30-08-2020 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 13-03-86 মধুবন


*সহজ পরিবর্তনের আধার - অনুভবের অথরিটি*


বাপদাদা তাঁর সর্ব আধারমূর্তি আর উদ্ধারমূর্তি বাচ্চাদের দেখছেন l প্রত্যেক বাচ্চা আজকের বিশ্বকে শ্রেষ্ঠ সম্পন্ন বানানোর আধারমূর্তি l আজ বিশ্ব আপন আধারমূর্তি শ্রেষ্ঠ আত্মাদের বিভিন্ন রূপে, বিভিন্ন বিধিতে ডাকছে, স্মরণ করছে l সুতরাং এইরকম সর্বদুঃখী অশান্ত আত্মাদের সহায় হয়ে, বিন্দু বিন্দু দিয়ে, সুখ-শান্তির রাস্তা বলে, জ্ঞান-নেত্রহীনকে দিব্য নেত্র দিয়ে, লক্ষ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ানো আত্মাদের ঠিকানা দিয়ে, অপ্রাপ্ত আত্মাদের প্রাপ্তির অনুভূতি করিয়ে, উদ্ধারকারী তোমরা সব শ্রেষ্ঠ আত্মা l বিশ্বের চতুর্দিকে কোনো না কোনো রকমের চাঞ্চল্য আছেই l কোথাও ধনের কারণে চাঞ্চল্য, কোথাও মনের বহু টেনশনের চাঞ্চল্য, কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজেদের জীবনের প্রতি অসন্তুষ্ট হওয়ার কারণে চাঞ্চল্য, কোথাও প্রকৃতির তমোপ্রধান বায়ুমন্ডলের কারণে চাঞ্চল্য, চতুর্দিকে চাঞ্চল্যের দুনিয়া l এইরকম সময়ে বিশ্বের কোণে তোমরা অনড়-অটল আত্মা l দুনিয়া ভয়ের বশে আছে, আর তোমরা নির্ভয় হয়ে সদা খুশিতে নাচতে গাইতে থাকো l যদি দুনিয়া অল্পকালের খুশির জন্য নাচ গান এবং আরও অনেক সাধন সহায় হিসেবে আপন করে, তাহলে সেই অল্পকালের সাধন আরও তাদেরকে চিন্তার চিতায় নিয়ে যাচ্ছে l বিশ্বের এমন আত্মাদের এখন শ্রেষ্ঠ, অবিনাশী প্রাপ্তির অনুভূতির আধার প্রয়োজন l তারা সবরকম আধার দেখে নিয়েছে, সবকিছু অনুভব করে নিয়েছে এবং সবার মন থেকে না চাইতেও এই আওয়াজ বের হয় - এর চাইতে আরও অন্য কিছু চাই l এই সাধন, এই বিধি সিদ্ধির অনুভূতি করায় না l আমরা নতুন কিছু চাই, অন্য রকম কিছু চাই l অল্পকালের যা কিছু সহায় হয়েছে, এই সবকিছু খড়কুটোর মতো l তারা প্রকৃত অবলম্বন খুঁজে যাচ্ছে l অল্পকালের উপায়, প্রাপ্তি এবং বিধি দেখে দেখে সেইসবে তারা ক্লান্ত হয়ে গেছে l এখন এইরকম আত্মাদের কে দেখাবে যথার্থ আশ্রয়, প্রকৃত উপায়, অবিনাশী সহায় ? তোমরা সবাই, তাই না !

দুনিয়ার তুলনায় তোমরা অল্প, খুব অল্প, কিন্তু পূর্ব কল্পের স্মরণিকেও অক্ষৌহিনীর সামনে পাঁচ পাণ্ডবই দেখিয়েছে l সবচেয়ে বড় অথরিটি তোমাদের সাথে l সাইন্সের অথরিটি, শাস্ত্রের অথরিটি, রাজনীতির অথরিটি, ধর্মনীতির অথরিটি এবং অন্য অনেক অথরিটি, তারা তাদের নিজ নিজ অথরিটির আধারে দুনিয়াকে পরিবর্তন করার ট্রায়াল করেছে l তারা অনেক বিষয়ে সচেষ্ট হয়েছে কিন্তু তোমাদের সবার কাছে কোন অথরিটি আছে ? সবচেয়ে বড় পরমাত্ম-অনুভূতির অথরিটি l অনুভবের অথরিটি দ্বারা তোমরা সহজে যেকোন কারও মধ্যে সহজে শ্রেষ্ঠ পরিবর্তন আনতে পারো l সুতরাং তোমাদের সবার কাছে এই অনুভবের বিশেষ অথরিটি আছে, সেইজন্য গর্বের সাথে, নিশ্চয়তার সাথে, উদ্যমের (নেশা) সাথে, ভরসার সাথে বলো আর বলবেও যে সহজ রাস্তা, যথার্থ রাস্তা একটাই l এক দ্বারাই প্রাপ্ত হয় আর সবাইকে এক বানায় l এই সন্দেশ সবাইকে দাও তো, তাই না ! সেইজন্য বাপদাদা আজ আধার-মূর্তি, বিশ্ব উদ্ধারমূর্তি বাচ্চাদের দেখছেন l দেখ - বাপদাদার সাথে নিমিত্ত কারা হয়েছে l তারা বিশ্বের আধার কিন্তু হয়েছে কারা ? তারা সব সাধারণ l যারা দুনিয়ার লোকের নজরে আছে তারা বাবার নজরে নেই, আর যারা বাবার নজরে আছে তারা দুনিয়ার নজরে নেই l তোমাদের দেখে প্রথমে তো তারা হাসবে যে এরাই সেই ! কিন্তু দুনিয়ার লোকে যা করে তা' বাবা করেন না l তাদের চাই নামজাদা আর বাবার চাই যাদের নামের লেশমাত্রও ঝরে গেছে তাদের নাম গৌরবান্বিত করার জন্য l তাঁকে অসম্ভবকে সম্ভব করতে হবে, সাধারণকে মহান বানানো, নির্বলকে মহান বলবান বানানো, জাগতিক দুনিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে যারা অশিক্ষিত, তাদের নলেজফুল বানানো - এটাই বাবার পার্ট, সেইজন্য বাচ্চাদের সভা দেখে বাপদাদাও মৃদু মৃদু হাসেন, সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ভাগ্য প্রাপ্তকারী এই হারানিধি বাচ্চারা নিমিত্ত হয়ে গেছে l এখন দুনিয়ার লোকের নজরও ধীরে ধীরে অন্য সব দিক থেকে সরে গিয়ে একদিকে আসছে l এখন তারা বোঝে যে যা আমরা করতে পারিনি, তা' বাবা গুপ্তরূপে করাচ্ছেন l এখন কুম্ভ মেলায় কি দেখেছ ? এটাই দেখেছ, তাই না ! সবাই কীভাবে স্নেহের নজরে দেখে ! এটা ধীরে ধীরে প্রত্যক্ষ হতেই হবে l ধর্মনেতা, রাজনৈতিক নেতা এবং বৈজ্ঞানিক এই তিন বিশেষ অথরিটি l এখন এই তিন নেতারাই সাধারণ রূপে পরমাত্ম-ঝলক দেখার শ্রেষ্ঠ আশাতে নিকটে আসছে l এখনও ঘোমটার ভিতর থেকে অর্থাৎ অন্তরাল থেকে দেখছে, আড়াল সরেনি l ঘোমটার আড়াল থেকে দেখার কারণে এখনও দ্বিধায় আছে l এরাই কি তারা নাকি অন্য কেউ - এটাই দ্বিধার ঘোমটা l যাই হোক, তবুও তাদের নজর গেছে ! এবারে ঘোমটাও সরে যাবে l অনেক প্রকার ঘোমটা আছে l এক, তাদের নেতৃত্বের, গদি অথবা আসনের ঘোমটাও তো অনেক বড় l সেই ঘোমটা থেকে বের হওয়ায় সামান্য টাইম লাগবে, কিন্তু অন্ততপক্ষে তাদের চোখ খুলেছে ! কুম্ভকর্ণ এখন একটু জেগেছে l

বাপদাদা বিশ্বের সকল আত্মাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের বাবার অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করার অধিকারী অবশ্যই বানাবেন l তারা যেমনই হোক, কিন্তু তারা তো বাচ্চাই l অতএব, বাচ্চাদের হয় মুক্তি অথবা জীবনমুক্তি উভয় উত্তরাধিকারই আছে l উত্তরাধিকার দেওয়ার জন্যই বাবা এসেছেন l তারা তো জানে না, তাই না ! তাদেরও দোষ নেই, সেইজন্য তোমাদেরও সবার করুণা হয়, নয় কি ? তোমাদের করুণাও হয়, উৎসাহ-উদ্দীপনাও থাকে যেভাবেই হোক সব আত্মাদের উত্তরাধিকারের অধিকার লাভ করানো উচিত l আচ্ছা !

আজ ক্যারাবিয়ানদের টার্ন l সবাইই তো বাপদাদার অতি প্রিয় l প্রত্যেক স্থানের নিজের নিজের বিশেষত্ব বাপদাদার সামনে সদাই প্রত্যক্ষ থাকে l বাস্তবে, সব বাচ্চার দোষ-স্বীকারপত্র (পোতামেল) বাপদাদার কাছে থাকেই l কিন্তু সব বাচ্চাকে দেখে বাপদাদা খুশি, কোন ব্যাপারে ? সব বাচ্চারা নিজ নিজ শক্তি অনুযায়ী সদা সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনায় থাকে l সেবা ব্রাহ্মণ জীবনের অক্যুপেশন হয়ে গেছে l সেবা ব্যতীত এই ব্রাহ্মণ জীবন শূন্য মনে হয় l যদি সেবা না থাকে তোমাদের মনে হয় যেন কিছুই করার নেই, একেবারে ফ্রি - ফ্রি ! তাইতো সেবাতে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে বাপদাদা বিশেষভাবে খুশি হন l ক্যারিবিয়ানের বিশেষত্ব কি ? তারা সদা কাছে (করীব) থাকে l বাপদাদা স্থূলভাবে এটা দেখেন না, শারীরিক ভাবে তোমরা তো কতো দূরে, কিন্তু মন থেকে তোমরা কাছে আছ, তাই না ! শারীরিকভাবে তোমরা যতটা দূরে, ততটাই বাবার সান্নিধ্য অনুভব করার বিশেষ লিফ্ট তোমরা লাভ করো, কারণ বাবার সদাই চতুর্দিকের বাচ্চাদের দিকে নজর থাকে l তারা তাঁর নজরে সমাহিত হয়ে থাকে l সুতরাং, নজরে যারা সমাহিত হয়ে আছে তারা কি হবে ? দূরে হবে নাকি কাছের হবে ? অতএব, তোমরা সবাই কাছের রত্ন l কেউই দূর নয় l নিয়ার আর ডিয়ার উভয়ই l যদি নিয়ার না হও, তাহলে তোমাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকবে না l বাবার সঙ্গ তোমাদের সদা শক্তিশালী বানিয়ে অগ্রচালিত করছে l

তোমাদের সবাইকে দেখে প্রত্যেকে খুশি হচ্ছে, কারণ কত সাহসের সাথে তোমরা সেবা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত করাচ্ছ l বাপদাদা জানেন, সবার একই সঙ্কল্প, সবচেয়ে বড় মালা আমাদের তৈরি করতে হবে l আর মালার দানা যে চারিদিকে ছড়িয়ে আছে তাদের একত্রিত করে মালা বানিয়ে বাবার সামনে নিয়ে আসে l সারা বছর ধরে এই উৎসাহ থাকে, এই ফুলের তোড়া অথবা মালা বাবার সামনে নিয়ে যেতে হবে l তাইতো এক বছর ধরে পুরো প্রস্তুতি নিতে থাকে l বাপদাদা দেখছেন এই বছর বিদেশের সব সেবাকেন্দ্রের বৃদ্ধির রেজাল্ট ভালো l প্রত্যেকে হয় ছোট, নয়তো বড়, কোন না কোন ফুলের তোড়া প্রত্যক্ষ ফলরূপে এনেছে l সুতরাং বাপদাদাও আগের কল্পের তাঁর নিজের স্নেহী বাচ্চাদের দেখে খুশি হন l ভালোবাসার সাথে পরিশ্রম করেছে l ভালোবাসা দিয়ে করা পরিশ্রম, পরিশ্রম মনে হয় না l তাইতো সবদিক থেকে ভালো গ্রুপ এসেছে l বাপদাদার সবচেয়ে যে ব্যাপারটা ভালো লাগে, সেবায় তোমরা সদাই ক্লান্তিহীন হয়ে এগিয়ে যাচ্ছ l আর এটাই সেবার সফলতার বিশেষত্ব যে তোমরা কখনও নিরাশ হও না l আজ অল্প, কাল অবশ্যই বেশি হবে, এটা নিশ্চিত l সুতরাং যেখানে তারা বাবার পরিচয় পেয়েছে, বাবার বাচ্চারা নিমিত্ত হয়েছে, সেখানে বাবার বাচ্চারা অবশ্যই লুকিয়ে আছে আর সময় অনুসারে তারা নিজের অধিকার নেওয়ার জন্য এখানে আসবে আর তাদের আসা চলতেই থাকবে l সেইজন্যই তোমরা সবাই খুশিতে নাচো l তোমরা সদা খুশি থাকো l বাবা অবিনাশী, বাচ্চারা অবিনাশী, সুতরাং প্রাপ্তিও অবিনাশী l তোমাদের খুশিও অবিনাশী l তোমরা সদাই খুশি থাকো, সদাই সর্বাপেক্ষা বেস্ট l ওয়েস্ট (ব্যর্থ) শেষ হয়ে গেলে শুধুই বেস্ট (সবচাইতে ভালো) থাকে l বাবার হওয়া অর্থাৎ সদাসর্বদার জন্য অবিনাশী ভান্ডারের অধিকারী হওয়া l সুতরাং অধিকারী জীবন বেস্ট জীবন, তাই না !

ক্যারিবিয়ানের মধ্যে সেবার বিশেষ ফাউন্ডেশন বিশেষ আত্মাদের ছিল l গভর্নমেন্টের সেবার ফাউন্ডেশন তো গায়ানাতেই ছিল, তাই না ! আর গভর্নমেন্ট পর্যন্ত রাজযোগের বিশেষত্বের আওয়াজ ছড়িয়ে দেওয়া, এটাও বিশেষত্ব l গভর্নমেন্টও তিন মিনিটের জন্য সাইলেন্সের প্রচেষ্টা তো করেছে, তাই না ! গভর্নমেন্টের কাছে আসার চান্স সেখানেই শুরু হয়েছে আর রেজাল্টও ভালো বেরিয়েছে এবং এখনও বের হচ্ছে l ক্যারিবিয়ান সেবাতে বিশেষ ভি. আই. পি.ও প্রস্তুত করেছে এবং তাদের একজনের মাধ্যমে অনেকের সেবা হচ্ছে, তাহলে এটাও তো বিশেষত্ব, তাই না ! নিমন্ত্রণ ছিলই বিধিপূর্বক এমনই ভি.আই. পি.র থেকে, সুতরাং ক্যারিবিয়ানই তো এটা করার ফার্স্ট নিমিত্ত হয়েছে ! আজ চারিদিকের এক্জাম্পেল হয়ে অনেককে উৎসাহ ও প্রেরণা দেওয়ার সেবায় নিয়োজিত হয়েছে l এই ফলও তো সবাই লাভ করবে, তাই না ! এখনও তোমরা গভর্নমেন্টের কানেকশনে আছ l এটাও কাছের কানেকশনে আসার একটা বিধি l এই বিধিকে আরও খানিকটা জ্ঞানযুক্ত কানেকশনের মাধ্যমে সেবাতে তোমাদের পৃথক হয়েও প্রিয় হওয়ার অনুভব করাতে পারো l যে কোনো মিটিংয়ে সেবার জন্য যখন তোমরা নিমিত্ত হও, এমনকি লৌকিক বিষয়তেও এমনভাবে তোমাদের কথা বলো যাতে তাদের স্বতন্ত্রতাও অনুভব হয় আর নিরহঙ্কার ভাবও অনুভব হয় l সুতরাং তোমাদের জন্য এটাও একটা চান্স যে তাদের সবার সাথে থেকেও তোমাদের স্বতন্ত্রতা অথচ নিরহঙ্কার ভাব দেখাতে পারো, সেইজন্য এই বিধিকে আরও একটু অ্যাটেনশন দিয়ে সেবার সাধন শ্রেষ্ঠ বানাতে পারো l যারা গায়ানা থেকে আগত তাদের এই চান্স প্রাপ্ত হয়েছে l আদি থেকেই সেবার চান্সের লটারী লাভ হয়েছে l সব স্থানের বৃদ্ধি ভালো l এখন আরও একটা বিশেষত্ব আনো - ওখানে নামজাদা পন্ডিতদের মধ্যে থেকে কিছুজনকে প্রস্তুত করো l ত্রিনিদাদ, গায়ানায় অনেক পন্ডিত আছে l তারা তবুও কাছে এসেছে l ভারতেরই ফিলোসফি তারা বিশ্বাস করে l সুতরাং এখন পন্ডিতদের গ্রুপ তৈরি করো l যেমন এখন হরিদ্বারে সাধুদের সংগঠন তৈরি হচ্ছে, সেইরকম এখান থেকে পন্ডিতদের গ্রুপ তৈরি করো l সস্নেহে তাদের তোমরা আপন করে নিতে পারো l সবার আগে স্নেহের সাথে তাদের কাছে নিয়ে এসো l হরিদ্বারেও স্নেহেরই রেজাল্ট ছিল l স্নেহ তাদেরকে মধুবন পর্যন্ত পৌঁছে দেয় l যদি তারা মধুবন পর্যন্ত আসে তখন নলেজ পর্যন্ত এসেই যাবে l কোথায় যাবে ! অতএব, এটা এখন করে দেখাও l আচ্ছা l

ইউরোপ কি করবে ? সংখ্যার নিরিখে ছোট বলা যায় না l সংখ্যা যাই হোক যদি কোয়ালিটি ভালো হয় তাহলে তোমরা নম্বর ওয়ান l যা অন্য কেউ আনেনি তোমরা তাদেরকে আনতে পারো l কোনও বড় ব্যাপার নয়, 'সাহসী বাচ্চা, বাবা সহায় l' বাচ্চাদের সাহস আর পুরো পরিবার, বাপদাদা সহায়, সেইজন্য এটা কোনও বড় ব্যাপার নয় l তোমরা যেমন চাও তা' করতে পারো l অবশেষে সবাইকে তো একই ঠিকানায় আসতে হবে l কাউকে এখনই আসতে হবে, কাউকে কিছু পরে l আসতে তো হবেই l যতই তারা খুশি হোক, তবুও কিছু না কিছু প্রাপ্তির ইচ্ছা তো হয়, তাই না ! বাতাবরণ ঠিক আছে, সেই কারণে যদি তারা আকুল নাও হয়, তবুও যতক্ষণ তাদের জ্ঞান না হয় অর্থাৎ বোধোদয় না হয় তাদের বিনাশী ইচ্ছা কখনও পূর্ণ হতে পারে না l একটা ইচ্ছার পরে আরেকটা ইচ্ছা উৎপন্ন হতে থাকে l তাইতো ইচ্ছাও সদা সন্তুষ্টতার অনুভব করায় না l সুতরাং যারা দুঃখী নয় তাদের ঈশ্বরীয় নিঃস্বার্থ স্নেহ কি, স্নেহী জীবন কি, আত্ম স্নেহ, পরমাত্ম-স্নেহের অনুভবই নেই l যতই স্নেহ থাকুক কিন্তু নিঃস্বার্থ স্নেহ তো কোথাও নেই l প্রকৃত স্নেহই নেই l সুতরাং হৃদয়ের প্রকৃত স্নেহ, পরিবারের স্নেহ সবাই চায় l এমন পরিবার কোথায় খুঁজে পাবে ? সেইজন্য যে বিষয়ে তাদের প্রাপ্তির অভাব অনুভব হবে, সেই বিশেষ প্রাপ্তির আকর্ষণের বিষয়ে বোঝাও l আচ্ছা !

সবাই তোমরা বিশেষ আত্মা l যদি বিশেষত্ব না থাকত তাহলে ব্রাহ্মণ আত্মা হতে পারতে না l বিশেষত্বই তোমাদেরকে ব্রাহ্মণ জীবন দিয়েছে l সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব তো এটাই কোটি কোটির মধ্যে মুষ্টিমেয় কয়েকের মধ্যে তুমিও আছ l সুতরাং প্রত্যেকের নিজ নিজ বিশেষত্ব আছে l সারাদিন বাবা আর সেবা এই গভীর নিষ্ঠা থাকে, তাই না ! লৌকিক কার্য তো নিমিত্ত মাত্র করতেই হয়, কিন্তু হৃদয়ে একনিষ্ঠা, স্মরণ আর সেবায় থাকতে দাও l আচ্ছা !

বরদান:-
সদা নিজধাম আর নিজ স্বরূপের স্মৃতি দ্বারা উপরম, পৃথক অথচ প্রিয় ভব

নিরাকার দুনিয়া আর নিরাকার রূপের স্মৃতিই সদা পৃথক অথচ প্রিয় বানায় l আমরা নিরাকার দুনিয়ার নিবাসী, এখানে সেবার্থে অবতরিত হয়েছি l আমরা এই মৃত্যুলোকের নই, কিন্তু অবতার ! শুধুমাত্র এই ছোট বিষয়টা যদি স্মরণে থাকে তাহলে উপরম হয়ে যাবে অর্থাৎ বৈরাগ্য এসে যাবে l যারা নিজেদের অবতার না ভেবে গৃহস্থ ভাবে, সেই গৃহস্থের গাড়ী কাদায় আটকে থাকে l গৃহস্থ অর্থাৎ ভারের স্থিতি আর অবতার একদম হালকা l অবতার ভাবলে নিজের আপন ধাম, আপন স্বরূপ স্মরণে থাকবে আর উপ-রম হয়ে যাবে l

স্লোগান:-
ব্রাহ্মণ সে-ই যে শুদ্ধতা আর বিধিপূর্বক সব কার্য করে l