24.07.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
বাবা তোমাদের জ্ঞান রত্ন দিতে এসেছেন, বাবা তোমাদের যা বলেন বা বোঝান সেসব হল জ্ঞান,
জ্ঞানের রত্ন জ্ঞান সাগর ব্যতীত কেউ দিতে পারে না "
প্রশ্নঃ -
আত্মার ভ্যালু
কম হওয়ার মুখ্য কারণ কি ?
উত্তরঃ -
ভ্যালু কম হয় খাদ পড়ার জন্য অর্থাৎ বিকার গ্রস্ত হওয়ার জন্য। যেমন সোনায় খাদ দিয়ে
গহনা তৈরি করা হয় তখন তার ভ্যালু কমে যায়। ঠিক তেমনই আত্মা হল প্রকৃত সোনা সম, তাতে
যখন অপবিত্রতার খাদ পড়ে তখন আত্মার ভ্যালু কম হয়ে যায়। এই সময় তমোপ্রধান আত্মার কোনো
ভ্যালু নেই। শরীরেরও কোনো ভ্যালু নেই। এখন তোমাদের আত্মা ও শরীর দুই-ই স্মরণের
দ্বারা ভ্যালুয়েবল হচ্ছে ।
গীতঃ-
কে এলো আজ
সকাল বেলায় ....
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি-মিষ্টি
রূহানী অর্থাৎ আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে বাবা বসে বোঝাচ্ছেন এবং স্মরণের যুক্তিও বলে
দিচ্ছেন। বাচ্চারা বসে আছে, বাচ্চাদের মনে এই কথা আছে যে শিব ভোলেবাবা এসেছেন। ধরো
যদি আধ ঘন্টা শান্ত হয়ে বসে থাকেন, কিছু না বলেন তাহলে তোমাদের আত্মা বলবে যে
শিববাবা কিছু বলুন। তোমরা তো জানো শিববাবা বসে আছেন, কিন্তু বলেন না। এও হল তোমাদের
স্মরণের যাত্রা তাইনা। বুদ্ধিতে শিববাবার স্মরণই আছে। মনে ভাববে শিববাবা যেন কিছু
বলেন, জ্ঞান রত্ন প্রদান করবেন। বাচ্চারা, বাবা তো আসেন-ই তোমাদের জ্ঞান রত্ন
প্রদান করতে। তিনি হলেন জ্ঞানের সাগর তাই না। তিনি বলবেন - বাচ্চারা, দেহী-অভিমানী
হয়ে থাকো। বাবাকে স্মরণ করো। এই হল জ্ঞান। বাবা বলেন এই ড্রামার চক্রকে, সিঁড়িকে এবং
বাবাকে স্মরণ করো - এও হল জ্ঞান। বাবা যা কিছু বোঝাবেন সেসবই জ্ঞান বলা হবে।
স্মরণের যাত্রাও বোঝাতে থাকেন। এই সব হল জ্ঞান রত্ন। স্মরণের কথা যা বোঝান, সেই
রত্ন গুলি খুব ভালো। বাবা বলেন নিজের ৮৪ জন্ম-কে স্মরণ করো। তোমরা পবিত্র এসেছিলে
আবার পবিত্র হয়ে ফিরে যেতে হবে। কর্মাতীত অবস্থায় স্থির হতে হবে এবং বাবার কাছে
সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার নিতে হবে। সেসব তখন পাওয়া যাবে, যখন আত্মা সতোপ্রধান হয়ে যাবে
স্মরণের শক্তি দ্বারা। এই কথাটি খুব ভ্যালুয়েবল, নোট করা উচিত। আত্মাতেই ধারণ হয়।
এই শরীর তো হল কর্মেন্দ্রিয় যা বিনাশ হয়ে যায়। সংস্কার ভালো বা খারাপ আত্মাতেই ভরা
থাকে। বাবার মধ্যেও সংস্কার ভরা আছে - সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের নলেজের, তাই তাঁকে
নলেজফুল বলা হয়। বাবা সঠিক করে বোঝান- ৮৪-র চক্র হল খুব সহজ। এখন ৮৪-র চক্র পূর্ণ
হয়েছে। এখন আমাদের বাবার কাছে ফিরে যেতে হবে। অপবিত্র আত্মা তো সেখানে যেতে পারে
না। তোমাদের আত্মা পবিত্র হয়ে গেলে এই শরীরও ত্যক্ত হবে। পবিত্র শরীর তো এখানে
প্রাপ্ত হতে পারেনা। এই হল পুরানো পাদুকা সম, এর প্রতি বৈরাগ্য অনুভব হচ্ছে। আত্মাকে
পবিত্র হয়ে পরে ভবিষ্যতে আমাদের পবিত্র শরীর নিতে হবে। সত্যযুগে আত্মা ও শরীর দুই-ই
পবিত্র ছিল। এইসময় তোমাদের আত্মা অপবিত্র হয়েছে তাই শরীরও হল অপবিত্র । যেমন সোনা
তেমন গহনা। গভর্নমেন্টও বলে হালকা সোনার গহনা পরো। যার মূল্য কম। এখন তোমাদের
আত্মার ভ্যালুও কম আছে। সেখানে তোমাদের আত্মার অনেক ভ্যালু থাকে। সতোপ্রধান, তাই
না। এখন হল তমোপ্রধান। খাদ পড়েছে, কোনও কাজের নয়। সেখানে আত্মা থাকে পবিত্র, তাই
অনেক ভ্যালু থাকে। এখন ৯ ক্যারেটের হয়েছে, ফলে কোনো ভ্যালু নেই । তাই বাবা বলেন,
আত্মাকে পবিত্র করো, তাহলে শরীরও পবিত্র প্রাপ্ত হবে। এই জ্ঞান আর কেউ প্রদান করতে
পারেনা।
বাবা বলেন - "মামেকম্ স্মরণ করো" । কৃষ্ণ কীভাবে বলবেন। তিনি তো হলেন দেহধারী, তাইনা।
বাবা বলেন, নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে আমি পিতা আমাকে স্মরণ করো। কোনও দেহ ধারীকে
স্মরণ ক'রো না। এখন তোমরা বুঝেছো, তাই বোঝাতে হবে। শিববাবা হলেন নিরাকার, তাঁর জন্ম
হল অলৌকিক। তোমাদের অর্থাৎ আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকেও অলৌকিক জন্ম প্রদান করেন।
অলৌকিক পিতা, অলৌকিক সন্তান। লৌকিক, পারলৌকিক এবং অলৌকিক বলা হয়। বাচ্চারা, তোমাদের
অলৌকিক জন্ম প্রাপ্ত হয়। বাবা তোমাদের দত্তক নিয়ে উত্তরাধিকার প্রদান করেন। তোমরা
জানো, আমরা ব্রাহ্মণ এটা হল আমাদেরও অলৌকিক জন্ম। অলৌকিক পিতার কাছে অলৌকিক
উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। ব্রহ্মাকুমার-কুমারী ছাড়া অন্য কেউ স্বর্গের মালিক হতে
পারেনা। মানুষ কিছু বোঝে না। তোমাদেরকে বাবা কত বোঝান। আত্মা যে অপবিত্র হয়েছে সে
স্মরণ ব্যতীত পবিত্র হতেই পারেনা। স্মরণে স্থিত না থাকলে খাদ তো রয়েই যাবে। পবিত্র
হতে পারবে না তারপর সাজা ভোগ করতে হবে। সম্পূর্ণ দুনিয়ার মনুষ্য আত্মাদের পবিত্র হয়ে
ফিরে যেতে হবে। শরীর তো যাবে না। বাবা বলেন নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করা খুবই কঠিন।
ব্যবসা ইত্যাদিতে সেই অবস্থায় তো স্থিত থাকা যায় না। বাবা বলেন আচ্ছা নিজেকে আত্মা
নিশ্চয় না করতে পারো তো শিববাবাকে স্মরণ করো। ব্যবসা ইত্যাদি করতে করতে এই পরিশ্রম
করো যে আমি আত্মা এই শরীর দ্বারা কর্ম করি। আমি আত্মাই শিববাবাকে স্মরণ করি। আত্মা-ই
সর্ব প্রথমে পবিত্র ছিলো, এখন আবার পবিত্র হতে হবে। এই হল পরিশ্রম। এতেই রয়েছে বড়
মাত্রায় উপার্জন । এখানে যতই বিরাট ধনী মানুষ থাকুক আরব-খরবপতি কিন্তু সে-ই সুখ নেই।
সবার জীবনে দুঃখ আছে। বড় বড় রাজা, প্রেসিডেন্ট ইত্যাদি আজ আছে, আগামীকাল তাদের হত্যা
করা হয়। বিদেশে সবই হয়। ধনী মানুষ, রাজা তাদের তো খুব বিপদ। এখানেও যারা রাজা ছিল
তারা প্রজা হয়েছে। রাজার উপরে প্রজার রাজত্ব হয়েছে। ড্রামায় এমনই নির্দিষ্ট আছে।
শেষ সময়ে এই অবস্থা হয়। নিজেদের মধ্যে নিজেরাই যুদ্ধ করবে। তোমরা জানো কল্প পূর্বেও
এমনটাই হয়েছিলো। তোমরা গুপ্ত বেশে প্রাণ ও হৃদয়, মন ও ভালোবাসা দিয়ে নিজের হারানো
রাজত্ব প্রাপ্ত করো। তোমরা পরিচয় পেয়েছো - আমরা তো মালিক ছিলাম, সূর্যবংশী দেৱতা
ছিলাম। এখন আবার সেই স্বরূপ প্রাপ্তির জন্য পুরুষার্থ করছো কারণ এখানে তোমরা সত্য
নারায়ণের কাহিনী শুনছো তাইনা। বাবার সাহায্যে আমরা নর থেকে নারায়ণ কীভাবে হই ? বাবা
এসে রাজযোগের শিক্ষা দেন। ভক্তিমার্গে এই শিক্ষা কেউ দিতে পারেনা। কোনও মানুষকে পিতা,
শিক্ষক, গুরু বলা যাবে না। ভক্তিতে কত পুরানো কাহিনী বসে শোনানো হয়। বাচ্চারা, এখন
তোমাদের ২১ জন্ম বিশ্রাম নেওয়ার জন্য পবিত্র তো নিশ্চয়ই হতে হবে।
বাবা বলেন নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো। অর্ধকল্প তো ড্রামা অনুযায়ী দেহ-অভিমানী হয়ে
থেকেছো, এখন দেহী-অভিমানী হতে হবে। ড্রামা অনুযায়ী এখন পুরানো দুনিয়াকে পরিবর্তিত
হয়ে নতুন দুনিয়া হতে হবে। দুনিয়া তো একটাই। পুরানো দুনিয়া থেকে আবার নতুন হবে। নতুন
দুনিয়ায় নতুন ভারত ছিলো তখন সেখানে দেবী-দেবতা ছিল, রাজধানীও জানো, যমুনার তীর ছিলো,
যার নাম ছিল পরিস্তান। সেখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিদ্যমান থাকে। আত্মা পবিত্র হয়ে
যায় তো পবিত্র আত্মার শরীরও পবিত্র প্রাপ্ত হয়। বাবা বলেন - আমি এসে তোমাদের সুন্দর
দেবী-দেবতায় পরিণত করি। তোমরা বাচ্চারা নিজের পরীক্ষা করতে থাকো, আমাদের মধ্যে কোনো
অবগুণ নেই তো ? স্মরণে থাকি ? পড়াও করতে হবে। এই হল বড় মাপের পড়াশোনা । এ হল
একমাত্র পড়াশোনা, ওই পড়াশোনায় তো কত বই ইত্যাদি পড়তে হয়। এই হল উঁচু থেকে উঁচু
পড়াশোনা, যিনি পড়ান তিনিও হলেন উঁচু থেকে উঁচু শিববাবা। এমন নয় যে শিববাবা এই
দুনিয়ার মালিক। বিশ্বের মালিক তো তোমরা হও তাইনা। বাবা কত রকমের নতুন গুহ্য কথা
তোমাদের বলেন। মানুষ ভাবে পরমাত্মা হলেন সৃষ্টির মালিক। বাবা বোঝান - মিষ্টি-মিষ্টি
বাচ্চারা, আমি এই সৃষ্টির মালিক নই। তোমরা মালিক হও তারপরে সেই রাজত্ব হারাও। তারপরে
বাবা এসে বিশ্বের মালিক করেন। একেই বিশ্ব বলা হয়। মূলবতন বা সূক্ষ্ম বতনের কথা নয়।
মূলবতন থেকে তোমরা এখানে এসে ৮৪ জন্মের চক্র পরিক্রমণ করো। তারপরে বাবাকে আসতে হয়।
এখন পুনরায় তোমাদের পুরুষার্থ করাই - সেই প্রালব্ধ প্রাপ্তির জন্য, যা তোমরা
হারিয়েছ। হার ও জিতের খেলা, তাইনা। এই রাবণ রাজ্য শেষ হওয়ার আছে। বাবা কত সহজ করে
বোঝান। বাবা নিজে বসে পড়ান। দুনিয়ায় তো মানুষ, মানুষকে পড়ায়। যদিও তোমরাও হলে মানুষ
কিন্তু বাবা আত্মাদের অর্থাৎ তোমাদের বসে পড়ান। পড়াশোনার সংস্কার আত্মাতেই থাকে।
এখন তোমরা খুব নলেজফুল, সেসব হল ভক্তির নলেজ। উপার্জন করার জন্যও নলেজ আছে।
শাস্ত্রেরও নলেজ আছে। এই হল রূহানী নলেজ। তোমাদের আত্মাকে আত্মিক পিতা বসে জ্ঞান
প্রদান করছেন। ৫ হাজার বছর পূর্বেও তোমরা শুনেছিলে। সম্পূর্ণ মনুষ্য সৃষ্টিতে কখনও
এমন করে কেউ পড়ায় নি। কেউ জানেনা, ঈশ্বর কীভাবে পড়ান ?
তোমরা বাচ্চারা জানো, এখন এই পড়াশোনা দ্বারা রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। যারা ভালো ভাবে
পড়ে এবং শ্রীমৎ অনুযায়ী চলে তারা হাইয়েস্ট হয় এবং যারা বাবার নিন্দে করায়, হাত ছেড়ে
চলে যায় তারা প্রজায় কম পদের অধিকারী হয়। বাবা তো একটি পড়াই পড়ান। পড়াশোনায় অনেক
মার্জিন আছে। দেবতাদের রাজধানী ছিলো, তাইনা। একমাত্র বাবা-ই, যিনি এসে রাজধানী
স্থাপন করেন। বাকি সব বিনাশ হয়ে যাবে। বাবা বলেন - বাচ্চারা, এখন শীঘ্র রেডি হও।
গাফিলতি করে সময় নষ্ট ক'রো না। স্মরণ না করলে মোস্ট ভ্যালুয়েবল সময় নষ্ট হয়। শরীর
নির্বাহের উদ্দেশ্যে ব্যবসা ইত্যাদি সবই করো, তবুও হাত থাকবে কর্মে, মন স্মরণে। বাবা
বলেন আমাকে স্মরণ করো তাহলে তোমরা রাজত্ব প্রাপ্ত করবে। তোমরা খোদা বন্ধুর কাহিনী
শুনেছো, তাইনা। আল্লাহ অবলদীনের নাটক দেখানো হয়। স্পর্শ করলেই খাজানা প্রাপ্তি হয়।
এখন তোমরা বাচ্চারা জানো - আল্লাহ তোমাদের স্পর্শ করে কি রূপে পরিণত করেন। দিব্য
দৃষ্টি দ্বারা বৈকুণ্ঠে চলে যাও। প্রথমে কন্যারা একসাথে বসে নিজেরাই ধ্যান মগ্ন হয়ে
যেতো। পরে বলে দিতো জাদু। তখন এইসব বন্ধ করা হল। সুতরাং এইসব কথা হল বর্তমান সময়ের।
হাতিমতাই- এর কাহিনী আছে। মুখে লৌহ গোলক পুরে রাখলে মায়া হেরে যেত। গোলক মুখ থেকে
বার করলেই মায়া চলে আসতো। এর রহস্য তো কেউ বুঝতে পারেনা। বাবা বলেন, বাচ্চারা মুখে
মূহলরা বা চুষিকাঠি পুরে নাও। তোমরা হলে শান্তির সাগর, আত্মা শান্তিতে নিজের
স্বধর্মে থাকে। সত্যযুগেও জ্ঞান থাকে যে আমরা আত্মা। যদিও পরমাত্মা পিতাকে কেউ
জানেনা। কখনও কেউ প্রশ্ন করলে বলো - সেখানে বিকারের নাম চিহ্ন নেই। সেটি হল পবিত্র
দুনিয়া। ৫ বিকার সেখানে থাকে না। দেহ-অভিমানই নেই সেখানে । মায়ার রাজ্যে দেহ-অভিমানী
হয়, সেখানে থাকে মোহজিত। এই পুরানো দুনিয়া থেকে নষ্টমোহ হতে হবে। বৈরাগ্য অনুভব
তাদের হয় যারা ঘর সংসার ত্যাগ করে। তোমাদের তো ঘর সংসার ত্যাগ করতে হবে না। বাবার
স্মরণে থেকে এই পুরানো শরীর ত্যাগ করে ফিরে যেতে হবে। সকলের হিসেব নিকেশ পূর্ণ হবে।
তারপরে ফিরে যাবে আত্মাদের ধাম। কল্প-কল্প এই হয়। তোমাদের বুদ্ধি এখন সুদূরে উপরে
যায়, তারা দেখে সাগরের দূরত্ব কত দূর পর্যন্ত আছে ? সূর্য - চাঁদে কি আছে ? প্রথমে
বলা হতো তারা দেবতা। তোমরা বলো এতো ব্রহ্মাণ্ডের আলোক বাতি। এখানে হয় খেলা। তাই এই
বাতি গুলি এখানেই আছে। মূলবতনে, সূক্ষ্মবতনে এইসব নেই। সেখানে কোনও খেলা নেই। এই
অনাদি খেলাটি হয়ে আসছে। *চক্র আবর্তিত হতেই থাকে, প্রলয় হয় না। ভারত তো হল অবিনাশী
খন্ড, এখানে মানুষ বাস করে, জলমগ্ন হয় না। পশু পাখি ইত্যাদি যা আছে, সব থাকবে। বাকি
যে সব খন্ড আছে, সেসব সত্যযুগ ত্রেতায় থাকে না।* তোমরা যা দিব্য দৃষ্টি দ্বারা
দেখেছো, সেসব আবার প্রাক্টিক্যালে দেখবে। প্রাক্টিক্যালে তোমরা বৈকুণ্ঠে গিয়ে
রাজত্ব করবে। যার জন্য পুরুষার্থ করছো, তবুও বাবা বলেন স্মরণে পরিশ্রম আছে। মায়া
স্মরণ করতে দেয় না। খুব ভালোবাসা সহকারে বাবাকে স্মরণ করতে হবে। তোমরা অজ্ঞান কালে
ভালোবেসে বাবার মহিমা করতে। আমাদের অমুক এমন ছিলো, অমুক পদ মর্যাদা যুক্ত ছিলো। এখন
তোমাদের বুদ্ধিতে সম্পূর্ণ সৃষ্টি চক্র ফিক্স আছে। সর্ব ধর্মের নলেজ আছে। যেমন
সেখানে আত্মাদের বংশ লতিকা আছে, তেমনই এখানে আছে মনুষ্য সৃষ্টির বংশ লতিকা।
গ্রেট-গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদার হলেন ব্রহ্মা। তারপরে হল তোমাদের বংশ। সৃষ্টি তো সর্বদা
চলায়মান তাইনা।
বাবা বোঝান - বাচ্চারা, নর থেকে নারায়ণ হতে হবে । যা তোমরা মুখে বলো, তাই যেন
তোমাদের কর্মে থাকে। প্রথমে নিজের অবস্থা দেখতে হবে। বাবা আমরা তো সম্পূর্ণ
উত্তরাধিকার নিয়েই থাকবো, সুতরাং ওই রকম চলনও চাই। এই হল একটি মাত্র পড়াশোনা, নর
থেকে নারায়ণ হওয়ার। এই পড়া তোমাদেরকে একমাত্র বাবা পড়ান। রাজার রাজা তোমরাই হও,
অন্য কোনও খণ্ডে হয় না। তোমরা পবিত্র রাজা হও, পরে লাইট হীন অপবিত্র রাজারা পবিত্র
রাজাদের মন্দির বানিয়ে পূজা করে। এখন তোমরা পড়ছো। স্টুডেন্ট নিজের টিচারকে কেন ভুলে
যায়! তারা বলে মায়া ভুলিয়ে দিয়েছে। মায়াকে দোষ দিয়ে দেয়। আরে, স্মরণে তো তোমাদের
রাখতে হবে। মুখ্য টিচার একজন-ই, বাকি অন্যরা সব হল অনুপম টিচার্স। বাবাকে ভুলে যাও,
আচ্ছা টিচারকে স্মরণ করো। তোমাদেরকে ৩-টি চান্স দেওয়া হয়। এক স্বরূপ বিস্মৃত হলে
অন্য দুটি স্বরূপকে স্মরণ করো। আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
বাবার কাছে পুরো প্রাপ্তির জন্য কথায় যা কর্মেও তাই যেন হয়, এরই পুরুষার্থ করতে হবে।
মোহজিত হতে হবে।
২) সদা যেন স্মরণে
থাকে যে, আমরা শান্তির সাগরের সন্তান, আমাদের শান্তিতে থাকতে হবে। মুখে চুষিকাঠি (মূহলরা)
রাখতে হবে। গাফিলতি করে সময় নষ্ট করবে না।
বরদান:-
কষ্টে
থাকা আত্মাদের এক সেকেন্ডে গতি-সদগতি প্রদান কারী মাস্টার দাতা ভব
ব্যাখা: যেমন স্থূল
সীজনের ব্যবস্থা করো, সেবাধারী সামগ্রী ইত্যাদি সব রেডি করো যাতে কারো কোনো কষ্ট না
হয়, সময় ব্যর্থ না যায়। তেমনই এখন সর্ব আত্মাদের গতি-সদগতি করার শেষ সীজন আসবে,
কষ্টে থাকা আত্মাদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার কষ্টটুকু দেবে না, আসতে থাকবে আর নিতে
থাকবে। এর জন্য এভাররেডি হও। পুরুষার্থী জীবনের ঊর্ধ্বে উঠে দাতা স্বরূপ স্থিতিতে
থাকো। প্রতিটি সঙ্কল্প, প্রতিটি সেকেন্ড মাস্টার দাতা হয়ে চলো।
স্লোগান:-
হুজুরকে
(শিববাবাকে) বুদ্ধিতে হাজির রাখো, তাহলে সর্ব প্রাপ্তি গুলি হ্যাঁ হুজুর করবে।