15.08.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
বাবা যেমন গাইড, সেই রকম গাইড হয়ে সকলকে বাড়ীর রাস্তা বলে দিতে হবে, অন্ধের লাঠি
হয়ে উঠতে হবে"
প্রশ্নঃ -
ড্রামার কোন্
রহস্যকে জানতে পারলে বাচ্চারা অসীম খুশিতে থাকতে পারবে ?
উত্তরঃ -
যারা জানে যে, ড্রামা অনুসারে এখন এই পুরাতন দুনিয়ার বিনাশ হবে, প্রাকৃতিক বিপর্যয়
হবে। কিন্তু আমাদের রাজধানী তো অবশ্যই স্থাপন হবে - এটা কেউ আটকাতে পারবে না। হয়তো
অবস্থার উন্নতি-অবনতি হবে, কখনো খুব উৎসাহ থাকবে, কখনো একদম ঠান্ডা (নিরুৎসাহিত) হয়ে
যাবে। এতে ঘাবড়ে গেলে চলবে না। সকল আত্মার পিতা স্বয়ং ভগবান আমাদেরকে পড়াচ্ছেন, তাই
খুশিতে থাকতে হবে।
গীতঃ-
সভার মাঝে জ্বলে উঠল বহ্নি-পতঙ্গ, বহ্নিশিখার তরে…
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি-মিষ্টি
এবং পুরুষার্থের ক্রম অনুসারে চৈতন্য পতঙ্গদেরকে বাবা স্মরণ এবং ভালোবাসা জানাচ্ছেন।
তোমরা সবাই চৈতন্য পতঙ্গ। বাবাকে জ্যোতিও বলা হয়। কিন্তু কেউই তাঁকে জানে না। তিনি
কোনো বড় জ্যোতি নন, একটা বিন্দু। কারোর বুদ্ধিতেই এটা আসবে না যে আমি আসলে একটা
বিন্দুরূপ আত্মা। আমার মধ্যে অর্থাৎ আত্মার মধ্যেই সকল ভূমিকা ভরা আছে। অন্য কারোর
মধ্যেই আত্মা-পরমাত্মার এই জ্ঞান নেই। তোমাদের মতো বাচ্চাদেরকেই বাবা এসে বুঝিয়েছেন
এবং আত্ম-অনুভূতি করিয়েছেন। আগে তোমরাও জানতে না যে আত্মা কি আর পরমাত্মা কি ? তাই
দেহভাব থাকার জন্য অনেক মোহ এবং বিকার রয়েছে। ভারত কত শ্রেষ্ঠ ছিল। বিকারের নামও
ছিল না। ওটা ছিল নির্বিকার ভারত, আর এটা হলো বিকারগ্রস্ত ভারত। যেভাবে বাবা
বোঝাচ্ছেন, সেভাবে কোনো মানুষ বোঝাতে পারবে না। আজ থেকে ৫ হাজার বছর আগে আমি এই
ভারতকে শিবালয় বানিয়েছিলাম। আমিই শিবালয় স্থাপন করেছিলাম। কিভাবে ? সেটা তো তোমরা
এখন দেখতেই পাচ্ছ। তোমরা জানো যে প্রতি মুহূর্তে যা কিছু হচ্ছে, সেইসব মঙ্গলের
জন্যই হচ্ছে। যে ভালোভাবে বাবাকে স্মরণ করে নিজের কল্যাণ করে, তার প্রত্যেকটা দিনই
অধিক মঙ্গলময়। এই যুগটাই হলো কল্যানকারী পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ। বাবার অনেক মহিমা।
তোমরা জানো যে এখন সত্যিকারের ভাগবতের অধ্যায় চলছে। দ্বাপরযুগে যখন ভক্তিমার্গের
সূচনা হয়, তখন প্রথমদিকে তোমরাও হীরার শিবলিঙ্গ বানিয়ে পূজা করতে। এখন তোমাদের
স্মৃতিতে এসেছে যে আমরা যখন পূজারী হয়ে গেছিলাম, তখন এইরকম মন্দির বানিয়ে পূজা
করেছিলাম। তখন হীরে মানিকের মন্দির বানাতাম। এখন সেইসব ছবি আর পাওয়া যায় না। এখানে
তো মানুষ রূপা দিয়ে বানিয়ে পূজা করে। এখানে দেখো, পূজারীদেরও কত সম্মান। শিবের পূজা
তো সকলেই করে। কিন্তু সেই অব্যভিচারী পূজা আর নেই। বাচ্চারা জানে যে বিনাশ তো
অবশ্যই হবে। তার প্রস্তুতিও চলছে। ড্রামাতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনাও রয়েছে। *কেউ
যতই বাধা দিক, তোমাদের রাজধানী তো স্থাপন হবেই। তবে অবস্থার উন্নতি-অবনতি অবশ্যই হবে।
এটা অনেক বড় উপার্জন* । কখনো তোমরা খুব খুশিতে থাকবে এবং শুভচিন্তা করবে। আবার কখনো
একেবারে ঠান্ডা (নিরুৎসাহিত) হয়ে যাবে। যাত্রার বিষয়েও এইরকম হয়। কখনো ভোরবেলা উঠে
বাবাকে স্মরণ করে অনেক খুশি হও - আহা ! স্বয়ং বাবা আমাদেরকে পড়াচ্ছেন। কতোই না
আশ্চর্যের বিষয়। কিন্তু ওরা কৃষ্ণকে ভগবান বলে ভেবে নিয়েছে। গোটা দুনিয়ায় গীতাকে
অনেক সম্মান করা হয়। কারন এটা হলো ভগবানুবাচ। কিন্তু কেউই এটা জানে না যে ভগবান কাকে
বলা যাবে। হয়তো অনেক উঁচু পদাধিকারী, বড় বড় বিদ্বান-পন্ডিত ইত্যাদি রয়েছে। তারা বলে
যে তারা গড ফাদারকে স্মরণ করে। কিন্তু তিনি কখন এসেছিলেন, এসে কি কর্তব্য করেছিলেন
সেগুলো ভুলে গেছে। বাবা এইসব বিষয় এখন বোঝাচ্ছেন। এইসব ড্রামাতেই রয়েছে। পুনরায়
এইরকম রাবণের রাজ্য হবে এবং আমাকে আসতে হবে। রাবণ-ই তোমাদেরকে অজ্ঞানের ঘোর অন্ধকারে
ঘুম পাড়িয়ে দেয়। *কেবল জ্ঞানের সাগর-ই এসে জ্ঞান শোনান এবং এর দ্বারাই সদগতি হয়।*
বাবা ছাড়া আর কারোর পক্ষেই সদগতি করা সম্ভব নয়। কেবল তিনিই সকলের সদগতি দাতা। বাবা
যে গীতাজ্ঞান শুনিয়েছিলেন সেটা প্রায় লুপ্ত হয়ে গেছে। এমন নয় যে এই জ্ঞান পরম্পরায়
সঞ্চারিত হয়। অন্যান্য ধর্মের ক্ষেত্রে কুরআন, বাইবেল ইত্যাদি পরম্পরায় সঞ্চারিত হয়
- বিনাশ হয় না। আমি তোমাদেরকে এখন যেসব জ্ঞান শোনাচ্ছি, সেগুলো নিয়ে কোনো শাস্ত্র
বানানো হয় না। তাই এটা অনাদি নয় এবং পরম্পরায় সঞ্চারিত হয় না। এগুলো তো তোমরা লেখ
এবং তারপর নষ্ট করে দাও। এগুলো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে নষ্ট হয়ে যাবে। বাবা আগের কল্পেও
তোমাদেরকে বলেছিলেন, এবং এখন আবার বলছেন। তোমরা এই জ্ঞানলাভ করার পরে ওখানে গিয়ে ফল
ভোগ করো। তখন এই জ্ঞানের আর দরকার থাকে না। ভক্তিমার্গে তো কেবল শাস্ত্র রয়েছে। বাবা
এখন তোমাদেরকে গীতা পড়ে শোনাচ্ছেন না। তিনি রাজযোগের শিক্ষা দিচ্ছেন এবং পরবর্তী
সময়ে এটাকে নিয়েই শাস্ত্র লেখার সময়ে সব উল্টোপাল্টা করে দেয়। সুতরাং তোমাদের মুখ্য
বিষয় হলো - গীতাজ্ঞান কে শুনিয়েছেন ? কেবল তাঁর নামটাই পরিবর্তন করা হয়েছে। অন্য
কারোর নাম এভাবে বদল করা হয়নি। সকল ধর্মেরই মুখ্য শাস্ত্র আছে। ধর্মগুলোর মধ্যে
দেবতা ধর্ম, ইসলাম ধর্ম এবং বৌদ্ধ ধর্ম হলো মুখ্য। হয়তো অনেকেই বলে যে আগে বৌদ্ধ
ধর্ম, তারপর ইসলাম ধর্ম। তোমরা বলো - এইসব বিষয়ের সঙ্গে গীতার কোনো সম্পর্ক নেই।
আমাদের প্রধান কাজ হলো বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার নেওয়া। বাবা কতো ভালোভাবে
বোঝাচ্ছেন - এটা অনেক বড় বৃক্ষ। ফুলদানির মতো। এতে ৩টে শাখা আছে। কত বুদ্ধি করে এই
বৃক্ষ বানানো হয়েছে। যে কেউ দেখলেই বুঝতে পারবে যে আমি কোন্ ধর্মের। আমাদের ধর্ম কে
স্থাপন করেছেন ? দয়ানন্দ, অরবিন্দ ঘোষ ইত্যাদি তো কয়েকদিন আগেই ছিলেন। ওরাও যোগ
ইত্যাদি শেখাত। কিন্তু সেগুলো সব ভক্তি। জ্ঞানের নামও ওখানে নেই। কত বড় বড় পদবী পায়।
এইসব ড্রামাতেই রয়েছে। ৫ হাজার বছর পরে আবার হবে। শুরু থেকে এই চক্র কিভাবে আবর্তিত
হয় এবং তারপর আবার কিভাবে পুনরাবৃত্ত হয় সেটা তোমরা এখন জানো। *এখন যেটা বর্তমান,
সেটাই একসময় অতীত হয়ে যাবে এবং তারপর সেটাই আবার ভবিষ্যত হবে।* অতীত, বর্তমান এবং
ভবিষ্যত। যেটা অতীত হয়ে যায়, সেটাই আবার ভবিষ্যত হয়ে যায়। এখন তোমরা জ্ঞানলাভ করছ।
এরপর তোমরাই রাজত্ব পাবে। এই দেবতাদের তো রাজত্ব ছিল, তাই না ? তখন অন্য কারোর
রাজত্ব ছিল না। এটাকে নিয়ে একটা গল্প বানাও। খুব ভালো কাহিনী হয়ে যাবে। অনেকদিন আগে,
৫ হাজার বছর আগে এই ভারতেই সত্যযুগ ছিল। কোনো ধর্ম ছিল না। কেবল দেবী-দেবতাদের
রাজত্ব ছিল। ওটাকে সূর্যবংশী রাজত্ব বলা হত। ১২৫০ বছর ধরে লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজত্ব
ছিল। তারপর ওরা অন্য ভাই ক্ষত্রিয়দেরকে রাজত্ব দিয়েছিল। তখন থেকে ওদের রাজত্ব শুরু
হয়েছিল। তোমরা বোঝাতে পারো যে বাবা এসেই শিক্ষা দিয়েছিলেন। যে ভালোভাবে পড়েছিল, সে
সূর্যবংশী হয়েছিল। যে ফেল হয়েছিল, তার নাম হয়েছিল ক্ষত্রিয়। এছাড়া কোনো লড়াইয়ের
বিষয় নেই। বাবা বলছেন - বাচ্চারা, তোমরা আমাকে স্মরণ করলে তোমাদের বিকর্ম বিনষ্ট হবে।
তোমাদেরকে এখন বিকারের ওপর বিজয়ী হতে হবে। বাবা অধ্যাদেশ জারি করেছেন - যে কাম
বিকারের ওপর বিজয়ী হবে, সে-ই জগৎজিৎ হবে। তারপর অর্ধেক কল্প পরে আবার বামমার্গে এসে
পতিত হবে। ওদের ছবিও দেখানো হয়েছে। তবে ওদের মুখ দেবতাদের মতো দেখিয়েছে। রামরাজ্য
আর রাবণ রাজ্য অর্ধেক-অর্ধেক। বসে বসে ওদেরকে নিয়ে গল্প লিখতে হবে। এরপর কি হলো,
এরপর কি হলো…। এটাই হলো সত্য নারায়ণের কাহিনী। কেবল বাবা-ই হলেন সত্য যিনি এখন
অবতীর্ন হয়ে তোমাদেরকে সমগ্র আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান শোনাচ্ছেন। অন্য কেউ দিতে পারবে
না। দুনিয়ার মানুষ তো বাবাকেই চেনে না। যে নাটকে অভিনয় করছে, সেই নাটকের রচয়িতা এবং
নির্দেশককে জানে না। তাহলে আর কে জানবে ! বাবা এখন তোমাদেরকে বলছেন - ড্রামা অনুসারে
পুনরায় এইরকম হবে। বাচ্চারা, বাবা আবার এসে তোমাদেরকে পড়াবেন। অন্য কেউ আসবে না।
বাবা বলছেন - আমি তো বাচ্চাদেরকেই পড়াই। এখানে নতুন কাউকে বসতে দেওয়া ঠিক নয়।
ইন্দ্রপ্রস্থের কথাও প্রচলিত রয়েছে। নীলম পরী, পোখরাজ পরী ইত্যাদি নাম আছে। তোমাদের
মধ্যেও কেউ কেউ আছে যারা হীরে তুল্য রত্ন। দেখো, রমেশ (রমেশ ভাই) এমন বিষয়ের ওপর
প্রদর্শনী করলো যে, সকলের বিচার সাগর মন্থন হলো। সুতরাং এটা তো হীরের মতো কাজ। কেউ
কেউ পোখরাজ পরীও আছে। অনেকে আবার কিছুই জানে না। তোমরা জানো যে রাজধানী স্থাপন হচ্ছে।
এরজন্য রাজা-রানী সবাইকে দরকার। তোমরা এটাও জানো যে আমরা শ্রীমৎ অনুসারে পড়াশুনা করে
বিশ্বের মালিক হচ্ছি। কত খুশি হওয়া উচিত। এই মৃত্যুপুরীর এবার বিনাশ হবে। এই বাবা
তো এখন থেকেই মনে করেন যে এবার আমি গিয়ে ছোট বাচ্চা হব। ছোটবেলার সেইসব কথা এখন
থেকেই স্মরণে আসছে। চালচলন-ই বদলে যায়। এইরকম *ওখানেও যখন বৃদ্ধ হবে, তখন ভাববে যে,
এবার এই বাণপ্রস্থ অবস্থায় শরীর ত্যাগ করে কিশোর অবস্থায় যাব। শৈশব হলো সতোপ্রধান
অবস্থা। লক্ষ্মী-নারায়ণ তো যুবক। বিবাহিত ব্যক্তিকে কখনো কিশোর বলা যাবে না। যৌবনকে
রজো এবং বার্ধক্যকে তমো অবস্থা বলা হয়। তাই মানুষ কৃষ্ণকে অনেক বেশি ভালোবাসে। আসলে
সে-ই লক্ষ্মী-নারায়ণ।* কিন্তু মানুষ এইসব কথা জানে না। কৃষ্ণকে দ্বাপরে আর
লক্ষ্মী-নারায়ণকে সত্যযুগে দেখিয়ে দিয়েছে। তোমরা এখন দেবতা হওয়ার পুরুষার্থ করছ। *বাবা
বলেন, কুমারীদেরকে খুব শক্তিশালী হতে হবে।* কন্যাকুমারী, অধর কুমারী, দিলওয়াড়া
ইত্যাদি যত মন্দির আছে, এগুলো সব তোমাদের নিখুঁত স্মৃতিচিহ্ন। ওগুলো জড়, আর এখানে
তোমরা চৈতন্য। তোমরা এখানে চৈতন্য রূপে বসে থেকে ভারতকে স্বর্গ বানাচ্ছ। স্বর্গ তো
এখানেই হবে। মূলবতন আর সূক্ষ্মবতন কোথায় আছে সেটাও তোমরা বাচ্চারা এখন জেনেছ। পুরো
ড্রামাটাই তোমরা জেনে গেছ। *যেটা অতীত হয়ে গেছে, সেটাই ভবিষ্যতে হবে, তারপর সেটাও
আবার অতীত হয়ে যাবে।* আগে বুঝতে হবে যে তোমাদেরকে কে পড়াচ্ছেন। আমাদেরকে স্বয়ং
ভগবান পড়াচ্ছেন। তাই খুশিতে এবং শান্ত হয়ে থাকতে হবে। বাবার স্মরণের দ্বারা সকল
দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দূর হয়ে যায়। বাবা যেমন আমাদের বাবা, সেইরকম তিনি আমাদেরকে
পড়াচ্ছেন এবং সাথে করে নিয়েও যাবেন। নিজেকে আত্মা রূপে অনুভব করে পরমাত্মা পিতার
সঙ্গে এইভাবে কথা বলতে হবে। বাবা, আমরা এখন এগুলো বুঝতে পেরেছি। ব্রহ্মা আর বিষ্ণুর
বিষয়টাও বুঝতে পেরেছি। বিষ্ণুর নাভি থেকে ব্রহ্মার উৎপত্তি। বিষ্ণুকে ক্ষীরের
সাগরের মধ্যে আর ব্রহ্মাকে সূক্ষ্মবতনে দেখানো হয়। কিন্তু ব্রহ্মা তো এখানেই আছে।
আর বিষ্ণু তো রাজত্ব করে। যদি বিষ্ণুর থেকেই ব্রহ্মার উৎপত্তি হয় তবে তো ব্রহ্মাও
রাজত্ব করবে। বিষ্ণুর নাভি থেকে উৎপত্তি হয়েছে মানে তো সে বিষ্ণুর সন্তান। বাবা এখন
বসে থেকে এইসব বিষয় বোঝাচ্ছেন। ব্রহ্মা-ই ৮৪ জন্ম সম্পূর্ণ করে এখন পুনরায়
বিষ্ণুপুরীর মালিক হচ্ছেন। এইসব বিষয়গুলো কেউ ভালোভাবে বোঝে না। সেইজন্যই খুশির
পারদ ততটা ঊর্ধগামী হয় না। তোমরাই হলে গোপ-গোপী। সত্যযুগে তো গোপ-গোপী থাকবে না।
ওখানে প্রিন্স-প্রিন্সেস থাকবে। এখানে গোপ-গোপীদের গোপী-বল্লভও রয়েছেন। প্রজাপিতা
ব্রহ্মা হলেন সকলের পিতা এবং নিরাকার শিববাবা হলেন সকল আত্মার পিতা। এরা সবাই মুখ
বংশাবলী। তাই তোমরা বি.কে.-রা হলে পরস্পরের ভাই-বোন। সুতরাং কোনো খারাপ দৃষ্টি থাকা
উচিত নয়। কিন্তু এই বিষয়েই মায়া হারিয়ে দেয়। বাবা বলছেন - এতদিন তোমরা যা কিছু পড়েছ,
সব বুদ্ধি থেকে মুছে দাও। এখন আমি যেটা পড়াচ্ছি, সেটাই পড়। সিঁড়ির চিত্র খুবই
সুন্দর। সকল বিষয়ের মূল ভিত্তি একটাই - গীতার ভগবান কে ? কৃষ্ণকে তো ভগবান বলা যাবে
না। তিনি হলেন সর্বগুণ সম্পন্ন দেবতা। কিন্তু গীতাতে তার-ই নাম লিখে দিয়েছে। তাকেও
শ্যামবর্ণ দেখিয়েছে এবং তার সাথে লক্ষ্মী-নারায়ণকেও শ্যামবর্ণ দেখানো হয়েছে। কোনো
হিসাব করেনি। রামচন্দ্রকেও কালো দেখিয়ে দেয়। বাবা বলছেন, কামচিতায় বসে কালো হয়ে যায়।
হয়তো একজনের ছবি দেখানো হয়। কিন্তু তোমরা সকল ব্রাহ্মণরা এখন জ্ঞানের চিতায় বসছ।
শূদ্ররা কাম চিতায় বসে আছে। বাবা বলছেন - বিচার সাগর মন্থন করে সবাইকে জাগানোর
যুক্তি বার করো। ড্রামা অনুসারে তো জাগবেই। ড্রামা খুব ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে।
আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
সর্বদা এই নেশাতে থাকতে হবে যে, আমরা হলাম গোপী-বল্লভের গোপ-গোপী। এই স্মৃতির দ্বারা
সর্বদা খুশিতে থাকতে হবে।
২ ) এখন পর্যন্ত যা কিছু পড়েছ, সেগুলো বুদ্ধি থেকে মুছে দিয়ে বাবা যেসব শোনাচ্ছেন
সেটাই পড়তে হবে। আমরা হলাম ভাই-বোন। এই স্মৃতির দ্বারা কুদৃষ্টি-কে নাশ করতে হবে।
মায়ার কাছে হেরে গেলে চলবে না।
বরদান:-
সততার দ্বারা রাজকীয়তার প্রত্যক্ষ রূপ প্রদর্শন করে সাক্ষাৎকারের প্রতিমূর্তি ভব
এখন এমন সময় আসবে যখন
প্রত্যেক আত্মা প্রত্যক্ষ রূপে নিজের সততার দ্বারা রাজকীয়তা প্রদর্শন করবে।
প্রত্যক্ষতার সময়ে মালার দানার নম্বর এবং ভবিষ্যতের রাজত্বের স্বরূপ - দুটোই
প্রত্যক্ষ হবে। এখন রেস (প্রতিযোগিতা) করতে করতে, একটু আধটু রিস অর্থাৎ ঈর্ষার
ধুলোর পর্দা উজ্জ্বল হীরাকে ঢেকে দিচ্ছে, অন্তিমে এই পর্দা সরে যাবে এবং লুকিয়ে থাকা
হীরা নিজের সম্পন্ন স্বরূপে প্রত্যক্ষ হবে। রাজ পরিবার তো এখন থেকেই নিজের রাজকীয়তা
প্রদর্শন করবে অর্থাৎ নিজের ভবিষ্যতের পদ স্পষ্ট দেখা যাবে। তাই সততার দ্বারা
রাজকীয়তার সাক্ষাৎকার করাও।
স্লোগান:-
যে কোনো উপায়ে ব্যর্থকে সমাপ্ত করে সমর্থকে ধারণ করো।