30.01.2021 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমাদের স্মরণের যাত্রা হলো একদমই গুপ্ত, তোমরা বাচ্চারা এখন মুক্তিধামে যাওয়ার জন্য যাত্রা করছো"

প্রশ্নঃ -
স্থূললোক নিবাসী থেকে সূক্ষ্মলোক নিবাসী ফরিস্তা হওয়ার পুরুষার্থ কি ?

উত্তরঃ -
সূক্ষ্মলোক নিবাসী ফরিস্তা হতে গেলে আত্মীক সেবাতে সম্পূর্ণ অস্থি স্বাহা করো। অস্থি স্বাহা না করে ফরিস্তা হতে পারবে না। কারণ ফরিস্তা অস্থি মাংস ব্যাতীত হয়। এই অসীম জগতের সেবাতে দধিচি ঋষির মতো প্রতিটি অস্থি নিয়োজিত করতে হবে, তবেই ব্যক্ত থেকে অব্যক্ত হবে।

গীতঃ-
ধৈর্য ধর রে মন (ধীরজ ধর মনুবা)...

ওম্ শান্তি ।
এই গানের দ্বারা বাচ্চারা ইশারা পেয়েছে যে ধৈর্য ধরো। বাচ্চারা জানে যে, আমরা শ্রীমত অনুযায়ী পুরুষার্থ করছি আর জানে যে আমরা এই গুপ্ত যোগের যাত্রাতে আছি। সেই যাত্রা নিজের সময় মতো সম্পূর্ণ হবে। মুখ্য হলোই এই যাত্রা, যেইটা তোমরা ব্যতীত আর কেউই জানে না। যাত্রাতে অবশ্যই যেতে হবে আর নিয়ে যাওয়ার জন্য পান্ডাও চাই। এর নামই রাখা হয়েছে পান্ডব সেনা। এখন যাত্রাতে চলছে। স্থূল লড়াই এর কোনো ব্যাপার নেই। প্রতিটি ব্যাপার হলো গুপ্ত। যাত্রাও হলো খুবই গুপ্ত। শাস্ত্রতেও আছে- বাবা বলেন আমাকে স্মরণ করো, তবে আমার কাছে এসে পৌঁছোবে। এইটা তো যাত্রা, তাই না ! বাবা সমস্ত শাস্ত্রের সার বলে দেন। প্র্যাকটিক্যালে অ্যাক্টে(প্রয়োগ করান) নিয়ে আসেন। আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের যাত্রা করতে হবে আমাদের নির্বাণধামে। ভেবে দেখলে বুঝতে পারবে। এইটা হলো মুক্তিধামের জন্য সত্যিকারের যাত্রা। সকলেই চায় আমি মুক্তিধামে যাবো, এই যাত্রা করার জন্য কেউ মুক্তিধামের রাস্তা বলো। কিন্তু বাবা তো নিজের সময় মতো নিজেই আসেন, যে সময়কে কেউ জানে না। বাবা এসে বলে দেন, তখন বাচ্চাদের বিশ্বাস হয়। এইটা একদম সত্যিকারের যাত্রা, যে যাত্রার কথা প্রচলিত আছে। ভগবান এই যাত্রা শিখিয়েছিলেন। "মন্মনাভব", "মধ্যাজীভব" । এই শব্দ তোমাদেরও অনেক কাজের। কেবল কে বলেছেন - এইটাই ভুল করে দিয়েছে। বলে যে দেহ সহ দেহের সম্বন্ধকে ভুলে যাও। এঁনারও (ব্রহ্মা বাবার) দেহ আছে। এঁনাকেও বোঝানোর জন্য আর কেউ আছেন, যার নিজের দেহ নেই- সেই বাবা হলেন বিচিত্র, ওঁনার কোনো চিত্র নেই, আর সকলের তো চিত্র আছে। সমগ্র দুনিয়া হলো চিত্রশালা। বিচিত্র আর চিত্র অর্থাৎ জীব আর আত্মার এই মনুষ্য স্বরূপ তৈরী হয়ে আছে। তবে সেই বাবা হলেন বিচিত্র। বোঝান যে আমাকে এই চিত্রের আধার নিতে হয়। শাস্ত্রে ভগবান বরাবর বলেছেন- মহাভারত লড়াইও যখন শুরু হয়েছিলো। রাজযোগ শেখাতেন, অবশ্যই রাজত্ব স্থাপন হয়েছিলো। এখন তো রাজত্ব নেই। রাজযোগ ভগবান শিখিয়েছিলেন, নূতন দুনিয়ার জন্য, কারণ বিনাশ সামনে ছিলো। বোঝানো হয় এইরকম হয়েছিলো যখন স্বর্গ স্থাপন করা হয়েছিলো। সেই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য স্থাপন হয়েছিলো। এখন তোমাদের বুদ্ধিতে আছে - সত্যযুগ ছিলো, এখন হলো কলিযুগ। বাবা আবার সেই কথাই বোঝান। কেউ তো এমন বলতে পারবে না যে, আমি পরমধাম থেকে এসেছি তোমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। পরমপিতা পরমাত্মাই বলতে পারেন ব্রহ্মার দ্বারা, আর কারোর দ্বারাই এইটা ব্যক্ত হবে না। সূক্ষ্মলোকে থাকেনই ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শঙ্কর। ব্রহ্মার ক্ষেত্রেও বোঝানো হয়েছে যে তিনি হলেন অব্যক্ত ব্রহ্মা আর ইনি ব্যক্ত। তোমরা এখন ফরিস্তা হচ্ছো। ফরিস্তা স্থূললোকে থাকে না। ফরিস্তার অস্থি-মাংস থাকে না। এখানে এই আত্মীক সেবাতে অস্থি ইত্যাদি সব নিঃশেষ করে দেয়, তারপর ফরিস্তা হয়ে যায়। এখন তো অস্থি আছে, তাই না ! এটাও লেখা হয়েছে -- নিজের অস্থি সমূহও সার্ভিসে দিয়ে দাও। যদি নিজের অস্থি সমূহ সম্পূর্ণ সমর্পণ করে, তখন স্থূললোক থেকে সূক্ষ্মলোকনিবাসী হয়। এখানে আমরা অস্থি সমর্পণ করে সূক্ষ্ম হয়ে যাই। এই সার্ভিসে সবকিছু স্বাহাঃ করতে হবে। স্মরণে থাকতে থাকতে আমরা ফরিস্তা হয়ে যাবো। এইটাও গাওয়া হয়েছে-- শিকারের মৃত্যুতে শিকারীর আনন্দ (মিরুয়া মৌত মলুকা শিকার), মলুক ফরিস্তাকে বলা হয়। তোমরা মানুষ থেকে ফরিস্তা হও। তোমাদের দেবতা বলা যাবে না। এখানে তো তোমাদের শরীর আছে ! সূক্ষ্মলোকের বর্ণনা এখন করা হয়। যোগে থেকে আবার ফরিস্তা হয়ে যায়। শেষকালে তোমরা ফরিস্তা হয়ে যাবে। তোমাদের সব সাক্ষাৎকার হবে, আর খুশী হবে। মানুষ তো সব কালের(মৃত্যুর) শিকার হয়ে যাবে। তোমাদের মধ্যে যারা মহাবীর হবে তারা অটল থাকবে। এছাড়া কি কি হতে থাকবে! বিনাশের সিন্ সব, তাই না ! অর্জুনের বিনাশের সাক্ষাৎকার হয়েছিলো। এ কোনো একজন অর্জুনের কথা নয়। বাচ্চারা, তোমাদের বিনাশ আর স্থাপনার সাক্ষাৎকার হয়। প্রথমদিকে বাবারও বিনাশের সাক্ষাৎকার হয়েছিলো। সেই সময় জ্ঞান তো কিছুই ছিলো না। দেখতেন সৃষ্টির বিনাশ হচ্ছে। তারপর চতুর্ভুজের সাক্ষাৎকার হয়েছিলো। বুঝতে পারে এইটা তো ভালো। বিনাশের পরে আমরা বিশ্বের মালিক হই, তখন খুশী আসে। এখন এই দুনিয়া জানে না যে বিনাশ তো ভালো। পীসের (শান্তির) জন্য কতো চেষ্টা করে, কিন্তু শেষকালে বিনাশ তো হতেই হবে। মানুষ স্মরণ করে - পতিত পাবন এসো, তো বাবা আসেন অবশ্যই, এসে পবিত্র দুনিয়া স্থাপন করবেন, যেখানে আমরা রাজত্ব করবো। এটা তো ভালো বেশ ! পতিত-পাবনকে স্মরণ করবো কেন ? কারণ এখানে হল দুঃখ । পবিত্র দুনিয়াতে দেবতারা থাকে, পতিত দুনিয়াতে তো দেবতাদের পা পড়তে পারে না। তাই তো অবশ্যই পতিত দুনিয়ার বিনাশ হওয়া উচিত। গাওয়াও হয়েছে যে মহাবিনাশ ঘটেছে। মহাবিনাশের পর কি ঘটে ? এক ধর্মের স্থাপনা, তো এইরকমই তো হবে। এইখান থেকে রাজযোগ শিখবে। বিনাশ হবে, এছাড়া ভারতে কে বাঁচবে ? যারা রাজযোগ শিখছে, জ্ঞান প্রদান করছে তারাই বাঁচবে। বিনাশ তো সবারই হবে, এর জন্য ভয় পাওয়ার ব্যাপার নেই। পতিত-পাবনকে ডাকে যখন আর তিনি এলে তখন তো খুশী হওয়া উচিত, তাইনা ! বাবা বলেন বিকারে যেও না । এই বিকারের উপর বিজয় প্রাপ্ত করো বা দান করো, তবে গ্রহণ - মুক্তি পাবে। ভারতের গ্রহণ অবশ্যই মুক্তি পায়। কুৎসিত থেকে সুন্দর হতে হবে। সত্যযুগে পবিত্র দেবতারা ছিলো, তারা অবশ্যই এখানে থাকবে। তোমরা জানো যে আমরা শ্রীমত অনুযায়ী নির্বিকারী হচ্ছি। ভগবানুবাচ, এইটা হলো গুপ্ত। শ্রীমত অনুযায়ী চলে তোমরা বাদশাহী প্রাপ্ত করো। বাবা বলেন, তোমাদের নর থেকে নারায়ণ হতে হবে। সেকেন্ডে রাজত্ব প্রাপ্ত হতে পারে। শুরুতে কন্যারা ৪ থেকে ৫ দিনও বৈকুন্ঠতে গিয়ে থাকতো। শিববাবা এসে বাচ্চাদেরকে বৈকুন্ঠেরও সাক্ষাৎকার করাতেন। দেবতারা আসতেন- কতো মান - সম্মানের সাথে। তাই বাচ্চাদের মনের মধ্যে থাকতো বরাবর গুপ্ত বেশে আসেন যে বাবা, তিনি আমাদের বোঝাচ্ছেন। ব্রহ্মার দেহে আসেন। ব্রহ্মার দেহ তো এখানে দরকার, তাই না! প্রজাপিতা ব্রহ্মা দ্বারা স্থাপনা । বাবা বুঝিয়েছেন- যে কেউই আসুক না কেন তাকে জিজ্ঞাসা করো - কার কাছে এসেছো ? বি. কে র কাছে। আচ্ছা, ব্রহ্মার নাম কখনো শুনছো ? প্রজাপিতা তিনি ! আমরা সবাই এসে ওঁনার হয়েছি। অবশ্যই পূর্বে হয়েছিলাম। ব্রহ্মা দ্বারা স্থাপনা তো অবশ্যই সাথে ব্রাহ্মণও চাই। বাবা ব্রহ্মার দ্বারা কাকে বোঝান ? শূদ্রকে তো বোঝাবেন না। এ হলো ব্রহ্মা মুখ বংশাবলী ব্রাহ্মণ, শিববাবা ব্রহ্মার দ্বারা আমাদের আপন করেছেন। ব্রহ্মাকুমার- কুমারীরা সংখ্যায় অনেক, কতো সেন্টার আছে। সব জায়গায় ব্রহ্মাকুমারীরা পড়ান। এখানে আমাদের পিতামহের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। ভগবানুবাচ - তোমাদের রাজযোগ শেখাচ্ছি। তিনি নিরাকার হওয়ার কারণে এঁনার শরীরের আধার নিয়ে আমাদের নলেজ শোনান। সবাই তো প্রজাপিতা, তাই না ! আমরা হলাম প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমার-কুমারী। শিববাবা হলেন পিতামহ। উনি আমাদেরকে অ্যাডপ্ট করেছেন। তোমরা জানো যে, আমরা দাদার কাছে বা পিতামহের কাছে পড়ছি ব্রহ্মা দ্বারা। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ দুইজন হলেন স্বর্গের মালিক ! ভগবান তো হলেন- একই উচ্চতমের চেয়েও উচ্চ নিরাকারী। বাচ্চাদের ধারণা খুবই ভালো হওয়া উচিত। সর্বপ্রথমে বুঝিয়ে দাও বাবা হলেন দু'জন, ভক্তি মার্গে। স্বর্গে হলো এক বাবা। পারলৌকিক বাপ দ্বারা বাদশাহী প্রাপ্ত হয়েছে, এরপর (স্বর্গে শিববাবাকে) স্মরণ কেন করবে। দুঃখই নেই যে স্মরণ করতে হবে। কীর্তন করে, দুঃখ হরণকারী, সুখ প্রদানকারী। এ' সব তো এখনকার কথা। যা কিছু পাস্ট হয়ে যায় তার গায়ন হয়। মহিমা হলো একেরই। সেই এক বাবা এসেই পতিতকে পবিত্র করেন। মানুষ কি আর তা বোঝে! তারা তো পাস্টের কথা বসে লেখে । তোমরা এখন বুঝতে পারো- বরাবর বাবা রাজযোগ শিখিয়েছেন, যার জন্য বাদশাহী প্রাপ্ত হয়েছে। ৮৪ জন্মের চক্র আবর্তন করেছে। এখন আমরা আবার অধ্যয়ণ করছি, আবার ২১ জন্ম রাজত্ব করবো। এইরকম দেবতা হবো। এইরকম পূর্ব কল্পে হয়েছিলাম। তোমরা এখন বুঝেছো যে, আমরা পুরো ৮৪ জন্মের চক্র আবর্তন করেছি। এখন আবার সত্যযুগ- ত্রেতাতে যাবো। তাই তো বাবা জিজ্ঞাসা করেন - পূর্বে কতবার মিলিত হয়েছো ? এইটা প্র্যাকটিক্যাল কথা যে ! নূতন যে, সেও যদি শোনে তো বুঝবে ৮৪ জন্মের চক্র তো অবশ্যই আছে। যারা সর্বপ্রথম থাকবে তাদেরই চক্র সম্পূর্ণ হবে। যুক্তিবুদ্ধির সাথে কাজ করতে হবে। এই বাড়ীতে, এই ড্রেসে বাবা আমি আপনার সাথে অনেকবার মিলিত হয়েছি আর মিলিত হবোও। পতিত থেকে পবিত্র আর পবিত্র থেকে পতিত হয়েই এসেছি। কোনো জিনিস সর্বদা নতুনই থাকবে, এইটা তো হতে পারে না। অবশ্যই পুরানো হবে। প্রতিটি জিনিস সতো-রজো-তমোতে আসে। বাচ্চারা, এখন তোমরা জানো যে নূতন দুনিয়া আসছে। সেইটাকে স্বর্গ বলা হয়। এইটা হলো নরক। সেইটা হলো পবিত্র দুনিয়া। অনেক ডাকে - হে পতিত পাবন এসে আমাদের পবিত্র করো, কারণ প্রচন্ড দুঃখ বেড়ে যাচ্ছে । কিন্তু এইটা বুঝতে পারে না যে আমরাই পূজ্য ছিলাম আবার পূজারী হয়েছি। অনেক ধর্ম হয়ে চলেছে। বরাবর পতিত থেকে পবিত্র, পবিত্র থেকে পতিত হয়ে এসেছো। ভারতের উপরই খেলা। বাচ্চারা, তোমাদের এখন স্মৃতি জেগেছে, এখন তোমরা শিবজয়ন্তী পালন করো। বাকি আর কেউ তো শিবকে জানে না। আমরা জানি। বরাবর আমাদের রাজযোগ শেখান। ব্রহ্মা দ্বারা স্বর্গের স্থাপনা হচ্ছে। অবশ্যই যারা যোগ শিখবে, স্থাপনা করবে, তারাই আবার রাজ্য - ভাগ্য প্রাপ্ত করবে। আমরা বলে থাকি বরাবর আমরা প্রতি কল্পে বাবার কাছে রাজযোগ শিখেছি। বাবা বুঝিয়েছেন - এখন এই ৮৪ জন্মের চক্র সম্পূর্ণ হচ্ছে । আবার নূতন চক্র আবর্তিত করতে হবে। চক্রকে তো জানা উচিত ! যদি এই চিত্র নাও থাকে তবুও তোমরা বোঝাতে পারো, এইটা তো একদমই সহজ ব্যাপার। বরাবর ভারত স্বর্গ ছিলো, এখন হলো নরক। শুধু তারাই মনে করে কলিযুগ হলো একদমই বাচ্চা। তোমরা বলো- এইটা তো কলিযুগের শেষ। বাবা বোঝান আমি আসি পতিত দুনিয়াকে পবিত্র করে তুলতে। তোমরা জানো যে, আমাদের পবিত্র দুনিয়াতে যেতে হবে। তোমরা মুক্তি, জীবনমুক্তি, শান্তিধাম, সুখধাম আর দুঃখধামকেও বুঝতে পারো। কিন্তু ভাগ্যে না থাকলে তখন আবার এইটা খেয়াল করে না যে কেন না আমরা সুখধাম যাবো। বরাবর আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের গৃহ হলো সেই শান্তিধাম। সেখানে আত্মাদের অরগ্যান্স না থাকার জন্য কথা বলে না। সেখানে সকলেরই শান্তি প্রাপ্ত হয়। সত্যযুগে হলো এক ধর্ম। এইটা হলো অনাদি, অবিনাশী ওয়ার্ল্ড ড্রামা যার চক্র আবর্তিত হতেই থাকে। আত্মার কখনো বিনাশ হয় না। শান্তি ধামে কিছু সময় থাকতেই হয়। এইটা খুবই বোঝার ব্যাপার। কলিযুগ হলো দুঃখধাম। কতো প্রকার ধর্ম এইখানে, কতো হাঙ্গামা হতে থাকে। যখন একদম দুঃখধাম হয় তখনই বাবা আসেন। দুঃখ ধামের পরে সম্পূর্ণ (ফুল) সুখধাম। শান্তিধাম থেকে আমরা আসি সুখধামে, আবার দুঃখধাম তৈরী হয়। সত্যযুগে সম্পূর্ণ নির্বিকারী, এখানে হলো সম্পূর্ণ বিকারী। এইটা বোঝানো তো খুবই সহজ। সাহস থাকা চাই। যে কোনো জায়গায় গিয়ে বোঝাও। এইটাও লেখা আছে- হনুমান সৎসঙ্গে গিয়ে পিছন দিকে জুতোর উপর বসতো। সুতরাং যে মহাবীর হবে সে যে কোনো জায়গায় গিয়েই যুক্তির সাথে শুনবে, দেখবে কি বলে। তোমরা ড্রেস পরিবর্তন করে যে কোনো জায়গায় যেতে পারো, ওদের কল্যাণ করতে। বাবাও তো গুপ্ত বেশে তোমাদের কল্যাণ করেন, তাই না ! যে কোনো জায়গায় মন্দিরে নিমন্ত্রণ পেলে গিয়ে বোঝাতে হবে। প্রত্যেক দিন তোমরা ক্রমশ সুবুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে উঠছো। সবাইকে বাবার পরিচয় দিতেই হবে, ট্রায়াল করতে হয় । এইটা তো বলাও হয়েছে, শেষের দিকে সন্ন্যাসীরা, রাজারা (বড় বড় মাপের মানুষ) আসবে। রাজা জনকের সেকেন্ডে জীবনমুক্তি প্রাপ্ত হয়েছিলো। সে গিয়ে আবার ত্রেতাতে অনুজনক হয়েছিলো। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) অন্তিম বিনাশের সিন দেখার জন্য নিজের স্থিতি মহাবীরের মতো নির্ভয়, অটল বানাতে হবে। গুপ্ত স্মরণের যাত্রাতে থাকতে হবে।

২ ) অব্যক্ত বতনবাসী ফরিস্তা হওয়ার জন্য অসীম জগতের সেবাতে দধীচি ঋষির মতো নিজের সমস্ত অস্থি স্বাহাঃ করতে হবে।

বরদান:-
একান্ত আর অন্তর্মুখীতার অভ্যাস দ্বারা নিজেকে অনুভবের দ্বারা সম্পন্ন বানানো মায়াজীত ভব

নলেজফুলের সাথে পাওয়ারফুল অর্থাৎ অনুভাবী মূর্ত হওয়ার জন্য একান্তবাসী আর অন্তর্মুখী হও। টালমাটাল হওয়ার কারণ হলো অনুভবের অভাব, সেইজন্য শুধুমাত্র বুঝতে পারা, বোঝাতে পারার মতো মননমূর্তি হয়ো না, একান্তবাসী হয়ে প্রতিটা পয়েন্টের অনুভাবী হলে যে কোনো প্রকারের ধোঁকার থেকে দুঃখ বা সংকট থেকে বেঁচে যাবে। কার বাচ্চা, কি প্রাপ্তি-- এই প্রথম পাঠের অনুভব করতে পারলে সহজেই মায়াজীত হয়ে উঠবে।

স্লোগান:-
দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে ডবল লাইট থাকতে পারে যে, সে-ই হলো বাবার সমীপ রত্ন।