13.03.2021 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


“মিষ্টি বাচ্চারা - উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে হলে সত্য বাবার কাছে সর্বদা সত্য থাকো, কোনো ভুল হলেই বাবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে নাও, নিজের মত অনুযায়ী চলো না”

প্রশ্নঃ -
কোন্ আদরের সন্তান কখনো লুকিয়ে থাকতে পারে না ?

উত্তরঃ -
যাদের ঈশ্বরীয় পরিবারের প্রতি ভালোবাসা থাকে, যাদের রাত-দিন সার্ভিসেরই চিন্তা থাকে, এমন সার্ভিসে বেল, যারা আজ্ঞাকারী (ফরমানবরদার) আর অনুগত হয়, কখনোই মনমতে চলে না, বাবার কাছে সত্য আর স্বচ্ছ হৃদয়ের হয়, তারা কখনো লুকিয়ে থাকতে পারে না।

গীতঃ-
তুমিই হলে মাতা পিতা...

ওম্ শান্তি ।
গানে কিসের গ্যারান্টি ছিলো ? পিতা-মাতার সাথে বাচ্চাদের গ্যারান্টি আছে যে বাবা আমাদের তো এক আপনিই আছেন, দ্বিতীয় আর কেউ নেই। কতো উঁচু লক্ষ্য । এইরকম শ্রেষ্ঠ বাবার শ্রীমত অনুযায়ী কেউ চললে গ্যারান্টি থাকে, উত্তরাধিকার সূত্রে অবশ্যই উচ্চ পদ প্রাপ্ত করবে। কিন্তু বুদ্ধি বলে, অনেক উচ্চ লক্ষ্য দেখতে পাওয়া যাচ্ছে । যা কোটির মধ্যে কেউ, আবার তাদের মধ্যেও বা কতিপয়ই মালার দানা হয়। বলেও যে তুমি মাতা-পিতা কিন্তু মায়া এতোটাই প্রবল যে, যে খুব কমই গ্যারান্টি দিয়ে চলতে পারে। প্রত্যেকে নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে পারো যে সত্যি-সত্যি আমি কি মাতা-পিতার হয়েছি ? বাবা বলেন - না। খুব কমই আছে, তাই তো দেখো মালা কতো কমকে নিয়ে হয়। কতো কোটির মধ্যে শুধুমাত্র ৮ এর বৈজয়ন্তি মালা তৈরী হয়, কেউ বলে এক করে আরেক, সেইজন্য বাবাও বলেন-- দেখো কেমন আশ্চর্য! বাবা কতো ভালোবেসে বোঝান কিন্তু সুযোগ্য বাচ্চা খুব কমই মেলে (মালার দানা)। বাচ্চাদের মধ্যে এতো শক্তি নেই যে শ্রীমত অনুযায়ী চলতে পারবে, তো অবশ্যই রাবণের মত অনুযায়ী চলে, এইজন্য এতো পদ প্রাপ্ত করতে পারবে না। বিরলই কেউ মালার দানা হয়, সেই আদরের সন্তানও গুপ্ত থাকতে পারবে না। সে হৃদয়ে অধিষ্ঠিত হয়ে থাকে। দিন রাত সার্ভিসেরই চিন্তা থাকে। ঈশ্বরীয় সম্বন্ধের প্রতি ভালোবাসা থাকে। তাদের বুদ্ধি বাইরে কোথাও যায় না। এইরকম ভালোবাসা দৈবী পরিবারের প্রতি রাখতে হবে। অজ্ঞানতার সময়ও বাচ্চাদের বাবার প্রতি, ভাই-বোনেদের নিজেদের মধ্যে খুবই ভালোবাসা থাকে। এখানে তো কারোর-কারোর কিঞ্চিত মাত্রও বাবার সাথে যোগ নেই। গ্যারান্টি তো অনেক করে। ভক্তি মার্গে গান গায়। এখন তো বাচ্চারা সামনে রয়েছে । ভেবে দেখো, ভক্তি মার্গে যখন গান গাইতে থাকে তখন কতো ভালোবাসার সাথে স্মরণ করতে থাকে ! এখানে তো স্মরণই করে না। বাবার হওয়ার কারণে মায়া শত্রু হয়ে যায়। বুদ্ধি বাইরে চলে গেলে তো মায়া ভালো করেই নীচে ফেলে দেয়। সে নিজে বুঝতে পারেনা যে আমি যা কিছু করছি সেসব নীচে নামার জন্যই করছি। নিজের মতে চলে নামতে থাকে। তার এটা জানা থাকে না যে আমি কি করছি! কিছু তো দুর্বলতা বাচ্চাদের মধ্যে আছে তাই না। বলে এক... করে অন্য...। নাহলে তো বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার রূপে কতো উঁচু প্রাপ্তি হয়। কতোই না সততার সাথে বাবার সেবাতে লেগে যাওয়া উচিত । কিন্তু মায়া অত্যন্ত প্রবল। কোটির মধ্যে কয়েকজনই বাবাকে সম্পূর্ণভাবে চিনতে পারে। বাবা বলেন, কল্প-কল্প এইরকমই হতে থাকে। সম্পূর্ণ অনুগত, আজ্ঞাকারী না হওয়ার কারণে তাদের বেচারাদের পদ এইরকম হয়ে পড়ে। বলে, বাবা আমি রাজযোগ শিখে নর থেকে নারায়ণ, নারী থেকে লক্ষ্মী হবো। রাম-সীতা হবো না। হাতও তোলে কিন্তু চাল-চলনও তো এইরকম চাই, তাই না! অসীম জগতের বাবা অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রদান করতে এসেছেন, তাহলে কতখানি না তাঁর শ্রীমতে চলা উচিত, তাই না ! অনেকেই আছে যারা প্রতিজ্ঞাই করেছে যে আমি শ্রীমতে চলবো না। তারা লুকিয়ে থাকতে পারে না। কারো যদি ভাগ্যে না থাকে তো প্রথমে দেহ-অভিমান থাপ্পড় লাগায় তারপর আসে কাম। কাম নেই তো ক্রোধ, লোভ আসে। সবকটিই তো হল শত্রু। মোহও এমন জিনিস যা ক্ষতি করে দেয়। লোভও কম নয়। অতি প্রবল শত্রু। এক পয়সার জিনিসও চুরি করে নেয়। এটাও তো লোভ তাই না। চুরি করার খুব খারাপ অভ্যাস আছে। মনের মধ্যে এই অনুশোচনা আসা উচিত যে, আমি এতো পাপ করছি তো কি পদ পাবো। শিববাবার যজ্ঞে এসে বাবার কাছে আমি এইরকম কাজ কি করে করতে পারি! মায়া অত্যন্ত উল্টো-পাল্টা কাজ করায়। যতই বোঝাও, তবুও অভ্যাস ছাড়তে পারে না। কেউ আবার নাম-রূপে ফেঁসে যায়। দেহ-অভিমানের কারণে নাম-রূপেও এসে যায়। প্রত্যেক সেন্টারের বিষয়ে বাবার সবকিছুই জানা থাকে তাই না। বাবাও কি করবেন, বোঝাতেও তো হয়। কতো সেন্টার রয়েছে ! বাবার কাছে কতোই না সংবাদ আসে। চিন্তা তো থাকে তাই না! পুনরায় বোঝাতে হয় যে, মায়া কম নয়। অনেক কষ্ট দেয়। ভালো-ভালো বাচ্চাদের বলতে হয় যে উচ্চপদের পাওয়ার জন্য অনেক দুঃখও ভোগ করতে হয় । এখানে তো দুঃখের কোনও কথাই নেই। জানে যে কল্প পূর্বেও এইরকম হয়েছিল। ঈশ্বরের হয়ে পুনরায় মায়ার বশ হয়ে যায়। কোনও না কোনো বিকর্ম করে ফেলে, তাই বাবা বলেন, প্রতিজ্ঞা তো অনেক বাচ্চা করে যে, বাবা আমি আপনার শ্রীমতে অবশ্যই চলবো, কিন্তু চলে না, এইজন্য মালা দেখো কতো ছোট তৈরী হয়। বাকিরা সবাই হল প্রজা। কতো উঁচু লক্ষ্য, এক্ষেত্রে হৃদয় অতি স্বচ্ছ চাই। প্রবাদ আছে - সত্য যেখানে, আত্মা নাচবে সেখানে । যদি সততার সঙ্গে বাবার সাথে চলতে থাকে তো সত্যযুগে কৃষ্ণের সাথে রাস করবে। সত্যযুগে কৃষ্ণের রাস বিখ্যাত। রাস লীলা, রাধা কৃষ্ণেরই দেখানো হয়। পরে রাম লীলা দেখানো হয়। কিন্তু প্রথম নম্বরে আছে রাধা-কৃষ্ণের রাস লীলা। কেননা এইসময় তারা বাবার কাছে অতি সৎ হয়, তাই কতো উঁচু পদ প্রাপ্ত করে। হাত তো অনেকে তোলে, কিন্তু মায়া কেমন আছে! প্রতিজ্ঞা করলে তো সেই প্রতিজ্ঞা বজায় রাখতে হবে তাই না। মায়ার ভূতগুলিকে দূর করে দিতে হবে। দেহ-অভিমানের পিছনে সব ভূত আটকে যায়। বাবা বলেন, দেহী-অভিমানী হয়ে বাবাকে স্মরণ করো। সেক্ষেত্রেও সকাল সকাল উঠে বার্তালাপ করো। বাবার মহিমা করো। ভক্তিমার্গে যদিও স্মরণ করে কিন্তু মহিমা তো কারোরই নেই। কৃষ্ণকে স্মরণ করবে। মহিমা করবে - মাখন চুরি করেছে, অপহরণ করেছে। অকাসুর, বকাসুরকে মেরেছে, এটা করেছে...। ব্যস্, আর কি বলবে। এইসব হল মিথ্যা। একটুও সত্য নয়। তারা আবার রাস্তা কিভাবে বলবে! মুক্তিকেই জানে না। এইসময় সমগ্র বিশ্বের উপর রাবণের রাজত্ব চলছে। সবাই এই সময় পতিত হয়ে গেছে। মানুষ ভ্রষ্টাচারীর অর্থই বুঝতে পারে না। এটাও জানে না যে সত্যযুগে নির্বিকারী দেবতারা ছিলেন। গাইতেও থাকে যে সর্বগুণ সম্পন্ন, ১৬ কলা সম্পূর্ণ। কিন্তু আবার বলে দেয় - সেখানেও রাবণ, কংস, জরাসন্ধ ইত্যাদি ছিল। বলা হয় যে পবিত্র হও, তো তারা বলে যে দেবতাদেরও তো সন্তানাদি ছিল, তাই না। আরে, তোমরা গাইছো যে সর্বগুণ সম্পন্ন... সম্পূর্ণ নির্বিকারী তাহলে বিকারের কথা কিভাবে হতে পারে। তুমিও নির্বিকারী হও, তো বলবে সৃষ্টি কিভাবে বৃদ্ধি পাবে। বাচ্চা কিভাবে জন্ম নেবে। মন্দিরে গিয়ে মহিমা কীর্তন করে। ঘরে এসে সেই মহিমা ভুলে যায়। সব দিক তোমরা যাচাই করে দেখো না ! ঘরে গিয়ে বোঝাও তো মানবে না। যেখানকার কথা সেখানেই থেকে যায়। পবিত্র হওয়ার জন্য বলো তো বলবে বাঃ! এটা ছাড়া দুনিয়া কিভাবে চলবে। তাদের এটা জানাই নেই যে, নির্বিকারী দুনিয়া কিভাবে চলে।

বাচ্চারা গানও শুনেছে। প্রতিজ্ঞা করে - তোমার মতে চলবো, কেননা শ্রীমতে চললে কল্যাণ হবে। বাবা তো বলতে থাকেন যে শ্রীমতে চলো, নাহলে তো শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর সময় এসে যাবে। তখন ধর্মরাজের বিচার সভায় সব বলতে হবে। তুমি এই পাপ করেছো। নিজের মতে চললে কল্প কল্প এই দাগ লেগে যাবে। এইরকম নয় যে একবার ফেল হলে তো দ্বিতীয় তৃতীয় বর্ষে পড়বে। না। এখন ফেল হলে তো কল্প কল্প ফেল হতেই থাকবে, এইজন্য অনেক পুরুষার্থ করতে হবে। প্রতিটি কদম শ্রীমৎ অনুসারে চলো। অন্তরে যেন একটুখানিও খারাপ কিছু না থাকে। হৃদয়কে শুদ্ধ করতে হবে। নারদকেও বলা হয়েছিলো না যে - আয়নায় নিজের মুখ দেখো। তখন দেখলো যে আমি তো বাঁদরের মতো। এটা হল একটা দৃষ্টান্ত। নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে হবে যে আমি কতোখানি শ্রীমত অনুসারে চলছি। বুদ্ধির যোগ তো বাইরে কোথাও ঘুরে বেড়াচ্ছে না তো ? দেহ-অভিমানে নেই তো ? দেহী-অভিমানী তো সেবায় ব্যস্ত থাকবে। সবকিছুই যোগের উপর নির্ভর করছে। ভারতের যোগ বিখ্যাত। সেটা তো নিরাকার বাবা-ই নিরাকার বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন। একে বলা হয় সহজ রাজযোগ। লেখাও আছে যে নিরাকার বাবা সহজ রাজযোগ শিখিয়েছেন। কেবল কৃষ্ণের নাম দিয়ে দিয়েছে। তোমরা জানো যে, আমাদেরকে এইরকম লক্ষ্মী-নারায়ণ হতে হবে। পূণ্য আত্মা হতে হবে। পাপের কোনও কথাই নেই। বাবার স্মরণে থেকে তাঁর সেবা করতে হবে। এতো উঁচু পদ প্রাপ্ত করতে হলে কিছু তো পরিশ্রম করতে হবে, তাই না। সন্ন্যাসীরা তো বলে দেয় যে গৃহস্থ ব্যবহারে থেকে কমল পুষ্পের মতো থাকা, এটা হতেই পারে না। সম্পূর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকেই ফেল হয়ে যায়, কেননা স্মরণ করতে পারে না। এখন বাবা প্রাচীন যোগ শেখাচ্ছেন। বাবা বলছেন, যোগ তো আমি নিজেই এসে শেখাই, এখন আমাকে স্মরণ করো। তোমাদেরকে আমার কাছে আসতে হবে। এটাই হল স্মরণের যাত্রা। সেটাই হল তোমাদের সুইট সাইলেন্স হোম। এটাও জানে যে আমরা ভারতবাসীরাই আবার ভারতে আসবো আর সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করবো। তো বাবা বার-বার বোঝাচ্ছেন যে, প্রতিজ্ঞা পালন করো। ভুল হয়ে গেলে তো বাবার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।

দেখো, এই বাচ্চা মুখ্যতঃ ক্ষমা চাওয়ার জন্য একদিনের জন্য বাবার কাছে এসেছে। অল্প একটু ভুল হয়েছে তো ছুটে চলে এসেছে, কেননা হৃদয়ে অনুশোচনা হচ্ছিল, তাই ভাবলো বাবাকে সম্মুখে গিয়ে বলবে। বাবার প্রতি কতটা শ্রদ্ধা আছে ! অনেক বাচ্চাই আছে যারা এর থেকেও অধিক বিকর্ম করতে থাকে, জানতেও পারা যায় না। আমি তো বলবো বাঃ বাচ্চা, খুব ভালো। অল্প একটু ভুল করার জন্য ক্ষমা চাইতে এসেছে। বাবাকে সর্বদাই বলতে হয় যে, যা ভুল করেছো সেটা বলে ক্ষমা চেয়ে নাও। নাহলে তো সেই পাপ বৃদ্ধি পেতে থাকবে। পুনরায় পড়ে যাবে। মুখ্যতঃ যোগের দ্বারাই বাঁচতে পারবে। যোগটাই কম হচ্ছে । জ্ঞান তো অনেক সহজ। এটা তো যেন একটা কাহিনী। আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে কার রাজ্য ছিল, কিভাবে রাজত্ব করেছিলেন তারা । কত সময় ধরে রাজত্ব করেছিলেন তারপর কিভাবে রাজত্ব করতে করতে বিকারে ফেঁসে গেল। কেউই (সিঁড়ি) আরোহণ করেনি। আরোহণ তো পরবর্তী কালে যখন বৈশ্য হল তখন হল। রাবণ তাঁদের থেকে রাজত্ব ছিনিয়ে নিয়েছিল। তোমরা পুনরায় রাবণের উপর বিজয় প্রাপ্ত করে রাজ্য গ্রহণ করছো। এটাও খুব কম জনেরই বুদ্ধিতে ধারণ হয় । যারা বাবার অনুগত এবং আজ্ঞাকারী হয়ে থাকে কেবল তাদেরই হয় । অজ্ঞানকালেও কেউ অনুগত, আজ্ঞাকারী হয়ে থাকে। কোনও কোনও চাকরও খুব সৎ হয়। লক্ষ টাকা পড়ে থাকলেও কখনো এক টাকাও ওঠায় না। বলে যে - মালিক আপনি চাবি ভুল করে ফেলে রেখে গিয়েছিলেন, আমি আগলে নিয়ে বসে আছি। এইরকমও হয়। বাবা তো বাচ্চাদেরকে খুব ভালো ভাবে বোঝাতে থাকেন । তোমাদের বিবেক বলে যে এই কারণের জন্য মালার দানা হতে পারছি না। পুনরায় সেখানে গিয়ে দাস-দাসী হবো। পঠন-পাঠন না করলে তো অবশ্যই এইরকম হাল হবে। শ্রীমতে চলে না। বাবা বোঝাতে থাকেন, তোমাদের লক্ষ্য সব কিছু যোগের উপরেই নির্ভর করছে। মায়া একদম নাক দিয়ে ধরে যোগযুক্ত থাকতে দেয় না। যোগযুক্ত থাকলে তো সেবাও ভালো করবে। পাপের ভয় থাকে। যেরকম এই বাচ্চা তো খুবই ভালো। সৎ হও তো এইরকম। ভালো ভালো বাচ্চার থেকেও এর পদ অনেক ভালো। আর যারা সার্ভিস করতে থাকে তারা কোথাও না কোথাও ফেঁসে থাকে। কিছুই বলে না। তাদেরকে বললেও তারা ছাড়তে চায় না। গীত তো দেখো, প্রতিজ্ঞা করে যে, যাকিছুই হয়ে যাক কিন্তু এইরকম ভুল কখনও করবো না। মূল কথা হল দেহ-অভিমানের। দেহ-অভিমানের কারণেই ভুল হয়ে থাকে। অনেক ভুল করে, এইজন্য সাবধান করা হয়। বাবার কাজ হল বোঝানো। না বোঝালে তো বলবে আমাকে তো কেউ বোঝায়নি। এর উপর একটি কাহিনীও আছে। বাবাও বলেন, বাচ্চারা সাবধানে থাকো। নাহলে তো অনেক শাস্তি ভোগ করতে হবে। তারপর আবার এইরকম বলো না যে, আমাকে কেন বোঝানো হয়নি। বাবা পরিস্কার করে বুঝিয়ে দিচ্ছেন যে - অল্প একটু পাপ করলেও অনেক বৃদ্ধি হয়ে যাবে। তখন বাবার সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতেও পারবে না। মিথ্যা বললে তো স্বীকার করে নিতে হবে। এইরকম ভেবো না যে শিববাবা কী আর আমাকে দেখতে পাচ্ছেন! আরে অজ্ঞানতার সময়ও তিনি সব জানতেন, তাই তো পাপ আর পূণ্যের ফল দিচ্ছেন। পরিস্কার করে বলে দেন যে, তুমি পাপ করবে তো তোমার জন্য অনেক বড় কঠোর শাস্তি আছে। বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার নিতে এসেছো, তো তার বদলে দুই কান কাটানো তো উচিত নয়, তাই, না ! বলে এক, আর স্মরণ করে অন্যজনকে। বাবাকে স্মরণ করে না তো বলো তার গতি কি হবে ? শুদ্ধ খাবার খাওয়া, সত্য কথা বলা, সভ্য বস্ত্র পরিধান করা... এটাও এখানকার কথা। যখন বাবা এসে শেখাচ্ছেন তো তাঁর কাছে প্রত্যেক কথাতে সত্য থাকতে হবে। আচ্ছা!

এইরকম সৎ অনুগত, আজ্ঞাকারী (বফাদার, ফরমানবরদার) বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) সততার সাথে বাবার সেবায় লেগে যেতে হবে। সম্পূর্ণ অনুগত, আজ্ঞাকারী হতে হবে। ঈশ্বরীয় পরিবারের সাথে সত্যিকারের ভালোবাসা রাখতে হবে।

২ ) শ্রীমতে মনমত বা রাবণের মত মিক্স করবে না। এক বাবা দ্বিতীয় কেউ নেই, এই গ্যারান্টিতে পাক্কা থাকতে হবে। হৃদয়কে শুদ্ধ পবিত্র বানাতে হবে।

বরদান:-
এই হীরে তুল্য যুগে হীরে দেখতে থাকা আর হিরো'র ভূমিকা পালনকারী তীব্র পুরুষার্থী ভব
 

যেরকম জহুরীদের দৃষ্টি সর্বদা হীরের প্রতি থাকে, তোমরা সবাই হলে অলংকার, তোমাদের দৃষ্টি পাথরের দিকে যেন না যায়, হীরেকে দেখো। প্রত্যেকের বিশেষত্বের প্রতি যেন দৃষ্টি যায়। সঙ্গম যুগ হলোই হীরেতুল্য যুগ। পার্টও হিরো, যুগও হীরেতুল্য, তো হীরেই দেখতে থাকো, তবেই নিজের শুভ ভাবনার কিরণ চারিদিকে ছড়িয়ে দিতে পারবে। বর্তমান সময়ে এই বিষয়ের প্রতি বিশেষ অ্যাটেনশন চাই। এইরকম পুরুষার্থীকেই তীব্র পুরুষার্থী বলা হয়ে থাকে ।

স্লোগান:-
বায়ুমন্ডল বা বিশ্বকে পরিবর্তন করবার পূর্বে স্ব-পরিবর্তন করো।