19.01.2021
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমাদের মিষ্টি বাবাকে স্মরণ করো, তাহলেই তোমরা সতোপ্রধান দেবতা হয়ে যাবে, সবকিছুই
এই স্মরণের যাত্রার উপর নির্ভর করে"
প্রশ্নঃ -
বাবার আকর্ষণ
যেমন সমস্ত বাচ্চাদের থাকে, তেমনই কোন্ বাচ্চাদের আকর্ষণ সকলের হবে ?
উত্তরঃ -
যে বাচ্চারা ফুল হয়েছে । ছোটো বাচ্চারা যেমন ফুল হয়, তারা যেমন বিকারের কিছুই জানে
না, তাই তারা সকলকেই আকর্ষণ করে, তাই না । তেমনই তোমরা বাচ্চারাও যখন ফুল অর্থাৎ
পবিত্র হয়ে যাবে, তখন সকলকেই আকর্ষণ করবে । তোমাদের মধ্যে বিকারের কোনো কাঁটা
থাকাও উচিত নয় ।
ওম্ শান্তি ।
আত্মারূপী
সন্তানরা জানে, এ হলো পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ । নিজের ভবিষ্যতের পুরুষোত্তম মুখ দেখো
কি ? পুরুষোত্তম শরীর দেখো কি ? এই অনুভব করো কি যে, আমরা নতুন দুনিয়া সত্যযুগে
এনাদের ( লক্ষ্মী - নারায়ণ ) বংশাবলীতে যাবো, অর্থাৎ সুখধামে যাবো, অথবা পুরুষোত্তম
হবো । তোমাদের বসে বসেই এই চিন্তন আসে তো ! ছাত্ররা যারা পড়ে, তখন তাদের ক্লাস
সম্বন্ধে বুদ্ধিতে অবশ্যই এই জ্ঞান থাকে যে - আমি ব্যারিস্টার অথবা অমুক হবো ।
তেমনই তোমরাও যখন এখানে বসো, তখন এই কথা জানো যে, আমরা বিষ্ণুর রাজত্বে যাবো ।
বিষ্ণুর দুই রূপ - লক্ষ্মী - নারায়ণ অর্থাৎ দেবী - দেবতা । তোমাদের বুদ্ধি এখন
অলৌকিক । আর কোনো মানুষের মধ্যে এই কথা রমণ করে না । বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে
এইসব কথা আছে । এ কোনো সাধারণ সৎসঙ্গ নয় । এখানে বসলে তোমরা বুঝতে পারো যে, সৎ বাবা
যাঁকে শিব বলা হয়, তাঁর সঙ্গে বসে আছি । শিববাবাই হলেন রচয়িতা, তিনিই রচনার আদি -
মধ্য এবং অন্তকে জানেন, আর এই জ্ঞান দেন । যেন তিনি কালকের কথা শোনাচ্ছেন । এখানে
যখন বসে আছো, তখন এ তো স্মরণে আছে যে আমরা এখানে পরিবর্তিত হতে এসেছি, অর্থাৎ এই
শরীর পরিবর্তন করে দেবতা শরীর নিতে । আত্মা বলে যে, এ আমাদের তমোপ্রধান পুরানো শরীর,
এই শরীরের পরিবর্তন করে এমন লক্ষ্মী - নারায়ণ তুল্য হতে হবে । আত্মা বলে যে, আমাদের
এই শরীর তমোপ্রধান আর পুরানো, একে পরিবর্তন করে এমন লক্ষ্মী - নারায়ণ হতে হবে । এইম
অবজেক্ট কতো শ্রেষ্ঠ । পড়ান যে শিক্ষক, তিনি নিশ্চই যে স্টুডেন্টরা পড়ে তাদের থেকে
তো হুঁশিয়ার হবেন, তাই না । তিনি পড়ান, ভালো কর্ম শেখান, তাহলে অবশ্যই উচ্চ হবেন,
তাই না । তোমরা জানো যে, আমাদের সবথেকে উঁচু ভগবান পড়ান । ভবিষ্যতে আমরা এমন দেবতা
হবো । আমরা এই যে পড়া পড়ি তা ভবিষ্যতের নতুন দুনিয়ার জন্য । আর কেউই নতুন দুনিয়ার
খবর জানেই না । তোমাদের বুদ্ধিতে এখন আসে যে, এই লক্ষ্মী - নারায়ণ নতুন দুনিয়ার
মালিক ছিলো । তাহলে তা আবার অবশ্যই রিপিট হবে । বাবা তাই বোঝান, তোমাদের এই পড়া পড়ে
মানুষ থেকে দেবতা হতে হবে । দেবতাদের মধ্যেও অবশ্যই নম্বরের ক্রমানুসার থাকবে । দৈবী
রাজধানী তো হয়, তাই না । তোমাদের সারাদিন এই খেয়াল তো চলতেই থাকবে যে, আমরা হলাম
আত্মা । আমাদের আত্মা যা খুবই পতিত ছিলো, তা এখন পবিত্র হওয়ার জন্য পবিত্র বাবাকে
স্মরণ করে । স্মরণের অর্থও বুঝতে হবে । আত্মা তার মিষ্টি বাবাকে স্মরণ করে । বাবা
নিজেই বলেন - বাচ্চারা, আমাকে স্মরণ করলে তোমরা সতোপ্রধান দেবতা হয়ে যাবে ।
সমস্তকিছুই এই স্মরণের যাত্রার উপর নির্ভর করে । বাবা তো অবশ্যই জিজ্ঞেস করবেন -
বাচ্চারা, তোমরা কতো সময় স্মরণ করো ? এই স্মরণ করাতেই মায়ার লড়াই হয় । তোমরা
নিজেরাই বুঝতে পারো যে, এ যাত্রা নয়, এ যেন লড়াই, এতে অনেক বিঘ্ন আসে । স্মরণের
যাত্রাতে থাকলেই মায়া বিঘ্ন এনে উপস্থিত করে, অর্থাৎ স্মরণ ভুলিয়ে দেয় । বলেও থাকে
- বাবা, আমাদের আপনার স্মরণে থাকাতে মায়ার অনেক তুফান আসে । এক নম্বর তুফান হলো দেহ
- অভিমানের । এরপর হলো কাম - ক্রোধ, লোভ, মোহ ......। আজ কামের তুফান, কাল ক্রোধের
তুফান, আবার কখনো লোভের তুফান এলো...আবার আজ আমাদের অবস্থা ভালো থাকলো, কোনো তুফানই
এলো না । স্মরণের যাত্রায় সারাদিন থাকলে, খুবই খুশী থাকলে । বাবাকে অনেক স্মরণ করলে
। স্মরণে প্রেমের অশ্রু বইতে থাকে । বাবার স্মরণে থাকলে তোমরা মিষ্টি হয়ে যাবে ।
বাচ্চারা, তোমরা এই কথাও বুঝতে পারো যে, আমরা মায়ার কাছে হার খেতে খেতে কোথায় এসে
পৌঁছেছি । বাচ্চারা হিসেব বের করতে থাকে । কল্পে কত মাস আর কত দিন থাকে । বুদ্ধিতে
তো আসে, তাই না । যদি কেউ বলে লাখ বছর আয়ু, তাহলে তো কেউ হিসেব করতেই পারে না ।
বাবা বোঝান যে - এই সৃষ্টিচক্র ঘুরতেই থাকে । এই সম্পূর্ণ চক্রে আমরা কতো জন্মগ্রহণ
করি । কোন্ সাম্রাজ্যে যাই । এ তো তোমরা জানো, তাই না । এ সম্পূর্ণ নতুন কথা, নতুন
দুনিয়ার জন্য নতুন জ্ঞান । স্বর্গকে নতুন দুনিয়া বলা হয় । তোমরা বলবে যে - আমরা
এখন মনুষ্য, এবার দেবতা তৈরী হচ্ছি । দেবতা পদ হলো উচ্চ । বাচ্চারা, তোমরা জানো যে,
আমরা সবথেকে পৃথক জ্ঞান গ্রহণ করছি । আমাদের যিনি পড়ান, তিনি সম্পূর্ণ পৃথক এবং
বিচিত্র । তাঁর এমন সাকার চিত্র নেই । তিনি হলেনই নিরাকার । ড্রামাতে দেখো, কতো
সুন্দর পার্ট রাখা রয়েছে । বাবা কিভাবে পড়াবেন ? তাই তিনি নিজেই বলেন -- আমি অমুকের
শরীরে আসি । কার শরীরে আসি, তাও তিনি বলে দেন । মানুষ দ্বিধায় থাকে যে -- একই শরীরে
আসবে কি ? কিন্তু এ তো ড্রামা, তাই না । এতে পরিবর্তন হতে পারে না । এ কথা তোমরাই
শোনো আর ধারণ করো, আর অন্যদেরও শোনাও - আমাদের কিভাবে শিববাবা পড়ান ? আমরা আবার
অন্য আত্মাদের পড়াই । আত্মারাই পড়ে । আত্মাই শেখে এবং শেখায় । আত্মা অতি মূল্যবান ।
আত্মা অবিনাশী এবং অমর । কেবল আমাদের শরীর শেষ হয়ে যায় । আমরা আত্মারা আমাদের
পরমপিতা পরমাত্মার থেকে জ্ঞান গ্রহণ করছি । আমরা রচয়িতা এবং রচনার আদি - মধ্য এবং
অন্ত, ৮৪ জন্মের জ্ঞান গ্রহণ করছি । এই জ্ঞান কে গ্রহণ করে ? আত্মা । আত্মা হলো
অবিনাশী । মোহ তো অবিনাশী জিনিসের প্রতিই রাখা উচিত, নাকি বিনাশী জিনিসের উপর ? এতো
সময় ধরে তোমরা বিনাশী জিনিসের উপর মোহ রেখে এসেছো । এখন বুঝতে পেরেছো - আমরা হলাম
আত্মা, এই দেহ ভাব তোমাদের ত্যাগ করতে হবে । কোনো কোনো বাচ্চা লিখেও থাকে, আমি আত্মা
এই কাজ করেছি । আমি আত্মা আজ এই ভাষণ করেছি । আমি আত্মা আজ বাবাকে অনেক স্মরণ করেছি
। তিনি হলেন সুপ্রীম আত্মা, নলেজফুল । তোমাদের মতো বাচ্চাদের তিনি কতো জ্ঞান দেন ।
তোমরা মূল বতন, সূক্ষ্ম বতনকে জানো । মানুষের বুদ্ধিতে তো কিছুই নেই । তোমাদের
বুদ্ধিতে আছে যে, রচয়িতা কে ? এই মনুষ্য সৃষ্টির সৃষ্টিকর্তা - এমন মহিমা আছে, তাহলে
অবশ্যই তিনি কর্তব্য করতে আসেন ।
তোমরা জানো, আর কোনো মানুষ নেই যাদের আত্মা আর পরমাত্মা বাবা স্মরণে আছে । বাবাই এই
জ্ঞান দেন যে, নিজেকে আত্মা মনে করো । তোমরা নিজেকে শরীর মনে করে উল্টো আটকে গেছো ।
আত্মা হলো সৎ - চিৎ - আনন্দ স্বরূপ । আত্মার সবথেকে বেশী মহিমা । এক বাবার আত্মারই
কতো মহিমা । তিনিই হলেন দুঃখহর্তা, সুখকর্তা । মশা ইত্যাদিদের তো মহিমা করা হবে না
যে, তারা দুঃখহর্তা, সুখকর্তা, জ্ঞানের সাগর । তা নয়, এ হলো বাবার মহিমা । তোমরাও
এক একজন দুঃখহর্তা, সুখকর্তা, কেননা তোমরা সেই বাবার সন্তান, তাই না, যারা সকলের
দুঃখ হরণ করে সুখ দান করে । সেও অর্ধেক কল্পের জন্য । এই জ্ঞান আর কারোর মধ্যেই নেই
। বাবাই হলেন একমাত্র নলেজফুল । আমাদের মধ্যে কোনো জ্ঞানই নেই । এক বাবাকেই কেউ জানে
না, তাহলে আবার জ্ঞান কি থাকবে । এখন তোমরা অনুভব করো, আমরা প্রথমে জ্ঞান নিতাম,
কিছুই জানতাম না । ছোটো বাচ্চাদের মধ্যে জ্ঞান থাকে না, আর কোনো অপগুণও থাকে না,
তাই তাদের মহাত্মা বলা হয়, কেননা তারা পবিত্র । যত ছোটো বাচ্চা, তত এক নম্বর ফুল ।
একদম যেন কর্মাতীত অবস্থা । কর্ম - বিকর্মকে তারা কিছুই জানে না । তারা ফুলের মতো,
তাই তাদের প্রতি আকর্ষণ থাকে । এখন যেমন বাবার প্রতি আকর্ষণ থাকে । বাবা এসেছেনই
তোমাদের মতো বাচ্চাদের ফুল তৈরী করতে । তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ খুব খারাপ কাঁটাও আছে
। পাঁচ বিকার রূপী কাঁটা আছে না ? এই সময় তোমাদের ফুল আর কাঁটার জ্ঞান আছে ।
কাঁটার জঙ্গলও হয় । বাবুলের কাঁটা সবথেকে বড় হয়ো । ওই কাঁটা দিয়েও অনেক জিনিস তৈরী
হয় । মানুষকে উপহারও দেওয়া হয় । বাবা বোঝান যে, এই সময় অনেক দুঃখ দানকারী মনুষ্য
কাঁটা আছে, তাই একে দুঃখের দুনিয়া বলা হয় । এমন বলাও হয় যে, বাবা হলেন সুখদাতা ।
মায়া রাবণ হলো দুঃখদাতা । এরপর সত্যযুগে মায়া থাকবে না, তখন এইসব কোনো কথাও থাকবে
না । ড্রামাতে এক পার্ট দুইবার হতে পারে না । বুদ্ধিতে আছে যে, সম্পূর্ণ দুনিয়াতে
যে অভিনয় চলে, সে সবই নতুন । তোমরা বিচার করো - সত্যযুগ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত
দিনই পরিবর্তন হয়ে যায়, এক্টিভিটি পরিবর্তন হয়ে যায় । পাঁচ হাজার বছরের পুরো
অ্যাক্টিভিটির রেকর্ড আত্মার মধ্যে ভরা আছে, তার আর পরিবর্তন হতে পারে না । প্রতিটি
আত্মার মধ্যে তার পার্ট ভরা থাকে । এই একটি কথা কেউই বুঝতে পারে না । এখন তোমরা আদি
- মধ্য এবং অন্তকে জানো । এ তো স্কুল, তাই না । তোমাদের এই সৃষ্টির আদি - মধ্য এবং
অন্তকে জানতে হবে, আর বাবাকে স্মরণ করে পবিত্র হওয়ার পড়া পড়তে হবে । এর আগে তোমরা
কি জানতে যে - আমাদের এই হতে হবে । বাবা কতো পরিস্কার ভাবে বোঝান । তোমরা প্রথম দিকে
এই ছিলে, তারপর নীচে নামতে নামতে কি হয়ে গেছো । এই দুনিয়াকে তো দেখো যে, কি হয়ে
গেছে । এখানে এখন কতো মানুষ । এই লক্ষ্মী - নারায়ণের রাজধানীকে চিন্তা করে দেখো যে,
সেখানে কি হবে ! এনারা যেখানে থাকবেন, সেখানে কেমন হীরে - জহরতের প্রাসাদ থাকবে ।
তোমাদের বুদ্ধিতে আসে যে - এখন আমরা স্বর্গবাসী হচ্ছি । ওখানে আমরা আমাদের ঘর
ইত্যাদি বানাবো । এমন নয় যে জলের নীচ থেকে দ্বারকা বের হয়ে আসবে । শাস্ত্রে যেমন
দেখানো হয়েছে । শাস্ত্রের নামই চলে আসছে, আর তো কোনো নাম রাখতে পারে না । আর বই
থাকে পড়ার জন্য । আবার নভেলও হয় । বাকি এগুলোকে পুস্তক বা শাস্ত্র বলে । ও সব হলো
পড়ার বই । শাস্ত্র যারা পড়ে তাদের ভক্ত বলা হয় । ভক্তি আর জ্ঞান দুই আলাদা জিনিস ।
আর বৈরাগ্য কিসের ? ভক্তি না জ্ঞানের ? অবশ্যই বলবে যে, ভক্তির । এখন তোমরা জ্ঞান
পাচ্ছো, যাতে তোমরা এতো উঁচু হতে পারো । বাবা এখন তোমাদের সুখদায়ী তৈরী করেন ।
সুখধামকেই স্বর্গ বলা হয় । তোমরাই সুখধামে যাবে, তাই তোমাদেরই তিনি পড়ান । তোমাদের
আত্মাই এই জ্ঞান গ্রহণ করে । আত্মার কোনো ধর্ম নেই । আত্মা তো আত্মাই । এরপর আত্মা
যখন শরীরে প্রবেশ করে তখন শরীরের ধর্ম আলাদা হয়ে যায় । আত্মার ধর্ম কি ? এক তো
আত্মা বিন্দুর মতো, আর শান্ত স্বরূপ । আত্মা শান্তিধাম অথবা মুক্তিধামে থাকে । বাবা
এখন বুঝিয়ে বলেন -- এ সকল বাচ্চাদের অধিকার । অনেক বাচ্চা আছে, যারা অন্য - অন্য
ধর্মে কনভার্ট হয়ে গেছে । তারা আবার বেড়িয়ে নিজের প্রকৃত ধর্মে ফিরে আসবে । যারা
দেবী - দেবতা ধর্ম ত্যাগ করে অন্য ধর্মে চলে গেছে, সেইসব পাতা ফিরে চলে আসবে, নিজের
জায়গায় । এই সব কথা অন্য কেউই বুঝতে পারবে না । সবার প্রথমে তো বাবার পরিচয় প্রদান
করতে হবে, এতেই সবাই দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে আছে । বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, আমাদের কে
পড়ান ? বাবা আমাদের পড়ান । কৃষ্ণ তো হলেন দেহধারী । এই ব্রহ্মা বাবাকে দাদা বলা হবে
। সবাই ভাই - ভাই, তাই না । এরপর সব পদের উপর নির্ভর করে । এ হলো ভাইয়ের শরীর, এ হলো
বোনের শরীর । এও এখন তোমরা জানো । আত্মা তো এক ছোটো তারা । এতো সব জ্ঞান এই ছোটো
তারার মধ্যেই আছে । তারা শরীর ছাড়া কথা বলতে পারে না । তারার অভিনয় করার জন্য অঙ্গও
চাই । এই তারাদের দুনিয়াই আলাদা । এরপর এখানে এসে আত্মা শরীর ধারণ করে । সে হলো
আত্মাদের ঘর । আত্মা হলো ছোটো বিন্দু । শরীর বড় জিনিস । এই শরীরকে কতো স্মরণ করে ।
এখন তোমাদের এক পরমপিতা পরমাত্মাকেই স্মরণ করতে হবে । ইনিই হলেন সত্য, তাই তো আত্মা
আর পরমাত্মার মেলা হয় । এমন মহিমাও আছে যে - আত্মা - পরমাত্মা পৃথক আছে বহুকাল ।
আমরা তো বাবার থেকে পৃথক হয়ে গেছি, তাই না । স্মরণে আসে যে, কতো সময় আলাদা হয়ে
গেছি । বাবা, যিনি কল্পে - কল্পে এসে শোনান, তিনিই আবার এসে শোনান । এতে সামান্য তফাৎ
হাতেই পারে না । সেকেণ্ড বাই সেকেণ্ড যে অভিনয় চলে, সে সবই নতুন । এক সেকেণ্ড পার
হয়, এক মিনিট পার হয়, তা যেন ছেড়ে চলে যাচ্ছে । চলে যেতে থাকে, তখন বলবে - এতো
বছর, এতো দিন, এতো সেকেণ্ড পার করে এসেছি । পুরো পাঁচ হাজার বছর হবে, তারপর আবার এক
নম্বর থেকে শুরু হবে । এ তো সঠিক হিসাব, তাই না । মিনিট, সেকেণ্ড সব নোট করা হয়
এখন যদি তোমাদের কেউ জিজ্ঞেস করে -- এ কবে জন্ম নিয়েছে ? তোমরা গুণে বলতে পারো ।
কৃষ্ণ প্রথম নম্বরে জন্ম নিয়েছে । শিবের তো মিনিট, সেকেণ্ড কিছুই বের করতে পারবে না
। কৃষ্ণের তিথি - তারিখ সম্পূর্ণ লেখা আছে । মানুষের সময়ে তফাৎ হতে পারে - মিনিট বা
সেকেণ্ডের । শিববাবার অবতরণে তো একদম তফাৎ হাতেই পারে না । জানতেই পারা যায় না যে,
তিনি কখন এলেন । এমনও নয় যে, সাক্ষাৎকার হলো আর তারপর তিনি এলেন । তা নয়, আন্দাজে
বলে দেয় । বাকি এমন নয় যে, ওই সময় প্রবেশ হয়েছিলো । সাক্ষাৎকার হয় যে, আমি অমুক
তৈরী হবো । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন
নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
সুখধামে যাওয়ার জন্য সুখদায়ী হতে হবে । সকলের দুঃখ হরণ করে সুখ দান করতে হবে ।
কখনোই দুঃখদায়ী কাঁটা হবে না ।
২ ) এই বিনাশী শরীরে আত্মাই অতি মূল্যবান, আত্মাই অমর, অবিনাশী, তাই অবিনাশী
জিনিসের প্রতি প্রেম রাখতে হবে । দেহ ভাব দূর করতে হবে ।
বরদান:-
এক বল
এক ভরসার আধারে লক্ষ্যকে নিকটে অনুভব করে সাহসী ভব
উচ্চ লক্ষ্যে
পৌঁছানোর পূর্বে ঝড় উঠবেই, স্টিমারকে পারে যাওয়ার জন্য মাঝ সমুদ্রকে পার করতেই হবে।
তাই শীঘ্র ঘাবড়ে যেও না, পরিশ্রান্ত হয়ো না বা থেমে যেও না । সাথীকে সাথে রাখো,
তাহলে প্রতিটি সমস্যা সহজ হয়ে যাবে, সাহস রেখে বাবার সাহায্যের পাত্র হও । এক বল,
এক ভরসা - এই পাঠকে সদা পাকা রাখো, তাহলে মাঝ সমুদ্র থেকে সহজেই বের হয়ে আসবে, আর
লক্ষ্য নিকটে অনুভব হবে ।
স্লোগান:-
বিশ্ব কল্যাণকারী সেই, যে প্রকৃতি সহ প্রতিটি আত্মার প্রতি শুভ ভাবনা রাখে ।