03-05-2020 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
06-01-86 মধুবন
*সঙ্গমযুগ সঞ্চয় করার যুগ*
আজ ত্রিকালদর্শী বাপদাদা যিনি সব বাচ্চার তিনকাল জানেন, তিনি বাচ্চাদের সঞ্চয়ের খাতা
দেখছেন l এটা তো তোমরা সবাই জানোই যে সারা কল্পে শ্রেষ্ঠ খাতা সঞ্চয় করার সময় শুধুই
এই সঙ্গমযুগ l এটা ছোট যুগ, ছোট জীবন l কিন্তু এই যুগ, এই জীবনের বিশেষত্ব এটাই, যে
কেউই এই সময় যতটা ইচ্ছে সঞ্চয় করতে পারে l এই সময়ের শ্রেষ্ঠ পুঁজি অনুযায়ী পূজ্য পদ
তোমরা লাভ কর আর তারপরে পূজ্য তথা পূজারীও হও l এই সময়ের শ্রেষ্ঠ কর্মের, শ্রেষ্ঠ
নলেজের, শ্রেষ্ঠ সম্বন্ধের, শ্রেষ্ঠ শক্তির, শ্রেষ্ঠ গুণের সবরকম শ্রেষ্ঠ হিসেবের
খাতা সঞ্চয় কর l দ্বাপর থেকে ভক্তির অল্পকালের পুঁজি দিয়ে যা কিছু করেছ, তার
তাৎক্ষণিক ফল লাভ করেছ আর শেষ হয়ে গেছে l ভক্তির সঞ্চয় এইজন্যই অল্পকালের, কারণ
উপার্জন করে তৎক্ষণাৎ খরচ করেছ -'যত্র আয়, তত্র ব্যয় l' সঞ্চয়ের অবিনাশী হিসেব যা
জন্ম জন্ম ধরে চলতে থাকে, সেই অবিনাশী হিসেবের খাতা পুঞ্জীভূত করার সময় এখন,
সেইজন্য এই শ্রেষ্ঠ সময়কে পুরুষোত্তম যুগ বা ধর্মীয় যুগ বলে, পরমাত্ম অবতরণ যুগ বলে
l ডিরেক্টলি বাবা দ্বারা প্রাপ্ত শক্তির যুগ হিসেবে এই যুগের গায়ন হয়েছে l এই যুগেই
বাবা বিধাতা আর বরদাতার ভূমিকা (পার্ট ) পালন করেন, সেইজন্য এই যুগকে বরদানী যুগও
বলা হয় l এই যুগে স্নেহের কারণে বাবা ভোলা ভাণ্ডারী হয়ে যান এবং তিনি তোমাদের একের
বিনিময়ে লক্ষ-কোটি গুন ফল দেন l *একের বিনিময়ে লক্ষ-কোটি পুঞ্জীভূত হওয়ার বিশেষ
ভাগ্য তোমাদের এই সময়েই প্রাপ্ত হয় l অন্য যুগে তোমরা যতটা করো বা দাও সেই হিসেবেই
ততটা প্রাপ্তি l তারতম্য তো হয়েই গেল, তাই না ! কারণ এখন বাবা ডিরেক্টলি অবিনাশী
উত্তরাধিকার এবং বরদান উভয় রূপে প্রাপ্ত করানোর নিমিত্ত l* ভক্তিতে ভাবনার ফল, এখন
উত্তরাধিকার আর বরদানের ফল, সেইজন্য এই সময়ের মহত্ত্বকে জেনে, সমুদায় প্রাপ্তি জেনে,
সঞ্চয়ের হিসেব জেনে, ত্রিকালদর্শী হয়ে প্রতিটা পদক্ষেপ নিচ্ছ ? এই সময়ের এক সেকেন্ড
সাধারণ সময়ের তুলনায় কতো গুরুত্বপূর্ণ তা' তোমরা জানো ? সেকেন্ডে কতো উপার্জন করতে
পার আর কতো নষ্ট করতে পার, সেই হিসেব তোমরা ভালো করে জানো ? নাকি সাধারণ উপায়ে কিছু
আয় কর আর কিছু নষ্ট কর ? এইভাবে অমূল্য সময় নষ্ট করছ না তো ! ব্রহ্মাকুমার
ব্রহ্মাকুমারী তো হয়েছ, কিন্তু অবিনাশী উত্তরাধিকার এবং বিশেষ বরদানের অধিকারী হয়েছ
? কারণ এই সময়ের অধিকারী জন্ম-জন্মের অধিকারী হয় l এই সময়ের কোন না কোনও সংস্কার বা
স্বভাব বা কোনও সম্বন্ধের অধীনে থাকা আত্মা জন্ম-জন্মের অধিকারী হওয়ার পরিবর্তে
প্রজা পদের অধিকারী হয় l রাজ্য অধিকারী নয় l প্রজা পদাধিকারী হয় l এখানে এসেছ তোমরা
রাজযোগী, রাজ্য অধিকারী হতে, কিন্তু অধীনতার সংস্কারের কারণে বিধাতার বাচ্চা হয়েও
রাজ্য অধিকারী হতে পার না, সেইজন্য সদা এটা চেক কর, তোমরা কতটা স্ব-অধিকারী হয়েছ !
যে স্ব-অধিকার নিতে অপারগ, সে কীভাবে বিশ্ব রাজত্বের অধিকার প্রাপ্ত করবে ! এখন
স্বরাজ্য অধিকারীর উপযুক্ত হয়ে তোমরা বিশ্ব-রাজ্যের অধিকারী হওয়ার চৈতন্য মডেল তৈরি
করতে পার l যে কোনও জিনিসের প্রথমে তো মডেল তৈরি কর, তাই না ! অতএব, সর্বাগ্রে এই
মডেল দেখ l
স্ব-অধিকারী হওয়া অর্থাৎ তোমার সর্ব কর্মেন্দ্রিয়রূপী প্রজার রাজা হওয়া l প্রজার
রাজ্য নাকি রাজার রাজ্য ? এটা তো জানতে পার, তাই না ? যদি প্রজার রাজ্য হয় তাহলে
তোমাকে রাজা বলা যাবে না l প্রজার রাজ্যে রাজবংশ বিলুপ্ত হয়ে যায় l যে কোনও একটা
কর্মেন্দ্রিয় যদি কৌশলে তোমাদের ভুলপথে চালিত করে, তাহলে স্বরাজ্য অধিকারী বলা হবে
না l এইরকম কখনও ভেবোনা দু'একটা দুর্বলতা তো থাকেই l সম্পূৰ্ণ তো লাস্টে গিয়ে হব !
কিন্তু বহুকালের একটা দুর্বলতাও সঙ্কটের সময়ে ভুলপথে চালিত করে l দীর্ঘ কালের অধীন
হওয়ার সংস্কার তোমাকে অধিকারী হতে দেবে না, সেইজন্য অধিকারী হওয়া অর্থাৎ স্ব-অধিকারী
l এই ভ্রান্তিতে থেকে যেও না যে অন্তে সম্পূৰ্ণ হয়ে যাবে l দীর্ঘ সময়ের স্ব
অধিকারের সংস্কার দীর্ঘ কালের বিশ্ব-অধিকারী বানাবে l স্বল্পকালীন স্ব-রাজ্য অধিকারী
অল্পকালেরই বিশ্ব-রাজ্যের অধিকারী হবে l যারা বাবার সমান হওয়ার আজ্ঞা অনুসারে বাবার
হৃদয় সিংহাসনাসীন হয়, তারাই রাজ্য সিংহাসনাসীন হয় l বাবা সমান হওয়া অর্থাৎ বাবার
হৃদয় সিংহাসনাসীন হওয়া l ঠিক যেমন ব্রহ্মাবাবা সম্পন্ন এবং সমান হয়েছেন, সেইরকমভাবে
সম্পূৰ্ণ আর সমান হও l রাজ্য-সিংহাসনের অধিকারী হও l কোনও রকম অসাবধানতা বশতঃ
নিজস্ব উত্তরাধিকারের অধিকার বা বরদান কম প্রাপ্ত ক'রনা l সুতরাং সঞ্চয়ের খাতা চেক
কর l নতুন বছর শুরু হয়েছে, তাই না ! পুরানো খাতা চেক কর আর সময় এবং বাবার বরদানে
অধিক থেকেও অধিকতর সঞ্চয় কর l শুধু আয় করলে আর খেয়ে নিলে, এইরকম খাতা বানিও না l
অমৃতবেলায় তোমরা যোগযুক্ত থেকেছ এবং সঞ্চয় করেছ l ক্লাসে তোমরা স্টাডি করে সঞ্চয়
করেছ আর তারপরে সারাদিন পরিস্থিতির বশে বা মায়ার আঘাতের বশে বা নিজের সংস্কারের বশে
যা জমা করেছ তা' যুদ্ধ করতে করতে বিজয়ী হওয়ায় খরচ করেছ l তাহলে রেজাল্ট কি হয়েছে ?
তোমরা উপার্জন করেছ আর খেয়েছ, তাহলে জমা কি হয়েছে ? অতএব, সদাসর্বদা তোমাদের
সঞ্চয়ের খাতা চেক কর এবং অনবরত বাড়াতে থাক l একভাবে চার্টে শুধু টিক (√) দিও না l
ক্লাস করেছ ? হ্যাঁ ! যোগ করেছ ? কিন্তু সময় অনুযায়ী যেমন শক্তিশালী যোগ হওয়া
প্রয়োজন, তেমন হয়েছিল ? তোমাদের সময় ভালোভাবে কাটিয়েছ (পাস), অনেক আনন্দ প্রাপ্ত
হয়েছে, বর্তমান তো তোমরা তৈরি করেছ, কিন্তু বর্তমানের সঙ্গে কিছু সঞ্চয় করেছ ? এতটা
শক্তিশালী অনুভব করেছ ? তোমরা এগিয়ে চলেছ কিনা শুধু এটা চেক ক'রনা l যখন কাউকে
জিজ্ঞাসা কর যে তারা কেমন এগোচ্ছে, তারা বলে খুব ভালো এগোচ্ছে l কি স্পীডে তোমরা
এগোচ্ছ সেটা চেক কর l পিঁপড়ের গতিতে এগিয়ে চলেছ, নাকি রকেটের স্পীডে ? এই বছর সব
বিষয়ে শক্তিশালী হওয়ার স্পীড এবং পার্সেন্টেজ চেক কর l কতো পার্সেন্টেজে জমা করছ ?
৫ টাকাও যদি হয় তো তোমরা বলবে জমা করেছ, যদি ৫০০ টাকা হয় তাহলেও বলবে জমা করেছ l
তোমরা জমা তো করেছ, কিন্তু কতো করেছ ? বুঝেছ, কি করতে হবে তোমাদের ?
গোল্ডেন জুবিলির দিকে তোমরা যাচ্ছ - এই পুরো বছরই গোল্ডেন জুবিলির বছর, তাই না !
সুতরাং, চেক কর সব বিষয়ে তোমরা গোল্ডেন এজড কিনা অর্থাৎ তোমাদের সতঃপ্রধান স্টেজ
হয়েছে কিনা ! নাকি সতঃ অর্থাৎ সিলভার স্টেজ ? তোমাদের পুরুষার্থও সতঃপ্রধান তথা
গোল্ডেন এজড হতে হবে l সেবাও গোল্ডেন এজড হতে দাও l পুরানো সংস্কারের সামান্যতমও
অ্যালয় (খাদ) যেন না থাকে l এমনকি আজকালকার মতো এমনও নয় যে রুপোর (রূপা) উপরে সোনার
জলের প্রলেপ লাগিয়ে দিলে l বাইরে থেকে সোনার মতো দেখতে, কিন্তু ভিতরে কি ? এটা তো
মিক্সড বলা হবে, তাই না ! সুতরাং সেবাতেও অভিমান আর অপমানের অ্যালয় মিক্স হতে দিও
না l তাকেই বলা হয় গোল্ডেন এজড সেবা l স্বভাবেও ঈর্ষা, জিদ এবং নিজেকে সঠিক প্রমাণ
করার চেষ্টা থাকা উচিত নয় l সেটা অ্যালয় l এই অ্যালয় সমাপ্ত ক'রে গোল্ডেন এজড
স্বভাবের হও l সদা 'হাঁ জী'র সংস্কার থাকবে অর্থাৎ সাকারাত্মক যে কোন আদেশ-নির্দেশে
তৎক্ষণাৎ সম্মত হওয়া l সময় এবং সেবা অনুযায়ী নিজেদের মোল্ড করতে হবে অর্থাৎ রিয়েল
গোল্ড হতে হবে l আমাকে মোল্ড হতে হবে l
অন্য কেউ করলে তবেই আমি করব - এটা জিদের প্রকৃতি l এটা রিয়েল গোল্ড নয় ! এই
অ্যালয়ের অবসান ঘটিয়ে গোল্ডেন এজড হও l সম্বন্ধে সদা প্রত্যেক আত্মার প্রতি শুভ
ভাবনা, কল্যাণের ভাবনা হতে দাও l স্নেহের ভাবনা, সহযোগের ভাবনা হতে দাও l কারও মধ্যে
যে অভিপ্রায়ই থাকুক বা সে যেকোন রকম স্বভাবেরই হোক, তোমার ভাবনা সদা শ্রেষ্ঠ হতে
দাও l এই সব বিষয়ে স্ব-পরিবর্তনই গোল্ডেন জুবিলি উদযাপন করা l অ্যালয় জ্বালিয়ে দেওয়া
অর্থাৎ গোল্ডেন জুবিলি উদযাপিত হওয়া l বুঝেছ - বছরের শুভারম্ভ গোল্ডেন-এজড স্থিতিতে
করো l এটা সহজ, নয় কি ! শোনার সময় তো সবাই বোঝ যে তোমাদের সেটা করতে হবে, কিন্তু
যখন কোনও সমস্যা সামনে আসে, তখন তোমরা ভাবো এতো খুব কঠিন ব্যাপার l সমস্যা যখন
উৎপত্তি হয়, তখন সেই সময়টা স্বরাজ্য অধিকারী হিসেবে অধিকার দেখানোর সময় l আক্রমণের
সময়ই তোমাদের বিজয়ী হতে হবে l পরীক্ষার সময়ই নম্বর ওয়ান নেওয়ার সময় l সমস্যা স্বরূপ
হয়োনা, বরং সমাধান স্বরূপ হও l বুঝেছ- এই বছর কি করতে হবে ? শুধুমাত্র তখনই গোল্ডেন
জুবিলির সমাপ্তি সম্পন্ন হওয়ার গোল্ডেন জুবিলি বলা হবে l
আর কি নতুনত্ব করবে তোমরা ? বাপদাদার কাছে সব বাচ্চার সঙ্কল্প তো পৌঁছেই যায় l
প্রোগ্রামেও কি নতুনত্ব আনবে তোমরা ? গোল্ডেন থটস্ শুনানোর টপিক তো রেখেছ তোমরা,
তাই না ! স্বর্ণালী সঙ্কল্প, স্বর্ণালী বিচার, যা সোনা বানিয়ে দেবে আর সোনার যুগ
নিয়ে আসবে l এই টপিক রেখেছ তো তোমরা, রেখেছ না ? আচ্ছা- আজ সূক্ষ্ম বতনে এই বিষয়ে
মনখোলা অন্তরঙ্গ আলাপচারিতা হয়েছে, সেই বিষয়ে বাবা তোমাদের পরে শোনাবেন l আচ্ছা -
সমস্ত উত্তরাধিকার এবং বরদানের ডবল অধিকারী ভাগ্যবান আত্মাদের, সদা স্বরাজ্য অধিকারী
শ্রেষ্ঠ আত্মাদের, যারা সদা নিজেকে গোল্ডেন এজড স্থিতিতে স্থিত রাখে, এমন রিয়েল
গোল্ড বাচ্চাদের, সদা স্ব-পরিবর্তনের একনিষ্ঠার সাথে এগিয়ে চলে, সেই বিশেষ আত্মাদের
বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l
মিটিংয়ে আগত ডাক্তারদের সাথে - অব্যক্ত বাপদাদার
সাক্ষাৎকার
নিজেদের শ্রেষ্ঠ উৎসাহ-উদ্দীপনা দ্বারা অনেক আত্মাকে সদা খুশি বানানোর সেবায় আপনারা
নিয়োজিত হয়েছেন, তাই না ! ডাক্তারদের বিশেষ কার্যই হলো, সব আত্মাকে খুশি দেওয়া l
প্রথম ওষুধই হলো খুশি l খুশি অর্ধেক অসুস্থতা দূর করে দেয় l সুতরাং আধ্যাত্মিক
ডাক্তার অর্থাৎ যারা খুশির ওষুধ দেয় l তাহলে আপনারাও এমনই ডাক্তার, তাই না ! যদি
একবারও খুশির ঝলক আত্মার অনুভব হয়ে যায় তাহলে সেই আত্মা সদা খুশির তথা বুদ্ধির
দীপ্তিতে অবিরত উড়তে থাকবে l তাহলে, আপনারা তো সব তেমনই ডাক্তার, সবাইকে ডবল লাইট
বানিয়ে উড়িয়ে দেন, তাই না ! অন্য ডাক্তাররা বেড থেকে উঠায় l বেডে শুয়ে থাকা
পেশেন্টকে তারা উঠিয়ে দেয়, হাঁটিয়ে দেয় l আপনারা পুরানো দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নিয়ে
নতুন দুনিয়ায় বসিয়ে দেন l এইরকম প্ল্যান আপনারা বানিয়েছেন, না ? রূহানী
ইন্সট্রুমেন্ট ইউজ করার প্ল্যান বানিয়েছেন ? ইঞ্জেকশন কি, ট্যাবলেট কি, ব্লাড দেওয়া
কি, এইসব আধ্যাত্মিক সাধন বানিয়েছেন ! কাউকে ব্লাড দেওয়ার আবশ্যকতা থাকলে তাকে
অধ্যাত্ম ব্লাড কি দিতে হবে, হার্ট পেশেন্টকে কি ধরণের ওষুধ দিতে হবে, হার্ট
পেশেন্ট অর্থাৎ ভগ্নোৎসাহের পেশেন্ট l সুতরাং আধ্যাত্মিক সামগ্রী প্রয়োজন l যেমন,
তারা নতুন নতুন যে ইনভেনশন করে, সেই ইনভেনশন সায়েন্সের সাধন দ্বারা করে l আপনারা
সাইলেন্সের সাধনে সদাকালের জন্য নিরোগী বানিয়ে দেন l তাদের কাছে যেমন বিভিন্নরকমের
সব ইন্সট্রুমেন্টের লিস্ট আছে, সেইরকম আপনাদেরও লম্বা লিস্ট থাকা উচিত l আপনারা তো
এইরকমই ডাক্তার, যাদের কাছে আত্মাদের এভার হেলদি বানানোর এত বড় সাধন থাকবে ! এটাকে
আপনারা আপনাদের অক্যুপেশন বানিয়েছেন ? সব ডাক্তার নিজ নিজ স্থানে এভার হেলদি এভার
ওয়েলদি বানানোর বোর্ড লাগিয়েছেন ? যেমন, আপনারা যে ওই অক্যুপেশন বোর্ড লেখেন, ঠিক
সেইভাবে এটা লিখেছেন যেটা দেখে সঙ্গে সঙ্গে লোকের মনে হয়, 'এটা কি - ভিতরে গিয়ে
দেখতে হবে !' অবশ্যই আকর্ষণ করে এমন বোর্ড হওয়া উচিত l লিখিত বিষয়বস্তু এমন হবে যে
পরিচয় নিতে আসা থেকে নিজেকে তারা নিরস্ত করতে পারবে না l বোর্ড অবশ্যই এমন হবে যাতে
তাদেরকে আপনাদের ডেকে আনার প্রয়োজন হবে না, বরং তারা নিজেরাই আপনারা না চাইতেও
আপনাদের সামনে এসে হাজির হয়ে যাবে l তারা তো লেখে "অমুক-অমুক, এম. বি. বি. এস.,"
কিন্তু এইরকম বোর্ডের উপরে আপনাদের অধ্যাত্ম অক্যুপেশন লিখবেন, যা থেকে লোকে বুঝতে
পারে যে এই স্থান আবশ্যক l নিজেদের এইরকম আধ্যাত্মিক ডিগ্রী বানিয়েছেন, নাকি শুধুই
জাগতিক ডিগ্রী লেখেন ?
(সেবার শ্রেষ্ঠ সাধন কি হওয়া উচিত) সেবার সবচেয়ে দ্রুত সাধন - শক্তিশালী সঙ্কল্প
দ্বারা সেবা l সঙ্কল্প, বোল এবং কর্ম সবই যেন শক্তিশালী হয় l একসাথে তিনের কার্য
হওয়া প্রয়োজন l এটা শক্তিশালী সাধন l যখন আপনারা বাণীতে আসছেন, শক্তিশালী সঙ্কল্পের
পার্সেন্টেজ কম হয়ে যায় অথবা পার্সেন্টেজ একই থাকল, বাণীর পার্সেন্টেজে তারতম্য হয়ে
গেল l কিন্তু না, তিনই একসাথে হওয়া দরকার l যেমন কোনও পেশেন্টকে একই সাথে কেউ নাড়ি
দেখে, কেউ অপারেশন করে .... একত্রিত হয়ে করে l যে অপারেশন করে সে যদি আগেই করে নেয়,
আর যে নাড়ি দেখে সে যদি তার পরে দেখে তাহলে কি হবে ? কতো কতো কার্য একসঙ্গেই হয় l
একইরকমভাবে, সেবার জন্য আধ্যাত্মিকতার সাধন একত্রে একই সঙ্গে হওয়া বাঞ্ছনীয় l সেবার
জন্য তো প্ল্যান আপনারা বানিয়েছেনই, খুব ভালো l কিন্তু এমন কোনো প্ল্যান বানান যেটা
সবাই বুঝবে যে হ্যাঁ এই অধ্যাত্ম ডাক্তার সবসময়ের জন্য তাদের হেলদি বানাবেন l আচ্ছা
l
পাটিদের সাথে :-
১) যারা অনেক বারের বিজয়ী আত্মা তাদের লক্ষণ কি হবে ? তাদের সব বিষয়ই খুব সহজ আর
হালকা অনুভব হবে l যারা কল্প কল্পের বিজয়ী আত্মা নয় তাদের সামান্য কাজও কঠিন অনুভব
হবে l তারা সেটা সহজ মনে করবে না l যাই হোক, অন্যান্যরা যে কোনও কাজ করার পূর্বে
নিজেকে এমন অনুভব করবে, যেন সেই কাজ হয়েই আছে l হবে কি হবে না, এই কোশ্চেনই হবে না
l হয়েই আছে, এই উপলব্ধি সদা থাকবে l তারা জানে যে তারা সফল হয়েই আছে, বিজয়ও
সুনিশ্চিত - তারা এইরকম নিশ্চয়বুদ্ধি হবে l কোনও বিষয়ই তাদের নতুন মনে হবে না,
তাদের বোধ হবে সেই সবকিছু খুব পুরানো l এই স্মৃতির সাথেই তারা নিজেদের অগ্রচালিত
করবে l
২) ডবল লাইট হওয়ার লক্ষণ কি হবে ? ডবল লাইট আত্মারা সদা সহজ উড়তি কলার অনুভব করে l
এমন নয় যে তারা কখনো থামে কখনো ওড়ে l সদা উড়তি কলার অনুভাবী এমন ডবল লাইট আত্মারাই
ডবল মুকুটের অধিকারী হয় l যারা ডবল লাইট তারা নিজে থেকেই উঁচু স্থিতির অনুভব করে l
যদি কোনরকম পরিস্থিতির উদ্ভব হয়, মনে রেখ তোমরা ডবল লাইট l বাচ্চা হওয়া অর্থাৎ তোমরা
হালকা হয়ে গেছ l তোমরা কোন ভার উঠাতে পারবে না l আচ্ছা - ওম্ শান্তি l
বরদান:-
শুভ চিন্তন আর শুভচিন্তক স্থিতির অনুভব দ্বারা
ব্রহ্মাবাবা সমান মাস্টার দাতা ভব
ব্রহ্মাবাবা সমান দাতা হওয়ার জন্য ঈর্ষা, ঘৃণা আর
ক্রিটিসাইজ - এই তিন বিষয় থেকে মুক্ত থেকে সবার প্রতি শুভচিন্তক হও আর শুভচিন্তন
স্থিতির অনুভব কর, কারণ যাদের মধ্যে ঈর্ষার অগ্নি
থাকে, তারা নিজেরা জ্বলে, অন্যদেরও হয়রান করে, যাদের ঘৃণা থাকে তাদের নিজেদেরও পতন
হয়, অন্যদেরও পতন ঘটায় আর এমনকি যারা ঠাট্টাচ্ছলেও ক্রিটিসাইজ করে, তারা আত্মাকে
সাহসহীন করে, দুঃখী করে l সেইজন্য এই তিন বিষয়ে মুক্ত থেকে শুভচিন্তক স্থিতির অনুভব
দ্বারা দাতার বাচ্চা মাস্টার দাতা হও l
স্লোগান:-
মন-বুদ্ধি আর সংস্কারের উপর সম্পূৰ্ণ রাজত্ব করে
স্বরাজ্য অধিকারী হও l