11-04-2021 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
10-12-87 মধুবন
"তন, মন, ধন আর শ্রেষ্ঠ সম্বন্ধের শ্রেষ্ঠ সওদা"
আজ সমস্ত ভান্ডারের সাগর রত্নাকর বাবা তাঁর বাচ্চাদের দেখে
মৃদু মৃদু হাসছিলেন, সর্ব ভান্ডারের রত্নাকর বাবার সওদাগর বাচ্চারা অর্থাৎ যারা
লেনদেন করেছে তারা কারা আর কার সাথে করেছে ? পরমাত্ম-সওদা যিঁনি প্রদান করেন আর যারা
পরমাত্মার সাথে সওদা করে তাঁদের মুখ কতো নির্মল অথচ কতো বড় সওদা করেছে ! এই যে এত
বড় সওদা করে সওদাগর আত্মারা, দুনিয়ার লোকে সেটা বুঝতে অপারগ l দুনিয়ার লোকে যে
আত্মাদের আশাহীন, অতি গরিব মনে করে, অসম্ভব ভেবে পাশে সরিয়ে দিয়েছে যে এই কন্যারা,
মাতারা পরমাত্ম-প্রাপ্তির অধিকারী কী হবে ! কিন্তু যারা সর্বাপেক্ষা বড় সওদা করে,
বাবা প্রথমে সেই মাতাদের, কন্যাদের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব গড়ে দেন l জ্ঞানের কলস প্রথমে
মাতাদের, কন্যাদের উপরে রেখেছেন l তিনি গরিব কন্যাকে নিমিত্ত যজ্ঞ-মাতা, জগদম্বা,
বানিয়েছেন l মাতাদের কাছে তবুও কিছু না কিছু লুকানো প্রপার্টি থাকে, কিন্তু কন্যা !
মাতাদের থেকেও গরিব হয় l সুতরাং বাবা সবচেয়ে গরিবকে প্রথমে সওদাগর বানিয়েছেন, আর
সেই সওদা কতো বড় ছিল, যা গরিব কুমারী থেকে জগত অম্বা তথা ধনদেবী লক্ষ্মী বানিয়ে
দিয়েছে ! যা আজকের দিন পর্যন্ত যতই কেন না মাল্টিমিলিয়নার (কোটিপতি) হোক, তবুও
লক্ষীর থেকে অবশ্যই ধন চাইবে, অবশ্যই পূজা করবে l রত্নাকর বাবা নিজের সওদাগর
বাচ্চাদের দেখে উৎফুল্ল হন l এক জন্মের জন্য এই সওদা করলে অনেক জন্ম সদা ধন ধান্যে
সম্পন্ন পরিপূর্ণ হয়ে যায় l আর যে সাধারণ লেনদেন করে সে যত বড়ই বিজনেসম্যান হোক না
কেন, সে কিন্তু শুধু ধনের সওদা, বস্তুর সওদা করবে l শুধুমাত্র অসীম জগতের এক বাবাই
যিঁনি ধনেরও সওদা করেন, মনেরও সওদা করেন, তনেরও সওদা করেন আর সদা শ্রেষ্ঠ
সম্বন্ধেরও সওদা করেন l এইরকম দাতা কেউ দেখেছে ? তোমরা চার রকমেরই সওদা করেছ, তাই
না ? তোমাদের তন সদা সুস্থ থাকবে, মন সদা খুশি থাকবে, ধনের ভান্ডার সদা পরিপূর্ণ
থাকবে আর তোমাদের সম্বন্ধে সদা নিঃস্বার্থ স্নেহ থাকবে, এই গ্যারান্টি আছে l আজকাল
লোকে মূল্যবান বস্তুর গ্যারান্টি দেয় l পাঁচ বছর, দশ বছরের জন্য গ্যারান্টি দেবে,
আর কী করবে ? কিন্তু রত্নাকর বাবা কত সময়ের গ্যারান্টি দেন ? অনেক জন্মের গ্যারান্টি
দেন l চারটের মধ্যে একটাও কম হবে না l যদি কেউ প্রজারও প্রজা হয়, তাহলেও তার লাস্ট
জন্ম পর্যন্ত অর্থাৎ ত্রেতার অন্ত পর্যন্ত এই চারটে জিনিস প্রাপ্ত হবে l এইরকম সওদা
কখনো করেছ ? এখন সওদা করেছ তাই না ? পাকা সওদা করেছ নাকি কাঁচা ? পরমাত্মার সাথে কতো
সস্তার লেনদেন করেছ ! কি দিয়েছ, কোনো কাজের জিনিস দিয়েছ তাঁকে ?
ফরেনার্স বাপদাদার কাছে সদাসর্বদা হৃদয়ের প্রতীক চিহ্ন বানিয়ে পাঠিয়ে দেয় l
হৃদয়-রূপ চিত্রে তারা পত্রও লেখে, গিফ্ট হিসেবেও তারা হৃদয়েরই প্রতীকী পাঠাবে l
তাহলে তো হৃদয়ই দেওয়া হলো, তাই না ! কিন্তু কোন হৃদয় দিয়েছে ? একটা হৃদয় কতো টুকরো
হয়ে পড়েছিল ! মা, বাবা, কাকা, মামা - কতো লম্বা লিস্ট ! কলিযুগে যদি সম্বন্ধের
লিস্ট বের করো তাহলে লিস্ট কতো লম্বা হবে ! প্রথমে, সম্বন্ধে হৃদয় দিয়ে দিয়েছ,
দ্বিতীয়তঃ, অপর বস্তুতেও হৃদয় দিয়েছ ... তাহলে কতো বস্তু আর কতো ব্যক্তি আছে যেখানে
তোমাদের হৃদয় জুড়েছ ? সবার সাথে হৃদয় জুড়ে দিয়ে হৃদয়ই টুকরো টুকরো করে দিয়েছ l বাবা
অনেক টুকরো হয়ে যাওয়া হৃদয় এক অভিমুখী ক'রে জুড়ে নিয়েছেন l তাহলে কী দিলে আর কী নিলে
! আর লেনদেনের বিধিও কতো সহজ ! সেকেন্ডের সওদা, তাই না ! "বাবা" শব্দই বিধি l এই
বিধি তো এক শব্দের, এতে কতো সময় লাগে ? শুধু হৃদয় দিয়ে বলেছ "বাবা", আর সেকেন্ডে
সওদা হয়ে গেছে l কতো সহজ বিধি ! এত সস্তা সওদা এই সঙ্গমযুগ ব্যতীত অন্য কোনও যুগে
তোমরা করতে পারবে না l তাইতো, বাপদাদা সওদাগরদের মুখের সৌন্দর্য-মূর্তি দেখছিলেন l
দুনিয়ার তুলনায় তোমরা সবাই অতিশয় ভালো l কিন্তু চমৎকার তো তোমরা নিরীহ-অকপট যারা
তারাই করেছ ! সওদা করায় তোমরা দক্ষ, তাই না ! আজকের বড় বড়ো খ্যাতনামা ধনবান, ধন
উপার্জনের পরিবর্তে ধন সামলানোর চিন্তায় পড়ে আছে l সেই চিন্তায় বাবাকে চেনারও ফুরসৎ
নেই l নিজেদের রক্ষা করতে এবং ধন রক্ষা করতে তাদের সময় চলে যায় l যদি বাদশাহ হয় তো
উদ্বিগ্ন বাদশাহ, কারণ যতই হোক, ধন তো অসৎ উপায়ের, তাই না ! সেইজন্য উদ্বিগ্ন
বাদশাহ, আর তোমরা বাহ্যিকরূপে কড়িহীন, কিন্তু নিশ্চিন্ত বাদশাহ, বেগার হয়েও বাদশাহ
l শুরুতে তোমরা কী সাইন করতে ? বেগার টু প্রিন্স l এখনো বাদশাহ, ভবিষ্যতেও বাদশাহ l
আজকালকার নম্বর ওয়ান ধনবান ব্যক্তিত্বের তুলনায় ত্রেতার অন্তে তোমাদের প্রজাও অধিক
ধনবান হবে l আজকালকার জনসংখ্যার হিসেবে ভাবো, ধন তো সেই একই হবে, চাপা পড়ে থাকা ধনও
বেরিয়ে আসবে l তো সংখ্যা অনুযায়ী ধন বণ্টিত হয়েই আছে l তাহলে ওখানে সংখ্যা কতো হবে
? সেই হিসেবে যদি দেখ, তবে কতো ধন হবে ! এমনকি, প্রজারও অপ্রাপ্ত কোনো বস্তু হবে না
l তাহলে, তারাও তো বাদশাহ হলো, তাই না ! বাদশাহ'র অর্থ এই নয় যে সিংহাসনাসীন হতে হবে
l বাদশাহ অর্থাৎ পরিপূর্ণ, কোনো অপ্রাপ্তি নেই, কোনকিছুর কমতি নেই l সুতরাং এইরকম
সওদা করেছ নাকি করছ ? নাকি এখন ভাবছ ? যখন তোমাদের কোনও ভালো জিনিস সস্তায় আর সহজে
পেয়ে যাও, তখনও ধন্দে পড়ে যাও, 'জানিনা, ভালো নাকি মন্দ !' তোমরা তো এইরকম ধন্দের
মধ্যে নেই, তাই না ? কারণ, যারা ভক্তিমার্গের তারা সহজকে এত কঠিন করে ফেলে যে তা'
সবাইকে বিভ্রান্তিতে আরও ঠেলে দিয়েছে, যার ফলে আজও সেই রূপে বাবাকে খুঁজে যাচ্ছে l
ছোট বিষয়কে বড় বানিয়ে দিয়েছে, সেইজন্য বিভ্রান্তিকর অবস্থায় পড়ে যায় l উঁচুতম থেকেও
উঁচু ভগবান, তাঁর সঙ্গে মিলনের লম্বা-চওড়া বিধি বলে দিয়েছে l সেই বিভ্রান্তিতে ভক্ত
আত্মারা চিন্তা-ভাবনার মধ্যেই পড়ে আছে l ভগবান ভক্তির ফল দিতে এসে গেছেন, কিন্তু
বিভ্রান্তির কারণে ভক্ত আত্মারা পাতায় পাতায় জল দিতেই বিজি l যতই তোমরা বার্তা দাও,
তো তারা কী বলে ? এত শ্রেষ্ঠ ভগবান, এত সহজে তিনি আসেন ! হতেই পারে না l তাইতো বাবা
মৃদুমৃদু হাসছিলেন যে আজকালকার ভক্তিতে খ্যাতনামা, তা' তাদের ধনের জন্যই হোক বা কোনো
অক্যুপেশনের জন্য - নিজেদের কার্যেই তারা বিজি l কিন্তু তোমরা সব সাধারণ আত্মারা
বাবার সঙ্গে সওদা করে নিয়েছ l পাণ্ডবরা পাকা সওদা করে নিয়েছ, তাই না ? ডবল ফরেনার্স
সওদা করায় চতুর l সওদা তো সবাই করেছে, কিন্তু সব বিষয়ে নম্বর-ক্রম আছে l বাবা তো
সবাইকে সব ভান্ডার একইরকম দিয়েছেন, কারণ তিনি অনন্ত সাগর l বাবাকে ভান্ডার দেওয়ার
জন্য নম্বর ক্রমানুসারে দেওয়ার কোনও আবশ্যকতা নেই l
যেমন আজকালকার বিনাশকারী আত্মারা বলে যে বিনাশের এত সামগ্রী তৈরি করা হয়েছে যে
এইরকম দুনিয়ার মতো অনেক দুনিয়া বিনাশ হতে পারে l বাবাও বলেন, বাবার কাছে এত ভান্ডার
আছে যা সারা বিশ্বের আত্মারা তোমাদের মতো সমঝদার হয়ে যদি সওদা করেও নেয়, তবুও
অফুরান থাকবে l তোমরা ব্রাহ্মণরা সংখ্যায় যত, তার থেকে আরো পদমগুনও যদি আসে, তবুও
নিতে পারে l এতই অসীম ভান্ডার ! কিন্তু যারা নেবে অর্থাৎ যারা গ্রহীতা তাদের মধ্যেই
নম্বর ক্রম হয়ে যায় l দরাজ হৃদয়ে লেনদেনকারী মাত্র মুষ্টিমেয় সাহসী বের হয়, সেইজন্য
দু'রকমের মালা পূজন হয় l কোথায় অষ্ট রত্ন আর কোথায় ষোলো হাজারের লাস্ট নম্বর ! কতো
তারতম্য হয়ে যায় ! সওদা করায় তো তোমরা সবাই একরকমই l লাস্ট নম্বরও বলে, 'বাবা' আর
ফার্স্ট নম্বরও বলে 'বাবা' l শব্দে প্রভেদ নেই l সওদা করার বিধিও একরকম আর যিঁনি
দেন সেই দাতাও এক l জ্ঞানের ভান্ডার অথবা শক্তির ভান্ডার, সঙ্গমযুগী যে সমস্ত
ভান্ডারের ব্যাপারে তোমরা জানো, তা' সবার কাছে একই রকম আছে l কাউকে সর্বশক্তি দিলেন,
কাউকে একটা শক্তি দিলেন বা কাউকে এক গুণ বা কাউকে সর্বগুণ দিলেন, এইরকম ভিন্নতা হয়
না l সবারই টাইটেল একই - আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান যারা জানে তারা ত্রিকালদর্শী,
মাস্টার সর্বশক্তিমান l এইরকম নয় যে কেউ সর্বশক্তিমান, কেউ শুধু শক্তিমান l না l
তোমাদের সবাইকে সর্বগুণ সম্পন্ন হতে যাওয়া দেব আত্মা বলা হয়, গুণমূর্ত বলা হয় l
ভান্ডার সবার কাছে আছে l যে শুধু একমাস স্টাডি করেছে সেও জ্ঞান-ভান্ডার সম্বন্ধে
সেইরকমই বলে, যারা ৫০ বছর স্টাডি করে জ্ঞানের ভান্ডার বর্ণন করে l যদি প্রতিটা
গুণের বিষয়ে, শক্তি বিষয়ে ভাষণ দেওয়ার জন্য বলা হয় তো খুব ভালো ভাষণ করতে পারে l
বুদ্ধিতে থাকে তবেই তো করতে পারে, তাই না ! সুতরাং ভান্ডার সবার কাছে আছে, প্রভেদ
তাহলে কীভাবে হয়ে গেল ? নম্বর ওয়ান সওদাগর ভান্ডারের মনন দ্বারা নিজের জন্য কার্যে
প্রয়োগ করে l সেই অনুভবের অথরিটি দ্বারা অনুভাবী হয়ে অন্যকে বিতরণ করে l কার্যে
প্রয়োগ অর্থাৎ ভান্ডার বৃদ্ধি করা l একদিকে, যারা শুধু বর্ণন করে আরেকদিকে যারা মনন
করে l সুতরাং, যারা মনন করে তারা যাকেই দেয় তারা স্বয়ং অনুভাবী হওয়ার কারণে অন্যকেও
অনুভাবী বানাতে পারে l যারা বর্ণন করে তারা অন্যকেও বর্ণনকারী বানিয়ে দেয় l তারা
মহিমা করতে থাকবে, কিন্তু অনুভাবী হবে না l তারা নিজে মহান হবে না, কিন্তু শুধুই
মহিমা করবে l
সুতরাং নম্বর ওয়ান অর্থাৎ মনন শক্তি দ্বারা ভান্ডারের অনুভাবী হয়ে অন্যদেরও অনুভাবী
বানায় অর্থাৎ ধনবান বানায় l সেইজন্য তাদের ভান্ডার সদা বেড়ে যায়, আর সময় অনুসারে
তাদের নিজেদের জন্য এবং অন্যদের জন্য কার্যে প্রয়োগ করায় সদা সফলতা স্বরূপ থাকে l
যারা শুধু বর্ণন করে তারা অন্যদের ধনবান বানাতে পারবে না এবং নিজের জন্যও সময়
অনুসারে যে শক্তি, গুণ, যে জ্ঞানের বিষয় ইউজ করা প্রয়োজন, সময়কালে তারা পারবে না,
সেইজন্য খাজানার পরিপূর্ণ স্বরূপের সুখ আর দাতা হয়ে দেওয়ার অনুভব করতে পারে না l ধন
থাকা সত্ত্বেও সেই ধন থেকে সুখ নিতে তারা অপারগ l শক্তি থাকলেও সময় মতো সেই শক্তি
দ্বারা সফলতা লাভ করতে পারবে না l গুণ থাকলেও সময় অনুযায়ী গুণের ইউজ করতে পারে না l
শুধু বর্ণন করতে পারে l ধন সবার কাছে আছে, কিন্তু ধনের সুখ সময়মতো ইউজ করাতেই অনুভব
হয় l যেমন আজকালকার সময়তেও কোনো কোনো ধনবানের বিনাশী ধনও ব্যাংকে থাকবে, আলমারিতে
হবে অথবা বালিশের নিচে হবে, না নিজে কার্যে লাগাবে, না অন্যদের লাগাতে দেবে l না
নিজে লাভ নেবে, না অন্যদের লাভ দেবে l সুতরাং ধন থাকা সত্ত্বেও তা' থেকে তারা সুখ
তো নিলো না, তাই না ! বালিশের নিচে থেকে যাবে, নিজে চলে যাবে l সুতরাং এই বর্ণন করা
অর্থাৎ ইউজ না করা, সদা গরিব হিসেবে প্রতীয়মান হবে l এই ধনও যদি নিজের জন্য বা
অন্যদের জন্য যথার্থ সময়ে ইউজ না করে, শুধু বুদ্ধিতে রেখে দেয়, তাহলে না নিজে
অবিনাশী ধনের নেশায় খুশিতে থাকে, না অন্যকে দিতে পারে l সদাসর্বদা কী করব, কীভাবে
করব ...এই বিধিতে চলতে থাকবে, সেইজন্য দু'টো মালা তৈরি হয়ে যায় l এক, যারা মনন করে,
দুই, যারা শুধু বর্ণন করে l তাহলে, কোন সওদাগর তোমরা ? নম্বর ওয়ান নাকি দু' নম্বরের
? এই ভান্ডারের কন্ডিশন (শর্ত) এটাই - অন্যদের যত দেবে, যত কার্যে প্রয়োগ করবে, ততই
বাড়বে l বৃদ্ধির জন্য এটাই বিধি l এতে বিধি আপন না করার কারণে নিজের মধ্যেও বৃদ্ধি
নেই, আর অন্যদের সেবা করাতেও বৃদ্ধি নেই l সংখ্যা বৃদ্ধির ব্যাপারে বাবা বলছেন না,
বলছেন অন্যদের সম্পন্ন বানানোর বৃদ্ধির ব্যাপারে l অনেক স্টুডেন্ট সংখ্যা গুনতিতে
তো আসে, কিন্তু এখনো তারা বলে যাচ্ছে - বুঝতে পারছি না যোগ কী, বাবাকে স্মরণ কীভাবে
করতে হয় ? তাদের এখন শক্তি নেই l স্টুডেন্টদের লাইনে তো আছে, রেজিস্টারে নাম আছে,
কিন্তু ধনবান তো হয়নি, তাই না ! তারা চাইতেই থাকবে l কখনো কোনো টিচারের কাছে গিয়ে
সহায়তার জন্য বলবে, কখনো বাবার সঙ্গে অধ্যাত্ম বার্তালাপ করবে তো বলবে সহায়তা করো l
সুতরাং পরিপূর্ণ তো হলো না, তাই না ! যে স্বয়ং মনন শক্তি দ্বারা নিজের জন্য
ধন-বৃদ্ধি করে, সে অন্যদেরও ধন-বৃদ্ধি করতে পারে l মনন শক্তি অর্থাৎ ধনকে বাড়ানো l
অতএব, ধনবানের খুশি, ধনবানের সুখ অনুভব করা l বুঝেছ ? মনন শক্তির গুরুত্ব অনেক l
আগেও তোমাদের সামান্য ইশারা দেওয়া হয়েছে l মনন শক্তির আরও মহত্ত্ব সম্বন্ধে বাবা
তোমাদের পরে বলবেন l বাবা তোমাদের নিজেদেরকে চেক করার কাজ দিতেই থাকেন l রেজাল্ট
আউট হলে তোমরা আবার বলবে যে আমরা তো জানি না, এই বিষয়ে বাপদাদা তো বলেননি, সেইজন্য
প্রতিদিন বলতে থাকেন l চেক করা অর্থাৎ চেঞ্জ করা l আচ্ছা l
সর্বশ্রেষ্ঠ সওদাগর আত্মাদের, সদা সমস্ত ভান্ডার সঠিক সময়ে যারা কার্যে প্রয়োগ করে
সেই মহান বিশাল বুদ্ধিমান বাচ্চাদের, যারা সদা নিজেকে সম্পন্ন অনুভব ক'রে অন্যকে
অনুভাবী বানায়, অনুভবের অথরিটি সেই বাচ্চাদের অলমাইটি অথরিটি বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ
আর নমস্কার l
"ইস্টার্ণ জোনের ভাই-বোনেদের সাথে বাপদাদার সাক্ষাৎকার"-
পূর্ব দিকে সূর্য উদয় হয়, তাই না ! সুতরাং ইস্টার্ণ জোন অর্থাৎ সদা জ্ঞান-সূর্য উদয়
হয়েই আছে l ইস্টার্ণের অর্থাৎ যারা সদা জ্ঞান-সূর্যের প্রকাশ দ্বারা সব আত্মাকে
আলোতে নিয়ে আসে, অন্ধকার সমাপ্ত করে l সূর্যের কাজ অন্ধকার সমাপ্ত করা l সুতরাং
তোমরা সব মাস্টার জ্ঞান-সূর্য অর্থাৎ চারিদিকের অজ্ঞান সমাপ্ত করো তোমরা, তাই না !
সবাই এই সেবাতে বিজি থাকো নাকি নিজের অথবা প্রবৃত্তির পরিস্থিতির জটিলতায় আটকে থাকো
? সূর্যের কাজ আলো দেওয়ার কাজে বিজি থাকা l তা' প্রবৃত্তিতেই হোক বা যেকোন ব্যবহারে
হোক, অথবা যে কোনও পরিস্থিতিই সামনে আসুক, সূর্য কিন্ত তার আলো দেওয়ার কর্তব্য
ব্যতীত থাকতে পারে না l সুতরাং তোমরা এইরকম মাস্টার জ্ঞান-সূর্য, নাকি মাঝেমধ্যে
জটিলতার মধ্যে আটকা পড়ে যাও ? প্রথম কর্তব্য - জ্ঞানের আলো দেওয়া l যখন এই স্মৃতি
তোমাদের বজায় থাকে যে পরমার্থ দ্বারা ব্যবহার এবং পরিবার উভয়ই শ্রেষ্ঠ বানাতে হবে,
তখন এই সেবা নিজে থেকেই হয় l যেখানে পরমার্থ অর্থাৎ পরম ধারণা আছে সেখানে ব্যবহার
প্রমাণ-সিদ্ধ এবং সহজভাবে হয় l আর পরমার্থের ভাবনা দ্বারা পরিবারেও সত্যিকারের
ভালোবাসা আপনা থেকেই এসে যায় l সুতরাং পরিবারও শ্রেষ্ঠ আর ব্যবহারও শ্রেষ্ঠ l
পরমার্থ পারিবারিক বা অন্যান্য সম্বন্ধ-ব্যবহার থেকে সরিয়ে দেয় না, বরং
পরমার্থ-কার্যে বিজি থাকায় পরিবার ও অন্যান্যদের সঙ্গে পারস্পরিক ব্যবহারে সহযোগিতা
লাভ হয় l অতএব, পরমার্থে সদা এগিয়ে চলো l যারা নেপাল থেকে, তাদের প্রতীকচিহ্নেও
সূর্য দেখানো হয়, তাই না ! প্রসঙ্গতঃ, রাজাদের মধ্যে সূর্যবংশী রাজারা প্রসিদ্ধ,
শ্রেষ্ঠ হিসেবে সুপরিচিত l সুতরাং তোমরাও মাস্টার জ্ঞান-সূর্য সবাইকে আলো প্রদান করো
l আচ্ছা l
বরদান:-
সঙ্গমযুগে সব কর্ম কলা রূপে ক'রে ১৬ কলা সম্পন্ন ভব
সঙ্গমযুগ বিশেষ কর্মরূপী কলা দেখানোর যুগ l যার সব
কর্ম কলা রূপে হয়, তার সব কর্মের এবং গুণের গায়ন হয় l ১৬ কলা সম্পন্ন অর্থাৎ
তোমাদের সব কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ কলা রূপে যেন দৃশ্যমান হয় - এটাই সম্পূৰ্ণ স্টেজের
লক্ষণ l যেমন সাকার রূপে বাবার চলাফেরায়, কথা বলায় ... সবকিছুতে তোমরা বিশেষত্ব
দেখেছ, সেটাই তো কলা ! ওঠা, বসবার কলা, দেখার কলা, চলাফেরার কলা - সবকিছুর মধ্যে
স্বতন্ত্রতা এবং বিশেষত্ব ছিল l অতএব, এইভাবে ফলো ফাদার করে ১৬ কলা সম্পন্ন হও l
স্লোগান:-
পাওয়ারফুল সেই, যে তৎক্ষণাৎ পরখ করে নিষ্পত্তি করতে পারে l