31.07.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা --
এই ওয়ান্ডারফুল পাঠশালায় তোমরা ছাত্র আত্মারাও যেমন দৃশ্যমান নও, তেমনই শিক্ষকেও
চোখে দেখা যান না, এইটি হল নতুন বিষয়"
প্রশ্নঃ -
এই পাঠশালায়
তোমরা মুখ্য কোন্ শিক্ষা-টি প্রাপ্ত করো যা অন্য কোনও পাঠশালায় প্রদান করা হয় না ?
উত্তরঃ -
এখানে বাবা নিজের আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে শিক্ষা দেন - বাচ্চারা, নিজের কর্মেন্দ্রিয়
গুলি নিয়ন্ত্রণে রাখবে। কখনও কোনো বোনের প্রতি কু দৃষ্টি যেন না থাকে। তোমরা আত্মা
রূপে হলে ভাই-ভাই এবং প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান রূপে হলে ভাই-বোন। তোমাদের মনে কোনো
খারাপ চিন্তা থাকা উচিত নয়। এমন শিক্ষা এই ইউনিভার্সিটি ছাড়া অন্য কোথাও দেওয়া হয়
না ।
গীতঃ-
দূর দেশের
নিবাসী....
ওম্ শান্তি ।
না দূরদেশবাসী
আত্মাকে চোখে দেখা যায়, আর না দূরদেশ নিবাসী পরমাত্মাকে। একমাত্র পরমাত্মা এবং
আত্মাকেই চোখে দেখা যায় না। অন্য সব কিছু হল দৃশ্যমান। এই কথা বোঝা তো যায় যে, আমরা
হলাম আত্মা। এই কথা মানুষও বোঝে যে, আত্মা ও শরীর দুই-ই হল পৃথক। আত্মা দূরদেশ থেকে
এসে শরীরে প্রবেশ করে। তোমরা প্রতিটি কথা ভালোভাবে বুঝতে পারছো। আমরা আত্মারা কীভাবে
দূরদেশ থেকে আসি। আত্মাকেও চোখে দেখা যায় না, যিনি পড়ান, সেই পিতা পরমাত্মাকেও চোখে
দেখা যায় না। এমন তো কখনও কোনো সৎসঙ্গে অথবা শাস্ত্রে কেউ শোনে নি। না কেউ শুনেছে,
না কেউ দেখেছে। এখন তোমরা জানো আমাদের অর্থাৎ আত্মাদেরকে চোখে দেখা যায় না।
আত্মাকেই পড়াশোনা করতে হবে। আত্মাই তো সবকিছু করে, তাইনা। এটা হল নতুন কথা, যা অন্য
কেউ বোঝাতে পারে না। পরমপিতা পরমাত্মা, তিনি হলেন জ্ঞানের সাগর, তিনিও দৃশ্যমান নন।
নিরাকার কীভাবে পড়াবেন ? আত্মাও তো শরীরে আসে, তাইনা। ঠিক তেমনই পরমপিতা পরমাত্মা
বাবাও ভাগ্যশালী রথ বা ভাগীরথে আসেন। এই রথেরও নিজস্ব আত্মা আছে। উনিও নিজের আত্মাকে
দেখতে পান না। বাবা এই রথের আধারে এসে বাচ্চাদেরকে পড়ান। আত্মাও এক শরীর ত্যাগ করে
অন্য শরীর গ্রহণ করে। আত্মার পরিচয় আছে, কিন্তু তাকে চোখে দেখা যায় না। (সকল
আত্মাদের) পিতা যিনি দৃশ্যমান নন, তিনিই তোমাদের পড়াচ্ছেন। এ হল একেবারে নতুন কথা।
বাবা বলেন, আমিও ড্রামা প্ল্যান অনুযায়ী নিজের সময়ে এসে শরীর ধারণ করি। তা নাহলে
তোমাদের অর্থাৎ মিষ্টি-মিষ্টি বাচ্চাদের দুঃখ থেকে মুক্ত করবো কীভাবে। এখন তোমরা
বাচ্চারা সবাই জাগ্রত। দুনিয়ার মানুষ সবাই নিদ্রিত। যতক্ষণ না তোমাদের কাছে এসে
বুঝছে এবং ব্রাহ্মণে পরিণত হচ্ছে। অন্য সৎসঙ্গে যে চায় গিয়ে বসতে পারে। এখানে
তেমনভাবে কেউ আসতে পারে না। কারণ এটা হল পাঠশালা, তাইনা। ব্যারিস্টারি পরীক্ষায় গিয়ে
তোমরা বসলে কিছুই বুঝতে পারবে না। এ হল একেবারে নতুন কথা। যিনি পড়াচ্ছেন উনি
দৃশ্যমান নন, পড়ছে যারা তারাও নয়। আত্মা ভিতরে শোনে, ধারণ করে। অন্তরে দৃঢ় নিশ্চয়
হতে থাকে যে, এই কথা তো সঠিক। পরমাত্মা এবং আত্মা দুই ই চোখে দেখা যায় না। বুদ্ধি
দ্বারা বুঝতে হয় - "আমি আত্মা" । অনেকে তো এই কথাও বিশ্বাস করে না, বলে দেয় নেচার।
তারপরে এর বর্ণনাও করে। নানান মতামত আছে, তাইনা। বাচ্চারা, তোমাদের এই নলেজে ব্যস্ত
থাকতে হবে। কর্মেন্দ্রিয়গুলি ধোঁকা দেয়, তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। মুখ্য হল চোখ,
যে সবকিছু দেখে। চোখ শিশুকে দেখে বলে এ হল আমার সন্তান। নাহলে বুঝবে কীভাবে ! কেউ
জন্মান্ধ হলে তখন তাদের বোঝানো হয় এ হল তোমার ভাই, কারণ তারা দেখতে পায় না। বুদ্ধি
দিয়ে বোঝে। বাস্তবে কেউ সুরদাস সম অন্ধ হলে জ্ঞান অর্জন ভালোভাবে করতে পারে, কারণ
চোখ তো নেই যে ধোঁকা দেবে। যদি অন্য কোনো কাজ পারঙ্গম নাও হয়, কিন্তু জ্ঞান অর্জন
করতে পারবে । স্ত্রীকে দেখতে পাবে না। অন্যদের দেখলে তো বুদ্ধি যাবে সেদিকে । তাদের
আঁকড়ে ধরবে (মোহ জন্মাবে) । দেখতেই পাবে না তো আঁকড়ে ধরবে কীভাবে ? *অতএব বাবা
বোঝান, কর্মেন্দ্রিয় গুলিকে পরিপক্ক করতে হবে। ক্রিমিনাল দৃষ্টি অর্থাৎ কু দৃষ্টি
দ্বারা কোনও বোনকে দেখবে না। তোমরাও হলে ভাই বোন, তাইনা। কু দৃষ্টির চিন্তাও যেন না
আসে।* যদিও আজকাল হল কলিযুগ, ভাই-বোনও খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী ভাই
বোনের কু চিন্তন থাকবে না।
*আমরা হলাম এক পিতার সন্তান। বাবা ডাইরেক্শন দেন - তোমরা হলে ব্রহ্মাকুমার-কুমারী,
তাই জ্ঞানের এই পয়েন্টটি খুব ভালো ভাবে পাকা হওয়া উচিত যে, আমরা হলাম ভাই-বোন। আমরা
আত্মারা হলাম ভগবানের সন্তান অর্থাৎ আমরা হলাম ভাই-ভাই এবং শরীর দ্বারা প্রজাপিতা
ব্রহ্মা দ্বারা আমরা ভাই-বোন হই কারণ অ্যাডপ্ট হই, তাইনা। কু দৃষ্টি হতে পারেনা। এই
কথাটি পাকাপাকি ভাবে বোঝো যে - আমরা হলাম আত্মা। বাবা আমাদের পড়ান, আমরা আত্মারা পড়ি
এই শরীর দ্বারা। এইগুলি হল কর্মেন্দ্রিয়। আমরা আত্মারা শরীর থেকে পৃথক, এই
কর্মেন্দ্রিয় দ্বারা আমরা কর্ম করি। আমি কর্মেন্দ্রিয় নই। আমি হলাম শরীর থেকে পৃথক
আত্মা। এই শরীর ধারণ করে পার্ট প্লে করি, তাও আবার অলৌকিক। অন্য কোনো মানুষ এই
পার্ট প্লে করেনা।* তোমরা প্লে করো। *ক্ষণে ক্ষণে নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে
স্মরণ করতে হবে*। উনিই আমাদের টিচার, উনিই হলেন আমাদের গুরু। দুনিয়ায়
পিতা-টিচার-গুরু যদিও আলাদা হয়। *একমাত্র নিরাকারী পিতা, টিচার, গুরু একজনই, তিনি
হলেন পরমাত্মা বাবা।* এখানে বাচ্চারা এখন নতুন শিক্ষা প্রাপ্ত করছে। পিতা-টিচার-গুরু
তিনজনই হলেন নিরাকারী। আমরাও নিরাকার আত্মারা পড়ছি, তাই তো বোঝা যায় "আত্মা-পরমাত্মা
আলাদা ছিলো বহুকাল। মিলন তো এখানেই হয়" । যদিও বাবাকে এসে পবিত্র করতে হয়। মূলবতনে
আত্মারা গিয়ে মিলিত হবে । সেখানে তো কোনো খেলা নেই, মূলবতন হল নিজের ঘর। সেখানে সব
আত্মারা থাকে। শেষ সময়ে সব আত্মারা সেখানে ফিরে যাবে। *আত্মারা যারা পার্ট প্লে করতে
আসে, তারা মাঝখানে ফিরে যেতে পারেনা। শেষ পর্যন্ত পার্ট প্লে করতে হয়। পুনর্জন্ম
নিতে হবে, যাতে সবাই আসতে পারে। সতো প্রধান থেকে সতো-রজো-তমোতে এসে যায়। তারপরে শেষে
যখন নাটক পূর্ণ হয় তখন তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হতে হবে।* বাবা সব কথা তো ঠিক করে
বোঝান। জ্ঞান মার্গ হলো ই সত্য। সত্যম্ শিবম্ সুন্দরম্ বলা হয়, তাইনা। সত্য বলেন
একমাত্র বাবা, এই সঙ্গমে পুরুষার্থী হওয়ার জন্য একমাত্র সৎ সঙ্গ হলো এটাই । বাবা
যখন আসেন, বাচ্চাদের সঙ্গে মিলিত হন, তখন বলা হয় সৎসঙ্গ। বাকি সবই হলো কু সঙ্গ।
গায়নও আছে - সৎ সঙ্গ উপরে ওঠায় আর কুসঙ্গ পতনের দিকে নিয়ে যায়.... কুসঙ্গ হলো
রাবণের। বাবা বলেন, আমি তো তোমাদের পার করিয়ে নিয়ে যাই। *তাহলে তোমাদের পতিত কে
বানায় ? তমোপ্রধান কীভাবে হয়ে যাও, তাও বলতে হবে*। সামনে শত্রু হলো মায়া। *শিববাবা
হলেন মিত্র। তাঁকেই বলা হয় - স্বামীদের স্বামী। এই মহিমা রাবণের নয়*। শুধু বলা হবে
রাবণ আছে, আর কিছু নয়। *রাবণ দহন কেন করা হয় ? সেখানেও তোমরা অনেক সেবা করতে পারো*।
কোনো মানুষ জানেনা, রাবণ কে ? কবে আসে, কেন দহন করা হয় ? অন্ধ বিশ্বাস আছে, তাইনা।
*বাচ্চারা, তোমাদের বোঝানোর অধিকার আছে।* যেমন দুনিয়ার মানুষ অধিকারের সঙ্গে
শাস্ত্র পাঠ করে। শ্রোতারাও মুগ্ধ হয়ে শোনে। টাকা পয়সা দান করে। সংস্কৃত শেখাও, গীতা
শেখাও। তার জন্যও অনেক পয়সা দেয়। বাবা বোঝান বাচ্চারা তোমরা কত সময় নষ্ট করেছো,
অর্থ ব্যয় করেছো।
তোমাদের কাছে যারা এই ব্রাহ্মণ কুলের হবে তারাই আসবে। তাই তোমরা প্রদর্শনী ইত্যাদি
করো। এখানকার ফুল হলে নিশ্চয়ই আসবে। এই বৃক্ষটি বৃদ্ধি হতেই থাকে। বাবা বীজ
পুঁতেছেন এক ব্রহ্মা তার থেকে ব্রাহ্মণ কুল হয়েছে। এক এক করে বৃদ্ধি হয়েছে। প্রথমে
পরিবারের সদস্যরা তারপরে আত্মীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশী সবাই এসেছে। পরে শুনে শুনে
অনেকে এসেছে। ভেবেছে এও একরকম সৎসঙ্গ। কিন্তু এইখানে রয়েছে পবিত্রতার পরিশ্রম, যার
কারণে এতো হাঙ্গামা হয়েছে। এখনও হয়, তাই গালাগালি করে। বলে অপহরণ করেছে, পাটরানী
করেছে। পাটরানী তো স্বর্গে হবে, তাইনা। এখানে নিশ্চয়ই পবিত্র করেছেন । তোমরা সবাইকে
বলো - এ হল মহারাজা-মহারানী হওয়ার নলেজ। নর থেকে নারায়ণ হওয়ার সত্য কাহিনী, তোমরা
সত্য ভগবানের কাছে শুনছো। এই লক্ষ্মী-নারায়ণকে কেউ ভগবান-ভগবতী বলতে পারে না। কিন্তু
পূজারীরা নারায়ণের চিত্রকে এত পুজো করে না যতখানি কৃষ্ণের করে। কৃষ্ণের চিত্র অনেক
কেনা হয়। কৃষ্ণের এত মান কেন ? কারণ শিশু যে। মহাত্মাদের থেকেও শিশুদের উঁচু স্থানে
রাখা হয়, কারণ মহাত্মারা ঘর সংসার ইত্যাদি তৈরি করে ত্যাগ করে। কেউ বাল ব্রহ্মচারীও
হয়। কিন্তু তারা জানে কাম-ক্রোধের অর্থ কি। *শিশুরা জানেনা, তাই মহাত্মাদের থেকে
শিশুদের উঁচু স্থান দেওয়া হয়, সেইজন্য কৃষ্ণকে বেশী মান দেওয়া হয়। কৃষ্ণকে দেখে খুব
খুশী হয়। ভারতের লর্ড হলেন কৃষ্ণ।* কন্যারা কৃষ্ণকে খুব ভালোবাসে। কৃষ্ণের মতন
স্বামী হোক, সন্তান হোক। কৃষ্ণের প্রতি আকৃষ্ট হয়। সতোপ্রধান যে। *বাবা বলতে থাকেন,
যত স্মরণে থাকবে ততই তমোপ্রধান থেকে তমো রজো স্থিতিতে আসবে এবং খুশী অনুভব হবে।*
প্রথমে তোমরা সতোপ্রধান ছিলে তখন অনেক খুশীতে ছিলে, তারপরে কোয়ালিটি কম হয়েছে। তোমরা
যত স্মরণে থাকবে ততই সুখ অনুভব হবে আর তোমরা ট্রান্সফার হতে থাকবে। *তমো থেকে রজো,
সতোতে আসতে থাকবে তো শক্তি, খুশী, ধারণা বৃদ্ধি পাবে।* এইসময় হলো তোমাদের উত্তরণ কলা।
শিখ ধর্মের মানুষ গান গায় - চড়তি খেলায় সকলের কল্যাণ। তোমরা জানো, এখন আমাদের
উত্তরণ কলা হয় স্মরণের দ্বারা। যত স্মরণ করবে, তত চড়তি (উত্তরণ) কলায় যাবে।
সম্পূর্ণ হতে হবে, তাইনা। *চাঁদের আলো, রেখাসম হয়ে যায়, তারপরে কলা বৃদ্ধি হয়ে
সম্পূর্ণ গোলাকার হয়। তোমাদেরও ঠিক তেমনই।* চাঁদেও গ্রহণ লাগে, তখন বলা হয় করো দান
কাটবে গ্রহণ। তোমরা চট করে বিকারের দান তো করতে পারবে না। চোখ খুব ধোঁকা দেয়। তারা
বোঝে না যে, কু দৃষ্টি হয়। আমরা যদিও ব্রহ্মাকুমার-কুমারী রূপে ভাই-বোন হই। তা
সত্বেও যদি ইচ্ছে হয় স্পর্শ করি , তখন ভ্রাতৃ স্নেহের পরিবর্তে স্ত্রী পুরুষের
ক্রিমিনাল লাভ (criminal love) হয়ে যায়। কারো কারো মনে পীড়া দিতে থাকে, আমরা বাবার
সন্তান, কোনো কুদৃষ্টি দ্বারা আমাদের স্পর্শ করা উচিত নয় । বাবাকে বলে - বাবা, কেউ
স্পর্শ করলে ভালো লাগে না। বাবা পরে এই বিষয়ে মুরলীতে বলেন - (কেউ যদি এমন ক'রো)
তাতে তোমাদের স্থিতি ঠিক থাকবে না। যদিও মুরলী খুব ভালো পড়ে শোনায়, অনেককে বোঝায়,
কিন্তু নিজের স্থিতি ঠিক নেই। কু দৃষ্টি হয়ে যায়। এত নোংরা এই দুনিয়া। বাচ্চারা বোঝে
লক্ষ্য খুব উঁচুতে। বাবার স্মরণে সেন্সিবল হয়ে থাকতে হবে। আমরা হলাম
ব্রহ্মাকুমার-কুমারী। *আমাদের রূহানী কানেকশন আছে, ব্লাড কানেকশন নেই। যদিও ব্লাড
থেকে সবার জন্ম হয়, সত্যযুগেও ব্লাড কানেকশন হয় কিন্তু ওই শরীর যোগবলের দ্বারা
প্রাপ্ত হয়।* তারা বলবে বিকার ব্যতীত সন্তান জন্ম হবে কীভাবে ! বাবা বলেন, ওই দুনিয়া
হলই নির্বিকারী দুনিয়া, সেখানে বিকার থাকেই না। সেখানেও বিকার থাকলে তো রাবণ রাজ্য
হয়ে যাবে। তাহলে এই দুনিয়া এবং ঐ দুনিয়ার মধ্যে তফাৎ কি থাকবে ! এই কথা তো বুঝতে হবে।
কু দৃষ্টি নষ্ট হতে খুব পরিশ্রম লাগে। কলেজে ছাত্র ছাত্রীরা একসঙ্গে পড়াশোনা করে,
তো অনেকের ক্রিমিনাল দৃষ্টি হয়ে যায়। বাচ্চাদের বুঝতে হবে, আমরা হলাম গড ফাদারের
সন্তান অর্থাৎ নিজেদের মধ্যে আমরা ভাই-বোন হয়ে গেলাম। তবে কু দৃষ্টি থাকবে কেন।
সবাই বলে, আমরা ঈশ্বরের সন্তান। আত্মারা হল নিরাকারী সন্তান। পরে বাবা যখন রচনা
করেন তখন সাকারী ব্রাহ্মণ রচনা করবেন। প্রজাপিতা ব্রহ্মা তো সাকারে থাকবেন, তাইনা।
এ হল অ্যাডপশন। দত্তক নেওয়া সন্তান। মানুষের বুদ্ধিতে এই কথাটি একেবারেই নেই যে
প্রজাপিতা ব্রহ্মা দ্বারা সৃষ্টি কীভাবে রচনা হয়েছে।
তোমরা প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান ব্রহ্মাকুমার-কুমারীরা হলে ভাই-বোন। কু দৃষ্টি যেন
না থাকে তার জন্য খুব সাবধান হতে হবে। এতেই অনেকের অসুবিধে হয়। উঁচু থেকে উঁচু পদের
অধিকারী হতে হলে পরিশ্রম তো করতে হবে। বাবা বলেন - "পবিত্র হও" । এনার কথাও কেউ মেনে
নেয়, কেউ নেয় না। খুব পরিশ্রম এতে। পরিশ্রম ছাড়া উচ্চ স্থান পাবে কীভাবে ?
বাচ্চাদের সাবধানে থাকতে হবে। ভাই-বোনের অর্থই হল - এক পিতার সন্তান, তাহলে কু
দৃষ্টি কেন যাবে। বাচ্চারা বোঝে বাবা ঠিকই বলেন - আমাদের ক্রিমিনাল দৃষ্টি হয়ে যায়।
স্ত্রী ও পুরুষ দু'জনেরই হয়ে যায়। লক্ষ্য তো ঠিক রাখতে হবে, তাইনা। নলেজ তো অনেক
প্রদান করা হয় কিন্তু আচরণও পবিত্র হওয়া উচিত। তাই বাবা বলেন, সবচেয়ে বেশী ধোঁকা
দেয় এই চোখ। মুখেও কথা তখন বের হয় যখন চোখ দেখে। তখন মন বলে এই খাবার খাবো। তাই
কর্মেন্দ্রিয়ের উপরে বিজয় লাভ করতে হবে। আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
পবিত্রতার আচরণ ধারণ করতে হবে। কু দৃষ্টি, কু চিন্তন সমাপ্ত করার জন্য নিজের
কর্মেন্দ্রিয়ের থেকে পৃথক নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করতে হবে।
২ ) নিজেদের মধ্যে রূহানী কানেকশন রাখতে হবে, ব্লাড কানেকশন নয়। নিজের অমূল্য সময়
এবং অর্থ নষ্ট করবে না। সঙ্গদোষ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে।
বরদান:-
ব্রহ্ম-মুহূর্তের সময় বরদান প্রাপ্তকারী ও প্রদানকারী বাবা সম বরদানী, মহাদানী ভব
ব্যাখা:
ব্রহ্ম-মুহূর্তের সময় বিশেষ ব্রহ্মলোক নিবাসী বাবা জ্ঞান সূর্যের লাইট ও মাইটের
কিরণ বাচ্চাদের বরদান রূপে দিয়ে থাকেন। তার সাথে ব্রহ্মা বাবা ভাগ্য বিধাতা রূপে
ভাগ্য রূপী অমৃত বিতরণ করেন। শুধুমাত্র বুদ্ধি রূপী কলসই হল এই অমৃত ধারণ করার
উপযুক্ত । কোনও রকমের বিঘ্ন বা বাধা যেন না থাকে। তারজন্য সারা দিনে শ্রেষ্ঠ স্থিতি
বা শ্রেষ্ঠ কর্মের মুহূর্ত তৈরী করতে হবে । কারণ অমৃতবেলার পরিবেশ বৃত্তি পরিবর্তন
করতে সাহায্য করে। তাই সেই সময় বরদান নেওয়ার সময় দান করো অর্থাৎ বরদানী এবং মহাদানী
হও।
স্লোগান:-
ক্রোধী
মানুষের কাজ হল ক্রোধ করা এবং তোমাদের কাজ হল স্নেহ দেওয়া ।