29.03.2021 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা -- তোমরা হলে রূপ-বসন্ত, তোমাদের মুখ থেকে সদা জ্ঞান-রত্নই নিঃসৃত হওয়া উচিত, যখনই নতুন কেউ আসবে তাকে বাবার পরিচয় দাও"

প্রশ্নঃ -
নিজের স্থিতিকে একরস করার উপায় (সাধন) কী ?

উত্তরঃ -
সঙ্গ (নির্বাচন) সম্পর্কে সতর্ক হও, তাহলেই অবস্থা একরস হতে থাকবে। সর্বদা ভাল সার্ভিসেবেল বাচ্চাদের সঙ্গী করা উচিত। যদি কেউ জ্ঞান এবং যোগ ব্যতীত অন্য (উল্টোপাল্টা) কথা বলে, মুখে রত্নের পরিবর্তে প্রস্তর নির্গত হয়, তবে তেমন সঙ্গ সম্পর্কে সর্বদা সতর্ক থাকা উচিত।

গীতঃ-
রাতের পথিক হয়ো না শ্রান্ত, দূর তো নয় ভোরের গন্তব্য.....

ওম্ শান্তি ।
জ্ঞান আর বিজ্ঞান। একে বলা হবে অল্ফ (অদ্বিতীয়) আর বে (বাদশাহী)। বাবা অল্ফ এবং বে-র জ্ঞান প্রদান করেন। দিল্লীতে বিজ্ঞান ভবন রয়েছে কিন্তু ওরা কোনো অর্থ জানে না। বাচ্চারা, তোমরা জানো জ্ঞান আর যোগ। যোগের মাধ্যমে আমরা পবিত্র হই আর জ্ঞানের মাধ্যমে আমাদের পোশাক রঙ্গীন হয়। আমরা সম্পূর্ণ চক্রকেই জেনে যাই। যোগের যাত্রার জন্যও এই জ্ঞান পাওয়া যায়। ওরা (অজ্ঞানী) কেউ যোগের জন্য জ্ঞান প্রদান করে না। তারা তো স্থূল ভাবে (শারীরিক) ড্রিল ইত্যাদি শেখায়। এ হলো সূক্ষ্ম এবং মূল কথা। গানও এর সঙ্গেই সম্পর্কযুক্ত। বাবা বলেন -- হে বাচ্চারা, হে মূল-লোকের পথিক, পতিত-পাবন বাবা-ই সকলের সদ্গতিদাতা। তিনিই সকলকে ঘরে ফিরে যাওয়ার পথ বলে দেবেন। তোমাদের কাছে মানুষ আসে বোঝবার জন্য। কার কাছে আসে ? প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমার-কুমারীদের কাছে আসে, তাহলে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা উচিত -- তোমরা কার কাছে এসেছো ? মানুষ সাধু, সন্ত, মহাত্মার কাছে যায়। তাদের নামও থাকে -- অমুক মহাত্মাজী। এখানে তো নামই হলো প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমার-কুমারী। বি. কে. তো অসংখ্য। তোমাদের জিজ্ঞাসা করা উচিত -- প্রজাপিতা ব্রহ্মা তোমাদের কে হন ? তিনি তো সকলেরই পিতা, তাই না! কেউ-কেউ বলে আপনাদের মহাত্মাজী, গুরুজীর দর্শন করবো। বলো যে, তোমরা গুরু কিভাবে বলো ! নামই রাখা হয়েছে প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমারী তাহলে তিনি হলেন বাবা, তাই না! তিনি গুরু নন। প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমার-কুমারী মানেই এদের কোনো পিতা রয়েছে। তিনি তো অবশ্যই তোমাদেরও পিতা। বলো -- আমরা বি.কে.-দের বাবার সঙ্গে দেখা করতে চাই। প্রজাপিতার নাম কখনও শুনেছো ? এত সন্তান-সন্ততি রয়েছে। বাবাকে জানবে, তবেই তো বুঝবে যে অসীম জগতের পিতা আছেন। প্রজাপিতা ব্রহ্মারও অবশ্যই কোনো বাবা আছেন। তাই কেউ এলে জিজ্ঞাসা করো যে -- কার কাছে এসেছো ? বোর্ডে কি লেখা রয়েছে ? যখন এত অগণিত সেন্টার্স রয়েছে, এত ব্রহ্মাকুমার-কুমারী রয়েছে তাহলে অবশ্যই বাবাও থাকবেন। তিনি গুরু হতে পারেন না। প্রথমে তো একথা বুদ্ধি থেকে বেরিয়ে আসুক, বুঝুক যে এ হলো ঘর, কোনো পরিবারে এসেছি। আমরা প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান তাহলে তোমরাও অবশ্যই তাই হবে। আচ্ছা, তাহলে ওই ব্রহ্মা আবার কার সন্তান ? ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকরের রচয়িতা হলেন পরমপিতা পরমাত্মা শিব। তিনি হলেনই বিন্দু। ওঁনার নাম শিব। তিনি হলেন আমাদের দাদু। তোমাদের আত্মাও ওঁনারই সন্তান। তোমরা ব্রহ্মারও সন্তান। তোমরা এ'ভাবে বলো যে, আমরা বাপদাদার সঙ্গে মিলিত হতে চাই। ওঁনাদের এ'ভাবে বোঝানো উচিত, যাতে তাদের বুদ্ধি বাবার দিকে চলে যায়। তারা বুঝতে পারে যে, আমরা কার কাছে এসেছি। প্রজাপিতা ব্রহ্মা আমাদের পিতা। উনি(শিব) হলেন সমস্ত আত্মাদের পিতা। তাহলে প্রথমে এটাই বোঝ যে, আমরা কার কাছে এসেছি। এ'ভাবে যুক্তি সহকারে বোঝাতে হবে যাতে তারা জানতে পারে যে এরা শিববাবার সন্তান। এ হলো এক পরিবার। ওরা যেন বাবা আর দাদার পরিচয় পেয়ে যায়। তোমরা বোঝাতে পারো -- সকলের সদ্গতিদাতা হলেন নিরাকার পিতা। তিনি প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারা সকলের সদ্গতি করেন। ওঁনাকে সকলেই ডাকে। দেখো না ! -- কত বাচ্চা রয়েছে যারা এসে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করে। প্রথমে তারা বাবার পরিচয় পাক তখন বুঝতে পারবে যে আমরা বাপদাদার সঙ্গে মিলিত হতে এসেছি। বলো, আমরা ওঁনাকে বাপদাদা বলি। নলেজফুল, পতিত-পাবন তো সে-ই শিববাবাই, তাই না! পুনরায় বোঝানো উচিত -- ঈশ্বর হলেন সকলের সদ্গতিদাতা নিরাকার, তিনি জ্ঞানের সাগর। ব্রহ্মার দ্বারা অসীম জগতের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছে। তবেই তারা বুঝবে যে এই ব্রহ্মাকুমার-কুমারীরা হলেন শিববাবার সন্তান, তিনিই সকলের পিতা। ভগবান এক। তিনিই আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা করেন। তিনি স্বর্গের রচয়িতা, সকলের পিতাও, শিক্ষকও, গুরুও। সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বোঝান অর্থাৎ ত্রিকালদর্শী করে দেন। যাদেরই দেখবে বুঝতে পারার মতন, তাদের বোঝানো উচিত। প্রথমে জিজ্ঞাসা করো -- তোমাদের পিতা ক'জন ? লৌকিক আর পারলৌকিক। বাবা তো সর্বব্যাপী হতে পারেন না। লৌকিক পিতার থেকে এই উত্তরাধিকার পাওয়া যায়, পারলৌকিকের থেকে এই উত্তরাধিকার পাওয়া যায়। তাহলে ওঁনাকে সর্বব্যাপী কিভাবে বলা যেতে পারে। এই শব্দটি নোট করে ধারণ করো। এ'কথা অবশ্যই বোঝানো উচিত। বোঝাবে তো তোমরাই। এ হলো ঘর, আমাদের গুরু নয়। দেখো, এরা সকলে হলো ব্রহ্মাকুমার-কুমারী। উত্তরাধিকার আমাদের নিরাকার শিববাবাই দিয়ে থাকেন যিনি সকলের সদ্গতি দাতা। ব্রহ্মাকে সকলের সদ্গতিদাতা, পতিত-পাবন, মুক্তিদাতা বলা যেতে পারে না। এ হলো শিববাবারই মহিমা, যারাই আসবে তাদের এটাই বোঝাও যে ইনি সকলের বাপদাদা। সে-ই বাবাই স্বর্গের রচয়িতা। ব্রহ্মার দ্বারা বিষ্ণুপুরী স্থাপন করেন। এ'ভাবে তোমরা কাউকে বোঝালে তবেই তো বাবার কাছে আসার প্রয়োজনই পড়বে না। তাদের এই অভ্যাস রয়েছে, তারা বলবে গুরুজীর দর্শন করবো....। ভক্তিমার্গে গুরুর অত্যন্ত মহিমা করা হয়। বেদ, শাস্ত্র, যাত্রাদি সমস্ত গুরুই শিখিয়ে থাকেন। তোমাদের বোঝাতে হবে যে, মানুষ গুরু হতে পারে না। আমরা ব্রহ্মাকেও গুরু বলি না। সদ্গুরু একজনই। কোনো মানুষ জ্ঞানের সাগর হতে পারে না। ওরা সকলেই ভক্তিমার্গের শাস্ত্র-পাঠ করে। একে বলা হয় শাস্ত্র-জ্ঞান, যাকে ফিলোসফিও বলা হয়। এখানে আমাদের জ্ঞান-সাগর বাবা পড়ান। এ হলো স্পিরীচুয়্যাল নলেজ। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকরকে জ্ঞান-সাগর বলতে পারো না, তাহলে মানুষকে কিভাবে বলতে পারবে ? জ্ঞানের অথরিটি (সর্বময়কর্তা) মানুষ হতে পারে না। শাস্ত্রের অথরিটিও পরমপিতা পরমাত্মাকেই বলা হয়। দেখানো হয়েছে, ব্রহ্মার মাধ্যমে পরমপিতা পরমাত্মা সমস্ত বেদ, শাস্ত্রের সার বোঝান। বাবা বলেন, আমায় কেউ জানেই না তাহলে উত্তরাধিকার কোথা থেকে পাবে। অসীমের উত্তরাধিকার অসীম জগতের পিতার কাছ থেকেই পাওয়া যায়। এখন এই বাবা কি করছেন ? এ হলো হোলী আর ধুরিয়া, তাই না! জ্ঞান-বিজ্ঞান হলো কেবল দু'টি শব্দ। মন্মনাভব-রও জ্ঞান প্রদান করে। আমায় স্মরণ করো তবেই তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে। তাই এই জ্ঞান-বিজ্ঞান হলো -- হোলী এবং ধুরিয়া। মানুষের মধ্যে জ্ঞান না থাকার কারণে একে-অপরের মুখে ধূলো দেয়। হয়ও এমনই। গতি-সদ্গতি কারোর জানা নেই। তারা ধূলোই মুখে ঢালে। জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র কারোরই নেই। লোককথা শুনে এসেছে। একে বলা হয় অন্ধশ্রদ্ধা। এখন তোমরা আত্মারা জ্ঞানের তৃতীয় নয়ন পেয়েছো। বাচ্চারা, তোমাদের বাবার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্তির জন্য পরামর্শ দিতে হবে, তবেই তারা জানতে পারবে। এই উত্তরাধিকার ব্রহ্মার দ্বারা প্রাপ্ত করছো, আর কারোর মাধ্যমে পাওয়া যেতে পারে না। সব সেন্টারেই এই নাম লেখা রয়েছে -- প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমার-কুমারী। যদি গীতা পাঠশালা লেখা হয় তবে তা সাধারণ কথা হয়ে যায়। এখন তোমরাও বি.কে লেখো তবেই তো বাবার পরিচয় দিতে পারবে। মানুষ বি.কে-দের নাম শুনে ভয় পেয়ে যায় তাই নাম লিখে রাখে গীতা পাঠশালা। কিন্তু এতে ভয় পাওয়ার মতন কোনো কথা নেই। তোমরা বলো, এ হলো ঘর। তোমরা জানো যে, কার ঘরে এসেছো ? এদের সকলের পিতা হলেন প্রজাপিতা ব্রহ্মা। ভারতবাসীরা প্রজাপিতা ব্রহ্মাকে মানে। খ্রিস্টানরাও মনে করে আদিদেবও এখানেই ছিলেন, যারই হলো এই মনুষ্য বংশ। কিন্তু তারা মানবে তো নিজেদের খ্রাইস্টকেই। খ্রাইস্টকে, বুদ্ধকে ফাদার মনে করে। বংশাবলী তো, তাই না! আসলে বাবা ব্রহ্মার দ্বারা আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা করেছেন। তিনি হলেন গ্রেট-গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদার। প্রথমে বাবার পরিচয় দিতে হবে। ওরা বলে -- আমরা তোমাদের বাবার সঙ্গে দেখা করতে চাই। তাদের বলো, উত্তরাধিকার শিববাবার থেকে পাওয়া যায়, ব্রহ্মাবাবার কাছ থেকে নয়। তোমাদের বাবা কে ? গীতার ভগবান কে ? আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা কে করেছেন ? 'বাবা' নামটি বললে সকলেই বুঝতে পারবে যে এরা সবাই ব্রহ্মাকুমার-কুমারী, শিববাবার সন্তান। শিবের থেকে ব্রহ্মার মাধ্যমে গতি বা সদ্গতির উত্তরাধিকার পাওয়া যায়। তিনি এইসময় আমাদের জীবনমুক্তি প্রদান করছেন। বাকিরা সকলে মুক্তিতে চলে যাবে। বাচ্চারা, এই জ্ঞান তোমাদের বুদ্ধিতে থাকা উচিত। কেউ এলে তাকে বোঝাও, কাকে সাক্ষাৎ করতে চাও ? তিনি তো আমাদেরও আর তোমাদেরও বাবা। তিনি তো গুরু-গোঁসাই নন। এ তো তোমরা বোঝ। যেমনভাবে হোলী, ধুরিয়া করাও। তা নাহলে হোলী, ধুরিয়ার কোনো অর্থ হয় না। জ্ঞানের দ্বারা (শরীর-রূপী) বসন রাঙিয়ে দাও। আত্মা এই বসনের মধ্যে থাকে। এ (আত্মা) পবিত্র হলে শরীরও পবিত্র পাবে। এই শরীর তো পবিত্র নয়। এ তো শেষ হয়ে যাবে। গঙ্গা-স্নান শরীরকে করানো হয় কিন্তু পতিত-পাবন তো বাবা ছাড়া আর কেউই নয়। আত্মাই অপবিত্র হয় তাহলে আত্মা তো জলে স্নান করে পবিত্র হতে পারে না। এ'কথা কেউ-ই জানে না। ওরা তো আত্মাই পরমাত্মা বলে মনে করে। আত্মা অলিপ্ত(নির্লেপ)। এখন যারা সেন্সীবেল হয়েছে, তারাই ধারণ করতে এবং করাতে পারবে। যেসকল বাচ্চাদের মুখ থেকে সদা জ্ঞান-রত্ন নির্গত হয়, তাদের রূপ-বসন্ত বলা হয়। জ্ঞান-বিজ্ঞান ব্যতীত পরস্পরে যদি কিছু আদান-প্রদান করে তবে তো (পরস্পরকে) পাথরের আঘাতই করে। সার্ভিসের বদলে ডিসসার্ভিস করে ফেলে। ৬৩ জন্ম একে-অপরকে পাথর দিয়ে আঘাতই করে এসেছো। এখন বাবা বলেন যে, জ্ঞান-বিজ্ঞানের কথা বলে তোমাদের মনকে(হৃদয়) আনন্দে রাখা উচিত। পরনিন্দা-পরচর্চার কথা শোনা উচিত নয়। এও তো জ্ঞান, তাই না! সমগ্র দুনিয়াই একে-অপরকে পাথর দিয়ে আঘাত করছে। বাচ্চারা, তোমরা হলে রূপ-বসন্ত। জ্ঞান-বিজ্ঞান ব্যতীত না কিছু তোমাদের শোনা উচিত, না শোনানো। যারা উল্টোপাল্টা কথা বলে তাদের সঙ্গই খারাপ। যারা প্রচুর সার্ভিস করে, তাদের সঙ্গই ভাল....কোনো ব্রাহ্মণ রূপ-বসন্ত, কেউ আবার ব্রাহ্মণ হয়ে উল্টোপাল্টা কথা বলে। এরকমের সঙ্গে থাকা উচিত নয় আরোই ক্ষতি করে দেবে। বাবা বারংবার সাবধান করেন। পরস্পরের সঙ্গে কখনও উল্টোপাল্টা কথা বলো না। তা নাহলে নিজেরও সর্বনাশ, অন্যেরও সর্বনাশ হয়ে যায় তখন পদভ্রষ্ট হয়ে পড়ে। বাবা কত সহজ করে শোনান। শখ থাকা উচিত, বাবা আমরা গিয়ে অনেককে এই জ্ঞান প্রদান করি। তারাই হলো বাবার সত্যিকারের সন্তান। সার্ভিসেবেল বাচ্চাদের মহিমা বাবাও করেন। তাদের সঙ্গ করা উচিত। কে ভাল স্টুডেন্টদের সঙ্গে থাকে, বাবাকে জিজ্ঞাসা করো তাহলে বলে দিতে পারে, কাদের সঙ্গে থাকা উচিত। কারা বাবার হৃদয়ে বসে রয়েছে, বাবা তৎক্ষনাৎ বলে দেবেন। যারা সার্ভিস করে তাদের বাবাও সম্মান দেন। কেউ-কেউ তো সার্ভিসও করতে পারে না। এরকম অনেকের খারাপ সঙ্গের কারণে স্থিতি উপর-নীচে হয়ে

যায়। হ্যাঁ, কেউ যদি স্থূল সার্ভিসে ভাল হয় সেও ভাল উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করে। অল্ফ এবং বে-কে বোঝানো তো অতি সহজ। যেকোনোজনকে কেবল বলো -- বাবাকে আর উত্তরাধিকার-কে স্মরণ করো। ব্যস, শব্দই হলো দু'টি -- অল্ফ আর বে। এ তো একদমই সহজ। কেউ এলে তাদের কেবল বলো -- বাবার আদেশ হলো, মামেকম্ স্মরণ করো, ব্যস। সবচেয়ে বড় আতিথেয়তা হলো এ'টাই। বাবা বলেন -- আমায় স্মরণ করো তাহলেই তোমরা স্বর্গের উত্তরাধিকার পেয়ে যাবে। প্রতিটি সেন্টারেই এরকম নম্বরের অনুক্রম রয়েছে। কেউ তো ডিটেলে বোঝাতে পারে। বোঝাতে না পারলে শুধু এ'কথা বলো। কল্প-পূর্বেও বাবা এ'কথা বলেছিলেন যে মামেকম্ স্মরণ করো, আর কোনও দেহধারী দেবতাদিকে স্মরণ কোরো না। এছাড়া পরনিন্দা-পরচর্চা, অমুকে এরকম করে, এই করে..... কিছু কোরো না। এই বাবা তোমাদের সঙ্গে হোলী আর ধুরিয়া(হোলিকাদহন বা নেড়াপোড়া) খেলেন। এছাড়া রঙ ইত্যাদি লাগানো এ'সব হলো আসুরীয় মানুষের কাজ। কেউ বসে-বসে যদি কারোর নিন্দা করে তবে তা শোনা উচিত নয়। বাবা কত ভাল কথা শোনায় -- "মন্মনাভব", "মধ্যাজীভব" । কেউ এলে তাকে বোঝাও -- শিববাবা সকলের পিতা, তিনি বলেন আমায় স্মরণ করো তাহলেই স্বর্গের উত্তরাধিকার পাবে। গীতার ভগবানও তিনি। মৃত্যু সম্মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাই বাচ্চারা, তোমাদের কাজ হলো সার্ভিস করা। বাবার কথা স্মরণ করানো। এ হলো মহামন্ত্র, যার ফলে রাজধানীর তিলক (রাজ-তিলক) পেয়ে যাবে। কত সহজ কথা, বাবাকে স্মরণ করো আর করাও তাহলেই তরী পার হয়ে যাবে। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) সেন্সীবেল হয়ে সকলকে বাবার পরিচয় দিতে হবে। মুখ থেকে কখনও কটূবাক্য (পাথর) বলে ডিস-সার্ভিস করে ফেলো না। জ্ঞান-যোগ ব্যতীত অন্য কোনো চর্চা করবে না।

২ ) যারা রূপ-বসন্ত, সার্ভিসেবেল কেবলমাত্র তাদের সঙ্গই করবে। যারা উল্টোপাল্টা কথা বলে তাদের সঙ্গী করবে না।

বরদান:-
পরাধীনতাকে সমাপ্ত করে সত্যিকারের স্বতন্ত্রতার অনুভাবী মাস্টার সর্বশক্তিমান ভব

বিশ্বকে সর্বশক্তির দান দেওয়ার জন্য স্বতন্ত্র আত্মা হও। সবচেয়ে প্রথম স্বতন্ত্রতা আসুক পুরোনো দেহের অভ্যন্তরের সম্বন্ধ-সম্পর্ক থেকে কারণ না চাইলেও দেহের পরাধীনতা অনেক বন্ধনে আবদ্ধ করে দেয়। পরাধীনতা কেবলই নিম্নমুখে নিয়ে যায়। দুঃশ্চিন্তা বা নীরস স্থিতির অনুভব করায়। তারা স্পষ্টরূপে কোনো অবলম্বন খুঁজে পায় না। না দুঃখের অনুভূতি, না খুশীর অনুভূতি, যেন মাঝ-সমুদ্রে আটকে পড়েছে। সেইজন্য মাস্টার সর্বশক্তিমান হয়ে সর্ববন্ধন থেকে মুক্ত হও, নিজের সত্যিকারের স্বাধীনতা দিবস পালন করো।

স্লোগান:-
পরমাত্ম-মিলনে সর্বপ্রাপ্তির আনন্দ অনুভব করে সন্তুষ্ট আত্মা হও।


হোলী এবং ধুরিয়া :-

'ধুরিয়া' হলো দোল পূর্ণিমার আগের দিন পালিত হোলিকা দহন বা নেড়াপোড়া উৎসব যা অশুভ শক্তির প্রতীক অর্থাৎ যা আত্মাকে দহন করে সেই অপবিত্র দেহ-অভিমানের খাদকে পুড়িয়ে ভস্মীভূত করে দাও।

'হোলী বা দোল' হলো পূর্ণিমার দিনে সকলকে রঙে রাঙিয়ে, আলিঙ্গন করে এবং মিষ্টিমুখ করিয়ে মধুর সম্পর্কে বেঁধে রাখার উৎসব যা শুভ শক্তির প্রতীক অর্থাৎ আত্মা পবিত্রতার রঙে রেঙে উঠুক, পরস্পরকে রাঙিয়ে দিক শুভভাবনা, শুভ কামনার রঙে, প্রতিটি আত্মার মধ্যে গড়ে উঠুক এক মধুর সম্পর্ক।