০৭-১০-১৮ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত-বাপদাদা" রিভাইসঃ ২২-০১-৮৪ মধুবন
নামিগ্রামী (সুবিখ্যাত ) সেবাধারী হওয়ার বিধি
আজ বাপদাদা স্থিতিশীল দীপ্যমান দীপের দীপমালা দেখছেন l কিভাবে দীপ্যমান দীপক তোমরা সকলে অনড়, নির্বিঘ্ন এবং তোমাদের আত্মজ্যোতি দ্বারা বিশ্বকে আলো দিচ্ছ l দীপের এই আলো আত্মাদের জাগিয়ে তোলার আলো l বিশ্বের সকল আত্মাদের সামনে অজ্ঞানের যে প্রাচীর আছে সেটা সরানোর জন্য এবং অন্যদের জাগাতে তোমরা নিজেরা জেগেছ, অন্ধকারের কারণে যারা অনেক রকমভাবে ঠোকর খাচ্ছে, তোমরা দীপ্যমান সব দীপের দিকে অত্যন্ত ভালোবাসার সাথে আশায় তাকিয়ে আছে, তাদের আলোর ইচ্ছা এবং আবশ্যকতা তোমরা পরিপূর্ণ করবে l লক্ষ্যহীনভাবে অন্ধকারে ঘুরে বেড়াচ্ছে এমন আত্মাদের জ্ঞানের আলো দিতে হবে তোমাদের, যাতে ঘরে ঘরে আলো জ্বলে ওঠে l (কারেন্ট চলে গেল ) এখনই দেখ, এই অন্ধকার ভালো লাগে? আলোই ভালো লাগে, তাই না ! সুতরাং, একইভাবে বাবার সাথে কানেকশন জুড়ে দাও l কিভাবে কানেকশন জুড়তে হয় তাদেরকে সেই জ্ঞান দাও l
তোমরা সব ডবল বিদেশিরা রিফ্রেশ হয়েছো অর্থাৎ তোমরা শক্তিশালী লাইটহাউজ, মাইটহাউজ, নলেজফুল, পাওয়ারফুল এবং সাকসেসফুল হয়ে সেবাস্থানে যাচ্ছ, পুনরায় ফিরে আসার জন্য l যাওয়া অর্থাৎ সফলতার প্রতিমূর্তি হওয়ার পার্ট প্লে করে একের বহুগুন হয়ে ফিরে আসা l তোমরা যাচ্ছ তোমাদের পরিবারের অন্য আত্মাদের বাবার ঘরে নিয়ে আসার জন্য l হদের যুদ্ধে যেমন বাহুবল, সায়েন্সের শক্তিসহ সব অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিজয়ের মেডেল আনতে যুদ্ধের ময়দানে যায়, তেমনই তোমরা সব রূহানী যোদ্ধা সেবার ময়দানে যাচ্ছ বিজয় পতাকা উত্তোলন করতে l তোমরা যতবেশি বিজয়ী হও, বাবার থেকে ততোই স্নেহের, সহযোগের, নৈকট্যের, সম্পূর্ণতার বিজয়ী মেডেলস লাভ করো l সুতরাং, চেক করো, এখনও পর্যন্ত কতো মেডেলস পেয়েছো ! বিশেষত্ব অথবা টাইটেলস্ যা দেওয়া হয়েছে, সেসবের কতগুলো মেডেল তোমরা ধারণ করেছো ? বিশেষ টাইটেল গুলোর লিস্ট তো তোমরা বানিয়েছো, তাই না ? সেই লিস্ট তোমাদের সামনে রেখে নিজেকে দেখ, এই সব মেডেলস তোমাদের প্রাপ্তি হয়েছে কিনা ! এখনও পর্যন্ত তোমরা খুব ছোট লিস্ট বানিয়েছো l কমপক্ষে ১০৮ তো হওয়াই উচিৎ ! তারপর তোমাদের এত মেডেলস দেখে নিজেদের নেশায় রাখো, কতো মেডেলসে তোমরা সেজে আছো ! যাওয়া অর্থাৎ বিশেষ কাজ সম্পন্ন করে সদা নতুন থেকেও নতুন মেডেলস লাভ করতে থাকা l তুমি যেমন কাজ সম্পন্ন করবে তেমন মেডেল পাবে l সুতরাং, এই বছর সেবার নিমিত্ত হওয়া সব বাচ্চাদের এই লক্ষ্য রাখতে হবে যে কোনো না কোনো এমন বিশেষ নতুন কাজ সম্পন্ন করার, যা ড্রামাতে এখনও লুকিয়ে আছে, অথচ স্থিরীকৃত l এখন সেই কাজ প্রত্যক্ষ করতে হবে l জাগতিক দুনিয়ায় যেমন তোমরা কোনো বিশেষ কাজ সম্পন্ন করে নামিগ্রামী (সুবিখ্যাত)হয়ে যাও l চারিদিকে তোমাদের বিশেষত্বের জন্য পরিচিত হওয়ার সাথে সাথে বিশেষ আত্মা হিসেবেও তোমাদের নাম হয়ে যায় l একইভাবে, তোমাদের প্রত্যেকে যেন ভাবে যে *আমাকে বিশেষ কার্য সম্পন্ন করতে হবে, বিজয় লাভের মেডেল নিতে হবে l ব্রাহ্মণ পরিবারের মধ্যে বিশেষ সেবাধারীদের লিস্টে সুবিখ্যাত হতে হবে* l রূহানী নেশায় থাকো, তোমার নামের নেশায় নয় l সেবার রূহানী নেশায় নির্মাণ অর্থাৎ নিরহঙ্কার নিমিত্ত হওয়ার সার্টিফিকেট সহ সুপরিচিত হতে হবে l
আজ ডবল বিদেশি গ্রুপ যারা বিজয়ী হয়েছে, তাদের বিজয় স্থলে যাওয়ার অভিনন্দন সমারোহ l যখন কেউ বিজয় স্থলে যায় তো মহা ধুমধামের সাথে খুশিতে ব্যান্ড বাজাতে বাজাতে বিজয় তিলক লাগিয়ে তারা অভিনন্দিত হয় l এটা বিদায়কালীন শুভেচ্ছা নয়, বরং অভিনন্দন, কারণ বাপদাদা এবং পরিবার জানে যে এইরকম সেবাধারীদের বিজয় নিশ্চিত, এইজন্য অভিনন্দন সমারোহ উদযাপিত হয় l আগে থেকেই বিজয় নিশ্চিত, তাই না ! শুধু নিমিত্ত হয়ে রিপিট করতে হবে, কারণ এটা করলে তোমরা নিমিত্ত হিসেবে করে এটার প্রতিদান পাবে ! কর্ম তো শুধু নামেমাত্র কারণ এর প্রত্যক্ষ ফল নিশ্চিত l এই নিশ্চয়ের উদ্যম-উৎসাহের সাথে তোমরা যাচ্ছ, অন্যদের অধিকারী বানিয়ে তাদের এখানে নিয়ে আসার জন্য l অধিকারের অনন্ত ভান্ডার তোমরা মহাদানী হয়ে তাদের দান পুণ্য করার জন্য যাচ্ছ l এখন দেখা যাবে পান্ডবরা আগে যায় নাকি শক্তিরা আগে যায় ! বিশেষ নতুন কাজ যে করবে, তার মেডেল প্রাপ্ত হবে l হয় এইরকম সেবার জন্য আত্মাদের বার করতে পারো, অথবা সেবাস্থানের আরও বৃদ্ধি করাতে পারো l অথবা বিশেষ কার্য সম্পন্ন করে চতুর্দিকে তোমার নাম ছড়িয়ে দিতে পারো, অথবা হতে পারে এমন একটা বড় গ্রুপ তৈরি করে বাপদাদার সামনে নিয়ে আসলে ! যারা এই ধরণের বিশেষ সেবা করবে তাদের বিজয়ের মেডেল প্রাপ্ত হবে l এইরকম বিশেষ কাজ যারা করে তাদের পূর্ণ সহযোগেরও প্রাপ্তি হয় l অন্যেরা তোমাকে টিকিট অফার করবে l একদম শুরুতে যখন তোমরা সেবাতে বেরোতে তো সেবা করে ফার্স্টক্লাসে সফর করতে l আর এখন, তোমরা নিজেরা নিজেদের টিকিট করে সেকেন্ড বা থার্ড ক্লাসে আসো l এমন কোনো কোম্পানির সেবা করো, সবকিছু সম্ভব হবে l সেবাধারীরা সব সুযোগ সুবিধাও পেয়ে যায় l বুঝেছো তোমরা ! সবাই তোমরা সন্তুষ্ট হয়ে বিজয়ী হয়েই তো ফিরে যাচ্ছ, তাই না ? কোনরকম কমজোরি তোমার সাথে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছ না তো ? কমজোরি অর্থাৎ সমস্ত দুর্বলতা স্বাহা (আহুতি) করে শক্তিশালী আত্মা হয়ে যাচ্ছ, তাই না ! কোনরকম দুর্বলতা থেকে যাচ্ছে না তো ? যদি কিছু থেকে যায়, তবে স্পেশ্যাল সময় করে সমাপ্তি ঘটিয়ে তারপরে এখান থেকে যেও l আচ্ছা !
এইরকম সদা অনড় প্রজ্জ্বলিত দীপ, যারা সর্বদা জ্ঞানালোকে অন্ধকার দূর করে, যারা সদা সেবার কিছু বিশেষত্বের সাথে স্পেশ্যাল পার্ট প্লে করে, যারা বাবার থেকে সব প্রাপ্ত হওয়া মেডেল ধারণ করে, সদাসর্বদা যারা বিশ্বাস করে যে বিজয় সুনিশ্চিত, এমন অবিনাশী বিজয়ের তিলকধারী, সদা সর্বপ্রাপ্তিতে সম্পন্ন, সন্তুষ্ট আত্মাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l
*জগদীশ ভাইয়ের সাথে* :- বাপদাদার সাকার পালনায় পালিত রত্নদের ভ্যাল্যু থাকে অর্থাৎ তারা মূল্যবান l জাগতিক স্তরেও, বৃক্ষে পাকা ফল কতো শোভনীয় হয় l সেইরকম তোমরা সব অনুভাবী আত্মাদেরও সবাই কতো ভালোবাসার সাথে দেখে ! প্রথম মিলনেই তোমরা বরদানপ্রাপ্ত হয়েছো, তাই না ! পালনা অর্থাৎ বরদানেই তোমাদের বিকাশ, তাই না ! এইজন্য সদা তোমাদের পালনার অনুভব দ্বারা অনেক আত্মাদের পালনা দিয়ে প্রতিনিয়ত তাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করতে থাকবে l সাগরের সাথে বিভিন্ন সম্বন্ধের এবং অনুভবের তরঙ্গে ভাসতে থাকবে l সেবার শুরুতে, ইকনমির সময়ে তোমরা নিমিত্ত হয়েছিলে l ইকনমির সময় নিমিত্ত হওয়ার কারণ সেবার ফল সদা শ্রেষ্ঠ হয় l একদম সঠিক সময়ে তোমরা সহযোগী হয়েছো, এইজন্য তোমরা বরদান লাভ করেছো l আচ্ছা -
*কনফারেন্সের জন্য আলাপআলোচনাঃ* - যখন তোমরা উৎসাহ-উদ্দীপনায় একসাথে কোনো কাজের নিষ্পত্তি করো তো তাতে সহজে তোমরা সফলতা লাভ করো l সেই কাজ সকলের সম্মিলিত উৎসাহে হচ্ছে, তাই সফলতা অবশ্যই হবে l সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করাও শ্রেষ্ঠত্বের লক্ষণ l সবাই একজোট হলে অন্য আত্মারাও মিলন উদযাপনের কাছাকাছি আসে l হৃদয়ের সঙ্কল্প ঐক্যবদ্ধ করা অর্থাৎ অনেক আত্মাদের মিলনোৎসব পালনে সমর্থ করে তোলা l এই লক্ষ্যে তোমরা সবকিছু করছো আর করতে থাকবে l আচ্ছা - ফরেনার্স সবাই ঠিক আছো ? তোমরা সন্তুষ্ট ? সবাই তোমরা এখন বড় হয়ে গেছ l সবকিছু সামলাচ্ছ l আগে তোমরা ছোট ছিলে, আর দুষ্টুমি করতে, এখন সেখানে তোমরা অন্যদের দায়িত্ব নিচ্ছ, দেখভাল করছো l এরকম নয় যে তোমাদেরকে অন্যের সামলানোর প্রয়োজন l এখন মেহনত তোমরা নাও না বরং অন্যদের জন্য মেহনত করো l তোমরা কমপ্লেন করোনা, বরং তোমরা কমপ্লিট l তোমাদের এখনও কোনো কমপ্লেনস্ নেই, আর পরেও নেই, এইরকমই তো, তাই না ? সদা খুশির খবর দাও l আর যারা আসেনি, তাদেরকে মায়াজিৎ বানাও l তখন তারা বেশি পত্র লিখবে না l শুধু *আমি ও. কে* .l তোমরা ভালো ভালো বিষয় লিখতে পারো, কিন্তু শর্টে l আচ্ছা l
*টিচারদের সাথে আলাপআলোচনাঃ* -
টিচারদের প্রতি বাপদাদার বিশেষ ভালোবাসা আছে, কারণ তোমরা সমান l বাবাও টিচার আর তোমরাও মাস্টার টিচার l যেমনই হোক, যারা সমান, তারা অতি প্রিয় হয় l অতি উদ্যম-উত্সাহের সাথে তোমরা সেবাতে এগিয়ে যাচ্ছ l সবাই তোমরা চক্রবর্তী l চতুর্দিকে পরিক্রমণ করাকালীন তোমরা অনেক আত্মার সম্বন্ধে এসেছো, অনেক আত্মাদের কাছে আনার কাজ করেছো l বাপদাদা খুশি l এইরকমই তো বোধ হয় যে বাপদাদা আমাদের প্রতি খুশি, নাকি মনে হয় এখনো কিছু করা বাকি ! তিনি খুশি, কিন্তু তোমাদের তাঁকে আরও খুশি করতে হবে l ভালো মেহনত করছো তোমরা, ভালোবাসার সাথে মেহনত করছো, তাই মেহনত কঠিন বলে বোধ হয় না l সার্ভিসেবল বাচ্চাদের বাপদাদা সদাই *মাথার মুকুট* বলেন l তোমরা শিরোভূষণ l বাচ্চাদের উদ্যম-উৎসাহ দেখে বাপদাদা উদ্যম-উৎসাহ বাড়ানোর জন্য সহযোগ দেন l *এক কদম বাচ্চাদের, পদম কদম বাবার* l যেখানেই হিম্মত সেখানেই উল্লাসের প্রাপ্তি নিজে থেকেই হয় l যখন তোমাদের সাহস থাকে তোমরা বাবার সহায়তা লাভ করো l এই কারণে তোমরা বেপরোয়া বাদশাহ, সেবা করতে থাকো l সফলতা পেতে থাকবে l আচ্ছা -
*০৭-১০-১৮ প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ১৩-০২-৮৪ মধুবন*
*"অশান্তির কারণ অপ্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তির কারণ অপবিত্রতা"*
( *কনফারেন্সের পরে অতিথিদের সাথে অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎকারঃ*)
আজ প্রেমের সাগর, শান্তির সাগর বাবা, শান্তিপ্রিয় এবং প্রেমের প্রতিমূর্তি নিজের বাচ্চাদের সাথে মিলিত হতে এসেছেন l সারা বিশ্বের আত্মাদের শান্তির জন্য একই আশা এবং প্রকৃত ভালোবাসা দেখে, বাপদাদা তোমরা সব বাচ্চাদের কাছে এসেছেন, তোমাদের সেই ইচ্ছাপূরণ করার সহজ বিধি দেখাতে l বহু সময় ধরে বিভিন্ন রূপে এই আশা পূরণ করার জন্য তোমরা বাচ্চারা যে প্রয়াস করেছো তা' দেখে করুণাময় বাবার তোমরা সব বাচ্চাদের প্রতি করুণা হয়, তোমরা দাতার বাচ্চারা এক মুহূর্তের শান্তি অথবা স্বল্প সময়ের শান্তির জন্য *দাও, দাও* বলছো ! অধিকারী বাচ্চারা ভিখারী হয়ে শান্তি আর স্নেহের জন্য চারিদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছ ! ঘুরতে ঘুরতে কোনো কোনো বাচ্চা হতোদ্যম হয়েছে l প্রশ্ন উঠেছ, বিশ্বে কি অবিনাশী শান্তি হতে পারে? সব আত্মার মধ্যে প্রকৃত নিঃস্বার্থ স্নেহ হতে পারে ?
বাচ্চাদের এই প্রশ্নের উত্তর দিতে বাবাকে স্বয়ং আসতেই হয়েছে l বাপদাদা বাচ্চাদের এই খুশির খবর শোনাতেই এসেছেন, তোমরা আমার বাচ্চারা কাল শান্তি আর সুখময় দুনিয়ার মালিক ছিলে l সকল আত্মারা প্রকৃত স্নেহের সূত্রে বাঁধা ছিলে l শান্তি আর প্রেম তো তোমাদের জীবনের বিশেষত্ব ছিলো l ভালোবাসার সংসার, সুখের সংসার, জীবনমুক্ত সংসার, যা তোমরা এখন আশা রাখো, ভাবছো যে এইরকম বিশ্বে হওয়া উচিৎ, তোমরা সেই সংসারের কাল মালিক ছিলে l আজ সেইরকম সংসার বানাচ্ছ আর কাল আবার সেই সংসারে হবে l কালকেরই তো ব্যাপার ! তোমাদের এই ভূমিই কাল স্বর্গভূমি হবে l ভুলে গেছ তোমরা, এটা তোমাদের রাজত্ব ছিলো, সুখসম্পন্ন রাজ্য যেখানে দুঃখ অশান্তির লেশমাত্র নেই, অপ্রাপ্তি নেই ! অপ্রাপ্তিই অশান্তির কারণ আর অপ্রাপ্তির কারণ অপবিত্রতা l সুতরাং, যেখানে অপবিত্রতা নেই, অপ্রাপ্তি নেই সেখানে কি হবে ? তোমাদের যা ইচ্ছা আছে অথবা তোমরা যে প্ল্যান তৈরি করো সেটা প্র্যাকটিক্যালে পরিণত হবে l সেই ড্রামার ভবিতব্য অটল এবং অনড়, কেউ এটা বদলাতে পারবে না l পূর্ব নির্দিষ্ট ঘটনা আগে থেকেই নির্ধারিত হয়ে আছে l বাবা দ্বারা নতুন রচনা রচিত হয়ে গেছে l সবাই তোমরা কে ? নতুন রচনার তোমরা ফাউন্ডেশন স্টোন l নিজেদের সেইরকম ফাউন্ডেশন স্টোন মনে করো, তবেই তো তোমরা এখানে এসেছো, তাই না ! ব্রাহ্মণ আত্মা অর্থাৎ নতুন দুনিয়ার আধার মূর্ত l বাপদাদা এইরকম আধারমূর্ত বাচ্চাদের দেখে পুলকিত হন l বাপদাদাও গীত গান, *"বাহ্ আমার প্রিয়, হারানিধি বাচ্চারা"* ! তোমরাও তো গীত গাও, তাই না ! তোমরা বলো, *"তুমিই আমার"*, আর বাবাও বলেন, *"তুমিই আমার"* l শৈশবে এই গান তো অনেক গাইতে, তাই না !
(দু'তিনজন বোন সেই গীত গাইলো আর তার রিটার্ণে বাপদাদা রেসপন্ড দিচ্ছিলেন ) l
মুখের আওয়াজ যেমনই হোক, বাপদাদা হৃদয়ের ধ্বনি শোনেন l বাবা গীত রচনা করেছেন আর বাচ্চারা সেটা গেয়েছে l আচ্ছা l(কিছু ভাই-বোন নিচে হলে তথা ওম্ শান্তি ভবনে মুরলি শুনছিলো, বাপদাদা সম্মেলনে আসা অতিথিদের সাথে আলাপালোচনা করছিলেন) নিচেও কিছু বাচ্চা বসে আছে l বাপদাদা স্নেহভরা চেহারা দেখছেন আর তাদের মিষ্টি-মধুর অনুযোগ শুনছেন l তোমরা সব বাচ্চারা সস্নেহে অন্তর্মন থেকে বিশ্ব সেবার পার্ট প্লে করেছো l বাপদাদা তোমাদের সকলের একনিষ্ঠার জন্য স্নেহের দোলায় দুলিয়ে অভিনন্দিত করছেন l *তোমরা দীর্ঘজীবী হও* , *ক্রমাগত উন্নতি করো* , *উড়তে থাকো, সদা সফল হও* l সকলের স্নেহের সহযোগ বিশ্বের কার্য সফল করেছে l যদি বাপদাদা একেকজন বাচ্চার প্রীতিপূর্ণ মেহনত দেখে দিনরাত সেই সম্পর্কে বর্ণন করতে থাকেন তো তাও কম হয়ে যাবে l বাবার মহিমা যেমন *অপরম-অপার* , সেইরকমই বাবার সেবাধারী বাচ্চাদের মহিমাও অপরম-অপার l একের প্রতি অনুরাগ, এক বিষয়ে উদ্যম এবং একমাত্র দৃঢ় সঙ্কল্প থাকে যে বিশ্বের সকল আত্মাদের শান্তির বার্তা অবশ্যই দিতে হবে l এই অনন্য নিষ্ঠার প্রত্যক্ষ স্বরূপে সাফল্য থাকে আর সদা থাকবে l দূরের যারা, তারাও কাছেই আছে l তোমরা নিচে বসে নেই বরং বাপদাদার নয়নে আছো l কেউ ট্রেনে কেউ বাসে ফিরে যাচ্ছে, কিন্তু বাপদাদার সবাইকে মনে আছে l তাদের মনের সঙ্কল্পও বাপদাদার কাছে পৌঁছেছে l আচ্ছা l
বাবার ঘরে তোমরা যারা এসেছো, তারা অতিথি নও, কিন্তু তোমরা মহান আত্মা হতে যাচ্ছ l বাপদাদা তোমাদের সবাইকে আই.পি.এস অথবা ভি.আই. পি হিসেবে দেখেন না, বরং তোমাদের হারানিধি বাচ্চারূপেই দেখেন l ভি.আই. পি.রা তো আসবে আর অল্প সময়ের জন্য দেখে শুনে চলে যাবে l কিন্তু বাচ্চারা সদা হৃদয়ে থাকবে l যেখানেই যাও তোমরা, থাকবে তো হৃদয়েই l তোমাদের নিজেদের ঘরে তথা বাবার ঘরে পৌঁছানোর জন্য অভিনন্দন l বাপদাদা সব বাচ্চাদের মধুবনের অর্থাৎ তাঁর ঘরের শৃঙ্গার মনে করেন l বাচ্চারা ঘরের শৃঙ্গার l কে তোমরা ? শৃঙ্গার, তাই না ! আচ্ছা l
যারা সদা দৃঢ় সঙ্কল্পধারী, সাফল্যের নক্ষত্র, সদা হৃদয় সিংহাসনাসীন, সদা স্মরণ আর সেবার নিষ্ঠায় মগ্ন থাকে, নতুন রচনার আধারমূর্ত, যারা সদাকালের জন্য বিশ্বকে নতুন আলো, নতুন জীবন দিয়ে সকলকে প্রকৃত স্নেহের অনুভব করায়, এইরকম স্নেহী সহযোগী, নিরন্তর সাথী বাচ্চাদের স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l
বরদান:-
নিজের সর্বকর্ম দ্বারা দিব্যতার অনুভূতি করিয়ে দিব্য জীবনধারী ভব
বাপদাদা তোমাদের প্রত্যেক বাচ্চার দিব্য জীবন তথা দিব্য মূর্তি বানিয়েছেন অর্থাৎ দিব্য মূর্তি তাদেরই, যাদের দিব্য সঙ্কল্প থাকে, যারা দিব্য বোল বলে এবং দিব্য কর্ম করে l দিব্যতা সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণের শ্রেষ্ঠ শৃঙ্গার l দিব্য জীবনধারী আত্মা যে কোনও আত্মাকে নিজের সব কর্ম দ্বারা সাধারণের ঊর্ধ্বে যাওয়ার দিব্যতা অনুভূতি করাবে l দিব্য জন্মধারী ব্রাহ্মণ তন দ্বারা সাধারণ কর্ম আর মন দ্বারা সাধারণ সঙ্কল্প করতে পারে না l তারা ধনকেও সাধারণ কার্যে ব্যবহার করতে পারেনা l
স্লোগান:-
তোমরা হৃদয় দিয়ে সদা গীত গাইতে থাকো, যা পাওয়ার ছিলো তা' পেয়ে গেছি* . . . *তবেই তোমাদের চেহারায় খুশি থাকবে* l