২০-০৮-১৯ প্রাতঃমুরলি ওম্ শান্তি বাপদাদা মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - এ হলো অসীমের সীমাহীন স্টেজ, যাতে তোমরা আত্মারা অভিনয় করার জন্য চুক্তিবদ্ধ, এতে প্রত্যেকেরই অভিনয় নির্দিষ্ট"
প্রশ্ন:-
কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত করার পুরুষার্থ কি ?
উত্তর:-
কর্মাতীত হতে হলে সম্পূর্ণ সমর্পিত হতে হবে । নিজের কিছুই নেই । সবকিছু ভুলে গেলেই কর্মাতীত হতে পারবে । যার ধন - দৌলত, সন্তান ইত্যাদি স্মরণে আসে, সে কর্মাতীত হতে পারবে না। তাই বাবা বলেন, আমি গরীবের ভগবান । গরীব বাচ্চারা শীঘ্রই সমর্পণ হয়ে যায় । সহজেই তারা সবকিছু ভুলে এক বাবার স্মরণে থাকতে পারে ।
ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের (রুহানী) বাবা বসে নিজের আত্মা রূপী (রুহানী) বাচ্চাদের বোঝান, বাচ্চাদের বুদ্ধিতে আছে যে, এখন ঘরে ফিরে যেতে হবে । ভক্তদের বুদ্ধিতে এইকথা থাকে না । তোমরা জানো যে, এখন ৮৪-র চক্র সম্পূর্ণ হয়েছে । এ হলো অনেক বড় অসীম মণ্ডপ বা স্টেজ । সীমাহীন স্টেজ । এই পুরানো মণ্ডপ ত্যাগ করে ঘরে যেতে হবে । অপবিত্র আত্মারা তো যেতে পারবে না । তাই অবশ্যই পবিত্র হতে হবে । এখন এই খেলার অন্তিম মুহূর্ত । অপার দুঃখের অন্তিম সময় । এই সময় এ হলো মায়ার জৌলুস, যাকে মানুষ স্বর্গ বলে মনে করে, কতো মহল, জায়গা জমি, গাড়ি ইত্যাদি আছে, একে বলা হয় মায়ার প্রতিযোগিতা । নরকের সঙ্গে স্বর্গের প্রতিযোগিতা । এখানে অল্পকালের জন্য সুখ । ড্রামা অনুসারে এ হলো মায়ার লালসা । এখানে কতো মানুষ । প্রথমে তো কেবল এক আদি সনাতন দেবী - দেবতা ধর্মই ছিলো । এখন তো এই বিশ্ব রঙ্গমঞ্চ ফুল হয়ে গেছে । এখন এই চক্র সম্পূর্ণ হচ্ছে, এখানে সবই তমোপ্রধান, এই সৃষ্টিও তমোপ্রধান, এরপর আবার তা সতোপ্রধান হতে হবে । সম্পূর্ণ সৃষ্টিই তো নতুন হতে হবে, তাই না । নতুন থেকে পুরানো আবার পুরানো থেকে নতুন, এ তো অগুন্তি বার চলে আসছে । এ হলো অনাদি খেলা । এই খেলা কবে শুরু হয়েছে, সে কথা বলা যাবে না । অনাদি কাল ধরে এই খেলা চলে আসছে । এ কথাও তোমরাই জানো, আর কেউই জানে না । তোমরাও এই জ্ঞান পাওয়ার পূর্বে কিছুই জানতে না । দেবতারাও এই কথা জানতো না, কেবলমাত্র তোমরা পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণরাই তা জানো, এরপর এই জ্ঞান প্রায় লোপ হয়ে যাবে । বাবা তোমাদের সুখধামের মালিক করেছেন, আর কি চাই । বাবার থেকে যা পাওয়ার ছিলো, তা পেয়ে গেছো, আর কিছু পাওয়ার জন্য থাকে না । তাই বাবা বলেন, বাচ্চারা, তোমরাই সবথেকে বেশিমাত্রায় পতিত হয়েছো । প্রথম - প্রথম তোমরাই এসেছিলে অভিনয় করতে । তোমাদেরই আবার প্রথমে যেতে হবে । এ তো চক্র, তাই না । প্রথম - প্রথম তোমরাই মালায় গ্রথিত হবে । এ তো রুদ্র মালা । এই সুতোয় সম্পূর্ণ দুনিয়ার মানুষ গ্রথিত হয়ে আছে । এই সূতো থেকে বের হয়ে পরমধামে চলে যাবে, তারপর আবার এমনভাবেই সুতোয় গ্রথিত হবে । এ হলো অনেক বড় মালা । শিববাবার কতো সন্তান । প্রথমদিকে তোমরা দেবতারা আসো । এ হলো অসীমের মালা, যেখানে সবাই মণির মতো গ্রথিত হয়ে আছে । রুদ্র মালা আর বিষ্ণুর মালার মহিমা আছে । প্রজাপিতা ব্রহ্মার কোনো মালা নেই । তোমাদের অর্থাৎ ব্রহ্মাকুমার - কুমারীদের কোনো মালা নেই কারণ তোমাদের উত্তরণ, অবতরণ হয়, তোমরা হেরেও যাও । মুহূর্তে - মুহূর্তে মায়া তোমাদের ফেলে দেয়, তাই ব্রাহ্মণদের মালা তৈরী হয় না, তোমরা যখন সম্পূর্ণ পাস হয়ে যাও, তখন বিষ্ণুর মালা তৈরী হয় । প্রজাপিতা ব্রহ্মারও তো বংশকুলজী আছে । যখন তোমরা উত্তীর্ণ হয়ে যাও তখন বলা হবে, ব্রহ্মারও মালা আছে । এই বংশলতিকা তৈরী আছে । এই সময় মালা তৈরী হতে পারে না, কেননা আজ তোমরা পবিত্র হও, কাল আবার মায়া থাপ্পড় মেরে কালো কায়া করে দেয় । তোমরা যা অর্জন করেছো, সব হারিয়ে ফেলো । তখন তোমরা ভেঙ্গে পড়ো । কোথা থেকে পড়ে যায়, তার বিচার করো । বাবা তো তোমাদের বিশ্বের মালিক করেন । তাঁর শ্রীমতে চললে তোমরা উঁচু পদ প্রাপ্তি করতে পারো । হেরে গেলেই সব শেষ । কাম বিকার হলো মহাশত্রু, এর কাছে হেরে যেও না । বাকি সব বিকার হলো বাচ্চা । বড় শত্রুই হলো কাম বিকার । একেই জয় করতে হবে । কামকে জয় করতে পারলেই তোমরা জগৎজিত হতে পারবে । এই পাঁচ বিকার হলো অর্ধেক কল্পের শত্রু, এও সহজে ছাড়ে না । সবাই চিৎকার করে যে, ক্রোধ করতে হয়, কিন্তু কিসের দরকার, ভালোবেসেও কাজ হতে পারে । চোরকেও যদি ভালোবেসে বোঝাও, সেও চট করে সত্য বলে দেবে । বাবা বলেন যে, আমি তো প্রেমের সাগর, তাই যে কোনো অবস্থাই হোক না কেন, বাচ্চাদেরও ভালোবেসে কাজ করতে হবে । বাবার কাছে মিলিটারীর লোকজন আসে । বাবা তাদেরও বোঝান, তোমরা যদি স্বর্গে যেতে চাও, তাহলে শিববাবাকে স্মরণ করো । তাদের বলা হয় - তোমরা যদি যুদ্ধের ময়দানে দেহত্যাগ করো, তাহলে স্বর্গে যাবে । বাস্তবে যুদ্ধের ময়দান তো এটাই । ওরা তো লড়াই করতে করতে মারা যায় তারপর ওখানেই আবার জন্মগ্রহণ করে, কারণ সংস্কার তো নিয়ে যায় । স্বর্গে তো যেতে পারে না । তাই বাবা তাদের বোঝাতেন, শিববাবাকে স্মরণ করলে তোমরা স্বর্গে যেতে পারো, কেননা এখন স্বর্গের স্থাপনা হচ্ছে । শিববাবার স্মরণেই বিকর্ম বিনাশ হবে । এই জ্ঞান অল্পও যদি পাও, তাহলে এই অবিনাশী জ্ঞানের কখনোই বিনাশ হয় না । বাচ্চারা, তোমরা যে মেলা ইত্যাদি করো, তোমাদের কতো প্রজা তৈরী হয় । তোমরা তো রুহানী সেনা, এতে কমান্ডার, মেজর আদি অল্পই, প্রজা অনেক হয় । যারা খুব ভালোভাবে বোঝায়, তারা কিছু ভালো পদ পায় । তাদের মধ্যেও প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বিভাগের হয় । তোমরা শিক্ষা দিতেই থাকো, কেউ কেউ তো তোমাদের মতোও হয়ে যায় । কেউ - কেউ সবার উপরেও যেতে পারে । এমনও দেখা যায় একে অপরের থেকে উপরে চলে যায় । নতুনরা পুরানোদের থেকেও তীক্ষ্ণগতিতে এগিয়ে যায় । বাবার সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগযুক্ত যদি হতে পারে, তাহলে উঁচুতে চলে যাবে। সবকিছুই এই যোগের উপর নির্ভর করে । জ্ঞান তো খুবই সহজ, তোমরা তা অনুভব করো । বাবার স্মরণেই যতো বিঘ্ন আসে । বাবা বলেন, ভোজনের সময়ও বাবার স্মরণে তা গ্রহণ করবে কিন্তু কেউ কেউ দুই মিনিট কেউ আবার পাঁচ মিনিট স্মরণে থাকে । সম্পূর্ণ সময় স্মরণে থাকা কঠিন মনে হয় । মায়া কোথায় না কোথায় উড়িয়ে সব ভুলিয়ে দেয় । বাবা ছাড়া যখন কারো স্মরণ থাকবে না, তখনই কর্মাতীত অবস্থা হবে । কিছু যদি তোমাদের আপন মনে হয় তাহলে তার স্মরণ অবশ্যই আসবে । বাবার মতো হলে কিছুই স্মরণে আসবে না, বাবার কি স্মরণে আসে ? তাঁর সন্তান - সন্ততি নাকি ধন সম্পদ ? কেবল তোমরা বাচ্চারাই তাঁর স্মরণে আসো । বাচ্চারা, তোমাদের তো অবশ্যই বাবা স্মরণ করবে, কেননা বাবা এসেছেনই কল্যাণ করার জন্য । তিনি সকলকেই স্মরণ করেন কিন্তু ফুলের প্রতিই চলে যায় । ফুল আবার অনেক প্রকারের হয় । কোনো কোনো ফুলের গন্ধ থাকে না । এ তো বাগান, তাই না । বাবাকে বাগানের মালিও বলা হয় । তোমরা তো এ কথা জানোই, মানুষ ক্রোধে এসে কতো লড়াই - ঝগড়া করে । অনেক দেহ - অভিমান থাকে । বাবা বোঝান যে - কখনো কেউ ক্রোধ করলে শান্ত থাকা উচিত । ক্রোধ হলো ভূত । এই ভূতের সামনে শান্তির সঙ্গে উত্তর দিতে হবে ।
সর্বশাস্ত্র শিরোমণি শ্রীমদ্ভগবদগীতা হলো ঈশ্বরীয় মত । ঈশ্বরীয় মত, আসুরী মত, দৈবী মতের বিষয়ে একমাত্র ঈশ্বরই এসে বলেন । তিনি রাজযোগের জ্ঞান প্রদান করেন । এরপর এই জ্ঞান লুপ্ত হয়ে যাবে । তোমরা রাজার রাজা হয়ে গেলে এই জ্ঞান আর কি হবে ? তোমরা ২১ জন্ম তো প্রালব্ধ ভোগ করো । ওখানে এইকথা মনে পড়ে না যে, এই পুরুষার্থের জন্য এই ফল পেয়েছি । তোমরা অনেকবার সত্যযুগে গেছো । এই চক্র ঘুরতে থাকে । সত্যযুগ আর ত্রেতা হলো জ্ঞানের ফল । এমন নয় যে ওখানে জ্ঞান পাওয়া যায় । বাবা এসে এখানে তোমাদের ভক্তির ফল প্রদান করেন । বাবা বলেছেন যে, তোমরা সবথেকে বেশী ভক্তি করেছিলে । এখন একমাত্র বাবাকে স্মরণ করো, তাহলে তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে যাবে । এতেই যতো পরিশ্রম । তোমরা যদি রচনার আদি - মধ্য এবং অন্তকে স্মরণ করো, তাহলে চক্রবর্তী রাজা হয়ে যাবে । ভগবান তো বাচ্চাদের ভগবান - ভগবতীই বানাবেন, তাই না, কিন্তু দেহধারীদের ভগবান - ভগবতী বলা ভুল । ব্রহ্মা - বিষ্ণু এবং শিবের কতো সম্বন্ধ আছে । এই ব্রহ্মাই পরবর্তীতে বিষ্ণু হবেন, আর এই ব্রহ্মার মধ্যেই শিবের প্রবেশ । সূক্ষ্ম লোকের বাসিন্দাকে ফরিস্তা বলা হয় । তোমাদেরও ফরিস্তা হতে হবে, সাক্ষাৎকারও হয়, বাকি আর কিছুই নয় । সাইলেন্স, মুভি আর এখানে হল টকি -- এই তিন দুনিয়া । এ হলো বিশদে (ডিটেইল)। আর সংক্ষেপে হল - 'মনমনাভব', মামেকম্ (একমাত্র আমাকে) স্মরণ করো আর সৃষ্টিচক্রকে স্মরণ করো । এখানে বসে থাকলেও শান্তিধাম আর সুখধামকে স্মরণ করো । এই পুরানো দুঃখধামকে ভুলে যাও । বেহদের সন্ন্যাস বুদ্ধির দ্বারাই এ সম্ভব হবে । ওদের হলো জাগতিক সন্ন্যাস । এই নিবৃত্তি মার্গের মানুষরা প্রবৃত্তি মার্গের জ্ঞান দিতে পারে না । রাজা - রানী হওয়া হলো প্রবৃত্তি মার্গের । ওখানে সুখই সুখ । সন্ন্যাসীরা তো সুখকে স্বীকারই করে না । কোটির আন্দাজে এখানে সন্ন্যাসী আছে । গৃহস্থীদের কাছ থেকে নিয়ে তারা তাদের দিনাতিপাত করে । এক তো তোমরা দান - পুণ্যে অর্থ নিয়োগ করেছো তারপর পাপ কাজ করে পাপ আত্মা হয়ে গেছো । বাচ্চারা, তোমরা তো এখন অবিনাশী জ্ঞান রত্নের আদান - প্রদান করো । ওরা ধর্মশালা ইত্যাদি বানায়, তাই পরবর্তী জন্মে ভালো ফল পায় । ইনি তো হলেন অসীম জগতের পিতা । ইনি হলেন ডায়রেক্ট আর উনি ইন - ডায়রেক্ট । মানুষ ঈশ্বরকে অর্পণ করে, কিন্তু এঁদের দুজনের তো মুখ নেই । শিব বাবা তো হলেন দাতা, তাঁর কি কখনো ক্ষুধা - তৃষ্ণা হবে ? শ্রীকৃষ্ণ দাতা নন । বাবা তো সবাইকেই দেন, তিনি কখনোই নেন না । এক দেবে তো দশ পাবে, গরীব ২ টাকা দেয় তো পদ্মগুণ পেয়ে যায় (সুদামার উদাহরণ রয়েছে) । ভারত তো সোনার চড়ুই পাখির দেশ ছিলো । বাবা তোমাদের কতো ধনবান করেছেন । সোমনাথ মন্দিরে অপরিসীম ধন ছিলো, তার কতো লুট করে নিয়ে গেছে । ওখানে বড় - বড় হীরে - জহরত ছিলো । এখন তো তা দেখাই যায় না, সব কেটে নিয়ে গেছে । এই হিস্ট্রি আবার রিপিট হবে । ওখানকার সব খনি তোমাদের জন্য ভরপুর হয়ে যাবে । হীরে - জহরত তো ওখানে পাথরের মতো পড়ে থাকে । বাবা তোমাদের অবিনাশী জ্ঞান রত্নের দান করেন, যাতে তোমরা ধনবান হয়ে যাও । তাই মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চাদের কতো খুশী হওয়া উচিত । তোমরা যত এই পাঠ পড়তে থাকবে, ততই তোমাদের খুশীর পারদ চড়তে থাকবে । বড় পরীক্ষা যখন পাস করে, তখন বুদ্ধিতে তো এই কথাই থাকে যে - এই পাস করে এই হবো, এই করবো । তোমরা জানো যে, ইনি দেবতা হবেন । এ তো হলো জড় চিত্র । ওখানে আমরা চৈতন্য রূপে থাকবো । এই চিত্রও তোমরা যা বানিয়েছো, তা কোথা থেকে এসেছে ? দিব্য দৃষ্টিতে তোমরা দেখে এসেছো । এই চিত্র তো খুবই আশ্চর্যের । কেউ কেউ মনে করবে, এই চিত্র ব্রহ্মা বানিয়েছেন । যদি ইনি কোথাও থেকে শিখতেন, তাহলে কেবল একটাই শিখতেন কি ? আরো তো অনেক শিখতেন । ইনি বলেন, আমি কিছুই শিখিনি । এ তো বাবা দিব্য দৃষ্টির দ্বারা বানিয়েছেন । শ্রীমতের দ্বারাই এই চিত্র তৈরী হয়েছে । এই চিত্র মনুষ্য মতের নয় । এ সবই শেষ হয়ে যাবে । এর কোনো নাম - নিশানা থাকবে না । এ হলো সৃষ্টির অন্তিম সময় । ভক্তির কতো সামগ্রী আছে । এ সবও থাকবে না । নতুন দুনিয়াতে সবকিছুই নতুন থাকবে । তোমরা অনেকবার স্বর্গের মালিক হয়েছো । তারপর মায়া তোমাদের হারিয়ে দিয়েছে । ধনকে নয়, মায়া বিকারকে বলা হয় । বাচ্চারা, তোমরা রাবণের শৃঙ্খলে অর্ধেক কল্প আটকে ছিলে । রাবণ হলো তোমাদের সবথেকে পুরানো শত্রু । অর্ধেক কল্প ধরে রাবণের রাজত্ব চলে । লাখ বছর হিসেব দিলে তখন অর্ধেক - অর্ধেক হিসেব তো আসে না । এখানে কতো তফাৎ । বাবা তো তোমাদের বলেছেন, সম্পূর্ণ কল্পের আয়ু হলো পাঁচ হাজার বছরের । ৮৪ লাখ যোনি তো নেইই । এ হলো বিশাল বড় মিথ্যা । সুর্যবংশী, চন্দ্রবংশী দেবী - দেবতারা কি এতো লক্ষ বছর রাজত্ব করেছিলেন ? এই কোনো কাজের কথাই নয় । সন্ন্যাসীরা মনে করে, এখন যদি আমরা নিজেদের ভুল বলে মেনে নিই, তাহলে সব অনুগামীরা আমাদের ছেড়ে দেবে, ফলে সম্পূর্ণ বিপ্লব এসে যাবে, তাই এখন তারা তোমাদের মতে চলে নিজেদের রাজত্ব ত্যাগ করবে না । পরের দিকে তারা অল্পকিছু বুঝতে পারবে কিন্তু এখন নয় । বিত্তবানেরা এই জ্ঞান ধারণ করবে না । বাবা বলেন, আমি গরীবের ভগবান । বিত্তবানেরা কখনোই সমর্পিত হয়ে কর্মাতীত অবস্থা পেতে পারবে না । বাবা হলেন অনেক বড় কোম্পানির দালাল । তিনি গরীবের থেকেই নেবেন । বিত্তবানের থেকে নিলে অনেক দিতেও হবে । বিত্তবানেরা এখানে সংখ্যায় খুব কমই আসে। কেননা এখানে সবকিছুই ভুলতে হয় । কিছুই যদি নিজস্ব না থাকে, তখনই বলা হবে কর্মাতীত অবস্থা । বিত্তবানেরা তো ভুলতে পারবে না, যারা পূর্ব কল্পে এই অবিনাশী উত্তরাধিকার নিয়েছিল, তারাই আবার নেবে । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদের নমস্কার জানাচ্ছেন ।
ধারণার জন্য মূখ্য সার :-
১. বাবা যেমন প্রেমের সাগর, তেমনই মাস্টার প্রেমের সাগর হয়ে ভালবাসার সাথে কাজ করিয়ে নিতে হবে । ক্রোধ করবে না । কেউ যদি ক্রোধ করে, তোমাদের শান্ত থাকতে হবে ।
২. বুদ্ধির দ্বারা এই পুরানো দুঃখের দুনিয়াকে ভুলে অসীম জগতের সন্ন্যাসী হতে হবে । শান্তিধাম আর সুখধামকে স্মরণ করতে হবে । অবিনাশী জ্ঞান - রত্নের আদান - প্রদান করতে হবে ।
বরদান:-
'মনমনাভবে' র সঙ্গে 'মধ্যাজী ভবে' র মন্ত্র স্বরূপে স্থিত থেকে মহান আত্মা ভব
বাচ্চারা, তোমাদের 'মনমনাভবে' র সঙ্গে 'মধ্যাজী ভবে' রও বরদান রয়েছে । নিজের স্বর্গের স্বরূপ যখন স্মৃতিতে থাকবে, তাকে বলা হবে 'মধ্যাজী ভব' । যে নিজের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তির নেশায় থাকে, সে-ই' মধ্যাজী ভবে' র মন্ত্র স্বরূপে স্থির থাকতে পারে । যে 'মধ্যাজী ভব' থাকে, সে তো 'মনমনাভব' হবেই । এমন বাচ্চার প্রতিটি সঙ্কল্প, বাণী আর কর্ম মহান হয়ে যায় । স্মৃতি স্বরূপ হওয়ার অর্থ মহান আত্মা হওয়া ।
স্লোগান:-
খুশী তোমাদের বিশেষ সম্পদ, এই সম্পদ কখনো ত্যাগ কোরো না* ।