05.12.2019
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
নিজের লক্ষ্য আর লক্ষ্যদাতা বাবাকে যদি স্মরণ করো তবে দৈবী গুণ এসে যাবে, কাউকে
দুঃখ দেওয়া, গ্লানি করা, এই সব হলো আসুরী লক্ষণ"
প্রশ্নঃ -
বাবার তোমাদের
অর্থাৎ বাচ্চাদের সাথে সর্বাধিক ভালোবাসা আছে, এর চিহ্ন কি ?
উত্তরঃ -
বাবার থেকে যে
মিষ্টি-মিষ্টি শিক্ষা পাওয়া যায়, সেই শিক্ষা প্রদান করাই তাঁর সর্বোচ্চ ভালোবাসার
লক্ষণ। বাবার প্রথম শিক্ষা হলো- মিষ্টি বাচ্চারা, শ্রীমৎ ব্যতীত কোনো উল্টো-পাল্টা
কাজ কোরো না। দ্বিতীয়তঃ তোমরা হলে স্টুডেন্ট, তোমাদের নিজের হাতে কখনো ল' বা আইন
তুলে নিতে নেই। সর্বদা তোমাদের মুখ থেকে যেন রত্নই নির্গত হয়, পাথর নয় ।
ওম্ শান্তি ।
বাবা বসে
বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন । এখন এদের অর্থাৎ লক্ষ্মী-নারায়ণকে তো বেশ ভালোই দেখতে পাচ্ছো।
এটা হলো এইম অবজেক্ট (লক্ষ্য বস্তু) অর্থাৎ তোমরা এই কুলের (ঘরানার) ছিলে। কতো
রাত-দিনের পার্থক্য, সেইজন্য বারংবার এদের দেখতে হবে। আমাকে এরকম হতে হবে। এদের
মহিমা তো ভালো করেই জানো। এটা পকেটে রাখলেই তোমরা খুশী হবে। তোমাদের মধ্যে যে
দ্বন্দ্ব আসে সেটা ঠিক না, একে দেহ-অভিমান বলা হয়। দেহী-অভিমানী হয়ে এই
লক্ষ্মী-নারায়ণকে দেখলে তবে বুঝবে আমরা এরকম হতে চলেছি, তাই অবশ্যই এদের দেখতে হবে।
বাবা মনে করেন তোমাদের এরকম হতে হবে। "মধ্যাজী ভব", এনাদের দেখো, স্মরণ করো।
দৃষ্টান্তও দেওয়া হয় না- নিজেকে মনে করলো আমি মোষ, তো সে নিজেকে মোষ মনে করতে লাগল।
তোমরা জানো যে, এটা আমাদের এইম অবজেক্ট। এরকম হতে হবে। কীভাবে হবে ? বাবাকে স্মরণ
করে। প্রত্যেকে নিজেকে জিজ্ঞাসা করো- প্রথম থেকেই কি আমরা এদের দেখে বাবাকে স্মরণ
করছি ? এটা তো তোমরা বুঝতে পারো যে বাবা আমাদের দেবতা করে তুলছেন। তাই তাঁকে যতটা
সম্ভব স্মরণ করা উচিত। বাবা এটাও বলেন যে নিরন্তর স্মরণ হয় না। কিন্তু পুরুষার্থ (চেষ্টা
করে যেতে হবে) করতে হবে। *যদিও ঘর গৃহস্থালির কর্ম করার সময় এদের অর্থাৎ
লক্ষ্মী-নারায়ণকে স্মরণ করলে তবে অবশ্যই বাবা স্মরণে আসবে। বাবাকে স্মরণ করলে তো
অবশ্যই এদের স্মরণে আসবে। আমাদের এরকম হতে হবে। সারাদিন এই সুরই বাজবে*। আবার একে
অপরের গ্লানি কখনো কোরো না। এ এইরকম, অমুকের এরকম...যারা এই ব্যাপারে লিপ্ত হয় তারা
কখনো উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে পারে না। এরকমই থেকে যায়। কতো সহজ করে বোঝানো হয়। এদের
স্মরণ করো, বাবাকে স্মরণ করো, তবে তোমরা এরকম হবেই। এখানে তো তোমরা সামনে বসে আছো,
সকলের ঘরেই এই লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্র অবশ্যই থাকা চাই। কতো অ্যাকুউরেট চিত্র।
এদের স্মরণ করলে বাবাও স্মরণে আসবে। সারাদিন অন্য কথার পরিবর্তে এটাই শুনতে থাকো।
অমুকে এরকম, এটা এরকম...কারোর নিন্দা করা- একে দ্বন্দ্ব বলা হয়। তোমাদের নিজেদের
দৈবী বুদ্ধি তৈরী করতে হবে। কাউকে দুঃখ দেওয়া, গ্লানি করা বিরক্ত করা, এমন স্বভাব
থাকা উচিত নয় । অর্ধ-কল্প তো এসবের মধ্যেই ছিলে। এখন তোমাদের কতো মিষ্টি শিক্ষা
প্রাপ্ত হচ্ছে, এর থেকে উচ্চ কোনো ভালোবাসা হতে পারে না। শ্রীমত ব্যতীত কোনো
উল্টো-পাল্টা কাজ করতে নেই। বাবা ধ্যানের ব্যাপারেও বলেন যে, শুধুমাত্র ভোগ নিবেদন
করে এসো। বাবা তো এটা বলেন না যে, বৈকুন্ঠে যাও, রাস-বিলাস ইত্যাদি করো। দ্বিতীয়
কোথাও গেলে তো বুঝবে সেখানে মায়ার প্রবেশ ঘটেছে। মায়ার এক নম্বর কর্তব্য হলো পতিত
করা। ব্যতিক্রমী চললে অনেক লোকসান হয়। আবার এও হতে পারে যে কড়া সাজা পেতে হলো, যদি
নিজেকে সামলাতে পারো তবে। বাবার সাথে ধর্মরাজও আছেন। ওনার কাছে অসীম জগতের
হিসাব-কিতাব থাকে। রাবণের জেলে কতো বছর শাস্তি পেয়েছে। এই দুনিয়ায় অপার দুঃখ আছে।
বাবা এখন বলেন আর সব কথা ভুলে এক বাবাকে স্মরণ করো আর সমস্ত দ্বন্দ্ব ভিতর থেকে ঝেড়ে
ফেলো। বিকারে কে নিয়ে যায়? মায়ার ভূত। তোমাদের এম অবজেক্ট হলই এটা। রাজযোগ যে।
বাবাকে স্মরণ করলে এই উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবে। তাই এই ধান্ধায় নেমে পড়তে হবে।
সমস্ত আবর্জনা ভিতর থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। মায়ার ছায়াও খুব কড়া। কিন্তু সেটাকে
ওড়াতে থাকো। যতটা সম্ভব স্মরণের যাত্রায় থাকতে হবে। এখন তো নিরন্তর স্মরণ হবে না।
সব শেষে নিরন্তর (স্মরণ) পর্যন্ত পৌঁছালে, তবেই উচ্চ পদ প্রাপ্ত হবে। যদি ভিতরে
দ্বন্দ্ব বা মন্দ ভাবনা থাকে, তবে উচ্চ পদ প্রাপ্ত হতে পারে না। মায়ার বশীভূত
হয়েই পরাজিত হয়।
বাবা বোঝান- বাচ্চারা, নোংরা কাজ করে পরাজিত হয়ো না। নিন্দা ইত্যাদি করলে তো
তোমাদের খুবই খারাপ গতি হয়। এখন সদ্গতি হচ্ছে, তাই খারাপ কর্ম করো না। বাবা দেখেন
যে মায়া গলা পর্যন্ত গ্রাস করে নিয়েছে। জানতেও পারা যায়নি। নিজেরা মনে করে যে আমরা
খুব ভালো আচার-আচরণ করি, কিন্তু না। বাবা বোঝান- মনসা, বাচা, কর্মে মুখ থেকে রত্নই
নির্গত হওয়া উচিত। নোংরা কথা বলা হলো পাথর ছোড়ার সমান। তোমরা এখন পাথর থেকে দিব্য
গুণ সম্পন্ন হচ্ছো, তাই মুখ থেকে কখনো পাথর নির্গত হওয়া উচিত নয় । বাবাকে তো বোঝাতে
হয়। বাচ্চাদের বোঝানোর অধিকার বাবার আছে। এমন নয় যে, ভাই-ভাই-কে সাবধান করবে।
টিচারের কাজ হলো শিক্ষা দেওয়া। তারা সবকিছুই বলতে পারে। স্টুডেন্টদের নিজের হাতে
আইন নিতে নেই। তোমরা হলে স্টুডেন্ট, তাই না। বাবা বোঝাতে পারেন, যাই হোক, বাচ্চাদের
কাছে তো বাবার ডায়রেক্শন আছে এক বাবাকে স্মরণ করো। তোমাদের সৌভাগ্য এখন বিস্তৃত।
শ্রীমতে না চললে তোমাদের ভাগ্য খারাপ হয়ে যাবে, তখন খুব অনুতাপ হবে। বাবার শ্রীমতে
না চলার ফলে এক তো শাস্তি পেতে হবে, দ্বিতীয় হলো পদ ভ্রষ্ট হতে হবে। জন্ম-জন্মান্তর,
কল্প-কল্পান্তরের বাজী। বাবা এসে পড়ান, সেটা বুদ্ধিতে রাখতে হবে- বাবা আমাদের
টিচার, যার থেকে এই নলেজ প্রাপ্ত হয় যে নিজেকে আত্মা মনে করো। আত্মা আর পরমাত্মার
মেলা বলা হয়, তাই না! ৫ হাজার বছর পরে মিলিত হবে, এর মধ্যে যত উত্তরাধিকার নিতে চাও
নিতে পারো। নইলে পরে খুব-খুব অনুশোচনা করবে, কাঁদবে। সব সাক্ষাৎকার হয়ে যাবে। স্কুলে
বাচ্চারা অন্য শ্রেণীতে ট্রান্সফার হলে পিছন দিকে বসে যারা তাদের তো সবাই দেখে।
এখানেও ট্রান্সফার হয়। তোমরা জানো এখানে শরীর ত্যাগ করে এরপর সত্যযুগে যাবো-
প্রিন্সের কলেজে ভাষা শিখবো। ওখানের ভাষা তো সকলকে পড়তে পারতে হবে, মাদার
ল্যাংগুয়েজ। অনেকের মধ্যে সম্পূর্ণ জ্ঞান নেই, তবু রেগুলার পড়েও না। এক-দুই বার
মিস করলে অভ্যাস হয়ে যায় মিস্ করার। মায়ার বশীভূত যারা তাদের সাথী করে। শিববাবার
সাথী অল্প, বাকি সব মায়ার সাথী। তোমরা শিববাবার সাথী হলে পরে মায়া সহ্য করতে পারে
না, সেইজন্য খুব সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। ছিঃ ছিঃ নোংরা মানুষদের থেকে খুবই
সাবধানে থাকতে হয়। হংস আর সারস যে না। বাবা আগেরর দিন রাত্রেও শিক্ষা দিয়েছেন,
সারাদিন কারোর না কারোর নিন্দা করা, পরচিন্তন করা একে দৈবীগুণ বলা যায় না। দেবতারা
এমন কাজ করে না। বাবা বলেন বাবা আর উত্তরাধিকারকে স্মরণ করো, তবুও নিন্দা করতে থাকে।
জন্ম-জন্মান্তর তো নিন্দা করে এসেছো। ভিতরে দ্বন্দ্ব থেকেই যায়। এটাও হলো
আভ্যন্তরীণ মারামারি। অকারণে নিজেকে হত্যা করে। অনেকের ক্ষতি করে। অমুকে এরকম, এতে
তোমাদের কি আসে-যায়। সকলের সহায়ক হলেন এক বাবা। এখন তো শ্রীমতে চলতে হবে। মানুষের
মত তো নোংরা করে দেয়। একে অপরের নিন্দা করতে থাকে। গ্লানি করা এটা হলো মায়ার ভূত।
এটা হলো পতিত দুনিয়া। তোমরা বুঝতে পারো যে আমরা এখন পতিত থেকে পবিত্র হচ্ছি। এটা
তো খুবই খারাপ ব্যাপার। বোঝানো হয় আজ থেকে নিজের কান ধরা চাই- কখনো এমন কর্ম করবো
না। যদি কিছু দেখো তো বাবাকে রিপোর্ট করা উচিত। তোমাদের কি আসে-যায় ! তোমরা কেন একে
অপরের নিন্দা করো ! বাবা তো সব কিছুই শোনেন, তাই না ! বাবা কান আর চোখের লোন
নিয়েছেন যে। বাবাও দেখেন তো এই দাদাও দেখেন। কারোর-কারোর আচার-আচরণ, পরিমণ্ডল তো
একদমই বেঠিক। যাদের বাবা থাকে না তাদের পিতৃ পরিচয়হীন(ছোরা) বলা হয়। তারা নিজেদের
বাবাকে চেনেও না, স্মরণও করে না। সংশোধন হওয়ার পরিবর্তে আরো খারাপ হয়ে যায়, ফলে
নিজেরই পদ হারিয়ে ফেলে। শ্রীমতে না চললে তো অনাথ বলা হয়। মা-বাবার শ্রীমতে চলে না।
ত্বমেব মাতাশ্চ পিতা...বন্ধু ইত্যাদিও হয়।
কিন্তু গ্রেট-গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদারই নেই তো মাদার কোথা থেকে হবে, এতটুকুও বুদ্ধি
নেই। মায়া একদম বুদ্ধি ঘুরিয়ে দেয়। অসীম জগতের পিতার আজ্ঞা না মানলে শাস্তি পেতে
হয়। সামান্যতমও সদ্গতি হয় না। বাবা দেখলে তো বলবেন যে না- এর কি খারাপ গতি হবে। এ
তো টগর, আকন্দ ফুল। যে সব কেউই পছন্দ করে না। তাই শোধরাতে হবে, তাই না। নইলে তো
পদভ্রষ্ট হয়ে যাবে। জন্ম-জন্মান্তরের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু দেহ-অভিমানীদের
বুদ্ধিতে বসবেই না। আত্ম-অভিমানীই বাবার প্রতি ভালোবাসা রাখতে পারে। নিজেকে সমর্পন
করা মাসীর বাড়ি যাওয়ার মতো সহজ ব্যাপার নয় । বড়-বড় মানুষ তো নিজেকে সমর্পণ করতে
পারে না। তারা আত্ম-সমর্পনের অর্থও বোঝে না। হৃদয় বিদীর্ণ হয়। আবার অনেক
বন্ধনমুক্তও আছে। সন্তানাদি নেই। বলে - বাবা আপনিই আমার সবকিছু। মুখে এরকম বলে,
কিন্তু সত্যি না। বাবাকেও মিথ্যা বলে দেয়। আত্মোৎসর্গ করলে নিজের সব মোহ সরিয়ে
ফেলতে হয়। এখন তো হলো শেষ সময়, তাই শ্রীমতে চলতে হবে। বিষয় সম্পত্তি ইত্যাদির
প্রতিও মোহ শেষ হবে। অনেকে আছে এরকম বন্ধনমুক্ত। শিববাবাকে আপন করেছে, অ্যাডপ্ট
করেন যে ! ইনি হলেন আমাদের বাবা, টিচার, সদ্গুরু। আমরা ওঁনাকে নিজের করি, ওঁনার
সম্পূর্ণ সম্পত্তি পাওয়ার জন্য। যারা বাচ্চা হয়ে গেছে অবশ্যই তারা দৈবী কুলে আসবে।
কিন্তু সেটাতে আবার পদ কতো আছে। কতো দাস-দাসীরা আছে। একে অপরের উপর আদেশ জারি করে।
দাস-দাসীও নম্বর অনুযায়ী হয়। রয়্যাল পরিবারে তো বাইরের দাস-দাসীরা আসবে না। যারা
বাবার হয়েছে, তারা অবশ্যই দৈবী পরিবারের হবে। এরকমও বাচ্চারা আছে যাদের সামান্যতমও
বুদ্ধি নেই। বাবা এমন তো বলেন না যে মাম্মাকে স্মরণ করো বা আমার রথকে স্মরণ করো।
বাবা বলেন একমাত্র আমাকে (মামেকম্) স্মরণ করো। দেহের সব বন্ধনকে ছেড়ে নিজেকে আত্মা
মনে করো। বাবা বোঝান, ভালোবাসা রাখতে চাও তো একের সাথেই রাখো, তবে খেয়া পার হবে।
বাবার ডায়রেক্শনে চলো। মোহজীত রাজার কথাও তো আছে। প্রথম নম্বরে বাচ্চারা, বাচ্চারা
তো বিষয়-সম্পত্তির মালিক হবে। স্ত্রী তো হলো হাফ-পার্টনার, বাচ্চা তো ফুল (সম্পূর্ণ)
মালিক হয়ে যায়। তাই বুদ্ধি সেই দিকেই যায়, বাবাকে ফুল মালিক করলে তো এই সব কিছু
তোমাদের দিয়ে দেবেন। দেওয়া-নেওয়ার ব্যাপারই নেই। এটা তো বোঝার ব্যাপার। যদিও তোমরা
শোনো তো দ্বিতীয় দিন সব ভুলে যাও। বুদ্ধিতে থাকলে তবে তো অপরকেও বোঝাতে পারবে।
বাবাকে স্মরণ করার ফলে তোমরা স্বর্গের মালিক হবে। এ তো খুব সহজ, মুখ চালাতে থাকো।
এইম অবজেক্ট তৈরী করতে থাকো। বিশাল বুদ্ধি সম্পন্ন যারা, তারা তো খুব তাড়াতাড়ি
বুঝে যাবে। শেষে এই চিত্র ইত্যাদি কাজে আসবে। এতে সমগ্র জ্ঞান সমাহিত।
লক্ষ্মী-নারায়ণ আর রাধা-কৃষ্ণর নিজেদের মধ্যে কি সম্বন্ধ ? এটা কেউ জানে না।
লক্ষ্মী-নারায়ণ তো প্রথমে অবশ্যই প্রিন্স হবে। বেগর টু প্রিন্স, তাই না! বেগর টু
কিং বলা হয় না। প্রিন্সের পরেই কিং হয়। এটা তো খুবই সহজ, কিন্তু মায়া কাউকে ধরে
ফেলে, কারোর নিন্দা করা, গ্লানি করা- এসব তো অনেকের অভ্যাস। আর তো কোনো কাজই নেই।
বাবাকেও স্মরণ করে না। একে অপরের গ্লানি করার কাজই করে। এ হলো মায়ার পাঠ। বাবার
পাঠ তো একদমই সহজ। শেষে এই সন্ন্যাসী ইত্যাদি যাবে, বলবে যে জ্ঞান আছে তো এই বি. কে
দের মধ্যে আছে। কুমার-কুমারী তো পবিত্র হয়। প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান । আমাদের
মধ্যে কোনো খারাপ ভাবনাও আসতে নেই। অনেকের এখনো খারাপ ভাবনা আসে, তবে এর শাস্তিও
অনেক কড়া। বাবা তো অনেক বোঝান। যদি তোমাদের কোনো আচরণ খারাপ দেখা যায় তো এখানে
থাকতে পারবে না। অল্প শাস্তিও দিতে হয়, তোমরা যোগ্য নও। বাবাকে ঠকাচ্ছো। তোমরা
বাবাকে স্মরণ করতে পারবে না। সমস্ত অবস্থা নীচে নেমে যায়। অবস্থা নেমে যাওয়াই হলো
শাস্তি। শ্রীমতে না চলার জন্য নিজের পদ ভ্রষ্ট হয়। বাবার ডায়রেক্শনে না চলার জন্য
আরোই ভূতের প্রবেশ ঘটে। বাবার তো কখনো কখনো মনে হয়, কোথাও অনেক বড় কড়া শাস্তি না
শুরু হয়ে যায় এখনই। শাস্তিও অনেক গুপ্ত হয় যে। কখনো খুব বেশী রকম অসুখ না হয়। অনেকে
নীচে নামে, শাস্তি পায়। বাবা তো সব ইশারায় বোঝান। নিজের ভাগ্যের সীমা অনেক টানে,
সেইজন্য বাবা সাবধান করতে থাকেন, এখন গাফিলতি করার সময় নয়, নিজেকে সংশোধন করো। শেষ
মুহূর্ত আসতে কোনো বিলম্ব নেই। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
কোনো ব্যতিক্রমী, শ্রীমতের বিরুদ্ধ আচরণ করতে নেই। নিজেকে নিজেই সংশোধন করতে হবে।
ছিঃ ছিঃ নোংরা মানুষদের থেকে নিজেকে সাবধানে থাকতে হবে।
২ ) বন্ধনমুক্ত হয়ে সম্পূর্ণ রূপে আত্ম-নিবেদন করতে হবে। নিজের মোহ ত্যাগ করতে হবে।
কখনোই কারোর নিন্দা বা পরিচিন্তন করতে নেই। নোংরা খারাপ ভাবনা থেকে নিজেকে মুক্ত
রাখতে হবে।
বরদান:-
স্বরাজ্য অধিকারের নেশা আর দৃঢ় বিশ্বাস দ্বারা সদা শক্তিশালী হতে সক্ষম সহজযোগী,
নিরন্তর যোগী ভব
স্বরাজ্য অধিকারী
অর্থাৎ প্রত্যেক কর্মেন্দ্রীয়ের উপর নিজের রাজত্ব । কখনো সংকল্পেও কর্মেন্দ্রীয়
যেন ধোঁকা না দেয়। কখনো সামান্যতমও দেহ-অভিমান এলে তেজ বা ক্রোধ সহজে এসে যায়,
কিন্তু যে স্বরাজ্য অধিকারী, সে সর্বদা নিরহঙ্কারী। সর্বদাই নির্মাণ হয়ে সেবা করে,
সেইজন্য আমি হলাম স্বরাজ্য অধিকারী আত্মা- এই নেশা আর সুদৃঢ় বিশ্বাস দ্বারা
শক্তিশালী হয়ে মায়াজীত অর্থাৎ জগৎজিৎ হলে পরে সহজযোগী, নিরন্তর যোগী হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
লাইট হাউস হয়ে মন বুদ্ধি দ্বারা লাইট বিস্তার করতে বিজি(ব্যস্ত) থাকো তো কোনো
ব্যাপারে ভয় করবে না।