১১-১১-১৮ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ২৬-০২-৮৪ মধুবন


বাপদাদার অদ্ভুত চিত্রশালা

বাপদাদা আজ নিজের চিত্রশালা দেখছেন l বাপদাদার কোন্ চিত্রশালা আছে, এটা জানো তোমরা ? বাপদাদা সব বাচ্চাদের চরিত্রের অর্থাৎ তাদের দৈবী কার্যকলাপের চিত্র দেখছিলেন l আদি থেকে এখন পর্যন্ত সকলের চরিত্রের চিত্র কেমন হয়েছে! চিত্রশালা কতো বড়ো হবে, ভাবো তাহলে ! বাবা সেই চিত্রে প্রত্যেক বাচ্চার মধ্যে বিশেষ তিনটে বিষয় লক্ষ্য করেছেন ! *এক, পবিত্রতার পার্সোনালিটি* l *দুই, রিয়্যালিটির রয়্যালটি* l *তিন, সম্বন্ধের নৈকট্য* l এই তিন বিষয় সবার চিত্রে দেখেছেন l



পিওরিটির পার্সোনালিটির চিত্রের চারপাশে সূক্ষ্ম জ্বলজ্বলে আলো রূপে দৃশ্যমান ছিলো l রিয়্যালিটির রয়্যালটি চেহারাতে মনের উল্লাস এবং স্বচ্ছতা হয়ে ঝলমল করছিলো, আর সম্বন্ধের নৈকট্য ছিলো ললাটের মধ্যভাগে দ্যুতিমান তারা, কেউ কেউ চতুর্দিকে কিরণ ছড়িয়ে অন্যদের থেকে বেশি জ্বলজ্বল করছিলো, কেউ স্বল্প কিরণসহ জ্বলজ্বল করছিলো l নিকটবর্তী আত্মারা বাবা সমান বেহদের অর্থাৎ চতুর্দিকে তাদের কিরণ ছড়িয়ে দিচ্ছিলো l লাইট আর মাইট, উভয়তঃ তারা বাবাসমান দৃশ্যমান ছিলো l প্রত্যেকের চরিত্রের চিত্রে এই তিন বিশেষত্ব দেখেছেন l এর সাথে সাথে আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত এই তিন বিষয়ে তোমরা সদা শ্রেষ্ঠ থেকেছো কিনা, অথবা কখনো একভাবে তো কখনো আরেকভাবে থেকেছো, সেই রেজাল্ট প্রত্যেকের চিত্রে দেখেছেন l স্থূল শরীরে যেমন নাড়ি দ্বারা চেক করা হয় সবকিছু সঠিক গতিতে চলছে, নাকি নিচে ওপরে হচ্ছে ; নাড়ির তীব্রগতি বা ধীরগতি থেকে তোমরা কারও স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে পারো l একইভাবে প্রত্যেক চিত্রের মধ্যভাগ, হৃদয় থেকে লাইট নিচে থেকে ওপরে সারা শরীরে যাচ্ছিল l গতিও দৃশ্যমান ছিলো l একই গতিতে লাইট নিচে থেকে ওপরে ঘোরাঘুরি করছে নাকি সময় সময়তে গতিতে অন্তর ছিলো ? এর সাথে সাথে লাইটের কালার পরিবর্তন হচ্ছে, নাকি অবিচল আছে তাও মাঝে মাঝে চেক করা হয়েছে l তৃতীয়তঃ, চলতে চলতে লাইট কোথাও থেমে গেছে নাকি একটানা চলতেই থাকছে - এই বিধি দ্বারা বাবা প্রত্যেকের চরিত্রের চিত্র দেখেছেন l তোমরাও তোমাদের চিত্র দেখতে পারো, তাই না ?



পার্সোনালিটি, রয়্যালটি এবং নৈকট্য এই তিন বিশেষত্বের দ্বারা চেক করো, তোমার চিত্র কেমন হবে ! তোমার লাইটের গতি কেমন হবে ! এটা অবশ্যই নম্বরক্রমে হয় l কিন্তু আদি থেকে এখন পর্যন্ত এই তিন বিশেষত্ব আর লাইটের তিন প্রকারের গতিতে সদা অবিচল থেকেছে - মেজরিটির এমন চিত্র ছিল না, মাইনরিটির দিকেই ছিল l তিন লাইটের গতি আর তিন বিশেষত্ব, ছ'টা বিষয়ই তো হল, তাই না ! এই ছয় বিষয়ের মধ্যে মেজরিটি চার-পাঁচটা বিষয়ে, আর কিছু ছিলো তিনটে বিষয় পর্যন্ত l পিওরিটির পার্সোনালিটির লাইটের আকার কারও শুধু তাজসম ছিল অর্থাৎ জ্যোতিশ্চক্র তাদের ফেসের আশপাশে বিদ্যমান ছিল, আর কারও অর্ধ শরীর পর্যন্ত এবং কারও সারা শরীরের চারপাশে প্রতীয়মান হচ্ছিল l উদাহরণস্বরূপ, যেমন তোমরা ফটো তোলো, সেই রকম l যারা ছিল, তারা তাদের মন্সা, বাচা, কর্মণায় আদি থেকে এখন পর্যন্ত পবিত্র থেকেছে l তাদের মন্সাতে নিজেদের প্রতি বা অন্য কারও প্রতি ব্যর্থরূপী কোনোরকম অপবিত্র সঙ্কল্পও চলেনি l কারও কোনোরকম দুর্বলতা বা অপগুণরূপী অপবিত্রতার সঙ্কল্পও ধারণ করেনি l তাদের সঙ্কল্পে তারা জন্ম থেকে বৈষ্ণব হয়েছে, *সঙ্কল্প হল বুদ্ধির ভোজন* l *জন্ম থেকে বৈষ্ণব* অর্থাৎ অশুদ্ধি বা অপগুণ, ব্যর্থ সঙ্কল্পকে মন, বুদ্ধিতে গ্রহণ করেনি l একেই বলা হয়ে থাকে, *প্রকৃত ব্রাহ্মণ* হওয়া বা *বাল ব্রহ্মচারী* l সুতরাং প্রত্যেকের চিত্রে বাবা এইরকম পিওরিটির পার্সোনালিটির রেখা লাইটের আকারে দেখেছেন l যারা মন্সা, বাচা, কর্মণা এই তিনটে ব্যাপারে পবিত্র থেকেছে (কর্মণাতে সম্বন্ধ, সম্পর্ক অন্তর্ভুক্ত) তাদের ললাট থেকে পা পর্যন্ত লাইটের আকারে চিত্র ঝিলমিল করছিল l বুঝেছো তোমরা ! নলেজের দর্পণে তুমি তোমার চিত্র দেখেছো ? বাপদাদা তোমাদের যে ছবি দেখেছেন, খুব ভালো করে দেখে নিও, তোমার চিত্র কেমন হয়েছে l আচ্ছা!



বাবার সাথে মিলিত হয়েছে যারা, তাদের লিস্ট লম্বা l অব্যক্ত বতনে তো না তোমরা কোনো নাম্বার পাবে আর না সময়ের কোনো ব্যাপার থাকবে l যখন ইচ্ছে যতক্ষণ ইচ্ছে যত(জন) চাও বাবার সাথে মিলিত হতে পারো, কারণ সেটা হদের দুনিয়ার ঊর্ধ্বে l এই সাকার দুনিয়াতেই এই সমস্ত বন্ধন (নিষেধাজ্ঞা), এইজন্য নির্বন্ধনকেও বন্ধনে বাঁধা পড়তেই হয় l



তোমরা টিচাররা সন্তুষ্ট তো হয়েছো, তাই না ! সবাই তোমরা নিজেদের ভাগের পুরো অংশ পেয়েছ তো ! তোমরা নিমিত্ত হওয়া বিশেষ আত্মা l বাপদাদাও বিশেষ আত্মাদের বিশেষ রিগার্ড দেন l তোমরা তো এখনো সেবার সাথী, তাই না ! বাস্তবে তো সবাই সাথী, কিন্তু তবুও নিমিত্তরা যখন নিজেদের নিমিত্ত মনে করবে তখনই সেবায় সফলতা লাভ হবে l যেমনই হোক, অনেক বাচ্চারা অতি তীব্র উৎসাহ-উদ্দীপনায় সেবার ক্ষেত্রে ক্রমশঃ এগিয়ে চলেছে l তবুও নিমিত্ত হওয়া বিশেষ আত্মাদের রিগার্ড দেওয়া অর্থাৎ বাবাকে রিগার্ড দেওয়া এবং সেই রিগার্ডের রিটার্ণে তোমরা বাবার হৃদয়ের স্নেহ লাভ করো l বুঝেছো তোমরা ? টিচারকে রিগার্ড দিচ্ছ না, বাবার থেকে তাঁর হৃদয়ের স্নেহ রিটার্ন নিচ্ছ l আচ্ছা l



এইরকম সদা দিলদরিয়া বাবার হৃদয়ের স্নেহ নেওয়ার সুপাত্র অর্থাৎ সুযোগ্য আত্মারা, যারা সদা পিওরিটির পার্সোনালিটি এবং রিয়্যালিটির রয়্যালটি নিজেদের মধ্যে অনুভব ক'রে নিকট এবং বাবা সমান হয়, সেই বাচ্চাদের বাপদাদার স্নেহ-স্মরণ এবং নমস্কার l



*ইউ.কে. গ্রুপের সাথে অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎকারঃ* -

সবাই তোমরা সব রহস্যে সম্পন্ন রাজযুক্ত এবং যোগযুক্ত আত্মা, তাই না ! শুরু থেকে তোমরা চারিদিকে বাপদাদার নাম প্রত্যক্ষ করার নিমিত্ত আত্মা l বাপদাদা এমন আদি রত্নদের, সেবার সাথীদের দেখে সদা খুশি হন l সবাই তোমরা বাপদাদার *রাইট হ্যান্ড গ্রুপ*l খুব ভালো ভালো রত্ন তোমরা l কেউ একরকম, অন্যরা আরেকরকম, কিন্তু রত্ন তোমরা সবাই, কারণ তোমরা অনুভাবী হয়ে অন্যদেরও অনুভাবী বানানোর নিমিত্ত আত্মা l বাপদাদা জানেন, সবাই কতো উৎসাহ-উদ্দীপনায় স্মরণ আর সেবায় সদা মগ্ন থাকা আত্মা তোমরা l স্মরণ আর সেবা ব্যতীত আর কিছুই নেই, তোমাদের সবকিছু সমাপ্ত হয়ে গেছে l *শুধুমাত্র এক, সবাই একের, একরস স্থিতিতে স্থিত* - এটাই সবার উক্তি l বাস্তবে, এটাই প্রকৃত শ্রেষ্ঠ জীবন l যাদের এমন শ্রেষ্ঠ জীবন তারা সদাই বাপদাদার কাছের l তোমরাই নিশ্চয়বুদ্ধির প্রত্যক্ষ প্রমাণ দাও l *সদা বাহ্ আমার বাবা, বাহ্ আমার শ্রেষ্ঠ ভাগ্য* - সদা এটাই তোমাদের স্মরণে থাকে, তাই না ! বাপদাদা এমন স্মৃতিস্বরূপ বাচ্চাদের দেখে সদা পুলকিত হন, *"বাহ্ ! আমার শ্রেষ্ঠ বাচ্চারা বাহ্"* l বাপদাদা এমন বাচ্চাদের গীত গান l লন্ডন বিদেশের সেবার ফাউন্ডেশন l তোমরা সবাই সেবার ফাউন্ডেশন স্টোন l তোমাদের সকলের সমর্থ হওয়ার প্রভাবে সেবায় বৃদ্ধি অব্যাহত আছে l যদিও ফাউন্ডেশন বৃক্ষের বিস্তারে লুকিয়ে থাকে, তবুও তো ফাউন্ডেশনই, তাই না ! বৃক্ষের সুন্দর বিস্তার দেখে, প্রত্যেকের দৃষ্টি সেদিকেই বেশি আকৃষ্ট হয় l ফাউন্ডেশন গুপ্ত থেকে যায় l এইভাবে তোমরাও নিমিত্ত হয়ে অন্যকে চান্স দেওয়া সমর্থী হয়ে গেছ, কিন্তু তবুও আদি, আদিই হয় l অন্যদের চান্স দিয়ে সামনে নিয়ে আসায় তোমাদের খুশি হয়, তাই না ? তোমরা এইরকম ভাবো না তো যে ডবল বিদেশি এসেছে, তাই তোমরা লুকিয়ে গেছ ? তবুও তোমরাই নিমিত্ত l তাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেওয়ার নিমিত্ত l যারা অন্যদের নিজেদের সামনে রাখে, তারা নিজেরা সামনেই আছে l যেমন তোমরা ছোট বাচ্চাদের তোমাদের সামনে চলতে বলো, আর বড়রা পিছনে থাকো l ছোটদের এগিয়ে যেতে দেওয়ার অর্থই হলো বড়দের সামনে থাকা l এর প্রত্যক্ষ ফল অবশ্যই তোমরা পেতে থাকো l যদি তোমরা সহযোগী না হও, তবে লন্ডনে এত সেন্টার খোলা হতো না l কেউ এক জায়গার নিমিত্ত হয়েছে এবং এর কেউ অন্য কোথাও l আচ্ছা l



*মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর গ্রুপের সাথে* - সবাই তোমরা নিজেদের বাবার স্নেহী আত্মা অনুভব করো ! সদা *এক বাবা, দ্বিতীয় কেউ নয়* , এই স্থিতিতে স্থিত থাকো তোমরা ? এই স্থিতিকেই একরস স্থিতি বলা হয়, কারণ যেখানে *এক* সেখানে *একরস* স্থিতি l যদি অনেক হয় তবে তোমার স্থিতি নিচে-ওপর হয় l বাবা তোমাদের সহজ রাস্তা দেখিয়েছেন, *"একের মধ্যে সবকিছু দেখ"* l অনেককে স্মরণ করা থেকে আর এদিকে-ওদিকে লক্ষ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ানো থেকে নিস্তার পেয়েছো তোমরা l *তোমরা সবাই এক, তোমরা একের এবং একরস স্থিতি* - এর দ্বারা সদা নিজেকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারো l



যারা সিঙ্গাপুর এবং হংকংয়ের, তাদের চীনে সেন্টার খোলার সঙ্কল্প করা উচিৎ l সমগ্র চায়নাতে এখন কোনও কেন্দ্র নেই l তাদেরকে তোমাদের কানেকশনে এনে অনুভব করাও l সাহসের সাথে তোমরা সঙ্কল্প করলে হয়ে যাবে l রাজযোগ দ্বারা তাদের পরমাত্ম-স্নেহ, শান্তি, শক্তির অনুভব করাও, আত্মারা অটোমেটিক্যালি পরিবর্তন হয়ে যাবে l রাজযোগী বানাও, তাদের ডিইটি (deity/দেবতা) বানিও না l রাজযোগী অটোমেটিক্যালি ডিইটি হয়ে যাবে l আচ্ছা l



*পোল্যান্ড গ্রুপের সাথে* :- বাপদাদা খুশি, তোমরা সব বাচ্চারা তোমাদের সুইট হোমে পৌঁছে গেছ l তোমাদেরও এই খুশি হয় যে এইরকম মহান তীর্থে তোমরা পৌঁছে গেছ, তাই না ! এই অভ্যাস করতে করতেই তোমাদের জীবন তো শ্রেষ্ঠ হয়েই যাবে, কিন্তু তোমরা এমন শ্রেষ্ঠ ভাগ্য লাভ করেছো যে এই স্থানে, নিজের প্রকৃত ঈশ্বরীয় স্নেহময় পরিবারে পৌঁছে গেছ ! এত খরচ করে, মেহনত করে এসেছো তোমরা, এখন ভাবছো খরচা আর মেহনত সফল হয়েছে l এমন মনে কোরো না তো যে জানি না কোথায় এসে পৌঁছলাম ! পরিবারের আর বাবার কতো প্রিয় তোমরা ! বাপদাদা সদা বাচ্চাদের বিশেষত্বই দেখেন l তোমরা জানো তোমাদের বিশেষত্ব ? তোমাদের তো বিশেষত্ব আছে, তোমাদের গভীর অনুরাগে এত দূর থেকে তোমরা এখানে পৌঁছেছো l এখন নিজের ঈশ্বরীয় পরিবার এবং রাজযোগের ঈশ্বরীয় বিধি সদাসর্বদা তোমাদের সাথে রাখো l এখন, তোমরা সেখানে ফিরে গিয়ে রাজযোগ কেন্দ্র ভালোভাবে এগিয়ে নিয়ে যেও কারণ এমন আত্মারা আছে, যারা প্রকৃত শান্তি, প্রকৃত প্রেম আর প্রকৃত সুখের পিয়াসী l তাদেরকে রাস্তা তো বলে দেবে, তাই না ! যেমনই হোক, কেউ জলের জন্য পিপাসার্ত হলে যদি সময়ে তাকে কেউ জল পান করায় তবে জীবনভর সেই পিপাসার্ত তার গুণগান করতে থাকে l সুতরাং, তোমরা জন্ম -জন্মান্তরের জন্য আত্মাদের সুখ-শান্তির তৃষ্ণা মিটিয়ে দিও, এতে তোমরা পুণ্য আত্মা হয়ে যাবে l তোমাদের খুশি দেখে সবাই খুশি হয়ে যাবে l খুশিই সেবার সাধন l



এই মহান তীর্থস্থানে পৌঁছনোতে সব তীর্থ এতে মিশে গেছে l এই মহান তীর্থে জ্ঞানস্নান করো আর যা কিছু কমজোরি আছে সেই সবকিছু দান করো l তীর্থে কিছু ছেড়েও দিতে হয় l কি ছাড়বে? যে ব্যাপারে তোমার দুশ্চিন্তা হয় সেটাই ছাড়তে হবে l ব্যস্! তখনই মহান তীর্থ সফল হয়ে যায় l শুধু এটা দান করো আর এই দানের মাধ্যমে তুমি পুণ্য আত্মা হয়ে যাবে, কারণ কোনো খারাপ কিছুর ত্যাগ অর্থাৎ ভালো কিছু ধারণ করা l যখন তুমি অপগুণ ত্যাগ করে গুণ ধারণ করবে তো নিজে থেকেই তুমি পুণ্য আত্মা হয়ে যাবে l এটাই এই মহান তীর্থের সফলতা l মহান তীর্থে তোমরা এসেছো, এতো খুব ভালো, আসা অর্থাৎ ভাগ্যবানের লিস্টে হয়ে যাওয়া, এতটাই শক্তি এই মহান তীর্থের l যাই হোক, এর পর থেকে তোমরা কি করতে চলেছো ? এক, ভাগ্যবান হওয়া, দুই, সৌভাগ্যবান হওয়া এবং তারপরে *পদমাপদম* ভাগ্যবান হওয়া l এই সঙ্গতে যতই থাকবে, গুণের ধারণ করতে থাকবে ততোই পদমাপদম ভাগ্যবান হতে থাকবে l আচ্ছা !



*ডবল বিদেশি টিচারদের সাথে* :- টিচারদের কখনও নিজেকে *"আমি অন্য ধর্মের, এখানে এসেছি"* এমন সঙ্কল্প হওয়া উচিৎ নয় l এটা নতুনরা বলে l তোমরা পুরানো, তবেই তো নিমিত্ত হয়েছো l এটা এরকম নয় যে তোমরা অন্য ধর্মের ছিলে, এই ধর্মে এসেছো, না ! "আমরা আর এরা আলাদা" - এই সঙ্কল্প তোমাদের স্বপ্নেও হতে দিওনা l এটা এমন নয়, ভারত আলাদা, বিদেশ আলাদা l এই সঙ্কল্প আমাদের ঐক্য মতানৈক্যতে ভাগ করে দেবে l তারপরে হয়ে গেল *আমরা আর ওরা* , তাই না ! যেখানে আমরা আর ওরা, সেখানে কি হবে ? সেখানে শুধু মতবিরোধ হবে l এই কারণে সবাই তোমরা সঙ্ঘবদ্ধ l বাপদাদা শুধু প্রতীকী হিসেবে তোমাদের *ডবল বিদেশি* বলেন l তাই ব'লে তোমরা আলাদা নও l এইরকম মনে কোরোনা যে 'আমরা ডবল বিদেশি, সুতরাং আমরা আলাদা, আর এই দেশবাসী আলাদা' l *না* ! যখন তোমাদের ব্রাহ্মণ জন্ম হলো তো ব্রাহ্মণ জন্মের মাধ্যমে তোমরা কি হয়েছো ? *ব্রাহ্মণ এক ধর্মের, তা'তে বিদেশি দেশী হয়না l আমরা সবাই এক ব্রাহ্মণ ধর্মের, ব্রাহ্মণ জীবনের এবং একই বাবার সেবার নিমিত্ত* l কখনও এই ভাষা ইউজই কোরোনা যে আমাদের বিচার এইরকম, তোমরা ইন্ডিয়ার থেকে যারা, তোমাদের এই রকম ! এই ভাষা রং l ভুল করেও এই শব্দ বলোনা l ভিন্ন ভিন্ন বিচার তো ভারতের যারা তাদেরও হতে পারে -এটা অন্য ব্যাপার l যেমনই হোক, ভারত আর বিদেশের মধ্যে কখনও ফারাক কোরোনা l কখনও ভেবোনা, আমরা সব ফরেনারদের সাথে সবসময় এইরকমই হয়, *না* ; কখনো ব'লোনা, যতোই হোক আমাদের নেচার এইরকম l না, কখনো এইভাবে ভেবোনা l *বাবা এক এবং এক বাবারই আমরা সবাই* l নিমিত্ত টিচার্স যেমন ভাষা বলে, সেই একই ভাষা অন্যরাও বলবে l সুতরাং, প্রতিটা শব্দ সুকৌশলে অর্থাৎ খুব যুক্তিযুক্তভাবে বলো l যোগযুক্ত এবং যুক্তিযুক্ত দুইই একই সময়ে হতে হবে l কেউ কেউ যোগে খুব এগিয়ে যেতে চেষ্টা করে, কিন্তু কর্মে যুক্তিযুক্ত নয় l দুইয়ের ব্যালেন্স হতে দাও l যোগযুক্ত হওয়ার লক্ষণই হলো যুক্তিযুক্ত হওয়া l আচ্ছা l

*সেবাধারীদের সাথে* :- যজ্ঞসেবার ভাগ্য পাওয়া, এও খুব বড়ো ভাগ্যের লক্ষণ l যদি ভাষণ নাও করো, কোর্স না করাও, তবুও সেবার মার্কস তো পেয়েই যাবে, তাই না ! এতেও তোমরা পাস হয়ে যাবে l প্রত্যেক সাবজেক্টের নিজের নিজের মার্কস আছে l এমন ভেবোনা যে 'আমি ভাষণ করতে পারিনা, সুতরাং আমি পিছনে' l সেবাধারী সদাই বর্তমান আর ভবিষ্যৎ ফলের অধিকারী l তোমাদের খুশি অনুভব হয়, তাই না ! মাতারা জানে, মন কিভাবে নাচে ! যদি তোমরা কিছু নাও করো, শুধু খুশিতে মন থেকে নাচতে থাকো, সেটাও অনেক সেবা হয়ে যাবে l

বরদান:-

সমানতার অনুভূতি বজায় রেখে একই সময়ে প্রতি পদে বিশেষত্বের অনুভব করিয়ে বিশেষ আত্মা ভব

সব বাচ্চার মধ্যে নিজ নিজ বিশেষত্ব আছে l বিশেষ আত্মাদের কর্ম সাধারণ আত্মাদের থেকে আলাদা l সবার মধ্যে সমানতার অনুভূতি হতে হবে, কিন্তু এটাও দৃশ্যমান হতে হবে যে প্রত্যেকে বিশেষ আত্মা l *'বিশেষ আত্মা'* অর্থাৎ যারা শুধু বলেই না, কিছু বিশেষ করে l এইরকম আত্মাদের থেকে সবার ফিলিংগ আসবে যে এইই স্নেহের ভান্ডার l তোমাদের প্রতি পদে, প্রতি পালকের দৃষ্টিতে স্নেহ অনুভব হতে দাও, এটাই বিশেষত্ব l

স্লোগান:-

সৃষ্টির বিনাশের আগে নিজেদের অপূর্ণতা এবং কমজোরি বিনাশ করো* l