০৫-১০-১৮ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


“মিষ্টি বাচ্চারা - কখনো পড়াশুনা মিস্ করবে না। জ্ঞানদাতা বাবার ওপরে সম্পূর্ণ নিশ্চয় থাকলেই পড়াশুনার প্রতি শখ থাকবে। নিশ্চয়বুদ্ধিসম্পন্ন বাচ্চারাই সেবা করতে পারবে”

প্রশ্ন:-

বাচ্চাদের কোন্ কথা শুনে বাপদাদা খুব খুশি হন?

উত্তর:-

যখন বাচ্চারা সেবার খবর জানিয়ে পত্র লেখে - বাবা, আজ আমি অমুক ব্যক্তিকে বুঝিয়েছি, ওকে দুই বাবার পরিচয় দিয়েছি… এইরকম সেবা করেছি, তখন বাবা ওইসব পত্র পড়ে খুব খুশি হন। কেবল স্মরণ-ভালোবাসার পত্র লিখলে কিংবা ভালো থাকার খবর দিলে বাবার পেট ভরে না। বাবা তাঁর সহযোগী বাচ্চাদেরকে দেখে খুশি হন। তাই সেবা করার পরে সেবার খবরাখবর জানিয়ে পত্র লিখতে হবে।

গীত:-

চলো যাই মা স্বপ্নের সেই গাঁয়ে...

ওম্ শান্তি।

বাচ্চারা জানে যে কাঁটা থেকে ফুলের দুনিয়াতে যেতে হবে। সত্যযুগী দুনিয়াকে তো দিব্য ফুল বলা যাবে। কলিযুগের মানুষ হল কাঁটার মতো। কেবলই একে অপরকে দুঃখ দেয়, বিরক্ত করে। তোমরা বাচ্চারা এখন খুশি হয়ে বলছ - চলো, এবার আমরা আমাদের সেই দিব্য ফুলের সুখধামে যাই। সেখানে যাওয়ার রহস্যটাও বুঝতে হবে। ভালো করে পড়াশুনা করলে তবেই যেতে পারবে। আগে তো এইটা নিশ্চয় করতে হবে - ‘কে পড়াচ্ছেন?’ এইসব কথা কোনো বেদ শাস্ত্রে লেখা নেই। হয়তো গীতাতে রাজযোগের কথা লেখা আছে। যেহেতু এই পড়াশুনা রাজত্ব পাওয়ার জন্য, তাহলে নিশ্চয় সত্যযুগেই সেই রাজত্ব দেওয়া হবে। প্রথমে শিক্ষকের ওপরে নিশ্চয় হতে হবে। ইনি তো কোনো সাধু, সন্ত অথবা মানুষ নন। ইনি হলেন নিরাকার। পরমপিতা পরমাত্মা হলেন সকল আত্মার পিতা। আগের কল্পের মতো যারা এই ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার, কেবল তারাই হবে। তোমরা দেখছ যে ফুলের দুনিয়া স্বর্গে যাওয়ার জন্য প্রত্যেকে নিজ নিজ পুরুষার্থ করছে। যদি কেউ নিশ্চিত হয়ে যায়, তাহলে সে ঝট করে পড়াশুনা করতে লেগে যাবে। শাস্ত্রতে কৃষ্ণ ভগবানুবাচ লিখে দিয়েছে। তবে তার সাথে এটাও লেখা আছে - রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞ। এটা তো তাহলে জ্ঞানের ব্যাপার হয়ে গেল। কিন্তু মানুষ কৃষ্ণের হাতে কাঠের মুরলি (বাঁশি) দিয়ে দিয়েছে। গায়ন আছে - তোমার মুরলিতে ঈশ্বরীয় জাদু রয়েছে। কিন্তু কাঠের মুরলিতে ঈশ্বরীয় জাদু থাকতে পারে না। সে তো মুখ দিয়ে মুরলি বাজাতে পারত। কৃষ্ণের কেবল ছোটবেলা দেখানো হয়। নিজেদের মধ্যে খেলাধুলা করছে। এইগুলো খুব বোঝার বিষয়। এটা বাচ্চারা বুঝে গেছে যে এটা হল রাজযোগ, অর্থাৎ যিনি রাজত্ব প্রাপ্ত করান তাঁর সঙ্গে যোগ। তিনি সমুখে এসে শিক্ষা দেন। এক্ষেত্রে কাঠের মুরলির কোনো ভূমিকা নেই। এইসব কথা একেবারে আলাদা। কেউ এটা জানে না যে স্বয়ং নিরাকার ভগবান এসে শিক্ষা দেন। কৃষ্ণের ক্ষেত্রেও বলা হয় যে তার মুরলিতে ঈশ্বরীয় যাদু আছে। ঈশ্বর তাহলে নিশ্চয়ই অন্য কেউ হবে। কৃষ্ণকে ভগবান বলা যাবে না। ঈশ্বরকেই ঈশ্বর বলা যাবে। তাঁকেই জাদুকর বলা হয়। জাদুকর স্বয়ং এসে জাদু দেখান, সাক্ষাৎকার করান। তার সঙ্গে উঁচু পদ প্রাপ্ত করানোর জন্য শিক্ষাও দেন। মীরাও বৈকুণ্ঠের সাক্ষাৎকার করেছিল এবং নৃত্যও করেছিল। কিন্তু রাজযোগ শেখেনি। রাজযোগের কথা কোনো শাস্ত্রতে লেখা নেই। মীরাকে শিক্ষা দেওয়ার কেউ ছিল না। তার নাম ভক্ত মালাতেই থাকবে। এটা হল জ্ঞান মালা। রাত-দিনের পার্থক্য। তোমরা বুঝে গেছ যে আমরা যত বেশি জ্ঞান ধারণ করব, তত উঁচু হব। ভক্তমালাও রয়েছে। তাদের মধ্যেও বিভিন্ন ক্রম রয়েছে। তাদের নাম খুব প্রসিদ্ধ। কিন্তু এই জ্ঞান কারোর কাছে নেই। তাই বোঝাতে হবে যে বাবা-ই হলেন এই জ্ঞান দেওয়ার অথরিটি। তাঁর উদ্দেশ্যেই বলা হয় যে তিনি ব্রহ্মার মুখ কমলের দ্বারা ব্রাহ্মণ রচনা করে তাদেরকে সকল বেদ শাস্ত্রের সারকথা শোনান। শিববাবার হাতে কোনো শাস্ত্র দিতে পারেনি। কারন তিনি হলেন নিরাকার। তাই তিনি ব্রহ্মার দ্বারা বোঝান। এটাই হল তাঁর যুক্তি। কিন্তু কেবল তিনিই এইসব কথা বোঝাতে পারেন। দেখানো হয় যে ব্রহ্মার দ্বারা সারকথা বোঝানো হয়। তাই নিশ্চয়ই অন্য কেউ আছেন যিনি এইসব বোঝান। এখন তোমরা বাস্তবে দেখছ যে জ্ঞানের সাগর শিববাবা, যিনি আমাদের পিতা, তিনি সম্মুখে বসে আছেন। তিনি নিশ্চয়ই ভারতেই আসেন এবং অন্য কারোর শরীরে আসেন। এটা হল ব্রহ্মার শরীর। প্রজাপিতা ব্রহ্মারও প্রয়োজন আছে। বরাবর প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারাই বাবা এসে ব্রাহ্মণ ধর্মের রচনা করেন। ধর্ম রচনা কিভাবে হয়? এটাও তোমরা জানো। বাস্তবে তোমরাই হলে ব্রহ্মার সন্তান। তোমরা নিজেদেরকে ব্রাহ্মণ ব্রাহ্মণী বল। বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার নিচ্ছ। অনুগামীরা কখনো উত্তরাধিকার পায় না। বাচ্চারাই বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার পায়। তোমরা এসে এখন বেহদের বাবার সন্তান হয়েছ। যিশুখ্রিস্টের ফলোয়ার্স বলা হয়, বুদ্ধ কিংবা গুরু নানকের ক্ষেত্রেও ফলোয়ার্স বলা হয়, সন্তান নয়। এখানে তোমরা হলে সন্তান। প্রজাপিতাও হলেন বাবা এবং শিববাবাও হলেন বাবা। তিনি হলেন নিরাকার, আর ইনি হলেন সাকার। এই সাকার শরীরের দ্বারাই শিববাবা বাচ্চাদেরকে রচনা করেছেন। কিন্তু তোমাদের মধ্যেও কারোর দৃঢ় নিশ্চয় আছে, কারোর নেই। এটা খুব বড় লটারি। তোমাদেরকে নিজের শরীর নির্বাহ করার জন্য কর্ম করতে হবে এবং তার সাথে এই জ্ঞানও অর্জন করতে হবে। ওই পড়াশুনাতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এখানে তো বাবা বলেন, এক ঘন্টা-আধ ঘন্টা অবশ্যই পড়তে বসো। কোনো কারণে কেউ হয়তো রোজ পড়তে পারবে না। সেক্ষেত্রে আগে সাত দিবসীয় কোর্স করে, তারপর মুরলির আধারে চলতে হবে। লক্ষ্যটা বুঝতে পেরেছ, এরপর জ্ঞানের বিভিন্ন শাখা প্রশাখা বুঝতে হবে। সৃষ্টিচক্রের ছবিতে সেই সবকিছুই আছে। তোমাদেরকে ৮৪ জন্মের রহস্য বোঝানো হয়েছে। কল্পবৃক্ষের ছবিতে সবকিছু বিস্তারিত ভাবে রয়েছে এবং সৃষ্টিচক্রের ছবিতে নাটসেলের মধ্যে রয়েছে। বোঝানো হয়েছে যে এটা হল ভ্যারাইটি মনুষ্য সৃষ্টির ধর্ম। শুরুতে একটাই ধর্ম থাকে, পরবর্তী সময়ে বৃদ্ধি হয়। বৃক্ষ দেখানো হয়েছে এবং কিভাবে স্থাপন হয় সেটাও দেখানো হয়েছে। কত সহজ রহস্য। ড্রামা এবং বৃক্ষের জ্ঞানকে বুঝতে হবে, বুদ্ধিতে ধারণ করতে হবে এবং তারপর অন্যকেও বোঝাতে হবে। দুই বাবার পয়েন্ট তো অবশ্যই বোঝাতে হবে। বেহদের বাবার কাছ থেকে স্বরাজ্য পাওয়া যায়। তাই রাজযোগ অবশ্যই শিখতে হবে। পরমপিতা পরমাত্মা-ই স্বর্গ স্থাপন করেন। একে কৃষ্ণপুরীও বলা হয়। কংসপুরীতে তো কৃষ্ণপুরীর স্থাপন সম্ভব নয়। তাই সঙ্গমযুগ রাখা হয়েছে। কেবল তোমাদের মতো বাচ্চাদের জন্য এটা হল সঙ্গমযুগ, বাকি সকলের জন্য এটা হল কলিযুগ। তোমরাই এই সঙ্গমযুগ থেকে এরপর সত্যযুগে যাবে- এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। এখন আমরা সঙ্গমযুগে রয়েছি। *সঙ্গমযুগের কথা মনে থাকলে সত্যযুগের কথাও মনে থাকবে এবং যিনি সত্যযুগের স্থাপন করেন তাঁকেও মনে থাকবে।* কিন্তু প্রতি মুহূর্তে ভুলে যায়। তোমরা বুঝেছ যে এখন আমরা সঙ্গমযুগে রয়েছি। বেহদের বাবা তো প্রতি কল্পের সঙ্গমযুগেই আসেন। গীতাতে ভুল লিখে দিয়েছে। গীতার সাথে কেবল ভাগবৎ এবং মহাভারতের সম্পর্ক রয়েছে। বাবা বোঝাচ্ছেন, তোমরা সবাই সীতা এবং আমি হলাম রাম। তোমরা এখন রাবণ-রাজ্য রূপী লঙ্কাতে রয়েছ। ওই লঙ্কার (শ্রীলঙ্কা) সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। এমন নয় যে ওখানে কোনো রাবণ-রাজ্য ছিল। সত্যযুগে তো লঙ্কা (শ্রীলঙ্কা) ইত্যাদি থাকবে না। ওখানে এখন বৌদ্ধ ধর্ম রয়েছে। বর্তমানে বৌদ্ধ ধর্মের অনেক বিস্তার হয়েছে। এটা তো বাচ্চাদেরকে বোঝানো হয়েছে যে আগে ভারত সম্পূর্ণ পবিত্র ছিল, সুখ-শান্তি ছিল, একটাই দেবী-দেবতা ধর্ম ছিল। আগে তো এই বিষয়ে একেবারে নিশ্চিত হতে হবে যে ইনি হলেন আমাদের বেহদের বাবা, তাঁর কাছ থেকে উত্তরাধিকার নিতে হবে। পুরুষার্থ করতে করতে পিছলে গেলে চলবে না। নিশ্চয় না হলে তো পুরুষার্থ করতেই পারবে না। বাবা পড়াচ্ছেন এবং তাঁর কাছ থেকে স্বর্গের অর্থাৎ সদা-সুখের উত্তরাধিকার পাওয়া যাচ্ছে - এটা তো সুনিশ্চিত। স্কুলে যদি কারোর এম অবজেক্টের ওপর নিশ্চয় না থাকে, তাহলে সে সেখানে বসে থাকবে না। ওখানে তো অনেক সাবজেক্ট থাকে, মার্জিন থাকে। এখানে তো একটাই সাবজেক্ট। একটা সাবজেক্টের দ্বারাই কত বড় রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। যে পড়বে না সে জ্ঞানী আত্মার সামনে মাথা নোয়াবে। প্রজাদের মধ্যেও যে ভালো প্রজা হবে, তার সামনে কম পদের প্রজারা মাথা নোয়াবে। প্রজাদের মধ্যেও বিভিন্ন ক্রম রয়েছে। কেউ গরিব, কেউ সাহুকার। দুইজন কখনো একইরকম হবে না। কতই না আশ্চর্যজনক এই ড্রামা। অভিনয় করার জন্য সকল মানুষের চেহারা এই ড্রামাতেই নিহিত রয়েছে। এইসব অতি গুহ্য বিষয়, যেগুলো ধারণ করে অন্যকেও বোঝাতে হবে। সবাই তো বোঝাতে পারবে না। বাবা কত ভালো ভালো কথা বোঝান। নিশ্চয় হলেই বিজয়ী হবে, নিশ্চিত হলে তবেই পড়বে। কেউ তো সংশয়বুদ্ধি হয়ে পড়াশুনা ছেড়ে দেয়। মায়া হঠাৎ করে তুফান এনে সংশয়বুদ্ধিসম্পন্ন করে দেয়। সংশয়বুদ্ধি হলে বিনাশ নিশ্চিত। চড়তে পারলে বৈকুণ্ঠ রসের স্বাদ পাবে, কিন্তু পড়ে গেলে হাড়-গোড় চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে। কত তফাৎ। পড়ে গেলে একেবারে চন্ডাল হয়ে যাবে আর চড়তে পারলে বাদশা হয়ে যাবে। সবকিছু পড়াশুনার ওপরেই নির্ভরশীল। আগে কি কখনো শুনেছ যে নিরাকার শিক্ষক কেমন হয়। এখন শিববাবার কাছ থেকে শুনছ। তোমরা নিশ্চিত হয়েছ যে আমি তোমাদের পিতা, পতিত-পাবন এবং নলেজফুল। নলেজের দ্বারা চক্রবর্তী রাজা হতে হবে - এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। নিশ্চয়ের ক্ষেত্রেই মায়া বিঘ্ন সৃষ্টি করে। শত্রু সামনেই আছে। তোমরা জানো যে মায়া হল আমাদের শত্রু, প্রতি মুহূর্তে ধোঁকা দিয়ে দেয়, পড়াশুনার ক্ষেত্রে সংশয় উৎপন্ন করে। সংশয় হলে অনেক বাচ্চাই পড়া ছেড়ে দেয়। পড়া ছেড়ে দেওয়ার অর্থ বাবা-টিচার এবং সদগুরুকেও ত্যাগ করা। দুনিয়ার মানুষ তো গুরু পরিবর্তন করে। অনেকজনকে গুরু করে। এখানে কেবল একজনই আছেন - সদগুরু। ইনি নিজের মহিমা করেন না। নিজের পরিচয় দেন। ভক্তরা গায়ন করে- শিবায় নমঃ, তুমি হলে মাতা-পিতা…। কিন্তু কিছুই জানে না। কেবল বলতে থাকে আর পূজা করতে থাকে। তোমরা এখন জেনে গেছ যে শিববাবা কে? শিববাবার পরে আছেন ব্রহ্মা এবং সরস্বতী। লক্ষ্মী-নারায়ন পরে আসেন। আগে তো শিববাবা, তারপরে ব্রহ্মা বিষ্ণু এবং শঙ্কর। বাবা বলেন, আমি আগে ব্রহ্মার মধ্যে প্রবেশ করে একে রচনা করি। ব্রহ্মার দ্বারা স্থাপন হয় এবং তারপর ব্রহ্মাই বিষ্ণু হয়ে পালন করেন। এইসব পয়েন্ট নোট করতে হবে। তারপর কাউকে বোঝানোর চেষ্টা করতে হবে। কেউ কেউ তো খুব ভালো বোঝায়। বাবার কথা তো সম্পূর্ণ আলাদা। কখনো শিববাবা বোঝান, কখনো ইনি বোঝান। তোমরা সর্বদা এটাই মনে করবে যে শিববাবা বোঝাচ্ছেন। শিববাবাকে স্মরণ করলেই বিকর্ম বিনাশ হবে। তোমরা মনে কর যে শিববাবা এনার দ্বারা যুক্তি সহকারে নুতন নুতন পয়েন্ট শোনাচ্ছেন। তাই বাচ্চাদেরকেও এগুলো বুঝতে হবে। আগে তো নিশ্চিত হতে হবে। সাত দিবসীয় কোর্সের দ্বারাও ভালো ভাবে রঙ লাগা সম্ভব। কিন্তু মায়াও খুব শক্তিশালী। আগে তো এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে যে বাবা অর্থাৎ পরমপিতা পরমাত্মা-ই হলেন স্বর্গের রচয়িতা। তাহলে নিশ্চয়ই তিনিই রাজযোগ শিখিয়েছিলেন। কৃষ্ণের পক্ষে শেখানো সম্ভব নয়। কৃষ্ণের আগমন তো সত্যযুগে হয়। বাবা কারোর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন না। এনার শরীরে প্রবেশ করার পর এনার পরিচয় দেন এবং বলেন যে এনার নাম কেন ব্রহ্মা রাখা হয়েছে। ইনিই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অভিনয় করেন। তোমাদেরও খুব ভালো ভালো নাম রাখা হয়েছিল। অনেক বাচ্চার নাম এসেছিল। কত আশ্চর্যের বিষয়, তাই না? মুহূর্তের মধ্যে দুই-আড়াই শো জনের নাম এসেছিল। এত নাম তো এখানকার ব্রাহ্মণরা দিতে পারবে না। বার্তাবাহক নাম নিয়ে এসেছিল। বেহদের বাবা নাম রেখেছিলেন। কত আশ্চর্যের বিষয়। ওয়ান্ডারফুল বাবা, ওয়ান্ডারফুল এম অবজেক্ট। তোমরাই রাজাদের রাজা হবে। লক্ষ্মী-নারায়ণের ছবি খুব স্পষ্ট। ত্রিমূর্তির চিত্রও যথাযথ। ৮৪ জন্ম তো অবশ্যই নিতে হবে। কলিযুগের অন্তিম হল পতিত এবং সত্যযুগের আদি হল পবিত্র। বাচ্চাদেরকে সেবার প্রমান দিতে হবে - বাবা, আমিও ছোট ছোট ইশতিহার (হ্যান্ডবিল) ছাপিয়েছি। ওপরে যেন শিববাবা, ত্রিমূর্তি এবং দুই বাবার পরিচয় থাকে। এইসব পয়েন্ট গুলো যেন অবশ্যই থাকে। এইরকম হ্যান্ডবিল ছাপিয়ে অনেক সেবা করে সেবার খবরাখবর দিতে হবে। তাহলেই শিববাবা হৃদয়ে স্থান পাবে। কেবল ভালো থাকার চিঠি লিখলে হবে না, সার্ভিস করে সেবার খবর লিখতে হবে - বাবা, এইরকম এইরকম সেবা করেছি। কেবল স্মরণ ভালোবাসার পত্র লিখলে কি বাবার পেট ভরবে? আজ অমুক ব্যক্তিকে বুঝিয়েছি, আমি স্বামীর সেবা করেছি, সে খুব খুশি হয়েছে, এইরকম ভাবে সেবা করেছি… ইত্যাদি খবর বাবাকে দিতে হবে। দুই বাবার পয়েন্ট হল মুখ্য। বেহদের বাবা হলেন স্বর্গের রাজত্বের দাতা। তোমরা কত মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চা। বাবা বোঝাচ্ছেন, এরা সবাই হল অ্যাডাপ্টেড চিলড্রেন। কেবল ধর্মের সন্তান হলেই এতজন সন্তান হওয়া সম্ভব। ওরা হল ধর্মের ফলোয়ার্স। এখানে তোমরা হলে সন্তান। বাবাও এইরকম বাচ্চাদেরকে দেখে খুশি হন। এরা সবাই আমার সন্তান। এখন অন্তিম সময়ের ভূমিকা পালন করছে। স্বর্গ স্থাপন করার কার্যে সাহায্য করার জন্য আমার সাথী হয়েছে। এটা হল রুদ্র শিববাবার রাজস্ব অশ্বমেধ যজ্ঞ। শিববাবা কিভাবে স্বর্গ স্থাপন করেন? আগে ব্রহ্মা এবং ব্রাহ্মণদের দ্বারা রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞের রচনা করেন। এই যজ্ঞের দ্বারাই স্বর্গ স্থাপন হয়। তাই ব্রাহ্মনদেরকেই এই যজ্ঞ সামলাতে হবে। আচ্ছা!



মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি রুহানী বাচ্চাদের প্রতি রুহানী বাপদাদার স্মরণ, ভালোবাসা এবং সুপ্রভাত। রুহানী বাবার রুহানী বাচ্চাদেরকে নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-

১. নিশ্চয়বুদ্ধি সম্পন্ন হয়ে পড়াশুনা করতে হবে। কোনো বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করা যাবে না। নিশ্চয়ের দ্বারাই বিজয় হবে।

২. বাবার সাথী হয়ে স্বর্গ স্থাপনার কার্যে সম্পূর্ণ সহযোগী হতে হবে। যজ্ঞ সামলাতে সক্ষম পাক্কা ব্রাহ্মণ হতে হবে।

বরদান:-

‘আসা এবং যাওয়া’-র অভ্যাস দ্বারা বন্ধনমুক্ত হয়ে অলিপ্ত এবং নির্লিপ্ত হও।

সমগ্র পাঠ অর্থাৎ সকল জ্ঞানের সার হল - ‘আসা এবং যাওয়া’। বুদ্ধিতে ঘর যাওয়ার এবং রাজত্বে আসার খুশি রয়েছে। কিন্তু আনন্দ সহকারে সে-ই যেতে পারবে যার আসা এবং যাওয়ার অভ্যাস থাকবে। যখন খুশি অশরীরী স্থিতিতে স্থির হয়ে যাও এবং যখন খুশি কর্মাতীত হয়ে যাও। এই অভ্যাস অত্যন্ত সুদৃঢ় হতে হবে। কোনো বন্ধন যেন নিজের দিকে আকর্ষণ করতে না পারে। বন্ধন-ই আত্মাকে টাইট করে দেয় এবং টাইট পোশাক খোলার সময়ে টানাটানি করতে হয়। তাই সর্বদা অলিপ্ত এবং নির্লিপ্ত থাকার পাঠকে পাকা করো।

স্লোগান:-

সুখের খনি দ্বারা সম্পন্ন থাকলে তোমার প্রত্যেক পদক্ষেপ দ্বারা সকলে সুখের অনুভব করতে থাকবে।