01.02.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা —
এই শরীর রূপী বস্ত্রকে এখানেই ত্যাগ করতে হবে, সেইজন্য এর প্রতি আকর্ষণ মিটিয়ে ফেল,
কোনও মিত্র-সম্বন্ধ যেন স্মরণে না আসে"
প্রশ্নঃ -
যে বাচ্চাদের
যোগবল আছে, তাদের চিহ্ন কি ?
উত্তরঃ -
কোনো ব্যাপারেই সামান্যতম ধাক্কাও তাদের কাছে আসবে না, কোথাও তাদের অ্যাটাচমেন্ট
থাকবে না । মনে করো আজ কেউ শরীর ত্যাগ করেছে তার জন্য দুঃখ হবে না, কেননা সে জানে
যে ড্রামাতে তার এতটুকুই ভূমিকা (পার্ট) ছিল । আত্মা এক শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর
ধারণ করবে ।
ওম্ শান্তি ।
এই জ্ঞান বড়ো
গুপ্ত, এতে নমস্কার করার প্রয়োজন পড়ে না । লৌকিক দুনিয়াতে নমস্কার অথবা রাম-রাম
ইত্যাদি বলে থাকে । এখানে এসব কথা চলে না। কেননা এটা হলো একটা পরিবার । পরিবারে একে
অপরকে নমস্কার বা গুডমর্নিং করবে এটা শোভা পায় না । ঘরে কেউ খাওয়া-দাওয়া করে অফিসে
যায়, তারপর ফিরে আসে, এটাই স্বাভাবিক ভাবে চলতে থাকে, এর মধ্যে নমস্কার করার
প্রয়োজন পড়ে না । গুডমর্নিং করার ফ্যাশন ইউরোপিয়ানদের কাছ থেকে এসেছে । নয়তো এর আগে
এসব ছিল না । কোনও সত্সঙ্গে মিলিত হলে একে অপরের সাথে নমস্কার বিনিময় করে, পা ছোঁয়
। মাথা নত করে পা ছোঁয়ার এই রীতি নম্রতার জন্য শেখানো হয় । এখানে তো বাচ্চারা,
তোমাদের দেহী-অভিমানী হতে হবে । আত্মা, আত্মাকে কি বলতে পারে ? তবুও বলতে হয় । যেমন
বাবাকে বলবে - বাবা নমস্কার । বাবাও বলেন — আমি সাধারণ ব্রহ্মা শরীর দ্বারা তোমাদের
ঈশ্বরীয় জ্ঞান প্রদান করি, এর দ্বারা স্থাপনা করাই । কিভাবে ? যখন বাবা সামনে আসেন
তখন বোঝান, নয়তো সবাই বুঝবে কিভাবে । বাবা সামনে বসে বোঝান তবেই বাচ্চারা বোঝে ।
দুজনকেই নমস্কার করে বলে — বাপদাদা নমস্কার । বাইরের কেউ শুনলে অবাক হবে যে কি বলছে
"বাপদাদা"। ডাবল নাম তো অনেক মানুষের হয়, তাইনা । যেমন লক্ষী-নারায়ণ অথবা
রাধা-কৃষ্ণ যদিও এরা পুরুষ স্ত্রী একত্রিত । আর এখানে একজন বাপদাদা । এই বিষয়
বাচ্চারা তোমরাই বুঝবে । বাবা নিশ্চয়ই বড় হবেন । ঐ নাম যদিও ডাবল কিন্তু একজনই না !
দুটো নাম ওরা কেন রাখবে ? তোমরা জান এটা ভুল । কেউ বাবাকে চিনতে পারে না । তোমরা বল
নমস্কার বাপদাদা । বাবাও তারপর বলেন নমস্কার শারীরিক আত্মিক বাচ্চারা । এতো দীর্ঘ
অভিবাদন যথাযথ বলে মনে হয় না কিন্তু শব্দ তো ঠিকই আছে । তোমরা এখন শরীর ধারী আবার
আত্মিকও। শিববাবা সব আত্মাদের পিতা আবার প্রজাপিতাও অবশ্যই আছেন । প্রজাপিতা
ব্রহ্মার সন্তানরা ভাইবোন । এটি প্রবৃত্তি মার্গ । তোমরা সবাই ব্রহ্মাকুমার -
ব্রহ্মাকুমারী । ব্রহ্মাকুমার কুমারী হলে প্রজাপিতাও প্রমাণ হয়ে যায়। এর মধ্যে অন্ধ
শ্রদ্ধার কোনও প্রশ্নই নেই । তোমরা বল ব্রহ্মাকুমার -ব্রহ্মা কুমারীরা বাবার কাছ
থেকে উত্তরাধিকার পেয়ে থাকে । ব্রহ্মার কাছ থেকে প্রাপ্ত করে না , ব্রহ্মাও
শিববাবার সন্তান । সূক্ষ্ম বতন নিবাসী ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শঙ্কর এরা হলো রচনা । এদের
রচয়িতা শিব । শিবের জন্য একথা বলতে পারবে না যে, এনার রচয়িতা কে ? শিবের রচয়িতা কেউ
হয় না । ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শঙ্কর শিববাবার রচনা । সবার উপরে শিব,সব আত্মাদের পিতা ।
এখন প্রশ্ন উঠবে ক্রিয়েটর যখন কবে ক্রিয়েট করেছেন ? এ হলো অনাদি । এতো আত্মাদের কবে
ক্রিয়েট করেছেন এ প্রশ্ন উঠতে পারে না । এই অনাদি ড্রামা এভাবেই চলে আসছে । যার কোনো
শেষ নেই । এ বিষয়েও তোমরা বাচ্চারা নম্বরানুসারে বুঝে থাক । বিষয় অতি সহজ । এক বাবা
ছাড়া দ্বিতীয় আর কারও সাথে যেন এটাচমেন্ট না থাকে, কেউ মরে যাক বা বেঁচে থাকুক ।
গাওয়াও হয়ে থাকে — মায়ের মৃত্যু হলেও হালুয়া খেও (আম্মা মরে তো ভী হলুআ খানা) .....কেউ
মারা গেলে চিন্তার কিছু নেই কেননা এই ড্রামা অনাদি । ড্রামানুসারে তাকে এই সময়
যেতেই হবে, এখানে কিই-বা করার আছে । ন্যূনতম দুঃখীত হওয়ার কিছুই নেই । এটাই হলো
যোগবলের শক্তি । নিয়ম বলছে সামান্যতম ধাক্কাও তোমাদের আসা উচিত নয় । সবাই অভিনেতা,
অভিনেত্রী তাইনা । নিজ -নিজ ভূমিকা (পার্ট) পালন করছে । বাচ্চারা তোমরা জ্ঞান অর্জন
করেছ।
ওরা আহ্বান করে বাবাকে বলে — হে পরমপিতা পরমাত্মা তুমি এসে আমাদের নিয়ে যাও। এতো সব
শরীরের বিনাশ ঘটিয়ে সব আত্মাদের সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া, এতো অনেক বড় কাজ। এখানে কেউ
মারা গেলে ১২ মাস কাঁদতে থাকে । বাবা তো সঙ্গে করে এতো অসংখ্য আত্মাদের নিয়ে যাবেন
। সবাই এখানে শরীর ত্যাগ করবে । বাচ্চারা জানে মহাভারত লড়াই শুরু হলে মশার মতো
আত্মারা যেতে থাকবে । প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসবে, এই সম্পূর্ণ দুনিয়াকে বদলে দেবে ।
এখন ইংল্যান্ড, রাশিয়া ইত্যাদি কত বড় বড় দেশ । সত্যযুগে কি এসব ছিল ? দুনিয়াতে এটা
কারও বুদ্ধিতে আসেনা যে আমাদের রাজ্যে এরা কেউ ছিল না । একটাই ধর্ম, একটাই রাজ্য
ছিল । তোমাদের মধ্যেও নম্বরানুসারে বুদ্ধিতে সঠিকভাবে ঢুকবে । যদি সঠিক ধারণা হয়ে
তবে সেই ঈশ্বরীয় নেশা সবসময় উচ্চ থাকবে । শুধুমাত্র কয়েকজনই এই নেশা বজায় রাখে
কঠিনতার সাহায্যে। মিত্র-সম্বন্ধ ইত্যাদি সবদিক থেকে মনকে সরিয়ে এনে এক অনন্ত খুশিতে
স্থিত হয়ে যাওয়া, অতি চমত্কার বিষয়। তবে হ্যাঁ, এটাও অন্তিমে গিয়ে হবে । শেষে গিয়েই
কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত হবে । শরীর থেকেও দেহভান ছিন্ন হয়ে যায় । আমি এখন চললাম,
এটাই সাধারণ বিষয় হয়ে যাবে । যেমন নাটকের কুশীলবরা অভিনয় শেষ করে ঘরে ফিরে যায় । এই
দেহরূপী বস্ত্র তো তোমাদের এখানেই ত্যাগ করতে হবে । এই বস্ত্র এখানেই ধারণ করতে হয়,
এখানেই ছেড়ে যেতে হয়। এসব নতুন বিষয় তোমাদের বুদ্ধিতে আছে , আর কারও বুদ্ধিতে নেই ।
অল্ফ ( ঈশ্বর, বাবা ) আর বে (স্বর্গের বাদশাহী)। অল্ফ সবচেয়ে উপরে । বলাও হয়ে থাকে
ব্রহ্মা দ্বারা স্থাপনা, শঙ্কর দ্বারা বিনাশ, বিষ্ণু দ্বারা পালনা। আচ্ছা, শিবের
কাজ তবে কি ? উচ্চ থেকে উচ্চতর শিববাবাকে কেউ জানেনা । বলে দেয় উনি সর্বব্যাপী ।
সবকিছুই ওনার রূপ । সম্পূর্ণ দুনিয়ার বুদ্ধিতে এটাই দৃঢ়তর হয়ে গেছে, সেইজন্যই সব
তমোপ্রধান হয়ে গেছে । বাবা বলেন— সম্পূর্ণ দুনিয়া দুর্গতি প্রাপ্ত, আমিই এসে সবাইকে
সদ্গতি প্রদান করি। যদি সর্বব্যাপী হই তবে কি সবাই ভগবান? একদিকে বলে সবাই ভাই,
তারপর বলে সবাই ফাদার্স, কিছুই বোঝেনা । এখন বাচ্চারা, অসীম জগতের পিতা তোমাদের
বলছেন আমাকে স্মরণ করলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে । তোমাদের এই দাদাকে বা মাম্মাকেও
স্মরণ করার প্রয়োজন নেই ।
বাবা বলেন, না মাম্মা , না বাবা (ব্রহ্মা) কারো মহিমা কিছুই নয় । শিববাবা না থাকলে
ব্রহ্মা কি করত ? ব্রহ্মাকে স্মরণ করে কি হবে? তবে হ্যাঁ, তোমরা জানো যে ব্রহ্মা
দ্বারাই আমরা শিববাবার উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছি, এনার দ্বারা নয়। ইনিও শিববাবার
কাছ থেকেই উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করেন ,সুতরাং স্মরণ শিববাবাকেই করতে হবে । ইনি তো
মাঝখানে দালাল। একটি ছেলে আর মেয়ের যখন আশীর্বাদ হয় তখন তো একে অপরকে স্মরণ করবেই
তাইনা । বিবাহ করান যিনি তিনি তো এদের মাঝখানে দালাল । ব্রহ্মা দ্বারা বাবা
এনগেজমেন্ট নিজের সাথে তোমরা আত্মাদের করিয়ে থাকেন সেইজন্য মহিমাও হয়ে থাকে দালালের
মাধ্যমে সদ্গুরু প্রাপ্ত হয়েছে । সদ্গুরু কোনও দালাল নন । সদ্গুরু তো নিরাকার ।
যদিও গুরু ব্রহ্মা, গুরু বিষ্ণু বলে থাকে কিন্তু ওনারা কোনও গুরু নন । সদ্গুরু এক
বাবাই যিনি সবাইকে সদ্গতি প্রদান করেন। বাবা তোমাদের শিখিয়েছেন তবেই তোমরা অন্যদেরও
রাস্তা বলে দাও আর বল যে কোনও কিছু দেখেও দেখো না । বুদ্ধি যেন এক শিববাবার প্রতিই
থাকে । এই চোখ দিয়ে যা কিছু দেখছ সব কবরস্থ হবে । স্মরণ এক শিববাবাকেই করতে হবে,
নাকি ব্রহ্মা বাবাকে। বুদ্ধি বলে ব্রহ্মার কাছ থেকেও কিছু উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবে
। উত্তরাধিকার তো বাবার কাছ থেকেই প্রাপ্ত হবে, যেতেও হবে বাবার কাছে। স্টুডেন্ট ,স্টুডেন্টকে
কেন স্মরণ করবে । স্টুডেন্ট তো টিচারকে স্মরণ করবে তাইনা । স্কুলে যারা বিচক্ষণ
বাচ্চা হয় তারা অন্যদেরও উন্নতি করতে চেষ্টা করে । বাবাও বলে থাকেন এক-দুজনকে
উত্তোরণের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা কর কিন্তু ভাগ্যে নেই সেইজন্যই পুরুষার্থও
করেনা। অল্পতেই সন্তুষ্ট হয়ে যায় । তাদের বোঝান উচিত প্রদর্শনীতে অনেক আত্মারা আসে,
অনেককে বোঝালে প্রভূত উন্নতি হয় । নিমন্ত্রণ করেও নিয়ে আসা হয়। অনেক বড়ো বড়ো
বিচক্ষণ ব্যক্তিরা আসেন। বিনা নিমন্ত্রণেও কিছু মানুষ চলে আসে। কত কি অপ্রয়োজনীয়
কথাবার্তা বলতে থাকে। রয়্যাল মানুষদের চাল-চলনও রয়্যাল হয়। রয়্যাল মানুষ রয়্যালটির
সাথেই ভিতরে প্রবেশ করবে।তাদের আচরণের মধ্যেও বিস্তর পার্থক্য থাকে । তাদের চলা এবং
বলার মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না । মেলায় সব রকমের মানুষ আসে, কাউকে নিষেধ করা যায়
না সেইজন্য যে কোনো প্রদর্শনীতে নিমন্ত্রণ কার্ড দিয়ে আমন্ত্রণ জানালে রয়্যাল এবং
ভালো ভালো মানুষ আসবে । তারপর তারা অন্যদেরও শোনাবে । কোথাও কোথাও মহিলাদের জন্য
প্রোগ্রাম রাখলে শুধুমাত্র মহিলারাই এসে দেখবে কেননা অনেক মহিলাই পর্দার আড়ালে থাকে।
সুতরাং শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য প্রোগ্রাম করা উচিত । কোনও পুরুষ যেন না আসে। বাবা
বুঝিয়েছেন সর্বপ্রথম তোমাদের এটাই বোঝাতে হবে যে শিববাবা নিরাকার । শিববাবা আর
প্রজাপিতা ব্রহ্মা দুজনেই বাবা । কিন্তু দুজনেই তো একরকম হতে পারেন না ,যে দুই
বাবার কাছ থেকেই উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবে । উত্তরাধিকার দাদা অথবা বাবার কাছ থেকে
প্রাপ্ত হবে । দাদার সম্পত্তির প্রতি সবার অধিকার থাকে । যেমনই সন্তান হোক কুপুত্র
হলেও দাদার উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়ে যাবে । এসব রীতি এখানকার জন্য । বোঝাও যায়
কুপুত্রের হাতে টাকাপয়সা পড়লে এক বছরের মধ্যেই সব উড়িয়ে শেষ করে দেবে। কিন্তু
গভর্নমেন্টের নিয়ম এমনই যে দিতেই হবে । গভর্নমেন্ট কিছুই করতে পারেনা। বাবা তো
অনুভাবী (ব্রহ্মা) । এক রাজার সন্তান এক কোটি টাকা ১২ মাসের মধ্যে শেষ করে দিয়েছিল।
এমনটাও হয়। শিববাবা তো বলবেন না যে আমি এমনটা হতে দেখেছি। এই দাদা (ব্রহ্মা) বলেন
আমি এমন বহু দৃষ্টান্ত দেখেছি। এই দুনিয়া বড় দুর্গন্ধময় । এ হলো পুরানো দুনিয়া,
পুরানো ঘর। পুরানো ঘরকে সবসময় ভেঙে ফেলতে হয় । এই লক্ষী-নারায়ণের বাদশাহী ঘর দেখ কত
চমত্কার ।
এখন তোমরা বাপদাদার দ্বারা বুঝতে পারছ এবং তোমরাই নর থেকে নারায়ণ হয়ে ওঠো । এই হলো
সত্যনারায়ণের কথা। তোমরা বাচ্চারা এটা বুঝেছ। তোমরাই এখন সম্পূর্ণ ফুল তৈরী হচ্ছ,
এতে ভীষণ সত্যতা থাকা উচিত । তোমরা প্রতিদিন উত্তরণের পথে এগিয়ে চলেছ। ফুল তৈরি
হচ্ছ ।
বাচ্চারা তোমরা ভালবেসে বলে থাকো —"বাপদাদা", এটাও তোমাদের নতুন ভাষা, যা মানুষের
বুদ্ধিতে আসতে পারে না । বাবা যেখানেই থাক না কেন বাচ্চারা বলবে বাপদাদা নমস্কার ।
বাবাও বলবেন রূহানী শরীরের বাচ্চাদের নমস্কার । কেউ শুনলে বলবে এতো নতুন কথা,
বাপদাদা একসাথে কিভাবে বলতে পারে । বাবা আর দাদা দুজন কখনও এক হয় নাকি ? নামও
দুজনের আলাদা । শিববাবা, ব্রহ্মা বাবা, তোমরা এই দুজনেরই সন্তান । তোমরা জান এনার
ভিতরে (ব্রহ্মা বাবা) শিববাবা বসে আছেন। আমরা বাপদাদার সন্তান ।এটাও বুদ্ধিতে স্মরণ
থাকলে খুশির মাত্রা ঊধ্বর্গামী থাকবে । ড্রামার প্রতিও দৃঢ় বিশ্বাস রাখা উচিত । মনে
কর কেউ শরীর ত্যাগ করেছে, এরপর অন্য শরীর ধারণ করে দ্বিতীয় কোনও ভূমিকা পালন করবে।
প্রত্যেক আত্মা অবিনাশী ভূমিকা পেয়েছে, এর মধ্যে বিচলিত হওয়ার প্রয়োজন নেই । তাকে
দ্বিতীয় কোনও ভূমিকা পালন করতে হবে । তাকে তো আর ডেকে ফিরিয়ে আনা যাবে না । ড্রামা
তাইনা । এতে কান্নাকাটি করার কোনো প্রয়োজন নেই । এমনই স্থিতিশীলতা সম্পন্নরাই
নির্মোহী রাজা হবে । সত্যযুগে সবাই নির্মোহী (মোহহীন) হয়। এখানে কেউ মারা গেলে কত
কান্নাকাটি করে । বাবাকে পেয়েছি যখন আর তো কান্নাকাটি করার প্রয়োজন নেই । বাবা কত
সুন্দর পথ বলে দিয়েছেন । কন্যাদের জন্য তো খুব ভালো । তোমাদের লৌকিক পিতা অযথা কত
পয়সা খরচ করে আর তোমরা গিয়ে নরকে পড়। বরং বলো যে আমি এই পয়সা দিয়ে রূহানী
ইউনিভার্সিটি বা হাসপাতাল খুলব । অনেকের কল্যাণ করলে তোমাদেরও পুণ্য, আমারও পুণ্য
হবে । বাচ্চারা নিজেরাই উৎফুল্ল থাকে এইভেবে যে আমরা ভারতকে স্বর্গ বানাবার জন্য
তন-মন-ধন সব উৎসর্গ করব ।এমনই ঈশ্বরীয় নেশা থাকা উচিত। দিতে হলে দাও, না দিতে হলে
দিও না। তোমরা নিজেদের কল্যাণ আর অনেকের কল্যাণ করতে চাও না ? এতোটাই খুশি থাকা
উচিত । বিশেষ করে কুমারীদের তো এগিয়ে আসা উচিত । আচ্ছা !
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
নিজের আচার আচরণে রয়্যালটি থাকা উচিত । সুন্দর আচরণের সাথে কথা বলা উচিত। নম্রতার
গুণ ধারণ করতে হবে ।
২ ) এই চোখ দিয়ে যা কিছু দেখছ সব কবরস্থ হবে, সেইজন্য সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করে
থাকা উচিত । এক শিববাবাকেই স্মরণ করতে হবে । কোনও দেহধারীকে নয়।
বরদান:-
বিশেষত্ব রূপী সঞ্জীবনী ঔষধি দ্বারা অচেতনকে সচেতন করে তুলতে সমর্থ স্বরূপ বিশেষ
আত্মা ভব
প্রতিটি আত্মাকে
শ্রেষ্ঠ স্মৃতির, বিশেষত্ব রূপী সঞ্জীবনী ঔষধ সেবন করালে সেই আত্মা অচেতন থেকে
সচেতন হয়ে উঠবে । বিশেষত্ব স্বরূপের দর্পণ তাদের সামনে রাখ। অন্যদের স্মরণ করিয়ে
দিলে তোমরা নিজেরাই বিশেষ আত্মা হয়ে উঠবে । যদি তোমরা কারো দুর্বলতা সম্পর্কে বল তবে
তারাও আড়াল করার চেষ্টা করবে, আর যদি তাদের বিশেষত্ব তুলে ধর তবে তারা নিজেরাই
নিজেদের দুর্বলতা স্পষ্ট অনুভব করবে । এমনই সঞ্জীবনী ঔষধি দ্বারা অচেতনকে সচেতন করে
উড়ে চল আর উড়িয়ে নিয়ে চলো ।
স্লোগান:-
সঙ্কল্পেও নাম - যশ -সম্মানের সুযোগ ত্যাগ করাই হলো মহান ত্যাগ ।