08.10.2019 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - সত্য বাবার সাথে সত্য থাকো, সততার চার্ট রাখো, জ্ঞানের অহংকার ছেড়ে স্মরণে থাকার সম্পূর্ণ পুরুষার্থ করো।"

প্রশ্নঃ -
মহাবীর বাচ্চাদের প্রধান লক্ষণ কি রকম হবে ?

উত্তরঃ -
মহাবীর বাচ্চা তারাই হবে, যাদের বুদ্ধিতে নিরন্তর বাবার স্মরণ থাকবে। মহাবীর মানে শক্তিমান। মহাবীর সে, যে নিরন্তর খুশিতে থাকে, যে আত্ম-অভিমানী থাকে, একটুখানিও দেহের অহংকার থাকবে না। এইরকম মহাবীর বাচ্চাদের বুদ্ধিতে থাকে যে, আমি হলাম আত্মা, বাবা আমাকে পড়াচ্ছেন।

ওম্ শান্তি ।
আত্মিক বাবা আত্মিক বাচ্চাদেরকে জিজ্ঞাসা করছেন - নিজেকে আত্মা মনে করে বসে আছো ? কেননা বাবা জানেন যে এটা একটু কঠিন কাজ ? এতেই পরিশ্রম আছে। যে আত্ম-অভিমানী হয়ে বসে আছে, তাকেই মহাবীর বলা হয়। যে নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করে - তাকেই মহাবীর বলা হয়। সবসময় নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে থাকো যে, আমি আত্মাভিমানী হয়েছি ? স্মরণের যাত্রাতেই মহাবীর হয়, অর্থাৎ পরম হয়। আর যে সমস্ত ধর্মাত্মারা আসেন, তারা এত পরম হন না। তারা তো আসেনই দেরিতে। তোমরা নম্বরের ক্রমানুসারে পরম তৈরি হও। পরম অর্থাৎ শক্তিমান বা মহাবীর। তাহলে নিজের মধ্যেই এতো খুশি হয় কি যে, আমি আত্মা। আমাদের সকল আত্মাদের বাবা, এখন আমাদেরকে পড়াচ্ছেন। এটাও বাবা জানেন যে, কোনো কোনো আত্মা ২৫ শতাংশ চার্ট দেখায়, কেউ কেউ আবার ১০০ শতাংশ দেখায়। কেউ বলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আধঘন্টা স্মরণ থাকে, তাহলে কত শতাংশ হলো ? নিজেকে খুব সাবধানে রাখতে হবে। ধীরে ধীরে মহাবীর হতে হবে। হঠাৎ করে হতে পারবে না, পরিশ্রম আছে। তারা, যারা ব্রহ্মজ্ঞানী, তত্ত্বজ্ঞানী, এইরকম ভেবোনা যে তারা নিজেদেরকে আত্মা মনে করে। তারা তো ব্রহ্মলোককেই পরমাত্মা মনে করে আর নিজেকে বলে "অহম্ ব্রহ্মাস্মি" অর্থাৎ "আমিই ব্রহ্ম"। এখন ঘরের সঙ্গে কি যোগ যুক্ত হওয়া যায় ! এখন তোমরা বাচ্চারা নিজেকে আত্মা মনে করো। নিজেদের এই চার্ট দেখতে থাকো - ২৪ ঘন্টার মধ্যে আমি কতটা সময় নিজেকে আত্মা মনে করছি? এখন তোমরা বাচ্চারা জেনে গেছো যে, আমরা ঈশ্বরীয় সেবায় নিযুক্ত আছি, অন গডলি সার্ভিস (On Godly Service) । এটাই সবাইকে বলতে হবে যে, বাবা শুধু বলেন - 'মন্মনা ভব' অর্থাৎ নিজেকে আত্মা মনে করে আমাকে স্মরণ করো। এটাই হচ্ছে তোমাদের সেবা। যত যত তুমি সেবা করবে, ততই ফল প্রাপ্তি হবে। এটাই ভালভাবে বুঝতে হবে। ভালো ভালো মহারথী বাচ্চারাও এই কথাটি পুরোপুরি বুঝতে পারেনা। এটার জন্য অনেক পরিশ্রম লাগে। পরিশ্রম বিনা ফল প্রাপ্ত হয় কি! বাবা দেখছেন, কোনো কোনো বাচ্চা চার্ট তৈরি করে পাঠিয়ে দেয়, কারোর চার্ট-ই তো এখানে এসে পৌঁছায় না। জ্ঞানের অহংকার আছে। স্মরণে বসার পরিশ্রমও পৌছায়না। বাবা বোঝান, মূল বিষয় হলো এই স্মরণের যাত্রা। নিজের উপর খেয়াল রাখতে হবে যে আমার সারাদিনের চার্ট কেমন ছিল? সেটাই নোট করতে হবে। কেউ কেউ আবার বলে চার্ট লেখার সময়ই নেই। মূল কথা তো বাবা বলেন যে, নিজেকে আত্মা মনে করে অল্ফ অর্থাৎ বাবাকে স্মরণ করো। এখানে যতটা সময় বসো তো মাঝে মাঝে হৃদয় দিয়ে নিজেকে জিজ্ঞাসা করো যে, আমি কতটা সময় স্মরণে বসে আছি ? এইখানে যখনই বসো তখন তোমাদের স্মরণের যাত্রাতে থাকতে হবে আর স্বদর্শন চক্র ফেরাতে হবে, এতে কোনো অসুবিধা নেই। আমাকে বাবার কাছে অবশ্যই যেতে হবে। পবিত্র সতোপ্রধান হয়েই যেতে হবে। এই কথাটি ভালোভাবে বুঝতে হবে। কেউ তো আবার খুব তাড়াতাড়ি ভুলে যায়। নিজের সঠিক চার্ট বলে না, এরকমও অনেক মহারথী আছে। সত্য তো কখনো বলে না। আধাকল্প মিথ্যার দুনিয়ায় থেকে, মিথ্যা যেন অন্তরে জমা হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে যারা সাধারণ আত্মা থাকে, তারা খুব তাড়াতাড়ি চার্ট লেখে। বাবা বলেন - *তোমরা কেবলমাত্র স্মরণের যাত্রাতেই পাপকে ভস্ম করে পবিত্র হতে পারবে ।* কেবলমাত্র জ্ঞান থাকলেই, পবিত্র হতে পারবে না। এতে লাভ কি আছে ? আমাকে আহ্বান করেছিলে তো, পবিত্র হওয়ার জন্য। তার জন্য চাই স্মরণ। প্রত্যেককে সততার সঙ্গে নিজেদের চার্ট বলতে হবে। এখানে তুমি যদি পৌনে ঘন্টা বসো, তাহলে দেখতে হবে এই পৌনে ঘন্টার মধ্যে আমি কতটা সময় নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করেছি ? কারো তো আবার সত্য বলতে লজ্জা আসে। বাবাকে সত্য কথা বলে না। তারা সমাচার দেবে এই সেবার, এতো জনকে বুঝিয়েছি, এটা করেছি। কিন্তু সত্য চার্ট লেখে না। বাবা বলেন, স্মরণের যাত্রাতে না থাকার কারণেই তোমাদের দ্বারা কাউকে কোনো তীর লাগে না। জ্ঞান তলোয়ারে বিষ লাগাও নি। জ্ঞান তো শোনাও, বাকি যোগের তীরও লেগে যায়, এটা খুবই মুশকিল বিষয়। বাবা তো বলেন, পৌনে ঘন্টার মধ্যে পাঁচ মিনিটও স্মরণের যাত্রায় থাকো না। তারা বোঝেই না যে কিভাবে নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করতে হয়। কেউ কেউ তো আবার বলে আমি নিরন্তর স্মরণে থাকি। বাবা বলেন, এই অবস্থা এখন হওয়ার নয়। যদি তুমি নিরন্তর স্মরণে থাকো, তাহলে কর্মাতীত অবস্থায় এসে যাবে। জ্ঞানের পরাকাষ্ঠা হয়ে যাবে। একটু বোঝালেই তীর লেগে যাবে। পরিশ্রম আছে না। বিশ্বের মালিক হওয়া কি সহজ বিষয়? মায়া তোমাদের বুদ্ধির যোগ কোথায় কোথায় নিয়ে যায়। মিত্র-সম্বন্ধী আদি স্মরণ আসতেই থাকবে। কারোর যদি বিদেশ যাওয়ার প্রোগ্রাম থাকে, তাহলে সব মিত্র-সম্বন্ধী, স্টিমার, এরোপ্লেন আদি স্মরণে আসতেই থাকে। বিদেশ যাওয়ার যে প্র্যাকটিক্যাল ইচ্ছা আছে, সেটাই আকৃষ্ট করতে থাকে। বুদ্ধির যোগ একদম ভেঙে যাবে। অন্য কোনো দিকে যেন বুদ্ধি না যায়, এটাই হল সব থেকে বড় পরিশ্রমের কথা। শুধুমাত্র এক বাবাই স্মরণে থাকে। এই দেহও যেন স্মরণে না আসে। এই অবস্থা তোমাদের অন্তিম সময়ে হবে।

দিন-দিন স্মরণের যাত্রাকে বৃদ্ধি করতে থাকো, এতে তোমাদেরই কল্যাণ হবে। যত যত স্মরণে থাকবে ততই তোমাদের উপার্জন হতে থাকবে। যদি শরীর ছেড়ে যায়, তবে এই উপার্জন তো আর করতে পারবে না। কোথাও ছোট বাচ্চা হয়ে জন্মগ্রহণ করবে। তাহলে উপার্জন কি করে করবে। হয়তো আত্মা এই সংস্কার নিয়ে যাবে কিন্তু শিক্ষক তো পুনরায় স্মৃতি উদঘাটন করতে চান না। বাবা-ই আমাদের স্মৃতি দেন। বাবাকে স্মরণ করো - এটা তোমরা ছাড়া আর কারোরই জানা নেই যে, বাবাকে স্মরণ করলেই পবিত্র হবে। তারা তো গঙ্গা স্নানকেই শ্রেষ্ঠ মনে করে। এজন্য গঙ্গা স্নান করতে থাকে। ব্রহ্মাবাবা তো এইসব কথার অনুভবী আছেন, তাই না ! উনিও তো অনেক গুরু করেছিলেন। নদীতে স্নান ইত্যাদি করতে যেতেন। এখানে তোমাদের স্নান হয় স্মরণে যাত্রাতে। বাবার স্মরণ ছাড়া তোমাদের আত্মা পবিত্র হতেই পারবেনা। এটার নামই হলো যোগ অর্থাৎ স্মরণের যাত্রা। জ্ঞানকে স্নান মনে করো না। যোগের স্নান হয়। জ্ঞান তো হল পড়াশোনা, যোগেরই স্নান হয়, যার দ্বারা পাপ মুক্ত হওয়া যায়। জ্ঞান আর যোগ দুটো আলাদা জিনিস। স্মরণের যাত্রাতেই জন্ম-জন্মান্তরের পাপ ভষ্মীভূত হয়ে যায়। বাবা বলেন এই স্মরণের যাত্রাতেই তোমরা পবিত্র হয়ে সতোপ্রধান হয়ে যাবে। বাবা তো খুব ভালো রীতিতে বোঝান, মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা - এই কথাগুলিকে ভালো করে বোঝো। এগুলো ভুলে যেওনা। স্মরণের যাত্রাতেই জন্ম-জন্মান্তরের পাপ মুক্ত হবে, বাকি জ্ঞান তো হলো উপার্জন। স্মরণ আর পড়াশোনা দুটো আলাদা জিনিস। জ্ঞান আর বিজ্ঞান - জ্ঞান মানে পড়াশোনা আর বিজ্ঞান হল যোগ অথবা স্মরণ। কোনটা শ্রেষ্ঠ - জ্ঞান না যোগ ? স্মরণে যাত্রা অনেক বড়। এতেই পরিশ্রম করতে হয়। স্বর্গে তো সবাই যাবে। সত্যযুগ হলো স্বর্গ, ত্রেতা হলো সেমি স্বর্গ। সেখানে তো এই পড়াশোনার মান অনুসারে গিয়ে বিরাজমান হবে। বাকি মুখ্য হল স্মরণের কথা। প্রদর্শনী বা মিউজিয়াম আদিতে তোমরা জ্ঞানের-কথা বোঝাও। যোগ তো বোঝাও না। শুধু এতটাই বল যে, নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো। বাকি জ্ঞান তো অনেক-ই শোনাও। বাবা বলেন প্রথমে এই কথাই বোঝাও যে, নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো। এই জ্ঞান দেওয়ার জন্যই তোমরা এতো চিত্র আদি তৈরি করো। যোগের জন্য কোন চিত্রের দরকার হয় না। চিত্রসব জ্ঞান বোঝানোর জন্যই প্রয়োজন হয়। নিজেকে আত্মা মনে করলে দেহ অহংকার একদম চলে যায়। জ্ঞান বোঝানোর জন্য তো অবশ্যই মুখের প্রয়োজন হয়। যোগের জন্য তো একটাই কথা - নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করতে হবে। পড়াশোনার জন্য তো দেহের প্রয়োজন হয়। শরীর ছাড়া কিভাবে পড়বে বা পড়াবে।

পতিত-পাবন বাবা, তাই তাঁর সাথে যোগ লাগাতে হয়। কিন্তু এটাই কেউ জানে না। বাবা নিজে এসে শেখান, মানুষ মানুষকে কখনো শেখাতে পারে না। বাবাই বলেন - আমাকে স্মরণ করো, এটাকেই বলা হয় পরমাত্মার জ্ঞান। পরমাত্মা-ই জ্ঞানের সাগর। এটাই বোঝার বিষয়। সবাইকে এটাই বলো যে, অসীম জগতের বাবাকে স্মরণ করো। এই বাবা-ই নতুন দুনিয়া স্থাপন করেন। তারা তো জানেই না যে নতুন দুনিয়া স্থাপন হচ্ছে, যার জন্যে ভগবানকে স্মরণ করবে। তারা তো এই বিষয়ে কিছুই জানে না, তাহলে খেয়াল করবে কি করে। এটাও তোমরা জানো যে, পরমপিতা পরমাত্মা শিব ভগবান এক জন-ই আছেন। তারা বলে যে - 'ব্রহ্মা দেবতায় নমঃ' আবার শেষে বলে -'শিব পরমাত্মায় নমঃ'। এই বাবা হলেন উঁচুর থেকে উঁচু। কিন্তু তিনি কেমন দেখতে, এটাও তারা জানে না। যদি পাথর, নুড়ি-কাকরের মধ্যেই হয় তাহলে নমস্কার কাকে জানায়। বিনা অর্থেই তারা বলতে থাকে। এখানে তো তোমাদেরকে আওয়াজ থেকে অনেক দূরে যেতে হবে অর্থাৎ নির্বাণধাম, শান্তিধামে যেতে হবে। শান্তিধাম, সুখধাম বলা হয়ে থাকে। সেটাই হচ্ছে স্বর্গ ধাম। নরককে ধাম বলা হয় না। এটা খুবই সহজ বিষয়। খ্রিস্টান ধর্ম কত দিন চলবে ? এটাও তাদের জানা নেই। বলতে থাকে যিশুখ্রিস্টের জন্মের তিন হাজার বছর আগে এই ভারত স্বর্গোদ্যান ছিল অর্থাৎ দেবী দেবতাদের রাজ্য ছিল তারপর আবার দুই হাজার বছর খ্রিস্টানদের হলো, এখন পুনরায় দেবী দেবতা ধর্ম হওয়া উচিত। মানুষের বুদ্ধি কিছু কাজ করে না। ড্রামার রহস্যকে না জানার কারণে কতইনা প্ল্যান তৈরি করতে থাকে। এইসব কথা বৃদ্ধা মায়েরা তো বুঝতে পারবে না। বাবা বোঝান - এখন তোমাদের সকলের বানপ্রস্থ অবস্থা। বাণী থেকে দূরে যেতে হবে। তারা বলে যে নির্বাণধামে গমন করেছে কিন্তু যেতে কেউই পারেনা। পুনর্জন্ম অবশ্যই নিতে হয়। ফিরে যেতে কেউই পারবে না। বাণপ্রস্থে যাওয়ার জন্য গুরুদের সঙ্গ করতে হয়। অনেক বানপ্রস্থ আশ্রম আছে। মাতাও অনেক আছে। সেখানেও তোমরা সেবা করতে পারো। বাণপ্রস্থ-র অর্থ কি, সেটা তোমাদেরকে বাবা বসে বোঝাচ্ছেন। এখন তোমরা সবাই বানপ্রস্থ হয়েছো। সমগ্র দুনিয়া বানপ্রস্থী। যে মানুষমাত্রকেই দেখো না কেন, সবাই বাণপ্রস্থী। সকলের সদ্গতি দাতা একই সদ্গুরু আছেন। সবাইকে ফিরে যেতেই হবে। যে ভালোভাবে পুরুষার্থ করবে সেই উঁচু পদ পাবে। এটাকে বলাই হয় - ভাগ্য নির্ধারণের সময়। অন্তিম সময়ের (কেয়ামত-এর) অর্থ মানুষ বোঝে না। তোমাদের বাচ্চাদের মধ্যেও নাম্বারের ক্রমানুসারে বোঝে। বড় উঁচু গন্তব্য স্থল। সবাইকে বোঝাতে হবে - এখন আমাদের ঘরে ফিরে যেতে হবে। আত্মাদেরকে শব্দের দুনিয়া থেকে দূরে যেতে হবে। পুনরায় এই অভিনয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটবে। কিন্তু বাবাকে স্মরণ করতে করতে গেলে উঁচু পদ পাবে। দিব্য গুণও ধারণ করতে হবে। কোনো খারাপ কাজ যেমন চুরি আদি করা যাবে না। তোমরা পূণ্যাত্মা হবে এই যোগের মাধ্যমে, জ্ঞানের দ্বারা নয়। আত্মা পবিত্র চাই। শান্তিধামে পবিত্র আত্মারাই যেতে পারবে। সমস্ত আত্মারাই সেখানে থাকে। এখন তারা সেখান থেকে নেমে আসছে। এখন অবশিষ্ট যারা থাকবে তারাও এখানে নেমে আসবে।

বাচ্চারা, তোমাদেরকে সব সময় স্মরণের যাত্রায় থাকতে হবে। এখানে তোমরা খুব ভালো সহায়তা পাবে। একে অপরের শক্তি প্রাপ্ত করবে। তোমরা সংখ্যায় খুব কম হলেও তোমাদের সেই শক্তিই কাজে আসে। গোবর্ধন পাহাড়কে দেখানো হয়েছে না আঙুলের ওপর উঠিয়েছে। তোমরা হলে গোপ-গোপিকা, তাই না? সত্যযুগের দেবী-দেবতাদের গোপ-গোপিকা বলা হয় না। আঙ্গুল তোমরাই দাও। লৌহ যুগকে স্বর্ণীম যুগে বা নরককে স্বর্গ বানানোর জন্য তোমরা এক বাবার সাথে বুদ্ধি যোগ লাগাও। যোগের দ্বারাই পবিত্র হতে হবে। এই কথাকে ভুলে যেওনা। এই শক্তি তোমাদের এখানেই প্রাপ্ত হয়। বাইরে তো আসুরি মানুষদের সঙ্গে থাকতে হয়। সেখানে স্মরণে থাকা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। এতটা অচল তোমরা সেখানে থাকতে পারবে না। সংগঠন চাই, তাই না। এখানে সবাই একরস স্থিতিতে একসাথে বসো, তাই সাহায্যপ্রাপ্ত হয়। এখানে ব্যবসা-বানিজ্য, কাজকর্ম ইত্যাদি কিছুই থাকে না। বুদ্ধি কোথায় যাবে ! বাইরে থাকলে ধান্ধা ঘর আদি আকৃষ্ট করবে অবশ্যই। এখানে তো কিছুই নেই। এখানকার বায়ুমণ্ডল খুবই শুদ্ধ প্রকৃতির হয়। ড্রামা অনুসারে কত দূরে পাহাড়ের উপরে এসে তোমরা বসে আছো। স্মরণিকও তোমাদের সামনে একেবারে যথাযথ ভাবে রয়েছে (দিলওয়ারা মন্দির) । উপরে স্বর্গ দেখানো হয়েছে। না হলে কোথায় বানাবে। তাই বাবা বলেন যে, এখানে এসে বসো, নিজেকে সচেতন রাখো যে, আমি বাবার স্মরণে আছি ? স্বদর্শন চক্র ঘোরাতে থাকো। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) নিজের স্মরণের চার্টের ওপর পুরোপুরি নজর রাখতে হবে, দেখতে হবে আমি বাবাকে কতক্ষণ স্মরণ করছি। স্মরণের সময় বুদ্ধি কোথায় কোথায় ছুটে বেড়াচ্ছে?

২ ) এই অন্তিম সময়ে শব্দের দুনিয়া থেকে অনেক উপরে গিয়ে পুরুষার্থ করতে হবে। বাবাকে স্মরণের সাথে সাথে দিব্যগুন অবশ্যই ধারণ করতে হবে। কোনো খারাপ কাজ চুরি আদি করা যাবে না।

বরদান:-
সদা সর্ব প্রাপ্তি দিয়ে ভরপুর থেকে হর্ষিত মুখ, হর্ষিত চিত্ত ভব।

ব্যাখ্যা -যখন কোন দেবী বা দেবতার মূর্তি তৈরি করা হয়, তখন তার চেহারা সদা হর্ষিত দেখানো হয়। তাই তোমাদের এই সময়ের হর্ষিত মুখে থাকার স্মরণাগার চিত্রতেও দেখানো হয়েছে। হর্ষিত মুখ অর্থাৎ সদা সর্ব প্রাপ্তি দিয়ে ভরপুর। যে ভরপুর থাকে সেই হর্ষিত থাকে। আর যদি কোনো অপ্রাপ্তি থেকে থাকে তাহলে হর্ষিত থাকতে পারবে না। কেউ যতই হর্ষিত থাকার চেষ্টা করুক না কেন, বাইরে থেকে হাসবে কিন্তু হৃদয় থেকে নয়। তোমরা তো হৃদয় দিয়ে হাসতে থাকো, কেননা তোমরা সর্ব প্রাপ্তি দিয়ে ভরপুর হর্ষিত চিত্ত আছো।

স্লোগান:-
সম্মানের সঙ্গে পাস করার জন্য প্রত্যেক খাজানার জমার খাতা ভরপুর করো।