২৯-০৪-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা -- বাবাকে ভালোবেসে স্মরণ করো তাহলে তোমরা সম্পন্ন হয়ে যাবে, দৃষ্টি দ্বারা সম্পন্ন হওয়ার অর্থ হল বিশ্বের মালিক হওয়া "

প্রশ্ন:-

দৃষ্টি দ্বারা সম্পন্ন করলেন স্বামী সদগুরু .... এই কথাটির বাস্তবিক অর্থ কি ?

উত্তর:-

আত্মা যখন বাবার দ্বারা জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র প্রাপ্ত করে এবং সেই চোখ দিয়ে বাবাকে চিনতে পারে তখন সে সম্পন্ন হয়ে যায় অর্থাৎ সদগতি লাভ করে। বাবা বলেন - বাচ্চারা, দেহী-অভিমানী হয়ে তোমরা আমার দৃষ্টিতে একনিষ্ঠ হও অর্থাৎ আমাকে স্মরণ করো, অন্য সব সঙ্গ ত্যাগ করে এক আমার সঙ্গে যুক্ত হও তাহলে দুরবস্থা বা কাঙাল স্থিতি থেকে সম্পন্ন বা ধনী হয়ে যাবে ।

ওম্ শান্তি ।

মিষ্টি মিষ্টি আত্মা রূপী (রূহানী) বাচ্চারা কার কাছে আসে ? আত্মার পিতা (রূহানী পিতা) পরমাত্মার কাছে। তোমরা বুঝতে পারো আমরা শিববাবার কাছে যাই। এই কথাও জানো শিববাবা হলেন সর্ব আত্মার পিতা। এই কথাতেও বাচ্চাদের দৃঢ় বিশ্বাস থাকা চাই যে সুপ্রিম টিচারও হলেন তিনি, সুপ্রিম গুরুও হলেন তিনি । সুপ্রিম অর্থাৎ পরম। ওই এক-কেই স্মরণ করতে হবে। দৃষ্টি দ্বারা দৃষ্টির মিলন হয়। বলা হয়ে থাকে - দৃষ্টি দ্বারা সম্পন্ন করেন স্বামী সদগুরু। তার কোনো অর্থ তো থাকা চাই। দৃষ্টি দ্বারা সম্পন্ন করা হয় কাদের ? অবশ্যই সম্পূর্ণ দুনিয়ার জন্যে বলা হবে, কারণ সকলের সদগতি দাতা হলেন তিনি। সকলকে এই পতিত দুনিয়া থেকে নিয়ে যান উনি। এবারে দৃষ্টিটি কার ? এই চোখ দুটি কি ? না , জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র যা প্রাপ্ত হয়। যার দ্বারা আত্মা জানতে পারে ইনি হলেন সকল আত্মাদের পিতা। বাবা আত্মাদের পরামর্শ দেন যে আমাকে স্মরণ করো। বাবা আত্মাদের বোঝান। আত্মারা-ই পতিত তমোপ্রধান হয়েছে। এখন এই হল তোমাদের ৮৪-তম জন্ম, এই নাটকটি পূর্ণ হয়েছে। পূর্ণ তো অবশ্যই হতে হবে। প্রতিটি কল্প পুরানো দুনিয়া থেকে নতুন দুনিয়ায় পরিণত হয়। নতুন দুনিয়া আবার পুরানো হয়। নামও আলাদা থাকে। নতুন দুনিয়ার নাম হল সত্যযুগ। বাবা বুঝিয়েছেন তোমরা প্ৰথমে সত্যযুগে ছিলে, তারপরে পুনর্জন্ম নিয়ে ৮৪ জন্ম পার করেছ। এখন তোমাদের আত্মা তমোপ্রধান হয়েছে। বাবাকে স্মরণ করলে সম্পন্ন হয়ে যাবে। বাবা সামনে থেকে বলেন আমাকে স্মরণ করো, আমি কে? পরমপিতা পরমাত্মা। বাবা বলেন - বাচ্চারা, দেহী-অভিমানী হও, দেহ-অভিমানী হয়ো না। আত্ম-অভিমানী হয়ে তোমরা আমার সঙ্গে দৃষ্টি মিলন করো তাহলে তোমরা সম্পন্ন হয়ে যাবে। বাবাকে স্মরণ করতে থাকো, এতে কোনও কষ্ট নেই। আত্মা-ই পড়া করে, পার্ট প্লে করে। খুব সূক্ষ্ম। যখন এখানে আসে তখন ৮৪ জন্মের পার্ট প্লে করে। সেই পার্ট আবার রিপিট করতে হয়। ৮৪ জন্মের পার্ট প্লে করে আত্মা পতিত হয়েছে। এখন আত্মার শক্তি কমেছে। এখন আত্মা সম্পন্ন নয়, কাঙাল হয়েছে। তাহলে আবার সম্পন্ন হবে কিভাবে ? এই শব্দটি হল ভক্তিমার্গের, যার সম্বন্ধে বাবা বোঝান। বেদ, শাস্ত্র, চিত্র ইত্যাদি বিষয়েও বোঝান। তোমরা এইসব চিত্র শ্রীমৎ অনুসারে তৈরি করেছ। অসুরী মতানুসারে অনেক অনেক চিত্র আছে। সেসব হল মাটির পাথরের। তার কোনো অক্যুপেশান নেই। এখানে তো বাবা এসে বাচ্চাদের পড়ান। ভগবানুবাচ বলা হয় অর্থাৎ এইসব হল তাঁরই নলেজ । স্টুডেন্ট জানে ইনি অমুক টিচার। এখানে তোমরা বাচ্চারা জানো যে অসীম জগতের (বেহদের) বাবা একবার-ই এসে এমন ওয়ান্ডারফুল পাঠ পড়ান। এই আত্মিক পড়াশোনা এবং ঐ দৈহিক পড়াশোনার মধ্যে রাত-দিনের তফাৎ আছে। ঐ পড়া পড়তে পড়তে রাত হয়, এই পড়া পড়লে দিন আসে। ঐ পড়া তো জন্ম জন্মান্তর পড়েছ। এইখানে বাবা স্পষ্ট বলেন যে আত্মা যখন পবিত্র হবে তখন ধারণা হবে। বলা হয় বাঘিনীর দুধ সোনার পাত্রে রাখা যায়। তোমরা বাচ্চারা বুঝেছ, আমরা এখন সোনার পাত্রে পরিণত হচ্ছি। থাকব তো মানুষ কিন্তু আত্মাকে সম্পূর্ণ পবিত্র হতে হবে। ২৪ ক্যারেট ছিল এখন ৯ ক্যারেট হয়ে গেছে। আত্মার জ্যোতি যে প্রজ্বলিত ছিল এখন নিভু নিভু অবস্থায় পৌঁছেছে। জাগ্রত জ্যোতি এবং ম্লান জ্যোতি মানুষের মধ্যেও তফাৎ আছে। জ্যোতি জাগ্রত হল কিভাবে এবং কিভাবে পদমর্যাদা প্রাপ্ত হল - সব কথা বাবা এসে বোঝান। বাবা বলেন আমাকে স্মরণ করো। যারা আমাকে ভালো ভাবে স্মরণ করবে আমিও তাদের ভালো করে স্মরণ করব। এই কথাও বাচ্চারা জানে যে দৃষ্টি দ্বারা সম্পন্ন করেন একমাত্র বাবা হলেন স্বামী। ব্রহ্মার আত্মাও সম্পন্ন হয়। তোমরা সবাই হলে বহ্নি পতঙ্গ, পরমাত্মাকে অগ্নি শিখা বলা হয়। কোনও পতঙ্গ শুধুমাত্র পরিক্রম করতে আসে। কেউ বাবাকে ভালো ভাবে চিনতে পারে এবং জীবন্মৃত (জীবিত অবস্থায় মৃত স্বরূপ) হয়ে যায়। কেউ পরিক্রমা করে ফিরে যায়, মাঝে মধ্যে আসে ও চলে যায়। এই সঙ্গমের-ই সম্পূর্ণ গায়ন আছে। এই সময় যা কিছু চলে তারই শাস্ত্র তৈরি হয়। বাবা একবার এসে স্বর্গের অধিকার (বর্সা) প্রদান করে চলে যান। অসীম জগতের পিতা অবশ্যই অসীমের বর্সা অর্থাৎ স্বর্গের উত্তরাধিকার দেবেন। গায়নও আছে ২১ জন্ম। সত্যযুগে কে বর্সা প্রদান করেন ? ভগবান রচয়িতা নিজেই অর্ধকল্পের জন্যে বর্সা প্রদান করেন রচনা-কে। স্মরণও সবাই তাঁকেই করে। তিনি-ই হলেন পিতা, টিচার, স্বামী ও সদগুরু। তোমরা যদিও অন্যকে স্বামী সদগুরু বলে সম্বোধন কর। কিন্তু সত্য পিতা হলেন একজন-ই। বাবাকে সর্বদা সত্য বা ট্রুথ বলা হয়। তিনি এসে কোন ট্রুথ করেন ? তিনি-ই পুরানো দুনিয়াকে সত্যখণ্ডে পরিণত করেন। সত্যখণ্ডের জন্যে আমরা পুরুষার্থ করছি। যখন সত্যখন্ড ছিল অন্য সব খন্ড গুলি ছিল না। এইসব পরবর্তীকালে আসে। সত্য খণ্ডের কথা কারো জানা নেই। বাকি যে খন্ড গুলি এখন রয়েছে সেসবের কথা তো সবাই জানে। নিজের ধর্ম স্থাপক কে জানে। বাকি সূর্যবংশী, চন্দ্রবংশী এবং এই সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণ কুলের কথা কেউ জানে না। প্রজাপিতা ব্রহ্মাকে বিশ্বাস করে, তারা বলে আমরা ব্রাহ্মণ ব্রহ্মার সন্তান, কিন্তু তারা হল কুখ বংশী (গর্ভের দ্বারা জন্ম লাভ হয়), তোমরা হলে মুখ বংশী। তারা হল অপবিত্র, তোমরা হলে মুখ বংশী পবিত্র। তোমরা মুখ বংশী হয়ে পুনরায় ছিঃ ছিঃ দুনিয়ায় রাবণ রাজ্যে চলে যাও। সেখানে রাবণ রাজ্য হয় না। এখন তোমরা চল নতুন দুনিয়ায়। তাকে বলা হয় ভাইসলেস ওয়ার্ল্ড। ওয়ার্ল্ড -ই নতুন পুরানো হয়। কিভাবে হয় সে কথা তোমরা জেনেছ। অন্য কারো বুদ্ধিতে নেই। লক্ষ বছরের কথা কেউ জানতেও পারে না। এইটি তো অল্প সময়ের কথা। এইসব কথা বাবা বসে বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন।



বাবা বলেন আমি আসি তখন যখন বিশেষ করে ভারতে ধর্মের গ্লানি হয়। অন্য স্থানে কেউ জানে না যে নিরাকার পরমাত্মা কি বস্তু। বিশাল লিঙ্গ তৈরি করে রেখেছে। বাচ্চাদের বোঝানো হয়েছে - আত্মার সাইজ কখনও ছোট-বড় হয় না। যেমন আত্মা অবিনাশী, তেমনই বাবাও হলেন অবিনাশী। তিনি হলেন সুপ্রিম আত্মা। সুপ্রিম অর্থাৎ সর্বদা পবিত্র এবং নির্বিকারী। তোমরা আত্মারাও নির্বিকারী ছিলে, দুনিয়াও নির্বিকারী ছিল। সেই স্থানকে বলা হয় সম্পূর্ণ নির্বিকারী, নতুন দুনিয়া যা অবশ্যই পুরানো হয়। কোয়ালিটি কম হয়ে যায়। দুই কলা বা কোয়ালিটি কম হয়ে চন্দ্রবংশী রাজ্য ছিল তারপরে দুনিয়া আরও পুরানো হতে থাকে। পরে অনেক খন্ড আসে। তাদের বলা হয় বাইপ্লট, কিন্তু মিক্স হয়ে যায়। ড্রামা প্ল্যান অনুযায়ী যা কিছু হয় সব আবার রিপিট হবে। যেমন বৌদ্ধ ধর্মের কোনো বিশিষ্ট জন এসে অনেককে বৌদ্ধ ধর্মে নিয়ে যায়। ধর্ম পরিবর্তন করিয়ে দিল। হিন্দুরা নিজের ধর্ম নিজেরাই বদলেছে, কারণ কর্ম ভ্রষ্ট হওয়ার দরুন ধর্ম ভ্রষ্টও হয়েছে। বাম মার্গে চলে গেছে। জগন্নাথের মন্দিরও গিয়েছে হয়তো, কিন্তু কারো কোনো চিন্তন চলে না। নিজেরা বিকারী, তাই তাঁদেরও বিকারী দেখিয়েছে। এই কথা বুঝতে পারেনি যে দেবতারা যখন বাম-মার্গে গেছে, তখন এমন বিকারী হয়েছে। সেই সময়েরই এই চিত্র। দেবতা নাম তো খুব ভালো। হিন্দু তো হিন্দুস্তানের নাম। তারপরে নিজেদেরকে হিন্দু বলেছে। কতখানি ভুল হয়েছে তাই বাবা বলেন "যদা যদা হি ধর্মস্যঃ ....." বাবা ভারতে আসেন। এমন তো বলেন না - আমি হিন্দুস্তানে আসি। এই হল ভারত, হিন্দুস্তান বা হিন্দু ধর্ম নেই। মুসলমানরা হিন্দুস্তান নাম রেখেছে। এও ড্রামাতে নির্দিষ্ট আছে। ভালো রীতি বোঝা উচিত। এও নলেজ। পুনর্জন্ম নিতে নিতে বাম মার্গে এসে ভ্রষ্টাচারী হয়, তারপরে দেবতাদের সামনে গিয়ে বলে, আপনি হলেন সম্পূর্ণ নির্বিকারী। আমরা হলাম বিকারী পাপী অন্য কোনও খণ্ডের মানুষ এমন বলবে না। আমরা নীচু অথবা আমাদের কোনও গুণ নেই। কেউ এমন বলছে তোমরা শোনো নি হয়তো। সিক্খ জনেরা গ্রন্থের সামনে বসে কিন্তু কখনও এমন বলে না যে নানক , তুমি নির্বিকারী, আমরা বিকারী। গুরু নানকের অনুগামীরা কঙ্কন (লৌহ বালা) ধারণ করে, সেইটি হল নির্বিকারী হওয়ার চিহ্ন। কিন্তু বিকার ছাড়া থাকতে পারে না। মিথ্যা চিহ্ন গুলি রেখেছে। যেমন হিন্দু মানুষ পৈতা ধারণ করে, সেইটি হল পবিত্রতার চিহ্ন। আজকাল তো ধর্মকে কেউ বিশ্বাস করে না। এই সময় ভক্তিমার্গ চলছে। যাকে বলা হয় ভক্তি কাল্ট। জ্ঞান কাল্ট হল সত্যযুগে। সত্যযুগে দেবতারা হলেন সম্পূর্ণ নির্বিকারী। কলিযুগে সম্পূর্ণ নির্বিকারী কেউ হতে পারে না। প্রবৃত্তি মার্গের স্থাপনা তো বাবা-ই করেন। বাকিরা সবাই গুরু নিবৃত্তি মার্গের অর্থাৎ সন্ন্যাস ধর্মের, বাবার চেয়ে গুরুদের জোর বেশি হয়েছে। বাবা বলেন এইসব যা কিছু তোমরা পড়েছ , সেসবের দ্বারা আমাকে প্রাপ্ত করা সম্ভব নয়। আমি যখন আসি, তখন সবাইকে দৃষ্টি দ্বারা সম্পন্ন করি। গায়নও আছে দৃষ্টি দ্বারা সম্পন্ন করেন স্বামী সদগুরু .... তোমরা এখানে কেন এসেছ ? সম্পন্ন হতে। বিশ্বের মালিক হতে। বাবাকে স্মরণ করো তাহলে সম্পন্ন হয়ে যাবে। কেউ কখনও বলবে না যে এমন করলে তোমরা এমন হয়ে যাবে। বাবা-ই বলেন তোমাদের এইরূপ (দেবতা স্বরূপ) হতে হবে। তাঁরা লক্ষ্মী-নারায়ণ কিভাবে হয়েছেন ? কেউ জানে না। বাচ্চারা, বাবা তোমাদের সবকিছু বলেন, ব্রহ্মাবাবা ৮৪ জন্ম নিয়ে পতিত হয়েছেন তারপরে আমি তোমাদের দেবতায় পরিণত করতে আসি।



বাবা নিজের পরিচয় দেন এবং দৃষ্টি দ্বারা সম্পন্নও করেন। এই কথা কার উদ্দেশ্যে বলা হয় ? এক সদগুরুর উদ্দেশ্যে। ঐ গুরুদের তো সংখ্যা অনেক এবং মাতারা হলেন অবলা, অবোধ। তোমরা সবাই হলে ভোলানাথের সন্তান। শঙ্করের উদ্দেশ্যে বলা হয় চোখ খুলতেই বিনাশ হয়। এও তো একপ্রকার পাপ কর্ম । বাবা কখনও এমন কাজের জন্য ডাইরেক্সন দেন না। বিনাশ তো অন্য কিছু দিয়ে হবে তাইনা। বাবা এমন ডাইরেক্সন দেন না। এইসব তো বিজ্ঞানের আবিষ্কার, বুঝতে পারে আমরা নিজের কুলের নিজেরাই বিনাশ করি। তারাও ড্রামার বন্ধনে আবদ্ধ। ত্যাগ করতে পারবে না। নাম বিখ্যাত হয়। চাঁদে যায় কিন্তু কোনও লাভ হয় না।



মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরাও বাবার সঙ্গে দৃষ্টি মিলন করো অথবা হে আত্মা, নিজের পিতাকে স্মরণ করো তাহলে সম্পন্ন হয়ে যাবে। বাবা বলেন - যারা আমায় স্মরণ করে, আমিও তাদের স্মরণ করি। যারা আমার জন্যে সার্ভিস করে, আমিও তাদের স্মরণ করি, ফলে তারা শক্তি প্রাপ্ত করে। তোমরা সবাই এখানে বসে আছো যারা সম্পন্ন হবে, তারা রাজা হবে। গায়নও আছে অন্য সব সঙ্গ ত্যাগ করে এক সঙ্গ তে যুক্ত হই। এক হলেন নিরাকার। আত্মাও হলেন নিরাকার। বাবা বলেন আমাকে স্মরণ করো। তোমরা নিজেরা বল হে পতিত-পাবন .... এই কথা কাকে বলেছে? ব্রহ্মা কে, বিষ্ণু কে, শঙ্কর কে ? নয়। পতিত-পাবন হলেন একজনই, তিনি হলেন সর্বদা পবিত্র। তাঁকে বলা হয় সর্বশক্তিমান। বাবা -ই সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের নলেজ বলে দেন এবং তাঁর সব শাস্ত্রের জ্ঞান আছে। সন্ন্যাসীরা শাস্ত্র ইত্যাদি পাঠ করে টাইটেল অর্জন করেন। বাবার তো প্রথম থেকেই টাইটেল আছে। তাঁকে পাঠ করে নিতে হয় না। আচ্ছা !



মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণ স্নেহ ও গুডমর্নিং। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্যে মুখ্য সার :-

১. অগ্নি শিখায় (পিতা পরমাত্মা) জীবিত অবস্থায় মৃত বা সমর্পিত হয়ে বহ্নি পতঙ্গ হতে হবে, শুধু পরিক্রমা করলে হবে না। ঈশ্বরীয় পঠন পাঠন ধারণ করবার জন্যে বুদ্ধিকে সম্পূর্ণ পবিত্র করতে হবে।

২. অন্য সব সঙ্গ ত্যাগ করে এক বাবার সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। একের স্মরণে থেকে নিজেকে সম্পন্ন করতে হবে।

বরদান:-

মন্মনাভবের মন্ত্র দ্বারা মনের বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া নির্বন্ধন, ট্রাস্টি ভব

যে কোনও রকমের বন্ধন হল কারাগার বা খাঁচা। খাঁচার ময়না এখন নির্বন্ধন হয়ে উড়ন্ত পাখি হয়েছে। যদি কোনও দেহের বন্ধন থাকেও তাও মন হল উড়ন্ত পাখি, কারণ মন্মনাভব হওয়ার দরুন মন বন্ধন থেকে মুক্ত হয়েছে। প্রবৃত্তি অর্থাৎ সংসারের দায়িত্ব পালনের কাজেও বন্ধন নেই। ট্রাস্টি হয়ে দায়িত্ব পালন করে যারা তারা সদা নির্বন্ধন থাকে। গৃহস্থ অর্থাৎ ভার বহনকারী, যে ভার বহন করে সে উড়তে পারে না। কিন্তু যে ট্রাস্টি হয় সে তো নির্বন্ধন হয় এবং উড়ন্ত কলার দ্বারা সেকেন্ডে সুইট হোম বা পরম ধামে পৌঁছাতে পারে।

স্লোগান:-

উদাসীনতাকে নিজের দাসী করে নাও, তাকে চেহারায় আসতে দিও না ।