10.03.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
পদমর্যাদার ভিত (আধার) হলো পড়াশোনা, যারা পুরানো ভক্ত, তারা পড়াশোনাও ভালো ভাবে
করবে এবং ভালো (উচ্চ) পদের অধিকারীও হবে"
প্রশ্নঃ -
যারা বাবার
স্মরণে থাক, তাদের কেমন লক্ষণ (নিশানী) প্রতীয়মান হবে ?
উত্তরঃ -
স্মরণে থাকা বাচ্চাদের গুণ ভালো হবে। তারা পবিত্র হতে থাকবে। রয়্যালিটি (দৈবী-আভিজাত্য)
আসতে থাকবে। পরস্পর ক্ষীরখন্ড অর্থাৎ দুধ-চিনির ন্যায় মিলেমিশে মিষ্টি হয়ে থাকবে।
অপরকে (দোষ) না দেখে, নিজেকে দেখবে। তাদের এ'কথা বুদ্ধিতে থাকে যে -- যে (এমন) করবে,
সেই পাবে।
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চাদের
বোঝানো হয়েছে যে, ভারতের যে আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম, তার শাস্ত্র হলো গীতা। এই
গীতার গায়ন (শুনিয়েছে) কে করেছে ? তা কেউ জানে না। এ হলো জ্ঞানের কথা। বাকি এই হোলি
ইত্যাদি আমাদের নিজস্ব কোনো উৎসব নয়, এ হলো ভক্তিমার্গের উৎসব। আমাদের উৎসব হলো
কেবল এক ত্রিমূর্তি শিব-জয়ন্তী। ব্যস্, শুধু শিব-জয়ন্তী কখনো বলা উচিত নয়।
ত্রিমূর্তি শব্দটি না প্রয়োগ করলে মানুষ বুঝবে না। যেমন, ত্রিমূর্তির চিত্র রয়েছে,
নীচে লেখা উচিত - দৈবী-স্বরাজ্য তোমাদের জন্মসিদ্ধ অধিকার। ভগবান শিব তো বাবাও, তাই
না! অবশ্যই আসেন, এসে স্বর্গের মালিক বানিয়ে দেন। স্বর্গের মালিক হয়েছোই রাজযোগ
শেখার কারণে। চিত্রের মধ্যে তো অনেক জ্ঞান রয়েছে। চিত্র এমনভাবে বানানো উচিত, যা
দেখে মানুষ আশ্চর্য হয়ে যায়। তাতেও যারা অনেক ভক্তি করেছে তারাই সঠিকভাবে জ্ঞানকে
গ্রহণ করতে পারবে। যারা ভক্তি কম করেছে, তারা জ্ঞানও কম গ্রহণ করবে, তাই তাদের
পদপ্রাপ্তিও কম হবে। দাস-দাসীও তো নম্বরের ক্রমানুসারেই হয়, তাই না! সবকিছুর
আধার(ভিত) হলো পড়া। তোমাদের মধ্যে অনেক অল্পসংখ্যকই রয়েছে, যারা ভালভাবে যুক্তি
সহকারে কথা বলতে পারে। ভালো ভালো বাচ্চাদের অ্যাক্টিভিটিও (কাজকর্ম) ভাল হবে। গুণও
সুন্দর হওয়া উচিত। যত বাবার স্মরণে থাকবে, ততই পবিত্র হতে থাকবে এবং (দৈব)
আভিজাত্যও আসতে থাকবে। কোথাও-কোথাও শূদ্রদের আচার-আচরণও অনেক ভালো হয় আর এখানে
ব্রাহ্মণ বাচ্চাদের আচার-আচরণ এমন যে সেকথা আর জিজ্ঞাসা কোরো না। তাই তারাও (অজ্ঞানীরা)
বলে যে, এদের ঈশ্বর পড়ান ? তাই বাচ্চাদের আচার-আচরণ এমন হওয়া উচিত নয়। অতি মিষ্টি
ক্ষীরখন্ড অর্থাৎ মিলেমিশে ক্ষীরের মতন হওয়া উচিত। যে এমন করবে, সে তেমনই পাবে। না
করলে, পাবে না। বাবা ভালো ভাবেই বোঝাতে থাকেন। সর্বপ্রথমে অসীম জগতের পিতার পরিচয়
দিতে থাকো। ত্রিমূর্তির চিত্র তো অতি সুন্দর -- স্বর্গ আর নরক দুই পিঠে রয়েছে। (সৃষ্টি)
গোলকের চিত্রও পরিস্কারভাবে রয়েছে। যেকোনো ধর্মাবলম্বীকেই তোমরা গোলোক বা
কল্পবৃক্ষের সাহায্যে বোঝাতে পারো যে -- এই হিসেবে তো তোমরা স্বর্গ অর্থাৎ নতুন
দুনিয়ায় আসতে পারবে না। যে ধর্ম সর্বাপেক্ষা উচ্চ ছিল, সর্বাপেক্ষা সমৃদ্ধশালী ছিল,
সে-ই সর্বাপেক্ষা দরিদ্র হয়ে গেছে। যে সর্বপ্রথমে ছিল, সংখ্যাও তার অধিক হওয়া উচিত।
কিন্তু হিন্দুরা অধিকমাত্রায় অন্যান্য ধর্মে পরিবর্তিত হয়ে গেছে। নিজেদের ধর্মকে না
জানার কারণে অন্যান্য ধর্মে কনভার্ট হয়ে গেছে বা নিজেদের হিন্দু বলে। নিজেদের
ধর্মকেও জানে না। ঈশ্বরকে অনেক ডাকে -- শান্তি দাও, কিন্তু শান্তির অর্থই জানে না।
একে অপরকে শান্তি পুরস্কার বিতরণ করতে থাকে। এখানে বাবা তোমাদের অর্থাৎ বিশ্বে
শান্তি স্থাপনের নিমিত্ত বাচ্চাদের বিশ্বের রাজত্বের পুরস্কার বিতরণ করেন। এই
পুরস্কারও পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে প্রাপ্ত হয়। বিতরণ করেন পিতা পরমেশ্বর।
পুরস্কার কত বড় -- বিশ্বের সূর্যবংশীয় রাজত্ব। বাচ্চারা, এখন তোমাদের বুদ্ধিতে
সমগ্র বিশ্বের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফী, বর্ণ ইত্যাদি সবকিছুই রয়েছে। বিশ্বের রাজত্ব নিতে
হলে কিছু পরিশ্রমও করতে হবে। পয়েন্ট তো খুবই সহজ। টিচার যা কাজ দেয় তা করে দেখানো
উচিত। যাতে বাবা দেখেন যে, কার মধ্যে সম্পূর্ণ জ্ঞান রয়েছে। অনেক বাচ্চারা তো
মুরলীর উপর ধ্যানও দেয় না। রেগুলার মুরলী পড়ে না। যে মুরলী পড়ে না, সে কীভাবে
অন্যের কল্যাণ করবে? অনেক বাচ্চারা আছে, যারা অপরের কল্যাণ করে না। না নিজের (কল্যাণ)
করে, না অপরের করে তাই অশ্বারোহী, পেয়াদা ইত্যাদি বলা হয়ে থাকে। মহারথী অতি অল্পই
রয়েছে। নিজেরাও বুঝতে পারে -- কে কে মহারথী ? বলে যে -- গুলজার দাদীকে, কুমারকা
দাদীকে (প্রকাশমণি), মনোহর দাদীকে পাঠাও..... কারণ নিজে তো অশ্বারোহী। আর ওনারা তো
মহারথী। বাবা সব বাচ্চাদেরকেই ভালো ভাবে বুঝতে পারেন। কারোর উপর আবার গ্রহের দশাও
বসে থাকে, তাই না। কখনো ভালো ভালো বাচ্চাদের কাছেও মায়ার তুফান এলে, তারা তালহীন হয়ে
পড়ে। জ্ঞানের দিকে অ্যাটেনশনই যায় না। প্রত্যেকের সার্ভিসের মাধ্যমে বাবা জানতে তো
পারেন, তাই না! সেবাধারী নিজের সম্পূর্ণ সমাচার বাবাকে দিতে থাকবে।
বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, গীতার ভগবান আমাদের বিশ্বের মালিক বানাচ্ছেন। অনেকেই আছে
যারা গীতাও কণ্ঠস্থ করে নেয়, আর হাজার-হাজার অর্থ উপার্জন করে। তোমরা হলে ব্রাহ্মণ
সম্প্রদায়, যারা পুনরায় দৈবী সম্প্রদায়ে পরিনত হও। সকলেই নিজেকে ঈশ্বরের সন্তান বলে,
পুনরায় বলে দেয় যে - আমরা সকলেই ঈশ্বর। যে যেমন পারে তেমনই বলতে থাকে। ভক্তিমার্গে
মানুষের হাল(অবস্থা) কেমন হয়ে গেছে। এই দুনিয়াই লৌহযুগীয়(আয়রণ-এজেড) অপবিত্র। এই
চিত্রের মাধ্যমে ভালভাবে বোঝাতে পারবে। সঙ্গে দৈব-গুণও চাই। অন্তরে-বাইরে সততা চাই।
আত্মাই অসত্য হয়ে গেছে, একেই পুনরায় সত্যপিতা সৎ বানান। বাবা-ই এসে স্বর্গের মালিক
বানান। দৈবগুণ ধারন করান। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, আমরা এমন(লক্ষ্মী-নারায়ণ)
গুণবান হতে চলেছি। নিজেকে যাচাই করতে থাকো যে -- আমাদের মধ্যে কোন আসুরী গুণ নেই
তো! চলতে-চলতে মায়ার থাপ্পড় এমনভাবে পড়ে যে তোমরা একেবারে অধঃপতনে যাও।
তোমাদের জন্য এই জ্ঞান আর বিজ্ঞানই হলো হোলি-ধুরিয়া অর্থাৎ বিকার-রূপী অসুরের বিনাশ
-- ভগবানের সঙ্গের রং-এ নিজেকে রাঙিয়ে নেওয়া। ওরাও (অজ্ঞানীরা)
হোলি-ধুরিয়া(হোলিকাদহন-দোল) পালন করে, কিন্তু এর অর্থ কি, তা কেউই জানে না। বাস্তবে
এ হলো জ্ঞান আর বিজ্ঞান, যার দ্বারা তোমরা নিজেদের অতি উচ্চে নিয়ে যাও। ওরা তো
কি-কি সব করে, ধূলো(মাটি) দেয় কারণ এ হলো চরমপর্যায়ের নরক। নতুন দুনিয়ার স্থাপনা
আর পুরানো দুনিয়ার বিনাশের কর্তব্য বা পার্ট চলছে। তোমাদের মতন ঈশ্বরীয় সন্তানদেরও
মায়া একদম এমন ঘুষি মারে যে, সজোরে গিয়ে পাঁকে পড়ে যায়। পুনরায় এর থেকে বাইরে
বেরোনো বড় মুশকিল হয়ে যায়, এরমধ্যে আশীর্ব্বাদ ইত্যাদির কোনো কথাই থাকে না। তাই
এইদিকে মুশকিল বাড়তে পারে, সেইজন্য অত্যন্ত সাবধান হওয়া উচিত। মায়ার আঘাত থেকে
সুরক্ষিত থাকার জন্য কখনো দেহ-অভিমানে আবদ্ধ হয়ে যেয়ো না। সর্বদা সচেতন হয়ে থাকো,
সকলেই হলে ভাই-বোন। বাবা যা শেখান, তাই-ই বোনেরা শেখায়। মহিমা তো বাবার-ই, বোনেদের
নয়। ব্রহ্মারও মহিমা নয়। উনিও পুরুষার্থের দ্বারা শিখেছেন। পুরুষার্থ ভাল করেছে
অর্থাৎ স্ব-কল্যাণ করেছে। আমাদেরকেও শেখান তাহলে আমরাও নিজেদের কল্যাণ করি।
আজ হোলি, হোলির জ্ঞানও এখনই শোনাতে থাকেন। জ্ঞান আর বিজ্ঞান। পড়াকে নলেজ বলা হয়।
বিজ্ঞান কি জিনিস, তা কেউই জানেনা। বিজ্ঞান হলো জ্ঞানেরও ঊর্ধ্বে। জ্ঞান তোমরা এখানে
পাও, যার দ্বারা তোমরা প্রালব্ধ(ফল) পাও। এছাড়া ওটা হলো শান্তিধাম। এখানে নিজ ভূমিকা
পালন করতে-করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তখন আবার শান্তিধামে যেতে চায়। তোমাদের বুদ্ধিতে
এখন এই চক্রের জ্ঞান রয়েছে। এখন আমরা স্বর্গে যাবো পুনরায় ৮৪ জন্ম নিতে-নিতে নরকে
আসবো। পুনরায় তেমনই অবস্থা হবে, এমন চলতেই থাকবে। এর থেকে কেউই বেরিয়ে যেতে পারে
না। কেউ বলে, এই ড্রামা কেন তৈরী হয়েছে ? আরে, এ তো নতুন দুনিয়া আর পুরানো দুনিয়ার
খেলা। এই ড্রামা অনাদিকাল থেকে নির্ধারিত হয়ে রয়েছে। কল্প বৃক্ষের (ঝাড়) মাধ্যমে
বোঝানো অত্যন্ত ভালো । সর্বাপেক্ষা প্রথম কথাটিই হলো, বাবাকে স্মরণ করো, তাহলেই
পবিত্র হয়ে যাবে। ভবিষ্যতে জানতে পারবে যে, কে-কে এই কুলের যারা অন্যান্য ধর্মে
পরিবর্তিত হয়ে গেছে, তারাও বেরিয়ে আসবে। যখন সকলেই আসবে তখন মানুষ আশ্চর্য হয়ে যাবে।
সকলকে এটাই বলতে হবে যে, দেহ-অভিমান ছেড়ে দেহী-অভিমানী হও। তোমাদের কাছে পড়াশোনাই
হলো মুখ্য উৎসব, যার মাধ্যমে তোমাদের কত উপার্জন হয়। ওরা(অজ্ঞানী) তো এই উৎসব পালন
করার জন্য কত অর্থাদি নষ্ট করে, কত ঝগড়াদি হয়। পঞ্চায়েতী রাজ্যে অনবরত কত ঝগড়া হয়,
কেউ ঘুষ দিয়ে মারারও চেষ্টা করে। এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে। বাচ্চারা জানে যে, সত্যযুগে
এমন কোন উপদ্রবই হয় না। রাবণ-রাজ্যে অনেক উপদ্রব, এখন তমোপ্রধান, তাই না। পরস্পরের
মধ্যে মতের মিল না হওয়ার কারণে কত ঝগড়া হয় তাই বাবা বোঝাতে থাকেন, এই পুরানো
দুনিয়াকে ভুলে একান্তে(একাকী) চলে যাও, ঘরকে স্মরণ করো। নিজের সুখধামকে স্মরণ করো,
কারোর সঙ্গে অধিক কথাও বোলোনা, এতে ক্ষতি হয়ে যায়। অতি মিষ্টি, শান্তভাবে,
প্রেমপূর্বক কথা বলা ভাল। বেশী (কথা) বলা ভাল নয়। শান্তিপূর্বক থাকাই ভাল। বাচ্চারা,
তোমরা তো শান্তির দ্বারা বিজয়প্রাপ্ত করো। একমাত্র বাবা ব্যতীত আর কারোর সঙ্গেই
প্রেমের বন্ধন রাখা উচিত নয়। বাবার কাছ থেকে যতটা সম্পত্তি নিতে চাও তা নিয়ে নাও।
লৌকিক পিতার সম্পত্তির ক্ষেত্রে তো কত ঝগড়া হয়ে যায়, তাই না! এরমধ্যে কোন
খিট-খিট(ঝগড়া) নেই।নিজের পড়ার মাধ্যমে যত চাও তত নিতে পারো। *আচ্ছা।*
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
সত্য-পিতা আমাদের সৎ বানাতে এসেছেন তাই সততার সঙ্গে চলতে হবে। নিজেকে যাচাই করতে হবে
-- আমাদের মধ্যে কোনো আসুরীয়-গুণ নেই তো ? আমরা বেশী কথা বলি না তো ? অত্যন্ত মিষ্ট
হয়ে শান্তি এবং প্রেমপূর্বক কথা বলতে হবে।
২ ) সম্পূর্ণ ধ্যান মুরলীর উপর দিতে হবে। প্রত্যহ মুরলী পড়তে হবে। নিজের এবং অপরের
কল্যাণ করতে হবে। টিচার যে কাজ দেন তা করে দেখাতে হবে।
বরদান:-
অবিনাশী আধ্যাত্মিক রঙের সত্যিকারের হোলির দ্বারা বাবা সম স্থিতির অনুভাবী ভব
ব্যাখা :- তোমরা হলে
পরমাত্ম-রঙে রাঙানো পবিত্র(হোলি) আত্মা। সঙ্গমযুগ হলো হোলি অর্থাৎ পবিত্র জীবনের
যুগ। যখন অবিনাশী আধ্যাত্মিক রঙ লেগে যায় তখন সদাকালের জন্য বাবার সমান হয়ে যায়।
তাই তোমাদের হোলি হলো সঙ্গের রঙ দ্বারা বাবার মতন হওয়া। রঙ যেন এমন পাকা হয় যার
দ্বারা অন্যদেরও (বাবার) সমান করে দিতে পারো। প্রত্যেক আত্মার উপর অবিনাশী জ্ঞানের
রঙ, স্মরণের রঙ, অনেক শক্তির রঙ, গুণের রঙ, শ্রেষ্ঠ বৃত্তি-দৃষ্টি, শুভ ভাবনা, শুভ
কামনার আধ্যাত্মিক(রুহানী) রঙ লাগাও।
স্লোগান:-
দৃষ্টিকে অলৌকিক, মনকে শীতল, বুদ্ধিকে ক্ষমাপূর্ণ এবং মুখকে মধুর করো।
মাতেশ্বরীজীর মহাবাক্য
১) "গুপ্ত বন্ধনযুক্ত (বাঁধেলী) গোপিকাদের গায়ন"
গীত :-
দর্শন বিনা প্রেম করি, গৃহে বসে স্মরণ করি..।
এখন এই সংগীত হলো, বন্ধনে আবদ্ধ তথাপি আনন্দমগ্ন কোনো গোপিকার গাওয়া গান। এ হলো
প্রতি কল্পের বিচিত্র খেলা। বিনা দর্শনেই প্রেম হয়, দুর্ভাগা দুনিয়া কি জানে যে,
কল্প-পূর্বের ভূমিকাই(পার্ট) পুনরায় হুবহু পুনরাবৃত হচ্ছে। অবশ্যই সেই গোপিকা
ঘর-সংসার পরিত্যাগ করে নি কিন্তু স্মরণের মাধ্যমে কর্মবন্ধন মিটিয়ে(চুক্ত) ফেলছে।
তাই সে খুশীতে মত্ত হয়ে দুলে-দুলে গান করছে। বাস্তবে ঘর পরিত্যাগের কোনো কথাই নেই।
ঘরে বসে বিনা দর্শনেই সেই সুখ অনুভব করে সেবা করতে হবে। কীভাবে সেবা করবো ? পবিত্র
হয়ে (অপরকে) পবিত্র করার। তোমরা এখন তৃতীয় নেত্র পেয়েছ, আদি থেকে নিয়ে অন্ত
পর্যন্তের বীজ এবং বৃক্ষের রহস্য তোমাদের নজরে রয়েছে। তাই এই জীবনের মহিমা আছে, এই
জ্ঞানের মাধ্যমে ২১ জন্মের জন্য সৌভাগ্য গঠিত হচ্ছে। এর মাঝে যদি কোনো প্রকারের
লোকলজ্জা, বিকারী কুলের মান-মর্যাদা থাকে, তাহলে সেবা করতে পারবে না। এ হলো নিজের
দুর্বলতা। অনেকে ভাবে এই ব্রহ্মাকুমারীরা ঘর ভাঙতে এসেছে, কিন্তু এখানে ঘর ভাঙার
কোনো কথাই নেই। ঘরে বসেই পবিত্র হতে হবে আর সার্ভিস করতে হবে, এতে কোনোও কষ্ট নেই।
পবিত্র হবে, তবেই পবিত্র দুনিয়ায় যাওয়ার অধিকারী হবে। বাকি যারা যাবে না তারা
কল্পপূর্বের মতোই শত্রুর ভূমিকা পালন করবে, এতে কারোর দোষ নেই। যেমন আমরা পরমাত্মার
কার্যকে জানি, তেমনই ড্রামার অন্তর্গত প্রত্যেকের ভূমিকাকেই জেনে গেছি। তাই এতে ঘৃণা
আসতে পারে না। এমন তীব্র পুরুষার্থী গোপিকারা রেসের মাধ্যমে বিজয়মালায় আসতে পারে।
আচ্ছা। ওম্ শান্তি।