12-04-2020 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 23-12-85 মধুবন


কামজিত - সীমিত পরিসরের সর্ব কামনার ঊর্ধ্বে


বাপদাদা নিজের ছোট শ্রেষ্ঠ সুখী সংসার দেখছেন l একদিকে অনেক বড় অসার সংসার l অন্যদিকে ছোট সুখী সংসার l এই সুখী সংসারে সদা সুখ-শান্তি সম্পন্ন ব্রাহ্মণ আত্মারা আছে, কারণ পবিত্রতা, স্বচ্ছতার আধারে এই সুখ-শান্তিময় জীবন l যেখানে পবিত্রতা বা স্বচ্ছতা আছে, সেখানে কোনও দুঃখ অশান্তির লেশমাত্র নেই l পবিত্রতার দুর্গের মধ্যে এই ছোট সুখী সংসার l তোমার সঙ্কল্পেও যদি পবিত্রতার দুর্গের বাইরে পা রাখ, তবে দুঃখ আর অশান্তির প্রভাব অনুভব কর l তোমাদের এই বুদ্ধিরূপী পা দুর্গের মধ্যে থাকলে তবে শুধু সঙ্কল্পেই নয়, স্বপ্নেও দুঃখ-অশান্তির তরঙ্গ আসতে পারে না l দুঃখ-অশান্তির সামান্যতম যদি অনুভব হয়, তাহলে অবশ্যই কোন না কোন অবিত্রতার প্রভাব পড়েছে l পবিত্রতা শুধুমাত্র কামজিত জগৎজিত হওয়াই নয়, বরং সীমিত পরিসরের সমুদয় আকাঙ্ক্ষায় রচিত কাম বিকারের বংশ l কামজিত অর্থাৎ সর্ব কামনাজিত, কারণ প্রতিটা কামনার অনেক সন্তান অর্থাৎ অনেক দূর বিস্তৃত l এক - বস্তুর জন্য আকাঙ্ক্ষা, দুই - ব্যক্তির থেকে সীমিত পরিসরের প্রাপ্তির কামনা, তিন - সম্বন্ধের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রেও সীমিত পরিসরের অনেক প্রকার কামনা উৎপন্ন হয় l চতুর্থ - সেবা ভাবনাতেও সীমিত পরিসরের কামনার ভাব উত্পন্ন হয়ে যায় l এই চার রকমের কামনা সমাপ্ত করা অর্থাৎ সদাসর্বদার জন্য দুঃখ-অশান্তিকে জয় করা l এখন নিজেই নিজেকে জিজ্ঞাসা কর, এই চার রকম কামনা কি আমি সমাপ্ত করেছি ? যে কোনও বিনাশী বস্তু যদি বুদ্ধিকে আকৃষ্ট করে তবে অবশ্যই সেটা কামনার রূপে আকর্ষণ বোধ l রয়্যাল রূপে শব্দকে পরিবর্তন করে তোমরা বলো - 'ইচ্ছা নেই কিন্তু ভালো লাগে l' বস্তুই হোক বা ব্যাক্তি যখন বিশেষভাবে তোমাকে আকর্ষণ করে, যখন সেই বিশেষ বস্তু বা ব্যক্তিকে তোমার ভালো লাগে তাহলে তার অর্থই হলো কামনা l ইচ্ছা l যখন বলো সবকিছু এবং সবাইকে ভালো লাগে, সেটাই যথার্থ, কিন্তু যখন বলো, বিশেষ বস্তু বা ব্যক্তি তোমার পছন্দ, সেটা অযথার্থ l এটা ইচ্ছার রয়্যাল রূপ l

হয় কারও সেবা ভালো লাগে, কারও পালনা, কারও গুণ, কারও শ্রম, কারও ত্যাগ বা কারও স্বভাব ভালো লাগে, কিন্তু সেই ভালত্বের সুবাস নেওয়াটা এক জিনিস আর সেই ভালত্বকে নিজেও ধারণ করাটা হল আলাদা বিষয়। তার এই জিনিসটা ভালো বলে তিনি ভালো - এই ভালো (হিন্দি অচ্ছা) বলাটাই এক ইচ্ছায় বদল হয়ে যায় l এটা হল কামনা l তোমরা তখন দুঃখ আর অশান্তি অন্তর্লীন করতে পার না l এক, সেই ব্যক্তি বিশেষের ভালত্বের সামনে নিজের ভালো হওয়া থেকে নিজেকে বঞ্চিত করা l দুই, শত্রুতার কামনাও নিচে নামিয়ে আনে l এক হলো প্রভাবিত হওয়ার কামনা, আরেকটা হলো কারও প্রতি দ্বেষ বা ঈর্ষা বোধের কামনা l সেটাও সুখ আর শান্তিকে সমাপ্ত করে দেয় l তোমাদের মন তখন সদাসর্বদা চঞ্চল হয় l প্রভাবিত হওয়ার লক্ষণ আসক্তি এবং বশ্যতা l সেইরকমই, ঈর্ষা এবং শত্রুতার ভাব থাকার লক্ষণ - জিদ করা এবং নিজেকে ন্যায়সঙ্গত প্রমাণ করা l এইরকম বোধ থাকায় তখন কতো এনার্জি আর সময় তোমরা নষ্ট করে দাও জানতেও পার না l দু'টোই প্রভূত লোকসানের কারণ হয় l তোমাদেরও হয়রান হয় আর অন্যদেরও হয়রান করে l এইরকম স্থিতির সময়ে এমন আত্মারা তর্জন-গর্জন করে - দুঃখ নিতে হবে এবং দুঃখ দিতেই হবে l যাই হয়ে যাক, আমাকে এটা করতেই হবে l এটা তাদের কামনা যা তারা সেই সময় বলে l ব্রাহ্মণ আত্মা বলে না, সেইজন্য কি হয় সুখ আর শান্তির সংসার থেকে বুদ্ধিরূপী পা বাইরে বেরিয়ে যায়, এইজন্য এই রয়্যাল কামনার উপরেও বিজয়ী হও l এই ইচ্ছাগুলো থেকেও ''ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যা" স্থিতিতে এসো l

এই যে দুই ভাবে (মানসিক অবস্থা ) সঙ্কল্প কর যে আমি এটা করেই দেখাব, কাকে দেখাবে ? বাবাকে নাকি ব্রাহ্মণ পরিবারকে ? কাকে দেখাবে ? এইরকম ভাবো - এটা করে দেখাব নয়, কিন্তু অধঃপতন হয়ে দেখাব ! সেটা চমৎকার কি যে তুমি করে দেখাবে ! অধঃপতিত হওয়া কি দেখানোর বিষয় ! এটা সীমিত পরিসরের প্রাপ্তির নেশা - আমি সেবা করে দেখাব l আমি খ্যাতনামা হয়ে দেখাব, এই শব্দ চেক কর রয়্যাল কিনা ! বলো তো সিংহের ভাষা আর হয়ে যাও ভেড়ার মতো l আজকাল যেমন কেউ বাঘের, কেউ হাতীর, কেউ বা রাবণের আবার কেউ রামের মুখোশ (ফেস) লাগায়, তাই না ! এটাও মায়া, বাঘের মুখোশ পরিয়ে দিচ্ছে l 'আমি এটা করে দেখাব, এই করব', যাই হোক, মায়া নিজের বশে ক'রে তোমাদের ভেড়া বানিয়ে দেয় l আমিত্ব বোধ থাকা অর্থাৎ সীমিত পরিসরের কোনও না কোন কামনার বশীভূত হওয়া l ভাষা যুক্তিযুক্ত ভাবে বলো আর যুক্তিযুক্ত ভাবনায় থাক l এটা বুদ্ধিমত্তা নয়, বরং প্রতি কল্পে সূর্যবংশী থেকে চন্দ্রবংশী হওয়ার পরাজয় স্বীকার ! কল্প কল্প চন্দ্রবংশী হতেই হবে l তাহলে হার হলো নাকি সাবধান হওয়া ? সুতরাং এইরকম সাবধানি হয়োনা l না অভিমানী হও, না কাউকে অপমান কর l এই উভয় ভাবনাই শুভ ভাবনা শুভ কামনা থেকে তোমাকে দূরে করে দেয় l সুতরাং চেক কর, সঙ্কল্প মাত্রেও সামান্যতম অভিমান বা অপমানের ভাবনা থেকে যায়নি তো ! যেখানে অভিমান এবং অপমানের ভাবনা আছে সেখানে কখনো কেউই স্বমানের স্থিতিতে স্থিত হতে পারে না l স্বমান সব আকাঙ্ক্ষা থেকে সরিয়ে দেবে, আর তখন সদা সুখের সংসারে সুখ-শান্তির দোলায় দুলতে থাকবে l একেই বলে, সর্ব কামনাজিত, জগতজিত l তাইতো বাপদাদা ছোট সুখী সংসার দেখছিলেন l তোমাদের সুখের সংসার থেকে, স্বদেশ থেকে বুদ্ধিরূপী পা দ্বারা পরদেশে কেন চলে যাও ? যে ধর্ম, যে দেশ তোমাদের নয়, তা' সদাসর্বদা তোমাদের দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায় l স্বদেশ, স্বধর্ম সুখ দেয় l সুতরাং সুখের সাগর বাবার বাচ্চা তোমরা, সুখের সংসারের অনুভাবী আত্মা তোমরা l তোমরা সব অধিকারী আত্মা সদা সুখী থাক, শান্ত থাক l বুঝেছ !

দেশ-বিদেশের তোমরা সব স্নেহী বাচ্চা নিজের ঘরে, তোমাদের বাবার ঘরে পৌঁছে গেছ l তাইতো অধিকারী বাচ্চাদের দেখে বাবা উৎফুল্ল হন l যেরকম খুশিতে তোমরা এসেছ, সেইরকমই সদা খুশি থাকার বিধি, এই দুই বিষয় ত্যাগ করে, এমনকি তোমাদের সঙ্কল্পেও এই দুই বিষয় ত্যাগ করে সদাসর্বদার জন্য ভাগ্যবান হয়ে যেও l ভাগ্য নিতে এসেছ, কিন্তু ভাগ্য নেওয়ার সাথে মন থেকে যে কোনও দুর্বলতা যা উড়তি কলায় বিঘ্নরূপ হয়, তা' ছেড়ে যেও l এই ছেড়ে দেওয়াই নেওয়া l আচ্ছা !

যারা সদা সুখের সংসারে থাকে, সর্ব কামনাজিত, যারা সদা সর্ব আত্মাদের প্রতি শুভ ভাবনা আর শুভ কামনা রাখে সেই শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, যারা সদা স্বমানের সীটে স্থিত থাকে, সেই বিশেষ আত্মাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l

*"মধুরতা দ্বারা তিক্ত ভূমিকে মধুর বানাও"*

আজ সবচেয়ে বড় বাবা, গ্র্যান্ড ফাদার তাঁর গ্র্যান্ড চিলড্রেন, লাভলি বাচ্চাদের সঙ্গে মিলিত হতে এসেছেন l গ্রেট গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদার রূপে ব্রহ্মার গায়ন হয়েছে l নিরাকার বাবা সাকার সৃষ্টির রচনার নিমিত্ত ব্রহ্মাকে বানিয়েছেন l মানব সৃষ্টির রচয়িতা হওয়ার কারণে, মানব সৃষ্টির স্মরণিক বৃক্ষরূপ দেখানো হয়েছে l বীজ গুপ্ত, প্রথমে দুই পাতা বিকশিত হয় যা থেকে কাণ্ড উদ্গম হয় l সেই বৃক্ষের আদি দেব - আদি দেবী মাতাপিতার স্বরূপে ব্রহ্মা বৃক্ষের ফাউন্ডেশনের জন্য নিমিত্ত হন l তা'থেকে ব্রাহ্মণ কাণ্ডের বিকাশ ঘটে আর পূর্ণ বিকশিত সেই কাণ্ড থেকে অনেক শাখা উৎপন্ন হয়, সেইজন্য গ্রেট গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদার ব্রহ্মা গাওয়া হয়েছে l ব্রহ্মার অবতরণ হওয়া অর্থাৎ খারাপ দিন শেষ হয়ে বড় দিনের শুরু হওয়া l রাত শেষ হয়ে ব্রহ্মা মুহূর্ত শুরু হয়ে যাওয়া, বাস্তবে, ব্রহ্মা মুহূর্ত, কিন্তু বলা হয়, 'ব্রহ্মমুহূর্ত', সেইজন্য তারা ব্রহ্মার বৃদ্ধরূপ দেখায় l গ্র্যান্ড ফাদার নিরাকার বাবা গ্র্যান্ড চাইল্ডদের এত উপহার দেন যা দিয়ে ২১ জন্ম তোমরা জীবন যাপন করতে পারবে l তিনি দাতা এবং তিনিই বিধাতা l জ্ঞান রত্নের থলি উপর্যুপরি ভরে তোমাদের দিয়ে দেন l অগণিত রূপে সমুদয় শক্তির গোল্ডেন গিফ্ট দেন l গুণের অলঙ্কারের বাক্স পরিপূর্ণ করে দেন l অলঙ্কারাদির কতো বাক্স তোমাদের কাছে আছে ! এমনকি, যদি তোমরা প্রতিদিন নতুন অলঙ্কারে অলঙ্কৃত হও, তবুও তা' অফুরন্তই থাকবে l এই গিফ্ট সদা সর্বদা তোমাদের সাথে চলবে l ওই স্থূল গিফ্ট তো এখানেই থাকবে, কিন্তু এই সবই তোমাদের সঙ্গে যাবে l গডলি গিফ্টে তোমরা এতই পরিপূর্ণ হও যে সেখানে তোমাদের রোজগার করার কোন প্রয়োজনই পড়বে না l গিফ্টের উপরই জীবন যাপন করবে l পরিশ্রম থেকে তোমরা নিস্তার পাবে l

সবাই বিশেষ ক্রিস্টমাস ডে উদযাপন করতে এসেছ, তাই না! বাপদাদা বলেন কিসমিস ডে l কিসমিস ডে অর্থাৎ মধুরতার দিন l সদা মিষ্টি হওয়ার দিন l তোমরা মিষ্টিই বেশি খাও আর খাওয়াও, তাই না ! মিষ্টিমুখ তো অল্প সময়ের জন্য হয়, কিন্তু নিজেই যদি মিষ্টি হয়ে যাও, তাহলে মুখে সদা মধুর বোল থাকবে l যেমন তোমরা মিষ্টি খেতে আর খাওয়াতে খুশি হও, সেইরকম মধুর বোল তোমাকেও খুশি বানায়, অন্যকেও খুশি দেয় l সুতরাং এই দিয়ে সকলের মিষ্টিমুখ করাতে থাক l সদা মিষ্টি দৃষ্টি, মিষ্টি বোল, মিষ্টি কর্ম হতে দাও l সেটাই কিসমিস ডে উদযাপন করা l উদযাপন করা অর্থাৎ অন্যকে মিষ্টি বানানো l কাউকে যদি কয়েক মুহূর্ত মিষ্টি দৃষ্টি দাও, একটুক্ষণ মিষ্টি বোল বলো, তাহলে সেই আত্মাকে তুমি সদাসর্বদার জন্য পরিপূর্ণ করে দেবে l কয়েক মুহূর্তের এই মধুর দৃষ্টি, বোল সেই আত্মার দুনিয়াই পরিবর্তন করে দেবে l এই একটু মধুর বোল সর্বদার জন্য তাদের পরিবর্তন করার নিমিত্ত হয়ে যাবে l *মাধুর্য এমনই বিশেষ ধারণা যা তিক্ত ভূমিকেও মধুর করে তোলে l তোমাদের সবার রূপান্তর ঘটার আধার বাবার মিষ্টি বোলই তো ছিল, না ! মিষ্টি বাচ্চা তোমরা, মিষ্টি শুদ্ধ আত্মা l* এই দু'টো মিষ্টি-মধুর বোল বদলে দিয়েছে, তাই না ! মিষ্টি দৃষ্টি বদলে দিয়েছে l এইরকমই মধুরতা দ্বারা অন্যকেও মধুর বানাও l এইভাবে তাদের মিষ্টি মুখ করাও l বুঝেছ - ক্রিসমাস ডে তোমরা পালন করেছ, তাই না ! এই সকল উপহারে নিজেদের ঝুলি পরিপূর্ণ করেছ তোমরা ? সদা মাধুর্যের উপহারকে সাথে রাখ l এর সাথেই সদা মিষ্টি থাক আর অন্যকেও মিষ্টি বানাও l আচ্ছা !

যারা সদা জ্ঞান রত্নে বুদ্ধিরূপী ঝুলি ভরে রাখে, সদা সর্বশক্তি দ্বারা শক্তিশালী আত্মা হয়ে সমুদয় শক্তিতে সদা সম্পন্ন হয়, সর্ব গুণের সর্বালঙ্কারে সদা ভূষিত শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, যারা সদা আপন মাধুর্যে মিষ্টিমুখ করায়, সেই মিষ্টি বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l

*অব্যক্ত বাপদাদার কুমারদের সাথে সাক্ষাৎকারঃ -*

কুমার অর্থাৎ যে তীব্রগতিতে অগ্রচালিত হয় l থেমে থেমে এগিয়ে যাওয়া নয় l যেমনই পরিস্থিতি হোক, নিজেকে সদা শক্তিশালী আত্মা মনে করে এগিয়ে চলো l পরিস্থিতি বা বায়ুমণ্ডলের প্রভাবে তোমরা প্রভাবিত হও না, বরং নিজেদের শ্রেষ্ঠ প্রভাবে অন্যদের প্রভাবিত কর l শ্রেষ্ঠ প্রভাব অর্থাৎ অধ্যাত্ম প্রভাব, অন্য কোনও প্রভাব নয় l এমন কুমার তোমরা ? পেপার এলে তোমরা নড়বড়ে হবে না তো ! পেপারে তোমরা পাস হয়ে যাবে, তাই না ? সদা সাহসী, নয় কি ? যেখানে মনোবল আছে, সেখানে বাবার সহায়তা আছে l *সাহসী বাচ্চা, বাবা সহায় l* সব কাজে নিজেকে সামনে রেখে অন্যদেরও নিরন্তর শক্তিশালী বানাও l

কুমাররা সদাই উড়তি কলায় l যারা সদা নির্বন্ধন, তারাই উড়তি কলায় l তাহলে, তোমরা নির্বন্ধন কুমার ! মনেরও বন্ধন নেই l সুতরাং সদা সমস্ত বন্ধনের অবসান ঘটিয়ে নির্বন্ধন হয়ে উড়তি কলায় থাকা কুমার তোমরা ? কুমার, নিজেদের শারীরিক শক্তি এবং বুদ্ধির শক্তি উভয়ই সময়ানুসার সফল করছ ? জাগতিক জীবনে নিজেদের শারীরিক শক্তি এবং বুদ্ধির শক্তি বিনাশকারী কার্যে নিরন্তর প্রয়োগ কর l আর এখন শ্রেষ্ঠ কার্যে প্রয়োগকারী হও l চঞ্চলতা উদ্রেককারী নয়, বরং শান্তি স্থাপনাকারী l এইরকম শ্রেষ্ঠ কুমার তোমরা ? কখনও লৌকিক জীবনের সংস্কার ইমার্জ হয় না তো ! অলৌকিক জীবন তোমাদের অর্থাৎ যারা নব জন্ম নেয় l সুতরাং নব জন্মে পুরানো কোনও বিষয় থাকে না l তোমরা সবাই নতুন জন্ম নেওয়া শ্রেষ্ঠ আত্মা l কখনও নিজেকে সাধারণ না মনে করে শক্তিশালী মনে কর l সঙ্কল্পেও কোনরকম চাঞ্চল্যে আসবে না l এমন প্রশ্ন কর না তো 'কি করব, এখনো আমার ব্যর্থ সঙ্কল্প থাকে !' ভাগ্যবান কুমার তোমরা, ২১ জন্ম ভাগ্য থেকেই খাবে l স্থূল এবং সূক্ষ্ম উভয়তঃ রোজগারের কঠিন পরিশ্রম থেকে নিস্তার পাবে l আচ্ছা l

*বিদায়কালে স্মরণ-স্নেহ :-* দেশ-বিদেশের দু'তরফের সব বাচ্চার থেকে এই বিশেষ দিনের জন্য বাপদাদা কার্ড, পত্র এবং স্মরণ স্বীকার করেছেন l বাপদাদা সবচাইতে মিষ্টি বাচ্চাদের এই বড় দিনে বরদান দিচ্ছেন, "সদা মধুরতার সাথে শ্রেষ্ঠ হও আর শ্রেষ্ঠ বানাও" - এই বরদানের সাথে নিরন্তর নিজে উন্নতি প্রাপ্ত হও আর সেবারও উন্নতি বিধান কর l মহোত্তম-সুমহান বাবার অতিমাত্রায় স্নেহময় স্মরণ আর সেইসঙ্গে সস্নেহ অভিনন্দন, গুড মর্নিং l সদা মনোহর হওয়ার অভিনন্দন l

বরদান:-
সহনশক্তি দ্বারা অবিনাশী আর মধুর ফল প্রাপ্ত করে সর্ব-স্নেহী ভব*

সহন করার অর্থ মরে যাওয়া নয়, বরং সবার হৃদয়ে স্নেহপূর্বক বেঁচে থাকা l যেমনই বিরুদ্ধাচারী হোক, রাবণের থেকেও তেজিয়ান হোক, একবার নয় দশ বার যদি সহন করতে হয়, তবুও সহনশক্তির ফল অবিনাশী আর মধুর হয় l কখনো এই ভাবনা রেখো না যে আমি এত সহন করেছি তাহলে অন্যেও তো কিছুটা করবে ! অল্পকালের ফলের ভাবনা রেখো না l দয়া ভাব রাখ, সেটাই সেবা ভাব l যারা সেবার মনোভাব পোষণ করে তারা সকলের দুর্বলতা অন্তর্লীন করে নেয় l তারা প্রতিরোধ করে না l

স্লোগান:-
যা অতীত হয়ে গেছে তাকে ভুলে যাও, বিগত বিষয় থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য সদা সাবধান থাকো l*