২৭-০৭-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা -- এখন সতোপ্রধান হয়ে নিজ নিকেতন পরমধাম ফিরতে হবে, তাই নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে নিরন্তর বাবাকে স্মরণ করার অভ্যাস করো, উন্নতির দিকে সদা সতর্ক থাকো"

প্রশ্ন:-

পড়াশোনায় দিন প্রতিদিন এগিয়ে চলেছি, নাকি পিছিয়ে পড়েছি তার প্রমাণ চিহ্ন কি ?

উত্তর:-

পড়াশোনায় যদি এগিয়ে চলেছ তাহলে হালকা ভাবের অনুভূতি হবে। বুদ্ধিতে থাকবে এই শরীর তো ছিঃ ছিঃ, একে ত্যাগ করতে হবে, আমাদের তো এখন নিজ ঘরে পরমধাম ফিরে যেতে হবে। দৈব গুণ ধারণ করতে থাকবে। যদি পিছিয়ে পড়েছ তাহলে আচার আচরণে অসুরী গুণ দেখা দেবে। চলতে-ফিরতে বাবার স্মরণ স্থির থাকবে না। তারা ফুলের মতন সবাইকে সুখ দিতে পারবে না। এমন বাচ্চাদের ভবিষ্যতে সাক্ষাৎকার হবে, তারপরে অনেক দন্ড ভোগ করতে হবে ।

ওম্ শান্তি ।

বুদ্ধিতে এই স্মৃতি যেন থাকে যে আমরা সতোপ্রধান এসেছিলাম। আত্মিক পিতা (রূহানী বাবা) আত্মা রূপী (রূহানী) বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন এখানে সবাই বসে আছে, কেউ বা দেহ-অভিমানী হয়ে আর কেউ দেহী-অভিমানী হয়ে। কেউ এক সেকেন্ডে দেহ-অভিমানী এবং পরের সেকেন্ডে দেহী-অভিমানী হতে থাকবে। এমন তো কেউ বলতে পারবে না যে আমরা সারা দিন দেহী অভিমানী হয়ে বসি। না, বাবা বোঝান কোনও সময় দেহী অভিমানী, কোনও সময় দেহ-অভিমানে থাকবে। এখন বাচ্চারা তো এই কথা জানে আমরা আত্মারা এই শরীর ত্যাগ করে ফিরে যাব পরমধাম নিজের ঘরে। খুব খুশীতে ফিরতে হবে। সারা দিন এই চিন্তন থাকবে -আমরা শান্তিধাম যাই কারণ বাবা তো পথ বলে দিয়েছেন। অন্য লোকেরা কখনও এইরূপ চিন্তন নিয়ে বসবে না হয়তো। এই শিক্ষা কেউ পায় না। চিন্তনও থাকবে না। তোমরা বুঝেছ এ হল দুঃখধাম। এখন বাবা সুখধামে যাওয়ার পথ বলে দিয়েছেন। বাবাকে যত স্মরণ করবে ততই সম্পূর্ণ হয়ে যথা যোগ্য রূপে শান্তিধাম যাবে, একেই মুক্তি বলা হয়, যার জন্য মানুষ গুরুর কাছে দীক্ষিত হয়। কিন্তু মানুষ একেবারেই জানে না যে মুক্তি-জীবনমুক্তি কি। কারণ এই কথাটি হল নতুন। তোমরা বাচ্চারাই বুঝতে পেরেছ এখন আমাদের পরমধামে ফিরতে হবে। বাবা বলেন স্মরণের যাত্রা দ্বারা পবিত্র হও। তোমরা সর্বপ্রথম যখন এসেছিলে শ্রেষ্ঠাচারী দুনিয়ায়, তখন সতোপ্রধান ছিলে। আত্মা সতোপ্রধান ছিল। কারো সঙ্গে কানেকশনও পরে হবে। যখন গর্ভে আসবে তখন সম্বন্ধ ক্রিয়েট হবে। তোমরা জানো এখন এই জন্ম হল আমাদের শেষ জন্ম। আমাদের ঘরে ফিরতে হবে। পবিত্র না হয়ে আমরা ফিরে যেতে পারব না। নিজের সঙ্গে অন্তরে এমন এমন কথা বলা উচিত। কারণ বাবার আদেশ হল উঠতে বসতে, চলতে ফিরতে বুদ্ধিতে যেন এই চিন্তন থাকে আমরা সতোপ্রধান এসেছিলাম, এখন সতোপ্রধান হয়ে ঘরে ফিরতে হবে। সতোপ্রধান হতে হবে বাবার স্মরণে। কারণ বাবা হলেন পতিত-পাবন। তিনি বাচ্চাদের অর্থাৎ আমাদের যুক্তি বলে দেন যে, তোমরা এইভাবে পবিত্র হতে পারবে। সম্পূর্ণ সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তকে তো একমাত্র বাবা-ই জানেন আর কোনও অথরিটি নেই। বাবা-ই হলেন মনুষ্য সৃষ্টির বীজ রূপ। ভক্তি কত দিন চলে, সেই কথাও বাবা বুঝিয়েছেন। এতটা সময় জ্ঞান মার্গ, এতটা সময় ভক্তি। এই সম্পূর্ণ জ্ঞান বুদ্ধিতে চলা উচিত। যেমন বাবার আত্মায় জ্ঞান আছে, তোমাদের আত্মায়ও জ্ঞান আছে। শরীর দ্বারা শুনতে হয় এবং শোনানো হয়। শরীর ব্যতীত আত্মা বলতে পারে না, এর জন্য প্রেরণা বা আকাশবাণীর কোনও ব্যাপার নেই। ভগবানুবাচ আছে সুতরাং অবশ্যই মুখ থাকা প্রয়োজন, রথও থাকা উচিত। গাধা-ঘোড়া টানা রথ চাই না। তোমরাও প্রথমে এটাই বুঝেছিলে যে, কলিযুগ এখনও ৪০ হাজার বছর আরও চলবে। অজ্ঞানের নিদ্রায় সবাই নিদ্রিত, এখন বাবা এসে জাগিয়ে তুলছেন। তোমরাও অজ্ঞানে ছিলে। এখন জ্ঞান অর্জন করেছ। অজ্ঞান বলা হয় ভক্তিকে।



এখন বাচ্চারা, তোমাদের এই চিন্তন করা উচিত আমরা নিজেদের উন্নতি কিভাবে করব, উঁচু পদ মর্যাদা কিভাবে প্রাপ্ত করব ? নিজের ঘরে পরমধাম ফিরে গিয়ে আবার নতুন রাজধানী স্বর্গে গিয়ে উঁচু পদ মর্যাদা প্রাপ্ত করি। তার জন্যে রয়েছে স্মরণের যাত্রা। নিজেকে অবশ্যই আত্মা নিশ্চয় করতে হবে। আমরা সবাই আত্মা, আমাদের সকলের পিতা হলেন পরমাত্মা। এই জ্ঞান তো খুবই সিম্পল। কিন্তু মানুষ এইটুকু কথাও বোঝে না। তোমরা বোঝাতে পারো যে, এই হল রাবণের রাজ্য, তাই তোমাদের বুদ্ধি ভ্রষ্টাচারী হয়েছে। মানুষ ভাবে যারা বিকারগ্রস্ত হয় না তারা পবিত্র। যেমন সন্ন্যাসী। বাবা বলেন তারা তো অল্পকালের জন্য পবিত্র হয়। দুনিয়া তবুও পতিত, তাই না। পবিত্র দুনিয়া হল সত্যযুগ। পতিত দুনিয়ায় সত্যযুগের মতন পবিত্র কেউ হতে পারে না। সেখানে তো রাবণের রাজ্যই নেই, বিকারের কথাই নেই। সুতরাং যেখানেই যাও, যতক্ষণ পারো ঘুরতে ফিরতে বুদ্ধিতে এইরূপ চিন্তন থাকা উচিত। বাবার মধ্যে এই জ্ঞান আছে, তাই না। তিনি হলেন জ্ঞানের সাগর, অতএব জ্ঞান তো টপ টপ করে পড়বে। তোমরা হলে জ্ঞান সাগর থেকে বেরিয়ে আসা জ্ঞান নদী। তিনি হলেন এভার সাগর অর্থাৎ সদা কালের সাগর, তোমরা আত্মারা সদাকালের সাগর নও। তোমরা বাচ্চারা বুঝেছ আমরা আত্মারা হলাম সবাই ভাই-ভাই। তোমরা বাচ্চারা পড়ছ, বাস্তবে নদী ইত্যাদির কোনও কথা নেই। নদী বললে গঙ্গা, যমুনা ইত্যাদি বলা হয়। তোমরা এখন অসীম জগতে দাঁড়িয়ে আছো। আমরা সব আত্মারা এক পিতার সন্তান, আমরা হলাম ভাই-ভাই। এখন আমাদের পরমধাম অর্থাৎ ঘরে ফিরতে হবে। যেখান থেকে এসে শরীরে প্রবেশ করি এবং ভ্রুকুটি সিংহাসনে বিরাজিত হই। খুব সূক্ষ্ম আত্মা, সাক্ষাৎকার হলে বুঝতে পারবে না। আত্মা শরীরের বাইরে গেলে বলা হয় কখনো মাথা থেকে, কখনো চোখ দিয়ে, মুখ দিয়ে বেরিয়েছে, মুখ খোলা থেকে যায়। আত্মা শরীর ত্যাগ করে গেলে শরীর জড় হয়ে যায় (নির্জীব)। এ হল জ্ঞান। স্টুডেন্টের বুদ্ধিতে সারা দিন পড়াশোনার চিন্তন থাকে। তোমাদেরও সারা দিন পড়াশোনার চিন্তন চলা উচিত। ভালো ভালো স্টুডেন্টদের হাতে সদা একটি বই থাকেই। তারা পড়তেই থাকে।



বাবা বলেন এ হল তোমাদের শেষ জন্ম, সম্পূর্ণ পরিক্রমা করে শেষ কালে এসেছ, তো বুদ্ধিতে স্মরণ থাকা উচিত। ধারণা করে অন্যদের বোঝানো উচিত। কারো ধারণা হয়ই না। স্কুলেও এইরূপ নম্বর অনুসারে স্টুডেন্ট থাকে। সাবজেক্ট ও অনেক থাকে। এখানে তো সাবজেক্ট একটাই। দেবতা হতে হবে, এই পড়ার চিন্তন যেন চলতে থাকে। এমন নয় পড়া ভুলে অন্য অন্য চিন্তন করবে। ব্যবসাদার হলে ব্যবসার চিন্তন চলবে। স্টুডেন্টের পড়াশোনার চিন্তন চলবে। বাচ্চারা, তোমাদেরও নিজেদের পড়াশোনায় থাকতে হবে।



গতকাল একটি নিমন্ত্রণ পত্র এসেছিল ইন্টারন্যাশনাল যোগ কনফারেন্সের । তোমরা তাদের লিখতে পারো তোমাদের এই যোগ তো হল হঠ যোগ (শারীরিক যোগ ব্যায়াম) । এই যোগের মুখ্য উদ্দেশ্য কি ? তাতে লাভ কি ? আমরা তো রাজ যোগ শিখছি। পরমপিতা পরমাত্মা যিনি হলেন জ্ঞানের সাগর, তিনি হলেন রচয়িতা। তিনি আমাদের নিজের এবং রচনার জ্ঞান শোনাচ্ছেন। এখন আমাদের ঘরে পরমধামে ফিরতে হবে। "মন্মনাভব" - এ হল আমাদের মন্ত্র। আমরা বাবাকে এবং বাবার দ্বারা যা অবিনাশী উত্তরাধিকার (বর্সা) প্রাপ্ত করি, সেসব স্মরণ করি। তোমরা এই হঠযোগ ইত্যাদি করছ, এর মুখ্য উদ্দেশ্য কি ? আমরা নিজেদের যোগের কথা তো বলেছি যে আমরা এই যোগ শিখছি। তোমাদের এই হঠযোগ দ্বারা কি প্রাপ্ত হয় ? এমন রেসপন্স বা প্রত্যুত্তর নাটসেল বা সংক্ষেপে লিখতে হবে। এমন নিমন্ত্রণ তোমাদের কাছে অনেক আসে। অল ইন্ডিয়া রিলিজিয়াস কনফারেন্সের নিমন্ত্রণ পত্র এলে এবং তোমাদের যদি জিজ্ঞাসা করে যে - তোমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য কি ? তো তাদের বোলো আমরা এই যোগ শিখছি। নিজেরটা অবশ্যই জানানো উচিত, তাই না ? কারণ এই রাজ যোগ তোমরা শিখছ। বলবে আমরা পড়ছি। আমাদের যিনি পড়াচ্ছেন তিনি হলেন ভগবান, আমরা আত্মা রূপে সবাই হলাম ব্রাদার্স। আমরা নিজেদের আত্মা ভাবি। অসীম জগতের পিতা (আত্মাদের পিতা) বলেন নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে "মামেকম্ স্মরণ করো", তাহলে তোমাদের পাপ নষ্ট হবে। এমন এমন বক্তব্য লিখে ভালো ভাবে প্রিন্ট করে রেখে দাও। তারপরে যেখানে যেখানে কনফারেন্স ইত্যাদি হবে, পাঠিয়ে দিও। তারা বলবে এরা তো খুব ভালো কায়দা বা নিয়ম শিখছে। এই রাজ যোগের দ্বারা রাজার রাজা বিশ্বের মালিক হওয়া যায়। প্রত্যেক ৫ হাজার বছর পরে আমরা দেবতায় পরিণত হই, পরে মানুষ হই। এমন এমন বিচার সাগর মন্থন করে ফার্স্টক্লাস লিখিত বক্তব্য তৈরী করা উচিত। তারা তোমাদের কাছে এর উদ্দেশ্য জিজ্ঞাসা করতে পারে। তাই এই বক্তব্য প্রিন্ট করিয়ে রাখো, আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্যটি হল এই। এই ভাবে লিখলে টেম্পটেশন অর্থাৎ ইচ্ছে জাগ্রত হবে। এতে কোনোরকম হঠ যোগ বা শাস্ত্র নিয়ে বাদ বিবাদ করার কথা নেই। তাদের শাস্ত্রচর্চা করারও খুব অহংকার থাকে । তারা নিজেদেরকে শাস্ত্রের অথরিটি ভাবে। বাস্তবে তারা হল পূজারী, অথরিটি তো পূজ্য আত্মাদের বলা হবে। পূজারীদের কি বলা হবে ? অতএব এই কথা ক্লিয়ার লেখা উচিত - আমরা কি শিখছি। বি.কে.দের নাম তো বিখ্যাত হয়ে গেছে।



যোগ দুই প্রকারের আছে - এক হল হঠ যোগ, দ্বিতীয় হল সহজ যোগ। সেই যোগ কোনো মানুষ শেখাতে পারে না। রাজ যোগ একমাত্র পরমাত্মাই শেখান। বাকি এত সব অনেক প্রকারের যোগ রয়েছে মনুষ্য মতানুসারে। স্বর্গে দেবতাদের তো কারো মতের দরকার নেই, কারণ অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়েছে। তারা হলেন দেবতা অর্থাৎ দৈব গুণ ধারী, যে আত্মার এমন গুণ নেই তাকে অসুর বলা হবে। দেবতাদের রাজ্য ছিল, পরে তারা কোথায় গেলেন ? ৮৪ জন্ম কিভাবে নিয়েছেন ? সিঁড়ির চিত্রে বোঝানো উচিত। সিঁড়ির চিত্রটি খুব ভালো। যা তোমাদের অন্তরে আছে সেসব সিঁড়ির চিত্রে আছে। সমস্ত কিছু নির্ভর করছে পড়াশোনার উপরে। এই পড়াশোনাটি হল সোর্স অফ ইনকাম। এই পড়াশোনা হল সবচেয়ে উঁচু । দি বেস্ট, সর্বশ্রেষ্ঠ। দুনিয়া জানে না দি বেস্ট পড়াশোনা কোনটি ? এই পড়াশোনার দ্বারা মানুষ থেকে দেবতা ডবল ক্রাউন অর্থাৎ ডবল মুকুটধারী হওয়া যায়। এখন তোমরা ডবল মুকুটধারী হওয়ার পুরুষার্থ করছ। পড়াশোনা তো একটাই, তারপরে কেউ কোনো পদ প্রাপ্ত করে, কেউ বা অন্য ! আশ্চর্যের বিষয়, তাই না ! একই পড়াশোনার দ্বারা রাজধানী স্থাপন হয়, রাজাও তৈরি হয় এবং প্রজাও। যদিও সেখানে দুঃখের কথা নেই। পদ মর্যাদা তো আছে। এখানে অনেক প্রকারের দুঃখ আছে। অনাবৃষ্টি, অসুখ-বিসুখ, আনাজের অভাব, বন্যা (ফ্লাড) আসতেই থাকে। যতই লক্ষপতি, কোটিপতি হোক, জন্ম তো বিকার থেকেই হয়, তাইনা। ধাক্কা ধাক্কি, মশার কামড় ইত্যাদি সবই তো দুঃখ, তাই না। নামই হল অতি ঘোর নরক (রৌরব নরক)। এরপরেও বলতে থাকে অমুকে স্বর্গে গেছেন। আরে, স্বর্গ তো আসছে ভবিষ্যতে ; তাহলে কেউ স্বর্গে গেছে কিভাবে। কাউকে বোঝানো খুব সহজ কাজ। এবার বাবা প্রবন্ধ লিখতে দিয়েছেন, লেখা তো বাচ্চাদের কাজ। ধারণ হয়ে থাকলে লিখবে নিশ্চয়ই। মুখ্য কথা, বাচ্চাদের বোঝানো - নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো, এবারে পরমধাম ফিরতে হবে। আমরা সতোপ্রধান ছিলাম তো খুশীর সীমা ছিল না। এখন তমো প্রধান হয়েছি। কতখানি সহজ। পয়েন্টস তো বাবা শোনাতেই থাকেন। অতএব ভালো করে বসে বোঝাতে হবে। বিশ্বাস না করলে বুঝে নিতে হবে এরা আমাদের বংশের নয়। পড়াশোনায় দিন প্রতিদিন এগিয়ে যেতে হবে। পিছিয়ে যাবে না। দৈব গুণের পরিবর্তে অসুরী গুণ ধারণ করা - এটাই হল পিছিয়ে যাওয়া। বাবা বলেন বিকার গুলি ত্যাগ করতে থাকো, দৈব গুণ ধারণ করো। খুব হালকা থাকতে হবে। এই শরীরটি হল পুরানো ছিঃ ছিঃ, একে ছাড়তে হবে। আমাদের তো এখন ঘরে ফিরতে হবে। বাবাকে স্মরণ না করলে সুন্দর ফুলে (গুল-গুল) পরিণত হবে না। খুব দন্ড ভোগ করতে হবে। ভবিষ্যতে তোমাদের সাক্ষাৎকার হবে। জিজ্ঞাসা করা হবে, তোমরা কি সার্ভিস করেছ ? তোমরা কখনও কোর্টে যাও নি । ব্রহ্মা বাবা সবকিছু দেখেছেন, কিভাবে তারা চোর ধরে, তারপরে কেস চলে। ঠিক সেইরকম সেখানে তোমাদেরকেও সব সাক্ষাৎকার করানো হবে। দন্ড ভোগ করে পাই পয়সার পদ মর্যাদা প্রাপ্ত করবে। টিচারের তো দয়া হয়, তাই না। এরা ফেল হয়ে যাবে। বাবাকে স্মরণ করার এই সাবজেক্টটি সবচেয়ে ভালো, যার দ্বারা পাপ বিনষ্ট হয়। বাবা আমাদের পড়ান। এই কথাটি স্মরণ করতে করতে পরিক্রমা করা উচিত। স্টুডেন্ট, টিচারকে স্মরণও করে আর বুদ্ধিতে পড়াটাও থাকে। টিচারের সঙ্গে যোগ তো নিশ্চয়ই থাকবে, তাইনা। এই কথা বুদ্ধিতে থাকা উচিত - আমরা সব আত্মা ভাইদের একজনই টিচার, তিনি হলেন সুপ্রিম টিচার। ভবিষ্যতে অনেকে জানবে - ওগো প্রভু তোমার লীলা ..... মহিমা বর্ণনা করে মারা যাবে কিন্তু প্রাপ্তি কিছুই হবে না। দেহ-অভিমানে এসে উল্টো কাজ করে। দেহী-অভিমানী হলে ভালো কাজ করবে। বাবা বলেন এখন তোমাদের হল বাণপ্রস্থ অবস্থা। ফিরে যেতেই হবে। হিসেব নিকেশ মিটিয়ে সবাইকে যেতে হবে। কেউ যেতে চাক বা না চাক, ফিরে যেতে হবেই। *এইরকম একটা দিন আসবে যেদিন এই দুনিয়াটা অনেক খালি হয়ে যাবে। শুধু ভারত থেকে যাবে। অর্ধকল্প শুধু ভারত ভূ খন্ড থাকবে সুতরাং দুনিয়া কত খালি হয়ে যাবে*। এমন চিন্তন কারো বুদ্ধিতে থাকবে না তোমাদের ছাড়া। তখন তো তোমাদের কেউ শত্রু থাকবে না। শত্রু আসে কেন ? ধনের লোভে। ভারতে এত মুসলমান ও ইংরেজ এসেছে কেন ? ধন সম্পদ দেখেছে। ধন সম্পদ তো অনেক ছিল, এখন আর নেই, তাই এখন আর কেউ নেই। ধন সম্পদ নিয়ে খালি করে গেছে। মানুষ এইসব জানে না। বাবা বলেন, ধন সম্পদ তো তোমরা নিজেরা শেষ করেছ, ড্রামা প্ল্যান অনুযায়ী। তোমাদের নিশ্চয় আছে আমরা অসীম জগতের পিতার কাছে এসেছি। কখনও কারো এই চিন্তন আসবে না যে, এ হল ঈশ্বরীয় পরিবার। আচ্ছা !



মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর গুডমর্নিং। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্যে মুখ্য সার :-

১. চলতে ফিরতে বুদ্ধিতে পড়াশোনার চিন্তন করতে হবে। যে কোনও কাজ করাকালীন বুদ্ধিতে সর্বদা যেন জ্ঞান বিন্দু টিপটিপ করে। এ হল সর্বশ্রেষ্ঠ ( দি বেস্ট ) পড়াশোনা, যে পড়া করে ডবল মুকুটধারী (ডবল ক্রাউন) হতে হবে।

২. অভ্যাস করতে হবে আমরা আত্মারা হলাম ভাই-ভাই। দেহ-অভিমানে এলেই উল্টো কর্ম হয়, তাই যতটা সম্ভব দেহী-অভিমানী হয়ে থাকতে হবে।

বরদান:-

অন্যদের সাথে সম্বন্ধ বা সম্পর্কে আসা কালীন ডায়মন্ড স্বরূপ ধারণ করে ডায়মন্ড দর্শনকারী বেদাগ ডায়মন্ড ভব

বাপদাদার শ্রীমৎ হল ডায়মন্ড (আত্মা রূপী হীরা) স্বরূপ ধারণ করে ডায়মন্ড (আত্মাকে) দেখবে। কোনও আত্মা কালো কয়লা রূপী তমোগুণী হলেও তোমাদের দৃষ্টি পড়লে তার কালিমা যেন কম হয়ে যায়। অমৃতবেলা থেকে রাত্রি পর্যন্ত যত আত্মার সম্বন্ধ সম্পর্কে আসবে শুধু ডায়মন্ড স্বরূপে ডায়মন্ড দর্শন করতে থাকো। কোনো রূপ বিঘ্ন বা স্বভাবের প্রভাবে ডায়মন্ডে যেন দাগ না লাগে। যতই অনেক প্রকারের পরিস্থিতি বিঘ্ন রূপে আসুক কিন্তু তোমরা এমন শক্তিশালী হও যে, তার কোনো প্রভাব যেন না পড়ে।

স্লোগান:-

মন ও বুদ্ধিকে মনমত থেকে সদা খালি রাখে যারা, তারাই হল আজ্ঞাকারী ।