০৮-০৮-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - কাজকর্ম করতে করতেও কেবল বাবার স্মরণেই থাকো, চলতে-ফিরতে বাবাকে এবং পরমধাম ঘরকে স্মরণ করো, এটাই হলো তোমাদের বাহাদুরি"
প্রশ্ন:-
কখন এবং কিভাবে বাবাকে সম্মান এবং অসম্মান করা হয় ?
উত্তর:-
যখন তোমরা বাচ্চারা বাবাকে খুব ভালো করে স্মরণ করো, তখন বাবাকে সম্মান করা হয়। কিন্তু যদি এইরকম বলো যে স্মরণ করার সময় নেই, তাহলে সেটা বাবাকে অসম্মান করা হয়। বাস্তবে এতে বাবার অসম্মান হয় না, এতে তো নিজেকেই অসম্মান করা হয়। তাই কেবল বক্তৃতা দেওয়ার জন্যই বিখ্যাত হয়ো না, স্মরণের যাত্রাতেও বিখ্যাত হও। স্মরণের যাত্রার চার্ট রাখো। এই স্মরণের দ্বারা-ই আত্মা সতোপ্রধান হবে।
ওম্ শান্তি।
আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে আত্মিক পিতা বলছেন - ৮৪ চক্রের যে জ্ঞান বোঝানো হয়, সেটা তো একটা নলেজ। এই নলেজ আমরা বাচ্চারা জন্ম-জন্মান্তর ধরে পড়েছি এবং ধারণ করেছি। এটা খুবই সহজ জ্ঞান। এটা তো কোনো নুতন কথা নয়।
সত্যযুগ থেকে কলিযুগের অন্তিম পর্যন্ত তোমরা কতবার পুনর্জন্ম নিয়েছ, সেটা বাবা বসে থেকে বোঝাচ্ছেন। এই জ্ঞানটা খুব সহজেই বুদ্ধিতে রয়েছে। এটা এক ধরনের পড়াশুনা যেখানে রচনার আদি, মধ্য এবং অন্তকে বুঝতে হয়। এটা তো কেবল বাবা ছাড়া অন্য কেউ বোঝাতে পারবে না। বাবা বলেন, এই জ্ঞানের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো স্মরণের যাত্রা, যাকে যোগ বলা হয়। যোগ শব্দটা সুপ্রসিদ্ধ। কিন্তু এটা আসলে স্মরণের যাত্রা। মানুষ যেমন কোথাও যাত্রা করতে যাওয়ার সময়ে বলে যে অমুক যাত্রায় যাচ্ছি। শ্রীনাথ কিংবা অমরনাথ যাওয়ার সময়ে ওইসব বিষয় স্মরণে আসে। এখন তোমরা জানো যে আত্মিক পিতা অনেক বড় যাত্রা করা শেখাচ্ছেন। বলছেন - "আমাকে স্মরণ করো" । ওইসব যাত্রাতে গেলে তো আবার ফিরেও আসে। কিন্তু এই যাত্রাতে তো মুক্তিধামে গিয়ে নিবাস করতে হবে। হয়তো আবার এসে ভূমিকা পালন করতে হবে, কিন্তু এই পুরাতন দুনিয়ায় তো আর আসতে হবে না। এই পুরাতন দুনিয়ার প্রতি তোমাদের বৈরাগ্য আছে। এটা হলো ছিঃ ছিঃ রাবণ রাজ্য। সুতরাং মুখ্য বিষয় হলো স্মরণের যাত্রা। কোনো কোনো বাচ্চা তো এটাও বোঝে না যে কিভাবে স্মরণ করতে হবে। কেউ স্মরণ করছে কি করছে না সেটা তো দেখতে পাওয়া যায় না। বাবা বলছেন - নিজেকে আত্মা অনুভব করে আমাকে অর্থাৎ নিজ-পিতাকে স্মরণ করো। এখানে কোনো দর্শন করার ব্যাপার নেই। কেউ কতক্ষণ স্মরণের যাত্রাতে থাকে সেটা জানতে পারা যায় না। সেটা তো কেবল সে নিজেই জানে। অনেকজনকেই এই স্মরণ করার যুক্তি বোঝানো হয়েছে। কল্যাণকারী বাবা বুঝিয়েছেন - নিজেকে আত্মা অনুভব করে শিববাবাকে স্মরণ করো। নিজের সার্ভিসও করো। যেমন কোনো বাচ্চা হয়তো পাহাড়ে পাহারা দেওয়ার ডিউটি করছে। সে তো খুব সহজেই স্মরণ করতে পারবে। কেবল বাবা ব্যতীত অন্য কোনো কিছুই স্মরণে আসা উচিত নয়। বাবা উদাহরণ দিয়ে বোঝাচ্ছেন যে এই স্মরণের যাত্রাতে থেকেই আসা-যাওয়া করো। যেমন পাদ্রীরা কত শান্তভাবে হাঁটা চলা করে। বাচ্চারা, তোমাদেরকেও খুব ভালোবাসার সাথে বাবাকে এবং ঘরকে স্মরণ করতে হবে। এটা খুব উঁচু লক্ষ্য। ভক্তরাও এইরকম পুরুষার্থ করে। কিন্তু ওরা এটা জানে না যে এখন আমাদেরকে ফিরতে হবে। ওরা মনে করে, যখন কলিযুগের সমাপ্তি হবে, তখন ফেরৎ যাব। ওদেরকে তো এই পদ্ধতিটা শেখানোর মতো কেউ নেই। তোমাদের মতো বাচ্চাদেরকে এটা শেখানো হয়। পাহারা দেওয়ার সময়ে একান্তে বসে যতটা স্মরণ করবে ততই মঙ্গল। স্মরণের দ্বারা-ই পাপ নাশ হবে। জন্ম-জন্মান্তরের পাপ মাথার ওপরে রয়েছে। যে আগে সতোপ্রধান হবে, সে-ই আগে রাম-রাজত্বে আসবে। সুতরাং তাকেই সবথেকে বেশি স্মরণের যাত্রাতে থাকতে হবে। প্রতি কল্পেই এইরকম হয়। সুতরাং এদের কাছে স্মরণের যাত্রায় থাকার খুব ভালো সুযোগ রয়েছে। এখানে তো কোনো লড়াই ঝগড়ার ব্যাপার নেই। আসা-যাওয়া করতে করতে, কিংবা কোথাও বসে থেকে দুটো কাজই একসাথে করতে পারো - পাহারাও দাও, আর বাবাকেও স্মরণ করো। কাজকর্ম করতে করতে বাবাকে স্মরণ করো। পাহারাদারদের সবথেকে বেশি সুবিধা। যদি স্মরণ করার অভ্যাস হয়ে যায় তাহলে দিনে কিংবা রাতে যারা পাহারা দেয়, তাদের সবথেকে বেশি সুবিধা। বাবা তো এটা খুব ভালো সার্ভিস দিয়েছেন। পাহারা আর স্মরণের যাত্রা। এতে বাবার স্মরণে থাকার সুযোগ পাওয়া যায়। স্মরণের যাত্রাতে থাকার জন্য এইরকম বিভিন্ন যুক্তি শেখানো হয়। এখানে তোমরা যতটা স্মরণ করতে পারবে, বাহ্যিক দুনিয়ার কাজকর্মে থেকে অতটা করতে পারবে না। তাই মধুবনে রিফ্রেশ হওয়ার জন্য আসে। একান্তে পাহাড়ের ওপর বসে স্মরণের যাত্রা করতে থাকো। একা আছ না কি সঙ্গে আরো দুই-তিন জন গেছে তাতে কিছু যায় আসে না। এখানে খুব ভালো সুযোগ রয়েছে। বাবাকে স্মরণ করাই হল মুখ্য বিষয়। ভারতের প্রাচীন যোগ খুবই সুপ্রসিদ্ধ। এখন তোমরা বুঝেছ যে এই স্মরণের যাত্রার দ্বারা পাপ নাশ হয়। আমরা সতোপ্রধান হয়ে যাব। তাই খুব ভালো পুরুষার্থ করতে হবে। কাজকর্ম করতে করতেও বাবাকে স্মরণ করে দেখাও - এটাই বাহাদুরি। তোমরা তো প্রবৃত্তি মার্গের পথিক। সুতরাং কর্ম তো করতেই হবে। ঘর-গৃহস্থে থেকেও, কাজকর্ম করতে করতেও বাবাকে স্মরণ করলে অনেক উপার্জন হয়। এখনো হয়তো কোনও বাচ্চার বুদ্ধিতে ধারণ হয় না। বাবা চার্ট রাখতে বলেন। কেউ কেউ একটু আধটু লেখে। বাবা অনেক যুক্তি বলে দেন। বাচ্চারা বাবার কাছে যেতে চায়। এখানে অনেক উপার্জন হয়। একান্তে থাকা খুবই উপকারী। বাবা সম্মুখে বসে থেকে বোঝাচ্ছেন যে আমাকে স্মরণ করলেই পাপ নাশ হবে। মাথার ওপরে জন্ম-জন্মান্তরের পাপ রয়েছে। বিকারের জন্য কত ঝগড়া হয়, বিঘ্ন আসে। *বাচ্চারা বলে - বাবা, আমাকে পবিত্র থাকতে দেওয়া হয় না। বাবা তখন বাচ্চাদেরকে বলেন - তুমি স্মরণের দ্বারা জন্ম-জন্মান্তরের পাপের বোঝা মাথা থেকে নামাও। ঘরে বসেই শিববাবাকে স্মরণ করতে থাকো। যেকোনো জায়গাতে বসেই স্মরণ করা সম্ভব। যেখানেই থাকো না কেন, এইরকম অভ্যাস করতে হবে। কেউ এলে তাকে প্রভু বার্তা দাও। বাবা বলেন, নিজেকে আত্মা অনুভব করে বাবাকে স্মরণ করো। এটাকেই যোগবল বলা হয়।* বল মানে শক্তি। বাবাকে সর্বশক্তিমান বলা হয়। কিন্তু বাবার কাছ থেকে সেই শক্তি পাওয়া যাবে কিভাবে? বাবা স্বয়ং উপদেশ দিচ্ছেন - আমাকে স্মরণ করো। তোমরা নীচে নামতে নামতে তমোপ্রধান হয়ে গেছ বলে সেই শক্তিও একেবারে শেষ হয়ে গেছে। এক কনাও অবশিষ্ট নেই। তোমাদের মধ্যেই কেউ কেউ আছে যারা ভালোভাবে বোঝে এবং বাবাকে স্মরণ করে।
সুতরাং নিজেকে জিজ্ঞাসা করো যে আমার সারাদিনের চার্ট কেমন থাকে? বাবা তো সব বাচ্চাকেই বলছেন যে মুখ্য বিষয় হলো স্মরণের যাত্রা। স্মরণের দ্বারা-ই তোমাদের পাপ নাশ হবে। যদি কেউ সাবধান করার নাও থাকে, তাহলেও তো স্মরণ করতে পারবে, তাই না ? যদি বিদেশে একা থাকতে হয়, তাহলেও তো স্মরণ করতে পারবে। ধরো কেউ বিয়ে করেছে কিন্তু তার স্ত্রী অন্য কোথাও থাকে, তাকেও পত্রতে লেখো যে তুমি কেবল একটা কথা মনে রেখো - কেবল বাবাকে স্মরণ করলেই জন্ম-জন্মান্তরের পাপ নাশ হয়ে যাবে। বিনাশ অতি নিকটে। বাবা তো খুব ভালো যুক্তি দিয়ে বোঝাচ্ছেন। এরপরে কেউ করল কি করল না, সেটা তো তার মর্জি। বাচ্চারাও বুঝতে পারে যে বাবা খুব ভালো উপদেশ দেন। আমাদের কাজ হলো সকল মিত্র-আত্মীয়কে প্রভুবার্তা দেওয়া। বন্ধু-বান্ধব, যে কেউ হোক, সার্ভিসের শখ থাকা উচিত। তোমাদের কাছে ছবিও আছে, ব্যাচও আছে। এটাও খুব ভালো জিনিস। এই ব্যাচের দ্বারা যেকোনো ব্যক্তিকে লক্ষ্মী-নারায়ণ বানানো সম্ভব। ত্রিমূর্তির ছবি নিয়ে খুব ভালো করে বোঝাতে হবে - এদের ওপরে শিববাবা রয়েছেন। দুনিয়ার মানুষও ত্রিমূর্তির ছবি বানায়। কিন্তু ওপরে শিববাবাকে দেখায় না। শিববাবাকে না জানার কারণে ভারতের তরী ডুবে গেছে। এখন শিববাবার দ্বারা-ই ভারতের তরী তীরে পৌঁছাবে। *মানুষ আহ্বান করে - হে পতিত-পাবন, তুমি এসে আমাদের মতো পাপীদেরকে পবিত্র বানাও। আবার তাঁকেই সর্বব্যাপী বলে দিয়েছে। কত বিশ্রী ভুল করে ফেলেছে।* বাবা বসে থেকে বোঝাচ্ছেন - তোমাদেরকেও এইরকম বক্তৃতা দিতে হবে। বাবা এইরকম মিউজিয়াম খোলার, সেবা করার নির্দেশও দেন। এতে অনেকে আসবে। বড় বড় শহরে সার্কাস বসে। ওদের কাছে কত জিনিস থাকে। দূরের গ্রাম থেকেও মানুষ আসে দেখার জন্য। তাই তোমাদেরকেও বাবা ঐরকম খুব সুন্দর মিউজিয়াম বানানোর নির্দেশ দিচ্ছেন যেটা দেখে লোকে খুশি হয়ে যাবে এবং অন্যদেরকেও শোনাবে। এটাও বোঝানো হয় যে এখন যাকিছু সেবা হয়, সবই হুবুহু আগের কল্পের মতো। কিন্তু সতোপ্রধান হওয়ার আন্তরিক ইচ্ছে থাকা উচিত। বাচ্চারা এই বিষয়টাতেই গাফিলতি করে। মায়াও এই স্মরণের যাত্রাতেই বিঘ্ন সৃষ্টি করে। নিজের অন্তরকে জিজ্ঞাসা করা উচিত - আমার কি সত্যিই অতটা শখ রয়েছে, সত্যিই কি আমি অতটা পরিশ্রম করি? জ্ঞানের বিষয় তো খুবই সাধারণ। কিন্তু বাবা ব্যতীত অন্য কেউ এই ৮৪ জন্মের চক্রের কাহিনী বোঝাতে পারবে না। তবে মুখ্য হল স্মরণের যাত্রা। অন্তিমে যেন কেবল বাবা ব্যতীত অন্য কেউ স্মরণে না আসে। বাবা তো বিস্তারিত ভাবে নির্দেশ দিতেই থাকেন। মুখ্য বিষয় হলো স্মরণ করা। তোমরা যেকোনো ব্যক্তিকেই বোঝাতে পারো। যেকোনো ব্যক্তিকেই তোমরা ব্যাচ নিয়ে বোঝাতে পারো। অন্য কারোর কাছেই এইরকম অর্থপূর্ণ মেডেল নেই। মিলিটারিতে যারা ভালো কাজ করে তাদেরকে মেডেল দেওয়া হয়। রায় সাহেবের কাছে এইরকম মেডেল রয়েছে। সবাই দেখে যে সে ভাইসরয়ের কাছ থেকে মেডেল পেয়েছে। আগে তো ভাইসরয় ছিল। এখন এদের কোনো ক্ষমতা নেই। আজকাল অনেক ঝগড়া লেগেই থাকে। মানুষের সংখ্যা অনেক হয়ে গেছে। ওদের জন্য তো শহরে অনেক জায়গা প্রয়োজন। বাবা এখন স্বর্গ স্থাপন করছেন। এতসব মানুষের বিনাশ হয়ে যাবে। খুবই অল্প সংখ্যক থাকবে। অনেক জায়গা পাওয়া যাবে। ওখানে তো সবকিছুই নুতন হবে। ওই নুতন দুনিয়াতে যাওয়ার জন্য ভালোভাবে পুরুষার্থ করতে হবে। প্রত্যেক মানুষই উঁচু পজিশন পাওয়ার জন্য পুরুষার্থ করে। কেউ পুরুষার্থ না করলে মনে করা হয় যে সে অনুত্তীর্ণ হয়ে যাবে। সে নিজেও বুঝতে পারে যে আমি হয়তো ফেল করে যাব। তখন সে পড়াশুনা ছেড়ে দিয়ে চাকরি করা শুরু করে। আজকাল তো চাকরির ক্ষেত্রেও অনেক নিয়ম বার করছে। মানুষ খুবই দুঃখী হয়ে গেছে। বাবা এখন তোমাদেরকে এমন রাস্তা বলছেন যাতে ২১ জন্মের জন্য দুঃখের নামটাই থাকবে না। বাবা বলছেন, যতটা সম্ভব কেবল স্মরণের যাত্রাতেই থাকো। রাতের সময়টা খুবই ভালো। শুয়ে শুয়েও স্মরণ করতে পারো। তবে এইরকম ভাবে স্মরণ করলে অনেকের ঘুম চলে আসে। কিন্তু যদি বয়স্ক হয় কিংবা অনেকক্ষণ বসে থাকলে অসুবিধা হয়, তবে সে নিশ্চয়ই শুয়ে পড়বে। শুয়ে শুয়েই বাবাকে স্মরণ করবে। খুব আন্তরিক খুশি হবে। কারণ এতে অনেক উপার্জন হয়। হয়তো এখনো সময় আছে, কিন্তু মৃত্যুর তো কোনো ঠিক নেই। তাই বাবা বোঝাচ্ছেন যে মূল বিষয় হল স্মরণের যাত্রা। বাইরে শহরে থাকলে তো সমস্যা হয়। এখানে আসলে খুব ভালো সুযোগ পাওয়া যায়, কোনো কিছুর চিন্তা করতে হয় না। তাই এখানে নিজের চার্টকে অনেকটা বাড়িয়ে নাও। এর দ্বারা তোমাদের চরিত্র শুধরে যাবে। কিন্তু মায়া খুবই শক্তিশালী। যারা ঘরে থাকে তারা অতটা গুরুত্ব দেয় না। কিন্তু যারা বাইরে থাকে তারা বেশি গুরুত্ব দেয়। তবে গোপদের (সেইসব ভাই যারা প্রভুপ্রেমে লীন থাকে) রেজাল্ট এখনো পর্যন্ত ভালো রয়েছে।
অনেক কন্যা পত্রতে লেখে - বিয়ের জন্য বাড়িতে খুব সমস্যা করছে, কি করব ? কিন্তু যে খুব মজবুত এবং বিচক্ষণ সন্তান হবে, সে কখনোই এইরকম লিখবে না। যদি কেউ এইরকম লেখে, তাহলে বাবাও বুঝতে পারেন যে এই সন্তান আসলে একটা ভেড়া। নিজের জীবনকে বাঁচানো তো নিজের হাতেই রয়েছে। এই দুনিয়ায় অনেক প্রকারের দুঃখ রয়েছে। বাবা খুবই সহজ ভাবে বোঝাচ্ছেন।
তোমরা বাচ্চারা তো অতিশয় ভাগ্যবান। এখানে এসে সাহেবের (সর্বময় কর্তা) সন্তান হয়েছ। বাবা কত শ্রেষ্ঠ বানাচ্ছেন। তা সত্ত্বেও তোমরাই বাবাকে গালাগালি করো। সেটাও আবার কাঁচা গালাগালি। তোমরা এতটাই তমোপ্রধান হয়ে গেছ যে বলার নয়। এর থেকে বেশি আর কত সহ্য করব। লোকেরা বলে থাকে, বেশি জ্বালাতন করলে একেবারে মেরে দেব। বাবা এখন বসে এ সকল বিষয় বোঝাচ্ছেন। শাস্ত্রে তো কেবল কাহিনী লিখে দিয়েছে। বাবা তো খুব সহজ ভাবে যুক্তি দিয়ে বলেন। কাজকর্ম করতে করতেই বাবাকে স্মরণ করো। এতে অনেক লাভ আছে। ভোরবেলা এসে স্মরণ করতে বসো। খুব মজা পাবে। কিন্তু অতটা শখ নেই। কোন্ স্টুডেন্ট ফেল করবে সেটা তো টিচার স্টুডেন্টের চাল-চলন দেখেই বুঝে যায়। বাবাও বুঝতে পেরে যান যে এই সন্তান ফেল করে যাবে। সেটাও আবার প্রত্যেক কল্পের জন্য। হয়তো খুব ভালো বক্তৃতা দেয়, খুব সুন্দর প্রদর্শনী বোঝায়, কিন্তু স্মরণ করে না। এতেই তো ফেল হয়ে যায়। এতে তো অসম্মান করা হয়। নিজেকেই অসম্মান করে। শিববাবার তো অসম্মান হয় না। *কেউই এইরকম বলতে পারো না যে আমি তো স্মরণ করার সময়ই পাই না। বাবা এটা কখনোই মানবেন না।* স্নান করার সময়ও তো স্মরণ করতে পারো। খাওয়ার সময়ে বাবাকে স্মরণ করলে অনেক লাভ হয়। কোনো কোনো বাচ্চা কেবল বক্তৃতা দেওয়ার জন্যই বিখ্যাত, কিন্তু যোগ করে না। এইরকম অহংকারের জন্যেও অনেকের পতন হয়। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্যসার :-
১. সর্বশক্তিমান বাবার কাছ থেকে শক্তি নেওয়ার জন্য স্মরণের চার্টকে দীর্ঘ করতে হবে। স্মরণ করার জন্য বিভিন্ন উপায় বের করতে হবে। একান্তে বসে বিশেষ ভাবে উপার্জন করতে হবে।
২. সতোপ্রধান হওয়ার আন্তরিক ইচ্ছা থাকতে হবে। গাফিলতি করা কিংবা অহংকারের বশীভূত হওয়া উচিত নয়। সার্ভিসের শখ থাকতে হবে এবং তার সাথে স্মরণের যাত্রাতেও থাকতে হবে।
বরদান:-
বুদ্ধিকে আমিত্বের চক্রব্যূহ থেকে বের করে সকল বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত হয়ে অলিপ্ত এবং ট্রাস্টি ভব
যদি বুদ্ধিতে কোনো প্রকারের বিভ্রান্তি উৎপন্ন হয়, তাহলে বুঝতে হবে যে কোনো না কোনো আমিত্ব ভাব রয়েছে। যেখানেই আমিত্বের ছোঁয়া আছে, সেখানেই বুদ্ধি চক্রব্যূহে ফেঁসে যাবে। যদি একজন গৃহী রূপে চিন্তা-ভাবনা করা হয়, তবে ভুল হয়ে যায়। তাই একেবারে অলিপ্ত এবং ট্রাস্টি হয়ে যাও। আমার নাম খারাপ হবে, আমার নিন্দা হবে - এইরকম আমিত্বের বিষয় নিয়ে চিন্তা করাটাই হল বিভ্রান্ত হওয়া। এরপর যতই সমাধান করতে চাইবে, ততই বিভ্রান্ত হয়ে যাবে। তাই ট্রাস্টি হয়ে এইসকল বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত হয়ে যাও। ভগবানের সন্তান কখনো বিভ্রান্ত হতে পারে না।
স্লোগান:-
তোমরা হলে শ্রেষ্ঠ (বড়) পিতার সন্তান, তাই না কখনো মনকে ছোট (হতাশ) করবে, না কখনো ছোট-ছোট বিষয়ে ঘাবড়াবে।