ওম্ শান্তি । ইনি হলেন পারলৌকিক আত্মাদের পিতা ।আত্মাদের সাথেই কথা বলেন। তাদেরকে বাচ্চারা - বাচ্চারা বলে কথা বলার প্র্যাক্টিস হয়ে যায়। শরীর যদিও কন্যার কিন্তু সব আত্মারাই তো হল বাচ্চা। সব আত্মারাই হল উত্তরাধিকারী অর্থাৎ উত্তরাধিকার নেওয়ার অধিকারী । বাবা এসে বলেন, বাচ্চারা তোমাদের প্রত্যেকের অধিকার রয়েছে উত্তরাধিকার নেওয়ার। অসীম জগতের পিতাকে অনেক অনেক স্মরণ করতে হবে। এতেই তো পরিশ্রম রয়েছে। বাবা পরমধাম থেকে এসেছেন আমাদেরকে পড়াতে। সাধু সন্তরা তো নিজেদের বাড়ি থেকে আসে বা কেউ কোনো গ্রাম থেকে। বাবা তো পরমধাম থেকে এসেছেন আমাদেরকে পড়াতে। এ'কথা কারোরই জানা নেই। অসীম জগতের পিতা তিনিই, সেই পতিত পাবন গড ফাদার । তাঁকে ওশান অফ নলেজও বলা হয়, অথরিটি তো তিনি। কী এই নলেজ ? ঈশ্বরীয় নলেজ। বাবা হলেন মনুষ্য সৃষ্টির বীজ রূপ । সৎ - চিৎ - আনন্দ স্বরূপ। তাঁর মহিমা অনেক উচ্চ। ওঁনার কাছে এই সব সমস্ত কিছুই রয়েছে। কারো নিজের দোকান থাকলে বলবে আমার দোকানে এই এই ভ্যারাইটি আছে। বাবাও বলেন, আমি হলাম জ্ঞানের সাগর, আনন্দের সাগর, শান্তির সাগর। আমার কাছে এই সব কিছু মজুত আছে। আমি সঙ্গমে আসি ডেলিভারী করতে। যা কিছু আমার কাছে আছে, সব ডেলিভারী করে দিই। তারপর যে যতটুকু ধারণ করবে বা যতখানি পুরুষার্থ করবে। বাচ্চারা জানে - বাবার কাছে কী কী আছে আর অ্যাক্যুরেট জানেন তিনি। আজকাল নিজের শেষ পর্যন্ত কী আছে কেউই বলতে চায় না। কিন্তু কথায় আছে - কারো ধন যাবে ধূলায় মিশে...এই সব কিছুই হল এখনকার বিষয়ে। আগুন লাগলে সব শেষ হয়ে যাবে। রাজাদের নিজেদের রাজমহলের ভিতরে বড় মজবুত গুহা বা কুঠুরি থাকে। যতই ভূমিকম্প ইত্যাদি হোক না কেন, ভয়ঙ্কর ভাবে আগুনও লাগুক না কেন, তবুও তার থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। তোমরা বাচ্চারা জানো যে, এখানকার কোনো জিনিসই ওখানে (সত্যযুগে) কাজে আসে না। খনিগুলিও আবার নতুন করে ভর্তি হয়ে যাবে। সায়েন্সও রিফাইন হয়ে তোমাদের কাজে আসে। বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে এখন সমস্ত জ্ঞান রয়েছে। বাচ্চারা জানে যে, আমরা সৃষ্টির আদি - মধ্য - অন্তকে জানি। আর বাকি শেষের যেটুকু রয়েছে, সেটাকে আমরা জেনে যাব। বাবা আগে থাকতেই কেন বলে দেবেন। বাবা বলেন - আমিও ড্রামার অধীন। যে জ্ঞান এখনও পর্যন্ত তোমরা পেয়েছো, সেটাই ড্রামার মধ্যে লিখিত রয়েছে। যে সেকেণ্ড অতিবাহিত হয়ে গেছে, তাকে ড্রামা মনে করতে হবে। বাকি যা কিছু কালকে হবে সেটা পরে দেখা যাবে। কালকের কথা আজকে বলা হবে না। এই ড্রামার রহস্যকে মানুষ বুঝতে পারে না। কল্পের আয়ুই কতো লম্বা চওড়া লিখে দিয়েছে। এই ড্রামাকে বোঝার জন্যও সাহসের প্রয়োজন । আম্মা (মা) মরলেও হালুয়া খাওয়া (ড্রামা /জ্ঞানের পয়েন্টকে স্মরণ করে নিশ্চিন্ত থাকা)...মনে করে এর পর তো মা অন্য কোথাও জন্ম নিয়েছে। আমরা তবে কাঁদব কেন ? বাবা তোমাদেরকে বুঝিয়েছেন - সংবাদপত্রে তোমরা লিখতে পারো, এই প্রদর্শনী আজ থেকে ৫ হাজার বছর পূর্বে এই তারিখে, এই স্থানেই এইভাবেই হয়েছিল। এই ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি - জিওগ্রাফি রিপিট হচ্ছে, এইভাবে লিখে দেওয়া উচিত। এটা তো জানা কথাই যে - এই দুনিয়ার আর কিছুদিনই বাকি রয়েছে, এই সব খতম হয়ে যাবে। আমরা তো পুরুষার্থ করে বিকর্মাজিত হয়ে যাব, তারপর দ্বাপর থেকে বিক্রম সম্বৎ শুরু হবে অর্থাৎ বিকর্ম হওয়ার সম্বৎ। এই সময় তোমরা বিকর্মের উপরে বিজয় প্রাপ্ত করো, তবেই বিকর্মাজিত হয়ে যাও। পাপ কর্মকে শ্রীমতের দ্বারা জয় করে বিকর্মাজিত হয়ে যাও তোমরা। ওখানে তোমরা আত্ম - অভিমানী হয়ে যাও। ওখানে দেহ - অভিমান থাকে না। কলিযুগে দেহ-অভিমান থাকে। সঙ্গমযুগে তোমরা দেহী-অভিমানী হয়ে ওঠো। পরমপিতা পরমাত্মাকেও জানতে পারলাম। এটা হল শুদ্ধ অভিমান। তোমরা ব্রাহ্মণরা হলে সবচেয়ে উচ্চ। তোমরা হলে সর্বোত্তম ব্রাহ্মণ কুলভূষণ । এই নলেজ কেবলমাত্র তোমরাই পাও, অন্য আর কেউই পায় না। তোমাদের কুল হল সর্বোত্তম। বলাও হয়ে থাকে - অতীন্দ্রিয় সুখ গোপী বল্লভের বাচ্চাদেরকে জিজ্ঞাসা করো। তোমরা এখন লটারি পেয়ে থাকো। কোনো জিনিস পেয়ে গেলে, তার জন্য তেমন খুশী হয় না। যখন গরিব থেকে বড়লোক হয়ে যায়, তখন খুব খুশী হয়। তোমরাও জানো যে, আমরা যত পুরুষার্থ করবো, ততই বাবার থেকে রাজধানীর উত্তরাধিকার নেবো। যে যত পুরুষার্থ করবে, ততই পাবে। মুখ্য কথা হল, বাবা বলেন - বাচ্চারা, তোমাদের মোস্ট বিলাভেট বাবাকে স্মরণ করো। তিনি হলেন সকলের বিলাভেট বাবা। তিনিই এসে সকলকে সুখ শান্তি প্রদান করেন। এখন দেবী - দেবতাদের রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। সেখানে কিং - কুইন হয় না। ওখানে বলা হবে মহারাজা - মহারানী। যদি ভগবান - ভগবতী বলো, তবে তো যথা রাজা - রানী তথা প্রজা, সবাই ভগবান ভগবতী হয়ে যাবে। সেইজন্য ভগবান ভগবতী বলা যাবে না। সূক্ষ্মলোকবাসী ব্রহ্মা, বিষ্ণু - শংকরকেও দেবতা বলা হয়। স্থূললোকনিবাসীদেরকে আমরা ভগবান ভগবতী কীভাবে বলব ? উচ্চ থেকে উচ্চ হল মূললোক তারপর হল সূক্ষ্মলোক আর এটা হল থার্ড নম্বর। এইসব তোমাদের বুদ্ধিতে থাকা উচিত। আমরা আত্মাদের বাবা শিববাবাই হলেন শিক্ষকও, গুরুও। তিনি স্বর্ণকার, ব্যারিস্টার সব। সবাইকে তিনি রাবণের জেল থেকে ছাড়ান। শিববাবা কত বড় ব্যারিস্টার। তো এমন বাবাকে কেন ভুলে যাওয়া হয়। কেন তোমরা বলো যে, বাবা আমরা ভুলে যাই। মায়ার অনেক ঝড় ঝাপটা আসে। বাবা বলেন, এ তো হবেই। কিছু তো পরিশ্রম করতে হবে। এ হল মায়ার সাথে লড়াই। এ তোমাদের অর্থাৎ পান্ডবদের কোনো কৌরবদের সাথে যুদ্ধ নয়। পান্ডব কীকরে যুদ্ধ করবে ? তবে তো হিংসক হয়ে যাবে। বাবা কখনোই হিংসা শেখান না। কিছুই বুঝতে পারে না। বাস্তবে আমাদের তো কোনো যুদ্ধ বিগ্রহই নেই। বাবা কেবল যুক্তি বলে দেন যে, আমকে স্মরণ করো, মায়ার আঘাত লাগবে না। এর ওপরেও একটা কাহিনী ছিল, প্রশ্ন ছিল আগে সুখ চাই না দুঃখ ? তাতে বলল, সুখ। দুঃখ তো হতে পারে না সত্যযুগে।
তোমরা জানো - এই সময় সব সীতারা রাবণের শোক বাটিকাতে রয়েছে। এই সমগ্র দুনিয়া হল সাগরের মাঝে বড় লঙ্কা। এখন সবাই জেলে পড়ে রয়েছে। সকলের সদ্গতি করার জন্য বাবা এসেছেন। সবাই শোক বাটিকাতে রয়েছে। স্বর্গে রয়েছে সুখ, নরকে হল দুঃখ। একে শোক বাটিকা বলা হবে। ওটা হল অশোক, স্বর্গ। অনেক বড় প্রভেদ। বাচ্চারা, তোমাদের অনেক অনেক প্রচেষ্টা করে বাবাকে স্মরণ করা উচিত, তবে খুশীর পারদ ঊর্ধ্বমুখী হবে। বাবার রায় মেনে না চললে তবে তো সতীনপুত্র বলা হবে। তাহলে প্রজাতে চলে যাবে। সহ-জাত হলে তবে তো রাজধানী চলে আসবে। রাজধানীতে আসতে যদি চাও, তবে শ্রীমৎ অনুসারে চলতে হবে । কৃষ্ণের মত প্রাপ্ত হয় না। মত হল দুটি। এখন তোমরা শ্রীমৎ প্রাপ্ত করো তারপর সত্যযুগে তার ফল তোমরা ভোগ করো। তারপর দ্বাপরে রাবণের মত প্রাপ্ত হয়। সবাই রাবণের মতে অসুর হয়ে যায়। তোমাদের প্রাপ্ত হয় ঈশ্বরীয় মত। মত প্রদানকারী হলেন এক বাবা-ই। তিনি হলেন ঈশ্বর। তোমরা ঈশ্বরীয় মতে কতো পবিত্র হয়ে যাও। প্রথম পাপ হল - বিষয় সাগরে হাবুডুবু খাওয়া। দেবতারা বিষয় সাগরে হাবুডুবু খাবে না। প্রশ্ন উঠবে তাহলে ওখানে কী সন্তান আদি হয় না ? সন্তান আদি হবে না কেন ! সেটা হল ভাইসলেস দুনিয়া, সম্পূর্ণ নির্বিকারী । সেখানে এই রকম কোনও বিকার হয় না। বাবা তোমাদেরকে বুঝিয়েছেন - দেবতারা কেবল আত্ম-অভিমানী হয়, পরমাত্ম-অভিমানী নয়। তোমরা আত্ম-অভিমানীও হও, পরমাত্ম-অভিমানীও। আগে দুটোই ছিলে না। সত্যযুগে পরমাত্মাকে তারা জানে না। আত্মাকে জানে যে, আমরা আত্মারা এই পুরোনো শরীর ছেড়ে আবার গিয়ে নতুন শরীর নেবো। আগে থাকতেই তারা বুঝতে পেরে যায় যে, এখন নতুন নিতে হবে। সন্তান জন্মানোর পূর্বেই সাক্ষাৎকার হয়ে যায়। যোগবলের দ্বারা তোমরা বিশ্বের মালিক হয়ে যাও। তাহলে যোগবলের দ্বারা কি বাচ্চা জন্মাতে পারে না ! যোগবলের দ্বারা তোমরা যে কোনো জিনিসকেই পবিত্র বানিয়ে ফেলতে পারো। কিন্তু তোমরা স্মরণ করতে ভুলে যাও। কারো আবার অভ্যাসও হয়ে যায়। অনেক সন্ন্যাসীও আছে, যারা আহারের বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক । তারা সেই সময় অনেক মন্ত্র উচ্চারণ করে তবে আহার গ্রহণ করবে। তোমাদেরকেও তো আহারের বিষয়ে সতর্কীকরণ দেওয়া আছে। মাছ - মাংস, মদিরা কোনো কিছুই তোমরা খাবে না। তোমরা তো দেবতা হবে, তাই না ! দেবতারা কখনো নোংরা জিনিস খায় না। তো এই রকম পবিত্র হতে হবে । বাবা বলেন, আমার দ্বারা তোমরা আমাকে জানলে 'পরে তোমরা সব কিছু জেনে যাবে। তারপর আর কিছু জানার বাকি থাকবে না। সত্যযুগে তারপর পড়াশোনাও অন্যরকম হয়। এই মৃত্যুলোকের পড়াশোনার এখন হল সমাপ্তি। মৃত্যুলোকের সকল কারবার সমাপ্ত হয়ে এরপর অমরলোক এর শুরু হবে। বাচ্চাদের এতখানি নেশা থাকা উচিত। অমরলোকের মালিক ছিলে তোমরা। বাচ্চারা, তোমাদের অতীন্দ্রিয় সুখ, পরম সুখে থাকা উচিত। আমরা বাচ্চারা হলাম পরমপিতা পরমাত্মার সন্তান বা স্টুডেন্ট আমরা। পরমপিতা পরমাত্মা আমাদেরকে এখন গৃহে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন, তাকেই পরমানন্দ বলা হয়। সত্যযুগে এ'সব কিছুই হয় না। এইসব এখন তোমরা শুনে থাকো, এই সময় তোমরা হলে ঈশ্বরীয় ফ্যামিলির । এখনকারই প্রশস্তি রয়েছে - অতীন্দ্রিয় সুখের কথা গোপ গোপীদেরকে জিজ্ঞাসা করো। পরমধামের বাসিন্দা বাবা এসে আমাদের বাবা, টিচার, গুরু হন। তিন রূপে সেবা করেন। কোনো রকমের অভিমান (অহংকার) রাখেন না। তিনি বলেন - আমি তোমাদের সেবা করে তোমাদেরকে সব কিছু দিয়ে নির্বাণধামে গিয়ে বসে যাব, তাহলে সার্ভেন্ট হলাম না ! ভাইসরয় প্রমুখরা সব সময় সাক্ষর করার সময় তো ওবিডিয়েন্ট সার্ভেন্ট লেখে। বাবাও হলেন নিরাকার, নিরহংকারী। কীভাবে বসে পড়ান। এত উচ্চ পড়াশোনা আর কেউই পড়াতে পারে না। এত এত পয়েন্টস কেউই দিতেই পারবে না। মানুষ তো জানতেই পারে না, এনাকে কোনো গুরু এ'সব শেখাননি। গুরু থাকলে তো অনেকের থাকত, কেবল একজনের হয় কী ? এই বাবা-ই পতিতদেরকে পবিত্র বানান। আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্মের স্থাপনা করছেন তিনি। বাবা বলেন, আমি কল্প - কল্প, কল্পের সঙ্গমযুগে এসে থাকি। বলা হয় না - বাবা আমরা কল্প পূর্বেও মিলিত হয়েছিলাম। বাবা-ই এসে পতিতদেরকে পবিত্র বানাবেন। ২১ জন্মের জন্য তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদেরকে আমি পবিত্র বানাই। তো এইসব ধারণা করা উচিত, তারপর বাবাকে জানানো উচিত বাবা কী বুঝিয়েছেন। বাবার কাছ থেকে আমরা ২১ জন্মের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করি। এ'কথা স্মরণে থাকলে তখন মনে খুশীও থাকবে। এ হল পরম - আনন্দ। মাস্টার নলেজফুল, ব্লিসফুল এই সব বরদান বাবার থেকে এখন তোমাদের প্রাপ্ত হয় । সত্যযুগে তো বুদ্ধু হবে। এই লক্ষ্মী-নারায়ণের তো কোনোই নলেজ নেই। তাদের যদি থাকত তবে পরম্পরা অনুসারে চলে আসত। তোমাদের মতো পরম আনন্দ দেবতাদেরও হতে পারে না। আচ্ছা -
*ধারণার জন্যে মুখ্য সারঃ-*
১ ) দেবতা হওয়ার জন্য খাদ্য - পানীয়ের বিষয়ে অনেক শুদ্ধি রাখতে হবে। এ বিষয়ে অত্যন্ত বুঝে শুনে চলতে হবে। যোগবলের দ্বারা খাবারকে দৃষ্টি দিয়ে শুদ্ধ বানিয়ে স্বীকার করতে হবে।
২ ) পরমপিতা পরমাত্মার আমরা সন্তান বা স্টুডেন্ট। তিনি আমাদেরকে এখন আমাদের প্রকৃত নিকেতনে নিয়ে যাবেন। এই নেশাতে থেকে পরম সুখ, পরম আনন্দের অনুভব করতে হবে।