২১-০৩-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -- প্রাণ দান করেন বাবা, তিনি এমন জ্ঞান প্রদান করেন, যার ফলে তোমরা প্রাণ(নতুন জীবন) ফিরে পাও, এমন প্রাণ প্রদানকারী পিতাকে প্রেমপূর্বক স্মরণ করো"
প্রশ্ন:-
কিসের ভিত্তিতে(আধারে) ২১ জন্ম পর্যন্ত তোমাদের সর্ব ভান্ডার পরিপূর্ণ থাকে ?
উত্তর:-
বাচ্চারা, সঙ্গমযুগে তোমরা যে নলেজ পাও, তা হল সোর্স অফ ইনকাম( উপার্জনের উৎস)। এই পড়ার ভিত্তিতেই তোমাদের সর্ব ভান্ডার পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এই পড়ার দ্বারাই ২১ জন্মের খুশী প্রাপ্ত হয়। আর এমন কোনো জিনিস নেই, যা তোমাদের প্রাপ্ত করার ইচ্ছা থাকে। বাবা এমন জ্ঞান প্রদান করেন, যার ফলে আত্মা(কড়ি থেকে হীরে-তুল্য)কি থেকে কি হয়ে যায়*।
ওম্ শান্তি ।
ভগবানুবাচ -- শালিগ্রামেরা জানে যে, শিববাবা আমাদের পড়াতে আসেন। বাচ্চারা জানে যে, একমাত্র তিনিই সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তকে জানেন। এখন বাচ্চাদের আর একথা নতুন বলে মনে হয় না। বুদ্ধিতে প্রবেশ করে গেছে। মানুষ তো সবকিছুই ভুলে গেছে। যিনি পড়িয়েছেন, তাঁর পরিবর্তে যিনি প্রথম স্থানাধিকারী, তার নাম লিখে দিয়েছে। পড়তে-পড়তে তোমাদের-কেই একথা প্রমাণ করতে হবে। এ হল ভারতেরই শাস্ত্র- কথা, অন্য ধর্মের শাস্ত্রের কথা নয়। ভারতীয় শাস্ত্রেই এই ভুল করা হয়েছে। তোমরা ব্যতীত একথা আর কেউই প্রমাণ করতে পারবে না। বাচ্চারাই জানে যে, এ হল অনাদি ড্রামা, পুনরায় রিপীট হবে। তোমরা প্রতিটি মানুষের সংস্কার পরিবর্তনের পুরুষার্থ করো। মানুষ যখন নিজেকে সংশোধন করে, তখন সমগ্র বিশ্বই সংশোধিত(পবিত্র) হয়ে যায়। সত্যযুগ হল সংস্কারী নতুন বিশ্ব আর কলিযুগ হল অসংশোধিত(অপবিত্র) পুরাতন বিশ্ব। বাচ্চারা, একথা শুধুমাত্র তোমরাই যুক্তিযুক্তভাবে বোঝো এবং ধারণ করে অপরকেও বোঝানোর যোগ্যতা লাভ কর। এতে অনেক সূক্ষ্মতার (রিফাইননেস) প্রয়োজন। বাবা তোমাদের কত রিফাইন করে বোঝান, সংশোধন(সংস্কার পরিবর্তন) করেন। বাবা বলেন, যখন তোমরা সংস্কারী হয়ে যাও তখন আর আমার সংশোধন করার দরকার পড়ে না। তোমরা অনার্য হয়ে গিয়েছিলে, এখন আর্য অর্থাৎ দেবী-দেবতা হতে হবে। আর সেটা তো সত্যযুগেই হবে। তারা(দেবী-দেবতা) সব সংস্কারী ছিল, আর এখন অপবিত্ররা তাদেরকে পূজা করে। একথা কারও বুদ্ধিতে আসে না যে, আমরা কেন তাদেরকে সংস্কারী বলি? এরা সকলেই তো মনুষ্য, যারা সংস্কারী আর্য ছিল তারাই পতিত হয়ে গেছে। আর্য আর অনার্য। এছাড়া এই যে আর্য সমাজ, তা হল একটি ধর্মীয়-মার্গ(মঠ-পন্থ)। এই সব বিষয় সৃষ্টি-রূপী কল্প-বৃক্ষের দ্বারা সুন্দরভাবে(ক্লিয়ার) বুঝতে পারা যায়। এ হলো মনুষ্য সৃষ্টি-রূপী বৃক্ষ, এর আয়ুষ্কাল ৫ হাজার বর্ষ। এর নাম কল্পবৃক্ষ। কিন্তু কল্পবৃক্ষ শব্দটি বললে মানুষের বুদ্ধিতে বৃক্ষ আসে না। আর তোমাদেরকে তো বৃক্ষ রূপেই বোঝানো হয়েছে। কিন্তু মানুষ বলে একটি কল্প লক্ষ-লক্ষ বছরের। বাবা বলেন, ৫ হাজার বছরের। কেউ আবার কল্পের আয়ু একরকম বলে তো অন্যেরা আবার অন্যকিছু বলে। সম্পূর্ণ সঠিকভাবে বোঝানোর মতো কেউ নেই। পরস্পরের মধ্যে শাস্ত্রের কতই না লড়াই চলে। আর এ হলো তোমাদের আত্মিক বার্তালাপ, তোমরা সেমিনার কর, একেই আত্মিক বার্তালাপ (রুহরিহান) বলা হয়। প্রশ্ন-উত্তর বোঝার জন্যও (আত্মিক বার্তালাপ) করা হয়। বাবা যা কিছু তোমাদের শোনান, তার থেকেই টপিক(বিষয়) বের করে তোমরা শোনাও। (লোকেরা) ওরা কি শোনায়, তাও তোমরা গিয়ে শোনো। তারপর এসে লোকেদের শোনানো উচিৎ যে, ওখানে এই ধরণের বাদ-বিবাদ চলে।
প্রথমে তো একথা বোঝাতে হবে যে, গীতার ভগবান কে ? ভগবান বাবাকে ভুলে যাওয়ার জন্য তাদের কর্মের হিসাব-নিকাশ সম্পূর্ণরূপে ক্ষতির খাতে চলে গেছে। বাচ্চারা, তোমাদের তো বাবার সাথে প্রেম বা স্নেহ রয়েছে। তোমরা বাবাকে স্মরণ কর। ব্যস, বাবা-ই প্রাণ (নবজীবন) প্রদানকারী। এমন জ্ঞান দান করেন যে, তোমরা কি থেকে কি হয়ে যাও। তাই বাবার প্রতি ভালবাসা থাকা উচিৎ। বাবা আমাদের এমন-এমন নতুন কথা শোনান। আমরা শ্রীকৃষ্ণকে স্মরণ করি, কিন্তু তিনি কিছুই দেন না। শ্রীনারায়ণকে স্মরণ কর, কিন্তু তাঁকে স্মরণ করে কিছু হয় কি? আমরা যে কাঙ্গাল সেই কাঙ্গাল-ই রয়ে গেছি। দেবতারা কত সম্পন্ন ছিল। এখন সব জিনিসই আর্টিফিসিয়াল(নকল) হয়ে গেছে। যে সবের কোনো দাম ছিল না, সেগুলিই আজ অত্যন্ত দামী হয়ে গেছে। ওখানে(স্বর্গে) তো আনাজ ইত্যাদির দামের কোনো কথাই নেই। সকলেরই নিজ-নিজ সম্পত্তি ইত্যাদি রয়েছে, এমন কোনো অপ্রাপ্ত বস্তু নেই, যেটা প্রাপ্ত করার ইচ্ছা থাকে। বাবা বলেন -- আমি তোমাদের ভান্ডার ভরপুর করে দিই। তোমাদের এমন জ্ঞান দিই, যারফলে তোমাদের ভান্ডার পরিপূর্ণ হয়ে যায়। তোমাদের বুদ্ধিতে একথা রয়েছে যে, নলেজ ইজ সোর্স অফ ইনকাম( জ্ঞানই উপার্জনের উৎস)। জ্ঞানই সবকিছু। এই পড়া করে তোমরা কত মহান(উচ্চ) হয়ে যাও। পড়ার তো ভান্ডার রয়েছে, তাই না। ওই(লৌকিক) টিচাররা যা পড়ায় তার থেকে অল্পকালের সুখ পাওয়া যায়। এই পড়ার থেকে তোমরা ২১ জন্মের সুখ পাও। বাচ্চারা, তোমাদের অত্যন্ত খুশী হওয়া উচিৎ। একথা বুঝতে সময় লাগে। শীঘ্রই কেউ বুঝতে পারে না। কোটি-কোটির মধ্যে থেকে কেউ-কেউ বেরোয়। আধাকল্প সকল মানুষ একে-অপরকে পতনের দিকেই নিয়ে গেছে। আরোহন(চড়তী কলা) করান একমাত্র বাবা। অসীম জগতের পড়া যিনি(শিববাবা) পড়িয়েছেন তাঁর পরিবর্তে যিনি(কৃষ্ণ) পড়েছেন তার নাম দিয়ে দেওয়া হয়েছে। দুনিয়া একথা জানে না। তারা বলে -- ভগবানুবাচ, কখনো পড়িয়ে গেছেন। তারপর আর তার কোনো শাস্ত্র থাকে না। সত্যযুগে তো কোনো শাস্ত্র থাকে না। এসবই হলো ভক্তিমার্গের শাস্ত্র। কত বড় কল্পবৃক্ষ ! ভক্তির এই যে অনেক শাখা-প্রশাখা তা যদি না থাকে তবে বৃক্ষের নামও থাকবে না। এসব হল ধারণ করার মতো বিষয়। তোমরা ধারণ কর। যিনি পড়ান তিনি তো পড়িয়ে গুপ্ত হয়ে যান। যারা পড়ে তারা এসে বিশ্বের মালিক হয়। এ হল কত নতুন বিষয়। একটি কথাও কারও বুদ্ধিতে বসে না। স্টুডেন্ট-ও তো তোমরা নম্বরের ক্রমানুসারেই হও, কেউ পাশ করে, কেউ ফেল করে। এ হল অসীম জগতের অনেক বড় পরীক্ষা। তোমরা জানো যে, এখন যদি আমরা ভালভাবে পড়ি তবেই প্রতি কল্পে ভালভাবে পড়ব। ভালমতন যারা পরে তারাই উচ্চপদ লাভ করে। নম্বরের ক্রমানুসারেই সকলে যাবে। সম্পূর্ণ ক্লাস-ই ট্রান্সফার হয়ে যায়। নম্বরের ক্রমানুসারেই সেখানে গিয়ে বসে, এই জ্ঞানও আত্মার মধ্যেই রয়েছে। ভালো বা খারাপ সংস্কার আত্মার মধ্যেই থাকে। শরীর তো মাটি। আত্মা তো অলিপ্ত(নির্লেপ)হতে পারে না। ১০০ শতাংশ সতোপ্রধান আর ১০০ শতাংশ তমোপ্রধাণ কারা -- এও তোমরাই জানো। প্রথমে তো গরীবদের তুলে আনতে হবে। তারাই প্রথমে আসবে। গুরুদেরও ভাল-ভাল অনন্য শিষ্যরা যখন আসবে তখন তাদের সকলের বুদ্ধি খুলবে। তারাও দেখবে যে, এ তো আমাদেরই পাতা(ভাই) আর আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছে। যারা এখানকার হবে তারা তো বেরিয়ে আসবেই। বাবা এসে নতুন বৃক্ষ স্থাপন করেন। যারা অন্যান্য ধর্মে পরিবর্তিত হয়ে চলে গেছে, তারা সব ফিরে আসবে। তারা আবার নিজের ভারতভুমি-তেই ফিরে আসবে। তারা তো ভারতবাসীই ছিল, তাই না। যারা আমাদের শাখার তারা সকলেই ফিরে আসবে। তোমরা যত এগিয়ে যেতে থাকবে তখন সবই বুঝতে পারবে। এখন সকলেই বাইরে(বিদেশ) থেকে ধাক্কা খাচ্ছে। যেখানে-যেখানে বাইরের লোকেরা(প্রবাসীরা) রয়েছে, তাদেরকে সেখান থেকে বিতাড়িত করা হচ্ছে। তারা মনে করছে -- এরা অনেক ধনবান হয়ে গেছে। আর সেখানকার লোকেরা গরীব হয়ে গেছে।
পরে সকলকেই নিজ-নিজ ধর্মে ফিরে যেতে হয়। শেষে সকলেই নিজ-নিজ ঘরে প্রত্যাবর্তন করবে। যদি কেউ বিদেশে মারা যায় তখন তাকে ভারতে আনা হয়। কারণ ভারত হল ফার্স্টক্লাস পবিত্রভুমি। ভারতেই নতুন দুনিয়া ছিল। এইসময় একে নির্বিকারী(ভাইসলেস) দুনিয়া বলতে পারা যায় না। এ হল বিকারী দুনিয়া, তাই তো (ভগবানকে) আহ্বান করে -- হে পতিত-পাবন এসো, এসে আমাদের পবিত্র বানাও। যদিও দুনিয়া সেই একই রয়েছে কিন্তু এইসময় দুনিয়ায় কেউ পবিত্র তো নেই। পবিত্র আত্মারা থাকে নিরাকার লোকে(মূলবতন)। ওটা হলো ব্রহ্ম মহাতত্ত্ব। সকলেই পবিত্র হয়ে সেখানে যাবে। আবার নম্বরের ক্রমানুসারে পুনরায় আসবে নিজের ভুমিকা পালন করতে। আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের এ হল ভিত। এর থেকে আবার তিনটি টিউব বা শাখা বেরোয়। দেবতা ধর্মের কোনো টিউব নেই। প্রথমে হল এই ভিত, তারপর তিনটি টিউব নির্গত হয়। মুখ্য হল ৪টি ধর্ম। সর্বাপেক্ষা উত্তম হল এই ব্রাহ্মণ ধর্ম। এর অনেক মহিমা। এখানে তোমরা হীরে-তুল্য হও। এখানে বাবা তোমাদের পড়ান। তাহলে তোমরা কত মহান। দেবতাদের থেকেও তোমরা ব্রাহ্মণেরা হলে অত্যন্ত জ্ঞানী। অতি বিস্ময়কর, তাই না ! আমরা যে নলেজ নিই তা আমাদের সাথেই চলতে থাকে । ওখানে কিন্তু এই জ্ঞান তোমরা ভুলে যাও। তোমরা জানো যে, পূর্বে আমরা কি পড়তাম আর এখন আমরা কি পড়ি। আই. সি. এস যারা দেয় তারা আগে কি পড়েছে আর পরে কি পড়ে। পার্থক্য আছে, তাই না। যত এগিয়ে যাবে ততই নতুন-নতুন পয়েন্টস্ শুনবে। এখন বলব না। তোমাদের পরে শোনার পার্ট রয়েছে। বুদ্ধিতে রয়েছে -- জ্ঞানের পার্ট যখন সম্পূর্ণ হবে তখন আমরাও বাবার জ্ঞানকে সেইসময় ধারণ করে নেব। পুনরায় আমাদের পার্ট স্বর্গে শুরু হয়ে যাবে। আর ওঁনার (শিববাবা) পার্ট(ভুমিকা) সমাপ্ত হয়ে যাবে। সঠিকভাবে বুদ্ধিতে ধারণ করা চাই। জ্ঞান মন্থন করতে থাকো, বাবাকে স্মরণ করতে থাকো। স্মরণ না করলে কম পদ প্রাপ্ত হবে। বাবাকে স্মরণ করতে-করতে শরীরের ভান থেকে মুক্ত হয়ে যাবে। সন্ন্যাসীরাও এমন অবস্থার অভ্যাস করতে-করতে শরীর ত্যাগ করে(সমাধি)। কিন্তু তাদের পথ আলাদা, তাই তাদের পুনরায় জন্ম নিতে হয়। শিষ্যরা মনে করে তিনি(সন্ন্যাসী) ব্রহ্ম-তে বিলীন হয়ে গেছেন পুনরায় আর ফিরে আসতে পারেন না। বাবা বোঝান যে, ফিরে কেউ যেতে পারে না। শেষে যখন সব অ্যাক্টর্স-রা স্টেজে আসবে তখন সবাই ঘরে ফিরে যাবে। ওটা হল পার্থিব জগতের(হদের) বিনাশী নাটক, আর এ হল অসীম জগতের অবিনাশী নাটক। তোমরা ভালভাবে বোঝাতে পারো, এই ড্রামা উকুনের মতন চলতে থাকে। ওরা তো ছোট-ছোট ড্রামা তৈরী করে। মিথ্যা ফিল্ম তৈরী করে। তাতে ভাল অল্পই থাকে, যেমন বিষ্ণুর অবতরন দেখায়। এরকম হয় না যে উপর থেকে কেউ নেমে আসে। লক্ষ্মীনারায়ণ তো তাদের ভুমিকা পালন করতে আসে। কিন্তু কেউ উপর থেকে নেমে আসে না। বাচ্চারা, এখন বাবা তোমাদের পড়ান। তখন এই সব কথা তোমরা বুঝতে পারো। প্রথমে তোমরাও অধঃপতিত (তুচ্ছ) বুদ্ধির ছিলে। যখন বাবা বোঝান, তখন তোমাদের(বুদ্ধির) দরজা খোলে। এতো সময় ধরে যা কিছু শুনেছ তা কোনো কাজের কথা ছিল না, তাতে আরও পতনের দিকে এগিয়ে গেছো তাই তোমরা সকলকে দিয়ে লেখাও। যখন লিখে দেবে তখন বোঝা যাবে যে -- কিছু বুদ্ধিতে বসেছে। যখন বাইরে থেকে(লোকেরা) আসে, যখন ফর্ম ভরানো হয় তখন জানা যায় যে এ আমাদের কুলের কি না। মুখ্য কথা হলো বাবাকে জানা। যেন বোঝে যে সত্যি সত্যি প্রতি কল্পে বাবা আমাদের পড়ান। একথা জিজ্ঞাসা করতে হবে - কবে থেকে পবিত্র হয়েছ ? যদিও অতি শীঘ্র সংস্কার পরিবর্তন করতে পারে না। প্রতি মুহূর্তে মায়ার কবলে পড়ে যায়। মায়াও দেখে -- যদি কাঁচা থাকে তবে তাকে গ্রাস করে নেয়। অনেক মহারথীদেরও মায়া গ্রাস করে নিয়েছে। শাস্ত্রতেও যে উদাহরণ রয়েছে তা এখনকার। (দিলওয়াড়া) মন্দিরেও অশ্বারোহী, মহারথী, পেয়াদা ইত্যাদি দেখানো হয়েছে। তোমরা এখন তোমাদের স্মরণ-চিহ্ন(ইয়াদগার) দেখো। যখন তোমরা এমন হয়ে যাবে তখন ভক্তির কথা ভুলে যাবে। তোমরা কারোর সামনে নত-মস্তক হতে পারো না। তোমরা জিজ্ঞাসা করবে যে, এঁরা(দেবতা) এখন কোথায়? এদের বায়োগ্রাফী (জীবন-চরিত) বলো। বাচ্চারা, বাবা তোমাদের নলেজফুল বানিয়েছেন তবেই তোমরা জিজ্ঞাসা কর। তাই নেশা থাকা উচিৎ। পাস উইথ অনার ৮ জন-ই হয়। এ হলো অনেক বড় পরীক্ষা। নিজেদের দেখতে হবে -- আমাদের আত্মা পবিত্র হয়েছে কী? ব্যাটারী চার্জ(ভরা) হবে তবেই যোগ লাগবে। বাবার সাথে যোগ-যুক্ত থাকলে তবেই সতোপ্রধান হতে পারবে। তমোপ্রধান আত্মা ফিরে যেতে পারে না।
এও হল ড্রামা। ওখানে এমন কোনো জিনিস নেই যা দুঃখ দেয়। গরুও সেখানে সুন্দর। কৃষ্ণের সঙ্গে যে গরুদের দেখানো হয় সেগুলিও কত সুন্দর। বড়-বড় লোকেদের আসবাবপত্রও অত্যন্ত সুন্দর। গরু ভাল দুধ দেয় তবেই তো দুধের নদী প্রবাহিত হয়। এখন এখানে তো তা নেই। এখন তোমরা নলেজফুল হয়ে গেছো। এই দুনিয়াকে তোমরা অধঃপতিত(তুচ্ছ) মনে কর। এর সমস্ত নোংরা(অপবিত্রতা) যজ্ঞে স্বাহা(অর্পণ) করতে হবে। তখন সর্ব অপবিত্রতা নিষ্কাশিত হয়ে সবকিছু স্বচ্ছ হয়ে যাবে। আর আমরাও আমাদের রাজধানীতে চলে যাবো। তার নাম হলো স্বর্গ। শুনলেই আনন্দ আসে। *আচ্ছা*!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১. এই অপবিত্র পুরাতন বিশ্বকে সংস্কারের জন্য নিজেকে পরিবর্তন বা সংশোধন করতে হবে, নিজের বুদ্ধিকে বাবার স্মরণের দ্বারা রিফাইন(সূক্ষ্ম) করতে হবে।
২. নিজেদের মধ্যে আত্মিক বার্তালাপ করতে হবে, তর্ক-বিতর্ক নয়। জ্ঞান দান করে সকলের ভান্ডারকে পরিপূর্ণ করতে হবে।
বরদান:-
স্নেহের রিটার্নে(পরিবর্তে) নিজেকে টার্ন (রূপান্তরিত) করে বাবা সম হয়ে ওঠা সম্পন্ন এবং সম্পূর্ণ ভব
স্নেহের চিহ্ন(নিশানী) হল, যাকে কেউ স্নেহ করে তার কোনো দুর্বলতা সে দেখতে পায় না। স্নেহী ব্যক্তির ভুলকে নিজের ভুল বলে মনে করে। বাবা যখন বাচ্চাদের কোনো কথা শোনেন, তখন মনে করেন যে, এ তো আমারই(শেখানো) কথা। বাবা বাচ্চাদেরকে নিজ সম সম্পন্ন এবং সম্পূর্ণ দেখতে চান। এই স্নেহের রিটার্নে নিজেকে পরিবর্তিত করে নাও। ভক্তেরা তো নিজেদের শিরোচ্ছেদ করে বাবার সম্মুখে রাখার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু তোমরা নিজেদের শিরোচ্ছেদ নয়, রাবণের শিরোচ্ছেদ কর।
স্লোগান:-
নিজের আত্মিক ভাইব্রেশন(প্রকম্পন) দ্বারা শক্তিশালী বায়ুমন্ডল তৈরীর সেবা করাই হল সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ সেবা।