13.01.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
মিষ্টি বাচ্চারা -
কর্মন্য ছাত্র হয়ে ভালো নম্বর নিয়ে পাস হওয়ার পুরুষার্থ করো। অলস ছাত্র হয়ো না।
অলস তো সে, যে সারাদিন আত্মীয় বন্ধু-বান্ধবকে স্মরণ করে"
প্রশ্নঃ -
এই সঙ্গম যুগে
সবথেকে সৌভাগ্যবান আত্মা কাকে বলা যাবে ?
উত্তরঃ -
যে বাবার এই
যজ্ঞ সেবায় নিজের তন-মন-ধন সব সফল করেছে বা করছে, সে-ই হল সৌভাগ্যবান আত্মা। কেউ
কেউ তো আবার অনেক কৃপন স্বভাবের হয়ে থাকে, পরে বোঝা যায় যে, তার ভাগ্যে নেই। তারা
এটা বুঝতে চায় না যে, বিনাশ সামনেই দাঁড়িয়ে আছে, কিছু তো করে নিই। যে সৌভাগ্যবান
বাচ্চা হবে, সে এটা বুঝে যাবে যে, বাবা এখন আমাদের সম্মুখে আছেন। এখন আমরা আমাদের
সব কিছু সফল করে নেবো। সাহস রেখে অনেকের ভাগ্য বানানোর নিমিত্ত হয়ে যাবো।
গীতঃ-
ভাগ্য জাগিয়ে
এসেছি...
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা,
এখানে তো তোমরা নিজেদের ভাগ্য শ্রেষ্ঠ বানাচ্ছো। গীতাতে তো শ্রীকৃষ্ণের নাম দিয়ে
দিয়েছে, আর বলে যে "ভগবানুবাচ"। এখন আমি তোমাদের রাজযোগ শেখাচ্ছি। এখন "কৃষ্ণ
ভগবানুবাচ" তো নেই। এই শ্রীকৃষ্ণ হলো আমাদের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য। পুনরায় শিব
ভগবানুবাচ - আমি তোমাদেরকে রাজাদেরও রাজা বানাচ্ছি। তো সর্বপ্রথম রাজকুমার
শ্রীকৃষ্ণ অবশ্যই হবেন। বাকি "কৃষ্ণ ভগবানুবাচ" তো হয় না। কৃষ্ণ তো হল তোমাদের
লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য। এটা হল পাঠশালা, যেখানে স্বয়ং ভগবান পড়াচ্ছেন। এই পড়াশোনা
করেই তোমরা সবাই রাজকুমার-রাজকুমারী তৈরি হও।
বাবা বলছেন যে, অনেক জন্মের অন্তিম জন্মেরও অন্তে আমি এসে তোমাদেরকে এই জ্ঞান শোনাই,
পুনরায় শ্রীকৃষ্ণ বানানোর জন্য। এই পাঠশালার শিক্ষক হলেন শিববাবা, শ্রীকৃষ্ণ নয়।
শিববাবা-ই দৈবী ধর্মের স্থাপন করেন। বাচ্চারা, তোমরা বলো যে, আমরা এখানে এসেছি
নিজের ভাগ্য তৈরি করতে। আত্মা জানে যে, আমরা পরমপিতা পরমাত্মার থেকে এখন ভাগ্য
বানাতে এসেছি। এটাই হল রাজকুমার-রাজকুমারী হওয়ার ভাগ্য। এটাই রাজযোগ, তাই না!
শিববাবার দ্বারা সর্বপ্রথম স্বর্গের দুটি পাতা অর্থাৎ রাধা-কৃষ্ণের জন্ম হয়। এই
যেসব চিত্র বানানো হয়েছে, এগুলি একদম সঠিক আছে। কাউকে বোঝানোর জন্য খুব ভালো। এই
গীতার জ্ঞান থেকেই ভাগ্য তৈরি হয়। একসময় আমাদের ভাগ্য খুব ভালো ছিল, কিন্তু ধীরে
ধীরে খারাপ হয়ে গেছে। অনেক জন্মের অন্তিম জন্মে তোমরা একদম তমোপ্রধান ভিখারী হয়ে
গেছো। এখন পুনরায় রাজকুমার হতে হবে। প্রথম তো অবশ্যই রাধা-কৃষ্ণ হবে, তারপর তো
তাদেরই রাজধানী চলবে। কেবলমাত্র একজনই তো হবে না। স্বয়ম্বরের পর রাধা-কৃষ্ণ থেকে
তারা লক্ষী-নারায়ণ হয়ে যাবে। নর থেকে রাজকুমার বা নারায়ণ হওয়া, একই কথা।
বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, এই লক্ষী-নারায়ণ স্বর্গের মালিক ছিলেন। তাহলে নিশ্চয়ই
এই সঙ্গম যুগেই স্থাপনা হয়েছিল, এই জন্য সঙ্গম যুগকে পুরুষোত্তম যুগ বলা হয়। আদি
সনাতন দেবী-দেবতার ধর্মের স্থাপনা হয়, বাকি অন্যান্য সব ধর্ম বিনাশ হয়ে যায়।
সত্যযুগে কেবলমাত্র একটিই ধর্ম ছিল। সেই ইতিহাস-ভূগোলের অবশ্যই পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
পুনরায় স্বর্গের স্থাপনা হবে। যেখানে লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজত্ব ছিল, পরিদের স্থান
ছিল, সেটা তো এখন কবরস্থান হয়ে গেছে। সবাই কাম চিতাতে বসে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।
সত্যযুগে তোমরা মহল আদি বানাবে। এমন নয় যে, নিচে থেকে কোনো সোনার দ্বারিকা বা
লঙ্কা বেরিয়ে আসবে। দ্বারিকা হতে পারে কিন্তু লংকা তো হবে না। স্বর্ণযুগ বলা হয়
যে রামরাজ্যকে। আসল সোনা যা কিছু ছিল, সেসব লুট হয়ে গেছে। তোমরা সবাইকে বোঝাও যে,
ভারত অনেক ধনবান ছিল। এখন তো দরিদ্র হয়ে গেছে। দারিদ্রতা - এই শব্দটি লেখা কোন
খারাপ কথা নয়। তোমরা বোঝাতে পারো যে, সত্যযুগে একটাই ধর্ম ছিল। সেখানে আর অন্য কোনো
ধর্ম থাকতে পারে না। কেউ কেউ বলে যে, এটা কিভাবে সম্ভব, কেবলমাত্র দেবতারাই সেখানে
থাকবে? অনেক মত-মতান্তর আছে, এক-পরস্পরের সঙ্গে কখনোই মিলবে না। কত আশ্চর্য বিষয়!
কত চরিত্র আছে। এখন স্বর্গের স্থাপনা হচ্ছে। আমরা স্বর্গবাসী হচ্ছি, এটি স্মরণে
থাকলে সদা হাসি-মুখ থাকবে। বাচ্চারা, তোমাদের অনেক খুশিতে থাকতে হবে। তোমাদের
লক্ষ্য-উদ্দেশ্য হল অনেক উঁচু, তাই না। আমরা মনুষ্য থেকে দেবতা, স্বর্গবাসী হতে
চলেছি। এটাও তোমরা ব্রাহ্মণরাই জানো যে, স্বর্গের স্থাপনা হচ্ছে। এটাও সর্বদা স্মরণে
রাখা চাই। কিন্তু মায়া ক্ষণে-ক্ষণে ভুলিয়ে দেয়। ভাগ্যে না থাকলে তো পরিবর্তন হবে
না। মিথ্যা কথা বলার অভ্যাস অর্ধকল্প থেকে চলে আসছে, সেটা পরিবর্তন হতে চায় না।
মিথ্যাকেই সম্পদ মনে করে রেখে দেয়, ত্যাগ করতে পারে না, বোঝা যায় যে এদের ভাগ্য
এই রকমই আছে। বাবাকে স্মরণ করে না। স্মরণও তখনই স্থির থাকবে, যখন সবার থেকে মমত্ব
বেরিয়ে যাবে। সমগ্র দুনিয়া থেকে বৈরাগ্য বৃত্তি আসবে। মিত্র-সম্বন্ধী আদিকে দেখেও
যেন দেখে না। জানে যে এরা সবাই হলো নরকবাসী, কবরস্থানে সমাধিস্থ আছে। এই সবকিছুই
শেষ হয়ে যাবে। এখন আমাদেরকে ঘরে ফিরে যেতে হবে। এইজন্য সুখধাম আর শান্তিধামকেই
স্মরণ করতে হবে। আমরা কালকে স্বর্গবাসী ছিলাম, রাজ্য করেছিলাম, সেসব এখন হারিয়ে
ফেলেছি, পুনরায় আমরা রাজ্যভাগ্য প্রাপ্ত করছি। বাচ্চারা বোঝে যে, ভক্তি মার্গে
অনেক মাথা ঠুকতে হয়, অনেক টাকা-পয়সা নষ্ট হয়ে যায়। চিৎকার করতে থাকে, কিন্তু
প্রাপ্ত কিছুই হয় না। আত্মা আহ্বান করে যে, বাবা এসো, সুখধামে নিয়ে চলো, সেটাও
যখন অন্ত সময়ে অনেক দুঃখ হয়, তখনই স্মরণ করে।
তোমরা দেখছো যে, এখন এই পুরানো দুনিয়ার বিনাশ হবে। এটাই হলো আমাদের অন্তিম জন্ম।
এই অন্তিম জন্মেই আমরা সমস্ত জ্ঞানপ্রাপ্ত করেছি। এই জ্ঞান সম্পূর্ণরূপে ধারণ করতে
হবে। ভূমিকম্প আদি হঠাৎ করেই হবে, তাইনা! হিন্দুস্তান পাকিস্তানের বিভাজনের সময়
অনেকে মারা গিয়েছিল। বাচ্চারা, তোমাদের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কিছুই জানা আছে।
বাকি যা কিছু হতে থাকবে, সেগুলোও জানতে পারবে। কেবলমাত্র একটি সোমনাথের মন্দির
সোনার হবে না। আরো অনেক অনেক মহল, মন্দির আদি সোনার তৈরি হবে। তারপর কি হয়, কোথায়
সব হারিয়ে যায় ? ভূমিকম্পের কারণেই কি সবকিছু ভূগর্ভস্থ হয়ে যায়, যেগুলি আর
বেরিয়ে আসে না ? ভূগর্ভেই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যায়.... কি হয় ? আস্তে আস্তে তোমরা
সবকিছুই জানতে পারবে। তারা বলে, সোনার দ্বারকা চলে গেছে। এখন তোমরা বলো যে,
ড্রামানুসারে সেটা নিচে চলে গেছে, চক্রের পুনরাবৃত্তি হলে তা পুনরায় উপরে উঠে আসবে।
সেটাও আবার নতুন করে বানাতে হবে। এই চক্র বুদ্ধিতে স্মরণ করে অনেক খুশিতে থাকতে হবে।
এই সমস্ত চিত্র তো পকেটে রেখে দিতে হবে। এই ব্যাচের দ্বারাও অনেক সেবা করা যায়।
কিন্তু এত সেবা কেউ করেই না। বাচ্চারা, তোমরা ট্রেনেতেও অনেক সেবা করতে পারো, কিন্তু
কেউ কখনো এই সমাচার দেয় না যে, ট্রেনেতে কেমন সেবা হয়েছে, তৃতীয় শ্রেণীর
কামরাতেও তোমরা সেবা করতে পারো। যারা কল্পপূর্বে বুঝেছিল, যারা মনুষ্য থেকে দেবতা
হয়েছিল, তারাই এখন এসে এই জ্ঞান বুঝবে। মনুষ্য থেকে দেবতা - বলা হয়ে থাকে। এই রকম
বলা হয় না যে, মনুষ্য থেকে খ্রিস্টান বা মনুষ্য থেকে শিখ হয়। না, মনুষ্য থেকে
দেবতাই হয় অর্থাৎ আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা হয়। বাকি সব নিজ-নিজ ধর্মে
চলে যায়। কল্প বৃক্ষের ঝাড়ের চিত্রে অন্যান্য ধর্ম দেখানো হয়েছে, সেসব ধর্ম কবে
স্থাপন হয়েছে ? দেবতারা হিন্দু হয়ে গেছে। হিন্দু থেকে পুনরায় অন্যান্য ধর্মে
রূপান্তরিত হয়ে গেছে। সেই আত্মাদের সংখ্যাও অনেক বেরোবে, যারা নিজের শ্রেষ্ঠ
ধর্ম-কর্মকে ছেড়ে অন্য অন্য ধর্মে গিয়েছে, তারা পুনরায় বেরিয়ে আসবে। অন্তিম সময়ে
অল্প একটু বুঝবে, তাই প্রজা বর্গে আসবে। দেবী-দেবতা ধর্মে সবাই আসতে পারবে না। সবাই
নিজের নিজের নির্দিষ্ট স্থানে চলে যাবে। তোমাদের বুদ্ধিতেই এই সমস্ত কথা আছে। ভক্তি
মার্গে তো কত কি সব করতে থাকে। সবজির জন্য অনেক ব্যবস্থা থাকে। বড় বড় মেশিন আদি
লাগায়। কিছুই হয় না। সৃষ্টিকে তমোপ্রধান হতেই হবে। সিঁড়ি দিয়ে নিম্নমুখী হতেই হবে।
নাটকে যেটা আছে, সেটাই হবেই। পুনরায় নতুন দুনিয়ার স্থাপনা হবেই। বিজ্ঞান, যেটা
এখন শিখছে, অল্প সময়ের মধ্যেই তারা অনেক কৃতিত্ব অর্জন করবে। যার কারণে সেখানে খুব
ভালো ভালো জিনিস তৈরি করতে পারবে। এই বিজ্ঞান সেখানে খুব সুখ প্রদান করবে। এখানে
সুখ তো খুব অল্প আছে, দুঃখের পরিমানই সর্বাধিক। এই বিজ্ঞানের এতকিছু সব বেরিয়েছে,
কত বছর হল? আগে তো এই বিদ্যুৎ-গ্যাস আদি কিছুই ছিল না। এখন তো দেখো কত কি সব বেরিয়ে
গেছে। আর সেখানে তো সবকিছু প্রাকৃতিক ভাবে আগে থেকেই তৈরী থাকবে। খুব তাড়াতাড়ি সব
কিছু তৈরী হয়ে যাবে। এখানে দেখো মহল কিভাবে তৈরি হয়। সবকিছুই যেন আগে থেকে
প্রস্তুত করা থাকে। কত মহল তৈরি করে। সেখানে এসব কিছু থাকবে না। সেখানে তো চাষাবাদ
করার জন্য সকলেরই নিজস্ব ক্ষেত থাকবে। সেখানে কর আদি কিছু দিতে হবে না। সেখানে তো
অনেক ধন সম্পদ থাকবে। জমিও অনেক থাকবে। নদীগুলিও সব থাকবে, বাকি কোন নালা আদি থাকবে
না, যেগুলো পরবর্তীকালে খোদাই করা হয়েছে।
বাচ্চাদের মধ্যে তো অনেক খুশি হওয়া চাই। কারণ তোমরা ডবল ইঞ্জিন পেয়েছো। পাহাড়ি
ট্রেনগুলোতে ডবল ইঞ্জিন থাকে। বাচ্চারা, তোমরা এই সেবায় সহযোগ দাও, তাইনা। তোমরা
সংখ্যায় খুব অল্প হও। তোমাদের মহিমাও গাওয়া হয়ে থাকে। তোমরা জানো যে তোমরা হলে
ঈশ্বরের সেবাধারী। শ্রীমৎ অনুসারে সেবা করো। বাবাও এখন তোমাদের সেবা করতে এসেছেন।
তিনি এক ধর্মের স্থাপনা এবং অনেক ধর্মের বিনাশ করেন, আর কিছুদিন পরেই তোমরা দেখতে
পাবে যে চারিদিকে কিভাবে যুদ্ধ শুরু হবে। এখনও ভয় আছে যে, কোথাও যুদ্ধ শুরু হয়ে
গেলে বম্ব না ফেলে দেয়। আগুন তো চারিদিকে লাগবেই। তারা সবসময়ই নিজেদের মধ্যে
লড়াই-ঝগড়া করতে থাকবে। বাচ্চারা জানে যে, এই পুরানো দুনিয়ার বিনাশ অবশ্যই হবে।
তারপর আমরা ঘরে ফিরে যাবো। এখন ৮৪ জন্মের চক্র সম্পন্ন হয়েছে। সবাই একসঙ্গে বাড়ি
ফিরে যাবো। তোমাদের মধ্যেও খুব অল্পসংখ্যক আছে যারা ঘন-ঘন বাবাকে স্মরণ করে। ড্রামা
অনুসারে কর্মণ্য আর অলস - এই দুই প্রকারেরই ছাত্র থাকবে। কর্মণ্য ছাত্ররা ভালো
নম্বর নিয়ে পাস হয়ে যাবে। আর যারা অলস হবে তারা তো সারাদিন লড়াই ঝগড়া করতেই
থাকবে। বাবাকে স্মরণ করবে না। সারাদিন বন্ধু-বান্ধবকেই স্মরণ করবে। এখানে তো সবকিছু
ভুলে যেতে হবে। আমরা হলাম আত্মা, আমাদের শরীর রূপী পুচ্ছ ঝুলে আছে। আমরা কর্মাতীত
অবস্থাকে প্রাপ্ত করলে, আমাদের এই শরীর রূপী পুচ্ছকে ত্যাগ করতে পারবো। এটাই
চিন্তার বিষয়, কর্মাতীত অবস্থা হয়ে গেলে তো শরীর আপনা হতেই শেষ হয়ে যাবে। আমরা
শ্যাম থেকে সুন্দর হয়ে যাব। পরিশ্রম তো করতেই হবে, তাই না। প্রদর্শনীতেও দেখো কত
সবাই পরিশ্রম করে। মহেন্দ্র (ভোপাল) অনেক সাহস দেখায়। একলাই অনেক পরিশ্রম করে
প্রদর্শনী আদি করে। পরিশ্রমের ফলও প্রাপ্ত করবে, তাই না। একজনই অনেক কামাল করে
দেখায়। কত জনের কল্যান করে। মিত্র-সম্বন্ধী আদির সাহায্যেই অনেক সেবা করে। সত্যি
আশ্চর্যের বিষয় ! মিত্র সম্বন্ধীদেরকে বোঝায় যে, এই টাকা-পয়সা আদি সবকিছুকে সেবা
কার্যে লাগাও, ব্যাংকে জমা রেখে কি হবে? তিনি সাহস রেখে একটা সেন্টারও খুলেছেন।
অনেকের ভাগ্য বানিয়েছেন। এইরকম ৫-৭ জন বেরিয়ে এলে তো অনেক সেবা হয়ে যাবে।
কেউ-কেউ তো আবার অনেক কৃপণতা দেখায়। পরে বোঝা যায় যে, তার ভাগ্যে নেই। এটা বোঝে
না যে, বিনাশ সামনেই দাঁড়িয়ে আছে, কিছু তো করে নিই। এখন মানুষ যা কিছু ঈশ্বরের
উদ্দেশ্যে দান করবে, তা থেকে কিছুই প্রাপ্ত হবে না। ঈশ্বর তো এখন এসেছেন স্বর্গের
রাজত্ব দেওয়ার জন্য। দান-পূর্ণ করলে কিছুই প্রাপ্ত হবে না। যে নিজের তন-মন-ধন সব
কিছু সফল করবে বা করছে, সেই হলো ভাগ্যবান। কিন্তু ভাগ্যতে না থাকলে তো সে কিছুই
বুঝতে পারবে না। তোমরা জানো যে, তারাও হল ব্রাহ্মণ, আমরাও হলাম ব্রাহ্মণ । আমরা
হলাম প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমার ব্রহ্মাকুমারী। এত সংখ্যক ব্রাহ্মণ, তারা তো হলো মাতৃ
গর্ভজাত বংশাবলী, তোমরা হলে ব্রহ্মামুখ বংশাবলি। শিব জয়ন্তী এই সঙ্গম যুগেই হয়।
এখন স্বর্গ বানানোর জন্য বাবা মন্ত্র দিচ্ছেন, "মন্মনা ভব" । আমাকে স্মরণ করো তো
তুমি পবিত্র হয়ে পবিত্র দুনিয়ার মালিক হয়ে যাবে। এই রকম যুক্তি দিয়ে পর্চা
ছাপাও। এই দুনিয়াতে তো অনেকেই মারা যায়। যেখানে কেউ মারা যায়, সেই জায়গায় এই
পর্চাগুলি বিতরণ করো। বাবা যখন আসেন, তখন পুরোনো দুনিয়ার বিনাশ অবশ্যই হয়। আর
তারপরেই স্বর্গের দ্বার খুলে যায়। আর যদি কেউ সুখধামে যেতে চায় তার জন্য মন্ত্র হল
*মন্মনা ভব*। এইরকম আকর্ষণীয় পর্চা সকলের কাছে রাখো। শ্মশানেও তোমরা এই পর্চা
বিতরণ করতে পারো। বাচ্চাদের সেবার প্রতি শখ থাকতে হবে। সেবা করার জন্য অনেক যুক্তি
বাবা বলে দেন। এটা তো ভালোভাবে লিখে দিতে হবে। আমাদের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য লেখা হয়ে
গেছে। কাউকে বোঝানোর জন্য খুব ভালো যুক্তি চাই। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
কর্মাতীত অবস্থাকে প্রাপ্ত করার জন্য, এই শরীর রূপী পুচ্ছকে ভুলে যেতে হবে। এক
বাবাকে ছাড়া অন্য কোনো বন্ধু বা অন্য কোন সম্বন্ধী-আদি যেন স্মরণে না আসে। এই
পুরুষার্থই করতে হবে।
২ ) শ্রীমতে চলে ভগবানের সাহায্যকারী (খুদাই-খিদমতগার) হতে হবে। তন-মন-ধন সব সফল করে
নিজের উচ্চ ভাগ্যশালী বানাতে হবে।
বরদান:-
অনেস্ট (সৎ) হয়ে নিজেকে বাবার সামনে স্পষ্ট করে উন্নতি কলার অনুভাবী ভব
ব্যাখ্যা :- আমি যা
আছি, যেমন আছি, সেইরকম ভাবেই নিজেকে বাবার সামনে প্রত্যক্ষ করা, এটাই হলো সবথেকে বড়
উন্নতি কলার সাধন। বুদ্ধিতে যে অনেক প্রকারের বোঝা আছে, সেগুলিকে সমাপ্ত করার এটাই
হলো সহজ যুক্তি। সৎ হয়ে নিজেকে বাবার সামনে স্পষ্ট করা অর্থাৎ পুরুষার্থের পথ
স্পষ্ট করা। কখনো চালাকি করে মনমত আর পরমত অনুসারে পরিকল্পনা মাফিক বাবা বা নিমিত্ত
হওয়া আত্মাদের সামনে কোনো বিষয় উপস্থাপন করা, এটাকে সততা বলা যায় না। অনেস্টি
অর্থাৎ বাবা যা, বাবা যেইরকম, বাচ্চাদের সম্মুখে প্রত্যক্ষ ঠিক তেমনই প্রত্যক্ষ
হয়েছেন, সেরকমই বাচ্চারা যেন বাবার সম্মুখে প্রত্যক্ষ হয় ।
স্লোগান:-
সত্যিকারের তপস্বী তো হল সে, যে সর্বদা সর্বস্ব ত্যাগের স্থিতিতে স্থিত থাকে।
অব্যক্ত স্থিতির
অনুভব করার জন্য
সারাদিন প্রত্যেক আত্মার প্রতি শুভকামনা আর শ্রেষ্ঠ ভাবকে ধারণ করবার বিশেষ
অ্যাটেনশন রেখে, অশুভ ভাবকে শুভ ভাবে, অশুভ ভাবনাকে শুভ ভাবনাতে পরিবর্তন করে, সদা
খুশির স্থিতিতে থাকো তো অব্যক্ত স্থিতির অনুভব, সহজেই হয়ে যাবে।