১০-০৫-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমাদের কর্মাতীত হতে হবে পরমধাম ঘরে ফিরে যাওয়ার আগে, সেই জন্য ভিতরে ভিতরে কোনো ফ্লো (ত্রুটি) থাকতে নেই, নিজেকে নিরীক্ষণ করে দুর্বলতা গুলি দূর করতে থাকো"
প্রশ্ন:-
কোন্ অবস্থাকে স্থির করাতে গেলে পরিশ্রম করতে হয় ? এর পুরুষার্থ কি?
উত্তর:-
এই চোখের দ্বারা দেখার মতো কোন জিনিসই যেন সামনে না আসে। দেখেও দেখো না। দেহতে থেকে দেহী-অভিমানী থাকো। এই অবস্থাতে স্থিত হতে টাইম লাগে। বুদ্ধিতে বাবা আর পরমধাম গৃহ ছাড়া কোনো বস্তু যেন স্মরণে না আসে, এর জন্য অন্তর্মুখী হয়ে নিজেকে নিরীক্ষণ করতে হয়। নিজের চার্ট রাখতে হয়।
ওম্ শান্তি।
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি আত্মা রূপী বাচ্চারা এটা তো জানে যে আমরা নিজেদের দৈবী রাজধানী স্থাপন করছি, এতে রাজাও আছে আবার প্রজাও আছে। পুরুষার্থ তো সবাই করে, যারা বেশী পুরুষার্থ করে, তারা বেশী প্রাইজ নেয়। এটা তো হলো একটা কমন কায়দা। এটা কোনো নতুন কথা না। একে দৈবী বাগান বলো বা রাজধানী বলো। এখন এটা হলো কলিযুগী বাগিচা অথবা কাঁটার জঙ্গল। ওর মধ্যেও কোনটা অনেক ফল দেওয়ার মতো বৃক্ষ হয়, কোনটা বা কম ফল দেওয়ার মতো হয়। কোনটা স্বল্প রস যুক্ত আম হয়, কোনটা বা অন্যরকম। ফুল-ফলের এরকম বিভিন্ন প্রকারের বৃক্ষ হয়। বাচ্চারা, ঐরকম তোমাদের মধ্যেও নম্বর অনুযায়ী পুরুষার্থ অনুসার হয়। কেউ খুব ভালো ফল দেয়, কেউ সামান্য ফল দেয়।বিভিন্ন প্রকারের বৃক্ষ হয়। এটা হলো ফল দিতে সক্ষম- এমন বাগান। পূর্ব কল্পের মতোই এই দৈবী বৃক্ষের স্থাপনার কাজ চলছে অথবা ফুলের বাগানের স্থাপনা হচ্ছে। ধীরে ধীরে সুগন্ধিত মধুরও হয়ে উঠছে- নম্বর অনুযায়ী পুরুষার্থ অনুসারে। সব তো ভ্যারাইটি। বাবার কাছেও আসে, বাবার মুখ দেখতে। এটা তো অবশ্যই বুঝতে পারো যে বাবা আমাদের স্বর্গের মালিক করে তুলছেন। বাচ্চারা অবশ্যই এ ব্যাপারে সুনিশ্চিত। অসীম জগতের পিতা আমাদের অসীম জগতের মালিক করে তুলছেন। মালিক হওয়ার জন্য খুশীও অনেক হয়। জাগতিক মালিকানায় দুঃখ আছে, এই খেলাই সুখ আর দুঃখের সাথে তৈরী হয়ে আছে আর এটা ভারতবাসীদেরই জন্য। বাচ্চাদেরকে বাবা বলেন প্রথমে তো নিজের বাড়ী সামলাও। ধনী বা বাড়ীর মালিকের তো বাড়ীর উপর নজর থাকে। তবে বাবাও বসে একেক জন বাচ্চাকে দেখতে থাকেন যে, তার মধ্যে কি কি গুণ আছে আর কি কি অবগুণ আছে ? বাচ্চারা নিজেরাও জানে। বাবা যদি বলেন যে বাচ্চারা, তোমরা সবাই নিজেদের ত্রুটি কি তা নিজেরাই লিখে নিয়ে আসো তো শীঘ্রই লিখতে পারবে। আমি নিজের মধ্যে কি কি ত্রুটি আছে বলে মনে করছি? কোনো না কোনো ত্রুটি তো অবশ্যই আছে। কেউই তো এখনো সম্পূর্ণ হয় নি। হ্যাঁ, হতে হবে-অবশ্যই। প্রতি কল্পে যে হয়েছে এতে কোনো সংশয় নেই। কিন্তু এই সময় ত্রুটি আছে। আর সে সব বাবাকে বললে তিনিই এই প্রসঙ্গে (ত্রুটিমুক্ত হতে) বোঝাবেন। এই সময় অনেক ত্রুটি আছে। মুখ্য ত্রুটি গুলি হয়ই দেহ-অভিমানের কারণে। আবার সেটা অনেক হয়রান করে। স্থিতিকে এগোতে দেয় না, সেই জন্য এখন সম্পূর্ণ ভাবে পুরুষার্থ করতে হবে। এই শরীরও এখন ছেড়ে দিয়ে যেতে হবে। দৈবী গুণও এখানেই ধারণ করে যেতে হবে। কর্মাতীত অবস্থায় যাওয়ার অর্থও তো বাবা বোঝাচ্ছেন। কর্মাতীত হয়ে গৃহে ফিরে যেতে গেলে কোনো ত্রুটিই (ফ্লো)যেন না থাকে, কারণ তোমরা তো হীরেতে পরিণত হচ্ছ। আমাদের মধ্যে কি কি ফ্লো (খাদ) আছে! এটা তো প্রত্যেকেই জানে, কারণ তোমরা হলে চৈতন্য। হীরের মতো জড় পদার্থে ফ্লো হলে সে কি আর বের করা যায়! তোমরা হলে চৈতন্য, তোমরা এই ত্রুটি (ফ্লো) থেকে মুক্ত হতে পারো। তোমরা কড়ির থেকে হীরের মতো হয়ে ওঠো। তোমরা নিজেদের ভালো ভাবেই জানো। সার্জন প্রশ্ন করছেন তোমার এমন কোন ত্রুটি আছে যা তোমাকে আটকে দিচ্ছে, সামনে এগোতে দিচ্ছে না? ত্রুটি গুলি তো শেষে তৈরী হয়। এসব এখন সরিয়ে দিতে হবে। যদি ত্রুটি মুক্ত না হয় তবে হীরের ভ্যালু কম হয়ে যায়। ইনিও এক খুব চতুর জহুরি। সারাটি জীবন এই চোখে শুধু হীরেই দেখেছেন। এরকম মণিকার(জহুরি) কেউই নেই, যার কি না এতো হীরে পরীক্ষা করার কৌতুহল আছে। তোমরাও হীরেতে পরিণত হচ্ছো। জানো যে কোন না কোনো ত্রুটি অবশ্যই আছে।সম্পূর্ণ তৈরী হও নি। চৈতন্য হওয়ার কারণে তোমরা পুরুষার্থ দ্বারা ত্রুটি (ফ্লো) সমাপ্ত করে দিতে পারো।হীরের মতো তো অবশ্যই হতে হবে, আর তখনই হবে যখন সম্পূর্ণ পুরুষার্থ করবে।
বাবা বলেন তোমাদের স্থিতি এরকম অবিচল হোক, যে শরীর ছাড়ার সময় শেষে কিছুই যেন স্মরণে না আসে। এটা তো ক্লীয়ার আছে। বন্ধু-স্বজন ইত্যাদি সবাই কে ভুলতে হবে। সম্বন্ধ রাখতে হবে এক বাবার সাথেই। এখন তোমরা হীরে তৈরী হচ্ছো। এটা রত্ন-সামগ্রীর দোকান। তোমরা প্রত্যেকে হলে একজন মণিকার। এই কথা দ্বিতীয় আর কেউ জানে না। তোমরা অর্থাৎ বাচ্চারা জানো- প্রত্যেকের হৃদয়ে আছে, আমরা বিশ্বের মালিক হতে চলেছি- পুরুষার্থ অনুসারে। যে উচ্চ পদ প্রাপ্ত করেছেন, সে অবশ্যই পুরুষার্থ করেছে। সে তো তোমাদের মধ্যেই কেউ। বাচ্চারা, তোমাদেরই এতো পুরুষার্থ করতে হবে, সেইজন্য বাবা প্রত্যেক বাচ্চাদের দেখতে থাকেন। যেরকম অনেক ফুল দেখা হয়- এটা কেমন সুগন্ধি ফুল!ওটা কেমন! এছাড়া এদের মধ্যে কি খুঁত(ফ্লো) আছে? কারণ তোমরা হলে চৈতন্য। চৈতন্য হীরে জানতে পারে তো-আমাদের মধ্যে কি কি ত্রুটি আছে, যা কি না বাবার সাথে আমাদের বুদ্ধি যোগ ভঙ্গ করে কোথায় না কোথায় ঘুরে বেড়ায়। বাবা তো বলেন বাচ্চারা একমাত্র আমাকেই (মামেকম্) স্মরণ করো। দ্বিতীয় কোনো স্মরণ যেন না আসে। গৃহস্থ ব্যবহারে থেকে এক বাবাকেই স্মরণ করতে হবে। যারা তৈরী হয়ে সার্ভিস করার জন্য বেরিয়ে ছিল, তাদের দ্বারা ভাট্টি তৈরী হয়েছিল। দেখা যায় যারা পুরোনো তারা ভালো সার্ভিস করছে। কিছু নতুনদের মধ্যে এড হতে থাকে। পুরোনোদের ভাট্টি হতো। যদিও পুরোনো কিন্তু তাও ত্রুটি অবশ্যই আছে। প্রত্যেকেই নিজের মন থেকে বুঝতে পারে যে বাবা যে অবস্থা তৈরী করার কথা বলছেন সেটা এখনও তৈরী হয়নি। এইম অবজেক্ট তো বাবা বোঝাচ্ছেন। সব থেকে বেশী খাদ হলো দেহ- অভিমানের, তখনই দেহের প্রতি বুদ্ধি চলে যায়। দেহতে থেকেও দেহী-অভিমানী হতে হবে। এই চোখ দিয়ে দেখার মতো কোনো জিনিসই যেন সামনে না আসে, এরকম স্থিতি গড়ে তুলতে হবে। আমাদের বুদ্ধিতে এক বাবা আর শান্তিধাম ব্যাতীত কোন বস্তুই যেন স্মরণে না আসে। কিছুই সাথে নিয়ে যাবে না। সর্বপ্রথম আমরা নতুন সম্বন্ধে আসি। এখন হলো পুরোনো সম্বন্ধ। পুরোনো সম্বন্ধের এতোটুকুও যেন স্মরণে না আসে। মহিমাও আছে অন্তিম কালে যে নারীকে স্মরণ করে (পরের জন্মে তবে বেশ্যা হতে হবে)... এটা এখনকার কথা। গান কলিযুগী মানুষেরা বানিয়েছে। কিন্তু বুঝতে তো আর পারেনি। আসল কথা বাবা বোঝাচ্ছেন- এক বাবা ব্যাতীত আর কেউ যেন স্মরণে না আসে। এক বাবার স্মরণের দ্বারাই তোমাদের পাপ খন্ডন হয়ে যাবে আর পবিত্র হীরে হবে। কোনো কোনো পাথর তো খুবই ভ্যালুয়েবেল হয়। মাণিকও ভ্যালুয়েবেল হয়। বাবা নিজের থেকেও বাচ্চাদের ভ্যালু উঁচু করতে থাকেন। নিজেকে নিরীক্ষণ করতে হয়, বাবা বলেন অন্তর্মুখী হয়ে নিজেকে দেখো- আমাদের মধ্যে কি ত্রুটি আছে? কতোটা দেহ-অভিমান আছে? পুরুষার্থের জন্য বাবা বিভিন্ন যুক্তি সমূহ বোঝাতে থাকেন। যতটা হয় একের স্মরণে থাকো। যতো প্রিয়ই হোক, সুন্দর বাচ্চারা খুব লাভলী হোক, তাও যেন কারোর স্মরণ না আসে। এখানকার কোন জিনিসই যেন স্মরণে না আসে। কোনো কোনো বাচ্চাদের খুব মোহো থাকে। বাবা বলেন তাদের সবার প্রতি মমত্ববোধ সরিয়ে দিয়ে একের স্মরণে থাকো। এক লাভলী বাবার সাথেই যোগ রাখতে হবে। তাঁর থেকে সব কিছু পাওয়া যায়। যোগের দ্বারাই তোমরা ভালোবাসার যোগ্য(লাভলী) হও। লাভলী আত্মা হয়ে ওঠো। বাবা তো হলেন মনোহর (লাভলী) বিশুদ্ধ( পিওর)। আত্মাকে লাভলী পিওর তৈরী করার জন্য বাবা বলেন- বাচ্চারা, যতো আমাকে স্মরণ করবে তোমরা অপরিসীম লাভলী হয়ে উঠবে। তোমরা এতো লাভলী হয়ে ওঠো যে তোমাদের অর্থাৎ দেবী-দেবতাদের কে এখনও পূজো করা হয়। খুব লাভলী হও না! অর্ধ কল্প তোমরা রাজ্য করো আর তারপর অর্ধ-কল্প তোমারই পূজ্য হও। তোমরা নিজেরাই পূজারী হয়ে নিজেদের চিত্রকে পূজা করো। তোমরা সব থেকে লাভলী হবে, কিন্তু যখন লাভলী বাবা কে ভালো করে স্মরণ করবে, তখনই লাভলী হবে।এক বাবা ব্যাতীত আর কেউ যেন স্মরণে না আসে। তবে নিজেকে নিরীক্ষণ করো যে বাবাকে অনেক ভালোবাসার সাথে স্মরণ করছি তো? বাবার স্মরণে প্রেমের অশ্রু এসে যায়। বাবা, আমার তো আপনি ব্যাতীত দ্বিতীয় কেউ নেই। আর কাউকে স্মরণে আসে না, মায়ার ঝড় যেন না আসে। ঝড় তো অনেক আসে। নিজের উপর অনেক নিরীক্ষণ করতে হবে। আমাদের প্রেম (লভ) বাবা ব্যতীত আর কোনো দিকে যাচ্ছে না তো? যতই অনেক সুন্দর জিনিস হোক, তাও এক বাবাকেই স্মরণে আসে। তোমরা সকলে একজন প্রিয়তমর প্রিয়তমা হয়ে ওঠ। প্রিয়তম-প্রিয়তমা যারা হবে, একবার একে অপরকে দেখলো তো, ব্যাস্! বিবাহ ইত্যাদি করে না, পৃথক থাকে। কিন্তু একে অপরের স্মরণ বুদ্ধিতে রাখে। এখন তোমরা জানো আমরা সবাই একজন প্রিয়তমরই প্রিয়তমা। সেই প্রিয়তমকে তোমরা ভক্তি মার্গেও অনেক স্মরণ করতে। এখানেও তোমাদের খুবই স্মরণ করতে হবে, যখন তিনি সম্মুখে আছেন। বাবা বলেন একমাত্র আমাকে (মামেকম্) স্মরণ করো তো তোমাদের জীবন তরণী পার হয়ে যাবে, এতে কোনো সংশয় নেই। ভগবানের সাথে মিলনের জন্য সবাই ভক্তি করে।
এখানে কোনো কোনো বাচ্চারা তো দধিচীর মতো সার্ভিস করে। সার্ভিসের জন্য যেন একদম ফুটতে থাকে। খুবই পরিশ্রম করে। তোমরা এটাও জানো যে বড় মানুষেরা এতো বুঝে উঠতে পারে না। কিন্তু তোমাদের পরিশ্রম কখনো ব্যর্থ হয় না। কেউ বুঝে নিয়ে যোগ্য হয়ে ওঠে, তবে বাবার সম্মুখে আসে। তোমরা মনে করো এ লায়েক হলো কি না। তাদের দৃষ্টি তো তোমাদের মতো বাচ্চাদের সাথে মিলে যায়, বাচ্চারা, সুসজ্জিত তো তোমরাই করেছ। যারাই এখানে এসেছে, তাদের সকলকে তোমরা এই বাচ্চারা সুসজ্জিত করেছ। বাবা তোমাদের করিয়েছেন। যাতে নিজের থেকেও অপরকে ভালো করতে পারা যায়। সবার তো নিজের নিজের ভাগ্য না! কেউ কেউ বোঝার লোক, যারা বোঝাচ্ছে তাদের থেকেও তীক্ষ্ম হয়ে যায়। মনে করে এর থেকেও আমি ভালো বোঝাতে পারি। বোঝানোর নেশা উঠে গেলে তো সেটা আবার বের হয়ে যায়। বাপ-দাদা দুজনেরই হৃদয়ে আসীন হন। অনেক নতুন নতুন আছে, যারা পুরোনোদের থেকেও তীক্ষ্ম। কাঁটা থেকে ভালো ফুল হয়ে পড়ে আছে। সেইজন্য বাবা একেক জনকে বসে দেখছেন- এদের মধ্যে কি কি দুর্বলতা আছে ? এই দুর্বলতা এদের থেকে যদি সরে যায় খুব ভালো সার্ভিস করবে। বাবা যে বাগানের মালিক। মন চায়- উঠে গিয়ে পিছনে গিয়ে দেখি কারণ পিছনে গিয়েও অনেকে বসে। ভালো ভালো মহারথীদের তো সামনে বসা উচিত। এতে কারোর মর্মাহত হওয়ার ব্যাপারই নেই। যদি মর্মাহত হয় বা মুখ গোমড়া করে তো নিজের ভাগ্যের প্রতি মুখ গোমড়া করবে। সামনে ফুলেদের দেখতে থাকায় অপার খুশী হতে থাকে। এ খুবই ভালো, এর মধ্যে অল্পবিস্তর ডিফেক্ট আছে। এ খুব ভালো পরিচ্ছন্ন। এর ভিতরে কোনো মরচে জমে পড়ে আছে। তো সেই সমস্ত নোংরা বের করে দিতে হবে। বাবার মতো প্রেম কেউ করে না। স্ত্রীরও স্বামীর প্রতি লভ থাকে যে। কিন্তু তার স্বামী তাকে অতো ভালোবাসে না, সে দ্বিতীয়-তৃতীয় স্ত্রী করে নেয়। স্ত্রীর স্বামী গেল তো,ব্যাস্-হায় হুসেন, হায় হুসেন (বুক চাপড়াতে)করতে থাকে। পুরুষের তো যেন এক জুতো গেল তো আর একটা নিয়ে এলো। শরীরকে জুতো বলে। শিববাবারও তো লং বুট। বাচ্চারা,তোমরা এখন মনে করো আমরা বাবাকে স্মরণ করবো, ফার্স্টক্লাস হবো। কেউ কেউ ফ্যাশানেবেল হয় তো জুতো জোড়াও ৪-৫ টা থাকে। নইলে তো আত্মার জুতো এক। পায়ের জুতোও এক জোড়াই হওয়া চাই। কিন্তু ফ্যাশন হয়ে গেছে।
তোমরা এখন মনে করো বাবার থেকে আমরা কোন উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করি। আমরা ঐ প্যারাডাইসের মালিক হতে চলেছি। হেভেনকে বলা হয় ওয়ান্ডার অফ ওয়াল্ড। অবশ্যই হেভেনলী গড ফাদারই হেভেন স্থাপনা করবে। এখন তোমরা প্র্যাকটিক্যালে শ্রীমতের আধারে নিজেদের জন্য স্বর্গের স্থাপনা করছো। এখানে তো কতো বড় বড় মহল তৈরী করে। এই সব শেষ হয়ে যাবে। তোমরা সেখানে কি করবে! হৃদয়ে আসা দরকার, এখানে তো আমাদের কাছে কিছুই নেই। তেমন যদিও বা বাইরে ঘর- গৃহস্থে থাকে- এটাও বোঝে, সব কিছু বাবার, আমাদের কাছে তো কিছু নেই, আমরা হলাম ট্রাস্টি। ট্রাস্টি নিজের কাছে কিছুই রাখে না। বাবা-ই হলেন মালিক। এই সব কিছু বাবার। গৃহে থেকেও ঐরকমই মনে করো। বিত্তশালীদের বুদ্ধিতে এই ব্যাপারটা আসে না। বাবা বলেন ট্রাস্টি হয়ে থাকো। যা কিছুই করো না কেন বাবার ইশারা দিতে থাকো। লেখে যে বাবা বাড়ী তৈরী করব? বাবা বলেন যদি বানাও, ট্রাস্টি হয়ে থাকো। বাবা বসে আছেন যে। বাবা গেলে তো সবাই এক সাথে আপন গৃহে যাবে। আবার তোমরা চলে যাবে নিজেদের রাজধানীতে। আমাকে আবার প্রতি কল্পে আসতে হবে পবিত্র করতে। নিজের সময় অনুযায়ী আসি। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার:-
১. সব কিছুর থেকে মমত্ব সরিয়ে এক লাভলী বাবাকে স্মরণ করতে হবে। অন্তর্মুখী হয়ে নিজের দুর্বলতাকে নিরীক্ষণ করে সরিয়ে দিতে হবে। ভ্যালুয়েবেল হীরে হতে হবে।
২. যেরকম বাবা আমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের সুসজ্জিত করেছেন, সেরকম সকলকে সুসজ্জিত করতে হবে। কাঁটা থেকে ফুলে পরিণত করার সেবাতে নিযুক্ত হতে হবে। ট্রাস্টি হয়ে থাকতে হবে।
বরদান:-
সর্বদা একের স্নেহে লীন হয়ে এক বাবাকে আশ্রয়কারী সর্ব আকর্ষণ মুক্ত ভব
যে বাচ্চারা এক বাবার স্নেহে লীন হয়ে থাকে তারা সকল প্রাপ্তিতে সম্পন্ন আর সন্তুষ্ট থাকে। তাদের বুদ্ধিতে কোনো প্রকারেরই অবলম্বন আকৃষ্ট করতে পারে না। তাদের সহজেই এক বাবা দ্বিতীয় কেউ নয় - এই অনুভূতি হতে থাকে। তাদের সংসার এক বাবা-ই, এক বাবার দ্বারাই সর্ব সম্বন্ধের রস অনুভব করা যায়। তাদের জন্য সর্ব প্রাপ্তির আধার হলো এক বাবা, না কোনো বৈভব- না কোনো সুযোগ সুবিধার উপকরণ - সেইজন্য তারা সহজেই আকর্ষণ মুক্ত হয়ে যায়।
স্লোগান:-
নিজেকে নিমিত্ত মনে করে সর্বদা ডবল লাইট থাকলে খুশীর অনুভূতি হতে থাকবে।