14.11.2018 Morning
Bengali Murli Om Shanti BapDada Madhuban
"মিষ্টি বাচ্চারা -
দেহ-অভিমান মানুষকে কাঁদায়। দেহী-অভিমানী হতে পারলেই সঠিক পুরুষার্থ হয়, ফলে যেমনি
নির্মল ও স্বচ্ছ হৃদয় হবে, তেমনি সম্পূর্ণ রূপে বাবাকে অনুসরণ করতে পারবে"
প্রশ্নঃ -
যে কোনও
পরিস্থিতি বা প্রতিকূলতার স্থিতিতে নির্ভয় ও একরস হয়ে থাকতে পারো কখন?
উত্তরঃ -
ড্রামার এই
জ্ঞানে যখন সম্পূর্ণ রূপে নিশ্চয়তা আসবে, তখন যে কোনও প্রতিকূলতাই সামনে হাজির হোক
না কেন, তা ড্রামাতে নির্দ্দিষ্ট - এমন ভাবই আসবে, পূর্ব কল্পেও যা অতিক্রম করেছি,
অতএব এতে ভয়ের কিছু নেই। অবশ্য বাচ্চাদেরও মহাবীর হতে হবে। যে সম্পূর্ণ রূপে বাবার
সহযোগী সুপুত্র হয়, সে বাবার হৃদয়াসনে জায়গা করে নেয়। এমন বাচ্চারাই সদা স্থির ও
একরস অবস্থায় থাকে।
গীত :-
ওগো দূর-দেশের
অভিযাত্রী, আমাকেও নিয়ে চলো সাথে ........!
ওঁম্ শান্তি!
বিনাশের সময়েও
কিছু না কিছু অবশ্যই বেঁচে যায়, বিনাশের হাত থেকে। তখন যেমন রামের কিছু সেনা আবার
রাবণের কিছু সেনা- উভয় তরফেরই কিছু কিছু বেঁচে থাকে। কিন্তু, কেবল রাবণের সেনারাই
কাঁদে। প্রথমতঃ তারা সাথে যেতে পারে না, এছাড়াও তাদের শেষের দিকটা খুবই কষ্টের,
যেহেতু চারিদিকেই তখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। তোমাদের বি.কে.-দের মধ্যে যারা অনন্য
হবে, কেবল তারাই বিনাশ দেখার যোগ্য। যেহেতু তারা বীর অঙ্গদ-এর মতন স্থির। একমাত্র
তোমাদের মধ্যে ছাড়া আর কেউ সেই বিনাশ দেখে স্থির থাকবে না। চতুর্দিকে ত্রাহি-ত্রাহি
রব এমন হবে যে, অপারেশন হবার সময় তা দেখে যেমন সামনে কেউ দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না-
তেমনই। কিন্তু তোমরা বি.কে.-রা তা পারো। চারিদিকে হাহাকারও হতে থাকবে। যারা বাবার
অনন্য সুপুত্র, অর্থাৎ সহযোগী বাচ্চা, কেবল তারাই বাবার হৃদয়াসনে স্থান পাবে।
হনুমান কোনও একজন নয়। সম্পূর্ন মালা-ই হনুমান ও মহাবীরদের। যেমন রুদ্রাক্ষের মালা -
তেমনই। রুদ্র ভগবানের জন্য যে মালা-"রুদ্রাক্ষ-মালা"। প্রকৃত রুদ্রাক্ষ মহামূল্যবান
বীজ। এই রুদ্রাক্ষের মধ্যেও আসল/নকল হয়। যা ১০০-টাকায় কিনতে হয়, আবার ২-টাকাতেও
পাওয়া যায়। প্রত্যেক জিনিসের ক্ষেত্রেই এমন। যেমন এই বাবা তোমাদের হীরের মতন
মূল্যবান করে গড়ে তুলছেন, তার তুলনায় অন্যেরা বানায় নকল হীরে। সত্য পরমাত্মার
তুলনায় তারা সবাই যে মিথ্যার কানা-কড়ি। যেমন প্রবাদ আছে- সূর্যের আলোর প্রকাশকে
অন্ধকার ঢেকে রাখতে পারে না। বাবা হলেন জ্ঞান-সূর্য, ওনার প্রকাশের আলোতে অজ্ঞান
লুকিয়ে থাকতে পারে না। সেই সত্য-বাবার সত্য-জ্ঞান পাচ্ছো তোমরা। তোমরা জানো,
সত্য-ঈশ্বর এই বাবার নামে লোকেরা যা বলে, তা সবই মিথ্যা।
তোমরা তো বুঝেছো, গীতার প্রকৃত ভগবান যে শিব, মোটেই তা দৈবগুণধারী দেবতা শ্রীকৃষ্ণ
অবশ্যই নয়। বর্তমান সময়কালটা যখন সঙ্গমযুগ, অতএব সত্যযুগ অবশ্যই আসবে। শ্রীকৃষ্ণের
আত্মাও এখন এই জ্ঞানের পাঠই পড়ছেন। অথচ অজ্ঞ মানুষেরা ভাবে কৃষ্ণই (গীতার) জ্ঞানদাতা।
ধারণার কত আকাশ-পাতাল তফাৎ। যেখানে একজন বাবা, অপরজন তার বাচ্চা। বাবার নামকে লুপ্ত
করে সেখানে বাচ্চার নাম বসিয়ে দিয়েছে অজ্ঞানী পণ্ডিতেরা। তোমরা যতই এই দিশায় এগোতে
থাকবে, ততই নানা সত্য উদ্ঘাটন হতে থাকবে। এটাই প্রথম ও প্রধান মুখ্য কথা। কিন্তু,
লোকেরা এমন ধারণা করলো কেন-বাবা সর্বব্যাপী? যেহেতু গীতাতে কৃষ্ণের নাম উল্লেখ
করেছে-তাই। অবশ্য তোমরা বি.কে.-রা এর প্রকৃত কারণটা জানো। শ্রীকৃষ্ণ এবং
দেবী-দেবতাদের আত্মারা পুরো ৮৪-জন্মই নেয়। একথাও প্রচলিত আছে- আত্মা আর পরমাত্মার
বিচ্ছেদ হয়েছে বহুকাল .....! তোমরা বি.কে.-রাই সর্বাগ্রে পৃথক হও, অন্য আত্মারা তখন
বাবার কাছে সেখানেই থাকে। এর প্রকৃত ভাবটা অন্যেরা কিন্তু বোঝেই না। তোমাদের মধ্যেও
খুব কম সংখ্যকই যথার্থ রীতিতে তা বুঝতে পারে। এই দেহ-অভিমানই সবার দুঃখ-কষ্টের কারণ।
দেহী-অভিমানী হতে পারলেই সঠিক ভাবে পুরুষার্থ করতে পারে, ফলে সঠিক ধারণা খুব সুন্দর
ভাবে ধারণ করে সম্পূর্ন রূপে বাবাকে অনুসরণ করতে পারে। বাবা নিজেও তো এই নাটকের
পার্টধারী। 'ফাদার' দু-জনকেই বলা হয়। কিন্তু তোমরা তা সঠিক বুঝিয়ে বলতে পারো না,
কোন্ বাবা কখন কি বলছেন। যেহেতু বাবা (পরমাত্মা) ও দাদা (আত্মা) উভয়েই একই শরীরে
অবস্থান করছে। কিন্তু, তোমরা অনুসরণ করবে তাকেই, যিনি তার কর্ম-কর্তব্যের অভিনয় করতে
এসেছেন এই দুনিয়ায়।
এবার বাবা বোঝাচ্ছেন - বাচ্চারা, দেহী-অভিমানী হও। অনেক ভাল-ভাল বাচ্চাও
দেহ-অভিমানেই থাকে, তাই তারা বাবাকে স্মরণ করে না। আর যে যোগী নয়, সে সঠিক ধারণা
করতে পারে না। এর জন্য প্রয়োজন সততার। সত্য বাবাকে সম্পূর্ন রূপে অনুসরণ করা উচিত।
যা শুনবে তা ধারণ করে অন্যদেরকেও বোঝাতে থাকো। নির্ভয়চিত্ত হতে হবে। ড্রামার প্রতি
নিশ্চয়তা আনতে হবে। যে কোনও প্রতিকূল অবস্থাই আসুক না কেন, ভাববে এটাই ড্রামায়
নির্দ্ধারিত। সেই প্রতিকূলতা তো তুমি আগেও পেরিয়ে এসেছো। তোমরাই তো বাবার সেই
মহাবীর বাচ্চা। তাই তো তোমাদের এত মহিমা। তোমাদের মধ্যে ৮-জন হবে খুব বড় মহাবীর,
১০৮-জন তাদের থেকে একটু কম, আর ১৬-হাজার তাদের চাইতেও আরও একটু কম মহাবীর। তোমাদেরই
তো তা হতে হবে। পূর্ব কল্পের মতনই আবারও তোমাদের জন্যই স্থাপনার কাজ চলছে। কিন্তু
তবুও সংশয় বুদ্ধিতে এসে অনেকেই এই জ্ঞানের পাঠ ছেড়েও দেয়। নিশ্চয় বুদ্ধির হলে সে
কখনও এমন প্রিয় বাবার সঙ্গ ছাড়ে না। এমনকি জোর জবরদস্তী জ্ঞান-অমৃত পান করাতে
চাইলেও, অনেকে তাও চায় না। তাদের বোধবুদ্ধি যেন খুবই ছোট বাচ্চার মতন। তাই তো বাবা
জ্ঞান-দুধ পান করাতে গেলেও তা পান করে না, মাথা ঘুড়িয়ে রাখে অন্যদিকে। ফলে তাদের
জীবন একেবারে ব্যর্থ-জীবনে পরিণত হয়। এমনকি মুখের উপরে বলেও দেয়, মা-বাবার কোনও
কিছুরই প্রয়োজন নেই তার। আরও বলে -যেখানে আমি শ্রীমৎ অনুসারে চলতেই পারবো না, সেখানে
শ্রেষ্ঠ হবার প্রশ্নই তো নেই। 'শ্রীমৎ' অর্থাৎ ভগবান প্রদত্ত মত। অতএব এমন স্লোগান
লেখা উচিত : নিরাকার জ্ঞান সাগর পতিত পাবন ভগবান শিবাচার্য উবাচঃ - "মাতারা
স্বর্গের দ্বার।" আর অন্যকে তা বোঝাবার জন্য নিজের বুদ্ধিতে পয়েন্টগুলি তৈরী করে
রাখতে হবে। যদিও ছাত্রেরা তাদের ক্রমিক অনুসারেই তা পারবে। তারা প্রত্যেকেই যে যার
নিজের নিজের পার্টও করে চলেছে ড্রামা অনুসারে। ওনাকে (শিববাবাকে) আমরা কেবল দুঃখের
সময়ই স্মরণ করি। বাবা থাকেন বহু দূরের দেশে। আমরা আত্মাধারীরা ওনাকেই স্মরণ করি।
দুঃখের সময় সবাই তাকে স্মরণ করে, অথচ সুখের সময় কেউ না। বর্তমানের এই দুনিয়াটাও যে
দুঃখের দুনিয়া। যা বুঝতে অসুবিধা হয় না মোটেই। অন্যদের বোঝাবার সময় শুরুতেই তা
বোঝাতে হবে যে, একমাত্র এই বাবাই স্বর্গ-রাজ্যের স্থাপনাকার, তবে কেনই বা আমরা ওনার
থেকে সেই স্বর্গ-রাজ্যের বাদশাহী নেবো না? যদিও তা জানা আছে, কিন্তু সবাই তো আর সেই
অবিনাশী আশীর্বাদী-বর্সা পাবে না। সবাই যদি স্বর্গ-রাজ্যে পৌঁছে যায়, তবে তো আর
নরকের কোনও অস্তিত্বই থাকবে না। আর নরক রাজ্য না হলে এত লোকসংখ্যা হবেই বা কি করে?
একথা তো প্রচলিত আছেই - ভারত ভূখণ্ড অবিনাশী-খণ্ড অর্থাৎ অবিনাশী বাবার জন্মস্থান।
এই ভারতই একদা ছিল স্বর্গ-রাজ্য। তাই আমরা আনন্দ সহকারে বলে থাকি- ৫-হাজার বছর আগে
ভারত ছিল স্বর্গ-রাজ্য। চিত্রে তা দেখানো আছে, বরাবরই এই ভারতেই স্বর্গ-রাজ্যের
স্থাপনা হয়। খ্রীষ্ট-জন্মের তিন-হাজার বর্ষ পূর্বে এই ভারতই ছিল সেই স্বর্গ-রাজ্য।
তবে তো অবশ্যই এই ভারতেই ছিল সেই সূর্যবংশী-চন্দ্রবংশীরা। এসবের বহু চিত্রও আছে।
সত্যি, কত সহজ সরল তথ্য। তোমাদের মন-বুদ্ধিতেও যেন এই জ্ঞান চলতেই থাকে। বাবার
আত্মাতে এই জ্ঞান ছিল বলেই তো তোমাদের আত্মাতেও সেই ধারণা করাতে পারছেন উনি। উনি যে
স্বয়ং জ্ঞানের সাগর। তবুও উনিই আবার বলেন-এই প্রজাপিতা ব্রহ্মার সাহায্যে রাজযোগের
শিক্ষা দেওয়ার ফলে বি.কে.-রা হতে পারছে রাজাদেরও রাজা। যদিও পরবর্তীতে এই জ্ঞান
আবার প্রায় লোপ পেয়েও যায়, যে জ্ঞান এখন তোমাদের দেওয়া হচ্ছে। অতএব বাচ্চারা, এখন
তোমরা অন্যদের সাথে এ বিষয়ে তর্কও করতে পারবে। যদিও এর জন্য তেমন বুদ্ধিমান
বাচ্চারই প্রয়োজন। বাবা ওনার নিজের কাছে কখনই উৎকৃষ্ট জিনিষটা রেখে দেন না। তাই তো
উনি বলেন, এতসব ঘর-বাড়ী ইত্যাদি যা কিছুই তৈরী হচ্ছে, তা তো বাচ্চাদেরই থাকার জন্য।
তা না হলে বাচ্চারা এসে থাকবে কোথায়! আগামীতে এই সব বাড়ী-ঘর তো তোমাদেরই হবে।
ভগবানের চৌখাটে ভক্তদের ভিড় তো উপচে পড়বেই। তারা ভগবানকে এতসব দিয়েছে তো এসব তৈরী
করার জন্যই। বাস্তব তো এটাই। তোমরা ভাবো তখন সেখানে কতই বা ভীড় হবে। দুনিয়ায়
অন্ধশ্রদ্ধার সংখ্যা অনেক। কোথাও কোনো মেলা বসলে কতই না ভীড় হয় সেখানে। কখনও কখনও
তারা নিজেদের মধ্যেই ঝগড়াঝাটি শুরু হয়ে যায়। এই ভীড়ের কারণেই কতজনের মৃত্যুও ঘটে।
কতজনের কতকিছু নষ্ট ও লোকসান হয়। অতএব, এই স্ব-দর্শণ চক্রই সবচেয়ে ভাল পন্থা। সেখানে
অবশ্যই সেখানে স্লোগান লিখে রাখবে। অবশেষে এই মাতাদের কাছেই সবাইকে নতশির হতে হবে।
শক্তির তেমন চিত্রও বানাতে হবে। বাবা তো তোমাদের জন্য সেই জ্ঞান-বারুদ তৈরী করেই
দেন। তোমাদের কেবল তা যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করে বোঝাতে হয়। যা তোমাদের জন্য খুবই সহজ
হয়ে যায়।
ভক্তরা স্মরণ করে ভগবানকে, আর সাধুরা সাধনা করে - ভগবানের সাক্ষ্যাৎ পাবার জন্য।
ভগবানকেই 'বাবা' বলা হয়। চিরকালই তোমরা তার প্রকৃত সন্তান। সুতরাং তোমরা নিজেদের
মধ্যে সম্পর্কে ভাই-ভাই। যেমন হিন্দু-চীনা ভাই-ভাই। কিন্তু সবারই বাবা সেই একজন -
তাই না? আবার জাগতিক হিসাবে তোমাদের মধ্যে ভাই-বোনের সম্পর্ক। অতএব, বিকারী দৃষ্টি
হওয়া উচিত নয় -এটাই পবিত্র থাকার যুক্তি। বাবা বারবার জানাচ্ছেন, কাম-বিকার মহাশত্রু।
অবশ্য তোমরা যদি তা সঠিকভাবে বুঝতে পারো। মুখ্য কথা হলো- "ভগবান সবারই বাবা"। এই
বাবাই স্বর্গ-রাজ্যের স্থাপনা করতে চলেছেন, অতএব বাবার থেকে সেই অবিনাশী
আশীর্বাদী-বর্সা অবশ্যই নিতে হবে তোমাদের। পূর্বেও এই বর্সা পেয়েছিলে তোমরা, কিন্তু
নিজেরাই তা খুইয়েছো। অবশ্য এই ড্রামা যে সুখ-দুঃখের খেলা। যা খুব ভালভাবে বুঝতে ও
বোঝাতে হবে। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ,
ভালবাসা আর সুপ্রভাত। ঈশ্বরীয় পিতা নমন জানাচ্ছেন ওনার ঈশ্বরীয় সন্তানদের।
ধারণার জন্যে
মুখ্য সারঃ-
১) সত্যকে
ধারণ করে বাবার প্রতিটি আচরণকে অনুসরণ করতে হবে। জ্ঞান-অমৃত পান করে অন্যদেরও পান
করাতে হবে। নির্ভয়চিত্ত হতে হবে।
২) আমরা সবাই ভগবানের সন্তান নিজেদের মধ্যে ভাই-ভাই সম্পর্ক-এই স্মৃতিতে নিজের
দৃষ্টি-বৃত্তিকে পবিত্র বানাতে হবে।
বরদানঃ-
বিশেষতাগুলিকে
সামনে রেখে সদা মহানন্দে এগোতে থাকা নিশ্চয়বুদ্ধি বিজয়ী রত্ন ভব
নিজের যা কিছু
বিশেষত্ব আছে, তাকে সামনে রাখো। দুর্বলতাগুলিকে নয়, তবে স্বাভাবিকভাবেই নিজের উপর
আস্থা থাকবে। দুর্বলতাগুলিকে বার বার মনে আনবে না, তবেই আনন্দ সহকারে এগিয়ে যেতে
থাকবে। এই নিশ্চয়তা অবশ্যই যেন থাকে, সর্বশক্তিমান বাবার হাত যে ধরবে, সে সহজেই
ভবসাগর পার হবে। সে সদাই নিশ্চয়বুদ্ধি বিজয়ী রত্ন হয়। নিজের প্রতি নিশ্চয়তা, বাবার
উপর নিশ্চয়তা আর ড্রামার প্রতিটি দৃশ্যকে দেখা সত্ত্বেও তাতেও সম্পূর্ণ নিশ্চয় হতে
পারলে, বিজয়ী হবেই সে।
স্লোগানঃ-
পিউরিটির
রয়েলিটিতে থাকলে এই হদের আকর্ষণগুলি থেকে স্বতন্ত্র থাকতে পারবে।
মাতেশ্বরীজী (মাম্মা)-র
মধুর মহাবাক্য:
"তমোগুণী
মায়ার বিস্তার"
সতোগুণী, রজোগুণী, তমোগুণী - এই যে তিনটি শব্দ ব্যবহৃত হয়, এর যথার্থ ভাবার্থ জানা
খুবই দরকার। লোকেরা ভেবে থাকে এই তিনটি গুণ একসাথেই চলতে থাকে, কিন্তু বিবেক কি বলে
- এই তিনটি গুণ কি একই সাথে চলে, নাকি এই তিনটি গুণের পার্ট চলে ভিন্ন-ভিন্ন যুগে ?
বিবেক তো এমনই বলছে, এই তিনটি গুণ একত্রে চলে না। সত্যযুগে থাকে সতোগুণী, দ্বাপরে
থাকে রজোগুণ আর কলিযুগে হয় তমোগুণ। যখন সতোগুণ থাকে তখন রজোগুণ ও তমোগুণ নয়, আবার
যখন রজোগুণ থাকে তখন সতোগুণ থাকে না। কিন্তু জাগতিক মানুষেরা তো এমনই ভেবে বসে আছে
যে, তিনটি গুণই একত্রে চলে। এমনটি বলা একেবারেই ভুল। তারা ভাবে মানুষেরা যখন সত্যকথা
বলে, কোনও পাপ-কর্ম করে না, তখন সে সতোগুণী হয়। কিন্তু বিবেক বলছে, আমি যখন সতোগুণ
বলছি, তখন সেই সতোগুণের অর্থ সম্পূর্ণ সুখ অর্থাৎ সমগ্র সৃষ্টিজগৎই সতোগুণী। তাই বলে
এমনটা মোটেই বলা যাবে না- যে সত্যকথা বলছে, সে সতোগুণী আর যে মিথ্যা কথা বলছে সে
কলিযুগী তমোগুণী, আর দুনিয়াও সেই হিসাবে চলে আসছে। এখন যদি আমরা সত্যযুগ বলি, তবে
তো তার মানে এই এসে দাঁড়ায়, তবে সমগ্র সৃষ্টিতেই সতোগুণ ও সতোপ্রধান হওয়া চাই।
কিন্তু একথাও ঠিক, কোনও সময়ে তেমনই সত্যযুগ অবশ্যই ছিল, যখন সমগ্র সৃষ্টি-সংসারই
সতোগুণী ছিল। সেই সত্যযুগ এখন আর নেই। বর্তমানের এই দুনিয়াটা কলিযুগী দুনিয়া, অর্থাৎ
সমগ্র সৃষ্টিতেই তমোপ্রধানের রাজত্ব। এই তমোগুণী সময়কালে তবে সতোগুণ আসবেই বা কোথা
থেকে। বর্তমান সময়টা তো ঘোর তমসাচ্ছন্ন হয়ে আছে, যাকে ব্রহ্মার রাত বলা হয়।
ব্রহ্মার দিন অর্থাৎ সত্যযুগ আর ব্রহ্মার রাত হলো কলিযুগ। অতএব এই দুটোকে তো একত্রে
মিলিয়ে দেওয়া যায় না। আচ্ছা! ওঁম্ শান্তি!