04.07.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
শ্রেষ্ঠ হতে চাইলে রোজ নিজের চার্ট দেখো। কোনো কর্মেন্দ্রিয় যেন ধোঁকা না দেয়,
চোখ খুব ধোঁকাবাজ, এর হাত থেকে নিজেকে সামলে রেখো"
প্রশ্নঃ -
কোন্ অভ্যাস
সবথেকে খারাপ এবং এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কি ?
উত্তরঃ -
সবথেকে খারাপ অভ্যাস হলো - জিভের স্বাদ, কোনো ভালো খাবার দেখলে লুকিয়ে খেয়ে নেওয়া।
লুকানো অর্থ চুরি করা। এই চুরি রূপী মায়াও অনেককে নাক-কান পাকড়ে ধরে নেয়। এর থেকে
মুক্তি পাওয়ার উপায় হল - যখনই অন্য কোনওদিকে বুদ্ধি যাবে তখন নিজেই নিজেকে শাস্তি
দাও। খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করার জন্য নিজেই নিজেকে আছাড় মারো।
ওম্ শান্তি ।
আত্ম-অভিমানী
হয়ে বসেছ ? সব বিষয়ে নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করতে হয়। আমি কি আত্ম-অভিমানী হয়ে
বাবাকে স্মরণ করছি ? শিবশক্তি পান্ডবসেনার গায়ন রয়েছে। এখানে তো শিববাবার সেনারা
বসে আছে, তাই না ? দুনিয়ার সেনাবাহিনীতে কেবল যুবকরাই থাকে, বাচ্চা কিংবা বৃদ্ধ
থাকে না। এই সেনাবাহিনীতে তো বৃদ্ধ-বাচ্চা-যুবক সবাই বসে আছে। মায়াকে পরাজিত করার
জন্য এই সেনাবাহিনী গঠন করা হয়েছে। প্রত্যেককে মায়ার উপর জয়ী হয়ে বাবার কাছ থেকে
অসীম উত্তরাধিকার নিতে হবে। বাচ্চারা জানে যে মায়া খুবই শক্তিশালী।
কর্মেন্দ্রিয়গুলোই সবথেকে বেশি ধোঁকা দেয়। চার্ট লেখার সময়ে এটাও লিখবে যে, আজ
কোন্ কর্মেন্দ্রিয় ধোঁকা দিয়েছে ? আজ অমুক ব্যক্তিকে দেখে স্পর্শ করতে ইচ্ছে
হয়েছে। চোখ খুবই ক্ষতিকারক। প্রত্যেক কর্মেন্দ্রিয়কেই দেখতে হবে যে, কে বেশি
ক্ষতিকারক। এক্ষেত্রে সুরদাসের উদাহরণ দেওয়া হয়। নিজেকে চেক করতে হবে। চোখ খুব
ধোঁকা দেয়। কেউ হয়তো অনেক সার্ভিস করে, কিন্তু চোখ খুব ধোঁকা দিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে
খুব সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এটা তো শত্রু, তাই না ? আমাদের পদ ভ্রষ্ট করে দেয়। *যেসব
বাচ্চা বিচক্ষণ হবে, তারা অবশ্যই নোট করবে। ডায়েরি যেন পকেটেই থাকে।* যেভাবে
ভক্তিমার্গে বুদ্ধি অন্যদিকে চলে গেলে নিজেই নিজেকে চিমটি কাটে, সেইরকম তোমাদেরও
নিজেকে সাজা দেওয়া উচিত। *খুব সতর্ক থাকতে হবে। কর্মেন্দ্রিয়গুলো ধোঁকা দিচ্ছে না
তো ? এইসব বিষয় থেকে নিজেকে সরিয়ে আনতে হবে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলে চলবে না।*
স্ত্রী পুরুষের মধ্যেই যত ঝামেলা। দেখলেই কাম-বিকারগ্রস্থ দৃষ্টি চলে যায়।
সেইজন্যই সন্ন্যাসীরা চোখ বন্ধ করে বসে থাকে। কোনো কোনো সন্ন্যাসী তো স্ত্রীলোকের
দিকে পিছন ফিরে বসে থাকে। পরিবর্তে ওইসব সন্ন্যাসীরা কি ফল পায় ? খুব বেশি হলে
দশ-কুড়ি লাখ কিংবা কয়েক কোটি সঞ্চয় করবে। মরে গেলে সব শেষ। আবার পরের জন্মে
সঞ্চয় করতে হবে। তোমরা বাচ্চারা যা কিছু পাচ্ছ সব অবিনাশী উত্তরাধিকার হয়ে যাচ্ছে।
ওখানে সম্পত্তির প্রতি কোনো লোভ থাকবে না। কোনো অপ্রাপ্তি থাকবে না যার জন্য
পরিশ্রম করতে হবে। কলিযুগের অন্তিম এবং সত্যযুগের আদি কালের মধ্যে দিন-রাতের
পার্থক্য। ওখানে অসীম সুখ থাকবে। এখানে তো কিছুই নেই। বাবা সবসময় বলেন - ‛সঙ্গম’
শব্দটার সঙ্গে ‛পুরুষোত্তম’ শব্দটা অবশ্যই লেখ। স্পষ্ট কথায় বলতে হবে। মানুষের
বুঝতে সুবিধা হবে। মানুষ থেকে দেবতা বানানোর গায়ন আছে। সুতরাং তিনি নিশ্চয়ই
সঙ্গমযুগেই দেবতা বানানোর কিংবা নরকবাসী থেকে স্বর্গবাসী বানানোর জন্য আসবেন। মানুষ
তো ঘোর অন্ধকারে আছে। স্বর্গ কি জিনিস জানেইনা। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা তো স্বর্গ
দেখতেই পাবে না। তাই বাবা বলেন, তোমাদের ধর্ম খুবই সুখদায়ী। ওই দুনিয়াটাকেই হেভেন
বলা হয়। কিন্তু ওরা কি মনে করে যে আমাদের পক্ষেও স্বর্গে যাওয়া সম্ভব ? কেউই কিছু
জানে না। ভারতবাসীরা সব ভুলে গেছে। বলে যে অনেক লক্ষ বছর আগে হেভেন ছিল। খ্রীস্টানরা
তো বলে, তিন হাজার বছর আগে হেভেন ছিল। লক্ষ্মী-নারায়ণ হলেন ভগবান এবং ভগবতী।
নিশ্চয়ই ভগবান এসেই ভগবান এবং ভগবতীকে বানাবেন। তাই পরিশ্রম করতে হয়। প্রতিদিন
নিজের চার্ট দেখতে হবে। কোনো কর্মেন্দ্রিয় ধোঁকা দেয়নি তো ? জিহ্বাও কম কিছু নয়।
কোনো ভালো জিনিস দেখলেই লুকিয়ে খেয়ে নেয়। জানেই না যে এটা একটা পাপ। এটা তো চুরি
করা হলো, তাই না ? তার ওপর আবার শিববাবার যজ্ঞ থেকে চুরি করা খুবই খারাপ জিনিস। বলা
হয় - এক পয়সার চোর আর এক লাখ টাকার চোর একই জিনিস। অনেক জনকেই মায়া নাক-কান পাকড়ে
ধরে নেয়। যত খারাপ অভ্যাস সব বেরিয়ে আসে। নিজেকে আছাড় মারতে হবে। যতক্ষণ কোনো
খারাপ অভ্যাস আছে, ততক্ষণ ভালো পদ পাওয়া যাবে না। স্বর্গে যাওয়া কোনো বড় ব্যাপার
নয়, কিন্তু কোথায় রাজা-রানী আর কোথায় প্রজা! তাই বাবা বলছেন, কর্মেন্দ্রিয়গুলোর
ওপর সতর্ক থাকতে হবে, দেখতে হবে যে কোন্ কর্মেন্দ্রিয় ধোঁকা দেয় ? চার্ট লিখতে হবে।
এটা তো ব্যবসা, তাই না ? বাবা বোঝাচ্ছেন, আমার সঙ্গে সওদা করো, ভালো পদ পেতে চাইলে
শ্রীমৎ অনুসারে চলো। বাবা তো নির্দেশ দিচ্ছেন, কিন্তু পালন করার ক্ষেত্রেই মায়া
বিঘ্ন নিয়ে আসে, করতেই দেয় না। বাবা বলছেন, এই কথাগুলো ভুলে যেওনা। গাফিলতি করলে
খুব আফসোস করতে হবে। কখনোই ভালো পদ পাবে না। বলার সময়ে তো খুব আনন্দ সহকারে বলো যে
আমরা নর থেকে নারায়ন হব। কিন্তু নিজেকেই জিজ্ঞেস করতে থাকো যে কখনো কোনো
কর্মেন্দ্রিয় ধোঁকা দেয় না তো ? নিজের উন্নতি করতে চাইলে বাবার নির্দেশগুলো
বাস্তবায়িত করো। সারাদিনের চার্ট রাখো। অনেক ভুল হতে থাকে। *চোখ খুব ধোঁকা দিয়ে
দেয়। ইচ্ছে হয় যে একে এটা খাওয়াই, এটা উপহার দিই। নিজের অনেক সময় নষ্ট করে।*
মালার দানা হওয়ার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়। মুখ্য হলো অষ্টরত্ন। নবরত্ন বলা হয়।
একজন তো বাবা, বাকি রইল আটজন। মধ্যখানে তো বাবার প্রতীক থাকতে হবে। কারোর ওপরে কোনো
গ্রহের দশা থাকলে নবরত্নের আংটি পরানো হয়। এতজন পুরুষার্থ করছে তার মধ্যে মাত্র আট
জন সম্মানের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়। অষ্টরত্নের অনেক মহিমা আছে। দেহ অভিমানের বশীভূত
হওয়ার জন্য কর্মেন্দ্রিয়গুলো খুব ধোঁকা দেয়। ভক্তিমার্গেও এইরকম চিন্তা করে যে
মাথায় অনেক পাপের বোঝা আছে, তাই দান-পুণ্য করলে সেই পাপ মুছে যাবে। *সত্যযুগে
এইরকম কোনো চিন্তা থাকবে না কারণ সেখানে রাবণের রাজত্ব নেই। ওখানেও যদি এইরকম
ব্যাপার থাকে তবে নরক আর স্বর্গের মধ্যে তো কোনো পার্থক্যই থাকবে না।* তোমাদেরকে এত
উঁচু পদ দেওয়ার জন্য স্বয়ং ভগবান বসে থেকে পড়াচ্ছেন। বাবা যদি স্মরণে নাও আসেন
তবে শিক্ষাদাতা টিচার তো স্মরণে আসবেন। আচ্ছা, এটা তো স্মরণ করো যে, আমাদের বাবা এবং
সদ্গুরু একজনই। মানুষ তো আসুরিক মত অনুসারে চলে বাবার কতো তিরস্কার করেছে। বাবা এখন
সকলের উপকার করছেন। তাই বাচ্চারা, তোমাদেরকেও উপকার করতে হবে। কারোর অপকার করো না,
খারাপ দৃষ্টিও যেন না যায়। এতে নিজেরই ক্ষতি করো। অন্যের ওপরেও এর প্রভাব পড়ে। বাবা
বলছেন, লক্ষ্য খুব বড়। তাই প্রতিদিন নিজের চার্ট চেক করো - কোনো বিকর্ম করিনি তো ?
এই দুনিয়াটাই হল বিকর্মের দুনিয়া। বিকর্মজিৎ দেবতাদের সম্বন্ধে কেউই কিছু জানে
না। বাবা বোঝাচ্ছেন, ৫ হাজার বছর আগে বিকর্মজিৎ অব্দ ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে
বিকর্ম অব্দ শুরু হয়েছে। রাজারাও বিকর্ম করছে। তাই বাবা এখন বলছেন, আমি তোমাদেরকে
কর্ম, অকর্ম এবং বিকর্মের গতি সম্বন্ধে বোঝাচ্ছি। রাবণের রাজত্বে তোমাদের কর্মগুলো
বিকর্ম হয়ে যায়। কিন্তু সত্যযুগে তোমাদের কর্মগুলো অকর্ম হবে, বিকর্ম হবে না।
ওখানে বিকারের কোনো চিহ্নও থাকবে না। এই সময়ে তোমরা জ্ঞান রূপী ত্রিনয়ন লাভ করো।
তোমরা এখন বাবার দ্বারা ত্রিনয়নী-ত্রিকালদর্শী হয়েছ। কোনো মানুষ এরকম বানাতে পারবে
না। বাবা-ই তোমাদেরকে এইরকম বানিয়েছেন। আস্তিক হলেই ত্রিনয়নী-ত্রিকালদর্শী হতে
পারবে। মূলবতন, সূক্ষ্মবতন, ৮৪ চক্র - সব তোমাদের বুদ্ধিতে আছে। পরবর্তীকালে
অন্যান্য ধর্মগুলো আসবে। বৃদ্ধি হতে থাকবে। ওইসব ধর্মস্থাপকদেরকে গুরু বলা যাবে না।
সদ্গুরু কেবল একজন, যিনি সকলের সদ্গতি করেন। ওরা কাউকে সদগতি দেওয়ার জন্য আসে না।
ওরা হলো ধর্মস্থাপক। যীশুখ্রীষ্টকে স্মরণ করলে কারোর সদ্গতি হয়না, বিকর্মের বিনাশ
হয়না। কোনো লাভ হয়না। ওরা সবাই ভক্তির লাইনেই রয়েছে। জ্ঞানের লাইনে কেবল তোমরাই
রয়েছো। তোমরা হলে পান্ডা। সবাইকে শান্তিধাম এবং সুখধামের রাস্তা বলে দাও। বাবা
যেমন মুক্তিদাতা, সেইরকম তিনি আবার পথপ্রদর্শক। সেই বাবাকে স্মরণ করলেই বিকর্ম
বিনাশ হবে। *এখন তোমরা বাচ্চারা নিজের বিকর্ম বিনাশ করার পুরুষার্থ করছ। তাই খেয়াল
রাখতে হবে যাতে আর কোনো বিকর্ম না হয়ে যায়। পুরুষার্থ করার সঙ্গে সঙ্গে যদি বিকর্মও
করো তবে সেটা একশো গুন হয়ে যাবে। যতটা সম্ভব বিকর্ম না করার চেষ্টা করো। নয়তো সেগুলো
নথিভুক্ত হয়ে যাবে। নামও বদনাম করবে। যখন জেনেই গেছ যে ভগবান পড়াচ্ছেন, তখন আর কোনো
বিকর্ম করা উচিত নয়। ছোটখাটো চুরি হোক কিংবা বড় চুরি, পাপ তো অবশ্যই হয়, তাই না ?
এই চোখ খুব ধোঁকা দেয়। বাবা বাচ্চাদের আচার-আচরণ দেখেই বুঝতে পারেন। *কখনো যেন
এইরকম চিন্তা না আসে যে, ইনি আমার স্ত্রী। আমরা হলাম ব্রহ্মাকুমার-কুমারী, শিববাবার
নাতি-নাতনি। আমরা তো শিববাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করে রাখি বেঁধেছি। তারপরেও কেন চোখ
ধোঁকা দেয় ? স্মরণের শক্তির দ্বারা যেকোনো কর্মেন্দ্রিয়ের ধোঁকা দেওয়া থেকে মুক্তি
পেতে পারো। অনেক পরিশ্রম করতে হবে। বাবার নির্দেশ অনুসারে চার্ট লেখ। স্ত্রী-পুরুষরা
নিজেদের মধ্যে এইরকম কথা বলো যে - আমরা তো বাবার কাছ থেকে সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার নেব,
টিচারের কাছে পুরো পাঠ পড়ব। এইরকম টিচার তো আর কখনোই পাব না যিনি অসীম জগতের জ্ঞান
দেবেন।* লক্ষ্মী-নারায়ণই তো এইসব জানবে না, তাই তাদের পরে যারা আসবে তারা কিভাবে
জানবে? বাবা বলছেন, কেবল তোমরাই সঙ্গমযুগে এই সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তিমের জ্ঞান জানতে
পারো। বাবা অনেক কিছু বোঝান - এটা করো, এইভাবে করো। কিন্তু এখান থেকে উঠে গেলেই ভুলে
যায়। এটা বুঝতে পারে না যে স্বয়ং শিববাবা আমাদেরকে বোঝাচ্ছেন। সবসময় মনে করো যে
শিববাবা বোঝাচ্ছেন, এনার ছবিও রেখো না। এটা তো লোন নেওয়া রথ। ইনিও পুরুষার্থ করছেন,
ইনিও বলছেন যে আমি বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার নিচ্ছি। তোমাদের মতো ইনিও স্টুডেন্ট
লাইফে আছেন। ভবিষ্যতে তোমাদের অনেক মহিমা করা হবে। এখন তো তোমরা পূজনীয় দেবতা হওয়ার
জন্য পড়ছো। এরপর সত্যযুগে তোমরা দেবতা হবে। এইসব কথা কেবল বাবা ছাড়া আর কেউই বোঝাতে
পারবে না। যদি কোনো ব্যক্তির ভাগ্যেই না থাকে তবে সে সংশয় প্রকাশ করে - শিববাবা
কিভাবে পড়াবেন ! আমি মানিনা। না মানলে শিববাবাকে স্মরণ করবে কিভাবে ? বিকর্মও বিনাশ
হবে না। এভাবে ক্রমানুসারে পুরো রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। দাস-দাসীদেরও তো প্রয়োজন আছে।
রাজারা উপহার হিসেবে দাস-দাসী পেত। এখানেই যদি এতো দাস-দাসী থাকে তবে সত্যযুগে আরো
কতো থাকবে। কখনোই এমন ঢিলেঢালা পুরুষার্থ করা উচিত নয় যে ওখানে গিয়ে দাস-দাসী হতে
হবে। বাবাকে জিজ্ঞেস করতে পারো - বাবা, যদি এখনই মৃত্যু হয় তাহলে কেমন পদ পাব ? বাবা
সঙ্গে সঙ্গে বলে দেবেন। নিজেই নিজের চার্ট দেখ। অন্তিমে তো ক্রমানুসারে কর্মাতীত
অবস্থা হয়েই যাবে। এটাই হলো সত্যিকারের উপার্জন। ওই উপার্জনের জন্য দিন-রাত কত
ব্যস্ত থাকে। যারা শেয়ার কেনা-বেচার দালালের কাজ করে তারা এক হাতে খাবার খায় আর
অন্য হাতে ফোন করে ব্যবসা সামলায়। তাহলে বলো, এইরকম ব্যক্তিরা কি জ্ঞানমার্গে চলতে
পারবে ? বলে দেয় যে আমার তো সময় নেই। আরে, আসল উপার্জন তো এখানেই হয়। কেবল বাবাকে
স্মরণ করলেই বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে। অষ্টদেবতা ইত্যাদি কতজনকে তো মানুষ স্মরণ করে।
কিন্তু ওদেরকে স্মরণ করলে কিছুই পাওয়া যাবে না। বাবা বারে বারে প্রত্যেকটা বিষয়
বোঝাতে থাকেন। যাতে কেউ বলতে না পারে যে এই বিষয়টা তো বাবা বোঝাননি। বাচ্চারা,
তোমাদেরকে তো সবার কাছে বার্তা পৌঁছাতে হবে। এরোপ্লেন থেকেও হ্যান্ডবিল ছড়ানোর
চেষ্টা করতে হবে। ওতে লেখ যে শিববাবা এইরকম বলেন। ব্রহ্মাবাবাও হলেন শিববাবার
সন্তান। যেহেতু তিনি প্রজাপিতা, তাই তিনিও পিতা, আবার ইনিও পিতা। মুখে শিববাবা
বললেই অনেক বাচ্চার চোখে প্রেমের অশ্রু চলে আসে। কখনো বাবাকে দেখেওনি। পত্র লেখে -
বাবা, কবে আমি তোমার সাথে গিয়ে সাক্ষাৎ করব ? আমাকে বন্ধন থেকে ছাড়িয়ে দাও। অনেকেই
বাবার অথবা প্রিন্সের সাক্ষাৎকার করে। ভবিষ্যতেও অনেকের সাক্ষাৎকার হবে। কিন্তু
পুরুষার্থ তো করতেই হবে। মৃত্যুর সময়েও মানুষকে বলা হয় - ভগবানকে স্মরণ করো। দেখবে,
তোমরাও অন্তিমে অনেক পুরুষার্থ করবে, স্মরণ করতে লেগে যাবে। বাবা নির্দেশ দিচ্ছেন -
বাচ্চারা, যেটুকু সময় পেয়েছ, সেই সময়ে পুরুষার্থ করে মেকআপ করে নাও। বাবার স্মরণে
থেকে বিকর্ম বিনাশ করলে, পরে এসেও আগে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। যেমন ট্রেন লেট করলে
মেকআপ করে নেয়। তোমরাও এখন সময় পেয়েছ, তাই মেকআপ করে নাও। এখানে এসে উপার্জন করতে
লেগে যাও। বাবা মত দিচ্ছেন - এইরকম ভাবে চলে নিজের কল্যাণ করো। বাবার শ্রীমৎ অনুসারে
চলো। এরোপ্লেন থেকে হ্যান্ডবিল ছড়াও যাতে মানুষ বুঝতে পারে যে এরা তো একদম সঠিক
বার্তা দিচ্ছে। ভারত কতো বড় দেশ, সবাইকে জানাতে হবে যাতে পরে কেউ না বলতে পারে যে
বাবা, আমি তো জানতে পারিনি। আচ্ছা ! মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি
মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার
আত্মা রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বিচক্ষণ হয়ে নিজের চেকিং করতে হবে যে চোখ কখনো ধোঁকা দেয় না তো। কোনো
কর্মেন্দ্রিয়ের বশীভূত হয়ে উল্টোপাল্টা কাজ করা উচিত নয়। স্মরণের শক্তির দ্বারা
কর্মেন্দ্রিয়ের ধোঁকা থেকে মুক্ত হতে হবে।
২ ) এইরকম সত্যিকারের উপার্জনের জন্য সময় বের করতে হবে। পরে এসেও পুরুষার্থ করে
মেকআপ করে নিতে হবে। এটা বিকর্ম বিনাশ করার সময়, তাই আর কোনো বিকর্ম যেন না হয়।
বরদান:-
সকল
কন্ডিশনে (পরিস্থিতিতে) সেফ (সুরক্ষিত) থেকে এয়ার-কন্ডিশনের টিকিটের অধিকারী ভব
সেইসব বাচ্চাই
এয়ার-কন্ডিশনের টিকিট পায়, যারা এখানে সকল পরিস্থিতিতে সুরক্ষিত থাকে। যেকোনো
পরিস্থিতি কিংবা সমস্যা আসুক না কেন, সকল সমস্যাকে এক সেকেন্ডে অতিক্রম করার
সার্টিফিকেট থাকতে হবে। যেভাবে ওই টিকিটের জন্য টাকা দাও, সেইরকম এক্ষেত্রেও ‛সর্বদা
বিজয়ী’ হওয়ার অর্থ প্রয়োজন - যার দ্বারা টিকিট পাওয়া যাবে। এই অর্থ জোগাড় করার জন্য
পরিশ্রম করার দরকার নেই। কেবল সর্বদা বাবার সঙ্গে থাকলেই অসীম উপার্জন জমা হতে থাকবে।
স্লোগান:-
যেকোনো পরিস্থিতি আসুক না কেন, পরিস্থিতি পালিয়ে যাবে, কিন্তু খুশি কখনোই যাবে না।