10.04.2020    প্রাত: মুরলী      ওম শান্তি      "বাপদাদা"      মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা — এখন নাটক সম্পূর্ণ হতে চলেছে, ঘরে ফিরে যেতে হবে, কলিযুগের পর আবার সত্যযুগের পুনরাবৃত্তি হবে, এই রহস্য সবাইকে বুঝিয়ে বলো"

প্রশ্নঃ -
আত্মা নিজ ভূমিকা পালন করতে-করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, ক্লান্ত হয়ে পড়ার কারণ কি ?

উত্তরঃ -
আত্মারা অনেক ভক্তি করেছে, টাকা পয়সা খরচ করে অনেক মন্দির তৈরি করেছে, ধাক্কা খেতে খেতে সতোপ্রধান আত্মা তমোপ্রধান হয়ে গেছে। তমোপ্রধান হওয়ার জন্য দুঃখী হয়ে গেছে। যখন কোনো ব্যাপারে বিরক্তি আসে তখনই ক্লান্তি আসে। এখন বাবা এসেছেন সব ক্লান্তি দূর করতে।

ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের পিতা বসে আত্মা রূপী বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন, ওঁনার নাম কি ? শিব । এখানে যে বাচ্চারা বসে আছে তাদের যথার্থ রীতিতে স্মরণ স্মরণ থাকা উচিত। এই ড্রামায় সবার যে ভূমিকা আছে, সেইসব সম্পূর্ণ হতে চলেছে। নাটক যখন শেষ হয়ে আসে সমস্ত কলাকুশলীরা বুঝতে পারে আমাদের অভিনয় এখন শেষ হয়েছে, ঘরে ফিরে যেতে হবে। বাচ্চারা বাবাও তোমাদের বুঝিয়েছেন, এসব আর কেউ বুঝবে না, কারো জ্ঞান নেই। বাবা তোমাদের বিচক্ষণ করে তুলেছেন । বাচ্চারা, এখন নাটক সম্পূর্ণ হতে চলেছে, আবার নতুন চক্র শুরু হবে। নতুন দুনিয়াতে সত্য যুগ ছিল, এখন পুরানো দুনিয়াতে কলিযুগের অন্তিম সময়। এসব কথা তোমরাই জান যারা বাবাকে পেয়েছ। নতুন যারা আসে তাদেরও এটা বোঝাতে হবে — এখন নাটক সম্পূর্ণ হতে চলেছে, কলিযুগ শেষ হলে আবারও সত্যযুগের পুনরাবৃত্তি হবে। যারা আছে প্রত্যেককেই নিজ ঘরে ফিরতে হবে। নাটক শেষ হতে চলেছে, এতে মানুষ মনে করে যে প্রলয় হবে। তোমরা জান পুরানো দুনিয়ার বিনাশ কিভাবে হয় । ভারত হলো অবিনাশী বাবাও এখানেই আসেন, বাকি সব খন্ড শেষ হয়ে যাবে। এই বিচার ভাবনা কারো বুদ্ধিতেই আসতে পারে না। বাবা বাচ্চারা, তোমাদেরকে বুঝিয়ে বলেন, এখন নাটক শেষ হতে চলেছে আবারও পুনরাবৃত্তি হবে। প্রথমে নাটকের বিষয় তোমাদের বুদ্ধিতে ছিল না। বলা মাত্রই বলতে এটা সৃষ্টি নাটক, যাতে আমরা অভিনয় করে চলেছি। প্রথমে যখন আমরা বলতাম শরীরকে ভাবতে। এখন বাবা বলেন নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো । আমাদের সুইট হোমে ফিরে যেতে হবে। ঐ নিরাকার দুনিয়াতে আমরা আত্মারা বাস করি। এই জ্ঞান কোনও মানুষের মধ্যে নেই। এখন তোমরা সঙ্গম যুগে আছ, তোমরা জান এখন আমাদের ফিরে যেতে হবে। পুরানো দুনিয়া শেষ হওয়া অর্থাত্ ভক্তিও শেষ হয়ে যাওয়া। সর্বপ্রথম কে আসে, কিভাবে ধর্ম নম্বরানুসারে আসে এই বিষয়ে কোনো শাস্ত্রে লেখা নেই। বাবা এসে এই নতুন বিষয়ে জ্ঞাত করান । এই বিষয়ে আর কেউ বোঝাতে সক্ষম নয়। বাবাই এসে বোঝান, জ্ঞানের সাগর বাবা একবারই আসেন যখন নতুন দুনিয়ার স্থাপনা, পুরানো দুনিয়ার বিনাশ ঘটার সময় হয়। বাবাকে স্মরণ করার সাথে-সাথে চক্রও বুদ্ধিতে থাকা উচিত। এখন নাটক সম্পূর্ণ হতে চলেছে, আমরা ঘরে ফিরে যাব । ভূমিকা পালন করতে-করতে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি, পয়সাও খরচ করেছি, ভক্তি করতে-করতে আমরা সতোপ্রধান থেকে তমোপ্রধান হয়ে গেছি । এই দুনিয়াই পুরানো হয়ে গেছে। নাটককে পুরানো বলা যাবে ? না । নাটক কখনোই পুরানো হয়না । নাটক তো নিত্যনতুন চলতেই থাকে। অবশিষ্ট দুনিয়া পুরানো হয়, আমরা অ্যাকটররা তমোপ্রধান হয়ে দুঃখি হয়ে পড়ি, ক্লান্ত হয়ে পড়ি । সত্যযুগে এমনটা বলা হয় না। সেখানে কোনও ব্যাপারে ক্লান্ত হওয়া বা বিরক্ত হওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। এখানে তো অনেক রকমের বিরক্তি দেখা যায়। তোমরা জানো এই পুরানো দুনিয়া শেষ হবে। কোনও সম্বন্ধ ইত্যাদি স্মরণে আসা উচিত নয়। এক বাবাকেই স্মরণ করা উচিত, যাতে বিকর্ম বিনাশ হয়, বিকর্ম বিনাশ হওয়ার অন্য কোনো উপায় নেই। গীতাতেও মনমনাভব শব্দটি লিখিত আছে , কিন্তু অর্থ কেউ জানেনা। বাবা বলেন — আমাকে আর অবিনাশী উত্তরাধিকারকে স্মরণ কর। তোমরা বিশ্বের উত্তরাধিকারী অর্থাত্ মালিক ছিলে । এখন তোমরা আবার বিশ্বের উত্তরাধিকারী হতে যাচ্ছ। সুতরাং কত খুশি থাকা উচিত। এখন তোমরা কড়িহীন থেকে হীরেতুল্য হতে যাচ্ছ । এখানে তোমরা এসেইছ বাবার কাছ থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকারী নিতে ।

তোমরা জানো, যখন কলা কম হতে থাকে তখন ফুলের বাগিচা সতেজতা হারিয়ে ফেলে । দুই কলা কম হয়ে গেছে, বাগিচা তার সতেজতা হারিয়েছে । এখন তো কাঁটার জঙ্গল হয়ে গেছে। তোমরা জান দুনিয়ার আর কেউ জানেনা। এই নলেজ তোমরা পেয়েছ । এ হলো নতুন দুনিয়ার জন্য নতুন নলেজ। নতুন দুনিয়া স্থাপন হচ্ছে। বাবা স্থাপনা করছেন । সৃষ্টির রচয়িতা বাবা। স্মরণও বাবাকেই করে থাক যে তুমি এসে স্বর্গ রচনা কর । সুখধাম রচনা করলে অবশ্যই দুখধাম বিনাশ হবে তাইনা। বাবা প্রতিদিনই বোঝান , তাকে ধারণ করে তারপর অন্যদেরও বোঝাতে হবে। সর্বপ্রথম বোঝাতে হবে — আমাদের পিতা কে , যাঁর কাছ থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্তি হবে। ভক্তি মার্গেও গড ফাদারকে স্মরণ করে বলে থাকে যে আমাদের দুঃখ হরণ করে সুখ প্রদান কর ।

সুতরাং বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে এই স্মৃতি থাকা উচিত, স্কুলে স্টুডেন্টসদের বুদ্ধিতে নলেজ থাকে, নাকি ঘরে বাইরের বিষয়ের উপর থাকে, স্টুডেন্ট লাইফে রোজগারের কোনও ব্যাপার নেই, শুধু পড়াশোনাই স্মরণে থাকে। এখানে তো কর্ম করতে-করতে, গৃহস্থ পরিবারে থেকেই বাবা বলেন এটা স্টাডি কর । এমন নয় যে বলবেন সন্ন্যাসীদের মতো ঘর পরিবার ছেড়ে দাও। এ হলো রাজযোগ প্রবৃত্তি মার্গ। সন্ন্যাসীদের বলতে পার তোমাদের হলো হঠযোগ। তোমরা ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যাও, এখানে এসব নেই। এই দুনিয়া ভীষণ নোংরা, কিভাবে সব রয়েছে, দেখলেই ঘৃণা হয়। বাইরে থেকে যখন পরিদর্শনে আসে তখন তাদের সুন্দর-সুন্দর স্থান দেখানো হয়, দরিদ্র মানুষেরা কিভাবে দুর্গন্ধময় স্থানে বাস করে, সেইসব দেখানো হয় না। এ তো নরক কিন্তু তার মধ্যেও পার্থক্য তো আছে তাইনা। বিত্তবানরা কোথায় থাকে, গরিব কোথায় থাকে সবই কর্মের হিসেব । সত্যযুগে এমন নোংরা সম্ভবই নয়। ওখানেও পার্থক্য থাকে কেউ সোনার মহল তৈরি করবে ,কেউ রূপার , কেউ আবার ইটের । এখানে তো কত খন্ড । এক ইউরোপ তার কত খন্ড। সত্য যুগে আমরাই শুধু থাকব, এটাও বুদ্ধিতে থাকলে উত্ফুল্ল স্থিতি থাকবে । স্টুডেন্টদের ঈশ্বরীয় পড়াশোনাই স্মৃতিতে থাকে — বাবা আর উত্তরাধিকার। সময় যে অল্প সেটা তো বোঝানো হয়েছে। ওরা তো বলে লক্ষ হাজার বছর। এখানে বিষয় ৫হাজার বছরের । তোমরা বাচ্চারা বুঝতে পেরেছ এখন আমাদের রাজধানী স্থাপন হতে চলেছে। অবশিষ্ট দুনিয়া শেষ হয়ে যাবে। এসবই হলো ঈশ্বরীয় অধ্যয়ন। বুদ্ধিতে যেন থাকে যে আমরা স্টুডেন্টস, ভগবান এসে আমাদের পড়াচ্ছেন। কতটা খুশি হওয়া উচিত। এটা কেন ভুলে যাও ! মায়া বড় প্রবল, ভুল করিয়ে দেয়। স্কুলে সব স্টুডেন্টস পড়ছে । সবাই জানে ভগবান এসে আমাদের পড়াচ্ছেন, লৌকিক দুনিয়াতে অনেক রকমের বিদ্যাভ্যাস করানো হয়, অনেক টিচার্স পড়ান । এখানে তো একজনই টিচার একটাই স্টাডি । সহায়ক টিচার্স তো অবশ্যই প্রয়োজন। স্কুল একটা, বাকি সব শাখা, পড়াচ্ছেন একজনই বাবা। বাবা এসে সবাইকে সুখ প্রদান করেন । তোমরা জান অর্ধকল্প আমরা সুখে থাকব । সুতরাং এতেও খুশি হওয়া উচিত যে শিববাবা আমাদের পড়াচ্ছেন। শিববাবা স্বর্গ রচনা করেন, আমরা স্বর্গের মালিক হওয়ার জন্য পড়াশোনা করি । অন্তর্মনে কত খুশি হওয়া উচিত। ঐ স্টুডেন্টসরা খাওয়া দাওয়ার সাথে ঘরের কাজকর্ম ইত্যাদিও করে থাকে। হ্যাঁ, কেউ হস্টেলে থাকে পড়াশোনার প্রতি অত্যধিক মনোযোগ দেওয়ার জন্য। সার্ভিস করার জন্য বাচ্চারা বাইরে থাকে। তাদের কাছে কত রকমের মানুষ আসে । এখানে তো তোমরা কত নিরাপদে বসে আছ, কেউ ভিতরে আসতে পারে না। তোমাদের এখানে অন্য কারো সঙ্গ নেই । পতিতদের সাথে কথা বলার প্রয়োজন নেই। তোমাদের কারও মুখ দেখারও দরকার নেই। তবুও যারা বাইরে থাকে তারাও দ্রুত এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এটা আশ্চর্যের বিষয় যে বাইরে থেকেও অনেককে পড়াশোনা করিয়ে, নিজের সমতুল্য করে তাদের এখানে নিয়ে আসে। বাবা জিজ্ঞাসা করেন — কেমন রুগীকে নিয়ে এসেছ, দুর্বল রুগী হলে তাকে ৭ দিন ভট্টিতে রাখা হয়। এখানে কোনও শূদ্রকে আনা উচিত নয়। এটা মধুবন তোমরা ব্রাহ্মণদের একটা গ্রাম । বাবা এখানে বসে তোমাদের বোঝান, বিশ্বের মালিক করে তোলেন। কোনও শূদ্রকে নিয়ে আসলে ভাইব্রেশন নষ্ট হয়ে যাবে। বাচ্চারা তোমাদের আচার -আচরণে সত্যতা থাকা উচিত।

আরও অগ্রসর হতে-হতে তোমাদের অনেক কিছু সাক্ষাত্কার হতে থাকবে — সত্যযুগে কি কি হবে, জানোয়ারও কেমন সুন্দর হবে। সমস্ত জিনিস সুন্দর হবে। সত্যযুগের কোনও জিনিস এখানে হতে পারে না। ওখানেও এখানকার কোনও জিনিস হতে পারে না। তোমাদের বুদ্ধিতে আছে আমরা স্বর্গে যাওয়ার জন্য পরীক্ষায় সফল হতে চলেছি। যেমন পড়াশোনা করবে তেমনই টিচার হয়ে অন্যদেরও পথ বলে দেবে । সবাই টিচার্স, সবাইকে শিক্ষা প্রদান করতে হবে। সর্বপ্রথম বাবার পরিচয় দিয়ে বলতে হবে যে বাবার কাছ থেকে এই উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। গীতা বাবাই শুনিয়েছেন। কৃষ্ণও বাবার কাছ থেকে শুনেই এই পদ প্রাপ্ত করেছে । প্রজাপিতা ব্রহ্মা আছেন যখন ব্রাহ্মণও প্রয়োজন। ব্রহ্মাও শিববাবার কাছে পড়েছেন । তোমরা এখন পড়াশোনা করছ বিষ্ণুপুরীতে যাওয়ার জন্য। এ হলো তোমাদের অলৌকিক ঘর । লৌকিক, পারলৌকিক তারপর অলৌকিক। নতুন কথা তাইনা। ভক্তি মার্গে কখনও ব্রহ্মাকে স্মরণ করে না । ব্রহ্মা বাবা বলা আসেনা। শিববাবাকে স্মরণ করে বলে দুঃখ থেকে মুক্তি দাও। তিনি হলেন পারলৌকিক পিতা, ইনি (ব্রহ্মা বাবা) হলেন অলৌকিক এঁকে তোমরা সূক্ষ্ম বতনে দেখে থাক। তারপর এখানেও দেখে থাক। লৌকিক পিতাকে তো একানেই দেখা যায়।

পারলৌকিক পিতাকে পরলোকে দেখা যায়। ইনি হলেন অলৌকিক ওয়ান্ডারফুল বাবা। এই অলৌকিক বাবাকে বুঝতে গিয়েই মুষড়ে পড়ে। শিববাবাকে বলা হয় নিরাকার । তোমরা বলবে উনি বিন্দু। ওরা অখণ্ড জ্যোতি বা ব্রহ্ম বলে থাকে। অনেক মত । তোমাদের হলো একমত। ব্রহ্মা দ্বারা বাবা মত দেওয়া শুরু করেছেন। এখন কত বৃদ্ধি হয়েছে। বাচ্চারা তোমাদের বুদ্ধিতে থাকা উচিত — আমাদের শিববাবা পড়াচ্ছেন। পতিত থেকে পাবন করে তুলছেন। রাবণ রাজ্যে পতিত তমোপ্রধান অবশ্যই হতে হবে। নামই এর পতিত দুনিয়া। সবাই দুঃখী তবেই তো বাবাকে স্মরণ করে বলে বাবা আমাদের দুঃখ দূর করে সুখ প্রদান কর। সব বাচ্চাদের পিতা একজনই। উনি তো সবাইকেই সুখ দেবেন তাইনা। নতুন দুনিয়াতে শুধুই সুখ আর সুখ। বাকিরা সবাই শান্তিধামে থাকে । বুদ্ধিতে থাকা উচিত এখন আমরা শান্তিধামে যাব। যত কাছে আসতে থাকবে আজকের দুনিয়া কি, আগামীকালের দুনিয়া কেমন হবে সব দেখতে পাবে। স্বর্গের বাদশাহী নিকটেই দেখতে পাবে। সুতরাং বাচ্চাদের প্রধান বিষয়ই বোঝান হয় — বুদ্ধিতে যেন থাকে যে আমরা স্কুলে বসে আছি। শিববাবা এই রথের (ব্রহ্মা বাবা) সারথী হয়ে আমাদের শিক্ষা প্রদান করতে এসেছেন। ইনি ভগীরথ। বাবা অবশ্যই একবার আসবেন। ভগীরথের নাম কি, এটাও কারো জানা নেই।

এখানে তোমরা বাচ্চারা যখন বাবার সামনে বস বুদ্ধিতে থাকে যে বাবা এসেছেন — আমাদের সৃষ্টি চক্রের রহস্য বোঝাচ্ছেন। এখন নাটক সম্পূর্ণ হতে চলেছে, আমাদের ফিরে যেতে হবে। এটা মনে রাখা কত সহজ কিন্তু এটুকুও স্মরণ করতে পার না। এখন চক্র সম্পূর্ণ হতে চলেছে, এখন আমাদের ফিরে যেতে হবে, তারপর আবার নতুন দুনিয়াতে এসে ভূমিকা পালন করতে হবে। তারপর আমাদের পরে অমুক -অমুক আসবে। তোমরা জান এই সম্পূর্ণ চক্র কিভাবে ঘোরে। দুনিয়া কিভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। নতুন থেকে পুরানো আবার পুরানো থেকে নতুন দুনিয়া সৃষ্টি হয়। বিনাশের জন্য প্রস্তুতি দেখতে পাচ্ছ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হবে। এতো বোমা তৈরি করে রেখেছে যখন কাজে তো লাগাবেই তাইনা। বোমা দ্বারাই এতো ক্ষতি হবে যে তারপর মানুষের লড়াই করার প্রয়োজন পড়বে না। সেনা বাহিনী থেকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং বোমা ফেলা অব্যাহত থাকবে। এতো সব মানুষের চাকরি চলে গেলে অনাহারে মরতে হবে। এসবই ঘটতে চলেছে। তারপর সিপাইরা কি করবে। আর্থকোইক হবে, বোমা নিক্ষেপ হবে, একে অপরকে মারবে, অকারনে রক্তপাত, ভয়ঙ্কর খেলা তো হবেই। সুতরাং এখানে এসে যখন বস তখন এইসব বিষয় মনোযোগী হওয়া উচিত। শান্তিধাম, সুখধামকে স্মরণ করতে থাকো । অন্তর্মনকে জিজ্ঞাসা কর আমার কি স্মরণে আসে ? যদি বাবাকে স্মরণ না হয় তবে বুঝতে হবে বুদ্ধি নিশ্চয়ই এদিকে-ওদিকে ছুটে বেড়িয়েছে। বিকর্ম বিনাশ হবে না, পদও কম হয়ে যাবে। আচ্ছা, বাবা স্মরণে যদি স্থিতি না থাকে তবে চক্রকে স্মরণ করো, তাতেও খুশির মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু শ্রীমতে না চললে, সার্ভিস না করলে বাপদাদার অন্তরে স্থান হবে না। সার্ভিস না করলে অন্যদের কাছ থেকে অনেক বিরক্তি আসবে। কেউ তো অনেককে নিজের সমতুল্য করে বাবার কাছে নিয়ে আসে। বাবা দেখে খুশি হন। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১) সবসময় খুশিতে থাকার জন্য বুদ্ধিতে যেন ঈশ্বরীয় অধ্যয়ণ আর শিক্ষা প্রদানকারী বাবা স্মরণ থাকে । পান - ভোজন ইত্যাদি সর্ব কাজ করতে-করতেও ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠনে মনোযোগী হতে হবে।

২) বাপদাদার অন্তরে স্থান পাওয়ার জন্য শ্রীমত অনুসারে অনেককে নিজের সমতুল্য করে তোলার সার্ভিস করতে হবে। কাউকে বিরক্ত করা উচিত নয়।

বরদান:-
যে কোনো আত্মাকে প্রাপ্তির অনুভূতি করাতে সমর্থ যথার্থ সেবাধারী ভব

যথার্থ সেবা ভাব অর্থাত্ সবসময় প্রতিটি আত্মার প্রতি শুভ ভাবনা, শ্রেষ্ঠ কামনার ভাব রাখা, সেবা ভাব অর্থাত্ তাদের অনুভূতি অনুসারে ফলের অভিজ্ঞতা লাভ করানো । সেবা অর্থাত্ প্রতিটি আত্মাকে প্রাপ্তি অনুভব করানো। এমন সেবায় তপস্যাও সাথে থাকে । যেখানে যথার্থ সেবা ভাব আছে সেখানে তপস্যার ভাব আলাদা নয়। যে সেবায় ত্যাগ ও তপস্যা নেই সেটা শুধুই নামধারী সেবা।সেইজন্য ত্যাগ তপস্যা আর সেবার কম্বাইন্ড রূপ দ্বারা প্রকৃত যথার্থ সেবাধারী হও ।

স্লোগান:-
নম্রতা আর ধৈর্যের গুণ ধারণ করলে ক্রোধাগ্নিও শান্ত হয়ে যাবে।