22-12-2019 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
24-03-85 মধুবন
এখন নয় তো কখনও নয়
আজ লাভফুল এবং ল-ফুল বাপদাদা সব বাচ্চার খাতা দেখছিলেন, প্রত্যেকে তোমরা তোমাদের
খাতায় কতটা জমা করেছ ! ব্রাহ্মণ হওয়া অর্থাৎ খাতায় জমা করা, কারণ এই এক জন্মে তোমরা
খাতায় যতটা সঞ্চয় করেছ, সেই অনুযায়ী তোমরা ২১ জন্ম প্রালব্ধ লাভ করতে থাকবে l না
শুধু ২১ জন্ম প্রালব্ধ প্রাপ্ত করবে, বরং যতটা পূজন যোগ্য হও অর্থাৎ রাজ্য পদের
অধিকারী হও, তদনুসারে অর্ধেক কল্প ভক্তিমার্গে পূজিত হবে রাজ্য ভাগ্যের অধিকারের
হিসাবে l রাজ্যপদ শ্রেষ্ঠ, কাজেই পূজ্য স্বরূপও এতই শ্রেষ্ঠ হয় l প্রজার সংখ্যাও
সেই অনুপাতে রচিত হয় l প্রজা রাজ্য অধিকারী বিশ্ব মহারাজ বা রাজাকে আপন মাতাপিতা
রূপে ভালোবাসে l একইভাবে, ভক্ত আত্মারাও সেই শ্রেষ্ঠ আত্মাকে বা রাজ্যাধিকারী মহান
আত্মাকে নিজের প্রিয় ইষ্ট মনে করে পূজা করে l যাদের বিদ্যমানতা আটের মধ্যে সেই ইষ্ট
সকলেও ঠিক এইরকমই মহান হয় l এই হিসাব অনুযায়ী এই ব্রাহ্মণ জীবনে রাজ্যপদ এবং
পূজ্যপদ প্রাপ্ত হয় l অর্ধেক কল্প রাজ্যপদপ্রাপ্ত হও আর অর্ধেক কল্প পূজ্যপদ
প্রাপ্ত কর l সুতরাং এই জন্ম বা জীবন অথবা যুগ সারা কল্পের সঞ্চয়ের খাতায় সঞ্চিত
করার যুগ বা জীবন, সেইজন্য তোমাদের সবার একটা স্লোগান তৈরি হয়ে আছে, মনে পড়ে ? *'এখন
নয় তো কখনো নয় l'* এটা এই সময়ের এই জীবনের জন্যই গাওয়া হয়েছে l ব্রাহ্মণদের জন্য
যেমন এই স্লোগান, অ-জ্ঞানী আত্মাদের জাগ্রত করার জন্যেও এই স্লোগান l যদি ব্রাহ্মণ
আত্মারা প্রতিটা শ্রেষ্ঠ কর্ম করার আগে শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প করাকালীন এই স্লোগান সদা
স্মরণে রাখে যে 'এখন নয় তো কখনো নয়', তাহলে কি হবে ? প্রতিটা শ্রেষ্ঠ কার্যে সদা
তেজোময় হয়ে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে l সাথে সাথে এই স্লোগান তোমাদের সদা
উৎসাহ-উদ্দীপনায় রাখে l আধ্যাত্মিক জাগৃতি নিজে থেকেই এসে যায় l 'আচ্ছা ঠিক আছে,
অন্য কোনো সময় করব, যাই হোক আমাকে তো এটা করতেই হবে, এই পথে আমাকে এগিয়ে যেতে হবে,
যেমনই হোক আমাকে সেইরকম হতেই হবে' - সাধারণ পুরুষার্থের এই সঙ্কল্প স্বতঃই সমাপ্ত
হয়ে যায়, কারণ এই বিষয়ে তোমরা সচেতন হয়েছ - 'এখন নয় তো কখনো নয় l' যা করার আছে তা'
এখনই কর l একেই বলে তীব্র পুরুষার্থ l
সময় যেমন বদলায়, শুভ সঙ্কল্পও কখনো কখনো বদলে যায় l যে উদ্যমের সাথে শুভ কার্য করার
জন্য ভেবেছ, সেই ভাবনাও বদলে যায়, তাহলে, ব্রহ্মাবাবার নম্বর ওয়ান হওয়াতে কোন
বিশেষত্ব তোমরা দেখেছ ? 'অন্য কোনো সময়', না ! বরং 'এখনই করতে হবে l' বলা হয়,
তাৎক্ষণিক দান মহাপুণ্যের l যদি তাৎক্ষণিক দান না কর, যদি এই ব্যাপারে ভাব আর সময়
নাও, প্ল্যান বানিয়ে তারপরে প্র্যাকটিক্যালি প্রয়োগ কর, তবে সেটা তাৎক্ষণিক দান বলা
হবে না l দান বলা যাবে l তাৎক্ষণিক দান আর দানের মধ্যে তারতম্য আছে l তাৎক্ষণিক দান
মহাদান l মহাদানের ফল মহান হয়, কারণ যতক্ষণ তোমরা সঙ্কল্প প্র্যাকটিক্যালি করার
জন্য ভাবছ - 'আচ্ছা ঠিক আছে আমার এটা করা উচিত, আমি এটা করব, এখন নয়, পরে অন্য কোনো
সময় করব, এখন কিছুটা করে নিচ্ছি', এই ভাবনা আর করার মধ্যবর্তী সময়ের যে ফাঁক থেকে
যায় তা'তে মায়া চান্স পেয়ে যায় l বাপদাদা অনেকবার বাচ্চাদের খাতার দিকে লক্ষ্য করে
দেখেন যে তোমরা বাচ্চারা যেটা ভাবছ, সেই ভাবনা আর করার মধ্যে যে সামান্য ফাঁক থাকছে,
সেই সময়ে মায়া এসে যায়, তা'তে পরিস্থিতিও বদলে যায় l উদাহরণস্বরূপ, তোমরা কখনো কখনো
ভাবো যে তন, মন দ্বারা কিছু করবে, কিন্তু একশ' পার্সেন্ট যেটা তোমরা করবে ভেবেছিলে
সময়কালে সেটা বদলে যায় l
সময় উপস্থিত হলে মায়ার প্রভাব হওয়ার কারণে যা আট ঘণ্টা করার ভাবনা ছিল সেটা ছয়
ঘন্টায় করবে, দুই ঘণ্টা কম হয়ে যাবে l সার্কমস্ট্যান্সই (পরিস্থিতি) বদলে যায় l
একইভাবে, ধনের ক্ষেত্রেও ভাববে ১০০ দেওয়ার, কিন্তু দেবে ৫০, সেইজন্য এতটাই তারতম্য
ঘটে, এর অন্তর্বর্তী সময়ে মায়া মার্জিন পেয়ে যায় l তখন অনেক সঙ্কল্প উত্থিত হয়,
যেমন, 'ঠিক আছে, এখন ৫০ দিই, পরে আবার ৫০ দেব l এতো বাবারই l' যতই হোক, তন-মন-ধনের
যে তাৎক্ষণিক দান তা' মহা পুণ্যের l তোমরা দেখেছ তো, তারা যদি বলিও দেয় তো
মহাপ্রসাদ তখনই হয় যখন তা' তৎক্ষণাৎ হয় l এক ঘায়ে বলিদান হলে তাকেই বলে *মহাপ্রসাদ*
l যারা বলিদান হতে চিৎকার করে, ভাবতেই থেকে যায়, তারা মহাপ্রসাদ নয় l যেমন বলি
হিসেবে তারা যখন ছাগ সমর্পণ করে, সে খুব চিৎকার করে l এখানে তোমরা কি কর ? তোমরা
ভাবো, এটা করব নাকি করব না ! এটা হলো ভাবনা l যারা চিৎকার করে, তাদের মহাপ্রসাদ রূপে
কখনও স্বীকার করা হয় না l একইভাবে, এখানেও তাৎক্ষণিক দান মহাপুণ্য ... এই যে গায়ন
তা' এই সময়ের অর্থাৎ ভাবনা আর করা মুহূর্ত মধ্যে সংঘটিত হতে হবে l ভাবতে ভাবতে থেকে
যেও না l অনেকবার এইরকম অনুভবও শোনাও কেউ কেউ, আমিও তো এমনই ভেবেছিলাম, কিন্তু ইনি
করে নিয়েছেন, আমি করিনি l সুতরাং যে করে সেই লাভ করে l যারা ভাবতে ভাবতে রয়ে যায়,
তারা ভাবতে ভাবতে ত্রেতাযুগ পর্যন্ত পৌঁছে যায় l তারা শুধু সবসময় ভাবনাতেই থেকে যায়
l এই ব্যর্থ সঙ্কল্পই তোমাদের তৎক্ষণাৎ করতে দেয় না l শুভ কার্য শুভ সঙ্কল্পের জন্য
গায়ন আছে, "তাৎক্ষণিক দান মহাপুণ্য l" কখনো কখনো অনেক বাচ্চা বড় খেলা খেলে l ব্যর্থ
সঙ্কল্প এত ফোর্সে আসে যা কন্ট্রোল করতে পারে না l তারপরে সেই সময় বলে, কি করব, ঘটে
গেল তো ! তারা সেগুলো থামাতে অপারগ, যে ভাবনা আসলো সেটাই করে ফেললো l কিন্তু
ব্যর্থের জন্য তোমাদের কন্ট্রোলিং পাওয়ার প্রয়োজন l একটা শক্তিশালী সঙ্কল্পের
লক্ষ্য-কোটি গুন ফল লাভ করো তোমরা l এইরকমই এক ব্যর্থ সঙ্কল্পের হিসেব-নিকেশ - উদাস
হওয়া, ভগ্নোৎসাহ হওয়া, খুশি হারানো বা বুঝতে না পারা আমি কি, নিজেকেও বুঝতে পারে
না- এও একের অনেক গুন হিসেবে অনুভূত হয় l তারপরে তোমরা ভাবো, 'সত্যিই এটা তো কিছুই
ছিল না, কিন্তু আমি জানিনা কেন খুশি গায়েব হয়ে গেছে l এটা তো বড় ব্যাপার ছিল না,
কিন্তু অনেক দিন হয়ে গেছে খুশি কম হয়ে গেছে l জানিনা কেন একাকীত্ব ভালো লাগে !
কোথাও চলে যাওয়া উচিত', কিন্তু কোথায় যাবে ? একলা কোথাও যাচ্ছ না অর্থাৎ বাবার সঙ্গ
ছাড়া একা তো কোথাও যাওয়ার নেই, তাই না ! হয়তো তুমি একলা, কিন্তু বাবার সঙ্গ থেকে
কখনও একলা হয়োনা l যদি বাবার সঙ্গ থেকে একলা হয়ে যাও, যোগবিচ্ছিন্ন হয়ে যাও, যদি
মর্মাহত হও তো সেটা আলাদা গোষ্ঠী ; ব্রাহ্মণ জীবন নয় l তুমি তো কম্বাইন্ড, তাই নয়
কি ! সঙ্গমযুগ কম্বাইন্ড থাকার যুগ l এইরকম ওয়ান্ডারফুল জুটি তো সারা কল্পে খুঁজে
পাওয়া যাবে না l এমনকি, লক্ষ্মী-নারায়ণ হলেও কিন্তু এমন ওয়ান্ডারফুল জুটি তো হবে
না, তাই না ! সেইজন্য সঙ্গমযুগের যে কম্বাইন্ড রূপ তা' থেকে এক সেকেন্ডও আলাদা হতে
পারে না l আলাদা হওয়ার সাথে সাথে লক্ষ্যভ্রষ্ট হবে l এইরকম অনুভব তো করেছ, নয় কি ?
তারপরে কি কর তোমরা ? কখনও সাগর-তীরে চলে যাও, কখনও ছাতে, কখনও পাহাড়ে চলে যাও l
মনন করার জন্য গেলে সেটা আলাদা ব্যাপার l কিন্তু বাবা ব্যতীত একলা যেও না l যেখানেই
যাও তাঁর সাথে যাও l ব্রাহ্মণ জীবনের এটা প্রতিজ্ঞা l জন্মানোর সাথে সাথেই এই
প্রতিজ্ঞা করেছিলে, তাই নয় কি ! তাঁর সাথে থাকবে, তাঁর সাথে চলবে l এইরকমভাবে জঙ্গলে
বা সাগরে চলে যেও না l না ! তাঁর সাথে তোমাদের থাকতে হবে এবং তাঁর সাথেই ফিরে যেতে
হবে l এই দৃঢ় প্রতিজ্ঞা সবারই তো, তাই না ! যারা দৃঢ় সঙ্কল্প করে তারা সদা সাফল্য
অর্জন করে l দৃঢ়তা সফলতার চাবি l তাহলে এই প্রতিজ্ঞা দৃঢ়তার সাথে করেছ, তাই না !
যেখানে সদা দৃঢ়তা বিদ্যমান, সেখানে সদা সাফল্য l দৃঢ়তা কম তো সফলতাও কম l
ব্রহ্মাবাবার কি বিশেষত্ব দেখেছ ? এটাই তো দেখেছ, তাই না ... তাৎক্ষণিক দান, কখনও
ভেবেছেন কি হবে ! আগে আমাকে ভাবতে দাও, পরে করব, না ! তাৎক্ষণিক দানের ক্ষেত্রে তিনি
মহা দানশীল পুণ্যবান ছিলেন বলেই নম্বর ওয়ান মহান আত্মা হয়েছিলেন l সেইজন্য দেখ,
নম্বর ওয়ান মহান আত্মা হওয়ার কারণে কৃষ্ণরূপে তাঁর নম্বর ওয়ান পূজা হচ্ছে l এই মহান
আত্মা একমাত্র, যাঁর শৈশব রূপেও পূজা হয় l তাঁর শৈশব রূপ তো তোমরা দেখেছ, তাই না !
রাধার সাথে যুবাবস্থায় রাধাকৃষ্ণ রূপেও তিনি পূজিত হন, তৃতীয়তঃ গোপ-,গোপীদের রূপেও
তাঁর গায়ন পূজন হয় l চতুর্থতঃ, লক্ষ্মী-নারায়ণ
রূপে l ইঁনিই একমাত্র মহান আত্মা, তাঁর জীবনের বিভিন্ন বয়সের বিভিন্ন চরিত্রের গায়ন
ও পূজন হয় l রাধারও গায়ন হয়, কিন্তু কৃষ্ণকে শিশুরূপে তারা যেমন কৃষ্ণকে দোলনায়
দোলায়, রাধাকে কখনও দোলায় না l তারা কৃষ্ণকে ভালোবাসে l কৃষ্ণের সাথে থাকার কারণে
রাধার নাম অবশ্যই উল্লিখিত হয়, তবুও দুই নম্বর আর এক নম্বর হওয়ায় ফারাক তো হবেই,
তাই না ! তাহলে নম্বর ওয়ান হওয়ার জন্য কারণ কি ছিল ? মহা পুণ্য l মহান পুণ্য আত্মা
তারপরে মহান পূজ্য আত্মা হয়েছেন l প্রথমদিকে তোমাদেরও তো শোনানো হয়েছিল যে তোমাদের
পূজাতেও তারতম্য ঘটবে l কোন কোনও দেবী-দেবতাদের পূজা বিধিপূর্বক হয় আর কারও কারও
নামে মাত্র পূজা হয় l এই বিষয়ে এনেক বিস্তার আছে l পূজারও অনেক বিস্তার আছে l কিন্তু
আজ তো বাবা সকলের জমার খাতা দেখছেন l জ্ঞানের ভান্ডার, শক্তির ভান্ডার, শ্রেষ্ঠ
সঙ্কল্পের ভান্ডার কতখানি সঞ্চয় করেছ আর সময়ের ভান্ডার কতখানি সঞ্চিত হয়েছে ? এই
চার ভান্ডারই কতখানি সঞ্চয় হয়েছে, সেই খাতাই দেখছিলেন l সুতরাং এখন নিজেদের এই চার
বিষয়েরই খাতা চেক কর l তারপরে বাপদাদাও তোমাদের বলবেন কি রেজাল্ট তিনি দেখেছেন এবং
প্রত্যেকটা ভান্ডার জমা করার বিধি, কীভাবে সেটা প্রাপ্তির সাথে সম্বন্ধযুক্ত আর
কীভাবে জমা করতে হবে, এই সব বিষয়ে বাবা তোমাদের পরে বলবেন l বুঝেছ!
সময় তো সীমিত, তাই না ! তিনি আসেনও সীমার মাঝে, নিজের শরীরও নেই l যে শরীর লোন
নিয়েছেন সেই শরীরও টেম্পোরারি ভূমিকা (পার্টের) পালন করছে, সেইজন্য বাবাকে সময়ের
ব্যাপারেও বিবেচনা করতে হয় l বাপদাদাও সব বাচ্চার সাথে মিলিত হতে, সব বাচ্চার মিষ্টি
মিষ্টি আধ্যাত্মিক সুবাস নিতে আনন্দিত হন l বাপদাদা তো সব বাচ্চার তিন কালের বিষয়ে
জানেন, তাই না ! আর বাচ্চারা শুধু নিজের বর্তমানকে বেশি জানে, সেইজন্য কখনো এইরকম
কখনো সেইরকম হয়ে যায় l (((((((((((কিন্তু তিন কাল জানার কারণে, বাপদাদা সেই দৃষ্টিতে
দেখেন যে পূর্ব-কল্প থেকে তোমরা সেই একইরকম অধিকারী। বাবার অবিনাশী ঐশ্বর্যের
অধিকারী l এখন শুধু কতিপয় মাত্রই চঞ্চলতার মধ্যে আছে, কিন্তু যারা ওঠাপড়ার মধ্যে
রয়েছে তাদের এখনই অনড় হতে হবে l তিনি তোমাদের ভবিষ্যৎ শ্রেষ্ঠ রূপে দেখেন, সেইজন্য
তিনি বর্তমান দেখেও দেখেন না l তাইতো তিনি সব বাচ্চার বিশেষত্ব দেখেন l এমন কেউ আছে
যার কোনও বিশেষত্ব নেই ? প্রথম বিশেষত্ব তো এটাই যে তোমরা এখানে পৌঁছেছ l আর কিছু
না হোক, সমুখ মিলনের এই ভাগ্য কম নয় l এই বিশেষত্ব তো তোমাদের আছে, নয় কি ! এই সভা
বিশেষ আত্মাদের, সেইজন্য বিশেষ আত্মাদের বিশেষত্ব দেখে বাপদাদা উৎফুল্ল হন l আচ্ছা
!
যারা সদা 'তাৎক্ষণিক দান মহাপুণ্যের' এই শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প করে, যারা সদা 'পরে কখনো'-কে
'এখন'-এ পরিবর্তন করে, সদা সময়ের বরদান জেনে তাদের ঝুলি বরদানে পরিপূর্ণ করে, সদা
ব্রহ্মাবাবাকে ফলো ক'রে ব্রহ্মাবাবার সাথে শ্রেষ্ঠ রাজ্য অধিকারী এবং শ্রেষ্ঠ
পদাধিকারী হয়, সদা বাবার সাথে কম্বাইন্ড থাকে, এইরকম সদা সাথী বাচ্চারা যারা সদা
সাথে থাকার দায়িত্ব পালন করে, এমন বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ এবং নমস্কার l
সকল বাচ্চার বিদায়কালে স্মরণ-স্নেহ প্রদান
বাপদাদা চতুর্দিকের সব বাচ্চাকে স্মরণ-স্নেহ পাঠাচ্ছেন l প্রত্যেক জায়গার স্নেহী
বাচ্চারা, সস্নেহে সেবাতেও অগ্রচালিত হচ্ছে এবং স্নেহ সদা অগ্রচালিত হতে তোমাদের
সমর্থ বানাবে l স্নেহের সাথে সেবা কর, সেইজন্য যাদের সেবা কর তারাও বাবার স্নেহী হয়ে
যায় l সব বাচ্চাকে সেবার জন্য অভিনন্দন এবং অভিনন্দন ভালোবাসার জন্য পরিশ্রমের জন্য
নয়, কারণ কঠিন পরিশ্রমের কথা বললেও কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা' ভালোবাসা l সেইজন্য
স্মরণে থেকে যারা সেবা করে তারা নিজের বর্তমান আর ভবিষ্যতের জন্য জমা করে l তাইতো
এখনও সেবার খুশি লাভ হয় আর ভবিষ্যতেও জমা হয় l তোমরা সেবা কর না, বরং অবিনাশী
ব্যাংকে তোমাদের হিসেবের খাতায় সঞ্চয় কর l একটুখানি সেবা সদাকালের জন্য সঞ্চয়ের
খাতায় সঞ্চিত হয়ে যায় l তাহলে সেই সেবা কেমন হলো ? সঞ্চয়ই তো হলো, নয় কি ! সেইজন্য
সব বাচ্চাকে বাপদাদা স্মরণ-স্নেহ পাঠাচ্ছেন l প্রত্যেকে তোমরা নিজেকে শক্তিশালী
আত্মা মনে করে অগ্রচালিত হলে তবে শক্তিশালী আত্মাদের সদাই সাফল্য l তোমরা সবাই
নিজের নিজের নামে বিশেষ স্মরণ-স্নেহ স্বীকার করে নাও l ( দিল্লি পাণ্ডব ভবনে
টেলেক্স লাগানো হয়েছে ) দিল্লি নিবাসী পাণ্ডব ভবনের সব বাচ্চাকে বিশেষ সেবার জন্য
অভিনন্দন l কারণ এই সাধনও সেবার জন্য তৈরি হয়েছে l সাধনের জন্য অভিনন্দন নয়, সেবার
জন্য অভিনন্দন l সদা এই সাধনের দ্বারা অসীম জগতের অবিনাশী সেবা করতে থাকবে, খুশির
সাথে এই সাধন দ্বারা বাবার সন্দেশ বিশ্বে পৌঁছে দিতে থাকবে, সেইজন্য বাপদাদা দেখছেন
বাচ্চাদের সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনা খুশি কতটা আছে ! এই খুশির সাথেই সদা এগিয়ে যেতে থাক
l পাণ্ডব ভবনের জন্য সকল বিদেশি খুশির সার্টিফিকেট দেয়, একে বলা হয়, বাবা সমান
আতিথেয়তায় সদা সামনে এগিয়ে থাকা l তোমরা দেখেছ, ব্রহ্মাবাবা কতো অতিথি-পরায়ণতা
দেখিয়েছেন l সুতরাং যারা এই আতিথেয়তা ফলো করে, তারা বাবাকে শো করে l বাবার নাম
প্রত্যক্ষ করে, সেইজন্য বাপদাদা সবার তরফে স্মরণ-স্নেহ দিচ্ছেন l
অমৃতবেলার পরে প্রাতঃ ৬ ঘটিকায় বাপদাদা আবারও মুরলী শোনান তথা স্মরণ-স্নেহ দেন -
২৫/০৩/৮৫
আজকের দিন, সদা নিজেকে ডবল লাইট মনে করে উড়তি কলার অনুভব করতে থাক l কর্মযোগীর
ভূমিকা (পার্ট ) পালন করেও কর্ম আর যোগের ব্যালেন্স চেক কর, কর্ম আর স্মরণ অর্থাৎ
যোগ দুইই শক্তিশালী থেকেছে কিনা l যদি কর্ম শক্তিশালী আর স্মরণ কম ছিল, তবে তা'
ব্যালেন্স হয়নি l আবার স্মরণ শক্তিশালী ছিল কিন্তু কর্ম শক্তিশালী ছিল না, তাহলে
সেটাও ব্যালেন্সড নয় l সুতরাং, কর্ম আর স্মরণের ব্যালেন্স সবসময় বজায় রাখ l সারাদিন
এই শ্রেষ্ঠ স্থিতিতে থাকায় নিজের কর্মাতীত অবস্থা কাছে আসার অনুভব করবে l সারাদিন
কর্মাতীত স্থিতি বা অব্যক্ত ফরিস্তা স্বরূপ স্থিতিতে একভাবে ঘোরাফেরা করবে l আর
নিচের স্থিতিতে যেও না l আজ নিচে নেমে যেও না, ওপরেই থেকো l যদি কোনও দুর্বলতার
কারণে নিচে নেমে যাও, তাহলে একে অন্যকে স্মরণ করিয়ে শক্তি দিয়ে তোমরা সবাই উঁচু
স্থিতির অনুভব করবে l এটা আজকের পঠন-পাঠনের হোমওয়ার্ক l হোমওয়ার্ক বেশি, পড়াশোনা কম
l
এইভাবে সদা বাবাকে ফলো করে, সদা বাবা সমান হওয়ার লক্ষ্যকে ধারণ করে অগ্রবর্তী, উড়তি
কলার অনুভাবী বাচ্চাদের বাপদাদার মন-প্রাণ থেকে গভীর ভালোবাসার সাথে স্মরণ-স্নেহ আর
গুড মর্নিং l
বরদান:-
মাধুর্য দ্বারা বাবার নৈকট্যের সাক্ষাৎকার করিয়ে
মহান আত্মা ভব
যে বাচ্চাদের সঙ্কল্পেও মাধুর্য, কথাতেও মাধুর্য এবং
কর্মেও মাধুর্য আছে, তারাই বাবার কাছে আছে, সেইজন্য বাবাও তাদের রোজ বলেন 'মিষ্টি
মিষ্টি বাচ্চারা' আর বাচ্চারাও রেসপন্স দেয় "মিষ্টি মিষ্টি বাবা !" সুতরাং
প্রতিদিনের এই মধুর বোল মাধুরী-সম্পন্ন করে তোলে l এইরকম মধুরিমা প্রত্যক্ষকারী
শ্রেষ্ঠ আত্মারাই মহান হয় l মাধুর্যেরই মাহাত্ম্য l মধুরতা না থাকলে মহত্ত্বের
অনুভব হয় না l
স্লোগান:-
যে কোনও কার্য ডবল লাইট হয়ে করলে মনোরঞ্জনের অর্থাৎ
মনে আনন্দের অনুভব করবে l