06.06.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
অসীম জগতের এই খেলায় তোমরা হলে আত্মা রূপী অ্যাক্টর, পার্টধারী, তোমাদের নিবাস
স্থান হলো সুইট সাইলেন্স হোম, যেখানে এখন যেতে হবে"
প্রশ্নঃ -
যারা ড্রামার
খেলাকে যথার্থ ভাবে জানে, তাদের মুখ থেকে কোন্ শব্দটি নির্গত হতে পারে না ?
উত্তরঃ -
যারা ড্রামার খেলাকে জানে, তারা এই রকম বলবে না যে, এটা এইরকম হত না, এই রকম হত, এটা
হওয়া উচিত নয়...। তোমরা বাচ্চারা জানো যে এই ড্রামার খেলা উকুনের মতো (অতি ধীর গতিতে)
আবর্তিত হতে থাকে, যা কিছু হয় সব ড্রামাতে নির্ধারিত আছে, চিন্তার কোনো ব্যাপার নেই।
ওম্ শান্তি ।
বাবা যখন তাঁর
নিজের পরিচয় বাচ্চাদের দেন, তখন বাচ্চাদেরও নিজের পরিচয় প্রাপ্ত হয়। সব বাচ্চারা
দীর্ঘকাল ধরে দেহ - অভিমানী হয়ে থাকে। দেহী- অভিমানী হলে তখন বাবার সাথে যথার্থ
পরিচয় হয়। কিন্তু ড্রামাতে এইরকম নেই। যদি বলেও থাকে যে, ভগবান হলেন গড ফাদার, উনি
রচয়িতা, কিন্তু জানে না। শিব লিঙ্গের চিত্রও আছে, কিন্তু তিনি তো এতো বড়ো নন।
সঠিক ভাবে না জানার কারণে বাবাকে ভুলে যায়। বাবা হলেনও রচয়িতা, নূতন দুনিয়াও
অবশ্যই রচনা করবেন, তাহলে আমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের অবশ্যই নূতন দুনিয়ার রাজধানীর
উত্তরাধিকার থাকা উচিত। স্বর্গের নামও ভারতে সুখ্যাত, কিন্তু কিছুই বোঝে না। বলে
অমুকে মারা গেছে, স্বর্গে পদার্পন করেছে। এই রকম কি আর এখন হয় ! এখন তোমরা বুঝতে
পারো যে, আমরা সবাই ছিলাম তুচ্ছ বুদ্ধি সম্পন্ন, নম্বর অনুযায়ীই অবশ্য বলবে।
প্রধানতঃ বোঝাতে হবে যে, আমি এঁনার মধ্যে(ব্রহ্মাবাবার মধ্যে) আসি, অনেক জন্মের
অধিকারী যিনি তাঁর অন্তিম শরীরে। ইনি হলেন নম্বর ওয়ান। বাচ্চারা মনে করে এখন আমরা
ওঁনার বাচ্চা অর্থাৎ ব্রাহ্মণ হয়ে গিয়েছি। এই সব হলো বোঝার ব্যাপার। বাবা এতো সময়
ধরে বোঝাতেই থাকেন। না হলে বাবাকে চিনতে পারা তো সেকেন্ডের ব্যাপার। বাবা বলেন,
আমাকে স্মরণ করলে তবে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে। একবার বিশ্বাস জন্মে গেলে, আর কোনো
ব্যাপারে প্রশ্ন ইত্যাদি উঠবে না। বাবা বুঝিয়েছেন- তোমরা যখন শান্তিধামে ছিলে, তখন
পবিত্র ছিলে। এই কথাও তোমরাই বাবার দ্বারাই শোনো। দ্বিতীয় কেউ শোনাতে পারে না। তোমরা
জানো যে, আমরা আত্মারা কোথাকার বসবাসকারী। যেরকম নাটকের অ্যাক্টররা বলে আমরা অমুক
স্থানের বাসিন্দা, নাটক শেষে পোশাক পরিবর্তন করে স্টেজের উপর এসে যাবো। এখন তোমরা
বুঝতে পারো যে, আমরা এখানকার বসবাসকারী নই। এটা হলো একটি নাট্যশালা। বুদ্ধিতে এটা
এখন এসে গেছে যে আমরা হলাম মূলবতনবাসী, যাকে সুইট সাইলেন্স হোম বলা হয়। এর জন্যই
সবাই চায়, কারণ আত্মা তো হলো দুঃখী, তাই বলে, আমি কীভাবে ফিরে যাব পরমধাম গৃহে।
গৃহের ঠিকানা না জানার কারণে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়ায়। তোমরা এখন উদ্দেশ্যহীন
ভাবে ঘোরার থেকে মুক্ত। বাচ্চারা জানতে পেরে গেছে, এখন তোমাদের সত্যিই গৃহে ফিরে
যেতে হবে। অহম্ আত্মা কতো ছোটো বিন্দু। এটাও হলো ওয়ান্ডার (বিস্ময়কর), যাকে প্রকৃতি
বলা হয়। এতো ছোটো বিন্দুতে এতো পার্ট ভরা হয়ে আছে পরমপিতা পরমাত্মা কীভাবে ভূমিকা
পালন করেন, এটাও তোমরা জেনে গেছো। সবচেয়ে মুখ্য পার্টধারী হলেন তিনি, করনকরাবনহার
তিনি। তোমাদের অর্থাৎ মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চাদের এটা এখন বোধগম্য হয়েছে যে, আমরা এই
আত্মারা শান্তিধাম থেকে এসেছি। আত্মারা কি আর কেউ নূতন বের হয়, যা শরীরে প্রবেশ করে
! না। আত্মারা সবাই সুইটহোমে থাকে। সেখান থেকে আসে ভূমিকা পালন করতে। সকলকেই ভূমিকা
পালন করতে হবে। এটা হলো খেলা। এই সূর্য, চন্দ্র, স্টার্স ইত্যাদি এই সব হলো বাতি,
যার জন্য রাত আর দিনের খেলা চলে। কেউ বলে সূর্য দেবতায়ে নমঃ, চন্দ্র দেবতায়ে নমঃ---
কিন্তু বাস্তবে এই দেবতাদের অস্তিত্ব নেই। এই খেলাটা কারোর জানা নেই। সূর্য চাঁদকেও
দেবতা বলে দেয়। বাস্তবে এই সব হলো সমগ্র বিশ্ব নাটকের জন্য বাতি সমূহ। আমরা সুইট
সাইলেন্স হোমের বসবাসকারী। এখানে আমরা ভূমিকা পালন করছি, উকুনের মতো এই চক্র
আবর্তিত হতে থাকে। যা কিছু হচ্ছে এসব ড্রামাতে নির্ধারিত হয়ে আছে। এরকম বলতে নেই যে
ঐরকম যদি না হতো তো এরকম হতো। এটা তো ড্রামা যে ! উদাহরণ স্বরূপ, যেরকম তোমাদের মা
অর্থাৎ মাম্মা ছিলেন, ভাবতে পারা যায়নি যে চলে যাবেন। আচ্ছা, শরীর ত্যাগ করলো-
ড্রামা। এখন নিজের নূতন ভূমিকা পালন করছেন। চিন্তার কোনো ব্যাপার নেই। এখানে
বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে, আমরা সকলে হলাম অ্যাক্টর্স, এটা হলো হার আর
জীতের খেলা। এই হার-জীতের খেলা মায়ার উপর আধারিত। মায়ার কাছে হেরে গেলে তো হার হলো
আর মায়ার কাছে বিজয়ী হলো তো বিজয় প্রাপ্ত হলো। এটা তো সবাই গায় কিন্তু বুদ্ধিতে
সামান্যতমও জ্ঞান নেই। তোমরা জানো যে, মায়া কি জিনিস। এটা তো হলো রাবণ, যাকে মায়া
বলা যায়। ধনকে সম্পত্তি বলা যায়। ধনকে মায়া বলে না। মানুষ মনে করে এর কাছে প্রচুর
ধন আছে। তো বলে দেয় মায়ার নেশা আছে। কিন্তু মায়ার নেশা হয় কি! মায়াকে তো আমরা
জিতে নেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে এর মধ্যে কোনো কথাতেই সংশয় রাখতে নেই। কাঁচা
অবস্থার কারণে মনে সংশয় আসে। এখন ভগবানুবাচ হল - কার প্রতি ? ভগবান তো অবশ্যই শিবই
হবেন - যিনি আত্মাদের প্রতি বলেন। কৃষ্ণ তো হলো দেহধারী। সে আত্মাদের প্রতি বলবে
কীভাবে। তোমাদের কোনো দেহধারী জ্ঞান শোনায় না। বাবার তো দেহ নেই। আর সকলের দেহ আছে,
যার পূজা করা হয়, তাঁকে স্মরণ করা তো সহজ। ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শঙ্করকে বলা হয় দেবতা।
শিবকে ভগবান বলা হয়। উচ্চতমের চেয়েও উচ্চ ভগবান, ওঁনার দেহ নেই। তোমরা এটাও জানো, *যখন
আত্মারা মূলবতনে ছিল তো তোমাদের কি দেহ ছিলো ? না। তোমরা আত্মারা ছিলে। এই বাবাও হলো
আত্মা*। শুধুমাত্র তিনি হলেন পরম, এঁনার পার্ট গাওয়া হয়ে থাকে। পার্ট করে
গিয়েছিলেন বলেই তো পূজা হয়ে থাকে। কিন্তু একজন মানুষও নেই যার এটা জানা আছে- ৫
হাজার বছর পূর্বেও পরমপিতা পরমাত্মা রচয়িতা এসেছিলেন, তিনি হলেনই হেভেনলী গড ফাদার।
প্রতি ৫ হাজার বছর পরে কল্পের সঙ্গমে তিনি আসেন, কিন্তু কল্পের আয়ু লম্বা- চওড়া করে
দেওয়াতে সব ভুলে গেছে। বাচ্চারা, তোমাদের বাবা বসে বোঝান, তোমরা নিজেরা বলো বাবা আমি
আপনার সাথে কল্প- কল্প মিলিত হই আর উত্তরাধিকার নিই, আবার কীভাবে হারিয়ে ফেলি- সেটা
বুদ্ধিতে আছে। জ্ঞান তো অনেক প্রকারের আছে, কিন্তু জ্ঞানের সাগর ভগবানকেই বলা হয়।
এখন তিনি এই সমস্তও বোঝান, বিনাশ অবশ্যই হবে। পূর্বেও বিনাশ হয়েছিলো। কীভাবে
হয়েছিলো- এটা কারোর জানা নেই। শাস্ত্রে তো বিনাশের বিষয়ে কি সমস্ত কথা লিখে দিয়েছে।
পান্ডব আর কৌরবের যুদ্ধ কীভাবে হতে পারে ! এখন তোমরা হলে এই সঙ্গম যুগের ব্রাহ্মণ।
ব্রাহ্মণদের তো কোনো লড়াই নেই-ই। বাবা বলেন, তোমরা হলে আমার বাচ্চা ননভায়োলেন্স,
ডবল অহিংসক। এখন তোমরা নির্বিকারী হচ্ছো। প্রতি কল্পে তোমরাই বাবার থেকে
উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করো। এর মধ্যে কষ্টের কোনো ব্যাপার নেই। নলেজ খুবই সহজ। ৮৪
জন্মের চক্র তোমাদের বুদ্ধিতে আছে। এখন নাটক সম্পূর্ণ হতে চলেছে, অল্প সময়ই বাকি আছে।
তোমরা জানো যে- এখন এরকম সময় আসতে চলেছে যে বিত্তশালীদেরও চাল-ডাল-আটা-ময়দা মিলবে
না, জল মিলবে না। একে বলা হয় দুঃখের পাহাড়, বিনা দোষে মেরে দেওয়া। এতো সব শেষ হয়ে
যাবে। কেউ ভুল করলে তার দন্ড প্রাপ্তি ঘটে, এরা সব কি ভুল করেছে ? শুধু একটাই ভুল
করেছে, যে বাবাকে ভুলে গেছে। তোমরা যে বাবার থেকে রাজত্ব নিচ্ছো। এছাড়া মানুষ মনে
করে এই বুঝি মরলাম। মহাভারতের যুদ্ধ কিছু মাত্রও শুরু হলে তো মরে যাবে। তোমরা তো
বিজয়ী, তাই না! তোমরা ট্র্যান্সফার হয়ে অমরলোকে যাও, এই অধ্যয়ণের শক্তির দ্বারা।
অধ্যয়ণকে সোর্স অফ ইনকাম বলা হয়। শাস্ত্রেও অধ্যয়ণ আছে, ওতেও ইনকাম হয়, কিন্তু
সেই অধ্যয়ণ হলো ভক্তির। এখন বাবা বলেন - তোমাদের এই লক্ষ্মী-নারায়ণের মতো তৈরী করছি।
তোমরা এখন স্বচ্ছ বুদ্ধি সম্পন্ন হচ্ছো। তোমরা জানো যে, আমরা উচ্চ থেকেও উচ্চ হই,
আবার পুনর্জন্ম নিতে নিতে নামতে থাকি। নূতন থেকে পুরানো হয়। সিঁড়ি দিয়ে তো অবশ্যই
নামতে হয়। এখন সৃষ্টিরও নিম্নগামী কলা। উর্দ্ধগামী কলা ছিলো তো এই দেবতাদের রাজত্ব
ছিলো, স্বর্গ ছিলো। এখন হলো নরক। এখন তোমরা আবার পুরুষার্থ করছো- স্বর্গবাসী হওয়ার
জন্য। বাবা বাবা করতে থাকো।
ও গড ফাদার বলে ডাকতে থাকে, কিন্তু এটা কি আর বোঝে যে, সেই আত্মাদের পিতা হলেন
উচ্চতমের চেয়ে ও উচ্চ ! আমরা হলাম তাঁর বাচ্চারা। তবে দুঃখী কেন হবো ? তোমরা এখন মনে
করো দুঃখীও হতেই হবে। এটা যে সুখ আর দুঃখের খেলা ! বিজয়ী হলে সুখ আছে, পরাজয়ে আছে
দুঃখ। বাবা রাজ্য দিয়েছিলেন, রাবণ ছিনিয়ে নিয়েছে। বাচ্চারা, এখন তোমাদের বুদ্ধিতে
আছে- বাবার থেকে আমাদের স্বর্গের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হতে থাকে। বাবা এসেছেন, এখন
শুধুমাত্র বাবাকে স্মরণ করলে পাপ খন্ডন হয়ে যাবে। জন্ম-জন্মান্তর মাথার উপর বোঝা আছে
যে । এটাও তোমরা জানো, তোমরা কখনো খুব বেশী দুঃখী হবে না। কিছু সুখও আছে, আটাতে
নুনের অস্তিত্বের মতো । যাকে কাক বিষ্ঠার সমান সুখ বলা হয়। তোমরা জানো যে, সকলের
সদ্গতি দাতা হলেনই এক বাবা। জগতের গুরুও তিনিই । বাণপ্রস্থে গুরু করা হয়। এখন তো
ছোটোবেলাই গুরু করিয়ে দেয়, কারণ যদি মরে যায়, তবে সদ্গতি প্রাপ্ত হবে। বাবা
বলেন-বাস্তবে কাউকেই গুরু বলা যায় না। গুরু তিনি, যিনি সদ্গতি প্রদান করেন। সদ্গতি
দাতা হলেন সেই এক। এছাড়া ক্রাইস্ট, বুদ্ধ ইত্যাদি কেউই গুরু নন। তারা এলে কি আর
সকলের সদ্গতি প্রাপ্ত হয়! ক্রাইস্ট এলো তো তার পিছনে সবাই আসতে থাকে, যারা ওই
ধর্মের ছিলো। তাদের আবার গুরু কীভাবে বলা যাবে, যেখানে নিয়ে আসার জন্য নিমিত্ত হয়েছে।
*পতিত পাবন একই বাবাকে বলা হয়, তিনি সকলকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম। স্থাপনাও করেন,
শুধুই সবাইকে নিয়ে গেলে তো প্রলয় হয়ে যাবে। প্রলয় তো হয় না*। সর্ব শাস্ত্র শিরোমণি
শ্রীমদ্ভগবত গীতা গাওয়া হয়েছে। মহিমা হয়- যদা যদাহি...। বাবা ভারতেই আসেন।
স্বর্গের বাদশাহী প্রদানকারী হলেন বাবা, তাঁকেও সর্বব্যাপী বলে দেয়। এখন বাচ্চারা,
তোমাদের কাছে খুশীর ব্যাপার যে, নূতন দুনিয়াতে সমগ্র বিশ্বের উপর এক আমাদেরই রাজ্য
হবে। সেই রাজ্যকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। এখানে তো এক এক টুকরোর জন্য কতো লড়াই
করতে থাকে। তোমাদের তো মজা হয়। আনন্দে কাঁধ নাচাতে থাকো। কল্প- কল্প আমরা বাবার থেকে
উত্তরাধিকার নিই বলে কতো খুশী হওয়া উচিত। বাবা বলেন, আমাকে স্মরণ করো, তবুও ভুলে
যাও। বলে যে- বাবা যোগ ভেঙে যায়। বাবা বলেন, যোগ শব্দ ছেড়ে দাও। ওটা তো শাস্ত্রের
শব্দ। বাবা বলেন- "আমাকে স্মরণ করো" । যোগ হলো ভক্তি মার্গের শব্দ। বাবার থেকে
স্বর্গের বাদশাহী প্রাপ্ত হয়, ওঁনাকে তোমরা স্মরণ না করলে তবে কীভাবে বিকর্ম বিনাশ
হবে ! রাজত্ব প্রাপ্ত হবে কীভাবে ! স্মরণ না করলে পদও কম হয়ে যাবে, শাস্তিও ভোগ করবে।
এই বুদ্ধিও নেই। এতো অবুঝ হয়ে পড়েছো। আমি প্রতি কল্পে তোমাদের বলি- শুধুমাত্র
আমাকে(মামেকম্) স্মরণ করো। বেঁচে থেকেও এই দুনিয়ার প্রতি মৃতবৎ হও। বাবার স্মরণে
তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে আর তোমরা বিজয়মালার দানা হয়ে উঠবে। কতো সহজ। উচ্চতমের চেয়ে
ও উচ্চ শিববাবা আর ব্রহ্মা দুজনেই হলেন হাইয়েস্ট। উনি (শিববাবা) পারলৌকিক আর ইনি (অলৌকিক)।
একদম সাধারণ টিচার। সেই টিচারাও শাস্তি দেয়, এখানে তো সোহাগ করতে থাকেন। বলেন-
মিষ্টি বাচ্চারা, বাবাকে স্মরণ করো, সতোপ্রধান হতে হবে। পতিত পাবন একমাত্র বাবা।
গুরুও উনিই, আর কেউ গুরু হতে পারে না। বলে যে বুদ্ধ পার নির্বাণ গিয়েছেন-- সব গল্প
কথা। এক জনও ফিরে যেতে পারে না। ড্রামাতে সকলেরই পার্ট আছে। কতো বিশাল বুদ্ধি আর
খুশী থাকা উচিত। উপর থেকে নিয়ে সমগ্র জ্ঞান বুদ্ধিতে আছে। ব্রাহ্মণই জ্ঞান ধারণ
করতে পারে। না শূদ্রদের মধ্যে, না দেবতাদের মধ্যে এই জ্ঞান আছে। এখন যার বোঝার সে-ই
বুঝবে। যে বুঝবে না তার মরণ। পদও কম হয়ে যাবে। স্কুলেও না পড়লে তো পদ কম হয়ে যায়।
*অল্ফ* বাবা, *বে* বাদশী। আমরা আবার নিজেদের রাজধানীতে যাচ্ছি। এই পুরানো দুনিয়া
নিঃশেষ হয়ে যাবে। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বাবা আমাদেরকে এইরকম নূতন বিশ্বের রাজত্ব দিচ্ছেন, যা কেউই কেড়ে নিতে পারবে না- এই
খুশীতে কাঁধ নাচাতে হবে।
২ ) বিজয়মালার দানা হওয়ার জন্য বেঁচে থেকেও এই পুরানো দুনিয়ার কাছে মৃতবৎ হয়ে
থাকতে হবে। বাবার স্মরণে বিকর্ম বিনাশ করতে হবে।
বরদান:-
একের
সাথে সর্ব সম্বন্ধ এর অনুভব করে সর্ব দিক থেকে মুক্ত সম্পূর্ণ ফরিস্তা ভব
যে রকম কোনো জিনিস
তৈরী করা হয় যখন আর সেটা যখন তৈরী হয়ে যায়, তো কিনারা ছেড়ে দেয়। সেইরকম যত সম্পন্ন
স্টেজের কাছাকাছি আসতে থাকবে ততই সব কিছুর থেকে কিনারা হতে থাকবে বা সরে আসতে থাকবে।
যখন সমস্ত বন্ধন থেকে বৃত্তি দ্বারা কিনারা হয়ে যাবে অর্থাৎ কারোর প্রতিই মোহ থাকবে
না, তখন সম্পূর্ণ ফরিস্তা হয়ে যাবে। একের সাথে সর্ব সম্বন্ধের অনুভব করা- এটাই হলো
ঠিকানা, এর দ্বারাই অন্তিম ফরিস্তা জীবনের লক্ষ্য নিকটে অনুভূত হবে। উদ্দেশ্যহীন
ভাবে বুদ্ধির ঘোরাফেরা বন্ধ হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
স্নেহ
এমনই এক চুম্বক যে, গ্লানি করে যারা তাদেরও নিকটবর্তী করে তোলে।