17-01-2021 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
14-10-87 মধুবন
"ব্রাহ্মণ জীবন - বাবার সঙ্গে সর্ব সম্বন্ধ অনুভব
করার জীবন"
আজ বাপদাদা তাঁর সেই বাচ্চাদের সঙ্গে মিলিত হতে এসেছেন, যাঁরা
তাঁর সঙ্গে অনেকবার মিলন উদযাপন করেছে, অনেক কল্প ধরে তাঁর সাথে মিলিত হয়েছে l এই
অলৌকিক, অব্যক্ত মিলন ভবিষ্যতের স্বর্ণযুগেও হতে পারে না l শুধু এই সময়ই এই বিশেষ
যুগের বরদান - বাবা আর বাচ্চাদের মিলনের, সেইজন্য এই যুগের নামই সঙ্গমযুগ অর্থাৎ
মিলন উদযাপনের যুগ l এইরকম যুগে এইরকম শ্রেষ্ঠ মিলন উদযাপনের পার্টধারী আত্মা তোমরা
l বাপদাদাও কোটি কোটির মধ্যে এইরকম কতিপয় শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান আত্মাদের দেখে উৎফুল্ল
হন এবং তিনি তোমাদের স্মৃতি জাগিয়ে তোলেন l আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত বাবা কতো স্মৃতি
ফিরিয়ে এনেছেন ? যদি মনে করো তবে লম্বা লিস্ট বেরিয়ে আসবে l তিনি এত স্মৃতি ফিরিয়ে
এনেছেন যে তোমরা সবাই স্মৃতিস্বরূপ হয়ে গেছ l ভক্তিতে ভক্তরাও তোমরা সব
স্মৃতি-স্বরূপ আত্মার স্মারকরূপ সবসময় স্মরণ করছে l তোমরা সব স্মৃতিস্বরূপ আত্মার
সব কর্মের বিশেষত্বের স্মরণ করতে থাকে l ভক্তির বিশেষত্বই স্মরণ অর্থাৎ কীর্তন করা
l তারা কতো ভাবমগ্ন হয়ে যায় ! অল্পকালের জন্য তাদেরও আর কোনও চেতনা থাকে না l স্মরণ
করতে করতে তার মধ্যে হারিয়ে যায় অর্থাৎ ভাবে বিভোর (লভলীন) হয়ে যায় l এই অল্পকালের
অনুভব সেই আত্মাদের জন্য কতো সুন্দর আর অনুপম হয় ! এটা কেন হয় ? কারণ যে আত্মাদের
তারা স্মরণ করে, সেই আত্মারা নিজেরাও সদা বাবার স্নেহে তন্ময় হয়ে থেকেছে, বাবার
সর্ব প্রাপ্তিতে সদা আত্মহারা হয়েছে, সেইজন্য এইরকম আত্মাদের স্মরণ করায় সেই
ভক্তদের অল্পকালের জন্য তোমরা সব বরদানী আত্মা দ্বারা এক আঁজলা সেই অনুভূতি প্রাপ্ত
হয়ে যায় l সুতরাং ভাবো, স্মরণ করে যদি ভক্ত আত্মাদেরও এত অলৌকিক অনুভব হয়, তাহলে
তোমরা স্মৃতিস্বরূপ, বরদাতা, বিধাতা আত্মাদের প্র্যাকটিক্যাল জীবনে কতো অনুভব
প্রাপ্ত হয় ! এই অনুভূতির সাথে সদা এগিয়ে চলো l
প্রতি পদক্ষেপে বিভিন্ন স্মৃতিস্বরূপের অনুভব করতে থাকো l যেমন সময়, যেমন কর্ম
সেইরকম স্বরূপের স্মৃতি ইমার্জ (প্রত্যক্ষ) রূপে অনুভব করো l যেমন, অমৃতবেলায় দিনের
শুরুতে আমি বাবার সাথে মিলন উদযাপন করছি - আমি শ্রেষ্ঠ আত্মা, মাস্টার বরদাতা হয়ে
বরদাতার থেকে বরদান নিচ্ছি, ভাগ্যবিধাতার থেকে ডাইরেক্ট ভাগ্য প্রাপ্তকারী আমি
ভাগ্যবান আত্মা - এই শ্রেষ্ঠ স্বরূপকে তোমার স্মৃতিতে ফিরিয়ে আনো l বরদানী এই সময়ে
বরদাতা বিধাতা সাথে আছেন l মাস্টার বরদানী হয়ে নিজেও সম্পন্ন হচ্ছ আর অন্য
আত্মাদেরও বরদান প্রাপ্ত করিয়ে তোমরা বরদানী আত্মা হও - এই স্মৃতিস্বরূপ ইমার্জ করো
l এমন ভেবো না আমি তো এইরকমই, বরং বিভিন্ন স্মৃতিস্বরূপকে সময় অনুসারে অনুভব করো তবে
অনেক বিচিত্র খুশি, বিচিত্র প্রাপ্তির ভান্ডার হয়ে যাবে এবং সদাসর্বদা হৃদয় থেকে
প্রাপ্তির গীত নিজে থেকেই #অনহদ শব্দরূপে বেরোতে থাকবে - "যা পাওয়ার ছিল তা' পেয়ে
গেছি ..." এইভাবে বিভিন্ন সময় আর কর্ম অনুসারে স্মৃতি স্বরূপের অনুভব করে যাও l যখন
মুরলী শুনছ তখন যেন এই স্মৃতি থাকে যে তোমার গডলি স্টুডেন্ট লাইফ (ঈশ্বরীয়
বিদ্যার্থী জীবন) অর্থাৎ তুমি ভগবানের বিদ্যার্থী, স্বয়ং ভগবান আমার জন্য পরমধাম
থেকে পড়াতে এসেছেন l এটাই বিশেষ প্রাপ্তি যে স্বয়ং ভগবান আসেন l এই স্মৃতিস্বরূপ
দ্বারা মুরলী শুনলে কতো নেশা হয় ! যদি সাধারণ রীতিতে নিয়ম অনুযায়ী যিনি শোনানোর তিনি
শোনাচ্ছেন আর যে শ্রোতা সে শুনছে, তাহলে এত নেশা অনুভব হবে না l কিন্তু আমি ভগবানের
বিদ্যার্থী - এই স্বরূপের স্মৃতিতে শুনলে তখন অলৌকিক নেশা অনুভব হবে l বুঝেছ ?
বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন স্মৃতিস্বরূপের অনুভবে কতো নেশা হবে ! এইভাবে সারাদিনের সব
কর্মে স্মৃতিস্বরূপ হয়ে বাবার সঙ্গে চলো - কখনো ভগবানের সখা বা সাথীরূপে, কখনো
জীবনসাথী রূপে, কখনো ভগবান আমার আজ্ঞাকারী বাচ্চা অর্থাৎ উত্তরাধিকারের প্রথম
অধিকার l যখন কোনও বাচ্চা এইরকম খুব সুন্দর আর অতিশয় উপযুক্ত হয়, তাহলে মা-বাবার কত
নেশা থাকে যে আমার বাচ্চা কুলদীপক বা কুলের নাম উজ্জ্বল করবে ! ভগবান যার বাচ্চা হয়ে
যাবেন, তার নাম কতো মহিমান্বিত হবে ! তার কুলের কতো কল্যাণ হবে ! সুতরাং যখন তুমি
কখনো কখনো দুনিয়ার বাতাবরণে বা বিভিন্ন সমস্যায় নিজেকে একা বা উদাস মনে করবে, তখন
এমন সুন্দর বাচ্চার সাথে খেলা করো, সখা রূপে খেলা করো l কখনো যদি শ্রান্ত হয়ে যাও
তাহলে তাঁর কোলে শুয়ে পড়ো, সমাহিত হয়ে যাও মায়ের অনুভবে l কখনো নিরাশ হলে
সর্বশক্তিমান স্বরূপের সাথে মাস্টার সর্বশক্তিমানের স্মৃতিস্বরূপ অনুভব যদি করো তো
নিরাশ থেকে 'দিলখুশ' (চিত্তানন্দ) হয়ে যাবে l বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সম্বন্ধের সাথে,
নিজের ভিন্ন-ভিন্ন স্বরূপের স্মৃতিকে ইমার্জ করো তো বাবার সাথ সদা নিজে থেকেই অনুভব
করবে আর এটাই সঙ্গমযুগের ব্রাহ্মণ জীবন, এই অমূল্য অনুভব সদাই হতে থাকবে l
আরেকটা ব্যাপার হলো যে এই সর্ব-সম্বন্ধ পালন করতে এত বিজি থাকবে যে মায়া আসারও ফুরসৎ
পাবে না l যারা বড় লৌকিক পরিবার সামলায় তারা সবসময় এটাই বলে, সংসার সামলাতে এত বিজি
থাকে তারা যে আর কোনও বিষয় মনেই থাকে না কারণ অনেক বড় পরিবার l তাহলে, তোমরা সব
ব্রাহ্মণ আত্মার প্রভুর সাথে প্রীতির দায়িত্ব পালনে তোমাদের কর্মকাণ্ড কতো বড় !
তোমাদের প্রভু-প্রীতির কর্মকাণ্ড শুয়েও চলতে থাকে l যদি তোমরা যোগনিদ্রাতেও থাকো,
তখনও তোমাদের সেটা নিদ্রা নয়, বরং যোগনিদ্রা l নিদ্রাতেও প্রভু মিলন উদযাপন করতে
পারো l যোগের অর্থই মিলন l যোগনিদ্রা অর্থাৎ অশরীরী ভাবের স্থিতির অনুভূতি l তাহলে,
এটাও তো প্রভু-প্রীতি, তাই না ! সুতরাং তোমাদের মতো বড় থেকেও বড় কর্মকাণ্ড কারও নেই
l এক সেকেন্ডও তোমাদের ফুরসৎ নেই, কারণ ভক্তিতেও ভক্ত রূপে গীত গাইতে, বহুদিন পরে
প্রভু এসেছ মিলিত হতে, তাইতো প্রভু পুরো হিসেব নেবো গুনে গুনে l তাহলে প্রতিটা
সেকেন্ডের তোমরা হিসেব নাও ! সারা কল্পের মিলনের হিসেব ছোট এই এক জন্মে পুরো করে
নাও l পাঁচ হাজার বছরের তুলনায় এই ছোট জন্ম শুধুমাত্র কিছু দিনের, তাই না ? সুতরাং
অল্প দিনের মধ্যে এত দীর্ঘ সময়ের হিসেব সম্পূৰ্ণ করতে হবে, সেইজন্য তোমাদের বলা হয়
প্রতি শ্বাসে স্মরণ করো l ভক্ত স্মরণ করে, তোমরা স্মৃতিস্বরূপ হও l তাহলে কি
তোমাদের এক সেকেন্ড সময়েরও ফুরসৎ আছে ? কতো বড় কর্মকাণ্ড ! এই পরিবারের কর্মকাণ্ডের
কাছে সেই ছোট পরিবারের কাজকর্ম তোমাদের আকৃষ্ট করবে না, আর সহজে নিজে থেকেই দেহসহ
দেহের সম্বন্ধ আর দেহের পদার্থ এবং প্রাপ্তি থেকে নষ্টমোহ, স্মৃতিস্বরূপ হয়ে যাবে l
এই লাস্ট পেপার নম্বর অনুক্রমে মালার দানা বানাবে l
যখন অমৃতবেলা থেকে যোগনিদ্রা পর্যন্ত বিভিন্ন স্মৃতিস্বরূপের অনুভাবী হয়ে যাবে তখন
বহুকালের স্মৃতিস্বরূপ হওয়ার কোশ্চেনে তোমাদের পাস উইথ অনার বানিয়ে দেবে l অতি
মনোমুগ্ধকর জীবনের অনুভব করবে, কারণ প্রত্যেক মানবাত্মা চায় জীবনে ভ্যারাইটি হোক l
সুতরাং এটা সারাদিনে ভিন্ন-ভিন্ন সম্বন্ধ, ভিন্ন-স্বরূপের ভ্যারাইটি অনুভব করো l
যেমন, দুনিয়াতেও লোকে বলে, বাবাকে তো অবশ্যই প্রয়োজন, সেইসঙ্গে যদি জীবন-সাথীর
অনুভব না হয় তাহলেও জীবন অসম্পূর্ণ হবে, যদি বাচ্চা না হও তবুও অসম্পূর্ণ জীবন বলা
হবে l সর্ব সম্বন্ধের জীবনই সম্পন্ন জীবন বলা হবে l সুতরাং এই ব্রাহ্মণ জীবন হলো
ভগবানের সাথে সর্ব সম্বন্ধ অনুভবকারী সম্পন্ন জীবন l একটা সম্বন্ধও কম ক'র না l
এমনকি, ভগবানের সাথে একটা সম্বন্ধও যদি কম হয় তাহলে কোন না কোনও আত্মা সেই সম্বন্ধে
নিজের দিকে টেনে নেবে l যেমন কিছু বাচ্চা কোন কোন সময় বলে, বাবারূপের সম্বন্ধ তো
আছেই, কিন্তু সখা বা সখি অথবা মিত্রের সম্বন্ধ তো গৌণ, এইসব সম্বন্ধের জন্য
আত্মাদের প্রয়োজন কারণ বাবা তো বড়, তাই না ! কিন্তু পরমাত্মার সাথে সম্বন্ধের মাঝে
কোন ছোট-বড় বা হালকা সম্বন্ধ অন্য আত্মাদের সাথে যদি মিক্স হয়ে যায় তাহলে 'সর্ব'
শব্দ সমাপ্ত হয়ে যায় এবং যথাশক্তি হওয়ার লাইনে এসে যাও l ব্রাহ্মণদের ভাষায় সব বিষয়ে
'সর্ব' শব্দ যুক্ত হয় l যেখানে 'সর্ব' সেখানেই সম্পন্নতা l এমনকি যদি দু'কলাও কম হয়ে
যায় তাহলে তোমরা দ্বিতীয় মালার দানা হয়ে যাও, সেইজন্য সর্ব সম্বন্ধের সর্ব
স্মৃতিস্বরূপ হও l বুঝেছ ? যখন ভগবান নিজে সর্ব সম্বন্ধের অনুভব করানোর অফার করছেন,
তখন তো সেই সান্নিধ্য লাভ তোমাদের করাই উচিত, তাই না ! এইরকম গোল্ডেন অফার এই সময়
এক এবং একমাত্র ভগবানই তোমাদের দিতে পারেন ; না অন্য কোন সময় আর না অন্য কেউ দিতে
পারে l এটা কি সম্ভব যে কেউ তোমাদের বাবাও হবে আবার বাচ্চাও হবে - এটা হতে পারে ?
এটা একের মহিমা, একেরই মহত্ত্ব, সেইজন্য সর্ব সম্বন্ধে স্মৃতিস্বরূপ হতে হবে l এতেই
আনন্দ, তাই না ? ব্রাহ্মণ জীবন কিসের জন্য ? আনন্দে আর উদ্যমের সাথে মনের সুখে
থাকার জন্য l সুতরাং এই অলৌকিক সুখ উদযাপন করো l আনন্দের জীবন অনুভব করো l আচ্ছা l
আজ দিল্লি দরবার থেকে আগতরা এখানে l তোমরা রাজ-দরবারের, নাকি শুধুই দরবারের দর্শক ?
যারা রাজত্ব করে আর যারা দেখে, দরবারে উভয়েই বসে l তোমরা সবাই কে ? দিল্লির দু'টো
বিশেষত্ব l এক - দিল্লি দিলারামের হৃদয়, দুই - রাজত্ব স্থান l হৃদয় যখন তো হৃদয়ে
থাকবে কে ? দিলারাম l সুতরাং দিল্লি নিবাসী অর্থাৎ যারা সবসময় দিলারামকে হৃদয়ে রাখে
l তোমরা এমনই অনুভাবী আত্মা এবং এখন থেকেই স্বরাজ্য অধিকারীই ভবিষ্যতে বিশ্ব-রাজ্য
অধিকারী l তোমাদের হৃদয়ে যখন দিলারাম আছেন, তখন এখন তোমাদের রাজ্য অধিকার আছে আর সদা
থাকবে l সুতরাং নিজের জীবনে চেক করে দেখ সদা এই দুই বিশেষত্ব আছে কিনা - হৃদয়ে
দিলারাম আর অধিকারও থাকা l এমন গোল্ডেন চান্স, শুধু গোল্ডেন নয় ডায়মন্ড চান্স যারা
নেয়, সেই তোমরা কতো ভাগ্যবান ! আচ্ছা l
এখন তো অসীমিত সেবার খুব ভালো উপায় তোমরা লাভ করেছ, তা' দেশে হোক, বা বিদেশে l যেমন
নাম, তেমনই সুন্দর কার্য ! নাম শুনেই সবাই অত্যন্ত উৎসাহিত হচ্ছে - "সবার স্নেহ,
সহযোগে সুখময় সংসার !" এটা অনেক দীর্ঘ কার্য, এক বছরেরও অধিক l সুতরাং যেমন কার্যের
নাম শুনতেই সবার আগ্রহ হয়, তেমন কার্যও আগ্রহের সাথে করবে l ঠিক যেমন সুন্দর নাম
শুনে তোমরা খুশি হচ্ছ, সেইরকমই কার্য হয়ে গেলেও তোমরা সদা খুশি থাকবে l তোমাদের তো
এটাও বলা হয়েছিল, তাই না যে প্রত্যক্ষতার পর্দা সরে যাওয়ার বা পর্দা খোলার আধার তৈরি
হয়েছে আর তৈরি হতেও থাকবে l সবার সহযোগী - কার্যের যেমন নাম, ঠিক তেমনই তার স্বরূপ
হয়ে সহজভাবে কার্য করতে থাকলে নিমিত্ত মাত্র পরিশ্রম আর সফলতা পদমগুণ অনুভব করতে
থাকবে l এমন অনুভব করবে যেন করানোর মালিক (করাবনহার) নিমিত্ত বানিয়ে করাচ্ছেন l আমি
করছি - অনুভব হবে না l এতে লোকে সহযোগী হবে না l করাবনহার করাচ্ছেন l যিঁনি চালানোর
তিনি চালাচ্ছেন l যেমন তোমাদের সবার জগদম্বার স্লোগান স্মরণে আছে - "হুকুমই (সর্বময়
কর্তা) হুকুম চালাচ্ছেন l" সদা এই স্লোগান স্মৃতিতে রাখলে সফলতা প্রাপ্ত হতে থাকবে
l চারিদিকের উৎসাহ-উদ্দীপনা খুব ভালো l যেখানে উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে সেখানে সফলতা নিজে
থেকেই কাছে এসে গলার মালা হয়ে যায় l এই বিশাল কার্য অনেক আত্মাকে সহযোগী বানিয়ে কাছে
নিয়ে আসবে, কারণ প্রত্যক্ষতার পর্দা খোলার পরে এই বিশাল স্টেজে সব শ্রেণীর পার্টধারী
স্টেজে প্রত্যক্ষ হওয়া উচিত l সব বর্গের অর্থই হলো, বিশ্বের সব আত্মার ভ্যারাইটি
বৃক্ষের সংগঠিত রূপ l কোনও বর্গ যেন থেকে না যায় যাতে অনুযোগ করতে পারে যে তারা
কোনও সন্দেশ (বার্তা) পায়নি, অতএব, সব বর্গ অর্থাৎ নেতা থেকে শুরু করে ঘিঞ্জি-বস্তি
পর্যন্তই বর্গ l সবচাইতে উচ্চ (টপ) শিক্ষিত সায়েন্টিস্টদের আর তারপরে যারা নিরক্ষর
তাদেরকেও এই জ্ঞানের নলেজ অর্থাৎ অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের সম্যক ধারণা দাও, এটাও সেবা
l সুতরাং সব বর্গের সবাইকে অর্থাৎ বিশ্বের সব আত্মার কাছে বার্তা পৌঁছাতে হবে l কতো
বড় কার্য এটা ! এমন কেউ বলতে পারবে না যে তাকে সেবার কোনও চান্স দেওয়া হয়নি l কেউ
অসুস্থ যদি হয় তো অসুস্থই অসুস্থের সেবা করো, নিরক্ষর, নিরক্ষরের সেবা করো l যে
যেটাই করতে পারে সেটাই করো, সেটাই চান্স l আচ্ছা, যদি বলতে না পার, তাহলে মন্সা
দ্বারা বায়ুমন্ডলে সুখের বৃত্তি, সুখময় স্থিতির দ্বারা সুখময় সংসার বানাও l কোনও
অজুহাত তোমরা দিতে পারবে না যে সময় নেই l উঠতে বসতে ১০-১০ মিনিট সেবা করো l আঙুলের
সহযোগ তো দেবে, তাই না ! যদি কোথাও যেতে না পারো, শরীর ঠিক না থাকে, তাহলে ঘরে বসে
করো, কিন্তু সহযোগী হওয়া অবশ্যই প্রয়োজন, তখনই সকলের সহযোগ প্রাপ্ত হবে l আচ্ছা l
উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে বাপদাদাও খুশি হন l তোমাদের সবার মনে আকাঙ্ক্ষা যে
প্রত্যক্ষতার পর্দা এখন খুলে যাক l আরম্ভ তো হয়েছে, তাই না ? সুতরাং ভবিষ্যতে সহজে
হতে থাকবে l বিদেশি বাচ্চাদের প্ল্যানসও বাপদাদার কাছে পৌঁছাতে থাকে l তাদের
নিজেদেরও প্রবল উৎসাহ আছে আর সকলের সহযোগও তারা উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে গ্রহণ করে l
যেখানে গভীর অনুভূতি, সেখানে গভীর অনুভূতির প্রাপ্তি, যেখানে প্রবল উৎসাহ সেখানে
প্রবল উৎসাহের প্রাপ্তি l এও মিলন হচ্ছে l সুতরাং খুব ধুমধামের সাথে এই কার্যকে
এগিয়ে নিয়ে যাও l উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে তোমরা যা করেছ, তাছাড়াও বাবার ও সকল
ব্রাহ্মণের সহযোগে, শুভ কামনা ও শুভ ভাবনায় আরও এগিয়ে যেতে থাকবে l আচ্ছা l
চারিদিকের শ্রেষ্ঠ বাচ্চাদের, যারা সদা স্মরণ আর সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনায় থাকে, সদা
সর্বকর্মে স্মৃতিস্বরূপের অনুভূতির অনুভাবী আত্মাদের, সদা সর্বকর্মে বাবার সঙ্গে
সর্ব সম্বন্ধের অনুভবকারী শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, যারা সদা ব্রাহ্মণ জীবনের আনন্দে জীবন
অতিবাহিত করে, সেই মহান আত্মাদের বাপদাদার অতি স্নেহ-সম্পন্ন স্মরণ-স্নেহ স্বীকার
হোক l
বরদান:-
সঙ্গমযুগে একের শতগুন প্রত্যক্ষফল প্রাপ্তকারী
পদমাপদম ভাগ্যশালী ভব
সঙ্গমযুগই একের শতগুন প্রত্যক্ষফল দেয়, শুধু এক বার
যদি সঙ্কল্প করেছ যে, 'আমি বাবার, আমি মাস্টার সর্বশক্তিমান', তাহলে মায়াজিত হওয়ার,
বিজয়ী হওয়ার নেশার অনুভব হয় l শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প করা - এটাই বীজ আর তার সবচেয়ে বড় ফল
যা স্বয়ং পরমাত্মা বাবাও সাকার মানুষ রূপে তোমাদের সাথে মিলিত হতে আসেন, এই ফলে সব
ফল অন্তর্ভুক্ত l
স্লোগান:-
প্রকৃত ব্রাহ্মণ সেই যার মুখ ও চরিত্র দ্বারা পিওরিটির পার্সোনালিটি এবং রয়্যালটি
অনুভব হোক l
সূচনাঃ-
আজ মাসের তৃতীয় রবিবার, অন্তর্রাষ্ট্রীয় যোগ দিবস, সন্ধ্যা ৬:৩০ থেকে ৭ :৩০ পর্যন্ত
সব ভাই-বোন বিশেষ যোগ তপস্যায় বসে নিজের শুভ ভাবনা সম্পন্ন সঙ্কল্প দ্বারা প্রকৃতি
সহ বিশ্বের সব আত্মাকে শান্তি আর শক্তির ভাইব্রেশন দেওয়ার সেবা করুন l # (অনহদ শব্দ
থেকে উৎপন্ন ধ্বনি সদাই হতে থাকে, যা শেষ হয় না, নষ্ট হয় না)