07.04.2021
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা —
বাবা তোমাদের জন্য দূরদেশ থেকে এসেছেন নতুন রাজ্য স্থাপন করার জন্য, তোমরা এখন
স্বর্গের উপযুক্ত হয়ে উঠছো"
প্রশ্নঃ -
যে বাচ্চাদের
শিববাবার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস আছে তার লক্ষণ (চিহ্ন) কী?
উত্তরঃ -
তারা চোখ বন্ধ করে বাবার শ্রীমতে চলে, বাবা যে আদেশ দিয়ে থাকেন। কখনোই ভাবনাতেই আসে
না যে, কোনও ক্ষতি না হয়ে যায়। কেননা এমন দৃঢ় বিশ্বাস সম্পন্ন বাচ্চাদের দায়িত্ব
বাবা স্বয়ং নিয়েছেন। তারা দৃঢ় নিশ্চয়ের শক্তি প্রাপ্ত করে থাকে। তাদের স্থিতি অচল,
অটল হয়ে যায়।
গীতঃ-
তুমিই মাতা, তুমিই পিতা....
ওম্ শান্তি ।
এটা কার মহিমা
শুনলে ? যাকে পৃথিবীতে তোমরা বাচ্চারা ছাড়া আর কেউ জানেনা। এই মহিমা উচ্চ থেকে
উচ্চতর বাবার। এছাড়া যারই মহিমা করুক না কেন সবই অনর্থক হয়ে যায়। উচ্চ থেকে উচ্চতর
হলেন এক বাবা। কিন্তু বাবার পরিচয় কে দেবে ? তিনি স্বয়ং এসে নিজের এবং আত্মাদের
পরিচয় দিয়ে থাকেন। কোনো মানুষেরই আত্মার পরিচিতি নেই। যদিও বলে থাকে মহান আত্মা,
জীব আত্মা। শরীর যখন ছেড়ে চলে যায় তখন বলে — আত্মা বেরিয়ে গেল । শরীর মরে যায়। আত্মা
অবিনাশী। আত্মার কখনও বিনাশ হয় না। আত্মা যা নক্ষত্র স্বরূপ, সেটা অতি সূক্ষ্ম। এই
চোখ দিয়ে দেখা যায় না। আত্মাই সব কর্তব্য করে, কিন্তু প্রতিটি মূহুর্তে দেহ-অভিমান
থাকার কারণে বলে থাকে আমি অমুক, আমি এটা করেছি। বাস্তবে তো সব আত্মাই করে থাকে।
শরীর তো অরগ্যান্স। সাধু, সন্ন্যাসীরাও জানে যে আত্মা অতি সূক্ষ্ম যা ভ্রুকুটির
মাঝখানে বিরাজ করে, কিন্তু তাদের এই জ্ঞান নেই যে, আত্মার মধ্যেই ভূমিকা পালন করার
সংস্কার সঞ্চিত থাকে। কেউ বলে — আত্মার মধ্যে সংস্কার থাকে না, আত্মা নির্লেপ হয়।
কেউ বলে সংস্কার অনুসারে জন্ম হয়। অনেক মতভেদ আছে। এটাও কারো জানা নেই কোন আত্মারা
৮৪ জন্ম গ্রহণ করে। তোমরা জান সূর্যবংশীয়রাই ৮৪ চক্র ঘোরে। আত্মাই ৮৪ চক্র ঘুরে
পতিত হয়ে যায়। তাদের এখন কে পবিত্র করে তুলবে ? পতিত-পাবন উচ্চ থেকে উচ্চতর এক
বাবাই পবিত্র করে তুলতে পারেন, ওঁনার মহিমাও সবচেয়ে উচ্চ। ৮৪ জন্ম সবাই তো নেবেনা।
যারা পরে আসবে তারা তো ৮৪ জন্ম নিতে পারবে না। সবাই একসাথে তো আসবে না। যারা
প্রথম-প্রথম সত্য যুগে আসবে, সূর্য বংশী রাজা এবং প্রজা তারাই ৮৪ জন্ম গ্রহণ করবে।
পরে তো জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে, তাইনা। তারপর কারো ৮৩ কারোও বা ৮০ টা জন্ম হয়।
সত্যযুগে সম্পূর্ণ আয়ু হয় ১৫০ বছরের। কারো মৃত্যুই তাড়াতাড়ি হয়না। এসব বিষয়ে বাবাই
বসে বোঝান। এখন কেউ-ই পরমপিতা পরমাত্মাকে জানে না। বাবা বুঝিয়েছেন যেমন তোমাদের
আত্মা, তেমনই আমারও। তোমাদের জন্ম-মৃত্যুর চক্রে আসতে হয়, আমাকে আসতে হয়না। আমাকে
আহ্বান করা হয় যখন সবকিছু পতিত হয়ে যায়। যখন খুব দুঃখি হয়ে পড়ে তখনই আহ্বান করে।
বাচ্চারা শিববাবা এখন তোমাদের শিক্ষা প্রদান করছেন।
কেউ-কেউ জিজ্ঞাসা করে কিভাবে মানবো যে পরমাত্মা আসেন ! ওদের বোঝাতে হবে যে সবাই
আহ্বান করে বলে — হে পতিত-পাবন এসো। উনি হলেন নিরাকার, ওঁনার নিজের শরীর নেই, আসেন
এই পতিত দুনিয়াতে। পবিত্র দুনিয়াতে তো যাবেন না। (পতিত দুনিয়াতে আসতে হয় পবিত্র করে
তোলার জন্য, পবিত্র দুনিয়াতে ভগবানের আসার প্রয়োজন পড়ে না) । এভাবে বোঝাতে হবে।
এটাও বোঝাতে হবে পরমাত্মা বিন্দু স্বরূপ এতো সূক্ষ্ম যেমন আত্মাও ছোট্ট। কিন্তু উনি
হলেন মনুষ্য সৃষ্টির বীজরূপ,এবং নলেজফুল। বাবা বলেন তোমরা আমাকে পরমপিতা পরমাত্মা
বলে থাকো। আহ্বান কর যখন তবে তো নিশ্চয়ই আসতে হবে। গাওয়াও হয় দূরদেশ নিবাসী এসেছেন
অন্যের দেশে। বাবার কাছ থেকেই এখন জেনেছি যে আমরা এখন অন্যের দেশে অর্থাত্ রাবণের
দেশে আছি। সত্যযুগ ত্রেতায় আমরা ঈশ্বরীয় দেশ অর্থাত্ নিজের দেশে ছিলাম তারপর দ্বাপর
থেকে আমরা অন্যের দেশ, অন্যের রাজ্যে চলে আসি। বাম মার্গে চলে আসি। তারপর শুরু হয়
ভক্তি। প্রথমে তো শিববাবাকেই ভক্তি করে ,শিবলিঙ্গকে কত বড়ো করে তৈরি করে, কিন্তু এতো
বড়ো তো তিনি নন। এখন তোমরা বুঝেছ আত্মা আর পরমাত্মার মধ্যে কি পার্থক্য আছে! তিনি
নলেজফুল, চির পবিত্র, সুখের সাগর, আনন্দের সাগর। এটাই তো পরমাত্মার মহিমা। তাঁকে
আহ্বান করা হয় হে পতিত-পাবন এসো। তিনি হলেন পরমপিতা যিনি কল্পে-কল্পে আসেন। দূরদেশ
নিবাসী পথিককে আহ্বান করা হয়, তাঁর মহিমা গাওয়া হয়। ব্রহ্মা, সরস্বতীকে আহ্বান করা
হয়না। আহ্বান করে নিরাকার পরমাত্মাকে। আত্মা ডেকে বলে দূরদেশ থেকে এখন অন্যের দেশে
এসো , কেননা সব পতিত হয়ে গেছে। আমিও যাই, যখন রাবণ রাজ্য শেষ হতে চলেছে। আমি আসি
সঙ্গম যুগে, এটা কারও জানা নেই।
বলাও হয় উনি পরম আত্মা, বিন্দু। আজকাল তো বলে থাকে প্রতিটি আত্মা পরমাত্মা এবং
পরমাত্মা প্রতিটি আত্মা। আত্মা কখনও পরমাত্মা হতে পারে না। আত্মা, পরমাত্মা দুইই
আলাদা। রূপ দুইয়েরই একরকম। কিন্তু আত্মাকে পতিত হতে হয়, ৮৪ জন্মের জন্য ভূমিকা পালন
করতে হয়। পরমাত্মা জন্ম-মৃত্যু রহিত। যদি আত্মাকেই পরমাত্মা বলা হয় তবে কি
সতোপ্রধান পরমাত্মা তমোপ্রধান হয়ে যায়! না, এটা তো হতে পারে না। বাবা বলেন আমি আসি
সব আত্মাদের সার্ভিস করার জন্য। তারা আমার জন্মের কথা বলতে পারেনা। আমি আসি
নরকবাসীদের স্বর্গবাসী করে তুলতে। তিনি স্বর্গ স্থাপনা করার জন্যই বিদেশে (লৌকিক,
সীমিত দুনিয়া) এসেছেন। বাবাই এসে আমাদের স্বর্গের উপযুক্ত করে তোলেন। এটাও বোঝান
হয়েছে প্রত্যেক আত্মার ভূমিকা আলাদা-আলাদা। পরমাত্মা জন্ম-মৃত্যু রহিত (জন্ম-মৃত্যুর
চক্রে আসেন না)। পরমাত্মা আসেন তবেই তো শিবরাত্রি পালন করা হয়। কিন্তু তিনি কবে
আসেন, কেউ জানেনা। না জেনে এভাবেই শিবজয়ন্তী পালন করে থাকে। তিনি অবশ্যই সঙ্গমে
আসেন,স্বর্গ স্থাপনা করার জন্য। পতিতদের পবিত্র করে তোলার জন্য অবশ্যই সঙ্গমেই
আসবেন তাইনা। পাবন সৃষ্টি হলো স্বর্গ। আহ্বান করে বলে পতিত-পাবন এসো। অবশ্যই পতিত
দুনিয়া বিনাশের সময়, তবেই তো পবিত্র দুনিয়া স্থাপন করবেন। যুগে-যুগে তিনি আসেন না।
বাবা বলেন — আমাকে সঙ্গম যুগেই এসে পতিত দুনিয়াকে পবিত্র করে তুলতে হয়। এটা অন্যের
দেশ, রাবণের দেশ। কিন্তু কোনো মানুষই জানেনা যে রাবণের রাজ্য চলছে। কবে থেকে এই
রাবণ রাজ্য শুরু হয়েছিল, কিছুই জানা নেই। প্রধান বিষয়ই হলো আত্মা আর পরমাত্মার
রহস্য বুঝিয়ে বলতে হবে,তারপর বোঝাতে হবে উনি কল্পের সঙ্গম যুগে আসেন পবিত্র করে
তোলার জন্য। এই কর্তব্য পরমাত্মার, কৃষ্ণের নয় । শ্রী কৃষ্ণ তো স্বয়ং ৮৪ জন্ম নিয়ে
নীচে নেমে এসেছে।সূর্যবংশীয়রা সবাই নীচে নেমে আসে। কল্প-বৃক্ষ অর্ধেক তরতাজা,
অর্ধেক পুরানো তো হবেই না ! জড়াজীর্ণ অবস্থা সবকিছুর হয়ে থাকে। কল্পের আয়ুও মানুষের
জানা নেই। শাস্ত্রতেও দীর্ঘ আয়ুর কথা বলা হয়েছে। বাবাই এসে সব বোঝান। এর মধ্যে আর
কোন প্রশ্নই উঠতে পারে না। রচয়িতা বাবা সত্যই বলেন । আমরা এতো সংখ্যক বি.কে সবাই
মানি। নিশ্চয়ই সত্য তবেই তো মানি। তোমরা যেমন এগিয়ে যাবে এবং দৃঢ় বিশ্বাস জন্মাবে
তখনই বুঝতে সক্ষম হবে। প্রথমে মানুষকে এটাই বোঝাতে হবে পরমপিতা পরমাত্মা নিরাকার
দূরদেশ থেকে এসেছেন। কোন শরীরে এসেছেন ? সূক্ষ্ম বতনে এসে তিনি কি করবেন ? নিশ্চয়ই
এখানেই আসতে হবে। প্রজাপিতা ব্রহ্মাকেও এখানে থাকা প্রয়োজন। ব্রহ্মা কে, তাও বাবা
বসে বোঝান। যার মধ্যে প্রবেশ করি সেও তার জন্মকে জানতো না সুতরাং বাচ্চারাও জানেনা।
বাচ্চারা আমার হয় যখন আমি অ্যাডপ্ট করি, আমি এই সাকার শরীর দ্বারা বাচ্চাদের বোঝাই
যে, তোমরা নিজের জন্মকে ভুলে গেছ, এখন সৃষ্টি চক্র সম্পূর্ণ হতে চলেছে তারপর আবার
রিপিট হবে। আমি এসেছি পবিত্র করে তোলার জন্য, রাজযোগ শেখাতে। এছাড়া পবিত্র হওয়ার আর
কোনো পথ নেই। যদি এই রহস্য মানুষ জানত তবে গঙ্গা ইত্যাদি নদীতে স্নান করতে, মেলা,
তীর্থ ইত্যাদিতে যেত না। এই জলের নদীগুলিতে সব সময় স্নানই করতে থাকে। দ্বাপর থেকে
করে আসছে। মানুষ মনে করে গঙ্গায় ডুব দিলেই পাপ নাশ হবে। কিন্তু কারো পাপ নাশ হয়না।
প্রথমে তাদের আত্মা আর পরমাত্মার রহস্য বুঝিয়ে বলো, আত্মারাই পরমাত্মা বাবাকে
আহ্বান করে থাকে, তিনি নিরাকার। অরগ্যান্স (অঙ্গ,কর্মেন্দ্রিয়) দ্বারাই আত্মা
আহ্বান করে, ভক্তি করার পর ভগবানকে আসতেই হবে, এটাও ড্রামায় নির্ধারিত।
বাবা বলেন — আমাকে নতুন দুনিয়া স্থাপন করার জন্য আসতে হয়। শাস্ত্রতেও লেখা আছে
ভগবান সঙ্কল্প করেছিলেন সুতরাং ড্রামার প্ল্যান অনুসারেই সঙ্কল্প উঠেছিল। প্রথমে এই
বিষয়গুলো কিছুই তোমরা বুঝতে না। প্রতিদিন একটু-একটু করে বুঝতে পারছ। বাবা বলেন — আমি
তোমাদের নতুন-নতুন অতি গুহ্য (গভীর, গুরুত্বপূর্ণ) বিষয় শুনিয়ে থাকি। শুনতে -শুনতে
তোমরাও বুঝতে পার , প্রথমে এমনটা বলতে না যে শিববাবা পড়াচ্ছেন। এখন ভালো ভাবে বুঝে
গেছ, বোঝার জন্য আরও অনেক বিষয় আছে। প্রতিদিন বুঝিয়ে থাকি কিভাবে কাউকে বোঝানো উচিত।
প্রথমে এই দৃঢ় বিশ্বাস থাকা উচিত যে অসীম জগতের পিতা বোঝাচ্ছেন নিশ্চয়ই তিনি সত্য
বলবেন। এতে বিভ্রান্তির কোনও ব্যাপার নেই। বাচ্চাদের মধ্যে কেউ পাক্কা (শক্তিশালী )
কেউবা কাচা (দুর্বল)। কাচা হলে কাউকে বোঝাতে পারবে না। স্কুলেও নম্বরানুসারে হয় (পড়াশোনার
অগ্রগতি অনুযায়ী)। অনেকের মধ্যেই এই সংশয় থাকে যে আমরা কিভাবে বুঝব যে পরমপিতা
পরমাত্মা এসে জ্ঞান প্রদান করেন কেননা তাদের বুদ্ধিতে আছে শ্রী কৃষ্ণ জ্ঞান
শুনিয়েছিলেন। এই পতিত দুনিয়াতে কৃষ্ণ তো এখন আসতে পারে না। এটাই ওদের কাছে প্রমাণ
করো পরমাত্মাকেই আসতে হয়, পতিত দুনিয়া আর পতিত শরীরে। বাবা বোঝান প্রত্যেকের
নিজ-নিজ বুদ্ধ আছে কেউ চট করে বুঝে নেয় । যতটুকু সম্ভব বোঝাতে হবে। ব্রাহ্মণ সবাই
একরকম হবে না, কিছু বাচ্চাদের মধ্যে ভীষণ রকম দেহ-অভিমান থাকে। বাবাও জানেন
বাচ্চাদের মধ্যে নম্বরানুসারে আছে। বাবার ডায়রেকশন অনুযায়ী বাচ্চাদের চলতে হবে। বড়
বাবা (শিববাবা) যা বলেন, সেটা মানা উচিত। গুরু ইত্যাদিদের তো মেনে এসেছ। এখন বাবা
যিনি স্বর্গে নিয়ে যেতে এসেছেন ,তাঁর কথা চোখ বন্ধ করে মানা উচিত। কিন্তু এমন
নিশ্চয় ( অটুট বিশ্বাস) বুদ্ধি বাচ্চাদের নেই। এতে কোনো লাভ হোক বা ক্ষতি গ্রহণ করা
উচিত। মনে কর এতে কোনো ক্ষতিই হবে তবুও বাবা বলছেন না! সবসময় মনে করবে — শিববাবা
বলছেন। এমনটা ভেবোনা যে ব্রহ্মা বলছেন। শিববাবার দায়িত্ব। এটা (ব্রহ্মা) তাঁর রথ এবং
তিনি অবশ্যই সবকিছু ঠিক রাখবেন। তিনি বলেন আমি এখানে বসে আছি। সবসময় মনে রেখো
শিববাবা যিনি সবকিছু বলছেন। ব্রহ্মা কিছুই জানে না। সবসময় এভাবেই ভাবো, এই বিশ্বাস
থাকা উচিত। শিববাবা বলেন আমার কথা মেনে চললে তোমাদের কল্যাণ হবে। এই ব্রহ্মাও যদি
কিছু বলে থাকে তার দায়িত্বও আমার। বাচ্চারা তোমরা চিন্তা করোনা। শিববাবাকে স্মরণ
করলে তোমাদের অবস্থা আরও শক্তিশালী হবে। বিকর্ম বিনাশ হবে, শক্তি পাবে। যত বাবাকে
স্মরণ করবে ততই শক্তি বৃদ্ধি হবে।
যে শ্রীমতে চলে সার্ভিস করবে সেই উচ্চ পদ পাবে। অনেকের মধ্যেই ভীষণ ভাবে দেহ-অভিমান
থাকে। বাবাকে দেখ সব বাচ্চাদের সাথে কত ভালোবাসার সাথে যোগাযোগ রেখে চলেন। সবার সাথে
কথা বলেন। বাচ্চাদের জিজ্ঞাসা করেন ভালোভাবে বসেছ ? কোনও অসুবিধা হচ্ছে না তো?
বাচ্চাদের প্রতি অসীম জগতের পিতার অধিক ভালোবাসা থাকে। যে যত শ্রীমত অনুসারে চলে
সার্ভিস করে সেই অনুসারে ভালোবাসা থাকে। শুধুমাত্র সার্ভিসেই লাভ আছে। সার্ভিসের
জন্য অস্থি দিতে হয়। বাচ্চারা যখন সার্ভিস করে তখন তারা হৃদয়ে বসে থাকে এবং প্রথম
শ্রেণীর বাচ্চা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। কিন্তু চলতে-চলতে কারো উপর গ্রহের প্রভাব
বিস্তার করে, কারণ মায়ার মুখোমুখি হতে হয় না ! গ্রহের কারণে জ্ঞানও ধারণ হয়না। কেউ
আবার বিনা ক্লান্তিতে কর্ম দ্বারা সেবা করতেই থাকে ।
তোমাদের কাজ হলো সবাইকে সুখধামের মালিক করে তোলা। কাউকে দুঃখ দেবে না। জ্ঞান না
থাকার কারণে দুঃখ দিয়ে থাকে। যতই বোঝাও না কেন বুঝতেই চায়না। প্রথমে আত্মা আর
পরমাত্মাকে বোঝাতে হবে। কিভাবে আত্মার মধ্যে ৮৪ জন্মের পার্ট সঞ্চিত থাকে, যা
অবিনাশী, যা কখনোই পরিবর্তন হবে না, ড্রামাতে ফিক্সড হয়ে আছে। এই দৃঢ় বিশ্বাস যাদের
মধ্যে আছে তারা কখনোই টালমাটাল হবে না (স্থিতি ওঠানামা )। অনেকেই নড়বড়ে হয়ে পড়ে।
অন্তিমে যখন খড়ের গাদায় আগুন লাগবে তখনই দৃঢ় বিশ্বাসে অটল হবে। এখন অনেক যুক্তি
সহকারে বোঝাতে হবে। ভালো-ভালো বাচ্চারা নিরন্তর সার্ভিসের মধ্যেই থাকে। তারা হৃদয়ে
বসে আছে। অনেকেই খুব দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকে। তারা অনেক পরিশ্রম করে। সার্ভিসের জন্য
তাদের খুব আগ্রহ থাকে। যার মধ্যে যে গুণ রয়েছে বাবা তা বর্ণন করেন । আচ্ছা!
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
সার্ভিসে প্রতিটি অস্থি দিতে হবে, কোনও বিষয়ে সংশয় থাকা উচিত নয়। সবাইকে সার্ভিস
দ্বারা সুখ দিতে হবে, দুঃখ নয়।
২ ) নিশ্চয়ের (দৃঢ় বিশ্বাসের) শক্তির দ্বারা নিজের অবস্থাকে অটল বানাতে হবে। যে
শ্রীমত পাওয়া যায়, তার মধ্যেই কল্যাণ আছে, কেননা রেসপন্সিবল হলেন বাবা, সেইজন্য
চিন্তা করা উচিত নয়।
বরদান:-
সহজযোগকে নেচার আর ন্যাচারাল করে তুলে প্রতিটি বিষয়ে পারফেক্ট ভব
যেমন তোমরা হলে বাবার
সন্তান, এর মধ্যে কোনো পারসেন্টেজ নেই, একইভাবে নিরন্তর সহজযোগী বা যোগী হওয়ার
স্টেজেও পারসেন্টেজ সমাপ্ত করতে হবে। ন্যাচারাল (স্বাভাবিক) নেচার (স্বভাব) হয়ে
যাওয়া উচিত। যেমন কারো বিশেষ নেচার থাকে, ঐ নেচারের বশীভূত হয়ে চলতে না চাইলেও
সেটাকে নিয়েই চলে। তেমনই এই সহজযোগী হওয়াও যেন স্বাভাবিক নেচার হয়ে যায়। কি করব,
কিভাবে যোগযুক্ত হব — এইসব বিষয় ভাবনা থেকে দূর হয়ে গেলে প্রতিটি বিষয়ে পারফেক্ট (নিখুঁত)
হয়ে যাবে। পারফেক্ট অর্থাৎ এফেক্ট (প্রভাব) আর ডিফেক্ট (ত্রুটি) থেকে মুক্ত।
স্লোগান:-
সহন করতে হলে খুশি মনে করো, বাধ্য হয়ে নয় ।