25.01.2021 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা -- বাবার শ্রীমতের দ্বারা তোমরা মানুষ থেকে দেবতায় পরিণত হও, তাহলে ওঁনার শ্রীমতের শাস্ত্র হলো সর্ব শাস্ত্র শিরোমণি শ্রীমদ্ ভাগবত গীতা"

প্রশ্নঃ -
সত্যযুগে প্রতিটি বস্তু ভালোর থেকেও ভাল (অত্যন্ত ভাল) হয় কেন ?

উত্তরঃ -
কারণ ওখানে মানুষ সতোপ্রধান, যখন মানুষ ভালো তখন জিনিসপত্রও ভালো আর মানুষ খারাপ তো জিনিসপত্রও ক্ষতিকারক হয়। সতোপ্রধান সৃষ্টিতে কোনও বস্তুই অপ্রাপ্ত নয়, কোনও জিনিসই কারোর কাছে চাইতে হয় না।

ওম্ শান্তি ।
বাবা এই শরীরের মাধ্যমে পড়ান। একে জীব বলা হয়, এরমধ্যে আত্মাও রয়েছে। আর বাচ্চারা, তোমরাও জানো পরমপিতা পরমাত্মাও এঁনার মধ্যেই রয়েছেন। সর্বপ্রথমে এ তো পাকা হওয়া উচিত, সেইজন্য এঁনাকে দাদাও বলা হয়। এ নিশ্চয় তো বাচ্চাদের রয়েছে। এই নিশ্চয়ের মধ্যেই বিচরণ করতে হবে। বরাবর বাবা যাঁর মধ্যে উপস্থিত হয়েছেন বা অবতরিত হয়েছেন তাঁর উদ্দেশ্যে বাবা স্বয়ং বলেন -- আমি এঁনার অনেক জন্মের অন্তেরও অন্তিম লগ্নে আসি। বাচ্চাদের বোঝানো হয়েছে যে, এ হলো সর্ব শাস্ত্র শিরোমণি গীতার জ্ঞান। শ্রীমত অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ মত। সর্বশ্রেষ্ঠ মত হলো সর্বোচ্চ ভগবানের। যাঁর শ্রীমতের মাধ্যমে তোমরা মানুষ থেকে দেবতায় পরিণত হয়ে যাও। তোমরা ভ্রষ্ট মানুষ থেকে শ্রেষ্ঠ দেবতা হও। তোমরা আসোই সেইজন্য। বাবাও স্বয়ং বলেন যে -- আমি আসি তোমাদের শ্রেষ্ঠাচারী, নির্বিকারী মতসম্পন্ন দেবী-দেবতায় পরিণত করতে। মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার অর্থও বুঝতে হবে। বিকারী মানুষ থেকে নির্বিকারী দেবতায় পরিনত করতে আসেন। সত্যযুগেও মানুষ থাকে কিন্তু তারা দৈবী-গুণসম্পন্ন। এখন কলিযুগে হলো আসুরীক-গুণসম্পন্ন। এ হলোই সমগ্র মনুষ্য-সৃষ্টি কিন্তু ওটা হলো ঈশ্বরীয় বুদ্ধি আর এটা হলো আসুরীক বুদ্ধি। ওখানে জ্ঞান, এখানে ভক্তি। জ্ঞান আর ভক্তি হলো আলাদা-আলাদা রকমের, তাই না! ভক্তির বইপত্র কত, আর জ্ঞানের বইপত্র কত। জ্ঞানের সাগর হলেন বাবা। ওঁনার বইও তো একটাই হওয়া উচিত। যিনি ধর্ম স্থাপন করেন তার একটি গ্রন্থ তো থাকা উচিত। তাকে ধর্মগ্রন্থ বলা হয়। প্রথম ধর্মগ্রন্থ হলো গীতা। শ্রীমদ্ ভগবত গীতা। এও বাচ্চারা জানে যে -- প্রথম হলো আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম, হিন্দু ধর্ম নয়। মানুষ মনে করে যে, গীতার থেকে হিন্দু ধর্ম স্থাপিত হয়েছে আর গীতা পাঠ করেছেন কৃষ্ণ। কাউকে জিজ্ঞাসা করলে বলবে পরম্পরাগতভাবে কৃষ্ণ গীতা গেয়ে আসছেন( বলে আসছেন)। কোনো শাস্ত্রে শিব ভগবানুবাচ লেখা নেই। শ্রীমদ্ কৃষ্ণ ভগবানুবাচ লিখে রেখেছে। যারা গীতা পাঠ করেছে তারা সহজেই বুঝতে পারবে। এখন তোমরা বুঝেছ যে, এই গীতা জ্ঞানের দ্বারাই মানুষ থেকে দেবতা হয়েছে, যা(জ্ঞান) এখন বাবা তোমাদের দিচ্ছেন। রাজযোগ শেখাচ্ছেন। পবিত্রতাও শেখাচ্ছেন। কাম মহাশত্রু, এর দ্বারাই তোমরা পরাজিত হয়েছো। এখন পুনরায় এর উপর বিজয়প্রাপ্ত করার ফলে তোমরা জগতজীৎ অর্থাৎ বিশ্বের মালিক হয়ে যাও। এ তো অতি সহজ। অসীম জগতের পিতা বসে এঁনার দ্বারা তোমাদের পড়ান। উনি হলেন সকল আত্মাদের পিতা। ইনি হলেন আবার মনুষ্যদের অসীম জগতের পিতা। নামই হলো প্রজাপিতা ব্রহ্মা। তোমরা কাউকে জিজ্ঞাসা করো যে ব্রহ্মার বাবার নাম বলো তাহলে বিভ্রান্ত হয়ে পড়বে। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকর হলেন রচনা(ক্রিয়েশন)। এই তিনজনের বাবা তো কেউ হবে, তাই না! তোমরা দেখাও যে, এই তিনজনের বাবা হলেন শিব। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকরকে সূক্ষ্মলোকের দেবতা হিসেবে দেখানো হয়। ওঁনাদের উপরে হলেন শিব। বাচ্চারা জানে যে -- যত আত্মারা অর্থাৎ শিববাবার বাচ্চারা রয়েছে তাদের নিজস্ব শরীর তো থাকবে। তিনি হলেন সদাই নিরাকার পরমপিতা পরমাত্মা। বাচ্চারা জেনেছে যে, আমরা হলাম নিরাকার পরমপিতা পরমাত্মার সন্তান। আত্মা শরীরের মাধ্যমে বলে -- পরমপিতা পরমাত্মা। কত সহজ কথা। একে বলা হয় বাবা আর তাঁর উত্তরাধিকার(অল্ফ-বে)। পড়ায় কে ? গীতার জ্ঞান কে শুনিয়েছেন ? নিরাকার বাবা। ওঁনার কোনো মুকুটাদি নেই। তিনি হলেন জ্ঞানের সাগর, বীজরূপ, চৈতন্য। তোমরাও হলে চৈতন্য আত্মা, তাই না! সকল বৃক্ষরাজির আদি-মধ্য-অন্তকে তোমরা জানো। যদিও মালি নও তথাপি বুঝতে পারো যে, কিভাবে বীজ রোপণ করা হয়, তার থেকে চারা বেরোয়। ওটা হলো জড়-বৃক্ষ, এ হলো চৈতন্য। তোমাদের আত্মায় জ্ঞান রয়েছে, আর কারোর আত্মায় জ্ঞান থাকে না। বাবা হলেন মনুষ্য সৃষ্টির বীজরূপ। তাহলে বৃক্ষও মানুষেরই হবে। এ হলো চৈতন্য ক্রিয়েশন। বীজ আর ক্রিয়েশনের(রচয়িতা ও রচনা) মধ্যে তফাৎ আছে, তাই না! আমের বীজ পুঁতলে আমগাছ হয়, তারপর বৃক্ষ কত বড় হয়ে যায়। তেমনভাবেই মনুষ্য সৃষ্টির বীজ থেকে মানুষ কত উর্বর(জ্ঞানসমৃদ্ধ) হয়। জড় বীজে কোনো জ্ঞান থাকে না। এ হলো চৈতন্য বীজরূপ। এরমধ্যে সমগ্র সৃষ্টি-রূপী বৃক্ষের জ্ঞান রয়েছে -- কিভাবে উৎপত্তি, লালন-পালন, পুনরায় বিনাশ হয়। এ হলো অতি বড় বৃক্ষ যার বিনাশ হয়ে পুনরায় অন্য নতুন বৃক্ষ কিভাবে দাঁড়ায়! তা গুপ্ত। তোমরা গুপ্তজ্ঞান প্রাপ্ত করো। বাবাও গুপ্তভাবে এসেছেন। তোমরা জানো যে, এখন কলম অর্থাৎ চারা রোপন করা হচ্ছে। এখন সকলেই অপবিত্র হয়ে গেছে। আচ্ছা, বীজ থেকে নম্বরের অনুক্রমে সর্বপ্রথম পত্ররূপে যিনি বেরিয়েছিলেন, তিনি কে ছিলেন ? সত্যযুগের প্রথম পত্র তো কৃষ্ণকেই বলা হবে, লক্ষ্মী-নারায়ণকে নয়। নতুন পাতা ছোট হয়। পরে বড় হয়। তাহলে এই বীজের কত মহিমা। এ তো চৈতন্য, তাই না! পরে পাতাও বেরোয়। তাদের মহিমা তো থাকে। এখন তোমরা দেবী-দেবতা হচ্ছো। দৈবী-গুণ ধারণ করছো। মূলকথাই হলো এই যে, আমাদের দৈবী-গুণ ধারণ করতে হবে, এঁনাদের মতন হতে হবে। চিত্রও রয়েছে। এই চিত্র না থাকলে তো বুদ্ধিতে জ্ঞানই আসতো না। এই চিত্র অনেক কার্যে আসে। ভক্তিমার্গে এই চিত্রগুলির পূজাও হয় আর জ্ঞানমার্গে এই চিত্রগুলির দ্বারা তোমাদের জ্ঞান প্রাপ্ত হয় যে এরকম হতে হবে। ভক্তিমার্গে এরকম মনে করা হয় না যে আমাদের এরকম হতে হবে। ভক্তিমার্গে কত মন্দির তৈরী করা হয়। সর্বাপেক্ষা অধিকসংখ্যক মন্দির কার হবে ? অবশ্যই শিববাবারই হবে যিনি বীজ-স্বরূপ। পুনরায় তারপরে তাঁর প্রথম রচনার মন্দির হবে। প্রথম রচনা হলো এই লক্ষ্মী-নারায়ণ। শিবের পর এঁনাদের পূজা হয় সবচেয়ে বেশী। মাতারা জ্ঞান প্রদান করে, তাদের পূজা হয় না। তারা তো পড়ায়, তাই না! বাবা তোমাদের পড়ান। তোমরা কারোর পূজা করো না। যিনি পড়ান তাঁর পূজা এখন করতে পারো না। তোমরা যখন পড়াশোনা(জ্ঞানী) করে পুনরায় অজ্ঞানী হয়ে যাবে তখন আবার তোমাদের পূজা হবে। তোমরাই দেবী-দেবতা হও। তোমরাই জানো, যিনি আমাদের এমন তৈরী করেন ওঁনার পূজা হবে তারপর আমাদের পূজা নম্বরের অনুক্রমে। পুনরায় অধঃপতনে গিয়ে পাঁচতত্বেরও পূজা করতে থাকে। শরীর তো পাঁচতত্বের, তাই না! ৫ তত্বের পূজা করো বা শরীরের করো, একই ব্যাপার। এই জ্ঞান তো বুদ্ধিতে রয়েছে। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ সমগ্র বিশ্বের মালিক ছিলেন। এই দেবী-দেবতাদের রাজ্য নতুন সৃষ্টিতে ছিল। কিন্তু তা কবে ছিল ? তা জানে না, লক্ষ-লক্ষ বছর বলে দেয়। এখন লক্ষ-লক্ষ বছরের কথা তো কখনো কারোর বুদ্ধিতে থাকতে পারে না। এখন তোমাদের স্মৃতিতে রয়েছে যে, আজ থেকে ৫০০০ বছর পূর্বে আমরা আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের ছিলাম। দেবী-দেবতা ধর্মাবলম্বীরা অন্যান্য ধর্মে কনভার্ট(ধর্মান্তরিত) হয়েছে। হিন্দু ধর্ম বলতে পারবে না। পতিত হওয়ার জন্য নিজেদের দেবী-দেবতা বলা শোভনীয় নয়। অপবিত্রদের দেবী-দেবতা বলতে পারবে না। মানুষ পবিত্র দেবীদের পূজা করে তাহলে অবশ্যই স্বয়ং অপবিত্র সে'জন্য পবিত্রের সম্মুখে মাথা নত করতে হয়। ভারতে বিশেষতঃ কন্যাদের প্রণাম করে। কুমারদেরকে প্রণাম করা হয় না। নারীদের প্রণাম জানানো হয়। পুরুষদের কেন প্রণাম করে না ? কারণ এইসময় জ্ঞানও প্রথমে মায়েরা পায়। বাবা এঁনার মধ্যে প্রবেশ করেন। তোমরা এও জানো যে, ইনি হলেন জ্ঞানের বড় নদী। তিনি জ্ঞান-নদীও আবার তিনি পুরুষও। এ হলো সবচেয়ে বড় নদী। ব্রহ্মপুত্র নদী হলো সবচেয়ে বড়, যা কলকাতা হয়ে গিয়ে সাগরে মিলিত হয়। মেলাও ওখানেই বসে। কিন্তু ওরা (অজ্ঞানী) এসব জানে না যে, এ হলো আত্মা আর পরমাত্মার (মিলন) মেলা। ওটা হলো জলের নদী, যার নাম রাখা হয়েছে ব্রহ্মপুত্র। তারা তো ব্রহ্ম বলে ঈশ্বরকে সেইজন্য ব্রহ্মপুত্রকে অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করে। বড় নদী যখন তখন পবিত্রও হবে। পতিত-পাবন বাস্তবে গঙ্গাকে নয়, ব্রহ্মপুত্রকে বলা যেতে পারে। মেলাও এঁনারই হয়। এও সাগর আর ব্রহ্মা নদীর মেলা। ব্রহ্মার দ্বারা অ্যাডপশন (দত্তক) কিভাবে হয় --- এই গুপ্ত কথাও বোঝার মতন বিষয়, যা প্রায় লুপ্ত হয়ে গেছে। এ তো একদম সহজ কথা, তাই না! ভগবানুবাচ, আমি তোমাদের রাজযোগ শেখাই, তারপর এই দুনিয়াই সমাপ্ত হয়ে যাবে। শাস্ত্র ইত্যাদি কিছুই থাকবে না। পুনরায় ভক্তিমার্গে এই শাস্ত্র আসে। জ্ঞানমার্গে শাস্ত্র থাকে না। মানুষ মনে করে এই শাস্ত্র পরম্পরাগতভাবে চলে আসছে। জ্ঞান তাদের কিছুই নেই। কল্পের আয়ুই লক্ষ-লক্ষ বছর বলে দিয়েছে সে'জন্য পরম্পরা বলে দেয়। একেই বলা হয় অজ্ঞানতার অন্ধকার। বাচ্চারা, এখন তোমরা এই অসীম জগতের পাঠ পেয়েছো, যার দ্বারা তোমরা আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বোঝাতে পারো। এই দেবী-দেবতাদের সম্পূর্ণ হিস্ট্রী-জিওগ্রাফী তোমাদের জানা আছে। এই পবিত্র প্রবৃত্তিমার্গীয়-রা পূজ্য ছিলেন। এখন পূজারী পতিত হয়ে গেছে। সত্যযুগে হয় পবিত্র প্রবৃত্তিমার্গ, আর এখানে কলিযুগে হয় অপবিত্র প্রবৃত্তিমার্গ। পরে আবার হয় নিবৃত্তিমার্গ। সেও ড্রামায় রয়েছে। তাকে সন্ন্যাস ধর্ম বলা হয়। ঘর-পরিবার থেকে সন্ন্যাস গ্রহণ করে (পরিত্যাগ করে) জঙ্গলে চলে যায়। সে হলো পার্থিব জগতের সন্ন্যাস। থাকে তো এই পুরোনো দুনিয়াতেই, তাই না! এখন তোমরা বোঝ যে, আমরা সঙ্গমযুগে রয়েছি পুনরায় নতুন দুনিয়ায় যাব। তোমাদের তিথি, তারিখ, সেকেন্ড-সহ সবকিছু জানা আছে। মানুষ (অজ্ঞানী) তো কল্পের আয়ুই লক্ষ-লক্ষ বছর বলে দেয়। কিন্তু এর সম্পূর্ণ হিসেব বের করা যেতে পারে। লক্ষ-লক্ষ বছরের কথা তো কেউ স্মরণও করতে পারবে না। এখন তোমরা বোঝ যে, বাবা কে, কিভাবে আসেন, কি কর্তব্য পালন করেন ? তোমরা সকলের পেশা, জন্মপত্রিকা জানো। বাকি বৃক্ষের পাতা তো হয় অসংখ্য। তা গোনা যায় নাকি! না তা গোনা যায় না। এই অসীম জগতের সৃষ্টি-রূপী বৃক্ষের পাতার সংখ্যা কত ? ৫০০০ বছরে এত কোটি। তাহলে লক্ষ-লক্ষ বছরে কত অগণিত মানুষ হয়ে যায়। ভক্তিমার্গে দেখানো হয় -- লেখা রয়েছে সত্যযুগ এত বছরের, ত্রেতা এত বছরের, দ্বাপর এত বছরের। বাচ্চারা, বাবা বসে থেকে তোমাদের এ'সমস্ত রহস্য বোঝান। আমের বীজ দেখলেই আমের বৃক্ষ সামনে আসবে, তাই না! এখন মনুষ্য-সৃষ্টির বীজরূপ তোমাদের সম্মুখে রয়েছে। বসে-বসে তোমাদের বৃক্ষের রহস্য বোঝান কারণ তা চৈতন্য। তিনি বলেন -- এ হলো উল্টোমুখী বৃক্ষ। তোমরা বোঝাতে পারো যে, যাকিছু এই দুনিয়ায় রয়েছে, জড় বা চৈতন্য, অবিকল সেইভাবেই তা পুনরাবৃত হবে। এখন কত বৃদ্ধি পেতে থাকে। সত্যযুগে এত হতে পারে না। বলে যে -- অমুক জিনিস অস্ট্রেলিয়া থেকে, জাপান থেকে এসেছে। সত্যযুগে অস্ট্রেলিয়া, জাপানাদি কি ছিল নাকি! না ছিল না। ড্রামানুসারে ওখানকার জিনিস এখানে আসে। প্রথমে আমেরিকা থেকে গম ইত্যাদি আসতো। সত্যযুগে কোনখান থেকে আসবে নাকি! না আসবে না। ওখানে হয়ই এক ধর্ম, সব জিনিস ভরপুরমাত্রায় থাকে। এখানে ধর্ম (সংখ্যায়) বৃদ্ধি পেতে থাকে, আর তারসঙ্গে সবকিছুই কম হতে থাকে। সত্যযুগে কোনোখান থেকে আমদানি করা হয় না। দেখো, এখন কোথা-কোথা থেকে আমদানি করতে হয়। পরে মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থেকেছে। সত্যযুগে অপ্রাপ্ত কোনো বস্তু থাকে না। ওখানকার সব জিনিসই অত্যন্ত ভাল সতোপ্রধান হয়। সেখানকার মানুষই সতোপ্রধান। মানুষ ভাল তো দ্রব্য সামগ্রীও ভাল। মানুষ খারাপ হলে দ্রব্যসামগ্রীও ক্ষতিকারক হয়। সাইন্সের প্রধানবস্তু হলো পরমানু বোমা, যার দ্বারা এতসব বিনাশ হয়ে থাকে। কিভাবে তৈরী করে ! নির্মাণকারী আত্মার মধ্যে ড্রামানুসারে প্রথম থেকেই জ্ঞান থাকবে। যখন সময় হয় তখন তাদের মধ্যে সেই জ্ঞান চলে আসে, যার মধ্যে চেতনা থাকবে সেই কাজ করবে এবং অপরকেও শেখাবে। প্রতিকল্পে যে ভূমিকা পালন করা হয়ে থাকে সেটাই পালিত হতে থাকে। এখন তোমরা কত নলেজফুল, এর থেকে অধিক নলেজ আর হয় না। তোমরা এই জ্ঞানের মাধ্যমে দেবতা হয়ে যাও। এর থেকে উঁচু কোনও জ্ঞান আর হয় না। ওটা হলো মায়ার নলেজ যার দ্বারা বিনাশ হয়। ওরা (সাইন্টিস্ট) চাঁদে যায়, খোঁজ করে। তোমাদের কাছে এ'সব কোনো নতুন কথা নয়। এ'সবকিছু মায়ার প্রভাব (পাম্প)। দেখনদারি (শো'অফ) অনেক, অতি গভীরে যায়। বুদ্ধির সঙ্গে অনেক লড়াই করে(বুদ্ধি খরচ করে)। তোমরাও বিস্ময়কর কিছু করে দেখাও। অধিক চমৎকারিত্বে আবার ক্ষতি হয়ে যায়। কি-কি তৈরী করতে থাকে। নির্মাণকারী জানে যে, এর দ্বারা এই বিনাশ হবে। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) গুপ্ত জ্ঞানকে স্মরণ করে প্রফুল্লিত থাকতে হবে। দেবতাদের চিত্রকে সম্মুখে দেখে, তাঁদের প্রণাম, বন্দনা করার পরিবর্তে তাঁদের মতন হওয়ার জন্য দৈবী-গুণ ধারণ করতে হবে।

২ ) সৃষ্টির বীজরূপ বাবাকে এবং তাঁর চৈতন্য রচনাকে (ক্রিয়েশন) বুঝে জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে, এই জ্ঞান অপেক্ষা বড় জ্ঞান আর হতে পারে না, এই নেশাতেই থাকতে হবে।

বরদান:-
দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আকারী এবং নিরাকারী স্থিতির অভ্যাস দ্বারা সাক্ষাৎকারমূর্তি-স্বরূপ ভব

যেমন সাকার-রূপে এত বড় দায়িত্ব পালন করেও আকারী এবং নিরাকারী স্থিতির অনুভব করান সেরকম ফলো ফাদার করো। সাকারী-রূপে ফরিস্তা ভাবের অনুভূতি করাও। যতই কেউ অশান্ত অথবা অস্থির হয়ে ভয়ে তোমার সম্মুখে আসুক, তুমি কিন্তু এক দৃষ্টি, বৃত্তি, স্মৃতির শক্তি দ্বারা তাদের সম্পূর্ণ শান্ত করে দেবে। ব্যক্ত ভাবে উপস্থিত থাকবে আর অব্যক্ত স্থিতির অনুভব করবে তবেই বলা হবে সাক্ষাৎকার-মূর্তি।

স্লোগান:-
যে সত্যিকারের দয়াশীল তার দেহ এবং দেহ-অভিমানের আকর্ষণ থাকতে পারে না।