31.08.2020 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


প্রশ্নঃ -
প্রশ্নঃ - যারা পুরোপুরি ৮৪-বার জন্মগ্রহণ করবে, তাদের পুরুষার্থ কেমন হবে ?

উত্তরঃ -
তাদের বিশেষ পুরুষার্থ হবে নর থেকে নারায়ণ হওয়ার। নিজেদের কর্মেন্দ্রিয়গুলির উপর সম্পূর্ণ কন্ট্রোল থাকবে। তারা কুদৃষ্টিসম্পন্ন হবে না। যদি এখনও পর্যন্ত কাউকে দেখলে বিকারী চিন্তা-ভাবনা আসে, তবে তারা কুদৃষ্টিসম্পন্ন, তখন বুঝে নেবে যে, তারা সম্পূর্ণ ৮৪-বার জন্মগ্রহণ করা আত্মা নয়।

গীতঃ-
এই পাপের দুনিয়া থেকে কোথাও দূরে নিয়ে চল.....

ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি-মিষ্টি আত্মা-রূপী বাচ্চারা জানে যে, এ হলো পাপের দুনিয়া। মানুষ পূণ্যের দুনিয়াকেও জানে। মুক্তি-জীবনমুক্তি পূণ্যের দুনিয়াকে বলা হয়। সেখানে পাপকর্ম হয় না। পাপ হয় দুঃখধাম, রাবণ-রাজ্যে। দুঃখপ্রদানকারী রাবণকেও দেখেছো। রাবণ কোনো বস্তু নয় তবুও কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। বাচ্চারা জানে যে, আমরা এ'সময় রাবণ-রাজ্যে রয়েছি কিন্তু তা পার হয়ে এসেছি। আমরা এখন পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে রয়েছি। বাচ্চারা যখন এখানে আসে তখন তাদের বুদ্ধিতে একথা থাকে যে -- আমরা সেই বাবার নিকটে যাই যিনি আমাদের মানুষ থেকে দেবতায় পরিণত করেন। সুখধামের মালিক করে দেন। যিনি সুখধামের মালিক করে দেন তিনি কোনো ব্রহ্মা নন, কোনো দেহধারীও নন। তিনিই হলেন শিববাবা, যিনি বিদেহী। তোমাদেরও দেহ ছিল না, পুনরায় তোমরা শরীর ধারণ করে জনম-মরণে আসো। তাই তোমরা জানো যে, আমরা অসীম জগতের পিতার কাছে যাই। তিনি আমাদের শ্রেষ্ঠ মত দেন। তোমরা এভাবে পুরুষার্থ করলে স্বর্গের মালিক হতে পারবে। স্বর্গকে সকলেই স্মরণ করে। জানে যে, নতুন দুনিয়া অবশ্যই রয়েছে। সেটিও অবশ্যই কেউ স্থাপন করবে। নরকও কেউ স্থাপন করে। তোমাদের সুখধামের ভূমিকা কখন সম্পূর্ণ হয় তাও তোমরা জানো। পুনরায় রাবণ-রাজ্যে তোমরা দুঃখী হতে থাকো। এ'সময় এ হলো দুঃখধাম। যদিও কত কোটিপতি, পদ্মপতি রয়েছে তবুও অবশ্যই পতিত দুনিয়া বলবে। এ হলো কাঙ্গাল দুনিয়া, দুঃখী দুনিয়া। যদিও কত বড়-বড় বাড়ি-ঘর, সুখের সমস্ত সাধন আছে, তবুও বলা হবে পতিত পুরানো দুনিয়া। বিষয় বৈতরণী নদীতে হাবু-ডুবু খেতে থাকে। এও জানে না যে, বিকারে যাওয়া পাপ। বলে -- এটা ছাড়া সৃষ্টির বৃদ্ধি কিভাবে হবে ? আবার আবাহনও করে -- হে ঈশ্বর! হে পতিত-পাবন! এসে এই পতিত দুনিয়াকে পবিত্র করো। আত্মা বলে শরীর দ্বারা। আত্মাই অপবিত্র হয়েছে, তাই তো ডাকে। স্বর্গে একজনও পতিত থাকে না।

বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, সঙ্গমযুগে যারা ভাল পুরুষার্থী তারাই বোঝে যে আমরা ৮৪ জন্ম নিয়েছি পুনরায় এই আমরা লক্ষ্মী-নারায়ণের সাথীরাই সত্যযুগে রাজ্য করবো। শুধু একজনই তো ৮৪ জন্ম নেয়নি, তাই না! রাজার সঙ্গে প্রজাও তো চাই। তোমাদের ব্রাহ্মণদের মধ্যেও নম্বরের ক্রমানুসারে রয়েছে। কেউ রাজা-রানী হয়, কেউ প্রজা। বাবা বলেন -- বাছা, এখনই তোমাদের দৈবী-গুণ ধারণ করতে হবে। এই চোখ কুদৃষ্টিসম্পন্ন, কাউকে যদি বিকারের দৃষ্টিতে দেখে তবে তাদের ৮৪ জন্ম হবে না। তারা নর থেকে নারায়ণ হতে পারবে না। যখন এই নয়নের উপর বিজয়প্রাপ্ত করে নেবে তখন কর্মাতীত অবস্থা হবে। সবকিছু চোখের উপরেই নির্ভর করে, চোখই ধোঁকা দেয়। আত্মা এই জানালা (চোখ) দ্বারা দেখে, এঁনার মধ্যে ডবল আত্মা রয়েছে। বাবাও এই জানালা দিয়ে দেখছেন। আমাদের দৃষ্টিও আত্মার উপর পড়ে। বাবা আত্মাদের-কেই বোঝান। তিনি বলেন, আমিও শরীর ধারণ করেছি তবেই বলতে পারি। তোমরা জানো যে, বাবা আমাদের সুখের দুনিয়ায় নিয়ে যায়। এ হলো রাবণ-রাজ্য। তোমরা এই পতিত দুনিয়া থেকে কিনারা করে নাও। কেউ অনেক এগিয়ে গেছে, কেউ পিছনে চলে গেছে। প্রত্যেকেই বলে, পার করে দাও। এখন পারে যাবে তো সত্যযুগে। কিন্তু যদি উচ্চপদ প্রাপ্ত করতে হয় তবে পবিত্র হতে হবে। পরিশ্রম করতে হবে। মুখ্যকথা হলো বাবাকে স্মরণ করো তবেই বিকর্ম বিনাশ হবে। এটিই হলো প্রথম (প্রধান) বিষয়।

তোমরা এখন জানো যে, আমরা আত্মারা হলাম অভিনেতা। সর্বপ্রথমে আমরা সুখধামে আসি, পরে পুনরায় দুঃখধামে আসি। এখন বাবা পুনরায় সুখধামে নিয়ে যেতে এসেছেন। তিনি বলেন, আমাকে স্মরণ করো আর পবিত্র হও। কাউকে দুঃখ দিও না। পরস্পরকে অত্যন্ত দুঃখ দিয়ে থাকে। কারোর মধ্যে কাম-বিকারের ভুত আসে, কারোর মধ্যে ক্রোধ আসে, হাতাহাতি করে। বাবা বলেন, এ হলো দুঃখপ্রদানকারী পাপাত্মা। পূণ্যাত্মা কিভাবে হবে ? এখনও পর্যন্ত পাপ করে চলেছো। এরফলে নাম বদনাম করে দেয়। সকলে কি বলবে! বলে আমাদের ভগবান পড়ান। আমরা মানুষ থেকে দেবতা, বিশ্বের মালিক হয়ে যাই। তারা এমন কার্য করে কী ? তাই বাবা বলেন, রোজ রাতে নিজেকে দেখো। যদি সুপুত্র হও তবে চার্ট পাঠাও। যদি কেউ চার্ট পাঠায়ও কিন্তু সাথে লেখে না যে আমরা কাউকে দুঃখ দিয়েছি বা এই ভুল করেছি। স্মরণ করতে থাকে আর উল্টো কার্যও করে, সেও ঠিক নয়। উল্টাপাল্টা কর্ম তখনই করে যখন দেহ-অভিমানী হয়ে পড়ে।

এই চক্র কিভাবে আবর্তিত হয় -- এ অতি সহজ বিষয়। একদিনেই টিচার হতে পারো। বাবা তোমাদের ৮৪-র রহস্য বোঝান, শিক্ষা দেন। পুনরায় এর উপর মনন করতে হবে। আমরা ৮৪ জন্ম কিভাবে নিয়েছি ? যিনি শেখান সেই টীচারের থেকে ভালভাবে দৈবী-গুণ ধারণ করে নিই। বাবা প্রমাণ সহকারে বলতে পারেন। দেখায় যে -- বাবা আমাদের চার্ট দেখো। আমরা কাউকে সামান্যতম দুঃখও দিইনি। বাবা বলবে, এই বাচ্চা অতি মিষ্টি। ভাল সুগন্ধ নির্গত হচ্ছে। টীচার হওয়া সেকেন্ডের কাজ। স্মরণের যাত্রায় স্টুডেন্ট টিচারের থেকেও তীব্রগতিতে এগিয়ে যেতে পারে। তাহলে টিচারের থেকেও উচ্চপদ লাভ করবে। বাবা জিজ্ঞাসা করেন -- কাকে শিক্ষা দাও ? প্রত্যহ শিবের মন্দিরে গিয়ে শিক্ষা প্রদান করো। শিববাবা কিভাবে এসে স্বর্গ স্থাপন করেন ? স্বর্গের মালিকে পরিনত করেন। বোঝানো অতি সহজ। বাবাকে চার্ট পাঠিয়ে দেয় -- বাবা আমাদের স্থিতি এরকম। বাবা জিজ্ঞাসা করেন -- বাছা! কোনো বিকর্ম করো না তো ? ক্রিমিনাল আই (কুদৃষ্টি) কোনো উল্টোপাল্টা কার্য করায় না তো ? নিজেদের আচার-আচরণ (ম্যানার্স), চরিত্র দেখতে হবে। চোখই চাল-চলনের সম্পূর্ণ আধার। চোখ অনেকভাবে ধোঁকা দেয়। জিজ্ঞাসা না করে সামান্য কোন জিনিস তুলে খেলে সেটাও পাপকর্ম হয়ে যায় কারণ আজ্ঞা ছাড়া নিয়েছো, তাই না! এখানে নিয়ম অনেক। শিববাবার যজ্ঞ, তাই না! ইনচার্জকে জিজ্ঞাসা না করে কোন জিনিস খেতে পারো না। একজন খেলে অন্যরাও তেমন করতে থাকবে। বাস্তবতঃ এখানে কোনো জিনিস তালাবন্ধ করে রাখার প্রয়োজন নেই। নিয়ম রয়েছে যে, এই ঘরের ভিতরে, রান্নাঘরের সম্মুখে কোনো অপবিত্রের আসা উচিত নয়। বাইরে তো অপবিত্র-পবিত্রের কোনো কথাই নেই। কিন্তু নিজেকে পতিত তো বলে, তাই না! এখানে সকলেই অপবিত্র। কেউ বল্লভাচারীকে অথবা শঙ্করাচার্যকে ছুঁতে পারে না কারণ তারা মনে করে আমরা পবিত্র, এরা পতিত। যদিও এখানে সকলের শরীরই অপবিত্র তবুও পুরুষার্থ অনুসারে বিকার থেকে সন্ন্যাস নেয়। তাই নির্বিকারীর সম্মুখে বিকারী মানুষ মাথা নত করে। তারা বলে, ইনি অতি ধর্মাত্মা-প্রকৃতির মানুষ। সত্যযুগে তো কেউ ম্লেচ্ছ(শূদ্র) হয় না। ওটা হলো পবিত্র দুনিয়া। ক্যাটাগরি একটাই। তোমরা সমগ্র এই রহস্যকে জানো। শুরু থেকে নিয়ে আদি-মধ্য-অন্তের রহস্যকে বুদ্ধিতে রাখা উচিত। আমরা সবকিছুই জানি। বাকি আর কিছু জানার থাকেই না। রচয়িতাকে জানা, সূক্ষ্মলোককে জানা, ভবিষ্যতের পদপ্রাপ্তিকে জানা যারজন্য তোমরা পুরুষার্থ করো পুনরায় যদি চাল-চলন এমন হয় তাহলে উচ্চপদ লাভ করতে পারবে না। কাউকে দুঃখ দেয়, বিকারে যায় অথবা কুদৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাহলে এও হলো পাপ। দৃষ্টি পরিবর্তন করা অতি পরিশ্রমের। দৃষ্টি অতি সুন্দর হওয়া উচিত। চোখযুগলই দেখে যে --এরা ক্রোধ করছে তখন নিজেও লড়তে শুরু করে। শিববাবার প্রতি সামান্যতম ভালবাসাও নেই, স্মরণও করে না। বলিহারী শিববাবার। বলিহারী গুরু তোমার..... বলিহারী সেই সদ্গুরুর যিনি গোবিন্দ শ্রীকৃষ্ণের সাক্ষাৎকার করিয়েছেন। গুরুর দ্বারাই তুমি গোবিন্দ হও। সাক্ষাৎকারে শুধু মুখ মিষ্টি হয় না। মীরার মুখ মিষ্টি হয়েছিল কী ? স্বর্গে তো সত্যি করে যাই নি ? সে হলো ভক্তিমার্গ, ওটাকে স্বর্গের সুখ বলা যাবে না। গোবিন্দকে কেবল দেখলেই হবে না, এমন হতে হবে। তোমরা এখানে এসেছোই এরকম হতে। এই নেশা থাকা উচিত যে, আমরা ওঁনার কাছে যাই যিনি আমাদের এরকমভাবে তৈরী করেন। তাই বাবা সকলকে এই পরামর্শ দেন যে চার্টে এও লেখো -- চোখ ধোঁকা দেয় নি তো ? কোন পাপ হয়ে যায় নি তো কি ? চোখ কোন না কোন বিষয়ে অবশ্যই ধোঁকা দেয়। চোখ সম্পূর্ণ শীতল হয়ে যাওয়া উচিত। নিজেকে অশরীরী মনে করো। এমন কর্মাতীত অবস্থা ভবিষ্যতে হবে, সেও তখন, যখন বাবাকে নিজের চার্ট পাঠিয়ে দেবে। অবশ্যই ধর্মরাজের রেজিস্টারে সব অটোমেটিক্যালী জমা হয়ে যায়। কিন্তু যেহেতু বাবা সাকারে (দেহে) এসেছেন তাই বলেন -- সাকারীর (ব্রহ্মা) জানা উচিত। তাহলে সতর্ক করবে। কুদৃষ্টিসম্পন্ন অথবা দেহী-অভিমানী হলে বায়ুমন্ডল অশুদ্ধ করে দেবে। এখানে বসেও বুদ্ধিযোগ বাইরে চলে যায়। মায়া অত্যন্ত ধোঁকা দেয়। মনে অতি অশান্ত। কত পরিশ্রম করতে হয় --- এমন হওয়ার জন্য। বাবার কাছে আসে, বাবা আত্মাদের জ্ঞান-শৃঙ্গার করান। তোমরা জানো যে, আমরা আত্মারা জ্ঞানের দ্বারা পবিত্র হবো। তখন শরীরও পবিত্র পাবো। আত্মা এবং শরীর দুই-ই পবিত্র হয় সত্যযুগে। পুনরায় আধাকল্প রাবণ-রাজ্য হয়। মানুষ বলবে, ভগবান এরকম কেন করেছে ? এই অনাদি ড্রামা পূর্ব-নির্ধারিত। ভগবান কিছু করেছে কি, না করে নি। সত্যযুগে হয়ই এক দেবী-দেবতা ধর্ম। কেউ-কেউ বলে এমন ভগবানকে আমরা কেনই বা স্মরণ করবো ? কিন্তু তোমাদের অন্য ধর্মের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। যারা কাঁটা তারাই এসে ফুল হবে। মানুষ বলে যে, ভগবান এসে কি কেবল ভারতবাসীদেরই স্বর্গে নিয়ে যাবে! আমরা মানবো না, ভগবানেরও দু'চোখ আছে কি ? কিন্তু এই ড্রামাও নির্ধারিত। সকলেই যদি স্বর্গে আসে তবে অনেক ধর্মের ভূমিকা কিভাবে পালিত হবে ? স্বর্গে এত কোটি হয় না। সর্বপ্রথম মুখ্যকথা হলো ভগবান কে ? তাঁকে জানো। সেটাই যদি না বোঝো তবে অনেকরকমের প্রশ্ন করতেই থাকবে। নিজেকে আত্মা মনে করলে তখন বলবে যে, একথা তো সঠিক। আমাদের পতিত থেকে পবিত্র হতে হবে। স্মরণ করতে হবে সেই একজনকেই। সর্ব ধর্মেই ঈশ্বরকে স্মরণ করে।

বাচ্চারা, তোমরা এখন এ'জ্ঞান প্রাপ্ত করছো। তোমরা জানো যে, এই সৃষ্টি-চক্র কীভাবে আবর্তিত হয়। প্রদর্শনীতেও তোমরা কত বোঝাও। কিন্তু বেরোয় অতি অল্পসংখ্যকই। কিন্তু তখন কি বলবে যে সে'জন্য করা উচিত নয়, না এভাবে বলবে না। ড্রামায় ছিল, করেছি, কোথাও প্রদর্শনী থেকে বেরোয় আবার কোথাও বেরোয়ও না। ভবিষ্যতে আসবে, উচ্চপদ প্রাপ্তির জন্য পুরুষার্থ করবে। কেউ যদি পদপ্রাপ্তি কম করতে চায় তবে এত পুরুষার্থ করবে না। তথাপি বাবা বাচ্চাদের বোঝান যে, কোনো বিকর্ম কোরো না। এও নোট করো যে, আমরা কাউকে দুঃখ দিইনি তো ? কারোর সঙ্গে লড়াই-ঝগড়া নেই তো ? উল্টাপাল্টা কিছু বলো না তো ? কোনো কর্তব্যহীন কার্য করো না তো ? বাবা বলেন, যে বিকর্ম করেছো তা লেখো। এ তো জানো যে, দ্বাপর থেকে বিকর্ম করতে-করতে এখন অতি বিকর্মকারী হয়ে গেছো। বাবাকে লিখে দিলে বোঝ হাল্কা হয়ে যাবে। লেখে যে, আমরা কাউকে দুঃখ দিইনা। বাবা বলবেন, আচ্ছা! চার্ট নিয়ে এসো দেখবো। বাবা ডাকেনও এমন করে -- আমার সুসন্তানদের আমি একটু দেখি তো ? সুপুত্রদের বাবা অত্যন্ত ভালবাসেন। বাবা জানেন যে, এখনও কেউ সম্পূর্ণ হয় নি। বাবা প্রত্যেককে দেখেন যে, কিভাবে পুরুষার্থ করছে। বাচ্চারা যখন চার্ট লেখে না তাহলে অবশ্যই কিছু দুর্বলতা আছে যা বাবার কাছে লুকোয়। সত্যিকারের সৎ সন্তান তাকেই মনে করি, যারা চার্ট লেখে। চার্টের সঙ্গে ম্যানার্সও থাকা উচিত। আচ্ছা।

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১) নিজের বোঝা হাল্কা করার জন্য যাকিছু বিকর্ম হয়েছে তা বাবার কাছে লিখে দিতে হবে। এখন কাউকে আর দুঃখ দেবে না। সুপুত্র হয়ে থাকতে হবে।

২) নিজের দৃষ্টিকে সু বা স্বচ্ছ করতে হবে। চোখ যেন ধোঁকা না দেয় -- সেবিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। নিজের আচার-আচরণ (ম্যানার্স) অত্যন্ত সঠিক রাখতে হবে। কাম-ক্রোধের বশবর্তী হয়ে কোনো পাপ করা উচিত নয়।

বরদান:-
অতীতকে চিন্তনে না এনে সম্পূর্ণ বিরাম (ফুলস্টপ) প্রদানকারী তীব্র পুরুষার্থী ভব

ব্যাখা :- এখনও পর্যন্ত যাকিছু হয়েছে --- তাতে ফুলস্টপ লাগিয়ে দাও। অতীতকে চিন্তায় এনো না -- এটাই হলো তীব্র পুরুষার্থ। যদি কেউ অতীতকে নিয়ে চিন্তা করে তবে সময়, শক্তি, সঙ্কল্প সবই অপচয় হয়ে যায়। এখন অপচয় করার সময় নেই কারণ সঙ্গমযুগের দুটি মুহূর্ত অর্থাৎ দু'সেকেন্ডও যদি অপচয় করো তাহলে অনেক বছর নষ্ট হয়ে যাবে, তাই সময়ের গুরুত্বকে জেনে এখন অতীতের বিষয়ে ফুলস্টপ লাগাও। ফুলস্টপ করে দেওয়া অর্থাৎ সর্ব ধন-সম্পদে (খাজানা) পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া।

স্লোগান:-
যখন প্রতিটি সঙ্কল্প শ্রেষ্ঠ হবে, তখন নিজের এবং বিশ্বের কল্যাণসাধন হবে।