১৭-১০-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - বাবাকে স্মরণ করার সাথে সাথে জ্ঞান ধনের দ্বারা সম্পন্ন হও, বুদ্ধিতে সমগ্র জ্ঞান আবর্তিত হতে থাকলে তখন অপার খুশী থাকবে, সৃষ্টি চক্রের জ্ঞানের দ্বারা তোমরা চক্রবর্তী রাজা হবে"
প্রশ্ন:-
কোন্ বাচ্চাদের (মানব সন্তানদের) বাবার প্রতি ভালোবাসা হতে পারে না ?
উত্তর:-
যাদের ভালোবাসা খুব গভীর ভাবে নরকে থাকা বিকারের সাথে হয়, সেরকম মানুষদের ভালোবাসা বাবার সাথে থাকতে পারে না। তোমরা অর্থাৎ বাচ্চারা বাবাকে জেনেছ, সেইজন্য বাবার প্রতি তোমাদের ভালোবাসা আছে।
ওম্ শান্তি।
আত্মাদের পিতা বসে আত্মা রূপী বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন। আত্মা রূপী বাচ্চারা স্মরণে বসেছো ? ভিতরে এই জ্ঞান আছে তো যে, আমরা আত্মারা স্মরণের যাত্রায় আছি। যাত্রা শব্দটি তো অবশ্যই হৃদয়ে থাকা উচিত । যে রকম হরিদ্বার বা অমরনাথ যাত্রা করা হয়, যাত্রা সম্পূর্ণ হলে আবার ফিরে আসে। বাচ্চারা, তোমাদের এক্ষেত্রে আবার বুদ্ধিতে থাকে আমরা শান্তিধামে যাই। বাবা এসে হাত ধরেছেন। হাত ধরে পারাপার হতে হয় যে না ! বলাও হয়, হাত ধরে নাও। কারণ বিষয়-সাগরে পড়ে আছি। এখন তোমরা শিববাবাকে স্মরণ করো আর পরমধাম গৃহকে স্মরণ করো। নিজেদের মধ্যে এটা আসা উচিত যে আমরা চলছি। এতে মুখেও কিছু বলার নেই। ভিতরে-ভিতরে শুধুমাত্র স্মরণ থাকুক - বাবা এসেছেন নিয়ে যেতে। অবশ্যই স্মরণের যাত্রায় থাকতে হবে। এই স্মরণের যাত্রার দ্বারাই তোমাদের পাপ খন্ডন হয়, তবেই আবার সেই লক্ষ্যে পৌঁছাবে। বাবা কতো ক্লীয়ার করে (পরিষ্কার) বোঝান। যেরকম ছোট বাচ্চাদের পড়ানো হয়। সর্বদা বুদ্ধিতে থাক যে আমরা বাবাকে স্মরণ করেই চলেছি। বাবার কাজই হলো পবিত্র করে পবিত্র দুনিয়াতে নিয়ে যাওয়ার। বাচ্চাদের নিয়ে যান। আত্মাদেরই যাত্রা করতে হবে। আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের বাবাকে স্মরণ করেই পরমধাম গৃহে যেতে হবে। গৃহে পৌঁছালে তবে বাবার কাজ সম্পূর্ণ হবে। বাবা আসেনই পতিত থেকে পবিত্র করে গৃহে (পরমধামে) ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। পড়াশুনা তো এখানেই পড়তে হবে। যদি বা ঘোরো-ফেরো, যে কোনো কাজ-কর্ম করো, বুদ্ধিতে এটা স্মরণ থাক। যোগ হলো সন্ন্যাসীদের। সে তো হলো সব মানুষের মত। অর্ধ-কল্প তোমরা মানুষের মতে চলেছো। অর্ধ-কল্প দেবী মতে চলেছিলে। এখন তোমাদের ঈশ্বরীয় মতের প্রাপ্তি হয়েছে।
যোগ শব্দটা বলো না, স্মরণের যাত্রা বলো। আত্মাকে এই যাত্রা করতে হবে। সেটা হলো শারীরিক যাত্রা, শরীরের সাথে চলে। এতে, অর্থাৎ স্মরণের যাত্রায় তো শরীরের কাজই নেই। আত্মারা জানে, আমাদের এই আত্মাদের সেই সুইট পরমধাম গৃহ আছে। বাবা আমাদের শিক্ষা দিচ্ছেন, যার দ্বারা আমরা পবিত্র হচ্ছি। স্মরণ করতে করতে তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হতে হবে। এই হলো স্মরণের যাত্রা। আমরা বাবার স্মরণে বসি, কারণ পরমধাম গৃহে বাবার কাছেই যেতে হবে। বাবা আসেনই পবিত্র করতে। তাই তো তোমাদের পবিত্র দুনিয়াতে যেতে হবে। বাবা পবিত্র করে তোলেন, তারপর নম্বরঅনুযায়ী পুরুষার্থ অনুসারে তোমরা পবিত্র দুনিয়াতে যাবে। এই জ্ঞান বুদ্ধিতে থাকা উচিত। আমরা স্মরণের যাত্রাতে আছি। এই মৃত্যুলোকে আমাদের ফিরে আসতে হবে না। বাবার কাজ হলো আমাদের পরমধাম গৃহ পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া। বাবা পথ বলে দেন, এখন তো তোমরা মৃত্যুলোকে আছো, এরপর নূতন দুনিয়া-অমরলোকে থাকবে। বাবা নতুন দুনিয়ার উপযুক্ত বানিয়েই ছাড়েন। বাবা সুখধামে নিয়ে যান না। পরমধাম গৃহ পর্যন্ত পৌঁছালে এর লিমিট হয়ে যায়। এই সমস্ত জ্ঞান বুদ্ধিতে থাকা উচিত। শুধুমাত্র যে বাবাকে স্মরণ করা উচিত তা নয়, সাথে জ্ঞানও থাকা চাই। জ্ঞানের দ্বারা তোমরা ধন উপার্জন করো যে না ! এই সৃষ্টিচক্রের নলেজ দ্বারা তোমরা চক্রবর্তী রাজা হও। বুদ্ধিতে এই জ্ঞান আছে, এর দ্বারা চক্র আবর্তিত করতে হবে। আবার আমরা পরমধামে (গৃহে) যাবো, আবার নূতন করে চক্র শুরু হবে। এই সমস্ত জ্ঞান বুদ্ধিতে থাকলে তবে খুশীর পারদ উপর দিকে উঠবে। বাবাকেও স্মরণ করতে হবে, শান্তিধাম, সুখধামকেও স্মরণ করতে হবে। ৮৪ জন্মের চক্র যদি স্মরণ না করো, তবে চক্রবর্তী রাজা হবে কি ভাবে? শুধুমাত্র একক কে স্মরণ করা সন্ন্যাসীদের কাজ, কারণ সেই এক কে, সে বিষয়ে তারা জ্ঞাত নয়। তারা ব্রহ্মকেই স্মরণ করে। বাবা তো বাচ্চাদের ভালো ভাবে বোঝান। স্মরণ করতে করতেই তোমাদের পাপ খন্ডিত হয়। প্রথমে তো গৃহে যেতে হবে, এটা হলো আত্মিক যাত্রা। গাওয়াও হয় চতুর্দিকে ঘুরে বেড়ালে তবুও বারংবার দূরে রইলে অর্থাৎ বাবার থেকে দূরে রইলে। যেই বাবার থেকে অসীম জগতের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় তাঁকে তো জানেই না। কতো ঘুরতে থাকে। প্রতি বছরই কোনো যাত্রা করে থাকে। পয়সা অনেক থাকলে যাত্রার শখ থাকে। এটা তো হলো তোমাদের আত্মিক যাত্রা। তোমাদের জন্য নূতন দুনিয়া তৈরী হয়ে যাবে আবার তো নূতন দুনিয়াতেই আসার মতো হও, যাকে অমরলোক বলা হয়। সেখানে মৃত্যু থাকে না, যা কাউকে নিয়ে যাবে। নূতন দুনিয়াতে মৃত্যুর প্রবেশ অধিকারই নেই। রাবণের তো এই পুরানো আছে যে। তোমরা এখানে তাকে ডেকেও থাকো। বাবা বলেন আমি পুরানো দুনিয়াতে পুরানো শরীরে আসি। আমারও নূতন দুনিয়াতে আসার অধিকার নেই। আমি তো পতিত কে পবিত্র করতে আসি। তোমরা পবিত্র হয়ে আবার অপরকেও পবিত্র করো। সন্ন্যাসী তো পালিয়ে যায়। একদম বিলুপ্ত হয়ে যায়। জানাই যায় না, কোথায় চলে গেছে, কারণ সে ড্রেসই পরিবর্তন করে নেয়। যেরকম এক্টর্স রূপ পরিবর্তন করে নেয়। কখনো মেল থেকে ফিমেল হয়ে যায়, কখনো ফিমেল থেকে ভেল হয়ে যায়। এটাও রূপ পরিবর্তন করে। সত্যযুগে কি আর এই সব ব্যাপার থাকবে !
বাবা বলেন, আমি আসি নূতন দুনিয়া গড়তে। বাচ্চারা, তোমরা অর্ধ-কল্প রাজত্ব করো আবার ড্রামার প্ল্যান অনুসারে দ্বাপর শুরু হয়, দেবতারা বাম মার্গে চলে যায়, তাদের অনেক ঘৃণ্য চিত্রও জগন্নাথপুরীতে আছে। জগন্নাথের মন্দির আছে। তাঁর তো রাজধানী ছিলো, তাই না ! স্বয়ং বিশ্বের মালিক ছিলেন। আবার মন্দিরে এসে বন্দী হয়েছেন, তাকে কালো দেখানো হয়েছে। এই জগত নাথের মন্দিরের উপর তোমরা অনেক কিছু বোঝাতে পারো। আর কেউ এর অর্থ বোঝাতে পারবে না। দেবতাই পূজ্য থেকে পূজারী হয়। সে-সব লোক তো বলে ভগবানের ক্ষেত্রে প্রত্যেক ব্যপারে বলে দেয়- আপনিই পূজার, আপনিই পূজারী। আপনিই সুখ দেন, আপনিই দুঃখ দেন। বাবা বলেন আমি তো কাউকে দুঃখই দিই না। এটা তো বোঝার ব্যাপার। বাচ্চা জন্মালে তো খুশী হয়, বাচ্চা মারা গেলে তো কাঁদতে থাকে। বলে ভগবান দুঃখ দিয়েছেন। আরে, এই অল্প সময়ের সুখ-দুঃখ তোমাদের রাবণ রাজ্যতেই প্রাপ্ত হয়। আমার রাজ্য দুঃখ নাম মাত্রও থাকে না। সত্যযুগকে বলা হয় অমরলোক। এর নামই হলো মৃত্যুলোক। অকালে মৃত্যু হয়। সেখানে তো অনেক খুশী পালন করা হয়, আয়ুও অনেক লম্বা হয়। দীর্ঘতম আয়ু ১৫০ বছরের হয়। এখানেও কখনো কখনো এরকম কারোর হয়, কিন্তু এখানে তো স্বর্গ নেই ! কেউ শরীরকে খুব সামলে রাখে, তাই আয়ুও দীর্ঘ হয়, আবার বাচ্চাও কতো হয়ে যায়। পরিবার বৃদ্ধি হতে থাকে, বৃদ্ধি তাড়াতাড়ি হয়। যেরকম বৃক্ষ থেকে শাখা-প্রশাখা বের হয়- ৫০টা শাখা আর তার থেকে আরো ৫০ বের হবে, কতো বৃদ্ধি হতে থাকে। এখানেও সেরকম, সেইজন্য এর উদাহরণ বৃহৎ বৃক্ষের সাথে দেওয়া হয়। সমস্ত বৃক্ষ দাঁড়িয়ে আছে, ফাউন্ডেশন (গোঁড়া) নেই। এখানেও আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের ফাউন্ডেশন নেই। কারোর জানাই নেই দেবতারা কবে ছিলো, তারা তো লক্ষ বছর বলে দেয়। পূর্বে তোমরা কখনো খেয়ালও করোনি। বাবা এসেই এসব ব্যাপার বোঝান। এখন তোমরা বাবাকেও জেনে গেছো আর সমস্ত ড্রামার আদি-মধ্য-অন্ত, ডিউরেশন ইত্যাদি সব কিছুকে জেনে গেছো। নূতন দুনিয়া থেকে পুরানো, পুরানো থেকে নূতন কি ভাবে গড়ে ওঠে, এটা কেউ জানে না। এখন তোমরা অর্থাৎ বাচ্চারা স্মরণের যাত্রায় বসছো। এই যাত্রা তো তোমাদের নিত্য চলে। ঘোরো-ফেরো কিন্তু এই স্মরণের যাত্রায় থাকো। এ হলো আত্মিক যাত্রা। তোমরা জানো ভক্তি মার্গে আমরাও সেই যাত্রাতে ছিলাম। অনেকবার যাত্রা করে থাকবে যে সুপরিপক্ক ভক্ত হবে। বাবা বুঝিয়েছেন এক শিবের ভক্তি করতে, সেটা হলো অব্যাভিচারী ভক্তি। আবার দেবতাদের ভক্তি করে, তারপর ৫ তত্ত্বকে ভক্তি করে। দেবতাদের ভক্তি করা তাও ভালো কারণ ওনাদের শরীর তাও সতোপ্রধান, মানুষের শরীর তো হলো পতিত যে না! তারা তো হলো পবিত্র, আবার দ্বাপর থেকে সব পতিত হয়ে পড়ে। নীচে নামতে শুরু করে। সিঁড়ির চিত্র বোঝানোর জন্য তোমাদের পক্ষে খুবই ভালো। জিনের কাহিনী আছে এ বিষয়ে । এই সব দৃষ্টান্ত ইত্যাদি এই সময়েরই। সব তোমাদের উপরেই তৈরী। ভ্রমরের দৃষ্টান্তও তোমাদের যারা কোটি (আত্মাকে ) নিজের সমান ব্রাহ্মণ তৈরী করে। এখানকারই সব দৃষ্টান্ত।
বাচ্চারা, তোমরা প্রথমে শারীরিক যাত্রা করতে। এখন আবার বাবার সাহায্যে আত্মিক যাত্রা শেখো। এটা তো অধ্যয়ণ যে না! ভক্তিতে দেখো কি-কি করে। সবার সামনে মাথা ঠুকতে থাকে, একজনেরও অক্যুপেশন (কর্ম-কর্তব্য) জানে না। হিসেব করা হয় যে না! সব থেকে বেশী জন্ম কে নেয় আবার কম হতে থাকে। এই জ্ঞানও তোমাদের এখন প্রাপ্ত হয়। তোমরা মনে করো স্বর্গ সব-সময় ছিলো। ভারতবাসী তো এতো পাথর বুদ্ধি সম্পন্ন হয়েছে যে তাদের জিজ্ঞাসা করো স্বর্গ কবে ছিলো তো লক্ষ বছর বলে দেবে। এখন তোমরা অর্থাৎ বাচ্চারা জানো যে আমরা বিশ্বের মালিক ছিলাম, কতো সুখী ছিলাম-এখন আবার আমাদের বেগর টু প্রিন্স হতে হবে। দুনিয়া নূতন থেকে পুরানো হচ্ছে যে না। তাই বাবা বলেন পরিশ্রম করো। এটাও জানা আছে মায়া ক্ষণে-ক্ষণে বিস্মৃত করে সব কিছু।
বাবা বোঝান বুদ্ধিতে সর্বদা এটা স্মরণে রাখো যে আমরা চলেছি, আমাদের এই পুরানো দুনিয়া থেকে নোঙর উঠে গেছে। নৌকা ওপারে যাবে। গাওয়া হয় যে আমার নৌকা তীরে নিয়ে যাও। কবে তীরে যেতে হবে, সেটা জানে না। তাই মুখ্য হলো স্মরণের যাত্রা। বাবার সাথে স্বর্গীয় উত্তরাধিকারও স্মরণে আসা উচিত। বাচ্চার বয়স বাড়ার সাথে সাথে বাবার উত্তরাধিকারও বুদ্ধিতে থাকে। তোমরা তো বড় হয়েই গেছো। আত্মা তাড়াতাড়ি জেনে যায়, একথা তো সব-সময়ের। অসীম জগতের পিতার উত্তরাধিকার হলই স্বর্গ। বাবা স্বর্গের স্থাপনা করেন, তাই বাবার শ্রীমতে চলতে হয়। বাবা বলেন অবশ্যই পবিত্র হতে হবে। পবিত্রতার কারণেই ঝগড়া হয়ে থাকে। তারা তো একদম যেন নরকের অনেক ভিতরে পড়ে আছে। আরো বেশী করে বিকারে নীচে নামতে থাকে, তাই বাবার প্রতি ভালোবাসা রাখতে পারে না। বিনাশ কালে বিপরীত বুদ্ধি হয় যে না। বাবা আসেনই প্রীত বুদ্ধি সম্পন্ন করে তুলতে। অনেকেই আছে যাদের সামান্যতমও প্রীত-বুদ্ধি নেই।কখনো বাবাকে স্মরণও করে না। শিববাবাকে জানেই না, মানেই না। সম্পূর্ণ ভাবে মায়ার গ্রহণ লেগে আছে। স্মরণের যাত্রা একদমই নেই। বাবা তো পরিশ্রম করান, এটাও জানো সূর্যবংশী, চন্দ্রবংশী রাজধানী এখানে স্থাপন হচ্ছে। সত্যযুগ-ত্রেতাতে কোন ধর্মই স্থাপন হয় না। রাম কোনো ধর্ম স্থাপন করে না। ইনি যা স্থাপনা করেন সে তো বাবার দ্বারাই তৈরী। অন্যান্য ধর্ম স্থাপক আর বাবার ধর্ম স্থাপনাতে রাত-দিনের পার্থক্য আছে। বাবা আসেনই সঙ্গমে যখন দুনিয়াকে পরিবর্তন করতে হয়। বাবা বলেন প্রতি কল্পে, কল্পের সঙ্গম যুগে আসি, তারা আবার যুগে-যুগে রঙ্(ভুল) শব্দ লিখে দিয়েছে। অর্ধ-কল্প ভক্তি মার্গও চলবেই। তাই বাবা বলেন বাচ্চারা এই কথাকে ভুলো না। এটা বলে যে বাবা আমরা আপনাকে ভুলে যাই। আরে, বাবাকে তো জানোয়ারও ভোলে না। তোমরা কেন ভুলে যাও? নিজেকে কি আত্মা মনে করো না! দেহ-অভিমানী হওতেই তোমরা বাবাকে ভুলে যাও। এখন যেরকম বাবা বোঝাচ্ছেন, সেরকম তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদেরও অভ্যাস রাখতে হবে। আত্মবিশ্বাসের সাথে কথা বলতে হবে। এমন না যে গণ্য-মান্য ব্যক্তিদের সামনে তোমরা কুণ্ঠিত হয়ে যাবে। তোমরা এই কুমারীরা হলে বড়-বড় বিদ্বান, পন্ডিতদের সামনে গেলে নির্ভয়তার সাথে বোঝাতে হবে। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার:-
১. সর্বদা বুদ্ধিতে যেন স্মরণ থাকে যে আমরা ফিরে যাচ্ছি, আমাদের নৌকার নোঙর এই পুরানো দুনিয়া থেকে উঠে গেছে। আমরা আত্মিক যাত্রায় চলয়মান। এই যাত্রাই করতে আর করাতে হবে।
২. কোনো গণ্য-মান্য ব্যক্তির সামনে নির্ভয়তার সাথে কথা বলতে হবে, কুণ্ঠিত হতে নেই। দেহী-অভিমানী হয়ে বোঝানোর অভ্যাস করতে হবে।
বরদান:-
সর্বদা হাল্কা হয়ে বাবার নয়নে অন্তর্লীন হওয়ার মতো সহজযোগী ভব
সঙ্গমযুগে খুশীর যে পুষ্টিকর খাদ্য প্রাপ্তি হয়, সেটা আর কোনো যুগে প্রাপ্ত হয় না। এই সময় হলো পিতার সাথে সন্তানের মিলনের, উত্তরাধিকার আছে, বরদান আছে। উত্তরাধিকার বা বরদান এই দুটোতে পরিশ্রম হয় না, সেইজন্য তোমাদের টাইটেলই হলো সহজযোগী। বাপদাদার বাচ্চাদের পরিশ্রম করা ভালো লাগে না। বলেন, বাচ্চারা নিজেদের সব বোঝা বাবাকে দিয়ে নিজে হাল্কা হয়ে যাও। এতো হাল্কা হও যে বাবা নিজের নয়নের উপর বসিয়ে সাথে করে নিয়ে যাবেন। বাবার স্নেহের নিশানি হলো- সর্বদা হাল্কা হয়ে বাবার দৃষ্টিতে অন্তর্লীন হয়ে যাওয়া।
স্লোগান:-
নেগেটিভ (নেতিবাচক) চিন্তা করার রাস্তা বন্ধ করে দিলে সফলতা স্বরূপ হয়ে যাবে।