06.11.2019
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
নিজেকে যাচাই (পরীক্ষা) করো যে, কতটা সময় বাবার স্মরণ (স্মৃতি) থাকে, কারণ স্মৃতিতে
থাকলেই লাভ, বিস্মরণে ক্ষতি"
প্রশ্নঃ -
এই
পাপাত্মাদের দুনিয়ায় এমন কোন্ কথাটি সম্পূর্ণরূপে অসম্ভব বা অবাস্তব এবং কেন ?
উত্তরঃ -
এখানে কেউ যদি বলে যে, আমি পুণ্যাত্মা, তবে তা একদমই অসম্ভব, কারণ দুনিয়াই কলিযুগীয়
তমোপ্রধান। মানুষ যে কার্যকে পুণ্যকর্ম বলে মনে করে সেটাও পাপকর্মে পরিণত হয়ে যায়।
কারণ সে প্রতিটি কর্ম বিকারের বশবর্তী হয়ে করে।
ওম্ শান্তি ।
একথা বাচ্চারা
বোঝে যে, আমরা এখন ব্রহ্মার সন্তান ব্রহ্মাকুমার-কুমারী। পরে পুনরায় হই দেবী-দেবতা।
এ শুধু তোমরাই জানো অন্য আর কেউ-ই জানে না। তোমরা জানো যে, আমরা
ব্রহ্মাকুমার-কুমারীরা অসীম জগতের পড়া পড়ছি। ৮৪ জন্মের পড়াও পড়ি, সৃষ্টি-চক্রের
পড়াও পড়ি। আবার তোমরা এই শিক্ষাও পাও যে, (আমাদের) পবিত্র হতে হবে। বাচ্চারা, এখানে
বসে তোমরা পবিত্র হওয়ার জন্য অবশ্যই বাবাকে স্মরণ কর। নিজের মনকে প্রশ্ন কর যে,
সত্যি-সত্যিই কি আমরা বাবার স্মরণে বসেছিলাম নাকি মায়া-রূপী রাবণ বুদ্ধিকে অন্যদিকে
নিয়ে গিয়েছিল। বাবা বলেছেন, "মামেকম্ (একমাত্র আমাকেই) স্মরণ করো", তবেই পাপমোচন হবে।
এখন নিজেদের প্রশ্ন কর যে, আমরা বাবার স্মরণে রয়েছি নাকি বুদ্ধি অন্য কোথাও চলে গেছে
? স্মৃতিতে থাকা উচিত যে -- কতটা সময় আমরা বাবার স্মরণে থাকি ? আর কতটা সময় আমাদের
বুদ্ধি অন্যান্য কোথাও চলে যায় ? নিজেদের অবস্থা অর্থাৎ স্থিতিকে দেখো। যতটা সময়
বাবাকে স্মরণ করবে, তাতেই পবিত্র হবে। লাভ-ক্ষতিরও দিনলিপি (পোতামেল) রাখতে হবে।
ডায়রী(দিনলিপি) লেখার অভ্যাস থাকলে স্মরণেও থাকবে। তখন লিখতেও থাকবে। ডায়রী তো
সকলের পকেটেই থাকে। যারা ব্যবসায়ী তাদের থাকে পার্থিব জগতের(হদের) সীমিত দিনলিপি বা
ডায়রী। আর তোমাদের ডায়রী হলো অসীম জগতের। তাই তোমাদের নিজেদের চার্ট নোট করতে হবে।
বাবার আজ্ঞা হলো -- কাজ-কর্মাদি সবকিছুই করো, কিন্তু সময় বের করে আমাকে স্মরণ করো।
নিজেদের দিনলিপি (পোতামেল) দেখে লাভের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে থাকো। নিজের ক্ষতি কোরো
না। এ তো তোমাদের যুদ্ধ, তাই না। সেকেন্ডে লাভ, আর সেকেন্ডে ক্ষতি। তৎক্ষণাৎ জানা
যায় যে, আমরা লাভ করেছি না লোকসান। তোমরা হলে ব্যবসায়ী, তাই না। অতি বিরল
ব্যক্তিরাই এই ব্যবসা করে। স্মরণের মাধ্যমে হয় লাভ আর বিস্মরণে ক্ষতি। নিজেকে যাচাই
করতে হবে, যারা উচ্চপদ লাভ করবে তাদের মধ্যে উৎসাহ (ইচ্ছা) থাকে -- দেখি, আমরা কতটা
সময় বিস্মরণে(ভুলে) থাকি ? বাচ্চারা, এ তো তোমরা জানো যে, আমাদের সকল আত্মাদের পিতা
হলেন পতিত-পাবন। আসলে আমরা হলাম আত্মা। নিজেদের প্রকৃত ঘর থেকে এখানে এসেছি, এই
শরীর ধারণ করে নিজ ভূমিকা পালন করছি। শরীর বিনাশী আর আত্মা অবিনাশী। সংস্কারও
আত্মাতেই থাকে। বাবা জিজ্ঞাসা করেন -- হে আত্মণ, স্মরণ করো যে, এই জন্মেই
বাল্যাবস্থায় কোনো উল্টোকর্ম (বিকর্ম) হয়ে যায়নি তো ? স্মরণ করো। ৩-৪ বছর থেকে শুরু
করে স্মরণে তো সব (কথা) থাকে, আমরা বাল্যকালে কীভাবে জীবন অতিবাহিত করেছি, আর কী-কী
করেছি ? এমন কোনো কথা হৃদয়কে দংশন করে না তো ? স্মরণ করো। সত্যযুগে পাপকর্ম হয়ই না,
তাই জিজ্ঞাসা করার মতন কথাও থাকে না। পাপ তো এখানেই হয়। মানুষ যেগুলোকে পুণ্যকর্ম
বলে মনে করে, সেগুলোও পাপই(কর্ম) হয়। এ হলো পাপাত্মাদের দুনিয়া। তোমাদের
আদান-প্রদান (লেন-দেন) হয় পাপাত্মাদের সঙ্গে। এখানে পূণ্য আত্মা হয়ই না।
পূণ্যাত্মাদের দুনিয়ায় আবার একটিও পাপাত্মা থাকে না। পাপাত্মাদের দুনিয়ায় আবার
একটিও পুণ্যাত্মা থাকতে পারে না। যে গুরুর চরণে পতিত হও, সেও তো কোনো পুণ্যাত্মা নয়।
এ তো হলোই কলিযুগ, তাও আবার তমোপ্রধান। তাই এখানে কোনো পুণ্যাত্মার থাকাই অসম্ভব।
পুণ্যাত্মা হওয়ার
জন্যই বাবাকে আহ্বান করে যে, এসে আমাদের পবিত্র আত্মায় পরিণত করো। এমনও নয় যে, যদি
কেউ অনেক দান-পুণ্যাদি করে, ধর্মশালা ইত্যাদি বানায়, তাহলেই সে পুণ্যাত্মা হয়ে যায়।
না, বিবাহাদির জন্য হল(মন্ডপ) ইত্যাদি তৈরী করে, এসব কি কোন পুণ্যের কাজ, না তা নয়।
এসব বোঝার মতো বিষয়। এ হলো রাবণ-রাজ্য, পাপ আত্মাদের আসুরী দুনিয়া। এসব কথা তোমরা
ব্যতীত আর কেউই জানে না। রাবণ যদিও রয়েছে, কিন্তু তাকে চিনতে কী পারে ? না পারে না।
শিবের চিত্রও রয়েছে, কিন্তু জানে না। বড়-বড় শিবলিঙ্গাদি তৈরী করে তথাপি বলে যে,
নাম-রূপের ঊর্ধ্বে (ন্যায়ারা), সর্বব্যাপী, তাই বাবা বলেন, যদা যদাহি....., ভারতেই
শিববাবার গ্লানি হয়। যে পিতা তোমাদের বিশ্বের মালিক বানান, তোমরা মনুষ্য-মতে চলে
তাঁর কত গ্লানি কর। মনুষ্য-মত আর ঈশ্বরীয়-মতের বইও তো রয়েছে, তাই না। একথা তো
তোমরাই জানো আর বোঝাও যে, আমরা শ্রীমতানুসারে দেবতা হই। রাবণ-মতে পরে আবার আসুরীয়
মানুষ হয়ে যায়। মনুষ্য মতকে আসুরী মত বলা হয়। আসুরী কর্তব্যই (কার্য) করতে থাকে।
মূলকথা হলো ঈশ্বরকে সর্বব্যাপী বলে দেওয়া। কূর্মাবতার, মৎস্যাবতার ইত্যাদি। তাহলে
কত আসুরী অপবিত্র (ছিঃ ছিঃ ) হয়ে গেছে। তোমাদের আত্মা কূর্ম বা মৎস্যরূপী অবতার হয়
না, মানুষের শরীরেই প্রবেশ করে। এখন তোমরা বোঝো যে, আমরা কোনো কূর্ম-মৎস্যে কী
পরিণত হই, না হই না। ৮৪ লক্ষ যোনীতে জন্ম নিই, না নিই না। এখন তোমরা বাবার শ্রীমত
পেয়েছ -- বাচ্চারা, তোমরা ৮৪ জন্ম নাও। ৮৪ আর ৮৪ লক্ষ-র পারসেন্টেজকে কত বলবে ! এ
মিথ্যা, সম্পূর্ণ মিথ্যা, এতে এক রতিও সত্য নেই। এরও অর্থ বোঝা উচিৎ। ভারতের অবস্থা
দেখ কী হয়েছে। ভারত সত্যখন্ড ছিল, যাকে হেভেন(স্বর্গ) বলা হতো। আধাকল্প রাম-রাজ্য,
আধাকল্প রাবণ-রাজ্যকে আসুরী সম্প্রদায়ের বলা হবে। শব্দ কত কড়া। আধাকল্প দেবতাদের
রাজ্য চলে। বাবা বোঝান -- লক্ষ্মী-নারায়ণ দি ফার্স্ট, দি সেকেন্ড, দি থার্ড বলা হয়ে
থাকে। যেমন এডওয়ার্ড ফার্স্ট, সেকেন্ড হয় ঠিক তেমনই, তাই না। প্রথম প্রজন্ম, পুনরায়
দ্বিতীয় প্রজন্ম এভাবেই চলতে থাকে। তোমাদেরও প্রথমে হয় সূর্যবংশীয় রাজ্য পরে
চন্দ্রবংশীয়। বাবা এসে ড্রামার রহস্যও সঠিকভাবে বোঝান। তোমাদের শাস্ত্রতে এসব কথা
নেই। কোনো-কোনো শাস্ত্রে সামান্য দাগ কাটা (বোঝান) হয়েছে, কিন্তু সেইসময় যারা
পুস্তক বা শাস্ত্রে রচনা করেছে তারা কিছুই বুঝতে পারেনি।
বাবাও (ব্রহ্মা) যখন বেনারস গিয়েছিলেন, সেইসময় এই দুনিয়া তাঁর ভাল লাগত না, ওখানে
বসে-বসে সমস্ত দেওয়ালে দাগ কাটতেন। বাবা-ই এসব করতেন, কারণ আমি তো সেইসময় বাচ্চা
ছিলাম, তাই না। সবকিছু বুঝতে পারতাম না। ব্যস্, মনে হতো কেউ এমন আছে যে আমাকে দিয়ে
এসব করাত। বিনাশ দেখে ভিতরে(মনে) খুশীও হোত। রাতে যখন শুতে যেতাম তখনও যেন উড়তেই
থাকতাম কিন্তু কিছুই বুঝতে পারতাম না। আমি এভাবেই দাগ কাটতে থাকতাম। মনে হতো যেন
কোনো শক্তি রয়েছে, যা প্রবেশ করত। আমি আশ্চর্য হয়ে যেতাম। পূর্বে তো কাজ-কর্মাদি (ব্যবসা)
করতাম, তারপর কী হলো, কাউকে দেখতাম আর তৎক্ষণাৎ ধ্যানে চলে যেতাম। আমি বলতাম -- এটা
কি হচ্ছে ? যার দিকেই তাকাই তার চোখ বন্ধ হয়ে যায়। আমি তাদের জিজ্ঞাসা করতাম কি
দেখেছ তখন তারা বলত যে, বৈকুন্ঠ দেখেছি, কৃষ্ণ দেখেছি। এইসবও বোঝার মতন বিষয়(কথা),
তাই না। তাই বোঝার জন্য সবকিছু ছেড়ে বেনারস চলে গেছি। সারাদিন বসে থাকতাম শুধু
পেন্সিল আর দেওয়াল আর অন্য কোনো কাজই নেই। বাচ্চা ছিলাম, তাই না। যখন এমন-এমন সব
দেখি তখন বুঝি যে এখন এসব কিছু করতে হবে না। ব্যবসাদি ছাড়তে হবে। খুশী ছিল যে, এই
বোঝা ছাড়তে হবে। রাবণ-রাজ্য তো, তাই না। *রাবণের উপর (মাথার মুকুট) গর্দভের মস্তক
দেখান হয়, তাই না। তখন মনে হয় যে, এ কোন রাজত্ব নয়, বোঝা। গাধা মুহূর্তে-মুহূর্তে
মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ধোপার কাপড়-জামা সব খারাপ করে দেয়। বাবাও(শিব) বলেন, তুমি কি
ছিলে, এখন তোমার কি অবস্থা হয়ে গেছে*। একথা বাবা-ই বসে বোঝান আর এই দাদাও বোঝান।
দু'জনেরই বোঝানো চলতে থাকে। জ্ঞানকে যারা ভালভাবে বোঝাতে পারে, তাদের তীক্ষ্ণ
বুদ্ধিসম্পন্ন বলা হবে। নম্বরের ক্রমান্বয়েই তো হয়, তাই না। বাচ্চারা, তোমরাও
বোঝাও, এই রাজধানী স্থাপিত হচ্ছে। অবশ্যই নম্বরের ক্রমানুসারেই পদপ্রাপ্তি হবে।
আত্মাই প্রতি কল্পে নিজ ভূমিকা পালন করে। সকলেই সমানভাবে একইরকমের জ্ঞান ধারণ করবে
না। এই স্থাপনাই বিস্ময়কর। অন্য কেউ কি আর স্থাপনার জ্ঞান দেয়, না দেয় না। মনে কর,
শিখ-ধর্মের স্থাপনা হচ্ছে। শুদ্ধ আত্মা প্রবেশ করেছে, তার কিছু সময় পরে শিখ-ধর্মের
স্থাপনা হয়েছে। তাদের হেড(প্রধান) কে ? গুরুনানক। তিনি এসে জপসাহেব রচনা করেন।
প্রথমে তো নতুন আত্মাই হবে, কারণ (নতুন) আত্মা পবিত্র হয়। পবিত্রকে মহান আত্মা বলা
হয়। সুপ্রীম তো একমাত্র বাবাকেই বলা হয়। তিনিও ধর্ম স্থাপনা করেন তাই তাকে মহান বলা
হবে। কিন্তু নম্বরের ক্রমানুসারেই (পর-পর) আসে। ৫০০ বছর পূর্বে এক আত্মা এসেছিল, এসে
শিখ ধর্ম স্থাপন করে, ওইসময় গ্রন্থ কোথা থেকে আসবে। অবশ্যই সুখমণী, জপসাহেব ইত্যাদি
পরে বানিয়েছিল, তাই না। কি শিক্ষা দেন। যদি ইচ্ছা থাকে তাহলে বসে বাবার মহিমা
কীর্তন করে। এছাড়া এসব পুস্তকাদি তো পরে বসে তৈরী করা হয়েছে। যখন অনেক হয়ে যায়, তখন
পাঠকও তো চাই পড়ার জন্য। সকলের শাস্ত্র পরে রচিত হয়েছে। যখন ভক্তিমার্গ শুরু হয় তখন
শাস্ত্র পাঠ করে। জ্ঞান তো চাই, তাই না। প্রথমে সতোপ্রধান হবে, পরে সতঃ, রজঃ, তমঃ-তে
আসে। যখন অতি বৃদ্ধি হয় তখন মহিমা-কীর্তিত হয় আর শাস্ত্রাদি রচিত হয়। তা নাহলে
বৃদ্ধি কে করবে, ফলোয়ার্স (শিষ্য) তো হতে হবে, তাই না। তখন শিখ-ধর্মের আত্মারা আসবে
যারা এসে ফলো করবে। তাতে অনেক সময়ের প্রয়োজন।
নতুন যে আত্মারা পরমধাম থেকে আসে, তাদের তো কোনো দুঃখ থাকে না। এটাই নিয়ম । আত্মা
যখন সতোপ্রধান থেকে সতঃ, রজঃ, তমঃ-তে আসে তখন দুঃখ শুরু হয়। নিয়মও তো আছে, তাই না।
এখানে মিলেমিশে রয়েছে, রাবণ-সম্প্রদায়ও রয়েছে, আবার রাম-সম্প্রদায়ও রয়েছে। এখনও তো
সম্পূর্ণরূপে তৈরী হয় নি। সম্পূর্ণ হলে তখন শরীর ত্যাগ করে দেবে। যারা কর্মাতীত
অবস্থা প্রাপ্ত করেছে, তাদের কোনো দুঃখ থাকতে পারে না। তারা এই ছিঃ-ছিঃ (অপবিত্র)
দুনিয়ায় থাকতে পারে না। তারা চলে যাবে, বাকি যারা থেকে যাবে তারা এখনও কর্মাতীত হয়
নি। সকলেই তো একসঙ্গে কর্মাতীত হতে পারে না। যদিও বিনাশ হয় তথাপি কিছু তো বেঁচে
থাকবে। প্রলয় হয় না। গায়নও করে যে, রাম গেছে, রাবণ গেছে........ রাবণের অনেক বড়
পরিবার। আমাদের পরিবার তো ছোট। এখানে অনেক ধর্ম। বাস্তবে সর্বাপেক্ষা বড় পরিবার তো
আমাদের হওয়া উচিত কারণ দেবী-দেবতা ধর্ম সর্বপ্রথমে আসে। এখন তো সব মিলেমিশে গেছে
তাই খ্রিষ্টান অনেক হয়ে গেছে। যেখানে মানুষ সুখ দেখে, পদ (পজিশন) দেখে, তখন সেই
ধর্মকে গ্রহণ করে। যখন-যখন পোপ আসে তখন অনেকেই খ্রিষ্টান (ধর্মান্তরিত) হয়ে যায়।
তখন বৃদ্ধিও অনেক হয়। সত্যযুগে তো হয়ই এক পুত্রসন্তান, এক কন্যাসন্তান। আর কোনো
ধর্মের এমন বৃদ্ধি হয় না। এখন দেখো, খ্রিষ্টান সর্বাপেক্ষা অধিক। যারা অধিক
সন্তানের জন্ম দেয়, তারা পুরস্কার পায় কারণ তাদের তো অনেক মানুষ চাই, তাই না। যারা
মিলিটারী, যুদ্ধের কার্যে ব্যবহৃত হবে। তারাও তো খ্রিষ্টান। রাশিয়া, আমেরিকায় সকলেই
খ্রিষ্টান, একটি কাহিনী রয়েছে -- দুটি বানর লড়াই করে আর মাখন বিড়ালে খেয়ে যায়।
ড্রামাও এভাবেই নির্ধারিত হয়ে রয়েছে। প্রথমে হিন্দু-মুসলমান একসঙ্গে বসবাস করত। যখন
পৃথক হয়ে যায় তখন পাকিস্তানে নতুন রাজত্ব শুরু হয়। এই ড্রামাও পূর্ব-নির্ধারিত।
দুপক্ষ যখন লড়াই করবে, তখন অন্য দেশ থেকে বারুদ(অস্ত্র-শস্ত্র) নেবে, তখন তাদের ভাল
ব্যবসা হবে। সর্বোচ্চ ব্যবসা হলো ওঁনার (পরমাত্মা)। কিন্তু ড্রামার ভবিতব্য এই যে,
বিজয় তোমাদের হবে। এটা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত যে, কেউ-ই তোমাদের উপর বিজয়প্রাপ্ত করতে
পারবে না। বাকি সকলের-ই বিনাশ হবে। তোমরা জানো যে, নতুন দুনিয়ায় আমাদের রাজত্ব হবে।
যারজন্যই তোমরা পড়ছ। তোমরা এখন যোগ্য তৈরী হচ্ছো। তোমরা যোগ্য ছিলে, এখন অযোগ্য হয়ে
গেছ, পুনরায় যোগ্যতাসম্পন্ন হতে হবে। গায়নও করা হয় যে, পতিত-পাবন এসো। কিন্তু এর
অর্থ কি বুঝতে পারে, না পারে না। এ হলেই সম্পূর্ণ জঙ্গল। এখন বাবা এসেছেন, এসে
কাঁটার জঙ্গলকে ফুলের বাগিচায় পরিনত করেন। ওটা হলো ডিটি(পবিত্র) ওয়ার্ল্ড, আর এটা
হলো ডেভিল ওয়ার্ল্ড (অপবিত্র দুনিয়া)। মনুষ্য-সৃষ্টির সমগ্র রহস্য বুঝিয়েছেন। তোমরা
এখন বুঝতে পারো যে, আমরা নিজেদের ধর্মকে ভুলে গিয়ে ভ্রষ্ট হয়ে গেছি। সব কর্ম এখানে
বিকর্মই হয়ে যায়। কর্ম, বিকর্ম, অকর্মের গতি বাবা তোমাদের বুঝিয়ে গিয়েছিলেন। তোমরা
জানো যে, নিশ্চিতই কাল আমরা এমন ছিলাম। পুনরায় আজ আমরা এমন(দেবী-দেবতা) তৈরী হচ্ছি।
দৈবী-যুগ নিকটেই রয়েছে, তাই না। বাবা বলেন, কাল তোমাদের দেবতায় পরিণত করেছিলাম,
রাজ্য-ভাগ্য দিয়েছিলাম, সেসব এখন কি করেছ ? এখন তোমাদের স্মরণে এসেছে যে --
ভক্তিমার্গে আমরা কত ধন-সম্পত্তি নষ্ট করেছি। যেন কালকের কথা, তাই না। বাবা তো এসে
হাতের উপর স্বর্গ রাখেন। এই জ্ঞান বুদ্ধিতে থাকা উচিত। বাবা এও বুঝিয়েছেন যে, এই
চোখ কত ধোঁকা দেয়। ক্রিমিনাল আই-কে (কু-দৃষ্টি) জ্ঞানের মাধ্যমে সিভিল বানাতে হবে।
*আচ্ছা।*
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
অসীম জগতের ডায়রীতে নিজের চার্ট নোট করতে হবে যে, আমরা স্মরণে থেকে কতটা লাভ বৃদ্ধি
করতে পেরেছি ? লোকসান হয়ে যায়নি তো ? স্মরণের সময় বুদ্ধি কোথায়-কোথায় গিয়েছিল ?
২ ) এই জন্মে বাল্যকাল থেকে আমাদের দ্বারা কী-কী উল্টোকর্ম বা পাপ হয়েছে, তা নোট
করতে হবে। যেকথা হৃদয়কে দংশন করে তা বাবাকে শুনিয়ে দিয়ে হাল্কা হয়ে যেতে হবে। এখন
কোন পাপকর্ম করা উচিত নয়।
বরদান:-
কারোর
সু-গুণের দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার পরিবর্তে তা নিজের মধ্যে ধারণ করা পরমাত্ম-স্নেহী
ভব
ব্যাখা:- যদি
পরমাত্ম-স্নেহী হতে হয়, তবে শরীর-সচেতনতার (বডি-কনশাস) বাঁধাগুলোকে পরীক্ষা কর।
অনেক বাচ্চারা বলে যে, এ (ভাই বা বোন) খুব ভালো, তাই (মনে) একটু দয়াভাব উৎপন্ন হয়.....কেউ
কারোর শরীরের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করে, আবার কেউ কারোর গুণ বা বিশেষত্বের প্রতি।
কিন্তু সেই বিশেষত্ব বা গুণ প্রদানকারী আসলে কে ? কেউ যদি সু-গুণের অধিকারী হয় তাহলে
তার গুণকে যদি গ্রহণ করও কিন্তু সেই গুণের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প'ড়ো না। (সবকিছুর)
ঊর্ধ্বে ওঠো এবং বাবার স্নেহী হও। এমন স্নেহী অর্থাৎ পরমাত্ম-স্নেহী বাচ্চারা সদা
সুরক্ষিত থাকে।
স্লোগান:-
সাইলেন্সের শক্তিকে ইমার্জ করো, তবেই সেবার গতি দ্রুতগামী (ফার্স্ট) হয়ে যাবে।