14-03-2021 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
18-11-87 মধুবন
"সাইলেন্সের পাওয়ার জমা করার উপায় -
অন্তর্মুখী এবং একান্তবাসী স্থিতি"
আজ সর্বশক্তিমান বাপদাদা নিজের শক্তিসেনাকে দেখছেন l এই
রূহানী শক্তি সেনা বিচিত্র সেনা l নাম রূহানী সেনা কিন্তু সাইলেন্সের বিশেষ শক্তি
এবং শান্তিদায়ক অহিংসক সেনা l সুতরাং, আজ বাপদাদা প্রত্যেক শান্তিদেব বাচ্চাদের
দেখছেন যে তারা সকলে শান্তির শক্তি কতখানি জমা করেছে ! শান্তির এই শক্তি রূহানী
সেনার বিশেষ অস্ত্র l অস্ত্রধারী তো সবাই, কিন্তু নম্বর অনুক্রমে l শান্তির শক্তি
সারা বিশ্বকে অশান্ত থেকে শান্ত বানায়, না শুধু মনুষ্যাত্মা, বরং প্রকৃতিকেও
পরিবর্তন করে, শান্তির শক্তিকে আরও গভীরভাবে জানতে ও অনুভব করতে হবে l এই শক্তিতে
তোমরা যত শক্তিশালী হবে, ততই শান্তির শক্তির গুরুত্ব এবং মহত্ত্ব বেশি অনুভব করতে
থাকবে l নিজের বাণীর শক্তি দ্বারা স্থূল সেবার সাধনের শক্তি অনুভব করছ এবং এই অনুভব
দ্বারা সফলতাও প্রাপ্ত করছ l কিন্তু বাণীর শক্তি অথবা স্থূল সেবার উপকরণের থেকে
সাইলেন্সের শক্তি বেশি এবং অতি শ্রেষ্ঠ l সাইলেন্সের শক্তির সাধনও শ্রেষ্ঠ l যেমন,
বাণী-সেবার উপকরণ ছবি, প্রজেক্টর অথবা ভিডিও বানাও, সে'রকম শান্তির শক্তির উপকরণ -
শুভ সঙ্কল্প, শুভ ভাবনা আর নয়নের ভাষা l যেমন মুখের ভাষা দ্বারা বাবার বা রচনার
পরিচয় দাও, সেইভাবে সাইলেন্সের শক্তির আধারে নয়নের ভাষায় নয়নে বাবার অনুভব করাতে
পারো l যেমন, প্রজেক্টর দ্বারা ছবি দেখাও, সে'রকম তোমার ললাটের মাঝে নিজের বা বাবার
উজ্জ্বলতার ছবি স্পষ্টভাবে দেখাতে পারো l বর্তমান সময়ে যেভাবে বাণী দ্বারা স্মরণের
যাত্রা অনুভব করাও, সে'ভাবে সাইলেন্সের শক্তি দ্বারা তোমাদের মুখ স্মরণের ভিন্ন
ভিন্ন স্টেজেস নিজে থেকেই অনুভব করাবে l যারা অনুভবকারী তাদের সহজেই এটা অনুভূত হবে
যে এই সময় বীজরূপ স্টেজের অনুভব হচ্ছে বা ফরিস্তা রূপের অনুভব হচ্ছে কিম্বা তোমাদের
এই শক্তিশালী ফেস থেকে স্বতঃই বিভিন্ন গুণের অনুভব হতে থাকবে l
যেভাবে বাণী দ্বারা আত্মাদেরকে স্নেহের সহযোগের ভাবনা উৎপন্ন করাও, সে'ভাবে যখন
তোমরা শুভ ভাবনা, স্নেহের ভাবনার স্থিতিতে স্বয়ং স্থিত হবে তখন তোমাদের ভাবনা যেমন
হবে, সে'রকম ভাবনা তাদের মধ্যেও উৎপন্ন হবে l তোমাদের শুভ ভাবনা তাদের ভাবনাকে
প্রজ্জ্বলিত করবে l ঠিক যেমন একটা দীপ অন্য দীপকে প্রজ্জ্বলিত করে, সে'রকম তোমাদের
শক্তিশালী শুভ ভাবনা অন্যদের মধ্যেও সর্বশ্রেষ্ঠ ভাবনা সহজেই উৎপন্ন করাবে l যেমন
বাণী দ্বারা এখন সব স্থূল কার্য করছ, একইভাবে সাইলেন্সের শক্তির শ্রেষ্ঠ বিধিতে তথা
শুভ সঙ্কল্পের শক্তি দ্বারা তোমরা যেকোন স্থূল কার্যও সহজে করতে পারো বা করাতে পারো
l সায়েন্সের শক্তির যেমন টেলিফোন, ওয়্যারলেসের সুযোগ-সুবিধা আছে, তেমনই এই শুভ
সঙ্কল্প সামনাসামনি কথা বলার বা টেলিফোন, ওয়্যারলেস দ্বারা কার্য করানোর অনুভব করাবে
l সাইলেন্সের শক্তির এমনই বিশেষত্ব l সাইলেন্সের শক্তি কম নয় l কিন্তু এখন বাণীর
শক্তি, স্থূল উপকরণ কার্যে বেশি ব্যবহার করার কারণে তোমাদের তা' সহজ লাগে l
সাইলেন্সের শক্তির সুযোগসুবিধা পরীক্ষামূলক ভাবে তোমরা প্রয়োগ করনি, সেইজন্য এর
অনুভব নেই l অন্য উপায় তোমাদের সহজ লাগে আর এটা পরিশ্রম মনে হয় l যেমনই হোক,
পরিবর্তনের সময় অনুসারে এই শান্তির শক্তির সাধন ব্যবহারে অবশ্যই আনতে হবে, অতএব, হে
শান্তিদেব শ্রেষ্ঠ আত্মারা ! শান্তির এই শক্তিকে অনুভব করো l যেমন, বাণীর
প্র্যাক্টিস করতে করতে বাণীতে তোমরা শক্তিশালী হয়ে গেছ, একইভাবে, শান্তির শক্তিতেও
অভ্যাস গড়ে তোল l অগ্রগতির হিসেবে বাণী বা স্থূল উপকরণের দ্বারা সেবার সময় তোমাদের
কাছে থাকবে না l এমন সময়ে শান্তির শক্তির পন্থাই আবশ্যক হবে, কারণ যতটা যা মহান
শক্তিশালী তা' অতি সূক্ষ্ম হবে l সুতরাং বাণী থেকে শুদ্ধ সঙ্কল্প সূক্ষ্ম হয়,
সেইজন্য সূক্ষ্মের প্রভাব শক্তিশালী হবে l তোমরা এখনও তা' অনুভব করো, যেখানে বাণী
দ্বারা কার্য সফল করতে পারো না সেখানে সাইলেন্সের শক্তির সহায়তা শুভ সঙ্কল্প, শুভ
ভাবনা, নয়নের ভাষা দ্বারা দয়া আর স্নেহের অনুভূতি কার্য সফল করতে পারে l যেমন, এখনও
যদি কোনো তর্কপ্রবণ কেউ আসে, তাহলে বাণী দ্বারা আরও বেশি বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়,
তখন তাকে স্মরণে বসিয়ে সাইলেন্সের শক্তিই তো অনুভব করাও, তাই না ! যদি এক সেকেন্ডও
স্মরণে সে শান্তির অনুভব করে, তাহলে তো নিজেই নিজের যুক্তিতর্কের বুদ্ধি সাইলেন্সের
অনুভূতির সামনে সারেন্ডার করে দেয় l সুতরাং সাইলেন্সের এই শক্তি বাড়িয়ে যাও l এখন
সাইলেন্সের এই শক্তির অনুভূতি অনেক কম l এখনো পর্যন্ত সাইলেন্সের শক্তি-রস মেজরিটি
শুধু আঁজলামাত্র অনুভব করেছে l হে শান্তিদেব, তোমাদের ভক্তরা তোমাদের জড়-চিত্রের
কাছে শান্তিই বেশি চায়, কারণ শান্তিতেই সুখ সমাহিত হয়ে আছে l তারা অল্পকালের জন্য
অনুভবও করে l তাইতো বাপদাদা দেখছিলেন কতো আত্মারা শান্তির শক্তির অনুভাবী, কতো আত্মা
বর্ণন করে আর কতো প্রয়োগ করে ! সেইজন্য অন্তর্মুখী এবং একান্তবাসী হওয়ার আবশ্যকতা
আছে l বহির্মুখী হওয়া সহজ, কিন্তু অন্তর্মুখিতার অভ্যাস বর্তমান সময় অনুসারে খুব
প্রয়োজন l কোনো কোনও বাচ্চা বলে, একান্তবাসী হওয়ার সময় তাদের নেই,
অন্তর্মুখী-স্থিতির অনুভব করার সময় পায় না, কারণ সেবার প্রবৃত্তি এবং বাণীর শক্তির
প্রবৃত্তি অনেক বেড়ে গেছে l কিন্তু তার জন্য একসঙ্গে আধ ঘন্টা বা একঘন্টা বের করার
আবশ্যকতা নেই l সেবার কাজকর্মের মধ্যে থেকেও মাঝে মধ্যে এতটা সময় পাওয়া যায় যাতে
একান্তবাসী হওয়ার অনুভব করতে পারো l
একান্তবাসী অর্থাৎ কোনও এক শক্তিশালী স্থিতিতে স্থিত হওয়া l হয় বীজরূপ স্থিতিতে
স্থিত হও, অথবা লাইট-হাউস্, মাইট-হাউস্ স্থিতিতে স্থিত হয়ে যাও অর্থাৎ বিশ্বকে
লাইট-মাইট দেওয়ার অনুভূতিতে স্থিত হয়ে যাও, ফরিস্তা ভাবের স্থিতি দ্বারা অন্যদেরও
অব্যক্ত স্থিতির অনুভব করাও l এক সেকেন্ড বা এক মিনিট যদি এই স্থিতিতে একাগ্রতার
সাথে স্থিত হতে পারো, তাহলে এই এক মিনিটের স্থিতি স্বয়ং তোমাকে এবং অন্যকেও অনেক
প্রাপ্তি দিতে পারে l শুধুই এর প্র্যাক্টিস প্রয়োজন l এখন, এইরকম কে আছে যার এক
মিনিটও ফুরসৎ হতে পারে না ? যেমন, প্রথমে যখন ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের প্রোগ্রাম হয়েছে
তখন অনেকে ভাবত, এটা কীভাবে সম্ভব ! সেবার প্রবৃত্তি অনেক বড়, তোমরা বিজি থাকো, যাই
হোক, তোমরা লক্ষ্য রেখেছ বলেই তো সম্ভব হয়েছে, সেই প্রোগ্রাম অব্যাহত রয়েছে, তাই না
! সেন্টার্সে ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের এই প্রোগ্রাম থাকে তোমাদের, নাকি কখনো কখনো
ট্র্যাফিক কন্ট্রোল মিস্ করো আর কখনো চলে ? ব্রাহ্মণ কুলের এটা একটা রীতি, নিয়ম l
যেমন, অন্যান্য নিয়ম আবশ্যক মনে করো, তেমনই এটাও স্ব-উন্নতির জন্য বা সেবার সফলতার
জন্য, সেবাকেন্দ্রের বাতাবরণের জন্য আবশ্যক l এইভাবে অন্তর্মুখী, একান্তবাসী হওয়ার
অভ্যাসের লক্ষ্য রেখে তোমাদের আপন হৃদয়ে গভীর ভালোবাসা থেকে মাঝে মাঝে সময় বের করো
l এর গুরুত্ব যারা জানে তারা আপনা থেকেই সময় পেয়ে যায় l গুরুত্ব নেই তো সময়ও পাওয়া
যায় না l এক পাওয়ারফুল স্থিতিতে নিজের মনকে, বুদ্ধিকে স্থিত করাই একান্তবাসী হওয়া l
যেমন সাকার ব্রহ্মা বাবাকে দেখেছ, সম্পূর্ণতার কাছাকাছি আসার লক্ষণ ছিল - সেবাতে
থেকে, সমাচার শুনতে শুনতে একান্তবাসী হয়ে যেতেন l তোমরা তা' অনুভব করেছ, তাই না !
এক ঘন্টার সমাচারও তিনি পাঁচ মিনিটে সারে বুঝে নিতেন এবং বাচ্চাদেরও খুশি করতেন আর
নিজের অন্তর্মুখী ও একান্তবাসী স্থিতিরও অনুভব করিয়েছেন l সম্পূর্ণতার লক্ষণ ছিল
এটাই, চলতে ফিরতে, শুনতে শুনতে, কোনকিছু করতে করতে তিনি অন্তর্মুখী, একান্তবাসী
স্থিতি অনুভব করেছেন l তাহলে ফলো ফাদার করতে পারো না ? ব্রহ্মা বাবার থেকে বেশি
দায়িত্ব আর কারও আছে কি ? ব্রহ্মা বাবা কখনও বলেননি যে তিনি খুব বিজি আছেন, কিন্তু
তিনি বাচ্চাদের সামনে এক্সাম্পল হয়েছেন l একইরকম ভাবে এখন সময় অনুসারে এই অভ্যাসের
আবশ্যকতা আছে l সেবার সব উপায় তোমাদের কাছে থাকা সত্ত্বেও, সাইলেন্সের শক্তির সেবা
আবশ্যক হবে, কারণ সাইলেন্সের শক্তি হলো অনুভূতি করানোর শক্তি l অধিকাংশ ক্ষেত্রে
বাণীর শক্তির তির মস্তিষ্ক অবধি পৌঁছায় আর অনুভূতির তির হৃদয়ে পৌঁছায় l সুতরাং
সময়ানুসার, রব উঠবে - অন্ততঃ এক সেকেন্ডের অনুভূতি করাও l শুনতে শুনতে, বলতে বলতে
শ্রান্ত হয়ে তারা আসবে l সাইলেন্সের শক্তির মাধ্যমে তোমরা এক নজরে তাদের ভরপুর করে
দেবে l শুভ সঙ্কল্প দ্বারা শান্তির শক্তিতে আত্মাদের ব্যর্থ সঙ্কল্পকে সমাপ্ত করে
দেবে l শুভ ভাবনা দ্বারা বাবার প্রতি তাদের স্নেহের ভাবনা উৎপন্ন করাবে l এইভাবে
যখন সেই আত্মাদের শান্তির শক্তিতে সন্তুষ্ট করবে, তখনই তোমরা চৈতন্য শান্তিদেব
আত্মাদের সামনে 'শান্তিদেব, শান্তিদেব', বলে মহিমা করবে l এই ট্রাফিক কন্ট্রোলও
কতখানি গুরুত্বপূর্ণ আর কতখানি প্রয়োজন তা' অন্য কোনো সময় বাবা তোমাদের শোনাবেন l
সুতরাং শান্তির শক্তির মহত্বকে স্বয়ং জানো আর সেবায় প্রয়োগ করো l বুঝেছ ?
আজ পাঞ্জাব এসেছে, তাই না ! পাঞ্জাবেও সেবাতে গুরুত্বপূর্ণ সাইলেন্সের শক্তি l
সাইলেন্সের শক্তি দ্বারা যারা হিংসক বৃত্তির তাদের অহিংসক বানাতে পারো l যেমন
স্থাপনের শুরুর সময়ে তোমরা দেখেছ, যারা হিংসক বৃত্তির তারা রূহানী শান্তির শক্তির
সামনে পরিবর্তন হয়ে গেছে, তাই না ! সুতরাং শান্তির শক্তিই হিংসক বৃত্তিকে শান্ত
বানায় l বাণী শুনতে তারা সম্মতই হয় না l যখন প্রকৃতির শক্তিতে গ্রীষ্ম বা শীতের
তরঙ্গ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে, তাহলে কি প্রকৃতিপতির শান্তির তরঙ্গ চারিদিকে ছড়াতে
পারে না ? সায়েন্সের উপকরণও গ্রীষ্মকে শীতের বাতাবরণে পরিবর্তন করতে পারে, তাহলে
অধ্যাত্ম শক্তি আত্মাদের পরিবর্তন করতে পারে না ? সুতরাং, পাঞ্জাব থেকে যারা আগত
তারা কী শুনেছে ? সবাই যেন উপলব্ধি করে কোনও শান্তিপুঞ্জ শান্তির কিরণ দিচ্ছে l
এইরকম সেবা করার সময় পাঞ্জাবকে দেওয়া হয়েছে l ফাংশন, প্রদর্শনী ইত্যাদি, তা' তো
করেই থাকো, কিন্তু এই শক্তির অনুভব করো আর করাও l শুধু নিজের মনের একাগ্র বৃত্তি,
শক্তিশালী বৃত্তি প্রয়োজন l লাইট হাউস যত শক্তিশালী হয়, ততই দূর পর্যন্ত লাইট
পৌঁছাতে পারে l সুতরাং যারা পাঞ্জাব থেকে তাদের ক্ষেত্রে এই শক্তি প্রয়োগ করার এটাই
সময় l বুঝেছ ? আচ্ছা l
অন্ধ্রপ্রদেশের গ্রুপও আছে ! তারা কী করবে ? তুফানকে শান্ত করবে l অন্ধ্রতে খুব
তুফান আসে, তাই না ! তুফান শান্ত করার জন্যও শান্তির শক্তি প্রয়োজন l তুফানে মনুষ্য
আত্মারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায় l সুতরাং, বিস্ময়বিমূঢ় আত্মাদের শান্তির ঠিকানা
দেখানো, অন্ধ্রের ভাইবোনেদের জন্য বিশেষ সেবা l শারীরিক ভাবেও যদি কেউ বিভ্রান্ত হয়ে
ঘুরে বেড়ায়, প্রথমে কিন্তু তার মন বিভ্রান্ত হয়, তারপরে শরীর l মনের উদ্দেশ্য তথা
লক্ষ্য ঠিক হলে শরীরের ঠিকানার জন্যও বুদ্ধি কাজ করবে l যদি মনের লক্ষ্য না থাকে
তাহলে শরীরের সাধনের জন্যও বুদ্ধি কাজ করে না, সেইজন্য সবার মন লক্ষ্যে স্থির করার
জন্য এই শক্তিকে কার্যে প্রয়োগ করো l উভয়কে (পাঞ্জাব এবং অন্ধ্র ) তুফান থেকে রক্ষা
করতে হবে l ওখানে হিংসার তুফান আর ওখানে হল সমুদ্রের তুফান l পাঞ্জাবে হল
ব্যক্তিদের আর ওখানে প্রকৃতির l কিন্তু তুফান দু'দিকেই l যারা তুফান কবলিত তাদের
শান্তির উপহার (তোহফা) দাও l তোহফা (উপহার) তুফানকে পরিবর্তন করে দেবে l আচ্ছা l
চারিদিকের শান্তিদেব শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, চারিদিকের অন্তর্মুখী মহান আত্মাদের, যারা
সদা একান্তবাসী হয়ে কর্মে আসে, সেই শ্রেষ্ঠ কর্মযোগী আত্মাদের, যারা সদা শান্তির
শক্তির প্রয়োগ করে সেই শ্রেষ্ঠ যোগী আত্মাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l
দাদীজী রাজপিপলা (গুজরাট) মেলায় যেতে একদিনের ছুটি
নিচ্ছেন -
বিশেষ আত্মাদের প্রতি কদমে পদম (লক্ষ-কোটি) উপার্জন l বড়দের সহযোগও ছত্রছায়া হয়ে
চতুর্গুণ গৌরব বাড়িয়ে দেয় l যেখানেই যাও সেখানে সবাইকে প্রত্যেকের নামে-নামে
স্মরণ-স্নেহ দিও l ভক্তিতে তো বাচ্চারা নামের মালা অনেক জপ করেছে l এখন যদি এই মালা
বাবা শুরু করেন তাহলে মালা অনেক বড় হয়ে যাবে l সেইজন্য যেখানেই বাচ্চারা (বিশেষ
আত্মারা) যায়, সেখানে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিশেষভাবে বেড়ে যায় l বিশেষ আত্মাদের যাওয়া
অর্থাৎ সেবায় আরও বিশেষত্ব আসা l এখান থেকে শুরু, কিন্তু তুমি ভূমিতে শুধু চরণ
ছুঁইয়ে যেও l চরণ ছোঁয়ান অর্থাৎ পরিক্রম করা l এখানে তোমরা সেবায় পরিক্রমায় যাও, আর
ওখানে ভক্তিতে তারা ভূমিতে চরণ রাখার গুরুত্ব দিয়েছে l কিন্তু শুরু তো সব এখান
থেকেই হয় l তোমরা যদি আধঘন্টা একঘন্টার জন্যও কোথাও যাও, তাহলে সবাই খুশি হয় l
কিন্তু এখানে সেবা হয় l ভক্তিতে শুধু চরণ রাখাতেই খুশি অনুভব করে l সব স্থাপনা এখান
থেকেই হচ্ছে l ভক্তি মার্গের পুরো ফাউন্ডেশন এখান থেকেই স্থাপিত হয়, শুধু রূপ
পরিবর্তন হয়ে যাবে l সুতরাং যারাই মেলার সেবায় নিমিত্ত হয়েছে অর্থাৎ মিলন উদযাপনের
সেবাতে নিমিত্ত হয়েছে, মেলার আগে তাদের সবার সাথে বাপদাদা মিলন-মেলা উদযাপন করছে l
এই মেলা বাবা আর বাচ্চাদের মেলা, সেই মেলা সেবার l সুতরাং সবাইকে হৃদয়ের
স্মরণ-স্নেহ l আচ্ছা l দুনিয়ায় তাদের নাইট ক্লাব থাকে, আর এখানে তোমাদের অমৃতবেলা
ক্লাব আছে l (দাদীদের প্রতি) তোমরা সবাই অমৃতবেলা ক্লাবের মেম্বার্স l সবাই তোমাদের
দেখে খুশি হয় l তারা বিশেষ আত্মাদের দেখেও খুশি হয় l আচ্ছা l
বিদায়কালে - সদগুরুবারের স্মরণ-স্নেহ (প্রাতঃ ৬টা) -
বৃক্ষপতি দিবসে বৃক্ষের আগে অমূল্য পত্রসমূহকে বৃক্ষপতি বাবার স্মরণ-স্নেহ আর
নমস্কার l বৃক্ষপতির দশা প্রত্যেক ব্রাহ্মণ আত্মার উপরে আছেই l রাহুর দশা আর
অন্যান্য সব দশা সমাপ্ত হয়েছে l এখন সব ব্রাহ্মণ আত্মার উপরে শুধু একটাই দশা, সদা
বৃক্ষপতির, বৃহস্পতির দশা থাকে l সুতরাং বৃহস্পতির দশাও আছে আর দিনও বৃহস্পতির এবং
বৃক্ষপতি আপন বৃক্ষের আদি পত্রদের সাথে মিলন উদযাপন করছে l অতএব, সদা স্মরণ আছে আর
সদা স্মরণ থাকবে l সদা ভালোবাসায় সমাহিত হয়ে আছ আর সদাই প্রিয় থাকবে l বুঝেছ ?
বরদান:-
পাওয়ারফুল ব্রেক দ্বারা বরদানী রূপে সেবা করার লাইট
মাইট হাউস ভব
বরদানী রূপে সেবা করার প্রথমে নিজের মধ্যে শুদ্ধ
সঙ্কল্প প্রয়োজন তথা অন্য সঙ্কল্পকে সেকেন্ডে কন্ট্রোল করার বিশেষ অভ্যাস প্রয়োজন l
সারাদিন শুদ্ধ সঙ্কল্পের সাগরে তরঙ্গিত হতে থাকো l আর যে সময়ে চাও শুদ্ধ সঙ্কল্পের
সাগরতলে গিয়ে সাইলেন্স স্বরূপ হয়ে যাও, এর জন্য তোমাদের ব্রেক পাওয়ারফুল হওয়া
প্রয়োজন, তোমার সঙ্কল্পের উপরে সম্পূর্ণ কন্ট্রোল এবং বুদ্ধি ও সংস্কারের উপরে
সম্পূৰ্ণ অধিকার থাকতে হবে, তবেই লাইট মাইট হাউস হয়ে বরদানী রূপে সেবা করতে পারবে l
স্লোগান:-
সঙ্কল্প, সময় আর বোলের ইকনমি করলে বাবার সহায়তা ক্যাচ করতে পারবে l