২৪-০৩-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ০৯-০৫-৮৪ মধুবন
সদা একের গভীরে নিমজ্জিত হয়ে (একরস) ওড়ার এবং অন্যকে ওড়ানোর গীত গাও
আজ অমৃতবেলা থেকে দিলারাম বাবা অনুরাগী বাচ্চাদের হৃদয়ের গীত শুনছিলেন l তোমরা সবাই গীত গাও, আর সকলেরই গীতের বোল এক, তা' হল *"বাবা"* । সবাই *বাবা বাবা* গীত গায় l এই গীত সবাই জানো ? অনবরত তোমরা এই গীত গাইছ ? যদিও গীতের বোল সকলেরই এক, তবুও প্রত্যেকের গাইবার সুর তাল আলাদা আলাদা। কারও সুর খুশির, কারও ওড়ার এবং ওড়ানোর সুর, আবার কোনো কোনো বাচ্চার অভ্যাসের সুর l কখনো কখনো তারা খুব ভালো, কিন্তু সম্পূর্ণ অভ্যাস না হওয়ার কারণে তাদের গীত নীচে-ওপরে হয় l এক সুরের সাথে অন্য সুর মিক্স হয়ে যায় l যেমন, এখানে তোমরা যখন গীতের সুর শোনো, তখন কিছু গীতের সুর এমন যে তোমাদের নাচতে মন হয়, কিছু স্নেহে নিমজ্জিত করায়, কিছু আহ্বানের, কিছু আবার প্রাপ্তির l বাপদাদাও বিভিন্ন লয়ের সুরে ভরা গীত শুনতে পান l বিজ্ঞানের ইনভেনশন অর্থাৎ বিজ্ঞানের উদ্ভাবিত বস্তুর মতো কেউ কেউ আজকাল নিরন্তর অটোমেটিক্যালি অর্থাৎ স্বতঃস্ফূর্তভাবে গেয়ে চলে l স্মৃতির সুইচ সদা খোলা আছে, এইজন্য নিজে থেকেই সবসময় বাজতে থাকে l যখন কেউ সুইচ অন করে তো সুর বেজে ওঠে l সবাই হৃদয় দিয়ে গায়, কিন্তু কারও কারও সদা নিমজ্জিত অবস্থায় নিজে থেকেই বাজে আর কারও বাজালে তবেই বাজে l যতই হোক, সুর সবই আলাদা, কখনো একরকম তো কখনো আরেকরকম l বাপদাদা বাচ্চাদের গীত শুনে উৎফুল্ল হন এই কারণে যে তোমাদের সকলের হৃদয়ে এক বাবা সমাহিত আছেন l তোমাদের নিষ্ঠা একের জন্যই l তোমরা সবকিছু করো বাবার জন্য l সর্ব সম্বন্ধও এক বাবার সাথে জুড়ে গেছে l শুধুমাত্র তোমাদের আছেন এক বাবা, তোমাদের স্মৃতিতে, দৃষ্টিতে আর তোমাদের মুখে আছে এক নাম l বাবাকে তোমরা তোমাদের দুনিয়া বানিয়েছ l প্রতি পদে বাবার স্মরণে থেকে লক্ষ-কোটি উপার্জন জমাও করেছ
l
তোমরা সব বাচ্চার ললাটে শ্রেষ্ঠ ভাগ্যের নক্ষত্র জ্বলজ্বল করছে l এইরকম শ্রেষ্ঠ বিশেষ আত্মারা বিশ্বের সামনে একজাম্পলও হয়ে গেছে l তোমরা রাজমুকুট আর তিলক লাভ করেছ এবং হৃদয় সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়েছ l তোমরা এমন শ্রেষ্ঠ আত্মা যে বাবা স্বয়ং তোমাদের গুণগান করেন l বাবা সব বাচ্চার নামের মালা জপ করেন l এমন শ্রেষ্ঠ ভাগ্য তোমাদের সকলের প্রাপ্ত হয়েছে, তাই না ! তা' সত্ত্বেও গীত গাইতে গাইতে সুর কেন বদল করে দিচ্ছ ? কেন মাঝে মাঝেই প্রাপ্তির গীত থাকছে, কখনো কখনো পরিশ্রমের, কখনো আহ্বানের আবার কখনো নিরুৎসাহ হওয়ার l তোমরা সদা কেন ওড়ার এবং অন্যকে ওড়ানোর গীত গাও ? এমন গীত গাও যাতে -
● যারা শুনবে তারা যেন পাখা পেয়ে উড়তে শুরু করে,
● যারা খঞ্জ তারা চরণপ্রাপ্ত হয়ে নাচতে শুরু করে,
তারা দুঃখশয্যা ত্যাগ করে খুশির গীত গাইতে শুরু করে,
● ভগ্নোৎসাহ আত্মারা উৎসাহ-উদ্দীপনার গীত গায়,
● ভিক্ষুক আত্মারা সর্ব ধনভান্ডারে সম্পন্ন হয়ে যেন এই গীত গাইতে শুরু করে যে "আমি বিস্মৃত সবকিছু খুঁজে পেয়েছি, সবকিছু প্রাপ্ত করেছি l"
তাদের এই সাফল্য-প্রাপ্ত সেবার আবশ্যকতা আছে বিশ্বের l লোকে স্বল্পমেয়াদী সাফল্যের পিছনে কত ঘুরে বেড়াচ্ছে ! তারা তাদের কত অর্থ আর সময় ব্যয় করে ফেলছে !
বর্তমান সময়ে সকল আত্মা পরিশ্রম করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, তারা সফলতা চায় l অল্পকালের সাফল্যপ্রাপ্তিতে তারা সন্তুষ্ট থাকে l কিন্তু একটা জিনিসে সন্তুষ্ট হলে আরও অনেক পরিস্থিতির উদ্ভব হয় l পঙ্গু ব্যক্তি হাঁটতে শুরু করে, কিন্তু এটাও যেন হয়, এটাও যেন হয়, এইরকম আরও ইচ্ছার উৎপত্তি হয় l সুতরাং, বর্তমান সময়ানুসারে তোমরা সব আত্মার সেবার বিধি সিদ্ধিস্বরূপ হওয়ার জন্য হতে হবে l অবিনাশী, অলৌকিক আত্মিক (রূহানী) সিদ্ধি বা রূহানী চমৎকারিত্ব প্রদর্শন করো l এই চমৎকারিত্ব কি কম কিছু ? সমগ্র দুনিয়ায় শতকরা নিরানব্বই ভাগ আত্মা চিন্তার চিতায় মৃত শায়িত l এমন মৃত সবাইকে নব জীবন দাও l তাদের এক প্রাপ্তির চরণ আছে, কিন্তু অন্য অনেক প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তারা প্রতিবন্ধী l এমন আত্মাদের অবিনাশী সকল প্রাপ্তির পা দাও l অন্ধ সকলকে ত্রিনেত্রী বানাও, তৃতীয় নয়ন উন্মোচন করাও l তাদের নিজেদের জীবনের শ্রেষ্ঠ বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ দেখার দৃষ্টিশক্তি দাও l এই সাফল্য কি অর্জন করতে তোমরা অপারগ ! এই রূহানী চমৎকার তোমরা দেখাতে পারবে না ! ভিখারীকে বাদশাহ তৈরি করতে পার না ! অভীষ্টলাভ হয় এমন সেবার শক্তি বাবার থেকে প্রাপ্ত কি করনি ! এখন, সঠিক বিধি প্রয়োগের প্রতিরূপ হওয়ার মাধ্যমে সিদ্ধিস্বরূপ হও l সিদ্ধিস্বরূপ সেবার নিমিত্ত হও l বিধি অর্থাৎ জীবনযাত্রার ধরন যা পুরুষার্থের সময় পুরুষার্থ করার জন্য তোমরা ধারণ করেছ l এখন, পুরুষার্থের ফল হিসেবে সিদ্ধিস্বরূপ হয়ে সিদ্ধিস্বরূপ সেবায় বিশ্বের সামনে প্রত্যক্ষ হও l এখন, এই আওয়াজ উচ্চরবে বিশ্বের সর্বত্র শোনা যাবে যে অবিনাশী সিদ্ধি শুধুমাত্র এই ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয় দিতে পারে, তারা কেবল প্রদর্শনই করে না, বরং সবাইকে সিদ্ধিস্বরূপ বানায় l কেবলমাত্র একটা স্থানই আছে l তোমরা নিজেরা তো সিদ্ধিস্বরূপ হয়েছ, তাই না !
সর্বাগ্রে, বম্বেতে (মুম্বাইয়ে) এই নাম মহিমান্বিত করো l বারবার পরিশ্রম করা থেকে মুক্ত হও l আজ, এই বিষয়ে পরিশ্রম করেছি l আজ ওই বিষয়ে পরিশ্রম করেছি l এই পরিশ্রম পুরুষার্থের l এখন এই শ্রম থেকে নিরস্ত হয়ে প্রাপ্তির শক্তিশালীস্বরূপ হও, এটা হল সিদ্ধিস্বরূপ l এখন সিদ্ধিস্বরূপ সকলকে জ্ঞানী তথা যোগী আত্মা হতে হবে এবং অন্যকেও তৈরি করতে হবে l শেষ পর্যন্ত কি তোমরা পরিশ্রম করেই যাবে ? ভবিষ্যতে প্রালব্ধ প্রাপ্ত করবে তোমরা ? পুরুষার্থের প্রত্যক্ষ ফল এখন খেতেই হবে l এখন প্রত্যক্ষ ফল খাও l পরে ভবিষ্যৎ ফল খেও l ভবিষ্যতের প্রতীক্ষায় প্রত্যক্ষ ফল খুইয়ে ফেলো না l অন্তে ফল লাভ হবে এইরকম ভেবে ভুলপথে চালিত হয়ো না l এক করো আর লক্ষ-কোটি গুণ লাভ করো l এটা এই বর্তমান সময়ের বিষয়েই বলা, অন্য কোন সময়ের নয় l বম্বের তোমরা বুঝেছ কি হতে হবে তোমাদের ? যারা শুধু আশা দেয়, তোমরা তেমন হবে না, তাই না ! সিদ্ধ বাবা - এ কথাটি তো অতি প্রসিদ্ধ l তারা বলে না - ইনি সিদ্ধ বাবা, সিদ্ধ যোগী ? যারা বম্বের তারাও সিদ্ধ সহজ যোগী অর্থাৎ তোমরা সিদ্ধি প্রাপ্ত করেছ, নয় কি ! আচ্ছা-
একের গভীরে নিমজ্জমান যারা নিজে থেকেই অন্যকে উড়ানোর গীত গায়, সদা সিদ্ধিস্বরূপ হয়ে অবিনাশী রূহানী সিদ্ধি প্রাপ্ত করায়, রূহানী চমৎকারিত্ব দেখানো চমৎকার আত্মাদের, যারা সদা সর্বপ্রাপ্তির সিদ্ধির অনুভব করায়, এমন সিদ্ধিস্বরূপ সহজযোগী, জ্ঞানস্বরূপ বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l
*কুমারীদের বিভিন্ন গ্রুপের সাথে অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎকার*
১) সদা আত্মিক (রূহানী) স্মরণে থাকা রূহানী কুমারী তোমরা, তাই না ! দেহ-অভিমানী কুমারী তো অনেক আছে, কিন্তু তোমরা রূহানী কুমারী l তোমরা সদা রূহ্ অর্থাৎ আত্মস্মৃতিতে থাকো l আত্মা হয়ে আত্মাকে দেখলে তাকে রূহানী কুমারী বলা হয় l সুতরাং তোমরা কোন্ কুমারী ? দেহ-অভিমান হয় এমন কুমারী তোমরা নও, তাই না ? দেহ-অভিমান হওয়া অর্থাৎ মায়ার কবলে পড়া আর রূহানী স্মৃতিতে থাকা অর্থাৎ বাবার কাছাকাছি আসা l তোমরা মায়ার কবলে পড়না, বরং বাবার সঙ্গে থাকো l বাবার সঙ্গে কারা থাকবে ? শুধুমাত্র রূহানী কুমারীরা বাবার সঙ্গে থাকতে পারে l বাবা যেমন সুপ্রিম, কখনও দেহ-অভিমানে আসেন না, সেইরকম তোমরাও দেহ-অভিমানে আস না l বাবার প্রতি যাদের ভালোবাসা আছে তারা রোজ ভালোবাসার সাথে বাবাকে স্মরণ করে, ভালোবাসার সাথে জ্ঞানের পাঠাভ্যাস করে l যে কার্য ভালোবাসার সাথে করা হয়, তা' সদা সফল হবেই l কারও বলার জন্য তুমি কিছু করলে সেটা মাঝেমধ্যে সফল হয় l যারা মন থেকে ভালোবেসে চলে, তারা চলতেই থাকে l একবার যখন তুমি অনুভব করে নিয়েছ যে বাবা কে আর মায়া কি, তখন তো অনুভাবী হওয়ার কারণে কখনও ঠকবে না l বিভিন্ন রূপ ধরে মায়া আসে l বস্ত্ররূপে আসে, মা-বাবার মোহরূপে আসে, সিনেমার রূপে আসে, স্থানাদি দর্শনের রূপে আসে l মায়া বলে, এই কুমারীরা তার হবে, বাবা বলবেন, আমার হবে l সুতরাং, তোমরা কি করবে ?
মায়া বিতাড়নে তোমরা সতর্ক থাকো তো ? ভয়ে তটস্থ হয়ে যায়, এমন দুর্বল তো নও তোমরা ? এইরকম নয় তো বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সিনেমায় চলে যাবে ? তেমন সঙ্গের রঙে মিশে যেও না l সদা বাহাদুর, সদা অমর, সদা অবিনাশী থাকো l সদা নিজের জীবনকে শ্রেষ্ঠ বানাতে হবে l নর্দমার পাঁকে (gutter-নালা, নর্দমা) পড়ে যেওনা l গাটার শব্দই তো কেমন ! বাবা সাগর, সাগর-তরঙ্গে সদা সমান তালে এগিয়ে চলো l তোমাদের কুমারী জীবনে তোমরা জ্ঞান পেয়েছ, রাস্তা খুঁজে পেয়েছ, লক্ষ্য জেনেছ, এইসব দেখে খুশি হয়! তোমরা খুব ভাগ্যবান l আজকের দুনিয়ার অবস্থা দেখ, দুঃখ দুর্দশা ছাড়া আর কিছু নেই ! নর্দমার পাঁকে পড়তে পড়তেও আঘাতের পর আঘাত পেতে থাকে l এটাই আজকের দুনিয়া l তোমরা তো প্রায়শঃ শোনো যে কেউ আজ বিয়ে করলো, তো পরের দিনই আগুনে পুড়ে মারা গেল ! আজ বিয়ে করেছে পরদিন ঘরে ফিরে এসেছে l প্রথমে সে নর্দমায় পড়েছে, আর তারপরে আঘাতের পর আঘাত পেয়েছে l সুতরাং, এমন আঘাত পেতে চাও কি ? এইজন্যই সদা নিজেকে ভাগ্যবান আত্মা মনে করো যে বাবা রক্ষা করেছেন l রক্ষা পেয়েছ, বাবার হয়েছ, এইরকম খুশি থাকে তোমাদের, নয় কি ? বাপদাদাও খুশি হন যে পড়ে যাওয়া থেকে, আঘাত পাওয়া থেকে তোমরা রক্ষা পেয়েছ l সুতরাং সদা এইরকম অবিনাশী থাকো l
২) তোমরা সবাই শ্রেষ্ঠ কুমারী, তাই না ? সাধারণ কুমারী থেকে শ্রেষ্ঠ কুমারী হয়ে গেছ l শ্রেষ্ঠ কুমারী সদা শ্রেষ্ঠ কর্তব্য করার নিমিত্ত l এইরকম নিজেদের সবসময় অনুভব করো যে তোমরা শ্রেষ্ঠ কার্যের নিমিত্ত ! শ্রেষ্ঠ কার্য কি ? বিশ্ব কল্যাণ l সুতরাং তোমরা সব বিশ্ব কল্যাণকারী কুমারী, বিশ্বের কল্যাণ করবে ! ঘরে বসে থাকা কুমারী নও l দায়িত্বের টুকড়ি বয়ে নিয়ে যাওয়া কুমারী নও, বরং তোমরা বিশ্ব কল্যাণকারী কুমারী l যারা কুলের কল্যাণ করে তারাই কুমারী l সমগ্র বিশ্ব তোমাদের কুল l সুতরাং এই কুল হলো অসীম পরিধির l সাধারণ কুমারীরা নিজের সীমিত পরিধির কুলের কল্যাণ করে l আর শ্রেষ্ঠ কুমারীরা বিশ্ব-কুলের কল্যাণ করবে l তোমরা এইরকমই, নয় কি ! তোমরা দুর্বল নও, তাই না! তোমরা ভয় পাও না তো ! বাবা সদাসর্বদা তোমাদের সাথে আছেন l যখন বাবা সাথে আছেন তো কোনও ভয়ের ব্যাপার নেই l এটা ভালো, এটা অনেক বড় ভাগ্য, তোমাদের কুমারী জীবনেই তোমরা বেঁচে গেছ l ভুলপথে গিয়ে ফিরে আসা, এটাও তো সময়ের অপচয় (waste/ওয়েস্ট), নয় কি ? অতএব, সময়, শক্তি সব রক্ষা পেয়েছে l লক্ষ্যহীন হয়ে ঘুরে বেড়ানোর শ্রম থেকে রেহাই পেয়েছ l কতো উপকৃত হয়েছ তোমরা ! কেবল বাহ্ আমার শ্রেষ্ঠ ভাগ্য ! এই দেখে সদা উৎফুল্ল থাকো l কোনরকম দুর্বলতার কারণে নিজের শ্রেষ্ঠ সেবা থেকে বঞ্চিত হ'য়োনা l
৩) কুমারী অর্থাৎ মহান l পবিত্র আত্মাকে সদা মহান বলা হয়ে থাকে l আজকালকার মহান আত্মারা কিভাবে মহান হয় ? তারা পবিত্র হয় l পবিত্রতার কারণেই তাদের মহান আত্মা বলা হয় l কিন্তু তোমরা সব মহান আত্মার কাছে তারা কিছুই নয় l তোমাদের মহত্ত্ব অবিনাশী মহত্ত্ব যা জ্ঞানে পরিপূর্ণ l তারা এক জন্মে মহান হয়, তারপরে, পরবর্তী জন্মে একইভাবে আবারও মহান হতে হয় l তোমরা জন্ম জন্ম ধরে মহান আত্মা l এখনকার মহত্ত্ব দিয়ে জন্মের পর জন্ম মহান হয়ে যাবে l ২১ জন্ম মহান থাকবে l যা কিছুই হোক না কেন, একবার বাবার হয়ে গেলে তো সদা বাবারই থাকবে, তোমরা এইরকম পাকা অর্থাৎ সম্পূৰ্ণ নিশ্চয় আছে, তাই না ? যদি কাঁচা (দুর্বল) হও তো মায়া খেয়ে ফেলবে l মায়া কাঁচা খায়, পাকা নয় ! সতর্ক থাকো - এখানে সবার ফটো নেওয়া হচ্ছে ! পরিপক্ক হও, পরিপূর্ণতা প্রাপ্ত করো l ভীত হ'য়োনা l যত তুমি পরিপূর্ণতা লাভ করবে ততই খুশির অনুভব, সর্বপ্রাপ্তির অনুভব করবে l পরিপক্কতা না থাকলে সেখানে সদাকালের খুশিও নেই l সদা নিজেদের মহান আত্মা মনে করো l মহান আত্মারা কখনও সাধারণ কার্য করতে পারে না l মহান আত্মা কখনো কারও সামনে মাথা নত করে না l সুতরাং তোমরা কখনো মায়ার দিকে ঝুঁকবে না l কুমারী অর্থাৎ হ্যান্ডস l কুমারীদের শক্তি হয়ে ওঠা অর্থাৎ সেবায় বৃদ্ধি হওয়া l বাবা খুশি হন যে তোমরা প্রতিশ্রুতিবান বিশেষ আত্মারা বিশ্ব সেবক হয়ে বিশ্বের কল্যাণ করবে l
৪) তোমরা কুমারীরা ছোটই হও বা বড়, তোমরা সকলেই শত ব্রাহ্মণের থেকেও অধিক উত্তম, এইরকম নিজেদের মনে করো ? "শত ব্রাহ্মণের থেকে উত্তম কন্যারা" কেন গাওয়া হয়ে থাকে ? প্রত্যেক কন্যা কমপক্ষে শত ব্রাহ্মণ নিশ্চিতরূপে তৈরি করবে, সেইজন্য শত ব্রাহ্মণের থেকে উত্তম কন্যারা বলা হয়ে থাকে l একশত তো কিছুই না, তোমরা তো বিশ্বসেবা করবে l তোমরা কন্যারা শত ব্রাহ্মণের থেকে উত্তম l সকল আত্মাকে শ্রেষ্ঠরূপে গড়ে তোলার তোমরা শ্রেষ্ঠ আত্মা l এইরকম নেশা থাকে তোমাদের ? স্কুল-কলেজের কুমারী নও, তোমরা ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কুমারী l যখন কেউ জিজ্ঞাসা করে তোমরা কোন কুমারী, তখন বলো তোমরা ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কুমারী l তোমরা এই একেক কুমারী সেবাধারী কুমারী হবে l কত সেন্টার খুলবে l কুমারীদের দেখে বাবা উৎফুল্ল হন কত হ্যান্ডস প্রস্তুত হচ্ছে ! তোমরা রাইট হ্যান্ডস, তাই না! লেফট হ্যান্ড নও l লেফট হ্যান্ড দিয়ে যে কাজ করো, তা' সামান্য নীচে -ওপরে হতে পারে l রাইট হ্যান্ডের কাজ তাড়াতাড়ি আর ভালোভাবে নিষ্পন্ন হয় l সুতরাং, তোমরা এত সব কুমারী যদি তৈরি হয়ে যাও, তবে কত সেন্টার খুলে যাবে, যেখানে পাঠানো হবে সেখানে যাবে, তাই না ! যে কার্যস্থানে বসতে বলা হবে সেখানে বসবে, নয় কি ? তোমরা কুমারীরা সকলেই মহান l সদা মহান থাকো, সঙ্গের প্রভাবে প্রভাবিত হ'য়োনা l যদি কেউ তোমার ওপরে নিজের রঙ লাগাতে চায়, তবে তাকে নিজের রঙে রাঙিয়ে দিও l এমনকি, মা-বাবাও যদি তোমার জন্য বন্ধন তৈরি করতে চেষ্টা করে, তবুও তোমরা বন্ধনে বাঁধা হবে না l সদা নির্বন্ধন l সদা ভাগ্যবান l কুমারী জীবন পূজনীয় জীবন l পূজন যোগ্য কেউ কখনো পূজারী হতে পারে না l সদা এই নেশায় থাকে l আচ্ছা l
৫) তোমরা সবাই দেবী, তাই না ! কুমারী অর্থাৎ দেবী l যারা উল্টো পথে যায় তারা দাসী হয় আর যারা মহান আত্মা হয়ে ওঠে তারা দেবী হয় l দাসী নত হয় l সুতরাং তোমরা সবাই দেবী, তোমরা দাসী হতে যাচ্ছ না l দেবীগণের কত পূজন হয় ! সুতরাং এই পূজন তোমাদেরই, নয় কি ! ছোটই হও বা বড়, তোমরা সবাই দেবী l ব্যস্, সদা স্মরণে রাখ যে তোমরা সবাই মহান, পবিত্র আত্মা l বাবার হওয়া কোনো ছোট ব্যাপার নয়, যদিও এটা বলা অনেক সহজ বিষয় হয়ে গেছে l কিন্তু কার হয়েছ ? কত শ্রেষ্ঠ হয়েছ ? তোমরা আত্মারা কত বিশেষ হয়েছ? ঘুরতে ফিরতে এটা স্মরণে থাকে কি যে তোমরা কত মহান, কত শ্রেষ্ঠ আত্মা ! ভাগ্যবান আত্মারা সর্বক্ষণ তাদের ভাগ্য স্মরণে রাখে l কে তোমরা ? দেবী l দেবীর মুখে সদা স্মিতহাসি, কখনো কাঁদে না l দেবীগণের ছবির সামনে গেলে কি দেখ তোমরা ? সদা হাস্যময় l তিনি দাত্রী,তাঁর দৃষ্টি দ্বারা, হস্ত দ্বারা সদা দান করছেন l দেবতা বা দেবীর অর্থই হলো যিনি দান করেন l তোমরা কি দিতে যাচ্ছ ? সবাইকে সুখ, শান্তি, আনন্দ, প্রেম সকল খাজানা দান করা দেবী তোমরা l সকলেই রাইট হ্যান্ড l রাইট হ্যান্ড অর্থাৎ যে শ্রেষ্ঠ কর্ম করে l
বরদান:-
ব্যর্থ সঙ্কল্প গুলির কারণ জেনে সেইসব সমাপ্ত করে সমাধান স্বরূপ ভব
ব্যর্থ সঙ্কল্প উৎপন্ন হওয়ার দু'টো মুখ্য কারণ - ১) অভিমান আর ২) অপমান l আমার জন্য কম কেন, আমারও এই পদ হওয়া উচিৎ, আমাকেও সামনে রাখা উচিৎ... এতে হয় তোমরা নিজেরা অপমানিত বোধ করো অথবা অভিমানের উৎপত্তি হয় l নামে, মান-মর্যাদায়, সামনে চলায় অথবা সেবায় ... অভিমান বা অপমান বোধ, সবই ব্যর্থ সঙ্কল্পের কারণ, এই কারণকে জেনে সেটার নিবারণ করাই সমাধান স্বরূপ হওয়া l
স্লোগান:-
সাইলেন্সের শক্তি দ্বারা সুইট হোমের যাত্রা করা খুব সহজ l