23-02-2020 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 27-11-85 মধুবন


পুরানো সংসার এবং পুরানো সংস্কার বিস্মৃত হওয়ার উপায়


বাপদাদা সব নিশ্চয়বুদ্ধি বাচ্চার প্রত্যয়ের প্রত্যক্ষ জীবনের স্বরূপ* দেখছেন l নিশ্চয়বুদ্ধির বিশেষত্ব সবাই শুনেছে l এইরকম বিশেষত্ব সম্পন্ন নিশ্চয়বুদ্ধি বিজয়ী রত্ন এই ব্রাহ্মণ জীবনে বা পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগী জীবনে সদা নিশ্চয়ের উদাহরণ হবে এবং তারা তুরীয় আনন্দে থাকবে l আধ্যাত্ম-নেশা নিশ্চয়ের দর্পণ স্বরূপ l নিশ্চয় শুধু বুদ্ধিতে স্মৃতি রূপে নয়, বরং প্রতি পদে আধ্যাত্মিক নেশারূপে, কর্ম দ্বারা প্রত্যক্ষ স্বরূপে নিজেকে তোমরা অনুভব কর এবং অন্যেরাও করবে, কারণ এটা জ্ঞানী আর যোগী জীবন l এটা শুধুই শোনা বা বলার জন্য নয়, জীবন গঠনের জন্য l জীবনে স্মৃতি অর্থাৎ সঙ্কল্প, বোল, কর্ম, সম্বন্ধ অঙ্গীভূত হয় l নিশ্চয়বুদ্ধি অর্থাৎ তুরীয় আনন্দের জীবন l যে আত্মারা এইরকম আধ্যাত্মিক নেশায় থাকে তাদের প্রতিটা সঙ্কল্প সদা তুরীয় অবস্থায় সম্পন্ন হবে l সঙ্কল্প, কর্ম, বোল এই তিনের মাধ্যমে নিশ্চয়ের নেশা অনুভব হবে l যেমন নেশা ঠিক তেমনই খুশির ঝলক তোমাদের চেহারায় এবং আচার-আচরণে প্রত্যক্ষীভূত হবে l নিশ্চয়ের প্রমাণ তুরীয় আনন্দ আর তুরীয় আনন্দের প্রমাণ অপার খুশি l এই তুরীয় অবস্থা কতো রকম হয় সেই পরিসর অনেক বড় l যতই হোক, সার রূপে প্রথম নেশা অশরীরী, আত্মিক স্বরূপ l এই বিষয়ে বিশদে জানো তোমরা ? আত্মা তো সবাই কিন্তু তুরীয় অবস্থা তখনই অনুভব হয় যখন তোমার এই স্মৃতি থাকে যে "আমি কোন্ আত্মা !" নিজেদের মধ্যে এই তুরীয় অবস্থা বা নেশার বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা করো বা নিজেই তার মনন করো l

দ্বিতীয় নেশার বিশেষ রূপ সঙ্গমযুগের অলৌকিক জীবন l এই জীবনেও তোমাদের জীবন কি ধরণের তার বিশদ বিবরণ সম্বন্ধে ভাবো l সুতরাং, প্রথম নেশা আত্মিক স্বরূপের, দ্বিতীয় নেশা অলৌকিক জীবনের, তৃতীয় ফরিস্তা ভাবের নেশা l তোমাদের ফরিস্তা কেন বলা হবে, সেটাও স্পষ্ট করো l চতুর্থ হল ভবিষ্যতের নেশা l এই চার রকম অলৌকিক নেশার মধ্যে কোনও নেশা যদি জীবনে থাকে স্বতঃই খুশিতে নাচতে থাকবে l তোমার নিশ্চয় আছে অথচ খুশি নেই, এর কারণ কি ? এর কারণ তোমার সেই নেশা নেই l নেশা সহজেই পুরানো সংসার আর পুরানো সংস্কার ভুলিয়ে দেয় l এই দুই বিষয়ই পুরুষার্থী জীবনে বিশেষ বিঘ্নরূপ, হয় পুরানো সংসার না হয় পুরানো সংস্কার l সংসারে দেহের সম্বন্ধ আর দেহের পদার্থ উভয়ই অন্তর্ভুক্ত l সেইসঙ্গে সংসারের থেকেও পুরানো সংস্কার অধিক বিঘ্নরূপ l সংসার ভুলে যেতে পারে কিন্তু সংস্কার ভুলতে পারা যায় না l সুতরাং সংস্কার পরিবর্তন করার সাধন এই চার রকম তুরীয় অবস্থার যে কোনও অবস্থা সাকার স্বরূপে থাকা l শুধু সঙ্কল্প স্বরূপে নয় l সাকার স্বরূপে হওয়ায় কখনও বিঘ্নরূপ হবে না l এখনও পর্যন্ত সংস্কার পরিবর্তন না হওয়ার এটাই কারণ l এই নেশাকে সঙ্কল্প রূপে অর্থাৎ নলেজ রূপে বুদ্ধিতে ধারণ করার জন্য কখনও কোনো পুরানো সংস্কার ইমার্জ হলে তোমরা এই ভাষা বলো - 'আমি সব বুঝি', তোমরা বুঝতে পার যে তোমাদের পরিবর্তিত হওয়া প্রয়োজন, কিন্তু সেটা শুধু বুঝতে পারা অবধি নয়, তা' কর্মে হতে হবে অর্থাৎ তোমাদের বাস্তব জীবনে হতে হবে l জীবনে পরিবর্তন যেন তোমাদের অনুভব হয় l একেই বলে, সাকার স্বরূপে হওয়া l এখন শুধু পয়েন্টস রূপে ভাববার এবং সেই সম্বন্ধে বর্ণন অবধি আছে I যাই হোক, যখন প্রতিটা কর্মে, সম্পর্কে পরিবর্তন প্রতীয়মান হয়, তাকে বলে, সাকার রূপে অলৌকিক নেশা l এখন সব নেশা তোমাদের জীবনে সংযোজন কর l যে কেউই তোমাদের ললাটের দিকে দেখলে তাদের আধ্যাত্মিক নেশার বৃত্তি তোমাদের ললাট থেকে অনুভূত হতে দাও l কেউ তা' বর্ণন করলেও বা না করলেও কিন্তু এই বৃত্তিই বায়ুমন্ডলে এবং ভাইব্রেশনে ছড়িয়ে যায় l তোমাদের বৃত্তি যেন অন্যদেরও খুশির বায়ুমন্ডলে খুশির ভাইব্রেশন অনুভব করায়, একে বলা হয়, তুরীয়ানন্দে স্থিত হওয়া l ঠিক একইভাবে, তোমাদের দৃষ্টি দ্বারা, মুখের হাসি এবং মুখের বোল দ্বারা আধ্যাত্ম নেশা সাকার রূপে অনুভূত হতে দাও l শুধুমাত্র তখনই বলা হবে যারা তুরীয়ানন্দে থাকে তারা নিশ্চয়বুদ্ধি বিজয়ী রত্ন l তোমাদের এতে অবশ্যই গুপ্ত থাকা উচিত নয় l এতে কেউ কেউ চাতুরী ক'রে বলে যে তারা গুপ্ত থাকছে l কথায় যেমন বলে, সূর্যকে কেউ লুকিয়ে রাখতে পারে না l ঘন মেঘাচ্ছন্ন হলেও সূর্য নিজের আলো দিয়ে যাবে l সূর্য সরে যায় নাকি মেঘ সরে যায় ? মেঘ আসে আবার সরেও যায়, কিন্তু সূর্য তার আলোক স্বরূপে স্থিত থাকে l ঠিক একইভাবে যারা আধ্যাত্মিক নেশায় থাকে তারাও তাদের আধ্যাত্মিক ঝলকে লুকিয়ে থাকতে পারে না l তাদের আধ্যাত্মিক নেশার ঝলক প্রত্যক্ষ রূপে অবশ্যই অনুভব হয় l তাদের ভাইব্রেশন নিজে থেকেই অন্যদের আকর্ষণ করে l যারা আধ্যাত্মিক নেশায় থাকে তাদের ভাইব্রেশন তাদের নিজেদের এবং অন্যদের জন্যও সুরক্ষিত ছত্রছায়ার কার্য করে l সুতরাং তোমাদের এখন কি করতে হবে ? অভ্যাসে পরিণত কর l নলেজের হিসেবে, তোমরা নলেজফুল হয়ে গেছ l কিন্তু নলেজকে তোমাদের সাকার জীবনে রেখে নলেজফুল হওয়ার সাথে সাথে নিজেদের তোমরা সাকসেসফুল, ব্লিসফুল অনুভব করবে l আচ্ছা বাবা তোমাদের অন্য কোনও সময় শোনাবেন কারও সাকসেসফুল আর ব্লিসফুল স্বরূপ কী !

আজ তো আধ্যাত্মিক নেশার বিষয়ে শোনাচ্ছেন l এই তুরীয়ানন্দ যেন সকলের অনুভব হয় l এই চার প্রকার তুরীয় অবস্থার মধ্যে থেকে একটা ভাবকে বিভিন্নভাবে ইউজ কর l এই নেশা জীবনে যত অনুভব করবে, ততই সদা সকলে উদ্বেগমুক্ত নিশ্চিন্ত বাদশাহ হয়ে যাবে l সবাই তোমাদের নিশ্চিন্ত বাদশাহ রূপে দেখবে l সুতরাং, এখন এই ব্যাখ্যান স্পষ্ট কর এবং প্র্যাক্টিসে সংযোজন কর l যেখানে খুশি থাকে সেখানে মায়া কোনও জারিজুরি খাটাতে পারে না l নিশ্চিন্ত বাদশাহর বাদশাহীর গণ্ডীর মধ্যে মায়া আসতে পারে না l সে আসে আর তোমরা তাকে বিতাড়ন কর, আবার আসে আর আবারও সে বিতাড়িত হয় l কখনো দেহের রূপে আসে, কখনো দেহ-সম্বন্ধের রূপে আসে l একেই বলে, মায়া কখনও হাতি হয়ে আসে, কখনো বিড়াল হয়ে আবার কখনো ইঁদুর হয়ে আসে l কখনো ইঁদুর তাড়াও আর কখনো বিড়াল তাড়াও l এই তাড়ানোর কার্যেই তোমাদের সময় অতিবাহিত হয়ে যায়, সেইজন্য সদা তুরীয়ানন্দে থাক l প্রথমে নিজেকে প্রত্যক্ষ কর, তারপরে তোমরা বাবাকে প্রত্যক্ষ করবে l কারণ তোমাদের মধ্য দিয়েই বাবা প্রত্যক্ষগোচর হতে হবে l আচ্ছা -

যারা সদা নিজের দ্বারা সর্বশক্তিমানকে প্রত্যক্ষ করে, সদা নিজেদের সাকার জীবনের দর্পণে আধ্যাত্মিক নেশার বিশেষত্ব প্রত্যক্ষ করে, সদা নিশ্চিন্ত বাদশাহ হয়ে মায়াকে বিদায় জানায়,সদা নলেজকে কার্যকর করে তোলে, এইরকম নিশ্চয়বুদ্ধি যে বাচ্চারা তুরীয়ানন্দে থাকে, সদা খুশির দোলায় দোলে, সেই শ্রেষ্ঠ এবং বিশেষ আত্মাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l

সেবাধারী (টিচার্স) বোনেদের সাথে :- সেবাধারী অর্থাৎ যারা নিজেদের শক্তির দ্বারা অন্যদেরও শক্তিশালী তৈরি করে l সেবাধারীর বাস্তবিক বিশেষত্ব এটাই l যারা নির্বল তাদের বল (শক্তি ) দ্বারা পূর্ণ করার নিমিত্ত হওয়াই প্রকৃত সেবা l এইরকম সেবার পার্ট প্লে করার অর্থ হিরো পার্ট প্লে করা l তাহলে, হিরো পার্টধারী, তোমরা কতো নেশায় থাক ? সেবার পার্ট দ্বারা যত চাও তোমাদের নম্বর বাড়িয়ে নিতে পার, কারণ সেবা অগ্রচালিত হওয়ার সাধন l সেবায় বিজি থাকলে নিজে থেকেই বাদবাকি সব থেকে সরে যায় l প্রতিটা সেবাস্থান একটা স্টেজ, যে স্টেজে প্রত্যেক আত্মা নিজের পার্ট প্লে করছে l সাধন তো অনেক আছে, কিন্তু সাধন সদা শক্তিপূর্ণ হওয়া প্রয়োজন l যদি বিনা শক্তির সাধন তোমরা ইউজ কর, তাহলে সেবাতে যে রেজাল্ট বেরনো উচিত তা' বের হয় না l পুরানো দিনের যোদ্ধারা সদা তাদের অস্ত্রশস্ত্র দেবতাদের সামনে অর্পণ ক'রে সেগুলো শক্তিপূর্ণ ক'রে তারপরে ইউজ করত l সুতরাং তোমরা সবাইই কোনও সাধন যখন ইউজ কর, তখন ইউজ করার আগে তা' বিধিপূর্বক কার্যে ইউজ করো ? যে সাধন তোমরা এখন ইউজ কর তার প্রতি লোকজন অল্প সময়ের জন্য আকৃষ্ট হয় l সদাকালের জন্য প্রভাবিত হয় না, কারণ এত শক্তিশালী আত্মারা যে শক্তি দিয়ে পরিবর্তন করে দেখাবে, তারা সবাই নম্বরানুক্রমিক l সেবা তোমরা সবাই কর ; তোমরা টিচার নামে অভিহিত l তোমরা সেবাধারী নাকি টিচার, কিন্তু সেবাতে প্রভেদ কি ? একই প্রোগ্রাম কর, প্ল্যানও একই রকম কর l তোমাদের রীতি-রেওয়াজও এক রকম l তবুও সফলতার ক্ষেত্রে তারতম্য ঘটে যায়, এর কারণ কি ? শক্তির অভাব l সুতরাং শক্তি দিয়ে সাধনসমূহ পূর্ণ কর l উদাহরণস্বরূপ, তরোয়ালে যদি তীক্ষ্ণতা না থাকে তাহলে সেই তরোয়াল তরোয়ালের কাজ করবে না l সাধন হলো সেইরকমই তরোয়াল, কিন্তু তা'তে শক্তির তীব্রতা প্রয়োজন l যে যত বেশি শক্তিতে নিজে পূর্ণ হবে, সেবাতে নিজে থেকেই ততই সফলতা লাভ করবে l সুতরাং শক্তিশালী সেবাধারী হও l সদা বিধি দ্বারা সিদ্ধিপ্রাপ্ত হওয়া, এটাও কোন বড় বিষয় নয়, কিন্তু যাতে শক্তিশালী আত্মাদের সংখ্যাবৃদ্ধি হয় সেইদিকে তোমাদের অবশ্যই বিশেষ অ্যাটেনশন দিতে হবে l কোয়ালিটি বের কর l আরও বেশি কোয়ান্টিটি আসবে l কোয়ালিটির প্রতি অ্যাটেনশন দাও l কোয়ালিটি অনুযায়ীই তোমরা নম্বর লাভ করবে, কোয়ান্টিটি নয় l কোয়ালিটির এক আত্মা একশ' কোয়ান্টিটির সমান l

কুমারদের সাথে:- কুমার, তোমরা কি চমৎকার (কামাল) করো ? হট্টগোলের কারণ তোমরা তো হও না, তাই না ! চমৎকার দেখানোর জন্য শক্তিশালী হও আর অন্যদের শক্তিশালী বানাও l শক্তিশালী হওয়ার জন্য নিজেদের *"মাস্টার সর্বশক্তিমানের"* টাইটেল সদা স্মৃতিতে রাখ l যেখানে শক্তি হবে, তোমরা মায়ার থেকে মুক্ত হবে l নিজেদের প্রতি তোমরা যতটা অ্যাটেনশন দেবে সেবাতেও ততোটাই অ্যাটেনশন দিতে সমর্থ হবে l যদি নিজের প্রতি অ্যাটেনশন না থাকে তাহলে সেবাতে কোনও শক্তি হবে না l সেইজন্য নিজেকে সদা সফলতা স্বরূপ বানাতে শক্তিশালী অভ্যাসের সাধন বানানো প্রয়োজন l এমন কোনও বিশেষ প্রোগ্রাম বানাও, যার মাধ্যমে প্রোগ্রেস হতে থাকে l যখন প্রথম প্রোগ্রাম স্ব-উন্নতির জন্য হবে, সেবা তখন সহজ আর সফল হবে l কুমার জীবন ভাগ্যবান জীবন, কারণ অনেক বন্ধন থেকে তোমরা রক্ষা পেয়েছ l নয়তো, গার্হস্থ্য জীবনে কতো বন্ধন ! তাহলে তোমরা যারা এমন ভাগ্যবান আত্মা, কখনো নিজের ভাগ্যকে ভুলে যাও না তো ! সদা নিজেকে শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান আত্মা মনে করে অন্যদেরও ভাগরেখা টেনে আনো l যারা বন্ধনমুক্ত তারা নিজে থেকেই উড়তি কলা দ্বারা নিরন্তর এগিয়ে যায়, সেইজন্য কুমার আর কুমারী জীবন বাপদাদার সদা প্রিয় l গার্হস্থ্য জীবন বন্ধনযুক্ত আর কুমারী জীবন বন্ধনমুক্ত l সুতরাং নির্বন্ধন আত্মা হয়ে অন্যদেরও নির্বন্ধন বানাও l কুমার অর্থাৎ যারা সদা সেবা আর স্মরণের ব্যালেন্স বজায় রাখে l যদি তোমাদের এই ব্যালেন্স থাকে, তবে তোমরা সদা উড়তি কলাতে l যারা ব্যালেন্স রাখতে জানে তারা কখনও কোনও পরিস্থিতিতে চঞ্চল হবে না l

অধর কুমারদের সাথে :- সবাই তোমরা নিজের জীবনের প্রত্যক্ষ উদাহরণ দিয়ে সেবা কর, তাই না ! সবচেয়ে বড় প্রত্যক্ষ প্রমাণ -

তোমাদের জীবনের পরিবর্তন l লোকে অনেক শ্রোতা বক্তা দেখেছে l এখন তারা দেখতে চায়, শুনতে চায় না l সুতরাং তোমরা যখনই কোন কর্ম কর, তখন এই লক্ষ্য রাখ, যে কর্ম আমরা করছি তা'তে এমন

পরিবর্তন হোক যা দেখে অন্যদেরও পরিবর্তন হয়ে যায় l এর থেকে তোমরা নিজেরাও সন্তুষ্ট আর খুশিতে থাকবে এবং অন্যেরও কল্যাণ করবে l অতএব, সব কর্ম সেবার্থে কর l যদি এই স্মৃতি থাকে যে তোমার সব কর্ম সেবার্থে, তখন নিজে থেকেই তোমরা শ্রেষ্ঠ কর্ম করবে l *মনে রাখো - স্ব-পরিবর্তন দ্বারা অন্যদের পরিবর্তন করতে হবে l এই সেবা সহজ আর শ্রেষ্ঠও l মুখে কথায় ভাষণ দেওয়া আর তোমাদের জীবন দ্বারা ভাষণ অর্থাৎ জীবনের গঠন-শৈলী, যাকে বলে সেবাধারী l সদা নিজের দৃষ্টি দ্বারা অন্যদের দৃষ্টি পরিবর্তনের সেবাধারী l দৃষ্টি যত অধিক শক্তিশালী হবে অনেকের পরিবর্তন ততোধিক করতে পারবে l সদা দৃষ্টি আর শ্রেষ্ঠ কর্ম দ্বারা অন্যের সেবা করার নিমিত্ত হও l

২) কি ছিলে আর কি হয়েছ, এটা সদা তোমাদের স্মৃতিতে থাকে ! এই স্মৃতি থাকলে কখনও কোনও পুরানো সংস্কার ইমার্জ হতে পারে না l সেইসঙ্গে ভবিষ্যতে তোমরা কি হতে যাচ্ছ সেটাও স্মরণে রাখ, তখন তোমাদের বর্তমান আর ভবিষ্যৎ শ্রেষ্ঠ হওয়ার কারণে তোমরা খুশিতে থাকবে আর খুশিতে থাকায় এগিয়ে যেতে থাকবে l বর্তমান আর ভবিষ্যতের দুনিয়া শ্রেষ্ঠ, সুতরাং শ্রেষ্ঠ দুনিয়ার সামনে দুঃখদায়ী দুনিয়ার অস্তিত্ব স্মরণেই আসবে না l নিজেদের এই অসীম জগতের পরিবার দেখে তোমরা সদা খুশি থাকবে l এমনকি তোমরা স্বপ্নেও ভাবনি যে তোমাদের এমন ভাগ্যবান পরিবার প্রাপ্ত হবে l যেমনই হোক, তোমরা এখন সাকারে দেখছ এবং অনুভব করছ l এমন পরিবার যা একমতে সঙ্ঘবদ্ধ, এত বড় পরিবার সারা কল্পে এখনই দৃশ্যগোচর হয় l সত্যযুগেও ছোট পরিবার হবে l সুতরাং বাপদাদা এবং পরিবার দেখে তোমরা খুশি হও, তাই না ! এই পরিবারকে ভালোবাস তোমরা ? কারণ এখানে তো স্বার্থ ভাব নেই ! যারা এমন পরিবারের হয়, ভবিষ্যতেও তারা একে অপরের কাছাকাছি হবে l সদা এই ঈশ্বরীয় পরিবারের বিশেষত্ব দেখতে দেখতে অগ্রচালিত হও l

কুমারীদের সাথে:- কুমারীরা, সবাই তোমরা নিজেদের বিশ্ব কল্যাণকারী মনে করে অগ্রচালিত হচ্ছ ? এই স্মৃতি তোমাদের সদা সমর্থ বানায় l

● কুমারী জীবন শক্তিশালী জীবন l

● কুমারীরা নিজেরা শক্তিশালী হয়ে অন্যদের শক্তিশালী বানায় l

● সদার্বদার জন্য তোমরা ব্যর্থকে সমাপ্ত কর l

● কুমারী জীবনের ভাগ্যকে স্মৃতিতে রেখে এগিয়ে চলো l

● সঙ্গমে এটাও বড় ভাগ্য, তোমরা কুমারী হয়েছ l

● কুমারী তার নিজের জীবন দ্বারা অন্যদের জীবন তৈরি করে l

● কুমারী সদা বাবার সাথে থাকে l

● কুমারী সদা নিজেকে শক্তিশালী অনুভব ক'রে অন্যকেও শক্তিশালী বানায় l

● কুমারী সদা শ্রেষ্ঠ এক বাবার, দ্বিতীয় কারও নয় l

● কুমারী এমনই তুরীয়ানন্দে প্রতিটা পদক্ষেপ সামনের দিকে বাড়ায় l

সুতরাং, তোমরা এমনই কুমারী, তাই না !

প্রশ্নঃ -
কোন্ বিশেষত্ব বা গুণ দ্বারা তোমরা সর্বপ্রিয় হতে পার ?

উত্তরঃ-
পৃথক হয়েও প্রিয় হওয়ার গুণ এবং নিঃসঙ্কল্প থাকার বিশেষত্ব দ্বারা তোমরা সর্বপ্রিয় হতে পার, স্নেহার্দ্র ভাব দ্বারা সকলের হৃদয়ের ভালোবাসা তোমাদের আপনা থেকেই প্রাপ্ত হয়ে যায় l এই বিশেষত্বের মাধ্যমে তোমরা সফলতা প্রাপ্ত করতে পার l

বরদান:-
সমস্ত সমস্যার বিদায় সমারোহ উদযাপন করে সমাধান স্বরূপ ভব
 

সমাধান স্বরূপ আত্মাদের মালা তখনই তৈরি হবে যখন তোমরা নিজের সম্পূৰ্ণ স্থিতিতে স্থিত হবে l সম্পূর্ণ স্থিতিতে সমস্যা গুলোকে শৈশবের খেলা ব'লে অনুভব হয় অর্থাৎ সমস্যা সমাপ্ত হয়ে যায় l যেমন ব্রহ্মাবাবার সামনে যদি কোনো বাচ্চা সমস্যা নিয়ে আসত তো সমস্যার বিষয়ে বলার সাহসও হত না, সেই বিষয় সে ভুলে যেত l ঠিক একইভাবে, বাচ্চারা তোমাদের সবাইকে সমাধান স্বরূপ হতে হবে আর তবেই তোমরা অর্ধেক কল্পের জন্য সমস্ত সমস্যার বিদায় সমারোহ উদযাপন করতে পারবে l বিশ্বের সমুদয় সমস্যার সমাধানই পরিবর্তন l

স্লোগান:-
যারা সদাসর্বদা জ্ঞান মন্থন করে তারা মায়ার আকর্ষণ থেকে সুরক্ষিত থাকে l