16.07.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা:—
সঙ্গম যুগ হচ্ছে বিকর্ম বিনাশ করার যুগ, এই যুগে কোনও রকম বিকর্ম যেন তোমাদের দ্বারা
না হয়, অবশ্যই পবিত্র হতে হবে"
প্রশ্নঃ -
অতীন্দ্রিয়
সুখের অনুভব কোন্ বাচ্চাদের হতে পারে ?
উত্তরঃ -
যে বাচ্চারা অবিনাশী জ্ঞান রত্ন দ্বারা ভরপুর, তারাই অতীন্দ্রিয় সুখ অনুভব করতে পারে,
যে যত পরিমাণ জ্ঞান জীবনে ধারণ করে সে ততই বিত্তশালী (সাহুকার) হয়ে ওঠে । যদি জ্ঞান
রত্ন ধারণ না করে থাকে তবে সে গরীব। বাবা তোমাদের পাস্ট, প্রেজেন্ট, ফিউচারের জ্ঞান
প্রদান করে ত্রিকালদর্শী করে তুলেছেন ।
গীতঃ-
ঔম নমঃ শিবায়
.......
ওম্ শান্তি ।
পাস্ট অতিক্রম
করে এখন প্রেজেন্ট চলছে তারপর এই প্রেজেন্ট, পাস্ট হয়ে যাবে। এই যে গায়ন সবই
পাস্টের । তোমরা এখন সঙ্গম যুগে। পুরুষোত্তম শব্দটি অবশ্যই ব্যবহার করা উচিত। তোমরা
প্রেজেন্ট দেখছ, যা পাস্টের গায়ন সেটাই প্র্যাকটিক্যালি হচ্ছে। এর মধ্যে কোনও সংশয়
থাকা উচিত নয়। বাচ্চারা জানে এখন এখন সঙ্গম যুগ, কলিযুগের অন্তিম সময়। সঙ্গম যুগ ৫
হাজার বছর পূর্বে পাস্ট ( অতীত) হয়ে গেছে, এখন আবার প্রেজেন্ট ( বর্তমান) হয়ে ফিরে
এসেছে। এখন বাবা এসেছেন, ফিউচার (ভবিষ্যৎ) সেটাই হবে যা পাস্ট হয়ে গেছে। বাবা এসে
রাজযোগ শেখাচ্ছেন তারপর তোমরা সত্য যুগে গিয়ে রাজত্ব করবে। এখন সঙ্গম যুগ, এই কথা
তোমরা বাচ্চারা ছাড়া আর কেউ জানেনা। তোমরা প্র্যাকটিকালি রাজযোগ শিখছ । অতি সহজ যোগ
। বাচ্চারা ছোটই হোক বা বড় , সবাইকে প্রধান বিষয় এটাই বোঝাতে হবে যে বাবাকে স্মরণ
করলেই বিকর্ম বিনাশ হবে। যখন বিকর্ম বিনাশের সময় তখন কে এমন আছে যে আবার বিকর্ম করবে
। কিন্তু মায়া বিকর্ম করিয়ে দেয়, বোঝে যে মায়া চড় মেরেছে , আমার দ্বারা এই ভুল হয়েছে।
যেখানে বাবাকে আহ্বান করে বলে থাক হে পতিত-পাবন এসো । এখন বাবা যখন এসেছেন তখন তো
পবিত্র হতেই হবে, তাইনা । ঈশ্বরের হয়ে আবার পতিত হওয়া উচিত নয়। সত্যযুগে সবাই
পবিত্র ছিল। এই ভারত-ও পবিত্র ছিল । গাওয়াও হয়ে থাকে পাপযুক্ত ওয়ার্ল্ড আর পাপমুক্ত
ওয়ার্ল্ড। সম্পূর্ণ নির্বিকারী ওয়ার্ল্ড। আমরা বিকারী কেননা বিকার দ্বারা আসি ।
বিকারই হলো পাপ । পতিতরাই আহ্বান করে বলে থাকে এসে পবিত্র করে তোল । ক্রোধীরা
আহ্বান করে না । বাবাও বাচ্চাদের আহ্বান শুনে ড্রামার প্ল্যান অনুসারে আসেন ।
বিন্দুমাত্র পার্থক্য হতে পারে না। যা পাস্ট হয়ে গেছে সেটাই এখন প্রেজেন্ট হয়ে চলেছে
। পাস্ট , প্রেজেন্ট, ফিউচারকে জানলেই ত্রিকালদর্শী বলা হয় । এটাই স্মরণে রাখতে হবে।
স্মরণে রাখাই পরিশ্রম । প্রতিটি মুহূর্তে ভুলে যাও। তা না হলে বাচ্চারা কতখানি
অতীন্দ্রিয় সুখের অনুভব তোমাদের থাকা উচিত। তোমরা এখানে অবিনাশী জ্ঞান রত্ন দ্বারা
সাহুকার হয়ে উঠছ। যার যেমন ধারণা, সে সেইরকম সাহুকার হতে চলেছে, কিন্তু নতুন
দুনিয়ার জন্য । তোমরা জানো, আমরা যা কিছু করছি ভবিষ্যতের নতুন দুনিয়ার জন্য । বাবা
তো আসেনই নতুন দুনিয়া স্থাপন করতে , পুরানো দুনিয়ার বিনাশ করতে । হুবহু কল্প
পূর্বের দৃষ্টান্ত অনুযায়ীই সবকিছু হবে। তোমরা বাচ্চারাও দেখবে । প্রাকৃতিক দুর্যোগ
হবে, ভূমিকম্প হবে আর সব শেষ । ভারতে কত ভূমিকম্প হবে, আমি তো বলি — এতো হতেই হবে।
কল্প পূর্বেও হয়েছিল তবেই তো বলা হয় সোনার দ্বারকা নীচে চলে গেছে। বাচ্চাদের যথার্থ
রীতিতে বুদ্ধিতে ধারণ হওয়া উচিত যে ৫ হাজার বছর আগেও আমরা এই নলেজ প্রাপ্ত করেছিলাম।
এতে বিন্দুমাত্র পার্থক্য হতে পারে না। তোমরা বলে থাক বাবা ৫ হাজার বছর পূর্বেও আমরা
তোমার কাছে অবিনাশী উত্তরাধিকার গ্রহণ করেছিলাম। আমরা অনেকবার তোমার কাছ থেকে
উত্তরাধিকার গ্রহণ করেছি, সেটা গণনা করা সম্ভব নয়। কতবার তোমরা বিশ্বের মালিক হয়েছ,
তারপর ফকির হয়ে গেছ । এই সময় ভারত সম্পূর্ণ রূপে ফকির হয়ে গেছে ।তোমরা লিখেও থাক
সবই ড্রামার প্ল্যান অনুসারে হচ্ছে। ওরা (লৌকিক) ড্রামা শব্দটি বলে না। ওদের
প্ল্যানই অন্যরকম।
তোমরা বলে থাকো, ড্রামার প্ল্যান অনুসারে ৫ হাজার বছর পূর্বের মতোই পুনরায় আমরা
স্থাপনা করছি । কল্প পূর্বে যে কর্তব্য করেছিলাম এখনও শ্রীমত দ্বারা সেই কর্তব্য করে
চলেছি । শ্রীমত দ্বারাই শক্তি প্রাপ্ত করি । শিব শক্তি নাম আছে না ! সুতরাং তোমরা
শিবের শক্তিরূপীনি দেবী , যাদের মন্দিরে পূজা করা হয়। তোমরাই দেবতা যারা আবার
বিশ্বরাজ্য অধিগ্রহণ কর । জগদম্বাকে দেখো কত পূজনীয়, তাঁর অনেক নাম রাখা হয়েছে,
কিন্তু তিনি তো একজনই । যেমন বাবা একজনই যাঁর নাম শিব । তোমরাও পূজিত হও যখন বিশ্বকে
স্বর্গে পরিণত করে তোল । অনেক দেবী আছে , লক্ষ্মীর কত পূজা হয় । দীপাবলির দিনও
মহালক্ষ্মীর পূজা করা হয়। লক্ষ্মীই প্রধান, মহারাজা-মহারানি একত্র করে মহালক্ষ্মী
বলে থাকে।
তোমরা বলে থাকো, আমরাও মহালক্ষ্মীর পূজা করতাম, ধন সম্পদ বৃদ্ধি হলেই মনে করা হয়
মহালক্ষ্মীর কৃপা বর্ষিত হচ্ছে। প্রতি বছরই পূজা করে থাকে। বলে থাকে আচ্ছা, ওনার
কাছে ধন প্রার্থনা করি, দেবীর কাছে আর কি চাইব ? তোমরা সঙ্গম যুগের দেবীরা স্বর্গকে
বরদান দিয়ে থাক। মানুষের জানা নেই যে, দেবীদের কাছে স্বর্গের সব কামনা পূর্ণ হয়ে
থাকে, তোমরা তো দেবী, তাইনা! মানুষকে জ্ঞান দান করে থাক - যার দ্বারা সব কামনা পূরণ
করে দাও । রোগ ব্যাধি ইত্যাদি হলে দেবীদের বলবে ভালো করে দাও, রক্ষা করো । অনেক
প্রকার দেবী আছে । তোমরা হলে সঙ্গম যুগের শিবশক্তি দেবী। তোমরাই স্বর্গের বরদান দিয়ে
থাক। বাবাও দেন ,বাচ্চারাও দেয় । মহালক্ষ্মীকে দেখানো হয়, নারায়ণকে গুপ্ত করে দেয়।
বাবা তোমাদের প্রভাবকে কত বৃদ্ধি করে তোলেন। দেবীরা ২১ জন্মের জন্য সুখের সব কামনা
পূর্ণ করে থাকে, লক্ষ্মীর কাছে ধন প্রার্থনা করে থাকে। ধন উপার্জন করার জন্যই মানুষ
ব্যবসা ইত্যাদি করে থাকে। বাবা এসে তোমাদের বিশ্বের মালিক করে তোলেন, অথাহ ধন
প্রদান করেন । শ্রী লক্ষ্মী-নারায়ণ বিশ্বের মালিক ছিল, এখন কাঙাল হয়ে গেছে। তোমরা
বাচ্চারা জান কলা কমে রাজত্ব কিভাবে ধীরে-ধীরে নীচে নেমে আসে, পুণর্জন্ম নিতে নিতে
কলা কমে এখন দেখো কি অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। এটাও নতুন বিষয়। প্রতি ৫ হাজার বছর পর
চক্র ঘুরতে থাকে। ভারত এখন কাঙাল, রাবণের রাজ্য। ভারত কত উচ্চ নম্বরে ছিল, এখন শেষ
নম্বরে। শেষ নম্বরে না আসলে নম্বর ওয়ানে যাবে কিভাবে। হিসাব আছে না ! ধৈর্য্যের সাথে
বিচার সাগর মন্থন করলে অতি সহজেই পুরো বিষয়টি বুদ্ধিতে ধারণ হবে। কত মধুর বিষয়। এখন
তো তোমরা সম্পূর্ণ সৃষ্টি চক্রকে জেনে গেছ। পড়াশোনা শুধু স্কুলে পড়লে হয়না, টীচার
লেসন দিয়ে থাকেন ঘরে বসে পড়ার জন্য, যাকে হোম ওয়ার্ক বলা হয়। বাবাও তোমাদের জন্য পড়া
দিয়ে দেন ঘরে বসে পড়ার জন্য। দিনের বেলায় কাজকর্ম কর, শরীর নির্বাহও তো করতে হবে।
অমৃতবেলায় সবারই সময় থাকে। অমৃতবেলায় দুটো-তিনটে খুব ভালো সময়। ঐ সময় উঠে বাবাকে
ভালোবাসার সাথে স্মরণ কর । বিকার-ই তোমাদের আদি-মধ্য-অন্ত দুঃখ দিয়ে এসেছে । রাবণকে
জ্বালিয়ে থাকে কিন্তু এর অর্থ কিছুই জানে না। শুধু পরম্পরা থেকে রাবণকে জ্বালানোর
রীতি চলে আসছে। ড্রামা অনুসারে এটাও নির্ধারিত। রাবণকে জ্বালিয়েই আসছে কিন্তু রাবণ
মরছেই না। তোমরা বাচ্চারা জানো এই রাবণ জ্বালানো কবে বন্ধ হবে। তোমরা প্রকৃতপক্ষে
এখনই সত্য-নারায়ণের কথা শুনছ । তোমরা জান আমরা এখন বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার
গ্রহণ করতে চলেছি। বাবাকে না জানার কারণে সবাই অনাথ হয়ে গেছে। বাবা যিনি ভারতকে
স্বর্গ করে তোলেন তাঁকেই জানে না। এটাও ড্রামায় নির্ধারিত। সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে
তমোপ্রধান হলে তবেই তো বাবা আসবে না ! নিজেকে তমোপ্রধান মনেই করেনা। বাবা বলেন, এই
সম্পূর্ণ বৃক্ষ জড়াজীর্ণ অবস্থা হয়ে গেছে। কিছুই সতোপ্রধান নেই। সতোপ্রধান হয়
শান্তিধাম আর সুখধামে। এখন সবই তমোপ্রধান। বাবাই এসে তোমাদের অজ্ঞান নিদ্রা থেকে
জাগিয়ে তোলেন । তোমরা তারপর অন্যদের জাগিয়ে তোল । যেমন মানুষ মারা গেলে প্রদীপ
জ্বালিয়ে রাখে যাতে আত্মা আলো পায় । চারদিকে ঘোর অন্ধকার, আত্মারা নিজের ঘরে ফিরতে
পারে না। যদিও অন্তর থেকে তারা তাদের দুঃখ থেকে মুক্তি পেতে চায়, কিন্তু একজনও
মুক্তি পায়না।
যে বাচ্চার পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগের স্মৃতি থাকবে, সে জ্ঞান রত্ন দান না করে থাকতে
পারবে না। যেমন মানুষ ( লৌকিক) পুরুষোত্তম মাসে অনেক দান-পুণ্য করে থাকে, তেমনই এই
পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে তোমাদের জ্ঞান রত্ন দান করতে হবে। এটাও তোমরা বুঝেছ স্বয়ং
পরমপিতা পরমাত্মা পড়াচ্ছেন, এখানে কৃষ্ণের কোনও বিষয় নেই। কৃষ্ণ তো সত্যযুগের প্রথম
প্রিন্স , তারপর তো সে পুণর্জন্ম নিতে থাকবে। বাবা পাস্ট, প্রেজেন্ট, ফিউচারের
রহস্য বুঝিয়েছেন। তোমরা ত্রিকালদর্শী হয়ে উঠছ, বাবা ছাড়া আর কেউ ত্রিকালদর্শী করে
তুলতে পারে না। সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান একমাত্র বাবার কাছেই আছে, তাঁকেই
জ্ঞানের সাগর বলা হয়। উচ্চ থেকে উচ্চতর ভগবান গায়ন আছে, উনিই রচয়িতা, হেভেনলি গড
ফাদার শব্দটি সম্পূর্ণ স্বচ্ছ— স্বর্গ স্থাপনকারী । ওরা শিব জয়ন্তী পালন করে কিন্তু
তিনি কবে এসেছিলেন, কি করেছেন — এসব কিছুই জানা নেই। জয়ন্তী শব্দের অর্থই জানা নেই,
সুতরাং পালন করে কি হবে, এটাও ড্রামার অন্তর্ভুক্ত। এই সময়েই তোমরা বাচ্চারা
ড্রামার আদি-মধ্য-অন্তকে জেনে থাক আর কখনোই জানতে পারবে না। আবার যখন বাবা আসবেন
তখনই জানতে পারবে। এখন তোমাদের স্মৃতিতে এসেছে — এই ৮৪ চক্র কিভাবে ঘুরছে।
ভক্তি মার্গে কি আছে, ও থেকে কিছুই পাওয়া যায় না। কত ভক্ত ভীড়ে ধাক্কা খেতে যায়,
বাবা তোমাদের ভক্তি থেকে মুক্ত করেছেন । এখন তোমরা জান আমরা শ্রীমত দ্বারা ভারতকে
আবার শ্রেষ্ঠ করে তুলছি। শ্রীমত দ্বারাই শ্রেষ্ঠ হওয়া যায়। শ্রীমত সঙ্গম যুগেই পাওয়া
যায়, তোমরা যথার্থ রীতিতে বুঝতে পেরেছে আমরা কি ছিলাম তারপর কিভাবে এরকম হয়েছি, এখন
আবার পুরুষার্থ করছি। পুরুষার্থ করতে-করতে কখনও তোমরা যদি অসফল হও তবে বাবাকে বল,
বাবা আবার উঠে দাঁড়াতে পরামর্শ দেবেন । কখনোই অসফল হয়ে বসে পড়া উচিত নয়। আবার উঠে
দাঁড়াও, ওষুধ গ্রহণ কর । সার্জন তো বসেই আছে তাইনা। বাবা বুঝিয়েছেন ৫ তলা থেকে পড়ে
যাওয়া আর দোতলা থেকে পড়ে যাওয়ার মধ্যে কতটুকু পার্থক্য। কাম বিকার হলো ৫ তলা,
সেইজন্যই বাবা বলেছেন কাম হলো মহাশত্রু যা তোমাদের পতিত বানিয়েছে, এখন পবিত্র হও ।
পতিত-পাবন বাবাই এসে পবিত্র করে তোলেন। অবশ্যই সঙ্গম যুগে পবিত্র করবেন। কলিযুগের
শেষ আর সত্য যুগের প্রারম্ভ এই হলো সঙ্গম।
বাচ্চারা জানে— বাবা এখন কলম লাগাচ্ছেন তারপর এই ঝাড় ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাবে।
ব্রাহ্মণদের ঝাড় বৃদ্ধি পাবে তারপর সূর্য বংশী, চন্দ্র বংশীতে গিয়ে সুখ ভোগ করবে।
বাবা কত সহজভাবে বুঝিয়েছেন। আচ্ছা, মুরলী পাচ্ছ না, বাবাকে স্মরণ কর । বুদ্ধি দ্বারা
নিশ্চয় কর যে শিববাবা ব্রহ্মা শরীর দ্বারা আমাদের বলছেন আমাকে স্মরণ করলে বিষ্ণু
ঘরানায় যেতে পারবে। পুরুষার্থের উপরেই সম্পূর্ণ আধারিত। কল্প -কল্প যেমন পুরুষার্থ
করেছ, হুবহু একইরকম হবে। অর্ধকল্প ধরে দেহ-অভিমানী ছিলে, এখন দেহী-অভিমানী হওয়ার
সম্পূর্ণ পুরুষার্থ কর। এতেই পরিশ্রম। পড়াশোনা তো সহজ, প্রধান বিষয়ই হলো পবিত্র হওয়া।
বাবাকে ভুলে যাওয়া মস্ত বড়ো ভুল । দেহ -অভিমানে এলেই ভুলে যাও । শরীর নির্বাহের
জন্য কাজকর্ম ইত্যাদি ৮ ঘন্টা কর, বাকি ৮ ঘন্টা স্মরণে থাকার পুরুষার্থ করতে হবে।
সেই অবস্থা তাড়াতাড়ি হবে না। অন্তিমে যখন এমন অবস্থা হবে তখনই বিনাশ হবে। কর্মাতীত
অবস্থা প্রাপ্ত হলে এই শরীর থাকবে না,চলে যাবে কেননা আত্মা পবিত্র হয়ে গেছে না !
যখন নম্বরানুসারে কর্মাতীত অবস্থা হয়ে যাবে তখনই লড়াই শুরু হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত
রিহার্সাল চলতে থাকবে। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১) এই
পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে অবিনাশী জ্ঞান রত্ন দান করতে হবে। অমৃতবেলায় উঠে বিচার সাগর
মন্থন করতে হবে। শ্রীমত অনুসারে শরীর নির্বাহ করে বাবা যে হোমওয়ার্ক দিয়েছেন সেটা
অবশ্যই পালন করতে হবে।
২) পুরুষার্থে কোনও
বিঘ্ন সৃষ্টি হলে বাবাকে জানিয়ে শ্রীমত নিতে হবে। সার্জনকে সব বলতে হবে। বিকর্ম
বিনাশ করার সময় কোনও বিকর্ম করা উচিত নয়।
বরদান:-
দেহ,
সম্বন্ধ, বৈভবের বন্ধন থেকে স্বতন্ত্র বাবা সম কর্মাতীত ভব
যে নিমিত্ত হয়ে
ডায়রেকশন অনুযায়ী প্রবৃত্তিকে সামলেও আত্মিক স্বরূপে থাকে, মোহের কারণে নয়, তাকে যদি
এখনই বলা হয় চলে যাও তবে চলে যাবে ( এভার রেডি স্থিতি) । বিউগল ( শিঙা নামক
বাদ্যযন্ত্র, সমাপ্তির ঘন্টা) যখন বেজে উঠবে তখন সময় যেন ভাবতে-ভাবতেই শেষ হয়ে না
যায় — তবেই বলা হবে নষ্টমোহ। সেইজন্যই সবসময় নিজেকে চেক করতে হবে যে, দেহের,
সম্বন্ধের, বৈভবের বন্ধন আকর্ষণ করছে না তো ! যেখানে বন্ধন সেখানেই আকর্ষণ, কিন্তু
যে স্বতন্ত্র সে বাবা সম কর্মাতীত অবস্থার সমীপে ।
স্লোগান:-
স্নেহ
আর সহযোগের শক্তি রূপ হতে পারলে রাজধানীতেও সামনের দিকের নম্বর প্রাপ্ত হয়ে যাবে ।