03.06.2020 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


“মিষ্টি বাচ্চারা - শ্রীমত অনুসারে তোমাদের সবাইকে সুখদান করতে হবে, নিজেরা শ্রেষ্ঠ হয়ে অন্যদেরকে শ্রেষ্ঠ বানানোর জন্য তোমাদের এখন শ্রেষ্ঠ মত প্রাপ্ত হচ্ছে”

প্রশ্নঃ -
দয়াবান বাচ্চাদের হৃদয়ে কোন্ ইচ্ছা উৎপন্ন হয় ? তাদেরকে কি করতে হবে ?

উত্তরঃ -
দয়াবান বাচ্চাদের হৃদয়ে এই ইচ্ছা উৎপন্ন হয় যে - আমরা গ্রামে-গ্রামে গিয়ে সেবা করবো। বর্তমান সময় অনুসারে তারা (গ্রামবাসীরা) অত্যন্ত দুঃখী হয়ে পড়েছে, তাদেরকে গিয়ে এই খুশীর খবর শোনাতে চাই যে, সমগ্র বিশ্বে পবিত্রতা, সুখ এবং শান্তির দৈবী স্বরাজ্য স্থাপন হচ্ছে, এটাই হল সেই মহাভারতের লড়াই, বরাবর ওই সময়ও বাবা ছিলেন, এখনও বাবা এসেছেন।

ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা এখানে বসে আছো তো এটা অবশ্যই বুঝে গেছো যে - আমরা হলাম ঈশ্বরীয় সন্তান। অবশ্যই নিজেদেরকে আত্মা মনে করছো। শরীর আছে তাই তো আত্মা শুনতে পাচ্ছে। বাবা এই শরীর লোনে নিয়েছেন, তবেই তো শোনাতে পারছেন। এখন তোমরা বুঝে গেছ যে - আমরা হলাম ঈশ্বরীয় সন্তান বা সম্প্রদায়ের, পুনরায় আমরা দৈবী সম্প্রদায়ের হব। দেবতারাই স্বর্গের মালিক হয়ে থাকে। আমরা পুনরায় পাঁচ হাজার পূর্বের ন্যায় দৈবী স্বরাজ্যের স্থাপন করছি। পুনরায় আমরা দেবতা হয়ে যাব। এই সময় সমগ্র দুনিয়া, মুখ্যতঃ ভারত তথা সমগ্র দুনিয়ার সকল মনুষ্যমাত্র এক-পরস্পরকে দুঃখই দেয়। তাদের এটাও জানা নেই যে, সুখধামও হয়। পরমপিতা পরমাত্মাই এসে সবাইকে সুখী- শান্ত বানিয়ে দেন। এখানে তো ঘরে ঘরে এক-পরস্পরকে দুঃখই দিতে থাকে। সমগ্র বিশ্বে শুধু দুঃখই দুঃখ। বাচ্চারা এখন তোমরা জেনে গেছ যে, বাবা আমাদেরকে ২১ জন্মের জন্য সদা সুখী বানাচ্ছেন। কবে থেকে দুঃখ শুরু হয়েছে, আবার কবে শেষ হবে, এই সব বিষয় নিয়ে আর কেউ বুদ্ধিতে চিন্তন করবে না। তোমাদেরই বুদ্ধিতে আছে যে, আমরা বরাবর ঈশ্বরীয় সম্প্রদায়ের ছিলাম, যদিও সমগ্র দুনিয়ার মানুষ মাত্রই হল ঈশ্বরীয় সম্প্রদায়। প্রত্যেকে তাঁকে বাবা বলে আহ্বান করে। এখন বাচ্চারা জেনে গেছে যে শিববাবা আমাদেরকে শ্রীমত প্রদান করছেন। শ্রীমত শব্দটি সকলেরই বেশ ভালোভাবে জানা আছে। উঁচুর থেকে উঁচু ভগবানের শ্রীমত হল উঁচুর থেকে উঁচু। গাওয়াও হয় যে - তাঁর গতি এবং শ্রীমত হল সবকিছুর থেকে পৃথক। শিববাবার শ্রীমত আমাদেরকে কি থেকে কি বানিয়ে দিচ্ছে! স্বর্গের মালিক। অন্যান্য মানুষ তো নরকের মালিক বানিয়ে দেয়। এখন তোমরা সঙ্গমে আছো। এটা নিশ্চয় আছে তাই না। নিশ্চয়বুদ্ধি যুক্ত আত্মারাই এখানে আসে আর মনে করে যে বাবা আমাদেরকে পুনরায় সুখধামের মালিক বানাচ্ছেন। আমরাই ১০০ শতাংশ পবিত্র গৃহস্থী ছিলাম। এইসব কিছু মনে পড়ে গেছে। ৮৪ জন্মেরও হিসাব আছে তাই না। কে কে কত জন্ম গ্রহণ করে। যে ধর্ম পরবর্তীকালে আসে, তাদের জন্মও অল্পসংখ্যক হয়।

বাচ্চারা তোমাদেরকে এখন এ বিষয়ে নিশ্চয় রাখতে হবে যে, আমরা হলাম ঈশ্বরীয় সন্তান। আমরা এখন শ্রেষ্ঠ মত প্রাপ্ত করছি, সবাইকে শ্রেষ্ঠ বানানোর জন্য। সেই শিববাবাই আমাদেরকে রাজযোগ শেখাচ্ছেন। সাধারণ মানুষ মনে করে যে, বেদ-শাস্ত্রাদী হল ভগবানকে প্রাপ্ত করার রাস্তা আর ভগবান বলেন যে - এর কোনো কিছুর দ্বারাই আমাকে প্রাপ্ত করা যায় না। আমি নিজেই আসি, তবেই তো আমার জয়ন্তী পালন করা হয়। কিন্তু কবে আর কার শরীরে আসি, এটা কেউ জানে না। তোমরা ব্রাহ্মণেরা ছাড়া। বাচ্চারা এখন তোমাদের সবাইকে সুখ প্রদান করতে হবে। দুনিয়াতে তো এক-পরস্পরকে দুঃখই দিতে থাকে। তারা এটা জানে যে, বিকারে বশীভূত হওয়াই হল দুঃখ দেওয়া। এখন তোমরা জেনে গেছো যে - এটাই হল মহান দুঃখ। যে কুমারী পবিত্র ছিল, তাকে অপবিত্র বানিয়ে দেয়। নরকবাসী হওয়ার জন্য কতইনা অনুষ্ঠান ইত্যাদি করে। এখানে তো এরকম হাঙ্গামার কোনো ব্যাপারই নেই। তোমরা অনেক শান্তিতে বসে থাকো। সবাই খুশীতে থাকে, সমগ্র বিশ্বকে সদাকালের জন্য সুখী বানিয়ে দেয়। তোমাদের সম্মান শিব-শক্তি রূপে প্রদর্শিত হয়। তোমাদের সামনে তো লক্ষ্মী-নারায়ণেরও কোনো সম্মান নেই।শিব-শক্তিদেরই নাম গান করা হয় কেননা বাবার সমান সেবাধারী, সবাইকে পবিত্র বানিয়ে সদা সুখী বানিয়েছে, এইরকম তোমরাও বাবার সাহায্যকারী হয়েছো, এইজন্য তোমাদেরই ভারত মাতা রূপে মহিমা করা হয়। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ তো রাজা-রাণী আর প্রজারা সবাই হবে স্বর্গবাসী। সেটা কি আর এমন বড় কথা! তারা যেমন হল স্বর্গ বাসী তেমনই এখানকার রাজা-রাণী সবাই হল নরকবাসী। এই নরকবাসীদের স্বর্গবাসী তোমরা বানাচ্ছ। সাধারণ মানুষ তো কিছুই জানেনা। একদমই নিম্নমানের বুদ্ধি। কিরকম সব করতে থাকে। এখানে অনেক লড়াই আদি হয়। প্রত্যেক কথাতে দুঃখই দুঃখ।

সত্যযুগে প্রত্যেক ক্ষেত্রেই হল সুখ আর সুখ। এখন সবাইকে সুখ দেওয়ার জন্যই বাবা শ্রেষ্ঠ মত দিচ্ছেন। গাওয়াও হয় শ্রীমত ভগবানুবাচ। শ্রীমত মনুষ্যুবাচ নয়। সত্যযুগে দেবতাদের মত দেওয়ার দরকারই নেই। এখানে তোমাদেরই শ্রীমত প্রাপ্ত হয়। বাবার সাথে সাথে তোমাদেরও শিব-শক্তিরূপে মহিমা হয়। এখন সেই পার্টই বাস্তবে তোমরা অভিনয় করছো। এখন বাবা বলছেন যে বাচ্চারা তোমাদেরকে মন-বাণী-কর্মের দ্বারা সবাইকে সুখ দিতে হবে। সবাইকে সুখধামে যাওয়ার রাস্তা বলে দিতে হবে। এটাই হল তোমাদের কাজ। শরীর নির্বাহ করার জন্য পুরুষদেরকে কাজ-কর্মও করতে হয়। সবাই বলে যে, সন্ধ্যের সময় দেবতারা পরিক্রমায় বাহির হন। এখন দেবতারা এখানে কিভাবে আসবেন। কিন্তু তারা এই সান্ধ্য সময়কে শুদ্ধ বলে মনে করে। এই সান্ধ্য সময়ে সকলেই কাজ থেকে অবসর নেয়। বাচ্চারা তোমাদেকে চলতে-ফিরতে, উঠতে-বসতে বাবাকে স্মরণ করতে হবে। ব্যস্ কোনো দেহধারীর চাকরী আদি করবে না। বাবার গায়নও আছে যে, তিনি দ্রৌপদীর পদসেবা করেছেন। এরও অর্থ বোঝে না। স্থুল পদসেবার কথা বলা হয় নি। বাবার কাছে অনেক বৃদ্ধা মাতারাই আসে, জানি যে, ভক্তি করতে করতে তারা অনেক ক্লান্ত হয়ে গেছে। অর্ধেক কল্প অনেক ধাক্কা খেয়েছে। আর এই জ্ঞানের দ্বারা সেবাকে তারা পদসেবা বলে দিয়েছে। আবার কৃষ্ণও কিভাবে পদসেবা করবে ? শোভনীয় হবে ? তোমরা কৃষ্ণকে পদসেবা করতে দেবে? কৃষ্ণকে দেখামাত্রই তাঁর প্রতি মন আকৃষ্ট হয়ে যাবে। তাঁর মধ্যে তো অনেক চমকপ্রদ সাজসজ্জা থাকে। কৃষ্ণকে ছাড়া অন্য কোনো কথা বুদ্ধিতে ধারণ হয়ই না। তিনিই হলেন সবথেকে তেজময়। কৃষ্ণ বাল্যকালে মুরলী বাজাতেন, এসব নিয়ে কারােরই মনে কোনো প্রশ্ন আসেনা। এখানে তোমরা শিববাবার সাথে কিভাবে মিলন করবে? বাচ্চাদেরকে বলতে হয় যে, শিববাবাকে স্মরণ করো তারপর এঁনার (কৃষ্ণের) কাছে এসো। বাচ্চারা তোমাদের অন্তরে তো খুশী হওয়া চাই যে আমাদেরকে শিববাবা ২১ জন্মের জন্য সুখী বানাচ্ছেন। এইরকম বাবার কাছে তো সমর্পণ হয়ে যেতে হবে। কোনো বাচ্চা যদি সুপুত্র হয়, তবে বাবাও তার কাছে বশ্যতা স্বীকার করেন। বাবার প্রত্যেক আশা সে পূর্ণ করে। কেউ কেউ তো আবার এমন বাচ্চা হয় যে, বাবাকে খুনও করে দেয়। এখানে তো তোমাদেরকে অতিমিঠা হতে হবে। কাউকে দুঃখ দিও না। যে বাচ্চার হৃদয়ে দয়ার গুণ থাকে, তার হৃদয় চায় যে - আমি গ্রামে গ্রামে গিয়ে সেবা করবো। আজকাল তারা (গ্রামবাসীরা) অনেক দুঃখী হয়ে গেছে। তাদের কাছে গিয়ে এই খুশীর খবর শোনাও যে, বিশ্বে পবিত্রতা, সুখ, শান্তির দৈবী স্বরাজ্য স্থাপন হচ্ছে, এটাই হল সেই মহাভারতের লড়াই। বরাবর সেই সময় বাবাও ছিলেন। এখনও বাবা এসেছেন। তোমরা জেনে গেছো যে বাবা আমাদেরকে পুরুষোত্তম বানাচ্ছেন। এটা হলই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ। বাচ্চারা তোমরা জেনে গেছো যে - আমরা কিভাবে পুরুষোত্তম তৈরী হচ্ছি। তোমাদেরকে কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে যে, তোমাদের উদ্দেশ্য কী? বলো মানুষ থেকে দেবতা হওয়া। দেবতাদের তো সবাই জানে। বাবা বলছেন যে, যারা দেবতাদের ভক্তবৃন্দ, তাদেরকে গিয়ে বোঝাও। প্রথম প্রথম তোমরা শিবেরই ভক্তি শুরু করেছিলে, পরে দেবতাদের ভক্তি শুরু হয়। তাই সর্ব প্রথম শিববাবার ভক্তদেরকে বোঝাতে হবে। বলো - শিববাবা বলছেন যে - আমাকে স্মরণ করো। শিবের পূজা করে, কিন্তু বুদ্ধিতে থাকে না যে, ইনিই হলেন পতিত-পাবন বাবা। ভক্তিমার্গেও দেখো, ভীড়ের মধ্যে কত ধাক্কা খায়। শিবলিঙ্গ তো ঘরের মধ্যেও রাখতে পারে, তার পূজা করতে পারে, তাহলে আবার অমরনাথ, বদ্রীনাথ আদির প্রতি যাত্রা করার কি দরকার ? কিন্তু ভক্তিমার্গে মানুষদেরকে ধাক্কা অবশ্যই খেতে হয়। তোমাদেরকে এই ধাক্কা খাওয়া থেকে আমি রক্ষা করি। তোমরা হলে শিব-শক্তি, শিব বাবার সন্তান। তোমরা বাবার থেকে শক্তি গ্রহণ করো। স্মরণের দ্বারাই সেই শক্তি প্রাপ্ত হয়। বিকর্ম বিনাশ হয়। পতিত-পাবন তো হলেন বাবা, তাই না। স্মরণের দ্বারাই তোমরা বিকর্মাজিৎ পবিত্র হও।সবাইকে এই রাস্তা বলতে হবে। তোমরা এখন রামের হয়েছো। রামরাজ্যে হল সুখ আর রাবণরাজ্যে হল দুঃখ। ভারতেই সকলের চিত্র আছে, যাদের পূজা হয়। অনেক অনেক মন্দির আছে। কেই হনুমানের পূজারী তো কেউ অন্য কোনো দেবতার! একেই বলা হয় অন্ধ শ্রদ্ধা। এখন তোমরা জেনেছো যে, আমরাও অন্ধ ছিলাম। এঁনারও (ব্রহ্মাবাবার) জানা ছিল না যে - ব্রহ্মা-বিষ্ণু- শংকর কে বা কেমন। যে পূজ্য ছিলো, সেই আবার পূজারী হয়ে যায়। সত্যযুগে হল পূজ্য, এখানে হল পূজারী। বাবা কত সুন্দর করে বুঝিয়ে দেন। তোমরা জেনেছো যে, পূজ্য হয়-ই সত্যযুগে। এখানে হল পূজারী, তাই তো পূজাই করতে থাকে। তোমরা হলে শিব-শক্তি। এখন তোমরা না পূজারী, না পূজ্য। বাবাকে ভুলে যেও না। এটা হল সাধারন শরীর তাই না। এঁনার মধ্যে উঁচুর থেকেও উঁচু ভগবান আসেন। তোমরাই তো বাবাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলে, তাই না। বাবা এসো, আমরা অনেক পতিত হয়ে গেছি। পুরানো পতিত দুনিয়া, পতিত শরীরে এসে আমাকে পবিত্র বানাও। বাচ্চারা নিমন্ত্রণ জানায়। এখানে তো কেউই পবিত্র নেই।অবশ্যই সকল পতিতদেরকে পাবন বানিয়ে নিয়ে যাবেন, তাই না। তাই সবাইকেই শরীর ত্যাগ করতে হবে, তাই না। কেউ দেহত্যাগ করলে তো কতইনা হায়-হতাশা করে চিৎকার করে। তোমরা তো খুশীতে দেহত্যাগ করবে। এখন তোমরা আত্মারা শিববাবাকে কে বেশী স্মরণ করবে তার জন্য নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছো। শিববাবাকে মনে করতে করতেই দেহত্যাগ হয়ে গেলে অহো সৌভাগ্য। তরী পার হয়ে যায়। সবাইকেই বাবা এইভাবে পুরুষার্থ করার জন্য বলছেন। কোনো কোনো সন্ন্যাসী এরকমও হয়। ব্রহ্মতে লীন হয়ে যাওয়ার জন্য পুরুষার্থ করতে থাকে। কিন্তু শেষ সময়ে এইভাবে বসে থেকেই শরীর ত্যাগ করে। সমাধিস্থ হয়ে যায়।

পুনরায় সুখের দিন আসবে। এরজন্যই তোমরা পুরুষার্থ করো যে, বাবা আমি তোমার কাছে আসছি। তোমাকেই মনে করতে করতে যখন আমরা আত্মারা পবিত্র হয়ে যাবো তখন তুমি আমাদেরকে সাথে করে নিয়ে যাবে। আগে যখন কাশী কলবটে গিয়ে আত্ম বলিদান করতো। তখন তারা এটা ভেবে খুশী হত যে,ব্যস্ আমি মুক্ত হয়ে যাব। এরকম মনে করতো। এখন তোমরা বাবাকে স্মরণ করতে চলে যাও শান্তিধামে। তোমরা বাবাকে স্মরণ করতে থাকো আর এই স্মরণের শক্তির দ্বারাই পাপ কেটে যায়, তারা মনে করে যে গঙ্গাজলে স্নান করলে পাপ কেটে যায়। মুক্তি পেয়ে যাবে। এখন বাবা বোঝাচ্ছেন যে, সেটা কোনো যোগবল নয়। পাপকর্মের শাস্তি খেতে খেতে পুনরায় গিয়ে জন্ম নেয়। নতুন জন্মেও পুনরায় পাপের খাতা শুরু হয়ে যায়। কর্ম-অকর্ম-বিকর্মের গতি বাবা বসে বোঝাচ্ছেন। রাম রাজ্যে কর্ম অকর্ম হয়, রাবণ রাজ্যে কর্ম বিকর্ম হয়ে যায়। সেখানে কোনো বিকার আদি হয় না।

মিষ্টি মিষ্টি ফুলের মতো বাচ্চারা জানে যে, বাবা আমাদেরকে সমস্ত যুক্তি, সমস্ত রহস্য বোঝাচ্ছেন। মুখ্য কথা এটাই হল যে, বাবাকে স্মরণ করো। পতিত-পাবন বাবা তোমাদের সামনে বসে আছেন, তিনি অত্যন্ত নির্মানচিত্ত। কোনও অহংকার নেই, একদম সাধারণ ভাবে থাকেন। বাপ-দাদা দুজনেই হলেন বাচ্চাদের সেবক। তোমাদের সেবক হলেন দু'জন - উঁচুর থেকেও উঁচু শিববাবা এবং প্রজাপিতা ব্রহ্মা বাবা। তারা তো ত্রিমূর্তি ব্রহ্মা বলে দেয়। অর্থ কিছুই জানে না। ত্রিমূর্তি ব্রহ্মা কি করেন, কিছুই জানা নেই। আচ্ছা।

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১) সর্বদা এই নিশ্চয় যেন থাকে যে, আমরা হলাম ঈশ্বরের সন্তান, আমাদেরকে শ্রেষ্ঠ মতে চলতে হবে। কাউকেই দুঃখ দেওয়া যাবে না। সবাইকে সুখের রাস্তা বলে দিতে হবে।

২) সুপুত্র হয়ে বাবার কাছে নিজেকে সমর্পণ করে দিতে হবে, বাবার প্রত্যেক আশাকে পূর্ণ করতে হবে। বাবা যে'রকম নির্মান আর নিরহংকারী, এইরকম বাবার সমান হতে হবে।

বরদান:-
কল্যাণকারী বাবা আর সময়ের প্রতিটি সেকেণ্ডকে শ্রেষ্ঠ কার্যে সফল করে নিশ্চয় বুদ্ধি, নিশ্চিন্ত ভব

*ব্যাখ্যা :-* যা কিছু ঘটে চলেছে, সেগুলিকে ত্রিকালদর্শী হয়ে দেখ, সাহস আর উদ্যম ধারণ করে নিজেও শক্তিশালী আত্মা হও আর বিশ্বকেও সমর্থ বানাও। নিজের পরিস্থিতির কারনে বিচলিত হও না, স্থির থাকো। যে সময় প্রাপ্ত হয়েছে, বাবাকে সাথী রূপে পেয়েছো, অনেক ধরণের কোষাগার প্রাপ্ত হয়েছে, সেগুলির দ্বারা সম্পত্তিবান আর শক্তিবান হও। সমগ্র কল্পে এমন দিন আর কখনও ফিরে আসবে না। এইজন্য নিজের সব চিন্তা বাবাকে দিয়ে নিশ্চয়বু্দ্ধি হয়ে সর্বদা নিশ্চিন্ত থাকো, কল্যাণকারী বাবা আর সময়ের প্রতিটি সেকেণ্ডকে সফল করো।

স্লোগান:-
বাবার সঙ্গের রং লাগাও, তবে কুসংস্কার স্বততঃ-ই সমাপ্ত হয়ে যাবে।