25.08.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
প্রশ্নঃ -
১৬ কলা
সম্পূর্ণ অথবা পারফেক্ট হওয়ার জন্য কোন্ পুরুষার্থ অবশ্যই করতে হবে ?
উত্তরঃ -
যতটা সম্ভব নিজেকে আত্মা মনে করো । প্রেমের সাগর বাবাকে বাবাকে স্মরণ করো, তাহলে
পারফেক্ট হয়ে যাবে । জ্ঞান খুবই সহজ, কিন্তু ১৬ কলা সম্পূর্ণ হওয়ার জন্য স্মরণের
দ্বারা আত্মাকে পারফেক্ট হতে হবে । নিজেকে আত্মা মনে করলে তোমরা মিষ্টি হয়ে যাবে ।
সব ঝামেলা (খিটখিট) সমাপ্ত হয়ে যাবে ।
গীতঃ-
তুমি প্রেমের
সাগর...
ওম্ শান্তি ।
প্রেমের সাগর
তাঁর নিজের বাচ্চাদেরও তেমনই প্রেমের সাগর বানান । বাচ্চাদের এইম অবজেক্ট হলো, আমরা
এমন লক্ষ্মী - নারায়ণ হবো । এঁদেরকে সবাই কতো ভালোবাসেন । বাচ্চারা জানে যে, বাবা
আমাদের এঁদের মতো মিষ্টি তৈরী করেন । এখানেই তোমাদের মিষ্টি তৈরী হতে হবে, আর এমন
তৈরী হবে স্মরণের দ্বারা । ভারতের যোগের মহিমা আছে, সে হলো স্মরণ । এই স্মরণের
দ্বারাই তোমরা এনাদের মতো বিশ্বের মালিক হও । বাচ্চারা, তোমাদের এই পরিশ্রমই করতে
হবে । তোমরা এই অহংকার করো না যে, আমাদের অনেক জ্ঞান । মূল বিষয় হলো স্মরণ । এই
স্মরণই ভালোবাসা প্রদান করে । অনেক মিষ্টি, অনেক প্রিয় হতে চাইলে, উঁচু পদ প্রাপ্ত
করতে চাও, তাহলে পরিশ্রম করো । তা নাহলে খুবই অনুতাপ করবে, কেননা অনেক বাচ্চা আছে,
যারা স্মরণে থাকতে পারে না, পরিশ্রান্ত হয়ে যায়, তাই ছেড়ে দেয় । এক তো দেহী -
অভিমানী হওয়ার জন্য অনেক প্রযত্ন করো, নাহলে অনেক কম পদ পাবে । তখন এতটা মিষ্টি
কখনোই হবে না । অনেক অল্প বাচ্চাই আছে যাদের এই টান অনুভব হয়, কেননা তারা স্মরণে
থাকে । কেবল বাবার স্মরণ প্রয়োজন । যতো স্মরণ করবে ততই অনেক বেশী মিষ্টি হতে পারবে
। এই লক্ষ্মী - নারায়ণও আগের জন্মে অনেক স্মরণ করেছিলেন । এই স্মরণেই তাঁরা মিষ্টি
হয়েছিলেন । সত্যযুগে সূর্যবংশী হলো প্রথম নম্বরে, চন্দ্রবংশী দ্বিতীয় নম্বর হয়ে
গেলো । এই লক্ষ্মী - নারায়ণ খুবই প্রিয় । এই লক্ষ্মী - নারায়ণের চিত্র আর রাম -
সীতার চিত্রের মধ্যে অনেক তফাৎ । এই লক্ষ্মী - নারায়ণের উপর কখনোই কেউ কলঙ্ক লাগায়
নি । কৃষ্ণের উপর ভুল করে কলঙ্ক লাগিয়েছে, রাম - সীতার উপরও লাগিয়েছে ।
বাবা বলেন, অতি মিষ্টি তখনই হতে পারবে, যখন মনে করবে, আমি আত্মা । নিজেকে আত্মা মনে
করে বাবাকে স্মরণ করাতে অনেক মজা । তোমরা যতো স্মরণ করবে, ততই সতোপ্রধান, ১৬ কলা
সম্পূর্ণ হবে । ১৪ কলা তো ডিফেক্ট হয়ে গেলো, তারপর আরো খারাপ হতে থাকে । তোমাদের
১৬ কলা পারফেক্ট হতে হবে । এই জ্ঞান তো সম্পূর্ণ সহজ । যে কেউই আকৃষ্ট হবে । তোমরা
কল্পে কল্পে ৮৪ জন্ম নিয়ে এসেছো । এখন ফিরে তো কেউই যেতে পারে না, যতক্ষণ না
সম্পূর্ণ পবিত্র হচ্ছে । তা নাহলে সাজা ভোগ করতে হবে । বাবা বার বার বোঝান, যতটা
সম্ভব প্রথম - প্রথম এই এক কথা পাকা করো যে, আমি আত্মা । আমি আত্মা নিজের ঘরে থাকি,
তখন সতোপ্রধান থাকি, তারপর এখানে জন্মগ্রহণ করি । কেউ অনেক জন্ম, কেউ আবার কম জন্ম
নেয় । পরের দিকে তমোপ্রধান হয় । দুনিয়ার সেই সম্মান কম হয়ে যায় । নতুন বাড়ী তৈরী
হলে সেখানে কতো আরামের অনুভব হয় । তারপর আবার খারাপ হয়ে যায়, কলা কম হয়ে যায় ।
বাচ্চারা, তোমরা যদি পারফেক্ট দুনিয়াতে যেতে চাও, তাহলে তোমাদের পারফেক্ট হতে হবে ।
কেবলমাত্র জ্ঞানকে পারফেক্ট বলা হয় না । আত্মাকে পারফেক্ট হতে হবে । যতটা সম্ভব
চেষ্টা করো -- আমি আত্মা, বাবার সন্তান । অন্তরে অনেক খুশী থাকা দরকার । মানুষ তার
নিজের লোকেদের দেহধারী মনে করে খুশী হয় । আমি অমুকের সন্তান -- সে হলো অল্পকালের
নেশা । বাচ্চারা, তোমাদের এখন বাবার সঙ্গে সম্পূর্ণ বুদ্ধিযোগ লাগাতে হবে, এতে
ঝিমিয়ে যেও না । যদিও বিদেশেও যেখানেই যাও না কেন, একটা কথা দৃঢ়ভাবে মনে রেখো যে,
বাবাকে স্মরণ করতে হবে । বাবা হলেন প্রেমের সাগর । এই মহিমা কোনো মানুষের জন্য নয়
। আত্মা তার নিজের বাবার মহিমা করে । আত্মারা নিজেরা সব ভাই - ভাই । সকলের বাবা
হলেন একজন । বাবা সবাইকে বলেন - বাচ্চারা, তোমরা সতোপ্রধান ছিলে, এখন তমোপ্রধান হয়ে
গেছো । তমোপ্রধান হওয়ার কারণে তোমরা দুঃখী হয়ে গেছো । এখন আমি আত্মাকে পরমাত্মা
বাবা বলছেন, তোমরা প্রথমে পারফেক্ট ছিলে । সব আত্মারা ওখানে পারফেক্টই থাকে । যদিও
পার্ট আলাদা - আলাদা, তবুও পারফেক্ট তো, তাই না । পবিত্রতা ছাড়া ওখানে তো কেউই যেতে
পারবে না । সুখধামে তোমাদের সুখও থাকে, আবার শান্তিও থাকে, তাই তোমাদের ধর্ম হলো
উঁচুর থেকেও উঁচু । ওখানে অপার সুখ থাকে । একবার চিন্তা করে দেখো, আমরা কি তৈরী হই
। স্বর্গের মালিক হই । সে হলো হীরের মতো জন্ম । এখন তো কড়িতুল্য জন্ম । এখন বাবা
তোমাদের স্মরণে থাকার ইঙ্গিত দেন । তোমরা তাঁকে ডাকো যে, তুমি এসে আমাদের পতিত থেকে
পবিত্র করো । সত্যযুগ হলো সম্পূর্ণ নির্বিকারী । রাম - সীতাকেও সম্পূর্ণ বলা যাবে
না । তাঁরা সেকেণ্ড গ্রেডে চলে যান । স্মরণের যাত্রায় পাস করতে পারেন না । জ্ঞানে
যতই তীক্ষ্ণ হও না কেন, বাবার কাছে প্রিয় মনে হবে না । স্মরণে থাকলেই তখন প্রিয়
আর মিষ্টি হতে পারবে । তখন বাবাও তোমাদের কাছে প্রিয় মনে হবে । এই পাঠ তো সম্পূর্ণ
সাধারণ, তোমাদের পবিত্র হতে হবে, স্মরণে থাকতে হবে । এই কথা খুব ভালোভাবে নোট করে
নাও, তারপর এই যে কোথায় - কোথায় ঝামেলা হয়, অহংকার এসে যায়, এই স্মরণের যাত্রায়
থাকলে তা আর কখনো হবে না । মূল বিষয় হলো, নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো ।
দুনিয়াতে মানুষ কতো লড়াই - ঝগড়া করে । জীবন যেন বিষতুল্য করে দেয় । এই অক্ষর
সত্যযুগে থাকবে না । ভবিষ্যতে মানুষের জীবন আরো বিষতুল্য হয়ে যাবে । এ হলোই বিষয়
সাগর । সবাই ভয়ানক নরকে পড়ে আছে, খুবই দুর্গন্ধের জায়গা । দিনে দিনে এই দুর্গন্ধ
বৃদ্ধি পেতে থাকবে । একে বলা হয় নোংরা দুনিয়া । এখানে একে অপরকে দুঃখই দিতে থাকে,
কেননা দেহ অভিমানের ভূত রয়েছে । কামের ভূত রয়েছে । বাবা বলেন, তোমরা এই ভূতদের দূর
করো । এই ভূতই তোমাদের মুখ কালো করে দেয় । কাম চিতায় বসে কালো হয়ে যায়, তখন বাবা
বলেন, আমি সেইসময় এসে জ্ঞান অমৃতের বর্ষণ করি । তোমরা এখন কি তৈরী হচ্ছো । ওখানে তো
হীরের মহল হয়, সব প্রকারের বৈভব থাকে । এখানে তো সবই ভেজাল জিনিস । গরুদের খাবার
দেখো, সবকিছু থেকে সার বের করে বাকি দিয়ে দেয় । গরুরাও ঠিকমতো খাবার পায় না ।
কৃষ্ণের গরু দেখো, কেমন এক নম্বর দেখানো হয় । সত্যযুগে গরু এমন সুন্দর হয় যে,
সেকথা আর জিজ্ঞেস করো না । দেখলেই মুগ্ধতা এসে যায় । এখানে তো সব জিনিস থেকে
সুগন্ধ দূর করে দেয় । এ হলো খুবই ছি ছি দুর্গন্ধের দুনিয়া । তোমরা এই দুনিয়ায় মন
লাগিও না । বাব বলেন যে, তোমরা কতো বিকারী হয়ে গেছো । লড়াই - ঝগড়াতে কিভাবে একে
অপরকে মারতে থাকে । অ্যাটমিক বম্ব যারা বানায়, তাদেরও কতো মান, এতে সকলেরই বিনাশ হয়ে
যায় । বাবা বসে বলেন - অাজকের মানুষ কি আর কাল কি হবে ! এখন তোমরা মাঝামাঝি আছো ।
সুসঙ্গ উদ্ধার করে, আর কুসঙ্গ নাশ করে । তোমরা পুরুষোত্তম হওয়ার জন্য বাবার হাত ধরো
। কেউ যদি সাঁতার শেখায়, তাহলে তার হাত ধরতে হয় । না হলে ধাক্কা খাবে তাই এতে হাত
ধরতে হবে নাহলে মায়া আকর্ষণ করে নেয় । তোমরা এই সম্পূর্ণ বিশ্বকে স্বর্গ বানাও ।
নিজেকে নেশাতে রাখা উচিত । আমরা শ্রীমতের দ্বারা নিজেদের রাজত্ব স্থাপন করছি ।
সমস্ত মনুষ্য মাত্র দান তো করেই । ফকিরদেরও দেয় । তীর্থ যাত্রায় পাণ্ডাদেরও দান করে,
তারা একমুঠো চাল তো অবশ্যই দান করবে । এইসব নিয়ম ভক্তিমার্গের চলে আসছে । বাবা এখন
আমাদের ডবল দানী বানান । বাবা বলেন, তোমরা এই তিন পদ পৃথিবীতে এই ঈশ্বরীয়
ইউনিভার্সিটি, ঈশ্বরীয় হসপিটাল খোলো, যাতে তোমরা ২১ জন্মের জন্য এসে সুস্বাস্থ্যের
অধিকারী হবে। এখানে তো কি না - কি রোগ হয় । এই রোগে কতো দুর্গন্ধ হয়ে যায় ।
হাসপাতালের অবস্থা দেখলে তো ঘৃণা আসে । মানুষের কতো কর্মভোগ । এইসব দুঃখ থেকে মুক্ত
হওয়ার জন্য বাবা বলেন -- তোমরা কেবল আমাকে স্মরণ করো, আমি তোমাদের আর কোনো কষ্ট দিই
না । বাবা জানেন যে - বাচ্চারা অনেক দুর্দশা দেখেছে । বিকারী মানুষের মুখের চেহারাই
পরিবর্তন হয়ে যায় । একদম যেন মৃতের মুখ হয়ে যায় । মাতাল ব্যক্তি যেমন মদ ছাড়া
থাকতে পারে না । এই মদে খুব নেশা হয় কিন্তু তাও অল্পকালের জন্য । এতে বিকারী
মানুষের আয়ুও কতো কম হয়ে যায় । নির্বিকারী দেবতাদের আয়ু গড়ে ১২৫ - ১৫০ বছর হয়
। চিরসুস্থ হলে, আয়ুও তো বৃদ্ধি পাবে, তাই না । শরীরও নিরোগী হয়ে যায় । বাবাকে
অবিনাশী সার্জনও বলা হয় । সদগুরু জ্ঞানের ইনজেকশন দিয়েছেন অজ্ঞান অন্ধকার বিনাশের
জন্য । বাবাকে জানে না তাই অজ্ঞান অন্ধকার বলা হয়, এ ভারতবাসীদেরই কথা । ক্রাইস্টকে
তো জানে যে, অমুক সম্বতে এসেছিলেন । তাঁর তো সম্পূর্ণ লিস্ট আছে । পোপ কিভাবে
নম্বরের ক্রমানুসারে গদিটে বসে । এক ভারতই কারোর বায়োগ্রাফি জানে না । এমন বলেও
দুঃখহর্তা, সুখকর্তা পরমাত্মা, হে মাতা - পিতা ---আচ্ছা, মাতা - পিতার বায়োগ্রাফি
তো বলো । মানুষ কিছুই জানে না ।
তোমরা জানো যে -- এ হলো পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ । আমরা এখন পুরুষোত্তম তৈরী হচ্ছি,
তাই আমাদের সম্পূর্ণভাবে এই পাঠ গ্রহণ করা উচিত । লোক - লজ্জা, কুলের মর্যাদা -
এইসবে অনেকেই আটকে থাকে । এই বাবা তো কোনোকিছুর পরোয়া করেননি । কতো গালি খেয়েছেন,
কিন্তু না মন, না চিত্ত লাগিয়েছেন তাতে । এই পথে চলতে চলতে ব্রাহ্মণ আটকেও যায় ।
বাবা ব্রাহ্মণ বানিয়েছিলেন, তাই গালিও খেয়েছেন । সম্পূর্ণ পঞ্চায়েত একদিকে আর দাদা
অন্যদিকে । সমস্ত সিন্ধ্রি পঞ্চায়েত বলেছিলো -- এ কি করছো ? আরে, গীতাতে তো ভগবান
উবাচঃ আছে -- কাম মহাশত্রু, একে জয় করতে পারলে বিশ্বের মালিক হতে পারবে । এ তো
গীতার অক্ষর । আমাকে দিয়েই কেউ বলায় যে, কাম বিকার জয় করলে তোমরা জগৎজিৎ হবে । এই
লক্ষ্মী - নারায়ণও তো জয় করেছিলেন, তাই না । এতে লড়াই ইত্যাদির কোনো কথা নেই । আমি
তোমাদের স্বর্গের বাদশাহী দিতে এসেছি । তোমরা এখন পবিত্র হও আর বাবাকেই স্মরণ করো ।
স্ত্রী বলে, আমি পবিত্র হবো, স্বামী বলে, আমি হবো না । তখন একজন হাঁস আর একজন বক হয়ে
যায় । বাবা এসে তোমাদের জ্ঞান রত্ন চয়নকারী হংস তৈরী করেন, কিন্তু একজন হলো আর
একজন হলো না, তখন ঝগড়া হয় । শুরুতে তো অনেক শক্তি ছিলো । এখন এখন এত শক্তি কারোর
কারোর মধ্যে নেই । যদিও তারা বলে যে, আমরা উত্তরাধিকারী কিন্তু উত্তরাধিকারী হওয়ার
বিষয় আলাদা । শুরুতে তো একদম ম্যাজিক ছিলো । বড় বড় ঘরের লোকেরা চট করে ছেড়ে আসতো
উত্তরাধিকার পেতে । তারা যোগ্য হয়ে গেছে । প্রথম প্রথম যারা আসতো, তাদের মধ্যে
বিশেষ গুণ ছিলো । এখন সামান্য কিছুই এমন হবে । লোক - লজ্জা অনেক আছে । প্রথমে যারা
এসেছিলো, তারা অনেক সাহস দেখিয়েছিলো । এখন এতটা সাহস কেউ রাখবে - এ খুবই মুশকিল ।
হ্যাঁ, গরীবরা রাখতে পারে । মালার দানা হতে হলে তো পুরুষার্থ করতেই হবে । মালা তো
অনেক বড় । ৮ এরও আছে, ১০৮ এরও আছে, আবার ১৬ হাজার ১০৮ এরও আছে । বাবা নিজেই বলেন,
তোমরা খুব পরিশ্রম করো । নিজেকে আত্মা মনে করো । সবাই বলে না, কিন্তু যারা নিজেদের
অনেক ভালো মনে করে, তাদেরও বিকর্ম হয়ে যায় । যদিও 'জ্ঞানী আত্মা' । তারা খুবই ভালো
বুঝতে পারে, কিন্তু যোগের অভাব, তাই বাবার হৃদয়ে বিরাজ করতে পারে না । স্মরণে না
থাকলে তো আর হৃদয়ে বিরাজ করতে পারবে না । স্মরণের দ্বারাই তো স্মরণ মিলিত হবে, তাই
না । শুরুতে চট করে বলিহারি যেতো । এখন বলিহারি যাওয়া তো মাসির ঘরে যাওয়ার মতো সহজ
নয় । মূল বিষয় হলো স্মরণ, তখনই খুশীর পারদ চড়বে । তোমাদের যতো কলা কম হয়ে গিয়েছে,
ততই দুঃখ বৃদ্ধি পেয়েছে । এখন যতো কলা বৃদ্ধি পাবে, ততই খুশীর পারদ চড়তে থাকবে ।
পরের দিকে তোমাদের সব সাক্ষাৎকার হবে যে, বেশী স্মরণ করলে কি পদ প্রাপ্ত হয় । অনেক
পরে তোমাদের সাক্ষাৎকার হবে । বিনাশ যখন হবে, তখন তোমরা স্বর্গের সাক্ষাৎকারের
হালুয়া খাবে । বাবা বারবার বোঝান - তোমরা স্মরণ করা বাড়াও । কাউকে কিছুটা বোঝালে -
এতে বাবা খুশী হন না । এক পণ্ডিতের কথাও তো আছে, তাই না । বলেছিলো, রাম - রাম করলে
সাগর পার হয়ে যাবে । এতে দেখানো হয় যে -- নিশ্চয়েই বিজয় । বাবার প্রতি সংশয় এলে
বিনশন্তী হয়ে যায় । বাবার স্মরণেই পাপমুক্ত হওয়া যায়, রাতদিন এই প্রয়াস করা উচিত
। তখনই কর্মেন্দ্রিয়ের চঞ্চলতা বন্ধ হয়ে যাবে । এতে অনেক পরিশ্রম । অনেকই আছে, যারা
স্মরণের চার্ট রাখে না । মনে করো তাদের কোনো ভিত্তিই নেই । যতটা সম্ভব, যেভাবেই হোক
স্মরণ করতে হবে, তখনই সতোপ্রধান, ১৬ কলা সম্পন্ন হতে পারবে । পবিত্রতার সঙ্গে সঙ্গে
স্মরণের যাত্রারও প্রয়োজন । পবিত্র থাকলেই স্মরণে থাকতে পারবে । এই পয়েন্ট খুব
ভালোভাবে ধারণ করো । বাবা কতো নিরহংকারী । পরের দিকে সবাই তোমাদের চরণে মাথা নত করবে
। ওরা বলবে, বরাবর এই মাতারাই স্বর্গের দ্বার খোলে । স্মরণের জোর এখন কম । তোমরা
কোনো দেহধারীকেই স্মরণ করো না । তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হওয়াতেই পরিশ্রম । আচ্ছা
।
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের বাবার ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন
নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই
পতিত ছিঃ ছিঃ দুঃখদায়ী দুনিয়ার প্রতি মন লাগিও না । এক বাবার হাত ধরে এর থেকে পার
হতে হবে ।
২ ) মালার দানা হওয়ার জন্য খুব সাহস করে পুরুষার্থ করতে হবে । জ্ঞান রত্ন চয়নকারী
হংস হতে হবে কোনো বিকর্ম ক'রো না ।
বরদান:-
বাবা এবং সেবার স্মৃতির দ্বারা একরস স্থিতির অনুভবকারী সর্ব আকর্ষণ মুক্ত ভব
সেবকের যেমন সর্বদা
সেবা আর প্রভু স্মরণে থাকে । তেমনই এই পৃথিবীর সেবক, প্রকৃত সেবাধারী বাচ্চাদেরও
বাবা এবং সেবা ব্যতীত কিছুই স্মরণে থাকে না, এতেই একরস স্থিতিতে থাকার অনুভব হয় ।
তাদের এক বাবার রস ব্যতীত সব রসই নীরস লাগে । এক বাবার রসের অনুভব হওয়ার কারণে
কোথাও আকর্ষণ যেতে পারে না, এই একরস স্থিতির তীব্র পুরুষার্থই সর্ব আকর্ষণ থেকে
মুক্ত করে দেয় । এটাই হলো শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য ।
স্লোগান:-
সংকটময় পরিস্থিতির পেপারে পাস করার জন্য নিজের প্রকৃতিকে শক্তিশালী বানাও ।