13.04.2021 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা -- বাচ্চারা, বাবা যা, যেমন তাঁকে তোমরাও নম্বরের অনুক্রমে সেভাবেই জেনেছো, যদি সকলেই জেনে যায় তবে তো অত্যন্ত ভীড় জমে যাবে"

প্রশ্নঃ -
চতুর্দিকে প্রত্যক্ষতার আওয়াজ কবে ছড়িয়ে পড়বে ?

উত্তরঃ -
যখন মানুষ জানবে যে স্বয়ং ঈশ্বর এই পুরোনো দুনিয়ার বিনাশ করে নতুন দুনিয়া স্থাপন করতে এসেছেন। ২) আমাদের সকলের সদ্গতিদাতা বাবা আমাদের ভক্তির ফল প্রদান করতে এসেছেন। এই নিশ্চয় থাকলে তবেই প্রত্যক্ষতা হয়ে যাবে। চতুর্দিকে হট্টগোল শুরু হয়ে যাবে।

গীতঃ-
যে প্রিয়তমের সঙ্গে রয়েছে.....

ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা গানের দু'লাইন শুনেছে। যে প্রিয়তমের সঙ্গে রয়েছে, এখন এই প্রিয়তমটি কে ! তা এই জগৎ জানে না। যদিও অসংখ্য বাচ্চা আছে, তবুও তার মধ্যে অনেকেই আছে যারা জানে না যে কিভাবে বাবাকে স্মরণ করা উচিত। সেইভাবে স্মরণ করতে জানে না। প্রতি মুহূর্তে ভুলে যায়। বাবা বোঝান -- বাচ্চারা, স্বয়ং-কে আত্মা মনে করো, আমরা বিন্দু। বাবা জ্ঞানের সাগর, ওঁনাকেই স্মরণ করতে হবে। স্মরণের যেন এমন অভ্যাস হয়ে যায় যে নিরন্তর স্মরণ চলতে থাকে। পরে যেন এটাই স্মরণে থাকে যে, আমি আত্মা, শরীরও আছে কিন্তু এই জ্ঞান বুদ্ধিতে রাখতে হবে যে, আমি আত্মা। বাবার ডায়রেক্শন পেয়েছো যে, আমি যা সেইরূপে কোনো বিরল ব্যক্তিই স্মরণ করে। বাচ্চারা অত্যন্ত দেহ-অভিমানে থাকে। বাবা বোঝান -- কাউকে যতক্ষণ না পর্যন্ত বাবার পরিচয় দিয়েছো ততক্ষণ পর্যন্ত কিছুই বুঝতে পারবে না। প্রথমে তো তারা এটাই জানুক যে সেই নিরাকার আমাদের বাবা, গীতার ভগবান, সকলের সদ্গতিদাতা। তিনি এখন সদ্গতি দানের ভূমিকা পালন করছেন। এই পয়েন্টে যদি নিশ্চয়বুদ্ধি হয়ে যায় তবে এত যে সাধু-সন্তাদি রয়েছে সকলেই এক সেকেন্ডে চলে আসবে। ভারতে বড় হট্টগোল বেঁধে যাবে। এখন যদি জানতে পারে যে এই জগৎ বিনাশপ্রাপ্ত হবে। এই কথায় যদি নিশ্চয় হয়ে যায় তবে মুম্বই থেকে আবু পর্যন্ত লাইন পড়ে যাবে। কিন্তু এত শীঘ্র কারোর নিশ্চয় আসতে পারে না। তোমরা জানো যে বিনাশ হবে, এরা সকলে গভীর নিদ্রায় ঘুমিয়ে থাকবে। পুনরায় অন্তিম সময়ে তোমাদের প্রভাব দেখা যাবে। মাসির বাড়ি যাওয়ার মতো সহজ ব্যাপার নয় যে এই কথায় নিশ্চয় হয়ে যাবে যে, গীতার ভগবান পরমপিতা পরমাত্মা শিব। এ'কথা প্রসিদ্ধ হয়ে গেলে সমগ্র ভারতে আওয়াজ উঠবে। এখন তো তোমরা একজনকে বোঝালে অন্যে বলবে তোমরা মোহজালে আবদ্ধ হয়ে গেছো। এই বৃক্ষ অতি ধীরে-ধীরে বৃদ্ধি পাবে। সময় এখন সামান্যই রয়েছে তবুও পুরুষার্থ করতে কোনো অসুবিধা নেই। তোমরা গন্যমান্যদের বোঝাও, কিন্তু তারা কি কিছু বোঝে নাকি! বাচ্চাদের মধ্যেও অনেকেই এই নলেজকে বোঝে না। বাবার স্মরণেও নেই তাই তেমন স্থিতিও নেই। বাবা জানেন যে নিশ্চয় কাকে বলে। মুশকিলই এখন ১-২ শতাংশই হবে যারা বাবাকে স্মরণ করে। যদিও এখানে বসে রয়েছে, বাবার সঙ্গে সেই ভালোবাসা থাকে না। এরজন্য ভালোবাসা চাই, ভাগ্য চাই। বাবার সঙ্গে ভালোবাসা থাকলে তবেই বুঝবে, প্রতিটি পদক্ষেপে আমাদের বাবার শ্রীমতানুসারে চলতে হবে। আমরা বিশ্বের মালিক হয়ে যাই। আধাকল্পের দেহ-অভিমান বসে রয়েছে তাই এখন দেহী-অভিমানী হতে অত্যন্ত পরিশ্রম লাগে। নিজেকে আত্মা মনে করে প্রিয়তম বাবাকে স্মরণ করা মাসির বাড়ি যাওয়ার মতো সহজ নয়। তাদের চেহারাতেই ঔজ্জ্বল্য থাকবে। কন্যা যখন বিয়ে করে, অলঙ্কারাদি পড়ে তখন তার চেহারায় খুশী সম্পূর্ণরূপে ধরা পড়ে। কিন্তু এখানে তো প্রিয়তমকে স্মরণই করে না, সে'জন্য চেহারা ঔজ্জ্বল্যহীন হয়ে থাকে। সে'কথা আর জিজ্ঞাসা কোরো না। কন্যা যখন বিয়ে করে তখন তার চেহারা খুশীতে ভরে যায়। কারো-কারোর মুখ তো আবার বিয়ের পরেও মৃত মানুষের মতন থাকে। নানারকমের হয়। কেউ আবার অন্য ঘরে (পরগৃহে) গিয়ে দুঃখী হয়ে পড়ে। এখানেও এমন হয়। বাবাকে স্মরণ করতেই পরিশ্রম। এই গায়ন অন্তিম সময়ের যে অতীন্দ্রিয় সুখের কথা গোপী-বল্লভের গোপ-গোপিনীদের কাছে জিজ্ঞাসা করো। নিজেকে গোপ-গোপিনী মনে করা আর নিরন্তর বাবার স্মরণে থাকা, এমন স্থিতি হতে হবে। বাবার পরিচয় সকলকে দিতে হবে। বাবা এসেছেন, তিনি উত্তরাধিকার প্রদান করছেন। এরমধ্যেই সমগ্র জ্ঞান চলে আসে। লক্ষ্মী-নারায়ণ যখন ৮৪ জন্ম সম্পূর্ণ করে তখন বাবা অন্তিমে এসে রাজযোগ শিখিয়ে রাজত্ব প্রদান করেন। লক্ষ্মী-নারায়ণের এই চিত্রই নম্বর ওয়ান। তোমরা জেনেছো যে ওঁনারা পূর্বজন্মে এমন কর্ম করেছিলেন, সেই কর্মই বাবা এখন শেখাচ্ছেন। তিনি বলেন -- মন্মনাভব, পবিত্র হয়ে থাকো। কোনও পাপ কোরো না কারণ তোমরা এখন স্বর্গের মালিক, পুণ্যাত্মা হতে চলেছো। অর্ধেক কল্প ধরে মায়া রাবণ পাপ করিয়ে এসেছে। এখন নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে হবে -- আমার দ্বারা কোনো পাপ হয়ে যাচ্ছে না তো ? পুণ্যকর্ম করে কি ? অন্ধের লাঠি হয়েছি কি ? বাবা বলেন -- "মন্মনাভব" । এও জিজ্ঞাসা করতে হয় যে মন্মনাভব কে বলেছেন ? ওরা বলবে কৃষ্ণ বলেছে। তোমরা বিশ্বাস করো যে পরমপিতা পরমাত্মা শিব বলেছেন। রাত-দিনের পার্থক্য। শিব-জয়ন্তীর সঙ্গে গীতা-জয়ন্তীও রয়েছে। গীতা-জয়ন্তীর সঙ্গে কৃষ্ণ-জয়ন্তী। তোমরা জানো যে আমরা ভবিষ্যতে প্রিন্স হবো। বেগার টু প্রিন্স হতে হবে। এটাই হলো রাজযোগের এইম অবজেক্ট। তোমরা প্রমাণ করে বলো যে গীতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ছিল না, তিনি ছিলেন নিরাকার। তাহলেই সর্বব্যাপীর জ্ঞান উড়ে যাবে। সকলের সদ্গতিদাতা, পতিত-পাবন হলেন বাবা। বলাও হয় যে তিনি হলেন মুক্তিদাতা, পুনরায় সর্বব্যাপী বলে দেয়। যা কিছু বলে, তা বোঝে না। ধর্মের বিষয়ে যা কিছু (মনে) আসে তাই বলে দেয়। মুখ্য ধর্ম হলো তিনটি। দেবী-দেবতা ধর্ম অর্ধেককল্প চলে। তোমরা জানো বাবা ব্রাহ্মণ, দেবতা, ক্ষত্রিয় ধর্ম স্থাপন করেন। এই জগৎ তা জানে না। ওরা তো সত্যযুগকেই লক্ষ-লক্ষ বছর বলে দিয়েছে। আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম সর্বাপেক্ষা উচ্চ। কিন্তু এরা নিজেদের ধর্মকে ভুলে ধর্মবিমুখ (অধার্মিক) হয়ে পড়েছে। খ্রিস্টানরা নিজেদের ধর্মকে ত্যাগ করে না। ওরা জানে -- খ্রাইস্টই আমাদের ধর্মের স্থাপনা করেছিলেন। ইসলাম, বৌদ্ধ, তারপর খ্রিস্টান, এই হলো মুখ্য ধর্ম। এছাড়া ছোট-ছোট অনেক রয়েছে। কোথা থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে ? তা কেউ জানে না। (হজরত) মোহম্মদের এখন অল্পসময়ই হয়েছে, ইসলাম পুরোনো। খ্রিস্টানও বিখ্যাত। এছাড়া কত অসংখ্য রয়েছে। সকলের নিজের-নিজের ধর্ম রয়েছে। নিজেদের বিভিন্ন ধর্ম, বিভিন্ন নাম রয়েছে তাই বিভ্রান্ত হয়ে গেছে। এ'কথা জানে না যে মুখ্য ধর্মশাস্ত্র রয়েছে ৪টি। এরমধ্যে দেবত্ব, ব্রাহ্মণত্বও এসে যায়। ব্রাহ্মণ তথা দেবতা, দেবতা তথা ক্ষত্রিয়, তা কারোর জানা নেই। গীতও গায় ব্রাহ্মণ দেবতায় নমঃ। পরমপিতা ব্রাহ্মণ, দেবতা, ক্ষত্রিয় ধর্মই স্থাপন করেছেন। শব্দ গুলোও রয়েছে, কিন্তু পড়ে এমনভাবে যেন তোতাপাখি। এ হলো কাঁটার জঙ্গল। ভারত গার্ডেন অফ ফ্লাওয়ার ছিল, তা মানে। কিন্তু তা কখন, কিভাবে, কে করেছিল, পরমাত্মা কি বস্তু, তা কেউই জানে না। তবেই তো অনাথ হয়ে গেছে, তাই না! সেইজন্যই এই লড়াই-ঝগড়া ইত্যাদি হয়। কেবল ভক্তি করেই খুশীতে থাকে। এখন বাবা এসেছেন আলোকজ্জ্বল করতে, সেকেন্ডে জীবনমুক্তি দেন। অজ্ঞান অন্ধকার বিনাশের জন্য সদ্গুরু জ্ঞান-অঞ্জন দিয়েছেন। তোমরা এখন জানো যে আমরা আলোয় রয়েছি। বাবা তৃতীয় নেত্র প্রদান করেছেন। যদিও দেবতাদের ত্রিনেত্র দেখানো হয়েছে কিন্তু অর্থ কিছুই জানে না। বাস্তবে ত্রিনেত্র রয়েছে তোমাদের। ওরা (অজ্ঞানী) আবার তা দিয়ে দিয়েছে দেবতাদের। গীতায় ব্রাহ্মণদের কোনো কথাই নেই। তাতে আবার কৌরব, পান্ডবাদির লড়াই, ঘোড়ার গাড়ি(রথ) ইত্যাদি লিখে দিয়েছে, কিছুই বোঝে না। তোমরা বোঝালে বলবে যে, তোমাদের শাস্ত্রাদির প্রতি বিশ্বাস নেই। তোমরা বলতে পারো যে, জানো কি! আমরা শাস্ত্রকে কেন মান্য করি না ! কারণ এ'সব ভক্তিমার্গের সামগ্রী। গায়নও রয়েছে, জ্ঞান আর ভক্তি। যখন রাবণ-রাজ্য আসে তখন ভক্তি শুরু হয়। ভারতবাসী বাম-মার্গে গিয়ে ধর্মভ্রষ্ট এবং কর্মভ্রষ্ট হয়ে যায় তাই এখন হিন্দু বলা হয়। অপবিত্র হয়ে গেছে। অপবিত্র কে করেছে ? রাবণ । রাবণকে দহন করা হয়, মনে করে যে এ তো পরম্পরাগতভাবে হয়ে আসছে। কিন্তু সত্যযুগে তো রাবণ-রাজ্য ছিলই না। কিছুই বোঝে না। মায়া সম্পূর্ণ প্রস্তরবুদ্ধিসম্পন্ন করে দেয়। পাথর থেকে পারশে পরিণত বাবা-ই করেন। যখন (বাবা) আয়রন-এজে (কলিযুগে) আসবেন তখনই তো গোল্ডেন এজ (সত্যযুগ) স্থাপন করবেন। বাবা বোঝাতে থাকেন তবুও এ'কথা অত্যন্ত মুশকিলই কারোর বুদ্ধিতে বসে। তোমাদের অর্থাৎ কুমারীদের এখন বাগদান হয়। তোমাদের পাটরানী করেন। তোমাদের ভাগিয়ে নিয়ে গেছিল অর্থাৎ আত্মা-রূপী তোমাদের বলেন -- তোমরা আমার ছিলে এখন তোমরা আমায় ভুলে গেছো। দেহ- অভিমানী হয়ে মায়ার বশে হয়ে যাও। এছাড়া ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়ার তো কোনো কথাই নেই। মামেকম্ স্মরণ করো। স্মরণেই পরিশ্রম। অনেকেই দেহ-অভিমানে এসে বিকর্ম করে। বাবা জানেন যে এই আত্মা আমায় স্মরণই করে না। দেহ-অভিমানে এসে অনেক পাপ করে তাই পাপের ঘড়া শতগুণ ভরে যায়। অন্যদের মার্গদর্শনের পরিবর্তে স্বয়ং-ই ভুলে যায়। আরোই অধিক দুর্গতি ভোগ করে। লক্ষ্য অনেক উঁচু। উত্তরণে (চড়লে) বৈকুন্ঠ-রস চাখতে পারবে, অধঃপতনে চুর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে। এই রাজত্ব স্থাপিত হচ্ছে। দেখো, এতে কত পার্থক্য হয়ে যায়। কেউ আবার অধ্যয়ন করে আকাশে উঠে যায়, কেউ ভূমিতে পড়ে যায়। বুদ্ধি ডাল (প্রখরতা নেই) তাই পড়তে পারে না। কেউ-কেউ বলে -- বাবা আমরা কাউকে বোঝাতে পারি না। আমি বলি -- আচ্ছা, কেবল নিজেকে আত্মা মনে করো, আমাকে অর্থাৎ বাবাকে স্মরণ করো তাহলেই আমি তোমাদের সুখ প্রদান করবো। কিন্তু স্মরণই করে না। স্মরণ করলে তবেই তো অন্যদের স্মরণ করাতে থাকবে। বাবাকে স্মরণ করলে পাপ বিনষ্ট হয়ে যায়। ওঁনাকে স্মরণ ব্যতীত তোমরা সুখধামে যেতে পারবে না। ২১ জন্মের উত্তরাধিকার বাবার থেকেই প্রাপ্ত হতে পারে। বাকি সকলেই তো অল্পসময়ের জন্য সুখ দিয়ে থাকেন। কেউ রিদ্ধি-সিদ্ধির(জাদু) দ্বারা সন্তান প্রাপ্ত করে বা আশীর্ব্বাদের দ্বারা লটারি পেয়ে যায়, ব্যস্ তখন বিশ্বাস হয়ে যায়। কারোর যদি ২-৪ কোটি লাভ হয়ে যায় তখন অত্যন্ত মহিমা করতে থাকবে। কিন্তু তা হলো অল্প সময়ের জন্য। ২১ জন্মের জন্য তো হেল্থ-ওয়েল্থ পেতে পারে না। কিন্তু মানুষ তা জানে না। দোষ দেওয়াও যেতে পারে না। অল্পসময়ের সুখেই খুশী হয়ে যায়। বাচ্চারা, বাবা তোমাদের রাজযোগ শিখিয়ে স্বর্গের রাজত্ব প্রদান করেন। কত সহজ। কেউ তো একদমই বোঝাতে পারে না। কেউ বুঝতেও পারে কিন্তু যোগযুক্ত না থাকার কারণে কারোর তীর লাগে না। দেহ-অভিমানে আসার কারণে কিছু না কিছু পাপ হতেই থাকে। যোগই মুখ্য। তোমরা যোগবলের দ্বারাই বিশ্বের মালিক হও। প্রাচীন যোগ ঈশ্বরই শিখিয়েছিলেন, শ্রীকৃষ্ণ নয়। স্মরণের যাত্রা অত্যন্তই ভাল। তোমরা নাটক দেখে এলে সবকিছু তোমাদের সামনে বুদ্ধিতে চলে আসবে। কাউকে বলতে সময় লাগবে। এও তেমনই। বীজ এবং বৃক্ষ। এই চক্র অত্যন্ত পরিষ্কার। শান্তিধাম, সুখধাম, দুঃখধাম.....সেকেন্ডের কাজ, তাই না! কিন্তু স্মরণে থাকবে, তবেই না! মুখ্য বিষয় হলো বাবার পরিচয়। বাবা বলেন -- আমায় স্মরণ করলে তোমরা সবকিছু জেনে যাবে। আচ্ছা। বাচ্চারা, শিববাবা তোমাদের স্মরণ করেন, ব্রহ্মাবাবা স্মরণ করেন না। শিববাবা জানেন যে কোন্-কোন্ বাচ্চারা আমার সুপুত্র। সার্ভিসেবেল সুসন্তানদের তিনি স্মরণ করেন। ইনি(ব্রহ্মা) কি কাউকে স্মরণ করবেন নাকি, না তা করবেন না। এঁনার আত্মাকেও তো ডায়রেক্শন দেওয়া রয়েছে -- মামেকম্ স্মরণ করো। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) সৌভাগ্যশালী হওয়ার জন্য অদ্বিতীয় পিতার সঙ্গে সত্যিকারের ভালোবাসার সম্পর্ক রাখতে হবে। ভালবাসা অর্থাৎ প্রতিটি পদক্ষেপে একজনের শ্রীমতানুসারেই চলতে থাকা।

২ ) প্রত্যহ পুণ্য কর্ম অবশ্যই করতে হবে। সর্বাপেক্ষা বড় পুণ্য হলো সকলকে বাবার পরিচয় দেওয়া। বাবাকে স্মরণ করা এবং সকলকে স্মরণ করানো।

বরদান:-
স্থূল কার্য করতে-করতেও মনের(মন্সা) দ্বারা বিশ্ব-পরিবর্তনের সেবাদানকারী দায়িত্ব সচেতন আত্মা ভব

কোনো স্থূলকার্য করতে-করতেও সর্বদা যেন এই স্মৃতি থাকে যে আমি বিশ্বের পটভূমিতে বিশ্ব-কল্যাণের সেবার্থে নিমিত্ত হয়েছি। আমি নিজের শ্রেষ্ঠ মন্সার দ্বারা বিশ্ব-পরিবর্তনের কার্যের অনেক বড় দায়িত্ব পেয়েছি। এই স্মৃতিতে থাকলে দায়িত্বে অসচেতনতা সমাপ্ত হয়ে যাবে আর সময়ও ব্যর্থভাবে অতিবাহিত হয়ে যাবে না। প্রতিটি সেকেন্ড অমূল্য মনে করে বিশ্ব-কল্যাণের উদ্দেশ্যে অথবা জড়কে চৈতন্যে পরিবর্তন করার কার্যকে সফল করতে থাকবে।

স্লোগান:-
এখন যোদ্ধা হওয়ার পরিবর্তে নিরন্তর যোগী হও।