০৪-১১-১৮ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ২৪-০২-৮৪ মধুবন


ব্রাহ্মণ জন্ম -অবতরিত জন্ম

বাপদাদা আওয়াজে আসেন সবাইকে আওয়াজের ঊর্ধ্বস্থিতিতে নিয়ে যেতে, ব্যক্ত দেশে ব্যক্ত শরীরে প্রবিষ্ট হন তোমাদের অব্যক্ত বানাতে l সদা অব্যক্ত স্থিতিতে স্থিত হয়ে নিজেদের সূক্ষ্ম ফরিস্তা মনে করে ব্যক্ত দেহে অবতরিত হও তোমরা ? সবাই তোমরা অবতরিত হওয়া অবতার l এই স্মৃতিতে সর্বকর্ম করতে করতে, কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে তোমরা কর্মাতীত অবতার হয়ে যাও l অবতার অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ কর্ম করার জন্য যে উপর থেকে নিচে নেমে আসে l তোমরাও সবাই তোমাদের উঁচু স্থিতিসহ উপর থেকে, দেহের আধার নিয়ে সেবার জন্য কর্ম করতে পুরানো দেহে, পুরানো দুনিয়ায় নিচে আসো l কিন্তু তোমাদের স্থিতি উপরে থাকে, এই কারণে তোমরা অবতার l অবতার সদা পরমাত্ম-বার্তা নিয়ে আসে l তোমরা সব সঙ্গমযুগী শ্রেষ্ঠ আত্মারাও পরমাত্ম-বার্তা দেওয়ার জন্য, সকলকে পরমাত্ম-মিলনে সমর্থ করে তুলতে অবতরিত হয়েছ l সেই দেহ এখন তোমাদের নয়, দেহও তোমরা বাবাকে দিয়ে দিয়েছ l তোমরা বলেছিলে, *সবকিছু তোমার, অর্থাৎ কিছুই আমার নয়* l সেবার্থে বাবা তোমাদের এই দেহ লোনে দিয়েছেন l *লোনে নেওয়া কোনও বস্তুর ওপর আমিত্বের অধিকার থাকতে পারে না l* দেহই যখন তোমার নয়, তখন দেহভাব কিভাবে হতে পারে ? আত্মাও বাবার হয়ে গেছে, দেহও বাবার হয়ে গেছে, তাহলে *আমি* আর *আমার* কোথা থেকে এলো ! আমিত্ব বোধ এখন শুধু এক বেহদের - *আমি বাবার* এবং যেমন বাবা তেমন আমি মাস্টার l সুতরাং, এটাই বেহদের আমিত্ব ভাব l হদের আমিত্ব ভাব বিঘ্ন উৎপত্তি করে l বেহদের আমিত্ব ভাব নির্বিঘ্ন, বিঘ্ন বিনাশক বানায় l একইভাবে, হদের আমিত্ব বোধ তোমাদের *আমার আমার* ঘূর্ণাবর্তে নিয়ে আসে, সেখানে বেহদের আমিত্ব ভাব অনেক জন্মচক্র থেকে তোমাদের রেহাই দেয় l



বেহদের *আমিত্ব* ভাব - *আমার বাবা* l সুতরাং হদ তো ছেড়েই গেল, তাই না ! অবতার হয়ে দেহের আধার নিয়ে সেবার জন্য কর্ম করতে এসো l বাবা তোমাদের লোন দিয়েছেন অর্থাৎ তিনি সেবার জন্য আমানত গচ্ছিত রেখেছেন l অন্য কোনও ব্যর্থ কার্যে এটা লাগাতে পারো না l নয়তো, গচ্ছিত আমানতের প্রতি অসদাচরণের খাতা অর্থাৎ হিসেব তৈরি হয়ে যায় l অবতার ব্যর্থের খাতা বানায় না l অবতার আসে, বার্তা দেয় আর চলে যায় l তোমরাও সবাই এই ব্রাহ্মণ জীবন নিয়েছ সেবার জন্যে এবং বার্তা দিতে l ব্রাহ্মণ জন্ম তোমাদের অবতরিত হওয়ার জন্ম, কোনো সাধারণ জন্ম নয় l সুতরাং সদাসর্বদা নিজেকে অবতরিত হওয়া বিশ্ব কল্যাণকারী, সদা শ্রেষ্ঠ অবতরিত আত্মা, এই নিশ্চয় আর নেশা বজায় রাখো l টেম্পোরারি সময়ের জন্য এসেছ আর তারপরে চলে যেতে হবে l এখন যেতে হবে, এটা সদা মনে থাকে তোমাদের ? তোমরা অবতার, এসেছো, আর এখন ফিরে যেতে হবে l এই স্মৃতি *উপরাম আর অপরমঅপার* প্রাপ্তির অনুভূতি করাবে l একদিকে, উপরাম আর অন্যদিকে, অপরমঅপার প্রাপ্তি ; এই দুই অনুভবই একইসঙ্গে থাকে l তোমরা এইরকম অনুভাবী মূর্ত, তাই না ! আচ্ছা !



এখন তোমরা যা কিছু শুনেছো, তা' স্বরূপে আনতে হবে l শোনা অর্থাৎ হওয়া l আজ বাবা তাঁর সম-সকলের সাথে বিশেষভাবে মিলিত হতে এসেছেন l তোমরা সবাই সমান, তাই না ! সত্য শিক্ষক নিমিত্ত শিক্ষকদের সাথে মিলিত হতে এসেছেন l সেবার সাথীদের সাথে মিলিত হতে এসেছেন l আচ্ছা !



যারা সদা বেহদের আমিত্ব-স্মৃতির প্রতিমূর্তি, সদা *আমার তো এক বাবা*, বেহদের এই সমর্থ স্থিতিতে স্থিত থাকে, এইরকম সদা শ্রেষ্ঠ স্থিতিতে স্থিত হয়ে দেহের আধার নিয়ে অবতরিত হওয়া সেই অবতার বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l



*টিচারদের সাথে* :- এই সংগঠন সদা সেবাধারী আত্মাদের, তাই না? সদা নিজেদের বেহদ বিশ্ব সেবাধারী মনে করো তোমরা ? তোমরা হদের সেবাধারী নও, তাই না ! সবাই তোমরা বেহদের ? তোমাদের যে কোনও কাউকে যদি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, তোমরা প্রস্তুত ? সবাই তোমরা উড়ন্ত বিহঙ্গ ? নিজের দেহভাবের ডালে থেকেও তোমরা উড়ন্ত বিহঙ্গ ? নিজের দিকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করা ডাল, এই দেহভাব l সামান্যতম পুরানো সংস্কারের দিকে আকর্ষণ মানে এই দেহের ভাব l *"আমার স্বভাব এইরকম, আমার সংস্কার এইরকম, আমার রহন-সহন এইরকম, আমার অভ্যাস এইরকম"* , এই সবকিছু দেহভাবের লক্ষণ l তাহলে তোমরা এই ডাল থেকেই উড়ন্ত বিহঙ্গ হয়েছো ? একেই বলা হয়ে থাকে কর্মাতীত স্থিতি l কোনও বন্ধন নেই l কর্মাতীত-এর অর্থ এই নয় যে কর্ম করা থেকে মুক্ত হয়ে গেছ, কিন্তু কর্মবন্ধন থেকে ন্যারে অর্থাৎ মুক্ত l সুতরাং দেহের কর্ম, যেমন, কারও নেচার আরামে থাকা, অথবা আরামে সময়মতো আহার করা এবং সবকিছু সময়মতো করা, কর্মের এই বন্ধনও তোমাকে এর নিজের দিকে আকর্ষণ করে l এই কর্মবন্ধন অর্থাৎ কর্ম করার অভ্যাসেরও ঊর্ধ্বে যাও, কেননা তোমরা নিমিত্ত, তাই না !



যতক্ষণ না তোমরা সব নিমিত্ত আত্মারা কর্মবন্ধন থেকে, দেহের সংস্কার-স্বভাব থেকে বিচ্ছিন্ন না হবে, কিভাবে অন্যদের মুক্ত করবে ! শরীরের অসুস্থতা যেমন কর্মভোগ, ঠিক একইভাবে যদি কোনও কর্মের বন্ধন এর নিজের দিকে তোমাকে আকর্ষণ করে তো সেই কর্মভোগও বিঘ্ন উৎপন্ন করে l যখন শারীরিক অসুস্থতা, কর্মভোগ এর নিজের দিকে বারংবার আকর্ষণ করে, ব্যথা হয় তখনই তো তোমাকে আকর্ষণ করে, তাই না ! তখন তোমরা বলো, *আমি কি করতে পারি ?* নয়তো,বলো, *আমি তো ঠিকই আছি, কিন্তু কড়া কর্মভোগ* l একইভাবে যদি কোনও বিশেষ পুরানো সংস্কার, স্বভাব বা অভ্যাস তোমাকে টানে তবে সেটাও কর্মভোগ l কোনরকম কর্মভোগ কর্মযোগী বানাতে পারেনা l সুতরাং, এরও ঊর্ধ্বে যাও l কেন ? তোমরা সব আত্মারা নাম্বার ওয়ান হতে যাচ্ছ l নাম্বার ওয়ানের অর্থই হলো সবকিছু জয় করা l তারপরে কোনকিছুই অভাব হয়না ! টিচার্সের অর্থ হলো, তারা সদা নিজ মূর্তি দ্বারা *কর্মাতীত ব্রহ্মাবাবা এবং পৃথক তথা প্রিয় শিববাবার* অনুভূতি করাবে l তাহলে তোমাদের এই বিশেষত্ব আছে, তাই না ! তোমরা ফ্রেন্ডস, তাই না ? কিভাবে ফ্রেন্ডস হবে তোমরা ? কারও সমান না হলে তোমরা ফ্রেন্ডস হতে পারবে না l তোমরা সবাই বাবার ফ্রেন্ডস, গডলি ফ্রেন্ডস l সমান হওয়াই ফ্রেন্ডশিপ l বাবার পদাঙ্কে তোমরা তোমাদের পদক্ষেপ করো, কেননা তোমরা ফ্রেন্ডসও বটে আবার মাশুকের আশিকও l সুতরাং প্রিয়তমা সদা তার প্রিয়তমের পায়ের ওপরে পা রাখে অর্থাৎ প্রিয়তমের পদচিহ্ন অনুসরণ করে l এটাই তো রীতি, তাই না ! যখন বিয়ে হয় তারা নবদম্পতিকে দিয়ে কি করায় ! এটাই তো করায়, তাই না ! তাহলে এই রীতি কোথা থেকে তৈরি হলো ? তোমাদের দ্বারাই তৈরি হয়েছে l তোমাদের হলো বুদ্ধিরূপী পা, কিন্তু তারা স্থূল পা ভেবে নিয়েছে l সব সম্বন্ধের সাথে বিশেষ সম্বন্ধের দায়িত্ব পালনকারী আত্মা তোমরা l



নিমিত্ত শিক্ষকদের অন্যদের তুলনায় অনেক সহজ সাধন আছে l অন্যদের তবুও তো তাদের সম্বন্ধ বজায় রাখতে হয়, সেখানে তোমাদের সম্বন্ধ সদা সেবা আর বাবার সাথে l এমনকি লৌকিক কাজকর্ম করতে করতেও সদা তোমাদের স্মরণে থাকে, সেবার সময় হলে, সেবার জন্য আমাকে বেরোতে হবে। আর লৌকিক কার্যের ক্ষেত্রে যার জন্য করা হয়, তার কথাই স্মরণে আসে l যেমন, লৌকিকে মা-বাবা রোজগার করে তাদের সন্তানদের জন্যে, সুতরাং সেই সন্তানরা স্বতঃই তাদের স্মরণে আসে l অতএব, যখন তোমরা তোমাদের জাগতিক কার্য করো তো কার জন্য তোমরা সেটা করো ? সেবার জন্য করো নাকি নিজের জন্য ? কেননা সেবাতে যতো করবে, ততোই তোমাদের খুশি থাকবে l কখনো লৌকিক সেবা মনে করে কোরো না l এটাও সেবার একটা মাধ্যম l এর ভিন্ন রূপ আছে, কিন্তু এটা এখনও সেবার জন্য l নয়তো দেখ, যদি লৌকিক সেবা করেও তোমাদের সেবার সাধন না থাকতো, তোমাদের সঙ্কল্প চলতো, কোথা থেকে আসবে ! কিভাবে আসবে ! চলছে না, জানিনা কবে হবে ! এই সঙ্কল্পগুলো কি তোমাদের সময় ব্যর্থ করত না ? অতএব, লৌকিক জব করছো, এ কথা কখনো বোলোনা l এটা অলৌকিক জব, সেবার নিমিত্ত l সুতরাং কখনও এটা তোমাদের বোঝা মনে হবে না, নয়তো কখনো কখনো ভারী হয়ে যাবে - "কবে হবে, কখন হবে" ? এটা তো তোমাদের সবার জন্য খুব সহজে প্রালব্ধ বানানোর সাধন l



তন, মন, ধন তিনটে জিনিস আছে, তাই না ! যদি তোমরা তিনটেই সেবাতে লাগাও, তবে সেই তিনের ফল কে লাভ করবে ? তোমাদের লাভ হবে নাকি বাবা লাভ করবেন ! তন-মন-ধন এই তিনের দ্বারা তোমরা প্রালব্ধ বানাতে সমর্থ হলে অন্যদের থেকে অ্যাডিশনাল প্রালব্ধ লাভ হয়ে গেল ! সেইজন্য কখনও এটা নিয়ে ভারী বোধ কোরো না l শুধু তোমার ভাবকে বদল করো, লৌকিকের জন্য নয়, অলৌকিক সেবার জন্য করছি l এই ভাবটাই বদল করো l বুঝেছো তোমরা ? এতে তোমাদের ডবল স্যারেন্ডার হয়ে যায় l তোমরা ধনের মাধ্যমে স্যারেন্ডার হয়ে যাও, সবকিছু বাবার জন্যে l স্যারেন্ডারের অর্থ কি ? তোমার যা কিছু আছে সব বাবার জন্য অর্থাৎ সেবার্থে l এটাকেই স্যারেন্ডার বলে l যারা মনে করে আমরা স্যারেন্ডার নই, তারা হাত উঠাও ! তাদের জন্য সেরিমনি উদযাপন করা হবে l ছেলেমেয়ে হয়ে গেছে, আর বলছো স্যারেন্ডার হওনি ! নিজেদের 'ম্যারেজ ডে' পালন করো, অথচ ম্যারেজ হয়নি এটা তো বোলোনা ! কি মনে করছ ? সব গ্রুপই স্যারেন্ডার গ্রুপ, তাই তো ?



বাপদাদা ডবল বিদেশি বাচ্চাদের অথবা ডবল বিদেশের স্থানে নিমিত্ত হওয়া টিচারদের অনেক মহিমা করেন l শুধু নামে মাত্র তিনি মহিমা করেন না, কিন্তু তোমরা ভালোবাসার সাথে বিশেষ মেহনতও করো l তোমাদের অনেক মেহনত করতে হয়, কিন্তু ভালোবাসার কারণে সেটা মেহনত বলে তোমরা বুঝতে পারোনা l দেখ, তোমরা কতদূর-দূর থেকে গ্রুপ তৈরি করে এখানে নিয়ে আসো, তাইতো বাপদাদা বাচ্চাদের মেহনতের কারণে নিজেকে সমর্পণ করে দেন l ডবল ফরেনের নিমিত্ত সেবাধারীদের একটা খুব ভালো বিশেষত্ব আছে l জানো তোমরা সেই বিশেষত্ব কি ? (অনেক বৈশিষ্ট্য বেরিয়েছে) যে বিশেষত্বই বেরিয়েছে তা' দিয়ে নিজেকে চেক করো, যদি সেসবের কিছু ঘাটতি থাকে তো নিজেকে ভরে নাও, কেননা অনেক ভালো ভালো জিনিস বেরিয়েছে l বাপদাদা শোনাচ্ছেন যে তিনি একটা বিশেষত্ব দেখেছেন, তোমরা সব ডবল বিদেশি সেবাধারীদের যে ডিরেকশনই বাপদাদা দেন, "এটা করে দেখাও", সেটার প্র্যাকটিক্যাল রূপ দিতে তোমাদের যতোই মেহনত করতে হোক না কেন, সবসময়ই তোমরা তাকে প্র্যাকটিক্যালে এনে থাকো l এই প্র্যাকটিক্যাল লক্ষ্য ভালো l বাপদাদা যেমন বলেন, গ্রুপ নিয়ে এসো, তারা গ্রুপও নিয়ে আসে l



বাপদাদা বলেছেন, ভি. আই. পি.-দের সেবা করতে হবে, আগে তোমরা বলতে, এটা খুব কঠিন, কিন্তু সাহস রেখেছো, করতেই হবে, তাহলে দেখ দু'বছর ধরে গ্রুপস আসছে, তাই না l তোমরা বলতে লন্ডন থেকে ভি. আই. পি.দের এখানে আসা খুব কঠিন l যতোই হোক, এখন তোমরা প্রত্যক্ষ প্রমাণ দেখিয়েছো, তাই না ! এইবার তো ভারতবাসীও রাষ্ট্রপতিকে এখানে নিয়ে এসেছে l তোমরা ডবল বিদেশিদের উৎসাহ থাকে, যেকোনো ডিরেকশন তোমরা পেলেই সেটা তোমাদের অবশ্যই করতে হবে, করার এই নিষ্ঠা খুব ভালো l প্র্যাকটিক্যাল রেজাল্ট দেখে বাপদাদা তোমাদের বিশেষত্বের গায়ন করেন l সেন্টার খোলা তো পুরানো ব্যাপার হয়ে গেছে l তোমরা সেগুলো খুলতেই থাকবে, কারণ সেখানে তোমাদের সহজ সাধন থাকে l এখান থেকে ওখানে গিয়ে তোমরা সেন্টার খুলতে পারো, এইসব সাধন ভারতে নেই, সুতরাং সেন্টার খোলা কোনো বড়ো ব্যাপার নয়, কিন্তু এখন এইরকম খুব ভালো উত্তরাধিকারী -কোয়ালিটি আত্মাদের প্রস্তুত করতে হবে l এক, উত্তরাধিকারী-কোয়ালিটি তৈরি করা আর দুই, তাদেরকে প্রস্তুত করতে হবে যারা জোরালো আওয়াজ ছড়িয়ে দেবে l দুইই আবশ্যক l উত্তরাধিকারী কোয়ালিটি, যেমন তোমরা উদ্যম-উৎসাহের সাথে সেবা করে বুদ্ধির দ্বারা তোমাদের তন, মন, ধন সমেত তোমরা স্যারেন্ডার হও, একেই বলা হয় উত্তরাধিকারী কোয়ালিটি l সুতরাং তোমাদের উত্তরাধিকারী-কোয়ালিটি আত্মাদেরও বার করতে হবে l এর প্রতি বিশেষ অ্যাটেনশন দিতে হবে l সব সেবাকেন্দ্রে এইরকম উত্তরাধিকারী কোয়ালিটি আত্মা থাকলে, তাহলে সেই সেবাকেন্দ্র সব সেবাকেন্দ্রের মধ্যে নম্বর ওয়ান হয়ে যাবে l



এক, সেবায় সহযোগী হওয়া আর দুই হলো পুরোপুরি স্যারেন্ডার হওয়া l এইরকম উত্তরাধিকারী কতো আছে ? সব সেবাকেন্দ্রে এমন উত্তরাধিকারী আছে ? তোমরা গডলি স্টুডেন্ট বানিয়েছো এবং সেবায় সহযোগী হয়েছো, সেই লিস্ট তো অনেক লম্বা কিন্তু মাত্র কিছু কিছুই উত্তরাধিকারী হয় l যার যে সময়ে যে ডিরেকশনই প্রাপ্ত হোক, যেমন শ্রীমৎ তোমরা পেতে থাকবে, সেই অনুসারে তোমরা চলতে থাকবে l সুতরাং, দুটোই লক্ষ্য রাখো l তোমাদের এই রকমেরও বানাতে হবে ওইরকমও বানাতে হবে l এইরকম উত্তরাধিকারী এক আত্মা অনেক সেবাকেন্দ্র খোলার নিমিত্ত হতে পারে l যখন তোমাদের এই লক্ষ্য, এটা প্র্যাকটিক্যালভাবে হতে থাকবে l তোমাদের বিশেষত্ব এখন বুঝেছো, তাই না ! আচ্ছা l



যাই হোক, তোমরা সন্তুষ্ট, নাকি জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন হবে ? তোমরাই অন্যকে সন্তুষ্ট করো l সুতরাং যারা অন্যকে সন্তুষ্ট করবে তারা নিজেরা তো সন্তুষ্ট হবে, তাই না ! কখনো কখনো সার্ভিস কম হয়েছে দেখে তোমরা অস্থির হও না তো ! সেবাকেন্দ্রে যখন কোনো বিঘ্ন উৎপন্ন হয়, সেটা দেখে তোমরা ঘাবড়ে যাও ? যেমন ধরো, বড়ো থেকেও বড়ো বিঘ্ন যদি এসে যায় বা কোনো ভালো অনন্য কেউ অ্যান্টি হয়ে যায় এবং তোমাদের সেবায় ডিস্টার্বেন্সের কারণ হয়, তখন কি ঘাবড়ে যাবে ? তার প্রতি কল্যাণের ভাব রেখে দয়াশীল হওয়া, সেটা অন্য ব্যাপার l কিন্তু তোমার নিজের স্থিতি নীচে-উপর হয়ে গেলে অথবা যদি ব্যর্থ সঙ্কল্প চলে, তখন সেটাকে বলে অস্থিরমতি l সুতরাং সঙ্কল্পের সৃষ্টিও রচনা কোরোনা অর্থাৎ ব্যর্থ সঙ্কল্প উৎপন্ন হতে দিওনা l এই সঙ্কল্পও যেন তোমাকে টলাতে না পারে l একেই বলা হয় অটল, অচল স্থিতি l এটা *নাথিং নিউ* ভেবে যেন অসাবধান হয়োনা l সেবা করো আর তার প্রতি সদয় হও, কিন্তু অস্থির হয়োনা l সুতরাং না অস্থিরতা, না কোনরকম ফিলিং (অনুভূতি) থাকা l সদা যে কোনো বাতাবরণে বা বায়ুমন্ডলেই থাকো, কিন্তু অচল-অটল থাকবে l কখনো নিমিত্ত হওয়া কেউ তোমায় রায় দিলে তা'তে কনফিউজড হয়োনা l এমন ভেবোনা, কেন সেই ব্যক্তি তোমাকে বলছে বা এটা কিভাবে হবে ! কারণ যারা নিমিত্ত তারা অনুভাবী এবং যারা প্র্যাকটিক্যালে চলছে তাদের কেউ কেউ নতুন, কেউ কেউ অল্প পুরানো l সুতরাং যে সময় যে পরিস্থিতি তাদের সামনে আসে, তখন সেই পরিস্থিতির কারণে আদি, মধ্য, অন্ত বোঝার তেমন ক্লিয়ার বুদ্ধি তাদের থাকেনা l তারা শুধুমাত্র বর্তমান জানতে পারে, এইজন্য বর্তমান দেখে, সেই সময় আদি মধ্য তাদের কাছে তেমন ক্লিয়ার হয়না আর তাই তারা কনফিউজড হয়ে যায় l কখনো কোনও ডিরেকশন যদি স্পষ্ট নাও হয়, কনফিউজড হয়োনা l শুধু ধৈর্যের সাথে বলো যে তোমরা বুঝতে চেষ্টা করবে l একটু টাইম দাও তাকে l সেই সময় কনফিউজ হয়ে বলোনা, *"এটা কোরোনা, বা ওটা কোরোনা, এভাবে কোরোনা* , কারণ ডবল বিদেশিদের ফ্রি মাইন্ড অনেক বেশি থাকে, এইজন্য তারা ফ্রি মাইন্ডের সাথে *না* ও বলে দেয়, সুতরাং অল্প যা কিছু বিষয় তোমাদের কাছে আসে, প্রথমে সেই সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করো, তা'তে কোনো না কোনো রহস্য অবশ্যই লুকিয়ে আছে l তাদের জিজ্ঞাসা করতে পারো, *এর রহস্য কি ? এর থেকে কি লাভ হবে ? আমাদের আরও স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দাও* l তোমরা তাদের এগুলো বলতে পারো l যাই হোক, কখনো কোনো ডিরেকশন রিফিউজ কোরোনা l তোমরা রিফিউজ করো বলেই কনফ্যুজ্ হয়ে যাও l এই সামান্য অতিরিক্ত অ্যাটেনশন ডবল বিদেশি বাচ্চাদের দেওয়া হয় l তা'নাহলে কি হবে, তোমরা নিমিত্ত হয়েছ, কিন্তু বোনেদের ডিরেকশন জানার চেষ্টা যদি না করো, তখন ক্রমশঃ অস্থির হতে শুরু করবে l আর তখন তারা তোমাদের দেখে যাদের তোমরা নিমিত্ত হয়েছ, তাদের মধ্যে এই সমস্ত সংস্কার ভরে যাবে l তারপরে কখনো কেউ মুখ গোমড়া করবে তো কখনো অন্য কেউ, আর তখন সেন্টারে এই খেলাই চলতে থাকবে l বুঝেছো তোমরা ? আচ্ছা l

বরদান:-

জ্ঞান আর যোগের শক্তি দ্বারা বিপরীত পরিস্থিতিকে সেকেন্ডে পাস করে অর্থাৎ পার করে মহাবীর ভব

মহাবীর অর্থাৎ সদা লাইট আর মাইট হাউজ l জ্ঞান লাইট আর যোগ মাইট l যারা এই দুই শক্তির দ্বারা সম্পন্ন থাকে, তারা সবরকম বিপরীত পরিস্থিতি সেকেন্ডে পাস করিয়ে অগ্রসর হয় l যদি সময়মতো পাস না করানোর সংস্কার থাকে তবে ফাইনালেও সেই সংস্কার ফুল (full) পাস হতে দেয় না l যে সময়ে ফুল পাস হয়, তাকে বলা হয় *পাস উইথ অনার* l ধর্মরাজও তাকে অনার দেন l

স্লোগান:-

যোগ অগ্নি দ্বারা বিকারের বীজ ভস্ম করে দিলে সময়কালে তুমি প্রতারিত হবেনা |