15-12-2019 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 21-03-85 মধুবন


স্বদর্শন চক্র দ্বারা বিজয় পদকের (চক্রের) প্রাপ্তি
 


আজ বাপদাদা আধ্যাত্মিক সেনাপতি রূপে নিজের আধ্যাত্মিক সেনাদের দেখছেন l তিনি দেখেন, এই আধ্যাত্মিক সেনাতে মহাবীর কারা এবং কি ধরণের অস্ত্র তারা ধারণ করেছে l যেমন জাগতিক অস্ত্রধারী দিনের পর দিন অতি সূক্ষ্ম আর শক্তিসম্পন্ন তীব্রগতির সাধন বানিয়ে চলেছে, ঠিক সেইভাবেই আধ্যাত্মিক সেনা অতি সূক্ষ্ম শক্তিশালী অস্ত্রধারী হয়েছে ? যেভাবে বিনাশকারী আত্মারা একস্থানে বসে বিনাশকারী রেস্ (rays/কিরণ) দ্বারা বিনাশ করার সাধন বানিয়েছে, এমনকি, সেখানে তাদের যাওয়ার প্রয়োজনও হবে না, দূরে বসেই নিশানা লাগাতে পারে, সেই একইভাবে আধ্যাত্মিক সেনা স্থাপনা-কার্য সম্পন্ন করছে ? তারা বিনাশক আর তোমরা স্থাপক l তারা নিশানার প্ল্যান ভাবে আর তোমরা নতুন রচনার আর বিশ্ব পরিবর্তনের প্ল্যান ভাব l স্থাপনাকারী সেনা, এমন তীব্রগতির আধ্যাত্মিক সাধন ধারণ করেছ ? এক স্থানে বসে যেখানে ইচ্ছা স্মরণের রেস্ দ্বারা যে কোনও আত্মাকে টাচ্ করতে পার ? পরিবর্তন শক্তি এত তীব্রগতির সেবা করার জন্য প্রস্তুত আছ ? নলেজের শক্তি দ্বারা এইরকম শক্তিশালী অস্ত্রধারী হয়েছ ? মহাবীর হয়েছ নাকি বীর হয়েছ ? বিজয়-চক্র প্রাপ্ত করেছ ? জাগতিক সেনা পুরস্কার হিসেবে অনেক রকম চক্র প্রাপ্ত করে l সফলতার পুরস্কার রূপে তোমরা বিজয় চক্র প্রাপ্ত করেছ ? বিজয় প্রাপ্তি হয়েই আছে ! এইরকম নিশ্চয় বুদ্ধি মহাবীর আত্মারা বিজয়-চক্রের অধিকারী l

বাপদাদা দেখছিলেন, কে বিজয়-চক্র প্রাপ্ত করেছে l স্ব-দর্শন চক্র দ্বারা তোমরা বিজয়-চক্র প্রাপ্ত কর l তাহলে, সবাই অস্ত্রধারী হয়েছ, তাই না ! এই আধ্যাত্মিক অস্ত্রের স্মারকচিহ্ন স্থূল রূপে তোমাদের স্মরণিক হিসেবে ছবিতে দেখিয়েছে l দেবীদের চিত্রে তাদের অস্ত্রধারী দেখিয়েছে l বাস্তবে, সব বাচ্চার বাপদাদা দ্বারা একই সময় একরকম নলেজের শক্তি প্রাপ্ত হয় l তিনি তোমাদের কাউকে আলাদা আলাদা নলেজ দেন না, তবুও কেন তোমরা নম্বর অনুক্রমিক হও ? বাপদাদা কখনো কি কাউকে আলাদাভাবে পড়িয়েছেন ? একত্রেই তো পাঠ পড়ান, তাই না ! সবাইকে একই পাঠাভ্যাস করান, নাকি কোন গ্রুপকে একরকম পড়ান আর অন্য কাউকে আরেকরকম !

এখানে ৬ মাসের গডলি স্টুডেন্ট হও বা ৫০ বছরের হও, একই ক্লাসে তোমরা বসো l আলাদাভাবে কি বসো ? বাপদাদা একই সময় একই পাঠ সবাইকে একত্রেই পড়ান l যদি কেউ পরে আসেও, যে পড়াশোনা আগেই হয়ে গেছে, সেই পাঠ তোমরা এখনও তাদের পড়িয়ে চলেছ l যে রিভাইস কোর্স চলছে, সেটা তোমরাও পড়ছ, নাকি পুরানোদের কোর্স আলাদা, আর তোমাদের আলাদা ? একই কোর্স, তাই নয় কি ? যারা এখানে ৪০ বছর ধরে আছে তাদের মুরলী থেকে যারা মাত্র ছয় মাস আছে তাদের মুরলী আলাদা তো নয়, তাই না ! একই মুরলী নয় কি ? পাঠের পড়া এক, পড়ান যিনি, তিনি এক, তবুও তোমরা নম্বর অনুক্রমে হও কেন ? নাকি সবাই তোমরা নম্বর ওয়ান ? নম্বর কীভাবে তৈরি হয় ? কারণ পাঠাভ্যাস যদিও বা সবাই করে কিন্তু পাঠের অর্থাৎ জ্ঞানের প্রতিটা বিষয়কে অস্ত্র বা শক্তিরূপে ধারণ করা, আর জ্ঞানের বিষয়কে পয়েন্ট হিসেবে ধারণ করার মধ্যে তারতম্য ঘটে l কেউ শুধুমাত্র শুনে পয়েন্টস্-এর আকারে বুদ্ধিতে ধারণ করে, আর সেই ধারণ করা পয়েন্টস্ খুব ভালোভাবে বর্ণনাও করে l ভাষণ দেওয়া বা কোর্স করানোর ব্যাপারে তোমাদের মেজরিটি দক্ষ l বাপদাদাও বাচ্চাদের ভাষণ দেওয়া আর কোর্স করানো দেখে খুশি হন l কিছু বাচ্চা তো বাপদাদার থেকেও ভালো ভাষণ দেয়, পয়েন্টসের বর্ণনাও করে খুব ভালো l কিন্তু প্রভেদ এটাই, জ্ঞান পয়েন্টসের আকারে ধারণ করা আর জ্ঞানের প্রতিটা পয়েন্টস্ শক্তিরূপে ধারণ করা l উদাহরণস্বরূপ, ড্রামার পয়েন্ট নাও, এটা বিজয় প্রাপ্ত করার অনেক বড় শক্তিশালী অস্ত্র l ড্রামার জ্ঞান-শক্তি যারা প্র্যাকটিক্যাল জীবনে ধারণ করেছে, তারা কখনও চঞ্চল হয় না l সদা একরস অটল অনড় থাকার এবং বানানোর বিশেষ শক্তি ড্রামার এই পয়েন্ট, যারা শক্তিরূপে তা' ধারণ করে তারা কখনও পরাজিত হয় না l কিন্তু যারা শুধু পয়েন্ট হিসেবে ধারণ করে তারা কি করে ? ড্রামার পয়েন্টও বর্ণন করে l তারা চাঞ্চল্যের মধ্যেও আসছে আবার ড্রামার পয়েন্টও বলছে l কখনো কখনো তাদের চোখ থেকে অশ্রুও ঝরতে থাকে, 'জানিনা কি হয়ে গেল ! জানিনা কি এটা !' আর তখনও ড্রামার পয়েন্ট বলে যায় l 'হ্যাঁ, বিজয়ী তো আমাকে হতেই হবে, আমি তো বিজয়ী রত্ন l ড্রামা স্মরণে আছে, কিন্তু জানিনা কি হয়ে গেল l

সুতরাং এটাকে তোমরা কি বলবে ? এটা কি শক্তি রূপে অথবা অস্ত্র রূপে ধারণ করেছ নাকি শুধুই পয়েন্ট হিসেবে ধারণ করেছ ? একইভাবে, আত্মা নিজের ক্ষেত্রেও বলবে, 'আমি শক্তিশালী আত্মা, আমি সর্বশক্তিমানের বচ্চি, কিন্তু এটা অনেক বড় পরিস্থিতি l আমি কখনো ভাবিনি এইরকম ঘটবে l' মাস্টার সর্বশক্তিমান আত্মা হওয়া আর এই উক্তি করার মধ্যে বিস্তর ফারাক l ভালো লাগে তোমাদের ? তাহলে সেটাকে কি বলবে ? সুতরাং আত্মার পাঠ, পরম আত্মার পাঠ, ড্রামার পাঠ, ৮৪ জন্মের পাঠ, কতো পাঠ আছে ? সবগুলো শক্তি অথবা সেই সব অস্ত্র রূপে ধারণ করা অর্থাৎ বিজয়ী হওয়া l শুধু পয়েন্ট হিসেবে ধারণ করলে, কখনো পয়েন্ট কাজ করে, কখনো করে না l তা' সত্ত্বেও তোমরা পয়েন্টের আকারে ধারণ করে, সেবাতে নিজেদের বিজি রেখে পয়েন্টসের বারংবার বর্ণন করার কারণে মায়ার থেকে সেফ থাক l

যতই হোক, যখন কোনরকম পরিস্থিতি বা মায়ার রয়্যাল রূপ তোমাদের সামনে উপস্থিত হয়, তোমরা তখন সদা বিজয়ী হতে অপারগ l একই পয়েন্টগুলো বলতে থাকবে, কিন্তু শক্তি না থাকার কারণে সদা মায়াজিত হতে তোমরা অপারগ l

সুতরাং, বুঝেছ তোমরা, কেন নম্বর অনুক্রমিক হও ? এখন এটা চেক কর, জ্ঞানের প্রতিটা পয়েন্ট শক্তি রূপে, অস্ত্র রূপে ধারণ করেছ কিনা ! শুধুই জ্ঞানবান হয়েছ নাকি শক্তিশালীও হয়েছ ? নলেজফুল হওয়ার সাথে সাথে পাওয়ারফুল হয়েছ তোমরা ? নাকি শুধু নলেজফুল হয়েছ ! যথার্থ নলেজ লাইট আর মাইটের স্বরূপ l সেই রূপে ধারণ করেছ তোমরা ? যদি সময়মতো নলেজ বিজয়ী না বানায়, তাহলে নলেজ শক্তিরূপে তোমরা ধারণ করনি l যদি কোনও যোদ্ধা সঠিক সময়ে অস্ত্র কার্যে প্রয়োগ না করে, তাহলে তাকে কি বলবে ? তাকে কি মহাবীর বলবে তোমরা ? নলেজের শক্তি তোমরা কেন পেয়েছ ? মায়াজিত হওয়ার জন্যই তো পেয়েছ, তাই না ! নাকি সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে পয়েন্ট স্মরণ করবে - 'এটা তো করা উচিত ছিল, এটা তো বিবেচনা করা উচিত ছিল l' অতএব এটা চেক কর । এখন কতদূর পর্যন্ত ফোর্সের কোর্স করেছ ! কোর্স করানোর জন্য সবাই প্রস্তুত হয়েছ তো ! এমন কেউ আছে যে কোর্স করাতে অপারগ ! সবাই করাতে পার আর তোমরা সেটা কর অনেক ভালোবাসার সাথে যত্ন সহকারে l বাপদাদা দেখেন তোমরা খুব ভালোবেসে, নিরলস প্রচেষ্টায়, নিষ্ঠা সহকারে অন্যদের করাও l খুব ভালো প্রোগ্রামস্ কর তোমরা l তন-মন-ধন কার্যকরী কর l তবেই না এত বৃদ্ধি হয়েছে l এ তো তোমরা খুব ভালো কর l যাই হোক, এখন সময়ানুসারে তোমরা তো এটা অতিক্রম (পাস) করেছ l শৈশব সম্পূর্ণ হয়েছে, তাই না ! এখন যুবাবস্থায় আছ, নাকি বাণপ্রস্থে l কতদূর পৌঁছেছ ? এই গ্রুপে নতুনদের মেজরিটি l কিন্তু বিদেশ সেবার এত বছর পূর্ণ হয়েছে, সুতরাং এখন আর শৈশব নয়, এখন যুবাবস্থায় পৌঁছে গেছ l এখন ফোর্সের কোর্স করো আর করাও l

যে কোনো ক্ষেত্রেই, যুবাদের (ইয়ুথ ) অনেক শক্তি আছে l যুবা বয়স অনেক শক্তিশালী, তারা যা চায় করতে পারে, সেইজন্য দেখ আজকালকার গভর্নমেন্টও যুবসমাজকে ভয় পায়, কারণ জাগতিক ক্ষেত্রে ইয়ুথ গ্রুপের বুদ্ধিরও শক্তি আছে আর শারীরিক শক্তিও আছে l যদিও , এখানে ধ্বংসাত্মক কাজকর্ম করার কেউ নেই l সকলেই সৃজনশীল l তারা বলপ্রয়োগ করে, আর এখানে সবাই শান্তস্বরূপ আত্মা l যা কিছু ভ্রষ্ট সেইসব ঠিক করে দেয় l সকলের দুঃখ দূর করে l তারা দুঃখ দেয় আর তোমরা দুঃখ হরণকারী। দুঃখহর্তা, সুখকর্তা l যেমন বাবা, তেমন বাচ্চারা l সদা প্রতিটা সঙ্কল্প, প্রত্যেক আত্মার প্রতি এবং নিজের প্রতি সুখদায়ী, কারণ তোমরা দুঃখের দুনিয়া ছেড়ে দিয়েছ l এখন দুঃখের দুনিয়ায় তোমরা নেই l দুঃখধাম থেকে সঙ্গমযুগে পৌঁছে গেছ l পুরুষোত্তম যুগে বসে আছ l তারা কলিযুগী ইয়ুথ l তোমরা সঙ্গমযুগী ইয়ুথ, সেইজন্য সবসময় নিজের মধ্যে এই নলেজ শক্তিরূপে ধারণ করো আর করাও l নিজে যত ফোর্সের কোর্স করেছ, ততই অন্যদেরও করাবে, নয়তো শুধু পয়েন্টসের কোর্স করাবে l অতএব, এখন আবার একবার কোর্স রিভাইস কর l একেকটা পয়েন্টে কি কি শক্তি আছে, কতটা শক্তি আছে, কোন্ সময় কোন্ শক্তি কি রূপে ইউজ করতে পার, এই ট্রেনিং নিজেকে নিজেই দিতে পার l সুতরাং, এটা চেক কর - আত্মার পয়েন্টরূপী শক্তিশালী অস্ত্র সারাদিনে প্র্যাকটিক্যাল কার্যে প্রয়োগ করেছ ? নিজের ট্রেনিং নিজেই করতে পার, কারণ যে কোনো ক্ষেত্রেই তোমরা নলেজফুল l যদি তোমাদের বলা হয়, আত্মা সম্বন্ধে পয়েন্ট বের করতে, তবে কতো পয়েন্টস্ তোমরা বের করতে পারবে ? অনেক আছে, তাই না ! ভাষণ দেওয়ায় তো তোমরা পটু l কিন্তু প্রতিটা পয়েন্ট দেখ, পরিস্থিতিতে কতদূর পর্যন্ত কার্যতঃ প্রয়োগ করতে সক্ষম ! এটা ভেবনা, 'সাধারণত: আমি ঠিকই থাকি, কিন্তু এমন ঘটনা ঘটে গেছে, পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে যে সেই কারণে এমন ঘটেছে l' অস্ত্র কিসের জন্য ? যখন শত্রু আসে তার জন্য, নাকি শত্রু এসেছে সেইজন্য আমি হেরে গেছি, মায়া এসেছিল, সেই কারণে টালমাটাল হয়ে গেছ l কিন্তু মায়ারূপী শত্রুর জন্যই তো অস্ত্র, তাই না ! শক্তি কি কারণে ধারণ করেছ ? তোমরা শক্তিশালী হয়েছ যাতে সঠিক সময়ে বিজয়ী হতে পার, নয় কি ! সুতরাং, বুঝেছ তোমরা কি করতে হবে তোমাদের ? নিজেদের মধ্যে ভালো করে অন্তরঙ্গভাবে মনখোলা আলাপচারিতা করে যেতে হবে l বাপদাদা সব সমাচার পেয়ে যান l বাপদাদা তো তোমরা সব বাচ্চার এই প্রবল আগ্রহ দেখে খুশি হন, পঠন-পাঠনের প্রতি তোমাদের ভালোবাসা আছে l বাবাকে তোমরা ভালোবাস l সেবার প্রতিও তোমাদের ভালোবাসা আছে কিন্তু কখনো কখনো তোমরা কোমলমতি হয়ে অস্ত্র নামিয়ে দাও l সেই সময় এদেরই ফিল্ম বানিয়ে আবার এদেরই দেখানো উচিত l এটা অল্প সময়ের জন্য হয়, বেশি সময় হয় না, কিন্তু তবুও লাগাতার অর্থাৎ সদা নির্বিঘ্ন থাকা আর বিঘ্ন নির্বিঘ্নের মধ্য দিয়ে চলতে থাকার মধ্যে ফারাক তো আছেই, তাই না ! সূতোতে যত গিঁট পড়ে, ততই সূতো দুর্বল হয়ে যায় l জোড়া লাগে ঠিকই, কিন্তু জোড়া লাগা জিনিস আর সম্পূৰ্ণ বস্তুর মধ্যে ফারাক তো হয়ই, তাই নয় কি ! জোড়া লাগা কোনকিছু তোমাদের ভালো লাগবে ? সুতরাং এই বিঘ্ন এলো আর তোমরা নির্বিঘ্ন হলে, আবার বিঘ্ন আসবে, ঠিক যেমন কোন জিনিস ভেঙে গেল আর তারপরে আবার তা' জুড়ে দেওয়া হলো, সুতরাং জোড়া তো পড়ল, তাই না ! সেইজন্য এর প্রভাব তোমাদের স্থিতির ওপর তো পড়বে !

অনেকে খুব ভালো তীব্র পুরুষার্থী l তারা নলেজফুলও, সার্ভিসেবলও ; তারা বাপদাদা এবং পরিবারের নজরে আছে, কিন্তু যে আত্মা ভাঙে আর জোড়ে, সে সদা শক্তিশালী থাকবে না l তুচ্ছ ব্যাপারেও তাকে পরিশ্রম করতে হবে l কখনো কখনো তারা সদা হালকা, উৎফুল্ল এবং খুশিতে নাচে, কিন্তু এইরকম সদাই নজরে আসবে না l মহারথীদের লিস্টে থাকবে কিন্তু যাদের সংস্কার এইরকম তারা অবশ্যই দুর্বল হয় l এর কারণ কি হতে পারে ? ভাঙা-গড়ার এই সংস্কার ভিতর থেকে তাদের দুর্বল করে দেয় l বাহ্যিকভাবে কোনকিছু হবে না l খুব ভালো প্রতীয়মান হবে। সেইজন্য কখনও এই সংস্কার তৈরি কোরো না l এটা ভেবো না, মায়া এসেছে, তবুও পাশাপাশি তুমি চলছ l কিন্তু এইভাবে চলা, কখনো ভাঙা কখনো জোড়া, এটা কি হচ্ছে ? সদা সম্পূর্ণ থাক, সদা নির্বিঘ্ন থাক, প্রতিনিয়ত প্রসন্ন এবং সুরক্ষিত ছত্রছায়ায় থাক l ওই জীবন আর এই জীবনে তারতম্য তো আছেই না ! সেইজন্য বাপদাদা বলেন, কারও কারও জন্মপত্রিকা একদম স্বচ্ছ, কারও আবার মাঝে মধ্যে দাগ রয়েছে l যদিও বা দাগ মুছে ফেলে, কিন্তু তবুও তো সেই দাগ দৃশ্যগোচর হয়, তাই না ! কোনরকম দাগ হতেই দিও না l সাদা কাগজ আর দাগ মুছে ফেলা কাগজের মধ্যে তোমরা কোনটা পছন্দ করবে ? সাদা কাগজ রাখার আধার খুব সহজ l এই ভেবে ঘাবড়ে যেও না যে এটা তো খুব কঠিন l না ! খুব সহজ, কারণ সময় নিকটবর্তী l সময়েরও বিশেষ বরদান প্রাপ্ত হয়েছে l পরে যে যত পিছনে আসে সময়ানুসারে তার এক্সট্রা লিফ্টের গিফ্ট প্রাপ্ত হয়, আর এখন অব্যক্ত রূপের পার্ট তো সৌভাগ্যশালী (বরদানী) হওয়ার পার্ট l অতএব, সময়েরও সহযোগিতা আছে l অব্যক্ত পার্টের এবং অব্যক্ত সহযোগেরও সহায়তা আছে l সময় এখন ফাস্ট গতির, এরও সহকারিতা আছে l আগে ইনভেনশন তৈরি হতে সময় লাগত l এখন সবকিছু তৈরি হয়ে আছে l তোমরা এখন এমন সময়ে এসে পৌঁছেছ, যখন সবকিছু সঙ্গে সঙ্গে প্রাপ্তি-সাধ্য l এই বরদানও কম নয় l যারা আগে এসেছে তারা মাখন নিষ্কাশন করেছে, তোমরা মাখন খাওয়ার সময়ে এসে পৌঁছেছ l তাহলে তো তোমরা সৌভাগ্যশালী হলে, তাই না ! শুধু সামান্য অ্যাটেনশন রাখ, নয়তো এটা কোনও বড় ব্যাপার নয় l সবরকম সহযোগিতা তোমাদের সাথে আছে l এখন নিমিত্ত মহারথী আত্মাদের দ্বারা তোমরা যতখানি প্রতিপালিত হচ্ছ, সেইরকম পরিপালন প্রথমদিকে যে আত্মারা এসেছিল তারা পায়নি l তোমাদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রে তারা কতো পরিশ্রম করে, টাইম দেয় l প্রথমে জেনারেল লালন-পালন হয়েছে l যতই হোক, তোমরা হারানিধি হয়ে প্রতিপালিত হচ্ছ l লালন-পালনের রিটার্ণও তো দাও, তাই না ! এটা কঠিন নয় l শুধুমাত্র প্রতিটা পয়েন্ট শক্তি রূপে ইউজ করতে অ্যাটেনশন দাও l বুঝেছ ? আচ্ছা !

সদা মহাবীর হয়ে বিজয় ছত্রধারী আত্মারা, যারা সদা জ্ঞানের শক্তি সময়োপযোগী করে তোলে, সদা অটল, অনড়, অখন্ড স্থিতি ধারণ করে, সদা নিজেকে মাস্টার সর্বশক্তিমান অনুভব করে, এইরকম শ্রেষ্ঠ সদা মায়াজিত বিজয়ী বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ এবং নমস্কার l

*দাদীদের সাথে -* অনন্য রত্নদের প্রতি পদে তাদের নিজেদের লক্ষ-কোটি উপার্জন তো আছেই, কিন্তু অন্যেরাও লক্ষ-কোটি উপার্জন করে l অনন্য রত্ন সদাই প্রতি পদে সামনে এগিয়ে চলে l অনাদি চাবি প্রাপ্ত হয়েছে ; অটোমেটিক চাবি l নিমিত্ত হওয়া অর্থাৎ অটোমেটিক চাবি প্রয়োগ করা l অনন্য রত্নদের অনাদি চাবিসহ অগ্রচালিত হতে হবে l তোমাদের প্রতি সঙ্কল্পে সেবা মিশে আছে l এক নিমিত্ত হয় অনেক আত্মাদের উৎসাহ-উদ্দীপনায় নিয়ে আসতে l পরিশ্রম করার প্রয়োজন হয় না, কিন্তু যখন তারা নিমিত্তকে দেখে সেই তরঙ্গ ছড়িয়ে যায় l একে অপরকে দেখে যেমন রঙ লেগে যায়, তাই না ? সুতরাং এই অটোমেটিক উৎসাহ-উদ্দীপনার তরঙ্গ অন্যদেরও উৎসাহ-উদ্দীপনা বাড়িয়ে দেয় l সাধারণতঃ, যখন কেউ ভালো ডান্স করে তো দর্শকের পা-ও নাচতে থাকে, আর সেই তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে l না চাইতেও হাত পা নাচতে থাকে l আচ্ছা !

মধুবনের কার্যসমূহ ঠিক আছে l মধুবন নিবাসীদের দ্বারা মধুবন সুশোভিত হয়ে আছে l বাপদাদা তো নিমিত্ত বাচ্চাদের দেখে সদা নিশ্চিন্ত হন, কারণ বাচ্চারা কতো নিপুণ ! বাচ্চারাও কম নয় l বাবার বাচ্চাদের প্রতি সম্পূৰ্ণ ফেইথ আছে, তাইতো বাচ্চারাও বাবার থেকে এগিয়ে l যারা নিমিত্ত হয়েছে তারা সদাই বাবাকেও নিশ্চিন্ত করে l কার্যতঃ, কোনও চিন্তাই তো নেই, তা' সত্ত্বেও বাবাকে তোমরা সু-সমাচার দাও l কোথাও কোনও বাচ্চা এইরকম হবে না, যারা পরস্পর পরস্পরের থেকে এগিয়ে, প্রত্যেক বাচ্চা বিশেষ l কারও এইরকম বিশেষ গুণ সম্পন্ন এত বাচ্চা হতে পারে না l অন্য জায়গায় তো কেউ লড়াই ঝগড়া করে, তো কেউ পড়াশোনা করে l কিন্তু এখানে তো সবাই তোমরা বিশেষ মণি, প্রত্যেকের বিশেষত্ব আছে l

বরদান:-
পবিত্রতার শক্তিশালী দৃষ্টি বৃত্তি দ্বারা সর্বপ্রাপ্তি করিয়ে দুঃখহর্তা সুখকর্তা ভব

সায়েন্সের ওষুধে অল্পকালের শক্তি, যা দুঃখ কষ্টের অবসান তো ঘটায়, কিন্তু পবিত্রতার শক্তি অর্থাৎ সাইলেন্সের শক্তিতে আশীর্বাদের শক্তি থাকে l পবিত্রতার এই শক্তিশালী দৃষ্টি বা বৃত্তি সদাকালের প্রাপ্তি করায়, সেইজন্য তোমাদের জড় চিত্রের সামনে 'হে দয়ালু, দয়া করো বলে দয়া বা আশীর্বাদ প্রার্থণা করে l সুতরাং চৈতন্য রূপে এইরকম মাস্টার দুঃখহর্তা সুখকর্তা হয়ে দয়া করেছ, তাইতো ভক্তিতে পূজিত হও l

স্লোগান:-
সময়ের নৈকট্য অনুসারে প্রকৃত তপস্যা বা সাধনাই হলো বেহদের বৈরাগ্য l
 


সূচনাঃ -
আজ মাসের তৃতীয় রবিবার, সবাই সংগঠিতরূপে সন্ধ্যা ৬ : ৩০ থেকে ৭ : ৩০ মিনিট পর্যন্ত অন্তর্রাষ্ট্রীয় যোগে সম্মিলিত হয়ে নিজে অবতরিত হওয়া অবতার আত্মা, এই স্মৃতিতে শরীরে প্রবেশ করতে হবে এবং শরীর থেকে পৃথক হয়ে যেতে হবে l নিজের বীজস্বরূপ স্থিতিতে বসে পরমাত্ম শক্তি বায়ুমন্ডলে ছড়িয়ে দেওয়ার সেবা করুন l