24-01-2021 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
17-10-87 মধুবন
"ব্রাহ্মণ জীবনের শৃঙ্গার - 'পবিত্রতা"
আজ বাপদাদা বিশ্বের চারিদিকে তাঁর বিশেষ ভবিষ্যৎ দেবতা হতে
যাওয়া পূজ্য বাচ্চাদেরকে দেখছেন। সমগ্র বিশ্বের মধ্যে কতো অল্প অমূল্য রত্ন পূজনীয়
হয়েছে ! পূজনীয় আত্মারাই বিশ্বের কাছে সমগ্র বিশ্বের নূর অর্থাৎ আলো হয়ে ওঠে।
যেমন এই শরীরে (চোখে) যদি আলো না থাকে তবে তার কাছে দুনিয়াও নেই (অন্ধকার), তেমনই
বিশ্বের মধ্যে পূজনীয় জগতের আলো তোমরা বাচ্চারা না থাকলে এই বিশ্বেরও কোনো মহত্ব
নেই। স্বর্ণ যুগ বা আদি যুগ বা সতোপ্রধান যুগ, নতুন জগৎ সংসার তোমাদের, বিশেষ
আত্মাদের দ্বারাই সূচনা হয়। তোমরা হলে নতুন বিশ্বের আধার মূর্তি, পূজনীয় আত্মা l
তাহলে তোমরা আত্মাদের কতখানি মহত্ব ! তোমরা পূজ্য আত্মারা হলে জগৎ সংসারের জন্য
নতুন আলো। তোমাদের উত্তরণ (চড়তি কলা) কলা বিশ্বকে শ্রেষ্ঠ কলাতে নিয়ে যাওয়ার
নিমিত্ত হয়ে থাকে। তোমরা পতনের কলায় এলে তখন বিশ্ব সংসারেরও পতনের কলা হয়। এত
মহান আর মহত্ব সম্পন্ন আত্মা তোমরা !
আজ বাপদাদা সকল বাচ্চাদেরকে দেখছিলেন । ব্রাহ্মণ হওয়া অর্থাৎ পূজ্য হওয়া, কেননা
ব্রাহ্মণই দেবতা হয় আর দেবতা অর্থাৎ পূজনীয়। সব দেবতা পূজনীয় তো হয়ই তবুও নম্বর
অনুক্রম তো অবশ্যই আছে। কোনো কোনো দেবতাদের পূজা বিধিসম্মত আর নিয়মিত ভাবে করা হয়ে
থাকে, কারো কারো সকল কর্মের পূজা হয় না। কারো কারো বিধি সম্মতভাবে প্রতিদিন
শৃঙ্গার (সুসজ্জিত করা হয়) হয়, আবার কারো শৃঙ্গার প্রতিদিন হয় না, উপর উপর একটু
আধটু সাজানো হয় কিন্তু বিধি সম্মতভাবে হয় না। কারও সামনে সব সময় কীর্তন হয়, কারো
সামনে কখনো কখনো হয়। এই সব কিছুর কারণ কী ? ব্রাহ্মণ তো সকলকেই বলা হবে, জ্ঞান -
যোগের পাঠও সবাই পড়ছে, তবুও এত প্রভেদ কেন ? ধারণা করার বিষয়ে প্রভেদ থেকে যাচ্ছে।
তবুও বিশেষ বিশেষ কোন্ কোন্ ধারণা গুলির আধারে নম্বর ওয়ান হয়ে থাকে, জানো তোমরা ?
পূজনীয় হওয়ার বিশেষ আধার হল পবিত্রতা । সর্ব প্রকারের পবিত্রতা তোমরা যত গ্রহণ করতে
থাকো, ততই তোমরা সর্ব প্রকারে পূজনীয় হয়ে যাও আর যারা নিরন্তর বিধিসম্মত ভাবে আদি,
অনাদি বিশেষ গুণের রূপের দ্বারা পবিত্রতাকে সহজেই গ্রহণ করে থাকে, তারাই
বিধিসম্মতভাবে পূজ্য হয়। সর্ব প্রকারের পবিত্রতা কী ? যে আত্মারা সহজে, স্বতঃতই
প্রতিটি সংকল্পে, বাণীতে, কর্মে সর্ব অর্থাৎ জ্ঞানী এবং অজ্ঞানী, সকলের সাথে
সম্পর্কে সদা পবিত্র বৃত্তি, দৃষ্টি, ভাইব্রেশনের দ্বারা যথার্থ সম্বন্ধ - সম্পর্ককে
পালন করে থাকে - তাকেই বলা হয় সর্ব প্রকারের পবিত্রতা। স্বপ্নেও নিজের প্রতি কিম্বা
অন্য আত্মাদের প্রতি সকল প্রকারের পবিত্রতার মধ্যে যেন কোনো প্রকারের অভাব না থাকে
। মনে করো স্বপ্নেও যদি ব্রহ্মচর্য খন্ডিত হয় বা কোনো আত্মার প্রতি কোনো প্রকারের
ঈর্ষা, আবেগের বশে কর্ম করা হয় বা মুখের বোলের রূপে নির্গত হয়, ক্রোধের অংশ রূপেও
ব্যবহৃত হয়, একেও পবিত্রতার খন্ডন হওয়া মানা হবে। ভাবো, যদি স্বপ্নেও প্রভাব পড়ে,
তবে সাকারে করে থাকা কর্মের প্রভাব কতখানি হবে ! সেইজন্য খন্ডিত মূর্তি কখনো পূজিত
হয় না। খন্ডিত মূর্তি মন্দিরে থাকে না, আজকালকার মিউজিয়ামে থাকে। সেখানে ভক্তরা
আসে না। কেবল এটাই বিখ্যাত যে, সেখানে অনেক পুরানো মূর্তি আছে, এইটুকুই l স্থূল
অঙ্গ গুলি খন্ডিত হওয়ায় তারা খন্ডিত বলে দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কোনো প্রকারের
পবিত্রতা যদি খন্ডিত হয়, তবে তা পূজ্য পদ থেকে খন্ডিত হয়ে যায়। এইভাবে চার
প্রকারের পবিত্রতা যদি খন্ডিত হয়ে যায়, তবে তো সে পূজ্য পদ থেকে খন্ডিত হয়ে গেল।
এইরূপে চার প্রকারের পবিত্রতা বিধি সম্মতভাবে যদি বজায় থাকে, তবে পূজাও বিধি
সম্মতভাবেই হবে।
মন - বাণী - কর্ম (কর্মের মধ্যে সম্বন্ধ - সম্পর্ক এসে যাবে) আর স্বপ্নেও পবিত্র -
একে বলা হয় 'সম্পূর্ণ পবিত্রতা' l কিছু বাচ্চা অসাবধানতার কারণে, হয় বড়দের নয়তো
ছোটদের এই কথা বলে সাথে এগিয়ে চলার চেষ্টা করে যে "আমার ভাব খুব ভালো, কিন্তু মুখ
থেকে (বোল) বেরিয়ে গেছে অথবা আমার এইম্ (লক্ষ্য) এইরকম ছিল না, কিন্তু হয়ে গেছে,
অথবা বলে- হাসি-ঠাট্টায় বলেছি অথবা করে ফেলেছি l এটাও চালিয়ে নেওয়া, সেইজন্য পূজাও
কোনো রকমেই হয় l এই ঢিলেঢালাভাব সম্পূর্ণ পূজ্য স্থিতিকে নম্বর অনুক্রমে নিয়ে আসে l
এও অপবিত্রতার খাতায় জমা হয়ে যায় l তোমাদের বলা হয়েছিল না যে পূজ্য, পবিত্র
আত্মাদের লক্ষণ এটাই যে তাদের চার ধরনের পবিত্রতা স্বাভাবিক, সহজ আর সদা হবে l এই
ব্যাপারে তাদের ভাবনার প্রয়োজন হবে না, কিন্তু পবিত্রতার ধারণা নিজে থেকেই তাদের
সঙ্কল্প, বোল, কর্ম আর স্বপ্ন যথার্থ বানায় l যথার্থ অর্থাৎ এক তো যুক্তিযুক্ত,
দ্বিতীয়তঃ, যথার্থ অর্থাৎ প্রতিটা সঙ্কল্পে অর্থ থাকবে ; তা' অর্থবিহীন হবে না l
তোমরা এইরকম বলবে না যে আমি এমনিই বলে দিয়েছি, বের হয়ে গেছে, করে ফেলেছি, হয়ে গেছে
! এমন পবিত্র আত্মা সদা সব কর্মে অর্থাৎ দিনচর্যায় যথার্থ যুক্তিযুক্ত থাকে l
সেইজন্য তাদের প্রতিটা কর্মের পূজাও হয় অর্থাৎ সম্পূৰ্ণ দিনচর্যার পূজা হয় l জেগে
ওঠার সময় থেকে রাতে শুতে যাওয়া পর্যন্ত ভিন্ন ভিন্ন কর্মের দর্শন হয় l
ব্রাহ্মণ জীবনের জন্য তৈরি হওয়া দিনলিপি অনুসারে কোনও কর্ম যদি যথার্থ না করা হয়,
তাহলে তারতম্য হওয়ার কারণে পূজাতেও তারতম্য হবে l মনে করো, অমৃতবেলায় ওঠার দিনলিপি
অনুযায়ী কেউ যদি বিধিপূর্বক না চলে তখন তাদের পূজাতে পূজারীও বিধিতে কম-বেশি করে
অর্থাৎ পূজারীও সময়মতো উঠে পূজা করবে না, তারা তাদের সময়মতো এসে পূজা করবে অথবা
অমৃতবেলায় জাগ্রত স্থিতিতে অনুভব করে না, বাধ্যবাধকতায় বা অলসতায় বসে তাহলে পূজারীও
বাধ্য হয়ে অথবা অলসতার সাথে পূজা করবে, বিধিসম্মত ভাবে পূজা করবে না l এইরকম
প্রত্যেক দিনচর্যার কর্মের প্রভাব পূজনীয় হওয়াতে প্রভাব ফেলে l বিধিসম্মত ভাবে না
চলা, দিনচর্যার কোনও ক্রিয়ায় উপর-নিচে হওয়া - এও অপবিত্রতার অংশ হিসেবে গণ্য হয়ে
থাকে, কারণ আলস্য আর ঢিলেঢালা ভাবও বিকার l যা যথার্থ কর্ম নয় সেটাই বিকার l অতএব,
সেটা অপবিত্রতার অংশ, তাই না ! এই কারণে পূজ্য পদে নম্বর অনুক্রম হয়ে যায় l তাহলে
ফাউন্ডেশন কি ? পবিত্রতা l
পবিত্রতার ধারণা অতি সূক্ষ্ম l পবিত্রতার আধারেই কর্মের বিধি আর গতির আধার l
পবিত্রতা শুধু স্থূল ব্যাপার নয় l ব্রহ্মচারী হওয়া অথবা নির্মোহ থাকা - শুধু একেই
পবিত্রতা বলা হবে না, পবিত্রতা ব্রাহ্মণ জীবনের শৃঙ্গার (সজ্জা) l সুতরাং সবসময়
তোমাদের মুখ ও আচরণ থেকে পবিত্রতার শৃঙ্গারের অনুভূতি অন্যদেরও হোক l তোমাদের
দৃষ্টিতে, মুখে, হাতে, চরণে সদা পবিত্রতার শৃঙ্গার প্রত্যক্ষ হোক l তোমাদের মুখের
দিকে কেউ যদি দেখে তো তোমাদের ফিচার্স দ্বারা তার যেন পবিত্রতা অনুভূত হয় l তারা
যেমন অন্য ধরনের ফিচার্স সম্বন্ধে বর্ণন করে, ঠিক সে'ভাবেই যেন এটা বর্ণন করে যে
এদের ফিচার্স থেকে পবিত্রতা প্রতীয়মান হয়, নয়নে পবিত্রতার ঝলক আর মুখে পবিত্রতার
স্মিতহাসি l আর কোনও বিষয় যেন তাদের নজরে না আসে l একে বলে, পবিত্রতার শৃঙ্গারে
সুসজ্জিত মূর্তি l বুঝেছ ? পবিত্রতার গভীরতা তো আরও বেশি, পরে এই বিষয়ে তোমরা আরও
শুনবে l কর্মের গতি যেমন অতি গহীন, পবিত্রতার পরিভাষাও অতি গহীন আর পবিত্রতাই
ফাউন্ডেশন l আচ্ছা l
আজ, গুজরাট থেকে তারা আগত l যারা গুজরাটের তারা সদা হালকা হয়ে নাচছে, গাইছে l তাদের
শরীর যতই ভারী হোক না কেন তারা হালকা হয়ে নাচে l গুজরাটের বিশেষত্ব হলো, সদা হালকা
থাকা, সদা খুশিতে নাচতে থাকা আর বাবার এবং তাদের প্রাপ্তির গীত গাইতে থাকা l শৈশব
থেকেই তারা ভালো নাচ-গান করে l ব্রাহ্মণ জীবনে তোমরা কী করো ? ব্রাহ্মণ জীবন অর্থাৎ
আনন্দময় জীবন l যখন তোমরা গরবা-রাস করো তখন তোমরা আনন্দে মেতে ওঠো, তাই না ! যদি
তন্ময় না হও, তাহলে বেশি করতে পারবে না l আনন্দ-উল্লাসে ক্লান্তি হয় না, অক্লান্ত
হয়ে যায় l সুতরাং ব্রাহ্মণ জীবন অর্থাৎ সদা খুশিময় জীবনে থাকার জীবন, সেটা হলো
স্থূল আনন্দ আর ব্রাহ্মণ জীবনে মনের আনন্দ l মনকে সদা আনন্দে নাচতে গাইতে দাও l
সে'সব লোকে হালকা হয়ে নাচ-গানে অভ্যস্ত l সেইজন্য ব্রাহ্মণ জীবনেও এদের ডবল লাইট (হালকা
) হ'তে কঠিন লাগে না l সুতরাং গুজরাট অর্থাৎ যারা সদা হালকা থাকায় অভ্যস্ত, যারা সদা
বরদানী l তাইতো সমগ্র গুজরাটের বরদান প্রাপ্ত হয়েছে - ডবল লাইট l তোমরা মুরলী
দ্বারাও বরদান লাভ করো, তাই না !
তোমাদের বলা হয়েছিল যে তোমাদের এই দুনিয়ায় সবকিছু যথাশক্তি অর্থাৎ ধারণক্ষমতা
অনুযায়ী যথা সময়ে হয় l যথা আর তথা অর্থাৎ যেরূপ-সেরূপ l আর বতনে তো যথা-তথার ভাষাই
নেই l এখানে তো দিনেরও আর রাতেরও বিবেচনা করতে হয় l ওখানে না দিন আছে, না রাত ; না
সূর্য উদয় হয়, না চন্দ্রমা l দুইয়েরই ঊর্ধ্বে l ওখানেই তো যেতে হবে, তাই না !
বাচ্চারা মনখোলা ও অন্তরঙ্গ আলোচনায় ( রূহ্-রিহান) তোমরা জিজ্ঞাসা করেছ কখন ?
বাপদাদা উত্তর দিয়েছেন, যদি তোমরা সবাই বলো যে তোমরা প্রস্তুত তো তখনই বাপদাদা করে
নেবেন l তখন তো আর 'কখন' এর প্রশ্নই নেই l 'কখন' ততক্ষণই, যতক্ষণ না সম্পূর্ণ মালা
তৈরি হয় l এখন যদি নাম বের করতে বসো তো ১০৮-এর মালাতে কারও নাম যুক্ত করতে তোমাদের
ভাবতে হবে l এখন, ১০৮-এর মালাতেও ১০৮ নাম প্রত্যেকের একই দেওয়া উচিত ; নয়তো,
বিভিন্ন রকম হয়ে যাবে l বাপদাদা তো এই মুহূর্তে তালি বাজাবেন আর তৎক্ষণাৎ সবকিছু
শুরু হয়ে যাবে - একদিকে প্রকৃতি, একদিকে মানুষজন l দেরি আর কীসের লাগবে ! কিন্তু
বাবার সব বাচ্চার প্রতি স্নেহ আছে, বাবা হাত ধরবেন, তবে তো তোমরা তাঁর সাথে যেতে
পারবে ! তাঁর হাতে হাত রাখা অর্থাৎ সমান হওয়া l তোমরা বলবে - সবাই সমান হবে না, অথবা
সবাই নম্বর ওয়ান হবে না l কিন্তু নম্বর ওয়ানের অনুগামী নম্বর টু হবে l আচ্ছা, বাবা
সমান হয়নি কিন্তু নম্বর ওয়ান দানার সমান তো হবে ! তৃতীয়, দ্বিতীয় দানার মতো দানা হবে
l চতুর্থ তিনের সমান হবে l অন্ততঃ এইভাবে তো তারা সমান হোক, তাহলে পরস্পর পরস্পরের
কাছাকাছি এলেই মালা তৈরি হয়ে যাবে l এইরকম স্টেজ পর্যন্ত পৌঁছানো অর্থাৎ বাবা সমান
হওয়া l ১০৮তম দানা ১০৭তম দানার সাথে একইরকম তো হবে, তাই না ! তাদের মতো বিশেষত্বও
যদি পরস্পরের মধ্যে এসে যায় মালা তৈরি হয়ে যাবে l নম্বর অনুক্রম হতেই হবে l বুঝেছ ?
বাবা তো বলেন - কেউ কি আছে এখন যে গ্যারান্টি দিয়ে বলবে 'হ্যাঁ সবাই প্রস্তুত রয়েছে
?' বাপদাদার তো লাগবে মাত্র এক সেকেন্ড l তোমাদের তো দৃশ্য দেখাতেন, তাই না যে
বাপদাদা তালি বাজাবেন আর পরীরা আসবে l আচ্ছা l
চারিদিকের পরম পূজ্য শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, সবরকম সম্পূৰ্ণ পবিত্রতার লক্ষ্য পর্যন্ত
পৌঁছে যাওয়া তীব্র পুরুষার্থী আত্মাদের, সদা সব কর্ম বিধিসম্মত ভাবে করে, এমন
সিদ্ধিস্বরূপ আত্মাদের, সদা সবসময় পবিত্রতার শৃঙ্গারে সজ্জিত বিশেষ আত্মাদের
বাপদাদার স্নেহ-
সম্পন্ন স্মরণ-স্নেহ স্বীকার হোক l
*পাটিদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার*
(১) বিশ্বের সবচাইতে শ্রেষ্ঠ আত্মা মনে করো নিজেদেরকে ? সারা বিশ্ব সেই শ্রেষ্ঠ
ভাগ্যের জন্য জোরে জোরে ডাকছে, যেন তাদের ভাগ্য খুলে যায় ... তোমাদের ভাগ্য তো খুলে
গেছে l এর থেকে বড় খুশির ব্যাপার আর কী হবে ! ভাগ্যবিধাতাই আমার বাবা - এমন নেশা আছে
না ! যার বাবাই ভাগ্যবিধাতা তার ভাগ্য কী ধরনের হবে ! এর থেকে বড় ভাগ্য কিছু হতে
পারে ? সুতরাং সদা যেন এই খুশি থাকে যে ভাগ্য তোমাদের জন্মসিদ্ধ অধিকার l বাবার কাছে
যা প্রপার্টি থাকে, বাচ্চারা তার অধিকারী হয় l তাহলে ভাগ্যবিধাতার কাছে কী আছে ?
ভাগ্যের ভান্ডার l সেই ভাণ্ডারের উপরে এখন তোমাদের অধিকার l সুতরাং সদাসর্বদা 'বাহ্
আমার ভাগ্য আর আমার ভাগ্যবিধাতা বাবা !' - এই গীত গাইতে গাইতে খুশিতে উড়তে থাকো l
যার ভাগ্য এত শ্রেষ্ঠ হয়ে গেছে তার আর কী প্রয়োজন ? তোমাদের ভাগ্যে সবকিছু যুক্ত
হয়েছে l ভাগ্যবানের কাছে তন-মন-ধন-জন সবকিছু থাকে l শ্রেষ্ঠ ভাগ্য অর্থাৎ অপ্রাপ্ত
কোনও বস্তু নেই l কোনও অপ্রাপ্তি আছে ? ভালো বাড়ী চাই, ভালো কার (গাড়ি) চাই ...না l
মনের খুশি যার প্রাপ্ত হয়েছে, তার সর্ব প্রাপ্তি হয়ে গেছে l শুধু কার নয়, বরং
কারুণের ভান্ডার প্রাপ্ত হয়েছে ! অপ্রাপ্ত কোনও বস্তুই নেই l তোমরা এমনই ভাগ্যবান !
বিনাশী ইচ্ছা রেখে কী করবে ? যা আজ আছে, কাল তা' নেই - তাহলে সে'সবের জন্য কোনও
ইচ্ছা কেন রাখবে ! সেইজন্য সদা অবিনাশী ভান্ডারের খুশিতে থাকো, যা এখনও আছে আর
সাথেও যাবে l এই বাড়ী, কার বা অর্থ সঙ্গে যাবে না l কিন্তু এই অবিনাশী ভান্ডার অনেক
জন্ম সঙ্গে থাকবে l কেউ কেড়ে নিতে পারে না, কেউ লুট করে নিতে পারে না l তোমরা
নিজেরাও অমর হয়ে গেছ আর অবিনাশী খাজানাও প্রাপ্ত হয়েছে ! জন্ম জন্ম এই শ্রেষ্ঠ
প্রালব্ধ সঙ্গে থাকবে l কতো বড় ভাগ্য ! যেখানে কোনও ইচ্ছা নেই, ইচ্ছা মাত্রম্
অবিদ্যা - এইরকম শ্রেষ্ঠ ভাগ্য ভাগ্যবিধাতা বাবা দ্বারা প্রাপ্ত হয়ে গেছে l
(২) নিজেদেরকে বাবার কাছাকাছি থাকা শ্রেষ্ঠ আত্মা অনুভব করো ? তোমরা এখন বাবার হয়ে
গেছ, এই খুশি তোমাদের সদা থাকে ? দুঃখের দুনিয়া থেকে বেরিয়ে সুখের সংসারে এসে গেছ l
দুনিয়া দুঃখে চিৎকার করছে আর তোমরা সুখের সংসারে, সুখের দোলায় দুলছ l কতো প্রভেদ !
দুনিয়া খুঁজে যাচ্ছে আর তোমরা মিলন উদযাপন করছ l সুতরাং সদা নিজের সর্বপ্রাপ্তিকে
দেখে উৎফুল্ল থাক l কী কী প্রাপ্তি হয়েছে, তার লিস্ট যদি বের করো তাহলে লিস্ট অনেক
দীর্ঘ হয়ে যাবে l কী কী লাভ করেছ তোমরা ? যখন শরীরের খুশি থাকে, তখন শরীর সুস্থ ;
মন শান্তি লাভ করে তো শান্তি মনের বিশেষত্ব আর ধনে এত শক্তি থাকে যে ডাল-রুটি ৩৬
রকম খাবারের সমান অনুভব হবে l ঈশ্বরীয় স্মরণে ডাল-রুটিও কতো শ্রেষ্ঠ মনে হয় !
দুনিয়ার যদি ৩৬ রকম থাকে আর তোমাদের শুধু ডাল-রুটি, তাহলে শ্রেষ্ঠ কোনটা হবে ?
ডাল-রুটি ভালো, তাই না ! কারণ সেটা প্রসাদ তথা পবিত্র আহার l যখন ভোজন বানাও তো
স্মরণে বানাও, স্মরণে খাও, সুতরাং প্রসাদ তো হয়েই গেল ! প্রসাদের মহত্ত্ব আছে l
তোমরা সবাই রোজ প্রসাদ খাও l প্রসাদে কতো শক্তি থাকে ! সুতরাং তন, মন, ধন সবকিছুতে
কতো শক্তি এসে গেছে, সেইজন্য বলা হয় - ব্রাহ্মণের ভাণ্ডারে কোনও বস্তু অপ্রাপ্ত নয়
l সুতরাং সদা এই সকল প্রাপ্তি সামনে রেখে খুশি থাকো, উৎফুল্ল থাকো, আচ্ছা l
বরদান:-
কর্ম দ্বারা সর্বগুণ দান করে ডবল লাইট ফরিস্তা ভব
যে বাচ্চারা কর্ম দ্বারা গুণের দান করে তাদের আচরণ
এবং মুখ উভয়ই ফরিস্তার মতো প্রতীয়মান হয় l তাদের ডবল লাইট অর্থাৎ প্রকাশময় এবং হালকা
ভাবের অনুভূত হয় l তাদের কোনরকম ভার উপলব্ধি হয় না l প্রতিটা কর্মে সহায়তার অনুভূতি
হয়, যেন কোনও শক্তি চালনা করছে l সব কর্ম দ্বারা মহাদানী হওয়ার কারণে তাদের সকলের
থেকে আশীর্বাদ এবং সকলের থেকে বরদান প্রাপ্তির অনুভব হয় l
স্লোগান:-
সেবায় সফলতার নক্ষত্র হও, দুর্বল নয় l