২৫-০৯-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - মায়াকে বশীভূত করার মন্ত্র হলো মন্মনাভব, এই মন্ত্রেই সব বিশেষত্ব সমাহিত আছে, এই মন্ত্রই তোমাদের পবিত্র করে তোলে"
প্রশ্ন:-
আত্মার নম্বর ওয়ান সেফ্টির (সুরক্ষার) সাধন(পদ্ধতি) কোনটি আর কি ভাবে ?"
উত্তর:-
স্মরণের যাত্রাই হলো সেফ্টির নম্বর ওয়ান পদ্ধতি। কারণ এই স্মরণের দ্বারাই তোমাদের ক্যারেক্টার শুদ্ধ হতে থাকে। তোমরা মায়ার উপর বিজয় প্রাপ্ত করো। স্মরণের দ্বারা পতিত কর্মেন্দ্রীয় শান্ত হয়ে যায়। স্মরণের দ্বারাই শক্তি আসে। জ্ঞানের তলোয়ারে যোগের ধার চাই। স্মরণের দ্বারাই মধুর সতোপ্রধান হবে। কাউকেই নিরাশ করবে না। সেইজন্য স্মরণের যাত্রাতে দূর্বল হতে নেই। নিজেকে নিজে জিজ্ঞাসা করতে হবে আমি কতটা স্মরণের মধ্যে থাকি ?"
ওম্ শান্তি।
মিষ্টি মিষ্টি আত্মা রূপী বাচ্চাদের অবশ্যই সাবধান করতে হয়। কি রকম ? সেফ্টি ফার্স্ট (সুরক্ষাই আগে)। কীসের সেফ্টি ? স্মরণের যাত্রার মাধ্যমে তোমরা খুবই সেফ্ (সুরক্ষিত) থাকো। বাচ্চাদের জন্য মুখ্য ব্যাপারই হলো এটি। বাবা বুঝিয়েছেন- বাচ্চারা, তোমরা যত স্মরণের যাত্রায় তৎপর থাকবে, ততই খুশীতে থাকবে আর ম্যানার্সও (আচরণ) ঠিক হবে। কারণ পবিত্র হতে হবে। ক্যারেক্টার্সও শুধরাতে হবে। নিজেকে নিরীক্ষণ করতে হবে-আমার ক্যারেক্টার্স কাউকে কাউকে দুঃখ দেওয়ার মতো নয় তো ! আমার মধ্যে কোনো দেহ-অভিমান এসে যাচ্ছে কি? এটা ভালো ভাবে নিজেকে নিরীক্ষণ করতে হবে। বাবা বসে বাচ্চাদের পড়াচ্ছেন। তোমরা অর্থাৎ বাচ্চারা নিজেরাও অধ্যয়ণ করো আবার অধ্যয়ণ করিয়েও থাকো। অসীম জগতের পিতা শুধুমাত্র অধ্যয়ণ করান। এছাড়া সকলেই তো হলো দেহধারী। এর মধ্যে সমগ্র দুনিয়া এসে যায়। একমাত্র বাবা হলেন বিদেহী। তিনি তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের বলেন যে, তোমাদেরও বিদেহী হতে হবে। আমি এসেছি তোমাদের বিদেহী করে তুলতে। পবিত্র হয়েই সেখানে যাবে। ঘৃণ্য কিছু (ছিঃ ছিঃ) তো সাথে নিয়ে যাবে না, সেইজন্য সর্বপ্রথম মন্ত্রই এটা দেওয়া হয়। মায়াকে বশীভূত করার মন্ত্র এটাই। পবিত্র হওয়ার মন্ত্র এটা। এই মন্ত্র অনেক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ, এর দ্বারাই পবিত্র হতে হবে। মানুষ থেকে দেবতা হতে হবে। অবশ্যই আমরা দেবতা ছিলাম, সেইজন্য বাবা বলেন, নিজের সেফ্টি যদি চাও, শক্তিশালী মহাবীর হতে চাও তো এই পুরুষার্থ করো। বাবা তো শিক্ষা দিতে থাকেন। এমনকি বারবার বলতেও থাকেন এ হল ড্রামা। ড্রামা অনুযায়ী একদম ঠিকঠাকই চলছে, তবুও বাচ্চাদের উন্নতির জন্য বোঝাতে থাকেন। স্মরণের যাত্রাতে দুর্বল হতে নেই। বন্ধনের জালে আবদ্ধ গোপিকারা, যারা বাইরে থাকে তারা যত স্মরণ করে, সামনে থাকে যারা ততো স্মরণ করে না, কারণ তারা যে শিববাবার সাথে মিলিত হওয়ার জন্য ব্যাকুল। যারা মিলিত হয়, তাদের যেন পেট ভরে যায়। যে অনেক স্মরণ করে, সে উচ্চ পদ প্রাপ্ত করে। দেখা যায়- ভালো-ভালো, বড়ো-বড়ো সেন্টার পরিচালনা করার মুখ্য যারা তারাও স্মরণের যাত্রায় দূর্বল। স্মরণের তীক্ষ্মতা খুব ভালো রকমের দরকার। জ্ঞানের তলোয়ারে যোগের ধার না থাকার কারণে কারোর তীর লাগেই না, সম্পূর্ণ মরে না (লৌকিক স্থিতিকে ভোলে না)। বাচ্চারা প্রচেষ্টা করে জ্ঞানের তীর বিঁধিয়ে বাবার করে তুলতে বা মরজীবা করতে। কিন্তু মরে না, তাই অবশ্যই জ্ঞান তলোয়ারে কোনো ত্রুটি আছে। যদিও বাবা জানেন- ড্রামা একদম অ্যাকিউরেট চলছে, কিন্তু উন্নতির জন্য তো বোঝাতে থাকেন যে না! প্রত্যেকে নিজের মন থেকে জিজ্ঞাসা করো- আমি কতোটা স্মরণ করি? স্মরণেই শক্তি জাগৃত হয়, সেইজন্য বলা হয়- জ্ঞান তলোয়ারে ধার চাই। জ্ঞান তো খুব সহজ ভাবে বোঝাতে পারা যায়।
তোমরা যত বেশি যোগে থাকবে, ততো মধুর হতে থাকবে। তোমরা সতোপ্রধান ছিলে, তাই খুব মধুর ছিলে। এখন আবার সতোপ্রধান হতে হবে। কখনো অপ্রসন্ন হতে নেই। এমন বাতাবরণ যেন না হয় যে কেউ বিক্ষুব্ধ হলো। এরকম প্রচেষ্টা করা চাই কারণ এই ঈশ্বরীয় কলেজ স্থাপন করার সার্ভিস খুবই উচ্চ মানের। ভারতে তো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েরই সুনাম আছে। বাস্তবে তো সেটা নয়। বিশ্ববিদ্যালয় তো একই হয়। বাবা এসে সকলকে মুক্তি-জীবনমুক্তি দেন। বাবা জানেন সমগ্র দুনিয়াতে যত মানুষই থাকুক, সবাই-ই নিঃশেষ হওয়ার। বাবাকে ডাকাও হয় এইজন্য যে, ঘৃণ্য দুনিয়ার বিনাশ আর নূতন দুনিয়ার স্থাপনা করো। বাচ্চারাও বোঝে বাবা একই ভাবে এসে থাকেন। এখন মায়ার কতো দাপট। ফল অফ পম্পিয়ার নাটকও দেখায়। বড়-বড় অট্টালিকা ইত্যাদি তৈরী করছে- এ সবই হলো মিথ্যা আড়ম্বর। সত্যযুগে বহুতল অট্টালিকা তৈরী হয় না। এখানে তৈরী হয় কারণ থাকার জমি কম। যখন বিনাশ হয় তখন বড়-বড় সব অট্টালিকা ভেঙে পড়ে। আগে এত বড়-বড় বিল্ডিং তৈরী হতো না। বম্ব যখন ছাড়া হয়, এমন ভাবে পড়তে থাকে যেন একেকটা তাস পড়ছে। এর অর্থ এটা নয় যে ওরাই মরবে আর বাকি সবাই থেকে যাবে। না, যেখানেই থাকুক, তা সমুদ্র হোক বা পৃথিবী, আকাশ, পাহাড়ে বা উড়ন্ত...সকলেই ধ্বংস হয়ে যাবে। এটা পুরানো দুনিয়া যে না। যে সব ৮৪ যোনী আছে (সমগ্র প্রাণীকুল) এই সব ধ্বংস হয়ে যাবে। সেখানে নূতন দুনিয়াতে এসব কিছুই থাকবে না। না এত মানুষ থাকবে, না মশা, না কোনো জীব-জন্তু ইত্যাদি থাকবে। এখানে তো অনেক আছে। বাচ্চারা, এখন তোমরাও দেবতা হচ্ছো বলে ওখানে প্রতিটা জিনিস সতোপ্রধান হয়। এখানেও বড় কোনো মানুষের বাড়ী গেলে তো ভালো রকমের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে। তোমরা তো সবচেয়ে বেশী বড় দেবতা হচ্ছো। বড় মানুষও বলবে না। তোমরা অনেক উচ্চ দেবতা হচ্ছো, এটা কোনো নূতন কথা না। ৫ হাজার বছর পূর্বেও তোমরা এরকম হয়েছিলে নম্বর অনুযায়ী। এই এতো আবর্জনা ইত্যাদি কিছুই থাকবে না ওখানে। বাচ্চাদের অনেক খুশী থাকে- আমরা অনেক উঁচু দেবতা হচ্ছি। আমাদের অধ্যয়ণ করানোর জন্য এক বাবা-ই আছেন। তিনি আমাদের অনেক উচ্চ মানের করে তোলেন। পড়াশুনাতে প্রায়ই নম্বর অনুযায়ী পোজিশন প্রাপ্ত হয়। কেউ কম পড়ে, কেউ বেশী পড়ে। বাচ্চারা এখন পুরুষার্থ করছে, বড়-বড় সেন্টার খুলছে, যেন বড় বড় ব্যক্তিরা জানতে পারে। ভারতের প্রাচীন রাজযোগও বিখ্যাত । বিশেষ ভাবে বিদেশীদেরও বেশী রকম উৎসাহ জাগে রাজযোগ শেখার। ভারতবাসী তো তমোপ্রধান বুদ্ধিসম্পন্ন। বিদেশীরাও তমো বুদ্ধি সম্পন্ন, তাই তাদের শখ থাকে ভারতের প্রাচীন রাজযোগ শেখার। ভারতের প্রাচীন রাজযোগ নামি-দামী, যার দ্বারা ভারত স্বর্গে পরিণত হয়েছিলো। খুব কমই আসে যারা সম্পূর্ণ ভাবে বোঝে। স্বর্গ হেভেন পাস হয়ে গেছে, তাই অবশ্যই আবার হবে। হেভেন বা প্যারাডাইস হলো সবচেয়ে ওন্ডার অফ ওয়ার্ল্ড অর্থাৎ বিশ্বের বিস্ময়। স্বর্গের কতো মহিমা। স্বর্গ আর নরক, শিবালয় আর বেশ্যালয়। এখন বাচ্চাদের নম্বর অনুযায়ী স্মরণে আছে যে, আমাদের শিবালয়ে যেতে হবে। ওখানে যেতে গেলে শিববাবাকে স্মরণ করতে হবে। উনিই হলেন সকলকে নিয়ে যাওয়ার পান্ডা। ভক্তিকে বলা হয় রাত। জ্ঞানকে বলা হয় দিন। এটা হলো অসীম জগতের কথা। নূতন আর পুরানো জিনিসে পার্থক্য থাকে। এখন বাচ্চাদের অন্তরে জাগে- এতো উচ্চতম থেকেও উচ্চ এই পঠন-পাঠন, বড় বড় বাড়িতে যদি এই পঠন-পাঠন করানো হয়, তবে বড়-বড় ব্যক্তিরা আসবে। একেক জনকে বোঝাতে হবে বসে। বাস্তবে অধ্যয়ণ বা শিক্ষার জন্য উত্তম স্থান হল নিরিবিলি স্থান। ব্রহ্মজ্ঞানীদের আশ্রমও দূরে দূরে হয় আর নীচেই থাকে। এতো উপরে বহুতলে থাকে না। এখন তো তমোপ্রধান হওয়াতে শহরের ভিতরে ঢুকে পড়েছে। সেই শক্তি শেষ হয়ে গেছে। এই সময় সকলের ব্যাটারী শেষ। এখন ব্যাটারীকে কীভাবে ভর্তি করতে হবে - এই বাবা ব্যতীত আর কেউই চার্জ করতে পারে না। ব্যাটারী চার্জ হলেই বাচ্চাদের মধ্যে শক্তি আসে। এর জন্য মুখ্য হলো স্মরণ। এতেই মায়ার বিঘ্ন ঘটে। কেউ সার্জেনের সামনে সত্যি বলে, কেউ লুকিয়ে নেয়। ভিতরে যে ত্রুটি আছে, সেটা তো বাবাকে বলতে হবে। এই জন্মে যে পাপ করে ফেলেছো, সেটা অবিনাশী সার্জেনের কাছে বর্ণনা করতে হবে, তা না হলে মনের ভিতরে ক্ষত হতে থাকবে। শোনালে পরে তখন ক্ষত থাকবে না। ভিতরে রেখে দেওয়া সেটাও ক্ষতিকারক। যারা সত্যিকারের বাচ্চা হয়, তারা সব বাবাকে বলে দেয়- এই জন্মে এই-এই পাপ করেছি। প্রত্যেক দিন বাবা জোর দিতে থাকেন, এটা তোমাদের অন্তিম জন্ম। তমোপ্রধান হওয়াতে অবশ্যই পাপ হয়ে থাকে যে ।
বাবা বলেন, আমি অনেক জন্মের শেষে যে নম্বর ওয়ান পতিত হয়েছে, তার মধ্যেই প্রবেশ করি। কারণ ওনাকেই আবার নম্বর ওয়ানে যেতে হবে। খুব পরিশ্রম করতে হয়। এই জন্মে পাপ তো হয়েছে, তাই না। কেউ জানতেই পারে না যে, আমরা এটা কি করছি। সত্যি বলে না। কেউ-কেউ সত্যি বলে দেয়। বাবা বুঝিয়েছেন - বাচ্চারা, তোমাদের কর্মেন্দ্রীয় তখনই শান্ত হবে, যখন কর্মাতীত অবস্থা তৈরী হয়। যেমন মানুষ বুড়ো হয়ে গেলে তখন কর্মেন্দ্রীয় অটোমেটিক্যালি শান্ত হয়ে যায়। এতে তো ছোটবেলাতেই সব শান্ত হয়ে যাওয়া চাই। যোগবলে ভালো ভাবে থাকলে এই সব ব্যাপার এন্ড (শেষ) হয়ে যায়। ওখানে এরকম কোনো ঘৃণ্য রোগ, নোংরা বসতি ইত্যাদি কিছুই থাকে না। মানুষ খুব পরিষ্কার-শুদ্ধ থাকে। ওখানে হলোই রাম রাজ্য। এখানে হলো রাবণ রাজ্য, তাই অনেক ধরনের নোংরা রোগ ইত্যাদি আছে। সত্যযুগে এসব কিছু হয় না। সেই দুনিয়ার বিষয়ে আর কী বলব ! নামটাই কতো ফার্স্ট ক্লাস - স্বর্গ, নূতন দুনিয়া। সব কিছুই সেখানে খুব পরিস্কার । বাবা বোঝান- এই পুরুষোত্তম যুগেই তোমরা এই সব কথা শুনছো। আগে শোনোনি। আগে ছিলে মৃত্যু লোকের মালিক, আজ অমর লোকের মালিক হয়ে যাও। সুনিশ্চিত হয়ে যাও কাল মৃত্যুলোকে ছিলে, এখন সঙ্গমযুগে আসাতে অমরলোকে যাওয়ার জন্য তোমরা পুরুষার্থ করছো। ঈশ্বরীয় পাঠ পড়ানোর জন্য কাউকে এখন পাওয়া গেছে। যে ভালোভাবে অধ্যয়ন করে, সে পয়সা কড়ি ইত্যাদিও ভালো উপার্জন করে। লৌকিক দুনিয়াতেও শিক্ষার স্থান অনেক উঁচুতে ।এখানেও তাই । এই আধ্যাত্মিক পঠন-পাঠনের বলে তোমরা অনেক উচ্চ পদ প্রাপ্ত করো। এখন তোমরা আলোতে আছো। এটাও তোমাদের, অর্থাৎ বাচ্চাদের ছাড়া আর কারও জানা নেই। তোমারাও আবার বারে বারে ভুলে যাও। পুরানো দুনিয়াতে চলে যাও। ভুলে যাওয়ার মানে পুরানো দুনিয়াতে চলে যাওয়া।
এখন তোমাদের অর্থাৎ সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণদের জানা আছে যে আমরা কলিযুগে নেই। সর্বোপরি এটা স্মরণ রাখতে হবে, আমরা নূতন দুনিয়ার মালিক হচ্ছি। বাবা আমাদের পড়াচ্ছেনই নূতন দুনিয়াতে যাওয়ার জন্য। এটা হলো শুদ্ধ অহংকার। সেটা হলো অশুদ্ধ অহংকার। তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের তো কখনো অশুদ্ধ ভাবনাও আসা উচিত নয় । পুরুষার্থ করতে করতে অবশেষে শেষের দিকে রেজাল্ট বেরোবে। বাবা বোঝান, এই সময় পর্যন্ত সকলেই হলো পুরুষার্থী । পরীক্ষা যখন হয় তখন নম্বর অনুযায়ী পাস করে তারপর ট্রান্সফার হয়। তোমাদের হলো অসীম জগতের অধ্যয়ন যা শুধুমাত্র তোমরাই জানো। তোমরা অন্যদের কতো বোঝাও। নূতন-নূতন আসতে থাকে অসীম জগতের পিতার থেকে উত্তরাধিকার পাওয়ার জন্য। যদিও দূরে থাকে আবার শুনতে শুনতে সুনিশ্চিত বুদ্ধি সম্পন্ন হয়ে যায়। এরকম বাবার কাছে যাওয়া উচিত। যে বাবা বাচ্চাদের এমন পড়াশুনা করাচ্ছেন, তেমন বাবার সাথে তো অবশ্যই মিলিত হতে হবে। ভালো করে বুঝেই এখানে আসে। কেউ না বুঝলেও এখানে এলে বুঝে যায়। বাবা বলেন মনের মধ্যে যেকোনো কথাই থাকুক না কেন, বুঝতে না পারলে তবে জিজ্ঞাসা করো। বাবা তো চুম্বক ! যার ভাগ্যে আছে সে ভালো ভাবে ধরতে পারে। ভাগ্যে না থাকলে সব বের হয়ে গেল। শুনে না শোনার মতো করে দেয়। এখানে কে বসে পড়ান ? ভগবান। ওঁনার নাম হলো শিব। শিববাবা-ই আমাদের স্বর্গের বাদশাহী দেন। তবে কোন্ পড়াশুনা ভালো ? তোমরা বলবে আমাদের শিববাবা পড়ান, যার দ্বারা ২১ জন্মের বাদশাহী প্রাপ্ত হয়। এইভাবে বুঝিয়ে তাদেরকে তোমাদের বাবার কাছে নিয়ে যেতে হবে । কেউ তো সম্পূর্ণ বুঝতে না পারার কারণে এত সার্ভিস করতে পারে না। বন্ধনকে শিকলের মতো আঁকড়ে থাকে। শুরুতে তো তোমরা নিজেকে কতো শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে এসেছো। যেমন কোনো নেশাগ্রস্ত হয়। এটাও ড্রামাতে পার্ট ছিল যার প্রচেষ্টা চলেছে। ড্রামাতে ভাট্টি (যোগ ভাট্টি) হতো। জীবিত থেকেও মৃতবৎ, আবার মায়ার দিকে কেউ কেউ চলে গেছে। যুদ্ধ তো হয়, তাই না ! মায়া দেখে- এ তো খুব সাহস দেখিয়েছে। এখন আমি বাজিয়ে দেখব সুপরিপক্ক কিনা ? বাচ্চাদের কতো যত্নে লালন পালন করা হত। সব কিছু শেখানো হতো। বাচ্চারা, তোমরা অ্যালবাম ইত্যাদি দেখো কিন্তু শুধুমাত্র চিত্র দেখলে বুঝতে পারবে না। কে বসে বোঝাবে যে কি কি হতো ! তোমরা তো জানো, তোমরা কীভাবে ভাট্টিতে পড়েছ, আবার এক একজন কীভাবে কীভাবে বেরোল ! যেমন টাকা ছাপলে তখনও কিছু-কিছু খারাপ হয়। এটাও ঈশ্বরীয় মিশনারী (নির্দিষ্ট লক্ষ্যে থাকা প্রচারকদের সমিতি)। ঈশ্বর বসে ধর্মের স্থাপনা করেন। এই কথা কারও জানা নেই। বাবাকে ডাকে, কিন্তু গরম চাটুতে জলের ছিঁটা দিলে যেমন বাষ্প হয়ে উড়ে যায়, তেমনি এখানেও মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যায়, বোঝেই না। বলে এটা কীভাবে হতে পারে ? মায়া রাবণ একদম এরকম করে দেয়। শিববাবার পূজাও করে আবার বলে দেয় সর্বব্যাপী। শিববাবা বলেন, তবে আবার সর্বব্যাপী কীভাবে হবে ? পূজা করে, লিঙ্গকে শিব বলে। এটা কি আর বলে যে এর মধ্যে শিব বসে আছেন ? এখন পাথরে-নুড়িতে ভগবানকে বলা...তবে কি সব ভগবান আর ভগবান হলো। ভগবান আনলিমিটেড তো নয়। তাই বাবা বাচ্চাদের বোঝান, পূর্ব-কল্পেও এরকম বুঝিয়েছিলেন। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার:-
১. এরকম মধুর বাতাবরণ তৈরী করতে হবে যেন কেউ ক্ষুদ্ধ না হয়। বাবার সমান বিদেহী হওয়ার পুরুষার্থ করতে হবে। স্মরণের শক্তি দ্বারা নিজের স্বভাব মধুর আর শান্ত করতে হবে।
২. সর্বদা এরকম নেশাতে থাকতে হবে যেন এখন আমরা সঙ্গমযুগী, কলিযুগী না। বাবা আমাদের নূতন বিশ্বের মালিক বানানোর জন্য পাঠ পড়াচ্ছেন। অশুদ্ধ বাসনা নির্মূল করতে হবে।
বরদান:-
শ্রেষ্ঠ সংকল্পের শক্তি দ্বারা সিদ্ধি প্রাপ্তকারী সিদ্ধি স্বরূপ ভব
তোমাদের অর্থাৎ মাস্টার সর্বশক্তিমান বাচ্চাদের সংকল্পে এতো শক্তি আছে যে, যে সময় চাইবে সেটাই করতে পারবে আর করাতেও পারবে । কারণ তোমাদের সংকল্প সর্বদা শুভ, শ্রেষ্ঠ আর কল্যাণকারী । শ্রেষ্ঠ আর কল্যাণের সংকল্প অবশ্যই সিদ্ধ হয়। মন সদা একাগ্র অর্থাৎ এক ঠিকানাতে স্থির থাকে, ঘুরে বেড়ায় না। যেখানে চাইবে যখন চাইবে মনকে সেখানে স্থির করতে পারবে। এতে সিদ্ধিস্বরূপ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই হয়ে যায়।
স্লোগান:-
পরিস্থিতির হালচাল থেকে বাঁচতে হলে তবে বিদেহী স্থিতিতে থাকার অভ্যাস করো।