11.02.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা-
তোমাদের অপার খুশী হওয়া উচিত, যে আমরা এখন পুরানো কাপড় ত্যাগ করে গৃহে যাবো আবার
নূতন কাপড় নেবো নূতন দুনিয়াতে"
প্রশ্নঃ -
ড্রামার কোন্
রহস্য অতি সূক্ষ্ম- বোঝার মতো ?
উত্তরঃ -
এই ড্রামা উকুনের মতো টিক্ টিক্ করে চলতেই থাকে। যার যে অ্যাক্ট ছিলো সেটা আবার
হুবহু ৫ হাজার বছর পরে রিপিট হবে, এই রহস্য খুবই সূক্ষ্ম- বুঝতে হবে। যে বাচ্চারা
এই রহস্যটা যথাযথ ভাবে বুঝতে পারে না, তখন বলে দেয় ড্রামাতে থাকলে পুরুষার্থ করে
নেবে, তারা উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে পারে না।
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চাদের
বাবার পরিচয় প্রাপ্ত হয়েছে, এরপর বাবার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করতে হবে আর
পবিত্র হয়ে উঠতে হবে। বলেও থাকে- হে পতিত-পাবন এসে আমাদের পবিত্র করো, কারণ মনে করে
আমরা হলাম পতিত বুদ্ধি সম্পন্ন। বুদ্ধিতেও বলে এটা হলো আয়রণ এজড্ দুনিয়া। নূতন
দুনিয়াকে সতোপ্রধান, পুরানো দুনিয়াকে তমোপ্রধান বলা হয়ে থাকে। বাচ্চারা, তোমারা
এখন বাবাকে পেয়েছো, ভক্তের ভগবান প্রাপ্তি হয়েছে, বলাও হয় ভক্তির পরে ভগবান এসে
ভক্তির ফল দেন, কারণ পরিশ্রম করে বলে তার ফলও চায়। ভক্ত কেমন পরিশ্রম করে সেটা তো
তোমরা জানো। তোমরা অর্ধ- কল্প ভক্তি মার্গে ধাক্কা খেয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছো। ভক্তি
করতে গিয়ে অনেক পরিশ্রম করেছো। এটাও ড্রামাতে নির্ধারিত হয়ে আছে। পরিশ্রম করা হয়
লাভবান হওয়ার জন্য। মনে করে ভগবান এসে ভক্তির ফল দিলে, তো যিনি ফল দেন ভগবানই
থাকেন। ভক্ত ভগবানকে স্মরণ করে কারণ ভক্তিতে আছে দুঃখ, তো বলে এসে আমাদের দুঃখ হরণ
করো, পবিত্র করো।
কেউই জানে না যে, এখন হলো রাবণ রাজ্য। রাবণই পতিত করেছে। বলেও থাকে রাম রাজ্য চাই,
কিন্তু সেটা কবে, কীভাবে হবে- কারোরই সেটা জানা নেই। আত্মা ভিতরে-ভিতরে মনে করে এখন
হলো রাবণ রাজ্য। এটা হলোই ভক্তি মার্গ। ভক্ত অনেক নাচ তামাশা করে। খুশীও হয় আবার
কাঁদতেও থাকে। ভগবানের প্রতি প্রেমে অশ্রু এসে যায়, কিন্তু ভগবানের সাথে পরিচিত নয়।
যাঁর প্রতি প্রেমে অশ্রু এসে যায় তাকে জানতে হবে তো! চিত্র থেকে তো কিছু পাওয়া যায়
না। হ্যাঁ, অনেক ভক্তি করলে তো সাক্ষাৎকার হয়। ব্যাস, এটাই ওদের জন্য খুশীর ব্যাপার।
ভগবান নিজে এসেই নিজের পরিচয় দেন যে আমি কে। আমি যে হই, যেমন হই, দুনিয়াতে কেউ জানে
না। তোমাদের মধ্যে যারা বাবা বলে তাদের মধ্যেও কেউ সুপরিপক্ক, কেউ কাঁচা।
দেহ-অভিমান ভাঙতেই পরিশ্রম হয়। দেহী-অভিমানী হতে হবে। বাবা বলেন তোমরা হলে আত্মা,
তোমরা ৮৪ জন্ম ভোগ করে তমোপ্রধান হয়েছো। এখন আত্মার তৃতীয় নেত্র প্রাপ্ত হয়েছে।
আত্মা বুঝতে পারছে। বাচ্চারা, তোমাদের সমগ্র সৃষ্টি চক্রের নলেজ বাবা দেন। বাবা
হলেন নলেজফুল তাই বাচ্চাদেরও নলেজ দেন। কেউ জিজ্ঞাসা করে শুধুমাত্র তোমরাই ৮৪ জন্ম
নাও। বলো হ্যাঁ- আমাদের মধ্যে কেউ ৮৪ জন্ম নেয়, কেউ ৮২ জন্ম নেয়। কেউ সব চেয়ে বেশী
৮৪ জন্ম নেয়। ৮৪ জন্ম তাদের হয় যারা শুরুতে আসে। যারা ভালো ভাবে পড়ে উচ্চ পদ
প্রাপ্ত করে, তারা আগে আসবে। মালাতে নিকটতম ভাবে ঘোরানো হবে। যেমন নূতন বাড়ী তৈরী
হতে থাকলে মনে হতে থাকে যে তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে গেলে, গিয়ে বসি। বাচ্চারা, তোমাদেরও
খুশী হওয়া উচিত- এখন আমাদের এই পুরানো কাপড় ছেড়ে নূতন নিতে হবে। নাটকে এক্টর্স আধা
ঘন্টা আগে থেকেই ঘড়ি দেখতে থাকে, টাইম সম্পূর্ণ হলে বাড়ী আসবে। সেই টাইম এসে পড়ে।
তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের জন্য অসীম জগতের ঘড়ি আছে। তোমরা জানো যখন কর্মাতীত অবস্থা
কে প্রাপ্ত করবে তখন আবার এখানে থাকবে না। কর্মাতীত হওয়ার জন্যও স্মরণে থাকতে হয়,
খুব পরিশ্রম। নূতন দুনিয়াতে তোমরা যাও আবার এক- একটা জন্মে কলা কম হতে থাকে। নূতন
বাড়ীতে ৬ মাস বসলে কিছু না কিছু দাগ ইত্যাদি হয়ে যায় যে না! কিছু পার্থক্য এসে যায়।
তো সেখানে নূতন দুনিয়াতেও কেউ তো প্রথমে আসবে, কেউ একটু পরে আসবে। যে প্রথমে আসবে
তাকে বলা হবে সতোপ্রধান আবার ধীরে-ধীরে কলা কম হতে থাকে। এই ড্রামার চক্র উনুনের মতো
চলতে থাকে। টিক্ টিক্ হতে থাকে। তোমরা জানো যে সমগ্র দুনিয়াতে যার যা- কিছুই এক্ট
চলে সেটাই চক্রবৎ আবর্তিত হতে থাকে। এটা বুঝতে পারার পক্ষে খুবই সূক্ষ্ম ব্যাপার।
বাবা অনুভবের আধারে শোনান।
তোমরা জানো যে, এই অধ্যয়ণ আবার ৫ হাজার বছর পরে রিপিট হবে। এটা পূর্বে ঘটে যাওয়া
খেলা। এই চক্রকে কারোর জানা নেই। এর ক্রিয়েটার, ডাইরেক্টর, মুখ্য এক্টর কে- কিছুই
জানে না। এখন তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের জানা আছে- আমরা ৮৪ জন্ম ভোগ করে এখন ফিরে
যাচ্ছি। আমরা হলাম আত্মা। দেহী-অভিমানী হলে তবে খুশী র পারদ উঠবে। সেটি হলো পার্থিব
জগতের নাটক, এটা হলো অসীম জগতের। বাবা আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের পড়াচ্ছেন, এটা বলবেন
না যে অমুক সময়ে এটা হবে। বাবাকে যে কোনো কথা জিজ্ঞাসা করলে বলেন ড্রামাতে যা কিছু
বলার সেটা বলে দেওয়া হয়, ড্রামা অনুসার যে উত্তর পাওয়া যেতো সেটা পাওয়া গেছে, ব্যাস,
এর উপর চলতে হবে।ড্রামা ব্যতীত বাবা কিছুই করতে পারেন না। কোনো বাচ্চা বলে ড্রামাতে
থাকলে তো পুরুষার্থ করে নেওয়া যাবে, তারা কখনো উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে পারবে না। বাবা
বলেন পুরুষার্থ তোমাদের করতে হবে। ড্রামা তোমাদের পুরুষার্থ করিয়ে নেয় পূর্ব
কল্পের ন্যায়। কেউ ড্রামা অনুসারে দাঁড়িয়ে পরে যে, ড্রামাতে যা হবে, তাই মনে করা
হয় ওদের ভাগ্যে নেই। তোমাদের এখন স্মৃতি এসেছে- আমরা হলাম আত্মা, আমরা এই ভূমিকা
পালন করতে এসেছি। আত্মাও অবিনাশী, পার্টও অবিনাশী। ৮৪ জন্মের পার্ট আত্মাতে স্থির
হয়ে আছে আবার সেই পার্টই পালন করবে। এটাকেই বলা হয় প্রাকৃতিক নিয়ম। প্রাকৃতিক
নিয়মের কি আর বিস্তার করা যায়। এখন মুখ্য ব্যাপার হলো- পবিত্র অবশ্যই হতে হবে।
এটাই মাথাব্যথা। কর্ম করার সময়ও বাবার স্মরণে থাকতে হবে। তোমরা একই প্রিয়ার
প্রিয়তম হলে যে না।
এক প্রিয়াকে সমস্ত প্রিয়তমরা স্মরণ করে। সেই প্রিয়া বলেন এখন আমাকে স্মরণ করো। আমি
তোমাদের পবিত্র করে তুলতে এসেছি। তোমরা আমাকেই পতিত-পাবন বলো আবার আমাকে ভুলে গিয়ে
গঙ্গাকে কেন পতিত-পাবনী বলো? এখন তোমরা বুঝে গেছো বলে ওই সব ছেড়ে দিয়েছো। তোমরা মনে
করো একমাত্র বাবা হলেন পতিত- পাবন। এখন কৃষ্ণকে পতিত-পাবন মনে করে কখনো স্মরণ করো
না। কিন্তু ভগবান কীভাবে আসেন- এটা কেউ জানে না। কৃষ্ণের আত্মা যিনি সত্যযুগে ছিলেন
তিনি অনেক রূপ ধারণ করতে-করতে এখন এখন তমোপ্রধান হয়েছে আবার সতোপ্রধান হচ্ছে।
শাস্ত্রে এই ভুল করে দিয়েছে। এই ভুলটাই হয় যখন, তখন আমি এসে নির্ভুল করি। এই ভুল
হওয়াটাও ড্রামাতে আছে, আবারও হবে। এখন তোমাদের বোঝানো হয়েছে, শিব ভগবানুবাচ। ভগবান
বলাও হয় শিবকে। ভগবান তো একই হন। সব ভক্তদের ফল প্রদানকারী এক ভগবান। ওনাকে কেউই
জানতে পারে না। আত্মা বলেও গড্ ফাদার। ঐ লৌকিক ফাদার তো এখানে, তবুও সেই বাবাকে
স্মরণ করো, সুতরাং আত্মার দুইজন ফাদার হয়ে যায়। ভক্তি মার্গে সেই ফাদারকে স্মরণ করতে
থাকে। আত্মা তো আছেই এতো সমস্ত আত্মাদের নিজের- নিজের পার্ট প্রাপ্ত হয়েছে। এক শরীর
ছেড়ে আবার দ্বিতীয় শরীর নিয়ে পার্ট করতে হয়। এই সমস্ত ব্যাপার একমাত্র বাবা বোঝান।
বলেনও আমি এখানে পার্ট অর্থাৎ ভূমিকা পালন করতে এসেছি। এটা একটা মঞ্চ। ওর মধ্যে
চাঁদ-নক্ষত্র ইত্যাদি সব আলো আলো আছে। এই সূর্য, চাঁদ, নক্ষত্রকে মানুষ দেবতা বলে
দেয়, কারণ এরা খুব ভালো কাজ করে, রিমঝিম করে, কাউকে কষ্ট দেয় না, সকলকে সুখ দেয়।
অনেক কাজ করে, এই জন্য এদের দেবতা বলে দেয়। ভালো কাজ যারা করে তাদের বলে যে- এ যেন
হলো দেবতা। এখন বাস্তবে তো দেবতারা ছিলেন সত্যযুগে। সকলে সুখ প্রদানকারী ছিলেন।সকলেরই
ভালোবাসা ছিল যার কারণে তাদেরকে দেবদেবীদের সাথে তুলনা করা হয়। দেবতাদের গুণগানও
করা হয়। তাদের সামনে গিয়ে গায়- আমি নির্গুণ, আমার মধ্যে কোনো গুণ নেই, আপনিই দয়া
করুন..আপনার তো দয়া হয়। বাবা বলেন দয়া হয় বলেই আবার এসেছি, তোমাদের গুণবান করে
তুলতে। তোমরা পূজ্য ছিলে, এখন পূজারী হয়েছো আবার পূজ্য হও। আমি সেই- এর অর্থ
তোমাদের বুঝিয়েছি। মানুষ তো বলে দেয় আত্মাই পরমাত্মা, পরমাত্মাই আত্মা। বাবা বলেন
এটা হলো রঙ্( ভুল)। তোমরা অর্থাৎ আত্মারা নিরাকার ছিলে আবার তোমরাই দেবতা, ক্ষত্রিয়,
বৈশ্য, শূদ্র হয়েছো। এখন তোমরাই ব্রাহ্মণ বর্ণে এসেছো। আত্মা প্রথমে সতোপ্রধান, সতো,
রজো, তমোতে আসে। তোমরা অর্থাৎ বাচ্চারা এখন বুঝতে পারো এই নলেজ বাবা কল্প-কল্প
সঙ্গমযুগে এসে আমাদের প্রদান করেন। ভারত প্রথম থেকেই স্বর্গ ছিলো, সেখানে কতো অল্প
মানুষ হবে। এখন হলো কলিযুগ। সব ধর্ম এসে গেছে। সত্যযুগে কি আর অন্য কোনো ধর্ম ছিলো!
সেখানে হয়ই এক ধর্ম। এছাড়া সব আত্মারা চলে যায়। তোমরা জানো যে এখন এই পুরানো
দুনিয়ার বিনাশ সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বাবা রাজযোগ শেখাচ্ছেন। যে কেউই এলে, বলো এটা হলো
অসীম জগতের ঘড়ি। বাবা দিব্য দৃষ্টি দিয়ে এই ঘড়ি তৈরী করেছেন। যেমন সেই ঘড়ি তোমরা
বারে-বারে দেখো, এখন এই অসীম জগতের ঘড়ি স্মরণে আসে। বাবা ব্রহ্মা দ্বারা এক ধর্মের
স্থাপনা, শঙ্কর দ্বারা আসুরী দুনিয়ার বিনাশ করান। বুদ্ধিতেও বলে- এই চক্র অবশ্যই
আবর্তিত হয়। কলিযুগের পর সত্যযুগ আসবে। এখন মানুষও অনেক, উপদ্রবও অনেক হতে থাকে।
সেই বোমা তৈরী হচ্ছে। শাস্ত্রেও কতো কথা বলে দিয়েছে। বাবা এসে বেদ - শাস্ত্রের সার
বোঝান। মুখ্য ধর্ম হলো চার টি। এই ব্রাহ্মণ ধর্ম হলো পঞ্চম। সবচেয়ে উচ্চতম হলো এই
ছোটো ধর্ম। যজ্ঞকে সামলানোর যোগ্য হলো এই ব্রাহ্মণ। এটা হলো জ্ঞান যজ্ঞ। উপদ্রবকে
বন্ধ করার জন্য এই যজ্ঞ, তারা মনে করে- এই লড়াই ইত্যাদি যেন না হয়। আরে লড়াই না
লাগলে সত্যযুগ আসবে কীভাবে, এতো সব মানুষ যাবে কোথায় !আমাদের সব আত্মাদের নিয়ে
যাবেন তো অবশ্যই, শরীর এখানে ত্যাগ করে যেতে হবে। তোমরা ডাকও - হে বাবা, এসে আমাদের
পতিত থেকে পবিত্র করো।
বাবা বলেন, আমাকে অবশ্যই পুরানো দুনিয়ার বিনাশ করতে হবে। পবিত্র দুনিয়া হলোই
সত্যযুগ, সবাইকে মুক্তিধাম নিয়ে যাই। সবাই তো মৃত্যুকে আবাহন করে। তারা এটা বুঝতে
পারে না যে তারা মহান মৃত্যুকে আবাহন করছে। বাবা বলেন এটাও ড্রামাতে নির্ধারিত হয়ে
আছে। আত্মাদের ছি-ছি দুনিয়া থেকে বের করে শান্তিধামে নিয়ে যাই। এটা তো ভালো
ব্যাপার। তোমাদের মুক্তি থেকে আবার জীবনমুক্তিতে আসতে হবে, আবার জীবনবন্ধতে যাওয়া।
এতো সব তো সত্যযুগে আসবে না, আবার নম্বর অনুযায়ী আসবে, সেই কারণে এখন শান্তিধাম আর
সুখধামকে স্মরণ করো। শেষে যারা আসে তাদের পার্টই তো অল্প। তারা প্রথমে অবশ্যই সুখ
প্রাপ্ত করবে। তোমাদের পার্ট হলো সবচেয়ে উচ্চ। তোমরা অনেক সুখ প্রাপ্ত করো। ধর্ম
স্থাপক তো শুধুমাত্র ধর্ম স্থাপনা করে, কাউকে লিবারেট (মুক্ত) করে না। বাবা তো ভারতে
এসে সকলকে জ্ঞান প্রদান করেন। তিনিই হলেন সকলের পতিত পাবন, সকলকে লিবারেট করেন। আর
কোনো ধর্ম স্থাপক সদ্গতি করতে আসে না, তারা আসে ধর্ম স্থাপন করতে। তারা কোনো
শান্তিধাম সুখধামে নিয়ে যায় না, সকলকে শান্তিধাম, সুখধামে একমাত্র বাবা নিয়ে যান।
যিনি দুঃখ থেকে ছাড়িয়ে সুখ প্রদান করেন, তীর্থ তাঁরই হয়। মানুষ বোঝে না, বাস্তবে তো
সত্যিকারের তীর্থ হয় এক বাবার। মহিমাও একেরই হয়। সবাই তাঁকে ডাকে- হে
লিবারেট(মুক্তেশ্বর) এসো। ভারতই হলো সত্যিকারের তীর্থ, যেখানে বাবা এসে সকলকে মুক্তি
- জীবনমুক্তি প্রদান করেন। আর তোমরা আবার ভক্তি মার্গে ওনার বড়-বড় মন্দির তৈরী করো।
হীরে-জহরতের মন্দির তৈরী করো। সোমনাথের মন্দির কতো অপূর্ব সৃষ্টি আর এখন দেখো বাবা
কোথায় বসেছেন, পতিত শরীরে, পতিত দুনিয়াতে। তোমরাই চেনো। তোমরা বাবার সাহায্যকারী
হয়ে ওঠো। আর সকলকে রাস্তা বলে দিতে যারা সাহায্য করবে তাদের উচ্চ পদ প্রাপ্ত হবে।
এটাই রীতি। বাবা বলেন পরিশ্রম করো। অনেক কে রাস্তা বলে দাও যে বাবা আর উত্তরাধিকার
কে স্মরণ করো। ৮৪ জন্মের চক্র তো সামনে আছে, এটা হলো যেন অন্ধের সম্মুখে আয়না। এই
ড্রামা একই অনুরূপে রিপিট হয়, তবুও আমাকে কেউ জানবে না। এরকম নয় যে আমার মন্দির
লুন্ঠন করবে তো আমি কিছু করবো। ড্রামাতে লুন্ঠন আছে, আবার লুন্ঠন করে নিয়ে যাবে।
আমাকে ডাকেই পতিত থেকে পবিত্র করো, তাই আমি এসে বাচ্চাদের পড়াই। ড্রামাতে বিনাশও
নির্ধারিত হয়ে আছে, তাই আবার হবে। আমি কোনো ফুঁ দিই না যে বিনাশ হয়ে যাবে। এই বোমা
ইত্যাদি তৈরী হয়েছে- এটাও ড্রামাতে নির্দিষ্ট। আমিও ড্রামার বন্ধনে বাঁধা আছি। আমার
পার্ট সবচেয়ে বড়- সৃষ্টিকে পরিবর্তন করা, পতিত থেকে পবিত্র করা। এখন সমর্থ কে? আমি
না ড্রামা? রাবণকেও ড্রামা অনুসারে আসতেই হবে। যে নলেজ আমার মধ্যে আছে, সেটা এসে
দিই। তোমরা হলে শিববাবার সেনা। রাবণের উপর বিজয় প্রাপ্ত করো। বাবা বলেন সেন্টর্স
খুলতে থাকো। আমি আসছি পড়াতে। আমি কিছু নিই না। পয়সা যা কিছু আছে সে সব এতে সফল করো।
এমনও না যে সব উজার করে দিয়ে খিদেতে মরো। খিদেতে কেউ মরতে পারে না। বাবা সব কিছু
দিয়েছেন, তবুও খিদেয় মরবে কি ? তোমরা কি খিদেয় মরো ? শিববাবার ভাঁড়ার। আজকাল দেখো
কতো মানুষ খিদেয় মরতে থাকে। এখন বাচ্চারা, তোমাদের সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার প্রাপ্ত
করার পুরুষার্থ করতে হবে। এটা হলো আত্মীক নেচার কিওর। একদম সিম্পল ব্যাপার,
শুধুমাত্র মুখে বলো মন্মনাভব। আত্মাকে কিওর (পরিচ্ছন্ন) করে, সেইজন্য বাবাকে অবিনাশী
সার্জনও বলা হয়। কতো সুন্দর অপারেশন শেখান। আমাকে স্মরণ করলে তোমাদের সব দুঃখ দূর
হয়ে যাবে। চক্রবর্তী রাজা হয়ে যাবে। এই কাঁটার জঙ্গলে থেকেও এমন মনে করো যে আমি
ফুলের বাগানে চলেছি। বাড়ী যাচ্ছি। এক দুইজন কে স্মরণ করাতে থাকো। আল্লাহ্ কে স্মরণ
করলে তবে বে অর্থাৎ বাদশাহী প্রাপ্ত হয়ে যাবে। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
উচ্চ পদ প্রাপ্ত করার জন্য সম্পূর্ণ ভাবে বাবার সাহায্যকারী হতে হবে। অন্ধকে রাস্তা
দেখাতে হবে। অসীম জগতের ঘড়িটাকে সর্বক্ষণ স্মরণে রাখতে হবে।
২ ) যজ্ঞের তত্ত্বাবধান করার জন্য সত্যিকারের ব্রাহ্মণ হয়ে উঠতে হবে। পয়সা ইত্যাদি
যা কিছু আছে সেই সব সফল করে বাবার থেকে সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করতে হবে।
বরদান:-
স্ব-উন্নতির দ্বারা সেবাতে উন্নতি করতে সক্ষম সত্যিকারের সেবাধারী ভব
স্ব-উন্নতি হলো সেবার
উন্নতির বিশেষ আধার। স্ব-উন্নতি কম হলে তবে সেবাও কম হয়। শুধুমাত্র মুখে কাউকে
পরিচয় দেওয়াই সেবা নয়। কিন্তু প্রত্যেক কর্ম দ্বারা শ্রেষ্ঠ কর্মের প্রেরণা দেওয়া
এটাও হলো সেবা। যে মন-বচন-কর্মে সর্বদা তৎপর থাকে, তাদের সেবা দ্বারা শ্রেষ্ঠ
ভাগ্যের অনুভব হয়। যতো সেবা করবে ততই নিজেও এগোতে থাকে। নিজের শ্রেষ্ঠ কর্ম দ্বারা
সেবা করতে সক্ষম সদা প্রত্যক্ষ ফল প্রাপ্ত করতে থাকো।
স্লোগান:-
সমীপে আসার জন্য ভাবা, বলা আর করা-কে সমান বানাও।