22/10/18 Morning
Bengali Murli Om Shanti BapDada Madhuban
"মিষ্টি বাচ্চারা --
বুদ্ধিকে এদিকে ওদিকে না চালিয়ে ঘরে বাবাকে স্মরণ করো, দূর দূরান্তে বুদ্ধিকে নিয়ে
যাও - একেই স্মরণের যাত্রা বলা হয়"
প্রশ্নঃ -
যে বাচ্চারা
মনের সততা নিয়ে বাবাকে স্মরণ করে তাদের লক্ষণ কি হবে ?
উত্তরঃ -
১) মনের সততা
নিয়ে যে বাচ্চারা স্মরণ করবে তাদের দ্বারা কোনো বিকর্ম হতে পারে না। তাদের দ্বারা
এমন কোনো কর্ম হবে না যার ফলে বাবার অসম্মান হয়। তাদের ম্যানার্স খুব ভালো হয়।
২) তারা ভোজনে বসেও স্মরণে থাকবে। ঠিক সময়ে তাদের ঘুমও ভেঙে যাবে। তারা খুব সহিষ্ণু
হবে, খুব মধুর হবে। বাবার কাছে কোনো কথা লুকাবেনা ।
গীতঃ-
আমাদের তীর্থ
হল অনুপম...
ওম শান্তি।
বাবা বসে
বাচ্চাদের বোঝান, কেউ নিরাকার বাবাকে বুঝবে, কেউ সাকার বাবাকে বুঝবে, কেউ মাতা
পিতাকে বুঝবে। এই মাতা পিতা বোঝাচ্ছেন, তবুও মাতা ও পিতা হলেন পৃথক । যদি নিরাকার
বোঝানো হয় তো নিরাকার ও সাকার দুই-ই পৃথক হয়ে যায়। কিন্তু বোঝাচ্ছেন যিনি তিনি হলেন
পিতা। তোমরা বাচ্চারাও এই কথা জানো যে দৈহিক বা জাগতিক তীর্থ এবং রূহানী তীর্থ আছে।
ঐ জাগতিক তীর্থ হল অর্ধকল্পের জন্যে, যদি বলা হবে জন্ম জন্মান্তর ধরে চলছে তাহলে
এমন হল যে শুরু থেকে এমনই চলছে , অনাদি রূপে। এমন তো নয় তাই অর্ধকল্প বলা হয়েছে।
এখন বাবা এসে এই তীর্থ গুলির রহস্য বুঝিয়েছেন। মন্মনাভব অর্থাৎ রূহানী তীর্থ।
নিশ্চয়ই আত্মাদেরই বোঝান এবং যিনি বোঝান তিনি হলেন পরম পিতা। আর কেউ বোঝাতে পারেনা।
প্রত্যেকে নিজের নিজের ধর্ম স্থাপকের তীর্থে যায়। এও অর্ধকল্পের প্রচলিত প্রথা।
সবাই তীর্থ করে কিন্তু কেউ সদগতি দিতে পারেনা। নিজেরাই বার বার তীর্থ করতে যেতে থাকে।
অমরনাথ, বদ্রীনাথ ইত্যাদি স্থানে প্রতি বছর তীর্থ করতে বেরিয়ে চার ধাম ঘুরে আসে।
এখন এই রূহানী তীর্থ যাত্রা শুধু মাত্র তোমরা জানো। রূহানী সুপ্রিম বাবা বুঝিয়েছেন
মন্মনাভব এবং দৈহিক বা জাগতিক তীর্থ ইত্যাদি সব ত্যাগ করো, আমায় স্মরণ করো তাহলে
তোমরা প্রকৃতরূপে স্বর্গে গমন করবে। যাত্রা অর্থাৎ আসা যাওয়া করা। সে তো এখনই হয়।
সত্যযুগে যাত্রা হয়না। তোমরা সদকালের জন্যে স্বর্গ আশ্রমে গিয়ে বসবে। এখানে তো শুধু
নাম রাখা হয়। বাস্তবে স্বর্গ আশ্রম এখানে নেই। স্বর্গ আশ্রম সত্যযুগ কে বলা হয়। নরক
কে এমন নাম দেওয়া যাবেনা। নরকবাসী নরকেই থাকে, স্বর্গবাসী স্বর্গে থাকে। এখানে তো
দৈহিক তীর্থ করে ফিরে আসে। এইসব বেহদের (অসীমের) বাবা বুঝিয়ে দেন। বাস্তবে প্রকৃত
সত্য বেহদের গুরু হলেন একজন-ই। বেহদের পিতাও হলেন একজন। যদিও বলা হয় আগা খাঁ গুরু,
কিন্তু তিনি কোনো গুরু নন। সদগতি দাতা তো নন, তাইনা ! যদি সদগতি দাতা হতেন তাহলে
নিজের গতি-সদগতি করবেন। তাকে গুরু বলা হবেনা। শুধু নাম রাখা হয়েছে। শিখরা বলে থাকে
সদগুরু অকাল। বাস্তবে সত্য শ্রী অকাল হলেন একমাত্র পরমাত্মা যাঁকে সদগুরুও বলা হয়।
তিনিই সদগতি প্রদান করতে পারেন। ইসলামী, বৌদ্ধি বা ব্রহ্মা ইত্যাদি করতে পারেন না।
যদিও বলা হয় গুরু ব্রহ্মা, গুরু বিষ্ণু। এবারে গুরু ব্রহ্মা বলা যেতেও পারে কিন্তু
গুরু বিষ্ণু, গুরু শঙ্কর তো হতে পারেনা। অবশ্য গুরু ব্রহ্মার নাম আছে। কিন্তু
ব্রহ্মা গুরুর কেউ গুরু তো হবে তাইনা। সত্য শ্রী অকালের কোনো গুরু নেই। তিনি হলেন
একমাত্র সদগুরু। বাকি আর কেউ গুরু বা ফিলোসফার অথবা স্পিরিচুয়াল নলেজ প্রদানকারী
নেই, একজন ছাড়া। বুদ্ধ ইত্যাদি তো নিজের পিছনে সবাইকে নিয়ে আসেন। তাদের রজো তমোতে
আসতেই হয়। তারা কেউ সদগতির জন্যে আসেননি। সদগতি দাতা একজনের নামই প্রচলিত আছে, যাঁকে
আবার সর্বব্যাপী বলা হয়েছে। তাহলে গুরু করার কি দরকার। আমিও গুরু, তুমিও গুরু, আমিও
শিব, তুমিও শিব - এর দ্বারা তো কারো পেট ভরে না। বাকি হ্যাঁ, পবিত্র বলে তাদের
সম্মান থাকে, সদগতি দিতে পারে না। তিনি তো হলেন একজনই, যাঁকে সত্য প্রকৃত গুরু বলা
হয়। গুরু তো অনেক রকমের হয়। শিক্ষা প্রদানকারী উস্তাদকেও গুরু বলা হয়। ইনিও হলেন
উস্তাদ। মায়ার সঙ্গে যুদ্ধ করা শেখান। বাচ্চারা, তোমাদের ত্রিকালদর্শীর নলেজ আছে,
যার দ্বারা তোমরা চক্রবর্তী হও। সৃষ্টির চক্রকে যে জানে সে চক্রবর্তী রাজা হয়।
ড্রামার চক্রকে বা কল্প বৃক্ষের আদি-মধ্য-অন্তকে জানা, একই কথা। চক্রের চিহ্নটি
অনেক শাস্ত্রে লেখা আছে। ফিলোসফির আলাদা বই থাকে। বই তো অনেক রকমের হয়। এখানে
তোমাদের কোনো বই এর দরকার নেই। তোমাদের বাবা যা শেখাচ্ছেন, সেসব বুঝতে হবে। পিতার
সম্পত্তিতে সব বাচ্চাদের অধিকার থাকে। কিন্তু স্বর্গে সবার একরকম সম্পত্তি তো হবে
না। রাজত্ব তাদের যারা বাবার আপন হয়। বাবা বলা, অল্প জ্ঞান শোনা মাত্রই অধিকার
প্রাপ্ত হয়। কিন্তু নম্বর অনুযায়ী। কোথায় বিশ্বের মহারাজা, কোথায় প্রজা দাস দাসী।
এখন সম্পূর্ণ রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। বাবার আপন হলে স্বর্গের বর্সা নিশ্চয়ই প্রাপ্ত
হয়। বর্সা প্রাপ্ত হয় বাবার কাছে। এই সব হল নতুন কথা, তাই মানুষ বুঝতে পারেনা। বাবা
বোঝান সত্যযুগে বিকার হয়না। মায়া-ই নেই তো বিকার কোথা থেকে আসবে। মায়ার রাজত্ব
আরম্ভ হয় দ্বাপর থেকে। এ হল রাবণের ৫-টি শৃঙ্খল। সেখানে এইসব হয়না। বেশী ডিসকাস
করার প্রয়োজন নেই। স্বর্গ হল সম্পূর্ণ নির্বিকারী দুনিয়া। বাকি সন্তান উৎপত্তির কথা,
সিংহাসনে বসার কথা, মহল ইত্যাদি তৈরি করার কথা যা প্রচলিত পদ্ধতি থাকবে - সেসব
অবশ্যই ভালো হবে কারণ সেটা হল স্বর্গ।
বাবা বোঝান - বাচ্চারা, এই রূহানী যাত্রায় তোমাদের নিরন্তর বুদ্ধিযোগে যুক্ত থাকতে
হবে। এ খুব সহজ। ভক্তিমার্গেও সকালে উঠতে হয়। জ্ঞান মার্গেও সকালে উঠে বাবাকে স্মরণ
করতে হবে আর কোনো বই ইত্যাদি পড়তে হবেনা। বাবা বলেন শুধু আমায় স্মরণ করো কারণ এখন
ছোট বড় সবার সামনে মৃত্যু দাঁড়িয়ে আছে। মৃত্যুর সময় বলা হয় - ভগবানকে স্মরণ করো।
অন্তিম সময়ে যদি ভগবানের নাম স্মরণ করবেনা তো স্বর্গে যেতে পারবে না। তাই বাবা বলেন
- মন্মনাভব। এই দেহকেও স্মরণ করবে না। আমরা আত্মারা হলাম অ্যাক্টর, শিববাবার সন্তান।
অবিরাম স্মরণে থাকতে হবে। ছোট বাচ্চাদের বলা হবে না যে ভগবানকে স্মরণ করো। এখানে
সবাইকে বলা হয় কারণ সবাইকে বাবার কাছে যেতে হবে, বাবার সঙ্গে বুদ্ধিযোগ লাগাতে হবে।
কারো সঙ্গে লড়াই- ঝগড়া করবে না। এ হল খুব ক্ষতিকর। কেউ কিছু খারাপ কথা বললে না
শোনার ভান করবে, লড়াই করতে উদ্যোগী হবেনা । সব কথায় সহিষ্ণু হওয়া উচিত এবং তারপরে
বুঝতে হবে বাবা, পিতাও হলেন তিনি, ধর্মরাজও হলেন তিনি। যে বিষয়ই আসুক, তোমরা বাবাকে
রিপোর্ট কর। তারপরে ধর্মরাজের কাছে পৌঁছে যাবে এবং সাজা ভোগ করার অধিকারী হবে। বাবা
বলেন আমি সুখ প্রদান করি। দুঃখ বা শাস্তি দেন ধর্মরাজ। সাজা দেওয়ার অধিকার আমার নেই।
আমায় এসে তোমরা বলো, সাজা দেবেন ধর্মরাজ। বাবাকে বললে হালকা হয়ে যাবে কারণ ইনি হলেন
রাইট হ্যান্ড। সদগুরুর নিন্দুক ঠাঁই পায় না কোথাও । জাজমেন্ট তো ধর্মরাজ দেবেন যে
দোষটা কার ? ওঁনার কাছে কিছুই লুকানো থাকে না। বলবে ড্রামা অনুসারে ভুল করি, কল্প
পূর্বেও এমন করেছে । কিন্তু এর মানে এই নয় যে ভুল করতেই থাকবে। তাহলে নির্ভুল হবে
কিভাবে ? ভুল হলে ক্ষমা চাইতে হবে। বেঙ্গলে কাউকে পা দিয়ে হোঁচট লাগলে তখনই ক্ষমা
চাওয়া হয়। এখানে তো একে অপরকে গালাগালি করে। ম্যানার্স খুব ভালো হওয়া উচিত। বাবা তো
অনেক শেখান, কিন্তু বোঝে না তখন ধরে নেওয়া হয় এদের রেজিস্টার খারাপ। নিন্দা করালে
পদ ভ্রষ্ট হয়ে যাবে। জন্ম জন্মান্তরের বিকর্মের বোঝা তো আছেই। সেই কর্মের শাস্তি তো
ভোগ করতেই হবে। তারপরে এখানে থেকেও যদি বিকর্ম করা হয় তবে তার এক শত গুণ শাস্তি
প্রাপ্ত হয়। শাস্তি তো ভোগ করতেই হবে। যেমন বাবা কাশী কলবট (কাশীতে একটা ছোড়া ভর্তি
কুঁয়ো ছিল, তাতে পাপ খন্ডনের জন্য ঝাঁপ দিয়ে জীবন বিসর্জন দিত) বিষয়টি বোঝান। সেটা
হল ভক্তিমার্গের। এ হল জ্ঞান মার্গের কথা। এক তো আগেকার বিকর্ম আছে, তারপরে এই সময়
যা বিকর্ম করা হয় তার দন্ড একশত গুণ হয়ে যায়। খুব কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। বাবা
তো প্রতিটি কথা বোঝান। কোনো রকম পাপ কোরো না, নষ্ট মোহ হও। পরিশ্রম আছে অনেক ! এই
মাম্মা-বাবাকে স্মরণ করবে না। এঁদের স্মরণ করলে জমা হবে না। এঁনার(ব্রহ্মা বাবা)
মধ্যে শিববাবা আসেন তাই স্মরণ করতে হবে শিববাবাকে। এমন নয় যে এঁনার মধ্যে শিববাবা
আছেন তাই এঁনাকে স্মরণ করতে হবে। না, শিববাবাকে ঐ পরমধামে স্মরণ করতে হবে। শিববাবা
এবং সুইট হোম (পরমধাম) কে স্মরণ করতে হবে। জিনের মতন বুদ্ধিতে স্মরণ রাখতে হবে -
শিববাবা পরমধামে থাকেন, শিববাবা এখানে এসে জ্ঞান প্রদান করেন, কিন্তু শিববাবাকে
আমাদের স্মরণ করতে হবে পরমধামে, এখানে নয়। বুদ্ধি দূরে যাওয়া উচিত, এখানে নয়।
শিববাবা তো চলে যাবেন। শিববাবা একমাত্র এনার মধ্যেই আসেন। মাম্মার মধ্যে ওঁনাকে দেখা
যাবে না। তোমরা জানো এ হল বাবার রথ, কিন্তু এঁনার চেহারা দেখবে না। বুদ্ধি যেন ওখানে
ঝুলে থাকে। বুদ্ধি এখানে থাকলে অত মজা অনুভব হবে না । এখানকার যাত্রা কোনো যাত্রা
নয় । তোমাদের যাত্রার গন্তব্য স্থল হল পরমধাম। এমন নয় ব্রহ্মবাবাকেই দেখতে থাকবে
কারণ, এঁনার মধ্যে শিব আছেন। তাহলে উপরে যাত্রার অভ্যাস হবেনা। বাবা বলেন আমাকে
পরমধামে স্মরণ করো , বুদ্ধিযোগ ঐখানে লাগাও। অনেক বুদ্ধি হীন ভাবে ব্রহ্মাবাবাকেই
বসে দেখো। আরে, বুদ্ধি সুইট হোমে যুক্ত করতে হবে। শিববাবা তো সবসময় রথে বিরাজিত
থাকবেন না। এখানে এসে কেবল সার্ভিস করবেন। বাহনে বসে সার্ভিস করে নেমে যাবেন।
ষাঁড়ের উপরে বসে সর্বদা যাত্রা সম্ভব নয়। তাই বুদ্ধি পরমধামে থাকা উচিত। বাবা আসেন,
মুরলী পড়িয়ে চলে যান। ব্রহ্মাবাবার বুদ্ধিও ঐখানে থাকে। সঠিক পথ ধরা উচিত। তা নাহলে
ক্ষণে ক্ষণে পার্ট থেকে নীচে নেমে যায়। এখন তো সময় কম আছে। এঁনার মধ্যে শিববাবা
উপস্থিত না থাকলে স্মরণ কেন করা হবে ? মুরলী তো ইনিও অর্থাৎ ব্রহ্মাবাবাও শোনাতে
পারেন, এঁনার মধ্যে কখনও আছেন, কখনও নেই। কখনও রেস্ট করেন। তোমরা স্মরণ ঐখানে করো।
কখনও কখনও বাবা ভাবেন - ড্রামা অনুসারে কল্প পূর্বে আজকের দিনে যে মুরলীটি চলে ছিল
সেইটিই গিয়ে চালাব। তোমরাও বলতে পারো যে কল্প পূর্বে বাবার কাছে যত বর্সা প্রাপ্তি
হয়েছিল, ততই প্রাপ্ত হবে। শিববাবার নাম তো অবশ্যই নিতে হবে। কিন্তু এইভাবে কেউ
স্মরণে আসবে না। বাবা নিশ্চয়ই স্মরণে আসবেন। বাবার-ই পরিচয় দিতে হবে। এমন নয়, বসে
শুধু এঁনাকে দেখতে হবে। বাবা বুঝিয়েছেন - শিববাবাকে স্মরণ করো, তা নাহলে পাপ হবে।
অবিরাম বাবাকে স্মরণ করতে হবে, নাহলে বিকর্ম বিনাশ হবে না। এ হল খুব উঁচু লক্ষ্য।
মাসির বাড়ি যাওয়ার মতো সহজ নয়। এমন নয়, ভোজনে বসে স্মরণ করে, হয়ে গেল শেষ, আর খাওয়া
শুরু করবে। না, পুরো সময় স্মরণ করতে হবে। পরিশ্রম আছে। এমনিই কি উঁচু পদ প্রাপ্ত হয়ে
যাবে ! তবেই তো দেখো কোটিতে কেবল ৮ রত্ন পাস করে। লক্ষ্য খুব উচ্চ। বিশ্বের মালিক
হওয়া, এ কথা তো কারো বুদ্ধিতে থাকবে না। এঁনার বুদ্ধিতেও ছিল না। এখন এটাই ভাবো,
কাদের ৮৪ জন্ম হয় ? নিশ্চয়ই যাঁরা প্ৰথমে আসেন তাঁরা হলেন লক্ষ্মী-নারায়ণ। এসব হল
বিচার সাগর মন্থন করার বিষয় । বাবা বোঝান - হাত রইবে কাজে, মন বাবার সাথে ( হাথ
কার ডে, দিল য়ার ডে)। যতই ব্যবসা ইত্যাদিতে থাকো, কিন্তু নিরন্তর বাবাকে স্মরণ করতে
থাকো। এ হল যাত্রা। তীর্থে গেলাম ফিরে এলাম, এ তা নয় । অনেক মানুষ তীর্থ করে, এখন
তো সেখানেও দূষণ বেড়েছে। তা নাহলে তীর্থ স্থানে কখনও বেশ্যালয় থাকে না। এখন কত
ভ্রষ্টাচার হয়েছে। সনাথ তো একজনও নেই। কথায় কথায় কটু কথা বলতে আরম্ভ করে দেয়। আজকে
যে চীফ মিনিস্টার আছে, কাল তাকেও আসন থেকে নামিয়ে দেয় । মায়ার দাস হয়ে যায় । টাকা
পয়সা জমা করে, বাড়ি বানায়, ধন সম্পদের জন্যে চুরি ইত্যাদিও করে। তোমরা এখন স্বর্গে
যাওয়ার জন্যে রেডি হচ্ছ। স্বর্গ-ই স্মরণে আসা উচিত। ধারণাও সেরকম হওয়া উচিত। মুরলী
(খাতায়) লিখে রিভাইস করা উচিত। অবসর সময় তো থাকেই। রাত্রে অনেক সময় থাকে। রাত্রে
জাগো, তাহলে অভ্যাস হয়ে যাবে। যে প্রকৃত ভাবে বাবাকে স্মরণ করবে তার চোখ আপনা থেকেই
খুলে যাবে। বাবা নিজের অনুভব থেকে বলেন। কিভাবে রাত্রে চোখ খুলে যায়। এখন তো
ঘুমানোর জন্যে কত পুরুষার্থ করে। হ্যাঁ, স্থূল কাজ করলে শরীর ক্লান্ত হয়। বাবার রথও
দেখো কত পুরানো হয়েছে। ভাবো, বাবা পতিত দুনিয়ায় এসে কত পরিশ্রম করেন ! ভক্তি
মার্গেও পরিশ্রম করতেন, এখনও পরিশ্রম করেন। শরীরও পতিত, তাই দুনিয়াও পতিত। বাবা
বলেন আমি অর্ধকল্প খুব আরামে থাকি, কোনো রকম ভাবনা করতে হয়না। ভক্তি মার্গে খুব বেশি
ভাবনা করতে হয় তাই বাবাকে দয়ালু বলা হয় - গায়ন আছে। ওশান অফ নলেজ, ওশান অফ ব্লিস,
কত মহিমা করা হয়। সেই বাবা এখন আমাদের পড়ান, অন্য কেউ পড়াতে পারে না। আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা বাপদাদার স্মরণ স্নেহ ও গুডমর্নিং।
রূহানী বাবার রূহানী বাচ্চাদের নমস্কার।
ধারণার জন্যে
মুখ্য সারঃ-
১ ) কারো
সম্মুখীন হওয়ার প্রয়োজন নেই, কেউ খারাপ কিছু বলে দিলে না শোনার ভান করবে। সহিষ্ণু
হতে হবে। সদগুরুর নিন্দা করাবে না।
২ ) নিজের রেজিস্টার খারাপ হতে দেবে না। ভুল হলে বাবাকে বলে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।
ঐখানে (উপরে) স্মরণ করার অভ্যাস করতে হবে।
বরদানঃ-
উপেক্ষা করার
পরিবর্তে নিজেকে অ্যাডজাস্ট করতে পারা সহিষ্ণুতার অবতার ভব
ব্যাখা: অনেক
বাচ্চাদের সহ্য শক্তি কম থাকে তাই ছোট ছোট কথাতেও চেহারা বদলে যায়, তারপরে ঘাবড়ে
গিয়ে স্থান পরিবর্তন করার কথা ভাবে অথবা যার কারণে বিরক্ত হয় তাদের বদলাবার কথা ভাবে।
অন্যদের পরিবর্তন করার বদলে নিজেকে বদলাও, সহিষ্ণুতার অবতার হয়ে যাও। সবার সঙ্গে
নিজেকে অ্যাডজাস্ট করতে শেখো।
স্লোগানঃ-
পরমার্থের (ঈশ্বরীয়
পথের) আধারে অপরের সাথে আচার - আচরণ করা- এটাই হল যোগী-র লক্ষণ ।