03.08.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা ---
তোমাদের সার্ভিসের অতি দ্রুত বৃদ্ধি হওয়া উচিত, যদি জ্ঞান আর যোগ থাকে, তবে
অন্যদেরও শেখাও, সার্ভিসের বৃদ্ধি করো"
প্রশ্নঃ -
সার্ভিসের
দ্রুত বৃদ্ধি না হওয়ার কারণ কি ? কোন্ বিঘ্নের কারণে দ্রুত বৃদ্ধি হয় না ?
উত্তরঃ -
সর্বাপেক্ষা বড় বিঘ্ন হলো কুদৃষ্টি (ক্রিমিনাল আই)। এই রোগ সার্ভিসের দ্রুত বৃদ্ধি
হতে দেয় না। এ অতি কঠিন রোগ। যদি কুদৃষ্টি শীতল না হয়, তবে গৃহস্থ-জীবনের দুটি চাকা
সঠিকভাবে চলতে পারে না, তখন গৃহস্থ-জীবন বোঝ-সদৃশ হয়ে পড়ে, পুনরায় হাল্কা হয়ে
সেবায় দ্রুত অগ্রসর হতে পারে না।
গীতঃ-
জাগো সজনীরা
জাগো/নবযুগ এসেছে... এসেছে সজনীরা জাগো....
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি-মিষ্টি
বাচ্চারা এ'গান শুনেছে। এরকম দুই-চারটি ভাল গান আছে যা সকলের কাছে থাকা উচিত বা
টেপ-রেকর্ডারে ভরে রাখা উচিত। এখন এটাই বলা হবে যে এই গান মানুষের তৈরী করা।
ড্রামানুসারে (এই গান) মন ছুয়ে যায় যা পুনরায় বাচ্চাদের কাজে আসে। এরকম গান শুনে
বাচ্চাদের নেশা চড়ে। বাচ্চাদের নেশা চড়ে থাকা উচিত যে এখন আমরা নতুন রাজ্য স্থাপন
করছি। রাবণের থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছি। যেমন কেউ যখন লড়াই করে তখন মনে রাখে, তাই না! ---
এদের রাজত্ব ছিনিয়ে নিতে হবে। এদের গ্রাম আমরা করায়ত্ত করবো। এখন ওরা (লৌকিক) সকলে
পার্থিব বিষয়ের জন্য লড়াই করে। বাচ্চারা, তোমাদের লড়াই হলো মায়ার সঙ্গে, যে বিষয়ে,
তোমরা ব্রাহ্মণেরা ব্যতীত আর কেউ জানে না। তোমরা জানো যে, আমাদের এই বিশ্বে
গুপ্তভাবে রাজ্য স্থাপন করতে হবে অথবা বাবার থেকে উত্তরাধিকার নিতে হবে। বাস্তবে একে
লড়াইও বলা যাবে না। ড্রামানুসারে তোমরা যে সতোপ্রধান থেকে তমোপ্রধান হয়েছো পুনরায়
সতোপ্রধান হতে হবে। তোমরা নিজেদের জন্মকে জানতে না। এখন বাবা বুঝিয়েছেন। আর যেসকল
ধর্ম রয়েছে সেগুলি এই নলেজ পাবে না। বাচ্চারা, বাবা তোমাদেরকেই বসে বোঝান। গায়নও করা
হয়, ধর্মের মধ্যেই শক্তি নিহিত রয়েছে। ভারতবাসীদের একথা জানা নেই যে, আমাদের ধর্ম
কী ? তোমরা বাবার মাধ্যমেই জেনেছো যে আমাদের ধর্ম হলো আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম।
বাবা এসে পুনরায় তোমাদের সেই ধর্মে ট্রান্সফার করেন। তোমরা জানো যে, আমাদের ধর্ম
কত সুখ প্রদান করে। তোমাদের কারোর সঙ্গে লড়াই ইত্যাদি করতে হবে না। তোমাদের নিজেদের
স্বধর্মে স্থির হতে হবে আর বাবাকে স্মরণ করতে হবে, এতেও সময় লাগে। এমনও নয় যে বললেই
স্থিত হয়। *অন্তরে এই স্মৃতি থাকা উচিত যে --- আমি আত্মা শান্ত-স্বরূপ। আমি আত্মা
এখন তমোপ্রধান পতিত হয়ে গেছি। আমরা আত্মারা যখন শান্তিধামে ছিলাম তখন পবিত্র ছিলাম,
পুনরায় (নিজ) ভূমিকা পালন করতে-করতে তমোপ্রধান হয়ে গেছি। এখন পুনরায় পবিত্র হয়ে
আমাদের ঘরে ফিরে যেতে হবে। বাবার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করার জন্য নিজেকে আত্মা
নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করতে হবে। তোমাদের এই নেশা চড়বে যে, আমরা ঈশ্বরের সন্তান।
বাবাকে স্মরণ করলেই বিকর্ম বিনাশ হয়। কত সহজ --- স্মরণের দ্বারাই আমরা পবিত্র হয়ে
পুনরায় শান্তিধামে চলে যাবো।* দুনিয়া এই শান্তিধাম, সুখধামকে জানে না। এ'কথা কোনো
শাস্ত্রে নেই। জ্ঞানসাগরের কাছে রয়েছেই একমাত্র গীতা, যার নাম বদল করে নিয়েছে।
সকলের সদ্গতিদাতা, জ্ঞানের সাগর সেই পরমপিতা পরমাত্মাকেই বলা হয়। আর কাউকে জ্ঞানবান
বলা যাবে না। যখন তিনি জ্ঞান প্রদান করেন তখন তোমরা জ্ঞানবান হও। এখন সকলে ভক্তিবান।
তোমরাও ছিলে। এখন পুনরায় জ্ঞানবান হতে চলেছো। পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে
জ্ঞান কারোর মধ্যে রয়েছে, কারোর মধ্যে নেই। কি আর করা যাবে ? সেই হিসাবে উচ্চপদ লাভ
করতে পারবে না। বাবা সার্ভিসের জন্য কত দ্রুত এগিয়ে দেন। বাচ্চাদের মধ্যে এখনও
পর্যন্ত সেই শক্তি আসে নি যে কাউকে ভালভাবে বোঝাতে পারে। এমন-এমন যুক্তি রচনা করো।
যদিও বাচ্চারা পরিশ্রম করে কনফারেন্স ইত্যাদি করে, গোপেদের(পান্ডব) মধ্যে কিছু শক্তি
রয়েছে, তাদের মনে থাকে যে সংগঠন হোক, যেখানে যুক্তি বের করা যাবে। সার্ভিসের বৃদ্ধি
কীভাবে হবে ? মাথা চাপড়াতে থাকে। নাম যদিও শক্তিসেনা কিন্তু লেখা-পড়া করে নি। কোথাও
আবার নিরক্ষরও শিক্ষিতদের ভাল পড়ায়। বাবা বলেছেন, 'ক্রিমিনাল আই' অনেক ক্ষতি করে
দেয়। এই রোগ বড় কঠিন, দ্রুত এগিয়ে যেতে দেয়না। বাবা জিজ্ঞাসা করেন, তোমরা হলে যুগল,
দুটি চাকা সঠিকভাবে চলো তো ? ওইদিকে কত বড়-বড় সেনা রয়েছে, স্ত্রীদেরও জোট রয়েছে,
তারা শিক্ষিত। তারা সহায়তাও পায়। তোমরা হলে গুপ্ত। কেউ জানেনা যে, এই
ব্রহ্মাকুমার-কুমারীরা কি করে। তোমাদের মধ্যেও নম্বরের ক্রমানুসারে রয়েছে।
গৃহস্থ-জীবনের বোঝা মাথার উপর থাকার জন্য ঝুঁকে পড়েছে। ব্রহ্মাকুমার-কুমারী বলা হয়
কিন্তু সেই *ক্রিমিনাল আই* শীতল হয় না। দুটি চাকার একসমান হওয়া বড় মুশকিল। বাবা
বাচ্চাদের সার্ভিসে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বোঝাতে থাকেন। কেউ ধনবান -- তথাপি
দ্রুত এগিয়ে যায় না। ধনের ক্ষুধা, সন্তান না হলেও দত্তক নেয়। দ্রুত এগিয়ে যায় না,
বাবা আমরা বসে আছি। আমরা বড় ঘর দিয়ে দিই।
দিল্লীর উপরে বাবার বিশেষ নজর রয়েছে, কারণ দিল্লী হলো রাজধানী, হেড অফিস। বাবা বলেন,
বিশেষ সেবা হেতু দিল্লীকে ঘেরাও করো অর্থাৎ দিল্লীর প্রতি ধ্যান কেন্দ্রীভূত করো।
কাউকে বোঝানোর জন্য গভীরে প্রবেশ করা উচিত। গায়নও রয়েছে যে পান্ডবরা কৌরবদের কাছ
থেকে তিন পা জমিও পায় নি। এই *কৌরব* শব্দটিও গীতার-ই। ঈশ্বর এসে রাজযোগ শিখিয়েছেন,
তার নাম গীতা রাখা হয়েছে। কিন্তু গীতার ভগবানকে ভুলে গেছে তাই বাবা প্রতিমুহূর্তে
বলে থাকেন, মুখ্য এই পয়েন্টকেই নিতে হবে। পূর্বে বাবা বলতেন, বেনারসের
বিদুত-মন্ডলীদের বোঝাও। বাবা যুক্তি বলতে থাকেন। সঠিকভাবে প্রচেষ্টা করতে হবে। বাবা
বার-বার বোঝাতে থাকেন। দিল্লী প্রথমস্থানে, তাই এর জন্যই যুক্তি রচনা করো। সংগঠনেও
এর বিচার-বিবেচনা করো। মুখ্য কথা, বড় মেলা ইত্যাদি দিল্লীতে কিভাবে করবো ? ওরা (অজ্ঞানীরা)
তো দিল্লীতে অনেক অনশনাদি করে। তোমরা তো এমন কোনো কাজ করো না। লড়াই-ঝগড়া কিছু করো
না। তোমরা শুধু নিদ্রাচ্ছন্নকে জাগরিত করো। দিল্লীবাসীদের-কেই পরিশ্রম করতে হবে।
তোমরা জানো, আমরা ব্রহ্মান্ডেরও মালিক আবার কল্প-পূর্বের মতন সৃষ্টিরও মালিক হবো।
অবশ্যই এটা পাকা। বিশ্বের মালিক হতেই হবে। এখন তোমাদের তিন পা জমিও রাজধানীতেই চাই,
যাতে সেখানে জ্ঞানের গোলাবর্ষণ করা যায়। নেশা চাই, তাই না! গন্যমান্যদের আওয়াজ চাই,
তাই না! এ'সময় সমগ্র ভারত গরীব। গরীবের সেবা করার জন্যই বাবা আসেন। দিল্লীতে
অত্যন্ত ভাল সেবা হওয়া উচিত। বাবা ইঙ্গিত দিতে থাকেন। দিল্লীবাসীরা মনে করে, বাবা
আমাদের ধ্যান আকর্ষিত করেন। পরস্পর ক্ষীরখন্ড(দুধ-চিনির ন্যায় মিলেমিশে) হয়ে থাকা
উচিত। নিজেদের অর্থাৎ পান্ডবদের দূর্গ তো নির্মাণ করো। দিল্লীতেই নির্মাণ করতে হবে।
এরজন্য মস্তিষ্ক অতি তীক্ষ্ণ হওয়া চাই। অনেককিছু করতে পারো। ওরা (লৌকিকে) তো অনেক
গায় যে, ভারত আমাদের দেশ, আমরা এভাবে করবো। কিন্তু নিজের মধ্যেই কোনো শক্তি নেই।
বিদেশের সাহায্য ব্যতীত উঠে দাঁড়াতে পারে না। তোমরা অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে অনেক
সহায়তা পাচ্ছো। আর কেউ এত সহায়তা প্রদান করতে পারে না। এখন শীঘ্রই দূর্গ নির্মাণ
করতে হবে। বাচ্চারা বাবা তোমাদের বিশ্বের রাজত্ব দেন তাই অধিক মনোবল চাই।
পরনিন্দা-পরচর্চায় অনেকের বুদ্ধি আটকে থাকে। মাতাদের উপর বন্ধনের সংকট আসে।
পুরুষদের কোনো বন্ধন নেই। মাতাদের অবলা বলা হয়। পুরুষ বলবান হয়। পুরুষ যখন বিবাহ করে
তখন তাকে ক্ষমতা দেওয়া হয় --- তুমিই গুরু, ঈশ্বর সর্বকিছু। স্ত্রী যেন লেজ অর্থাৎ
অবশিষ্টাংশ। শেষে এসে ঝোলে অর্থাৎ সম্বন্ধে যুক্ত হয় সত্যিকরেই তাই লেজ হয়েই ঝুলে
থাকে। স্বামীর প্রতি মোহ, সন্তানের প্রতি মোহ, পুরুষের এত মোহ থাকে না। তারা(পুরুষ)
তো একটা জুতো যদি চলে যায় দুটো তিনটে নিয়ে নেবে(এক স্ত্রী-র অবর্তমানে দু-তিনটি
বিবাহ করে নেয়)। অভ্যাস হয়ে গেছে। বাবা বোঝাতে থাকেন --- এমন-এমন কথা সংবাদপত্রে
লেখো। বাচ্চাদের বাবার প্রদর্শনী(শো) করতে হবে। এ'কথা বোঝানো তোমাদের কাজ। বাবার
সঙ্গে দাদাও রয়েছেন। তাই এরা চলে যেতে পারবে না। তারা বলবে, শিববাবা এটা বলো --
আমাদের উপর এই বিপদ এসেছে, এরজন্য তুমি পরামর্শ দাও। এমন-এমন কথা জিজ্ঞাসা করে। বাবা
এসেছেন পতিতদের পবিত্র করতে। বাবা বলেন -- বাচ্চারা, তোমরা সব নলেজ পাও। প্রচেষ্টায়
থাকো যে, পরস্পর মিলিত হয়ে পরামর্শ করবে। বাচ্চারা, তোমাদের এখন বিহঙ্গ-মার্গীয়
সেবার জাদু দেখানো উচিত। পিপীলিক-মার্গীয় সেবা(ধীরগতিতে সেবা) তো এখনো পর্যন্ত চলছে।
কিন্তু এমন জাদু দেখাও যেন অনেকের কল্যাণ হয়ে যায়। বাবা এ'কথা কল্প-পূর্বেও
বুঝিয়েছিলেন, এখনও বোঝান। অনেকের বুদ্ধি কোথায় না কোথায় আটকে রয়েছে। উৎসাহ নেই। অতি
শীঘ্র দেহ-অভিমানে চলে আসে। দেহ-অভিমানই সর্বনাশ করেছে। এখন সত্য-পিতা উচ্চ করার কত
সহজ কথা বলেন। বাবাকে স্মরণ করো তবেই শক্তি আসবে। তা নাহলে শক্তি পাবে না। যদিও
সেন্টার দেখাশোনা করে কিন্তু নেশা নেই কারণ দেহ-অভিমান চলে আসে। দেহী-অভিমানী হলে
নেশা চড়বে। আমরা কোন্ পিতার সন্তান। বাবা বলেন -- যত তোমরা দেহী-অভিমানী হবে ততই
শক্তি আসবে। আধাকল্প দেহ-অভিমানের নেশা চড়ে রয়েছে তাই দেহী-অভিমানী হতে অধিক
পরিশ্রম লাগে। বাবা শুধু-শুধুই জ্ঞানের সাগর নন, (তাঁর থেকে) আমরাও জ্ঞান প্রাপ্ত
করেছি, অনেককে বোঝাই কিন্তু স্মরণের তীক্ষ্ণতাও চাই। জ্ঞানের তলোয়ার রয়েছে। স্মরণের
আবার যাত্রা রয়েছে। দুটি পৃথক বস্তু। জ্ঞানে স্মরণের যাত্রার ধার(তীক্ষ্ণতা) চাই।
তা না থাকলে তা কাঠের তলোয়ার হয়ে যায়। শিখরা তলোয়ারের কত মর্যাদা রক্ষা করে। কিন্তু
সে তো হিংসক ছিল, যার দ্বারা লড়াই করা হয়। বাস্তবে গুরুরা কি লড়াই করতে পারে, না তা
পারে না। গুরু তো অহিংসক হওয়া উচিত, তাই না! লড়াই-এর মাধ্যমে কি সদ্গতি হয়, না তা
হয় না। তোমাদের হলো যোগের কথা। স্মরণের শক্তি ব্যতীত জ্ঞানের তলোয়ার কাজ করতে পারবে
না। ক্রিমিনাল আই অনেক ক্ষতি করে দেয়। আত্মা কানের মাধ্যমে শোনে, বাবা বলেন, তোমরা
স্মরণে মত্ত থাকো তবেই সেবা বৃদ্ধি পাবে। কখনো-কখনো তারা বলে -- বাবা,
মিত্র-সম্বন্ধীয়-রা শোনে না। বাবা বলেন, স্মরণের যাত্রায় কাঁচা তাই জ্ঞান-তলোয়ার
কাজ করে না। স্মরণের জন্য পরিশ্রম করো। এখানের পরিশ্রম হলো গুপ্ত। মুরলী শোনানো তো
প্রত্যক্ষ (সেবা)। স্মরণই গুপ্ত পুরুষার্থ, যারফলে শক্তি প্রাপ্ত হয়। জ্ঞানের দ্বারা
শক্তি পাওয়া যায় না। তোমরা পতিত থেকে পবিত্র স্মরণের শক্তির দ্বারা হও। উপার্জনের
জন্যই পুরুষার্থ করতে হবে।
বাচ্চাদের স্মরণ যখন একরস (একাগ্র) থাকে, স্থিতি ভাল থাকে তখন অত্যন্ত খুশীতে থাকে,
কিন্তু যখন স্মরণ সঠিকভাবে হয় না, ঝিমিয়ে পড়ে, তখন খুশী হারিয়ে যায়। স্টুডেন্টদের
কি টিচারকে মনে পড়ে না ! এখানে তো ঘরে থেকেও, সবকিছু করেও টিচারকে স্মরণ করতে হবে।
এই টিচারের থেকে তো অতি উচ্চপদ প্রাপ্ত হয়। গৃহস্থ-ব্যবহারেও থাকতে হবে। টিচার যদি
স্মরণে থাকে তবে বাবা এবং গুরুও অবশ্যই স্মরণে থাকবে। কতরকমভাবে বোঝান হয়। কিন্তু
ঘরে পুনরায় ধন-দৌলত, সন্তানাদি দেখে ভুলে যায়। অনেক বোঝান হয়। তোমাদের আধ্যাত্মিক
সেবা করতে হবে। বাবাকে স্মরণ করাই হলো সর্বোচ্চ সেবা। মন-বাণী-কর্মে বুদ্ধিতে যেন
বাবার স্মরণই থাকে। মুখেও জ্ঞানের কথা শোনাও। কাউকে দুঃখ দেওয়া উচিত নয়। অকরণীয় কিছু
করা উচিত নয়। প্রথম কথা অল্ফ অর্থাৎ বাবাকে না বুঝলে আর কিছুই বুঝবে না। প্রথমে
অল্ফ-কে পাক্কা করাও ততক্ষণ পর্যন্ত আর এগিয়ে যাওয়া উচিত নয়। শিববাবা রাজযোগ শিখিয়ে
বিশ্বের মালিক করে দেন। এই খারাপ(ছিঃ ছিঃ ) দুনিয়ায় মায়ার শো(প্রদর্শন) অনেক। কত
ফ্যাশন হয়ে গেছে। খারাপ দুনিয়ার প্রতি ঘৃণা আসা উচিত। এক পিতাকে স্মরণ করলেই
তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে। তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে। সময় নষ্ট কোরো না। ভালভাবে
ধারণা করো। শত্রু-রূপী মায়া অনেকের বুদ্ধি ভ্রষ্ট করে দেয়। কমান্ডার যখন গাফিলতি করে
তখন তাকে বরখাস্ত (ডিসমিস) করে দেওয়া হয়। স্বয়ং কমান্ডারও লজ্জিত হয় তখন
রেজিগনেশনও(ইস্তফা) দিয়ে দেয়। এখানেও এমন হয়। ভাল-ভাল কমান্ডাররাও(মহারথী) অবসর নিয়ে
নেয়। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
স্মরণের জন্য গুপ্তভাবে পরিশ্রম করতে হবে। স্মরণের নেশায় মত্ত থাকলে সার্ভিস স্বততঃ-ই
বৃদ্ধি পেতে থাকবে। মন-বাণী-কর্মের দ্বারা স্মরণে থাকার পুরুষার্থ করতে হবে।
২) মুখ দ্বারা
জ্ঞানেরই কথা শোনাতে হবে, কাউকে দুঃখ দেবে না। কোনও অকরণীয় কাজ করা উচিত নয়।
দেহী-অভিমানী হওয়ার পুরুষার্থ(পরিশ্রম) করতে হবে।
বরদান:-
বিজয়ী
হওয়ার নেশায় সদা প্রফুল্লিত থাকা সর্ব আকর্ষণমুক্ত ভব
ব্যাখ্যা :-
বিজয়ী-রত্নের স্মরণ-চিহ্ন -- বাবার গলার মালার আজ পর্যন্ত পূজা হয়। তাই সদা এই নেশা
যেন থাকে যে, আমরা বাবার গলার মালা 'বিজয়ী-রত্ন', আমরা বিশ্বের মালিকের বালক অর্থাৎ
সন্তান। আমরা যা পেয়েছি তা আর কেউই পেতে পারে না --
এই নেশা এবং খুশী যদি
চিরস্থায়ী হয় তবে যেকোনো প্রকারের আকর্ষণ থেকে মুক্ত থাকবে। যে সদা বিজয়ী সে সদা
প্রফুল্লিত। একমাত্র বাবার স্মরণের আকর্ষণেই আকৃষ্ট ।
স্লোগান:-
একের
মধ্যে বিলীন হয়ে যাওয়া অর্থাৎ একান্তবাসী হওয়া।