18.03.2021
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
স্মরণে থেকে অন্যদেরকে স্মরণ করবার অভ্যাস করাও, যে যোগ করাবে তার বুদ্ধি যেন এদিক
ওদিক ছুটোছুটি না করে"
প্রশ্নঃ -
কোন্
বাচ্চাদের উপরে অনেক বড় রেসপন্সিবিলিটি রয়েছে ? তাদের কীসের প্রতি মনযোগ দেওয়া
অত্যন্ত জরুরী ?
উত্তরঃ -
যে বাচ্চারা নিমিত্ত টিচার হয়ে অন্যদেরকে যোগ করায়, তাদের উপরে অনেক বড়
রেসপন্সিবিলিটি রয়েছে। যোগ করাবার সময় বুদ্ধি যদি এদিক ওদিক ছুটোছুটি করে, তবে
সেটা সার্ভিসের পরিবর্তে ডিস্-সার্ভিস হয়ে যাবে । সেইজন্য এটা খেয়াল রাখতে হবে যে,
আমার দ্বারা যাতে পূণ্যের কাজ হয়।
গীতঃ-
ওম্ নমঃ শিবায়...
ওম্ শান্তি ।
বাবা সব
বাচ্চাদেরকে সবার প্রথমে এখানে বসে লক্ষ্যকে স্থিত করবার জন্য দৃষ্টি দিতে থাকেন
যে, আমি যেমন শিব বাবার স্মরণে বসে আছি, তোমরাও শিব বাবার স্মরণে বসো। প্রশ্ন এটাই
ওঠে যে, সামনে যিনি নেষ্ঠা অর্থাৎ ধ্যান করাবার জন্য বসেছেন, তিনি নিজে সারাদিন শিব
বাবার স্মরণে থাকেন, যাতে অন্যদের মধ্যেও (বাবার প্রতি) আকর্ষণ হয় ? স্মরণে থাকলে
খুব শান্তিতে থাকবে। অশরীরী হয়ে শিব বাবার স্মরণে যদি থাকে, তবে অন্যদেরকেও
শান্তিতে নিয়ে যাবে, কারণ টিচার হয়ে বসেছো যে। যদি টিচারই ঠিক মতো স্মরণে না থাকে,
তবে অন্যরাও থাকতে পারবে না। প্রথমে তো এই খেয়াল রাখতে হবে যে, আমি কি ওই প্রিয়তম
বাবার আশিক (প্রিয়তমা), ওঁনার স্মরণে বসে আছি ? প্রত্যেকে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করো।
বুদ্ধি যদি অন্যদিকে ছুটোছুটি করে, দেহ-অভিমানে এসে গেলে তখন আর সেটা সার্ভিস থাকে
না, ডিস-সার্ভিস করে বসে। এটা তো ভালো ভাবে বুঝতে হবে। কোনো সার্ভিস তো হল না,
এমনিই বসে থাকলে, তবে তো ক্ষতিই করে বসল। টিচারের বুদ্ধিযোগ যদি ছুটোছুটি করে, তবে
সে সাহায্য কী করবে ? যারা টিচার হয়ে বসছো তারা নিজেকে জিজ্ঞাসা করো যে, আমি কি
পুণ্যের কাজ করছি ? যদি পাপ কর্ম করি তবে তো অসীম দুর্গতি রয়েছে। পদ ভ্রষ্ট হয়ে
যাবে । আর যদি এইরকম কাউকে তুমি গদিতে বসাও, তবে তার জন্য তুমি রেসপন্সিবল থাকবে।
শিববাবা তো সবাইকে জানেন। এই বাবাও সবার অবস্থাকে (স্থিতিকে) জানেন। শিববাবা বলবেন
যিনি টিচার হয়ে বসেছেন, তার বুদ্ধিযোগ তো এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতে থাকে । এ
অন্যদেরকে সাহায্য করবে কীকরে ? তোমরা ব্রাহ্মণ বাচ্চারা নিমিত্ত হয়েছো শিববাবার
হয়ে ওঁনার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার নেওয়ার জন্য। বাবা বলেন, হে আত্মারা মামেকম্
স্মরণ করো। টিচার হয়ে বসলে আরও ভালো ভাবে ওই অবস্থাতে বসো। এমনিতে তো সবাইকেই
বাবাকে স্মরণ করতে হবে। স্টুডেন্ট নিজেই নিজের অবস্থাকে বুঝতে পারে। নিজেই বুঝতে
পারে যে আমি পাশ করব কি করব না। টিচারও জানেন। যদি প্রাইভেট টিচার রাখে, তিনিও বুঝতে
পারেন। ওই পড়াশোনাতে যদি কেউ প্রাইভেট টিচার রাখতে চায় তো রাখতে পারে। এখানে কেউ
যদি বলে আমাকে যোগে (নিষ্ঠা/নেষ্ঠা) বসাও, তখন বাবার স্মরণে বসতে হবে। বাবার ফরমানই
(আদেশ) হল, বাবাকে স্মরণ করো। তোমরা হলে আশিক (প্রেমিকা), চলতে ফিরতে প্রিয়তমকে
স্মরণ করো। সন্ন্যাসী ব্রহ্মকে স্মরণ করে। তারা মনে করে আমরা ব্রহ্মতে লীন হয়ে যাব।
যারা খুব বেশী স্মরণ করবে তাদের স্থিতি খুব ভালো হবে। প্রত্যেকের মধ্যে কিছু না কিছু
ভালো তো আছেই, তাই না ! বলা হয় যে, স্মরণের যাত্রায় থাকো। নিজেকেও বাবার স্মরণে
রাখতে হবে। বাবার কাছে সৎ মানুষেরা যেমন আছে আবার তেমন উল্টোটাও। নিজে নিরন্তর
স্মরণে থাকা খুবই কঠিন। কেউ কেউ এমন আছে যারা বাবার কাছে একদম সৎ থাকে। এই বাবাও
নিজের অনুভব বাচ্চারা তোমাদের বলেন যে, কিছু সময় স্মরণে থাকি, তারপর আবার ভুলে যাই।
কেননা এই ব্রহ্মার উপরে অনেক দায়িত্বের বোঝা রয়েছে। এত এত বাচ্চা। তোমরা তো এটাও
জানতে পারো না যে, এই মুরলীতে শিববাবা বলছেন নাকি ব্রহ্মা বলছেন, কেননা দু'জনেই
একসাথে আছেন। ইনিও (ব্রহ্মা) বলেন যে, আমিও শিববাবাকে স্মরণ করি। এই বাবা
বাচ্চাদেরকে নেষ্ঠা করান। ইনি বসলে তোমরা দেখতে পাও চারিদিক কেমন নিস্তবদ্ধ হয়ে
যায়। অনেকের তখন আকর্ষণ হয়। তিনি বাবা যে। বলেন - বাচ্চারা, স্মরণে থাকো। নিজেও
থাকতে হবে। কেবল পন্ডিত হলে হবে না। স্মরণে না থাকলে অন্তিম সময়ে ফেল হয়ে যাবে।
বাবা আর মাম্মার তো উচ্চ পদ, এছাড়া মালা তো এখনো তৈরী হয়নি। মালার একটি দানাও
কমপ্লিটলি তৈরী হয়নি। পূর্বে মালা বানানো হত বাচ্চাদের (পুরুষার্থে) লিফ্ট দেওয়ার
জন্য। কিন্তু দেখা গেল যে মায়া অনেককেই শেষ করে দিল। সমস্ত কিছুই সার্ভিসের উপরেই
নির্ভর করছে। অতএব যে সামনে নেষ্ঠা করাতে বসবে তাকে বোঝাতে হবে যে, আমি সত্যিকারের
টিচার হয়ে বসছি। নইলে বলতে হবে যে বুদ্ধি এদিক ওদিক ছুটে বেড়াতে থাকে। আমি এখানে
বসার যোগ্য নই। নিজের থেকেই বলে দেওয়া উচিত। এমন যেন না হয় যে, যার ইচ্ছা সে-ই এসে
বসে গেল। এমনও কেউ কেউ আছে, যে মুরলী হয়ত শোনায় না, কিন্তু স্মরণে থাকে । কিন্তু
এখানে তো দুটোতেই তুখোর হতে হবে। সজন তো অতীব লভলী, তাঁকে তো খুব বেশী স্মরণ করতে
হবে। এতেই পরিশ্রম রয়েছে । বাকি প্রজা হওয়া তো সহজ। দাস দাসী হওয়া বড় ব্যাপার নয়।
তারা জ্ঞানকে ধারণ করতে পারে না। যেমন যজ্ঞের ভান্ডারীকে দেখো। সকলকে কেমন খুশী করে।
কাউকেই দুঃখ দেয় না, সবাই তার প্রশংসা করে। তো বাঃ শিববাবার ভাণ্ডারী তো নম্বর
ওয়ান। অনেকের মনকে খুশী করে দেয় সে। বাবাও বাচ্চাদের মনকে খুশী করে আসছেন। বাবা
বলেন, আমাকে স্মরণ করো আর এই সৃষ্টিচক্রকে বুদ্ধিতে রাখো। এখন প্রত্যেককে নিজের
কল্যাণ করতে হবে । প্রতিটি হাড় দিয়ে সেবা করতে হবে। তোমাদের খুবই দয়ালু হওয়া উচিত
। মানুষ মুক্তি জীবনমুক্তির জন্য এদিক ওদিক অনেক বিভ্রান্ত হতে থাকে। সদ্গতির বিষয়ে
কারোরই জানা নেই। মনে করে যেখান থেকে এসেছি সেখানেই ফিরে যেতে হবে। এও বোঝে যে এটা
হল সৃষ্টি নাটক, কিন্তু সেটাকে মেনে চলে না। দেখো, ক্লাসে কখনো কখনো মুসলমানরাও আসে।
তারা বলে আমরা আসল দেবী দেবতা ধর্মের, মুসলিম ধর্মে কনভার্ট হয়ে গেছি। আমরা ৮৪
জন্ম ভোগ করেছি। সিন্ধেও ৫ - ৬ জন মুসলমান আসতেন। এখনও আসে, তারপর আগে চলতে পারবে
কি পারবে না, সেটা তো পরে দেখা যাবে। কেননা মায়াও তো পরীক্ষা নেয়। কেউ কেউ
পাকাপোক্ত ভাবে রয়ে যায়, কেউ আবার পারে না। যে প্রকৃত ব্রাহ্মণ ধর্মের হবে, যারা
৮৪ জন্ম নিয়ে থাকবে, সে কখনো নড়চড় করবে না। বাকিরা তো কোনো কারণে বা অকারণে চলে
যাবে। দেহ-অভিমানও খুব এসে যায়। বাচ্চারা, তোমাদের অনেকের কল্যাণ করতে হবে। নাহলে
কী পদ পাবে ? তোমরা বাড়ি ঘর ছেড়েছো নিজের কল্যাণের জন্য। বাবাকে অনুগ্রহ করবার
জন্য নয়। বাবার হয়েছো, তবে সার্ভিসও সেই রকমই করা উচিত । তোমাদের তো রাজত্বের
মেডেল প্রাপ্ত হয়, ২১ জন্ম সদা সুখের রাজত্ব প্রাপ্ত হয় । মায়ার উপরে কেবল বিজয়
প্রাপ্ত করতে হবে আর অন্যদেরকেও শেখাতে হবে। অনেকে ফেলও হয়ে যায়। ভাবে বাদশাহী
নেওয়া তো খুবই কঠিন ব্যাপার। বাবা বলেন, এমন ভাবাটা হল দুর্বলতা । বাবা এবং
উত্তরাধিকারকে স্মরণ করা তো খুবই সহজ। বাচ্চাদের মধ্যে সাহস আসে না রাজত্ব নেওয়ার,
তখন কাপুরুষের মতো বসে যায়। না নিজেরা নেয়, না অন্যদেরকে নিতে দেয়। তাহলে পরিণাম
কী হবে ? বাবা বাচ্চাদেরকে বোঝান যে, রাত দিন সার্ভিস করো। কংগ্রেসীরাও তো পরিশ্রম
করেছিল। কত সংগ্রামের পরে ফরেনারদের থেকে রাজত্ব নিয়ে নিয়েছিল। তোমাদেরকে রাবণের
থেকে রাজত্ব নিয়ে নিতে হবে। সে হল সকলের শত্রু। জগতবাসী জানে না যে, আমরা রাবণের মতে
চলছি, তাই তো দুঃখী। কারো সত্যিকারের স্থায়ী আন্তরিক সুখ আছে কি ? শিববাবা বলেন,
আমি তোমাদেরকে সদা সুখী বানাতে এসেছি। এখন শ্রীমতে চলে তোমাদের শ্রেষ্ঠ হতে হবে।
ভারতবাসীরা সবাই নিজের ধর্মকে ভুলে গেছে। যথা রাজা রানী, তথা প্রজা। এখন বাচ্চারা,
তোমাদের এই বোধ প্রাপ্ত হয় - সৃষ্টির চক্র কীভাবে পরিক্রমা করে। সেটাও মাঝে মাঝেই
ভুলে যায়। বুদ্ধিতে বসেই না। ব্রাহ্মণ তো অনেকেই হয়, কিন্তু কেউ কাঁচা থেকে
যাওয়ার কারণে বিকারে চলে যায়। নিজেকে বি. কে. বলে পরিচয় দেয়, কিন্তু বি.কে বলা
যাবে না। বাদবাকি যারা সম্পূর্ণ বাবার ডাইরেক্শন অনুযায়ী চলে, নিজ সম বানাতে থাকে,
তারাই উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে পারবে । বিঘ্ন তো পড়বে। অমৃত পান করতে করতে তারপর গিয়ে
বিঘ্ন সৃষ্টি করে। এও কথিত আছে । তারা কী পদ পাবে ? অনেক কন্যারা বিকারের কারণে
মারও খায়। তারা বলে, এইটুকু কষ্ট সহ্য করে নেবো। আমাদের প্রিয়তম যে শিববাবা। মার
খাওয়ার সময়ও আমরা শিববাবাকে স্মরণ করি। তারা খুবই খুশীতে থাকে। এই আন্তরিক খুশীতেই
থাকা উচিত। বাবার থেকে আমরা অবিনাশী উত্তরাধিকার নিচ্ছি, অন্যদেরকেও আমরা আমাদের মতো
বানাতে থাকি।
বাবার বুদ্ধিতে তো এই সিঁড়ির চিত্র সব সময় থাকে। এটাকে তিনি অত্যন্ত গুরুত্ব দেন।
বাচ্চারা যখন বিচার সাগর মন্থন করে এমন এমন চিত্র বানায়, তখন বাবাও তাদেরকে
ধন্যবাদ জানান। কিম্বা এটা বলা যায়, বাবা সেই বাচ্চার বুদ্ধিতে টাচ্ করিয়েছেন।
সিঁড়ির চিত্র খুবই সুন্দর বানানো হয়েছে। ৮৪ জন্মকে জানলে সৃষ্টির আদি - মধ্য -
অন্তকে জেনে গেলে। এটা একেবারে ফার্স্টক্লাস চিত্র। ত্রিমূর্তি গোলার (সৃষ্টিচক্র)
চিত্রের থেকেও এই সিঁড়ির চিত্রে নলেজ অনেক বেশী রয়েছে। এখন আমরা সিঁড়ি চড়ছি। কত
সহজ এ'সব। বাবা এসে লিফ্ট দেন। শান্তিতে বাবার থেকে উত্তরাধিকার নিচ্ছো। সিঁডি
এইজন্য খুবই ভালো। (জিজ্ঞাসুকে) বোঝাতে হবে, তুমি কী হিন্দু, তুমি তো হলে দেবী দেবতা
ধর্মের। আর যদি বলে যে, আমি কী ৮৪ জন্ম নিয়েছি নাকি ? আরে কেন বুঝতে পারছ না যে,
আমরা ৮৪ জন্ম নিয়েছিলাম। তারপরে যদি স্মরণ করো তবে প্রথম নম্বরে এসে যাবে। তোমাদের
কুলের হলে এই রকম প্রশ্ন করবে না যে, সবাই থোড়াই ৮৪ জন্ম নেবে নাকি ! আরে তুমি এমন
কেন ভাবছো যে আমি তো দেরিতে এসেছি। বাবা, তোমাদেরকে, সব বাচ্চাদেরকে বলেন যে, তোমরা
ভারতবাসীরা ৮৪ জন্ম নিয়েছো। এখন পুনরায় নিজের উত্তরাধিকার নাও, স্বর্গে চলো।
বাচ্চারা, তোমরা তো যোগে বসো, সিঁড়ির স্মরণ করো, দেখবে খুব আনন্দ অনুভব হবে যে -
আমরা ৮৪ জন্ম সম্পূর্ণ করেছি ! এখন আমরা ফিরে যাচ্ছি। কতখানি খুশী হতে থাকে !
সার্ভিস করবারও উদ্দীপনা থাকা চাই। বোঝানোর জন্যও অনেক অনেক উপায় এখন তোমরা পেয়ে
যাচ্ছো। সিঁড়ির ওপরে বোঝাও। সব চিত্রই থাকা চাই। বাবা তো বলেনই, তোমরা আমার
ভক্তদের কাছে যাও, তাদেরকে এই জ্ঞান শোনাও। তাদেরকে তোমরা মন্দিরে পাবে। মন্দির
গুলিতে গিয়ে এই সিঁড়ির চিত্রের ওপরে তোমরা বোঝাতে পারো। সারাদিন ধরে বুদ্ধিতে এটাই
যেন থাকে সকলকে বাবার পরিচয় দিই, মানুষের কল্যাণ করি। দিনে দিনে তোমাদের বুদ্ধির
তালা খুলতে থাকবে। যাদের উত্তরাধিকার পাওয়ার তারা আসবে, প্রতিদিন শিখতেও থাকবে। কারো
কারো উপরে গ্রহের দশা লেগে গেলে বাবাকে তখন বোঝাতে হয়। তারা বুঝতে পারে না যে,
আমাদের উপরে গ্রহের দশা লেগেছে, সেইজন্য আমার দ্বারা সার্ভিস হচ্ছে না। সমস্ত
রেসপন্সিবিলিটি বাচ্চারা, তোমাদের উপরে । নিজ সম ব্রাহ্মণ বানাতে থাকো। সার্ভিসে
থাকলে মন সব সময় খুশীতে থাকে, অনেকের কল্যাণ হয়। বাবার মুম্বইতে সেবা করতে খুব
ভালো লাগতো। নতুন অনেকে আসতো। বাবার তো খুব ইচ্ছা হত যে সার্ভিস করি। বাচ্চাদেরও
এইরকম দয়ালু হওয়া চাই । সার্ভিসে লেগে পড়া উচিত। মনের মধ্যে সব সময় এটাই যেন হতে
থাকে যে, যতক্ষণ পর্যন্ত না কাউকে নিজ সম বানাচ্ছি, ততক্ষণ পর্যন্ত অন্ন গ্রহণ করব
না। আগে পুণ্য তো করি। পাপ আত্মাকে পুণ্য আত্মা বানিয়ে তবেই খাবার খাব। নিজের মতো
ব্রাহ্মণ বানানোর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উচিত। বাচ্চাদের জন্য ম্যাগাজিন বেরোয়,
কিন্তু বি. কে. রা এত পড়ে না। ভাবে আমাদের জন্য না, এ তো বাইরের লোকেদের জন্য। বাবা
বলেন বাইরের লোকেরা তো কিছুই বুঝবে না যতক্ষণ না টিচাররা বোঝাচ্ছে। এ'সব হল
ব্রহ্মাকুমার কুমারীদের জন্য, তাই পড়ে রিফ্রেশ হও। কিন্তু তারা পড়ে না। সব
সেন্টারের বাচ্চারা, তোমরা সমস্ত ম্যাগাজিন পড়ো ? পড়ে কী মনে হয় ? কেমন লাগছে ?
যারা ম্যাগাজিন বের করছে তাদেরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা উচিত যে আপনারা খুব সুন্দর
সুন্দর লেখা দিয়েছেন। আপনাদেরকে ধন্যবাদ। পরিশ্রম করতে হবে, ম্যাগাজিন পড়তে হবে।
এ'সব হল বাচ্চাদের রিফ্রেশ হওয়ার জন্য । কিন্তু বাচ্চারা পড়ে না। খ্যাতনামাদেরকে
সবাই ডাকতে থাকে যে, বাবা অমুককে আমাদের এখানে পাঠান। বাবা তখন বোঝান যে, নিজেরা
ভাষণ করতে পারে না বলে অন্যদেরকে ডাকতে থাকে। তাহলে সার্ভিসেবলদেরকে কতখানি রিগার্ড
দেওয়া উচিত ! আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
রাজত্বের মেডেল নেওয়ার জন্য সবার মনকে খুশী করতে হবে। অত্যন্ত দয়ালু হয়ে নিজের আর
সকলের কল্যাণ করতে হবে । প্রতিটি হাড় দিয়ে সেবা করতে হবে।
২ ) দেহ-অভিমানে এসে ডিস্-সার্ভিস করবে না। সর্বদা পুণ্য কর্ম করবে। নিজ সম
ব্রাহ্মণ বানানোর সেবা করতে হবে । সার্ভিসের রিগার্ড রাখতে হবে।
বরদান:-
স্মরণ আর সেবার ডবল লকের দ্বারা সদা সেফ, সদা আনন্দিত আর সদা সন্তুষ্ট ভব
সারাদিন সংকল্প, বোল
আর কর্ম বাবার স্মরণ আর সেবাতে নিয়োজিত থাকবে, প্রতিটি সংকল্পে বাবার স্মরণ থাকবে,
বোলের দ্বারা বাবার দেওয়া সম্পদ (খাজানা) অন্যদেরকে দাও, কর্মের দ্বারা বাবার
চরিত্রকে প্রতিষ্ঠিত করো। যদি এইরকম স্মরণ আর সেবাতে সদা বিজি থাকো, তবে ডবল লক লেগে
যাবে। তখন মায়া কখনোই আসতে পারবে না। যারা এই স্মৃতির দ্বারা পাকাপোক্ত লক লাগায়,
তবে সে সদা সেফ, সদা আনন্দিত আর সদা সন্তুষ্ট থাকে।
স্লোগান:-
"বাবা" শব্দের ডায়মন্ড চাবী যদি সদা থাকে, তবে সকল খাজানার অনুভূতি হতে থাকবে।