২০-০৬-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -- অন্তর্মুখী হও অর্থাৎ চুপ করে থাকো, মুখে কিছু বোলো না, প্রতিটি কাজ শান্তিতে করো, কখনও অশান্তি সৃষ্টি কোরো না"
প্রশ্ন:-
বাচ্চারা, যে তোমাদের কাঙাল করেছে সবচেয়ে বড় সেই শত্রুটি কে ?
উত্তর:-
ক্রোধ। বলা হয় যেখানে ক্রোধ আছে সেখানে জল ভরা কলসও শুকিয়ে যায়। ভারত রূপী কলস যে হীরে জহরত দিয়ে ভরা ছিল, সেসব এই ক্রোধ রূপী ভূতের জন্যে খালি হয়েছে। এই বিকার রূপী ভূতেরাই তোমাদের কাঙাল করেছে। ক্রোধ যুক্ত মানুষ নিজেও পোড়ে অন্যদেরও পোড়ায় তাই এখন এই ভূতকে অন্তর্মুখী হয়ে বাইরে বের করো।
ওম্ শান্তি ।
বাবা বাচ্চাদের বোঝান - মিষ্টি বাচ্চারা, অন্তর্মুখী হও। অন্তর্মুখী অর্থাৎ কোনো কিছুই বোলো না। নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করো। বাবা বসে এই শিক্ষা দেন বাচ্চাদের। অন্য কিছুই বলার নেই এইখানে। শুধু বোঝানো হয়। গৃহস্থে এমন ভাবে থাকতে হবে। এই হল মন্মনাভব। আমাকে স্মরণ করো, এইটি হল প্রথম মুখ্য পয়েন্ট। বাচ্চারা, তোমাদের ঘরে কখনও ক্রোধ করা উচিত নয়। ক্রোধ এমন যার প্রভাবে জল ভরা কলস শুকিয়ে যায়। ক্রোধ যুক্ত মানুষ অশান্তি সৃষ্টি করে, তাই গৃহস্থে থেকে শান্তিতে থাকতে হবে। ভোজন গ্রহণ করে নিজের কাজে ব্যবসা অথবা অফিস ইত্যাদিতে চলে যাবে, সেখানেও সাইলেন্সে থাকা ভালো। সবাই বলে আমাদের শান্তি চাই। এই কথা তো বাচ্চাদের বলা হয়েছে শান্তির সাগর হলেন একমাত্র বাবা। বাবা নিজেই নির্দেশ দেন আমাকে স্মরণ করো। এতে মুখে কিছু বলার নেই। অন্তর্মুখী হয়ে থাকতে হবে। অফিস ইত্যাদিতে নিজের কাজও করতে হবে তো তাতেও বেশি কথা বলতে হয় না, খুব মধুর হতে হবে। কাউকেও দুঃখ দেওয়া উচিত নয়। ঝগড়া ঝাঁটি ইত্যাদি করা এই সবই হল ক্রোধ, সবচেয়ে বড় শত্রু হল কাম। দ্বিতীয় নম্বরে হল ক্রোধ। একে অপরকে দুঃখ দেয়। ক্রোধ বশতঃ কত লড়াই হয়ে যায়। বাচ্চারা জানে সত্যযুগে লড়াই হয় না। এ হল রাবণের বশীভূত হওয়ার লক্ষণ। ক্রোধ যুক্ত মানুষকে অসুরী সম্প্রদায় বলা হয়। ভূতের প্রবেশ রয়েছে কিনা। এতে কিছুই বলতে হবে না, কারণ সেই মানুষের তো জ্ঞান নেই। তারা তো ক্রোধ করবে, ক্রোধ যে করে তার সঙ্গে ক্রোধ করলে ঝগড়া লেগে যায়। বাবা বোঝান - এই ভূত খুব কঠিন, যাকে যুক্তি যুক্ত হয়ে নিষ্কাসিত করতে হয়। মুখ দিয়ে কটু কথা বলা উচিত নয়। এইরূপ বলা খুবই ক্ষতিকর। বিনাশও ক্রোধের বশে-ই হয়, তাইনা। যে ঘরে ক্রোধের বাস, সেখানে অশান্তি অনেক হয়। ক্রোধ করলে তোমরা বাবার নাম বদনাম করবে। এই ভূত গুলিকে দূর করতে হবে। একবার তাড়িয়ে দিলে অর্ধকল্পের জন্য সেই ভূত আর থাকবে না। এই পাঁচ বিকার এখন ফুল ফোর্সে আছে। এমন সময়েই বাবা আসেন, যখন বিকার ফুল ফোর্সে থাকে। এই দৃষ্টি খুব ক্রিমিনাল। মুখও খুব ক্রিমিনাল। জোরে কথা বললে মানুষ আগুনের মত জ্বলে ওঠে এবং ঘরেও ক্রোধের আগুন জ্বালিয়ে দেয়। কাম ও ক্রোধ এই দুই হল বড় শত্রু। ক্রোধ বশতঃ মানুষ স্মরণ করতে পারে না। যে স্মরণ করবে সদা শান্তিতে থাকবে। নিজের মনকে প্রশ্ন করা উচিত - আমাদের মধ্যে কোনও ভূত নেই তো ? মোহ রূপী, লোভ রূপী ভূত থাকে। লোভের ভূতও কম নয়। এই সব হল ভূত, কেননা এরা হল রাবণের সেনা।
বাবা বাচ্চাদের স্মরণের যাত্রা শেখান। কিন্তু বাচ্চারা এতেই কনফিউজড হয়ে পড়ে। বুঝতে পারেনা, কারণ অনেক কাল ভক্তি করেছে যে । ভক্তি অর্থাৎ দেহ-অভিমান। অর্ধকল্প দেহ-অভিমান আছে। বাহ্যমুখী হওয়ার দরুন নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করতে পারে না। বাবা খুব জোর দিয়ে বলেন - নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করো। কিন্তু তারা পারেই না । অন্য সব কথা বিশ্বাসও করে। তারপরে বলে স্মরণ করব কিভাবে, কোনো কিছু তো দেখা যাচ্ছে না। তাদেরকে বোঝানো হয় - তোমরা নিজেদের আত্মা নিশ্চয় করো। এই কথাও জানো তিনি হলেন অসীম জগতের পিতা। মুখে শিব শিব বলার দরকার নেই। অন্তরে জ্ঞান আছে তাইনা, আমি হলাম আত্মা। মানুষ শান্তি চায়, শান্তির সাগর তিনিই হলেন পরমাত্মা। অবশ্যই অবিনাশী স্বর্গের অধিকারও তিনি-ই দেবেন। এখন বাবা বোঝাচ্ছেন, আমাকে স্মরণ করো তাহলে শান্তি হয়ে যাবে। এবং জন্ম জন্মান্তরের বিকর্ম বিনাশ হবে। অন্য কোনও কিছু নেই। কোনও বিশাল লিঙ্গ রূপ নেই। আত্মা সূক্ষ্ম, বাবাও হলেন সূক্ষ্ম। তাই বাবা বাচ্চাদেরকে বলেন মন্মনাভব। মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, অন্তর্মুখী হয়ে থাকো। এই যা কিছু চোখে দেখছ সব শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আত্মা শান্তিতে বাস করে। আত্মাকে শান্তিধাম যেতে হবে। যতক্ষণ আত্মা পবিত্র না হয় ততক্ষণ শান্তিধাম যেতে পারে না। ঋষি মুনিরা বলেন শান্তি কিভাবে প্রাপ্ত হবে। বাবা তো সহজ যুক্তি বলে দেন। কিন্তু বাচ্চাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা শান্তিতে বাস করে না। বাবা জানেন ঘরে থাকে, একদম শান্ত হয়ে থাকে না। কিছুক্ষণের জন্য সেন্টারে যায়, মন শান্ত করে বাবাকে স্মরণ করবে, তা করে না। সারা দিন বাড়িতে হাঙ্গামা করতে থাকে, তো সেন্টারে এসে শান্তিতে থাকতে পারে না। কারো সঙ্গে প্রেম হয়ে গেলে তো কখনও শান্তি হতে পারে না। শুধু তারই কথা স্মরণে আসবে। *বাবা বোঝান - মানুষের মধ্যে আছে ৫-টি ভূত। বলা হয় এর মধ্যে ভূত প্রবেশ করেছে। এই ভূত গুলিই তোমাদের কাঙাল করেছে। সে তো হল একটি ভূত, সেও কখনও প্রবেশ করে। বাবা বলেন এই পাঁচটি বিকার রূপী ভূত তো সকলের মধ্যেই প্রবিষ্ট আছে। এই ভূত গুলি তাড়ানোর জন্যেই বাবাকে আহ্বান করে। বাবা, এসে আমাদের শান্তি দিন, এই ভূত গুলিকে তাড়ানোর যুক্তি বলে দিন। এই বিকার রূপী ভূত তো সবার মধ্যে আছে। এই যে হল রাবণ রাজ্য । সবচেয়ে বড় ভূত হল কাম-ক্রোধ*। বাবা এসে ভূত ভাগিয়ে দেন তার পরিবর্তে বাবার কিছু পাওনা থাকা উচিত তাইনা। তিনি ভূত-প্রেত ভাগিয়ে দেন, প্রাপ্তি কিছুই হয় না।, এই কথা তো বাচ্চারা জানে বাবা আসেন সম্পূর্ণ বিশ্বের ভূত তাড়াতে। এখন সম্পূর্ণ বিশ্বে সবার মধ্যে ভূতের প্রবেশ রয়েছে*। দেবতাদের মধ্যে কোনও ভূত থাকে না, না দেহ -অভিমানের, না কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ ..... কিছুই থাকে না। লোভ রূপী ভূতও কম নয়। এই খাই, সেই খাই ..... অনেকের মধ্যে এই ভূত থাকে। তারা নিজের মনে বুঝতে পারে - যথার্থই আমাদের মধ্যে কাম রূপী ভূত আছে, ক্রোধ রূপী ভূত আছে। তাই এই বিকার রূপী ভূত তাড়াতে বাবাকে এত মাথা খাটাতে হয়। দেহ-অভিমানে এলে ইচ্ছে হয় এমন করি বা আলিঙ্গন করি। তখন সম্পূর্ণ উপার্জন শেষ হয়ে যায়। ক্রোধের অবস্থাও একই রকম। ক্রোধ যুক্ত হয়ে পিতা সন্তানকে মারে, সন্তান পিতাকে, স্ত্রী নিজের স্বামীকে। জেলে গিয়ে তোমরা দেখো বিভিন্ন রকম কেস থাকে। এই বিকার রূপী ভূতের প্রবেশ ঘটে বলেই ভারতের এমন দুরবস্থা হয়েছে ! ভারত রূপী বিশাল কলসটি যে হীরে জহরত দিয়ে ভরা ছিল, সেসব এখন নিঃস্ব হয়েছে। কথায় বলে - ক্রোধের প্রভাবে জল ভরা কলসও শুকিয়ে যায় । অতএব ভারতের অবস্থাও তেমন হয়েছে। এই কথা কেউ জানে না। বাবা স্বয়ং আসেন ভূত নিষ্কাশন করতে। যে কর্ম কোনও মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। এই পাঁচটি ভূত খুব সাংঘাতিক। অর্ধকল্প এই ভূতের প্রবেশ থাকে। এই সময় তো কোনও কথাই নেই। কেউ যতই পবিত্র থাকুক কিন্তু জন্ম তো বিকার দ্বারা হয়েছে। ভূত তো আছে, তাইনা। ৫ টি ভূত ভারতকে একেবারে কাঙাল করেছে। ড্রামা কিরকম তৈরি করা হয়েছে, যা বাবা বসে বোঝাচ্ছেন। ভারত কাঙাল হয়েছে, বিদেশ থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে। ভারতের জন্যই বাবা বোঝান, এখন বাচ্চারা তোমরা এই পড়াশোনা করে কত ধন প্রাপ্ত কর। এ হল অবিনাশী পাঠ যা অবিনাশী বাবা পড়ান। ভক্তিমার্গে কত সামগ্রী আছে। ব্রহ্মাবাবা শৈশব থেকে গীতা পাঠ করতেন এবং নারায়ণ পূজা করতেন। যদিও কিছু বুঝতেন না। আমি আত্মা, তিনি আমাদের পিতা, এই সব কথার বোধ ছিল না, তাই প্রশ্ন করে কিভাবে স্মরণ করব ? আরে, তোমরা তো ভক্তি মার্গে স্মরণ করেছ - হে ভগবান, এসো, উদ্ধার করো, আমাদের গাইড হও। গাইডেন্স লাভ হয় মুক্তি-জীবনমুক্তির জন্য। বাবা এই পুরানো দুনিয়ার প্রতি ঘৃণা ধরিয়ে দেন। এই সময় সবার আত্মা কালিমা যুক্ত বা অসুন্দর হয়ে আছে, তাহলে তাদের সুন্দর দেহ প্রাপ্ত হবে কিভাবে। যতই গায়ের রঙ ফর্সা হোক, কিন্তু আত্মা তো কালো, তাইনা। যাদের সুন্দর ফর্সা শরীর থাকে, তাদের নিজের সৌন্দর্যের অনেক নেশা থাকে। মানুষ এই কথা জানতে পারে না যে আত্মা সুন্দর কিভাবে হয় ? তাই তাদের বলা হয় নাস্তিক অর্থাৎ ঈশ্বরে অবিশ্বাসী। যারা নিজের পিতা রচয়িতা এবং রচনার কথা জানে না তারা হল ঈশ্বরে অবিশ্বাসী, যারা জানে তারা হল ঈশ্বরে বিশ্বাসী। বাচ্চারা, বাবা বসে কত ভালো ভাবে তোমাদের বোঝান। প্রত্যেকে নিজেকে প্রশ্ন করো - আমাদের মধ্যে কত খানি পরিছন্নতা আছে ? কত খানি আমরা নিজেদের আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করি? স্মরণের শক্তির দ্বারা-ই রাবণকে জয় করতে হবে। এর জন্যে শরীরের শক্তিশালী হওয়ার ব্যাপার নেই। এই সময় সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র হল আমেরিকা, কারণ তাদের কাছে ধন-সম্পদ, বারুদ ইত্যাদি অনেক আছে অর্থাৎ শক্তি হয়ে গেল পার্থিব। মৃত্যুর জন্য জড়ো করা । বাচ্চাদের বুদ্ধিতে রয়েছে আমরা বিজয়ী হব। তোমাদের তো হল রূহানী শক্তি বা আত্মিক শক্তি, তোমরা জয় লাভ কর রাবণের উপরে। যার দ্বারা তোমরা বিশ্বের মালিক হও। তোমাদের উপরে কেউ জয় লাভ করতে পারে না। অর্ধকল্পের জন্যে কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না এবং অন্য কেউ বাবার অবিনাশী উত্তরাধীকার প্রাপ্ত করতে পারে না। তোমরা কি স্বরূপ ধারণ করো, সেই নিয়ে একটু বিচার করো। বাবাকে তো খুব ভালোবাসে স্মরণ করতে হবে এবং স্বদর্শন চক্রধারী হতে হবে। তারা ভাবে স্বদর্শন চক্র দিয়ে বিষ্ণু সকলের মাথা কেটে ছিলেন। কিন্তু এখানে হিংসার কোনও কথাই নেই।
সুতরাং মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চাদের বাবা বলেন - মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা কি ছিলে, এখন নিজের অবস্থা তো দেখো ! তোমরা যতই ভক্তি ইত্যাদি করে ছিলে কিন্তু ভূত তাড়াতে পারো নি। *এখন অন্তর্মুখী হয়ে দেখো আমাদের মধ্যে কোনও ভূত আছে কি* ? কারো প্রতি মোহ রাখলে বা আঁকড়ে থাকো, তাহলে বুঝে নিও যা কিছু উপার্জন জমা হয়েছিল সব শূন্য হয়ে গেল। তাদের মুখ দর্শন করতেও বাবার ভালো লাগবে না। তারা তো যেন অস্পৃশ্য হয়ে গেল, স্বচ্ছ নয়। তারা বিবেকের দংশন হতে থাকবে যথার্থই আমি অস্পৃশ্য। বাবা বলেন দেহ সহ সবকিছু ভুলে যাও, নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো, এই অবস্থায় স্থির হয়ে থাকলে তোমরা দেবতা হবে। সুতরাং কোনও ভূতের আগমন হওয়া উচিত নয়। বাবা বোঝাতে থাকেন- নিজের চেকিং করো। অনেকের মধ্যেই ক্রোধের বিকার আছে, গালাগালি না করে থাকতে পারে না, তারপরে ঝগড়া চলতে থাকে। ক্রোধ তো খুব খারাপ। ভূত তাড়িয়ে একদম ক্লিয়ার হতে হবে। শরীরের কথা যেন স্মরণে না আসে, তবেই উঁচু পদের অধিকারী হতে পারবে। তাই ৮ রত্নের কথা প্রসিদ্ধ আছে। তোমরা জ্ঞান রত্ন প্রাপ্ত কর রত্নে পরিণত হওয়ার জন্য। বলা হয় ভারতে ৩৩ কোটি দেবতারা বাস করতেন, কিন্তু তাঁদের মধ্যে ৮ রত্ন পাস উইথ অনার হবে। তাঁদেরই পুরস্কার দেওয়া হবে। যেরকম স্কলারশিপ প্রদান করা হয়। তোমরা জানো লক্ষ্য খুব কঠিন। এই যাত্রাপথে চলাকালীন পতন হয়, ভূতের প্রবেশ ঘটে। স্বর্গে বিকার থাকে না। বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে সম্পূর্ণ ড্রামার চক্র আবর্তিত হওয়া উচিত।
তোমরা জানো ৫ হাজার বছরে কত মাস, কত ঘন্টা, কত সেকেন্ড হয়। কেউ হিসেব করলে বেরোবে। তারপরে এই বৃক্ষের যে চিত্রটি আছে, তাতেও লিখে দেবে যে কল্পে এত মাস, এত দিন, এত ঘন্টা, এত সেকেন্ড হয়। মানুষ বলবে এরা তো একেবারে সঠিক বলে দেয়। ৮৪ জন্মের হিসেব বলে দেয়। তাহলে কল্পের আয়ু কেন বলবে না !বাচ্চাদেরকে মুখ্য কথা তো বলা হয়েছে যে যেমন করে হোক ভূত তাড়াতে হবে। এই বিকার রূপী ভূতগুলি তোমাদের সম্পূর্ণ সর্বনাশ করেছে। সব মানুষ মাত্রেই ভূত অবশ্যই আছে। তাদের হয়েই থাকে ভ্রষ্টাচারের দ্বারা জন্ম। স্বর্গে ভ্রষ্টাচার হয় না। রাবণ-ই নেই। রাবণ কে, তার কথাও কেউ বোঝে না। তোমরা রাবণের উপরে জয় লাভ কর। পরে রাবণের অস্তিত্ব থাকবে না। এখন পুরুষার্থ করো। বাবা এসেছেন, তাই বাবার কাছে স্বর্গের অবিনাশী অধিকার অবশ্যই প্রাপ্ত হওয়া উচিত। তোমরা কত বার দেবতায় পরিণত হও। কত বার অসুরে পরিণত হও, তার হিসেব করতে পারবে না। অসংখ্য বার হয়েছ হয়তো। আচ্ছা, বাচ্চারা শান্তিতে থাকলে কখনও ক্রোধ আসবে না। বাবা যে শিক্ষা গুলি দেন, সেই অনুযায়ী চলা উচিত। আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণ স্নেহ ও গুডমর্নিং। আত্মাদের পিতা পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্যে মুখ্য সার :-
১. নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে হবে - আমাদের মধ্যে কোনও ভূত নেই তো ? দৃষ্টি ক্রিমিনাল হয় না তো ? জোরে কথা বলার বা অশান্তি সৃষ্টি করার সংস্কার নেই তো ? লোভ-মোহ রূপী বিকার বিরক্ত করে না তো ?
২. কোনও দেহধারীর প্রতি মোহ রাখবে না। দেহ সহ সবকিছু ভুলে স্মরণের যাত্রার দ্বারা নিজের মধ্যে আত্মিক বল (রূহানী শক্তিভরতে) হবে। এক বার ভূত তাড়িয়ে অর্ধকল্পের জন্যে মুক্তি পেতে হবে।
বরদান:-
নিরহঙ্কারিতার (নির্মাণতার) গুণ ধারণ করে সবাইকে সুখ প্রদানকারী সুখের দেবতা, সুখ স্বরূপ ভব
তোমরা মহান আত্মা, তোমাদের পরিচয় হল নম্রতা ( নিরহঙ্কারিতা) । যত নির্মাণ (নম্র) হবে ততই সর্বজনের মান প্রাপ্ত হবে। যে নির্মাণ হয় সে সবাইকে সুখ প্রদান করবে। যেখানে যাবে, যা করবে সবই সুখদায়ী হবে। অতএব সম্পর্কে যে আসুক সে যেন সুখের অনুভূতি করে তাই তোমরা ব্রাহ্মণ আত্মাদের উদ্দেশ্যে গাওয়া হয় - সুখের সাগরের সন্তান সুখ স্বরূপ, সুখের দেবতা। অতএব সবাইকে সুখ প্রদান করে, সুখ প্রাপ্ত করতে থাকো। কেউ যদি তোমাদের দুঃখ দেয়, নিও না।
স্লোগান:-
সবচেয়ে বড় জ্ঞানী সে, যে আত্ম অভিমানী থাকে ।