০২-০৬-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ২৪-১২-৮৪ মধুবন


ঈশ্বরীয় স্নেহের মহত্ত্ব

আজ স্নেহের সাগর তাঁর নিজের স্নেহী চাতক বাচ্চাদের সাথে মিলিত হতে এসেছেন l অনেক জন্ম ধরে এই প্রকৃত অবিনাশী ঈশ্বরীয় স্নেহের জন্য তারা তৃষিত হয়ে থেকেছে l বহু জন্মের পিয়াসী চাতক আত্মাদের এখন প্রকৃত স্নেহ, অবিনাশী স্নেহ অনুভব হচ্ছে l তোমরা বাচ্চারা ভক্ত আত্মা হয়ে থাকার কারণে ভিখারী হয়ে গেছ l এখন বাবা, ভিখারী থেকে স্নেহের সাগরের উত্তরাধিকারের অধিকারী বানাচ্ছেন l তোমাদের অনুভবের আধারে সবার হৃদয় থেকে নিজে থেকেই আওয়াজ বার হবে, ঈশ্বরীয় স্নেহ আমাদের জন্মসিদ্ধ অধিকার l সুতরাং, তোমরা ভিখারী থেকে অধিকারী হয়ে গেছ l বিশ্বে প্রত্যেক আত্মার জীবনে প্রয়োজনীয় জিনিস স্নেহই l তাদের জীবনে স্নেহ না থাকলে তারা জীবনকে নীরস অনুভব করে l স্নেহ এতই শ্রেষ্ঠ জিনিস, যা আজকের সাধারণ লোক স্নেহকেই ভগবান বলে মনে করে l তারা বিশ্বাস করে, ভালোবাসাই পরমাত্মা, বা পরমাত্মাই ভালোবাসা l

সুতরাং স্নেহ এত শ্রেষ্ঠ, যতটা ভগবানকে শ্রেষ্ঠ ব'লে তারা বিশ্বাস করে l সেইজন্য ভগবানকে বলে স্নেহ বা ভালোবাসা l এইরকম কেন বলা হয়, তাদের কোন অনুভব নেই l তবুও পরমাত্ম-বাবা যখন এই সৃষ্টিতে এসেছেন, তখন সব বাচ্চাকে প্র্যাকটিক্যাল জীবনে সাকার স্বরূপ দ্বারা স্নেহ দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন l আগে যদিও তোমাদের এই অনুভব ছিল না, কিন্তু এটা বুঝতে যে স্নেহই পরমাত্মা l অতএব, পরমাত্ম-বাবার প্রথম উপহার স্নেহ l স্নেহ তোমাদের ব্রাহ্মণ জন্ম দিয়েছে l স্নেহের পুষ্টিসাধনে তোমাদের সবাইকে ঈশ্বরীয় সেবার যোগ্য বানিয়েছে l স্নেহ সহজ যোগী, কর্মযোগী, স্বতঃযোগী বানিয়েছে l স্নেহ সীমিত পরিধির ত্যাগকে ভাগ্য বলে অনুভব করিয়েছে l এটা ত্যাগ নয়, বরং ভাগ্য l প্রকৃত সত্য এই অনুভব করিয়েছে, তাই না ! এই স্নেহের আধারে যে কোনো ধরনের ঝড় বা বিপর্যয় ঈশ্বরীয় উপহার অনুভব হয় l স্নেহের আধারে কঠিনকে অতি সহজ অনুভব হয় l এই ঈশ্বরীয় স্নেহ অনেক সম্বন্ধে যুক্ত মনকে, অনেক টুকরো হয়ে যাওয়া মনকে একের সাথে জুড়ে দিয়েছে l এখন এক হৃদয় এক দিলারাম l হৃদয় টুকরো টুকরো নয়, স্নেহ বাবা সমান বানিয়ে দিয়েছে l সদা তাঁর সাহচর্য অনুভব হওয়ার কারণে স্নেহ তোমাদের সমর্থ বানিয়েছে l স্নেহ যুগের রূপান্তর ঘটিয়ে তোমাদের কলিযুগী থেকে সঙ্গমযুগী বানিয়েছে l স্নেহই দুঃখ-যন্ত্রণার দুনিয়াকে আনন্দ দেওয়া আর সুখানুভবের দুনিয়ায় রূপান্তরিত করেছে l এতটাই মহত্ত্ব এই ঈশ্বরীয় স্নেহের l যে এই মহত্ত্বকে জানে সে-ই মহান হয়ে যায় l তোমরা এমন মহান হয়েছ, তাই না ! সবচাইতে সহজ পুরুষার্থ এটাই l স্নেহে সদা সমাহিত হয়ে থাক l লাভলীন আত্মা অর্থাৎ স্নেহে নিমজ্জিত আত্মা তাদের স্বপ্নেও মায়া দ্বারা প্রভাবিত হয় না কারণ লাভলীন (নিমজ্জমান ) অবস্থা মায়াপ্রুফ অবস্থা l তাহলে, স্নেহে ডুবে থাকা সহজ, নয় কি ! স্নেহ সবাইকে মধুবন নিবাসী বানিয়েছে l স্নেহের কারণেই তো তোমরা এখানে পৌঁছেছ, তাই না ? বাপদাদাও সব বাচ্চাকে বরদান দেন, *"সদা স্নেহী ভব"* l স্নেহ এমনই জাদু যে তুমি যা চাইবে সেটাই প্রাপ্ত করতে পারবে l যতই হোক, এটা একমাত্র হয় প্রকৃত স্নেহ থাকলে, হৃদয়ের স্নেহ দিয়ে, যারা সময়ানুসারে স্নেহী হয় সেই স্বার্থী স্নেহে নয় l সময় অনুযায়ী স্নেহী হয়ে ভাসা ভাসা ভাবে মিষ্টি বাবা, প্রিয় বাবা বলে দায়িত্ব পালনকারী তোমরা নও l নিরন্তর এই স্নেহে সমাহিত হয়ে আছ l এমন বাচ্চাদের জন্য বাপদাদা সদা সুরক্ষিত ছত্রছায়া l যারা শুধু প্রয়োজনের সময় বা স্বার্থ উদ্দেশ্যে *আমাকে* স্মরণ করে, তারাও তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী, তাদের স্নেহ অনুযায়ী রিটার্নে সহযোগ লাভ করে l কিন্তু তাদের যোগ্যতা সম্পন্ন এবং সম্পূৰ্ণ সফলতা লাভ করতে পারে না l অতএব, সদা স্নেহ দ্বারা প্রাপ্তিস্বরূপ হওয়ার অনুভব করার জন্য প্রকৃত হৃদয়ে স্নেহী হও l বুঝেছ তোমরা !



বাপদাদা মধুবন ঘরের সব অলঙ্করণ বাচ্চাদের স্নেহের বিশেষ অভিনন্দন জানাচ্ছেন l প্রত্যেক বাচ্চা বাবার ঘরের বিশেষ অলঙ্করণ l তোমরা বাচ্চারাই মধুবনের এই অসীম ঘরের সৌন্দর্য l নিজেদের এইরকম মনে কর, তাই না ! দুনিয়ার লোকে খ্রিস্টমাস পালনের জন্য বহু জায়গায় যায় l আর এই বিশেষ বিদেশি বা ভারতের বাচ্চারা সুইট হোমে পৌঁছেছে, সুমহান বাবার সঙ্গে উদার মনে বড়দিন উদযাপন করার জন্য l



এই বড়দিন বিশেষ দিন, যা বাবা আর দাদা উভয়ের স্মারকচিহ্নের প্রতীকী l এক, দাতারূপে শিববাবার প্রতীক আর দ্বিতীয়, বৃদ্ধস্বরূপ ব্রহ্মাবাবার প্রতীক l কখনও যুবরূপ তারা দেখায় না l খ্রীসমাস ফাদারকে তারা বৃদ্ধ রূপেই দেখায় l আর দু'টো রঙ অবশ্যই দেখাবে, সাদা আর লাল l সুতরাং এই প্রতীক বাবা আর দাদার উভয়ের l বাপদাদা ছোট বাচ্চাদের যা ইচ্ছা তা'তে তাদের পরিপুর্ণ করে দেন l এই বিশেষ দিনে ছোট ছোট বাচ্চারা অতি স্নেহের সাথে নিজের মন পছন্দ জিনিস পাওয়ার জন্য খ্রীসমাস ফাদারকে বলে এবং সঙ্কল্প করে l তাদের এই নিশ্চয়ও থাকে যে তিনি তাদের ইচ্ছা অবশ্যই পূর্ণ করবেন l সুতরাং, বাচ্চারা এই স্মারকচিহ্ন তোমাদেরও l তোমাদের পুরানো শূদ্র জীবনে যত বৃদ্ধই তোমরা হও না কেন, ব্রাহ্মণ জীবনে তোমরা ছোট বাচ্চাই l সুতরাং, তোমরা সব ছোট বাচ্চা যে শ্রেষ্ঠ কামনাই কর তা' পূর্ণ তো হয়, তাই না ! সেইজন্য এই স্মরণচিহ্ন যারা লাস্ট ধর্মের তাদের মধ্যেও অব্যাহত রয়েছে l তোমরা সবাই সঙ্গমযুগের বড়দিনের অনেক অনেক উপহার বাপদাদার থেকে লাভ করেছ, তাই না ! এই বড়দিন উপহারের বিশেষ দিন l সুতরাং, বাপদাদা সবচাইতে বড় উপহার স্বরাজ্য আর স্বর্গরাজ্য দেন, যেখানে অপ্রাপ্ত বস্তু বলে কিছু থাকে না l তোমরা সর্বপ্রাপ্তিস্বরূপ হয়ে যাও l সুতরাং, যারা বড়দিন উদযাপন করে তারা হৃদয়বান l বিশ্বকে যারা দেয় তারাই তো হৃদয়বান হয়, তাই না ! সুতরাং সবাইকে উদারচিত্তে সঙ্গমযুগী বড় দিনের সর্বাপেক্ষা বড় বাপদাদা অভিনন্দন জানাচ্ছেন l সেই সব লোকে ১২ টার পরে উদযাপন করবে, সেক্ষেত্রে তোমরা প্রত্যেকে সকলের থেকে এগিয়ে l সুতরাং তোমরাই প্রথমে পালন করছ এবং দুনিয়ার লোকে পরে পালন করবে l ডবল বিদেশি আজ খুব উৎসাহ-উদ্দীপনায় স্মরণের উপহার স্থূল এবং সূক্ষ্মরূপে বিশেষভাবে বাবাকে দিচ্ছে l বাপদাদাও সব ডবল বিদেশি বাচ্চাকে স্নেহের উপহারের রিটার্নে, "তোমরা সদা স্নেহী সাথী হবে, সদা স্নেহের সাগরে ডুবে লাভলীন স্থিতির অনুভব করবে", এইরকম বরদানে ভরা লক্ষ-কোটি স্মরণ আর অমর ভালোবাসা দিচ্ছেন l তোমরা সদা খুশিতে গাইতে এবং নাচতে থাকবে l মুখ সদা মিষ্টি থাকবে অর্থাৎ মুখে সদা মধুর-কোমল-নম্র ভাষা থাকবে l এইভাবে, ভারতের সব স্নেহী বাচ্চাকে "সহজ যোগী এবং স্বতঃযোগী হবে"- এই বরদানের বিশেষ স্মরণ-স্নেহ দিচ্ছেন l



দাতা এবং ভাগ্যবিধাতা বাপদাদা অবিনাশী স্নেহ সম্পন্ন সদা সমর্থ স্বরূপ দ্বারা সবকিছু সহজ অনুভব করার জন্য তোমরা সব বাচ্চাকে স্মরণ-স্নেহ দিচ্ছেন l সকলকে স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l



*গ্রুপের সাথে :-* সদা নিজেকে এই পুরানো দুনিয়ার আকর্ষণের ঊর্ধ্বে আর বাবার ঘনিষ্ঠ, এইরকম অনুভব কর ? তোমরা যতটা ঊর্ধ্বে হবে ততটাই নিজে থেকেই প্রিয় হবে l যদি তোমরা স্বতন্ত্র না হও, তবে প্রিয় হতে পারবে না l সুতরাং তোমরা পৃথক হয়েও প্রিয়, নাকি কোন না কোন আসক্তি আছে l যখন তোমাদের কোন আসক্তি থাকে না, তখন বুদ্ধি নিজে থেকেই এক বাবার দিকে যাবে l অন্য কোথাও যেতে পারে না l সহজ আর নিরন্তর যোগীর স্থিতি অনুভব হবে l এখন সহজ যোগী হবে না তো কবে হবে ? এত সহজ প্রাপ্তি, সত্যযুগেও এখনকার প্রাপ্তির ফল লাভ কর l সুতরাং, এই সময়ে সহজ যোগী আর সদাকালের রাজ্যভাগ্যের অধিকারী সহজযোগী বাচ্চারা সদা বাবার কাছাকাছি থাকে l সুতরাং, নিজেকে বাবার কাছাকাছি, তাঁর সাথে থাকার অনুভব কর তোমরা ? যারা সাথে থাকে, তাঁর সাহচর্য সদা তাদের সঙ্গে থাকে l যদি তাঁর সাথে না থাক, তার সাহচর্য অনুভব করতে পারবে না l এখন, তোমরা যখন বাবার সাহচর্য লাভ করেছ, তখন কোনও বিঘ্ন আসতে পারে না l যেখানে সর্বশক্তিমান বাবা সহায় হন, তখন মায়া নিজেই তোমাদের থেকে সরে যায় l শক্তিশালীর সামনে দুর্বল কি করবে ! সরেই তো যাবে, তাই না ! একইভাবে মায়াও সরে যাবে, কোনরকম প্রতিরোধ করবে না l তাহলে, সবাই তোমরা মায়াজিৎ ? বিভিন্নরকমভাবে, নতুন নতুন রূপে মায়া আসে, কিন্তু নলেজফুল আত্মারা মায়ার ভয়ে ভীত হয় না l তারা মায়ার সবরকম রূপ জেনে তার থেকে সরে আসে l যখন মায়াজিৎ হয়ে গেছ তখন কেউ কখনো তোমাদের নাড়াতে পারবে না l যে যতই চেষ্টা করুক কিন্তু তোমরা বিন্দুমাত্র কম্পিত হয়ো না l



অমৃতবেলা থেকে রাত পর্যন্ত বাবা আর সেবা ব্যতীত অন্য কোনো কিছুর সাথে মনকে যুক্ত হতে দিও না l তোমরা বাবাকে খুঁজে পেয়েছ এবং সেবাধারী হয়েছ, কারণ তোমরা যা পেয়েছ, সেটা যত বিতরণ করবে ততই বাড়বে l এক দাও আর লক্ষ-কোটি লাভ কর l এটাই স্মরণে রাখ যে, তোমরাই সর্ব ভাণ্ডারের মালিক, ভাণ্ডার পরিপূর্ণ l যাঁকে দুনিয়া খুঁজে বেড়াচ্ছে তোমরা তাঁর বাচ্চা হয়েছ l দুঃখের দুনিয়া থেকে সরে গিয়ে সুখের সাগরে পৌঁছে গেছ l সুতরাং সদা সুখের সাগরে তরঙ্গিত হয়ে সবাইকে সুখের ভাণ্ডারে পরিপূর্ণ কর l আচ্ছা !



*বাছাই করা অব্যক্ত মহাবাক্য*

*ব্রাহ্মণ জীবনে সভ্যতা রূপী কালচারকে আপন কর*



ব্রাহ্মণ পরিবারের এক নম্বর কালচার হলো - *সভ্যতা* l সুতরাং, সকলের চেহারায় এবং আচরণে এই ব্রাহ্মণ কালচার প্রত্যক্ষ হতে দাও l সব ব্রাহ্মণকে স্মিতহাস্যে সকলের সম্পর্কে আসতে হবে l যে যেমনই হোক না কেন তোমরা তোমাদের এই ব্রাহ্মণ কালচার ছেড়ে দিও না l এখন নিজেদের জীবনে নতুন সভ্যতার সংস্কার প্রত্যক্ষ করাও l কম বলো, ধীরে বলো আর মধুরতার সাথে বলো l যদি তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ক্রোধ বা বিরক্তি-জ্বালা উপস্থিত হয়, তবে মনকে বলো, *"মিষ্টি বাবা"* , তখন এক্সট্রা সহায়তা তোমরা লাভ করবে l অন্তর্মন থেকে যদি শুভ ভাব আর প্রেম ভাব ইমার্জ করো, তবে মহাশত্রু ক্রোধের ওপরে বিজয় প্রাপ্ত করতে পারবে l



কোনো কোনো বাচ্চা আজকাল এক বিশেষ ভাষা ইউজ করে, তারা বলে যে কোনরকম অসত্য দেখা বা শোনা তাদের সহ্য হয় না l সেইজন্য যখন তারা কিছু অসত্য দেখে বা শোনে, তারা প্রবল শক্তিতাড়িত হয় l কিন্তু যদি অন্যে অসত্য হয় এবং অসত্য দেখে তুমি শক্তিতাড়িত হও, তবে সেই শক্তিও তো অসত্য, তাই না ! যেকোন ধরনের অসত্যতা সমাপ্ত করতে নিজের মধ্যে সত্যতার শক্তি ধারণ কর l সত্যতার নিদর্শন হলো সভ্যতা l যখন তুমি সত্য এবং যখন তোমার মধ্যে সত্যতার শক্তি আছে তখন সভ্যতা কখনও ছেড়োনা, সত্যতাকে তোমার প্রমাণ করতেই হবে, কিন্তু সভ্যতাপূর্বক l যদি সভ্যতা ছেড়ে অভব্য আচরণের দ্বারা কোনও সত্যকে প্রমাণ করতে চাও তবে সেই সত্য প্রমাণ করতে পারবে না l *অসভ্যতার নিদর্শন হলো জিদ আর সভ্যতার নিদর্শন হলো নম্রতা* l যারা সত্যতাকে প্রমাণ করে তারা সদাসর্বদা নিজেরা নিরহঙ্কারী হয়ে সভ্যতাপূর্বক ব্যবহার করবে l জোর করে যদি কেউ সত্যকে প্রমাণ করতে চেষ্টা করে তখন তার মধ্যে অবশ্যই কিছু না কিছু অসত্য ভরা থাকবে l কোনো কোনো বাচ্চার ভাষাই হয়ে গেছে- আমি সম্পূর্ণ সত্যি বলি, শতকরা একশ' ভাগ সত্য l কিন্তু সত্যকে প্রমাণ করার আবশ্যকতা নেই l সত্য সূর্যের মতো, যা লুকিয়ে থাকতে পারে না l সত্যের সমুখে যে যতই পর্দার আড়াল দিক কিন্তু সত্যের প্রকাশ কখনও লুকিয়ে রাখা যাবে না l সভ্যতাপূর্বক বোল, সভ্যতাপূর্বক আচার-আচরণই সফলতা নিয়ে আসে l



যদি তোমরা কোনো অসত্য কিছু দেখ বা শোন, তবুও অসত্য বায়ুমন্ডল বিস্তৃত ক'রনা l অনেকে বলে, এটা তো পাপকর্ম, কেউ এই পাপকর্ম করছে তা' আমি সহ্য করতে পারি না l কিন্তু বায়ুমন্ডলে অসত্য কোনকিছু ছড়িয়ে দেওয়া, এটাও তো পাপ ! লৌকিক পরিবারেও যদি এমন কোন ব্যাপার দেখ বা শোন, তবে সেটা ছড়িয়ে দেওয়া উচিৎ নয় l কানে শুনে মনে লুকিয়ে রাখবে l *যদি কোন ব্যর্থ বিষয় চারিদিকে ছড়িয়ে দিতে থাক, তবে সেটাও পাপের অংশ l এইরকম ছোট ছোট পাপ উড়তি কলার অনুভব সমাপ্ত করে দেয়, সেইজন্য কর্মের গহন গতি বুঝে সভ্যতাপূর্বক আচরণ কর* l তোমরা ব্রাহ্মণ বাচ্চারা অতীব রয়্যাল l তোমাদের চেহারা আর আচরণ, উভয় থেকেই যেন অন্যেরা তোমাদের সভ্যতা এবং সত্যতা অনুভব করে l এমনিতেও রয়্যাল আত্মাদের সভ্যতার দেবী বলা হয় l তাঁদের বলা, দেখা, চলা, আহার, ওঠা-বসা, সব কর্মে তাঁদের সভ্যতা সত্যতা নিজে থেকেই প্রত্যক্ষ হয় l এমন হতে দিও না যে তুমি সত্য প্রমাণ করছ আর সভ্যতা ব'লে কিছুই নেই l সুতরাং, এটা রাইট (ঠিক) নয় l কোন কোন বাচ্চা বলে, সাধারণত: আমি ক্রুদ্ধ হই না, কিন্তু যখন কেউ সত্যের অপলাপ করে অর্থাৎ মিথ্যা বলে তখন ক্রোধ এসে যায় l *সে মিথ্যা বলল আর তুমি ক্রুদ্ধ হয়ে বললে, তাহলে তোমাদের মধ্যে রাইট কে* ? কেউ কেউ আবার খুব চাতুর্যের সাথে বলে, তারা ক্রোধ করে না, তাদের গলার আওয়াজ খুব উঁচু স্বরের, তীক্ষ্ণ l *কিন্তু যখন সায়েন্সের সাধন দ্বারা আওয়াজ কম বা বেশি করতে পার, তখন সাইলেন্সের পাওয়ার দিয়ে নিজের কণ্ঠস্বর নিয়ন্ত্রণ করা যায় না* ? ক্রোধ যেমন অজ্ঞানের শক্তি, ঠিক একইভাবে *জ্ঞানের শক্তি শান্তি, সহন শক্তি* l তোমরা অজ্ঞানের শক্তি ক্রোধকে খুব ভালোভাবে সংস্কার বানিয়ে নিয়েছ আর ইউজও করে যাচ্ছ, তারপরে ক্ষমার জন্যেও বলো l একইভাবে, এখন সকল গুণ এবং জ্ঞানের সকল নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুকে তোমাদের সংস্কার বানাও, তখন সভ্যতার নিরন্তর বিকাশ ঘটবে l



কেউ কেউ মনে করে, হয়তো ক্রোধ কোনও বিকার নয়, তারা ভাবে এটা অস্ত্র, বিকার নয় l যাই হোক, *ক্রোধ জ্ঞানদীপ্ত আত্মাদের জন্য মহাশত্রু* , কারণ যখন তোমরা অনেক আত্মাদের সম্পর্ক-সম্বন্ধে আস, ক্রোধ প্রকাশ পায় আর যখন তোমাদের ক্রোধ প্রকাশিত হয় বাবার নাম খুব অসম্মানিত হয় l যারা পরচর্চা করে তারা এটাই বলে, দেখে নিয়েছি *জ্ঞানী তু আত্মাদের তথা বাচ্চাদের !* অতএব, ক্রোধের অংশমাত্রকেও সমাপ্ত কর l অন্যদের সাথে খুব সভ্যতাপূর্বক আচরণ কর l

বরদান:-

ডিরেক্ট পরমাত্ম লাইটের কানেকশন দ্বারা অন্ধকার দূর করে লাইট হাউজ ভব

তোমরা সব বাচ্চার কাছে ডিরেক্ট পরমাত্ম-লাইটের কানেকশন আছে l শুধু স্বমানের স্মৃতির সুইচ ডিরেক্টলি লাইন থেকে অন করলে লাইট তো এসে যাবে এবং সূর্যের তেজোময় আলোকে কালো মেঘ যতই নিষ্প্রদীপ করার চেষ্টা করুক, সেই কালোমেঘও অদৃশ্য হয়ে যাবে l এইভাবে, তোমরা নিজেরা তো লাইটে থাকবেই কিন্তু অন্যদের জন্যেও তোমরা লাইটহাউজ হয়ে যাবে l

স্লোগান:-

নিজেদের পুরুষার্থে ঐকান্তিক চেষ্টা থাকলে, তবেই তোমাদের ভাইব্রেশন দ্বারা অন্যদের মায়া সহজে পলায়ন করবে l