16.03.2021
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমাদের শিববাবার রচিত এই রুদ্র যজ্ঞের খুব ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে, এ হলো
স্বরাজ্য লাভের জন্য অসীম জগতের যজ্ঞ"
প্রশ্নঃ -
এই রুদ্র
যজ্ঞের প্রতি রেসপেক্ট (সম্মান) কোন্ বাচ্চাদের থাকে ?
উত্তরঃ -
যারা এর বিশেষত্বকে জানে । তোমরা জানো যে, এই রুদ্র যজ্ঞে তোমরা কড়ি থেকে হীরেতে
পরিণত হও, এতে সম্পূর্ণ পুরানো দুনিয়া স্বাহা হয়ে যায়, এই পুরানো শরীরেরও স্বাহা
করতে হবে । কোনো এমন ভুল কর্ম যেন না হয়, যাতে এই যজ্ঞে বিঘ্ন আসে । এই সচেতনতা
যখন থাকবে, তখন তোমরা রেসপেক্ট রাখতে পারবে ।
গীতঃ-
মাতা ও মাতা তুমিই ভাগ্য বিধাতা...
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা গীত
শুনেছে । যারা এই গীত লিখেছে, সেই বেচারারা তো মাতাকে জানেও না । তারা নাম শুনেছে,
জগৎ অম্বা, কিন্তু তিনি কে ছিলেন, কি করে গিয়েছিলেন, তোমরা বাচ্চারা ছাড়া এ কেউই
জানে না । জগৎ অম্বা যখন আছেন, তখন অবশ্যই বাবাও আছেন । পুত্ররাও যেমন আছে, তেমনই
পুত্রীরাও আছে । যারা জগদম্বার কাছে যায়, তাদের বুদ্ধিতে এই জ্ঞান নেই, তারা কেবল
মূর্তি পূজারী । দেবীর সামনে গিয়ে তারা প্রার্থনা করে । এখন এ হলো রাজস্ব অশ্বমেধ
অবিনাশী রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞ । এর রচয়িতা হলেন মাতা - পিতা, ততত্বম । তোমরাও হলে এই
যজ্ঞের রচয়িতা । বাচ্চারা, তোমাদের সকলকে এই যজ্ঞের দেখভাল করতে হবে । এই যজ্ঞের
জন্য তোমাদের অনেক সম্মান রাখা উচিত । এই যজ্ঞকে সম্পূর্ণভাবে রক্ষা করা হয় । এ হলো
হেড অফিস, এর আরো ব্রাঞ্চ(শাখা ) আছে । মাম্মা - বাবা আর তোমরা বাচ্চারাও এই যজ্ঞের
দ্বারা নিজেদের ভাগ্য হীরে তুল্য তৈরী করছো । তাই এমন যজ্ঞকে কতভাবে রক্ষা এবং
সম্মান করতে হবে । তোমাদের কতো ভালোবাসা থাকা উচিত যে, এ হলো আমাদের মাম্মা
জগদম্বার যজ্ঞ । মাম্মা - বাবার যজ্ঞ, তাই এ আমাদেরও যজ্ঞ । এই যজ্ঞের বৃদ্ধি করতে
হয় যাতে অনেক বাচ্চারা নিজের বাবার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করবে । যদি নিজে নিতে
না পারো, সময় যদি না পাও, তাহলে আচ্ছা, অন্যদের নিমন্ত্রণ দেওয়া উচিত । এর নামই হলো
রাজস্ব অশ্বমেধ জ্ঞান যজ্ঞ, যাতে স্বরাজ্য লাভ করা যায় । এই যজ্ঞে পুরানো শরীরকেও
স্বাহা করতে হয় । তোমাদের বাবার হয়ে যেতে হবে । এই যজ্ঞ কোনো একটি বাড়ী নয়, এ হলো
অসীম জগতের কথা । যেই যজ্ঞে সম্পূর্ণ বিশ্বকে স্বাহা হতে হবে । এর পরের দিকে তোমরা
দেখবে, এই যজ্ঞের কতো সম্মান করা হবে । এখানে তো অনেকেরই যজ্ঞের প্রতি কোনো সম্মান
নেই । এতো সব যজ্ঞের সন্তান । বাচ্চা জন্ম নিতে থাকে, তাই তাদের যজ্ঞের কতো সম্মান
করা উচিত, কিন্তু এমন অনেকেই আছে, যারা কোনো কদর করে না । এ এতো বড় যজ্ঞ, যেখানে
মনুষ্য হীরে থেকে কড়ি তুল্য, ভ্রষ্টাচারী থেকে শ্রেষ্ঠাচারী তৈরী হয়, তাই বাবা
বলেন, তোমরা যেমন যজ্ঞ রচনা করো, এতে একজনও যদি শ্রেষ্ঠাচারী তৈরী হয় তাহলে 'অহো
সৌভাগ্য ।' এতো লাখ - লাখ মন্দির ইত্যাদি আছে, সেখানে কেউই শ্রেষ্ঠাচারী তৈরী হয়
না । এখানে তো কেবল তিন পদ পৃথিবী চাই । কেউ এলে তার জীবনের পরিবর্তন হয়ে যাবে । এই
যজ্ঞের কতো সম্মান হওয়া উচিত । অনেকেই বাবাকে লেখে যে, বাবা আমি আমার ঘরে পাঠশালা
খুলবো কি ? আচ্ছা বাচ্চারা, তোমরা যদি যজ্ঞভূমি বানাও, তাহলে কারোর না কারোর কল্যাণ
হয়ে যাবে । এই যজ্ঞের অনেক মহিমা । এ হলো যজ্ঞভূমি যেখানে পুত্রীরা অন্যদের কল্যাণ
করতে থাকে । এই যজ্ঞকে খুব সম্মান করা উচিত কিন্তু অনেকের সম্পূর্ণ জ্ঞান না থাকার
কারণে এই যজ্ঞকে সম্মান করতে পারে না । অনেকেই আছে, যারা যজ্ঞে বিঘ্ন সৃষ্টি করে ।
এ হলো শিববাবার যজ্ঞ । তাই মাতা - পিতা এখানে একত্রিত । এই মাম্মা - বাবার থেকে তো
কিছুই পাওয়া যায় না । অসীম জগতের পিতার কাছেই সবকিছু পাওয়া যায় । তিনি হলেন এক ।
মাম্মা - বাবা বলা হয় শরীরধারীদের । নিরাকারের তো আর কোনো শরীর নেই । তাই বাবা
বলেন, তোমরা সাকারের অনুগত হয়ো না । মামেকম (আমাকে ) স্মরণ করো । এই বাবাও আমাকেই
স্মরণ করেন । চিত্রতে দেখানো হয়, রাম, কৃষ্ণ, ব্রহ্মা আদি সবাই তাঁকেই স্মরণ করে ।
এমন কিন্তু নয় । ওখানে তো কেউ স্মরণ করে না । তাঁরা প্রালব্ধ পেয়ে যায় । তাই
তাঁদের স্মরণ করার কি দরকার ? আমরা পতিত হয়েছি, তাই আমাদের পবিত্র হওয়ার জন্য স্মরণ
করতে হবে । মহিমা কিন্তু একজনেরই । সেই একজনের জন্যই এঁদের এতো মহিমা । তোমরা কোনো
দেহধারীকেই স্মরণ করবে না । দেহধারীর থেকে তাঁর পরিচয় পাওয়া যায় কিন্তু স্মরণ
তাঁকেই করতে হবে । এই বাবাও দেহধারী, তিনি সব পরিচয় দেন, কিন্তু এমন অনেক অবুঝ
বাচ্চা আছে, যারা বলে, আমরা তো প্রত্যক্ষভাবে শিববাবার থেকে প্রেরণার দ্বারা জ্ঞান
অর্জন করতে পারি । এমন যদি সম্ভব হতো, তাহলে এই রথে তাঁর আসার কি প্রয়োজন ছিলো ?
এমনও অনেক আছে, যারা মনে করে, এই সাকারকে দিয়ে আমাদের কি কাজ ? বাবা বলেন -
মন্মনাভব । তাঁকে স্মরণ করো কিন্তু মাধ্যম তো এনাকেই বলা হয়, তাই না । তাই নম্বরের
ক্রমানুসারে সম্মানও করে । তারাই সম্মান করবে, যারা নম্বরের ক্রমানুসারে গদিতে বসবে
। মাম্মা - বাবা প্রথমে রাজগদিতে বসবেন । তারপর তাঁদের অনুসরণ করবে । অনেক প্রজা
তৈরী হবে । পদও অনেক উঁচু । এখানে ভয় পাওয়ার কোনো কথা নেই । এরোপ্লেনে যখন কেউ নতুন
চড়ে, তখন ভয় পায় । আবার কাউকে তো দেখো, চাঁদেও চলে যায় । এ তো অভ্যাসের ব্যাপার,
তাই না কিন্তু এতে কোনো লাভ নেই, সে তোমরা জানো । ওরা মনে করে, চাঁদেও রাজধানী
বানাবে কিন্তু এসব কিছুই হয় না । পতন হয় তো । পতন আর উত্থানকেও বাচ্চারা বুঝতে পারে
। এমন চিত্রও আছে যে এই লক্ষ্মী - নারায়ণ রাজত্ব করতেন ।
আজ তো দেখো, ভারত কতো গরীব । এ তো সত্য কথা । ইনি তো নিজেই লিখেছেন, তাই সিঁড়িতে এও
দেখানো উচিত । ওখানে হীরের মহল ঝলমল করে, এখানে আবার কড়ির দেখানো উচিত । আগে কড়ি
চলতো । গুরুদ্বারে কড়ি রাখা হতো । এখন তো কেউ পয়সাও রাখবে না । সিঁড়ির চিত্র তো
খুবই সুন্দর, এখানে অনেককিছুই লিখতে পারো । মাম্মা বাবার সঙ্গে যেন বাচ্চাদেরও
চিত্র থাকে আর উপরে আত্মাদের বৃক্ষও । নতুন - নতুন চিত্র তৈরী হতে থাকবে । এতে
বোঝাতেও সহজ হবে যে কিভাবে পতন হয়, আবার উত্থান কিভাবে হয় । আমরা নিরাকারী দুনিয়াতে
গিয়ে আবার সাকার দুনিয়াতে আসি, এ বোঝানো খুবই সহজ । যদি বুঝতে না পারে তখন মনে করা
হয় যে ভাগ্যে নেই । ড্রামাকে সাক্ষী হয়ে দেখা হয় । বাচ্চাদের এই যজ্ঞের প্রতি
অনেক সম্মান থাকা উচিত । যজ্ঞের একটি পয়সাও জিজ্ঞেস না করে নেওয়া, বা মাতা - পিতার
অনুমতি ছাড়া কাউকে দেওয়া, এ অনেক বড় পাপ । তোমরা তো সন্তান, তাই যে কোনো সময় যে
কোনো জিনিসই পেতে পারো । বেশী নিয়ে কেন রাখবে ? মনে করে কেউ জানতে পারবে না, কিন্তু
ভিতরে চেপে রেখে দিলে মনে অনুতাপ হয় কেননা এ অন্যায় কাজ । জিনিস তো তোমরা যে কোনো
সময়ই পেতে পারো । বাবা বলেছেন যে, অন্তকালে হঠাৎ যে কোনো ব্যক্তিরই মৃত্যু হতে পারে
। তাই অন্তিম সময় যে পাপ করবে, সেই আবর্জনা সব সামনে আসবে, তাই বাবা সবসময় বোঝাতে
থাকেন, অন্দরে কোনো দ্বিধা থাকা উচিত নয় । হৃদয় যদি স্বচ্ছ থাকে তাহলে অন্তিম
মুহূর্তে কিছুই সামনে আসবে না । যজ্ঞ থেকে তো সবকিছুই মিলতে থাকে । অনেক বাচ্চা আছে
যাদের কাছে অনেক অর্থ আছে । তাদের বলা হয়, যখন প্রয়োজন হবে তখন চেয়ে নেওয়া হবে ।
তারা বলে - বাবা, কখনো যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে আমরা আছি । যদিও তারা পবিত্র থাকে না
। তারা খাওয়াদাওয়ারও শুদ্ধতা রাখে না কিন্তু তারা এই পণ করে যে - বাবা, আমাদের কাছে
অনেক টাকা আছে, এমনিতেই তা শেষ হয়ে যাবে । মাঝে এই টাকা অন্য কেউ নিয়ে নেবে, তাই
যখন লাগবে নিয়ে নিন । বাবা বলেন - আমিইবা কি করবো । বাড়ী বানাতে হলে সেই টাকা
কোথাও না কোথাও থেকে এসেও যায় । তাই অনেক বাচ্চা নিজেদের ঘরে বসে আছে । এই
বাচ্চারাও অনেক উঁচু পদ প্রাপ্তি করে । প্রজাতেও তো কম পদ নেই । রাজাদের থেকেও কোনো
কোনো সাহুকার অনেক ধনবান হয়, তাই এমন কোনো কথা অন্তরে আসা উচিত নয় । তোমাদের
প্রতিজ্ঞা হলো - বাবা, তুমি যা খাওয়াবে তাই খাবো... এরপর এই কথা যদি না রাখো তখনই
তোমাদের দুর্গতি হয়ে যায় । বাবা তোমাদের সদগতি দিতে এসেছেন । যদি উচ্চ পদ না পাও,
তাহলে তো দুর্গতি বলা হবে, তাই না । ওখানেও অনেক বিত্তবান থাকবেন, কেউ কম পদের, কেউ
আবার উচ্চ পদের তো থাকবেন, তাই না । বাচ্চাদের শ্রীমৎ অনুযায়ী পুরুষার্থ করতে হবে ।
নিজের মতে চললে নিজেকে ধোকা দিয়ে দেয় । এ হলো শিববাবার রচিত জ্ঞান যজ্ঞ । এর নামই
হলো - রাজস্ব অশ্বমেধ অবিনাশী রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞ । শিববাবা এসে স্বরাজ্যের দান করেন
। কারোর যদি ভাগ্যে না থাকে, নাম যদি উজ্জ্বল না করে, তাহলে তাদের মুখ থেকে ভালো
ভালো পয়েন্টস বের হয় না । কাউকে না বোঝাতে পারলে বলবে - এর নাম হতে অনেক দেরী, যেই
কারণে বোঝানোর সময় মুখ্য - মুখ্য পয়েন্টস ভুলে যায় । তোমাদের এও বোঝানো উচিত যে -
স্বরাজ্য লাভের জন্য এ হলো রাজস্ব অশ্বমেধ অবিনাশী রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞ । তোমরা
বোর্ডের উপরও লিখতে পারো । এই যজ্ঞে পুরানো দুনিয়া সব স্বাহা হয়ে যায়, যার জন্য
এই মহাভারতের লড়াই উপস্থিত । বিনাশের পূর্বে এই স্বরাজ্য পদ নিতে হলে এসে নিয়ে যাও
। তোমরা তো বোর্ডে অনেককিছুই লিখতে পারো । এখানে এইম অবজেক্টও যেন এসে যায় । নীচে
লেখা উচিত - এখানে স্বরাজ্য পদ লাভ হয় । যতটা সম্ভব পরিস্কার ভাবে লেখা উচিত, যাতে
কেউ পড়লেই বুঝতে পারে । বাবা নির্দেশ দেন - তোমরা এইভাবে বোর্ড তৈরী করো । এই অক্ষর
অবশ্যই লেখো । ভবিষ্যতে এই যজ্ঞের অনেক প্রভাব হবে । ঝড় তো অনেকই আসবে । বলা হয় -
সত্যের নৌকা দোল খেলেও তা ডুববে না । তোমাদের ক্ষীর সাগরের দিকে যেতে হলে বিষয়
সাগরের দিকে মন দেওয়া উচিত নয় । যারা জ্ঞান শোনে না, তাদের পিছনে থেকে সময় নষ্ট করা
উচিত নয় । এই বোঝানো তো খুবই সহজ ।
তোমরাই পূজ্য দেবী - দেবতা ছিলে, এখন পূজারী হয়েছো । এখন বাবা বলছেন, তোমরা আমাকে
স্মরণ করো তাহলে তোমাদের খাদ দূর হয়ে যাবে । এতে তোমাদের পাপ ভস্ম হয়ে যাবে, আর
অন্য কোনো উপায় নেই । এই হলো প্রকৃত উপায় । অনেকে যোগে থাকে না, তাদের দেহ বোধও
অনেক । দেহ বোধ দূর হলে তবেই যোগে থাকতে পারবে, তাহলেই পরে কর্মাতীত অবস্থা হবে ।
শেষে অন্য কোনো জিনিসই স্মরণে আসা উচিত নয় । কোনো কোনো বাচ্চার কোনো জিনিসের প্রতি
এতো মোহ এসে যায় যে, সেকথা আর জিজ্ঞাসা করো না । তারা শিববাবাকে কখনোই স্মরণ করে
না । এমন বাবাকে বিশেষ ভাবে স্মরণ করতে হবে । বলা হয় - হাতে কাজ আর হৃদয়ে স্মরণ....খুব
কমেরই এইরূপ স্মরণ থাকে । তাদের আচরণ দেখেই বুঝতে পারা যায় । তারা যজ্ঞকে রেসপেক্ট
করে না । এই যজ্ঞের খুব ভালোভাবে সুরক্ষা করা উচিত । এই সুরক্ষা করা অর্থাৎ বাবাকে
খুশী করে দেওয়া । প্রতিটি বিষয়ের সুরক্ষার প্রয়োজন । গরীবের পাই - পয়সা এই যজ্ঞে আসে
যাতে তারা পদ্মপতি হয় । মাতারা, যাদের কাছে কিছুই নেই, যারা এক বা দুই টাকা, আট আনা
এই যজ্ঞতে দেয়, তারাও পদ্মপতি হয়ে যায়, কেননা তারা অনেক বড় ভাবনার সাথে, খুশীর সাথে
নিয়ে আসে । বাবা বলেন - আমি হলামই গরীবের ভগবান । বাচ্চারা, আমি তোমাদের জন্যই এসেছি
। কেউ আবার আট আনা নিয়ে এসে বলে - বাবা, বাড়ী তৈরীর সময় একটা ইট লাগিয়ে দিও । কখনো
দুই মুঠি আনাজও নিয়ে আসে । তাদের তো অনেক বৃদ্ধি পায় । কণা মাত্র জিনিসও মোহর
সমান হয়ে যায় । এমন তো নয় যে, তোমাদের বসে গরীবদের দান করতে হবে । গরীবদের তো ওরা
দান করে । এমনিতে তো এই দুনিয়াতে অনেক গরীব আছে । সবাই যদি এখানে এসে বসে যায় তাহলে
একে অন্যের মাথা খারাপ করে দেবে । এমন তো অনেকেই বলে, আমি যজ্ঞে সমর্পিত হবো, কিন্তু
খুব সাবধানে বুঝে নিতে হয় । এমন যেন না হয় যে, যজ্ঞে এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলো ।
যজ্ঞে তো খুব পুণ্য আত্মা হওয়া উচিত । খুব সুরক্ষার প্রয়োজন । যেই ঈশ্বরীয় যজ্ঞ
থেকে আমরা নিজের শরীর নির্বাহ করি, সেই যজ্ঞের জন্য রেসপেক্ট থাকা উচিত । যজ্ঞের
অর্থ অন্য কাউকে দিয়ে দেওয়া অনেক বড় পাপ । এই অর্থ তাদের জন্য যারা কড়ি থেকে হীরের
মতো তৈরী হয়, যারা ঈশ্বরীয় সেবাতে আছে । বাকি গরীবদের দান করা, এই দান - পুণ্য তো
জন্ম - জন্মান্তর ধরে করে এসেছো । এতে নামতে নামতে পাপ আত্মা হয়ে গেছো ।
বাচ্চারা, তোমরা সবাইকে বাবার পরিচয় দেওয়ার জন্য ছোটো - ছোটো গ্রামে প্রদর্শনী করতে
থাকো । একজন গরীবও যদি এর থেকে আসে, সেও ভালো, এতে তো কোনো খরচ নেই । লক্ষ্মী -
নারায়ণ যে এই রাজত্ব পেয়েছিলেন, কি খরচ করেছিলেন । কিছুই নয় । এই বিশ্বের বাদশাহী
লাভের জন্য কিছুই তো খরচ করেন নি । ওরা তো নিজেদের মধ্যে কতো লড়াই করে । বারুদ
ইত্যাদিতে কতো খরচ করে । এখানে তো খরচের কোনো কথাই নেই । কোনো কড়ি খরচ না করে তোমরা
এক সেকেণ্ডে বিশ্বের বাদশাহী নাও । তোমরা অল্ফকে (আল্লাহ) স্মরণ করো । বে অর্থাৎ
বাদশাহী তো আছেই । বাবা বলেন, যতটা সম্ভব সত্য হৃদয়ে সত্য সাহেবকে ( বাবা ) খুশী করো,
তাহলে সত্যখণ্ডের মালিক হতে পারবে । এখানে মিথ্যা চলবে না । তোমাদের স্মরণ করতে হবে
।এমন নয় যে, আমরা তো বাবার বাচ্চাই । এই স্মরণ করাতেই খুব পরিশ্রম । কোনো বিকর্ম
করলে অনেক ক্ষতি করে ফেলবে, তখন বুদ্ধি স্থির হবে না । বাবা তো অনুভাবী, তাই না ।
তাই বাবা বলতে থাকেন । কোনো কোনো বাচ্চা নিজেকে অতি চালাক মনে করে, কিন্তু বাবা
বলেন, এখানে অনেক পরিশ্রম । মায়া অনেক বিঘ্ন সৃষ্টি করে । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন
নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
নিজেদের এই রুদ্র যজ্ঞের অত্যন্ত রেসপেক্ট রাখতে হবে । যজ্ঞের পরিবেশ খুব শুদ্ধ এবং
শক্তিশালী করার জন্য সহযোগী হতে হবে । খুব ভালোবেসে এর রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে ।
২ ) নিজের কাছে কিছুই লুকিয়ে রাখবে না । স্বচ্ছ হৃদয় থাকলে লক্ষ্য পূরণ হবে । এই
যজ্ঞের এক একটি কড়ি অমূল্য, তাই একটি কড়িও ব্যর্থ নষ্ট করবে না । এর বৃদ্ধিতে সহযোগ
দিতে হবে ।
বরদান:-
কারণকে নিবারণে পরিবর্তন করে সদা এগিয়ে গিয়ে সমর্থী স্বরূপ ভব
জ্ঞান মার্গে যত এগোতে
থাকবে, মায়া তত ভিন্ন - ভিন্ন রূপে পরীক্ষা নিতে আসবে, কেননা এই পরীক্ষাই হলো এগিয়ে
যাওয়ার উপাদান (সাধন), নীচে নামানোর নয়। কিন্তু নিবারণের পরিবর্তে যদি কারণ নিয়ে
চিন্তা করো, তাহলে সময় এবং শক্তি ব্যর্থ নষ্ট হবে । কারণের পরিবর্তে যদি নিবারণ
নিয়ে চিন্তা করো আর এক বাবার স্মরণের একাগ্রতায় মগ্ন থাকো, তাহলে সমর্থী স্বরূপ
হয়ে নির্বিঘ্ন হয়ে যাবে ।
স্লোগান:-
সে-ই মহাদানী, যে নিজের দৃষ্টি, বৃত্তি এবং স্মৃতির শক্তির দ্বারা শান্তির অনুভব
করাবে ।