28.02.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা-
বাবা তোমাদের অতিথি হয়ে এসেছেন, সুতরাং তাঁকে তোমাদের আদর সম্মান করতে হবে। যেমন
ভালোবেসে তাঁকে আহ্বান করেছ তেমনই তাঁকে আদর দিতে হবে, নিরাদর যেন না হয়"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
তোমাদের কোন্ নেশা সবসময় ঊধ্বর্গামী হওয়া উচিত ? যদি নেশা ( ঈশ্বরীয় নেশা)
ঊধ্বর্গামী না হয়ে থাকে, তাহলে কি করবে ?
উত্তরঃ -
উচ্চ থেকে উচ্চতর ভাড়াটে (আসামী) এই পতিত দুনিয়াতে আমাদের অতিথি হয়ে এসেছেন, এই নেশা
সবসময় ঊধ্বর্গামী থাকা উচিত । কিন্তু নম্বরানুসারে এই নেশা ঊর্ধে থাকে। কেউ তো
বাবার হয়েও সংশয় বুদ্ধির কারণে হাত ছেড়ে চলে যায় একেই বলে ভাগ্য ।
ওম্ শান্তি ।
ওম্ শান্তি,
দুই বারই বলতে হয়। বাচ্চারা তো জানে এক হলেন বাবা, দ্বিতীয় জন দাদা। দুজনে একত্রিত
তাইনা । ভগবানের কত উচ্চ মহিমা করা হয় কিন্তু শব্দ কত সাধারণ — গড ফাদার । শুধু
ফাদার নয় , গড ফাদার হলেন উচ্চ থেকে উচ্চতর। ওঁনার মহিমাও উচ্চ । ওঁনাকে আহ্বানও করা
হয় পতিত দুনিয়াতেই। তিনি স্বয়ং এসে বলেন যে সত্যযুগ —ত্রেতাতে কার রাজ্য ছিল, কিভাবে
হয়েছিল, এসব কারো জানা নেই । পতিত-পাবন বাবা আসেন , কেউ তাঁকে পতিত-পাবন বলে,কেউ বলে
মুক্তিদাতা। তাঁকে আহ্বান করে বলে স্বর্গে নিয়ে চল। উচ্চ থেকে উচ্চতর তিনি তাইনা ।
পতিত দুনিয়াতেই আহ্বান করে বলা হয় আমরা ভারতবাসীদের শ্রেষ্ঠ করে তোল। ওঁনার
পদমর্যাদা কত বিশাল । হাইয়েস্ট অথরিটি তিনি। এই রাবণ রাজ্যের দুনিয়াতেই তাঁকে
আহ্বান করা হয় । তিনি ছাড়া এই রাবণ রাজ্য থেকে কে মুক্তি দেবে ? এইসব কথা যখন তোমরা
বাচ্চারা শোন তখন নেশাও ঊর্ধে থাকা উচিত । কিন্তু এই নেশা ঊধ্বর্গামী হয়না। মদের
নেশা চড়ে যায়, এই নেশা অপূর্ণ থেকে যায় । এখানে ধারণ করার বিষয়, ভাগ্যের ব্যাপার ।
বাবা হলেন অনেক বড় আসামী । তোমাদের মধ্যেও ঈশ্বরের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস কারও কারও থাকে।
দৃঢ়তা যদি সবার থাকতো তবে সংশয়ে এসে চলে যেত কেন ? বাবাকে ভুলে যায় । বাবার হয়ে
তাঁর প্রতি কোনও সংশয় থাকা উচিত নয় । বাবা হলেন ওয়ান্ডারফুল । গাওয়াও হয়ে থাকে
আশ্চর্য চকিত হয়ে বাবাকে জানে, বাবা বলে ডাকে, জ্ঞান শোনে, অন্যদেরও শোনায় তারপর
মায়া এসে সংশয় বুদ্ধি করে তোলে। বাবা বুঝিয়ে বলেন ভক্তি মার্গের শাস্ত্রে কোনও সার
নেই । বাচ্চারা তোমাদের মধ্যেও কেউ-কেউ মুশকিলের সাথে স্মরণে স্থায়ী হয়ে থাক। তোমরা
অনুভবও করতে পার স্মরণ স্থায়ীভাবে স্থিত হয় না। আমরা আত্মা বিন্দু,বাবাও বিন্দু ,
তিনি আমাদের পিতা, ওঁনার নিজের শরীর নেই । উনি বলেন আমি এই শরীরের ( ব্রহ্মা তন )
আধার নিয়ে থাকি। আমার নাম শিব । আমি পরমাত্মার নাম কখনও পরিবর্তিত হয় না । তোমাদের
শরীরের নামের বদল হয় । শরীরের প্রতিই নামকরণ করা হয়। বিবাহ হয়ে গেলে নাম বদলে যায়,
তারপর সেই নামটাই স্থায়ী হয়ে যায় । বাবা বলেন তোমরাও এটা নিশ্চিত করে নাও যে আমরা
আত্মা । বাবা নিজ পরিচয় দিয়ে বলেছেন যখন দুনিয়াতে অত্যাচার আর গ্লানি শুরু হয় তখনই
আমি আসি। তোমাদের কোনও শব্দকে ধরে রাখার প্রয়োজন নেই । বাবা স্বয়ং বলেন আমাকে নুড়ি
পাথরের ভিতরেও আছি বলে কত গ্লানি করে থাকে, এটাও নতুন বিষয় নয়। কল্পে-কল্পে পতিত হয়ে
গ্লানি করে, আর তখনই আমি আসি।
কল্পে -কল্পে এটাই আমার ভূমিকা (পার্ট)। এর মধ্যে কিছুই অদলবদল হতে পারে না ।
ড্রামায় নির্ধারিত না ! তোমাদের মধ্যে কেউ-কেউ জিজ্ঞাসা করে তিনি কি শুধু ভারতেই
আসেন ! শুধু কি ভারতই স্বর্গ হবে ? হ্যাঁ । এ হলো অনাদি -অবিনাশী ড্রামা । বাবা কত
উচ্চ থেকে উচ্চতর । পতিতদের পাবন প্রদানকারী বাবা বলেন আমাকে আহ্বান করাই হয় এই
পতিত দুনিয়াতে । আমি তো চির পবিত্র । আমাকে তো পবিত্র দুনিয়াতেই ডাকা উচিত তাইনা!
কিন্তু না, পাবন দুনিয়াতে আমাকে ডাকার প্রয়োজনই নেই । পতিত দুনিয়াতেই আহ্বান করে বলা
হয় তুমি এসে পাবন করে তোল । আমি কত বড় অতিথি । অর্ধকল্প ধরে আমাকে স্মরণ করে আসছ।
এখানে কোনও বড়ো ( বিখ্যাত, নামীদামি) মানুষকে আহ্বান করতে হলে এক -দুই বছর ডাকবে।
অমুক এই বছর না হলেও পরের বছর তো আসবে। ওনাকে তো অর্ধকল্প ধরে স্মরণ করে আসছ ,
ওঁনার আসার সময় তো ফিক্সড হয়ে আছে । এটা কারও জানা নেই । উচ্চ থেকে উচ্চতর এই বাবা
। একদিকে তো মানুষ ভালোবেসে বাবাকে আহ্বান করে, অপরদিকে তাঁর মহিমাকে কালিমালিপ্ত
করে । বাস্তবে ইনি হলেন সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ গেস্ট অফ অনার ( বিশাল মহিমান্বিত অতিথি
) যাঁর মহিমাকে কলঙ্কিত করা হয়েছে, বলা হয় ঈশ্বর নুড়ি ,পাথর সর্বত্র বিরাজমান । কত
হাইয়েস্ট অথরিটি তিনি, আহ্বানও করা হয় ভালোবাসার সাথে, কিন্তু সম্পূর্ণ বুদ্ধু (
বোকা, অন্তঃসারশূন্য)। আমিই এসে নিজ পরিচয় দিয়ে বলি, আমিই তোমাদের ফাদার । আমাকে গড
ফাদারও বলা হয় ।
যখন সবাই রাবণের কয়েদখানায় চলে যায় তখনই বাবাকে আসতে হয় কেননা সব ভক্ত অথবা ব্রাইডস
—সীতাদের উদ্ধার করতে। বাবা হলেন ব্রাইড গ্রুম — রাম । এখানে কোনও একজন সীতার বিষয়
নয়, সব সীতাদের রাবণের কয়েদখানা থেকে মুক্ত করেন । এ হলো অনন্ত জগতের বিষয় । এখানে
হলো পুরানো পতিত দুনিয়া । এর পুরানো হওয়া তারপর আবার নতুন করে শুরু হওয়া এ হলো
অ্যাকুরেট । এই শরীর ইত্যাদি শীঘ্রই পুরানো হয়ে যায়, কিছু বেশী সময় ধরে চলে । এসবই
ড্রামায় অ্যাকুরেট । সম্পূর্ণ ৫ হাজার বছর পরে আমাকে আসতে হয় । আমিই এসে নিজ পরিচয়
দিয়ে থাকি আর সৃষ্টি চক্রের রহস্য বুঝিয়ে বলি । কেউ আমার পরিচয় জানে না । না ব্রহ্মা,
বিষ্ণু, শঙ্করের, না লক্ষ্মী-নারায়ণের , না রাম-সীতার পরিচয় সম্পর্কে জানে। ড্রামায়
উচ্চ থেকে উচ্চতর একটর্স ইনি। বিষয়বস্তু তো মানুষকে ঘিরে । কখনও ৮-১০ ভূজাধারী
মানুষ হয়না। বিষ্ণুর ৪ ভূজা কেন দেখানো হয়েছে ? রাবণের ১০ মাথা কেন ? কেউ-ই জানেনা
। বাবাই এসে সম্পূর্ণ ওয়ার্ল্ডের আদি-মধ্য অন্তের নলেজ সম্পর্কে অবগত করান। উনি
বলেন আমিই হলাম সর্বোত্তম বড়ো গেষ্ট কিন্তু গুপ্ত রূপে । এটাও শুধুমাত্র তোমরাই জান
। কিন্তু জেনেও তারপর ভুলে যাও। ওঁনাকে কতটা রিগার্ড করা উচিত, স্মরণ করা উচিত ।
আত্মা নিরাকার, পরমাত্মাও নিরাকার এখানে ফটোর কোনও ব্যাপার নেই । তোমাদের তো নিজেকে
আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করতে হবে । দেহ-অভিমান ত্যাগ করতে হবে । তোমাদের
সবসময় অবিনাশী বস্তুকে দেখা উচিত, তোমরা বিনাশী দেহকে কেন দেখ ? দেহী -অভিমানী হও,
এতেই পরিশ্রম আছে। যত স্মরণে থাকবে ততই কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত করে উচ্চ পদ পাবে।
বাবা খুব সহজ যোগ অর্থাত্ স্মরণ শিখিয়ে থাকেন। যোগ তো অনেক রকমের আছে । স্মরণ শব্দটি
যথার্থ । পরমাত্মা বাবাকে স্মরণ করার মধ্যেই পরিশ্রম আছে । খুব কম সংখ্যকই আছে যে
সত্যি বলবে আমি এতো সময় স্মরণে থেকেছি। স্মরণ করেই না সুতরাং বলতেও দ্বিধা বোধ করে
। লিখে থাকে সারাদিন এক ঘন্টা স্মরণে ছিলাম, সুতরাং লজ্জা তো আসাই উচিত তাইনা ।
এমন বাবা যাঁকে দিবা-রাত্র স্মরণ করা উচিত তাঁকে মাত্র একঘন্টা স্মরণ করি , লজ্জা
তো আসাই উচিত তাইনা! এতেই বড় গুপ্ত পরিশ্রম । বাবাকে আহ্বান করা হয় , কতদূর থেকে
আসেন উনি তিনি তো গেস্ট তাইনা । বাবা বলেন আমি নতুন দুনিয়ার গেস্ট হইনা। আসি পুরানো
দুনিয়াতে নতুন দুনিয়ার স্থাপনা করতে। এ হলো পুরানো দুনিয়া, এটাও কেউ যথার্থ ভাবে
জানে না । নতুন দুনিয়ার আয়ুই জানেনা। বাবা বলেন এই নলেজ আমিই এসে দিয়ে থাকি তারপর
ড্রামানুসারে এই নলেজ লুপ্ত হয়ে যায় । আবার কল্প পরে এই ভূমিকার পুনরাবৃত্তি হবে ।
আমাকে আহ্বান করে প্রতি বছর শিব জয়ন্তী পালন করা হয় । যা হয়ে চলে যায় তার বাৎসরিক
অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় । শিববাবারও ১২ মাস পর জয়ন্তী পালন করা হয় কিন্তু কবে থেকে
পালন করা হচ্ছে এটা কারও জানা নেই । শুধু বলে থাকে লক্ষ বছর হয়ে গেছে । কলিযুগের
আয়ুও লক্ষ বছর লিখেছে। বাবা বলেন এটা ৫ হাজার বছরের বিষয় । সর্বপ্রথম এই দেবতাদেরই
ভারতে রাজ্য ছিল । সুতরাং বাবা বলেন — আমি ভারতের অনেক বড় অতিথি, আমাকে অর্ধকল্প ধরে
অনেক নিমন্ত্রণ দিয়ে আসছে, যখন খুব দুঃখী হয়ে ওঠে, তখন বলে হে পতিত-পাবন এসো আমি
এসেওছি পতিত দুনিয়াতে । আমার তো রথ চাই না ! আত্মা অকাল মূর্তি, তার আসন এটা । (
ব্রহ্মা শরীর) । বাবাও অকালমূর্ত, এই আসনে এসে বিরাজ করেন। কেউ শুনলে চমকে যাবে। এ
বড়োই রমণীয় বিষয় । যখন বাবা বলেন — বাচ্চারা, আমার মতে চল । মনে কর শিববাবা মত
প্রদান করেন, মুরলী পড়েন । ইনিও বলেন (ব্রহ্মা বাবা) আমিও মুরলী শুনে তারপর শোনাব ।
শোনান তো তিনি । ইনি নম্বর ওয়ান পূজ্য তারপর নম্বর ওয়ান পূজারী হন (ব্রহ্মা বাবা)।
এখন ইনি পুরুষার্থী। বাচ্চাদের সবসময় বোঝানো উচিত — আমি শিববাবার শ্রীমত পেয়েছি ।
যদি কেউ উল্টো কথা বলে তাকে ঠিক করে দেবে । এই অটুট দৃঢ়তা থাকলে তার রেসপনসিবিলিটি
শিববাবার । এটাই ড্রামায় নির্ধারিত । বিঘ্ন তো আসবেই ,অনেক কঠিন কঠিন বিঘ্ন আসে।
নিজের সন্তানদের উপরেও বিঘ্ন আসে। অতএব সবসময় মনে কর শিববাবা বোঝাচ্ছেন, তবেই স্মরণ
থাকবে। কিছু বাচ্চারা ভাবে ব্রহ্মা বাবা মত প্রদান করেন, কিন্তু তা নয় । শিববাবাই
রেসপনসিবল । দেহ -অভিমান থাকার কারণে প্রতিটি মুহূর্তে ব্রহ্মাকেই দেখে। শিববাবা কত
মহান অতিথি রেলওয়ের কর্মিরাও জানেনা , নিরাকারকে কিভাবে জানবে বা চিনবে । তাঁর কখনও
অসুখ হয়না কিন্তু অসুখের কারণ বলে দেন। ওরা কি করে জানবে এর মধ্যে কি আছে ? তোমরা
বাচ্চারাও নম্বরানুসারে জান। তিনি সব আত্মাদের পিতা আর ইনি (ব্রহ্মা বাবা) প্রজাপিতা
মানুষের পিতা। সুতরাং এনারা দুজন (বাপদাদা) কত বড়ো অতিথি ।
বাবা বলেন যা কিছু হচ্ছে ড্রামায় নির্ধারিত, আমিও ড্রামার বন্ধনে আবদ্ধ । নির্ধারণ
ছাড়া কিছুই করতে পারিনা । মায়াও ভীষণ প্রবল। রাম আর রাবণ দুজনেরই ভূমিকা রয়েছে ।
ড্রামায় যদি রাবণ চৈতন্য হতো তবে বলত— আমিও ড্রামানুসারে আসি। এ হলো সুখ দুঃখের খেলা।
সুখ হলো নতুন দুনিয়াতে ,দুঃখ পুরানো দুনিয়াতে। নতুন দুনিয়াতে কত অল্প সংখ্যক মানুষ,
পুরানো দুনিয়াতে অসংখ্য মানুষ । পতিত -পাবন বাবাকেই ডেকে বলা হয় পাবন দুনিয়া বানাও
কেননা পাবন দুনিয়াতে কত সুখ ছিল সেইজন্যই কল্প-কল্প আহ্বান করে । বাবা সবাইকে সুখ
প্রদান করে যান। এখন আবার তাঁর ভূমিকার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে । সৃষ্টি কখনোই বিনাশ হয়না।
বিনাশ হওয়া ইমপসিবল । সমুদ্র এই পৃথিবীতেই আছে । এটা বিশ্বের তৃতীয় তল । বলে থাকে
বন্যায় পরিণত হয়েছে সর্বত্র শুধু জল আর জল । তা সত্বেও পৃথিবী তো মেঝে তাইনা, সেখানে
জলও আছে । পৃথিবীর মেঝে কখনোই ধ্বংস হতে পারে না । জলও এই মেঝের উপরেই রয়েছে ।
সেকেন্ড এবং ফার্স্ট ফ্লোর ( দ্বিতীয়, তৃতীয় তল) যা পৃথিবীর সূক্ষ্ম বতন (ধাম) আর
পরমধাম যেখানে কোনও জল নেই । অনন্ত জগতের তিনটি তল আছে, যা তোমরা বাচ্চারা ছাড়া আর
কেউ জানেনা । এই খুশির খবর সবাইকে খুশির সাথে শোনাতে হবে । এই অতীন্দ্রিয় সুখের
স্মৃতিচিহ্ন কেবল তাদেরই স্মরণীয় করে রাখে যারা সম্পূর্ণ রূপে উত্তীর্ণ হবে। যারা
দিবারাত্র সার্ভিসে তত্পর থাকে ,সার্ভিস করতেই থাকে তারাই অতিব খুশিতে থাকে। কখনো
কখনো এমন দিনও আসে যখন মানুষ রাতেও জেগে থাকে কিন্তু আত্মা ক্লান্ত হয়ে পড়লে ঘুমোতে
হয়। আত্মা ঘুমোলে শরীরও শুয়ে পড়ে। আত্মা না শুলে শরীরও শোয়না। আত্মাই ক্লান্ত হয়ে
পড়ে । আজ আমি বড় ক্লান্ত — কে বলে ? আত্মা বলে । বাচ্চারা তোমাদের আত্ম অভিমানী হতে
হবে , এতেই পরিশ্রম । বাবাকে স্মরণ না করলে , দেহী -অভিমানী না হলে দেহ সম্বন্ধদের
স্মরণ এসে যায় । বাবা বলেন তোমরা বস্ত্রহীণ হয়ে এসেছিলে বস্ত্রহীণ হয়েই যেতে হবে ।
এই দেহের সম্বন্ধ ইত্যাদি ভুলে যাও। এই শরীরে থেকে আমাকে স্মরণ করলে সতোপ্রধান হতে
পারবে। বাবা কত বড় অথরিটি । বাচ্চারা ছাড়া কেউ জানেনা । বাবা বলেন আমি দীনবন্ধু,
সবাই সাধারণ। পতিত-পাবন বাবা এসেছেন, এটা জানলে জানা নেই কত ভীড় হবে । বড় বড় (
বিখ্যাত, নামীদামি) মানুষ এলে কত ভীড় হয়ে যায় । ড্রামাতে এনার ভূমিকা হলো গুপ্ত।ধীরে
ধীরে তোমরা যত অগ্রসর হবে তোমাদের প্রভাব বৃদ্ধি পাবে এবং বিনাশ সংঘটিত হবে । এমনিই
তো কিছু পাওয়া যায় না । স্মরণ করলে বাবার পরিচয় পেয়ে যাবে । সবাই পৌছতে পারবে না ।
যেমন যেসব কন্যা/মাতা পরিবারের শৃঙ্খলে আবদ্ধ থাকে তারা বাবার সাথে মিলিত হতে পারেনা
,কত অত্যাচার সহন করতে হয় । বিকার ত্যাগ করতে পারেনা । বলে সৃষ্টি তবে কিভাবে চলবে
? বাবা বলেন সৃষ্টির বোঝ কি বাবার উপর নাকি তোমাদের উপর? বাবাকে জেনে গেলে এরকম
প্রশ্ন করবেনা । তাদের বল ,প্রথমে বাবাকে তো জান তারপর সবকিছু জানতে পারবে। বোঝানোর
জন্য যুক্তি চাই। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্নেহ স্মরণ আর গুডমরনিং
। রূহানী বাবা রূহানী বাচ্চাদের জানাচ্ছেন নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
সবসময় হাইয়েস্ট অথরিটি বাবার স্মরণে থাকতে হবে । বিনাশী দেহকে না দেখে দেহী-অভিমানী
হওয়ার পুরুষার্থ করতে হবে । স্মরণের প্রকৃত চার্ট রাখতে হবে ।
২) দিবারাত্র সার্ভিসে তত্পর থেকে অপার খুশিতে থাকতে হবে। তিন লোকের রহস্য সবাইকে
উৎফুল্লতার সাথে বোঝাতে হবে । শিববাবা যে শ্রীমত দেন তার প্রতি অটুট দৃঢ়তা রেখে চলতে
হবে, কোনও বিঘ্ন এলে ঘাবড়ানো উচিত নয়, রেসপনসিবল শিববাবা, সেইজন্য সংশয় যেন না আসে।
বরদান:-
সময় আর সংকল্পের সেবায় অর্পণ করতে সমর্থ মাস্টার বিধাতা,বরদাতা ভব
এখন নিজের ছোট-ছোট
কথার পিছনে, শরীরের পিছনে,মনের পিছনে,সাধনের পিছনে ,সম্বন্ধের পিছনে সময় আর
সংকল্পের পরিবর্তে একে সেবা কার্যে অর্পণ কর ,এই সমর্পণ সমারোহের সাথে পালন কর ।
প্রতিটি শ্বাস প্রশ্বাসে সেবা করার জন্য ভালোবাসা , নিবিষ্টতা থাকুক । সেবাতে
একাত্ম হলে স্ব -উন্নতির গিফ্ট সততই প্রাপ্ত হবে । বিশ্ব কল্যাণের মধ্যেই স্ব -কল্যাণ
নিহিত আছে সুতরাং নিরন্তর মহাদানী ,মাস্টার বিধাতা আর বরদাতা হও।
স্লোগান:-
নিজের ইচ্ছাকে দমন করতে পারলে অনেক সমস্যা কম হয়ে যাবে ।