19.08.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
প্রশ্নঃ -
জয় আর পরাজয়ের
সাথে সম্বন্ধ যুক্ত কোন্ ভ্রষ্ট কর্মটি মানুষকে দুঃখী করে ?
উত্তরঃ -
“জুয়া”(পাশা খেলা)। অনেক মানুষের মধ্যেই জুয়া খেলার কুসংস্কার থাকে, এটা হল ভ্রষ্ট
কর্ম, কেননা এই খেলায় পরাজয়ের কারণে দুঃখ আর জয়ের কারণে খুশী হয়। বাচ্চারা তোমাদের
প্রতি বাবার নির্দেশ হল - বাচ্চারা, দৈবী কর্ম করো। এরকম কোনও কর্ম করো না, যার
কারনে সময় ব্যর্থ নষ্ট হয়। সর্বদা অসীম জগতের জয় প্রাপ্ত করা জন্য পুরুষার্থ করো।
গীতঃ-
অবশেষে সেইদিন
এসেছে আজ..
ওম্ শান্তি ।
ডবল ওম্ শান্তি।
বাচ্চারা, তোমাদেরকেও বলতে হবে যে - ওম্ শান্তি। এখানে হল ডবল ওম্ শান্তি। একটি হল,
সুপ্রিম আত্মা (শিব বাবা) বলছেন - ওম্ শান্তি। দ্বিতীয়, এই দাদাও বলছেন - ওম্
শান্তি। আবার বাচ্চারা, তোমরাও বল যে - আমি আত্মা হলাম শান্ত স্বরূপ, আমরা হলাম
শান্তি দেশের বাসিন্দা। এখানে এই স্থূল দেশে আমরা অভিনয় করতে এসেছি। এই সমস্ত কথা
আত্মারা ভুলে গিয়েছিল, অবশেষে সেই দিন তো অবশ্যই ফিরে এসেছে, যেদিনের কথা তোমরা
শুনেছিলে। কোন কথাটি তোমরা শুনেছিলে ? বলেছিলে যে - বাবা দুঃখ হরণ করে সুখ প্রদান
করো। প্রত্যেক মানুষ সুখ-শান্তি পছন্দ করে। বাবা হলেন গরিবের রাজা। এই সময় ভারত হলো
একদম গরিব। বাচ্চারা জানে যে, আমরা অত্যন্ত ধনী ছিলাম। এটাও তোমরা, ব্রাহ্মণ
বাচ্চারাই জানো, বাকিরা তো সবাই জঙ্গলে আছে। বাচ্চারা তোমাদেরও নম্বরের ক্রমে
পুরুষার্থানুসারে এ বিষয়ে নিশ্চয় আছে। তোমরা জানো যে ইনি হলেন শ্রী শ্রী, তাঁর মতও
হল শ্রেষ্ঠ-র থেকেও অতি শ্রেষ্ঠ। ভগবানুবাচ, তাই না! মানুষ তো রাম-রাম করে এমন
চিৎকার করে, যেন মনে হয় বাজনা বাজে। এখন, রাম তো ছিল ত্রেতার রাজা, তাঁরও অনেক মহিমা
ছিল। ১৪ কলা ছিল। ২ কলা কম, তাঁর জন্য বলা হতো যে, রাম রাজা - রাম প্রজা....।
তোমরাই ধনী হও, তাই না! রাম-এর থেকেও বেশি ধনী হবেন লক্ষ্মী-নারায়ণ। রাজাকে
অন্নদাতাও বলা হয়। বাবা হলেন দাতা, তিনি সবকিছুই প্রদান করেন, বাচ্চাদেরকে বিশ্বের
মালিক তৈরী করেন। সেখানে অপ্রাপ্ত কোনো বস্তু হয় না, যেটা প্রাপ্ত করার জন্য
তোমাদের পাপ কর্ম করতে হয়। সেখানে পাপের কোনও নাম থাকে না। অর্ধকল্প হলো দৈবী
রাজ্য, পুনরায় অর্ধকল্প হল আসুরিক রাজ্য। অসুর অর্থাৎ যার মধ্যে দেহ-অভিমান আছে,
পাঁচ বিকার আছে।
এখন তোমরা এসেছ - মাঝি অথবা বাগানের মালির কাছে। তোমরা জানো যে, আমরা এখন
প্রত্যক্ষরূপে তাঁর কাছে বসে আছি। বাচ্চারা তোমরাও বসে বসে ভুলে যাও। ভগবান, তিনি
যা নির্দেশ দেন, সেটা মানতে হবে, তাই না! প্রথমতঃ তিনি শ্রীমৎ দেন তোমাদেরকে
শ্রেষ্ঠ-র থেকেও শ্রেষ্ঠতম বানানোর জন্য। তাই তাঁর শ্রীমতে চলতে হবে, তাইনা!
সর্বপ্রথম এই শ্রীমত দেন যে - *দেহী-অভিমানী হও*। বাবা আমাদেরকে অর্থাৎ আত্মাদেরকে
পড়াচ্ছেন। এটা খুব ভালো ভাবে স্মরণে রাখো। এই কথাটি মনে থাকলে বেড়া হয়ে যাবে।
বাচ্চাদেরকে বোঝানো হয়েছে যে, তোমরাই ৮৪ জন্ম গ্রহণ করো। তোমরাই তমোপ্রধান থেকে
সতোপ্রধান হও। এই দুনিয়া তো হল পতিত-দুঃখী। স্বর্গকে বলা যায় সুখধাম। বাচ্চারা
জানে যে, শিববাবা, স্বয়ং ভগবান আমাদেরকে পড়াচ্ছেন। আমরা হলাম তাঁর স্টুডেন্ট। তিনি
হলেন আমাদের বাবা, আবার শিক্ষকও, তাই পড়তেও হবে খুব ভালোভাবে। দৈবী কর্মও করতে হবে।
কোনও ভ্রষ্ট কর্ম করো না। ভ্রষ্ট কর্মের মধ্যে জুয়া বা পাশা খেলাও এসে যায়। এটাও
দুঃখ দেয়। পরাজয় হলে দুঃখ হয়, আর জয় হলে খুশি হয়। বাচ্চারা, এখন তোমরা অসীম
জগতের মায়ার কাছে পরাজিত হয়েছো। এটা হলই অসীমের জয় আর পরাজয়ের খেলা। ৫
বিকাররূপী রাবণের থেকে হেরে গেলেই পরাজয়, তার উপর জয় প্রাপ্ত করতে হবে। মায়ার কাছে
হেরে গেলেই পরাজয় হয়। বাচ্চারা, এখন তোমাদেরকে জয়ী হতে হবে। এখন তোমাদেরকেও জুয়া
অথবা পাশাখেলা আদি সব ছেড়ে দিতে হবে। এখন অসীম জগতের উপর জয় প্রাপ্ত করার জন্য
সম্পূর্ণ অ্যাটেনশন দিতে হবে। এমন কোনও কর্ম করো না, যাতে সময় ব্যর্থ নষ্ট হয়।
অসীম জগতের জয় প্রাপ্ত করার জন্য পুরুষার্থ করতে হবে। যিনি করাবেন সেই বাবা হলেন
সমর্থ। তিনি হলেন সর্বশক্তিমান। এটাও বোঝানো হয়েছে যে কেবল বাবা-ই সর্বশক্তিমান নয়,
রাবণও হল সর্বশক্তিমান। অর্ধ কল্প রাবন রাজ্য, অর্ধ কল্প রামরাজ্য চলতে থাকে। এখন
তোমরা রাবণের উপর জয় প্রাপ্ত করছো। এখন সেই লৌকিক জগতের কথা ছেড়ে অসীম জগতের কথাতে
মনঃসংযোগ করতে হবে। মাঝি এসে গেছেন। অবশেষে সেই দিনও এসে গেছে, তাই না! উঁচুর থেকে
উঁচু বাবার কাছে তোমাদের আহ্বানের ডাক শ্রুতিগোচর হয়। বাবা বলছেন যে - বাচ্চারা,
তোমরা অর্ধ কল্প অনেক ধাক্কা খেয়েছ। পতিত হয়ে গেছো। পবিত্র ভারত শিবালয় ছিল।
তোমরা শিবালয়ে থাকতে। এখন তোমরা বেশ্যালয় আছো। শিবালয়ে যারা থাকে, তোমরা তাদেরকে
পূজা করতে । এখানে অনেক ধর্ম হওয়ার কারণে নিজেদের মধ্যে কতো বিশৃঙ্খলা করে। বাবা
বলেন যে, এইসব ধর্মগুলিকে আমি বিনাশ করে দিই। সকলের বিনাশ হবেই আর ধর্ম স্থাপক
বিনাশ করেন না। তিনি সদ্গতি প্রদান করা কোনো গুরুও নন। সদ্গতি তো জ্ঞানের দ্বারা
প্রাপ্ত হয়। বাবা-ই হলেন সকলের সদ্গতি দাতা জ্ঞানের সাগর। এই কথাটিও ভালোভাবে নোট
করো। অনেকেই আছে যারা এখানে শুনে বাইরে গেলে, এখানকার কথা এখানেই রেখে চলে যায়।
যেরকম গর্ভ-জেলে বলে যে - আমি আর পাপ করবো না। বাইরে বেরোলে, ব্যস ওখানকার কথা
ওখানেই থেকে যায়। একটু বড় হলেই পাপ করতে শুরু করে দেয়। কাম কাটারি চালাতে থাকে।
সত্যযুগে তো গর্ভও মহল হয়ে যাবে। তাই বাবা বসে বোঝাচ্ছেন - অবশেষে সেই দিন এসেছে
আজ। কোন দিন? পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগের দিন। যার কথা কারো জানা নেই। বাচ্চারা অনুভব
করে যে আমরা পুরুষোত্তম হচ্ছি। উত্তমের থেকেও উত্তম পুরুষ আমরা-ই ছিলাম, শ্রেষ্ঠ-র
থেকেও শ্রেষ্ঠ ধর্ম আমাদেরই ছিল। কর্মও শ্রেষ্ঠর থেকেও শ্রেষ্ঠ ছিল। সেখানে রাবন
রাজ্যই হয় না। অবশেষে সেই দিন এসেছে, যেদিন বাবা এসেছেন পড়াতে। তিনিই হলেন
পতিত-পাবন। তাই এইরকম বাবার শ্রীমতে চলতে হবে, তাই না! এখন হল কলিযুগের অন্ত সময়।
অল্প সময়ই তো চাই, পবিত্র হওয়ার জন্য। ৬০ বছরের পর বাণপ্রস্থ বলা হয়। ৬০ বছর বয়স
হলেই তো লাঠির প্রয়োজন হয়। এখন তো দেখো ৮০ বছরের ব্যক্তিও বিকার ছাড়তে পারে না।
বাবা বলেন যে, আমি এঁনার বানপ্রস্থ অবস্থাতে প্রবেশ করে এঁনাকে বোঝাই। আত্মাই
পবিত্র হয়ে ওপারে যায়। আত্মাই ওড়ে। এখন আত্মার ডানা কেটে গেছে। উড়তে পারে না।
রাবণ ডানা কেটে দিয়েছে। পতিত হয়ে গেছে। কোনও একজনও বাড়ি ফিরে যেতে পারে না।
প্রথমে তো সুপ্রিম বাবাকে যেতে হবে। শিবের বরযাত্রী বলা হয়, তাইনা! শঙ্করের
বরযাত্রী হয় না। বাবার পিছনে পিছনে আমরা, সমস্ত বাচ্চারাই যাই। বাবা এসেছেন
আমাদেরকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। শরীর সহ তো নিয়ে যাবেন না। এখন আত্মারা সবাই পতিত হয়ে
গেছে। যতক্ষণ না পবিত্র হয়, ততক্ষণ বাড়ি ফিরে যেতে পারবে না। পবিত্রতা ছিল তো,
তখন শান্তি আর সমৃদ্ধিও ছিল। কেবলমাত্র তোমরাই আদি সনাতন ধর্মের ছিলে। এখন অন্যান্য
সমস্ত ধর্মের আত্মারা আছে। কিন্তু দৈবী-কুল নেই। একেই কল্প বৃক্ষ বলা হয়। বড়
গাছের সঙ্গে (অর্থাৎ কলকাতার বোটানিক্যাল গার্ডেন- এর সঙ্গে) এই আদি সনাতন
দেবী-দেবতা ধর্মের মিল পাওয়া যায়। কান্ড নেই। বাকি সমস্ত ঝাড় দাঁড়িয়ে আছে।
সেইরকম এখানেও এই দেবী-দেবতা ধর্মের প্রধান কান্ড নেই। বাকি সমস্ত গাছ দাঁড়িয়ে আছে।
কান্ড ছিলো তো অবশ্যই, কিন্তু প্রায়ঃলোপ হয়ে গেছে, আবার পুনরায় রিপিট হবে। বাবা
বলছেন যে, আমি পুনরায় আসি এক ধর্মের স্থাপনা করতে। অন্যান্য সমস্ত ধর্মের বিনাশ হয়ে
যায়। না হলে তো সৃষ্টি চক্রের কিভাবে পুনরাবৃত্তি হবে? বলাও হয়ে থাকে যে -
বিশ্বের হিস্ট্রি জিওগ্রাফি পুনরাবৃত্তি হয়। এখন পুরানো দুনিয়া আছে, পুনরায় নতুন
দুনিয়াকে রিপিট হতে হবে। এই পুরানো দুনিয়া পরিবর্তিত হয়ে নতুন দুনিয়া স্থাপন হবে।
এই ভারতই আবার নতুন থেকে পুরানো হয়ে যায়। বলা হয় যে যমুনার কন্ঠে পরিস্থান ছিল।
বাবা বলেন - তোমরা কাম চিতার উপর বসে কবরস্থানী হয়ে গেছো। পুনরায় বাবা তোমাদেরকে
পরিস্থানী বানাচ্ছেন। শ্রীকৃষ্ণকে শ্যাম-সুন্দর বলা হয় কেন? কারোরই বুদ্ধিতে নেই।
নাম তো খুবই ভালো রেখে দিয়েছে, তাই না? রাধে আর কৃষ্ণ - এঁরাই হলেন নতুন বিশ্বের
প্রিন্স-প্রিন্সেস। বাবা বলেন যে - কাম চিতার উপর বসার কারণে এঁরাই আয়রন এজ্ড হয়ে
গেছে। গাওয়া-ও হয় যে - সাগরের বাচ্চারা কাম চিতাতে বসে জ্বলে পুড়ে মারা গেছে।
এখন বাবা সবার উপর জ্ঞানের বর্ষণ করছেন। পুনরায় সবাই চলে যাবে গোল্ডেন এজ-এ। এখন হল
সঙ্গম যুগ। তোমাদের এখন অবিনাশী জ্ঞান-রত্নের দান প্রাপ্ত হয়, যার দ্বারা তোমরা ধনী
হয়ে যাও। এখানকার এক-এক রত্ন লক্ষ টাকার সমান। তারা তো আবার ভেবে নেয় যে,
শাস্ত্রের সংস্করণগুলির মূল্য লক্ষ টাকা। বাচ্চারা, তোমরা এই পড়াশোনার দ্বারা
পদ্মাপতি হও। এই পড়াশোনা হল ‘সোর্স অফ ইনকাম’, তাই না! এই জ্ঞানরত্ন গুলিকে তোমরা
ধারণ করতে থাকো। ঝুলি ভরপুর করতে থাকো। তারা তো আবার শঙ্করের জন্য বলে দেয় যে - হে
বম বম মহাদেব, ভরে দাও ঝুলি। শংকর এর কাছে অনেক অভিযোগ করে। ব্রহ্মা আর বিষ্ণুর
পার্ট হলো এখানেই। এটাও তোমরা জানো যে - ৮৪ জন্ম বিষ্ণুর জন্যও বলা হয়, আবার
লক্ষ্মী-নারায়ণের জন্যও বলা হয়। তোমরা ব্রহ্মার ক্ষেত্রেও বলতে পারো। বাবা বসে
বোঝাচ্ছেন যে - সত্য কোনটা, মিথ্যা কোনটা, ব্রহ্মা আর বিষ্ণুর পার্ট কি? তোমরাই
দেবতা ছিলে, চক্র লাগিয়ে ব্রাহ্মণ হয়েছ, পুনরায় এখন দেবতা হতে চলেছ। সমস্ত অভিনয়
এখানেই চলতে থাকে। বৈকুন্ঠের রাস দেখতে থাকে। এখানে তো বৈকন্ঠ নেই। মীরা রাস করে
ছিলেন। সেগুলিকে সাক্ষাৎকার বলা যাবে। তাঁকে অনেক সম্মানও দেওয়া হয়। তিনি
সাক্ষাৎকার করেছিলেন, কৃষ্ণের সাথে রাস করেছিলেন। তাতে কি হয়েছে, স্বর্গতে তো যেতে
পারেন নি। গতি-সদ্গতি তো সঙ্গমেই প্রাপ্ত হতে পারে। এই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগকে
তোমরাই জানো। আমরা বাবার দ্বারা এখন মানুষ থেকে দেবতা তৈরি হচ্ছি। বিরাট রূপেরও
জ্ঞান তোমাদের জানা আছে, তাই না! তারা নিজেদের কাছে বিরাট রূপের চিত্রও রাখে, কিন্তু
অর্থ কিছুই বুঝতে পারে না। অকাসুর - বকাসুর এইসব হল এই সঙ্গমের নাম। ভষ্মাসুরেরও
নাম আছে। কাম চিতার উপর বসে তোমরা ভষ্ম হয়ে গিয়েছিলে। এখন বাবা বলছেন যে - আমি
সবাইকে পুনরায় জ্ঞান চিতার উপর বসিয়ে নিয়ে যেতে এসেছি। আত্মারা সবাই হলো ভাই-ভাই।
বলা হয় যে হিন্দু-চিনি ভাই-ভাই। হিন্দু-মুসলিম ভাই-ভাই। এখন ভাই-ভাইও নিজেদের মধ্যে
লড়াই করছে। কর্ম তো আত্মাই করে, তাই না! শরীর দ্বারা আত্মা লড়াই করতে থাকে। পাপও
আত্মার উপরই আরোপিত হয়, এই জন্য পাপাত্মা বলা হয়। বাবা অনেক স্নেহের সাথে এই সমস্ত
কথা বসে বোঝাচ্ছেন। শিব বাবা আর ব্রহ্মা বাবা দুজনেরই অধিকার আছে বাচ্চা-বাচ্চা বলে
ডাকার। বাবা, দাদার দ্বারা বলছেন যে - হে বাচ্চারা! তোমরা বুঝতে পেরেছো, যে আমরা
আত্মারা এখানে এসে অভিনয় করছি। পুনরায় অন্তে বাবা এসে সবাইকে পবিত্র বানিয়ে সাথে
নিয়ে যান। বাবা-ই এসে জ্ঞান প্রদান করেন। আসেনও এখানেই। শিবজয়ন্তীও এখানেই মানানো
হয়। শিব-জয়ন্তীর পর আসে কৃষ্ণ-জয়ন্তী। শ্রীকৃষ্ণ-ই পুনরায় শ্রী নারায়ণ হয়।
পুনরায় চক্র লাগিয়ে অন্ত সময়ে শ্যামবর্ণ (পতিত) হয়ে যায়। বাবা এসে পুনরায় গোরা
বানান। তোমরাই ব্রাহ্মণ থেকে দেবতা হবে। পুনরায় সিঁড়ি দিয়ে নিচের দিকে নামবে। এই
৮৪ জন্মের হিসাব অন্য কারোর বুদ্ধিতে থাকবে না। বাবা-ই বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন। গানও
শুনেছো যে - অবশেষে ভক্তদের আহ্বানে ভগবান সাড়া দেন। আহ্বান করেছিলে যে - হে ভগবান,
এসে আমাদেরকে ভক্তির ফল প্রদান করো। ভক্তি ফল দেয় না। ফল দেন স্বয়ং ভগবান।
ভক্তদেরকে দেবতা বানিয়ে দেন। তোমরা অনেক ভক্তি করেছিলে। প্রথম প্রথম তো তোমরাই
শিবের ভক্তি আরম্ভ করেছিলে। যে ভালোভাবে এই কথাগুলিকে বুঝতে পারবে, তোমরা অনুভব করবে
যে এ হলো আমাদের কুলের। কারোর বুদ্ধিতে আবার এই সমস্ত কথা ধারণ হয়না, তখন বুঝবে যে
এ বেশী ভক্তি করেনি, পিছনে এসেছে। এখানেও প্রথমে আসতে পারবে না। এটা হিসাব আছে। যে
অনেক ভক্তি করেছে, তারই অনেক ফল প্রাপ্ত হবে। অল্প ভক্তি, অল্প ফল। সে স্বর্গের সুখ
ভোগ করতে পারবে না, কেননা শুরুতে শিবের ভক্তি অল্প কয়েকজনই করেছে। তোমাদের বুদ্ধি
এখন কাজ করছে। বাবা ভিন্ন-ভিন্ন যুক্তির দ্বারা তোমাদেরকে বোঝাচ্ছেন। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১)
একেকটি অবিনাশী জ্ঞানরত্ন, যেগুলি পদ্ম (লক্ষ কোটি গুণ) সমান মূল্যবান, এই
জ্ঞানরত্ন দিয়ে নিজের ঝুলি ভরপুর করে, বুদ্ধিতে ধারণ করে, পুনরায় দান করতে হবে।
২) শ্রী শ্রী-র শ্রেষ্ঠ শ্রীমতের উপর সম্পূর্ণ রীতিতে চলতে হবে। আত্মাকে সতোপ্রধান
বানানোর জন্য দেহী-অভিমানী হওয়ার সম্পূর্ণ পুরুষার্থ করতে হবে।
বরদান:-
"মন্মনাভব"-রবিধি দ্বারা বন্ধনেরবীজগুলিকে সমাপ্তকরে মোহমুক্তস্মৃতি স্বরূপভব
ব্যাখ্যা :- বন্ধনের
বীজ হলো সম্বন্ধ। যখন বাবার সাথে সর্ব সম্বন্ধ জুড়ে নিয়েছ, তখন অন্য কারোর প্রতি
মোহ কিভাবে হতে পারে! বিনা সম্বন্ধে মোহ হয় না, আর মোহ নেই তো বন্ধনও নেই। যখন
বীজকেই সমাপ্ত করে দিয়েছো, তখন বিনা বীজে বৃক্ষ কিভাবে জন্ম হবে। যদি এখনও পর্যন্ত
বন্ধন থাকে, তাহলে এটাই প্রমাণিত হয় যে - কিছু ভেঙেছ, কিছু জুড়েছ, এইজন্য "মন্মনাভব"-র
বিধি দ্বারা মনের বন্ধন থেকেও মুক্ত, মোহমুক্ত স্মৃতি স্বরূপ হও, তখন এই অভিযোগ
সমাপ্ত হয়ে যাবে যে, কি করব.. বন্ধন আছে, ছাড়তে পারছি না।
স্লোগান:-
ব্রাহ্মণ জীবনের শ্বাস হল উৎসাহ-উদ্দীপনা, এইজন্য কোনও পরিস্থিতিতেই
উৎসাহ-উদ্দীপনার প্রেশার যেন কম না হয়।