূর্য বংশী- চন্দ্র বংশী রাজত্বে সবাই
চাই তাইনা। বাচ্চারা জানে বাবা কীভাবে আমাদের বিশ্বের বাদশাহী দেন। তারপরে আমরা নীচে
নেমে আসি। স্মরণে এসেছে তাইনা। স্কুলের পড়াশোনা স্মরণে তো থাকে তাই না। এখানেও বাবা
স্মরণ করান। এই আধ্যাত্মিক পড়াশোনা দুনিয়ায় অন্য কেউ পড়াতে পারে না। গীতায়ও লেখা আছে
মন্মনাভব। যাকে মহামন্ত্র বশীকরণ মন্ত্র বলা হয় অর্থাৎ মায়ার উপরে জয় লাভ করার
মন্ত্র। মায়া কে জয় করলেই জগৎ জিত। মায়া ৫ বিকারকে বলা হয়। রাবণের চিত্র একেবারে
ক্লিয়ার - ৫ বিকার স্ত্রী -র, ৫ বিকার পুরুষের। যার ফলে গাধায় পরিণত হয় তাই উপরে
গাধার মাথা দেওয়া হয়। এখন তোমরা বুঝেছ জ্ঞান ছাড়া আমরাও এমন ছিলাম। বাবা কত রমণীয়
ভাবে বসে পড়ান। তিনি হলেন সুপ্রিম টিচার। আমরা তাঁর কাছে যা পড়ি সেসব অন্যদের বলি।
সর্ব প্রথমে যিনি পড়ান তাঁর প্রতি নিশ্চয় (দৃঢ় বিশ্বাস) করানো উচিত। বলো, বাবা
আমাদের বুঝিয়েছেন, এবারে বিশ্বাস করলে করো। ইনি হলেন অসীমের পিতা তাইনা। শ্রীমৎ -ই
শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করে। অতএব শ্রেষ্ঠ দুনিয়াও অবশ্যই চাই, তাইনা।
এখন তোমরা বুঝেছ, আমরা নোংরা দুনিয়ায় বসে আছি। অন্যরা কেউ বুঝবে না। সেখানে আমরা
স্বর্গে সদা সুখী থাকি। এখানে নরকে কত দুঃখে আছি। একে নরক বলো বা বিষয় বৈতরণী নদী
বলো, পুরানো দুনিয়া হল ছিঃ ছিঃ দুনিয়া। এখন তোমরা অনুভব করো - কোথায় সত্যযুগ স্বর্গ,
কোথায় কলিযুগ নরক ! স্বর্গকে বলা হয় ওয়ান্ডার অফ দ্য ওয়ার্ল্ড। ত্রেতাকে বলা হবে
না। এখানে এই নোংরা দুনিয়ায় থাকতে মানুষের খুবই খুশী অনুভব হয়। বিষ্ঠা কীট গুলিকে
ভ্রমরী ভুঁ ভুঁ করে নিজের মতন করে। তোমরাও নোংরায় পড়ে ছিলে। আমি এসে ভুঁ-ভুঁ করে
তোমাদের মতন কীটদের অর্থাৎ শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণে পরিণত করেছি। এখন তোমরা ডবল
মুকুটধারী হয়েছ তো কত খুশীর অনুভব হওয়া উচিত। পুরুষার্থও পুরোপুরি করা উচিত। অসীমের
পিতা খুব সহজ করে বোঝান। অন্তরে অনুভব হয় যে বাবা সত্য কথা বলেন। এইসময় সবাই মায়ার
পাঁকে আটকে আছে। বাইরের আড়ম্বর কতখানি ? বাবা বোঝান আমি তোমাদের পাঁক থেকে মুক্ত করি,
স্বর্গে নিয়ে যাই। স্বর্গের নাম তো শুনেছ। এখন তো স্বর্গ নেই। শুধু এই চিত্র আছে।
স্বর্গের মালিক কত বিত্তবান ছিলেন। ভক্তি মার্গে যদিও রোজ মন্দিরে যেতে, কিন্তু
জ্ঞান তো কিছুই ছিলনা। এখন তোমরা বুঝেছ ভারতে এই আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম ছিল।
তাঁদের রাজত্ব কবে ছিল, সেসব কারো জানা নেই। দেবী-দেবতা ধর্মের পরিবর্তে এখন
হিন্দু-হিন্দু বলতে থাকে। শুরুতে হিন্দু মহাসভার প্রেসিডেন্ট এসেছিল। বললেন, আমরা
বিকারী অসুর নিজেকে দেবতা বলে পরিচয় দেব কীভাবে ? আমি বলি আচ্ছা এসো তোমাকে বোঝাই
পুনরায় দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা হচ্ছে। আমি তোমাকে স্বর্গের মালিক করে দেব । বসে
শেখো। তিনি বললেন , দাদা, সময় কোথায় ? সময় না থাকলে দেবতা হবে কীভাবে ! এ তো হল
পড়াশোনা, তাইনা। বেচারার ভাগ্যে ছিল না, মারা গেল (চলে গেল) । এমনও বলা হবে না যে,
সে প্রজায় আসবে। না, এমনি এসেছিল, শুনেছিল যে এখানে পবিত্রতার জ্ঞান প্রাপ্ত হয়।
কিন্তু সত্যযুগে আসতে পারবে না। তবুও হিন্দু ধর্মে তো আসবেই।
তোমরা বাচ্চারা বুঝেছ মায়া প্রচন্ড শক্তিশালী। কিছু না কিছু ভুল করাতেই থাকে। কখনও
কোনো উল্টো কর্ম হয়ে গেলে বাবাকে অন্তর থেকে সত্য কথা গুলো বলে দিতে হবে। রাবণের
দুনিয়ায় পাপ তো হতেই থাকে। তারা বলে আমরা হলাম জন্ম জন্মান্তরের পাপী। এই কথা কে
বলেছে ? আত্মা বলে - বাবার সম্মুখে অথবা দেবতাদের সামনে। এখন তো তোমরা অনুভব করেছ
সঠিকভাবে আমরা জন্ম জন্মান্তরের পাপী ছিলাম। রাবণের রাজ্যে পাপ অবশ্যই হয়েছে। অনেক
জন্মের পাপ তো বর্ণনা করাও অসম্ভব। এই জন্মের বর্ণনা করতে পারো। সেসব বাবাকে বলে
দিলেও হালকা হবে। সার্জেনের সামনে অসুখ বর্ণনা করলে - অমুককে মেরেছি, চুরি করেছি....
এইসব বলতে লজ্জা অনুভব হয় না, বিকারগ্রস্ত হওয়ার কথা বললে লজ্জা অনুভব হয়।
সার্জেনের কাছে লজ্জা বোধ করলে অসুখ সারবে কীভাবে ? তারপরে অন্তর্মনে অনুতাপ হবে,
বাবাকে স্মরণ করতে পারবে না। সত্য বলে দিলে স্মরণ করতে পারবে। বাবা বলেন আমি
সার্জেন তোমাদের ঔষধ প্রদান করি। তোমাদের কায়া (দেহ) সদা কাঞ্চন থাকবে। সার্জেনকে
বলে দিলে হাল্কা হয়ে যায়। কেউ নিজেই লেখে - বাবা আমরা জন্ম জন্মান্তর পাপ করেছি।
পাপ আত্মাদের দুনিয়ায় পাপাত্মা হয়েছি। এখন বাবা বলেন বাচ্চারা, পাপ আত্মাদের সঙ্গে
তোমরা কোনো রকম লেনদেন করবে না। সত্য সদ্গুরু, অকালমূর্তি হলেন বাবা, তিনি কখনও
পুনর্জন্মে আসেন না। তারা অকাল তখ্ত নাম রেখেছে, কিন্তু অর্থ বোঝে না। বাবা
বুঝিয়েছেন, এ হল আত্মার তখ্ত। এখানেই শোভা পায়, তিলকও এইখানে ভ্রু যুগলের মাঝখানে
দেওয়া হয়, তাইনা। আসলে তিলক একদম বিন্দু সম দেওয়া হত। এখন তোমাদের নিজেদেরকে নিজেই
তিলক দিতে হবে। বাবাকে স্মরণ করতে থাকো। যারা অনেক সার্ভিস করবে তারা বড় মহারাজা হবে।
নতুন দুনিয়ায়, পুরানো দুনিয়ার পড়া কি পড়বে নাকি। সুতরাং এত উঁচু পড়াশোনায় মনোনিবেশ
করা উচিত। এখানে বসে থেকেও অনেকের বুদ্ধিযোগ ভালো থাকে, অনেকের বুদ্ধি বাইরে বিচরণ
করে। কেউ ১০ মিনিট লেখে, কেউ ১৫ মিনিট লেখে। যার চার্ট ভালো থাকবে তার নেশাও বেশি
থাকবে - বাবা এত সময় আমরা আপনার স্মরণে ছিলাম। ১৫ মিনিটের বেশি তো কেউ লিখতে পারে
না। বুদ্ধি এদিক ওদিক বিচরণ করে। যদি সবাই একরস হয়ে যাবে, তাহলে তো কর্মাতীত অবস্থা
হয়ে যাবে। বাবা কত মিষ্টি মিষ্টি লাভলী কথা শোনান। এমন করে তো কোনও গুরু শেখাননি।
গুরুর কাছে একজন শিখবে না, গুরুর কাছে তো হাজার জন শিখবে, তাইনা। সদগুরুর কাছে তোমরা
কত কি শিখছ। এ হল মায়াকে বশে করার মন্ত্র। মায়া ৫ বিকারকে বলা হয়। ধনকে সম্পত্তি বলা
হয়। লক্ষ্মী-নারায়ণের জন্য বলা হবে তাঁদের কাছে অনেক সম্পত্তি আছে। লক্ষ্মী-নারায়ণকে
কখনও মাতা-পিতা বলা হবে না। আদি দেব, আদি দেবীকে জগৎ পিতা, জগৎ অম্বা বলা হয়, এঁদের
নয়। এনারা হলেন স্বর্গের মালিক। অবিনাশী জ্ঞান ধন নিয়ে আমরা বিত্তবান হই। অম্বার
কাছে অনেক মনস্কামনা নিয়ে যায়। লক্ষ্মীর কাছে যায় ধন লাভের আশায় অন্য কিছু নয়। তাহলে
বড় কে হলেন ? এই কথা কেউ জানে না , অম্বার কাছে কি প্রাপ্তি হয় ? লক্ষ্মীর কাছে কি
প্রাপ্তি হয় ? লক্ষ্মীর কাছে শুধু ধন চাওয়া হয় । অম্বার কাছে তোমরা সবকিছু প্রাপ্ত
কর। অম্বার নাম বেশি কারণ মাতাদের বেশি দুঃখ সহ্য করতে হয়। তাই মাতাদের নাম বেশি হয়।
আচ্ছা, তবুও বাবা বলেন বাবাকে স্মরণ করো তো পবিত্র হবে। চক্রকে স্মরণ করো, দৈবী গুণ
ধারণ করো। অনেককে নিজের মতন বানাও। তোমরা গড ফাদারের স্টুডেন্ট। কল্প পূর্বেও ছিলে,
এখন আবার সেই উদ্দেশ্য সামনে আছে। এই হল সত্য নর থেকে নারায়ণ হওয়ার কথা। আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
সার্জেনের কাছে নিজের অসুখ কখনও লুকাবে না। মায়ার ভূতের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে
হবে। নিজেকে রাজতিলক প্রদান করতে সার্ভিস নিশ্চয়ই করতে হবে।
২ ) নিজেকে অবিনাশী জ্ঞান ধনে বিত্তবান করতে হবে। এখন পাপ আত্মাদের সঙ্গে কোনো রকম
লেন-দেন করবে না। পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে হবে।
বরদান:-
গীতার পাঠ পড়ে এবং পড়িয়ে নষ্টমোহ স্মৃতি স্বরূপ ভব
ব্যাখা: গীতা জ্ঞানের
প্রথম পাঠ হল - অশরীরী আত্মা হও এবং অন্তিম পাঠ হল নষ্টমোহ স্মৃতি স্বরূপ হও। প্রথম
পাঠ হল বিধি এবং অন্তিম পাঠ হল বিধি দ্বারা সিদ্ধি। অতএব সবসময় প্রথমে নিজে এই পাঠ
পড়ো তারপরে অন্যদের পড়াও। এমন শ্রেষ্ঠ কর্ম করে দেখাও যে তোমাদের শ্রেষ্ঠ কর্ম দেখে
অন্য অনেক আত্মারা শ্রেষ্ঠ কর্ম করে নিজের ভাগ্যের রেখা শ্রেষ্ঠ করতে পারে।
স্লোগান:-
পরমাত্ম স্নেহে সমায়িত থাকো, তাহলে পরিশ্রম থেকে মুক্ত হয়ে যাবে ।