১৫-০২-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা- এই পর্যন্ত যা কিছু পড়েছ সেই সব ভুলে যাও, একদম শৈশবকালে চলে যাও, তবেই এই আধ্যাত্মিক (রুহানী) পড়াতে পাশ করতে পারবে"
প্রশ্ন:-
যে সব বাচ্চাদের দিব্য-বুদ্ধি প্রাপ্ত হয়েছে, তাদের লক্ষণ কি ?
উত্তর:-
সেই সব বাচ্চারা এই পুরানো দুনিয়াকে এই চক্ষু দ্বারা দেখেও যেন দেখবে না। তাদের বুদ্ধিতে সর্বদা থাকে যে এই পুরানো দুনিয়া যে কোনো মুহূর্তে শেষ হল বলে। এই শরীরও পুরানো, তমোপ্রধান, তবে আত্মাও তমোপ্রধান, এর সাথে আর কি প্রীতি রাখব। এই রকম দিব্য বুদ্ধি সম্পন্ন বাচ্চাদের সাথেই বাবারও হৃদয় জুড়ে যায়। এই রকম বাচ্চারাই নিরন্তর বাবার স্মরণে থাকতে পারে। সেবাতেও অগ্রসর হতে পারে।
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি আত্মা রূপী বাচ্চাদের আত্মাদের পিতা বোঝাচ্ছেন। যেমন জাগতিক (হদের) সন্ন্যাসীরা ঘর-বাড়ী ত্যাগ করে, কারণ তারা মনে করে আমরা ব্রহ্মতে লীন হয়ে যাব, সেইজন্য দুনিয়ার আসক্তি ছাড়তে হবে। অভ্যাসও ঐরকম করতে থাকে। কোথাও গিয়ে একান্তে থাকে। তারা হল হঠযোগী, তত্ত্ব জ্ঞানী। মনে করে ব্রহ্মতে লীন হয়ে যাবে। সেইজন্য তারা মায়া-মমতা ত্যাগ করবে বলে ঘর-বাড়ী ছেড়ে দেয়। বৈরাগ্য এসে যায়। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে মায়া-মমতা যায় না। স্ত্রী- সন্তান ইত্যাদি স্মরণে আসতে থাকে। এখানে তো তোমাদের জ্ঞানের বুদ্ধির দ্বারা সব কিছু ভুলে যেতে হয়। কোনো কিছুই তাড়াতাড়ি ভোলা যায় না। এখন তোমরা এই অসীমের (বেহদের) সন্ন্যাস করো। স্মরণ তো সব সন্ন্যাসীদেরও থাকে। কিন্তু তাদের বুদ্ধিতে বলে আমাদের ব্রহ্মতে লীন হতে হবে, সেইজন্য আমাদের দেহ বোধ (দেহ ভান) রাখতে নেই। ওটা হল হঠযোগ মার্গ। মনে করে আমরা এই শরীর ছেড়ে ব্রহ্মতে লীন হয়ে যাব। ওদের এটা জানা নেই যে আমরা শান্তিধামে কিভাবে যেতে পারি। তোমরা এখন জান আমাদের নিজ নিকেতনে যেতে হবে। যেমন বিলেত থেকে এলে মনে করে আমাদের বম্বে যেতে হবে ভায়া...। এখন তোমরা বাচ্চারাও দৃঢ় ভাবে সুনিশ্চিত। অনেকে বলে এদের পবিত্রতা ভালো, জ্ঞান ভালো, সংস্থা ভালো। মাতা-রা ভালো পরিশ্রম করে, কারণ তারা নিরলসভাবে বোঝায়। নিজের তন-মন-ধন দেয়, সেই জন্য তাদের সেবা করতে ভালো লাগে। কিন্তু আমরাও এরকম অভ্যাস করি, সেই খেয়ালও হয় না। সেরকম বিরলই কেউ আসে। সে তো বাবাও বলেন কোটির মধ্যে কেউ অর্থাৎ যারা তোমাদের কাছে আসবে, তার মধ্যে থেকে কেউ বেরোবে। তাছাড়া এই দুনিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার সম্মুখে। তোমরা জানো এখন বাবা এসেছেন। সাক্ষাৎকার হোক বা না হোক, বিবেক বলে অসীমের বা বেহদের বাবা এসেছেন। এটাও তোমরা জানো বাবা একজনই, সেই পারলৌকিক বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর। লৌকিক বাবাকে কখনো জ্ঞানের সাগর বলবে না। এটাও বাবা এসেই তোমাদের বাচ্চাদের নিজের পরিচয় দেন। তোমরা জানো এখন পুরোনো দুনিয়া শেষ হতে চলেছে। আমরা ৮৪ জন্মের চক্র সম্পূর্ণ করেছি। এখন আমরা পুরুষার্থ করছি ভায়া শান্তিধাম হয়ে সুখধামে ফিরে যাওয়ার জন্য। শান্তিধাম তো অবশ্যই যেতে হবে। ওখান থেকে আবার এখানে ফিরে আসতে হবে। মানুষ তো এই কথায় বিহ্বল হয়ে রয়েছে। কেউ মারা গেলে তো ভাবে বৈকুন্ঠে গেছে। কিন্তু বৈকুন্ঠ কোথায় আছে? এই *বৈকুন্ঠ* নামটা তো ভারতবাসীই জানে অন্য ধর্মের কেউ জানেই না। শুধু মাত্র নাম শুনেছে আর চিত্র দেখেছে। দেবতাদের মন্দির ইত্যাদি অনেক দেখেছে। যেমন হল এই দিলওয়ারা মন্দির। লক্ষ-কোটি টাকা খরচা করে তৈরী হয়েছে, তৈরী হয়েই চলেছে। দেবী-দেবতাদের বৈষ্ণব বলা হয়। তারা হল বিষ্ণুর বংশাবলী।তারা তো পবিত্রই। সত্যযুগকে বলা হয় পবিত্র দুনিয়া। এটা হল পতিত দুনিয়া। সত্যযুগের বৈভব ইত্যাদি এখানে হয় না। এখানে তো আনাজ ইত্যাদি তমোপ্রধান হয়ে যায়। স্বাদও তমোপ্রধান। বালিকারা ধ্যানে যায়,বলে সুবীরস পান করে এসেছে। খুবই সুস্বাদু ছিল। এখানেও তোমাদের হাতের খাওয়ার হলে বলে খুব সুস্বাদু, কারণ তোমরা সুন্দর নিয়ম মেনে কর। সবাই মন ভরে খায়। এমন নয়, তোমরা যোগে থেকে তৈরী করো তবে সুস্বাদু হয় ! না, এটাও অভ্যাস বশতঃই হয়। কেউ খুব ভালো খাওয়ার তৈরী করে। ওখানে তো সব জিনিস সতোপ্রধান, সেইজন্য খুব শক্তি সম্পন্ন হয়। তমোপ্রধান হওয়ার জন্য শক্তি কম হয়ে যায়, আবার তার থেকে রোগ-দুঃখ ইত্যাদিও হতে থাকে। নামই হল দুঃখধাম। সুখধামে দুঃখের ব্যাপার নেই। আমরা এতো সুখে যাই, যাকে স্বর্গীয় সুখ বলা হয়। শুধু তোমাদের পবিত্র হতে হবে, তাও এই জন্মের জন্য। পিছনের খেয়াল করো না, এখন তো তোমরা পবিত্র হও। প্রথমে তো বিচার করো- কে বলছে! অসীমের (বেহদের)বাবার পরিচয় দিতে হবে। অসীমের বাবার থেকে সুখের বর্সা প্রাপ্ত হয়। লৌকিক বাবাও পারলৌকিক বাবাকে স্মরণ করে। বুদ্ধি উপরে চলে যায়। তোমরা বাচ্চারা যারা সুনিশ্চিত বুদ্ধি দ্বারা দৃঢ় চেতন, তাদের ভিতরে থাকবে যে এই পুরোনো দুনিয়াতে আমরা আর মাত্র কয়েক দিন আছি। এ যেন হল কড়ির মত শরীর। আত্মাও কড়ি তুল্য হয়ে পড়েছে, একে বৈরাগ্য বলা হয়।
এখন তোমরা বাচ্চারা ড্রামাকে জেনে গেছ। ভক্তি মার্গের ভূমিকা চলছেই। সবাই ভক্তিতে আছে, তবুও তাদের প্রতি ঘৃণা নয় । সন্ন্যাসীরা নিজেরাই ঘৃণা করতে বলে। তাদের বাড়ীর সবাই দুঃখী হয়ে যায়, তারা নিজেরা (সাধনার দ্বারা) নিজেকে সামান্য সুখী করে। মুক্তিতে কেউ ফিরে যেতে পারে না। যারা এসে(পরমধাম থেকে), ফিরে কেউই যায়নি। সবাই এখানেই আছে। একজনও নির্বাণধাম বা ব্রহ্মতে যায় নি। তারা মনে করে অমুকে ব্রহ্মতে লীন হয়ে গেছে। এই সব ভক্তি মার্গের শাস্ত্রে আছে। বাবা বলেন এই শাস্ত্র ইত্যাদিতে যা কিছু আছে, সব ভক্তি মার্গ। বাচ্চারা, তোমাদের এখন জ্ঞান প্রাপ্ত হচ্ছে সেইজন্য তোমাদের কিছুই পঠনপাঠনের দরকার নেই। তবুও কেউ কেউ এমন আছে যাদের আবার নভেল ইত্যাদি পড়ার অভ্যাস আছে। জ্ঞান তো সম্পূর্ণ নেই, ওদের বলা হয় মোরগ (কুক্কড় জ্ঞানী) জ্ঞানী । রাত্রে নভেল পড়ে ঘুমালে তাদের কি গতি হবে ? এখানে বাবা বলেন, যা কিছু পড়েছ সব ভুলে যাও। এই ঈশ্বরীয় পাঠ পড়তে থাক। এখানে ভগবান পড়াচ্ছেন, যার মাধ্যমে তোমরা দেবতা হয়ে যাবে, ২১জন্মের জন্য। তবে যা কিছু অধ্যয়ন করেছিলে সব ভুলে যেতে হবে। একদম ছোটবেলায় চলে যাও। নিজেকে আত্মা মনে কর। এই চর্মচক্ষু দিয়েই দেখ, কিন্তু দেখেও যেন দেখো না। তোমাদের দিব্য দৃষ্টি, দিব্য বুদ্ধি প্রাপ্ত হয়েছে, তাই তাোমরা এখন জানো যে এই সমগ্র দুনিয়া হল এখন পুরানো। এটা শেষ হয়ে যাবে। এখানে সবকিছু এখন কবরে, এর প্রতি আর কীসের মোহ ! এখন পরিস্থানের অধিবাসী হতে হবে। তোমরা এখন কবরস্থান আর পরিস্থানের মাঝখানে বসে আছ। পরিস্থান এখন তৈরী হচ্ছে। তোমরা এখন বসে আছ পুরানো দুনিয়াতে, কিন্তু তোমাদের বুদ্ধির যোগ সেখানে । তোমরা পুরুষার্থই করছ নতুন দুনিয়ার জন্য। এখন মধ্যবর্তী স্থানে বসে আছ, পুরুষোত্তম হওয়ার জন্য।এই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগকেও কারোর জানা নেই। পুরুষোত্তম মাস, পুরুষোত্তম বর্ষেরও অর্থ বোঝে না। পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগের সময় খুবই অল্প রয়েছে। দেরীতে ইউনিভার্সিটিতে এলে তো অনেক পরিশ্রম করতে হবে।স্মরণ স্থায়ী হওয়া বেশ কঠিন, মায়া বিঘ্ন ঘটাতে থাকে। তাই বাবা বোঝাচ্ছেন, এই পুরানো দুনিয়া শেষে হতে চলেছে। যদিও বাবা এখানেই বসে আছেন, সবকিছুই দেখছেন, কিন্তু বুদ্ধিতে থাকে এই সবকিছু শেষ হতে চলেছে। কিছুই থাকবে না। এটা তো হল পুরানো দুনিয়া, এতে বৈরাগ্য এসে যায়। শরীরধারীরাও সবাই হল পুরানো। শরীর পুরানো তমোপ্রধান হলে তো আত্মাও তমোপ্রধান হল। এরকম জিনিসকে আমরা দেখে কি করব ।এসব কিছুই তো থাকবে না, তাই ওসবের প্রতি কোনো প্রীতি নয়। বাচ্চাদের মধ্যেও বাবার ভালোবাসা তাদের প্রতিই বেশী থাকে, যারা বাবাকে ভালো ভাবে স্মরণ করে আর সার্ভিস করে। যদিও বাচ্চা তো সবাই । কতো কত বাচ্চা তাঁর । সবাই তো কখনো দেখবেও না বাবাকে। প্রজাপিতা ব্রহ্মাকে তো জানেই না। প্রজাপিতা ব্রহ্মার নাম তো শুনেছে কিন্তু তাঁর থেকে কি প্রাপ্ত হয়- এর কিছুই জানা নেই। ব্রহ্মার মন্দির আছে, সেখানে সাদা দাঁড়িওয়ালা দেখিয়েছে। কিন্তু তাকে কেউ স্মরণ করে না, কারণ তার থেকে উত্তরাধীকার প্রাপ্ত হয় না। আত্মাদের উত্তরাধীকার প্রাপ্ত হয় এক লৌকিক পিতার থেকে, দ্বিতীয় পারলৌকিক পিতার থেকে। প্রজাপিতা ব্রহ্মাকে তো কেউ জানে না। এটা সত্যিই বিস্ময়ের ব্যাপার (ওয়ান্ডারফুল)। বাবা হয়েও তোমাদের উত্তরাধিকার দেবে না, তিনি অবশ্যই অলৌকিক হলেন। উত্তরাধিকার হয়ই হদের(পার্থিব) আর বেহদের (অপার্থিব)। মধ্যবর্তী কোনো উত্তরাধিকার নেই। যদিও প্রজা বলা হয় কিন্তু উত্তরাধিকার কিছুই নেই। এই অলৌকিক বাবারও উত্তরাধিকার পারলৌকিক দ্বারা প্রাপ্ত হয় তো ইনি আবার দেবে কি ভাবে! পারলৌকিক বাবা এনার মাধ্যমে (থ্রু) দেন। ইনি হলেন রথ। এনাকে কি স্মরণ করবে। এনার নিজেরই ওই বাবাকে স্মরণ করতে হয়। ওসব লোক মনে করে এই ব্রহ্মাই পরমাত্মা। কিন্তু আমাদের উত্তরাধিকার এনার থেকে প্রাপ্ত হয় না, উত্তরাধিকার তো শিববাবার দ্বারা প্রাপ্ত হয়। উনি তো থাকেন মধ্যবর্তী দালাল রূপে। উনিও হলেন আমাদের মতোন স্টুডেন্ট। ভয় পাওয়ার কোনো ব্যাপার নেই।
বাবা বলেন এই সময় সমগ্র দুনিয়া তমোপ্রধান। তোমাদের যোগ বল দ্বারা সতোপ্রধান হতে হবে। লৌকিক পিতার থেকে পার্থিব (হদ) উত্তরাধিকার পাওয়া যায়। তোমাদের এখন বুদ্ধি রাখতে হবে অসীমে (বেহদে)। বাবা বলেন, বাবা ব্যাতীত আর কারোর থেকে কিছু পাওয়া যায় না, এমনকি দেবী- দেবতাদের থেকেও না। ওসব লোকেরা তো মনে করে ইনি অমর, কখনো মারা যান না।তমোপ্রধান হন না। কিন্তু তোমরা জানো যিনি সতোপ্রধান ছিলেন সেই তমোপ্রধান এ আসেন। শ্রী কৃষ্ণকে লক্ষ্মী-নারায়ণের থেকেও উঁচুতে ভাবে কারণ তিনি আবার বিবাহ করেছিলেন। কৃষ্ণ তো জন্ম থেকেই পবিত্র সেইজন্য কৃষ্ণের অনেক মহিমা। দোলনাতেও কৃষ্ণকে দোলায়। কৃষ্ণেরই জয়ন্তী পালিত হয়। লক্ষ্মী-নারায়ণের কেন পালন করা হয় না? জ্ঞান না হওয়ার জন্য কৃষ্ণকে দ্বাপরে নিয়ে গেছে। বলা হয় গীতার জ্ঞান দ্বাপর যুগে দিয়েছে। কাউকে বোঝানো কতো কঠিন! বলে দেয় জ্ঞান তো পরম্পরায় চলে আসছে। কিন্তু পরম্পরাই বা কবে থেকে ? এটা তো কেউ জানে না। পূজো কবে থেকে শুরু হয়েছে এটাও কেউ জানে না, সেইজন্য বলে দেয় রচয়িতা আর সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তকে জানে না। কল্পের আয়ু লক্ষ বছর বলে পরম্পরা বলে দেয়। তিথি-তারিখ কিছুই জানে না। লক্ষ্মী-নারায়ণেরও জন্মদিন পালন করে না। একে বলা হয় অজ্ঞান অন্ধকার। তোমাদের মধ্যেও কেউ যথার্থ ভাবে এই ব্যাপারে জানে না। তাই তো বলা হয়ে থাকে - মহারথী, ঘোড়সওয়ার আর পেয়াদা। হাতীকে নক্র (বৃহৎ কুমারী বিশেষ) খেয়েছে। নক্র বড় হয়, একদম গ্রাস করে নেয়। যেমন সাপ ব্যাঙকে গিলে খায়।
ভগবানকে বাগানের মালিক (বাগবান), মালী, পাটনী কেন বলা হয় ? এটাও তোমরা এখন বুঝতে পার। বাবা এসে বিষয় সাগর থেকে পারে নিয়ে যান, তাই তো বলে, পাটনী পার করো আমাকে। তোমাদেরও এখন জানা হয়ে গেছে যে আমরা কি ভাবে পারে যাচ্ছি। বাবা আমাদের ক্ষীর সাগরে নিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে দুঃখ-যন্ত্রণার ব্যাপার নেই। তোমরা শুনে অন্যান্যদেরও বল যে নৌকাকে যে পার করেন সেই পাটনী বলে- হে বাচ্চারা, তোমরা সবাই নিজেকে আত্মা মনে কর। তোমরা প্রথমে ক্ষীরসাগরে ছিলে, এখন বিষয় সাগরে এসে পৌঁছেছ। প্রথমে তোমরা দেবতা ছিলে। স্বর্গ হল বিশ্বের বিস্ময় (ওয়ান্ডার অফ ওয়ার্ল্ড)। সমস্ত দুনিয়াতে আধ্যাত্মিক বিস্ময় (ওয়ান্ডার) হল স্বর্গ। নাম শুনেই আনন্দ হয় । তোমরা স্বর্গে (হেভেন) থাকো। এখানে রয়েছে সপ্তম আশ্চর্য । তাজমহল তার মধ্যে একটি, কিন্তু ওখানে তো আর থাকা যায় না। তোমরা তো বিশ্বের বিস্ময়ের (ওয়ান্ডার অফ ওয়ার্ল্ড) মালিক হবে। তোমাদের থাকার জন্য বাবা কত বিস্ময়কর (ওয়ান্ডারফুল) স্বর্গ তৈরী করেছেন, ২১ জন্মের জন্য লক্ষ কোটি গুণের(পদ্মা পদমপতি) মালিক হবে। তাই বাচ্চারা, তোমাদের কত খুশী হওয়া উচিত । আমরা ওই পারে যাব। অনেক বার বাচ্চারা, তোমরা স্বর্গে গিয়েছ হয়তো। এই চক্র তোমরা পরিক্রমা করতেই থাক। পুরুষার্থ এমনই করা উচিত যেন নতুন দুনিয়াতে আমরা সর্বপ্রথমেই আসতে পারি। পুরানো বাড়ীতে যেতে কি আর মন চায় ! বাবা উৎসাহিত করছেন বাচ্চাদের, পুরুষার্থ করে নতুন দুনিয়াতে যাও। বাবা আমাদের বিশ্বের বিস্ময়ের (ওয়ান্ডার অফ ওয়ার্ল্ড) মালিক করেন। তবে ঐরকম বাবাকে আমরা কেন স্মরণ করব না। অনেক পরিশ্রম করতে হবে। এসব দেখেও দেখো না। বাবা বলেন যদিও আমি দেখি, কিন্তু আমার মধ্যে জ্ঞান আছে - আমি হলাম অল্প দিনের যাত্রী (মুসাফির) । সেইরকম তোমরাও এখানে ভূমিকা পালন করতে এসেছ। তাই এ সব কিছুর থেকে মমতা ত্যাগ করো। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন, স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত। ঈশ্বরীয় পিতা ওঁনার ঈশ্বরীয় সন্তানদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার:-
১. আধ্যাত্মিক পঠনপাঠনে সর্বদা ব্যস্ত থাকতে হবে। কখনো নভেল (গল্প, উপন্যাস) ইত্যাদি পড়ার খারাপ অভ্যাস কোরো না, এখন পর্যন্ত যা কিছু পড়েছ, সে সব ভুলে বাবাকে স্মরণ করতে হবে।
২. এই পুরানো দুনিয়াতে নিজেকে অতিথি মনে করে থাকতে হবে। এর প্রতি প্রীতি রাখতে নেই, দেখেও দেখতে নেই।
বরদান:-
অধিকারী হয়ে সমস্যাকে খেলতে খেলতে পার করতে সক্ষম হিরো পার্টধারী ভব
যে কোনো পরিস্থিতিই হোক বা সমস্যা আসুক, সমস্যার অধীন নয়, অধিকারী হয়ে সমস্যাকে এমন ভাবে পার করে ফেল যেন খেলতে খেলতে পার করছ। বাইরে থেকে রোদনের ভূমিকাও যদি পালন করতে হয়, মনের ভিতর যেন থাকে এ সব হল খেলা- যাকে বলে ড্রামা আর আমরা ড্রামার হিরো পার্টধারী। হিরো পার্টধারী অর্থাৎ নিখুঁত ভূমিকা পালন করে যে। সেইজন্য কঠিন সমস্যাকেও খেলা মনে করে হাল্কা করে দাও, কোনো বোঝা যেন না থাকে ।
স্লোগান:-
সর্বদা জ্ঞানের মথন করতে থাকলে সর্বদা প্রফুল্লিত থাকবে, মায়ার আকর্ষণ থেকে বেঁচে যাবে।