30.01.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
বাবা তোমাদের জ্ঞান এবং যোগের খাবার খাইয়ে জোরদার তদারক করেন, তাই তোমরা সর্বদা
খোশমেজাজে থাকো আর শ্রীমৎ অনুসারে সকলকে তদারক করতে থাকো"
প্রশ্নঃ -
এই সঙ্গমযুগে
তোমাদের কাছে সবথেকে অমূল্য জিনিস কি আছে, যাকে রক্ষা করতে হবে ?
উত্তরঃ -
এই সর্বোত্তম ব্রাহ্মণ কুলে তোমাদের এই জীবন খুবই অমূল্য, তাই এই শরীরের যত্ন
অবশ্যই করতে হবে । এমন নয় যে, এ তো মাটির পুতুল, এ তো একদিন শেষ হয়ে যাবে । তা নয়
। এই শরীরকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে । কেউ যদি অসুস্থ হয়, তো তার প্রতি বিরক্ত হওয়া
উচিত নয় । তাকে বলো, তুমি শিববাবাকে স্মরণ করো । যত স্মরণ করবে, ততই পাপ মুক্ত হয়ে
যাবে । তাঁর সেবা করা উচিত, তোমরা বেঁচে থাকবে, শিববাবাকেও স্মরণ করতে থাকবে ।
ওম্ শান্তি ।
জ্ঞানের তৃতীয়
নেত্র প্রদানকারী আত্মাদের পিতা বসে তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদের বোঝান । জ্ঞানের এই
তৃতীয় নেত্র একমাত্র বাবা ছাড়া অন্য কেউই দিতে পারে না । বাচ্চারা, এখন তোমরা
জ্ঞানের তৃতীয় নয়ন পেয়েছো । বাচ্চারা, এখন তোমরা জানো যে, এই পুরানো দুনিয়া
পরিবর্তন হয়ে যাবে । বেচারা মানুষ জানেই না, কে এই দুনিয়ার পরিবর্তন করবেন, আর
কিভাবে তিনি পরিবর্তন করবেন । কেননা তাদের তো জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র নেই । বাচ্চারা,
তোমরা এখন জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র পেয়েছো, যার দ্বারা তোমরা এই সৃষ্টির আদি - মধ্য এবং
অন্তকে জেনে গেছো । এ হলো জ্ঞানের স্যাকারিন । স্যাকারিনের এক ফোঁটাতেও কতো মিষ্টি
হয় । জ্ঞানের একই অক্ষর হলো 'মনমনাভব ।' এই অক্ষর কতো মিষ্টি । তোমরা নিজেকে আত্মা
মনে করে বাবাকে স্মরণ করো । বাবা তোমাদের শান্তিধাম এবং সুখধামের পথ বলে দিচ্ছেন ।
বাচ্চারা, বাবা এসেছেন তোমাদের স্বর্গের অবিনাশী উত্তরাধিকারের আশীর্বাদ দেওয়ার
জন্য । তাই বাচ্চাদের কতো খুশীতে থাকা উচিত । এমন বলাই হয়, খুশীর মতো খাবার নেই ।
যে সর্বদা খুশী আর মস্তিতে থাকে, তার জন্য এ হলো খাবারের সমান । ২১ জন্ম মস্তিতে
থাকার এ হলো জোরদার খাবার । এই খাবার সর্বদা একে অপরকে খাওয়াতে থাকো । এই হলো একে
অপরের প্রতি জোরদার তদারকি । এমন খাতির আর কোনো মানুষই অন্য মানুষকে করতে পারে না ।
বাচ্চারা, তোমরা শ্রীমতে উপর নির্ভর করে সকলের আধ্যাত্মিক সেবা করো । কাউকে বাবার
পরিচয় দান করাও হলো এক প্রকৃত সেবা । মিষ্টি বাচ্চারা জানে যে, বেহদের বাবার দ্বারা
আমরা জীবনমুক্তির উপহার লাভ করি । সত্যযুগে ভারত জীবনমুক্ত ছিলো, পবিত্র ছিলো । বাবা
অনেক বড় মানের খাবার দেন, তাই তো গায়ন আছে, অতীন্দ্রিয় সুখের কথা জিজ্ঞেস করতে হলে
গোপ - গোপীদের জিজ্ঞাসা করো । এ হলো জ্ঞান এবং যোগের কতো এক নম্বরের আশ্চর্যের
খাবার, আর এই খাবার একমাত্র আত্মিক সার্জনের কাছেই আছে । এই খাবারের কথা আর কেউই
জানে না । বাবা বলেন, মিষ্টি বাচ্চারা, আমি তোমাদের জন্য হাতে করে উপহার নিয়ে এসেছি
। মুক্তি আর জীবনমুক্তির এই উপহার আমার কাছেই থাকে । কল্প - কল্প আমি এসেই তোমাদের
এই উপহার প্রদান করি, এরপরে রাবণ তা ছিনিয়ে নেয় । তাই বাচ্চারা, এখন তোমাদের খুশীর
পারদ কতখানি চড়া উচিত । তোমরা জানো যে, আমাদের একজনই বাবা, টিচার এবং প্রকৃত সদগুরু,
যিনি আমাদের সঙ্গে করে নিয়ে যান । আমরা আমাদের অতি প্রিয় বাবার কাছ থেকে এই বিশ্বের
বাদশাহী পাই । এ কি কম কথা ? বাচ্চাদের সবসময় খুশীতে থাকা উচিত । এই ঈশ্বরীয় ছাত্র
জীবন হলো সর্বসেরা । এ তো এখনকারই কথা, তাই না । এরপর নতুন দুনিয়াতে তোমরা সবসময়
খুশীর উৎসব পালন করতে থাকবে । দুনিয়া এ কথা জানে না যে, সত্যিকারের খুশী কখন পালন
করা হবে । মানুষের তো সত্যযুগের জ্ঞানই নেই, তাই তারা এখানেই খুশী পালন করতে থাকে,
কিন্তু এই পুরানো তমোপ্রধান দুনিয়াতে খুশী কোথা থেকে আসবে ? এখানে তো মানুষ ত্রাহি
- ত্রাহি রব করতে থাকে । এই দুনিয়া কতো দুঃখের দুনিয়া ।
বাচ্চারা, বাবা তোমাদের কতো সহজ পথ বলে দেন । গৃহস্থ জীবনে থেকে কমল পুষ্পের ন্যায়
পবিত্র থাকো । কাজ - কারবার করেও আমাকে স্মরণ করতে থাকো । আশিক আর মাশুক (প্রিয়তম -
প্রিয়তমা ) যেমন একে অপরকে স্মরণ করতে থাকে । সে তার প্রিয়তম হয়, যে তার প্রিয়তমা
। এখানে এই বিষয় নেই, এখানে তো তোমরা সবাই এক মাশুকের (প্রিয়তমের ) জন্ম -
জন্মান্তরের আশিক (প্রিয়তমা ) হয়ে রয়েছো । বাবা কখনোই তোমাদের আশিক হন না । তোমরা
সেই মাশুককে (প্রিয়তম ) আসার জন্য তাঁকে স্মরণ করে এসেছো । মানুষের দুঃখ যখন বেশী
হয়, তখন সে বেশী করে স্মরণ করে, তাই তো এই মহিমা আছে যে - দুঃখে সবাই স্মরণ করে,
সুখে কেউই করে না । এই সময় বাবা হলেন সর্বশক্তিমান । দিনে দিনে মায়াও সর্বশক্তিমান,
তমোপ্রধান হয়ে যাচ্ছে, তাই বাবা বলেন - মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা দেহী - অভিমানী হও
। নিজেকে আত্মা মনে করে আমি তোমাদের বাবা, তোমরা আমাকে স্মরণ করো আর এর সঙ্গে সঙ্গে
দৈবী গুণও ধারণ করো, তাহলে তোমরা এমন লক্ষ্মী - নারায়ণের তুল্য হয়ে যাবে । এই
আধ্যাত্মিক পড়ার মূখ্য বিষয়ই হলো স্মরণ করা । উঁচুর থেকেও উঁচু বাবাকে খুব ভালোবেসে,
স্নেহের সঙ্গে স্মরণ করা উচিত । ওই উঁচুর থেকেও উঁচু বাবা হলেন নতুন দুনিয়া
স্থাপনকারী । বাবা বলেন - বাচ্চারা, আমি এসেছি তোমাদের এই বিশ্বের মালিক বানাতে,
তাই তোমরা যদি আমাকে স্মরণ করো তাহলে তোমাদের অনেক জন্মের পাপ কেটে যাবে । পতিত
পাবন বাবা বলেন - তোমরা খুবই পতিত হয়ে গেছো, তাই এখন তোমরা আমাকে যদি আমাকে স্মরণ
করো, তাহলে পবিত্র হয়ে পবিত্র দুনিয়ার মালিক হয়ে যাবে । পতিত পাবন বাবাকেই তো ডাকা
হয়, তাই না । এখন বাবা যখন এসেছেন তখন অবশ্যই তো পবিত্র হতে হবে । বাবা হলেন
দুঃখহর্তা এবং সুখকর্তা । বরাবর সত্যযুগে পবিত্র দুনিয়া ছিলো তাই সকলেই সেখানে সুখী
ছিলো । বাবা এখন আবার বলছেন - বাচ্চারা, তোমরা শান্তিধাম এবং সুখধামকে স্মরণ করতে
থাকো । এখন হলো সঙ্গম যুগ । কাণ্ডারী বাবা তোমাদের এই পার থেকে ওই পারে নিয়ে যান ।
নৌকা কোনো একটা নয়, সম্পূর্ণ দুনিয়াই যেন এক বিশাল জাহাজ । এদের সবাইকে তিনি পারে
নিয়ে যান ।
তোমাদের মতো মিষ্টি বাচ্চাদের কতো খুশী হওয়া উচিত । তোমাদের জন্য সর্বদা খুশীই খুশী
। অসীম জগতের বাবা আমাদের পড়াচ্ছেন, বাহ ! এই পড়া তো কখনোই শুনি নি বা পড়ি নি ।
ভগবান উবাচঃ -আমি তোমাদের মতো আত্মিক বাচ্চাদের রাজযোগ শেখাচ্ছি । তাই তোমাদের তা
সম্পূর্ণ রীতিতে শেখা চাই, ধারণা করা চাই । সম্পূর্ণ রীতিতে পড়া চাই । পড়াতে এক
নম্বর তো সর্বদা হয়ই । নিজেকে পর্যবেক্ষণ করা উচিত, আমি কি উত্তম, মধ্যম, নাকি
কনিষ্ঠ ? বাবা বলেন - নিজেকে দেখো, আমি কি উচ্চ পদ পাওয়ার যোগ্য ? এই আধ্যাত্মিক
সেবা কি আমি করি ? কেননা, বাবা বলেন - বাচ্চারা, তোমরা সেবাধারী হও, বাবাকে অনুসরণ
করো । আমি এই সেবার জন্যই এখানে এসেছি । আমি রোজ সেবা করি, সেই কারণেই তো এই রথ
নিয়েছি । এই রথ যদি অসুস্থ হয়, তাহলে আমি এঁর মধ্যে বসে মুরলী লিখি । মুখ দিয়ে তো
বলতে পারে না, তাই আমি লিখে দিই, যাতে বাচ্চাদের মুরলী মিস না হয়, তাই আমিও তো এই
সেবাতেই আছি, তাই না । এ হলো আধ্যাত্মিক সেবা । তাই বাচ্চারা, তোমরাও বাবার এই
সেবাতে লেগে যাও । এই গড ফাদারলি সেবায় । যে খুব ভালো পুরুষার্থ করে, খুব ভালো সেবা
করে, তাকে মহাবীর বলা হয় । দেখা হয় যে, কে মহাবীর, যে বাবার নির্দেশে চলে ? বাবার
আদেশ হলো, নিজেকে আত্মা মনে করে সকলকে ভাই - ভাইয়ের নজরে দেখো । এই দেহকে ভুলে যাও
। বাবাও শরীরকে দেখেন না । বাবা বলেন, আমি আত্মাদের দেখি । বাকি এ তো হলো জ্ঞান যে
আত্মারা শরীর ছাড়া কথা বলতে পারে না । আমিও এই শরীরে এসেছি, এই শরীর ধার নিয়েছি ।
এই শরীরের সঙ্গেই আত্মা পড়তে পারে । বাবার আসন এই ভ্রুকুটির মাঝে । এ হলো অকাল
সিংহাসন । আত্মা হলো অকালমূর্ত । আত্মা কখনোই ছোটো বা বড় হয় না । শরীর ছোটো বা বড়
হয় । যে আত্মারা আছে, তাদের সকলেরই আসন এই ভ্রুকুটি । শরীর তো সকলেরই ভিন্ন -
ভিন্ন । কারোর এই অকাল সিংহাসন পুরুষের, কারোর অকাল সিংহাসন স্ত্রীর । কারোর অকাল
সিংহাসন বাচ্চার । বাবা বসে বাচ্চাদের ড্রিল শেখান । কারোর সঙ্গে যখন কথা বলবে তখন
নিজেকে আত্মা মনে করো । আমি আত্মা, অমুক ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলছি । বাবা এই নির্দেশ
দেন যে, শিববাবাকে স্মরণ করো । এই স্মরনেই তোমাদের জং দূর হয় । সোনাতে যখন খাদ
দেওয়া হয়, তখন সোনার মূল্য কম হয়ে যায় । তোমাদের আত্মার মধ্যেও জং ধরার কারণে
তোমরাও মূল্যহীন হয়ে গেছো । এখন তোমাদের আবার পবিত্র হতে হবে তোমরা আত্মারা এখন
জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র পেয়েছো । সেই নেত্রের দ্বারা নিজের ভাইদের দেখো । ভাই - ভাই
নজরে দেখলে তোমাদের কর্মেন্দ্রিয় চঞ্চল হবে না । রাজ্য - ভাগ্য নিতে হলে, বিশ্বের
মালিক হতে হলে এই পরিশ্রম করো । ভাই - ভাই মনে করে সবাইকে এই জ্ঞান দাও । তখন এই
অভ্যাস পাকা হয়ে যাবে । তোমরা সকলেই হলে প্রকৃত ভাই - ভাই । বাবাও উপর থেকে এসেছেন
আর তোমরাও উপর থেকেই এসেছো । বাবা এখন বাচ্চাদের সঙ্গে এই সেবা করছেন । এই সেবায়
বাবা সাহস প্রদান করেন । সাহসী সন্তান --আর সাহায্যকারী বাবা ---এই অভ্যাস করতে হবে
। আমি আত্মা আমার ভাইকে পড়াচ্ছি । আত্মা তো পড়ে, তাই না । এই জ্ঞানকে আধ্যাত্মিক
জ্ঞান বলা হয় যা আত্মাদের পিতার কাছ থেকেই পাওয়া যায় । এই সঙ্গম যুগে এসেই বাবা
এই জ্ঞান প্রদান করেন যে, নিজেকে আত্মা মনে করো । তোমরা বস্ত্রহীন অবস্থায় এখানে
এসেছিলে তারপর শরীর ধারণ করে ৮৪ জন্ম এই অভিনয় করেছো । এখন আবার তোমাদের ফিরে যেতে
হবে তাই নিজেকে আত্মা অনুভব করে সকলকে ভাই - ভাইয়ের দৃষ্টিতে দেখতে হবে । এই
পরিশ্রম তোমাদের করতে হবে । নিজের পরিশ্রম নিজেকেই করতে হবে, অন্যের জন্য কি যায়
আসে । সেবা প্রথমে ঘর থেকেই শুরু করতে হয়, অর্থাৎ নিজেকে প্রথমে আত্মা মনে করো,
তারপর ভাইদের তা বোঝাও । তাহলে খুব ভালোভাবে তীর বিদ্ধ হবে । এই জোর তোমাদের দিতেই
হবে । পরিশ্রম করলে তবেই উঁচু পদ পাবে । এতে কিছু সহ্যও করতে হয় । যখন কেউ
উল্টোপাল্টা কথা বলবে, তখন তোমরা চুপ থাকো । তোমরা চুপ করে থাকলে অন্যে আর কি করবে
? দুই হাতেই তো তালি বাজে । একজন মুখের তালি বাজালে অপরজন যদি চুপ করে থাকে তাহলে
এমনিতেই সে চুপ হয়ে যাবে । তালিতে তালি বাজালেই আওয়াজ হয় । বাচ্চাদের একে অপরের
কল্যাণ করতে হবে । বাবা বোঝান যে, বাচ্চারা, সর্বদা যদি খুশীতে থাকতে চাও তাহলে
মনমনাভব । নিজেকে আত্মা জ্ঞান করে বাবাকে স্মরণ করো । ভাইদের দিকে ( আত্মা ) দেখো ।
বাচ্চাদের তাই এই আধ্যাত্মিক যাত্রায় থাকার অভ্যাস করতে হবে । এতে তোমাদেরই লাভ আছে
। বাবার এই শিক্ষা ভাইদের দিতে হবে । বাবা বলেন, আমি তোমাদের অর্থাৎ আত্মাদের জ্ঞান
দান করছি । আমি আত্মাদেরই দেখি । মানুষ যখন মানুষের সঙ্গে কথা বলবে তখন তো তাদের
মুখের দিকেই দেখবে, তাই না । তোমরা আত্মার সঙ্গে কথা বলো তাই আত্মাকেই দেখতে হবে ।
যদিও তোমরা এই শরীরের দ্বারাই জ্ঞান দান করো কিন্তু এই দেহের বোধ তোমাদের ত্যাগ
করতেই হয় । তোমাদের আত্মা বুঝতে পারে, পরমাত্মা বাবা আমাদের জ্ঞান দান করছেন ।
বাবাও বলেন - আমি আত্মাদেরই দেখি, আত্মাও বলে, আমি পরমাত্মা বাবাকেই দেখছি । তাঁর
থেকে জ্ঞান গ্রহণ করছি, একে বলা হয় আধ্যাত্মিক জ্ঞানের লেনদেন, আত্মার আত্মার সঙ্গে
লেনদেন । আত্মার মধ্যেই জ্ঞান রয়েছে । আত্মাকেই জ্ঞান দান করতে হবে । এ যেন এক শক্তি
। তোমাদের জ্ঞান এই শক্তিতে ভরপুর হবে । তখন কাউকে বোঝালে চট করে তীর লেগে যাবে ।
বাবা বলেন, তোমরা এই অভ্যাস করে দেখো যে তীর লাগে কিনা ? এই নতুন অভ্যাস করো, তাহলে
দেহ বোধ দূর হবে । মায়ার ঝড়ও অনেক কম আসবে । মন্দ সঙ্কল্পও আসবে না । ক্রিমিনাল
দৃষ্টিও আর থাকবে না । আমরা আত্মারা ৮৪ জন্মের চক্র সম্পূর্ণ করেছি । এখন এই নাটক
সম্পূর্ণ হয়ে এসেছে । এখন তোমাদের বাবার স্মরণে থাকতে হবে । এই স্মরণের দ্বারাই
তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে সতোপ্রধান দুনিয়ার মালিক হয়ে যাবে । এ কতো সহজ ।
বাবা জানেন যে, বাচ্চাদের এই শিক্ষাদানও আমার পার্ট । এ কোনো নতুন কথা নয় । প্রতি
৫০০০ বছর অন্তর আমাকে আসতেই হয় । আমিও এতে আবদ্ধ । আমি বাচ্চাদের বসে বোঝাই, মিষ্টি
বাচ্চারা, তোমরা এই আধ্যাত্মিক স্মরণের যাত্রায় থাকো, তাহলে অন্ত মোতি তেমন গতি হয়ে
যাবে । এ তো অন্তকাল, তাই না । তোমরা আমাকে স্মরণ করো, তাহলে তোমাদের সদগতি হয়ে
যাবে । এই স্মরণের যাত্রায় তোমাদের পায়া মজবুত হয়ে যাবে । বাচ্চারা, এই দেহী
অভিমানী হওয়ার শিক্ষা এই একবারই তোমরা পাও । এ কতো আশ্চর্যের জ্ঞান । বাবা
আশ্চর্যের তাই বাবার জ্ঞানও আশ্চর্যের । কোথাও কেউই এ বলতে পারে না । এখন ঘরে ফিরে
যেতে হবে, তাই বাবা বলেন, মিষ্টি বাচ্চারা, এখন এই অভ্যাস করো । নিজেকে আত্মা মনে
করে আত্মাদের জ্ঞান দান করো । তৃতীয় নেত্রে ভাই - ভাইয়ের নজরে দেখতে হবে। এই হলো
খুবই পরিশ্রমের কাজ ।
এ হলো তোমাদের মতো ব্রাহ্মণদের সর্বোত্তম উঁচুর থেকে উঁচু কুল । এই সময় তোমাদের
জীবন হলো অমূল্য, তাই তোমাদের এই শরীরেরও সুরক্ষা করতে হবে । তমোপ্রধান হওয়ার কারণে
তোমাদের শরীরের আয়ুও কম হয়ে এসেছে । এখন তোমরা যতো যোগে থাকবে ততই তোমাদের আয়ু
বৃদ্ধি পাবে । তোমাদের আয়ু বাড়তে বাড়তে সত্যযুগে ১৫০ বছর হয়ে যাবে, তাই তোমাদের
এই শরীরেরও সুরক্ষা করতে হবে । এমন নয় যে, এ তো মাটির পুতুল, কবে শেষ হয়ে যাবে !
তা নয় । এই শরীরকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে । এই জীবন তো অমূল্য, তাই না । কেউ যদি
অসুস্থ হয়ে যায়, তবে তার প্রতি বিরক্ত হওয়া উচিত নয় । তাকেও তোমরা বলো, শিববাবাকে
স্মরণ করো । যতো স্মরণ করবে, ততই পাপ কাটতে থাকবে । তাঁর এই সেবাকাজ করা উচিত ।
তোমরা বেঁচে থাকো এবং শিববাবাকে স্মরণ করতে থাকো । এই বুদ্ধি তো আছেই যে, আমরা
বাবাকে স্মরণ করছি । আত্মা বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকারের আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য
বাবাকে স্মরণ করে । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে মাতা - পিতা,
বাপদাদার স্নেহ - সুমন, স্মরণ এবং সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী
সন্তানদের নমস্কার জানাচ্ছেন ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
নিজেকে পর্যবেক্ষণ করো, আমি পুরুষার্থে উত্তম, মধ্যম নাকি কনিষ্ঠ ? আমি উচ্চ পদ
পাওয়ার যোগ্য কি ? আমি এই আধ্যাত্মিক সেবা করি কি ?
২ ) তৃতীয় নেত্রে আত্মা রূপী ভাইকে দেখো, ভাই - ভাই মনে করে সকলকে জ্ঞান দান করো,
আত্মিক স্থিতিতে থাকার অভ্যাস তৈরী করো তাহলে কর্মেন্দ্রিয় চঞ্চল হবে না ।
বরদান:-
পেপার দেখে ঘাবড়ে যাওয়ার পরিবর্তে ফুল স্টপ দিয়ে সম্পূর্ণ পাস করা সফলতামূর্ত ভব
যে কোনো প্রকারের
পেপার যখন আসে, তখন ঘাবড়ে যেও না, কোশ্চেন মার্কে এসো না, এ কেন হলো ? এই চিন্তায়
সময় নষ্ট করো না । কোশ্চেন মার্ক শেষ আর ফুল স্টপ, তখনই ক্লাসের পরিবর্তন হবে অর্থাৎ
পেপারে পাস করে যাবে । ফুল স্টপ যে লাগাবে সে সম্পূর্ণ পাস করবে, কেননা ফুল স্টপ হলো
বিন্দুর স্থিতি । দেখেও দেখো না, শুনেও শুনো না । বাবার কথা শোনো, বাবা যা দিয়েছেন
তাই দেখো, তাহলে সম্পূর্ণ পাস করে যাবে । আর এই পাস করার নিদর্শন - সদা চড়তি কলার
অনুভব করে সফলতার নক্ষত্র হয়ে যাবে ।
স্লোগান:-
স্ব - উন্নতি করতে হলে কোশ্চেন, কারেকশন এবং কোটেশনের ত্যাগ করে নিজের কানেকশন ঠিক
রাখো ।
অব্যক্ত স্থিতির
অনুভব করার জন্য বিশেষ হোম ওয়ার্ক
কোনো প্রকারের বিঘ্ন যদি বুদ্ধিকে বিভ্রান্ত করে তাহলে যোগের প্রয়োগের দ্বারা প্রথমে
সেই বিঘ্নকে সমাপ্ত করো । মন এবং বুদ্ধিতে যেন সামান্যতম বিরক্তি না আসে । অব্যক্ত
স্থিতিতে স্থিত হওয়ার এই অভ্যাস এমন যেন হয় যে, আত্মা, আত্মার কথা বা যে কারোর
মনের কথা সহজেই যেন জেনে যেতে পারো ।