14.03.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমরা অনেক ভাগ্যবান। কারণ, তোমাদের বাবার স্মরণ ব্যতীত আর কোনো ভাবনা নেই, কিন্তু
এই বাবাকে অনেক কিছু ভাবতে হয়"
প্রশ্নঃ -
বাবার যারা
সুযোগ্য বাচ্চা, তাদের লক্ষণ কি হবে ?
উত্তরঃ -
তাদের সকলের বুদ্ধি এক বাবার প্রতি যোগ-যুক্ত হতে থাকে, তারা সার্ভিসেবেল হবে। ভালো
ভাবে অধ্যয়ণ করে অন্যদের পড়াবে। বাবার হৃদয় জুড়ে থাকবে। এরকম সুযোগ্য বাচ্চারাই
বাবার নাম উজ্জ্বল করে। যারা সম্পূর্ণ রূপে অধ্যয়ণ করে না, তারা অন্যদের খারাপ করে।
এটাও ড্রামাতে নির্ধারিত হয়ে আছে।
গীতঃ-
মা- বাবার
আশীর্বাদ নিয়ে নাও ...
ওম্ শান্তি ।
প্রত্যেক
বাড়ীতে মা বাবা আর ২-৪ টি বাচ্চা থাকে, তারপর আশীর্বাদ ইত্যাদি চাইতে থাকে। এটা তো
হলো পার্থিব জগতের ব্যাপার। এই গানপার্থিব জগতের জন্য গাওয়া হয়। অসীম জগতের
ব্যাপার কারোরই জানা নেই। বাচ্চারা, তোমরা এখন জানো যে আমরা হলাম অসীম জগতে পিতার
পুত্র আর কন্যা। সেই মা-বাবা হলো পার্থিব জগতের - আশীর্বাদ নিয়ে নাও পার্থিব জগতের
মাতা-পিতার। ইনি হলেন অসীম জগতের মা-বাবা। এই পার্থিব জগতের মা-বাবাও বাচ্চাদের
সামলায়, আবার টিচার পড়ায়। এখন তোমরা বাচ্চারা জানো- ইনি হলেন অসীম জগতের মা-বাবা,
অসীম জগতের টিচার, অসীম জগতের সদ্গুরু, সুপ্রীম ফাদার, টিচার, সুপ্রীম গুরু। সত্য
বলতে সক্ষম, সত্য শিক্ষা দিতে সক্ষম। বাচ্চাদের মধ্যে তো নম্বর অনুযায়ী হয়, তাই না!
লৌকিক বাড়ীতে ২-৪টে বাচ্চা থাকলে কতো দেখা-শোনা করতে হয়। এখানে কতো বেশী বাচ্চারা
রযেছে, কতো সেন্টার থেকে বাচ্চাদের সংবাদ আসে- এই বাচ্চা এরকম, এই জন শয়তানী করছে,
এ ঝামেলা করছে, বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। উদ্বেগ তো এই বাবার। প্রজাপিতা তো ইনি, তাই না!
কতো কতো বাচ্চাদের খেয়াল রাখেন। তাইতো বাবা বলেন, তোমরা বাচ্চারা ভালো ভাবে বাবার
স্মরণে থাকতে পারো। এনার তো হাজার উদ্বেগ আছে। একটা তো উদ্বেগ আছেই। এছাড়া আরো
হাজারটা অন্যান্য উদ্বেগ থাকে। কতো প্রচুর সংখ্যক বাচ্চাদের সামলাতে হয়। মায়াও যে
বড় শত্রু ! কারোর-কারোর ভালো রকম চামড়া ছাড়িয়ে দেয়। কাউকে নাক থেকে, কাউকে টিকি
থেকে ধরে নেয়। এতো সব কিছুর বিচার করতে হয়। তবুও অসীম জগতের পিতার স্মরণে থাকতে হয়।
তোমরা হলে অসীম জগতের পিতার সন্তান। তোমরা জানো যে, আমরা বাবার শ্রীমতে চলে কেন না
বাবার থেকে সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করি। সবাই তো একরস চলতে পারে না, কারণ
রাজত্ব স্থাপন হচ্ছে, আর কারোর বুদ্ধিতে এ'কথা আসতে পারে না। এটা হলো খুব উচ্চ
মানের অধ্যয়ণ। বাদশাহী প্রাপ্ত হয়ে গেছে তবু জানতে পারা যাচ্ছে না যে এই রাজত্ব
কীভাবে স্থাপন হলো। এই রাজত্ব স্থাপন হওয়া খুব ওয়ান্ডারফুল (বিস্ময়ের)। এখন তোমরা
অনুভাবী হয়েছো। প্রথমে এনারও(ব্রহ্মা বাবার) কি আর জানা ছিলো যে আমি কি ছিলাম,
আবার কীভাবে ৮৪ জন্ম নিয়েছি। এখন বোঝা গেছে। তোমরাও বলো - বাবা তুমি হলেন সে-ই (যাঁকে
আমরা এতদিন খুঁজেছি) । এটা খুবই বোঝার ব্যাপার । এই সময়ই বাবা এসে সব কথা বোঝান।
এই সময় যদি কেউ যতই লাখপতি, কোটিপতি হোক না কেন, বাবা বলেন - এই পয়সা ইত্যাদি সব
মাটিতে মিশে যাবে। এছাড়া টাইমই বা কতো আছে। দুনিয়ার সংবাদ তোমরা রেডিওতে বা সংবাদ
পত্রে শুনছো- কি-কি হচ্ছে। প্রত্যেক দিন ঝামেলা বাড়তেই থাকছে। ক্রমশঃ সব জট পাকিয়ে
যাচ্ছে। সবাই নিজেদের মধ্যে লড়াই-ঝগড়া করে, মরে যায়। প্রস্তুতি এরকম হচ্ছে যাতে
বোঝা যাচ্ছে লড়াই শুরু হলো বলে। দুনিয়া জানে না যে এটা কি হচ্ছে, কি হতে চলেছে।
তোমাদের মধ্যেও খুবই কম আছে যারা সম্পূর্ণ ভাবে বুঝতে পেরে যায় আর খুশীতে থাকে। এই
দুনিয়াতে আমরা আর অল্প দিনই আছি । এখন আমাদের কর্মাতীত অবস্থাতে যেতে হবে।
প্রত্যেকের নিজের জন্য পুরুষার্থ করতে হবে। তোমরা তো নিজের জন্য পুরুষার্থ করো। যে
যত করবে, সেই পরিমাণ ফল প্রাপ্ত হবে। নিজের পুরুষার্থ করতে হবে আর অন্যদের
পুরুষার্থ করাতে হবে। রাস্তা বলে দিতে হবে। এই পুরানো দুনিয়া তো শেষ হয়ে যাবে ।
এখন বাবা এসেছেন নূতন দুনিয়া স্থাপন করতে, তাই এই বিনাশের শুরুতে তোমরা নূতন
দুনিয়ার জন্য অধ্যয়ণ করে নাও। *ভগবানুবাচ- আমি তোমাদের রাজযোগ শেখাচ্ছি। আদরের
বাচ্চারা, তোমরা অনেক ভক্তি করেছো। অর্ধ-কল্প তোমরা রাবণ রাজ্যে ছিলে।* এটাও কারোর
জানা নেই যে, রাম কাকে বলা হয়ে থাকে ? রামরাজ্য কীভাবে স্থাপনা হলো ? এই সব তোমরা
ব্রাহ্মণরাই জানো। তোমাদের মধ্যেও কেউ তো এমনও আছে যে কিছুই জানে না।
বাবার কাছে সুযোগ্য বাচ্চা হলো তারাই, যারা সকলের বুদ্ধি যোগ এক বাবার সাথেই যুক্ত
করে। যারা সার্ভিসেবেল, যারা ভালো ভাবে অধ্যয়ণ করে, তারা বাবার হৃদয়ে স্থান করে
নেয় । কেউ তো আবার অযোগ্যও হয়, সার্ভিসের পরিবর্তে ডিসসার্ভিস করে, যা বাবার থেকে
তাদের বুদ্ধি যোগ ছিন্ন করে দেয়। এটাও ড্রামাতে নির্ধারিত আছে। ড্রামা অনুসারে এটা
হওয়ারই । যারা সম্পূর্ণ রূপে অধ্যয়ণ করে না, তারা কি করবে ? অন্যদের খারাপ করে দেবে।
সেই জন্য বাচ্চাদের বোঝানো হয়, বাবাকে ফলো করো আর যে সকল সার্ভিসেবেল বাচ্চারা আছে-
বাবার হৃদয়ে বসে আছে তাদের সঙ্গ করো। তোমরা জিজ্ঞাসা করতে পারো যে, কার সঙ্গ করবো
? বাবা তাড়াতাড়ি উত্তর দেবেন, এনার সঙ্গ খুবই ভালো। অনেকে আছে যারা সঙ্গই এমন করে,
যার রঙও উল্টো বসে যায়। কথাও আছে - সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস, অসৎ সঙ্গে নরক বাস। কুসঙ্গে
পড়লে তো একদম শেষ করে দেবে। বাড়ীতেও তো দাস-দাসীদের দরকার হয়। প্রজারও চাকরের
দরকার হয়। সমগ্র রাজধানী স্থাপন হচ্ছে, এর জন্য অনেক বিশাল রকমের বুদ্ধির দরকার,
সেইজন্য তোমরা অসীম জগতের পিতাকে পেয়েছো যখন, তবে তাঁর শ্রীমত নিয়ে সেই অনুযায়ী চলো।
নয়তো বিনামূল্যে পদভ্রষ্ট হয়ে যাবে।এটা হলো অধ্যয়ণ। এতে এখন ফেল করলে তবে জন্ম
জন্মান্তর, কল্প-কল্পান্তর ফেল করতে থাকবে।ভালো ভাবে অধ্যয়ণ করলে তবে
কল্প-কল্পান্তর ভালো ভাবে অধ্যয়ণ করতে থাকবে। বুঝতে পারা যায়, এই আত্মা সম্পূর্ণ
অধ্যয়ণ করছে না, তো কি পদ প্রাপ্ত করবে ? নিজেও বুঝতে পারে আমি তো কিছুই করি না।
আমার কাছে তো সচেতন বাচ্চা অনেক আছে, তাদেরই ভাষণের জন্য ডাকা হয়। অবশ্যই তাই যারা
সচেতন উচ্চ পদ তারাই প্রাপ্ত করবে। আমরা এতো সার্ভিস না করলে উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে
পারবো না। টিচার তো স্টুডেন্টদের বুঝতে পারে, তাই না! তিনি রোজ পড়ান, বাচ্চাদের
রেজিস্টার ওঁনার কাছে থাকে। অধ্যয়ণ আর আচার-আচরণের রেজিস্টার থাকে। এখানেও ওইরকম,
এতে আবার মুখ্য ব্যাপার হলো যোগ। যোগ ভালো হলে আচরণও ভালো হবে। অধ্যয়ণের ক্ষেত্রে
কখনো আবার অহঙ্কার চলে আসে। এর জন্য গুপ্ত পরিশ্রম করতে হবে স্মরণের। এই জন্যই
অনেকের রিপোর্ট আসে যে, বাবা আমি যোগে থাকতে পারছি না। বাবা বুঝিয়েছেন, যোগ শব্দটি
সরিয়ে দাও। বাবা, যার থেকে কি না উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়, ওঁনাকে তোমরা স্মরণ করতে
পারো না ! বিস্ময়ের ব্যাপার ! বাবা বলেন- হে আত্মারা, তোমরা আমাকে অর্থাৎ এই বাবাকে
স্মরণ করো না, আমি তোমাদের রাস্তা বলে দিতে এসেছি, তোমরা আমাকে স্মরণ করলে এই যোগ
অগ্নি দ্বারা পাপ দগ্ধ হয়ে যাবে। ভক্তি মার্গে মানুষ কতো ধাক্কা খেতে থাকে । কুম্ভ
মেলাতে কতো ঠান্ডা জলে গিয়ে স্নান করে। কতো কষ্ট সহ্য করে। এখানে তো কোনো কষ্ট নেই।
যারা ফার্স্ট ক্লাস বাচ্চা, তারা এক প্রিয়তমর সাথে সত্যিকারের প্রিয়তমা হয়ে স্মরণ
করতে থাকবে। ঘুরতে-ফিরতে গেলে একান্তে বাগানে বসে স্মরণ করবে। পরনিন্দা পরচর্চা (ঝগমুই
ঝগমুই) ইত্যাদি করলে বায়ুমন্ডল খারাপ হয়ে যায়। সেইজন্য যখনই টাইম পাবে বাবাকে
স্মরণ করার প্র্যাক্টিস করো। ফার্স্টক্লাস সত্যিকারের প্রিয়তমর প্রিয়তমা হও। বাবা
বলেন, দেহধারীর ফটো রেখো না। শুধুমাত্র এক শিববাবার ফটো রাখো, যাঁকে স্মরণ করতে হবে
। চাও তো সৃষ্টি চক্রকেও স্মরণ করতে থাকো, তো ত্রিমূর্তি আর গোলার চিত্র হলো
ফার্স্টক্লাস, এতে সমগ্র জ্ঞান আছে। স্বদর্শন চক্রধারী - তোমাদের এই নাম অর্থবহ।
নূতন কেউ নাম শুনলে বুঝতে পারবে না, এটা তোমরা বাচ্চারাই বুঝতে পারো। তোমাদের
মধ্যেও খুব কম সংখ্যকই ভালো ভাবে স্মরণ করে। অনেকে আছে যারা স্মরণই করে না। নিজের
খাওয়ারই খারাপ করে দেয়।
পড়াশুনা তো খুবই সহজ। বাবা বলেন, সাইলেন্সের দ্বারা তোমাদের সায়েন্সের উপর বিজয়
প্রাপ্ত করতে হবে। সাইলেন্স আর সায়েন্স রাশি হলো একই। মিলিটারিতেও ৩ মিনিট
সাইলেন্সের অভ্যাস করায়। মানুষও চায় যাতে আমাদের শান্তি প্রাপ্ত হয়। এখন তোমরা
জানো যে, শান্তির স্থানই তো হলো ব্রহ্মান্ড। যে ব্রহ্ম মহাতত্ত্বতে আমি আত্মা এতো
ছোটো বিন্দু থাকি। সেই সমস্ত আত্মাদের বৃক্ষ তো ওয়ান্ডারফুল, তাই না ! মানুষ বলেও,
ভ্রূকুটির মাঝে চমকায় এক আজব নক্ষত্র। খুবই ছোটো সোনার টিপ তৈরী করে এখানে লাগায়।
আত্মাও হলো বিন্দু, বাবাও এসে তার সামনে বসেন। সাধু-সন্ত ইত্যাদি কেউই নিজের আত্মাকে
জানে না। যখন আত্মাকেই জানে না তো পরমাত্মাকে কীভাবে জানবে ? শুধুমাত্র তোমরা
ব্রাহ্মণরাই আত্মা আর পরমাত্মাকে জানো। কোনো ধর্মেরই কেউ জানতে পারে না। এখন তোমরাই
জানো, কীভাবে এতো ছোট্ট আত্মা ভূমিকা পালন করে। সৎসঙ্গ তো অনেক করে। কিছুই বুঝতে
পারে না। ইনিও (ব্রহ্মা) অনেক গুরু করেছিলেন। এখন বাবা বলেন, এরা সব হলো ভক্তি
মার্গের গুরু। জ্ঞান মার্গের গুরু হলোই একজন। ডবল মুকুটধারী রাজাদের সামনে সিঙ্গল
মুকুটধারী রাজারা মাথা নত করে, নমস্কার করে। কারণ তারা হলো পবিত্র। ওই পবিত্র
রাজাদেরই মন্দির তৈরী হয়ে আছে। পতিতরা গিয়ে তাদের সামনে মাথা ঠোকে, কিন্তু ওদের কি
কিছু জানা থাকে আর জানা যাচ্ছে যে এরা কে, আমরা কেন মাথা ঠুকি ? সোমনাথের মন্দির
তৈরী করেছে, পূজা তো করে, কিন্তু বিন্দুর পূজা কীভাবে করে ? বিন্দুর মন্দির কীভাবে
তৈরী হবে ? এটা খুবই রহস্যের ব্যাপার। গীতা ইত্যাদিতে কি আর এই কথা আছে ! যিনি নিজে
হলেন মালিক, তিনিই বুঝিয়ে দেন। তোমরা এখন জানো, কীভাবে এতো ছোটো আত্মাতে পার্ট
নির্ধারিত হয়ে আছে। আত্মাও হলো অবিনাশী, পার্টও হলো অবিনাশী। ওয়ান্ডার ! তাই না !
এই সমস্ত কিছুই পূর্ব-নির্ধারিত খেলা। বলাও হয়ে থাকে যা বানানো রয়েছে, তা-ই আবার
তৈরী হচ্ছে। ড্রামাতে যা নির্ধারিত আছে সেটা তো অবশ্যই ঘটবে। চিন্তার কী আছে !
বাচ্চারা, তোমাদের এখন নিজের কাছে নিজেকে প্রতিজ্ঞা করতে হবে, যা কিছুই হয়ে যাক
চোখের জল ফেলা যাবে না। অমুকে মরে গেল, আত্মা গিয়ে অন্য শরীর নিল, তো আবার কাঁদবার
কি আছে ? ফিরে তো আসতে পারবে না। চোখের জল এলে পাশ করতে পারবে না। সেইজন্য বাবা
বলেন, প্রতিজ্ঞা করো যে, আমি কখনো কাঁদবো না। ভাবনা ছিলো পার ব্রহ্মতে থাকা বাবার,
তাঁকে পেয়ে গেছো, এছাড়া আর কি চাই। বাবা বলেন, তোমরা আমাকে - এই বাবাকে স্মরণ করো।
আমি একবারই আসি- এই রাজধানী স্থাপন করার জন্য। এতে লড়াই ইত্যাদির কোনো ব্যাপার নেই।
গীতাতে দেখানো হয়েছে লড়াই শুরু হয়েছে, শুধুমাত্র পান্ডবরা বেঁচেছে। সেই কুকুর সাথে
নিয়ে পাহাড়ের উপর গলে গেছে। বিজয়ী হয়ে মরে গেছে। ব্যাপারটাই দাঁড়ালো না। এই সব হলো
মুখের কথা। একে বলা হয় ভক্তি মার্গ।
বাবা বলেন বাচ্চারা, তোমাদের এতে বৈরাগ্য আসা উচিত। পুরানো জিনিসের প্রতি ঘৃণা আসে,
তাই না! ঘৃণা হলো কড়া শব্দ। বৈরাগ্য শব্দ হলো মধুর। জ্ঞান প্রাপ্ত হলে তখন আবার
ভক্তিতে বৈরাগ্য এসে যায়। সত্যযুগ, ত্রেতাতে তো আবার জ্ঞানের প্রালব্ধ ২১ জন্মের
জন্য প্রাপ্ত হয়। সেখানে জ্ঞানের প্রয়োজন থাকে না। আবার যখন তোমরা বাম মার্গে বা
পাপের পথে যাও তখন সিঁড়ি দিয়ে নামতে থাকো। এখন হলো অন্তিম। বাবা বলেন, এখন এই পুরানো
দুনিয়ার প্রতি বাচ্চারা, তোমাদের বৈরাগ্য আসা চাই। তোমরা এখন শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ
হচ্ছো, আবার দেবতা হবে। অন্যান্য মানুষ এই ব্যাপারে কি আর জানবে। যদিও বিরাট রূপের
চিত্র তৈরী করে, কিন্তু না ওতে শিখা (টিকি অর্থাৎ ব্রাহ্মণকে দেখানো হয়নি) ) আছে না
শিব আছে। বলে দেয় দেবতা, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র। ব্যাস্, শূদ্র থেকে দেবতা কীভাবে
কে তৈরী করে, এটা কিছুই জানে না। বাবা বলেন, তোমরা দেবী-দেবতারা কত বিত্তশালী ছিলে,
সেই সব পয়সা আবার কোথায় গেল! মাথা ঠুকে-ঠুকে কপাল ঘষে পয়সা হারিয়েছো। গতকালকের
ব্যাপার যেন। তোমাদের এমন তৈরী করে গেলাম আবার কি হয়ে গেছো। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
পরনিন্দা পরচর্চার (ঝরমুই-ঝগমুই) করে পরিবেশ খারাপ করতে নেই। একান্তে বসে
সত্যিকারের প্রেমিকা হয়ে নিজের প্রিয়তমকে স্মরণ করতে হবে।
২ ) নিজের কাছে নিজেকে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে, কখনো কাঁদবে না। চোখের জল ফেলবে না।
যারা সার্ভিসেবেল(সেবা করতে সক্ষম), বাবার হৃদয়ে স্থান পেয়েছে তাদেরই সঙ্গ করতে হবে।
নিজের রেজিস্টার খুব ভালো রাখতে হবে।
বরদান:-
নির্বিঘ্ন স্থিতি দ্বারা নিজের ফাউন্ডেশনকে মজবুত করে পাশ উইথ অনার ভব
যে বাচ্চারা অনেক সময়
ধরে নির্বিঘ্ন স্থিতির অনুভব করে, তাদের ফাউন্ডেশন দৃঢ় হওয়ার কারণে নিজেও শক্তিশালী
থাকে আর অপরকেও শক্তিশালী বানায় । দীর্ঘ দিনের শক্তিশালী নির্বিঘ্ন আত্মা পরিশেষেও
নির্বিঘ্ন হয়ে পাশ উইথ অনার হয়ে যায় আর ফার্স্ট ডিভিশনে স্থান নেয়। তাই সর্বদা এই
লক্ষ যেন থাকে যে, দীর্ঘকাল ধরে অবশ্যই নির্বিঘ্ন স্থিতির অনুভব করতে হবে।
স্লোগান:-
সকল
আত্মার প্রতি সর্বদা উপকার অর্থাৎ শুভ কামনা থাকলে স্বতঃতই আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে।