16-08-2020 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 07-03-86 মধুবন


*"(ঈশ্বরীয়) পঠন-পাঠনের চারটি সাবজেক্টের যথার্থ স্মরণিক - মহাশিবরাত্রি"*


আজ জ্ঞান দাতা, ভাগ্য বিধাতা, সর্বশক্তির বরদাতা, সকল সম্পদে (খাজানা) ভরপুরকারী বাবা তাঁর অত্যন্ত স্নেহের, সদা মহাযোগী, সমীপ বাচ্চাদের সাথে মিলিত হওয়ার জন্য এসেছেন । এই মিলনই সর্বকালের উৎসব পালনের স্মরণিক হয়ে যায়। যে যে নামেই সময়ে সময়ে যে উৎসবই পালন করা হয় - সে সবই হল এই সময় বাবা আর বাচ্চাদের মধুর মিলন, উৎসাহে ভরপুর মিলন, ভবিষ্যতের জন্য তা উৎসবের রূপ নিয়ে নেয়। এই সময় তোমাদের অর্থাৎ সর্বশ্রেষ্ঠ বাচ্চাদের প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহূর্ত খুশীতে থাকার মুহূর্ত বা সময়। অতএব এই ছোট্ট সঙ্গমযুগের অলৌকিক জীবন, অলৌকিক প্রাপ্তি সকল, অলৌকিক অনুভব গুলিকে দ্বাপর থেকে ভক্তরা ভিন্ন ভিন্ন নামে স্মরণিক বানিয়ে দিয়েছে। তোমাদের এই একটি জন্মের এই জীবন, ভক্তির ৬৩ জন্মের জন্য স্মরণের উপায় বা সাধন হয়ে যায়। এতটাই মহান হলে তোমরা। এই সময়ের সব থেকে বিস্ময়কর বিষয় এটাই দেখতে পাচ্ছ যে - যেটা প্র্যাকটিক্যালেও তোমরা পালন করছো এবং নিমিত্ত হয়ে সেই স্মরণিককেও তোমরা পালন করছো। চৈতন্যও তোমরা, চিত্রও - দুই-ই একসাথে।

৫ হাজার বছর পূর্বে প্রত্যেকে কি কি প্রাপ্ত করেছো, কী রূপে তৈরী হয়েছো, কীভাবে তৈরী হয়েছো - এই ৫ হাজার বছরের তোমাদের সম্পূর্ণ স্মরণিক চিত্র আর জীবনপঞ্জী স্পষ্ট ভাবে জেনে গেছো, শুনছোও আর দেখতে দেখতে আনন্দিতও হচ্ছ যে, এ তো আমাদেরই গায়ন - পূজন, আমাদেরই জীবন কথাই বর্ণিত হচ্ছে। ডবল ফরেনার্স, তোমরা তোমাদের স্মরণিক চিত্র দেখেছ তো ? চিত্র গুলিকে দেখে এমনই অনুভব হচ্ছে তো যে, এ তো আমারই চিত্র। অরিজিনাল তোমার চিত্র তো বানাতে পারবে না। সেইজন্য মনের ভাবনা থেকে যতটুকু টাচ্ হয়েছে, সেই মতো তারা চিত্র বানিয়ে দিয়েছে। তাই আজও তোমরা সবাই 'শিবরাত্রি' পালন করছো। প্র্যাকটিক্যাল শিব জয়ন্তী তো রোজ পালন করই । কেননা সঙ্গমযুগই হল অবতরণের যুগ, শ্রেষ্ঠ কর্তব্য, শ্রেষ্ঠ চরিত্র বানানোর যুগ। কিন্তু এই অলৌকিক যুগের মাঝে এই স্মরণিক দিনও পালন করছো তোমরা । তোমাদের সকলের পালন করা হল - “মিলন উদযাপন করা” আর তাদের পালন করা হল - ‘আহ্বান করা’। তাদের হল ‘ডাকা’ আর তোমাদের হল ‘পেয়ে যাওয়া’। তারা বলবে ‘এসো’ আর তোমরা বলবে ‘এসে গেছে’। পেয়ে গেছি। স্মরণিক আর প্র্যাকটিক্যালে কতখানি রাতদিনের প্রভেদ। বাস্তবে এই দিন হল ভোলানাথ বাবার দিন। ভোলানাথ অর্থাৎ কোনো হিসাব না করে অগুণতি যিনি দিয়ে দেন। এমনিতে তো হিসাব হয়ে থাকে যতটা আর ততটার। যেমন করবে, তেমন পাবে। এটাই হল হিসাব। তবে ভোলানাথ কেন বলা হয় ? কেননা এই সময় দেওয়ার ব্যাপারে যতটা আর ততটার হিসাব তিনি দেখেন না। এক এর পদ্মগুণ (লক্ষ কোটি) হিসাব। তাহলে অগুণতি হয়ে গেল না ! কোথায় এক আর কোথায় পদ্ম। পদ্ম হল শেষ শব্দ, সেইজন্য পদ্ম বলা হয়। অগণিত ভাবে প্রদানকারী ভোলা ভান্ডারীর দিন স্মরণিক রূপে পালিত হয়। তোমরা তো এতো পেয়েছ যে, এখন তো ভরপুর হয়েই গেছ। এছারাও পরবর্তী ২১ প্রজন্মতেও ভরপুর থাকবে।

এত জন্মের গ্যারান্টি আর কেউ কী করতে পারে ? যত বড়ই দাতা হোক না কেন অনেক জন্মের ভরপুর ভান্ডার হওয়ার গ্যারান্টি কেউই করতে পারবে না। তাই তো তিনি ভোলানাথ যে। নলেজফুল হয়েও তিনি ভোলা...সেইজন্যই তাঁকে ভোলানাথ বলা হয়। এমনিতে যদি হিসাব করো, তবে এক একটি সংকল্পের হিসাব জানতে পারা সম্ভব। কিন্তু তা জেনেও দেওয়ার ব্যাপারে তিনি ভোলানাথ হয়ে যান। আর তোমরা হলে সকলেই ভোলানাথ বাবার ভোলানাথ বাচ্চা।একদিকে বলা হচ্ছে ভোলানাথ, অন্যদিকে ভরপুর ভান্ডারী বলা হচ্ছে। স্মরণিকও দেখো কী সুন্দর করে পালন করে। যারা পালন করে তারা জানে না। কিন্তু তোমরা জানো। মুখ্যতঃ এই সঙ্গমযুগের যে পঠন-পাঠন, যার বিশেষতঃ হল চারটি সাবজেক্ট, সেই চারটি সাবজেক্টই স্মরণিক দিবসে পালন করে আসছে। কীভাবে ? পূর্বেও বলেছি যে, বিশেষতঃ এই উৎসবের দিন বিন্দু আর ফোঁটার মহত্ব রয়েছে। তো বিন্দু হল এই সময়ের স্মরণ অর্থাৎ যোগের সাবজেক্টের চিহ্ন । স্মরণে বিন্দু রূপ স্থিতিতেই স্থিত হও তোমরা, তাই না ? তো ‘বিন্দু’ হল স্মরণের চিহ্ন আর ফোঁটা হল - জ্ঞানের ভিন্ন ভিন্ন ফোঁটা। এই জ্ঞানের সাবজেক্টের চিহ্ন বা প্রতীক ফোঁটা রূপে দেখিয়েছে। ধারণার চিহ্ন হল এই দিন বিশেষ ব্রত রাখে। অর্থাৎ ব্রত ধারণ করে। ধারণাতেও তোমরা দৃঢ় সংকল্প করে থাকো। তো তোমরা ব্রত রাখো যে, এইরূপ সহনশীল বা অন্তর্মুখী অবশ্যই হয়েই দেখাবো। তো এই ব্রত ধারণ করে থাকো, তাই না ? এই ‘ব্রত’ হল ধারণার প্রতীক। আর সেবার প্রতীক হল ‘জাগরণ’। তোমরা তো সেবা করছোই - কাদের জাগানো জন্য ? অজ্ঞান নিদ্রা থেকে জাগানো, জাগরণ করা, জাগৃতি দেওয়া - এটাই হল তোমাদের সেবা । তো এই ‘জাগরণ’ হল সেবারই চিহ্ন। তাহলে চারটি সাবজেক্ট চলে এল, তাই না ! কিন্তু কেবল রূপরেখাকে তারা স্থূল ভাবে বদলে দিয়েছে। তবুও তো তারা ভাবনা যুক্ত হয় আর সর্বদাই সত্যিকারের ভক্তদের এই লক্ষণ থাকবে, তারা যে সংকল্পই করবে, তাতে তারা দৃঢ় থাকবে। সেইজন্য ভক্তদের প্রতিও বাবার স্নেহ রয়েছে। তবু তো তোমাদের স্মরণিক দ্বাপর থেকে পরম্পরা অনুসারে চালিয়ে যাচ্ছে। আর বিশেষতঃ এই দিন যেমন তোমরা এখানে সঙ্গমযুগে বারবার সমর্পণ সমারোহ উদযাপন করো, আলাদা আলাদা ভাবে পালনও করছো, এই রকমই তোমাদের এই ফাংশনেরও স্মরণিক, তারা নিজেদেরকে সমর্পণ করে না, পরিবর্তে পাঠাবলি দেয়। বলি চড়িয়ে দেয়। এমনিতে বাবা মজা করে বলেন যে, এই 'ম্যা ম্যা' - করাকে অর্থাৎ আমিত্ব ভাবের যখন সমর্পণ হবে অর্থাৎ সম্পূর্ণ হও। বাবা সম হও। যেমন ব্রহ্মাবাবা সর্বপ্রথমে কোন্ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ? আমি আর আমার-ভাব এর সমর্পণ সমারোহ পালন করেছিলেন। যে কোনো বিষয়েই 'আমি'-র পরিবর্তে সর্বদা ন্যাচারাল ভাষায়, সাধারণ বিষয়েও “বাবা” শব্দটিই শোনা গেছে। “আমি” শব্দ নয়।

আমি করছি। না। বাবা করাচ্ছেন। বাবা চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমি বলছি। না। *বাবা বলেন*। জাগতিক কোনো ব্যক্তি বা বৈভবের প্রতি আসক্তি হল “আমার” ভাব। অতএব আমিত্ব ভাবকে আর আমি ভাবকে সমর্পণ করা। একেই বলা হয় 'বলি চড়া'। বলি চড়া অর্থাৎ মহাবলী হওয়া। তো এটাই হল সমর্পণ হওয়ার লক্ষণ । তো বাপদাদা ভক্তদেরকে একটি বিষয়ে ধন্যবাদ দেন যে - যেভাবেই হোক না কেন ভারতে কিম্বা সব দেশে উৎসাহের ঢেউ তারা ছড়িয়ে দেয়। উৎসব বানিয়ে দিয়েছে, এটা তো বেশ ভালোই। দুই দিনের জন্য হোক বা একদিনের জন্য, কিন্তু উৎসাহের ঢেউ তো ছড়িয়ে যায়। সেইজন্যই তো উৎসব বলা হয়। তবুও অল্প সময়ের জন্য হলেও বিশেষ ভাবে বাবার দিকেই মেজরিটির অ্যাটেনশন তো অন্তত যায়। তো এই বিশেষ দিনে তোমরা বিশেষ কী করবে ? যেমন ভক্তিতে কেউ কেউ চিরদিনের জন্য ব্রত ধারণ করে আবার কারো কারো সাহসের অভাব থাকায় এক মাসের জন্য নেয়, একদিনের জন্য নেয় বা অল্প সময়ের জন্য নেয়। তারপর এই ব্রত ছেড়ে দেয়। তোমরা তো এমনটা ক'রো না তাই না ! মধুবনে তো ধরিত্রীতে পা থাকে না তোমাদের। তারপর (বিদেশে) যখন ফিরে যাবে তখন কী ধরিত্রীতে ফিরে আসবে নাকি ওপরেই থাকবে ? সর্বদা উপর থেকে নীচে এসে কর্ম করবে ? নাকি নীচে থেকেই কর্ম করবে ? উপরে থাকা অর্থাৎ উপরের স্থিতিতে থাকা। উপরে মানে কোনো ছাদে ঝুলে থাকা নয়। উচ্চ স্থিতিতে স্থিত হয়ে যে কোনো সাধারণ কর্ম করা অর্থাৎ নীচে আসা, কিন্তু সাধারণ কর্ম হলেও স্থিতি হবে উপরের অর্থাৎ উচ্চ। যেমন বাবাও সাধারণ তন নেন, তাই না ! সাধারণ কর্মও করবেন। যেমন তোমরা কথা বলবে, তেমন তিনিও বলবেন। তেমনই চলবেন। অর্থাৎ কর্ম সাধারণ, তনই হল সাধারণ, কিন্তু সাধারণ কর্ম করলে স্থিতি থাকত উঁচু। ঠিক তেমনই তোমাদেরও স্থিতি যেন সদা উচ্চ থাকে।

যেমন আজকের দিনকে তোমরা অবতরণের দিন বলে থাকো, তো রোজ অমৃতবেলায় এমনই ভাবো যে, ঘুম থেকে নয়, শান্তিধাম থেকে কর্ম সম্পাদন করবার জন্য অবতরিত হয়েছি। আর রাতে কর্ম সমাপ্তি শেষে শান্তিধামে চলে যাও। তো অবতরিত হয়েছোই শ্রেষ্ঠ কর্ম করবার জন্য। তাকে জন্ম বলা হয় না। বলা হয় অবতরণ। উপরের স্থিতি থেকে নীচে আসে - এটা হল অবতরণ। তো এইরূপ স্থিতিতে থেকে সকল কর্ম করলে সাধারণ কর্মও অলৌকিক কর্মে পরিবর্তিত হয়ে যাবে। অন্যরা যেমন খাবার খায় আর তোমরা বলো - আমরা ব্রহ্মা ভোজন খাই। তফাৎ হয়ে গেল না ! চলছো - ফিরছো কিন্তু তোমাদের চলাফেরা হল ফরিস্তার, ডবল লাইট। ডবল লাইট স্থিতিতে চলো তোমরা। তো অলৌকিক চলাফেরা, অলৌকিক কর্ম হয়ে গেল। তাই আজকের দিন কেবল অবতরণের দিন নয়, বরং সঙ্গমযুগই হল অবতরণ দিবস।

আজকের দিনে তোমরা বাপদাদাকে অভিনন্দন জানিয়ে থাকো। কিন্তু বাপদাদা বলেন - “আগে তোমরা”। বাচ্চারা যদি না থাকত, তবে “বাবা” বলে কারা ডাকত ? বাচ্চারাই বাবাকে ডাকে বাবা বলে। সেইজন্য প্রথমে অভিনন্দন বাচ্চাদেরকে। তোমরা সবাই বার্থ ডে সঙ্ গাও না ? হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ....। বাপদাদাও বলেন হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ। বার্থ ডে’র অভিনন্দন তো বাচ্চারা বাবাকে দিয়েছে। বাবাও বাচ্চাদেরকে দিয়েছেন। আর অভিনন্দন অর্থাৎ উৎসাহের দ্বারাই তো তোমরা প্রতিপালিত হচ্ছ। *তোমরা প্রতিপালিত হচ্ছ কীভাবে ? বাবার, পরিবারের অভিনন্দনের দ্বারাই তো প্রতিপালিত হচ্ছ তোমরা। অভিনন্দনেই তো নাচছো, গাইছো, উড়ছো তোমরা। এই পালনাও বড়ই আশ্চর্যের। পরস্পরকে তোমরা প্রতি মুহূর্তে কী দিয়ে থাকো ? অভিনন্দন (উৎসাহ)। আর এটাই হল পালনার বিধি। যে যেমনই হোক, সে তো বাপদাদাও জানেন। তোমরাও জান যে, নম্বর অনুক্রমে তো থাকবেই। যদি নম্বর অনুক্রমে না হয়, তবে তো সত্যযুগে দেড় লক্ষ রাজসিংহাসন বানাতে হবে। সেইজন্য নম্বর অনুক্রমে হতেই হয়। নম্বর অনুসারে তো হতেই হবে। কিন্তু কখনো কারো বিষয়ে তোমরা হয়ত বুঝতে পারছ যে তার এটা ঠিক নয়, সে সঠিক কাজ করছে না। রঙ্-কে রাইট করবার বিধি বা যথাযথ কাজ করছে না। কিন্তু তাকে সঠিকটা শিখিয়ে দেওয়ার বিধি - কখনোই তা সরাসরি না বলা যে, তুমি ভুল। তবে সে আরও মুহ্যমান হয়ে পড়বে। প্রথমে তাকে ভালো ভালো বলে আগে তো থামাও। প্রথমে জল তো ঢালো। তারপর বলো আগুন কেন লেগেছে। আগেই এটা ব'লো না যে, তুমি এইরকম, তুমি এটা করেছ, ওটা করেছ। আগে ঠান্ডা জল ঢালো। পরে সেও বুঝতে পারবে যে, হ্যাঁ, আগুন লাগার কারণ কী। আর আগুন নেভাতেও কীভাবে হবে। যদি তুমি খারাপকে খারাপ বলে দাও, তবে আগুনে তেল ঢেলে দিলে। সেইজন্য খুব ভালো, খুব ভালো বলে, পরে তাকে যদি যদি কিছু বলো, তবে সে শোনার, ধারণ করবার সাহস তখন তার এসে যাবে। সেইজন্যই বলছি যে, খুব ভালো খুব ভালো - এটাই হল অভিনন্দন । যেমন বাপদাদাও কখনো ডাইরেক্ট রঙ্ বলবেন না, মুরলীর মাধ্যমে বলে দেবেন - রাইট কোনটা, রঙ্ কোনটা। কিন্তু কেউ যদি সোজা এসে জিজ্ঞাসা করে আমি কি রঙ্ ? বাপদাদা বলবেন - না, তুমি তো একেবারে রাইট। কেননা সেই সময় তার মধ্যে সাহস থাকে না। যেমন কোনো পেশেন্ট যাওয়ার সময়, যখন সে অন্তিম শ্বাস নিচ্ছে, তখনও যদি ডাক্তারকে সে জিজ্ঞাসা করে - আমি কী বাঁচবো না ? ডাক্তার কখনোই বলবে না যে, হ্যাঁ, আপনার সময় হয়ে গেছে। কেননা সেই সময় পেশেন্টের সাহস থাকে না। কারো হার্ট দুর্বল তুমি যদি তাকে এমন কোনো কথা বলে দাও, তাতে তার হার্টফেলই হয়ে গেল ! অর্থাৎ পুরুষার্থে পরিবর্তন করবার শক্তি আসবে না। তো সঙ্গমযুগই হল অভিনন্দন বা উৎসাহ প্রদানের দ্বারা বৃদ্ধি হওয়ার যুগ। এই অভিনন্দনই হল শ্রেষ্ঠ পালনা*। সেইজন্য তোমাদের এই অভিনন্দনের পালনার স্মরণিক হল যখনই কোনো দেবী দেবতার দিন পালন করা হয়, তাকে বড় একটা দিন বলে মানা হয়। দীপমালা হবে, শিব রাত্রি হলে তো বলবে আজকে অনেক বড় দিন। যে উৎসবই হবে, তাকে বড় দিন বলবে তারা। কেননা তোমাদের হৃদয় হল অনেক বড়, তাই তো তারা বড় দিন বলে থাকে। তো একে অপরকে অভিনন্দন জানানো, এটাই তো হল অনেক বড় হৃদয়। বুঝেছো - এমন নয় যে রঙ্-কে রঙ্ মানবে না। বরং একটু ধৈর্য ধরো, ইশারা তো দিতেই হবে, সঠিক সময়টা তো দেখো। সে মারা যাচ্ছে, আর তুমি তাকে বলছো - মরে যাও, মরে যাও। তাই সময়টাকে বিবেচনা করো, তার সাহসটাকেও মাথায় রাখো। খুব ভালো খুব ভালো বললে সাহস এসে যায়। কিন্তু অন্তর থেকে বলো। এমন নয় যে, বাইরে থেকে বললে আর সে বুঝে যাবে যে আমাকেই বলছে। এটা হল অনুভূতির বিষয়। মনে যদি দয়া বা ক্ষমার মনোভাব থাকে, তবে অপরজনকেও সেই ভাব স্পর্শ করবে। সেইজন্য সর্বদা অভিনন্দন দিতে থাকো। অভিনন্দন নিতে থাকো। এই অভিনন্দন হল বরদান। যেমন আজকের দিনে গাওয়া হয় - শিবের ভান্ডার ভরপুর.... এ তো তোমাদের জন্যও কীর্তন, কেবল বাবার জন্য নয়। সদা তোমাদের ভান্ডার ভরপুর যেন থাকে। দাতার সন্তান, দাতা হয়ে যাও। পূর্বেও বলেছি না - ভক্ত হল লেবতা আর তোমরা হলে প্রদানকারী 'দেবতা', তো দাতা মানেই হল প্রদানকারী। কাউকে সামান্য কিছু অন্তত দিয়েও যদি তারপর তার কাছে থেকে কিছু নাও, তাতে সে কিছু ফিল করবে না। তখন তুমি যা বলবে তা সে শুনবে। কিন্তু আগে তাকে দাও। সাহস দাও উৎসাহ দাও। খুশী দাও, তারপর তাকে কিছু বোঝালে সে বুঝবে। রাজি হবে। রোজ উৎসব পালন করতে থাকো। রোজ বাবার সাথে মিলন উদযাপন করা - এটাই হল উৎসব পালন করা। তাই রোজই হল উৎসব। আচ্ছা !

চতুর্দিকের বাচ্চাদেরকে, সঙ্গমযুগের প্রতিটি দিনকে অবতরণ দিবসের অবিনাশী অভিনন্দন। সদা বাবা সম দাতা এবং বরদাতা হয়ে সকল আত্মাদেরকে ভরপুরকারী, মাস্টার ভোলানাথ বাচ্চাদেরকে, সর্বদা স্মরণে থেকে প্রতিটি কর্মকে স্মরণীয় করে দেওয়া বাচ্চাদেরকে সর্বদা স্ব উন্নতি আর সেবার উন্নতিতে উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে অগ্রসর হওয়া শ্রেষ্ঠ বাচ্চাদেরকে, বিশেষতঃ আজকের স্মরণিক দিবস শিব জয়ন্তী তথা ব্রাহ্মণ জয়ন্তী হীরে তুল্য জয়ন্তী, সর্বদা সকলকে সুখী বানাতে থাকা, সম্পন্ন বানাতে থাকা বাচ্চাদেরকে জয়ন্তীর অভিনন্দন আর স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।

বরদান:-
সকল শক্তিকে অর্ডার অনুযায়ী পরিচালনকারী মাস্টার রচয়িতা ভব

কর্ম শুরু করবার পূর্বে যেরূপ কর্ম সেইরূপ শক্তির আহ্বান করো। মালিক হয়ে অর্ডার করো। কেননা এই সর্ব শক্তি গুলি হল তোমাদের ভুজ সম। তোমার ভুজ গুলি তোমার অর্ডার ছাড়া কিছু করতে পারবে না। অর্ডার করো সহন শক্তি কার্য সফল করো, তো দেখো সফল হয়েই রয়েছে। কিন্তু অর্ডার করবার পরিবর্তে তোমরা ভয় পেয়ে যাও - করতে পারব কী পারব না। এই রকম ভয় যদি থাকে, তবে তোমার অর্ডার চলবে না (কাজ করবে না)। সেইজন্য মাস্টার রচয়িতা হয়ে সকল শক্তিকে অর্ডার অনুযায়ী পরিচালনা করবার জন্য নির্ভয় হও।

স্লোগান:-
আশ্রয়দাতা বাবাকে প্রত্যক্ষ করিয়ে সকলকে পার লাগাও।