26-04-2020 প্রাতঃ মুরলি "অব্যক্ত বাপদাদা" ওম্ শান্তি ০১-০১-৮৬ মধুবন


*নববর্ষে নতুনত্বের অভিনন্দন*

আজ অমৃতবেলা থেকে চতুর্দিকের সকল স্নেহী সহযোগী এবং শক্তিশালী বাচ্চার মিষ্টি-মধুর মনের শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প, স্নেহের প্রতিশ্রুতি, পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি, বাবা সমান হওয়ার উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্কল্প অর্থাৎ বিবিধরকম অধ্যাত্ম-সুরে ভরা মনের গীত প্রাণসখার কাছে পৌঁছেছে l পরানসখা সকলের শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্পের মিষ্টি গীত শুনে অতি উৎফুল্ল হয়েছেন l মনোমিত তাঁর সকল অধ্যাত্ম মিতাকে, গডলি ফ্রেন্ডসকে তাদের সকলের গীতে রেসপন্ড করছেন l সদা প্রত্যেক সঙ্কল্পে, প্রতি সেকেন্ডে এবং প্রতিটা বোলে হোলি, হ্যাপি, হেলদি থাকার জন্য তোমাদের অভিনন্দন l মনোমিতের কার্যে সহযোগের সঙ্কল্পের সাথে সদা সহযোগের হাত হাতে থাকতে দাও l চতুর্দিকের বাচ্চাদের সঙ্কল্প, পত্র, কার্ড আর সেইসঙ্গে স্মরণ-চিহ্ন রূপে স্নেহের উপহার বাপদাদার কাছে পৌঁছে গেছে l নববর্ষের অভিনন্দনস্বরূপ বাপদাদা সদা সব বাচ্চার বুদ্ধিরূপী মস্তকে বরদানের, সদা সফলতার আশীর্বাদী হাত রাখছেন l নববর্ষে তিনি তোমরা সব বাচ্চাকে সদা সকল প্রতিজ্ঞা অনুশীলন করার তিলক দিচ্ছেন অর্থাৎ সদগুরু তোমরা সব আজ্ঞাকারী বাচ্চাকে প্রতি পদে ফলো ফাদার করার তথা বিশেষ স্মৃতিস্বরূপ হওয়ার বিশেষ তিলক দিচ্ছেন l আজকের দিনে, ছোট-বড় সবার মুখে অভিনন্দনের বোল সারাদিনই থাকছে l একইভাবে সদা নতুন সুর, সদা নতুন সেকেন্ড, সদা নতুন সঙ্কল্প আছে, সেইজন্য প্রতি সেকেন্ডে তোমরা অভিনন্দিত হও l সদা নতুনত্বের অভিনন্দন জানানো হয় l যদি নতুন কোনও কিছু হয় বা নতুন কার্যের উদ্যোগ নেওয়া হয়, অবশ্যই অভিনন্দন জানানো হয় l অভিনন্দন নবীনত্বকে দেওয়া হয় l সুতরাং তোমাদের জন্য সবকিছু সদা নতুন l সঙ্গমযুগের এটাই বিশেষত্ব l সঙ্গমযুগের প্রতিটা কর্ম তোমাদের উড়তি কলায় নিয়ে যায় l সেই কারণে সবসময় সবচেয়ে নতুন l পূর্ব মুহূর্তে তোমাদের যা স্টেজ এবং স্পীড ছিল, তা' পরমুহূর্তে উঁচু হয়ে যায় অর্থাৎ উড়তি কলার দিকে যায় l সেইজন্য প্রতি সেকেন্ডের স্টেজ আর স্পীড উঁচু অর্থাৎ নতুন l সুতরাং প্রতি সেকেন্ডের সঙ্কল্পের নতুনত্বের জন্য তোমাদের অভিনন্দন l সঙ্গমযুগ তো অভিনন্দনেরই যুগ l সদা মুখ মিষ্টি, জীবন মিষ্টি, সম্বন্ধ মিষ্টি অনুভব করার যুগ l বাপদাদা শুধু নতুন বছরের জন্য অভিনন্দন জানান না, বরং সঙ্গমযুগের প্রতি সেকেন্ডের, সঙ্কল্পের শ্রেষ্ঠ অভিনন্দন জানান l লোকে তো আজ অভিবাদন করবে, কাল শেষ l বাপদাদা সদাসর্বদা তোমাদের অভিনন্দিত করেন, বাহবা দেন l নবযুগের কাছাকাছি আসার জন্য অভিবাদন করেন l তোমাদের সঙ্কল্পের খুব ভালো গীত বাপদাদা শুনেছেন l এই গীত শুনতে শুনতে বাপদাদা গীতের সুর-নির্যাসে নিমজ্জিত হয়েছেন l

আজ অমৃতবেলা থেকে বাপদাদা গীতমালার প্রোগ্রাম শুনছিলেন l সময়ের মাপকাঠিতে অমৃতবেলা দেশে হোক বা বিদেশে যার যার নিজস্ব l প্রত্যেক বাচ্চা বিশ্বাস করে যে সে অমৃতবেলায় বাবার সঙ্গে কথা বলছে, আর বাপদাদাও নিরন্তর তোমাদের থেকে শুনছেন l প্রত্যেকের গীতের নিয়মও বড়ই মনোরম l সুরও তোমাদের নিজস্ব ঠিকই, কিন্তু বাপদাদার সবার গীত মধুময় লাগে l তিনি তোমাদের অভিবাদন করেছেন, হয় শব্দ দ্বারা করেছেন অথবা মন দ্বারা l হয় নিয়ম অনুসারে দিয়েছেন অথবা প্রীতির দায়িত্ব পালনের শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প দ্বারা l তাহলে, ভবিষ্যতে কি করবে ? ঠিক যেমন সেবার ৫০ বছর (১৯৮৬ তে) পূর্ণ হচ্ছে, সেইভাবেই সমস্ত শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প ও প্রতিশ্রুতি পালন করবে, নাকি সঙ্কল্প রূপেই সেইসব থাকতে দেবে ? প্রতি বছরই তোমরা খুব ভালো ভালো প্রতিশ্রুতি দাও l যেমন, আজকের দুনিয়ায় দিনের পর দিন উত্তরোত্তর সুন্দর সুন্দর কার্ড বানিয়ে চলেছে, সেইভাবে তোমাদের সঙ্কল্পও প্রতি বছর অধিকতর শ্রেষ্ঠ হয়, কিন্তু সঙ্কল্প এবং স্বরূপ উভয়ই সমান হতে দাও l এটাই মহত্ত্ব l এই মহানুভবতায় যে পারদর্শী, সেই অর্জুন l কে হবে সেইরকম ? সবাই বিশ্বাস করে সে হবে l অন্যেরা কে অর্জুন হবে কে ভীম হবে সেদিকে দেখে না, 'আমাকে নম্বর ওয়ান অর্থাৎ অর্জুন হতে হবে l' শুধুমাত্র "হে অর্জুন" গায়ন হয়েছে l হে ভীম গাওয়া হয়নি l অর্জুনের বিশেষত্ব সদা স্মৃতিস্বরূপ হতে হবে এবং বিন্দুতে স্থির হয়ে বিজয়ী হতে হবে l যে এমন নষ্টমোহ স্মৃতিস্বরূপ হয় সে অর্জুন l যে সদা গীতা জ্ঞান শোনে আর মনন করে সে অর্জুন l এইরকম বিদেহী, জীবিত থেকেও মৃতবৎ হয়ে আছে - যার এমন বেহদ-বৈরাগ্যের বৃত্তি, সেই অর্জুন কে হবে ? এইরকম কি তোমরা হবে, নাকি এই ব্যাপারে শুধুই বলবে ! তোমরা বলো নতুন বছর,সদা প্রতি সেকেন্ডে নতুনত্ব l মন্সাতে, বাণীতে, কর্মে, সম্বন্ধে নতুনত্ব আনো l নববর্ষের এই অভিনন্দন সদা তোমাদের সাথে রাখ l প্রতি সেকেন্ড প্রতিটা মুহূর্ত স্থিতির পার্সেন্টেজ উর্ধ্বতর হতে দাও l যেমন, কেউ কোন লক্ষ্যে পৌঁছাতে যত ধাপ এগোয়, প্রতি ধাপে সে তার লক্ষ্যের কাছাকাছি চলে যায় l স্থানুবৎ সেখানেই থেমে থাকে না l এইভাবে প্রতি সেকেন্ডে এবং প্রতি পদক্ষেপে নৈকট্য এবং সম্পূর্ণতার কাছাকাছি আসার লক্ষণ নিজেরাও অনুভব কর এবং অন্যদেরও অনুভব হতে দাও l একে বলে, পার্সেন্টেজ ক্রমবর্ধিত করা অর্থাৎ অগ্ৰগামী হওয়া l পার্সেন্টেজের নতুনত্ব এবং স্পীডের নতুনত্ব একেই বলা হয়ে থাকে l সুতরাং সদাসর্বদা নতুনত্ব নিয়ে এসো l সবাই জিজ্ঞাসা করে নতুন কি করব ? প্রথমে, নিজের মধ্যে নতুনত্ব আনো, তবেই সেবাতে নতুনত্ব নিজে থেকেই আসবে l

এই বছর প্রভাবশালী হওয়ার বিশেষত্ব দেখাও l ব্রাহ্মণ আত্মারা যখন নিজেদের মধ্যে সম্পর্কে আসো, তখন তোমাদের মনে সকলের প্রতি সদা স্নেহ, সহযোগ এবং কল্যাণের ভাবনা প্রভাবশালী হতে দাও l প্রতিটা বোল যেন যেকোন কাউকে সাহস এবং উৎসাহ দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাবশালী হয় l ব্যর্থ হতে দিও না l কখনো কখনো তোমরা সাধারণ কথাবার্তায় আধঘন্টা পর্যন্ত কাটিয়ে দাও, তারপরে ভাবো এর রেজাল্ট কি ! সুতরাং না খারাপ, না ভালো এইরকম যে সাধারণ আচার- আচরণ, সেগুলোকে প্রভাবশালী বলা যাবে না l একইভাবে সব কর্ম ফলদায়ক হতে দাও, তা' নিজের প্রতি হোক বা অন্যের প্রতি l অতএব, নিজেদের মধ্যেও পরস্পরের উপরে সর্বরূপে অধ্যাত্ম প্রভাব বিস্তার কর l সেবাতেও অধ্যাত্ম প্রভাব পড়তে দাও l তোমরা ভালো পরিশ্রম কর এবং সবকিছু হৃদয় দিয়ে কর, সবাই এইরকম বলো l কিন্তু বাবাকে প্রত্যক্ষ করার প্রভাব এমনভাবে বিস্তার হতে দাও যাতে লোকে বলে, এঁরা রাজযোগী ফরিস্তা, আধ্যাত্মিকতা যদি কোথাও থেকে থাকে তা' এখানেই আছে, এটাই পরমাত্ম কার্য l এই জীবন ভালো, এই কাজ ভালো, কিন্তু এমন প্রভাব পড়তে হবে যাতে তারা উপলব্ধি করে, এটা পরমাত্ম কার্য, এঁরা পরমাত্ম সন্তান, এটাই সম্পূর্ণ এবং সম্পন্ন জীবন l এই প্রভাব বিস্তৃত হওয়া প্রয়োজন l সেবাতে আরও প্রভাবান্বিত করার প্রয়োজন, এখন এই তরঙ্গ ছড়িয়ে দাও যাতে তারা বলে যে তারাও ভালো হতে চায় l যখন তারা বলে তোমরা খুব ভালো, সেটা ভক্তদের মালা প্রস্তুত হচ্ছে l কিন্তু এখন সর্বাগ্রে বিজয়মালা প্রস্তুত কর অর্থাৎ স্বর্গের অধিকারী হওয়ার মালা আগে প্রস্তুত কর l প্রথম জন্মে ন'লাখ প্রয়োজন l ভক্তের মালা অনেক লম্বা l এই মালা যারা রাজত্বের অধিকারী, রাজ্য শাসন করার নয় l রাজ্যে আসার অধিকারীও এখন প্রয়োজন l সুতরাং এখন এমন তরঙ্গ ছড়িয়ে দাও, যারা বলে এটা ভালো এবং ভালো হওয়ার জন্য সম্পর্কে থাকে, তারা অন্ততপক্ষে প্রজার সম্বন্ধে তো এসে যাবে l নিতান্তই তারা যদি তোমাদের সম্পর্কে আসে, তবে তাদের স্বর্গের অধিকারী তো বানাবে, তাই না ! সেবায় এমন প্রভাব তৈরি কর l এই বছর, প্রভাবশালী হওয়ায় এবং এই প্রভাব দ্বারা বাবাকে প্রত্যক্ষ করার বিশেষত্বে বিশেষভাবে পালন কর l নিজে প্রভাবিত হয়োনা l কিন্তু বাবা দ্বারা তাদের প্রভাবিত হতে দাও l বুঝেছ ! যেমন, ভক্তিমার্গে তারা বলে সবই পরমাত্মার রূপ l তারা বলে ভুল ভাবনার সাথে l যেমনই হোক, জ্ঞানের প্রভাবে তোমাদের সকলের রূপে তারা যেন বাবাকে অনুভব করে l যখন তোমাদের যেকোন কারও মধ্যে তাদের পরমাত্ম স্বরূপের অনুভূতি হবে, তখনই নবযুগ আসবে l এখনো প্রথম জন্মের প্রজাই তোমরা প্রস্তুত করনি l পরবর্তী সময়ের প্রজা সহজে তৈরি হয়ে যাবে, কিন্তু আগে প্রথম জন্মের প্রজা l ঠিক যেমন রাজা শক্তিশালী হবে, একইরকম ভাবে প্রথম প্রজাও শক্তিশালী হবে l সুতরাং, সঙ্কল্পের বীজ সদা ফল স্বরূপে রাখতে থাক l প্রত্যক্ষতার জন্য প্রতিজ্ঞাকে নিরন্তর কার্যকর বানাও l ডবল বিদেশি কি করবে ? সবকিছুতে তোমরা ডবল রেজাল্ট বের করবে, তাই না ? প্রতি সেকেন্ডে নতুনত্বের সাথে, প্রতি সেকেন্ড বাবার থেকে অভিনন্দন নাও l আচ্ছা !

যারা সদা সব সঙ্কল্পে নতুনত্বের মহত্ত্ব প্রদর্শন করে, সবসময় উড়তি কলার অনুভব করে, সদা প্রভাবশালী হয়ে বাবার প্রভাব প্রত্যক্ষ করে, আত্মাদের মধ্যে নতুন জীবন বানানোর নতুন প্রেরণা দেয়, নবযুগের অধিকারী বানানোর শ্রেষ্ঠ তরঙ্গ ছড়ায় - এইরকম সদা বরদানী, মহাদানী আত্মাদের সদা বাপদাদার নতুনত্বের সঙ্কল্পের সাথে স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l

*দাদীদের সাথে:-* আজ বিশেষ আবশ্যকতা এই - *শক্তিশালী সঙ্কল্পের সহযোগ l* নিজের পুরুষার্থ আলাদা বিষয় কিন্তু *শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্পের সহযোগ* - এর বিশেষ আবশ্যকতা আছে l এই বিশেষ সেবা তোমরা সব বিশেষ আত্মার l তোমাদের সঙ্কল্পের দ্বারা সহযোগ দেওয়ার সেবা এখন বাড়াতে হবে l *"বাণী দ্বারা শিক্ষা দেওয়ার সময় অতিক্রান্ত l"* এখন শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্পের সাথে পরিবর্তন করতে হবে l সেবার জন্য এখন প্রয়োজন শ্রেষ্ঠ ভাবনার দ্বারা পরিবর্তন আনা l সকলের এই বল প্রয়োজন l সঙ্কল্প তো সবাই করে কিন্তু সেই সব সঙ্কল্প বলপূর্ণ করা এখন আবশ্যক l সুতরাং তোমরা যে যতটা নিজে শক্তিশালী ততটাই অন্যদের সঙ্কল্পেও বল ভরতে পারবে l যেমন, আজকাল লোকে সূর্যের শক্তি জমা ক'রে সেই শক্তি দ্বারা অনেক কার্য সফল করে l এখানেও, যখন তোমরা সঙ্কল্প-শক্তি করেছ, তা' দিয়ে অন্যদেরও বল ভরতে পার l কার্য সফল করতে পার l তারা স্পষ্টভাবে বলে যে তাদের সেই মনোবল নেই l অতএব, তাদের সাহস দিতে হবে l বাণী থেকেও সাহস তথা আত্মবিশ্বাস আসতে পারে, কিন্তু সদাকালের জন্য নয় l বাণীর সাথে সাথে শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্পের সূক্ষ্ম শক্তি অনেক বেশি কাজ করে l কোনকিছু যা যত বেশি সূক্ষ্ম হবে তা' অধিক সফলতা নিয়ে আসে l বাণী থেকে সঙ্কল্প বেশি সূক্ষ্ম, নয় কি ! সুতরাং আজ এরই আবশ্যকতা l এই সঙ্কল্প শক্তি খুব সূক্ষ্ম l যেমন, ইঞ্জেকশন দ্বারা তারা রক্তে শক্তি ভরে দেয়, তাই না ! এইভাবে সঙ্কল্প ইঞ্জেকশনের মতো কাজ করে, সুতরাং তোমাদের সঙ্কল্প দ্বারা তাদের মনোবৃত্তিতে উত্থিত সঙ্কল্প শক্তিপূর্ণ হয় l এখন এই সেবা সর্বাধিক আবশ্যক l আচ্ছা l

*টিচারদের সাথে:-* নিমিত্ত সেবাধারী হওয়ায় ভাগ্যপ্রাপ্তির অনুভব করো তোমরা ? সেবার নিমিত্ত হওয়া অর্থাৎ গোল্ডেন চান্স লাভ করা, কারণ নিজে থেকেই সেবাধারীর স্মরণ আর সেবা ব্যতীত কিছু থাকে না l যদি প্রকৃত সেবাধারী হও, তবে দিন রাত সেবায় বিজি হওয়ার কারণে তোমরা সহজেই উন্নতির অনুভব করো l মায়াজিত হওয়ার এটা এক্সট্রা লিফ্ট l সুতরাং তোমরা নিমিত্ত সেবাধারীরা যতটা সমুখগামী হতে চাও, ততটা সামনে এগিয়ে যেতে পারো l এটা বিশেষ বরদান l সুতরাং যে এক্সট্রা লিফ্ট বা গোল্ডেন চান্স পেয়ে, তা' থেকে তোমরা লাভ করে নিয়েছ l সেবাধারীরা স্বাভাবিকভাবেই সেবার মেওয়া খেতে থাকা আত্মা হয়ে ওঠে, কারণ এখনই তারা সেবার প্রত্যক্ষ ফল প্রাপ্ত করে l তোমরা উত্তমরূপে সাহস বজায় রেখেছ l সাহস আছে এমন আত্মাদের প্রতি সদা বাপদাদার সহায়তার হাত থাকে l এই সহায়তার দ্বারা এগিয়ে যাচ্ছ আর ক্রমাগত এগোতে থাক l বাবার সাহচর্যের এই হাত সদাসর্বদার জন্য আশীর্বাদ হয়ে যায় l বাপদাদা সেবাধারীদের দেখে বিশেষ খুশি হন, কারণ বাবার মতন তোমরা কার্যে নিমিত্ত হয়েছ l সদা নিজেদের মতো টিচারদের বৃদ্ধি করতে থাক l সদা নতুন উদ্যম, নতুন উৎসাহ নিজের মধ্যে ধারণ কর আর অন্যদেরও দেখাও l তোমাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে নিজে থেকেই যেন সেবা হতে থাকে l সবসময় সেবায় নতুনত্বের কোনও প্ল্যান বানাতে থাক l এটা এমন প্ল্যান হতে হবে, যা বিহঙ্গ মার্গের সেবার বিশেষ সাধন হয় l এখন এমনই কোন চমৎকার করে দেখাও l যখন নিজেরা বিঘ্নরহিত এবং অনড়, তখন সেবাতে সহজে নতুনত্ব দেখাতেই পার l যতটা যোগযুক্ত হবে ততটাই নতুনত্ব টাচ্ হবে, এমনই করতে হবে তোমাদের, আর স্মরণের বল দ্বারা সফলতা অর্জন করতে পারবে l সুতরাং বিশেষ কোনও কার্য করে দেখাও l

*পাটিদের সাথে:-* ১) সমুদায় ভাণ্ডারে সম্পন্ন শ্রেষ্ঠ আত্মা, এইরকম অনুভব কর তোমরা ? কতো ভাণ্ডার পেয়েছ, তা' জানো ? সেগুলো গুনতে পার ? সেই সমুদায় ভাণ্ডার অবিনাশী, অগণিত l সুতরাং একেকটা ভাণ্ডার স্মৃতিতে নিয়ে এসো l তোমাদের স্মৃতিতে এই ভাণ্ডার থাকলে তোমরা খুশি হবে l যতোধিক এই ভাণ্ডার তোমাদের স্মৃতিতে বজায় রাখবে ক্রমশঃ ততোধিক শক্তিশালী হবে এবং যেখানে শক্তি আছে সেখানে ব্যর্থ শেষ হয়ে যায় l ব্যর্থ সঙ্কল্প, ব্যর্থ সময়, ব্যর্থ বোল সব বদলে যায় l এইরকম অনুভব কর তোমরা ? পরিবর্তন হয়ে গেছে, তাই না ! এখন তোমরা নতুন জীবনে এসেছ l নতুন জীবন, নতুন উদ্যম, নতুন উৎসাহ, প্রতিটা সেকেন্ড নতুন, প্রতি ক্ষণ নতুন l সুতরাং প্রত্যেক সঙ্কল্পে নতুন উদ্যম, নতুন উৎসাহ থাকা উচিত l কাল কি ছিলে আর আজ কি হয়ে গেছ ! এখন পুরানো সঙ্কল্প, পুরানো সংস্কার থেকে যায়নি তো ! এমনকি সামান্যতমও না, অতএব সদা এই উদ্যমের সাথে এগিয়ে চলো l যখন সবকিছু পেয়ে গেছ, তখন তো পরিপূর্ণ হয়েই গেছ, নয় কি ! যে জিনিস পরিপূর্ণ তা' কখনো নড়বড়ে হয় না l সম্পন্ন হওয়া অর্থাৎ অনড় হওয়া l সুতরাং নিজের এই স্বরূপ সামনে রাখ - *আমি খুশির সম্পদে পরিপূর্ণ ভাণ্ডার হয়ে গেছি l* যেখানে খুশি আছে, সেখানে সদাসর্বদার জন্য দুঃখ দূর হয়ে যায় l তুমি নিজে যতটা খুশি থাকবে, ততটা খুশির খবর অন্যকেও শোনাবে l সুতরাং খুশি থাক আর খুশির খবর শুনাতে থাক l

২) এটা অধ্যাত্ম বাগিচা, সদা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত l আর তোমরা সবাই অধ্যাত্ম গোলাপ, তাই না ! যেমন, সব ফুলের মধ্যে সুগন্ধি গোলাপ শ্রেষ্ঠ গাওয়া হয়ে থাকে l সেই সব ফুল অল্পকালের সুগন্ধ দেয় l তোমরা কে ? অধ্যাত্ম গোলাপ অর্থাৎ যে অবিনাশী সুবাস দেয়, সদা আধ্যাত্মিকতার সুগন্ধ থাকে এবং অধ্যাত্ম সুগন্ধি বিতরণ করে l এইরকম তৈরি হয়েছ তোমরা ? সবাই অধ্যাত্ম গোলাপ হয়েছ নাকি অন্য কিছু ? আরও বিভিন্নরকম ফুল হয়, কিন্তু গোলাপ ফুলের যে ভ্যাল্যু আছে তেমন অন্য ফুলের নেই l পরমাত্ম বাগিচার সদা প্রস্ফুটিত পুষ্প l কখনো সতেজতা হারায় না l মায়ার কারণে সঙ্কল্পেও কখনো সতেজতা হারিও না l মায়া আসে এর মানে নিস্তেজ হয়ে যাও l যদি মায়াজিত হও তবে সদা আভাযুক্ত থাক l যেমন, বাবা অবিনাশী, সেইরকম বাচ্চারাও সদা অবিনাশী গোলাপ l পুরুষার্থও অবিনাশী, সুতরাং প্রাপ্তিও অবিনাশী l

৩) সদা নিজেকে সহযোগী অনুভব কর ? সহজ মনে হয় নাকি কঠিন ? বাবার অবিনাশী উত্তরাধিকার বাচ্চাদের অধিকার l সুতরাং অধিকার সদা সহজে লাভ হয় l যেমন লৌকিক বাবার থেকে বাচ্চাদের অধিকার সহজেই প্রাপ্ত হয় l সুতরাং তোমরাও অধিকারী l অধিকারী হওয়ার কারণে তোমরা সহজযোগী l পরিশ্রম করার আবশ্যকতা নেই l বাবাকে স্মরণ করা কখনোই কঠিন হয় না l ইঁনি অসীম জগতের বাবা এবং অবিনাশী বাবা, সেইজন্য সদা সহজযোগী আত্মা l ভক্তি অর্থাৎ পরিশ্রম, জ্ঞান অর্থাৎ সহজ ফলের প্রাপ্তি l যতোধিক তোমরা স্নেহের সম্বন্ধে বাবাকে স্মরণ করবে, ততোধিক সহজে তোমরা অনুভব করবে l সদা নিজের এই বরদান স্মরণে রাখ, 'আমিই সহজযোগী l সুতরাং যেমন স্মৃতি হবে সেইরকম স্থিতি নিজে থেকেই হয়ে যাবে l আচ্ছা l

*বরদানঃ-*

তোমাদের প্রতিটা কর্ম দৈবী চরিত্র রূপে গায়ন যোগ্য ক'রে মহান আত্মা ভব*

মহান আত্মা সেই, যার প্রতিটা সঙ্কল্প, প্রতিটা কর্ম মহান l একটাও সঙ্কল্প সাধারণ বা ব্যর্থ হতে দিও না l কোনও কর্ম সাধারণ এবং অর্থহীন হতে দিও না l কর্মেন্দ্রিয় দ্বারা যে কর্মই কর তা' অর্থপূর্ণ হতে দাও l তোমাদের সময়ও যেন সদাসর্বদা উপযুক্তভাবে এই মহান কার্যে প্রযুক্ত হতে থাকে, তবেই তোমাদের সব কর্ম দিব্য চরিত্র হিসেবে গায়ন যোগ্য হবে l মহান আত্মাদেরই স্মরণিক প্রসন্ন মূর্তি, আকর্ষণ মূর্তি এবং অব্যক্ত মূর্তি রূপ হয় l

*স্লোগানঃ-*

মানের ইচ্ছে ত্যাগ করে যদি স্বমানে স্থিত হও, তবে মান ছায়ার মতো পিছনে আসবে l*