24.03.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
আত্মিক সেবা করে নিজের এবং অন্যের কল্যাণ করো, বাবার সঙ্গে প্রকৃত হৃদয়ের সম্পর্ক
রাখো, তাহলে বাবারও হৃদয়ে বিরাজ করতে পারবে"
প্রশ্নঃ -
দেহী - অভিমানী
হওয়ার পরিশ্রম কারা করতে পারে ? দেহী - অভিমানীর নিদর্শন শোনাও ?
উত্তরঃ -
যার পড়ার প্রতি এবং বাবার প্রতি অটুট প্রেম আছে, সেই দেহী - অভিমানী হওয়ার পরিশ্রম
করতে পারে । সে শীতল হবে, কারোর সঙ্গেই অধিক কথা বলবে না, তার বাবার প্রতি প্রেম
থাকবে, তার চলন রাজকীয় হবে । তার এই নেশা থাকে যে, ভগবান আমাকে পড়ান, আমি তাঁর
সন্তান । সে সুখদায়ী হবে । প্রতি পদে শ্রীমত অনুসরণ করবে ।
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চাদের সেবা
সমাচারও শোনা চাই, আবার মুখ্য - মুখ্য যে সেবা পরায়ণ মহারথী, তাঁদের রায়ও শোনা চাই
। বাবা জানেন যে, সেবা পরায়ণ বাচ্চাদেরই বিচার সাগর মন্থন চলবে । মেলা বা
প্রদর্শনীর উদ্বোধন কাকে দিয়ে করাবে ? কি কি পয়েন্টস শোনানোর প্রয়োজন । শঙ্করাচার্য
আদি যদি তোমাদের এই কথা বুঝতে পারে তাহলে বলবেন, এখানকার জ্ঞান তো অনেক উঁচু । এদের
যিনি পড়ান, তিনি খুব তীক্ষ্ণ মনে হয় । ভগবান যে পড়ান, তারা তো মানবে না । তাই
প্রদর্শনী আদির উদ্বোধন করতে যারা আসেন, তাদের কি কি বোঝাও, সেই খবর সবাইকে বলা
উচিত, অথবা টেপে ছোটো করে ভরে রাখা উচিত । গঙ্গা যেমন শঙ্করাচার্যকে বুঝিয়েছেন, এমন
সেবাপরায়ণ বাচ্চারা বাবার হৃদয়ে বিরাজ করে । যদিও স্থূল সেবা আছে, তবুও বাবার
মনোযোগ আত্মিক সেবার প্রতিই যাবে, যেই সেবা অনেকের কল্যাণ করে । যদিও কল্যাণ তো
প্রতি বিষয়েই আছে । যদি যোগযুক্ত হয়ে বানানো যায়, তাহলে ব্রহ্মা ভোজন বানানোতেও
কল্যাণ আছে । এমন যোগযুক্ত রন্ধনকারী যদি থাকে তাহলে ভাণ্ডারাতে অনেক শান্তি থাকে ।
স্মরণের যাত্রায় থাকে । কেউ যদি আসে তাকে চট করে বোঝাতে পারে । বাবা বুঝতে পারেন n-
সেবাপরায়ণ বাচ্চা কারা আছে, যারা অন্যদেরও বোঝাতে পারে, তাদেরই বিশেষ করে এই সেবার
জন্য ডাকেন । তাই সেবা যারা করে তারাই বাবার হৃদয়ে বিরাজ করতে পারে । বাবার
সম্পূর্ণ মনোযোগও সেবাপরায়ণ বাচ্চাদের প্রতিই যায় । কেউ কেউ তো সম্মুখে মুরলী
শুনেও কিছুই বুঝতে পারে না । তাদের ধারণাই হয় না কারণ অর্ধেক কল্পের দেহ - বোধের
রোগ অতি দৃঢ়। খুব অল্পই তা দূর করার জন্য খুব ভালোভাবে পুরুষার্থ করে । অনেকেই দেহী
- অভিমানী হওয়ার পরিশ্রম পর্যন্ত করে না । বাবা বোঝান -- বাচ্চারা, দেহী - অভিমানী
হওয়ায় অনেক পরিশ্রম । কেউ যদি চার্টও পাঠায়, তাও তা সম্পূর্ণ নয় । তবুও কিছু
মনোযোগ তো থাকে । দেহী - অভিমানী হওয়ার প্রতি মনোযোগ খুব কমেরই থাকে । দেহী -
অভিমানী খুবই শীতল হবে । তারা এতো বেশী কথা বলবে না । তাদের বাবার প্রতি এতো প্রেম
থাকবে, যে একথা জিজ্ঞেসই কোরো না । আত্মার এতো খুশী হওয়া উচিত যে কখনো কোনো মানুষের
তা হবে না । এই লক্ষ্মী - নারায়ণের তো জ্ঞান থাকবেই না । জ্ঞান তো তোমাদের মতো
বাচ্চাদেরই আছে, যাদের ভগবান পড়ান । ভগবান আমাদের পড়ান, এই নেশাও তোমাদের মধ্যে এক
বা দুজনের থাকে । যারা স্মরণে থাকে, তাদের আচার আচরণ খুব সুন্দর রাজকীয় হবে । আমরা
ভগবানের সন্তান, তাই এমন মহিমাও আছে -- অতীন্দ্রিয় সুখের কথা গোপ - গোপিনীদের
জিজ্ঞেস করো, যারা দেহী - অভিমানী হয়ে বাবাকে স্মরণ করে । যারা স্মরণ করে না তাই
শিববাবার হৃদয়েও বিরাজ করতে পারে না । শিববাবার হৃদয়ে বিরাজ করতে না পারলে দাদার
হৃদয়েও বিরাজ করতে পারবে না । ওনার হৃদয়ে বিরাজ করলে অবশ্যই এনার হৃদয়েও বিরাজ করবে
। বাবা প্রত্যেকের কথাই জানতে পারেন । বাচ্চারা নিজেরাও বুঝতে পারে যে, তারা কি সেবা
করছে । এই সেবার শখ বাচ্চাদের মধ্যে অনেক থাকা চাই । কারোর আবার সেন্টার করার শখও
থাকে । কারোর আবার চিত্র বানানোর শখ থাকে । বাবাও বলেন - আমার জ্ঞানী আত্মা বাচ্চা
প্রিয়, যে বাবার স্মরণেও থাকে আবার সেবা করার জন্যও অস্থির হয় । কেউ তো আবার একদমই
সেবা করে না, বাবার কথাও মানে না । বাবা তো জানেন যে - কাকে কোথায় সেবা করতে হবে,
কিন্তু দেহ - অভিমানের কারণে নিজের মতে চলে তাই বাবার হৃদয়ে বিরাজ করতে পারে না ।
অজ্ঞান কালেও কোনো কোনো বাচ্চার খারাপ চলন হয়, তো তারাও বাবার হৃদয়ে বিরাজ করতে
পারে না । তাদের কুপুত্র মনে করা হয় । সঙ্গদোষে তারা খারাপ হয়ে যায় । এখানেও যারা
সেবা করে তারাই বাবার কাছে প্রিয় হয় । আর যারা সেবা করে না, তাদের বাবা ভালোই
বাসেন না । মনে করা হয়, ভাগ্য অনুসারেই তারা পড়বে, তবুও ভালোবাসা কাদের উপর থাকবে
? এই তো নিয়ম, তাই না । ভালো বাচ্চাদের খুব ভালোভাবে ডাকবে । বলবে, তোমরা খুবই
সুখদায়ী, তোমরা পিতার স্নেহী । যারা বাবাকে স্মরণই করবে না তাদের পিতা স্নেহী বলাই
হবে না । দাদা স্নেহী হতে হবে না, স্নেহী হতে হবে বাবার । যে বাবার স্নেহী হবে, তার
কথাবার্তা অনেক মধুর এবং সুন্দর থাকবে । মন এমন বলে -- যদিও সময় আছে, তবুও এই
শরীরের উপর কোনো ভরসাই নেই । বসে বসেই দুর্ঘটনা হয়ে যায় । কারোর আবার হার্ট ফেলও
হয়ে যায় । কারোর রোগ হয়ে যায়, হঠাৎ মৃত্যু এসে যায় তো, তাই এই শ্বাসের উপর কোনো
ভরসা নেই । প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও এখন হয়ে চলেছে । অসময়ে বৃষ্টি হলেও ক্ষতি হয়ে যায়
। এই দুনিয়াই হলো দুঃখ দেওয়ার দুনিয়া । বাবাও এমন সময়ই আসেন যখন অনেক দুঃখ, এখানে
রক্তের নদীও বইবে । এই চেষ্টা করা উচিত যে - আমরা পুরুষার্থ করে ২১ জন্মের জন্য
কল্যাণ তো করে নিই । অনেকের মধ্যেই নিজের কল্যাণ করার ইচ্ছা দেখা যায় না ।
বাবা এখানে বসেও যখন মুরলী চালান তখনও বুদ্ধি সেবা পরায়ণ বাচ্চাদের প্রতিই থাকে ।
এখন শঙ্করাচার্যকে প্রদর্শনীতে ডাকা হয়েছে, এরা কোথায় না যায় । এরা অনেক অহংকারী'
তাই এদের সম্মানও করতে হয় । উপরে সিংহাসনে বসাতে হয় । এমন নয় যে, সাথে বসতে পারে
। তা নয়, এদের অনেক সম্মান করা চাই । নির্মাণ হয়েই এরা রুপোর সিংহাসন ত্যাগ করতে
পারবে । বাবাকে দেখো, কতো সাধারণ থাকেন । কেউই জানতে পারে না । বাচ্চারা, তোমাদের
মধ্যেও খুব সামান্যই জানে । বাবা কতো নিরহংকারী । এ তো বাবা আর বাচ্চাদের সম্বন্ধ,
তাই না । লৌকিক বাবা যেমন বাচ্চাদের সাথে থাকে, তাদের নিজের হাতে খাওয়ায়, ইনি হলেন
অসীম জগতের পিতা । সন্ন্যাসীরা কিন্তু বাবার এই প্রেম পান না । বাচ্চারা, তোমরা জানো
যে, কল্পে - কল্পে আমরা বাবার ভালোবাসা পাই । বাবা তোমাদের ফুলে পরিণত করার জন্য
অনেক পরিশ্রম করেন, কিন্তু এই নাটকের নিয়ম অনুসারে সবাই তো আর ফুলে পরিণত হয় না ।
আজ খুবই ভালো থাকে, কাল আবার বিকারী হয়ে যায় । বাবা বলবেন, ভাগ্যে না থাকলে আর কি
করবে ? অনেকের চলনই খুব খারাপ হয়ে যায় । আজ্ঞার উল্লঙ্ঘন করে ফেলে । ঈশ্বরের মতে
না চললে তাদের কি পরিণাম হবে ! উঁচুর থেকে উঁচু হলেন বাবা, আর তো কেউই নেই । এরপর
যখন দেবতাদের চিত্র দেখবে, তখন দেখবে এই লক্ষ্মী - নারায়ণ হলেন উঁচুর থেকেও উঁচু ।
মানুষ কিন্তু এও জানে না যে, কে এঁদের এমন বানিয়েছেন । বাচ্চারা, বাবা তোমাদের বসে
এই রচয়িতা এবং রচনার জ্ঞান খুব ভালোভাবে বোঝান । তোমাদের তো তোমাদের নিজের
শান্তিধাম এবং সুখধামই স্মরণে আসে । যারা সেবা করে, তাদের নামও স্মৃতিতে আসে । তাহলে
অবশ্যই যারা আজ্ঞাকারী বাচ্চা হবে, তাদের প্রতিই মন যাবে । এই অসীম জগতের বাবা
একবারই আসেন । আর লৌকিক বাবা তো জন্ম - জন্মান্তর ধরেই মেলে । সত্যযুগেও লৌকিক বাবা
মেলে, কিন্তু সেখানে এই বাবাকে পাওয়া যায় না । এখনকার পড়া দিয়েই তোমরা ওখানে পদ
পাও । বাচ্চারা, তোমরা একথাও জানো যে, বাবার কাছে আমরা নতুন দুনিয়ার জন্য পাঠ গ্রহণ
করছি । এই কথা বুদ্ধিতে স্মরণে থাকা চাই । এ খুবই সহজ । মনে করো, বাবা খেলছেন, কেউ
যদি সেখানে অনায়াসে চলেও আসে, তখন বাবা চট করে সেখানেই তাকে জ্ঞান দান করতে লেগে
যাবেন । তোমরা অসীম জগতের পিতাকে জানো কি ? বাবা এসেছেন পুরানো দুনিয়াকে নতুন করার
জন্য । তিনি রাজযোগ শেখান । এই ভারতবাসীদেরই তা শেখাতে হবে । এই ভারতই একদিন স্বর্গ
ছিলো । যেখানে এই দেবী - দেবতাদের রাজ্য ছিলো । এখন তো তা নরক । এই নরক থেকে বাবাই
আবার স্বর্গ বানাবেন । তোমরা এমন - এমন মুখ্য কথা মনে রেখে, যে কেউই আসুক না কেন,
তাদের বসে বোঝাও । তাহলে কতো খুশী হয়ে যাবে । তোমরা কেবল বলো, বাবা এসেছেন । এ হলো
সেই মহাভারতের লড়াই, যার মহিমা গীতাতে করা হয়েছে । গীতার ভগবান এসছিলেন, তিনি গীতা
শুনিয়েছিলেন । কিসের জন্য ? মানুষকে দেবতা বানানোর জন্য । বাবা কেবল বলেন, আমাকে আর
আমার অবিনাশী উত্তরাধিকারকে স্মরণ করো । এ হলো দুঃখধাম । এতটাও যদি বুদ্ধিতে স্মরণ
থাকে তাহলেও খুশী থাকবে । আমি আত্মা বাবার সঙ্গে শান্তিধামে যাবো । তারপর ওখান থেকে
প্রথম দিকে অভিনয় করতে আসবো সুখধামে । কলেজে যেমন পড়ে, তো মনে করে, আমরা এই এই পড়ি,
তারপর এই হবো । ব্যরিস্টার হবো, বাপুলিশ সুপারিনটেণ্ডেট হবো, এতো অর্থ উপার্জন করবো
। খুশীর পারদ চড়ে থাকবে । বাচ্চারা, তোমাদেরও এমন খুশীতে থাকা চাই । আমরা অসীম
জগতের পিতার কাছ থেকে এমন অবিনাশী উত্তরাধিকার পাই, তারপর আমরা স্বর্গে নিজেদের মহল
বানাবো । সারাদিন বুদ্ধিতে যদি এই চিন্তন থাকে, তাহলে খুশীতে থাকবে । নিজের এবং
অন্যদেরও কল্যাণ করবে । যেই বাচ্চাদের কাছে জ্ঞান ধন আছে, তাদের কর্তব্য হলো দান করা
। যদি ধন থাকে অথচ দান না করে, তাদের অমানুষ বলা হয় । তাদের কাছে ধন থেকেও যেন নেই
। ধন থাকলে অবশ্যই দান করো । খুব ভালো ভালো মহারথী বাচ্চা যারা আছে, তারা সর্বদা
বাবার হৃদয়ে বিরাজ করেন । কারোর কারোর জন্য মনে হয় --এ হয়তো নেমেই যাবে ।
পরিস্থিতিই এমন হয় । দেহের অহংকার অত্যধিক । যে কোনো সময় বাবার হাত ছেড়ে দেবে আর
নিজের ঘরে ফিরে এসে থাকবে । যদিও কেউ কেউ খুবই ভালোভাবে মুরলী পড়ে কিন্তু দেহের
অহংকার অনেক, বাবা যদি অল্প সাবধানী দেয়, তখনই ভেঙ্গে পড়ে । না হলে এমন গায়ন আছে --
ভালোবাসো অথবা ত্যাগ করো -- এখানে বাবা যদি সঠিক কথাও বলেন, তাও রাগ হয়ে যায় ।
এমন - এমন বাচ্চাও আছে, কেউ কেউ তো অন্তরে অনেক ধন্যবাদ জানায়, আবার কেউ আবার জ্বলে
মরে । মায়াতে দেহ - অহংকার অনেক । এমন অনেক বাচ্চা আছে যারা মুরলী শোনেও না, আর কেউ
কেউ তো মুরলী ছাড়া থাকতেও পারে না । মুরলী না পড়লে সে তার নিজের জেদ, মনে করে,
আমাদের মধ্যে তো জ্ঞান অনেক, অথচ কিছুই নেই ।
তাই যেখানে শঙ্করাচার্য আদিরা প্রদর্শনীতে আসে, যেখানে ভালো সেবা হয়, সেই খবর
সবাইকে পাঠানো উচিত তাহলে সবাই জানতে পারবে, কিভাবে সেবা হলো, তখন তারাও শিখতে পারবে
। এমন সেবার জন্য যাদের খেয়াল হয়, বাবা তাদেরই সেবা পরায়ণ মনে করবেন । সেবাতে
কখনোই পরিশ্রান্ত হওয়া উচিত নয় । এতে তো অনেকেরই কল্যাণ করতে হবে, তাই না । বাবার
তো এই উদ্দেশ্যই আছে যে, সবাই যেন এই জ্ঞান পায় । বাচ্চাদেরও যেন উন্নতি হয় ।
রোজই তিনি মুরলীতে বোঝাতে থাকেন যে, এই আত্মিক সেবা হলো মূখ্য । তোমাদের শুনতে হবে
আর শোনাতে হবে । এই শখ থাকা চাই । ব্যাজ পড়ে রোজ মন্দিরে গিয়ে বোঝাও --এঁরা লক্ষ্মী
- নারায়ণ কিভাবে হয়েছেন ? তারপর কোথায় গেলেন, কিভাবে রাজ্য - ভাগ্য পেলেন ?
মন্দিরের দ্বারে গিয়ে বসো । যে কেউ এলেই বলো, এই লক্ষ্মী - নারায়ণ কে, ভারতে কবে
এনাদের রাজ্য ছিলো ? হনুমান জী তো জুতোর উপর বসতেন, তাই না । তারও তো রহস্য আছে,
তাই না । দয়া হয় এই সেবার যুক্তি বাবা অনেক কিছু বলে দেন, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে খুবই
অল্পই মুশকিলের সঙ্গে আসে । সেবা তো অনেক আছে । তোমাদের অন্ধের লাঠি হতে হবে । যারা
সেবা করে না, বুদ্ধি স্বচ্ছ হয় না, তাদের ধারণাও হয় না । তা না হলে সেবা খুবই সহজ
। তোমরা এই জ্ঞান রত্নের দান করো । বিত্তবান কেউ এলে তোমরা বলো, আমরা আপনাদের এই
উপহার দিচ্ছি । এর অর্থও আপনাদের বুঝিয়ে বলছি । এই ব্যাজের বাবার অনেক সম্মান । আর
কারোরই এতো কদর নেই । এনার মধ্যে অনেক জ্ঞান ভরপুর রয়েছে কিন্তু কারোর ভাগ্যে না
থাকলে বাবা আর কি করতে পারেন । বাবাকে আর এই পড়াকে ত্যাগ করা - এ হলো অনেক বড় অপঘাত
। বাবার হয়ে তারপর তাঁকে ত্যাগ করা --এর মতো বড় পাপ আর কিছুই হয় না । এর মতো অকাল
কুশ্মাণ্ড আর কেউ হয় না । বাচ্চাদের তো শ্রীমতেই চলতে হবে, তাই না । তোমাদের
বুদ্ধিতে আছে যে, আমরা এই বিশ্বের মালিক হবো, এ কোনো কম কথাই নয় । এই কথা স্মরণ
করবে তাহলে খুশীও থাকবে । আর স্মরণ না করলে পাপও ভস্ম হবে না । তোমরা যখন বাবার
সন্তান হয়েছো তাহলে খুশীর পারদ চড়া উচিত কিন্তু মায়া এতে অনেক বিঘ্ন উৎপন্ন করে ।
যারা পাকাপোক্ত হয় নি তাদের ফেলে দেয় । যারা বাবার শ্রীমত শোনে না, তারা আর কি পদ
প্রাপ্ত করবে ? অল্প কথা শুনলে পদও ছোটো পাবে । ভালোভাবে শ্রীমতে চললে উঁচু পদ পাবে
। এ এখন অসীম জগতের রাজধানী স্থাপন হচ্ছে । এতে খরচ ইত্যাদির কোনো কথাই নেই ।
কুমারীরা আসে, তারা অনেককে টেনে এনে নিজের সমান বানায়, এতে কোনো ফি ইত্যাদির কথাই
নেই । বাবা বলেন, আমি তোমাদের স্বর্গের বাদশাহী দিই । আমি কিন্তু স্বর্গে আসিই না ।
শিববাবা তো দাতা, তাই না । তাঁকে খরচ কি দেবে । তিনি তো সবকিছুই তাঁকে দিয়ে
দিয়েছেন, উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিয়েছেন । প্রতিফলে দেখো, রাজত্ব তো পাও, তাই না । ইনি
হলেন প্রথম উদাহরণ । সম্পূর্ণ বিশ্বে স্বর্গের স্থাপনা হয় । এক পয়সাও খরচ লাগে না
। আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১) পিতা
স্নেহী হওয়ার জন্য খুবই সুখদায়ী হতে হবে । নিজের চালচলন এবং বাণী খুবই মধুর এবং
রাজকীয় করতে হবে । সেবা পরায়ণ হতে হবে । নিরহংকারী হয়ে সেবা করতে হবে ।
২) ঈশ্বরীয় পাঠ এবং
বাবাকে ত্যাগ করে কখনোই অপঘাতী এবং মহাপাপী হবে না । মুখ্য হলো আত্মিক সেবা, এই
সেবাতে কখনো পরিশ্রান্ত হবে না । জ্ঞান রত্নের দান করতে হবে, অমানুষ হবে না ।
বরদান:-
'আমি'
আর 'আমিত্ব ভাবকে' বলি দিয়ে সম্পূর্ণ মহাবলী ভব
জাগতিক কোনো ব্যক্তি
বা বৈভবের প্রতি আকর্ষণ -- এই হলো আমিত্ব ভাব । এই আমিত্ব ভাবকে, আর আমি করি, আমিই
করেছি ---এই আমিত্ব ভাবকে সম্পূর্ণ সমর্পণকারীই অর্থাৎ বলি দেয় যে, সেই মহাবলী ।
যখন এই জাগতিক আমিত্ব ভাব সমর্পণ হবে, তখনই সম্পূর্ণ বা বাবার সমান হতে পারবে । আমি
করছি, তা নয় । বাবা করাচ্ছেন, বাবা চালাচ্ছেন । যে কোনো বিষয়ে 'আমি-র' পরিবর্তে সদা
সাধারণ ভাষায়ও যেন 'বাবা' শব্দ আসে, 'আমি' শব্দ নয় ।
স্লোগান:-
সঙ্কল্পে এমন দৃঢ়তা ধারণ করো, যাতে চিন্তা করা আর কর্ম করা যেন সমান হয়ে যায় ।