১৮-১১-১৮ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ০৪-০৪-৮৪ মধুবন


"সঙ্গমযুগের শ্রেষ্ঠ বেলা,শ্রেষ্ঠ ভাগ্যের চিত্র বানানোর বেলা"

আজ বাপদাদা প্রত্যেক ব্রাহ্মণ-শ্রেষ্ঠ আত্মার শ্রেষ্ঠ জীবনের জন্ম বেলা(সময়), ভাগ্য-রেখা দেখছিলেন। জন্মের সময় সব বাচ্চাদেরই শ্রেষ্ঠ, কারণ এখন যুগই হলো পুরুষোত্তম শ্রেষ্ঠ। শ্রেষ্ঠ সঙ্গমযুগে অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ বেলায় সকলের শ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণ জন্ম হয়েছে। জন্ম, সময় - সবই শ্রেষ্ঠ। ভাগ্য-রেখা, ভাগ্যও সব ব্রাহ্মণদের শ্রেষ্ঠ। কারণ তারা শ্রেষ্ঠ পিতার শিব-বংশীয় ব্রহ্মাকুমার-কুমারী। তাই শ্রেষ্ঠ পিতা, শ্রেষ্ঠ জন্ম, শ্রেষ্ঠ আশীর্ব্বাদ, শ্রেষ্ঠ পরিবার, শ্রেষ্ঠ খাজানা(ধনভান্ডার) - এই ভাগ্য-রেখা সকলেরই জন্ম থেকেই শ্রেষ্ঠ। সময়ও শ্রেষ্ঠ আর প্রাপ্তির কারণে ভাগ্য-রেখাও শ্রেষ্ঠ। এমন ভাগ্য সব বাচ্চাদেরই এক বাবার কাছ থেকে একই রকমের প্রাপ্ত হয়, এতে কোনো অন্তর নেই। তবুও একই রকমের ভাগ্য প্রাপ্ত করেও তা নম্বরের ক্রমানুসারে হয় কেন? বাবা এক, জন্ম এক, আশীর্ব্বাদ এক, পরিবার এক, সময়ও এই সঙ্গমযুগে, তাহলে নম্বর অনুসারে কেন? সর্বপ্রাপ্তি অর্থাৎ ভাগ্য সবাই বেহদের পেয়েছে। কিন্তু পার্থক্য কোথায়? বেহদের ভাগ্যকে জীবনে কর্মের স্বরূপে(তসবীর) নিয়ে আসা, এতে নিজ নিজ শক্তির কারণে প্রভেদ হয়ে যায়। ব্রাহ্মণ জীবন অর্থাৎ ভাগ্যকে চিত্রে(স্বরূপে) নিয়ে আসা, জীবনে নিয়ে আসা। প্রতিটি কর্মের মধ্যে নিয়ে আসা, প্রতিটি সঙ্কল্পের দ্বারা, বাণীর দ্বারা, কর্মের দ্বারা ভাগ্যবান যেন ভাগ্যকে অনুভব করে অর্থাৎ দেখতে পায়। ব্রাহ্মণ অর্থাৎ ভাগ্যবান আত্মার নয়ন, ললাট, মুখ-মন্ডলের হাসি - প্রতি পদেই যেন সকলকে শ্রেষ্ঠ ভাগ্যের অনুভূতি করায় - একেই বলা হয় ভাগ্যের চিত্র নির্মাণ করা । ভাগ্যকে অনুভবের কলম দ্বারা কর্ম-রূপী কাগজে চিত্রিত(স্বরূপ) করা। ভাগ্যের চিত্রের 'চিত্র-রেখা' বানানো। চিত্র তো সকলেই তৈরী করে, কিন্তু কারও চিত্র (তসবীর) সম্পন্ন(সম্পূর্ণ) আবার কারও চিত্রে কোনো না কোনো কিছুর অভাব রয়ে যায়। অর্থাৎ যখন তারা তাকে প্রাক্টিক্যাল জীবনে নিয়ে আসে, অর্থাৎ ললাট-রেখা অর্থাৎ মন্সা, নয়ন-রেখা অর্থাৎ আত্মিক(রুহানী) দৃষ্টি, মুখের হাসির রেখা অর্থাৎ সদা সর্বপ্রাপ্তি স্বরূপ সন্তুষ্ট আত্মা তারা। সন্তুষ্টতাই হর্ষিতমুখতার রেখা। হস্ত-রেখা অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ কর্মের রেখা, পদ-রেখা অর্থাৎ প্রতিটি পদক্ষেপে শ্রীমত অনুসারে চলার শক্তি। এভাবেই ভাগ্যের চিত্র বানানোয় কারও কারও কোথাও কোথাও অন্তর হয়ে যায়। যেমন স্থূল চিত্রও যখন বানানো হয় তখন কেউ চোখ আঁকতে পারে না আবার কেউ পা আঁকতে পারে না, কেউ হর্ষিতমুখী চিত্র বানাতে পারে না। তাই অন্তর হয়ে যায়। চিত্র যতই সম্পন্ন হয় ততই মূল্যবান হয়। সেই একটি চিত্রই লক্ষাধিক মূল্যের হয়, আবার কেউ ১০০ টাকাও রোজগার করে। তাই পার্থক্য কিসের জন্য? সম্পন্নতার। এমনই ব্রাহ্মণ আত্মারাও সর্ব রেখার দ্বারা সম্পন্ন না হওয়ায় কারণে, কোনো একটি রেখা বা দুটি রেখার সম্পূর্ণতা না হওয়ার কারণে নম্বরের ক্রমানুসারে হয়ে যায়।



তাই বাবা আজ ভাগ্যবান বাচ্চাদের ভাগ্য দেখছিলেন। যেমন স্থূল ভাগ্যও ভিন্ন-ভিন্ন প্রকারের হয়। তেমন এখানেও ভাগ্যের ভিন্ন-ভিন্ন চিত্র দেখেছেন। প্রতিটি চিত্রেই মুখ্য হলো মস্তক আর নয়ন যা কিনা চিত্রের ভ্যালু বাড়ায়, তেমন এখানেও মন্সা বৃত্তির শক্তি ও নয়নে রুহানী দৃষ্টির শক্তি - এরই মহত্ত্ব রয়েছে। এটিই হলো চিত্রের(তসবীর) ভিত(ফাউন্ডেশন)। সবাই নিজেদের চিত্রকে দেখো যে আমাদের চিত্র কতখানি সম্পন্নতা স্বরূপ হয়েছে। এমন চিত্র কী বানানো হয়েছে যে চিত্রের মাধ্যমে ভাগ্য-বিধাতাকে প্রত্যক্ষ করা যায়। প্রত্যেকটি রেখাকে চেক্ করো। এর কারণেই নম্বরের ক্রম(নম্বরবার) হয়ে যায়। বুঝেছ।



দাতা এক আর দানও সকলকে একইরকম করেন । কিন্তু যারা তৈরী হবে, তারা নিজেদের তৈরি করবার সময়েই নম্বর ক্রমে এসে যায়। কেউ বিশেষ অষ্ট-রত্ন, কেউ ইষ্ট-দেব হয়ে যায়, কেউ দেবতা হয়। কেউ আবার দেবতাদের দেখেই হর্ষিত হয়ে যায়, এমনও হয়। নিজের চিত্র দেখে নিয়েছ তো। আচ্ছা !



সাকার রূপে মিলন উদযাপনের জন্য তো সময় ও সংখ্যা দুই-ই দেখতে হয় আর অব্যক্ত মিলনে সময় ও সংখ্যার কোনো ব্যাপারই নেই। অব্যক্ত মিলনের অনুভাবী হয়ে গেলে, অব্যক্ত মিলনের বিচিত্র অনুভূতি সর্বদা করতেই থাকবে। বাপদাদা হলেন বাচ্চাদের সদা আজ্ঞাকারী, তাই অব্যক্ত হয়েও ব্যক্ত-রূপে আসতে হয় তাঁকে । কিন্তু তোমাদের কী হতে হবে ? অব্যক্ত হবে ? না ব্যক্ত হবে ? অব্যক্ত হও। অব্যক্ত হলে বাবার সাথে নিরাকার হয়ে ঘরে ফিরে যাবে। এখনো তোমরা মাধ্যমের(ভায়া, via) স্টেজ পর্যন্তই পৌঁছোওনি। ফরিস্তা স্বরূপ হলে নিরাকার হয়ে ঘরে যেতে পারবে। তাই এখন ফরিস্তা স্বরূপ হয়েছো ! ভাগ্যের চিত্র সম্পন্ন বানিয়েছ ? *সম্পন্নতার চিত্রই হলো ফরিস্তা*। আচ্ছা !



ভিন্ন ভিন্ন জোন থেকে আগত সকল বাচ্চাদেরকে, প্রত্যেক জোনের বিশেষত্বের সাথে বাপদাদা দেখতে দেখতে প্রফুল্লিত হচ্ছেন। কেউ কেউ হয়তো ভাষাটা (হিন্দি) জানেনা, কিন্তু তারা প্রেম এবং ভাবনার ভাষা বুঝতে বেশ হুঁশিয়ার। আর কিছু না জানুক, কিন্তু মুরলীর ভাষা তারা অবশ্যই জানে। প্রেম আর মনের ভাব - এর দ্বারা ভাষা না জানলেও অনেক কিছুই বুঝে যায়। বাংলা আর বিহার তো সদা বসন্ত কালে থাকে। সদা বসন্ত সেখানে।



পাঞ্জাব তো রয়েছেই সকলকে তরতাজা সবুজে ভরিয়ে দেওয়ার জন্যই (ভরপুর করবার জন্য)। হরিয়ানা তো হলই সবুজে ভরপুর। যেখানে সবুজই সবুজ, সেই স্থানকে সদা কুশল, শ্রেষ্ঠ স্থান বলা হয়। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা সদাই খুশীতে ভরপুর। সেইজন্যই বাপদাদাও দেখে দেখে প্রফুল্লিত হন। রাজস্থানের বিশেষত্ব কী ? রাজস্থান চিত্র রেখার (চিত্রকলা) জন্য প্রসিদ্ধ। রাজস্থানের চিত্র শিল্প খুবই মূল্যবান হয়। কারণ রাজা রাজরাদের স্থান সেটি। তাই রাজস্থানের ভাগ্যের চিত্র গুলোও সবচেয়ে বেশি মূল্যবান বানাবে। চিত্রের রেখাতে সদা শ্রেষ্ঠ ।গুজরাতের বিশেষত্ব কী ? সেখানে আয়নার শৃঙ্গার বেশি হয়। তাই গুজরাত হল দর্পণ। দর্পণ বলো, আর আয়নাই বলো, যাতে বাবার মূরত দেখতে পাওয়া যায়। আয়নায় তো চেহারাই তো দেখে, তাই না ! তো গুজরাতের দর্পণ দ্বারা বাবার ছবি ফরিস্তা স্বরূপের ছবি সকলকে দেখানোর বিশেষত্ব রয়েছে। তো গুজরাতের বিশেষত্ব হল বাবাকে প্রত্যক্ষ করানোর দর্পণ। বাকি রইল ছোট্ট তামিলনাড়ু। ছোটোই কামাল করে দেয়। অনেক বড় কাজ করে দেখায়। তামিলনাড়ু কী করবে ? ওদের মন্দির রয়েছে অনেক। মন্দির অনেক রয়েছে সেখানে। মন্দির গুলিতে নাদ ধ্বনিত হয় (সঙ্গীত, বাদ্য) তামিলনাড়ুর বিশেষত্ব হল নাগাড়া বাজিয়ে বাবার প্রত্যক্ষতার ধ্বনি উচ্চকিত করা। ভালো বিশেষত্ব রয়েছে তাদের। ছোট বয়স থেকেই সঙ্গীত বাদ্য (নাদ) বাজায় তারা। ভক্তরাও ভক্তিভরে নাদ ধ্বনিত করে। আর বাচ্চারাও আনন্দের সাথে বাজায়। এখন প্রতিটি স্থান নিজের নিজের বিশেষত্বকে প্রত্যক্ষ স্বরূপে নিয়ে এসো। সকল জোনের সাথেই মিলন হয়েছে না ! শেষে তো এই রকম মিলনই হবে। পুরানো বাচ্চারা বলে, আমাদের ডাকো না কেন বাবা ? আমরা প্রজাও বানাচ্ছি, বৃদ্ধিও করে যাচ্ছি। তো পুরানোরা নতুনদেরকে স্থান দেবে, তবেই তো বৃদ্ধি হবে ! পুরানোরা হলেন দাতা, তারা দেয়, আর পুরানোরা হল নেওয়ার স্থানে। তো চান্স তো দিতেই হবে, এতে তো দাতা হতে হবে ! সাকার মিলনে সব কিছু সীমিত (হদের) ব্যাপার। কিন্তু অব্যক্ত মিলনে সীমার কোনো ব্যাপারই নেই। কেউ কেউ বলছে, বাবা, সংখ্যা বাড়লে তখন কী হবে ? সাকার মিলনের বিধিও তো তখন বদলাবে। যখন সংখ্যা বাড়ে, তখন কিছু দানপুণ্যও তো করতে হয়। আচ্ছা -



সকল দেশ বিদেশের চতুর্দিকের স্নেহী বাচ্চাদেরকে অন্তরের আওয়াজ, খুশীর সঙ্গীত এবং হৃদয়ের সমাচার পত্র গুলির রেসপন্ড এ বাপদাদা সকল বাচ্চাদেরকে পদমগুণ স্মরণের স্নেহের সাথে রেসপন্ড দিচ্ছেন যে, সদা স্মরণে অমর ভব-র বরদানী হয়ে এগিয়ে যাও আর অন্যদেরও এগিয়ে নিয়ে যাও। উৎসাহ উদ্দীপনায় ভরপুর সকল বাচ্চাদেরকে বাপদাদা স্ব উন্নতি এবং সেবার উন্নতির জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছেন। অভিনন্দন। সদা সাথে থাকো। সদা সম্পন্ন আর সম্পূর্ণ থাকো। এমন সকল বরদানী বাচ্চাদেরকে বাপদাদা আবারও স্মরণের স্নেহ সুমন দিচ্ছেন । স্মরণের স্নেহ সুমন আর নমস্কার।



*পার্টিদের সাথে* - সর্বদা নিজেকে বাবা সমান আত্মা মনে করো ! যে সম্পন্ন, সে সদা এগিয়ে যেতে থাকবে। সম্পন্নতা না থাকলে এগিয়ে যেতে পারবে না। তো যেমন বাবা, তেমনই বাচ্চারা । বাবা হলেন সাগর আর বাচ্চারা হল মাস্টার সাগর । প্রতিটি গুণকে চেক করো - বাবা যেমন জ্ঞানের সাগর, তো আমরাও হলাম মাস্টার জ্ঞানের সাগর । বাবা হলেন প্রেমের সাগর, তো আমরা হলাম মাস্টার প্রেমের সাগর। এমন ভাবে সমানতাকে চেক করো, তবেই বাবা সমান হয়ে এগিয়ে যেতে পারবে। বুঝেছ - সদা এই ভাবে চেক করতে থাকো। সদা এমন খুশীতে থাকো, যাকে বিশ্ব খুঁজছে, সে-ই আমাকে আপন বানিয়ে নিয়েছে।



*অব্যক্ত মহাবাক্য - বিশ্ব কল্যাণকারী হও*



বাপদাদা বাচ্চাদেরকে, অর্থাৎ তোমাদেরকে বিশ্ব সেবার জন্য নিমিত্ত করেছেন। বিশ্বের সামনে বাবাকে দেখাবে তোমরা বাচ্চারাই তো। বাচ্চাদের দ্বারাই বাবাকে দেখা যাবে। ব্যাকবোন তো বাবা-ই। যদি বাবা ব্যাকবোন না হন, তবে তোমরা একা একা তো হাপিয়ে যাবে, সেইজন্য বাবাকে ব্যাকবোন মনে করে বিশ্ব কল্যাণের সেবাতে তন-মন-ধন, মন্সা-বাচা-কর্মণাতে বিজি থাকলে, সহজেই মায়াজিৎ হতে পারবে।

বর্তমান সময়ে সমগ্র বিশ্বে অল্পকালের প্রাপ্তি রূপী ফল - ফুল শুকিয়ে গেছে। সকলেই মনে মনে বা মুখে আর্তনাদ করছে যে তারা তাদের জীবনকে, তাদের দুনিয়াকে বাধ্য হয়ে চালাচ্ছে। তাদের জীবনে আনন্দ বিদায় নিয়েছে। এমন বাধ্য হয়ে যারা তাদের জীবনকে চালাচ্ছে তাদের প্রাপ্তির ডানা প্রদান করে ওড়াও। কিন্তু ওড়াতে তখনই পারবে, যখন নিজে উড়তি কলাতে থাকবে। এর জন্য বাবা সমান বিশ্ব কল্যাণকারীর বেহদের স্টেজে স্থিত হবে বিশ্বের সকল আত্মাদেরকে সকাশ দাও, বিশ্ব পরিক্রমা লাগাও ।চিত্রে যেমন দেখানো হয়েছে, গ্লোবের উপরে শ্রীকৃষ্ণ বসে আছে, সেইরকম বিশ্বের গ্লোবের উপরে বসে যাও আর বিশ্বের চারিদিকে তাকাও, তো অটোমেটিক্যালি বিশ্ব পরিক্রমা হয়ে যাবে । এমনিতেও যখন অনেক উঁচু স্থানে উঠলে, পরিক্রমা করতে হয় না, এক জায়গায় দাঁড়িয়েই সব কিছু দেখতে পাওয়া যায়। তাই, যখন তোমরা তোমাদের উঁচু স্টেজে, বীজরূপ স্টেজে, বিশ্ব কল্যাণকারী স্থিতিতে স্থিত থাকবে,, তো সমগ্র বিশ্ব এমন দেখাবে যেন একটা ছোট গ্লোব, সেকেন্ডে পরিক্রমা করে চলে আসবে।



তোমরা হলে সকল আত্মাদের পিতার সন্তান। সকল আত্মারা হল তোমাদের ভাই। তাই তোমরা তোমাদের ভাইদের প্রতি সংকল্পকে নিবিষ্ট করো, বিশাল বুদ্ধির, দূরদর্শী হও । ছোট ছোট বিষয়ে নিজের সময় নষ্ট কোরো না। উঁচু স্টেজে স্থিত হয়ে এখন বিশাল কার্যের নিমিত্ত হও। হে বিশ্ব কল্যাণকারী আত্মারা - সদা বিশাল কার্যের জন্য প্ল্যান ইমার্জ রাখো। সকলের বিশেষত্বের দ্বারাই বিশ্ব কল্যাণের বিশাল (বেহদ) কার্য সম্পন্ন হয়। যেমন কোনো স্থূল জিনিস বানানো হয়, তাতে যদি সব জিনিস ঠিক মতো দেওয়া না হয়, সাধারণ মিষ্টি হোক বা লবণ না হয়, তবে খাবার যতই উৎকৃষ্ট হোক না কেন তা খাওয়ার যোগ্য হয় না। ঠিক তেমনই বিশ্বের এত শ্রেষ্ঠ কার্যের জন্য নানান রত্নের প্রয়োজন। সকলের সকলের হাত প্রয়োজন। প্রত্যেকের সহযোগিতার আঙ্গুলের দ্বারাই পরিবর্তনের কাজ সম্পন্ন হবে।



বাপদাদার ইচ্ছে যে, সমগ্র বিশ্বে চিরকালের জন্য সুখ আর শান্তির পতাকা উড্ডীয়মান হতে থাকে। সদা যেন স্বস্তির বাঁশি বাজতে থাকে। এই লক্ষ্যকে সাথে নিয়ে সকলের সহযোগিতার অঙ্গুলির দ্বারা এই বিশাল কার্যকে সম্পন্ন করো। তোমাদের, অর্থাৎ ব্রাহ্মণ বাচ্চাদের, এখন বিশেষ কর্তব্য হল - মাস্টার জ্ঞান সূর্য হয়ে

সমগ্র বিশ্বকে সর্ব শক্তির কিরণকে দেওয়া। তেমনি তোমরাও মাস্টার জ্ঞান সূর্য হয়ে সর্ব শক্তির কিরণ সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে দাও, তখনই সকল আত্মারা তোমাদের সকাশ পেতে সক্ষম হবে।



তোমরা হলে বিশ্বের দীপক, অবিনাশী দীপক তোমরা, যার স্মরণিক রূপে দীপমালা পালন করে। এখনও পর্যন্ত তারা তোমাদের মালা জপ করে। কেননা, তোমরাই অন্ধকারকে আলোকিত করো । তো নিজেকে এমন সদা জাগ্রত দীপক অনুভব করো। যতই ঝড় ঝাপটা তুফান আসুক, সদা একরস, অখন্ড জ্যোতির মতো তোমরা জাগ্রত জ্যোতি। এমন দীপকদেরকে বিশ্বও নমন করে আর বাবাও এমন দীপকদের সাথে থাকেন। বাবা যেমন সদা জাগ্রত জ্যোতি, অখন্ড জ্যোতি, অমর জ্যোতি, তেমনই তোমরা, বাচ্চারাও সদা অমর জ্যোতি হয়ে বিশ্বকে অন্ধকার থেকে নির্গত করবার সেবা করো। বিশ্বের আত্মারা তোমাদের, অর্থাৎ জাগ্রত দীপকদের দিকে আন্তরিক ভাবে চেয়ে আছে। তোমরা হলে রাত্রিকে দিবসে পরিবর্তনকারী চৈতন্য দীপক। কত কত আত্মা, অন্ধকারে ভ্রমিত হয়ে একটু আলোর জন্য ছটফট করছে। তোমাদের জ্যোতিই যদি টিমটিম করে, এই জ্বলে উঠছে, এই নিভু নিভু - এমন হয়, তবে ভ্রমিত আত্মাদের কী অবস্থা হবে ! নিভছে আর জ্বলছে - এমন লাইট তো পছন্দ করবে না। সেইজন্যই জাগ্রত জ্যোতি হয়ে, নিজেকে অন্ধকারকে বিদূরিত করবার দায়িত্বে থাকা আত্মা মনে করে চলো, তবেই বলা হবে বিশ্ব কল্যাণকারী ।



তোমরা হলে পূর্বজ আত্মা, তোমাদের বৃত্তি বিশ্বের বাতাবরণকে পরিবর্তন করবে। তোমাদের, অর্থাৎ পূর্বজদের দৃষ্টি সকল বংশাবলীদের ব্রাদারহুডের (ভ্রাতৃত্ব বোধের) স্মৃতি স্মরণ করাবে । তোমরা, পূর্বজরা, বাবার স্মৃতিতে থেকে, সকল বংশাবলিদের স্মরণ করিয়ে দাও যে, সকলের বাবা এসে গেছেন । তোমাদের, অর্থাৎ পূর্বজদের শ্রেষ্ঠ কর্ম বংশাবলিদের শ্রেষ্ঠ চরিত্র অর্থাৎ চরিত্র নির্মাণের শুভ আশা উৎপন্ন করে দেবে। সকলের চোখ, তোমাদের, অর্থাৎ পূর্বজদের খুঁজে ফিরছে, তাই এখন বেহদের স্মৃতি স্বরূপ হও । যেমন বাবার মহিমায় কীর্তন করে - "নির্বলকে বল প্রদাতা" । তেমনই তোমরা সবাই, তা ব্রাহ্মণ পরিবারকেই হোক বা বিশ্বের আত্মাদেরকে, নির্বলকে বল প্রদানকারী মহাবলবান হও । যেমন লৌকিক দুনিয়ায় শ্লোগান দেয় - দারিদ্র দূর করো ("গরিবী হঠাও), তেমনি তোমরা নির্বলতাকে দূর করো। এইভাবে নিমিত্ত হয়ে বিশ্বের সকল আত্মাদেরকে বাবার কাছ থেকে সাহস আর সাহায্য প্রাপ্ত করাও । আচ্ছা! ওঁম্ শান্তি ।



*বরদানঃ - ভালবাসার অগ্নিতে সকল চিন্তাকে সমাপ্ত করতে সমর্থ নিশ্চয় বুদ্ধি নিশ্চিত ভব



যে বাচ্চারা নিশ্চয় বুদ্ধি সম্পন্ন, তারা নিশ্চিন্ত থাকে । সকল চিন্তা সমাপ্ত হয়ে গেছে। বাবা চিন্তার চিতা থেকে উঠিয়ে বাবার হৃদ্ সিংহাসনে বসিয়ে দিয়েছেন। বাবাকে ভালোবেসেছ, আর সেই ভালোবাসার আধারে, ভালোবাসার অগ্নিতে সব চিন্তা সমাপ্ত হয়ে গেছে, যেন কখনও ছিলই না। না শরীরের চিন্তা, না মনে কোনও ব্যর্থ চিন্তা আর না ধনের চিন্তা - যেমন কী হবে ইত্যাদি। জ্ঞানের শক্তিতে সব কিছুই জেনে গেছে। সেইজন্য সকল চিন্তার ঊর্ধ্বে - নিশ্চিত জীবন।

বরদান:-

ভালবাসার অগ্নিতে সকল চিন্তাকে সমাপ্ত করতে সমর্থ নিশ্চয় বুদ্ধি নিশ্চিত ভব

যে বাচ্চারা নিশ্চয় বুদ্ধি সম্পন্ন, তারা নিশ্চিন্ত থাকে । সকল চিন্তা সমাপ্ত হয়ে গেছে। বাবা চিন্তার চিতা থেকে উঠিয়ে বাবার হৃদ্ সিংহাসনে বসিয়ে দিয়েছেন। বাবাকে ভালোবেসেছ, আর সেই ভালোবাসার আধারে, ভালোবাসার অগ্নিতে সব চিন্তা সমাপ্ত হয়ে গেছে, যেন কখনও ছিলই না। না শরীরের চিন্তা, না মনে কোনও ব্যর্থ চিন্তা আর না ধনের চিন্তা - যেমন কী হবে ইত্যাদি। জ্ঞানের শক্তিতে সব কিছুই জেনে গেছে। সেইজন্য সকল চিন্তার ঊর্ধ্বে - নিশ্চিত জীবন।

স্লোগান:-

এমন অচল অটল হও, যাতে কোনও প্রকারের সমস্যা বুদ্ধি রূপী পা' কে নড়াতে না পারে*।