15.06.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
তোমাদের এই স্মৃতি ফিরে এসেছে যে, আমরা ৮৪ জন্মের চক্র পূর্ণ করেছি, এখন ফিরে যাচ্ছি
নিজেদের ঘর শান্তিধামে, ঘরে ফেরার আর অল্পসময় বাকি রয়েছে"
প্রশ্নঃ -
যেসকল
বাচ্চাদের ঘরে ফেরার স্মৃতি থাকে, তাদের চিহ্ন বা নিশান কি হবে ?
উত্তরঃ -
তারা এই পুরানো দুনিয়াকে দেখেও দেখবে না। তাদের মধ্যে অসীম জগতের বৈরাগ্য আসবে,
কাজ-কর্ম বা ব্যবসাদির মধ্যে থেকেও হাল্কা থাকবে। এদিক-ওদিকের পরনিন্দা-পরচর্চায়
নিজেদের সময় নষ্ট করবে না। নিজেদেরকে এই দুনিয়ায় অতিথি হিসাবে মনে করবে।
ওম্ শান্তি ।
কেবলমাত্র
তোমরা অর্থাৎ সঙ্গমযুগীয় ব্রাহ্মণ বাচ্চারাই জানো যে, আমরা এখন অতি স্বল্পসময়েয়
জন্য এই পুরানো দুনিয়ার অতিথি। তোমাদের সত্যিকারের ঘর হলো শান্তিধাম। একেই মানুষ
অত্যন্ত স্মরণ করে, তাতে মনে শান্তি প্রাপ্ত হয়। কিন্তু মন কি ? শান্তি কি ? এসব
আমরা কোথা থেকে পাবো, কিছুই বোঝে না। তোমরা জানো যে, এখন ঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য
অল্পসময় বাকি রয়েছে। সমগ্র দুনিয়ার মানুষ নম্বরের ক্রমানুসারে সেখানে যাবে। ওটা হলো
শান্তিধাম আর এটা হলো দুঃখধাম। একে স্মরণ করা তো সহজ, তাই না ! কেউ বৃদ্ধ হোক বা
যুবক একে তো স্মরণ করতেই পারো, তাই না! এতে সৃষ্টির সমগ্র জ্ঞানই চলে আসে। সবকিছু
বিশদভাবে (ডিটেলে) বুদ্ধিতে চলে আসে। এখন তোমরা সঙ্গমযুগে বসে রয়েছো, একথা তো
বুদ্ধিতে রয়েছে যে, ড্রামা প্ল্যান অনুসারে আমরা এখন শান্তিধামে যাচ্ছি। একথা
বুদ্ধিতে থাকলে তোমাদের খুশী বজায় থাকবে, স্মৃতি থাকবে। আমাদের নিজেদের ৮৪ জন্মের
স্মৃতি ফিরে এসেছে। ওই ভক্তিমার্গ হলো আলাদা, এ হলো জ্ঞানমার্গের কথা। বাবা
বোঝাচ্ছেন -- মিষ্টি বাচ্চারা, এখন নিজেদের ঘর স্মরণে আসে ? কতকিছু শুনতে থাকো, এত
অজস্র কথা শুনেছো। একমাত্র এই যে, এখন আমরা যাবো শান্তিধাম, পুনরায় সুখধামে আসবো।
বাবা এসেছেন পবিত্র দুনিয়ায় নিয়ে যেতে। সুখধামেও আত্মারা সুখ এবং শান্তিতে থাকে।
শান্তিধামে শুধুই শান্তি, এখানে তো খুবই গন্ডোগোল, তাই না! এখানে মধুবন থেকে তোমরা
যখন নিজেদের ঘরে যাবে তখন বুদ্ধি পরনিন্দা-পরচর্চা, নিজেদের কাজ-কর্মাদির দিকে চলে
যাবে। এখানে তো সেসব ঝঞ্ঝাট নেই। তোমরা জানো যে, আমরা অর্থাৎ আত্মারা হলাম
শান্তিধাম-নিবাসী। এখানে আমরা নিজ ভূমিকা পালনকারী (পার্টধারী), আর কেউই জানে না
যে, কিভাবে আমরা পার্টধারী হয়েছি ? বাচ্চারা, তোমাদেরকেই বাবা এসে পড়ান, কোটিতে
কেউ-ই(অতি বিরল কেউ) পড়ে। সকলেই তো পড়বে না। তোমরা এখন কত সমঝদার হয়ে গেছো, পূর্বে
অবুঝ ছিলে। দেখো, এখন কত লড়াই-ঝগড়াদি হয়, একে কি বলবে ? আমরা পরস্পর ভাই-ভাই, তারা
একথা ভুলে গেছে। ভাই ভাইকে কখনো হত্যা করে কী ? হ্যাঁ, হত্যা করে শুধু ঐশ্বর্য
প্রাপ্তির জন্য। তোমরা এখন জানো, আমরা সকলে এক পিতার সন্তান ভাই-ভাই। তোমরা
প্র্যাকটিক্যালি জানো যে, আমাদের আত্মাদের বাবা এসে পড়ান। ৫ হাজার বছর পূর্বের মতন
আমাদের পড়ান, কারণ তিনি জ্ঞানের সাগর, আর কেউই এই পড়া জানে না। বাচ্চারা, একথা
তোমরাই জানো যে, বাবা-ই স্বর্গের রচয়িতা। সৃষ্টির রচয়িতা বলবে না। সৃষ্টি তো অনাদি।
স্বর্গের রচয়িতা বলবে, ওখানে আর কোনো ভূখন্ড ছিল না। এখানে তো অনেক ভূখন্ড । কোন এক
সময় ছিল তখন এক ধর্ম ছিল, এক ভূখন্ড ছিল। পরে অন্যান্য ধর্ম এসেছে।
এখন বুদ্ধিতে বসেছে যে, অন্যান্য ধর্ম কিভাবে আসে। সর্বপ্রথমে আদি সনাতন দেবী-দেবতা
ধর্ম আসে, এখানেও সনাতন ধর্ম বলা হয়ে থাকে। কিন্তু অর্থ তো কিছুই বোঝে না। তোমরা
সকলেই আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের, শুধু অপবিত্র হয়ে গেছো। সতোপ্রধান থেকে
সতঃ-রজঃ-তমঃ হয়ে গেছো। তোমরা জানো যে, আমরা আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের, অত্যন্ত
পবিত্র ছিলাম, এখন পতিত হয়ে গেছি। তোমরা বাবার থেকে পবিত্র দুনিয়ার মালিক হওয়ার
উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করেছিলে। তোমরা জানো যে, আমরা সর্বপ্রথম পবিত্র গৃহস্থ ধর্মে
ছিলাম, ড্রামা প্ল্যান অনুসারে এখন রাবণ-রাজ্যে আমরা পতিত প্রবৃত্তিমার্গীয় হয়ে গেছি।
তোমরাই ডাকো --- হে পতিত-পাবন, আমাদের সুখধামে নিয়ে চলো। এ তো কালকের কথা। কাল তোমরা
পবিত্র ছিলে, আজ অপবিত্র হয়ে আমাকে ডাকছো। আত্মা অপবিত্র হয়ে গেছে। আত্মাই আহ্বান
করে যে, বাবা এসে আমাদের পুনরায় পবিত্র করো। বাবা বলেন, এখন এই অন্তিমজন্মে পবিত্র
হও পুনরায় তোমরা ২১ জন্মের জন্য অত্যন্ত সুখী হয়ে যাবে। বাবা অতি ভাল-ভাল কথা
শোনান। খারাপ জিনিস(অভ্যাস) ত্যাগ করান, তোমরা দেবতা ছিলে, তাই না! এখন পুনরায় হতে
হবে, পবিত্র হও। কত সহজ, উপার্জন অনেক বৃহৎ। বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে এখন শিববাবা
এসেছেন, প্রতি ৫ হাজার বছর পর আসেন। পুরানো দুনিয়া থেকে নতুন অবশ্যই হয়। একথা আর
কেউ বলতে পারে না। শাস্ত্রে কলিযুগের আয়ু অতি দীর্ঘ করে দিয়েছে। এ সবই ড্রামায়
নির্ধারিত।
বাচ্চারা, এখন তোমরা পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার পুরুষার্থ করো। ধ্যান রেখো যেন আর কোনো
পাপ না হয়ে যায়। দেহ-অভিমানে এলেই পুনরায় আরো বিকার আসে, যারফলে পাপ হয় তাই
ভুতগুলিকে তাড়িয়ে দিতে হয়। এই দুনিয়ার কোনো বস্তুর প্রতি যেন মোহ না থাকে। এই পুরানো
দুনিয়ার প্রতি যেন বৈরাগ্য আসে। অবশ্যই দেখো যে, যদিও পুরানো ঘরে রয়েছো কিন্তু
বুদ্ধি নতুন ঘরের দিকেই নিবদ্ধ রয়েছে। যখন নতুন ঘরে যাবে তখন নতুনকেই দেখবে। যতক্ষণ
না পর্যন্ত পুরানো ঘর শেষ হয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত দৃষ্টি দ্বারা পুরানোকে দেখেও
স্মরণ নতুনকেই করতে হবে। এমন কোনো কর্ম করা উচিত নয় যাতে পরে অনুতাপ করতে হয়। আজ
অমুককে দুঃখ দিয়েছি, এই পাপকর্ম করেছি, বাবার কাছে জিজ্ঞাসা করতে পারো যে, বাবা এটা
কি পাপ ? অনুতাপ কেন করবে। জিজ্ঞাসা না করলে অনুতাপ করতে থাকবে। বাবাকে জিজ্ঞাসা
করলে বাবা তৎক্ষনাৎ তা হাল্কা করে দেবে। তোমরা অনেক ভারী হয়ে গেছো। পাপের বোঝা অনেক
ভারী হয়। পুনরায় ২১ জন্ম পাপ থেকে হাল্কা হয়ে যাবে। মাথায় জন্ম-জন্মান্তরের বোঝা
রয়েছে। যত স্মরণে থাকবে ততই হাল্কা হতে থাকবে। খাদ নির্গত হতে থাকবে আর খুশীর (পারদ)
চড়তে থাকবে। সত্যযুগে তোমরা অপার খুশীতে ছিলে, পুনরায় কম হতে-হতে তোমাদের সমস্ত
খুশী হারিয়ে গেছে। সত্যযুগ থেকে নিয়ে কলিযুগ পর্যন্ত এই যাত্রায় ৫ হাজার বছর লেগে
গেছে। স্বর্গ থেকে নরক গমনের যাত্রায় তোমরা এখন জেনেছো যে, আমরা স্বর্গ থেকে নরকে
কীভাবে এসেছি। এখন পুনরায় তোমরা নরক থেকে স্বর্গে যাচ্ছো। এক সেকেন্ডে জীবনমুক্তি।
বাবাকে চিনেছো। বাবা যখন এসেছেন তখন অবশ্যই আমাদের স্বর্গে নিয়ে যাবেন। বাচ্চার
জন্ম হয়েছে আর উত্তরাধিকারের মালিক হয়ে গেছে। বাবার হয়ে গেলে তো আবার নেশা চড়ে যাওয়া
উচিত, তাই না! নেশা নেমে যাওয়া কি উচিত! তোমরা তো বড়, তাই না! অসীম জগতের পিতার
সন্তান হয়েছো তাই অসীম জগতের রাজধানীর উপর তোমাদের অধিকার রয়েছে, তাই গায়নও রয়েছে
--- অতীন্দ্রিয় সুখের কথা জানতে হলে গোপী-বল্লভের গোপ-গোপিনীদের জিজ্ঞাসা করো।
বল্লভ হলেন বাবা, ওঁনাকে জিজ্ঞাসা করো। পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারেই খুশীর
পারদ চড়তে থাকবে। কেউ তো অতি শীঘ্রই (অন্যদের) নিজ-সম করে দেবে। বাচ্চাদের কাজই এই,
সবকিছু ভুলিয়ে নিজেদের রাজধানীকে স্মরণ করানো।
তোমরা স্বর্গের মালিক ছিলে। এখন কলিযুগ, পুরানো দুনিয়া পুনরায় নতুন দুনিয়া হবে।
বাচ্চারা, এখন তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে যে, প্রতি ৫ হাজার বছর পর বাবা ভারতেই আসেন।
ওঁনার জন্মদিনও(জয়ন্তী) পালন করা হয়। তোমরা জানো যে, বাবা এসে আমাদের রাজধানী
স্থাপন করে দিয়ে যান, পুনরায় স্মরণ করার প্রয়োজনই পড়ে না। পুনরায় ভক্তি যখন শুরু
হয় তখন স্মরণ করে। আত্মা সুখ-শান্তি অনুভব করেছে তবেই তো বাবাকে স্মরণ করে বলে, বাবা
পুনরায় এসে আমাদের শান্তিধাম, সুখধামে নিয়ে চলো। বাচ্চারা এখন তোমরা জানো, তিনি
আমাদের পিতাও, শিক্ষকও, সদ্গুরুও। সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের চক্র, ৮৪ জন্মের জ্ঞান
তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে। অগণিতবার ৮৪ জন্ম নিয়েছো এবং নিতে থাকবে। এর অন্ত কখনো হয়
না। তোমাদের বুদ্ধিতেই এই চক্র রয়েছে, প্রতিমুহূর্তে স্বদর্শন-চক্র স্মরণে আসা উচিত।
এই হলো 'মন্মনাভব'। যত বাবাকে স্মরণ করবে ততই পাপ ভস্মীভূত হবে।
তোমরা যখন কর্মাতীত অবস্থার সমীপে পৌঁছে যাবে তখন তোমাদের দ্বারা কোনো বিকর্ম হবে
না। এখন অল্প-স্বল্প বিকর্ম হয়ে যায়। সম্পূর্ণ কর্মাতীত অবস্থা এখন হয়েছে কি, না হয়
নি। এই বাবাও(ব্রহ্মা) তোমাদের মতন স্টুডেন্ট। পড়ায় শিববাবা। যদিও এঁনার মধ্যে
প্রবেশ করেন তথাপি ইনিও স্টুডেন্ট। এ হলো নতুন-নতুন কথা। এখন শুধু তোমরা বাবাকে আর
সৃষ্টি-চক্রকে স্মরণ করো। ওটা হলো ভক্তিমার্গ, এটা হলো জ্ঞানমার্গ। রাত-দিনের
পার্থক্য। ওখানে কত কাসর-ঘন্টাদি বাজানো হয়। এখানে শুধু স্মরণে থাকতে হয়। আত্মা তো
অমর, অকাল-তখ্তও। এমন নয় যে, অকাল-মূর্তি কেবল বাবা-ই হন। তোমরাও অকাল-মূর্তি।
অকাল-মূর্তি আত্মার এটি হলো ভ্রুকুটি-সিংহাসন। অবশ্যই তবে ভ্রুকুটিতেই বসবে। পেটে
কি বসবে, না তা বসবে না। এখন তোমরা জানো যে, আমরা অর্থাৎ অকাল-মূর্তি আত্মার আসন
কোথায় এই ভ্রুকুটির মধ্যভাগে আমাদের আসন রয়েছে। অমৃতসরে অকাল-তখ্ত রয়েছে, তাই না!
অর্থ কিছুই বুঝতে পারে না। মহিমা-কীর্তনও করা হয় অকাল-মূর্তি। ওঁনার(শিববাবা)
অকাল-সিংহাসন কোথায় কেউ জানে না। এখন তোমরা জেনেছো যে, আসন তো এটাই(ব্রহ্মার
ভ্রুকুটি), যেখানে বসে শোনান। তাহলে আত্মা অবিনাশী, শরীর বিনাশী। আত্মার এ হলো
অকাল-সিংহাসন, সর্বদাই এই অকাল-সিংহাসনই থাকে। একথা তোমরাই জানো। তারা তো আবার আসন
তৈরী করে তার নাম রেখে দিয়েছে। বাস্তবে অকাল আত্মা তো এখানে বসে রয়েছে। তোমাদের
বুদ্ধিতে এর অর্থ জানা রয়েছে, এক ওঁকার..... এর অর্থ তোমরা বোঝ। মানুষ মন্দিরে গিয়ে
বলে ' অচ্যুতম্ কেশবম্.......অর্থ কিছুই নেই। এমনি-এমনিই স্তুতি করতে থাকে। '
অচ্যুতম্ কেশবম্ রাম নারায়ণম্ '.......এখন রাম কোথায়, নারায়ণ কোথায়। বাবা বলেন, ওসব
হলো ভক্তিমার্গ। জ্ঞান তো অতি সাধারণ, কোনো কথা জিজ্ঞাসা করবার পূর্বে বাবা এবং
উত্তরাধিকারকে স্মরণ করো, কিন্তু সেই পরিশ্রম কারোর দ্বারা হয় না, ভুলে যায়। একটি
নাটকও আছে --- মায়া এমন করে তো, ভগবান অমন করেন। তোমরা বাবাকে স্মরণ করো আর মায়া
তোমাদের আরো ঝড়ের সম্মুখীন করে দেয়। মায়ার আদেশ -- অতি শক্তিশালী হয়ে লড়ো, তোমরা
সকলে এখন লড়াই-এর ময়দানে রয়েছো। তোমরা জানো, এখানে কোন্-কোন্ প্রকারের যোদ্ধা রয়েছে।
কেউ অতি দুর্বল, কেউ মধ্যমপ্রকারের দুর্বল, কেউ অতি তীক্ষ্ণ। সকলেই মায়ার সঙ্গে
যুদ্ধ করবে। অতি গোপন (যুদ্ধ), যেন আন্ডারগ্রাউন্ড। সাইন্টিস্টরাও আন্ডারগ্রাউন্ড
বোমার পরীক্ষা-নিরীক্ষা(ট্রায়াল) করে। বাচ্চারা, তোমরা এও জানো, ওরা নিজেদের
মৃত্যুর জন্য সবকিছু করছে। তোমরা সম্পূর্ণ শান্তিতে বসে রয়েছো, ওদের হলো সাইন্সের
শক্তি। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও অনেক হচ্ছে। একে কেউই বশ করতে পারে না। এখন কৃত্রিম
বৃষ্টিপাতের জন্যও চেষ্টা করছে। কৃত্রিম বৃষ্টি হলে শাক-সব্জীও অধিকমাত্রায় হবে।
বাচ্চারা, তোমরা তো জানো যে, যতই বৃষ্টিপাত হোক তথাপি প্রাকৃতিক বিপর্যয় অবশ্যই হবে।
মুষলধারে বৃষ্টিপাত হবে, তখন কি করবে। একেই বলা হয় প্রাকৃতিক বিপর্যয়। সত্যযুগে এমন
হয় না। এখানে যা হয় পুনরায় তা বিনাশে সহায়তা করে।
তোমাদের বুদ্ধিতে একথা রয়েছে যে, আমরা যখন সত্যযুগে থাকবো, তখন যমুনার উপকন্ঠে
আমাদের সোনার মহল থাকবে। আমরা অতি অল্পসংখ্যকই ওখানে থাকবো। প্রতিকল্পেই এমন হয়ে
থাকে। প্রথমে অল্প হয় পরে বৃক্ষ(ঝাড়) বৃদ্ধি পায়। ওখানে কোনো নোংরা(খারাপ) বস্তু
থাকেই না। এখানে তো দেখো পাখিও নোংরা করতে থাকে, ওখানে নোংরার কোনো কথাই নেই। একে
বলাই হয় স্বর্গ। এখন তোমরা জানো যে, আমরা দেবতা হই, তাহলে অন্তরে কত খুশী থাকা উচিত।
বাবা বলেন -- বাচ্চারা, তোমরা মায়া-রূপী ভুত (জিন) থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য
আধ্যাত্মিক কার্যে ব্যস্ত হয়ে যাও। 'মন্মনাভব'। ব্যস এতেই জিন হয়ে যাও। জিনের
উদাহরণ দেওয়া হয়, তাই না! যদি বলে কিছু কাজ দাও..... তাহলে বাবাও কাজ দেন। তা নাহলে
মায়া গ্রাস করে নেবে। সম্পূর্ণরূপে বাবার সহায়তাকারী হতে হবে। বাবা একলা তো (বিশ্ব
পরিবর্তন) করবে না। বাবা তো রাজত্বও করেন না। সেবাও তোমরাই করো, রাজত্বও তোমাদেরই
জন্য। বাবাও বলেন, আমিও এই মগধ দেশে আসি। মায়া হলো কুমীর, কত মহারথীদের ছিনিয়ে নিয়ে
গ্রাস করে নিয়েছে। এসব হলো শত্রু। যেমন সাপ হলো ব্যাঙের শত্রু, তাই না! তোমরা জানো
যে, তেমনই তোমাদের শত্রু হলো মায়া। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
নিজেকে পাপমুক্ত করার পুরুষার্থ করতে হবে, কখনো দেহ-অভিমানে আসবে না। এই দুনিয়ার
কোনো বস্তুর প্রতি মোহ রাখবে না।
২) মায়া-রূপী জিন(ভুত)
থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য বুদ্ধিকে আধ্যাত্মিক কার্যে ব্যস্ত রাখতে হবে।
সম্পূর্ণরূপে বাবার সহায়তাকারী হতে হবে।
বরদান:-
'আমি'
এবং 'আমার' মনোভাবকে সমাপ্ত করে সমানতা এবং সম্পূর্ণতার অনুভাবী সত্যিকারের ত্যাগী
ভব
প্রতি সেকেন্ডে, প্রতি
সঙ্কল্পে যেন কেবলমাত্র বাবা-ই (বাবা-বাবা) স্মরণে থাকে, আমিত্ব সমাপ্ত হয়ে যায়,
যখন আমি নেই তখন আমারও নেই। আমার স্বভাব, আমার সংস্কার, আমার নেচার, আমার কাজ বা
দায়িত্ব, আমার নাম, আমার খ্যাতি..... যখন এই 'আমিত্ব' আর 'আমার' মনোভাব সমাপ্ত হয়ে
যায়, সেটাই সমানতা আর সম্পূর্ণতা। এই 'আমি' আর 'আমার' -- এই মনোভাবকে ত্যাগ করাই হলো
সর্বাপেক্ষা বৃহৎ সূক্ষ্ম ত্যাগ। 'আমিত্ব'-রূপী এই অশ্বকে অশ্বমেধ যজ্ঞে স্বাহা
অর্থাৎ সমর্পণ করে দাও, তবেই অন্তিম আহূতি পড়বে আর বিজয়ডঙ্কা বাজবে।
স্লোগান:-
'অবশ্যই'
(হা জী') বলে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া অর্থাৎ শুভকামনার মালা পরা