১৪-১০-১৮ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ১৮-০২-৮৪ মধুবন


ব্রাহ্মণ জীবন - অমূল্য জীবন

আজ স্নেহের সাগর এসেছেন, সদাসদাসর্বদা স্নেহ-সাগরে ডুবে থাকা বাচ্চাদের সাথে মিলিত হতে l তোমরা যেমন সস্নেহে বাবাকে স্মরণ করো, তেমনই স্নেহী বাচ্চাদের পদমগুন রিটার্ন দিতে, মিলনোৎসব পালন করতে বাবা সাকার সৃষ্টিতে এসেছেন l বাবা বাচ্চাদের নিজসম অশরীরী নিরাকার বানান, আর বাচ্চারা স্নেহের বশে নিরাকার এবং সূক্ষ্ম বাবাকে সাকার বানিয়ে দেয় l এটাই হলো বাচ্চাদের স্নেহের চমৎকারিত্ব ! বাচ্চাদের স্নেহের এমন চমৎকার দেখে বাপদাদা পুলকিত হন l বাবা বাচ্চাদের গুণের গীত গান, কিভাবে তারা বাবার সঙ্গের রঙে বাবার সমান হচ্ছে l এইরকমভাবে যে বাচ্চারা ফলো ফাদার করে, তাদের বাপদাদা বলেন, আজ্ঞাকারী, বিশ্বস্ত, নির্ভরশীল, প্রকৃত অমূল্য রত্ন l তোমাদের তুলনায় এই স্থূল হীরে-জহরতও মৃত্তিকাসমান l তোমরা এতটাই অমূল্য ! বাপদাদার গলার মালার *"আমি অমূল্য রত্ন"* - নিজেকে এইরকম অনুভব করো তোমরা ? এমন স্বমান থাকে তোমাদের ?



ডবল বিদেশি বাচ্চাদের নেশা আর খুশি থাকে যে তারা এত দূরে থাকা সত্ত্বেও বাপদাদা তাদের দূরদেশ থেকে বাছাই করে আপন করেছেন l *সারা দুনিয়া বাবাকে খুঁজছে আর বাবা আমাদের খুঁজে নিয়েছেন* l এমনভাবে নিজেদের ভাবো ? দুনিয়া তাঁকে এখানে আসার জন্য ডাকছে, আর নম্বরক্রমিক তোমরা বাচ্চারা কি গীত গাও ? *"আমি তোমা সনে বসি, তোমা সনে বসি আহারে, থাকি প্রতি অনুক্ষণ তোমারই সনে"* l কোথায় ডাকখোজঁ আর কোথায় সদা সঙ্গ ! রাতদিনের ফারাক, তাই না ! কোথায় এক সেকেন্ডের প্রকৃত অবিনাশী প্রাপ্তির পিপাসু আত্মারা আর কোথায় তোমরা সব প্রাপ্তিস্বরূপ আত্মারা ! তারা গায়ন করে আর তোমরা সবাই বাবার কোলে সদা বসে আছো! তারা মর্মপীড়ায় কাঁদে আর তোমরা প্রতি পদে তাঁর মত অনুসারে চলো l তারা পলকমাত্র দর্শনের পিয়াসী আর তোমরা স্বয়ংই বাবা দ্বারা দর্শনীয় মূর্তি হয়ে গেছ l আর একটু দুঃখ-বেদনার অনুভব বাড়তে দাও, তারপরে দেখ তোমাদের সকলের সেকেন্ডের এক ঝলক দর্শন আর সেকেন্ডের দৃষ্টির জন্য কতখানি তৃষ্ণার্ত হয়ে তোমাদের সামনে আসে !



এখন তোমরা তাদের নিমন্ত্রণ জানাচ্ছ, ডাকছো l তারপর সময় এলে তোমাদের সাথে সেকেন্ডের সাক্ষাৎ করতেও তারা অনেক মেহনত করবে, "আমাদের দেখা করতে দাও" l তোমাদের সকলের এইরকম সাক্ষাৎকারস্বরূপ হওয়ার প্রত্যক্ষ রূপ থাকবে l তোমরা সব বাচ্চাদের মধ্যেও, তোমরা নিজেদের শ্রেষ্ঠ জীবন আর শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তির মহত্ব অধিক মাত্রায় চিনবে l এখন অসতর্কতা এবং সাধারণ হওয়ার কারণে তোমরা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব আর বিশেষত্ব ভুলেও যাও l কিন্তু যখন প্রাপ্তির অভাবে আত্মারা পিপাসার্ত হয়ে তোমাদের সামনে আসবে, তখন তোমরা বেশি অনুভব করবে যে তোমরা কে আর তারা কে ! এই মুহূর্তে বাপদাদার থেকে সহজেই তোমাদের অনেক খাজানা লাভ হওয়ার কারণে কখনও কখনও নিজের এবং খাজানার ভ্যাল্যুকে সাধারণ মনে করো - অথচ, প্রত্যেকটা শ্রেষ্ঠ মহাবাক্য, প্রত্যেকটা সেকেন্ড এবং ব্রাহ্মণ জীবনের প্রতিটি শ্বাস কতো শ্রেষ্ঠ ! তোমরা যতো উন্নতি করবে সেসব আরও বেশি অনুভব করবে l ব্রাহ্মণ জীবনের প্রতিটা সেকেন্ড শুধু এক জন্মের নয়, বরং জন্ম-জন্মের প্রারব্ধ তৈরি করে l এক সেকেন্ড চলে যাওয়ার অর্থ অনেক জন্মের প্রারব্ধ চলে যাওয়া l তোমরা সব শ্রেষ্ঠ আত্মাদের এমনই অমূল্য জীবন ! এমন শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান বিশেষ আত্মা তোমরা ! বুঝেছো, তোমরা কে ? এইরকম শ্রেষ্ঠ বাচ্চাদের সাথে বাবা মিলিত হতে এসেছেন l ডবল বিদেশি বাচ্চাদের এটা সদা মনে থাকে, তাই না ? নাকি কখনো ভুলে যাও আর কখনো মনে থাকে ? স্মরণকারী নয়, তোমাদের স্মরণস্বরূপ হতে হবে l আচ্ছা !

যারা সদা মিলন উদযাপন করে, যারা সদা বাবার সঙ্গের রঙে থাকে, যারা সদা নিজের, সময়ের, সর্বপ্রাপ্তির মহত্বকে জেনে, সদা প্রতি পদে ফলো ফাদার করে, সেইরকম হারানিধি সুযোগ্য বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l



*পোল্যান্ড তথা অন্য দেশ থেকে আসা নতুন বাচ্চাদের সাথে* :-

সবাই তোমরা নিজেদের ভাগ্যবান মনে করো, কোন ভাগ্য ? এই শ্রেষ্ঠ ভূমিতে আসা, এটাই সবচেয়ে বড় ভাগ্য l এই ভূমি মহান তীর্থের ভূমি l যেমনই হোক, এখানে পৌঁছেছো এটা তো ভাগ্যই l সুতরাং, এখন তোমরা বেশি কি করবে ? স্মরণে থাকো, স্মরণের অভ্যাসকে সদা বাড়াতে থাকো l তোমরা যতো শেখো, সেটাকেই সদা বাড়িয়ে যাও l যদি তোমরা সদা সম্বন্ধ বজায় রাখো, তবে সেই সম্বন্ধ দ্বারাই নিরন্তর অনেক প্রাপ্তি করতে থাকবে l কেন ? আজ বিশ্বে সবারই খুশি আর শান্তি দুইই চাই l তাই এই দুটোই এই রাজযোগের অভ্যাস দ্বারা সদাসর্বদার প্রাপ্তি হতে পারে l যদি এই প্রাপ্তি চাও তো এটাই সহজ সাধন, এটা ছেড়োনা l সাথে রেখো l অনেক খুশি তোমরা লাভ করবে l মনে হবে যেন তোমরা খুশির খনি পেয়ে গেছ, যা দিয়ে অন্যদের প্রকৃত খুশি বিতরণ করতে পারবে l অন্যদের শোনাও আর এই রাস্তাও অন্যদের দেখাও l বিশ্বে এত আত্মারা আছে, কিন্তু সেই আত্মাদের মধ্যে থেকে তোমরা কিছু আত্মাই এখানে পৌঁছেছ l এটাও মহা ভাগ্যের লক্ষণ l তোমরা শান্তিকুণ্ডে পৌঁছে গেছ l শান্তি সবারই জন্য আবশ্যক, তাই না ! নিজেও শান্ত আর সবাইকে শান্তি দিতে থাকাও, মানুষের বিশেষত্ব l যদি শান্তি না থাকে তবে মানব জীবন কি ? তোমাদের আত্মিক, অবিনাশী শান্তি থাকে l তোমরা নিজেকে এবং অন্য আরও অনেককে প্রকৃত শান্তি প্রাপ্ত করার রাস্তা বলতে পারো l তোমরা পুণ্য আত্মা হয়ে যাবে l কোনও অশান্ত আত্মাকে শান্তি যদি দাও তো কতবড় পুণ্য সেটা ! প্রথমে নিজে ভরপুর হও তারপরে অন্যের জন্যও পুন্যাত্মা হতে পারো l এর মতো পুণ্য আর কিছু নেই l দুঃখী আত্মাদের সুখ শান্তির ঝলক দেখাতে পারো l যেখানে একাগ্রতা সেখানে হৃদয়ের সঙ্কল্প পরিপূর্ণ হয়ে যায় l এখন বাবা দ্বারা যে সন্দেশ (বার্তা ) পেয়েছো সেই সন্দেশ শুনিয়ে সন্দেশী (ব্রতাবাহক ) হয়ে চলতে থাকো l



*সেবাধারীদের সাথে* :- সেবার লটারী সদাকালের জন্য তোমাদের সম্পন্ন বানায় l সেবা করে সদাকালের জন্য তোমরা খাজানায় ভরপুর হয়ে যাও l সবাই নাম্বার ওয়ান সার্ভিস করেছো l সবাই তোমরা ফার্স্ট প্রাইজ নাও, তাই না ! ফার্স্ট প্রাইজ হলো, সন্তুষ্ট থাকা, আর সবাইকে সন্তুষ্ট করা l তাহলে কি ভাবছো তোমরা ? যতদিন সেবা করেছো ততদিন নিজেও সন্তুষ্ট থেকেছো আর অন্যদেরও করেছো, নাকি কেউ কেউ তোমরা মর্মাহত হয়েছো ? যদি তোমরা সন্তুষ্ট থাকো আর অন্যদের সন্তুষ্ট করে থাকো তো তোমরা নাম্বার ওয়ান l প্রতি কার্যে বিজয়ী হওয়া অর্থাৎ নাম্বার ওয়ান হওয়া l এটাই সফলতা l না নিজেদের ডিস্টার্ব হতে দাও আর না অন্যদের ডিস্টার্ব করো, এটা বিজয় l সুতরাং তোমরা এমনই সদাকালের বিজয়ী রত্ন l বিজয় সঙ্গমযুগের অধিকার, কারণ তোমরা মাস্টার সর্বশক্তিমান l



প্রকৃত সেবাধারী তারাই যারা সদা রূহানী দৃষ্টি দ্বারা, রূহানী বৃত্তি দ্বারা রূহানী গোলাপ হয়ে সমস্ত রূহকে খুশি করে l তাই যতো সময় তোমরা সেবা করেছো ততোটা সময় রূহানী গোলাপ হয়ে সেবা করেছো তোমরা ? মাঝখানে কোনো কাঁটা ছিলোনা তো, ছিলো ? সদাই রূহানী স্মৃতিতে থেকেছো অর্থাৎ রূহানী গোলাপের স্থিতি বজায় রেখেছো ? যেমন এখানে তোমরা এই অভ্যাস করেছো, তেমনই নিজের নিজের জায়গাতেও এইরকমই শ্রেষ্ঠ স্থিতিতে থেকো l নিচে এসোনা l যা কিছুই হোক না কেন, বায়ুমন্ডল যেমনই হোক, গোলাপ ফুল যেমন কাঁটার মধ্যে থেকেও নিজে সদা সুগন্ধ বিতরণ করে, কিন্তু কাঁটার সাথে নিজে কখনো কাঁটা হয়না l তেমনই, রূহানী গোলাপেরা সদা বায়ুমন্ডলের প্রভাবের ঊর্ধ্বে থাকে এবং স্বতন্ত্রতা বজায় রেখেও প্রিয় হয় l ফিরে গিয়ে লিখোনা *"কি করবো, মায়া এসেছিলো"* ! সদা মায়াজিৎ হয়েই তো ফিরে যাচ্ছ, তাই না ? মায়াকে আসার অনুমতি দিওনা l সবসময় দরজা বন্ধ করে দেবে l ডবল লক হলো স্মরণ আর সেবা l যেখানে ডবল লক আছে, সেখানে মায়া আসতে পারে না l



*দাদীজী তথা অন্য বড় বোনেদের সাথে* :- বাবা যেমন সদা বাচ্চাদের উদ্যম-উৎসাহ বাড়াতে থাকেন, ফলো ফাদার করা বাচ্চারাও আছে l দেশ-বিদেশ থেকে যে টিচাররা সেবার জন্য এসেছে, বাপদাদা সব টিচারদের বিশেষভাবে অভিনন্দন জানান l তোমরা প্রত্যেকে নিজের নামসহ বাবার স্মরণ আর ভালোবাসার অধিকারী মনে করে নিজেই নিজেকে ভালোবেসো l বাবা যদি এক একজনের গুণগান করেন, কতজনের গুণগান তিনি করতে পারতেন ! সবাই তোমরা অনেক মেহনত করেছো l গত বছরের থেকে তোমরা ভালো উন্নতি করেছো আর ভবিষ্যতে এর থেকে আরও অনেক বেশি নিজের জন্য এবং সেবাতে উন্নতি করতে থাকবে l বুঝেছো তোমরা ? এমন ভেবোনা যে আমাকে বাপদাদা বললেন না, তিনি তোমাদের সবাইকে বলছেন l ভক্তরা বাবার নাম স্মরণ করার জন্য অনেক চেষ্টা করতে থাকে, ভাবে বাবার নাম তাদের মুখে থাকা উচিৎ, কিন্তু বাবার মুখে কার নাম থাকে ? তোমরা সব বাচ্চাদের নাম বাবার মুখে, বুঝেছো তোমরা ! আচ্ছা l



*ডবল বিদেশি ভাই-বোনেদের প্রশ্নঃ - বাপদাদার উত্তরঃ*



*প্রশ্নঃ - এই বছরে সেবার জন্য নতুন প্ল্যান কি* ?



*উত্তরঃ* - সময়কে এগিয়ে নিয়ে আসার জন্য প্রথমে বৃত্তি দ্বারা বায়ুমন্ডলকে শক্তিশালী বানানোর সেবা করতে হবে l এর জন্য সর্বাগ্রে নিজের বৃত্তির প্রতি বিশেষ অ্যাটেনশন দেওয়া প্রয়োজন আর দ্বিতীয়তঃ, অন্যদের সেবা করার জন্য বিশেষভাবে সেই আত্মাদের বাছাই করো, যারা প্রকৃতই বিশ্বাস করে যে শান্তির বিধি এখান থেকেই পাওয়া যাবে l এই বছর এই আওয়াজ উঠতে দাও যে শান্তি যদি হয়, তবে এই বিধিতেই হবে l এটাই একমাত্র বিধি যা বিশ্বে আবশ্যকতা আছে, এই বিধি ব্যতীত অন্য কিছু নেই l এই বাতাবরণ চারিদিকে একসঙ্গে তৈরি হতে হবে l ভারতে তথা বিদেশে শান্তির ঝলক প্রতীয়মান হতে হবে l চারিদিক থেকে সবাইকে এটা টাচ্ হতে দাও, আকৃষ্ট হতে দাও যে শান্তি পেতে যদি যথার্থ স্থান কোথাও থেকে থাকে তো তা' এটাই l গভর্নমেন্টের যেমন ইউ.এন.ও. আছে অর্থাৎ যখনই কোনকিছু হয় তো সবার অ্যাটেনশন সেদিকেই যায় l একইভাবে, যখনই কোনো অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হবে, সকলের অ্যাটেনশন যেন শান্তির বার্তা দেওয়া আত্মা হিসেবে তোমাদের দিকে যায় l তারা যেন অনুভব করে, অশান্তি থেকে রেহাই পাওয়ার এটাই একটা জায়গা, যেখানে আশ্রয় নেওয়া যেতে পারে l এই বছর এই বায়ুমন্ডল তৈরি হয়ে যাওয়া উচিৎ l জ্ঞান ভালো, জীবন ভালো, রাজযোগ ভালো, এতো সবাই বলে, কিন্তু এই আওয়াজ জোরদার হতে হবে, *প্রকৃত প্রাপ্তি এখান থেকেই হবে, এই স্থানে বিশ্বের কল্যাণ হবে এই বিধি দ্বারা* l বুঝেছো তোমরা ? এর জন্য শান্তির বিশেষভাবে অ্যাডভার্টাইজ্ করো, যদি কেউ শান্তি চাও তো এখান থেকেই তোমরা বিধি পেয়ে যাবে l শান্তি সপ্তাহ রাখো, শান্তির জন্য সমাবেশের আয়োজন করো, তাদের শান্তির অনুভূতি করানোর জন্য যোগ শিবিরের ব্যবস্থা করো l এইভাবে শান্তির ভাইব্রেশন ছড়াও l



সার্ভিসের মাধ্যমে যেমন স্টুডেন্ট বানাও, সেটা খুব ভালো l তাতে তো অবশ্যই বৃদ্ধি প্রাপ্ত হবেই l কিন্তু এখন সব ভ্যারাইটির লোক, যেমন কালো ফর্সা, বিভিন্ন জাতিধর্মের আত্মারা আছে, তেমনই সর্বত্র বিভিন্ন অক্যুপেশনের আত্মাদের থাকা উচিৎ l কেউ কোথাও গেলে তার নিজের অক্যুপেশনের রীতিতে সেখানে তাদেরকে অনুভব শোনাও l যেমন তোমরা এখানে ওয়ার্কশপ করো, কখনো ডক্টরদের সাথে, কখনো উকিলদের সাথে l যখন বিভিন্ন অক্যুপেশনের লোক একই শান্তির বিষয়ে নিজের অক্যুপেশনের আধারে বলে তো তাদের সেটা ভালো লাগে l সুতরাং এইভাবে যে কেউ সেন্টারে আসুক, তার নিজের অক্যুপেশনের কাউকে সেই সেন্টারে খুঁজে নিজের অনুভব শোনাতে হবে, তাদের ওপর এর প্রভাব পড়ে l তাদের এই অনুভব হতে দাও যে সব অক্যুপেশনের লোকের জন্য এটা সহজ বিধি l যেমন, কিছু সময়ের মধ্যে এই অ্যাডভার্টাইজ্ ভালো হয়েছে যে সব ধর্মাবলম্বীদের জন্য এটাই এক বিধি, এই আওয়াজ উঠতে দাও l এইভাবে এখন আওয়াজ ছড়িয়ে দাও l যারা তোমাদের সম্পর্কে আসে এবং স্টুডেন্টদের কাছে পর্যন্ত এই আওয়াজ তো পৌছেই যায় কিন্তু চারিদিকে এই আওয়াজ যাতে ছড়িয়ে পড়ে সেদিকে আরও একটু অ্যাটেনশন দিতে হবে l এখন ব্রাহ্মণও খুব কমই তৈরি হয়েছে l নম্বরক্রমে ব্রাহ্মণ হওয়ার যে গতি, সেটাকে ফাস্ট বলতে পারা যাবেনা, তাই না ! এখন তো কমপক্ষে ন'লাখ প্রয়োজন l সত্যযুগের আদিতে অন্ততঃ ন'লাখের ওপরে তো তোমরা রাজ্য করবে, তাই না ! তার মধ্যে প্রজাও হবে, কিন্তু তারা এখন তোমাদের কাছের সম্পর্কে এলে তখনই একমাত্র তারা প্রজা হবে l সুতরাং এই হিসেবে গতি কেমন হওয়া উচিৎ ? এখনও পর্যন্ত সংখ্যা খুব কম l বিদেশের টোটাল সংখ্যা কতো হবে ? কমপক্ষে বিদেশের সংখ্যা দু'তিন লাখ তো হওয়া উচিৎ l তোমরা খুব ভালো মেহনত করছো, এতে কোনো ভুল নেই, তবে স্পীড আরেকটু দ্রুত হতে দাও l জেনারেল বাতাবরণের মাধ্যমে স্পিড বাড়বে l আচ্ছা l



*প্রশ্নঃ - অতি পাওয়ারফুল বাতাবরণ বানানোর যুক্তি কি* ?



*উত্তরঃ* - স্বয়ং তুমি পাওয়ারফুল হও l সেইজন্য অমৃতবেলা থেকে প্রতিটা কর্মে নিজের স্টেজ শক্তিশালী কিনা সেটা চেকিংয়ের ক্ষেত্রে আরও খানিক অ্যাটেনশন দাও l অন্যদের সেবায় অথবা সেবার প্ল্যানে তোমরা যখন বিজি থাকো, কখনো কখনো নিজের স্থিতিতে শিথিলতা এসে যায়,সেইজন্য এই বাতাবরণ শক্তিশালী হয়না l সেবা হয়, কিন্তু বাতাবরণ শক্তিশালী হয়না l এইজন্য নিজের ওপর বিশেষ অ্যাটেনশন রাখতে হবে l কর্ম আর যোগ, কর্মের সাথে শক্তিশালী স্টেজ, এই ব্যালেন্সের একটু অভাব আছে l শুধুমাত্র সেবায় বিজি থাকার কারণে স্ব-স্থিতি শক্তিশালী থাকেনা l যতো সময় সেবাতে দাও, তন, মন, ধন যতটা সেবায় লাগাও, সেই অনুযায়ী একের লাখো গুণ বেশি যা তোমাদের লাভ হওয়া উচিৎ, তা' লাভ হয়না l এর কারণ কর্ম আর যোগের ব্যালেন্স নেই l সেবার জন্য তোমরা যেমন প্ল্যান বানিয়েছ, প্রচারপত্র ছাপিয়েছ, টি.ভি ., রেডিওতে প্রোগ্রাম করেছো, বাইরের এই সাধন ঠিক যেমন ব্যবহার করেছো, একইভাবে প্রথমে নিজের মনসা শক্তিশালী বানানোর বিশেষ সাধন থাকা প্রয়োজন l এই অ্যাটেনশনের অভাব আছে l তারপরে আবার বলো, তোমরা বিজি ছিলে, সেইজন্য সামান্য মিস্ হয়ে গেছে l সুতরাং, ডবল লাভ হতে পারেনা l আচ্ছা l

বরদান:-

সেবা দ্বারা প্রাপ্ত মান পদমর্যাদা ত্যাগ করে অবিনাশী ভাগ্য বানিয়ে মহাত্যাগী ভব

তোমরা বাচ্চারা যে শ্রেষ্ঠ কর্ম করো, সেই শ্রেষ্ঠ কর্ম অথবা সেবার প্রত্যক্ষ ফল হল, সকলের দ্বারা মহিমান্বিত হওয়া l সেবাধারীর শ্রেষ্ঠ গায়নের সীট লাভ হয় l সে মান, প্রতিষ্ঠার সীট লাভ করে l এমন আত্মার অবশ্যই এই সিদ্ধি প্রাপ্ত হয় l যতই হোক, এই সিদ্ধি যাত্রাপথের সিঁড়ি, এটা কোনো ফাইনাল গন্তব্য নয় l সুতরাং এটা ত্যাগ করো, ভাগ্যবান হও l একেই বলা হয়ে থাকে মহাত্যাগী হওয়া l গুপ্ত মহাদানীর বিশেষত্বই হলো ত্যাগেরও ত্যাগী l

স্লোগান:-

ফরিস্তা হতে হলে সাক্ষী হয়ে সকল আত্মার পার্ট দেখ এবং তাদের সকাশ দাও* l