07.02.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
মিষ্টি বাচ্চারা -
বাবা তোমাদের যা কিছু শোনাচ্ছেন শুধু সেইসবই শোনো, কোনে বিকারী কথা শুনবেও না,
বলবেও না, হিয়ার নো ইভিল, সী নো ইভিল...
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা, তোমাদের কোন্ নিশ্চয় বাবার দ্বারা-ই হয়েছে ?
উত্তরঃ -
বাবা তোমাদেরকে নিশ্চয় করিয়েছেন যে, "আমি তোমাদের বাবাও, শিক্ষকও, এবং সদ্গুরুও",
এই স্মৃতিতে স্থির থাকার জন্য তোমরা পুরুষার্থ করো, কিন্তু মায়া তোমাদেরকে এই কথাটি
ভুলিয়ে দেয়। অজ্ঞান কালে তো তোমরা মায়ার সম্বন্ধে কিছুই জানতে না।
প্রশ্নঃ -
দৈনন্দিন চার্ট -এ কোন্ বিষয়টি দেখার জন্য বিশাল বুদ্ধি চাই ?
উত্তরঃ -
নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে কতটা সময় স্মরণ করতে পারছি - এই চার্ট রাখার জন্য
বিশাল বুদ্ধি চাই। দেহী-অভিমানী হয়ে বাবাকে স্মরণ করলে বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে।
ওম্ শান্তি ।
ছাত্র-ছাত্রীরা
এটা বুঝে গেছে যে, শিক্ষক এসে গেছেন। এটা তো বাচ্চারা জেনে গেছে যে, তিনি আমাদের
বাবাও, শিক্ষকও, আবার পরম সদ্গুরুও । এই সমস্ত কথাগুলি বাচ্চাদের স্মৃতিতে আছে, তবে
পুরুষার্থের ক্রম অনুসারে। নিয়ম হল, যখন একবার জানা যায় যে, তিনি আমাদের শিক্ষক
অথবা বাবা বা গুরু, তখন তাকে ভোলা সম্ভব নয়। কিন্তু এখানে মায়া তোমাদের ভুলিয়ে
দেয়। অজ্ঞান কালে মায়া কখনো ভোলাতে পারেনা। লৌকিকে, বাচ্চারা কখনো ভুলতে পারে না
যে, ইনি হলেন আমাদের বাবা, এটাই হলো তাঁর কাজ। বাচ্চারা এটা জেনে খুশি থাকে যে, আমরা
হলাম বাবার ধন-সম্পত্তির মালিক। হয়তো নিজেই পড়ে, কিন্তু বাবার সম্পত্তি তো প্রাপ্ত
হয়, তাই না! এখানে বাচ্চারা, তোমরা পড়াশোনা করো আর বাবার সম্পত্তির অধিকারী হও।
তোমরা এখন রাজযোগ শিখছো। বাবার দ্বারাই নিশ্চিত হও যে, আমরা বাবার আছি, বাবা-ই
আমাদের সদ্গতির রাস্তা বলে দেন। এইজন্য তিনি সদ্গুরুও আছেন। এই সমস্ত কথা ভুলে যাওয়া
উচিৎ নয়। যা কিছু বাবা শোনাচ্ছেন, সেটাই শুনতে হবে। এখানে যে বাঁদরের প্রতিমূর্তি
দেখানো হয় - হিয়ার নো ইভিল, সী নো ইভিল..... এসব হল মানুষের কথা। বাবা বলেন যে,
বিকারী কথা বলো না, শোনোও না আর বিকারী কিছু দেখবেও না। হিয়ার নো ইভিল.....
প্রথমদিকে বাঁদরদের মূর্তি বানিয়ে দেখানো হতো। এখন তো মানুষেরও মূর্তি বানাচ্ছে।
তোমাদের কাছে নলিনী বাচ্চীর তোলা চিত্র রয়েছে (খারাপ দেখব না, খারাপ শুনব না,
খারাপ বলবো না)। তাই তোমরা এমন কোনো কথা শুনবে না, যেখানে বাবার নিন্দা-গ্লানি করা
হয়েছে। বাবা বলেন যে, সবথেকে বেশি নিন্দা আমারই হয়। তোমাদের জানা আছে যে, কৃষ্ণের
ভক্তদের জ্বালানো ধূপের সুগন্ধ নাকে এলে রামের ভক্তরা নাক বন্ধ করে দেয়। পরস্পরের
সুগন্ধও ভালো লাগেনা। পরস্পরের শত্রু হয়ে যায়। এখন তোমরা হলে রাম-বংশী। সমগ্র জগৎ
হল রাবণ-বংশী। এখানে ধূপ ইত্যাদির তো কোনো কথাই নেই। তোমরা জানো যে বাবাকে
সর্বব্যাপী বলার কারণে তোমাদের কি গতি হয়েছে! নুড়ি পাথরের মধ্যে বাবাকে স্থাপন করে
তোমাদের বুদ্ধিও পাথর সমান হয়ে গেছে। তাই অসীম জগতের বাবা, যিনি তোমাদের স্বর্গের
আশীর্বাদ প্রদান করেন, তাঁকে কত গ্লানি করা হয়েছে। জ্ঞান তো কারোর মধ্যেই নেই। তারা
কোন জ্ঞানরত্ন নয়, তারা হল পাথর সমান। এখন তোমাদেরকে, বাবাকে স্মরণ করতে হবে। বাবা
বলেন যে, আমি যা, যেমন, যথার্থ রীতি আমাকে কেউই জানেনা। বাচ্চাদের মধ্যেও নম্বরের
ক্রমানুসার আছে। বাবাকে যথার্থ রীতিতে স্মরণ করতে হবে। তিনি হলেন অত্যন্ত সূক্ষ্ম
বিন্দু স্বরূপ। তাঁর মধ্যেই সমস্ত পার্ট ভরা আছে। বাবাকে যথার্থ রীতি জেনে স্মরণ
করতে হবে, নিজেকে আত্মা মনে করতে হবে। যদিও আমরা হলাম বাবার সন্তান, কিন্তু এমন নয়
যে, বাবার আত্মা বড় আর আমাদের আত্মা হলো ছোট। না। হয়তো বাবা নোলেজফুল আছেন, কিন্তু
আত্মা কোন বড় ছোটো হয় না। তোমাদের আত্মাতেও জ্ঞান আছে, কিন্তু নম্বরের ক্রমানুসারে।
স্কুলেও নম্বরের ক্রমানুসারে পাস হয় তাইনা! শূন্য নম্বর কেউই পায় না। কিছু না কিছু
নম্বর তো প্রাপ্ত করে। বাবা বলেন যে, আমি যা কিছু জ্ঞান তোমাদের শোনাই, সেসব
প্রায়ঃলোপ হয়ে যায়। তবুও চিত্র আছে, শাস্ত্র অাদিও অনেক বানানো হয়েছে। বাবা
তোমাদের আত্মাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলছেন যে, হিয়ার নো ইভিল..... অর্থাৎ খারাপ কিছু
শুনবে না। এই দুনিয়াতে কিছুই দেখার মতো নেই। এই পুরানো ছিঃ ছিঃ নোংরা দুনিয়া থেকে
মুখ ফিরিয়ে নিতে হবে। এখন আত্মার স্মৃতিতে এসেছে যে, এটা হল পুরানো দুনিয়া। এর
থেকে কোনো যোগাযোগ রাখার প্রয়োজন নেই। আত্মার স্মরণে এসেছে যে, এই দুনিয়াকে দেখেও
দেখা উচিত নয়। নিজের শান্তিধাম আর সুখধামকে স্মরণ করতে হবে। আত্মার এখন জ্ঞানের
তৃতীয় নেত্র প্রাপ্ত হয়েছে, তাই এই সমস্ত কথা চিন্তন করতে হবে। ভক্তিমার্গেও সকাল
সকাল উঠে মালা জপ করে। সকালের সময়টা খুব সুন্দর হয়। ব্রাহ্মণদের সময়। ব্রহ্মা
ভোজনেরও অনেক মহিমা আছে। ব্রহ্মভোজন নয়, ব্রহ্মাভোজন। তোমাদেরকেও ব্রহ্মাকুমারীর
বদলে ব্রহ্মকুমারী বলে দেয়। বোঝেনা কিছুই। ব্রহ্মার সন্তান তো
ব্রহ্মাকুমার-কুমারীই হবে, তাইনা! ব্রহ্ম তো হল তত্ত্ব, থাকার স্থান, তার আবার কি
মহিমা হতে পারে ! বাবা বাচ্চাদেরকে অনুযোগ করেন যে, বাচ্চারা তোমরা একদিকে পূজা করো
আবার অন্যদিকে সকলকে নিন্দাও করো। নিন্দা করতে করতে তমোপ্রধান হয়ে গেছো। তমোপ্রধান
হতেই হয়, সৃষ্টিচক্রের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে, তাই না ! যখন কোন নামী-গ্রামী ব্যক্তি
আসেন, তখন তাকেও এই সৃষ্টি চক্র সম্বন্ধে অবশ্যই বোঝাতে হবে। এই সৃষ্টি চক্র ৫
হাজার বর্ষের জন্য আছে, এই চিত্রের উপর খুব একাগ্রচিত্ত হতে হবে। রাতের পর দিন
অবশ্যই হয়। এমন নয় যে, রাতের পর দিন আসেনা। কলিযুগের পর সত্যযুগ অবশ্যই আসবে। এই
বিশ্বের ইতিহাস-ভূগোলের পুনরাবৃত্তি হতেই থাকে।
তাই বাবা বোঝাচ্ছেন যে, মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, নিজেকে আত্মা মনে করো, আত্মাই সব
কিছু করে, অভিনয় করে। এসমস্ত কথা কারোরই জানা নেই যে, যদি আমরা অভিনয় করি, তাহলে
নাটকের আদি-মধ্য-অন্তকে অবশ্যই জানতে হবে। বিশ্বের ইতিহাস ভূগোলের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে,
তো এটা নাটকই হলো তাইনা। সেকেন্ডের সময় অনুসারে পুনরাবৃত্তি হবে যা পূর্ব কল্পে
হয়েছিল। এই সমস্ত কথা আর কেউ বুঝতে পারে না। যাদের বুদ্ধি কম তারা সর্বদাই ফেল হয়ে
যায় তো, তার জন্য শিক্ষক কি করতে পারে! শিক্ষককে কি বলবে যে, কৃপা করো বা আশীর্বাদ
করো। এটাও হলো পড়াশোনা। এই গীতা পাঠশালাতে স্বয়ং ভগবান রাজযোগ শেখাচ্ছেন। কলিযুগ
পরিবর্তিত হয়ে সত্যযুগ অবশ্যই হবে। ড্রামা অনুসারে বাবাকেও আসতে হয়। বাবা বলেন
যে, আমি কল্প কল্পের সঙ্গম যুগেই আসি, আর অন্য কেউ কি এই কথা বলতে পারবে যে, আমি
সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান শোনাতে এসেছি। নিজেকে "শিবোহম্" বলে দেয়, তাতে কি
লাভ আছে। শিববাবা তো আসেন-ই পড়ানোর জন্য, সহজ রাজযোগ শেখানোর জন্য। কোন সাধু-সন্ত
আদিকে শিব ভগবান বলা যায় না। এরকম তো অনেকেই বলে যে, আমি কৃষ্ণ, আমি লক্ষীনারায়ণ।
এখন কোথায় সেই শ্রীকৃষ্ণ সত্য যুগের রাজা আর কোথায় এই কলিযুগী পতিত মানুষ। এরকম
কি কেউ বলতে পারে যে, এঁনার মধ্যে ভগবান আছেন। তোমরা মন্দিরে গিয়ে জিজ্ঞাসা করতে
পারো যে - এঁনারা তো সত্যযুগে রাজত্ব করেছিলেন, তারপর কোথায় গেলেন? সত্য যুগের পর
অবশ্যই ত্রেতা, দ্বাপর, কলি যুগ হয়। সত্য যুগে সূর্যবংশী রাজ্য ছিল, ত্রেতাতে
চন্দ্রবংশী...... এইসব জ্ঞান বাচ্চারা, তোমাদেরই বুদ্ধিতেই আছে। এত সংখ্যক
ব্রহ্মাকুমার-ব্রহ্মাকুমারী আছে, তাহলে অবশ্যই প্রজাপিতাও থাকবেন। পুনরায় ব্রহ্মার
দ্বারা মনুষ্যসৃষ্টি রচিত হয়। ব্রহ্মাকে রচয়িতা বলা যায় না। তিনিই (শিব বাবা)
হলেন গডফাদার। কিভাবে রচনা করেন, সেসব তো বাবা সম্মুখে বসে তোমাদের বোঝান। এই
শাস্ত্র আদি তো পরবর্তীকালে বানানো হয়েছে। যেরকম, যীশুখ্রীষ্ট যা বুঝিয়েছেন, সেটা
বাইবেলে লেখা হয়েছে। পরবর্তীকালে সেসবই বসে প্রার্থনা করা হয়। সকলের সদ্গতি দাতা,
সকলের মুক্তিদাতা, পতিতপাবন এক বাবা-ই আছেন, তাঁকে স্মরণ করতে থাকে আর বলে যে, হে
গডফাদার - আমাকে দয়া করো। ফাদার তো একজনই হন। ইনি হলেন সমগ্র বিশ্বের ফাদার।
মানুষের এবিষয়ে জানা নেই যে সর্ব দুঃখ থেকে মুক্তিদাতা কে ? এখন সৃষ্টিও পুরানো,
মানুষও পুরানো তমোপ্রধান হয়ে গেছে। এটা হল লৌহ যুগের বিশ্ব। স্বর্ণযুগ ছিল, তা
পুনরায় অবশ্যই হবে। এই সব বিনাশ হয়ে যাবে, বিশ্বযুদ্ধ হবে, প্রকৃতির দুর্যোগ হবে।
এটাই হলো সেই সময়। মনুষ্য সৃষ্টি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
তোমরা বলতে থাকো যে - ভগবান এসে গেছেন। বাচ্চারা, তোমরা সবাইকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলো
যে, ব্রহ্মার দ্বারা এক আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা হচ্ছে। ড্রামা অনুসারে
সবাই শুনতে থাকে। দৈব্যগুনও ধারণ করতে হয়। তোমরা জানো যে তোমাদের মধ্যে কোন গুণ
ছিল না। প্রথম নম্বরের অবগুণ হলো কাম বিকারের। যা আমাদের দুঃখ দেয়। মায়ার সাথে
যুদ্ধ চলতেই থাকে। না চাইতেও মায়ার তুফান একদম নিচে ফেলে দেয়। এটা হল লৌহযুগ,
তাইনা। মুখ কালো করে দেয়। নীল মুখ তো বলতে পারো না। কৃষ্ণের জন্যই দেখানো হয়েছে
যে, সর্পদংশনের জন্য নীল হয়ে গেছে। সম্মান রাখার জন্য নীল রঙ দেখানো হয়েছে। মুখ
কালো দেখালে সম্মান চলে যায়। তাই দূরদেশ, নিরাকার দেশ থেকে অতিথি এসেছেন, লৌহ
যুগের দুনিয়ায়, কালো শরীরে এসে এঁনাকেও শুভ্র বানিয়ে দেন। এখন বাবা বলেন যে,
তোমাদেরকে পুনরায় সতোপ্রধান হতে হবে। আমাকে স্মরণ করো তো বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে,
আর বিষ্ণুপুরের মালিক হয়ে যাবে। এই সমস্ত জ্ঞানের কথাগুলি বুঝতে হবে। বাবা হলেন
রূপ (যোগী) আবার বসন্তও (জ্ঞানী)। তেজোময় বিন্দু স্বরূপ তিনি । তাঁর মধ্যে জ্ঞানও
আছে। তিনি নাম রূপ থেকে পৃথক নন। তাঁর রূপ কী, এই দুনিয়া তা জানেনা। বাবা তোমাদেরকে
বোঝাচ্ছেন যে, আমাকেও আত্মা বলে, শুধু পরম আত্মা। পরম আর আত্মা মিলে হয়ে যায়
পরমাত্মা। তিনি বাবাও আছেন, শিক্ষকও আছেন। তিনি বলেন যে, তিনি হলেন নলেজ ফুল। তারা
এটা বোঝে যে, নলেজ ফুল অর্থাৎ সকলের হৃদয়ের কথা জানতে পারেন। আর যদি পরমাত্মা
সর্বব্যাপী হয় তাহলে সবাই নলেজ ফুল হয়ে যাবে। তাহলে সেই এক-কে কেন বলা হয়?
মানুষের বুদ্ধি তুচ্ছ হয়ে গেছে। জ্ঞানের কথাগুলোকে একদম বুঝতে পারে না। বাবা বসে
জ্ঞান আর ভক্তির বৈষম্য প্রদর্শন করে বলেন যে - প্রথম হল জ্ঞান, দিন, সত্য যুগ আর
ত্রেতা। তারপর হল দ্বাপর কলিযুগ রাত। জ্ঞানের দ্বারাই সদ্গতি হয়। এই রাজযোগের
জ্ঞান হঠযোগীরা বোঝাতে পারেনা। গৃহস্থীরাও বোঝাতে পারে না, কারণ তারা হল অপবিত্র।
এখন রাজযোগ তাহলে কে শেখাবে? তিনি বলেন যে, মামেকম্ স্মরণ করো তাহলেই বিকর্ম বিনাশ
হয়ে যাবে। নিবৃত্তি মার্গের ধর্ম হল আলাদা, তারা প্রবৃত্তি মার্গের জ্ঞান কিভাবে
শোনাতে পারে? এখানে সবাই বলে যে গডফাদার ইজ ট্রুথ। বাবা-ই সত্য কথা শোনান। আত্মার
মধ্যে বাবার স্মৃতি এসেছে, এইজন্য আমরা বাবার স্মরণ করছি। বলি যে, এসে আমাদের নর
থেকে নারায়ণ হওয়ার জন্য সত্য নারায়ণের কথা শোনাও। আমিই তোমাদেরকে সত্যনারায়ণের
কথা শোনাই, তাই না! আগে তোমরা মিথ্যা কথা শুনতে। এখন তোমরা সত্য শুনছো। মিথ্যা কথা
শুনতে শুনতে কেউ নারায়ণ তো হতে পারোনি। তাহলে সেটি সত্যনারায়ণের কথা কিভাবে হবে?
মানুষ কাউকে নর থেকে নারায়ন বানাতে পারেনা। বাবা এসে স্বর্গের মালিক বানান। বাবা
আসেনই ভারতে, কিন্তু কখন আসেন, এটা কেউই জানেনা। তারা তো শিব-শঙ্করকে মিলিয়ে গল্প
বানিয়ে দিয়েছে। শিব পুরাণও আছে। 'গীতা'- বলা হয় কৃষ্ণের, তাহলে তো শিবপুরাণ বড়
হয়ে যায়। বাস্তবে জ্ঞান তো গীতাতেই আছে। ভগবান উবাচ - মন্মনা ভব। এই শব্দটি গীতা
ছাড়া অন্য কোনো শাস্ত্রে থাকতে পারে না। গাওয়াও হয় যে, সর্ব শাস্ত্রের শিরোমণি হলো
গীতা। শ্রেষ্ঠমৎ আছেই ভগবানের। প্রথম প্রথম এটাই বলতে হবে যে, আর কয়েক বছরের মধ্যেই
নতুন শ্রেষ্ঠাচারী দুনিয়া স্থাপন হয়ে যাবে। এখন হলো ভ্রষ্টাচারী দুনিয়া।
শ্রেষ্ঠাচারী দুনিয়াতে খুব অল্পসংখ্যক মানুষই থাকবে। এখন তো অনেক মানুষ। তাদেরজন্য
বিনাশ সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বাবা রাজযোগ শেখাচ্ছেন। উত্তরাধিকার তো বাবার থেকেই
প্রাপ্ত হয়। কিছু প্রয়োজন হলে বাবার কাছেই প্রার্থনা করে। কারোর ধনসম্পত্তি বৃদ্ধি
হলে বা বাচ্চা হলে বলে যে ভগবান দিয়েছেন। তাহলে ভগবান তো এক হলেন, তাই না। তাহলে
সকলের মধ্যেই ভগবান কিভাবে হতে পারেন ? এখন আত্মাদের বাবা বলছেন যে, আমাকে স্মরণ করো।
আত্মা বলে যে আমাকে পরমাত্মা জ্ঞান প্রদান করেছেন, যে জ্ঞান আমরা পুনরায় ভাইদের
প্রদান করছি। নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে কতটা সময় স্মরণ করছি, এই চার্ট রাখার
জন্য বিশাল বুদ্ধি চাই। দেহী অভিমানী হয়ে বাবাকে স্মরণ করলে বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে।
জ্ঞান তো হল খুবই সহজ। বাকি নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করলেই নিজের উন্নতি
হবে। এই চার্ট বিরলই কেউ রাখতে পারে। দেহী অভিমানী হয়ে বাবার স্মরণে থাকলে, কখনো
কাউকে দুঃখ দিতে পারবে না। বাবা আসেন-ই সুখ প্রদান করার জন্য, তাই বাচ্চাদেরকেও
সবাইকে সুখ দিতে হবে। কখনো কাউকে দুঃখ দেবে না। বাবাকে স্মরণ করলেই সব ভূত বেরিয়ে
যাবে। এটাই হলো গুপ্ত পরিশ্রম। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই
বিকারী নোংরা দুনিয়ার দিক থেকে নিজের চোখ বন্ধ করে নিতে হবে। এটা হল পুরানো দুনিয়া।
এর সাথে কোনো রকমের যোগাযোগ রেখোনা। এই জগতের কোনোকিছু দেখেও দেখো না।
২ ) এই অসীম জগতের নাটকের মধ্যে আমি হলাম অভিনেতা। এই নাটকটি প্রত্যেক কল্পে
সেকেন্ড বাই সেকেন্ড পুনরাবৃত্তি হচ্ছে । যেটা পূর্বের কল্পে হয়েছিলো, সেটাই
পুনরায় হবে... এই কথাগুলি স্মৃতিতে রেখে প্রত্যেক বিষয়ে পাশ হতে হবে। এর জন্য
অনন্য বুদ্ধিসম্পন্ন হতে হবে।
বরদান:-
নিজের শ্রেষ্ঠ আচরণ দ্বারা অন্যদের আচরণকে পরিবর্তন করে সর্বদা সিদ্ধি স্বরূপ ভব
ব্যাখ্যা :- সিদ্ধি
স্বরূপ হওয়ার জন্য শ্রেষ্ঠ আচরণ দ্বারা অন্যদের আচরণকে, সংকল্পের দ্বারা
অন্যান্যদের সংকল্পকে পরিবর্তন করার কাজ করো, গবেষণা করো। যখন এই সেবাতে ব্যস্ত হয়ে
যাবে, তখন এই সূক্ষ্ম সেবা সততঃই কোন দুর্বল সংস্কার থেকে তোমাদেরকে পার করে দেবে।
এখন এরই প্ল্যান তৈরি করো, তো জিজ্ঞাসু আত্মাদের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পাবে। তোমাদের
অর্থনৈতিক আয়ও অনেক বৃদ্ধি পাবে, বড় বড় ভবন আদি প্রাপ্ত হবে - এইসব সিদ্ধি সহজেই
হয়ে যাবে। এই বৃদ্ধি তোমাদের সিদ্ধি স্বরূপ বানিয়ে দেবে।
স্লোগান:-
সময়কে সফল করতে থাকো, , তাহলে সময়ের প্রতারণা থেকে বেঁচে যাবে।