০২-০৫-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা আত্ম-অভিমানী হও, ‘আমি হলাম আত্মা, শরীর নয়’ - এটাই হল প্রথম পাঠ, এই প্রথম পাঠটাই সবাইকে ভালোভাবে শেখাও”
প্রশ্ন:-
জ্ঞান শোনানোর সঠিক উপায় কোনটা ? কেমন পদ্ধতিতে জ্ঞান শোনানো উচিত ?
উত্তর:-
জ্ঞানের কথাগুলো অতি আনন্দ সহকারে শোনাও, বাধ্যতামূলক ভাবে নয়। তোমরা নিজেদের মধ্যে বসে জ্ঞানের বিষয়ে আলোচনা করো, মনন-চিন্তন করো, এবং তারপর কাউকে শোনাও। যদি নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে তারপর অন্য আত্মাকে শোনাও, তবে যে শুনবে সেও খুশি হবে।
ওম্ শান্তি।
বাবা তোমাদেরকে আত্ম-অভিমানী বা দেহী-অভিমানী হয়ে বসতে বলেন। কারণ আত্মার মধ্যেই ভালো অথবা খারাপ সংস্কার ভর্তি হয়। আত্মার ওপরেই সবকিছুর প্রভাব পড়ে। আত্মাকেই পতিত বলা হয়। পতিত আত্মা তো নিশ্চয়ই কোনো জীবাত্মাকেই বলা যাবে। আত্মা তার শরীরের সাথে থাকে। প্রথম কথা হল - আত্মিক স্থিতিতে বসো। নিজেকে শরীর নয়, আত্মারূপে অনুভব করো। আত্মা-ই তো এইসকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পরিচালনা করে। প্রতি মুহূর্তে নিজেকে আত্মারূপে অনুভব করলে পরমাত্মার কথাও স্মরণে থাকবে। যদি শরীরের কথা মনে থাকে, তবে শারীরিক পিতার কথাও মনে আসবে। তাই বাবা বলছেন - আত্ম-অভিমানী হও। বাবা স্বয়ং শিক্ষা দিচ্ছেন, এটাই হল প্রাথমিক শিক্ষা। তোমরা আত্মারা হলে অবিনাশী, এই শরীরটা বিনাশী। ‘আমি হলাম আত্মা’ - এই প্রাথমিক শিক্ষাটাকে যদি বারবার স্মরণ না করো, তাহলে অপোক্ত থেকে যাবে। ‘আমি হলাম আত্মা, শরীর নয়’ - বাবা বর্তমান সময়ে এইরকম শিক্ষাই দিচ্ছেন। আগে কেউ কখনো এইরকম শিক্ষা দেয়নি। বাবা তো বাচ্চাদেরকে আত্ম-অভিমানী বানিয়ে জ্ঞান দেওয়ার জন্যই এসেছেন। তাঁর দেওয়া প্রথম জ্ঞান হল - হে আত্মা, তুমি এখন পতিত হয়ে গেছ, কারণ এই দুনিয়াটাই হল পতিত দুনিয়া। প্রদর্শনীতেও তোমরা বাচ্চারা অনেকজনকে বোঝাও। যদি অনেক প্রশ্নোত্তর করে, তাহলে সারাদিনে যখন অবসর সময় পাবে, তখন নিজেদের মধ্যে আলোচনা করা উচিত যে ওই ব্যক্তি কি প্রশ্ন করেছিল আর আমি কি উত্তর দিয়েছি। তারপর তাকে ঐভাবে না বুঝিয়ে অন্যভাবে বোঝাতে হবে। সকলের বোঝানোর যুক্তি একইরকম হয় না। আসল কথা হল - নিজেকে আত্মা মনে করো, না কি শরীর মনে করো ? সকলেরই দু'জন বাবা আছেন। যত দেহধারী আছে, সকলেরই একজন লৌকিক পিতা এবং পারলৌকিক পিতা রয়েছেন। লৌকিক (হদের) পিতা থাকাটা তো কমন ব্যাপার। এখানে তোমরা অসীম জগতের (বেহদের) পিতাকে পেয়েছ। তিনি নিজে বসে থেকে আমাদের মতো আত্মাদেরকে শিক্ষা দিচ্ছেন। তিনি একাধারে বাবা, টিচার এবং সদ্গুরু। এই বিষয়ে ভালোভাবে বোঝাতে হবে। তোমরা যখন কাউকে বোঝাও, তখন তোমাদেরকে যেসব প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়, সেইসব প্রশ্নগুলো নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে হবে। যে খুব বিচক্ষণ, তাকেও সেই আলোচনাতে রাখতে হবে। দিনের বেলা তোমরা কিছুটা সময় পেতে পারো। এমন যেন না হয় যে খাবার খাওয়ার পরেই ঘুম পেয়ে গেল। যে অতিরিক্ত পরিমাণে খাবার খায়, তারই ঘুম পায়, অলসতা আসে। দিনের বেলা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে হবে - অমুক ব্যক্তি এইরকম প্রশ্ন করেছিল আর আমি এইরকম উত্তর দিয়েছি। অনেক রকমের প্রশ্ন করবে। তার যথাযথ উত্তর দিতে হবে। দেখতে হবে যে সেই ব্যক্তিকে কি আমি আকৃষ্ট করতে পেরেছি? সে কি সন্তুষ্ট হয়েছে ? নাহলে তার সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। যে খুব বিচক্ষণ, তাকেও এই আলোচনাতে থাকতে হবে। এমন যেন না হয় যে খাবার খাওয়ার পরেই ঘুম পেয়ে গেল। দেবতারা সর্বদা খুশিতে থাকত বলে তারা খাবার খুব কম খেত। তাই বলা হয় খুশির মতো খোরাক নেই। বাচ্চারা, তোমাদের তো খুব খুশি হওয়া উচিত। ব্রাহ্মণ হওয়াটাই তো খুব খুশির ব্যাপার। যে এখানে খুশি অনুভব করতে পারে, সে-ই ব্রাহ্মণ হয়। দেবতাদের কাছে সম্পত্ত্বি, রাজপ্রাসাদ সবকিছুই ছিল। তাই তারা সর্বদাই খুশিতে থাকত। তাই তাদের কাছে সেই খুশিটাই যথেষ্ট ছিল। খুশিতে থাকলে খাবার খুব কম খাবে এবং সূক্ষ্মভাবে খাবে। এটাই নিয়ম। অতিরিক্ত আহার করলেই বেশি ঘুম পাবে। যার বেশি ঘুম পায়, সে কাউকেই বোঝাতে পারবে না। হয়তো কখনো বাধ্য হয়ে কাউকে কিছু শোনাবে। কিন্তু এইসব জ্ঞানের কথা তো খুব আনন্দ সহকারে সবাইকে শোনানো উচিত। তাহলে সহজেই বোঝানো যাবে।
আসল কথা হল বাবার পরিচয় দেওয়া। ব্রহ্মাকে তো কেউই জানে না। ইনি হলেন প্রজাপিতা ব্রহ্মা - এনার অনেক প্রজা রয়েছে। ইনি কিভাবে প্রজাপিতা ব্রহ্মা হলেন, সেই বিষয়েও ভালোভাবে বোঝাতে হবে। বাবা বুঝিয়েছেন - এনার অনেক জন্মের মধ্যে একেবারে অন্তিম জন্মের অন্তিম সময়ে অর্থাৎ বানপ্রস্থ অবস্থায় আমি এসে প্রবেশ করি। নাহলে রথ পাব কোথা থেকে। শিববাবার জন্যেই রথের কথা প্রচলিত আছে। তিনি কিভাবে এই রথের মধ্যে প্রবেশ করেন - সেই বিষয়েই সংশয় প্রকাশ করে। রথ তো অবশ্যই প্রয়োজন। এখানে তো কৃষ্ণ আসতে পারবে না। তাহলে অবশ্যই ব্রহ্মার দ্বারা-ই বোঝাবেন। উপর থেকে তো বলবেন না। কিন্তু ব্রহ্মা এলো কোথা থেকে? বাবা বলেছেন - যে সম্পূর্ণ ৮৪ জন্ম নেয়, আমি তার শরীরেই প্রবেশ করি। এইসব কথা ইনি নিজেও জানেন না, আমিই শোনাই। কৃষ্ণের তো অন্য কোনো রথের প্রয়োজন নেই। কৃষ্ণের কথা বললে ভাগীরথের কথাও বলা যাবে না। কৃষ্ণকে ভাগীরথ বলা হয় না। সে প্রথম জন্মে রাজকুমার ছিল। বাচ্চাদেরকে মনে মনে এইসব বিষয় নিয়ে বিচার সাগর মন্থন করতে হবে। বাচ্চারা জানে যে শাস্ত্রতে যাকিছু লেখা আছে, বাস্তবে ঐরকম কিছুই নেই। কিন্তু এটা তো অবশ্যই ঠিক যে বিচার সাগর মন্থনের দ্বারা প্রাপ্ত কলসী লক্ষ্মীকেই দেওয়া হয়েছে। তারপরে তিনি অন্যদেরকেও সেই অমৃত পান করিয়েছেন। এভাবেই স্বর্গের গেট খুলেছিল। কিন্তু পরমপিতা পরমাত্মাকে তো এইরকম বিচার সাগর মন্থন করার দরকার নেই। তিনি হলেন বীজরূপ। তাঁর মধ্যেই জ্ঞান রয়েছে, তিনিই সবকিছু জানেন। একটা সময়ে তোমরাও জানতে। এই বিষয়গুলো ভালোভাবে বোঝাতে হবে। না বুঝলে দেবতা হবে কিভাবে! বাবা আত্মাদেরকে রিফ্রেশ করার জন্য এইসব বোঝাচ্ছেন। কেউই কিছু জানে না। বাবা এসে এইসকল বিষয় বোঝান। এখন তোমাদের নোঙ্গর ভক্তিমার্গ থেকে উঠে জ্ঞানমার্গে এসেছে। বাবা বলেন, আমি তোমাদেরকে যেসব জ্ঞান শোনাচ্ছি, সেইগুলো লুপ্তপ্রায় হয়ে যায়।
একজন হলেন নিরাকার পিতা, আরেকজন হলেন সাকার পিতা। তোমাদেরকে খুব ভালোভাবে বোঝানো হলেও মায়া আকৃষ্ট করে নোংরা দুনিয়ায় নিয়ে চলে যায়। পতিত হয়ে যায়। বাবা বলছেন - তুমি কাম বিকারের চিতায় দগ্ধ হয়ে একেবারে কবরস্থানে এসে গেছ। এরপর এখানেই পরীস্থান হবে। এখানে অর্ধেক কল্প যাবৎ পরীস্থান থাকে এবং তারপর অর্ধেক কল্পের জন্য কবরস্থান হয়ে যায়। শীঘ্রই সবাই কবরে চাপা পড়বে। তোমরা সিঁড়ির ছবি নিয়েও ভালোভাবে বোঝাতে পারো। এটা হল পতিতদের রাজত্ব। এই রাজ্যের বিনাশ তো অবশ্যই হবে। এখন এই ভূমিতে কবরস্থান রয়েছে। এরপর এই ভূমিটাই পরিবর্তিত হয়ে লৌহযুগী থেকে স্বর্ণযুগী হয়ে যাবে। তারপর একসময় দুই কলা কমে যাবে। পাঁচ তত্ত্বের কলাও যখন কম হয়ে যায় তখন তারা উপদ্রব শুরু করে। তোমরা সবাইকে খুব ভালোভাবে বোঝাও। যদি কেউ বুঝতে না পারে, তাহলে সে কড়িতুল্য, কোনো মূল্যই নেই। বাবা এসেই সঠিক মূল্যবোধের শিক্ষা দিচ্ছেন। হীরেতুল্য জন্মের গায়ন রয়েছে। আগে যখন তোমরাও বাবাকে জানতে না, তখন তোমরাও কড়িতুল্য ছিলে। এখন বাবা এসে হীরেতুল্য বানাচ্ছেন। বাবার কাছ থেকেই তোমরা হীরেতুল্য জন্ম পাও। তাহলে পুনরায় কড়িতুল্য হয়ে যাও কেন ? তোমরা তো ঈশ্বরীয় সন্তান, তাই না ? গায়ন আছে - আত্মা এবং পরমাত্মা অনেকদিন আলাদা থেকেছে। *যখন আত্মা ওখানে শান্তিধামে থাকে, তখন সেই মিলনে কোনো লাভ হয় না*। ওটা হল কেবল পবিত্রতা বা শান্তির স্থান। এখানে তোমরা জীবাত্মারা রয়েছ এবং পরমাত্মা পিতার কোনো নিজস্ব শরীর না থাকার কারনে তিনি অন্য একটা শরীরে প্রবেশ করে তোমাদের মতো বাচ্চাদেরকে পড়াচ্ছেন। তোমরা বাবাকে জেনেছ এবং তাঁকে বাবা বলে সম্বোধন করো। বাবাও তোমাদেরকে বাচ্চা বলে সম্বোধন করেন। লৌকিক পিতাও বলে - বাচ্চারা তোমরা এসো, তোমাদেরকে মিষ্টি খাওয়াব। সঙ্গে সঙ্গে সবাই চলে যাবে। এখানেও বাবা বলছেন - বাচ্চারা, তোমরা এসো, তোমাদেরকে আমি বৈকুন্ঠের মালিক বানাব। তাহলে নিশ্চয়ই সবাই দৌড়ে যাবে। মানুষ প্রার্থনা করে - তুমি এসে আমাদের মতো পতিতদেরকে পবিত্র বানিয়ে, পবিত্র দুনিয়ার মালিক করে দাও। যদি বিশ্বাস থাকে, তাহলে তো অবশ্যই মানতে হবে। বাচ্চারাই আমাকে ডেকেছে। আমি তো বাচ্চাদের জন্যই আসি। এসে বাচ্চাদেরকে বলি - তোমরা আমাকে ডেকেছিলে, তাই আমি এখন এসেছি। বাবাকেই তো পতিত-পাবন বলা হয়, তাই না? গঙ্গা অথবা অন্য কোনো নদীর জলের দ্বারা তো তোমরা পবিত্র হতে পারবে না। অর্ধেক কল্প ধরে তোমরা ভুলের মধ্যে ছিলে। হয়তো ভগবানের খোঁজ করে, কিন্তু কেউই কিছু বোঝে না। বাবা বলেন - ‘আমার বাচ্চারা’। তখন বাচ্চাদের অন্তর থেকেও উল্লাসের সহিত আওয়াজ আসা উচিত - ‘আমার বাবা’। কিন্তু ততটা উল্লাসের সহিত আওয়াজ বেরোয় না। এটাকে দেহ-অভিমান বলা হয়, দেহী-অভিমানী নয়। তোমরা এখন বাবার সম্মুখে বসে আছ। অসীম জগতের পিতাকে স্মরণ করলে অসীমের বাদশাহীও অবশ্যই স্মরণে আসবে। এইরকম বাবাকে কত ভালোবাসার সহিত উত্তর দেওয়া উচিত। তোমরা ডেকেছ বলেই বাবা এসেছেন। ড্রামা অনুসারে এক মিনিটও আগে পরে হবে না। দুনিয়ায় সকলেই বলে - হে পিতা, দয়া করো, মুক্ত করো। আমরা সবাই রাবণের জেলে বন্দি, তুমি আমাদের পথ দেখাও। তাই বাবা আমাদের গাইড রূপে পথ দেখান। সবাই তাঁকে আহ্বান করে - হে মুক্তিদাতা, হে গাইড, তুমি এসে আমাদেরকে পথ দেখাও, আমাদেরকে তোমার সাথে নিয়ে চলো। তোমরা এখন সঙ্গমে রয়েছ। বাবা সত্যযুগ স্থাপন করছেন। এটা হল কলিযুগ, এখানে কোটি কোটি মানুষ আছে। কিন্তু সত্যযুগে তো কেবল কয়েকজন দেবী-দেবতারা ছিলেন। তাহলে নিশ্চয়ই বিনাশ হয়েছিল। সেই বিনাশ এখন দোর-গোড়ায়। সেইজন্যেই বলা হয় বিজ্ঞানের অহংকার, বুদ্ধি খাটিয়ে কত রকমের জিনিস তৈরি করে। ওরা হল যাদব সম্প্রদায়। এই ইতিহাস পুনরায় রিপিট হবে। *তবে আপাতত সত্যযুগের ইতিহাস রিপিট হবে*।
তোমরা জানো যে আমরা নুতন দুনিয়াতে উঁচু পদ পাওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছি। পবিত্র তো হতেই হবে। তোমরা সবাইকে বোঝাও যে এই পতিত দুনিয়ার বিনাশ তো অবশ্যই হবে। তোমাদের বাচ্চারাও জীবিত থাকবে না। কোনো উত্তরাধিকারীও থাকবে না, আর কেউ বিয়েও করবে না। অনেকটা সময় অতিবাহিত হয়েছে, আর সামান্যই আছে। যে সামান্য সময় অবশিষ্ট আছে, তার হিসাব রয়েছে। আগে এইরকম বলা হত না। এখন খুবই কম সময় আছে। আগে আগে যারা শরীর ছেড়েছে, তারা পুরুষার্থের ক্রম অনুসারে জন্ম নিয়েছে। কেউ হয়তো আবার এখানেই এসেছে। দেখেই বোঝা যায় যেন এখান থেকেই অন্য কোথাও চলে গিয়েছিল। সে জ্ঞানের বিষয় ছাড়া আর অন্য কোনো কিছুতেই আনন্দ পাবে না। মা-বাবাকেও বলে দেয় যে আমি তো ওখানেই যাব। এইসব বিষয়গুলো খুব সহজেই বোঝা যায়। বিনাশ তো অবশ্যই হবে। যুদ্ধের প্রস্তুতিও দেখতে পাচ্ছ। অর্ধেকটা তো এদের যুদ্ধের সামগ্রীর পেছনেই অধিক অর্থ খরচ হয় । কত রকমের এরোপ্লেন বানিয়েছে। বলা হয়, ঘরের মধ্যে বসে থেকেই সবাই শেষ হয়ে যাবে। ড্রামা অনুসারেই ওরা ঐরকম জিনিস তৈরি করে। হাসপাতাল ইত্যাদি কিছুই থাকবে না। ড্রামা অনুসারে ওরাও যেন বাবার কাছ থেকেই ইশারা পাচ্ছে। এইসব তো ড্রামাতেই রয়েছে। ওরা চায় কেউ যেন কখনো অসুস্থ না হয়। কিন্তু সবাইকে তো অবশ্যই মরতে হবে। রাম-রাবণ সকলকেই যেতে হবে। তবে যে যোগের দ্বারা আয়ু বৃদ্ধি করবে, তার অবশ্যই আয়ু বাড়বে। আনন্দ সহকারে দেহত্যাগ করবে। যেমন ব্রহ্মজ্ঞানীর উদাহরণ দেওয়া হয়। ওরাও ব্রহ্মে যাওয়ার জন্য এইরকম আনন্দ সহকারে দেহত্যাগ করে। কিন্তু ব্রহ্মে কেউ যেতে পারে না, আর কারোর পাপনাশও হয় না। এখানেই পুনর্জন্ম নিতে হয়। বাবা এসে পাপনাশের যুক্তি বলছেন - "একমাত্র আমাকেই স্মরণ করো, আর কাউকে স্মরণ করো না। লক্ষ্মী-নারায়নকেও স্মরণ করো না" । তোমরা জানো যে পুরুষার্থের দ্বারা আমরা এইরকম পদ প্রাপ্ত করছি। এখন স্বর্গ স্থাপন হচ্ছে। আমরা ঐরকম পদ পাওয়ার জন্য এখানে পড়ছি। সবকিছুই পুরুষার্থের ক্রম অনুসারে হয়। ওরা যে সাম্রাজ্যের অধিকারী ছিল, সেই সাম্রাজ্য সঙ্গমযুগে বাবা এসে স্থাপন করেন। তোমরা এমনভাবে বক্তৃতা দাও যাতে কারো বুদ্ধিতে যথাযথ ভাবে তীর লেগে যায়। এখন আমরা হলাম ঈশ্বরীয় সম্প্রদায় এবং প্রজাপিতা ব্রহ্মার মুখ বংশাবলী ভাই-বোন। আমরা আত্মারা হলাম ভাই-ভাই। ব্রহ্মাকুমার এবং ব্রহ্মাকুমারীদের বিয়ে হয় না। এটাও বাবা বুঝিয়েছেন যে কিভাবে কেউ পড়ে যায়, কাম বিকারের অগ্নি জ্বালাতন করে। কিন্তু তার সাথে ভয়ও থাকে যে আমি যদি একবার পড়ে যাই, তাহলে সমস্ত উপার্জন নষ্ট হয়ে যাবে। কাম বিকারের কাছে পরাজিত হলে পদভ্রষ্ট হয়ে যাবে। কত বিশাল উপার্জন! দুনিয়াতে মানুষ কোটি-কোটি উপার্জন করে। কিন্তু ওরা জানে না যে আর কিছু সময়ের মধ্যে সব বিনষ্ট হয়ে যাবে। যারা বোমা বানায়, তারা জানে যে এই দুনিয়ার বিনাশ আসন্ন। ওরা ভাবে আমাদেরকে কেউ প্রেরণা দিচ্ছে, তাই আমরা এগুলো বানাচ্ছি। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্যসার:-
১. অন্তরে জ্ঞানের বিষয় নিয়ে মনন-চিন্তন অর্থাৎ বিচার সাগর মন্থন করতে হবে। নিজেদের মধ্যে জ্ঞানের বিষয় নিয়ে আধ্যাত্মিক আলোচনা (রুহরিহান) করার পরে অন্যকে বোঝাতে হবে। অলসতা এবং নিদ্রাকে ত্যাগ করতে হবে।
২. দেহী-অভিমানী হয়ে আন্তরিক উল্লাসের সাথে বাবাকে স্মরণ করতে হবে। সর্বদা নেশা থাকা উচিত যে আমরা বাবার কাছে এসেছি কড়ি থেকে হীরে হওয়ার জন্য। আমরা হলাম ঈশ্বরীয় সন্তান।
বরদান:-
মন-বুদ্ধির দ্বারা শ্রেষ্ঠ অবস্থার আসনে উপবিষ্ট হয়ে তপস্যার প্রতিমূর্তি ভব
তপস্বী সর্বদা কোনো না কোনো আসনের ওপরে বসে তপস্যা করে। তোমাদের মতো তপস্বী আত্মাদের আসন হলো একরস অবস্থা - ফরিস্তা স্থিতি। এইরকম শ্রেষ্ঠ অবস্থাতে স্থিত হওয়ার অর্থ হল আসনে উপবিষ্ট হওয়া। স্থূল আসনের ওপরে তো স্থূল শরীরকে বসানো হয়, কিন্তু এই শ্রেষ্ঠ আসনের ওপরে তোমরা মন-বুদ্ধিকে বসিয়ে দাও। ওই তপস্বীরা এক পায়ে খাড়া থাকে আর তোমরা একরস অবস্থাতে একাগ্র হয়ে যাও। ওদেরটা হলো হঠযোগ আর তোমাদেরটা হলো সহজযোগ।
স্লোগান:-
তোমরা প্রেমের সাগর বাবার সন্তান, তাই প্রেমে পরিপূর্ণ গঙ্গা হয়ে থাকো।