30.03.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমাদের চেহারাতে যেন সর্বদা খুশি লেগে থাকে, কেননা "আমাদেরকে এখন ভগবান পড়াচ্ছেন",
চেহারাতে যেন এই খুশির ঝলক দেখা যায়"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা, এখন
তোমাদের মুখ্য পুরুষার্থ কী আছে ?
উত্তরঃ -
তোমরা এখন শাস্তি খাওয়া থেকে বাঁচার জন্য পুরুষার্থ করছো। তার জন্য মুখ্য হল
স্মরণের যাত্রা, যার দ্বারাই বিকর্মের বিনাশ হয়। তোমরা ভালোবাসার সাথে স্মরণ করো
তো অনেক উপার্জন জমা হতে থাকবে। সকাল সকাল উঠে বাবাকে স্মরণ করলে পুরানো দুনিয়া
ভুলতে থাকবে। জ্ঞানের কথাগুলিও বুদ্ধিতে আসতে থাকবে। বাচ্চারা তোমরা মুখ দিয়ে কোনো
নোংরা অপশব্দ কখনোই বলবে না।
গীতঃ-
তোমাকে পেয়ে
আমরা সমগ্র জগৎ পেয়ে গেছি, জমি তো কিছুই নয়, সম্পূর্ণ আকাশ পেয়ে গেছি...
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা যখন
এইরকম গান শোনে, তখন কোনো কোনো বাচ্চা এই গানের অর্থকে বুঝে অনেক খুশিতে ভরে ওঠে।
ভগবান আমাদেরকে পড়াচ্ছেন, ভগবান আমাদেরকে বিশ্বের রাজ্যপদ প্রদান করছেন। কিন্তু এত
খুশি কোনো বিরলারই এখানে হয়ে থাকে। সেই স্মরণ স্থায়ী থাকে না। আমরা বাবার হয়েছি,
বাবা আমাদেরকে পড়াচ্ছেন। আবার অনেক আছে, যাদের এই নেশা চড়ে না। সেইসব সৎসঙ্গ আদি
করে, সেখানকার কথা শোনে, তাদেরও খুশি হয়। এখানে তো বাবা কত সুন্দর সুন্দর কথা
শোনাচ্ছেন। বাবা পড়াচ্ছেন আবার পুনরায় বিশ্বের মালিকও বানাচ্ছেন, তো স্টুডেন্টদের
মধ্যে কত খুশি থাকা দরকার। ওই লৌকিক পড়াশোনা করে তারা যেমন খুশীতে থাকে, এখানকার
স্টুডেন্টদের মধ্যে ততটা খুশি দেখা যায়না। বুদ্ধিতে তো কিছুই বসে না। বাবা
বুঝিয়েছেন যে, এইরকম এইরকম গীত চার-পাঁচবার শোনো। বাবাকে ভুলে যাওয়ার কারণে, পুরানো
দুনিয়া আর পুরনো সম্বন্ধী স্মরণে আসতে থাকে। এইরকম সময়ে গীত শুনলেও বাবার স্মরণ
এসে যাবে। বাবা বলে ডাকলে তাঁর আশীর্বাদও স্মরণে এসে যাবে। পড়াশোনা করলেই বাবার
আশীর্বাদ প্রাপ্ত হয়। তোমরা বিশ্বের মালিক হওয়ার জন্য শিব বাবার কাছে পড়াশোনা করো।
তো বাকি আর কি চাই। এইরকম স্টুডেন্টদের অন্তরে কতই-না খুশী হওয়া দরকার। দিন-রাত
খুশীতে থাকার কারণে নিদ্রারও প্রয়োজন হয় না। মুখ্যতঃ নিদ্রাকে ত্যাগ করেই, একরকম
নেশায় মত্ত হয়ে বাবাকে আর শিক্ষককে স্মরণ করতে হবে। অহো! আমরা বাবার থেকে বিশ্বের
রাজ্যপদ গ্রহণ করছি! কিন্তু মায়া স্মরণ করতে দেয়না। মিত্র সম্বন্ধীদের স্মরণ আসতেই
থাকে। মনের মধ্যে তাদেরই চিন্তন চলতে থাকে। পুরানো পচে যাওয়া নোংরা জিনিস অনেকেরই
স্মরণে আসে। বাবা যে কথাটা বলেন - তোমরা বিশ্বের মালিক তৈরী হচ্ছো - এই নেশা থাকেই
না। যারা স্কুলে পড়াশোনা করে, তাদের চেহারার মধ্যে খুশীর ঝলক দেখা যায়। এখানে ভগবান
পড়াচ্ছেন - এই খুশী কোনো বিরলারই থাকে। তাহলে তো খুশীর পারদ অনেক উঁচুতে থাকা দরকার।
অসীম জগতের বাবা আমাদেরকে পড়াচ্ছেন, এটা ভুলে যায়। এটা স্মরণে থাকলেও খুশী আসবে।
কিন্তু অতীতের কর্মভোগই এইরকম আছে, তাই বাবাকে স্মরণ করে না। নোংরা জিনিসের প্রতি
দৃষ্টি চলে যায়। বাবা তো সবার জন্য বলেন না, নম্বরের ক্রমানুসার আছে। মহান শক্তিশালী
তো সে, যে বাবার স্মরণে থাকে। ভগবান, বাবা আমাদেরকে পড়াচ্ছেন। যেরকম লৌকিক পড়াশোনার
ক্ষেত্রে এই খেয়াল থাকে যে অমুক শিক্ষক আমাকে ব্যারিষ্টার তৈরী করছেন, সেইরকম এখানে
আমাদেরকে ভগবান পড়াচ্ছেন - ভগবান ভগবতী বানানোর জন্য তো কতইনা নেশা থাকা উচিৎ।
শোনার সময় কারোর কারোর নেশা চড়ে যায়। বাকিরা তো কিছুই বোঝেনা। ব্যস্, গুরু করে, মনে
করে যে, এ আমাদেরকে সাথে নিয়ে যাবে। ভগবানের সাথে মিলন করাবে। এখানে ইনি তো নিজেই
ভগবান আছেন। নিজের সাথে মিলিত করান এবং সাথে নিয়েও যাবেন। মানুষ গুরু করে এই জন্যই
যে, গুরু তাদেরকে ভগবানের কাছে নিয়ে যাবে বা শান্তিধামে নিয়ে যাবে। এখানে বাবা
সামনে বসে কত বোঝাচ্ছেন। তোমরা হলে স্টুডেন্ট। যিনি পড়াচ্ছেন সেই শিক্ষককে তো
স্মরণ করো। একদমই স্মরণ করো না, সে কথা জিজ্ঞেস করো না। ভালো ভালো বাচ্চারাও স্মরণ
করেনা। শিব বাবা আমাদেরকে পড়াচ্ছেন, তিনি হলেন জ্ঞানের সাগর, আমাদেরকে আশীর্বাদ
প্রদান করেন, এই ধরনের নেশা থাকলে তো খুশির পারদ চড়তে থাকবে। বাবা সম্মুখে বসে
বোঝাচ্ছেন তবুও সেই নেশা চড়ছে না। বুদ্ধি অন্য-অন্যদিকে চলে যাচ্ছে। বাবা বলছেন যে,
আমাকে স্মরণ করো তো তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে। আমি গ্যারান্টি করছি - এক
বাবাকে ছাড়া আর কাউকে স্মরণ করো না। যে জিনিস বিনাশ হয়ে যায় তাকে কি কেউ স্মরণ
করে! এখানে তো কেউ মারা গেলে তো দু-চার বছর তো তাকে স্মরণ করতেই থাকে। তার নাম গান
করতে থাকে। এখন বাবা বসে তোমাদেরকে বলছেন যে, আমাকে স্মরণ করো। যে যত বেশি ভালবাসার
সাথে স্মরণ করবে তার পাপ তত কেটে যাবে। অনেক উপার্জন জমা হতে থাকবে। সকালে উঠে
বাবাকে স্মরণ করো। সাধারণ মানুষ সকালে উঠেই ভক্তি আদি করে। তোমরা হলে জ্ঞান মার্গের।
তোমরা এই পুরানো দুনিয়ার নোংরা আবর্জনায় ফেঁসে যেও না। তবুও কোনো কোনো বাচ্চা এমন
ভাবে ফেঁসে যায় যে, সে কথা জিজ্ঞেস করো না। নোংরা আবর্জনা থেকে বেরোতেই চায় না।
সারাদিন নোংরা কথাই বলতে থাকে। জ্ঞানের-কথা বুদ্ধিতে আসেই না। এমনও কিছু বাচ্চা আছে,
যারা সারাদিন সেবার জন্য দৌড়ঝাঁপ করতে থাকে। যে বাচ্চা বেশি সার্ভিস করে, সেই
বাচ্চা বাবার খুব প্রিয় হয় এবং বাবা তাকে স্মরণও করেন। এই সময়ে সব থেকে বেশি
সেবাতে তৎপর তো মনোহর দিদিকেই দেখা যায়। তার কর্ণেলের কাছে গেলো, কাল কোথাও গেলো,
সার্ভিসের জন্য সারাদিন দৌড়ঝাঁপ করতেই থাকে। যারা নিজেদের মধ্যে লড়াই ঝগড়া করতে
থাকে, তারা কি সেবা করবে! কোন্ বাচ্চা বাবার কাছে প্রিয় ? যে বাচ্চা ভালো সেবা করে,
দিন-রাত সেবার জন্য চিন্তায় থাকে, বাবার হৃদয়ে সে-ই অধিষ্ঠিত হয়। মাঝে-মধ্যে এইরকম
গান তোমরা শুনতে থাকো তাহলে স্মরণও থাকবে, কিছুটা হলেও নেশা চড়বে। বাবা বলেছেন যে,
কোনো সময় যদি কারোর উদাসভাব এসে যায়, তখন রেকর্ড বাজিয়ে শোনো তাহলে খুশি এসে যাবে।
অহো! আমরা বিশ্বের মালিক হতে চলেছি। বাবা তো শুধুই বলেন যে, আমাকে স্মরণ করো। কত
সহজ হল এই পড়াশোনা। বাবা ভালো ভালো দশ-বারোটি রেকর্ড বাছাই করে রেখেছেন, যেগুলি
সকলের কাছে থাকা দরকার। কিন্তু তবুও সবাই ভুলে যায়। কেউ তো চলতে চলতে পড়াশোনাই
ছেড়ে দেয়। মায়া আক্রমণ করে। বাবা তমোপ্রধান বুদ্ধিকে সতোপ্রধান বানানোর জন্য কত
সহজ যুক্তি বলে দেন। এখন তোমাদের সঠিক আর ভুল বিচার করার বুদ্ধি প্রাপ্ত হয়েছে।
তোমরা এই বলেই ডাকো যে - হে পতিতপাবন এসো। এখন বাবা এসেছেন তো পাবন হতে হবে তাই
না। তোমাদের মাথার উপর জন্ম-জন্মান্তরের বোঝা চেপে আছে, তার জন্য যত স্মরণ করবে,
পবিত্র হবে, খুশিও আসবে। সেবা যদিও করতে থাকো, কিন্তু নিজের হিসাবও রাখতে হবে। আমি
বাবাকে কতটা সময় স্মরণ করছি। স্মরণের চার্ট কেউ রাখেনা। জ্ঞানের পয়েন্টস্ তো লেখে
কিন্তু স্মরণ করতে ভুলে যায়। বাবা বলেন যে, তোমরা যদি স্মরণে থেকে ভাষণ করো, তাহলে
অনেক শক্তি প্রাপ্ত হবে। নাহলে বাবা বলেন যে, আমিই গিয়ে অনেককে সাহায্য করি। কারোর
মধ্যে প্রবেশ করে আমিই গিয়ে সেবা করি। সেবা তো করতেই হবে তাই না। দেখি যে কার
ভাগ্য খুলতে পারে, যারা বোঝায় তাদের মধ্যে এতটা ক্ষমতা থাকে না, তাই আমি প্রবেশ করে
সেবা করিয়ে নিই, তবুও কেউ কেউ লেখে যে, বাবা-ই সেবা করেছেন। আমার মধ্যে তো এত শক্তি
নেই, বাবা-ই মুরলী শুনিয়েছেন। কারোর কারোর তো আবার নিজের অহংকার এসে যায়, আমি
এইভাবে ভালো করে বুঝিয়েছি। বাবা বলেন যে, আমি কল্যান করার জন্য প্রবেশ করি, তখন সে
ব্রাহ্মণীর থেকেও তীব্র হয়ে যায়। কোনো বুদ্ধুকে পাঠিয়ে দিই তো সে মনে করে যে, এর
থেকে তো আমি ভালো বোঝাতে পারি। তার মধ্যে কোন গুণই নেই। এর থেকে তো আমার অবস্থা
অনেক ভালো আছে। কেউ কেউ আবার হেড হয়ে থাকে তো তার বড় নেশা চড়ে যায়। অনেক অভিমান
নিয়ে থাকে। বড় বড় ব্যক্তিদের সাথে তুই-তুই করে কথা বলে। ব্যস তাকে দেবী-দেবী বললে
সে খুশি হয়ে যায়, এরকম অনেক আছে। টিচারের থেকেও স্টুডেন্ট হুঁশিয়ার হয়ে যায়।
পরীক্ষায় পাস করলে তো একবাবাই আছেন, তিনি হলেন জ্ঞানের সাগর। তার দ্বারাই তোমরা পড়ে
তারপর পড়াও। কেউ তো আবার খুব ভালোভাবে ধারণ করে নেয়। কেউ আবার ভুলে যায়। বড় থেকে
বড় মুখ্য কথা হল স্মরণের যাত্রা। আমাদের বিকর্ম বিনাশ কি করে হবে? কোনো কোনো বাচ্চা
তো এমন ব্যবহার করতে থাকে, যেটা ব্যস এই বাবা জানে, আর সেই বাবা জানে।
এখন বাচ্চারা তোমদেরকে শাস্তি খাওয়া থেকে মুক্ত হওয়ার জন্যই মুখ্য পুরুষার্থ করতে
হবে। তার জন্য মুখ্য হলো স্মরণে যাত্রা, যার দ্বারাই তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হয়।
হয়তো কেউ টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করে, মনে করে যে আমি ধনী হয়ে জন্মাব, কিন্তু
পুরুষার্থ তো শাস্তি খাওয়া থেকে বাঁচার জন্য করতেই হবে। না হলে তো বাবার সামনে
শাস্তি খেতে হবে। বিচারকের বাচ্চা যদি কোনো খারাপ কাজ করে, তাে বিচারকেরও লজ্জা আসবে
তাই না। বাবাও বলেন যে, আমি যাদেরকে পালন করছি তাদেরকে আবার শাস্তি দেবো! সেই সময়
কাঁধ নিচে করে হায়-হায় করতে থাকে, বাবা আমাকে এত বুঝিয়েছিলেন, পড়িয়েছিলেন, আমি
মনোযোগ দিই নি। বাবার সাথে তো ধর্মরাজও আছেন তাইনা। তিনি তো জন্মপত্রিকা জানেন। এখন
তো তোমরা বাস্তবে দেখছো। ১০ বছর পবিত্র থাকার পর হঠাৎই মায়া এমন ঘুসি মারলো যে
সমস্ত উপার্জন নষ্ট করে দিলো, পতিত হয়ে গেল। এই রকম অনেক উদাহরণ আছে। অনেকে বাবার
হাত ছেড়ে চলে যায়। মায়ার তুফানের কারণে সারাদিন বিচলিত হয়ে থাকে, তারপর বাবাকেও
ভুলে যায়। বাবার থেকে আমরা অসীম জগতে রাজ্যপদ প্রাপ্ত করছি, সেই খুশি থাকে না।
কামের পিছনে আবার মোহও এসে যায়। এর থেকে নষ্টমোহ হতে হবে। পতিতদের সাথে কী বুদ্ধির
যোগ লাগাবে। হ্যাঁ, এই চিন্তায় থাকতে হবে যে - একেও আমি বাবার পরিচয় দিয়ে পতিত
থেকে পাবন বানাবো। একে কিভাবে শিবালয়ের যোগ্য বানাবো। অন্তরেতে এই যুক্তি রচনা করো।
মোহের কথা নেই। কতই প্রিয় সম্বন্ধী হোক, তাদেরকেও বোঝাতে থাকো। কারোর মধ্যেই যেন
অন্তর থেকে মোহ না যায়। না হলে তো শোধরাবে না। দয়াবান হতে হবে। তাই না নিজের
উপরেও দয়া করতে হবে আর অন্যদের উপরেও দয়া করতে হবে। বাবারও তো তোমাদেরকে দেখে দয়া
হয়। বাবা দেখেন যে কতজনকে তোমরা নিজের সমান বানিয়েছো। বাবাকে তার জবাব দিতে হবে।
আমি কতজনকে বাবার পরিচয় দিয়েছি। তারা লেখে যে - বাবা আমি এঁনার দ্বারা তোমার
পরিচয় প্রাপ্ত করেছি। বাবার কাছে এই জবাব এলে তখন বাবা বুঝবে যে, এই বাচ্চা সেবা
করে। বাবাকে লেখে যে, বাবা এই ব্রাহ্মণী তো অনেক সতর্কতা অবলম্বন করে। খুব ভালো সেবা
করে, আমাদেরকে খুব ভালো করে পড়ায়। যোগের মধ্যে তবুও বাচ্চারা ফেল হয়ে যায়।
স্মরণ করার সময় পায়না। বাবা বোঝান যে, ভোজন খাবার সময় শিববাবাকে স্মরণ করতে করতে
খাও। কোথায় ঘুরতে ফিরতে যাও তবুও শিববাবাকে স্মরণ করো। পরচর্চা পরনিন্দা করো না।
যদি কোন কথা স্মরণে চলেও আসে, তবুও বাবাকে স্মরণ করো তো তোমার কাজকর্মের চিন্তাও
করলে আবার বাবাকে স্মরণ করাও হল। বাবা বলেন যে, কর্ম তো অবশ্যই করো, নিদ্রাও করো,
সাথে সাথে এটাও করো। ন্যূনতম ৮ ঘন্টা যোগযুক্ত থাকতে হবে। এইটা হবে অন্ত পর্যন্ত।
ধীরে ধীরে নিজের চার্ট বাড়াতে থাকো। কেউ কেউ লেখে যে দু'ঘণ্টা স্মরণে থাকার পর চলতে
চলতে চার্ট শিথিল হয়ে যায়। সেটাও মায়া ভুলিয়ে দেয়। মায়া খুব শক্তিশালী আছে।
যে এই সেবাতে সারাদিন ব্যস্ত থাকে, সে স্মরণও করতে পারে। প্রতি মুহূর্তে বাবার
পরিচয় দিতে থাকে। বাবাকে স্মরণ করার জন্য বিশেষ দৃঢ়তা দেখায়। নিজেও ফিল(অনুভব) করে
যে, আমি বাবার স্মরণে থাকতে পারি না। স্মরণের যাত্রাতেই মায়া বিঘ্ন দেয়। পড়াশোনা
তো খুব সহজ। বাবার কাছ থেকে আমরা পড়াশোনাও করি। যত ধন দান করবে ততই ধনী হবে। বাবা
তো সবাইকেই পড়ান তাইনা। বাণী সকলের কাছে পৌঁছায়, শুধু তুমি নও, সবাই পড়াশোনা করছে।
বাণী না গেলে তো চিৎকার করতে থাকে। কেউ কেউ তো আবার এমনও আছে যারা শুনতেই চায় না।
এভাবেই চলতে থাকে। মুরলী শোনারও শখ হওয়া চাই। গানগুলো কত ফাস্ট ক্লাস আছে - বাবা
আমরা তোমার আশীর্বাদ নিতে এসেছি। বলে যে - বাবা আমি যেরকম আছি, সেরকমই আছি, কানা আছি,
কি রকম আছি, তোমারই আছি। সেটা তো ঠিক আছে, কিন্তু ছি ছি থেকে তো ভালো হতেই হবে তাই
না। সবকিছুই নির্ভর করছে যোগ আর পড়াশোনার উপর।
বাবার হওয়ার পরে এই বিচার প্রত্যেক বাচ্চার মধ্যে আসা চাই যে, আমি বাবার হয়েছি তো
স্বর্গে যাবোই কিন্তু আমি স্বর্গে গিয়ে আমাকে কি হতে হবে, সেটাও চিন্তা করতে হবে।
ভাল রীতিতে পড়ো, দৈবী গুণ ধারণ করো। বাঁদরের মতোই থেকে গেলে তো কি পদ পাবে? সেখানেও
তো প্রজা চাকর-বাকর সবকিছুই চাই তাই না। যে ভালো পড়াশোনা করবে তার সামনে যারা
পড়াশোনা করবে না তারা মাথা নত করবে। যত পুরুষার্থ করবে ততো ভালো সুখ পাবে। ভালো
ধনবান হবে তো সম্মান অনেক থাকবে। যারা পড়াশোনা করে তাদের অনেক সম্মান করা হয়। বাবা
তো রায় দিতে থাকবেন। বাবার স্মরণে থেকে শান্তিতে থাকো। কিন্তু বাবা জানেন যে যারা
সম্মুখে থাকে তাদের থেকেও যারা দূরে থাকে তারা আরও বেশি স্মরণ করে আর ভালো পদও পেতে
পারে। ভক্তি মার্গেও এরকম হয়। কোনো কোনো ভক্ত ভালো ফার্স্ট ক্লাস হয় যারা গুরুর
থেকেও বেশি স্মরণ করতে থাকে। যে বেশি ভালো ভক্তি করে, সে-ই এখানে আসে। সবাই ভক্ত আছে
তাইনা। সন্ন্যাসী আদি এখানে আসবে না, সকল ভক্ত ভক্তি করতে করতে এখানে এসে যাবে। বাবা
কত পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। তোমরা জ্ঞান ধারণ করছো, তার মানে এটাই সিদ্ধ হয়
যে, তোমরা অনেক ভক্তি করেছো। যে বেশি ভক্তি করবে সেই বেশি পড়াশোনা করবে। কম ভক্তি
করলে কম পড়াশোনা করবে। মুখ্য পরিশ্রম হলো স্মরণের যাত্রাতে। স্মরণের দ্বারাই
বিকর্ম বিনাশ হবে আর তোমাদেরকে অনেক মিষ্টিও হতে হবে। আচ্ছা।
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি, সেবাধারী, বিশ্বস্ত, আজ্ঞাবহ বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা
বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী
বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১) যত
প্রিয়ই সম্বন্ধী হোক না কেন, তার প্রতি যেন কোন মোহ না থাকে। নষ্টমোহ হতে হবে।
যুক্তি দিয়ে বোঝাতে হবে। নিজের উপর এবং অন্যদের উপর দয়ার ভাবনা রাখতে হবে।
২) বাবাকে আর শিক্ষককে
অনেক ভালোবাসার সাথে স্মরণ করতে হবে। এই নেশা যেন থাকে যে - ভগবান স্বয়ং আমাদেরকে
পড়াচ্ছেন, বিশ্বের রাজ্যপদ প্রদান করছেন। ঘুরতে ফিরতেও বাবার স্মরণে থাকতে হবে।
পরনিন্দা পরচর্চা করবে না।
বরদান:-
সকল
আত্মাদেরকে যথার্থ অবিনাশী আশ্রয় প্রদানকারী আধার এবং উদ্ধার মূর্তি ভব
বর্তমান সময়ে
বিশ্বের চারিদিকে কোনো না কোনো অস্থিরতা আছেই, কোথাও মনের মধ্যে অনেক দুশ্চিন্তার
দোলাচল হচ্ছে, কোথাও প্রকৃতির তমোপ্রধান বায়ুমণ্ডলের কারণে দোলাচল হচ্ছে,
অল্পকালের সাধন সকলকে চিন্তার চিতাতে নিয়ে যাচ্ছে, এইজন্য অল্পকালের আধার থেকে,
প্রাপ্তিগুলি থেকে, বিধিগুলির থেকে পরিশ্রান্ত হয়ে বাস্তবিক আশ্রয় খুঁজে চলেছে। তাই
তোমরা আধার এবং উদ্ধারমূর্তি আত্মারা তাদেরকে শ্রেষ্ঠ অবিনাশী প্রাপ্তিগুলির যথার্থ,
বাস্তবিক, অবিনাশী আশ্রয়ের অনুভূতি করাও।
স্লোগান:-
সময়
হল অমূল্য সম্পদ, এইজন্য একে নষ্ট না করে যত শীঘ্র সম্ভব নির্ণয় করে সফল করো।