18-04-2021 প্রাতঃ মুরলি "অব্যক্ত বাপদাদা" ওম্ শান্তি 14-12-87 মধুবন


"সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণ জীবনের তিন বিশেষত্ব"

আজ বাপদাদা তাঁর সকল সদা সাথে থাকা, সদা সহযোগী হয়ে, সেবার সাথী হয়ে সেবারত আর সাথে যেতে সমর্থ শ্রেষ্ঠ বাচ্চাদেরকে দেখে পুলকিত হচ্ছেন। সাথে থাকা অর্থাৎ সহজ স্বতঃ যোগী আত্মারা। সদা সেবাতে সহযোগী সাথী হয়ে সাথে যেতে সমর্থ অর্থাৎ বাবা সম জ্ঞানী আত্মারা, সত্যিকারের সেবাধারী। সাথে যেতে সমর্থ অর্থাৎ সমান এবং সম্পন্ন কর্মাতীত আত্মারা। বাপদাদা সকল বাচ্চাদের মধ্যে এই তিনটি বিশেষত্বকে দেখছিলেন যে, তিনটি বিষয়ের মধ্যে বাচ্চারা কতদূর সম্পূর্ণ হয়েছে ? সঙ্গমযুগের শ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণ জীবনের এই তিনটি বিশেষত্বই আবশ্যক। যোগী আত্মা, জ্ঞানী আত্মা এবং বাবা সম কর্মাতীত আত্মা - এই তিনটির মধ্যে যদি একটি বিশেষত্বও কম হয়, তবে ব্রাহ্মণ জীবনের বিশেষত্বের অনুভাবী না হতে পারা অর্থাৎ সম্পূৰ্ণ ব্রাহ্মণ জীবনের সুখ বা প্রাপ্তি গুলির থেকে বঞ্চিত থেকে যাওয়া। কেননা বাপদাদা সকল বাচ্চাদেরকে সম্পূর্ণ বরদান প্রদান করেন। যথা শক্তি যোগী ভব বা যথা শক্তি জ্ঞানী আত্মা ভব - এমন বরদান দেন না। পাশাপাশি সঙ্গমযুগ, যেটা হল সমগ্র কল্পের মধ্যে বিশেষ যুগ, এই যুগ অর্থাৎ সময়কেও বরদানী সময় বলা হয়ে থাকে। কেননা বরদাতা বাবা বরদান বিতরণ করবার জন্য এই সময় আসেন। বরদাতার আসার কারণে সময়ও বরদানী হয়ে গেল। এই সময়কে এটাই হল বরদান । সর্ব প্রাপ্তি গুলির মধ্যেও সম্পূর্ণ প্রাপ্তি লাভের এটাই হল সময়। সম্পূর্ণ স্থিতিকে প্রাপ্তি করবার এটাই হল বরদানী সময়। আর সম্পূর্ণ কল্পে কর্ম অনুসারে প্রালব্ধ প্রাপ্ত করা বা যেমন কর্ম তেমন ফল স্বতঃতই প্রাপ্ত হতে থাকে । কিন্তু এই বরদানী সময়ে এক কদম তোমার কর্ম আর পদমগুণ বাবার থেকে সহায়তার রূপে সহজেই প্রাপ্ত হয় । সত্যযুগে এক এর পদমগুণ প্রাপ্ত হয় না কিন্তু এখন প্রাপ্ত হওয়া প্রালব্ধের রূপে ভোগ করবার অধিকারী হয়ে যাও তোমরা। কেবল যে'গুলো জমা হয়েছে সে'গুলোই খেতে খেতে নীচে চলে আসতে থাকে। কলা কম হয়ে যায়। একটা যুগ সম্পূর্ণ হওয়ার সাথে সাথে কলাও ১৬ কলার থেকে ১৪ কলা হয়ে যায়। কিন্তু সম্পূর্ণ প্রাপ্তির সময়ই হল এই সঙ্গমযুগ। এই সময়ে বাবা খোলা মনে সকল প্রাপ্তির ভান্ডার বরদানের রূপে, উত্তরাধিকারের রূপে আর ঈশ্বরীয় পড়াশোনার ফল স্বরূপ প্রাপ্তির রূপে, তিন রূপ সম্বন্ধের দ্বারা তিন রূপে বিশেষ রূপে উন্মুক্ত ভান্ডার, ভরপুর ভান্ডার বাচ্চাদের সম্মুখে রাখেন। যত'র তত - এই হিসাব রাখেন না, বরং এক এর পদমগুণ - এই হিসাবে রাখেন। কেবল নিজের পুরুষার্থ করলে আর প্রালব্ধ পেলে, এইভাবে করেন না। বরং করুণাময় হয়ে, দাতা হয়ে, বিধাতা হয়ে, সকল প্রকারের সম্বন্ধের সম্বন্ধী হয়ে স্বয়ং প্রতি মুহূর্তে সহায়ক হয়ে যান। এক সেকেন্ডের সাহসের অনেক অনেক সম্পদের উত্তরাধিকার সম পরিশ্রমের সহায়তার রূপে সদা সহযোগী হয়ে যান। কেননা তিনি জানেন, এরা হল অনেক অনেক জন্মের দিশেহারা হয়ে যাওয়া নির্বল আত্মা, শ্রান্ত - ক্লান্ত এরা। সেইজন্য এতখানি সহযোগ দেন, সহায়ক হন।

তিনি নিজে অফার করেন যে, সকল প্রকারের বোঝা বাবাকে দিয়ে দাও। নিজে বোঝা বহন করবার জন্য অফার করেন। ভাগ্যবিধাতা হয়ে নলেজফুল বানিয়ে, শ্রেষ্ঠ কর্মের জ্ঞান স্পষ্ট করে বুঝিয়ে ভাগ্যের রেখাকে যতখানি টেনে নিয়ে যেতে পারো টানো। সকল উন্মুক্ত সম্পদের চাবি তোমার হাতে তিনি দিয়ে দিয়েছেন। আর সেই চাবিও কত সহজ। যদি মায়ার ঝড় এসে উপস্থিতও হয়, ছত্রছায়া হয়ে সর্বদা সেফও রাখে। যেখানে ছত্রছায়া রয়েছে, সেখানে ঝড় ঝঞ্ঝা কী করবে ? সেবাধারীও বানাতে থাকে তার সাথে সাথে বুদ্ধিবানদেরও বুদ্ধি হয়ে আত্মাদেরকে টাচও করায়, যাতে নাম হয় বাচ্চাদের, কাজ বাবার, সেটা সহজেই হয়ে যায়। এতখানি আদর আর ভালোবাসা দিয়ে আদরের বানিয়ে প্রতিপালন করতে থাকেন যে, সদাই অনেক দোলনায় দোল খেতে থাকে বাচ্চারা। মাটিতে পা ফেলতে দেন না। কখনো খুশীর দোলায়, কখনো সুখের দোলায়, কখনো বাবার কোলের দোলায় ; আনন্দ, প্রেম, শান্তির দোলায় দুলতে থাকে। দুলতে থাকা অর্থাৎ মজায় দিন কাটানো। এই সকল প্রাপ্তি গুলোই এই বরদানী সময়ের বিশেষত্ব। এই সময় বরদাতা বিধাতা হওয়ার কারণে, বাবা আর সর্ব সম্বন্ধ তার সাথে রাখার কারণে বাবা এখন করুণাময়। এক এর পদম দেওয়ার বিধি এই সময়ের জন্যই। অন্তিম সময়ে তো হিসাবপত্র মেটানোর সাথী রূপে দেখবেন। সাথী কে জানা আছে তো ? তখন এই এক এর পদমগুণের হিসাব সমাপ্ত হয়ে যাবে। এখন তো তিনি করুণাময়, এরপর হিসাবপত্র শুরু হবে। এখন তো তবু ক্ষমাও করে দেবেন। কড়ি মাত্র ভুলকেও মার্জনা করে আরোই সহায়ক হয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ওড়াতে থাকেন। কেবল অন্তরে অনুভব মানেই মাফ। দুনিয়াতে যেমন ভাবে ক্ষমা চাওয়া হয় এখানে সেই রীতিতে হয় না, ভুলের অনুভব হওয়া - এটাই হল ক্ষমা লাভের বিধি। অতএব অন্তর থেকে অনুভব করা, কেউ বলার পরে বা সময়ের উপরে ছেড়ে দেওয়ার মনোভাব থাকলে এই ক্ষমা মঞ্জুর হয় না। কোনো কোনো বাচ্চা চতুরও হয়। পরিবেশ দেখে নিয়ে বলে - এখন তো অনুভব করে নাও, ক্ষমা চেয়ে নাও, তারপর দেখা যাবে। কিন্তু বাবাও তো নলেজফুল, তিনি জানেন, তারপর হেসে ছেড়ে দেন। কিন্তু ক্ষমা মঞ্জুর করেন না। বিধি ছাড়া কখনোই সিদ্ধি প্রাপ্ত হয় না, তাই না ! বিধি হল এক কদমের আর সিন্ধি হল পদম কদমের সমান। কিন্তু এক কদমের বিধি তো যথার্থ হতে হবে ! তো এই সময়ের বিশেষত্ব কতখানি বা বরদানী সময় কেন - এ বিষয়ে বললাম।

*বরদানঃ-*

ী সময়ে যদি বরদান না নাও তবে কোন্ সময় নেবে ? সময় সমাপ্ত হলে আর সময়ানুসারে এই সময়ের বিশেষত্বগুলিও সব সমাপ্ত হয়ে যাবে । সেইজন্য যা যা করার, যা যা নেওয়ার, যা যা বলার, সে'সব এখন বরদানের রূপে বাবা যখন সহায়তা করছেন সেই সময়ের মধ্যে করে নাও, বানিয়ে নাও। তারপরে এই ডায়মন্ড চান্স আর পাওয়া যাবে না। সময়ের বিশেষত্বকে তো শুনলে। সময়ের বিশেষত্বের আধারে ব্রাহ্মণ জীবনের যে তিন বিশেষত্বের কথা বলা হল - তাতে সম্পূর্ণ হও। তোমাদের স্লোগানও তো এটা - "যোগী হও, পবিত্র হও। জ্ঞানী হও, কর্মাতীত হও।" যখন সাথে যেতেই হবে তো সদা সাথে যে থাকবে সে-ই সাথে যাবে। যে সাথে থাকে না সে সাথে যাবে কীকরে ? সময় মতো তৈরীই হবে সাথে যাওয়ার জন্য। কারণ বাবার সমান হওয়া অর্থাৎ তৈরী হওয়া । সমান হওয়াই হল সাথ আর হাত। নাহলে কী হবে ? আগে যারা যাবে তাদেরকে দেখতে দেখতে পিছনে পিছনে এলে, কিন্তু সাথী তো হলে না। সাথী তো সাথে যাবে। অনেক সময় ধরে সাথে থাকা, সাথী হয়ে সহযোগী হওয়া - এই অনেকদিনের সংস্কারই সাথী বানিয়ে সাথে নিয়ে যাবে। এখনও সাথে থাকো না, তাতে প্রমাণিত হয় যে, দূরে রয়েছো। তো দূরে থাকার সংস্কার সাথে যাওয়ার সময়ও দূরেরই অনুভব করাবে। সেইজন্য এখন থেকেই তিনটি বিশেষত্বকেই চেক করো। সদা সাথে থাকো। সদা বাবার সাথী হয়ে সেবা করো। করাচ্ছেন বাবা (করাবনহার হলেন বাবা), আমি নিমিত্ত হয়ে করছি (আমি করনহার)। তবে কখনোই সেবা তোমাকে অস্থিরতার মধ্যে ফেলবে না। যেখানে একা হয়ে যাবে, তখন 'আমিত্ব' চলে এলেই, মায়া মার্জারী ম্যাঁউ ম্যা়ঁউ করতে থাকে। তোমরা আমি আমি বলতে থাকো, সে বলে - আমি আসছি, আমি আসছি। মায়াকে তোমরা মার্জারী বলো তো, তাই না ! অতএব সাথী হয়ে সেবা করো। কর্মাতীত হওয়ার পরিভাষাও বড়ই গূহ্য, সে বিষয়ে পরে কখনো বলবো।

আজ কেবল এই তিনটি বিষয়কে চেক করতে হবে। আর সময়ের বিশেষত্বের লাভ কতখানি নিয়েছো ? কেননা সময়ের মহত্বকে জানা অর্থাৎ মহান হওয়া। নিজেকে জানা, বাবাকে জানা - যতখানি এটা মহত্বের, ঠিক তেমনই সময়কে জানাও অত্যন্ত আবশ্যক ।তাহলে বুঝতে পেরেছো কী করতে হবে ? বাপদাদা বসে রেজাল্ট শোনাবেন তার আগেই নিজের রেজাল্ট নিজেই বের করো। কারণ বাপদাদা যদি রেজাল্ট আউট করে দেন, তাহলে রেজাল্ট শুনে ভাববে, এখন তো অ্যানাউন্স হয়ে গেল, এখন কী করব ? এখন তো আমি যেমন আছি ঠিক আছে। সেইজন্যই বাপদাদা তাই বলেন - এটা চেক করো, ওটা চেক করো। এটা ইনডাইরেক্ট রেজাল্ট শোনাচ্ছি। কেননা আগে থেকেই বলা হচ্ছে যে, রেজাল্ট বলা হবে আর সময়ও দেওয়া হয়েছে। কখনো ৬ মাস কখনো এক বছর দেওয়া হয়েছে। তারপর কেউ কেউ ভাবে যে, ৬ মাস তো শেষ হয়ে গেল। বাবা তো কিছু বললেন না। কিন্তু বলেছি না যে, এখনও তাও কিছু সময় হল ক্ষমা আর করুণার (রহমদিল), বরদানের। এখন চিত্রগুপ্ত, গুপ্ত রয়েছেন। এরপর প্রত্যক্ষ হবেন। সেইজন্য তবুও তো বাবার দয়া হয় - চলো ১ বছর আরও দিয়ে দাও, তবুও বাচ্চা যে। বাবা চাইলে কি না করতে পারেন। সকলের একটা একটা বিষয়ে এনাউন্স করতে পারেন। অনেকেই (বাবাকে) ভোলানাথ মনে করে না ! তাই কোনো কোনো বাচ্চা এখনও বাবাকে ভোলা বানাতে থাকে। তিনি ভোলানাথ ঠিকই, কিন্তু আবার মহাকাল তিনি। এখন সেই রূপ বাচ্চাদের সামনে দেখাচ্ছেন না। তাহলে (সেই রূপের) সামনে দাঁড়াতে পারবে না। সেইজন্য জানা সত্ত্বেও ভোলানাথ হয়ে থাকেন, জানেন না এমন ভাবে থাকেন। কিন্তু কিসের জন্য ? বাচ্চাদেরকে সম্পূর্ণ বানানোর জন্য। বুঝতে পেরেছো ? বাপদাদা এই সব দৃশ্য দেখে মনে মনে হাসেন। বাচ্চারা কি কি খেলা খেলতে থাকে - সব দেখতে থাকেন। সেইজন্য ব্রাহ্মণ জীবনের বিশেষত্ব গুলিকে নিজের মধ্যে চেক করো আর নিজেকে সম্পন্ন বানাও। আচ্ছা !
চতুর্দিকের সকল যোগী আত্মা, জ্ঞানী আত্মা, বাবা সম কর্মাতীত আত্মাদেরকে, সদা বাবার সাথে সর্ব সম্বন্ধের, প্রাপ্তি গুলিকে নিয়ে থাকা সুবুদ্ধিসম্পন্ন (সমঝদার) বিশাল বুদ্ধি, স্বচ্ছ বুদ্ধি, সদা পবিত্র বাচ্চাদেরকে বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার ।
পার্টিদের সাথে সাক্ষাৎ - সদা নিজেকে সর্ব শক্তিতে সম্পন্ন মাস্টার সর্বশক্তিমান আত্মা অনুভব করে থাকো ? বাবা তোমাদেরকে সর্ব শক্তিগুলির খাজানা উত্তরাধিকারের রূপে দিয়ে দিয়েছেন। তো সর্ব শক্তিগুলি হল তোমাদের উত্তরাধিকার অর্থাৎ খাজানা ।নিজের সম্পদ গুলি সর্বদা সাথে থাকে তো ? বাবা দিয়েছেন আর বাচ্চাদের হয়ে গেছে। তো যে জিনিস নিজের হয় তা স্বাভাবিকভাবেই স্মরণে থাকে। সেটা যে জিনিসই হোক, সেটা হল বিনাশী আর এই উত্তরাধিকার বা শক্তি গুলি হল অবিনাশী। আজ উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হল, কাল শেষ হয়ে গেল, এমন নয়। আজ খাজানা রয়েছে, কালকে কেউ জ্বালিয়ে দিল কি লুট করে নিল - এ এমন খাজানা নয়। যত খরচ করবে তত বৃদ্ধি পাবে। যত যত জ্ঞানের খাজানাকে বিতরণ করবে ততই বৃদ্ধি পেতে থাকবে। সকল উপকরণও স্বতঃই প্রাপ্ত হতে থাকবে। তো সদা কালের জন্য উত্তরাধিকারের অধিকারী হয়ে গেছো - এই খুশী থাকে তো ? উত্তরাধিকারও তো কতখানি শ্রেষ্ঠ ! কোনো অপ্রাপ্তি নেই, সকল প্রাপ্তি সম্পন্ন । আচ্ছা !
অমৃতবেলায় বিদায় নেওয়ার সময় দাদীদের সাথে তথা দাদী নির্মলশান্তা জীর সাথে বাপদাদার সাক্ষাৎ -
মহারথীদের প্রতিটি কদমে সেবা। কিছু বলুক কিম্বা না বলুক, কিন্তু প্রতিটি কর্ম, প্রতিটি আচরণে সেবা। সেবা ছাড়া এক সেকেন্ডও থাকতে পারেন না। সেটা মন্সা সেবা হোক, বাচা সেবা হোক কিম্বা সম্বন্ধ - সম্পর্কের ক্ষেত্রে - তারা নিরন্তর যোগী যেমন, তেমনই নিরন্তর সেবাধারীও। খুব ভালো - মধুবনে যে খাজানা জমা করেছো, সে'সব সকলকে বিতরণ করে খাওয়ানোর জন্য তোমরা যাচ্ছো। মহারথীদের উপস্থিতিও অনেক আত্মাদের জন্য স্থূল আশ্রয় হয়ে যায়। বাবা যেমন ছত্রছায়া, সেইরকমই বাবা সম বাচ্চারাও ছত্রছায়া হয়ে যায়। সবাই তাঁদেরকে দেখে কত খুশী হয়ে যায় ! তো এই বরদান রয়েছে মহারথীদের জন্য। চোখের জন্য বরদান, মস্তকের জন্য কত কত বরদান রয়েছে ! প্রতিটি কর্ম করার জন্য নিমিত্ত কর্মেন্দ্রিয়ের জন্য বরদান রয়েছে। নয়নের দ্বারা যখন দেখো, তখন কী মনে হয় ? সকলে মনে করে যে, বাবার চোখের দৃষ্টি এই আত্মাদের চোখের দৃষ্টি থেকে অনুভব হয়। তাহলে চোখের দৃষ্টি বরদান হয়ে গেল, তাই না ! মুখের বরদান রয়েছে, এই চেহারার বরদান রয়েছে, কদম - কদমের বরদান রয়েছে। কত কত বরদান, কতো গুণবো ! অন্যদেরকে তো বরদান দিয়ে থাকো, কিন্তু তোমরা তো আগে থেকেই বরদান পেয়ে গেছো। যে পদক্ষেপই নাও, বরদানের দ্বারা তোমাদের ঝুলি ভরেই রয়েছে। লক্ষ্মীকে যেমন দেখায় না - তার হাত থেকে ধন সকলের প্রাপ্ত হতেই থাকে। অল্প সময়ের জন্য নয়, সদা সম্পত্তির দেবী হয়ে সম্পত্তি দিতেই থাকে। তো এটা কার চিত্র ?
তো কতো বরদান রয়েছে ! বাবা তো বলতে থাকেন - কোনো বরদানই আর বাকি নেই। তাহলে আর কোনটা দেবো ? বরদানের দ্বারাই সুসজ্জিত হয়ে চলছো। যেমন বলা হয় না - হাত ঘোরালো আর বরদান পেয়ে গেল। বাবা তো "সমান ভব" র বরদান দিয়েছেন। এর মধ্যেই সব বরদান রয়েছে। যখন বাবা অব্যক্ত হলেন, তখন সকলকে "সমান ভব" র বরদান দিয়েছেন। সূক্ষ্ম রূপে সব মহাবীর বাবার সামনে ছিলেন আর বরদান প্রাপ্ত হয়েছিল। আচ্ছা !
তোমাদের সাথে সকলের আশীর্বাদ আর ঔষধী তো আছেই। সেইজন্য বড় বড় অসুখও ছোট হয়ে যায়। কেবল রূপরেখাখানি দেখায়, কিন্তু নিজের চোট লাগাতে পারে না। শূল তখন কাঁটার রূপে দেখা যায়। বাকি তো বাবার হাত আর সাথ তো সব সময়ই রয়েছে। প্রতিটি কদমে, প্রতিটি বোল'এ বাবার আশীর্বাদ আর ঔষধী প্রাপ্ত হতেই থাকে। সেইজন্য নিশ্চিন্ত (বেফিকর) থাকো । (এতে ফ্রি কবে হবে?) এইভাবে ফ্রি হয়ে গেলে তখন সূক্ষ্মলোকে পৌঁছে যাও। এতে অন্যরাও বল পায়। তোমাদের এই অসুখও সেবা করে থাকে। তো অসুখ, অসুখ নয়, সেবার উপায় হয়ে যায়। নাহলে সকলে ভাবতে পারে এদের জন্য তো বাবার সহায়তা রয়েছে, এনাদের কোনো কিছুর অনুভব হবে নাকি ! কিন্তু তোমাদেরকে অনুভাবী বানিয়ে অন্যদেরকে সাহস জোগানোর সেবার জন্য সামান্য রূপরেখা দেখায়। নাহলে তো সকলের মধ্যে হতাশা আসতে পারে । তোমরা সবাই এক্সাম্পেলের রূপে একটুখানি রূপরেখা দেখতে পাও, বাদবাকি হিসাব মিটে গিয়ে কেবল রূপরেখাটুকু রয়ে গেছে। আচ্ছা !
বিদেশী ভাই বোনেদের প্রতি -
অন্তর থেকে প্রতিটি আত্মার প্রতি শুভ ভাবনা রাখবে - এটাই হল অন্তরের থ্যাঙ্কস । বাবার প্রতিটি কদমে প্রতিটি বাচ্চাকে অন্তর থেকে থ্যাঙ্কস প্রাপ্ত হতেই থাকে। সঙ্গমযুগ সকল আত্মার প্রতি সদা কালের জন্য থ্যাঙ্কস প্রদান করবার সময় বলা যেতে পারে। সঙ্গমযুগের পুরোটাই হল 'থ্যাঙ্কস ডে'। সদা একে অপরকে শুভ কামনা, শুভ ভাবনা দিতে থাকো আর বাবাও দিতে থাকেন। আচ্ছা !
বরদান : - খুশীর সাথে শক্তিকে ধারণ করে বিঘ্নকে অতিক্রমকারী বিঘ্নজিৎ ভব
যে বাচ্চারা জমা করতে জানে, তারা শক্তিশালী হয়ে ওঠে। যদি এখনই উপার্জন করল আর সাথে সাথেই বিতরণ করল, নিজের মধ্যে সমায়িত করল না, তাহলে শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়। কেবল বিতরণ করা আর দান করার আনন্দ থাকে। খুশীর সাথে যদি শক্তি থাকে, তবে সহজেই বিঘ্ন গুলিকে অতিক্রম করে বিঘ্নজিৎ হয়ে যাবে। তখন কোনো প্রকারের বিঘ্নই একাগ্রতাকে ভঙ্গ (ডিস্টার্ব) করবে না। তখন যেমন চেহারারায় খুশীর ঝলক প্রতিভাত হবে, তেমনি শক্তির ঝলকও প্রতিভাত হবে।

*স্লোগানঃ-*

পরিস্থিতির সমাবেশ হলে ঘাবড়ে যাওয়ার পরিবর্তে তাকে শিক্ষক মনে করে পাঠ গ্রহণ করো।