28.04.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
এখন এই নাটক সম্পূর্ণ হতে চলেছে, তোমাদের ঘরে ফিরে যেতে হবে, তাই এই দুনিয়ার থেকে
আসক্তি মিটিয়ে ফেলো, ঘরকে এবং নতুন রাজ্যকে স্মরণ করো"
প্রশ্নঃ -
দানের
মহত্ব(মহিমা) কখন বজায় থাকে ? তার রিটার্ন কোন্ বাচ্চারা প্রাপ্ত করে ?
উত্তরঃ -
দানের মহত্ব তখনই থাকে, যখন দান করে দেওয়া জিনিসের প্রতি মোহ থাকে না। দান দিয়ে যদি
পুনরায় তা স্মরণে আসে তবে তার রিটার্ন ফল প্রাপ্ত করতে পারবে না। দান দেওয়াই হয়
পরজন্মের জন্য তাই এই জন্মে তোমাদের কাছে যা কিছু আছে তার থেকে মোহমুক্ত হয়ে যাও।
ট্রাস্টী হয়ে রক্ষা বা দেখাশোনা করো। এখানে তোমরা ঈশ্বরীয় সেবায় যা কিছুই দাও,
হাসপাতাল বা কলেজ খোলো তাতে অনেকের কল্যাণ হয়, তার পরিবর্তে ২১ জন্মের জন্য (ফল)
প্রাপ্ত হয়।
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চাদের কি
নিজেদের ঘর এবং নিজেদের রাজধানী স্মরণে রয়েছে ? এখানে যখন বসো তখন বাইরের ঘর-দুয়ার,
কাজ-কর্ম ইত্যাদির চিন্তা আসা উচিত নয়। ব্যস, শুধু নিজের ঘরই(শান্তিধাম) স্মরণে
আসবে। এখন এই পুরানো দুনিয়া থেকে নতুন দুনিয়ায় ফেরত যেতে হবে, এই পুরানো দুনিয়া
সমাপ্ত হয়ে যাবে। আগুনে সবকিছু স্বাহা হয়ে যাবে। যাকিছু এই চোখে দেখছো,
মিত্র-সম্বন্ধীয় ইত্যাদি এই সবকিছুই সমাপ্ত হয়ে যাবে। এই জ্ঞান বাবা আত্মাদের বোঝান।
বাচ্চারা, এখন তোমাদের নিজেদের ঘরে ফিরে যেতে হবে। নাটক সম্পূর্ণ হতে চলেছে। এ হলোই
৫ হাজার বছরের চক্র। জগৎ তো রয়েছেই(অপরিবর্তিত), কিন্তু তার আবর্তন করতে ৫ হাজার
বছর লেগে যায়। যেসকল আত্মারা রয়েছে, তারা সকলেই ফিরে চলে যাবে। এই পুরানো দুনিয়াই
সমাপ্ত হয়ে যাবে। প্রত্যেকটা কথা বাবা অত্যন্ত ভালভাবে বোঝান। কেউ-কেউ এমন দুর্ভাগা
হয় যে শুধু-শুধুই নিজেদের সম্পত্তি হারিয়ে ফেলে। ভক্তিমার্গেও তো দান-পুণ্য করে,
তাই না! কেউ ধর্মশালা তৈরী করে, কেউ হাসপাতাল তৈরী করে, তাদের বুদ্ধিতে থাকে যে, এর
ফল পরজন্মে পাবো। কোনো আশা বা ইচ্ছা ব্যতীত, অনাসক্ত হয়ে কেউ করে -- এমন হয় না।
অনেকেই বলে, ফলের ইচ্ছা আমরা রাখি না। কিন্তু না, ফল অবশ্যই প্রাপ্ত হয়। মনে করো,
কারোর কাছে পয়সা আছে তারথেকে সে কিছু দান করে দিলো, তখন এটা তার বুদ্ধিতে থাকে যে
এর ফল আমি পরজন্মে পাবো। যদি মোহ থাকে, এই জিনিস আমার এমন মনে করলে তবে ওখানে (পরজন্মে)
আর পাবে না। দান দেওয়াই হয় পরজন্মের জন্য। যখন দ্বিতীয় জন্ম হয় তখন এই জন্মে মোহ
কেন রাখো ? এইজন্য ট্রাস্টী করা হয় যাতে মোহ(মমত্ব) কেটে যায়। যদি কেউ ভাল ধনী
ব্যক্তির ঘরে জন্ম নেয় তখন বলা হয় যে, সে ভাল কর্ম করেছে। কেউ রাজা-রানীর ঘরে জন্ম
নেয়, কারণ দান-পুণ্য করেছে কিন্তু সেটা হলো অল্পসময়ের অর্থাৎ এক জন্মের কথা। এখন
তোমরা এই পড়াশোনা করছো। তোমরা জানো যে, এই পড়ার মাধ্যমেই আমাদের এমন হতে হবে, তাই
দৈবী-গুণ ধারণ করতে হবে। এখানে যে দান করো তার দ্বারাই আধ্যাত্মিক ইউনিভার্সিটি,
হসপিটাল খোলা হয়। দান করে আবার তার থেকে মমত্ব মিটিয়ে ফেলা উচিত কারণ তোমরা জানো
যে, আমরা ভবিষ্যতে ২১ জন্মের জন্য বাবার কাছ থেকে প্রাপ্ত করি। বাবা ঘর-বাড়ী ইত্যাদি
তৈরী করেন, এ হলো অস্থায়ী। তা নাহলে এতসব বাচ্চা কোথায় থাকবে ? সকলে দান করে
শিববাবাকে। তিনি হলেন ধনী। তিনি এঁনার দ্বারাই এসব করান। শিববাবা রাজত্ব করেন না।
স্বয়ং-ই হলেন দাতা। ওঁনার মোহ কিসের মধ্যে থাকবে ? বাবা এখন শ্রীমত দেন যে, মৃত্যু
সম্মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আগে তোমরা কাকে দিতে, তখন মৃত্যুর কোনো কথা ছিল না। এখন বাবা
যখন এসেছেন তখন পুরানো দুনিয়াই বিনাশপ্রাপ্ত হবে। বাবা বলেন, আমি এসেছিই এই পতিত
দুনিয়াকে সমাপ্ত করতে। এই রুদ্র যজ্ঞতে সমগ্র পুরানো দুনিয়া স্বাহা(অর্পিত) হবে।
তোমরা নিজেদের জন্য যে ভবিষ্যত তৈরী করো, তা নতুন দুনিয়ায় পাবে। তা নাহলে এখানেই
সবকিছু সমাপ্ত হয়ে যাবে। কেউ না কেউ খেয়ে যাবে। এখন মানুষ ধারেও(ঋণ) দেয়। বিনাশ হলে
সবকিছু সমাপ্ত হয়ে যাবে। কেউ কাউকে কিছু দেবে না। সবকিছুই রয়ে যাবে। আজ ভালো তো কাল
দেউলিয়া হয়ে যায়। কেউই কোনো টাকাপয়সা পাবে না। কাউকে (পয়সা) দিয়েছো, সে মারা গেলে
তখন কে বসে রিটার্ন করবে। তাহলে কি করা উচিত ? ভারতের ২১ জন্মের কল্যাণের উদ্দেশ্যে
আর নিজেদের ২১ জন্মের কল্যাণের উদ্দেশ্যে এতে ব্যবহার করে দেওয়া উচিত। তোমরা
নিজেদের জন্যই করছো। তোমরা জানো যে, শ্রীমতের দ্বারাই আমরা উচ্চপদ লাভ করি, যার
দ্বারা ২১ জন্মের জন্য সুখ-শান্তি লাভ হবে। একেই বলে অবিনাশী বাবার আধ্যাত্মিক
হসপিটাল আর ইউনিভার্সিটি, যেখানে স্বাস্থ্য(হেল্থ), সম্পদ(ওয়েল্থ) আর সুখ(হ্যাপিনেস)
পাওয়া যায়। কারোর স্বাস্থ্য আছে, সম্পদ নেই তাহলে সুখও থাকতে পারে না। দুটোই থাকলে
তখন সুখীও থাকে। বাবা ২১ জন্মের জন্য তোমাদের দুটোই দেন। তা ২১ জন্মের জন্য জমা করতে
হবে। বাচ্চাদের কাজ হলো যুক্তি রচনা করা। বাবা আসার জন্য গরীব বাচ্চাদের ভাগ্য খুলে
যায়। বাবাই হলেন গরীবের ত্রাতা (গরীব-নিওয়াজ)। ধনীদের ভাগ্যে এমন বিষয় নেই। এইসময়
ভারত সর্বাপেক্ষা গরীব। যে ধনী ছিল সেই গরীব হয়ে গেছে। এইসময় সকলেই পাপাত্মা। যেখানে
পূণ্যাত্মা থাকে সেখানে একটিও পাপাত্মা থাকে না। ওটা হলো সত্যযুগ সতোপ্রধান, এটা হলো
কলিযুগ তমোপ্রধান। এখন তোমরা সতোপ্রধান হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছো। বাচ্চারা, বাবা
যখন তোমাদের স্মরণ করান তখন তোমরা জানতে পারো যে, বরাবর আমরাই স্বর্গবাসী ছিলাম।
পুনরায় আমরা ৮৪ জন্ম নিয়েছি। এছাড়া ৮৪ লক্ষ যোনী, এ তো গল্পকথা। এত জন্ম পশু-যোনীতে
থাকে কী ? এটা কি তোমাদের অন্তিম মনুষ্য-জন্ম ? এখন কি ফিরে যাবে ?
এখন বাবা বোঝান যে, মৃত্যু সম্মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ৪০-৫০ হাজার বছর আর নেই। মানুষ
সম্পূর্ণ ঘন অন্ধকারে রয়েছে, তাই বলা হয় প্রস্তরবুদ্ধি। এখন তোমরা
প্রস্তরবুদ্ধিসম্পন্ন থেকে পরশবুদ্ধিসম্পন্ন (সুবুদ্ধিসম্পন্ন) হচ্ছো। এই কথা কোনো
সন্ন্যাসী ইত্যাদিরা বোঝাতে পারে কি, না পারে না। এখন বাবা তোমাদের স্মরণ করান যে,
ফিরে যেতে হবে। যতখানি সম্ভব নিজেদের ব্যাগ-ব্যাগেজ ট্রান্সফার করে দাও। বাবা এইসব
নিয়ে নাও, আমরা সত্যযুগে ২১ জন্মের জন্য পেয়ে যাবো। এই বাবাও(ব্রহ্মা) অনেক
দান-পুণ্য করতেন। ওঁনার খুব শখ ছিল। ব্যবসায়ীরা দানার্থে দু-পয়সা বের করে। বাবা এক
আনা বের করতো। কেউ এলে যেন দরজা থেকেই খালি (হাতে) ফেরত না যায়। এখন ভগবান সম্মুখে
এসেছেন, একথা কারোরই জানা নেই। মানুষ দান-পুণ্য করতে-করতে মারা যাবে তখন কোথায় পাবে
? পবিত্র তো হয় না, বাবার সঙ্গে প্রীত রাখে না। বাবা আমাদের বুঝিয়েছেন যে, যাদব আর
কৌরবদের হলো বিনাশকালে বিপরীত-বুদ্ধি। পান্ডবদের হলো বিনাশকালে প্রীত-বুদ্ধি।
ইউরোপবাসীরা সকলেই যাদব, যারা মুসল(মিসাইল) ইত্যাদি বের করতে থাকে। শাস্ত্রতে তো
কি-কি কথা লিখে দিয়েছে। ড্রামা প্ল্যান অনুসারে অসংখ্য শাস্ত্র তৈরী হয়েছে। এখানে
প্রেরণা ইত্যাদির কোনো কথাই নেই। প্রেরণার অর্থ বিচার। এছাড়া বাবা কি প্রেরণার
মাধ্যমে পড়ায়, না তা পড়ায় না। বাবা বোঝান, ইনিও একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। অত্যন্ত
খ্যাতনামা ছিলেন। সকলেই সম্মান করতো। বাবা প্রবেশ করেন আর ইনি গালি খেতে শুরু করেন।
শিববাবাকে জানে না, না তাকে গালি দিতে পারে। গালি ইনি(ব্রহ্মা) খান। কৃষ্ণ তো বলে
তাই না -- আমি মাখন খাই নি। ইনিও বলেন যে, কাজ তো সবকিছু বাবা করে, আমি কিছুই করি
না। জাদুকর তো তিনি, আমি কি জাদুকর, না তা নয়। শুধু-শুধুই এঁনাকে গালি দিয়ে দেয়। আমি
কাউকে তাড়িয়ে দিয়েছি কী ? কাউকে বলিনি যে, তুমি পালিয়ে চলে এসো। আমি তো ওখানেই
ছিলাম, এরা নিজেরাই পালিয়ে এসেছে। শুধু-শুধুই দোষ দিয়েছে। কত গালি খেয়েছে। কি-কি কথা
শাস্ত্রতে লিখেছে। বাবা বোঝান, এ আবারও ঘটবে। এসব হলো জ্ঞানের কথা। কোনো মানুষ কি
এমন করতে পারে, না পারে না। তাও সেই ব্রিটিশ গভর্নমেন্টের রাজত্বে কত মায়েরা, বোনেরা
এসেছে এবং রয়ে গেছে। এব্যাপারে কেউ কিছুই করতে পারবে না। কারোর আত্মীয়-পরিজন আসলে
একদম বিতাড়িত করে দেওয়া হতো। বাবা বলতেন, অবশ্যই এদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে নিয়ে যাও। আমি
কী নিষেধ করি, না করি না কিন্তু কারোর সাহস ছিল না। বাবারও শক্তি ছিল, তাই না! এ
নতুন কিছুই নয়। এসব আবারও হবে। গালিও খেতে হবে। দ্রৌপদীর কথা রয়েছে। এরা সকলেই
দ্রৌপদী আর দুঃশাসন, এ একজনের কথা ছিল না। শাস্ত্রতে মিথ্যা কথা(গালগল্প) কে লিখেছে
? বাবা বলেন, এই ভূমিকাও ড্রামায় রয়েছে। আত্মার জ্ঞানই কারোর মধ্যে নেই, সম্পূর্ণ
দেহ-অভিমানী হয়ে পড়েছে। দেহী-অভিমানী হতে পরিশ্রম লাগে। রাবণ সম্পূর্ণ উল্টো করে
দিয়েছে। বাবা এখন সঠিক করছেন।
দেহী-অভিমানী হলে স্বততঃ-ই স্মৃতিতে থাকে যে, আমরা আত্মা, এই দেহ হলো বাজনা,
বাজানোর অর্থাৎ ভূমিকা পালনের জন্য। এই স্মৃতিও যদি থাকে তাহলেও দৈবী-গুণ আসতে-যেতে
থাকে। তোমরা কাউকে দুঃখ দিতে পারো না। ভারতেই এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য ছিল। ৫
হাজার বছরের কথা। যদি কেউ লক্ষ-লক্ষ বছর বলে তাহলে তারা গভীর অন্ধকারে রয়েছে।
ড্রামানুসারে যখন সময় সম্পূর্ণ হয়েছে তখন বাবা পুনরায় এসেছেন। এখন বাবা বলেন, আমার
শ্রীমতানুসারে চলো। মৃত্যু সম্মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অন্তরে আবার যদি কিছু আশা থাকে,
তা রয়ে যাবে। মরতে তো অবশ্যই হবে। এ সেই মহাভারতের লড়াই। যত নিজের কল্যাণ করতে পারবে
ততই ভাল। তা নাহলে তোমরা খালি হাতে যাবে। সমগ্র দুনিয়া খালি হাতেই যাবে। বাচ্চারা,
শুধু তোমরাই ভরা-হাত অর্থাৎ ধনশালী হয়ে যাও। এটা বোঝার জন্য বিশালবুদ্ধির প্রয়োজন।
কত ধর্মের মানুষ আছে। প্রত্যেকেই নিজ ভূমিকা পালন করে। একের ভূমিকা অন্যের সঙ্গে
মেলে না। সকলেরই নিজ-নিজ ফীচার্স অর্থাৎ মুখাবয়ব রয়েছে, কত রকমের ফীচার্স, এ সবই
ড্রামায় নির্ধারিত। বিস্ময়কর কথা, তাই না! এখন বাবা বলেন, নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো।
আমরা অর্থাৎ আত্মারা ৮৪ জন্ম পরিক্রমা করি, আমরা অর্থাৎ আত্মারা এই ড্রামার
অ্যাক্টর, এর থেকে আমরা বেরিয়ে যেতে পারি না, মোক্ষ কেউ পেতে পারে না। তাই চেষ্টা
করাও বৃথা। ড্রামার থেকে কেউ বেরিয়ে যাবে, বা অন্য কেউ যুক্ত হয়ে যাবে -- এমন হতে
পারে না। এত-এত জ্ঞান সকলের বুদ্ধিতে থাকতে পারে না। সারাদিন এমনভাবে জ্ঞানের
রোমন্থন করতে হবে। একমুহূর্ত-আধামুহূর্ত ....... একে (জ্ঞান) স্মরণ করো আর এর বৃদ্ধি
করতে থাকো। ৮ ঘন্টা অবশ্যই স্থূল সার্ভিস করো, আরামও করো, আর এই আধ্যাত্মিক
গভর্নমেন্টের সার্ভিসেও সময় দাও। তোমরা আসলে নিজেদের সেবাই করছো, এটাই হলো মুখ্যকথা।
স্মরণের যাত্রায় থাকো। এছাড়া জ্ঞানের মাধ্যমেই উচ্চপদ পেতে হবে। নিজেদের স্মরণের
সম্পূর্ণ চার্ট রাখো। জ্ঞান তো সহজ। বাবার বুদ্ধিতেও রয়েছে যে, আমি এই মনুষ্য
সৃষ্টির বীজরূপ, এর আদি-মধ্য-অন্তকে জানি। আমরাও বাবার সন্তান। বাবা একথা বুঝিয়েছেন
যে, কীভাবে এই চক্র আবর্তিত হয়। ওই(স্থূল) উপার্জনের জন্যও তো তোমরা ৮-১০ ঘন্টা দাও,
তাই না! ভাল গ্রাহক পেয়ে গেলে রাতেও কখনো হাই ওঠে না। হাই তুললে বোঝা যায় যে, এ
ক্লান্ত। বুদ্ধি বাইরে কোথাও বিচরণ করছে। সেন্টারেও অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। যে
বাচ্চারা অন্যদের চিন্তন করে না, নিজেদের পড়ায় মগ্ন থাকে তাদের উন্নতি সদাই হতে
থাকবে। অন্যদের চিন্তা করে তোমরা নিজেদের পদ ভ্রষ্ট কোরো না। হিয়ার নো ইভিল, সী নো
ইভিল ন....কেউ ভালভাবে না বললে তা এক কান দিয়ে শুনে অন্যদিক দিয়ে বের করে দাও। সদা
নিজেকে দেখতে হবে, না কি অন্যদের। নিজেদের পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। অনেকেই এমন
রয়েছে যারা অসন্তুষ্ট হয়ে যায়। আসা বন্ধ করে দেয়, পুনরায় আসতে থাকে। না আসলে যাবে
কোথায় ? স্কুল তো একটাই। নিজেদের পায়ে কুড়োল মারা উচিত নয়। নিজেদের পড়ায় মগ্ন থাকো।
অত্যন্ত খুশিতে থাকো। ভগবান পড়ায়, আর কি চাই। ঈশ্বর আমাদের বাবা, শিক্ষক, সদ্গুরু,
ওঁনার সঙ্গেই বুদ্ধির যোগসূত্র স্থাপন করতে হয়। তিনি হলেন সমগ্র দুনিয়ার নম্বরওয়ান
প্রিয়তম, যিনি তোমাদের নম্বরওয়ান বিশ্বের মালিক বানান।
বাবা বলেন, তোমাদের আত্মা অত্যন্ত অপবিত্র, উড়তে পারে না। পাখনা কেটে গেছে। রাবণ
সকল আত্মাদের পাখনা কেটে দিয়েছে। শিববাবা বলেন, আমি ছাড়া আর কেউ পবিত্র করতে পারে
না। সব অভিনেতারাই এখন এখানে, বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে থাকে, ফিরে কেউই যায় না। *আচ্ছা!*
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
নিজের চিন্তন আর পড়ায় মগ্ন থাকতে হবে। অন্যদের দেখবে না। যদি কেউ ভালভাবে কথা না বলে
তাহলে এক কান দিয়ে শুনে অন্য দিক দিয়ে বের করে দিতে হবে। অসন্তুষ্ট হয়ে পড়া ছেড়ে
দেওয়া উচিত নয়।
২) জীবিত থাকতেই
সবকিছু দান করে স্বয়ং মোহমুক্ত হয়ে যেতে হবে। ট্রাস্টী হয়ে সবকিছু উইল করে দিয়ে
হাল্কা থাকতে হবে। দেহী-অভিমানী হয়ে সমস্ত দৈবী-গুণ ধারণ করতে হবে।
বরদান:-
নিজের
মূল সংস্কারের পরিবর্তন দ্বারা বিশ্ব-পরিবর্তনকারী উদাহরণ-স্বরূপ ভব
ব্যাখা :- প্রত্যেকের
মধ্যেই নিজের যে মূল সংস্কার রয়েছে, যাকে নেচার বা স্বভাব বলা হয়, যা সময় বিশেষে
এগিয়ে যেতে বাঁধা প্রদান করে, সেই মূল সংস্কারের পরিবর্তনকারী উদাহরণ-স্বরূপ হও
তবেই সম্পূর্ণ বিশ্ব পরিবর্তন হবে। এখন এমন পরিবর্তন করো যাতে কেউ এমন বর্ণনা না করে
যে এর এই সংস্কার তো শুরু থেকেই রয়েছে। যখন শতকরায় পুরানো সংস্কারের সামান্যতম অংশও
দেখা যায় না, তার বর্ণনা হয় না তখন বলা হবে যে, সে সম্পূর্ণ পরিবর্তনের উদাহরণ
স্বরূপ।
স্লোগান:-
এখন
প্রচেষ্টার সময় হয়ে অতিবাহিত হয়ে গেছে, তাই মনের(হৃদয়ের) প্রতিজ্ঞার দ্বারা জীবনকে
পরিবর্তন করো।