01-03-2020 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
02-12-85 মধুবন
বন্ধন-বিমুক্ত হওয়ার যুক্তি - আধ্যাত্মিক শক্তি
আজ বাপদাদা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদের আত্মিক শক্তি দেখছিলেন l তাঁর বাচ্চা হওয়ার
সুবাদে প্রত্যেক অধ্যাত্মমুখী বাচ্চা আধ্যাত্মিক শক্তির সম্পূৰ্ণ শক্তি প্রাপ্ত তো
করেছে, কিন্তু কতখানি প্রাপ্তিস্বরূপ হয়েছে সেটাই দেখছিলেন l প্রতিদিন, প্রত্যেক
বাচ্চা নিজেকে আত্মজ্ঞানী বাচ্চা বোধে অধ্যাত্ম বাবাকে স্মরণ-স্নেহের রিটার্ণ দেয়,
হয় মুখে অথবা তাদের মন থেকে স্মরণ-স্নেহ ও নমস্কার রূপে l তোমরা রিটার্ণ দাও, তাই
না ! এর অর্থ এটাই যে প্রতিদিন আধ্যাত্মিক বাবা অধ্যাত্ম (রুহানী) বাচ্চারা বলে
আহ্বান করে আত্মিক শক্তির বাস্তবিক স্বরূপ স্মরণ করিয়ে দেন, কারণ এই ব্রাহ্মণ
জীবনের বিশেষত্বই আধ্যাত্মিকতা (রুহানীয়ত) l এই আধ্যাত্মিকতার শক্তি দ্বারা তোমরা
নিজেদের এবং সকলের পরিবর্তন করো l এই আত্মিক শক্তিই মুখ্য ফাউন্ডেশন l এই শক্তির
মাধ্যমে অনেক দৈহিক বন্ধন থেকে মুক্তি পাওয়া যায় l বাপদাদা দেখছিলেন, এখনও পর্যন্ত
কিছু সূক্ষ্ম বন্ধন আছে যা নিজেরাও অনুভব করে - এই বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া উচিত l
কিন্তু মুক্ত হওয়ার যুক্তি প্র্যাকটিক্যাল রূপে প্রয়োগ করতে তোমরা অপারগ l এর কারণ
কি ? আত্মিক শক্তি প্রতিটা কর্মে তোমরা ইউজ করতে জানো না l একই সময়ে সঙ্কল্প, বোল
এবং কর্ম এই তিনটেই একসাথে শক্তিশালী বানাতে হবে l কিন্তু কিসে তোমরা লুজ্ হয়ে যাও
? একদিকে, সঙ্কল্প শক্তিশালী বানাও তো বাণীতে অল্পস্বল্প লুজ্ হয়ে যাও l কখনো আবার
বাণী শক্তিশালী বানাও তো কর্মে লুজ্ হয়ে যাও l যাই হোক, এই তিনটে একই সময়ে
আধ্যাত্মিক সাধনায় শক্তিশালী বানানোই মুক্তিপ্রাপ্তির যুক্তি l ঠিক যেমন সৃষ্টি
রচনায় তিন কার্য - স্থাপন, পালন এবং বিনাশ প্রয়োজন, তেমনই, সবরকম বন্ধনমুক্ত হওয়ার
যুক্তি মন্সা, বচন এবং কর্ম, এই তিন বিষয়ে একসাথে আধ্যাত্মিক শক্তি প্রয়োজন l কখনো
তোমরা মন্সার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখছ তো কখনো বচনে কম হয়ে যাচ্ছে l তোমরা তখন বলো, 'আমি
তো এইরকম ভাবিনি, জানিনা কেন এমন হলো !' তিন ক্ষেত্রেই তোমাদের সম্পূৰ্ণ অ্যাটেনশন
দিতে হবে l কেন ? এই তিন সাধনই তোমাদের সম্পন্ন স্থিতি এবং বাবাকে প্রত্যক্ষ করবে l
মুক্তি পাওয়ার জন্য এই তিন ক্ষেত্রেই অধ্যাত্মমুখিতা অনুভব হতে হবে l এই তিনটেতে
যারা সম্পূৰ্ণ জ্ঞানী, তারাই জীবনমুক্ত l সুতরাং বাপদাদা সূক্ষ্ম বন্ধনগুলো
দেখছিলেন ; সূক্ষ্ম বন্ধনেও এই তিনের বিশেষ কানেকশন আছে l
বন্ধনযুক্ত কারও লক্ষণ - সে সদা অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয় l বন্ধনযুক্ত কেউ নিজেকে
আন্তরিক খুশি বা সুখে সদা অনুভব করবে না l লৌকিক দুনিয়ায় অল্পকালের সাধন তোমাদের
অল্পকালীন খুশি বা সুখের অনুভূতি করায় কিন্তু আন্তরিক এবং অবিনাশী অনুভূতি হয় না l
ঠিক সেইরকমই সূক্ষ্ম বন্ধনে আবদ্ধ আত্মা এই ব্রাহ্মণ জীবনেও অল্প সময়ের সেবার সাধন,
সংগঠনের শক্তির সাধন, কোনও না কোনও প্রাপ্তির সাধন, শ্রেষ্ঠ সঙ্গের সাধন - এই সমস্ত
সাধনের আধারে চলতে থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের এই সাধন আছে তারা ততক্ষণই খুশি আর
সুখের অনুভূতি করে l কিন্তু সাধনের পরিসমাপ্তিতে খুশিও সমাপ্ত হয়ে যায় l সদা একরস
থাকে না l কখনো কখনো খুশিতে তারা এমন নাচবে যে সেই সময় তাদের মতো যেন কেউ নেই l যতই
হোক, তারা যখন স্থির হবে তারপরে সাধারণ ছোট পাথরও পাহাড় সমান অনুভব করবে l কারণ
তাদের অরিজিনাল শক্তি না থাকায় তারা সেই সাধনসমূহের আধারে খুশিতে নাচে l সাধন যদি
একবার সরে যায় তাহলে কীভাবে নাচবে ! সেইজন্য আন্তরিক অধ্যাত্ম শক্তি তিন রূপে সদা
একসাথে আবশ্যক l মুখ্য বন্ধন - মন্সা সঙ্কল্পে তাদের কন্ট্রোলিং পাওয়ার নেই l
নিজেদেরই সঙ্কল্পের বশ হওয়ার কারণে তোমরা অন্যের বশীভূত হওয়ার অনুভব কর l যারা
নিজের সঙ্কল্পের বন্ধনে আবদ্ধ, তারা অনেক সময় এতেই বিজি থাকে l তোমরাও যেমন বাতাসে
দুর্গ বানানোর কথা বলো, তোমরা কেল্লা বানাও আর ধ্বংস কর l অনেক লম্বা প্রাচীর খাড়া
কর l এই কারণে বলা হয়, হাওয়াই কেল্লা l যেমন, ভক্তিতে তারা মূর্তি পূজা ক'রে, সাজিয়ে
গুছিয়ে তারপরে ডুবিয়ে দেয়, সেইরকম সঙ্কল্পের বন্ধনে বাঁধা আত্মা অনেক কিছু বানায় আর
সেইসবের অনেকই নষ্ট করে দেয় l নিজেই এই ব্যর্থ কার্যে ক্লান্তও হয়ে যায়, আর হতাশও
হয়ে যায় l আর কখনো অভিমান বশতঃ নিজের দোষের জন্য অন্যকে দোষী সাব্যস্ত করে l পরে,
সময় অতিবাহিত হলে অন্তর্মনে তারা বোঝে এবং উপলব্ধি করে যে তারা ঠিক করেনি l কিন্তু
অভিমানের বশবর্তী হওয়ার কারণে, নিজেদের ন্যায়সঙ্গত প্রমাণ করতে তারা অন্যদের
দোষারোপ করে l সবচেয়ে বড় বন্ধন মন্সার এই বন্ধন, যার জন্য বুদ্ধিতে তালা লেগে যায়,
সেইজন্য তাদের বোঝানোর যতই চেষ্টা কর, কিন্তু তারা বুঝতে অপারগ l মন্সা বন্ধনে
থাকার বিশেষ লক্ষণ, উপলব্ধি করার শক্তি সমাপ্ত হয়ে যায়, সেইজন্য এই সূক্ষ্ম বন্ধনের
অবসান ব্যতীত তোমরা কখনও আন্তরিক খুশি, সদাসর্বদার অতীন্দ্রিয় সুখ অনুভব করতে পারবে
না l
সঙ্গমযুগের বিশেষত্বই হলো - অতীন্দ্রিয় সুখের দোলায় দোলা এবং সদা খুশিতে নৃত্য করা
l সুতরাং, সঙ্গমযুগী হয়ে যদি এই বিশেষত্বের অনুভব না কর তবে কি বলবে ? সেইজন্য
নিজেকে চেক কর কোনও রকম সঙ্কল্পের বন্ধনে তুমি আটকে নেই তো ! তা' ব্যর্থ সঙ্কল্পের
বন্ধন হোক বা ঈর্ষা-দ্বেষ সম্বলিত বন্ধন, অথবা অমনোযোগের সঙ্কল্প বা আলস্যের
সঙ্কল্প, এই ধরণের যে কোনও রকম সঙ্কল্প মন্সা বন্ধনের লক্ষণ l তাইতো, আজ বাপদাদা
সমুদায় বন্ধন দেখছিলেন, কতো মুক্ত আত্মা আছে !
মোটা মোটা দড়ি তো সমাপ্ত হয়েছে, এখন এই সূক্ষ্ম সুতা রয়েছে l সেগুলো সরু, কিন্তু
সেইগুলো তোমাদেরকে বন্ধনে বাঁধতে সক্ষম l তোমরা বুঝতেই পার না যে 'তোমরা বন্ধনে
বেঁধে যাচ্ছ,' কারণ এই বন্ধন অল্পকালীন ভোগলিপ্সাও বাড়িয়ে দেয় l বিনাশী কোনকিছু
পাওয়ার জন্য যাদের প্রবল আকাঙ্ক্ষা থাকে, তারা কখনো নিজেদের নিকৃষ্ট মনে করে না l
তারা থাকবে নালিতে, ভাববে মহলে আছে l তারা হবে রিক্তহস্ত, অথচ ভাববে নিজেদের রাজা l
ঠিক একইভাবে, যারা এইরকম নেশাসক্ত তারা কখনো নিজেদের রং বলে মনে করবে না l সদা
নিজেদের হয় রাইট হিসেবে প্রমাণ করবে অথবা উপেক্ষা করবে l এইরকম তো হয়ই, এইরকম তো
হতেই থাকে, সেইজন্য আজ শুধু মন্সা বন্ধন সম্বন্ধে তোমাদের বলা হয়েছে l বাবা অন্য
কোনও সময় বচন এবং কর্ম সম্বন্ধেও তোমাদের বলবেন l বুঝেছ !
আধ্যাত্মিক শক্তি দ্বারা নিরন্তর মুক্তি প্রাপ্ত কর।সঙ্গমযুগে জীবনমুক্তির অনুভব
করাই জীবনমুক্তির ভবিষ্যৎ প্রালব্ধ প্রাপ্ত করা l গোল্ডেন জুবিলিতে তোমাদের
জীবনমুক্ত তো হতে হবে, নাকি শুধুই জুবিলি উদযাপন করতে চাও ? হওয়াই উদযাপন ; দুনিয়ায়
লোকে শুধুই উদযাপন করে, এখানে তোমরা তৈরি হও l এখন শিঘ্রাতিশীঘ্র তৈরি হও,
কেবলমাত্র তখনই তোমাদের মুক্তি দ্বারা সকলে মুক্ত হয়ে যাবে l সায়েন্সটিস্টরা
নিজেদের তৈরি সাধনের বন্ধনে বেঁধে রয়েছে l নেতারাও দেখ নিজেদের রক্ষা করতে চায়,
কিন্তু তারা এতটাই বেঁধে রয়েছে যে কিছু করার জন্য ভাবলেও তারা তা' করতে অপারগ, সুতরাং
বন্ধনই তো হলো, নয় কি ! তোমরা যারা বিভিন্ন বন্ধন থেকে সবাইকে মুক্ত করতে চলেছ তারা
নিজেরা মুক্ত হও আর সব আত্মাকে মুক্ত কর l সবাই মুক্তির জন্য চিৎকার করছে l কেউ
দারিদ্র্য থেকে মুক্তি চায়, কেউ গার্হস্থ্য জীবন থেকে মুক্তি চায়, কিন্তু সকলের
আওয়াজ শুধু এক মুক্তির জন্য l অতএব, এখন মুক্তিদাতা হয়ে তাদের মুক্তির রাস্তা দেখাও
অথবা মুক্তির উত্তরাধিকার দাও l তাদের আওয়াজ তোমাদের কাছে তো পৌঁছাচ্ছে, তাই না !
নাকি ভাবছ, 'এটা তো বাবার কাজ ! আমার কি !' বাবা বলেন, তোমাদের প্রালব্ধ লাভ করতে
হবে ; বাবাকে প্রাপ্ত করতে হবে না l প্রজা বা ভক্ত তোমরাই চাও l বাবা চান না l যারা
তোমাদের ভক্ত হবে, তারা আপনা থেকেই বাবার ভক্ত হয়ে যাবে, কারণ দ্বাপরে তোমরাই প্রথমে
ভক্ত হবে l বাবার পূজা তোমরাই প্রথম শুরু করবে l সুতরাং এখন তোমাদেরই সবাই ফলো করবে,
তাহলে তোমাদের এখন কি করতে হবে ? তাদের আওয়াজ শোন l মুক্তিদাতা হও l আচ্ছা !
যারা সদা আধ্যাত্মিক শক্তির যুক্তিতে মুক্তি প্রাপ্ত করে, সদা নিজেকে সূক্ষ্ম বন্ধন
থেকে মুক্ত করে মুক্তিদাতা হয়, সদা নিজেকে আন্তরিক খুশি, অতীন্দ্রিয় সুখের অনুভূতিতে
নিরন্তর অগ্রচালিত করে, সদা সকলকে মুক্ত আত্মা বানানোর শুভ ভাবনা রাখে, এইরকম
অধ্যাত্মমুখী শক্তিশালী বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l
পাটিদের সাথে:-
১) শোনার সাথে প্রতিমূর্তি হওয়াতেও তোমরা শক্তিশালী আত্মা, তাই না ! প্রতিদিন
নিজেদের সঙ্কল্পে সদাসর্বদা নিজেদের এবং অন্যদের প্রতি উৎসাহব্যঞ্জক সঙ্কল্প যেন
থাকে l আজকাল যেমন সংবাদপত্রে অথবা বিভিন্ন স্থানে "আজকের বিচার" বলে শীর্ষক লেখে,
ঠিক সেইরকমই প্রতিদিন উদ্দীপনামূলক কোনও না কোনও সঙ্কল্প তোমাদের মনে ইমার্জ হতে
দাও l আর সেই সঙ্কল্পের সাথে নিজের স্বরূপ বানাও আর তা' অন্যদের সেবায় যদি নিয়োজিত
হয় তাহলে কি হবে ? সদাই উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকবে - আজ এটা করব, আজ এটা করব l যেমন কোনও
বিশেষ প্রোগ্রাম হলে তখন উৎসাহ-উদ্দীপনা কেন থাকে ? তোমরা যে প্ল্যান বানাও, তাই না
- এটা করব, তারপরে এটা করব l এইরকম করায় বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হও l এইভাবে প্রতিদিন
অমৃতবেলায় বিশেষ উদ্যম-উৎসাহের সঙ্কল্প কর আর তারপরে সেই অনুযায়ী চেক কর তাহলে
সদাসর্বদার জন্য নিজেরও উৎসাহ ভরা জীবন হবে আর অন্যদেরও উদ্যমী করে তুলতে পারবে l
বুঝেছ - ঠিক যেমন বিনোদনমূলক প্রোগ্রাম হয় সেইভাবেই তোমাদের মনোরঞ্জনের জন্য এই
বিনোদনের প্রোগ্রাম হোক l আচ্ছা !
২) সদা শক্তিশালী স্মরণে অগ্রবর্তী আত্মা তোমরা, তাই না ? শক্তিশালী স্মরণ ব্যতীত
কোনও অনুভব হতে পারে না l সুতরাং সদা শক্তিশালী হয়ে নিরন্তর অগ্রচালিত হও l সদা
নিজের শক্তি অনুসারে ঈশ্বরীয় সেবায় নিয়োজিত হও আর সেবার ফল লাভ কর l যত শক্তি আছে,
ততখানি সেবাতে প্রয়োগ কর, হয় তন দ্বারা, মন দ্বারা বা ধন দ্বারা l নিশ্চিতরূপে একের
পদম গুণ তোমরা লাভ করবেই l নিজের জন্য সঞ্চয় করছ l অনেক জন্মের জন্য সঞ্চয় করতে হবে
l এক জন্মের সঞ্চয়ে ২১ জন্মের শ্রম থেকে তোমরা নিস্তার লাভ কর l এই রহস্য তো তোমরা
জানো, তাই না ? অতএব, নিজের ভবিষ্যৎ নিরন্তর শ্রেষ্ঠ বানাও l খুশির সাথে সেবাতে
নিজেকে অগ্রচালিত কর l সদা স্মরণ দ্বারা একরস স্থিতিতে সমুখগতি হও l
৩) স্মরণের খুশি দ্বারা অনেক আত্মাকে যারা খুশি প্রদান করে তোমরা তেমনই সেবাধারী,
তাই না ! প্রকৃত সেবাধারী অর্থাৎ নিজেও সদা একাগ্রতায় মগ্ন থাকে এবং অন্যকেও
একাগ্রতায় মগ্ন হতে সমর্থ বানায় l প্রতিটা স্থানের সেবা যার যার নিজস্ব l তবুও, যদি
লক্ষ্য রেখে তোমরা নিরন্তর এগিয়ে চলো তাহলে এই অগ্রচালিত হওয়াই সবচেয়ে খুশির
ব্যাপার l বাস্তবে, এই লৌকিক স্টাডি ইত্যাদি সবই বিনাশী, অবিনাশী প্রাপ্তির সাধন
শুধু এই নলেজ l এইরকম অনুভব তো তোমরা কর, তাই না ! দেখ, ড্রামাতে তোমরা সব সেবাধারী
এমন গোল্ডেন চান্স লাভ করেছ l এই গোল্ডেন চান্সের সাথে যত বেশি সম্ভব অগ্রচালিত হওয়া
তোমাদের নিজেদের হাতে l এইরকম গোল্ডেন চান্স সবাই পায় না l কোটি কোটির মধ্যে কতিপয়
মাত্রেরই লাভ হয়, আর তোমরা তা' পেয়ে গেছ l এত খুশি থাকে তোমাদের ? দুনিয়াতে যা কারও
কাছে নেই তা' তোমাদের আছে ! এইরকম খুশিতে সদা নিজেরাও থাক, অন্যদেরও এই খুশিতে
সামিল কর l তোমরা নিজেরা যতটা অগ্রচালিত হবে, ততটাই অন্যদেরও অগ্রচালিত করবে l তোমরা
সদা অগ্রবর্তী, এখানে ওখানে দেখে স্থানুবৎ হও না l তোমাদের সামনে যেন সদা কেবলই বাবা
আর সেবা থাকে l তাহলেই অবিরতভাবে তোমরা উন্নতি করবে l সদা নিজেকে বাবার হারানিধি মনে
করে এগিয়ে চলো l
চাকুরীরতা কুমারীদের সাথে :-
১) তোমাদের সকলের লক্ষ্য তো শ্রেষ্ঠ, তাই না ! তোমরা এইরকম ভাবো না তো যে দু'দিকেই
চলবে, কারণ যখন কোনো বন্ধন হয় তখন দুদিক বজায় রেখে চলা আলাদা ব্যাপার, কিন্তু
নির্বন্ধন আত্মাদের উভয় দিকে থাকা অর্থাৎ ঝুলে থাকা l কারও কারও সার্কমস্ট্যান্স
এমন হয়, আর তখন বাপদাদাও ছুটির অনুমতি দেন, কিন্তু যদি মনের বন্ধন হয় তখন সেটা হয়
ঝুলন্ত অবস্থা l এক পা এখানে, আরেক পা ওখানে হলে তবে কি হবে ? যদি এক পা একটা নৌকায়
আর দ্বিতীয় পা আরেকটা নৌকায় রাখ তাহলে কি অবস্থা হবে ! তোমরা বিচলিত হবে, তাই না !
সেইজন্য দুই পা এক নৌকায় রাখ l সদা মনোবল কায়েম রাখ l মনোবল থাকলে সহজেই তোমরা পার
হয়ে যাবে l সদাসর্বদা মনে রাখ, *বাবা আমার সাথে আছেন l* তুমি একা নও, তাহলেই যে কাজ
তুমি করতে চাও করতে পারবে l
২) সঙ্গমযুগে কুমারীদের বিশেষ পার্ট, নিজেদের এমন বিশেষ পার্টধারী তৈরি করেছ ? নাকি
এখনও তোমরা সাধারণ হয়েই আছ ? তোমাদের বিশেষত্ব কি ? বিশেষত্ব সেবাধারী হওয়া l যে
সেবাধারী, সে বিশেষ l যদি তোমরা সেবাধারী না হও, তাহলে তো তোমরা সাধারণ হয়ে গেলে !
কি লক্ষ্য রেখেছ তোমরা ? সঙ্গমযুগেই এই চান্স প্রাপ্ত হয় l যদি এখন এই চান্স তোমরা
প্রাপ্ত না কর, তবে সারা কল্পে আর পাওয়া যাবে না l শুধুমাত্র সঙ্গমযুগেরই বিশেষ
বরদান আছে l জাগতিক পড়াশোনা করার কালেও তোমাদের নিষ্ঠা এই পাঠের প্রতি হতে দাও l
তখন সেই পড়া বিঘ্নরূপ হবে না l অতএব, সবাই তোমরা নিজের ভাগ্য তৈরি করতে করতে সামনে
এগিয়ে চলো l নিজের ভাগ্যের নেশা যত হবে, ততই সহজে মায়াজিত হয়ে যাবে l এটা
আধ্যাত্মিক নেশা l সদা নিজ ভাগ্যের গীত গাইতে থাক, তাহলেই গীত গাইতে গাইতে নিজেদের
রাজ্যে পৌঁছে যাবে l
বরদান:-
নিজের সমস্ত দুর্বলতা দানের বিধি দ্বারা সমাপ্ত করে
দাতা, বিধাতা ভব
ভক্তিতে এই নিয়ম আছে যে যখন কোনও বস্তু কম থাকে তখন
সেই বস্তু দান করতে বলা হয় l দান করায় দেওয়া নেওয়া হয়ে যায় l সুতরাং, যে কোনও
দুর্বলতা সমাপ্ত করার জন্য দাতা আর বিধাতা হও l যদি তুমি বাবার রত্ন-ভান্ডার
অন্যদের দেওয়ার নিমিত্ত সহায় হও, তাহলে দুর্বলতা তখন নিজে থেকেই সরে যাবে l তোমাদের
দাতা ও বিধাতা হওয়ার শক্তিশালী সংস্কার যদি ইমার্জ কর, তাহলে দুর্বল সংস্কার নিজে
থেকেই সমাপ্ত হয়ে যাবে l
স্লোগান:-
নিজেদের শ্রেষ্ঠ ভাগ্যের মহিমা গাও - দুর্বলতার নয় l