27.03.2021
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
স্মরণের যাত্রাতে রেস্ (প্রতিযোগিতা) করলে পুণ্য আত্মা হয়ে যাবে, স্বর্গের বাদশাহী
প্রাপ্তি হবে"
প্রশ্নঃ -
ব্রাহ্মণ জীবনে
যদি অতিন্দ্রীয় সুখের অনুভব না হয় তো কি বুঝতে হবে ?
উত্তরঃ -
অবশ্যই সূক্ষ্ম ভাবেও কোনো না কোনো পাপ হয়। দেহ - অভিমানে থাকার জন্যই পাপ হয়, যে
কারণে সেই সুখের অনুভূতি করতে পারা যায় না। নিজেকে গোপ- গোপিনী মনে করেও অতীন্দ্রিয়
সুখের অনুভূতির প্রকাশ হয় না, অবশ্যই কোনো ভুল হয় সেইজন্য বাবাকে সত্যি কথা বলে
শ্রীমত গ্রহণ করতে থাকো।
ওম্ শান্তি ।
নিরাকার
ভগবানুবাচ। এখন নিরাকার ভগবান বলাই হয়ে থাকে শিবকে, যদিও ভক্তি মার্গে তাঁর অনেক
নাম রেখে দিয়েছে, অনেক নাম আছে - তাই তো এতো বিস্তার লাভ করেছে। বাবা নিজে এসে
বলেন যে, হে বাচ্চারা, আমাকে অর্থাৎ নিজের পিতা শিবকে তোমরা স্মরণ করে এসেছো, হে
পতিত- পাবন, নাম তো অবশ্যই একই হবে। অনেক নামের প্রচলন থাকতে পারে না। শিবায় নমঃ
বললে তো একই শিব নাম হলো। রচয়িতাও একই হলো। অনেক নামের জন্য তো বিভ্রান্ত হতে হয়।
যেমন তোমার নাম হলো পুষ্পা-- তার পরিবর্তে তোমাকে শীলা বললে কি তুমি রেসপন্স করবে ?
না । মনে করবে অন্য কাউকে ডাকছে। এইটাও এমনই ব্যাপার হলো। ওঁনার নাম হলো এক, কিন্তু
ভক্তি মার্গ হওয়ার কারণে, অনেক মন্দির তৈরী করার জন্য কতো রকমের নাম রেখে দিয়েছে।
তা না হলে নাম প্রত্যেকের একটাই হয়। গঙ্গা নদীকে যমুনা নদী বলা যাবে না। যে কোনো
কিছুরই একটাই নাম প্রসিদ্ধ হয়। এই শিব নামও হলো প্রসিদ্ধ। শিবায় নমঃ গাওয়া হয়েছে।
ব্রহ্মা দেবতায় নমঃ-- বিষ্ণু দেবতায় নমঃ-- আবার বলে শিব পরমাত্মায় নমঃ, কারণ তিনি
হলেন উচ্চতমের চেয়েও উচ্চ। মানুষের বুদ্ধিতে গেঁথে গিয়েছে উচ্চতমের চেয়েও উচ্চ
নিরাকারকে বলা হয়। তাঁর নাম একটাই। ব্রহ্মাকে ব্রহ্মা, বিষ্ণুকে বিষ্ণু-ই বলা হয়।
অনেক নাম রাখলে বিভ্রান্ত হতে হয়। রেসপন্সই পাওয়া যায় না আর তাঁর রূপকেও জানা যায়
না। বাবা এসে বাচ্চাদের সাথেই কথা বলেন। শিবায় নমঃ বললে তো একটা নাম ঠিক থাকে। শিব-
শঙ্কর বলাও ভুল হয়ে যায়। শিব, শঙ্কর নাম হলো আলাদা আলাদা। যেরকম লক্ষ্মী-নারায়ণের
নামও হল আলাদা-আলাদা। সেখানে নারায়ণকে তো লক্ষ্মী-নারায়ণ বলা হয় না। আজকাল তো
নিজেদের দুটো করে নামও রাখে। দেবতাদের প্রতি এইরকম ডবল নাম ছিলো না। রাধার আলাদা,
কৃষ্ণের আলাদা- এখানে তো একজনের নামই রাধাকৃষ্ণ, লক্ষ্মী-নারায়ণ রেখে দেয়। বাবা বসে
বোঝান ক্রিয়েটার হলো একই, তাঁর নামও হলো এক। তাঁকেই জানতে হবে। বলা হয় আত্মা এক
স্টারের মতো, ভ্রূকুটির মধ্যবর্তী স্থানে ঝলমল করতে থাকে তারকা আবার বলে আত্মাই হলো
পরমাত্মা। তাই পরমাত্মাও স্টার হলো যে না! এইরকম নয় যে আত্মা ছোটো বা বড় হয়।
ব্যাপারটা হলো খুবই সহজ।
বাবা বলেন যে তোমরা ডাকতে, হে পতিত-পাবন এসো। কিন্তু তিনি পবিত্র করেন কীভাবে, এইটা
কেউ জানে না। গঙ্গাকে পতিত-পাবনী মনে করে নেয়। পতিত-পাবন তো হলেন একমাত্র বাবা।
বাবা বলেন আমি পূর্বেও বলেছিলাম-- মন্মনা ভব, মামেকম্ স্মরণ করো। শুধু নাম পরিবর্তন
করে দিয়েছে। বাচ্চারা মনে করে যে বাবাকে স্মরণ করলে উত্তরাধিকার নিশ্চিত থাকে।
মন্মনাভব বলারও দরকার হয় না। কিন্তু একদমই বাবাকে আর উত্তরাধিকারকে ভুলে গিয়েছে,
তাই তো বলি আমাকে অর্থাৎ এই পিতাকে আর উত্তরাধিকারকে স্মরণ করো। বাবা হলেন স্বর্গের
রচয়িতা- তাই অবশ্যই বাবাকে স্মরণ করলেই আমাদের স্বর্গের বাদশাহী প্রাপ্ত হবে।
বাচ্চা জন্ম নিলো আর বাবা বলবেন উত্তরাধিকারী এলো। কন্যাদের জন্য এইরকম বলবে না।
তোমরা আত্মারা হলে সবাই আমার বাচ্চা। বলাও হয় যে আত্মা হলো এক স্টার। তবে আঙ্গুলের
মতো হতে পারে কি করে! আত্মা হলো এতো সূক্ষ্ম জিনিস, এই চোখে দেখা যায় না। হ্যাঁ, একে
দিব্য দৃষ্টি দ্বারা দেখা যেতে পারে কারণ এইটা হলো অব্যক্ত জিনিস। দিব্য দৃষ্টি
দ্বারা চৈতন্য দেখা যায় আবার হারিয়ে যায়। কিছুই তো প্রাপ্তি ঘটে না, শুধু খুশী হয়ে
যায়। একে বলা হয় ভক্তির অল্প সুখ। এই হল ভক্তির ফল। যারা অনেক ভক্তি করেছে, রীতি
অনুযায়ী তাদের অটোমেটিক্যালি এই জ্ঞানের দ্বারা ফল প্রাপ্ত হয়। ব্রহ্মা আর বিষ্ণু
একত্রিত দেখানো হয়। ব্রহ্মা যে বিষ্ণু সে, ভক্তির ফল বিষ্ণুর রূপে প্রাপ্ত হয়,
রাজত্বের। বিষ্ণু বা কৃষ্ণের সাক্ষাৎকার তো অনেক হয়েছে। কিন্তু বুঝতে পারা যায়--
বিভিন্ন নামে-রূপে ভক্তি করেছে। সাক্ষাৎকারকে জ্ঞান বা যোগ বলা যায় না। নৌধা
ভক্তির(নয়টি পর্যায়ে সম্পূর্ণ ভক্তি) দ্বারা সাক্ষাৎকার হয়েছে। এখন সাক্ষাৎকার না
হলেও আপত্তি নেই। এইম্ অবজেক্ট হলোই মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার। তোমরা দেবী-দেবতা
ধর্মের হতে চলেছো। এছাড়া পুরুষার্থ করানোর জন্য বাবা শুধু বলেন, অন্যান্য সঙ্গীর
থেকে বুদ্ধির যোগ সরিয়ে ফেলো, দেহের থেকেও বুদ্ধির যোগ সরিয়ে বাবাকে স্মরণ করো।
যেমন প্রিয়তম-প্রিয়তমা কাজও করতে থাকে কিন্তু মন প্রিয়তমর প্রতি যুক্ত থাকে। বাবাও
বলেন একমাত্র আমাকে স্মরণ করো-- তবুও বুদ্ধি অন্যান্য সব দিকে চলে যায়। এখন তোমরা
জানো যে আমাদের নীচে নামতে এক কল্প লেগেছে। সত্যযুগ থেকে সিঁড়ি দিয়ে নামতে থেকেছে।
একটু একটু করে খাদ পড়তে থেকেছে। সতো থেকে তমো হয়ে যায়। এখন আবার তমো থেকে সতো
হওয়ার জন্য বাবা জাম্প করাচ্ছেন। সেকেন্ডে তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান।
তাই মিষ্টি- মিষ্টি বাচ্চাদের পুরুষার্থ করতে হবে। বাবা তো শিক্ষা দিতেই থাকেন। ভালো-
ভালো সেন্সেবেল বাচ্চারা নিজেরা অনুভব করে-- বরাবর খুবই ডিফিকাল্ট। কেউ বলে, কেউ তো
একদমই বলে না। নিজের অবস্থা বলা উচিত। বাবাকে স্মরণই করে না তো উত্তরাধিকার প্রাপ্ত
হবে কি করে! ঠিক মতো স্মরণই করে না, মনে করে আমি তো হলামই শিববাবার। স্মরণ না করার
জন্য নীচে নেমে যায়। বাবাকে নিরন্তর স্মরণ করার ফলে খাদ বেরিয়ে যায়, অ্যাটেনশন দিতে
হয়। যতক্ষণ শরীর আছে ততক্ষণ পুরুষার্থ চলতে থাকে। বুদ্ধিও বলে-- বারে বারে স্মরণ
করতে ভুলে যাই। এই যোগবলের দ্বারা তোমরা বাদশাহী প্রাপ্ত করো। সবাই তো এক রকম দৌড়াতে
পারে না, ল' তাই বলে না। রেস হলেও সামান্য পার্থক্য থাকে। নম্বর ওয়ান, তারপর প্লাসে
এসে যায়। এখানেও বাচ্চাদের রেস হয়। মুখ্য ব্যাপার হলো স্মরণ করার। এইটা তো বোঝো যে
আমরা পাপ আত্মা থেকে পুণ্য আত্মা হচ্ছি। বাবা ডায়রেক্শন দিয়েছেন, এখন পাপ করলে
সেইটা শত গুণ হয়ে যায়। অনেকে আছে যারা পাপ করে, বলে না। তারপর পাপ বৃদ্ধি হতে থাকে।
শেষে আবার ফেল করে যায়। শোনাতে গেলে লজ্জা লাগে। সত্য না বলার কারণে নিজেকেই ধোঁকা
দিতে থাকে। কারো তো আবার ভয় হয় যে, বাবা আমার এই কথা শুনলে কি বলবেন! কেউ তো আবার
ছোট ভুল করেও শোনাতে আসে। কিন্তু বাবা তাদেরকে বলছেন, বড় বড় ভুল তো খুব ভালো ভালো
বাচ্চারা করে। ভালো ভালো মহারথীদেরও মায়া ছাড়ে না। মায়া শক্তিশালীদেরই চক্রব্যুহের
মধ্যে নিয়ে আসে, এক্ষেত্রে বাহাদুর হতে হবে। মিথ্যা তো চলবেনা। সত্য কথা বললে হালকা
হয়ে যাবে। বাবা কতো করে বোঝান, তথাপি কিছু না কিছু চলতেই থাকে। অনেক প্রকারের কথা
হয়ে থাকে। এখন যেহেতু বাবার থেকে রাজ্য নিতে হবে তো বাবা বলছেন যে অন্যান্য দিক থেকে
বুদ্ধিযোগ সরিয়ে নাও। বাচ্চারা এখন তোমাদের জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছে, পাঁচ হাজার বছর
পূর্বে ভারত স্বর্গ ছিল। তোমরা নিজেদের জন্ম সম্বন্ধেও জেনে গেছো। কারোর জন্ম
অন্যরূপে (বিকলাঙ্গ রূপে) হয়, তাকে ডিফেক্টেড বলা হয়। নিজের কর্ম অনুসারে এইরকম হয়।
এছাড়া মানুষ তো মানুষই হয়ে থাকে। তাই বাবা বোঝাচ্ছেন যে - এক তো পবিত্র থাকতে হবে,
দ্বিতীয়ত - মিথ্যা, পাপ কিছু করা যাবে না। নাহলে তো অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। দেখো,
একজনের অল্প একটু ভুল হয়েছিল, বাবার কাছে ছুটে এসেছে। বাবা ক্ষমা করে দিন। এইরকম
কাজ আর কখনোও করবো না। বাবা বলছেন যে - এইরকম ভুল অনেকেরই হয়ে থাকে, তুমি তো সত্য
কথা বলছো, কেউ তো আবার শোনায়ই না। কিছু কিছু প্রথম সারির বাচ্চী (কন্যারা) আছে,
যাদের বুদ্ধি কখনও কোথাও যায় না। যেরকম মুম্বাইয়ের নির্মলা ডাক্তার হলেন প্রথম
নম্বর। একদমই স্বচ্ছ বুদ্ধি, কখনও বুদ্ধিতে উল্টো-পাল্টা চিন্তা আসে না, এইজন্য
সর্বদা বাবার হৃদয় জুড়ে অবস্থান করে থাকে। এইরকম আরও অনেক বাচ্চী আছে। তাই বাবা
বোঝাচ্ছেন যে - কেবল সত্য হৃদয় দিয়ে বাবাকে স্মরণ করে। কর্ম তো করতেই হবে। বুদ্ধির
যোগ বাবার সাথে জুড়ে থাকবে। হাত কাজের প্রতি, বুদ্ধি বাবার প্রতি। এই অবস্থা অন্তিম
সময়ে হবে। যার জন্য গাইতে থাকে যে - অতীন্দ্রিয় সুখ গোপ-গোপীদেরকে জিজ্ঞাসা করো,
যারা এই স্থিতিকে প্রাপ্ত করে। যে পাপ কর্ম করে তার এই স্থিতি প্রাপ্ত হয় না। বাবা
খুব ভালোভাবেই জানেন তবেই তো ভক্তি মার্গেও ভালো বা খারাপ কর্মের ফল প্রাপ্ত হয়।
দাতা তো হলেন বাবা তাই না। যে অন্যকে দুঃখ দেবে, সে অবশ্যই দুঃখ ভোগ করবে। যেরকম
কর্ম করবে তো সেরকমই ফল ভোগ করতে হবে। এখানে তো বাবা নিজে হাজির হয়েছেন, বোঝাতে
থাকছেন, তবুও গভর্নমেন্ট হওয়ার কারেণ ধর্মরাজ তো আমার সাথেই আছে তাই না। এইসময় আমার
থেকে কিছু লুকিয়ো না। এইরকম নয় যে, বাবা জানেন, আমি শিববাবার কাছে মনে মনে ক্ষমা
চেয়ে নিয়েছি, কিছুই ক্ষমা হয় না। পাপ কখনও চাপা থাকে না। পাপ করার কারণে
দিন-প্রতিদিন পাপাত্মা হতে থাকে। ভাগ্যে না থাকলে তো এইরকমই হতে থাকে। রেজিস্টার
খারাপ হয়ে যায়। একবার মিথ্যা বলে, সত্য বলে না, বোঝা যায় এইরকম কাজ করতেই থাকে।
মিথ্যা কখনও চাপা থাকে না। বাবা তবুও বাচ্চাদেরকে বোঝাতে থাকেন, এক পয়সার চোর সমান
লক্ষ টাকার চোর বলা হয়ে থাকে, এইজন্য বলা চাই যে আমার দ্বারা এই ভুল হয়েছে। যখন বাবা
জিজ্ঞাসা করেন তখন বলে ভুল হয়ে গেছে, নিজে থেকে আগে কেন বলে না। বাবা জানেন যে অনেক
বাচ্চাই পাপ করে লুকিয়ে থাকে। বাবাকে শোনালে শ্রীমত প্রাপ্ত হবে। কোথা থেকে চিঠি
আসলে তো বলো কি উত্তর দেবো। শোনালে শ্রীমত প্রাপ্ত হবে। অনেকের মধ্যেই খারাপ
সংস্কার আছে - তাই সে লুকিয়ে থাকে। কারো তো লৌকিক ঘর থেকে সেই সংস্কার প্রাপ্ত হয়।
বাবা বলেন যে যদি সেই সংস্কার ধারণ করো তো দায়িত্ব বাবার হয়ে যায়। স্থিতি দেখে কাউকে
বলি যে যজ্ঞে পাঠিয়ে দাও। তোমাকে বদলী করে দিলে ভালো হবে, না হলে তো সে স্মরণে আসতে
থাকবে। বাবা খুব সাবধান করে দেন। মার্গ অনেক উঁচু। প্রত্যেক কদমে সার্জেনের রায় নিতে
হবে। বাবা এই শিক্ষাই দেন যে, এইরকম ভাবে চিঠি লেখো তো তীর লেগে যাবে, কিন্তু
অনেকের মধ্যে দেহ-অভিমান আছে। শ্রীমতে না চলার কারণে নিজের খাতা খারাপ করে ফেলে।
শ্রীমতে চললে প্রত্যেক ক্ষেত্রে লাভ আছে। রাস্তা কতোই না সহজ। কেবলমাত্র স্মরণের
দ্বারা তোমরা বিশ্বের মালিক তৈরী হচ্ছো। বয়স্কা মাতাদের জন্য বলছেন - কেবলমাত্র বাবা
আর উত্তরাধিকারকে স্মরণ করো। প্রজা না তৈরী করলে তো রাজা-রাণীও হতে পারবে না। তবুও
যে পাপ কর্ম করে লুকিয়ে থাকে, তার থেকে তো উঁচু পদ পেতে পারবে। বাবার কর্তব্য হল
বোঝানো। যাতে কেউ এইরকম না বলে যে, আমি তো জানতাম না। বাবা সবরকম নির্দেশ দেন। ভুল
করলে শীঘ্রই বলে দিতে হবে। এটা কোনও ব্যাপার নয়, তবে পুনরায় এই ভুল করো না। এতে ভয়
পাওয়ার কিছু নেই। স্নেহের সাথে বোঝানো হয়। বাবাকে বললে কল্যাণ আছে। বাবা স্নেহের
সাথে ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেবেন। নাহলে তো হৃদয় থেকে একদম ভেঙে পড়বে। এমন নয় যে আমি
প্রত্যক্ষ ভাবে নিতে পারবো, কিছুই হবে না। যতটা বোঝানো হয় - বাবাকে স্মরণ করো, ততই
বুদ্ধি বাইরের দিকে ছুটতে থাকে। এইসব কথা বাবা প্রত্যক্ষভাবে বসে বোঝাচ্ছেন, যেটা
পরবর্তী কালে শাস্ত্রে পরিণত হয়। এগুলির মধ্যে গীতাই হল ভারতের সর্বোত্তম শাস্ত্র।
গাওয়া হয়েও থাকে যে - সর্বশাস্ত্রময়ী শিরোমণী গীতা, যেটা ভগবান বলেছেন। অন্যান্য সব
ধর্ম তো পরবর্তী কালে আসে। গীতা হয়ে গেল মাতা-পিতা আর অন্যান্য শাস্ত্রগুলি হল
বাচ্চা। গীতাতেই ভগবানুবাচ আছে। কৃষ্ণকে তো দৈবী সম্প্রদায়ের বলা হবে। দেবতা তো হল
ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকর। ভগবান তো হলেন দেবতাদের থেকেও উঁচু। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকর এই
তিন দেবতারই রচয়িতা হলেন শিব। একদম ক্লিয়ার তাই না। ব্রহ্মার দ্বারা স্থাপনা, এইরকম
তো কখনও বলে না যে কৃষ্ণের দ্বারা স্থাপনা। ব্রহ্মার রূপ দেখানো হয়েছে। কিসের
স্থাপনা? বিষ্ণুপুরীর। এই ছবি যেন হৃদয়ের মধ্যে ছেপে যাওয়া চাই। আমরা শিববাবার থেকে
এনার দ্বারা উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছি। বাবা ছাড়া ঠাকুরদাদার উত্তরাধিকার প্রাপ্ত
হয় না। যখন কারো সাথে মিলিত হও তো এটাই বলো যে বাবা বলেন - মামেকম্ স্মরণ করো। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
লক্ষ অনেক উঁচু এইজন্য প্রত্যেক কদমে বাবার থেকে রায় নিতে হবে। শ্রীমতে চললে লাভ আছে,
বাবার থেকে কিছু লুকিয়ো না।
২) দেহ আর দেহধারীদের থেকে বুদ্ধির যোগ সরিয়ে এক বাবার সাথে জুড়তে হবে। কর্ম করতেও
এক বাবার স্মরণে থাকার পুরুষার্থ করতে হবে।
বরদান:-
শক্তিগুলির কিরণের দ্বারা দুর্বলতা এবং অপূর্ণতারূপী আবর্জনা গুলিকে ভষ্মকারী
মাস্টার জ্ঞানসূর্য ভব।
যে বাচ্চারা
জ্ঞানসূর্যের সমান মাস্টার জ্ঞানসূর্য হয় তারা নিজের শক্তিগুলির কিরণের দ্বারা
যেকোনও প্রকারের আবর্জনা অর্থাৎ দুর্বলতা বা অপূর্ণতা, সেকেন্ডে ভষ্ম করে দেয়।
সূর্যের কাজই হল আবর্জনাকে এইরকম ভষ্ম করে দেওয়া যার নাম, রূপ, রঙ সদাকালের জন্য
সমাপ্ত হয়ে যায়। মাস্টার জ্ঞানসূর্যের প্রত্যেক শক্তি অনেক কিছু করতে পারে কিন্তু
সময় অনুসারে ব্যবহার করতে হবে। যে সময় যে শক্তির প্রয়োজনীয়তা আছে সেই সময় সেই
শক্তিকে কাজে লাগাও আর সকলের দূর্বলতাগুলিকে ভষ্ম করে দাও তখন বলা যাবে মাস্টার
জ্ঞান সূর্য।
স্লোগান:-
গুণ মূর্তি হয়ে নিজের জীবনরূপী ফুলের তোড়াতে দিব্যতার সুগন্ধি ছড়িয়ে দাও।