03-02-2021 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - সবাইকে বার্তা শোনাও যে বাবার নির্দেশ হলো - যদি এই পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে পবিত্র হও, তবে সত্যযুগের উত্তরাধিকার পেয়ে যাবে”

*প্রশ্নঃ -

কোন্ সস্তা লেনদেনের কথা সবাইকে বলতে হবে ?

*উত্তরঃ -

যদি এই অন্তিম জন্মে বাবার নির্দেশ অনুসারে চলে পবিত্র হও, তবে ২১ জন্মের জন্য বিশ্বের রাজত্ব পেয়ে যাবে। এটা খুবই সস্তা লেনদেন। তোমরা সবাইকে এই ব্যবসাটা শিখিয়ে দাও। বলো - এখন শিববাবাকে স্মরণ করে পবিত্র হলে, পবিত্র দুনিয়ার মালিক হয়ে যাবে।

ওম্ শান্তি । আত্মা রূপী সন্তানরা জানে যে আত্মিক পিতা উপদেশ দিচ্ছেন - প্রদর্শনী বা মেলায় শো দেখিয়ে মানুষকে বোঝাও যে, এখন বাবার কাছ থেকে অসীম জগতের উত্তরাধিকার নিতে হবে। কিসের উত্তরাধিকার ? মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার। বোঝাতে হবে যে কীভাবে অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে অর্ধেক কল্পের জন্য স্বর্গের রাজত্ব নেওয়া যায়। বাবা তো একজন ব্যবসায়ী, তাঁর সঙ্গে ব্যবসা করতে হবে। মানুষ জানে যে দেবী দেবতারা পবিত্রই থাকে। ভারতে যখন সত্যযুগ ছিল, তখন দেবী-দেবতারা পবিত্র ছিল। স্বর্গপ্রাপ্তির জন্য নিশ্চয়ই তারা কোনো উপার্জন করেছিল। এই প্রাপ্তি তো কেবল স্বর্গের স্থাপক বাবা ছাড়া অন্য কেউ করাতে পারবে না। পতিত-পাবন বাবা-ই পতিতদেরকে পবিত্র বানিয়ে পবিত্র দুনিয়ার রাজত্ব দান করেন। কতো সস্তায় লেনদেন করেন। কেবল বলছেন - এটাই তোমাদের অন্তিম জন্ম। যতক্ষণ আমি এখানে আছি, তোমরা পবিত্র হয়ে যাও। আমি পবিত্র বানানোর জন্যই এসেছি। এই অন্তিম জন্মে তোমরা পবিত্র হওয়ার পুরুষার্থ করলে পবিত্র দুনিয়ার উত্তরাধিকার পেয়ে যাবে। খুব সস্তার লেনদেন। তাই বাবার মনে খেয়াল এসেছে যে বাচ্চাদেরকে এইভাবে বোঝাতে হবে যে, বাবা পবিত্র হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এটাই হলো পবিত্র হওয়ার পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ। দেবতারাই হলেন সর্বোত্তম। লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজত্ব ছিল। তোমরা সমগ্র দৈব দুনিয়ার রাজত্ব বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেতে পারো। বাবার শ্রীমৎ অনুসারে এই অন্তিম জন্মে পবিত্র থাকার জন্য যোগবলের দ্বারা নিজেকে তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান করার উপায়ও বলে দেন। নিজের কল্যাণের জন্য বাচ্চাদেরকে অবশ্যই খরচ করতে হবে। খরচা না করলে তো রাজধানী স্থাপন হবে না। লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। বাচ্চাদেরকে অবশ্যই পবিত্র হতে হবে। মন, বাণী কিংবা কর্মের দ্বারা কোনো উল্টোপাল্টা কাজ করা যাবে না। দেবতাদের মধ্যে কোনো খারাপ চিন্তা ভাবনা আসবে না, মুখ থেকে এইরকম কথাবার্তা বেরোবে না। ওরা সকলেই সর্বগুণে সম্পন্ন, সম্পূর্ণ নির্বিকার, মর্যাদা পুরুষোত্তম…। অতীতে যারা ছিল, তাদেরই গুণগান করা হয়। বাচ্চারা, এখন তোমাদেরকেও দেবী-দেবতা বানাতে এসেছি। তাই মন, বাণী কিংবা কর্মের দ্বারা কোনো খারাপ কাজ করো না। দেবতারা সম্পূর্ণ নির্বিকার ছিলেন। এই গুণ তোমরা এই সময়েই ধারণ করতে পারো কারণ এই মৃত্যুপুরীতে এটাই তোমাদের অন্তিম জন্ম। পতিত দুনিয়াকে মৃত্যুপুরী আর পবিত্র দুনিয়াকে অমরপুরী বলা হয়। মৃত্যুপুরীর বিনাশ এখন অতি নিকটে। তাহলে অবশ্যই অমরপুরী স্থাপন হচ্ছে। এটাই সেই মহাভারতের প্রবল যুদ্ধ, যেটা শাস্ত্রে দেখানো হয়েছে, যার দ্বারা পুরাতন বিকারগ্রস্থ দুনিয়ার বিনাশ হয়ে যায়। কিন্তু কারোর মধ্যেই এই জ্ঞান নেই। বাবা বলছেন, সকলেই অজ্ঞান নিদ্রায় নিমগ্ন। ৫ বিকারের নেশায় আচ্ছন্ন। বাবা এখন উপদেশ দিচ্ছেন - পবিত্র হও। মাস্টার গড তো হতেই হবে, তাই না ? লক্ষ্মী-নারায়ণকে গড-গডেজ বলা হয়। নিশ্চয়ই ভগবানের (গড) কাছ থেকে এই উত্তরাধিকার পেয়েছিল। এখন ভারত পতিত হয়ে গেছে, সকলে মন, বাণী এবং কর্মের দ্বারা এইরকম কাজই করে। কোনো কথা আগে মনের মধ্যে আসবে, তারপর মুখ দিয়ে বেরোবে। কর্ম করা হলে বিকর্ম তৈরি হয়ে যায়। বাবা বলছেন, ওখানে কোনো বিকর্ম হয় না। এখানে বিকর্ম হয় কারন এটা হলো রাবণের রাজত্ব। বাবা বলছেন, আর যতটা আয়ু আছে, ততদিন পবিত্র থাকো। পবিত্র হওয়ার প্রতিজ্ঞা করার পর আমার সঙ্গে বুদ্ধি যুক্ত করতে হবে যার দ্বারা তোমাদের জন্ম জন্মান্তরের পাপ নাশ হয়ে যায়। তাহলেই তোমরা ২১ জন্মের জন্য স্বর্গের মালিক হয়ে যাবে। বাবা অফার করছেন। বোঝাচ্ছেন যে এনার মাধ্যমে বাবা এইরকম উত্তরাধিকার দিচ্ছেন। তিনি হলেন শিববাবা আর ইনি হলেন ঠাকুরদাদা। তাই সর্বদা বাপদাদা বলা হয়। শিব বাবা এবং ব্রহ্মা ঠাকুরদাদা। বাবা কতো ভালো লেনদেন করছেন। এই মৃত্যুপুরীর বিনাশ অতি নিকটে। অমরপুরী স্থাপন হচ্ছে। ভারতবাসীদের কল্যাণের জন্যই প্রদর্শনী কিংবা মেলার আয়োজন করা হয়। বাবা এসেই ভারতে রাম রাজ্য স্থাপন করেন। রাম রাজ্যে অবশ্যই পবিত্র আত্মারাই থাকবে। বাবা বলছেন - বাচ্চারা, কাম বিকার অনেক বড় শত্রু। এই ৫ বিকারকেই মায়া বলা হয়। এদেরকে পরাজিত করতে পারলেই তোমরা জগৎজিৎ হয়ে যাবে। কেবল দেবতারাই হলো জগৎজিৎ, আর কেউ জগৎজিৎ হতে পারে না। বাবা বুঝিয়েছেন যে যদি খ্রিস্টানরা নিজেরা মিলিত হয়ে যায়, তবে সমগ্র বিশ্বে রাজত্ব করতে পারবে। কিন্তু সেটা হওয়ার নেই। এইসব বোমা তো পুরাতন দুনিয়ার ধ্বংসের জন্যই আছে। প্রতি কল্পেই এইভাবে নতুন থেকে পুরাতন দুনিয়া এবং পুরাতন থেকে নতুন হয়। নতুন দুনিয়ায় ঐশ্বরিক রাজত্ব থাকে, যাকে রাজরাজ্য বলা হয়। ঈশ্বরকে না জানার জন্য এমনিই রাম-রাম বলতে থাকে। তবে তোমাদের মতো বাচ্চাদের অন্তরে এইসব বিষয়ে ধারণা থাকা উচিত। বরাবর আমরা ৮৪ বার জন্ম নিয়ে সতোপ্রধান থেকে তমোপ্রধান হয়েছি। এখন পুনরায় সতোপ্রধান হতে হবে। এগুলো শিববাবার নির্দেশ। এই নির্দেশ অনুসারে চললে ২১ জন্মের জন্য পবিত্র দুনিয়ায় উঁচু পদমর্যাদা পাবে। এবার তুমি চাইলে পুরুষার্থ করবে অথবা করবে না, তুমি চাইলে স্মরণ করবে, অন্যদেরকে রাস্তা দেখাবে, অথবা দেখাবে না। প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাচ্চারা অনেকজনকে রাস্তা বলে দেয়। নিজেরও কল্যাণ করতে হবে। এটা খুবই সস্তার লেনদেন। কেবল অন্তিম জন্ম পবিত্র থাকলে আর শিববাবাকে স্মরণ করলে তোমরা তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে যাবে। কতো সস্তা ব্যবসা। জীবনটাই পুরো পাল্টে যায়। এইরকম ভাবে চিন্তা ভাবনা করতে হবে। বাবার কাছে বিভিন্ন খবরাখবর আসে। রাখি পরাতে গেলে কেউ কেউ বলে যে আজকাল এই তমোপ্রধান দুনিয়ায় পবিত্র থাকা তো অসম্ভব। কিন্তু ওই বেচারারা জানেই না যে এটা হলো সঙ্গমযুগ। বাবা-ই পবিত্র বানান। পরমপিতা এদের সহায়। ওরা জানে না যে এখানে কতো বড় প্রাপ্তি হয়। পবিত্র থাকলে পবিত্র দুনিয়ার মালিক হওয়া যায়। বাবা বলছেন, এই মায়ারূপী ৫ বিকারকে পরাজিত করলে তুমি বিশ্বজিৎ হয়ে যাবে। তাহলে আমরা পবিত্র থাকব না কেন ? ফার্স্টক্লাস ব্যবসা। বাবা বলছেন, কাম বিকার খুব বড় শত্রু। একে পরাজিত করতে পারলেই পবিত্র হয়ে যাবে। এটাই হলো যোগবলের দ্বারা মায়াকে পরাজিত করার বিষয়। পরমপিতা পরমাত্মা এসে আত্মাদেরকে বোঝাচ্ছেন যে আমাকে স্মরণ করলেই খাদ বার হবে, তোমরা সতোপ্রধান দুনিয়ার মালিক হয়ে যাবে। বাবা এই সঙ্গমযুগেই উত্তরাধিকার দেন। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ সবথেকে উত্তম ছিল, এদেরকেই মর্যাদা পুরুষোত্তম দেবী-দেবতা ধর্ম বলা হয়। অনেক ভালো ভাবে বোঝানো হলেও কখনো কখনো এইসব পয়েন্ট ভুলে যাও। পরে মনে হয় যে বক্তৃতা দেওয়ার সময়ে এই এই পয়েন্টগুলো বোঝানো হয়নি। বোঝানোর জন্য অনেক পয়েন্ট আছে। অনেক সময়ে অনেক উকিলও কিছু পয়েন্ট ভুলে যায়। পরে সেই পয়েন্ট মনে পড়লে আবার লড়াই করে। ডাক্তারদের ক্ষেত্রেও এইরকম হয়। তারা ভাবনা চিন্তা করে যে এই ব্যাধির জন্য এই ঔষধ কাজে আসতে পারে। এখানেও অনেক পয়েন্ট আছে। বাবা বলছেন, আজকে তোমাদেরকে একটা খুব সূক্ষ্ম বিষয় বোঝাচ্ছি। কিন্তু যারা বুঝবে, তারা সবাই পতিত। তাঁকে পতিত পাবন বলা হয়। কিন্তু কাউকে যদি পতিত বলো, তবে সে রেগে যাবে। তবে ভগবানের সামনে গিয়ে সত্যি কথা বলে - হে পতিত পাবন, তুমি এসে আমাদেরকে পবিত্র বানাও। কিন্তু ঈশ্বরকে ভুলে গেলেই মিথ্যে কথা বলে দেয়। তাই খুব যুক্তি দেখিয়ে বোঝাতে হবে যাতে সাপও মরে, লাঠিও না ভাঙে। বাবা বলেন, ইঁদুরের কাছ থেকেও শিক্ষা নাও। ইঁদুর এমন ভাবে কামড়ায় যে রক্ত বেরোলেও কিছুই বুঝতে পারা যায় না। অতএব, বাচ্চাদের বুদ্ধিতে সমস্ত পয়েন্ট রাখতে হবে। যারা যোগযুক্ত থাকে, তারা প্রয়োজনের সময়ে সাহায্য পেয়ে যায়। যে শোনাচ্ছে, তার থেকেও যে শুনছে সে বাবার কাছে বেশি প্রিয় হতে পারে। বাবা স্বয়ং বসে থেকে বোঝাচ্ছেন। এমনভাবে বোঝাতে হবে যাতে ওরা মনে করে যে পবিত্র হওয়া তো খুবই ভালো। এই এক জন্ম পবিত্র থাকলে, আমরা ২১ জন্ম পবিত্র দুনিয়ার মালিক হয়ে যাব। ভগবানুবাচ - যদি এই অন্তিম জন্ম পবিত্র থাকো, তবে আমি কথা দিচ্ছি যে ড্রামার পরিকল্পনা অনুসারে তোমরা ২১ জন্মের জন্য উত্তরাধিকার পেতে পারবে। আমরা প্রতি কল্পেই এই উত্তরাধিকার পেয়ে থাকি। যার সেবার প্রতি রুচি থাকবে, সে বুঝবে যে অন্যদেরকে গিয়ে বোঝাতে হবে। দৌড়ঝাঁপ করতে হবে। বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর, তিনি অসীম জ্ঞান বর্ষণ করে যাচ্ছেন। যে আত্মা যত পবিত্র, তার তত ভালো ধারণা হয়, খুব নামডাক হয়। প্রদর্শনী এবং মেলার মাধ্যমেই বোঝা যায় যে কে কত ভালো সেবা করতে পারে। টিচারকে পরখ করে দেখতে হবে যে কে কেমন ভাবে বোঝায়। লক্ষ্মী-নারায়ণ এবং সিঁড়ির ছবি বোঝানো সবথেকে ভালো। যোগবলের দ্বারা পুনরায় এইরকম লক্ষ্মী-নারায়ণ হওয়া যায়। লক্ষ্মী-নারায়ণই আদিদেব এবং আদিদেবী হয়। চতুর্ভূজ চিত্রের দ্বারা লক্ষ্মী-নারায়ণ দুজনকেই বোঝানো হয়। দুটো হাত লক্ষ্মীর আর দুটো হাত নারায়ণের। তবে এই বিষয়টাও ভারতবাসীরা জানে না। মহালক্ষ্মীরও চারটে হাত রয়েছে। এর অর্থ হলো যুগল (জোড়া) রূপ। বিষ্ণু তো চতুর্ভূজই হয়।

প্রদর্শনীতে প্রতিদিন বোঝানো হয়। রথ দেখানো হয়েছে। বলা হয়, তাতে অর্জুন বসে আছে আর কৃষ্ণ রথ চালাচ্ছে। ওগুলো সব গল্পকথা। এগুলোই হলো জ্ঞানের বিষয়। জ্ঞান অমৃতের কলসী লক্ষ্মীর মাথায় দেখানো হয়। বাস্তবে জগদম্বার ওপরেই এই কলসী রাখা হয়েছে, যিনি পরবর্তীকালে লক্ষ্মী হন। এই বিষয়টাও বোঝাতে হবে। সত্যযুগে সকল মানুষের ধর্ম এবং মত অভিন্ন হয়। দেবতাদের মত একইরকম হয়। দেবতাদেরকেই শ্রী বলা হয়। আর কাউকে শ্রী বলা যাবে না। বাবা ভাবছিলেন যে অল্প কথার মধ্যে বোঝাতে উচিত। এই অন্তিম জন্মে ৫ বিকারকে পরাজিত করলেই তুমি রামরাজ্যের মালিক হয়ে যাবে। কতো সস্তা সওদা। বাবা এসে অবিনাশী জ্ঞান রত্ন দান করছেন। বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর। তিনিই জ্ঞান রত্ন দান করেন। ইন্দ্রের সভায় পোখরাজ পরী, নীলম পরী থাকে। সকলেই সাহায্য করছে। অনেক রকমের অলংকার থাকে। তাই নবরত্ন দেখানো হয়। যে ভালো পড়াশুনা করবে, সে অবশ্যই ভালো পদমর্যাদা পাবে। ক্রম অনুসারেই হবে। এটাই হলো পুরুষার্থ করার সময়। বাচ্চারা বুঝতে পারে যে আমরা বাবার মালার দানা হয়ে যাই। যত বেশি শিববাবাকে স্মরণ করবে, এই স্মরণের যাত্রার প্রতিযোগিতায় তত এগিয়ে যাবে। তাড়াতাড়ি পাপ নাশ হবে।

এই পড়াশোনা তো তেমন জটিল কিছু নয়। কেবল পবিত্র থাকতে হবে আর দিব্যগুণ ধারণ করতে হবে। মুখ থেকে কখনো পাথরের মতো (দুঃখদায়ী) কথা বলা যাবে না। যারা পাথর নিক্ষেপ করবে, তাদের বুদ্ধিও পাথরের মতো হয়ে যাবে। যারা রত্ন দান করবে, তারাই ভালো পদমর্যাদা পাবে। এটা খুবই সহজ ব্যাপার। আগ্রহী ব্যক্তিদের বোঝাও - পতিত-পাবন, যিনি সবাইকে মুক্তি এবং মুক্ত-জীবন দান করেন, সেই পরমপিতা পরমাত্মা শিব বলছেন - আমার ভারতবাসী আত্মা রূপী বাচ্চারা, কলিযুগের রাবণরাজ্য অর্থাৎ মৃত্যুপুরীর এই অন্তিম জন্মে পবিত্র হয়ে থাকলে এবং পরমপিতা পরমাত্মা শিবের সাথে বুদ্ধি দ্বারা যোগবলের যাত্রা করলে তমোপ্রধান আত্মারা সতোপ্রধান আত্মা হয়ে ৫ হাজার বছর আগের মতো পুনরায় সত্যযুগের দুনিয়ায় পবিত্রতা, সুখ, শান্তি, সম্পত্তিতে পরিপূর্ণ মর্যাদা পুরুষোত্তম দিব্য স্বরাজ্য পদ পেতে পারবে। তবে অবশ্যম্ভাবী প্রবল বিনাশের আগেই বাবা আমাদেরকে উত্তরাধিকার দিচ্ছেন, শিক্ষা দিচ্ছেন। যত বেশি পড়াশুনা করবে, তত ভালো পদমর্যাদা পাবে। তিনি অবশ্যই তাঁর সাথে নিয়ে যাবেন। তাহলে আমরা কেন এই পুরাতন শরীর কিংবা এই দুনিয়ার কথা চিন্তা করব ? এটা তো তোমাদের জন্য পুরাতন দুনিয়াকে ত্যাগ করার সময়। এইসব কথা নিয়ে যদি বুদ্ধিতে মন্থন চলতে থাকে, তবে অতি উত্তম। পুরুষার্থ করতে করতে যত সময় এগিয়ে আসবে, তখন ভবিষ্যতে আর ঝিমুনি আসবে না। তখন দেখবে যে এই দুনিয়ার তো আর সামান্য সময় অবশিষ্ট আছে তাই বুদ্ধি দ্বারা যুক্ত হতে হবে। সেবা করলে অনেক সাহায্যও পাওয়া যায়। যত বেশী করে কাউকে সুখের রাস্তা দেখাবে, তত খুশিতে থাকবে। পুরুষার্থ তো চলতেই থাকে। ভাগ্য ক্রমশঃ স্পষ্ট হয়। বাবা পুরুষার্থ করা শেখাচ্ছেন। কেউ কেউ সেই অনুসারে চলতে শুরু করে দেয়, কেউ কেউ করে না। তোমরা জানো যে কোটিপতি কিংবা কোটি-কোটিপতিরা তো এক নিমেষে ধুলিস্মাৎ হয়ে যাবে। আচ্ছা !

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।

*ধারণার জন্যে মুখ্য সারঃ-*

১ ) উঁচু পদমর্যাদা পাওয়ার জন্য মুখ থেকে সর্বদা রত্নই বের করতে হবে, পাথর নয়। মন, বাণী এবং কর্মের দ্বারা এমন কর্ম করতে হবে যাতে মর্যাদা পুরুষোত্তম হওয়া যায়।

২ ) এই অন্তিম জন্মে পবিত্র হওয়ার প্রতিজ্ঞা করতে হবে। সবাইকে পবিত্র হওয়ার যুক্তি বলতে হবে।

*বরদানঃ-*

সর্বদা কল্যাণকর ভাবনার দ্বারা গুণগ্রাহী হয়ে অচল-অটল ভব

আপন অবস্থাকে অচল-অটল বানানোর জন্য গুণগ্রাহী হও। যদি প্রত্যেক বিষয়ে গুণগ্রাহী হতে পারো, তবে কখনোই চঞ্চল হবে না। গুণগ্রাহী মানে কল্যাণকর ভাবনা। খারাপ গুণের মধ্যেও ভালো গুণ খুঁজে নেওয়াকেই গুণগ্রাহীতা বলা হয়। তাই খারাপ গুণ সম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে থেকেও ভালো গুণ খুঁজে নাও। ওরা যেমন খারাপ গুণের বিষয়ে সুদৃঢ়, সেইরকম তুমিও গুণের বিষয়ে মজবুত হও। ভালো গুণ গ্রহণ করো, খারাপ গুণ নয়।

*স্লোগানঃ-*

যে নিজের সবকিছু বাবাকে অর্পণ করে সর্বদা হাল্কা থাকে, সে-ই ফরিস্তা।