26.02.2021 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


“মিষ্টি বাচ্চারা - সঙ্গমে তোমাদের নতুন আর একেবারে আলাদা জ্ঞান প্রাপ্ত হয়, তোমরা জানো যে আমরা সকল আত্মারা হলাম অভিনেতা। একজনের পার্ট অন্যজনের সাথে মেলে না”

প্রশ্নঃ -
মায়ার উপর জয় প্রাপ্ত করার জন্য তোমরা আধ্যাত্মিক যোদ্ধাদের (ক্ষত্রিয়দের) কোন্ যুক্তি প্রাপ্ত হয়েছে ?

উত্তরঃ -
হে আধ্যাত্মিক ক্ষত্রিয়, তোমরা সর্বদা শ্রীমৎ অনুসারে চলতে থাকো। আত্ম অভিমানী হয়ে বাবাকে স্মরণ করো, প্রতিদিন সকাল সকাল উঠে স্মরণে থাকার অভ্যাস তৈরী করো, তাহলে মায়ার উপরে বিজয় প্রাপ্ত করতে পারবে। উল্টো-পাল্টা সংকল্পের থেকে বেঁচে যাবে। স্মরণের মিষ্টি যুক্তি মায়াজিৎ বানিয়ে দেবে।

গীতঃ-
যার সাথী হলেন ভগবান...

ওম্ শান্তি ।
এটা হল মানুষের দ্বারা তৈরী হওয়া গান। এর অর্থ কেউ কিছুই জানেনা। গান, ভজন ইত্যাদি গাইতে থাকে। ভক্তরা মহিমা করতে থাকে কিন্তু কিছুই জানেনা। মহিমা অনেক করতে থাকে। বাচ্চারা তোমাদেরকেও কোনো মহিমা করতে হয়না। বাচ্চারা বাবার কখনো মহিমা করে না। বাবা জানেন যে এরা হলো আমার বাচ্চা। বাচ্চারা জানে ইনি হলেন আমাদের বাবা। এখন এটা হল অসীম জগতের কথা। তবুও সকলে অসীম জগতের বাবাকে স্মরণ করে। এতদিন পর্যন্তও স্মরণ করে এসেছে। ভগবানকে বলে যে - হে বাবা। এঁনার নাম হল শিব বাবা। যেরকম আমরা হলাম আত্মা সেইরকম তিনি হলেন শিব বাবা। তিনি হলেন পরম আত্মা, যাকে সুপ্রিম বলা হয়, আমরা হলাম তাঁর বাচ্চা। তাঁকে সুপ্রিম সোল অর্থাৎ পরম আত্মা বলা হয় । তাঁর নিবাস স্থান কোথায় ? পরম ধামে। সমস্ত আত্মারা সেখানেই থাকে। সকল আত্মারাই হলো অভিনেতা। তোমরা জানো যে নাটকের অভিনেতাদের মধ্যে নম্বরের ক্রম হয়ে থাকে। প্রত্যেকের পার্ট অনুসারে সেই মতো মূল্য প্রাপ্ত হয়। সেখানে যে আত্মা থাকে তারা প্রত্যেকেই হলো পার্টধারী কিন্তু নম্বরের ক্রম অনুসারে সকলের পার্ট প্রাপ্ত হয়েছে। অাত্মিক বাবা বসে বোঝাচ্ছেন যে আত্মাদের মধ্যে কিভাবে অবিনাশী পার্ট পূর্ব থেকে নির্ধারিত হয়ে থাকে। সমস্ত আত্মাদের পার্ট এক রকম হতে পারে না। সকলের মধ্যে একই রকম শক্তি নেই। তোমরা জানো যে সব থেকে ভালো পাঠ তাদের, যারা প্রথমদিকে শিব বাবার রুদ্র মালাতে আছে। নাটকে যারা খুব ভালো ভালো অভিনেতা হয় তাদের অনেক মহিমা হয়ে থাকে। কেবল তাদেরকে দেখার জন্যও লোকেরা যায়। তো এটাই হল অসীম জগতের ড্রামা। এই অসীম জগতের ড্রামাতেও উঁচু হলেন এক বাবা। তাঁকে সর্বোচ্চ অ্যাক্টর, ক্রিয়েটার, ডাইরেক্টরও বলা যায়, তারা সবাই হল লৌকিক জগতের অভিনেতা, ডাইরেক্টর ইত্যাদি। তাদের নিজেদের ছোট পার্ট প্রাপ্ত হয়। আত্মাই ভূমিকা পালন করে কিন্তু দেহ অভিমানের কারণে বলে দেয় যে মানুষের এইরকম পার্ট আছে। বাবা বলেন সমস্ত পার্টই হল আত্মার। আত্ম অভিমানী হতে হয়। বাবা বুঝিয়েছেন যে সত্যযুগে আত্ম-অভিমানী হয়ে থাকে। বাবাকে জানে না। এখানে কলিযুগে তো আত্ম-অভিমানী নেই আর বাবাকেও জানে না। এখন তোমরা আত্ম-অভিমানী হচ্ছ। বাবাকেও জেনেছো।

তোমাদের অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের একবারই আলাদা জ্ঞান প্রাপ্ত হচ্ছে। তোমরা আত্মাকে জেনে গেছ যে আমরা সবাই হলাম আত্মা, অভিনেতা। প্রত্যেকেরই পার্ট প্রাপ্ত হয়েছে যেটা পরস্পরের সাথে মেলে না। সমস্ত পার্ট আত্মার মধ্যেই আছে। এমনিতেও তো যে নাটক তৈরি হয়, সেই পার্টও আত্মাই ধারণ করে। ভালো পার্টও আত্মাই গ্রহণ করে। আত্মাই বলে যে আমি হলাম গভর্নর, আমি অমুক। কিন্তু আত্ম-অভিমানী হয়না। সত্যযুগে বুঝবে যে আমি হলাম আত্মা। এক শরীর ছেড়ে দ্বিতীয় নেবে। পরমাত্মাকে সেখানে কেউ জানবে না, এই সময় তোমরা সবকিছু জেনে গেছো। শূদ্র আর দেবতাদের থেকে তোমরা ব্রাহ্মণেরা হলে উত্তম। এত অধিক ব্রাহ্মণ কোথা থেকে আসবে, যে তৈরী হবে। প্রদর্শনীতে লক্ষাধিক আসে। যে ভালোভাবে বুঝবে, জ্ঞান শুনবে তারা প্রজা হয়ে যাবে। এক-এক রাজার অনেক প্রজা হবে। তোমরা অনেক প্রজা তৈরি করছ। প্রদর্শনী, প্রজেক্টরের দ্বারা কেউ কেউ বুঝে ভালো ভালোও তৈরী হয় । শিখবে, যোগ করবে। এখন তারা বেরিয়ে আসবে। প্রজাও বেরোবে তারপর ধনী, রাজা-রানী, গরিব ইত্যাদি সবাই বেরিয়ে আসবে। প্রিন্স প্রিন্সেস অনেক হবে। সত্যযুগ থেকে ত্রেতা পর্যন্ত প্রিন্স প্রিন্সেস হবে। কেবল ৮ জন বা ১০৮ জন তো হবে না। কিন্তু এখন সবাই তৈরি হচ্ছে। তোমরা সেবা করতে থাকো। এটাও নতুন কিছু নয়। তোমরা যদি কোনো অনুষ্ঠান করো, এও নাথিং নিউ (নতুন কিছু নয়) । অনেকবার করেছ পুনরায় সঙ্গম যুগে করবে, আর কি করবে! বাবা এসেছেন পতিতদেরকে পাবন বানাতে। একে বলা হয় ওয়ার্ল্ড-এর হিস্ট্রি জিওগ্রাফি। প্রত্যেক কথাতে নম্বরের ক্রম তো হবেই। তোমাদের মধ্যে যে ভালো ভাষণ করতে পারে তাকে সবাই বলবে যে এ খুব সুন্দর ভাষণ করেছে। অন্যদের শুনবে তো বলবে যে প্রথমজন খুব ভালো বোঝাতে পারে। তৃতীয়জন তার থেকেও ভালো হলে তো বলবে যে এ তো তার থেকেও অধিক ভালো বোঝায়। প্রত্যেক কথাতে পুরুষার্থ করতে হবে যে আমি তার থেকে উপরে যাব। যারা দক্ষ হবে তারা ঝট্ করে হাত তুলবে ভাষণ করার জন্য। তোমরা সবাই হলে পুরুষার্থী, পরবর্তীকালে মেল ট্রেন হয়ে যাবে। যেইরকম মাম্মা স্পেশাল মেল ট্রেন ছিলেন। বাবার বিষয়ে তো জানা যায় না, কেননা দুজন একসঙ্গে ছিলেন। তোমরা বুঝতে পারবে না যে কে বলছেন। তোমরা সর্বদা এটাই বুঝবে যে শিব বাবা বোঝাচ্ছেন। বাবা আর দাদা দু'জনে জানেন কিন্তু তিনি হলেন অন্তর্যামী। বাইরে থেকে বলেন যে ইনি তো খুবই হুশিয়ার। বাবাও মহিমা শুনে খুশি হন। লৌকিক বাবার কোনো বাচ্চা যদি ভালো রকম পড়াশোনা করে উঁচু পদ প্রাপ্ত করে, তখন বাবা বোঝেন যে এই বাচ্চার ভালো নাম হবে। ইনিও বোঝেন যে অমুক বাচ্চা এই আধ্যাত্মিক সেবাতে খুবই হুশিয়ার। মুখ্য হলো ভাষণ করা, কাউকে বাবার পরিচয় দেওয়া, বোঝানো। বাবা উদাহরণও বলেছিলেন যে কারো ৫টি বাচ্চা ছিল, তো কেউ জিজ্ঞাসা করেছিল যে তোমার কতগুলো বাচ্চা ? তো বলেছিল যে আমার দুটি বাচ্চা। তাকে বলল তোমার তো ৫ টি বাচ্চা। তখন সে বলল, সুপুত্র হল দুটি। এখানেও এরকম। বাচ্চা তো অনেক আছে। বাবা বলবেন যে এই ডাক্তার নির্মলা বাচ্চী খুবই ভালো। অত্যন্ত প্রেমের সাথে লৌকিক বাবাকে বুঝিয়ে সেন্টার খুলিয়েছে। এটাই হল ভারতের সেবা। তোমরা ভারতকে স্বর্গ বানাচ্ছ। রাবণ এই ভারতকে নরক বানিয়েছে। একজন সীতা বন্দি ছিলেন না, তোমরা সীতারা রাবণের কাছে বন্দি ছিলে। বাকি শাস্ত্রে তো সব গল্প-কথা বলে দিয়েছে। এই ভক্তি-মার্গও ড্রামাতে আছে। তোমরা জানো যে সত্যযুগ থেকে যেটা ঘটে এসেছে সেটাই পুনরাবৃত্তি হবে। তোমরাই পূজ্য তোমরাই পূজারী হও। বাবা বলেন, আমাকে এসে পূজারী থেকে পূজ্য বানাতে হয়। প্রথমে গোল্ডেন এজড্ তারপর আয়রন এজড্ হতে হয়। সত্যযুগে সূর্যবংশী লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য ছিল। রামরাজ্য তো চন্দ্রবংশী ছিল।

এই সময় তোমরা সবাই হলে আধ্যাত্মিক ক্ষত্রিয় (যোদ্ধা)। যুদ্ধের ময়দানে আগতকে ক্ষত্রিয় বলা যায়। তোমরা হলে আধ্যাত্মিক ক্ষত্রিয়। বাকি অন্যরা হল লৌকিক ক্ষত্রিয়। তাদেরকে বলা যায় বাহুবলের দ্বারা লড়াই ঝগড়া করে। শুরু থেকে মল্লযুদ্ধ হতো হাত ইত্যাদির দ্বারা। নিজেদের মধ্যে লড়াই করতো তারপর বিজয় প্রাপ্ত করত। এখন তো দেখো বম্বস্ ইত্যাদি তৈরী হয়েছে। তোমরাও হলে ক্ষত্রিয়, তারাও হলো ক্ষত্রিয়। শ্রীমতে চলে তোমরা মায়ার উপর জয় লাভ করো। তোমরা হলে আধ্যাত্মিক ক্ষত্রিয়। এই শরীরের কর্মেন্দ্রিয় দ্বারা আত্মাই সবকিছু করছে। আত্মাকে বাবা এসে শেখাচ্ছেন - বাচ্চারা, আমাকে স্মরণ করলে মায়া আক্রমণ করবে না। তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে আর তোমাদের উল্টোপাল্টা সংকল্প আসবে না। বাবাকে স্মরণ করলে খুশিও থাকবে । এইজন্য বাবা বোঝাচ্ছেন যে, সকাল সকাল উঠে অভ্যাস করো। বাবা তুমি কত মিষ্টি। আত্মা বলছে - বাবা। বাবা নিজের পরিচয় দিয়েছেন - আমি হলাম তোমাদের বাবা, তোমাদেরকে সৃষ্টির আদি মধ্য অন্তের জ্ঞান শোনাতে এসেছি। এটা হল মনুষ্যসৃষ্টির উল্টো বৃক্ষ। এটি হলো ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের মনুষ্যসৃষ্টি, একে বলা যায় বিরাট লীলা। বাবা বুঝিয়েছেন যে এই মানুষের বৃক্ষের আমি হলাম বীজ রূপ। আমাকে স্মরণ করে। কে কোন্ বৃক্ষের, কে কোন বৃক্ষের। তবুও নম্বরের ক্রমানুসারে বেরিয়ে আসে। এটাই ড্রামা তৈরি হয়ে আছে। কথিত আছে যে অমুক ধর্ম স্থাপক দেবদূতকে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে পাঠান না। এটা ড্রামা অনুসারে পুনরাবৃত্তি ঘটে। এই একজনই আছেন যিনি ধর্ম আর রাজধানী স্থাপন করেছেন। এটা দুনিয়াতে কেউই জানেনা। এখন হল সঙ্গম। বিনাশের জ্বালা প্রজ্বলিত হবেই। এটি হল শিব বাবার জ্ঞান যজ্ঞ। তারা রুদ্র নাম রেখে দিয়েছে। প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারা তোমরা ব্রাহ্মণেরা জন্ম নিয়েছে, তাইনা। তোমরা হলে সবথেকে শ্রেষ্ঠ। পিছনে আরো অনেকে বেরিয়ে আসে। বাস্তবে তো সবাই হল ব্রহ্মার বাচ্চা। ব্রহ্মাকে বলা যায় গ্রেট গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদার। বিভাগ আছে, সবার প্রথমে ব্রহ্মা হলেন উঁচুতে তারপর শাখা বিভাজন হয়েছে। বলা হয় ভগবান সৃষ্টি কিভাবে রচনা করেন। রচনা তো আছে। যখন তারা পতিত হয় তখন তাঁকে আহ্বান করে। তিনিই এসে দুঃখী সৃষ্টিকে সুখী বানান, এইজন্য আহ্বান করে, বাবা, দুঃখ হরণকারী সুখ প্রদানকারী এসো। নাম রেখে দিয়েছে হরিদ্বার। হরিদ্বার অর্থাৎ হরির দ্বার। সেখানে গঙ্গা প্রবাহিত হচ্ছে। মনে করে যে আমরা গঙ্গা স্নান করলে হরির দ্বারে চলে যাব। কিন্তু হরির দ্বার কোথায় আছে ? তারা তখন কৃষ্ণকে বলে দেয়। হরির দ্বার তো হলেন শিব বাবা। দুঃখ হরণকারী সুখ প্রদানকারী। প্রথমে তোমাদেরকে যেতে হবে নিজ নিকেতনে । বাচ্চারা, তোমাদের এখন নিজের বাবার আর ঘরের জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছে। বাবার স্থান হল উপরে। ফুল হলো উপরে তারপর যুগল দানা তার থেকে নিচে। তখন বলা হবে রুদ্র মালা। রুদ্র মালা তারপর বিষ্ণুর মালা। বিষ্ণুর গলার হার সেটাই যারা বিষ্ণুপুরীতে রাজত্ব করবে। ব্রাহ্মণদের মালা হয় না, কেননা সময়ে সময়ে তা ভেঙে যায় । বাবা বোঝান, নম্বরের ক্রমানুসারে তো আছে তাই না। আজ ঠিক আছে কাল তুফান এসে যায়, গ্রহের দশা এসে গেলে ঠাণ্ডা পড়ে যায়। বাবা বলেন, তারা আমার হয়, আশ্চর্যবৎ শোনে, অন্যদেরকে শোনায়ো, ধ্যানে যায়, মালাতে এসে... পুনরায় একদম ভাগন্তি, চন্ডাল হয়ে যায়। তাহলে মালা কিভাবে হবে ? তাই বাবা বোঝাচ্ছেন, ব্রাহ্মণদের কোনও মালা হয়না। ভক্ত মালা আলাদা, রূদ্র মালা আলাদা। ভক্ত মালাতে মুখ্য হলো নারীদের মধ্যে মীরা আর পুরুষদের মধ্যে নারদ। এটাই হলো রুদ্র মালা। সঙ্গমে বাবা-ই এসে মুক্তি জীবনমুক্তি প্রদান করেন। বাচ্চারা বুঝে গেছে যে আমরাই স্বর্গের মালিক ছিলাম। এখন নরকে আছি। বাবা বলছেন, নরককে লাথি মারো, স্বর্গের রাজত্ব গ্রহণ করো, যেটা রাবণ তোমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল। এটা তো বাবা এসে বলে দেন। তিনি এই সকল শাস্ত্র তীর্থ ইত্যাদিকে জানেন। তিনি হলেন বীজ রূপ, তাই না। জ্ঞানের সাগর, শান্তির সাগর.... এটা আত্মা বলছে।

বারা বোঝান যে, এই লক্ষ্মী-নারায়ণ সত্যযুগের মালিক ছিল। তার আগে কি ছিল ? অবশ্যই কলিযুগের অন্ত হবে তাহলে তো সঙ্গম যুগ হতে হবে পুনরায় এখন স্বর্গ তৈরি হচ্ছে। বাবাকে স্বর্গের রচয়িতা বলা হয়, স্বর্গ স্থাপন করছেন। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ স্বর্গের মালিক ছিলেন। এঁনাদের অবিনাশী উত্তরাধিকার কোথা থেকে প্রাপ্ত হয়েছে ? স্বর্গের রচয়িতা বাবার থেকে। এই উত্তরাধিকার বাবার দ্বারাই প্রদত্ত। তোমরা যে কাউকে জিজ্ঞেস করতে পারো যে এই লক্ষ্মী-নারায়ণের সত্যযুগে রাজধানী ছিল, তারা তা কিভাবে গ্রহণ করেছিলেন ? কেউ বলতে পারবে না। এই দাদাও বলছেন যে, আমিও জানতাম না। পূজা করতাম কিন্তু কিছুই জানতাম না। এখন বাবা বুঝিয়েছেন - এই সঙ্গমেই রাজযোগ শিখছে। গীতাতেই রাজযোগের বর্ণনা আছে। গীতা ছাড়া আর কোনও শাস্ত্রে রাজযোগের কথা নেই। বাবা বলেন, আমি তোমাদেরকে রাজাদেরও রাজা তৈরি করছি। ভগবানই এসে নর থেকে নারায়ণ হওয়ার জ্ঞান প্রদান করেন। ভারতের মুখ্য শাস্ত্র হল গীতা। গীতা কবে রচনা করা হয়েছে এটা জানেনা। বাবা বলেন, আমি কল্প-কল্পের সঙ্গমে আসি। যাদেরকে রাজ্য দিয়েছিলাম তারা রাজ্য হারিয়ে পুনরায় তমোপ্রধান দুঃখী হয়ে পড়েছে। এখন এটা হল রাবণের রাজ্য। সমগ্র ভারতেরই কাহিনি এটি। ভারত হলো অলরাউন্ড, অন্যান্যরা তো সব পরে আসে। বাবা বলেন, তোমাদেরকে ৮৪ জন্মের রহস্য বলছি। ৫ হাজার বছর পূর্বে তোমরা দেবী দেবতা ছিলে, তোমরা নিজেদের জন্মকে জানতে না, হে ভারতবাসী! বাবা এসেছেন অন্তিম সময়ে। আদিতে এলে তো আদি মধ্য অন্তের জ্ঞান কিভাবে শোনাবেন! সৃষ্টির বৃদ্ধিই যদি না হয় তো কিভাবে বোঝাবেন ? সেখানে তো জ্ঞানের দরকারই নেই। বাবা এখন সঙ্গম যুগেই জ্ঞান প্রদান করতে এসেছেন। তিনি হলেন নলেজ ফুল, তাই না। অবশ্যই জ্ঞান শোনাতে এই অন্তিম সময় আসতে হয়। আদিতে তোমাদেরকে কি শোনাবেন! এটা হল বোঝার বিষয়। ভগবানুবাচ যে আমি তোমাদেরকে রাজযোগ শেখাচ্ছি। এ হল পাণ্ডব গভর্মেন্টের ইউনিভার্সিটি। এখন হল সঙ্গম - যাদব, কৌরব আর পাণ্ডব। তারা সেনা দেখিয়ে দিয়েছে । বাবা বোঝাচ্ছেন যে যাদব কৌরব বিনাশ কালে বিপরীত বুদ্ধি। পরস্পরকে গালি দেয়। বাবার সাথে প্রীতি নেই। বলে দেয় যে কুকুর বিড়াল সকলের মধ্যে পরমাত্মা আছে। বাকি পান্ডবদের প্রীত-বুদ্ধি ছিল। পাণ্ডবদের সাথে ছিলেন স্বয়ং পরমাত্মা। পান্ডব মানে আধ্যাত্মিক পান্ডা। তারা হল লৌকিক পান্ডা, তোমরা হলে আধ্যাত্মিক পান্ডা। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) আত্ম অভিমানী হয়ে এই অসীম জগতের নাটকে হিরো পার্ট পালন করতে হবে। প্রত্যেক অভিনেতার পার্ট নিজ নিজ। এই জন্য কারো পার্ট দেখে ঈর্ষা ক'রো না।

২ ) সকাল সকাল উঠে নিজের সাথে কথা বলতে হবে, অভ্যাস করতে হবে - আমি এই শরীরের কর্মেন্দ্রিয়ের থেকে আলাদা। বাবা তুমি কতই না মিষ্টি, তুমি আমাকে সৃষ্টির আদি মধ্য অন্তের জ্ঞান দিয়েছো।

বরদান:-
সর্বদা দেহ অভিমান এবং দেহের দুর্গন্ধ থেকে দূরে থেকে ইন্দ্রপ্রস্থ নিবাসী ভব

বলা হয় যে ইন্দ্রপ্রস্থে পরীরা ছাড়া আর কোনও মানুষ থাকতে পারে না। মানুষ অর্থাৎ যে নিজেকে আত্মা না মনে করে দেহ মনে করে। তাই দেহ অভিমান আর দেহের পুরানো দুনিয়া, পুরানো সম্বন্ধের থেকে সর্বদা উপরে উড়তে থাকো। অল্প একটুও মনুষ্যভাবের দুর্গন্ধ যেন না থাকে। দেহী-অভিমানী স্থিতিতে থাকো, জ্ঞান আর যোগের ডানা মজবুত হলে তবে বলা যাবে ইন্দ্রপ্রস্থ নিবাসী।

স্লোগান:-
নিজের শরীর, মন, ধনকে সফল করে বা সকল খাজানাকে বৃদ্ধি যে করতে পারে, সে-ই হল সুবুদ্ধি সম্পন্ন।