29.02.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
শত্রু মায়া তোমাদের সামনে উপস্থিত, তাই নিজের খুবই সুরক্ষা করতে হবে, চলতে - ফিরতে
যদি মায়ায় আটকে গেছো তাহলে নিজের সৌভাগ্যে গণ্ডি টেনে দেবে"
প্রশ্নঃ -
তোমাদের মতো
রাজযোগী বাচ্চাদের মুখ্য কর্তব্য কি ?
উত্তরঃ -
পড়া আর পড়ানো, এই হলো তোমাদের মূখ্য কর্তব্য । তোমরা ঈশ্বরীয় মতে আছো । তোমাদের
কখনোই জঙ্গলে যেতে হবে না । ঘর - গৃহস্থে থেকে, শান্তিতে বসে তোমাদের বাবাকে স্মরণ
করতে হবে । অল্ফ (আল্লাহ ) আর বে (বাদশাহী ), এই দুই শব্দেই তোমাদের সমস্ত পড়া এসে
যায় ।
ওম্ শান্তি ।
বাবাও
ব্রহ্মার দ্বারা বলতে পারেন যে - বাচ্চারা, সুপ্রভাত কিন্তু বাচ্চাদেরও তো উত্তর
দিতে হবে । এখানে হলো বাবা আর বাচ্চাদের সম্পর্ক । নতুন যারা আছে, তারা যতক্ষণ না
পাকা হয়, ততক্ষণ কিছু না কিছু জিজ্ঞেস করতেই থাকবে । এ তো হলো পড়া, ভগবান উবাচঃও
লেখা আছে । ভগবান হলেন নিরাকার । এই বাবা কাউকে খুব ভালোভাবে কাউকে বুঝিয়ে
পাকাপোক্ত করেন, কারণ ওইদিকে হলো মায়ার জোর । এখানে তো সেই মায়া নেই । বাবা তো বুঝতে
পারেন, যে পূর্ব কল্পে এই অবিনাশী উত্তরাধিকার নিয়েছে, সে নিজে থেকেই এসে যাবে ।
এমন নয় যে, অমুকে যেন চলে না যায়, তাকে ধরবো । যদি চলে যেতে চায় তাহলে চলে যাক ।
এখানে তো জীবন্মৃত হয়ে থাকার কথা । বাবা তোমাদের দত্তক নেন । এই দত্তক নেওয়াও হয়
অবিনাশী আশীর্বাদ দেওয়ার জন্য । বাচ্চারা মা - বাবার কাছে আসেই উত্তরাধিকারের লোভে
। বিত্তবানের সন্তান গরীবরা কি কখনো দত্তক নেবে ? এতো ধন দৌলত আদি ছেড়ে কিভাবে যাবে
? বিত্তবানরাই দত্তক নেয় । তোমরা এখন জানো যে, বাবা আমাদের স্বর্গের বাদশাহী দেন ।
কেন আমরা তাঁর হবো না । প্রতিটা জিনিসেই তো লোভ থাকে । তোমরা যতো বেশী পড়বে,
তোমাদের লোভ তত বেশী হবে । তোমরাও জানো যে, বাবা আমাদের দত্তক নিয়েছেন অসীম জগতের
অবিনাশী উত্তরাধিকার দেওয়ার জন্য । বাবাও বলেন, আমি তোমাদের আবারও পাঁচ হাজার বছর
পূর্বের মতো দত্তক নিই । তোমরাও বলো যে, বাবা আমি তোমার । আমরা পাঁচ হাজার বছর
পূর্বেও তোমারই হয়েছিলাম । তোমরা প্রত্যক্ষভাবে কতজন ব্রহ্মাকুমার - কুমারী ।
প্রজাপিতাও তো কতো নামীদামি । যতক্ষণ না তোমরা শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ হচ্ছো ততক্ষণ
দেবতা হতে পারবে না । বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে এখন এই চক্র ঘুরতে থাকে -- আমরা
শূদ্র ছিলাম, এখন ব্রাহ্মণ হয়েছি, এরপরে আমাদের দেবতা হতে হবে আমরাই সত্যযুগে
রাজত্ব করবো । তাই অবশ্যই এই পুরানো দুনিয়ার বিনাশ হতে হবে । সম্পূর্ণ নিশ্চয়তা না
এলে তখন অনেকেই চলে যায় । কেই কাঁচা থাকলে তাদের অবনতি হয়, এও এই নাটকেই লিপিবদ্ধ
আছে । শত্রু মায়া তোমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে, সেই তোমাদের আকর্ষণ করে নেয় । বাবা
প্রতি মুহূর্তে তোমাদের এই কথা পাকা করান, তোমরা মায়াতে আটকে যেও না, না হলে নিজের
ভাগ্যে গণ্ডি টেনে দেবে । বাবাই এ কথা জিজ্ঞেস করতে পারেন, তোমরা আগে কখন মিলিত
হয়েছো ? আর কারোরই এ কথা জিজ্ঞেস করার মতো বুদ্ধি আসবে না । বাবা বলেন, আমাকেও আবার
গীতা শোনাতে আসতে হয় । আমাকে এসে তোমাদের রাবণের জেল থেকে উদ্ধার করতে হয় । অসীম
জগতের পিতা অসীম জগতের কথা বুঝিয়ে বলেন । এখন হলো রাবণের রাজ্য, এই পতিত রাজ্য
অর্ধেক কল্প ধরে শুরু হয়েছে । রাবণকে দশ মাথা দেখানো হয়, বিষ্ণুর চার ভুজা দেখানো
হয় । এমন কোনো মানুষই হয় না । এ তো প্রবৃত্তি মার্গকে দেখানো হয় । এই হলো এইম
অবজেক্ট - বিষ্ণুর দ্বারা পালনা । বিষ্ণুপুরীকে কৃষ্ণপুরীও বলা হয় । কৃষ্ণের তো
দুই হাতই দেখানো হবে, তাই না । মানুষ তো কিছুই বুঝতে পারে না । বাবা তোমাদের প্রতিটি
কথা বুঝিয়ে বলেন । ও সব হলো ভক্তিমার্গ । এখন তোমাদের এই জ্ঞান হয়েছে, তোমাদের
প্রকৃত লক্ষ্যই হলো নর থেকে নারায়ণ হওয়া । এই গীতা পাঠশালা হলো জীবনমুক্তি প্রাপ্ত
করার জন্য । ব্রাহ্মণ তো অবশ্যই প্রয়োজন । এ হলো রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞ । শিবকে রুদ্রও
বলা হয় । বাবা এখন জিজ্ঞেস করছেন, এই জ্ঞান যজ্ঞ কৃষ্ণের, নাকি শিবের ? শিবকে
পরমাত্মা বলা হয়, আর শঙ্করকে বলা হয় দেবতা । ওরা আবার শিব আর শঙ্করকে এক করে
দিয়েছে । বাবা এখন বলছেন, আমি এনার মধ্যে প্রবেশ করেছি । বাচ্চারা, তোমরা বলো
বাপদাদা । ওরা বলে শিবশঙ্কর । জ্ঞানের সাগর তো একজনই ।
এখন তোমরা জানো যে, ব্রহ্মাই জ্ঞানের দ্বারা বিষ্ণু হন । বরাবর চিত্রও বানানো হয় ।
বিষ্ণুর নাভি থেকে ব্রহ্মা নির্গত হয়েছে । এর অর্থ কেউই বুঝতে পারে না । ব্রহ্মার
হাতে শাস্ত্র দেখানো হয়েছে । এখন এই শাস্ত্রের সার বাবা বসে শোনান, নাকি ব্রহ্মা ?
ইনিও তো মাস্টার জ্ঞানের সাগর হন । বাকি এতো চিত্র বানানো হয়েছে, তা সব যথার্থ নয়
। সে সব হলো ভক্তি মার্গের । মানুষ কখনোই আট বা দশ হাতের হতে পারে না । এ তো কেবল
প্রবৃত্তি মার্গ দেখানো হয়েছে । রাবণের অর্থও বলা হয়েছে ---অর্ধেক কল্প হলো রাবণ
রাজ্য, অর্থাৎ রাত । অর্ধেক কল্প হলো রাম রাজ্য অর্থাৎ দিন । বাবা প্রতিটি কথাই
বুঝিয়ে বলেন । তোমরা সকলেই হলে এক বাবার সন্তান । বাবা ব্রহ্মার দ্বারা বিষ্ণুপুরীর
স্থাপনা করেন, আর তোমাদের রাজযোগ শেখান । তিনি অবশ্যই এই সঙ্গম যুগেই তোমাদের
রাজযোগ শেখাবেন । দ্বাপরে গীতা শুনিয়েছিলেন, এ তো ভুল তথ্য হয়ে যায় । বাবা সত্য
কথা বলেন । অনেকেরই ব্রহ্মার, কৃষ্ণের সাক্ষাৎকার হয় । ব্রহ্মাকে সাদা পোশাকে দেখে
। শিববাবা তো হলেন বিন্দু । বিন্দুর সাক্ষাৎকার হলে কিছুই বুঝতে পারে না । তোমরা বলো
যে, আমরা আত্মা, এখন আত্মাকে কে দেখেছে, কেউই না । সে তো হলো বিন্দু । তোমরা তো
বুঝতে পারছো । যে যেই ভাবনায় যাঁর পুজা করে, তার তাঁরই সাক্ষাৎকার হবে । অন্য কোনো
রূপ দেখলে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যায় । হনুমানের পুজা করলে তাঁকেই দেখতে পাবে । গণেশের
পূজারী গণেশকেই দেখতে পাবে । বাবা বলেন যে, আমি তোমাদের এতো ধনবান বানিয়েছি,
তোমাদের হীরে - জহরতের মহল ছিলো, তোমাদের ধন ছিলো অগুণতি, তোমরা এখন সেই সব কোথায়
হারিয়ে ফেলেছো ? এখন তোমরা কাঙ্গাল হয়ে গেছো, তোমরা এখন ভিক্ষা চাইছো । বাবা তো এ
কথা বলতেই পারেন, তাই না । বাচ্চারা, এখন তোমরা বুঝতে পারো, বাবা এসেছেন, আমরা আবার
এই বিশ্বের মালিক হচ্ছি । এই অনাদি ড্রামা বানানোই আছে । প্রত্যেকেই এই ড্রামাতে
নিজের অভিনয় করে যাচ্ছে । কেউ যদি এক শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করে, এতে
কান্নার কিসের দরকার । সত্যযুগে কেউই কান্নাকাটি করে না । তোমরা এখন মোহজিৎ হচ্ছো ।
লক্ষ্মী - নারায়ণ ইত্যাদিরাই হলেন মোহজিৎ রাজা । ওখানে মোহ থাকে না । বাবা অনেক
প্রকারের কথা বোঝাতে থাকেন । বাবা হলেন নিরাকার । মানুষ তো তাঁকে নাম - রূপ থেকে
পৃথক বলে দেয় কিন্তু নাম - রূপ থেকে পৃথক কোনো জিনিস হতেই পারে না । হে ভগবান, ও গড
ফাদার -- এমন বলে না । তো নাম - রূপ তো আছেই । লিঙ্গকে শিব পরমাত্মা, শিববাবা তো
বলেই । বাবা তো বরাবরই আছেন । বাবার অবশ্যই বাচ্চারাও থাকবেন । নিরাকারকে নিরাকার
আত্মাই বাবা বলে ডাকে । মন্দিরে গেলে তখন তাঁকে শিববাবা বলবে, আবার ঘরে ফিরে এসে
বাবাকেও বলে বাবা । অর্থ তো ওরা কিছুই বোঝে না, আমরা তাঁকে শিববাবা কেন বলি । বাবা
বড়র থেকেও বড় পড়া দুটি অক্ষরেই পড়ান -- অল্ফ (আল্লাহ ) আর বাদশাহী । অল্ফকে স্মরণ
করলেই বে অর্থাৎ বাদশাহী তোমাদের । এ হলো অনেক বড় পরীক্ষা । মানুষ যখন বড় পরীক্ষায়
পাস করে তখন প্রথম দিকের পড়া স্মরনেই থাকে না । পড়তে পড়তে অবশেষে সার বুদ্ধিতে এসে
যায় । এও ঠিক এমনই । তোমরা এখানে পড়তে এসেছো । অন্তিম সময়ে বাবা যখন বলবেন -
মনমনাভব, তখন দেহের ভাব সম্পূর্ণ ভেঙ্গে যাবে । এই মনমনাভবের অভ্যাস হয়ে গেলে পরের
দিকে বাবা আর তাঁর অবিনাশী আশীর্বাদ স্মরণে থাকবে । মূখ্য হলো এটাই, এ কতো সহজ । ওই
পড়াতেও তো এখন না জানি কতোকিছু পড়তে হয় । রাজা যেমন হয়, নিয়মও তেমনই চালায় ।
পূর্বে মণ, সের, পাও - এই হিসেব চলতো । এখন তো কিলো আদি কতোকিছুই বেরিয়েছে । পৃথক -
পৃথক প্রান্তে পৃথক - পৃথক হয়ে গেছে । দিল্লীতে কোনো জিনিস এক টাকা সের, বোম্বেটে
তা পাওয়া যাবে দু টাকা সেরে, কেননা প্রান্ত আলাদা । প্রত্যেকেই মনে করে আমাদের
জায়গার অভাব রাখবো না । এতে কতো ঝগড়া হয়, কতো দ্বিধা তৈরী হয় ।
ভারত কতো সমর্থ ছিলো, তারপর ৮৪ চক্র সম্পূর্ণ করতে করতে অসমর্থ হয়ে গেছে । বলা হয়
--- অমূল্য যে জীবন মিলেছিল, কিন্তু তাকে কড়ি তুল্য বানিয়ে হারিয়ে ফেলেছে। বাবা
বলেন - তোমরা কড়ির পিছনে কেন ছুটতে থাকো । এখন তো তোমরা বাবার থেকে অবিনাশী
উত্তরাধিকারের আশীর্বাদ নাও, তোমরা পবিত্র হও । মানুষ ডাকতেও থাকে - হে পতিত পাবন,
এসো, আমাদের পবিত্র বানাও । এতেই সিদ্ধ হয়, তোমরা পবিত্র ছিলে, এখন আর তা নেই৷ এখন
তো হলো কলিযুগ । বাবা বলেন যে, আমি পবিত্র দুনিয়া বানাবো, তখন পতিত দুনিয়ার অবশ্যই
বিনাশ হবে, তাই এই হলো মহাভারতের লড়াই যা এই রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞ থেকে প্রজ্জ্বলিত
হয়েছে । ড্রামাতে তো এই বিনাশও লিপিবদ্ধ আছে । প্রথমদিকে তো বাবার সাক্ষাৎকার
হয়েছিলো । তিনি দেখেছিলেন যে, এতো বড় রাজত্ব পাওয়া যায়, তাই খুব খুশী ছিলেন, তখন
বিনাশের সাক্ষাৎকারও করিয়েছিলেন । মনমনাভব, মধ্যাজী ভব । এ হলো গীতার অক্ষর । গীতার
কোনো কোনো অক্ষর ঠিক । বাবাও বলেন, আমি তোমাদের এই জ্ঞান শোনাই, এ আবার প্রায় লোপ
হয়ে যায় । কেউই জানে না যে, যখন লক্ষ্মী - নারায়ণের রাজ্য ছিলো, তখন অন্য কোনো
ধর্ম ছিলো না । সেইসময় জনসংখ্যা কতো কম ছিলো, এখন কতো বেশী । তাই এই পরিবর্তনের
প্রয়োজন । বিনাশ তো অবশ্যই প্রয়োজন । মহাভারতের যুদ্ধও তো আছে । তাহলে অবশ্যই
ভগবানও আছেন । মানুষ যখন শিব জয়ন্তী পালন করে তাহলে শিববাবা এসে কি করেছিলেন ? এও
তারা জানে না । বাবা এখন বোঝান, গীতার থেকে কৃষ্ণের আত্মা রাজত্ব পেয়েছিলো । গীতাকে
মাতা - পিতা বলা হবে, যার থেকে তোমরা আবার দেবতা হও, তাই চিত্রে দেখানো হয় --
কৃষ্ণ গীতা শোনান নি । কৃষ্ণ গীতার জ্ঞানের দ্বারা রাজযোগ শিখে এমন হয়েছিলেন, কাল
আবার তিনিই কৃষ্ণ হবেন । ওরা আবার শিববাবার পরিবর্তে কৃষ্ণের নাম দিয়ে দিয়েছে ।
তাই বাবা বোঝান, এ কথা নিজের অন্তরে পাক্কা নিশ্চিত করে নাও, কেউ যেন উল্টোপাল্টা
কথা শুনিয়ে তোমাদের নামিয়ে না দেয় । মানুষ অনেক কথা জিজ্ঞেস করে --বিকার ছাড়া সৃষ্টি
কিভাবে চলবে ? এ কিভাবে হবে ? আরে, তোমরা তো নিজেরাই বলো -- সে হলো নির্বিকারী
দুনিয়া । সম্পূর্ণ নির্বিকারী বলো তোমরা, তাহলে বিকারের কথা কিভাবে আসতে পারে ?
তোমরা এখন জানো যে, অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে অসীম জগতের বাদশাহী পাওয়া যায়, তাহলে
এমন বাবাকে কেন স্মরণ করবে না ? এ হলো পতিত দুনিয়া । কুম্ভ মেলায় কতো লাখ মানুষ যায়
। এখন বলে যে ওখানে এক গুপ্ত নদী আছে । এখন কি নদী গুপ্ত হতে পারে ? এখানেও গুপ্ত
মুখ বানানো হয়েছে । বলা হয়, গঙ্গা এখানে আসে, আরে, গঙ্গা নিজের রাস্তা করে সমুদ্রে
যাবে, নাকি তোমাদের কাছে এই পাহাড়ে আসবে । ভক্তিমার্গে এমন কতো ধাক্কা আছে । জ্ঞান,
ভক্তি তারপর বৈরাগ্য । এক হলো লৌকিক জগতের বৈরাগ্য, দ্বিতীয় হলো অসীম জগতের
বৈরাগ্য । সন্ন্যাসীরা বাড়ীঘর ছেড়ে জঙ্গলে থাকে, এখানে তো সেসব কথা নেই । তোমরা
বুদ্ধির দ্বারা সম্পূর্ণ দুনিয়ার সন্ন্যাস করো । তোমাদের মতো রাজযোগী বাচ্চাদের
মুখ্য কর্তব্য হলো পড়া আর পড়ানো । এখন এই রাজযোগ জঙ্গলে তো শেখানো হয়ই না । এ হলো
স্কুল । এর শাখাপ্রশাখা নির্গত হতেই থাকে । তোমরা বাচ্চারা এখন রাজযোগ শিখছো ।
শিববাবার থেকে পড়েছে এমন ব্রাহ্মণ - ব্রহ্মাণীরা রাজযোগ শেখান । এক শিববাবা বসে
সবাইকে একা শেখাতেই পারেন না । তাহলে এ হলো পাণ্ডব গভর্নমেন্ট । তোমরা ঈশ্বরীয় মতে
আছো । এখানে তো তোমরা কতো শান্তিতে বসে আছো, বাইরে তো অনেক হাঙ্গামা । বাবা বলেন
যে, তোমরা যদি পাঁচ বিকারের দান করে দিতে পারো, তাহলে তোমাদের গ্রহণ কেটে যাবে ।
তোমরা আমার হও, তাহলে আমি তোমাদের সব কামনা পূরণ করে দেবো । বাচ্চারা, তোমরা জানো
যে, আমরা এখন সুখধামে যাচ্ছি, এই দুঃখধামে আগুন লেগে যাবে । বাচ্চারা বিনাশের
সাক্ষাৎকারও করেছে । এখন সময় অনেক কম, তাই তোমরা যদি স্মরণের যাত্রায় লেগে যাও
তাহলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে আর উঁচু পদও পাবে । আচ্ছা ।
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন
আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বাবার অবিনাশী উত্তরাধিকার নেওয়ার জন্য জীবন্মৃত হতে হবে । তোমাদের বাবার দত্তক
সন্তান হতে হবে । কখনোই নিজের উঁচু ভাগ্যে গণ্ডি লাগাবে না ।
২ ) কোনো উল্টোপাল্টা কথা শুনে যেন সংশয় উৎপন্ন না হয় । নিশ্চয়তায় যেন দোলা না লাগে
। এই দুঃখধামে আগুন লাগবে, তাই এর থেকে নিজের বুদ্ধিযোগ দূর করে নিতে হবে ।
বরদান:-
সমস্যাকে সমাধান রূপে পরিবর্তিত করে বিশ্ব কল্যাণকারী ভব
আমি বিশ্ব কল্যাণী
আত্মা ---এখন এই শ্রেষ্ঠ ভাবনা, শ্রেষ্ঠ কামনার সংস্কার হাজির করো । এই শ্রেষ্ঠ
সংস্কারের সামনে জাগতিক সব সংস্কার শীঘ্রই সমাপ্ত হয়ে যাবে । সমস্যা সমাধানের রূপে
পরিবর্তন হয়ে যাবে । এখন যুদ্ধে সময় নষ্ট করো না, বিজয়ীভাবের সংস্কার হাজির করো
এখন সবকিছুই সেবাতে লাগিয়ে দাও তাহলে পরিশ্রম থেকে মুক্ত হয়ে যাবে । সমস্যায়
যাওয়ার পূর্বে দান দাও, বরদান দাও, তাহলে নিজের গ্রহণ শীঘ্রই সমাপ্ত হয়ে যাবে ।
স্লোগান:-
কারোর দুর্বলতার বর্ণনা করার পরিবর্তে গুণ স্বরূপ হও, গুণের বর্ণনা করো ।