31-12-2018 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
একমাত্র বাবার সঙ্গে প্রকৃত ভালোবাসা থাকলে বাবা তোমাদের নিজের সাথে ঘরে নিয়ে যাবেন,
সব পাপ থেকে মুক্ত করে দেবেন, স্বর্গের মালিক করবেন"
প্রশ্ন:-
নিজেকে খুশী রাখতে
কোন্ মুখ্য ধারণাটির প্রয়োজন ?
উত্তর:-
খুশীতে তখনই থাকতে
পারবে যখন নিজের সঙ্গে আত্মিক কথোপকথন (রূহরিহান) করার পদ্ধতি জানবে। কোনো জিনিসের
প্রতি যেন আসক্তি না থাকে। উদরপূর্তির জন্যে দুটো রুটি হলেই হল, ব্যস - এমন অনাসক্ত
বৃত্তির ধারণা হলে খুশী থাকবে। জ্ঞানের মনন করে নিজেকে খুশী রাখো। তোমরা হলে
কর্মযোগী, কর্ম করতে, সংসারের যাবতীয় কাজ করতে, খাবার খাওয়ার সময়েও বাবাকে স্মরণ করো।
স্বদর্শন চক্র বুদ্ধিতে যেন ঘুরতে থাকে, তাহলে খুব খুশীর অনুভব হবে ।
গীত:-
না সে আমার কাছ থেকে
দূরে যাবে, না মন থেকে প্রেমের এই অনুভব চলে যাবে ....
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি
বাচ্চারা গীত শুনল। এ হল বাচ্চাদের বা আত্মাদের নিজের পরমপিতা পরমাত্মার সঙ্গে
আত্মিক প্রেম। এই অলৌকিক (রূহানী) ভালোবাসা শুধুমাত্র তোমাদের অর্থাৎ ব্রাহ্মণ
বাচ্চাদের হয়। তোমরা নিজেদের আত্মা নিশ্চয় কর। কিন্তু যখন বলা হয় আত্মা-ই পরমাত্মা,
তখন আত্মা কার প্রতি প্রেম রাখবে। ভালোবাসা হয় বাচ্চাদের, বাবার সঙ্গে। বাবার সঙ্গে
বাবার ভালোবাসা হতে পারেনা। এখন তোমরা বুঝতে পারো আমরা আত্মারা নিজের পরমপিতা
পরমাত্মার সঙ্গে প্রেম যুক্ত হচ্ছি। এই প্রেম-ই তোমাদের সঙ্গে নিয়ে যায়। তোমরা যখন
রূহানী ভালোবাসা রাখো বাবার সঙ্গে তখন কষ্টও সহ্য করতে হয়। সম্পূর্ণ দুনিয়া, ঘরের
পরিবার পরিজন সবাই শত্রু হয়ে যায়।
বাচ্চাদের বোঝানো হয়েছে যে পতিত-পাবনী গঙ্গা নয়। মানুষ পবিত্র হওয়ার আশায় গঙ্গা বা
যমুনার তটে হরিদ্বার বা কাশীতে গিয়ে বাস করে। এই দুটি হল প্রধান স্থান । বলা হয় -
হে পতিত পাবনী গঙ্গা। এবারে ঐ গঙ্গা তো কানে শোনে না। শুনতে পান তিনি। তিনি তো হলেন
একমাত্র পতিত পাবন বাবা। এখন তোমরা সেই বাবার সামনে বসে আছ। বাবা বলছেন তোমরা
পবিত্র হবে কিভাবে ? গঙ্গা নদী কী বলে - মামেকম্ স্মরণ করলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ
হবে ! বাবা বলেন - আমি প্রতিজ্ঞা করি, যদি তোমরা আমাকে, অর্থাৎ তোমাদের পিতাকে
স্মরণ করো, তবে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে। তিনি গ্যারান্টি দেন, গঙ্গা তো গ্যারান্টি
দিতে পারে না। যেমন মানুষ রাবণকে প্রতি বছর দহন করে, কিন্তু রাবণের মৃত্যু হয় না।
তেমনই জন্ম-জন্মান্তর গঙ্গা স্নান করেও পতিত থেকে পবিত্র কেউ হয় না । বার-বার স্নান
করতে যায়। একবার স্নান করে পবিত্র হয়ে গেলে আবার স্নান করার জন্যে কেন যায় ? কত মেলা
আয়োজিত হয়। তাকে আত্মা-পরমাত্মার সঙ্গম বলা হবে না। ভক্তি মার্গে ভিড় হয় মেলায়। এখন
তোমরা বাবার সঙ্গে বুদ্ধি যোগ লাগাও। তোমরা জানো আমরা আত্মারা হয়েছি প্রেমী। আত্মা-ই
ভগবানকে স্মরণ করে শরীর দ্বারা। বাবা বলেন আমিও এই শরীর দ্বারা তোমাদের পড়াই তাই
সর্বদা বাবাকে স্মরণ করতে থাকো। "বাবা" - বললে স্বর্গ নিশ্চয়ই স্মরণে আসবে এবং নিজ
মুক্তিধামও স্মরণে আসবে। মুক্তিকে নির্বাণধামও বলা হয়।
এ হল সাকারী দুনিয়া। যতক্ষণ আত্মারা এখানে না আসছে ততক্ষণ সাকারী দুনিয়া বৃদ্ধি হবে
কিভাবে ? আত্মারা নিরাকারী দুনিয়া থেকে আসে। মনুষ্য সৃষ্টি বৃদ্ধি হতেই থাকে। অনেকে
ভাবে ন্যাচারাল বৃদ্ধি হয়। তোমরা জানো আত্মারা এখানে আসে, বৃদ্ধি হতেই থাকে।
বাচ্চারা জেনেছে যে সুইট হোম হল শান্তিধাম। অনেকে শান্তি পছন্দ করে। তোমরা জানো
শান্তিধাম তো হল আমাদের সুইট গড ফাদারলি হোম। ভারতবাসী বিদেশ থেকে ফিরে এসে বলে আমরা
নিজের সুইট হোম ভারতে ফিরে আসি। যেখানে জন্ম হয় সেই দেশ প্রিয় লাগে। বলে আমাদের
সুইট হোমে (ভারতে) নিয়ে চলো। আচ্ছা, যদি মৃত্যু হয়, আত্মা তো চলে যায়। তারপরে শরীর
এখানে নিয়ে এসে শেষ কার্য করা হয়। তারা ভাবে ভারতের মাটি ভারতেই যেন মিশে যায়। নেহরু
মারা গেলেন তো ওনার অবশেষ দেখো কোথায় নিয়ে গেছে ! জমিতে ছড়ানো হয়েছে। তারা ভেবেছে
ভালো ফসল হবে। কিন্তু প্রতিটি জিনিসকে তারা যতই মান দিক, পুরানো তো হবে নিশ্চয়ই।
কতই কষ্ট সহ্য করছে ! পিতার পরিচয় জানা নেই। তোমরা বাবার পরিচয় জেনে বর্সা প্রাপ্ত
করছ। তাই তোমাদের মিত্র আত্মীয় স্বজনদেরও স্বর্গবাসী করতে ইচ্ছে হয়। যদি তোমরা কাউকে
বলো স্বর্গবাসী হও তাহলে তারা বলবে তোমরা কি আমাদের মারতে চাও ! তোমরা বাচ্চারা জানো
- শ্রীমৎ অনুসারে আমরা শ্রেষ্ঠ স্বর্গবাসী হচ্ছি। দেহী-অভিমানী হতে খুব পরিশ্রম লাগে।
ক্ষণে ক্ষণে দেহ-অভিমানে এসে বাবাকে ভুলে যাও। এখন তোমরা সামনে বসে আছো। জানো আমরা
নিজের পরমপিতা পরমাত্মার কাছে এসেছি। বাবা বলেন - এর আগে কখনও দেখা হয়েছিল ? তখন
সাথে সাথে বলে - হ্যাঁ বাবা, পাঁচ হাজার বছর আগে। এ হল তোমাদের গুপ্ত কথা। অন্য কেউ
কপি করতে পারে না। যদিও কেউ কেউ কৃষ্ণের বেশ ধারণ করে বলে আমরা এসেছি স্বর্গের
স্থাপনা করতে, কিন্তু ৫ হাজার বছর আগেও স্বর্গ স্থাপন করা হয়েছিল - সে কথা তারা বলতে
পারে না। তোমরাই বলো - বাবা, ৫ হাজার বছর পূর্বে আমরা আপনার কাছে বর্সা নিতে
এসেছিলাম। আপনি রাজ যোগের শিক্ষা দিয়েছিলেন। এই কথা আত্মা বলে শরীর দ্বারা। নিজেকে
আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করতে হবে। এতে সর্বব্যাপীর কোনো কথাই নেই। *এই কথাও
বোঝে না যে ব্রহ্মা নিশ্চয়ই সাকারে হওয়া উচিত, যাঁর দ্বারা পরমপিতা পরমাত্মা সৃষ্টি
রচনা করেন*।
পতিত পাবন বাবা আসেন এবং এসে দেবী-দেবতা স্বরূপ পবিত্র করেন। বাবা-ই হলেন স্বর্গের
রচয়িতা। সুতরাং স্বর্গে অবশ্যই মানুষের প্রয়োজন। বাবা এসে তোমাদের স্বর্গের দ্বার
বলে দেন। তোমরা চেষ্টা কর আমরা নরকবাসীদের স্বর্গবাসী করি। কোনো বিশিষ্ট
ব্যক্তিদেরকে যদি সরাসরি বলো যে তুমি পতিত নরকবাসী, তাহলে তার মেজাজ গরম হয়ে যাবে।
এখন তোমরা জানো আমরা নরক থেকে বের হয়ে স্বর্গের দিকে যাচ্ছি। এখন আমরা হলাম
সঙ্গমবাসী। আমরা আত্মারা এখন যাচ্ছি - এই শরীর ত্যাগ করে বাবার সঙ্গে, বাবার ঘরে (পরমধাম)।
এ হল তোমাদের আত্মিক বা আধ্যাত্মিক যাত্রা। বাবার স্মরণে থাকতে হবে। তোমরা ভাবো এই
শরীর যতক্ষণ আছে ততক্ষণ যাত্রা থাকবে। কর্মও করতে হবে। খাও দাও, রান্না কর। যত সময়
পাবে বাবাকে নিশ্চয়ই স্মরণ করতে হবে। অফিসে বসে থাকো, দেখো অবসর সময়ে বাবাকে স্মরণ
করো। তাতে অনেক উপার্জন। যখন ট্রেনে বসে যাত্রা কর, সেই সময় কোনো কাজ থাকে না। বসে
বসে বাবাকে স্মরণ করতে থাকো। এখন আমরা বাবার কাছে ফিরে যাই। বাবা পরমধাম থেকে
আমাদের নিতে এসেছেন। আচ্ছা, সন্ধ্যে বেলায় ঘরে খাবার তৈরি করার সময় একে অপরকে স্মরণ
করাও - এসো, আমরা নিজের বাবার স্মরণে বসি। একে অপরকে পয়েন্ট শোনাও। আমরা হলাম স্ব
দর্শন চক্রধারী। বাবা বলেন - তোমরা হলে লাইট হাউস, পথ বলে দাও। উঠতে, বসতে, চলতে
তোমরা হলে লাইট হাউস। একটি চোখে মুক্তি, আরেকটিতে জীবনমুক্তি। স্বর্গ এখানে ছিল।
এখন নেই। এখন তো হল নরক। বাবা আবার স্বর্গ স্থাপন করছেন। বাবা বলেন আমি তোমাদের
গুলগুল অর্থাৎ ফুলে পরিণত করি। তারপরে তোমরা গিয়ে মহারানী, পাটরানী হবে। খদ্দরের
রানী হবে না। তোমাদের ১৬ কলা সম্পূর্ণ হতে হবে, ১৪ কলা নয়। শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন ১৬ কলা।
তোমরা কন্যারা কত ব্রত নিয়ম ইত্যাদি করতে ! ৭ দিন নির্জলা থাকতে, কত পরিশ্রম করতে
! কিন্তু কৃষ্ণপুরীতে যেতে পারোনি। এখন তোমরা কৃষ্ণপুরী স্বর্গে যাওয়ার জন্যে
প্রাক্টিক্যালে পুরুষার্থ করছ। কৃষ্ণকে দ্বাপরে নিয়ে গেছে, স্বর্গের ঠিকানা কারো
জানা হয় না। বাস্তবে ৭ দিনের অর্থ কি, সে কথা তোমরা এখন জানো। বাবা ব্যতীত আর কাউকে
স্মরণ করবে না। বাকি নির্জলা ইত্যাদির কোনো ব্যাপারই নেই। বাবাকে স্মরণ করলে তোমরা
বাবার কাছে চলে যাবে। বাবা তারপরে স্বর্গে পাঠিয়ে দেবেন। ব্রত ইত্যাদি করে তোমরা
অনেক দিন অনাহারে থেকেছ ! জন্ম জন্ম অনেক পরিশ্রম করেছ ! প্রাপ্তি কিছুই হয়নি। এখন
তোমাদের সেসব থেকে মুক্ত করে সদগতির মার্গে নিয়ে যাওয়া হয়। তোমরা বল - বাবা, কল্প
পূর্বেও আপনার সঙ্গে দেখা হয়েছিল স্বর্গের বর্সা প্রাপ্তির জন্যে। বাবা বলেন প্রতি
পদক্ষেপে পরামর্শ নাও। সব হিসেব নিকেশ জিজ্ঞাসা কর। বাবা পরামর্শ দিতেই থাকবেন।
যদিও তোমরা নিজের ব্যবসা ইত্যাদি করতে থাকো। তবুও বাবা পরামর্শ দিতে থাকবেন। দেখবেন
- ব্যবসায় খুব ব্যস্ত হয়েছে তখন পরামর্শ দেবেন। এত কেন চিন্তা করছ ? যতদিন বাঁচবে
উদরপূর্তির জন্য দুটো রুটির তো প্রয়োজন । গরিব ও ধনী দুয়ের-ই চলে যায় । ধনীরী জন
ভালো ভালো খাবার খায় আর রুগী হয়। ভীলদের দেখো, কতো শক্তিশালী হয় তারা। তারা কি আর
খায় ! কত কাজ করে ! নিজের কুঁড়ে ঘরে খুশীতে থাকে। সুতরাং এই সময় তোমাদের অন্য সব আশা
ত্যাগ করা উচিত। দুটো রুটি খেয়ে পেট ভরে গেলেই ব্যস, বাবাকে স্মরণ করতে হবে। তোমরা
হলে রূহানী সন্তান, পরমপিতা পরমাত্মা স্বরূপ প্রেমিকের তোমরা প্রেমিকা হয়েছ। বাবাকে
যত স্মরণ করবে ততই বিকর্ম বিনাশ হবে এবং যাঁকে স্মরণ কর তাঁর সঙ্গে মিলিত হবে। অনেকে
চায় সাক্ষাৎকার হোক, ইত্যাদি ইত্যাদি। বাবা বলেন ঘরে থেকেও তোমাদের হতে পারে।
শিববাবাকে স্মরণ করলে তোমাদের বৈকুণ্ঠের সাক্ষাৎকার হবে, কৃষ্ণপুরী দেখবে। এখানে তো
বাবা তোমাদের বৈকুণ্ঠের মালিক করেন। শুধুমাত্র সাক্ষাৎকারের কথা তো নেই। আমাকে
স্মরণ করো কারণ আমি তোমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছি । শিববাবাকে স্মরণ করতে হবে।
তিনিই কৃষ্ণপুরীর মালিক করবেন। এইসব কৃষ্ণ করবে না। শিববাবাকে স্মরণ করলে তোমাদের
বৈকুণ্ঠের বাদশাহী প্রাপ্ত হয়। এখন তিনি পরমধাম থেকে এসে রয়েছেন। নিশ্চয়ই এসেছিলেন,
তবেই তো মন্দির ইত্যাদি স্মারক রূপে তৈরি হয়ে আছে তাই না ! শিবের মন্দির আছে। শিব
জয়ন্তীও পালন হয় তাই না ! কিন্তু ভারতে কিভাবে আসেন - এই কথা কারো জানা নেই।
কৃষ্ণের দেহে তো আসেন না। কৃষ্ণ থাকেন সত্যযুগে। শিবের বিশাল মন্দির আছে। কৃষ্ণের
মন্দির এত বড় নয়। সোমনাথের মন্দির কত বড় ! কৃষ্ণের মন্দিরে রাধে-কৃষ্ণের বহু
অলঙ্কারে সজ্জিত দেখানো হয়। শিবের মন্দিরে অলঙ্কার ইত্যাদি দেখবে না। এবারে শিববাবা
তো ঐ বিশাল মহলে থাকেন না। থাকেন শ্রীকৃষ্ণ। বাবা বলেন আমি মহলে থাকি-ই না। কিন্তু
ভক্তিমার্গে বিশাল সুসজ্জিত হীরে-জহরতের মন্দির তৈরি করেছে ! যারা শিববাবার কাছে
স্বর্গের বর্সা প্রাপ্ত করেছে তারা-ই এত উঁচু শিবের মন্দির তৈরি করেছে। স্মারক
চিহ্ন রূপে বিশাল মন্দির তৈরি করা হয়েছে ! তাহলে তারা নিজেরা কতই না ধনী হবে ! খুব
সুন্দর সুন্দর মন্দির বানিয়েছে। বম্বেতে বাবুরিনাথে শিবের মন্দির আছে।
লক্ষ্মী-নারায়ণের মন্দির মাধব-বাগানে আছে। বাবা বলেন আমি তোমাদের স্বর্গের মালিক করি।
তাই ভক্তি মার্গে তোমরা বিশাল মন্দির তৈরি কর এবং এখন দেখো কেমন কুঁড়ে ঘরে বসে আছি
! তোমাদেরও নাম সুখ্যাত হবে। তোমরা জানো আমাদের মন্দির তৈরি হবে। আমাদের পিতা
শিবেরও অনেক মন্দির আছে, এই হল কামাল । যে ব্যক্তি সোমনাথের মন্দির তৈরি করেছে সে
কতই না ধনী ছিল ! এখন তো গুপ্ত রূপে আছি ! কেউ জানে না। তোমরা জেনেছ পরে কিভাবে
শিববাবার মন্দির তৈরি করতে হবে । ভক্তি মার্গে আসব। মাম্মা-বাবা যাঁরা প্রথম নম্বরে
পূজ্য স্বরূপ হন, বৈকুণ্ঠের মালিক হন, তারপরে সর্বপ্রথমে পূজারী হয়ে তাঁদেরকেই
মন্দিরও তৈরি করতে হবে। সুতরাং মনে মনে এটাই বলবে কিনা - আমরাই পূজারী হয়ে মন্দির
তৈরি করব। এমন কথায় বিচরণ করতে থাকলে এই পুরানো দুনিয়া ভুলে যাবে। নিজেদের মধ্যে
এমন কথা বলা উচিত তাহলে তোমাদের খুশী অনুভব হতে থাকবে। নিজের সঙ্গে আত্মিক
বার্তালাপ (রূহ-রিহান করো) ।
পরমাত্মা (সুপ্রিম রূহ) বসে আত্মাদের (রূহদের) মন ভালো করেন। এই জ্ঞানের দ্বারা খুশী
করেন। তোমরা বল আমরা কল্প বাদে আবার এসেছি। অনেকবার বাবার সঙ্গে মিলিত হয়েছি। বর্সা
প্রাপ্ত করেছি। নিজেদের মধ্যে এমন এমন কথা বলা উচিত। তারপর তোমরা হলে কর্ম যোগী। ঘরে
থেকে রন্ধন ইত্যাদি করো, খুশী থাকবে। তোমরা ৮৪ জন্মের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি জানো। এখন
আমরা ব্রাহ্মণ হয়েছি তারপরে দেবতা হয়ে রাজত্ব করব। পূজারী থেকে পূজ্য হব। তারপরে
প্রাসাদ ইত্যাদি তৈরি করব। নিজেদের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি শোনাও। আমাদের
হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি কিভাবে পরিক্রমা করে - একেই স্বদর্শন চক্রধারী বলা হয়। তোমরা
তিন লোকের কথা জানো। জ্ঞানের নেত্র তোমাদের খুলেছে। এই চক্রকে স্মরণ করে তোমাদের
খুশীর অনুভূতি হওয়া উচিত। বাবাও খুশী থাকেন। এখন তোমরা সেবায় উপস্থিত আছো। তোমরা
সেবাধারী, তোমাদের মন্দির পরে ভক্তি মার্গে তৈরি হবে। এখন বাচ্চারা, আমি তোমাদের
সার্ভিস করতে এসেছি। তোমাদের স্বর্গের সম্পূর্ণ বর্সা প্রদান করতে এসেছি। যে যত
পুরুষার্থ করবে, সেই অনুসারে স্বর্গের মালিক হবে।
আচ্ছা ! মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণ স্নেহ ও
গুডমর্নিং। রূহানী বাবার রূহানী বাচ্চাদেরকে নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১) চলতে ফিরতে লাইট
হাউস রূপে সবাইকে পথ বলে দিতে হবে। সকল আশাকে ত্যাগ করে একমাত্র বাবার স্মরণে থাকতে
হবে। বাবার কাছে পরামর্শ নিতে হবে।
২) জ্ঞানের কথায় বিচরণ করতে হবে। নিজের সঙ্গে কথা বলতে হবে। স্ব দর্শন চক্র ঘুরিয়ে
সদা খুশীতে থাকতে হবে।
বরদান:-
শ্রেষ্ঠ স্বমানের সীটে
বসে সকলকে সম্মান দিতে পারে এমন সর্ব মাননীয় ভব
ব্যাখা: সদা নিজের
শ্রেষ্ঠ স্ব মানে স্থিত থেকে, নির্মান হয়ে সবাইকে সম্মান দিতে থাকো, তবে এই দেওয়া-ই
নেওয়া হয়ে যাবে। সম্মান দেওয়া অর্থাৎ সেই আত্মাকে উৎসাহ উদ্দীপনা প্রদান করা। সদা
স্বমানে থাকলে সর্ব প্রাপ্তি স্বতঃতই হতে থাকবে। স্বমানের কারণে বিশ্ব সম্মান দেবে
এবং সকলের দ্বারা শ্রেষ্ঠ মান পাওয়ার পাত্র, মাননীয় হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
যে সকলকে রিগার্ড দেয়
তার রেকর্ড স্বতঃই ঠিক হয়ে যায় ।