05.06.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা —
তোমরা এখন জ্ঞানের দৃষ্টি পেয়েছ, সেইজন্য তোমাদের বিভ্রান্ত হয়ে ঘোরা বন্ধ হয়েছে,
তোমরা শান্তি ধাম আর সুখধামকে স্মরণ কর"
প্রশ্নঃ -
দেবতাদের মধ্যে
কোন্ শক্তি আছে আর সেই শক্তি কোন্ বিশেষত্বের জন্য ?
উত্তরঃ -
দেবতাদের সম্পূর্ণ বিশ্বে রাজত্ব করার শক্তি আছে, সেই শক্তি ঈশ্বরীয় বিশেষ মতানুসারে
চলার বিশেষত্বের জন্য। সত্য যুগে এক মত হওয়ার কারণে উজির ইত্যাদি রাখার প্রয়োজন পড়ে
না। দেবতারা সঙ্গমে বাবার এমন শ্রীমত অনুসারে চলে যে ২১ জন্ম ধরে রাজত্ব করে থাকে ।
ওখানে এক রাজার এক দৈবী পরিবার। দ্বিতীয় কোনও মত হয় না।
গীতঃ-
নেত্রহীনকে পথ
দেখাও প্রভু.....
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা নয়ন
প্রাপ্ত করেছে , প্রথমে নয়ন ছিল না, কোন্ সে নয়ন ? তাদের জ্ঞানের নয়ন ছিল না।
অজ্ঞানের নয়ন ছিল । বাচ্চারা জানে জ্ঞানের সাগর একজনই বাবা, আর কারও মধ্যে এই রূহানী
জ্ঞান নেই, যে জ্ঞান দ্বারা সদ্গতি হয় অর্থাত্ শান্তিধাম - সুখধামে যাওয়া যায়। এখন
তোমরা বাচ্চারা দৃষ্টি পেয়েছ- কিভাবে সুখধাম পরিবর্তন হয়ে মায়ার রাজ্য বা দুঃখ ধামে
পরিণত হয়। আহ্বান করে বলে থাকে নেত্রহীনকে পথ বলে দাও । ভক্তি মার্গে যজ্ঞ, দান -পুণ্য
ইত্যাদি করে কোনও পথ পাওয়া যায় না — শান্তিধাম - সুখধামে যাওয়ার । প্রত্যেককেই নিজ
-নিজ ভূমিকা পালন করতেই হবে। বাবা বলেন আমারও ভূমিকা রয়েছে। ভক্তি মার্গে আহ্বান করে
বলে থাকে মুক্তি-জীবনমুক্তির পথ বলে দাও। তারজন্য কত যজ্ঞ-তপ,দান পুণ্য ইত্যাদি করে
থাকে, কত দিকভ্রান্ত হয়ে দৌড়ে বেড়ায়। শান্তিধাম -সুখধামে দৌড়ে বেড়াতে হয়না। এও তোমরা
জান ওরা শাস্ত্রের পড়াশোনা আর দেহ ধারন কারীদের পড়াশোনাকেই জানে । এই আধ্যাত্মিক
বাবাকে একদমই জানেনা। আধ্যাত্মিক বাবা তখনই এসে জ্ঞান প্রদান করেন যখন সবার সদ্গতি
হবে, পুরানো দুনিয়ার পরিবর্তন হবে। মানুষ থেকে দেবতা হয়ে ওঠা তারপর সম্পূর্ণ
সৃষ্টিতে একই রাজ্য রচিত হয় দেবতাদের জন্য যাকে স্বর্গ বলা হয়। ভারতবাসীরা এটাও জানে
যে আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম ভারতেই ছিল, ঐ সময় অন্য কোনও ধর্ম ছিল না । বাচ্চারা,
তোমাদের জন্য এখন হলো সঙ্গম যুগ। বাকি সবাই আছে কলিযুগে। তোমরা পুরুষোত্তম সঙ্গম
যুগে বসে আছ । যারা বাবাকে স্মরণ করে, বাবার শ্রীমতে চলে, তারা সঙ্গম যুগে। বাকিরা
কলিযুগে ।
এখন কোনো সার্বভৌমত্ব বা রাজত্ব নেই । অনেক মতামতের মাধ্যমেই সরকার কাজ করে। সত্য
যুগে এক মহারাজার মত-ই চলে, উজির (পরামর্শ দাতার) রাখার প্রয়োজন পড়ে না। রাজার
এতটাই শক্তি থাকে, তারপর যখন পতিত হয়ে পড়ে, তখনই উজির ইত্যাদি রাখতে হয়। কেননা
শক্তিহীন হয়ে পড়ে। এখন তো প্রজার রাজ্য, সত্য যুগে এক মত হওয়ার কারণে শক্তি থাকে।
এখন তোমরা সেই শক্তি প্রাপ্ত করে ২১ জন্ম স্বাধীনভাবে রাজত্ব করে থাকো ।নিজেরই দৈবী
পরিবারে । এখন তোমাদের ঈশ্বরীয় পরিবার। বাবা বলেন নিজেকে আত্মা মনে করে যদি বাবার
স্মরণে থাক তবে তোমরা ঈশ্বরীয় পরিবার ভুক্ত । যদি দেহ-অভিমানে এসে ভুলে যাও তবে
আসুরিক পরিবার ভুক্ত। এক সেকেন্ডে ঈশ্বরীয় সম্প্রদায়ের আবার এক সেকেন্ডে আসুরিক
সম্প্রদায় ভুক্ত হয়ে যাও ।
নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করলে বিকর্ম বিনাশ হবে। দেহ দ্বারা কর্ম তো
করতেই হবে। দেহ ছাড়া তোমরা তো কর্ম করতে পারবে না। চেষ্টা করতে হবে কর্ম করতে করতেও
আমরা বাবাকে স্মরণ করব । কাজ না থাকলেও এখানে বাবাকে স্মরণ করে না, ভুলে যায়। এতেই
পরিশ্রম । ভক্তিতে তো এমনটা বলা হয় না যে সারাদিন ভক্তি কর । সেখানে সময় হলো ভোরবেলা,
সন্ধ্যা বা রাত । তারপর মন্ত্র ইত্যাদি যা শোনে সে সব বুদ্ধিতে থাকে । অনেকানেক
শাস্ত্র ভক্তি মার্গে পড়া হয় । তোমাদের তো কোনও পুস্তক ইত্যাদি পড়তে হয় না, না তৈরি
করতে হয়। এই মুরলী প্রিন্ট করা হয় রিফ্রেশ হওয়ার জন্য। পুস্তক ইত্যাদি কোনও কিছুই
থাকবে না, সব শেষ হয়ে যাবে। জ্ঞান একমাত্র বাবার কাছেই আছে। এখন দেখো জ্ঞান-বিজ্ঞান
ভবন নামকরণ করা হয়েছে, যেন ওখানে জ্ঞান আর যোগ শেখানো হয়। অর্থ ছাড়াই এমন সব নামকরণ
করে । কিছুই জানেনা, জ্ঞান কি আর বিজ্ঞান কি । তোমরা এখন জ্ঞান আর বিজ্ঞানকে জেনেছ
। যোগের মধ্যে রয়েছে হেল্থ, যাকে বিজ্ঞান বলা হয় আর এ হলো জ্ঞান, যার মাধ্যমে
ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি-জিয়োগ্রাফী বোঝানো হয়। ওয়ার্ল্ড হিস্ট্রি-জিয়োগ্রাফী কিভাবে
রিপিট হয় তা জানতে হবে। কিন্তু সেই পড়াশোনা হলো সীমিত, এখানে তো তোমাদের বুদ্ধিতে
অসীম জগতের হিস্ট্রি-জিয়োগ্রাফী আছে । আমরা কিভাবে রাজ্য গ্রহণ করি, কত সময় ধরে, আর
কবে রাজত্ব করতাম, কিভাবে রাজধানী প্রাপ্ত হয়েছে — এইসব বিষয় আর কারও বুদ্ধিতে আসবে
না। বাবা হলেন নলেজফুল। এই সৃষ্টি চক্র কিভাবে ঘুরছে বাবাই এসে বোঝান। পূর্ব
নির্ধারিত অনাদি ড্রামাকে না জানার কারণে মানুষ বলে থাকে — অমুকে নির্বাণ লাভ করেছে
বা জ্যোতিতে মিলিত হয়েছে।
তোমরা জানো, সমস্ত মানুষ মাত্রই এই সৃষ্টি চক্রে আসে, এখান থেকে কেউ-ই মুক্তি পাবে
না। বাবা বুঝিয়ে বলেন মানুষ এক শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করে, কত বিশাল এই
ড্রামা। সবার মধ্যে আত্মা আছে, ঐ আত্মার মধ্যে অবিনাশী পার্ট ভরা আছে। একেই বলে
পূর্ব নির্ধারিত। ড্রামা যখন অবশ্যই এর সময়ও নির্ধারিত হওয়া প্রয়োজন। বাবা বলেন এই
ড্রামা ৫ হাজার বছরের। ভক্তি মার্গে শাস্ত্রতে লিখেছে এই ড্রামা লক্ষ বছরের। এই সময়
যখন বাবা এসে রাজযোগ শিখিয়েছিলেন । এই সময়ের জন্য গায়ন আছে যে কৌরবরা ঘোর অন্ধকারে
ছিল আর পান্ডবরা আলোর পথে । ওরা ভাবে কলিযুগে লৌহযুগ ৪০ হাজার বছরের। ওরা তো জানেই
না ভগবান এসেছেন । এই পুরানো দুনিয়ার বিনাশ সামনেই অপেক্ষা করছে । সবাই অজ্ঞানতায়
ঘুমিয়ে রয়েছে। যখন যুদ্ধ দেখে বলে ওঠে এতো মহাভারতের লড়াইয়ের দৃষ্টান্ত। এমন
রিহার্সাল হতেই থাকবে । তারপর ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাবে। তোমরা জান আমাদের সম্পূর্ণ
স্থাপনার অল্প কিছুই হয়েছে। গীতাতেও লেখা নেই যে বাবা এসে সহজ রাজযোগ শিখিয়ে এখানেই
রাজ্য স্থাপন করেছিলেন। গীতায় প্রলয় দেখানো হয়েছে। দেখানো হয়েছে সবাই মারা গেছে ।
শুধুমাত্র ৫ পান্ডব জীবিত ছিল, তারাও পরে পাহাড়ে গিয়ে গলে মরে গেছে। রাজযোগ দ্বারা
কি হয়েছে, কিছুই জানেনা। বাবা প্রতিটি বিষয় বুঝিয়ে বলেন। ওটা হলো সীমিত বিষয়, সীমিত
রচনা, ব্রহ্মা (শারীরিক পিতা) তৈরি করেন এবং পালন করেন, ধ্বংস করেন না। মাতাকে (ব্রহ্মা,
বড় মা) অ্যাডপ্ট করেন, বাবাই এসে অ্যাডপ্ট করেন । বাবা বলেন আমি এর মধ্যে প্রবেশ করে
বাচ্চাদের নলেজ দিই, এর দ্বারাই বাচ্চাদের রচন করি । বাবাও আছেন, পরিবারও আছে। এ অতি
গুহ্য বিষয়, অতি গম্ভীর বিষয়। কারো বুদ্ধিতে এটা ধারণ অতি কষ্টেই হয়। সর্বপ্রথম বাবা
বলেন, নিজেকে আত্মা মনে করো। আত্মাই এক শরীর ছেড়ে অন্য শরীর ধারণ করে। শরীরের উপরই
ভিন্ন -ভিন্ন নামকরণ হয়। নাম, রূপ, চেহারা সব আলাদা-আলাদা হয় । একজনের চেহারা
অন্যজনের সাথে মেলে না। প্রত্যেক আত্মার জন্ম -জন্মান্তরে নিজস্ব চেহারা হয়।প্রত্যেকের
ভূমিকা ড্রামায় নির্ধারিত হয়ে আছে, সেইজন্যই এই ড্রামাকে পূর্ব নির্ধারিত বলা হয়ে
থাকে, এখন অসীম জগতের পিতা বলছেন আমাকে স্মরণ করলে বিকর্ম বিনাশ হবে, তবে কেন বাবাকে
স্মরণ করব না । এতেই পরিশ্রম।
তোমরা বাচ্চারা যখন স্মরণের যাত্রায় বসো, তখন মায়ার তুফান আসে, যুদ্ধ চলে, এতে ঘাবড়ে
যেও না। মায়া প্রতি মুহূর্তে স্মরণ ছিন্ন করে দেওয়ার চেষ্টা করবে। সঙ্কল্প-বিকল্প
এমনই সব আসবে যে মাথা খারাপ করিয়ে দেবে । তোমরা পরিশ্রম (পুরুষার্থ)কর । বাবা
তোমাদের বুঝিয়েছেন এই লক্ষ্মী-নারায়ণের ইন্দ্রিয় কিভাবে বশীভূত হয়েছে। ওরা সম্পূর্ণ
নির্বিকারী ছিল। এই শিক্ষা ওরা কিভাবে প্রাপ্ত করেছে । এখন বাচ্চারা তোমরা
লক্ষ্মী-নারায়ণ হয়ে ওঠার শিক্ষা প্রাপ্ত করছ । এদের মধ্যে কোনও বিকার থাকে না। ওখানে
রাবণ রাজ্য হয়না। পরে রাবণ রাজ্যে পরিণত হয়। রাবণ যে কি জিনিস, কেউ জানেনা। ড্রামা
অনুসারে এটাও নির্ধারিত। ড্রামার আদি-মধ্য-অন্তকে না জানার কারণে নেতি-নেতি বলে
এসেছে ।এখন তোমরা স্বর্গবাসী হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছ ।এই লক্ষ্মী-নারায়ণ স্বর্গের
মালিক। এদের সম্মুখে মাথা নত কারিরা তমোপ্রধান কনিষ্ঠ পুরুষ। বাবা বলেন সর্বপ্রথম
নিশ্চিত করে নাও - নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ কর। এতেই পরিশ্রম। যেমন ৮
ঘন্টা সরকারি চাকরি হয় না! তোমরাও তেমনই এখন অসীম জগতের সরকারের সহযোগী। তোমাদের
কমপক্ষে ৮ ঘন্টা পুরুষার্থ করে স্মরণ করতে হবে। এই অবস্থা এমনই পাক্কা হয়ে যাবে যে
আর কেউ স্মরণে আসবে না। বাবার স্মরণেই শরীর ত্যাগ হবে। তারপর বিজয় মালার দানা হবে।
এক রাজার অসংখ্য প্রজা তৈরি হবে। এখানেও প্রজা হবে। তোমরা বিজয় মালার দানা পূজার
যোগ্য হবে। ১৬ হাজার ১০৮ এর মালা হবে। ৮ এর মালা আছে, ১০৮ এর-ও মালা আছে। শেষে গিয়ে
১৬ হাজার ১০৮ এর মালা হবে। তোমরা বাচ্চারাই বাবার কাছ থেকে রাজযোগ শিখে সম্পূর্ণ
বিশ্বকে স্বর্গ বানিয়েছিলে, সেইজন্যই তোমাদের পূজা হয় । তোমরাই পূজ্য ছিলে, তারপর
পূজারী হয়েছ। এই দাদা বলেন, আমি স্বয়ং মালা জপ করেছি। লক্ষ্মী-নারায়ণের মন্দিরে তো
রুদ্র মালা হওয়া উচিত তোমরা *প্রথমে রুদ্র মালা তারপর রুন্ড মালায় যাও । প্রথম
নম্বরে রুদ্র মালা যেখানে শিব আছেন, রুন্ড মালায় শিব কোথা থেকে আসবে, ওটা হলো বিষ্ণু
মালা* । এইসব বিষয় কেউ জানেনা। তোমরা এখন বলে থাক আমরা শিববাবার গলার হার হয়ে উঠছি
। ব্রাহ্মণদের কোনও মালা হয়না । তোমরা যত স্মরণে থাকবে ততই দ্রুত গিয়ে রাজধানী
স্থাপন করতে পারবে। এই পঠন-পাঠন আর কোথাও হয়না। তোমরা জান এখন আমরা এই পুরানো শরীর
ত্যাগ করে স্বর্গবাসী হব। সম্পূর্ণ ভারত স্বর্গবাসী হবে।প্রকৃতপক্ষে এই ভারতই
স্বর্গ ছিল। ৫ হাজার বছরের কথা, লক্ষ বছরের কথা হতে পারে না। দেবতাদেরও ৫ হাজার বছর
হয়েছে, স্বর্গকে মানুষ ভুলে গেছে, এমনিই কথার কথা বলে থাকে। কিন্তু কিছুই নেই। এত
প্রাচীন কিছু হতে পারে না। সূর্য বংশী, চন্দ্র বংশী তারপর অন্যান্য ধর্ম স্থাপকরা
আসে। পুরানো জিনিস কোন্ কাজে আসবে। কত কেনাকাটা করে থাকে, পুরানো জিনিসকে কত মূল্য
দেয়। *সবচেয়ে মূল্যবান হলেন শিববাবা*। কত শিবলিঙ্গ নির্মাণ করে থাকে। আত্মা এতো ছোট
বিন্দু, কেউ বোঝে না। অতি সূক্ষ্ম রূপ । বাবাই বুঝিয়ে বলেন এতো ছোট বিন্দুতে কত
পার্ট ফিক্সড হয়ে আছে। এই ড্রামা রিপিট হতেই থাকে, এই জ্ঞান তোমাদের ওখানে থাকবে
না। এ প্রায় লুপ্ত হয়ে যায়, সুতরাং কেউ সহজ রাজযোগ কিভাবে শেখাবে। এই সব ভক্তি
মার্গের জন্য বসে তৈরি করেছে । এখন বাচ্চারা জানে বাবা দ্বারা ব্রাহ্মণ, দেবতা,
ক্ষত্রিয়- তিন ধর্ম স্থাপন হচ্ছে ভবিষ্যতের নতুন দুনিয়ার জন্য। এই ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠন
যা তোমরা পড়ছ তা এই জন্মের জন্য, এর প্রালব্ধ তোমরা নতুন দুনিয়াতে ভোগ কর । এই
পঠন-পাঠন হয় সঙ্গমে। এ হলো পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ । মানুষ থেকে দেবতা নিশ্চয়ই
সঙ্গমেই তৈরি হবে। বাবা বাচ্চাদের সব রহস্য বুঝিয়ে বলেন। বাবা এটাও জানেন তোমরা
সারাদিন স্মরণে থাকতে পারবে না, অসম্ভব। সেইজন্যই চার্ট রাখো, দেখো আমরা কতক্ষণ
স্মরণে থাকতে পারছি ? দেহ -অভিমান থাকলে কিভাবে স্মরণে থাকবে ! পাপের বোঝা অনেক যা
মস্তকে সঞ্চিত হয়ে আছে। সেইজন্যই বাবা বলেন স্মরণে থাকো । ত্রিমূর্তির চিত্র পকেটে
রাখো, কিন্তু প্রতি মুহূর্তে ভুলে যাও । অল্ফকে স্মরণ করলে সব স্মরণে এসে যায়।
সবসময় যেন ব্যাজ আটকানো থাকে । শিক্ষিত বা যে কোনো ভালো মানুষকে ব্যাজ দেওয়া উচিত।
ভালো মানুষরা কখনোই ফ্রিতে নেবে না। জিজ্ঞাসা করবে, এর মূল্য কত দিতে হবে ? তাদের
বলো - এটা গরিবদের ফ্রিতে দেওয়া হয়, তারপর যার যেমন ইচ্ছে দেবে। রয়্যালটি থাকা উচিত।
তোমাদের রীতিনীতি দুনিয়া থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হওয়া উচিত। রয়্যাল মানুষ কিছু না কিছু
নিজে থেকেই দেবে। এসবই আমরা সবাইকে দিই কল্যাণের জন্য। কেউ পড়াশোনা করেও তোমাদের
টাকা পাঠিয়ে দেবে। তোমরা তো খরচ করো না ! তাদের বলো, আমরা তন-মন-ধন ভারতের সেবায়
খরচ করে থাকি । আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১) এই
অসীম জগতের সরকারকে সাহায্য করার জন্য কমপক্ষে ৮ ঘন্টা স্মরণে থাকার পুরুষার্থ করতে
হবে। স্মরণে মায়া বিঘ্ন ঘটাবে, তাতে ঘাবড়ানো উচিত নয়।
২) এই পুরুষোত্তম
সঙ্গম যুগে ঈশ্বরীয় পরিবার ভুক্ত হয়ে, ঈশ্বরের মতে চলতে হবে। কর্ম করতে করতেও এক
বাবার স্মরণে থাকার অভ্যাস করতে হবে।
বরদান:-
বেগর
টু প্রিন্সের ভূমিকা প্র্যাকটিক্যালি পালনকারী ত্যাগী বা শ্রেষ্ঠ ভাগ্যশালী আত্মা
ভব
যেমন ভবিষ্যতে
বিশ্বের মহারাজন দাতা হবে, তেমনই এখন থেকেই দাতার সংস্কার ইমার্জ করো । কারো কাছ
থেকে ত্রাণ নিয়ে তারপর ত্রাণ দেওয়া — এমন সংকল্প যেন না আসে — একেই বলে বেগর টু
প্রিন্স। নেওয়ার ইচ্ছে টুকুও থাকবে না। এই অল্প সময়ের অস্থায়ী ইচ্ছের ভিক্ষুক তোমরা
নও । এমন বেগর-ই সম্পন্ন মূর্তি। যে এমন বেগর টু প্রিন্সের ভূমিকা পালন করছে তাকে
বলা হয় সদা ত্যাগী বা শ্রেষ্ঠ ভাগ্যশালী। ত্যাগ দ্বারাই সদাকালের জন্য ভাগ্য
স্বতঃতই নির্মাণ হয় ।
স্লোগান:-
সদা
উৎফুল্ল থাকার জন্য সাক্ষী দ্রষ্টার সিটে বসে দ্রষ্টা হয়ে প্রতিটি খেলা দেখো।