30.03.2021
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমাদের শ্রীমতে চলে তত্ত্ব সহ সম্পূর্ণ দুনিয়াকে পবিত্র করার সেবা করতে হবে, সবাইকে
সুখ এবং শান্তির রাস্তা বলে দিতে হবে"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
তোমরা তোমাদের দেহকে ভোলার পুরুষার্থ করো, তাই তোমাদের কোন্ জিনিসের প্রয়োজন নেই ?
উত্তরঃ -
চিত্রের । যখন এই চিত্রকে ( দেহকে ) ভুলতে হবে, তখন ওই চিত্রের কি প্রয়োজন ? নিজেকে
আত্মা মনে করে বিদেহী বাবাকে আর সুইট হোমকে স্মরণ করো । এই চিত্র তো হলো ছোটো
বাচ্চাদের জন্য অর্থাৎ নতুনদের জন্য । তোমাদের তো স্মরণে থাকতে হবে আর সবাইকে স্মরণ
করাতে হবে । কাজকারবার করেও সতোপ্রধান হওয়ার জন্য স্মরণে থাকার পুরুষার্থ করো ।
গীতঃ-
ভাগ্য জাগিয়ে এসেছি.....
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি -
মিষ্টি বাচ্চারা এই শব্দ শুনেছে আর সাথে সাথেই খুশীতে রোমাঞ্চিত হয়ে গেছে ।
বাচ্চারা জানে যে, তারা এখানে এসেছে নিজের সৌভাগ্য, স্বর্গের ভাগ্য নিতে । এমন আর
অন্য কোথাও বলবে না । তোমরা জানো যে, আমরা বাবার থেকে স্বর্গের উত্তরাধিকার নিচ্ছি
অর্থাৎ স্বর্গ বানানোর পুরুষার্থ করছি । কেবল স্বর্গবাসী হওয়ার জন্য নয়, স্বর্গে
উঁচুর থেকে উঁচু পদ পাওয়ার পুরুষার্থ করছি । স্বর্গের সাক্ষাৎকার করান যে বাবা, তিনি
আমাদের পড়াচ্ছেন । বাচ্চাদের এই নেশাও চড়ে থাকা উচিত । এখন ভক্তি শেষ হয়ে যাবে ।
বলা হয়, ভগবান ভক্তদের উদ্ধার করতে আসেন, কেননা তারা রাবণের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে আছে
। অনেক মানুষের অনেক মত । তোমরা তো তা জেনে গেছো । সৃষ্টিচক্রের এই অনাদি খেলা তৈরী
হয়ে রয়েছে । ভারতবাসীরা এও বুঝতে পারে যে, বরাবর আমরাই প্রাচীন নতুন দুনিয়ার
অধিবাসী ছিলাম, এখন আমরা পুরানো দুনিয়ার অধিবাসী হয়েছি । বাবা স্বর্গের নতুন দুনিয়া
তৈরী করেছেন, রাবণ আবার নরক তৈরী করেছে । তোমরা এখন বাপদাদার মতে চলে নিজেদের জন্য
নতুন দুনিয়া তৈরী করছো । তোমরা নতুন দুনিয়ার জন্য পড়ছো । তোমাদের কে পড়ান ? জ্ঞানের
সাগর, পতিত পাবন যাঁর মহিমা । এই এক ছাড়া আর কারোর মহিমার গায়ন হয় না । তিনিই হলেন
পতিত পাবন । আমরা সকলেই হলাম পতিত । পবিত্র দুনিয়ার কথা কারোর মনে নেই । তোমরা এখন
জানো যে, বরাবর পাঁচ হাজার বছর পূর্বে পবিত্র দুনিয়া ছিলো । এই ভারতেই ছিলো । বাকি
সব ধর্মের আত্মারা শান্তিতে ছিলো । আমরা ভারতবাসীরা সুখধামে ছিলাম । মানুষ শান্তি
চায়, কিন্তু এখানে তো কেউই শান্তিতে থাকতে পারে না । এ কোনো শান্তিধাম নয় ।
শান্তিধাম হলো নিরাকারী দুনিয়া, যেখান থেকে আমরা আসি । বাকি সত্যযুগ হলো সুখধাম,
তাকে শান্তিধাম বলা হবে না । ওখানে তোমরা পবিত্রতা, সুখ, শান্তিতে থাকো । ওখানে কোনো
হাঙ্গামা থাকে না । ঘরে যখন বাচ্চারা ঝগড়া আদি করে, তখন তাদের বলা হয়, শান্ত হয়ে
থাকো । বাবা তাই বলেন, তোমরা আত্মারা ওই শান্তি দেশে ছিলে । এখন তোমরা এই ঝগড়ার দেশে
এসে বসেছো । এই কথা তোমাদের বুদ্ধিতে আছে । তোমরা বাবার কাছে উঁচুর থেকে উঁচু পদ
পাওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছো । এই স্কুল কম কিছু নয় । এ হলো গড ফাদারের ইউনিভর্সিটি
। সম্পূর্ণ দুনিয়ায় এ হলো সবথেকে বড় ইউনিভার্সিটি । এখানে সবাই বাবার থেকে সুখ আর
শান্তির উত্তরাধিকার পায় । এক বাবা ছাড়া আর কারোরই কোনো মহিমা নেই । ব্রহ্মারও কোনো
মহিমা নেই । বাবা এই সময় এসে উত্তরাধিকার প্রদান করেন । তারপর তো সুখই সুখ । বাবাই
সুখ - শান্তি প্রদান করেন । তাঁরই মহিমা । সত্যযুগ এবং ত্রেতাতে কারোর মহিমা হয় না
ওখানে তো রাজধানী চলতে থাকে । তোমরা উত্তরাধিকার পাও, বাকি সব শান্তিধামে থাকে ।
মহিমা কারোরই নেই । যদিও ক্রাইস্ট ধর্ম স্থাপন করে, সে তো করতেই হবে । তিনি ধর্ম
স্থাপন করেন, তবুও নীচে নামতে থাকেন । তাহলে মহিমা কি হলো ? মহিমা কেবল একজনেরই,
যাঁকে পতিত পাবন, উদ্ধারকর্তা বলে ডাকা হয় । এমন তো নয় যে, ওদের ক্রাইস্ট, বুদ্ধ
ইত্যাদিদের কথা স্মরণে আসবে । স্মরণ কেবলমাত্র একজনকেই করে - ও গড ফাদার । সত্যযুগে
তো কারোর মহিমা হয় না । পরের দিকে এই ধর্ম শুরু হয়, তখন বাবার মহিমা করা হয় আর
ভক্তি শুরু হয় । এই ড্রামা কিভাবে তৈরী হয়ে আছে । এই চক্র কিভাবে ঘোরে, তা যারা
বাবার বাচ্চা হয়েছে, তারাই জানে । বাবা হলেন রচয়িতা । তিনি নতুন সৃষ্টি স্বর্গের
রচনা করেন, কিন্তু সবাই তো আর স্বর্গে আসতে পারে না । এই ড্রামার রহস্যকেও বুঝতে হবে
। বাবার থেকে সুখের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় । এই সময় সকলেই দুঃখী । সকলকেই ফিরে
যেতে হবে, আবার আসবে সুখের দুনিয়ায় । বাচ্চারা, তোমরা খুব সুন্দর পার্ট পেয়েছো ।
যেই বাবার এতো মহিমা, তিনি এখন এসে সম্মুখে বসে আছেন, আর বাচ্চাদের বোঝান । সকলেই
তো বাচ্চা, তাই না । বাবা তো চির সুখী । বাস্তবে বাবার জন্য একথা বলা যাবে না । তিনি
যদি সুখী হন তাহলে তাঁকে অসুখীও হতে হবে । বাবা তো এই সবকিছুর থেকেই পৃথক । বাবার
যা মহিমা, তাই এই সময় তোমাদের মহিমা এরপর ভবিষ্যতে তোমাদের মহিমা আলাদা হবে । বাবা
যেমন জ্ঞানের সাগর, তোমরাও তেমনই । তোমাদের বুদ্ধিতে এই সৃষ্টিচক্রের জ্ঞান আছে ।
তোমরা জানো যে, বাবা হলেন সুখের সাগর, তাঁর থেকে অপার সুখ পাওয়া যায় । এই সময়
তোমরা বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার নিচ্ছো । বাবা এখন বাচ্চাদের শ্রেষ্ঠ কর্ম
শেখাচ্ছেন । এই লক্ষ্মী - নারায়ণ যেমন আগের জন্মে অবশ্যই কোনো ভালো কর্ম করেছেন,
তাই এমন পদ পেয়েছেন । দুনিয়াতে এ কেউই বোঝে না যে, এনারা এই রাজ্য কিভাবে পেয়েছেন ?
বাবা বলেন - বাচ্চারা, তোমরা এখন এমন তৈরী হচ্ছো । তোমাদের বুদ্ধিতে এইকথা আসে যে,
আমরা এমন ছিলাম, আবার এমন তৈরী হচ্ছি । বাবা বসে আমাদের কর্ম - অকর্ম এবং বিকর্মের
গতি বোঝান, যাতে আমরা এমন তৈরী হই । বাবা শ্রীমৎ প্রদান করেন, তাই শ্রীমৎকে তো জানা
চাই, তাই না । তিনি এই শ্রীমতের দ্বারা সম্পূর্ণ দুনিয়া, তত্ত্ব আদি সবকিছুকেই
শ্রেষ্ঠ তৈরী করেন । সত্যযুগে সবকিছুই শ্রেষ্ঠ ছিলো । সেখানে কোনো হাঙ্গামা না
তুফান হতো না । সেখানে না বেশী ঠান্ডা, আর না বেশী গরম । সর্বদাই সেখানে প্রাকৃতিক
সৌন্দর্য বিরাজমান । সেখানে তোমরা কতো খুশী থাকো । ওরা এমন গানও গায় যে - খুদা
স্বর্গ - হেভেন স্থাপনা করেন । তাই তাতে উঁচু পদ প্রাপ্ত করার পুরুষার্থ করা উচিত ।
সর্বদা এমন গায়ন হয় যে - মা - বাবাকে অনুসরণ করো । বাবাকে স্মরণ করলে তোমাদের
বিকর্ম বিনাশ হবে । তারপর বাবার সঙ্গে আমরা আত্মারা একত্রিত হয়ে চলে যাবো । এই
শ্রীমতে চলে তোমাদের প্রত্যেককে পথ বলে দিতে হবে ।
অসীম জগতের পিতা হলেন স্বর্গের রচয়িতা । এখন তো নরক । অবশ্যই তাহলে সেই নরকেই
স্বর্গের উত্তরাধিকার দিয়েছিলেন । এখন ৮৪ জন্ম সম্পূর্ণ হয়ে আসছে, তারপর আমাদের
প্রথম জন্ম স্বর্গে গ্রহণ করতে হবে । তোমাদের এইম অবজেক্ট সামনে উপস্থিত । তোমাদের
এমন হতে হবে । আমাদেরই এমন লক্ষ্মী - নারায়ণ হতে হবে, বাস্তবে এই চিত্রের কোনো
প্রয়োজন নেই৷ যারা এখনো কাঁচা, প্রতি মুহূর্তে যারা ভুলে যায়, তাই তাদের জন্য এই
চিত্র রাখা হয় । কেউ কৃষ্ণের চিত্র রাখে । কৃষ্ণকে না দেখে স্মরণ করতে পারে না ।
সকলের বুদ্ধিতেই তো চিত্র থাকে । তোমাদের কোনো চিত্র লাগাবার প্রয়োজন নেই৷ তোমরা
নিজেদের আত্মা মনে করো, তাই তোমাদের নিজের চিত্রও ভুলতে হবে । দেহ সহিত সর্ব
সম্বন্ধ ভুলে যেতে হবে । বাবা বলেন - তোমরা হলে আশিক (প্রেমিকা ), এক মাশুকের (প্রেমিকের
)। মাশুক বাবা বলেন, তোমরা আমাকে স্মরণ করতে থাকো, তাহলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হয়ে
যাবে । এমন অবস্থা হয়ে যাবে যে, যেই সময় এই দেহ চলে যাবে তখন মনে করবে, আমরা এই
পুরানো দুনিয়া ত্যাগ করে এখন বাবার কাছে যাবো । ৮৪ জন্ম এখন সম্পূর্ণ হয়েছে, এবার
যেতে হবে । বাবা আদেশ করেছেন যে, আমাকে স্মরণ করো । কেবলমাত্র বাবাকে আর সুইট হোমকে
স্মরণ করো । আমাদের বুদ্ধিতে আছে, আমরা আত্মারা শরীর ছাড়া ছিলাম, তারপর এখানে অভিনয়
করার জন্য শরীর ধারণ করেছি । অভিনয় করতে করতে এখন পতিত হয়ে গেছি । এই শরীর তো হলো
পুরানো জুতো । আত্মা এখন পবিত্র হচ্ছে । শরীর তো এখানে পবিত্র হতে পারবে না । আমরা
আত্মারা এখন ঘরে ফিরে যাবো । প্রথমে প্রিন্স - প্রিন্সেস হবো তারপর সয়ম্বরের পর
লক্ষ্মী - নারায়ণ হবো । মানুষ তো জানেই না যে, এই রাধা - কৃষ্ণ কে ? এঁরা দুজন পৃথক
রাজধানীতে ছিলো, তারপর তাঁদের সয়ম্বর হয় । বাচ্চারা, তোমরা ধ্যানে সেই সয়ম্বর
দেখেছো । শুরুতে অনেক সাক্ষাৎকার হতো, কেননা পাকিস্থানে তোমাদের খুশীতে থাকার জন্য
এইসব পার্ট চালানো হতো । পরের দিকে হলো মহামারী । ভূমিকম্প ইত্যাদি আরো অনেকই হবে ।
তোমাদের সাক্ষাৎকার হতে থাকবে । প্রত্যেকেই জানতে পারবে যে, আমরা কোন পদ পাবো ।
এরপর যারা কম পড়বে, তারা অনেক অনুতাপ করবে । বাবা বলবেন - তোমরা নিজে পড়ো নি, না
অন্যদের পড়িয়েছো, না তোমরা স্মরণে থাকতে । স্মরণের দ্বারাই তোমরা সতোপ্রধান হতে পারো
। পতিত - পাবন তো হলেন বাবাই । তিনি বলেন, মামেকম্ ( আমাকে ) স্মরণ করো তাহলে
তোমাদের খাদ দূর হয়ে যাবে । পুরুষার্থ করতে হবে - এই স্মরণের যাত্রার ।কাজকারবার
যতই করো, কর্ম তো করতেই হবে, তাই না কিন্তু বুদ্ধির যোগ যেন ওখানে থাকে । তমোপ্রধান
থেকে সতোপ্রধান এখানেই হতে হবে । গৃহস্থ জীবনে থেকে তোমরা আমাকে স্মরণ করো, তখনই
তোমরা নতুন দুনিয়ার মালিক হতে পারবে । বাবা আর কোনো কষ্ট দেন না । তোমাদের তিনি খুব
সহজ উপায় বলে দেন । সুখধামের মালিক হতে হলে মামেকম্ (আমাকে ) স্মরণ করো । এখন তোমরা
স্মরণ করো - বাবাও হলো তারার মতো । মনুষ্য তো মনে করে, তিনি সর্বশক্তিমান, বড়
তেজবান । বাবা বলেন - আমি হলাম মনুষ্য সৃষ্টির চৈতন্য বীজরূপ । বীজ হওয়ার কারণে আমি
এই সৃষ্টির আদি - মধ্য এবং অন্তকে জানি । তোমরা তো বীজ নয়, আমি হলাম বীজ, তাই আমাকে
জ্ঞানের সাগর বলা হয় । মনুষ্য সৃষ্টির চৈতন্য বীজ যখন, তখন তিনি তো অবশ্যই জানবেন
যে, এই সৃষ্টিচক্র কিভাবে ঘোরে । ঋষি - মুনি কেউই এই রচনার আদি - মধ্য এবং অন্তকে
জানে না । বাচ্চারা যদি জানতো, তাহলে তাঁর কাছে যেতে দেরী লাগতো না, কিন্তু বাবার
কাছে যাওয়ার রাস্তা কেউই জানে না । পবিত্র দুনিয়াতে পতিত কিভাবে যেতে পারে, তাই বাবা
বলেন, তোমরা কাম মহাশত্রুকে জয় করো । এই তোমাদের আদি - মধ্য এবং অন্ত দুঃখ দেয় ।
বাচ্চারা, বাবা তোমাদের কতো ভালোভাবে বুঝিয়ে বলেন । তোমাদের কোনো সমস্যা নেই৷
তোমাদের কেবল বাবা আর তাঁর উত্তরাধিকারকে স্মরণ করতে হবে । বাবার স্মরণ অর্থাৎ
যোগের দ্বারাই তোমাদের পাপ ভস্ম হবে । এক সেকেণ্ডে বাবার থেকেই উত্তরাধিকার পাওয়া
যায় । বাচ্চারা যদিও স্বর্গে আসবে কিন্তু স্বর্গে উঁচু পদ প্রাপ্ত করার জন্য
পুরুষার্থ করতে হবে । স্বর্গে তো যেতেই হবে । তোমরা অল্প শুনলেই বুঝতে পারবে যে,
বাবা এসেছেন । এখনও তিনি বলেন, এ হলো সেই মহাভারতের লড়াই । অবশ্যই বাবাই হবেন, যিনি
বাচ্চাদের রাজযোগ শেখান । তোমরা সবাইকে জাগাতে থাকো । যারা অনেককে জাগাবে, তারা
উচ্চ পদ পাবে । তোমাদের পুরুষার্থ করতে হবে । সবাই তো একরকম পুরুষার্থী হবে না । এই
স্কুল হলো অনেক ভারী । এ হলো ওয়ার্ল্ডের ইউনিভার্সিটি । সম্পূর্ণ ওয়ার্ল্ডকে সুখধাম
আর শান্তিধাম বানাতে হবে । এমন টিচার কোথাও আছে কি ? ইউনিভার্স সম্পূর্ণ দুনিয়াকে
বলা হয় । বাবাই সম্পূর্ণ ইউনিভার্সের মনুষ্য মাত্রকে সতোপ্রধান বানান অর্থাৎ তিনিই
স্বর্গ তৈরী করেন ।
ভক্তিমার্গে যে উৎসব পালন করা হয়, সেই সবই এই সঙ্গম যুগের । সত্যযুগ এবং ত্রেতাতে
কোনো উৎসব হয় না । ওখানে তো সবাই প্রালব্ধ ভোগ করে । উৎসব সব এখানে পালন করা হয় ।
হোলি আর ধুরিয়া এ হলো জ্ঞানের কথা । অতীতে যা হয়েছিলো, সেইসব ঘটনা উৎসব হিসাবে পালন
করে আসছে । সবই এই সময়ের । হোলিও এই সময়েরই । এই ১০০ বছরের ভিতরেই সব কাজ হয়ে যায়
। সৃষ্টিও নতুন তৈরী হয়ে যায় । তোমরা জানো যে, আমরা অনেকবার সুখের উত্তরাধিকার
নিয়েছি, আবার হারিয়ে ফেলেছি । এমন খুশীও হয় যে, আমরা আবার বাবার থেকে উত্তরাধিকার
গ্রহণ করছি । অন্যদেরও এই পথ বলে দিতে হবে । ড্রামা অনুসারে এই স্বর্গের স্থাপনা
অবশ্যই হতে হবে । দিনের পরে যেমন রাত, আবার রাতের পরে দিন হয়, তেমনই কলিযুগের পর
অবশ্যই সত্যযুগ হতে হবে । মিষ্টি - মিষ্টি বাচ্চাদের বুদ্ধিতে খুশীর বাজনা বাজা
উচিত । এখন সময় সম্পূর্ণ হয়ে এসেছে, আমরা শান্তিধামে যাবো । এ হলো অন্তিম জন্ম ।
কর্মভোগও খুশীর কারণে হালকা হয়ে যায় । কিছু ভোগ করে, আবার কিছু যোগবলের দ্বারা
হিসেব - নিকেশ শোধ হয় । বাবা বাচ্চাদের ধৈর্য প্রদান করেন, তোমাদের সুখের দিন আসছে
। তোমাদের কাজকারবারও করতে হবে । শরীর নির্বাহের কারণে অর্থ তো চাই, তাই না । বাবা
বুঝিয়েছেন যে, ব্যবসায়ী লোক ধর্মান্ধ হয়, তারা মনে করে, অনেক ধন যখন একত্রিত হবে,
তখন অনেক দান করবো । এখানে বাবাও বোঝান, কেউ যদি এখানে দুই পয়সাও দেয়, তার পরিবর্তে
২১ জন্মের জন্য অনেককিছু পেয়ে যায় । আগে তোমরা যে দান - পুণ্য করতে তার রিটার্ন
পরের জন্মে পেতে । এখন তো তোমরা এর রিটার্ন ২১ জন্মের জন্য পেয়ে যাও । আগে তোমরা
সাধু - সন্ত ইত্যাদিদের দান করতে । এখন তো তোমরা জানো যে, এই সবই শেষ হয়ে যাবে ।
এখন আমি যখন তোমাদের সম্মুখে এসেছি তখন এই কাজে লাগাও । তাহলে তোমরা ২১ জন্মের জন্য
উত্তরাধিকার পেয়ে যাবে । পূর্বে তোমরা পরোক্ষভাবে দান করতে, এখন এ হলো প্রত্যক্ষ ।
বাকি তোমাদের সবকিছুই শেষ হয়ে যাবে । বাবা বলতে থাকেন - অর্থ থাকলে তোমরা সেন্টার
খুলতে থাকো । এই অক্ষর লিখে দাও - প্রকৃত গীতা পাঠশালা । ভগবান উবাচঃ -- মামেকম্ (
আমাকে ) স্মরণ করো আর উত্তরাধিকারকে স্মরণ করো । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন
নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বাবার তুল্য মহিমা যোগ্য হওয়ার জন্য বাবাকে অনুসরণ করতে হবে ।
২ ) এ হলো অন্তিম জন্ম, এখন ঘরে ফিরে যেতে হবে, তাই মনে যেন খুশীর বাজনা বাজতে থাকে
। কর্মভোগকে কর্মযোগের দ্বারা অর্থাৎ বাবার স্মরণে খুশীর সঙ্গে শোধ করতে হবে ।
বরদান:-
নিজের স্মৃতির জ্যোতিতে ব্রাহ্মণ কুলের নাম উজ্জ্বল করে কুল দীপক ভব ।
এই ব্রাহ্মণ কুল হলো
অনেক বড়, এই কুলে তোমরা সবাই হলে দীপক । কুল দীপক অর্থাৎ সদা নিজের স্মৃতির জ্যোতির
দ্বারা ব্রাহ্মণ কুলের নাম যারা উজ্জ্বল করে । অখণ্ড জ্যোতি অর্থাৎ সদা স্মৃতি
স্বরূপ আর সমর্থ স্বরূপ । যদি স্মৃতি থাকে যে, আমি মাস্টার সর্বশক্তিমান, তাহলে
শীঘ্রই সমর্থ স্বরূপ হতে পারবে । এই অখণ্ড জ্যোতির স্মরণ তোমাদের জড় চিত্রের সামনে
অখণ্ড জ্যোতি জ্বালায় ।
স্লোগান:-
যে সর্ব আত্মার প্রতি শুদ্ধ সঙ্কল্প রাখে, সে-ই হলো বরদানী মূর্ত ।
*হোলী এবং ধুরিয়া :-*
'ধুরিয়া' হলো দোল পূর্ণিমার আগের দিন পালিত হোলিকা দহন বা নেড়াপোড়া উৎসব যা অশুভ
শক্তির প্রতীক অর্থাৎ যা আত্মাকে দহন করে সেই অপবিত্র দেহ-অভিমানের খাদকে পুড়িয়ে
ভস্মীভূত করে দাও।
'হোলী বা দোল' হলো পূর্ণিমার দিনে সকলকে রঙে রাঙিয়ে, আলিঙ্গন করে এবং মিষ্টিমুখ
করিয়ে মধুর সম্পর্কে বেঁধে রাখার উৎসব যা শুভ শক্তির প্রতীক অর্থাৎ আত্মা পবিত্রতার
রঙে রেঙে উঠুক, পরস্পরকে রাঙিয়ে দিক শুভভাবনা, শুভ কামনার রঙে, প্রতিটি আত্মার মধ্যে
গড়ে উঠুক এক মধুর সম্পর্ক।