01.03.2021 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা -- তোমাদের পরস্পরের সঙ্গে অত্যন্ত আত্মিক স্নেহময় হয়ে থাকতে হবে, কখনও মতভেদ হওয়া উচিত নয়"

প্রশ্নঃ -
প্রত্যেক ব্রাহ্মণ বাচ্চারই নিজের হৃদয়কে(মন) কোন্ কথা জিজ্ঞাসা করা উচিত ?

উত্তরঃ -
নিজের হৃদয়কে প্রশ্ন করো -- ১) আমি কী ঈশ্বরের হৃদয়ে স্থান পেয়েছি ! ২) আমার মধ্যে দিব্যগুণের ধারণা কতখানি এসেছে ? ৩) আমি ব্রাহ্মণ ঈশ্বরীয় সার্ভিসে বিঘ্ন ঘটাই না তো! ৪) সদা ক্ষীরখন্ড অর্থাৎ মিলেমিশে থাকি কী! পরস্পরের সঙ্গে মতের মিল আছে তো ? ৫) আমি কী সর্বদা শ্রীমত পালন করি ?

গীতঃ-
ভোলানাথের থেকেও অনন্য আর কেউ নেই....

ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা, তোমরা হলে ঈশ্বরীয় সম্প্রদায়। পূর্বে ছিলে আসুরীক সম্প্রদায়। আসুরীয় সম্প্রদায়রা জানেই না যে ভোলানাথ কাকে বলে। এও জানে না যে, শিব-শঙ্করের মধ্যে অন্তর রয়েছে। সেই শঙ্কর হলেন দেবতা, শিব হলেন পিতা। কিছুই জানে না। এখন তোমরা হলে ঈশ্বরীয় সম্প্রদায় অথবা ঈশ্বরীয় পরিবার। ওটা হলো রাবণের আসুরীয় পরিবার। কত পার্থক্য রয়েছে। এখন তোমরা ঈশ্বরীয় পরিবারে ঈশ্বর দ্বারা শিক্ষা প্রাপ্ত করছো যে পরস্পরের সঙ্গে আত্মিক প্রেম কেমন থাকা উচিত। ব্রাহ্মণ কুলে পরস্পরের মধ্যে এই আত্মিক প্রেম এখান থেকেই ভরতে হবে। যাদের সম্পূর্ণ ভালবাসা থাকবে না তারা (উচ্চ) পদও পাবে না। ওখানে তো হয়ই এক ধর্ম, এক রাজ্য। পরস্পরের সঙ্গে কোনো ঝগড়া-বিবাদ হয় না। এখানে তো রাজত্ব নেই। ব্রাহ্মণদের মধ্যেও দেহ-অভিমানের কারণে মত-পার্থক্য হয়ে যায়। এইরকম মতের অমিল থাকে যাদের তারা সাজা ভোগ করে তারপর পাশ করবে। তারপর সেখানে যখন এক ধর্ম হয়, তখন সেখানে শান্তি বিরাজ করে। এখন ওইদিকে হলো আসুরীক সম্প্রদায় বা আসুরীক পরিবারের মতন। এখানে হলো ঈশ্বরীয় পরিবারভুক্ত। ভবিষ্যতের জন্য দৈবী-গুণ ধারণ করছে। বাবা সর্বগুণসম্পন্ন করে দেন। সকলেই তো হয় না। যে শ্রীমতানুসারে চলে সে-ই বিজয়মালার দানা হয়ে যায়। যে হবে না সে প্রজায় চলে আসবে। ওখানে তো দৈব গভর্নমেন্ট রয়েছে। ১০০ শতাংশ পবিত্রতা, শান্তি, সমৃদ্ধি থাকে। এখন এই ব্রাহ্মণ কুলেই দিব্যগুণ ধারণ করতে হবে। কেউ তো ভালভাবে দৈবী-গুণ ধারণ করে, অন্যান্যদেরকেও করিয়ে থাকে। ঈশ্বরীয় কুলেও পরস্পরের মধ্যে আত্মিক স্নেহ তখনই হবে যখন দেহী-অভিমানী হবে, সেইজন্য পুরুষার্থ করতে থাকে। অন্তিমেও সকলের অবস্থা একরস, একইরকমের তো হতে পারে না। তখন সাজাভোগ করে পদভ্রষ্ট হয়ে পড়বে। স্বল্প পদ প্রাপ্ত করবে। ব্রাহ্মণদের মধ্যেও কেউ যদি পরস্পরের সঙ্গে ক্ষীরখন্ড অর্থাৎ মিলেমিশে না থাকে, পরস্পর বিরোধী হয়ে থাকে, দৈবী-গুণ ধারণ না করে তাহলে সে উচ্চপদ কীভাবে প্রাপ্ত করতে পারবে ? বিরোধী হওয়ার কারণে কোথাও ঈশ্বরীয় সেবাতেও বিঘ্ন ঘটাতে থাকে। যার ফলে কি হয় সে এতটা উচ্চপদ লাভ করতে পারে না। একদিকে ক্ষীরখন্ড হওয়ার পুরুষার্থ করে, অন্যদিকে মায়া বিরোধী করে দেয়, যার কারণে সার্ভিসের বদলে ডিসসার্ভিস করে। বাবা বসে-বসে বোঝান যে, তোমরা হলে ঈশ্বরীয় পরিবারভুক্ত। থাকোও তো ঈশ্বরের সঙ্গে। কেউ সঙ্গে থাকে, কেউ-কেউ অন্যান্য গ্রামে থাকে কিন্তু হও তো তোমরা একত্রিতই, তাই না! বাবাও ভারতেই আসেন। মানুষ একথা জানে না যে, বাবা কবে আসেন, এসে কি করেন ? তোমরা বাবার মাধ্যমে এখনই পরিচয় পেয়েছো। এখন তোমরা রচয়িতা এবং রচনার আদি-মধ্য-অন্তকে জানো। দুনিয়া জানে না যে এই চক্র কিভাবে আবর্তিত হয়, এখন কোন্ সময় চলছে, সম্পূর্ণভাবে গভীর অন্ধকারে রয়েছে। বাচ্চারা, রচয়িতা বাবা এসে তোমাদের সব সমাচার শুনিয়েছেন। সঙ্গে-সঙ্গে বুঝিয়ে থাকেন যে -- হে শালিগ্রামেরা আমায় স্মরণ করো। এ'কথা শিববাবা বলেন তাঁর সন্তানদের। তোমরা তো পবিত্র হতে চাও, তাই না! আহ্বান করে এসেছো। এখন আমি এসেছি। শিববাবা আসেনই ভারতকে পুনরায় শিবালয়ে পরিনত করতে, রাবণ বেশ্যালয়ে পরিনত করে। নিজেরাই গায় যে আমরা হলাম পতিত বিকারী। ভারত সত্যযুগে সম্পূর্ণ নির্বিকারী ছিল। নির্বিকারী দেবতাদের বিকারী মানুষ পুজো করে। পুনরায় নির্বিকারীই বিকারী হয়ে যায়। তা কারোর জানা নেই। পূজ্যরাই তো নির্বিকারী ছিল পুনরায় পূজারী বিকারী হয়ে গেছে, তবেই তো আহ্বান করে -- হে পতিত-পাবন এসো, এসে নির্বিকারী করো। বাবা বলেন -- এই অন্তিম জন্মে তোমরা পবিত্র হও। মামেকম্ স্মরণ করো তবেই তোমাদের পাপস্খলন হবে আর তোমরা তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে যাবে, তারপরে আবার চন্দ্রবংশীয় ক্ষত্রিয় পরিবারভুক্ত হবে। এইসময় হলে ঈশ্বরীয় পরিবারভুক্ত পরে আবার ২১ জন্ম দৈবী পরিবারে থাকবে। এই ঈশ্বরীয় পরিবারে তোমরা অন্তিম জন্ম অতিবাহিত করো। এখানে তোমাদের পুরুষার্থ করে আবার সর্বগুণসম্পন্ন হতে হবে। তোমরা সর্বগুণসম্পন্ন ছিলে -- বরাবর রাজত্ব করতে পরে পূজারী হয়েছো। এ তো বোঝাতে হবে, তাই না! ভগবান হলেন বাবা। আমরা ওঁনার সন্তান তাহলে ফ্যামিলি হলো, তাই না! গাওয়াও হয় -- তুমি মাতা-পিতা আমরা বালক তোমার..... তাহলে ফ্যামিলিই তো হলো, তাই না! এখন বাবার থেকে গভীর সুখ প্রাপ্ত হয়। বাবা বলেন, তোমরা অবশ্যই আমার পরিবারের। কিন্তু ড্রামার প্ল্যান অনুসারে রাবণ রাজ্যে আসার পর পুনরায় তোমরা দুঃখের মাঝে আসো তখনই ডাকো। এইসময় তোমাদের ফ্যামিলি হলো অ্যাকিউরেট। পুনরায় তোমাদের ২১ জন্মের জন্য উত্তরাধিকার প্রদান করি। এই উত্তরাধিকার আবার দৈবী-পরিবারে ২১ জন্ম পর্যন্ত বজায় থাকবে। দৈবী-পরিবার সত্যযুগ, ত্রেতা পর্যন্ত চলে। পুনরায় রাবণ-রাজ্য হওয়ার কারণে ভুলে যায় যে আমরা দৈবী পরিবারের। বাম-মার্গে চলে যাওয়ার ফলে আসুরীয় পরিবারভুক্ত হয়ে যায়। ৬৩ জন্ম সিড়ি ধরে নীচে নেমে এসেছো। এই সমস্ত নলেজ তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে। যেকোনো কাউকে তোমরা বোঝাতে পারো। প্রকৃতপক্ষে তোমরা হলে দেবী-দেবতা ধর্মের। সত্যযুগের পূর্বে ছিল কলিযুগ। সঙ্গমে তোমাদের মানুষ থেকে দেবতায় পরিনত করা হয়। মাঝে মাঝে রয়েছে এই সঙ্গম। তোমাদের ব্রাহ্মণধর্ম থেকে পুনরায় দৈবী ধর্মে নিয়ে আসা হয়। বোঝানো হয় যে, লক্ষ্মী-নারায়ণ এই রাজ্য কিভাবে প্রাপ্ত করেছে। তার পূর্বে আসুরীয় রাজ্য ছিল পুনরায় দৈবী-রাজ্য কিভাবে হয়েছে। বাবা বলেন -- প্রতি কল্পের সঙ্গমে এসে তোমাদের ব্রাহ্মণ, দেবতা, ক্ষত্রিয় ধর্মে নিয়ে আসে। এ হলো ঈশ্বরের পরিবার। সকলেই বলে গডফাদার। কিন্তু বাবাকে না জানার কারণে অনাথ হয়ে গেছে, সেইজন্যই বাবা আসেন গভীর অন্ধকার থেকে আলোকিত করতে। এখন স্বর্গ স্থাপিত হচ্ছে। বাচ্চারা, তোমরা পড়ছো, দৈবী-গুণ ধারণ করছো। এও জানা উচিত --- শিব-জয়ন্তী পালন করে, শিব-জয়ন্তীর পর কি হবে? অবশ্যই দৈবী রাজ্যের জয়ন্তী হয়েছে, তাই না! হেভেনলী গডফাদার হেভেন স্থাপন করতে হেভেনে(স্বর্গে) তো আসবে না। তিনি বলেন -- আমি নরক এবং স্বর্গের মধ্যবর্তী সঙ্গমে আসি। শিবরাত্রি বলা হয়, তাই না! তাহলে আমি রাত্রিতেই আসি। বাচ্চারা, এটা তোমরা বুঝতে পারো। যে বোঝে সে অন্যদেরও ধারণ করায়। হৃদয়েও সে-ই স্থান পায় যে মন-বাণী-কর্মের দ্বারা সার্ভিসে তৎপর থাকে। যেমন-যেমনভাবে সেবা তেমনভাবেই হৃদয়ে স্থান অধিকার করা। কেউ-কেউ অলরাউন্ড ওয়ার্কার্স হয়। সবরকমের কাজ শেখা উচিত। ভোজন তৈরী, রুটি তৈরী, বাসনপত্র পরিস্কার করা.... এগুলোও তো সেবা, তাই না! বাবার স্মরণ হলো ফার্স্ট। ওঁনার স্মরণেই বিকর্ম বিনাশ হয়। এখানকার উত্তরাধিকার পাওয়া হয়ে গেছে। ওখানে সর্বগুণসম্পন্ন হয়। যেমন রাজা-রানী তেমনই প্রজা। দুঃখের কোনো কথাই থাকে না। এ'সময় সকলেই নরকবাসী। সকলেরই অবতরণ-কলা (উতরতী)। পুনরায় এখন আরোহণ-কলা হবে। বাবা সকলকে দুঃখ থেকে মুক্ত হয়ে সুখে নিয়ে যান, সেইজন্যই বাবাকে মুক্তিদাতা বলা হয়। এখানে তোমাদের নেশা থাকে যে আমরা বাবার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছি, যোগ্য হয়ে উঠছি। যোগ্য তো তাকেই বলা হয় যে অন্যদেরও রাজপদ পাওয়ার যোগ্য করে তোলে। এও বাবা বুঝিয়েছেন যে, শিক্ষা নিতে অর্থাৎ স্টুডেন্ট তো অনেক আসবে। কিন্তু এমন নয় যে সকলেই ৮৪ জন্ম নেবে। যারা কম পড়বে তারা দেরীতে আসবে, তাহলে জন্মও তো কম হবে, তাই না! কেউ ৮০, কেউ ৮২, কে পূর্বে আসবে, কে পরে আসবে.... সবকিছু পড়ার উপর নির্ভর করে। সাধারণ প্রজা পরে আসবে। তাদের ৮৪ জন্ম হবে না। পরে আসতেই থাকে। যে একদম শেষে থাকবে সে ত্রেতার শেষে এসে জন্ম নেবে। তারপর বাম-মার্গে চলে যায়। অবতরণ শুরু হয়ে যায়। ভারতবাসীরা কিভাবে ৮৪ জন্ম নিয়েছে, এ হলো তারই সিড়ি। এই গোলক (ড্রামা হুইল) হলো ড্রামার চিত্রের। যে পবিত্র ছিল সে-ই এখন পতিত হয়ে গেছে পুনরায় পবিত্র দেবতা হয়ে যায়। বাবা যখন আসেন তখন সকলের কল্যাণ সাধিত হয়, সে'জন্য একে অস্পিসীয়াস যুগ বলা হয়। এত কৃতিত্ব (বলিহারী) বাবার, যিনি সকলের কল্যাণ করো। সত্যযুগে সকলের কল্যাণ হতো, কেউ দুঃখী ছিল না, এ তো বোঝাতে হবে যে আমরা ঈশ্বরীয় পরিবারভুক্ত। ঈশ্বর সকলের পিতা। এখানেই তোমরা মাতা-পিতার গায়ন করো। ওখানে তো শুধু ফাদার বলা হয়। বাচ্চারা, এখানে তোমরা মা-বাবা পাও। এখানে তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের দত্তক নেওয়া হয়। বাবা রচয়িতা তাহলে মা-ও থাকবে। তা নাহলে রচনা হবে কিভাবে! হেভেনলী গডফাদার কিভাবে স্বর্গের স্থাপনা করেন, তা না ভারতবাসীরা জানে, না বিদেশীরা জানে। এখন তোমরা জানো নতুন দুনিয়ার স্থাপনা আর পুরানো দুনিয়ার বিনাশ, তা অবশ্যই সঙ্গমেই হবে। এখন তোমরা সঙ্গমে রয়েছো। এখন বাবা বুঝিয়ে থাকেন যে -- মামেকম্ স্মরণ করো অর্থাৎ একমাত্র আমাকেই স্মরণ করো। আত্মাকে স্মরণ করতে হবে -- পরমপিতা পরমাত্মাকে। আত্মারা এবং পরমাত্মা আলাদা হয়ে রয়েছে বহুকাল ধরে.... সুন্দর মেলা কোথায় হবে। পরমাত্মা পিতা এখানে আসেন। একে বলা হয় কল্যাণকারী সুন্দর মেলা। জীবনমুক্তির উত্তরাধিকার সকলকেই দেন। জীবনবন্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত হয়ে যায়। সকলেই শান্তিধামে যাবে -- পুনরায় যখন আসে তখন সতোপ্রধান থাকে। ধর্ম স্থাপনের জন্য আসে। নীচে যখন তাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায় তখন রাজত্বের জন্য পুরুষার্থ করে ততক্ষণ পর্য্যন্ত কোনো ঝগড়াদি থাকে না। সতোপ্রধান থেকে রজঃ-তে যখন আসে তখন লড়াই-ঝগড়া শুরু করে। প্রথমে সুখ তারপর দুঃখ। এখন সম্পূর্ণ দুর্গতিতে রয়েছে। এই কলিযুগীয় দুনিয়ার বিনাশ পুনরায় সত্যযুগীয় দুনিয়ার স্থাপনা হবে। বিষ্ণুপুরীর স্থাপনা করছেন ব্রহ্মার দ্বারা। যে যেমন পুরুষার্থ করে সেই অনুযায়ী বিষ্ণুপুরীতে এসে প্রালব্ধ(ফল ভোগ) পায়। এ'সব বোঝার জন্য অনেক ভাল-ভাল কথা আছে। বাচ্চারা, এইসময় তোমাদের অত্যন্ত খুশী হওয়া উচিত এইকারণে যে আমরা ঈশ্বরের থেকে ভবিষ্য ২১ জন্মের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছি। যতখানি পুরুষার্থ করে নিজেদের ত্রুটিহীন (অ্যাকিউরেট) করবে.... তোমাদের অ্যাকিউরেট হতে হবে। ঘড়িও লিভার এবং সিলিন্ডর হয়, তাই না! লীভার অত্যন্ত অ্যাকিউরেট হয়। বাচ্চাদের মধ্যে কেউ কেউ অ্যাকিউরেট হয়ে যায়। কেউ আবার ত্রুটিবিশিষ্টও হয়ে যায়, তখন কম পদলাভ করে। পুরুষার্থ করে অ্যাকিউরেট হওয়া উচিত। এখনও সকলে অ্যাকিউরেটলী চলে না। প্রয়াস করান তো একমাত্র বাবা-ই। সৌভাগ্য গঠনের পুরুষার্থে স্বল্পতা থাকায় পদ কম পায়। শ্রীমতে না চলার কারণে, আসুরীয়-গুণ পরিত্যাগ না করার কারণে, যোগে না থাকার কারণে এ'সব হয়। যোগে তো থাকে না তবু যেন পন্ডিত। যোগ কম তাই শিববাবার প্রতি ভালবাসা থাকে না। ধারণাও কম হয় সে'জন্য সেই খুশীও থাকে না। চেহারাই যেন মৃতলোকের মতন হয়ে থাকে। তোমাদের চেহারা সদা প্রফুল্লিত থাকা উচিত। যে'রকম দেবতাদের থাকে। বাবা তোমাদের কত অপরিমেয় উত্তরাধিকার প্রদান করেন। কোনো গরীবের সন্তান যদি ধনবানের কাছে যায় তখন তার কত খুশী হবে। তোমরা অত্যন্ত গরীব ছিলে। এখন বাবা অ্যাডপ্ট করেছেন তাই খুশী হওয়া উচিত। আমরা ঈশ্বরীয় সম্প্রদায়ের হয়ে গেছি। কিন্তু ভাগ্যে না থাকলে কি আর করা যেতে পারে। পদ ভ্রষ্ট হয়ে যায়। পাটরানী হতে পারবে না। বাবা তো আসেই পাটরানী বানাতে। বাচ্চারা, তোমরা যেকোনো কাউকে বোঝাতে পারো যে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকর এই তিনজনেই হলো শিবের সন্তান। ভারতকে পুনরায় স্বর্গে পরিনত করেন ব্রহ্মার দ্বারা। শঙ্করের দ্বারা পুরোনো দুনিয়ার বিনাশসাধন হয়, ভারতেই বাকি সামান্য ভারতেই বেঁচে থাকে। প্রলয় তো হয় না, কিন্তু অনেকেই শেষ হয়ে যায় তখন যেন মনে হয় প্রলয় হয়ে গেছে । রাত-দিনের পার্থক্য হয়ে যায়। তারা সকলেই মুক্তিধামে চলে যাবে। এ হলো পতিত-পাবন বাবার কাজ। বাবা বলেন -- দেহী-অভিমানী হও। তা নাহলে পুরোনো আত্মীয়-পরিজন স্মরণে আসতে থাকবে। ত্যাগ করেও দিয়েছো তবুও বুদ্ধি যেতে থাকবে। নষ্টমোহ হয়নি, একে বলা হয় ব্যাভিচারী স্মরণ। সদ্গতি হবে না কারণ তারা দুর্গতি-সম্পন্নদের (কলিযুগীয়) স্মরণ করতে থাকে। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) বাপদাদার হৃদয়ে স্থান পাওয়ার জন্য মন-বাণী-কর্মের দ্বারা সেবা করতে হবে। অ্যাকিউরেট এবং অলরাউন্ডার হতে হবে।

২ ) এমন দেহী-অভিমানী হতে হবে যাতে কোনো পুরোনো সম্বন্ধ স্মরণে না আসে। একে অপরের সাথে অত্যন্ত আত্মিক ভালবাসার সাথে থাকতে হবে, বিরোধিতা (লুন-পানি) যেন না হয়।

বরদান:-
সদা সঙ্গলাভের অনুভব দ্বারা পরিশ্রম সম্বন্ধে অবিদ্যা থাকা অতীন্দ্রিয় সুখ বা আনন্দ-স্বরূপ ভব

বাচ্চা যদি বাবার কোলে থাকে তখন তার ক্লান্তি থাকে না। যদি নিজের পায়ে চলে তখন ক্লান্তও হবে, কান্নাকাটিও করবে। বাচ্চারা, এখানেও তোমরা বাবার কোলে বসে চলছো। এতটুকুও পরিশ্রম বা অসুবিধার অনুভূতি নেই। সঙ্গমযুগে যে সকল এইরকম সদা সাথে থাকা আত্মারা রয়েছে তাদের পরিশ্রম সম্বন্ধে অবিদ্যা থাকে। পুরুষার্থ এক স্বাভাবিক কার্য বা প্রক্রিয়া হয়ে যায়। সে'জন্য সদা অতীন্দ্রিয় সুখ বা আনন্দ-স্বরূপ স্বততঃ-ই হয়ে যায়।

স্লোগান:-
রুহে (আত্মা-রূপী) গোলাপ হয়ে নিজের আত্মিক বৃত্তির দ্বারা বায়ুমন্ডলে আত্মিকতার সৌরভ ছড়িয়ে দাও।