৩১-০৩-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ১১-০৫-৮৪ মধুবন


ব্রাহ্মণের প্রতিটি পদক্ষেপ, সঙ্কল্প এবং কর্মের মাধ্যমে বিধানের (নিয়মনীতি) নির্মাণ

বিশ্ব রচয়িতা নতুন বিশ্ব নির্মাণকারী এবং নতুন বিশ্বের ভাগ্য, তাঁর নিজের বাচ্চাদের লক্ষ্য করছেন l তোমরা সব শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান বাচ্চার ভাগ্য বিশ্বের ভবিতব্য l নতুন বিশ্বের আধার স্বরূপ শ্রেষ্ঠ আত্মা তোমরা l নতুন বিশ্বের রাজ্যভাগ্যের অধিকারী বিশেষ আত্মা তোমরা l তোমাদের নব জীবন বিশ্বের নব নির্মাণ করে l বিশ্বকে শ্রেষ্ঠাচারী সুখ-শান্তি সম্পন্ন বানাতে হবে, তোমাদের সকলের এই দৃঢ় শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্পের আঙুল দিয়ে কলিযুগী দুঃখী দুনিয়া পরিবর্তিত হয়ে সুখী দুনিয়া হয়, কারণ সর্বশক্তিমান বাবার শ্রীমৎ অনুসরণ করে তোমরা সহযোগী হয়েছ, সেইজন্য বাবার সাথে তোমাদের সকলের সহযোগ এবং শ্রেষ্ঠ যোগ বিশ্ব পরিবর্তন করেই নেয় l এই সময় তোমরা সব শ্রেষ্ঠ আত্মার সহজযোগী, রাজযোগী জীবনের প্রতিটা পদক্ষেপ, কর্ম বিধি হয়ে যায় l ব্রাহ্মণের নিয়ম সদাকালের জন্য বিধি হয়ে যায় l সুতরাং, দাতার সন্তান দাতা, বিধাতা এবং বিধি বিধাতা হয়ে যায় l আজও লাস্ট জন্ম পর্যন্ত, তোমাদের অর্থাৎ দাতার সব বাচ্চার চিত্রের থেকে ভক্তরা কিছু চাইতেই থাকে l তোমরা এমন বিধি-বিধাতা হয়ে যাও যে শপথ গ্রহণের সময় চিফ জাস্টিসও শপথ বাক্য পাঠ করানোর আগে সবাইকে ঈশ্বর বা ইষ্ট দেব-দেবীর স্বরূপ স্মরণ করিয়ে নেন l লাস্ট জন্মেও তোমরা সব বাচ্চার বিধানের (অনুশাসনের বিধির) শক্তি এখনো কাজ করছে l তারা তাদের নিজের নামে শপথ গ্রহণ করে না l তারা বাবার অথবা তোমাদেরই গুরুত্ব দেয় l তোমরাও সদা বরদানী স্বরূপ l বিভিন্ন দেবী-দেবতা তথা তোমাদের চিত্র দ্বারাই তারা বিভিন্ন বরদান চায় l কেউ শক্তির দেবতা, কেউ বিদ্যার দেবী l তোমরা বরদানী স্বরূপ হয়েছ, সেই কারণেই ভক্তির পরম্পরা শুরু থেকে এখনো চলছে l বাপদাদা দ্বারা সদা সর্বপ্রাপ্তি স্বরূপ, প্রসন্নচিত্ত তথা প্রসন্নতার প্রতিমূর্তি হয়েছ তোমরা, সেই কারণে তারা নিজেদের তৃপ্তির জন্য দেবী-দেবতাদের তুষ্ট করে এই বিশ্বাসে যে এঁরাই তাদের সদাসর্বদা প্রসন্নতা দান করবেন l বাবার থেকে সবচেয়ে বড় ঐশ্বর্য, সন্তুষ্টতা তোমরা সকলে প্রাপ্ত করেছ, সেই কারণে সদাতৃপ্ত হতে তারা সন্তোষী দেবীর পূজা করে l সন্তুষ্ট আত্মা তোমরা সকলেই সন্তোষী মা, তাই না ! সবাই সন্তোষী, নয় কি ? তোমরা সব সন্তুষ্ট আত্মা সন্তোষীমূর্তি l বাপদাদার থেকে জন্মসিদ্ধ অধিকার হিসেবে তোমরা সফলতা প্রাপ্ত করেছ এবং এই কারণে তারা তোমাদের ছবির কাছে সফলতার দান, বরদান প্রার্থণা করে l যেমনই হোক, তাদের দুর্বল বুদ্ধির কারণে, নির্বল আত্মা হওয়ার কারণে, ভিখারী আত্মা হওয়ার কারণে অল্পকালের সাফল্য কামনা করে l যেমন, ভিখারী কখনও হাজার টাকা দাও একথা বলবে না l এটুকুই বলবে, কিছু পয়সা দাও, একটা টাকা দাও বা দু'টো টাকা দাও l একইভাবে, যে আত্মারা সুখ-শান্তি, পবিত্রতার ভিখারী তারা অল্পকালের জন্য সফলতা কামনা করবে l ব্যস্! আমার এই কাজটা যেন হয়ে যায়, এটা যেন সফল হয় l যতই হোক, তারা তো চায় তোমরা সব সফলতাস্বরূপ আত্মাদের থেকেই l তোমরা দিলারাম বাবার বাচ্চারা দিলদরিয়া বাবাকে সবাই তোমাদের হৃদয়ের সবকিছু বলো, হৃদয়ের কথা বলো l যা কোনো আত্মার সাথে করতে পারো না সেটাই বাবার সাথে করো l তোমরাই সত্য বাবার প্রকৃত বাচ্চা হয়ে ওঠো l এখনও তোমাদের ছবির সামনে তারা তাদের হৃদয়ের গতিবিধি জানাতে থাকে l গোপনীয় যা কিছু তারা লুকাতে চায়, তারা তাদের স্নেহী আত্মীয়-পরিজনের থেকেও গোপন রাখবে, কিন্তু দেবী-দেবতাদের কাছে গোপন করবে না l দুনিয়ার সামনে দাঁড়িয়ে বলবে, আমি এই, আমি সৎ, আমি মহান, কিন্তু দেবতার সামনে কি বলবে ? আমি যা, এই আমিই সেই l আমি কামাধীন, প্রবঞ্চকও l অতএব, তোমরা এইরকম নতুন বিশ্বের ভাগ্যবান l তোমাদের সবার ভাগ্যে নতুন বিশ্বের রাজ্যভাগ্য আছে l



তোমরা এমনই বরদাতা, বিধি-বিধাতা সর্বশ্রেষ্ঠ আত্মা l তোমাদের প্রত্যেকের শ্রেষ্ঠমত রূপী হাতে স্বর্গের স্বরাজ্যের গোলা আছে l এটাই মাখন l রাজ্য ভাগ্যের মাখন l প্রত্যেকের ললাটে পবিত্রতার মহত্ত্বের লাইটের ক্রাউন l তোমরা হৃদয় সিংহাসনে বসে আছ l স্বরাজ্যের তিলকধারী তোমরা l সুতরাং বুঝেছ তুমি কে ? "আমি কে" এই ধাঁধার সমাধান করতে এসেছ, তাই না? প্রথদিনের পাঠে এটাই পড়েছিলে, নয় কি ? আমি কে ? আমি এটা নই, আমি এটা (বিন্দুরূপ) l এতেই জ্ঞান সাগরের সারা জ্ঞান সমাহিত l সবকিছু জেনে গেছ, তাই না ! এই আত্মিক (রূহানী) নেশা যেন সদা সাথে থাকে l তোমরা এতই শ্রেষ্ঠ আত্মা, এতই মহান l তোমাদের প্রতিটা কদম, সঙ্কল্প, কর্ম স্মৃতিচিহ্ন হয়ে যাচ্ছে, নিয়মনীতি তৈরি হচ্ছে l সবকিছু এই শ্রেষ্ঠ স্মৃতিতে করো l বুঝেছ তোমরা ? সমগ্র বিশ্বের নজর তোমাদের দিকে l যা কিছু আমি করবো তা'ই বিশ্বের জন্য বিধান আর স্মারকচিহ্ন হবে l আমি দোলাচলে থাকলে দুনিয়াও সংশয়াপন্ন হবে l আমি সন্তুষ্ট, প্রসন্ন থাকলে, তবে দুনিয়াও সন্তুষ্ট আর প্রসন্ন হবে l নব বিশ্বের নির্মাণের জন্য নিমিত্ত সব আত্মাদের এতটাই দায়িত্ব l কিন্তু, দায়িত্ব যতবড় ততই হালকা, কেননা সর্বশক্তিমান বাবা তোমাদের সাথে আছেন l আচ্ছা !



এইরকম প্রসন্নচিত্ত আত্মাদের, যারা সদা মাস্টার বিধাতা, বরদাতা বাচ্চাদের, সদা সর্বপ্রাপ্তি স্বরূপ সন্তুষ্ট আত্মাদের, সদা স্মরণের মাধ্যমে সকল কর্মের স্মারকচিহ্ন বানায়, এমন পূজ্য মহান আত্মাদের বরদাতা বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l



*কুমারদের বিভিন্ন গ্রুপের সাথে বাপদাদার সাক্ষাৎকার*

১) তোমরা সবাই শ্রেষ্ঠ কুমার, তাই না ? সাধারণ কুমার নও, শ্রেষ্ঠ কুমার l শারীরিক শক্তি, মানসিক শক্তি সব শ্রেষ্ঠ কার্যে প্রয়োগ করো l কোনও শক্তি বিনাশী কার্যে ব্যবহার করো না l বিকারী কার্য হলো বিনাশকারী আর শ্রেষ্ঠ কার্য হলো ঈশ্বরীয় কার্য l সুতরাং সর্বশক্তি ঈশ্বরীয় কার্যে প্রযুক্তকারী শ্রেষ্ঠ কুমার তোমরা l কোথাও কোনো ব্যর্থ কার্যে তোমাদের শক্তি ব্যয় করো না তো ? এখন নিজের শক্তি কোথায় প্রয়োগ করতে হবে,সেই বোধশক্তি তোমরা লাভ করেছ l এই বোধবুদ্ধি দ্বারা সদা শ্রেষ্ঠ কার্য করো l এমন শ্রেষ্ঠ কার্যে যারা সদা যুক্ত থাকে তারা শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তির অধিকারী হয়ে যায় l এইরকম অধিকারী হয়েছ তোমরা ? শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি হচ্ছে, এমন অনুভব হয় তোমাদের ? নাকি সেগুলো এখনো তোমাদের প্রাপ্ত করতে হবে ? প্রতি পদে লক্ষ-কোটি উপার্জন জমা হচ্ছে, এমন অনুভব হয়, তাই না ? যার এক পদক্ষেপে লক্ষ-কোটি উপার্জন জমা হয় সে কত শ্রেষ্ঠ ! যার এত সম্পত্তি জমা হয় সে কত খুশি হবে ! আজকালকার লাখপতি, কোটিপতিরও স্বল্পকালীন বিনাশী খুশি থাকে, সেখানে তোমাদের তো অবিনাশী প্রপার্টি l শ্রেষ্ঠ কুমারের পরিভাষা বুঝতে পারো তোমরা ? এর অর্থ, যারা সর্বশক্তি শ্রেষ্ঠ কার্যের জন্য সদা ব্যবহার করে l তোমাদের ব্যর্থের খাতা সর্বদার জন্য সমাপ্ত হয়েছে, শ্রেষ্ঠ খাতা জমা হয়েছে নাকি একইসঙ্গে উভয় খাতা চলে ? একটা হিসেব শেষ হয়েছে l এখন দুটোই চালানোর সময় নয় l এখন ব্যর্থের খাতা সদাসর্বদার জন্য সমাপ্ত l দু'টো থাকলে যতটা জমা হওয়া উচিৎ ততটা হবে না l যদি নষ্ট না করে জমা করো, তবে তোমাদের কতো জমা হবে ! সুতরাং ব্যর্থ খাতার সমাপ্তি, আর সমর্থ খাতায় পুঞ্জীভূত l



২) কুমার জীবন শক্তিশালী জীবন l কুমার জীবনে যেমন চাও তা' করতে পারো l ইচ্ছে হলে তুমি নিজেকে শ্রেষ্ঠ বানাতে পারো, ইচ্ছে হলে নিজেকে নিচেও নামাতে পারো l এই কুমার জীবনই হয় উঁচু নয়তো নিচু হয় l এমন জীবনেই তোমরা বাবার হয়েছ l বিনাশী জীবনসাথীর কর্মবন্ধনে বাঁধা হওয়ার পরিবর্তে তোমরা প্রকৃত জীবনসাথী খুঁজে পেয়েছ l কত ভাগ্যবান তোমরা ! এখন যে এসেছ তা'কি একলা এসেছ নাকি কম্বাইন্ড হয়ে এসেছ? (কম্বাইন্ড) টিকিটের জন্য অর্থ ব্যয় করনি তো ? সুতরাং এটাও সাশ্রয় হয়ে গেল l কার্যতঃ, যদি স্থূল সাথীকে আনতে তবে টিকিটের জন্য খরচ করতে হতো, তোমাকে তার লটবহরও বইতে হতো আর রোজগার করে রোজ খাওয়াতেও হতো l এই সাথী তো খানই না, শুধু সুবাস নেন l তোমার রুটি (খাবার) কম হয় না, বরং বাস্তবে আরও শক্তিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায় l সুতরাং তোমাদের সাথী কোনরকম খরচ বা পরিশ্রমে তোমাদের ভারাক্রান্ত করেন না এবংতিনি সাথীও অবিনাশী l তোমরা তাঁর থেকে সম্পূৰ্ণ সহযোগ লাভ করো l তিনি কঠোর পরিশ্রম করতে দেন না, বরং তোমাদের সহযোগ দেন l যখন কোনো কঠিন কার্য তোমাদের সামনে উপস্থিত হয়, তোমরা তাঁকে স্মরণ করো আর তাঁর থেকে সহায়তা লাভ করো l তোমরা এটা অনুভব করেছ, তাই না ? যখন তিনি ভক্তদের তাদের ভক্তির ফল দেন, তখন যারা তাঁর জীবন সাথী হয়েছে তাদের সহায় হবেন না ? কুমাররা কম্বাইন্ড হয়েছে, আর এই কম্বাইন্ড রূপে নিশ্চিন্ত বাদশাহ হয়ে গেছে l কোনরকম ঝঞ্ঝাট নেই, নিশ্চিন্ত l আজ বাচ্চার জ্বর হয়েছে, আজ বাচ্চা স্কুলে যায়নি - এই ধরনের বন্ধন থেকে সবসময় তোমরা মুক্ত, নির্বন্ধন l এঁকের বন্ধনে বাঁধা হওয়ায় অনেক বন্ধন থেকে তোমরা নিস্তার পেয়েছ l ভোজনপান করো আর উৎফুল্ল হও, আর কি কাজ ! নিজের হাতে বানাবে আর খাবে, যা চাও তাই খেতে পারো l তোমরা আত্মনির্ভর l কতো শ্রেষ্ঠ হয়েছ তোমরা ! দুনিয়ার বাকিদের তুলনাতেও তোমরা ভালো l বুঝতে পারো তো যে দুনিয়ার জটিলতা থেকে তোমরা রেহাই পেয়েছ ? আত্মার ব্যাপার থাক,শরীরের কর্মবন্ধনের হিসেবেও তোমরা পরিত্রাণ পেয়েছ l এতটাই সেফ (নিরাপদ) তোমরা l কোনো জ্ঞানী সঙ্গী পাওয়ার ইচ্ছা তো তোমাদের হয় না, তাই না ? কোনো কুমারীর কল্যাণ করার ইচ্ছা মনে জাগে? এটা কল্যাণ নয়, অকল্যাণ ! কেন? তোমরা একটা বন্ধন বাঁধলে তা' থেকে অনেক বন্ধন শুরু হয়ে যায় l এই একটা বন্ধনই তখন অনেক বন্ধনের জন্ম দেয়, এইজন্য তোমরা সহায়তা পাও না l এটা বোঝা হয়ে যায় l আপাতদৃষ্টিতে সাহায্য মনে হতে পারে, কিন্তু বাস্তবে অনেক বিষয়ের বোঝা l যতটা মনে করো ততটাই এর ভার l সুতরাং অনেক চাপ থেকে রেহাই পেয়েছ l কখনো স্বপ্নেও এই ব্যাপারে ভেবনা l নয়তো, এমন ভার অনুভব করবে যাতে জেগে ওঠাই কঠিন হবে l আত্মনির্ভর হয়েও যদি বন্ধনে বেঁধে যাও, তবে লক্ষ-কোটি বোঝা হয়ে যাবে l সেই বেচারীরা সকলে অজান্তে বাঁধা হয়ে গেছে, সেক্ষেত্রে তোমরা জেনেবুঝে বন্ধনে বাঁধলে তবে অনুশোচনার ভার থাকবে l তোমরা কেউ অপরিপক্ক তো নও, তাই না ? যারা অপরিপক্ক হয় তারা মুক্তির অনুভব করতে পারে না অর্থাৎ গতি প্রাপ্ত হয় না l তারা না হয় এখানের, না হয় ওখানের l তোমাদের সদগতি প্রাপ্ত হয়েছে, নয় কি ? সদগতি অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ গতি l সামান্য সঙ্কল্পও কি থাকে তোমাদের ? ফটো তোলা হচ্ছে l তোমরা সামান্যতম দ্বিধাগ্রস্ত হলেও কিন্তু তোমাদের ফটো তোলা হবে l তোমরা যত পরিপক্ক হও সেই অনুপাতে তোমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ শ্রেষ্ঠ হয় l



৩) সবাই তোমরা সমর্থ কুমার, তাই না ? তোমরা সমর্থ ? সদা সমর্থ আত্মা যে সঙ্কল্পই করবে, যে শব্দ বলবে, যে কর্ম করবে সেইসবই যথাযোগ্য হবে l সমর্থের অর্থই হলো যারা সমস্ত ব্যর্থ সমাপ্ত করে l তোমরা ব্যর্থের খাতা সমাপ্ত করো আর তোমাদের উপযুক্ত খাতায় জমা করো l যদি ব্যর্থ সঙ্কল্প বা ব্যর্থ বোল অথবা ব্যর্থ সময়ে এক সেকেন্ডও চলে যায় তবে কত ক্ষতি করবে ! কখনো কোনরকম ব্যর্থ তোমাদের থাকে না, তাই না ? সঙ্গমযুগে এক সেকেন্ডও কতো গুরুত্বপূর্ণ!

এটা এক সেকেন্ড নয়, বরং এক সেকেন্ড এক জন্মের সমান l তোমরা এক সেকেন্ড হারাও না, এক জন্ম বিনষ্ট হয় l যারা এই সময়ের মহত্ত্ব জানে, তোমরা সেই সমর্থ আত্মা, তাই না ! সদা এই স্মৃতি যেন বজায় থাকে যে তোমরা সমর্থ বাবার বাচ্চা, সমর্থ আত্মা l সমর্থ কার্যের নিমিত্ত l আর তখন তোমরা সদা উড়তি কলার অনুভব করতে থাকবে l যারা দুর্বল তারা উড়তে পারে না l সমর্থ সদা উড়তে থাকবে l সুতরাং কোন কলায় (স্থিতিতে) আছ তোমরা ? উড়তি কলা নাকি উত্তরণের কলা ? উত্তরণে তোমাদের শ্বাস রুদ্ধ হয় l তোমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ো, শ্বাসও কম হয়ে যায় l যেমনই হোক, উড়তি কলায় তোমরা লক্ষ্যে পৌছাও আর সেকেন্ডে সফলতার প্রতিমূর্তি হয়ে ওঠো l যদি তোমরা উত্তরণের কলায় থাকো, তবে অবশ্যই ক্লান্ত হবে, শ্বাসও রুদ্ধ হবে l "কি করবো, কিভাবে করবো" - এই বলাই রুদ্ধশ্বাস হওয়া l উড়তি কলায় তোমরা সেইসবের ঊর্ধ্বে উঠে যাও l কিছু করার জন্য এই টাচিং লাভ করো যে এটা আগে থেকেই সম্পন্ন হয়ে আছে l সুতরাং সেকেন্ডে সাফল্যের লক্ষ্য প্রাপ্ত করো, একেই বলা হয় সমর্থ আত্মা l বাবা উৎফুল্ল হন যে তোমরা সব বাচ্চারা উড়তি কলায় আছ, পরিশ্রম কেন করবে ? বাবা বলবেন, তাঁর বাচ্চারা পরিশ্রম করা থেকে নিস্তার পাক l যখন বাবা রাস্তা দেখাচ্ছেন, তোমাদের ডবল লাইট তৈরি করছেন, তাহলে তোমরা কেন নিচে আসছ ? কি হবে, কিভাবে হবে ? -এটা একটা বোঝা (burden) l সদা কল্যাণ হবে, সবকিছু সদা শ্রেষ্ঠ হবে, সবসময় এই স্মৃতির সাথে চলো যে সফলতা তোমাদের জন্মসিদ্ধ অধিকার l



৪) টেস্ট পেপার দিতে কুমারদের যুদ্ধ করতে হয় l যখন সঙ্কল্প করো পবিত্র হতে হবে, মায়া তোমার সাথে যুদ্ধ শুরু করে দেয় l কুমার জীবন শ্রেষ্ঠ জীবন l তোমরা সব মহান আত্মা l কুমারদের এখন চমৎকার করে দেখাতে হবে l সবচেয়ে বড় চমৎকার বাবার সমান হয়ে অন্যদের বাবার সাথী বানানো l যেমন তোমরা বাবার সাথী হয়েছ সেইরকম অন্যদেরও সাথী বানাতে হবে l এমন সেবাধারী যারা মায়ার সাথীদের বাবার বানায় l নিজের বরদানী স্বরূপ দ্বারা শুভ ভাবনা এবং শুভ কামনা প্রদান করে বাবার বানাতে হবে l এই বিধি দ্বারা সদা সিদ্ধিপ্রাপ্ত হতে হবে l যেখানে শ্রেষ্ঠ বিধি সেখানে সিদ্ধি অবশ্যই আছে l কুমার অর্থাৎ সদা অচল l অচল আত্মারা অন্যকেও অচল বানায় l



৫) সবাই তোমরা বিজয়ী কুমার, তাই না ? যখন বাবা তোমাদের সাথে আছেন, তোমরা সদা বিজয়ী l সদা বাবার সহায়তায় যেকোন কার্য করলে, তোমাদের পরিশ্রম কম আর প্রাপ্তি বেশি হবে l বাবার থেকে সামান্য সরে গেলে, পরিশ্রম বেশি আর প্রাপ্তি কম l সুতরাং পরিশ্রম থেকে নিস্তার পাওয়ার সাধন, প্রতিটা সেকেন্ড প্রতিটা সঙ্কল্পে সদা বাবার সাহচর্য l এই সাহচর্যেই সফলতা আগে থেকেই হয়ে আছে l এইরকম বাবার তোমরা সাথী, নয় কি ? বাবার আজ্ঞা অনুসারে তোমাদের পদক্ষেপণ হতে দাও l বাবার কদমে কদম মিলিয়ে চলতে হবে l এখানে পা রাখবে কি রাখবে না, এই ভাবনা রাইট নাকি রং (ভুল ) ? এমন ভাবনারও প্রয়োজন নেই l নতুন কোন রাস্তা থাকলে ভাবতে হবে l কিন্তু যখন তাঁর কদমে কদম মিলিয়ে চলতে হবে, সেখানে কোনকিছু ভাবার প্রয়োজন নেই l সদা বাবার কদমে কদম মিলিয়ে চলো তো লক্ষ্য সামনেই আছে l বাবা কতো সহজ করে দেন- শ্রীমৎই কদম l শ্রীমতের কদমে কদম রাখলে পরিশ্রম থেকে সদা রেহাই পেয়ে যাবে l সকল সাফল্য তোমরা অধিকার রূপে লাভ করবে l ছোট কুমাররাও অনেক সেবা করতে পারে l অনর্থ হয় এমন কোনো কার্য কখনও ক'রনা, তোমাদের চলন-বলন, আচার-আচরণ এমন হতে হবে যাতে সবাই জিজ্ঞাসা করে তোমরা কোন স্কুলে পড়তে যাও ! সুতরাং সেবা তো হয়েই যাবে, তাই না ! আচ্ছা !

বরদান:-

শ্রীমতের লাগাম টাইট করে মনকে নিয়ন্ত্রণ করে বালক তথা মালিক ভব

দুনিয়ার লোকে বলে, মন হলো অতি দ্রুতগামী অশ্বের মতো, কিন্তু তোমাদের মন এদিকে ওদিকে দৌড়ে বেড়াতে পারে না, কারণ শ্রীমতের লাগাম খুব মজবুত l যখন মন-বুদ্ধি সাইডসীন দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন লাগাম আলগা হয়ে যাওয়ায় মন চঞ্চল হয়ে ওঠে, সেইজন্য যখনই কোন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়, মন চঞ্চল হয় তখন শ্রীমতের লাগাম টাইট করে নিলে তোমার লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে l *আমি বালক তথা মালিক* - এই স্মৃতির সাথে অধিকারী হয়ে মনকে নিজের বশে রাখো l

স্লোগান:-

সদা নিশ্চয় থাকতে হবে যে যা হচ্ছে ভালো, আর যা হবে তা' আরও ভালো, তবেই অটল অনড় থাকবে l