০২-১০-১৯ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা- তোমরা সকলে নিজেদের মধ্যে এক মত, তোমরা নিজেদেরকে আত্মা মনে করে এক বাবাকে স্মরণ করো বলে সব ভূত (বিকার) পালিয়ে যায়"

প্রশ্ন:-

বাবা যা শোনান, সেই এক-একটি কথাকে যে ধারণ করে সে-ই লক্ষ-কোটি গুণ ভাগ্যশালী হয়। নিরীক্ষণ করো বাবা কি বলেন আর রাবণ সম্প্রদায়ের লোকেরা কি বলে! এই নলেজ দ্বারাই তোমরা গুণবান হয়ে ওঠো।

উত্তর:-

বাবা যা শোনান, সেই এক-একটি কথাকে যে ধারণ করে সে-ই লক্ষ-কোটি গুণ ভাগ্যশালী হয়। নিরীক্ষণ করো বাবা কি বলেন আর রাবণ সম্প্রদায়ের লোকেরা কি বলে! এই নলেজ দ্বারাই তোমরা গুণবান হয়ে ওঠো।

ওম্ শান্তি।

আত্মাদের পিতা, ইংরাজীতে বলা হয় স্প্রীচুয়্যাল ফাদার। তোমরা যখন সত্যযুগে যাবে তখন সেখানে ইংরাজী ইত্যাদি দ্বিতীয় কোনো ভাষা তো থাকবে না। তোমরা জানো সত্যযুগে আমাদের রাজ্য হয়, সেখানে আমাদের যে ভাষা হবে সেটাই চলবে। পরে আবার সেই ভাষা পরিবর্তিত হতে থাকে। এখন তো অনেক রকমের ভাষা আছে। যেমন-যেমন রাজা তাদের সেরকম সেরকম ভাষা চলে। এখন এটা তো সব বাচ্চারা জানে, সব সেন্টারেও যে বাচ্চারা আছে তাদের একই মত হয়। নিজেকে আত্মা মনে করতে হবে, আর এক বাবাকে স্মরণ করতে হবে, যাতে সব ভূত পালায়। বাবা হলেন পতিত-পাবন। পাঁচ ভূতের প্রবেশ তো সকলের মধ্যেই আছে। আত্মার মধ্যেই ভূতের প্রবেশ ঘটে, তারপর এই ভূত গুলির অথবা বিকার গুলির নামও দেওয়া হতে থাকে-- দেহ-অভিমান, কাম, ক্রোধ ইত্যাদি। এরকম না যে সর্বব্যাপী কোনো ঈশ্বর আছেন। যদি কেউ কখনো বলে ঈশ্বর সর্বব্যাপী আছেন তো বলো সর্বব্যাপী হলো আত্মারা আর এই আত্মাদের মধ্যে পাঁচ বিকার হলো সর্বব্যাপী। তাছাড়া এমন নয় যে পরমাত্মা সকলের মধ্যে বিরাজমান আছেন। পরমাত্মার মধ্যে আবার পাঁচ ভূতের প্রবেশ হবে কি ভাবে! এক-একটা কথাকে ভালো ভাবে ধারণ করলে তোমরা লক্ষ-কোটি গুণ ভাগ্যশালী হবে। দুনিয়ার লোক রাবণ সম্প্রদায় কি বলে আর বাবা কি বলেন, এখন নিরীক্ষণ করো। প্রত্যেকের শরীরের মধ্যে আত্মা আছে। সেই আত্মাতে ৫ বিকারের প্রবেশ হয়ে রয়েছে। শরীরে নয়, আত্মাতে ৫ বিকার অথবা ভূতের প্রবেশ ঘটে। সত্যযুগে এই ৫ ভূত নেই। নামই হলো ডিটি ওয়ার্ল্ড(দৈবী-দুনিয়া)। এটা হলো ডেভিল ওয়ার্ল্ড (শয়তানের দুনিয়া)। ডেভিল বলা হয় অসুরকে। কত দিন আর রাতের পার্থক্য। এখন তোমরা চেঞ্জ (পরিবর্তিত) হচ্ছো। সেখানে তোমাদের মধ্যে কোন বিকার, কোনো অবগুণই থাকে না। তোমাদের মধ্যে সম্পূর্ণ গুণ এসে যায়। তোমরা ১৬ কলা সম্পূর্ণ হয়ে ওঠো। প্রথমে ছিলে আবার নীচে নামতে থাকো। এখন এই চক্রের পরিচিতি হয়। ৮৪ জন্মের চক্র কীভাবে আবর্তিত হয়। আমাদের আত্মাদের স্ব-এর দর্শন হয়েছে অর্থাৎ এই চক্রের নলেজ হয়েছে। উঠতে, বসতে, চলতে তোমাদের এই নলেজ বুদ্ধিতে রাখতে হবে। বাবা নলেজ পড়ান। এই রুহানী অর্থাৎ আত্মিক নলেজ বাবা ভারতে এসেই দেন। বলে যে না- আমাদের ভারত। বাস্তবে হিন্দুস্থান বলা তো রঙ্ (ভুল) । তোমরা জানো ভারত যখন স্বর্গ ছিলো তো শুধুমাত্র আমাদেরই (যারা সঙ্গমযুগে ব্রাহ্মণ আর সত্যযুগে দেবী-দেবতা) রাজ্য ছিলো আর কোনো ধর্ম ছিলো না। নিউ ওয়ার্ল্ড ছিলো। নিউ দিল্লী বলে যে না! দিল্লীর নাম আসলে দিল্লী ছিলো না পরিস্তান বলা হতো। এখন তো নূতন দিল্লী আর পুরানো দিল্লী বলে, এরপর আবার না পুরানো, না নূতন দিল্লী হবে। পরিস্তান বলা হবে। দিল্লীকে ক্যাপিটাল বলা হয়। এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য হবে, এছাড়া আর কিছু হবে না, আমাদেরই রাজ্য হবে। এখন তো রাজ্য নেই সেইজন্য শুধুমাত্র বলে আমাদের দেশ হলো ভারত। রাজারা তো নেই। তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের বুদ্ধিতে সমগ্র জ্ঞান চক্র রাখা হয়। বরাবর সর্বপ্রথমে এই বিশ্বে দেবী- দেবতাদের রাজ্য ছিলো আর কোনো রাজ্য ছিলো না। যমুনার তট ছিলো, সে-জায়গাকে পরিস্তান বলা হতো। দেবতাদের ক্যাপিটল দিল্লীই থাকছে, তাই সকলেরই আকর্ষণ থাকে। সবচেয়ে বড়ও। একদম সেন্টারে বা দেশের মধ্যবর্তী স্থানে।



মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা জানে পাপ তো অবশ্যই হয়েছে, পাপ-আত্মা হয়ে গেছে। সত্যযুগে সকল আত্মারাই পূণ্য আত্মা। বাবা এসেই পবিত্র করে তোলেন, তাই তো তোমরা শিব জয়ন্তীও পালন করো। এখন জয়ন্তী শব্দটা তো সব কিছুর মধ্যে যুক্ত করা হয়, সেইজন্য একে আবার শিবরাত্রি বলে। রাত্রির অর্থ তো তোমরা ব্যতীত আর কেউ বুঝতে পারে না। বড় বড় বিদ্বানরাও জানে না যে শিবরাত্রি কি ? তাই পালন আর কি করবে ! বাবা বুঝিয়েছেন রাত্রির অর্থ কি? এটা যে হলো ৫ হাজার বছরের চক্র, সেটাতে সুখ আর দুঃখের খেলা থাকে, সুখকে বলা হয় দিন, দুঃখকে বলা হয় রাত। তো দিন আর রাতের মধ্যবর্তীতে আসে সঙ্গম। অর্ধ-কল্প হলো আলোকোজ্জ্বল, অর্ধ-কল্প হলো অন্ধকার। ভক্তিতে তো অনেক সময় নেয় । এখানে তা হলো সেকেন্ডের ব্যাপার। একদম ইজি, সহজ যোগ। তোমাদের প্রথমে যেতে হবে মুক্তিধাম। বাচ্চারা, এরপর তোমরা জীবনমুক্তি আর জীবনবন্ধে কতো সময় থেকেছো, এটা তোমাদের স্মরণে আছে, তবুও বারে বারে ভুলে যাও। বাবা বোঝান যোগ শব্দটি ঠিক, কিন্তু ওদের হলো শারীরিক যোগ। এটা হলো আত্মাদের সাথে পরমাত্মার যোগ। সন্ন্যাসীরা অনেক ধরনের হঠযোগ ইত্যাদি শেখায়, এতে মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের বাবাও হন তো টিচারও হন, তাই ওনার সাথে যোগ যুক্ত তো হতে হবে। টিচারের মাধ্যমে পাঠ নিতে হয়। বাচ্চা জন্ম নিলে তো প্রথমে বাবার সাথে যোগ হয় তারপর ৫ বছর পরে টিচারের সাথে যোগ যুক্ত হতে হয় আবার বাণপ্রস্থ অবস্থায় গুরুর সাথে যোগ যুক্ত হতে হয়। তিন মুখ্য স্মরণে থাকে। সেটাতো আলাদা-আলাদা হয়। এখানে এটা একই বার বাবা এসে বাবাও হন, টিচারও হন। ওয়ান্ডারফুল(বিস্ময়কর) হলো না! এরকম বাবাকে তো অবশ্যই স্মরণ করা উচিত। জন্ম-জন্মান্তর তিন কে আলাদা-আলাদা স্মরণ করে এসেছো। সত্যযুগেও বাবার সাথে যোগ হয় আবার টিচারের সাথে হয়। পড়ে যায় তো না! এছাড়া সেখানে গুরুর দরকার থাকে না কারণ সকলে সদ্গতিতে থাকে। এই সব কথা স্মরণ করতে কি কষ্ট? একদম সহজ। একে বলা হয় সহজ যোগ। কিন্তু এখানে হলো আনকমন। বাবা বলেন আমি এটা টেম্পোরারী লোন নিই, তাও কতো কম সময় নিই। ৬০ বছরে বাণপ্রস্থ অবস্থা হয়। বলা হয় ষাঠে লাগে লাঠি। এই সময় সকলের লাঠির প্রয়োজন হয়। সব বাণপ্রস্থ, নির্বাণ ধামে যাবে। সেটা হলো সুইট হোম, সুইটেস্ট হোম। ওর জন্যই কতো অপার ভক্তি করা হয়েছে। এখন চক্র আবর্তিত হয়ে এসেছো। মানুষের এসব কিছু জানা নেই, এরকম ভাবেই গল্পকথা সাজিয়ে দিয়েছে যে লক্ষ বছরের চক্র। লক্ষ বছরের ব্যাপার হলে তো রেস্ট পাওয়া যেতো না। রেস্ট পাওয়াই মুশকিল হয়ে যায়। তোমরা রেস্ট পাও, তাকে বলা হয় সাইলেন্স হোম, ইনকর্পোরিয়াল ওয়ার্ল্ড। এটা হলো স্থূল সুইট হোম। সেটা হলো মূল সুইট হোম। আত্মা হলো একদম ছোট রকেট, এর থেকে তীব্র গতিতে পালানোর মতো কিছু হয় না। এটা তো সবচেয়ে তীব্র। এক সেকেন্ডে শরীর ছেড়ে গেল আর এটা পালালো, অন্য শরীর তো আগেই তৈরী হয়ে থাকে। ড্রামা অনুযায়ী তাকে নির্দিষ্ট সময়ে যেতেই হবে। ড্রামা কতো অ্যাকুউরেট। এর মধ্যে কোনো ইনঅ্যাকুউরেসি (এতটুকু ভুল নেই) নেই। এটা তোমরা জানো। বাবাও ড্রামা অনুসারে একদম টাইমে আসেন। এক সেকেন্ডেরও পার্থক্য হয় না। এতে কীভাবে জানা যায় যে বাবা হলেন ভগবান। যখন নলেজ দেন, বাচ্চাদের বসে বোঝান। শিবরাত্রিও পালন করা হয় যে না। আমি শিব কখন কীভাবে আসি, সেটা তোমাদের তো জানা নেই। শিবরাত্রি কৃষ্ণরাত্রি পালন করা হয়। রামের পালন করা হয় না কারণ পার্থক্য হয়ে যায়। শিবরাত্রির সাথে কৃষ্ণরাত্রিও পালন করা হয়। কিন্তু কিছুই জানে না। এখানে হলো আসুরী রাবণ রাজ্য। এটা বোঝার মতো ব্যাপার। এখানে তো হলেন বাবা, বৃদ্ধকে বাবা বলা হয়। ছোট বাচ্চাকে কি আর বাবা বলা যায়! কেউ কেউ ভালোবেসে বাচ্চাকে বাবা বলে থাকে। তো সেও কৃষ্ণকে ভালোবেসে বলে থাকে। বাবা তো তখন বলা যায় যখন বড় হবে আর আবার বাচ্চার জন্ম দেবে। কৃষ্ণ নিজেই হলেন প্রিন্স, ওনার বাচ্চা কোথা থেকে আসবে। বাবা বলেনও আমি বৃদ্ধ লোকটির দেহে আসি। শাস্ত্রেও আছে, কিন্তু শাস্ত্রের সব কথা অ্যাকুউরেট না, কিছু কিছু কথা ঠিক। ব্রহ্মার আয়ু অর্থাৎ প্রজাপিতা ব্রহ্মার আয়ু বলা হবে। সেটা তো অবশ্যই এই সময় হবে। ব্রহ্মার আয়ু মৃত্যুলোকে শেষ হবে। এটা কোনো অমরলোক না। একে বলা হয় পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ। বাচ্চারা, এটা ছাড়া তোমাদের বুদ্ধিতে আর আর কিছু হতে পারে না।



বাবা বসে বলেন - মিষ্টি-মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা নিজেদের জন্মকে জানো না, আমিই এসে বলি, তোমরা ৮৪ জন্ম নিয়ে থাকো। কীভাবে ? এটাও তোমরা জানতে পেরেছো। প্রত্যেক যুগের আয়ু ১২৫০ বছর, আর এতো- এতো জন্ম নিয়েছি। ৮৪ জন্মের হিসেব যে। ৮৪ লাখের হিসেব তো হতে পারে না। একে বলা হয় ৮৪ জন্মের চক্র, ৮৪ লাখের কথাই তো স্মরণে আসে না। এখানে কতো অপরমপার দুঃখ। কীভাবে দুঃখ দেওয়ার মতো বাচ্চারা জন্ম নিতে থাকে। একে বলা হয় ঘোর নরক, একদম ছিঃ ছিঃ (ঘৃণ্য) দুনিয়া। বাচ্চারা, তোমরা জানো এখন আমরা নূতন দুনিয়াতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। পাপ খন্ডন হলে তোমরা পুণ্য আত্মা হয়ে উঠবে। এখন কোনো পাপ করতে নেই। একে অপরের উপর কাম কাটারি চালানো - এটা আদি-মধ্য-অন্ত দুঃখ দেওয়ার। এখন এই রাবণ রাজ্য সম্পূর্ণ হচ্ছে। এখন হলো কলিযুগের শেষ। এই মহাভারী লড়াই হলো অন্তিম। এরপর কোনো লড়াই ইত্যাদি হবেই না। সেখানে কোনো যজ্ঞেরই রচনা করা হবে না। যখন যজ্ঞ রচনা করা হয় তখন হোম করা হয়। বাচ্চারা তাদের পুরানো সামগ্রী সব স্বাহা (ত্যাগ) করে দেয়। এখন বাবা বুঝিয়েছেন, এটা হলো রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞ। রুদ্র শিবকে বলা হয়। রুদ্র মালা বলা হয় যে না। যারা নিবৃত্তি মার্গের তাদের প্রবৃত্তি মার্গের নিয়ম-কানুন কিছুই জানা নেই। তারা তো বাড়ী-ঘর ছেড়ে জঙ্গলে চলে যায়। নামই হলো সন্ন্যাস। কার সন্ন্যাস? বাড়ী-ঘরের। খালি হাতে বেরিয়ে যায়। যারা গুরু তারা তো প্রথমে অনেক পরীক্ষা নেয়, কাজ করায়। প্রথমে ভিক্ষাতে শুধুমাত্র আটা নিতো, রান্না করা খাওয়ার নিতো না। ওদের জঙ্গলেই থাকতে হয়, সেখানে কন্দ-মূল বা খাদ্য মূল,ফল পাওয়া যায়। এটাও খ্যাত আছে যখন সতোপ্রধান সন্ন্যাসী হবে তখন এটা খাবে। এখন তো কি-কি করতে থাকে বলার না। এর নামই হলো ভিসিয়াস ওয়ার্ল্ড(দূষিত-পঙ্কিল দুনিয়া)। সেটা হলো ভাইসলেস ওয়ার্ল্ড (পাপ মুক্ত দুনিয়া)। তাই নিজেকে ভিশশ্ মনে করতে হবে। বাবা বলেন সত্যযুগকে বলা হয় শিবালয়, ভাইসলেস ওয়ার্ল্ড। এখানে তো সকলে হলো পতিত মানুষ সেইজন্য দেবী-দেবতার বদলে নামই হিন্দু রেখে দিয়েছে। বাবা তো সব কথা বোঝাতে থাকেন। তোমরা আসলে হলে অসীম জগতের পিতার সন্তান। তিনি তো তোমাদের ২১ জন্মের উত্তরাধিকার দেন। তাই বাবা মিষ্টি-মিষ্টি বাচ্চাদের বোঝান- তোমাদের মাথার উপরে জন্ম-জন্মান্তরের পাপ। পাপ-মুক্ত হওয়ার জন্যই তোমরা ডাকো। সাধু-সন্ত ইত্যাদি সকলে ডাকে- হে পতিত-পাবন...অর্থ কিছু বোঝে না, এমনিই গাইতে থাকে, করতালি দিতে থাকে। ওদের যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে - পরমাত্মার সাথে কীভাবে যোগ লাগাবে, ওঁনার সাথে কীভাবে মিলিত হবে- তো বলে দেবে তিনি তো সর্বব্যাপী। এই পথই কী তারা অন্যদেরকে দেখায় ! বলে দেয় - বেদ-শাস্ত্র পড়লে ভগবানকে পাওয়া যাবে। কিন্তু বাবা বলেন- আমি প্রতি ৫ হাজার বছর পরে ড্রামার প্ল্যান অনুসারে আসি। এই ড্রামার রহস্য বাবা ব্যতীত আর কেউ জানে না। লক্ষ বছরের ড্রামা তো হতেই পারে না। এখন বাবা বোঝান এটা ৫ হাজার বছরের ব্যাপার। কল্প পূর্বেও বাবা বলেছিলেন মন্মনাভব। এইটি হলো মহামন্ত্র। মায়ার উপর বিজয় প্রাপ্ত করার মহামন্ত্র। বাবা বসেই অর্থ বোঝান। দ্বিতীয় কেউ অর্থ বোঝে না। কথিত আছে সকলের সদ্গতিদাতা এক। কোনো মানুষ তো হতে পারে না। দেবতাদেরও ব্যাপার না। সেখানে তো সুখ আর সুখ, সেখানে কেউ ভক্তি করে না। ভক্তি করা হয় ভগবানের সাথে মিলিত হওয়ার জন্য। সত্যযুগে ভক্তি হয় না কারণ ২১ জন্মের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়ে থাকে। তখন গাওয়াও হয় দুঃখে জপ করা...এখানে তো অপার দুঃখ। ক্ষণে-ক্ষণে বলে ভগবান দয়া করো। এই কলিযুগী দুঃখী দুনিয়া সামগ্রীক ভাবে থাকে না। সত্যযুগ-ত্রেতা পাস্ট হয়ে গেছে, আবার হবে। লক্ষ বছরের কথাও স্মরণ থাকতে পারে না। এখন তো বাবা সমস্ত নলেজ দেন, নিজের পরিচয়ও দেন আর রচনার আদি-মধ্য-অন্তের রহস্যও বোঝান। ৫হাজার বছরের ব্যাপার। বাচ্চারা, তোমরা এখন এ বিষয়ে জ্ঞাত হয়েছো । এখন তো অপরের রাজ্যে আছো। তোমাদের নিজেদের রাজ্য ছিলো। এখানে তো লড়াই করে নিজের রাজ্য নেয়, হাতিয়ারের দ্বারা, মারামারি করে নিজের রাজ্য নিয়ে থাকে। তোমরা অর্থাৎ বাচ্চারা তো যোগবলের দ্বারা নিজের রাজ্য স্থাপন করছো। তোমাদের সতোপ্রধান দুনিয়া চাই। পুরানো দুনিয়া শেষ হয়ে নূতন দুনিয়া তৈরী হয়, একে বলা হয় কলিযুগ পুরানো দুনিয়া। সত্যযুগ হলো নূতন দুনিয়া। এটাও কারোর জানা নেই। সন্ন্যাসী বলে দেয় এটা আপনার কল্পনা। এখানেই সত্যযুগ, এখানেই কলিযুগ। এখন বাবা বসে বোঝান একজনও এরকম নেই যে বাবাকে জানে। যদি কেউ জেনে থাকতো তো বাবার পরিচয় দিতো। সত্যযুগ-ত্রেতা কি জিনিস, কারোর কি আর বোধগম্য হয় ! বাচ্চারা, বাবা তোমাদের ভালো ভাবে বোঝাতে থাকেন। বাবা-ই সবকিছু জানেন, জানিজানন হার অর্থাৎ নলেজ ফুল। মানুষ সৃষ্টির বীজরূপ তিনি । জ্ঞানের সাগর, সুখের সাগর। ওঁনার থেকেই আমাদের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। বাবা বাচ্চাদের নলেজের দিক থেকে নিজের সমান করে তোলেন। আচ্ছা!





মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার:-

১. এটা পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার সময়, তাই এখন পাপ করতে নেই। পুরানো সব সামগ্রী এই রুদ্র যজ্ঞে স্বাহা করতে হবে।

২. এখন হলো বাণপ্রস্থ অবস্থা সেইজন্য বাবা, টিচারের সাথে-সাথে সদ্গুরুকেও স্মরণ করতে হবে। সুইট হোমে যাওয়ার জন্য আত্মাকে সতোপ্রধান হতে হবে।

বরদান:-

সময় কে শিক্ষক করার পরিবর্তে বাবাকে শিক্ষক করার মাস্টার রচয়িতা ভব

কোনো বাচ্চার সেবার উৎসাহ আছে কিন্তু বৈরাগ্য বৃত্তির অ্যাটেনশন নেই, এতে আলস্য রয়েছে। চলছে - হচ্ছে - হয়ে যাবে - সময় এলে ঠিক হয়ে যাবে - এরকম ভাবা অর্থাৎ সময়কে নিজের শিক্ষক করা। বাচ্চারা বাবাকে আশ্বস্ত করতে থাকে - বাবা, চিন্তা করবেন না, সময় এলে ঠিক হয়ে যাবে, করে নেব। উন্নতি করে নেব। কিন্তু বাচ্চারা, তোমরা হলে মাস্টার রচয়িতা, সময় তোমাদের রচনা। রচনা মাস্টার রচয়িতার শিক্ষক হবে, এটা শোভনীয় নয় ।

স্লোগান:-

নিজের এবং সকলের পরিবর্তন হওয়াতে সহযোগী হওয়াই হল বাবার প্রতিপালনের রিটার্ন দেওয়া ।