17.02.2020 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা -- বাবা তোমাদের অবিনাশী জ্ঞান রত্নের দান দেন, তোমরাও আবার অন্যদের এই দান দিতে থাকো, এই দানেই তোমাদের সদ্গতি হয়ে যাবে"

প্রশ্নঃ -
কোন্ নতুন পথের কথা তোমরা বাচ্চারা ছাড়া আর কেউই জানে না ?

উত্তরঃ -
ঘরের পথ বা স্বর্গে যাওয়ার পথ তোমরা বাবার কাছ থেকে এখনই জানতে পেরেছো । তোমরা জানো যে, আমাদের আত্মাদের ঘর হলো শান্তিধাম, স্বর্গ আলাদা আর শান্তিধাম আলাদা । এই নতুন পথের কথা তোমরা আত্মারা ছাড়া আর কেউই জানে না । তোমরা বলো যে, এখন কুম্ভকর্ণের নিদ্রা ত্যাগ করো, চোখ খোলো, তোমরা পবিত্র হও । তোমরা পবিত্র হলেই ঘরে যেতে পারবে ।

গীতঃ-
জাগো সজনীরা জাগো ...

ওম্ শান্তি ।
ভগবান উবাচঃ । এ কথা তো বাবাই বুঝিয়েছেন যে, মনুষ্যকে বা দেবতাদের ভগবান বলা হয় না, কেননা এদের সাকারী রূপ আছে । বাকি পরমপিতা পরমাত্মার না আকারী রূপ আছে, না সাকারী রূপ আছে, তাই তাঁকে শিব পরমাত্মা নমঃ বলা হয় । জ্ঞানের সাগর ওই একজনই । কোনো মানুষের মধ্যে এই জ্ঞান থাকতেই পারে না । কিসের জ্ঞান ? রচয়িতা আর এই রচনার আদি - মধ্য এবং অন্তের জ্ঞান অথবা আত্মা আর পরমাত্মার এই জ্ঞান আর কারোর মধ্যেই নেই । তাই বাবা এসে জাগ্রত করেন - হে সজনীরা, হে ভক্তরা, তোমরা জাগো । সমস্ত ভক্তই পুরুষ অথবা নারী । তারা ভগবানকে স্মরণ করে ।সকল কনেরাই তাদের একমাত্র বরকে স্মরণ করে । সকল আশিক আত্মারা এক মাশুক পরমপিতা, পরমাত্মাকে স্মরণ করে । সকলেই হলো সীতা, একমাত্র রাম হলো পরমপিতা পরমাত্মা । রাম অক্ষর কেন বলা হয় ? এ তো রাবণ রাজ্য, তাই না । এর বিপরীতে রামরাজ্য বলা হয় । রাম হলেন বাবা, যাঁকে ঈশ্বরও বলা হয় আবার ভগবানও বলা হয় । তাঁর প্রকৃত নাম হলো শিব । তাই এখন তিনি বলছেন, তোমরা জাগো, এখন নবযুগ আসছে । পুরানো যুগ শেষ হয়ে আসছে । এই মহাভারত লড়াইয়ের পর সত্যযুগ স্থাপন হয়, আর এই লক্ষ্মী - নারায়ণের রাজ্য হবে । এই পুরানো কলিযুগ শেষ হয়ে আসছে তাই বাবা বলেন -- বাচ্চারা, এখন কুম্ভকর্ণের নিদ্রা ত্যাগ করো । এখন তোমাদের চোখ খোলো । এখন নতুন দুনিয়া আসছে । এই নতুন দুনিয়াকে স্বর্গ, সত্যযুগ বলা হয় । এ হলো এক নতুন পথ । এই ঘরে বা স্বর্গে যাওয়ার পথ কেউই জানে না । স্বর্গ আলাদা আর শান্তিধাম, যেখানে আত্মারা থাকে, তা আলাদা । বাবা এখন বলছেন - তোমরা জাগো, এই রাবণ রাজ্যে তোমরা পতিত হয়ে গেছো । এই সময় একজনও পবিত্র আত্মা থাকে না । কাউকেই পুণ্য আত্মা বলা হবে না । মানুষ যদিও বা দান - পুণ্য করে, তবুও পবিত্র আত্মা তো একজনও নেই । এখানে অর্থাৎ কলিযুগে সব পতিত আত্মারা থাকে, আর সত্যযুগে থাকে পবিত্র আত্মারা, তাই বলা হয় --- হে শিববাবা, তুমি এসে আমাদের পবিত্র আত্মা বানাও । এ হলো পবিত্রতার কথা । বাচ্চারা, বাবা এইসময় এসে তোমাদের অবিনাশী জ্ঞান রত্নের দান দেন । তিনি বলেন, তোমরাও অন্যদের দান দিতে থাকো তাহলে পাঁচ বিকার রূপী গ্রহণ দূর হবে । তোমরা পাঁচ বিকারের দান দাও তাহলে এই দুঃখের গ্রহণ দূর হবে । তোমরা পবিত্র হয়ে সুখধামে চলে যাবে । পাঁচ বিকারের মধ্যে এক নম্বর হলো কাম বিকার, এই বিকার ত্যাগ করে পবিত্র হও । তোমরা নিজেরাও বলো -- হে পতিত পাবন, তুমি আমাদের পবিত্র বানাও । বিকারী পতিতকে বলা হয় । এই সুখ - দুঃখের খেলা ভারতের জন্যই বানানো আছে । বাবা ভারতে এসে সাধারণ তনে প্রবেশ করেন তারপর তিনি বসেই এনার জীবনী শোনান । এরা হলো সব ব্রাহ্মণ আর ব্রাহ্মণীরা, প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান । তোমরা সবাইকে পবিত্র হওয়ার যুক্তি বলে দাও । তোমরা ব্রহ্মাকুমার - কুমারীরা বিকারে যেতে পারো না । তোমাদের মতো ব্রাহ্মণদের এই হলো একটাই জন্ম । দেবতা বর্ণে তোমরা ব্রাহ্মণরা ২০ জন্মগ্রহণ করো, বৈশ্য এবং শূদ্র বর্ণে ৬৩ জন্ম । ব্রাহ্মণ বর্ণের এ হলো অন্তিম জন্ম, যেই জন্মে তোমাদের পবিত্র হতে হবে । সত্যযুগে তো কেউই পতিত হয় না । এখন এই অন্তিম জন্ম যদি তোমরা পবিত্র হও, তাহলে ২১ জন্ম পবিত্র থাকতে পারবে । তোমরা পবিত্র ছিলে, এখন পতিত হয়ে গেছো । মানুষ পতিত, তাই তো তারা ভগবানকে ডাকে । কে তোমাদের পতিত বানিয়েছে ? রাবণের আসুরী মত । আমি ছাড়া আর কেউই তোমাদের রাবণ রাজ্য থেকে, এই দুঃখ থেকে উদ্ধার করতে পারে না । সকলেই কাম চিতায় বসে ভস্ম হয়ে আছে । আমাকে এসে জ্ঞান চিতাতে বসাতে হয় । জ্ঞান স্নান করাতে হয় । সকলেরই সদগতি করাতে হবে । যারা খুব ভালোভাবে এই পড়া পড়ে, তাদেরই সদগতি হয় । বাকি সকলেই শান্তিধামে চলে যায় । সত্যযুগে কেবল দেবী - দেবতারা থাকে, তাঁরাই সদগতি পেয়েছে । পাঁচ হাজার বছর পূর্বে এই দেবী - দেবতাদের রাজ্য ছিলো । এ লক্ষ বছরের কথাই নয় । বাবা এখন বলছেন - মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা আমাকে স্মরণ করো । "মন্মনাভব" শব্দটি তো প্রসিদ্ধ । ভগবান উবাচঃ - কোনো দেহধারীকেই ভগবান বলা যায় না । আত্মা তো এক শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করে । কখনো স্ত্রী, আবার কখনো পুরুষ জন্ম নেয় । ভগবান কখনোই জন্ম - মরণের এই খেলায় আসে না । এ নাটকের নিয়ম অনুসারে লিপিবদ্ধ আছে । এক জন্ম অন্য জন্মের সঙ্গে মেলে না । এরপর তোমাদের এই জন্ম যখন রিপিট হবে তখন এই এই অভিনয়, এই চরিত্র আবারও ধারণ করবে । এই ড্রামা অনাদি রূপে বানানো আছে । এর পরিবর্তন হতে পারে না । সত্যযুগে শ্রীকৃষ্ণের যে শরীর ছিলো, তা আবারও সেখানে তিনি পাবেন । সেই আত্মা তো এখন এখানে আছেন । তোমরা এখন জানো যে, আমরাও তেমন হবো । এই লক্ষ্মী - নারায়ণের চিত্র সম্পূর্ণ সঠিক নয়, এমনই আবারও তৈরী হবে । এইসব কথা নতুনরা কেউই বুঝতে পারে না । খুব ভালোভাবে যখন কাউকে বোঝাবে তখনই ৮৪ জন্মের চক্র জানতে এবং বুঝতে পারবে, প্রত্যেক জন্মের নাম - রূপ - চিত্র ইত্যাদি আলাদা আলাদা হয় । এখন এনার ৮৪ তম জন্মের চিত্র এমন, তাই নারায়ণের চিত্র কাছাকাছি এমন দেখানো হয়েছে । তা না হলে মানুষ বুঝতে পারবে না ।

বাচ্চারা, তোমরা জানো যে - মাম্মা - বাবাই এই লক্ষ্মী - নারায়ণ হন । এখানে তো পাঁচ তত্ব পবিত্র নয় । এই শরীরও সবই পতিত । সত্যযুগে শরীরও পবিত্র হয় । কৃষ্ণকে অতি সুন্দর বলা হয় । সেখানে স্বাভাবিক সৌন্দর্য থাকে । এখানে বিলাতে মানুষ গৌর বর্ণ হলেও তাদের দেবতা বলা হবেই না । তাদের মধ্যে তো দৈবী গুণ নেই, তাই না । তাই বাবা কতো ভালোভাবে বসে বুঝিয়ে বলেন । এ হলো উঁচুর থেকেও উঁচু পড়া, যাতে তোমাদের কতো বড় উপার্জন হয় । অগুণতি হীরে - জহরত, ধন উপার্জন হয় । ওখানে তো এই হীরে - জহরতের মহল ছিলো । এখন সে সব হারিয়ে গেছে । তোমরা তাই কতো ধনবান হও । এই উপার্জন হলো ২১ জন্মের জন্য অপার উপার্জন, এতে অনেক পরিশ্রমের প্রয়োজন । আমরা হলাম আত্মা, আমাদের এই পুরানো শরীর ত্যাগ করে এখন নিজেদের ঘরে ফিরে যেতে হবে । বাবা এখন আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছেন । আমরা আত্মারা ৮৪ জন্ম সম্পূর্ণ করেছি, এখন আবার আমাদের পবিত্র হতে হবে, বাবাকে স্মরণ করতে হবে । না হলে এ তো শেষ সময় উপস্থিত । সাজা ভোগ করে ঘরে ফিরে যাবে । এই হিসেব - নিকেশ তো সবাইকে শোধ করতেই হবে । ভক্তি মার্গে মানুষ কাশীতে মৃত্যু কুঁয়াতে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যু বরণ (কাশী কলবট ) করতো, তাও কেউই মুক্তি পেতো না । সে হলো ভক্তি মার্গ আর এ হলো জ্ঞান মার্গ । এখানে জীবঘাত করার দরকার নেই । সে হলো জীব - ঘাত । তাও ভাবনা থাকে যে, আমরা মুক্তি পাবো তাই পাপের হিসেব - নিকেশ শোধ হয়ে আবার শুরু হয় । এখন তো কাশী কলবটের সাহস খুব কমই মুশকিলের সঙ্গে রাখে । বাকি মুক্তি বা জীবনমুক্তি পেতে পারে না । বাবা ছাড়া কেউই জীবনমুক্তি দিতেই পারে না । আত্মারা আসতে থাকে, তারপর ফিরে কিভাবে যাবে ? বাবা এসেই সকলের সদগতি করিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন । সত্যযুগে খুবই অল্প মানুষ থাকে । আত্মার তো কখনোই বিনাশ হয় না । আত্মা অবিনাশী, এই শরীর হলো বিনাশী । সত্যযুগে অনেক বেশী আয়ু হয় । সেখানে দুঃখের কোনো কথাই থাকে না । মানুষ এক শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করে । সর্পের যেমন উদাহরণ, তাকে মৃত্যু বলা হয় না । দুঃখের কোনো কথাই নেই । তারা মনে করে, এখন সময় সম্পূর্ণ হয়েছে, এই শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করবে । বাচ্চারা, তোমাদের এই শরীর থেকে পৃথক হওয়ার অভ্যাস এখনেই করতে হবে । আমরা হলাম আত্মা, আমাদের এখন ঘরে ফিরে যেতে হবে, এরপর আবার নতুন দুনিয়াতে আসবো, নতুন শরীর ধারণ করবো, এই অভ্যাস করো । তোমরা জানো যে, আত্মা ৮৪ শরীর ধারণ করে । মানুষ একে ৮৪ লাখ বলে দিয়েছে । বাবার জন্য তো আবার কোণায় - কোণায় নুড়ি - পাথরের মধ্যে আছে বলে দেয় । একেই বলা হয় ধর্মের গ্লানি । মানুষ স্বচ্ছ বুদ্ধির থেকে সম্পূর্ণ তুচ্ছ বুদ্ধির হয়ে যায় । বাবা এখন তোমাদের স্বচ্ছ বুদ্ধির তৈরী করেন । স্মরণের দ্বারাই তোমরা স্বচ্ছ হও । বাবা বলেন যে, এখন নবযুগ আসবে, যার নিদর্শন হলো এই মহাভারতের যুদ্ধ । এ হলো সেই মুশলের যুদ্ধ যাতে অনেক ধর্মের বিনাশ হয়ে এক ধর্মের স্থাপনা হয়েছিলো, তাহলে অবশ্যই তিনি ভগবান হবেন, তাই না । কৃষ্ণ এখানে কিভাবে আসবেন ? জ্ঞানের সাগর কি নিরাকার নাকি কৃষ্ণ ? কৃষ্ণের তো এই জ্ঞান থাকবেই না । এই জ্ঞানই গুপ্ত হয়ে যায় । তোমাদের চিত্রই আবার ভক্তিমার্গে তৈরী হবে । তোমরা পূজ্যরাই আবার পূজারী হও, তোমাদের কলা কম হয়ে যায় । তোমাদের আয়ুও কম হয়ে যায় কেননা তোমরা ভোগী হয়ে যাও । ওখানে হলো যোগী । এমন নয় যে তোমরা ওখানে কারোর স্মরণে যোগ লাগাও । ওখানে সবাই পবিত্র । কৃষ্ণকেও যোগেশ্বর বলা হয় । এইসময় কৃষ্ণের আত্মা বাবার সঙ্গে যোগ লাগাচ্ছেন । কৃষ্ণের আত্মা এই সময় যোগেশ্বর, সত্যযুগে যোগেশ্বর বলা হবে না । ওখানে তো রাজকুমার হন । তাই পরের দিকে তোমাদের এমন অবস্থা হওয়া চাই যে, একমাত্র বাবা ছাড়া অন্য কোনো শরীর যেন স্মরণে না থাকে । শরীর এবং পুরানো দুনিয়া থেকে যেন মমত্ব দূর হয়ে যায় । সন্ন্যাসীরা তো পুরানো দুনিয়াতেই থাকে কিন্তু তাদের ঘরবাড়ীর প্রতি মমত্ব দূর হয়ে যায় । তারা ব্রহ্মকে ঈশ্বর মনে করে তার সঙ্গে যোগযুক্ত হন । তারা নিজেদের ব্রহ্মজ্ঞানী - তত্বজ্ঞানী বলে । তারা মনে করে, আমরা ব্রহ্মে লীন হয়ে যাবো । বাবা বলেন - এ সবই হলো ভুল ধারণা । আমিই হলাম সঠিক, আমাকেই সত্য বলা হয় । বাবা তাই বলেন -- স্মরণের যাত্রা খুব দৃঢ় হওয়ার প্রয়োজন । জ্ঞান তো খুবই সহজ । দেহী - অভিমানী হওয়াতেই পরিশ্রম । বাবা বলেন যে, কারোর দেহই যেন স্মরণে না আসে, এ হলো ভূতের স্মরণ, ভূত পূজা । আমি তো অশরীরী, তোমাদের আমাকে স্মরণ করতে হবে । এই চোখে সবকিছু দেখেও বুদ্ধির দ্বারা বাবাকেই স্মরণ করো । বাবার নির্দেশ মতো চলো, তাহলে ধর্মরাজের সাজার হাত থেকে মুক্ত হবে । পবিত্র হলেই সাজা শেষ হয়ে যাবে, এ অনেক বড় লক্ষ্য । প্রজা হওয়া তো খুবই সহজ, এতেও বিত্তবান প্রজা, গরীব প্রজা কে কে হতে পারে - বাবা সব বোঝান । পরের দিকে তোমাদের বুদ্ধির যোগ বাবা আর ঘরের প্রতি থাকা উচিত । অভিনেতার যেমন অভিনয় সম্পূর্ণ হলেও বুদ্ধি ঘরের দিকে চলে যায় । এ হলো অসীম জগতের কথা । ও হলো জাগতিক আমদানী আর এ হলো অসীম জগতের আমদানী । ভালো অভিনেতার তো আমদানীও ভালো হয়, তাই না । তাই বাবা বলেন, গৃহস্থ জীবনে থেকে বুদ্ধিযোগ ওখানে লাগাতে হবে । ওরা তো আশিক - মাশুক হয় একে অপরের । এখানে তো সকলেই আশিক এক মাশুকের । তাঁকেই সবাই স্মরণ করে । এ তো একা আশ্চর্যের পথিক, তাই

না । তিনি এই সময় এসেছেন সবাইকে দুঃখ থেকে মুক্ত করে সদগতিতে নিয়ে যাবার জন্য । তাঁকেই বলা হয় প্রকৃত মাশুক । ওরা একে অপরের শরীরকে ভালোবাসে, এখানে কোনো বিকারের কথা নেই । ওদের বলা হবে দেহ - ভাবের যোগ । সে ভূতের স্মরণ হয়ে গেলো । মানুষকে স্মরণ করার অর্থ পাঁচ ভূতকে, প্রকৃতিকে স্মরণ করা । বাবা বলেন, তোমরা প্রকৃতিকে ভুলে আমাকে স্মরণ করো । এ তো পরিশ্রম, আবার দৈবী গুণেরও প্রয়োজন । কারোর প্রতি প্রতিশোধ নেওয়া, এ আসুরী গুণ । সত্যযুগে হয় এক ধর্ম, এখানে পরিবর্তনের কোনো কথাই নেই । সে হলো অদ্বৈত দেবতা ধর্ম, যা শিববাবা ছাড়া আর কেউই স্থাপন করতে পারেন না । সূক্ষ্মবতনবাসী দেবতাদের বলা হয় ফরিস্তা । এইসময় তোমরা হলে ব্রাহ্মণ তারপরে তোমরা ফরিস্তা হবে । তারপর ঘরে ফিরে যাবে, এরপর নতুন দুনিয়াতে গিয়ে দৈবী গুণ সম্পন্ন মানুষ অর্থাৎ দেবতা হবে । এখন তোমরা শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ হও । তোমরা প্রজাপিতা ব্রহ্মার বাচ্চা না হতে পারলে আশীর্বাদ কি করে নেবে ? এই প্রজাপিতা ব্রহ্মা আর মাম্মা, তাঁরাই আবার লক্ষ্মী - নারায়ণ হন । এখন দেখো, জৈন লোকেরা তোমাদের বলে, আমাদের জৈন ধর্ম সবথেকে পুরানো । এখন বাস্তবে মাহবীর তো আদি দেব ব্রহ্মাকেই বলা হয় । ব্রহ্মাই হলেন মহাবীর, কিন্তু কোনো জৈন মুনি এসে তাঁর নাম মহাবীর রেখে দিয়েছেন । এখন তোমরাও তো সব মহাবীর, তাই না । তোমরা মায়াকে জয় করছো । তোমরা সবাই বাহাদুর হও । প্রকৃত মহাবীর - মহাবীরনী তোমরাই । তোমরা হলে শিবশক্তি, তোমরা সিংহের উপর বিরাজিত, আর মহারথীরা হাতির উপর । তবুও বাবা বলেন, এ অনেক বড় লক্ষ্য । এক বাবাকে স্মরণ করলেই বিকর্ম বিনাশ হবে, অন্য আর কোনো রাস্তা নেই । যোগবলের দ্বারা তোমরা বিশ্বের উপর রাজত্ব করো । আত্মা বলে যে, এখন আমাদের ঘরে ফিরে যেতে হবে, এই দুনিয়া পুরানো ---এ হলো অসীম জগতের সন্ন্যাস । গৃহস্থ জীবনে থেকে পবিত্র হতে হবে, আর চক্রকে বুঝতে পারলে চক্রবর্তী রাজা হয়ে যাবে । আচ্ছা ।

মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতাপিতা - বাপদাদার স্মরণের স্নেহ -সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১) ধর্মরাজের সাজার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কারোর দেহকেই স্মরণ করবে না, এই চোখের দ্বারা সবকিছু দেখেও বাবাকেই স্মরণ করতে হবে, অশরীরী হওয়ার অভ্যাস করতে হবে । তোমাদের পবিত্র হতে হবে ।

২) মুক্তি আর জীবনমুক্তির পথ সবাইকে বলে দিতে হবে । এখন নাটক সম্পূর্ণ হয়েছে, ঘরে ফিরে যেতে হবে -- এই স্মৃতিতে অসীম জগতের আমদানী জমা করতে হবে ।

বরদান:-
লক্ষ্য আর গন্তব্যকে সদা স্মৃতিতে রেখে তীব্র পুরুষার্থ করে সদা পবিত্র এবং সুখী ভব

ব্রাহ্মণ জীবনের লক্ষ্য হলো জাগতিক কোনো আধার বিনা সদা আন্তরিক খুশীতে থাকা । এই লক্ষ্য যখন পরিবর্তন করে জাগতিক প্রাপ্তির ছোটো ছোটো গলিতে যখন আটকে যাও, তখনই গন্তব্য থেকে দূর হয়ে যাও, তাই যা কিছুই হোক না কেন, জাগতিক প্রাপ্তির ত্যাগও যদি করতে হয়, তো ত্যাগ করো, কিন্তু অবিনাশী খুশীকে কখনোই ত্যাগ করো না । পবিত্র এবং সুখী ভব - এই বরদানকে স্মৃতিতে রেখে তীব্র পুরুষার্থের দ্বারা অবিনাশী প্রাপ্তি করো ।

স্লোগান:-
গুণমূর্তি হয়ে গুণের দান করতে থাকো - এ হলো সবথেকে বড় সেবা ।