12-07-2020 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
22-02-86 মধুবন
আধ্যাত্মিক সেবা - নিঃস্বার্থ সেবা
আজ সব আত্মাদের বিশ্ব কল্যাণকারী বাবা সেবায় তাঁর সাথী, সেবাধারী বাচ্চাদের দেখছেন
l আদি থেকে বাপদাদার সাথে সেবাধারী বাচ্চারাও সাথী হয়েছে এবং অন্তিম পর্যন্ত বাপদাদা
গুপ্তরূপে এবং প্রত্যক্ষ রূপে বাচ্চাদের বিশ্বসেবার নিমিত্ত বানিয়েছেন l আদিতে
ব্রহ্মাবাবা আর ব্রাহ্মণ বাচ্চারা গুপ্তরূপে সেবার নিমিত্ত হয়েছে l এখন সেবাধারী
বাচ্চারা, শক্তি সেনা আর পাণ্ডব সেনা সকলে বিশ্বের সামনে প্রত্যক্ষ রূপে কার্য করছে
l সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনা মেজরিটি বাচ্চাদের মধ্যে ভালোভাবে প্রতীয়মান হয় l আদি থেকে
সেবার জন্য প্রবল আকাঙ্ক্ষা রয়েছে এবং অন্তিম পর্যন্ত থাকবে l ব্রাহ্মণ জীবনই সেবার
জীবন l ব্রাহ্মণ আত্মারা সেবা ব্যতীত বাঁচতে পারে না l মায়ার থেকে নিজেদের রক্ষা
করার শ্রেষ্ঠ সাধনই সেবা l সেবা যোগযুক্ত বানায় l কিন্তু কোন সেবা ? এক, শুধু মুখের
সেবা, যা শুনেছ তা' শোনানোর সেবা l দুই, মন থেকে মুখের সেবা l তোমরা যে মধুর বোল
শুনেছ তার প্রতিমূর্ত হয়ে, প্রতিমূর্তি দ্বারা সেবা, নিঃস্বার্থ সেবা l ত্যাগ,
তপস্যা স্বরূপ দ্বারা সেবা l সীমিত পরিসরের কামনারও ঊর্ধ্বে নিষ্কাম সেবা l একেই বলে,
ঈশ্বরীয় সেবা, আধ্যাত্মিক সেবা l যা শুধু মুখের সেবা, তাকে বলে নিজেকে খুশি করার
সেবা l সবাইকে খুশি করার সেবা মন আর মুখের সাথে সাথে হয় l মনের সাথে অর্থাৎ
মন্মনাভব স্থিতিতে মুখের সেবা l
বাপদাদা আজ নিজের রাইট হ্যান্ডস্ সেবাধারী এবং লেফ্ট হ্যান্ডস্ সেবাধারী উভয়কে
দেখছিলেন উভয়েই সেবাধারী, কিন্তু রাইট আর লেফ্টে প্রভেদ তো আছেই, তাই না ! রাইট
হ্যান্ড সদা নিষ্কাম সেবাধারী l লেফ্ট হ্যান্ড সীমিত পরিসরের এই জন্মের জন্য কোন না
কোন ফল খাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় সেবার নিমিত্ত হয় l তারা গুপ্ত সেবাধারী আর এর নামধারী
সেবাধারী l এই মুহূর্তে সেবা করে পরমুহূর্তে নাম হলো - খুব ভালো, খুব ভালো l কিন্তু
এখনই করেছ, এখনই খেয়েছ, তোমার হিসেবের খাতায় কিছুই জমা হলো না l গুপ্ত সেবাধারী
অর্থাৎ নিষ্কাম সেবাধারী l সুতরাং এক নিষ্কাম সেবাধারী, আরেক হলো নামধারী সেবাধারী
l গুপ্ত সেবাধারীর নাম বর্তমান সময়ে গুপ্ত থাকলেও কিন্তু গুপ্ত সেবাধারী সফলতার
খুশিতে সদা পরিপূর্ণ থাকে l কিছু বাচ্চার সঙ্কল্প উৎপন্ন হয় যে 'আমি করলেও আমার নাম
হয় না l আর যারা নামধারী হয়ে বাইরে থেকে শো করে সেবা করার, তাদেরই বেশি নাম হয় l'
কিন্তু এটা এমন নয় l যে নিষ্কাম অবিনাশী নাম অর্জন করে তার হৃদয়ের আওয়াজ হৃদয়ে
পৌঁছায়, তা' লুকিয়ে থাকতে পারে না l তার মুখে, অবয়বে প্রকৃত সেবাধারীর ঝলক অবশ্যই
দেখা দেয় l যদি কোন নামধারী এখানে খ্যাতি তথা সুনাম অর্জন করে তবে তা' ছিল
ভবিষ্যতের জন্য, ফল খেয়েছে আর শেষ করে ফেলেছে, তার ভবিষ্যৎ শ্রেষ্ঠ বা অবিনাশী করে
তোলেনি, সেইজন্য বাপদাদার কাছে সেবাধারীদের সম্পূৰ্ণ রেকর্ড আছে l সেবা করে যাও,
নাম হবে এমন সঙ্কল্প ক'রনা l সঞ্চয় হবে, সেই সম্পর্কে ভাবো l অবিনাশী ফলের অধিকারী
হও l অবিনাশী উত্তরাধিকারের জন্য এসেছ l সেবার ফল বিনাশী সময়ের জন্য যদি খেয়ে ফেল
তবে তো অবিনাশী উত্তরাধিকারের অধিকার কম হয়ে যাবে, সেইজন্য সদা বিনাশী কামনার সাথে
মুক্ত নিষ্কাম সেবাধারী, রাইট হ্যান্ড হয়ে সেবাতে এগিয়ে চলো l গুপ্ত দানের মহত্ত্ব,
গুপ্ত সেবার মহত্ত্ব বেশি হয় l সেই আত্মা সদা নিজের মধ্যে ভরপুর থাকবে l সে
নিশ্চিন্ত বাদশাহ হবে এবং নাম-যশের পরোয়া করবে না l এতেই বেপরোয়া বাদশাহ হবে অর্থাৎ
সদা স্বমানের তখতাসীন হবে l সীমিত মানের তখতাসীন নয়, স্বমানের তখতাসীন, অবিনাশী
তখতাসীন l অটল অখন্ড প্রাপ্তির তখতাসীন l একে বলে, বিশ্ব কল্যাণকারী সেবাধারী l কখনো
সাধারণ সংকল্পের কারণে বিশ্ব সেবার কার্যে সফলতা প্রাপ্ত করায়, পিছনে সরে যায় না l
ত্যাগ আর তপস্যা দ্বারা সদা সফলতা প্রাপ্ত করে সামনে এগিয়ে যেতে থাক l বুঝেছ !
সেবাধারী কাকে বলে ? তোমরা সবাই এমনই সেবাধারী ? যে সেবা স্থিতিকে বিচলিত করে তা'
সেবা নয় l কেউ কেউ ভাবে সেবাতে চঞ্চলতাও অনেক হয় l সেবাতে বিঘ্নও উৎপন্ন হয় আবার
সেবাই নির্বিঘ্ন বানায় l যতই হোক, যে সেবা বিঘ্নরূপ সেটা সেবা নয় l সেটাকে প্রকৃত
সেবা বলা যাবে না l নামধারী সেবা বলা হবে l প্রকৃত সেবাই প্রকৃত হীরা l যেমন,
প্রকৃত হীরা তার আপন দ্যুতি থেকে লুকাতে পারে না l এইরকম প্রকৃত সেবাধারী প্রকৃত
হীরা l নকল হীরার দ্যুতি যতই চমকপ্রদ হোক, কিন্তু মূল্যবান কে ? মূল্য তো আসলেরই হয়,
তাই না ! নকলের তো হয় না l অমূল্য রত্ন প্রকৃত সেবাধারী l অনেক জন্মের মূল্য প্রকৃত
সেবাধারীর থাকে l নামধারী সেবা হলো অল্পকালের চমকপ্রদ শো l সেইজন্য সদা সেবাধারী হয়ে
সেবা দ্বারা বিশ্ব কল্যাণ করে যাও l বুঝেছ - সেবার মহত্ত্ব কি ! কেউ কারও থেকে কম
নয় l প্রত্যেক সেবাধারী নিজ নিজ বিশেষত্বে বিশেষ সেবাধারী l নিজেকে কম ক'রনা l আর
তারপরে কিছু করে নাম পাওয়ার ইচ্ছাও রেখ না l বিশ্ব কল্যাণে তোমাদের সেবাকে সদাসর্বদা
অর্পণ করে চলতে থাক l সাধারণতঃ, ভক্তিতে যারা গুপ্ত দানী পুণ্য আত্মা, তারা এই
সঙ্কল্পই করে সকলের জন্য সবকিছু ভালো হোক l তারা এটা ভাবে না যে তাদের জন্য কিছু
হোক, তাদের যেন কিছু ফল প্রাপ্তি হয় ! না ! তাদের ভাবনা সবার যেন ফলপ্রাপ্তি হয় l
সকলের সেবায় অর্পিত হবে l তারা কখনো তাদের নিজেদের জন্য ইচ্ছা রাখবে না l এইভাবেই
সকলের জন্য সেবা কর l সকলের কল্যাণের ব্যাঙ্কে নিরন্তর জমা করতে থাক l তখন সবাই কি
হয়ে যাবে ? নিষ্কাম সেবাধারী l এখন যদি কেউ তোমার সম্পর্কে জানতে আগ্রহ না দেখায়,
তবে ২৫০০ বছর তারা তোমার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করবে l কেউ তোমার ব্যাপারে এক জন্ম
আগ্রহ দেখাবে, নাকি ২৫০০ বছর কেউ আগ্রহ প্রকাশ করবে, তাহলে বেশি কোনটা হলো ? ওটাই
তো বেশি, তাই না ! সীমিত পরিসরের সঙ্কল্পের ঊর্ধ্বে গিয়ে অসীম জগতের সেবাধারী হয়ে
বাবার হৃদয় সিংহাসনাসীন বেপরোয়া বাদশাহ হয়ে, সঙ্গমযুগের খুশি, অনাবিল আনন্দ উদযাপন
করতে থাক l কখনো কোনও সেবা যদি উদাস করে, তখন বুঝবে সেটা সেবা নয় l যদি কোনকিছু
অস্থির করে তোলে, চঞ্চলতায় নিয়ে আসে, তবে সেটা সেবা নয় l সেবা এমন একটা ব্যাপার যা
তোমাকে উড়াবে l সেবা বেগমপুরের (দুঃখহীন দুনিয়া) বাদশাহ বানায় l তোমরা এইরকম
সেবাধারী, তাই না ? বেপরোয়া বাদশাহ, বেগমপুরের বাদশাহ l সফলতা নিজে থেকেই যার পিছু
পিছু আসে l সফলতার পিছনে সে ধাবিত হয় না l সফলতা তাকে অনুসরণ করে l আচ্ছা - তোমরা
অসীম জগতের সেবার প্ল্যান বানাও, তাই না ? অসীম জগতের স্থিতি দ্বারা অসীম জগতের
সেবার প্ল্যান সহজে সফল হয় l (ডবল বিদেশি ভাইবোনেরা এক প্ল্যান বানিয়েছে, যে
প্ল্যানে তারা সব আত্মাকে কয়েক মিনিট শান্তির দানের জন্য বলতে চায় l )
বিশ্বকে মহাদানী বানানোর প্ল্যান ভালো বানিয়েছে, তাই না ! অল্প সময়ের জন্য হলেও তো
হয় বাধ্য হয়ে নয়তো সস্নেহে শান্তির সংস্কারকে ইমার্জ করবে, তাই নয় কি ! এমনকি, তারা
প্রোগ্রাম অনুসরণ করেও যদি অন্ততঃ শান্তির সংস্কার ইমার্জ হয় l কারণ শান্তিই তো
স্বধর্ম, তাই না ? যেমনই হোক, শান্তির সাগরেরই তো বাচ্চা, নিবাসীও শান্তিধামের l
প্রোগ্রাম অনুসরণেও তারা ইমার্জ হলে শান্তির এই শক্তি তাদের আকর্ষণ করতে থাকবে l
যেমন বলা হয়ে থাকে - যে একবার মিষ্টির স্বাদ পেয়েছে, সে মিষ্টি পেলেও বা না পেলেও,
সেই আস্বাদিত রস তার মনকে বারবার টানবে l অতএব, এটাও শান্তির মধু চাখা l তাইতো এই
শান্তির সংস্কার নিজে থেকেই তাদের মনে সবসময় স্মৃতির উদ্রেক ঘটাবে l অতএব, ধীরে ধীরে
আত্মাদের মধ্যে শান্তির জাগরণ হতে দাও, এটাও তোমাদের সকলের তরফে সেই আত্মাদের
শান্তির দান দিয়ে তাদের দানী বানানো হলো l তোমাদের শুভ সঙ্কল্প থাকে যে যে প্রকারে
সম্ভব আত্মাদের যেন শান্তির অনুভূতি হয় l বিশ্ব শান্তিও তো আত্মিক শান্তির আধারে হবে,
তাই না ! প্রকৃতিও পুরুষের (আত্মার ) আধারে চলে l এই প্রকৃতিও শান্ত হবে যখন
আত্মাদের মধ্যে শান্তির স্মৃতি আসবে l যে বিধিতেই তারা সেটা করুক না কেন, অশান্তির
ঊর্ধ্বে তো উঠে যায়, তাই না ! আর এক মিনিটের শান্তিও তাদেরকে অনেকক্ষণের শান্তি
লাভের জন্য আকর্ষণ করতে থাকবে l ভালো প্ল্যান বানিয়েছ তোমরা l এটা ঠিক যেন কাউকে
একটু অক্সিজেন দিয়ে শান্তির শ্বাস চালু করার সাধন l শান্তির শ্বাস ব্যতীত বাস্তবে
তারা বেহুঁশ হয়ে পড়ে আছে l তাইতো এই সাধন তথা প্ল্যান অক্সিজেনের মতো l এতে কিছুজন
সামান্য শ্বাস নিতে শুরু করবে l কতিপয়ের শ্বাস অক্সিজেন দ্বারা চলতে চলতে পুনরায়
জীবিত হয়ে ওঠে l সুতরাং, তোমাদের সবাইকে উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে সবার আগে শান্তি হাউস
হয়ে শান্তির কিরণ দিতে হবে l তখন তোমাদের শান্তির কিরণের সাহায্যে, তোমাদের শান্তির
সঙ্কল্প দ্বারা তাদেরও সঙ্কল্প উঠবে যে কোনও বিধিতে তারা সেটা করবে, কিন্তু তোমাদের
শান্তির ভাইব্রেশন তাদেরকে প্রকৃত বিধির দিকে টেনে আনবে l এটাও হতাশ কাউকে আশার ঝলক
দেখানোর সাধন l হতাশার মধ্যে আশার সঞ্চার ঘটানোর পন্থা l যতটা সম্ভব ততটা পর্যন্ত
যে-ই সম্পর্কে আসবে, যারই সম্পর্কে আসবে তখন তাকে অল্প কথায় আত্মিক শান্তি, মনের
শান্তির পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা তোমাদের অবশ্যই করতে হবে, কারণ প্রত্যেকে নিজের নিজের
নাম অ্যাড তো করাবেই l এমনকি যদি পত্র বিনিময় দ্বারাও এটা করে, তারা তোমাদের
কানেকশনে তো আসবে, তাই না ! লিস্টে তো আসবে, নয় কি ! সুতরাং যতটা সম্ভব শান্তির
অর্থ কি, অল্প কথায় তাও স্পষ্ট করার চেষ্টা কর l এক মিনিটের মধ্যেও আত্মায় জাগৃতি
আসতে পারে l বুঝেছ ! প্ল্যান তোমাদেরও সবার পছন্দ, তাই না ! অন্যেরা তো শুধু
নামেমাত্র কাজ করে, প্রকৃত কাজ তোমরা কর l যখন তোমরা শান্তির দূত তো চারিদিকে সকল
শান্তি দূতের এই আওয়াজ ধ্বনিত হবে এবং শান্তির ফরিস্তারা প্রত্যক্ষ হতে থাকবে l শুধু
নিজেদের মধ্যে এই আলোচনা করে নিতে হবে যে পীস শব্দের সাথে এমন কোন বিশেষ শব্দ হবে
যা জাগতিক দুনিয়া থেকে একটু অন্যরকম লাগে l দুনিয়ার লোকেও পীস মার্চ অথবা পীস শব্দ
ইউজ করে l সুতরাং পীস শব্দের সাথে এমন কোন শব্দ হবে যা ইউনিভার্সালও হবে আর শুনলেই
মনে হবে এটা একদম আলাদা l সুতরাং ইনভেনশন কর l বাকী বিষয় সবই তো ভালো ! অন্ততপক্ষে
যতক্ষণ এই প্রোগ্রাম চলবে, যা কিছুই হয়ে যাক ততক্ষণ তোমরা না নিজেরা অশান্ত হবে, না
অশান্ত করবে l কোন অবস্থাতেই শান্তি ছাড়বে না l সবচাইতে আগে ব্রাহ্মণ তো অঙ্গীকারের
এই সুতো বাঁধবে, তাই না ! যখন তাদেরও অঙ্গীকারাবদ্ধ সুতো বেঁধে দাও, তখন তো
ব্রাহ্মণ আগে নিজেকে সেই সুতো বাঁধবে, তবেই তো অন্যকে বাঁধতে পারবে l যেমন, গোল্ডেন
জুবিলিতে সবাই কি সঙ্কল্প করেছিল ? তোমরা সঙ্কল্প করেছিলে যে তোমরা সমস্যাস্বরূপ হবে
না, এই সকল্পই তো করেছিলে, তাই না ? এটাকে বারবার আন্ডারলাইন করতে থাক l এমন হতে
দিও না, তোমরা সমস্যা হবে আর বলবে যে সমস্যাস্বরূপ হব না l তাহলে, অঙ্গীকারাবদ্ধ এই
সুতো বাঁধা তোমাদের পছন্দ, তাই তো ! প্রথমে স্ব, পরে বিশ্ব l স্ব-এর প্রভাব বিশ্বের
উপরে পড়ে l আচ্ছা !
আজ ইউরোপের টার্ন l ইউরোপও অনেক বড়, নয় কি ! যতবড় ইউরোপ তত বড়ই হৃদয় তোমাদের, তাই
না ! ইউরোপের বিস্তারের মতোই যতটা বিস্তার ততটাই সেবাতে সার l বিনাশের স্ফুলিঙ্গ
কোথা থেকে বেরোয় ? ইউরোপ থেকে বের হয়, তাই না ! সুতরাং বিনাশের সাধন যেমন ইউরোপ থেকে
বের হয় তাহলে স্থাপনের কার্যে ইউরোপ থেকে বিশেষ আত্মাদের প্রত্যক্ষ হতেই হবে l বম্ব
যেমন প্রথমে আন্ডারগ্রাউন্ড তৈরি হয়, পরে কার্যে প্রয়োগ হয়, ঠিক তেমনই এমন আত্মারাও
এখন তৈরি হচ্ছে গুপ্তভাবে l আন্ডারগ্রাউন্ড রয়েছে, কিন্তু প্রত্যক্ষতাও হচ্ছে আর
হতেও থাকবে l যেমন প্রতিটা দেশের নিজস্ব বিশেষত্ব থাকে, তেমন এখানেও প্রতিটা
স্থানের বিশেষত্ব আছে l প্রসিদ্ধির জন্য ইউরোপের যন্ত্র কাজে আসবে l যেমন সায়েন্সের
যন্ত্র কার্যে এসেছে, সেইরকম আওয়াজ তীব্র করার জন্য ইউরোপের যন্ত্র নিমিত্ত হবে l
নতুন বিশ্ব তৈরি করার জন্য ইউরোপই তোমাদের সহায়তা করবে l ইউরোপের জিনিস সবসময় মজবুত
হয় l জার্মানির জিনিসকে সবাই গুরুত্ব দেয় l সুতরাং এইভাবেই সেবার নিমিত্ত
মহিমান্বিত আত্মারা প্রত্যক্ষ হতে থাকবে l বুঝেছ l ইউরোপও কম নয় l এখন প্রত্যক্ষতার
পর্দা খুলতে শুরু করেছে l যথা সময়ে তোমরা বেরিয়ে আসবে l ভালো যে অল্প সময়ের মধ্যে
চারিদিকে তোমরা বিস্তারের কাজ ভালো করেছ এবং ভালো রচনা রচেছ l এখন এই সমুদয় রচনাকে
লালন-পালনের জল দিয়ে শক্তিধর বানাচ্ছ l যেমন, ইউরোপের স্থূল জিনিস মজবুত হয় তেমন
আত্মারাও বিশেষ অনড়, অচল শক্তিশালী হবে l ভালোবাসার সাথে পরিশ্রম করছ l সেইজন্য
পরিশ্রম পরিশ্রম নয়, বরং সেবার প্রতি তোমাদের প্রবল আকাঙ্ক্ষা থাকে l যেখানে শুভ
আকাঙ্ক্ষা থাকে, সেখানে বিঘ্ন যদি আসেও সাথে সাথেই সমাপ্ত হয়ে যায়, আর সফলতা লাভ
হতেই থাকে l যে কোনো ক্ষেত্রে, যদি টোটাল ইউরোপের কোয়ালিটির দিকে দেখ, সেটা খুব ভালো
l ব্রাহ্মণরা হল ভি. আই. পি. (ভেরী ইমপর্টৈন্ট পার্সন) l এমনিতেই তারা আই. পি. (ইমপর্টৈন্ট
পার্সন) । সেইজন্য ইউরোপের নিমিত্ত সেবাধারীদের অধিক স্নেহপূর্ণ শ্রেষ্ঠ পালনা
দ্বারা শক্তিশালী বানিয়ে বিশেষ সেবার ময়দানে আনতে থাক l যে কোনো ক্ষেত্রেই ধরণী ফল
দেবে l আচ্ছা এতো তোমাদের বিশেষত্ব, যা বাবার হওয়ার সাথে সাথেই অন্যকে তৈরি করতে
শুরু করে দাও l তোমাদের মনোবল খুব ভালো, এই মনোবলের কারণেই গিফ্ট, যার দরুণ
সেবাকেন্দ্রের বৃদ্ধি হতে থাকে l কোয়ালিটিও বাড়াও আর কোয়ান্টিটিও বাড়াও l দুইয়ের
ব্যালেন্স হতে দাও l কোয়ালিটির শোভা কোয়ান্টিটির শোভা থেকে আলাদা l উভয়ই প্রয়োজন l
যদি শুধু কোয়ালিটি থাকে, আর কোয়ান্টিটি না থাকে, তাহলেও যারা সেবা করছে তারা
ক্লান্ত হয়ে যায়, সেইজন্য নিজ নিজ বিশেষত্ব সহ উভয়েরই প্রয়োজন l দুই রকম সেবাই জরুরী,
কারণ ন'লাখ তো তৈরি করতে হবে, তাই না ! ন'লাখের মধ্যে বিদেশ থেকে কতো হয়েছে ? (৫
হাজার ) আচ্ছা - একটা কল্পের চক্র তো সম্পূৰ্ণ করেছ l বিদেশের লাস্ট সো ফাস্ট হওয়ার
বরদান আছে, সুতরাং ভারতের থেকে ফাস্ট যেতে হবে, কারণ ভারতের যারা আছে তাদের ভূমি
প্রস্তুত করতে পরিশ্রম করতে হয় l বিদেশে নিষ্ফলা (barren) জমি নেই l এখানে প্রথমে
মন্দকে ভালো করতে হয় l ওখানে তো খারাপ কোনকিছুই তারা শোনেনি, না খারাপ কথা না বিরূপ
মন্তব্য কিছুই শোনেনি l সেইজন্য তারা সুগঠিত তথা পরিষ্কার l ভারতে তাদেরকে প্রথমে
স্লেট পরিষ্কার করতে হবে তারপরে লিখতে হবে l সময় অনুসার বিদেশের বরদান আছে, লাস্ট
সো ফাস্টের l সুতরাং, ইউরোপ কত লাখ তৈরি করবে ? ঠিক যেমন এই মিলিয়ন মিনিটের
প্রোগ্রাম বানিয়েছ, সেইরকম প্রজার বানাও l প্রজা তো তৈরি হতে পারে, পারে না !
মিলিয়ন মিনিট সঞ্চয় করতে পার, মিলিয়ন প্রজা বানাতে পার না ? বাবা বলছেন, আরও এক লাখ
কম ! বাবা ন'লাখের জন্যই বলেন ! বুঝেছ - ইউরোপ থেকে যারা আগত, তাদের কি করতে হবে !
*ত্বরিৎ বেগে তৎপরতার সাথে* প্রস্তুত কর l আচ্ছা - ডবল বিদেশিদের ডবল লাক, সাধারণত:
সবার মাত্র একটা মুরলী শোনার চান্স থাকে, বিদেশিদের ডবল তথা দু'টো মুরলী লাভ হয়েছে
l তোমরা কনফারেন্স দেখেছ আর গোল্ডেন জুবিলিও দেখেছ l বড়-বড়ো দাদীদের দেখেছ l গঙ্গা,
যমুনা, গোদাবরী, ব্রহ্মপুত্র সব দেখেছ l তোমরা সব বড়ো দাদীদের দেখেছ, তাই না ?
প্রত্যেক দাদীর একেকটা বিশেষত্ব উপহার হিসেবে নিয়ে যাও, বিশেষত্ব সবার কাজে প্রয়োজন
হবে l বিশেষত্বের উপহারে ঝুলি পরিপূর্ণ করে যাও l এর জন্য কাস্টমসের লোক তোমাদের
আটকাবে না l আচ্ছা !
সদা বিশ্ব কল্যাণকারী হয়ে বিশ্ব সেবার নিমিত্ত প্রকৃত সেবাধারী শ্রেষ্ঠ আত্মাদের,
সদা সফলতার জন্ম সিদ্ধ অধিকার প্রাপ্তকারী বিশেষ আত্মাদের, সদা স্ব স্বরূপ দ্বারা
সবাইকে স্বরূপের স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দেয় এমন নিকট আত্মাদের, সদা অসীম জগতের নিষ্কাম
সেবাধারী হয়ে উড়তি কলায় উড়ন্ত ডবল লাইট বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার
l
বরদান:-
নিজের ফরিস্তা রূপ দ্বারা গতি-সদগতির প্রসাদ বিতরণ
করে মাস্টার গতি-সদগতি দাতা ভব
বর্তমান সময়ে বিশ্বের অনেক আত্মা বিপরীত পরিস্থিতির
কারণে চিৎকার করছে, কেউ উচ্চমূল্যের কারণে, কেউ শারীরিক রোগের কারণে, কেউ মনের
অশান্তি থেকে.... সবার নজর টাওয়ার অফ পীসের দিকে যাচ্ছে l সবাই চেয়ে আছে হাহাকারের
পরে কখন জয়জয়কার হয় ! সুতরাং, এখন নিজের সাকার ফরিস্তা রূপ দ্বারা বিশ্বের দুঃখ দূর
কর, মাস্টার গতি-সদগতি দাতা হয়ে ভক্তদের গতি-সদগতির প্রসাদ বিতরণ কর l
স্লোগান:-
বাপদাদার প্রতিটি আদেশ যারা প্র্যাকটিক্যালি করে,
তারাই আদর্শমূর্তি হয় l