16.04.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
বাবা তোমাদের পুরুষোত্তম করে তোলার জন্য অধ্যয়ণ করাচ্ছেন, তোমরা এখন কনিষ্ঠ থেকে
উত্তম পুরুষ হয়ে উঠছো, সবচেয়ে উত্তম হলো দেবতারা"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
তোমরা এখানে কি রকম পরিশ্রম করো যা সত্যযুগে থাকবে না ?
উত্তরঃ -
এখানে দেহ সহ দেহের সকল সম্বন্ধকে ভুলে আত্ম-অভিমানী হয়ে শরীর ছাড়ার জন্য অনেক
পরিশ্রম করতে হয়। সত্যযুগে বিনা পরিশ্রমে বসে-বসে শরীর ছেড়ে দেবে। এখন কি এই অভ্যাস
করছো যে - আমি হলাম আত্মা, আমাকে এই পুরানো দুনিয়া পুরানো শরীর ছাড়তে হবে, নূতন
নিতে হবে ! সত্যযুগে এই অভ্যাসের আবশ্যকতা নেই ।
গীতঃ-
দূর দেশে
থাকেন যিনি, এসেছেন তিনি এই দেশে* (দূর দেশ কা রহনে বালা---)
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি
আত্মা রূপী বাচ্চারা জানে যে, আবার এসেছে কল্প পরে। একে বলা হয় দূর দেশে যিনি থাকেন
তিনি এসেছেন অপরের দেশে। এটা শুধুমাত্র সেই একের জন্যই গায়ন আছে, ওঁনাকেই সকলে
স্মরণ করে, তিনি হলেন বিচিত্র। ওনার কোনো চিত্র নেই। ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শঙ্করকে দেবতা
বলা হয়। শিব ভগবানুবাচ বলা হয়, তিনি থাকেন পরমধামে। ওনাকে কখনো সুখধামে ডাকা হয় না,
দুঃখধামেই ডাকা হয়। তিনি আসেনও সঙ্গম যুগে। বাচ্চারা, এটা তো জানো যে সত্যযুগে
সমগ্র বিশ্বের উপর তোমরা পুরুষোত্তম থাকো। মধ্যম, কনিষ্ঠ সেখানে থাকে না। উত্তমের
থেকেও সর্বোত্তম পুরুষ এই শ্রী লক্ষ্মী-নারায়ণ হলেন যে না! এনাদের এই প্রকার যিনি
করে তুলেছেন তাঁকে শ্রী-শ্রী শিববাবা বলে। শ্রী-শ্রী সেই শিববাবাকেই বলা যায়। আজকাল
তো সন্ন্যাসী ইত্যাদিও নিজেকে শ্রী-শ্রী বলে দেয়। তো বাবা এসেই এই সৃষ্টিকে
পুরুষোত্তম করেন। সত্যযুগে সমগ্র সৃষ্টিতে উত্তমের চেয়েও উত্তম পুরুষ থাকে। উত্তমের
থেকেও উত্তম আর কনিষ্ঠ থেকেও কনিষ্ঠ এই সময় তোমরা বোঝো। কনিষ্ঠ বা ছোটো মানুষ
নিজের নীচতা প্রদর্শন করে । এখন তোমরা মনে করো আমরা কি ছিলাম, এখন আমরা আবার
স্বর্গবাসী পুরুষোত্তম হয়ে উঠছি। এটা হলোই সঙ্গমযুগ। তোমাদের নিশ্চিন্ততা আছে যে এই
পুরানো দুনিয়া নূতন তৈরী হচ্ছে। পুরানো থেকেই নূতন, নূতন থেকেই পুরানো অবশ্যই হয়।
নূতনকে সত্যযুগ, পুরানোকে কলিযুগ বলা হয়ে থাকে। বাবা হলেনই সত্যিকারের সোনা, সত্য
বলতে সক্ষম। ওঁনাকে ট্রুথ(সত্য) বলা হয়। সব কিছু সত্য বলেন। এটা যারা বলে ঈশ্বর
হলেন সর্বব্যাপী, তা হলো মিথ্যা হলো। এখন বাবা বলেন মিথ্যা শুনো না। হিয়ার নো ইভিল,
সী নো ইভিল ...পার্থিব বিদ্যার (রাজ-বিদ্যার) ব্যাপার আলাদা। সেটা তো হলোই অল্প
সময়ের সুখের জন্য। আত্মা যখন আরেক জন্ম গ্রহণ করে, তখন আবার তাকে নূতন করে পড়তে হয়
। সেটা হলো অল্প সময়ের সুখ। এটা হলো ২১ জন্ম,২১ প্রজন্মের জন্য। বার্ধক্য কাল
পর্যন্ত সম্পূর্ণ জীবনকালকে কাঠামোতে বলা হয় একটা প্রজন্ম । সেখানে কখনো অকাল মৃত্যু
হয় না। এখানে তো দেখো কেমন অকাল মৃত্যু হতে থাকে। জ্ঞানে এসেও মরে যায় অর্থাৎ হাত
ছেড়ে চলে যায় । তোমরা এখন মৃত্যুর উপর বিজয় প্রাপ্ত করছো। তোমরা জানো যে, ওইটা হলো
অমরলোক, এটা হলো মৃত্যুলোক। সেখানে যখন বুড়ো হয় তখন সাক্ষাৎকার হয়- আমি এই শরীর
ছেড়ে গিয়ে ছোট বাচ্চা হয়ে জন্মাবো। বার্দ্ধক্য সম্পূর্ণ হলে শরীর ছেড়ে দেবে। নূতন
শরীর প্রাপ্ত হলে সেটা তো ভালোই। বসে- বসে খুশী হয়ে শরীর ছেড়ে দেয়। এখানে তো সেই
অবস্থাতে থেকে শরীর ছাড়তে পরিশ্রম করতে হয়। এখানকার পরিশ্রম সেখানে আবার কমন হয়ে
যায়। এখানে দেহ সহ যা কিছু আছে সব কিছু ভুলে যেতে হবে। নিজেকে আত্মা মনে করতে হবে,
এই পুরানো দুনিয়াকে ছাড়তে হবে। নূতন শরীর ধারণ করতে হবে। আত্মা সতোপ্রধান ছিলো বলে
সুন্দর শরীর প্রাপ্ত হয়েছে। আবার কাম চিতার উপর বসার জন্য কালো তমোপ্রধান হয়ে গেছে,
তাই শরীরও কুৎসীত প্রাপ্ত হয়েছে, সুন্দর থেকে কুৎসিত হয়ে গেছে। কৃষ্ণের নাম তো
কৃষ্ণই, তবে শ্যাম সুন্দর কেন বলা হয়(এক জনই সুন্দর আর কুতসিত)? চিত্রতেও কৃষ্ণের
চিত্র ঘন নীল করে দেয় কিন্তু অর্থ বোঝে না। এখন তোমরা বুঝতে পারো যখন সতোপ্রধান
ছিলে, সুন্দর ছিলে।এখন তমোপ্রধান শ্যাম হয়ে গেছো। সতোপ্রধান যকে পুরুষোত্তম বলা হবে,
তমোপ্রধানকে কনিষ্ঠ বলা হবে। বাবা তো হলেন এভার পিওর। তিনি আসেনই সুন্দর করে তুলতে।
ভবঘুরে (মুসাফির) যে তিনি। প্রতি কল্পে আসেন, তা না হলে পুরানো দুনিয়াকে নূতন কে
তৈরী করবে! এটা তো হলো পতিত ঘৃণ্য দুনিয়া। এই কথা দুনিয়াতে কেউ জানে না। এখন তোমরা
জানো বাবা আমাদের পুরুষোত্তম তৈরী করার জন্য পড়াচ্ছেন। আবার দেবতা হওয়ার জন্য
আমরাই ব্রাহ্মণ হয়েছি। তোমরা হলে সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণ। দুনিয়া এটা জানে না যে এখন
হলো সঙ্গম যুগ। শাস্ত্রে কল্পের সময়কালকে লক্ষ বছর বলে দেয় বলে মনে করে কলিযুগ তো
এখনো বাচ্চা । এখন তোমরা মনে মনে বুঝতে পারো- আমরা এখানে এসেছি উত্তম থেকেও উত্তম,
কলিযুগী পতিত থেকে সত্যযুগী পবিত্র, মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার জন্য। গ্রন্থতেও মহিমা
আছে- যখন ভগবান এসে ময়লা কাপড় কাচেন (মূত পলিতি কাপড় কাচে)। কিন্তু গুরুগ্রন্থ
সাহেব যারা পড়ে, তারা এর অর্থ বোঝে না। এই সময় তো বাবা এসে সমগ্র দুনিয়ার
মানুষকেই পরিচ্ছন্ন করেন। তোমরা সেই বাবার সামনে বসে আছো। একমাত্র এই বাবা
বাচ্চাদের বোঝেন। এই রচয়িতা আর রচনার নলেজ আর কেউ জানেই না। একমাত্র বাবা হলেন
জ্ঞানের সাগর। তিনি হলেন সৎ, চৈতন্য, অমর। পুণর্জন্ম হতে মুক্ত। তিনি হলেন শান্তির
সাগর, সুখের সাগর, পবিত্রতার সাগর। ওনাকেই ডাকে যে এসে এই উত্তরাধিকার দিন। বাবা
এখন তোমাদের ২১ জন্মের জন্য উত্তরাধিকার দিচ্ছেন। এই অধ্যয়ণ হলো অবিনাশী। আমাদের
পড়ান যিনি, সেই বাবাও হলেন অবিনাশী। অর্ধ-কল্প তোমরা রাজত্ব প্রাপ্ত করো, আবার
রাবণ রাজ্য হয়। অর্ধ-কল্প হলো রাম রাজ্য, আর অর্ধ-কল্প রাবণ রাজ্য। প্রাণাধিক প্রিয়
হলেন এই একমাত্র বাবা, কারণ তিনিই তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের সমস্ত দুঃখ থেকে মুক্ত
করে অপার সুখে নিয়ে যান। তোমরা দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে বলো তিনি হলেন আমাদের প্রাণাধিক
প্রিয় বাবা। প্রাণ আত্মাকে বলা হয়। সমস্ত মানুষ মাত্রই তাঁকে স্মরণ করে, কারণ অর্ধ
কল্পের জন্য দুঃখের থেকে মুক্ত করেন, শান্তি আর সুখ প্রদানকারী একমাত্র এই বাবা।
সুতরাং প্রাণাধিক প্রিয় হলো যে না! তোমরা জানো যে সত্যযুগে আমরা সদা সুখী থাকি।
এছাড়া সকলে শান্তিধামে চলে যাবে। আবার রাবণ রাজ্যে দুঃখ শুরু হয়। এ হলো দুঃখ আর
সুখের খেলা। মানুষ মনে করে এখানেই এখন সুখ আছে, তো এখনই দুঃখ আছে। কিন্তু না, তোমরা
জানো যে স্বর্গ আলাদা আর নরক আলাদা। স্বর্গের স্থাপনা বাবা রা করেন, নরকের স্থাপনা
রাবণ করে, যাকে প্রতি বছর জ্বালানো হয়। কিন্তু কেন জ্বালানো হয়? কি জিনিস? কিছু জানে
না। কতো খরচা করে। বসে কতো গল্প শোনায়, রামের সীতা ভগবতীকে রাবণ নিয়ে গেছে। মানুষ
মনেও করে এমন হয়েছিলো হয়তো। এখন তোমরা সকলের অক্যুপেশন জানো। এটা তোমাদের বুদ্ধিতে
নলেজ আছে। সমগ্র ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফিকে কোন মানুষই জানে না। শুধুমাত্র
বাবা জানেন। ওনাকে ওয়ার্ল্ডের রচয়িতাও বলা যায় না। ওয়ার্ল্ড তো আছেই, বাবা এসি
শুধু নলেজ দেন এই চক্র কীভাবে আবর্তিত হয়। ভারতে এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য ছিলো,
তারপর কি হলো? দেবতারা কি কারোর সাথে লড়াই করেছিলো? কিছুই না। অর্ধ-কল্প পরে রাবণ
রাজ্য শুরু হলে দেবতারা বাম মার্গে বা পাপের রাস্তা অবলম্বন করে। তাছাড়া এমন নয় যে
যুদ্ধে কেউ পরাজিত করেছে।লস্কর ইত্যাদির কোনো ব্যাপার নেই। না লড়াই করে রাজ্য নেয়,
না হারিয়ে ফেলে। এটা তো তোমরা যোগে থেকে পবিত্র হয়ে পবিত্র রাজ্য স্থাপন করছো।
এছাড়া হাতে কিছু নেই। এটা হলো ডবল অহিংসা। এক হলো পবিত্রতার অহিংসা, দ্বিতীয়ত তোমরা
কাউকে দুঃখ দাও না। সবচেয়ে কড়া হিংসা হলো কাম কাটারির। যা কি না আদি-মধ্য-অন্ত
দুঃখ দেয়। রাবণের রাজ্যেই দুঃখ শুরু হয়। অসুখ শুরু হয়ে যায়। রাবণের রাজ্যেই দুঃখ
শুরু হয়। অসুখ শুরু হয়ে যায়। প্রচুর রকমের অসুখ। অনেক ধরণের ওষুধ বের হতে থাকে। রোগী
হয়ে পড়ে আছে যে না! তোমরা এই যোগবলের দ্বারা ২১জন্মের জন্য নিরোগী হচ্ছো। সেখানে
দুঃখ বা অসুখের নাম মাত্র চিহ্নও নেই। এর জন্য তোমরা পড়াশুনা করছো। বাচ্চারা জানে
ভগবান আমাদের পড়িয়ে ভগবান ভগবতী করে তুলছেন। পড়াও কতো সহজ। আধা পৌনে ঘন্টায়
সমগ্র চক্রের নলেজ বুঝিয়ে দেয়। ৮৪ জন্মও কারা নেয়- সেটা তোমরা জানো।
ভগবান আমাদের পড়াচ্ছেন, তিনি হলেন নিরাকার। সত্যি-সত্যি ওনার নাম হলো শিব।
কল্যাণকারী যে না! সকলের কল্যাণকারী, সকলের সদ্গতি দাতা হলেন উচ্চতমের চেয়েও উচ্চ
বাবা। উচ্চতমেরও উচ্চ মানুষ তৈরী করেন। বাবা পড়াশুনা করিয়ে যোগ্য করে নিয়ে এখন
বলেন গিয়ে পড়াও। এই ব্রহ্মা কুমার-কুমারীদের পড়ানোর জন্য হলেন শিববাবা। ব্রহ্মা
দ্বারা তোমাদের অ্যাডপ্ট করেছেন। প্রজাপিতা ব্রহ্মা কোথা থেকে এলো ? এই ব্যাপারেই
বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। এনাকে অ্যাডপ্ট করেছেন, বলে অনেক জন্মের শেষে...এখন অনেক জন্ম
কে নিয়েছেন? এই লক্ষ্মী-নারায়ণই সম্পূর্ণ ৮৪ জন্ম নিয়েছেন, সেইজন্য কৃষ্ণের জন্য
বলে দেয় শ্যাম-সুন্দর। আমরাই সুন্দর ছিলাম আবার ২ কলা কম হলো। কলা কমতে কমতে এখন
নো কলা হয়ে গেছে। এখন তমোপ্রধান থেকে আবার কীভাবে সতোপ্রধান হবে ? বাবা বলেন আমাকে
স্মরণ করলে তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে। এটাও জানো যে এটা হলো রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞ। এখন
যজ্ঞের জন্য চাই ব্রাহ্মণ। তোমরা হলে সত্যিকারের ব্রাহ্মণ, সত্যিকারের গীতা শোনাতে
সক্ষম তোমরা, সেইজন্য লেখোও যে সত্যিকারের গীতাপাঠশালা। ওই গীতাতে তো নামই পরিবর্তন
করে দিয়েছে। হ্যাঁ, যারা যেমন পূর্ব কল্পে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করেছিলো তারাই এসে
আবার প্রাপ্ত করবে। নিজের মনকে জিজ্ঞাসা করো যে আমি কি সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার নিতে
পারবো? মানুষ শরীর ছেড়ে দেয় যখন খালি হাতে যায়, সেই সমস্ত বিনাশী কিছু সাথে চলে
না। তোমরা শরীর ছাড়লে তো তোমাদের হাত ভর্তি, কারণ ২১ জন্মের জন্য তোমরা নিজেদের
উপার্জন জমা করছো। মানুষের তো সমস্ত উপার্জন মাটিতে মিশে যাবে। এর থেকে তো আমরা কেন
না ট্র্যান্সফার করে বাবাকে দিয়ে দিই। যারা অনেক দান পূণ্য করে তারা তো পরের জন্মে
বিত্তশালী হয়, ট্র্যান্সফার করে যে! এখন তোমরা ২১জন্মের জন্য নূতন দুনিয়াতে
ট্র্যান্সফার করো। তোমাদের রিটার্নে ২১ জন্মের জন্য প্রাপ্তি হয়। তারা তো এক
জন্মের জন্য অল্প সময়ের জন্য ট্রান্সফার করে। তোমরা তো ট্র্যান্সফার করো ২১ জন্মের
জন্য। বাবা তো হলেনই দাতা। এটা ড্রামাতে নির্ধারিত। যে যতো করে, তার প্রাপ্তি হয়।
তারা ইনডাইরেক্ট দান-পূণ্য করে বলে অল্প সময়ের সুখ রিটার্ন পায়। এটা হলো ডায়রেক্ট।
এখন সব কিছু নূতন দুনিয়াতে ট্র্যান্সফার করতে হবে। এনাকে (ব্রহ্মাকে) দেখছো কতো
বাহাদুরী দেখিয়েছেন ! তোমরা বলো সব কিছু ঈশ্বর দিয়েছেন। এখন বাবা বলেন, এই সব
আমাকে দাও। আমি তোমাদের বিশ্বের বাদশাহী দিচ্ছি। বাবা তো সবকিছু সাথে সাথে দিয়ে
দিয়েছেন, ভাবেনওনি। ফুল পাওয়ার দিয়ে দিয়েছেন (শিব বাবাকে) । আমি বিশ্বের বাদশাহী
পেতে চলেছি, সেই নেশা চড়ে গেছে তখন । বাচ্চাদের বা পরিবারের কথা কিছুই খেয়াল
করেননি। দেওয়ার জন্য ঈশ্বর আছেন যখন এরপর কি আর কারোর রেস্পন্সেবেল কি আর আছে! ২১
জন্মের জন্য ট্র্যান্সফার কীভাবে করতে হয়- এই বাবাকে অর্থাৎ ব্রহ্মা বাবাকে দেখো,
ফলো ফাদার। প্রজাপিতা ব্রহ্মা করেছেন তো! ঈশ্বর তো হলেন দাতা। তিনিই ওনাকে
করিয়েছেন। তোমরাও জানো আমরা এসেছি বাবার থেকে বাদশাহী নিতে। প্রত্যেকটা দিন টাইম
কমতে হতে থাকে। জাতীয় বিপর্যয় আসবে না জানিয়েই। ব্যবসায়ীদের শ্বাস তো মুঠিতে থাকে।
কোনো যমদূত যেন না আসে। সিপাইদের মুখ দেখলে লোক বেহুঁশ হয়ে যায়। ক্রমশ খুব বিরক্ত
করে। সোনা ইত্যাদি কিছুই রাখতে দেয় না। এছাড়া তোমাদের কাছে কি থাকবে? পয়সা থাকবে
না যে কিছু কিনতে পারবে। নোট ইত্যাদিও চলবে না। রাজ্য পরিবর্তিত হয়ে যায়। শেষে অনেক
দুঃখী হয়ে মরে। অনেক দুঃখের পর আবার সুখ হয়। এটা হলো বিনা দোষে মেরে দেওয়া।
ন্যাচারাল ক্যালামিটিসও হবে। এর আগেই বাবার থেকে সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার নেওয়ার উচিত।
যদি ঘোরাফেরাও করো তো শুধুই বাবাকে স্মরণ করো, তবে পবিত্র হয়ে যাবে। জাতীয় বিপর্যয়
আসবে। তখন মানুষ অনেক হায় হায় করতে থাকবে। তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের এখনি এই
প্র্যাক্টিস করতে হবে যে শেষে শুধুই শিববাবা স্মরণে আসবে। ওঁনার স্মরণে থেকেই শরীর
ত্যাগ করতে হবে, অন্য কোনো বন্ধু-পরিজন যেন স্মরণে না আসে। এই প্র্যাক্টিস করতে হবে।
বাবাকেই স্মরণ করতে হবে আর নারায়ণ হয়ে উঠতে হবে। এই প্র্যাক্টিস অনেক করতে হবে।
না হলে অনেক অনুশোচনা করতে হবে। আর কেউ স্মরণে এলে পাশ করতে পারবে না। যে পাশ করতে
পারে সেই বিজয় মালাতে আবর্তিত হতে পারে। নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে হবে বাবাকে কতোটা
স্মরণ করি? কিছু হাতে থাকলে সেটা শেষ সময়ে স্মরণে আসবে। হাতে না থাকলে তো স্মরণেও
আসবে না। বাবা বলেন আমার কাছে তো কিছুই নেই। এটা আমার জিনিস না। ওই নলেজের পরিবর্তে
এটা নিলে তো ২১ জন্মের জন্য উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবে। তা না হলে স্বর্গের বাদশাহী
হারিয়ে ফেলবে। তোমরা এখানে এসেই থাকো বাবার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করতে। অবশ্যই
পবিত্র হতে হবে। তা না হলে সাজা পেয়ে হিসেব-কিতেব মিটিয়ে যেতে হবে। কিছুই পদ
প্রাপ্ত হবে না। শ্রীমতে চললে তো কৃষ্ণেকে কোলে নিতে পারবে। কথায় আছে না কৃষ্ণের মতো
স্বামী বা সন্তান যদি প্রাপ্ত হয়! কেউ তো ভালো মতো বুঝতে পারে আবার কেউ উল্টো-পাল্টা
বলে দেয়। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
ব্রহ্মা বাবা যেমন নিজের সব কিছু ট্র্যান্সফার করে ফুল পাওয়ার (সম্পূর্ণ অধিকার)
বাবাকে দিয়ে দিয়েছিলেন, ভাবেননি, সেই রকম ফলো ফাদার করে ২১ জন্মের প্রালব্ধ জমা
করতে হবে।
২) প্র্যাক্টিস করতে
হবে শেষ সময়ে এক বাবা ব্যতীত আর কোনো কিছুই যেন স্মরণে না আসে। আমার কিছুই নয়, সবই
বাবার। অল্ফ আর বে - এই স্মৃতিতে পাশ করে বিজয় মালাতে আসতে হবে।
বরদান:-
লাভ আর
লাভলীন স্থিতির অনুভব দ্বারা সব কিছু ভুলে যেতে সক্ষম সদা দেহী অভিমানী ভব
কর্মে, বাণীতে,
সম্পর্কে বা সম্বন্ধে লভ আর স্মৃতি বা স্থিতিতে লভলীন থাকলে সব কিছু ভুলে
দেহী-অভিমানী হয়ে যাবে। ভালোবাসাই বাবার নিকটতম সম্বন্ধতে নিয়ে আসে, সর্বস্ব ত্যাগী
হতে হবে। এই ভালোবাসার বিশেষত্ব দিয়ে বা লভলীন স্থিতিতে থাকলেই সকল আত্মাদের ভাগ্য
বা লাক্ জাগিয়ে তুলতে পারবে। এই লভই হলো লাকের (সৌভাগ্যের) চাবি। এটা হলো মাষ্টার
কি (সব তালা খোলার চাবি)। এর দ্বারা যে কোনো রকমেরই দুর্ভাগ্যশালী আত্মাকে
সৌভাগ্যশালী করে দিতে পারো।
স্লোগান:-
নিজের
পরিবর্তনের সময় সুনিশ্চিত করলে বিশ্ব পরিবর্তন নিজে থেকেই হয়ে যাবে।