27.05.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
জ্ঞান এবং যোগের দ্বারাই নিশ্চয় আসে, সাক্ষাৎকারের দ্বারা নয়। সাক্ষাৎকার হওয়া
ড্রামার মধ্যে দৈব্য নির্দিষ্ট থাকে, কিন্তু তার থেকে কারো কল্যাণ হয় না”
প্রশ্নঃ -
বাবার কাছে
জাদুগরী শক্তি থাকা সত্ত্বেও বাবা কোন্ শক্তিটির প্রদর্শন করেন না?
উত্তরঃ -
মানুষ মনে করে যে ভগবান তো সর্বশক্তিমান, তিনি মৃত মানুষকেও জীবিত করে তুলতে পারেন,
কিন্তু বাবা বলেন, এই শক্তি আমি প্রদর্শন করিনা। যদি কেউ যদি ভক্তির পরাকাষ্ঠা
(নবধা ভক্তি, নয়-ধরনের ভক্তি) হয়, তাহলে তাকে আমি সাক্ষাৎকার করাই। এটাও ড্রামার
মধ্যে দৈবনির্দিষ্ট আছে। সাক্ষাৎকার করানোর জাদুগরী বাবার কাছেই আছে, এইজন্য কোনো
কোনো বাচ্চার ঘরে বসেই ব্রহ্মা বা শ্রীকৃষ্ণের সাক্ষাৎকার হয়ে যায়।
গীতঃ-
কে এসেছে আমার
মনের দ্বারে ...
ওম্ শান্তি ।
এটা হল
বাচ্চাদের অনুভবের গান। সৎসঙ্গ তো অনেক আছে, মুখ্যতঃ ভারতেই অনেক সৎসঙ্গ আছে, অনেক
মত-মতান্তরও আছে, বাস্তবে সেগুলি কোনো সৎসঙ্গ নয়। সৎসঙ্গ হলো একটাই। তোমরা সেখানে
কোনো বিদ্বান, আচার্য, পন্ডিতের মুখ দেখতে পাও, তখন তোমাদের বুদ্ধি তাদের প্রতি চলে
যায়। কিন্তু এখানে তো হলো অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি-র কথা। এই সৎসঙ্গ একইবার এই সঙ্গম
যুগেই হয়। এটা তো একদম নতুন কথা। সেই অসীম জগতের বাবার তো কোনো শরীর নেই। তিনি
বলেন যে, আমি হলাম তোমাদের নিরাকার শিববাবা। তোমরা অন্যান্য অনেক সৎসঙ্গে যাও, তো
সেখানে শরীরকেই দেখতে পাও। তারা তো শাস্ত্রকে স্মরণ করে তারপর তোমাদের শোনায়, অনেক
প্রকারের শাস্ত্র আছে, সেসব তো তোমরা জন্ম-জন্মান্তর ধরে শুনে এসেছো। এখানে হলো
নতুন বিষয়। বুদ্ধির দ্বারা আত্মা জানতে পারে, বাবা বলছেন যে - হে আমার হারানিধি
বাচ্চারা, হে আমার শালিগ্রাম বাচ্চারা! তোমরা জানো যে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে এই
(ব্রহ্মাবাবার) শরীর দ্বারা বাবা তোমাদের পড়িয়েছিলেন। তোমাদের বুদ্ধি একদম দূরে
চলে যায়। তাইতো বাবা এসেছেন। ‘বাবা’ এই শব্দটি কত মিষ্টি। তিনি হলেন মাতা-পিতা।
কেউ যদি শোনে তো বলবে জানিনা এনাদের মাতা-পিতা কে ? বরাবর তিনিই সাক্ষাৎকার করিয়ে
এসেছেন তাইতো তাদের মধ্যে দ্বিধাগ্রস্থ বোধ হয়েছে। কখনো ব্রহ্মাকে দেখেছেন, তো
কখনো কৃষ্ণকে দেখেছেন। তখন তাদের মনে এই চিন্তাই চলে যে এসব কি হচ্ছে? অনেকের তো
ঘরে বসে-বসেই ব্রহ্মাবাবার সাক্ষাৎকার হত। এখন ব্রহ্মাকে তো কেউ পূজা করেনা। কৃষ্ণ
আদিকে সবাই পুজো করে। ব্রহ্মাকে তো কেউ জানেই না। প্রজাপিতা ব্রহ্মা তো এখন এসেছেন,
ইনি হলেন প্রজাপিতা। বাবা বসে বোঝাচ্ছেন যে সমগ্র দুনিয়া এখন পতিত হয়ে গেছে, তাই
অবশ্যই ইনিও (ব্রহ্মা বাবা) অনেক জন্মের অন্তিম জন্মে পতিত হয়েছেন। এখানে কেউই
পবিত্র নেই, এইজন্যই কুম্ভের মেলা, হরিদ্বারে গঙ্গা সাগরের মেলাতে যায়, তারা মনে
করে যে সেই গঙ্গা নদীতে স্নান করলে তারা পবিত্র হয়ে যাবে। কিন্তু এই নদীগুলি তো
কোনো পতিত-পাবনী হতে পারে না। নদীগুলি তো নির্গত হয় সাগর থেকে। বাস্তবে তোমরাই হলে
জ্ঞান গঙ্গা, তোমাদেরই তো মহিমা করা হয়। তোমরা জ্ঞান-গঙ্গারা যেখান- সেখান থেকে
বেরিয়ে আসো, তারাতো শাস্ত্রতে দেখিয়েছে যে অর্জুন তীর মেরে ভূ-গর্ভ থেকে গঙ্গা
আনয়ন করেছেন, কিন্তু এখানে তীর মারার তো কোনো কথা নেই। এই জ্ঞান-গঙ্গারা
দেশ-দেশান্তরে যায়।
শিব বাবা বলেন যে - আমিও এই ড্রামার বন্ধনে বাঁধা পড়ে আছি। প্রত্যেকেরই পার্ট
নিশ্চিত করা আছে। আমারও পার্টও হলো পূর্বনির্দিষ্ট। কেউ কেউ মনে করে যে ভগবান তো
সর্বশক্তিমান, তিনি মৃত মানুষকেও জীবিত করতে পারেন। এইসব হল লম্বা-লম্বা গল্পকথা।
আমি তো আসিই পড়ানোর জন্য। তাহলে এসব শক্তির প্রদর্শন কেন করতে যাব! সাক্ষাৎকার
করানো হলো জাদুগরী। যে অত্যন্ত ভক্তি (নবধা-ভক্তি) করে, আমি তাকে সাক্ষাৎকার করাই।
যেরকম কালীর রূপ দেখানো হয়, তার সামনে তেল অর্পণ করা হয়। কিন্তু বাস্তবে এরকম
কালী তো হয় না। কিন্তু কালীর নবধা-ভক্তি অনেকে করে। বাস্তবে কালী তো হল জগদম্বা।
কালীর এইরকম উগ্র রূপ হয় না। কিন্তু নবধা-ভক্তি করার জন্য বাবা তাদের ভাবনার ফল
প্রদান করেন। কাম চিতাতে বসে কালো হয়ে গেছে। এখন জ্ঞান চিতাতে বসে পুনরায় গোরা
হচ্ছে। যে কালী এখন জগদম্বা হয়েছেন, তিনি সাক্ষাৎকার কিভাবে করাবেন! তিনি তো এখন
অনেক জন্মের অন্তিম জন্মে শরীর ধারণ করে এখানে উপস্থিত আছেন। দেবতারা তো এখন আর
নেই। তাই তারা কিভাবে সাক্ষাৎকার করাবে। বাবা বোঝাচ্ছেন যে, এই সাক্ষাৎকারের চাবি
তো আমার হাতে আছে। অল্পকালের জন্য তাদের ভাবনাকে সম্পূর্ণ করতে আমি সাক্ষাৎকার
করাই। কিন্তু তারা তো কেউ আমার সাথে মিলন করে না। উদাহরণ তো এক কালীর দেওয়া হলো।
এইরকম অনেক আছে হনুমান, গণেশ আদি। যদিও শিখ-ধর্মাবলম্বীরা গুরুনানককে অনেক ভক্তি
করে, তখন তাদেরও সাক্ষাৎকার হয়ে যায়। কিন্তু তারাও তো নিচেই (অধঃপতনে) চলে যায়।
বাবা বাচ্চাদেরকে দেখাচ্ছেন যে, দেখো এরা গুরুনানকের ভক্তি করছে। সাক্ষাৎকার কিন্তু
আমিই করাই। সে কিভাবে সাক্ষাৎকার করাবে! গুরু নানকের কাছে তো সাক্ষাৎকার করানোর
চাবি নেই। এই (ব্রহ্মা) বাবা বলছেন যে, আমাকেও বিনাশ আর স্থাপনার সাক্ষাৎকারও এই
শিববাবাই করিয়েছিলেন। কিন্তু সাক্ষাৎকারের দ্বারা কারো কল্যান হয়না। এইরকম তো
অনেকেরই সাক্ষাৎকার হয়েছিল। আজ তারা এখানে নেই। অনেক বাচ্চারাই বলে যে, আমাকে যখন
সাক্ষাৎকার করাবেন, তখন আমি নিশ্চিত হব। কিন্তু সাক্ষাৎকারের দ্বারা নিশ্চিত হওয়া
যায় না। জ্ঞান আর যোগের দ্বারা নিশ্চয় হয়। পাঁচহাজার বছর পূর্বেও আমি বলেছিলাম
যে, এই সাক্ষাৎকার আমিই করাই। মীরাকেও আমিই সাক্ষাৎকার করিয়েছিলাম। এইরকম নয় যে,
আত্মা সেখানে চলে যায়। না, বসে-বসেই সাক্ষাৎকার করে কিন্তু আমাকে প্রাপ্ত করতে
পারেনা।
বাবা বলছেন যে - কোনো কথাতে সংশয় জন্মালে, যিনি ব্রাহ্মণী বা টিচার, তাকে জিজ্ঞাসা
করো। এটা তো জানো যে, বাচ্চারাও নম্বরের ক্রমানুসারে জ্ঞান ধারণ করেছে। নদীও
নম্বরের ক্রমানুসারে হয়ে থাকে। কেউ-কেউ তো আবার পুকুরের ন্যায়। একদম নোংরা পচা
দুর্গন্ধ জলের পুকুর। সেখানেও শ্রদ্ধাভাবের দ্বারা মানুষ যায়। সেটা হল ভক্তির
অন্ধ-শ্রদ্ধা। কখনো কারোর থেকে ভক্তি কেড়ে নিও না। যখন জ্ঞানে এসে যাবে, তখন ভক্তি
করা নিজে থেকেই বন্ধ করে দেবে। এই ব্রহ্মা বাবাও নারায়ণের ভক্ত ছিলেন, চিত্রতে
দেখলেন যে, লক্ষ্মী, নারায়ণের পদসেবা করছেন। এই চিত্র তার একদম ভালো লাগলো না।
সত্য যুগে এই রকম তো হবে না। তখন আমি এক চিত্রকারকে ডেকে বললাম যে লক্ষ্মীকে এই
দাসত্ব থেকে মুক্ত করো। বাবা ভক্ত ছিলেন কিন্তু জ্ঞানও কিছু ছিল। ভক্ত সবাই। আমরা
তো হলাম বাবার বাচ্চা, মালিক। বাবা বাচ্চাদেরকে ব্রহ্মান্ডের মালিক বানাচ্ছেন। তিনি
বলেন যে, আমি তোমাদেরকে রাজ্য ভাগ্য প্রদান করছি। এই রকম বাবা কখনো দেখেছো? এই
বাবাকে সম্পূর্ণভাবে স্মরণ করতে হবে। তাকে তো তোমরা এই চর্মচক্ষু দিয়ে দেখতে পাবে
না। তার সাথে বুদ্ধির যোগ লাগাতে হবে। স্মরণ আর জ্ঞানও হলো একদম সহজ। বীজ আর
বৃক্ষকে জানতে হবে। তোমরা সেই নিরাকারী বৃক্ষ থেকে সাকারী বৃক্ষে এসেছো। বাবা
সাক্ষাৎকারের রহস্যও বুঝিয়েছেন। বৃক্ষের রহস্যও বুঝিয়েছেন। কর্ম-অকর্ম-বিকর্মের
গতিও বাবা বুঝিয়ে দিয়েছেন। বাবা, টিচার এবং গুরু এই তিনজনের থেকেই তোমরা
শিক্ষাপ্রাপ্ত করছো। এখন বাবা বলছেন যে, আমি তোমাদেরকে এমন শিক্ষা দিই, এমন কর্ম
শেখাই যে, তোমরা ২১ জন্মের জন্য সদা সুখী হয়ে যাও। টিচার শিক্ষা প্রদান করেন তাই
না। গুরুরাও পবিত্রতার শিক্ষা প্রদান করেন অথবা শাস্ত্র কথা শোনান। কিন্তু ধারণা
কিছুই হয় না। এখানে তো বাবা বলছেন যে, অন্তিম সময়ে যেরকম মতি হবে, সেই রকমই
তোমাদের গতি হবে। মানুষ যখন মারা যায় তখনও বলে যে রাম-রাম বলো, তাহলে বুদ্ধি তার
প্রতি চলে যাবে। এখন বাবা বলছেন যে, তোমাদের এখন সাকারের (দেহধারীর) থেকে বুদ্ধির
যোগ কেটে গেছে। এখন আমি তোমাদেরকে খুব ভালো কর্ম করতে শেখাচ্ছি। শ্রীকৃষ্ণের চিত্র
দেখো, পুরানো দুনিয়ার দিকে পা রেখেছে আর হাতে করে নতুন দুনিয়া নিয়ে আসছে। তোমরাও
পুরানো দুনিয়ার দিকে পা রেখে নতুন দুনিয়ার দিকে যাচ্ছো। তাই তোমাদের এখন নরকের
দিকে হল পা আর স্বর্গের দিকে হল মুখ। শ্মশানের মধ্যে যখন প্রবেশ করে তখন মৃত
মানুষের মুখ থাকে ঐদিকে আর পা থাকে এইদিকে। তাই এইচিত্রও (কৃষ্ণের) এই রকম বানানো
হয়েছে।
মাম্মা, বাবা আর বাচ্চারা তোমরা, তোমাদেরকে তো মাম্মা বাবাকে ফলো করতে হবে। যারা
তাঁদের কোলেতে বসে আছো। রাজার সন্তানদেরকে প্রিন্স প্রিন্সেস বলা হয়, তাই না।
তোমরা জানো যে, আমরাই ভবিষ্যতে প্রিন্স প্রিন্সেস হবো। এরকম কি কোনো বাবা, টিচার বা
গুরু হবেন, যিনি তোমাদেরকে এইরকম কর্ম শেখাবেন! তোমরা সদাকালের জন্য সুখী হয়ে যাবে।
এটাই হলো শিববাবার বরদান, তিনি আশীর্বাদ করছেন। এটা নয় যে, আমাদের উপর তাঁর
কৃপাদৃষ্টি আছে। কেবলমাত্র বললে কিছুই হবে না। তোমাদেরকে শিখতে হবে। কেবলমাত্র
আশীর্বাদের দ্বারা তোমরা সেইরকম হতে পারবেনা। তার শ্রীমতে চলতে হবে। জ্ঞান আর যোগের
ধারণা করতে হবে। বাবা বোঝাচ্ছেন যে মুখ দিয়ে রাম-রাম বলাও আওয়াজ হয়ে যায়।
তোমাদেরকে তো এখন বাণী থেকে দূরে যেতে হবে। চুপ থাকতে হবে। খেলাও খুব সুন্দর সুন্দর
বের হয়। যারা অজ্ঞানী তাদেরকে বুদ্ধু বলা হয়। বাবা বলেন যে, এখন সবাইকে ভুলে
গিয়ে তোমরা একদম বুদ্ধু হয়ে যাও। আমি যে তোমাদেরকে শ্রীমত দিচ্ছি, সেই অনুসারে
চলো। পরমধামে তোমরা, সকল আত্মারা শরীর ছাড়াই থাকো। পুনরায় এখানে এসে তোমরা শরীর
ধারণ করো, তখন তোমাদের জীবাত্মা বলা হয়ে থাকে। আত্মা বলে যে, আমি একটা শরীর ছেড়ে
দ্বিতীয় শরীর গ্রহণ করি। তাই বাবা বলছেন যে, আমি তোমাদেরকে ফার্স্ট ক্লাস কর্ম
শেখাই। টিচার পড়াচ্ছেন, এখানে শক্তির তো কোন কথা নেই। সাক্ষাৎকার করাচ্ছেন, এটাকে
জাদুগরী বলা হয়ে থাকে। মানুষ থেকে দেবতা বানানো, এইরকম জাদুগরী কেউ করতে পারে না।
বাবা হলেন ব্যবসাদার। পুরানো নিয়ে নতুন প্রদান করেন। এই শরীরকে পুরানো লোহার বাসন
বলা হয়। এর কোন মূল্য নেই। আজকাল তো দেখো তামার জিনিসেরও কোনো মূল্য হয় না। সেখানে
তো সোনার মোহর থাকবে। কতই-না আশ্চর্যের বিষয়। কি থেকে কি হয়ে গেছে!
বাবা বলছেন যে, আমি তোমাদেরকে প্রথম নম্বরের কর্ম শেখাই। "মন্মনাভব" হয়ে যাও।
তারপর তো হল পড়া, যার দ্বারা তোমরা স্বর্গের প্রিন্স হবে। এখন দেবতা ধর্ম যেটা
প্রায়ঃলোপ হয়ে গেছে, সেটা পুনরায় স্থাপন হচ্ছে। সাধারণ মানুষ তোমাদের নতুন কথা
শুনে আশ্চর্যান্বিত হয়ে যায়। তারা বলে যে - স্ত্রী-পুরুষ দুজনেই একসাথে থেকে
পবিত্র থাকবে - এটা কিভাবে সম্ভব! বাবা তো বলেন যে, যদিও একসাথে থাকো, না হলে সবাই
বুঝবে কি করে কিন্তু মাঝখানে জ্ঞানের তলোয়ার রেখে দাও, এতটাই বাহাদুরী দেখাতে হবে।
পরীক্ষা দিতে হবে। তাই সাধারণ মানুষ এই কথাতে আশ্চর্যান্বিত হয়ে যায় কেননা
শাস্ত্রতে তো এইরকম কথা নেই। এটার জন্য প্র্যাকটিক্যালে পরিশ্রম করতে হয়। গন্ধর্ব
বিবাহের কথাও এখানেই প্রচলন আছে। এখন তোমরা পবিত্র হচ্ছো। তাই বাবা বলছেন,
বাহাদুরী দেখাও। সন্ন্যাসীদের কাছে গিয়ে প্রত্যক্ষ প্রমাণ দিতে হবে (গৃহস্থে থেকেও
পবিত্র থাকা যায়)। সমর্থ্য বাবা-ই সমগ্র দুনিয়াকে পবিত্র বানাচ্ছেন। বাবা বলেন যে
- যদিও একসাথে থাকো, শুধু নগ্ন হয়ো না। এই সবকিছুই হল যুক্তি। বড় শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি।
কেবলমাত্র একজন্ম বাবার শ্রীমতে চলে পবিত্র থাকতে হবে। যোগ আর জ্ঞানের দ্বারা ২১
জন্মের জন্য চির সুস্থ হয়ে যাও, এতে তো পরিশ্রম আছে তাই না। তোমরা হলে শক্তিসেনা।
মায়াকে জয় করে জগৎজীত হচ্ছো। সবাই কি হতে পারবে? যে বাচ্চারা পুরুষার্থ করবে,
তারাই উঁচু পদ প্রাপ্ত করবে। তোমরা ভারতকে পবিত্র বানিয়ে পুনরায় ভারতেই রাজ্য
করবে। লড়াইয়ের দ্বারা কখনো সৃষ্টির রাজপদ প্রাপ্ত করা যায় না। এটাই হল আশ্চর্যের
বিষয় তাই না। এই সময় সবাই নিজেদের মধ্যে লড়াই করে শেষ হয়ে যাবে। ভারত-ই মাখন
প্রাপ্ত করবে। প্রদাতা হলেন - বন্দেমাতরম। এখানে সিংহভাগ হল মাতাদের। এখন বাবা
বলছেন যে, জন্ম-জন্মান্তর তোমরা গুরু করে এসেছো, শাস্ত্র পড়ে এসেছো, এখন আমি
তোমাদেরকে বোঝাচ্ছি যে, নিজেদেরকে প্রশ্ন করো, সঠিক কোনটা? সত্যযুগ হলো ধার্মিক
রাজ্য। মায়া অধার্মিক করে দেয়। এখন ভারতবাসীরা নাস্তিক হয়ে গেছে। এক ধর্ম না
থাকার কারণে শক্তিও হারিয়েছে। নাস্তিক, অধার্মিক, নীতিবিরুদ্ধ, গরীব-কাঙ্গাল হয়ে
পড়েছে। অসীম জগতের বাবা এসে অসীম জগতের কথা বোঝাচ্ছেন, তিনি বলছেন যে - আমি
তোমাদেরকে পুনরায় ধার্মিক, অত্যাধিক শক্তি সম্পন্ন বানাচ্ছি। স্বর্গ বানানো তো
সর্বশক্তিমানের কাজ। কিন্তু গুপ্তভাবে। তোমরা হলে গুপ্ত সেনা। বাবা বাচ্চাদেরকে খুব
স্নেহ করেন। তাদের শ্রীমৎ প্রদান করেন। বাবার শ্রীমত, টিচারের মত, গুরুর মত,
স্বর্ণকারের মত, ধোপার মত - এরমধ্যে সকলেরই মত এসে যায়। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১) এই
এক অন্তিম জন্মে, বাবার নির্দেশ অনুসারে চলে, গৃহস্থে থেকেও পবিত্র থাকতে হবে। এর
মধ্যে বাহাদুরী দেখাতে হবে।
২) শ্রীমতে চলে
সর্বদা শ্রেষ্ঠ কর্ম করতে হবে। বাণী থেকে উপরে যেতে হবে, যা কিছু পড়েছ বা শুনেছো,
সে সবকিছু ভুলে গিয়ে বাবাকে স্মরণ করতে হবে।
বরদান:-
শুভ
চিন্তন দ্বারা জ্ঞান সাগরে সমাহিত হয়ে অতীন্দ্রিয় সুখের অনুভাবী ভব
*ব্যাখ্যা :-* যেরকম
সাগরের অন্তরে থাকা জীবজন্তু সাগরের মধ্যেই সমাহিত হয়ে থাকে, বাইরে বেরিয়ে আসতে
চায়না। মৎস্যও জলের মধ্যেই থাকে, সাগর বা জল হল তার সংসার। এই রকম বাচ্চারা,
তোমরাও শুভ চিন্তন দ্বারা জ্ঞান সাগর বাবার মধ্যে সর্বদা সমাহিত হয়ে থাকো, যতক্ষণ
না পর্যন্ত সাগরের মধ্যে সমাহিত হয়ে থাকার অনুভাব না করছো, ততক্ষণ অতীন্দ্রিয়
সুখের দোলনায় দোলার, সর্বদা হাসি-খুশিতে থাকার অনুভাব করতে পারবে না। এর জন্য
নিজেকে একান্তবাসী করো অর্থাৎ সর্ব আকর্ষণের ভাইব্রেশন থেকে অন্তর্মুখী হও।
স্লোগান:-
নিজের
শরীরকে এমনই চলমান মিউজিয়াম বানাও, যেখানে বাবা বিন্দু রূপে প্রত্যক্ষ হবেন।