২০-১০-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ২৪-০২-৮৫ মধুবন


সঙ্গমযুগ সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাপ্তির যুগ

আজ বাপদাদা চতুর্দিকের প্রাপ্তিস্বরূপ বিশেষ আত্মাদের দেখছিলেন l একদিকে অনেক আত্মার প্রাপ্তি অল্পকালীন অর্থাৎ প্রাপ্তির সাথে সাথে অপ্রাপ্তিও আছে l আজ প্রাপ্তি তো কাল অপ্রাপ্তি l সুতরাং, একদিকে অনেক প্রাপ্তি, সেইসঙ্গে কিছু অপ্রাপ্তিও থাকে l অন্যদিকে সদাকালের প্রাপ্তিস্বরূপ অল্প কিছু বিশেষ আত্মা l বাবা দুইয়ের মধ্যে বিশাল প্রভেদ দেখেছিলেন l বাপদাদা প্রাপ্তিস্বরূপ বাচ্চাদের দেখে উৎফুল্ল হচ্ছিলেন l তোমরা প্রাপ্তিস্বরূপ বাচ্চারা কত পদমাপদম ভাগ্যবান ! এত প্রাপ্তি করেছ যে তোমরা সব বিশেষ আত্মার প্রতিটা কদমে পদম লাভ হয় l জাগতিক জীবনে প্রাপ্তিস্বরূপ হয়ে উঠতে বিশেষ চার বিষয়ের প্রাপ্তি আবশ্যক l ১) সুখময় সম্বন্ধ l ২) স্বভাব আর সংস্কার যা সদা শীতল আর স্নেহী l ৩) প্রকৃত উপার্জনের শ্রেষ্ঠ সম্পত্তি l ৪) শ্রেষ্ঠ কর্ম শ্রেষ্ঠ সম্পর্ক l যদি এই চার বিষয়ই প্রাপ্ত হয় তাহলে লৌকিক জীবনেও সফলতা আর খুশি থাকে l যতই হোক, লৌকিক জীবনের প্রাপ্তিসকল অল্পকালীন প্রাপ্তি, আজ সম্বন্ধ সুখময় তো কাল সেই সম্বন্ধই দুঃখময় হয়ে যায় l আজ সাফল্য তো কাল নেই l এর বিপরীতে, তোমরা সব প্রাপ্তিস্বরূপ শ্রেষ্ঠ আত্মার অলৌকিক শ্রেষ্ঠ জীবনেও এই চার বিষয়েরই সদা প্রাপ্তি, কারণ ডিরেক্টলি সুখদাতার সাথে তোমাদের অবিনাশী সম্বন্ধ আছে l যে অবিনাশী সম্বন্ধ কখনও দুঃখ দেয় না বা বঞ্চিত করে না l বিনাশী সম্বন্ধে বর্তমান সময়ে দুঃখও আছে বা বঞ্চনাও আছে l অবিনাশী সম্বন্ধে প্রকৃত স্নেহ আছে, সুখ আছে l সেইজন্য বাবার থেকে সদা স্নেহ আর সুখের সর্ব সম্বন্ধের প্রাপ্তি, একটা সম্বন্ধও কম নয় l যে সম্বন্ধ চাও সেই সম্বন্ধ থেকে প্রাপ্তির অনুভব করে নাও l যে আত্মার যে সম্বন্ধ প্রিয় সেই সম্বন্ধের মাধ্যমে ভগবান তাঁর প্রেম-প্রীতি- ভালোবাসার দায়িত্ব পরিপূর্ণ করছেন l ভগবানকে তোমরা সর্ব সম্বন্ধী বানিয়ে নিয়েছ l এইরকম শ্রেষ্ঠ সম্বন্ধ সারা কল্পে আর প্রাপ্ত হতে পারে না l সুতরাং সম্বন্ধও প্রাপ্ত করেছ তোমরা l সেইসঙ্গে, এই অলৌকিক দিব্য জন্মে সদা শ্রেষ্ঠ স্বভাব, ঈশ্বরীয় সংস্কার হওয়ার কারণে স্বভাব সংস্কার কখনও দুঃখ দেয় না l যা বাপদাদার সংস্কার সেটাই বাচ্চাদের সংস্কার, যা বাপদাদার স্বভাব সেটাই বাচ্চাদের স্বভাব l স্ব-ভাব অর্থাৎ সদা প্রত্যেকের প্রতি স্ব-এর অর্থাৎ আত্মার ভাব l স্ব-এর অর্থ শ্রেষ্ঠও বটে ! স্ব-এর ভাব বা শ্রেষ্ঠ ভাবই স্বভাব l সদা মহাদানী, দয়াশীল, বিশ্ব কল্যাণকারী - এই সংস্কার বাবার, সুতরাং এটাই তোমাদের সংস্কার হওয়া উচিত l সেইজন্য স্বভাব আর সংস্কার সদা খুশির প্রাপ্তি করায় l এইভাবেই, তোমাদের প্রকৃত উপার্জনের সুখময় সম্পত্তি আছে l তাহলে অবিনাশী রত্ন ভান্ডার তোমরা কত পেয়েছ ? তোমরা প্রত্যেকে রত্নভান্ডারের খনির মালিক l শুধুই ভান্ডার পাওনি, বরং অক্ষয়, অফুরন্ত ভান্ডার তোমরা লাভ করেছ যা তোমরা নিরন্তর খরচ করে, খেয়ে বাড়াতে পার l যতই খরচ কর ততই বাড়ে l তোমরা তো অনুভাবী, তাই না ! স্থূল সম্পত্তি কিসের জন্য উপার্জন কর ? যাতে ডাল রুটি খেতে পার আর তোমাদের পরিবার সুখী হয় এবং বিশ্বে তোমাদের পরিচিতি গড়ে ওঠে ! তোমরা নিজেদের দেখ কত সুখ আর খুশির ডাল রুটি পাচ্ছ l গায়নও আছে, *ডাল রুটি খাও, প্রভুর গীত গাও l* এইভাবেই তোমাদের ডাল রুটি খাওয়ার গায়ন হয়েছে l তোমরা সব ব্রাহ্মণ বাচ্চার প্রতি বাপদাদার গ্যারান্টি আছে, ব্রাহ্মণ বাচ্চারা ডাল রুটি থেকে বঞ্চিত হতে পারে না l আসক্তি আছে এমন খাবার পাবে না, কিন্তু ডাল রুটি অবশ্যই পাওয়া যাবে l ডাল রুটিও আছে, পরিবারও ঠিক আছে আর তোমাদের নাম তো কত মহিমাযুক্ত ! তোমাদের নাম এতই মহিমান্বিত যে আজ তোমরা তোমাদের লাস্ট জন্ম পর্যন্ত পৌঁছে গেছ, অনেক আত্মা তোমাদের জড় চিত্রের নামের দ্বারা তাদের কাজ সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছে l তারা তোমরা সব দেবী-দেবতার নাম নিয়ে তাদের কাজে অভীষ্ট লাভ করছে l তোমাদের নাম এতটাই মহিমান্বিত ! শুধুমাত্র এক জন্মের জন্য তোমাদের নাম মহিমাযুক্ত হয় না, বরং সারা কল্প তোমরা মহিমান্বিত হও l সেইজন্যই তোমরা প্রকৃত সুখের সম্পত্তিবান l বাবার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হওয়ায় তোমাদের সাথেও শ্রেষ্ঠ সম্পর্ক থাকে l তোমাদের সাথে সম্পর্ক এমন শ্রেষ্ঠ যে তোমাদের জড় চিত্রের সাথে সেকেন্ডের সম্পর্কের জন্যও সেই আত্মারা তৃষিত ! সারা রাত ধরে তারা জেগে থাকে l শুধু সেকেন্ডের পলকমাত্র দর্শনের সম্পর্কের জন্য তারা ডাকতে থাকে l তারা অনবরত চিৎকার করে যায় শুধু সামনে যাওয়ার জন্য, সেইজন্য কত সহন করে ! শুধুই তো চিত্র, এমন চিত্র তাদের ঘরেও আছে, তবুও এক সেকেন্ডের সমুখ-সম্পর্কের জন্য কতই না তৃষিত ! অসীম জগতের এক বাবার হওয়ার কারণে সমগ্র বিশ্বের আত্মাদের সাথে তোমাদের সম্পর্ক হয়ে গেছে l তোমরা এখন অসীম জগতের পরিবারের হয়ে গেছ l বিশ্বের সকল আত্মার সাথে তোমাদের সম্পর্ক হয়ে গেছে l সুতরাং চার বিষয়ই তোমরা অবিনাশীরূপে প্রাপ্ত করেছ, সেইজন্য তোমাদের সদা সুখী জীবন l প্রাপ্তিস্বরূপ জীবন l ব্রাহ্মণ জীবনে কোনও অপ্রাপ্ত বস্তু নেই l এটা তোমাদের গীত l এইরকম প্রাপ্তিস্বরূপ তো তোমরা নাকি হতে হবে ? তাইতো, তোমাদের বলা হয়েছিল বাবা আজ প্রাপ্তিস্বরূপ বাচ্চাদের দেখছিলেন l যে শ্রেষ্ঠ জীবনের জন্য দুনিয়ার লোকে কত পরিশ্রম করে ! আর তোমরা কি করেছ ? পরিশ্রম করেছ নাকি ভালোবেসেছ ? তোমাদের ভালোবাসাতেই বাবাকে তোমরা আপন করে নিয়েছ l সুতরাং দুনিয়ার সবাই পরিশ্রম করে আর তোমরা তাঁকে প্রাপ্ত করেছ তাঁর প্রতি তোমাদের অনুরাগে l *বাবা বলেছ, আর রত্নভান্ডারের চাবি পেয়েছ l* তোমরা যদি তাদের জিজ্ঞাসা কর তো তারা কী বলবে ? কিছু উপার্জন করা খুব কঠিন, আর তোমরা কী বলো ? কদমে পদম উপার্জন ! আর এই জীবনের সাথে চলা তোমাদের জন্য কত সহজ ! তোমরা উড়তি কলায় হলে তো চলা থেকেও বেঁচে যাবে l তোমরা বলো, 'চলব কি, উড়তে হবে l' কত তফাৎ হয়ে যায় ! বাপদাদা আজ সারা বিশ্বের সব বাচ্চাকে দেখছিলেন l সবাইই তাদের নিজ নিজ প্রাপ্তির ভালোবাসায় ব্যস্ত l কিন্তু রেজাল্ট কী ? তারা সকলেই কিছুর খোঁজে ব্যস্ত হয়ে আছে l সাইন্টিস্টদের দেখ, তারা নিজেদের খোঁজে এতই মগ্ন যে আর কিছু ভাবতে পারে না l দেখ, মহান আত্মারা কীভাবে ঈশ্বরের খোঁজে রত ! সামান্য ভ্রান্তির কারণে তারা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত l আত্মাই পরমাত্মা বা পরমাত্মা সর্বব্যাপী, এই ভ্রান্ত চিন্তনের জন্যই তারা এখনও খুঁজে চলেছে l প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত থেকে গেছে l সাইন্টিস্টরাও এখনো ভেবে যাচ্ছে তাদের আরও সামনে যেতে হবে, আরও সামনে... চন্দ্রমাতে, নক্ষত্রে দুনিয়া বানাবে, এইরকম অনুসন্ধান করতে করতে তারা তাদের গবেষণায় হারিয়ে গেছে l শাস্ত্রের অর্থ খোঁজ করার লক্ষ্যে সেই অর্থ থেকেই বঞ্চিত হয়েছে l রাজনৈতিক নেতারা দেখ কীভাবে নিজেদের হারিয়ে ফেলেছে সামাজিক অবস্থানের আসন দখলের ছোটাছুটিতে l দেখ কীভাবে দুনিয়ার অ-জ্ঞানী আত্মারা বিনাশী প্রাপ্তির ছোট টুকরোর ভরসাকে প্রকৃত ভরসাস্থল ভেবে বসে আছে l আর তোমরা কি করেছ ? তারা সবাই ভাবনাতেই হারিয়ে গেছে আর তোমরা সবকিছু প্রাপ্ত করেছ l বিভ্রান্তির অবসান ঘটিয়েছ l সেইজন্য তোমরা প্রাপ্তিস্বরূপ হয়ে গেছ, সদা প্রাপ্তিস্বরূপ শ্রেষ্ঠ আত্মা !



বাপদাদা ডবল বিদেশি বাচ্চাদের বিশেষভাবে অভিনন্দিত করেন, কারণ বিশ্বের অনেক আত্মার মধ্যে তোমরা সব শ্রেষ্ঠ আত্মার চেনার নেত্র শক্তিশালী থেকেছে, সেইজন্যই তোমরা চিনেছ আর তাঁকে পেয়েছ l সুতরাং, বাপদাদা ডবল বিদেশি বাচ্চাদের চেনার নেত্র দেখে বাচ্চাদের গুণগান গাইছেন *বাহ্ বাচ্চারা বাহ্ !* কারণ দূরদেশী হয়েও, ভিন্ন ধর্মের হয়েও, ভিন্ন নিয়ম নীতির হয়েও তোমরা নিজের প্রকৃত বাবাকে কাছ থেকে চিনে নিয়েছ l কাছের সম্বন্ধে এসে গেছ l ব্রাহ্মণ জীবনের নিয়ম-নীতিকে নিজের আদি নিয়মনীতি উপলব্ধি করে সহজেই নিজেদের জীবনে আপন করে নিয়েছ l একেই বলা হয়, বিশেষ লাভলী আর লাকি বাচ্চা l বাচ্চাদের যেমন বিশেষ খুশি থাকে, বাপদাদারও বিশেষ খুশি থাকে l ব্রাহ্মণ পরিবারের আত্মারা বিশ্বের কোনায় কোনায় চলে গেছে, কিন্তু প্রতিটা কোন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া শ্রেষ্ঠ আত্মারা আবারও নিজেদের পরিবারে ফিরে এসেছে l বাবা খুঁজেছেন, আর তোমরা চিনেছ, সেইজন্য প্রাপ্তির অধিকারী হয়ে গেছ l আচ্ছা -



এইরকম অবিনাশী প্রাপ্তিস্বরূপ বাচ্চাদের, সদা সর্ব সম্বন্ধ অনুভবকারী বাচ্চাদের, সদা অবিনাশী সম্পত্তিবান বাচ্চাদের, সদা বাবা সমান শ্রেষ্ঠ সংস্কার আর সদা স্ব-ভাবে থাকা সর্ব প্রাপ্তির ভান্ডার তথা সর্বপ্রাপ্তির মহান দানী বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l



*যুগলদের সাথে- অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎকার*



প্রবৃত্তিতে থেকে সর্ব বন্ধন থেকে তোমরা স্বতন্ত্র আর বাবার প্রিয়, তাই না ? তোমরা আটকে পড়নি তো ? খাঁচার পাখি নও, উড়ন্ত বিহঙ্গ, নয় কি ! সামান্যও বন্ধন ফাঁদে আটকাতে পারে l তোমরা বন্ধন থেকে মুক্ত হলে সদা উড়তে থাকবে l সুতরাং কোনরকম বন্ধন থাকবে না, না দেহের, না সম্বন্ধের, না প্রবৃত্তির, না পদার্থের l কোনও বন্ধন না থাকাকেই বলা হয় পৃথক হয়েও প্রিয় হওয়া l যারা স্বতন্ত্র তারা উড়তি কলায় হবে আর পরতন্ত্র অর্থাৎ যারা পরনির্ভরশীল তারা অল্প উড়বেও কিন্তু বন্ধন তাদের আবার নীচে নামিয়ে আনবে l সুতরাং তারা কখনো নীচে, কখনো উপরে হয়, তাদের সময় এতে চলে যাবে l সদা একরস উড়তি কলার অবস্থা আর কখনো নীচে, কখনো উপরের অবস্থা, দুইয়ের মধ্যে রাত-দিনের তারতম্য ! তোমরা কোন অবস্থায় আছ ? সদা নির্বন্ধন, সদা স্বতন্ত্র বিহঙ্গ ? সদা বাবার সঙ্গে থাক ? কোনও আকর্ষণে আকৃষ্ট হও না, এই জীবনই প্রিয় l যে বাবার প্রিয় হয় তার জীবন সদা প্রিয় l কোনরকম দ্বন্দ্বের জীবন নয় l আজ এই হয়েছে, কাল এই হয়েছে, না l কিন্তু সদা বাবার সাথে থাকে, একরস স্থিতিতে থাকে l সদা আনন্দের জীবন l যদি আনন্দ না থাকে, তাহলে অবশ্যই বিভ্রান্ত হবে l আজ এই প্রবলেম, কাল সেই প্রবলেম, এইসব কিছু দুঃখধামের ব্যাপার, দুঃখধামে তো অবশ্যই আসবে, কিন্তু তোমরা সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণ সুতরাং সমস্ত দুঃখ নীচে থেকে যাবে l দুঃখধাম থেকে তোমরা সরে এসেছ, সুতরাং দুঃখ দেখলেও সেটা তোমাদের স্পর্শ করবে না l কলিযুগ ছেড়ে দিয়েছ, কিনারা ছেড়ে দিয়েছ, এখন সঙ্গমযুগে পৌঁছেছ যখন সঙ্গম সদা উঁচু দেখায় l সঙ্গমযুগী আত্মারা সদা উঁচু, তারা নীচে হয় না l যখন বাবা এসেছেন ওড়ানোর জন্য তখন উড়তি কলা থেকে নীচে এসেছই কেন ! নীচে আসা মানেই আটকে পড়া l এখন পাখা পেয়েছ তো উড়তে থাক, নীচে এসই না l আচ্ছা ?



*অধরকুমারদের সাথে :-* সবাই একনিষ্ঠায় মগ্ন থাক, তাই না ? এক বাবা আর আমরা, তৃতীয় কেউ নেই l একেই বলা হয়ে থাকে নিষ্ঠায় মগ্ন হওয়া l আমি আর আমার বাবা l এই ছাড়া অন্য কেউ 'আমার' আছে ? আমার বাচ্চা, আমার নাতি ... এইরকম নয় তো ! 'আমার' - এতে মমতা থাকে l আমিত্ব ভাব সমাপ্ত হওয়া অর্থাৎ মমতা সমাপ্ত হওয়া l অতএব, তোমাদের সব মমতা বাবার প্রতি l এর রূপান্তর ঘটে শুদ্ধ মোহ হয়ে গেছে l বাবা সদা শুদ্ধ, সেইজন্য মোহ রূপান্তরিত হয়ে প্রীতি হয়ে গেছে l এক আমার বাবা, শুধু 'আমার এক বাবা' এতেই সব কিছুর অবসান হয়ে যায় এবং একের স্মরণ সহজ হয়ে যায় l অতএব, তোমরা সদা সহজ যোগী l *'আমি শ্রেষ্ঠ আত্মা আর আমার বাবা'*, শুধু এটুকুই l নিজেকে শ্রেষ্ঠ আত্মা মনে করলে শ্রেষ্ঠ কর্ম নিজে থেকেই হবে, শ্রেষ্ঠ আত্মার সামনে মায়া আসতে পারে না l



*মাতাদের সাথে :-* মাতারা সদা বাবার সাথে খুশির দোলায় দুলতে থাক, তাই না ! গোপ-গোপীরা সদা খুশিতে নাচে অথবা দোলায় দোলে l সুতরাং যারা সদা বাবার সাথে থাকে তারা খুশিতে নাচে l বাবা যখন তোমাদের সাথে, সর্বশক্তিও তোমাদের সাথে আছে l বাবার সাহচর্য তোমাদের শক্তিশালী বানায় l যারা বাবার সঙ্গে থাকে, তারা সদা নির্মোহ হয়, কারও প্রতি মোহ তাদের কষ্ট দেয় না l তাহলে তোমরা নষ্টমোহ হয়েছ ? যে পরিস্থিতিই আসুক না কেন, তোমরা সব পরিস্থিতিতেই 'নষ্টমোহ' l যত নষ্টমোহ হবে, ততই স্মরণ আর সেবায় এগিয়ে যেতে থাকবে l



*মধুবনে আগত সেবাধারীদের সাথে :-* সেবার খাতায় তোমরা জমা করেছ, তাই না ! এখনও মধুবনের বাতাবরণে তোমাদের স্থিতি শক্তিশালী বানানোর চান্স পেয়েছ এবং ভবিষ্যতের জন্য তোমরা জমা করেছ, সুতরাং তোমাদের ডবল প্রাপ্তি হয়েছে l যজ্ঞ সেবা অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ সেবা শ্রেষ্ঠ স্থিতিতে থেকে করলে লক্ষ-কোটি গুন ফল জমা হয়ে যায় l যে সেবাই কর, প্রথমে এটা দেখ, তোমরা শক্তিশালী স্থিতিতে স্থিত হতে সেবাধারী হয়ে সেবা করছ কিনা ! সাধারণ সেবাধারী নয়, আধ্যাত্ম সেবাধারী l আধ্যাত্মিক সেবাধারীর মধ্যে আধ্যাত্মিক নেশা এবং আধ্যাত্মিক ঝলক সদা ইমার্জ রূপে থাকা উচিত l যখন রুটি বেলছ তখনও স্বদর্শন চক্র যেন ঘুরতে থাকে l হতে পারে তোমরা লৌকিক নিমিত্ত স্থূল কার্য করছ, কিন্তু স্থূল এবং সূক্ষ্ম সেবা উভয়ই একসাথে একই সময়ে হতে দাও, হাতে স্থূল কাজ আর বুদ্ধি দ্বারা মন্সা সেবা কর, তাহলে ডবল হয়ে যাবে l হাত দিয়ে কর্ম করাকালীন স্মরণের শক্তি দ্বারা এক স্থানে থেকেও অনেক সেবা করতে পার l যতই হোক, মধুবন তো লাইটহাউস, লাইট হাউস এক জায়গায় স্থির থাকে, কিন্তু চতুর্দিকে সেবা করে l এইভাবে সেবাধারী তাদের নিজেদের এবং অন্যদের জন্য অনেক শ্রেষ্ঠ প্রালব্ধ তৈরি করতে পারে l আচ্ছা ! ওম্ শান্তি l

আজ বাপদাদা সারারাত সব বাচ্চাদের সাথে মিলন উদযাপন করেছেন এবং সকাল ৭ টার সময় স্মরণ-স্নেহ দিয়ে তাদের বিদায় জানিয়েছেন, সকালের ক্লাস বাপদাদাই করিয়েছেন

রোজ বাপদাদার থেকে মহাবাক্য শুনতে শুনতে তোমরা মহান আত্মা হয়ে গেছ l সুতরাং, আজকের দিনের এই সার সারাদিন মনের সুরের সাথে শোন, মহাবাক্য শুনে কীভাবে তোমরা মহান হয়েছ ! সর্বাপেক্ষা মহান কর্তব্য করার জন্য তোমরা সদা নিমিত্ত হও প্রত্যেক আত্মার প্রতি মন্সা দ্বারা, বচন দ্বারা, সম্পর্ক দ্বারা তোমরা মহাদানী আত্মা এবং সদা মহান যুগের আহ্বানকারী অধিকারী আত্মা l শুধু এটাই স্মরণে রেখ l সদা এই মহান স্মৃতি যারা বজায় রাখে এমন শ্রেষ্ঠ আত্মাদের হারানিধি বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ এবং গুড মর্নিং l আগামী এবং বর্তমান বাদশাহদের বাবার নমস্কার l আচ্ছা l

বরদান:-

শুদ্ধ আর শক্তিশালী সঙ্কল্পের শক্তি দ্বারা ব্যর্থ ভাইব্রেশন সমাপ্ত করে প্রকৃত সেবাধারী ভব

বলা হয়ে থাকে সঙ্কল্পও সৃষ্টি বানাতে পারে l যখন দুর্বল আর ব্যর্থ সঙ্কল্প কর তখন ব্যর্থ বায়ুমন্ডলের দুনিয়া সৃষ্টি হয় l প্রকৃত সেবাধারী তারাই, যারা নিজের শুদ্ধ শক্তিশালী সঙ্কল্প দ্বারা পুরানো ভাইব্রেশনও সমাপ্ত করে l ঠিক যেমন সাইন্স অস্ত্র দ্বারা অস্ত্রকে ধ্বংস করে, এক বিমান দ্বারা অন্য বিমানকে আছড়ে ফেলে, ঠিক সেভাবেই তোমাদের শুদ্ধ ও শক্তিশালী সঙ্কল্পের ভাইব্রেশন, ব্যর্থ ভাইব্রেশনের সমাপ্তি ঘটায় l এখন এইরকম সেবা কর l

স্লোগান:-

বিঘ্নরূপী সোনার সূক্ষ্ম সুতো থেকে মুক্ত হও আর মুক্তি-বর্ষ উদযাপন কর l