17.03.2021
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
জ্ঞান সাগর বাবার দ্বারা তোমরা মাস্টার জ্ঞান সাগর হও, তোমরা জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র
প্রাপ্ত কর, তাই তোমরা হলে ত্রিনেত্রী, ত্রিকালদর্শী এবং ত্রিলোকীনাথ ”
প্রশ্নঃ -
তোমরা বাচ্চারা
ব্যতীত বিশ্বের রূহানী সেবা কেউ করতে পারে না - কেন ?
উত্তরঃ -
কারণ তোমরাই সুপ্রিম আত্মার (শিববাবার) শক্তি প্রাপ্ত কর। প্রথমে আত্মাদের অর্থাৎ
তোমাদের জ্ঞান ইনজেকশন লাগানো হয় , যার দ্বারা তোমরা ৫ বিকারের উপরে নিজেও বিজয় লাভ
কর এবং অন্যদেরও জয় লাভ করাও। এমন সেবা অন্য কেউ করতে পারে না। কল্প-কল্প তোমরা
বাচ্চারাই এই রূহানী অর্থাৎ আত্মিক সেবা কর।
ওম্ শান্তি ।
বাবার স্মরণে
বসবে অন্য কোনো দেহধারীর স্মরণে নয়। নতুন যারা আসে বাবাকে তো তারা জানে না। তাঁর
নাম তো খুব সহজ শিববাবা। বাবাকে বাচ্চারা জানে না, কতখানি ওয়ান্ডার। শিববাবা হলেন
উঁচু থেকে উঁচুতে, সর্বের সদগতিদাতা। সর্ব পতিতদের পবিত্র করেন তিনি, সর্বের দুঃখ
হরণ কর্তাও তিনি কিন্তু তিনি কে, সেই কথা কেউ জানে না, একমাত্র তোমরা বি.কে.রা জানো।
তোমরা হলে তাঁর নাতি নাতনি। তাহলে তো নিশ্চয়ই নিজের পিতা এবং তাঁর রচনার
আদি-মধ্য-অন্তের কথা জানবে। বাবার দ্বারা আত্মারূপী বাচ্চারা সবকিছু জানতে পারে। এই
হল পতিত দুনিয়া। সর্ব কলিযুগী পতিতদের সত্যযুগী পবিত্র কীভাবে বানাতে হয় তা একমাত্র
বি.কে. রা জানে দুনিয়ায় আর কেউ জানে না। কলিযুগী দুর্গতি থেকে মুক্তি দেন, সত্যযুগী
সদগতি দাতা হলেন একমাত্র বাবা। শিব জয়ন্তীও ভারতেই পালন হয়। নিশ্চয়ই তিনি আসেন
কিন্তু এসে কি দেন ভারতকে , সে কথা ভারতবাসী জানে না। প্রতি বছর শিব জয়ন্তী পালন হয়
কিন্তু জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র নেই তাই পিতার পরিচয় জানা নেই।
গীত:-
নয়নহীন কে পথ
দেখাও প্রভু .......
এই গীত মানুষের তৈরি করা যে আমরা সবাই হলাম নয়নহীন অর্থাৎ অন্ধ। এই দৈহিক স্থূল নয়ন
তো সবারই আছে কিন্তু নিজেকে নয়নহীন বা দৃষ্টিহীন কেন বলে ? বাবা বসে বোঝান যে
জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র কারো কাছে নেই। বাবার পরিচয় না জানা অর্থাৎ এই হল অজ্ঞান অথবা
জ্ঞানহীন। বাবার পরিচয় বাবার দ্বারা প্রাপ্ত করা একেই জ্ঞান বলা হয়। বাবা জ্ঞানের
তৃতীয় নেত্র প্রদান করেন, যার দ্বারা তোমরা সম্পূর্ণ রচনার আদি মধ্য অন্তকে জানো।
জ্ঞান সাগরের সন্তান তোমরা মাস্টার জ্ঞান সাগর হয়ে যাও। তৃতীয় নেত্র অর্থাৎ
ত্রিনেত্রী, ত্রিকালদর্শী, ত্রিলোকীনাথ হয়ে যাও। ভারতবাসী এই কথা জানে না যে এই
লক্ষ্মী-নারায়ণ সত্যযুগের মালিক ছিলেন , এই উত্তরাধিকার তারা পেলেন কীভাবে? কবে
এসেছিলেন ? পরে কোথায় গেলেন ? পুনরায় রাজ্য কীভাবে পেলেন ? কিছুই জানে না। দেবতারা
হলেন পবিত্র তাইনা। পবিত্র তো অবশ্যই বাবা করবেন। তোমরা ভারতবাসী, বাবা বসে তোমাদের
বোঝান। যারা দেবতাকে , শিবকে বিশ্বাস করে। শিবের জন্ম হয় ভারতে। উঁচু থেকে উঁচু
হলেন ভগবান। শিব জয়ন্তীও এখানেই পালন হয়। জগৎ অম্বা, জগৎ পিতা ব্রহ্মা এবং
সরস্বতীরও জন্ম এখানেই। ভারতেই পালন হয়। আচ্ছা, লক্ষ্মী-নারায়ণের জন্মও এখানেই হয়,
তারাই হলেন রাধে কৃষ্ণ। এই কথাও ভারতবাসী জানে না। তারা বলে পতিত-পাবন এসো অর্থাৎ
নিশ্চয়ই সবাই পতিত হয়েছে। সাধু সন্ন্যাসী ঋষি মুনি ইত্যাদি সবাই আহবান করে যে
আমাদের পবিত্র করতে এসো। অন্য দিকে কুম্ভ মেলায় স্নান করতে যায় পাপ নষ্ট করতে। ভাবে
গঙ্গা হল পতিত-পাবনী। আহবান করে পতিত-পাবন এসো তাহলে মানুষ পবিত্র করবে কীভাবে? বাবা
বোঝান তোমরা প্রথমে দেবী-দেবতা ধর্মের ছিলে তখন সবাই পবিত্র ছিল। এখন পতিত হয়েছে।
বলে যে পথ বলে দাও প্রভু। কোথাকার পথ ? তারা বলে বাবা জীবনমুক্তির পথ বলে দাও।
আমাদের মধ্যে ৫-টি বিকার আছে। বাবা আমরা যখন সবাই স্বর্গে ছিলাম তখন নির্বিকারী
ছিলাম। এখন বিকারী পতিত হয়েছি, এই বিষয়ে কিছু রহস্য বুঝিয়ে দাও। এই সব কোনো পুরাতন
কাহিনী নয়। বাবা বোঝান - শ্রীমৎ ভাগবত গীতা অথবা পরমাত্মা দ্বারা উচ্চারিত গীতা।
পতিতদের পবিত্র করেন নিরাকার ভগবান। মানুষকে ভগবান বলা হয় না। বাবা বলেন - এই যে এত
বড় বড় গুরু আছে তা সত্ত্বেও ভারত এমন পতিত কড়ি তুল্য হয়েছে কেন। গতকালের কথা ভারত
স্বর্গ ছিল। বাবা ভারতকে স্বর্গের উপহার দিয়েছিলেন। ভারতবাসী পতিতদের এসে রাজযোগ
শিখিয়ে পবিত্র বানিয়েছিলাম। এখন বাবা আবার এসেছেন বাচ্চাদের কাছে সেবাধারী রূপে।
বাবা হলেন আত্মিক সেবাধারী। বাকি সব মানুষ মাত্রই হল দৈহিক সেবাধারী। সন্ন্যাসীরাও
হল পার্থিব দেহের সেবাধারী। তারা বসে বই ইত্যাদি পাঠ করে শোনায়। বাবা বলেন আমি
নিরাকার সাকার সাধারণ বৃদ্ধ দেহে প্রবেশ করে বাচ্চাদের এসে বোঝাই। হে ভারতবাসী
বাচ্চারা, দেখো আত্মিক পিতা আত্মাদের বসে বোঝাচ্ছেন। ব্রহ্মা জ্ঞান শোনাচ্ছেন না বরং
নিরাকার পিতা এই দেহের আধার নিয়েছেন। শিবের নিজস্ব দেহ তো নেই। শালিগ্রাম আত্মাদের
তো নিজস্ব দেহ আছে। আত্মারা পুনর্জন্মের চক্রে এসে পতিত হয়। এখন তো সম্পূর্ণ
দুনিয়াই হল পতিত। পবিত্র একজনও নেই। তোমরা সতোপ্রধান ছিলে তারপরে খাদ পড়ে সতো থেকে
রজো তমোতে এসেছো। তোমরা ভারতবাসী, তোমাদের কাছে শিববাবা এসে শরীর ধারণ করেন যাকে
ভাগীরথী বলা হয়। মন্দিরে শঙ্করের চিত্র দেখানো হয় কারণ তারা তো শিব শঙ্কর একই ভেবে
নিয়েছে। এই কথা বোঝে না যে শিব তো হলেন নিরাকার, শঙ্কর হলেন আকারী। শিব শঙ্কর একই
বলে কীভাবে। আচ্ছা, তারপরে বলদের উপরে যাত্রা করে কে । শিব অথবা শঙ্কর ? সূক্ষ্মবতনে
বলদ আসে কোথা থেকে ? শিব থাকেন মূলবতনে, শঙ্কর থাকেন সূক্ষ্মবতনে। মূলবতনে সবাই
আত্মা রূপে বাস করে। সূক্ষ্ম বতনে কেবল ব্রহ্মা বিষ্ণু শঙ্কর আছে, সেখানে পশু
ইত্যাদি নেই। বাবা বলেন আমি সাধারণ বৃদ্ধ দেহে প্রবেশ করে তোমাদের বোঝাই। তোমরা
বাচ্চারা নিজেদের জন্মের কাহিনী জানো না। সত্যযুগ থেকে তোমরা কত গুলি জন্ম নিয়েছো ?
৮৪ জন্ম। এখন এই জন্ম টি হল শেষ জন্ম। ভারত যে অমরলোক পবিত্র ছিল, সেই ভারত এখন
মৃত্যুলোক পতিত হয়েছে। সর্বজনের সদগতি দাতা তো হলেন একজন তাইনা। রুদ্র মালা হল
পরমপিতা পরমাত্মা নিরাকার শিবের। শ্রী শ্রী ১০৮ রুদ্র মালা বলা হয়। সবাই হল শিবের
গলার হার। বাবা তো হলেন সর্বের সদগতি দাতা, সর্বকে অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রদান করেন।
লৌকিক পিতার কাছে দৈহিক জগতের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় যাকে সন্ন্যাসীরা কাগ বিষ্ঠা
সম সুখ বলে। বাবা বলেন যথাযথভাবে তোমাদের এই সুখ কাগ বিষ্ঠা সম সুখ। বাবা স্বয়ং এসে
পতিতদের পবিত্র করেন অথবা কাঁটাদের ফুলে পরিণত করেন জ্ঞানের দ্বারা। এই হল গীতা
জ্ঞান। এই জ্ঞান কোনো মানুষ বোঝাতে পারে না। কেবলমাত্র জ্ঞানের সাগর পতিত-পাবন বাবা
এই জ্ঞান বোঝাতে পারেন। বাবার কাছেই অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় যা তোমরা নিচ্ছো।
তোমরা ই সদগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছ। এখন তোমরা আছো সঙ্গমে, তারা তো কলিযুগে আছে। এখন
হল কলিযুগের অন্ত সময়। মহাভারতের যুদ্ধ সামনে রয়েছে। ৫ হাজার বছর পূর্বেও যখন তোমরা
রাজযোগ শিখেছিলে তখন সম্পূর্ণ জগতে আগুন লেগেছিল। এখন তোমরা রাজযোগ শিখছো,
লক্ষ্মী-নারায়ণ হওয়ার জন্য। বাকি সবই হল ভক্তিমার্গ। বাবা যখন আসেন তখন এসে
স্বর্গের দ্বার খুলে দেন। বাবা বলেন এই শিব শক্তি ভারতমাতা রা ভারতকে স্বর্গে পরিণত
করে শ্রীমতের দ্বারা। তোমরা হলে শিব শক্তি ভারত মাতা, যারা ভারত কে স্বর্গ বানাও।
তোমরাই হলে শিবের সন্তান, তাঁকেই তোমরা স্মরণ কর। শিবের কাছে শক্তি নিয়ে ৫ বিকার
রূপী শত্রুদের জয় কর। তোমরা বাচ্চারা ৫ হাজার বছর পূর্বেও ভারতের রূহানী সেবা
করেছিলে। তারা সোশ্যাল সেবা করে সে হল পার্থিব দেহের সেবা। এই হল রূহানী অর্থাৎ
আত্মিক সেবা। সুপ্রিম আত্মা এসে আত্মাদের ইনজেকশন লাগিয়ে দেন, পড়ান। আত্মা ই শোনে।
তোমরা হলে আত্মা। তোমরাই ৮৪ জন্ম নাও। এক শরীর ত্যাগ করে অন্য টি ধারণ করো। ৮৪ জন্ম
নিয়ে ৮৪ মাতা পিতা পেয়ে যাও। সত্য যুগ ত্রেতায় তোমরা স্বর্গের সুখ পাও, এখন পুনরায়
অসীম জগতের পিতা দ্বারা সুখের অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছো। যথাযথভাবে ভারতের
এই উত্তরাধিকার ছিল। ভারতে এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য ছিল। সেখানে দৈত্য ইত্যাদি
কিছু ছিল না। তোমরা জানো এখন এই পুরানো দুনিয়ায় আগুন লাগবে। আমি এসে জ্ঞান যজ্ঞ রচনা
করি। তোমরা সবাই পবিত্র দেবতায় পরিণত হও। হাজার জন আছে যারা দেবতা হওয়ার পুরুষার্থ
করছে। বাবা এসেছেন সদগতি করতে। বাচ্চারা তোমাদেরকে কাঁটা থেকে ফুলে পরিণত করছেন।
তোমাদের জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র প্রদান করেছেন যাতে তোমরা সম্পূর্ণ ড্রামার বিষয়ে,
শিববাবা কিরূপ পার্ট প্লে করেন, সব জানতে পারো। ব্রহ্মা ও বিষ্ণুর কি কানেকশন,
সেসবও জানতে পারো। তারা দেখায় বিষ্ণুর নাভিকমল থেকে ব্রহ্মা উদয় হয়েছেন। ব্রহ্মা
গিয়ে বিষ্ণু রূপে পরিণত হন। ব্রাহ্মণ রা পরিণত হয় দেবতায়। বিষ্ণু থেকে ব্রহ্মা হতে
সময় লাগে ৫ হাজার বছর। এই জ্ঞান তোমাদের আছে। তোমরা ব্রাহ্মণ, তোমাদের নাভি কমল থেকে
বিষ্ণুপুরী প্রকট হচ্ছে। তারা তো চিত্র তৈরি করেছে যে বিষ্ণুর নাভি থেকে ব্রহ্মার
উদয় হয়। তারপরে সর্ব বেদ শাস্ত্রের সার বলেন। এখন তোমরা ব্রহ্মা দ্বারা সম্পূর্ণ
সার বুঝেছো। বাবা বলেন মুখ্য ধর্ম-শাস্ত্র হল ৪-টি, প্রথম দৈব ধর্মের শাস্ত্র হল
গীতা। গীতা গায়ন করেন কে ? শিববাবা। জ্ঞান-সাগর, পতিত-পাবন, সুখের সাগর হলেন শিববাবা।
তিনি বসে ভারতকে স্বর্গে পরিণত করেছেন, কৃষ্ণ নয়। কৃষ্ণ তো আমার দ্বারা জ্ঞান শ্রবণ
করে পরে কৃষ্ণ হয়েছে। অর্থাৎ এই কথাটি গুপ্ত কথা তাইনা। নতুন আত্মা রূপী বাচ্চারা
এই সব কথা বুঝবে না, একেই বলা হয় নরক। আসন্ন সময়টিকে বলা হয় স্বর্গ। শিববাবা
স্বর্গের স্থাপনা করেন, সেইখানে লক্ষ্মী-নারায়ণ রাজ্য করতেন। এখন তোমরা মানুষ থেকে
দেবতায় পরিণত হচ্ছো। বাবা বলেন এই মৃত্যুলোক, দুঃখধামে এই হল তোমাদের শেষ জন্ম।
ভারত অমরলোক ছিল। সেখানে দুঃখের নাম ছিল না। ভারত পরিস্তান ছিল, এখন কবর খানায়
পরিণত হয়েছে, পুনরায় পরিস্তান হবে। এই সব কথা বুদ্ধি দ্বারা বুঝতে হবে। এই হল মানুষ
থেকে দেবতা হওয়ার পাঠশালা। এই খানে কোনো সন্ন্যাসীদের সৎসঙ্গ নেই, যেখানে বসে
শাস্ত্র পাঠ করে শোনানো হয়। এইসব কথা কোনো নতুন আত্মা বুঝবে না যতক্ষণ না সে ৭
দিনের কোর্স করছে। এইসময় সব মানুষ মাত্রই হল ভক্ত, তাদের আত্মাও স্মরণ করে। একমাত্র
প্রিয়তম পরমাত্মার সবাই হল প্রিয়তমা।
বাবা এসে সত্যখন্ড গঠন করেন। অর্ধকল্প পরে রাবণ এসে মিথ্যা খণ্ডে পরিণত করে। এখন
সঙ্গম। এইসব কথাই বুঝতে হবে। আচ্ছা !
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন
নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
বাবার শ্রীমৎ অনুসারে ভারতের প্রকৃত রূহানী সেবা অর্থাৎ আত্মিক সেবা করতে হবে। সর্ব
শক্তিমান বাবার থেকে শক্তি নিয়ে ৫-টি বিকার রূপী শত্রুদের জয় করতে হবে।
২) মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার জন্য পবিত্র নিশ্চয়ই হতে হবে। জ্ঞান ধারণ করে কাঁটা থেকে
ফুলে পরিণত হতে হবে এবং পরিণত করতে হবে।
বরদান:-
শ্রীমৎ দ্বারা সদা খুশী বা হালকা অনুভব করে মনমত ও পরমত থেকে মুক্ত ভব
যে বাচ্চাদের প্রতিটি
পদক্ষেপ হয় শ্রীমৎ অনুযায়ী তাদের মন সদা সন্তুষ্ট হবে, মনে কোনো রকম দোলাচল থাকবে
না, শ্রীমৎ অনুযায়ী চলে ন্যাচারাল খুশী বজায় থাকবে, হালকা অনুভব হবে, তাই যখনই মনে
অস্থিরতার অনুভব হবে, খুশীর মাত্রা একটুও কম হবে তখন চেক করো - নিশ্চয়ই শ্রীমতের
অবজ্ঞা হয়েছে তাই সূক্ষ্ম চেকিং করে মনমত বা পরমত থেকে নিজেকে মুক্ত করে নাও।
স্লোগান:-
বুদ্ধি রূপী বিমান দ্বারা বতনে (পরমধামে) পৌঁছে জ্ঞান সূর্যের আলো অনুভব করাই হল
শক্তিশালী যোগ।
*মাতেশ্বরী দেবীর অনুপম মহাবাক্য*
*1) আত্মা পরমাত্মায় তফাৎ, পার্থক্য :-* আত্মা ও পরমাত্মা দূরে ছিল বহুকাল ধরে,
সুন্দর মেলার আয়োজন হয় যখন সদগুরু আসেন মাধ্যম হয়ে .... যখন আমরা এই শব্দ বলি তখন
এর যথার্থ অর্থ হল যে আত্মা, পরমাত্মা বহু কাল ধরে দূরে ছিল। বহু কালের অর্থ হল -
অনেক খানি সময় আত্মা, পরমাত্মা থেকে দূরে ছিল, অর্থাৎ এই শব্দটি প্রমাণ করে যে আত্মা
ও পরমাত্মা দুটি পৃথক বস্তু, দুইয়ের আন্তরিক পার্থক্য আছে কিন্তু দুনিয়ার মানুষ
সেসব কথা না জানার কারণে তারা এই শব্দের অর্থ বলে দেয় আমি আত্মা ই হলাম পরমাত্মা,
কিন্তু আত্মার উপরে মায়ার আবরণ থাকে যার ফলে আত্মা নিজের প্রকৃত স্বরূপ ভুলে গেছে,
তারা বলে যখন মায়ার আবরণ খুলে যাবে তখন সেই আত্মা ই হল পরমাত্মা। সুতরাং তারা
আত্মার দূরে থাকার অর্থ এইভাবে বলে এবং অন্যরা বলে আমি আত্মা ই সেই পরমাত্মা, কিন্তু
আত্মা নিজেকে ভুলে যাওয়ার দরুন দুঃখে আছে। যখন আত্মা পুনরায় নিজেকে চিনতে পেরে
শুদ্ধ হয় তখন আত্মা ও পরমাত্মার স্বরূপ এক হয়েই যাবে। অতএব আত্মাকে এই অর্থে দূরে
ছিল বলা হয় কিন্তু আমরা তো জানি আত্মা ও পরমাত্মা দুটি পৃথক বস্তু। আত্মা, পরমাত্মা
হতে পারে না এবং পরমাত্মায় মিলিত হয়ে এক হতেও পারে না এবং পরমাত্মার উপরে কখনও
মায়ার আবরণ পড়ে না।
*2) " মনের অশান্তির কারণ - কর্ম বন্ধন এবং শান্তির আধার হল কর্মাতীত স্থিতি"*
বাস্তবে প্রত্যেকটি মানুষের অবশ্যই এই চাহিদা থাকে যে আমি মনের শান্তি প্রাপ্ত করি
তাই অনেক চেষ্টা করে চলেছে কিন্তু এখনও মনের শান্তি প্রাপ্ত হয় নি, এর যথার্থ কারণ
কি ? এর জন্য প্রথমে এই চিন্তন করা উচিত যে মনের অশান্তির প্রথম মূল কি ? মনের
অশান্তির মুখ্য কারণ হল - কর্মবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া। যত ক্ষণ মানুষ এই পাঁচটি বিকারের
কর্ম বন্ধন থেকে মুক্ত না হচ্ছে ততক্ষণ মানুষ অশান্তি থেকে মুক্তি পাবে না। যখন
কর্মবন্ধন বিচ্ছিন্ন হয় তখন মনের শান্তি অর্থাৎ জীবনমুক্তি প্রাপ্ত করতে পারে। এখন
ভাবতে হবে - এই কর্ম বন্ধন বিচ্ছিন্ন হবে কীভাবে ? এবং কে এই বন্ধন থেকে মুক্তি
প্রদান করতে পারে ? এই কথা তো আমরা জানি যে কোনো মনুষ্য আত্মা অন্য কোনো মনুষ্য
আত্মাকে মুক্তি দিতে পারে না। এই কর্মবন্ধনের হিসেব-নিকেশ শেষ করতে পারেন একমাত্র
পরমাত্মা, তিনি এসে এই জ্ঞান যোগ বলের দ্বারা কর্ম বন্ধন থেকে মুক্ত করেন তাই
পরমাত্মাকে সুখ প্রদানকর্তা বলা হয়। যত ক্ষণ পর্যন্ত এই জ্ঞান নেই যে আমি এক আত্মা,
প্রকৃত রূপে কার সন্তান, আমার সত্য গুণগুলি কি ? যখন এই জ্ঞান বুদ্ধিতে এসে যায়
তখনই কর্মবন্ধন বিচ্ছিন্ন হয়ে। এই জ্ঞান কেবল পরমাত্মার কাছেই আমরা প্রাপ্ত করি
সুতরাং পরমাত্মার সাহায্যে কর্ম বন্ধন বিচ্ছিন্ন হয়। আচ্ছা - ওম্ শান্তি।