12.03.2021
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
সঙ্গদোষ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে (ঈশ্বরীয়) পঠন-পাঠনের উপরে সম্পূর্ণ মনযোগ দাও, তাহলে
কোনো ঝড়ঝঞ্ঝা আসতে পারবে না"
প্রশ্নঃ -
কোন্ একটি
বিষয়কে খেয়াল রাখলে তোমাদের জীবন তরী পার হয়ে যাবে ?
উত্তরঃ -
"বাবা, যথা আজ্ঞা", এইভাবে সর্বদা বাবার হুকুম অনুযায়ী চলতে থাকলে তোমাদের জীবন তরী
পার হয়ে যাবে। হুকুম অনুযায়ী যারা চলে, তারা মায়ার প্রহার থেকে রক্ষা পায়,
বুদ্ধির তালা খুলে যেতে থাকে। অপার খুশীতে থাকে। কোনোভাবেই কোনো উল্টো কর্ম তার
দ্বারা হয় না।
গীতঃ-
তোমায় পেয়ে মোরা পুরো দুনিয়াকে পেয়ে গেছি, পৃথিবী তো বটেই আকাশও আমাদের হাতের
মুঠোয়...
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি সকল
সেন্টারের বাচ্চারা গীত শুনেছো। সবাই জানে যে বেহদের (অসীম) বাবার থেকে পুনরায় আমরা
৫ হাজার বছরের মতোই বিশ্বের বাদশাহী নিচ্ছি। কল্প কল্প আমরা নিয়ে এসেছি। বাদশাহী
নিয়েছি আবার হারিয়েছি। বাচ্চারা জানে যে, এখন আমরা বেহদের বাবার কোলে এসেছি বা
ওঁনার বাচ্চা হয়েছি। এটা তো সত্যই। ঘরে বসে বসে বাচ্চারা পুরুষার্থ করে। বেহদের
বাবার থেকে উঁচু পদ পাওয়ার জন্য পঠন-পাঠন চলছে। তোমরা জানো যে, জ্ঞানের সাগর, পতিত
- পাবন সকলের সদ্গতি দাতা শিববাবাই আমাদের বাবাও, টিচারও, সদ্গুরুও। তাঁর থেকে আমরা
অবিনাশী উত্তরাধিকার নইলে তার জন্য কতখানি পুরুষার্থ করা উচিত - উঁচু পদ প্রাপ্ত
করবার জন্য ! অজ্ঞানকালেও যখন স্কুলে পড়তে তো নম্বর অনুযায়ী মার্কসের আধারে পাশ করে,
নিজের পড়াশোনা অনুযায়ী। সেখানে এমন তো কেউ বলবে না যে, মায়া আমাদের বিঘ্ন সৃষ্টি
করে বা ঝড়ঝাপটা আসে। ঠিক মতো পড়াশোনা না করলে বা কুসঙ্গে পড়ে যায়। অথবা
খেলাধুলায় বেশী মন হলে পড়ায় মন নেই। তখন পাশ করতে পারে না। একে কখনোই মায়ার ঝড়
তো বলা যাবে না। আচরণ ঠিক না হলে টিচারও সার্টিফিকেটে লিখে দেয় এর আচার আচরণ ঠিক
নয়। কুসঙ্গে পড়ে খারাপ হয়েছে। এতে মায়া রাবণকে তো কেউ দোষী বলবে না। বড় বড়
মানুষের ছেলেমেয়েদের মধ্যেও কেউ কেউ খুবই ভালো হয় আবার কেউ কেউ পানাসক্ত হয়ে যায়।
খারাপ পথে চলে গেলে বাবা মা'ও বলে কুপুত্র। ওই পড়াশোনাতে তৈ অনেক প্রকারের
সাবজেক্ট। এখানে তো এক প্রকারেরই পড়া। সেখানে মানুষ পড়ায়। এখানে বাচ্চারা জানে
আমাদেরকে ভগবান পড়ান। আমরা ভালো ভাবে পড়াশোনা করলে আমরা বিশ্বের মালিক হতে পারব।
বাচ্চা তো অনেক, তার মধ্যে কেউ কেউ পড়তেই পারে না সঙ্গদোষের কারণে। একে মায়ার ঝড়
কেন বলবে ? না পড়তে পারলে নিজের বাড়িতে ফিরে যায়। এ'সব তো ড্রামানুসারে প্রথমে
ভাট্টিতে পড়ারই ছিল। এসে শরণ নিয়েছিল। কাউকে স্বামী মারধর করত, এত অত্যাচার করত যে
বিরক্ত হয়ে বৈরাগ্য এসে গেছিল। বাড়িতে টিকতে পারছিল না, আবার কেউ কেউ এখানে এসেও
আবার চলে গেছে। না পড়তে পেরে চাকরিবাকরি অথবা বিয়ে করে নেয়। এটা তো একটা বাহানা
যে, মায়ার তুফানের কারণে পড়াশোনা করতে পারল না। এটা বুঝতে পারে না যে, সঙ্গদোষের
কারণে এই হাল হয়েছে আর আমার মধ্যে বিকার বড় প্রবল ভাবে রয়েছে। । এই কথা কেন বলো
যে, মায়ার ঝড় কাবু করে ফেলেছে ? এ তো নিজের উপরেই নির্ভর করছে।
বাবা, টিচার, সদ্গুরুর থেকে যে শিক্ষা প্রাপ্ত হয়, তার উপরেই চলতে হবে। যদি না চলে
তবে নিশ্চয় খারাপ সঙ্গ আছে বা কামের নেশা আছে বা দেহ-অভিমানের নেশা আছে। সেন্টারের
সবাই জানে যে আমি অসীম জগতের বাবার থেকে বিশ্বের রাজপদ প্রাপ্ত করার জন্য পড়ছি।
নিশ্চয় না থাকলে তো বসবেই বা কেন, আরোও তো অনেক আশ্রম আছে। কিম্তু সেখানে তো কিছু
প্রাপ্তি নেই। এইম অবজেক্ট নেই। সেসব হল ছোট-ছোট মঠ-পন্থ বা তার শাখা-প্রশাখা।
বৃক্ষের বৃদ্ধি তো হবেই। এখানে তো এই সব একটার সাথে আরেকটা যুক্ত । যে আত্মা এই
মিষ্টি দৈবী বৃক্ষের হবে, সে বেরিয়ে আসবে। সবথেকে মিষ্টি কে হবে ? যে সত্যযুগের
মহারাজা-মহারাণী হবে। এখন তোমরা বুঝে গেছো যে প্রথম নম্বরে আসে, তাঁকে অবশ্যই ভালো
পড়াশোনা করতে হয়েছে। সে-ই সূর্য বংশী পরিবারে যাবে। এইরকমও আছে, গৃহস্থ পরিবারে
থেকেও অর্পণময় জীবন ব্যতীত করে। অনেক সেবা করছে। পার্থক্য তো আছে, তাই না। হয়ত এখানে
থাকে কিন্তু পড়াতে পারে না, তো অন্য সার্ভিসে লেগে যায়। পিছনের দিকে অল্প কিছু পদ
পাবে। দেখা যায় বাইরে গৃহস্থ ব্যবহারে থেকেও অনেক তীব্র গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে পড়তে আর
পড়াতে। সবাই তো গৃহস্থী নয়। কন্যা বা কুমারকে গৃহস্থী বলা যায় না আর যারা বাণপ্রস্থী,
তারা ৬০ বছর পর পুনরায় সবকিছু বাচ্চাদেরকে দিয়ে নিজে কোনও সাধু সন্তদের সঙ্গ করে।
আজকাল তো সবাই তমোপ্রধান হয়ে গেছে, তাই মৃত্যুর সময় পর্যন্তও ব্যবসাপত্র ইত্যাদি
ত্যাগ করে না। আগে ৬০ বছর হয়ে গেলে বাণপ্রস্থ অবস্থায় চলে যেত। বেনারসে গিয়ে থাকতো।
এটা তো বাচ্চারা বুঝে গেছে যে, ফিরে কেউ যেতে পারবে না। সদ্গতি পেতে পারবে না।
বাবাই হলেন মুক্তি-জীবনমুক্তি দাতা। যদিও সবাই জীবনমুক্তি পাবে না। কেউ কেউ মুক্তিতে
চলে যায়। এখন আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা হচ্ছে, তারপর যে যতটা পুরুষার্থ
করবে। সেখানেও কুমারীদের ভালো চান্স আছে। পারলৌকিক বাবার উত্তরাধিকারী হয়ে যায়।
এখানে তো সব বাচ্চারই বাবার থেকে উত্তরাধিকার নেওয়ার অধিকার রয়েছে। এখানে (লৌকিক
জগতে) তো কন্যারা উত্তরাধিকারী হয় না। ছেলেদের (সম্পত্তি পাওয়ার) লোভ থাকে। আবার
এমনও আছে যারা ভাবে এই অধিকারও নিই, ওটাওবা ছাড়ি কেন। দুই দিকেই পড়াশোনা করে। এই
রকম নানান ধরনের বাচ্চারা রয়েছে। এখন এটাও বোঝে যে, যারা ভালো ভাবে পড়াশোনা করে,
তারা উচ্চ পদ প্রাপ্ত করে । প্রজাতে অনেকে বিত্তশালী হয়ে যায়। এখানে যারা থেকে
যায়, সেখানেও তাদের (প্রাসাদের) ভিতরেই থাকতে হয়, দাস দাসী রূপে। তারপর ত্রেতার
অন্তিমে ৩ - ৪ - ৫ জন্ম হয়ত রাজত্ব করতে পারবে। তাদের থেকে তো সেই সাহুকাররা ভালো,
যাদের সত্যযুগ থেকে শুরু করে তাদের সাহুকারী কায়েম থাকে। গৃহস্থ ব্যবহারে থেকে
তাহলে সাহুকারী পদ নেবে না কেন। চেষ্টা করে যাতে রাজার পদ প্রাপ্ত করা যায়। কিন্তু
যদি পদস্খলন হয়ে যায়, তবে প্রজাতে যাওয়ার জন্য অন্তত ভালো করে পুরুষার্থ করা উচিত।
এখানে যারা থাকে, তাদের থেকে বাইরে যারা রয়েছে, তারা অনেক উঁচু পদ পেতে পারে।
সমস্ত কিছুই পুরুষার্থের উপরেই নির্ভর করছে। পুরুষার্থও লুকিয়ে থাকে না। প্রজার
মধ্যেও যে অনেক বড় বড় সাহুকার (বিত্তবান) হবে, তারাও লুকিয়ে থাকতে পারবে না। এমন
নয় যে, যারা বাইরে রয়েছে, তারা নীচু পদ পাবে। অনেক পরে রাজত্ব পাওয়া ভালো নাকি
প্রথম থেকেই প্রজাতে উঁচু পদ পাওয়া ভালো ? গৃহস্থে যারা রয়েছে, মায়ার তুফান তাদের
কাছে এত আসে না। এখানে যারা থাকে, তাদের কাছে অনেক অনেক তুফান আসে। সাহস সঞ্চয় করে
সে শিববাবার শরণে বসতে চায়, কিন্তু সঙ্গদোষে পড়ে গিয়ে পড়াশোনা করে না। পরে সব
বুঝতে পেরে যাবে । সাক্ষাৎকার হবে, কে কোন্ পদ পাবে। সকলে পড়াশোনা করে, নম্বর
অনুসারে। কেউ কেউ তো সেন্টারকে নিজেই চালায়। কোথাও কোথাও তো সেন্টার যারা চালায়
তাদের থেকেও অনেক এগিয়ে যায়। সব কিছুই পুরুষার্থের উপরে। এমন নয় যে মায়ার ঝড়
ঝাপটা আসে। না। নিজের চলন ঠিক নেই। শ্রীমৎ অনুসারে চলে না। লৌকিকেও এমন হয়। টিচার
বা মা - বাবার মতে চলে না (কথা শোনে না)। তোমরা তো এমন বাবার বাচ্চা হয়েছো, যার
কোনো বাবাই নেই। বাইরের দুনিয়ায় তো অনেককেই খুব বিদেশেও যেতে হয়। কোনো কোনো বাচ্চা
এমন সঙ্গদোষে পড়ে যায় যে পাশ করতে পারে না। অনেকের আবার লোভও থাকে। কারো মধ্যে
ক্রোধ, কারো মধ্যে চুরি করার অভ্যাস, শেষ পর্যন্ত তো জানতেই পারা যায়। অমুকে অমুকে
এই এই আচরণের কারণে (বাবার হাত ছেড়ে) চলে গেছে। বোঝা যায় যে, শূদ্র কুলের হয়ে গেছে
। তাদেরকে তখন আর ব্রাহ্মণ বলা যাবে না। তখন গিয়ে শূদ্র হয়ে যায়। পড়াশোনা ছেড়ে
দেয়। এতটুকুও যদি জ্ঞান শোনে তবে প্রজাতে এসে যাবে। সৃষ্টি রূপী বৃক্ষ অনেক বড়।
কোথা কোথা থেকে যে বেরিয়ে এসেছে। দেবী দেবতা ধর্মের ছিল, অন্য ধর্মে কনভার্ট হয়ে
গেছে, তারাই এখন বেরিয়ে আসবে। অনেকে আসবে, সবাই অবাক হয়ে যাবে। অন্য ধর্মের লোকেরা
মুক্তির বর্সা তো নিতেই পারে, তাই না ! এখানে যে কোনো ধর্মের লোকই আসতে পারে। নিজের
ঘরানাতে উচ্চ পদ পেতে চাইলে তারাও এখান থেকে সেই লক্ষ্য নিয়ে যাবে। বাবা তোমাদেরকে
সাক্ষাৎকার করিয়েছেন, তারাও এখানে এসে লক্ষ্য নিয়ে যাবে। এমন নয় যে এখানে থেকেই
লক্ষ্যতে টিকে থাকতে পারবে। যে কোনো ধর্মের লোকেরা এখান থেকে লক্ষ্য নিয়ে যেতে পারে।
লক্ষ্য এটাই - বাবাকে স্মরণ করো। শান্তিধামকে স্মরণ করলে নিজের ধর্মে উচ্চ পদ
প্রাপ্ত করতে পারবে। তারা জীবনমুক্তি তো পাবে না, না তারা আসবে। এখানে তাদের মন বসবে
না। সত্যি সত্যি মন তাদেরই এখানে বসবে যারা এখানকার হবে। পরে তো আত্মারা সবাই তাদের
প্রকৃত পিতাকে জেনে যাবে। অনেক সেন্টারে এমন অনেকেই আছে যাদের ঈশ্বরীয় পাঠের প্রতি
অ্যাটেনশন নেই। তাতে বুঝতে পারা যায় যে, উচ্চ পদ পেতে পারবে না। নিশ্চয় যদি থাকে
তবে বলবে না যে, সময় নেই। কিন্তু ভাগ্যে না থাকলে বলবে সময় নেই, অমুক কাজ আছে।
ভাগ্যে থাকলে দিনরাত পুরুষার্থে উঠৈ পড়ে লেগে থাকবে। চলতে চলতে সঙ্গে পড়েও খারাপ
হয়ে যায়। তাকে গ্রহের ফেরও বলতে পারো। বৃহস্পতির দশা বদলে গিয়ে মঙ্গলের দশা লেগে
যায়। হয়ত বা পরে সেটা উঠে গেল। কারো কারো ক্ষেত্রে বাবা বলেন, রাহুর দশা লেগেছে।
ভগবানের কথাও শোনে না। মনে করে এটা ব্রহ্মা বলছে। বাচ্চারা এটা বুঝতে পারে না যে,
কে তিনি যিনি এই ডাইরেকশন দিচ্ছেন। দেহ-অভিমানের কারণে ভেবে বসে সাকার বাবা বলছেন।
দেহী-অভিমানী হলে বুঝতে পারে যে, শিববাবা আমাদেরকে যেটা বলছেন, সেটা আমাকে করতে হবে।
রেসপন্সিবিলিটি শিববাবার উপরে । শিববাবার মতে তো চলা উচিত, তাই না ! দেহ-অভিমানে
আসার ফলে শিব বাবাকে ভুলে যায়, তখন শিববাবা রেসপন্সিবল থাকেন না। তাঁর অর্ডার তো
শিরোধার্য করা উচিত, তাই না ! কিন্তু বুঝতেই পারে না যে, কে বোঝাচ্ছেন। তাও তো তিনি
কোনো অর্ডার করেন না, কেবল বলেন, আমি তোমাদেরকে শ্রীমৎ প্রদান করি। এক তো আমাকে
স্মরণ করো আর আমি যে জ্ঞান শুনিয়ে থাকি সেগুলো নিজে ধারণা করো আর অন্যদেরকে ধারণ
করাও। ব্যস্ এইটুকু কাজই করো। আচ্ছা বাবা যথা আজ্ঞা । রাজাদের সামনে যারা থাকে, তারা
এইভাবে বলে - "যথা আজ্ঞা" । সেই রাজারা হুকুম করতেন। এ হল শিব বাবার হুকুম। বারে
বারে বলা উচিত - "যথা আজ্ঞা শিববাবা" । তাহলে তোমাদের মনে খুশীও থাকবে। মনে করবে
যে, শিববাবা হুকুম করছেন। শিববাবার স্মরণ থাকলে বুদ্ধির তালাও খুলে যাবে। শিববাবা
বলেন, এই প্র্যাকটিস হয়ে যাওয়া উচিত, তাহলে তোমাদের তরী পার হয়ে যাবে। কিন্তু এটাই
হল ডিফিকাল্টি। বারে বারেই ভুলে যায়। তোমরা কেন বলো যে, মায়া ভুলিয়ে দেয় ? আমরা
ভুলে যাই, তাই তো উল্টো কাজকর্ম করতে থাকি।
অনেক কন্যাই এমন আছে, জ্ঞান তো ভালোই শোনায়, কিন্তু যোগ কম, যার দ্বারা বিকর্ম
বিনাশ হবে। এই রকম অনেক ভালো ভালো বাচ্চারা রয়েছে, তাদের যোগ একেবারেই নেই। আচরণের
দ্বারা বুঝতে পারা যায় যে, যোগে থাকে না, পাপ থেকে যায় আর ভুগতে হয়। এতে (মায়ার)
তুফানের তো কোনো কথাই নেই। ভাববে আমার দ্বারাই কোনো ভুল হয়েছে, আমি শ্রীমতে চলি
না। এখানে তোমরা এসেছো রাজযোগ শিখতে। এখানে প্রজা যোগ শেখানো হয় না। মাতা - পিতা
তো আছেনই। তাঁদেরকে ফলো করো, তাহলে সিংহাসনে বসতে পারবে। এটা তো তাদের জন্য নিশ্চিত
যে তাঁরাই লক্ষ্মী-নারায়ণ হবেন। অতএব ফলো মাদার ফাদার। অন্য ধর্মের লোকেরা মাদার
ফাদারকে ফলো করে না। তারা তো ফাদারকেই মানে। এখানে তো উভয়েই আছেন। গড তো হলেন
ক্রিয়েটর। মাদারের বিষয়টি রহস্যযুক্ত । মা - বাবা পড়াতে থাকেন। তারা বোঝাতে থাকেন
- এটা কোরো না, ওটা করো। টিচার কোনো শাস্তি দিলে সেটা স্কুলের মধ্যেই তো দেবেন, তাই
না ! বাচ্চারা কী তখন বলবে আমাকে অপমান করা হয়েছে ? বাবা তো তার ৫ - ৬ টি সন্তানের
সামনে থাপ্পড় মারেন, তাতে কি কেউ বলবে যে, ৫ - ৬ জন বাচ্চার সামনে আমাকে কেন মারল ?
বলবে না। এখানে তো বাচ্চাদেরকে শিক্ষা প্রদান করা হয়, তাও তারা চলতে পারে না। তা
যদি করতে না পারো তবে বাড়িতে থাকো আর পুরুষার্থ করো। এখানে বসে যদি ডিস-সার্ভিস করো,
তবে যেটুকু করেছো, সেটাও শেষ হয়ে যাবে। পড়তে না চাইলে ছেড়ে দাও যে, আমি চলতে পারছি
না। গ্লানি কেন করবে ! অনেক অনেক বাচ্চা রয়েছে, কেউ পড়বে, কেউ ছেড়ে দেবে।
প্রত্যেককে তার পড়াশোনাতেই লেগে থাকতে হবে।
বাবা বলেন, একে অপরের থেকে সেবা নেবে না। কোনো অহংকার যেন চলে না আসে। অন্যদের কাছ
থেকে সেবা নেওয়া, সেটাও হল দেহ অহংকার । বাবাকে তো বোঝাতেই হবে। নইলে যখন
ট্রাইব্যুনাল বসবে তখন বলবে - এই সব নিয়ম কানুন আমি জানতাম নাকি। সেইজন্য বাবা
বাচ্চাদেরকে বুঝিয়ে দেন, তারপর সাক্ষাৎকার করিয়ে সাজা দেবেন। প্রুফ ছাড়া কী কখনো
সাজা দেওয়া যায় নাকি ! বাবা তো ভালো ভাবেই বোঝান, যেমন কল্প পূর্বে বুঝিয়েছিলেন।
এরপর প্রত্যেকের ভাগ্যে যা আছে । কেউ কেউ সার্ভিস করে নিজের জীবনকে হীরে তুল্য
বানায়, কেউ আবার নিজের ভাগ্যকে গন্ডি লাগিয়ে দেয়। আচ্ছা।
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বাবা টিচার সদ্গুরুর দ্বারা যে শিক্ষা প্রাপ্ত হয় তার উপরে চলতে হবে। মায়াকে দোষ
না দিয়ে নিজের ঘাটতি গুলিকে জাজ করে সেগুলিকে বের করে দিতে হবে।
২ ) অহংকারকে ত্যাগ করে নিজের পড়াশোনাতে (আনন্দে) ডুবে থাকতে হবে। কখনোই অন্যদের
থেকে সেবা নেবে না। সঙ্গদোষের থেকে নিজেকে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বাঁচিয়ে চলতে হবে।
বরদান:-
নিশ্চয়ের আধারে সদা একরস অচল স্থিতিতে স্থিত থেকে নিশ্চিন্ত ভব
নিশ্চয়বুদ্ধির লক্ষণ
হল সদা নিশ্চিন্ত। সে কোনো ব্যাপারেই বিচলিত হয় না। সদা অচল থাকে। সেইজন্য যেটাই
ঘটুক চিন্তা করবে না, কী হল, কীকরে হল এ'সবের মধ্যে যাবে না। ত্রিকালদর্শী হয়ে
নিশ্চিন্ত থাকো। কেননা প্রতিটি কদমে কল্যাণ রয়েছে । যখন কল্যাণকারী বাবার হাত ধরেছো,
তো তিনি অকল্যাণকেও কল্যাণে বদলে দেবেন । সেইজন্য সদা নিশ্চিন্ত থাকো।
স্লোগান:-
যে সদা স্নেহী হয়, সে সকল কাজে স্বতঃতই সহযোগী হয়।