26-01-2020 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 13-11-85 মধুবন


"সঙ্কল্প, সংস্কার, সম্বন্ধ, বোল এবং কর্মে নতুনত্ব আনো"


আজ বাবা, নতুন পার্থিব রচনার রচয়িতা, তাঁর নতুন দুনিয়ার অধিকারী বাচ্চাদের অর্থাৎ নতুন রচনাকে দেখছেন l নতুন রচনা সদাই প্রিয় l জাগতিক নিয়মে পুরানো যুগে নতুন বছর উদযাপন করে l কিন্তু তোমরা নতুন রচনার নতুন যুগ এবং নতুন জীবনের অনুভূতি করছ l সবকিছু নতুন l যা কিছু পুরানো তা' সমাপ্ত হয়ে নতুন জন্ম নতুন জীবনের প্রারম্ভ হয়েছে l যখন তোমাদের জন্ম নতুন হয়েছে, তখন জন্মের সাথে জীবন নিজে থেকেই পরিবর্তিত হয় l 'জীবন পরিবর্তন' অর্থাৎ সঙ্কল্প, সংস্কার, সম্বন্ধ সব পরিবর্তিত হয়ে যায় অর্থাৎ নতুন হয়ে যায় l তোমাদের ধর্ম নতুন, কর্ম নতুন l তারা শুধু বলে, এটা নতুন বছর, কিন্তু তোমাদের জন্য সবকিছু নতুন হয়ে গেছে l আজকের দিন অমৃতবেলা থেকে নতুন বছরের অভিনন্দন তো জানিয়েছ, কিন্তু তা' কি শুধুই মুখে জানিয়েছ নাকি অন্তর থেকে ? নবীনত্বের সঙ্কল্প নিয়েছ ? *বিশেষ এই তিন বিষয়ে নতুনত্বের সঙ্কল্প করেছ ? সঙ্কল্প, সংস্কার আর সম্বন্ধ l* তোমাদের সংস্কার আর সঙ্কল্প নতুন হওয়া অর্থাৎ সেগুলো শ্রেষ্ঠ হয়ে গেছে l নতুন জন্ম, নতুন জীবন হয়েও এখনও পুরানো জন্ম বা জীবনের সঙ্কল্প, সংস্কার এবং সম্বন্ধ থেকে যায়নি তো ! যদি এই তিন বিষয়ের কোনও বিষয়ে পুরানো ভাব অংশমাত্রও থাকে, সেই অংশের লেশ নতুন জীবনের, নতুন যুগের, নতুন সম্বন্ধের, নতুন সংস্কারের সুখ বা সর্বপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করে দেবে l কোন কোন বাচ্চা তাদের মনের এই সমস্ত বিষয়গুলো বাপদাদার সামনে অন্তরঙ্গভাবে মনখোলা আলাপচারিতা করতে থাকে l তাদের এই আলাপচারিতা শুধুই মৌখিকতা নয়, বাহ্যিকভাবে কেউ যদি তাদের জিজ্ঞাসা করে তারা কেমন আছে, তারা সকলেই এই জবাব দেয় যে তারা খুব ভালো আছে, কারণ তারা জানে বহির্মুখী আত্মা অন্তরাত্মার ব্যাপারে কি জানবে ! যাই হোক, তারা তাদের মনখোলা কথোপকথনে বাবার থেকে এটা গোপন করে না l তাদের মনের কথাবার্তায় তারা অবশ্যই বলে, ব্রাহ্মণ তো হয়েছি, শুদ্র আচার-আচরণ থেকে সরে এসেছি, কিন্তু ব্রাহ্মণ জীবনের যে মহত্ত্ব, বিশেষত্ব - সর্বশ্রেষ্ঠপ্রাপ্তির বা অতীন্দ্রিয় সুখের, ফরিস্তা ভাবের ডবল লাইটের, এইরকম বিশেষ অনুভব যতটা হওয়া উচিত ততটা অনুভব করতে পারি না l এই শ্রেষ্ঠ যুগের শ্রেষ্ঠ জীবন সম্পর্কে তারা যা বর্ণন করে, তারা যে অনুভব করে, সেই স্থিতি খুব কম সময় হয় l এর কারণ কী ? যখন তোমরা ব্রাহ্মণ হয়েছ তো ব্রাহ্মণ জীবনের অধিকারের অনুভব হয় না, কেন ? তোমরা রাজার বাচ্চা অথচ সংস্কার ভিখারীভাবের তবে তাকে কি বলবে ? রাজকুমার বলবে ? এখানেও নতুন জন্ম, নতুন ব্রাহ্মণ জীবন, তবুও পুরানো সঙ্কল্প বা সংস্কার যদি এখনও ইমার্জ হয়, বা কর্মে হয় তবে কি তাকে ব্রহ্মাকুমার বলবে ? নাকি তাকে অর্ধেক শূদ্র কুমার আর অর্ধেক ব্রহ্মাকুমার বলবে ! তোমরা ড্রামাতে যে দেখাও, অর্ধেক আলো আর অর্ধেক অন্ধকার - একে সঙ্গমযুগ ভাবনি তো ! সঙ্গমযুগ অর্থাৎ নবযুগ l নবযুগে সবকিছু নতুন l

বাপদাদা আজ সবার আওয়াজ শুনছিলেন - নতুন বছরের অভিনন্দন l তোমরা কার্ড পাঠাও, তোমরা চিঠি লেখ, কিন্তু তোমরা যা বলো আর যা কর তা' কি এক ? তোমরা অভিনন্দন জানিয়েছ, খুব ভালো করেছ l বাপদাদাও অভিনন্দন জানান l বাপদাদাও বলেন, সবার মুখে অবিনাশী ভব'র বরদান ! তোমরা যেমন বলো, 'তোমার মুখে ফুলচন্দন পড়ুক', বাপদাদা বলেন, তোমাদের মুখে 'অবিনাশী ভব'র বরদান থাকুক' l আজ থেকে একটা শব্দ স্মরণে রাখ - 'নবীন' l যে সঙ্কল্পই কর, যে বোল বলো, যে কর্মই কর, সেগুলো চেক কর আর দেখ সেগুলো নতুন কিনা ! পোতামেলের হালখাতা, চার্ট, রেজিস্টার আজ থেকে শুরু কর l দীপাবলীতে হালখাতা দিয়ে কি কর ? তার ওপরে তোমরা স্বস্তিকা চিহ্ন আঁকো, তাই না ! গণেশ (স্বস্তিকাকে গণেশও বলা হয়) l তোমরা স্বস্তিকার চার যুগে বিন্দু অবশ্যই দাও l কেন দাও ? কোনও কার্যের প্রারম্ভকালে স্বস্তিকা বা গণেশায় নমঃ অবশ্যই বলো l এই স্মরণিক কার ? স্বস্তিকাকে গণেশ কেন বলে ? স্বস্তিকা স্ব-স্থিতিতে স্থিত হওয়ার সমগ্র রচনার নলেজের সূচক l গণেশ অর্থাৎ নলেজফুল l স্বস্তিকার এক চিত্রে সমুদায় নলেজ সমাহিত হয়ে আছে l নলেজফুলের স্মৃতির স্মরণিক হিসেবে গণেশ বা স্বস্তিকা দেখানো হয় l এর অর্থ কি হলো ? কোনও কার্যের সফলতার আধার - নলেজফুল অর্থাৎ বিচক্ষণ, জ্ঞানস্বরূপ হওয়া l যদি তুমি বিচক্ষণ এবং জ্ঞানের প্রতিমূর্তি হও, তবেই তো সর্বকর্ম শ্রেষ্ঠ আর সফল হবে, তাই না ! তারা তো শুধু কাগজে স্মৃতিচিহ্নের প্রতীকী দেখায়, সেক্ষেত্রে, তোমরা ব্রাহ্মণ আত্মারা নিজেরা নলেজফুল হয়ে প্রতিটা সঙ্কল্প তৈরি করবে আর তখন সঙ্কল্প আর সফলতা দুইই একসাথে তোমরা অনুভব করবে l অতএব, আজ থেকে এই দৃঢ় সঙ্কল্পের রঙ দ্বারা নিজের জীবনের নতুন খাতায় প্রতিটা সঙ্কল্প সংস্কার নতুন হতেই হবে l কোনও সময় হবে এমনও নয়, হতেই হবে l স্ব-স্থিতিতে স্থিত হয়ে এই শ্রীগণেশ করো অর্থাৎ সূচনা করো l নিজে শ্রীগণেশ হয়ে প্রকাশিত হও l এইরকম ভেবনা, এ তো হতেই থাকে l সঙ্কল্প অনেকবার করো, কিন্তু সঙ্কল্প যেন দৃঢ় হয় l যেমন, ফাউন্ডেশন সিমেন্ট ইত্যাদি দিয়ে মজবুত করা হয়, তাই না ! যদি বালির ফাউন্ডেশন বানাও তবে তা' কত কাল চলবে ? তবুও যে সময় সঙ্কল্প কর সেই সময় বলো, 'করে দেখব, যতটা সম্ভব করব, অন্যরাও তো এইরকমই করে l' এই বালি মিশিয়ে দাও তোমরা, সেইজন্য ফাউন্ডেশন মজবুত হয় না l অন্যকে দেখা সহজ মনে হয় l নিজেকে দেখায় শ্রম লাগে l যদি অন্যকে দেখতে চাও, যদি সেই অভ্যাসে বাধ্য হও, তবে ব্রহ্মাবাবাকে দেখো l তিনিও তো অন্য কেউ হলেন, তাই না !সেইজন্য বাপদাদা দীপাবলীর চার্ট (পোতামেল) দেখেছেন l চার্টে মুখ্য বিষয় বাপদাদা দেখেছেন যে ব্রাহ্মণ হওয়ার পরেও তোমাদের ব্রাহ্মণ জীবনের অনুভূতি না হওয়া l যতখানি হওয়া প্রয়োজন, ততটা হয় না l এর বিশেষ কারণ - পরদৃষ্টি, পরচিন্তন, পরপঞ্চে যাওয়া (অন্যের ব্যাপারে নিমগ্ন হওয়া) l পরিস্থিতি সম্পর্কে বর্ণন আর মনন অনেক বেশি হয়, সেইজন্য স্ব-দর্শন চক্রধারী হও l স্ব -এর প্রতি অ্যাটেনশনে পরের প্রতি অ্যাটেনশন অর্থাৎ পরচিন্তন শেষ হয়ে যাবে l যেমন আজ তোমরা সবাই মিলে নতুন বছরে অভিনন্দন করেছ, ঠিক তেমনই প্রত্যেক দিনই নতুন দিন, নতুন জীবন, নতুন সঙ্কল্প, নতুন সংস্কার স্বতঃই অনুভব করবে l আর মন থেকে প্রত্যেক মুহূর্ত বাবার প্রতি, ব্রাহ্মণ পরিবারের প্রতি অভিবাদনের শুভ আগ্রহ নিজে থেকেই উৎপন্ন হতে থাকবে l সকলের দৃষ্টিতে কল্যাণ, অভিনন্দন আর গ্রিটিংসের তরঙ্গ খেলবে l সুতরাং আজ অভিনন্দন শব্দকে অবিনাশী বানাও l বুঝেছ! লোকে পোতামেল রাখে l বাবা পোতামেল দেখেছেন l বাচ্চাদের প্রতি বাপদাদার অনুকম্পা হয়, কারণ তোমরা সবকিছু পূর্ণরূপে লাভ করতে পার, তবুও অসম্পূর্ণ কেন নাও ? তোমাদের নতুন নাম হয়েছে ব্রহ্মাকুমার বা কুমারী, তবে মিক্সড কাজ কেন কর ? তোমরা দাতার বাচ্চা, বিধাতার বাচ্চা, বরদাতার বাচ্চা l তাহলে, নতুন বছরে তোমরা কি স্মরণে রাখবে ? সবকিছু নতুন করতে হবে অর্থাৎ ব্রাহ্মণ জীবনের নিয়ম- নীতি সব নতুন l নতুনের অর্থ কোনরকম মিক্সচার না করা l তোমরা সবাই খুব চতুর হয়ে গেছ, তাই না ? বাবাকেও তোমরা পড়াতে শুরু কর l কোনো কোনো বাচ্চা বলে - বাবা বলেছিলেন তো নতুন করতে হবে ! তাইতো আমরা এটা নতুন করছি l কিন্তু ব্রাহ্মণ জীবনের মর্যাদাকে মাথায় রেখেই নতুন হতে হবে l বাপদাদা তো তোমাদের ব্রাহ্মণ জীবনের তথা ব্রাহ্মণ জন্ম থেকে মর্যাদার সীমারেখা বেঁধে দিয়েছেন l বুঝেছ, নতুন বছর কীভাবে উদযাপন করতে হবে ! তোমাদের তো বলা হয়েছিল, ১৮ অধ্যায় শুরু হতে চলেছে l

গোল্ডেন জুবিলির আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল্ডেন জুবিলি l এইরকম মনে ক'রনা যে ৫০ বছর যারা এখানে আছে শুধু তাদের গোল্ডেন জুবিলি l এটা ঈশ্বরীয় কাজের গোল্ডেন জুবিলি l স্থাপনার কার্যে যে-ই সহযোগী হোক তা' দু'বছরেরই হোক বা ৫০ বছরের জ্ঞানেই হোক, কিন্তু দু'বছর ধরে তোমরা যারা জ্ঞানে আছ, নিজেদের ব্রহ্মাকুমার তো বলো, তাই না ! নাকি আর কোনও নাম বলো ? সুতরাং এ হ'লো ব্রহ্মা দ্বারা ব্রাহ্মণদের রচনার গোল্ডেন জুবিলি, এর মধ্যে সব ব্রহ্মাকুমার কুমারীরা অন্তর্ভুক্ত l গোল্ডেন জুবিলিতে পৌঁছানো পর্যন্ত তোমাদের নিজেদের মধ্যে গোল্ডেন এজড অর্থাৎ সতঃপ্রধান সঙ্কল্প সংস্কার ইমার্জ করতে হবে l এইরকম গোল্ডেন জুবিলি উদযাপন করতে হবে l এতো নিমিত্তমাত্র রীতি-রেওয়াজের নিয়ম অনুযায়ী উদযাপন কর, কিন্তু বাস্তবিক গোল্ডেন জুবিলি গোল্ডেন এজড হওয়ার জুবিলি l কার্য সফল হয়েছে অর্থাৎ কার্যার্থে নিমিত্ত আত্মারা সাফল্যের প্রতিমূর্তি হয়েছে l এখনও সময় বাকি আছে l এই তিন মাসের মধ্যে দুনিয়ার স্টেজে অনন্য এক গোল্ডেন জুবিলি উদযাপন করে দেখাও l দুনিয়ার লোকে সম্মান দেয় আর এখানে তোমাদের সমানতার স্টেজে প্রত্যক্ষ করাতে হবে l সম্মান দেওয়ার জন্য যা কিছু কর সেটা তো নিমিত্ত মাত্র l বাস্তবিকতা দুনিয়ার সামনে দেখাতে হবে, আমরা সবাই এক, আমরা একের, একরস স্থিতিতে স্থিত l একের অনুরাগে বিভোর হয়ে একের নাম প্রত্যক্ষ-গোচর করে এই স্বতন্ত্র অথচ প্রিয় গোল্ডেন স্থিতির পতাকা উত্তোলন কর l গোল্ডেন দুনিয়ার দৃশ্য তোমাদের নয়নে এবং বোল আর কর্মের দ্বারা স্পষ্টভাবে যেন প্রতীয়মান হয় l এইরকম গোল্ডেন জুবিলি উদযাপন কর l আচ্ছা -

এইরকম সদা অবিনাশী অভিনন্দনের যোগ্য শ্রেষ্ঠ বাচ্চাদের,নিজেদের সব সঙ্কল্প এবং কর্ম দ্বারা যারা নতুন সংসারের সাক্ষাৎকার করায় সেই বাচ্চাদের, নিজেদের গোল্ডেন এজড স্থিতি দ্বারা 'গোল্ডেন দুনিয়া প্রায় সমাগত' - এমন শুভ আশার দীপক বিশ্বের আত্মাদের মধ্যে যারা প্রজ্জ্বলিত করে, সদা জ্বলজ্জ্যোতি নক্ষত্রদের, সফলতার সব দীপককে, তাদের দৃঢ় সঙ্কল্প দ্বারা যা নতুন জীবনের দর্শন করায়, সেই দর্শনীয় মূর্তি বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ, অবিনাশী অভিনন্দন, অবিনাশী বরদানের সাথে নমস্কার l

শান্তি পদযাত্রী তথা সাইকেল যাত্রীদের সাথে অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎকার
তোমরা সবাই শান্তি যাত্রার দ্বারা তো সেবা করেছ l যে সেবাই করেছ, সেই সেবার প্রত্যক্ষ ফলও অনুভব করেছ তোমরা l সেবার বিশেষ খুশি অনুভব করেছ, তাই না ! তোমরা পদযাত্রা তো করেছ, সবাই তোমাদের পদযাত্রী রূপে দেখেছে l এখন আধ্যাত্মিক যাত্রী রূপে তাদের দেখতে দাও l সেবার রূপে তো তারা দেখেছে কিন্তু এখন তাদের অনুভব হতে দাও যে তোমরা অলৌকিক যাত্রী, যারা এমন স্বতন্ত্র যাত্রার অনুভব করায় l নিষ্ঠার সাথে এই সেবা করে তোমরা যেমন সফলতা লাভ করেছ, ঠিক একইভাবে, আধ্যাত্মিক যাত্রায় সফল হতে হবে l তোমরা এতে অনেক পরিশ্রম করেছ, অনেক ভালো সেবা করেছ, তোমরা খুব ভালো জ্ঞান শুনিয়েছ এবং তারা অনুভব করেছে যে তোমাদের জীবন খুব ভালো, তাইতো হয়েছে ! যাই হোক, এখন এই জীবন তৈরিতে তাদের নিজেদের নিযুক্ত হতে দাও, তারা যেন এইরকম অনুভব করে যে এই জীবন ব্যতীত আর কোনও জীবন নেই l সুতরাং, আধ্যাত্মিক যাত্রার লক্ষ্য রেখে আধ্যাত্মিক যাত্রার অনুভব করাও l বুঝেছ কি করতে হবে ! চলতে-ফিরতে তারা যেন এটাই দেখে যে তোমরা সাধারণ নও, তোমরা আধ্যাত্মিক যাত্রী l অতএব, কি করতে হবে তোমাদের ! নিজেরাও যাত্রায় থাক, আর অন্যদেরও যাত্রার অনুভব করাও l তোমরা তাদের পদযাত্রার অনুভব করিয়েছ, এখন ফরিস্তাভাবের অনুভব করাও l তাদের এই অনুভব হতে দাও যে তোমরা এই ধরণীর বাসিন্দা নও, ফরিস্তা, আর ফরিস্তার পা কখনও ভূমিতে থাকে না l দিনের পর দিন তোমাদের উড়তি কলার দ্বারা অন্যদেরও ওড়াতে হবে l এখন সবাইকে ওড়ানোর সময় l এখন সাধারণভাবে হাঁটানোর সময় নয় l হাঁটতে সময় লাগে, কিন্তু উড়তে সময় লাগে না l নিজের উড়তি কলা দ্বারা অন্যদেরও ওড়াও l বুঝেছ ! তোমাদের দৃষ্টি এবং স্মৃতি দ্বারা সবাইকে সম্পন্ন বানিয়ে যাও l তাদের যেন মনে হয় যে তারা কিছু পেয়েছে যা দিয়ে তারা পরিপূর্ণ হয়েছে l খালি ছিল, কিন্তু এখন উচ্ছলিত l যেখানে প্রাপ্তি হয় সেখানে তারা সেকেন্ডে সমর্পিত হয়ে যায় l তোমাদের প্রাপ্তি হয়েছে, তবেই তো ত্যাগ করেছ, তাই না ! তোমাদের ভালো লেগেছে, অনুভব করেছ, তবেই ছেড়েছ, নয় কি ! এমনি এমনি তো আর ছেড়ে দাওনি ! এইভাবেই অন্যদেরও প্রাপ্তির অনুভব করাও l বুঝেছ ! আর তো সবই ভালো l সেবাতে যে ক'দিনই তোমরা অতিবাহিত করেছ, তা' নিজেদের জন্যও এবং অন্যদের জন্যও শ্রেষ্ঠ বানিয়েছ l তোমাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা ভালো ছিল ! রেজাল্ট ভালো ছিল, তাই না ? আধ্যাত্মিক যাত্রা যদি সবসময় হতে থাকে তবে সদাসর্বদা তোমরা সফলতাও লাভ করবে l এইরকম ভেবনা, পদযাত্রা সম্পূর্ণ করেছ তো সেবাও সম্পূৰ্ণ হয়েছে ! তারপরে যেমন ছিলে তেমন l না সেবার ক্ষেত্রে সদা সেবা ব্যতীত ব্রাহ্মণ থাকতে পারে না l শুধু সেবার পার্ট চেঞ্জ হয়েছে l সেবা তো শেষ পর্যন্ত করতে হবে l এইরকম সেবাধারী তো, নাকি দু'তিন মাসের সেবাধারী ! তোমরা সদা সেবাধারী, সুতরাং সদাসর্বদা উৎসাহ-উদ্দীপনা বজায় থাকতে দাও l আচ্ছা l ড্রামাতে যে পার্টই অর্পিত হয়, তা' বিশেষত্বে ভরা l তোমাদের মনোবল দ্বারা সহায়তার অনুভব করেছ l আচ্ছা l নিজের দ্বারা বাবাকে প্রত্যক্ষ করার শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প ছিল, কারণ যখন বাবাকে প্রত্যক্ষ করবে, তখন এই পুরানো দুনিয়ার সমাপ্তি হবে, আপন রাজ্য আসবে l বাবাকে প্রত্যক্ষ করা অর্থাৎ তোমাদের রাজ্য নিয়ে আসা l নিজেদের রাজ্য নিয়ে আসতে সবসময় তোমাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকে, তাই না ! বিশেষ প্রোগ্রামের জন্য যেমন তোমাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল, সেইরকমই এই সঙ্কল্পের জন্য সদা উদ্যম-উদ্দীপনা থাকতে দাও l বুঝেছ !

*পার্টির সাথে:-* তোমরা তো অনেক শুনেছ ! যা কিছু শুনেছ, এখন সেইসব বিষয় নিজেদের মধ্যে অন্তর্লীন করে নাও, কারণ যত অন্তর্লীন করতে পারবে বাবার সমান ততই শক্তিশালী হবে l তোমরা মাস্টার, তাই না ! সুতরাং বাবা যেমন সর্বশক্তিমান সেইরকম তোমরাও সবাই মাস্টার সর্বশক্তিমান অর্থাৎ যারা সর্বশক্তি নিজের মধ্যে অন্তর্লীন করে নেয়, তোমরা যে বাবা সমান হবে, তাই না ! বাবা আর বাচ্চাদের জীবনে কোনও প্রভেদ যেন প্রতীয়মান না হয় l যেমন ব্রহ্মাবাবার জীবন দেখেছ, ঠিক সেইভাবেই ব্রহ্মাবাবা আর বাচ্চারাও যেন দৃশ্যগোচর হয় l সাকার রূপে তো ব্রহ্মাবাবা কর্ম করে দেখানোর নিমিত্ত হয়েছেন, তাই না ! এইরকম সমান হওয়া অর্থাৎ সর্বশক্তিমান হওয়া l তাহলে কি সর্বশক্তি আছে তোমাদের ! তোমরা ধারণ করেছ, কিন্তু পার্সেন্টেজ আছে, যতটা তোমাদের প্রয়োজন ছিল ততটা নয় l তোমরা সম্পন্ন নও l তোমাদের সম্পন্ন হতে হবে, তাই না ? সুতরাং পার্সেন্টেজ বাড়াও l প্রয়োজনের সময় শক্তিসমূহকে কার্যে প্রয়োগ করা, এই আধারেই তোমরা নম্বর পাও l যদি প্রয়োজনের সময় শক্তি কার্যে প্রয়োগ না হয় তাহলে তোমরা কি বলবে ? থেকেও না থাকা - এটাই তো বলবে, কারণ প্রয়োজনে কাজে ব্যবহৃত হয়নি l সুতরাং, চেক কর সময় অনুসারে যে শক্তি আবশ্যক তা'কার্যে প্রয়োগ করতে পার কিনা l বিশ্বকে বাবা সমান মাস্টার সর্বশক্তিমান হওয়ার প্রত্যক্ষ রূপ তোমাদের দেখাতে হবে l শুধুমাত্র তখনই বিশ্ব স্বীকার করবে, হ্যাঁ ! সর্বশক্তিমান প্রত্যক্ষ রূপে প্রকাশিত হয়েছে l এটাই তো তোমাদের লক্ষ্য, তাই না ! এখন দেখব গোল্ডেন জুবিলিতে পৌঁছানো পর্যন্ত নম্বর কে নেয় ! আচ্ছা !

বরদান:-
বিশ্ব কল্যাণের ভাবনা দ্বারা সব আত্মার সেফটির প্ল্যান বানিয়ে প্রকৃত দয়াশীল ভব

বর্তমান সময়ে অনেক আত্মারা নিজেই নিজের অকল্যাণের নিমিত্ত হচ্ছে, তাদের প্রতি সহৃদয়তার সাথে কোনও প্ল্যান বানাও l কোনও আত্মার পার্ট দেখে স্বয়ং চঞ্চল হয়োনা, বরং তাদের সেফটির সাধন ভাবো, এমন ভেবোনা যে এইরকম তো হতেই থাকে, বৃক্ষ থেকে তো ঝরবেই l না ! যে বিঘ্ন উপস্থিত হয়েছে তা' শেষ কর l তোমাদের বিশ্ব - কল্যাণকারী বা বিঘ্ন বিনাশকের টাইটেল অনুযায়ী তোমাদের সঙ্কল্পে, বোলে এবং কর্মে দয়াশীল হয়ে বায়ুমন্ডল চেঞ্জ করতে সহযোগী হও l

স্লোগান:-
কর্মযোগী তারাই হতে পারে যারা তাদের বুদ্ধিতে অর্থাৎ তাদের সঙ্কল্পে অ্যাটেনশনের সতর্কতা বজায় রাখে l


অব্যক্ত স্থিতির অনুভ করার জন্য বিশেষ হোমওয়ার্ক
যদি কোনো রকম নিবিড় বন্ধন অথবা বোঝা থাকে তাহলে আত্মিক এক্সারসাইজ করো l এক মিনিটে কর্মযোগী হও, অর্থাৎ সাকার রূপধারী হয়ে সাকার সৃষ্টির ভূমিকা (পার্ট ) পালন কর, আর পরমুহূর্তে আকারী ফরিস্তা হয়ে আকারী বতনবাসী অব্যক্ত রূপের অনুভব কর, আবার এক মুহূর্তে নিরাকার হয়ে মূলবতনবাসীর অনুভব কর, এই এক্সারসাইজ দ্বারা হালকা হয়ে যাবে, নিবিড়তা শেষ হয়ে যাবে l