২০-০৩-১৯ : প্রাতঃমুরলী ওঁম্ শান্তি! "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - বিচার সাগর মন্থন করার অভ্যাসে অভ্যাসী হও, প্রত্যুষে একান্তে বসে বিচার সাগর মন্থন করলে বুদ্ধিতে অনেক নতুন নতুন পয়েন্ট আসতে থাকবে"

প্রশ্ন:-

বাচ্চাদের নিজেদের স্থিতিকে ফার্স্টক্লাস বানাতে চাইলে কি কি বিষয়ের প্রতি সর্বদাই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে ?

উত্তর:-

১) একমাত্র এই বাবা যা শোনান - কেবলমাত্র তাই শুনবে, এছাড়া এই দুনিয়ার আর কোনও কিছুই শুনবে না। ২) সঙ্গী-সাথী নির্বাচনে সতর্ক হও। যে এই ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠন খুব মনোযোগী, এই জ্ঞানের পাঠে যার ধারণা বেশ উন্নত, তাকে সঙ্গী করলে তোমার স্থিতি ফার্স্টক্লাস হয়ে যাবে। অনেক বাচ্চার অবস্থা দেখে বাবার (ব্রহ্মা) মনে হয় যে, ড্রামাতে হয়তো কিছু পরিবর্তন হতে চলেছে, কিন্তু তখনই আবার উনি (শিববাবা) বলেন- এখন তো রাজধানী স্থাপনার কার্য চলছে।

ওঁম্ শান্তি!

অসীম জগতের বাবা কেবল একজনই। যিনি ওঁনার অসীম জগতের বাচ্চাদের সামনে বসিয়ে জ্ঞানের পাঠ পড়ান ও বোঝান। এছাড়া মানুষ যা কিছু পড়ায় ও শোনায় - সেসব তোমাদের শোনা বা পড়ার দরকার নেই। যেহেতু এখন তো বুঝেই গেছো, ঈশ্বরীয় পাঠ কেবল এই একটাই। তাই এখন থেকে কেবল এটাই পড়তে হবে তোমাদের। বাবা যা পড়াবেন, যা শেখাবেন - তোমরাও তাই আওড়াবে। জগতে তো কত প্রকারের পুস্তক ইত্যাদি লেখা হয়, তা জগতের লোকেদের পড়ার জন্য। অসংখ্য লোকেরা তা পড়েও থাকে। অনেক অনেক পুস্তক পড়ে অনেকে। কিন্তু একমাত্র তোমরা বি.কে.-রাই -কেবলমাত্র এই এক বাবার কাছেই জ্ঞানের পাঠ পড়ো ও শোনো এবং অন্যদেরকেও তা শোনাও। যেহেতু বাবার থেকে যা কিছুই শুনবে, তাতে অবশ্যই কল্যাণ হবে। জগতে তো কত অসংখ্য পুস্তক আছে এবং নিত্য নতুন কত প্রকারের পুস্তক প্রকাশও পায়, কিন্তু তোমরা এখন বুঝতে পেরেছ, প্রকৃত সত্য শোনান কেবলমাত্র এই এক বাবা। ব্যস্, শুধুমাত্র ওঁনারটাই শুনব। তোমাদের কর্তব্য মনোযোগ সহকারে ওঁনার পাঠ শোনা। তোমাদেরকে যার কিছু কিছু অংশের ব্যাখ্যাও করেন উঁনি। পরে আবার তারই বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে শোনান, আবার সেই পূর্বের পাঠেই চলে আসেন। যদিও মন্মনাভব শব্দটি একেবারেই সঠিক, কিন্তু বাবা তা বলেননি। বাবা বলেন-"নিজেকে আত্মা ভাবো, আমাকে স্মরণ করো আর সৃষ্টিচক্রের আদি-মধ্য-অন্তের যে জ্ঞান আমি শোনাই, তা ধারণ করো।" একমাত্র তোমরাই তা জানো যে- তোমরা যারা দেবতা হবে, তাদের সংখ্যাও আরও বৃদ্ধি পাবে। এমন বাচ্চাদেরই যেমন মূলবতন স্মরণে থাকবে, তেমনি স্মরণ থাকবে নতুন দুনিয়াও।"



সর্বাগ্রে, উচ্চতমেরও উচ্চে এই বাবা, এরপর আসবে নতুন দুনিয়া, যেখানে আগামীতে রাজত্ব করবেন উচ্চ থেকেও উচ্চের এই লক্ষ্মী-নারায়ণ। সামনে এই চিত্রটিকে রাখতে হবে অবশ্যই, তবেই তো তা মনে থাকবে। যদিও এই একই চিত্র রাম-রাজ্যেরও, কিন্তু রাম-রাজ্য তো আর স্বর্গ-রাজ্য (স্বর্ণযুগ) নয়। তা হলো সেমি- (আধা) স্বর্গ। উচ্চতমেরও উচ্চে যিনি, সেই বাবা স্বয়ং তোমাদেরকে এই জ্ঞানের পাঠ পড়ান। তাই এই পঠন-পাঠনে জাগতিক কোনও পুস্তকাদির প্রয়োজন নেই। এখানে জাগতিক পুস্তকের পাঠ চলে না, কারণ তা তো আর পরবর্তী জন্মে কাজে আসবে না। জাগতিক পাঠ কেবলমাত্র এই এক জন্মের জন্য। কিন্তু বি.কে.দের এই পাঠের নাম 'অমরকথা'! যেই পাঠের দ্বারা নর হতে পারে নারায়ণ, নতুন সেই দুনিয়ার জন্য এমন শিক্ষাই দেন এই বাবা। বাচ্চারা, এখন তো তোমরা ৮৪-জন্ম চক্রের কথাও জানো। বর্তমান সময়কালটা তোমাদের পাঠের সময়। সাথে মন-বুদ্ধিতে পাঠের মন্থনও করতে হবে। তোমাদেরকেই তো আবার অন্যদেরকেও তা পড়াতে হবে যে। খুব ভোরে উঠে বিচার সাগর মন্থন করতে হবে। ভোরে বিচার সাগর মন্থন করলে ভাল যুক্তি ও পয়েন্ট পাওয়া যায়। যে অন্যকেও বোঝাতে আগ্রহী হবে, তার খুব ভাল বিচার সাগর মন্থন হবে। টপিক, পয়েন্ট, ইত্যাদিও পেয়ে যাবে সে। যেহেতু জন্মজন্মান্তর ধরে ভক্তির কথা তো শুনেই থাকবে সে। কিন্তু এই জ্ঞান তো আর জন্মজন্মান্তর ধরে শুনতে পাও না। পুরো কল্পে এই একবারই তা শোনায় এই বাবা। পরে এই জ্ঞান বিস্মৃতির অতলে তলিয়েও যায়। ভক্তি-মার্গে কত প্রকারের পুস্তকাদিও থাকে। বিদেশ থেকেও আসে কত কি। সব কিছুরও বিনাশ হয়। সত্যযুগে কোনও পুস্তকাদির প্রয়োজন পড়ে না। এগুলি সব কলিযুগের সামগ্রী। বর্তমান দুনিয়ায় যা কিছুই দেখছ - হাসপাতাল, জেল, কোর্টের-জর্জ, ইত্যাদি কিছুই থাকবে না সেখানে। সেই দুনিয়া হবে একেবারেই অন্য ধরণের দুনিয়া। যদিও দুনিয়া তো এটাই থাকবে, তবুও নতুন আর পুরোনোর মধ্যে অবশ্যই তফাৎ তো থাকবেই। তাই তো তাকে বলা হয় স্বর্গ-রাজ্য। সেই দুনিয়াই আবার নরক-রাজ্যে পরিণত হয়।



লোকেদের মুখে শোনা যায়- অমুকে স্বর্গ-বাসী (বা স্বর্গে গেছে) হয়েছে। সন্ন্যাসীদের ক্ষেত্রে বলা হয়-ব্রহ্মে লীন হয়েছে, নির্বাণ ধামে গেছেন। কিন্তু নির্বাণ ধামে কেউই যেতে পারে না। তোমরা বি.কে.-রা সেই রহস্যকে জানো, রুদ্রমালার গঠন হয় কিভাবে? এছাড়া রুণ্ডমালাও হয়। যা বিষ্ণুর রাজধানীর জন্য গঠিত হয়। তোমাদের জ্ঞানের পঠন-পাঠনের নম্বরের ক্রমিক অনুসারে সেই মালায় স্থান পাও। সর্বাগ্রে নিশ্চয় হতে হবে, জ্ঞানের এই পাঠ হল- ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠন। তিনি যেমন সুপ্রিম বাবা, তেমনি আবার সুপ্রিম শিক্ষকও বটে। তোমাদের বুদ্ধিতে যে জ্ঞান ধারণ করবে, তা আবার অন্যদেরকেও ধারণ করাতে হবে। নিজের মতন করে তাকেও তৈরি করতে হবে। এসবের জন্যও বিচার সাগর মন্থন করতে হবে। সংবাদ-পত্রও তো খুব ভোরেই বিলি করা হয়। যদিও তা অতি সাধারণ কথা। কিন্তু তোমাদের এই জ্ঞান-রত্ন এক একটির মূল্য লক্ষ টাকা। তা সত্ত্বেও তোমাদের মধ্যে যেমন কেউ কেউ খুব মনোযোগী হয়ে ভালভাবে সবকিছু বোঝে, কেউ বা আবার খুবই কম বোঝে। কে কেমন বুঝলে আর কে কেমন বোঝাতে পারলে, সেই অনুসারেই নতুন দুনিয়াতে তেমন পদের প্রাপ্তি হয়। বিচার সাগর মন্থনের জন্য চাই একান্ত পরিবেশ। যেমন রামতীরথ্ যখন কিছু লিখতেন, চ্যালাদের বলতেন- তোমরা এখন দু-মাইল দূরে থাকো, না হলে তোমাদের ভাইব্রেশন এই লেখায় প্রভাব পড়বে। এখনও তোমরা পারফেক্ট হতে চলেছ। সমগ্র দুনিয়াটাই যে এখন ডিফেক্টটেড বুদ্ধির। এই জ্ঞানের পাঠেই তোমরা লক্ষ্মী-নারায়ণের মতন হতে পারো। সত্যি, কত উন্নত এই পাঠ। কিন্তু ক্লাসে জ্ঞানের ক্রমিক অনুসারে তোমাদের বসানো যায় না। পিছনে বসলে তো ফেল হয়ে যাবে, ঝিমুনি আসবে, ফলে বায়ুমণ্ডলকেই খারাপ করে ফেলবে। যদিও নিয়মানুসারে জ্ঞানের ধারণা অনুসারেই বসানো উচিত। কিন্তু এসব বিষয়ে ★ "গুর জানে গুর কী গোথরী জানে।" (গুর অর্থাৎ অতি মিষ্ট যিনি শিববাবা, তিনি সবই জানেন আর গোথরী অর্থাৎ সেই অতি মিষ্ট গুর রাখার পাত্র, ব্রহ্মাবাবা তিনিও তা জানেন।) যার মর্মার্থ অনেক উচ্চ ধারণার। ক্লাস তো আর পৃথকভাবে করা যায় না। বাস্তবে ক্লাসে তোমাদের এমনভাবে বসা উচিত, যাতে নিজের অঙ্গের সাথে আসপাসের অন্য কারও অঙ্গ যেন না লাগে। মাইকে তো বেশ দূর থেকেই আওয়াজ শুনতে পাবে। বাবা বলছেন-এই দুনিয়ায় তুমি যেমন আর অন্য কিছুই শুনবে না, তেমনি অন্য কিছু পড়বেও না। এমন কি তাদের সাথে সঙ্গও করবে না। যারা মনোযোগ সহকারে এই জ্ঞানের পঠন-পাঠন করে, কেবলমাত্র তাদেরই সাথে সঙ্গ করা উচিত। যেখানে খুব ভাল সেবাকার্য চলবে, যেমন মিউজিয়াম ইত্যাদিতে, সেখানে খুব জ্ঞানী-বুদ্ধিমতি ও যোগযুক্ত কন্যাদেরই পাঠানো উচিত।



এবার বাবা বোঝাচ্ছেন - এই অবিনাশী ড্রামা পূর্ব নির্ধারিত । তবুও বাবা কখনও কখনও ভাবেন, ড্রামাতে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে কি ? বাস্তবে, যেহেতু তা অবিনাশী, তাই পরিবর্তন তো হতেই পারে না। ড্রামার চিত্রপট যে পূর্ব থেকেই নির্ধারিত । তবুও বাচ্চাদের অবস্থা দেখে এমনই মনে হয় যে, ড্রামার হয়তো কোনও পরিবর্তন হতে চলেছে। এত সহজেই কি স্বর্গ-রাজ্যে পৌঁছে যাওয়া যায় ? পরক্ষণেই আবার মনে হয়, স্বর্গ-রাজ্যের জন্য রাজধানীরও তো দরকার। সেখানেও কেউ বা দাস-দাসী, চণ্ডাল, ইত্যাদিরও তো প্রয়োজন আছে। অতএব ড্রামাতে কোনও পরিবর্তন আদৌ হচ্ছে না। স্বয়ং ভগবান যেখানে বলছেন-"এই ড্রামা পূর্ব নির্ধারিত। এতে আমিও কোনও পরিবর্তন ঘটাতে পারি না।" -ভগবানের ঊর্ধ্বে আর কেউই হয় না। এদিকে লোকেরা বলে-"ভগবান তা কেন করতে পারবে না! ওদিকে ভগবান স্বয়ং বলছেন- "আমি এই অবিনাশী ড্রামাতে কিছুই করতে পারবো না। তা যে পূর্ব নির্ধারিত। বিঘ্ন এলেও কিছুই করার নেই আমার। তা হয় ড্রামার চিত্রপট অনুসারে। এতে আমি আর কি করবো।" অনেক কন্যারা চিৎকার করে, বাবা আমাদেরকে নগ্ন হওয়ার হাত থেকে বাঁচাও। কিন্তু এতে বাবা কি করবে? বাবা কেবল এই বলতে পারে, এসব যে ড্রামার ভবিতব্য। ড্রামার চিত্রপট যে পূর্বেই খোঁচিত হয়ে আছে। এমন যেন ভেবো না, এসব ভগবানের ভবিতব্য। ভগবানের হাতে এসব থাকলে, কোনও অনন্য কেউ শরীর ছাড়লে, তাকে বাঁচিয়ে তুলতেন অবশ্যই। এসবে অনেকেরই সংশয় আসে। ভগবান তো জ্ঞানের পাঠ পড়ান। ভগবানের বাচ্চা হওয়া সত্ত্বেও, ভগবান কি নিজের বাচ্চাকে বাঁচিয়ে তুলতে পারেন না? এমন কতই না অভিযোগ অনুযোগ দাও তোমরা। লোকেরা বলে- সাধুরা তো কারও কাউকে বাঁচিয়েও দেয়, তাদের শরীরে আবারও প্রাণের সঞ্চার হয়। এমন কি চিতা থেকেও উঠে আসে কেউ কেউ। তখন তারা বলে ঈশ্বর তার জীবন ফিরিয়ে দিয়েছেন। কাল তাকে নিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু প্রভু তাকে ক্ষমা করে তার প্রতি কৃপা করেছেন। বাবা বোঝাচ্ছেন - যা কিছু ড্রামার চিত্রপটে খোঁদিত আছে, তেমনটাই ঘটে। এতে বাবারও কিছু করার নেই। একেই বলা হয় ড্রামার ভবিতব্য। তোমরা তো ড্রামার বিষয়টা জানো। লোকেরা বলবে- যা কিছু হবার ছিল তেমনটাই হচ্ছে। এতে চিন্তার কি আছে ? বাবা তো তোমাদের সর্বপ্রকারের চিন্তামুক্ত করে গড়ে তুলছেন। তোমরা এমনটাই ভাববে- সেকেন্ড বাই সেকেন্ড যা কিছুই ঘটে চলেছে, তা ড্রামা অনুসারেই। আত্মা এক শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করে সে তার নির্ধারিত ভূমিকা পালন করতে থাকে। অনাদি এই পার্টকে তুমি কি ভাবেই বা বদলাতে পারবে? যদিও তোমাদের বর্তমান স্থিতি এখনও অনেকটাই কাঁচা, তবুও এ বিষয়ে কিছু তো বিচার করতে পারবে। কিন্তু ভবিতব্য যেখানে সেখানে আর কিছুই করার থাকে না। যদিও লোকেরা অনেক কিছুই বলে, কিন্তু তোমাদের বুদ্ধিতে তো ড্রামার রহস্যগুলি জানা আছে। যার যে পার্ট, তাকে তো তা করতেই হবে। এ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার প্রয়োজন নেই। স্থিতি যতক্ষণ কাঁচা থাকবে, ততক্ষণ অল্পবিস্তর ঢেউয়ের লহর তো আসতেই থাকবে।



"বাচ্চারা, এখন তোমরা সবাই জ্ঞানের পাঠ পড়ছ। এখানে তোমরা সবাই দেহধারী। আমিই একমাত্র বিদেহী। এই বিদেহী সব দেহধারীদের এতসব শেখাচ্ছেন।" বাবা আরও বলছেন-"বাচ্চারা, কখনও কখনও তোমাদেরকে এই ব্রহ্মাও বোঝাতে থাকেন। বাবার পার্ট আবার প্রজাপিতা ব্রহ্মারও পার্ট - সত্যি কি ওয়ান্ডারফুল! বাবা নিজে বিচার সাগর মন্থন করে তোমাদের তা বলছেন। এই নলেজও কত ওয়ান্ডারফুল। কত বুদ্ধি খরচ করতে হয় এই জ্ঞানের পাঠে। বাবা খুব ভোরে উঠে এসবের বিচার সাগর মন্থন করেন। তোমাদেরও তেমনই করা উচিত। যেমন শিক্ষক - তেমনি ছাত্র। তবুও তফাৎ তো থাকবেই। টিচার স্টুডেন্টকে ১০০-তে ১০০ নম্বর তো আর দিতে পারেন না। কিছু কম তো হবেই। তার উপরে এই বাবা হলেন উচ্চতমেরও উচ্চে। এছাড়াও তোমরা হলে দেহধারী, সেখানে হুবহু শত প্রতিশত ১০০% হবেই বা কি করে ? যা অতি গুহ্য রহস্যের ব্যাপার। কেউ কেউ তা শুনে অবশ্য ধারণও করে, যা জানতে পেরে খুশীও হয়। কেউ কেউ আবার বলে - বাবার একই বাণী তো বারবার রিপিট হতে থাকে। উত্তরে বাবা জানান- নতুন নতুন বাচ্চারাও তো আসতে থাকে, তাই পুরোনো পয়েন্টকেও রিপিট করতে হয়৷ তার সাথে নতুন পয়েন্টও অবশ্যই থাকে অন্যদেরকে বোঝাবার জন্য। বাচ্চারাই তো এ ব্যাপারে বাবার সহযোগী হবে। ম্যাগাজীন-পুস্তিকাও তো প্রকাশ হয়। কল্প পূর্বেও এই একই বিষয়ে লেখা হয়েছিল। সংবাদপত্রে যদি এ বিষয়ে কিছু লিখতে চাও, তবে অবশ্যই সব দিক লক্ষ্য রাখতে হবে। এমন কোনও বিষয়বস্তু যেন ছাপা না হয়, যা পড়ে সাধারণ মানুষেরা বিরক্ত বোধ করে। ম্যাগাজীন-পুস্তিকা তো কেবল তোমরা বি.কে.-রাই পড়ো। বাস্তব সম্মত ব্যাখ্যা না হলেই লোকেরা বলবে বি.কে.-রা এখনও জ্ঞানে সম্পূর্ণ হতে পারেনি। অবশ্য এক্কেবারে এ্যকুরেট ১৬-কলা হওয়ার জন্য সময়ও তো লাগবে। তাই এখনও অনেক সেবা করতে হবে। প্রজার সংখ্যাও বাড়াতে হবে অনেক। তার সাথে বাবা এও জানাচ্ছেন - নম্বরও তো হয় অনেক প্রকারের। যেমন বাবার নিমিত্ত কেউ। অনেককে এই জ্ঞান ধারণ করার ব্যবস্থা করতে পারলে, তারও ফলপ্রাপ্তি তেমন হয়। পুরানো এই দুনিয়া যে এখন বিনাশের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। এই অনিশ্চিত দুনিয়ায় যা কেবল অল্প কালের সুখ। রোগ-ভোগ ইত্যাদি তো সবারই হয়। বাবা স্বয়ং এসবে অনুভবী। তাই তিনি দুনিয়াদারির এইসব কথা বিশ্লেষণ করে বোঝান।



বাবা জানাচ্ছেন - সংবাদপত্র বা ম্যাগাজীন-পুস্তিকায় এমন চমৎকার কিছু লেখো, যা পড়ে লোকেরা ভাববে যে, ব্রহ্মাকুমারীরা একেবারে সঠিক কথাই লেখে। পূর্বেও এই লড়াই হুবহু এমনটাই ঘটেছিলো ৫-হাজার বছর পূর্বে। কিন্ত কি ছিল সে লড়াই আর কিভাবে ? তা জানতে হলে এখানে এসে বোঝো। এতে তোমাদের যেমন সুনাম হবে, লোকেরাও এসব জেনে পুলকিত হবে। এটাই সবচেয়ে বড় কথা- কিন্তু যদি তা কারও বুদ্ধিতে স্থান পায়। যা কিছু লিখবে তোমরা, তা অন্যকে ব্যাখ্যা করে বোঝাতে পারতে হবে। আর যারা বুঝিয়ে উঠতে পারো না, তারা কিছু লিখতেও পারো না। *আচ্ছা!*



মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারনার জন্য মুখ্য সার :-

১. একমাত্র এই বাবা যা কিছু শোনান ও পড়ান, কেবলমাত্র তাই পড়বে ও শুনবে। এছাড়া অন্য কোনও কিছুই পড়া বা শোনার প্রয়োজন নেই । সঙ্গী-সাথীর ব্যাপারে খুবই সতর্কতা অবলম্বন করবে। খুব ভোরে উঠে একান্তে বসে বিচার সাগর মন্থন করবে।

২. ড্রামার ভবিতব্য নিশ্চিত, তাই সদা নিশ্চন্তে থাকো। কোনও বিষয়েই সংশয় যেন না আসে। লোকেরা যা কিছুই বলুক না কেন, তুমি কিন্তু অবশ্যই ড্রামার চিত্রনাট্যের প্রতি অটল থাকবে।

বরদান:

হোলী শব্দের অর্থ - স্বরূপে স্থির থেকে প্রকৃত হোলী পালনকারী তীব্র পুরুষার্থী ভব

হোলী উৎসব পালন করা অর্থাৎ হো, লী, যা অতীত হয়ে গেছে। যা অতীত তাকে একেবারেই ইতি টানার প্রতিজ্ঞা করা। অতীতের কথা মনে এলেও এমন মনে হবে তা যেন অনেক জন্ম পূর্বের কাহিনী। যখন এমন স্থিতিতে আসবে তখন পুরুষার্থের গতি বৃদ্ধি পাবে। নিজের এবং অপরের পুরোনো কথাকে চিন্তায় না আনা, চিত্ততে না রাখা - এটাই প্রকৃত হোলী পালন করা অর্থাৎ পাকা রং লাগানো।

স্লোগান:-

সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ভাগ্য তার, যে সরাসরি ভগবানের দ্বারা প্রতিপালিত হয়, পড়াশোনা করে, আর শ্রেষ্ঠ জীবনের জন্য শ্রীমৎ পায়।