16.01.2021 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - প্রতি পদে শ্রীমত অনুসরণ করো, না হলে মায়া নিঃস্ব করে দেবে, এই চোখ খুবই ধোঁকা দেয় বা প্রতারণা করে, একে খুবই সাবধানে রাখো"

প্রশ্নঃ -
কোন্ বাচ্চাদের দিয়ে মায়া অনেক বিকর্ম করায় ? যজ্ঞে বিঘ্ন রূপ হয় কারা ?

উত্তরঃ -
যাদের নিজেদের অহঙ্কার থাকে তাদের দিয়ে মায়া অনেক বিকর্ম করিয়ে নেয়। এইরকম মিথ্যা অহঙ্কার যাদের থাকে তারা মুরলীও পড়ে না। এইরকম অবহেলা করার জন্য মায়া থাপ্পড় লাগিয়ে ওয়ার্থ নট পেনী (অর্থাৎ মূল্যহীন) করে দেয়। যজ্ঞে বিঘ্ন রূপ হলো তারা, যাদের বুদ্ধিতে পরচর্চার কথা (ঝরমুই-ঝগমুই) থাকে, এটা হলো খুবই খারাপ অভ্যাস।

ওম্ শান্তি ।
আত্মা রূপী বাচ্চাদের বাবা বুঝিয়েছেন, এখানে বাচ্চারা তোমাদের অবশ্যই এই ভাবনায় বসতে হয়- ইনি বাবাও, টিচারও আবার সুপ্রিম গুরুও আর এটাও বোধগম্য হয় যে বাবাকে স্মরণ করতে করতে পবিত্র হয়ে গিয়ে পবিত্রধামে পৌঁছাবে। বাবা বুঝিয়েছেন- পবিত্রধাম থেকেই তোমরা নীচে নামতে থাকো। প্রথমে তোমরা সতোপ্রধান ছিলে, তারপর সতো-রজো-তমোতে এসেছো। তোমরা এখন মনে করো আমরা নীচে পড়ে গিয়েছি। যদিও তোমরা সঙ্গমযুগে আছো, কিন্তু জ্ঞানের দ্বারা তোমরা এইটা জানো- যে আমরা কিনারা করে নিয়েছি অর্থাৎ সবকিছুর থেকে সরে গিয়েছি। এরপর যদি আমরা শিববাবার স্মরণে থাকি তবে শিবালয় আর দূরে নেই। শিববাবাকে স্মরণই না করলে তবে শিবালয় খুবই দূরে হয়। শাস্তি পেতে হয় বলে তো খুবই দূরে হয়ে যায়। তবে বাবা বাচ্চাদের বেশী কষ্ট দেন না। এক তো বারংবার বলেন- মন্সা - বচন - কর্মে পবিত্র হতে হবে। এই চোখও খুবই ধোঁকা দেয়। খুবই সাবধানে চলতে হয়।

বাবা বুঝিয়েছেন- ধ্যান আর যোগ একদমই আলাদা। যোগ অর্থাৎ স্মরণ। চোখ খোলা রেখে স্মরণ করতে পারো। ধ্যানকে যোগ বলা হয় না। ধ্যানে গেলে তখন তাকে না জ্ঞান, না যোগ বলা হবে। যারা ধ্যানে যায় তাদের উপর মায়া খুবই আক্রমণ করে, এইজন্য এর থেকে খুবই সতর্ক থাকতে হয়। বাবাকে স্মরণ করতে হবে যথাযথ ভাবে । নিয়মের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করলে তখন মায়া একদম ফেলে দেয়। ধ্যানের ইচ্ছা তো কখনোই রাখতে নেই, ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যা। তোমাদের কোনো ইচ্ছা থাকতে নেই। তোমাদের সমস্ত কামনা বাবা না চাইতেই পূর্ণ করে দেন, যদি বাবার আজ্ঞা অনুসারে চলো- তবে। যদি বাবার আজ্ঞার উলঙ্ঘন করে উল্টো রাস্তা ধরো তবে এমন হতে পারে যে স্বর্গে যাওয়ার পরিবর্তে নরকে পড়ে গেলে। গায়নও আছে- হাতীকে বড় কুমীরে খেয়েছে। অনেককে জ্ঞান দিয়েছে যে, ভোগ নিবেদন করেছে যে, সে আজ নেই, কারণ নিয়মের উলঙ্ঘন করলে তখন সম্পূর্ণ মায়াবী হয়ে যায়। ডিটি হতে হতে ডেবিল হয়ে যায়, সেইজন্য এই জ্ঞান মার্গে খুবই সতর্ক থাকা উচিত। নিজের উপর কন্ট্রোল রাখতে হয়। বাবা তো বাচ্চাদের সাবধান করেন। শ্রীমতের অবমাননা করতে নেই। আসুরিক মত অনুযায়ী চলার জন্যই তোমাদের নিম্নগামী কলা হয়েছে। কোন্ জায়গা থেকে কোথায় পৌঁছে গেছে। একদম নীচে পৌঁছে গিয়েছে। এখনও যদি শ্রীমত অনুযায়ী না চলো, বেপরোয়া হও তবে পদ ভ্রষ্ট হয়ে যাবে। বাবা কালকেও বুঝিয়েছেন যা কিছু শ্রীমতের আধার ব্যতীত করা হয় তো খুবই ডিসসার্ভিস করা হয়। শ্রীমত ব্যতীত করলে তখন নীচে নামতেই থাকবে। বাবা প্রথম থেকেই মাতাদের নিমিত্ত করেছেন কারণ কলসও মাতাদের প্রাপ্ত হয়। বন্দে মাতরম্ গাওয়া হয়েছে। বাবাও মাতাদের একটা কমিটি করেন। সবকিছু তাদের হস্তক্ষেপ করে দেন। কিশোরীরা বিশ্বাসযোগ্য হয়। পুরুষরা বিশেষ করে সর্বস্বান্ত হয়। সেইজন্য বাবাও কলস মাতাদের উপর রাখেন। এই জ্ঞান মার্গে মাতারাও দেউলিয়া হতে পারে। লক্ষ কোটি গুণ ভাগ্যশালী হতে চলেছে যে, সেও মায়ার কাছে পরাজিত হয়ে নিঃস্ব হয়ে যেতে পারে। এতে স্ত্রী-পুরুষ দুই-ই নিঃস্ব হতে পারে। ওতে শুধু পুরুষ দেউলিয়া হয়। এখানে দেখো কতো জন পরাজিত হয়ে চলে গেছে, দেউলিয়া হয়ে যায় । বাবা বসে বোঝান- ভারতবাসী সম্পূর্ণ দেউলিয়া হয়ে গেছে। মায়া কতো শক্তিশালী। বুঝতে পারো না আমরা কি ছিলাম ? কোন জায়গা থেকে একদম নীচে এসে পড়েছি। এখানেও উঁচুতে উঠতে উঠতে আবার শ্রীমতকে ভুলে নিজের মত অনুযায়ী চললে আবার দেউলিয়া হবে। এরপর বলো তার অবস্থা কি হবে। তারা তো দেউলিয়া হয় আবার ৫--৭ বছর পরে দাঁড়িয়ে পরে। এরা তো ৮৪ জন্মের জন্য দেউলিয়া হয়। তারপর আর উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে পারে না, দেউলিয়া হতেই থাকে। কতো মহারথী অনেককে ওঠাতো, আজ তারা নেই। দেউলিয়া হয়ে আছে। এখানে উচ্চ পদ তো অনেক আছে, কিন্তু তবুও সতর্ক না থাকলে উপর থেকে একদম নীচে পড়ে যাবে। মায়া গ্রাস করে নেয়। বাচ্চাদের খুবই সতর্ক হতে হবে। নিজের মত অনুযায়ী কমিটি ইত্যাদি তৈরী করা, ওতে কিছুই নেই। বুদ্ধিযোগ বাবার সাথে যুক্ত করো- এতেই সতোপ্রধান হবে। বাবার হয়ে আর তারপর বাবার সাথে যোগ-যুক্ত হতো না, শ্রীমতের উলঙ্ঘন করে তো একদম নীচে পড়ে যায়। কানেক্শনই ছিন্ন হয়। লিঙ্ক ছিন্ন হয়ে যায়। লিঙ্ক ছিন্ন হয়ে গেলে তখন চেক্(নিরীক্ষণ) করা উচিত যে মায়া কেন এতো আমাদের বিরক্ত করে। চেষ্টা করে বাবার সাথে লিংক জোড়া উচিত। তা না হলে ব্যাটরী চার্জ হবে কীভাবে! বিকর্ম করার ফলে ব্যাটরী ডিসচার্জ হয়ে যায়। উঁচুতে উঠতে উঠতে নীচে পড়ে যায়। জানো যে এইরকম কেউ আছে। প্রথম দিকে কতো লোক এসে বাবার হয়েছে। ভাট্টিতে এসেছিল-তারপর আজ কোথায় ? নীচে নেমে গেছে, কারণ পুরানো দুনিয়া স্মরণে এসেছে। এখন বাবা বলেন আমি তোমাদের অসীম জগতের বৈরাগ্য এনে দিই। এই পুরানো পতিত দুনিয়ার প্রতি মনের টান রাখতে নেই। মনের টান রাখো স্বর্গের প্রতি, এতে পরিশ্রম আছে। যদি এই লক্ষ্মী-নারায়ণ হতে চাও তো পরিশ্রম করতে হবে। বুদ্ধি যোগ এক বাবার সাথে হওয়া উচিত। পুরানো দুনিয়ার থেকে বৈরাগ্য। আচ্ছা, পুরানো দুনিয়াকে ভুলে যাওয়া-এইটা তো ঠিক আছে। তবে কাকে স্মরণ করবে? শান্তিধাম-সুখধামকে। যতোটা সম্ভব উঠতে- বসতে, চলতে-ফিরতে বাবাকে স্মরণ করো। অসীম জগতের সুখের স্বর্গকে স্মরণ করো। এইটা তো হলো একদমই সহজ। যদি এই দুই আশার থেকে উল্টো দিকে চলো তবে পদ ভ্রষ্ট হয়ে যাবে। তোমরা এখানে এসেছোই নর থেকে নারায়ণ হয়ে উঠতে। সবাইকে বলো তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হতে হবে কারণ রিটার্ন জার্নি করতে হবে। ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি- জিওগ্রাফি রিপিট মানে নরক থেকে স্বর্গ, আবার স্বর্গ থেকে নরক। এই চক্র আবর্তিত হতেই থাকে। বাবা বলেছেন এখানে স্বদর্শন চক্রধারী হয়ে বসো। এইরকম স্মরণে থাকো, আমি কতোবার এই চক্রে আবর্তিত হয়েছি। আমরা হলাম স্বদর্শন চক্রধারী, এখন আবার দেবতা হবো। দুনিয়াতে কেউই এই রহস্যকে জানে না। এই জ্ঞান তো দেবতাদের শোনাতে হয় না। তারা তো হলোই পবিত্র। ওদের মধ্যে জ্ঞান নেই যে শঙ্খ বাজাবে। তারা পবিত্রও , এইজন্য তাদের চিহ্ন দেওয়ারও দরকার নেই। চিহ্ন তখনই থাকে যখন দুইজন একত্রিত চতুর্ভুজ থাকে। তোমাদেরও দেয় না, কারণ তোমরা আজ দেবতা কাল আবার পতিত হও। মায়া নীচে নামিয়ে দেয় যে না! বাবা ডিটি(পবিত্র) করেন, মায়া আবার ডেবিল(শয়তান) করে তোলে। অনেক ভাবে মায়া পরীক্ষা নেয়। বাবা যখন বোঝান তখন টের পাওয়া যায়। সত্যি-সত্যিই আমাদের অবস্থা নীচে পড়ে গিয়েছে। কতো বিচার নিজের সব কিছু শিববাবার ধন-ভান্ডারে জমা করিয়ে তারপরেও আবার মায়ার কাছে পরাজিত হয়ে যায়। শিববাবার হয়ে গিয়েছো, আবার কেন ভুলে যাও, এতে যোগের যাত্রা হলো মুখ্য। যোগের দ্বারাই পবিত্র হতে হবে। নলেজের সাথে- সাথে পবিত্রতাও দরকার। তোমরা ডাকোও - বাবা এসে আমাদের পবিত্র করো, যাতে আমরা স্বর্গে যেতে পারি। স্মরণের যাত্রা হলোই পবিত্র হয়ে উচ্চ পদ প্রাপ্ত করার জন্য। যারা চলে যায় তবুও কিছু না কিছু শুনে নেয় বলে অবশ্যই শিবালয়ে যাবে। যদিও তারপর যেমনই পদ প্রাপ্ত করুক কিন্তু অবশ্যই আসে। একবারও যদি স্মরণ করে তো স্বর্গে এসে যাবে, তবে উচ্চ পদ প্রাপ্ত করবে না। স্বর্গের নাম শুনেই খুশী হতে নেই। ফেল করে পাই-পয়সার পদ প্রাপ্ত করা- এতে খুশী হওয়া উচিত নয়। যদিও সেটা স্বর্গ, কিন্তু সেখানে পদ অনেক ! ফিলিং তো আসে তাই না- আমি চাকর, আমি মেথর। শেষের দিকে তোমাদের সব সাক্ষাৎকার হবে- আমি কি হবো, আমার কি বিকর্ম হয়েছে যে এইরকম অবস্থা হয়েছে ? আমি কেন মহারাণী হতে পারিনি ? প্রতিটি পদক্ষেপ সতর্ক হয়ে চলার জন্য তোমরা পদমপতি বা লক্ষ-কোটি গুণ ভাগ্যশালী হতে পারো। সতর্কতা না থাকলে তবে পদমপতি হতে পারবে না। মন্দির গুলিতে দেবতাদের পদমপতির চিহ্ন দেখানো হয়। পার্থক্য তো বুঝতে পারো। সামাজিক মর্যাদার তো অনেক ধরন আছে। এখনও দেখো সামাজিক মর্যাদা কতো রকম। আড়ম্বর কতো থাকে। হলো তো অল্প সময়ের সুখ। তাই বাবা এখন বলেন এই উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে হবে, যার জন্য সবাই বাবার সামনে হাত তোলে, তাই পুরুষার্থ অতোটাই করতে হবে। যারা হাত তোলে তারা নিজেরাই শেষ হয়ে যায়। বলে এই দেবতা হতাম। পুরুষার্থ করে শেষ হয়ে গিয়েছি। হাত ওঠানো হলো সহজ। অনেককে বোঝানোও হলো সহজ, মহারথী বুঝিয়েও অদৃশ্য হয়ে যায়। অপরের কল্যাণ করে নিজেই নিজের অকল্যাণ করে বসে, সেইজন্য বাবা বোঝান সতর্ক থাকো। অন্তর্মুখী হয়ে বাবাকে স্মরণ করো। কি রকম ভাবে ? বাবা আমাদের বাবাও, টিচারও, সদ্গুরুও, আমরা চলেছি-- নিজের সুইট হোমে, এই সব জ্ঞান ভিতরে থাকা উচিত। বাবার মধ্যে জ্ঞান আর যোগ দুই-ই আছে। তোমাদের মধ্যেও থাকা উচিত। জানে যে শিববাবা পড়ায় তো জ্ঞানও হলো, স্মরণও হলো। জ্ঞান আর যোগ দুই একত্রে চলে। এমন না যে, যোগে বসে শিববাবাকে স্মরণ করতে থাকবে, নলেজ ভুলে যাবে। বাবা যোগ শেখালে তখন কি আর নলেজ ভুলে যান! সমগ্র নলেজ ওনার মধ্যে থাকে। বাচ্চারা, তোমাদের মধ্যে এই নলেজ থাকা দরকার। অধ্যয়ণ করা উচিত। কর্ম যেমন করবো, আমাকে দেখে আরো অনেকে করবে। আমি মুরলী না পড়লে আর সবাইও পড়বে না। আমি যেমন দুর্গতি ভোগ করবো আর সবাইও দুর্গতি ভোগ করবে। আমি নিমিত্ত হয়ে যাবো আর সকলকে নীচে নেমে যাওয়ার। কোনো বাচ্চা মুরলী পড়ে না, মিথ্যা অহঙ্কারে চলে আসে। মায়া তাড়াতাড়ি আক্রমণ করে নেয়। প্রতি পদক্ষেপে শ্রীমত চাই। সেটা না হলে কিছু না কিছু বিকর্ম হয়ে যায়। অনেক বাচ্চা ভুল করে তারপর সর্বনাশ হয়ে যায়। অবহেলা করার ফলে মায়া থাপ্পড় লাগিয়ে ওয়ার্থ নট পেনী অর্থাৎ মূল্যহীন করে দেয়, এটা খুবই বোধ থাকা চাই। অহঙ্কার আসলে মায়া অনেক বিকর্ম করিয়ে নেয়। যখন কেউ কমিটি ইত্যাদি তৈরী করে তো সেখানে হেড এক দুই জন ফিমেল অবশ্যই থাকা উচিত, যাদের আদেশ অনুযায়ী কাজ হবে। কলস তো লক্ষ্মীর উপর রাখা হয়ে থাকে। গায়নও আছে অমৃত পান করানোর সময় অসুরও বসে পান করতো। আবার বলে যজ্ঞে অনেক প্রকারের বিঘ্ন ঘটায়, বিঘ্ন ঘটানোর জন্য অনেক প্রকারের আছে। বুদ্ধিতে সারাদিন পরচর্চার কথা থাকে, এটা খুবই খারাপ। কোনো কথা থাকলে বাবাকে রিপোর্ট করো। সংশোধন করানোর জন্য তো এক জনই বাবা আছেন। তোমরা নিজেদের হাতে ল' অর্থাৎ আইন তুলে নিও না। তোমরা বাবার স্মরণে থাকো। সবাইকে বাবার পরিচয় দাও, তবে এইরকম হতে পারবে। মায়া খুবই কড়া, কাউকেই ছাড়ে না। সবসময় বাবাকে সংবাদ লিখে দিতে হয়। ডায়রেক্শন নিতে থাকতে হয়। নয়তো একেক রকম ডায়রেক্শন প্রাপ্ত হতেই থাকবে। বাচ্চারা মনে করে বাবা তো নিজের থেকেই এই ব্যাপারে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাই তিনি হলেন অন্তর্যামী। বাবা বলেন- না, আমি তো নলেজ(জ্ঞান) অধ্যয়ণ করাই। এতে অন্তর্যামীর ব্যাপারই নেই। হ্যাঁ, এটা জানি যে এই সব হলো আমার বাচ্চা। প্রত্যেকের ভিতরের আত্মা হলো আমার বাচ্চা। তাছাড়া এইরকম না যে বাবা সব কিছুতেই বিরাজমান। মানুষ উল্টো বুঝে নেয়।

বাবা বলেন- আমি জানি সবার সিংহাসনে আত্মা বিরাজমান। এটা তো কতো সহজ কথা। তবুও ভুলে বলে দেয় পরমাত্মা সর্বব্যাপী। এটা হলো একটা বড় ভুল, এইজন্যই এতোটা নীচে নেমেছে। যিনি বিশ্বের মালিক করে তোলেন তোমরা তাঁকে গালি দাও, এইজন্য বাবা বলেন- যদা যদাহি-- বাবা এখানে এলে তখন বাচ্চাদের বিচার সাগর ভালো করে মন্থন করা উচিত। নলেজের উপর খুবই মন্থন করা উচিত, টাইম দেওয়া চাই - তবে তোমরা নিজেদের কল্যাণ করতে পারবে, এতে পয়সা ইত্যাদির ব্যাপার নেই। ক্ষুধার্ত হয়ে তো কেউ মরতে পারে না। বাবার কাছে যে যত জমা করে, ততই তার ভাগ্য তৈরী হয়। বাবা বুঝিয়েছেন জ্ঞান আর ভক্তির পরে হলো বৈরাগ্য। বৈরাগ্য মানে সবকিছু ভুলে যেতে হয়। নিজেকে ডিচ্যাচ্ করে দেওয়া উচিত, শরীর থেকে আমরা আত্মারা এখন চলে যাচ্ছি। আচ্ছা !

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) নিজের উপর খুবই কন্ট্রোল রাখতে হবে। শ্রীমতের ব্যাপারে কখনো বেপরোয়া হতে নেই। খুবই সতর্ক থাকতে হয়, কখনো কোনো নিয়মের উলঙ্ঘন যেন না হয়।

২ ) অন্তর্মুখী হয়ে এক বাবার সাথে বুদ্ধির লিঙ্ক জুড়তে হবে। এই পতিত পুরানো দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য আসা চাই। বুদ্ধিতে থাকব - যে কর্ম আমি করবো, আমাকে দেখে সবাই করবে।

বরদান:-
স্বমানের সীটে স্থিত থেকে মায়াকে স্যারেন্ডার করানো শ্রেষ্ঠ স্বমানধারী ভব

সঙ্গমযুগের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ স্বমান হলো মাস্টার সর্বশক্তিমানের স্মৃতি থাকা। যেইরকম কোনো বড় অফিসার বা রাজা যখন স্বমানের সীটের উপর স্থিত হয় তো অন্যান্যরাও সেই সম্মান প্রদান করে, যদি নিজেই না সীটে থাকবে তো তার অর্ডার কেউ মানবে না। সেইরকম তোমরাও স্বমানধারী হয়ে নিজের শ্রেষ্ঠ স্বমানের সীটের উপর সেট থাকো, তবে মায়া তোমার সামনে স্যারেন্ডার হয়ে যাবে।

স্লোগান:-
সাক্ষীভাবের স্থিতিতে থেকে দিলারামের সঙ্গের অনুভবকারী হল লভলীন আত্মা।