24-05-2020 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
15-01-86 মধুবন
সুলভ সওদা এবং সঞ্চয়ের বাজেট
রত্নাকর বাবা তাঁর সর্বাপেক্ষা বড় সওদা করে এমন সওদাগর বাচ্চাদের দেখে মৃদু মৃদু
হাসছেন l সওদা কতো বড়, আর কৃতসঙ্কল্প সওদাগর দুনিয়ার তুলনায় কতো সাধারণ, আলাভোলা l
ভগবানের সাথে সওদা ক'রে কোন আত্মারা ভাগ্যবান হয়েছে, সেটা দেখেই বাবা মৃদু মৃদু
হাসছেন l এক জন্মে তোমরা এত বড় সওদা কর, যা ২১ জন্মের জন্য সমৃদ্ধশালী হয়ে যাও l কি
তোমরা দাও আর কি তোমরা নাও ! অসংখ্য কোটির উপার্জন এবং কোটি কোটির সওদা তোমরা কতো
সহজে কর l বাস্তবে, চুক্তিবদ্ধ হতে এক সেকেন্ড লাগে l আর তোমরা কতো সস্তা সওদা করেছ
! এক সেকেন্ডে আর এক কথায় স্বীকার করে নিয়েছ - *হৃদয় থেকে স্বীকার করেছ 'আমার বাবা'
l* এই একটা কথায় এত বড় আর অগণিত ভাণ্ডারের সওদা করে নাও তোমরা l সওদা সস্তা, নয় কি
! না পরিশ্রম, না উচ্চমূল্য ! না সময় দিতে হয় l আর যখন তোমরা সীমিত পরিসরের যে কোনও
সওদা কর তো কতো সময় ব্যয় করতে হয় ! পরিশ্রমও করতে হয় আর দিন -দিন মূল্য আরও বৃদ্ধি
হয়েই যায় l আর তা' চলবেই বা কত পর্যন্ত ! এক জন্মেরও গ্যারান্টি নেই l তাহলে কি
তোমরা শ্রেষ্ঠ সওদা করে নিয়েছ, নাকি এখনও করতে হবে ভাবছ ? পাকাপোক্ত সওদা করে নিয়েছ
তো ? বাপদাদা নিজের সওদাগর বাচ্চাদের দিকে দেখছিলেন আর দেখছিলেন সওদাগরের লিস্টে
নামী কে কে আছে l দুনিয়ায় তারাও নামী লোকের লিস্ট বানায়, তাই না ! বিশেষ ডিরেক্টরিও
বানায় l বাবার ডিরেক্টরিতে কাদের নাম আছে ? যাদের উপরে দুনিয়ার লোকের নজর যায় না,
তারাই বাবার সাথে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে আর পরমাত্ম-নয়নের নয়নতারা হয়ে গেছে,
পরমাত্ম-নয়নের আলোক রতন হয়ে গেছে l নিরাশ আত্মাদের তিনি বিশেষ আত্মায় পরিণত করেছেন
l এইরকম নেশা সদা থাকে ? *পরমাত্ম- ডিরেক্টরির বিশেষ ভি. আই. পি. আমরা, সেইজন্যই
গায়ন আছে ভোলাদের ভগবান l* তিনি সু-চতুর, কিন্তু ভোলাদেরই তাঁর পছন্দ হয় l দুনিয়ার
বহির্মুখী চাতুর্য বাবার পছন্দ নয় l কলিযুগে তাদের রাজ্য l এই মুহূর্তে তারা
লাখপতি, পরমুহূর্তে কাঙালপতি l কিন্তু তোমরা সবাই সদাকালের জন্য পদমাপদমপতি হয়ে যাও
l ভয়ের রাজ্য নয়, ভয়শূন্য l
আজকের দুনিয়ায় ধনও আছে আর ভয়ও আছে l তাদের যত বেশি ধন ততই তারা ভয়ে খায়, ভয়ে ঘুমায়
l আর তোমরা নিশ্চিন্ত বাদশাহ হয়ে যাও l ভীতিশূন্য হয়ে যাও l বলা হয় ভয়ের ভূত l
তোমরা সেই ভূতের থেকে নিস্তার পাও l রেহাই পেয়ে গেছ, তাই না ? কোনরকম ভয় আছে ?
যেখানে আমিত্বের ভাব থাকবে সেখানে ভয় অবশ্যই হবে l
"আমার বাবা l" শুধু এক শিববাবাই আছেন, যিনি নির্ভীক বানান l উঁনি ব্যতীত কোনও সোনার
হরিণও যদি 'আমার' হয়, তখনই ভয় হবে l সুতরাং চেক কর, 'আমার আমার' সংস্কার ব্রাহ্মণ
জীবনেও কোনও সূক্ষ্মরূপে থেকে যায়নি তো ! সিলভার জুবিলি, গোল্ডেন জুবিলি পালন করছ,
তাই না ! রূপা বা সোনা, রিয়্যাল তখনই হয়, যখন অগ্নিতে গলিয়ে যা কিছু মিক্স থাকে
সেগুলো সরিয়ে দেয় l সেটাই রিয়্যাল সিলভার জুবিলিও, রিয়্যাল গোল্ডেন জুবিলিও, তাই না
! সুতরাং জুবিলি উদযাপন করতে রিয়্যাল সিলভার, রিয়্যাল গোল্ড হতেই হবে l এমন নয়,
যারা সিলভার জুবিলি উদযাপন করছে তারা সিলভারই l এতো বছরের হিসেবে সিলভার জুবিলি বলে
l তোমরা কিন্তু সবাই গোল্ডেন এজের অধিকারী গোল্ডেন এজের অন্তর্ভুক্ত l সুতরাং চেক
কর কতটা রিয়্যাল গোল্ড হয়েছ ? সওদা তো করেছ, কিন্তু এসেছ আর খেয়েছ l এইরকম নয় তো !
এতটা সঞ্চয় তোমরা করেছ, যাতে ২১ জন্মের জন্য সদা সম্পন্ন থাকতে পারো, তোমাদের
রাজবংশও সমৃদ্ধশালী থাকবে ? না শুধু ২১ জন্ম, বরং দ্বাপরেও ভক্ত আত্মা হওয়ার কারণে
কোনোরকম অভাব হবে না l দ্বাপরেও এত ধন থাকে যে দান-পুণ্য ভালোভাবে করতে পারো l
কলিযুগের অন্তেও দেখ, অন্তিম জন্মেও ভিখারী তো হওনি, তাই না ! ডাল-রুটি খেতে পারো
এমন তো হয়েছ, না ? তোমাদের কালোধন (অবৈধ ধন) নেই, কিন্তু ডাল-রুটি তো আছে, না ? এই
সময়ের উপার্জন বা সওদা তোমাদের নিশ্চিন্ত করে যে সারা কল্প তোমরা ভিখারী হবে না,
এতটা পুঁজি বানিয়েছ যাতে অন্তিম জন্মেও ডাল-রুটি খেতে পারো ! এতটা জমা-পুঁজির হিসেব
রাখ তোমরা ? কীভাবে বাজেট বানাতে হয় তা' জানো ? সঞ্চয় করতে তোমরা দক্ষ, তাই না !
নয়তো ২১ জন্ম কি করবে ? উপার্জনশীল হবে, নাকি রাজ্য অধিকারী হয়ে রাজত্ব করবে ?
রয়্যাল ফ্যামিলির উপার্জনের প্রয়োজন হয় না l প্রজাদের উপার্জন করতে হবে l তা'তেও
নম্বর আছে l সাহুকার প্রজা, আর সাধারণ প্রজা l গরীব তো কেউ হয়ই না l কিন্তু রয়্যাল
ফ্যামিলি পুরুষার্থের প্রারব্ধ হিসেবে রাজত্ব প্রাপ্ত করে l জন্মের পর জন্ম রয়্যাল
ফ্যামিলির অধিকারী হয় l প্রত্যেক জন্মে তাদের রাজ-সিংহাসনের অধিকার থাকে না l
কিন্তু রয়্যাল ফ্যামিলির অধিকার জন্ম-জন্ম ধরে প্রাপ্ত করে ! সুতরাং কি হবে তোমরা ?
এখন বাজেট বানাও l জমা পুঁজির স্কীম বানাও l
আজকালকার দুনিয়ায় তারা ওয়েস্ট থেকে বেস্ট বানায় l তারা ওয়েস্টকে সঞ্চয় করে l সুতরাং
তোমরাও সবাই সঞ্চয়ের খাতা সদা স্মৃতিতে রাখ l বাজেট বানাও l সঙ্কল্প শক্তি, বাণীর
শক্তি, কর্মের শক্তি, সময়ের শক্তি কীভাবে আর কোথায় তোমরা প্রয়োগ করবে l এই সব শক্তি
ব্যর্থ হয়ে যাবে, এমন হতে দিও না l সঙ্কল্পও যদি সাধারণ হয়, ব্যর্থ হয়, তবে ব্যর্থ
আর সাধারণ দুইই কিছু সঞ্চয় করল না l বরং নষ্ট করে ফেলল l সারাদিনে নিজের চার্ট
বানাও l এই সব শক্তি কার্যে প্রয়োগ করে কতটা বাড়িয়েছ ! কারণ যত কার্যে প্রয়োগ করবে,
ততই শক্তি বাড়বে l জানো তো সবাই যে সঙ্কল্প একটা শক্তি, কিন্তু কার্যত: ব্যবহারের
অভ্যাসে নম্বরানুক্রম আছে l কেউ কেউ আবার না তো কার্যে লাগায়, না পাপ কর্মে নষ্ট
করে l সাধারণ দিনচর্যায় না তোমরা আয় করেছ, না ক্ষয় হয়েছে l সঞ্চয় তো হয়নি, তাই না !
সাধারণ সেবার দিনচর্যা এবং সাধারণ প্রবৃত্তির দিনচর্যা, বাজেটের খাতায় জমা হচ্ছে
বলা যাবে না l শুধু এটাই চেক ক'রনা যে তোমরা যথাশক্তি অনুযায়ী সেবাও করেছ, পড়াও
করেছ, কাউকে দুঃখ দাওনি, কোনও ভুল কর্ম করনি l কাউকে দুঃখ তো দাওনি, কিন্তু সুখ কি
দিয়েছ ? যেভাবে যতটা শক্তিশালী সেবা করার প্রয়োজন ছিল, ততটা করেছ ? যেমন, বাপদাদা
সদা ডিরেকশন দেন যে আমি এবং আমিত্বভাবের ত্যাগই প্রকৃত সেবা, এইরকম সেবা করেছ ?
অনৈতিক বোল বলনি, কিন্তু এমন বোল কি বলেছ যা কোনও নিরাশ আত্মাকে আশাবাদী বানিয়েছে ?
সাহসহীনকে সাহসী বানিয়েছে ? কারও মধ্যে খুশির উৎসাহ-উদ্দীপনা জাগ্রত করেছ ? এটাই
সঞ্চয়, পুঁজি l দু'চার ঘণ্টা শুধুই চলে গেছে, সঞ্চয় কিছুই হয়নি l সব শক্তি সঞ্চয়
করে পুঁজি তৈরি হবে, এমন বাজেট বানাও l এই বছর বাজেট বানিয়ে কার্য কর l সব শক্তি
কার্যে কীভাবে প্রয়োগ করবে, সেই প্ল্যান বানাও l ঈশ্বরীয় বাজেট এমন বানাও যাতে
বিশ্বের প্রত্যেক আত্মা কিছু না কিছু প্রাপ্ত করবে, তোমাদের গুণগান করবে l সবাইকেই
কিছু না কিছু দিতেই হবে l হয় মুক্তি দাও, নয়তো জীবনমুক্তি দাও l তোমরা যে শুধু মানব
আত্মাকে পবিত্র বানানোর সেবা করছ তা'তো নয়, প্রকৃতিকেও পবিত্র বানানোর সেবা করছ l
ঈশ্বরীয় বাজেট অর্থাৎ সকল আত্মা প্রকৃতি সহ সুখী ও শান্ত হয়ে যাবে l ওই গভর্নমেন্ট
বাজেট বানায় যে তারা এত জল দেবে, এত ঘর-বাড়ী দেবে, এত বিদ্যুৎ দেবে ... তোমরা কি
বাজেট বানিয়েছ ?
যা তোমরা সবাইকে দেবে, অনেক জন্মের জন্য মুক্তি এবং জীবনমুক্তি ! ভিখারীপনা থেকে,
দুঃখ অশান্তি থেকে মুক্ত করবে l অর্ধ-কল্প তো তারা আরামে থাকবে, তাদের আশা তো পূরণ
হয়েই যাবে l তারা তো সবাই মুক্তিই চায়, তাই না ! জানে না, অথচ চায়, নয় কি ? সুতরাং
নিজের জন্য এবং বিশ্বের জন্য বাজেট বানাও l বুঝেছ তোমরা, কি করতে হবে ! সিলভার আর
গোল্ডেন জুবিলি দুইই এই বছরে উদযাপন করছ, তাই না ? সুতরাং, এই বছর গুরুত্বপূর্ণ l
আচ্ছা l
যারা সদা শ্রেষ্ঠ সওদা স্মৃতিতে বজায় রাখে, সদা সঞ্চয়ের খাতা বৃদ্ধি করে, সদা সব
শক্তি কার্যে লাগিয়ে বিস্তার ঘটায়, সদা সময়ের মাহাত্ম্য জেনে মহান হয় এবং অন্যদেরও
মহান বানায়, এইরকম শ্রেষ্ঠ ধনবান, শ্রেষ্ঠ বিচক্ষণ বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ
আর নমস্কার l
*কুমারদের সাথে :-*
কুমার জীবনও লাকি জীবন l কারণ ভুল সিঁড়ি চড়া থেকে রক্ষা পেয়েছে l কখনো ভুল সিঁড়ি
চড়ার সঙ্কল্প আসে না তো ! এমনকি, যারা চড়েছে, তারাও নিচে নামছে l যারা প্রবৃত্তিতে
আছে তারাও তো নিজেদের কুমার কুমারী বলে, তাই না ! তাহলে তারা তো সিঁড়ি দিয়ে নেমেছে,
নেমেছে না ? সুতরাং, নিজেদের এই শ্রেষ্ঠ ভাগ্যকে সদা স্মৃতিতে রাখ l কুমার জীবন
অর্থাৎ বন্ধন থেকে রক্ষা পাওয়ার জীবন l নয়তো দেখ কতো বন্ধনে বেঁধে যাবে তোমরা !
সুতরাং বন্ধনের টানা-পোড়েন থেকে তোমরা বেঁচে গেছ l মন থেকেও স্বতন্ত্র, সম্বন্ধ
থেকেও তোমরা স্বতন্ত্র l কুমার জীবনই তো স্বতন্ত্র l কখনো স্বপ্নেও এই খেয়াল আসে না
তো - একটু যদি সহযোগী পাওয়া যেত ! কোনও সাথী পাওয়া যেত ! অসুস্থতায় সাহায্য হয়ে যেত
...এইরকম কখনো ভাবো ! একেবারেই খেয়াল আসে না ? কুমার জীবন অর্থাৎ সদা উড়ন্ত বিহঙ্গ,
বন্ধনে আটকা পড়ে নেই l কখনো কোনও সঙ্কল্প আসতে দিও না l সদা নির্বন্ধন হয়ে
তীব্রগতিতে সামনে এগিয়ে চলো l
*কুমারীদের সাথে:-*
সেবায় এগিয়ে যাওয়ার লিফ্ট কুমারীদের প্রাপ্ত হয়েছে l এই লিফ্টই শ্রেষ্ঠ গিফ্ট l এই
গিফ্ট কীভাবে ইউজ করতে হয় জানো তোমরা ! নিজেদের যত শক্তিশালী বানাবে, তোমরা সেবাও
ততই শক্তিশালী করবে l যদি নিজেরাই দুর্বল হও তবে তো সেবাও দুর্বল হবে, সেইজন্য
শক্তিশালী হয়ে শক্তিশালী সেবাধারী তৈরি হও l এইরকম প্রস্তুতি নিয়ে চলো, যাতে সময়ে
সফলতা-পূর্বক সেবায় নিয়োজিত হতে পার আর সামনের দিকে নম্বর নিয়ে নাও l এখন তো
তোমাদের পড়াশোনায় সময় দিতে হয়, তাহলে তো শুধু একটা কাজই করতে হবে, সেইজন্য যেখানেই
থাক ট্রেনিং নিতে থাক l নিমিত্ত হওয়া আত্মাদের সাহচর্যে নিজেদের প্রস্তুত করতে থাক
l তাহলে যোগ্য সেবাধারী হয়ে যাবে l তোমরা যত এগিয়ে যাবে ততই নিজেদেরই লাভ হবে l
*সেবাধারী - টিচার্স বোনেদের সাথে:-*
১) সেবাধারী অর্থাৎ সদা নিমিত্ত l নিমিত্ত ভাব - সেবাতে স্বতঃই সফলতা লাভ করায় l
নিমিত্ত ভাব নেই তো সফলতা নেই l সদা বাবার ছিলে, বাবার আছ আর বাবারই থাকবে - এইরকম
প্রতিজ্ঞা করেছ, না ? সেবাধারী অর্থাৎ যে তার প্রতি কদম বাবার কদমে রাখে l একেই
বলে, ফলো ফাদার হওয়া l তোমাদের প্রতি কদম শ্রেষ্ঠ মত অনুসরণে শ্রেষ্ঠ বানাও, এমনই
সেবাধারী তোমরা, তাই না ! সেবায় সফলতা প্রাপ্ত করা সেবাধারীদের শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য l
তাহলে সবাই তোমরা শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য বজায় রাখ, তাই না ! সেবাতে এবং নিজের মধ্যে ব্যর্থ
যত সমাপ্ত হয়ে যায়, ততই সেবা ও আত্মা (স্ব) শক্তিশালী হয় l সুতরাং ব্যর্থকে সমাপ্ত
করা এবং সদা শক্তিশালী থাকাই সেবাধারীদের বিশেষত্ব l তোমরা নিমিত্ত হওয়া আত্মারা যত
শক্তিশালী হবে, সেবাও ততই শক্তিশালী হবে l সেবাধারীর অর্থই হলো, সেবাতে সদা
উৎসাহ-উদ্দীপনায় থাকা l যারা সদা উৎসাহ-উদ্দীপনায় থাকে, তারা অন্যদের মধ্যেও উৎসাহ-
উদ্দীপনা জাগাতে পারে l সুতরাং, সদা প্রত্যক্ষরূপে উৎসাহ-উদ্দীপনা প্রতীয়মান হতে
দাও l এইরকম নয় যে, আমি ভিতরে তো সেইরকমই থাকি, কিন্তু বাইরে দেখা যায় না l গুপ্ত
পুরুষার্থ আলাদা ব্যাপার কিন্তু উৎসাহ-উদ্দীপনা লুকিয়ে থাকতে পারে না l তোমাদের
মুখে সদা উৎসাহ-উদ্দীপনার ঝলক নিজে থেকেই দেখা দেবে l তোমরা কিছু বলো বা নাই বলো,
কিন্তু চেহারা বলবেই, ঝলক বলবে l এমনই সেবাধারী তোমরা ?
সেবায় গোল্ডেন চান্স পাওয়া - এটাও শ্রেষ্ঠ ভাগ্যের লক্ষণ l সেবাধারী হওয়ার ভাগ্য তো
প্রাপ্ত হয়েছে, এখন তোমাদের ভাগ্য বানাতে হবে এবং দেখ সেবাধারী নম্বর ওয়ান নাকি টু
! শুধু একরকম ভাগ্য নয়, বরং ভাগ্যের উপরে ভাগ্যের প্রাপ্তি l ভাগ্য যত প্রাপ্ত করতে
থাকবে, সামনের দিকে নম্বরও নিজে থেকেই বেড়ে চলবে l একেই বলে, পদমাপদম ভাগ্যবান l এক
সাবজেক্টে নয়, সব সাবজেক্টে সফলতা স্বরূপ l আচ্ছা !
২) সবচেয়ে বেশি খুশি কার বাবার নাকি তোমাদের ? কেন বলছ না যে সবচেয়ে বেশি খুশি
তোমাদের ! দ্বাপর থেকে ভক্তিতে ডেকেছ আর এখন প্রাপ্ত করেছ তো কতো খুশি হবে ! ৬৩
জন্ম প্রাপ্তির ইচ্ছা রেখেছ আর ৬৩ জন্মের ইচ্ছা পূরণ হয়ে গেছে তাহলে কতো খুশি হবে !
কোনও কিছুর ইচ্ছা পূর্ণ হলে তো খুশি হয়ই, তাই না ! এই খুশিই বিশ্বকে খুশি দেবে l
তোমরা যখন খুশি হও তো সারা বিশ্ব খুশি হয় l এইরকম খুশি তোমাদের প্রাপ্ত হয়েছে, তাই
না ! যখন তোমরা বদলে যাও তো দুনিয়াও বদলে যায় l আর এমন বদল হয় যার মধ্যে দুঃখ আর
অশান্তির লেশমাত্র থাকে না l সুতরাং, সদা খুশিতে নাচতে থাক l সদা নিজের শ্রেষ্ঠ
কর্মের খাতা সঞ্চয় করে চলো l সবার মধ্যে খুশির খাজানা ভাগ করে দাও l আজকের সংসারে
খুশি নেই l সবাই খুশির জন্য ভিখারী, তাদের খুশিতে ভরপুর বানাও l সদা এই সেবাতে
এগিয়ে যেতে থাক l যে আত্মারা নিরুৎসাহ হয়ে গেছে তাদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা জাগাতে
থাক l কিছু করতে পারি না, কিছুই সম্ভবপর নয় - তারা এমনই হতাশার ভাবনা ভাবছে l
সুতরাং তোমরা বিজয়ী হয়ে তাদের বিজয়ী বানাও আর তাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা বাড়াও l সদা
বিজয়-স্মৃতির তিলক লেগে থাকতে দাও l তোমরা তিলকধারীও এবং স্বরাজ্য অধিকারীও - সদা
এই স্মৃতিতে থাক l
প্রশ্নঃ-
যারা কাছের নক্ষত্র তাদের লক্ষণ কি হবে ?
উত্তরঃ-
তারা সমান প্রতীয়মান হবে l কাছের নক্ষত্রদের মধ্যে
বাপদাদার গুণ আর কর্তব্য দৃশ্যমান হবে l যত নৈকট্য ততই সমতা থাকবে l তাদের মুখমন্ডল
বাপদাদার সাক্ষাৎকার করানোর দর্পণ হবে l তাদের দেখে লোকের বাপদাদার পরিচয় প্রাপ্ত
হবে l যদিও তারা দেখবে তোমাদের, কিন্তু আকৃষ্ট হবে বাপদাদার প্রতি l একেই বলে, 'সন
শোজ দ্য ফাদার l' স্নেহীর প্রতি কদমে, যার প্রতি স্নেহ-প্রেম থাকে তার ছাপ
প্রতীয়মান হয় l যত হর্ষিতমূর্ত ততই আকর্ষণ-মূর্ত হয়ে যায় l আচ্ছা !
বরদান:-
সেবা দ্বারা অনেক আত্মার আশীর্বাদ প্রাপ্ত করে সদা
অগ্রসর হয়ে মহাদানী ভব*
মহাদানী হওয়া অর্থাৎ অন্যদের সেবা করা, অন্যদের সেবা
করলে নিজের সেবা স্বতঃই হয়ে যায় l মহাদানী হওয়া অর্থাৎ নিজেকে সৌভাগ্যশালী করা, যত
আত্মাকে তোমরা সুখ, শক্তি ও জ্ঞানের দান দেবে, সেই আত্মাদের প্রাপ্তির আওয়াজ বা
কৃতজ্ঞতা যা কিছু বের হয়, তা' তোমাদের জন্য আশীর্বাদের রূপ হয়ে যাবে l এই আশীর্বাদই
এগিয়ে যাওয়ার সাধন l যার আশীর্বাদ প্রাপ্ত হয় সে সদা খুশি থাকে l সুতরাং রোজ
অমৃতবেলায় মহাদানী হওয়ার প্রোগ্রাম বানাও l কোনও সময়, বা একটা দিনও যেন এমন না হয়,
যখন দান দাওনি l
স্লোগান:-
এখনের প্রত্যক্ষ ফল আত্মাকে উড়তি কলার বল দেয় l