07-03-2021 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 14-11-87 মধুবন


"পূজ্য দেব আত্মা হওয়ার উপায় (সাধন) - 'পবিত্রতার শক্তি"


আজ রুহানী বহ্নিশিখা তাঁর রুহানী বহ্নি-পতঙ্গদেরকে দেখছেন। এক একটি রুহানী বহ্নি-পতঙ্গ তাদের উৎসাহ - উদ্দীপনার ডানায় উড়তে উড়তে এই রুহানী জলসায় পৌঁছে গেছে। এই রুহানী জলসা হল বিচিত্র অলৌকিক জলসা, যাকে রুহানী বাবা জানেন আর রুহানী বাচ্চারা জানে। এই রুহানী আকর্ষণের কাছে মায়ার হরেক প্রকারের আকর্ষণ অতি তুচ্ছ, অসার মনে হয়। এই রুহানী আকর্ষণ সব সময়ের জন্য বর্তমান আর ভবিষ্যৎ অনেক জন্মের জন্য আনন্দিত করে দেওয়ার মতো, অনেক প্রকারের দুঃখ - অশান্তির ঢেউয়ের থেকে দূরে সরিয়ে দিয়ে থাকে। সেইজন্য সকল রুহানী বহ্নি-পতঙ্গ এই জলসায় পৌঁছে গেছে।

বাপদাদা সকল বহ্নি-পতঙ্গদেরকে দেখে আনন্দিত হন। সকলের ললাটে পবিত্র স্নেহ, পবিত্র স্নেহের সম্বন্ধ, পবিত্র জীবনের পবিত্র দৃষ্টি - বৃত্তির চিহ্ন গুলি দৃশ্যমান হচ্ছে। সকলের উপরে এই সব পবিত্র চিহ্ন গুলির সিম্বল বা সূচক 'লাইটের মুকুট' ঝলমল করছে। সঙ্গমযুগী ব্রাহ্মণ জীবনের বিশেষত্ব হল - পবিত্রতার চিহ্ন । এই লাইটের মুকুট, যা কিনা প্রতিটি ব্রাহ্মণ আত্মার বাবার দ্বারা প্রাপ্ত হয়ে থাকে। মহান আত্মা, পরমাত্ম-বহ্নি-পতঙ্গ আত্মা, উচ্চ থেকে উচ্চ আত্মাদের এই রাজমুকুট হল চিহ্ন। তো তোমরা সকলে এই রকম মুকুটধারী হয়েছো ? বাপদাদা বা মাতা-পিতা প্রত্যেক বাচ্চাকে জন্ম থেকেই 'পবিত্র - ভব'র বরদান দিয়ে থাকেন। পবিত্রতা নেই তো ব্রাহ্মণ জীবন নেই। আদি স্থাপনা থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত পবিত্রতার উপরেই বিঘ্ন আসছে, কেননা পবিত্রতার ফাউন্ডেশন হল ২১ জন্মের ফাউন্ডেশন । পবিত্রতার প্রাপ্তি তোমাদের অর্থাৎ ব্রাহ্মণ আত্মাদেরকে উড়তি কলার দিকে সহজেই এগিয়ে যাওয়ার আধার।

যেমন গাওয়া হয়ে থাকে কর্মের 'গহন গতি', তো পবিত্রতার পরিভাষা অতি গুহ্য। পবিত্রতা হল মায়ার অনেক অনেক বিঘ্নের থেকে সুরক্ষার ছত্রছায়া। 'পবিত্রতাকেই সুখ - শান্তির জননী বলা হয়।' যে কোনো প্রকারের অপবিত্রতা দুঃখ বা অশান্তির অনুভব করায় । তো সারাদিনে চেক করো - কোনো সময়ে দুঃখ বা অশান্তির ঢেউ অনুভব হয় ? তার বীজ হল অপবিত্রতা। তা সে প্রধান বিকার গুলির কারণেই হোক বা বিকারের সূক্ষ্ম রূপের কারণেই হোক। পবিত্র জীবন অর্থাৎ দুঃখ অশান্তির নাম নিশানও নেই। কোনো কারণে দুঃখের এতটুকুও যদি অনুভব হয়, তবে সম্পূর্ণতার অভাব রয়েছে। পবিত্র জীবন অর্থাৎ বাপদাদার দ্বারা প্রাপ্ত হওয়া বরদানী জীবন। ব্রাহ্মণদের সংকল্পে অথবা মুখে এই শব্দ কখনোই আসা উচিত নয় যে, এই কারণে বা এই ব্যক্তির ব্যবহারের কারণে আমার দুঃখ হয়েছে। কখনো কখনো সাধারণ ভাবে এই শব্দ উচ্চারণও করে ফেলা কিম্বা অনুভবও করবে না। এটা পবিত্র ব্রাহ্মণ জীবনের বোল নয়। ব্রাহ্মণ জীবন অর্থাৎ প্রতিটি সেকেন্ড সুখময় জীবন। দুঃখের দৃশ্যও যদি হয়, কিন্তু যেখানে পবিত্রতার শক্তি রয়েছে, সেখানে কখনোই দুঃখের দৃশ্যে দুঃখের অনুভব করবে না, বরং দুঃখ-হর্তা সুখ-কর্তা বাবার সমান দুঃখের পরিবেশে দুঃখ ভারাক্রান্ত ব্যক্তিদেরকে সুখ-শান্তির বরদানী হয়ে সুখ-শান্তির অঞ্জলি দেবে, মাস্টার সুখ-কর্তা হয়ে দুঃখকে রুহানী সুখের পরিবেশে পরিবর্তন করবে। একেই বলা হয় - 'দুঃখ-হর্তা সুখ-কর্তা'।

সায়েন্সের শক্তি যখন অল্প কালের জন্য কারো দুঃখ কষ্টকে সমাপ্ত করতে সমর্থ হয়, তাহলে পবিত্রতার শক্তি অর্থাৎ সাইলেন্সের শক্তি দুঃখ-কষ্টকে কী সমাপ্ত করতে পারবে না ? সায়েন্সের ঔষধীতে অল্প কালের শক্তি যদি থাকে, তবে পবিত্রতার শক্তিতে, পবিত্রতার আশীর্বাদের মধ্যে কত বড়ই না শক্তি রয়েছে। সময় অনুসারে যখন আজকের ব্যক্তি ওষুধের কারণে, কারণে অকারণে বিরক্ত বোধ করবে, অসুখ বিসুখ চরমে গিয়ে পৌঁছাবে, তখন তারা সময় মতো তোমাদের, পবিত্র দেব বা দেবীদের কাছে আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য আসবে যে, আমাদেরকে দুঃখ, অশান্তির থেকে চিরদিনের জন্য মুক্ত করো। পবিত্রতার দৃষ্টি-বৃত্তি সাধারণ শক্তি নয়। যেমন এখন শারীরিক ডাক্তার এবং হাসপাতাল বেড়েই যাচ্ছে, তাও ডাক্তারদের সময়ই নেই, হাসপাতাল গুলিতে স্থানাভাব, রোগীর লাইন লেগেই থাকে। এই রকম এরপর হাসপাতাল বা ডাক্তারের কাছে যাওয়ার, চিকিৎসা করাবার চেষ্টা করলেও পারবে না। মেজরিটি নিরাশ হয়ে যাবে, তখন কী করবে ? যখন চিকিৎসায় নিরাশা আসবে, তখন কোথায় যাবে ? তোমাদের কাছেও লাইন লাগবে। এখন যেমন তোমাদের বা বাবার জড় চিত্রের সামনে "ও দয়ালু, দয়া করো" বলে দয়া আশীর্বাদ চায়, তেমনই তোমরা চৈতন্য, পবিত্র, পূজ্য আত্মাদের কাছে "ও পবিত্র দেবীরা বা পবিত্র দেব ! আমাদের উপরে দয়া করো" - এই প্রার্থনা করার জন্য আসবে। আজকাল অল্প কালের সিদ্ধি প্রাপ্তকারীদের কাছে মানুষ, যদি কোনো অলৌকিক চমৎকার হয়ে যায় (এই আশায়) কিম্বা একটু সুখ-শান্তির দয়া নেওয়ার জন্য কত ছুটোছুটি করে ! মনে করে - দূর থেকেও যদি একটু দৃষ্টি পড়ে ! আর তোমরা তো পরমাত্ম - বিধি দ্বারা সিদ্ধি - স্বরূপ হয়েছ।

অল্প কালের জন্য যারা সিদ্ধি প্রাপ্তকারী রয়েছে, সাময়িক কিছু না কিছু পবিত্রতার বিধির দ্বারা তারা সিদ্ধি প্রাপ্ত করে। এটা চিরকাল ধরে চলতে পারবে না। এও গোল্ডেন এজেড আত্মাদের অর্থাৎ লাস্টে উপর থেকে (পরমধাম) আসা আত্মাদেরকে মুক্তিধাম থেকে আসার জন্য এবং ড্রামার নিয়ম অনুসারে, সতোপ্রধান স্টেজ অনুসারে পবিত্রতার ফল স্বরূপ সাময়িক (অল্প কালের জন্য) সিদ্ধি প্রাপ্ত হয়ে যায় । কিন্তু কিছু সময়ান্তরালেই সতো, রজো, তমো - এই তিন স্টেজ প্রাপ্তকারী আত্মা তারা। সেই কারণে চিরকাল তাদের এই সিদ্ধি থাকে না। পরমাত্ম - বিধির দ্বারা তাদের সিদ্ধি নয়, সেইজন্য কোথাও না কোথাও স্বার্থ বা অহংকারে সেই সিদ্ধি অন্তর্হিত (শেষ) হয়ে যায়। কিন্তু তোমরা পবিত্র আত্মারা হলে সদা সিদ্ধি স্বরূপ, সদা কালের প্রাপ্তি করিয়ে থাকো তোমরা। কেবল চমৎকার দেখানোর দলের নও। অবিনাশী ভাগ্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র বানানোর নিমিত্ত তোমরা। সেইজন্য এই সব লোকেদের প্রতি নির্ভরশীলতা এখন খুব অল্প সময়ের জন্য থাকবে আর শেষ অবধি তোমাদের, পবিত্র আত্মাদের কাছেই সকলে আঁচল পেতে নেওয়ার জন্য আসবে। তো এতখানি সুখ-শান্তির জননী পবিত্র আত্মা হয়েছ তোমরা ? এতটা হওয়ার স্টক জমা করেছ নাকি নিজের জন্যও এখনও পর্যন্ত চেয়েই যাচ্ছ ?

কোনো কোনো বাচ্চারা এখনও সময়ে সময়ে বাবার কাছে প্রার্থনা করতে থাকে যে, এটার জন্য এখন একটু আশীর্বাদ করো। তবে যারা নিজেরাই চাইছে তারা দাতা হবে কীভাবে ? সেইজন্য পবিত্রতার শক্তির মহানতাকে জেনে পবিত্র অর্থাৎ পূজ্য দেব আত্মা এখন থেকেই হও। এমন নয় যে, অন্তিম সময়ে হয়ে যাবে। এ হল দীর্ঘ দিনের জমা হওয়া শক্তি, যেটা অন্তিম সময়ে কাজে আসবে। তাহলে বুঝতে পেরেছো, পবিত্রতার গূহ্য গতি কী ? সদা সুখ - শান্তির জননী আত্মা - এটাই হল পবিত্রতার গূহ্যতা ! সাধারণ কথা নয় এটা ! ব্রহ্মচারী থাকে, পবিত্র হয়ে গেছে। কিন্তু পবিত্রতা জননী - সংকল্পে হোক কিম্বা বৃত্তিতে, বায়ুমন্ডলে, বাণীতে, সম্পর্কে - সুখ-শান্তির জননী হওয়া - একেই বলা হয় - 'পবিত্র আত্মা' । তো কতখানি হতে পেরেছো - এটা নিজেকে নিজে চেক করো। আচ্ছা ।

আজ অনেকে চলে এসেছে। যেমন জলের বাঁধ ভেঙে যায়, তেমন এখানে নিয়মের বাঁধ ভেঙে চলে এসেছে। তবুও নিয়ম মেনে চলার লাভ অনেক। যারা নিয়ম মেনে আসে, তারা পায়ও বেশী আর যারা ঢেউয়ের তোড়ে চলে আসে, সেই হিসেবে সেই রকমই মিলবে তাই না ! তবুও দেখো, বন্ধনমুক্ত বাপদাদাও তো বন্ধনেই আসেন, তাই না ! স্নেহের বন্ধন যে ! স্নেহের সাথে সাথে সময়েরও বাঁধন রয়েছে। শরীরেরও কিছুটা বন্ধন রয়েছে। কিন্তু বন্ধন যেহেতু ভালোবাসার, সেইজন্য বন্ধনে থেকেও স্বাধীন। বাপদাদা তো বলবেন - ঠিক আছে এসেছো ভালো কথা, নিজের বাড়িতে পৌঁছে গেছো। আচ্ছা।

চতুর্দিকের সকল পরম পবিত্র আত্মাদেরকে, সদা সুখ - শান্তির জননী পবিত্র আত্মাদেরকে, সদা পবিত্রতার শক্তির দ্বারা অনেক আত্মাদেরকে দুঃখ কষ্টের থেকে মুক্তকারী দেব আত্মাদেরকে, সদা পরমাত্ম - বিধির দ্বারা সিদ্ধি - স্বরূপ আত্মাদেরকে বাপদাদার স্নেহ সম্পন্ন স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার ।

হোস্টেলের কুমারীদের প্রতি - (ইন্দোর গ্রুপ) -
তোমরা সবাই পবিত্র মহান আত্মা তাই না ! আজকাল যাদের মহাত্মা বলা হয় তাদের থেকেও তোমরা অনেক গুণ শ্রেষ্ঠ। পবিত্র কুমারীদের সদা পূজন হয়ে থাকে। তো তোমরা সবাই পবিত্র, পূজ্য সদা শুদ্ধ আত্মা, তাই না ! কোনো অশুদ্ধি নেই তো ? সর্বদা নিজেদের মধ্যে একমত, স্নেহী, সহযোগী হয়ে থাকা আত্মা তোমরা, তাই না ? সংস্কারের মিলন করতে পারো তোমরা তাই না ? কেননা সংস্কারের মিলন ঘটানো - এটাই হল মহানতা। সংস্কারের কোনোরকম বিরোধ যাতে না হয়, বরং সর্বদা সংস্কার মিলনের রাস করতে থাকো। খুব ভালো ভাগ্য পেয়েছো তোমরা - ছোট অবস্থা থেকেই মহান হয়ে গেছো ! সব সময় মনে খুশী থাকে তো ? কখনো কেউ মনে মনে কাঁদো না তো ? নির্মোহী হয়েছো ? কখনো লৌকিক পরিবারের কথা মনে হয় ? উভয় পঠন-পাঠনেই তোমরা এগিয়ে যাচ্ছ তো ? দুটো পড়াতেই সদা এক নম্বরে থাকতে হবে। বাবা যেমন ওয়ান, তেমনি বাচ্চারাও নম্বর ওয়ানে। সবার থেকে নম্বর ওয়ান - এমন বাচ্চারাই সব সময় বাবার প্রিয়। বুঝতে পেরেছো ? আচ্ছা।

পার্টিদের সাথে অব্যক্ত বাপদাদার সাক্ষাৎকার -
সর্বদা নিজেকে শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান মনে করো ? ঘরে বসে ভাগ্য বিধাতার দ্বারা শ্রেষ্ঠ ভাগ্য পেয়ে গেছো। ঘরে বসেই ভাগ্য মিলে যাওয়া - এটা কতখানি খুশীর ব্যাপার ! অবিনাশী বাবা, অবিনাশী প্রাপ্তি করান। তো অবিনাশী অর্থাৎ সদা, কখনো কখনো নয়। তো ভাগ্যকে দেখে সদা খুশী থাকো ? সব সময় ভাগ্য আর ভাগ্য বিধাতা - দুটোই যেন স্বতঃতই স্মরণে থাকে । সদা, 'বাঃ, আমার শ্রেষ্ঠ ভাগ্য !' - এই গীতই গাইতে থাকো। এ হল মনের সঙ্গীত। এই গান যত গাইবে ততই সদাই উড়তি কলার অনুভব করতে থাকবে। সমগ্র কল্পে এমন ভাগ্য প্রাপ্ত করবার সময়ই হল এটা। সেইজন্য স্লোগানও হল - 'এখন নয় তো কখনো নয়।' যা কিছু শ্রেষ্ঠ কর্মই করার তা এখনই করতে হবে। সব কাজে সব সময় এটাই স্মরণে রাখো, 'এখন নয় তো কখনোই নয়।' যার স্মৃতিতে এটা থাকে, সে কখনোই সময়, সংকল্প বা কর্ম ওয়েস্ট (নষ্ট) হতে দেবে না। সদা জমা করতে থাকবে। বিকর্ম করার তো প্রশ্নই নেই। কিন্তু ব্যর্থ কর্মও ধোঁকা দিয়ে দেয়। তো প্রতিটি সেকেন্ডের প্রতিটি সংকল্পের মহত্ত্বকে তোমরা জানো তো ? জমার খাতা যেন সব সময় ভর্তি হতে থাকে। যদি প্রতিটি সেকেন্ড বা প্রতিটি সংকল্প শ্রেষ্ঠ জমা করতে থাকো, ব্যর্থ নষ্ট না করো, তবে ২১ জন্মের জন্য নিজের খাতা শ্রেষ্ঠ বানিয়ে নিতে পারবে। তো যতটা জমা করবার প্রয়োজন, ততটা করছো ? যতটা জমা করার দরকার, ততটা করছো ? এই বিষয়ে আরও বেশি করে আন্ডারলাইন করো - 'এক সেকেন্ডও, সংকল্পও যেন ব্যর্থ না যায়।' ব্যর্থ সমাপ্ত হয়ে গেলে তখন সদা সমর্থ হয়ে যাবে। আচ্ছা। অন্ধ্রপ্রদেশে দারিদ্র্য খুব বেশী না ! আর তোমরা এই কয়জনই মাত্র বিত্তবান ? চারিদিকে দারিদ্র্যতা বেড়েই যাচ্ছে আর সেখানে তোমাদের বিত্ত বেড়েই যাচ্ছে। কেননা জ্ঞান - ধন আসতে থাকলে এই স্থূল ধনও স্বতঃতই অন্তত ডাল ভাত (রুটি) মিলেই যায়। কোনো ব্রাহ্মণ কি অভুক্ত থাকে ? তাই স্থূল ধনের দারিদ্রও সমাপ্ত হয়ে যায়, কেননা তোমরা সুবুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে যাও যে। কাজকর্ম করে নিজের আর পরিবাররের ভরণপোষণ করবার মতো বুদ্ধি এসেই যায়। সেইজন্য ডবল বিত্ত লাভের পথ খুলে যায় যে। শরীর ও মন উভয়ই ভালো থাকে। ডাল রুটি তো সহজেই পেয়ে যাচ্ছ তাই না ! ব্রহ্মাকুমার - ব্রহ্মাকুমারী হওয়ার ফলে রয়্যালও হয়ে গেছো, বিত্তবানও হয়ে গেছো আর অনেক জন্ম মালামালও থাকবে। আগে যেমন চলতে ফিরতে, থাকতে, পোশাক আশাক পড়তে.... তার থেকে এখন কতো রয়্যাল হয়ে গেছো ! এখন সব সময়ই স্বচ্ছ ভাবে থাকো। পূর্বে হয়ত ময়লা পোশাকও পরে থাকবে। এখন ভিতরে বাইরে দুইই দিকেই স্বচ্ছ হয়ে গেছো। তো ব্রহ্মাকুমার হওয়াতে কত লাভ হয়ে গেছে, তাই না ! সব বদলে যায়, পরিবর্তন হয়ে যায় । আগেকার চেহারা আর ধীশক্তি দেখো আর এখনকারও দেখো, কতখানি তফাৎ তা বুঝে যাবে। এখন আধ্যাত্মিকতার (রুহানীয়ৎ) দীপ্তি এসে গেছে। সেইজন্য চেহারাও বদলে গেছে। তাই সদা এই রকম খুশীতে নাচতে থাকো।

ডবল বিদেশি ভাই বোনেদের প্রতি -
ডবল বিদেশি তোমরা ? এমনিতে তো সকল ব্রাহ্মণ আত্মাই হল এই ভারত ভুমির। অনেক জন্ম তোমরা ভারতবাসী থেকেছো। এ তো সেবার জন্য নানান স্থানে গিয়ে পৌঁছেছো। সেইজন্যই এই লক্ষণই দেখতে পাওয়া যায় যে, ভারতে আসার সাথে সাথেই অর্থাৎ মধুবন ভূমিতে বা ব্রাহ্মণ পরিবারে আসার সাথে সাথেই বড়ই আপন মনে হয়। যদিও বিদেশী আত্মারা, তারা যত নিকট আত্মীয়ই হোক না কেন, নিকট সম্বন্ধেরই হোক না কেন, এখানে আত্মাদের যেমন আপন ভাব অনুভূত হয়, তেমনটি অনুভূত হবে না। যত নিকটের আত্মা হবে তত বেশী করে আপন অনুভূত হবে। ভাবতে হবে না যে, আমি ছিলাম বা আমি হতে পারি। প্রতিটি স্থূল বস্তুও অত্যন্ত প্রিয় মনে হবে। যেমন কোনো নিজের জিনিস যেন। নিজের জিনিস সব সময়ই ভালো লাগে। তো এগুলো হল লক্ষণ। বাপদাদা দেখছেন যে, দূরে থেকেও তোমরা সব সময়ই কাছের। সমগ্র পরিবার তোমাদেরকে এইরকম শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবানের নজরে দেখে থাকে। আচ্ছা।

বরদান:-
যুদ্ধে ভীত বা পিছু হটে যাওয়ার পরিবর্তে বাবার সাথের দ্বারা সদা বিজয়ী ভব

সেনা বাহিনীতে যারা যুদ্ধ করে, সেই সব যোদ্ধাদের স্লোগান হল হেরে যাওয়া বা পিছু হটে যাওয়া হল কাপুরুষতা। যোদ্ধা অর্থাৎ হয় মরো নয় মারো। তোমরাও হলে রুহানী যোদ্ধা, ভয় পেয়ে পিছু হটার দলের নও। সদা এগিয়ে গিয়ে বিজয়ী হওয়ার দলের। এমন কখনোই ভাবে না যে, কত আর যুদ্ধ করবো, এ তো সারা জীবনের ব্যাপার। কিন্তু ৫ হাজার বছরের প্রালব্ধের হিসাবে এ তো সেকেন্ডের ব্যাপার। কেবল বিশাল বুদ্ধি হয়ে অসীমের হিসাবে দেখো আর বাবার স্মরণ বা সাথের অনুভূতির দ্বারা বিজয়ী হও।

স্লোগান:-
সদা আশা আর বিশ্বাসের আধারে বিজয়ী হও।