19.05.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমরা এখন শান্তিধাম আর সুখধামে যাওয়ার জন্য ঈশ্বরীয় ধামে বসে আছো, এ হলো সৎসঙ্গ,
যেখানে তোমরা পুরুষোত্তম তৈরী হচ্ছো"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
তোমরা বাবার থেকেও উঁচু, নীচ নয় -- তা কিভাবে ?
উত্তরঃ -
বাবা বলেন -- বাচ্চারা, আমি এই বিশ্বের মালিক হই না, আমি তোমাদের এই বিশ্বের মালিক
বানাই, সেইসঙ্গে এই ব্রহ্মাণ্ডেরও মালিক বানাই । বাচ্চারা, আমি উঁচুর থেকেও উঁচু
বাবা তোমাদের নমস্কার জানাই, যে বাবা তোমাদের এমন বানান, তোমরাও তাঁকে নমস্কার করো
।
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি -
মিষ্টি আত্মা রূপী সন্তানদের নমস্কার । তোমরা উত্তর করো না কিন্তু বলো -- বাবা
নমস্কার, কেননা বাচ্চারা জানে যে, বাবা আমাদের যেমন এই ব্রহ্মাণ্ডের মালিক বানান,
তেমনই এই বিশ্বের মালিকও বানান । বাবা তো কেবল এই ব্রহ্মাণ্ডের মালিক হন, এই
বিশ্বের মালিক হন না । তিনি বাচ্চাদের ব্রহ্মাণ্ড এবং বিশ্ব এই দুইয়েরই মালিক
বানান, তাহলে বলো - কে বড় হলো ? বাচ্চারাই তো বড় হলো, তাই তিনি বাচ্চাদের নমস্কার
করেন । বাবা, তুমিই আমাদের এই ব্রহ্মাণ্ড এবং বিশ্বের মালিক বানাও, তাই তোমাকেও
নমস্কার । মুসলমানরাও সালেকম সেলাম, সেলাম মলেকম বলে থাকে, তাই না । বাচ্চারা,
তোমাদের এই হলো খুশী । যার নিশ্চয় আছে, নিশ্চয় (দৃঢ় বিশ্বাস) ছাড়া কেউই তো এখানে
আসতে পারে না । এখানে যে আসে, সে জানে যে, আমি কোনো মনুষ্য গুরুর কাছে যাচ্ছি না ।
আমরা মনুষ্য বাবার কাছে, মনুষ্য টিচারের কাছে বা মনুষ্য গুরুর কাছে যাই না । তোমরা
আসো আধ্যাত্মিক বাবা, আধ্যাত্মিক টিচার, আধ্যাত্মিক সদগুরুর কাছে । ওই মনুষ্য তো
অনেকই আছে । এ হলো একই । এই পরিচয় কেউই জানতো না । ভক্তিমার্গের শাস্ত্রেও আছে যে,
রচয়িতা আর রচনাকে কেউই জানে না । আর এই না জানার কারণে তাদের অনাথ বলা হয় । যে খুব
ভালোভাবে লেখাপড়া করে, সেই বুঝতে পারে যে, আমাদের সকল আত্মার এক বাবা হলেন নিরাকার
। তিনি এসেই একাধারে বাবা, টিচার এবং সদগুরু হন । গীতাতে কৃষ্ণের নামের মহিমা করা
হয়েছে । গীতা হলো সর্ব শাস্ত্র শিরোমণি, সর্বোত্তম । গীতাকেই মাতা - পিতা বলা হয়,
আর যা শাস্ত্র আছে, তাকে মাতা - পিতা বলা হবে না । শ্রীমদ্ভগবদগীতা যে মাতা, এমন
মহিমা আছে । ভগবানের মুখ কমল থেকে নিঃসৃত এই গীতার জ্ঞান । বাবা হলেন উঁচুর থেকেও
উঁচু, তাহলে অবশ্যই সর্বোচ্চ মহিমা যে গীতার, সেই হলো রচয়িতা । বাকি সব শাস্ত্র হলো
এর পাতা অর্থাৎ রচনা । রচনা থেকে কোনো উত্তরাধিকার পাওয়া যায় না । যদিও পাওয়া যায়,
তাও অল্পকালের জন্য । বাকি যে সব শাস্ত্র আছে, তা পাঠ করলে অল্পকালের জন্য সুখ
পাওয়া যায়, তাও এক জন্মের জন্য । যা মানুষই মানুষকে পড়ায় । সমস্ত প্রকারের যে সব
পড়া আছে, তা অল্পকালের জন্য মানুষই মানুষকে পড়ায় । অল্পকালের সুখ পায় তারপর অন্য
জন্মে অন্য পড়া পড়তে হয় । এখানে তো এক নিরাকারী বাবাই আছেন, যিনি ২১ জন্মের জন্য
অবিনাশী উত্তরাধিকার দেন । কোনো মানুষ তো এমন দিতে পারে না । ওরা তো কপর্দকশূন্য
বানিয়ে দেয় । বাবা তোমাদের পাউন্ড তৈরী করেন । বাবা এখন বসে বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন ।
তোমার সকলেই তো ঈশ্বরের সন্তান, তাই না । সর্বব্যাপী বলাতে অর্থ কিছুই বুঝতে পারে
নি । সবারমধ্যে যদি পরমাত্মা থাকে তাহলে সবাই তো বাবা হয়ে গেলো । বাবাই বাবা,
তাহলে উত্তরাধিকার কোথা থেকে পাওয়া যাবে ? কার দুঃখ কে হরণ করবে ? বাবাকেই
দুঃখহর্তা এবং সুখকর্তা বলা হয় । বাবাই বাবা, এর তো কোনো অর্থই হয় না । বাবা বসে
বোঝান - এ হলো রাবণ রাজ্য । এও এই নাটকেই নিহিত আছে তাই চিত্রতেও পরিস্কারভাবে
দেখানো হয়েছে ।
বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে আছে -- আমরা এখন পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে আছি । বাবা
আমাদের পুরুষোত্তম বানাতে এসেছেন । যেমন ব্যরিস্টারী, ডাক্তারী আদি পড়ে, যাতে পদ
পায় । মনে এই পড়াতে আমরা অমুক হবো । এখানে তোমার সৎএর সঙ্গে বসে আছো, যাঁর জন্য
তোমরা সুখধামে যাও । সৎ ধামও দুটি আছে -- এক সুখধাম, দ্বিতীয় হলো শান্তিধাম । এ
হলো ঈশ্বরের ধাম । বাবা তো রচয়িতা, তাই না । যারা বাবার কাছে বুঝে সতর্ক হয়ে যায়
-- তাদের কর্তব্য হলো সেবা করা । বাবা বলবেন - তোমার এখন বুঝে সাবধান হয়েছো, তাহলে
শিবের মন্দিরে গিয়ে বোঝাও, তাদের বলো, তোমার এঁর উপর ফল, ফুল, মাখন, ঘি, আকন্দ ফুল,
গোলাপ ফুল এমন ভিন্ন - ভিন্ন কেন নিবেদন করো ? কৃষ্ণের মন্দিরে আকন্দের ফুল নিবেদন
করা হয় না । তাঁকে খুব সুন্দর সুগন্ধিত ফুল নিবেদন করা হয় । শিবকে আকন্দের ফুল আবার
গোলাপ ফুলও নিবেদন করা হয় । এর অর্থ তো কেউই জানে না । এই সময় বাচ্চারা, তোমাদের
বাবা পড়ান, কোনো মানুষ পড়ান না । আর সম্পূর্ণ দুনিয়ায় মানুষ মানুষকে পড়ায় । তোমাদের
ভগবান পড়ান । কোনো মানুষকে কখনোই ভগবান বলা হয় না । লক্ষ্মী - নারায়ণকেও ভগবান নয়,
তাঁদের দেবতা বলা হয় । ব্রহ্মা - বিষ্ণু - শঙ্করকেও দেবতা বলা হবে ভগবান হলেন এক
বাবা, তিনি হলেন সমস্ত আত্মাদের বাবা । সবাই বলেও থাকে -- হে পরমপিতা পরমাত্মা ।
তাঁর প্রকৃত নাম হলো শিব, আর বাচ্চারা, তোমরা হলে শালগ্রাম । পণ্ডিতরা যখন রুদ্র
যজ্ঞের রচনা করেন, তখন শিবের অনেক বড় লিঙ্গ বানানো হয়, আর ছোটো ছোটো শালগ্রাম
বানানো হয় । আত্মাদের শালগ্রাম বলা হয় । পরমাত্মাকে শিব বলা হয় । তিনিই হলেন
সকলের বাবা, আমরা সকলেই হলাম ভাই - ভাই, বলাও হয় ব্রাদারহুড । বাবার সন্তান আমরা
হলাম ভাই - ভাই । তাহলে ভাই - বোন কিভাবে হলাম ? প্রজাপিতা ব্রহ্মার মুখের দ্বারা
প্রজার রচনা করা হয় । তারা হলো ব্রাহ্মণ আর ব্রহ্মাণী । আমরা প্রজাপিতা ব্রহ্মার
সন্তান, তাই আমাদের বি .কে বলা হয় । আচ্ছা, ব্রহ্মাকে কে জন্ম দিয়েছে ? ভগবান ।
ব্রহ্মা - বিষ্ণু - শঙ্কর --- এ সবই হলো সৃষ্টি ।সূক্ষ্মবতনেরও রচনা হয়েছে ।
ব্রহ্মা মুখ কমল থেকে তোমার বাচ্চারা তৈরী হয়েছো । তোমাদের ব্রাহ্মণ - ব্রাহ্মণী
বলা হয় । তোমার ব্রহ্মার দত্তক সন্তান ব্রহ্মা মুখ বংশাবলী । প্রজাপিতা ব্রহ্মা
কিভাবে সন্তানের জন্ম দেবেন ? অবশ্যই তিনি দত্তক নেবেন । গুরুরা যেমন অনুসরণকারীদের
দত্তক নেন, তাদের বলা হবে শিষ্য । তাই প্রজাপিতা ব্রহ্মা সম্পূর্ণ দুনিয়ার পিতা
হয়ে গেলেন । তাঁকে বলা হয় গ্রেট - গ্রেট - গ্রেট ফাদার । প্রজাপিতা ব্রহ্মাকে তো
এখানেই চাই, তাই না । সূক্ষ্মবতনেও ব্রহ্মা আছেন । ব্রহ্মা - বিষ্ণু.- শঙ্কর এই
নামের মহিমা করা হয়, কিন্তু সূক্ষ্ম বতনে তো প্রজা থাকেই না । প্রজাপিতা ব্রহ্মা
কে, এসব বাবা বসেই বোঝান । ওই ব্রাহ্মণরাও নিজেদের ব্রহ্মার সন্তান বলে পরিচয় দেন ।
ব্রহ্মা এখন কোথায় আছে ? তোমরা বলবে এখানে বসে আছে, ওরা বলবে, এ অনেক আগে হয়ে গেছে
। ওরা তো নিজেদের পূজারী ব্রাহ্মণ বলে পরিচয় দেয় । তোমরা তো এখন প্রত্যক্ষ ভাবে
আছো । প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান তোমরা নিজেদের মধ্যে ভাই - বোন হয়ে গেছো ।
ব্রহ্মাকে শিববাবা দত্তক নিয়েছেন । তিনি বলেন, আমি এই বৃদ্ধ শরীরে প্রবেশ করে
তোমাদের রাজযোগ শেখাই । মানুষকে দেবতা তৈরী করা, এ কোনো মানুষের কাজ নয় । বাবাকেই
রচয়িতা বলা হয় । ভারতবাসী এও জানে যে, শিবজয়ন্তীও পালন করা হয় । শিব হলেন আমাদের
বাবা । মানুষ এও জানে না যে, দেবী - দেবতাদের এই রাজ্য কে দিয়েছিলেন ? স্বর্গের
রচয়িতা হলেনই পরমাত্মা, যাঁকে পতিত - পাবন বলা হয় । আত্মা মূল স্বরূপে পবিত্র হয়,
তারপর সতো, রজঃ এবং তমোতে আসে । এইসময় কলিযুগে সকলেই তমোপ্রধান, সত্যযুগে সতোপ্রধান
ছিলো । আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে এই লক্ষ্মী - নারায়ণের রাজ্য ছিলো । ২৫০০ বছর
দেবতাদের রাজত্বকাল চলেছিলো । তাঁদের সন্তানরাও রাজত্ব করেছিলো । লক্ষ্মী - নারায়ণ
দি ফার্স্ট, দি সেকেণ্ড, এমনভাবে চলতে থাকে । মানুষ এইসব বিষয়ে কিছুই জানে না । এই
সময় হলো সকলেই তমোপ্রধান এবং পতিত । এখানে একজন মানুষও পবিত্র থাকতে পারে না ।
সকলেই ডাকতে থাকে, হে পতিত পাবন, এসো । তাহলে এ তো পতিত দুনিয়াই হলো তাই না । একেই
কলিযুগ বা নরক বলা হয় । নতুন দুনিয়াকে স্বর্গ, পাবন দুনিয়া বলা হয় । এরপরে আবার
কি করে পতিত হয়, এ কেউই জানে না । ভারতে এমন একজনও মানুষ নেই, যে নিজের ৮৪ জন্মকে
জানে । মানুষ সবথেকে বেশী ৮৪ জন্ম নেয় আর সবথেকে কম এক জন্ম ।
ভারতকে অবিনাশী খণ্ড মানা হয়, কেননা এখানেই শিববাবার অবতরণ হয় ভারত খণ্ডের কখনোই
বিনাশ সম্ভব নয় । বাকি যা অনেক খণ্ড আছে, তার বিনাশ হয়ে যাবে । এই সময় আদি সনাতন
দেবী - দেবতা ধর্ম প্রায় লোপ হয়ে গেছে । কেউই এখন নিজেদের দেবতা বলে না, কেননা
দেবতারা ছিলেন সতোপ্রধান, পাবন । এখন তো সকলেই পতিত এবং পূজারী হয়ে গেছে । এও
বাবাই বসে বোঝান । ভগবান উবাচঃ, তাই না ! ভগবান হলেন সকলের বাবা, তিনি একই বার এই
ভারতে আসেন । তিনি কবে আসেন ? এই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে । এই সঙ্গম যুগকেই
পুরুষোত্তম বলা হয় । এই সঙ্গম যুগ হলো কলিযুগ থেকে সত্যযুগ আর পতিত থেকে পাবন
হওয়ার যুগ । কলিযুগে থাকে পতিত মানুষ, সত্যযুগে থাকে পবিত্র দেবতা, তাই এই যুগকে
বলা হয় পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ, যখন বাবা এসে পতিত থেকে পাবন করেন । তোমরা এখানে
এসেছো মানুষ থেকে পুরুষোত্তম দেবতা হতে । মানুষ তো একথাও জানে না যে, আমরা আত্মারা
নির্বাণধামে থাকি । সেখান থেকেই অভিনয় করতে আসি । এই নাটকের আয়ু হলো পাঁচ হাজার
বছর । আমরা এই অসীম জগতের নাটকে অভিনয় করি । এখানে সব মানুষই অভিনেতা । এই নাটকের
চক্র ঘুরতেই থাকে । কখনোই তা বন্ধ হয় না । এই নাটকে প্রথমের দিকে সত্যযুগে অভিনয়
করতে আসে দেবী - দেবতা । তারপর ত্রেতাতে আসে ক্ষত্রিয় । এই নাটককেও তো জানা চাই,
তাই না । এ হলো কাঁটার জঙ্গল । এখানে সব মানুষই দুঃখী । কলিযুগের পরে আবার সত্যযুগ
আসে ।কলিযুগে তো অনেক মানুষ, সত্যযুগে কতো মানুষ থাকবে ? খুবই অল্প । আদি সনাতন
সূর্যবংশী দেবী দেবতাই থাকবে । এই পুরানো দুনিয়ার এখন পরিবর্তন হতে হবে । মনুষ্য
সৃষ্টি থেকে আবার দেবতাদের সৃষ্টি হবে । ভারতে আদি সনাতন দেবী দেবতাদের ধর্ম ছিলো
কিন্তু এখন তোমরা নিজেদের দেবতা বলো না । তোমরা নিজের ধর্মই ভুলে গেছো । এ কেবল
ভারতবাসীই, যারা নিজের ধর্ম ভুলে গেছে, হিন্দুস্থানে থাকার কারণে নিজেদের হিন্দু
বলে দেয় । দেবতারা পবিত্র ছিলো, এরা হলো পতিত, তাই নিজেদের দেবতা বলতে পারে না ।
তারা দেবতাদের পুজো করতে থাকে । নিজেদের পাপী - নীচ বলে । বাবা এখন বোঝাচ্ছেন,
তোমরাই পূজ্য ছিলে, আবার তোমরাই পূজারী পতিত হয়েছো । 'আমিই সেই' এই অর্থও তিনি
বুঝিয়েছেন । ওরা তো বলে দেয় আত্মাই পরমাত্মা । এ হলো মিথ্যা মায়া --- সত্যযুগে এমন
বলবে না । বাবা সত্যখণ্ডের স্থাপনা করেন, রাবণ করে মিথ্যা খণ্ডের স্থাপনা । আত্মা
কি -- আর পরমাত্মা কি --এও বাবা এসেই বোঝান । এও কেউই জানে না । বাবা বলেন, তুমি
আত্মা বিন্দু, তোমাদের মধ্যে ৮৪ জন্মের পার্ট লিপিবদ্ধ হয়ে আছে । আমি আত্মা কেমন --
এ কেউই জানে না । আমি ব্যরিস্টার, আমি অমুক -- এ কথা জানে, বাকি আত্মাকে একজনও মানে
না । বাবা এসেই পরিচয় দেন । তোমাদের আত্মার মধ্যে ৮৪ জন্মের পার্ট অবিনাশী ভাবে
লিপিবদ্ধ হয়ে আছে, যা কখনোই বিনাশ হতে পারে না । এই ভারত ছিলো ফুলের বাগিচা । সুখই
সুখ ছিলো তখন, এখন দুঃখই দুঃখ । বাবা এই জ্ঞান দেন ।
বাচ্চারা, তোমরা বাবার কাছে এখন নতুন নতুন কথা শোনো । সবথেকে নতুন কথা হলো --
তোমাদের এখন মানুষ থেকে দেবতা হতে হবে । তোমরা জানো যে, মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার পড়া
কোনো মানুষ পড়ায় না, ভগবান পড়ান । সেই ভগবানকে সর্বব্যাপী বলা - এ তো গালি দেওয়া
হয়ে গেলো । বাবা এখন বোঝাচ্ছেন - আমি প্রতি পাঁচ হাজার বছর পরে এসে এই ভারতকে
স্বর্গ বানাই । রাবণ বানায় নরক । এই কথা দুনিয়ার আর কেউই জানে না । বাবা এসেই
তোমাদের মানুষ থেকে দেবতা বানায় । এমন কথাও আছে যে -- "দুর্গন্ধ যুক্ত ময়লা কাপড়
পরিস্কার করে....." (মূত পলিথিন কাপড়ে ধোয়ে) ।ওখানে বিকার থাকে না । সে হলো
সম্পূর্ণ নির্বিকারী দুনিয়া । এখন হলো বিকারী দুনিয়া । মানুষ ডাকেও - হে পতিত পাবন,
এসো । রাবণ আমাদের পতিত বানিয়েছে, কিন্তু জানেই না যে রাবণ কবে এসেছে, কি হয়েছিলো ।
রাবণ কতো কাঙ্গাল করে দিয়েছে । পাঁচ হাজার বছর পূর্বে ভারত কতো বিত্তবান ছিলো ।
সেখানে সোনা - হীরে - জহরতের মহল ছিলো । সেখানে কতো ধন - সম্পদ ছিলো । এখন এখানকার
পরিস্থিতি কি ! তাই বাবা ব্যতীত আর কেউই মুকুটধারী বানাতে পারে না । তোমরা এখন বলো
-- শিববাবা ভারতকে হেভেন বানায় । বাবা এখন বলছেন - মৃত্যু সামনে উপস্থিত । তোমরা
হলে বানপ্রস্থী । এখন তোমাদের ফিরে যেতে হবে তাই নিজেকে আত্মা মনে করো, আমাকে
(মামেকম্ ) স্মরণ করো, তাহলেই পাপ ভস্ম হয়ে যাবে । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন
নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
আমরা হলাম ব্রহ্মা মুখ বংশাবলী ব্রাহ্মণ, স্বয়ং ভগবান আমাদের মানুষ থেকে দেবতা
হওয়ার পাঠ পড়াচ্ছেন, এই নেশা এবং খুশীতে থাকতে হবে । পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে
পুরুষোত্তম হওয়ার পুরুষার্থ করতে হবে ।
২) এখন আমাদের
বাণপ্রস্থ অবস্থা, মৃত্যু সামনে উপস্থিত, আমাদের ঘরে ফিরে যেতে হবে --- তাই বাবার
স্মরণে সমস্ত পাপকে ভস্ম করতে হবে ।
বরদান:-
আমি
আত্মিক যাত্রী -- এই স্মৃতিতে সদা উর্ধ্বে, সব কিছু থেকে পৃথক এবং নির্মোহী ভব
আত্মিক যাত্রী সদা
স্মরণের যাত্রায় এগিয়ে যেতে থাকে, এই যাত্রা সর্বদাই হলো সুখদায়ী । যে এই আত্মিক
যাত্রায় তৎপর থাকে, তার অন্য কোনো যাত্রা করার আবশ্যকতা নেই । এই যাত্রাতেই সমস্ত
যাত্রা অন্তর্লীন হয়ে আছে । এই যাত্রায় মন এবং শরীরের বিভ্রান্তি বা এদিক - ওদিক
ঘুরে বেড়ানো বন্ধ হয়ে যায় । তাই সর্বদা যেন এই স্মৃতি থাকে যে, আমি আত্মিক
যাত্রী, যাত্রীর কারোর প্রতিই কোনো মোহ থাকে না । সে সহজেই ঊর্ধ্ব, পৃথক বা
নির্মোহী হওয়ার বরদান প্রাপ্ত করে ।
স্লোগান:-
সদা
বাঃ বাবা, বাঃ ভাগ্য, বাঃ মিষ্টি পরিবার --- এই গানই গাইতে থাকো ।