05-04-2020 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 19-12-85 মধুবন


*ফলো ফাদার*


আজ সর্ব স্নেহী বাচ্চাদেরকে তাদের স্নেহের রিগার্ড দিতে বাপদাদা মিলন উদযাপন করতে এসেছেন l বিদেহী বাপদাদাকে দেহের আধার নিতেই হয় l কিসের জন্য ? বাচ্চাদেরও বিদেহী বানানোর জন্য l যেমন বাবা বিদেহী, দেহে এসেও বিদেহী স্বরূপে, বিদেহী ভাবের অনুভব করান, সেইরকম তোমরা সবাই জীবনে থেকে, দেহে থেকে বিদেহী আত্মা-স্থিতিতে স্থিত হয়ে এই দেহ দ্বারা করানোর মালিক (করাবনহার) হয়ে কর্ম করাও l এই দেহ করনহার l আর তোমরা, দেহী, করাবনহার l এই স্থিতিকে 'বিদেহী স্থিতি' বলে l একেই ফলো ফাদার বলা হয় l সদা ফলো ফাদার করার জন্য নিজের বুদ্ধিকে দুই স্থিতিতে স্থিত হতে দাও l *বাবাকে ফলো করার স্থিতি হলো সদা অশরীরি হওয়া, বিদেহী স্থিতি, নিরাকার স্থিতি l দাদা অর্থাৎ ব্রহ্মাবাবাকে ফলো করার জন্য সদা অব্যক্ত স্থিতিতে স্থিত হও, ফরিস্তা স্বরূপ হও, আকারী স্থিতিতে হও l এই দুই স্থিতিতে স্থিত থাকা ফলো ফাদার করা l এর থেকে নিচে ব্যক্ত ভাব, দেহ বোধ, ব্যক্তি ভাব, এর নিচে এসো না l ব্যক্তি ভাব বা ব্যক্ত ভাব নিচে নামিয়ে আনার আধার, সেইজন্য সবকিছুর ঊর্ধ্বে এই দুই স্থিতিতে থাক l* তৃতীয় বিষয় এটাই যে, ব্রাহ্মণ জন্ম নেওয়ার সাথে সাথে তোমরা বাপদাদার এই শিক্ষা লাভ করো - সঙ্কল্পে বা স্বপ্নেও নিচে নামার স্থিতিতে যেও না, এই স্থিতি অন্যের, তোমাদের অধিকারভুক্ত নয় l যেমন, কেউ বিনা আজ্ঞায় পরদেশে যদি চলে যায়, তবে কি হবে ? বাপদাদাও আজ্ঞানুবর্তিতার এই রেখা টেনে দিয়েছেন - এর বাইরে যেও না l তোমাদের মধ্যে যদি কেউ অবজ্ঞা করে তবে সে সন্তপ্তও হয়, অনুতাপও করে, সেইজন্য সদা আপন মহিমায় থাকার, সদা প্রাপ্তিস্বরূপ স্থিতিতে স্থিত হওয়ার সহজ সাধন 'ফলো ফাদার l' ফলো করা তো সহজ, তাই না ! জীবনে শৈশব থেকে ফলো করার অনুভাবী তোমরা l শিশুকালেও বাচ্চাকে বাবার আঙুল ধরে চলতে, উঠতে-বসতে ফলো করায় l তারপরে যখন গৃহস্থ জীবনে প্রবেশ করে তখনও স্বামী-স্ত্রীকে পরস্পরকে ফলো করতে শেখানো হয় l তারপরে ক্রমপর্যায়ে গুরু করে, তখন গুরুর ফলোয়ার্স হয়ে যায় অর্থাৎ যারা ফলো করে l লৌকিক জীবনে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তোমাদের ফলো করতে হয় l অলৌকিক, পারলৌকিক বাবাও একই বিষয়ে সহজ সাধনের কথা বলেন - তাঁরা তোমাদের 'কি করব, কীভাবে করব, এইভাবে করব নাকি ওইভাবে করব' এই বিস্তার থেকে তোমাদের রেহাই দেন l *সব প্রশ্নের উত্তর একটাই - ফলো ফাদার l*

সাকার রূপে কীভাবে তোমাদের কর্ম করতে হবে তা' শেখানোর জন্য ৮৪ জন্ম সম্পূৰ্ণকারী ব্রহ্মা-আত্মা নিমিত্ত হয়েছেন l

● কর্ম সম্পাদন করায়,

● যে কোনও বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ায়,

● কর্মের দায়িত্ব পালন করায়,

● দেহে থেকে বিদেহী স্থিতিতে স্থিত হওয়ায়,

● দেহ বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ায়,

● মনোনিষ্ঠায় মগ্ন হওয়ার স্থিতি নিরন্তর বজায় রাখায়,

● ধনের প্রতিটা নতুন পয়সা সময়োপযোগী করায় - সাকার ব্রহ্মা সাকার জীবনে নিমিত্ত হয়েছেন l

কর্ম বন্ধনে আবদ্ধ আত্মা কর্মাতীত হওয়ার এক্সাম্পল হয়েছেন l তাহলে, সাকার জীবনকে ফলো করা সহজ, তাই না ! এটাই ফলো ফাদারের পাঠ l যে প্রশ্নই কর, দেহ সম্পর্কে বা দেহের সম্বন্ধের অথবা ধনের ব্যাপারে, সেই *সব প্রশ্নের উত্তর ব্রহ্মাবাবার জীবন l* যেমন, আজকালকার সায়েন্সের লোকে প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর কম্পিউটারে জিজ্ঞাসা করে, কারণ তারা মনে করে মানুষের বুদ্ধির থেকে এই কম্পিউটার অ্যাক্যুরেট, যারা এটা বানিয়েছে তাদের থেকে বানানো জিনিসকে অ্যাক্যুরেট মনে করছে l কিন্তু তোমরা যারা সাইলেন্সের তাদের সবার জন্য ব্রহ্মার জীবনই অ্যাক্যুরেট কম্পিউটার, সেইজন্য কেন, কীভাবে জিজ্ঞাসার পরিবর্তে *'জীবনের কম্পিউটার'* থেকে দেখ l 'কীভাবে আর কি'-এর কোশ্চেন এতেই বদলে যাবে l প্রশ্নচিত্ত-এর পরিবর্তে প্রসন্নচিত্ত হয়ে যাবে l প্রশ্নচিত্ত চঞ্চল বুদ্ধির, সেইজন্য প্রশ্নের চিহ্নও বাঁকা l যখন তোমরা কোশ্চেনের চিহ্ন লেখ, সেটা তো বাঁকাচোরাই হয়, নয় কি ? সেক্ষেত্রে প্রসন্নচিত্ত হওয়ার চিহ্ন বিন্দু l বিন্দুতে কোনরকম আঁকাবাঁকা আছে ? চারিদিক থেকে একইরকম l বিন্দুকে যে দিক থেকে দেখ এটা সোজাই হবে এবং একরকমই দেখাবে, তা' সোজা দিকেই দেখ বা উল্টো দিকে l প্রসন্নচিত্ত অর্থাৎ যারা একরস স্থিতিতে এক বাবাকে ফলো করে l তাহলে নিঃসৃত সার কি হলো ! ফলো ব্রহ্মা সাকার রূপ ফাদার অথবা ফলো আকার রূপ ব্রহ্মা ফাদার l হয় ব্রহ্মাবাবাকে ফলো করো, নয় শিববাবাকে ফলো কর l কিন্তু শব্দ সেটাই ফলো ফাদার, সেইজন্য ব্রহ্মার মহিমা 'ব্রহ্মা বন্দে জগতগুরু' বলা হয়, কারণ ফলো করার জন্য সাকার রূপে ব্রহ্মাই সাকার জগতের নিমিত্ত হন l তোমরা নিজেদেরও শিবকুমার বা শিবকুমারী বলো না ; ব্রহ্মাকুমার ব্রহ্মাকুমারী বলো l সাকার রচনার নিমিত্ত ব্রহ্মাই সাকার শ্রেষ্ঠ জীবনের স্যাম্পল হন, সেইজন্য শিববাবাকে সদগুরু বলা হয়, আর যিনি তোমাদের কিছু শেখান তাঁকে গুরু বলা হয় l জগতকে শেখানোর জন্য ব্রহ্মাই নিমিত্ত হন l সুতরাং প্রতি কর্মে ফলো করতে হবে l এই পরিপ্রেক্ষিতে ব্রহ্মাকে জগতগুরু বলা হয়, সেইজন্য জগত ব্রহ্মার বন্দনা করে l জগতপিতা টাইটেলও ব্রহ্মার l বিষ্ণু বা শঙ্করকে প্রজাপিতা বলা হয় না l মালিক হওয়ার সুবাদে তারা তাঁকে পতি বলে, কিন্তু বাস্তবে তিনি পিতা l তিনি যতটাই জগতের প্রিয় ততটাই জগত থেকে স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে এখন অব্যক্ত রূপে 'ফলো অব্যক্ত স্থিতির পাঠ' পড়াচ্ছেন l বুঝেছ ! কোনও আত্মার এইরকম এতটা স্বতন্ত্র বোধ হয় না l অন্য কোন সময়ে বাবা তোমাদের ব্রহ্মার স্বতন্ত্রতার কাহিনী শোনাবেন l

আজ তো বাবাকে শরীরেরও দেখভাল করতে হবে l যখন লোন দেওয়া হয়, তখন ভালো মালিক তিনিই হন, যিনি শরীর এবং স্থানকে এর শক্তি অনুযায়ী কার্যে প্রয়োগ করেন l তবুও, বাপদাদা তাঁদের শক্তিশালী পার্ট অর্থাৎ ভূমিকা পালন করতে উভয় রথ চালানোর নিমিত্ত হয়েছেন l এটাও ড্রামাতে বিশেষ বরদানের আধার l অনেক বাচ্চার এই কোশ্চেন থাকে, এই রথই কেন নিমিত্ত হয়েছেন ! অন্যদেরকে বিবেচনার বিষয়ীভূত মনে হওয়া তো দূর, এনার (গুলজার দাদী) জন্যও কোশ্চেন ওঠে l কিন্তু যেমন ব্রহ্মাও নিজের জন্ম জানতেন না, ইনিও তাঁর নিজের বরদান বিস্মৃত হয়েছেন l আদিতে সাক্ষাৎকারের বিশেষ পার্টের সময় সাকার ব্রহ্মার থেকে এই বচ্চি বরদান লাভ করেছিলেন l আদিতে ব্রহ্মাবাবার সাথে তপস্যার অনুকূল স্থানে এই আত্মার বিশেষ সাক্ষাৎকারের পার্টকে দেখে এবং বচ্চির সরল স্বভাব, ইনোসেন্ট জীবনের বিশেষত্ব দেখে ব্রহ্মাবাবা তাঁকে এই বরদান দিয়েছিলেন - যেভাবে আদি থেকে এখন পর্যন্ত এই পার্টে তুমি, ব্রহ্মাবাবার সাথীও হয়েছ এবং সাথেও থেকেছ, একইভাবে ভবিষ্যতে বাবার সাথী হওয়ার, সমান হওয়ার ডিউটিও সামলাবে l সেবাতে ব্রহ্মাবাবার সমান পার্ট প্লে করবে l সেইজন্য, সেই বরদান ভাগ্যরেখা হয়ে গেছে এবং ঠিক ব্রহ্মাবাবার সমান রথ হওয়ার পার্ট প্লে করা স্থিরীকৃত হয়ে গেছে l যাই হোক, এই পার্ট পালন করার জন্য বাপদাদা বচ্চিকে অভিনন্দিত করেন l এবং এত সময় যাবৎ এত শক্তি অ্যাডজাস্ট করতে সমর্থ হওয়ার জন্য, অ্যাডজাস্ট করার বিশেষত্বের এই লিফ্ট এক্সট্রা গিফ্ট হয়েছে l বাপদাদাকে শরীর সহ সবকিছুর খেয়াল রাখতে হয় l বাজনা ( নিমিত্ত শরীর ) পুরানো এবং যিনি ব্যবহার করছেন তিনি শক্তিশালী l যতই হোক, হাঁ জী, হাঁ জী'র পাঠের কারণে অর্থাৎ সদর্থকভাবে সবকিছুতে সম্মত হওয়ার কারণে ভালো কাজ করছে l কিন্তু বাপদাদাও বিধি এবং যুক্তিপূর্বক কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন l অবশ্যই তিনি তোমাদের সাথে মিলনের প্রতিজ্ঞা করেছেন, কিন্তু সময় অনুযায়ী এই বিধি পরিবর্তন হতে থাকবে l অষ্টাদশ বছরে বাবা তোমাদের সবকিছু শোনাবেন l আচ্ছা ! সতের তো সম্পূর্ণ করতেই হবে l আচ্ছা !

যারা ফলো ফাদার করে সেই সকল সহজ পুরুষার্থী বাচ্চাদের, সদা প্রসন্নচিত্ত আত্মাদের, সদা করানোর মালিক হয়ে দেহ দ্বারা কর্ম করানোর মাস্টার রচয়িতা বাচ্চাদের, বাপদাদার স্নেহের, যারা জীবন দ্বারা রেসপন্স দেয়, এইরকম বাচ্চাদের স্নেহসম্পন্ন স্মরণ-স্নেহ এবং নমস্কার l

*টিচার বোনেদের সাথে - অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎকার*

১) টিচার্স সদা স্বস্থিতিতে নিজেও সমুখগামী হয় এবং অন্যকেও সমুখগামী করে, অগ্রচালিত হওয়া আর অগ্রচালিত করাই টিচার্স-এর বিশেষ লক্ষ্য আর লক্ষণও l সদা বাবা সমান মাস্টার সর্বশক্তিমান আত্মা হয়ে সমুখগতি হও এবং অন্যকেও সমুখগতি কর l ত্যাগের মাধ্যমে ভাগ্য প্রাপ্তকারী শ্রেষ্ঠ আত্মা তোমরা, সদা ত্যাগই ভাগ্য l শ্রেষ্ঠ ভাগ্য, শ্রেষ্ঠ কর্ম, শ্রেষ্ঠ ফল . . . এই প্রত্যক্ষ ফল দ্বারা সদা নিজে উড়ে অন্যকেও উড়িয়ে নিয়ে চলো l নিজেকে সব কর্মে নিমিত্ত মনে করাই শ্রেষ্ঠ হওয়ার সহজ সাধন l সেবাধারী হওয়া, এটাও সঙ্গমযুগে বিশেষ ভাগ্যের লক্ষণ l সেবা করা অর্থাৎ জন্মের পর জন্ম ধরে সম্পন্ন হওয়া, কারণ সেবা দ্বারা সঞ্চয় হয় আর তোমরা যা সঞ্চয় করেছ অনেক জন্ম ধরে খেতে থাকবে l যদি এটা তোমাদের স্মৃতিতে থাকে তোমরা সেবা দ্বারা সঞ্চয় করছ, তাহলে সদা খুশিতে থাকবে এবং সেই খুশির কারণে তোমরা ক্লান্ত হবে না l সেবা তোমাদের ক্লান্তিহীন তৈরি করে, খুশির অনুভব করায় l

সেবাধারী অর্থাৎ বাবা সমান l অতএব, চেক কর, তোমরা কতটা সমান হয়েছ, সমান হয়ে অন্যদেরও বাবা সমান বানিয়ে অগ্রচালিত হও l সেন্টারের বায়ুমন্ডলকে শক্তিশালী বানানোর জন্য চারিদিকে দু'য়েক বার পরিক্রমা করে শক্তিশালী স্মরণের অনুভূতির প্রোগ্রাম বানাও l শক্তিশালী বাতাবরণ অনেক পরিস্থিতি থেকে তোমাদেরকে স্বতঃ দূরত্বে রাখে l এখন নিজে কোয়ালিটির হয়ে অন্যকেও কোয়ালিটির বানাতে থাক l আচ্ছা l

২) সবাই নিজেকে কোন মণি মনে কর ? (সন্তুষ্টমণি) আজকের সময়ে বিশেষভাবে সন্তুষ্টতাই আবশ্যক l কোন দেবী অধিক পূজিত হন ? সন্তোষী মা l আর সন্তোষী মা'কে সন্তুষ্ট করাও সহজ l সন্তোষী তাড়াতাড়ি সন্তুষ্ট হয়ে যায় l সন্তোষীর পূজা কেন হয় ? কারণ আজকের সময়ে অনেক টেনশন, অনেক হয়রানির কারণে অসন্তুষ্টতা বেড়ে যাচ্ছে, সেইজন্য প্রত্যেকে সন্তুষ্ট থাকার সাধন খুঁজছে, কিন্তু তারা এটা করতে অপারগ l সুতরাং এইরকম সময়ে তোমরা সব সন্তুষ্ট মণি হয়ে অন্যদেরও সন্তুষ্টতার জ্ঞানদীপকে আলোকিত কর l নিজেদের সন্তুষ্টতার জ্ঞানালোকে অন্যকেও সন্তুষ্ট বানাও l সর্বাগ্রে নিজের প্রতি নিজে সন্তুষ্ট থাক, তারপরে সেবাতে সন্তুষ্ট থাক, তারপরে সম্বন্ধে সন্তুষ্ট থাক, তখনই তোমাদের বলা হবে সন্তুষ্টমণি l তোমাদের প্রয়োজন সন্তুষ্টতার তিন সার্টিফিকেট l এক নিজের থেকে, দুই সেবা থেকে, তিন সাথীদের থেকে l এই তিন সার্টিফিকেট তোমরা তো নিয়েছ, তাই না ! এটা ভালো যে দুনিয়ার অস্থিরতা থেকে বেরিয়ে তোমরা অচল ঘরে পৌঁছে গেছ l বাবার এই স্থান অচল ঘর l সুতরাং অচল ঘরে পৌঁছে যাওয়া, এটাও বড় ভাগ্যের লক্ষণ l ত্যাগ করেছ, তাইতো অচল ঘরে পৌঁছেছ l ভাগ্যবান হয়ে গেছ, কিন্তু ভাগ্যরেখা যতটা লম্বা চাও টানতে পার l ভাগ্যবানের লিস্টে তো এসেই গেছ, কারণ এখন তোমরা ভগবানের হয়েছ যখন, ভাগ্যবান তো হয়েই গেছ l

সবার থেকে সরে এসে তোমরা এককে আপন বানিয়েছ - তাহলে তো ভাগ্যবান হয়ে গেছ l বাচ্চাদের এই মনোবল দেখে বাপদাদা উৎফুল্ল l যা কিছুই হোক, তবুও ত্যাগ আর সেবার ইচ্ছাশক্তিতে তোমরা শ্রেষ্ঠ l ছোট হও বা নতুন হও, বাপদাদা তোমাদের ত্যাগ আর ইচ্ছাশক্তিকে অভিবাদন করেন l বাপদাদা এই রিগার্ডের সাথে তোমাদের দেখেন l নিমিত্ত হওয়ারও মহত্ত্ব আছে l এই মহত্ত্বের সাথে অগ্রচালিত হয়ে বিশ্বে মহান আত্মা হয়ে প্রসিদ্ধ হয়ে যাবে l তাহলে নিজের মহত্ত্বকে তো জানো তোমরা, তাই না ! যত মহান ততই নিরহঙ্কার (নির্মান ) l যেমন, ফলদায়ক বৃক্ষের লক্ষণ - ঝুঁকে থাকা l যারা এইরকম বিনম্রচিত্ত তারাই প্রত্যক্ষ ফল খায় l এটাই সঙ্গমযুগের বিশেষত্ব l আচ্ছা !

*কুমারদের সাথে অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎকার* কুমার অর্থাৎ সদাসর্বদার জন্য দুর্বলতাকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় l অর্ধেক কল্পের জন্য দুর্বলতাকে সংযোগহীন করে দিয়েছ, তাই না ! নাকি এখনও দাওনি ? যারা সদা শক্তিশালী আত্মা, তাদের সামনে দুর্বলতা আসতে পারে না l সদা শক্তিশালী থাকা অর্থাৎ দুর্বলতার অবসান ঘটানো l এইরকম শক্তিশালী আত্মারা বাবারও প্রিয় l পরিবারেরও প্রিয় l কুমার অর্থাৎ নিজের প্রতিটা কর্ম দ্বারা যে অনেকের জন্য শ্রেষ্ঠ কর্মের রেখা টানে l তোমাদের নিজের কর্ম অন্যদের কর্মের রেখা বানানোর নিমিত্ত হয়ে যায় l এইরকম সেবাধারী তোমরা l সুতরাং প্রতিটা কর্মে এটা চেক কর, প্রতিটা কর্ম যেন এমন স্পষ্ট হয় যাতে অন্যদেরও কর্মের রেখা স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয় l তোমরা এমনই বিশেষ আত্মা যারা শ্রেষ্ঠ কর্মের শ্রেষ্ঠ খাতায় সঞ্চয় কর, একেই বলে, প্রকৃত সেবাধারী l স্মরণ আর সেবা - এটাই সদা অগ্রচালিত হওয়ার সাধন l স্মরণ শক্তিশালী বানায় আর সেবা গুণ ও শক্তির ধনভাণ্ডারে সম্পন্ন বানায় l স্মরণ আর সেবা দ্বারা নিরন্তর সামনে এগিয়ে চলো আর অন্যকেও অগ্রচালিত কর l আচ্ছা l

বরদান:-
ব্রহ্মাবাবা সমান সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিকৃতি বানিয়ে পরোপকারী ভব

শ্রেষ্ঠ স্মৃতি আর শ্রেষ্ঠ কর্ম দ্বারা ভাগ্যের প্রতিচ্ছবি তো সব বাচ্চাই বানিয়েছে, এখন শুধু সম্পূর্ণতার জন্য এবং ব্রহ্মা বাবার সমান সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ হওয়ার জন্য লাস্ট টাচিং বাকি আছে l এর জন্য পরোপকারী হও অর্থাৎ স্বার্থ ভাব থেকে সদা মুক্ত থাক l সব পরিস্থিতিতে, সর্বকার্যে, সব সহযোগী সংগঠনে যত নিঃস্বার্থ বোধের হবে ততই পর-উপকারী হতে পারবে l সদা নিজেকে পরিপূর্ণ অনুভব করবে l সদা প্রাপ্তিস্বরূপের স্থিতিতে স্থিত থাকবে l নিজের জন্য তখন আর কোনকিছু গ্রহণ করবে না l

স্লোগান:-
সর্বস্ব ত্যাগী হওয়াতেই সরলতা এবং সহনশীলতার গুণ বিকশিত হবে l