20.04.2021 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা দেহ বোধের দ্বার বন্ধ করে দাও, তাহলে মায়ার তুফান আসা বন্ধ হয়ে যাবে"

প্রশ্নঃ -
যে বাচ্চাদের বিশাল বুদ্ধি, তাদের নমুনা শোনাও !

উত্তরঃ -
১ ) তাদের সারাদিন সেবার খেয়াল চলতে থাকবে । ২ ) তারা সেবা ছাড়া থাকতে পারবে না । ৩) তাদের বুদ্ধিতে থাকবে যে, কিভাবে সম্পূর্ণ বিশ্বের চতুর্দিকের সবাইকে পতিত থেকে পবিত্র করবে । তারা বিশ্বকে দুঃখধাম থেকে সুখধাম বানানোর সেবা করতে থাকবে । ৪) তারা অনেককে নিজের সমান বানাতে থাকবে ।

ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের পিতা তাঁর মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চাদের বসে বোঝান - বাচ্চারা, তোমরা নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো তাহলে তোমাদের সব দুঃখ সদা কালের জন্য দূর হয়ে যাবে । নিজেকে আত্মা মনে করে সবাইকে ভাই - ভাইয়ের দৃষ্টিতে দেখো, তাহলে দেহের দৃষ্টি - বৃত্তির পরিবর্তন হয়ে যাবে । বাবাও অশরীরী, তোমরা আত্মারাও অশরীরী । বাবা আত্মাদেরই দেখেন, আত্মারা সবাই অকাল সিংহাসনে বিরাজিত। তোমরা আত্মারা ভাই - ভাইয়ের দৃষ্টিতে দেখো, এতেই বড় পরিশ্রম । দেহ বোধে আসলেই মায়ার তুফান আসে । এই দেহ বোধের দ্বার বন্ধ করে দাও, তাহলে মায়ার তুফান আসা বন্ধ হয়ে যাবে । এই দেহী অভিমানী হওয়ার শিক্ষা বাবা সম্পূর্ণ কল্পের এই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে তোমাদের মতো বাচ্চাদের দেন ।

মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, এখন আমরা নরক থেকে পৃথক হয়ে এগিয়ে যাচ্ছি, মাঝের এই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ সম্পূর্ণ আলাদা । তোমাদের নৌকা মাঝ সমুদ্রে আছে । তোমরা না সত্যযুগী, না কলিযুগী । তোমরা হলে পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগী সর্বোত্তম ব্রাহ্মণ । সঙ্গম যুগ হলো ব্রাহ্মণদের । ব্রাহ্মণরা হলো শিখা । এ হলো ব্রাহ্মণদের খুব ছোটো যুগ । এই যুগ এক জন্মের হয় । এ হলো তোমাদের খুশীর যুগ । কোন্ বিষয়ের খুশী ? ভগবান আমাদের পড়ান । এমন ছাত্রদের কতো খুশী হবে । তোমাদের বুদ্ধিতে এখন সম্পূর্ণ চক্রের জ্ঞান আছে । এখন আমরাই সেই ব্রাহ্মণ, এরপর আমরাই সেই দেবতা হবো । প্রথমে আমরা আমাদের সেই মিষ্টি ঘরে যাবো তারপর নতুন দুনিয়াতে আসবো । আমরা ব্রাহ্মণরাই হলাম স্বদর্শন চক্রধারী । আমরাই এই ডিগবাজির খেলা খেলি । তোমরা ব্রাহ্মণ বাচ্চারাই এই বিরাট রূপকে জানো, তোমাদের বুদ্ধিতে সারাদিন এই কথারই মন্থন হওয়া উচিত । মিষ্টি বাচ্চারা, এ তোমাদের খুব সুন্দর পরিবার, তাই তোমাদের প্রত্যেককেই খুব সুন্দর হতে হবে । বাবাও মিষ্টি, তাই তিনি বাচ্চাদেরও তেমনই মিষ্টি বানান । কখনোই কারোর উপর রাগ করা উচিত নয় । তোমরা মন - বচন এবং কর্মে কাউকেই দুঃখ দেবে না । বাবা কখনোই কাউকে দুঃখ দেন না । তোমরা যত বাবাকে স্মরণ করবে, ততই মিষ্টি হতে থাকবে । ব্যস্, এই স্মরণেই তোমাদের নৌকা পার হয়ে যাবে - এ হলো স্মরণের যাত্রা । এই স্মরণ করতে করতেই তোমাদের ভায়া শান্তিধাম হয়ে সুখধামে যেতে হবে । বাবা এসেছেনই বাচ্চাদের সদা সুখী বানাতে । বিকার রূপী ভূত দূর করার যুক্তি বাবাই বলে দেন, তোমরা আমাকে স্মরণ করো তাহলে এই ভূত দূর হতে থাকবে । কোনো ভূতকেই সাথে নিয়ে যেও না । কারোর মধ্যে যদি ভূত থাকে তাহলে এখানেই আমার কাছে রেখে যাও । তোমরা তো বলোই, বাবা, তুমি এসে আমাদের ভূতকে দূর করে পতিত থেকে পবিত্র করো । তাই বাবা তোমাদের কতো ফুলের মতো তৈরী করেন । বাবা আর দাদা দুইজন মিলে তোমাদের শৃঙ্গার করেন । মাতা - পিতাই তো বাচ্চাদের শৃঙ্গার করেন, তাই না । তিনি হলেন জাগতিক পিতা, আর ইনি হলেন অসীম জগতের পিতা । বাচ্চাদের তাই নিজেরা খুব ভালোবেসে চলতে হবে এবং চালাতে হবে । সব বিকারের দান করে দিতে হবে, দান দিলে গ্রহণ মুক্ত হবে । এখানে কোনো বাহানা ইত্যাদির কোনো কথা নেই । প্রেমের দ্বারা তোমরা যে কোনো ব্যক্তিকেই বশ করতে পারো । তোমরা ভালোবেসে বোঝাও, ভালোবাসা খুব মিষ্টি জিনিস - বাঘ, হাতি এবং অন্য জানোয়ারদেরও মানুষ প্রেমের দ্বারা বশ করে নেয় । এরা তো তবুও আসুরী মনুষ্য । তোমরা তো এখন দেবতা তৈরী হচ্ছো । তাই তোমাদের দৈবী গুণ ধারণ করে খুব - খুব মিষ্টি হতে হবে । একে অপরকে ভাই - ভাই, বা ভাই - বোনের দৃষ্টিতে দেখো । আত্মা, অন্য আত্মাকে কখনোই দুঃখ দিতে পারে না । বাবা বলেন - মিষ্টি বাচ্চারা, আমি তোমাদের স্বর্গের রাজ্য - ভাগ্য দিতে এসেছি । এখন তোমরা যা চাও, তাই আমার কাছ থেকে নাও । আমি তো তোমাদের বিশ্বের মালিক, ডবল মুকুটধারী বানাতে এসেছি, কিন্তু পরিশ্রম তোমাদেরই করতে হবে । আমি কারোর মাথায় মুকুট রাখবো না । তোমাদের নিজের পুরুষার্থেই নিজেকে রাজতিলক দিতে হবে । বাবা পুরুষার্থের যুক্তি বলে দেন যে, এইভাবে নিজেকে বিশ্বের মালিক, ডবল মুকুটধারী করতে পারো । তোমরা পড়ার প্রতি সম্পূর্ণ মনোযোগ দাও । কখনোই পড়া ছেড়ে দিও না । কোনো কারণে অসন্তুষ্ট হয়ে যদি পড়া ছেড়ে দিলে, তাহলে অনেক ক্ষতি করে ফেলবে । তোমরা ক্ষতি আর লাভকে দেখতে থাকো । তোমরা ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ঈশ্বর বাবার কাছে পড়ছো, এই পড়া পড়ে তোমরা পূজ্য দেবী - দেবতা তৈরী হচ্ছো । তাই এমন স্টুডেন্টদেরও রেগুলার হওয়া চাই । স্টুডেন্ট লাইফ হলো সবথেকে ভালো । যতো পড়বে, পড়াবে আর চরিত্রের শোধন করবে, ততই ভালো হতে পারবে ।

মিষ্টি বাচ্চারা, এখন তোমাদের রিটার্ন জার্নি, সত্যযুগ থেকে ত্রেতা, দ্বাপর এবং কলিযুগ পর্যন্ত তোমরা যেমন নীচে নেমে এসেছো, এখন তোমাদের আয়রন এজ থেকে উপরে গোল্ডের এজে যেতে হবে । যখন সিলভার এজ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে, তখন এই কর্মেন্দ্রিয়ের চঞ্চলতা সমাপ্ত হয়ে যাবে, তাই যতো বাবাকে স্মরণ করবে, ততই তোমাদের থেকে রজঃ, তমঃ এর জং দূর হতে থাকবে, আর যতো জং দূর হতে থাকবে, ততই চুম্বক রূপী বাবার প্রতি আকর্ষণ বাড়তে থাকবে । আকর্ষণ বাড়ে না, অর্থাৎ জং এখনো লেগে আছে -- এই জং যখন একদম দূর হয়ে প্রকৃত সোনা হয়ে যাবে, সেই হলো অন্তিম কর্মাতীত অবস্থা ।

তোমাদের গৃহস্থ জীবনে, প্রবৃত্তি মার্গে থেকেও কমল পুষ্প সমান হতে হবে । বাবা বলেন, মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা ঘর - গৃহস্থেরও দেখাশোনা করো, শরীর নির্বাহের কারণে কাজকর্মও করো । এর সাথে সাথে এই পড়াও পড়তে থাকো । এমন গায়নও আছে যে, হাতে কাজ আর মুখে নাম । কাজকর্ম করতে করতে এক প্রিয়তম বাবাকে স্মরণ করতে হবে । তোমরা হলে অর্ধেক কল্পের প্রেমিকা । অগাধ ভক্তিতেও দেখো যে, কৃষ্ণ ইত্যাদিদের কতো প্রেমের সঙ্গে স্মরণ করে । সে হলো অতি ভক্তি অর্থাৎ অগাধ ভক্তি । সেখানে কৃষ্ণের অটল ভক্তি থাকে কিন্তু এতে কেউ মুক্তি পায় না । আর এ তো হলো নিরন্তর স্মরণের জ্ঞান । বাবা বলেন যে, আমি হলাম পতিত পাবন, তোমরা আমাকে স্মরণ করো, তাহলে তোমাদের পাপ নাশ হয়ে যাবে, কিন্তু মায়াও অনেক শক্তিশালী । সে কাউকেই ছাড়ে না । মায়ার কাছে বার বার হেরে গেলে তো মাথা নত করে প্রায়শ্চিত্ত করা উচিত । বাবা তাঁর মিষ্টি বাচ্চাদের শ্রেষ্ঠ হওয়ার জন্য শ্রেষ্ঠ মত দান করেন । বাবা যখন দেখেন যে, বাচ্চারা এতো পরিশ্রম করে না, তখন বাবার দয়া হয় । এই অভ্যাস যদি সবাই না করে, তাহলে অনেক সাজা ভোগ করতে হবে, আর কল্পে - কল্পে পাই - পয়সার পদ পেতে থাকবে ।

মূল বিষয় হলো, মিষ্টি বাচ্চাদের বাবা বোঝান যে, তোমরা দেহী অভিমানী হও । দেহ সহ দেহের সব সম্বন্ধ ভুলে আমাকে স্মরণ করো, তোমাদের অবশ্যই পবিত্র হতে হবে । কুমারীরা যখন পবিত্র থাকে, তখন সবাই তাদের সামনে মাথা নত করে । বিয়ে করলে তখন পূজারী হয়ে যায় । তখন সকলের সামনে মাথা নত করতে হয় । কন্যা যখন তার পিতৃগৃহে থাকে, তখন এতো বেশী সম্বন্ধ থাকে না । বিয়ের পরে দেহের সম্বন্ধও বৃদ্ধি পায় তারপর পতি এবং বাচ্চাদের প্রতিও মোহ বৃদ্ধি পায় । শ্বশুর - শাশুড়ি সবাই স্মরণে আসতে থাকবে । প্রথমে তো কেবলমাত্র মা - বাবার প্রতিই মোহ থাকে । এখানে তো ওইসব সম্বন্ধ ভুলতে হয়, কেননা এই একই তো তোমাদের প্রকৃত মাতা - পিতা, তাই না । এ হলো ঈশ্বরীয় সম্বন্ধ । এমন গাওয়াও হয় যে..... ত্বমেব মাতাশ্চ পিতা ত্বমেব.....এই মাতা - পিতা তো তোমাদের বিশ্বের মালিক বানান, তাই বাবা বলেন - আমি, এই অসীম জগতের পিতাকে তোমরা নিরন্তর স্মরণ করো, আর কোনো দেহধারীর প্রতি তোমরা মমত্ব রেখো না । স্ত্রীর তার কলিযুগী স্বামীর কথা কতো স্মরণে থাকে, সে তো গর্তে ফেলে দেয় । এই অসীম জগতের পিতা তো তোমাদের স্বর্গে নিয়ে যান । তোমরা এমন মিষ্টি বাবাকে খুব প্রেমের সঙ্গে স্মরণ করতে এবং স্বদর্শন চক্র ঘোরাতে থাকো । এই স্মরণের বলেই তোমাদের আত্মা কাঞ্চন হয়ে স্বর্গের মালিক হয়ে যাবে । স্বর্গের নাম শুনেই মন খুশী হয়ে যায় । যারা নিরন্তর স্মরণ করবে আর অন্যদেরও করাতে থাকবে, তারা উচ্চ পদ প্রাপ্ত করবে । এই পুরুষার্থ করতে করতে অন্তিমে তোমাদের সেই অবস্থা তৈরী হবে । এই দুনিয়া তো পুরানো, দেহও পুরানো, দেহ সহিত দেহের সব সম্বন্ধও পুরানো । সেই সবকিছুর থেকে বুদ্ধিযোগকে দূর করে এক বাবার সঙ্গে জুড়তে হবে, যাতে অন্তকালেও সেই এক বাবার স্মরণ থাকে, আর অন্য কোনো সম্বন্ধ যদি স্মরণে থাকে, তাহলে তখন অন্তিম সময়ে সেই স্মরণে এসে যাবে আর পদ ভ্রষ্ট হয়ে যাবে । অন্তিম কালে যার অসীম জগতের পিতাকে স্মরণে থাকবে, সেই নর থেকে নারায়ণ হতে পারবে । বাবার স্মরণ থাকলে তখন শিবালয় তোমাদের থেকে দূরে নয় ।

মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চারা অসীম জগতের বাবার কাছে আসেই রিফ্রেশ হতে, কেননা বাচ্চারা জানে যে অসীম জগতের বাবার কাছ থেকে অসীম বিশ্বের বাদশাহী পাওয়া যায় । একথা কখনোই ভুলে যাওয়া উচিত নয় । একথা সর্বদা যদি স্মরণে থাকে, তাহলেও বাচ্চাদের অপার খুশী থাকবে । এই ব্যাজ চলতে - ফিরতে প্রতি মুহূর্তে দেখতে থাকো - একদম হৃদয়ে লাগিয়ে দাও । আহা ! ভগবানের শ্রীমতে আমরা এমন তৈরী হচ্ছি । ব্যাস, ব্যাজকে দেখে তাঁকে ভালোবাসতে থাকো । বাবা - বাবা করতে থাকো তাহলে সর্বদা স্মৃতি থাকবে । আমরা বাবার দ্বারা এমন তৈরী হই । বাবার শ্রীমতে তো চলতে হবে, তাই না । মিষ্টি বাচ্চাদের খুব বড় বিশাল বুদ্ধির প্রয়োজন । সারাদিন যেন তোমাদের সেবার খেয়াল চলতে থাকে । বাবার তো সেই বাচ্চাদের প্রয়োজন, যারা সেবা ছাড়া থাকতে পারে না । বাচ্চারা তোমাদের সম্পূর্ণ বিশ্বের চতুর্দিকে ছড়িয়ে দিতে হবে অর্থাৎ পতিত দুনিয়াকে পবিত্র করতে হবে । সম্পূর্ণ বিশ্বকে দুঃখধাম থেকে সুখধামে পরিণত করতে হবে । টিচারের তো পড়াতে মজা হয়, তাই না । তোমরা তো এখন অনেক উচ্চ টিচার হয়েছো । টিচার যতো ভালো হবে, তারা অনেককে নিজের সমান তৈরী করবে, একদম পরিশ্রান্ত হবে না । এই ঈশ্বরীয় সেবায় অনেক আনন্দ হয় । তোমরা বাবার সাহায্য পাও । এ অনেক বড় অসীম জগতের কারবারও, ব্যবসায়ীরাই ধনবান হয় । তারা এই জ্ঞান মার্গেও বেশী উৎসাহ দেখায় । বাবাও তো অসীম জগতের ব্যবসায়ী, তাই না । এই ব্যবসা এক নম্বর, কিন্তু এতে অনেক বেশী সাহস ধারণ করতে হয় । নতুন বাচ্চারা পুরানোদের থেকেও পুরুষার্থতে এগিয়ে যেতে পারে । প্রত্যেকেরই ভাগ্য আলাদা, তাই পুরুষার্থও প্রত্যেককেই আলাদা করতে হবে । নিজের চেকিং সম্পূর্ণভাবে করা উচিত । এমন চেকিং যারা করে তারা রাতদিন পুরুষার্থতে লেগে যাবে, তারা বলবে, আমরা আমাদের সময় কেন নষ্ট করবো । তারা যতটা সম্ভব সময়কে সফল করবে । তারা নিজের কাছে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে যে, আমরা বাবাকে কখনোই ভুলবো না । স্কলারশিপ নিয়েই ছাড়বো । এমন বাচ্চারা তাই বাবার সাহায্যও পায় । তোমরা এমন নতুন - নতুন পুরুষার্থী বাচ্চাদের দেখবে । সাক্ষাৎকার করতে থাকবে । শুরুতে যা হয়েছিলো, তাই আবার শেষের দিকে দেখবে । তোমরা যতো নিকটে আসতে থাকবে, ততই খুশীতে নাচতে থাকবে । ওইদিকে তখন রক্তের খেলা চলতে থাকবে ।

বাচ্চারা, তোমাদের এখন ঈশ্বরীয় রেস চলছে, যত সামনে দৌঁড়াতে থাকবে, ততই নতুন দুনিয়ার দৃশ্য নিকটে আসতে থাকবে, তোমাদের খুশীও বৃদ্ধি পেতে থাকবে । যারা এই দৃশ্য দেখতে পারবে না, তাদের অত খুশী হবে না । তোমাদের তো এখন কলিযুগী দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য আর সত্যযুগী নতুন দুনিয়ার প্রতি খুব প্রেম থাকা উচিত । শিব বাবা যদি স্মরণে থাকে তাহলে স্বর্গের উত্তরাধিকারও স্মরণে থাকবে । আবার স্বর্গের উত্তরাধিকার যদি স্মরণে থাকে, তাহলে শিব বাবাও স্মরণে থাকবে । বাচ্চারা, তোমরা এখন জানো যে, আমরা স্বর্গের দিকে যাচ্ছি, আমাদের পা নরকের দিকে আর মাথা স্বর্গের দিকে । এখন তো ছোটো - বড় সকলেরই বানণপ্রস্থ অবস্থা । বাবার সর্বদা এই নেশা থাকে -- আহা ! আমি গিয়ে এই বালক কৃষ্ণ হবো, যার জন্য অগ্রিম উপহারও পাঠাতে থাকে । যাদের সম্পূর্ণ নিশ্চয় আছে, সেই গোপিকারাই উপহার পাঠায়, তাদের অতীন্দ্রিয় সুখের অনুভব আসে । আমরাই এই অমরলোকের দেবতা হবো । পূর্ব কল্পেও আমরাই হয়েছিলাম, তারপর আমরা ৮৪ বার পুনর্জন্ম গ্রহণ করেছি । এই ডিগবাজির খেলা যদি স্মরণে থাকে, তাহলেও আহা ! কি সৌভাগ্য । তোমরা সর্বদা অপার খুশীতে থাকো, কারণ তোমরা অনেক বড় লটারী পাচ্ছো । ৫ হাজার বছর পূর্বেও আমরা রাজ্যভাগ্য পেয়েছিলাম, আবার আগামীকাল পাবো । এ'সব ড্রামাতে লিপিবদ্ধ আছে । পূর্বকল্পেও যেমন জন্মগ্রহণ করেছিলাম, তেমনই আবার করবো, তারাই আমাদের মা - বাবা হবে । যিনি কৃষ্ণের বাবা ছিলেন, তিনিই আবার হবেন । এমনভাবে যারা সারাদিন চিন্তন করতে থাকবে, তারা আনন্দের মধ্যে থাকবে । বিচার সাগর মন্থন না করলে, তবে মনে করো এ আনহেলদি হয়ে গেলো । গরু যখন খাবার খায়, তখন সারাদিন জাবর কাটতে থাকে, মুখ চলতেই থাকে । মুখ যদি না চলে তাহলে মনে করা হবে এ অসুস্থ, এখানেও তেমনই ।

অসীম জগতের বাবা আর দাদা, দুইজনেরই মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চাদের প্রতি অনেক ভালোবাসা, কতো ভালোবেসে পড়ান । অসুন্দর থেকে সুন্দর বানান । তাই বাচ্চাদেরও খুশীর পারদ চড়তে থাকা উচিত । স্মরণের যাত্রাতেই এই পারদ চড়বে । বাবা কল্পে - কল্পে খুব ভালোবেসে এই লাভলী সেবা করেন । তিনি পাঁচ তত্ব সহ সকলকে পবিত্র করেন । এ কতো বড় অসীম জগতের সেবা । বাবা খুব ভালোবেসে বাচ্চাদের শিক্ষাও দেন, কেননা বাচ্চাদের শুধরানো বাবা বা টিচারেরই কাজ । বাবারই হলো এই শ্রীমৎ, যাতে তোমরা শ্রেষ্ঠ হতে পারবে । তোমরা যত ভালোবেসে স্মরণ করবে, তত শ্রেষ্ঠ হতে পারবে । এও চার্টে লিখতে হবে যে, আমরা শ্রীমতে চলি বা নিজের মতে চলি ? শ্রীমতে চললেই তোমরা সঠিক হতে পারবে । আচ্ছা ----

মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে, আমরা নিজের সময় নষ্ট করবো না । সঙ্গমের প্রতি মুহূর্ত সফল করবো আমরা বাবাকে কখনোই ভুলে যাবো না । স্কলারশিপ নেবোই ।

২ ) সদা যেন স্মৃতিতে থাকে যে, এখন আমাদের বাণপ্রস্থ অবস্থা । আমাদের পা নরকের দিকে আর মাথা স্বর্গের দিকে । ডিগবাজির খেলাকে স্মরণ করে আমাদের অপার খুশীতে থাকতে হবে । দেহী - অভিমানী হওয়ার পরিশ্রম করতে হবে ।

বরদান:-
নিজের শক্তিশালী বৃত্তির দ্বারা পতিত বায়ুমণ্ডলকে পরিবর্তন করে মাস্টার পতিত - পাবনী ভব

বায়ুমণ্ডল যেমনই হোক না কেন, কিন্তু নিজের শক্তিশালী বৃত্তি বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তন করতে পারে । বায়ুমণ্ডল বিকারী হলেও নিজের বৃত্তি যেন নির্বিকারী হয় । যে পতিতকে পবিত্র করতে পারে, সে কখনোই পতিত বায়ুমণ্ডলের বশীভূত হয় না । মাস্টার পতিত পাবনী হয়ে নিজের শক্তিশালী বৃত্তির দ্বারা অপবিত্র বা দুর্বল বায়ুমণ্ডলকে মুক্ত করো, তার বর্ণনা করে তেমন বায়ুমণ্ডল তৈরী ক'রো না । দুর্বল বা পতিত বায়ুমণ্ডলের বর্ণনা করাও পাপ ।

স্লোগান:-
এখন ধরণীতে পরমাত্ম পরিচিতির বীজ বপন করো, তাহলে প্রত্যক্ষতা হবে ।