09-12-2018
প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ ০৭-০৩-৮৪ মধুবন
কর্মাতীত, বাণপ্রস্থী
আত্মারাই তীব্রগতিতে সেবার নিমিত্ত
মধুবন বরদান ভূমি,
সমর্থ ভূমি, শ্রেষ্ঠ সঙ্গের ভূমি, সহজ পরিবর্তন ভূমি, সর্বপ্রাপ্তির অনুভব করতে
তোমাদের কুশলী বানানোর ভূমি l এমন ভূখণ্ডে এসে সবাই তোমরা নিজেদের সম্পন্ন অর্থাৎ
সব বিষয়ে ভরপুর অনুভব করো ? কোনকিছুর অপ্রাপ্তি নেই, তাই তো ! তোমরা সব ধনভান্ডার
যে লাভ করেছো, সেগুলো সদাকালের জন্য ধারণ করেছো ? তোমরা কি এইরকম ভাবছো যে এখান থেকে
সেবস্থানে ফিরে গিয়ে তোমরা মহাদানী হয়ে এই শক্তি, সকল প্রাপ্তি সবাইকে দেওয়ার
নিমিত্ত হবে ? সবসময়ের জন্য নিজেকে বিঘ্ন-বিনাশক, সমাধান স্বরূপ অনুভব করেছো ?
তোমার একার সমস্যা তো আছেই, কিন্তু অন্য আত্মাদের সমস্যার জন্যও তোমাদের সমাধান
স্বরূপ হতে হবে l
সময়ানুসারে, এখন তোমরা ব্রাহ্মণ আত্মারা সমস্যার আওতার ঊর্ধ্বে চলে গেছ l সমস্যার
বশীভূত হওয়া তো শৈশব অবস্থা l ব্রাহ্মণ আত্মাদের এখন শৈশব অবস্থা সমাপ্ত হয়েছে l
তোমাদের যুবাবস্থায় মায়াজিৎ হওয়ার বিধিতে তোমরা মহাবীর হয়েছো, সেবায় চক্রবর্তী হয়েছো,
অনেক আত্মাদের জন্য তোমরা বরদানী মহাদানী হয়েছো, অনেকরকম অনুভব থেকে তোমরা মহাবীর
হয়েছো l তোমরা এখন বানপ্রস্থের কর্মাতীত স্থিতি লাভ করার সন্ধিক্ষণে পৌঁছে গেছ l
একমাত্র বানপ্রস্থের কর্মাতীত স্থিতির মাধ্যমেই বিশ্বের সকল আত্মাদের অর্ধকল্পের
জন্য কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত করে তাদের মুক্তিতে পাঠাতে তোমরা সক্ষম হবে l শুধুমাত্র
মুক্ত আত্মারাই সেকেন্ডে বাবার থেকে তাদের মুক্তির উত্তরাধিকার নিতে সমর্থ l
আত্মাদের মেজরিটি বানপ্রস্থ স্থিতিতে কর্মাতীত, মহাদানী এবং বরদানী বাচ্চাদের কাছে
মুক্তির ভিক্ষা চাইতে আসবে l ঠিক যেমন এখন মন্দিরে গিয়ে তোমাদের জড় চিত্রের সামনে
সুখ-শান্তির জন্য প্রার্থণা করে l অনেকে তীর্থস্থানে গিয়ে প্রার্থণা করে l কেউ কেউ
ঘরে বসেই চায় l যাদের যতোটা ধারণক্ষমতা তারা ততো দূর পৌঁছায়, কিন্তু তাদের যোগ্যতা
অনুযায়ী তাদের ফলপ্রাপ্তি হয় l কেউ দূরে বসেও অন্তর্মনে প্রার্থণা করে, কেউ কেউ
তীর্থক্ষেত্রে বা মন্দিরে গিয়ে শুধু দেখানোর জন্য করে l তারা করে স্বার্থবশে l
এইসবের হিসেব অনুসারে তাদের যেমন কর্ম, যেমন ভাবনা তেমনই তাদের ফলপ্রাপ্ত হয় l এখন,
সময় অনুসারে তোমরা সব মহাদানী, বরদানী চৈতন্য মূর্তির সামনে তারা প্রার্থণা করবে l
কেউ কেউ সেবাস্থানরূপী মন্দিরে পৌঁছাবে l কেউ কেউ মহান তীর্থ মধুবন পর্যন্ত পৌঁছাবে
আর কেউ কেউ ঘরে বসে বসেই সাক্ষাৎকার ক'রে দিব্য বুদ্ধি দিয়ে প্রত্যক্ষতার অনুভব করবে
l তারা এখানে না এসেও তাদের অনুরাগ এবং দৃঢ় সঙ্কল্পের সাথে প্রার্থণা করবে l তারা
তাদের মন্সায় তোমরা চৈতন্য ফরিস্তাদের আহ্বান করে আঁজলাভর মুক্তির উত্তরাধিকার চাইবে
l অল্প সময়ের মধ্যে সকল আত্মাদের উত্তরাধিকার দেওয়ার কার্য তীব্র গতিতে করতে হবে l
বিনাশের সাধন যেমন রিফাইন হওয়ার কারণে তীব্রগতিতে সমাপ্তির নিমিত্ত হবে, একইরকমভাবে
তোমরা বরদানী মহাদানী অত্মারা নিজেদের কর্মাতীত ফরিস্তা স্বরূপের সম্পূর্ণ শক্তিশালী
প্রতিচ্ছায়ায় সকল আত্মাদের প্রার্থণার রেসপন্স্ (প্রকৃত উত্তর ) হবে আর মুক্তির
অধিকার নিতে তাদেরকে সমর্থ বানাবে l তীব্রগতির এই কাজের জন্য মাস্টার সর্বশক্তিমান,
সর্বশক্তির ভান্ডার, জ্ঞানের ভান্ডার, স্মরণের প্রতিমূর্তি হিসেবে তোমরা প্রস্তুত ?
বিনাশের মেশিনারি আর বরদানের মেশিনারি দুইই একই সময়ে একসাথে তীব্রগতিতে কাজ করবে l
এখন থেকেই বহুকাল সময় ধরে তোমাদের এভাররেডি হতে হবে l তীব্রগতিতে যারা চলে, তারা যদি
সদা কর্মাতীত, সমাধান স্বরূপ থাকার অভ্যাস না করে তবে যখন তীব্রগতির সময় দেওয়ার
প্রয়োজন, তখন সেটার দানকারী হওয়ার পরিবর্তে শুধু দর্শক হয়ে যেতে হবে l যারা বহুকাল
ধরে তীব্র পুরুষার্থী, শুধুমাত্র তারাই তীব্রগতির সেবার নিমিত্ত হতে পারবে l এটাই
হলো বানপ্রস্থের রমণীয় স্থিতি অর্থাৎ সর্ব বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া, পৃথক অথচ প্রিয় (ন্যারে)
হয়ে বাবার সাথে তীব্রগতির সেবা করা l তাহলে, এখন দানশীল হওয়ার সময়, নাকি এখনও
নিজেদের জন্য বা সমস্যার জন্য এই সময়টা গ্রহণকারী হওয়ার সময় ! নিজেদের সমস্যায়
নাস্তানাবুদ হওয়ার সময় এখন পার হয়ে গেছে l সমস্যাও, নিজের দুর্বলতার একটা রচনা l
কারও থেকে বা কোনও সার্কমস্ট্যান্সের (পরিস্থিতি) কারণে আসা সমস্যা কার্যত নিজেদের
দুর্বলতারই ফসল l যেখানেই কমজোরি সেখানে ব্যক্তি বা সার্কমস্ট্যান্সের মাধ্যমে
সমস্যা হানা দেয় l যদি কমজোরি না থাকে সমস্যা আক্রমণ চালাতে পারে না l উদ্ভূত সমস্যা,
সমস্যা অনুভাবী হওয়ার পরিবর্তে সমাধানের অনুভাবী বানাবে l এটা তোমাদের নিজেস্ব
কমজোরি থেকে উৎপন্ন হওয়া মিকি মাউস l এখন তো সবাই তোমরা হাসছো, কিন্তু যখন
সমস্যারুপী মিকি মাউস এসে পড়ে তখন কি করো ? তখন নিজেরাই মিকি মাউস হয়ে যাও l এর সাথে
খেল, ভীত হয়োনা l যতই হোক, এগুলো শৈশবের খেলা l না কিছু উৎপন্ন করো আর না সময় নষ্ট
করো l এসব কিছুর ঊর্ধ্বে বানপ্রস্থী হয়ে যাও l বুঝেছো তোমরা ?
সময় কি বলছে ? বাবা কি বলছেন ? এখনও খেলনা দিয়ে খেলতে ভালো লাগে তোমাদের ? কলিযুগের
মানব রচনা কিসের মতো হয়ে গেছে ? মুরলিতে তোমরা শোনো, তাই না ? বিছে আর গিরগিটি হয়ে
গেছে l সুতরাং, এই কমজোর সমস্যার রচনা বিছে আর গিরগিটির মতো তোমাদের দংশন করে,
শক্তিহীন বানায় l সবাই তোমরা মধুবন থেকে সম্পন্ন হয়ে ফিরে যাবে, সেইজন্য এখন থেকে
তোমাদের নিজেদের সব সমস্যা সমাপ্ত করার দৃঢ় সঙ্কল্প করে যাও l যতোই যা হোক, অন্য
কারও জন্য সমস্যাস্বরূপ হবেনা l নিজের জন্য এবং অন্যান্য সকলের জন্য তোমরা সবসময়
সমাধান স্বরূপ থাকবে l বুঝেছো তোমরা !
এত খরচ করে, মেহনত করে এখানে আসো তোমরা, সুতরাং, তোমাদের দৃঢ় সঙ্কল্পের মাধ্যমে এই
মেহনতের ফল সহজে তোমরা সদা লাভ করতে থাকবে l মুখ্য বিষয় পবিত্রতার জন্য যেমন
তোমাদের দৃঢ় সঙ্কল্প থাকে, তোমাদের মরতেও যদি হয় তো মরে যাবে, সহন করবে, কিন্তু এই
ব্রত পালনে দৃঢ়বদ্ধ থাকবে l স্বপ্নে বা সঙ্কল্পেও যদি সামান্য নীচে-ওপর হয়, তোমরা
সেটাও তো পাপ মনে করো, তাই না ! একইভাবে, সমস্যা স্বরূপ হওয়া অথবা সমস্যার বশবর্তী
হওয়া - এটাও পাপের খাতায় জমা হয়ে যায় l পাপের পরিভাষা এবং ধারণা, যেখানে পাপ, সেখানে
বাবার স্মরণ হবেনা, তাঁর সাথও থাকবে না l পাপ আর বাবা, যেমন দিন আর রাত ! তাহলে,
যখন তোমাদের সমস্যা থাকে, সেই সময় বাবা স্মরণে আসে ? তাঁর থেকে তোমরা সরে যাও, তাই
না ? তারপরে যখন তোমরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ো, তখন তোমরা বাবাকে স্মরণ করো, কিন্তু
সেটাও ভক্তরূপে স্মরণ করো l "আমাকে শক্তি দাও, আমার সহায় হও, আমাকে পার করে দাও !"
না তোমরা তাঁকে অধিকারী রূপে স্মরণ করো, না সাথীরূপে আর নাই সমান হয়ে ! বুঝেছো তোমরা,
তাহলে এখন তোমাদের কি করতে হবে ! সমাপ্তি সমারোহ উদযাপন করতে হবে, তাই না ! নাকি
শুধু ড্যান্স করবে ? তোমরা খুব ভালো ড্রামা করো ! এখন এই ফাংশন করো, কারণ সেবার
জন্য অনেক সময়ের প্রয়োজন l মানুষ তোমাদের ডাকছে আর তোমরা এখানে অস্থিতিশীল হয়ে আছো,
এটা তো ঠিক নয়, তাই না ! তারা তোমাদের বরদানী, মহাদানী ব'লে ডাকছে, আর তোমরা মুড অফে
কাঁদছো, তাহলে তাদেরকে ফল কিভাবে দেবে ! তাদের কাছেও তো তোমাদের উষ্ণ অশ্রু পৌঁছে
যাবে আর তারা ভয় পেতে থাকবে l এখন মনে রাখো, ব্রহ্মাবাবার সাথে তোমরা ইষ্টদেব পূজ্য
আত্মা l আচ্ছা !
বাচ্চারা, যারা দীর্ঘ সময় ধরে তীব্র পুরুষার্থী, যারা তীব্র সেবার জন্য এভাররেডি,
সদা বিশ্ব পরিবর্তক তথা সমস্যা পরিবর্তক এবং সমাধান স্বরূপ, যারা ভক্ত আত্মাদের এবং
ব্রাহ্মণ আত্মাদের প্রতি সদা দয়াশীল, স্নেহী এবং সহযোগী হয়ে থাকে, এমন শ্রেষ্ঠ
আত্মারা, যারা সদা সমস্ত সমস্যার ঊর্ধ্বে থাকে, যারা বানপ্রস্থের কর্মাতীত স্থিতিতে
থাকে, সেই সম্পন্ন স্বরূপ বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l
নিউ ইয়র্ক
গ্রুপের সাথে বাপদাদার সাক্ষাৎকারঃ -
সবাই তোমরা নিজেদের বাবার বিশেষ আত্মা মনে করো ? সদা এই খুশি থাকে, বাবা যেমন
শ্রেষ্ঠ তেমন তোমরাও বাবা সমান শ্রেষ্ঠ ? এই স্মৃতির সাথেই সদা সব কর্ম নিজে থেকে
শ্রেষ্ঠ হয়ে যাবে l যেমন সঙ্কল্প হবে তেমন কর্ম হবে l সুতরাং, সদা স্মৃতির সাথে
শ্রেষ্ঠ স্থিতিতে থাকা তোমরা বিশেষ আত্মা l নিজের এই শ্রেষ্ঠ জন্মের খুশি সদা
উদযাপন করো l এইরকম শ্রেষ্ঠ জন্ম, যেখানে তোমরা ভগবানের বাচ্চা হয়ে যাও, সারা কল্পে
আর এমন হয়না l পাঁচ হাজার বছরের মধ্যে শুধু এই সময় এই অলৌকিক জন্ম হয় l সত্যযুগেও
তোমরা আত্মাদের পরিবারে যাবে, কিন্তু এই সময় তোমরা পরমাত্মার সন্তান l অতএব, এই
বিশেষত্ব সবসময় স্মরণে রেখো l সদা মনে রেখো যে তুমি ব্রাহ্মণ, শ্রেষ্ঠ ধর্ম,
শ্রেষ্ঠ কর্ম এবং শ্রেষ্ঠ পরিবারের l এই স্মৃতি বজায় রেখে প্রতি পদে নিরন্তর এগিয়ে
চলো l তোমার মেহনতের গতি তেজোময় হতে দাও l উড়তি কলা সদাই তোমাদের মায়াজিৎ আর
নির্বন্ধন তৈরি করবে l যখন বাবাকেই তোমার করেছো, তখন আর বাকি কি থাকলো ? শুধু এঁক'ই
রয়ে গেছেন l এঁকের মধ্যেই সব সমাহিত হয়ে আছে l এঁকের স্মরণে, একরস স্থিতিতে স্থিত
হলে শান্তি , শক্তি আর সুখের অনুভূতি হতে থাকবে l যেখানে একেশ্বর সেখানে তোমাদের এক
(প্রথম) নম্বর থাকবে l সুতরাং, সবাই তোমরা নাম্বার ওয়ান, তাই না ! একের স্মরণ বেশি
সহজ নাকি অনেকের ? বাবা শুধুই এই অভ্যাস করান, আর কিছু না l দশটা জিনিস তোলা সহজ
নাকি একটা জিনিস ? সুতরাং, তোমাদের বুদ্ধির জন্য এঁকের স্মরণই খুব সহজ l তোমাদের
সকলের লক্ষ্য খুব ভালো l লক্ষ্য যখন ভালো, তখন সদাসর্বদা তোমাদের যোগ্যতার উন্নতি
হতে থাকবে l আচ্ছা !
অব্যক্ত
মহাবাক্যঃ - সঙ্কল্প শক্তিকে কন্ট্রোল করো
সময় এবং পরিস্থিতি অনুসারে, তোমাদের শীতলতার শক্তি দিয়ে তোমাদের সঙ্কল্পের গতি এবং
তোমাদের উচ্চারিত বোলের সমন্বয়ে সেসব শীতল আর ধৈর্যশীল বানাও l যদি তোমাদের
সঙ্কল্পের স্পীড অতি ফাস্ট হয়, তো বহু সময় তোমরা ব্যর্থ করে ফেলবে, সেগুলো আর
কন্ট্রোল করতে পারবে না l সেইজন্য, শীতলতার শক্তি ধারণ করে ব্যর্থ থেকে এবং
অ্যাক্সিডেন্ট থেকে নিজেদের রেহাই দাও l তারপরে তোমরা ব্যর্থের ফাস্ট গতি আর এটা
কেন, কি, এইরকম হওয়া এটা উচিৎ নয়, ইত্যাদি প্রশ্ন থেকে তোমরা নিস্তার পেয়ে যাবে l
কখনো কখনো কোনো কোনো বাচ্চা বড়ো খেলা খেলে l ব্যর্থ সঙ্কল্প এত ফোর্সে আসে যে তারা
সেগুলো কন্ট্রোল করতে অপারগ হয় l তারপরেই তারা বলে, "কি করি, হয়ে গেল" l তারা থামাতে
পারেনা l তারা যেমন চায় করে নেয়, যেমনই হোক, সেই ব্যর্থের জন্য অবশ্যই কন্ট্রোলিং
পাওয়ার প্রয়োজন l যেমন একটা জোরালো সঙ্কল্পের ফল লাভ করো, ঠিক একইভাবে এক ব্যর্থ
সঙ্কল্পের হিসেব-নিকেশ হলো, উদাস হওয়া, হতোদ্যম হওয়া অথবা তোমাদের খুশি গায়েব হয়ে
যাওয়া - এও একের হিসেবেই এত বেশি অনুভব করো তোমরা l রোজ নিজের দরবার বসাও, আর তোমার
চেতনশক্তি কর্মচারীদের জিজ্ঞাসা করো, কিভাবে করছে তারা ! তোমাদের যে সূক্ষ্ম শক্তি
আছে, তারা মন্ত্রী বা মহামন্ত্রী যেই হোক তাদেরকে তোমাদের অর্ডার অনুসারে চালাও l
যদি এখন থেকে রাজ্য দরবার যথার্থরূপে কাজকর্ম করে তবে তোমাদের আর ধর্মরাজের দরবারে
যেতে হবে না l ধর্মরাজও তোমাদের স্বাগত জানাবেন l কিন্তু কন্ট্রোলিং পাওয়ার যদি
তোমাদের না থাকে, তবে ফাইনাল রেজাল্টে ফাইন দিতে ধর্মরাজ পুরীতে যেতে হবে l এই ফাইন
সাজা হবে l রিফাইন্ড হও, তাহলেই আর ফাইন দিতে হবে না l
বর্তমান হলো ভবিষ্যতের দর্পণ l তোমাদের দর্পণরুপী স্থিতির মাধ্যমে তোমরা নিজেদের
ভবিষ্যৎ দেখতে পারো l ভবিষ্যৎ রাজ্য অধিকারী হওয়ার জন্য চেক করো, রুলিং পাওয়ার
তোমার মধ্যে কতোখানি আছে ! প্রথমে তোমাদের সূক্ষ্ম শক্তি, যা তোমাদের বিশেষ
কার্যকর্তা, সেই সঙ্কল্প শক্তির (মন) ওপর, তোমাদের বুদ্ধি এবং সংস্কারের ওপর
তোমাদের পূর্ণ অধিকারের প্রয়োজন l এই বিশেষ তিন শক্তি রাজ্যের কাজ-কারবার পরিচালনায়
মুখ্য সহযোগী কার্যকর্তা l যদি এই তিন কার্যকর্তা তুমি আত্মার অর্থাৎ রাজ্য অধিকারী
রাজার ইশারায় চলে, তবে তোমার রাজ্য সদা যথার্থ নিয়মে চলবে l ঠিক যেমন রাজা স্বয়ং
কাজ করেন না, অন্যদের দিয়ে করান l রাজ্য কারবারে যারা কাজ করে, তারা রাজার অনুচর l
যদি রাজার অনুচরেরা ঠিক না হয় তাহলে তো রাজ্যই নড়বড়ে হয়ে যাবে l আত্মাই করাবনহার,
করনহার এই তিন বিশেষ ত্রিমূর্তি শক্তি l সর্বাগ্রে, তাদের ওপর তোমার রুলিং পাওয়ার
থাকলে, তবে এই সাকার সব কর্মেন্দ্রিয় তখন নিজে থেকেই সঠিক পথ অনুযায়ী চলবে l
সত্যযুগীয় রাজত্বের ক্ষেত্রে যেমন বলা হয়ে থাকে, এক রাজ্য, এক ধর্ম l একইভাবে এখন
তোমাদের স্বরাজ্যেও এক রাজা হতে হবে অর্থাৎ তোমার ইশারা অনুযায়ী সমস্ত কর্মকাণ্ড
চলতে দাও l মন নিজের মতে যেন কাজকর্ম না করে, তোমাদের বুদ্ধির নির্ণয় শক্তি
দ্বিধাগ্রস্ত হওয়া উচিৎ নয় l তোমার সংস্কার আত্মাকে যেন নাচাতে না পারে, তবেই বলা
হবে এক ধর্ম, এক রাজ্য l সুতরাং এইরকম কন্ট্রোলিং পাওয়ার ধারণ করো l
'পাস উইথ অনার' হওয়ার জন্য অথবা রাজ্য অধিকারী হওয়ার জন্য, তোমাদের সূক্ষ্ম শক্তি
মনকে, পুরোপুরি কন্ট্রোল করা প্রয়োজন অর্থাৎ তোমাদের অর্ডার অনুযায়ী মন কাজ করবে l
তোমরা যা ভাবছো, সেটা তোমাদের অর্ডার হতে হবে l স্টপ যদি বলো তো স্টপ হয়ে যাবে, যদি
বলো সেবা বিষয়ে ভাবো তো সেবাতেই নিয়োজিত হয়ে যাবে l যদি বলো পরমধাম সম্পর্কে ভাবতে
তো মন পরমধামে পৌঁছাবে l এইরকম কন্ট্রোলিং পাওয়ার এখন বাড়াও l ছোট ছোট তুচ্ছ
ব্যাপারে (সংস্কারে), যুদ্ধে সময় নষ্ট কোরোনা l কন্ট্রোলিং পাওয়ার ধারণ করে নিলে তবে
তোমরা কর্মাতীত অবস্থার কাছাকাছি পৌঁছে যাবে l যখন সব সঙ্কল্প শান্ত হয়ে যায়, তখন
শুধু বাবা আর তুমি - শুধুমাত্র এক বাবার সাথে তোমাদের মিলনের অনুভূতির সঙ্কল্প থাকে,
একেই বলা হয় পাওয়ারফুল যোগ।এইজন্য তোমাদের প্রয়োজন অন্তর্লীন করার শক্তি এবং গুটিয়ে
ফেলার শক্তি l স্টপ বলা মাত্রই তোমাদের সঙ্কল্প অবশ্যই স্টপ হয়ে যেতে হবে l জোরালো
ব্রেক লাগাতে হবে, দুর্বল নয় l তোমাদের পাওয়ারফুল ব্রেক এবং পাওয়ারফুল কন্ট্রোল থাকা
উচিৎ l যদি এক সেকেন্ডের বদলে বেশি সময় লেগে যায় তবে গুটিয়ে ফেলার শক্তি কমজোর হয় l
লাস্টে ফাইনাল পেপারের কোশ্চেন হবে- সেকেন্ডে ফুলস্টপ দাও, এরই ভিত্তিতে তোমাদের
নম্বর দেওয়া হবে l সেকেন্ডের বেশি সময় লাগলে তখন তুমি ফেল হয়ে যাবে l এক বাবা আর
তুমি, তৃতীয় কোনও বিষয় যেন না আসে l এইরকম নয়, এটা করতে হবে, এটা দেখতে হবে, এটা
হয়েছে, হয়নি ; এইরকম কেন হয়েছে, কি হয়েছে - এইরকম কোনও ভাবনা যদি আসে তো তুমি ফেল l
কোনও বিষয়ে কেন, কি'র কিউ লাগিয়ে দিলে তো সেই কিউ সমাপ্ত করতে বহু সময় পার হয়ে যাবে
l একবার রচনা রচন হলে তোমাকে সেটার পালন করতেই হবে, পালন করা থেকে রেহাই পাবেনা l
সময়, এনার্জি দিতেই হবে, এইজন্য ব্যর্থ রচনার বার্থ কন্ট্রোল (রচন নিয়ন্ত্রণ) করো l
যারা তাদের সূক্ষ্ম শক্তিকে হ্যান্ডেল (পরিচালনা করা ) করতে পারে, তারা অন্যদেরও
হ্যান্ডেল করতে পারে l সুতরাং নিজের ওপর কন্ট্রোলিং পাওয়ার, রুলিং পাওয়ার সবার
ক্ষেত্রে যথার্থ হ্যান্ডলিং পাওয়ার হয়ে যায় l অজ্ঞানী আত্মাদের সেবা করার মাধ্যমে
হ্যান্ডলিং করতে পারো অথবা ব্রাহ্মণ পরিবারে স্নেহ সম্পন্ন, সন্তুষ্টতা সম্পন্ন
ব্যবহার করো, উভয়তঃই তোমরা সফল হয়ে যাবে l
বরদান:-
তোমাদের মন্সা এবং
বাচা'র মেলবন্ধনের নবীনত্ব এবং বিশেষত্ব দ্বারা মন্ত্রবৎ কার্য সম্পাদন করে সম্পন্ন
ভব
মন্সা এবং বাচা, এই
দুইয়ের মিলন জাদুমন্ত্রের মতো কাজ করে, এতে সংগঠনের ছোট ছোট বিষয়গুলো এমনভাবে
সমাপ্ত হয়ে যাবে, তোমাদের মনে হবে - এতো ম্যাজিক হয়ে গেছে l যখন তোমাদের মন সবাইকে
শুভ ভাবনা বা শুভ আশিস দেওয়ায় বিজি থাকবে তখন মনের চঞ্চলতা সমাপ্ত হয়ে যাবে,
পুরুষার্থে কখনো নিরাশ হবেনা l সংগঠনে কখনও শঙ্কিত হবেনা l মন্সা-বাচা'র সম্মিলিত
সেবায় বিহঙ্গ মার্গের সেবার প্রভাব দেখবে তোমরা l এখন সেবাতে এই নবীনত্ব আর
বিশেষত্বের সাথে সম্পন্ন হও, তবে ন'লাখ প্রজা সহজে তৈরি হয়ে যাবে l
স্লোগান:-
বুদ্ধি যথার্থ নির্ণয়
তখনই দিতে পারবে যখন তোমরা সম্পূর্ণ ভাইসলেস হবে l