05.05.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমাদের ভালোবাসা একমাত্র বাবার সঙ্গে, কেননা তোমরা অসীম জগতের অবিনাশী উত্তরাধিকার
পাও, তোমরা ভালোবেসে বলো -- আমার বাবা"
প্রশ্নঃ -
কোনো দেহধারী
মানুষের বাণীর তুলনাই বাবার সঙ্গে করা যায় না -- কেন ?
উত্তরঃ -
কেননা বাবার এক একটি বাণী হলো মহাবাক্য । এই মহাবাক্য যে শ্রবণ করে সে মহান অর্থাৎ
পুরুষোত্তম হয়ে যায় । বাবার মহাবাক্য সুন্দর ফুল বানিয়ে দেয় । মানুষের বাক্য তো
মহাবাক্য নয়, এতে তো মানুষ আরো নীচে নেমে এসেছে ।
গীতঃ-
"এই দুনিয়ার
পরিবর্তন হয়ে যাবে......
ওম্ শান্তি ।
এই গানের
প্রথম লাইনে কিছু অর্থ আছে, বাকি সম্পূর্ণ গীত কোনো কাজের নয় । গীতাতে যেমন 'ভগবান
উবাচঃ," মন্মনাভব"," মধ্যাজী ভব" এই শব্দ গুলো সঠিক । একে বলা হয় আটার মধ্যে নুনের
মতো । এখন ভগবান কাকে বলা হয়, তা তো বাচ্চারা খুব ভালোভাবেই জেনে গেছে । ভগবান
শিববাবাকে বলা হয় । শিববাবা এসেই শিবালয় রচনা করেন । তিনি কোথায় আসেন ? এই
বেশ্যালয়ে । তিনি নিজেই এসে বলেন --- হে মিষ্টি - মিষ্টি অতি প্রিয়, হারানিধি
আত্মারূপী বাচ্চারা, একথা তো আত্মারাই শোনে, তাই না । তোমরা জানো যে, আমরা আত্মারা
হলাম অবিনাশী । এই দেহ হলো বিনাশী । আমরা আত্মারা এখন পরমপিতা পরমাত্মার কাছ থেকে
মহাবাক্য শ্রবণ করছি । মহাবাক্য হলো এক পরমপিতা পরমাত্মারই, যা আমাদের মহান পুরুষ
অর্থাৎ পুরুষোত্তম বানায় । বাকি যে মহাত্মা গুরু ইত্যাদি আছেন, তাঁদের বাক্যকে
মহাবাক্য বলা যাবে না । 'শিবোহম' যে শব্দ বলা হয় তাও সঠিক শব্দ নয় । তোমরা এখন
বাবার কাছ থেকে মহাবাক্য শ্রবণ করে ফুলে পরিণত হও । কাঁটা আর ফুলের মধ্যে কতো তফাৎ
। বাচ্চারা, তোমরা এখন জানো যে, আমাদের কোনো মানুষ শোনায় না । এনার উপর শিববাবা
বিরাজমান আছেন, ইনিও আত্মা, কিন্তু ওনাকে বলা হয় পরম আত্মা । পতিত আত্মারা এখন বলছে
--হে পরম আত্মা, তুমি এসো, তুমি এসে আমাদের পবিত্র করো । তিনি হলেনই পরমপিতা, পরম
বানান যিনি । তোমরা পুরুষোত্তম অর্থাৎ সব পুরুষের থেকে উত্তম পুরুষ হও । তাঁরা হলেন
দেবতা । পরমপিতা অক্ষর অতি মিষ্টি । সর্বব্যাপী বলে দিলে সেই মিষ্টি ভাব আসে না ।
তোমাদের মধ্যেও খুবই অল্প আছে, যারা ভালোবেসে অন্তরে বাবাকে স্মরণ করে, ওরা স্ত্রী
-পুরুষ তো স্থূলভাবে একে অপরকে স্মরণ করে । এ হলো আত্মাদের, পরমাত্মাকে অতি ভালোবেসে
স্মরণ করা । ভক্তিমার্গে এতো ভালোবেসে পুজো করতে পারে না । এই প্রেম সেখানে থাকে না
। তারা বাবাকে জানেই না, তাহলে এই প্রেম কিভাবে হবে ? বাচ্চারা, এখন তোমাদের বাবার
প্রতি অতি প্রেম আছে । আত্মা বলে --'আমার বাবা' । আত্মারা তো ভাই - ভাই, তাই না ।
প্রত্যেক ভাই বলে, বাবা আমাকে তাঁর নিজের পরিচয় দিয়েছেন । ওই ভালোবাসাকে কিন্তু
ভালোবাসা বলা যাবে না । যাঁর থেকে কিছু প্রাপ্তি হয়, তাঁর প্রতি ভালোবাসা থাকে ।
বাবার প্রতি বাচ্চাদের ভালোবাসা থাকে, কারণ বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার পাওয়া
যায় । যতো অবিনাশী উত্তরাধিকারের প্রাপ্তি, বাচ্চাদের ততই বেশী প্রেম থাকবে ।
বাবার কাছে যদি কিছুই সম্পদ না থাকে, দাদুর কাছে যদি থাকে, তাহলে তখন বাবার প্রতি
এতো ভালোবাসা থাকবে না । তখন আবার দাদুর প্রতি ভালোবাসা এসে যাবে । তখন মনে করবে,
এর থেকে অর্থ পাবো । এখন, ইনি তো হলেন অসীম জগতের পিতা । বাচ্চারা, তোমরা জানো যে,
বাবা আমাদের পড়ান । এ তো খুবই খুশীর কথা । ভগবান হলেন আমাদের বাবা । যেই রচয়িতা
বাবাকে কেউই জানে না । আর এই না জানার কারণে ওরা নিজেদের 'বাবা' বলে দেয় ।
বাচ্চাদের যেমন তোমরা জিজ্ঞেস করো , তোমার বাবা কে ? অবশেষে হয়তো বলে দেয়, আমি ।
তোমরা এখন জানো যে, ওইসব বাবাদেরও অবশ্যই বাবা আছে, আমরা এখন যে অসীম জগতের পিতাকে
পেয়েছি, তাঁর কোনো বাবা নেই । ইনিই হলেন উঁচুর থেকেও উঁচু, সর্বোচ্চ বাবা ।
বাচ্চাদের অন্তরে তাই খুশী থাকা উচিত । জাগতিক যাত্রায় যখন যায়, তখন এতো খুশী থাকবে
না, কেননা সেখানে প্রাপ্তি কিছুই নেই । সেখানে কেবল দর্শন করতে যায় । ফোকোটে কতো
ধাক্কা খায় সেখানে । এক তো তারা মাথা ঠোকে সেখানে, দ্বিতীয়, তাদের সব অর্থ খরচ হয়ে
যায় । তারা অর্থ অনেকই খরচ করে কিন্তু প্রাপ্তি কিছুই নেই । ভক্তিমার্গে যদি
প্রাপ্তি হতো তাহলে ভারতবাসী বিত্তবান হয়ে যেতো । ওরা এই মন্দির ইত্যাদি তৈরী করাতে
কোটি টাকা খরচ করে । তোমাদের এই সোমনাথের মন্দির একটাই ছিলো না । সব রাজাদের কাছেই
মন্দির ছিলো । তোমাদের কতো ঐশ্বর্য দিয়েছিলাম ---পাঁচ হাজার বছর পূর্বে তোমাদের এই
বিশ্বের মালিক বানিয়েছিলাম । এক বাবাই এমন বলতে পারেন । আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর
পূর্বে আমি তোমাদের রাজযোগ শিখিয়ে এমন বানিয়েছিলাম । এখন তোমরা কি হয়ে গেছো । এই
কথা তো বুদ্ধিতে আসা চাই, তাই না । আমরা কতো উচ্চ ছিলাম, পুনর্জন্ম নিতে নিতে একদম
নীচে এসে পড়েছি । এখন কড়ি তুল্য হয়ে গেছি । এখন আমরা আবার বাবার কাছে যাচ্ছি । যেই
বাবা আমাদের এই বিশ্বের মালিক বানান । এ হলো একই যাত্রা, যেখানে আত্মাদের বাবা
মিলিত হন, তাই তোমাদের অন্তরে সেই প্রেম থাকা চাই । বাচ্চারা, তোমরা যখন এখানে আসো,
তখন তোমাদের বুদ্ধিতে থাকা চাই যে, আমরা সেই বাবার কাছে যাই, যাঁর কাছ থেকে আমরা
আবার এই বিশ্বের বাদশাহী পাই । ওই বাবা আমাদের শিক্ষা দেন -- বাচ্চারা, দৈবী গুণ
ধারণ করো । সর্বশক্তিমান, পতিত -পাবন, আমি তোমাদের বাবা, তোমরা আমাকে স্মরণ করো ।
আমি কল্পে -কল্পে এসে তোমাদের বলি যে - তোমরা আমাকে (মামেকম্) স্মরণ করো, তাহলে
তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে । তোমাদের মনে এই কথা আসা চাই যে, আমরা অসীম জগতের পিতার
কাছে এসেছি । বাবা বলেন, আমি হলাম গুপ্ত । তোমরা মনে করো, আমরা শিববাবার কাছে যাই,
ব্রহ্মা দাদার কাছে যাই । যে কম্বাইন্ড, আমরা তাঁর সঙ্গে মিলিত হতে যাই, যাঁর দ্বারা
আমরা এই বিশ্বের মালিক হই । তোমাদের অন্তরে কতো অপার খুশী হওয়া উচিত । মধুবনে আসার
জন্য যখন বাড়ি থেকে বের হও, তখন অন্তরে খুশীতে গদগদ হওয়া চাই । বাবা আমাদের পড়ানোর
জন্য এসেছেন, তিনি আমাদের দৈবী গুণ ধারণ করার যুক্তি বলে দেন । ঘর থেকে বের হওয়ার
সময় অন্তরে এই খুশী থাকা চাই । কন্যা যখন তার পতির সঙ্গে মিলিত হতে যায়, তখন গয়না
ইত্যাদি পড়ে, তখন তার মুখ আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে যায় । সেই মুখ হাসিতে উজ্জ্বল হয়
দুঃখ পাওয়ার জন্য । তোমাদের মুখ উজ্জ্বল হয় সদা সুখ পাওয়ার জন্য । তাই এমন বাবার
কাছে আসার সময় কতো খুশী হওয়া উচিত । আমরা এখন অসীম জগতের পিতাকে পেয়েছি । সত্যযুগে
যখন যাবে, তখন ডিগ্রি কম হয়ে যাবে । তোমরা তো এখন ব্রাহ্মণ ঈশ্বরীয় সন্তান ।
ভগবান বসে তোমাদের পড়ান । তিনি আমাদের বাবাও, আবার টিচারও, তিনি আমাদের পড়ান, আবার
তিনিই আমাদের পবিত্র করে সঙ্গে নিয়ে যাবেন । আমরা আত্মারা এখন এই ছি - ছি রাবণ
রাজ্য থেকে মুক্ত হয়ে যাবো । আমাদের অন্তরে অপার খুশী হওয়া চাই -- বাবা যখন আমাদের
এই বিশ্বের মালিক বানান, তাহলে আমাদের কতো ভালোভাবে পড়া চাই । ছাত্ররা যদি খুব
ভালোভাবে পড়াশোনা করে, তাহলে খুব ভালো নম্বর নিয়ে পাস করে । বাচ্চারা বলে --বাবা,
আমরা তো শ্রী নারায়ণ তৈরী হবো । এই হলো সত্যনারায়ণের কথা, অর্থাৎ নর থেকে নারায়ণ
হওয়ার কথা । তোমরা ওই মিথ্যা কথা জন্ম - জন্মান্তর ধরে শুনে এসেছো । এখন তোমরা
বাবার কাছ থেকে একবারের জন্যই এই সত্য কথা শোনো । ওই কথা তো ভক্তিমার্গে চলে এসেছে
। শিব বাবার যেমন অবতরণ হয়েছে বলে বর্ষ বর্ষ তাঁর জয়ন্তী পালন করা হয় । তিনি কবে
এসেছিলেন, কি করলেন, মানুষ কিছুই জানে না । আচ্ছা, কৃষ্ণের জয়ন্তীও তো পালন করে,
তিনিও কবে এলেন, কি করলেন, কিছুই জানে না । ওরা বলে তিনি কংসপুরীতে আসেন, কিন্তু
তিনি এই পতিত দুনিয়াতে কিভাবে জন্ম নেবেন ! বাচ্চাদের কতটা খুশী হওয়া উচিত -- আমরা
অসীম জগতের পিতার কাছে যাই । অনুভবও তো শোনায়, তাই না -- আমার অমুকের দ্বারা তীর
লেগেছে যে, বাবা এসেছেন । ব্যস্, সেই দিন থেকে শুরু করে আমি বাবাকেই স্মরণ করি ।
এ হলো তোমাদের বড়র থেকেও বড় বাবার কাছে আসার যাত্রা । বাবা তো চৈতন্য, তিনি
বাচ্চাদের কাছেও যান । ও হলো জড় যাত্রা । আর এখানে তো বাবা চৈতন্য । আমরা আত্মারা
যেমন কথা বলি, তেমনই পরমাত্মা বাবাও শরীরের দ্বারা কথা বলেন । এই পড়া হলো ভবিষ্যত
২১ জন্ম শরীর নির্বাহের জন্য । সে হলো কেবল এক জন্মের জন্য । এখন তোমাদের কোন পড়া
পড়ার প্রয়োজন বা কোন কাজ করার প্রয়োজন ? বাবা বলেন যে, তোমরা দুইই করো ।
সন্ন্যাসীদের মতো তোমাদের বাড়িঘর ত্যাগ করে জঙ্গলে যেতে হবে না । এ তো প্রবৃত্তি
মার্গ, তাই না । দুইয়ের জন্যই পড়া আছে । সবাই তো পড়বেও না । কেউ ভালো পাঠ নেবে, কেউ
আবার কম । কারোর আবার চট করে তীর লেগে যাবে । কেউ তো উন্মত্তের মতো বলতে থাকবে ।
কেউ বলে -- হ্যাঁ, আমরা বোঝার চেষ্টা করবো । কেউ আবার বলবে - এ তো একান্তে বোঝার মতো
কথা । ব্যস, আবার তারা হারিয়ে যাবে । কারোর যদি এই জ্ঞানের তীর লাগে, তারা চট করে
বুঝতে আসবে । কেউ আবার বলবে -- আমাদের তো সময় নেই । তাহলে মনে করবে তীর লাগেই নি ।
দেখো, বাবার এই জ্ঞানের তীর বিদ্ধ হয়েছিলো, তাই চট করে ছেড়ে দিয়েছিলেন, তাই না ।
তিনি মনে করেছিলেন, বাদশাহী পাবো, এর সামনে এসবের কি মূল্য ? আমাকে তো বাবার থেকে
রাজত্ব পেতে হবে । বাবা এখন বলছেন, ওইসব কাজ করবার করো, কেবল এক সপ্তাহ খুব ভালো করে
এই শিক্ষা বোঝো । গৃহস্থ জীবনকেও রক্ষা করতে হবে । রচনার লালন পালনও করতে হবে । ওরা
তো রচনা করে (স্ত্রী, সন্তান) তারপর পালিয়ে যায় । বাবা বলেন যে, তোমরা যখন রচনা
করেছো, তখন তার সুরক্ষা করো । মনে করো, স্ত্রী বা সন্তান তোমার কথা শোনে, তো
সুপুত্র । আর যদি না শোনে, তো কুপুত্র । কে সুপুত্র আর কে কুপুত্র, সে তো জানতে পারা
যায়, তাই না । বাবা বলেন যে, তোমরা যদি শ্রীমতে চলো তাহলে শ্রেষ্ঠ হতে পারবে । না
হলে তো অবিনাশী উত্তরাধিকার পাবে না । তোমরা পবিত্র হয়ে, সুপুত্র হয়ে নাম উজ্জ্বল
করো । তীর বিদ্ধ হলে তখনই বলবে -- এখনই তো আমরা প্রকৃত উপার্জন করবো । বাবা এসেছেন,
আমাদের শিবালয়ে নিয়ে যেতে । তাই সেই শিবালয়ে যাবার জন্য তো উপযুক্ত হতে হবে । এখানে
অনেক পরিশ্রম আছে । তোমরা বলো -- এখন শিববাবাকে স্মরণ করো, কেননা মৃত্যু সামনে
উপস্থিত । কল্যাণ তো ওদেরও করতে হবে, তাই না । বলো - এখন তোমরা স্মরণ করো, তাহলে
বিকর্ম বিনাশ হবে । বাচ্চারা, তোমাদের দায়িত্ব হলো বাবার ঘর আর শ্বশুর ঘরের উদ্ধার
করা, যেহেতু তোমাদের সেখানে ডাকা হয়, তো তোমাদেরও দায়িত্ব হলো তাদের কল্যাণ করা ।
তোমাদের দয়ালু হওয়া উচিত । তোমাদের পতিত তমোপ্রধান মানুষকে সতোপ্রধান হওয়ার পথ বলে
দিতে হবে । তোমরা জানো যে, প্রতিটি জিনিসই অবশ্যই নতুন থেকে পুরানো হয় । নরকে তো
সবাই পতিত আত্মা, তাই তো তারা গঙ্গা স্নান করে পবিত্র হতে যায় । প্রথমে তো বোঝো,
আমরা পতিত, তাই পবিত্র হতে হবে । বাবা আত্মাদের বলেন, তোমরা যদি আমাকে স্মরণ করো,
তাহলে তোমাদের পাপ নষ্ট হয়ে যাবে । সাধু -সন্ত ইত্যাদি যারাই বলে সবাইকে এই খবর
দিয়ে দাও যে, বাবা বলেন, তোমরা আমাকে স্মরণ করো । এই যোগ অগ্নির দ্বারা অথবা
স্মরণের যাত্রায় তোমাদের খাদ দূর হয়ে যাবে । তোমরা পবিত্র হয়ে আমার কাছে চলে আসবে
। আমি তোমাদের সকলকে সঙ্গে করে নিয়ে যাবো । বিছে যেমন চলতে থাকে, কোথাও নরম জিনিস
দেখলেই কামড়ে দেয় । পাথরকে কামড়ে দিয়ে কি করবে ! তোমরাও বাবার পরিচয় দাও । বাবা এও
বুঝিয়েছেন ---আমার ভক্ত কোথায় থাকে । শিবের মন্দিরে, কৃষ্ণের মন্দিরে, লক্ষ্মী -
নারায়ণের মন্দিরে । ভক্ত তো আমার ভক্তি করতে থাকে । তারাও তো আমার সন্তান, তাই না ।
আমরা থেকে রাজ্য ভাগ্য নিয়েছিলো, এখন পূজ্য থেকে পূজারী হয়ে গেছে । ওরা তো
দেবতাদের ভক্ত, তাই না । এক নম্বর হলো শিবের অব্যভিচারী ভক্তি । এরপর নামতে নামতে
এখন তো ভূত পুজো করতে শুরু করেছে । শিবের পূজারীদের বোঝাতে সহজ হবে । এই সমস্ত
আত্মাদের বাবা হলেন শিববাবা । তিনি স্বর্গের উত্তরাধিকার দেন । বাবা এখন বলছেন --
তোমরা আমাকে স্মরণ করো, তাহলেই তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে । আমি তোমাদের এই খবর
জানাই । বাবা এখন বলেন -- পতিত পাবন, জ্ঞানের সাগর হলাম আমি । আমি এখন তোমাদের
জ্ঞানও শোনাচ্ছি । পবিত্র হওয়ার জন্য তোমাদের যোগও শেখাচ্ছি । ব্রহ্মা তনের দ্বারা
আমি তোমাদের এই খবর দিচ্ছি যে, তোমরা আমাকে স্মরণ করো । তোমাদের ৮৪ জন্মকে স্মরণ করো
। তোমরা ভক্তদের পাবে মন্দিরে, আর পাবে কুম্ভ মেলায় । ওখানে তোমরা তাদের বোঝাতে
পারবে যে পতিত পাবন গঙ্গা, নাকি পরমাত্মা ?
বাচ্চাদের তাই এই খুশী থাকা চাই যে, আমরা কার কাছে যাই । ইনি কতো সাধারণ । কি বড়
ভাব দেখাবেন ? শিববাবা কি করছেন যে বড় মানুষ মনে হবে ? সন্ন্যাসীর গেরুয়া বস্ত্র তো
পড়েন না । বাবা বলেন যে, আমি তো সাধারণ মানুষের শরীর আশ্রয় করি । তোমরাই রায় দাও যে
আমি কি করবো ? এই রথের কি শৃঙ্গার করবো ? ওরা হুসেনের ঘোড়া বের করে, তাকে শৃঙ্গার
করায় । ইনি হলেন শিববাবার রথ, একে ষাঁড় বানিয়ে দিয়েছে । ষাঁড়ের মাথায় গোল গোল
শিবের চিত্র দেখানো হয় ।এখন শিববাবা ষাঁড়ের মধ্যে কোথা থেকে আসবেন ? মন্দিরে তাহলে
ষাঁড় কেন রাখে ? শঙ্করের বাহন বলা হয় । সূক্ষ্ম বতনে কি শঙ্করের বাহন থাকে ? এ সবই
হলো ভক্তি মার্গ, যা এই ড্রামাতে নিহিত আছে । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন
নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে, আমরা এখন প্রকৃত উপার্জন করে নিজেকে শিবালয়ে
যাওয়ার উপযুক্ত করবো । সুপুত্র হয়ে শ্রীমতে চলে বাবার নাম উজ্জ্বল করবো ।
২) দয়ালু হয়ে
তমোপ্রধান মানুষদের সতোপ্রধান বানাতে হবে । সকলের কল্যাণ করতে হবে। মৃত্যুর পূর্বে
সবাইকে বাবার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে হবে ।
বরদান:-
'আপনিই
ঠিক' (হাঁ জী) এর পাঠের দ্বারা সেবাতে মহান হওয়ার জন্য সকলের শুভ কামনার পাত্র ভব
যে কোনো সেবা খুশী আর
উৎসাহের সঙ্গে করতে করতে সদা যেন খেয়াল থাকে যে, যে সেবা করছি, তাতে যেন সকলের শুভ
কামনা প্রাপ্ত হয়, কেননা যেখানে শুভ কামনা থাকে, সেখানে পরিশ্রম থাকে না । এখন এই
লক্ষ্য যেন থাকে যে, যার সম্পর্কেই আসি না কেন, তার শুভ কামনা যেন প্রাপ্ত করি । 'সম্মতির'
পাঠই হলো শুভ কামনা প্রাপ্ত করার সাধন । কেউ যদি ভুলও বলে, তাকে ভুল বলে ধাক্কা
দেওয়ার পরিবর্তে তার অবলম্বন হয়ে তাকে তুলে ধরো । সহযোগী হও । তাহলে তার থেকেও
সন্তুষ্টতার শুভেচ্ছা প্রাপ্ত করবে । যে শুভ কামনা প্রাপ্ত করাতে মহান হয়, সে
শীঘ্রই মহান হয়ে যায় ।
স্লোগান:-
কঠোর
পরিশ্রমের সঙ্গে সঙ্গে নিজের স্থিতিকেও দৃঢ় করার লক্ষ্য রাখো ।