01.06.2020 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা -- যতদিন জীবিত থাকবে ততদিন পড়তে এবং পড়াতে হবে, খুশী আর পদপ্রাপ্তির ভিত্তি (আধার) হলো পঠন-পাঠন"

প্রশ্নঃ -
সেবায় সফলতা প্রাপ্তির জন্য মুখ্য গুণ কী হওয়া উচিত ?

উত্তরঃ -
সহনশীলতার। প্রত্যেক বিষয়ে সহনশীল হয়ে
নিজেদের সংগঠন তৈরী করে সার্ভিস করো। ভাষণাদির প্রোগ্রাম তৈরী করো। মানুষকে নিদ্রা থেকে জাগরিত করার জন্য অনেককিছু ব্যবস্থা করতে হবে। যে সৌভাগ্যশালী হবে সে পড়াশোনাও করবে আগ্রহ সহকারে।*

গীতঃ-
আমাদের সেই পথে চলতে হবে.....

ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা, তোমরা কী চিন্তা করে এখানে মধুবনে আসো ! পড়তে আসো কী ? কার কাছে ? (বাপদাদার কাছে) এ হলো নতুন কথা। কখনো এমন কথা শুনেছো কী যে, বাপদাদার কাছে পড়তে যায়, তাও আবার বাপদাদা একত্রিত। বিস্ময়কর তাই না ! তোমরা বিস্ময়কর পিতার সন্তান, তাই না! বাচ্চারা, তোমরাও না রচয়িতার, না রচনার আদি-মধ্য-অন্তকে জানতে। এখন সেই রচয়িতা আর রচনাকে তোমরা পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে জেনেছো। যতটা জেনেছো আর যাকে যতটা বোঝাও সেইমতো ততটাই খুশী এবং পদ প্রাপ্ত হবে। মুখ্য কথা হলো, আমরা এখন রচয়িতা এবং রচনার আদি-মধ্য-অন্তকে জেনেছি। শুধু আমরা অর্থাৎ ব্রাহ্মণ-ব্রাহ্মণীরাই জানি। যতদিন জীবিত থাকবে, নিজেকে নিশ্চয় করতে হবে যে আমরা বি.কে. আর আমরা শিববাবার কাছ থেকে সমগ্র বিশ্বের উত্তরাধিকার গ্রহণ করছি। সম্পূর্ণরূপে পড়ো বা কম পড়ো, সে কথা আলাদা, কিন্তু তাও একথা তো জানো, তাই না! আমরা তাঁর সন্তান, পরে প্রশ্ন ওঠে পড়ার অথবা না পড়ার। সেই অনুসারেই পদ প্রাপ্ত হবে। (বাবার) কোলে যখন এসেছো তখন এই নিশ্চয়তা তো রয়েছে যে আমরা রাজত্বের অধিকারী হয়েছি। আবার পড়াতেও রাত-দিনের পার্থক্য হয়ে যায়। কেউ তো অত্যন্ত ভালভাবে পড়ে আর পড়ায়, এছাড়া আরকিছু বোঝেই না। ব্যস, পড়া আর পড়ানো, এই শেষপর্যন্ত চলতে থাকবে। ছাত্রজীবনে কোনো পড়া শেষপর্যন্ত চলে না। এর একটা সময় থাকে। এখানে যতদিন জীবিত থাকবে ততদিন তোমাদের পড়তে এবং পড়াতে হবে। নিজেকে প্রশ্ন করো যে, কতজনকে রচয়িতা পিতার পরিচয় দাও ? মানুষ তো মানুষই। দেখতে এদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। শরীরেও পার্থক্য নেই। একথা ভিতরে বুদ্ধিতে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে। যে যত পড়বে, সে তত খুশীতে থাকবে। অন্তরে একথা বিরাজ করে যে, আমরা নতুন বিশ্বের মালিক হবো। এখন আমরা স্বর্গদ্বারে যাচ্ছি। নিজের মনকে প্রশ্ন করো যে, আমাদের মধ্যে কতটা পার্থক্য রয়েছে ? বাবা আমাদের নিজের করে নিয়েছেন, আমরা কী থেকে কী হয়ে যাই। সবকিছু নির্ভর করে পড়ার উপর। পড়ার মাধ্যমে মানুষ কত উঁচু হয়ে যাই। এসব হলো অল্পকালের ক্ষণভঙ্গুর পদমর্যাদা। এরমধ্যে কিছু রাখা (কোনো প্রাপ্তি) নেই। যেন কোনো কাজেরই নয়। কোনো লক্ষণ ছিল না। এখন এই পড়ার মাধ্যমে কত উঁচু হয়ে যাও। সম্পূর্ণ অ্যাটেনশন পড়াশোনার দিকে দিতে হবে। যাদের ভাগ্যে রয়েছে তাদের মন পড়াশোনায় থাকে। তারা অন্যান্যদেরও পড়ানোর জন্য বিভিন্ন রীতি অনুযায়ী পুরুষার্থ করায়। মন(হৃদয়) বলে, তাদেরকে পড়িয়ে বৈকুন্ঠের মালিক বানাই। মানুষকে নিদ্রা থেকে জাগরিত করার জন্য কত মাথা কুটতে থাকে এবং থাকবে। এই প্রদর্শনী ইত্যাদি তো কিছুই নয়, ভবিষ্যতে বোঝানোর জন্য আরও ব্যবস্থা করা হবে। এখন বাবা পবিত্র করছেন তাই বাবার শিক্ষার উপর অ্যাটেনশন দেওয়া উচিত। প্রতিটি বিষয়ে সহনশীল হওয়া উচিত। পরস্পর মিলিত হয়ে সংগঠন তৈরী করে ভাষণাদির প্রোগ্রাম রাখা উচিত। আমরা এক অল্ফের উপরেই অত্যন্ত ভালভাবে বোঝাতে পারি। ঈশ্বর কে ? যিনি সর্বোচ্চ। অদ্বিতীয় অল্ফের(ভগবান) উপরেই তোমরা দু-ঘন্টা ভাষণ করতে পারো। এও তোমরা জানো যে, অল্ফকে স্মরণ করলে খুশী বজায় থাকে। বাচ্চাদের যদি স্মরণের যাত্রায় অ্যাটেনশন কম থাকে, অল্ফকে স্মরণ না করে তাহলে অবশ্যই ক্ষতি হয়ে যায়। সবকিছুই নির্ভর করে স্মরণের উপরে। স্মরণ করলে একেবারে স্বর্গে (হেভেন) চলে যায়। স্মরণ ভুললেই অধঃপতন হয়। এসব কথা আর কেউ বুঝতে পারে না। শিববাবাকেই তো জানে না। অনেক আড়ম্বর করে যদি কেউ পূজাও করে, স্মরণও করে তবুও বোঝে না।

তোমরা বাবার কাছ থেকে অনেক বড় ধন-সম্পদ পাও। ভক্তিমার্গে কৃষ্ণের সাক্ষাৎকারের জন্য কত মাথা কুটতে থাকে, আচ্ছা যদি দর্শন হয়েও যায় তাতে কি ? তাতে কিছু লাভ হয় নি। দুনিয়া দেখো কোন্ কথার উপর চলছে। যেন তোমরা আখের রস পান করছো আর বাকি সমস্ত মানুষ খোসা শোষন করছে (চুষছে)। এখন তোমরা পেট ভরে সুগার(আখের রস) পান করে আধাকল্প সুখ পাও, ভক্তিমার্গে বাকি সকলে খোসা চুষে নিচে অবতরণ করে। বাবা এখন কত স্নেহপূর্বক পুরুষার্থ করান। কিন্তু ভাগ্যে না থাকলে তখন সচেতনতাও থাকে না। না নিজেরা অ্যাটেনশন দেয়, না অন্যদের দিতে দেয়। না নিজেরা অমৃত পান করে, না অন্যদের পান করতে দেয়। এমনধরণের অ্যাক্টিভিটি অনেকেরই থাকে। যারা ভালভাবে পড়ে না, দয়ালুও নয়, কারো কল্যাণ করে না তারা আর কি পদ লাভ করবে। যে পড়ে এবং পড়ায় সে কত উঁচু পদ লাভ করে। না পড়লে কি পদ লাভ করবে -- সেও ভবিষ্যতে রেজাল্ট জেনে যাবে। পরে বুঝতে পারবে যে -- বরাবর বাবা আমাদের কত সতর্ক করতেন। এখানে বসে রয়েছো, বুদ্ধিতে থাকা উচিত -- আমরা অসীম জগতের পিতার কাছে বসে রয়েছি। তিনি উপর থেকে এসে এই শরীরের(ব্রহ্মা) মাধ্যমে আমাদের পড়ান, কল্প-পূর্বের মতন। এখন আমরা বাবার সম্মুখে বসে রয়েছি। ওঁনার সঙ্গেই আমাদের চলতে হবে। ছেড়ে যাওয়া উচিত নয়। বাবা আমাদের সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন। এই পুরানো দুনিয়া

বিনাশপ্রাপ্ত হয়ে যাবে। একথা আর কেউই জানে না। পরে জানতে পারবে যে, পুরানো দুনিয়া অবশ্যই সমাপ্ত হয়ে যাবে। প্রাপ্তি তো কিছুই হবে না। এই কথা আর কেউ জানে না। 'টু লেট'(অনেক দেরী) হয়ে যাবে। হিসেব-নিকেশ চুকিয়ে সকলকে ফিরে যেতে হবে। এও যারা সেন্সীবেল(সমঝদার) বাচ্চা তারাই জানে। (বাবার) বাচ্চা তারাই, যারা সেবায় উপস্থিত থাকে। মা-বাবাকে ফলো করে। যেমন বাবা আধ্যাত্মিক সেবা করেন তেমন তোমাদেরও করতে হবে। এমন অনেক বাচ্চারা রয়েছে যাদের মধ্যে এমন উন্মাদনা থাকে যে, বাবা যাদের মহিমা করেন, তাদের মতন হতে হবে। টিচার সকলেই পায়। এখানেও সকলেই আসে। এখানে বড় অর্থাৎ প্রধান শিক্ষক বসে রয়েছেন। বাবাকে স্মরণই করে না তাহলে কীভাবে শুধরাবে ? জ্ঞান অতি সহজ। ৮৪ জন্মের চক্র(চক্রের জ্ঞান) কত সহজ। কিন্তু কত মাথা কুটতে হয়। বাবা কত সহজ কথা বোঝান। বাবাকে আর ৮৪ জন্মের চক্রকে স্মরণ করো তবেই তরী পার হয়ে যাবে। এই সন্দেশ সকলকে দিতে হবে। নিজের মনকে জিজ্ঞাসা করো যে -- আমরা কতটা ম্যাসেঞ্জার (বার্তাবাহক) হতে পেরেছি ? যত বেশীসংখ্যককে জাগরিত করবে, পুরস্কারও ততই পাবে। যদি জাগরিত না করি তাহলে অবশ্যই কোথাও শায়িত রয়েছে, তবে আমি এত উচ্চপদ তো পাবো না। বাবা প্রত্যহ বলেন যে, রাতে নিজের সারা দিনের চার্ট (পোতামেল) রাখো। সেবাতেও থাকতে হবে। মুখ্যকথা হলো, বাবার পরিচয় দেওয়া। বাবা-ই ভারতকে স্বর্গে পরিনত করেছিলেন। এখন নরক, পুনরায় স্বর্গ হবে। চক্রকে আবর্তিত হতেই হবে। তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হতে হবে। বাবাকে স্মরণ করো তাহলেই বিকার নিষ্কাশিত হয়ে যাবে। সত্যযুগে অত্যন্ত অল্পসংখ্যক (মানুষ) থাকে। পুনরায় রাবণ-রাজ্যে কত বৃদ্ধি পায়। সত্যযুগে ৯ লক্ষ, পরে বৃদ্ধি হতে থাকবে। যে প্রথমে পবিত্র ছিল, সে-ই পতিত হয়। সত্যযুগে দেবতাদের প্রবৃত্তিমার্গ ছিল। তারাই পরে অপবিত্র প্রবৃত্তিমার্গীয় হয়ে যায়। ড্রামানুসারে এই চক্রকে আবর্তিত হতেই হবে। এখন তোমরা পুনরায় পবিত্র প্রবৃত্তিমার্গীয় হতে চলেছো। বাবা এসেই পবিত্র করেন। তিনি বলেন, আমাকে স্মরণ করো তবেই বিকর্ম বিনাশ হবে। তোমরা আধাকল্প পবিত্র ছিলে, পরে রাবণ-রাজ্যে তোমরা অপবিত্র হয়ে গেছো। এও তোমরা এখনই বুঝেছো। আমরাও একদম 'ওয়ার্থ নট এ পেনী'( মূল্য এক পয়সাও নয়) ছিলাম। এখন কত জ্ঞান পেয়েছি। যার (জ্ঞান) দ্বারা আমরা কি থেকে কি হয়ে যাই। বাকি অন্যান্য যেসব ধর্ম রয়েছে, সেসব সমাপ্ত হয়ে যাবে। যেমনভাবে জানোয়ার মারা যায় তেমনভাবেই সকলের মৃত্যু হবে। যখন বরফ পড়ে তখন কত পশু-পক্ষী ইত্যাদি মারা যায়। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও আসবে। এইসব শেষ হয়ে যাবে। এইসব মরেই পড়ে আছে। এই নেত্র দ্বারা যাকিছু দেখছো তা আর ঘটবে না। নতুন দুনিয়ায় একদম অল্পসংখ্যকই থাকবে। এই জ্ঞান তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে, জ্ঞানের সাগর বাবা-ই তোমাদের জ্ঞানের উত্তরাধিকার দিচ্ছেন। তোমরা জানো যে, সারা দুনিয়ায় এখন পাঁকই-পাঁক(নোংরা)। তোমরাও পাঁকে ময়লা হয়ে পড়েছিলে। এখন বাবা পাঁক থেকে বের করে এনে কতসুন্দর ফুলে পরিনত করছেন। আমরা এই শরীর পরিত্যাগ করবো, আর আত্মা পবিত্র হয়ে যাবে।

বাবা সকলকেই একরস অর্থাৎ সমানভাবে পড়াশোনা করান কিন্তু কেউ সম্পূর্ণ জড়বুদ্ধিসম্পন্ন, কিছুই বুঝতে পারে না। এও ড্রামায় নির্ধারিত। বাবাও বলেন যে, এদের ভাগ্যে না থাকলে আমি কি করতে পারি। আমি তো সকলকে সমানভাবে (একরস) পড়াই। কিন্তু পড়ে নম্বরের ক্রমানুসারে। কেউ ভালভাবে বোঝে আর বোঝায়, অন্যদেরকেও হীরে-তুল্য বানায়। কেউ তো (অন্যদের) তৈরীই করে না। উপরন্তু তাদের অহংকার কত। যেমন বিজ্ঞানমনষ্কদের বুদ্ধির কত অহংকার, দূর-দূরান্তের আকাশকে, সমুদ্রকে দেখতে চায়। বাবা বলেন, এতে কোনো লাভ নেই। শুধু-শুধুই সাইন্সের অহংকারীরা নিজেদের মাথা খারাপ করে। তারা মোটা অংকের বেতন পায়, সব নষ্ট করতে থাকে। এমন নয় যে, সোনার দ্বারকা সমুদ্রতল থেকে উঠে আসবে। এ তো ড্রামার চক্র যা আবর্তিত হতেই থাকে। পুনরায় আমরা সময়ানুসারে গিয়ে নিজেদের মহল তৈরী করবো -- নতুন দুনিয়ায়। কেউ আশ্চর্য হয়ে যায়, এমনই ঘর-বাড়ী কি আবারও তৈরী হবে। অবশ্যই, বাবা দেখান যে, তোমরা পুনরায় এমনই সোনার ঘর-বাড়ী তৈরী করবে। ওখানে তো অনেক সোনা। এখনও পর্যন্ত কোন-কোনদিকে(স্থানে) অনেক সোনার পাহাড় রয়েছে, কিন্তু সোনা বের করতে পারে না। নতুন দুনিয়ায় প্রচুর সোনার খনি ছিল, সেসব শেষ হয়ে গেছে। এখন হীরের দামও দেখো কত। আজ এত দাম, কাল পাথরের সমান হয়ে যাবে। বাচ্চারা, বাবা তোমাদের অত্যন্ত আশ্চর্যজনক কথা শোনান আর সাক্ষাৎকারও করান। বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে এখন যেন এটাই থাকে -- আমরা অর্থাৎ আত্মারা আমাদের ঘর পরিত্যাগ করেছি ৫ হাজার হয়ে গেছে যাকে মুক্তিধাম বলা হয়। ভক্তিমার্গে মুক্তির জন্য কত মাথা কুটতে থাকে কিন্তু এখন তোমরা বুঝেছো যে বাবা ছাড়া আর কেউই মুক্তি দিতে পারে না। সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারে না। বাচ্চারা, এখন তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে নতুন দুনিয়া, তোমরা জানো এই চক্র আবর্তিত হবে, তোমাদের আর কোনো কথায় (বিষয়ে) যাওয়া উচিত নয়। শুধু বাবাকে স্মরণ করতে হবে, সকলকে এটাই বলতে থাকো -- বাবাকে স্মরণ করো তবেই বিকর্ম বিনাশ হবে। বাবা তোমাদের স্বর্গের মালিক বানিয়েছিল, তাই না! তোমার আমার শিব-জয়ন্তীও পালন করো। কত বছর হয়েছে ? ৫ হাজার বছরের কথা। তোমরা স্বর্গবাসী হয়েছিলে, পুনরায় ৮৪ জন্ম পরিক্রমা করেছো। এই ড্রামাও পূর্ব-নির্ধারিত। আমি এসে তোমাদের এই সৃষ্টিচক্রকে বোঝাই। বাচ্চারা, এখন তোমাদের অত্যন্ত ভালভাবে স্মৃতিতে এসেছে। আমরাই সর্বোচ্চ ভূমিকা (পার্টধারী) পালনকারী। আমাদের পার্ট রয়েছে বাবার সঙ্গে, আমরা বাবার শ্রীমতানুসারে, বাবার স্মরণে থেকে অন্যদেরকেও নিজের সমান তৈরী করি। যারা কল্প-পূর্বে ছিল তারাই হবে। সাক্ষী হয়ে দেখতে থাকবে আর পুরুষার্থও করাতে থাকবে। সর্বদা উৎসাহ-উদ্দীপনায় থাকার জন্য প্রতিদিন একান্তে বসে নিজের সঙ্গে কথা বলো। এই অশান্ত দুনিয়ায় আর অল্পসময় বাকি রয়েছে, তখন আর অশান্তির কোনো নামই থাকবে না। কেউ যেন মুখে একথা বলতে না পারে যে, মনের শান্তি কেমন করে পাবো ? শান্তি জন্য যায় কিন্তু শান্তির সাগর তো একমাত্র পিতাই, অন্য কারোর কাছে এই বস্তু(শান্তি) নেই। বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে একথা প্রতিধ্বনিত হওয়া উচিত যে, রচয়িতা আর রচনাকে জানা -- এটাই হলো জ্ঞান। এক হলো শান্তির জন্য, আরেক হলো সুখের জন্য। সুখ আসে ধনের মাধ্যমে। ধন না থাকলে মানুষ কোনো কর্মের থাকে না। ধনের জন্য কত পাপ করে। বাবা অগাধ ধন-সম্পদ দিয়েছেন। স্বর্গ সোনার, নরক পাথরের। আচ্ছা।

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১) সময় বের করে একান্তে নিজের সঙ্গে কথা বলে নিজেকে উৎসাহিত করতে হবে। নিজ সম বানানোর সেবা করার সাথে-সাথে প্রত্যেকের ভূমিকাকে সাক্ষী হয়ে দেখার অভ্যাস করতে হবে।

২) বাবাকে স্মরণ করে নিজেই নিজেকে শোধরাতে হবে। নিজের মনকে(হৃদয়) জিজ্ঞাসা করতে হবে যে, আমি কী ম্যাসেঞ্জার (বার্তাবাহক) হয়েছি ? কতজনকে নিজের মতন করে গড়েছি ?

বরদান:-
সাইলেন্সের শক্তি দ্বারা প্রত্যক্ষতার ডঙ্কা বাদনকারী শান্ত-স্বরূপ ভব

কথিত আছে - "সায়েন্সের উপর সাইলেন্সের বিজয়" না কি বাণীর (বিজয়)। সময় বা সম্পূর্ণতা যত কাছে আসবে, ততই অত্যধিক আওয়াজ থেকে অটোমেটিক বৈরাগ্য আসবে। যেমন এখন চাইলেও অভ্যাস আওয়াজে (শব্দজগতে) নিয়ে আসে, তেমনই চাইলেই তখন (অভ্যাসবশতঃ) আওয়াজের ঊর্ধ্বে চলে যাবে। প্রোগ্রাম তৈরী করে শব্দের জগতে আসবে। যখন এমন পরিবর্তন দেখা যাবে তখন মনে করবে যে, এখন বিজয়ডঙ্কা বাজতে চলেছে, এরজন্য যত সময় পাবে --- শান্ত-স্বরূপ স্থিতিতে থাকায় অভ্যস্ত হও।

স্লোগান:-
জিরো অর্থাৎ বিন্দু-স্বরূপ পিতার সঙ্গীরাই হিরো(মুখ্য) ভূমিকাসম্পন্ন হয়।