২৫-০৩-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -- তোমরা হলে রয়্যাল কুলের রয়্যাল স্টুডেন্ট, তোমাদের চলন খুব রয়্যাল হওয়া উচিত, তবেই বাবাকে শো' (প্রত্যক্ষ) করাতে পারবে"
প্রশ্ন:-
বিনাশের সময় সর্বশেষ পেপারে কারা পাস করবে ? তার জন্যে কি পুরুষার্থ করতে হবে ?
উত্তর:-
সর্বশেষ পেপারে তারা-ই পাস করবে যাদের বাবা ব্যতীত পুরানো দুনিয়ার কোনও বস্তু স্মরণে থাকে না। স্মরণে এল অর্থাৎ ফেল। এর জন্যে অসীমের (বেহদের) সম্পূর্ণ দুনিয়ার প্রতি যেন আসক্তি না থাকে। ভাই-ভাইয়ের পাকা অবস্থা হবে। দেহ-অভিমান যেন ভঙ্গ হয়ে যায় ।
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চাদের সর্বদা এই নেশা থাকা উচিত যে আমরা কত রয়্যাল স্টুডেন্ট। অসীম জগতের (বেহদের) বাবা আমাদের পড়াচ্ছেন। তোমরা কত উঁচু কুলের রয়্যাল স্টুডেন্ট তাই রয়্যাল স্টুডেন্টদের চলনও রয়্যাল থাকা চাই তবেই তো বাবাকে প্রত্যক্ষ করবে। তোমরা বিশ্বে শান্তি স্থ্যাপনের কাজে নিমিত্ত হয়েছ , শ্রীমৎ অনুযায়ী। তোমরা শান্তির পুরস্কার প্রাপ্ত কর। তাও এক জন্মের জন্যে নয়, জন্ম জন্মান্তরের জন্যে প্রাপ্ত কর। বাচ্চারা বাবাকে কি ধন্যবাদ করবে ! বাবা নিজেই এসে হাতে স্বর্গ দেন। বাচ্চারা কি জানত যে বাবা এসে স্বর্গ দেবেন ! এখন বাবা বলেন - মিষ্টি বাচ্চারা, আমাকে স্মরণ করো। স্মরণ করতে কেন বলেন ? কারণ এই স্মরণের দ্বারা বিকর্ম বিনাশ হবে। অসীম জগতের পিতার পরিচয় প্রাপ্ত হওয়াতে নিশ্চয় হয়েছে। কষ্টের কোনও কথা নেই। ভক্তিমার্গে বাবা-বাবা করতে থাকে। নিশ্চয়ই বাবার কাছে কিছু বর্সা প্রাপ্ত হবে। পুরুষার্থ করার মার্জিনও আছে তোমাদের । শ্রীমৎ অনুযায়ী যত পুরুষার্থ করবে ততই উঁচু পদ প্রাপ্ত হবে। পিতা, শিক্ষক, সদগুরু - তিনজনের শ্রীমৎ প্রাপ্ত হয়। সেই মত অনুযায়ী চলতে হবে। নিজের ঘরে থাকতেও হবে। মত অনুযায়ী চলার ক্ষেত্রেই বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। মায়ার প্রথম বিঘ্ন হল দেহ-অভিমান। বাবা বলেন নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো। তাহলে কেন শ্রীমৎ অনুযায়ী চলো না ? বাচ্চারা বলে আমরা চেষ্টা তো করি কিন্তু মায়া করতে দেয় না। বাচ্চারা বোঝে পড়াশোনায় বিশেষ পুরুষার্থ অবশ্যই করা উচিত। যারা ভালো বাচ্চা তাদের ফলো করা উচিত। সবাই এমন পুরুষার্থ করে যাতে আমরা বাবার কাছে উঁচু বর্সা প্রাপ্ত করি। কাঁটা থেকে ফুল হওয়ার জন্য স্মরণের প্রয়োজন অনেক বেশি। ৫-টি বিকারের কাঁটা দূর হলে ফুলে পরিণত হব। সেসব দূর হবে যোগবলের দ্বারা। অনেক বাচ্চারা ভাবে অমুক এমন ভাবে চলে গেছে, হয়তো আমরাও চলে যাব। কিন্তু তাকে দেখে তেমন পুরুষার্থ করা উচিত তাইনা। শরীর ত্যাগের সময় বাবার স্মরণ যেন থাকে, বশ করার মন্ত্র যেন স্মরণে থাকে। অন্য কিছু স্মরণে যেন না থাকে একমাত্র বাবা ছাড়া, তখন যেন দেহ থেকে প্রাণটি বেরোয়। বাবা, ব্যস আমরা আপনার কাছে এই এলাম বলে। এমন বাবাকে স্মরণ করলে আত্মায় যা আবর্জনা ভরা আছে , সেসব ভস্ম হয়ে যাবে। আত্মায় আছে তো শরীরেও আছে বলা হবে। জন্ম জন্মান্তরের আবর্জনা, সব পুড়ে ছাই হবে। যখন তোমাদের সমস্ত আবর্জনা জ্বলে পুড়ে যাবে তখন দুনিয়াও পরিষ্কার হয়ে যাবে। দুনিয়া থেকে সমস্ত আবর্জনা দূর হবে -তোমাদের জন্যে। তোমাদের শুধু নিজের ময়লা পরিষ্কার করতে হবে না , সকলের আবর্জনা পরিষ্কার করতে হবে। বাবাকে আহবান করা-ই হয় বাবা এসে এই দুনিয়ার আবর্জনা পরিষ্কার করুন। সম্পূর্ণ বিশ্ব কে পবিত্র করুন। কাদের জন্যে ? ঐ পবিত্র দুনিয়ায় তোমরা বাচ্চারা সর্বপ্রথমে রাজ্য করতে আসো। সুতরাং বাবা তোমাদের জন্যে তোমাদের দেশে এসেছেন।
ভক্তি ও জ্ঞানে অনেক তফাৎ আছে। ভক্তিতে কত ভালো ভালো গীত তারা গান করে। কিন্তু কারও কল্যাণ করে না। কল্যাণ তো হয় নিজের স্ব ধর্মে স্থির হলে এবং বাবাকে স্মরণ করলে। তোমাদের স্মরণ করা হল এমন , যেমন করে লাইট হাউস পরিক্রম করে। স্ব-দর্শনকেই লাইট হাউস বলা হয়। তোমরা বাচ্চারা মনে মনে বুঝতে পারো বাপদাদার কাছে স্বর্গের অধিকার রূপী বর্সা প্রাপ্ত হবে। এই হল সত্য নারায়ণের কথা-কাহিনী, নর থেকে নারায়ণ হওয়ার । বাবা বোঝান তোমাদের আত্মা যে তমোপ্রধান হয়েছে , তাকে সতোপ্রধান করতে হবে। সত্যযুগে সতো প্রধান ছিলে এখন আবার সতোপ্রধান করতে বাবা এসেছেন। বাবা বলেন আমাকে স্মরণ করলেই তোমরা সতোপ্রধান হয়ে যাবে। বাবা - ই গীতা শুনিয়ে ছিলেন। এখন তো মানুষ শোনায়, কতখানি তফাৎ হয়েছে। ভগবান্ তো হলেন ভগবান্ , তিনি মানুষ থেকে দেবতায় পরিণত করেন। নতুন দুনিয়ায় পবিত্র দেবতারা বাস করেন। অসীম জগতের (বেহদের) বাবা হলেন নতুন দুনিয়ার বর্সা প্রদানকারী। বাবাকে স্মরণ করতে থাকো তো অন্ত সময়ের মত অনুযায়ী সদগতি হয়ে যাবে। তোমরা জানো - বাবা আসেন সঙ্গম যুগে, পুরুষোত্তম করতে। এখন এই ৮৪-র চক্র পূর্ণ হচ্ছে, পরে শুরু হবে। এই খুশীও থাকা উচিত। প্রদর্শনী তে যে লোকেরা আসে , তাদেরও প্ৰথমে শিববাবার চিত্রের সামনে দাঁড় করাও। বাবা বলেন আমাকে স্মরণ করলে তোমরা এমন হয়ে যাবে। পিতার কাছে সত্যযুগের বর্সা প্রাপ্ত হয়। ভারত সত্যযুগ ছিল, এখন নয় আবার হবে তাই পিতা ও রাজত্ব - কে স্মরণ করো তাহলে অন্ত সময়ের মত অনুযায়ী সদগতি হয়ে যাবে। ইনি হলেন প্রকৃত সত্য পিতা, তাঁর সন্তান হলে তোমরা সত্যখণ্ডের মালিক হবে। প্ৰথমে অল্ফ-কে পাকা করো। "অল্ফ" অর্থাৎ বাবা, "বে" অর্থাৎ বাদশাহী। বাবাকে স্মরণ করো তাহলে স্মরণের দ্বারাই বিকর্ম বিনাশ হবে এবং তোমরা স্বর্গে চলে যাবে। কতখানি সহজ। জন্ম জন্মান্তর ভক্তির কথা শুনে শুনে বুদ্ধিতে মায়ার তালা লেগেছে। বাবা এসে চাবি দিয়ে তালা খোলেন। এই সময়ে সবার কান বন্ধ আছে। পাথরবুদ্ধি হয়ে আছে। তোমরা লেখ - শিববাবা স্মরণে আছে ? স্বর্গের বর্সা স্মরণে আছে ? বাদশাহী স্মরণ করলে মুখ মিষ্টি তো হবেই তাইনা। বাবা বলেন আমি তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের কত উপকার করি। তোমরা তো অপকার করেই এসেছ। সেসবও ড্রামাতে ফিক্সড আছে, কারও দোষ নেই। বাচ্চারা তোমাদের এই মিশন-ই হল পাথরবুদ্ধি দের স্পর্শ বুদ্ধি করা বা কাঁটাকে ফুলে পরিণত করা। তোমাদের এই মিশন চলছে। সবাই এক-দুইজন কে কাঁটা থেকে ফুল করছে। তাদের এমন যিনি তৈরি করেন তিনি কিং ফ্লাওয়ার হবেন। স্বর্গের স্থাপনকারী অথবা ফুলের বাগান রচনাকারী হলেন একমাত্র বাবা। তোমরা হলে খোদাই খিদমতগার অর্থাৎ ঈশ্বরীয় সেবাধারী। তমোপ্রধান কে সতোপ্রধান করা - এই হল সেবা, আর কোনও কষ্ট দেন না। বোঝানোও খুব সহজ। কলিযুগে আছে তমোপ্রধান। যদি কলিযুগের আয়ু বাড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলে আরও বেশি তমোপ্রধান হয়ে যাবে।
তোমরা জানো এখন বাবা এসেছেন আমাদের ফুলে পরিণত করতে। কাঁটা বানানো হল রাবণের কাজ। বাবা ফুল তৈরি করেন। যার শিববাবা স্মরণে আছে, তার অবশ্যই স্বর্গও স্মরণে থাকবে। যখন প্রভাতফেরী কর তখন তাতে দেখাও যে আমরা প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমার - কুমারীরা ভারতের উপরে এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য স্থাপন করি। আমরা ব্রাহ্মণ রা সেই দেবতায় পরিণত হই। দেবতা তারপরে ক্ষত্রিয়, বৈশ্য..... এই হল ডিগবাজির খেলা (বাজোলী)। কাউকে বোঝানো খুব সহজ। আমরা ব্রাহ্মণ। ব্রাহ্মণদের টিকি বা শিখা থাকে। তোমরাও বুঝেছ আমরা ৮৪-র চক্র পূর্ণ করেছি। বাচ্চারা কত ভালো জ্ঞান প্রাপ্ত করে। অন্য সব কিছু হল ভক্তি। জ্ঞান একমাত্র বাবা-ই শোনান। সর্বের সদগতি দাতা হলেন একমাত্র বাবা। পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগও হল একটাই। বাচ্চারা, এই সময় বাবা তোমাদের পড়ান। ভক্তিমার্গে এসব স্মরণীয় হয়ে পরম্পরা প্রচলিত আছে । বাচ্চারা, বাবা তোমাদের পথ বলে দিয়েছেন যে এই পুরুষার্থ করলে তোমরা এই বর্সা প্রাপ্ত করতে পারো। এই পড়া হল খুব সহজ। এই হল নর থেকে নারায়ণ হওয়ার পড়াশোনা। ব্রতকথা পাঠ হল রং বা ভুল কারণ তাতে কোনও এইম অবজেক্ট থাকে না। পড়াশোনায় এইম অবজেক্ট আছে। কে পড়ান ? জ্ঞান সাগর। বাবা বলেন আমি এসে রত্ন দিয়ে তোমাদের ঝুলি ভরি। অসীম জগতের (বেহদের) বাবাকে তোমরা কি প্রশ্ন করবে । এই সময় সবাই হল পাথরবুদ্ধি। রাবণ কে কেউ জানে না। তোমরা এখন বুদ্ধি পেয়েছ প্রশ্ন করার। মানুষদের জিজ্ঞাসা করো - তাহলে রাবণ কে ? তার জন্ম কবে হয়েছে ? কবে থেকে রাবণ দহন করো ? বলবে এসবই হল অনাদি। তোমরা অনেক রকম করে প্রশ্ন করতে পারো। যখন সময় হবে তখন প্রশ্ন করবে। কোনও রেসপন্স করতে পারবে না। তোমাদের আত্মা স্মরণের যাত্রায় তৎপর হয়ে যাবে। এখন নিজেকে প্রশ্ন করো - আমরা কি সতোপ্রধান হয়েছি ? মন সায় দেয় ? এখনও কর্মাতীত অবস্থা তো হয় নি। হবে। এই সময় তোমরা সংখ্যায় অনেক কম তাই কেউ তোমাদের কথা শোনে না আর তোমাদের কথাও পৃথক। সর্ব প্ৰথমে বলো পিতা সঙ্গমযুগে আসেন। এক-একটি কথা যখন বুঝতে থাকবে তখন জ্ঞানে এগোবে। অনেক ধৈর্যের সাথে, ভালোবেসে বোঝাতে হবে যে তোমাদের দুই পিতা আছেন - লৌকিক এবং পারলৌকিক। পারলৌকিক পিতার কাছে বেহদের বর্সা তখনই প্রাপ্ত হয় যখন সতোপ্রধান স্থিতি হয়। বাবার স্মরণে খুশীর পারদ ঊর্ধ্বে থাকবে। বাচ্চারা তোমাদের মধ্যে অনেক গুণ ভরতে থাকবে। বাচ্চারা, বাবা এসে তোমাদের কোয়ালিফিকেশন শেখান। স্বাস্থ্য - সম্পদও (হেল্থ-ওয়েল্থ) প্রদান করেন, গুণ শুধরে দেন। এডুকেশন বা শিক্ষাও দেন। জেলের সাজা থেকেও মুক্ত করেন।
তোমরা খুব ভালো ভাবে মন্ত্রী ইত্যাদিকেও বোঝাতে পারো। এমন বোঝানো উচিত যাতে তাদের চিত্ত স্নিগ্ধ হয়ে যায়। তোমাদের জ্ঞান খুব মিষ্টি মধুর। প্রেম পূর্ণ হয়ে বসে শুনলে চোখে জল এসে যাবে। সর্বদা এমন দৃষ্টি রাখবে যে আমরা ভাইকে পথ বলে দিচ্ছি। বলো, আমরা শ্রীমৎ অনুসারে ভারতের প্রকৃত সত্য সেবা করছি। ভারতের সেবায় অর্থ নিয়োগ করি। বাবা বলেন দিল্লিতে সেবা দ্বারা ঘেরাও করো, বিস্তার লাভ করো। কিন্তু এখনও কেউ জ্ঞানের বাণে আহত হয় নি, আহত করতে যোগবলের প্রয়োজন । যোগবলের দ্বারা তোমরা বিশ্বের মালিক হও। সঙ্গে জ্ঞানও আছে। যোগের দ্বারা-ই তোমরা সকলকে আকৃষ্ট করতে পারবে। এখন বাচ্চারা যদিও ভালোই ভাষণ দিতে পারে কিন্তু যোগের আকর্ষণ কম আছে। মুখ্য কথা হল যোগের। তোমরা বাচ্চারা যোগের দ্বারা নিজেকে পবিত্র কর। অতএব খুব বেশি যোগবলের প্রয়োজন আছে। তারই ঘাটতি রয়েছে। অন্তরে খুশীতে ডান্স করা উচিত, এই হল খুশীর ডান্স। এই জ্ঞান-যোগের দ্বারা তোমাদের অন্তরে ডান্স চলতে থাকে। বাবার স্মরণে থেকে তোমরা অশরীরী হয়ে যাও। জ্ঞান দ্বারা অশরীরী হতে হবে, তার জন্যে হারিয়ে যাওয়ার কথা নেই, বুদ্ধিতে জ্ঞান চাই। এখন ঘরে ফিরতে হবে তারপরে রাজত্ব করতে আসতে হবে। বাবা বিনাশ এবং স্থাপনার সাক্ষাৎকারও করিয়েছেন। এই সম্পূর্ণ দুনিয়া ভস্মীভূত হয়ে আছে, আমরা নতুন দুনিয়ায় যাওয়ার জন্যে উপযুক্ত হচ্ছি। এখন ঘরে ফিরতে হবে তাই শরীরের প্রতি কোনও আসক্তি থাকা উচিত নয়। এই শরীর থেকে, এই দুনিয়া থেকে উপরাম বা ঊর্ধ্বে থাকা উচিত। শুধু নিজের ঘর (পরমধাম) এবং রাজধানীকে (স্বর্গ) স্মরণ করতে হবে। কোনও বস্তুর প্রতি আসক্তি যেন না থাকে। বিনাশ খুবই কঠিন হবে। যখন বিনাশ হওয়া শুরু হবে তখন তোমাদের খুশী অনুভব হবে - ব্যস্, আমরা এই ট্রান্সফার হলাম বলে। পুরানো দুনিয়ার কোনও বস্তু স্মরণে এলেই ফেল হয়ে যাবে। বাচ্চাদের কাছে কিছুই নেই তো স্মরণে কি আসবে ? অসীম জগতের সম্পূর্ণ দুনিয়ার প্রতি মমত্ব মিটে যাক, এতেই পরিশ্রম আছে। ভাই-ভাইয়ের দৃঢ় অবস্থাও তখনই থাকা সম্ভব যখন দেহ-অভিমান ভেঙে চুরমার হয়ে থাকবে। দেহ-অভিমানে এলেই কম বেশি ক্ষতি হয়ে যায়। দেহি-অভিমানী হয়ে থাকলে কোনও ক্ষতি হবে না। আমরা ভাইকে পড়াই। ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলি, এই অভ্যাসটি যেন পাকা হয়ে যায়। যদি স্কলারশিপ নিতে হয় তবে এতখানি পুরুষার্থ তো করতে হবে। যখন বোঝাও তখনই যেন স্মরণ থাকে আমরা সবাই হলাম ভাই-ভাই। সব আত্মারা হল এক পিতার সন্তান। সব ভাইদের পিতার সম্পত্তিতে (স্বর্গ রূপী বর্সা) অধিকার আছে। বোনের আভাসও যেন না হয়। একেই বলে আত্ম-অভিমানী হওয়া। আত্মার এই শরীরটি প্রাপ্ত হয়েছে, সেই আধারে কেউ পুরুষ নাম কেউ নারী নাম প্রাপ্ত করেছে। এসবের ঊর্ধ্বে তারা হল আত্মা। চিন্তন করা উচিত - বাবা যে পথটি বলে দেন সেই পথটি সঠিক। এখানে বাচ্চারা আসে প্র্যাক্টিস করতে। ট্রেনে বসে ব্যাজ নিয়ে অনেককে বোঝাতে পারো। বসে একে অপরকে জিজ্ঞাসা করো তোমাদের কতজন পিতা ? তারপরে উত্তর দাও। এই হল অন্যের মনোযোগ আকর্ষণ করার যুক্তি। তারপরে বলো তোমাদের দুই জন পিতা, আমাদের তিনজন। এই অলৌকিক পিতা দ্বারা আমরা বর্সা প্রাপ্ত করি। তোমাদের কাছে ফার্স্টক্লাস জিনিস আছে। কেউ বলবে এই নিয়ে কি লাভ ? বলো, আমাদের কর্তব্য হল অন্ধের লাঠি হয়ে পথ দেখানো। যেমন নান -রা সার্ভিস করে, তেমন তোমরাও করো। তোমাদের প্রজা তৈরি করতে হবে। উঁচু পদ প্রাপ্তির জন্যে পুরুষার্থ করতে হবে। তোমরা সবাইকে চড়তি কলা বা আরোহণ কলায় যাওয়ার পথ বলে দাও। এক পিতাকে স্মরণ করতে থাকো তাহলে অনেক খুশীর অনুভব হবে এবং বিকর্মও বিনাশ হবে। বাবার কাছে বর্সা প্রাপ্ত করা খুবই সহজ। কিন্তু অনেক বাচ্চারা গাফিলতি করে। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন, স্মরণ-ভালবাসা এবং সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্যে মুখ্য সার :-
১. শেষ সময়ে পাস করতে হলে এই শরীর ও দুনিয়া থেকে উপরাম বা ঊর্ধ্বে থাকতে হবে, কোনও বস্তুর প্রতি আসক্তি রাখবে না। বুদ্ধিতে যেন থাকে এখন আমরা ট্রান্সফার হতে চলেছি।
২. খুব ধৈর্য সহকারে ভালোবাসা দিয়ে সবাইকে দুই পিতার পরিচয় দিতে হবে। জ্ঞান রত্নের দ্বারা ঝুলি ভরে দান করতে হবে। কাঁটাদের ফুলে পরিণত করার সেবা অবশ্যই করতে হবে।
বরদান:-
সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনার দ্বারা সেফটি অনুভবকারী মায়াজিত ভব |
যে বাচ্চারা স্থূল কর্মের সাথে আত্মিক (রূহানী) সেবা করতে ছুটে ছুটে যায়, এভার রেডি থাকে, তখন এই সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনা সেফটি বা সুরক্ষিত থাকার উপায় হয়ে যায়। যারা সেবায় ব্যস্ত থাকে তারা মায়ার প্রভাব থেকে সুরক্ষিত থাকে। মায়াও দেখে যে, এদের কাছে অবসর নেই তো ফিরে যায়। যে বাচ্চাদের বাবা আর সেবার প্রতি ভালোবাসা আছে তাদের এক্সট্রা সাহস যুক্ত সাহায্য প্রাপ্ত হয়, ফলে তারা সহজেই মায়াজিত হয়ে যায়।
স্লোগান:-
জ্ঞান এবং যোগকে নিজের জীবনের নেচার করে নাও, তাহলে পুরানো নেচার বদলে যাবে ।