12.02.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
সত্যের সঙ্গ জ্ঞান-মার্গেই হয়, তোমরা এখন সত্য-পিতার সঙ্গে বসে আছো, বাবার স্মরণে
থাকার অর্থই হল সত্সঙ্গ করা"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
সত্সঙ্গের প্রয়োজন তোমাদের এখনই রয়েছে --- কেন ?
উত্তরঃ -
কারণ তমোপ্রধান আত্মা একমাত্র সত্য-পিতা, সত্য-শিক্ষক, সত্গুরুর সঙ্গ দ্বারাই
সতোপ্রধান অর্থাৎ শ্যাম থেকে সুন্দর হতে পারে। সত্সঙ্গ ব্যতীত দুর্বল আত্মা সবল হতে
পারে না। বাবার সঙ্গলাভেই আত্মায় পবিত্রতার শক্তি চলে আসে, ২১ জন্মের জন্য
তার(আত্মার) তরী পার(গতি-সদ্গতি) হয়ে যায়।
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা,
তোমরা সত্যের সঙ্গে বসে রয়েছ। বাচ্চারা প্রতি কল্পের সঙ্গমেই এই সত্সঙ্গে বসে।
দুনিয়া তো জানে না যে, সত্যের সঙ্গ (সৎসঙ্গ) কাকে বলা হয়। 'সৎসঙ্গ' নামটি অর্থাৎ
শব্দটি অনাদিকাল ধরে চলে আসছে। ভক্তিমার্গে (মানুষ) বলে যে, আমরা অমুক সৎসঙ্গে যাই।
কিন্তু বাস্তবে এখন ভক্তিমার্গে কেউই সৎসঙ্গে যায়না। জ্ঞান-মার্গেই সৎসঙ্গ হয়। এখন
তোমরা সৎসঙ্গে বসে রয়েছো। আত্মারা সত্য-পিতার সঙ্গে বসে রয়েছে। আর কোন স্থানে
আত্মারা পরমপিতা পরমাত্মার সঙ্গে বসে না। তারা বাবাকে জানেই না। অবশ্যই তারা বলে
যে, আমরা সৎসঙ্গে যাই কিন্তু তারা দেহ-অভিমানে চলে আসে। তোমরা দেহ-অভিমানে আসবে না।
তোমরা জানো যে -- আমরা আত্মা, সত্যিকারের পিতার সঙ্গে বসে আছি। আর কোন মানুষ সৎসঙ্গে
বসতে পারে না। সত্যের সঙ্গ বা সৎসঙ্গ -- এই নামও এখনকারই। সত্যের সঙ্গ বা সৎসঙ্গ --
এর যথাযত অর্থ বাবা-ই বসে বোঝান। তোমরা অর্থাৎ আত্মারা এখন পরমাত্মা পিতা যিনি সত্য,
তাঁর সঙ্গে বসে রয়েছো। তিনি সত্য-পিতা, সৎ-শিক্ষক, সৎগুরু। তাহলে তোমরা সৎসঙ্গেই বসে
রয়েছো। তাহলে তোমরা এখানে বা ঘরে যেখানেই বসো, নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে স্মরণ বাবাকে
করো। আমরা অর্থাৎ আত্মারা এখন সত্য-পিতাকে স্মরণ করছি অর্থাৎ সৎসঙ্গে রয়েছি। বাবা
মধুবনে বসে রয়েছেন। বাবাকে স্মরণ করার তোমরা অনেকপ্রকারের যুক্তি পাও। স্মরণের
দ্বারাই বিকর্ম বিনাশ হবে। একথাও বাচ্চারা জানে -- আমরা ১৬ কলা সম্পূর্ণ হই পুনরায়
নীচে নামতে-নামতে কলা কম হয়ে যায়। ভক্তিও প্রথমে অব্যভিচারী ছিল, পরে নীচে
নামতে-নামতে ভক্তিও ব্যভিচারী হয়ে যাওয়ার কারণে তমোপ্রধান হয়ে যায়, পুনরায় তাদের
সত্যের সঙ্গের অর্থাৎ সৎসঙ্গের অবশ্যই প্রয়োজন। তা নাহলে পবিত্র কীভাবে হবে ? তাই
আত্মারা, তোমরা এখন বাবার সঙ্গ পেয়েছো। আত্মারা জানে যে, আমাদের বাবাকে স্মরণ করতে
হবে, ওঁনার সঙ্গই রয়েছে। স্মরণ করাকেই (বাবার) সঙ্গ বলা হয়। এ হলো সত্যের সঙ্গ।
আত্মারা, এই শরীর থাকতেও তোমরা আমাকে স্মরণ করো, এটাই সৎসঙ্গ। যেমন বলা তো হয়, তাই
না যে -- এর বড়লোকেদের সঙ্গ হয়েছে, তাই দেহ-অভিমানী হয়ে গেছে। তোমাদের এখন সঙ্গ
হয়েছে সত্য-পিতার সঙ্গে, যার ফলে তোমরা তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে যাও। বাবা
বলেন, আমি একবারই আসি। এখন আত্মার সঙ্গ পরমাত্মার সঙ্গে হওয়ার কারণে তোমরা ২১
জন্মের জন্য পার হয়ে যাও। পুনরায় তোমাদের সঙ্গ লাগে দেহের। এও ড্রামায় নির্ধারিত।
বাবা বলেন -- বাচ্চারা, আমার সঙ্গে তোমাদের সঙ্গ হওয়ায় কারণে তোমরা সতোপ্রধান হয়ে
যাও, যাকে স্বর্ণযুগ বা গোল্ডেন এজ বলা হয়।
সাধু-সন্ত আদিরা মনে করে আত্মা অলিপ্ত (লেপ-ছেপহীন), সকলেই পরমাত্মাই-পরমাত্মা। এর
অর্থ হলো পরমাত্মার মধ্যেও (বিকারের) খাদ পড়েছে। কিন্তু পরমাত্মার মধ্যে তো খাদ পড়তে
পারে না। বাবা বলেন, আমার মধ্যে কি খাদ পড়তে পারে ? না। আমি সর্বদাই পরমধামে থাকি,
কারণ আমাকে তো জন্ম-মরণে(চক্রে) আসতে হয় না। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, তোমাদের
মধ্যেও কারোর সঙ্গ বেশী রয়েছে, কারোর সঙ্গ কম। কেউ ভালভাবে পুরুষার্থ করে যোগে থাকে,
যতটা সময় আত্মা বাবার সঙ্গ করবে ততই লাভ হবে। বিকর্ম বিনাশ হবে। বাবা বলেন -- হে
আত্মাগণ, আমাকে অর্থাৎ বাবাকে স্মরণ কর, আমার সঙ্গ করো। আমাকে এই শরীরের (ব্রহ্মা)
আধার নিতে হয়। তা নাহলে পরমাত্মা বলবে কীভাবে ? আত্মা শুনবে কীভাবে ? বাচ্চারা, এখন
তোমাদের সঙ্গ হয়েছে সত্যের সঙ্গে। সত্য-পিতাকে নিরন্তর স্মরণ করতে হবে। আত্মাকে
সৎসঙ্গ করতে হবে। আত্মাও ওয়ান্ডারফুল, পরমাত্মাও ওয়ান্ডারফুল, আর দুনিয়াও
ওয়ান্ডারফুল। এই দুনিয়া কীভাবে আবর্তিত হয়, বিস্ময়কর। সমগ্র ড্রামায় তোমরা অলরাউন্ড
(নিজ) ভূমিকা পালন কর। তোমাদের আত্মায় তোমাদের ৮৪ জন্মের ভূমিকা নির্ধারিত করা আছে
-- আশ্চর্যজনক। সত্যযুগী আত্মারা আর আজকালকের (কলিযুগী) আত্মারা। তারমধ্যেও তোমাদের
আত্মা সর্বাপেক্ষা অধিক বিস্ময়কর। নাটকে কারোর শুরু থেকেই পার্ট থাকে, কারোর
মধ্যভাগ থেকে, কারোর পরে পার্ট থাকে। সেসব হলো পার্থিব জগতের ড্রামা, সেসবও এখনই
বেরিয়েছে। এখন সাইন্সের বল অধিক। সত্যযুগে ওদের কত শক্তি থাকবে। নতুন দুনিয়া কত
শীঘ্র গঠিত হবে। ওখানে পবিত্রতার শক্তিই মুখ্য। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ তো শক্তিশালী,
তাই না। এখন রাবণ শক্তি ছিনিয়ে নিয়েছে, পুনরায় তোমরা সেই রাবণের উপর বিজয়লাভ করে কত
বলবান হয়ে যাও। যত সত্যের সঙ্গ করবে অর্থাৎ আত্মা যত সত্-পিতাকে স্মরণ করে ততই
বলবান হয়ে যায়। পঠন-পাঠনের মাধ্যমেও শক্তি প্রাপ্ত হয়, তাই না। তোমরাও শক্তি
প্রাপ্ত করো, সমগ্র বিশ্বের উপর তোমরা শাসন করো। আত্মার সত্যের সঙ্গে যোগ অর্থাৎ
মিলন সঙ্গমেই হয়। বাবা বলেন, আমার সঙ্গ পাওয়ায় আত্মা অত্যন্ত বলবান হয়ে যায়। বাবা
হলেন ওয়ার্ল্ড অলমাইটি অথরিটি, তাই না। ওঁনার দ্বারাই বল প্রাপ্ত হয়। এরমধ্যেই
সমগ্র বেদ-শাস্ত্রের আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান চলে আসে।
যেমন বাবা সর্বশক্তিমান, তোমরাও তেমনই সর্বশক্তিমান হয়ে যাও। বিশ্বে তোমরাই রাজ্য
করো। তোমাদের থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। তোমরা আমার কাছ থেকে কত শক্তি প্রাপ্ত
করো, যত বাবাকে স্মরণ করবে ততই শক্তি প্রাপ্ত করবে। বাবা আর কোন কষ্ট দেন না। শুধু
স্মরণ করতে হবে, ব্যস্। ৮৪ জন্মের চক্র এখন সম্পূর্ণ হয়েছে, এখন ফিরে যেতে হবে। এটা
বোঝা কোনো বড় কথা নয়। বেশী বিস্তারে যাওয়ার প্রয়োজনই নেই । বীজকে জানলেই বোঝা যায়,
এর মধ্য থেকেই সমগ্র এই বৃক্ষ এভাবে নির্গত হয়। সংক্ষেপে বুদ্ধিতে চলে আসে। এ অতি
বিচিত্র কথা। ভক্তিমার্গে মানুষ কত ধাক্কা খায়। পরিশ্রম করে, কিন্তু কিছুই প্রাপ্ত
হয় না। পুনরায় বাবা এসে তোমাদের বিশ্বের মালিক বানান। আমরা যোগবলের দ্বারা বিশ্বের
মালিক হয়ে যাই, এই পুরুষার্থই করতে হবে। ভারতের যোগ বিখ্যাত। যোগের দ্বারাই তোমাদের
আয়ু কত বড় হয়ে যায়। সৎসঙ্গে কত লাভ, আয়ুও দীর্ঘ আর শরীরও নিরোগী হয়ে যায়। বাচ্চারা,
এইসব কথা তোমাদের বুদ্ধিতেই বসানো হয়। তোমরা অর্থাৎ ব্রাহ্মণরা ব্যতীত আর কারোরই
সত্যের সাথে সঙ্গ নেই। তোমরা প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান, দাদু-নাতি হও। তাই এত খুশী
তো থাকা উচিত যে, আমরা হলাম দাদু -নাতি। উত্তরাধিকারও দাদার(দাদু) থেকেই পাওয়া যায়,
এটাই স্মরণের যাত্রা। বুদ্ধির দ্বারা একথাই স্মরণে রাখা উচিত। ওই সৎসঙ্গে (লৌকিক)
এক স্থানে গিয়ে বসে, এখানে সেসব কথা নেই। এমনও নয় যে এক স্থানে বসলেই সৎসঙ্গ হবে।
না, উঠতে-বসতে, চলতে-ফিরতে আমরা সৎসঙ্গে রয়েছি, যদি ওঁনাকে স্মরণ করি তবেই। স্মরণ
যদি না করো তবে তো দেহ-অভিমানে রয়েছে, দেহ হলো অসত্য (বিকারী) জিনিস, তাই না। দেহকে
সত্য বলা যাবে না। শরীর হলো জড়-পদার্থ, ৫ তত্ত্বে গঠিত, ওর মধ্যে আত্মা না থাকলে তা
নড়াচড়া করে না। মানুষের শরীরের কোন মূল্য নেই, আর সকলের শরীরের মূল্য রয়েছে। আত্মা
সৌভাগ্য পায়, আমি অমুক আত্মা, একথা আত্মা বলে, তাই না। বাবা বলেন, আত্মা কেমন হয়ে
গেছে ! ডিম, কচ্ছপ, মাছ সবকিছু খায়। প্রত্যেকেই ভস্মাসুর, নিজেকে নিজেই ভস্ম করে।
কীভাবে ? কাম-চিতায় বসে প্রত্যেকেই নিজের ভস্ম করছে, তাহলে ভস্মাসুরই হলো, তাই না।
এখন তোমরা জ্ঞান-চিতায় বসে দেবতা হও। সমগ্র দুনিয়া কাম-চিতায় বসে ভস্মীভূত হয়ে গেছে,
তমোপ্রধান, কালো হয়ে গেছে। বাবা আসেন বাচ্চাদের শ্যাম থেকে সুন্দরে পরিনত করতে। তাই
বাবা বাচ্চাদের বোঝান যে, দেহ-অভিমান পরিত্যাগ করে নিজেকে আত্মা মনে করো। বাচ্চারা
স্কুলে পড়ে কিন্তু পরে পড়াশোনা তো ঘরে থাকলেও বুদ্ধিতে থাকে, তাই না। এও তোমাদের
বুদ্ধিতে থাকা উচিত। এও তোমাদের স্টুডেন্ট লাইফ। এইম অবজেক্ট সম্মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
উঠতে, বসতে, চলতে বুদ্ধিতে এই জ্ঞান থাকা উচিত।
এখানে বাচ্চারা আসে রিফ্রেশ হতে, যুক্তি বোঝান হয় যে, এমনভাবে-এমনভাবে বোঝাও।
দুনিয়ায় অসংখ্য সৎসঙ্গ আছে। সেখানে কত মানুষ এসে একত্রিত হয়। বাস্তবে তা সৎসঙ্গ তো
নয়। বাচ্চারা, সত্যের সঙ্গ তো তোমরা এখনই প্রাপ্ত করো। বাবা-ই এসে সত্যযুগ স্থাপন
করেন। তোমরা মালিক হয়ে যাও। দেহ-অভিমান অথবা মিথ্যা অভিমানে তোমরা অধঃপতনে যাও আর
সৎসঙ্গে তোমরা ঊর্ধ্বে আরোহণ করো। আধাকল্প তোমরা প্রালব্ধ অর্থাৎ কর্মফল ভোগ করো।
এমনও নয় যে, ওখানে তোমাদের সতের(বাবা) সঙ্গ রয়েছে। না, সৎসঙ্গ এবং মিথ্যাসঙ্গ তখনই
বলা হবে যখন দুটোই উপস্থিত থাকবে। সৎ-পিতা যখন আসেন, তিনি এসে সবকথা বোঝান। যতক্ষণ
না পর্যন্ত সেই সত্য-পিতা আসছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ জানেই না। বাচ্চারা, বাবা এখন
তোমাদের বলেন -- হে আত্মাগণ, তোমরা আমার সাথে সঙ্গ করো। (তোমরা) শরীরের যে সঙ্গ
পেয়েছো, তারথেকে পৃথক হয়ে যাও। অবশ্যই শরীরের সঙ্গ সত্যযুগেও থাকবে কিন্তু সেখানে
তোমরা থাকোই পবিত্র। এখন তোমরা সৎসঙ্গে পতিত থেকে পবিত্র হও, পরে শরীরও সতোপ্রধান
পাবে। আত্মাও সতোপ্রধান থাকবে। এখন তো দুনিয়াও তমোপ্রধান। দুনিয়া নতুন আর পুরানো হয়।
নতুন দুনিয়ায় বরাবর আদি সনাতন দেবী-দেবতা ছিল। আজ সেই ধর্মকে সরিয়ে দিয়ে আদি সনাতন
হিন্দু ধর্ম বলে দেয়, বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে। এখন তোমরা ভারতবাসীরা বোঝো যে, আমরা
প্রাচীন দেবী-দেবতা ধর্মের ছিলাম। সত্যযুগের মালিক ছিলাম ? কিন্তু সেই নেশা কোথায় ?
কল্পের আয়ুই দীর্ঘ লিখে দিয়েছে। সবকথা ভূলে গেছে। এর নামই হলো ভুল-ভুলাইয়ার খেলা।
এখন তোমরা সত্য-পিতা দ্বারা সমগ্র নলেজ জেনে উচ্চপদ লাভ করো, পুনরায় তোমরা আধাকল্প
পরে নীচে পতিত হও কারণ তখন রাবণ-রাজ্য শুরু হয়। দুনিয়া পুরানো তো হবেই, তাই না।
তোমরা মনে করো যে, আমরা নতুন দুনিয়ার মালিক ছিলাম, এখন পুরানো দুনিয়ায় রয়েছি।
কারো-কারোর তো একথাও স্মরণে থাকে না। বাবা আমাদের স্বর্গবাসী বানান। আধাকল্প আমরা
স্বর্গবাসী থাকবে পুনরায় আধাকল্প পরে নিম্নে অবতরণ করো কারণ রাবণ-রাজ্য শুরু হয়।
দুনিয়া পুরানো তো হবে, তাই না। তোমরা জানো যে, বাবা আমাদের স্বর্গবাসী বানান।
আধাকল্প আমরা স্বর্গবাসী থাকবো পুনরায় নরকবাসী হবো। তোমরাও পুরুষার্থের নম্বরের
ক্রমানুসারে অলমাইটি অথরিটি (সর্বশক্তিমান) হও। এ হলো জ্ঞানামৃতের ডোজ। শিববাবা
অরগ্যান্সও পায় পুরানো। নতুন অরগ্যান্স তো পাওয়া যায় না। পুরানো বাজনা পায়। বাবা
আসেও বাণপ্রস্থেই। বাচ্চারা খুশী হলে তখন বাবাও খুশী হয়। বাবা বলেন, আমি যাই
বাচ্চাদের জ্ঞান প্রদান করে রাবণের থেকে মুক্ত করতে। পার্ট তো খুশী-খুশী পালন করা
হয়, তাই না। বাবা অত্যন্ত খুশীর সঙ্গে নিজ ভূমিকা পালন করে। বাবাকে প্রতি কল্পে
আসতে হয়। এই ভূমিকা(পার্ট) কখনো সমাপ্ত হয় না। বাচ্চাদের অত্যন্ত খুশী থাকা উচিত।
যত সৎসঙ্গ করবে ততই খুশী থাকবে, স্মরণ কম করে তাই এত খুশী থাকে না। বাবা বাচ্চাদের
উত্তরাধিকার দেন। যে বাচ্চাদের হৃদয়ে সততা রয়েছে, তাদের প্রতি বাবার অত্যন্ত স্নেহ
থাকে। সৎ-হৃদয়বানের উপর সদা সাহেব রাজি অর্থাৎ বাবা সদয় থাকেন। অন্তরে ও বাইরে যে
সৎ থাকে, বাবার সহায়ক হয়, সেবায় সদা তৎপর থাকে, সেই বাবার প্রিয় হয়। নিজের হৃদয়কে
জিজ্ঞাসা করো -- আমরা সত্য-সত্যই সার্ভিস করি তো ? সত্য-পিতার সাথে সঙ্গ রাখি কী ?
যদি সত্য-পিতার সাথে সঙ্গ বা সম্বন্ধ না রাখি তবে কী গতি হবে ? অনেককে মার্গদর্শন
করালে, উচ্চপদও লাভ করবে। সত্য-পিতার থেকে আমরা কী উত্তরাধিকার পেয়েছি। নিজেদের
অন্তরে দেখতে হবে। এ তো জানে যে, নম্বরের ক্রমানুসারেই হয়। কেউ এতখানি(বেশী)
উত্তরাধিকার পায়, তো কেউ এতখানি (কম)। রাত-দিনের পার্থক্য থাকে। *আচ্ছা !*
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
তোমরা যে দেহের সঙ্গ পেয়েছো, সেই সঙ্গ থেকে পৃথক হয়ে থাকতে হবে। সতের(বাবা) সঙ্গে
থেকে পবিত্র হতে হবে।
২ ) এই স্টুডেন্ট লাইফে চলতে-ফিরতে বুদ্ধিতে যেন জ্ঞানের মন্থন চলতে থাকে। এইম
অবজেক্টকে সম্মুখে রেখে পুরুষার্থ করতে হবে। সৎ-হৃদয়ে বাবার সাহায্যকারী হতে হবে।
বরদান:-
স্বর্ণযুগীয় স্বভাব দ্বারা স্বর্ণযুগীয় সেবা প্রদানকারী শ্রেষ্ঠ পুরুষার্থী ভব
ব্যাখা :- যে
বাচ্চাদের স্বভাবে কোনো ঈর্ষা, সিদ্ধি এবং জেদের মনোভাব অথবা কোনও পুরানো সংস্কারের
খাদ(অ্যালয়) মিশ্রিত থাকে না, তারাই স্বর্ণযুগীয় (গোল্ডেন এজে'ড) স্বভাবের। এমন
স্বর্ণযুগীয় স্বভাব আর সদা 'জী হুজুর'-এর সংস্কার গঠন করা শ্রেষ্ঠ পুরুষার্থী
বাচ্চারা, যেমন সময়, যেমন সেবা তেমনভাবেই নিজেকে মোল্ড করে রীয়েল গোল্ড হয়ে যায়।
সেবাতেও যেন অভিমান বা অপমানের অ্যালয় মিশ্রিত না হয়, তবেই বলা হবে স্বর্ণযুগীয়
সেবাধারী।
স্লোগান:-
কেন, কী-এর প্রশ্নকে সমাপ্ত করে, সদা প্রসন্নচিত্ত থাকো।