18.01.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা —
তোমাদের আচার আচরণ সত্যতা থাকা উচিত, তোমরা দেবতা হতে যাচ্ছ, সেইজন্য লক্ষ্য আর
লক্ষণ অর্থাত্ তোমরা যা বলো এবং করো তা যেন সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়"
গীতঃ-
তোমাকে পেয়ে
সারা দুনিয়াকে পেয়ে গেছি
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি
আত্মিক বাচ্চারা এই গান শুনেছে । এখন তো অল্প সংখ্যক বাচ্চা আছে পরে অধিক সংখ্যক
বাচ্চা হয়ে যাবে । প্রজাপিতা ব্রহ্মাকে তো সবারই জানা উচিত তাইনা! সমস্ত
ধর্মাবলম্বীরা তাঁকে মান্যতা দেবে। বাবা বুঝিয়েছেন, এমনকি লৌকিক পিতাও সীমিত জগতের
ব্রহ্মা । তাদের পদবী দ্বারাই বংশলতিকা তৈরি হয় । কিন্তু ইনি হলেন অসীম অনন্ত, তাঁর
নাম প্রজাপিতা ব্রহ্মা । লৌকিকের ব্রহ্মা সীমিত, যারা সন্তান সৃষ্টি করে এবং তা
সীমাবদ্ধ । কেউ দুই থেকে চারটি সন্তান সৃষ্টি করেন, কারো একটিও থাকে না । কিন্তু
এনার জন্য তো বলা হবে না যে কোনও সন্তান নেই । সারা দুনিয়ার সন্তান এনার । অসীম
জগতের বাপদাদা দুজনেরই মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চাদের প্রতি অগাধ আত্মিক ভালোবাসা আছে ।
বাচ্চাদের কত ভালোবেসে পড়ান আর কি থেকে কি তৈরি করে তোলেন । সুতরাং বাচ্চাদের খুশির
মাত্রা কতটা বৃদ্ধি পাওয়া উচিত । খুশির মাত্রা তখনই বৃদ্ধি পাবে যখন নিরন্তর বাবাকে
স্মরণ করবে । বাবা কল্প-কল্প ধরে অতিব ভালোবাসার সাথে বাচ্চাদের পবিত্র করে তোলার
সেবা করে আসছেন । ৫ তত্ত্ব সহ সবকিছু পবিত্র করে তোলেন । কড়িহীন থেকে হীরেতুল্য করে
তোলেন । কত বিশাল এই অসীম জগতের সেবা। বাবা বাচ্চাদের কত ভালোবেসে ঈশ্বরীয় শিক্ষাও
প্রদান করেন। কেননা বাচ্চাদের সংশোধন করে তোলা বাবা বা টিচারের কর্তব্য । বাবার
শ্রীমত দ্বারাই তোমরা শ্রেষ্ঠ হয়ে ওঠো । বাচ্চাদের নিজের চার্ট দেখা উচিত যে আমরা
শ্রীমতে চলি নাকি নিজের মনমতে চলি ? শ্রীমতে চলেই তোমরা অ্যাক্যুরেট হতে পারবে ।
বাবার প্রতি যত ভালোবাসা থাকবে ততই গুপ্ত খুশিতে ভরপুর থাকবে । নিজের অন্তর্মনকে
জিজ্ঞাসা করা উচিত আমার কি সেই উচ্চ অলৌকিক খুশি আছে ? কোনও অব্যভিচারী স্মরণ কি আছে
? কোনও ইচ্ছা তো নেই ? এক বাবাকেই স্মরণ আছে তো ? স্বদর্শন চক্র ঘোরাতে ঘোরাতেই যেন
আত্মা শরীর ত্যাগ করে । এক শিববাবা ছাড়া দ্বিতীয় কেউ নয় । এই হলো অন্তিম মন্ত্র ।
বাবা আত্মিক বাচ্চাদের জিজ্ঞাসা করেন মিষ্টি বাচ্চারা, যখন বাপদাদাকে সামনে দেখ তখন
বুদ্ধিতে আসে ইনিই আমাদের বাবা, শিক্ষক এবং সদ্গুরু । বাবা আমাদের এই পুরানো দুনিয়া
থেকে নতুন দুনিয়াতে নিয়ে যান । এই পুরানো দুনিয়া এখন কোনও কাজের নয়, বিনাশের মুখে ।
বাবা কল্পে-কল্পে নতুন দুনিয়া রচনা করেন । আমরা কল্পে-কল্পে নর থেকে নারায়ণ হয়ে উঠি।
বাচ্চাদের এই বিষয় রমণ করে কত উল্লাসে থাকা উচিত । বাচ্চারা, তোমাদের সময় খুব কম,
আজ তোমরা একরকম আগামীকাল তোমরা কি হবে । আজ আর কালের খেলা সেইজন্যই বাচ্চাদের কোনও
ফাঁকিবাজি করা উচিত নয় । বাচ্চারা তোমাদের আচার - আচরণে সত্যতা থাকা উচিত
প্রত্যেককেই নিজেকে দেখা উচিত যে আমার চলনে দৈবীগুণ আছে কিনা । আমার বুদ্ধি কি
দৈবীগুণ সম্পন্ন ?
যা লক্ষ্য আছে এবং হতে যাচ্ছি সে কি শুধুই কথার কথা? যে নলেজ প্রাপ্ত হচ্ছে তাতে
সবসময় উৎফুল্ল থাকা উচিত । যত অন্তর্মুখী হয়ে এই বিষয়ে বিচার করবে ততই খুশি অনুভব
হবে । বাচ্চারা, তোমরা জান যে এই দুনিয়া থেকে ঐ দুনিয়াতে যাওয়ার জন্য অল্প কিছু সময়
অবশিষ্ট আছে । যখন এই দুনিয়াকে ছেড়েই দিয়েছ তখন কেন পিছন ফিরে দেখবে! বুদ্ধিযোগ কেন
ঐ দিকে যাবে ? তোমাদের সবকিছু বুদ্ধি দিয়ে করতে হবে । সব যখন পেরিয়ে এসেছ তারপরও
বুদ্ধি কেন ঐ দিকে যায়? পুরানো কথা চিন্তা কোরনা । এই পুরানো দুনিয়ার প্রতি যেন
কোনও আশা না থাকে। এখন একটাই শ্রেষ্ঠ আশা রাখতে হবে — আমরা সুখধামে যাব, কোথাও থমকে
যাব না, কিছুই দেখব না । এগিয়ে যেতে হবে । একদিকে দৃষ্টি দিলে তবেই অচল-অটল ( দৃঢ়তা)
স্থির অবস্থা প্রাপ্ত হবে । সময় সংবেদনশীল হতে চলেছে, এই পুরানো দুনিয়ার অবস্থা
অতিব খারাপের দিকে যাচ্ছে । এর সাথে তোমাদের কোন কানেকশন নেই । তোমাদের কানেকশন
নতুন দুনিয়ার সাথে, যা এখন স্থাপন হচ্ছে । বাবা বুঝিয়েছেন, এখন ৮৪ চক্র সম্পূর্ণ
হয়েছে, এই পুরানো দুনিয়া শেষ হবে, এর অবস্থা সংকটজনক । এই সময় সবচেয়ে বেশি ক্রোধ
জন্মায় প্রকৃতির আর তাই সে সবকিছু শেষ করে দেয় । তোমরা এখন বুঝতে পেরেছ এই প্রকৃতি
তার রাগ আরও তীব্রভাবে প্রকাশ করবে — সম্পূর্ণ দুনিয়াকে ডুবিয়ে দেবে, বন্যা হবে ।
আগুন লাগবে । মানুষ অনাহারে মরবে । ভূমিকম্পে বাড়িঘর সব ভেঙে পড়বে ।
এরকম অবস্থা সম্পূর্ণ দুনিয়াতে হবে । অনেক ভাবে মৃত্যু হবে । বোমা থেকে এমন গ্যাস
ছুড়বে — যার তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধে মানুষ মরে যাবে । এসবই ড্রামার প্ল্যান অনুসারে
তৈরি হয়েছে । এখানে কারো কোনও দোষ নেই । বিনাশ তো হবেই সেইজন্যই এই দুনিয়া থেকে
তোমাদের বুদ্ধিযোগ সরিয়ে নিতে হবে । এখন তোমরা বলবে বাঃ সদ্গুরু — যিনি আমাদের এই
পথের ঠিকানা বলে দিয়েছেন । আমাদের প্রকৃত সত্য গুরু একজনই বাবা । যাঁর নাম ভক্তি
মার্গেও আছে । যাঁর মহিমা বাঃ বাঃ করে গাওয়া হয় । বাচ্চারা তোমরা বলবে- বাঃ সদ্গুরু
বাঃ ! বাঃ ভাগ্য বাঃ ! বাঃ ড্রামা বাঃ ! বাবার জ্ঞান থেকে আমাদের সদ্গতি প্রাপ্ত
হচ্ছে । বাচ্চারা, তোমরা বিশ্বে শান্তি স্থাপনের নিমিত্ত হয়েছ । সুতরাং এই খুশির
খবর সবাইকে শোনাও । এখন নতুন ভারত, নতুন দুনিয়া যেখানে লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য ছিল
তা পুনরায় স্থাপন হতে চলেছে । এই দুঃখ ধাম পরিবর্তিত হয়ে সুখধামে পরিবর্তন হবে ।
অন্তর্মনে খুশি হওয়া উচিত যে আমরা সুখধামের মালিক হতে যাচ্ছি। ওখানে কেউ তোমাদের
জিজ্ঞাসা করবে না যে তোমরা খুশি এবং সন্তুষ্ট আছ কিনা, তোমাদের শরীর ঠিক আছে কিনা!
এসব কথা এখানেই জিজ্ঞাসা করা হয় কেননা এ হচ্ছে দুঃখের দুনিয়া । বাচ্চারা তোমাদেরও
এই প্রশ্ন কেউ করতে পারে না । জিজ্ঞাসা করলে বলবে আমরা ঈশ্বরীয় সন্তান, সুতরাং
আমাদের কল্যাণ সম্পর্কে তোমরা কি করে জিজ্ঞাসা করছ! আমরা সবসময়ই খুশি এবং সন্তুষ্ট
থাকি । স্বর্গের থেকেও এখানে বেশি খুশি কেননা স্বর্গ স্থাপনাকারী বাবাকে এখানে
পেয়েছি । বাবাকে পাওয়া অর্থাত্ সবকিছু পাওয়া । তোমরা অধীর ছিলে পিতা সম্পর্কে যিনি
ব্রহ্ম তত্ত্ব নামক উপাদানে বাস করেন এবং এখন তাঁকে পেয়েছ তবে আর কিসের উদ্বেগ!
সবসময় ঈশ্বরীয় নেশা থাকা উচিত । রয়েল এবং মিষ্টি হতে হবে । নিজের ভাগ্যকে উচ্চ করে
তোলার জন্য এটাই সময়। পদ্মগুণ ভাগ্যপতি হওয়ার প্রধান সাধন — প্রতিটি পদক্ষেপে সতর্ক
হয়ে চলা, অন্তর্মুখী হওয়া । সবসময় মনে রাখতে হবে - "যেমন কর্ম আমরা করব আমাদের দেখে
অন্যরাও করবে"। দেহ অহঙ্কার ইত্যাদি বিকারের বীজ তো অর্ধকল্প ধরেই রোপন করে এসেছি।
সম্পূর্ণ দুনিয়াতেই এই বীজ । এখন একে বিলুপ্ত করতে হবে । দেহ অভিমানের বীজ আর রোপন
নয় । এখন দেহী অভিমানীর বীজ রোপণ করতে হবে । তোমাদের এখন বাণপ্রস্থ অবস্থা । মোস্ট
বিলভেড বাবাকে পেয়েছ তাঁকেই স্মরণ করতে হবে। বাবার পরিবর্তে দেহকে বা দেহধারীদের
স্মরণ করা — এটাও ভুল । তোমাদের আত্ম-অভিমানী হওয়ার জন্য, শীতল হওয়ার জন্য অতিব
প্রচেষ্টা করতে হবে।
মিষ্টি বাচ্চারা, নিজের জীবনের প্রতি কখনোই বিরক্ত হওয়া উচিত নয় । বলাও হয়ে থাকে এ
জীবন অমূল্য একেও যত্ন করতে হবে । সাথে সাথে উপার্জনও করতে হবে । এখানে যতদিন থাকবে,
বাবাকে স্মরণ করে অগাধ উপার্জন সঞ্চয় করতে হবে । হিসেব নিকেশ মিটতে থাকবে সেইজন্যই
কখনও বিরক্ত হওয়া উচিত নয় । বাচ্চারা জিজ্ঞাসা করে বাবা, সত্যযুগ কবে আসবে ? বাবা
বলেন তোমরা বাচ্চারা কর্মাতীত অবস্থা তো প্রাপ্ত কর! যত সময় পাবে পুরুষার্থ কর
কর্মাতীত হওয়ার জন্য । বাচ্চাদের নষ্টমোহ হওয়ার জন্যও সাহস থাকা উচিত । অসীম জগতের
পিতার কাছ থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার গ্রহণ করতে হলে নষ্টমোহ হতে হবে । নিজের
অবস্থানকে অতিব উচ্চ করে তুলতে হবে । যখন বাবার হয়েছ তখন বাবার অলৌকিক সেবায় নিজেকে
নিযুক্ত করতে হবে । স্বভাব অত্যন্ত মধুর হতে হবে । মানুষের স্বভাব ভীষণভাবে
বিরক্তির কারণ হয়ে ওঠে । জ্ঞানের যে তৃতীয় নেত্র পেয়েছ, তার দ্বারা নিজেকে যাচাই কর
। যা কিছু ত্রুটি আছে তাকে বের করে দিয়ে পিওর ডায়মন্ড হয়ে উঠতে হবে । সামান্য ত্রুটি
থাকলেও মূল্য কম হয়ে যাবে সেইজন্যই পুরুষার্থ করে নিজেকে মূল্যবান হীরে করে তুলতে
হবে ।
বাচ্চারা, তোমাদের দিয়ে বাবা এখন নতুন দুনিয়ার সম্বন্ধের জন্য পুরুষার্থ করাচ্ছেন ।
মিষ্টি বাচ্চারা, এখন অসীম জগতের পিতা আর অবিনাশী অনন্ত সুখের উত্তরাধিকারের সাথেই
সম্বন্ধ রাখ । একজনই অসীম জগতের পিতা যিনি সর্ব বন্ধন থেকে মুক্ত করে অলৌকিক
সম্বন্ধে নিয়ে যান । সবসময় যেন এটাই স্মৃতিতে থাকে যে আমরা ঈশ্বরীয় সম্বন্ধের সাথে
যুক্ত । এই ঈশ্বরীয় সম্বন্ধই সবসময়ের জন্য সুখদায়ী । আচ্ছা!
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি অত্যন্ত স্নেহের বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার হৃদয়
গভীর থেকে ভালবাসা, স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা
রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
অব্যক্ত
বাপদাদার মধুর মহাবাক্য (রিভাইজ)
সফলতার
প্রতিমূর্তি হওয়ার জন্য প্রধান দুটি বিশেষত্ব প্রয়োজন — প্রথম হলো পিউরিটি, দ্বিতীয়
ইউনিটি । যদি পিউরিটি কম থাকে তবে ইউনিটিতেও কম থাকবে । পিউরিটি শুধুমাত্র
ব্রহ্মচর্যকেই বলা হয় না । সঙ্কল্প, স্বভাব, সংস্কারেও পিউরিটি হওয়া উচিত। মনে করো
একে অপরের প্রতি ঈর্ষা বা ঘৃণার সঙ্কল্প, এ তো পিউরিটি নয়, ইমপিউরিটি বলা হবে ।
পিউরিটির পরিভাষা হলো সর্ব বিকারের অংশটুকুও না থাকা। সঙ্কল্পেও যেন কোনও রকম
ইমপিউরিটি না থাকে । বাচ্চারা তোমরা নিমিত্ত হয়েছ অনেক উচ্চ কার্য সম্পন্ন করার
জন্য । নিমিত্ত তো মহারথী রূপ থেকে হয়েছ, তাই না! যদি লিস্ট বের করা হয় তবে লিস্টেও
সার্ভিসেবল তথা সার্ভিসের নিমিত্ত ব্রহ্মা বৎসরাই মহারথীদের লিস্টে গোনা হবে ।
মহারথীদের বিশেষত্ব কতদূর এসেছে ? সেও প্রত্যেকেই নিজ-নিজ ভাবে জানে । যে লিস্টে
মহারথীদের গোনা হবে তারা আরও এগিয়ে যেতে যেতে মহারথী হবে অথবা বর্তমান লিস্টে তারাই
মহারথী, সুতরাং এই দুটো বিষয়ের প্রতি অ্যাটেনশন থাকা উচিত ।
ইউনিটি অর্থাত্ সংস্কার‐ স্বভাবের মিলনের ইউনিটি । কারো সংস্কার আর স্বভাব না
মিললেও চেষ্টা কর মেলাতে, এটাই হলো ইউনিটি । শুধুমাত্র সংগঠনকে ইউনিটি বলা যায় না ।
সার্ভিসেবল নিমিত্ত আত্মারা এই দুটি বিষয় ছাড়া অসীম জগতের সার্ভিসের নিমিত্ত হতে
পারে না । লৌকিকের সার্ভিস হতে পারে কিন্তু অসীম জগতের সার্ভিসের জন্য পিউরিটি এবং
ইউনিটি দুটো বিষয়ই প্রয়োজন । শুনিয়েছিলাম না -‐ রাসের ( ডান্ডিয়া নৃত্য) সাথে তাল
মেলালেই বাঃ বাঃ হয় । সুতরাং এখানেও তাল মেলানো অর্থাত্ রাস মেলানো ( সংস্কার,
স্বভাবের সাথে) । এতো আত্মা যারা নলেজ বর্ণনা করে সবার মুখ থেকে তখন একই কথা শোনা
যায়, তারা বলে, এদের সবাই একই কথা বলে, সবার বিষয়ই এক, একই শব্দ, এসব বলে, তাইনা !
এইভাবে সবার স্বভাব আর সংস্কার যখন একের সাথে অন্যের মিলবে তখনই বলবে রাস মেলানো ।
এর জন্যও প্ল্যান তৈরি করো ।
যে কোনও দুর্বলতাকে সমাপ্ত করার জন্য বিশেষ মহাকালী স্বরূপ শক্তির সংগঠন প্রয়োজন ।
যে নিজের যোগ-অগ্নির প্রভাবে দুর্বল বাতাবরণকে পরিবর্তন করতে সক্ষম হবে । এখন তো
ড্রামানুসারে প্রত্যেকের আচার-আচরণ রূপী দর্পণে অন্তিম রেজাল্ট স্পষ্ট হতে যাচ্ছে ।
আরও এগিয়ে গেলে মহারথী বাচ্চারা নিজ নলেজ শক্তি দিয়ে প্রত্যেকের চেহারা দ্বারা
তাদের কর্মের কাহিনীচিত্র স্পষ্টরূপে প্রত্যক্ষ করতে সক্ষম হবে । যেমন ম্লেচ্ছ (অশুদ্ধ,
অপবিত্র, তামসিক) ভোজনের গন্ধ বোঝা যায়, তেমনই ম্লেচ্ছ সঙ্কল্প রূপী আহার গ্রহণ করে
যে আত্মারা তাদের ভাইব্রেশন বুদ্ধিতে স্পষ্ট টাচিং ( অনুভব)হবে। এই যন্ত্র হলো
বুদ্ধির লাইন ক্লিয়ার । যার বুদ্ধিরূপী যন্ত্র যত পাওয়ারফুল হবে সে সহজেই বুঝতে
পারবে।
শক্তির দেবতাদের জড় চিত্রেও এই বিশেষত্ব আছে, কোনও পাপ আত্মা নিজের পাপ তাদের কাছে
লুকাতে পারবে না । নিজেই বর্ণনা করে থাকে আমি এরকম, সুতরাং জড় চিত্র স্মরণেও
অন্তিমকাল পর্যন্ত এই বিশেষত্ব দেখা যায় । চৈতন্য রূপে শক্তির এই বিশেষত্ব প্রসিদ্ধ
হয়েছে তবেই তো স্মৃতিচিহ্নেও দর্শানো হয়েছে । এ হলো "মাস্টার জানি জননহারের" (যিনি
সব জানেন) স্টেজ অর্থাত্ নলেজফুল স্টেজ । এই স্টেজ প্র্যাকটিকাল অনুভব হবে, হতে
চলেছে আর হবেও। এমন সংগঠন তৈরি করেছ? তৈরি করতে তো হবেই । এইরকম বহ্নি পতঙ্গ স্বরূপ
সংগঠন প্রয়োজন, যাদের প্রতিটি পদক্ষেপে বাবা প্রত্যক্ষ হবে । আচ্ছা!
বরদান:-
সেবা করতে করতেও স্মরণের অনুভবের রেস করতে সমর্থ সদা লভলীন আত্মা ভব
স্মরণে থাকছ কিন্তু
স্মরণের যাত্রা দ্বারা যে প্রাপ্তি হয়ে চলেছে, ঐ প্রাপ্তির অনুভবকে বৃদ্ধি করে আরও
অগ্রসর হও । এর জন্য বিশেষ সময় এখন এর প্রতি অ্যাটেনশন দাও, যাতে বোঝা যায় এই আত্মা
অনুভবের সাগরে লীন হয়ে যাওয়া লভলীন আত্মা । যেমন পবিত্রতা, শান্তির বাতাবরণ অনুভূত
হয়, তেমনই শ্রেষ্ঠ যোগী, ভালোবাসায় মগ্ন হয়ে থাকে - এই অনুভব যেন হয় । নলেজের
প্রভাব আছে কিন্তু যোগের সিদ্ধি স্বরূপের প্রভাব প্রয়োজন । সেবা করতে করতেও স্মরণের
অনুভবে ডুবে থাকো, এমনই স্মরণের যাত্রায় অনুভবের রেস লাগাও।
স্লোগান:-
সিদ্ধিকে স্বীকার করে নেওয়া অর্থাত্ ভবিষ্যতের প্রালব্ধকে এখানেই সমাপ্ত করে দেওয়া
অব্যক্ত স্থিতি অনুভব
করার জন্য বিশেষ হোমওয়ার্ক
যেমন ব্রহ্মা বাবা বিশ্বাস এবং আধ্যাত্মিক নেশার ভিত্তিতে জানতে পেরেছিলেন তাঁর
সুনিশ্চিত ভাগ্য সম্পর্কে এবং সমস্ত কিছুকে এক সেকেন্ডে সার্থক করে তুলতে সফল
হয়েছিলেন । নিজের জন্য কিছুই রাখেননি। সুতরাং ভালোবাসার লক্ষণ হলো প্রতিটি জিনিস
উপযুক্ত উপায়ে ব্যবহার করা । যথোপযুক্ত উপায়ে ব্যবহার করার অর্থ হলো শ্রেষ্ঠত্বের
দিকে এগিয়ে নিয়ে চলা ।