১৩-০৮-১৯ প্রাতঃমুরলি ওম্ শান্তি বাপদাদা মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - বিনাশী শরীরকে ভালো না বেসে অবিনাশী বাবাকে ভালোবাসো, তাহলে ক্রন্দন থেকে মুক্তি পাবে"

প্রশ্ন:-

অন্যায্য বা অসংগত প্রেম কি আর তার পরিণাম কি হয় ?

উত্তর:-

বিনাশী শরীরের প্রতি মোহ রাখা হলো অন্যায্য প্রেম । যে বিনাশী শরীরের প্রতি মোহ রাখে, তাকে কাঁদতে হয় । দেহ - ভাবের কারণে এই কান্না আসে । সত্যযুগে সকলেই আত্ম - অভিমানী, তাই সেখানে কান্না থাকে না । যারা ক্রন্দন করে, তারা হারিয়ে ফেলে । অবিনাশী বাবার অবিনাশী বাচ্চারা এখন এই শিক্ষা পাচ্ছে যে, দেহী - অভিমানী হও, তাহলে এই ক্রন্দন থেকে মুক্তি পাবে ।

ওম্ শান্তি ।

বাচ্চারা তো এই কথা জানে যে, আত্মা অবিনাশী এবং বাবাও অবিনাশী, তাই কাকে ভালোবাসা উচিত ? অবিনাশী আত্মাকে । অবিনাশীকেই ভালোবাসতে হবে, বিনাশী শরীরকে কখনোই ভালোবাসা উচিত নয় । সম্পূর্ণ দুনিয়াই বিনাশী, প্রতিটা জিনিসই বিনাশী, এই শরীরও বিনাশী, আত্মা হলো অবিনাশী । আত্মার প্রেমই অবিনাশী হয় । আত্মার কখনোই মৃত্যু হয় না, একেই বলা হয় ন্যায্য বা সঠিক । বাবা বলেন যে, তোমরা অন্যায্য হয়ে গেছো । বাস্তবে অবিনাশীর, অবিনাশীর সঙ্গেই প্রেম হওয়া উচিত । তোমাদের প্রেম বিনাশী শরীরের প্রতি হয়ে গেছে, তাই তোমাদের কাঁদতে হয় । তোমাদের অবিনাশীর সঙ্গে প্রেম নেই । বিনাশী শরীরের প্রতি প্রেম থাকলে কাঁদতে হয় । এখন তোমরা নিজেদের অবিনাশী আত্মা মনে করো, তাই কান্নার কোনো কথা নেই। কেননা তোমরা আত্ম - অভিমানী । বাচ্চারা, তাই বাবা এখন তোমাদের আত্ম - অভিমানী বানাচ্ছেন । দেহ - অভিমানী হওয়ার কারণে তোমাদের কাঁদতে হয় । বিনাশী শরীরের জন্য তোমরা কাঁদতে থাকো । তোমরা বুঝতে পারো যে, আত্মার মৃত্যু নেই । বাবা বলেন যে, নিজেদের আত্মা মনে করো । তোমরা অবিনাশী বাবার সন্তান, অবিনাশী আত্মা, তোমাদের কান্নার কোনো প্রয়োজন নেই । আত্মা এক শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীরে অভিনয় করে । এ তো এক খেলা । তোমরা শরীরের প্রতি আকর্ষণ কেন রাখো ? দেহ সহ দেহের সব সম্বন্ধের থেকে বুদ্ধিযোগ ছিন্ন করো । নিজেকে অবিনাশী আত্মা মনে করো । আত্মার কখনোই মৃত্যু হয় না । কথাতেও আছে - যে কাঁদে, সে সব হারিয়ে ফেলে । আত্ম - অভিমানী হলেই উপযুক্ত হয়ে যাবে । তাই বাবা এসে দেহ - অভিমানী থেকে আত্ম - অভিমানী করেন । তিনি বলেন, তোমরা কিভাবে সব ভুলে গেছো । জন্ম - জন্মান্তর ধরে তোমাদের কাঁদতে হয়েছে । এখন আবার নতুন করে তোমরা আত্ম - অভিমানী হওয়ার শিক্ষা পাও । এরপর তোমরা কখনোই আর কাঁদবে না । এ হলো ক্রন্দনের দুনিয়া, ওই দুনিয়া হলো হাসির । এ হলো দুঃখের দুনিয়া আর ওই দুনিয়া হলো সুখের । বাবা খুব সুন্দর রীতিতে শিক্ষা দেন । অবিনাশী বাবার থেকে তাঁর অবিনাশী সন্তানরা শিক্ষা পায় । ওরা দেহ - অভিমানী, তাই দেহ দেখেই শিক্ষা দেয় । তাই দেহের স্মরণ আসার কারণে ওরা কাঁদতে থাকে । দেখতেই পায় মৃত্যুতে শরীর শেষ হয়ে গেলো, তাহলে সেই শরীর স্মরণ করে কি লাভ ? ছাইকে কি স্মরণ করা হয় ? অবিনাশী জিনিস আত্মা গিয়ে অন্য শরীর ধারণ করে ।



বাবা তো জানেন -- যে ভালো কর্ম করে, সে ভালো শরীরই প্রাপ্ত করে । কেউ কেউ খারাপ রুগ্ন শরীর পায়, সেও কর্ম অনুসারে । এমন নয় যে, ভালো কর্ম করলেই উপরে চলে যাবে । তা নয়, উপরে তো কেউই যেতে পারে না । ভালো কর্ম করলে ভালো বলা হবে । তখন ভালো জন্ম মিলবে, তারপরও তো নিচে নামতেই হবে । তোমরা জানো যে, আমরা কিভাবে উত্তরণে যাই । যদিও ভালো কর্ম করলে কেউ কেউ মহাত্মা হন, তবুও কলা তো কম হতেই থাকবে । বাবা বলেন, তবুও যদি ঈশ্বরের স্মরণে কিছু ভালো কাজও করে, আমি তাদেরও ক্ষণকালের সুখ প্রদান করি । এরপরও তো সিঁড়িতে নীচে নামতেই হবে । নাম যদি কারোর ভালোও হয়, তবুও এখানে তো মানুষ ভালো বা খারাপ কর্মকেও ঠিকভাবে জানে না । ঋদ্ধি - সিদ্ধি যারা করে তাদের কতো সম্মান দেয় । তাদের পিছনে মানুষ হয়রান হয়েও যায় কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এ তো অজ্ঞানতা । মনে করো কেউ পরোক্ষভাবে দান - পুণ্য করে, ধর্মশালা, হাসপাতাল ইত্যাদি বানায়, তো পরবর্তী জন্মে তারা অবশ্যই এর প্রতিদান পায় । বাবাকে স্মরণ করে, যদি গালিও দেয়, তবুও মুখে ভগবানের নাম বলতে থাকে । বাকি অজ্ঞানতা থাকার কারণে কিছুই জানে না । ভগবানকে স্মরণ করে রুদ্র পূজা করে, রুদ্রকে ভগবান মনে করে । রুদ্র যজ্ঞের রচনা করে । তারা শিব বা রুদ্রের পূজা করে । বাবা বলেন, আমার পূজা করে, কিন্তু না বোঝার কারণে কি - কি বানায়, কি - কি করতে থাকে । যত মানুষ, ততই তাদের গুরু । বৃক্ষে নতুন - নতুন পাতা, ডালপালা ইত্যাদি বের হয়, তখন কতো শোভা দেয় । সতোগুণী হওয়ার কারণে তাদের মহিমা হয় । বাবা বলেন যে, এই দুনিয়াই হলো বিনাশী জিনিসকে ভালোবাসার দুনিয়া । কারোর খুব প্রেম উৎপন্ন হয়, তো মোহতে যেন পাগল হয়ে যায় । বড় বড় শেঠেরা মোহের বশে পাগল হয়ে যায় । মাতা-দের জ্ঞান না থাকার কারণে বিনাশী শরীরের বিধবা হয়ে কতো কান্নাকাটি করে, সেই শরীরকে স্মরণ করতে থাকে । এখন তোমরা নিজেদের আত্মা জ্ঞান করে, অন্যদেরও আত্মা জ্ঞান করো, তাই সামান্যতম দুঃখও হয় না । অধ্যয়নকে সোর্স অফ ইনকাম বলা হয় । অধ্যয়নে এইম অবজেক্টও থাকে কিন্তু তা হলো এক জন্মের জন্য । সরকার থেকেও পারিশ্রমিক মেলে । পড়া সম্পূর্ণ করে কাজ - কারবার করে, তখন অর্থ প্রাপ্ত করে । এখানে তো সব নতুন কথা । তোমরা কিভাবে অবিনাশী জ্ঞান রত্নের দ্বারা ঝুলি পূর্ণ করো । আত্মা মনে করে যে, বাবা আমাদের অবিনাশী জ্ঞান সম্পদ দান করেন । ভগবান যখন পড়ান, তখন অবশ্যই ভগবান - ভগবতীই বানাবেন। কিন্তু বাস্তবে এই লক্ষ্মী - নারায়ণকে ভগবান - ভগবতী মনে করা ভুল । বাচ্চারা, এখন তোমরা জানো - অহো, যখন আমরা দেহ - অভিমানী হয়ে যাই, তখন আমাদের বুদ্ধি কতো নেমে যায় । যেন পশুতুল্য বুদ্ধি হয়ে যায় । পশুদের সেবা তো খুব ভালোভাবে হয় । মানুষের তো সেখানে কিছুই হয় না । রেসের ঘোড়া ইত্যাদির কতো যত্ন করা হয় । এখানকার মানুষদের দেখো, কি অবস্থা । কুকুরকেও কিভাবে ভালোবেসে যত্ন করে । তারা তাদের আদরও করে, আবার একসাথে নিয়ে ঘুমায় । দেখো, দুনিয়ার কি অবস্থা হয়ে গেছে । ওখানে সত্যযুগে এইসব কাজ হয় না ।



বাবা তাই বলেন - বাচ্চারা, মায়া রাবণ তোমাদের অনৈতিক (আনরাইটিয়াস) বানিয়ে দিয়েছে । এ তো অনৈতিক রাজ্য, তাই না । মানুষ অনৈতিক, তাই সম্পূর্ণ দুনিয়াও অনৈতিক হয়ে যায় । নৈতিক আর অনৈতিক দুনিয়ার মধ্যে দেখো কতো তফাৎ । কলিযুগের অবস্থা দেখো, কেমন ! আমি স্বর্গ স্থাপন করছি, মায়াও তার স্বর্গ দেখায়, ইচ্ছা তো হয় । কতই নকল সম্পদ আছে, তাই মনে করে আমরা এখানে স্বর্গে বসে আছি । স্বর্গে ১০০ তলার বাড়ি ইত্যাদি হয়ই না । কিভাবে এখানে বাড়িঘর সাজায়, ওখানে তো দোতলা কোনো বাড়িই হয় না । মানুষও তো ওখানে খুব অল্প থাকে । এতো জমি, যে তোমরা কি করবে । এখানে জমির জন্য মানুষ কত লড়াই - ঝগড়া করে । ওখানে সমস্ত জমি তোমাদেরই থাকে । কত রাত - দিনের তফাৎ । ইনি তোমাদের লৌকিক বাবা আর উনি পারলৌকিক বাবা । পারলৌকিক বাবা বাচ্চাদের কি না দেন । অর্ধেক কল্প তোমরা ভক্তি করো । বাবা পরিষ্কার ভাবে বলে দেন - এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না অর্থাৎ আমার থেকে পাওয়া যায় না । তোমরা তমোপ্রধান অবস্থায় আমার সাথে মিলিত হও । আমিও মুক্তিধামে থাকি । তোমরাও মুক্তিধামে থাকো, তারপর ওখান থেকে তোমরা স্বর্গে যাও । ওখানে স্বর্গে আমি থাকি না । এও এক নাটক । এরপর হুবহু আবার এমন রিপিট হবে, এবং আবার এই জ্ঞান ভুলে যাবে । এই জ্ঞান প্রায় লোপ হয়ে যাবে । যতক্ষণ সঙ্গমযুগ না আসবে, ততক্ষণ এই গীতা জ্ঞান কিভাবে হতে পারবে । বাকি যে সব শাস্ত্র ইত্যাদি আছে, সে হলো ভক্তিমার্গের শাস্ত্র ।



এখন তোমরা জ্ঞানের কথা শুনছো । আমি হলাম বীজরূপ, জ্ঞানের সাগর । তোমাদের আমি কিছুই করতে দিই না, পায়ে পড়তেও দিই না । তোমরা কার পায়ে পড়বে ? শিববাবার তো পা নেই ? এ তো ব্রহ্মার পায়ে পড়া হয়ে যাবে । আমি তো তোমাদের গোলাম । তাঁকে বলা হয় নিরাকারী, নিরহংকারী, তাও যখন তিনি এই ভূমিকা পালন করতে আসেন, তখনই নিরহংকারী বলা যাবে । বাবা তোমাদের অগাধ জ্ঞান দেন । এ হলো অবিনাশী জ্ঞান রত্নের দান । এরপর যে যতটা নিতে পারে । অবিনাশী জ্ঞান রত্ন নিয়ে এরপর তা অন্যকে দান করতে থাকো । এই রত্নের জন্যই বলা হয়, এক একটি রত্ন লাখ টাকার । প্রতি পদে পদ্ম তো একমাত্র বাবাই দেন । তোমাদের সেবাতে অনেক মনোযোগ দেওয়া উচিত । তোমাদের পদক্ষেপ হলো স্মরণের যাত্রা, এতে তোমরা অমর হয়ে যাও । ওখানে কোনো মৃত্যুভয় থাকে না । তোমরা এক শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করবে । তোমরা মোহজিত রাজার কাহিনীও শুনেছো । এ তো বাবা বসেই বোঝান । এখন বাবা তোমাদের এমনই বানান, এ এখনকারই কথা ।



রাখী বন্ধনের পর্বও পালন করা হয় । এ কবেকার নিদর্শন ? ভগবান কখন বলেছিলেন যে, পবিত্র হও ? এই দুনিয়ার মানুষ কি জানে যে, নতুন দুনিয়া কবে এবং পুরানো দুনিয়া কবে হয় ? এও কেউ জানে না । কেবল এইটুকুই বলে যে, এ হলো কলিযুগ । সত্যযুগ ছিলো, এখন আর তা নেই । মানুষ পুনর্জন্মকেও মানে । ৮৪ লাখ বলে দেয়, তাহলে তো পুনর্জন্মই হলো । নিরাকার বাবাকে সকলেই স্মরণ করে । তিনি হলেন সব আত্মাদের পিতা, তিনি এসেই আমাদের বোঝান । দেহধারী বাপু তো অনেকই আছে । পশুরাও তাদের বাচ্চাদের বাবা । তাদের জন্য তো এমন বলা হবে না যে, পশুর বাবা । সত্যযুগে কোনো আবর্জনা বা বাজে জিনিস থাকে না । সেখানে মানুষ যেমন, আসবাবও তেমন । ওখানে পাখিরাও খুব সুন্দর হয় । সেখানে সব সুন্দর জিনিস থাকবে । সেখানে ফল কত সুস্বাদু এবং বড় হয় । তারপর এইসব কোথায় চলে যায় ! মিষ্টি, সুস্বাদু থেকে তেতো হয়ে যায় । মানুষ যখন থার্ড ক্লাস হয়ে যায় তখন জিনিসও থার্ড ক্লাস হয়ে যায় । সত্যযুগে সবাই ফার্স্ট ক্লাস, তাই জিনিসও ফার্স্ট ক্লাস হয় । কলিযুগে সবই থার্ড ক্লাস । সমস্ত জিনিসই সতো, রজঃ এবং তমঃ অবস্থা দিয়ে পার হয় । এখানে তো কোনো আনন্দই নেই । আত্মাও তমোপ্রধান তাই শরীরও তমোপ্রধান হয়ে গেছে । বাচ্চারা, এখন তোমাদের জ্ঞান হয়েছে, কোথায় ওরা, কোথায় তোমরা, রাতদিনের তফাৎ । বাবা তোমাদের কত উঁচু বানান । তোমরা যতো স্মরণ করবে ততই স্বাস্থ্য এবং সম্পদ দুইই পাবে । বাকি আর কি চাই । এই দুটির মধ্যে একটি যদি না থাকে তাহলে সুখ থাকবে না । মনে করো স্বাস্থ্য সুন্দর থাকলো কিন্তু সম্পদ নেই, তাহলে কিসের কাজ ? কথায় বলে - "অর্থ থাকে তো চারিদিকে ঘুরে বেড়াও ।" বাচ্চারা মনে করে - ভারত সোনার পাখি ছিলো, এখন সেই সোনা কোথায় । সোনা - রূপা - তামা সব চলে গেছে, এখন সব কাগজই কাগজ । কাগজ যদি জলে বয়ে যায় তাহলে অর্থ কোথা থেকে পাবে । সোনা তো অনেক ভারী হয়, সোনা সেখানেই পড়ে থাকে । আগুনও সোনাকে জ্বালাতে পারে না । তো এখানে সবই দুঃখের কথা । ওখানে এইসব কথাই নেই । এখানে এইসময় অপার দুঃখ । বাবা তখনই আসেন যখন অপার দুঃখ থাকে, কাল আবার অপার সুখ হবে । বাবা তো কল্প - কল্প এসে পড়ান, এ কোনো নতুন কথাই নয় । তোমাদের খুশীতে থাকা উচিত । কেবল খুশীই খুশী, এ হলো অন্তিম সময়ের কথা । অতীন্দ্রিয় সুখের কথা গোপ - গোপীদের জিজ্ঞেস করো । পরের দিকে তোমরা খুব ভালোভাবে বুঝে যাও ।



প্রকৃত শান্তি কাকে বলা হয়, এ একমাত্র বাবাই বলে দেন । তোমরা বাবার থেকে শান্তির অবিনাশী উত্তরাধিকার গ্রহণ করো । তাঁকে সবাই স্মরণ করে । বাবা হলেন শান্তির সাগর । বাবা বোঝান যে, কে আমার কাছে আসতে পারে । অমুক - অমুক ধর্ম, অমুক - অমুক সময়ে আসে । তারা স্বর্গে তো আর আসতে পারে না । এখন অনেক সাধু - সন্ত হয়েছে, তাই তাদের মহিমা হয় । পবিত্র হলে অবশ্যই তাদের মহিমা হওয়া উচিত । এখন তো অনেক নতুন এসেছেন । পুরানোদের তো এতো মহিমা হতে পারে না । ওরা তো সুখ ভোগ করে তমোপ্রধান অবস্থায় চলে গেছে । কতো বিভিন্ন ধরণের গুরু আছে, কিন্তু এই অসীম (কল্প) বৃক্ষকে কেউই জানে না । বাবা বোঝান যে, ভক্তির সমগ্রী এতোটাই, যতটা এই বৃক্ষ ছড়িয়ে আছে । জ্ঞান বীজ কতো ছোটো । ভক্তি অর্ধেক কল্প ধরে চলে । এই জ্ঞান তো কেবল এই এক জন্মের জন্য । জ্ঞান প্রাপ্ত করে তোমরা অর্ধেক কল্পের জন্য মালিক হয়ে যাও । ভক্তি বন্ধ হয়ে যায় তখন দিন শুরু হয় । এখন তোমরা সদাকালের জন্য প্রফুল্ল হয়ে যাও, একে বলা হয় ঈশ্বরের অবিনাশী লটারী । এরজন্য পুরুষার্থ করতে হয় । ঈশ্বরীয় লটারী আর আসুরী লটারীর মধ্যে কতো তফাৎ হয় । আচ্ছা ।



মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতাপিতা - বাপদাদার স্মরণের স্নেহ - সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মারূপী পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদের নমস্কার জানাচ্ছেন ।

ধারণার জন্য মূখ্য সার :-

১. তোমাদের, স্মরণের প্রতি পদে পদ্ম আছে, এর দ্বারাই অমর পদ প্রাপ্ত করতে হবে । বাবার থেকে তোমরা যে অবিনাশী জ্ঞান রত্ন পাও, তা দান করতে হবে ।

২. আত্ম - অভিমানী হয়ে অপার খুশীর অনুভব করতে হবে । শরীর থেকে মোহ মুক্ত করে সদা উৎফুল্ল থাকতে হবে, মোহজিত হতে হবে ।

বরদান:-

সেবা আর স্ব - পুরুষার্থের ভারসাম্যের দ্বারা ব্লেসিংস (আশীর্বাদ) প্রাপ্তকারী কর্মযোগী ভব

কর্মযোগী অর্থাৎ কর্মের সময় যেন যোগের ভারসাম্য থাকে । সেবা অর্থাৎ কর্ম আর স্ব পুরুষার্থ অর্থাৎ যোগযুক্ত - এই দুইয়ের ভারসাম্য রাখার জন্য একটাই শব্দ স্মরণে রেখো যে, বাবা হলেন সর্বময় কর্তা (করাবনহার) আর আমি আত্মা করণহার । এই একটি শব্দ সহজেই ভারসাম্য তৈরী করবে আর সকলের আশীর্বাদ প্রাপ্ত করবে । যখন করণহারের পরিবর্তে নিজেকে সর্বময় কর্তা মনে করো, তখন আশীর্বাদ থাকে না, আর মায়াও তার নিজের সুযোগ নিয়ে নেয় ।

স্লোগান:-

স্নেহের দৃষ্টির দ্বারা (দৃষ্টি দ্বারা ভরপুর করা) সেবা করতে হলে বাপদাদাকে নিজের নজরে লীন করে নাও* ।