১৪-০৭-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ৩১-১২-৮৪ মধুবন
নব জ্ঞান এবং নব জীবন দ্বারা নবীনত্বের ঝলক দেখাও
আজ চারিদিকের বাচ্চারা তাদের সাকার রূপে বা আকার রূপে নতুন যুগ, নতুন জ্ঞান, নতুন জীবন বাপদাদার সাথে উদযাপন করতে এই হায়েস্ট এবং হোলিয়েস্ট নতুন আধ্যাত্মিক দরবারে উপস্থিত হয়েছে l সব বাচ্চার হৃদয়ের উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং পরিবর্তন নিয়ে আসার শুভ সঙ্কল্পের প্রতিজ্ঞা, তাদের শুভ কামনা এবং শুভ ভাবনা বাপদাদার কাছে পৌঁছে গেছে l নতুন বিশ্বের সকল নির্মাতাকে, বিশ্ব পরিবর্তক বিশেষ আত্মাদের, সদাসর্বদা পুরানো দুনিয়ার পুরানো সংস্কার, পুরানো স্মৃতি, যারা পুরানো বৃত্তি এবং এই পুরানো দুনিয়ার পুরানো দেহভাবের স্মৃতির ঊর্ধ্বে থাকে, সমস্ত পুরানো বিষয়কে বিদায় জানায়, তাদেরকে বাপদাদা সদাকালের জন্য অভিনন্দিত করছেন l অতীতকে বিন্দু লাগিয়ে যারা স্বরাজ্যের বিন্দু তথা স্বরাজ্যের তিলক কাটে (লাগায় ) তাদের তিনি অভিনন্দন জানাচ্ছেন l বিদায়ের এই আদেশের জন্য অভিনন্দিত করার সাথে বাবা তোমাদের নব বর্ষের বিশেষ উপহারও দিচ্ছেন l *"সদা সাথে থাক" "সদা সমান হও" "সদা হৃদয় সিংহাসনাসীন শ্রেষ্ঠ আধ্যাত্মিক নেশায় থাক"* - বাবা এই বরদানের উপঢৌকন দিচ্ছেন l
সারা বছর এই সমর্থ স্মৃতি থাকতে দাও, *তোমরা বাবার সাথে আছ, তোমরা বাবার সমান* তাহলে নিজে থেকেই সব সঙ্কল্পে প্রতি মুহূর্তে বিদায়ের হুকুম জারি করার জন্য অভিনন্দিত হওয়ার অনুভব করতে থাকবে l পুরানোকে বিদায় না দিলে, তোমরা নবীনত্বের জন্য অভিনন্দনও অনুভব করতে পারবে না l সেইজন্য আজকে যেমন পুরানো বছরকে বিদায় জানাচ্ছ, ঠিক একইভাবে বছরের সাথে বাবা পুরানো যে সব বিষয় সম্পর্কে বলেছেন সেইসব পুরানো-ভাবও সদাসর্বদার জন্য বিদায় দাও l এটা নতুন যুগ, ব্রাহ্মণদের সুন্দর নতুন সংসার, নতুন সম্বন্ধ, নতুন পরিবার l নতুন প্রাপ্তি l সবকিছু নতুন ! তোমরা যখন অন্যকে দেখছ, সেটাও আধ্যাত্মিক নজরে আত্মাকে দেখছ l আধ্যাত্মিক বিষয়েই ভাবছ l সুতরাং সবকিছুই তো নতুন, তাই না ? রীতি-নীতি নতুন, প্রীতি-ভালোবাসা নতুন, সব নতুন l অতএব, সদা নবীনত্বের জন্য অভিনন্দিত হতে থাক l একেই বলে, আধ্যাত্মিক অভিনন্দন, যা শুধু একদিনের জন্য নয়, বরং আধ্যাত্মিক অভিনন্দনের সাথে তোমরা সদা উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে থাক l বাপদাদা এবং সমস্ত ব্রাহ্মণ পরিবারের অভিনন্দন বা আধ্যাত্মিক আশীর্বাদ নিয়ে তোমরা প্রতিপালিত হচ্ছ, অগ্রচালিত হচ্ছ - এইরকম নিউ ইয়ার জগতে কেউ উদযাপন করতে পারে না l তারা অল্পকালের জন্য পালন করে l তোমরা সেটা অবিনাশীরূপে পালন কর, সর্বকালের জন্য উদযাপন করছ l মানবাত্মা সকলে মানুষের সঙ্গেই পালন করছে, সেখানে তোমরা শ্রেষ্ঠ আত্মারা পরমাত্মার সাথে উদযাপন কর l বিধাতা এবং বরদাতার সাথে পালন কর, সেইজন্য পালন করা অর্থাৎ অফুরন্ত সম্পদের ভাণ্ডারে এবং বরদানে সদাসর্বদা ঝুলি ভরে থাকা l তারা উদযাপন করছে আর খুইয়ে ফেলছে, সেক্ষেত্রে, এখানে তোমরা তোমাদের ঝুলি পূর্ণ করছ l সেইজন্য তোমরা বাপদাদার সাথেই উদযাপন কর, তাই না ? সেই সব লোকে বলে, হ্যাপি নিউ ইয়ার আর তোমরা বলো, এভার হ্যাপি নিউ ইয়ার l আজ খুশি আর কাল দুঃখ এমন ঘটনা দুঃখী বানায় না l যেকোনও দুঃখের ঘটনা হোক না কেন, এমন সময়তেও তোমাদের সুখ, শান্তিস্বরূপ স্থিতি দ্বারা সবাইকে সুখ শান্তির কিরণ দিয়ে দাতার, মাস্টার সুখ-সাগরের ভূমিকা (পার্ট) পালন কর l সেই কারণে তোমরা যেকোন দুঃখদায়ী পরিস্থিতির ঊর্ধ্বে থাক এবং সদা এভার হ্যাপি হওয়ার অনুভব কর l সুতরাং এই নতুন বছরে কি নতুনত্ব করবে ? তোমরা কনফারেন্স করবে, মেলা করবে l সবাই এখন পুরানো রীতি-রেওয়াজে, পুরানো আদব-কায়দায় ইতিমধ্যেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে l সবাই ভাবে, নতুন কিছু হওয়া দরকার l কি নতুন হবে বা কিভাবে হবে সেটা বুঝতে তারা অপারগ l যারা এইরকম নবীনত্বের ইচ্ছা রাখে তাদের নতুন জ্ঞান দ্বারা, নতুন জীবন দ্বারা নবীনত্বের ঝলক অনুভব করাও l তারা অন্ততঃ বোঝে যে এটা ভালো l যতই হোক, এটা নতুন, এটাই নতুন জ্ঞান যা নতুন যুগ নিয়ে আসছে, এই অনুভব তাদের কাছে এখনও আবৃত l তারা বলে, এটা হওয়া উচিত l তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার জন্য নতুন জীবনের প্রত্যক্ষ এক্সাম্পল তাদের সামনে প্রত্যক্ষরূপে উপস্থাপিত কর, যাতে তারা নতুন ঝলক অনুভব করতে পারে l অতএব, নতুন জ্ঞান প্রত্যক্ষ কর l প্রত্যেক ব্রাহ্মণের জীবন থেকে যখন নবীনত্বের অনুভব হবে, তখনই তারা নতুন সৃষ্টির আভাস দেখতে পাবে l যে প্রোগ্রামই তোমরা কর, তা'তে লক্ষ্য থাকবে যাতে সবার নবীনত্ব অনুভূত হয় l 'এটাও খুব ভালো কাজ হচ্ছে', এই রিমার্ক করার পরিবর্তে তাদের এই অনুভব হতে দাও এটা নতুন জ্ঞান, নতুন সৃষ্টি নিয়ে আসছে l বুঝেছ তোমরা ? নতুন সৃষ্টির স্থাপনার অনুভব করানোর তরঙ্গ ছড়িয়ে দাও l *নতুন সৃষ্টি সমাগত প্রায় অর্থাৎ আমাদের সকলের শুভ ভাবনার ফল প্রাপ্তির সময় এসে গেছে l* এইরকম উৎসাহ-উদ্দীপনা তাদের মনে উৎপন্ন হতে দাও l সবার মনে নিরাশার বদলে শুভ ভাবনার দীপ প্রজ্জ্বলিত কর l যেকোনও বড়দিন উদযাপন করতে তারা দীপ জ্বালায় l আজকাল তো রয়্যাল মোমবাতি হয়ে গেছে l সুতরাং সকলের মনে এই দীপ জ্বালাও l এইরকম নিউ ইয়ার উদযাপন কর l শ্রেষ্ঠ ভাবনার ফলের উপহার সবাইকে দাও l আচ্ছা -
যারা সদা সবাইকে নতুন জীবন, নতুন যুগের ঝলক দেখায়, নতুন উৎসাহ-উদ্দীপনার অভিনন্দন জানায়, সবাইকে এভার হ্যাপি বানায়, বিশ্বকে নতুন রচনার অনুভব করায়, এমন সর্বশ্রেষ্ঠ নতুন যুগ পরিবর্তক, বিশ্ব কল্যাণকারী, সদা বাবার সাহচর্যের অনুভব করে, বাবার সদা সাথী এমন বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার।
*পাটিদের সাথে বাপদাদার সাক্ষাৎকার-* নতুন বছরের নতুন উদ্যম, নতুন উৎসাহ সবসময়ের জন্য থাকতে হবে, এমন দৃঢ় সঙ্কল্প করেছ তোমরা ? নতুন যুগ, সুতরাং প্রতিটা সঙ্কল্প সবচাইতে নতুন হওয়া উচিত l প্রতিটা কর্ম সর্বাপেক্ষা নতুন হতে দাও l একে বলা হয় নতুন উদ্যম, নতুন উৎসাহ l এমন দৃঢ় সঙ্কল্প করেছ ? যেমন বাবা অবিনাশী, সেইরকম বাবার থেকে প্রাপ্তিও অবিনাশী l সুতরাং অবিনাশী প্রাপ্তি তোমাদের দৃঢ় সঙ্কল্পের মাধ্যমে প্রাপ্ত করতে পার l সুতরাং নিজের কার্যক্ষেত্রে গিয়ে এই অবিনাশী দৃঢ় সঙ্কল্প ভুলে যেও না l বিস্মৃত হওয়া অর্থাৎ অপ্রাপ্তি এবং দৃঢ় সঙ্কল্প থাকা অর্থাৎ সর্বপ্রাপ্তি l
সদা নিজেদের লক্ষ কোটি গুণ ভাগ্যবান আত্মা মনে কর l তোমরা স্মরণের সাথে যে পদক্ষেপ নাও, সেই পদক্ষেপের প্রতিটা পদে লক্ষ-কোটি গুণ উপার্জন পূর্ণ হয়ে আছে l অতএব, সদা একদিনে বিপুল অর্জন করে নিজেদের পদমাপদম ভাগ্যবান আত্মা মনে করে সদা এই খুশিতে থাক, *"বাহ্ আমার শ্রেষ্ঠ ভাগ্য"* l তাহলে তোমাদের খুশি দেখে অন্যেরাও অনুপ্রেরিত হবে l এটাই সেবার সহজ সাধন l যারা স্মরণ ও সেবায় মেতে থাকে তারা সেফ থাকে, বিজয়ী হয় l স্মরণ ও সেবা এমন শক্তি নিয়ে আসে যাতে তোমরা উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে থাকবে l শুধু স্মরণ ও সেবার মধ্যে তোমাদের অবশ্যই ব্যালেন্স রাখতে হবে l এই ব্যালেন্স ব্লেসিংস লাভ করতে তোমাদের সমর্থ বানাবে l সাহসী বাচ্চাদের সাহসের কারণে সদা সহায়তা লাভ হয় l বাচ্চারা সাহসের এক কদম ওঠালে বাবার থেকে হাজার কদম সহায়তা লাভ হয়ে যায় l
(রাত ১২টা বাজার পরে ১-১-৮৫ তে বিদেশি ভাই-বোনেরা নব বর্ষের জন্য খুশিতে গীত গেয়েছে এবং বাপদাদা সব বাচ্চাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন l)
বাচ্চারা যেমন বাবার প্রতি সস্নেহে স্মরণের গীত গায় এবং ভালোবাসায় নিমজ্জিত হয়, ঠিক একইভাবে, বাবাও বাচ্চাদের ভালোবাসায় সমাহিত হয়ে আছেন l বাবা প্রিয়তমাও এবং প্রিয়তমও l সব বাচ্চার বিশেষত্বে বাবাও প্রেমময় হয়ে যান l সুতরাং তোমরা কি নিজেদের বিশেষত্ব জানো ? তোমাদের কোন্ বিশেষত্ব বাবাকে প্রণয়মুগ্ধ করেছে, সবাই জানো তোমরা ?
সারা বিশ্বে বাবার এমন স্নেহী বাচ্চা কতো সামান্য ! সুতরাং বাপদাদা সব স্নেহী বাচ্চাকে মন-প্রাণ থেকে, অনেক অনেক গভীর ভালোবাসায় নিউ ইয়ারের জন্য লক্ষ-কোটি গুণ অভিনন্দন জানাচ্ছেন l ঠিক যেমন তোমরা গীত গেয়েছ, তেমনই বাপদাদাও বাচ্চাদের খুশির গীত গান l বাবার গীত মনের আর তোমাদের গীত মুখের l তোমাদের গীত তো শুনেছ, কিন্তু বাবার গীত কি শুনেছ তোমরা ?
এই নতুন বছরে সদা সব কর্মে কোনো না কোনো বিশেষত্ব দেখাতে থাক l প্রতিটা সঙ্কল্প বিশেষ হতে দাও, সাধারণ হতে দিও না l কেন ? বিশেষ আত্মাদের প্রতিটা সঙ্কল্প, বোল আর কর্ম বিশেষই হয় l সদা উৎসাহ-উদ্দীপনায় সামনে এগিয়ে চলো l উৎসাহ-উদ্দীপনা তোমাদের বিশেষ পাখা, এই পাখা দিয়ে তোমরা যত উঁচুতে উড়তে চাও উড়তে পার l এই পাখাই উড়তি কলার অনুভব করায় l এই পাখায় ভর করে যদি উড়ে যাও, তবে বিঘ্ন সেখানে তোমাদের কাছে পৌঁছাতে পারবে না l লোকে যখন স্পেসে (মহাকাশে) যায়, সেখানে পৃথিবীর কোন আকর্ষণ থাকে না l একইভাবে, যারা উড়তি কলায় স্থিত তাদের বিঘ্ন কোনকিছু করতে পারে না l সদা উৎসাহ-উদ্দীপনায় সামনে এগিয়ে চলো এবং অন্যদেরও অগ্রচালিত হতে অনুপ্রেরিত কর, এটাই বিশেষ সেবা l সেবাধারীদের নিরন্তর এই বিশেষত্বের সাথে এগিয়ে যেতে হবে l
*বাছাই করা বিশেষ অব্যক্ত মহাবাক্য -*
*লাইট-মাইট হাউসের উঁচু স্থিতি দ্বারা পরমাত্মার প্রত্যক্ষতার নিমিত্ত হও*
বাবাকে প্রত্যক্ষ করার আগে তোমাদের নিজেদের মধ্যেকার সব মহিমা (১৬ কলা সম্পূর্ণ, সম্পূর্ণ নির্বিকারী, মর্যাদাপুরুষোত্তম ইত্যাদি) যা তোমাদের জন্য প্রযোজ্য, সেই সব বিষয় প্রত্যক্ষ কর, শুধুমাত্র তখনই বাবাকে প্রত্যক্ষ করতে পারবে l সেইজন্য বিশেষ জ্বালাস্বরূপ অর্থাৎ লাইট হাউস এবং মাইট হাউস স্থিতি বুঝে এই পুরুষার্থ বজায় রাখ - বিশেষ স্মরণের যাত্রাকে পাওয়ারফুল বানাও, জ্ঞানস্বরূপের অনুভাবী হও l
মেজরিটি ভক্তদের ইচ্ছা শুধুমাত্র এক সেকেন্ডের জন্যে হলেও লাইট দেখার l তোমরা সব বাচ্চার নয়ন তাদের সেই ইচ্ছাপূরণের সাধন l এই নয়ন দ্বারা বাবার জ্যোতিস্বরূপের সাক্ষাৎকার হতে দাও l তোমাদের এই নয়ন, নয়ন হিসেবে নয়, বরং আলোর গোলা রূপে তাদের দেখতে দাও l আকাশে যেমন ঝলমলে নক্ষত্র দেখা যায়, ঠিক একইভাবে, তোমাদের নয়নতারাও যেন ঝলমলে নক্ষত্রসম দেখায় l যতই হোক, তা'একমাত্র তখনই দেখা যাবে যখন তোমরা নিজেরা লাইট স্বরূপ স্থিতিতে থাকবে l কর্মেও লাইট অর্থাৎ হালকাভাব, প্রতিচ্ছবিও লাইট অর্থাৎ আলোকোজ্জ্বল এবং স্টেজও লাইট হবে, যখন তোমরা সব বিশেষ আত্মার এইরকম পুরুষার্থ বা স্থিতি থাকবে তখনই প্রত্যক্ষতা হবে l কর্ম করাকালীন বা কথা বলতে বলতে, সম্পর্ক-সম্বন্ধ বজায় রেখে, স্বতন্ত্র থাকার অভ্যাস কর l সম্বন্ধে বা কর্মে আসা যেমন সহজ, ঠিক একইভাবে স্বতন্ত্রতাও সহজ হতে দাও l এইরকম প্র্যাকটিস প্রয়োজন l যখন সবকিছু অতিমাত্রায় পৌঁছাবে এক সেকেন্ডে অন্ত হয়ে যাবে - এটাই লাস্ট স্টেজের পুরুষার্থ, এক মুহূর্তে গভীর সম্বন্ধে আর পর মুহূর্তে সেই সম্পর্কে যতটা গভীরতা ততটাই স্বতন্ত্রতা l যেন লাইট হাউসে সমাহিত হওয়া l এই অভ্যাসের দ্বারা লাইট হাউস, মাইট হাউস স্থিতি হবে এবং অনেক আত্মার সাক্ষাৎকার হবে - এটাই প্রত্যক্ষতার সাধন l
এখন এই লাস্ট সীজন থেকে গেছে প্রত্যক্ষতার কাড়া-নাকাড়া বাজার জন্য l সাইলেন্স থাকাকালীন, সর্বত্র উচ্চরবে আওয়াজ হবে l তবে সাইলেন্সের মাধ্যমেই ঢক্কানিনাদ হবে l যতক্ষণ মুখের আওয়াজ বেশি থাকবে ততক্ষণ প্রত্যক্ষতা হবে না l যখন প্রত্যক্ষতার কাড়া-নাকাড়া বাজবে তখন মুখের নিনাদ বন্ধ হয়ে যাবে l গায়নও আছে, *'সায়েন্সের ওপরে সাইলেন্সের জয়'* , তা' বাণীর মাধ্যমে নয় l এখন প্রত্যক্ষতার বিশেষত্ব মেঘের আড়ালে আছে, চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ছে মেঘ, কিন্তু সম্পূর্ণভাবে সরে যায়নি l তোমরা যত শক্তিশালী মাস্টার জ্ঞান সূর্যের বা লাইট-মাইট হাউসের স্টেজে পৌঁছাতে থাকবে, ঠিক সেভাবেই এই মেঘ অদৃশ্য হয়ে যাবে l মেঘ অদৃশ্য হলে সেকেন্ডে কাড়া-নাকাড়া বেজে উঠবে l
যেমন, চারিদিক যদি আগুনে জ্বলতে থাকে আর একটা শীতলস্থানও যদি সেখানে নজরে আসে তো সবাই সেই দিকেই দৌড়ে যায়, ঠিক সেইভাবেই শান্তিস্বরূপ হয়ে শান্তিকুণ্ডের অনুভব করাও l মন্সা সেবা দ্বারা শান্তি কুণ্ডের প্রত্যক্ষতা করাতে পার l যেখানেই শান্তিসাগরের বাচ্চারা থাকে, সেই স্থান শান্তিকুণ্ড হতে দাও l
ব্রহ্মাবাবার সমান অসীম জগতের মুকুটধারী হয়ে চতুর্দিকে প্রত্যক্ষতার লাইট ও মাইট ছড়িয়ে দাও যাতে সকল নিরাশ আত্মাদের আশার কিরণ দৃশ্যগোচর হয় l সকলের অঙ্গুলি নির্দেশ সেই বিশেষ স্থানের দিকে উঠতে দাও l যারা আকাশের ঊর্ধ্বে অঙ্গুলি নির্দেশ করে কাউকে খুঁজছে তাদের এই অনুভব হতে দাও যে ধরিত্রীর এই বরদান ভূমিতে ধরিত্রীর নক্ষত্র প্রত্যক্ষীভূত হয়েছে l এই সূর্য, চন্দ্রমা এবং তারামন্ডল যেন এখানে অনুভূত হয় l সংগঠিত রূপে পাওয়ারফুল (শক্তিশালী) লাইট হাউস, মাইট হাউস হয়ে ভাইব্রেশন ছড়িয়ে দেওয়ার সেবা কর l সকলেই এখন প্রতীক্ষা করছে কবে তাদের রচয়িতা অথবা মাস্টার রচয়িতা সম্পন্ন এবং সম্পূৰ্ণ হয়ে তাদের স্বাগত জানাবে l প্রকৃতিও তো স্বাগত জানাবে l সুতরাং সেইদিন সমাগত, যেদিন তারা সফলতার মালা দিয়ে তোমাদের স্বাগত জানাবে l যখন সফলতার বাজনা বাজবে তখন প্রত্যক্ষতার বাজনাও বাজবে l বাজতে তো হবেই l
ভারত বাবার অবতরণ ভূমি এবং প্রত্যক্ষতার আওয়াজ উচ্চরবে করার নিমিত্ত ভূমিও ভারত l বিদেশের সহযোগ ভারতে প্রত্যক্ষতা করাবে এবং ভারতের প্রত্যক্ষতার আওয়াজ বিদেশ পর্যন্ত পৌঁছাবে l দুনিয়াতে যারা বাণী দ্বারা প্রভাব বিস্তার করে এমন অনেকই আছে, কিন্তু তোমাদের বাণীর বিশেষত্ব এটাই যে তোমাদের বোল বাবাকে স্মরণ করাবে l বাবাকে প্রত্যক্ষ করার সিদ্ধি যেন আত্মাদের সদগতির পথ দেখায়, এটাই তোমাদের স্বতন্ত্রতা l যেভাবে এখন পর্যন্ত এটা প্রসিদ্ধ হয়েছে যে এই রাজযোগী আত্মারা শ্রেষ্ঠ, রাজ যোগ শ্রেষ্ঠ, কর্তব্য শ্রেষ্ঠ, পরিবর্তন শ্রেষ্ঠ, সেইভাবেই এখন প্রত্যক্ষ কর যে অলমাইটি স্বয়ং ডিরেক্টলি তোমাদের শেখাচ্ছেন, সেই জ্ঞানসূর্য সাকার সৃষ্টিতে এখন উদিত হয়েছেন l
যদি তোমরা মনে কর, বাবার প্রত্যক্ষতা শিঘ্রাতিশীঘ্র হোক, তবে ক্ষিপ্রতার সাথে এমন ঘটতে হলে সকলকে নিজের জন্য এবং অন্যের জন্য পজিটিভ বৃত্তি ধারণ করতে হবে l নলেজফুল হও, কিন্তু নিজের মনে নেগেটিভ ভাবনা রেখো না l নেগেটিভের অর্থ হলো আবর্জনা l সুতরাং তোমাদের বৃত্তি পাওয়ারফুল কর, ভাইব্রেশন পাওয়ারফুল বানাও, বায়ুমন্ডল পাওয়ারফুল বানাও l যখন চারিদিকের বায়ুমন্ডল সম্পূৰ্ণ বিঘ্নমুক্ত, সদয় হয় এবং শুভ কামনা, শুভ ভাবনায় পরিপূর্ণ হয়,
তখন তোমাদের এই লাইট-মাইটের স্থিতি প্রত্যক্ষতার নিমিত্ত হবে l নিরন্তর সেবা এবং তপস্যা এই দুইয়ের ব্যালেন্স দ্বারাই প্রত্যক্ষতা হবে l যেভাবে তোমরা সেবার ডায়ালগ তৈরি কর, ঠিক একইভাবে এমন তপস্যা কর যাতে সব পতঙ্গ "বাবা বাবা" বলতে বলতে তোমাদের বিশেষ স্থানে পৌঁছে যায় l যখন পতঙ্গসকল "বাবা বাবা" বলতে বলতে আসবে, তখনই বলা যাবে প্রত্যক্ষগোচর হয়েছে অর্থাৎ ইন্দ্রিয়লব্ধ জ্ঞানের উপলব্ধি হয়েছে l
মাইকও এমন তৈরি কর যাতে মিডিয়ার মতন তারা প্রত্যক্ষতার আওয়াজ ছড়াতে পারে l তোমরা বলো, ভগবান এসে গেছেন, ভগবান এসে গেছেন ... কিন্তু তারা তো ভাবে সেটা কমন, এখন তোমাদের তরফে অন্যেরাও যেন বলে এবং তাদেরকে অথিরিটির সাথে বলতে দাও l প্রথমে, তোমাদের শক্তির রূপে তাদের প্রত্যক্ষ করতে দাও l যখন সকল শক্তি প্রত্যক্ষ হবে তখন শিববাবা প্রত্যক্ষ হয়েই যাবেন l আচ্ছা - ওম্ শান্তি l
বরদান:-
যোগ করার এবং করানোর যোগ্যতার সাথে সাথে প্রয়োগী আত্মা ভব
বাপদাদা দেখেছেন বাচ্চারা যোগ করতে এবং করানো উভয়েতেই দক্ষ l সুতরাং যেভাবে যোগ করতে-করাতে যোগ্য, সেইরকমই প্রয়োগ করাতেও যোগ্য হও আর অন্যদের যোগ্য বানাও l এখন আবশ্যকতা প্রয়োগী জীবনের l সবার আগে চেক কর, নিজের সংস্কার পরিবর্তনে কতদূর প্রয়োগী হয়েছ ? কারণ শ্রেষ্ঠ সংস্কারই শ্রেষ্ঠ রচনার ভিত l ভিত মজবুত হলে অন্য সব বিষয় নিজে থেকেই মজবুত হয়ে যাবে l
স্লোগান:-
অনুভাবী আত্মারা কখনো বায়ুমন্ডল অথবা কোনও সঙ্গের রঙে প্রভাবিত হয় না l