৩১-০৫-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা -- তোমরা এখন আল্লাহ-কে পেয়েছ, তাই সোজা পথে চলো অর্থাৎ নিজেকে আত্মা মনে কর, দেহ মনে করাই হলো উল্টো পথে যাওয়া (বিপরীত দিশায় যাওয়া)"

প্রশ্ন:-

এমন কোন্ কথাটি বুঝতে পারলে অসীম জগতের বৈরাগী হতে পারবে ?

উত্তর:-

পুরানো দুনিয়া এখন নিরাশাজনক(হোপলেস), কবরখানায় পরিণত হবে, এই কথাটি বুঝে নিতে পারলেই অসীম জগতের বৈরাগী হতে পারবে। তোমরা জানো, এখন নতুন দুনিয়া স্থাপিত হচ্ছে। এই রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞতে সমগ্র পুরানো দুনিয়া স্বাহা হয়ে যাবে। এই এক বিষয়ই তোমাদের অসীম জগতের বৈরাগী বানিয়ে দেবে। তোমাদের হৃদয়(মন) এখন এই কবরখানা থেকে সরে গেছে।

ওম্ শান্তি ।

আসলে হলো ডবল ওম্ শান্তি, কারণ দুটি আত্মা রয়েছে। দুই আত্মারই স্বধর্ম হলো শান্ত। বাবার স্বধর্মও শান্ত। বাচ্চারা সেখানে শান্তিতে থাকে, তাকে বলা হয় শান্তিধাম। বাবাও সেখানে থাকেন। বাবা তো সদাই পবিত্র। বাকি আর যে সকল মনুষ্যরা রয়েছে, তারা পুনর্জন্ম নিতে-নিতে অপবিত্র হয়ে যায়। বাবা বাচ্চাদের বলেন, বাচ্চারা, নিজেদেরকে আত্মা মনে কর। আত্মা জানে, পরমপিতা পরমাত্মা জ্ঞানের সাগর, শান্তির সাগর, তাঁর অনেক মহিমাও রয়েছে, তাই না। তিনি সকলের পিতা আর সকলের সদ্গতিদাতাও। তাই সকলেরই বাবার উত্তরাধিকারের উপর অবশ্যই অধিকার রয়েছে। বাবার কাছ থেকে কি উত্তরাধিকার পাওয়া যায় ? বাচ্চারা জানে যে, বাবা-ই হলেন স্বর্গের রচয়িতা তাই অবশ্যই তিনি স্বর্গের অবিনাশী উত্তরাধিকার দেবেন আর অবশ্যই তা দেবেন এই নরকেই। নরকের উত্তরাধিকার দিয়েছে রাবণ। এইসময় সকলেই নরকবাসী, তাই না। তাই অবশ্যই এই উত্তরাধিকার রাবণের থেকেই প্রাপ্ত হয়েছে। নরক আর স্বর্গ দুই-ই রয়েছে। একথা কে শোনে ? আত্মা। অজ্ঞানতায় থাকাকালীনও সবকিছু আত্মাই করত, কিন্তু দেহ-অভিমানের কারণে মনে করা হয় --- সবকিছু শরীর করে। আমাদের স্বধর্ম হলো শান্ত। একথা ভুলে যায়। আমরা হলাম শান্তিধাম নিবাসী। এও বোঝা উচিৎ যে, সত্যখন্ডই(স্বর্গ) ক্রমশঃ মিথ্যাখন্ডে(নরক) পরিনত হয়। ভারত সত্যখন্ড ছিল পরে তা রাবণ-রাজ্য, মিথ্যাখন্ডে পরিনত হয়েছে। এ তো সাধারণ কথা। মানুষ কেন বোঝে না ? কারণ আত্মা তমোপ্রধান হয়ে গেছে, যাকে প্রস্তরবুদ্ধি বলা হয়। যিনি ভারতকে স্বর্গে পরিনত করেছেন, পূজ্য বানিয়েছেন, তাঁকেই আবার পূজারী হয়ে গালি দেয়। এতে কারোর দোষ নেই। বাবা বাচ্চাদের বোঝান, এই ড্রামা কিভাবে তৈরী হয়ে রয়েছে। কিভাবে পূজ্য থেকে পূজারী হয়েছে। বাবা বোঝান, আজ থেকে ৫ হাজার বছর পূর্বে ভারতে আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম ছিল, যেন কালকেরই কথা। কিন্তু মানুষ তা সম্পূর্ণ ভুলে গেছে। শাস্ত্রাদি এই সবকিছুই ভক্তিমার্গের জন্য বসে বানানো হয়েছে। শাস্ত্র হলোই ভক্তিমার্গের জন্য, জ্ঞানমার্গের জন্য নয়। জ্ঞানমার্গের কোন শাস্ত্রই তৈরী হয় না। বাবা-ই প্রতি কল্পে এসে বাচ্চাদের নলেজ দেন, দেবতা পদপ্রাপ্তির জন্য। বাবা পড়ান ক্রমশঃ এই জ্ঞান প্রায়ঃলুপ্ত হয়ে যায়। সত্যযুগে কোন শাস্ত্রাদি থাকে না কারণ সেখানে রয়েছে জ্ঞানমার্গের প্রাপ্তি(প্রালব্ধ)। ২১ জন্মের জন্য অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে অসীম জগতের আশীর্ব্বাদ প্রাপ্ত হয়, পরে আবার অল্পকালের জন্য রাবণের আশীর্ব্বাদও পাওয়া যায়। যাকে সন্ন্যাসীরা কাকবিষ্ঠা-সম সুখ বলে। সেখানে শুধু দুঃখই দুঃখ, তাই এর নাম দুঃখধাম। কলিযুগের পূর্বে হলো দ্বাপর, তাকে বলা হবে সেমী-দুঃখধাম। আর এ(কলি) হলো চরম(ফাইনাল) দুঃখধাম। আত্মাই ৮৪ জন্ম নেয়, আর নীচে নামতে থাকে। বাবা সিড়িতে চড়িয়ে দেন কারণ (সৃষ্টি) চক্রকে পুনরায় অবশ্যই আবর্তিত (ঘুরতে) হতে হবে। নতুন দুনিয়া ছিল, দেবী-দেবতাদের রাজ্য ছিল। দুঃখের কোন নাম বা চিহ্নই ছিল না তাই দেখান হয় যে, বাঘে-গরুতে একত্রে জল পান করছে। সেখানে হিংসার কোন কথাই নেই। তাই অহিংসা পরম দেবী-দেবতা ধর্ম বলা হয়। হিংসা হলো এখানে। সর্বপ্রথম হিংসা হলো কামবিকার-রূপী তলোয়ারের প্রয়োগ। সত্যযুগে কেউ বিকারী হয় না। তাদেরই তো মহিমা-কীর্তন করা হয়। লক্ষ্মী-নারায়ণের মহিমার গায়ন(স্মরণ) হয়, তাই না --- আপনারা সম্পূর্ণ নির্বিকারী.......। এ হলো কলিযুগ, লৌহযুগী বিশ্ব( আয়রন এজেড্ ওয়ার্ল্ড) । একে তো স্বর্ণযুগ বলতে পারবে না। ড্রামাই এভাবে বানানো রয়েছে। সত্যযুগ হলো শিবালয়। সেখানে সকলেই পবিত্র, যাদের চিত্রও রয়েছে। যিনি শিবালয় তৈরী করেন সেই শিববাবারও চিত্র রয়েছে। ভক্তিমার্গে তো ওঁনাকে অনেক নাম দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাস্তবে নাম হলো একটিই। বাবার তো নিজস্ব শরীর নেই। তিনি স্বয়ং বলেন যে, আমাকে নিজের পরিচয় দিতে বা রচনার আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান শোনাতে আসতেই হয়। আমাকে এসে তোমাদের সেবা করতে হয়। তোমরাই আমাকে ডাকো --- হে পতিত-পাবন এসো। সত্যযুগে ডাকো না। এইসময় সকলেই ডাকে কারণ বিনাশ সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ভারতবাসীরা জানে, এ হলো সেই মহাভারতের লড়াই। পুনরায় আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা হয়। ‌বাবাও বলেন, আমি রাজার রাজা বানাতে আসি। আজকাল তো মহারাজা, বাদশাহ্ ইত্যাদিরা আর নেই। এখন শুধু প্রজার উপর প্রজার রাজ্য। বাচ্চারা বোঝে, আমরা অর্থাৎ ভারতবাসীরা সম্পন্ন ছিলাম। হীরে-জহরতের প্রাসাদে ছিলাম। নতুন দুনিয়া ছিল পুনরায় সেই নতুনই পুরনো হয়েছে। প্রত্যেকটি জিনিসই পুরনো তো হয়ই। যেমন ঘর নতুন বানানো হয় কিন্তু শেষে আবার তার আয়ু কম হয়ে যায়। বলা হবে এ হলো নতুন, এ হলো আধা পুরনো, এ হলো মাঝারি। প্রত্যেক জিনিসই সতো, রজো, তমো হয়। ভগবানুবাচ, তাই না। ভগবান হলো ভগবান। ভগবান কাকে বলা হয়, তাও জানে না। রাজা-রানী তো নেই। এখানে রয়েছে প্রেসিডেন্ট, প্রাইম মিনিস্টার আর তাদের অনেক মন্ত্রী...... সত্যযুগে হয় যথা রাজা-রানী....... পার্থক্য তো বাবা বলেছেন। সত্যযুগের যারা মালিক তাদের মন্ত্রী, পরামর্শদাতা থাকে না। প্রয়োজন নেই। এইসময়েই শিববাবার কাছ থেকে শক্তি প্রাপ্ত করে তারা সেই পদ প্রাপ্ত করে। এইসময় বাবার কাছ থেকে অনেক উচ্চ পরামর্শ পাওয়া যায়, যারফলে উচ্চ পদপ্রাপ্তি ঘটে। তারপর আর কারও কাছ থেকে পরামর্শ নেবে না। ওখানে পরামর্শদাতা থাকে না। পরামর্শদাতা তখন হয় যখন বাম-মার্গে চলে যায়। বুদ্ধিভ্রষ্ট হয়ে যায়।



মূল বিষয় হল বিকার। দেহ-অভিমানের কারণেই বিকারের জন্ম হয়। তার মধ্যে কাম-বিকার হলো নম্বর ওয়ান। বাবা বলেন, এই কাম-বিকার হলো মহাশত্রু, এর উপরেই বিজয় প্রাপ্ত করতে হবে। বাবা অনেকবার বুঝিয়েছেন, নিজেকে আত্মা নিশ্চয় কর। ভাল বা খারাপ সংস্কার আত্মাতেই থাকে। এখানেই (নিজ) কর্মের জন্য অনুতাপ করতে হয়, সত্যযুগে নয়। ওটা হলো সুখধাম। বাচ্চারা, বাবা এসে তোমাদের সুখধাম, শান্তিধাম নিবাসী বানান। বাবা আত্মাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। (তিনি) সকলকে বলেন, বুদ্ধির দ্বারা নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বসো, দেহ-অভিমান ছাড়ো। এই দেহ বিনাশী, তুমি অবিনাশী আত্মা। এই জ্ঞান আর কারোর মধ্যে নেই। জ্ঞানকে না জানার কারণে ভক্তিকেই জ্ঞান বলে মনে করেছে। বাচ্চারা, তোমরা এখন বোঝ -- ভক্তি হলো আলাদা, জ্ঞানের দ্বারা তো সদ্গতি হয়। ভক্তির সুখ হলো অল্পকালের জন্য কারণ পাপাত্মা হয়ে যায়, বিকারে চলে যায়। তোমরা আধাকল্পের জন্য অসীম জগতের উত্তরাধিকার পেয়েছিলে, এখন তা পূর্ণ হয়ে গেছে। এখন বাবা পুনরায় উত্তরাধিকার দিতে এসেছেন, যাতে পবিত্রতা, সুখ, শান্তি সবকিছু পাওয়া যায়। বাচ্চারা, তোমরা জানো, এই দুনিয়াকে তো কবরখানায় পরিণত হতেই হবে। এখন এই কবরখানা থেকে মনকে সরিয়ে এনে নতুন দুনিয়া, স্বর্গের প্রতি আকর্ষণকে নিয়ে যাও। যেমন লৌকিক পিতা যখন নতুন ঘর তৈরী করে তখন বাচ্চাদের বুদ্ধিযোগ পুরনো ঘরের প্রতি না থেকে নতুন ঘরের প্রতি থাকে। অফিসে বসে থাকবে তথাপি বুদ্ধি নতুন ঘরের দিকেই থাকে। এটা হলো পার্থিব জগতের(হদের) কথা। অসীম জগতের পিতা তো নতুন দুনিয়া, স্বর্গ রচনা করছেন। বলেন যে, এখন পুরনো দুনিয়ার থেকে সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন করে এক বাবা অর্থাৎ আমার সঙ্গে সম্বন্ধ স্থাপন কর। তোমাদের জন্যই নতুন দুনিয়া, স্বর্গ স্থাপন করতে এসেছি। এখন সমগ্র পুরনো দুনিয়া এই রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞতে স্বাহা হয়ে যাবে। এই (সৃষ্টি-রূপী) বৃক্ষ সম্পূর্ণ তমোপ্রধান জরাজীর্ণ (খোকলা) হয়ে গেছে। এখন আবার নতুন তৈরী হচ্ছে। তাই বাবা বোঝান যে, এসব হলো নতুন দুনিয়ার কথা। যেমন মানুষ রোগ-গ্রস্থ হলে নিরাশ হয়ে পড়ে, তাই না। মনে করে, এর বাঁচা খুব মুশকিল। ঠিক তেমনই এই দুনিয়াও এখন হোপলেস (নিরাশাজনক)। কবরখানায় যখন পরিণত হবেই তখন কেন একে স্মরণ করবে। এ হলো অসীম জগতের সন্ন্যাস। হঠযোগী সন্ন্যাসীরা তো শুধু ঘর-বাড়ী ছেড়ে চলে যায়। তোমরা তো পুরনো দুনিয়াকেই মনে মন থেকে ত্যাগ করো। পুরনো দুনিয়া থেকেই আবার নতুন দুনিয়া হয়ে যায়।



বাবা বলেন, আমি তো আজ্ঞাকারী সেবক(সার্ভেন্ট)। আমি বাচ্চাদের সেবা করতে এসেছি। আমাকে ডাকা হয়েছে --- বাবা, আমরা পতিত হয়ে গেছি, তুমি এই পতিত দুনিয়ায় আর পতিত শরীরে এসো। দেখ, নিমন্ত্রণ কিভাবে করে! পতিত বানিয়েছে রাবণ, যাকে দহন করতেই থাকে। এ হলো অতি শক্তিশালী শত্রু। যখন থেকে এই রাবণ এসেছে (তখন থেকে) তোমরা আদি-মধ্য-অন্ত দুঃখই পেয়েছ। বিষয় সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছ। এখন বাবা বলেন, বিষ ছেড়ে অমৃত পান কর। আধাকল্প রাবণ-রাজ্যতে তোমরা বিকারের কারণে কত দুঃখী হয়ে পড়েছ। এতটাই উন্মত্ত হয়ে যাও যে বসে-বসে (বাবাকে) গালি দাও। গালিও এত দাও -- অবাক করে দাও, যিনি তোমাদের পবিত্র বিশ্বের মালিক বানান, তাঁকেই তোমরা সর্বাপেক্ষা অধিক গালি দাও। মানুষের জন্য তো বল যে, ৮৪ লক্ষ যোনী আর আমায় সর্বব্যাপী বলে দাও। এও হলো ড্রামা। (বাবা) তোমাদের মজা করতে-করতে বোঝান। ভাল আর খারাপ সংস্কার-স্বভাব আত্মারই হয়। আত্মা বলে, আমিই ৮৪ জন্ম ভোগ করি। আত্মাই এক শরীর ছেড়ে অন্য শরীর ধারণ করে। এখন একথাও বাবা-ই বোঝান। ড্রামার প্ল্যান অনুযায়ী পুনরায় বাবা-ই এসে, যারা উল্টো(বিপরীত-ধর্মী) হয়ে গেছে তাদের সোজা (স্বধর্মী) বানান। মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চাদের বাবা বলেন যে, এখানে তোমরা উল্টো অর্থাৎ দেহ-ভান নিয়ে বোসো না। নিজেকে আত্মা মনে কর। এখন তোমরা আল্লাহ-কে (ঈশ্বর) পেয়েছ, যিনি তোমাদের সোজা (স্বধর্মী) বানান। রাবণ উল্টো (পরধর্মী) বানায়। পুনরায় সোজা হলে তোমরা সঠিকভাবে দাঁড়াও। এও এক নাটক। এই জ্ঞান বাবা-ই বসে বলেন। ভক্তি হলো ভক্তি। আর জ্ঞান হলো জ্ঞান। ভক্তি সম্পূর্ণ আলাদা। কথিত আছে যে, একটি জলাশয় আছে, যেখানে স্নান করলে পরী হয়ে যায়। আবার এও বলে, পার্বতীকে অমরকথা শুনিয়েছে। তোমরাই তো এখন অমরকথা শুনছ, তাই না। শুধু এক পার্বতীকেই কি অমরকথা শুনিয়েছে ! এ হলো অসীম জগতের কথা। অমরলোক হলো সত্যযুগ, মৃত্যুলোক হলো কলিযুগ। একে কাঁটার জঙ্গল বলা হয়। বাবাকে জানেই না। তারা বলেও যে, পরমপিতা পরমাত্মা, হে ভগবান। কিন্তু জানে না। তোমরাও জানতে না। বাবা এসে তোমাদের সঠিক দিশায় চালিত করেন। ভগবানকে আল্লাহ বলা হয়। আল্লাহ পড়িয়ে আবার পদও তো দেবেন, তাই না। কিন্তু ভগবান তো একজনই। এঁনাদেরকে(লক্ষ্মী-নারায়ণ) ভগবান-ভগবতী বলা যাবে না। এঁনারা তো পুনর্জন্মে আসেন, তাই না। আমিই এঁদের পড়িয়ে দৈবী-গুণসম্পন্ন বানিয়েছি।



তোমরা সবাই হলে ভাই-ভাই। বাবার অবিনাশী উত্তরাধীকারের অধিকারী। মানুষ তো ঘোর অন্ধকারে রয়েছে। আসুরী সম্প্রদায়ের, তাই না। তারা বলে, কলিযুগ এখন হামাগুড়ি দিচ্ছে (ছোট বাচ্চারা যেমন হাটুর সাহায্যে চলে), মনে করে, এখনও অনেক বছর বাকি রয়েছে। কত অজ্ঞানতার অন্ধকারের নিদ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে। এও এক প্রকারের খেলা।আলোয় কখনো দুঃখ থাকে না, রাতের অন্ধকারে দুঃখ থাকে। একথাও তোমরাই বোঝ আর বোঝাতে পারো। সর্বপ্রথমে প্রতিটি মানুষকে বাবার পরিচয় দিতে হবে। দুজন বাবা তো সকলেরই হয়। লৌকিক (হদের) পিতা পার্থিব জগতের সুখ দেয়, অসীম জগতের পিতা অসীম জগতের সুখ দেন। শিবরাত্রি যখন পালন করা হয়, তখন অবশ্যই বাবা আসেন স্বর্গের স্থাপনা করতে। যে স্বর্গ পাস্ট হয়ে গেছে পুনরায় তার স্থাপনা করছেন। এখন এ হলো তমোপ্রধান দুনিয়া, নরক। ড্রামা প্ল্যান অনুসারে যখন সঠিক সময় আসে তখন পুনরায় আমি এসে (নিজ) ভুমিকা পালন করি। আমি নিরাকার। আমার তো (বলার জন্য) মুখ অবশ্যই চাই। ষাঁড়ের মুখকে কি ব্যবহার করা যাবে, না যাবে না। আমি এঁনার(ব্রহ্মা) মুখ ব্যবহার করি, যিনি তাঁর অনেক জন্মেরও অন্তিম জন্মে বাণপ্রস্থ অবস্থায় রয়েছেন, আমি এঁনার মধ্যে প্রবেশ করি। ইনি নিজের জন্মকে জানেন না। *আচ্ছা*!



মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাত-পিতা বাপদাদার স্নেহ-স্মরণ ও সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-

১. যেমন বাবা ডায়রেক্ট বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলেন, তেমনভাবেই নিজেকে দৃঢ়তার সাথে আত্মা মনে করতে হবে। এই কবরখানা থেকে আকর্ষণ সরিয়ে ফেলতে হবে। এমন সংস্কার ধারণ করতে হবে যেন কখনো নিজ কর্মের জন্য অনুতাপ করতে না হয়।

২. বাবা যেমন পূর্ব-নির্ধারিত ড্রামার উপর সম্পূর্ণ অবিচল( অটল) থাকার জন্য কাউকে দোষ দেন না, তাঁকে যারা গালি দেয় সেই অপকারীর প্রতিও উপকার করেন, ঠিক তেমনই বাবার সমান হতে হবে। এই ড্রামায় কারও কোনো দোষ নেই, এই ড্রামা সম্পূর্ণ সঠিকভাবেই (অ্যাকুরেট) তৈরী হয়ে রয়েছে।

বরদান:-

সকল আত্মার মধ্যে নিজের শুভ ভাবনার বীজ বপনকারী মাস্টার দাতা ভব

ফলের প্রতীক্ষা না করে তোমরা নিজের শুভ ভাবনার বীজ প্রতিটি আত্মার মধ্যে রোপন করো। সঠিক সময়ানুসারে আত্মাদের জাগতে হবেই । কেউ যদি বিরুদ্ধাচরণ করেও তথাপি তোমরা ক্ষমার ভাবনা ত্যাগ কোরো না, এই বিরোধ, অপমান, গালি - বীজের খাদ্য-রূপে কাজ করবে আর ফলও ভালো ফলবে। যত গালি দেবে, পরে ততই গুণগান করবে, তাই মাস্টার দাতা হয়ে প্রতিটি আত্মাকে নিজের বৃত্তি দ্বারা, ভাইব্রেশন দ্বারা, বাণীর দ্বারা শুভ ভাবনা দিতে থাকো।

স্লোগান:-

সদা প্রেম, সুখ, শান্তি আর আনন্দের সাগরে নিমজ্জিত হয়ে থাকা বাচ্চারাই সত্যিকারের তপস্বী।