08.11.2018 Morning
Bengali Murli Om Shanti BapDada Madhuban
“মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমাদের
সত্যিকারের দীপাবলি তো নুতন দুনিয়াতে হবে। তাই তোমাদের এই পুরাতন দুনিয়ার মিথ্যা
উৎসবগুলো দেখার ইচ্ছে হওয়া উচিত নয়।”
প্রশ্নঃ -
তোমরা হলে
পবিত্র হংস, তোমাদের কর্তব্য কি?
উত্তরঃ -
আমাদের
কর্তব্য হল কেবল বাবাকে স্মরণ করা এবং সকলের বুদ্ধিকে কেবল বাবার সাথেই যুক্ত করা।
আমরা পবিত্র হচ্ছি এবং সবাইকে সেইরকম বানাচ্ছি। আমাদেরকে মানুষ থেকে দেবতা বানানোর
কর্তব্যে সর্বদা নিযুক্ত থাকতে হবে। সবাইকে দুঃখ থেকে মুক্ত করে, গাইডের মতো মুক্তি
এবং জীবন-মুক্তির রাস্তা বলতে হবে।
গীতঃ-
তুমহে পাকে
হমনে জাঁহা পা লিয়া হ্যায়… ( তোমাকে পেয়ে আমরা গোটা দুনিয়া পেয়ে গেছি)
ওম্ শান্তি।
বাচ্চারা গান
শুনল। বাচ্চারা বলছে যে আমরা স্বর্গের রাজত্বের উত্তরাধিকার লাভ করছি। সেই রাজত্বকে
কেউ জ্বালাতে পারবে না, কেউ ছিনিয়ে নেবে না অথবা আমাদেরকে পরাজিত করে কেউ সেই
রাজত্ব নিয়ে নেবে না। আত্মারা বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার পায়। এই বাবাকে
মাতা-পিতাও বলা হয়। যে মাতা-পিতাকে চিনতে পারে, সে-ই এই সংস্থায় আসতে পারে। বাবাও
বলেন, আমি বাচ্চাদের সামনে প্রত্যক্ষভাবে এসে পড়াই এবং রাজযোগ শেখাই। বাচ্চারা এখানে
এসে জীবিত অবস্থাতেই বেহদের বাবার সন্তান হয়ে যায়। জীবিত সন্তানকেই তো দত্তক নেওয়া
হয়। তুমি আমার, আমি তোমার। তোমরা কেন আমার সন্তান হয়েছ? তোমরা বলো - বাবা, তোমার
কাছ থেকে স্বর্গের উত্তরাধিকার নেওয়ার জন্য আমরা তোমার সন্তান হয়েছি। আচ্ছা, ঠিক আছে।
তবে এইরকম বাবাকে কখনো ত্যাগ কোরো না যেন। নাহলে তার ফল কি হবে? স্বর্গের রাজত্বের
সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার পাবে না। মাম্মা-বাবা তো মহারাজা-মহারানী হন। তাই পুরুষার্থ
করে ঠিক ততটাই উত্তরাধিকার নিতে হবে। কিন্তু বাচ্চারা পুরুষার্থ করতে করতে বাবাকে
ত্যাগ করে চলে যায়। তারপর বিকারের বশীভূত হয়ে যায় অথবা নরকে গিয়ে পড়ে। নরককে হেল এবং
স্বর্গকে হেভেন বলা হয়। তোমরা বলো- আমরা এখন নরকে আছি, তাই সদাকালের জন্য স্বর্গের
মালিক হওয়ার জন্য বাবার বাচ্চা হয়েছি। হেভেনলি গড ফাদার, অর্থাৎ যিনি স্বর্গের
রচয়িতা, তিনি যতক্ষণ না আসছেন, ততক্ষণ কেউ হেভেনে (স্বর্গে) যেতে পারবে না। তাঁর
নামটাই হল হেভেনলি গড ফাদার। এটাও তোমরা জেনেছ। বাবা বলছেন - বাচ্চারা, তোমরা বুঝতে
পেরেছ যে আমরা বরাবর ৫ হাজার বছর আগের মতো বাবা কাছ থেকে উত্তরাধিকার পাওয়ার জন্য
বাবার কাছে এসেছি। কিন্তু তা সত্ত্বেও চলতে চলতে মায়ার তুফান একদম খারাপ করে দেয়।
তারপর পড়াশুনাই ছেড়ে দেয়, অর্থাৎ মরে যায়। ঈশ্বরের সন্তান হওয়ার পরে হাত ছেড়ে
দেওয়ার অর্থ নুতন দুনিয়া থেকে মরে গিয়ে পুরাতন দুনিয়াতে চলে যাওয়া। হেভেনলি গড
ফাদার-ই নরকের দুঃখ থেকে মুক্ত করে গাইড হয়ে যেখান থেকে আমরা এসেছিলাম, সেই সুইট
সাইলেন্স হোমে নিয়ে যান। তারপর সুইট হেভেনের রাজত্ব প্রদান করেন। বাবা আমাদেরকে দুটো
জিনিস দেওয়ার জন্য এসেছেন - গতি এবং সদগতি। সত্যযুগ হল সুখধাম, কলিযুগ হল দুঃখধাম।
আর আমরা আত্মারা যেখান থেকে আসি, সেটা হল শান্তিধাম। এই বাবা আমাদেরকে ভবিষ্যতের
জন্য সুখ-শান্তি প্রদান করেন। এই অশান্তির দেশ থেকে আমরা প্রথমে শান্তির দেশে যাব।
সেই স্থানকে সুইট সাইলেন্স হোম বলা হয়। আমরা সেখানেই থাকি। আত্মারা বলছে - ওটা হল
আমাদের সুইট হোম। এরপর আমরা এখন যে পাঠ পড়ছি, তার ফলস্বরূপ স্বর্গের রাজধানী পাব।
বাবার নামটাই হল হেভেনলি গড ফাদার, লিবারেটর, গাইড, নলেজফুল, ব্লিসফুল, জ্ঞানের
সাগর। তাঁকে দয়াময়ও বলা হয়। তিনি সকলের ওপরেই দয়া করেন। তত্ত্বের ওপরেও তিনি দয়া
করেন। সকলেই দুঃখ থেকে মুক্ত হয়ে যায়। জন্তু-জানোয়াররাও তো দুঃখ পায়। কাউকে মারলে
তো কষ্ট হবেই। বাবা বলছেন, শুধু মানুষই নয়, আমি সবাইকেই দুঃখ থেকে মুক্ত করি। কিন্তু
জানোয়ারদেরকে তো আমার সাথে নিয়ে যাব না। এটা কেবল মানুষদের জন্যেই। এইরকম বেহদের
বাবা কেবল একজনই আছেন। বাকি সবাই দুর্গতিতে নিয়ে যায়। তোমরা জানো যে বেহদের বাবা-ই
স্বর্গের এবং মুক্তিধামের গিফ্ট অর্থাৎ উত্তরাধিকার দেন। বাবা-ই হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ।
সকল ভক্তই সেই ভগবান অর্থাৎ পিতাকে স্মরণ করে। খ্রিস্টানরাও গডকে স্মরণ করে। শিববাবা-ই
হলেন হেভেনলি গড ফাদার। তিনিই হলেন নলেজফুল এবং ব্লিসফুল। এইসব কথার অর্থ তোমরা
বাচ্চারাই জানো। তোমাদের মধ্যেও বিভিন্ন ক্রম রয়েছে। কেউ কেউ এমনও আছে, তাকে যতই
জ্ঞানের সজ্জায় সজ্জিত করা হোক, তাও সে বিকারের বশীভূত হবে অথবা দুনিয়ার নোংরা
জিনিস দেখবে। কোনো কোনো বাচ্চা দীপাবলি দেখতে যায়। কিন্তু বাস্তবে আমার বাচ্চা হয়ে
এই দীপাবলি দেখা উচিত নয়। কিন্তু প্রকৃত জ্ঞান না থাকলে তো ইচ্ছে হবেই। তোমাদের
দীপাবলি তো সত্যযুগে হবে, যখন তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে। তোমরা বাচ্চারা সবাইকে বোঝাও
যে বাবা আসেন সুইট হোম এবং সুইট হেভেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য। যে ভালোভাবে পড়বে, ধারণ
করবে, সে-ই স্বর্গের রাজধানীতে আসবে। কিন্তু ভাগ্যেও থাকতে হবে। শ্রীমৎ অনুসারে না
চললে শ্রেষ্ঠ হবে না। এটাই হল শ্রী শিব ভগবানুবাচ। যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ বাবার
পরিচয় না পাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ভক্তি করবে। যখন পাকাপাকি ভাবে নিশ্চিত হয়ে যাবে,
তখন আপনা-আপনিই ভক্তি ছেড়ে দেবে। তোমরা হলে হোলি (পবিত্র) হংস। তোমরা গড ফাদারের
ডাইরেকশন অনুসারে সবাইকে পবিত্র বানাচ্ছ। ওরা তো কেবল হিন্দুদেরকে, কেবল
মুসলমানদেরকে কিংবা কেবল খ্রিষ্টানদেরকে বানায়। তোমরা আসুরিক মানুষদেরকে পবিত্র
বানাচ্ছ। পবিত্র হলেই হেভেন অথবা সুইট হোমে যেতে পারবে। নান বাট ওয়ান, তোমরা কেবল
বাবাকে ছাড়া আর কাউকে স্মরণ করো না। যেহেতু কেবল বাবার কাছ থেকেই উত্তরাধিকার পাওয়া
যায়, তাই কেবল সেই বাবাকেই স্মরণ করব। তোমরা নিজেরা পবিত্র হচ্ছ এবং অন্যকেও পবিত্র
হওয়ার জন্য সাহায্য করছ। ওই নান-রা (সন্ন্যাসিনীরা) কাউকে পবিত্র বানায় না কিংবা
নিজের মতো সন্ন্যাসিনীও বানায় না। কেবল হিন্দুদেরকে খ্রিস্টান বানায়। তোমরা হলে হোলি
নান্স। তোমরা সবাইকে পবিত্র বানাচ্ছ এবং সকল আত্মার বুদ্ধিকে গড ফাদারের সাথে যুক্ত
করছ। গীতাতেও রয়েছে - দেহ এবং দেহের সকল সম্মন্ধ ত্যাগ করে নিজেকে আত্মা অনুভব করে
বাবাকে স্মরণ কর। এরপর জ্ঞান ধারণ করলেই রাজত্ব পাওয়া যাবে। বাবাকে স্মরণ করলে
এভার-হেলদী হবে এবং নলেজের দ্বারা এভার-ওয়েলদী হবে। বাবা তো হলেন জ্ঞানের সাগর। তিনি
সকল বেদ-শাস্ত্রের সারকথা শোনাচ্ছেন। ব্রহ্মার হাতে শাস্ত্র দেখানো হয়। ইনি হলেন
ব্রহ্মা। শিববাবা এনার দ্বারা সকল বেদ-শাস্ত্রের সারকথা শোনাচ্ছেন। তিনি হলেন
জ্ঞানের সাগর। এনার দ্বারা তোমরা জ্ঞানলাভ করছ। এরপর তোমাদের কাছ থেকে অন্যেরা
পাচ্ছে।
কোনো কোনো বাচ্চা বলে - বাবা, আমি এই রুহানি হাসপাতাল খুলেছি যেখানে রোগী মানুষরা
এসে নিরোগী হবে এবং স্বর্গের উত্তরাধিকার নেবে, নিজের জীবন সফল করবে, অনেক সুখ পাবে।
তখন সে অবশ্যই অনেকের আশীর্বাদ পাবে। বাবা আগেও একদিন বুঝিয়েছিলেন যে গীতা, ভাগবৎ,
বেদ, উপনিষদ ইত্যাদি যেসব ভারতীয় শাস্ত্র রয়েছে, সেগুলো পাঠ করা, যজ্ঞ, তপস্যা,
ব্রত, তীর্থ ইত্যাদি করা, এইসব হল ভক্তিমার্গের সামগ্রী অর্থাৎ ঘোল। কেবল শ্রীমৎ
ভাগবৎ গীতার দ্বারা-ই ভারত প্রকৃত মাখন লাভ করে। শ্রীমৎ ভগবৎ গীতাকেও খন্ডন করা
হয়েছে। জ্ঞানের সাগর পতিত-পাবন নিরাকার পরমপিতা পরমাত্মা-র পরিবর্তে শ্রীকৃষ্ণের
নাম বলে দিয়ে ঘোল বানিয়ে দিয়েছে। এটাই হল সবথেকে বড় ভুল। এখন তোমাদের মতো
বাচ্চাদেরকে জ্ঞানের সাগর ডাইরেক্ট জ্ঞান দিচ্ছেন। তোমরা এখন জেনেছ যে এই সৃষ্টি
চক্র কিভাবে আবর্তিত হয়, সৃষ্টিরূপী এই কল্পবৃক্ষের বৃদ্ধি কিভাবে হয়? তোমরা
ব্রাহ্মণরা হলে সর্বোচ্চ কুল, শিববাবা হলেন তোমাদের পিতা। এরপর ব্রাহ্মণ থেকে দেবতা
এবং দেবতা থেকে ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র হবে। এটা অনেকটা ডিগবাজির মতো। এটাকে ৮৪
জন্মের চক্র বলা হয়। যারা বেদ-সম্মেলন করে, তোমরা তাদেরকেও বোঝাতে পারো। ভক্তি হল
ঘোল আর জ্ঞান হল মাখন। এই মাখনের দ্বারা-ই মুক্তি এবং জীবনমুক্তি পাওয়া যায়। যদি
তুমি এখন বিস্তারিত ভাবে এই জ্ঞান বুঝতে চাও তাহলে ধৈর্য্য ধরে শোনো।
ব্রহ্মাকুমারীরা তোমাদেরকে বোঝাতে পারবে। শাস্ত্রতেও লেখা আছে যে অন্তিমে এই
বাচ্চারাই ভীষ্ম পিতামহ, অশ্বত্থামা ইত্যাদি ব্যক্তিকে জ্ঞান দিয়েছিল। অন্তিমে এরা
সকলেই বুঝতে পারবে যে এরা ঠিক কথাই বলছে, অন্তিমে এরা অবশ্যই আসবে। তোমরা যখন
প্রদর্শনী করো, তখন কত হাজার হাজার মানুষ আসে, কিন্তু সবাই তো নিশ্চয়বুদ্ধি হয় না।
কোটির মধ্যে এমন কয়েকজন থাকে যারা ভালোভাবে বুঝে নিশ্চিত হয়। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি লাকি জ্ঞানের নক্ষত্রদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার
পুরুষার্থের ক্রম অনুসারে স্মরণ, ভালোবাসা এবং সুপ্রভাত। রুহানী বাবার রুহানী
বাচ্চাদেরকে নমস্কার।
ধারণার জন্যে
মুখ্য সারঃ-
১) নিজে
পবিত্র হয়ে, অপরকেও নিজের মতো পবিত্র বানাতে হবে। কেবল বাবা ব্যতীত অন্য কাউকে
স্মরণ করা যাবে না।
২) অনেক আত্মার আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য রুহানি হাসপাতাল খুলতে হবে। সবাইকে গতি এবং
সদগতির রাস্তা বলতে হবে।
বরদানঃ-
নিশ্চয়বুদ্ধি
হয়ে লৌকিকের মধ্যেও অলৌকিক ভাবনা রেখে ডবল সেবাধারী অর্থাৎ ট্রাস্টি হও
কোনো কোনো বাচ্চা সেবা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যায়। মনে করে যে এইরকম পরিস্থিতি
কখনোই বদলাবে না। এইরকম ভাবে হতাশ হয়ে যেও না। নিশ্চয়বুদ্ধি হয়ে আমিত্বভাবের সকল
সম্বন্ধ থেকে বুদ্ধি সরিয়ে চলতে থাকো। কোনো কোনো আত্মার ভক্তির হিসাবপত্র মিটতে একটু
সময় লাগে। তাই ধৈর্য্য ধরে, সাক্ষীর আসনে বসে, ওইসব আত্মাদেরকে শক্তি এবং শান্তির
সহযোগ দিতে থাকো। লৌকিকের মধ্যেও অলৌকিক ভাবনা রাখো। ডবল সেবাধারী অর্থাৎ ট্রাস্টি
হও।
স্লোগানঃ-
নিজের শ্রেষ্ঠ
বৃত্তি দ্বারা বায়ুমন্ডলকে শ্রেষ্ঠ বানানো - এটাই হল সত্যিকারের সেবা।
-:মাতেশ্বরীজীর
মহাবাক্য:-
১) “এই
ঈশ্বরীয় সৎসঙ্গ কোনো কমন সৎসঙ্গ নয়”
আমাদের এই ঈশ্বরীয় সৎসঙ্গ কোনো কমন (সাধারণ) সৎসঙ্গ নয়। এটা হল ঈশ্বরীয় স্কুল অথবা
কলেজ। এই কলেজে রেগুলার স্টাডি করতে হয়। বাকি সব জায়গায় তো কেবল সৎসঙ্গ করা হয়।
কিছুক্ষণ ওখানে গিয়ে শুনল, তারপর আবার আগের মতোই হয়ে যায়। কারন ওখানে এইরকম কোনো
রেগুলার পড়াশুনা হয় না যেখান থেকে কিছু প্রাপ্তি হবে। তাই আমাদের এই সৎসঙ্গ কোনো
কমন সৎসঙ্গ নয়। এটা হল ঈশ্বরীয় কলেজ যেখানে স্বয়ং পরমাত্মা বসে থেকে শিক্ষা দেন এবং
আমরা সেই পাঠ সম্পূর্ণ ভাবে ধারণ করে উঁচু পদ প্রাপ্ত করি। স্কুলে যেমন মাস্টারমশাই
প্রতিদিন পড়ান এবং শেষে ডিগ্রী প্রদান করা হয়, ঠিক সেইরকম এখানেও স্বয়ং পরমাত্মা
গুরু, পিতা এবং টিচারের রূপে আমাদেরকে পড়িয়ে সর্বোত্তম দেবী-দেবতা পদ প্রাপ্ত করান।
তাই এই স্কুলের সাথে যুক্ত হওয়া খুবই জরুরি। এখানে যারা আসে তাদেরকে অবশ্যই বোঝাতে
হবে যে এখানে কিসের শিক্ষা দেওয়া হয়? এই শিক্ষা গ্রহণ করলে আমাদের প্রাপ্তি কি হবে?
আমরা তো জেনে গেছি যে স্বয়ং পরমাত্মা এসে আমাদেরকে ডিগ্রী দেন এবং এই একটা জন্মেই
আমাদেরকে পুরো কোর্স শেষ করতে হবে। তাই যারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই জ্ঞানের
কোর্স সম্পূর্ণ ভাবে ধারণ করবে, তারাই ফুল পাস হবে। কিন্তু যারা কোর্স চলাকালীন আসবে,
ওরা তো এতটা জ্ঞান ধারণ করতে পারবে না। ওরা কিভাবে জানবে যে আগে কি কোর্স করানো
হয়েছে? তাই এখানে রেগুলার পড়তে হবে। এই জ্ঞান ধারণ করলেই আগে এগিয়ে যাবে। তাই
রেগুলার স্টাডি করতে হবে।
২) “পরমাত্মার
সত্যিকারের সন্তান হওয়ার পরে কোনো বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করা উচিত নয়”
যেহেতু পরমাত্মা নিজে এই সৃষ্টিতে অবতরণ করেছেন, তাই পরমাত্মাকে পাকাপাকি ভাবে
নিজের হাত দিতে হবে। কিন্তু যারা বাবার পাক্কা এবং সত্যিকারের বাচ্চা, তারাই বাবাকে
হাত দিতে পারবে। এইরকম বাবার হাত ছেড়ে দেওয়া কখনোই উচিত নয়। যদি ছেড়ে দাও তাহলে
অনাথ হয়ে কোথায় ঘুরে বেড়াবে? যখন একবার পরমাত্মার হাত ধরেই নিয়েছ, তখন সূক্ষ্ম
ভাবেও পরমাত্মার হাত ছেড়ে দেওয়ার সঙ্কল্প করা উচিৎ নয় কিংবা এইরকম সংশয় প্রকাশ করা
উচিত নয় যে আমি পাশ করতে পারব কি না। এমন কোনো কোনো বাচ্চা আছে যারা বাবাকে চিনতে
না পেরে বাবার মুখে মুখে উত্তর দেয় আর বলে যে আমি কাউকে পরোয়া করি না। যদি এইরকম
খেয়াল আসে, তাহলে বাবা কিভাবে এইরকম অযোগ্য সন্তানের দেখাশোনা করবেন? সেক্ষেত্রে
বুঝে নাও যে তার পড়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত। কারণ মায়া তো ফেলে দেওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা
করে। মায়া তো অবশ্যই পরীক্ষা নেবে যে কোন যোদ্ধা কত বড় পালোয়ান হয়েছে। আমরা প্রভুর
দ্বারা যত শক্তিশালী হব, মায়াও তত শক্তিশালী হয়ে আমাদেরকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করবে।
এইরকম অবশ্যই হবে। এটা একেবারে পারফেক্ট জুটি। প্রভু যত শক্তিশালী, মায়াও ততটাই
শক্তি প্রদর্শন করবে। কিন্তু আমাদের তো পাক্কা নিশ্চয় আছে যে পরমাত্মা-ই হলেন মহান
শক্তিশালী এবং পরিশেষে তাঁর-ই জিৎ হবে। প্রতিটা শ্বাস-প্রশ্বাসে আমাদেরকে এই
বিশ্বাসে স্থির থাকতে হবে। মায়া তো অবশ্যই শক্তি প্রদর্শন করবে, প্রভুর সামনে সে
কখনোই নিজের দুর্বলতা দেখাবে না। একবারের জন্যেও দুর্বল হলেই শেষ হয়ে যাবে। তাই মায়া
যতই বল প্রয়োগ করুক, কিন্তু আমরা কখনোই মায়াপতির হাত ছাড়ব না। তিনি সম্পূর্ণ ভাবে
হাত ধরে থাকলে তো বিজয় নিশ্চিত। যেহেতু পরমাত্মা-ই আমাদের মালিক, তাই কখনোই তাঁর
হাত ছেড়ে দেওয়ার সঙ্কল্প আসা উচিত নয়। পরমাত্মা বলছেন - বাচ্চারা, আমি যেহেতু সমর্থ,
তাই আমার সাথে থাকলে তোমরাও অবশ্যই সমর্থ হয়ে যাবে। বুঝেছ ?