03.03.2021 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা সত্যিকারের সত্য পিতার কাছ থেকে সত্য কথা শুনে নর থেকে নারায়ণ হচ্ছ, তোমরা ২১ জন্মের জন্য অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে উত্তরাধিকার পেয়ে যাও"

প্রশ্নঃ -
বাবার কোন্ নির্দেশ পালন করলে বাচ্চাদের বুদ্ধি পরশসম হয়ে যায় ?

উত্তরঃ -
বাবার নির্দেশ হলো - সকল দৈহিক সম্বন্ধকে ভুলে কেবল বাবা এবং রাজত্বকালকে স্মরণ করো। এটাই হলো সদগতি প্রাপ্তির জন্য সদগুরুর শ্রীমৎ। যারা এই শ্রীমৎ পালন করে অর্থাৎ দেহী-অভিমানী হয়, তাদের বুদ্ধি পরশসম হয়ে যায়।

গীতঃ-
আমরা মানুষরা এখন অন্ধকারে নিমজ্জিত…

ওম্ শান্তি ।
এটা কলিযুগের দুনিয়া। সকলে আজ অন্ধকারে নিমজ্জিত। একসময়ে এই ভারতেই রোশনাই ছিল। যখন ভারতে স্বর্গ ছিল। এই ভারতবাসীরা, যারা এখন নিজেকে হিন্দু বলে, তারা আসলে দেবী-দেবতা ছিল। ভারতবাসীরা স্বর্গবাসী ছিল। অন্য কোনো ধর্ম ছিল না, একটাই ধর্ম ছিল। স্বর্গ, বৈকুণ্ঠ, বেহেস্ত কিংবা হেভেন - এগুলো সবই ভারতের নাম ছিল। প্রাচীন ভারত পবিত্র এবং অনেক ধনী ছিল। এখন ভারত কাঙাল হয়ে গেছে। কারন এখন কলিযুগ চলছে। ওটা ছিল সত্যযুগ। তোমরা সকলেই ভারতবাসী। তোমরা জানো যে এখন আমরা অন্ধকারে রয়েছি। যখন সত্যযুগে ছিলাম, তখন রোশনাই ছিল। লক্ষ্মী-নারায়ণ ছিল স্বর্গের রাজ রাজেশ্বর এবং রাজ রাজেশ্বরী। ওই দুনিয়াকে সুখধাম বলা হয়। নতুন বাচ্চারা এলে বাবা পুনরায় বোঝান। বাবার কাছ থেকেই তোমরা স্বর্গের উত্তরাধিকার নাও যাকে মুক্ত জীবন বলা হয়। এখন সকলেই জীবনের বন্ধনে আবদ্ধ। সমগ্র দুনিয়া, বিশেষ করে ভারত এখন রাবণের জেল শোক বাটিকায় (বাগিচায়) রয়েছে। এমন নয় যে রাবণ কেবল লঙ্কায় ছিল, রাম কেবল ভারতেই ছিল আর রাবণ এসে সীতাকে হরণ করেছিল। এগুলো সব গল্পকথা। গীতা হলো মুখ্য। শ্রীমৎ অর্থাৎ ভগবানের দ্বারা উচ্চারিত গীতা হলো সকল শাস্ত্রের শিরোমণি। কোনো মানুষ কারোর সদগতি করতে পারে না। সত্যযুগে মুক্ত জীবনের অধিকারী দেবী-দেবতারা ছিল, যারা কলিযুগের অন্তিমে এই উত্তরাধিকার পেয়েছিল। ভারতবাসীরা এই কথাগুলো জানত না, কোনো শাস্ত্রেও লেখা নেই। সবই ভক্তিমার্গের শাস্ত্র, ভক্তিমার্গের জ্ঞান। কোনো মানুষের কাছেই সদগতি প্রাপ্তির জ্ঞান নেই। বাবা বলেন - একজন মানুষ কখনো অন্য কোনো মানুষের গুরু হতে পারে না। ওই গুরুরা কখনো সদগতি দিতে পারে না। ওই গুরুরা কেবল ভক্তি করতে আর দান-পূন্য ইত্যাদি করার পরামর্শ দেয়। দ্বাপরযুগ থেকে এই ভক্তি চলে আসছে। সত্য আর ত্রেতাযুগে ছিল জ্ঞানের প্রারব্ধ বা পুরস্কার। এমন নয় যে ওখানেও এই জ্ঞান থাকবে। বাবার কাছ থেকে সঙ্গমযুগেই ভারত এই উত্তরাধিকার পেয়েছিল। এখন তোমরা পুনরায় সেটাই নিচ্ছ। ভারতবাসীরা যখন নরকবাসী অর্থাৎ চরম দুঃখী হয়ে যায়, তখনই পতিত-পাবন, দুঃখ হরণকারী এবং সুখ প্রদানকারীকে চিৎকার করে আহ্বান করে। কাদের পতিত-পাবন ? সকলের। কারণ এখন সমগ্র দুনিয়ায়, বিশেষ করে ভারতে পাঁচ বিকার অবশ্যই আছে। বাবা হলেন পতিত-পাবন। বাবা বলছেন, আমি প্রত্যেক কল্পের সঙ্গমযুগেই আসি এবং সকলের সদগতি দাতা হই। আমাকেই অবলা, অহিল্লা, গণিকা এমনকি গুরুদেরকেও উদ্ধার করতে হয় কারন এই দুনিয়াটাই পতিত দুনিয়া। সত্যযুগকে বলা হয় পবিত্র দুনিয়া। ভারতে এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজত্ব ছিল। তবে ভারতবাসীরা জানে না যে এরাই স্বর্গের মালিক ছিল। পতিত ভূমি মানে মিথ্যার জগৎ আর পবিত্র ভূমি মানে সত্যের জগৎ। ভারত একসময়ে পবিত্র ভূমি ছিল। এই লক্ষ্মী-নারায়ণের সূর্যবংশের সাম্রাজ্য ছিল। ভারত ভূমি হলো অবিনাশী ভূমি, এর কখনো বিনাশ হয় না। যখন এনাদের রাজত্ব ছিল, তখন অন্য কোনো ভূমি ছিল না। ওরা সবাই পরবর্তীকালে এসেছে। শাস্ত্রে সবথেকে বড় ভুল এটাই করেছে যে কল্পের আয়ুকেই লক্ষ বছর বলে দিয়েছে। বাবা বলছেন, কল্পের আয়ুও লক্ষ বছর হয় না আর সত্যযুগের আয়ুও লক্ষ বছর হয় না। কল্পের আয়ু ৫ হাজার বছর। কিন্তু ওরা বলে যে মানুষ ৮৪ লক্ষ বার জন্ম নেয়। মানুষকে কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি বানিয়ে দেয়। কিন্তু বাস্তবে ওদের জন্ম তো আলাদা। ৮৪ লক্ষ রকমের প্রজাতি রয়েছে। মানুষের প্রজাতি কেবল একটাই, তাদের ৮৪ বার জন্ম হয়।

বাবা বলছেন - বাচ্চারা, তোমরাই আদি সনাতন দেবী-দেবতা ছিলে। ড্রামার পরিকল্পনা অনুসারে ভারতবাসীরা তাদের ধর্মকেই ভুলে গেছে। কলিযুগের অন্তিমে একেবারে পতিত হয়ে গেছে। তারপর সঙ্গমযুগে বাবা এসে পবিত্র বানান। এটা হলো দুঃখধাম। এরপর সুখধামের সময় আসবে। বাবা বলছেন - বাচ্চারা, তোমরা ভারতবাসীরাই স্বর্গবাসী ছিলে। তারপর তোমরা ৮৪ জন্মের সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে এসেছো। সতো অবস্থা থেকে রজো এবং তমো অবস্থায় অবশ্যই আসতে হবে। তোমাদের মতো দেবতুল্য ধনী, সদাসুখী এবং সদা স্বাস্থ্যবান আর কেউ নেই। ভারত কতোই না ধনী ছিল। বড় বড় পাথরের মতো হীরে মানিক ছিল, তার মধ্যে অনেক ভেঙে গেছে। বাবা তোমাদের মতো বাচ্চাদেরকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে তোমাদেরকে কতো ধনী বানিয়েছিলাম। তোমরা সর্বগুণে সম্পন্ন, ১৬ কলায় সম্পূর্ণ ছিলে। যেমন রাজা রানী, সেইরকম প্রজা। এনাদেরকে ভগবান, ভগবতীও বলতে পারো। কিন্তু বাবা বুঝিয়েছেন, ভগবান একজনই, তিনিই হলেন পিতা। কেবল ঈশ্বর কিংবা প্রভু বললে স্মরণে আসে না যে তিনি সকল আত্মার পিতা। তিনি তো সকল আত্মার পিতা। তিনি বোঝাচ্ছেন, তোমরা ভারতবাসীরা তাঁর জয়ন্তী পালন করো কিন্তু তিনি কবে এসেছিলেন, সেটা কেউই জানে না। সকলের বুদ্ধি এখন পাথরের মতো বা লৌহযুগী হয়ে গেছে। একসময়ে পারশনাথ ছিলে, এখন প্রস্তরনাথ হয়ে গেছ। নাথও বলা যাবে না, কারণ এখন তো রাজা রানী আর নেই। আগে এখানে দিব্য রাজস্থান ছিল। পরবর্তীকালে আসুরিক রাজত্ব হয়ে গেছে। এটাই হলো খেলা। ওগুলো সব সীমাবদ্ধ দুনিয়ার নাটক। এটা অসীম জগতের নাটক। তোমরাই এখন বিশ্বের ইতিহাস এবং ভূগোল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জেনেছো। অন্য কেউ জানে না। ভারতে যখন দেবী দেবতারা ছিলেন, তখন তারা সমগ্র সৃষ্টির মালিক ছিলেন এবং এই ভারতেই ছিলেন। বাবা ভারতবাসীদেরকে এগুলো স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। সত্যযুগে আদি সনাতন দেবী দেবতারা ছিল। তাদের ধর্ম এবং কর্ম শ্রেষ্ঠ ছিল। তারপর ৮৪ জন্মের সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামতে হয়েছে। বাবা স্বয়ং বসে থেকে কাহিনী শোনাচ্ছেন যে এটা তোমাদের অনেক জন্মের অন্তিম জন্ম। কোনো একজনের কাহিনী নয়। এখানে কোনো যুদ্ধক্ষেত্রও নেই। ভারতবাসীরা ভুলেই গেছে যে একদিন এদের (লক্ষ্মী-নারায়ণের) রাজত্ব ছিল। সত্যযুগের আয়ুকে বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য তাদেরকে সুদূর অতীতে নিয়ে চলে গেছে।

বাবা বোঝাচ্ছেন, কোনো মানুষকে কখনো ভগবান বলতো পারবে না। একজন মানুষ কখনো অন্য কোনো মানুষের সদগতি করতে পারে না। কথিত আছে, সকলের সদগতি দাতা, পতিত পাবন তো একজনই। এটা হলো মিথ্যার ভূমি। সৎ বাবা এসে সত্য ভূমি স্থাপন করেন। ভক্তরা পূজা করে, কিন্তু ভক্তিমার্গে যাদের পূজা করে, তাদের কারোর জীবনকাহিনী জানে না। শিব জয়ন্তী পালন করে। বাবা হলেন নতুন দুনিয়ার রচয়িতা। হেভেনলী গড ফাদার। অসীম সুখ প্রদান করেন। সত্যযুগে অনেক সুখ ছিল। সেটা কে কিভাবে স্থাপন করেছিল ? নরকবাসীদেরকে স্বর্গবাসী বানিয়েছিল। দুর্নীতিপরায়ণ মানুষদেরকে নীতিপরায়ণ দেবতা বানিয়েছিলেন। এটা তো বাবার-ই কর্তব্য। তোমাদের মতো বাচ্চাদেরকে পবিত্র বানান। তোমরা স্বর্গের মালিক হয়ে যাও। কিন্তু তারপর তোমাদেরকে কে পতিত বানিয়ে দেয় ? রাবণ। মানুষ বলে, সুখ-দুঃখ ঈশ্বরই দেয়। বাবা বলেন, আমি তোমাদেরকে কেবল সুখই দিই। অর্ধেক কল্প ধরে তোমরা আর বাবাকে স্মরণ করবে না। তারপর যখন রাবণ রাজ্য আসবে, তখন সকলকে পূজা করতে শুরু করবে। এটা তোমাদের অনেক জন্মের অন্তিম জন্ম। কেউ কেউ প্রশ্ন করে - বাবা, আমি কতগুলো জন্ম নিয়েছি ? বাবা বলেন - সন্তান, তুমি নিজের জন্মগুলোকেই জানো না। তোমরা পুরো ৮৪ বার জন্ম নিয়েছ। তোমরা অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে ২১ জন্মের উত্তরাধিকার নিতে এসেছ। অর্থাৎ সত্যিকারের সত্য বাবার কাছ থেকে সত্য কথা বা নর থেকে নারায়ণ হওয়ার জ্ঞান শুনছ। এটা জ্ঞান, আর ওটা ভক্তি। সুপ্রিম রুহ বা পরম আত্মা এসে এই আধ্যাত্মিক জ্ঞান প্রদান করেন। বাচ্চাদেরকে দেহী-অভিমানী হতে হবে। নিজেকে আত্মা রূপে অনুভব করে কেবল আমাকে (মামেকং) স্মরণ করো। শিববাবা সকল আত্মার পিতা। পরমধাম থেকে আত্মারা এখানে শরীরের মধ্যে ভূমিকা পালন করতে আসে। এটাকে তাই কর্মক্ষেত্র বলা হয়। অনেক বড় খেলা। আত্মার মধ্যেই ভালো কিংবা খারাপ সংস্কার থাকে। সেই অনুসারেই মানুষ ভালো কিংবা খারাপ জন্ম পায়। ইনি একসময়ে পবিত্র ছিলেন, এখন পতিত হয়ে গেছে। এই কথাটা তোমাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আমাকে, তোমাদের পিতাকে রাবণের এই পরের দুনিয়াতে এবং পতিত শরীরেই আসতে হয়। তার মধ্যেই আসতে হয় যিনি প্রথম হন। সূর্যবংশের আত্মারাই পুরো ৮৪ বার জন্ম নেয়। এরা সবাই ব্রহ্মা এবং ব্রাহ্মণ। বাবা প্রতিদিনই বোঝাতে থাকেন, কিন্তু পাথরের মতো বুদ্ধিকে পরশসম করে দেওয়া তো মুখের কথা নয়। হে আত্মারা, তোমরা এখন দেহী-অভিমানী হও। হে আত্মারা, তোমরা কেবল বাবাকে এবং রাজত্বকালকে স্মরণ করো। দৈহিক সম্বন্ধগুলো পরিত্যাগ করলেই তোমাদের বুদ্ধি পরশসম হয়ে যাবে। মরতে তো সবাইকেই হবে। এখন সকলের বানপ্রস্থ অবস্থা। কেবল সদগুরু ছাড়া কেউই সকলের সদগতি দাতা হতে পারেন না। বাবা বলছেন - হে ভারতবাসী সন্তানেরা, শুরুতে তোমাদের বুদ্ধি পরশসম ছিল। গান আছে - আত্মা এবং পরমাত্মা অনেক দিন আলাদা থেকেছে। প্রথমে তোমরা ভারতবাসীরা, অর্থাৎ যারা দেবী-দেবতা ধর্মের, তারাই এখানে এসেছ। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা পরে পরে এসেছে, তাই জন্মও কম হয়। কিভাবে সমগ্র সৃষ্টিচক্র আবর্তিত হয়, সেটা বাবা বসে থেকে বোঝাচ্ছেন। যাদের ধারণা হয়ে যায়, তাদের কাছে খুবই সহজ। আত্মাই ধারণা করে। পূণ্য আত্মা এবং পাপ আত্মা তো আত্মাই হয়। এটা তোমাদের অন্তিম ৮৪তম জন্ম। তোমরা এখন বাণপ্রস্থ অবস্থায় রয়েছ। বাণপ্রস্থে গেলে গুরুর শরণ নেয় - মন্ত্র নেওয়ার জন্য। তোমাদের এখন বাইরের কোনো মানবকে গুরু করার দরকার নেই। তোমাদের সকলের আমি হলাম বাবা, টিচার এবং সদ্গুরু। আমাকে বলাই হয় - পতিত পাবন শিববাবা। তোমাদের এখন স্মৃতি এসেছে, সকল আত্মার ইনিই হলেন পিতা। আত্মা সত্য এবং চৈতন্য, কেননা আত্মা হল অমর। সকল আত্মার মধ্যে নিজ নিজ পার্ট ভরা রয়েছে। বাবাও সত্য এবং চৈতন্য। তিনি মনুষ্য সৃষ্টির বীজরূপ হওয়ার কারণে বলেন যে - আমি সমগ্র সৃষ্টির আদি - মধ্য - অন্তকে জানি। সেইজন্য আমাকে নলেজফুল বলা হয়। তোমাদের সমস্ত নলেজ রয়েছে যে - বীজ থেকে বৃক্ষ কীভাবে নির্গত হয় । গাছ বড় হতে তো টাইম লাগে। বাবা বলেন, আমি হলাম বীজরূপ। শেষে পুরো বৃক্ষ জরাজীর্ণ অবস্থা প্রাপ্ত হয়। এখন দেখো দেবী দেবতা ধর্মের ফাউন্ডেশন নেই। প্রায় লুপ্ত হয়ে গেছে। যখন দেবী দেবতা ধর্ম অদৃশ্য হয়ে যায়, তখন বাবাকে আসতে হয়। এক ধর্মের স্থাপনা করে বাকি সবের বিনাশ করিয়ে দেন। প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারা বাবা স্থাপনা করাচ্ছেন আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্মের। তোমরা এসেছো ভ্রষ্টাচারী থেকে শ্রেষ্ঠাচারী দেবতা হতে। এই ড্রামা তৈরী হয়ে রয়েছে, এর এন্ড হয় না। বাবা আসেন। তোমরা আত্মারা হলে ব্রাদার্স, মূল লোকের বাসিন্দা তোমরা। সকলে সেই এক পিতাকে স্মরণ করে। দুঃখে সবাই তাঁকে স্মরণ করে...(সুখে কেউ করে না) । রাবণ রাজ্যে হল দুঃখ। সবাই এখানে সকলের সদ্গতি দাতা সেই এক বাবাকেই স্মরণ করে। তাঁরই হল সকল মহিমা। বাবা না এলে পবিত্র কে বানাবে। খ্রীষ্টান, ইসলাম ইত্যাদি সব মানুষই এখন হল তমোপ্রধান। সকলকে পুনর্জন্ম অবশ্যই নিতে হবে। এখন পুনর্জন্ম হয় নরকে। এমন নয় যে তারা সুখের মধ্যে যায়। হিন্দু ধর্মের লোকেরা যেমন বলে স্বর্গে গমন করেছেন, সেটা অবশ্যই নরকেই, তাই না ! এখন যদি স্বর্গে যায়, তবে তোমাদের মুখে গোলাপ ! স্বর্গে যদি যায়, তাহলে নরকের আসুরিক বৈভব কেন খাওয়াও ? প্রেত ভোজন করায় না ! বেঙ্গলে মাছ, মাংস, ডিম ইত্যাদি খাওয়ায়। আরে, তাদের এই সব খাবার খাওয়ার কী দরকার ! কেউই ফিরে যেতে পারবে না। কিন্তু প্রথম নম্বরের যারা, তাদের ৮৪ জন্ম নিতে হয়। এই জ্ঞানে কোনো কষ্ট নেই। ভক্তি মার্গে কতো পরিশ্রম । রাম নাম জপ করতে করতে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠতে থাকে। এই সবই হল ভক্তি মার্গ। এই সূর্য, চাঁদ এ'সব কেবল আলো দেয়, এরা কখনো দেবতা হতে পারে ? বাস্তবে জ্ঞান সূর্য, জ্ঞান চন্দ্রমা, নক্ষত্ররাজি হল এখানকারই মহিমা । আচ্ছা !

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই অন্তিম ৮৪ তম জন্মে কোনো রকমেরই পাপ কর্ম (বিকর্ম) যেন না হয়। পুণ্য কর্ম করবার সম্পূর্ণ পুরুষার্থ করতে হবে, সম্পূর্ণ পবিত্র হতে হবে ।

২ ) নিজের বুদ্ধিকে পরসবুদ্ধি বানানোর জন্য দেহের সকল সম্বন্ধকে ভুলে দেহী-অভিমানী হওয়ার অভ্যাস করতে হবে ।

বরদান:-
প্রতিনিয়ত কোম্পানি (সঙ্গ) আর কম্প্যানিয়নের (সাথী) দায়িত্ব পালনকারী শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান আত্মা ভব

ড্রামার ভাগ্য অনুসারে তোমরা কতিপয় আত্মাই, যাদের সর্ব প্রাপ্তি করানো শ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণদের কোম্পানি (সঙ্গ) প্রাপ্ত হয়েছে । সত্যিকারের ব্রাহ্মণদের কোম্পানি চড়তি কলার হয়ে থাকে। তারা এমন কোম্পানি করবে না যারা স্থবিরতার কলায় নিয়ে যায়। যারা সদা শ্রেষ্ঠ কোম্পানিতে থাকে আর এক বাবাকেই নিজের কম্প্যানিয়ন বানিয়ে তাঁর প্রতিই ভালবাসার দায়িত্ব পালন করে (প্রীতির রীতি), তারাই হল শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান ।

স্লোগান:-
মন আর বুদ্ধিকে একই পাওয়ারফুল স্থিতিতে স্থিত করাই হল একান্তবাসী হওয়া।