02.09.2019
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - এ
হলো এক আশ্চর্যজনক সৎসঙ্গ, যেখানে তোমাদের জীবন্মৃত হতে শেখানো হয়, যারা জীবন্মৃত
হতে পারে, তারাই হংস হতে পারে ।
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
তোমাদের এখন এক কোন্ চিন্তা আছে ?
উত্তরঃ -
আমাদের
বিনাশের পূর্বে সম্পন্ন হতে হবে । যে বাচ্চারা জ্ঞান আর যোগে দৃঢ় হতে থাকে, তাদের
মানুষকে দেবতা বানানোর অভ্যাস হতে থাকে । তারা সেবা বিনা থাকতেই পারে না । তারা
জিনের মতো দৌঁড়াতে থাকবে । তাদের সেবার সঙ্গে সঙ্গে নিজেকেও সম্পন্ন করার চিন্তা
থাকবে ।
ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের পিতা
বসে তাঁর আত্মিক সন্তানদের বোঝান -- আত্মা এখন সকারে আছে এবং তারা প্রজাপিতা
ব্রহ্মার সন্তান, কেননা তাদের অ্যাডাপ্ট করা হয়েছে । সকলেই তোমাদের বলে যে, এরা ভাই
- বোন হয়ে যায় । বাবা তাঁর বাচ্চাদের বুঝিয়েছেন যে, প্রকৃতপক্ষে তোমরা আত্মারা হলে
ভাই - ভাই । সৃষ্টি এখন নতুন হবে, তাই সর্বপ্রথম শিখায় ব্রাহ্মণের প্রয়োজন । তোমরা
শূদ্র ছিলে, এখন তোমাদের পরিবর্তন হয়েছে । ব্রাহ্মণও তো অবশ্যই চাই । প্রজাপিতা
ব্রহ্মার নাম তো বিখ্যাত। এই হিসাবে তোমরা বুঝতে পারো যে, আমরা সমস্ত বাচ্চারা ভাই
- বোন হলাম । যারা নিজেদের ব্রহ্মাকুমার - কুমারী বলে পরিচয় দেবে, তারা অবশ্যই ভাই
- বোন অনুভব হবে । সবাই যখন প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান, তখন অবশ্যই ভাই - বোন হওয়া
উচিত । অবুঝদের এই কথা বুঝিয়ে বলা উচিত । অবুঝরাও যেমন আছে, তেমনই অন্ধ বিশ্বাসীরাও
আছে । তারা যার পূজা করে, যার প্রতি বিশ্বাস রাখে যে, এ অমুক, কিন্তু তাঁর সম্বন্ধে
কিছুই জানে না । তারা লক্ষ্মী - নারায়ণের পূজা করে, কিন্তু তাঁরা কবে এসেছিলেন,
কিভাবে এমন হয়েছিলেন, এরপর কোথায় গেলেন, এসব কেউই জানে না । কোনো মানুষ যদি নেহেরু
ইত্যাদিকে জানে, তাহলে তাঁর হিস্ট্রি - জিওগ্রাফিকেও অবশ্যই জানে । যদি তাঁর জীবনী
না জানে তাহলে কোন কাজের ? ওরা পূজা করে কিন্তু জীবন কাহিনীই জানে না । মানুষের
জীবন কাহিনী তো জানে কিন্তু বড়রা, যারা অতীত হয়ে গেছেন তাদের একজনেরও জীবন কাহিনী
জানে না । শিবের কতো পূজারী, তারা পূজা করে, তবুও মুখে বলে দেয়, ঈশ্বর নুড়ি -
পাথরের মধ্যে আছেন, কণায় - কণায় আছেন । একি কোনো জীবন - কাহিনী হলো ? এ তো কোনো
বুদ্ধির কথাই নয় । মানুষ নিজেদেরও পতিত বলে দেয় । পতিত শব্দ কতটা সঠিক ? পতিত কথার
অর্থ বিকারী । তোমরা বুঝিয়ে বলতে পারো, আমাদের কেন ব্রহ্মাকুমার - কুমারী বলা হয় ?
কেননা আমরা ব্রহ্মার গৃহীত সন্তান । আমরা কুলজাত নয়, আমরা মুখ বংশাবলী । ব্রাহ্মণ -
ব্রাহ্মাণীরা তো ভাই - বোন হলো । তাই তাদের নিজেদের মধ্যে কোনো কুদৃষ্টি থাকতে পারে
না । মুখ্য খারাপ চিন্তা হলো কাম বিকারের । তোমরা বলো যে, আমরা প্রজাপিতা ব্রহ্মার
সন্তান, তাই ভাই - বোন হয়ে যাই । তোমরা মনে করো, আমরা সবাই শিববাবার সন্তান, ভাই -
ভাই । এও পাকা কথা । এই দুনিয়া এসবের কিছুই জানে না । তারা যেমন খুশী বলে দেয় ।
তোমরা সবাইকে বুঝিয়ে বলতে পারো, সমস্ত আত্মাদের বাবা ওই একজনই । তাঁকেই সবাই ডাকতে
থাকে । তোমরা তাঁর ছবিও দেখিয়েছো । বড় - বড় ধর্মের মানুষরাও এই নিরাকার বাবাকে
মানেন । তিনি হলেন সমস্ত নিরাকার আত্মাদের বাবা, আর সাকারে সকলের বাবা প্রজাপিতা
ব্রহ্মা, যার থেকে বৃদ্ধি হতে থাকে এবং বৃক্ষের ঝাড় বাড়তে থাকে । আত্মা ক্রমাগত
ভিন্ন - ভিন্ন ধর্মে আসতে থাকে । আত্মা তো এই শরীর থেকে পৃথক । শরীর দেখে মানুষ বলে
-- এ আমেরিকান, এ অমুক । আত্মাকে তো সে কথা বলে না । আত্মারা সকলেই শান্তিধামে থাকে
। সেখান থেকে অভিনয় করার জন্য আসে । তোমরা যে কোনো ধর্মের মানুষদের এ কথা শোনাও,
পুনর্জন্ম তো সবাই নেয় আর উপর থেকেও নতুন আত্মা আসতে থাকে । তাই বাবা বলেন -
তোমরাও মানুষ আর মানুষেরই তো সৃষ্টির আদি - মধ্য এবং অন্তকে জানা উচিত যে, এই
সৃষ্টিচক্র কিভাবে ঘুরছে, এর রচয়িতা কে, এই সৃষ্টিচক্র ঘুরতে কতটা সময় লাগে ? এ কথা
তোমরাই জানো, দেবতারা তো জানেই না । মানুষই সব জেনে দেবতা হয় । আর এই মানুষকে দেবতা
বানান বাবা । বাবা নিজের এবং রচনার পরিচয় দেন । তোমরা জানো যে, আমরা বীজরূপ বাবার
বীজরূপ সন্তান । বাবা যেমন এই উল্টো বৃক্ষকে জানেন, তেমনই আমরাও জেনে গেছি । মানুষ,
মানুষকে এ কথা কখনোই বোঝাতে পারবে না । বাবা কিন্তু তোমাদের তা বুঝিয়েছেন ।
যতক্ষণ না তোমরা ব্রহ্মার সন্তান হচ্ছো ততক্ষণ তোমরা এখানে আসতে পারবে না । যতক্ষণ
না তোমরা কোর্স সম্পূর্ণ করে বুঝতে পারছো ততক্ষণ এই ব্রাহ্মণদের সভায় কিভাবে বসতে
পারবে ? একে ইন্দ্র সভাও বলা হয় । ইন্দ্র কখনো জলের বর্ষণ করেন না । 'ইন্দ্র সভা'
বলা হয আর পরীও তোমাদেরই হতে হবে । অনেক প্রকার পরীর মহিমা আছে । কোনো কোনো বাচ্চা
খুব সুন্দর হলে যেমন বলা হয়, এ তো যেন পরীর মতো । পাউডার লাগিয়ে সুন্দর হয়ে যায় ।
সত্যযুগে তোমরা পরী হও, পরীজাদা হও । এখন তোমরা জ্ঞানের সাগরে জ্ঞান স্নান করাতে পরী
(দেবী - দেবতা ) হয়ে যাও । তোমরা জানো যে, আমরা কি থেকে কি হচ্ছি । সেই পরিব্রাজক
বাবা, যিনি সদা পবিত্র, চির সুন্দর, তিনি তোমাদেরও তাঁর তুল্য বানানোর জন্য অপবিত্র
শরীরে প্রবেশ করেন । এখন গোরা অর্থাৎ নির্বিকারী, সুন্দর কে বানাবেন ? বাবাকেই তো
বানাতে হবে, তাই না । এই সৃষ্টিচক্রকে তো ঘুরতেই হবে । তোমাদের এখন গোরা অর্থাৎ
সুন্দর হতে হবে । একমাত্র জ্ঞানের সাগর বাবাই তোমাদের পড়ান । তিনি জ্ঞানের সাগর,
প্রেমের সাগর । সেই বাবার মহিমার গায়ন যেমন হয়, লৌকিক বাবার তেমন হয়ই না । এ হলো
অসীম জগতের পিতার মহিমা । তাঁকেই সবাই ডাকতে থাকে যে, তুমি এসে আমাদেরও এমন মহিমা
সম্পন্ন করো । এখন তোমরা পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে তেমন তৈরী হচ্ছো । এই পড়াতে
সবাই একরস হয় না । এতে রাতদিনের তফাৎ থাকে । এরপর তোমাদের কাছেও অনেকেই আসবে ।
তোমাদের অবশ্যই ব্রাহ্মণ হতে হবে । এরপর কেউ ভালোভাবে পড়ে, কেউ আবার কম । এই
আধ্যাত্মিক পঠনে যে ভালো হবে, সে আবার অন্যদেরও পড়াতে পারবে । তোমরা এখন বুঝতে পারো,
কতো আধ্যাত্মিক মহাবিদ্যালয় তৈরী হচ্ছে । বাবাও বলেন, এমন মহাবিদ্যালয় তোমরা বানাও
যাতে যে কেউ এসে যেন বুঝতে পারে যে, এই মহাবিদ্যালয়ে রচয়িতা এবং রচনার আদি - মধ্য
এবং অন্তের জ্ঞান মেলে । বাবা এই ভারতেই আসেন তাই ভারতেই আধ্যাত্মিক মহাবিদ্যালয়
খোলা হয় । এর পরে বিদেশেও খুলতে থাকবে । অনেক কলেজ - বিশ্ববিদ্যালয় তো চাই যেখানে
অনেকে এসেই পড়বে আর যখন এই পাঠ সম্পূর্ণ হবে তখন দেবী - দেবতা ধর্মে সবাই
ট্রান্সফার হয়ে যাবে অর্থাৎ মানুষ থেকে দেবতা হয়ে যাবে । তোমরা তো মনুষ্য থেকে
দেবতা হও, তাই না । এমন মহিমাও আছে - মানুষ থেকে দেবতা করা হলো -----। এখানে এটা হলো
মনুষ্যের দুনিয়া আর ওটা হলো দেবতাদের দুনিয়া । দেবতা আর মানুষে রাতদিনের তফাৎ । দিনে
হলো দেবতা আর রাতে মানুষ । সমস্ত ভক্তই হলো ভক্ত এবং পূজারী । তোমরা এখন পূজারী থেকে
পূজ্যে পরিণত হচ্ছো । সত্যযুগে শাস্ত্র - ভক্তি ইত্যাদির কোনো নাম থাকে না । সেখানে
সকলেই হলো দেবতা । মানুষ হলো ভক্ত । মানুষই আবার পরে দেবতা হয় । সে হলো দৈবী দুনিয়া
আর একে বলা হয় আসুরী দুনিয়া । রাম রাজ্য আর রাবণ রাজ্য । পূর্বে তোমাদের বুদ্ধিতে
ছিলোই না যে, রাবণ রাজ্য কাকে বলা হয় ? রাবণ কবে এসেছিলো ? তোমরা কিছুই জানতে না ।
মানুষ বলে যে, লঙ্কা সমুদ্রে ডুবে গিয়েছিলো । দ্বারকার জন্যও এমনই বলা হয় । এখন
তোমরা জানো যে, এই সম্পূর্ণ লঙ্কা ডুবে যাবে, এই সম্পূর্ণ দুনিয়া হলো অসীম জগতের
লঙ্কা । এ সবই ডুবে যাবে, অনেক জল এসে যাবে । বাকি স্বর্গ কখনোই ডুবে যায় না ।
সেখানে অগাধ ধন - সম্পদ ছিলো । বাবা বুঝিয়েছেন যে, এক সোমনাথ মন্দিরকে মুসলিমরা কতটা
লুট করেছিলো । এখন দেখো, কিছুই নেই । ভারতে কতো অগাধ ধন ছিলো । ভারতকেই স্বর্গ বলা
হয় । এখন কি একে স্বর্গ বলা হবে ? এখন তো নরক, আবার স্বর্গ তৈরী হবে । কে স্বর্গ
আর কে নরক বানায় ? এ কথা এখন তোমরা জেনে গেছো । রাবণ রাজ্য কতো সময় ধরে চলে, এও
তোমাদের বলা হয়েছে । রাবণ রাজ্যে কতো অজস্র ধর্ম হয়ে যায় । রামরাজ্যে তো কেবল
সুর্যবংশী আর চন্দ্রবংশীরা থাকে । এখন তোমরা এই আধ্যাত্মিক পাঠ গ্রহণ করছো । এই পাঠ
আর কারোর বুদ্ধিতেই নেই । তারা তো রাবণ রাজ্যেই আছে । রামরাজ্য হয় সত্যযুগে । বাবা
বলেন, আমি তোমাদের যোগ্য বানাই । তারপর তোমরা অযোগ্য হয়ে যাও । অযোগ্য কেন বলা হয়
তোমাদের ? কেননা তোমরা পতিত হয়ে যাও । তোমরা দেবতাদের যোগ্যতার মহিমা করো আর
নিজেদের অযোগ্যতার গান করো ।
বাবা বোঝান যে - তোমরা যখন পূজ্য ছিলে তখন দুনিয়া নতুন ছিলো । সেখানে খুবই অল্প
মানুষ ছিলো । তোমরাই সম্পূর্ণ বিশ্বের মালিক ছিলে । এখন তোমাদের খুবই খুশী হওয়া
উচিত । তোমরা তো ভাই - বোন হয়ে যাও, তাই না । ওরা বলে দেয়, তোমরা ঘর ভেঙ্গে দাও ।
আবার ওরাই যখন এখানে এসে শিক্ষা গ্রহণ করে তখন বুঝতে পারে, এই জ্ঞান তো খুবই ভালো ।
তখন অর্থ বুঝতে পারে, তাই না । ভাই - বোন সম্পর্ক ছাড়া পবিত্রতা কোথা থেকে আসবে ?
সমস্ত কিছুই পবিত্রতার উপর নির্ভর করে । বাবা আসেনই মগধ দেশে, যা কিনা অনেক পড়ে
যাওয়া দেশ, সেখানে অনেক পতিত, খাওয়া - দাওয়াও সেখানে অশুদ্ধ । বাবা বলেন - আমি অনেক
জন্মের অন্ত জন্মের শরীরে প্রবেশ করি । ইনি ৮৪ জন্মগ্রহণ করেন । অন্তিম থেকে প্রথম
আর প্রথম থেকে অন্তিমে যান । একজনকে তো উদাহরণ বানাবেন, তাই না । তোমাদের সাম্রাজ্য
এখন তৈরী হচ্ছে । তোমরা যতো ভালোভাবে বুঝতে পারবে, ততই তোমাদের কাছে অনেকে আসবে ।
এখন এই বৃক্ষের ঝাড় খুবই ছোটো । ঝড়ও অনেক আসে । সত্যযুগে ঝড়ের কোনো কথাই নেই । উপর
থেকে নতুন নতুন আত্মা আসতে থাকে । এখানে মায়ার ঝড় এলেই মানুষ পড়ে যায় । ওখানে মায়ার
তুফান থাকেই না । এখানে তো বসে বসেই মানুষ প্রাণত্যাগ করে, আর তোমাদের তো মায়ার
সঙ্গে যুদ্ধ, তাই মায়াও তোমাদের হয়রান করে । সত্যযুগে এসব হয় না । দ্বিতীয় অন্য
কোনো ধর্মে এমন বিষয় নেই । রাবণ রাজ্য আর রাম রাজ্যকে আর কেউই বুঝতে পারে না ।
সত্যযুগে যদিও বা যায়, সেখানে মরা - বাঁচার কোনো কথাই নেই । এখানে তো বাচ্চাদের
দত্তক নেওয়া হয় । তোমরা বলো, আমরা শিববাবার সন্তান, আমরা তাঁর থেকে অবিনাশী
উত্তরাধিকার গ্রহণ করি । এই উত্তরাধিকার নিতে নিতে আমরা নামতে থাকি তখন এই
উত্তরাধিকারও শেষ হয়ে যায় । হংস থেকে পরিবর্তন হয়ে বক হয়ে যায় । বাবা তো দয়ালু,
তাই তিনি আবারও বোঝাতে থাকেন । কেউ আবার নতুন করে উঠতে থাকে । যে স্থির, অচল থাকে,
তাকে বলা হয় মহাবীর, হনুমান । তোমরাই হলে সেই মহাবীর । তোমাদের নম্বরের ক্রমানুসার
তো থাকেই । সবথেকে শক্তিশালীকে মহাবীর বলা হয় । আদিদেবকেও মহাবীর বলা হয়, যার থেকে
এই মহাবীরের জন্ম হয়, তিনিই এই বিশ্বের রাজত্ব করেন । পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে
রাবণের উপর বিজয় প্রাপ্ত করার জন্য তোমরা পুরুষার্থ করতে থাকো । রাবণ হলো পাঁচ
বিকার । এ তো বোঝার মতো কথা । বাবা এখন তোমাদের বুদ্ধির তালা খুলছেন । এরপর তালা
একদম বন্ধ হয়ে যায় ।এখানেও এমন আছে, যার তালা খুলে গেলে গিয়ে সার্ভিস করে । বাবা
বলেন, তোমরা গিয়ে সার্ভিস করো, যারা গর্তে পড়ে আছে তাদের তুলে ধরো । এমন নয় যে,
তোমরাও গর্তে পড়ে গেলে । তোমরা গর্ত থেকে বের হয়ে অন্যদেরও বের করো । বিষয় বৈতরণী
নদীতে অপার দুঃখ থাকে । এখন তোমাদের অপার সুখের দুনিয়ায় যেতে হবে । যিনি অপার সুখ
প্রদান করেন, তাঁর মহিমার গায়ন হয় । রাবণ, যে দুঃখ দেয়, তার কি মহিমা হবে ? রাবণকে
বলা হয় অসুর । বাবা বলেন যে, তোমরা রাবণ রাজ্যে ছিলে, এখন অপার সুখ পাওয়ার জন্য
তোমরা এখানে এসেছো । তোমরা কতো অপার সুখ পাও । তোমাদের কতটা খুশীতে থাকা উচিত আবার
সাবধানও থাকা উচিত । নম্বরের ক্রমানুসারে তো তোমাদের পজিশন হয় । প্রত্যেক অভিনেতার
পজিশন আলাদা । সবার মধ্যে তো ঈশ্বর থাকতে পারে না । বাবা প্রত্যেকটি কথা নিজে বসে
বোঝান । তোমরা পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে বাবাকে আর এই রচনার আদি - মধ্য এবং অন্তকে
জেনে যাও । পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে এই পাঠের উপর মার্কস দেওয়া হয় । এ হলো অসীম
জগতের পাঠ, এতে বাচ্চাদের খুবই মনোযোগ দেওয়া উচিত । একদিনও যেন এই পাঠ বাদ না যায় ।
আমরা হলাম ছাত্র, গড ফাদার আমাদের পড়ান - বাচ্চাদের এই নেশা থাকা উচিত । ভগবান উবাচঃ
- ওরা কেবল নাম পরিবর্তন করে কৃষ্ণের নাম দিয়ে দিয়েছে । ভুল করে ওরা কৃষ্ণ ভগবান
উবাচঃ ভেবে নিয়েছে কেননা কৃষ্ণ হলেন ভগবানের সবথেকে কাছের । বাবা যে স্বর্গ স্থাপন
করেন তাতে এক নম্বর হলেন ইনি । এই জ্ঞান এখন তোমরা পেয়েছো । পুরুষার্থের নম্বর
অনুসারে তারা নিজেরও কল্যাণ করে, আর অন্যেরও কল্যাণ করতে থাকে, তাদের সেবা ছাড়া
কিছুতেই সুখ আসবে না ।
বাচ্চারা, তোমরা যোগ আর জ্ঞানে দৃঢ় হয়ে যাবে, তখন এমনভাবে কাজ করবে, যেন জিন ।
মানুষের দেবতা হওয়ার অভ্যাস হয়ে যাবে । মৃত্যুর আগেই তোমাদের উত্তীর্ণ হতে হবে ।
তোমাদের অনেক সেবা করতে হবে । এরপরে তো লড়াই লেগে যাবে । প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও আসবে ।
আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদের নমস্কার
জানাচ্ছেন ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
লাস্টে এসেও ফাস্ট (দ্রুত) যাওয়ার জন্য মহাবীর হয়ে পুরুষার্থ করতে হবে । মায়ার ঝড়
দেখে ঘাবড়ে যেও না । বাবার সমান দয়ালু হয়ে মানুষের বুদ্ধির তালা খোলার সেবা করতে
হবে ।
২) জ্ঞানের সাগরে রোজ
স্নান করে পরীজাদা হতে হবে । একদিনও এই আধ্যাত্মিক পাঠ বাদ দেবে না । আমরা ভগবানের
ছাত্র -- এই নেশায় থাকতে হবে ।
বরদান:-
মন থেকে
"আমার বাবা" বলে সত্যিকারের কামাই করে সমর্পিত বা জীবন্মৃত ভব
কুমারী হওয়া অর্থাৎ
সমর্পিত হওয়া । মন থেকে যখন বলো "আমার বাবা" তখন বাবাও বলেন, বাচ্চারা, সবকিছুই
তোমাদের । প্রবৃত্তিতেই থাকো অথবা সেন্টারে, মন থেকে যদি কেউ বলে "আমার বাবা", তখন
বাবাও আপন করে নেন, এ হলো মনের কামাই, মুখের স্থূল কামাই নয় । সমর্পণ অর্থাৎ
শ্রীমতের অন্দরে থাকা । এমন সমর্পিতরাই জীবন্মৃত ব্রাহ্মণ হয় ।
স্লোগান:-
যদি 'আমার'
শব্দের প্রতি প্রেম থাকে তাহলে অনেক 'আমারকে' এক 'আমার বাবার' কাছে বিলীন করে দাও ।