21-01-2021 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা এখানে এসেছো সর্বশক্তিমান বাবার থেকে শক্তি নিতে অর্থাৎ প্রদীপে জ্ঞানের ঘৃত ঢালতে”

*প্রশ্নঃ -

শিবের বরযাত্রীর গায়ন কেন আছে ?

*উত্তরঃ -

কারণ শিববাবা যখন ফিরে যান তখন সব আত্মারা সদলবলে শিববাবার পিছনে ছুটে যায়। মূলবতনেও (পরমধামে) আত্মারা মৌচাকের মতন একত্রিত হয়ে থাকে। তোমরা বাচ্চারা যারা পবিত্র হও তারা বাবার সঙ্গে ফিরে যাও। যেহেতু সঙ্গে যাও তাই বরযাত্রী বলা হয়।

ওম্ শান্তি । বাচ্চাদেরকে সর্বপ্রথমে একটি পয়েন্ট বুঝতে হবে যে আমরা সবাই হলাম ভাই-ভাই এবং তিনি হলেন সকলের পিতা। তাঁকেই সর্বশক্তিমান বলা হয়। তোমাদের মধ্যে সর্বশক্তি ছিল। বিশ্বে তোমাদের রাজত্ব ছিল। ভারতেই এই দেবী-দেবতাদের রাজ্য ছিল। অর্থাৎ বাচ্চারা তোমাদের রাজ্য ছিল। তোমরা পবিত্র দেবী-দেবতা ছিলে, তোমাদের কুল বা বংশ ছিল, তারা সবাই নির্বিকারী ছিল। কারা নির্বিকারী ছিল ? আত্মারা। এখন তোমরা পুনরায় নির্বিকারী হতে চলেছ। যেমন তোমরা সর্বশক্তিমান পিতাকে স্মরণ করে তাঁর কাছে শক্তি প্রাপ্ত করছো। বাবা বুঝিয়েছেন আত্মা ৮৪-র পার্ট প্লে করে। আত্মার সতোপ্রধান শক্তি যা ছিল সেসব দিন-প্রতিদিন কম হতে থাকে। সতোপ্রধান থেকে তমোপ্রধান হতে হয়। যেমন ব্যাটারির শক্তি যখন কমে যায় তখন মেশিন থেমে যায়। ব্যাটারি ডিসচার্জ হয়ে যায়। আত্মা রূপী ব্যাটারি পুরোপুরি ডিসচার্জ হয় না, একটু শক্তি থেকে যায়। যেমন কারো মৃত্যু হলে দীপ প্রজ্বলিত করা হয়, তাতে ঘৃত ঢালা হয় যাতে প্রদীপ নিভে না যায়। ব্যাটারির শক্তি কম হলে চার্জ করা হয়। এখন তোমরা বাচ্চারা বুঝেছো - তোমাদের আত্মা সর্বশক্তিমান ছিল, এখন পুনরায় তোমরা সর্বশক্তিমান পিতার সঙ্গে নিজের বুদ্ধিযোগ সংযুক্ত করছো। যাতে বাবার শক্তিতে আমরা ভরপুর হই, কারণ আত্মার শক্তি কম হয়ে গেছে। অবশ্য একটু শক্তি থেকেই যায়। একদম শেষ হয়ে গেলে তো শরীর থাকবে না। আত্মা, পিতাকে স্মরণ করতে করতে সম্পূর্ণ পবিত্র হয়ে যায়। সত্যযুগে তোমাদের ব্যাটারি ফুল চার্জ থাকে পরে একটু করে কমতে থাকে। ত্রেতায় মিটার কম হয়, যাকে কলা (কোয়ালিটি) বলা হয়। তখন বলা হবে আত্মা যে সতোপ্রধান ছিল সে সতো হয়ে যায়, শক্তি কম হয়ে যায়। তোমরাও বুঝেছো আমরা মানুষ থেকে দেবতায় পরিণত হয়ে যাই সত্যযুগে। এখন বাবা বলেন - আমাকে স্মরণ করো তাহলে তোমরা তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে যাবে। এখন তোমরা তমোপ্রধান হয়েছো তাই শক্তিহীন হয়েছো। বাবার স্মরণে থাকলে সম্পূর্ণ শক্তি পুনরায় প্রাপ্ত হয়ে যাবে, কারণ তোমরা জানো দেহ সহ দেহের সব সম্বন্ধ, সব শেষ হয়ে যাবে তারপরে তোমরা অসীম জগতের রাজ্য প্রাপ্ত করো। পিতা যখন অসীম জগতের তখন অসীম জগতের উত্তরাধিকার-ই প্রদান করবেন। এখন তোমরা হলে পতিত, তোমাদের শক্তি একেবারে কম হয়েছে। হে বাচ্চারা - এখন তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমি অলমাইটি, আমার দ্বারা অলমাইটি রাজত্ব প্রাপ্ত হয়। সত্যযুগে দেবী-দেবতা সম্পূর্ণ বিশ্বের মালিক ছিল, পবিত্র ছিল, দিব্য গুণে সম্পন্ন ছিল। এখন সেই দিব্য গুণ নেই। সকলের ব্যাটারি পুরোপুরি ডিসচার্জ হয়ে যাচ্ছে। এইসময় ব্যাটারি পুনরায় ভরপুর হয়। একমাত্র পরমপিতা পরমাত্মার সঙ্গে যোগ যুক্ত না হলে ব্যাটারি চার্জ হওয়া সম্ভব নয়। এক পিতা হলেন সদা পবিত্র। এখানে সবাই হল অপবিত্র। যখন পবিত্র থাকে তখন ব্যাটারি চার্জ থাকে। অতএব বাবা বোঝান একের স্মরণে থাকতে হবে। উঁচু থেকে উঁচু হলেন ভগবান। বাকি সবই হল রচনা। রচনা থেকে রচনার উত্তরাধিকার প্রাপ্তি হয় না। সৃষ্টি কর্তা তো হলেন একজনই। উনি হলেন অসীম জগতের পিতা। বাকি সবাই হল দেহের জগতের, সীমিত জগতের। অসীম জগতের পিতাকে স্মরণ করলে অসীম জগতের বাদশাহী প্রাপ্ত হয়। অতএব বাচ্চাদের মনে বোধ করা উচিত - আমাদের জন্য বাবা নতুন দুনিয়া স্বর্গের স্থাপনা করছেন। ড্রামা প্ল্যান অনুযায়ী স্বর্গের স্থাপনা হচ্ছে। তোমরা জানো - সত্যযুগ আসছে। সত্যযুগে থাকে সদা সুখ। সেই সুখ কীভাবে প্রাপ্ত হয় ? বাবা বসে বোঝান মামেকম্ স্মরণ করো। আমি সদা পবিত্র। আমি কখনও মনুষ্য দেহ ধারণ করি না। না দেবতা দেহ ধারণ করি, না মনুষ্য দেহ অর্থাৎ আমি জন্ম-মরণে আসি না। শুধুমাত্র বাচ্চারা, তোমাদেরকে স্বর্গের বাদশাহী প্রদান করতে, যখন ব্রহ্মাবাবা ৬০ বছর বয়সে বাণপ্রস্থ অবস্থায় থাকেন তখন এনার দেহে আসি। কেবল ব্রহ্মাবাবা পুরোপুরি সতোপ্রধান থেকে তমোপ্রধান হয়েছে। সর্বোচ্চ নম্বরে হলেন ভগবান তারপরে সূক্ষ্মবতনবাসী ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শঙ্কর, যার সাক্ষাৎকার হয়। সূক্ষ্মবতন হল মধ্যিখানে। যেখানে শরীর থাকতে পারে না। সূক্ষ্ম শরীর শুধুমাত্র দিব্য দৃষ্টি দ্বারা দেখা সম্ভব। মনুষ্য সৃষ্টি তো আছে এখানে । যদিও তারা তো হলেন কেবল সাক্ষাৎকারের জন্য অ্যাঞ্জেল স্বরূপ। তোমরা বাচ্চারাও শেষ সময়ে যখন পূর্ণ পবিত্র হয়ে যাও তখন তোমাদেরও সাক্ষাৎকার হয়। এমন অ্যাঞ্জেল বা ফরিস্তা হয়ে পরে সত্যযুগে এখানে এসেই স্বর্গের মালিক হবে। এই ব্রহ্মা কিন্তু বিষ্ণুকে স্মরণ করেন না। ইনিও শিববাবাকেই স্মরণ করেন এবং ইনিই পরে বিষ্ণু স্বরূপে পরিণত হন। সুতরাং এই কথাটি বুঝতে হবে তাইনা। এনারা রাজ্য প্রাপ্ত করেন কীভাবে! যুদ্ধ ইত্যাদি তো কিছুই হয় নি। দেবতারা হিংসা করবেন কীভাবে!

এখন তোমরা বাচ্চারা পিতাকে স্মরণ করে রাজত্ব প্রাপ্ত কর। কেউ বিশ্বাস করুক বা না করুক। গীতায়ও আছে - হে বাচ্চারা, দেহ সহ দেহের সব ধর্ম ত্যাগ করে মামেকম্ স্মরণ করো। তাঁর তো দেহ নেই যে আসক্তি থাকবে। তিনি বলেন আমি খুব কম সময়ের জন্য ব্রহ্মার শরীর লোনে নিয়ে থাকি। তা নাহলে নলেজ প্রদান করি কীভাবে! আমি তো হলাম বীজরূপ তাইনা। এই সম্পূর্ণ বৃক্ষের নলেজ আমার কাছে আছে। অন্য কেউ জানেনা, এই সৃষ্টির আয়ু কত ? কীভাবে সৃষ্টির স্থাপনা, পালনা (রক্ষণাবেক্ষণ), বিনাশ হয় ? মানুষের তো এই জ্ঞান থাকা উচিত। মানুষ পড়াশোনা করে। পশুপাখী তো পড়ে না। মানুষ পড়া করে সীমিত জগতের বা পার্থিব জগতের পড়াশোনা। শিববাবা তোমাদের অসীম জগতের পড়া পড়াচ্ছেন, যার দ্বারা তোমাদের অসীম জগতের মালিক তৈরি করেন। অতএব এই কথা বুঝতে হবে ভগবান কোনও মানুষকে বা দেহধারীকে বলা হয় না। ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শঙ্করের আছে সূক্ষ্ম দেহ। এনাদের নাম আলাদা, ভগবান বলা যাবে না। এই শরীরটি তো ব্রহ্মাবাবার আত্মার বসার স্থান ছিল। অকাল তখ্ত তাইনা। এখন এই হল অকালমূর্ত বাবার তখ্ত অর্থাৎ বসার স্থান। অমৃতসরেও একটি অকাল তখ্ত আছে তাইনা। উঁচু মানের যারা হয় তারা অকাল তখ্তে গিয়ে বসে। এখন বাবা বোঝান এইসব দেহ হল অকাল আত্মাদের তখ্ত অর্থাৎ বসার স্থান। আত্মা হল অকাল যাকে কাল গ্রাস করতে পারেনা। যদিও তখ্ত তো বদলাতে থাকে। অকালমূর্ত আত্মা এই তখ্তে এসে বসে। প্রথমে তখ্ত ছোট থাকে পরে বড় হয়ে যায়। আত্মা এক দেহ ত্যাগ করে অন্য দেহ ধারণ করে। আত্মা হল অকাল। আত্মাতেই যদিও ভালো ও খারাপ সংস্কার থাকে তাইতো বলা হয় এই হল কর্মের ফল। আত্মা কখনও বিনাশ হয় না । আত্মার পিতা হল এক। এই কথা তো বুঝতে হবে তাইনা। এই বাবা কোনও শাস্ত্রের কথা কি শোনান ! শাস্ত্র ইত্যাদি পড়ে কেউ ফিরে তো যেতে পারেনা। শেষকালে সবাই যাবে। যেমন পঙ্গপালের দল বা মৌমাছির দল যায় ঠিক তেমন ভাবে। মৌমাছিদের মক্ষীরানী থাকে। তার পিছনে সবাই উড়ে যায়। বাবাও যাবেন তাঁরই পিছনে সব আত্মারা যাবে। ওইখানে মূলবতনে অর্থাৎ পরমধামে সব আত্মারা মৌচাকের মতন একত্র হয়ে থাকবে। এখানে আছে মানুষের দল। সুতরাং এই দলও একদিন ফিরে যাবে। বাবা এসে সব আত্মাদের ফিরিয়ে নিয়ে যান। শিবের বরযাত্রা বলা হয়। আত্মাদের সন্তান বলো বা সজনী বলো। বাবা এসে আত্মারূপী বাচ্চাদের পড়িয়ে স্মরণের যাত্রা করা শেখান। পবিত্র না হয়ে তো আত্মা ফিরে যেতে পারেনা। যখন পবিত্র হয়ে যাবে তখন সর্বপ্রথমে শান্তিধামে যাবে। সেখানে গিয়ে সবাই বাস করে। সেখান থেকে পরে ধীরে-ধীরে নীচে আসে, বৃদ্ধি হতে থাকে। তোমরাও প্রথমে অনুসরণ করেবে বাবাকে। তোমরা বাচ্চারা, তোমাদের যোগ পিতার সঙ্গে অথবা তোমরা সজনী তোমাদের যোগ থাকে সজনের সঙ্গে। রাজধানী তো তৈরি হবে তাইনা। সবাই একসাথে তো আসবে না। পরমধাম হল সব আত্মাদের দুনিয়া। সেখান থেকে এক এক করে নম্বর অনুযায়ী নীচে আসে। বৃক্ষটি ধীরে-ধীরে বৃদ্ধি পায়। সর্বপ্রথমে হল আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম, যে ধর্ম শিবপিতা স্থাপন করেন। প্রথমে আমাদেরকে ব্রাহ্মণ করেন। প্রজাপিতা ব্রহ্মা আছে তাইনা। প্রজায় ভাই-বোনেরা থাকে। ব্রহ্মাকুমার ও কুমারীদের সংখ্যা অনেক। অবশ্যই নিশ্চয়বুদ্ধি হয়েছে তবেই তো সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্রাহ্মণদের সংখ্যা কত ? কাঁচা বা পাকা ? কেউ তো ৯৯ নম্বর নেয়, আর কেউ ১০ নম্বর নেয় অর্থাৎ কাঁচা তাইনা। তোমাদের মধ্যেও যারা পাকা আছে তারা অবশ্যই প্রথমে আসবে। যারা কাঁচা তারা পরে আসবে। এই হল পার্টধারীদের দুনিয়া যা নিরন্তর চলতে থাকে। সত্যযুগ, ত্রেতা....এখন এই হল পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ। এই কথাটি এখন বাবা বলেছেন। প্রথমে তো আমরা উল্টো কথা বুঝেছি যে কল্পের আয়ু হল লক্ষ বছরের। এখন বাবা বলেছেন এই হল পুরোপুরি ৫ হাজার বছরের চক্র। অর্ধকল্প হল রাম রাজ্য, অর্ধকল্প হল রাবণ রাজ্য। লক্ষ বছরের কল্প যদি হয় তাহলে অর্ধেক হওয়া অসম্ভব। দুঃখ এবং সুখের এই দুনিয়া এমন ভাবেই রচিত। অসীম জগতের এই জ্ঞান অসীম জগতের পিতার কাছেই প্রাপ্ত হয়। শিববাবার দেহের কোনো নাম নেই। এই দেহটি তো ব্রহ্মাবাবার। বাবা কোথায় ? শিববাবা কিছু সময়ের জন্য লোনে নিয়েছেন। বাবা বলেন আমার তো মুখের প্রয়োজন তাইনা। এখানেও গৌ মুখ বানানো হয়েছে। পাহাড় বয়ে জল তো যেখানে-সেখানে নেমে আসে। এখানে যদিও গৌ মুখ বানিয়ে দিয়েছে, তাতে জল আসে, তাকেই গঙ্গাজল ভেবে নেয়। এখানে গঙ্গা এলো কোথা থেকে ? এইসবই হল মিথ্যা। মিথ্যা কায়া, মিথ্যা মায়া, মিথ্যা সব সংসার। ভারত যখন স্বর্গ ছিল তখন সত্যখন্ড বলা হত তারপরে ভারত-ই পুরানো হয় তখন মিথ্যাখন্ড বলা হয়। এই মিথ্যা খণ্ডে যখন সবাই পতিত হয়ে যায় তখন আহবান করে - বাবা আমাদের পবিত্র করে এই পুরানো দুনিয়া থেকে নিয়ে চলো। বাবা বলেন আমার সব বাচ্চারা কাম চিতায় বসে শ্যাম বর্ণে পরিণত হয়েছে। বাবা বসে বাচ্চাদের বোঝান তোমরা তো স্বর্গের মালিক ছিলে তাইনা! স্মরণে আছে না। বাচ্চাদের বোঝান, পুরো দুনিয়াকে বোঝান না। তোমাদেরই বোঝান যাতে তোমরা জানতে পারো যে আমাদের পিতা কে !

এই দুনিয়াকে বলা হয় কাঁটার জঙ্গল। সবচেয়ে বড় কাঁটা হল কাম বিকারের। যদিও এই দুনিয়ায় অনেক ভক্ত আছে, নিরামিষাশী আছে, কিন্তু এমন তো নয় যে বিকারগ্রস্ত হয় না। সে তো অনেক বালক ব্রহ্মচারীও আছে। শৈশব থেকে কখনও তামসিক ভোজন গ্রহণ করেনি। সন্ন্যাসীরাও বলে - নির্বিকারী হও। তারা মানুষ, দেহের জগতের সন্ন্যাস করায়। পর জন্মে পুনরায় গৃহস্থের গৃহে জন্ম হয় পরে ঘর সংসার ত্যাগ করে চলে যায়। সত্যযুগে কৃষ্ণ ইত্যাদি দেবতাগণ কখনও কি ঘর সংসার ত্যাগ করেন? না। সুতরাং তাদের হল দেহের জগতের সন্ন্যাস। এখন তোমাদের হল অসীম জগতের অর্থাৎ আত্মিক দুনিয়ার সন্ন্যাস। সম্পূর্ণ দুনিয়ার,সকল আত্মীয়স্বজন ইত্যাদির সন্ন্যাস ক'র তোমরা। তোমাদের জন্য স্বর্গের স্থাপনা হচ্ছে। তোমাদের বুদ্ধি স্বর্গের দিকেই যাবে। অতএব শিববাবাকেই স্মরণ করতে হবে। অসীম জগতের পিতা বলেন আমাকে স্মরণ করো। মন্মনাভব, মধ্যাজি ভব। তাহলে তোমরা দেবতায় পরিণত হবে। এই হল সেই গীতার এপিসোড। সঙ্গমযুগও আছে। আমি সঙ্গমেই জ্ঞান প্রদান করি। রাজযোগ অবশ্যই পূর্ব জন্মে সঙ্গমে শিখবে । এই সৃষ্টি পরিবর্তনশীল, তোমরা পতিত থেকে পবিত্র হয়ে যাও। এখন এই হল পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ, যখন আমরা এই তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হই। প্রতিটি কথা ভালো রীতি বুঝে দৃঢ় নিশ্চয় করা উচিত। এই কথা কোনো মানুষ তো বলছে না। এই হল শ্রীমৎ অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ থেকে শ্রেষ্ঠ মত, ভগবানের। বাকি সবই হল মনুষ্য মত। মনুষ্য মতে নীচে নামতে থাকো। এখন শ্রীমৎ দ্বারা তোমরা উপরে উঠে যাও। বাবা মানুষ থেকে দেবতা বানিয়ে দেন। দৈব মত হল স্বর্গবাসীদের এবং এই হল নরকবাসী মনুষ্য মত, যাকে রাবণ বলা হয়। রাবণ রাজ্য কোনো অংশে কম নয়। সম্পূর্ণ দুনিয়ায় আছে রাবণের রাজ্য। এই হল অসীমের লঙ্কা যেখানে রাবণের রাজ্য রয়েছে পরে দেবতাদের পবিত্র রাজ্য হবে। সেখানে অসীম সুখ থাকে। স্বর্গের মহিমা অনেক। বলাও হয় স্বর্গে গেছে। অর্থাৎ নরকে ছিল তাইনা। নরক থেকে গিয়ে তো আবার নরকেই আসবে তাইনা! স্বর্গ এখন কোথায় আছে? এইসব কথা কোনো শাস্ত্রে নেই। এখন বাবা তোমাদের সম্পূর্ণ নলেজ প্রদান করছেন। ব্যাটারি ভরপুর হচ্ছে। মায়া আবার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আচ্ছা!

মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

*ধারণার জন্যে মুখ্য সারঃ-*

১ ) মন-বাণী-কর্মে পবিত্র হয়ে আত্মা রূপী ব্যাটারি চার্জ করতে হবে। পাকা ব্রাহ্মণ হতে হবে।

২ ) মনমত বা মনুষ্য মত ত্যাগ করে এক পিতার শ্রীমৎ অনুসরণ করে নিজেকে শ্রেষ্ঠ বানাতে হবে। সতোপ্রধান হয়ে বাবার সঙ্গে উড়ে যেতে হবে।

*বরদানঃ-*

শ্রীমতের আধারে খুশী, শক্তি ও সফলতা অনুভবকারী সর্ব প্রাপ্তি সম্পন্ন ভব

যে বাচ্চারা নিজেকে ট্রাস্টি ভেবে শ্রীমৎ অনুসারে চলে, শ্রীমতে একটুও মনমত (নিজস্ব মতামত) বা পরমত (অন্যদের মতামত) মিক্স করে না তাদের নিরন্তর খুশী, শক্তি ও সফলতার অনুভূতি হয়। পুরুষার্থ বা পরিশ্রম কম হওয়া সত্ত্বেও প্রাপ্তি বেশী হবে তখন বলা হবে যথার্থ শ্রীমৎ অনুসরণকারী। কিন্তু মায়া, ঈশ্বরীয় মতে মনমত বা পরমত রয়্যাল রূপে মিক্স করে দেয় তাই সর্বপ্রাপ্তির অনুভব হয় না। এর জন্য পরখ করার শক্তি এবং নির্ণয় করার শক্তি ধারণ করো তাহলে কখনো ধোঁকা খাবে না।

*স্লোগানঃ-*

যে বালক সে-ই মালিক, কেবল তারা-ই হয় যারা তপস্যার শক্তি দ্বারা ভাগ্যবিধাতা বাবাকে আপন করে নেয়।