21-06-2020 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 16-02-86 মধুবন


*গোল্ডেন জুবিলির গোল্ডেন সঙ্কল্প*


আজ ভাগ্যবিধাতা বাবা চতুর্দিকে তাঁর পদমাপদম ভাগ্যবান বাচ্চাদের দেখছেন l প্রত্যেক বাচ্চার ললাটভাগে ভাগ্যের ঝিলমিলে নক্ষত্র দেখে উৎফুল্ল হচ্ছেন l সারা কল্পে এমন বাবা কেউ হতে পারে না, যাঁর এত ভাগ্যবান বাচ্চা আছে ! নম্বর অনুক্রমে ভাগ্যবান হলেও আজকালকার দুনিয়ায় শ্রেষ্ঠ ভাগ্যের সামনে লাস্ট নম্বর বাচ্চাও অতি শ্রেষ্ঠ, সেইজন্য অসীম জগতের বাপদাদা সব বাচ্চার ভাগ্যের জন্য গৌরবান্বিত হন l বাপদাদাও সদা 'বাহ্ আমার ভাগ্যবান বাচ্চারা, বাহ্ একনিষ্ঠায় মগ্ন বাচ্চারা' - এই গীত গাইতে থাকেন l বাপদাদা আজ সব বাচ্চার স্নেহ আর সাহস এই দুই বিশেষত্বের বিশেষ অভিনন্দন জানাতে এসেছেন l

প্রত্যেকে যথাযোগ্য স্নেহের রিটার্ণ সেবায় দেখিয়েছে l প্রবল আকাঙ্ক্ষায় এক বাবাকে প্রত্যক্ষ করানোর মনোবল প্রত্যক্ষ রূপে দেখিয়েছে l নিজের নিজের কার্য উৎসাহ-উদ্দীপনায় সম্পন্ন করেছে l তোমাদের এই কার্যে বাপদাদা খুশি হয়ে অভিনন্দন জানাচ্ছেন l দেশ-বিদেশ থেকে আগত যারা সামনে এবং দূরে বসেও যারা নিজের শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্পের দ্বারা ও সেবা দ্বারা সহযোগী হয়েছে, বাপদাদা তাদের "সদা সফলতা ভব, সদা সর্বকার্যে সম্পন্ন ভব, সদা প্রত্যক্ষ প্রমাণ ভব"র বরদান দিচ্ছেন l সকলের স্ব-পরিবর্তনের, সেবায় আরও এগিয়ে যাওয়ার, শুভ উৎসাহ-উদ্দীপনার সব প্রতিজ্ঞা বাবা শুনেছেন l তোমাদের তো বলা হয়েছিল, তাই না যে বাপদাদার কাছে সাকার দুনিয়ায় তোমাদের থেকে আরও উন্নত শক্তিশালী টি. ভি. আছে l তোমরা শুধু শরীরের অ্যাক্ট দেখতে পার, কিন্তু বাপদাদা মনের সঙ্কল্পও দেখতে পান l প্রত্যেকে যে ভূমিকাই (পার্ট )পালন করেছে, সেইসব সঙ্কল্প সমেত মনের গতিবিধি আর তনের গতিবিধি দুইই দেখেছেন, শুনেছেন l কি দেখেছেন ? আজ বাবা তোমাদের অভিনন্দন জানাতে এসেছেন, সেইজন্য অন্য কিছু শোনাবেন না l বাপদাদা এবং সাথে তোমাদের সেবার সব সাথী বাচ্চা একটা ব্যাপারে অনেক খুশির তালি বাজিয়েছে, হাতের তালি নয়, খুশির তালি বাজিয়েছে, সমগ্র সংগঠনে সেবা দ্বারা এখনই বাবাকে প্রত্যক্ষ করাতে হবে, এখনই যেন বিশ্বে আওয়াজ ছড়িয়ে পড়ে . . . এই উৎসাহ-উদ্দীপনার এক সঙ্কল্প সঙ্ঘবদ্ধভাবে সবার মধ্যে একই রকম ছিল l হয় তারা কেউ ভাষণ দিয়েছে, কেউ শুনেছে অথবা হয় কেউ স্থূল কার্যও করেছে, সবার মধ্যে এই সঙ্কল্প খুশিরূপে ভালোই ছিল, সেইজন্য চারিদিকে ছিল খুশির ঝলক, প্রত্যক্ষ করানোর উৎসাহ-উদ্দীপনা, বাতাবরণকে খুশির তরঙ্গে উপনীত করা l মেজরিটি 'খুশি আর নিঃস্বার্থ স্নেহ' - এই অনুভবের প্রসাদ নিয়ে গেছে, সেইজন্য বাপদাদাও বাচ্চাদের খুশিতে খুশি হচ্ছিলেন l বুঝেছ l

গোল্ডেন জুবিলি উদযাপন তো করেছ, তাই না ! ভবিষ্যতে তোমরা কি উদযাপন করবে ? ডায়মন্ড জুবিলি এখানে উদযাপন করবে, নাকি নিজেদের রাজ্যে পালন করবে ? গোল্ডেন জুবিলি কিসের জন্য পালন করেছ ? গোল্ডেন দুনিয়া আনার জন্যই তো পালন করেছ, তাই না ! এই গোল্ডেন জুবিলি থেকে শ্রেষ্ঠ গোল্ডেন সঙ্কল্প কি করেছ ? অন্যদের গোল্ডেন থটস্ তো অনেক শুনিয়েছ, ভালো ভালো সব শুনিয়েছ l নিজের জন্য কোন বিশেষ স্বর্ণালী সঙ্কল্প করেছ ? যাতে সারা বছর ধরে প্রতিটা সঙ্কল্প প্রতিটা মুহূর্ত গোল্ডেন হবে ! লোকে তো শুধু গোল্ডেন মর্নিং অথবা গোল্ডেন নাইট বলে দেয়, অথবা বলে গোল্ডেন ইভনিং l কিন্তু তোমরা সব সর্বশ্রেষ্ঠ আত্মার প্রতি সেকেন্ড গোল্ডেন হতে দাও l গোল্ডেন সেকেন্ড হওয়া চাই, শুধু গোল্ডেন মর্নিং বা গোল্ডেন নাইট যেন না হয় l সবসময় তোমাদের দুই নয়নে গোল্ডেন দুনিয়া আর গোল্ডেন লাইটের সুইট হোম থাকতে দাও l একটা গোল্ডেন লাইট, আরেকটা গোল্ডেন দুনিয়া l এমনই অনুভব হতে দাও l স্মরণে আছে তোমাদের, শুরুর সময়ে একটা চিত্র বানিয়েছিলে ! এক চোখে মুক্তি, দ্বিতীয় চোখে জীবনমুক্তি l এই অনুভব করানোই গোল্ডেন জুবিলির গোল্ডেন সঙ্কল্প l এইরকম সঙ্কল্প সবাই করেছে নাকি শুধু সেই দৃশ্য দেখেই খুশিতে আছ ? গোল্ডেন জুবিলি এই শ্রেষ্ঠ কার্যের l কার্যের নিমিত্ত তোমরাও সবাই কার্যের সাথী l শুধু সাক্ষী হয়েই তোমরা দেখ না, সাথী তোমরা l বিশ্ব বিদ্যালয়ের গোল্ডেন জুবিলি l যদি একদিনের বিদ্যার্থীও হয়, এটা তারও গোল্ডেন জুবিলি l তাছাড়াও, আয়োজিত গোল্ডেন জুবিলিতে তোমরা পৌঁছেছ l আয়োজনের পরিশ্রম এরা করেছে, উদযাপনের সময় তোমরা সবাই পৌঁছে গেছ l সেইজন্য বাপদাদাও তোমাদের সবাইকে গোল্ডেন জুবিলির অভিনন্দন জানাচ্ছেন l সবাই এইরকমই তো ভাবছ, নয় কি ! তোমরা তো এমন নও যে শুধুই দেখছ, তাই না ! তোমরা সেইরকমই হবে নাকি শুধু দেখবে ! দুনিয়ায় তো অনেক দেখেছ, এখানে দেখা অর্থাৎ সেইরূপ হওয়া l শোনা অর্থাৎ সেইরূপ হওয়া l সুতরাং কি সঙ্কল্প করেছ ? প্রতিটা সেকেন্ড যেন গোল্ডেন হয় l প্রতিটা সঙ্কল্প যেন গোল্ডেন হয় l সদা প্রত্যেক আত্মার প্রতি স্নেহ-খুশির স্বর্ণালী পুষ্পবৃষ্টি করতে থাক l যদি শত্রুও হয়, তবুও স্নেহের বর্ষা শত্রুকেও বন্ধু বানিয়ে দেবে l এমনকি, কেউ তোমাকে মান দিক বা না দিক, অথবা তোমাকে মেনে নিক বা নাই মেনে নিক, কিন্তু তুমি সদা স্বমানে থেকে অন্যদের স্নেহী দৃষ্টির দ্বারা, স্নেহী বৃত্তি দ্বারা নিরন্তর আত্মিক মান দিয়ে যাও l তারা তোমাদের মানলে বা না মানলেও, কিন্তু তোমরা তাদের মিষ্টি ভাই, মিষ্টি বোন মেনে চলো l তারা না মানলেও তোমরা তো মানতে পার, পার না ? তারা পাথর ছুঁড়লেও তোমরা তাদের রত্ন দাও l তোমরাও যেন পাথর ছুঁড়ো না, কারণ তোমরা সব রত্নাকর বাবার বাচ্চা l রত্ন খনির মালিক তোমরা, মাল্টি-মাল্টি-মাল্টিমিলিয়নার l তোমরা সেই ভিখারী নও যে ভাববে - অন্যে দিলে তবেই তোমরা দেবে l এটা ভিখারীর সংস্কার l দাতার বাচ্চারা কখনো নেওয়ার জন্য হাত পাতে না l এমনকি, তোমাদের বুদ্ধিতে এই সঙ্কল্প থাকা - 'ইনি করলে আমি করব, ইনি যদি স্নেহ দেয় তবে আমিও দেব, ইনি মান দিলে তবে আমিও মান দেব', এটাও একরকম হাত পাতা l এটাও রয়্যাল ভিখারীপনা l এক্ষেত্রে, তোমরা যখন নিষ্কাম যোগী হও, তখনই গোল্ডেন দুনিয়ার খুশির তরঙ্গ বিশ্ব পর্যন্ত পৌঁছাবে l যেমন বিজ্ঞানের শক্তি সমগ্র বিশ্বকে বিনাশ করার অনেক শক্তিশালী সামগ্রী বানিয়েছে, যাতে অল্প সময়ের মধ্যেই কার্য সমাপ্ত হতে পারে l বিজ্ঞানের শক্তি এমন রিফাইন বস্তু বানাচ্ছে l তোমরা সব জ্ঞান-শক্তি এমন শক্তিশালী বৃত্তি আর বায়ুমন্ডল বানাও, যা অল্প সময়ের মধ্যে চারিদিকে খুশির তরঙ্গ, সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ ভবিষ্যতের তরঙ্গ শীঘ্রাতিশীঘ্র ছড়িয়ে পড়ে l অর্ধেক দুনিয়া এখন অর্ধমৃত হয়ে আছে l ভয়ের মৃত্যুশয্যায় শুয়ে আছে l তাদেরকে খুশির তরঙ্গের অক্সিজেন দাও l এটাই গোল্ডেন জুবিলির গোল্ডেন সঙ্কল্প, সদা ইমার্জ রূপে থাকতে দাও l বুঝেছ - কি করতে হবে ! এখন গতি আরও তীব্র করতে হবে l এখনো পর্যন্ত যা করেছ সেটাও খুব ভালো করেছ l এখন ভবিষ্যতের জন্য নিরন্তর ভালোর থেকে আরও ভালো করতে থাক l আচ্ছা l

ডবল বিদেশিদের খুব উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে l এখন তো ডবল বিদেশিদের চান্স l অনেকে পৌঁছেও গেছে l বুঝেছ ! এখন সবাইকে খুশির টোলি খাওয়াও l দিলখুশ যে মিষ্টি হয়, সেই দিলখুশ মিষ্টি সবাইকে দাও l আচ্ছা - সেবাধারী তোমরা খুশিতে নাচছ, তাই না ! নাচলে ক্লান্তির অবসান হয় l সুতরাং, সেবার অথবা খুশির ডান্স সবাইকে দেখিয়েছ ? কি করেছ ? ডান্স তো দেখিয়েছ, তাই না ! আচ্ছা !

সর্বশ্রেষ্ঠ ভাগ্যবান, বিশেষ আত্মাদের, যারা প্রতিটা সেকেন্ড, প্রতিটা সঙ্কল্প স্বর্ণালী বানায় এমন আজ্ঞাকারী বাচ্চাদের, সদা দাতার বাচ্চা হয়ে সকলের ঝুলি পূর্ণ করে, এমন সম্পন্ন বাচ্চাদের, সদা বিধাতা আর বরদাতা হয়ে সবাইকে মুক্তি ও জীবনমুক্তির প্রাপ্তি করায়, এমন পরিপূর্ণ বাচ্চাদের বাপদাদার সোনালী স্নেহের সোনালী খুশির পুষ্পসহ স্মরণ-স্নেহ অভিনন্দন আর নমস্কার l

পাটিদের সাথে :- সদা বাবা আর অবিনাশী উত্তরাধিকার স্মরণে থাকে ? বাবার স্মরণ স্বতঃই উত্তরাধিকারেরও স্মরণ করায় আর উত্তরাধিকার স্মরণে থাকলে বাবার স্মরণ নিজে থেকেই হয় l বাবা আর উত্তরাধিকার একসাথে l বাবাকে তোমরা স্মরণ কর উত্তরাধিকারের জন্য l যদি উত্তরাধিকারের প্রাপ্তি না হয় তাহলে বাবাকে কেন স্মরণ করবে ! সুতরাং 'বাবা আর উত্তরাধিকার' এই স্মরণ সদাই পরিপূর্ণ করে তোলে l ভাণ্ডারে পরিপূর্ণ হও আর দুঃখ-বেদনা থেকে দূরে সরে আসো, দুইই লাভজনক l দুঃখ থেকে দূরে চলে যাও আর ভাণ্ডারে ভরপুর হও l এইরকম প্রাপ্তি সদাকালের, বাবা ব্যতীত অন্য কেউ করাতে পারে না l এই স্মৃতি সদা সন্তুষ্ট, সম্পন্ন বানাবে l যেমন বাবা সাগর, সদা পরিপূর্ণ l যতই সাগরকে শুকানোর চেষ্টা করা হোক না কেন, সাগর সমাপ্ত হবে না, সাগর সম্পন্ন l এই রকম তো তোমরাও সবাই সম্পন্ন, তাই না ! খালি হলে তো নেওয়ার জন্য কোথাও হাত পাততে হবে ! কিন্তু ভরপুর আত্মা সদাই খুশির দোলায় দুলতে থাকে, সুখের দোলায় দুলতে থাকে l তাহলে, তোমরা এমন শ্রেষ্ঠ আত্মা হয়েছ, সদা সম্পন্ন থাকতেই হবে l চেক কর, প্রাপ্ত শক্তির ভান্ডার কতখানি কার্যে লাগিয়েছ ?

সদা সাহস আর উৎসাহের ডানায় উড়তে থাক অন্যকে উড়াতে থাক l সাহস আছে কিন্তু উৎসাহ-উদ্দীপনা নেই, তাহলেও সফলতা হবে না l যদি উভয়ই তোমাদের সাথে থাকে, তাহলে সেটা উড়তি কলা, সেইজন্য সদা সাহস আর উৎসাহ-উদ্দীপনার পাখায় উড়তে থাক l আচ্ছা l

*অব্যক্ত মুরলী থেকে বাছাই করা অমূল্য মহাবাক্যঃ-*

*১০৮ রত্নের বৈজয়ন্তী মালায় আসার জন্য সংস্কার মিলনের রাস কর*

১) কোনও মালা যখন বানানো হয় তখন একটা দানা আরেকটা দানার সঙ্গে যুক্ত থাকে l বৈজয়ন্তী মালাতেও ১০৮ নম্বরের দানাও অন্য দানার সঙ্গে মিলে থাকে l সুতরাং, সবার এই উপলব্ধি হতে দাও যে এঁরা তো মালায় দানার মতো গেঁথে আছে l ভ্যারাইটি সংস্কার থাকলেও যেন কাছের বলে প্রতীয়মান হয় l

২) একে অপরের সংস্কার জেনে, পারস্পরিক স্নেহে একে অন্যের সঙ্গে মিলেমিশে থাকা - এটাই মালার দানার বিশেষত্ব l কিন্তু পরস্পরকে তখনই স্নেহ করতে পারবে যখন একে অন্যের সংস্কার আর সঙ্কল্প মিলিয়ে চলতে পারবে l এইজন্য সরলতার গুণ ধারণ কর l

৩) তোমাদের স্থিতি এখনও স্তুতির ভিত্তিতে, যে কর্মই কর তার ফলের ইচ্ছা থাকে, যদি প্রশংসা না পাও তো স্থিতি থাকে না l নিন্দা হলে নিধিনাথকে ভুলে হারাধন হয়ে যাও আর তারপরে সংস্কারের দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায় l এই দুই বিষয় মালা থেকে বের করে দেয় l সেইজন্য স্তুতি আর নিন্দা, দুই ক্ষেত্রেই সমান স্থিতি বানাও l

৪) সংস্কারে মিল করার জন্য যেখানে মালিক হয়ে চলার সেখানে বালক হবে না, আর যেখানে বালক হওয়ার সেখানে মালিক হবে না l বালকভাব অর্থাৎ নিঃসঙ্কল্প, ব্যর্থ ভাবনা থেকে মুক্ত l যে আজ্ঞাই পাও, শুধু ডিরেকশন অনুসারে চলতে হবে l মালিক হয়ে নিজের রায় দাও আর তারপরে বালক হয়ে যাও, তবেই দ্বন্দ্ব থেকে রক্ষা পাবে l

৫) সার্ভিসে সফলতার আধার নম্রতা l যত নম্রতা ততই সফলতা l নিজেকে নিমিত্ত মনে করায় নম্রতা আসে l নম্রতার গুণের কাছে সবাই নমন করে l যে নিজে ঝুঁকতে জানে তার সামনে সবাই ঝোঁকে l সেইজন্য *শরীরকে নিমিত্ত মাত্র মনে করে চলো, আর সার্ভিসে নিজেকে নিমিত্ত মনে করে চলো তবেই নম্রতা আসবে l* যেখানে নম্রতা সেখানে সঙ্ঘর্ষ হতে পারে না l নিজে থেকেই সংস্কারের মিল হয়ে যাবে l

৬) মনে যে সঙ্কল্পই উৎপন্ন হয় তা'তে সততা ও স্বচ্ছতা প্রয়োজন l অন্তর্মনে কোনও বিকর্মের আবর্জনা থাকতে দিও না l যে কোনও ভাব-স্বভাব, পুরানো সংস্কারেরও আবর্জনা যেন না থাকে l যে এমন সাফাইকর্মী হবে সে স্বচ্ছ তথা ন্যায়বান হবে আর যে ন্যায়বান হবে সে সবার প্রিয় হবে l যদি সবার প্রিয় হয়ে যাও তবে সংস্কার মিলনের রাস হবে l যে স্বচ্ছ তার প্রতি প্রভু তুষ্ট হন l

৭) সংস্কার মিলনের রাস করার জন্য নিজের নেচারকে ইজি আর অ্যাক্টিভ বানাও l ইজি অর্থাৎ আপন পুরুষার্থে, সংস্কারে ভারী ভাব হতে না দেওয়া l যদি ইজি হও, তাহলে তুমি অ্যাক্টিভ l ইজি থাকলে সব কাজও ইজি, পুরুষার্থও ইজি হয়ে যায় l নিজে যদি ইজি না হও তবে সমস্যাসঙ্কুল পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয় l তারপরে নিজের সংস্কার, নিজের দুর্বলতা, সমস্যারূপে দেখা দেয় l

৮) সংস্কার মিলনের রাস তখনই হবে যখন তোমরা প্রত্যেকে একে অন্যের বিশেষত্ব নজর করবে l তোমরা নিজেকে বিশেষ আত্মা মনে করে বিশেষত্বে সম্পন্ন হও l "এটা আমার সংস্কার", 'আমার সংস্কার' এই শব্দও যেন অবশ্যই লুপ্ত হয়ে যায় l এমনভাবে যেন লোপ পায় যাতে নেচারও পরিবর্তন হয়ে যায় l যখন প্রত্যেকের নেচার পরিবর্তন হবে তখন তোমাদের "অব্যক্তি ফিচার" অর্থাৎ দেবোপম বৈশিষ্ট্য হবে l

৯) বাপদাদা বাচ্চাদের বিশ্ব মহারাজন বানানোর পাঠ পড়ান l যারা বিশ্ব-মহারাজ হতে চলেছে তারা সকলের স্নেহী হবে l যেমন বাবা সবার স্নেহী, সবাই বাবার স্নেহী, ঠিক একইভাবে সব আত্মার প্রতি তোমাদের প্রত্যেকের ভিতর থেকে স্নেহের ফুল বর্ষণ হতে দাও l যখন স্নেহের ফুল এখানে বর্ষিত হবে তখন জড়চিত্রের উপরেও ফুল বর্ষণ হবে l সুতরাং লক্ষ্য রাখ - সবার থেকে স্নেহের পুষ্প বর্ষণ হওয়ার যোগ্য পাত্র হতে হবে l তোমাদের সহযোগিতাতেই স্নেহের প্রাপ্তি হবে l

১০) সদাসর্বদা এই লক্ষ্য রাখ যে 'আমাদের আচার-আচরণে কারও যেন দুঃখ না হয় l আমার আচরণ, সঙ্কল্প, বাণী এবং সর্বকর্ম সুখদায়ী হবে l' এটাই ব্রাহ্মণ কুলের রীতি, এই রীতি যদি আপন করে নাও, তবে সংস্কার মিলনের রাস হয়ে যাবে l
 

বরদান:-
ঈশ্বরীয় রয়্যালটির সংস্কার দ্বারা প্রত্যেকের বিশেষত্বের বর্ণন করে পুণ্য আত্মা ভব

সদা নিজেকে বিশেষ আত্মা মনে করে প্রতিটা সঙ্কল্প কর এবং প্রত্যেকের বিশেষত্ব দেখ, বর্ণন কর, প্রত্যেককে বিশেষ বানানোর জন্য সবার প্রতি কল্যাণের শুভ কামনা রাখ - এটাই ঈশ্বরীয় রয়্যালটি l রয়্যাল আত্মারা অন্যের বাতিল করে দেওয়া বস্তু নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারে না, সেইজন্য সদা অ্যাটেনশন থাকতে দাও, কারও দুর্বলতা বা অপগুণ দেখার নেত্র সদা বন্ধ থাকবে l যদি একে অন্যের গুণগান কর, স্নেহ, সহযোগের পুষ্প আদান-প্রদান কর, তাহলে পুণ্য আত্মা হয়ে যাবে l

স্লোগান:-
বরদানের শক্তি পরিস্থিতি রূপী অগ্নিকেও জলে পরিণত করতে পারে l


সূচনাঃ-
আজ তৃতীয় রবিবার, অন্তর্রাষ্ট্রীয় যোগ দিবস, সন্ধ্যা ৬ : ৩০ থেকে ৭: ৩০ পর্যন্ত সব ভাইবোনেরা সংগঠিতভাবে একত্রিত হয়ে যোগ অভ্যাসে অনুভব করুন ... আমি ভ্রুকুটি আসনে বিরাজমান পরমাত্ম শক্তিতে সম্পন্ন সর্বশ্রেষ্ঠ রাজযোগী আত্মা কর্মেন্দ্রিয়জিত, বিকর্মজিত l সারাদিন এই স্বমানে থাকুন - সারা কল্পে হিরো পার্ট তথা ভূমিকা পালনকারী আমি সর্বশ্রেষ্ঠ মহান আত্মা l