14.02.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
তোমরা হলে আত্মা, তোমাদের স্বধর্ম হল শান্তি, তোমাদের দেশ হল শান্তিধাম, তোমরা
আত্মারা হলে শান্ত স্বরূপ, তাই তোমরা শান্তি চাইতে পারো না"
প্রশ্নঃ -
তোমাদের যোগবল
কোন্ অদ্ভুত কার্য করে ?
উত্তরঃ -
যোগবলের দ্বারা তোমরা সম্পূর্ণ দুনিয়াকে পবিত্র করো, তোমরা বাচ্চারা সংখ্যায় খুব কম,
তোমরা যোগবলের দ্বারা এই সম্পূর্ণ পাহাড় তুলে সোনার পাহাড় স্থাপন করো। ৫ তত্ত্ব
সতোপ্রধান হয়ে যায়, ফল ভালো দেয়। সতোপ্রধান তত্বের দ্বারা এই শরীর টিও সতোপ্রধান হয়।
সেখানকার ফল খুবই সুস্বাদু হয় ।
ওম্ শান্তি ।
যখন ওম্ শান্তি
বলা হয় তখন খুব খুশী অনুভব হওয়া উচিত। কারণ বাস্তবে আত্মা হল-ই শান্ত স্বরূপ, তার
স্বধর্ম হল শান্ত। এই বিষয়ে সন্ন্যাসীরাও বলেন, শান্তির মালা তোমাদের গলায় রয়েছে।
শান্তিকে তোমরা বাইরে কোথায় খুঁজে বেড়াচ্ছ। আত্মা স্বতঃই হল শান্ত স্বরূপ। এই শরীরে
পার্ট প্লে করতে আসতে হয়। আত্মা সদা শান্ত থাকলে কর্ম করবে কীভাবে ? কর্ম তো করতেই
হবে। হ্যাঁ, শান্তি ধামে আত্মারা শান্ত থাকে। সেখানে শরীর থাকে না, এই কথা কোনও
সন্ন্যাসী ইত্যাদিরা বোঝেন না যে আমরা হলাম আত্মা, শান্তিধাম নিবাসী। বাচ্চাদের
বোঝানো হয়েছে - শান্তিধাম আমাদের দেশ, তারপরে আমরা সুখধামে এসে পার্ট প্লে করি, পরে
রাবণ রাজ্য হয় দুঃখধামে। এই হল ৮৪ জন্মের কাহিনী। ভগবানুবাচ আছে না অর্জুন কে
বলেছিলেন তুমি নিজের জন্মের বিষয়ে জানো না। একজন কে কেন বলেন? কারণ একের গ্যারান্টি
আছে। রাধে-কৃষ্ণের তো গ্যারান্টি আছে তাই এঁদের বলেন। এই কথা বাবাও জানেন,
বাচ্চারাও জানে যে এই যে সব বাচ্চারা আছে সবাই তো ৮৪ জন্ম নেবে না। কেউ মাঝখানে আসবে,
কেউ শেষে আসবে। এনার তো হল সার্টেন। এনাকেই বলা হয় - হে সন্তান । অর্থাৎ ইনি হলেন
অর্জুন, তাইনা। রথে বিরাজিত তাইনা। বাচ্চারা নিজেরাও বুঝতে পারে - আমরা কীভাবে জন্ম
নেব ? সার্ভিস না করলে সত্যযুগ নতুন দুনিয়ায় প্রথমে আসবে কীভাবে ? এদের ভাগ্য কোথায়।
পরে যারা জন্ম নেবে তাদের জন্য তো পুরানো ঘর হতে থাকবে তাইনা। আমি এনার জন্য বলি,
ফলে তোমাদের জন্যও হয় সার্টেন। তোমরাও বুঝতে পারো - মাম্মা - বাবা ৮৪ জন্ম নেন।
কুমারকা , জনক এমন মহারথীরা আছেন যারা ৮৪ জন্ম নেন। যারা সার্ভিস করে না তারা
অবশ্যই কিছু জন্ম পরে আসবে। তারা বোঝে আমরা তো ফেল হয়ে যাব, শেষে আসব। স্কুলে দৌড়ে
টার্গেট পর্যন্ত এসে আবার ফিরে যায় তাইনা। সবাই একরস হতে পারবে না। রেসে এক ইঞ্চি
তফাৎ থাকলেও জিতে যায়, এও অশ্ব রেস তাইনা। অশ্ব বলা হয় ঘোড়াকে। রথকেও ঘোড়া বলা হয়।
যদিও তারা যা দেখায় দক্ষ প্রজাপিতা যজ্ঞ রচনা করেছেন, তাতে ঘোড়া উৎসর্গ করেছেন,
সেসব কোনও কথা নেই। দক্ষ প্রজাপিতাও নেই, কোনও যজ্ঞ রচনাও করেন নি। বই ইত্যাদিতে
ভক্তি মার্গের অনেক কাহিনী আছে। তার নাম হল কাহিনী। অনেক কাহিনী শোনে। তোমরা তো
পড়াশোনা কর। পড়াশোনাকে কাহিনী বলা হবে না। স্কুলে পড়া কর, মুখ্য উদ্দেশ্য থাকে। এই
পড়ার দ্বারা এই চাকরি প্রাপ্ত হবে। কিছু তো প্রাপ্তি হবে। এখন বাচ্চারা তোমাদের দেহি
অভিমানী হতে হবে। এই হল পরিশ্রম। বাবাকে স্মরণ করলেই বিকর্ম বিনাশ হবে। বিশেষ ভাবে
স্মরণ করা উচিত, এমন নয় আমি তো শিববাবার সন্তান তাহলে স্মরণের কি প্রয়োজন । না,
স্মরণ করতে হবে নিজেকে স্টুডেন্ট ভেবে। আমরা আত্মা, আমাদের শিববাবা পড়াচ্ছেন, সে
কথাও ভুলে যায়। শিববাবা হলেন একমাত্র টিচার যিনি সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বলে
দেন, এই কথাও স্মরণে থাকে না। প্রত্যেক বাচ্চার নিজের মনে প্রশ্ন করা উচিত কতক্ষণ
বাবার স্মরণ থাকে ? বেশির ভাগ সময় তো বাহ্যমুখী হয়েই কাটে। এই স্মরণ-ই হল মুখ্য। এই
ভারতের যোগের খুব মহিমা আছে। কিন্তু যোগ কে শেখায় - সে কথা কেউ জানেনা। গীতায়
কৃষ্ণের নাম দেওয়া আছে। এবারে কৃষ্ণকে স্মরণ করলে একটি পাপও বিনষ্ট হবে না কারণ তিনি
তো হলেন দেহধারী। পাঁচ তত্ত্ব দিয়ে তৈরি। কৃষ্ণকে স্মরণ করা অর্থাৎ মাটিকে স্মরণ করা,
৫ তত্ত্বকে স্মরণ করা। শিববাবা তো হলেন অশরীরী তাই বলা হয় অশরীরী হও, আমি পিতা আমাকে
স্মরণ করো।
তোমরা বলেও থাকো - হে পতিত-পাবন ! তিনি তো একজনই, তাইনা। যুক্তি সহকারে জিজ্ঞাসা করা
উচিত - গীতার ভগবান কে ? ভগবান তো হলেন রচয়িতা একজন। যদি মানুষ নিজেদের ভগবান বলেও
থাকে তবুও এমন কখনও বলবে না যে তোমরা সবাই আমার সন্তান। এমন বলবে ততত্বম , বা বলবে
ঈশ্বর হলেন সর্বব্যাপী। আমিও ভগবান , তুমিও ভগবান, যেদিকে দেখি সবাই ভগবান। পাথরেও
ভগবান, এমনও বলে দেয়। তোমরা আমার সন্তান এমন বলতে পারেনা। এই কথা তো এক বাবা-ই বলেন
- হে আমার প্রিয় আত্মারূপী বাচ্চারা। এমন করে আর কেউ বলতে পারেনা। মুসলমানদের কেউ
যদি বলে আমার প্রিয় সন্তান, তবেও চড় মেরে দেবে। এই কথা একমাত্র পারলৌকিক পিতা-ই বলতে
পারেন। আর অন্য কেউ সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান প্রদান করতে পারেনা। ৮৪-র সিঁড়ির
রহস্য কেউ বোঝাতে পারেনা, শুধুমাত্র নিরাকার পিতা ছাড়া । তাঁর প্রকৃত নাম হল শিব।
সে তো মানুষ অনেক নাম রেখে দিয়েছে। অনেক ভাষা আছে। তো নিজের নিজের ভাষায় নাম রেখেছে।
যেমন বোম্বে তে বলা হয় বাবুলনাথ, কিন্তু তারা অর্থ বোঝেনা। তোমরা বুঝেছ কাঁটাদের
ফুলে পরিণত করেন যিনি। ভারতে শিববাবার হাজার নাম আছে, অর্থ জানেনা। বাবা বাচ্চাদেরই
বোঝান। তার মধ্যে মাতাদের বাবা বিশেষ এগিয়ে রাখেন। আজকাল ফিমেল দের মান আছে কারণ
বাবা এসেছেন তাইনা। বাবা মাতাদের উঁচু মহিমা বর্ণনা করেন। তোমরা হলে শিব শক্তি সেনা,
তোমরাই শিববাবাকে জানো। সত্য একটাই। গায়ন আছে সত্যের নৌকো নড়ে চড়ে, ডোবে না। সুতরাং
তোমরা হলে সত্য, নতুন দুনিয়া স্থাপনা করছ। বাকি সব মিথ্যা বন্ধন শেষ হয়ে যাবে। তোমরা
এখানে রাজত্ব করবে না। তোমরা পরের জন্মে এসে রাজত্ব করবে। এইসব হল বড়ই গুপ্ত কথা যা
তোমরা-ই জানো। এই বাবা যদি না থাকতেন কিছুই জ্ঞান থাকত না। এখন সব জ্ঞান হয়েছে।
এই হল যুধিষ্ঠির, যুদ্ধের ময়দানে বাচ্চাদের দাঁড় করিয়েছেন যিনি। এই হল অহিংসক,
নন-ভায়োলেন্স। মানুষ মারামারিকে হিংসা ভাবে। বাবা বলেন প্রথম মুখ্য হিংসা তো হল কাম
কাটারীর তাই বলা হয় কাম মহাশত্রু, এর উপরেই জিত অর্জন করতে হবে। মুখ্য কথা হল কাম
বিকারের, পতিত অর্থাৎ বিকারী। বিকারী বলা হয় পতিতদের, যারা বিকারগ্রস্ত হয়। ক্রোধী
মানুষকে এমন বিকারী বলা হবে না । ক্রোধী কে ক্রোধী, লোভী কে লোভী বলা হবে। দেবতাদের
নির্বিকার বলা হয়। দেবতারা হলেন নির্লোভী, নির্মোহী, নির্বিকারী। বিকারে লিপ্ত হন
না। তোমাদের বলে বিকার না থাকলে সন্তান হবে কীভাবে ? তাঁদের কে নির্বিকারী মানছ তো
তাইনা। ওই হল ভাইসলেস দুনিয়া। দ্বাপর কলিযুগ হল ভিশাস দুনিয়া। নিজেকে বিকারী,
দেবতাদের নির্বিকারী বলো তো, তাইনা। তোমরা জানো আমরাও বিকারী ছিলাম। এখন এঁদের মতন
নির্বিকারী হচ্ছি। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ স্মরণের শক্তি দ্বারা এই পদ মর্যাদা প্রাপ্ত
করেছিলেন এখন আবার প্রাপ্ত করছেন। আমরা-ই দেবী-দেবতা ছিলাম, আমরা-ই কল্প পূর্বে এই
রাজত্ব প্রাপ্ত করেছিলাম, যা হারিয়ে ছিলাম, আবার আমরা-ই প্রাপ্ত করছি। এই চিন্তন
বুদ্ধিতে থাকলেও খুশী অক্ষুন্ন থাকবে। কিন্তু মায়া এই স্মৃতি ভুলিয়ে দেয়। বাবা
জানেন তোমরা স্থায়ীভাবে স্মরণে থাকতে পারবে না। তোমরা বাচ্চারা অটল হয়ে স্মরণ করতে
থাকো তো শীঘ্রই কর্মাতীত অবস্থা হয়ে যাবে এবং আত্মা ফিরে যাবে। কিন্তু হয় না। প্রথম
নম্বরে ইনি যাবেন। তারপরে শিবের বরযাত্রী। বিয়ের অনুষ্ঠানে মাতা-রা মাটির কলসে
জ্যোতি জ্বালিয়ে নিয়ে যায়, তাইনা ! এ হল প্রমাণ চিহ্ন। শিববাবা সজন হলেন সর্বদা
জাগ্রত জ্যোতি। আমাদের জ্যোতি জাগ্রত করেন। এখানকার কথা ভক্তি মার্গে নিয়ে গেছে।
তোমরা যোগবলের দ্বারা নিজের জ্যোতি জাগ্রত কর। যোগের দ্বারা তোমরা পবিত্র হও।
জ্ঞানের দ্বারা ধন প্রাপ্তি হয়। পড়াশোনাকে সোর্স অফ ইনকাম বলা হয় তাইনা। যোগবলের
দ্বারা তোমরা বিশেষ ভাবে ভারত এবং সাধারণ ভাবে সম্পূর্ণ বিশ্বকে পবিত্র বানাও। এই
সেবায় কন্যারা খুব ভালো ভাবে সহযোগী হতে পারে। সার্ভিস করে উঁচু পদ মর্যাদা প্রাপ্ত
করতে হবে। জীবন হীরে তুল্য বানাতে হবে, কম নয়। গায়ন আছে ফলো ফাদার মাদার। সী মাদার
ফাদার এবং অনন্য ব্রাদার্স, সিস্টার্স।
তোমরা বাচ্চারা প্রদর্শনীতে বোঝাতে পারো যে তোমাদের দুইজন পিতা আছে - লৌকিক এবং
পারলৌকিক। দুইজনের মধ্যে কে বড় ? অবশ্যই অসীম জগতের পিতা হবেন তাইনা। অবিনাশী
উত্তরাধিকার তাঁর কাছেই প্রাপ্ত হওয়া উচিত। এখন উত্তরাধিকার দিচ্ছেন, বিশ্বের মালিক
বানাচ্ছেন। ভগবানুবাচ - তোমাদের রাজ যোগের শিক্ষা প্রদান করি তারপর তোমরা পর জন্মে
বিশ্বের মালিক হবে। বাবা কল্প-কল্প ভারতে এসে ভারতকে বিত্তবান করেন। তোমরা বিশ্বের
মালিক হও এই পড়াশোনা দ্বারা। লৌকিক পড়াশোনা দ্বারা কি প্রাপ্ত হয় ? এখানে তো তোমরা
হীরে তুল্য হয়ে যাও ২১ জন্মের জন্য। ওই পড়াশোনায় রাত-দিনের তফাৎ আছে। ইনি হলেন পিতা,
টিচার, গুরু একজন-ই। অতএব পিতার উত্তরাধিকার, টিচারের উত্তরাধিকার এবং গুরুর
উত্তরাধিকার সবই প্রদান করেন। এখন বাবা বলেন দেহ সহ সবাইকে ভুলে যেতে হবে। তুমি
মৃতবৎ হলে তোমার দুনিয়াও তোমার জন্য মৃত হবে। বাবার অ্যাডপ্টেড সন্তান হয়ে, কাকে
স্মরণ করবে। অন্যদের দেখেও দেখবেনা। পার্ট প্লে করার সময়ে বুদ্ধিতে থাকবে - আমাদের
নিজ ধাম ফিরে যেতে হবে তারপরে এখানে এসে পার্ট প্লে করতে হবে। এই কথা বুদ্ধিতে
থাকলেও খুশীর অনুভূতি হতে থাকবে। বাচ্চাদেরকে দেহের ভান বা দেহের অনুভব ত্যাগ করা
উচিত। এই পুরানো জিনিস এখানে ত্যাগ করতে হবে, এবারে ফিরে যেতে হবে। নাটক সম্পূর্ণ
হয়েছে। পুরানো সৃষ্টিকে আগুন লাগছে। অন্ধের সন্তান অন্ধ-রা অজ্ঞান নিদ্রায় নিদ্রিত।
মানুষ বুঝবে নিদ্রিত মানুষ দেখানো হয়েছে। কিন্তু এই হল অজ্ঞানের নিদ্রার কথা, যে
নিদ্রা থেকে তোমরা জাগিয়ে তোলো। জ্ঞান অর্থাৎ দিন হল সত্যযুগ, অজ্ঞান অর্থাৎ রাত হল
কলিযুগ। এই কথাটি খুব ভালোভাবে বুঝতে হবে। কন্যার বিবাহ হলে মাতা-পিতা, শ্বশুর,
শাশুড়ী সকলেই স্মরণে আসবে। তাদেরও ভুলে যেতে হবে। এমন অনেক যুগল আছে, যারা
সন্ন্যাসীদের দেখায় - আমরা যুগল হওয়া সত্ত্বেও বিকারগ্রস্ত হই না। জ্ঞান তলোয়ার
মধ্যিখানে থাকে। বাবার আদেশ হল - পবিত্র থাকতে হবে। দেখো রমেশ ভাই - ঊষা বোন আছে,
কখনও তারা পতিত হয়নি। তাদের এই ভয় আছে, যদি পতিত হয় তো ২১ জন্মের রাজত্ব শেষ হয়ে
যাবে। দেউলিয়া হয়ে যাবে। এইভাবে কেউ কেউ ফেল হয়ে যায়। গন্ধর্ব বিবাহের নাম তো আছে
তাই না। তোমরা জানো পবিত্র থাকলে উঁচু পদের প্রাপ্তি হবে। এক জন্মের জন্য পবিত্র
থাকতে হবে। যোগবলের দ্বারা কর্মেন্দ্রিয়ের উপরে কন্ট্রোল বা নিয়ন্ত্রণ এসে যায়।
যোগবলের দ্বারা তোমরা সম্পূর্ণ দুনিয়াকে পবিত্র কর। তোমরা বাচ্চারা সংখ্যায় খুব কম
যোগবলের দ্বারা এই সম্পূর্ণ পাহাড় উড়িয়ে সোনার পাহাড় স্থাপন কর। মানুষ তো বোঝে না,
তারা গোবর্ধন পর্বতের পরিক্রমা করতে থাকে। বাবা নিজে এসে সম্পূর্ণ দুনিয়াকে গোল্ডেন
এজেড করেন। এমন নয় যে হিমালয় সোনার হয়ে যাবে। সেখানে তো সোনার খনি ভরপুর হয়ে যাবে।
৫ তত্ত্ব সতোপ্রধান হয়, ফলও ভালো দেয়। সতো প্রধান তত্বের দ্বারা এই শরীরও সতোপ্রধান
হয়। সেখানকার ফলও সুস্বাদু হয় । নাম ই হল স্বর্গ। অতএব নিজেকে আত্মা ভেবে বাবাকে
স্মরণ করলেই বিকার মুক্ত হবে। দেহ-অভিমানে এলে বিকার গ্রস্ত হওয়ার চেষ্টা করা হয়।
যোগী কখনো বিকারে লিপ্ত হবে না। জ্ঞান বল তো আছে, কিন্তু যোগী না হলে পতন হবে। যেমন
জিজ্ঞাসা করা হয় - পুরুষার্থ বড় নাকি প্রালব্ধ ? তখন বলে পুরুষার্থ বড়। তেমনই এইখানে
বলা হবে যোগ বড়। যোগের দ্বারা-ই পতিত থেকে পবিত্র হয়। এখন তোমরা বাচ্চারা বলবে যে
আমরা অসীম জগতের পিতার কাছে পড়াশোনা করব। মানুষের কাছে পড়ে কি প্রাপ্তি হবে ? এক
মাসে কত উপার্জন হবে ? এইখানে তোমরা এক একটি রত্ন ধারণ কর। এই হল লক্ষ টাকার রত্ন।
স্বর্গে টাকা পয়সার গণনা করা হয় না। অপার ধন থাকে। সকলের নিজস্ব কৃষি ক্ষেত্র
ইত্যাদি থাকে। এখন বাবা বলেন আমি তোমাদের রাজ যোগ শেখাই। এই হল মুখ্য উদ্দেশ্য।
পুরুষার্থ করে উচ্চ মানের হতে হবে। রাজধানী স্থাপনা হচ্ছে। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ কীভাবে
প্রালব্ধ প্রাপ্ত করেছেন, এঁদের প্রালব্ধের কথা জানলে আর কি চাই। এখন তোমরা জানো
কল্পের ৫ হাজার বছর পরে বাবা আসেন, এসে ভারত কে স্বর্গ বানান। তো বাচ্চাদের সার্ভিস
করার উৎসাহ থাকা উচিত। যতক্ষণ পথ বলবে না ততক্ষণ খাবার খাবে না - এতখানি
উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকলে তবে উঁচু পদ মর্যাদা প্রাপ্ত করতে পারো। আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ আর
সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
ঈশ্বরীয় সেবা করে নিজের জীবন ২১ জন্মের জন্য হীরে তুল্য করতে হবে। মাতা-পিতা এবং
অনন্য ভাই-বোনদেরকেই ফলো করতে হবে।
২ ) কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্তির জন্য দেহ সহ সবাইকে ভুলে যেতে হবে। নিজের স্মরণ অটল
এবং স্থায়ী বানাতে হবে। দেবতাদের মতন নির্লোভ, নির্মোহী, নির্বিকারী হতে হবে।
বরদান:-
সর্বগুণ সম্পন্ন হওয়ার সাথে কোনও একটি বিশেষত্বে বিশেষ প্রভাবশালী ভব
ব্যাখা: যেমন
ডাক্তাররা সাধারণ রোগের চিকিৎসার নলেজ তো রাখে, কিন্তু তার সাথে কোনও একটি বিশেষ
বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে থাকে। তেমনই বাচ্চারা তোমাদেরও সর্বগুণ সম্পন্ন তো হতেই হবে,
তার পাশাপাশি একটি বিশেষত্বকে বিশেষভাবে অনুভব করে, সেবায় প্রয়োগ করে এগিয়ে চলো।
যেমন সরস্বতীকে বিদ্যার দেবী, লক্ষ্মীকে ধন দেবী সম্বোধন করে পূজা করা হয়। এভাবেই
নিজেকে সর্বগুণ, সর্বশক্তি সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও একটি বিশেষত্বে বিশেষ রিসার্চ করে
নিজেকে প্রভাবশালী বানাও।
স্লোগান:-
বিকার
রূপী সর্পগুলিকে সহজযোগের শয্যা বানিয়ে দাও, তবে সদা নিশ্চিন্ত থাকবে ।