01.04.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
সুখ আর দুঃখের খেলাকে তোমরাই জানো, অর্ধেক কল্প হলো সুখী আর অর্ধেক কল্প হলো দুঃখের,
বাবা দুঃখ হরণ করতে আর সুখ দান করতে আসেন"
প্রশ্নঃ -
কোনো কোনো
বাচ্চা কোন্ একটি বিষয়ে নিজের মনকে খুশী করে অতি চালাক হয়ে যায় ?
উত্তরঃ -
কেউ কেউ মনে করে, আমরা সম্পূর্ণ হয়ে গেছি, আমরা সম্পূর্ণ তৈরী হয়ে গেছি । এমন মনে
করে নিজের মনে খুশী হয়ে যায় । এও এক অতি চালাক হওয়া । বাবা বলেন - মিষ্টি বাচ্চারা,
এখন অনেক পুরুষার্থ করতে হবে । তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে, তাই সেই দুনিয়াও তো পবিত্র
চাই । এখন রাজধানী স্থাপন হচ্ছে, একজন তো আর যেতে পারবে না ।
গীতঃ-
তুমিই মাতা,
তুমিই পিতা ......
ওম্ শান্তি ।
এ হলো
বাচ্চাদের পরিচিতি । বাবাও এমন বলেন, আমরা সকলেই আত্মা এবং সকলেই মানুষও । বড় হোক
বা ছোটো, প্রেসিডেন্ট, রাজা, রানী সকলেই মানুষ । বাবা এখন বলছেন, সকলেই আত্মা, আমি
হলাম সকল আত্মার পিতা, তাই আমাকে বলা হয় পরম পিতা পরম আত্মা অর্থাৎ সুপ্রীম ।
বাচ্চারা জানে যে, তিনি হলেন আমাদের মতো আত্মাদের পিতা, আমরা সকলেই ভাই - ভাই ।
এরপর ব্রহ্মার দ্বারা ভাই - বোনেদের উঁচু বা নিচু কুল হয়ে যায় । আত্মারা তো সকলেই
আত্মা । এও তোমরা বুঝতে পারো । মানুষ তো কিছুই বুঝতে পারে না । বাবা বসে তোমাদের
বোঝান - বাবাকে তো কেউই জানে না । মানুষ গেয়ে থাকে - হে ভগবান, হে মাতা - পিতা,
কেননা উঁচুর থেকে উঁচু তো একজনই হওয়া উচিত, তাই না । তিনি হলেন সকলের বাবা, সকলের
সুখ প্রদানকারী । এই সুখ - দুঃখের খেলাকেও তোমরাই জানো । মানুষ তো বুঝতে পারে, এখনই
সুখ আবার এখনই দুঃখ । তারা একথা মনে করে না যে, অর্ধেক কল্প সুখ আর অর্ধেক কল্প
দুঃখ । সতোপ্রধান, সতো, রজঃ আর তমঃ, এই আছে, তাই না । শান্তিধামে আমরা সব আত্মারা
থাকি, তো ওখানে সবাই সত্যিকারের সোনা । ওখানে কেউই পৃথক হতে পারে না । যদিও নিজের
নিজের আলাদা পার্ট ভরা থাকে কিন্তু আত্মারা সকলেই পবিত্র থাকে । অপবিত্র আত্মা
সেখানে থাকতে পারে না । এই সময় এখানে কোনো পবিত্র আত্মা থাকতে পারবে না । তোমরা
ব্রাহ্মণ কুলভূষণরা এখন পবিত্র হচ্ছো । তোমরা এখন নিজেদের দেবতা বলতে পারবে না ।
তাঁরা হলেন সম্পূর্ণ নির্বিকারী । তোমাদের সম্পূর্ণ নির্বিকারী বলাই হবে না ।
শঙ্করাচার্যই হোক বা অন্য যে কেউই হোক, দেবতারা ছাড়া অন্য কাউকেই নির্বিকারী বলা
যাবে না । এই কথা তোমরাই জ্ঞান সাগরের মুখ থেকে শোনো । তোমরা এও জানো যে, জ্ঞান
সাগর এই একবারই আসেন । মানুষ তো পুনর্জন্ম নিয়ে আবার আসে । কেউ কেউ এই জ্ঞান শুনে
চলে গেছে, সংস্কার নিয়ে গেছে, তো তারা যখন আবার পুনর্জন্মে আসে, তারা এসে আবার শোনে
। তোমরা তো বুঝতে পারো, কেউ কেউ ৬ বা ৮ বছরের হয়, তাও তাদের মধ্যে খুব ভালোভাবে
বোঝার ক্ষমতা এসে যায় । আত্মা তো ওই একই । এই জ্ঞান শুনে তাদের ভালো লাগে । আত্মা
মনে করে আমি আবারও বাবার ওই জ্ঞান পাচ্ছি । তাদের ভিতরে খুশী থাকে, তারা অন্যদেরও
শেখাতে লেগে যায় । ফুর্তি এসে যায় । যেমন লড়াই যারা করে, তারা সেই সংস্কার নিয়ে
যায়, তো ছোটবেলাই সেই কাজে খুশীর সঙ্গে লেগে যায় । তোমাদের তো এখন পুরুষার্থ করে
নতুন দুনিয়ার মালিক হতে হবে । তোমরা তো সকলকে একথা বোঝাতে পারো, তোমরা নতুন দুনিয়ার
মালিক হতে পারো, না হলে শান্তিধামের মালিক হতে পারো । শান্তিধাম হলো তোমাদের ঘর,
যেখান থেকে তোমরা এখানে অভিনয় করতে এসেছো । একথাও কেউ জানে না কারণ আত্মার কথাই তারা
জানে না । তোমরাও তো প্রথমে জানতেই না যে, আমরা নিরাকারী দুনিয়া থেকে এসেছি । আমরা
হলাম বিন্দু । যদিও সন্ন্যাসীরা বলে, ভ্রুকুটির মধ্যে আত্মা তারা রূপে থাকে, তবুও
বুদ্ধিতে বড় রূপ এসে যায় । শালিগ্রাম বললে বড় রূপ মনে করে । আত্মা হলো শালিগ্রাম ।
যজ্ঞ যখন করে, সেখানেও বড় বড় শালিগ্রাম বানানো হয় । পূজার সময়ও শালিগ্রামের বড়
রূপই বুদ্ধিতে থাকে । বাবা বলেন, এ সম্পূর্ণ অজ্ঞানতা । জ্ঞান তো আমিই শোনাই,
দুনিয়াতে আর কেউই তা শোনাতে পারে না । এ কেউই বোঝায় না যে, আত্মাও বিন্দু আর
পরমাত্মাও বিন্দু । ওরা তো অখণ্ড জ্যোতি স্বরূপ ব্রহ্ম বলে দেয় । ব্রহ্মকে ভগবান মনে
করে আবার নিজেকেও ভগবান বলে দেয় । ওরা বলে, আমরা অভিনয় করার জন্য ছোটো আত্মার রূপ
ধারণ করি । তারপর বড় জ্যোতিতে লীন হয়ে যাই । লীন হয়ে যাবো, আবার কি ! এই অভিনয়ও
লীন হয়ে যাবে । এ কতো ভুল হয়ে যায় ।
বাবা এখন এসে সেকেণ্ডেই জীবনমুক্তি দান করেন তারপর অর্ধেক কল্প পরে সিঁড়ি নামতে
নামতে জীবন বন্ধতে এসে যায় । তারপর বাবা এসে আবার জীবনমুক্ত করেন, তাই তাঁকে সকলের
সদগতিদাতা বলা হয় । তাই যিনি পতিত পাবন বাবা, তাঁকেই স্মরণ করতে হবে, তাঁর স্মরনেই
তোমরা পবিত্র হবে । না হলে তোমরা পবিত্র হতে পারবে না । উঁচুর থেকে উঁচু হলেন
একমাত্র বাবাই । কোনো কোনো বাচ্চা মনে করে, আমরা সম্পূর্ণ হয়ে গেছি । আমরা
সম্পূর্ণ তৈরী হয়ে গেছি । এই মনে করে নিজের মনকে খুশী করেও নেয় । এও হলো অতি চালাক
হওয়া । বাবা বলেন, মিষ্টি বাচ্চারা, এখন অনেক পুরুষার্থ করতে হবে । তোমরা পবিত্র হলে
তোমাদের জন্য পবিত্র দুনিয়াও চাই । একজন তো আর যেতে পারবে না । কেউ যতই চেষ্টা করুক
না কেন, আমরা শীঘ্রই কর্মাতীত হয়ে যাবো, কিন্তু তা হবে না । রাজধানী স্থাপন হতে হবে
। যদিও কোনো ছাত্র পড়াতে খুবই হুঁশিয়ার বা ওস্তাদ হয়ে যায়, কিন্তু পরীক্ষা তো সময়
মতোই হবে, তাই না । পরীক্ষা তো আর তাড়াতাড়ি হতে পারবে না । এও তেমনই । সময় যখন হবে
তখন তোমাদের পড়ার ফল বের হবে । যতই ভালো পুরুষার্থ করো না কেন, এখন বলতেই পারবে না
যে, আমরা সম্পূর্ণ তৈরী । তা নয়, ১৬ কলা সম্পূর্ণ কোনো আত্মা এখন হতে পারবে না ।
তোমাদের অনেক পুরুষার্থ করতে হবে । নিজের মনকে কেবল খুশী করলেই হবে না যে, আমরা
সম্পূর্ণ হয়ে গেছি । তা নয়, সম্পূর্ণ অন্তিম সময়েই হতে হবে । তোমরা অতি চালাক হয়ো
না । এখন তো সম্পূর্ণ রাজধানী স্থাপন হবে । হ্যাঁ, তোমরা এটা বুঝতে পারো যে, সময়
খুবই অল্প আছে । মুষলও আবিস্কৃত হয়েছে । এত বানাতেও প্রথমে সময় লাগে, তারপর যখন
অভ্যাস হয়ে যায়, তখন চট করে বানিয়ে ফেলে । এই সব এই নাটকেই লিপিবদ্ধ আছে । মানুষ
বিনাশের জন্য বোম্বস বানাতে থাকে ।গীতাতেও এই মুষল অক্ষর আছে । শাস্ত্রতে আবার লিখে
দিয়েছে, পেট থেকে লোহা বের হয়েছে, আরো কতো কি হয়েছে । এসব তো মিথ্যা কথা, তাই না
। বাবা এসে বোঝান, তাঁকেই মিসাইল বলা হয় । এখন এই বিনাশের পূর্বে আমাদের তমোপ্রধান
থেকে সতোপ্রধান হতে হবে । বাচ্চারা জানে যে, আমরা আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্মের
ছিলাম । আমরা প্রকৃত সোনা ছিলাম । ভারতকে সত্য খণ্ড বলা হয় । এখন তা মিথ্যা খণ্ড
হয়ে গেছে । সোনাও তো আসল আর নকল হয়, তাই না । বাচ্চারা, এখন তোমরা জেনে গেছো যে,
বাবার মহিমা কি ! তিনি হলেন মনুষ্য সৃষ্টির বীজ রূপ, সত্য এবং চৈতন্য । আগে তো তোমরা
তো কেবল মহিমা করতে । এখন তোমরা বুঝতে পারছো যে, আমাদের মধ্যে সম্পূর্ণ গুণ ভরে
দিচ্ছেন । বাবা বলেন, সবার প্রথমে তোমরা স্মরণের যাত্রা করো, তোমরা আমাকে স্মরণ করলে
তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে । আমার নামই হলো পতিত পাবন । এমন গেয়েও থাকে যে, হে
পতিত পাবন এসো, কিন্তু তিনি এসে কি বলবেন, তা জানে না । এক সীতা তো হবে না । তোমরা
সকলেই তো সীতা ।
বাচ্চারা, বাবা তোমাদের অসীম জগতে নিয়ে যাওয়ার জন্য অসীম জগতের কথা শোনান । তোমরা
অসীম বুদ্ধির দ্বারা জানো যে, পুরুষ আর মহিলা সকলেই সীতা । সকলেই রাবণের জেলে বন্দী
। বাবা (রাম ) এসেই সকলকে রাবণের জেল থেকে মুক্ত করেন । রাবণ কোনো মানুষ নয় ।
তোমাদের এ কথা বোঝানো হয় যে, প্রত্যেকের মধ্যেই পাঁচ বিকার আছে, তাই একে রাবণ
রাজ্য বলা হয় । এর নামই হলো বিকারী দুনিয়া, সে হলো নির্বিকারী দুনিয়া, দুই নাম
পৃথক । এ হলো বেশ্যালয় আর ও হলো শিবালয় । এই লক্ষ্মী - নারায়ণ নির্বিকারী দুনিয়ার
মালিক ছিলেন । এঁদের সামনে গিয়ে বিকারী মানুষ মাথা নত করতেন । বিকারী রাজা ওই
নির্বিকারী রাজাদের সামনে মাথা নত করতেন । এও তোমরাই জানো । মানুষ তো কল্পের আয়ুই
জানে না, কিভাবে বুঝবে যে, রাবণ রাজ্য কবে শুরু হয় । অর্ধেক - অর্ধেক হওয়া উচিত,
তাই না । রামরাজ্য, রাবণ রাজ্য কখন শুরু করবে, সম্পূর্ণ দ্বিধায় ফেলে দিয়েছে ।
বাবা এখন বোঝাচ্ছেন, এই পাঁচ হাজার বছরের চক্র ঘুরতে থাকে । তোমরা এখন জানতে পেরেছো
যে, আমরা ৮৪ জন্মের অভিনয় করি । তারপর আমরা ঘরে ফিরে যাই । সত্যযুগ এবং ত্রেতাতেও
আমরা পুনর্জন্ম গ্রহণ করি । সে হলো রামরাজ্য, তারপর রাবণ রাজ্যে আসতে হবে । এ হলো
হার জিতের খেলা । তোমরা জয় পাও তাই স্বর্গের মালিক হও । আর হেরে গেলে নরকের মালিক
হও । স্বর্গ পৃথক, কেউ মারা গেলে বলে, স্বর্গে গেছেন । তোমরা এখন বলবেই না কারণ
তোমরা জানো, স্বর্গ কবে হবে । ওরা তো বলে দেয় জ্যোতি জ্যোতিতে মিলিয়ে গেলো অথবা
নির্বাণ হয়ে গেলো । তোমরা তো বলবে, জ্যোতি কখনোই জ্যোতিতে মেলাতে পারে না । সর্বের
সদগতিদাতা একজনই, এমন গাওয়া হয় । সত্যযুগকে স্বর্গ বলা হয় । এখন তো হলো নরক । এ
ভারতেরই কথা । বাকি উপরে কিছুই নেই । দিলওয়ারা মন্দিরে উপরে স্বর্গ দেখানো হয়েছে,
তাই মানুষ মনে করে বরাবর উপরেই স্বর্গ । আরে উপরে আকাশের ছাদে মানুষ কিভাবে থাকবে,
বুদ্ধু হলো, তাই না । তোমরা এখন পরিষ্কার করে বোঝাতে পারো । তোমরা জানো যে, এখানেই
আমরা স্বর্গবাসী ছিলাম আবার এখানেই আমরা নরকবাসী হই । এখন আবার আমাদের স্বর্গবাসী
হতে হবে । এই জ্ঞান হলো নর থেকে নারায়ণ হওয়ার । কথাও সত্যনারায়ণ হওয়ারই শোনানো হয়
। রাম - সীতার কথা বলা হয় না, এ হলো নর থেকে নারায়ণ হওয়ার কথা । উঁচুর থেকে উঁচু
পদ হলো লক্ষ্মী - নারায়ণের । রাম - সীতা দুই কলা কম হয়ে যায় । উঁচু পদ পাওয়ার
জন্য পুরুষার্থ করা হয়, এরপর যদি না করে তখন চন্দ্রবংশীতে যায় । ভারতবাসী যখন
পতিত হয়ে যায় তখন নিজের ধর্মকে ভুলে যায় । খৃস্টানরা যদিও সতো থেকে তমোপ্রধান
হয়েছে তবুও তো তারা খৃস্টান সম্প্রদায়ের, তাই না । আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্মেররা
তো নিজেদের হিন্দু বলে দেয় । তারা এও বুঝতে পারে না যে, আমরা প্রকৃতপক্ষে দেবী দেবতা
ধর্মের । এ তো আশ্চর্য, তাই না । তোমরা জিজ্ঞেস করো, হিন্দু ধর্ম কে স্থাপন করেছিলো
? তখনই মানুষ দ্বিধায় পড়ে যায় । দেবতাদের পূজা করে, তাহলে দেবতা ধর্ম তো আছে, তাই
না, কিন্তু বুঝতেই পারে না । এও এই নাটকেই লিপিবদ্ধ আছে । তোমাদের বুদ্ধিতে
সম্পূর্ণ জ্ঞান আছে । তোমরা জানো যে, আমরা প্রথমে সুর্যবংশী ছিলাম, তারপর আমরা অন্য
ধর্মে আসি । আমরা পুনর্জন্মে আসি । তোমাদের মধ্যেও কেউ কেউ যথার্থ রীতিতে এই কথা
জানতে পারে । স্কুলেও কোনো কোনো ছাত্রের বুদ্ধিতে খুব ভালোভাবে বসে যায়, কারোর
কারোর বুদ্ধিতে কম বসে । এখানেও যারা পাস করতে পারে না তাদের ক্ষত্রিয় বলা হয় ।
তারা চন্দ্রবংশীতে চলে যায় । তাদের দুই কলা তো কম হয়ে গেলো, তাই না । তারা
সম্পূর্ণ হতে পারলো না । তোমাদের বুদ্ধিতে এখন অসীম জগতের হিস্ট্রি - জিওগ্রাফি আছে
। ওরা তো স্কুলে জাগতিক হিস্ট্রি - জিওগ্রাফি পড়ায় । ওরা তো মূল বতন, সূক্ষ্ম বতনকে
জানেই না । সাধু - সন্ত ইত্যাদি কারোর বুদ্ধিতেই নেই । তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে,
আত্মারা মূল বতনে থাকে । এ হলো স্থূল বতন । তোমাদের বুদ্ধিতে এই সম্পূর্ণ জ্ঞান আছে
। এখানে স্বদর্শন চক্রধারী সেনা বসে আছে । এই সেনারা বাবাকে আর চক্রকে স্মরণ করে ।
তোমাদের বুদ্ধিতে জ্ঞান আছে । বাকি তোমাদের কোনো হাতিয়ার ইত্যাদি নেই । জ্ঞানের
দ্বারা তোমাদের স্ব দর্শন হয়েছে । বাবা তোমাদের রচয়িতা এবং রচনার আদি -মধ্য এবং
অন্তের জ্ঞান দেন । বাবার এখন নির্দেশ হচ্ছে, তোমরা রচয়িতাকে স্মরণ করো, তাহলে
তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে । যে যতটা স্বদর্শন চক্রধারী হতে পারে, অন্যদেরও বানাতে
পারে, যারা বেশী সেবা করে, তারা উঁচু পদ পাবে । এ তো সাধারণ কথা ।গীতায় কৃষ্ণের নাম
দেওয়াতে বাবাকে সবাই ভুলে গেছে । কৃষ্ণকে ভগবান বলা যাবে না । তাঁকে বাবাও বলা যাবে
না । অবিনাশী উত্তরাধিকারের আশীর্বাদ একমাত্র বাবার থেকেই পাওয়া যায় । বাবাকেই
পতিত পাবন বলা হয়, তিনি যখন আসেন, তখনই আমরা শান্তিধামে যাই । মানুষ তো মুক্তির
জন্য কতো মাথা ঠুকতে থাকে । তোমরা কতো সহজ করে বুঝিয়ে বলো । তোমরা বলো - পবিত্র বা
পাবন তো পরমাত্মা, তাহলে তোমরা গঙ্গা স্নান করতে কেন যাও । মানুষ গঙ্গার তীরে গিয়ে
বসে, যেন আমরা এখানে মারা যেতে পারি । প্রথমে বাংলায় যখন কেউ মারা যেতো, তখন তাকে
গঙ্গার তীরে নিয়ে গিয়ে হরিবোল ধ্বনি দিতো । তারা মনে করতো, এতে উনি মুক্ত হয়ে
যাবেন । এখন আত্মা তো বেরিয়ে গেছে । সে তো আর পবিত্র হয় নি । বাবা এসেই পুরানো
দুনিয়াকে নতুন করেন । বাকি নতুন কিছু রচনা করেন না । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি হারনিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন
আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
বাবার মধ্যে যে গুণ আছে, তা নিজের মধ্যে ভরতে হবে । পরীক্ষার পূর্বে পুরুষার্থ করে
নিজেকে সম্পূর্ণ পবিত্র বানাতে হবে, এতে অতি চালাক হবে না ।
২) স্বদর্শন চক্রধারী
হতে হবে আর অন্যদেরও করতে হবে । বাবা এবং চক্রকে স্মরণ করতে হবে । অসীম জগতের বাবার
কাছে অসীম জগতের কথা শুনে
নিজের বুদ্ধিকেও
অনন্ত করতে হবে । জাগতিক বুদ্ধিতে এসো না ।
বরদান:-
সুইট
সাইলেন্সে মগ্ন স্থিতির দ্বারা নষ্টমোহ সমর্থ স্বরূপ ভব
দেহ, দেহের সম্বন্ধ,
দেহের সংস্কার, ব্যক্তি অথবা বৈভব, বায়ুমণ্ডল, ভাইব্রেশন, সব থাকা সত্বেও নিজের
প্রতি আকর্ষণ করো না । মানুষ চিৎকার করলেও তোমরা অচল থাকো । প্রকৃতি, মায়া সবই শেষ
সুযোগ নেওয়ার জন্য যতই নিজের দিকে আকর্ষণ করুক, তোমরা কিন্তু পৃথক এবং বাবার প্রিয়
হওয়ার স্থিতিতে মগ্ন থাকো -- একেই বলা হয় দেখেও দেখো না, শুনেও শুনো না । এই হলো
সুইট সাইলেন্স স্থিতিতে মগ্ন স্থিতি, এমন স্থিতি যখন হবে তখন বলা হবে নষ্টমোহ সমর্থ
স্বরূপের বরদানী আত্মা ।
স্লোগান:-
হোলিহংস হয়ে অপগুণ রূপী কাঁকর ত্যাগ করে গুণ রূপী মুক্তো চয়ন করতে থাকো ।