20.01.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
পুণ্য আত্মা হতে হলে নিজের দৈনন্দিন চার্টকে দেখো যে, কোনো পাপ কর্ম হয়ে যায়নি
তো, সত্যের খাতা জমা আছে ?"
প্রশ্নঃ -
সবথেকে বড়
পাপ কি ?
উত্তরঃ -
কারোর প্রতি খারাপ দৃষ্টি দিয়ে দেখা - এটাই হলো সবথেকে বড় পাপ। বাচ্চারা তোমরা
পূণ্যাত্মা হতে চলেছো, তাই তোমাদের কারোর প্রতি খারাপ দৃষ্টি বা বিকারী দৃষ্টি রাখা
যাবে না। নিজেকে চেক করো যে, তুমি কতক্ষণ যোগযুক্ত হয়ে থাকো ? কোনো পাপ কর্ম তো হয়ে
যায় না ? উঁচু পদ পেতে হবে, তাই খুব সাবধানে থাকো, একটুখানিও কুদৃষ্টি যেন না হয়।
বাবা যে শ্রীমৎ দিচ্ছেন, তার ওপর সম্পূর্ণভাবে চলতে থাকো।
গীতঃ-
মুখমন্ডল দেখে
নাও হে প্রাণী...
ওম্ শান্তি ।
অসীম জগতের
বাবা নিজের বাচ্চাদেরকে বলছেন যে, হে বাচ্চারা, নিজেকে নিরীক্ষণ করো। এটা তো
মানুষের জানা আছে যে, তারা সারাজীবনে কি কি পাপ কর্ম করেছে আর কি কি পূণ্য কর্ম
করেছে ? প্রত্যেকদিন নিজের দৈনন্দিন চার্টকে দেখো - কত পাপ আর কত পূণ্য করেছো ?
কাউকে নিরুৎসাহিত তো করোনি ? প্রত্যেক মানুষ এটা জানে যে তারা নিজেদের জীবনে কি কি
কর্ম করেছে ? কত পাপ কর্ম করেছে আর কত দান পূর্ণ আদি করেছে ? মানুষ তীর্থযাত্রা আদি
করার সময় অনেক দান পূর্ণ আদি করে। সেই সময় তারা চেষ্টা করে যে যাতে কোন পাপ কর্ম
তাদের দ্বারা না হয়। তাই বাবাও বাচ্চাদেরকে জিজ্ঞাসা করছেন যে, কত পাপকর্ম, আর কত
পূণ্য কর্ম করেছো ? এখন বাচ্চারা, তোমাদের পুণ্যাত্মা হতে হবে। কোনরূপ পাপকর্ম করবে
না। পাপও অনেক প্রকারের হয়ে থাকে। কারোর প্রতি খারাপ দৃষ্টি গেলে, এটাও এক ধরনের
পাপ কর্ম হয়। খারাপ দৃষ্টি হয় বিকারের। সেটা হলো সবথেকে খারাপ। কখনো বিকারী দৃষ্টি
যেন কারোর প্রতি না যায়। বিশেষ করে স্ত্রী-পুরুষের তো বিকারী দৃষ্টি হয়ে থাকে।
কুমার-কুমারীদেরও কোথাও না কোথাও বিকার যুক্ত দৃষ্টি হয়ে থাকে। এখন বাবা বলছেন যে,
এই বিকারী দৃষ্টি যেন না হয়। না হলে তো তোমাদেরকে বাঁদর বলে ডাকতে হবে।
উদাহরণস্বরূপ নারদকে দেখানো হয়েছে, তাই না! নারদ বলেছিল যে, "আমি লক্ষ্মীকে বরণ
করব!" তোমরাও তো বলো যে, আমিও লক্ষ্মীকে বরণ করবো। নারী থেকে লক্ষ্মী, নর থেকে
নারায়ণ হবে। বাবা বলছেন যে, হৃদয় দিয়ে নিজেকে জিজ্ঞাসা করো যে, কতখানি আমি পূণ্য
আত্মা হতে পেরেছি ? কোন পাপ কর্ম তো করছি না ? কতক্ষণ আমি যোগযুক্ত হয়ে থাকছি ?
বাচ্চারা, তোমরা তো বাবাকে চিনেই গেছো, তাই তো এখানে বসে আছো, তাই না! দুনিয়ার
মানুষেরা তো বাবাকে চেনেই না, যে তারা বলবে ইনিই হলেন বাপ-দাদা। তোমরা ব্রাহ্মণ
বাচ্চারা তো জানো যে, পরমপিতা পরমাত্মা ব্রহ্মা বাবার শরীরে প্রবেশ করে আমাদেরকে
অবিনাশী জ্ঞান রত্নের খাজানা দিয়ে ভরপুর করে দেন। মানুষের কাছে থাকে বিনাশী ধন।
সেটাই তারা দান করে। সেটা তো হলো পাথরের সমান। এটা হল জ্ঞানের রত্ন। জ্ঞান সাগর
বাবার কাছেই এই রত্ন থাকে। এই এক-এক রত্ন লক্ষ টাকার সমান। রত্নাকর বাবার থেকে
জ্ঞানরত্ন ধারণ করে পুনরায় এই রত্নের দান করতে হবে। যত পরিমাণ যে গ্রহণ করবে আর
দান করবে, ততই সে উঁচু পদ প্রাপ্ত করবে। তাই বাবা বোঝাচ্ছেন যে, নিজের অন্তরকে দেখো
যে নিজে কত পাপ কর্ম করেছো? এখন কোনরূপ পাপকর্ম তো হচ্ছে না ? একটুও কুদৃষ্টি যেন
কারোর প্রতি না যায়। বাবা যে শ্রীমৎ দিচ্ছেন, তার ওপর সম্পূর্ণভাবে চলতে হবে। এর
জন্য সাবধানতা বজায় রাখতে হবে। মায়ার তুফান তো আসবেই, কিন্তু কর্মেন্দ্রিয় দিয়ে
কোন বিকর্ম যেন না হয়ে যায়। কারোর প্রতি কুদৃষ্টি গেলে তার সামনে তো দাঁড়িয়ে
থাকাই যাবে না। একদম দূরে চলে যেতে হবে। বোঝা যায় যে এর কুদৃষ্টি আছে। যদি উঁচু পদ
প্রাপ্ত করতে হয়, তাহলে খুব সাবধানে থাকতে হবে। কুদৃষ্টি হলে তো বিকলাঙ্গ হয়ে
জন্ম গ্রহন করতে হবে। বাবা যে শ্রীমৎ দিচ্ছেন তার উপরই চলতে হবে। বাবাকে বাচ্চারাই
চিনতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, মনে করো বাবা কোথাও গেছেন, তাহলে বাচ্চারাই তাঁকে বুঝতে
পারবেন যে, বাবা-দাদা এসেছেন। অন্যদিকে মানুষের ভিড় তো অনেক হয়ে যায় তাঁকে দেখার
জন্য, কিন্তু তারা তো এঁনাকে জানেই না। কেউ হয়তো জিজ্ঞাসা করে যে ইঁনি কে? তখন বলো
যে, ইঁনি হলেন বাপ-দাদা। ব্যাজ তো সবার কাছেই থাকা চাই। বলো, শিব বাবা আমাদেরকে এই
দাদার দ্বারা অবিনাশী জ্ঞান রত্নের দান করছেন। এটা হলো আধ্যাত্মিক জ্ঞান (স্পিরিচুয়াল
নলেজ)। স্পিরিচুয়াল ফাদার, সকল আত্মাদেরকে বাবা বসে এই জ্ঞান শোনাচ্ছেন। শিব
ভগবানুবাচ। গীতাতে কৃষ্ণ ভগবানুবাচ লেখা আছে। এটা হল ভুল কথা। জ্ঞান সাগর পতিত-পাবন
শিবকেই বলা হয়ে থাকে। জ্ঞানের দ্বারা সদ্গতি হয়। এটা হল অবিনাশী জ্ঞানরত্ন। সদ্গতি
দাতা হলেন এক বাবা। এই সমস্ত কথা ভালো করে স্মরণে রাখতে হবে। এখন বাচ্চারা বুঝে গেছে
যে, আমরা বাবাকে জেনে গেছি আর বাবাও এটা বোঝেন যে আমি বাচ্চাদেরকে জানি। বাবা তো
বলবেন-ই যে এরা সবাই হলো আমার বাচ্চা, কিন্তু কেউ জানে না। ভাগ্যে থাকলে পরবর্তীকালে
জানতে পারবে। মনে করো বাবা কোথাও যাচ্ছেন, কেউ জিজ্ঞাসা করল ইঁনি কে ? অবশ্যই শুদ্ধ
ভাবনা দিয়েই জিজ্ঞাসা করবে ? উত্তর একটাই বলো যে, ইনি হলেন বাপ-দাদা। অসীম জগতের
বাবা হলেন নিরাকার। তিনি যতক্ষণ না এই সাকার শরীরে আসেন, ততক্ষণ বাবার থেকে
আশীর্বাদ কিভাবে প্রাপ্ত হবে ? শিব বাবা প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারা দত্তক নিয়ে
আশীর্বাদ প্রদান করেন। ইনি হলেন প্রজাপিতা ব্রহ্মা আর তোমরা সব হলে বি. কে. ।
শিক্ষক হলেন জ্ঞানের সাগর। তাঁর থেকেই উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। এই ব্রহ্মা বাবাও
এখন পড়ছেন। তোমরা ব্রাহ্মণ থেকে পুনরায় দেবতা হতে চলেছো। কাউকে বোঝানো তো খুবই সহজ।
কাউকে ব্যাজ দেখিয়ে বোঝালেও খুব ভালো হয়। বলো, বাবা বলেন যে আমাকে স্মরণ করো তো
তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে। পবিত্র হয়ে পবিত্র দুনিয়ায় চলে যাবে। এই বাবা
হলেন পতিত-পাবন তাইনা। আমরা পুরুষার্থ করছি পবিত্র হওয়ার জন্য। যখন বিনাশের সময়
হবে তখন আমাদের এই পড়াও সম্পন্ন হয়ে যাবে। এইসব কথা বোঝানো খুবই সহজ। কেউ যদি
কোথাও যাতায়াত করো তাহলে এই ব্যাজ সাথে রেখে দিও। এই ব্যাচের সাথে একটা ছোট পর্চাও
রেখে দিও। তাতে লেখা থাকবে যে, ভারতে বাবা এসে পুনরায় আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্ম
স্থাপন করছেন। অন্য সকল ধর্ম এই মহাভারত লড়াইয়ে দ্বারা কল্প পূর্বের ন্যায়
ড্রামার প্ল্যান অনুসারে বিনাশ হয়ে যাবে। এইরকম পর্চা ২-৪ লক্ষ ছাপানো চাই। যে কেউ
পর্চা বিতরণ করতে পারে। উপরে ত্রিমূর্তির চিত্র থাকবে অপরদিকে সেন্টারের অ্যাড্রেস
থাকবে। বাচ্চাদের বুদ্ধিতে সারাদিন এইসব সেবার চিন্তাই যেন চলতে থাকে।
বাচ্চারা তো এই গান শুনেছেই - প্রতিদিন নিজের দৈনন্দিন চার্ট বসে লিখতে হবে যে, আজ
সারাদিন আমার স্থিতি কেমন ছিল? বাবা এইরকম অনেক মানুষ দেখেছেন, যারা রোজ রাতে
সারাদিনের চার্ট লেখেন। চেক করে যে, সারাদিন কোনো খারাপ কাজ তো করিনি ? সব কিছু
পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে লেখে। এটা বোঝে যে ভালো জীবন কাহিনী লেখা থাকলে পরবর্তী কালে
যারা এই ডাইরি পড়বে তারাও এই সুন্দর সংস্কার শিখতে পারবে। এই রকম লেখার জন্য
ব্যক্তিত্ব খুব ভালো হয়ে যায়। বিকারী তো সবাই আছেই। এখানে তো সেসবের কোনো কথা নেই।
তোমরা প্রত্যেকদিন নিজেদের দৈনন্দিন চার্ট দেখো, তারপর বাবার কাছে পাঠিয়ে দাও,
তাহলে উন্নতিও খুব ভালো হবে আর ভয়ও থাকবে। সবটাই পরিষ্কার করে লিখতে হবে - আজ আমার
খারাপ দৃষ্টি গেছে, এটা হয়েছে.....। যারা একে অপরকে দুঃখ দেয়, বাবা তাদেরকে গাজী
বলেন। জন্ম-জন্মান্তরের পাপ তোমাদের মাথার উপর আছে। এখন তোমাদেরকে স্মরণের শক্তি
দিয়ে পাপের বোঝা গুলিকে নামাতে হবে, এই জন্য প্রতিদিন দেখতে হবে যে আজ সারাদিন আমি
কতটা গাজী হয়েছি ? কাউকে দুঃখ দেওয়া অর্থাৎ গাজী হওয়া। পাপ হয়ে যায়। বাবা বলেন
যে, গাজী হয়ে কাউকে দুঃখ দিও না। নিজেকে সম্পূর্ণরূপে চেক করো, আমি কত পাপ করেছি
আর কত পূণ্য কাজ করেছি? যাদের সাথে পরিচিত আছে, তাদের সবাইকে এই রাস্তা বলতেই হবে।
সবাইকে খুব প্রেমের সাথে বলো যে, বাবাকে স্মরণ করো আর পবিত্র হও। গৃহস্থ ব্যবহারে
থেকেও পদ্মফুলের সমান পবিত্র থাকতে হবে। যদিও তোমরা সঙ্গম যুগে আছো কিন্তু এটা হলো
রাবণ রাজ্য তাই না। এই মায়াবী বিষয়-বৈতরণী নদীতে থেকেও পদ্মফুলের সমান পবিত্র থাকতে
হবে। পদ্মফুল ছোট বাচ্চাদের (কুঁড়ি) সাথেই থাকে। তবুও জল থেকে অনেক উপরে থাকে।
গৃহস্থী আছে, অনেক জিনিসের জন্ম দেয়। এই দৃষ্টান্ত তোমাদের জন্যই আছে। বিকার থেকে
পৃথক হয়ে থাকো। এই এক জন্ম পবিত্র থাকো তো পুনরায় এটা অবিনাশী হয়ে যাবে বাবা
তোমাদেরকে অবিনাশী জ্ঞানরত্ন প্রদান করছেন। বাকি এইসব তো হলো পাথরের সমান। তারা তো
ভক্তির কথাই শোনাতে থাকে। জ্ঞান সাগর পতিতপাবন তো একজনই আছেন, তো এইরকম বাবার সাথে
বাচ্চাদের কতই না ভালোবাসা থাকা চাই। বাবার বাচ্চাদের সাথে, বাচ্চাদের বাবার সাথে
ভালোবাসা থাকে। বাকি অন্য কারোর সাথে মনের যোগসুত্র রেখো না। সত্পুত্র তো সে, যে
বাবার শ্রীমতে সম্পূর্ণভাবে চলেনা। রাবণের মতে চলতে থাকে, তাই রামের শ্রীমৎ মনে থাকে
না। অর্ধকল্প হল রাবণ সম্প্রদায়, এইজন্য এটাকে ভ্রষ্টাচারী দুনিয়া বলা হয়। এখন
তোমাদেরকে অন্য সব কিছুকে ছেড়ে এক বাবার শ্রীমতে চলতে হবে। বি.কে.দের মত্ পাওয়া
যায়, সেই মতকেও চেক করতে হয় যে এই মতটি সঠিক না ভুল? বাচ্চারা তোমাদেরকে সঠিক আর
ভুল বোঝার সময়ও এখন এসেছে। যখন পরীক্ষক আসবেন তখন কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল বলে
দেবেন। বাবা বলেন যে, তোমরা অর্ধেক কল্প এই ভক্তি মার্গের শাস্ত্র শুনেছো। এখন আমি
তোমাদেরকে যা কিছু শোনাচ্ছি - এটাই হলো সত্য, নাকি ওইসব হলো সত্য? তারা বলে যে
ঈশ্বর হল সর্বব্যাপী, আমি বলি যে আমি তো হলাম তোমাদের বাবা। এখন তোমরাই বিচার করো
যে কোনটা ঠিক ? এটাও বাচ্চাদেরকেই বোঝানো হয় তাই না, যখন ব্রাহ্মণ হয়েছো, ঠিক বুঝবে।
রাবণ সম্প্রদায় তো অনেক আছে, তোমরা তাে হলে সংখ্যায় খুব কম। তার মধ্যেও আবার
নম্বরের ক্রম আছে। যদি কারোর কুদৃষ্টি থাকে, তাহলে তাকে রাবণ সম্প্রদায়ের বলা হবে।
রাম সম্প্রদায়ের তখন বোঝা যাবে, যখন সমস্ত দৃষ্টি পরিবর্তিত হয়ে দৈবী হয়ে যাবে।
নিজের স্বস্থিতি থেকে সবাই তো বুঝতে পারো তাই না। প্রথমে তো জ্ঞান ছিলই না, এখন বাবা
এসে রাস্তা বলে দিয়েছেন। তাই দেখতে হবে যে অবিনাশী জ্ঞানরত্নের দান আমি করছি ?
ভক্তরা বিনাশী ধনের দান করে। এখন তোমাদেরকে অবিনাশী ধনের দান করতে হবে, নাকি বিনাশী
ধনের। যদি বিনাশী ধন থেকেও থাকে, তো তাকে অলৌকিক সেবাতে লাগিয়ে দাও। পতিতদেরকে দান
করলে তো পতিতই হয়ে যাবে। এখন তুমি নিজেদের ধন দান করছো তো এর পরিবর্তে তোমরা ২১
জন্মের জন্য নতুন দুনিয়ায় সুখ প্রাপ্ত করবে। এই সমস্ত কথা হল বোঝার বিষয়। বাবা
সেবার যুক্তিগুলিও বলে দেন। সবার উপর দয়া করো। বলা হয়ে থাকে যে, পরম পিতা
পরমাত্মা ব্রহ্মার দ্বারা স্থাপনা করেন। কিন্তু অর্থ কেউ বোঝেনা। পরমাত্মাকেই
সর্বব্যাপী বলে দেয়। তাই বাচ্চাদেরকে খুব ভালো করে সেবার করার শখ রাখতে হবে।
অন্যদেরকে কল্যাণ করলে তো নিজেরই কল্যান হবে। দিন-প্রতিদিন বাবা খুব সহজ করে দেন।
এই ত্রিমূর্তির চিত্রও হল খুব সুন্দর। এতে শিববাবাও আছেন, আবার প্রজাপিতা ব্রহ্মাও
আছেন। প্রজাপিতা ব্রহ্মা এবং ব্রহ্মাকুমার-কুমারীদের দ্বারা পুনরায় ভারতে ১০০
শতাংশ পবিত্রতা-সুখ-শান্তির দৈবী স্বরাজ্য স্থাপন করছেন। বাকি অনেক ধর্ম এই মহাভারত
লড়াইয়ের দ্বারা কল্পপূর্বের ন্যায় বিনাশ হয়ে যাবে। এইরকম-এইরকম পর্চা ছাপিয়ে
বিতরণ করতে হবে। বাবা কত সহজে রাস্তা বলে দেন। প্রদর্শনীতেও পর্চা দাও। পর্চা দ্বারা
বোঝানো সহজ হয়। পুরানো দুনিয়ার বিনাশ তো হতেই হবে। নতুন দুনিয়ার স্থাপনা হচ্ছে।
এক আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্মের স্থাপনা হচ্ছে। বাকি এই সব বিনাশ হয়ে যাবে কল্প
পূর্বের ন্যায়। যেখানেই যাও, পকেটে পর্চা আর ব্যাজ যেন সর্বদা থাকে। সেকেন্ডে
জীবনমুক্তি গাওয়া হয়। বলো, ইনি হলেন বাবা, আর ইনি হলেন দাদা। ওই বাবাকে স্মরণ করলে
এই সত্যযুগে দেবতা পদ পাওয়া যায়। পুরানো দুনিয়ার বিনাশ, নতুন দুনিয়ার স্থাপনা,
বিষ্ণুপুরী নতুন দুনিয়াতে পুনরায় এঁনার রাজ্য হবে। কত সহজ আছে। অনেক মানুষ তীর্থ
আদি করতে যায়, কত ধাক্কা খায়। আর্য সমাজীরাও ট্রেন ভর্তি করে যায়। এটাকে বলা হয়
ধর্মের ধাক্কা, বাস্তবে হল অধর্মের ধাক্কা। ধর্মের মধ্যে তো ধাক্কা খাওয়ার দরকারই
নেই। তোমরা তো পড়াশোনা করছো। ভক্তিমার্গে মানুষ কত-কিইনা করতে থাকে!
বাচ্চারা এই গীত তো শুনেছে যে, "মুখমন্ডল দেখে নাও হে প্রাণী..." এই মুখমন্ডল তোমরা
ছাড়া তো অন্য কেউ দেখতে পারে না। ভগবানকেও তোমরা দেখাতে পারো। এটা হল জ্ঞানের কথা।
তোমরা মনুষ্য থেকে দেবতা, পাপাত্মা থেকে পূণ্য আত্মা হতে চলেছো। জগতে এই সমস্ত কথা
কেউই জানেনা। এই লক্ষী-নারায়ণ স্বর্গের মালিক কিভাবে হয়েছিলেন, এই সমস্ত কথাও
কারোর জানা নাই। তোমরা বাচ্চারা তো সব জেনে গেছো। কারোর বুদ্ধিতে তীর লেগে যায় তো
বেড়া পার হয়ে যাবে। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) যদি
বিনাশী ধন থাকে, তো সেটাকে সফল করার জন্য অলৌকিক সেবাতে লাগিয়ে দাও। অবিনাশী ধনের
দানও অবশ্যই করতে হবে।
২ ) নিজের দৈনন্দিন চার্টে দেখো যে, নিজের স্থিতি কেমন ছিলো ? সারাদিন কোনো খারাপ
কাজ হয়নি তো ? একে অপরেকে দুঃখ দিইনি তো ? কারোর প্রতি কুদৃষ্টি যায়নি তো ?
বরদান:-
প্রতিটি খাজানাকে বাবার নির্দেশ অনুসারে কার্যে প্রয়োগ করে অনেস্ট বা সৎ ভব
ব্যাখ্যা :- অনেস্ট
অর্থাৎ সৎ - তাকেই বলা যাবে, যে বাবার থেকে প্রাপ্ত খাজানা গুলিকে বাবার নির্দেশ
বিনা কোন কাজে লাগায় না। যদি সময়, বাণী, কর্ম, শ্বাস বা সংকল্প পরমত বা সঙ্গদোষে
ব্যর্থের দিকে নষ্ট করতে থাকে, স্ব-চিন্তনের পরিবর্তে পরচিন্তন করতে থাকে, স্বমানের
পরিবর্তে কোনোপ্রকার দেহ অভিমানে এসে যায়, শ্রীমতের বদলে মনমতের আধারে চলে তো
তাদেরকে অনেস্ট বলা যাবে না। এইসব খাজানা গুলি বিশ্ব কল্যাণের জন্য প্রাপ্ত হয়েছে,
তাই বিশ্ব কল্যাণের কাজেই লাগাতে হবে - এটাই হলো অনেস্ট হওয়া।
স্লোগান:-
মায়ার সাথে বিরুদ্ধাচরণ করো, কিন্তু দৈব পরিবারের সঙ্গে নয়।
অব্যক্ত স্থিতির
অনুভব করার জন্য
প্রতিটি সময়ে নতুনত্বের অনুভব করতে হবে এবং অপরকেও নতুনভাবে উৎসাহিত করতে হবে।
খুশিতে নাচতেও হবে আবার বাবার গুনগানও করতে হবে। মধুরতার মিঠাই দিয়ে নিজের মুখও
মিঠা করতে হবে, আবার অপরদেরও মধুর বোল, মধুর সংস্কার, মধুর স্বভাব দ্বারা মুখ মিষ্টি
করতে হবে।