২৯-০৯-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ১৬-০২-৮৫ মধুবন


প্রতিটা শ্বাসে খুশির সুর-ঝঙ্কৃতি শ্রেষ্ঠ জন্মের উপহার

আজ ভোলানাথ বাবা ভোলা ভাণ্ডারী নিজের অতি স্নেহী, সদা সহযোগী, সহজযোগী, সমগ্র ভাণ্ডারের মালিক বাচ্চাদের সাথে মিলন উদযাপন করতে এসেছেন l তোমরা এখনকার মালিক, ভবিষ্যতেও মালিক l এখন বিশ্ব রচয়িতার বালক তথা মালিক, ভবিষ্যতে বিশ্বেরও মালিক l বাপদাদা এমন মালিক বাচ্চাদের দেখে পুলকিত হন l এটাই বালক তথা এই মালিক ভাবের অলৌকিক নেশা, অলৌকিক খুশি l তোমরা এইরকম সদা সৌভাগ্যবান সদা সম্পন্ন শ্রেষ্ঠ আত্মা, তাই না ! আজ সব বাচ্চা বাবার অবতরণের জন্ম-জয়ন্তী পালনের বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় উৎফুল্ল l বাপদাদা বলেন, বাবার জয়ন্তী তথা বাচ্চাদেরও জয়ন্তী, সেইজন্য এটা ওয়ান্ডারফুল জয়ন্তী l বাস্তবে, বাবা আর বাচ্চার একই জয়ন্তী হয় না l হয় কি ? যে দিনে বাবার জন্ম সেই একই দিনে তাঁর বাচ্চার জন্ম, এমন কখনও শুনেছ ? এটাই অলৌকিক জয়ন্তী l যে মুহূর্তে বাবা ব্রহ্মা বাচ্চার মধ্যে অবতরিত হয়েছেন, সেই দিন সেই মুহূর্ত ব্রহ্মারও অলৌকিক জন্ম l অতএব, এই জন্ম একসাথে হলো, তাই না ? ব্রহ্মার সাথে সাথে অনন্য ব্রাহ্মণদেরও জন্ম হ'লো l সেইজন্য শিববাবার অবতরণ এবং ব্রহ্মার দিব্য জন্মের তিথি, সময় এবং রেখা এক l যদিও শিববাবা এবং ব্রহ্মা বাচ্চা অর্থাৎ পরম আত্মা এবং মহান আত্মা, তৎসত্ত্বেও ব্রহ্মা, বাবা সমান হয়েছেন l সমান হওয়ার কারণে তাঁরা কম্বাইন্ড রূপ হয়ে গেছেন l যখন তোমরা বলো, *'বাপদাদা'* , তখন সদা একসাথে বাপদাদা বলো, আলাদাভাবে বলো না l ঠিক একইভাবে, অনন্য ব্রাহ্মণ বাপদাদার সাথে সাথে ব্রহ্মাকুমার, ব্রহ্মাকুমারী রূপে অবতরিত হয় l



অতএব, ব্রহ্মা এবং কুমার কুমারী, এরাও বাবা আর বাচ্চাদের কম্বাইন্ড রূপের স্মৃতির নাম l সুতরাং, বাপদাদা এসেছেন বাচ্চাদের ব্রাহ্মণ জীবনে অবতরণ জয়ন্তী উদযাপন করতে l তোমরাও সবাই অবতার, তাই না ! অবতার হওয়া অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ স্মৃতি থাকা, *"আমি দিব্য জীবনধারী ব্রাহ্মণ আত্মা l"* সুতরাং, এই তো নবজন্ম, তাই না ! তোমরা শ্রেষ্ঠ স্মৃতির সাথে এই সাকার শরীরে অবতরিত হয়েছ, বিশ্ব কল্যাণের কার্যে নিমিত্ত হয়েছ l সুতরাং, তোমরা তো অবতার, তাই না ? যেমন বাবা অবতরিত হয়েছেন, তেমন তোমরাও অবতরিত হয়েছ বিশ্ব পরিবর্তনের জন্য l *পরিবর্তন হওয়াই অবতরিত হওয়া, তাই না* ! সুতরাং, এই সভা অবতারগণের l বাবার সাথে সাথে তোমরা সব ব্রাহ্মণ বাচ্চারও অলৌকিক বার্থডে l সুতরাং, বাচ্চারা বাবার জন্ম-জয়ন্তী পালন করবে, নাকি বাবা বাচ্চাদের জয়ন্তী পালন করবেন ? নাকি সবাই মিলে একসাথে একে অপরের উদযাপন করবে ! ভক্তরা শুধু স্মরণিক পালন করতে থাকে, আর তোমরা সামনাসামনি বাবার সঙ্গে উদযাপন কর l এমন শ্রেষ্ঠ ভাগ্য, কল্প-কল্পের অবিনাশী ভাগ্যের রেখা টেনে দিয়েছে l সদা স্মৃতিতে রেখো, তোমাদের ভাগ্য ভগবানের সাথে l ভাগ্য বিধাতার থেকে ডিরেক্টলি তোমাদের ভাগ্য প্রাপ্ত করার পার্ট l তোমরা ডবল হিরো, হিরো পার্টধারী আবার হীরাসম জীবনধারীও l সুতরাং, ডবল হিরোই তো হলে, তাই না ! সমগ্র বিশ্বের নজর তোমরা সব হিরো পার্টধারী আত্মার দিকে l তোমাদের অর্থাৎ ভাগ্যবান আত্মাদের আজ অন্তিম জন্মে এবং কল্পের অন্তিম কালেও তোমরা সব ভাগ্যবান আত্মার স্মরণ রূপে এখনও কত স্মারকচিহ্ন বিদ্যমান রয়েছে l বাবার বা ব্রাহ্মণের বোল শাস্ত্রের আকারে স্মরণিক হয়ে গেছে, এখনও যার দু'টো বচন শোনার জন্য তারা তৃষিত l সামান্য দু'একটা বচন শুনে তারা শান্তি, সুখের অনুভব করতে থাকে l



তোমরা সব ভাগ্যবান আত্মার শ্রেষ্ঠ কর্ম চরিত্র রূপে এখনও গাওয়া হচ্ছে l তোমরা সব ভাগ্যবান আত্মার শ্রেষ্ঠ ভাবনা, শ্রেষ্ঠ কামনার শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প আশীর্বাদ রূপে গাওয়া হচ্ছে l যে কোনও দেবতার সামনে লোকে আশীর্বাদ প্রার্থণা করতে যায় l তোমরা সব ভাগ্যবান আত্মার শ্রেষ্ঠ স্মৃতির স্মরণ রূপে আজও স্মারকচিহ্ন ক্রমাগত চলে আসছে l লোকে স্মরণের কত মহিমা করে ! হয় তারা নাম স্মরণ করে অথবা মালারূপে জপ করে, এই স্মৃতির স্মরণই স্মরণিক রূপে চলছে l সুতরাং, এইরকম ভাগ্যবান কিভাবে হয়েছিলে ! কারণ ভাগ্যবিধাতার সাথে ভাগ্যবান হয়েছ l তাহলে, বুঝতে পারছ কত ভাগ্যবান দিব্য জন্ম তোমাদের ! এমন ভাগ্যবান বাচ্চাদের দিব্য জন্মের জন্য বাপদাদা, ভগবান, অভিনন্দন জানাচ্ছেন l সদাই অভিনন্দন আর অভিনন্দন l এই অভিনন্দন শুধু মাত্র এক দিনের জন্য নয় l এই ভাগ্যবান জন্ম প্রতিটা সেকেন্ড, প্রতিটা মুহূর্ত অভিনন্দনে পরিপূর্ণ l নিজেদের এই শ্রেষ্ঠ জন্ম তোমরা জানো, তাই না ? প্রতিটা শ্বাসে খুশির সুর বেজে চলেছে l এ শুধু তোমাদের শ্বাসক্রিয়া চলছে না, বরং সেটা খুশির সুর l তোমরা সেই সুর শুনতে পাও, তাই না ? ন্যাচারাল সুর কত শ্রেষ্ঠ ! এই দিব্য জন্মের এই খুশির সুর অর্থাৎ তোমাদের শ্বাস এই দিব্য জন্মের শ্রেষ্ঠ উপহার l ব্রাহ্মণ জন্ম হতেই গিফ্ট হিসেবে এই খুশির সুর লাভ করেছ, তাই না ? যখন তোমরা যন্ত্রে সঙ্গীতের সুর বাজাও তোমাদের আঙুল নিচে-ওপরে চলে, তাই নয় কি ? তেমনই শ্বাসও নিচে-ওপরে চলে l সুতরাং শ্বাস চলা অর্থাৎ সুর বেজে চলা l শ্বাসক্রিয়া বন্ধ হতে পারে না l সকলের খুশির সুর ঠিকভাবে বাজছে, তাই না ! ডবল বিদেশিরা কি ভাবছে ? ভোলা ভাণ্ডারীর থেকে সব খাজানা নিয়ে নিজের ভাণ্ডার

পরিপূর্ণ করে নিয়েছ, তাই না ! যে ভাণ্ডার একুশ জন্ম পরিপূর্ণ থাকবে l পূর্ণ করার পরিশ্রম করতে হবে না l আরামে তোমাদের প্রালব্ধ লাভ হবে l বর্তমান সময়ের পুরুষার্থ ২১ জন্মের প্রালব্ধ নিয়ে আসে l ২১ জন্ম সদা সম্পন্ন রূপে থাকবে l সুতরাং, কি পুরুষার্থ করেছ ? পরিশ্রম করতে হয় ? পুরুষার্থ অর্থাৎ শুধু এই রথে বিরাজমান পুরুষ অর্থাৎ আত্মা মনে কর l একেই বলে, পুরুষার্থ l এই পুরুষার্থ তো করেছ, না ? এই পুরুষার্থের ফলস্বরূপ একুশ জন্ম সদা খুশি আর সন্তুষ্ট থাকবে l এখনও সঙ্গমযুগ আনন্দের যুগ l বিভ্রান্ত হওয়ার নয়, আনন্দের যুগ l যদি কোনও ব্যাপারে তালগোল পাকিয়ে যায়, তবে তার কারণ সঙ্গমযুগ থেকে পা মাঝে মধ্যে কলিযুগের দিকে নিয়ে যাও l যখন তোমাদের সঙ্কল্প অর্থাৎ তোমাদের বুদ্ধিরূপী পা সঙ্গমযুগে থাকে, তোমরা সদা সুখানুভবে থাক l সঙ্গমযুগ অর্থাৎ দুইয়ের মিলন উদযাপন করার যুগ l সুতরাং, সঙ্গমযুগ হলো বাবা আর বাচ্চাদের মিলনোৎসব পালন করার জন্য l যেখানে মিলন সেখানে আনন্দ l সুতরাং, এই জন্ম খুশিতে উদযাপন করার, নয় কি ? বিষন্ন বা দিশাহারা হওয়ার লেশমাত্র নেই l খুশির সময় অনেক অলৌকিক খুশি পালন কর l ডবল বিদেশিরা ডবল খুশিতে থাক, তাই না ? এমন খুশিময় জন্মের (জীবনের ) জন্য অভিনন্দন l বিশ্বে অনেক আত্মা আছে, যারা বিভ্রান্ত, তোমরা নও l আগে থেকেই তারা অনেক, আর তোমরা যারা খুশি উদযাপন কর তারা কতিপয় মাত্র l বুঝেছ - নিজেদের এই শ্রেষ্ঠ জন্ম-জয়ন্তী ! বাস্তবে, জ্যোতিষী তোমাদের জন্মের দিন, তিথি আর সময়ের আধারে ভাগ্য নির্ধারণ করে l তোমাদের সকলের সময়কাল কি ! কি তিথি ? বাবার সাথে সাথে ব্রাহ্মণদেরও জন্ম, তাই না ! সুতরাং, যে তিথি ভগবানের তা' তোমাদের l



ভগবানের অবতরণ অর্থাৎ দিব্য জন্মের সময় তোমাদেরও জন্মের সময় l কত শ্রেষ্ঠ সময় ! কত শ্রেষ্ঠ রেখা, যেটাকে দশাও বলা হয় l সুতরাং, হৃদয়ে সদা এই উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকতে দাও যে বাবার সাথে সাথে তোমাদেরও জন্ম l ব্রহ্মা ব্রাহ্মণ ব্যতীত কিছু করতে পারেন না l শিববাবা ব্রহ্মাকে ছাড়া কিছু করতে পারেন না l সুতরাং, তাঁরা তো একসাথেই হলেন, তাই না ! অতএব, জন্ম তিথি, জন্ম সময়ের মহত্ত্ব সদা স্মরণে রাখ l *"যে তিথিতে ভগবান নেমে এসেছেন, সেই তিথিতে আমরা আত্মারাও অবতরিত হয়েছি l"* নামের শব্দেও দেখ কেমন সাদৃশ্য, ব্রহ্মা- ব্রাহ্মণ l ব্রহ্মাকুমার, ব্রহ্মাকুমারী l নামের শব্দও শ্রেষ্ঠ, এইরকম শ্রেষ্ঠ জন্ম বা জীবনধারী বাচ্চাদের দেখে বাবা সদা উৎফুল্ল হন l বাচ্চারা বলে, বাহ্ ! বাবা বাহ্ ! আর বাবা বলেন, বাহ্ বাচ্চারা ! এমন বাচ্চাও কারও হবে না l



আজকের এই দিব্য দিবসের বিশেষ উপহার হিসেবে বাপদাদা সকল স্নেহী বাচ্চাকে দু'টো গোল্ডেন বোল (বাণী) উপহার দিচ্ছেন, এক, সদা নিজেকে ভাব - *"আমি বাবার নয়নমণি (নূরে রতন) l"* নয়নমণি অর্থাৎ সদা নয়নে সমাহিত হয়ে থাকা l নয়নে সমাহিত হওয়ার স্বরূপ বিন্দু l নয়নে বিন্দুর চমৎকার ! সুতরাং, নয়নমণি অর্থাৎ আমি বিন্দু বাবার মধ্যে সমাহিত l "আমি ভালোবাসায় নিমজ্জিত l" *অতএব, প্রথমতঃ, এই গোল্ডেন বোল স্মরণে রাখ, "আমি নয়নমণি l" দ্বিতীয়তঃ, বাবার সাথ আর হাত সদা আমার ওপরে আছে l"* তাঁর সাহচর্য তোমাদের সাথে আছে আর তাঁর হাতও l সদা আশীর্বাদের হাত এবং সহযোগের সাথ আছে l সুতরাং, সদা বাবার সাথ এবং হাত আছেই l সাথ দেওয়া হাত রাখা নয়, কিন্তু সদাসর্বদা আছেই l এই আরেকটা গোল্ডেন বোল- সদা সাথ আর সদা হাত l এটা আজ এই দিব্য জন্মের উপহার l আচ্ছা -



চারিদিকের এমন সদা শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান বাচ্চাদের, সদা প্রতিটা শ্বাসকে খুশির সুর অনুভব করা বাচ্চাদের, ডবল হিরো বাচ্চাদের, সদা ভগবান আর ভাগ্যের প্রতিমূর্তি এমন বাচ্চাদের, সদা সর্ব সম্পদে যাদের ভান্ডার পরিপূর্ণ, সেই বাচ্চাদের দিব্য জন্মের জন্য ভোলানাথ, অমরনাথ বরদাতা বাবার অনেক অনেক অভিনন্দন, সেইসঙ্গে স্মরণ-স্নেহ এবং নমস্কার l



*দাদীদের সাথে -* অসীম বাবার স্নেহের বাহু অনেক বড়, স্নেহের সেই বাহুতে বা অলিঙ্গনে তোমরা সবাই সমাহিত হয়ে আছ l তোমরা সব বাচ্চা সদাসর্বদা বাবার বাহুমধ্যে আছ, বাহুডোরে আছ, এই কারণেই তোমরা মায়াজিৎ l ব্রহ্মার সাথে সাথে জন্মগ্রহণকারী শ্রেষ্ঠ আত্মা তোমরা, তাই না ! তিথিতে সামান্যতমও ফারাক নেই, সেইজন্য ব্রহ্মাকে বহু আনন দেখানো হয়েছে l ব্রহ্মারই পঞ্চানন বা ত্রি-আনন দেখানো হয়, কারণ ব্রহ্মার সাথে ব্রাহ্মণও আছে l তো তোমরা ত্রিমুখীতে আছ নাকি পঞ্চমুখীতে আছ ? মুখও সহযোগী, তাই না ! বাবারও নেশা আছে, কি বিষয়ে ? সমগ্র বিশ্বে কোনও বাবা এমন বাচ্চাদের খুঁজে নিয়ে আসতে গেলে পাবে তাদের ? (না l) বাবা বলবেন, এমন বাচ্চা পাওয়া যাবে না, বাচ্চারা বলে, এমন বাবা পাওয়া যাবে না l এটা ভালোই, বাচ্চারাই ঘরের শোভা l শুধুমাত্র বাবা একা থাকলে ঘরের শোভা হয় না l এই কারণে বাচ্চারা এই বিশ্বরূপী ঘরের শ্রী l এত ব্রাহ্মণের শোভা সুবিন্যস্ত করার নিমিত্ত কে হয়েছে ? বাচ্চারাই তো হয়েছে, না ! বাবাও বাচ্চাদের শ্রীমন্ডিত রূপ দেখে খুশি হন l বাবাকে তোমাদের থেকেও বেশি মালা জপ করতে হয় l তোমাদের তো শুধু এক বাবাকেই স্মরণ করতে হয় আর বাবাকে কত মালার স্মরণ করতে হয় ! ভক্তিমার্গে যত মালা তাঁকে অর্পণ করা হয়েছে, বাবাকে সেই সবই এখন স্মরণ করতে হয় l এমনকি, একদিনের জন্যও এক বাচ্চারও মালা বাবা জপ করবেন না, এমন হতেই পারে না l সুতরাং, বাবাও চরম (নবধা ) ভক্ত, তাই না ! প্রত্যেক বাচ্চার বিশেষত্ব এবং গুণের মালা বাবা জপ করেন এবং যতবার স্মরণ করেন তত সেই গুণ এবং বিশেষত্ব ফ্রেশ হতে থাকে l বাবা মালা জপ করেন কিন্তু মালার ফল তিনি বাচ্চাদের দেন, তাঁর নিজের জন্য নেন না l আচ্ছা - বাপদাদা তো সদা বাচ্চাদের সাথেই থাকেন, ক্ষণমাত্রও বাচ্চাদের থেকে আলাদা থাকতে পারেন না l থাকতে চাইলেও থাকতে পারেন না l কেন ? বাচ্চারা তাকে কত স্মরণ করে, সুতরাং তাঁকে রেসপন্স তো দিতে হবে, না ! তাঁকে স্মরণ করার রিটার্ণ তো দিতে হবে, তাই না ! এমনকি, এক সেকেন্ডও বাচ্চাদের ছাড়া তিনি থাকতে পারেন না l তোমরা এমন ওয়ান্ডার কখনো দেখবে না যেখানে বাবা সদা সাথেই থাকবেন ! বাবা বাচ্চাদের থেকে আলাদাই হবেন না l পিতা-পুত্রের এমন জুটি কখনও দেখবে না l খুব ভালো বাগিচা তৈরি হয়েছে l তোমাদের সবার এই বাগিচা ভালো লাগে, তাই না ! প্রত্যেকের সুগন্ধ আলাদা এবং প্রত্যেকে প্রীতিমধুর, সেইজন্যই *আল্লার বাগান* গাওয়া হয়েছে l



তোমরা সবাই আদি রত্ন, প্রতিটা রত্নের কত ভ্যাল্যু, আর প্রত্যেক মুহূর্তে প্রতিটা কাজে রত্ন আবশ্যক l সুতরাং, তোমরা শ্রেষ্ঠ রত্নরাজি l আজও রত্নরূপে যাঁদের পূজা হয় l এখন অনেক আত্মার বিঘ্ন বিনাশক হওয়ার সেবা করছ, এই কারণে তোমাদের প্রত্যেকের এত ভ্যাল্যুয়েবল রত্ন হওয়ার স্মরণিক বিদ্যমান l প্রত্যেক রত্নের নিজস্ব বিশেষত্ব আছে l কোনো রত্ন বিঘ্ন বিনাশ করে, আর কোনো রত্ন অন্যকিছু ! সুতরাং, এখন লাস্ট পর্যন্তও স্মরণিকের স্থূল রূপ সেবা করছে l এইরকম সেবাধারী হয়েছ তোমরা l বুঝেছ !



*সম্মেলনে আগত বিদেশি প্রতিনিধিদের সাথে অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎকার*

সবাই কোথায় পৌঁছেছ ? তোমরা বাবার ঘরে এসেছ, এমন অনুভব কর ? বাবার ঘরে অতিথি আসে নাকি বাচ্চারা আসে ? তোমরা বাচ্চা, অধিকারী নাকি অতিথি ? বাবার ঘরে এসেছ, বাবার ঘরে সদা অধিকারী বাচ্চারা আসে l এখন থেকে নিজেদের অতিথি নয়, বরং বাবার বাচ্চা মহান আত্মা মনে করে এগিয়ে যাও l তোমরা ভাগ্যবান যে কারণে এই স্থানে পৌঁছেছ l এখন কি করতে যাচ্ছ ? এখানে আসার ভাগ্য তো ছিল, কিন্তু এখন কি করতে হবে ? এখন সদাসর্বদা বাবার সাথে থাক, তাঁর স্মরণে থাকাই তাঁর সাথে থাকা l একলা যেয়োনা l কম্বাইন্ড হয়ে যেখানেই যাবে, যে কর্মই করবে তা' কম্বাইন্ড রূপে করলে তোমরা সদা সহজ আর সফল অনুভব করবে l যাওয়ার আগে এই সঙ্কল্প অবশ্যই কর যে সদা তাঁর সাথে থাকবে l পুরুষার্থ করবে, এই ব্যাপারে ভেবে দেখবে, এটা নয়, বরং এটা তোমাদের করতেই হবে, কারণ দৃঢ়তা সফলতার চাবি l সুতরাং এই চাবি সদা নিজের সাথে রাখ l এটা এমন চাবি, যে খাজানাই তুমি চাও শুধু তা' সঙ্কল্প করবে আর খাজানা লাভ হবে ! এই চাবি সদা সাথে রাখা অর্থাৎ সদা সাফল্য লাভ করা l এখন তোমরা অতিথি নও, বরং অধিকারী আত্মা l

বাপদাদাও এইরকম অধিকারী বাচ্চাদের দেখে উৎফুল্ল হন l যে অনুভব তোমরা করেছ, সেই অনুভবের খাজানা সদা ভাগ করে দিতে থাক, তোমরা যত বেশি ভাগ করে দেবে তত বেশি বাড়তে থাকবে l সুতরাং, মহাদানী হও, শুধু নিজের কাছে রেখে দিয়োনা l আচ্ছা !



*প্রত্যূষকাল ৩:৩০ মিনিটে বিদায়ের সময়* - অভিনন্দনের সাথে সব বাচ্চাকে গুড মর্নিং l আজকের রাত যেমন শুভ মিলনের আনন্দ অনুভবে কাটিয়েছ, তেমনই সদা দিন রাত বাবার মিলনের আনন্দে উদযাপন করতে থাক l সদা মহাদানী বরদানী হয়ে অনেক আত্মাদের দানও দিও, বরদানও দিও l

আচ্ছা - এইরকম সদা বিশ্ব কল্যাণকারী, সদা হৃদয়বান, সদা সকলের প্রতি শুভ ভাবনা বহনকারী বাচ্চাদের স্মরণ-স্নেহ আর গুড মর্নিং l

বরদান:-

উপলব্ধির শক্তি দ্বারা স্ব-পরিবর্তন করে তীব্র পুরুষার্থী ভব

যে কোনও পরিবর্তনের সহজ আধার হলো উপলব্ধির শক্তি l যতক্ষণ না পর্যন্ত উপলব্ধির শক্তি আসে, ততক্ষণ অনুভূতি হয় না এবং যতক্ষণ অনুভূতি না হয় ততক্ষণ ব্রাহ্মণ জীবনের বিশেষত্বের ফাউন্ডেশন মজবুত হতে পারবে না, আর উৎসাহ-উদ্দীপনার কোনও কর্মকাণ্ড হবে না l যখন উপলব্ধির শক্তি সব বিষয়ে অনুভাবী করে তোলে তখনই তোমরা তীব্র পুরুষার্থী হয়ে যাও l উপলব্ধির শক্তি সদাকালের জন্য সহজ পরিবর্তন করিয়ে দেয় l

স্লোগান:-

স্নেহের প্রতিচ্ছবি সাকারে ইমার্জ করে ব্রহ্মাবাবা সমান হও l