04.06.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
এখন তোমাদের অসীম জগতের পবিত্রতা ধারণ করতে হবে, অসীম জগতের পবিত্রতা অর্থাৎ
একমাত্র বাবা ব্যতীত অন্য কেউ যেন স্মরণে না আসে"
প্রশ্নঃ -
বাবার কাছে
উত্তরাধিকার প্রাপ্তির পূর্বের পুরুষার্থ এবং তার পরের স্থিতির মধ্যে কি পার্থক্য ?
উত্তরঃ -
যখন তোমরা বাবার কাছ থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকার নাও, তখন দেহের সব সম্বন্ধ ত্যাগ করে
এক বাবার স্মরণে থাকার পুরুষার্থ করো এবং যখন উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়ে যায় অর্থাৎ
স্বর্গ প্রাপ্ত হয়ে যায়, তখন বাবাকে ভুলে যাও। এখন উত্তরাধিকার নিতে হবে, তাই কোনও
নতুন সম্বন্ধ গড়ে তুলবে না। তা নাহলে ভুলতে কষ্ট হবে। সব কিছু ভুলে একমাত্র বাবাকে
স্মরণ করো তাহলে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবে ।
গীতঃ-
এই সময় পার হয়ে
যাচ্ছে....
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি
আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে বাবা বোঝাচ্ছেন - জ্ঞানী ও অজ্ঞানী কাকে বলা হয়, এই কথা
শুধুমাত্র তোমরা ব্রাহ্মণরাই জানো। জ্ঞান হল পঠন-পাঠন, যার দ্বারা তোমরা জেনেছো যে
- আমরা হলাম আত্মা, উনি হলেন পরমপিতা পরমাত্মা। তোমরা যখন মধুবনে আসো তখন অবশ্যই
নিজেদেরকে আত্মা নিশ্চয় করো। আমরা নিজের পিতার কাছে যাই। বাবা, শিববাবাকে বলা হয়,
শিববাবা আছেন প্রজাপিতা ব্রহ্মার দেহে। ব্রহ্মাও হয়ে গেলেন বাবা। তোমরা ঘর থেকে
বেরিয়ে ভাবো আমরা বাপদাদার কাছে যাই। তোমরা চিঠিতেও লেখো "বাপদাদা" শিববাবা, ব্রহ্মা
দাদা। আমরা বাবার কাছে যাই। বাবা কল্প-কল্প আমাদের সঙ্গে মিলিত হন। বাবা আমাদের
অসীম জগতের উত্তরাধিকার প্রদান করেন, আত্মিক রূপে পবিত্র করে। পবিত্রতায় হদ ও বেহদ
অর্থাৎ দৈহিক ও আত্মিক বিষয় আছে। তোমরা পুরুষার্থ করছো আত্মিক রূপে পবিত্র হয়ে
সতোপ্রধান হওয়ার জন্য। নম্বর অনুযায়ী তো অবশ্যই আছে। আত্মিক পবিত্রতা অর্থাৎ এক
অসীম জগতের পিতা ব্যতীত অন্য কেউ যেন স্মরণে না আসে। ওই বাবা হলেন অতি মধুর। উনি
হলেন উঁচু থেকে উঁচু ভগবান এবং অসীম জগতের পিতা। সকলের পিতা। তোমরা আত্মারূপী
বাচ্চারা-ই শুধু চিনেছো। অসীম জগতের পিতা কেবল ভারতেই আসেন। তিনি এসে অসীমের
সন্ন্যাস প্রদান করেন। সন্ন্যাস হল মুখ্য, যাকে বৈরাগ্য বলা হয়। বাবা সম্পূর্ণ
পুরানো ছিঃ ছিঃ দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য অনুভব করান। বাচ্চারা, এই দুনিয়া থেকে বুদ্ধি
যোগ বিচ্ছিন্ন করো। এই দুনিয়ার নাম ই হল নরক, দুঃখধাম। মানুষ নিজেরাও বলে যখন কেউ
মারা যায় তখন বলে স্বর্গবাসী হয়েছে, অর্থাৎ সে নরকে ছিল তাইনা। এখন তোমরা জানো এরা
যে কথা বলে সেই কথাটিও হল ভুল। বাবা সঠিক কথা বলে দেন, স্বর্গবাসী হওয়ার জন্য। এখনই
পুরুষার্থ করতে হয়। স্বর্গবাসী হওয়ার জন্য এক বাবা ব্যতীত কেউ পুরুষার্থ করাতে পারে
না। তোমরা এখন পুরুষার্থ করছো - ২১ জন্ম স্বর্গবাসী হওয়ার জন্য। স্বর্গবাসী করেন
বাবা। তাঁকেই বলা হয় হেভেনলি গড ফাদার। তিনি নিজে এসে বলেন বাচ্চারা, আমি তোমাদের
প্রথমে শান্তিধাম নিয়ে যাবো। তিনি হলেন মালিক তাইনা। শান্তিধাম গিয়ে পরে আসবো
সুখধামে পার্ট প্লে করতে। আমরা শান্তিধাম গেলে সর্ব ধর্মের মনুষ্য আত্মারা
শান্তিধাম যাবে। বুদ্ধিতে এই সম্পূর্ণ ড্রামার চক্রকে রাখতে হবে। আমরা সবাই যাবো
শান্তিধাম তারপর আমরা প্রথমে এসে বাবার কাছে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করি। যাঁর কাছে
উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়, তাঁকে তো স্মরণ করতে হবে। বাচ্চারা জানে স্বর্গের
উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হলে বাবার কথা বিস্মৃত হয়ে যাবে। এই উত্তরাধিকার খুব সহজভাবে
প্রাপ্ত হয়। বাবা সম্মুখে বলেন - মিষ্টি বাচ্চারা, তোমাদের দেহের সব সম্বন্ধ ভুলে
যাও। এখন কোনো নতুন সম্বন্ধ গড়ে তুলবে না। যদি কোনও সম্বন্ধে যুক্ত হবে তাহলে সেটাও
ভুলে যেতে হবে। যদি সন্তান জন্ম নেয় তবে তাও হল মুশকিল। অতিরিক্ত সম্বন্ধ বৃদ্ধি হল
স্মরণ করার জন্য। বাবা বলেন সবাইকে ভুলে একমাত্র বাবাকেই স্মরণ করতে হবে। তিনিই
হলেন আমাদের মাতা, পিতা, টিচার, গুরু সবকিছু, এক পিতার সন্তান আমরা হলাম ভাই-বোন।
কাকা-মামা ইত্যাদি কোনও সম্বন্ধ নেই। একমাত্র এই একটি সময়ে ভাই-বোনের সম্বন্ধ থাকে।
ব্রহ্মার সন্তানরা শিববাবার সন্তানও হয় সুতরাং নাতি-নাতনীও আছে। এই কথাটি তো
বুদ্ধিতে স্মরণে থাকে তাইনা। নম্বর অনুযায়ী পুরুষার্থ অনুসারে। স্ব দর্শন চক্রধারী
তোমরা বাচ্চারা চলতে ফিরতে হও।
বাচ্চারা, তোমরা এইসময় হলে চৈতন্য লাইট হাউস, তোমাদের এক চোখে হল মুক্তিধাম,
দ্বিতীয়টিতে হল জীবনমুক্তিধাম। ওই লাইট হাউস হল জড় বস্তু, তোমরা হলে চৈতন্য ।
তোমাদের জ্ঞান নেত্র প্রাপ্ত হয়েছে। তোমরা জ্ঞানবান হয়ে সবাইকে পথ দেখিয়ে দাও।
বাবাও তোমাদের পড়াচ্ছেন। তোমরা জানো - এই হল দুঃখধাম। আমরা এখন সঙ্গমে আছি। বাকি
সম্পূর্ণ দুনিয়া কলিযুগে আছে। সঙ্গমে বাবা বাচ্চাদের সঙ্গে বসে কথা বলেন এবং
বাচ্চারা ই আসে এইখানে। কেউ লেখে বাবা অমুক কে এখানে আনবো? ভালো তো গুণ গ্রহণ করবে,
যদি তীর (জ্ঞান বাণ) লেগে যায়। তাই বাবারও করুণা হয়, হতে পারে কল্যাণ হয়ে যাবে।
তোমরা বাচ্চারা জানো এই হল পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ। এই সময়েই তোমরা পুরুষোত্তম হও।
কলিযুগে সব হল কনিষ্ঠ পুরুষ, যারা উত্তম পুরুষ লক্ষ্মী-নারায়ণকে প্রণাম করে।
সত্যযুগে কেউ কাউকে প্রণাম করে না। এখানকার এইসব কথা সেখানে থাকে না। এই কথাও বাবা
বোঝান - ভালো ভাবে বাবার স্মরণে থেকে সার্ভিস করবে, তাহলে ভবিষ্যতে তোমাদের
সাক্ষাৎকারও হতে থাকবে। তোমরা কোনো রকম ভক্তি ইত্যাদি করো না। শুধু বাবা তোমাদের
পড়ান। ঘরে বসে আপনা থেকেই সাক্ষাৎকার ইত্যাদি হতে থাকবে। অনেকের ব্রহ্মার
সাক্ষাৎকার হয়, ব্রহ্মার সাক্ষাৎকারের জন্য কোনও পুরুষার্থ করতে হয় না। অসীম জগতের
পিতা ব্রহ্মা দ্বারা সাক্ষাৎকার করান। ভক্তি মার্গে যে যার প্রতি যেমন ভাবনা পোষণ
করে , তারই সাক্ষাৎকার হয়। এখন তোমাদের ভাবনা রয়েছে সবচেয়ে উঁচু থেকে উঁচু ঈশ্বর
পিতার জন্য। তাই পরিশ্রম ছাড়া ই বাবা সাক্ষাৎকার করাতে থাকেন। শুরুতে অনেকে ধ্যান
মগ্ন হয়ে যেতো, নিজেদের মধ্যেই বসে থাকতে থাকতে ধ্যান মগ্ন হয়ে যেতো। কোনও ভক্তি
করেনি। সন্তান কখনও ভক্তি করে নাকি ? যেন একটি খেলা, চলো বৈকুণ্ঠে যাই। একে অপরকে
দেখে চলে যেত, যা পাস্ট হয়েছে সেসব রিপিট করবে। তোমরা জানো আমরা এই ধর্মের ছিলাম।
সত্যযুগে সর্ব প্রথমে হয় এই ধর্ম, এই ধর্মেই অনেক সুখ আছে। তারপরে ধীরে-ধীরে কলা বা
কোয়ালিটি কম হতে থাকে। নতুন বাড়িতে যেমন সুখ থাকে তেমন পুরানো বাড়িতে থাকে না। কিছু
সময় বাদে সেই জাঁক জমক কমে যায়। স্বর্গ এবং নরকে অনেক তফাৎ তাইনা। কোথায় স্বর্গ,
কোথায় নরক! তোমরা খুশীতে থাকো, এই কথাও জানো বাবার স্মরণে দৃঢ় হতে হবে। আমরা হলাম
আত্মা - এই কথা ভুলে গিয়েই দেহ-অভিমান এসে যায়। এখানে বসে আছো তো চেষ্টা করো নিজেকে
আত্মা নিশ্চয় করো। তাহলেই বাবার স্মরণ থাকবে। দেহে এলেই দেহের সব সম্বন্ধ স্মরণে এসে
যাবে। এই হল একটি নিয়ম। তোমরা গানও গাও আমরা তো এক বাবা দ্বিতীয় কেউ নয়। বাবা আমরা
সমর্পণ করবো। এই হল সেই সময়, একের স্মরণে থাকতে হবে। চোখ দিয়ে যা দেখছো দেখো, ঘুরে
বেড়াও আত্মাকে শুধু পিতাকে স্মরণ করতে হবে। শরীর নির্বাহের উদ্দেশ্যে কর্ম কর্তব্যও
করতে হবে। কিন্তু হাত দিয়ে কর্ম সম্পন্ন করতে করতে পিতার স্মরণে থাকতে হবে, আত্মাকে
নিজের প্রিয়তমকে স্মরণ করতে হবে। কারো নিজের সখীর সঙ্গে এমন প্রীতি হয় যে সখীর
স্মরণ স্থির হয়ে যায়। তখন এই মোহের ভাব মুক্ত হতে কষ্ট হয়। প্রশ্ন করে - বাবা, এইসব
কি ! আরে, তোমরা নাম-রূপে কেন আটকে যাও। এক তো তোমরা দেহ-অভিমানী হও, দ্বিতীয়
তোমাদের অতীতের কিছু হিসেব আছে, সেসব হল ধোকা। বাবা বলেন এই চোখ দিয়ে যা কিছু দেখো
তাতে যেন বুদ্ধি না যায়। তোমাদের বুদ্ধিতে এই কথা যেন থাকে আমাদের শিববাবা পড়ান।
সুতরাং নিজেকে দেখা উচিত - আমরা শিববাবাকে কতখানি স্মরণ করেছি ? তা নাহলে স্মরণের
চার্ট খারাপ হয়ে যাবে।
ভগবান বলেন - মিষ্টি বাচ্চারা, আমাকে স্মরণ করো। নিজের কাছে নোট করে রাখো, যখন ইচ্ছে
স্মরণে বসে যাও। খাবার খেয়ে একটু ঘুরে এসে ১০-১৫ মিনিট স্মরণে বসো কারণ এখানে কোনো
কর্মকান্ড তো নেই। তা সত্ত্বেও যা কাজ কর্ম ছেড়ে এইখানে এসেছো সেসব বুদ্ধিতে এসে
যায়। খুব কঠিন লক্ষ্য, তাই তো বাবা বলেন নিজের চেকিং করো। এই সময় হল তোমাদের মোস্ট
ভ্যালুয়েবল সময়। ভক্তিমার্গে তোমরা কত সময় নষ্ট করেছো। দিন দিন নীচে নেমেছো।
কৃষ্ণের দর্শন পেয়ে কত খুশী হয়েছো। প্রাপ্তি কিছুই নেই। বাবার উত্তরাধিকার তো একবার
ই প্রাপ্ত হয়, এখন বাবা বলেন আমার স্মরণে থাকো তো তোমাদের জন্ম জন্মান্তরের পাপ
বিনষ্ট হয়ে যাবে। স্বর্গের পাসপোর্ট সেই বাচ্চাদের প্রাপ্ত হয় যারা স্মরণে থেকে
নিজের বিকর্ম বিনাশ করে কর্মাতীত অবস্থা প্রাপ্ত করে। তা নাহলে দন্ড ভোগ করতে হয়।
বাবা আরও বলেন নিজের মুকুট ও সিংহাসনের ফটো পকেটে রাখো তাহলে স্মরণ থাকবে। এর দ্বারা
আমরা এমন স্বরূপে পরিণত হই। যত দেখবে তত স্মরণ করবে। তখন এতেই মোহ অনুভব হবে। আমরা
এমন স্বরূপে পরিণত হই - নর থেকে নারায়ণ, চিত্র দেখে খুশী হবে। শিববাবার স্মৃতি থাকবে।
এইসব হল পুরুষার্থ করার যুক্তি। কাউকেও জিজ্ঞাসা করো সত্য নারায়ণের কাহিনী শুনলে কি
হয় ? আমাদের বাবা আমাদের সত্যনারায়ণের কাহিনী শোনাচ্ছেন। কীভাবে ৮৪ জন্ম হয়েছে,
সেসবের হিসেব তো চাই তাইনা। সবাই তো ৮৪ জন্ম নেবে না । দুনিয়া তো কিছুই জানে না।
এমনি ই মুখে বলে দেয়-একেই বলে থিওরিটিক্যাল। তোমাদের এই হল প্রাক্টিক্যাল। এখন যা
হচ্ছে ভক্তিমার্গে সেসবের বই লেখা হবে। তোমরা স্বদর্শন চক্রধারী হয়ে বিষ্ণুপুরীতে
আসো। এই হল নতুন কথা। রাবণ রাজ্য মিথ্যাখন্ড, সত্যখন্ড রামরাজ্য হবে। চিত্রে সবই
ক্লিয়ার আছে। এখন এই পুরানো দুনিয়ার অন্ত সময়, ৫ হাজার বছর পূর্বেও বিনাশ হয়েছিল।
বিজ্ঞানবিদ যারা আছে তাদের চিন্তনেও আছে আমাদের কেউ প্রেরিত করছে যার দ্বারা আমরা
এই সব আবিষ্কার করতে থাকি। বোধ আছে আমরা এইসব আবিষ্কার করলে সব শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু
পরবশ অর্থাৎ অন্যের বশে বশীভূত, ভয় তো আছেই। সবকিছু বুঝেছে তারা যে ঘরে বসে একটি
বোমা ছুঁড়ে দিলেই সব শেষ হয়ে যাবে। বিমান, পেট্রোল ইত্যাদির কোনও প্রয়োজন থাকবে না।
বিনাশ অবশ্যই হবে। নতুন দুনিয়া সত্যযুগ ছিল, ক্রাইষ্টের ৩ হাজার বছর পূর্বে স্বর্গ
ছিল এখন সেই স্বর্গের স্থাপনা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও বুঝতে পারবে - তোমরা জানো স্থাপনা
অবশ্যই হবে। এতে এক পয়সারও সন্দেহ নেই।
এই ড্রামা চলতে থাকে কল্প পূর্বের ন্যায়। ড্রামা অবশ্যই পুরুষার্থ করাবে। এমনও নয়,
যা ড্রামায় আছে তাই হবে ....। জিজ্ঞাসা করা হয় পুরুষার্থ বড় নাকি প্রালব্ধ বড় ?
পুরুষার্থ বড় কারণ পুরুষার্থের দ্বারাই প্রালব্ধ প্রাপ্তি হবে। পুরুষার্থ ব্যতীত
কখনও কেউ থাকতে পারে না। তোমরা পুরুষার্থ তো করছো তাইনা। কোথা কোথা থেকে বাচ্চারা
আসে, পুরুষার্থ করে। তারা বলে বাবা আমরা ভুলে যাই। আরে, শিববাবা তোমাদের বলেন আমাকে
স্মরণ করো, কাকে বললেন ? আমি আত্মা, আমাকে বললেন। বাবা আত্মাদের সঙ্গেই কথা বলেন।
শিববাবা হলেন পতিত-পাবন, এই আত্মাও (ব্রহ্মা বাবা) তাঁর কাছেই (শিববাবার) শোনেন।
বাচ্চারা, তোমাদের এই দৃঢ় নিশ্চয় থাকা উচিত যে অসীম জগতের পিতা আমাদের বিশ্বের
মালিক করেন। তিনি হলেন উঁচু থেকে উঁচুতে সর্বোচ্চ, অতীব প্রিয় সকলের আমাদের প্রিয়
শিববাবা। ভক্তিমার্গে তাঁকেই স্মরণ করছি, গানও গেয়েছি তোমার গতি - মতি সবই পৃথক।
সুতরাং নিশ্চয়ই তিনি মত দিয়েছিলেন। এখন তোমাদের বুদ্ধিতে আছে - এত অসংখ্য মানুষ ঘরে
ফিরবে। বিচার করে দেখো কত আত্মা আছে, সকলের বংশ আছে। সব আত্মারা নম্বর অনুযায়ী গিয়ে
বসবে। ক্লাস ট্রান্সফার হলে নম্বর অনুযায়ী গিয়ে বসে, তাইনা। তোমরাও নম্বর অনুযায়ী
যাও। সূক্ষ্ম বিন্দু রূপে আত্মা নম্বর অনুযায়ী গিয়ে বসবে তারপরে নম্বর অনুসারে আসবে
পার্ট প্লে করতে। এই হল রুদ্র মালা। বাবা বলেন এত কোটি কোটি আত্মাদের মালা আমার।
উপরে আমি ফুল, পরে পার্ট প্লে করতে সবাই এখানেই আসে। এইরূপ ড্রামা নির্দিষ্ট আছে।
বলাও হয় এই হল পূর্ব রচিত ড্রামা। এই ড্রামা কিভাবে এগিয়ে চলে সে কথা তোমরা জানো।
সবাইকে এই কথা বলো নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে শিববাবাকে স্মরণ করো, তাহলে তোমাদের
বিকর্ম বিনাশ হবে তখন তোমরা ফিরে যাবে। এই হল পরিশ্রম। সবাইকে পথ বলে দিতে হবে, এই
তোমাদের কর্তব্য। তোমরা দেহধারীর সম্পর্কে আটকে পড়ো না। বাবা তো বলেন আমাকে স্মরণ
করো তাহলে পাপ ভস্ম হবে। বাবা নির্দেশ দেন তাতো করতে হবে। প্রশ্নের কথা নেই।
যেভাবেই হোক স্মরণ অবশ্যই করো, এতে বাবা কিবা কৃপা করবেন। তোমাদের স্মরণ করতে হবে,
উত্তরাধিকার তোমাদের নিতে হবে। বাবা হলেন স্বর্গের রচয়িতা তাই স্বর্গের উত্তরাধিকার
অবশ্যই প্রাপ্ত হবে। এখন তোমরা জানো এই বৃক্ষটি পুরানো হয়েছে তাই এই পুরানো দুনিয়ার
প্রতি বৈরাগ্য ভাব রাখো। একেই বলা হয় অসীমের বৈরাগ্য। হঠ-যোগীদের হল দৈহিক বৈরাগ্য।
তারা অসীমের আত্মিক বৈরাগ্য বৃত্তি শেখাতে পারে না। অসীমের বৈরাগ্য বৃত্তিধারী
দেহের সীমিত বৈরাগ্য শেখাবে কীভাবে। এখন বাবা বলেন হারানিধি বাচ্চারা, তোমরাও বলো
বাবাও হলেন হারানিধি (কত কাল পর সাক্ষাৎ হয়েছে)। ৬৩ জন্ম বাবাকে স্মরণ করেছি, এখন
একমাত্র বাবা হলেন আমাদের আপন, অন্য কেউ নয়। আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
স্বর্গে যাওয়ার পাসপোর্ট নেওয়ার জন্য বাবার স্মরণে থেকে নিজের বিকর্ম গুলি বিনাশ করে
কর্মাতীত অবস্থা গড়ে তুলতে হবে। দন্ড ইত্যাদি থেকে সুরক্ষিত থাকার পুরুষার্থ করতে
হবে।
২) জ্ঞানবান হয়ে
সবাইকে পথ বলে দিতে হবে, চৈতন্য লাইট হাউস হতে হবে। একটি চোখে শান্তিধাম, অন্যটিতে
সুখধাম যেন থাকে। এই দুঃখধামের কথা ভুলে যেতে হবে।
বরদান:-
নিজের
ডবল লাইট স্বরূপ দ্বারা আসন্ন বিঘ্নগুলি পার করে তীব্র পুরুষার্থী ভব
ব্যাখা: আসন্ন বিঘ্ন
গুলি দেখে ক্লান্তি বা হতাশা অনুভব করার পরিবর্তে সেকেন্ডে নিজের আত্মিক জ্যোতি
স্বরূপ এবং নিমিত্ত ভাব যুক্ত ডবল লাইট স্বরূপ দ্বারা সেকেন্ডে হাই জাম্প লাগিয়ে
দাও। বিঘ্ন রূপী পাথর ভাঙতে সময় নষ্ট কোরো না। জাম্প লাগিয়ে সেকেন্ডে পার হয়ে যাও।
একটু বিস্মৃতির কারণে সহজ মার্গটি কঠিন করবে না। নিজের জীবনের ভবিষ্যতের শ্রেষ্ঠ
লক্ষ্য স্পষ্ট দেখতে দেখতে তীব্র পুরুষার্থী হও। বাপদাদা এবং বিশ্ব যে দৃষ্টিতে
তোমাদের দেখছে, সেই শ্রেষ্ঠ স্বরূপে সর্বদা স্থির হয়ে থাকো।
স্লোগান:-
সদা
খুশীতে থাকা এবং সবাইকে খুশী প্রদান করা - এই হল সবচেয়ে বড় সম্মান ।