27.04.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
স্ব -উন্নতির জন্য রোজ পোতামেল (চার্ট ) রাখো, সারাদিনে আচরণ কেমন ছিলো, নিজেকে
পর্যবেক্ষণ করো --যজ্ঞের প্রতি নিষ্ঠাবান ছিলাম কি ?"
প্রশ্নঃ -
কোন্
বাচ্চাদের প্রতি বাবার অনেক সম্মান থাকে ? সেই সম্মানের নিদর্শন কি ?
উত্তরঃ -
যে বাচ্চারা বাবার প্রতি স্বচ্ছ, যজ্ঞের প্রতি নিষ্ঠাবান, যারা কিছুই লুকায় না, সেই
বাচ্চাদের প্রতি বাবার অনেক সম্মান থাকে । আর এই সম্মান বা শ্রদ্ধা থাকার কারণে
অনুপ্রেরণা দিয়েও উপরে ওঠাতে থাকেন । সেবাতেও পাঠিয়ে দেন । বাচ্চাদেরও সত্য শুনে
শ্রীমৎ গ্রহণ করার বুদ্ধি থাকার প্রয়োজন ।
গীতঃ-
জলসাঘরে জ্বলে
ওঠে ঝাড়বাতির শিখা -- পিপীলিকার পুড়ে মরা তাহাতেই লিখা....
ওম্ শান্তি ।
এখন এই গীত তো
ভুল, কেননা তোমরা তো বহ্নিপতঙ্গ নয় । আত্মাকে বাস্তবে বহ্নিপতঙ্গ বলা হয় না ।
ভক্তরা অনেক নাম রেখে দিয়েছে । না জানার কারণে তারা বলেও থাকে --- এও নয় - এও নয়,
আমরা জানি না, সবই নাস্তিক । তাও যে নাম মনে আসে তাই বলে দেয় । ব্রহ্ম, বহ্নিপতঙ্গ,
নুড়িপাথরেও পরমাত্মা আছে, বলে দেয়, কেননা ভক্তিমার্গে কেউই বাবাকে যথার্থ রীতিতে
চিনতে পারে না । বাবাকে এসেই তাঁর নিজের পরিচয় দিতে হয় । শাস্ত্র ইত্যাদি কোথাও
বাবার পরিচয় নেই, তাই ওদের নাস্তিক বলা হয় । বাবা এখন বাচ্চাদের তাঁর পরিচয় দিয়েছেন,
কিন্তু নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করা -- এতে অনেক বুদ্ধির কাজ । এইসময় হলো
পাথর বুদ্ধি । আত্মার মধ্যে বুদ্ধি থাকে । দেহের কর্মের দ্বারাই বোঝা যায় যে,
আত্মার বুদ্ধি পরশ পাথর তুল্য নাকি পাথর তুল্য ? সবকিছুই আত্মার উপর নির্ভর করে ।
মানুষ তো বলে দেয়, আত্মাই পরমাত্মা । ও তো নির্লিপ্ত, তাই যা চাও তাই করতে থাকো ।
মানুষ হয়েও বাবাকে জানে না । বাবা বলেন যে, মায়া রাবণ সকলকেই পাথর বুদ্ধির করে
দিয়েছে । দিনে -দিনে মানুষ অনেক বেশী তমোপ্রধান হয়ে যায় । মায়ার অনেক জোর, মানুষ
সহজে সংশোধন করেই না । বাচ্চাদের বোঝানো হয়, রাতে সারাদিনের পোতামেল (চার্ট ) লেখো
--কি করেছো ? আমরা দেবতাদের মতো ভোজন করেছি কি ? চালচলন নিয়মমাফিক আছে তো, নাকি
আনাড়ীদের মতো ? রোজ যদি নিজের পোতামেল না রাখো, তাহলে তোমাদের উন্নতি কখনোই হবে না
। অনেককেই মায়া থাপ্পড় মারতে থাকে । তারা লেখে আজ আমাদের বুদ্ধিযোগ অমুকের নাম -রূপের
দিকে গেছে,আজ এই পাপ কর্ম হয়েছে এমন সত্যি কথা কোটিতে কয়েকজনই লিখতে পারে । বাবা
বলেন, আমি যা বা যেমন, আমাকে সম্পূর্ণ কেউই জানে না । নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে
যদি স্মরণ করে তাহলে হয়তো কিছু বুদ্ধিতে বসতে পারে । বাবা বলেন, খুব ভালো ভালো
বাচ্চা, জ্ঞান খুব ভালো শোনায় কিন্তু যোগ কিছুই করে না । বাবার পুরো পরিচয় নেই, নিজে
বুঝতে পারে না তাই কাউকে বোঝাতেও পারে না । সম্পূর্ণ দুনিয়ার মানুষ মাত্র রচয়িতা আর
রচনাকে সম্পূর্ণ জানেই না, তাহলে মনে করো কিছুই জানে না । এও এই নাটকেই লিপিবদ্ধ আছে
। আবারও তা হবে । পাঁচ হাজার বছর পরে আবারও এই সময় আসবে, আমাকে এসে আবার বোঝাতে হবে
রাজত্ব নেওয়া তো কম কথা নয় । এতে অনেক পরিশ্রম । মায়া খুব জোরে আঘাত করে, খুব বড়
যুদ্ধ চলে । যেমন বক্সিং হয়, তাই না । যারা খুব হুঁশিয়ার, তাদেরই বক্সিংয়ের যুদ্ধ
হয় একে অপরকে তো বেহুঁশ করে দেয়, তাই না । ওরা বলে, বাবা মায়ার অনেক ঝড় আসে, এই হয়
। তাও খুব অল্পই সত্য লেখে । অনেকেই আছে যারা লুকিয়ে রাখে । তারা বুঝতেই পারে না
যে, বাবাকে কিভাবে সত্যি কথা শোনাবে ? কি শ্রীমৎ নিতে হবে ? এ বর্ণনা করতে পারে না
। বাবা জানেন যে, মায়া অতি প্রবল । তাই সত্য বলতে ওদের লজ্জা হয়, ওদের কর্ম এমন হয়ে
যায় যে, বলতে লজ্জা লাগে । বাবা তো অনেক সম্মান দিয়ে উপরে তুলে ধরেন । তিনি বলেন,
এ খুবই ভালো, একে অলরাউন্ডার সেবাতে পাঠাবো । ব্যস, দেহ অহংকার এলে, মায়ার থাপ্পড়
খেলেই, নেমে যায় । বাবা তো উপরে তুলে ধরার জন্য প্রশংসাও করেন । তিনি বলেন, আমি
তোমাদের অনুপ্রেরণা দিয়ে তুলে ধরবো । তোমরা তো খুবই ভালো । স্থূল সেবাতেও তোমরা ভালো
। বাবা তোমাদের যথার্থ রীতিতে বলেন যে, এই লক্ষ্য খুবই ভারী । দেহ আর দেহের সম্বন্ধ
ত্যাগ করে নিজেকে অশরীরী আত্মা মনে করা --এই পুরুষার্থ করাই হলো বুদ্ধির কাজ । এখানে
সকলেই পুরুষার্থী । কতো বড় রাজত্ব স্থাপন হচ্ছে । বাবার যেমন সব সন্তান, তেমনই তারা
ছাত্রও আবার অনুসরণকারীও । ইনি হলেন সম্পূর্ণ দুনিয়ার বাবা । সকলেই ওই একজনকেই ডাকতে
থাকে । তিনি এসেই বাচ্চাদের বোঝাতে থাকেন । তবুও এতো সম্মান করেই না । বড় বড় ব্যক্তি
যখন আসে তখন মানুষ কতো সম্মান করে তাদের দেখাশোনা করে । কতো আড়ম্বরে পরিপূর্ণ থাকে
। এই সময় সকলেই তো পতিত, কিন্তু নিজেকে কেউই পতিত মনে করে না । মায়া সম্পূর্ণ তুচ্ছ
বুদ্ধির বানিয়ে দিয়েছে । তারা বলে দেয়, সত্যযুগের আয়ু এতো লম্বা, তো বলেন, সবাই
১০০ শতাংশ অবুঝ হয়ে গেছে । তারা মানুষ হয়ে কি কি কাজ করে । পাঁচ হাজার বছরের কথাকে
লাখ বছরের বলে দেয় । এও বাবা এসেই বোঝান যে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে এই লক্ষ্মী -নারায়ণের
রাজ্য ছিলো । এনারা দৈবী গুণ সম্পন্ন মানুষ ছিলেন, তাই এনাদের দেবতা, আর আসুরী গুণ
সম্পন্নদের অসুর বলা হয় । অসুর আর দেবতার মধ্যে রাতদিনের তফাৎ । কতো মহামারী, ঝগড়া
লেগে রয়েছে । আর প্রস্তুতিও হতে থাকে । এই যজ্ঞে সম্পূর্ণ দুনিয়া স্বাহা হয়ে যাবে
। আর এইজন্য এইসব আয়োজনের তো প্রয়োজন, তাই না । এই যে এতো বোম্ব তৈরী হয়েছে, এর
প্রস্তুতি তো বন্ধ করাই যাবে না । অল্পসময়ের মধ্যে সকলের কাছে অনেক হয়ে যাবে, কেননা
বিনাশ তো দ্রুত হওয়া চাই, তাই না । তখন এই হসপিটাল ইত্যাদি থাকবেই না কেউ জানতেই
পারবে না । এ কোনো মাসির ঘরে যাওয়ার মতো সহজ নয় । বিনাশ -সাক্ষাৎকার কোনো পাই -পয়সার
কথাই নয় । তোমরা এই সম্পূর্ণ দুনিয়ায় আগুন লেগেছে দেখতে পাবে । এমন সাক্ষাৎকার হয়
--চারিদিকে আগুনই আগুন লেগে আছে । সম্পূর্ণ দুনিয়া শেষ হতে হবে । এ কতো বড় দুনিয়া ।
আকাশ তো আর জ্বলবে না । এর ভিতরে যা কিছুই আছে সবের বিনাশ হতে হবে । সত্যযুগ আর
কলিযুগের মধ্যে রাতদিনের তফাৎ । এখানে কতো সংখ্যক মানুষ, জন্তু -জানোয়ার, কতো
সামগ্রী । এও বাচ্চাদের বুদ্ধিতে খুবই মুশকিলের সঙ্গে বসে । চিন্তা করে দেখো, এ হলো
পাঁচ হাজার বছরের কথা । দেবী -দেবতাদের রাজ্য ছিলো, তাই না । তখন কতো অল্প মানুষ
ছিলো । এখন কতো বেশী । এখন হলো কলিযুগ, এর অবশ্যই বিনাশ হতে হবে ।
বাবা এখন আত্মাদের বলেন, তোমরা একমাত্র আমাকে (মামেকম্ ) স্মরণ করো । এও বুদ্ধির
দ্বারা বুঝেই স্মরণ করতে হবে । এমন তো অনেকেই শিব -শিব করতে থাকে । ছোটো বাচ্চারাও
বলে দেয় কিন্তু বুদ্ধির দ্বারা কিছুই বুঝতে পারে না । অনুভবের দ্বারা বলে না যে, ও
হলো বিন্দু । আমিও এমনই ছোটো বিন্দু । এমনভাবে বুদ্ধির দ্বারা স্মরণ করতে হবে ।
প্রথমে তো -- আমি আত্মা, এই কথা দৃঢ় করো, তারপর বাবার পরিচয় বুদ্ধিতে খুব ভালোভাবে
ধারণ করো । অন্তর্মুখী বাচ্চারাই খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে যে, আমরা আত্মারা হলাম
বিন্দু । আমরা আত্মারা এখনই এই জ্ঞান প্রাপ্ত হচ্ছি যে, আমাদের মধ্যে ৮৫ জন্মের
পার্ট কিভাবে ভরা আছে, এরপর কিভাবে আত্মারা সতোপ্রধান হয় । এইসব কথা সম্পূর্ণ
অন্তর্মুখী হয়ে বোঝার মতো । এতেই সময় লাগে । বাচ্চারা জানে যে, এ হলো আমাদের
অন্তিম জন্ম । এখন আমরা ঘরে ফিরে যাবো । বুদ্ধিতে এ কথা দৃঢ় হওয়া চাই যে, আমরা আত্মা
। দেহভাব কম থাকলেই তখন ব্যবহারে পরিবর্তন আসবে । তা না হলে চালচলন একদমই খারাপ হয়ে
যায়, কেননা শরীর থেকে পৃথক তো হয়ই না । দেহভাবে এসে কিছু না কিছু করে দেয় । এই
যজ্ঞে তো অনেক সততার প্রয়োজন । এখন তো অনেকই ঢিলেমি আছে । অনেকের খাওয়াদাওয়া,
পরিবেশ কিছুই পরিবর্তন হয় নি । এখনো তো অনেক সময়ের প্রয়োজন । সেবাপরায়ণ বাচ্চাদেরই
বাবা স্মরণ করেন, পদও তারাই পেতে পারবে । অল্পেতেই নিজেকে খুশী করে নেওয়া, সে তো
চানা খাওয়ার মতো হয়ে গেলো । এতে অনেক অন্তর্মুখতার প্রয়োজন । বোঝানোর জন্যও যুক্তি
চাই । প্রদর্শনীতে কেউ সেভাবে বুঝতেই পারে না । তারা কেবল বলে দেয়, তোমাদের কথা ঠিক
। এও নম্বরের ক্রমানুসারে । তোমাদের এমন বিশ্বাস আছে যে, তোমরা বাবার বাচ্চা হয়ে
গেছো, বাবার কাছ থেকেই তোমরা অবিনাশী উত্তরাধিকার পাও । বাবার সম্পূর্ণ সেবা করাই
হলো আমাদের একমাত্র কাজ । তাহলেই সম্পূর্ণ দিন বিচার সাগর মন্থন হতে থাকবে । এই
বাবাও তো বিচার সাগর মন্থন করেন, তাই না । নাহলে এই পদ তিনি কিভাবে পাবেন ! এই
দুজনেই বাচ্চাদের একসঙ্গে বোঝান । দুটো ইঞ্জিন মিলিত হয়েছে, কেননা চড়াই অনেক বড়,
তাই না । পাহাড়ে চড়তে গেলে গাড়িতে দুটো ইঞ্জিন লাগানো হয় । কখনো কখনো চলতে চলতে
গাড়ি দাঁড়িয়ে গেলে তাকে টানতে টানতে নীচে নামিয়ে আনা হয় । আমাদের বাচ্চাদেরও এমনই
। চড়তে -চড়তে, পরিশ্রম করতে করতে আর উচ্চতায় চড়তে পারে না । মায়ার গ্রহণ বা তুফান
লাগে, তখন একদম চূর্ণ হয়ে নীচে পড়ে যায় । অল্প কিছু সেবা করলেই অহংকার এসে যায়,
তখনই নীচে নেমে যায় । মনেও করে না যে, বাবা আছেন, সঙ্গে ধর্মরাজও আছেন । যদি এমন
কিছু করি তাহলে আমাদের অনেক বেশী দণ্ড ভোগ করতে হবে । এই শাস্তির বাইরে থাকলে তো
খুবই ভালো । বাবার হয়ে এই অবিনাশী উত্তরাধিকার গ্রহণ করা, এ কোনো মাসির বাড়ী
যাওয়ার মতো সহজ নয় । বাবার হয়ে এমন কিছু যদি করে তাহলে বদনাম করে দেয় । তখন অনেক
দোষ হয়ে যায় । উত্তরাধিকারী হওয়া মাসির বাড়ী যাওয়ার মতো সহজই না । প্রজাতেও এমন
এতো বিত্তবান প্রজা হয় যে, সেকথা আর জিজ্ঞেস করো না । অজ্ঞানকালে কেউ ভালো হয়,
কেউ আবার যেমন তেমন । নাবালক বাচ্চাদের তো বলে দেবে, আমাদের সামনে থেকে সরে যাও ।
এখানে তো এক -দুজন বাচ্চার কথা নয় । এখানে মায়া খুবই জোরদার । এখানে বাচ্চাদের
খুবই অন্তর্মুখী থাকতে হবে, তখনই তোমরা কাউকে বোঝাতে পারবে । তোমাদের কাছে সবাই তখন
বলিহারি যাবে, তারপর তারা অনেক অনুতাপ করবে --- আমরা বাবাকে এতো গালি দিয়ে এসেছি ।
যারা বাবাকে সর্বব্যাপী বলে বা নিজেদের ঈশ্বর বলে, তাদের সাজা কি কম ? এমনি তো
উদ্ধার হবেই না । তাদের জন্য আরো সমস্যা । সময় যখন আসবে, বাবা এদের থেকে সমস্ত
হিসাব নেবেন । অন্তিম সময় সকলেরই হিসেব -নিকেশ তো শোধ হয়, তাই না, এতে অনেক বিশাল
বুদ্ধির প্রয়োজন ।
মানুষকে তো দেখো, কাকে কাকে শান্তির জন্য প্রাইজ দিতে থাকে । আর বাস্তবে তো একজনই
শান্তি স্থাপন করেন । বাচ্চাদের লিখে দেওয়া উচিত --এই দুনিয়াতে পবিত্রতা -শান্তি এবং
সমৃদ্ধি ভগবানের শ্রীমতেই স্থাপন হচ্ছে । এই শ্রীমৎ তো বিখ্যাত । মানুষ তো শ্রীমৎ
ভাগবত গীতা শাস্ত্রকে কতো সম্মান করে । কেউ কারোর শাস্ত্র মন্দিরের নামে কোনোকিছু
বললো, তখনই কতো লড়াই শুরু করে দেয় । তোমরা এখন জানো যে, এই সম্পূর্ণ দুনিয়া জ্বলে
ভস্ম হয়ে যাবে । এরা মন্দির - মসজিদকে জ্বালিয়ে দেবে । এই সব হওয়ার পূর্বে তোমাদের
পবিত্র হতে হবে । তোমাদের এই উদ্বিগ্নতা থাকা উচিত । ঘরবাড়িও তোমাদেরই দেখাশোনা করতে
হবে । এখানে তো অনেকেই আসে । এখানে তো ছাগলের মতো রাখা হবে না, তাই না, কেননা এ তো
অমূল্য জীবন, এই জীবনকে তো খুবই সাবধানের সঙ্গে রক্ষা করতে হবে । এখানে বাচ্চাদের
সঙ্গে করে নিয়ে আসা, এও বন্ধ করতে হবে । এতো বাচ্চাদের কিভাবে বসে সামলানো যাবে ।
বাচ্চারা ছুটি পেলে তোমরা মনে করো, আর কোথায় যাবো, চলো মধুবনে বাবার কাছে যাই । এ
তো তাহলে ধর্মশালা হয়ে যাবে । তাহলে এ ইউনিভার্সিটি কিভাবে হলো ? বাবা এখন সব
দেখছেন, কখন তিনি নির্দেশ দিয়ে দেবেন -- বাচ্চাদের যেন কেউ সঙ্গে করে নিয়ে না আসে
। এই বন্ধনও তোমাদের কম হয়ে যাবে । মায়েদের উপর বাবার দয়ার অনুভব হয় । বাচ্চারা
এও জানে যে, শিববাবা হলেন গুপ্ত । কারোর কারোর তো এনার প্রতি সম্মানও থাকে না । তারা
মনে করে, আমাদের তো সমস্ত সম্পর্ক শিববাবার সঙ্গে । তারা এটুকুও বুঝতে পারে না যে
--শিববাবাই তো এনার দ্বারা বোঝান, তাই না । মায়া নাক ধরে উল্টো কাজ করায়, তাই
ছাড়তেই পারে না । রাজধানীতে তো সবাইকেই চাই, তাই না । এইসব ভবিষ্যতে সাক্ষাৎকার হবে
। শাস্তিরও সাক্ষাৎকার হবে । পূর্বেও বাচ্চাদের এইসব সাক্ষাৎকার হয়েছে । তাও কেউ
কেউ পাপ কাজ ছাড়তেই পারে না । কোনো কোনো বাচ্চা এমন গিঁট বেঁধে রেখেছে যে, আমাদের
তো থার্ড ক্লাসই হতে হবে, তাই তারা পাপ করা থেকে বিরত থাকতে পারে না । তারা আরো
ভালোভাবে নিজেদের সাজার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে । তাদের বোঝাতে তো হয়, তাই না, যে
এই গিঁট বেঁধে রেখো না, কিন্তু তাদের তো থার্ড ক্লাসই হতে হবে । এখনই এই গিঁট বেঁধে
নাও যে, আমাদের তো এমন লক্ষ্মী -নারায়ণ হতেই হবে । কেউ তো খুব ভালোভাবে গিঁট বাঁধে,
চার্ট লেখে --অাজকের দিনে আমরা কোনোকিছু করি তো নি । এমন চার্টও অনেকেই রাখতো, তারা
আজ আর নেই । মায়া প্রচুর আছাড় মারে । অর্ধেক কল্প আমি তোমাদের সুখদান করি আর অর্ধেক
কল্প মায়া তোমাদের দুঃখ দান করে । আচ্ছা ।
মিষ্টি -মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ -সুমন
সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদের জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
অন্তর্মুখী হয়ে দেহ ভাব থেকে উর্ধ্বে থাকার অভ্যাস করতে হবে, খাওয়া-দাওয়া,
আচার-আচরণ সংশোধন করতে হবে, কেবল নিজেকে খুশী করে অমনোযোগী হবে না ।
২) উত্তরণ হলো অনেক
উচ্চ, তাই অনেক সাবধান হয়ে চলতে হবে । যে কোনো কর্ম খুব সাবধানের সঙ্গে করতে হবে ।
অহংকারে এসো না । উল্টো কর্ম করে সাজা তৈরী করো না । এই গিঁট বাঁধতে হবে যে, আমাকে
এই লক্ষ্মী - নারায়ণের মতো তৈরী হতেই হবে ।
বরদান:-
কর্মভোগ রূপী পরিস্থিতির আকর্ষণকে সমাপ্ত করে সম্পূর্ণ নষ্টমোহা ভব
এখনো পর্যন্ত
প্রকৃতির দ্বারা তৈরী পরিস্থিতির অবস্থা কোনো না কোনোভাবে আকর্ষণ করে । সবথেকে বেশী
নিজের দেহের হিসেব -নিকেশ, বাকি থাকা কর্মভোগের রূপে আগত পরিস্থিতি নিজের দিকে
আকৃষ্ট করে --- এই আকর্ষণও যখন সমাপ্ত হয়ে যাবে, তখন বলা হবে সম্পূর্ণ নষ্টমোহ ।
কোনো দেহের বা দেহের দুনিয়ার পরিস্থিতি স্থিতিকে যেন হেলিয়ে দিতে না পারে -- এটাই
হলো সম্পূর্ণ স্টেজ । এমন স্টেজে যখন পৌঁছে যাবে, তখনই সেকেণ্ডে মাস্টার
সর্বশক্তিমান স্বরূপে সহজেই স্থিত হতে পারবে ।
স্লোগান:-
পবিত্রতার ব্রত হলো সবথেকে শ্রেষ্ঠ সত্যনারায়ণের ব্রত, এতেই অতীন্দ্রিয় সুখ নিহিত
আছে ।