11.03.2021
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
(বিশেষ শিবজয়ন্তী
নিমিত্ত)
প্রশ্নঃ -
বাবা
বাচ্চাদেরকে সঙ্গমে সৃষ্টির সমাচার শোনান, সত্যযুগে নয়, কেন ?
উত্তরঃ -
কারণ সত্যযুগ হলই আদি কাল, সেই সময় সম্পূর্ণ সৃষ্টির খবরাখবর অর্থাৎ সৃষ্টির
আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান কীভাবে বলবেন, যতক্ষণ সার্কেল রিপিট না হচ্ছে ততক্ষণ খবরটি
দেবেন কীভাবে। সঙ্গমেই তোমরা বাচ্চারা বাবার দ্বারা সম্পূর্ণ সমাচার প্রাপ্ত কর।
তোমরাই জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র প্রাপ্ত কর।
ওম্ শান্তি ।
আজ হল
ত্রিমূর্তি শিবজয়ন্তী সেই সঙ্গে ব্রাহ্মণ জয়ন্তী তারই সঙ্গে সঙ্গমযুগ জয়ন্তীর শুভ
দিবস। অনেকে আছে যাদেরকে বাবা ঈশ্বরীয় জন্মগত অধিকারের গ্রিটিংসও দিতে পারেন না।
অনেকে আছে যারা জানেনা যে শিববাবা কে, তাঁর সঙ্গে মিলন উৎসবের প্রয়োজন কেন। তারা
গ্রিটিংস কি বুঝবে। নতুন বাচ্চারা কিছুই বুঝবে না। এ হল জ্ঞানের ডান্স। বলা হয় -
শ্রীকৃষ্ণ নৃত্য করতেন। এখানে কন্যারা রাধে-কৃষ্ণ রূপে ডান্স করে। কিন্তু ডান্স
করার তো কথা নেই। তারা তো সেখানে সত্যযুগে শিশুরূপে প্রিন্স-প্রিন্সেসদের সঙ্গে
ডান্স করবে। বাচ্চারা জানে - ইনি হলেন বাপদাদা। দাদাকে গ্র্যান্ড ফাদার বলা হয়। এই
দাদা (ব্রহ্মা বাবা) হলেন দেহের পিতা। এখানে তো এই কথাটি ওয়ান্ডারফুল ! ওই দাদা
হলেন আত্মিক এবং ইনি হলেন দৈহিক, এনাকে বলা হয় বাপদাদা। বাবার দ্বারা ঠাকুরদাদার
সম্পত্তির উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। উত্তরাধিকার হল দাদার (দাদুর)। সব আত্মারা হল
ব্রাদার্স, অতএব উত্তরাধিকার পিতার কাছ থেকে প্রাপ্ত হবে। বাবা বলেন তোমরা আত্মা,
তোমাদের নিজস্ব শরীর, নিজস্ব কর্মেন্দ্রিয় আছে। আমাকে নিরাকার বলা হয় - আমারও
শরীরের প্রয়োজন আছে নিশ্চয়ই। তবে তো বাচ্চাদের রাজযোগের শিক্ষা প্রদান করি বা মানুষ
থেকে দেবতায় পরিণত করি, পতিত থেকে পবিত্র হওয়ার জ্ঞান মার্গের বিষয়ে বলি বা
পুতিগন্ধময় বস্ত্র ধুয়ে পরিষ্কার করি .... নিশ্চয়ই কোনও বড় মাপের নিৰ্মলকর (ধোপা)
হবে। সম্পূর্ণ বিশ্বের আত্মাদের এবং শরীর ধুয়ে পরিষ্কার করেন। জ্ঞান ও যোগের দ্বারা
তোমাদের আত্মাকে ধুইয়ে দেওয়া হয় ।
আজ তোমরা বাচ্চারা এসেছো, জানো যে আমরা শিববাবাকে অভিনন্দন জানাতে এসেছি। বাবাও
বলেন তোমরা যাঁকে অভিনন্দন জানাতে এসেছো সেই বাবাও তোমাদের গ্রিটিংস দিচ্ছেন কারণ
তোমরা হলে অতি উত্তম সৌভাগ্যশালী ব্রাহ্মণ কুল ভূষণ। দেবতারাও এত উত্তম নয় যতখানি
উত্তম তোমরা। ব্রাহ্মণ হল দেবতাদের চেয়েও উঁচুতে। উঁচু থেকে উঁচু হলেন শিববাবা।
তারপরে তিনি আসেন ব্রহ্মা দেহে। তোমরা তাঁর সন্তান সর্বোচ্চ ব্রাহ্মণ হলে তোমরা।
ব্রাহ্মণদের হল শিখা। তার নীচে দেবতাদের স্থান। সবচেয়ে উপরে হলেন বাবা। বাচ্চারা,
বাবা তোমাদেরকে ব্রাহ্মণ-ব্রাহ্মণী বানিয়েছেন - স্বর্গের উত্তরাধিকার দিতে। এই
লক্ষ্মী-নারায়ণের অনেক মন্দির বানিয়েছে। প্রণাম করতে যায়। ভারতবাসীদের এই কথা জানা
উচিত যে লক্ষ্মী-নারায়ণ হলেন মানুষ। লক্ষ্মী-নারায়ণ দুইজনেই পৃথক। এখানে তো একটি
মানুষের দুটি নাম রেখে দিয়েছে। একজনের নাম লক্ষ্মী-নারায়ণ অর্থাৎ নিজেকে বিষ্ণু
চতুর্ভূজ বলে দিয়েছে। লক্ষ্মী-নারায়ণ অথবা রাধে-কৃষ্ণ নাম রেখেছে, সুতরাং চতুর্ভূজ
হল তাইনা। বিষ্ণু তো হলেন সূক্ষ্মবতনের এইম অবজেক্ট (মূল লক্ষ্য) । তোমরা এই
বিষ্ণুপুরীর মালিক হবে। লক্ষ্মী-নারায়ণ হলেন বিষ্ণুপুরীর মালিক। বিষ্ণুর ৪-টি ভূজা
আছে। দুটি লক্ষ্মীর, দুটি নারায়ণের। তোমরা বলবে আমরা বিষ্ণুপুরীর মালিক হচ্ছি।
আচ্ছা, বাবার মহিমার গীত শোনাও। একমাত্র শিববাবা ব্যতীত সম্পূর্ণ দুনিয়ায় শুরু থেকে
এখনও পর্যন্ত কারো এতখানি মহিমা বর্ণনা করা হয়নি । নম্বর অনুসারে তো আছেই। সবচেয়ে
বেশী সর্বোৎকৃষ্ট মহিমা হল উঁচু থেকে উঁচু পরমপিতা পরমাত্মার, তোমরা যাঁর সন্তান।
তোমরা বলো আমরা হলাম ঈশ্বরীয় সন্তান। ঈশ্বর তো হলেন স্বর্গের রচয়িতা তাহলে তোমরা
নরকে কেন আছো। ঈশ্বরের জন্ম এখানেই হয়। খ্রিস্টানরা বলবে আমরা হলাম খ্রীষ্টের। এই
কথাটি ভারতবাসী ভুলে গেছে যে আমরা পরমপিতা পরমাত্মা শিবের ডাইরেক্ট সন্তান। বাবা
এখানে আসেন বাচ্চাদের আপন করে পুনরায় রাজ্য-ভাগ্য প্রদান করতে। আজ বাবা ভালো রীতি
বোঝাচ্ছেন কারণ অনেক নতুন বাচ্চারাও আছে। তাদের বুঝতে কঠিন মনে হবে। হ্যাঁ, তবু
স্বর্গবাসী হবে। স্বর্গে সূর্য বংশী রাজা-রানীও থাকে, দাস-দাসীরাও থাকে। প্রজাও থাকে।
সেখানে কেউ গরিব, কেউ ধনী থাকে। তাদেরও দাস-দাসী থাকে। সম্পূর্ণ রাজধানী এখানে
স্থাপন হচ্ছে। এই কথা তো আর কেউ জানে না। সবার আত্মা তমোপ্রধান, জ্ঞানের তৃতীয়
নেত্র কারো নেই। (গীত) এখনই বাবার মহিমা শুনলে। তিনি হলেন সকলের পিতা। ভগবানকে পিতা
বলা হয়, অসীম জগতের সুখ প্রদান করেন পিতা। এই সেই ভারত যেখানে অসীম জগতের সুখ ছিল,
লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য ছিল। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ শৈশবে হয় রাধে-কৃষ্ণ তারপরে স্বয়ংবর
অনুষ্ঠানের পরে লক্ষ্মী-নারায়ণ নাম প্রাপ্ত করে। এই ভারতে ৫ হাজার বছর পূর্বে
দেবতাদের রাজত্ব ছিল। লক্ষ্মী-নারায়ণ ব্যতীত অন্য কারো রাজ্য ছিল না। অন্য কোনও
খন্ড ছিল না। অতএব এখন ভারতবাসীদের এই কথা অবশ্যই জানা উচিত যে লক্ষ্মী-নারায়ণ
পূর্ব জন্মে কিরূপ কর্ম করেছেন। যেমন বলা হবে বিড়লা কি কর্ম করেছিল যে এত ধনী হয়েছে।
অবশ্যই বলা হবে পূর্ব জন্মে দান-পুণ্য করেছিল নিশ্চয়ই। কারো কাছে অনেক ধন আছে, কারো
কাছে খাবার নেই কারণ কর্ম এমন করেছে। কর্মকে তো স্বীকার করো । কর্ম-অকর্ম-বিকর্মের
গতি গীতার ভগবান বলেছিলেন। যাঁর মহিমা শুনলে। শিব হলেন একমাত্র ভগবান। মানুষকে
ভগবান বলা হবে না। এখন বাবা কোথায় এসেছেন ! তিনি বুঝিয়ে বলেন সামনে মহাভারতের যুদ্ধ
তাই অতি মিষ্টি বাবা বুঝিয়ে বলছেন, তাঁকে দুঃখে সবাই স্মরণ করে। দুঃখে স্মরণ সবাই
করে .... শিববাবাকে দুঃখে সবাই স্মরণ করে। সুখে কেউ করে না। স্বর্গে তো দুঃখ ছিল
না। সেখানে পিতার কাছে প্রাপ্ত হওয়া উত্তরাধিকার ছিল। ৫ হাজার বছর পূর্বে যখন
শিববাবা এসেছিলেন তখন ভারতকে স্বর্গ বানিয়েছিলেন। এখন হয়েছে নরক। বাবা এসেছেন
স্বর্গ বানাতে। দুনিয়া তো জানেনা। তারা বলে আমরা অন্ধ। অন্ধের লাঠি প্রভু এসো, এসে
চক্ষু প্রদান করো। তোমরা বাচ্চারা জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র প্রাপ্ত করেছো। যেখানে আমরা
আত্মারা বাস করি তার নাম শান্তিধাম। বাবাও সেখানেই থাকেন। তোমরা আত্মারা এবং আমি
থাকি। এনার আত্মা দ্বারা বাবা বলেন - আমি তোমাদের অর্থাৎ সব আত্মাদের পিতা সেখানে
থাকি। তোমরা পুনর্জন্মের পার্ট প্লে কর, আমি করি না। তোমরা বিশ্বের মালিক হও, আমি
হই না। তোমাদের ৮৪ বার জন্ম নিতে হয়। তোমাদের বুঝিয়েছিলাম যে হে বাচ্চারা তোমরা
নিজেদের জন্মের কাহিনী জানো না। ৮৪ লক্ষ জন্ম বলে দিয়েছে - এই হল মিথ্যে কথা। আমি
জ্ঞানের সাগর পতিত-পাবন, আমি আসি তখন, যখন সবাই পতিত হয়। তখনই এসে সৃষ্টির
আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বুঝিয়ে ত্রিকালদর্শী বানাই। অনেকে জিজ্ঞাসা করে সর্বপ্রথমে
মানুষ রচনা কীভাবে করেন ? ভগবান সৃষ্টি রচনা করেন কীভাবে ? একটি শাস্ত্রে দেখানো
হয়েছে - প্রলয় হয় তারপরে সমুদ্রে অশ্বত্থ পাতায় শিশু কৃষ্ণ এলেন। বাবা বলেন এমন
কোনও কথা নেই, এই হল অসীম জগতের ড্রামা। দিন হল সত্যযুগ-ত্রেতা, রাত হল
দ্বাপর-কলিযুগ।
বাচ্চারা, বাবা তোমাদের অভিনন্দন জানান। বাবা বলেন - তৎত্বম্ (আমি যেমন তোমরাও
তদনুরূপ হও) । তোমরাও একশো শতাংশ দুর্ভাগ্যশালী থেকে একশো শতাংশ সৌভাগ্যশালী হও।
তোমরা ভারতবাসীরা ছিলে সেই রূপে কিন্তু তোমরা সে কথা জানো না। বাবা এসে বলেন। তোমরা
নিজের জন্মের কাহিনী জানো না। আমি এসে বলি - তোমরা ৮৪ জন্ম গ্রহণ কর। বাবা তোমাদের
সঙ্গমে সম্পূর্ণ সৃষ্টির খবরাখবর প্রদান করেন। সত্যযুগে তো বলবেন না। যে সময়
সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্ত হয়নি, সেই বিষয়ে কীভাবে বোঝাবেন ? আমি আসি অন্ত সময়ে, কল্পের
সঙ্গমযুগে। শাস্ত্রে লেখা আছে যুগে-যুগে, কৃষ্ণ ভগবানুবাচ - গীতায় লিখে দিয়েছে। সব
ধর্মের মানুষ কৃষ্ণকে ভগবান রূপে স্বীকার করবে না। ভগবান তো হলেন নিরাকার তাইনা।
তিনি হলেন সর্ব আত্মাদের পিতা। বাবার কাছে অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। তোমরা
সব আত্মারা হলে ভাই-ভাই। পরমাত্মাকে সর্বব্যাপী বলে দিলে তো ফাদারহুড হয়ে যায়।
ফাদার কখনো উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করে কি ? উত্তরাধিকার সন্তানদের প্রাপ্ত হয়। তোমরা
আত্মারা সবাই হলে সন্তান। পিতার উত্তরাধিকার অবশ্যই চাই। পার্থিব জগতের উত্তরাধিকার
পেয়েও তোমরা খুশী থাকো না তাই আহবান কর - তোমার কৃপায় ঘন সুখের প্রাপ্তি হয়েছিল।
এখন রাবণ দ্বারা দুঃখ প্রাপ্ত হয়েছে তাই আহবান করছো। সবার আত্মা-ই ভগবানকে ডাকছে,
কারণ তারা দুঃখে আছে তাই স্মরণ করছে, বাবা এসে সুখ প্রদান করো। এখন এই জ্ঞানের
দ্বারা স্বর্গের মালিক হও। তোমাদের সদগতি হয় তাই গায়ন আছে, সর্বজনের সদগতি দাতা
হলেন একমাত্র শিবপিতা। এখন সবাই দুর্গতিতে আছে পরে সকলের সদগতি হয়। যখন
লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজত্ব ছিল তখন তোমরা স্বর্গে ছিলে। বাকিরা সবাই মুক্তিধামে ছিল।
এখন আমরা বাবার কাছে রাজযোগের শিক্ষা প্রাপ্ত করি। বাবা বলেন কল্পের সঙ্গমে আমি
তোমাদের পড়াই। মানুষ থেকে দেবতায় পরিণত করি। বাচ্চারা, এখন তোমাদের সম্পূর্ণ রহস্য
বুঝিয়ে বলি। শিবরাত্রি কবে হয়েছিল, সে কথা তো জানা প্রয়োজন। কি হয়েছিল, শিববাবা কবে
এসেছিলেন ? কিছুই তো জ্ঞান নেই। সুতরাং পাথরবুদ্ধি তাইনা। এখন তোমরা পারসবুদ্ধি বা
স্পর্শবুদ্ধিতে পরিণত হচ্ছো। ভারত পারসপুরী গোল্ডেন এজ বা স্বর্ণ যুগ ছিল।
লক্ষ্মী-নারায়ণকে ভগবান-ভগবতী বলা হয়। তাঁদের এই উত্তরাধিকার ভগবান দিয়েছিলেন, এখন
আবার দিচ্ছেন। তোমাদের পুনরায় ভগবান-ভগবতী বানাচ্ছেন। এখন এই সময়টি হল তোমাদের অনেক
জন্মের শেষ জন্ম। বাবা বলেন বিনাশ সামনে রয়েছে। একেই বলে রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞ। ওই সবই
হল ভৌতিক পদার্থের যজ্ঞ। এই হল জ্ঞানের কথা। এখানে বাবা এসে মানুষকে দেবতায় পরিণত
করেন। তোমরা অভিনন্দন জানাও শিববাবার আগমনের। বাবা বলেন আমি একা তো আসি না। আমারও
দেহের প্রয়োজন হয়। ব্রহ্মা দেহে আসতে হয়। সর্ব প্রথমে সূক্ষ্মবতন রচনা করতে হয় তাই
এনার মধ্যে প্রবেশ করি, ইনি তো পতিত ছিলেন। ৮৪ জন্ম গ্রহণ করে পতিত হয়েছেন। সবাই
আহবান করে। এখন বাবা বলেন বাচ্চারা, আমি পুনরায় তোমাদের অবিনাশী উত্তরাধিকার দিতে
এসেছি। বাবা স্বয়ং ভারতকে উত্তরাধিকার প্রদান করেন। স্বর্গের রচয়িতা হলেন বাবা,
নিশ্চয়ই স্বর্গের উপহার দেবেন। এখন তোমরা স্বর্গের মালিক হচ্ছো। এই হল পাঠশালা -
ভবিষ্যতে মানুষ থেকে ২১ জন্মের জন্য দেবতা হওয়ার। তোমরা স্বর্গের মালিক হচ্ছো। ২১
বংশ তোমরা সুখ প্রাপ্ত করো। সেখানে অকালে মৃত্যু হয় না। যখন শরীরের আয়ু পূর্ণ হয়
তখন সাক্ষাৎকার হয়। এক দেহ ত্যাগ করে অন্য দেহ ধারণ হয়। সর্পের দৃষ্টান্ত আছে ...
তাই তোমরা বাচ্চারা বাবাকে অভিনন্দন জানাও। বাবা আবার তোমাদের অভিনন্দন জানান। তোমরা
এখন দুর্ভাগ্যশালী থেকে সৌভাগ্যশালী স্বরূপে পরিণত হও। পতিত মানুষ থেকে পবিত্র
দেবতায় পরিণত হও। চক্র তো আবর্তিত হতেই থাকে। বাচ্চারা, এই কথা তো তোমাদের বোঝাতে
হবে। পরে এই জ্ঞান প্রায় লুপ্ত হয়ে যায়। সত্যযুগে জ্ঞানের প্রয়োজন নেই। এখন তোমরা
দুর্গতিতে আছো তবে এই জ্ঞানের দ্বারা সদগতি প্রাপ্ত কর। বাবা স্বয়ং এসে স্বর্গ
স্থাপন করেন। সর্বজনের সদগুরু হলেন একজন ই। যদিও ভক্তিমার্গের কর্মকান্ড দ্বারা কারো
সদগতি হয় না। সবাইকে সিঁড়ি বেয়ে নীচে নামতেই হয়। ভারত সতোপ্রধান ছিল তারপরে ৮৪ জন্ম
গ্রহণ করতে হয় এখন আবার তোমাদের উপরে উঠতে হয়। মুক্তিধাম নিজের ঘরে ফিরতে হয়। এখন
নাটক পূর্ণ হয়েছে। এই পুরানো দুনিয়া শেষ হয়ে যাবে। ভারতকে অবিনাশী খন্ড বলা হয়।
বাবার জন্ম স্থান কখনও বিনষ্ট হয় না। তোমরা শান্তিধামে গিয়ে পুনরায় আসবে, এসে
রাজত্ব করবে। পবিত্র ও পতিত ভারতেই হয়। ৮৪ বার জন্ম নিয়ে পতিত হও। যোগী থেকে ভোগী
হয়েছো। এই হল ঘোর নরক। মহান দুঃখের সময়। এখন তো অনেক দুঃখ আসবে। এই হল রক্তরঞ্জিত
খেলা । বসে-বসে বোমা এসে পড়বে। তোমরা কি অপরাধ করেছ ? অযথা সকলের বিনাশ হবে।
বিনাশের সাক্ষাৎকার তো বাচ্চারা করেছে। এখন তোমরা সৃষ্টি চক্রের জ্ঞান জেনেছো।
তোমাদের কাছে জ্ঞানের তলোয়ার, জ্ঞানের খড়্গ আছে। তোমরা হলে ব্রহ্মার মুখবংশী
ব্রাহ্মণ। প্রজাপিতাও হলেন বাবা। কল্প পূর্বেও ব্রহ্মাবাবা মুখবংশী সন্তান জন্ম
দিয়েছেন। বাবা বলেন আমি কল্প-কল্প আসি। এনার মধ্যে প্রবেশ করে তোমাদের মুখবংশী
বানাই। ব্রহ্মা দ্বারা স্বর্গের স্থাপনা করাই। স্বর্গে তো ভবিষ্যতে যাবে। অপবিত্র
ছিঃ ছিঃ দুনিয়া তো শেষ হওয়া উচিত। অসীম জগতের পিতা তো আসেন নতুন দুনিয়া রচনা করতে।
বাবা বলেন - বাচ্চারা, আমি তোমাদের জন্য হাতের মুঠোয় স্বর্গ এনেছি। তোমাদের কোনও
কষ্ট দিতে আসি না। তোমরা সবাই হলে দ্রৌপদী। আচ্ছা!
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন
নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
দেবতাদের চেয়েও উচ্চ আমরা হলাম সর্বোত্তম ব্রাহ্মণ - এই আত্মিক নেশায় থাকতে হবে।
জ্ঞান ও যোগের দ্বারা আত্মাকে স্বচ্ছ বানাতে হবে।
২) সবাইকে শিববাবার অবতরণের অভিনন্দন জানাতে হবে। বাবার পরিচয় দিয়ে পতিত থেকে
পবিত্র করতে হবে। রাবণ রূপী শত্রু থেকে মুক্ত করতে হবে।
বরদান:-
প্রতিটি সঙ্কল্প বাবার সম্মুখে অর্পণ করে দুর্বলতাগুলি দূর করতে সক্ষম সদা
স্বতন্ত্র ভব
দুর্বলতা গুলি দূর
করার সহজ উপায় (সাধন) হল - যা কিছু সঙ্কল্পে আসে সেসব বাবাকে অর্পণ করে দাও। সব
দায়িত্ব বাবাকে দিয়ে দিলে স্বয়ং স্বতন্ত্র হয়ে যাবে। শুধুমাত্র একটি দৃঢ় সঙ্কল্প
রাখো যে আমি বাবার এবং বাবা আমার। যখন এই রূপ অধিকারী স্বরূপে স্থিত হবে তখন
অধীনস্থ ভাব অটোমেটিক দূর হয়ে যাবে। প্রতিটি সেকেন্ড এই কথাটি চেক করো যে আমি বাবার
মতন সর্ব শক্তির অধিকারী মাস্টার সর্বশক্তিমান হয়েছি !
স্লোগান:-
শ্রীমতের ইঙ্গিত অনুযায়ী সেকেন্ডে নির্লিপ্ত ও প্রিয় হওয়াই তপস্বী আত্মার লক্ষণ।