14-06-2020 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
22-01-86 মধুবন
"বাপদাদার আশা - সম্পূর্ণ আর সম্পন্ন হও"
আজ বিশেষ দূরদেশবাসী দূরদেশ নিবাসী বাচ্চাদের সাথে দেখা করতে এসেছেন। এতদূর থেকে
মিলিত হতে এসেছেন। এত দূর থেকে কোন্ গভীর ভালোবাসার সাথে আসেন ? বাপদাদা, বাচ্চাদের
আন্তরিক ভালবাসার কথা জানেন। একদিকে মিলনের জন্য তোমাদের হৃদয়ের গভীর ব্যকুলতা,
অন্যদিকে বাবার সাথে মিলিত হওয়ার জন্য ধৈর্যও রয়েছে তোমাদের। সেইজন্য এই ধৈর্যের
ফলই বিশেষ ভাবে দেওয়ার জন্য এসেছি। বিশেষতঃ দেখা করবার জন্যই এসেছি। সকল ডবল বিদেশী
বাচ্চাদের স্নেহের সংকল্প, হৃদয়ে মিলনের উচ্ছ্বাস সব সময় বাপদাদা দেখতে এবং শুনতে
পান। সুদূরে বসেও স্নেহের কারণেই অতি নিকটে রয়েছেন। বাপদাদা সব সময় দেখতে থাকেন
যে, কীভাবে রাত রাত জেগে বাচ্চারা দৃষ্টি আর ভাইব্রেশনের দ্বারা স্নেহ আর শক্তি
ক্যাচ্ করতে থাকে। আজ বিশেষ কোনো মুরলী চালাতে আসেননি। মুরলী তো অনেক শুনেছ ; এখন
তো বাপদাদা এই বছরে বিশেষ ভাবে প্রত্যক্ষ স্বরূপ, বাপদাদার স্নেহের প্রমাণ স্বরূপ,
সম্পূর্ণ আর সম্পন্ন হওয়ার সমীপতার স্বরূপ, শ্রেষ্ঠ সংকল্প, শ্রেষ্ঠ বাণী, শ্রেষ্ঠ
কর্ম, শ্রেষ্ঠ সম্বন্ধ আর সম্পর্ক এমন শ্রেষ্ঠ স্বরূপ দেখতে চান। যা যা শুনেছ, শুনতে
শুনতে স্বরূপ হয়ে ওঠা - এই সমানতাই দেখতে চান। প্র্যাকটিকাল পরিবর্তনের শ্রেষ্ঠ
সমারোহ দেখতে চাইছেন। এই বছর সিলভার জুবিলি, গোল্ডেন জুবিলি তো উদযাপন করলে এবং আরো
উদযাপন করবে। কিন্তু বাপদাদা সত্যিকারের দাগহীন, অমূল্য হীরের হার বানাতে চান। এমন
এক একটি হীরে অমূল্য ঝলমলে উজ্জ্বল হবে, তার লাইট মাইটের ঔজ্জ্বল্য কেবল এই সীমিত
জগতেই প্রসারিত হবে না, অসীম অনন্তকেও ছুঁয়ে যাবে। বাপদাদা বাচ্চাদের এই জাগতিক
সংকল্প, জাগতিক বোল, জাগতিক সেবা, জাগতিক সম্বন্ধকে দীর্ঘ সময় ধরে দেখলেন। কিন্তু
এখন তিনি অসীম জগতের পিতা, অতএব এখন অসীম জগতের সেবা আবশ্যক । ওঁনার সামনে এই
প্রদীপের আলো তুলনাতেই আসে না। এখন লাইট হাউস, মাইট হতে হবে। দৃষ্টি থাকুক অসীমের
দিকে। সৃষ্টি পরিবর্তনের এত বড় কার্য অল্প সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। অতএব, গতি
ও বিধিও অসীমের জন্যই দ্রুততার চাই।
তোমাদের বৃত্তির (মনোভাব) মাধ্যমে দেশ-বিদেশের বায়ুমণ্ডলে এই একটাই আওয়াজ যেন
মুখরিত হয় যে, অসীম জগতের মালিক, বিশ্বের মালিক, অসীম জগতের রাজ্য অধিকারী, অসীম
জগতের সত্যিকারের সেবাধারী আমাদের দেব আত্মারা এসে গেছেন। এখন এই অসীম জগতের এই
একটিই আওয়াজ দেশে-বিদেশে যেন মুখরিত হয়ে ওঠে। তখনই সম্পূর্ণতা এবং সমাপ্তি অনুভূত
হবে। বুঝেছো তোমরা ? আচ্ছা।
চতুর্দিকের শ্রেষ্ঠ ভাবনা, শ্রেষ্ঠ কামনা পূরণকারী, ফরিস্তা তথা দেবতা আত্মাদেরকে,
সদা উচ্চ স্থিতিতে স্থিত থাকা লাইট-হাউস মাইট-হাউস আত্মাদেরকে, বাপদাদার সূক্ষ্ম
ইশারা গুলিকে অনুধাবনকারী, বিশাল-বুদ্ধি বাচ্চাদেরকে বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন
আর নমস্কার।
*দেশ - বিদেশের সকল বাচ্চাদের প্রতি বাপদাদা সন্দেশ (বার্তা)
রূপে স্মরণের স্নেহ-সুমন দিয়েছেন*
চতুর্দিকের স্নেহী সহযোগী এবং শক্তিশালী বাচ্চাদের রকমারি উর্মীমালার পত্র দেখে
বাপদাদা স্নেহের সাগরে একাকার হয়ে গেলেন। সকলের বিভিন্ন উর্মি তাদের নিজ নিজ উৎসাহ
- উদ্দীপনা অনুসারে অবশ্যই শ্রেষ্ঠ আর বাপদাদা সেই সব উর্মীমালাকে দেখে প্রফুল্লিত
হন। তাদের উৎসাহও বেশ ভালো এবং প্ল্যানও বেশ ভালো। এখন প্র্যাকটিকালের মার্কস
বাপদাদার থেকে নিতে হবে আর ভবিষ্যতের খাতা জমা করতে হবে। এই সময় বাপদাদা সব
বাচ্চাদের প্র্যাকটিকাল কোর্সের মার্কস নোট করে রাখছেন। আর এই বছরে বিশেষ করে
প্র্যাকটিকাল কোর্স এবং প্র্যাকটিকাল কোর্সের অতিরিক্ত মার্কস নিতে হবে। সেইজন্য যে
যে ইশারা সময়ে সময়ে পেয়েছ, সেই ইশারা গুলিকে প্রত্যেকে তাকে 'আমার জন্যই দেওয়া'
মনে করে যদি প্র্যাকটিকালে নিয়ে আসো, তবে নম্বর ওয়ান হতে পারবে । বিদেশের কিম্বা
দেশের যে সব বাচ্চারা দূরে বসেও যাদের সমীপ স্নেহের অনুভূতি হয় এবং সদাই উৎসাহ
উদ্দীপনায় থাকে, কিছু করে দেখাতে চায় - এটা করি, এইভাবে করি, এমন উদ্দীপনায় থাকে,
এখন অসীম জগতের সেবার জীবন্ত প্রমাণ হয়ে উদ্দীপনাকে প্র্যাকটিকালে নিয়ে আসার তাদের
কাছে বিশেষ সুযোগ রয়েছে। সেইজন্য উড়তি কলার রেস করো। স্মরণে, সেবাতে, দিব্য গুণের
প্রতিমূর্তি হওয়াতে, তার সাথে সাথে জ্ঞান স্বরূপ হয়ে জ্ঞান চর্চা করতে - এই চারটি
সাবজেক্টে উড়তি কলার রেসে বিশেষ ভাবে নম্বর নেওয়ার সুযোগ রয়েছে এই বছরে। এই
বিশেষ সুযোগ নিয়ে নাও। নতুন জিনিস অনুভব করো। নবীনত্বকে পছন্দ করো, তাই না ! তাই এই
নতুনত্বটি করে নম্বর নিয়ে নিতে পারো। এখন এই বছরে এক্সট্রা রেসের এক্সট্রা মার্কস
রয়েছে। সময় এক্সট্রা পেয়েছ। পুরুষার্থ অনুসারে প্রালব্ধ তো সব সময়ই পাও। কিন্তু
এই বছর বিশেষ এক্সট্রা মার্কস রয়েছে। সেইজন্য উড়তি কলার অনুভাবী হয়ে নিজেও এগিয়ে
যাও, অন্যদেরকেও এগিয়ে নিয়ে যাও। বাবা সকল বাচ্চাদের গলায় তাঁর বাহুর মালা পরিয়ে
দিচ্ছেন। হৃদয়কে বিশাল করে নিলে সাকারে এখানে পৌঁছানোও সহজ হয়ে যাবে। যেখানেই
উদার হৃদয় রয়েছে, ধনও সেখানে স্বাভাবিক ভাবেই পৌঁছে যায়। হৃদয় তখন কোথা থেকে
কোথা ঠিক নিয়ে আসে। সেইজন্য অন্তর চাইছে অথচ ধন নেই, এ'কথা বাপদাদা মানবেন না। যে
অন্তর থেকে চাইবে, কোনো না কোনো ভাবেই তার টাচিং হবে আর তারা এখানে পৌঁছে যাবে।
পরিশ্রমের পয়সা হবে। পরিশ্রমের পয়সা হলে, পরিশ্রমের অর্থ পদমগুণ লাভ প্রদান করবে।
কারণ বাবার স্মরণে থেকে করা উপার্জন যে। অতএব স্মরণের খাতায জমা হয়ে যায় এবং
পৌঁছেও যায়। আচ্ছা - সকলে নিজ নিজ নাম এবং বিশেষত্বের দ্বারা বাহুর মালা সহ তোমরা
স্মরণের স্নেহ-সুমন স্বীকার ক'রো।
*সিলভার জুবিলিতে আগত টিচার্স বোনেদের প্রতি অব্যক্ত
মহাবাক্য*
সকলে সিলভার জুবিলি উদযাপন করলে ? হতে তো হবে গোল্ডেন এজেড, সিলভার তো নয়, তাই না
! গোল্ডেন এজেড হওয়ার জন্য এই বছর কী প্ল্যান বানিয়েছ ? সেবার প্ল্যান তো বানিয়েই
থাকো, কিন্তু স্ব পরিবর্তন আর অসীম জগতের পরিবর্তন - তার জন্য কী প্ল্যান বানিয়েছ
? সেটা তো নিজ নিজ স্থানের প্ল্যান বানিয়ে থাকো, আমরা এটা এটা করব। কিন্তু তোমরা হলে
আদি থেকে নিমিত্ত, তাই তোমরা হলে অসীম জগতের প্ল্যান প্রস্তুতকারক। সেই সময়
বুদ্ধিতে উদিত হয় যে, আমাদেরকে এত বড় বিশ্বের কল্যাণ করতে হবে ? এই ভাবনা ইমার্জ
হয় ? নাকি ভাবো এটা যার কাজ তিনিই জানেন ! কখনো অসীম জগতের বিষয়ে খেয়াল যায় ?
নাকি নিজের স্থানের দিকেই খেয়াল যায় ? তোমাদের নামই হল বিশ্ব কল্যাণকারী, অমুক
স্থানের কল্যাণকারী তো বলা হয় না। অসীম জগতের সেবার কী সংকল্প চলছে ? অসীম জগতের
মালিক হতে হবে না ! স্টেটৈর মালিক তো হবে না, তাই না ! সেবাধারী নিমিত্ত আত্মাদের
মধ্যে যখন এই উর্মী তরঙ্গায়িত হবে, তখন অন্যদের মধ্যেও জাগবে। যদি তোমাদের মধ্যে
এই উর্মী না খেলে, তবে অন্যদের মধ্যেও তা আসবে না। তাই সর্বদা নিজেকে অসীম জগতের
অধিকারী মনে করে অসীম জগতের প্ল্যান বানাও। প্রথম মুখ্য বিষয় হল - কোনো প্রকারের
সীমিত জাগতিক বন্ধনে আবদ্ধ নও তো ! বন্ধন-মুক্তই অসীম জগতের সেবাতে সফল হবে। এখানেই
সেটা প্রত্যক্ষ হতে চলেছে এবং হতে থাকবে। অতএব এই বছরে কোন্ বিশেষত্ব দেখাবে ? দৃঢ়
সংকল্প তো প্রত্যেক বছরই করে থাকো। যখনই এই রকমের কোনো সুযোগ আসে, তাতেও তোমরা দৃঢ়
সংকল্প তো নিজেরাও করে থাকে আর অন্যদেরকে করাও। তাই দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করাও কমন হয়ে
গেছে। বলার সময় বলছো দৃঢ় সংকল্প, কিন্তু গিয়ে দাঁড়ায় সংকল্পে। যদি দৃঢ় হত, তবে
আবার নিতে হত না। দৃঢ় সংকল্প, এই শব্দও এখন কমন হয়ে গেছে। এখন কোনো কাজ যখন করো,
তখন বলার জন্য বলে থাকো যে, হ্যাঁ, দৃঢ় সংকল্প করছি। তাই এখন এমন কোনো নতুন উপায়
বের করো যাতে যেটা ভাবছো সেটাই করছো, এরূপ সমান হবে। প্ল্যান আর প্র্যাকটিকাল দুটোই
যেন একসাথে হয়। প্ল্যান তো অনেক রয়েছে, কিন্তু প্র্যাকটিকালে সমস্যা যেমন চলে আসে,
তেমনই পরিশ্রমও অনেক লাগে। অনেক কিছুর সম্মুখীনও হতে হয়। সে সব তো হবেও আর হতেও
থাকবে। কিন্তু লক্ষ্য যদি ঠিক থাকে, তবে প্র্যাকটিকালে সদা এগিয়ে যেতে থাকবে। এখন
এমন প্ল্যান বানাও, যার দ্বারা কোনো নবীনত্ব প্রতিভাত হয়। নিলে প্রতি বছর সকলে
সমবেত তো হচ্ছো, তোমরাই বলো যে, যেমন তেমনই রয়ে গেছে। পরস্পর পরস্পরকে সেই একই রকম
ভাবে দেখতে থাকো। কিছুই মনের মতন হয় না। যতটা চাও, ততটা হয় না। সেটা কীভাবে সম্ভব
করবে ? এর জন্যই বলা হয়ে থাকে, "যে (লক্ষ্যকে) অর্জন করে, সে-ই অর্জুন"। একজনও যদি
নিমিত্ত হয়ে যায় তবে অন্যদের মধ্যেও উৎসাহ উদ্দীপনার সঞ্চার হয়ে যায়। তাই, এই
যে এত সংখ্যক তোমরা একসাথে জড়ো হয়েছ, এখন এমন কোনো প্র্যাকটিকালে করার মতো
প্ল্যান বানাও। থিওরির পেপারও থাকে আবার প্র্যাকটিকালেরও হয়ে থাকে। এটা সত্য যে, আদি
থেকে যারা নিমিত্ত হয়েছেন, তাঁদের ভাগ্য তো অবশ্যই শ্রেষ্ঠ। এখন নতুন কী করবে ?
এর জন্য বিশেষ অ্যাটেনশন - যে কোনো কাজ করবার পূর্বে এটাই লক্ষ্য রাখো যে, আমাকে
নিজেকে সম্পন্ন বানিয়ে অন্যদের কাছে অনুকরণ যোগ্য (স্যাম্পল) হয়ে উঠতে হবে। কিন্তু
হয় কি, সংগঠনে থাকার সুবিধা যেমন রয়েছে, তেমনি ক্ষতিও হয়ে যায়। সংগঠনে একজন
অপরজনকে দেখে আলস্য ভাব এসে যায় আবার সংগঠনে একজন অপরজনকে দেখে উৎসাহ উদ্দীপনাও
বেড়ে যায়। তাই দুটোই হয়। তাই সংগঠনকে আলস্যের দিক দিয়ে দেখবে না। সংগঠনে আলস্যের
কারণে অনেক ক্ষতি হয়ে যায়। সংগঠন থেকে শ্রেষ্ঠ হওয়ার সহযোগ নেওয়া সেটা হল অন্য
বিষয়। যদি লক্ষ্য এটা থাকে যে, আমাকে করতে হবে, আমাকে নিজেকে করে অন্যদেরকে দেখাতে
হবে - তাহলেই উৎসাহ আসবে নিজে করারও এবং অন্যদেরকে দিয়ে করানোরও।আর এই লক্ষ্যকেই
বারবার ইমার্জ করো (মনের সামনে নিয়ে আসা)। কিন্তু যদি সাধারণ ভাবে লক্ষ্য রাখো,
তাহলে সেটা আবার মনের আড়ালে চলে যাবে (মার্জ হয়ে যাবে)। সেই কারণেই তা
প্র্যাকটিকাল হয় না। তাই লক্ষ্যকে মাঝে মাঝেই ইমার্জ করো। লক্ষ্য আর লক্ষণও
বারেবারে মিলিয়ে নাও। তখনই শক্তিশালী হয়ে উঠবে। নইলে সাধারণই থেকে যাবে। এইবার
এ'বছরে প্রত্যেকে এটাই ভাবো যে - "আমাকে সিম্পল আর স্যাম্পল হতে হবে"। এই সেবার
প্রবৃত্তি তো বৃদ্ধি পেতেই থাকবে, কিন্তু এই প্রবৃত্তি যেন বিঘ্ন রূপ হয়ে না ওঠে।
উন্নতিতে যদি বিঘ্ন রূপ হয়ে ওঠে, তবে তাকে সেবা বলা যাবে না। আচ্ছা, এটা তো বেশ
বড়ই ঝাঁক (গ্রুপ) ; একটা ছোট অ্যাটম বম্বও যদি কামাল করে দেখাতে পারে, এই এত এত
আত্মিক বম্ব তবে কিই না করতে পারে। তোমরাই তো স্টেজে আসবে, তাই তো ? গোল্ডেন
জুবিলির যারা তারা তো হল ব্যাকবোন। কিন্তু প্র্যাকটিকালে তো আসতে হবে তোমাদেরকেই।
এখন এমন কিছু করে দেখাও - যেমন গোল্ডেন জুবিলির নিমিত্ত আত্মাদের স্নেহের সংগঠন
প্রত্যক্ষভূত হয় আর সেই সংগঠন প্রত্যক্ষ ফলও দেখিয়েছে, তা হল সেবার বৃদ্ধি এবং
সেবায় সফলতা। তোমরাও অনুরূপ একটি সংগঠন বানাও, যা কিনা হবে কেল্লার মতো। যেরূপ
গোল্ডেন জুবিলির নিমিত্ত দিদিরা এবং দাদীরা যারাই রয়েছেন, তারা যেমন স্নেহ আর
সংগঠনের শক্তির প্রত্যক্ষ ফল দেখিয়েছেন, সেইরূপ তোমরাও প্রত্যক্ষ ফল দেখাও। অতএব,
একে অপরের সমীপে আসার জন্য সমতার প্রয়োজন । সংস্কারের ভিন্নতা তো আছে এবং তা
থাকবেও। এখন জগদম্বার দিকে আর ব্রহ্মার দিকে ফিরে তাকাও, সংস্কার তো ভিন্ন হবেই।
এখন নিমিত্ত দাদী, দিদিরা যারাই রয়েছেন, সংস্কার সকলের একরূপ নয়, তত্সত্বেও
সংস্কারের মিলন - স্নেহের সেই নিদর্শন তারা রেখেছেন। এমন মনে ক'রো না যে, সংস্কারের
মিলন ঘটলে তবেই সংগঠনের নির্মাণ হবে, না তা নয়। সংস্কারের মিলন হলে স্বাভাবিকভাবেই
সংগঠন মজবুত হয়েই যায়। আচ্ছা, এও হয়েই যাবে। সেবা একটাই, কিন্তু নিমিত্ত হওয়া,
নিমিত্ত ভাব রেখে চলা, বিশেষত্ব হল এটাই। এই সীমাবদ্ধতা থেকে বেরোতে হবে, তাই না !
এর কারণেই তো তোমরা ভেবেছ না - সবাইকে পরিবর্তন করতে হবে ! এক সেন্টারের ভাইবোনেদের
অন্য সেন্টারেও যাওয়া উচিত। সবাই তার জন্য প্রস্তুত ? প্রস্তুত থাকলে অর্ডার রের করা
হবে। তোমাদের হ্যান্ডস আপ তাই তো ? বদলানোতে লাভও রয়েছে। এই বছরে এই নতুন জিনিসটাই
করা হোক না ! নষ্টমোহ তো হতেই হবে। যখন ত্যাগী তপস্বী হয়ে গেছ, তবে এ আর কী জিনিস
! ত্যাগই হল ভাগ্য। তো ভাগ্যের সামনে এ আর কী ত্যাগ। যারা এগিয়ে এসে করে, তারা
ধন্যবাদের পাত্র হয়ে যায়। তোমরা সবাই হলে বাহাদুর। বদলি মানেই বদলি। যাকে ইচ্ছে
করতে পারো। সাহস যদি থাকে, তবে আর সমস্যা কী ! আচ্ছা, এই বছরে তবে এই নবীনত্ব করা
হবে। পছন্দ তো তোমাদের ? যারা এভাররেডির পাঠ প্রথম থেকে পড়েছে, তাদের ভিতরে ভিতরে
এই বল পূর্ণ ভাবে ভরা থাকে। যে কোনো আজ্ঞা পালন করবার বল স্বতঃতই চলে আসে। সেই কারণে
আজ্ঞাকারী হওয়ার বল তারা পেয়ে যায়। আচ্ছা - সদা তোমাদের শ্রেষ্ঠ ভাগ্য রয়েছে আর
ভাগ্যের কারণে সহযোগ প্রাপ্ত তো হতেই থাকবে। বুঝেছো !
২)* সেবা বর্তমান আর ভবিষ্যৎ উভয়কেই শ্রেষ্ঠ বানায়। সেবার বল কম নয়। স্মরণ আর সেবা,
দু'য়েরই ব্যালেন্স চাই। তখন সেবা উন্নতির অনুভব করাবে। স্মরণে থেকে সেবা করা যেন
ন্যাচারাল হয়ে যায়। ব্রাহ্মণ জীবনের নেচার কী ? স্মরণে থাকা। ব্রাহ্মণ জন্ম নেওয়া
অর্থাৎ স্মরণের বন্ধনে বেঁধে যাওয়া। লৌকিক ব্রাহ্মণদের যেমন কোনো না কোনো চিহ্ন থাকে,
তেমনই এই ব্রাহ্মণ জীবনের চিহ্ন হল স্মরণ। স্মরণে থাকাটাই যেন ন্যাচারাল হয়, তার
জন্য স্মরণ আলাদা আর সেবা আলাদা করলাম, একেবারেই নয়। দুটোই যেন একসাথে হয়। এত সময়
কোথায় যে স্মরণ আলাদা করে করবে, সেবা আলাদা করবে। সেইজন্য স্মরণ আর সেবা সর্বদা
একসাথেই রয়েছে। এতেই অনুভাবীও হতে হবে আর সফলতাও প্রাপ্ত করতে হবে । আচ্ছা ।
বরদান:-
কর্মের গতিকে জেনে গতি-সদ্গতির ফয়সলা করতে সমর্থ
মাস্টার দুঃখ হর্তা সুখ কর্তা ভব
এখনও পর্যন্ত নিজের জীবনের কাহিনী দেখতে এবং শুনতে
বিজি থেকো না। বরং প্রত্যেকের কর্মের গতিকে জেনে গতি সদ্গতি প্রদানের ফয়সলা করো।
মাস্টার দুঃখ হর্তা সুখ কর্তার ভূমিকা পালন করো। তোমার রচনার দুঃখের অশান্তির সমস্যা
গুলির সমাপ্তি করো, তাদেরকে মহাদান আর বরদান দাও। তুমি নিজে কোনো ফেসিলিটি ( সুবিধা)
নিতে যাবে না, বরং দাতা হয়ে অন্যদেরকে দাও। যদি স্যালভেশনের আধারে নিজের উন্নতি
কিম্বা সেবায় সাময়িক সফলতা প্রাপ্তি হয়েও যায়, তবুও আজ যদি মহান হও, অচিরেই সেই
মহানতার পিপাসু আত্মা হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
অনুভূতি না হওয়া হল যুদ্ধের স্টেজ, যোগী হও যোদ্ধা
নয়।