24-11-2019 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
12-03-85 মধুবন
সত্যতার শক্তি
আজ সত্য
বাবা, সত্য শিক্ষক, সদ্গুরু তাঁর নিজের সত্যতার শক্তি-স্বরূপ বাচ্চাদের দেখছেন l
সত্য জ্ঞান বা সত্যতার শক্তি কত যে মহান তোমরা তার অনুভাবী হয়েছ l সব দূরদেশবাসী
বাচ্চা ভিন্ন ধর্ম থেকে এসে এবং ভিন্ন মতের বিশ্বাস আর রীতি-রেওয়াজে থেকেও এই
ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে বা রাজযোগের দিকে কেন আকৃষ্ট হয়েছে ? তোমারা সত্য
বাবার সত্য পরিচয় পেয়েছ অর্থাৎ সত্য জ্ঞান লাভ করেছ, সত্য পরিবার পেয়েছ, প্রকৃত
স্নেহ পেয়েছ, প্রকৃত প্রাপ্তির অনুভব হয়েছে তোমাদের l এই কারণে সত্যতার শক্তির দিকে
তোমরা আকৃষ্ট হয়েছ l জীবনও ছিল, তোমাদের প্রাপ্তিও ছিল, যথাশক্তি জ্ঞানও ছিল, কিন্তু
সত্য জ্ঞান ছিল না, সেইজন্য সত্যতার শক্তি তোমাদের বাবার বানিয়ে নিয়েছে l
সত্য শব্দের দু'টো অর্থ - সত্য সত্যতাও আবার অবিনাশীও l যেহেতু, সত্যতার শক্তি
অবিনাশী, সেইজন্য তোমাদের প্রাপ্তি অবিনাশী, সম্বন্ধ অবিনাশী, স্নেহ অবিনাশী,
পরিবার অবিনাশী l ২১ জন্ম ভিন্ন ভিন্ন নাম রূপে এই পরিবারই তোমাদের থাকবে l তোমরা
তাদের জানবে না l এখন জানো যে তুমিই বিভিন্ন সম্বন্ধে একই পরিবারে আসতে থাকবে l
এমনকি, এই অবিনাশী প্রাপ্তি এবং পূর্ব পরিচিতির স্বীকৃতি দূরদেশে থাকা সত্ত্বেও
নিজের সত্য পরিবার, সত্য বাবা, সত্য জ্ঞানের দিকে আকৃষ্ট করেছে l যেখানে সত্যতাও
থাকে আর তা' অবিনাশীও হয়, সেটাই পরমাত্ম-স্বীকৃতি অর্থাৎ পরমাত্মাকে চিনতে পারার
শক্তি l সুতরাং, যেভাবে তোমরা সবাই এই বিশেষত্বের আধারে আকৃষ্ট হয়েছ, ঠিক সেভাবেই
সত্যতার শক্তিকে, সত্য জ্ঞানকে বিশ্বে প্রত্যক্ষ করতে হবে l পঞ্চাশ বছর ধরে ধরণী
প্রস্তুত করেছ, লোককে স্নেহ দিয়েছ এবং সম্পর্কে নিয়ে এসেছ l রাজযোগের প্রতি আকৃষ্ট
করেছ, শান্তির অনুভবের প্রতি আকৃষ্ট করেছ l তাহলে, বাকী আর কি থাকল ? বিভিন্ন
ধর্মাবলম্বী যেমন বিশ্বাস করে পরমাত্মা এক, ঠিক সেইরকমই যথার্থ সত্য জ্ঞান এক
বাবারই এবং পথ একটাই, এই আওয়াজ যতক্ষণ না তীব্র হবে, ততক্ষণ সামান্য খড়কুটোর ভরসায়
আত্মাদের ঘুরে বেড়ানো বন্ধ হবে না l এখন তারা এটাই ভাবে যে এটাও একটা রাস্তা আর এটা
ভালো রাস্তা l যতই হোক, অবশেষে তারা চিন্তা করবে, এক বাবার এটাই একমাত্র পরিচয়,
একমাত্র পথ l বহুত্বের এই ভ্রান্তির অবসান হওয়াই বিশ্ব শান্তির আধার l সত্যতার
পরিচয়ের এবং সত্য জ্ঞানের শক্তির তরঙ্গ যতক্ষণ পর্যন্ত চারিদিকে না ছড়িয়ে পড়ছে
ততক্ষণ প্রত্যক্ষতার ধ্বজাতলে সকল আত্মারা আশ্রয় নিতে পারবে না l সুতরাং, গোল্ডেন
জুবিলিতে যখন তোমরা বাবার ঘরে বিশেষ আমন্ত্রণ জানিয়ে আত্মাদের আহ্বান করো, তা'
তোমাদের স্টেজ l শ্রেষ্ঠ বাতাবরণ আর স্বচ্ছ বুদ্ধির প্রভাব বিদ্যমান l স্নেহের
পরিবেশ আছে, পবিত্র স্নেহের পালন আছে l এমন পরিমণ্ডলের মাঝে তোমাদের সত্য জ্ঞান
প্রসিদ্ধ করাই প্রত্যক্ষতার আরম্ভ হওয়া l মনে আছে তোমাদের, প্রদর্শনীতে তোমরা
বিহঙ্গ মার্গের সেবা যখন শুরু করেছিলে তখন কি করতে ? তাদেরকে মুখ্য জ্ঞানের
প্রশ্নের ফর্ম পূরণ করতে বলতে, তাই না ! পরমাত্মা সর্বব্যাপী নাকি না ? গীতার ভগবান
কে ? এই ফর্মই তো তোমরা ভরতে বলতে, নয় কি ! তাদের ওপিনিয়ন লিখতে বলতে l ধাঁধা
জিজ্ঞাসা করতে l তোমরা প্রথমে এভাবেই আরম্ভ করেছিলে, কিন্তু চলতে চলতে যত এগিয়েছ,
পরমাত্ম জ্ঞানের মূল বিষয় গুলোকে গুপ্ত রূপে রেখে ভগবানের স্নেহকে প্রধান ভাবে সামনে
রেখে আত্মাদেরকে সমীপে নিয়ে এসেছো। এবার যখন তারা এই ভূমিতে আসবে, তখন খুব
স্পষ্টভাবে তাদের সত্য পরিচয় দাও l যখন তারা বলে, "এটাও ভালো", সেটা শুধু তোমাদেরকে
খুশি করার কথা l কিন্তু একই বাবার এক যথার্থ পরিচয় স্পষ্টভাবে তাদের বুদ্ধিতে আসতে
দাও, সেই সময়ও এখন তোমাদের আনতে হবে l তোমরা যখন তাদের সরাসরিভাবে বলো যে, এই জ্ঞান
বাবা দিচ্ছেন, বাবা এসেছেন, তখন তারা যাতে এই বিশ্বাস নিয়ে চলে যায় যে - এটা
পরমাত্ম জ্ঞান l পরমাত্মার কর্তব্য চলছে l এই জ্ঞানের নতুনত্ব কি তারা অনুভব করে ?
এমন ওয়ার্কশপ কখনও করেছ যেখানে তোমরা জিজ্ঞাসা করতে পারো পরমাত্মা সর্বব্যাপী কিনা,
তিনি একবারই আসেন নাকি বারেবারে আসেন ? তারা যেন এইরকম স্পষ্ট পরিচয় পায়, যাতে বুঝতে
পারে যে দুনিয়ায় তারা যা কখনও শোনেনি তা' এখানে শুনেছে l যারা বিশেষ স্পিকার হয়ে আসে,
তাদের সাথে এই জ্ঞানের রহস্যের আধ্যাত্মিক আলাপচারিতা করলে সেটা তাদের বুদ্ধিকে
বিদ্ধ করবে l সেইসঙ্গে প্রত্যেক স্পিকারকে (সম্মানীয় বক্তাদেরকে) এই প্রস্তাব দাও,
তারা যেন তাদের ভাষণে নিজেদের পরিবর্তনের অনুভব শোনানোর সময় জ্ঞানের প্রতিটা বিষয়
স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করে l যেন সোজাসুজিভাবে টপিকের বিবৃতি না দেয় - পরমাত্মা
সর্বব্যাপী নন। বরং এক বাবাকে এক রূপে জেনে বিশেষ কি কি প্রাপ্তি হয়েছে, সেইসব
প্রাপ্তির ব্যাপারে শুনিয়ে তারপরে সর্বব্যাপীর বিষয় স্পষ্ট করতে পারে l তাদের বলো,
নিজেকে পরমধাম নিবাসী মনে করে বাবাকে স্মরণ করলে কীভাবে বুদ্ধি একাগ্র হয় আর বাবার
সাথে সম্বন্ধ থেকে কি কি প্রাপ্তির অনুভূতি হয় ! এইরকমভাবে সত্যতা আর নম্রতা
উভয়রূপের সাথেই তা' প্রমাণ করতে পারো l যাতে এটা তোমাদের অহংকার বলেও প্রতীত না হয়
যে, তোমরা শুধু নিজেদের মহিমা করো l নম্রতা এবং দয়ার ভাবনা অহংকার বলে অনুভূত হতে
দেয় না l যেমন, যখন তোমরা মুরলী শোনো, (পরমাত্ম মহাবাক্যকে) তখন কেউই অহংকার বলবে
না l অথরিটির সাথে বলা হয় - এটাই বলবে l যদি কোনো শব্দ কঠিনও হয়, কিন্তু তবুও সেটা
দম্ভ বলবে না ! তার মাধ্যমে অথরিটি অনুভূত হয় l এইরকম কেন হয় ? যতটাই অথরিটি আছে,
ঠিক ততটাই আছে নম্রতা আর দয়ার ভাব l এইভাবে তো বাবা বাচ্চাদের সামনে বলেন, কিন্তু
তোমরা সবাই এই বিশেষত্বের সাথে স্টেজে এই বিধি দ্বারা স্পষ্ট করতে পার l তোমাদের
যেভাবে বলা হয়েছিল, না ... সেইভাবেই পুনরারম্ভ করো l *এক, সর্বব্যাপীর বিষয় নিয়ে,
দুই, নাম-রূপের ঊর্ধ্বে হওয়ার ব্যাপারে, তিন, তোমাদের বুদ্ধিতে ড্রামার পয়েন্ট রেখে
l আত্মার নতুন বিশেষত্ব তোমাদের বুদ্ধিতে রাখো* l বিশেষ টপিকগুলো লক্ষ্য করে
তোমাদের অনুভব আর প্রাপ্তির আধারে সেইসব বারংবার স্পষ্ট করে দাও, যাতে তারা বুঝতে
পারে যে এই সত্য জ্ঞান থেকেই সত্যযুগের স্থাপনা হচ্ছে l ভগবানুবাচঃ এমন বিশেষ কি আছে
যা ভগবান ছাড়া কেউ শোনাতে পারে না ? বিশেষ স্লোগান, যা তোমরা সোজাসুজি বলো - যেমন
মানুষ মানুষের কখনো সদগুরু, সত্য বাবা হতে পারে না l মানুষ পরমাত্মা হতে পারে না l
এইরকম বিশেষ পয়েন্ট তো তোমরা সময় সময়ে শুনে এসেছ, সেইসবেরই রূপ-রেখা তৈরি কর, যাতে
সত্য জ্ঞানের স্পষ্টতা থাকবে l নতুন দুনিয়ার জন্য নতুন জ্ঞান l নতুনত্ব আর সত্যতা
মানুষের মধ্যে দুইয়েরই অনুভব হতে দাও l যেমন, তোমরা যখন কনফারেন্স করো, সেই সময় খুব
ভালো সেবা হয় l কনফারেন্স ঘিরে যা কিছু উপায়ই অনুসরণ কর, কখনো চার্টারের বানিয়ে,
কখনো অন্য কিছু, তা'তেও যে সাধন তোমরা অনুসরণ করো তা' (নতুন নতুন আত্মাদের সাথে)
সম্পর্কের যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য l এই সাধনও ভালো, কেননা পরেও তাদের সাথে মিলিত
হওয়ার চান্স থাকে l কিন্তু এখন যারাই এখানে আসে, তারা বলে, "হ্যাঁ এটা খুব ভালো
ব্যাপার l" প্ল্যান ভালো, চার্টার ভালো, সেবার সাধনও ভালো l ঠিক একইভাবে, তারা যেন
এই বলে ফিরে যায় যে - নতুন জ্ঞান আজ স্পষ্ট হয়েছে l এইরকম যদি পাঁচ-ছয় আত্মাকেও
প্রস্তুত করতে পারো.....কারণ সবার সাথে এই অলৌকিক কথোপকথন তো হতে পারে না, তারা শুধু
কতিপয় বিশেষই এখানে আসে l তোমরা টিকিট দিয়ে তাদের নিয়ে আসো l তারা বিশেষ পালনাও লাভ
করে l তাদের মধ্যে যারা খ্যাতনামা তাদের সাথে অন্তরঙ্গ ও মনখোলা আলোচনা করে এটা
স্পষ্টভাবে অবশ্যই তাদের বুদ্ধিভেদ করাতে হবে অর্থাৎ তাদের উপলব্ধি করাতে হবে l এমন
কোনও প্ল্যান বানাও, যাতে তাদের এটা না মনে হয় যে, তোমাদের শুধু নিজেদেরই অনেক নেশা
আছে, বরং তাদের সত্যতা উপলব্ধি হতে দাও l একে বলা হয়, তিরও লাগবে, ব্যথাও হবে না l
তারা কাঁদবে না, বরং আনন্দে তারা যেন নেচে ওঠে l ভাষণ দেওয়ার নতুন রূপরেখা তৈরি করো
l বিশ্ব শান্তির ভাষণ তো অনেক দেওয়া হয়েছে l আধ্যাত্মিকতার জন্য আবশ্যক, আধ্যাত্মিক
শক্তি ব্যতিরেকে কিছুই হতে পারে না l সংবাদপত্রে ছাপা হয়, কিন্তু আধ্যাত্মিক শক্তি
কি ! আধ্যাত্মিক জ্ঞান কি ! এর সোর্স কে ! তারা এতদূর পৌঁছায়নি ! তাদের বুঝতে দাও
ভগবানের কার্য চলছে l এখন তারা বলে, মাতারা ভালোভাবে কার্য করছে l সময়ানুসারে এই
ভূমিও প্রস্তুত করতে হবে l যেমন, সন সোজ ফাদার, ঠিক তেমনই ফাদার সোজ সন l এখন ফাদার
সোজ সন চলছে l সুতরাং এই তীব্র আওয়াজ প্রত্যক্ষতার পতাকা উত্তোলন করবে l বুঝেছ !
গোল্ডেন জুবিলিতে কি করতে হবে, তা' বুঝেছ, তাই না ! অন্য স্থানে তবুও বাতাবরণের
ব্যাপারে বিবেচনা করতে হয়, কিন্তু বাবার ঘর নিজের ঘর, নিজের স্টেজ, সুতরাং এইরকম
স্থানে প্রত্যক্ষতার আওয়াজ উচ্চরবে করতে পার l এইভাবে যদি অল্পসংখ্যকও এই বিষয়ে
নিশ্চয়বুদ্ধি হয়ে যায় - তবে তারাই প্রবল আওয়াজ তুলবে l এখন রেজাল্ট কি ! যারা নিজেরা
সম্পর্কে ও স্নেহে এসেছে, তারাই সেবা করছে l অন্যদেরও স্নেহ আর সম্পর্কে নিয়ে আসছে
l তারা নিজেরা যতটা হয়েছে, তদনুরূপ সেবা করছে l এটাও তো সফলতা বলা যাবে, নয় কি !
যতই হোক, এখন আরও এগিয়ে যেতে হবে l বদনাম থেকে তোমাদের নাম এখন গৌরবান্বিত হয়েছে l
আগে তারা শঙ্কিত ছিল, এখন তোমাদের কাছে আসতে চায় l তাহলে ফারাক তো হলো, তাই না ! *প্রথমে
নামই শুনতে চাইত না, এখন নাম নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে l এটাও সাফল্য, যা তোমরা
পঞ্চাশ বছর ধরে অর্জন করেছ l ভূমি প্রস্তুতিতেই সময় লাগে l এইরকম ভেবো না, পঞ্চাশ
বছর এতেই লেগে গেল তো আর কি হবে ! মাটি হল চালানোর উপযুক্ত করতে সময় লাগে, বীজ বপন
করতে সময় লাগে না l শক্তিশালী বীজ থেকে শক্তিশালী ফল উৎপন্ন হয় l এখন পর্যন্ত যা
হয়েছে এটাই হওয়ার ছিল, সেটা যথার্থ হয়েছে* l বুঝেছ !
(বিদেশি বাচ্চাদের দেখে ) এই চাতকসকল ভালো l ব্রহ্মাবাবা দীর্ঘকাল আহ্বান করার পর
তোমাদের জন্ম দিয়েছেন l বিশেষ আহ্বান দ্বারা তোমাদের জন্ম হয়েছে l তোমাদের জন্ম
অবশ্যই দীর্ঘ সময় নিয়েছে, কিন্তু তোমরা জাত হয়েছ অনাময় এবং ভালো l বাবার আওয়াজ
তোমাদের কাছে পৌঁছেছে, আর তোমরা সময়মতো কাছে পৌঁছে গেছ l ব্রহ্মাবাবা বিশেষভাবে খুশি
হন l বাবা খুশি হলে বাচ্চারাও খুশি হবে, কিন্তু ব্রহ্মাবাবার বিশেষ স্নেহ আছে l এই
কারণে তোমাদের মেজরিটি ব্রাহ্মবাবাকে না দেখেও এমন অনুভব কর যেন তাঁকে দেখেছ l
ছবিতেও চেতনার অনুভব করো l এটা বিশেষত্ব l ব্রহ্মাবাবার জন্য তোমরা সব আত্মার
স্নেহের বিশেষ সহযোগ থাকে l ভারতের লোকে কোশ্চেন করবে ব্রহ্মা কেন, বিশেষ ইনিই কেন
? . . .
কিন্তু বিদেশি বাচ্চারা আসার সাথে সাথেই ব্রহ্মাবাবার আকর্ষণে স্নেহে আবদ্ধ হয়ে যায়
l সুতরাং এই হলো বিশেষ সহযোগের বরদান, সেইজন্য তোমরা তাঁকে না দেখেও তাঁর মহান পালনা
অনুভব করতে থাক l গভীর হৃদয়ে তোমরা বলো, 'ব্রহ্মাবাবা l' এটা বিশেষ সূক্ষ্ম স্নেহের
কানেকশন l এমন নয় যে, বাবা ভাবেন কেন এরা আমার পরে অর্থাৎ অব্যক্ত হওয়ার পরে এসেছে
! না তোমরা ভাবো, না ব্রহ্মা ভাবেন ! তিনি তোমাদের সামনেই আছেন l সাকার রূপের মতোই
আকার রূপেও প্রতিপালন করছেন l এইরকম অনুভব কর, তাই না ! অল্প সময়ের মধ্যেই কতো ভালো
টিচার তৈরি হয়েছে ! বিদেশে সেবা শুরু হয়েছে কতো কাল হলো ? কতো টিচার তৈরি হয়েছে ?
এটা ভালো, বাপদাদা বাচ্চাদের সেবার একাগ্রতা দেখতে থাকেন, কারণ তোমরা বিশেষ সূক্ষ্ম
পালনা লাভ করছ, নয় কি ! ব্রহ্মাবাবার মধ্যে বিশেষ সংস্কার কি দেখেছ ? সেবা ব্যতীত
তিনি থাকতে পারতেন ? যারা সুদূর বিদেশে থাকে তাদের এই বিশেষ পালনার সহযোগ থাকার
কারণে সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনা অধিকতর l
গোল্ডেন জুবিলিতে আর কি করেছ ? তোমরা নিজেরাও গোল্ডেন আর জুবিলিও গোল্ডেন l এটা ভালো,
নিজের এবং সেবার ব্যালেন্স রাখতে অবশ্যই অ্যাটেনশন দাও l স্ব-উন্নতি এবং সেবার
উন্নতি l ব্যালেন্স বজায় রাখতে পারলে তোমরা নিজসহ অনেক আত্মাদের ব্লেসিংস দেওয়াতে
নিমিত্ত হয়ে যাবে l বুঝেছ ! সেবার প্ল্যান তৈরি করাকালীন প্রথমে স্ব-স্থিতির
অ্যাটেনশন, কেবলমাত্র তখনই প্ল্যানে পাওয়ার যুক্ত হবে l প্ল্যান হলো বীজ l সুতরাং
বীজে যদি শক্তি না থাকে, যদি বীজ শক্তিশালী না হয়, তাহলে যতই পরিশ্রম কর শ্রেষ্ঠ ফল
তারা দেবে না, সেইজন্য প্ল্যানের সাথে স্ব-স্থিতির পাওয়ার দিয়ে অবশ্যই সেগুলো পূর্ণ
করতে থাক l বুঝেছ ! আচ্ছা !
যারা সত্যকে প্রত্যক্ষ করে, সদা সত্যতা আর নম্রতার ব্যালেন্স বজায় রাখে, প্রতিটা
উক্তিতে যুক্তি দিয়ে এক বাবার পরিচয় প্রমাণ করে, সদা স্ব-উন্নতি দ্বারা সাফল্য লাভ
করে, সেবায় বাবার প্রত্যক্ষতার পতাকা উত্তোলন করে, সদগুরুর, সত্য বাবার এইরকম সত্য
বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l
বিদায়কালে দাদীজী ভূপাল
যাওয়ার অনুমতি নিচ্ছেন
যেতেও
সেবা আবার স্থিত হয়েও সেবা l যে বাচ্চারা সেবার জন্য নিমিত্ত হয়েছে, তাদের প্রতিটা
সঙ্কল্পে, প্রতি সেকেন্ডে সেবা l তারা তোমাদের দেখে, তাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা যতই
বর্ধিত হবে, ততই বাবাকে স্মরণ করবে l তারা সেবায় অগ্রচালিত হবে, সেইজন্য সফলতা
সবসময় তোমাদের সাথে আছেই l বাবাকেও তুমি সাথে নিয়ে যাচ্ছ, সফলতাও তোমার সাথে নিয়ে
যাচ্ছ l যে স্থানে যাচ্ছ সেখানে সফলতা হবে l(মোহিনী বোনের সাথে আলাপ আলোচনা ) : তুমি
সেবার উদ্দেশ্যে পরিক্রমায় যাচ্ছ l পরিক্রমায় যাওয়া অর্থাৎ অনেক আত্মাকে
স্ব-উন্নতির সহযোগ দেওয়া l সেইসঙ্গে যদি স্টেজে তোমার কিছু বলবার সুযোগ আসে, তবে
অবশ্যই এমন নতুন কিছু ভাষণ দিয়ে আসবে l প্রথমে তুমি শুরু করে দিও, তুমিই তখন নম্বর
ওয়ান হয়ে যাবে। যেখানেই যাবে সেখানে সবাই কি বলবে ? বাপদাদার থেকে স্মরণ-স্নেহ এনেছ
? ঠিক যেমন বাপদাদা স্নেহ এবং সহযোগের শক্তি দেন, তেমনই বাবার থেকে নেওয়া স্নেহ আর
শক্তির সহযোগ তুমিও নিরন্তর তাদের দিয়ে যাও l সকলকে উৎসাহ-উদ্দীপনায় ওড়ানোর জন্য
কোনো না কোনো আদর্শবাণী (স্লোগান ইত্যাদি) বলতে থেকো l সবাই খুশিতে নাচতে থাকবে l
অলৌকিকতার খুশিতে সবাইকে নাচিয়ে দিয়ো এবং তোমার মনোরম প্রকৃতি দ্বারা খুশিতে কীভাবে
পুরুষার্থে অগ্রচালিত হওয়া যায় সবাইকে শিখিয়ে দিয়ো l আচ্ছা !
বরদান:-
জ্ঞানী আত্মা হয়ে স্ব-চক্রকে জেনে প্রভু প্রিয় ভব
এই সৃষ্টিচক্রে আত্মার কি কি পার্ট আছে, তা' জানা
অর্থাৎ স্বদর্শন চক্রধারী হওয়া l সমগ্র চক্রের জ্ঞান বুদ্ধিতে যথার্থ রীতিতে ধারণ
করাই স্ব-দর্শন চক্র ঘোরানো, স্ব-চক্রকে জানা অর্থাৎ জ্ঞানী আত্মা হওয়া l এইরকম
জ্ঞানী আত্মাই প্রভু প্রিয় হয়, মায়া তাদের সামনে তিষ্ঠোতে পারে না l এই স্ব-দর্শন
চক্রই ভবিষ্যতে চক্রবর্তী রাজা বানায় l
স্লোগান:-
প্রত্যেক বাচ্চা বাবা সমান প্রত্যক্ষ প্রমাণ হলে
প্রজা সহজে প্রস্তুত হবে l