16.04.2021 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


“মিষ্টি বাচ্চারা - বাবা এবং উত্তরাধিকারের কথা স্মরণ করলেই তোমরা রমণীয় (মনোরঞ্জনের অনুভব হবে) হয়ে যাবে, বাবাও রমণীয়, তাই বাচ্চাদেরও রমণীয় হওয়া উচিত”

প্রশ্নঃ -
দেবতাদের ছবির প্রতি সবাই আকৃষ্ট হয় কেন ? তাদের মধ্যে কোন্ বিশেষ গুণ বিদ্যমান ?

উত্তরঃ -
দেবতারা খুব রমণীয় এবং পবিত্র। মনোরঞ্জক হওয়ার জন্য তাদের ছবির প্রতি সকলে আকৃষ্ট হয়। দেবতাদের মধ্যে পবিত্রতার বিশেষ গুণও রয়েছে। এই গুণ থাকার জন্যই অপবিত্র মানুষ তাদের সামনে নত মস্তক হয়। সে-ই মনোরঞ্জক হতে পারে, যার মধ্যে সমস্ত দিব্যগুণ রয়েছে এবং যে সর্বদা খুশিতে থাকে।

ওম্ শান্তি ।
আত্মা এবং পরমাত্মার মিলন কতোই না বিস্ময়কর। তোমরা এইরকম অসীম জগতের পিতার সন্তান, তাই সন্তানদেরকেও কতো মনোরঞ্জক হতে হবে। দেবতারাও খুব মনোরঞ্জক। কিন্তু রাজধানী তো অনেক বড়। সবাই এইরকম মনোরঞ্জক হবে না। তবে কোনো কোনো সন্তান অবশ্যই খুব মনোরঞ্জক। কারা মনোরঞ্জক হতে পারে ? যে সর্বদা খুশিতে থাকে এবং যার মধ্যে দিব্যগুণ রয়েছে। এই রাধা-কৃষ্ণও খুব মনোরঞ্জক ছিল, তাই না ? ওরা খুবই চিত্তাকর্ষক। কিসের আকর্ষণ ? কারণ এদের আত্মাও পবিত্র এবং তার সঙ্গে শরীরও পবিত্র। আর পবিত্র আত্মারা অপবিত্রদেরকে আকর্ষণ করে। তাদের পায়ে পড়ে। তাদের মধ্যে অনেক শক্তি থাকে। হয়তো ওরা সন্ন্যাসী, কিন্তু ওরাও দেবতাদের সামনে নতমস্তক হয়। হয়তো কেউ কেউ খুব অহংকারী হয়, কিন্তু তা সত্ত্বেও দেবতাদের সামনে কিংবা শিবের সামনে অবশ্যই মাথা নত করবে। দেবীদের ছবির সামনেও মাথা নত করে, কারন বাবাও যেমন মনোরঞ্জক, বাবার সৃষ্টি করা দেবী-দেবতারাও সেইরকম মনোরঞ্জক। তাদের মধ্যে পবিত্রতার আকর্ষণ রয়েছে। তাদের সেই আকর্ষণ এখনো রয়েছে। এরা যতটা চিত্তাকর্ষক, তোমরা যারা লক্ষ্মী-নারায়ণ হতে চাও, তাদেরকেও সেইরকম আকর্ষক হতে হবে। এইসময়ে তোমাদের এই আকর্ষণ অবিনাশী হয়ে যায়। তবে সকলে এইরকম হয় না। ক্রমানুসারে হয়। যারা ভবিষ্যতে উঁচু পদমর্যাদা পাবে, তারা এখন থেকেই চিত্তাকর্ষক হবে, কারণ আত্মা পবিত্র হয়ে যায়। তোমাদের মধ্যে তারাই বেশী চিত্তাকর্ষক হয়, যারা স্মরণের যাত্রার জন্য বিশেষ সময় দেয়। যাত্রা করার সময়ে অবশ্যই পবিত্র থাকে। পবিত্রতার মধ্যেই আকর্ষণ রয়েছে। পবিত্রতার প্রতি আকর্ষণ, পড়াশুনার ক্ষেত্রেও আকর্ষক বানিয়ে দেয়। এইসব তোমরাই এখন জেনেছ। তোমরা ওদের (লক্ষ্মী-নারায়ণ) অক্যুপেশন সম্বন্ধে জেনেছো। ওরাও নিশ্চয়ই বাবাকে অনেক স্মরণ করেছিল। ওরা যে এতো রাজত্ব পেয়েছিল, সেইসব নিশ্চয়ই রাজযোগের দ্বারা পেয়েছিল। এখন তোমরা এখানে ওই পদপ্রাপ্তির জন্য এসেছ। বাবা স্বয়ং বসে থেকে তোমাদেরকে রাজযোগ শেখাচ্ছেন। এই বিষয়ে পুরো নিশ্চিত হয়েই তোমরা এখানে এসেছে তো ? বাবাও তিনি, শিক্ষাদাতাও তিনি। তিনিই সাথে করে নিয়ে যাবেন। তো, এই গুণটা যেন সর্বদাই থাকে। সবসময় হাসিমুখে থাকো। বাবার স্মরণে থাকলেই সর্বদা হাসিখুশি থাকতে পারবে। তখন উত্তরাধিকারের কথাও স্মরণে থাকবে এবং মনোরঞ্জকও হয়ে যাবে। তোমরা বাচ্চারা জানো যে এখানে আমরা মনোরঞ্জক হলে, ভবিষ্যতেও এইরকম মনোরঞ্জক হব। এখানে যা শিক্ষালাভ করা হয়, সেটাই অমরপুরীতে নিয়ে যায়। এই সত্যিকারের বাবা তোমাদেরকে সত্যিকারের উপার্জন করাচ্ছেন। এই সত্যিকারের উপার্জন ২১ জন্মের জন্য সাথে থাকবে। তারপর ভক্তিমার্গে যে উপার্জন করবে সেটা ক্ষণিকের সুখের জন্য। ওটা সর্বদা সঙ্গে থাকবে না। অতএব, বাচ্চাদেরকে এই পড়াশুনায় খুব মন দিতে হবে। তোমরাও সাধারণ, আর তোমাদেরকে যিনি শিক্ষা দিচ্ছেন তিনিও অতি সাধারণ রূপেই রয়েছেন। তাই যারা শিক্ষা গ্রহণ করছে, তারাও নিশ্চয়ই সাধারণ হবে। নাহলে তো লজ্জা হবে। আমরা কীভাবে ভালো পোশাক পড়ব ? আমাদের মা-বাবা কতো সাধারণ থাকেন, তাই আমরাও অতি সাধারণ। এনারা কেন এতো সাধারণ থাকেন ? কারণ এটা তো বনবাস। এখন তোমাদেরকে ফেরৎ যেতে হবে। এখানে কোনো বিয়ে করতে হবে না। ওরা যখন বিয়ে করে, তখন কুমারীরা বনবাসে থাকে। ময়লা কাপড় পড়ে, তেল দেয়, কারন শ্বশুর বাড়ী যায়। ব্রাহ্মণের দ্বারা আশীর্বাদ সম্পন্ন হয়। তোমাদেরকেও শ্বশুর বাড়ী যেতে হবে। রাবণ পুরী থেকে রাম পুরী বা বিষ্ণু পুরীতে যেতে হবে। এই বনবাসে থাকার নিয়ম রাখার কারন হলো, দেহের কিংবা পোশাকের কোনো অভিমান যেন না থাকে। কারোর হয়তো সাধারণ শাড়ি আছে, সে যদি দেখে যে অন্য কারোর কাছে ভালো শাড়ি আছে, তখন সে ভাবে - এ তো বনবাসে নেই। কিন্তু তোমরা বনবাসে এইরকম সাধারণ ভাবে থেকেও কাউকে এত শ্রেষ্ঠ জ্ঞান শোনাও, এতো নেশায় থাকো যে তার বুদ্ধিতেও তীর লেগে যায়। হয়তো বাসন মাজছ কিংবা কাপড় ধুচ্ছ, কিন্তু তোমাদের সামনে কেউ এলেই সঙ্গে সঙ্গে তাকে বাবার কথা স্মরণ করাও। তোমরা যদি এই নেশায় থাকো, আর সাদা পোশাক পড়ে কাউকে জ্ঞান শোনাও, তাহলে ঐ ব্যক্তিও আশ্চর্য হয়ে যাবে যে এদের কাছে এতো শ্রেষ্ঠ জ্ঞান আছে ! এটা তো ভগবানের দেওয়া গীতাজ্ঞান। রাজযোগ তো গীতার জ্ঞান। এইরকম নেশা হয় কি ? যেমন বাবা নিজের উদাহরণ দেন। মনে করো আমি বাচ্চাদের সঙ্গে খেলছি। তখন কোনো কৌতূহলী ব্যক্তি যদি আমার সামনে আসে, তবে সঙ্গে সঙ্গে তাকে বাবার পরিচয় দিয়ে দিই। যোগের শক্তি থাকার জন্য সেই ব্যক্তি সেখানেই দাঁড়িয়ে যাবে আর আশ্চর্য হয়ে ভাববে যে এতো সাধারণ একজন মানুষের মধ্যে এতো শক্তি ! তখন সে আর কিছুই বলতে পারবে না। মুখ থেকে একটাও কথা বেরোবে না। তোমরা যেমন বাণীর ওপরে রয়েছ, সেই ব্যক্তিও তখন বাণীর ঊর্ধ্বে উঠে যাবে। অন্তরে এইরকম নেশা থাকা উচিত। যেকোনো ভাই-বোন এলেই তাকে দাঁড় করিয়ে বিশ্বের মালিক হওয়ার শ্রেষ্ঠ মত শোনাতে পারো। অন্তরে এইরকম নেশা থাকতে হবে। নিজেই উৎসাহিত হয়ে সেবা করতে হবে। বাবা সবসময় বলেন যে তোমাদের কাছে জ্ঞান থাকলেও যোগের শক্তি নেই। পবিত্র এবং যোগযুক্ত থাকলেই তীক্ষ্ণতা আসবে। স্মরণের যাত্রার দ্বারা-ই তোমরা পবিত্র হয়ে যাও। শক্তি আসে। জ্ঞানের সাথে সম্পত্ত্বির সম্পর্ক রয়েছে। যেমন স্কুলে পড়াশুনা করে এম.এ., বি.এ. ইত্যাদি পাস করলে সেইরকম উপার্জন করতে পারে। এখানে বিষয়গুলো আলাদা। ভারতের প্রাচীন যোগ সুপ্রসিদ্ধ। এটাই হলো স্মরণ। বাবা সর্ব শক্তিমান হওয়ার কারণে বাচ্চারা বাবার কাছ থেকে শক্তি পেয়ে যায়। বাচ্চাদের অন্তরেও থাকতে হবে যে আমরা বাবার সন্তান হলেও বাবার মতো পবিত্র নই। এখন ঐরকম হতে হবে। এটাই এখন এম অবজেক্ট। যোগের দ্বারা তোমরা পবিত্র হয়ে যাও। যারা অনন্য সন্তান, তারা সারাদিন ধরে এইরকম চিন্তন করবে। যেকোনো ব্যক্তি এলেই আমি তাকে রাস্তা বলে দেব। করুণা হওয়া উচিত - এ তো বেচারা অন্ধ। অন্ধ ব্যক্তিকে লাঠি ধরিয়ে নিয়ে যায়। এরাও সবাই জ্ঞান চক্ষুহীন অন্ধ।

তোমরা এখন জ্ঞানের ত্রিনয়ন পেয়েছ, তাই সবকিছু জেনে গেছ। সমগ্র সৃষ্টির আদি, মধ্য এবং অন্তকে আমরা এখন জেনে গেছি। এগুলো সব ভক্তিমার্গের বিষয়। তোমরা কি আগেও জানতে যে মন্দ কিছু শুনতে নেই, মন্দ কিছু দেখতে নেই…? এই ছবিটা কেন বানানো হয়েছিল ? দুনিয়ার কেউই এই ছবির অর্থ বোঝে না। তোমরা এখন বুঝতে পেরেছো। বাবা যেমন নলেজফুল, সেইরকম তাঁর সন্তান হয়ে তোমরাও এখন নলেজফুল হয়ে যাচ্ছ। তবে পুরুষার্থের ক্রমানুসারে। কোনো কোনো বাচ্চার অনেক নেশা হয়ে যায়। বাঃ ! বাবার সন্তান হয়েও যদি বাবার কাছ থেকে সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার না নিলাম, তবে বাচ্চা হয়ে কি করলাম ? প্রতিদিন রাত্রে নিজের দিনলিপি দেখ। বাবা তো ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীরা সহজেই প্রতিদিনের হিসাব রাখতে পারে। সরকারি কর্মচারীরা সহজে প্রতিদিনের হিসাব রাখতে পারে না। ওরা ব্যবসা করে না। ব্যবসায়ীরা এটা ভালো বুঝবে। তোমরাও ব্যবসায়ী। তোমরা নিজের লাভ লোকসানের বিষয়টা বুঝতে পারবে। তাই প্রতিদিন রাত্রে নিজের দিনলিপি দেখ। নিজের কারবার সামলাও। লাভ হচ্ছে নাকি লোকসান হয়ে যাচ্ছে ? তোমরা তো সওদাগর। গায়ন আছে - বাবা হলেন সওদাগর, রত্নাকর… ইত্যাদি। অবিনাশী জ্ঞান রত্নের ব্যবসা করেন। পুরুষার্থের ক্রম অনুসারে এগুলো তোমরা জানো। সকলেই তীক্ষ্ণ বুদ্ধির অধিকারী নয়। এক কান দিয়ে শোনার পর অন্য কান দিয়ে বেরিয়ে যায়। ঝুলির (থলি) ছিদ্র দিয়ে বেরিয়ে যায়। ঝুলি আর ভর্তি হয় না। বাবা বলেন, ধনসম্পদ দান করলে কখনো সেগুলো কমে যায় না। এগুলো এমন জ্ঞানরত্ন যার কোনো বিনাশ নেই। বাবা হলেন জ্ঞানী এবং যোগী। আত্মা রয়েছে এবং আত্মার মধ্যেই জ্ঞান রয়েছে। তাঁর সন্তান হয়ে তোমরাও জ্ঞানী-যোগী হয়েছ। আত্মার মধ্যেই জ্ঞান ভরে দেওয়া হয়। আত্মার নির্দিষ্ট রূপ আছে। হয়তো আত্মা খুব ছোট, কিন্তু একটা রূপ তো অবশ্যই আছে। আত্মার উপস্থিতি জানতে পারা যায়। পরমাত্মাকেও জানতে পারা যায়। সোমনাথের পূজা করার সময়ে এতো ছোট স্টারকে কিভাবে পূজা করবে ? তাই পূজার জন্য অনেক লিঙ্গ বানিয়েছে। ছাদের সমান উচ্চতার বড় বড় শিবলিঙ্গ বানায়। হয়তো রূপে খুব ছোট, কিন্তু তাঁর পদ তো কতো বড়।

আগের কল্পেও বাবা বলেছিলেন যে জপ, তপ ইত্যাদির দ্বারা কোনো প্রাপ্তি হয় না। এইসব করতে করতেই ক্রমশ অধঃপতন হয়েছে। সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে এসেছ। তোমাদের এখন উন্নতি হচ্ছে। তোমরা ব্রাহ্মণরা হলে এক নম্বর জিন। গল্পে আছে - একটা জিন বলেছিল যে তাকে কাজ না দিলে সে খেয়ে ফেলবে। তখন তাকে কাজ দেওয়া হলো - সিঁড়ি দিয়ে ওঠো আর নামো। সেই জিন তখন কাজ পেয়ে গেল। বাবা এখন বলছেন, তোমরা এই অসীম জগতের সিঁড়ি দিয়ে নামো, তারপর আবার ওঠো। তোমরাই পুরো সিঁড়ি নেমে আসো, এবং তারপর ওঠো। তোমরাই হলে জিন। অন্য কেউ পুরো সিঁড়ি ওঠে না। পুরো সিঁড়ির জ্ঞান পাওয়ার জন্য তোমরা কতো উঁচু পদ পেয়ে যাও। তারপর আবার নীচে নামো, তারপর আবার ওপরে ওঠো। বাবা বলছেন - আমি তোমাদের পিতা। তোমরা আমাকে পতিত পাবন বলো। আমি হলাম সর্বশক্তিমান কারন আমি আত্মা সর্বদা ১০০ শতাংশ পবিত্র থাকি। আমার রূপ বিন্দু, আমিই অথরিটি। সকল শাস্ত্রের রহস্য আমি জানি। কতো আশ্চর্যের ব্যাপার। এগুলো খুব ওয়ান্ডারফুল নলেজ। কখনোই শোনোনি যে আত্মার মধ্যে ৮৪ জন্মের অবিনাশী ভূমিকা ভরা আছে যেটা কখনোই মুছে যায় না। ক্রমাগত আবর্তিত হয়। ৮৪ জন্মের চক্র আবর্তিত হয়। ৮৪ জন্মের রেকর্ড ভরা আছে। কতো ছোট আত্মার মধ্যে এত জ্ঞান ভরা আছে। বাবার মধ্যেও আছে, তোমাদের মতো বাচ্চাদের মধ্যেও আছে। কতো রকম ভূমিকায় অভিনয় করতে হয়। এইসব পার্ট কখনোই মুছে যাবে না। এই চোখের দ্বারা আত্মাকে কখনোই দেখা যায় না। আত্মার রূপ হলো বিন্দু। বাবা বলেন, আমিও বিন্দু রূপ। তোমরা বাচ্চারাও এখন এই কথাটা বুঝতে পারো। তোমরা হলে অসীম জগতের ত্যাগী এবং রাজঋষি। কতো নেশা হওয়া উচিত। রাজঋষি একেবারে পবিত্র থাকে। সূর্যবংশী আর চন্দ্রবংশীরা হলো রাজঋষি, যারা এখানে রাজত্ব নিচ্ছে। বাচ্চারা জানে যে আমরা এখন যাচ্ছি। মাঝির নৌকায় বসে আছো। এটাও জানো যে এটা হলো পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ। পুরাতন দুনিয়া থেকে নতুন দুনিয়ায় অবশ্যই যেতে হবে, ভায়া শান্তিধাম। বাচ্চাদের বুদ্ধিতে সবসময় এই কথাগুলো থাকতে হবে। আমরা যখন সত্যযুগে ছিলাম, তখন অন্য কোনো ভূখণ্ড ছিল না। কেবল আমাদের রাজত্ব ছিল। এখন পুনরায় যোগবলের দ্বারা নিজের রাজত্ব নিচ্ছ। বোঝানো হয়েছে যে যোগবলের দ্বারা-ই বিশ্বের রাজত্ব পাওয়া যায়। বাহুবলের দ্বারা পাওয়া যায় না। এটা অসীম জগতের নাটক। খেলাটা তৈরি করা আছে। বাবা এসেই এই খেলাটা বুঝিয়ে দেন। প্রথম থেকে সমগ্র দুনিয়ার হিস্ট্রি জিওগ্রাফি শোনান। তোমরা সূক্ষ্মলোক আর মূল লোকের রহস্যকেও ভালো করে জেনেছো। স্থূললোকে এনাদের আর আমাদের রাজত্ব ছিল। কিভাবে তোমরা সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামো, সেটাও মনে পড়েছে। সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামার এই খেলা বাচ্চাদের বুদ্ধিতে ধারণ হয়েছে। বুদ্ধিতে আছে যে কিভাবে এই ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি জিওগ্রাফি রিপিট হয়। এতে আমাদের হিরো, হিরোইনের ভূমিকা আছে। আমরাই হেরে যাই, তারপর আমরাই আবার জয়ী হই। সেইজন্যই নাম রাখা হয়েছে - হিরো, হিরোইন। আচ্ছা -

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এখন আমরা বনবাসে আছি, তাই খুব সাবধানে থাকতে হবে। দেহের কিংবা পোশাকের কোনো অভিমান যেন না থাকে। যেকোনো কর্ম করার সময়ে বাবার স্মরণের নেশায় থাকতে হবে।

২ ) আমরা অসীম জগতের ত্যাগী এবং রাজঋষি - এই নেশাতে থেকে পবিত্র হতে হবে। জ্ঞান-ধনে ভরপুর হয়ে দান করতে হবে। সত্যিকারের সওদাগর হয়ে নিজের দিনলিপি লিখতে হবে।

বরদান:-
স্মরণের সার্চ লাইটের দ্বারা বায়ুমন্ডলের রচনা করে বিজয়ী রত্ন ভব

সেবাদানকারী আত্মাদের কপালে সর্বদাই জয়ের তিলক লেগে থাকে, কিন্তু যে স্থানের সেবা করতে হবে সেই স্থানে আগে থেকেই সার্চ লাইটের প্রকাশ ফেলতে হবে। স্মরণের সার্চ লাইটের দ্বারা এমন বায়ুমন্ডলের রচনা হবে যে অনেক আত্মা খুব সহজেই নিকটে আসবে। তখন কম সময়ের মধ্যে সহস্র গুণ সাফল্য লাভ হবে। এর জন্য দৃঢ় সংকল্প করো যে আমরা বিজয়ী রত্ন এবং আমাদের প্রত্যেক কর্মের মধ্যেই বিজয় নিহিত আছে।

স্লোগান:-
যে সেবা নিজেকে কিংবা অপরকে ডিস্টার্ব করে, সেটা সেবা নয়, বোঝা।