18.06.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা —
বাবা তোমাদের নতুন দুনিয়ার জন্য রাজযোগ শেখাচ্ছেন, সুতরাং এই পুরানো দুনিয়ার বিনাশ
অবশ্যই হবে"
প্রশ্নঃ -
মানুষের মধ্যে
এমন কোন্ সুন্দর অভ্যাস আছে, যা থাকা সত্বেও প্রাপ্তি হয়না ?
উত্তরঃ -
মানুষের মধ্যে ভগবানকে স্মরণ করার অভ্যাস আছে, যখন কোনও পরিস্থিতি সামনে এসে দাঁড়ায়
তখন বলে ওঠে — হে ভগবান ! সম্মুখে শিবলিঙ্গ থাকলেও যথার্থ রূপে তাঁকে না জানার কারণে
প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে যায়, আর তখনই বলে থাকে সুখ-দুঃখ সব ইনিই দিয়ে থাকেন।
বাচ্চারা, তোমরা এখন আর এমনটা বলবে না।
ওম্ শান্তি ।
বাবা যাঁকে
রচয়িতা বলা হয়, তিনি কিসের রচয়িতা ? নতুন দুনিয়ার রচয়িতা। নতুন দুনিয়াকে বলা হয়
স্বর্গ বা সুখধাম, নাম বলে কিন্তু কাকে বলে জানা নেই। কৃষ্ণের মন্দিরকেও সুখধাম বলে
থাকে। সে মন্দির তো ছোট । কৃষ্ণ তো বিশ্বের মালিক ছিল। অনন্ত জগতের মালিককে সীমিত
জগতের মালিক বানিয়ে দেয়। কৃষ্ণের ছোট মন্দিরকে সুখধাম বলে থাকে। বুদ্ধিতে এটাও আসে
না যে কৃষ্ণ তো বিশ্বের মালিক ছিল। ভারতের নিবাসী ছিল । তোমাদের ও প্রথমে কিছু জানা
ছিল না। বাবা তো সবকিছুই জানেন, সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের সমস্ত জ্ঞান তাঁর কাছে আছে
। বাচ্চারা তোমরা এখন জানো, দুনিয়াতে তো এটাও কেউ জানেনা — ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শঙ্কর এরা
কে ? শিব হলেন উচ্চ থেকে উচ্চতর ভগবান। আচ্ছা, তবে প্রজাপিতা ব্রহ্মা কোথা থেকে
এসেছেন ? তিনি তো মানুষই । প্রজাপিতা ব্রহ্মাকে তো অবশ্যই এখানেই প্রয়োজন যার দ্বারা
ব্রাহ্মণ জন্ম নেবে । প্রজাপিতা অর্থাত্ মুখ দ্বারা ( মুখ নিঃসৃত জ্ঞান দ্বারা)
অ্যাডপ্ট করেন যিনি, তোমরা হলে মুখ বংশাবলী । এখন তোমরা জানো, কিভাবে ব্রহ্মাকে
অ্যাডপ্ট করে বাবা মুখ বংশাবলী বানিয়েছেন, এনার মধ্যে প্রবেশ করেছেন এবং বলেছেন এ
আমার সন্তান। তোমরা জানো, ব্রহ্মা নামকরণ কিভাবে হয়েছে, কিভাবে জন্ম হয়েছে, এই বিষয়ে
আর কেউ জানেনা। শুধুমাত্র মহিমা করে থাকে পরমপিতা পরমাত্মা উচ্চ থেকে উচ্চতর, কিন্তু
এটা কারো বুদ্ধিতে আসেনা যে , উচ্চ থেকে উচ্চতর পিতা তিনি। সমস্ত আত্মাদের পিতা,
তিনিও বিন্দু রূপ, ওঁনার মধ্যে সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান আছে, এই নলেজ তোমরা
এখন পেয়েছ। প্রথমে এই জ্ঞান সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জানা ছিল না। মানুষ শুধু বলে থাকে
ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শঙ্কর কিন্তু তাঁদের সম্পর্কে কিছুই জানে না। সুতরাং ওদের বোঝানোর
মতো বিচক্ষণ তোমরা হয়েছ । তোমরা জানো বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর, যিনি আমাদের ঈশ্বরীয়
জ্ঞান প্রদান করেন । রাজযোগ হলো সত্যযুগের নতুন দুনিয়ার জন্য তবে নিশ্চয়ই এই পুরানো
দুনিয়ার বিনাশ হওয়া প্রয়োজন। সেইজন্যই এই মহাভারত লড়াই। অর্ধকল্প ধরে তোমরা ভক্তি
মার্গের শাস্ত্র পড়ে এসেছ । এখন বাবার কাছ থেকে ডায়রেক্ট শুনছ । বাবা বসে কোনও
শাস্ত্র শোনান না। জপ-তপ করা , শাস্ত্র ইত্যাদি পড়া এসবই হলো ভক্তি। সুতরাং ভক্তদের
ভক্তির ফল তো চাই কেননা পরিশ্রম তো করে ভগবানের সাথে মিলিত হওয়ার জন্য। জ্ঞান
দ্বারাই সদ্গতি প্রাপ্তি হয় । জ্ঞান আর ভক্তি একসাথে চলতে পারে না। এখন হলো ভক্তির
রাজ্য, সবাই ভক্ত। প্রত্যেকের মুখ থেকেই – ও গডফাদার ! অবশ্যই শোনা যায়। এখন তোমরা
বাচ্চারা জান বাবা এসে নিজ পরিচয় দিয়ে বলেছেন আমি ছোট বিন্দু, আমাকেই জ্ঞানের সাগর
বলা হয়। আমি বিন্দুর মধ্যেই সম্পূর্ণ জ্ঞান সঞ্চিত আছে, আত্মার মধ্যেই নলেজ থাকে ।
এখন বাচ্চারা তোমরা জেনেছ ওঁনাকে পরমপিতা পরমাত্মা বলা হয়। তিনি হলেন সুপ্রিম সোল ।
উচ্চ থেকে উচ্চতর পতিত-পাবন বাবাই সুপ্রিম তাইনা !
*মানুষ হে ভগবান ! বললে শিবলিঙ্গই স্মরণে আসবে, সেটাও যথার্থ রীতিতে নয় , যেন এক
অভ্যাসে পরিণত হয়েছে ভগবানকে স্মরণ করা । ভগবানই যেন সুখ-দুঃখ দিয়ে থাকেন। এখন তোমরা
বাচ্চারা এমনটা বলবে না। তোমরা জান বাবা হলেন সুখদাতা* । সত্যযুগে সুখধাম ছিল ,
দুঃখের চিহ্নমাত্র ছিল না। কলিযুগে তো শুধুই দুঃখ, এখানে সুখের কোনও চিহ্ন নেই ।
উচ্চ থেকে উচ্চতর ভগবান তিনিই হলেন সমস্ত আত্মাদের পিতা, এটা কারও জানা নেই
আত্মাদেরও পিতা আছে, বলেও থাকে আমরা সবাই ভাই-ভাই, সুতরাং সবাই একই পিতার সন্তান
তাইনা! কেউ আবার বলে থাকে তিনি তো সর্বব্যাপী — তোমার মধ্যেও আছেন , আমার মধ্যেও
আছেন .......। কি আশ্চর্য, তোমরা তো আত্মা, আর এটা তোমাদের শরীর তবে তৃতীয় বস্তু
কিভাবে সেখানে হতে পারে!
আত্মাকে কি পরমাত্মা বলবে ! জীবাত্মা বলা হয়। জীব পরমাত্মা বলা হয় না। পরমাত্মা
সর্বব্যাপী কিভাবে হতে পারে! পিতা সর্বব্যাপী হলে তো ফাদারহুড ( পিতৃদত্ত) হয়ে যাবে,
পিতা, পিতার কাছ থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার গ্রহণ কিভাবে করবে ! বাচ্চারা পিতার কাছ
থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্তি করে। সবাই ফাদার কিভাবে হবে, এতো ছোট একটি বিষয়ও
কারো বিবেচনায় আসে না। বাবা বলেন — বাচ্চারা, আজ থেকে ৫ হাজার বছর আগে তোমাদের কত
বিচক্ষণ করে তুলেছিলাম, তোমরা এভার হেল্দী, ওয়েল্দী, বিচক্ষণ ছিলে । এমন বিচক্ষণতা
কারো হতে পারে না। তোমরা এখন যা জ্ঞান প্রাপ্ত করছ এসব ওখানে আর থাকবে না। ওখানে তো
এটাও জানা থাকবে না যে - আমরা পুনরায় অধঃপতিত হবো, যদি এটা জানা থাকে তবে সুখ অনুভব
হবে না। এই জ্ঞান প্রায়শই লুপ্ত হয়ে যায়। এই ড্রামার জ্ঞান শুধুমাত্র তোমাদের
বুদ্ধিতে আছে। ব্রাহ্মণরাই এর অধিকারী হয়ে থাকে। তোমাদের বুদ্ধিতে আছে আমরা এখন
ব্রাহ্মণ বর্ণের। ব্রাহ্মণদেরই বাবা এসে জ্ঞান প্রদান করেন। ব্রাহ্মণরা তারপর সবাইকে
শোনায়। গায়নও আছে ভগবান এসে স্বর্গ স্থাপনা করেছিলেন, রাজযোগ শিখিয়েছিলেন। ওরা
কৃষ্ণ জয়ন্তী পালন করে, মনে করে কৃষ্ণ বৈকুন্ঠের মালিক ছিল, কিন্তু সে যে বিশ্বেরও
মালিক ছিল — এটা বুদ্ধিতে আসেনা। যখন তাঁর রাজ্য ছিল তখন অন্য কোনও ধর্ম ছিল না,
যমুনার তীরে কৃষ্ণেরই সম্পূর্ণ বিশ্বের রাজ্য ছিল। এখন এইসব বিষয় তোমাদের কে
বোঝাচ্ছেন ? ভগবানুবাচ। অবশিষ্ট যত বেদ -শাস্ত্র ইত্যাদি শোনানো হয়, সব ভক্তি
মার্গের। এখানে স্বয়ং ভগবান এসে তোমাদের শোনাচ্ছেন। এখন তোমরা বুঝেছ আমরা
পুরুষোত্তম হতে চলেছি । তোমাদের বুদ্ধিতে আছে আমরা শান্তিধাম নিবাসী, আবার এসে ২১
জন্মের জন্য প্রালব্ধ ভোগ করব ।
বাচ্চারা, তোমাদের অন্তর খুশিতে গদগদ হয়ে যাওয়া উচিত যে, অসীম জগতের শিবপিতা আমাদের
পড়াচ্ছেন, উনি জ্ঞানের সাগর, সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তকে তিনি জানেন। এমন বাবা
শুধুমাত্র আমাদের জন্য এসেছেন সুতরাং খুশিতে উচ্ছ্বসিত হওয়া উচিত।
বাবাকে বাচ্চারা বলে বাবা, আমরা তোমাকে উত্তরাধিকারী করেছি, বাবাও তখন বাচ্চাদের
সন্তান হয়ে যান । বাচ্চারা তারপর বলে ভগবান তুমি যখন আসবে আমরা তোমার সন্তান হব ।
পিতাও বাচ্চাদের উত্তরাধিকার দিয়ে থাকেন। বাবাকে উত্তরাধিকারী কিভাবে করবে, এ অতি
গুহ্য বিষয়। নিজের সবকিছু (অবগুণ) এক্সচেঞ্জ করা — এটা বোঝার জন্য বুদ্ধির প্রয়োজন।
গরীবরা চট করেই এক্সচেঞ্জ করবে, বিত্তবানদের জন্য বিষয়টি একটু মুশকিল, যতক্ষণ
পর্যন্ত না যথার্থ রীতিতে জ্ঞানকে ধারণ করবে । দৃঢ়তার অভাব । গরীবরা চট্ করে বলে
দেয় — বাবা আমরা তো তোমাকেই উত্তরাধিকারী করব, আমাদের কাছে কি-ই বা আছে ! *উত্তরাধিকারী
করে শরীর নির্বাহের জন্য নিজেকেই সবকিছু করতে হবে, শুধু ট্রাস্টি মনে করে ( ঈশ্বরীয়
জ্ঞানে আসার পর এই শরীর বাবার দেওয়া) থাকতে হবে*। বাবা অনেক যুক্তি বলে দেন। বাবা
দেখেন - কোনও পাপ কর্মে পয়সা খরচ হচ্ছে না তো ! মানুষকে পুণ্য আত্মা তৈরি করার কাজে
কি পয়সা খরচ করছে ? সার্ভিস কি নিয়মানুযায়ী হচ্ছে ? সম্পূর্ণ রূপে যাচাই করে তারপর
তোমাদের পরামর্শ দেবেন। এই ব্যক্তিও (ব্রহ্মা বাবা) তার ব্যবসা থেকে ঈশ্বরীয় কাছে
কিছু দান দিতেন, সেটা ছিল ইনডাইরেক্ট, এখন বাবা ডাইরেক্ট এসেছেন। মানুষ মনে করে আমরা
যা কিছু করি তার ফল ঈশ্বর আমাদের পরবর্তী জন্মে দিয়ে থাকেন। কোনও গরিব দুঃখী হলে মনে
করে কর্মই এমন করেছি যার ফল ভুগতে হচ্ছে। ভালো কর্ম করলে সুখি হয় । বাবা তোমাদের
কর্মের গতি সম্পর্কেও বুঝিয়ে থাকেন, রাবণ রাজ্যে তোমাদের সব কর্মই বিকর্ম হয়ে যায়।
সত্য যুগ আর ত্রেতায় রাবণই নেই সেইজন্য সেখানে কোনও বিকর্ম হয় না। এখানে যে ভালো
কর্ম করে সে অল্প কালের জন্য সুখ প্রাপ্ত করে থাকে, তারপরেও কোনও না কোনও রোগ,
খিটমিট তো হতেই থাকে। কেননা অল্প কালের সুখ । এখন বাবা বলেন এই রাবণ রাজ্য শেষ হবেই
। রাম রাজ্যের স্থাপনা শিববাবা করছেন ।
তোমরা জানো, এই চক্র কিভাবে ঘুরছে। ভারত আজ থেকে ৫ হাজার বছর আগে স্বর্গ ছিল,
লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য ছিল। সর্বপ্রথম এদেরই সিংহাসন ছিল , তারপর কৃষ্ণ স্বয়ম্বর
দ্বারা রাজা হন । নারায়ণ নামকরণ হয়। সেই ভারতও গরিব হয়ে যায়। এসবই যখন তোমরা শোন
তোমাদের অবাক লাগে। বাচ্চারা বলে ,বাবা তুমি সম্পূর্ণ রচনা আর রচয়িতার নলেজ শোনাও,
কত উচ্চ নলেজ তুমি প্রদান কর । এক বাবা ছাড়া আর কাউকে স্মরণ করা উচিত নয়। শেষ
পর্যন্ত ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠন করতে হবে সুতরাং টিচারকে অবশ্যই স্মরণ করতে হবে। স্কুলেও
টিচারকে স্মরণ করা হয় তাইনা ! লৌকিক স্কুলে অনেক টিচার থাকেন । প্রতিটি বিষয়ের জন্য
ভিন্ন-ভিন্ন টিচার, এখানে তো একজনই টিচার। কত স্নেহশীল। বাবা লাভলি, টিচারও লাভলি
.... প্রথমে ভক্তি মার্গে অন্ধ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে । এখন তো বাবা ডাইরেক্ট
পড়াচ্ছেন সুতরাং কত খুশি হওয়া উচিত তারপরও বলে থাক বাবা ভুলে যাই । জানিনা আমাদের
বুদ্ধি কেন তোমাকে স্মরণ করে না। গাওয়াও হয়ে থাকে ঈশ্বরের মতি-গতি ভিন্ন। বাবা
তোমার গতি আর সদ্গতি প্রাপ্ত করার শ্রীমত বড়ো চমকপ্রদ। এমন বাবাকে স্মরণ করা উচিত।
স্ত্রী স্বামীর গুণগান করে না ! এই এই ওঁনার প্রপার্টি। কত সুন্দর ! অন্তরে কত খুশি
থাকে, তাইনা ! আর ইনি হলেন পতিরও পতি, পিতারও পিতা। এনার কাছ থেকে আমরা কত সুখ
প্রাপ্ত করে থাকি । সবার কাছ থেকে তো দুঃখই পাই । হ্যাঁ, টিচার দ্বারা সুখ প্রাপ্ত
হয়, কেননা ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠন দ্বারা উপার্জন হয়ে থাকে। গুরু করা হয় বাণপ্রস্থে ।
বাবাও বলেন, আমি বাণপ্রস্থে এসেছি । ব্রহ্মাও বাণপ্রস্থী, আমিও বাণপ্রস্থী। এইসব
বাচ্চারা আমার বাণপ্রস্থী। বাবা, টিচার এবং গুরু একত্রিত। বাবা টিচার হন তারপর গুরু
হয়ে সঙ্গে করে নিয়ে যান। ঐ এক বাবারই মহিমা, এই বিষয় কোনো শাস্ত্র ইত্যাদিতে নেই।
বাবা প্রতিটি বিষয় যথার্থ রীতিতে বুঝিয়ে থাকেন। এর চেয়ে উচ্চ নলেজ আর কিছু হয় না,
না জানার প্রয়োজন পড়ে । আমরা সবকিছু জেনে বিশ্বের মালিক হয়ে উঠি আর কি চাই !
বাচ্চাদের বুদ্ধিতে এটুকু থাকলেই খুশি আর স্মরণ থাকবে । পুণ্য আত্মা হওয়ার জন্য
অবশ্যই স্মরণে থাকতে হবে। মায়ার ধর্ম হলো তোমাদের যোগ ছিন্ন করে দেওয়া। যোগেই মায়া
বিঘ্ন সৃষ্টি করে। তোমরা তখন ভুলে যাও । মায়ার তুফান প্রচন্ড শক্তিশালী। এটাও
ড্রামায় নির্ধারিত। সর্বপ্রথম তো ব্রহ্মা, সুতরাং এনার সব অনুভব হয়। আমার কাছে এই
তুফান এলে তবেই তো সবাইকে বোঝাতে পারব তাইনা ! মায়ার তুফান আসবে। বাবার (ব্রহ্মা)
কাছেও আসে, তোমাদের কাছেও আসবে। *যদি মায়ার কোনও তুফান না থাকে, তোমাদের যোগ স্থির
থাকে তবেই তোমরা কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত করবে।*
কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত হলে সবাই চলে যাবে। শিবের বরযাত্রী গায়ন আছে না ! শিববাবা
এলেই আমরা সব আত্মারা ঘরে ফিরে যাই । শিববাবা আসেন-ই সবাইকে নিয়ে যেতে। সত্যযুগে এতো
আত্মা তো থাকবে না। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
শিববাবাকে নিজের উত্তরাধিকারী করে সবকিছু এক্সচেঞ্জ করতে হবে। উত্তরাধিকারী করে
শরীর নির্বাহও করতে হবে, ট্রাস্টি মনে করে থাকতে হবে। কোনও পাপ কর্মে যেন পয়সা খরচ
না হয়।
২) অন্তরে খুশির ঝর্ণা
বইতে থাকবে যে, স্বয়ং জ্ঞানের সাগর বাবা এসে আমাদের পড়াচ্ছেন। পুণ্য আত্মা হওয়ার
জন্য অবশ্যই স্মরণে থাকতে হবে, মায়ার তুফান থেকে নির্ভীক হতে হবে।
বরদান:-
আত্মিক
(রূহানিয়ত) স্থিতির দ্বারা ব্যর্থ কথার স্টককে সমাপ্ত করে খুশির খাজানায় সম্পন্ন ভব
রূহানিয়ত স্থিতি
দ্বারা ব্যর্থ কথার স্টক সমাপ্ত করো। নয়তো একে অপরের অবগুণ বর্ণন করতে-করতে রোগের
জীবাণু বায়ুমণ্ডলে ছড়াতে থাকবে। এতে বাতাবরণ শক্তিশালী হবে না। তোমাদের কাছে অনেক
ভাব (মতামত, অনুভব) নিয়ে অনেক আত্মা আসবে, কিন্তু তোমাদের কাছ থেকে শুভ ভাবনার
চিন্তনই নিয়ে যাবে । এটা তখনই সম্ভব হবে, যখন নিজের কাছে খুশির বার্তার স্টক সঞ্চিত
থাকবে । যদি মনের মধ্যে কারো প্রতি কোনো ব্যর্থ সংলাপ চলে, সেখানে বাবা থাকেন না,
কারণ পাপ আছে ।
স্লোগান:-
স্মৃতির সুইচ অন থাকলে মুড অফ হতেই পারে না।