16.06.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
তোমাদের প্রথম প্রথম পাঠ হলো - আমি আত্মা, শরীর নই, আত্ম - অভিমানী হয়ে থাকো, তাহলে
বাবার স্মরণ থাকবে''
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
তোমাদের কাছে কোন্ গুপ্ত সম্পদ আছে, যা অন্য মানুষদের কাছে নেই ?
উত্তরঃ -
তোমাদের ভগবান বাবা পড়ান, সেই পড়ার জন্য খুশীর গুপ্ত আনন্দ তোমাদের কাছেই আছে ।
তোমরা জানো যে, আমরা যা পড়ছি, তা ভবিষ্যৎ অমরলোকের জন্য, নাকি এই মৃত্যুলোকের জন্য
? বাবা বলেন যে, ভোরবেলা উঠে ঘুরে বেড়াও, শুধু প্রথম প্রথম এই পাঠ স্মরণ করো, তাহলে
খুশীর সম্পদ জমা হতে থাকবে ।
ওম্ শান্তি ।
বাবা
বাচ্চাদের জিজ্ঞাসা করেন -- বাচ্চারা, তোমরা আত্ম - অভিমানী হয়ে বসেছো তো ? নিজেকে
আত্মা মনে করে বসেছো ? আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের পরমাত্মা বাবা পড়াচ্ছেন, বাচ্চাদের
এই স্মৃতি এসেছে যে, আমরা দেহ নই, আত্মা । বাচ্চাদের দেহী অভিমানী বানানোর জন্যই
পরিশ্রম করতে হয় । বাচ্চারা আত্ম - অভিমানী থাকতে পারে না । তারা বারে বারে দেহ
বোধে এসে যায় তাই বাবা জিজ্ঞাসা করছেন -- আত্ম অভিমানী হয়ে থাকো কি ? আত্ম -
অভিমানী হলে বাবার স্মরণ আসবে, আর দেহ বোধে থাকলে লৌকিক সম্বন্ধ স্মরণে আসবে ।
প্রথম প্রথম এই শব্দ স্মরণে রাখতে হবে যে, আমি আত্মা । আমি আত্মার মধ্যেই ৮৪ জন্মের
পার্ট লিপিবদ্ধ আছে । এই কথা পাকা করতে হবে । আমি হলাম আত্মা । অর্ধেক কল্প তোমরা
দেহ অভিমানী থেকেছো । এখন কেবল এই সঙ্গম যুগেই বাচ্চাদের আত্ম অভিমানী বানানো হয় ।
নিজেকে দেহ মনে করলে বাবাকে স্মরণে আসবে না, তাই প্রথম প্রথম এই পাঠ দৃঢ় করে নাও -
আমি আত্মা অসীম জগতের পিতার সন্তান । দেহের বাবাকে স্মরণ করার কথা কখনো মনে করাতে
হয় না । বাবা এখন বলেন, আমি তোমাদের পারলৌকিক বাবা, তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আত্ম
অভিমানী হও । দেহী অভিমানী হলে দেহের সম্বন্ধ স্মরণে আসবে, নিজেকে আত্মা মনে করে
বাবাকে স্মরণ করো, এই হলো পরিশ্রমের । একথা কে বোঝাচ্ছেন, আমাদের আত্মাদের বাবা,
যাঁকে সবাই স্মরণ করে, বাবা এসো, তুমি এসে আমাদের এই দুঃখ থেকে উদ্ধার করো ।
বাচ্চারা জানে যে, এই পড়ার দ্বারা আমরা ভবিষ্যতে উঁচু পদ পাই । এখন তোমরা
পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে আছো । এখন এই মৃত্যুলোকে একদম থাকবে না । আমাদের এই পড়া
ভবিষ্যৎ ২১ জন্মের জন্য । আমরা সত্যযুগ অমরলোকের জন্য পড়ছি । অমর বাবা আমাদের জ্ঞান
শোনাচ্ছেন, তাহলে এখানে যখন বসো তখন প্রথম - প্রথম নিজেকে আত্মা মনে করে বাবার
স্মরণে থাকতে হবে, তাহলেই বিকর্ম বিনাশ হবে । আমরা এখন সঙ্গমযুগে আছি । বাবা আমাদের
পুরুষোত্তম বানাচ্ছেন । তিনি বলেন যে, আমাকে স্মরণ করো, তাহলেই তোমরা পুরুষোত্তম হয়ে
যাবে । আমি এসেছি তোমাদের মানুষ থেকে দেবতা বানানোর জন্য । সত্যযুগে তোমরা দেবতা
ছিলে, এখন জানো যে, তোমরা কিভাবে সিঁড়িতে নেমে এসেছো । আমাদের আত্মার মধ্যে ৮৪
জন্মের পার্ট লিপিবদ্ধ আছে । দুনিয়ার কেউই জানে না যে, ওই ভক্তি মার্গ আলাদা আর এই
জ্ঞান মার্গ আলাদা । যেই আত্মাদের বাবা পড়ান, তারা জানে, আর কেউই জানে না । এ হলো
ভবিষ্যতের জন্য গুপ্ত সম্পদ । তোমরা তো এই পড়া পড়ো অমরলোকের জন্য, নাকি মৃত্যুলোকের
জন্য ? বাবা এখন বলছেন, ভোরবেলা উঠে তোমরা ঘুরে বেড়াও, কিন্তু প্রথম এই শব্দই স্মরণ
করো যে, আমি শরীর নই, আমি আত্মা । আমার আত্মিক বাবা আমাকে পড়ান । এই দুঃখের দুনিয়া
এখন পরিবর্তন হয়ে যাবে । সত্যযুগ হলো সুখের দুনিয়া, তোমাদের বুদ্ধিতে এই সম্পূর্ণ
জ্ঞান আছে । এ হলো আত্মাদের আধ্যাত্মিক জ্ঞান । বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর, তিনি
আমাদের আধ্যাত্মিক পিতা । আর লৌকিক পিতা হলো দেহের বাবা । বাকি তো সবাই দেহের
সম্বন্ধী । এখন এই দেহের সম্বন্ধ ত্যাগ করে একের সঙ্গে জুড়তে হবে । এমন গাওয়াও হয়
যে, আমার তো এক, দ্বিতীয় আর কেউই নেই । আমরা এক বাবাকেই স্মরণ করি । আমরা দেহকেও
স্মরণ করি না । এই পুরানো দেহ তো ত্যাগ করতে হবে । এই জ্ঞানও তোমরাই পাও । এই শরীর
কিভাবে ত্যাগ করতে হবে । স্মরণ করতে করতেই শরীর ত্যাগ করতে হবে, তাই বাবা বলেন -
তোমরা দেহী অভিমানী হও । নিজের ভিতরে বার বার গুলতে থাকো - বাবা, বীজ আর ঝাড়কে
স্মরণ করতে হবে । শাস্ত্রে এই কল্প বৃক্ষের বৃত্তান্ত আছে ।
বাচ্চারা এ কথাও জানে যে, জ্ঞানের সাগর বাবা আমাদের পড়ান । আমাদের কোনো মনুষ্য পড়ায়
না । এই কথা মনে দৃঢ় করে নিতে হবে । পড়তে তো হবেই, তাই না । সত্যযুগেও দেহধারীই
পড়ান । ইনি কিন্তু দেহধারী নন । ইনি বলেন, আমি পুরানো দেহের আধার নিয়ে তোমাদের
পড়াই । কল্প - কল্প আমি তোমাদের এমনভাবে পড়াই । আবার পরের কল্পে এইভাবেই পড়াবো ।
এখন তোমরা যদি আমাকে স্মরণ করো তাহলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে, আমিই হলাম পতিত
পাবন । আমাকেই সর্বশক্তিমান বলা হয় । মায়াও কিন্তু কম নয়, সেও শক্তিমান, কোথা থেকে
নামিয়ে দিয়েছে । এখন তো তোমরা মনে করতে পারো, তাই না । ৮৪ চক্রেরও মহিমা আছে । এ হলো
মনুষ্যেরই কথা । অনেকেই জিজ্ঞাসা করে, পশুদের কি হবে ? আরে এখানে জানোয়ারদের কথা
নেই । বাচ্চাদের সঙ্গে বাবাই কথা বলেন, এছাড়া বাইরের লোকেরা তো বাবাকে জানেই না,
তাহলে কি কথা বলবে ? কেউ কেউ বলে, আমরা বাবার সঙ্গে দেখা করতে চাই, এখন তারা তো
কিছুই জানে না, খালি বসে উল্টোপাল্টা প্রশ্ন করবে । সাতদিন কোর্স করার পরেও কিছুই
বুঝতে পারে না যে, বাবা আমাদের অসীম জগতের পিতা । যারা পুরানো ভক্ত, যারা অনেক ভক্তি
করে এসেছে, তাদের বুদ্ধিতে তো এই জ্ঞানের সব কথা বসে যায় । কম ভক্তি করে এলে
বুদ্ধিতে এই কথা কম বসবে । তোমরাই সবথেকে বেশী পুরানো ভক্ত । এমন মহিমাও আছে যে,
ভগবান ভক্তির ফল দিতেই আসেন, কিন্তু কেউ এই কথা জানেই না । জ্ঞান মার্গ আর ভক্তি
মার্গ সম্পূর্ণ আলাদা । সম্পূর্ণ দুনিয়া ভক্তি মার্গে আছে । কোটিতে কয়েকজন এসে এই
পড়া পড়ে । এই জ্ঞান তো খুব মিষ্টিভাবেই বোঝানো হয় । ৮৪ জন্মের চক্র তো মানুষই জানবে,
তাই না । তোমরা তো আগে কিছুই জানতে না, শিবকেও জানতে না । শিবের তো কতো মন্দির আছে
। মানুষ শিবের পুজো করে, জল ঢালে, শিবায় নমঃ বলে, অথচ কেন পুজো করে, কিছুই জানে না
। লক্ষ্মী - নারায়ণের পুজো কেন করে, তাঁরা কোথায় গেলো, কিছুই জানে না । ভারতবাসীরাই
এমন, যারা নিজেদের পূজ্যকে একদমই জানে না । খৃস্টানরা জানে যে ক্রাইস্ট অমুক সংবতে
এসেছিলেন, তিনি এসে সেই ধর্মের স্থাপনা করেছিলেন । শিববাবাকে কেউই জানে না । পতিত
পাবনও শিবকেই বলা হয় । তিনিই তো উঁচুর থেকেও উঁচু, তাই না । সবথেকে বেশী সেবা
তাঁরই করে । তিনি সর্বের সদগতিদাতা । তিনি দেখো, কিভাবে তোমাদের পড়ান । মানুষ বাবাকে
ডাকেও যে, এসে আমাদের পবিত্র বানাও । মানুষ মন্দিরে কতো পুজো করে, কতো ধুমধাম করে
খরচ করে । শ্রীনাথের মন্দিরে, জগন্নাথের মন্দিরে গিয়ে দেখো । তাঁরা তো সেই একই ।
জগন্নাথের (জগৎনাথ ) কাছে চালের হাঁড়ি চড়ানো হয় । শ্রীনাথের ওখানেও অনেক জিনিস তৈরী
করা হয় । তফাৎ হয় কেন ? কারণ তো চাই, তাই না । শ্রীনাথকেও কালো আবার জগন্নাথকেও
কালো করে দিয়েছে । এর কারণ তো কিছুই বোঝে না । জগৎ - নাথ লক্ষ্মী নারায়ণকেই বলা হবে
নাকি রাধাকৃষ্ণকে ? রাধাকৃষ্ণ আর লক্ষ্মী নারায়ণের সম্বন্ধ কি, একথাও কেউ জানে না ।
বাচ্চারা, এখন তোমরা জানতে পেরেছো যে, আমরাই পূজ্য দেবতা ছিলাম তারপর পূজারী হয়েছি
। চক্র লাগিয়েছি । এখন আবার দেবতা হওয়ার জন্য আমরা পড়ছি । আমাদের কোনো মানুষ পড়ায়
না । এ হলো ভগবান উবাচঃ । ভগবানকেই জ্ঞান সাগর বলা হয় । এখানে তো ভক্তির সাগর অনেক
আছে যারা জ্ঞান সাগর বাবাকেই স্মরণ করে । তোমরা পতিত হয়েছিলে, আবার তোমাদের অবশ্যই
পাবন হতে হবে । এ হলো পতিত দুনিয়া । এ স্বর্গ নয় । বৈকুণ্ঠ কোথায়, সে কথা কেউই জানে
না । মানুষ মারা গেলে বলে, বৈকুন্ঠে গিয়েছে । তাহলে তোমরা নরকের ভোজন ইত্যাদি তাদের
কেন খাওয়াও । সত্যযুগে তো অনেক ফল - ফুল ইত্যাদি হয় । এখানে কি আছে ? এ হলো নরক !
তোমরা এখন জানো যে, বাবার দ্বারা আমরা স্বর্গবাসী হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছি ।
আমাদের পতিত থেকে পবিত্র হতে হবে । বাবা তো যুক্তি বলেই দিয়েছেন --- কল্প - কল্প
বাবাই যুক্তি বলে দেন । আমাকে স্মরণ করো তাহলে বিকর্ম বিনাশ হবে । তোমরা এখন জানো
যে, আমরা পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে আছি । তোমরাই বলো যে, বাবা আমরা পাঁচ হাজার বছর
পূর্বে এমন হয়েছিলাম । তোমরাই জানো যে, আমরা কল্প কল্প এই অমরকথা বাবার কাছ থেকে
শুনি । শিববাবাই হলেন অমরনাথ । বাকি এমন নয় যে, তিনি পার্বতীকে বসে অমরকথা শোনান ।
সে হলো ভক্তি । জ্ঞান আর ভক্তিকে তোমরাই বুঝেছো । ব্রাহ্মণদের দিন আর ব্রাহ্মণদের
রাত । বাবা বোঝান যে, তোমরাই তো হলে ব্রাহ্মণ, তাই না । আদিদেব তো ব্রাহ্মণই ছিলেন
। তাঁকে দেবতা বলা হবে না । মানুষ আদিদেবের কাছেও যায়, দেবীদেরও কতো নাম আছে । তোমরা
সার্ভিস করেছো, তাই তোমাদের এতো মহিমা, ভারত যে নির্বিকারী দুনিয়া ছিলো, তা আবার
বিকারী দুনিয়া হয়ে যায় । এখন তো রাবণ রাজ্য, তাই না ।
সঙ্গমযুগে বাচ্চারা, তোমরা এখন পুরুষার্থী হও, তোমাদের উপর অবিনাশী বৃহস্পতির দশা
হয়, তখনই তোমরা অমরপুরীর মালিক হয়ে যাও । বাবা তোমাদের পড়াচ্ছেন, মানুষ থেকে দেবতা
হওয়ার জন্য । স্বর্গের মালিক হওয়াকে বৃহস্পতির দশা বলা হয় । তোমরা তো অবশ্যই
স্বর্গ, অমরপুরীতে যাবে । বাকি পড়াতে দশা উপর - নীচ হতে থাকে । স্মরণ করতেই ভুলে
যায় । বাবা বলেছেন - আমাকে স্মরণ করো । গীতাতেও ভগবান উবাচঃ আছে - কাম মহাশত্রু ।
ওরা পড়ে কিন্তু বিকার জয় করতেই পারে না । ভগবান কবে বলেছিলেন ? পাঁচ হাজার বছর হয়ে
গেছে । ভগবান এখন আবার বলছেন - কাম হলো মহাশত্রু, একে জয় করতে হবে । এ তোমাদের আদি
- মধ্য এবং অন্ত দুঃখ দেয় । মুখ্য হলো কামের কথা, এতেই পতিত বলা হয় । এখন তোমরা
জানতে পেরেছো, এই চক্র ঘুরতে থাকে । আমরা পতিত হই, তারপর ড্রামা অনুসারে বাবা এসে
আমাদের পাবন বানান । বাবা বার বার বলেন, প্রথম - প্রথম অল্ফ-কে (আল্লাহ ) স্মরণ করো,
শ্রীমতে চলতে পারলেই তোমরা শ্রেষ্ঠ হতে পারবে । এও তোমরাই বুঝতে পারো যে, আমরা
প্রথমে শ্রেষ্ঠ ছিলাম, তারপর ভ্রষ্ট হয়েছি । এখন আবার শ্রেষ্ঠ হওয়ার জন্য পুরুষার্থ
করছি । আমাদের দৈবী গুণ ধারণ করতে হবে । কাউকেও দুঃখ দেবে না । সবাইকে পথ বলতে থাকো
যে, বাবা বলেন, আমাকে স্মরণ করো তাহলেই পাপ মুক্ত হবে । পতিত পাবন তো তোমরা আমাকেই
বলো, তাই না । এ কথা কেউই জানে না যে, পতিত পাবন কিভাবে এসে পাবন বানান । পূর্ব
কল্পেও বাবা বলেছিলেন যে, মামেকম ( আমাকে ) স্মরণ করো । এ হলো যোগ অগ্নি, যাতে পাপ
দগ্ধ হয় । খাদ মুক্ত হলে আত্মা পবিত্র হয়ে যায় । খাদ তো সোনাতেই দেওয়া হয় । তখন
গয়নাও তেমনই তৈরী হয় । বাচ্চারা, বাবা এখন তোমাদের বুঝিয়েছেন, আত্মায় কিভাবে খাদ
পড়েছে, তাকে এখন দূর করতে হবে । এই ড্রামাতে বাবারও পার্ট আছে, তাই তিনি এসে
তোমাদের দেহী - অভিমানী বানান । তোমাদের তো পবিত্রও হতে হবে । তোমরা জানো যে,
সত্যযুগে আমরা বৈষ্ণব ছিলাম । সেখানে পবিত্র গৃহস্থ আশ্রম ছিলো । এখন আমরা পবিত্র
হয়ে বিষ্ণুপুরীর মালিক হই । তোমরা ডবল বৈষ্ণব হও । প্রকৃত বৈষ্ণব হলে তোমরাই । ওরা
হলো বৈষ্ণব ধর্মের বিকারী । তোমরা হলে বৈষ্ণব ধর্মের নির্বিকারী । এখন তোমরা তো এক
বাবাকেই স্মরণ করো আর বাবার মধ্যে যে জ্ঞান আছে তা তোমরা ধারণ করো । তোমরা রাজার
রাজা হও । ওরা রাজা হয় অল্পকালের জন্য অর্থাৎ এক জন্মের জন্য । তোমাদের রাজত্ব হলো
২১ জন্মের জন্য অর্থাৎ তোমরা সম্পূর্ণ এজ রাজত্ব করো । ওখানে কখনোই অকালে মৃত্যু হবে
না । তোমরাই কালকে জয় করো । সময় যখন হবে তখন বুঝতে পারো যে, এখন এই পুরানো খোলস
ত্যাগ করে নতুন নিতে হবে । তোমাদের সাক্ষাৎকার হবে । খুশীর বাজনা বাজতে থাকবে ।
তমোপ্রধান শরীর ত্যাগ করে সতোপ্রধান শরীর ধারণ করা, এ তো খুশীর কথা । ওখানে এভারেজ
১৫০ বছর আয়ু হয় । এখানে অকালে মৃত্যু হতেই থাকে কারণ মানুষ ভোগী । যেই বাচ্চাদের
যথার্থ যোগ হয়, তাদের সমস্ত কর্মেন্দ্রিয় যোগবলের দ্বারা বশে থাকবে । সম্পূর্ণ
যোগে থাকলে কর্মেন্দ্রিয় শীতল হয়ে যায় । সত্যযুগে তোমাদের কোনো কর্মেন্দ্রিয়ই
ধোকা দেয় না, ওখানে কখনো এমন বলবেই না যে কর্মেন্দ্রিয বশে নেই । তোমরা অনেক উঁচু
পদ পাও । একে বলা হয় বৃহস্পতির অবিনাশী দশা । বৃক্ষপতি, মনুষ্য সৃষ্টির বীজরূপ
হলেন বাবা । বীজ তো উপরে থাকে, তাই তাঁকে অবশ্যই উপরে স্মরণ করা হয় । আত্মা তার
বাবাকে স্মরণ করে বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, অসীম জগতের পিতা আমাদের পড়ান, তিনি
একবারই এই অমরকথা শোনাতে আসেন । অমরকথাই বলো বা সত্যনারায়ণের কথাই বলো, ওই কথার
অর্থও মানুষ বুঝতে পারে না । সত্যনারায়ণের কথায় নর থেকে নারায়ণ হয় । অমরকথায়
তোমরা অমর হও । বাবা প্রতিটি কথা পরিস্কার করে বোঝান । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন
নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
যোগবলের দ্বারা নিজের সর্ব কর্মেন্দ্রিয় বশীভূত করতে হবে । এক বৃক্ষপতি বাবার
স্মরণে থাকতে হবে । প্রকৃত বৈষ্ণব অর্থাৎ পবিত্র হতে হবে ।
২) ভোরবেলা উঠে
প্রকৃত পাঠ পাকা করতে হবে যে, আমি শরীর নই, আত্মা । আমার আত্মিক পিতা আমাকে পড়ান,
এই দুঃখের দুনিয়ার এখন পরিবর্তন হয়ে যাবে -- বুদ্ধিতে যেন এই সম্পূর্ণ জ্ঞানের
মন্থন হতে থাকে ।
বরদান:-
নিজের
প্রতি ' ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যা' হয়ে বাবা সম অখণ্ড দানী, পরোপকারী ভব
ব্রহ্মা বাবা যেমন
নিজের সময়ও সেবাতে দিয়েছিলেন, স্বয়ং নির্মান হয়ে বাচ্চাদের মান দিয়েছিলেন, কর্মের
নাম প্রাপ্তির ইচ্ছাকেও ত্যাগ করেছিলেন । নাম, মান - সম্মান সবেতেই পরোপকারী
হয়েছিলেন, নিজের নামের আকাঙ্খা ত্যাগ করে অন্যের নাম করেছিলেন, নিজেকে সর্বদা
সেবাধারী করে রেখেছিলেন, বাচ্চাদের মালিক বানিয়েছিলেন । বাচ্চাদের সুখের মধ্যেই
নিজের সুখের অনুভব করতেন । এমনই বাবার সমান 'ইচ্ছা মাত্রম অবিদ্যা' অর্থাৎ মস্ত
ফকির হয়ে অখণ্ডদানী, পরোপকারী হও, তাহলেই বিশ্ব কল্যাণের কার্যে তীব্রগতি এসে যাবে
। কেস আর গালগল্প সমাপ্ত হয়ে যাবে ।
স্লোগান:-
জ্ঞান,
গুণ এবং ধারণায় সিন্ধু হও, স্মৃতিতে বিন্দু হও ।