23.12.2019
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
প্রতি পদে শ্রীমতে চলাই হলো সর্বোচ্চ চার্ট, যে বাচ্চাদের শ্রীমতের প্রতি সম্মান আছে,
তারা অবশ্যই মুরলী পড়বে"
প্রশ্নঃ -
তোমাদের মতো
ঈশ্বরীয় সন্তানদের কাছে কোন্ প্রশ্ন কেউই জিজ্ঞেস করতে পারে না ?
উত্তরঃ -
বাচ্চারা,
তোমাদের কাছে কেউই এই কথা জিজ্ঞেস করতে পারে না যে, তোমরা খুশীতে আছো, সন্তুষ্ট
তোমরা ? কেননা, তোমরা বলো যে, আমরা সর্বদাই খুশী । পার ব্রহ্মে থাকা বাবার জন্য
উৎকন্ঠা ছিলো, তাঁকে পেয়ে গেছি, আর কিসের জন্য পরোয়া করবো। তোমরা যদি অসুস্থও থাকো,
তাহলেও বলবে যে, আমরা খুবই খুশীতে আছি । ঈশ্বরের সন্তানদের কোনো বিষয়েরই উদ্বেগ থাকে
না । বাবা যখন দেখেন যে, এর উপর মায়ার আঘাত হয়েছে, তখন তিনি জিজ্ঞাসা করেন ---
বাচ্চারা, তোমরা খুশীতে আছো তো ?
ওম্ শান্তি ।
বাবা বোঝান
যে, বাচ্চাদের বুদ্ধিতে এ কথা অবশ্যই আছে যে, বাবা যেমন বাবাও, তেমনই টিচার এবং
সুপ্রীম গুরুও । তোমরা এই স্মরণে অবশ্যই থাকবে । এই স্মরণ তোমাদের কেউই কখনো শেখাতে
পারে না । কল্প - কল্প বাবা এসেই শেখান । তিনিই হলেন জ্ঞানের সাগর, পতিত পাবন । একথা
তোমাদের এখনই বোঝানো হয়, যখন তোমরা জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র, দিব্য বুদ্ধি পেয়েছো ।
বাচ্চারা যদিও বুঝতে পারে, তবুও তারা বাবাকেই ভুলে যায়, তো টিচার বা গুরু কিভাবে
স্মরণে আসবে ? মায়া অত্যন্ত প্রবল যে, বাবার তিন রূপকেই ভুলিয়ে দেয় । তখন বলে, আমরা
হেরে গেছি । যদিও প্রতি পদে পদ্ম সম উপহার, তবুও হেরে গেলে কিভাবে পদ্ম হবে ?
দেবতাদেরই পদ্মের নিদর্শন দেওয়া হয় । এ হলো ঈশ্বরীয় পাঠ । মানুষের পাঠ কখনো এমন
হতে পারে না । দেবতাদের মহিমা যদিও করা হয়, তবুও উঁচুর থেকেও উঁচু হলেন একমাত্র
বাবা । বাকি ওদের বিশেষত্ব কোথায় ? আজ গাধার জাহাজ, কাল আবার রাজা । তোমরা এখন
পুরুষার্থ করে এমন তৈরী হচ্ছো । তোমরা জানো যে, আমরা পুরুষার্থতে অনেকেই ফেল করে
যাই । জ্ঞান তো অনেকই সহজ তবুও খুব অল্পই এতে পাস হয় । তা কেন ? মায়া তোমাদের প্রতি
মুহূর্তে ভুলিয়ে দেয় । বাবা বলেন, তোমরা চার্ট লেখো, তবুও লিখতেই পারে না । কখন
লিখবে ? যদিও বা লেখে তো কখনো আপ আবার কখনো ডাউন । সর্বোচ্চ চার্ট তাদেরই হয় যারা
প্রতি পদে শ্রীমতে চলতে থাকে । বাবা তো বুঝতেই পারবে যে, এই চিন্তার জন্য লজ্জা আসে
। না হলে প্রকৃতপক্ষে শ্রীমতে চলা চাই । মুশকিলে এক বা দুই শতাংশই লিখতে পারে ।
শ্রীমতের প্রতি এতো সম্মান নেই । মুরলী পেলেও তারা পড়ে না । তারা হৃদয় দিয়ে অবশ্যই
এ কথা বুঝতে পারে যে, বাবা তো সত্যি কথাই বলেন, আমরা মুরলীই পড়ি না তো অন্যদের কি
শেখাবো ।
বাবা তো বলেন, আমাকে স্মরণ করো তাহলে স্বর্গের মালিক হতে পারবে, এতে বাবাও এসে গেলো
আর শিক্ষকও এসে গেলো । অল্প কিছু শব্দেই সম্পূর্ণ জ্ঞান এসে যায় । তোমরা এখানে
আসোই এই জ্ঞান রিভাইজ করতে । বাবা যদিও এ কথা বোঝান, কারণ তোমরা নিজেরাই বলো যে,
তোমরা ভুলে যাও, তাই তিনি আসেন রিভাইজ করাতে । যদিও কেউ করেও তবুও রিভাইজ হয় না ।
ভাগ্যে না থাকলে প্রচেষ্টাও আর কি করবে । এই প্রচেষ্টাও এক বাবাই করান, তিনি এতে
কাউকেই বিশেষ ভাবে কিছু আলাদা করান না । ওই পড়াতে তো অতিরিক্ত পড়ানোর জন্য টিচার
রাখা হয় । বাবা তো ভাগ্য বানানোর জন্য সকলকেই একরস পড়ান । এক - একজনকে আলাদা আলাদা
করে কিভাবে পড়াবেন - কতো বাচ্চা । ওই পড়াতে কোনো বড়লোকের সন্তানের জন্য যদি অনুরোধ
করা হয় তাহলে অতিরিক্তও পড়ানো হয় । টিচার জানে যে, এই ছাত্র মোটা বুদ্ধির, তাই
অতিরিক্ত পড়িয়ে তাকে স্কলারশিপের উপযুক্ত করে । এই টিচার এমন করেন না । ইনি তো
সকলকেই একই রকম পড়ান । অতিরিক্ত পুরুষার্থ অর্থাৎ টিচার কিছু কৃপা করেন । এমনিতে
তারা অর্থও নেন, অতিরিক্ত সময় দিয়ে পড়ান যাতে সে বেশী বুদ্ধিমান হতে পারে । এই
বাবা তো সকলকেই একই মহামন্ত্র দেন যে, "মনমনাভব" । ব্যস্ । বাবাই হলেন একমাত্র পতিত
পাবন, তাঁর স্মরণেই আমরা পবিত্র হতে পারবো । বাচ্চারা, এ তোমাদেরই হাতে, তোমরা যত
স্মরণ করবে, ততই পবিত্র হতে পারবে । সমস্তকিছুই এক পুরুষার্থের উপর নির্ভর করে । ওরা
তো তীর্থযাত্রা করতে যায় । একে অপরকে দেখেও যায় । বাচ্চারা, তোমরাও অনেক যাত্রাই
করেছিলে কিন্তু কি হলো ? তোমরা নীচে নেমেই এসেছো । এই যাত্রা কিসের জন্য, এতে কি
পাবে ? কিছুই জানতে না । এখন তোমাদের হলো স্মরণের যাত্রা । অক্ষর একটাই - "মন্মনাভব"।
এ হলো তোমাদের অনাদি যাত্রা । ওরাও বলে, এই যাত্রা আমরা অনাদি কাল ধরে করে আসছি ।
এখন তোমরা জ্ঞানের সঙ্গে বলো, কল্প কল্প আমরা এই যাত্রা করি । এই যাত্রা স্বয়ং বাবা
এসেই শোনান । ওই যাত্রায় মানুষ কতো ধাক্কা খায় । কতো শোরগোল হয় । আর এই যাত্রা হলো
ডেড সাইলেন্সের যাত্রা । এক বাবাকেই স্মরণ করতে হবে, এতেই তোমাদের পবিত্র হতে হবে ।
বাবা তোমাদের এই প্রকৃত আত্মিক যাত্রা শিখিয়েছেন । ওই যাত্রা তো তোমরা জন্ম -
জন্মান্তর ধরে করেছোই, তবুও গাইতে থাকে --- চারিদিকে প্রদক্ষিণ করলাম --তবুও
ভগবানের থেকে দূরেই রইলাম । যাত্রা করে এসে আবার যদি বিকারে যায়, তাহলে কি লাভ ।
তোমরা এখন জেনেছো, এ হলো পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ, যেহেতু বাবা এসেছেন । একদিন সকলেই
জানতে পারবে যে বাবা এসেছে । অবশেষে ভগবানকে কিভাবে পাওয়া যাবে ? এ তো কেউই জানে না
। কেউ কেউ তো মনে করে যে, কুকুর - বিড়ালের মধ্যে পাওয়া যাবে । এই সবকিছুর মধ্যে কি
ভগবানকে পাওয়া যাবে ? এ কতবড় মিথ্যা । মিথ্যা এই খাওয়া, মিথ্যা পানীয়, মিথ্যাই এই
রাত কাটানো ---তাই এ হলো মিথ্যা খণ্ড । সত্য খণ্ড স্বর্গকে বলা হয় । এই ভারতই
স্বর্গ ছিলো । স্বর্গে সবই ভারতবাসীরা ছিলো, সেই ভারতবাসীরা এখন নরকে আছে । এই কথা
তো তোমরা মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চারাই জানো যে, আমরা বাবার শ্রীমতে এই ভারতকে আবার
স্বর্গ তৈরী করছি । সেই সময় ভারতে আর কেউই থাকে না । সম্পূর্ণ বিশ্ব পবিত্র হয়ে
যায় । এখন তো কতো বিভিন্ন ধর্ম এখানে । বাবা তোমাদের সম্পূর্ণ বৃক্ষের জ্ঞান শোনান
। তিনি আবারও তোমাদের স্মৃতি ফিরিয়ে দেন । তোমরাই সেই দেবতা ছিলে তারপর তোমরাই
বৈশ্য এবং শূদ্র হয়েছো । তোমরা এখন ব্রাহ্মণ হয়েছো । এই কথা কখনো কোনো সন্ন্যাসী,
উদাসী বা বিদ্বানের কাছে শুনেছো ? এই যে 'আমরাই সেই' কথার অর্থ বাবা কতো সহজ করে
শোনান । 'আমিই সেইয়ের' অর্থ আমি আত্মা, আমি আত্মাই এমন চক্র পরিক্রমা করি । ওরা তো
বলে দেয় - আমি আত্মাই পরমাত্মা, পরমাত্মাই আমি আত্মা । এমন একজনও নেই যে 'আমিই
সেইয়ের' অর্থ জানে । বাবা বলেন, এই যে 'আমিই সেইযের' মন্ত্র, এই মন্ত্র সদা বুদ্ধিতে
স্মরণ রাখা চাই । না হলে কিভাবে চক্রবর্তী রাজা হবে ? ওরা তো ৮৪ এর অর্থও বুঝতে পারে
না । ভারতেরই উত্থান আর পতনের মহিমা আছে । সতোপ্রধান, সতো, রজো আর তমো । সুর্যবংশী
আর চন্দ্রবংশী...।
বাচ্চারা, এখন তোমরা সবকিছুই জেনে গেছো । এক বীজরূপ বাবাকেই জ্ঞানের সাগর বলা হয় ।
তিনি এই সৃষ্টিচক্রে আসেন না । এমন নয় যে, আমি আত্মাই পরমাত্মা হয়ে যাই । তা নয়,
বাবা তাঁর নিজের সমান জ্ঞানী তৈরী করেন আমাদের । তিনি আমাদের তাঁর নিজের সমান ভগবান
বানান না, এই বিষয়কে খুব ভালোভাবে বুঝতে হবে, তাহলেই বুদ্ধির চক্র চলতে পারে । তোমরা
বুদ্ধি দিয়ে বুঝতে পারো যে, আমরা কিভাবে ৮৪ এর চক্রে আসি । এতে সময়, বর্ণ এবং
বংশাবলী সবই এসে যায় । এই জ্ঞানেই আমরা উঁচুর থেকেও উঁচু হই । এই জ্ঞান থাকলেই আমরা
অন্যকে তা দান করতে পারবো । ওই স্কুলে যখন পরীক্ষা হয় তখন যে পরীক্ষা পত্র আসে তা
বিলেত থেকে আসে, কেউ আবার বিলেতে পড়তে যায়, তাই কোনো শিক্ষা মন্ত্রী তাদের এই
পরীক্ষা পত্র চেক করে । এখানে তোমাদের পেপার কে চেক করবে ? তোমরা নিজেরাই তা করবে ।
নিজেরা যা চাও, তাই তৈরী হও । এই ঈশ্বরীয় পাঠ পড়ে বাবার কাছ থেকে যে পদ চাও, তাই
নিয়ে নাও । বাবাকে যত স্মরণ করবে, যত সেবা করবে, ততই ফল পাবে । তাদের এই সেবা করার
ইচ্ছা থাকবে, কারণ রাজধানী তো স্থাপন হচ্ছে, আর এরজন্য প্রজারও তো প্রয়োজন, তাই না
। ওখানে উজির ইত্যাদির প্রয়োজন হয় না । এখানে তো সকলেরই বুদ্ধি কম তাই উজিরের
দরকার হয় । এখানে বাবার কাছেও রায় নিতে আসে - বাবা, এমন হয়েছে, কি করবো ? এই কাজ
কারবার কিভাবে করবো ? বাবা বলেন, দুনিয়ার এই কাজ কারবারের কথা এখানে এনো না । হ্যাঁ,
যদি কারোর মন খারাপ হয়ে যায় বা কেউ হতাশ হয়ে যায়, তখন তিনি তার জন্য কিছু উপদেশ
দিয়ে দেন, কিন্তু এ আমার কোনো কাজ নয় । আমার কাজ হলো, তোমাদের এই বিশ্বের মালিক
করার জন্য পতিত থেকে পবিত্র বানাই । তোমরা সদাই বাবার থেকে শ্রীমৎ নিয়ে চলতে হবে ।
এখন তো সকলেরই হলো আসুরী মত । ওখানে তো হলো সুখধাম । ওখানে কেউই এমন জিজ্ঞেস করবে
না যে, তোমরা খুশী আছো ? তোমাদের শরীর সুস্থ আছে তো ? এই কথা এখানেই জিজ্ঞাসা করা
হয় । ওখানে এইসব কথা থাকে না । দুঃখধামের কোনো কথাই ওখানে থাকে না, কিন্তু বাবা
জানেন, বাচ্চাদের মধ্যে মায়ার প্রবেশের কারণেই বাবা জিজ্ঞেস করেন, তোমরা ঠিকঠাক
খুশীতে আছো তো ? মানুষ তো এখানকার শব্দ বুঝতেই পারে না । কোনো মানুষ জিজ্ঞেস করলে
তোমরা বলতে পারো, আমরা তো ঈশ্বরের সন্তান, আমাদের কি খুশীতে থাকার কথা জিজ্ঞাসা করো
? পার ব্রহ্মে থাকা বাবার জানা তাঁকে পাওয়ার জন্য উৎকন্ঠা ছিলো, এখন তাঁকে পেয়ে
গেছি, এখন আর কিসের পরোয়া ? এই কথা সবসময় স্মরণে রাখা উচিত । আমরা কার সন্তান - এই
জ্ঞানও বুদ্ধিতে আছে । আমরা যখন সম্পূর্ণ পবিত্র হয়ে যাবো, তখন লড়াই শুরু হবে ।
তোমাদের অবশ্যই জিজ্ঞেস করবে । তোমরা বলবে, আমরা তো সর্বদাই খুশী । অসুস্থ হলেও
খুশীতে থাকি । তোমরা বাবার স্মরণে থাকলে স্বর্গের থেকেও বেশী খুশীতে থাকবে যেহেতু
স্বর্গের বাদশাহী প্রদানকারী বাবাকে পেয়েছো । তিনি আমাদের কতো উপযুক্ত বানান, তাহলে
কিসের পরোয়া ? ঈশ্বরের সন্তানদের কিসের পরোয়া ? ওখানে দেবতাদেরও কোনো পরোয়া নেই ।
দেবতাদের উপরে হলেন ঈশ্বর । তাহলে ঈশ্বরের সন্তানদের কিসের ভয় থাকতে পারে ? বাবা
আমাদের পড়াচ্ছেন । বাবা আমাদের টিচার এবং সদগুরু । বাবা আমাদের মাথায় মুকুট রাখেন
। আমাদের ইংরাজীতে বলে ক্রাউন প্রিন্স । বাবার মুকুটই বাচ্চারা মাথায় দেয় । তোমরা
বুঝতে পারো, এই সদগুরুতে সুখই সুখ । প্রত্যক্ষভাবে সেই সুখ তখনই পাবে যখন তোমরা
ওখানে যাবে । এ তো তোমরাই জানো, যখন তোমরা এই শরীর ত্যাগ করে সত্যযুগে যাবে তখন
সেখানে কি পাবে । এখন বাবা তোমাকে প্রত্যক্ষভাবে পড়াচ্ছেন । তোমরা জানো যে, আমরা
সত্যিই স্বর্গে যাই । ওরা যে বলে, অমুকে স্বর্গে গেছে, কিন্তু ওরা জানেই না যে,
স্বর্গ আর নরক কাকে বলা হয় । কল্পের আয়ুই লাখ বছরের লিখে দিয়েছে । জন্ম -
জন্মান্তর এই জ্ঞান শুনতে শুনতে নেমে এসেছে । এখন তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে, আমরা
কোথা থেকে কোথায় নেমে এসেছি । সত্য যুগ থেকে নেমেই এসেছে । আমরা এখন এই পুরুষোত্তম
সঙ্গম যুগে এসে পৌঁছেছি । কল্প - কল্প বাবাই পড়াতে আসেন । বাবার কাছেই তো তোমরা থাকো,
তাই না । ইনিই হলেন আমাদের প্রকৃত সদগুরু যিনি মুক্তি এবং জীবনমুক্তির পথ বলে দেন ।
এই বাবাও যেমন শেখেন তেমনই এনাকে দেখে তোমরা বাচ্চারাও শেখো । তোমাদের প্রতি পদে
সাবধানে থাকতে হয় । মন - বচন এবং কর্মে খুবই শুদ্ধ থাকতে হবে । অন্তরে কোনরকম
দুর্গন্ধের আবর্জনা থাকা উচিত নয় । বাচ্চারা প্রতি মুহূর্তে বাবাকে ভুলে যায় ।
বাবাকে ভুলে যাওয়ার কারণে বাবার দেওয়া শিক্ষাও ভুলে যায় । আমরা যে ছাত্র - এই কথাও
ভুলে যায় । এ খুবই সহজ । বাবার স্মরনেই জাদু আছে । এমন জাদু আর কোনো বাবাই শেখাতে
পারেন না । এই জাদুতেই মানুষ তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয় ।
বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, শিববাবা ব্রহ্মার দ্বারা আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্মের
স্থাপনা করেছিলেন, যেই ধর্ম সত্যযুগ আর ত্রেতাযুগ, এই অর্ধেক কল্প ধরে চলে । এরপর
অন্য ধর্ম পরে বৃদ্ধি পায় । ক্রাইস্ট যেমন এসেছিলেন, তখন খুব অল্প সংখ্যায় মানুষ
ছিলো । যখন অনেক হয়ে যাবে তখন রাজত্ব করতে পারবে । খৃস্টান ধর্ম এখন পর্যন্ত আছে ।
বৃদ্ধি তো হতেই থাকে । ওরা জানে যে ক্রাইস্টের দ্বারাই আমরা খৃস্টান হয়েছি । আজ থেকে
দুই হাজার বছর পূর্বে ক্রাইস্ট এসেছিলেন । এখন তাঁর ধর্মের বৃদ্ধি হচ্ছে । খৃস্টানরা
বলবে, আমরা ক্রাইস্টের । প্রথমে এক ক্রাইস্ট এসেছিলেন, তারপর তাঁর ধর্ম স্থাপন হয়,
বৃদ্ধি হতে থাকে । এক থেকে দুই, দুই থেকে চার... এইভাবে বৃদ্ধি হতে থাকে । এখন
খৃস্টানের বৃক্ষ কতো বড় হয়ে গেছে । ফাউন্ডেশন (ভিত) হলো দেবী - দেবতার কুলের (ঘরানার),
তাই ব্রহ্মাকে গ্রেট গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদার বলা হয়। কিন্তু ভারতবাসীরা এ কথা ভুলে
গেছে যে, আমরা পরমপিতা পরমাত্মা শিবের প্রত্যক্ষ সন্তান ।
খৃস্টানরাও মনে করে, আদি দেব ছিলেন, যাঁর থেকেই এই মনুষ্য বংশাবলী । বাকি তারা তো
তাদের ক্রাইস্টকেই মানবে, ক্রাইস্টকে, বুদ্ধকে মানুষ বাবা মনে করে । এ তো বৃক্ষের
ঝাড় । যেমন খৃস্টানদের দেশে ক্রাইস্টের স্মরণ হয় । বাচ্চারা, তেমনই তোমরা এখানে
তপস্যা করেছিলে, তাই তো তোমাদের স্মরণ আবুতে হয় । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন
নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
ডেড সাইলেন্সের প্রকৃত আত্মিক যাত্রা করতে হবে । 'আমিই সেই' - এই মন্ত্র সদা স্মরণে
রাখতে হবে, তখনই চক্রবর্তী রাজা হতে পারবে ।
২ ) মন - বচন এবং কর্মে অনেক শুদ্ধ থাকতে হবে । ভিতরে যেন কোনো দুর্গন্ধ - আবর্জনা
না থাকে । প্রতি পদে সাবধান থাকতে হবে । শ্রীমতের সম্মান রাখতে হবে ।
বরদান:-
"বাবা" শব্দের চাবিতে সর্ব সম্পদ প্রাপ্তকারী ভাগ্যবান আত্মা ভব
আর কোনো জ্ঞানের
বিস্তার যদি জানতে নাও পারো, না শোনাতে নাও পারো, কিন্তু এক "বাবা" শব্দ মন থেকে
মেনেছো বা অন্যদেরও মন থেকে শুনিয়েছো, তো বিশেষ আত্মা হয়ে গেছো। দুনিয়ার সামনে
মহান আত্মার স্বরূপে মহিমার যোগ্য হয়ে গেছো কেননা এক "বাবা" শব্দ সর্ব সম্পদ বা
ভাগ্যের চাবিকাঠি । এই চাবি লাগানোর বিধি হলো মন থেকে জানা আর মানা । মন থেকে বলো
-" বাবা", তো সম্পদ সদা হাজির ।
স্লোগান:-
বাপদাদার প্রতি স্নেহ থাকলে সেই স্নেহে পুরানো দুনিয়াকে বলিদান দিয়ে দাও ।