১৬-০৯-১৯ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা -- নিজের ব্যাটারি চার্জ করার চিন্তা করো, নিজের সময় পরচিন্তন অর্থাৎ অন্যদের কথা ভেবে নষ্ট কোরোনা, নিজের মনে নিজে মন্থন করলে নেশা চড়বে"

প্রশ্ন:-

জ্ঞান এক সেকেন্ডের হওয়া সত্ত্বেও বাবাকে এত ডিটেলে বোঝাতে হয় বা এত সময় দেওয়ার প্রয়োজন হয় কেন ?

উত্তর:-

কারণ জ্ঞান দান করার পরে বাচ্চাদের মধ্যে কোনও সুপরিবর্তন হয়েছে কিনা, এও তো বাবা দেখেন এবং তারপরেও শুধরে নেওয়ার জন্য জ্ঞান প্রদান করতেই থাকেন। সম্পূর্ণ বীজ এবং কল্প বৃক্ষের জ্ঞান প্রদান করেন, যে কারণে তাঁকে জ্ঞানের সাগর বলা হয়। যদি এক সেকেন্ডের মন্ত্র দিয়ে চলে যান তাহলে তো জ্ঞান সাগর - এই টাইটেল তাঁকে দেওয়া যাবে না ।

ওম্ শান্তি।

আত্মাদের পিতা (রূহানী) বসে আত্মারূপী (রূহানী) বাচ্চাদের বোঝান। ভক্তি মার্গে পরমপিতা পরমাত্মা শিবকে এখানেই পূজা করা হয়। যদিও বুদ্ধিতে আছে তিনি এসে চলে গেছেন। তারা শিবলিঙ্গ সামনে রেখেই তাঁর পূজা করে। এই কথা তো বোঝে শিব পরমধামে বাস করেন, এসে চলে গেছেন, তাই তাঁর স্মরণিক তৈরি করে পূজা করে। যে সময়ে স্মরণ করা হয় তখন বুদ্ধিতে অবশ্যই আসে যে তিনি হলেন নিরাকার, যিনি পরমধামে থাকেন, তাঁকে শিব নামে পূজা করা হয়। মন্দিরে গিয়ে মাথা নত করে, তাঁর উপরে দুধ, ফল, জল ইত্যাদি অর্পণ করে। কিন্তু সে তো হল জড়। জড় বস্তুর ভক্তিই করে। এখন তোমরা জানো - তিনি হলেন চৈতন্য, তাঁর নিবাস হল পরমধাম। তারা যখন পূজা করে তো বুদ্ধিতে থাকে যে তিনি হলেন পরমধাম নিবাসী, দুনিয়ায় এসে চলে গেছেন। তবেই তো এই চিত্র তৈরি হয়েছে, যে স্বরূপের পূজা হয়। ওই চিত্রটি (শিবলিঙ্গ) শিব নয়, শিবের প্রতিমা। সেই ভাবেই দেবতাদেরও পূজা করে, সে সবও হল জড় চিত্র, চৈতন্য নয়। কিন্তু চৈতন্য যারা ছিলেন তারা কোথায় গেছেন, সে কথা বুঝতে পারে না। অবশ্যই পুনর্জন্ম নিয়ে নীচে এসেছে । এখন তোমরা বাচ্চারা জ্ঞান প্রাপ্ত করছ। তোমরা বুঝেছ যে দেবতারা ছিলেন, তাঁরা পুনর্জন্ম নিয়েছেন। আত্মা একই আছে, আত্মার নাম পরিবর্তন হয় না। কিন্তু শরীরের নাম পরিবর্তন হয়। ওই আত্মা কোনো শরীরে আছে। পুনর্জন্ম তো নিতেই হয়। তোমরা তাঁদের পূজা কর, যারা সর্বপ্রথমে শরীরধারী ছিলেন (সত্যযুগী লক্ষ্মী-নারায়ণের পূজা করে) এই সময় তোমাদের চিন্তন চলে যে, এই নলেজ বাবা দিয়ে থাকেন। তোমরা বুঝেছ, যে চিত্রের পূজা করা হয় উনি হলেন প্রথম নম্বর ধারী। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ চৈতন্য ছিলেন। এখানে ভারতেই ছিলেন, এখন নেই। মানুষ এই কথা বোঝে না যে, তাঁরা পুনর্জন্ম নিয়ে ভিন্ন নাম-রূপ ধারণ করে ৮৪ জন্ম পার্ট প্লে করেছেন। এই কথা কারো চিন্তনে নেই। সত্যযুগে তো তারা ছিলেন নিশ্চয়ই, কিন্তু এখন নেই। এই কথাও কেউ বুঝতে পারে না। এখন তোমরা জানো - ড্রামার প্ল্যান অনুযায়ী আবার চৈতন্য রূপে আসবেন নিশ্চয়ই। মানুষের বুদ্ধিতে এই চিন্তন থাকে না। যদিও এই কথা তারা বোঝে যে, এনারা কখনও ছিলেন। তাঁদের জড় চিত্র রয়েছে। কিন্তু এখন এই কথা কারো বুদ্ধিতে থাকে না যে, তাদের চৈতন্য রূপ এখন কোথায় আছে। মানুষ তো ৮৪ লক্ষ পুনর্জন্ম বলে দেয়, এই কথাও তোমরা বাচ্চারা জেনেছ যে ৮৪ জন্ম হয়, ৮৪ লক্ষ জন্ম নয়। রাম চন্দ্রের পূজা করে, তারা এই কথা জানে না যে, রাম কোথায় গেছেন। তোমরা জানো যে, শ্রী রামের আত্মা তো নিশ্চয়ই পুনর্জন্ম নিতে থাকে। এখানে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে না । কিন্তু কোনও এক রূপে তো আছে, তাইনা। এখানেই পুরুষার্থ করছে। এত খ্যাতি রামের, তবে তো আসবেন নিশ্চয়ই, তাঁকেও নলেজ নিতে হবে। এখন মানুষ যেহেতু কিছুই জানে না। তাই সেসব কথা এখন রেখে দাও । এইসব কথায় সময় নষ্ট হয়, তারচেয়ে বরং নিজের সময় সফল করা উচিত। নিজের উন্নতির জন্য ব্যাটারি চার্জ করো। অন্যদের কথা চিন্তন করলে তো পরচিন্তন করা হয়ে গেল। এখন তো নিজের চিন্তন করতে হবে। আমরা বাবাকে স্মরণ করি। তিনিও নিশ্চয়ই পড়ছেন। নিজের ব্যাটারি চার্জ করছেন। কিন্তু তোমাদের নিজেরটা করতে হবে। বলাও হয় - নিজের মনে নিজে মন্থন করতে থাকলে নেশা বাড়তে থাকে ।



বাবা বলেন - যখন তোমরা সতোপ্রধান ছিলে, তখন তোমাদের পদমর্যাদা খুব উঁচুতে ছিল। এখন আবার পুরুষার্থ করো, আমাকে স্মরণ করো তো বিকর্ম বিনাশ হবে। তোমাদের সামনে লক্ষ্য তো রয়েছে, তাইনা। এই চিন্তন করতে করতে সতোপ্রধান হয়ে যাবে। নারায়ণকে স্মরণ করলেই আমরা নারায়ণ হব। শেষসময় যে নারায়ণকে স্মরণ করে .....। তোমাদের বাবাকে স্মরণ করতে হবে, যাতে পাপ বিনষ্ট হয়। তারপরে নারায়ণ হবে। এ হল নর থেকে নারায়ণ হওয়ার হাইয়েস্ট যুক্তি। মাত্র একজন নারায়ণ তো হবে না, তাইনা। এই রূপ তো সম্পূর্ণ বংশ তৈরি হবে। বাবা হাইয়েস্ট পুরুষার্থ করাবেন। এটা হল-ই রাজযোগের নলেজ, তাও আবার সম্পূর্ণ বিশ্বের মালিক হওয়ার । যত পুরুষার্থ করবে, ততই অবশ্যই লাভ হবে। এক তো নিজেকে অবশ্যই আত্মা নিশ্চয় করো । কেউ-কেউ লিখেও দেয় এমন, অমুক আত্মা আপনাকে স্মরণ করে। আত্মা শরীর দ্বারা লেখে। আত্মার কানেকশন হল শিববাবার সঙ্গে। আমি আত্মা অমুক শরীরের নাম-রূপে পরিচিত। এই কথা তো নিশ্চয়ই বলতে হবে, কারণ আত্মার শরীরের উপরেই ভিন্ন-ভিন্ন নাম থাকে। আমি আত্মা আপনার সন্তান, আমি আত্মা, আমার নাম অমুক। আত্মার নাম তো কখনও বদলায় না। আমি আত্মা অমুক শরীরধারী। শরীরের নাম তো অবশ্যই চাই। তা নাহলে কাজ কারবার, ব্যবসা ইত্যাদি চলতে পারে না। এখানে বাবা বলেন - আমিও এই ব্রহ্মার দেহে প্রবেশ করি টেম্পোরারি, ব্রহ্মার আত্মাকেও বোঝাই। আমি এই শরীর দ্বারা তোমাদের পড়াতে এসেছি। এই শরীর-টি আমার নয়। আমি এই শরীরে প্রবেশ করেছি। পরে ফিরে যাব নিজ ধামে। *আমি এসেছি বাচ্চাদের অর্থাৎ তোমাদের এই মন্ত্র দিতে। এমন নয় মন্ত্র দিয়ে চলে যাব। না, বাচ্চাদেরকে দেখতেও হয় যে কতটুকু সু- পরিবর্তন হয়েছে। তারপরে শুধরে নেওয়ার শিক্ষা দিতে থাকি। সেকেন্ডের জ্ঞান দিয়ে চলে গেলে তো আর জ্ঞান সাগরও বলা হবে না। কত সময় হয়েছে সেসবও বোঝাতে থাকেন। সৃষ্টি রূপী বৃক্ষের, ভক্তি মার্গের সব কথা বিস্তৃত ভাবে বোঝানোর প্রয়োজন আছে। বাবা তাই ডিটেলে বোঝান। তবে এক কথায় হল (হোলসেলে) "মন্মনাভব" । কিন্তু এমন এক কথায় বলে তো চলে যাবেন না। বাচ্চাদের রক্ষণাবেক্ষণও করতে হয়। অনেক বাচ্চারা বাবাকে স্মরণ করতে করতে হারিয়ে যায়। অমুক আত্মা যার নাম অমুক নাম ছিল, পড়াশোনায় খুব ভালো ছিল - স্মৃতি তো আসবে, তাইনা। পুরানো পুরানো অনেক বাচ্চা খুব ভালো ছিল, তাদেরকে মায়া গ্রাস করেছে। শুরুর দিকে অনেকে এসেছিল। চট করে বাবার কোলে এসেছিল। ভাট্টি হয়েছিল। তাতে সবাই নিজের ভাগ্য নির্ধারণ করার চেষ্টা করেছিল। তারপরে ভাগ্য নির্ধারণের চেষ্টা করতে করতে মায়া একেবারে শেষ করে দিল। এখানে থামল না তারা। আবার ৫ হাজার বছর পরেও এমনই হবে। কতজন চলে গেছে, বৃক্ষের অর্ধেক তো চলেই গেছে। যদিও বৃক্ষের বৃদ্ধি হয়েছে কিন্তু পুরানো বাচ্চারা চলে গেছে, যদিও বোঝা যায় - তাদের মধ্যে অনেকে আবার ফিরে আসবে নিশ্চয়ই পড়াশোনা করতে। স্মরণ করবে যে, আমরা বাবার কাছে পড়তাম, অন্যরা সবাই এখনও পড়ছে। আমরা হার স্বীকার করেছি। আবার ময়দানে আসবে। বাবা আসতে দেবেন, যদি এসে পুরুষার্থ করে। কিছু ভালো পদ মর্যাদা প্রাপ্ত করবে।



বাবা মনে করিয়ে দেন - মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, মামেকম্ স্মরণ করো তো পাপ বিনষ্ট হবে। এবারে কিভাবে স্মরণ কর, তা কি বুঝেছ যে, বাবা পরমধামে আছেন ? বাবা তো এইখানে রথে বসে আছেন। এই রথের কথা সবাই জানে। এ হল ভাগ্যশালী রথ। বাবা এঁনার মধ্যে এসেছেন। ভক্তিমার্গে যখন ছিলে তখন তাঁকে পরমধামে স্মরণ করতে কিন্তু এই কথা না জেনে যে, স্মরণ করলে লাভ কি হবে। এখন বাচ্চারা তোমাদের বাবা নিজে এই রথে বসে শ্রীমৎ দিচ্ছেন, তাই তোমরা বাচ্চারা বুঝেছ বাবা এইখানে এই মৃত্যুলোকে পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে আছেন। তোমরা জানো আমরা ব্রহ্মাকে স্মরণ করি না। বাবা বলেন - "মামেকম্ স্মরণ করো, আমি এই রথে বিরাজিত হয়ে তোমাদের এই নলেজ দিচ্ছি। নিজের পরিচয়ও দিয়ে থাকি, আমি এইখানে আছি" । আগে তো তোমরা ভাবতে বাবা তো পরমধাম নিবাসী। এসে চলে গেছেন। কিন্তু কবে, সে কথা জানতে না। এসে সবাই তো চলে গেছে, তাইনা। যাদের চিত্র ইত্যাদি আছে, তারা এখন কোথায়, সে কথা জানা নেই। যারা চলে যায় তারা আবার নিজের সময় অনুযায়ী আসে। ভিন্ন-ভিন্ন পার্ট প্লে করে। স্বর্গে তো কেউ ফিরে যায় না। বাবা বুঝিয়েছেন, স্বর্গে যাওয়ার জন্য পুরুষার্থ করতে হয় এবং পুরানো দুনিয়ার শেষ, নতুন দুনিয়ার আদি হওয়া চাই, যাকে পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ বলা হয়। এই জ্ঞান এখন তোমাদের আছে। মানুষ কিছুই জানে না। তারা বুঝতে পারে মৃত্যু হলে শরীর জ্বলে পুড়ে যায়, আত্মা গমন করে। এখন কলিযুগ, তাই জন্ম অবশ্যই কলিযুগেই নেবে। সত্যযুগে যখন ছিল তখন জন্ম সত্যযুগে হত। তোমরা এই কথাও জানো, আত্মাদের সম্পূর্ণ স্টক নিরাকারী দুনিয়ায় থাকে। এই কথা তো বুদ্ধিতে আছে, তাইনা। তারপরে সেখান থেকে আসে, এখানে শরীর ধারণ করে জীব আত্মা হয়। সবাইকে এখানে এসে জীব আত্মা হতে হবে। তারপরে ক্রম অনুসারে ফিরে যেতে হবে। সবাইকে তো নিয়ে যাবে না, তাহলে তো প্রলয় হয়ে যাবে। দেখানো হয় প্রলয় হয়েছে, রেজাল্ট কিছুই দেখায়নি। তোমরা তো জানো এই দুনিয়া কখনোই খালি হতে পারে না। বলা হয়ে থাকে - রাম গেল, রাবণের অনেক পরিবার ও প্রায় একে একে চলে গেল । সম্পূর্ণ দুনিয়ায় তো রাবণ সম্প্রদায় আছে, তাইনা। রাম সম্প্রদায় তো খুবই কম আছে। রামের সম্প্রদায় হয়ই সত্যযুগ-ত্রেতায়। উভয়ের অনেক তফাৎ। পরে (দ্বাপরে) আরও শাখা-প্রশাখা বের হয়। এখন তোমরা বীজ ও বৃক্ষের কথা জেনেছ। বাবা সবকিছু জানেন, তবেই তো জ্ঞান শোনাতে থাকেন তাই তাঁকে জ্ঞানের সাগর বলা হয়, একই কথা যদি হয় তাহলে তো কোনও শাস্ত্র ইত্যাদি তৈরি হবে না। বাবা সৃষ্টি রূপী বৃক্ষের বিষয়ে ডিটেলে বোঝাতে থাকেন। মুখ্য কথা নম্বরওয়ান সাবজেক্ট হল বাবাকে স্মরণ করা। এতেই পরিশ্রম আছে। স্মরণের উপরেই সম্পূর্ণ নির্ভর করছে। যদিও বৃক্ষের বিষয়ে তোমরা তো জেনেছ। দুনিয়ায় এই কথাগুলি কেউ জানে না। তোমরা সব ধর্মের মানুষদের তিথি-তারিখ ইত্যাদি সবই বলে দাও। অর্ধকল্প বললে এইসব এসে যায়। বাকি রইল সূর্যবংশী ও চন্দ্রবংশী। তার জন্যে অনেক যুগ তো হবে না, তাইনা। আছেই দুটি যুগ। সেখানে মানুষের সংখ্যা কম থাকে। ৮৪ লক্ষ জন্ম তো হতেও পারে না। কথাগুলি মানুষের বোধ শক্তির বাইরে চলে যায়, তাই আবার বাবা এসে বোধগম্য করান। বাবা, যিনি হলেন রচয়িতা, তিনি-ই রচয়িতা ও রচনার আদি-মধ্য-অন্তের নলেজ বসে প্রদান করেন। ভারতবাসী তো একেবারেই কিছু জানে না। সবার পূজা করতে থাকে, মুসলমানকে, ফরাসীকে, যে আসে তারই পূজা করে, কারণ নিজের ধর্মস্থাপককে ভুলে গেছে। অন্যরা তো সবাই নিজের-নিজের ধর্মকে জানে, সবার জ্ঞান আছে অমুক ধর্ম কবে, কে স্থাপন করেছে। যদিও সত্যযুগ-ত্রেতার হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি কারো জানা নেই। চিত্র দেখে, ভাবে শিববাবার এই রূপ। তিনি হলেন উচ্চ থেকেও উচ্চতম পিতা। অতএব স্মরণও তাঁকেই করতে হবে। এখানে আবার সবচেয়ে বেশি পূজা করে কৃষ্ণের, কারণ নেক্সট নম্বরে আছে, তাই না। কৃষ্ণকেই ভালোবাসে, তাই গীতার ভগবানও তাঁকেই ভেবে নিয়েছে। জ্ঞান শোনাবার জন্য কাউকে তো চাই, তবে তো তাঁর কাছ থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবে। বাবা-ই শোনান, নতুন দুনিয়ার স্থাপনা এবং পুরানো দুনিয়ার বিনাশ করেন যিনি, তিনি এক বাবা ব্যতীত অন্য কেউ হতে পারে না । ব্রহ্মা দ্বারা স্থাপনা, শঙ্কর দ্বারা বিনাশ, বিষ্ণু দ্বারা পালনা - এই কথাও লেখে। তা যে এখানকার জন্যই । কিন্তু কিছুই বোঝে না।



তোমরা জানো ওটা হল নিরাকারী সৃষ্টি। এটা হল সাকারী সৃষ্টি। *সৃষ্টি তো এইটাই - এখানেই রামরাজ্য ও রাবণরাজ্য হয়। মহিমা সম্পূর্ণ এখানকার*। যদিও সূক্ষ্মলোকে (বতনে) শুধু সাক্ষাৎকার হয়। মূলধামে (বতনে) তো আত্মারা থাকে, তারপরে এখানে এসে পার্ট প্লে করে। বাকি সূক্ষ্মলোকে কি আছে, তার চিত্রও বানানো হয়েছে, যে চিত্রের বিষয়ে বাবা বোঝান। বাচ্চারা, তোমাদের এমন সূক্ষ্মবতনবাসী ফরিস্তা হতে হবে। ফরিস্তা বা অ্যাঞ্জেল হাড়-মাংস বিহীন হয়। বলা হয়ে থাকে - দধিচি ঋষি হাড় দান করেছিলেন। যদিও শঙ্করের প্রশস্তি কোথাও নেই। ব্রহ্মা, বিষ্ণুর মন্দির আছে। শঙ্করের কিছু নেই। অতএব তাকে নিযুক্ত করা হয়েছে বিনাশের কার্যে। যদিও এমন কেউ চোখ খুলেই বিনাশ করে না। দেবতারা হিংসাপূর্ণ কোনো কর্ম করবেন কিভাবে। না তাঁরা করেন, না বাবা এমন ডাইরেকশন দেন। যিনি ডাইরেকশন দেন, তার উপরেও তো দায়িত্ব থাকে, তাইনা। যে বলবে সে-ই ফেঁসে যাবে। তারা তো শিব-শঙ্করকে একত্রে বলে দেয়। এখন *বাবাও বলেন আমাকে স্মরণ করো, মামেকম্ স্মরণ করো। এমন তো বলেন না শিব-শঙ্করকে স্মরণ করো। পতিত-পাবন একজন কেই বলা হয়*। ভগবান অর্থ সহ বুঝিয়ে দেন, এই কথা কেউ জানে না। তাই এই চিত্র দেখে কনফিউজড হয়ে পড়ে। অর্থ অবশ্যই বলে দিতে হবে, তাইনা। বুঝতে সময় লাগে। কোটিতে কেউ একজন বিরল আত্মা জ্ঞানে আসে। আমি আসলে কে, কেমন, কোটিতে কেউ একজন-ই আমাকে চিনতে পারে। আচ্ছা !



মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্যে মুখ্য সার :-

১. অন্য কোনো বিষয়ে চিন্তা করে নিজের সময় নষ্ট করবে না। নিজের মনে আনন্দে থাকতে হবে। নিজের চিন্তন করে আত্মাকে সতোপ্রধান করতে হবে।

২. নর থেকে নারায়ণ হওয়ার জন্য অন্তিম সময়ে এক পিতার স্মরণ-ই যেন থাকে। এই হাইয়েস্ট যুক্তিটি সামনে রেখে পুরুষার্থ করতে হবে - আমি আত্মা। এই শরীরকে ভুলে যেতে হবে।

বরদান:-

আমি দেহ - এই ভাব থেকে নির্লিপ্ত হয়ে পরমাত্ম স্নেহের অনুভবকারী পদ্ম আসনধারী ভব

কমল আসন বা পদ্ম আসন হল ব্রাহ্মণ আত্মাদের শ্রেষ্ঠ স্থিতির প্রমাণ চিহ্ন। এমন পদ্ম আসনধারী আত্মারা আমি দেহ - এই ভাব থেকে স্বতঃই নির্লিপ্ত থাকে। তাদের নিজেদের শরীরের ভাব নিজের দিকে আকৃষ্ট করে না। যেমন ব্রহ্মা বাবার চলতে ফিরতে ফরিস্তা রূপ বা দেবতা রূপ সদা স্মৃতিতে থাকত। এমনই ন্যাচারাল দেহী-অভিমানী স্থিতি সদা থাকলে বলা হবে দেহ-ভাব থেকে নির্লিপ্ত। এমন দেহ-ভাব থেকে নির্লিপ্ত স্থিতিতে স্থির আত্মারা পরমাত্মার প্রিয় হয়।

স্লোগান:-

তোমাদের বিশেষত্ব বা গুণ হল প্রভু প্রসাদ, সেসব আমার ভাবা-ই হল দেহ-অভিমান ।