12.04.2021 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


“মিষ্টি বাচ্চারা - এটা হলো তোমাদের ওয়ান্ডারফুল ইউনিভার্সিটি, যেখানে সঠিক পথের দিশারী ভোলানাথ বাবা টিচার হয়ে তোমাদের পড়াচ্ছেন”

প্রশ্নঃ -
এই অন্তিম সময়ে বাচ্চারা তোমরা সবাইকে কি এমন লক্ষ্য দিতে থাকো ?

উত্তরঃ -
হে আত্মারা এখন পবিত্র হও, পবিত্র না হলে বাড়ি ফিরে যেতে পারবে না। অর্ধেক কল্প ধরে যে রোগ লেগে আছে, তার থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য তোমরা সবাইকে সাতদিনের ভাট্টিতে বসাও। পতিতদের সঙ্গ থেকে দূরে থাকো, কেউ যেন না স্মরণে আসে, তবেই বুদ্ধিতে কিছু জ্ঞানের ধারণা হতে পারে ।

গীতঃ-
তোমরা রাত কাটিয়েছ ঘুমিয়ে ...

ওম্ শান্তি ।
বাচ্চাদেরকে এটা কে বলছেন ? যেহেতু স্কুলে বসে আছো তো অবশ্যই টিচার বলেছেন। প্রশ্ন ওঠে যে এই টিচার বলছেন, বাবা বলেছেন নাকি সদ্গুরু বলেছেন? এই আশীর্বচন কে বলছেন? বাচ্চাদের বুদ্ধিতে সর্বপ্রথম এটাই আসা চাই যে ইনি হলেন আমাদের অসীম জগতের বাবা, যাকে পরমপিতা পরমাত্মা বলা হয়। তাই বাবাও বলছেন, শিক্ষকও বলছেন তো সাথে সাথে সদ্গুরুও বলছেন। এটা তোমাদেরই বুদ্ধিতে আছে, যারা স্টুডেন্ট হয়েছো। অন্যান্য কলেজ বা ইউনিভার্সিটি'তে যে টিচার পড়ান, তাদেরকে কোনও ফাদার বা গুরু বলা যায় না। এটাও হলো পাঠশালা, আবার ইউনিভার্সিটি বলো বা কলেজ বলো। হয় তো পড়াশোনা, তাইনা! সর্বপ্রথম এটাই বুঝতে হবে যে, পাঠশালাতে আমাদেরকে কে পড়াচ্ছেন? বাচ্চারা জানে যে তিনি হলেন নিরাকার, যিনি সকল আত্মাদের বাবা, সকলের সদ্গতি দাতা, তিনি আমাদেরকে পড়াচ্ছেন। এই সমস্ত রচনা সেই এক রচয়িতার সম্পত্তি। তাই নিজেই বসে রচনার আদি মধ্য অন্তের রহস্য বোঝাচ্ছেন। বাচ্চারা তোমরা বাবার কাছে জন্ম নিয়েছো। তোমরা বুদ্ধির দ্বারা জানতে পারো যে তিনিই হলেন আমাদের সকল আত্মাদের বাবা, যাঁকে জ্ঞানের সাগর, নলেজফুল বলা হয়। তিনি জ্ঞানের সাগর, পতিতপাবন। জ্ঞানের দ্বারাই সদ্গতি হয়ে থাকে, মানুষ পতিত থেকে পবিত্র হয়। এখন বাচ্চারা তোমরা এখানে বসে আছো। অন্যান্য স্কুলে কারোর বুদ্ধিতে এটা থাকে না যে আমাদের জ্ঞানের সাগর নিরাকার বাবা পড়াচ্ছেন। এটা এখানেই তোমরা জানতে পারো। তোমাদেরকেই বোঝানো হয়ে থাকে। মুখ্যতঃ ভারত আর গৌণ ভাবে সমগ্র দুনিয়াতে এইরকম কেউই বুঝতে পারবে না যে আমাদেরকে নিরাকার পরমাত্মা পড়াচ্ছেন। তাদেরকে যারা পড়াচ্ছেন তারা তো হলেন মানুষরুপী টিচার। আর এই রকম জ্ঞানও নেই যে বুঝবে, যে আমরা হলাম আত্মা। আত্মাই পড়ছে। আত্মাই সবকিছু করছে। অমুক আত্মা চাকরি করছে এই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দ্বারা। তাদের বুদ্ধিতে তো এটাই থাকে যে আমি হলাম অমুক। শীঘ্রই তার নাম রূপ স্মরণে এসে যায়। আমরা এটা করছি, আমরা এইরকমভাবে করছি। শরীরের নামই স্মরণে এসে যায়, কিন্তু সেটা হল ভুল। প্রথমে আমরা তো হলাম আত্মা। পড়ে এই শরীর ধারণ করেছি। শরীরের নাম পরিবর্তন হতে থাকে, আত্মার নাম তো পরিবর্তন হয়না। আত্মা তো এক-ই থাকে। বাবা বলছেন যে আমি আত্মার একটাই নাম - শিব। এটা সমগ্র দুনিয়া জানে। বাকি এত সব নাম শরীরের রাখা হয়। শিব বাবাকে তো শিবই বলা হয়ে থাকে, ব্যস্। তাঁর কোনো শরীর দেখা যায় না। মানুষের নাম দেওয়া হয়, আমি হলাম অমুক। আমাকে অমুক টিচার পড়াচ্ছেন। তার নাম বলবে, তাই না! বাস্তবে আত্মা শরীরের দ্বারা টিচারের কাজ করে, তার আত্মাকে পড়ায়। সংস্কার আত্মার মধ্যেই হয়ে থাকে। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দ্বারা পড়ায়, ভূমিকা পালন করে, সংস্কার অনুসারে। কিন্তু দেহের যে নাম দেওয়া হয়, তার উপর সমস্ত কাজকর্ম ইত্যাদি চলতে থাকে। এখানে বাচ্চারা তোমরা জানো যে আমাকে নিরাকার বাবা পড়াচ্ছেন। তোমাদের বুদ্ধি কোথায় চলে গেছে? আমি আত্মা সেই বাবার হয়েছি। আত্মা বুঝতে পারে যে নিরাকার ফাদার আমাদেরকে এসে এই সাকার দ্বারা পড়াচ্ছেন। তার নাম হলো শিব। শিব জয়ন্তীও মানাতে থাকে। শিব তো হলেন অসীম জগতের বাবা, তাঁকে পরমপিতা পরমাত্মা বলা হয়। তিনি হলেন সকল আত্মার বাবা, এখন তাঁর জয়ন্তি কিভাবে মানানো হয়। আত্মা শরীরে প্রবেশ করে নাকি গর্ভে আসে? উপর থেকে আসে, এটা কারোরই জানা থাকে না। ক্রাইস্টকে ধর্ম স্থাপক বলা হয়। ওঁনার আত্মাকে প্রথম উপর থেকেই আসতে হয়। সতোপ্রধান আত্মা আসে। পূর্বে কোনো বিকর্ম করেননি। প্রথমে সতোপ্রধান তারপর সতো তারপর রজো এবং পরে তমোতে আসে, তখনই বিকর্ম হয়। যে আত্মা প্রথমবার আসবে, সতোপ্রধান হওয়ার কারণে কোনও দুঃখ ভোগ করবে না। অর্ধেক সময় যখন সম্পূর্ণ হয় তখন বিকর্ম করতে থাকে।

আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে বরাবর সূর্যবংশী রাজ্য ছিল, অন্যান্য সকল ধর্ম পরবর্তীকালে এসেছে। ভারতবাসীরাই বিশ্বের মালিক ছিলেন। ভারতকেই অবিনাশী খন্ড বলা যায়, তখন অন্যান্য কোনও খন্ড ছিল না। তাই শিব বাবা হলেন ভুল পথের যাত্রীদের সত্য পথের দিশারী, ভোলানাথ - শিবকেই বলা যায় নাকি শঙ্করকে? ভোলানাথ শিব হলেন সত্য পথের দিশারী। শিব আর শংকর এক নয়, আলাদা আলাদা। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শঙ্করের কোনও মহিমা নেই। মহিমা কেবল এক শিব বাবারই হয়, যিনি সত্য পথের দিশারী। তিনি বলেন যে আমি সাধারণ বৃদ্ধ শরীরে প্রবেশ করি। ইনি ৮৪ জন্ম সম্পূর্ণ করেছেন, এখন খেলা সম্পন্ন হয়েছে। এই পুরানো শরীর, পুরানো সম্বন্ধও বিনাশ হয়ে যাবে। এখন কাকে স্মরণ করবে? যে জিনিস বিনাশ হয়ে যায় তাকে স্মরণ করা হয় না। নতুন মহল তৈরি হলে তখন পুরানো বাড়ির থেকে আকর্ষণ কেটে যায়। এসব হলো অসীম জগতের কথা। সকলের সদ্গতি হয় অর্থাৎ রাবণের রাজ্য থেকে সকলের মুক্তি প্রাপ্ত হয়। রাবণ সবাইকেই বিকারী বানিয়ে দিয়েছে। ভারত একদমই কাঙ্গাল ভ্রষ্টাচারী হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষ ভ্রষ্টাচার বলতে মনে করে দুর্নীতি, জালিয়াতি, চুরি, ঠকানো। কিন্তু বাবা বলেন যে - প্রথম ভ্রষ্টাচার হল নোংরা বিকারী হয়ে যাওয়া। শরীর বিকারের দ্বারা জন্ম হয়, এই জন্য একে বিকারী দুনিয়া বলা হয়। সত্যযুগকে নির্বিকারী দুনিয়া বলা হয়। আমরা সত্যযুগে প্রবৃত্তি মার্গের দেবী দেবতা ছিলাম। বলে যে পবিত্র হলে বিকার ছাড়া বাচ্চা কিভাবে জন্ম নেবে? বলো- আমরা নিজেদের রাজধানী বাহুবলের দ্বারা নয়, যোগবলের দ্বারা স্থাপন করছি, তাহলে কি যোগবলের দ্বারা বাচ্চা জন্ম নিতে পারে না? যখন হলোই নির্বিকারী দুনিয়া, পবিত্র গৃহস্থ আশ্রম। যথা রাজা-রানী সম্পূর্ণ নির্বিকারী তথা প্রজা। এখানে হলো সম্পূর্ণ বিকারী। সত্যযুগে বিকার হয়না। তাকে বলা যায় ঈশ্বরীয় রাজ্য। ঈশ্বর বাবা স্থাপন করছেন। এখন তো হলো রাবণ রাজ্য। শিব বাবার পূজা হয়, যিনি স্বর্গ স্থাপন করেছেন। রাবণ, যে নরক বানিয়েছে তাকে জ্বালিয়ে দেয়। দ্বাপর কবে থেকে শুরু হয়েছে, এটাও কারোর জানা নেই। এটাও হলো বোঝার কথা। এটা হলই তমোপ্রধান আসুরিক দুনিয়া। সেটা হল ঈশ্বরীয় দুনিয়া। তাকে স্বর্গ দৈব পবিত্র দুনিয়া বলা হয়। এটা হল নরক, পতিত দুনিয়া। এইসব কথা সে-ই বুঝতে পারবে যে প্রতিদিন মুরলী পড়বে। অনেকেই বলে যে অমুক জায়গায় স্কুল থোড়াই আছে। আরে হেড-অফিস তো আছে তাই না! তোমরা এসে ডাইরেকশন নিয়ে যাও। বড় কথা তো নয়। সৃষ্টিচক্রকে সেকেন্ডে বোঝানো যায়। সত্যযুগ, ত্রেতা পাস্ট হয়ে গেছে, পুনরায় দ্বাপর, কলিযুগ এটাও পাস্ট হয়ে গেছে। এখন হল সঙ্গম যুগ। নতুন দুনিয়াতে যাওয়ার জন্য পড়াশোনা করতে হবে। প্রত্যেকের অধিকার আছে এই মুরলী পড়ার। বাবা আমি চাকরি করি। আচ্ছা এক সপ্তাহ জ্ঞান নিয়ে তারপর চলে যেও, মুরলী প্রাপ্ত হতে থাকবে। প্রথমে সাতদিনের ভাট্টিতে অবশ্যই থাকতে হবে। যদিও সাত দিন আসবে কিন্তু সকলের বুদ্ধি তো একরকম নয়। সাতদিনের ভাট্টি মানে কারোর কথা স্মরণে যেন না আসে। কারো সাথে পত্র মারফতও ব্যবহার ইত্যাদি যেন না হয়। সবাই একই রকম তো বুঝতে পারে না। এখানে পতিতদেরকে পবিত্র হতে হয়। এই পতিতপনাও হল রোগ। এখনকার মানুষ হল অর্ধেক কল্পের মহারোগী। তাদেরকে আলাদা বসাতে হবে। কারোর সঙ্গে নয়। বাইরে যাবে, উল্টো-পাল্টা খাবে, পতিতদের হাতে খাবে। সত্যযুগে দেবতারা পবিত্র ছিলেন, তাই না। তাদের জন্য দেখো শ্রেষ্ঠ মন্দির তৈরি হয়। দেবতাদেরকে আবার কোনও পতিত স্পর্শ করতে পারে না। এই সময় তো মানুষ একদমই পতিত ভ্রষ্টাচারী হয়ে গেছে। শরীর বিষের দ্বারা জন্ম হয়, এইজন্য একে ভ্রষ্টাচারী বলা যায়। সন্ন্যাসীদেরও শরীর বিষের দ্বারা তৈরি হয়েছে। বাবা বলেন যে প্রথম প্রথম আত্মাকে পবিত্র হতে হবে, তারপর তো শরীরও পবিত্র চাই, এই জন্য পুরানো অপবিত্র শরীর সব বিনাশ হয়ে যাবে। সবাইকে বাড়ি ফিরে যেতে হবে। এটা হল বিনাশের সময়। সবাইকে পবিত্র হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হবে। ভারতেই হোলিকা দহন পালন করা হয়। এখানে ৫ তত্ত্বের শরীর হলো তমোপ্রধান। সত্যযুগে শরীরও সতোপ্রধান হয়ে থাকে। শ্রীকৃষ্ণের চিত্র তো আছে তাইনা! নরককে লাথি মারছে, কেননা সত্যযুগে যেতে হবে। মৃত-কে যখন শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয় তখন প্রথমে মুখ শহরের দিকে আর পা শ্মশানের দিকে থাকে। আবার যখন শ্মশানের ভিতরে প্রবেশ করে তখন মুখ শ্মশানের দিকে করে দেয়। এখন তোমরা স্বর্গে যাচ্ছো তাই তোমাদের মুখ সেই দিকে আছে। শান্তিধাম আর সুখধাম, পা দুঃখ ধামের দিকে আছে। সেটা তো হলো মৃতদের কথা। এখানে তো পুরুষার্থ করতে হয়। সুইট হোমকে স্মরণ করতে-করতে তোমরা আত্মারা সুইট হোমে চলে যাবে। এটাই হলো বুদ্ধির প্র্যাক্টিস। এই বাবা বসে সমস্ত রহস্য বোঝাচ্ছেন। তোমরা জানো আমাদের আত্মাদেরকে ঘরে যেতে হবে। এটা হল পুরানো শরীর, পুরানো দুনিয়া, নাটক সম্পন্ন হয়েছে মানে ৮৪ জন্ম অভিনয় করেছো। এটাও বোঝানো হয় যে সবাই ৮৪ জন্ম নেয় না। যারা পরবর্তীকালে আসে অন্যান্য ধর্মে, অবশ্যই তাদের কম জন্ম হবে। ইসলামীর থেকে বৌদ্ধদের কম। ক্রিস্টানদের তার থেকেও কম। গুরু নানকের শিখ ধর্মাবলম্বীরা এসেইছে এখন। গুরু নানকের ৫০০ বছর হয়েছে তো তারা থোরাই ৮৪ জন্ম নেবে। হিসাব করা যায়। ৫ হাজার বছরে এত জন্ম, তো ৫০০ বছরে কত জন্ম হবে? ১২ থেকে ১৩ জন্ম। ক্রাইস্টের ২০০০ বছর হলে, তাদের কত জন্ম হবে? অর্ধেকেরও কম হয়ে যাবে। হিসাব আছে তাই না। এতে কে কত, কে কত, অ্যাকুরেট কেউ বলতে পারে না। এইসব কথাতে তর্ক করে বেশী সময় নষ্ট করো না। তোমাদের কাজ হল বাবাকে স্মরণ করা। ফালতু কথাতে বুদ্ধি যেন না যায়। বাবার সাথে যোগ লাগাতে হবে, চক্রকে জানতে হবে। বাকি পাপ নষ্ট হবে স্মরণের দ্বারা। এতেই পরিশ্রম আছে। এইজন্য ভারতের প্রাচীন যোগ বলা হয়, যেটা বাবা-ই শেখাচ্ছেন। সত্য যুগ, ত্রেতাতে তো যোগের কোনো কথাই নেই। পুনরায় ভক্তি মার্গে হঠযোগ শুরু হয়। এটা হল সহজ রাজযোগ। বাবা বলেন যে আমাকে স্মরণ করলে তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে। মূলকথা হলো স্মরণের। কোনও পাপ কাজ করো না। দেবী দেবতাদের মন্দির আছে কেননা তাঁরা হলেন পবিত্র। যারা পূজারী তারা পতিত হয়ে গেছে। পবিত্র দেবতাদেরকে স্নান ইত্যাদি করায়। বাস্তবে পতিতদের হাত লাগানোই উচিত নয়। এই সব হল ভক্তি মার্গের রীতি-রেওয়াজ। এখন তো আমরা পবিত্র হচ্ছি। পবিত্র হয়ে গেলে পুনরায় দেবতা হয়ে যাব। সেখানে তো পূজা ইত্যাদির দরকারই নেই। সকলের সদ্গতি দাতা হলেনই এক বাবা। তাঁকেই ভোলানাথ বলা হয়। আমি আসি পতিত দুনিয়া পতিত শরীরে, পুরানো রাবন রাজ্যে। হ্যাঁ, যে কারোরই শরীরে প্রবেশ করে মুরলী চালাতে পারি, তার মানে এই নয় যে সর্বব্যাপী। প্রত্যেকেরই তো নিজের নিজের আত্মা আছে। ফর্মেও লেখানো হয় যে তোমাদের আত্মার বাবা কে? কিন্তু বুঝতে পারে না। আত্মাদের বাবা তো এক-ই হবেন। আমরা সবাই হলাম ভাই-ভাই, বাবা হলেন এক। তাঁর থেকে জীবন মুক্তির উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। তিনি হলেন মুক্তিদাতা, গাইড। সকল আত্মাদেরকে নিয়ে যান সুইট হোমে, এইজন্য পুরানো দুনিয়ার বিনাশ হয়ে যায়। হোলিকা দহন হয়, তাই না! শরীরের সব কিছু শেষ হয়ে যাবে, বাকি আত্মারা সকলেই বাড়ি ফিরে যাবে। সত্যযুগে তো পুনরায় খুবই অল্পসংখ্যক হবে। বোঝাতে হবে যে স্বর্গের স্থাপনা কে করেন? কলিযুগের বিনাশ কে করেন? সেটাও তো পরিষ্কারভাবে লেখা আছে। বলেন যে -“মিঠরা ঘুর তো ঘুরায়” অর্থাৎ ভালোবাসো তো ভালোবাসা প্রাপ্ত হবে। বাবা বলেন, যে আমার জন্য অনেক সার্ভিস করে, মানুষকে দেবতা বানানোর - সে-ই আমার কাছে বেশী প্রিয় ।

যে পুরুষার্থ করবে সে-ই উঁচু পদ প্রাপ্ত করবে। উত্তরাধিকার পরমাত্মা বাবার থেকেই প্রাপ্ত হয়। আত্ম অভিমানী হতে হবে। কেউ অনেক ভুলও করে, পুরানো সংস্কার পাক্কা হয়ে যায়। তখন তাকে যতই বোঝাও, সে বুঝতে পারে না। নিজের-ই পদ কম করে দেয়। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) কোনও কথাতে তর্ক করে নিজের সময় নষ্ট ক'রো না। ব্যর্থ কথাতে বুদ্ধি যেন অধিক না যায়। যতটা সম্ভব স্মরণের যাত্রায় থেকে বিকর্ম বিনাশ করতে হবে। আত্ম-অভিমানী হয়ে থাকার সংস্কার ধারণ করতে হবে।

২ ) এই পুরানো দুনিয়ার থেকে নিজের মুখ ঘুরিয়ে নিতে হবে। শান্তিধাম আর সুখধামকে স্মরণ করতে হবে। নতুন মহল তৈরি হচ্ছে তাই পুরানোর থেকে বুদ্ধি সরিয়ে নিতে হবে।

বরদান:-
মায়ার বিঘ্নকে খেলার সমান অনুভবকারী মাস্টার বিশ্ব-নির্মাতা ভব

যেরকম কোনো বয়স্কের সামনে ছোট বাচ্চা নিজের শৈশবের দুর্বলতার কারণে কিছু কথা বলে দেয়, কোনও এমন কর্তব্যও করে ফেলে তো বয়স্ক ব্যক্তি বোঝে যে এ তো নির্দোষ, অজ্ঞানী, ছোট বাচ্চা। কোনও প্রভাব পড়ে না। এরকমই যখন তোমরা নিজেদেরকে মাস্টার বিশ্ব-নির্মাতা মনে করবে, তো এই মায়ার বিঘ্ন বাচ্চাদের খেলার সমান মনে হবে। মায়া যে কোনও আত্মার দ্বারা সমস্যা, বিঘ্ন বা পরীক্ষার পেপার হয়ে এসে যাবে তো তাতে ঘাবড়ে যাবে না বরং তাকে নির্দোষ মনে করবে।

স্লোগান:-
স্নেহ, শক্তি আর ঈশ্বরীয় আকর্ষণ নিজের মধ্যে ভরো তাহলে সবাই সহযোগী হয়ে যাবে।