26.02.2020 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমাদের এই শ্রীমত প্রাপ্ত হয়ছে যে, আত্ম-অভিমানী হয়ে বাবাকে স্মরণ করো, কোনো ব্যাপারেই তোমাদের বাদানুবাদ (আরগু) করতে নেই"

প্রশ্নঃ -
বুদ্ধিযোগ স্বচ্ছ হয়ে বাবার সাথে যুক্ত হতে পারে, তার জন্য কোন্ পদ্ধতি তৈরী করা হয়েছে ?

উত্তরঃ -
সাত দিনের ভাট্টি। নতুন কেউ এলে তাকে ৭দিনের জন্য ভাট্টিতে বসাও, যাতে বুদ্ধির আবর্জনা বের হয়ে যায় আর গুপ্ত বাবা, গুপ্ত অধ্যয়ণ আর গুপ্ত উত্তরাধিকারকে চিনতে পারে। যদি এমনিই বসে গেলো তো বিভ্রান্ত হয়ে যাবে, কিছু বুঝবে না।

গীতঃ-
জাগো সজনীরা, জাগো.....(জাগ সজনীয়া জাগ....)

ওম্ শান্তি ।
বাচ্চাদের জ্ঞানী আত্মা করে তোলার জন্য এই ধরনের যে সকল গান রয়েছে, সে-সমস্ত শুনিয়ে আবার তার অর্থ বের করতে হবে, তবে তো তার বাণী বোধগম্য হবে। জানতে পারবে যে সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান কতো দূর পর্যন্ত বুদ্ধিতে আছে। বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে তো উপর থেকে নিয়ে মূলবতন, সূক্ষ্মবতন, স্থূলবতনের আদি-মধ্য-অন্তের সমগ্র রহস্য যেন উজ্জ্বল হয়ে আছে। বাবার কাছেও এই জ্ঞান আছে যা তোমাদের শুনিয়ে থাকেন। এটা হলো সম্পূর্ণ নূতন জ্ঞান। যদিও শাস্ত্র ইত্যাদিতে নাম আছে কিন্তু সেই নাম নিলে পরে আটকে যাবে, ডিবেট করতে লেগে যাবে। এখানে তো একদম সিম্পল নিয়মে বোঝানো হয়- ভগবানুবাচ, আমাকে স্মরণ করো, আমিই হলাম পতিত-পাবন। কখনোই কৃষ্ণকে বা ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শঙ্কর ইত্যাদিকে পতিত পাবন বলা হবে না। সূক্ষ্মবতনবাসীদেরও তোমরা পতিত পাবন বলো না, তো স্থূল বতনের মানুষ কীভাবে পতিত-পাবন হতে পারে ? এই জ্ঞানও তোমাদেরই বুদ্ধিতে আছে। শাস্ত্রের বিষয়ে বেশী রকম আরগু (তর্ক) করা ভালো নয় । অনেক বাদ-বিবাদ হয়ে যায়। একে অপরের প্রতি লাঠিও উদ্যত করে । তোমাদের তো অনেক সহজ করে বোঝানো হয়। শাস্ত্রের কথায় টু মাচ (অতিরিক্ত) যেতে নেই। মূল ব্যাপার হলোই আত্ম-অভিমানী হওয়ার। নিজেকে আত্মা মনে করতে হবে আর বাবাকে স্মরণ করতে হবে। এ হলো মুখ্য শ্রীমত। বাকি সব ডিটেল (বিস্তারিত)। বীজ কতো ছোট, বাকি বৃক্ষের বিস্তার হয়। যেমন ভাবে বীজের মধ্যে সমগ্র জ্ঞান অন্তর্নিহিত হয়ে আছে, সেই রকম এই সমগ্র জ্ঞানও বীজের মধ্যে অন্তর্নিহিত হয়ে আছে। তোমাদের বুদ্ধিতে বীজ আর বৃক্ষ এসে গেছে। তোমরা যেমন ভাবে জানো আর কেউ বুঝতে পারে না। বৃক্ষের আয়ুই লম্বা লিখে দিয়েছে। বাবা বসে বীজ আর বৃক্ষ বা ড্রামা চক্রের রহস্য বোঝান। তোমরা হলে স্বদর্শন চক্রধারী। নূতন কেউ এলে যদি বাবা মহিমা করেন যে স্বদর্শনচক্রধারী বাচ্চারা, তো কেউ বুঝতে পারবে না। তারা তো নিজেদের পরমাত্মার বাচ্চা বলেই মনে করে না। এই বাবাও হলেন গুপ্ত, নলেজও গুপ্ত, উত্তরাধিকারও হলো গুপ্ত। নূতন যে কেউই শুনে বিভ্রান্ত হয়ে পড়বে, সেইজন্য ৭ দিনের ভাট্টিতে বসানো হয়। এই যে ৭দিনের ভগবত বা রামায়ণ ইত্যাদি পাঠ রাখে, বাস্তবে এটা এই সময় ৭দিনের জন্য ভাট্টিতে রাখা হলে, তবেই বুদ্ধিতে যে সমস্ত কিছু আবর্জনা আছে সেটা বের হয়ে বাবার সাথে বুদ্ধি যোগ যুক্ত হবে। এখানে সব হলো রোগী। সত্যযুগে এই রোগ থাকে না। এটা হলো অর্ধ-কল্পের রোগ, ৫ বিকারের রোগ খুব ভারী। সেখানে তো দেহী-অভিমানী থাকে, জানে যে আমি আত্মা এক শরীর ছেড়ে দ্বিতীয় শরীর ধারণ করি। প্রথমেই সাক্ষাৎকার হয়ে যায়। অকালে কখনো মৃত্যু হয় না। তোমাদের মৃত্যুর উপর বিজয় প্রাপ্ত করানো হয়। কাল-কাল মহাকাল বলা হয়। মহাকালেরও মন্দির হয়। শিখদের আবার অকালতখ্ত হয়। বাস্তবে এই অকাল তখ্ত হলো ভ্রূকুটি, যেখানে আত্মা বিরাজমান হয়। সব আত্মারা এই অকালতখ্তে (ভ্রূকুটি সিংহানে) বসে আছে, বাবা বসে এটা বোঝান। বাবার তো নিজের তখ্ত বা ভ্রূকুটি সিংহাসন হয় না। তিনি এসে এঁনার এই ভ্রূকূটি সিংহাসন গ্রহণ করেন। এই আসনে বসে বাবা বাচ্চারা, তোমাদের অমর সিংহাসনে বসার সুযোগ্য করে তোলেন। তোমরা জানো সেই মহাসন কীভাবে হয়, যাতে লক্ষ্মী-নারায়ণ বিরাজমান হবে । ময়ূর সিংহাসনের খ্যাতি আছে, তাই না!

বিচার করতে হবে, তাঁকে কেন ভোলানাথ ভগবান বলা হয় ? ভোলানাথ ভগবান বললে বুদ্ধি উপর দিকে চলে যায়। সাধু-সন্ত ইত্যাদি আঙুল দিয়ে ইশারাও সেরকমই করে - তাঁকে স্মরণ করো। যথার্থ ভাবে তো কেউ জানতে পারে না। এখন পতিত পাবন বাবা সম্মুখে এসে বলেন আমাকে স্মরণ করলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে। গ্যারান্টি আছে। গীতাতেও লেখা আছে কিন্তু তোমরা গীতার একটি উদাহরণ বের করলে তারা ১০টা বের করবে, সেইজন্য দরকার নেই। যারা শাস্ত্র ইত্যাদি পড়েছে তারা বুঝবে আমরা লড়তে পারি। বাচ্চারা, তোমরা যা এই শাস্ত্র ইত্যাদি জানোই না, তোমাদের ওই সবের নামও কখনো নেওয়ার প্রয়োজন নেই। শুধু বলো ভগবান বলেন আমাকে অর্থাৎ নিজের পিতাকে স্মরণ করো, ওঁনাকেই পতিত-পাবন বলা হয়। গানও গায় - পতিত পাবন সীতারাম...সন্ন্যাসীরাও যেখানে-সেখানে সুর তুলতে থাকে। এরকম যে অনেক মত-মতান্তর আছে। এই গান কতো সুন্দর, ড্রামা প্ল্যান অনুসারে কল্প-কল্প এরকম গীত তৈরী হতে থাকে, যেন মনে হয় বাচ্চারা তোমাদের জন্যই তৈরী হয়েছে। এরকম ধরনের ভালো-ভালো গান আছে। যেমন "নয়নহীনকে পথ দেখাও প্রভু" । প্রভু কোনো কৃষ্ণকে কি আর বলে ! প্রভু বা ঈশ্বর নিরাকারকেই বলবে। এখানে তোমরা বলো - বাবা, পরমপিতা পরমাত্মা। তিনিও যে হলেন আত্মা। ভক্তি মার্গে বড়ো বেশী টু মাচ চলে গেছে। এখানে তো একদম সিম্পল ব্যাপার। অল্ফ আর বে। অল্ফ আল্লাহ্, বে বাদশাহী- এতোটা তো হলো সিম্পল ব্যাপার। বাবাকে স্মরণ করলে তোমরা স্বর্গের মালিক হবে। প্রথম থেকেই এই লক্ষ্মী-নারায়ণ স্বর্গের মালিক, সম্পূর্ণ নির্বিকারী ছিলেন। সুতরাং বাবাকে স্মরণ করলেই তোমরা এরকম সম্পূর্ণ হবে। যে যতো স্মরণ করে আর সার্ভিস করে সে ওই রকমই উচ্চ পদ প্রাপ্ত করে। সেটা বুঝতেও পারা যায়, স্কুলে স্টুডেন্ট বুঝতে পারে না তবে কি আমরা কম পড়াশুনা করি! যারা সম্পূর্ণ অ্যাটেনশন দেয় না তো তারা পিছনে বসে থাকে, তাই অবশ্যই ফেল করে যায়।

নিজেকে রিফ্রেস করার জন্য জ্ঞান বিষয়ক যে ভালো-ভালো গান তৈরী হয়েছে, সেই সব শোনা উচিত। এরকম ধরনের গান নিজের ঘরে রাখা উচিত। কাউকে এর উপরে বোঝাতেও পারো। কীভাবে আবার মায়ার ছায়া পরে। শাস্ত্রে তো এই কথা নেই যে কল্পের আয়ু ৫ হাজার বছর। ব্রহ্মার দিন আর ব্রহ্মার রাত হলো অর্ধেক-অর্ধেক। এই গান তো কেউ না কেউ রচনা করেছে। *বাবা হলেন বুদ্ধিমানের বুদ্ধি*, তাই কারোর তো বুদ্ধিতে এসেছে যে বসে এই গান তৈরী করেছে। এই সব গান ইত্যাদির উপরও(শুনে) তোমাদের মধ্যে কতো জন ধ্যানে যেতো। একদিন আসবে যে এই জ্ঞান সমৃদ্ধ গান যারা করে তারাও তোমাদের কাছে আসবে। বাবার মহিমার সুখ্যাতি করতে গিয়ে এমন গান গাইবে যা ঘায়েল করে দেবে। এমন ধরনের আসবে। টিউনের উপরও নির্ভর করে। সঙ্গীত বিদ্যারও অনেক নাম আছে। এখন তো এরকম কেউ নেই। শুধু একটি গান তৈরী হয়ছিলো কতো মধুর কতো প্রিয়...বাবা খুবই মধুর খুবই প্রিয়, তাই তো সকলে ওঁনাকে স্মরণ করে। এরকম নয় যে দেবতারা ওঁনাকে স্মরণ করে। চিত্রতে রামের সামনেও শিব দেখানো হয়েছে, রাম পূজা করছে। এটা ভুল। দেবতারা কি আর কাউকে স্মরণ করে! স্মরণ মানুষ করে। তোমরাও এখন হলে মানুষ আবার দেবতা হবে। দেবতা আর মানুষের মধ্যে রাত-দিনের পার্থক্য। সেই দেবতারাই আবার মানুষ হয়। চক্র কীভাবে আবর্তিত হতে থাকে, কারোর জানাও নেই। তোমাদের এখন জানা হয়েছে যে আমরা সত্যি-সত্যি দেবতা হচ্ছি। এখন আমরা হলাম ব্রাহ্মণ, নূতন দুনিয়াতে দেবতা বলা হবে। তোমরা এখন অবাক হয়ে যাও ! এই ব্রহ্মা নিজেই যিনি এই জন্মে প্রথম দিকে পূজারী ছিলেন, শ্রী নারায়ণের মহিমার সুখ্যাতি করতেন, নারায়ণের প্রতি খুব প্রেম ছিলো। এখন ওয়ান্ডার(বিস্ময়) লাগে, আমরা সেই হতে চলেছি। তাই খুশীর পারদ কতো ওঠা উচিত। তোমরা হলে আননোন ওয়ারিয়র্স (গুপ্ত যোদ্ধা), ননভায়োলেন্স(অহিংসক)। সত্যি-সত্যি তোমরা হলে ডবল অহিংসক। না কাম কাটারি, না সেই লড়াই। কাম হলো আলাদা, ক্রোধ হলো আলাদা জিনিস। তোমরা হলে ডবল অহিংসক। ননভায়োলেন্স(অহিংসক) সেনা। সেনা শব্দতে তারা আবার সেনা দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। মহাভারত লড়াইতে মেলের নাম দেখিয়েছে। ফিমেলের নেই। বাস্তবে তোমরা হলে শিবশক্তি। মেজরিটি (বেশীর ভাগ) তোমাদের হওয়ার কারণে শিব শক্তি সেনা বলা হয়। এই কথা এক বাবা বসে বুঝিয়েছেন।

এখন বাচ্চারা, তোমরা নব যুগকে স্মরণ করো। দুনিয়ায় কারোরই নবযুগ সম্বন্ধে জানা নেই। তারা তো মনে করে নবযুগ ৪০ হাজার বছর পরে আসবে। সত্যযুগ হলো নবযুগ, এটা তো বড় রকম ক্লিয়ার। তো বাবা রায় দেন, এরকম এরকম ভালো গান শুনেও রিফ্রেস হবে আর কাউকে বোঝাবেও। এই সমস্ত হলো যুক্তি। এই সবের অর্থও শুধু তোমরাই বুঝতে পারো। অনেক ভালো-ভালো গান আছে নিজেকে রিফ্রেস করার জন্য। এই গান খুব সাহায্য করে। অর্থ করতে চাইলে তো মুখও খুলে যাবে, খুশীও হবে। এছাড়া যারা বেশী ধারণা করতে পারবে না তাদের জন্য বাবা বলেন - ঘরে বসে বাবাকে স্মরণ করো। গার্হস্থ্য জীবনে থেকে শুধু এই মন্ত্র স্মরণে রাখো- বাবাকে স্মরণ করো আর পবিত্র হও। পূর্বে, পুরুষরা পত্নীকে বলতো ভগবানকে তো ঘরেও স্মরণ করতে পারো আবার মন্দির ইত্যাদিতে দিশে হারা হয়ে ঘুরে বেড়ানোর দরকার কি ? আমি তোমাকে ঘরে মূর্তি দিয়ে দিচ্ছি, এখানে বসে স্মরণ করো, ধাক্কা খেতে কেন যাবে ? এরকম অনেক পুরুষ স্ত্রীদের যেতে দিত না। জিনিস তো একই হলো, পূজা করতে হবে আর স্মরণ করতে হবে। যখন একবার দেখে নিয়েছে তো এরকমও স্মরণ করতে পারো। কৃষ্ণের চিত্র তো হলো কমন- ময়ূর মুকুটধারী। বাচ্চারা, তোমরা সাক্ষাৎকার করেছো- ওখানে কীভাবে জন্ম হয়, সেটাও সাক্ষাৎকার করেছো, কিন্তু তোমরা কি তার ফটো বের করতে পারো ? কেউ অ্যাকুউরেট বের করতে পারে না। দিব্য দৃষ্টি দ্বারা শুধু দেখতেই পারে, তৈরী করতে পারে না, হ্যাঁ- দেখে বর্ণনা করতে পারে, তাছাড়া সেই চিত্র আঁকতেও পারবে না। যত ভালো পেইন্টারই হোক না কেন, সাক্ষাৎকার করলেও অ্যাকুউরেট ফিচার্স বের করতে পারে না। তাই বাবা বুঝিয়েছেন, কারোর সাথে অতিরিক্ত আরগু করতে নেই। বলো, তোমাদের কাজ পবিত্র হওয়া। আর শান্তি চাইলে বাবাকে স্মরণ করো আর পবিত্র হও। পবিত্র আত্মা এখানে থাকতে পারে না। তারা ফিরে যাবে (সত্য - ত্রেতা শেষ হলে)। আত্মাদের পবিত্র করার শক্তি এক বাবার মধ্যেই আছে, আর কেউ পবিত্র করতে পারে না। বাচ্চারা, তোমরা জানো এই সমস্ত হলো স্টেজ, এর উপর নাটক হয়। এই সময়ে সমস্ত স্টেজে হলো রাবণের রাজ্য। সমগ্র সমুদ্রের উপর সৃষ্টি দাঁড়িয়ে আছে। এটা অসীম জগতের পুষ্করিণী। সেটা হলো জাগতিক। এটা হলো অসীম জগতের ব্যাপার। যার উপর অর্ধ-কল্প দেবী রাজ্য, অর্ধ-কল্প আসুরী রাজ্য হয়। এই ভূমি তো হলো পৃথক-পৃথক, কিন্তু এটা হলো সমস্ত অসীম জগতের ব্যাপার। তোমরা জানো যে আমরা গঙ্গা যমুনা নদীর মিষ্টি জলের তটে থাকবো। সমুদ্র ইত্যাদিতে যাওয়ার দরকার থাকে না। এই যে দ্বারকা, সেটার অস্তিত্ব কোনো সমুদ্রের মাঝে নয়। দ্বারকা হল অন্য জিনিস । তোমরা অর্থাৎ বাচ্চারা সব সাক্ষাৎকার করেছো। শুরুতে এই সন্দেশী আর গুলজার খুবই সাক্ষাৎকার করতো। এনারা অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছেন, কারণ ভাট্টিতে বাচ্চাদের বলতে হতো। আর সাক্ষাৎকারের ফলে অনেক বলা যেতো। বাবা বলেন আবার শেষের দিকে অনেকে বলবে। সেই ভূমিকা আবার অন্য রকম। গান আছে না- আমি যা দেখেছি সেটা তুমি দেখোনি। তোমরা তাড়াতাড়ি সাক্ষাৎকার করতে থাকবে। যেমন পরীক্ষার দিন কাছে এলে বুঝতে পারা যায় যে আমি কতো মার্কসে পাশ করবো। তোমাদেরও এটা হলো পড়াশুনা। এখন তোমরা নলেজফুল হয়ে বসে আছো। সকলে তো ফুল হয় না। স্কুলে প্রায়ই নম্বর অনুযায়ী হয়। এটাও হলো নলেজ- মূলবতন, সূক্ষ্মবতন - তোমাদের তিন লোকের জ্ঞান আছে। এই সৃষ্টির চক্রকে তোমরা জানো, এটা আবর্তিত হতে থাকে। বাবা বলেন তোমাদের যে নলেজ দিয়েছি, এটা আর কেউ বুঝতে পারে না। তোমাদের উপর হলো অসীম জগতের দশা। কারোর উপর বৃহস্পতির দশা, কারোর উপর রাহুর দশা হলে, তবে গিয়ে চন্ডাল ইত্যাদি হবে। এটা হলো অসীম জগতের দশা, ওটা হলো পার্থিব জগতের দশা। অসীম জগতের পিতা অসীম জগতের কথা শোনান, অসীম জগতের উত্তরাধিকার প্রদান করেন। বাচ্চারা, তোমাদের কতো খুশী হওয়া উচিত। তোমরা অনেক বার বাদশাহী নিয়েছো আর হারিয়েছো, এটা তো একদম নিশ্চিত ব্যাপার। নাথিং নিউ, তাই তো তোমরা সর্বদা প্রফুল্ল থাকতে পারো। নয়তো মায়া শ্বাসরোধ করে দেয় ।

তোমরা সবাই হলে প্রিয়তমা, এক প্রিয়তমর। সকল প্রিয়তমারা সেই এক প্রিয়তমকেই স্মরণ করে। তিনি এসে সকলকে সুখ প্রদান করেন। অর্ধ- কল্প তাঁকে স্মরণ করেছো, এখন তাঁকে পাওয়া গেছে, তাই কতো খুশী হওয়া উচিত। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) সর্বদা প্রফুল্ল থাকার জন্য নাথিং নিউ এর পার্ট সুনিশ্চিত করতে হবে। অসীম জগতের পিতা আমাদের অসীম জগতের বাদশাহী দিচ্ছেন- এই খুশীতে থাকতে হবে।

২ ) জ্ঞান সম্পর্কিত ভালো-ভালো গান শুনে নিজেকে রিফ্রেস করতে হবে। তার অর্থ বের করে অপরকে শোনাতে হবে।

বরদান:-
অনেক রকমের প্রবৃত্তি থেকে নিবৃত্ত হতে সক্ষম নষ্টমোহ স্মৃতি স্বরূপ ভব

স্ব(নিজের) প্রবৃত্তি, দৈবী পরিবারের প্রবৃত্তি, সেবার প্রবৃত্তি, পার্থিব জগতের প্রাপ্তির প্রবৃত্তি, এই সবের থেকে নষ্টমোহ অর্থাৎ পৃথক থাকার জন্য বাপদাদার স্নেহের রূপ সামনে রেখে স্মৃতি স্বরূপ হয়ে ওঠো। স্মৃতি স্বরূপ হলে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই নষ্টমোহ হয়ে যাবে। প্রবৃত্তি থেকে নিবৃত্তি হওয়া অর্থাৎ আমিত্বকে সমাপ্ত করে নষ্টমোহ হয়ে ওঠা। এরকম নষ্টমোহ হতে সক্ষম বাচ্চারা দীর্ঘ সময়ের পুরুষার্থ থেকে দীর্ঘ সময়ের প্রালব্ধের প্রাপ্তির অধিকারী হবে।

স্লোগান:-
কমল ফুলের মতো পৃথক থাকলে প্রভু প্রেম প্রাপ্ত হতে থাকবে।