২১-১২-১৮ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - শুভ কার্যে দেরী করা উচিৎ নয়, নিজের ভাই-বোনেদের হোঁচট(ঠোক্কর) খাওয়া থেকে রক্ষা করতে হবে, (জ্ঞানের) ভুঁ-ভুঁ করে নিজের সমান বানাতে হবে"
প্রশ্ন:-
কোন্ বিষয়ে অনর্থ হওয়ায় ভারত কড়ি-তুল্য হয়ে গেছে ?
উত্তর:-
সর্বাপেক্ষা বড় অনর্থ হয়েছে এই যে গীতার স্বামীকে(ভগবান) ভুলে গীতা জ্ঞানের দ্বারা জন্ম নেওয়া বাচ্চাকেই স্বামী বলে দিয়েছে। এই একটি অনর্থের কারণেই সবাই বাবার থেকে বিমুখ হয়ে গেছে। ভারত কড়ি-তুল্য হয়ে গেছে। এখন তোমরা বাচ্চারা বাবার থেকে তাঁর সম্মুখে বসে সত্যিকারের গীতা শুনছো, যে গীতা জ্ঞানের দ্বারা দেবী-দেবতা ধর্ম স্থাপিত হয়, তোমরা শ্রীকৃষ্ণ-সম হয়ে যাও।
গীত:-
কে এই সব খেলা রচনা করেছে...
ওম্ শান্তি ।
ব্রাহ্মণ কুলভূষণ বাচ্চারা বুঝতে পেরে গেছে যে অবশ্যই আমাদেরই স্বর্গের প্রভূত অসীম সুখ ছিল, আমরা অত্যন্ত খুশীতে ছিলাম, আমরা জীব আত্মারা স্বর্গে অত্যন্ত মজায় ছিলাম তাহলে আবার কি হলো? রং-রূপের(রঙ্গীন) মায়া এসে আমাদের ছাড়িয়ে নিয়ে গেলো। বিকারের কারণেই একে নরক বলা হয়। সমগ্র দুনিয়াই নরক। এখন এই যে ভ্রমরীর উদাহরণ দেওয়া হয়, ভ্রমরী আর ব্রাহ্মণী দুজনেরই কাজ এক। ভ্রমরীর উদাহরণ তোমাদের উদ্দেশ্যেই দেওয়া হয়। ভ্রমরী কীট(পোকা) ধরে নিয়ে যায়। ঘর বানিয়ে তারমধ্যে পোকা রেখে দেয়। এও হলো নরক। এখানে সবাই কীট। কিন্তু সব কীট-ই দেবী-দেবতা ধর্মের নয়। যেকোনো ধর্মীয়-ই হোক সবাই হলো নরকবাসী কীট। এখন দেবী-দেবতা ধর্মের কীট কে? তা কি করে জানা যাবে। এরা ব্রহ্মা বংশীয় ব্রাহ্মণী যারা বসে ভুঁ-ভুঁ করে। যারা দেবতা ধর্মের হবে তারাই থাকতে পারবে। যারা হবে না, তারা থাকতে পারবে না। নরকবাসী কীট তো সকলেই। সন্ন্যাসীরাও এটাই বলে যে, নরকের এই সুখ হলো কাক-বিষ্ঠা সমান। তাদের এটা জানা নেই যে স্বর্গে অগাধ সুখ। এখানে ৫ শতাংশ সুখ আর ৯৫ শতাংশ দুঃখ। তাই একে কোনো স্বর্গ বলা যাবে না। স্বর্গে তো দুঃখের কোনো কথাই নেই। এখানে তো অনেক শাস্ত্র, অনেক ধর্ম তো অনেক মত হয়ে গেছে। স্বর্গে তো একটিই অদ্বৈত দেবতা মত। একটিই ধর্ম। তাহলে তোমরা হলে ব্রাহ্মণী। তোমরা যখন ভুঁ-ভুঁ কর তখন যারা এই ধর্মের তারা থেকে যায়। অনেক প্রকারের হয়। কেউ প্রকৃতিকে(নেচার) মানে, কেউ বিজ্ঞানকে, কেউ বলে এই সৃষ্টি কল্পনা মাত্র। এরকম কথা-বার্তা এখানেই বলা হয়ে থাকে, সত্যযুগে বলা হয় না। এই বেহদের পিতা ব্রহ্মার মুখ-কমলের দ্বারা নিজের বাচ্চাদের বসে বোঝান যে তোমরা আমার কাছে ছিলে, এখন আবার আমার কাছেই আসতে হবে। এর মধ্যে তো কোনো শাস্ত্রের কথা ওঠে না। ক্রাইস্ট তথা বুদ্ধ আসেন, তারাই এসে শোনায়, ওই সময় তো শাস্ত্রের প্রশ্ন উঠতেই পারে না। ক্রাইস্ট বাইবেল পড়তো কি? বাইবেলের প্রশ্ন উঠতেই পারে না। বাবা বলেন - বাচ্চারা, তোমরা নিজের অবস্থা তো দ্যাখো! মায়া রাবণ তোমাদের কেমন হাল (অবস্থা) করে দিয়েছে। বুঝতেও পারে যে আমরা হলাম আসুরী রাবণ সম্প্রদায়ের। রাবণকে জ্বালানো হয়, কিন্তু জ্বলে না। রাবণের এই জ্বলা কবে বন্ধ হবে? একথা মানুষের জানা নেই। তোমরা হলে ঈশ্বরীয় দৈবী সম্প্রদায়। তোমরা বাচ্চারা হলে আমার, এখন আমি পুনরায় এসেছি বাচ্চারা, তোমাদের রাজযোগ শেখাতে। অনেক ধর্ম রয়েছে। তার মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসতে পরিশ্রম লাগে। গীতাও কোথা থেকে এসেছে? আদি সনাতন ধর্ম যে ছিল তার চিহ্ন কোথা থেকে বেরিয়েছে। যা আবার ঋষি-মুনিরা বসে তৈরী করেছেন, যা এখনো পর্যন্ত শুনে চলেছি। বেদের গীত গুলি কারা রচনা করেছে ? বেদ-শাস্ত্রের পিতা কে? বাবা বলেন - গীতার ভগবান হলাম আমি। গীতা মাতার রচনা করেছেন শিববাবা, আর তার থেকেই জন্ম হয়েছে কৃষ্ণের। ওঁনার সাথেই রাধা ইত্যাদি সবাই এসে যায়। প্রথমেই হলো ব্রাহ্মণ।
বাচ্চারা, তোমাদের এই নিশ্চয় রয়েছে যে ইনি হলেন আমাদের মোস্ট বিলাভেড বাবা - যাঁকে সবাই বলে ও গড্ ফাদার দয়া করো ! ভক্তরা ডাকে যে কি করে দুঃখ থেকে মুক্তি পাবো। যদি ভগবান সর্বব্যাপী হয় তাহলে তো ডাকার কোনো প্রশ্নই থাকে না। মুখ্য হলো গীতার কথা, কত যজ্ঞ ইত্যাদি রচনা করা হয়।এখন তোমরা এমন প্রচারপত্র (পরচা) ছাপাও। কত অনর্থ হয়ে গেছে। যেখানে-সেখানে দেখো গীতা লিখতে থাকে। গীতা কে রচনা করেছেন, কে গেয়েছেন, কখন গেয়েছেন, কে বানিয়েছেন, কিছুই জানে না। শ্রীকৃষ্ণেরও যথার্থ পরিচয় নেই। ব্যস, বলে দেয় যে, যেদিকেই দেখো সর্বব্যাপী কৃষ্ণই কৃষ্ণ রয়েছে। রাধার ভক্তরা রাধার উদ্দেশ্যে বলে সর্বব্যাপী রাধাই রাধা রয়েছে। যদি একমাত্র নিরাকার পরমাত্মাকেই বলা হয় তবুও ঠিক। সবাইকে কেন সর্বব্যাপী করে দিয়েছে। গনেশের উদ্দেশ্যেও বলা হয় সর্বব্যাপী। এক মথুরা শহরেই কেউ বলবে শ্রীকৃষ্ণ সর্বব্যাপী, কেউ বলবে রাধা সর্বব্যাপী। কত জটিলতা সৃষ্টি করেছে । একজনের মত অন্যজনের সাথে মেলে না। একই ঘরে বাবার গুরু আলাদা তো বাচ্চাদের গুরু আলাদা। বাস্তবে গুরু করা হয় বাণপ্রস্থ অবস্থায়। বাবা বলেন, আমি এঁনার(ব্রহ্মা) বাণপ্রস্থ অবস্থাতেই আসি। দুনিয়ায় তো যারা যত বড় গুরু হয় তাদের ততই নেশা থাকে। আদি দেবকেই মহাবীর নাম দেওয়া হয়েছে। হনুমানকেও মহাবীর বলা হয়। মহাবীর তো হলে তোমরা, শক্তিরা। দিলবাড়া মন্দিরে শক্তিসেনারা বাঘের উপর অধিষ্ঠিত আর পান্ডবরা হাতীর উপর। মন্দির বড় যুক্তি-যুক্তভাবে তৈরী করা হয়েছে। অবিকল তোমাদের স্মরণ-চিহ্ন। তোমরা তো ওই সময় থাকবে না যে তোমরা তোমাদের চিত্র দেবে। মন্দির তো দ্বাপরে তৈরী হয়েছে তাহলে তোমাদের চিত্র কোথা থেকে আসবে। সেবা(সার্ভিস) তো তোমরা এখন করছো। সব কথাই তো এখনকার। তারা পরে শাস্ত্র বানিয়েছে। আমরা যদি গীতার নাম না নিই তবে মানুষ মনে করবে - জানি না যে এ কোন্ নতুন ধর্ম ? কত পরিশ্রম করতে হয়। তারা তো শুধু এই দুনিয়ায় ধর্ম স্থাপন করে। তোমাদেরকে বাবা নতুন দুনিয়ার জন্য তৈরী করেন।
বাবা বলেন, আমার মতো কর্তব্য কেউ করতে পারে না। সব পতিতকেই পবিত্র বানাতে হয়। এখন বাচ্চারা, তোমাদের, সবাইকে সাবধান করতে হবে। ভারতে কত অনর্থ হয়ে গেছে। সেই কারণেই ভারত কড়ি-তুল্য হয়ে গেছে। বাবা, গীতা মাতার দ্বারা কৃষ্ণকে জন্ম দিয়েছেন, ওরা আবার কৃষ্ণকে গীতার স্বামী(ভগবান) বানিয়ে দিয়েছে। গীতার স্বামী তো শিব, উনি গীতার দ্বারা কৃষ্ণের জন্ম দিয়েছেন। তোমরা সবাই হলে সঞ্জয়, শোনান একমাত্র শিববাবা। প্রাচীন দেবী-দেবতা ধর্মের রচয়িতা কে? এইসব লেখার জন্য বুদ্ধি চাই। গীতার দ্বারাই আমরা জন্ম নিচ্ছি। মাম্মা রাধা হবেন, ইনি(ব্রহ্মা) আবার হবেন কৃষ্ণ। এ হলো গুপ্ত কথা, তাই না ! ব্রাহ্মণদের জন্মকে কেউ বুঝতে পারে না। বিষয়টি হলো কৃষ্ণ আর পরমাত্মার। ব্রহ্মা, কৃষ্ণ আর শিববাবা - এইসব কথা অতি গূঢ় (রহস্যময়), তাই না ! এই সমস্ত কথাকে যে বুঝবে তাকে অনেক বড় বুদ্ধিমান হতে হবে। যারা সম্পূর্ণ যোগে থাকবে, তাদের বুদ্ধি পারশ(স্বচ্ছ/ দিব্য) হতে থাকবে। যাদের বুদ্ধি সদা ব্যর্থভাবে এদিকে-ওদিকে ঘুরতে থাকে, সেই বুদ্ধিতে একথা বসতে পারে না। বাবা তোমাদের, অর্থাৎ বাচ্চাদের কত উচ্চ নলেজ দিচ্ছেন। বিদ্যার্থীরাও নিজেদের বুদ্ধি চালায়, তাই না ! তাই এখন বসে লেখো যে, শুভ কার্যে দেরী করা উচিৎ নয়। আমরা সাগরের সন্তান তাই আমরা নিজেদের ভাই-বোনেদের রক্ষা করব। বেচারা-রা হোঁচট খেতেই থাকে। ওরা বলবে যে, বি. কে. -রা এতো চিৎকার করছে, কিছু ব্যাপার তো আছেই। লক্ষ লক্ষ প্রচারপত্র (পরচা) ছাপিয়ে গীতা-পাঠশালাগুলিতে বিলি কর। ভারত অবিনাশী খন্ড আর সর্বোত্তম তীর্থ। যে বাবা সকলকে সদ্গতি দেন তাঁর তীর্থস্থানকেই গুপ্ত করে দিয়েছে, আবার তাঁর নাম প্রকাশিত করতে হয়। ফুল অর্পণ করার মতো তো একমাত্র শিবই রয়েছেন। বাকী সবই তো ব্যর্থ। গীতাপাঠশালা তো অনেক রয়েছে। তোমরা বেশ(বস্ত্র) বদল করে সেখানে যাও। পরে যদিও বুঝতে পারবে যে এরা অবশ্যই বি. কে.। এই ধরনের প্রশ্ন কেউ জিজ্ঞাসা করতে পারে না। আচ্ছা!
তোমরা বোঝো যে শিববাবা ব্রহ্মার শরীরে বসে এই কথা বোঝান। যে বাবা স্বর্গের মালিক বানান, এখন তিনি এসেছেন। তোমরা নতুন দুনিয়ায় পুনর্জন্ম নেবে। আচ্ছা!
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-স্মরণ ও সুপ্রভাত। রুহানী বাবার রুহানী বাচ্চাদের নমস্কার।
*রাত্রি ক্লাস* ১২-০১-৬৯(12-01-69)
তোমরা, বাচ্চারা এক পিতার স্মরণ বসেছো, একের স্মরণে থাকা - একে বলা হয় অব্যভিচারী স্মরণ। যদি এখানে বসেও অন্য কেউ স্মরণে আসে তাহলে তাকে ব্যভিচারী স্মরণ বলা হবে। খাওয়া-দাওয়া, থাকা এক ঘরে, আর স্মরণ অন্যকে, এ তো ঠকানো হয়ে গেলো। ভক্তিও যতক্ষণ এক শিববাবাকে করে ততক্ষণ পর্যন্ত তা অব্যভিচারী ভক্তি আর অন্যান্যদের স্মরণ করা, সে তো ব্যভিচারী ভক্তি হয়ে যায়। এখন তোমরা বাচ্চারা জ্ঞান পেয়েছো, এক বাবাই কত কামাল করেন । আমাদের বিশ্বের মালিক বানান । তাই সেই এক-কেই স্মরণ করা উচিৎ। আমার তো একজনই। কিন্তু বাচ্চারা বলে যে শিববাবাকে স্মরণ করতে ভুলে যায়। বাহ্! ভক্তিমার্গে তো তোমরা বলেছিলে যে আমরা একের-ই ভক্তি করব। একমাত্র সেই পতিত-পাবন, আর তো কাউকে পতিত-পাবন বলা হয় না। একজনকেই বলা যায়। সেই উচ্চ থেকে উচ্চতম। এখন তো ভক্তির কোনো কথাই নেই। বাচ্চাদের জ্ঞান রয়েছে। জ্ঞান-সাগরকে স্মরণ করতে হবে। ভক্তিমার্গে বলে যে আপনি এলে শুধুমাত্র আপনাকেই আমরা স্মরণ করব। তাহলে সে কথা তো স্মরণ করা উচিৎ। প্রত্যেকে নিজেকে জিজ্ঞাসা করো যে আমরা কি একমাত্র বাবাকেই স্মরণ করি ? না অনেক মিত্র-সম্বন্ধী ইত্যাদিদের-ও স্মরণ করি ? এক বাবার সাথেই হৃদয়ের যোগ যেন থাকে। যদি হৃদয় অন্যদিকে যায় তবে স্মরণ ব্যভিচারী হয়ে যায়। বাবা বলেন, মামেকম্ স্মরণ কর। ওখানে (স্বর্গ) আবার তোমরা দৈবী সম্বন্ধ পাবে। নতুন দুনিয়ায় সবকিছুই নতুন পাবে। তাই নিজেকে পরীক্ষা করতে হবে যে আমরা কাকে স্মরণ করি। বাবা বলেন, তোমরা পারলৌকিক পিতাকে স্মরণ কর। আমিই পতিত-পাবন, চেষ্টা করে অন্যদিক থেকে বুদ্ধিযোগ সরিয়ে বাবাকে স্মরণ করতে হবে। যত স্মরণ করবে ততই পাপ দুর হবে। এমন নয় যে আমরা যতটা স্মরণ করব বাবাও ততটাই স্মরণ করবে। বাবাকে কী কোনো পাপ দুর করতে হয় ! এখন তোমরা এখানে বসে রয়েছো পবিত্র হওয়ার জন্য। শিববাবাও এখানে রয়েছেন। তাঁর তো নিজের শরীর নেই, লোন নিয়েছেন । তোমরা বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছো - বাবা আপনি এলে আমরা আপনার কাছে সমর্পিত হয়ে নতুন দুনিয়ার মালিক হয়ে যাব। নিজের মনকে জিজ্ঞাসা করতে থাকো। এ তো জানো যে বুদ্ধিযোগের সংযোগ (লিংক) প্রতি মুহূর্তে বাবার থেকে ছিন্ন হয়ে যায়। বাবা জানেন যে যোগাযোগ(লিংক) ছিন্ন হবে, আবার স্মরণ করবে, পুনরায় ছিন্ন হবে। বাচ্চারা নম্বরের ক্রমানুসারে পুরুষার্থ তো করতেই থাকে। ভাল মতন স্মরণে থাকলে, তবেই এই ডিনায়েস্টিতে (রাজত্ব) আসবে। নিজের পরীক্ষা করতে থাকো, ডায়রী লেখো। সারাদিনে আমাদের বুদ্ধিযোগ কোথায় কোথায় গেছে ? তখন বাবা পুনরায় বোঝাবে। আত্মায় যে মন, বুদ্ধি রয়েছে তা সদা পালিয়ে বেড়ায়। বাবা বলেন পালিয়ে গেলে ক্ষতি হয়ে যাবে। আমাকে স্মরণ করলে অনেক লাভ হয়, বাকী সবেতেই তো ক্ষতির পর ক্ষতি হয়। স্মরণ করতে হবে প্রধানতঃ একজনকেই। নিজেকে সাবধানে রাখতে হবে। প্রতিটি পদক্ষেপেই(কদমে) লাভও হয়, আবার প্রতি পদে ক্ষতিও হয়। ৮৪ জন্ম দেহধারীদের স্মরণ করে ক্ষতিই হয়েছে। এক এক দিন করে ৫ হাজার বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে, ক্ষতিই হয়েছে, এখন বাবার স্মরণে থেকে লাভ(ফায়দা) করতে হবে।
এমনভাবে বিচার সাগর মন্থন করে জ্ঞান-রত্ন বের করতে হবে, একাগ্রচিত্ত হয়ে বাবার স্মরণে থাকতে হবে। অনেক বাচ্চাদের কড়ি(টাকা-পয়সা) উপার্জনের চিন্তাই বেশী থাকে। মায়াই রোজগার ইত্যাদির বিচার নিয়ে আসে। ধনীদের তো অনেক বিচার আসে। বাবা কি করবে। বাবার(ব্রহ্মা) তো কত ভাল ব্যবসা ছিল। এদিক ওদিক ধাক্কা(ঠোক্কর) খাওয়ার কোনো দরকারই ছিল না। কোনো ব্যবসায়ী এলে আমি জিজ্ঞাসা করতাম, প্রথমে একথা বলো তো যে তুমি ব্যবসায়ী না এজেন্ট?(হিস্ট্রি) ব্যবসা ইত্যাদি করেও তোমাদের বুদ্ধির যোগ বাবার সাথে রাখতে হবে। এখন কলিযুগ সম্পূর্ণ হয়ে সত্যযুগ আসছে। পতিতরা তো সত্যযুগে যাবে না। যত স্মরণ করবে ততই পবিত্র হবে। পবিত্রতার দ্বারা ধারণা ভাল হবে। পতিত না স্মরণ করতে পারবে, না ধারণা করতে পারবে। কেউ ভাগ্য(তকদীর) অনুসারে সময় পায়, পুরুষার্থ করে, কেউ আবার সময় পায় না, তাই স্মরণই করে না। যে যতটা চেষ্টা কল্প-পূর্বে করেছিল ততটাই করে, প্রত্যেককে নিজের থেকেই পরিশ্রম করতে হবে। পূর্বে উপার্জনে ক্ষতি হলে বলা হতো ঈশ্বরের ইচ্ছা। এখন বলা হয় ড্রামা। যা কল্প-পূর্বে হয়েছিল তাই হবে। এমন নয় যে এখন ৪ ঘন্টা স্মরণ করো আর অন্য কল্পে আরও বেশী করবে। না, শিক্ষা দেওয়া হয়। এখন পুরুষার্থ করবে তবেই প্রতি কল্পে ভাল পুরুষার্থ হবে। তাহলে পরীক্ষা কর যে বুদ্ধি কোথায় কোথায় যাচ্ছে। মল্লযুদ্ধে অনেক সাবধানে থাকতে হয়। আচ্ছা- রুহানী বাচ্চাদের রুহানী বাবার স্মরণ-স্নেহ, গুডনাইট ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১. বুদ্ধিমান হওয়ার জন্য স্মরণের দ্বারা নিজের বুদ্ধিকে দিব্য (স্বচ্ছ/পারশ) বানাতে হবে। বুদ্ধি এদিকে-ওদিকে বিভ্রান্ত যেন না হয়। বাবা যা শোনায় তার উপরেই বিচার করতে হবে।
২. ভ্রমরী হয়ে (জ্ঞানের) ভুঁ-ভুঁ করে নরকবাসী হয়ে পড়ে থাকা কীটেদের(পোকা) দেবী-দেবতা বানানোর সেবা করতে হবে। শুভ কার্যে দেরী করবে না। নিজের ভাই-বোনেদের বাঁচাতে হবে।
বরদান:-
অবিনাশী সুহাগ(বিবাহের সৌভাগ্য চিহ্ন) এবং ভাগ্যের তিলকধারী তথা ভবিষ্যতের রাজ্য তিলকধারী ভব
সঙ্গমযুগেই দেবাদিদেবের সৌভাগ্য-তিলক(সুহাগ) এবং পরমাত্ম বা ঈশ্বরীয় সন্তানের ভাগ্যের তিলক প্রাপ্ত হয়। যদি এই সৌভাগ্য (সুহাগ) আর ভাগ্যের তিলক অবিনাশী হয়, তখন মায়া সেই তিলককে মুছতে পারে না, তখন এখানকার সৌভাগ্য আর ভাগ্যের তিলকধারী-ই ভবিষ্যতের রাজ্য তিলকধারী হয়। প্রতি জন্মে রাজ্য-তিলকের উৎসব হয়। রাজার সাথে রয়্যাল ফ্যামিলিরও তিলক দিবস পালন করা হয়।
স্লোগান:-
সদা একের স্নেহে লীন হয়ে থাক, তবেই এই প্রেম(মহব্বত) পরিশ্রম(মেহনত)-কে সমাপ্ত করে দেবে।