29.03.19       Morning Bengali Murli        Om Shanti      BapDada       Madhuban


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমাদের এই শরীর সহ সব কিছুর থেকে আসক্তি সরিয়ে ফেলতে হবে। যখন তোমরা অর্থাৎ আত্মারা, পবিত্র কর্মাতীত হয়ে যাবে তখন নিজ নিকেতনে যেতে পারবে"

প্রশ্নঃ -
কি কারণে আত্মারা ভীষণ রকম ভয় পায় আর সে কেনই বা ভয় পায় ?

উত্তরঃ -
আত্মার শরীর ত্যাগ করতে ভীষণ ভয় করে, কারণ তার শরীরের প্রতি মমতা এসে যায়। যদি কেউ অতি দুঃখে শরীর ত্যাগ করতে চায়, তবে তার পাপ-কর্মের শাস্তি ভোগ তো করতেই হবে। বাচ্চারা, সঙ্গমে তোমাদের কোনোই ভয় নেই। তোমরা আরো বেশী খুশীতে থাকো যে আমরা পুরানো শরীর ছেড়ে বাবার কাছে যাব ।

ওম্ শান্তি।
মিষ্টি-মিষ্টি বাচ্চাদের বোঝানো হয়েছে এক হল জ্ঞান, দ্বিতীয় হল ভক্তি। ড্রামাতে এটা পূর্ব-নির্ধারিত হয়ে আছে। ড্রামার আদি-মধ্য-অন্তকে আর কেউই জানে না। তোমরা অর্থাৎ বাচ্চারা তো জানো। সত্যযুগে মৃত্যু-ভয় থাকে না, অবগত থাকে আমাদের এক শরীর ত্যাগ করে দ্বিতীয় শরীর নিতে হবে। দুঃখ-কান্না ইত্যাদির ব্যাপার নেই। এখানে মৃত্যুর জন্য ভয় থাকে। আত্মা শরীর ত্যাগ করতে দুঃখ পায়। ভয় পায়, কারণ আবার দ্বিতীয় জন্ম নিয়ে দুঃখই সহ্য করতে হবে। তোমরা তো হলে সঙ্গমযুগী। বাচ্চারা, তোমাদের বাবা বুঝিয়েছেন এখন ফিরে যেতে হবে। কোথায় ? গৃহে। সেইটা হল ভগবানের গৃহ। এটা কোনো গৃহ হল না, যেখানে ভগবান আর তোমরা এই বাচ্চা রূপী আত্মারা থাকো তাকেই গৃহ বলা হয়। সেখানে এই শরীর থাকে না। যেমন মানুষ বলে আমরা ভারতে থাকি, গৃহে থাকি, সেরকম তোমরা বলবে- আমরা সকলেই অর্থাৎ আমরা আত্মারা সেখানে নিজ- গৃহে থাকি। সেটা হলো আত্মাদের গৃহ, আর এটা হলো জীব- আত্মাদের গৃহ। ওটাকে বলা হয় মুক্তি ধাম। মানুষ সেখানে যাওয়ার জন্য তো পুরুষার্থ করে- যাতে আমরা গিয়ে ভগবানের সাথে মিলিত হতে পারি। ভগবানের সাথে মিলিত হওয়ার জন্য খুব খুশীতে থাকা চাই। এই যে আত্মার শরীর আছে, এতে আত্মার ভীষণ মোহ এসে গেছে, সেই জন্য সামান্য অসুখ-বিসুখ করলেই ভয় করে-এই শরীর যেন না ছেড়ে যায়। অজ্ঞান কালেও ভয় থাকে। এই সময়, অর্থাৎ কি না সঙ্গম যুগে, তোমরা জানো এখন ফিরে যেতে হবে বাবার কাছে, ভয়ের ব্যাপার নেই। বাবা খুব সুন্দর যুক্তি বলেছেন। পতিত আত্মারা তো আমার কাছে মুক্তিধামে আসতে পারবে না, ওটা হলই পবিত্র আত্মাদের গৃহ। এটা হল মানুষদের গৃহ। এখানে শরীর তৈরী হয় পঞ্চতত্ত্বের দ্বারা, তাই পঞ্চতত্ত্বও এখানে থাকার জন্য আকর্ষণ করতে থাকে। আকাশ, জল, বায়ু...ওখানে (মূলবতনে) এই তত্ত্ব নেই। এটা হল বিচার সাগর মন্থন করার যুক্তি। আত্মা এই প্রপার্টি নিয়ে নিয়েছে, সেইজন্য শরীরের প্রতি মমতা এসে গেছে। তা না হলে তো আমরা আত্মারা হলাম ওখানে থাকারই। এখন আবার পুরুষার্থ করে ওখানে যাওয়ার জন্য। যখন তোমরা পবিত্র আত্মা হয়ে যাও তখন আবার তোমাদের সুখ প্রাপ্তি হয়, দুঃখের কোনো ব্যাপারই নেই। এই সময় হলই দুঃখধাম। তাই এই পাঁচ তত্ত্বও আকর্ষণ করতে থাকে উপর থেকে নীচে এসে ভূমিকা পালন করার জন্য। প্রকৃতির আধার তো অবশ্যই নিতে হবে, না হলে তো খেলা চলবে না। এই খেলা দুঃখ আর সুখের তৈরী। যখন তোমরা সুখে থাকো তখন এই পঞ্চতত্ত্বের তৈরী শরীরের উপর কোনো আসক্তি থাকে না। ওখানে তো পবিত্র থাকে। শরীরের প্রতি এতো মমতা থাকে না। এই পঞ্চতত্ত্বের আসক্তিও ছেড়ে দেয়। আমরা পবিত্র হই, সেখানে আবার শরীরও যোগ-বলের দ্বারা তৈরী হয়, সেই কারণে মায়া আকর্ষণ করে না। আমাদের সেই শরীর যোগ বলের দ্বারা নির্মিত বলে দুঃখ হয় না। ড্রামা কিরকম বিস্ময়কর ভাবে (ওয়ান্ডারফুল)তৈরী। এটাও অনেক সূক্ষ্ম ভাবে বোঝার ব্যাপার। যে খুব বুদ্ধিমান আর সার্ভিসে সদা উপস্থিত থাকে সেই ভালো ভাবে বুঝতে পারে। বাবা বলেছেন- ধন দান করলে ধন হ্রাস পায় না। দান করতে থাকলে ধারণাও হবে। নয়তো ধারণা হওয়া মুশকিল আছে। এরকম মনে করো না যে লিখলে ধারণা হয়ে যাবে। তবে হ্যাঁ, কারোর কল্যাণের জন্য লিখে পয়েন্টস পাঠিয়ে দিলে সেটা আলাদা ব্যাপার। নিজের তো কাজে আসে না। কেউ আবার কাগজে লিখে ফালতু মনে করে ফেলে দেয়। এটাও মনে মনে বুঝতে হবে আমি যে লিখছি সেটা আবার কাজে আসবে। লিখে ফেলে দিলে তাতে কি লাভ। এটাও আত্মা যেন নিজেকে ঠকায়। এটা তো ধারণা করার জিনিস। সামান্য কিছুও মনে রাখতে না পারলে বাবা লিখে রাখতেন। বাবা তো রোজই বোঝাতে থাকেন। সর্বপ্রথম তোমাদের বাবার সাথে কানেকশন হয়। বাবাকে স্মরণ করলেই তোমাদের আত্মা পবিত্র হয়ে যাবে। আবার ওখানেও তোমরা পবিত্র থাকো। আত্মা আর শরীর দুটোই পবিত্র থাকে। আবার সেই শক্তি (পবিত্রতার বল) নিঃশেষ হয়ে গেলে পঞ্চতত্ত্বের শক্তি আত্মাকে আকর্ষণ করে। আত্মার গৃহে ফিরে যাওয়ার জন্য শরীরকে ছেড়ে দিতে মন চায়। তোমরা পবিত্র হয়ে শরীর ঐরকম ভাবে সহজেই ত্যাগ করবে যেমন মাখন থেকে একটা চুলকে টেনে বের করা যায়।

বাচ্চারা, তোমাদের সমস্ত জিনিসের প্রতি এমনকি নিজের শরীরের প্রতিও আসক্তি ত্যাগ করতে হবে। আমরা আত্মারা বিনা শরীরেই এসেছিলাম, আমরা পবিত্র (পিওর) ছিলাম। এই দুনিয়ার সাথে মমতা ছিল না। ওখানে শরীর ত্যাগ করলে কেউ কাঁদে না। কোনো কষ্ট বা অসুখ নেই। শরীরের প্রতি আসক্তি নেই। যেরকম আত্মা ভূমিকা পালন করে- এক শরীর বৃদ্ধ হলে তখন আবার দ্বিতীয় শরীর ধারণ করে, নিজ ভূমিকা পালন করার জন্য। ওখানে তো রাবণ রাজ্যই নেই। তবে এই সময় বাবার কাছে যেতে হৃদয় চায়। বাবা বলেন আমাকে স্মরণ করো। এই জ্ঞান তোমাদের বুদ্ধিতে আছে। বাবা বলেন পবিত্র হয়ে আমার কাছে আসতে হবে।এখন সবাই পতিত, সেই কারণে পাঁচ তত্ত্বের পুতুলের উপর মোহ এসে যায়, একে ত্যাগ করতে মন চায় না। নইলে তো বিবেক বলে- শরীর চলে গেলে আমরা বাবার কাছে চলে যাব। এখন পুরুষার্থ করতে হবে, আমাদের যে পবিত্র হয়ে বাবার কাছে যেতে হবে। বাবা বলেছেন-তোমরা তো আমার ছিলে, এখন আবার আমাকে স্মরণ করো, তবে আত্মা পবিত্র হয়ে যাবে, আবার এই শরীর ধারণ করতেও কোনো কষ্ট হবে না। এখন শরীরের প্রতি মোহ আছে, তাই ডাক্তার ইত্যাদিদের ডাকা হয়। তোমাদের তো খুশীতে থাকা চাই, যে আমরা বাবার কাছে যাচ্ছি। এই শরীরের সাথে এখন আমাদের সংযোগ নেই। এখানে আমরা শরীর পেয়েছি ভূমিকা পালন করার জন্য। ওখানে আত্মা আর শরীর দুটোই স্বাস্থ্যকর হয়। দুঃখের লেশ মাত্র থাকে না। তবে বাচ্চাদের অনেক পুরুষার্থ করার প্রয়োজন। এসময় আমরা যখন বাবার কাছে যাই, তবে আমরা এই শরীর পরিত্যাগ করেই যাই না কেন। তবে যতক্ষণ না যোগ করে পবিত্র হবে, কর্মাতীত অবস্থা না হবে, তো যেতেও পারবে না। এই ভাবনা অজ্ঞানী মানুষের আসবে না, তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের আসবে। এখন আমাদের যেতে হবে। পূর্বে তো আত্মার মধ্যে শক্তি থাকে, খুশী থাকে, কখনো ভীতি থাকে না। এখানে দুঃখ আছে, সেইজন্য মানুষ ভক্তি ইত্যাদি করে। কিন্তু ফিরে যাওয়ার পথ চেনে না। যাওয়ার পথ তো এক বাবা-ই বলেন। আমরা বাবার কাছে যাব- এর জন্য খুশী থাকি। বাবা বোঝান এখানে তোমাদের শরীরে মোহ আছে। এই মোহ বের করে দাও। এটা তো পঞ্চতত্ত্বের দ্বারা নির্মিত শরীর, এ সব হল মায়া। এই চোখের দ্বারা আত্মা যা কিছু দেখে সবই মায়া আর মায়া। এখানে প্রতিটি জিনিসে দুঃখ আছে। কতো খারাপ। স্বর্গে তো শরীরও ফার্স্ট ক্লাস, মহলও ফার্স্ট ক্লাস পাওয়া যাবে। দুঃখের ব্যাপারই নেই। এই খেলা দৈব- নির্ধারিত। এই ভাবনা তোমাদের মধ্যে আসা চাই। বাবা বলেন তারা যদি কিছু নাও বোঝে, আচ্ছা তবে তাদের বলো- বাবাকে স্মরণ করলে বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে, স্বর্গে চলে যাবে। আমরা তো হলাম আত্মা। এই শরীর রূপী পুচ্ছ পরবর্তী কালে প্রাপ্ত করেছি, আমরা এতে আটকে পড়ব কেন? বাবা বোঝান একে রাবণ রাজ্য বলা হয়। রাবণ রাজ্যতে দুঃখ আর দুঃখ। সত্যযুগে দুঃখের কোনো ব্যাপার নেই। এখন বাবাকে স্মরণের মাধ্যমে আমরা শক্তি নিই, কারণ কমজোরি হয়ে পড়েছি। দেহ অভিমান সবচেয়ে বেশী কমজোর করে দেয়। তাই বাবা বোঝান এই ড্রামা পূর্বে নির্ধারিত। এটা থেমে যেতে পারে না। মোক্ষ ইত্যাদির কোনো ব্যাপারই নেই। এটা তো পূর্ব নির্ধারিত ড্রামা। বলা হয়ে থাকে- চিন্তা এরকম ধরনের করো- যা বিগত (পাস্ট) হয়ে গেছে সেটা আবার হবেই। চিন্তার কোনো ব্যাপার নেই। সত্যযুগে খারাপ কিছু হয় না। এখানে চিন্তা লেগেই আছে। বাবা বলেন এটা তো হলো ড্রামা। বাবা তো পথ বলেই দিয়েছেন। এরকম ভাবে তোমরা আমার কাছে পৌঁছে যাবে। মাখন থেকে চুল বের হয়ে যাবে (শরীর থেকে আত্মা সহজে বেরিয়ে যাবে) । শুধুমাত্র তোমরা আমাকে স্মরণ করলে আত্মা পবিত্র হয়ে যাবে। পবিত্র হওয়ার আর কোনো যুক্তি নেই। এখন তোমরা মনে করো আমরা রাবণ রাজ্যে বসে আছি।ওটা (সত্যযুগ ) হল ঈশ্বরীয় রাজ্য। এই খেলা ঈশ্বরীয় রাজ্য আর রাবণ রাজ্যের। ঈশ্বর কি ভাবে এসে স্থাপনা করেন, এটা কারও জানা নেই। বাবাকেই জ্ঞানের সাগর বলা হয়। উনি এসেই সমস্ত কিছু বোধগম্য করান। এখন তোমরা সমস্ত জ্ঞান বুঝছো, পরে এই সমস্ত জ্ঞান ভুলে যাবে। যে পড়াশুনার দ্বারা আমরা এই পদ প্রাপ্ত করি, এ সবই ভুলে যাই। স্বর্গে গেল আর এই নলেজ গুপ্ত হয়ে যায়। ভগবান দ্বিমুকুট ধারী কিভাবে বানিয়েছেন, তারাই সেকথা জানে না। তারাই যদি না জানে, তো শাস্ত্র ইত্যাদি যারা পড়ে তারা আর কি জানবে। এমন কি এই নলেজ তাদের স্পর্শও করবে না। তোমরা এখানে এসে শোনো, তাই শীঘ্রই এই জ্ঞান তোমাদের স্পর্শ (টাচ্) করে। এ সব গুপ্ত। বাবা বাচ্চাদেরকে শোনান, কী দেখতে পাওয়া যাবে ? বুঝতে পারা যায়, আত্মাকে কি দেখেছ ? বুঝতে পারা যায় আত্মা আছে । দিব্য দৃষ্টির দ্বারা দেখা যেতে পারে। বাবা বলেন দেখলে কি বুঝবে। আত্মা তো হল ছোট বিন্দু। আত্মারা সংখ্যায় অনেক। ১০-২০ টি আত্মার সাক্ষাৎকারও তোমরা করবে। একটাতে তো কিছু বোঝা যাবে না। বুঝতেই পারবে না। অনেকেরই সাক্ষাৎকার হয়। কি করে বুঝবে- আত্মা না পরমাত্মা? এর পার্থক্য বোঝা যায় না। বসে বসে ছোট ছোট আত্মাদের দেখা যায়। এ কি আর বুঝতে পারা যায় আত্মা না পরমাত্মা !

এখন তোমরা জানো এতো ছোট আত্মাতে কতো শক্তি। আত্মা হলো মালিক, এক শরীর ছেড়ে দ্বিতীয় শরীরে প্রবেশ করে ভূমিকা পালন করবে বলে। প্রকৃতি কতো বিস্ময়কর। শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে বা কেউ নিঃস্ব হয়ে পড়লে মনে করে এর থেকে তো ভালো শরীর ছেড়ে দেওয়া। আত্মা বের হয়ে গেলে দুঃখ থেকে মুক্তি পাবে। কিন্তু পাপের বোঝা তো মাথার উপরে, সেটা কি ভাবে মুক্ত হবে ? তোমরা পুরুষার্থ করোই যাতে স্মরণের দ্বারা পাপ বিনাশ হয়ে যায়। রাবণের কারণে অনেক পাপ হয়েছে, যার থেকে মুক্ত হওয়ার পথ বাবা বলে দিচ্ছেন। তিনি বলেন - শুধুমাত্র আমাকে স্মরণ করতে থাকো। স্মরণ করতে করতে শরীর ত্যাগ হয়ে যাবে। তোমাদের পাপ ইত্যাদি সব শেষ হয়ে যাবে। স্মরণ করাটাও মাসীর বাড়ী যাওয়ার মতো সহজ ব্যাপার নয়। আমাকে স্মরণ করতে গেলে মায়া তোমাদের খুবই উৎপীড়ন করে। বারে বারে আমাকে ভুলিয়ে দেয়। বাবা তাঁর অনুভবও শোনান। আমি(ব্রহ্মা বাবা) অনেক চেষ্টা করি, তবুও মায়া আমার স্মরণে বাধা সৃষ্টি করে- দু'জনে (বাবা আর দাদা) এক সাথে থাকা সত্ত্বেও । একত্রিত থেকেও বারে বারে তাঁকে ভুলে যাই। এটা খুব কঠিন। বারংবার এটা-সেটা বা অমুকের কথা এসব স্মরণ হয়। তোমরা তো খুব ভালো পুরুষার্থ করছো। কেউ আবার বড় বড় গল্প শোনায়। ১০ - ১৫দিন চার্ট লেখে, তারপর ছেড়ে দেয়। এর জন্য খুব সতর্কতা রাখতে হয়। বোঝাই যায় যখন তোমরা সম্পূর্ণ পবিত্র হয়ে যাবে, কর্মাতীত অবস্থায় পৌঁছবে, তখন তোমরা জিতবে। এটা তো হল ঈশ্বরীয় লটারী। বাবাকে স্মরণ করা - এ হল স্মরণের যোগ- সূত্র। এটা বুদ্ধি দ্বারা বুঝে নেওয়ার ব্যাপার। যদিও বা কেউ বলে আমরা বাবাকে স্মরণ করি, কিন্তু বাবা বলেন তাঁকে কি ভাবে স্মরণ করতে হয় তা-ই জান না। এক্ষেত্রে পদ প্রাপ্তিরও পার্থক্য এসে যায়। কি ভাবে রাজ্য স্থাপন হয়েছে। তোমরা অনেক বার রাজত্ব করেছ আবার হারিয়েছও। বাবা প্রত্যেক ৫ হাজার বছর পরে পড়ান। আবার রাবণ রাজ্যে তোমরা পাপের পথে (বাম মার্গে) চলে যাও। যারা দেবতা ছিল তারাই আবার পাপের পথে নামতে থাকে, তাই বাবা অনেক অন্তর্নিহিত কথা বোঝান - বাবাকে স্মরণ করার জন্য। এটা তো খুব সহজ, শরীর ত্যাগ করে বাবার কাছে চলে যাবে। আমাকে জানলে তবে যোগবলের দ্বারা বিকর্ম বিনাশ হবে। সেটা তো শেষের দিকেই হবে। কিন্তু কেউই ফিরে আসে না। যে যা কিছুই করুক না কেন, যথার্থ যোগ তো আমি এসেই শেখাই। আবার অর্ধ-কল্প যোগবল চলতে থাকে। সেখানে তো অপরিসীম সুখ ভোগ করো। ভক্তি মার্গে মানুষ কি-কি সব করতে থাকে। বাবা যখন এসে জ্ঞান দিতে থাকেন তখন আবার ভক্তি হয় না। জ্ঞানের আলোকে দিন হয়ে গেছে এবার কোনোই কষ্ট নেই। ভক্তি হলো রাত- ঠোক্কর খাওয়ার। ওখানে তো দুঃখের ব্যাপারই নেই। এই সব কথা যারা এখানকার চারা (স্যাপলিং) হবে তাদের বুদ্ধিতে বসবে। এটা খুব সূক্ষ্ম ব্যাপার, ওয়ান্ডারফুল জ্ঞান, যেটা কি না বাবা ব্যাতীত আর কেউই বোঝাতে পারে না। বুঝতে পারার মতো খুব কমই আছে । ড্রামাতে এটা পূর্ব নির্ধারিত। তার কোনো কিছুই অন্যথা হয় না। মানুষ তো মনে করে পরমাত্মা কি না করতে পারে। কিন্তু ভগবান তো আসেনই একবার, এসে তোমাদের স্বর্গের পথ বলে দেন।

এখন বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধি কতো বিশাল হয়ে গেছে। এই দুই জন একত্রিত আছেন। ইনি (ব্রহ্মা) কাউকে দেখলে, মনে করেন তাকে শান্তির দান দিতে হবে। কাউকে দেখলে বোঝা যায় সে আমাদের ঘরানার কি না। সেবার যোগ্য (সার্ভিসেবেল) বাচ্চাদেরও কাজ তাদের নাড়ী দেখা। যদি আমাদের কূলের হয় তবে শান্ত হয়ে যাবে। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্যে মুখ্য সারঃ-

১ ) পবিত্র হয়ে বাবার সাথে গৃহে যাওয়ার জন্য এই পঞ্চতত্ত্বের পুতুলের প্রতি মোহ রাখতে নেই। শরীর ত্যাগ করার ভীতি সরিয়ে ফেলতে হবে।

২ ) স্মরণের যাত্রার চার্ট খুব মনোযোগ দিয়ে বাড়াতে থাকতে হবে। যোগবল দ্বারা আত্মাকে পবিত্র করে, কর্মাতীত হয়ে ঈশ্বরীয় লটারীকে জিতে (উইন) নিতে হবে।

বরদানঃ-
মন আর বুদ্ধিকে ব্যর্থ থেকে মুক্ত রেখে ব্রাহ্মণ সংস্কার তৈরী করার শাসক (রুলার) ভব

যে কোনো ছোট্ট ব্যর্থ কথা, ব্যর্থ পরিবেশ বা ব্যর্থ দৃশ্যের প্রভাব প্রথমে মনের উপর পড়ে, তারপর বুদ্ধি তাকে সহযোগ দেয়। মন আর বুদ্ধি যদি সেই অনুসারে চলতে থাকে, তবে তা সংস্কার তৈরী হয়ে যায়। তারপর পৃথক-পৃথক সংস্কার দেখা যায়, যা কিনা ব্রাহ্মণ সংস্কার নয়। যে কোনো ব্যর্থ সংস্কারের বশ হওয়া, নিজের সাথেই যুদ্ধ করা, বারংবার খুশী হারিয়ে যাওয়া- এসব ক্ষত্রিয়ের সংস্কার। ব্রাহ্মণ অর্থাৎ রুলার (নিজের রাজা) ব্যর্থ সংস্কার থেকে মুক্ত হবে, পরের বশ হবে না।

স্লোগানঃ-
মাস্টার সর্বশক্তিমান সে-ই হয়, যে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা দ্বারা সকল সমস্যাকে সহজেই পার করে নেয়।