11.08.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
প্রশ্নঃ -
ভাগ্যবান
বাচ্চাদের কোন্ উৎসাহ সর্বদাই থাকবে ?
উত্তরঃ -
অসীম জগতের পিতা আমাদের নতুন দুনিয়ার প্রিন্স - প্রিন্সেস বানানোর জন্য পড়াচ্ছেন ।
তোমরা এই উৎসাহের সঙ্গে সবাইকে বোঝাতে পারো যে, এই লড়াইয়ের মধ্যে স্বর্গ লুকিয়ে আছে
। এই লড়াইয়ের পর স্বর্গের দ্বার খুলে যাবে -- তোমাদের এই খুশীতে থাকতে হবে আর খুশীর
সঙ্গে অন্যদেরও বোঝাতে হবে ।
গীতঃ-
দুনিয়া রং
রঙ্গলী বাবা...
ওম্ শান্তি ।
একথা কারা
বাবাকে বলেছে যে, এই দুনিয়া রং - বেরংয়ের ? এখন এর অর্থ দ্বিতীয় কেউ বুঝতে পারে
না। বাবা বুঝিয়েছেন যে, এই খেলা হলো রং - বেরংয়ের। কোনো বায়োস্কোপ ইত্যাদি হলে,
সেখানে অনেক রং-বেরংয়ের সিন-সিনারি দেখানো হয়, তাই না! এখন অসীম জগতের এই দুনিয়াকে
কেউ জানেই না। তোমাদের মধ্যেও পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে সম্পূর্ণ বিশ্বের আদি,
মধ্য এবং অন্তের জ্ঞান আছে। তোমরা বুঝতে পারো যে, স্বর্গ কতো রং - বেরংয়ের, কতো
সুন্দর! যে স্বর্গকে, কেউই জানে না। একথা কারোর বুদ্ধিতেই নেই, সে হলো আশ্চর্যজনক
রং-বেরংয়ের দুনিয়া। এমন গায়ন আছে যে, পৃথিবীর আশ্চর্য - এ কেবল তোমরাই জানো। তোমরাই
সেই আশ্চর্যজনক পৃথিবীর জন্য নিজের নিজের ভাগ্য অনুসারে পুরুষার্থ করছো। তোমাদের
লক্ষ্য বস্তু তো আছেই। সে হলো পৃথিবীর আশ্চর্য জায়গা, বড় রং-বেরংয়ের দুনিয়া, যেখানে
হীরে-জহরতের মহল থাকে । তোমরা এক সেকেণ্ডে সেই আশ্চর্যজনক বৈকুন্ঠে চলে যাও। তোমরা
সেখানে খেলা করো, রাস বিলাস ইত্যাদি করো। বরাবর তা তো আশ্চর্যের দুনিয়া, তাই না!
এখানে হলো মায়ার রাজ্য। এও কতো আশ্চর্যের। এখানে মানুষ কতো কি করতে থাকে। এই
দুনিয়াতে কেউই বুঝতে পারে না যে, আমরা এই নাটকে খেলা করছি। নাটক যদি বুঝতে পারো,
তাহলে সেই নাটকের আদি - মধ্য এবং অন্তের জ্ঞানও থাকবে। বাচ্চারা, তোমরাও জানো যে,
বাবা কতো সাধারণ। মায়া তোমাদের সম্পূর্ণ ভুলিয়ে দেয়। মায়া তোমাদের নাক পাকড়ে ফেলে
আর সব ভুলিয়ে দেয়। এখনই স্মরণে আছে, খুবই আনন্দে আছো, আহা! আমরা সেই আশ্চর্যজনক
পৃথিবী, স্বর্গের মালিক হচ্ছি, আবার ভুলেও যাও, তখনই ঝিমিয়ে পড়। এমন ঝিমিয়ে যাও যে,
ভিলও (গরীবরাও) এমন ঝিমিয়ে যায় না। তখন সামান্যতমও বুঝতে পারে না যে, আমরা স্বর্গে
যাবো। অসীম জগতের পিতা আমাদের পড়াচ্ছেন। একদম যেন মরার মতো হয়ে যায়। সেই খুশী আর
নেশা থাকে না। এখন সেই আশ্চর্যজনক পৃথিবীর স্থাপনা হচ্ছে। সেই আশ্চর্যজনক পৃথিবীর
রাজকুমার হলেন শ্রীকৃষ্ণ। এও তোমরাই জানো। যে জ্ঞানে তীক্ষ্ণ, সে কৃষ্ণের
জন্মাষ্টমীতেও বোঝাতে থাকবে। শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন সেই আশ্চর্যজনক পৃথিবীর রাজকুমার। সেটা
ছিলো সত্যযুগ, তারপর তা আবার কোথায় গেলো! সত্যযুগ থেকে শুরু করে সিঁড়ি কিভাবে নেমে
এসেছে। সত্যযুগ থেকে কলিযুগ কিভাবে হলো? অবতরণের কলা কিভাবে হলো? বাচ্চারা, তোমাদের
বুদ্ধিতেই এই কথা আসবে। এই খুশীর সঙ্গেই অন্যদেরও বোঝানো উচিত। শ্রীকৃষ্ণ
আবার আসছেন। কৃষ্ণের রাজ্য আবার স্থাপন হচ্ছে। একথা শুনে ভারতবাসীদেরও খুশী হওয়া
উচিত, কিন্তু এই উৎসাহ তাদেরই আসবে যারা ভাগ্যবান হবে। দুনিয়ার মানুষ তো রত্নকেও
পাথর মনে করে ফেলে দেয়। এ তো অবিনাশী জ্ঞান রত্ন, তাই না! এই জ্ঞান রত্নের সাগর
হলেন বাবা। এই রত্নের অনেক মূল্য। এই জ্ঞান রত্নই ধারণ করতে হবে। এখন তোমরা
প্রত্যক্ষভাবে জ্ঞান সাগরের কাছে শুনছো, এরপর আর অন্যকিছুই শোনার দরকার নেই।
সত্যযুগে এইসব হয় না। সেখানে না এল.এল.বি থাকে, আর না সার্জন আদি থাকে। সেখানে এই
জ্ঞানই থাকে না। ওখানে তো তোমরা প্রালব্ধ ভোগ করো। তাই জন্মাষ্টমী উপলক্ষে
বাচ্চাদের খুব ভালোভাবে বোঝাতে হবে । অনেকবার এই জ্ঞান মুরলী শোনানো হয়েছে ।
বাচ্চাদের বিচার সাগর মন্থন করতে হবে, তখনই নতুন নতুন পয়েন্ট বের হবে । ভাষণ করতে
হলে ভোরবেলা উঠে লেখা উচিত, তারপর তা পাঠ করতে হবে । ভুলে যাওয়া পয়েন্ট আবার যোগ
করতে হবে । এতে সুন্দর ধারণা হবে, তবুও লেখা অনুসারে সবাই বলতে পারবে না । কিছু না
কিছু পয়েন্ট ভুলেই যাবে । তাই তোমাদের বোঝাতে হয় - কৃষ্ণ কে, তিনি তো আশ্চর্যজনক
পৃথিবীর মালিক ছিলেন । ভারতই স্বর্গ ছিলো । সেই স্বর্গের মালিক শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন ।
আমরা আপনাদের সেই সন্দেশ শোনাচ্ছি যে, শ্রীকৃষ্ণ এখন আসছেন । রাজযোগ ভগবানই
শিখিয়েছেন । তিনি এখনো শেখাচ্ছেন । পবিত্রতার জন্য তিনি এখন পুরুষার্থ করাচ্ছেন,
তোমাদের ডবল মুকুটধারী দেবতা বানানোর জন্য । এইসব কথা বাচ্চাদের স্মৃতিতে আসা উচিত
। যার খুব ভালো অভ্যাস থাকবে, সে খুব ভালোভাবে বোঝাতে পারবে । কৃষ্ণের চিত্রের
লিখনও একনম্বর । এই লড়াইয়ের পরে স্বর্গের দ্বার খুলে যাবে । এই লড়াইয়ের মধ্যেই
স্বর্গ লুকিয়ে আছে । বাচ্চাদেরও খুবই খুশীতে থাকা উচিত । জন্মাষ্টমীতে মানুষ নতুন
বস্ত্র আদি পরিধান করে কিন্তু তোমরা জানো যে, আমরা এখন এই পুরানো শরীর ত্যাগ করে
নতুন কাঞ্চন কায়া ধারণ করবো । কাঞ্চন কায়া তো বলা হয়, অর্থাৎ সোনার কায়া । সেখানে
আত্মাও পবিত্র, আবার শরীরও পবিত্র । এখন তোমাদের কায়া কাঞ্চন নয় । নম্বরের
ক্রমানুসারে তা তৈরী হচ্ছে । এই স্মরণের যাত্রাতেই কায়া কাঞ্চন তৈরী হবে । বাবা
জানেন যে, এমন অনেকেই আছে যাদের স্মরণ করারও বুদ্ধি নেই । এই স্মরণের যখন পরিশ্রম
করবে তখন তোমাদের বাণীও শক্তিশালী হবে । এখন সেই শক্তি কোথায় ? তোমাদের যোগবল নেই ।
লক্ষ্মী - নারায়ণ হওয়ার মতো মুখও তো চাই, তাই না । তেমন শিক্ষাও চাই । কৃষ্ণ
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বোঝানো খুব সহজ । কৃষ্ণকে বলা হয় শ্যাম সুন্দর । কৃষ্ণকেও কালো,
নারায়ণকেও কালো আবার রামকেও কালো বানিয়ে দিয়েছে । বাবা বলেন, আমার বাচ্চারা যারা
প্রথমে জ্ঞান চিতায় বসে স্বর্গের মালিক হয়েছিলো, তারপর তারা কোথায় চলে গেলো ! তারা
কাম চিতায় বসে নম্বরের ক্রমানুসারে নামতে থেকেছে । এই সৃষ্টিও সতোপ্রধান, সতো, রজঃ,
তমঃ হয়ে যায় । মানুষের অবস্থাও এমনই হয় । কাম চিতায় বসে সবাই শ্যাম অর্থাৎ কালো
হয়ে গেছে । আমি এখন এসেছি তোমাদের সুন্দর বানাতে । আত্মাকে সুন্দর করা হয় । বাবা
প্রত্যেকেরই আচরণ দেখে বুঝতে পারেন যে -- এ মন, বচন এবং কর্মে কিভাবে চলে । কিভাবে
কর্ম করে, তাও জানতে পারা যায় । বাচ্চাদের চলন তো একনম্বর হওয়া উচিত । মুখ থেকে
সর্বদা রত্ন নির্গত হওয়া উচিত । কৃষ্ণ জয়ন্তীতে বোঝানো খুবই ভালো । তখন শ্যাম এবং
সুন্দরের বিষয় যেন থাকে । কৃষ্ণকেও কালো, তারপর নারায়ণ এবং রাধাকেও কেন কালো বানানো
হয় ? শিবলিঙ্গতেও কালো পাথর রাখা হয় । এখন তিনি তো কালোই নন । শিব কি আর ওরা কি
জিনিস তৈরী করে । এইসব বিষয় বাচ্চারা, তোমরাই জানো । কেন তাঁদের কালো বানানো হয়,
তোমরা এইসব বিষয়ের উপরও বোঝাতে পারবে । এখন দেখবো যে, বাচ্চারা কি সেবা করে । বাবা
তো বলেন - এই জ্ঞান সব ধর্মের মানুষের জন্য । তাদেরও বলতে হবে যে - বাবা বলছেন,
আমাকে স্মরণ করো, তাহলে তোমাদের জন্ম - জন্মান্তরের পাপ কেটে যাবে । তোমাদের পবিত্র
হতে হবে । তোমরা যে কাউকেই রাখী পড়াতে পারো । ইউরোপিয়নদেরও রাখী বাঁধতে পারো । যে
কেউই হোক না কেন, তোমরা তাদের বলবে - ভগবান উবাচঃ তো অবশ্যই কোনো শরীরের দ্বারাই
বলবেন, তাই না । তিনি বলেন - "মামেকম্ ( একমাত্র আমাকে) স্মরণ করো" । দেহের সব ধর্ম
ত্যাগ করে নিজেকে আত্মা মনে করো । বাবা কতো বোঝান, তবুও বুঝতে না পারলে বাবা মনে
করেন, এর ভাগ্যে নেই । এ তো বুঝবেই যে, শিববাবা আমাদের পড়ান । রথ (শরীর ) ছাড়া তো
তিনি পড়াতে পারেন না । এই ইঙ্গিত দেওয়াই হলো যথেষ্ট । কোনো কোনো বাচ্চার বোঝানোর
অভ্যাস খুবই ভালো । বাবা - মাম্মার কথা তো বুঝতেই পারো যে, এনারা উঁচু পদ পাবেন ।
মাম্মাও তো সেবা করতেন, তাই না । এই কথাও বোঝাতে হয় । মায়ারও অনেক প্রকারের রূপ হয়
। অনেকেই বলে যে, আমার মধ্যে মাম্মা আসে, শিববাবা আসে, কিন্তু নতুন নতুন পয়েন্টস তো
নির্ধারিত শরীরের দ্বারাই শোনাবেন, নাকি অন্য কারোর দ্বারা শোনাবেন ? এ তো হতেই পারে
না । এমনিতে তো বাচ্চারা নিজেদেরও অনেক প্রকারের পয়েন্টস শোনায় । ম্যাগাজিনে কতো কথা
লেখা হয় । এমন নয় যে, মাম্মা - বাবা তাদের মধ্যে আসেন, তাঁরা লেখান । তা নয়, বাবা
তো এখানে প্রত্যক্ষভাবে আসেন, তাই তো তোমরা এখানে শোনার জন্য আসো । বাবা - মাম্মা
যদি অন্য কারোর মধ্যে আসতেন, তাহলে সেখানে বসেই তাদের কাছে পড়তো । তা নয়, এখানে
আসার জন্যই সবাই চেষ্টা করে । দূরে যারা থাকে, তারা আরো বেশী চেষ্টা করে । বাচ্চারা,
তোমরা তাই জন্মাষ্টমী উপলক্ষে অনেক সেবা করতে পারো । কৃষ্ণের জন্ম কবে হয়েছে, এও
কেউ জানে না । তোমাদের ঝুলি এখন ভর্তি হচ্ছে তাই তোমাদের খুশীতে থাকা উচিত, কিন্তু
বাবা দেখেন যে, কারোর কারোর মধ্যে খুশী একদমই নেই । শ্রীমতে না চলার জন্য যেন
প্রতিজ্ঞা করেই বসে আছে । সেবা পরায়ণ বাচ্চাদের তো কেবল সেবার নেশাই লেগে থাকবে ।
তারা মনে করে যে, বাবার সেবা যদি না করি, কাউকে যদি পথ না দেখাই তাহলে তো আমরা
অন্ধই রয়ে গেলাম । এ তো বোঝার মতো কথা, তাই না । ব্যাজেও কৃষ্ণের চিত্র আছে, তোমরা
এর উপরও বোঝাতে পারো । কাউকে জিজ্ঞেস করো, এনাকে কালো কেন দেখানো হয়েছে, কেউ বলতে
পারবে না । শাস্ত্রে লিখে দিয়েছে যে, রামের স্ত্রীকে হরণ করা হয়েছিলো, কিন্তু এমন
কোনো ঘটনা সেখানে হয় না ।
তোমরা ভারতবাসীরাই পরীস্থানী ছিলে, এখন তোমরা কবরস্থানী হয়ে গেছো, আবার জ্ঞান
চিতায় বসে দৈব গুণ ধারণ করে পরীস্থানী হও । এই সেবা তো বাচ্চাদের করতেই হবে । সবাইকে
খবর দিতে হবে । এতে বৃহৎ বুদ্ধির প্রয়োজন । এমন নেশা থাকা উচিত যে - আমাদের ভগবান
পড়ান । আমরা ভগবানের সঙ্গে থাকি । আমরা ভগবানের সন্তানও,আবার তাঁর কাছে পড়ি ।
বোর্ডিংয়ে থাকলে বাইরের সঙ্গ লাগে না । এখানেও তো স্কুল, তাই না । খৃস্টানদের
স্বভাব - চরিত্রও খুব সুন্দর ছিলো, এখন আর তা নেই, সকলেই তমোপ্রধান এবং পতিত । এই
পতিত আত্মারা দেবতাদের সামনে গিয়ে মাথা ঠোকে । সেই দেবতাদের কতো মহিমা । সত্যযুগে
সকলের চরিত্রই দৈবী ছিলো, এখন সকলেই আসুরী চরিত্রের । তোমরা যদি এমন - এমনভাবে ভাষণ
দাও, তাহলে সকলেই শুনে খুশী হয়ে যাবে । ছোটো মুখে বড় কথা --একথা কৃষ্ণের জন্য বলা
হয় । এখন তোমরা কতো বড় কথা শোনো, এতো বড় হওয়ার জন্য । তোমরা যে কাউকেই রাখী বাঁধতে
পারো । বাবার খবর তো সবাইকেই দিতে হবে । এই লড়াই স্বর্গের দ্বার খোলে । তোমাদের এখন
পতিত থেকে পবিত্র হতে হবে । বাবাকে স্মরণ করতে হবে । তোমরা দেহধারীকে স্মরণ করো না
। এক বাবাই সকলের সদগতি করেন । এ হলো পৃথিবীর লৌহ যুগ । বাচ্চারা, তোমাদের
বুদ্ধিতেও পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে ধারণা হয় । স্কুলেও যেমন স্কলারশিপ নেওয়ার
জন্য পরিশ্রম করে । এখানেও কতো বড় স্কলারশিপ । এখানে সেবাও অনেক বড় । মায়েরাও চিত্র
দেখিয়ে অনেক সেবা করতে পারে । কৃষ্ণের কালো, নারায়ণের কালো, রামচন্দ্রেরও কালো,
শিবেরও কালো, এইসব চিত্র দেখিয়ে সকলকে বোঝাও । দেবতাদের কেন কালো বানানো হয়েছে ?
শ্যাম - সুন্দর । শ্রীনাথের মন্দিরে যাও তো সেখানে সম্পূর্ণ কালো চিত্র । তাই এই
সমস্ত চিত্র একত্রিত করা উচিত । তোমাদের বাবার চিত্রও দেখানো উচিত । শ্যাম -
সুন্দরের অর্থ বুঝিয়ে বলো, তোমরাও যদি এখন রাখী বেঁধে কাম চিতা থেকে নেমে জ্ঞান
চিতায় বসো, তাহলে গোরা ( আত্মা পবিত্র ) হয়ে যাবে । এখানেও তোমরা সেবা করতে পারো ।
তোমরা খুব সুন্দর ভাষণ দিয়ে বুঝিয়ে বলতে পারো যে, এঁদের কেন কালো করা হয়েছে ?
শিবলিঙ্গকেও কালো কেন বানানো হয়েছে ! বলো, সুন্দর আর শ্যাম কেন বলা হয়, আমরা
বুঝিয়ে বলবো । এতে কেউই বিরক্ত হবে না । সেবা তো খুবই সহজ । বাবা তো বোঝাতেই থাকেন
-- বাচ্চারা, তোমরা ভালো গুণ ধারণ করো, বংশের নাম উজ্জ্বল করো । তোমরা এখন জানো যে,
আমরা হলাম উঁচুর থেকেও উঁচু ব্রাহ্মণ কুলের । এরপর রাখী বন্ধনের অর্থও তোমরা কাউকেই
বোঝাতে পারো । তোমরা বারবনিতাদেরও বুঝিয়ে রাখী বাঁধতে পারো । তোমাদের সঙ্গে যেন
চিত্রও থাকে । বাবা বলেন যে -- একমাত্র আমাকে (মামেকম ) স্মরণ করো, এই নির্দেশ পালন
করলে তোমরা গোরা ( পবিত্র, সুন্দর ) হয়ে যাবে । এখানে অনেক উপায় আছে । কেউই বিরক্ত
হবে না । একজন ছাড়া অন্য কোনো মানুষই কারোর সদগতি করতে পারে না । রাখী বন্ধনের দিন
না থাকলেও যে কোনোদিন রাখী বাঁধতে পারো । এ তো অর্থ বোঝার কথা । রাখী যখন চায় তখনই
বাঁধতে পারে । তোমাদের কর্তব্যই হলো এটা । বলো, বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করো । বাবা
বলেন যে, আমাকে ( মামেকম্ ) স্মরণ করো, তাহলে তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে । তোমরা মসজিদে
গিয়েও ওদের বোঝাতে পারো । বলবে, আমরা রাখী বাঁধার জন্য এসেছি । এই কথা তোমাদেরই
বোঝানোর অধিকার আছে । বাবা বলেন, তোমরা আমাকে স্মরণ করো, তাহলেই তোমাদের পাপ দূর হবে,
তোমরা পবিত্র হয়ে পবিত্র দুনিয়ার মালিক হয়ে যাবে । এখন তো পতিত দুনিয়া, তাই না ।
অবশ্যই একসময় স্বর্ণযুগ ছিলো, এখন লৌহযুগ । তোমরা স্বর্ণযুগে বা ঈশ্বরের কাছে যাবে
না কি ? এমনভাবে শোনাও তাহলে চট করে শরণে আসবে । আচ্ছা!
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণ, স্নেহ -
সুমন এবং সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মারূপী সন্তানদের সুপ্রভাত জানাচ্ছেন ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
জ্ঞান রত্নের সাগর থেকে যে অবিনাশী জ্ঞান রত্ন প্রাপ্ত হচ্ছে, তার মূল্য রাখতে হবে।
বিচার সাগর মন্থন করে নিজের মধ্যে জ্ঞান রত্ন ধারণ করতে হবে। মুখ থেকে সর্বদা যেন
রত্নই নির্গত হয়।
২ ) স্মরণের যাত্রায় থেকে বাণীকে শক্তিশালী করতে হবে। এই স্মরনেই আত্মা কাঞ্চন
তুল্য হবে, তাই স্মরণ করার কায়দা শিখতে হবে।
বরদান:-
পুরানো দেহ আর দুনিয়াকে ভুলে বাপদাদার হৃদয় আসনে আসীন ভব
সঙ্গমযুগী শ্রেষ্ঠ
আত্মাদের স্থানই হলো বাপদাদার হৃদয় আসন। এমন আসন, সম্পূর্ণ কল্পে মিলতে পারে না।
বিশ্ব রাজ্যের আসন বা কেবল রাজ্যের আসন তো পেতে থাকবে, কিন্তু এই আসন পাবে না - এ
এতো বিশাল আসন যে, চলো-ফেরো, খাও বা ঘুমাও কিন্তু সদা আসনে বিরাজিত থাকবে। যে
বাচ্চারা সদা বাপদাদার হৃদয় আসনে বিরাজিত থাকে, তারা এই পুরানো দেহ বা দেহের দুনিয়া
বিস্মৃত থাকে, একে দেখেও দেখে না।
স্লোগান:-
জাগতিক মান - সম্মানের পিছনে দৌড় লাগানো অর্থাৎ ছায়ার পিছনে দৌড়ানো।