02.03.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
বাবা তোমাদের মতো আত্মাদের সঙ্গেই আত্মিক বার্তালাপ করেন, তোমরা বাবার কাছে ২১
জন্মের জন্য নিজের লাইফ ইনসিওর করাতে এসেছ, তোমাদের জীবন এমন ইনসিওর হয়ে যায় যে
তোমরা অমর হয়ে যাও"
প্রশ্নঃ -
দুনিয়ার
মানুষও লাইফ ইনসিওর করায় আর তোমরা বাচ্চারাও করাও - এই দুটোর মধ্যে তফাৎ কোথায় ?
উত্তরঃ -
মানুষ নিজের লাইফ ইনসিওর করায় যাতে সে মারা গেলে তার পরিবারের কেউ টাকা পায়, আর
তোমরা বাচ্চারা এমন ইনসিওর করাও যাতে ২১ জন্ম আমাদের মৃত্যুই হবে না - অমর হয়ে যাই।
সত্যযুগে কোনো ইনসিওর কোম্পানি থাকে না। এখনই তোমরা নিজেদের লাইফ ইনসিওর করছ যার ফলে
আর কখনো মৃত্যুই হবে না। তাই খুশিতে থাকা উচিত ।
গীতঃ-
কে এলো আজি
প্রভাতে…
ওম্ শান্তি ।
আত্মিক পিতা
বসে থেকে আত্মিক বাচ্চাদের সাথে আত্মিক বার্তালাপ করছেন। তোমরা বাচ্চারা জানো যে
বাবা এখন কেবল ২১ জন্মই নয়, আমাদের ৪০-৫০ জন্ম ইনসিওর করে দিচ্ছেন। ওরা লাইফ ইনসিওর
করায় যাতে সে মারা গেলে তার পরিবারের কেউ টাকা পায়, আর তোমরা এমন ইনসিওর করাও যাতে
২১ জন্ম আর মৃত্যুই হবে না। বাবা অমর বানিয়ে দেন। তোমরা তো অমর ছিলে, মূলবতনকেও তো
অমরলোক বলা যাবে। ওখানে তো জীবন-মৃত্যুর কোনো প্রশ্নই নেই। ওটা হলো আত্মাদের
নিবাসস্থান। বাবা কেবল নিজ সন্তানদের সঙ্গেই এইরকম আত্মিক বার্তালাপ করেন, অন্য
কারোর সাথে করেন না। *যে আত্মা নিজেকে জেনেছে, কেবল তার সাথেই কথা বলেন।* অন্য কেউ
তো বাবার কথা বুঝতেই পারবে না। প্রদর্শনীতে তো এতজন আসে, তারা কি তোমাদের কথা বুঝতে
পারে ? অনেক চেষ্টা করে হয়তো সামান্য কয়েকজন বুঝতে পারে। তোমাদেরকেও তো কত কত বছর
ধরে বোঝাচ্ছি, তারপরেও সামান্য কয়েকজন বুঝেছে। যদিও এটা এক সেকেন্ডেই বোঝা যায়। আমরা
আত্মারা পবিত্র ছিলাম এবং এখন পতিত হয়ে গেছি। এরপর পুনরায় পবিত্র হতে হবে। তারজন্য
সুইট ফাদারকে স্মরণ করতে হবে। তাঁর থেকেও মিষ্টি তো আর কিছুই নেই। এই স্মরণের
বিষয়েই মায়াবী বিঘ্ন আসে। তোমরা জানো যে বাবা আমাদেরকে অমর বানাতে এসেছেন।
পুরুষার্থ করে অমর হয়ে অমরপুরীর মালিক হতে হবে। অমর তো ওখানে সকলেই হবে। সত্যযুগকে
অমরলোকও বলা হয়। এটা হলো মৃত্যুলোক। এগুলোই হলো অমরকথা। এমন নয় যে শঙ্কর কেবল
পার্বতীকেই অমরকথা শুনিয়েছিল। ওগুলো সব ভক্তিমার্গের কথা। তোমরা বাচ্চারা কেবল আমার
কথাই শোনো আর আমাকেই স্মরণ করো। কেবল আমিই জ্ঞান দিতে পারি। ড্রামা অনুসারে সমগ্র
দুনিয়া এখন তমোপ্রধান হয়ে গেছে। অমরপুরীতে রাজত্ব করলেই অমর পদমর্যাদা সম্পন্ন বলা
যাবে। ওখানে কোনো ইনসিওর কোম্পানি থাকে না। এখন তোমাদের লাইফ ইনসিওর করা হচ্ছে।
তোমরা কখনোই মরবে না। এটা বুদ্ধিতে রেখে খুশিতে থাকতে হবে। আমরা যেহেতু অমরপুরীর
মালিক হচ্ছি, সুতরাং অমরপুরীকে স্মরণ করতে হবে। তবে যেতে হবে মূলবতন হয়ে। এইরকম
ভাবেই মনে মনে স্মরণ করা হয়। মূলবতন হলো *মন্মনা ভব*, অমরপুরী হলো মধ্যাজী ভব।
প্রত্যেকটা বিষয়েই দুটো জিনিস আছে। কতো রকম ভাবে তোমাদেরকে অর্থ বোঝানো হয়। তবে গিয়ে
বুদ্ধিতে ধারণ হয়। সবথেকে কঠিন হলো নিজেকে নিশ্চিত ভাবে আত্মা অনুভব করা। আমি আত্মা
এই শরীরে জন্ম নিয়েছি। ৮৪ জন্ম ধরে কতো নাম-রূপ-দেশ-কাল পরিবর্তন করেছি। সত্যযুগে
এতগুলো জন্ম নিয়েছি, ত্রেতাতে এতগুলো…। এই কথাগুলোও কিছু বাচ্চা ভুলে যায়। আসল
ব্যাপার হলো নিজেকে আত্মা অনুভব করে সুইট বাবাকে স্মরণ করা। উঠতে বসতে এগুলো স্মরণে
থাকলেই খুশি থাকবে। অর্ধেক কল্প ধরে আমরা যাঁকে ডেকে এসেছি - এসো, তুমি এসে আমাদেরকে
পবিত্র করো, সেই বাবা পুনরায় এসেছেন। মূলবতনে তো পবিত্র অবস্থাতেই থাকবে। সত্যযুগ
হলো অমরপুরী। ভক্তিমার্গে মানুষ মুক্তি পাওয়ার জন্য কিংবা কৃষ্ণপুরীতে যাওয়ার জন্য
পুরুষার্থ করে। মুক্তি কিংবা নির্বাণধাম যাই বলো না কেন, বানপ্রস্থ শব্দটাই যথার্থ।
যারা বানপ্রস্থ নেয় তারা শহরের মধ্যেই থাকে। সন্ন্যাসীরা ঘর বাড়ি ত্যাগ করে জঙ্গলে
চলে যায়। কিন্তু বর্তমান সময়ে যারা বাণপ্রস্থ অবস্থায় রয়েছে তাদের মধ্যে একটুও শক্তি
নেই। সন্ন্যাসীরা 'ব্রহ্ম'কেই ভগবান বলে দেয়, 'ব্রহ্মলোক' বলে না। তোমরা বাচ্চারা
এখন জেনেছো যে কারোর পুনর্জন্ম বন্ধ হয় না। সকলেই নিজের ভূমিকা পালন করে।
আসা-যাওয়ার এই চক্র থেকে কখনোই মুক্তি পাওয়া যাবে না। এখন তো কোটি কোটি মানুষ রয়েছে।
আরো আসতে থাকবে, ওরাও পুনর্জন্ম নেবে। তারপর একসময়ে ফার্স্টফ্লোর খালি হয়ে যাবে।
মূলবতন হলো ফার্স্টফ্লোর, সূক্ষ্মবতন হলো সেকেন্ডফ্লোর। এটাকে তোমরা থার্ডফ্লোর
কিংবা গ্রাউন্ড ফ্লোর বলতে পারো। *এছাড়া আর অন্য কোথাও কোনো ফ্লোর নেই। ওরা তো মনে
করে অন্য কোনো নক্ষত্রেও হয়তো কোনো জগৎ আছে। কিন্তু এইরকম কিছুই নেই।* ফার্স্টফ্লোরে
কেবল আত্মারা থাকে। এই দুনিয়াটা হলো মানুষদের জন্য।
বাচ্চারা, তোমরা হলে সীমাহীন বৈরাগী। এই পুরাতন দুনিয়াতে থেকেও, এই চোখ দিয়ে সবকিছু
দেখেও তোমাদের কিছুই দেখা চলবে না। এটাই হলো প্রধান পুরুষার্থ। কারণ এই সবকিছুই তো
বিনষ্ট হয়ে যাবে। তাই বলে এটা নয় যে এই সংসারের অস্তিত্বই নেই। সংসার তো রয়েছে,
কিন্তু এর প্রতি তোমাদের কোনো আসক্তি নেই। অর্থাৎ সমগ্র দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য রয়েছে।
বলা হয় ভক্তি, জ্ঞান এবং বৈরাগ্য। ভক্তিমার্গের পরে আসে জ্ঞানমার্গ এবং তখন ভক্তির
ওপরে বৈরাগ্য এসে যায়। বুদ্ধি দিয়ে বিচার করে বুঝতে পারো যে এই দুনিয়াটা অতি
প্রাচীন এবং এটাই আমাদের শেষ জন্ম। সবাইকে এখন বাড়ি ফিরতে হবে। এমনকি ছোট
বাচ্চাদেরকেও শিববাবার কথা মনে করিয়ে দিতে হবে। তাদের মধ্যে অশুদ্ধ খাদ্য বা পানীয়
খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করা উচিত নয়। ছোটবেলা থেকে যেটা অভ্যাস করা হয়, সেই অভ্যাস
সর্বদাই রয়ে যায়। আজকাল, সঙ্গের প্রভাব খুবই খারাপ। বলা হয় : সৎসঙ্গে স্বর্গবাস আর
অসৎসঙ্গে সর্বনাশ। এই দুনিয়া এখন বিষয়-সমুদ্র, পতিতালয় হয়ে গেছে। কেবল পরমপিতা
পরমাত্মা-ই হলেন সত্য। বলা হয়: গড ইজ ওয়ান। তিনি স্বয়ং এসে প্রকৃত সত্য বুঝিয়ে দেন।
বাবা বলছেন: আমার আত্মিক সন্তানেরা, আমি, তোমাদের পিতা, তোমাদের সাথে আত্মিক
বার্তালাপ করছি। তোমরা তো আমাকেই ডেকে এসেছো। তিনি হলেন জ্ঞানের সাগর, পতিত-পাবন,
নতুন দুনিয়ার রচয়িতা। তিনিই পুরাতন দুনিয়ার ধ্বংস করান। ত্রিমূর্তি তো অতি প্রসিদ্ধ।
শিববাবা হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। তারপরে, সূক্ষ্মবতনে রয়েছে ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং শঙ্কর।
পবিত্র হওয়ার কারণে মানুষ ওদেরকেও দর্শন করে। তবে এই দৈহিক চোখ দিয়ে ওদেরকে দেখা
যাবে না। অগাধ ভক্তি করলে তবে দর্শন হয়। যদি কেউ হনুমানের ভক্ত হয়, তবে সে হনুমানের
দর্শন পাবে। শিবের ভক্তদেরকে তো মিথ্যে বলা হয়েছে। বলা হয়েছে পরমাত্মা হলেন অখন্ড
জ্যোতি। বাবা বলছেন, আমি তো অতি সূক্ষ্ম বিন্দু। ওরা বলে - অর্জুনকে ভগবান অখন্ড
জ্যোতি স্বরূপ দেখিয়েছিলেন। তখন অর্জুন বলেছিল - বন্ধ করো, আমি আর সহ্য করতে পারছি
না। গীতাতে অর্জুনের এইরকম দর্শনের কথাই লেখা আছে। মানুষ ভাবে অখন্ড জ্যোতির দর্শন
হয়েছিল। বাবা এখন বলছেন: এগুলো হলো ভক্তিমার্গের গল্প কাহিনী, যেগুলো শুনে কেবল সেই
সময়ে একটু খুশি হয়। আমি তো কখনোই বলিনি যে আমি অখন্ড জ্যোতি স্বরূপ। তোমরা আত্মারা
যেমন সূক্ষ্ম বিন্দু, আমিও সেইরকম। তোমরা যেমন ড্রামার বন্ধনে আবদ্ধ, আমিও সেইরকম
ড্রামার বন্ধনে বাঁধা আছি। প্রত্যেক আত্মার নিজস্ব একটা ভূমিকা রয়েছে। সবাইকেই
পুনর্জন্ম নিতে হবে। ক্রমানুসারে সবাইকেই আসতে হবে। যারা প্রথমে এসেছিল, তারা ক্রমশঃ
পতিত হয়ে যায়। বাবা তো কতো কিছুই না বোঝাচ্ছেন। এটাও তিনি বুঝিয়েছেন যে এইভাবেই
সৃষ্টিচক্র আবর্তিত হয়। যেভাবে দিনের পরে রাত্রি আসে, সেভাবেই সত্যযুগের পর
ত্রেতাযুগ… এবং শেষে সঙ্গমযুগ আসে। এই সঙ্গমযুগেই বাবা পরিবর্তনের কার্য করেন। যারা
সতোপ্রধান ছিল তারাই এখন তমোপ্রধান হয়ে গেছে। ওরাই আবার সতোপ্রধান হবে। মানুষ
আহ্বান করে - হে পতিত-পাবন, তুমি এসো। তাই বাবা এখন বলছেন "মন্মনা ভব" । আমি একটা
আত্মা এবং আমাকে এখন বাবাকে স্মরণ করতে হবে - এইভাবে খুব কমজন-ই বুঝতে পারে। আমাদের
আত্মিক পিতা কতোই না মিষ্টি। মিষ্টি স্বভাব তো আত্মার মধ্যেই থাকে। শরীরটা তো নষ্ট
হয়ে যায়। তখন সেই আত্মাকে আহ্বান করে। আত্মার সঙ্গেই ভালোবাসা থাকে। সংস্কার তো
আত্মার মধ্যেই থাকে। আত্মাই পড়ছে, শুনছে। শরীরটা তো নষ্ট হয়ে যায়। আমি একটা আত্মা -
অমর। তাহলে তুমি আমার জন্য কাঁদো কেন ? এটা তো দেহ অভিমান, তাই না ? তোমাদের এই
শরীরের সঙ্গে ভালোবাসা রয়েছে। কিন্তু ভালোবাসা তো আত্মার সঙ্গেই থাকা উচিত। অবিনাশী
জিনিসের সাথেই ভালোবাসা থাকা উচিত। বিনাশী জিনিসের সঙ্গে ভালোবাসা থাকার কারণেই
চারদিকে এতো লড়াই ঝগড়া। সত্যযুগে দেহী-অভিমানী হওয়ার জন্য খুশি হয়ে একটা শরীর ত্যাগ
করে অন্য শরীর ধারণ করে। কান্নাকাটির কোনো ব্যাপার-ই নেই। বাচ্চারা, তোমাদেরকেও
আত্ম-অভিমানী অবস্থা তৈরি করার জন্য অনেক প্র্যাকটিস করতে হবে - আমি একটা আত্মা,
আমার ভাইকে (আত্মা) বাবার বার্তা শোনাচ্ছি, আমার ভাই এই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দ্বারা
শুনছে - এইরকম অবস্থা তৈরি করতে হবে। বাবাকে স্মরণ করতে থাকলে বিকর্ম বিনষ্ট হতে
থাকবে। এইভাবে নিজেকে আত্মা অনুভব করলে এবং সামনের ব্যক্তিকেও আত্মা রূপে দেখতে
থাকলে পাক্কা অভ্যাস হয়ে যাবে। এটাই হলো গুপ্ত পরিশ্রম। অন্তর্মুখী হয়ে এই
অভ্যাসটাকে পাক্কা করতে হবে। যখনই সময় পাবে, এইরকম অভ্যাস করো। ৮ ঘন্টা নাহয়
কাজকর্ম করো, তারপর ঘুমাও। কিন্তু অবশিষ্ট সময়ে এটা অভ্যাস করো। ৮ ঘন্টা যদি করতে
পারো তবেই তোমরা অনেক খুশি হবে। পতিত-পাবন বাবা বলছেন - আমাকে স্মরণ করলেই তোমাদের
বিকর্মের বিনাশ হবে। এখন সঙ্গমযুগেই তোমরা জ্ঞান অর্জন করো। যত মহিমা সব এই
সঙ্গমযুগের। এই সময়েই বাবা বসে থেকে তোমাদেরকে জ্ঞান বোঝান। এটা কোনো স্থূল বিষয় নয়।
তোমরা যা কিছু লিখছো, সেগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। পয়েন্টগুলো যদি লেখা থাকে তবে মনে থাকবে।
এই জন্যই লেখা হয়। যাদের বুদ্ধি খুব তীক্ষ্ণ, তাদের মনে থাকে। ক্রম তো অবশ্যই রয়েছে।
*মুখ্য বিষয় হলো বাবা এবং সৃষ্টিচক্রকে স্মরণ করতে হবে।* কোনো বিকর্ম যেন না হয়। ঘর
গৃহস্থেও থাকতে হবে। তবে পবিত্র অবশ্যই হতে হবে। *কোনো কোনো নোংরা চিন্তাধারার
বাচ্চা ভাবে - অমুক মহিলাকে আমার খুব ভালো লাগে, ওনাকে আমি গন্ধর্ব মতে বিয়ে করব।
যখন কারোর আত্মীয়-বন্ধুরা অতিরিক্ত অত্যাচার করে, তখন তাকে বাঁচানোর জন্যই গন্ধর্ব
মতে বিয়ে করানো হয়। কিন্তু তাই বলে এটা নয় যে সকলেই বলবে আমি গন্ধর্ব মতে বিয়ে করব।
এইরকম বাচ্চারা কখনোই টিকতে পারবে না। প্রথম দিনেই সে গর্তে পড়ে যায়। নাম-রূপে ফেঁসে
যায়।* এগুলো খুবই খারাপ বিষয়। *গন্ধর্ব মতে বিয়ে করা মুখের কথা নয়।* পরস্পরকে ভালো
লেগে গেলে বলে দেয় গন্ধর্ব মতে বিয়ে করব। এক্ষেত্রে পরিজনদেরকেও সতর্ক থাকতে হবে।
বুঝতে হবে যে এই বাচ্চা কোনো কাজের নয়। যাকে মনে ধরেছে তার থেকে সরিয়ে নিতে হবে।
নয়তো কথা বলতেই থাকবে। এই সভাতে খুবই সতর্ক থাকতে হয়। ভবিষ্যতে অনেক নিয়ম মেনে সভা
অনুষ্ঠিত হবে। যাদের এইরকম মনোবৃত্তি থাকবে, তাদেরকে আসতে দেওয়া হবে না।
যেসব বাচ্চারা আত্মিক সেবায় নিযুক্ত থাকে, যারা যোগযুক্ত হয়ে সেবা করে, তারাই
সত্যযুগের রাজধানী স্থাপন করার কার্যে সহযোগী হয়। সেবাধারী বাচ্চাদের প্রতি বাবার
নির্দেশ - আরাম করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যারা অনেক সেবা করে, তারা নিশ্চয়ই রাজা রানী
হবে। যারা পরিশ্রম করে, অনেকজনকে নিজের মতো বানায়, তাদের মধ্যে শক্তিও থাকে। ড্রামা
অনুসারে স্থাপন তো হবেই। সব পয়েন্ট ভালোভাবে ধারণ করে সেবাতে লেগে যেতে হবে। আরাম
করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কেবল সেবা আর সেবা। তবে গিয়ে ভালো পদ পাবে। মেঘের মতো এখানে
এসে রিফ্রেশ হয়ে আবার সেবাস্থানে চলে যাও। তোমাদের সেবা অনেক বৃদ্ধি পাবে। কতো
রকমের ছবি বেরোবে যেগুলো দেখে মানুষ খুব তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবে। এইসব ছবিগুলোও আরো
ভালো হবে। যারা আমাদের ব্রাহ্মণ বংশের হবে, তারাই ভালোভাবে বুঝবে। যে বোঝাচ্ছে সেও
যদি ভালো হয়, তাহলে কিছুটা বুঝতে পারবে। যে ভালোভাবে ধারণ করে, বাবাকে স্মরণ করে -
তার মুখ দেখেই বোঝা যায়। বাবা, আমি তো তোমার থেকে পুরো উত্তরাধিকার নেব - তার মনে
এইরকম খুশির বাজনা বাজতে থাকে, সেবার বিষয়েও খুব রুচি থাকে। রিফ্রেশ হয়ে চলে যায়।
সেবার জন্য প্রত্যেক সেন্টার থেকেই অনেকজনকে তৈরি হতে হবে। তোমাদের সেবা তো অনেক
বৃদ্ধি পাবে। অনেকেই তোমাদের সাথে যুক্ত হবে। অবশেষে একদিন সন্ন্যাসীরাও আসবে। এখন
তো ওদেরই রাজত্ব। মানুষ ওদের পায়ে পড়ে, ওদেরকে পূজা করে। বাবা বলছেন - এগুলো হলো
ভূত পূজা। আমার তো কোনো পা নেই, তাই তোমরা পূজাও করো না। এই শরীরটা আমি লোন নিয়েছি।
এটাকে বলা হয় ভাগ্যবান রথ।
বাচ্চারা, এখন তোমরা খুবই সৌভাগ্যবান কারণ তোমরা হলে ঈশ্বরীয় সন্তান। গায়ন আছে -
আত্মা এবং পরমাত্মা অনেকদিন আলাদা থেকেছে। সুতরাং যারা অনেকদিন ধরে আলাদা থেকেছে
তারাই এখানে আসবে এবং আমি এসে ওদেরকেই শিক্ষা দিই। কৃষ্ণের ক্ষেত্রে কি এইরকম বলা
সম্ভব ? সে তো পুরো ৮৪ বার জন্ম নেয়। এটাই হলো এনার অন্তিম জন্ম। তাই এনাকেই
শ্যাম-সুন্দর বলা হয়। শিবের সম্পর্কে তো কেউ কিছুই জানে না যে তিনি আসলে কে। বাবা
এসেই এইসব কথা বোঝাচ্ছেন। আমি হলাম পরমাত্মা, পরমধাম নিবাসী। তোমরাও ওখানকার নিবাসী।
আমি হলাম সুপ্রীম, পতিত-পাবন। তোমরা এখন ঈশ্বরীয় বুদ্ধি সম্পন্ন হয়েছ। ঈশ্বরের
বুদ্ধিতে যেসব জ্ঞান রয়েছে, সেগুলো তিনি তোমাদেরকে শোনাচ্ছেন। সত্যযুগে কোনো ভক্তির
ব্যাপার থাকবে না। তোমরাই এখন এই জ্ঞান অর্জন করছো। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের -সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
অন্তর্মুখী হয়ে নিজের অবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে। আমি হলাম এক আত্মা, নিজের ভাইকে
(আত্মা) বাবার বার্তা শোনাচ্ছি… - এইরকম অভ্যাস করতে হবে। এইভাবে আত্ম-অভিমানী
হওয়ার গুপ্ত পরিশ্রম করতে হবে।
২) আত্মিক সেবায় রুচি
থাকা উচিত। অন্যকেও নিজের মতো বানানোর জন্য পরিশ্রম করতে হবে। সঙ্গদোষ খুবই খারাপ,
এটা থেকে নিজেকে সামলে রাখতে হবে। অশুদ্ধ খাদ্য-পানীয় খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত নয়।
বরদান:-
'ঈশ্বরীয় সেবাধারী'-র স্মৃতি দ্বারা সহজেই স্মরণের অনুভব করে সহজযোগী ভব
'ঈশ্বরীয় সেবাধারী'
মানে ঈশ্বর অর্থাৎ বাবা যেসব সেবা দিয়েছেন, সেই সেবাতেই সর্বদা নিযুক্ত থাকা।
সর্বদাই যেন এই নেশা থাকে যে স্বয়ং ঈশ্বর আমাদেরকে এইসব সেবা দিয়েছেন। কাজ করতে করতে,
যিনি কাজটা দিয়েছেন তাকে কখনোই ভোলা যায় না। সুতরাং কর্মের দ্বারা সেবা করার সময়েও
যেন এটা স্মরণে থাকে যে বাবার নির্দেশ অনুসারে এটা করছি। তাহলে সহজেই স্মরণের অনুভব
করে সহজযোগী হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
সর্বদা
যদি গডলি স্টুডেন্ট লাইফের স্মৃতি থাকে, তবে মায়া সামনে আসতেই পারবে না।