৩০-১১-১৮ প্রাতঃমুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - এ হলো তোমাদের ব্রাহ্মণদের নতুন বৃক্ষ । একে বড়ও করতে হবে আবার সুরক্ষিতও রাখতে হবে কারণ নতুন গাছকে পাখীরা খেয়ে নেয়"
প্রশ্ন:-
ব্রাক্ষণ বৃক্ষের থেকে বেরোনো পাতা কেন সতেজ থাকে না, ঢলে পড়ে ? এর কারণ আর নিবারণ কি?
উত্তর:-
বাবা জ্ঞানের যে ওয়ান্ডারফুল(আশ্চর্যজনক) রহস্য শোনায় তা না বুঝতে পারার কারণে সংশয় উৎপন্ন হয়, তাই নতুন-নতুন পাতা মুষড়ে পড়ে আর পড়া ছেড়ে দেয়। সেইজন্য এখানে যে আত্মারা বোঝায় তাদের অনেক হুশিয়ার হওয়া উচিৎ। যদি কোনো সংশয় ওঠে তখন বড়দের জিজ্ঞাসা করা উচিৎ। উত্তর না পেলে বাবাকেও জিজ্ঞাসা করতে পারো।
গীত:-
প্রীতম এসে মিলিত হও/দুঃখী এ প্রাণ ডাকছে তোমায়...
ওম্ শান্তি।
এই গীত তো বাচ্চারা অনেকবার শুনেছে, দুঃখেই ভগবানকে সবাই ডাকে। আর তিনি তো তোমাদের কাছেই বসে আছেন। তোমাদের সব দুঃখ থেকে মুক্ত(লিবারেট)করে দেন। তোমরা জানো যে সর্বদাই যিনি দুঃখধাম থেকে সুখধামে নিয়ে যান, সেই সুখধামের মালিকই এ কথা বলেন। তিনি এসেছেন, তোমাদের সম্মুখে বসে রয়েছেন এবং রাজযোগ শেখাচ্ছেন। এ কোনো মানুষের কাজ নয়। তোমরা বলবে যে পরমপিতা পরমাত্মা আমাদের মনুষ্য থেকে দেবতা বানানোর জন্য রাজযোগ শিখিয়েছেন। মানুষ, মানুষকে দেবতা বানাতে পারে না। "মনুষ্য থেকে দেবতা বানাতে বেশী সময় লাগে না"....... এ কার মহিমা? বাবার। দেবতারা সর্বদা সত্যযুগেই থাকে। এই সময় দেবতারা থাকে না। তাহলে স্বর্গের স্থাপনা করেন যিনি, তিনিই মনুষ্য থেকে দেবতা বানাবেন। পরমপিতা পরমাত্মা, যাঁকে শিবও বলা হয়, তাঁকে এখানে আসতে হয় পতিতদের পাবন(পবিত) বানাতে। এখন কথা হলো তিনি আসবেন কেমন করে? পতিত দুনিয়ায় তো কৃষ্ণের শরীর পাওয়া যেতে পারে না। মানুষ তো মুষড়ে পড়েছে। এখন তোমরা বাচ্চারা সন্মুখে বসে শুনছো। তোমরা এই দুনিয়ার হিস্ট্রি-জিওগ্রাফী জানো। হিস্ট্রির সঙ্গে জিওগ্রাফীও অবশ্যই থাকে, আর হিস্ট্রি-জিওগ্রাফী হয় মনুষ্য সৃষ্টিতে। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকরের, সূক্ষ্মবতনের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফী কখনো হবেনা। ওটা হলো সূক্ষ্মবতন। ওখানে হলো মুভী(নির্বাক আকারী), টকী-তো(সবাক সাকারী) এখানে হয়। এখন বাবা তোমাদের বাচ্চাদের সমগ্র দুনিয়ার হিস্ট্রি-জিওগ্রাফী আর মূলবতনের সংবাদ, যাকে ত্রিলোক বলা হয়,সেইসবই শোনাতে থাকেন। এখন তোমাদের ব্রাহ্মণদের নতুন গাছ লাগানো হচ্ছে। একে ঝাড় বা চারাগাছ বলে। অন্য যে সব মঠ, পন্থ(মার্গ) আছে তাদেরকে বৃক্ষ (ঝাড়) বলা হবে না। *যদিও খ্রীস্টানরা জানে যে তাদের খ্রীস্টমাস-ট্রি আলাদা কিন্তু তাদের একথা জানা নেই যে সমস্ত শাখা-প্রশাখা এই বড় বৃক্ষ থেকেই বেরোয়। বোঝানো উচিৎ যে মনুষ্য সৃষ্টির রচনা কিভাবে হয়েছে*। মাতা-পিতা, তারপরে বালক......তাও আবার সব একসাথে তো বেরোবে না। দুই থেকে চার, পাঁচ পাতা হয়, আবার কোনো পাতাকে পাখীতে খেয়েও নেয়। এখানেও পাখী(মায়া) খেয়ে নেয়। এ হলো অতি ক্ষুদ্র ঝাড় বা চারা। ধীরে-ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে, যেমন পূর্বেও পেয়েছে। তোমাদের বাচ্চাদের এখন কত নলেজ(জ্ঞান) রয়েছে। তোমরা হলে ত্রিকালদর্শী, তিনটি কালকেই জানো, তোমরা ত্রিলোকীনাথ অর্থাৎ তিন লোক-কেই জানো। লক্ষ্মী-নারায়ণকে ত্রিলোকীনাথ, ত্রিকালদর্শী বলা যেতে পারে না। মনুষ্য আবার কৃষ্ণ-কে ত্রিলোকীনাথ বলে। যারাই সার্ভিস(সেবা) তাদেরই প্রজা তৈরী হবে। নিজের উত্তরসুরিও(বংশধর) বানাতে হবে, প্রজাও বানাতে হবে। তাহলে বুদ্ধিতে একথা অবশ্যই থাকা উচিত যে - আমরাই ত্রিলোকীনাথ। এ বড়ই ওয়ান্ডারফুল বিষয়। বাচ্চারা সম্পূর্ণ রীতি অনুযায়ী বোঝাতে পারে না তাই কন্সট্রাকশানের(রচনা) বদলে ডেস্ট্রাকশান(ধ্বংস) করে দেয়। নির্গত(বেরোনো) পত্রদেরও নিস্তেজ(নষ্ট) করে দেয়। তাই পড়া ছেড়ে দেয়। তখন আমরা বলি কল্প-পূর্বেও এমনই হয়েছিল, দেখো, যা বিগত তা বিগত-ই থাক। এখন তোমরা বাচ্চারা সমগ্র সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তকে জেনে গেছো, হিস্ট্রি-জিওগ্রাফীকে জানো। তাছাড়া মানুষ তো অনেক কথা বানিয়ে বলে, তাই না, কি কি সব লেখে, কেমন নাটক তৈরি করে!
ভারতে অনেককেই অবতার মানা হয়। ভারত নিজেই নিজের তরী ডুবিয়েছে। এখন তোমরা বাচ্চারা, বিশেষ করে ভারতকে আর সাধারণভাবে সমগ্র দুনিয়াকেই মুক্ত করো। এই দুনিয়ার চক্র ঘুরতেই থাকে, আমরা উপরে যাবো তো নরক নীচে যাবে। যেমন সূর্য্য অস্ত গেলে বলা হয় সমুদ্রে ডুবে গেছে। কিন্তু থোড়াই নীচে চলে যায়। মনে করে দ্বারকা ইত্যাদি ডুবে গেছে। মানুষের বুদ্ধিও কেমন আশ্চর্যের( ওয়ান্ডারফুল), তাই না। এখন তোমরা কতই না উঁচু(উচ্চপদ) হয়ে যাও। কত খুশি হওয়া উচিৎ। দুঃখের সময় তোমরা লটারী পাচ্ছো। দেবতাদের তো পাওয়া হয়ে গেছে। এখানে তোমরা দুঃখ থেকে অসীম সুখ পাও। কত খুশি হয়ে যাও যে ভবিষ্যত ২১ জন্মের জন্য আমরা স্বর্গের মালিক হয়ে যাই।
মানুষ তো বলে যে গীতার জ্ঞান শোনা অর্থাৎ এও তো এক সত্সঙ্গ। সাঁই বাবা ইত্যাদি কত সত্সঙ্গ আছে। ওটা হলো অনেক বড় বাজার আর এ হলো ব্রহ্মকুমারী-দের একটাই দোকান। জগদম্বা হলেন ব্রহ্মার মুখ বংশাবলী। সরস্বতী, ব্রহ্মার কন্যা হিসাবেই বিখ্যাত। তোমরা জানো যে মাতা-পিতার কাছ থেকেই আমরা অনেক সুখ পেয়েছিলাম। এখন আবার আমরা সেই মাতা-পিতাকেই পেয়েছি। অতি সুখে বিভোর করে দিচ্ছেন। আচ্ছা, এই মাতা-পিতাকে জন্ম কে দিয়েছেন? শিববাবা। আমরা রত্ন(জ্ঞান).শিববাবার কাছ থেকে পেয়ে থাকি। তোমরা হলে পৌত্র-পৌত্রী। আমরা এখন সেই বেহদের বাবার থেকে, ব্রহ্মা-সরস্বতীর(মাতা-পিতা) দ্বারা অতি সুখ লাভ করছি। দাতা হলেন তিনি। কত সহজ কথা। আবার এও বোঝাতে হবে যে আমরাই এই ভারতকে স্বর্গে পরিনত করছি। সেখানে আবার অতি সুখ লাভ করব। আমরা হলাম ভারতের সেবক। আমরা তো, মন, ধন দ্বারা সেবা করি। গান্ধীজী-কেও সাহায্য করত, তাই না। তোমরা বোঝাতে পারো যে যাদব, কৌরব, পান্ডব-রা কি করত ? পান্ডবদের তরফে হলো পরমপিতা পরমাত্মা। পান্ডব হলো বিনাশকালে প্রীত বুদ্ধি, কৌরব আর যাদব হলো বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি। যারা পরমপিতা পরমাত্মাকে মানে না। তিনি কাঁকড়-পাথরেও রয়েছেন বলে দেয়। তোমাদের তো তিনি ছাড়া আর কারোর সাথে প্রীত(প্রেম) হয় না। তাই সর্বদা হাসি-খুশি থাকা উচিৎ। পায়ের নখ থেকে মস্তকের শিখা(টিক্কি) পর্য্যন্ত অর্থাৎ সর্বাঙ্গে খুশি থাকা উচিৎ। বাচ্চারা তো অনেক রয়েছে, তাই না। তোমরা মাতা-পিতার দ্বারা শোনো, তাই তোমাদের খুশি হয়। সমগ্র সৃষ্টিতে আমাদের মতো সৌভাগ্যশালী আর কেউ হতে পারে না! আমাদের মধ্যেও কেউ পদ্মাপদম ভাগ্যশালী, কেউ সৌভাগ্যশালী, কেউ ভাগ্যশালী আবার কেউ দুর্ভাগ্যশালীও রয়েছে। যারা আশ্চর্যজনকভাবে ভাগন্তী হয়ে যায়, তাদের বলা হয় মহান দুর্ভাগ্যশালী। কোনো না কোনো কারণে বাবাকে ছেড়ে দেয়। বাবা তো অতি মিষ্ট। বাবা বুঝতে পারেন যে, তিনি যদি উচিৎ শিক্ষা দেন তবে তারা তাঁকে ছেড়ে চলে যাবে না তো। তিনি বোঝান যে তোমরা বিকারে গিয়ে কুলের(বংশ) নাম বদনাম করো। যদি নাম বদনাম করাও তাহলে অনেক সাজা পেতে হবে। তাদের বলা হবে যে সদ্গুরুর নিন্দাকারী....... তারা আবার মনে করে যে একথা বুঝি নিজের লৌকিক গুরুর বিষয়ে বলা হয়েছে। অবলাদের পুরুষেরাও ভয় দেখায়। এইসময়েই অমরনাথ বাবা তোমাদের অমরকথা শোনাচ্ছেন। বাবা বলেন, আমি তো টিচার, সার্ভেন্ট, তাই না ! টিচারের পা ধুয়ে জল পান করে কী? বাচ্চারা, যারা মালিক হতে চলেছে, আমি কি তাদেরকে দিয়ে পা ধোওয়াবো? না। গায়নও করা হয় নিরাকার, নিরহংকারী। ইনিও(ব্রহ্মা) ওঁনার সঙ্গ-তে নিরহংকারী হয়ে গেছেন।
অবলাদের উপর অত্যাচারের কথাও বলা হয়েছে। কল্প-পূর্বেও অত্যাচার হয়েছিল। রক্তের নদী বয়ে যাবে, পাপের কলস পূর্ণ হবে। এখন তোমরা যোগবলের দ্বারা বেহদের বাদশাহী(রাজত্ব) নাও। তোমরা জানো যে আমরা বাবার কাছথেকে অটল- অখন্ড বাদশাহী নিই। আমরা তো সূর্যবংশীয় হবো। হ্যাঁ, এতে অনেক হিম্মতও চাই। নিজের মুখ দেখতে থাকো - আমাদের মধ্যে কোনো বিকার নেই তো। কোনো কথা না বুঝলে বড়দের জিজ্ঞাসা করো, নিজে সংশয় মুক্ত হও। যদি ব্রাহ্মণী(নিমিত্ত) সংশয় মুক্ত করতে না পারে তবে বাবাকে জিজ্ঞাসা করো। এখনও বাচ্চারা তোমাদের অনেক কিছু কথা বোঝার আছে। যতদিন বেঁচে থাকবে বাবা ততদিন বোঝাতেই থাকবে। বলো, এখনও তো আমরা পড়া করছি, আমরা বাবাকে জিজ্ঞাসা করব, অথবা বলো, এই কথা বাবা এখনো বোঝায় নি। পরে বোঝাবে, তখন জিজ্ঞাসা করো। অনেক পয়েন্টস্ (সুত্র) বেরোতে থাকে। কেউ বলবে লড়াই-এর কি হবে? বাবা ত্রিকালদর্শী, তাই তিনি বোঝাতে পারেন, কিন্তু এখনো তো বাবা বলেননি। আর্জি(আবেদন) আমাদের, মর্জি(ইচ্ছা) ওঁনার। নিজেকে মুক্ত করে নেওয়া উচিৎ।
বাগানে(গার্ডেন) বাবা বাচ্চাদের প্রশ্ন করেন যে, বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর তাই অবশ্যই তিনি জ্ঞান-ডান্স করে থাকেন। আচ্ছা, যখন ভক্তিমার্গে শিববাবা সকলের মনোকামনা পূর্ণ করার পার্ট (অভিনয়) করেন, তখন সেইসময় ওঁনার এই সঙ্কল্প হয় যে আমাকে সঙ্গমযুগে ভারতে গিয়ে বাচ্চাদের-কে এই রাজযোগ শেখাতে হবে? স্বর্গের মালিক বানাতে হবে? এই সংকল্প হবে বা যখন আসার সময় হবে তখন সঙ্কল্প আসবে?
বাবা মনে করেন যে সম্ভবতঃ এই সঙ্কল্প আসবে না। যদিও তাঁর মধ্যে জ্ঞান মার্জ(লীন)থাকেই, তাই না। গায়নও করা হয় যে, ভগবানের নতুন সৃষ্টি রচনার সঙ্কল্প উঠেছিল, সে তো যখন সময় হবে তখনই সঙ্কল্প করবে। তিনিও ড্রামার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আছেন। এ হলো অতি গূহ্য কথা। *আচ্ছা*!
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাত-পিতা বাপদাদার স্নেহ-স্মরণ ও সুপ্রভাত। রুহানী বাবার রুহানী বাচ্চাদের নমস্কার।
*রাত্রি ক্লাস 13.1.69(১৩-০১-৬৯)*
বাচ্চারা যখন এখানে এসে বসে তখন বাবা জিজ্ঞাসা করেন, বাচ্চারা, বাবাকে স্মরণ করো তো? পরে আবার বিশ্বের রাজত্বকে(বাদশাহী) স্মরণ করো তো? বেহদের পিতার নাম শিব। আবার ভাষা-ভেদে আলাদা-আলাদা নাম রেখে দেয়। যেমন বোম্বাই -তে বাবুলনাথ বলে কারণ তিনি কাঁটাদের ফুলে পরিনত করেন। সত্যযুগে হয় ফুল, আর এখানে সবাই কাঁটা। তাই বাবা রুহানী বাচ্চাদের জিজ্ঞাসা করেন যে বেহদের পিতার স্মরণে কতটা সময় থাকো? ওঁনার নাম হলো শিব, কল্যাণকারী। তোমরা যতই স্মরণ করবে ততই তোমাদের জন্ম-জন্মানতরের পাপ কেটে যাবে। সত্যযুগে কোনো পাপ হয় না। ওটা হলো পূণ্যাত্মাদের দুনিয়া, এটা হলো পাপাত্মাদের দুনিয়া। পাপ করায় ৫ বিকার। সত্যযুগে রাবণ থাকে না। রাবণ হলো সমগ্র দুনিয়ার শত্রু। এই সময় সমগ্র দুনিয়াই রাবণের রাজ্য। সবাই দুঃখী, তমোপ্রধাণ তবেই তো বলে, বাচ্চারা, মামেকম্ (একমাত্র আমাকেই) স্মরণ করো। এ হলো গীতার কথা। বাবা স্বয়ং বলেন, দেহ-সহিত সব সম্বন্ধ ছেড়ে মামেকম্ স্মরণ করো।প্রথমে-প্রথমে তোমরা সুখের সম্বন্ধে ছিলে, তারপর রাবণের বন্ধনে এসেছো। এখন আবার সুখের সম্বন্ধে আসতে হবে। নিজেকে আত্মা মনে করো আর বাবাকে স্মরণ করো - এই শিক্ষা বাবা সঙ্গমযুগেই দেন। বাবা স্বয়ং বলেন, আমি পরমধাম নিবাসী, এই শরীরে প্রবেশ করেছি তোমাদের বোঝানোর জন্য। বাবা বলেন, পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তোমরা আমার কাছে আসতে পারবে না। এখন পবিত্র কি করে হবে? শুধুমাত্র আমাকে স্মরণ করো। ভক্তিমার্গেও শুধু আমাকেই পূজা করা হয়, একে অব্যভিচারী পূজা বলা হয়। আমি হলাম পতিত-পাবন। তাই তোমরা আমাকে স্মরণ কর, তাহলেই তোমাদের জন্ম-জন্মানতরের পাপ কেটে যাবে। এ হলো ৬৩ জন্মের পাপ। সন্ন্যাসীরা কখনো রাজযোগ শেখাতে পারে না, বাবাই শেখায়। বাস্তবে এই শাস্ত্র, ভক্তি ইত্যাদি প্রবৃত্তি-মার্গীয়দের জন্য। সন্ন্যাসীরা তো জঙ্গলে গিয়ে বসে আর ব্রহ্মকে স্মরণ করে। এখন বাবা বলেন - সকলের সদ্গতি দাতা হলাম আমি, তাই আমাকে স্মরণ কর তবেই তোমরা এমন( লক্ষ্মী-নারায়ণ) হবে। এইম অবজেক্ট(লক্ষ্যবস্তু) সামনে রয়েছে। যতই পড়বে আর পড়াবে ততই দৈবী রাজধানীতে উচ্চ-পদ পাবে। এক পিতার হলেন অল্ফ। রচনার দ্বারা রচনা আশীর্ব্বাদ(বর্সা) পেতে পারে না। তিনি হলেন বেহদের পিতা তাই বেহদের বর্সা দেন। তোমরা স্বর্গে সদ্গতিতে থাকবে। এছাড়া আর সব আত্মারা ঘরে(পরমধাম) ফিরে যাবে। মুক্তি-জীবনমুক্তি, গতি-সদ্গতি শব্দগুলো হলো শান্তিধাম, সুখধামের। বাবার স্মরণ ছাড়া কেউ-ই ঘরে ফিরে যেতে পারবে না। আত্মাকে পবিত্র অবশ্যই হতে হবে। এখানে সকলে হলো নাস্তিক। বাবাকে জানে না। তোমরা এখন আস্তিক হও।গায়নও রয়েছে যে বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি বিনশ্বন্তী, এখন তো বিনাশকাল, তাই না। চক্রকে অবশ্যই ঘুরতে হবে। বিনাশকালে যাদের প্রীত বুদ্ধি হয়, তারাই বিজয়ন্তী হয়। বাবা কত সহজ করে শোনান। কিন্তু মায়া রাবণ ভুলিয়ে দেয়। এখন এই পুরোনো দুনিয়ার অন্তিম সময়। ওটা হলো অমরলোক, ওখানে কাল হয় না। বাবার উদ্দেশ্যে বলা হয়, এসো, সাথে করে আমাদের সকলকে নিয়ে চলো। তাহলে বাবা হলেন কাল, তাই না। সত্যযুগের ঝাড়(বৃক্ষ) কত ছোটো! এখন তো ঝাড় অনেক বড়।
ব্রহ্মা আর বিষ্ণুর অক্যুপেশন(পেশা) কী? বিষ্ণুকে দেবতা বলা হয়। ব্রহ্মার তো কোনো গহনা ইত্যাদি নেই। ওখানে তো না ব্রহ্মা আছে, না বিষ্ণু, না শঙ্কর আছে। প্রজাপিতা ব্রহ্মা তো এখানে রয়েছে। সূক্ষ্মবতনের শুধু সাক্ষাৎকার হয়। স্থূল, সূক্ষ্ম, মূল আছে, তাই না! সূক্ষ্মবতনে হলো মুভী। এটা হলো বোঝার মতো বিষয়। এ হলো গীতা পাঠশালা, যেখানে তোমরা রাজযোগ শেখো। শিববাবা পড়ান তাই অবশ্যই শিববাবাই স্মরণে আসবে, তাই না। *আচ্ছা*!
*রুহানী বাচ্চাদের-কে রুহানী বাপদাদার স্নেহ-স্মরণ, শুভ রাত্রি। রুহানী বাচ্চাদের রুহানী পিতাকে নমস্কার*।
ধারণার জন্য মুখ্য সার:-
১. দুঃখের সময় যে অপার সুখের লটারী পেয়েছো, এক বাবার সাথে যে সত্যিকারের প্রীত বা প্রেম হয়েছে, তা স্মরণ করে সদা খুশিতে থাকতে হবে।
২. বাপ-দাদার সমান নিরাকারী আর নিরহংকারী হতে হবে। হিম্মত রেখে বিকারের উপর জয় প্রাপ্ত করতে হবে। যোগবলের দ্বারা রাজত্ব (বাদশাহী) নিতে হবে।
বরদান:-
সারথী হয়ে পৃথক(ন্যায়ারী) ও প্রিয়(প্যায়ারী) স্থিতির অনুভব করানো প্রথম স্থানাধিকারী(নাম্বার ওয়ান) সিদ্ধি স্বরূপ ভব
সারথী অর্থাৎ আত্ম-অভিমানী। এই বিধির দ্বারা ব্রহ্মাবাবা প্রথম স্থানাধিকারী(নাম্বার ওয়ান) হিসাবে সিদ্ধি প্রাপ্ত করেছিলেন । যেমন বাবা দেহকে বশ করে প্রবেশ করেন দেহের অধীনে আসেন না, তাই তিনি উপরাম এবং প্রেমময় হন। ঠিক তেমন-ই তোমরা ব্রাহ্মণ আত্মারাও পিতা-সম সারথীর স্থিতিতে থাকো। চলতে-ফিরতে চেক্ করো যে আমি হলাম সারথী অর্থাৎ শরীরের পরিচালনকারী পৃথক ও প্রেমময় স্থিতিতে স্থিত ? এতেই নাম্বার ওয়ান সিদ্ধি স্বরূপ হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
বাবার আজ্ঞাকারী হয়ে থাকো তবেই গুপ্ত দুয়া(প্রার্থনা) সময় মতো সাহায্য করতে থাকবে*।