১৬-১০-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - আত্মার থেকে সমস্ত বিকার রূপী ময়লাকে বের করে শুদ্ধ ফুল হও। বাবার স্মরণে থাকলেই সমস্ত ময়লা বেরিয়ে যাবে"
প্রশ্ন:-
পবিত্র হওয়ার জন্য বাচ্চাদের কোন্ বিষয়ে বাবাকে অনুসরণ করতে হবে?
উত্তর:-
বাবা যেমন পরম পবিত্র, তিনি কখনও অপবিত্র নোংরা আত্মাদের সাথে একত্রিত হন না, সদা পবিত্র থাকেন, এইরকম তোমরাও পবিত্র হওয়ার জন্য বাবাকে অনুসরণ করতে থাকো, খারাপ কিছু দেখো না*।
ওম্ শান্তি।
বাবা বসে বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন। এই দুই বাবা-ই তো আছেন। একজনকে আত্মিক, আর অন্যজনকে দৈহিক বাবা বলা হয়ে থাকে। শরীর তো দু'জনেরই এক, যেন মনে হয় দু' জন বাবা-ই বোঝাচ্ছেন। কিন্তু একজন বোঝান, অন্যজন বোঝেন। তবুও বলা হয়ে থাকে দু'জনেই বোঝাচ্ছেন। এই যে এত ছোট একটা আত্মা, তাতে কতই না ময়লা জমা হয়ে আছে। ময়লা জমলে কত ক্ষতি হয়ে যায়। এই লাভ আর ক্ষতি তো তখনই দেখা যায়, যখন এসব শরীরের সাথে হয়। তোমরা জানো যে আমরা আত্মা যখন পবিত্র হব, তখন এই লক্ষ্মী-নারায়ণের মত পবিত্র শরীর পাব। এখন আত্মার মধ্যে কতই-না ময়লা জমে আছে। যখন মধু বের করা হয়, তখন তাকে পরিশোধন করে নেওয়া হয়। তখন কতই না ময়লা বেরিয়ে আসে আর শুদ্ধ মধু আলাদা করে রাখা হয়। আত্মাও অনেক ময়লা হয়ে যায়। আত্মা-ই শুদ্ধ ছিল, একদম পবিত্র ছিল। শরীর কি রকম সুন্দর ছিল। এই লক্ষ্মী-নারায়ণের শরীর দেখো কত সুন্দর। মানুষ তো শরীরকেই পূজা করে, তাইনা। আত্মাকে তো দেখতেই পায় না। আত্মাকে তো চেনেই না। প্রথমে আত্মা সুন্দর ছিল। শরীরও সুন্দর পাওয়া যায়। তোমরাও এখন এইরকম লক্ষ্মী-নারায়ণ হতে চলেছো। তাই আত্মাকে কতই না শুদ্ধ হতে হবে। আত্মাকেই তমোপ্রধান বলা হয়ে থাকে, কেননা তাতে নোংরা ভর্তি আছে। এক হচ্ছে দেহ-অভিমানের ময়লা আর দ্বিতীয় কাম-ক্রোধের ময়লা। ময়লা বের করার জন্য পরিশোধন করা হয়। পরিশোধনের দ্বারা রং-ও পরিবর্তিত হয়ে যায়। তোমরা ভালোভাবে বিচার করলে অনুভব করতে পারবে যে, তোমাদের মধ্যে কত ময়লা ভরা হওয়া আছে। আত্মার মধ্যেই রাবণের প্রবেশ হয়। এখন বাবার স্মরণে থাকলেই সমস্ত ময়লা বেরিয়ে যাবে। এতেও সময়ের প্রয়োজন হয়। বাবা বোঝান যে, দেহ অভিমানের কারণে বিকারের কত ময়লা জমা হয়। ক্রোধের ময়লাও কম নয়। ক্রোধী, অন্তরে অন্তরে জ্বলতে থাকে। কোনো না কোনো কথাতে হৃদয় জ্বলতেই থাকে। মুখটাও তামার মত হয়ে যায়। এখন তোমরা বুঝে গেছো যে, আমাদের আত্মাও জ্বলেছিল। আত্মার মধ্যে কত ময়লা আছে - এখন জানা গেছে। এইসব কথা বোঝার জন্য খুব কম সংখ্যক আত্মাই আছে। এখানে তো ফার্স্ট ক্লাস বুদ্ধি চাই, তাই না। এখনো তো অনেক ঘাটতি আছে। তোমাদেরকে তো সমস্ত ঘাটতিগুলি পূরণ করে একদম পবিত্র হতে হবে। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ কত পবিত্র। বাস্তব ক্ষেত্রে তাদেরকে স্পর্শ করার জন্যও আদেশ নেই। পতিতরা এত উঁচু পবিত্র দেবতাদের স্পর্শ করতে পারবে না। স্পর্শ করার যোগ্যই নয়। শিবকে তো স্পর্শ করতেই পারবে না। তিনি তো হলেনই নিরাকার, তাকে তো স্পর্শ করাই যায় না। তিনি হচ্ছেন পবিত্রতম। হয়তো বা তাঁর প্রতিমা অনেক বড় করা হয়। কেননা এত ছোট বিন্দু, তাতে তো কেউ স্পর্শ করতেই পারবে না। আত্মা শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে, তাই শরীর বড় হয়। আত্মা তো বড় ছোট হয় না। এটা তো হলই নোংরা দুনিয়া। আত্মার মধ্যে কত নোংরা জমা হয়ে আছে। শিব বাবা হলেন অত্যন্ত সেক্রেড (পবিত্র) .... খুবই পবিত্র। এখানে তো সবাইকে এক সমান বানিয়ে দেয়। একে অপরকে বলে তুমি তো জানোয়ার। সত্য যুগে এরকম ভাষা হবেই না। এখন তোমরা অনুভব করতে পেরেছো যে, আত্মার মধ্যে অনেক ময়লা জমে আছে। আত্মার সেই যোগ্যতাই নেই যে বাবাকে স্মরণ করে। অযোগ্য বুঝে মায়াও তাকে একদম সরিয়ে দেয়।
বাবা কত পবিত্র এবং শুদ্ধ । আমরা আত্মারাও কি থেকে কি হতে চলেছি। এখন বাবা বোঝাচ্ছেন যে, তোমরা আমাকে ডেকেছিলে আত্মাকে শুদ্ধ করানোর জন্য। অনেক নোংরা ভর্তি হয়ে আছে। বাগানের মধ্যে সব ফুলই সুন্দর হয় না। নম্বরের ক্রমানুসারে হয়। বাবা হলেন বাগানের মালি। আত্মা কত পবিত্র হয়। পুনরায় অনেক ময়লা জমে একদম কাঁটা হয়ে যায়। আত্মার মধ্যেই দেহ অভিমানের, কাম-ক্রোধের ময়লা ভরা আছে। ক্রোধও মানুষের মধ্যে অনেক আছে। যখন তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে, তখন তো কারোর মুখ দেখতেই ইচ্ছা করবে না। খারাপ কিছু দেখো না।
অপবিত্রদেরকে তো দেখাই উচিত নয়। আত্মা পবিত্র হয়ে পবিত্র নতুন দেহ ধারণ করে। তাহলে নোংরা তো দেখবেই না। নোংরা দুনিয়াই সমাপ্ত হয়ে যাবে। বাবা বোঝাচ্ছেন যে, তোমরা দেহ অভিমানে এসে কতই না নোংরায় পড়ে গেছো। পতিত হয়ে গেছো। বাচ্চারা বলে যে - বাবা আমার মধ্যে ক্রোধের ভূত আছে। বাবা, আমরা তোমার কাছে এসেছি পবিত্র হওয়ার জন্য। আমরা জানি যে, বাবা হচ্ছেন চির পবিত্র। এইরকম সর্বোচ্চ অথরিটিকে সর্বব্যাপী বলে কতই না অপমান করা হয়েছে। নিজের উপরেও কত ঘৃণাভাব জন্মায়। আমরা কি ছিলাম, পুনরায় কি থেকে কি হতে চলেছি। এসব কথা তোমরা বাচ্চারাই বুঝতে পারো, আর অন্য কোনো সৎসঙ্গ বা বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি কোথাও এই রকম লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যকে কেউ বোঝাতে পারবে না। এখন তোমরা বাচ্চারা জেনে গেছো যে আমাদের আত্মার মধ্যে কিভাবে নোংরা ময়লা জমেছে। দুই কলা কম হলো, তারপর চার কলা কম হলো, নোংরা জমতেই থাকছে। এইজন্য বলা হয়ে থাকে যে তমোপ্রধান। কেউ লোভে বশীভূত হয়ে, কেউ মোহে জর্জরিত হয়ে জ্বলে মরে, এই অবস্থাতেই জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এখন বাচ্চারা, তোমাদের তো শিব বাবার স্মরণে থেকেই শরীর ত্যাগ করতে হবে, যে শিব বাবা এই রকম তৈরি করেছেন। এই লক্ষ্মী-নারায়ণকে এই শিব বাবা-ই তৈরি করেছেন, তাই না। অতএব নিজের উপর অনেক সতর্ক থাকতে হবে। তুফান তো অনেক আসবে। তুফান মায়ার হয়েই আসে, তুফান আর কিছুর নয়। তারা তো শাস্ত্রে হনুমান ইত্যাদির গল্প লিখে দিয়েছে । *আরো বলে থাকে যে, ভগবান শাস্ত্র রচনা করেছেন। ভগবান তো সব বেদ শাস্ত্রের সার শোনায়* । ভগবান তো সদ্গতি করে দিয়েছেন, তাঁর আবার শাস্ত্র রচনা করার কি দরকার ? এখন বাবা বলেন - খারাপ কিছু শুনো না। এই শাস্ত্র ইত্যাদি পড়ে তোমরা শ্রেষ্ঠ হতে পারবে না। আমি তো এইসব থেকে আলাদা থাকি। কেউ আমাকে চিনতেই পারে না। বাবা কি, কারোরই তা জানা নেই। বাবা জানেন, কে কে আমার সেবা করে অর্থাৎ কল্যাণকারী হয়ে অন্যদেরও কল্যাণ করে, সে-ই আমার হৃদয় সিংহাসনে বসে। কেউ তো আবার এমনও আছে, যার সেবার বিষয়ে কোনো জ্ঞানই নেই। বাচ্চারা, তোমাদের তো এ বিষয়ে জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছে যে নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো। হয়তো আত্মা শুদ্ধ হয়, শরীর তো সেই পতিতই থাকে, তাই না। যাদের আত্মা শুদ্ধ হয়, তাদের কার্যকলাপের মধ্যে রাত-দিনের পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। আচার-আচরণে বোঝা যায়। কারোরই নাম নেওয়া হয় না। যদি নাম বলা হয় তবে আরো খারাপ হয়ে যেতে পারে।
এখন তোমরা পার্থক্য দেখতে পাবে যে, তোমরা কি ছিলে, আর তোমাদের কি হতে হবে ! তো শ্রীমতে চলতে হবে, তাই না। অন্দরে যে খারাপ জিনিস জমা হয়ে আছে, সেগুলোকে বের করতে হবে। লৌকিক সম্বন্ধের ক্ষেত্রেও কোনো কোনো বাচ্চা অনেক খারাপ হয়, তাদের প্রতি তাদের বাবাও বিরক্ত বোধ করে। বলে থাকে যে এরকম বাচ্চা থাকার থেকে না থাকা ভালো। ফুলের বাগান সুরভিত হয়ে থাকে । কিন্তু ড্রামা অনুসারে নোংরাও হয় । আকন্দ ফুল দেখতেও ভালো লাগে না। কিন্তু বাগানে গেলে সব ফুলের ওপরই তো নজর পড়ে, তাই না। আত্মা বলে এটা অমুক ফুল । সুগন্ধি ফুলের-ই তো আঘ্রাণ নেবে সবাই, তাইনা। বাবাও দেখেন যে, এনার আত্মাও কতক্ষণ স্মরণের যাত্রায় থাকে। কত পবিত্র হয়েছে আর অন্যদেরও নিজের সমান তৈরি করছে। জ্ঞান শোনায়। মূল কথাই হলো মন্মনা ভব। বাবা বলেন যে, আমাকে স্মরণ করো, তাহলে পবিত্র ফুল হয়ে যাবে। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ কত পবিত্র ফুল ছিল। এর থেকেও শিববাবা অনেক অনেক পবিত্র। মানুষের কি জানা আছে যে এই লক্ষ্মী-নারায়ণকে এই শিব বাবা-ই তৈরি করেছেন। তোমরা এখন জেনেছ যে, এই পুরুষার্থের দ্বারাই এনারা এইরকম হয়েছেন। রাম কম পুরুষার্থ করেছেন, তাই চন্দ্রবংশী হয়েছেন। বাবা তো অনেক বোঝান। এক তো স্মরণের যাত্রায় থাকতে হবে, যার দ্বারা খারাপ সব বেরিয়ে যাবে, আর আত্মা পবিত্র হবে। তোমাদের কাছে মিউজিয়াম ইত্যাদিতে অনেক আত্মা আসে। বাচ্চাদেরকে সেবা করার জন্য অনেক শখ রাখতে হবে। সেবা ছেড়ে কখনো ঘুমাবে না। সেবার ক্ষেত্রে সর্বদা নির্ভুল থাকতে হবে। মিউজিয়ামেও তোমরা বিশ্রাম করবার সময় টুকু পর্যন্ত তোমরা নাও না। গলায় ব্যাথা হয়ে যায়। ভোজনাদিও খেতে হবে, কিন্তু অন্তরে দিনরাত এই উৎসাহই থাকবে যে কিভাবে সেবা করব। কেউ এলে তাকে রাস্তা বলতে হবে। ভোজনের সময় কেউ এসে গেলে তবে প্রথমে তাকে বুঝিয়ে তারপর ভোজন খেতে হবে। এইরকম সেবাধারী হয়েছো ? কারো কারো আবার অনেক দেহ অভিমান এসে যায়। আরাম পছন্দ করে। তখন সে নবাব হয়ে যায়। বাবাকে তো সবকিছুই বোঝাতে হয়, তাই না। এইসব নবাবী ছাড়ো। পুনরায় বাবা সাক্ষাৎকারও করাবেন। নিজের পদ দেখো। দেহ অভিমানের নোংরা নিজেরাই নিজেদের পায়ে লাগিয়েছো। অনেক বাচ্চা বাবাকেও ঈর্ষা করে। আরে ! ইনি তো শিব বাবার রথ । এনাকে তো যত্ন করতেই হবে। এখানে তো এমনও অনেকে আছে যাদের ডাক্তারের নির্দেশে অনেক ওষুধ খেতে হয় । যদিও বাবা বলে থাকেন শরীরকে সুস্থ রাখতে হবে, কিন্তু নিজের স্থিতিকেও দেখতে হবে, তাই না। তোমরা বাবার স্মরণে থেকে খাও, তাহলে কোনো ক্ষতি হবে না। স্মরণে থাকলেই শক্তি ভরে যাবে। ভোজন অনেক শুদ্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু এখন এই স্থিতি নেই। বাবা তো বলেন যে, ব্রাহ্মণদের (ব্রহ্মা বৎসদের) হাতে তৈরি হওয়া ভোজন হল উত্তমের থেকেও উত্তম, কিন্তু তখন-ই, যখন সেটা বাবার স্মরণে থেকে তৈরি করা হয়। স্মরণে থেকে রান্না হলে, যে করেছে তারও লাভ, আর যে খাবে তারও লাভ হবে।
আকন্দ ফুল তো অনেক আছে, তাইনা। এরা কি পদ পাবে ? বাবার তো খুব দয়া হয়। কিন্তু ড্রামা অনুসারে দাস-দাসী হতেও হবে। এতে খুশি হয়ে যেও না । অনেকেই এটা ভাবে না যে, আমাকে এইরকম হতে হবে। দাস-দাসী হওয়ার পর যদি ধনী হও তাহলে ঠিক আছে, দাস-দাসী রাখতেও পারবে। বাবা তো বলেন যে, নিরন্তর এক আমাকে স্মরণ করো আর সুখের দোলনায় দুলতে থাকো। ভক্তরা আবার জপমালা তৈরি করে। ওটা ভক্তদের কাজ। বাবা তো শুধু বলেন যে, নিজেকে আত্মা মনে করো আর বাবাকে স্মরণ করো। ব্যস্, বাকি কিছু জপ করতে হবে না, না মালা ঘোরাতে হবে । বাবাকে যথাযথ রূপে জানতে হবে আর তাঁকে স্মরণ করতে হবে। মুখে শুধু "বাবা বাবা" বললেই হবে না। তোমরা এখন জেনেছ যে, তিনি হলেন আমরা আত্মাদের অসীম জগতের পিতা। তাঁকে স্মরণ করলেই আমরা সতোপ্রধান হয়ে যাবো অর্থাৎ আত্মা শুদ্ধ হয়ে যাবে। কত সহজ বিষয়। যুদ্ধের ময়দান আছ এখন তোমরা, তাইনা। তোমাদের হল মায়ার সঙ্গে যুদ্ধ। সে প্রতিমুহূর্তে তোমাদের বুদ্ধিযোগ ভাঙার চেষ্টা করছে। বিনাশ কালে যত যত প্রীত বুদ্ধি থাকবে, ততই উঁচু পদ পাবে। এক বাবাকে ছাড়া আর কাউকে স্মরণ ক'রো না। কল্প পূর্বেও এইরকম অনেক আত্মাই বেরিয়েছেন, যাঁরা বিজয় মালার দানা হয়েছেন। তোমরা ব্রাহ্মণ কুলের হয়েছো। ব্রাহ্মণদেরও মালা তৈরি হয়, যারা অনেক গুপ্ত সেবা করেছেন, তাদের। জ্ঞানও গুপ্ত, তাইনা। বাবা তো প্রত্যেককে খুব ভালোভাবে জানেন। ভালো ভালো প্রথম নম্বরের মহারথী বলে তোমরা যাদের জানো, তারা তো আজ নেই। দেহ অভিমান অনেক আছে। বাবার স্মরণ স্থায়ী হয় না। মায়া অনেক জোরে থাপ্পড় মারে। অনেক কম সংখ্যকই আছে যাদের মালা তৈরি হয়। বাবাও বাচ্চাদেরকে বোঝান যে, নিজেকে দেখতে থাকো। আমি কতটা পবিত্র দেবতা ছিলাম, পুনরায় আমি কি থেকে কি হয়ে গিয়েছিলাম, একদম নোংরা হয়ে গিয়েছিলাম। এখন শিব বাবাকে পেয়েছি, তাই তাঁর শ্রীমতে চলতেই হবে। কোনো দেহধারীকে স্মরণ ক'রো না। কারোর স্মরণ যেন বুদ্ধিতে না আসে। নিজের কাছে কারোর চিত্র রেখো না। এক শিব বাবাকে স্মরণ করো। শিব বাবার তো শরীর নেই। এটা তো কিছুদিনের জন্য লোন নিয়েছেন। তোমাদেরকে এইরকম দেবী দেবতা লক্ষ্মী-নারায়ণ তৈরি করার জন্য কতই না পরিশ্রম করতে হয়। বাবা বলেন, তোমরা আমাকে পতিত দুনিয়াতে আহ্বান করেছিলে।আমি তোমাদেরকে পবিত্র বানাই, কিন্তু তোমরা পবিত্র দুনিয়াতে আমাকে আহ্বান ক'রো না। সেখানে এসেই বা আমি কি করবো। তাঁর সেবা-ই হল পতিতদেরকে পবিত্র করা। বাবা জানেন যে, তোমরা একদম জ্বলে পুড়ে কালো কয়লা হয়ে গিয়েছিলে। বাবা এসেছেন তোমাদেরকে সুন্দর বানানোর জন্য। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।*
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১. সেবার ক্ষেত্রে একদম নির্ভুল থাকতে হবে। দিনরাত সেবার জন্য উৎসাহের ঢেউ আসতে থাকবে। সেবা ছেড়ে কখনো আরাম ক'রো না। বাবার সমান কল্যাণকারী হতে হবে।
২. একের-ই স্মরণে থেকে প্রীত বুদ্ধি হয়ে অন্তরের সমস্ত ময়লাকে বের করে দিতে হবে। সুগন্ধি ফুল হতে হবে। এই নোংরা দুনিয়াতে বুদ্ধি যোগ লাগিও না।
বরদান:-
"প্রথমে আপনি" - এই মন্ত্র দ্বারা সকলের স্বমান প্রাপ্ত করে নির্মাণ তথা মহান ভব
এই মহামন্ত্র সদা স্মরণে থাকে যে "নির্মাণ - ই হলো সবথেকে মহান"। "প্রথমে আপনি" করা-ই হলো সবার থেকে স্বমান প্রাপ্ত করার আধার। মহান হওয়ার এই মন্ত্র বরদান রূপে সদা সাথে রাখবে। বরদানের দ্বারাই প্রতিপালিত হয়ে, উড়ে গিয়ে নিজের গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যাও। পরিশ্রম তো তখন করতে হয়, যখন বরদানগুলিকে কাজে লাগাও না। যদি বরদানের দ্বারা প্রতিপালিত হও বা বরদানকে ব্যবহারিক কাজে লাগিয়ে থাকো, তাহলে পরিশ্রম সমাপ্ত হয়ে যাবে। সর্বদা সফলতা আর সন্তুষ্টতা অনুভব করতে থাকবে।
স্লোগান:-
চেহারার দ্বারা সেবা করার জন্য নিজের হাস্যময়, আনন্দদায়ী এবং গম্ভীর স্বরূপকে ধারণ করো।