18-01-2021 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 18-01-20 মধুবন


১৮-ই জানুয়ারি, পিতাশ্রীর পূণ্য স্মৃতি দিবসে প্রাতঃকালীন ক্লাসে শোনানোর জন্য -- বাপদাদার অমূল্য মহাবাক্য


"অদ্বিতীয় পিতার স্মরণের দ্বারাই তোমাদের সুপ্রীম হতে হবে, তাই ভুল করেও আর কাউকে স্মরণ করবে না"

ওম্ শান্তি ।
অসীম জগতের বাবা বসে বাচ্চাদের বোঝান -- মিষ্টি বাচ্চারা, নিজেদের আত্মা মনে করে আমাকে অর্থাৎ বাবাকে স্মরণ করো আর নিজেদের ঘরকে স্মরণ করো। সেটিকে বলা-ই হয় টাওয়ার অফ সাইলেন্স। টাওয়ার অফ সুখ। টাওয়ার অনেক উঁচু হয়। তোমরা সেখানে যাওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছো। তোমরা উচ্চ থেকেও উচ্চতম টাওয়ার অফ সাইলেন্সে কিভাবে যাবে, সেটাও টাওয়ারে বসবাসকারী বাবা বসে শেখান -- বাচ্চারা, নিজেদের আত্মা মনে করো। আমরা আত্মারা হলাম শান্তিধাম নিবাসী। ওটা হলো বাবার ঘর। চলতে-ফিরতে এই অভ্যাস করতে হবে। নিজেকে আত্মা মনে করো আর শান্তিধাম, সুখধামকে স্মরণ করো। আত্মা জানে যে, এতেই পরিশ্রম রয়েছে। যে আত্ম-অভিমানী হয়ে থাকে, তাকে বলা হয় মহাবীর। স্মরণের দ্বারাই তোমরা মহাবীর, সুপ্রীম হয়ে যাও। সুপ্রীম অর্থাৎ শক্তিশালী। বাচ্চাদের খুশী হওয়া উচিত -- স্বর্গের মালিকের রচনাকার, বিশ্বের মালিকের রচনাকার বাবা আমাদের পড়াচ্ছেন। আত্মার বুদ্ধি চলে যায় বাবার দিকে। এ হলো -- আত্মার প্রেম একমাত্র পিতার সঙ্গেই। সকাল-সকাল উঠে বাবার সাথে মিষ্টি-মিষ্টি বার্তালাপ করো। বাবা তুমি তো বিস্ময়কর, স্বপ্নেও ছিল না যে তুমি আমাদের স্বর্গের মালিক করে দেবে। বাবা আমরা তোমার শিক্ষানুসারে অবশ্যই চলবো। কোনও পাপকর্ম করবো না। বাবা যেমনভাবে পুরুষার্থ করেন, তা বাচ্চাদেরকেও শোনান। শিববাবার এত সংখ্যক বাচ্চা, উদ্বিগ্নতা তো থাকবেই, তাই না! কত বাচ্চাদের লালন-পালন করতে হয়। এখানে তোমরা ঈশ্বরীয় পরিবারে বসে রয়েছো। বাবা সম্মুখে বসে রয়েছেন। তোমার সাথেই খাব, তোমার সাথেই বসবো..... তোমরা জানো যে, শিববাবা এঁনার মধ্যে এসে বলেন -- মিষ্টি বাচ্চারা, মামেকম্(একমাত্র আমাকেই) স্মরণ করো। দেহ-সহ দেহের সর্ব সম্বন্ধকে ভুলে যাও। এ হলো অন্তিম জন্ম। এই পুরোনো দুনিয়া, পুরোনো শরীর বিনাশ হয়ে যাবে। কথায় আছে, আমি মরে গেলে তো দুনিয়া ও আমার কাছে মৃত। পুরুষার্থের জন্য সঙ্গমের এই সামান্য সময় রয়েছে। বাচ্চারা জিজ্ঞাসা করে -- বাবা এই পড়া আর কতদিন চলবে ? যতদিন না পর্যন্ত দৈবী রাজধানী স্থাপিত হয়ে যায় ততদিন পর্যন্ত শোনাতে থাকব। তারপর ট্রান্সফার হবে নতুন দুনিয়ায়। এ হলো পুরোনো শরীর, কিছু না কিছু কর্ম ভোগ করতেই হবে। এতে বাবা সহায়তা করবে -- এমন আশা রাখা উচিত নয়। দেউলিয়া হয়ে গেলে, অসুস্থ হলে -- বাবা বলেন এ হলো তোমাদের হিসেব-নিকেশ। হ্যাঁ, তবুও যোগের দ্বারা আয়ু বৃদ্ধি পাবে। নিজে পরিশ্রম করো। দয়াভিক্ষা কোরো না। বাবাকে যত স্মরণ করবে তারমধ্যেই কল্যাণ নিহিত রয়েছে। যতখানি সম্ভব যোগবলের দ্বারা কর্ম করো। গাওয়াও তো হয়, তাই না -- আমায় আঁখি পল্লবে আড়াল করো(চোখে হারানো).... প্রিয় বস্তুকে উজ্জ্বল রত্ন (নয়নের মণি), প্রাণপ্রিয় বলা হয়। এই বাবাও হলেন অতি প্রিয়, কিন্তু গুপ্ত। ওঁনার প্রতি ভালবাসা এমন হওয়া উচিত যে, সেকথা জিজ্ঞাসাও কোরো না। বাচ্চারা তো বাবাকে চোখে হারাবে। এই পলক কোনো স্থূল চোখ নয়। এ তো বুদ্ধির দ্বারা স্মরণে রাখতে হবে। প্রিয়তম পিতার সঙ্গে কতখানি ভালবাসা থাকা উচিত। বাচ্চাদের জন্য কত নিষ্কাম সেবা করেন। বাচ্চারা, অপবিত্র শরীরে এসে (প্রবেশ করে) তোমাদের হীরে-তুল্য করেন। বাবা কত মিষ্টি। তাহলে বাচ্চাদেরকেও এরকমই মিষ্টি হতে হবে। বাবা কত নিরহংকারী হয়ে তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের সেবা করেন, তাই বাচ্চারা তোমাদেরও এতখানি সেবাই করা উচিত। শ্রীমতানুসারে চলতে হবে। কোথাও যদি নিজের মত প্রকাশ করো তবে সৌভাগ্যে দাগ পড়ে যাবে। তোমরা ব্রাহ্মণেরা হলে ঈশ্বরীয় সন্তান। ব্রহ্মার সন্তান ভাই-বোন। ঈশ্বরের পৌত্র-পৌত্রী। ওঁনার কাছ থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছো। যত পুরুষার্থ করবে ততই (উচ্চ) পদ লাভ করবে। এখানে সাক্ষী হয়ে থাকার অভ্যাসও অধিকমাত্রায় চাই। বাবা বলেন -- মিষ্টি বাচ্চারা, হে আত্মারা মামেকম্ স্মরণ করো। ভুল করেও বাবা ব্যতীত আর কাউকে স্মরণ করবে না। তোমাদের প্রতিজ্ঞা হলো -- বাবা, আমার তো শুধু একজনই তুমি আছো। আমরা আত্মা, তুমি পরমাত্মা। তোমার থেকেই উত্তরাধিকার নেব। তোমায় কাছেই রাজযোগ শিখছি, যার দ্বারা রাজ্য-ভাগ্য প্রাপ্ত করি। মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা জানো এ হলো অনাদি ড্রামা। এখানে জয়-পরাজয়ের খেলা চলে। যা ঘটে তা সঠিক। রচনাকারের তো ড্রামা অবশ্যই পছন্দ হবে, তাই না! তাহলে রচনাকারের বাচ্চাদেরও তা পছন্দ হবে। এই ড্রামায় বাবা একবারই বাচ্চাদের কাছে বাচ্চাদের দিল বা হৃদয়ে, সিক বা প্রেম-পূর্বক সেবা করতে আসেন। সব বাচ্চারাই বাবার প্রিয়। তোমরা জানো সত্যযুগেও সকলে পরস্পরকে অত্যন্ত ভালবাসে। পশুদের মধ্যেও ভালবাসা থাকে। সেখানে এমন কোনো পশু নেই যারা মিলেমিশে না থাকে। তাহলে বাচ্চারা, তোমাদের এখানে মাস্টার প্রেমের সাগর হতে হবে। এখানে হলে সেই সংস্কার অবিনাশী হয়ে যাবে। বাবা বলেন -- পুনরায় কল্প-পূর্বের মতন অবিকল প্রেমময় বানাতে এসেছি। কখনো কোনো বাচ্চার ক্রোধের গর্জন শুনলে, তখন বাবা শিক্ষা দেন -- বাছা, ক্রোধ করা উচিত নয়, এতে তুমিও দুঃখী হবে অন্যান্যদেরও দুঃখী করবে। বাবা সদাকালের জন্য সুখ প্রদান করেন, সে'জন্য বাচ্চাদেরকেও বাবার সমান হতে হবে। একে অপরকে দুঃখ দিও না। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে শিববাবা হলেন প্রভাতের বন্ধু..... রাত্রিকে দিবসে পরিণত করেন। সাঁই বলা হয় অসীম জগতের পিতাকে। তিনিই হলেন একমাত্র সাঁইবাবা, ভোলানাথ শিববাবা। নামই হলো ভোলানাথ। সহজ-সরল কন্যাদের, মাতাদের (মাথার) উপর জ্ঞানের কলস রাখেন । তাদেরকেই বিশ্বের মালিক করেন। কত সহজ উপায় বলে দেন। কত স্নেহ করে তোমাদের জ্ঞানের পালনা দেন। আত্মাকে পবিত্র করার জন্য স্মরণের যাত্রায় থাকো। যোগের স্নান করতে হবে। জ্ঞান হলো অধ্যয়ন। যোগ-স্নানের দ্বারা পাপ ভস্মীভূত হয়। নিজেকে আত্মা মনে করার অভ্যাস করতে থাকো। তাহলে দেহের অহংকার সম্পূর্ণ ভেঙ্গে যাবে। যোগের দ্বারাই পবিত্র সতোপ্রধান হয়ে বাবার কাছে যেতে হবে। অনেক বাচ্চারা এইসমস্ত কথাকে সঠিকভাবে বোঝে না। নিজেদের সত্য চার্ট বলে না। অর্ধেককল্প মিথ্যা দুনিয়ায় থেকেছে সে'জন্য অসততা অন্তরে জমে বসে রয়েছে। সততার সঙ্গে বাবাকে নিজের চার্ট জানানো উচিত। চেক করা উচিত যে, আমরা পৌনে এক ঘন্টা বসেছি, এ কতটা সময় নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করেছে! অনেকে আবার সত্য বলতে লজ্জা পায়। ইনি তো তৎক্ষনাৎ বলবেন যে, এতখানি সার্ভিস করেছি, এতজনকে বুঝিয়েছি কিন্তু স্মরণের চার্ট কতখানি রয়েছে, সে'বিষয়ে সত্য বলে না। স্মরণে না থাকার কারণে তোমাদের কারোর তীর লক্ষ্যভেদ করে না। জ্ঞান-তলোয়ারে তীক্ষ্ণতা থাকে না। কেউ-কেউ বলে আমরা তো নিরন্তর স্মরণে থাকি, বাবা বলেন -- তেমন ‌স্থিতি থাকে না। নিরন্তর স্মরণে থাকলে তো কর্মাতীত অবস্থা হয়ে যাবে। জ্ঞানের পরাকাষ্ঠা দেখা যাবে, এতে অনেক পরিশ্রম। বিশ্বের মালিক কি এমনিতেই হয়ে যায় নাকি, না তা হবে না। একমাত্র বাবার স্মরণ ব্যতীত আর কারোর স্মরণ যেন না আসে। এই দেহও যেন স্মরণে না আসে। এরকম অবস্থা তোমাদের পরে হবে। স্মরণের যাত্রার দ্বারাই তোমাদের উপার্জন হতে থাকবে। যদি শরীর মুক্ত হয়ে যায় তবে আর উপার্জন করতে পারবে না। যদিও আত্মা সংস্কার নিয়ে আসবে কিন্তু টিচারও তো চাই যিনি স্মরণ করাবেন। বাবা প্রতিমুহূর্তে স্মরণ করাতে থাকেন। এরকম অনেক বাচ্চা রয়েছে যারা গৃহস্থ-জীবনে থেকেও, চাকুরি ইত্যাদি করেও আরও উচ্চপদ লাভের জন্য শ্রীমতানুসারে চলে নিজেদের ভবিষ্যৎও(ভবিষ্য-জীবন) সঞ্চয় করতে থাকে। বাবার থেকে পরামর্শ নিতে থাকে। পয়সা আছে তাহলে তাকে সফল কিভাবে করবো। বাবা বলেন, সেন্টার খোলো, যাতে অনেকের কল্যাণ হয়। মানুষ দান-পুণ্যাদি করে, দ্বিতীয় জন্মে তার ফল প্রাপ্ত করে। তোমাদেরও ভবিষ্যৎ ২১ জন্মের জন্য রাজ্য-ভাগ্য প্রাপ্ত হয়। তোমাদের এ হলো এক নম্বর ব্যাংক, এখানে চার আনা রাখলে ভবিষ্যতে হাজার হয়ে যাবে। পাথর থেকে সোনা হয়ে যাবে। তোমাদের প্রতিটি বস্তু পারশ হয়ে যাবে। বাবা বলেন -- মিষ্টি বাচ্চারা, উচ্চপদ প্রাপ্ত করতে হলে মাতা-পিতাকে পুরোপুরি অনুসরণ করো আর নিজেদের কর্মেন্দ্রিয়গুলির উপর কন্ট্রোল রাখো। যদি কর্মেন্দ্রিয়গুলি বশে না থাকে, চাল-চলন সঠিক না হয় তাহলে উচ্চপদ থেকে বঞ্চিত রয়ে যাবে। নিজের চাল-চলনকে শুধরে নিতে হবে। অধিক ইচ্ছা রাখা উচিত নয়। বাবা, তুমি বাচ্চাদের কত জ্ঞান-শৃঙ্গার করিয়ে সত্যযুগের মহারাজা-মহারানী করে দাও। এর জন্য সহনশীলতার গুণ খুব ভালভাবে চাই। দেহের প্রতি অধিকমাত্রায় মোহ থাকা উচিত নয়। যোগবলের দ্বারাও কার্য সম্পন্ন করতে হবে। বাবার কতই না কাশি ইত্যাদি হয় তথাপি সদা সার্ভিসে তৎপর থাকেন। জ্ঞান-যোগের দ্বারা শৃঙ্গার করিয়ে বাচ্চাদের যোগ্য করে তোলেন। তোমরা এখন ঈশ্বরীয় কোলে, মাতা-পিতার কোলে বসেছো। বাচ্চারা, ব্রহ্মাবাবা মুখের সাহায্যে(বাণী) তোমাদের জন্ম দেন তাহলে ইনি হয়ে গেলেন মা। তথাপি কিন্তু তোমাদের বুদ্ধি শিববাবার দিকেই যায়। 'তুমি মাতা-পিতা আমরা বালক তোমার.....'। তোমাদের সর্বগুণসম্পন্ন এখানেই হতে হবে। প্রতিমুহূর্তে মায়ার কাছে পরাজিত হবে না। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

"অব্যক্ত-মহাবাক্য"
সকলে যোগ-যুক্ত এবং যুক্তি-যুক্ত স্থিতিতে স্থির হয়ে নিজেদের কার্য সম্পন্ন করছো ? কারণ বর্তমান সময়ানুসারে সঙ্কল্প, বাণী এবং কর্ম -- এই তিনটিই যুক্তি-যুক্ত হওয়া চাই তবেই সম্পন্ন এবং সম্পূর্ণ হতে পারবে। চতুর্দিকের বায়ুমন্ডল যেন যোগ-যুক্ত এবং যুক্তি-যুক্ত হয়। যেমন যুদ্ধক্ষেত্রে যোদ্ধা যখন যুদ্ধ করার জন্য শত্রুর সম্মুখীন হয় তখন তাদের নিজেদের উপর এবং নিজেদের অস্ত্র-শস্ত্রের উপর অর্থাৎ আপন শক্তির উপর কতখানি অ্যাটেনশন থাকে! সময় এখন সমীপে এসে গেছে, এটাই মনে করো যে, এখন যুদ্ধক্ষেত্রে সম্মুখে আসার সময়। চতুর্দিকের এমন সময়ানুসারে নিজের সর্বশক্তিগুলির প্রতি অ্যাটেনশন চাই। অ্যাটেনশন যদি সামান্যতম কম হয় তবে সময়ানুসারে যেমন-যেমনভাবে চতুর্দিকের টেনশন বৃদ্ধি পেতে থাকে তেমনই চতুর্দিকের টেনশনের বাতাবরণের প্রভাব যুদ্ধে উপস্থিত আধ্যাত্মিক পান্ডবসেনাদের উপরেও পড়তে পারে। দিনে-দিনে সম্পূর্ণতার সময় যত নিকটে আসতে থাকবে ততই দুনিয়ায় টেনশনও আরও বৃদ্ধি পাবে, কম হবে না। চতুর্দিকে সংকটময় জীবনের অনুভব হবে, সংকট যেন চতুর্দিক থেকে আসছে। একদিকে ছোট-ছোট প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষয়ক্ষতির টেনশন, অপরদিকে এই দুনিয়ার গভর্নমেন্টের কঠিন নিয়মাবলীর টেনশন, তৃতীয়তঃ আচার-ব্যবহারে স্বল্পতার(নমণীয়তা) টেনশন, আর চতুর্থতঃ লৌকিক আত্মীর-পরিজনাদির সঙ্গে স্নেহ এবং স্বাধীন হওয়ার জন্য অল্পসময়ের জন্য যে খুশীর অনুভূতি থাকে তাও সমাপ্ত হয়ে ভয়ের অনুভূতির টেনশনে পরিণত হয়। চতুর্দিকের এইরকম টেনশন মানুষের মধ্যে বৃদ্ধি পেতেই থাকবে। চতুর্দিকের টেনশনে আত্মারা ছটফট করবে। যেখানেই যাবে সেখানেই টেনশন। যেমন শরীরের কোনো শিরায় টান ধরলে তখন কত অসুবিধা হয়। মাথায় (মেজাজ) খিটখিটে ভাব (চিড়বিড় করে) হয়ে থাকে। সেইরকমই এমন বাতাবরণও বাড়তে থাকবে। যেমন কোনও ঠিকানা অর্থাৎ কুল-কিনারা নজরে পড়বে না যে কি করবো ? যদি 'হ্যাঁ' করি তাহলেও সংকট -- যদি 'না' করি তাহলেও সংকট -- উপার্জন করলেও মুশকিল, উপার্জন না করলেও মুশকিল। জমা করলেও মুশকিল, না করলেও মুশকিল। এইরকম বাতাবরণ তৈরী হতে থাকবে। এইরকম সময়ে চতুর্দিকের টেনশনের প্রভাব যেন আধ্যাত্মিক পান্ডবসেনাদের উপর না পড়ে। যদি নিজের টেনশনে আসার সমস্যা নাও থাকে কিন্তু বায়ুমন্ডলের প্রভাব দুর্বল আত্মাদের উপর সহজেই পড়ে। ভয়ের ভাবনা, কি হবে ? কিভাবে হবে ? -- এইসমস্ত কথার প্রভাব যেন না পড়ে -- তারজন্য মাঝে-মাঝে মধুবন দ্বারা কোনও না কোনও ঈশ্বরীয় স্মরণের যাত্রার বিশেষ প্রোগ্রাম পৌঁছে যাওয়া উচিত যার দ্বারা আত্মাদের কেল্লা মজবুত থাকবে। আজকাল সার্ভিসও অনেক বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু বৃদ্ধির সঙ্গে-সঙ্গে যুক্তি-যুক্তও হওয়া উচিত। আজকাল সম্বন্ধ সম্পর্কীয়রাই অধিকমাত্রায় আসবে। যারা স্বরূপ হবে তেমন কমসংখ্যকই আসবে। সকলেই একইরকম হবে না। দিনে-দিনে আত্মাদের কোয়ালিটিও শিথিল হবে অর্থাৎ প্রজা অধিকসংখ্যক আসবে, তাদের একটি কথাই ভাল লাগবে, দ্বিতীয়টি নয়। সব কথায় নিশ্চয় থাকবে না। তাই সম্পর্কীয়দেরও যা তাদের চাই -- সেইমতোই তাদের সম্পর্কে যুক্ত রাখতে হবে। সময় যত সংকটময় হতে থাকবে, সমস্যানুযায়ী তাদের রেগুলার স্টুডেন্ট হওয়া ততই মুশকিল হবে। কিন্তু অগণিত-সংখ্যক সম্পর্কে আসবে, কারণ শেষ সময়, তাই না! তাহলে লাস্ট পোজ কেমন হবে ? যেমন প্রথমদিকে উচ্ছ্বলতা, উদ্দীপনা, উৎসাহ থাকে -- তেমন ভাব বিরলসংখ্যক কারোর-কারোর মধ্যে থাকবে। অধিকসংখ্যক সম্বন্ধ আর সম্পর্কে থাকারাই আসবে। তাহলে এই অ্যাটেনশন চাই। এমনও নয় যে, সম্পর্কে আসা আত্মাদের পরখ না করেই তাদের সম্পর্ক থেকে বঞ্চিত করে দেবে। খালি হাতে কেউ যেন না যায়, নিয়মানুসারে অবশ্যই চলতে পারবে না। কিন্তু তারা স্নেহে থাকতে চায়, তাই এমন আত্মাদের প্রতিও অ্যাটেনশন অবশ্যই দিতে হবে। বুঝে নিতে হবে যে, এই গ্রুপ এই সময়ানুসারে তৃতীয় পর্যায়ের, সেইজন্য তাদেরকেও সেইমতোই পরিচালনা করতে হবে। আচ্ছা!

বরদান:-
স্নেহের জন্য সকল দুর্বলতাকে সমর্পণকারী সমর্থী-স্বরূপ ভব

স্নেহের নিদর্শন হলো সমর্পণ। স্নেহের জন্য সমর্পণ করলে কোনও কঠিন বা অসম্ভব বিষয়ও সম্ভব এবং সহজ অনুভূত হয়। সে'জন্য সমর্থী-স্বরূপের বরদান দ্বারা সকল দুর্বলতাকে বিবশ হয়ে নয় হৃদয় থেকে সমর্পণ করো। কারণ সত্য-পিতার কাছে সত্যই স্বীকৃত হয়। তাই কেবল বাবার স্নেহের গায়ন কোরো না বরং স্বয়ং পিতা-সম অব্যক্ত স্থিতি স্বরূপ হও, যাতে সকলেই তোমাদের জয়গান করে।

স্লোগান:-
সঙ্কল্প অথবা স্বপ্নেও যেন একমাত্র হৃদয়রামেরই (দিলারাম) স্মরণ থাকে, তবেই বলা হবে সত্যিকারের তপস্বী।