22.08.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
প্রশ্নঃ -
কখন এবং কিভাবে
বিশ্বে শান্তি স্থাপন হয় ?
উত্তরঃ -
তোমরা জানো যে মহাভারতের যুদ্ধের পরেই বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়। কিন্তু তার জন্য
আগে থেকেই তোমাদেরকে প্রস্তুত হতে হবে। নিজের কর্মাতীত অবস্থা তৈরি করার জন্য
পরিশ্রম করতে হবে। সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান চিন্তন করে এবং বাবাকে স্মরণ করে
সম্পূর্ণ পবিত্র হতে হবে। তখনই এই সৃষ্টির পরিবর্তন হবে।
গীতঃ-
আজ মানুষ
অন্ধকারে রয়েছে…
ওম্ শান্তি ।
এই গানটা
ভক্তিমার্গে গাওয়া হয়। ওরা বলে - আমরা অন্ধকারে আছি, আমাদেরকে জ্ঞানের ত্রিনয়ন দাও।
জ্ঞানের সাগরের কাছে জ্ঞান চায়। তবে তারা সকলেই অজ্ঞানতায় আচ্ছন্ন। বলা হয়, কলিযুগে
সকলেই অজ্ঞানতার আসুরিক নিদ্রায় আচ্ছন্ন কুম্ভকর্ণ। বাবা বলছেন - জ্ঞান তো খুব সহজ।
ভক্তিমার্গে কত বেদ-শাস্ত্র ইত্যাদি পাঠ করে, হঠযোগ করে, গুরুর কাছে দীক্ষা নেয়। *এখন
সেগুলো ছাড়তে হবে কারণ ওরা কেউই রাজযোগ শেখাতে পারবে না।* রাজত্ব তো বাবা-ই দেবেন।
একজন মানুষ কখনো অন্য মানুষকে দিতে পারবে না। কিন্তু এই রাজত্বকেই সন্ন্যাসীরা
কাক-বিষ্ঠার মতো সুখ বলে দেয় কারন তারা নিজেরাই ঘরবাড়ি ত্যাগ করে। জ্ঞানের সাগর বাবা
ছাড়া এই জ্ঞান অন্য কেউ দিতে পারবে না। ভগবান-ই এই রাজযোগ শেখান। কোনো মানুষ কখনো
অন্য মানুষকে পবিত্র করতে পারবে না। কেবল বাবা-ই হলেন পতিত-পাবন। মানুষ ভক্তিমার্গে
ফেঁসে আছে। জন্ম-জন্ম ধরে ভক্তি করে আসছে। স্নান করতে যায়। এমন নয় যে শুধু গঙ্গাতেই
স্নান করতে যায়। যেখানেই জল আছে এমন পুকুর কিংবা দীঘি দেখবে, সেটাকেই পতিত-পাবন মনে
করবে। এখানেও গোমুখ আছে। ঝর্ণা থেকে জল বেরিয়ে আসে। কুঁয়াতেও এভাবে জল আসে। কিন্তু
সেটাকে তো পতিত-পাবনী গঙ্গা বলা হয় না। মানুষ মনে করে, এটাও একটা তীর্থ। অনেক মানুষ
ওখানে ভাবনা নিয়ে যায় এবং স্নান করে। তোমরা বাচ্চারা এখন জ্ঞান পেয়েছ। তোমরা অন্যকে
বললেও তারা মানতে চায় না। নিজের অনেক দেহ-অহংকার রয়েছে - আমি এত শাস্ত্র পড়েছি। বাবা
বলছেন - যা কিছু পড়েছ, সেগুলো সব ভুলে যাও। মানুষ যাতে এইসব বিষয় জানতে পারে, তাই
বাবা বলেন - এইসব পয়েন্ট গুলো লিখে এরোপ্লেন থেকে ফেলে দাও। আজকাল মানুষ বলে -
কিভাবে বিশ্বে শান্তি আসবে ? কেউ কোনো মতামত জানালে তাকে পুরস্কারও দেওয়া হয়। কিন্তু
ওরা তো শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। কোথায় শান্তি আছে ? মিথ্যে পুরস্কার দিয়ে
দেয়। তোমরা এখন জেনেছ যে, যুদ্ধের পরেই বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। প্রস্তুতি এমন
পর্যায়ে যে, যেকোনো সময়ে এই যুদ্ধ লেগে যাবে। কেবল তোমরা বাচ্চারাই তৈরি হওনি।
কর্মাতীত অবস্থায় পৌঁছনোর জন্যই তোমাদেরকে পরিশ্রম করতে হবে। *বাবা বলছেন - কেবল
আমাকেই স্মরণ করো, ঘর-গৃহস্থে থেকেও কমল পুষ্পের মতো পবিত্র হও, আর সৃষ্টির
আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান চিন্তন করো।* তোমরা লিখতে পারো যে ড্রামা অনুসারে আগের
কল্পের মতো পুনরায় শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। তোমরা এটাও বোঝাতে পারো যে সত্যযুগেই
সমগ্র বিশ্বে শান্তি থাকবে। এখানে অবশ্যই অশান্তি থাকবে। কিন্তু কেউ কেউ তোমাদের কথা
একটুও বিশ্বাস করে না। ওরা যেহেতু স্বর্গে আসবে না, তাই শ্রীমৎ অনুসারে চলবে না।
এখানেও অনেকে আছে যারা শ্রীমৎ অনুসারে পবিত্র থাকতে পারে না। সর্বোচ্চ ভগবান
তোমাদেরকে মতামত দিচ্ছেন। কারোর চালচলন ঠিকঠাক না হলে বলা হয় - ঈশ্বর তোমার সুমতি
দিক। তোমাদেরকে এখন ঈশ্বরীয় মত অনুসারে চলতে হবে। বাবা বলছেন - তোমরা ৬৩ জন্ম ধরে
বিষয় সাগরে ধাক্কা খেয়ে এসেছ। বাবা তো বাচ্চাদের সাথেই কথা বলেন। বাচ্চাদেরকেই তো
বাবা শুধরাবেন। সমগ্র দুনিয়াকে কিভাবে শুধরাবেন ? বাইরের সবাইকে বলবেন - বাচ্চাদের
কাছ থেকে বুঝে নাও। বাইরের কারোর সঙ্গে তো বাবা কথা বলতে পারেন না। বাচ্চারাই বাবার
কাছে প্রিয়। সৎপুত্ররা তো প্রিয় হতে পারে না। লৌকিক বাবাও সুযোগ্য সন্তানকেই
সম্পত্ত্বি দেন। সব বাচ্চা সমান হয় না। বাবাও বলছেন - যে আমার হয়ে যায়, তাকেই আমি
উত্তরাধিকার দিই। যারা আমার হয় না, তারা এটা হজম করতে পারবে না। শ্রীমৎ অনুসারে চলতে
পারবে না। ওরা হলো ভক্ত। বাবা অনেক কিছু দেখেছেন। বড় কোনো সন্ন্যাসী এলে তার সাথে
অনেক ফলোয়ার্স হয়ে যায়। চাঁদা তোলে। নিজ নিজ ক্ষমতা অনুসারে চাঁদা দেয়। এখানে বাবা
কখনোই এরকম চাঁদা তুলতে বলেন না। না, এখানে যেরকম বীজ বপন করবে, ২১ জন্ম ধরে তার ফল
পাবে। মানুষ দান করার সময়ে ভাবে যে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে দান করছি। হয় ঈশ্বর সমর্পণম্
বলে অথবা কৃষ্ণ সমর্পণম্ বলে। কৃষ্ণের নাম বলে কেন ? কারন কৃষ্ণকেই গীতার ভগবান মনে
করে। শ্রীরাধা অর্পণম্ বলে না। ঈশ্বর অথবা কৃষ্ণ অর্পণম্ বলে। মানুষ জানে যে ঈশ্বর-ই
ফল প্রদান করেন। কেউ কোনো ধনী বাড়িতে জন্ম নিলে বলা হয় যে সে আগের জন্মে অনেক দান
পুণ্য করেছিল তাই এখন এইরকম হয়েছে। রাজাও হতে পারে। কিন্তু সেগুলো সব ক্ষণিকের
কাক-বিষ্ঠা সম সুখ। রাজাদেরকেও সন্ন্যাসীরা সন্ন্যাস গ্রহণ করানোর সময়ে বলে যে
স্ত্রী হলো নাগিন। কিন্তু দ্রৌপদী তো আর্তনাদ করে বলেছিল যে দুঃশাসন তাকে নগ্ন করছে।
এখনও কত অবলা নারী আর্তনাদ করে বলছে - আমাদের লজ্জা নিবারণ করো। বাবা, উনি আমাকে
খুব মারধর করেন, বলেন - বিষ না দিলে খুন করে দেবে। বাবা, আমাকে এই বন্ধন থেকে রক্ষা
করো। বাবা বলছেন - বন্ধন তো অবশ্যই ছিন্ন হবে। এরপর ২১ জন্ম আর নগ্ন হবে না। ওখানে
কোনো বিকার থাকবে না। এই মৃত্যুপুরীতে এটাই অন্তিম জন্ম। এই দুনিয়াটাই বিকারগ্রস্থ।
দ্বিতীয়ত, বাবা বোঝাচ্ছেন যে এখন মানুষ কতো নির্বোধ হয়ে গেছে। কেউ মারা গেলে বলে -
তিনি স্বর্গে গমন করেছেন। কিন্তু স্বর্গ কোথায় ? এটা তো নরক। এখন স্বর্গবাসী হয়েছেন
মানে আগে নিশ্চয়ই নরকে ছিল। কিন্তু কাউকে যদি সরাসরি বলো যে সে নরকে আছে, তাহলে সে
রেগে (নারাজ) যাবে। তোমাদের উচিত এইরকম ব্যক্তিদেরকে পত্র লেখা - উনি স্বর্গবাসী
হয়েছেন মানে আপনি নিশ্চয়ই নরকে আছেন। আমরা আপনাকে সত্যিকারের স্বর্গে যাওয়ার উপায়
বলতে পারি। এই পুরাতন দুনিয়ার তো এবার বিনাশ হবে। খবরের কাগজেও ছেপে দাও যে, এই
যুদ্ধের পরেই সমগ্র বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। ৫০০০ বছর আগের মতো। এখানে একটাই
আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্ম ছিল। দুনিয়ায় মানুষ বলে যে ওখানেও কংস, জরাসন্ধ ইত্যাদি
অসুর ছিল, ত্রেতাযুগে রাবণ ছিল। ওদের সঙ্গে কে তর্ক করবে ? জ্ঞান আর ভক্তিতে
দিন-রাতের পার্থক্য। এত সহজ কথাগুলোও খুব কম জনের বুদ্ধিতে ধারণ হয়। তাই এইরকম
স্লোগান বানাতে হবে। এই যুদ্ধের পরেই ড্রামা অনুসারে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে।
প্রতি কল্পেই এইভাবে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয় এবং তারপর কলিযুগের অন্তিমে আবার
অশান্তি হয়ে যায়। সত্যযুগেই শান্তি থাকবে। তোমরা এটাও লিখতে পারো যে গীতাতে এইরকম
ভুল করার জন্যই আজ ভারতের এই অবস্থা। পুরো ৮৪ জন্ম নেওয়া শ্রীকৃষ্ণের নাম জুড়ে
দিয়েছে। শ্রীনারায়ণের নাম লেখেনি। তার ক্ষেত্রে তো তবুও সম্পূর্ণ ৮৪ জন্মের থেকে
কিছুদিন কম হয়। কৃষ্ণই পুরো ৮৪ জন্ম নেয়। শিববাবা তো হীরার মতো বানাতে আসেন। তাই
তাঁর জন্য সেইরকম সোনার কৌটো দরকার যেখানে বাবা এসে প্রবেশ করবেন। কিন্তু ইনি
স্বর্ণতুল্য কিভাবে হবেন ? তাই সঙ্গে সঙ্গে এনাকে (ব্রহ্মা বাবাকে) সাক্ষাৎকার
করিয়েছেন যে তুমি তো বিশ্বের মালিক ছিলে। এখন কেবল আমাকে স্মরণ করে পবিত্র হও। সঙ্গে
সঙ্গে ইনি পবিত্র হতে শুরু করেছেন। পবিত্র না হলে জ্ঞান ধারণ হবে না। বাঘিনীর দুধের
জন্য সোনার পাত্র প্রয়োজন। এটা হলো পরমপিতা পরমাত্মার দেওয়া জ্ঞান। এটাকে ধারণ করার
জন্যও সোনার পাত্র চাই। পবিত্র হলেই ধারণ করতে পারবে। *পবিত্রতার প্রতিজ্ঞা করার
পরেও যদি পতিত হয়ে যায় তাহলে তার যোগের যাত্রাও সমাপ্ত হয়ে যায়।* আর কাউকে সে বলতে
পারবে না যে ভগবানুবাচ হলো কামবিকার সবথেকে বড় শত্রু। রোজ চার্ট লেখো। বাবা যেমন
সর্বশক্তিমান, সেইরকম মায়াও সর্বশক্তিমান। অর্ধেক কল্প ধরে রাবণের রাজত্ব চলে। বাবা
ছাড়া অন্য কেউই এই রাবণের বিরুদ্ধে জয়ী করতে পারে না। ড্রামা অনুসারে রাবণ রাজ্য তো
অবশ্যই হবে। ভারতের হার - জিতের গল্প নিয়েই এই নাটক বানানো আছে। বাচ্চারা,
তোমাদেরকেই বাবা এইসব বোঝাচ্ছেন। *মুখ্য বিষয় হলো পবিত্র হওয়া।* বাবা বলছেন - আমি
পতিতদেরকে পবিত্র করতেই আসি। শাস্ত্রে উল্লিখিত পাণ্ডব - কৌরবদের যুদ্ধ আর জুয়া খেলা
ইত্যাদি তো মানুষ বসে বসে বানিয়েছে। এইরকম কিভাবে হতে পারে ? এভাবে কি রাজযোগের
শিক্ষা দেওয়া সম্ভব ? যুদ্ধক্ষেত্রে কি গীতা পাঠশালা হওয়া সম্ভব ? *কোথায় শিববাবা
জন্ম-মৃত্যুর ঊর্ধ্বে, আর কোথায় শ্রীকৃষ্ণ সম্পূর্ণ ৮৪ জন্ম গ্রহণ করে।* ওনার
অন্তিম জন্মেই বাবা এসে প্রবেশ করেন। কত স্পষ্ট বিষয়। ঘর-গৃহস্থে থাকলেও অবশ্যই
পবিত্র হতে হবে। সন্ন্যাসীরা তো বলে যে দুজন একসাথে থাকলে পবিত্র থাকা সম্ভব নয়।
ওদেরকে বলো - তোমাদের তো কোনো প্রাপ্তি হয় না, তাই কিভাবে পবিত্র থাকবে ? কিন্তু
এখানে তো রাজত্ব প্রাপ্ত হয়। বাবা বলছেন, আমার জন্য অন্তত বংশের সম্মান রক্ষা করো।
শিববাবা বলছেন - এনার দাঁড়ির মান রাখো। এই একটা অন্তিম জন্ম পবিত্র থাকলেই স্বর্গের
মালিক হয়ে যাবে। নিজের জন্যই তো পরিশ্রম করছ। অন্য কেউই স্বর্গে আসতে পারবে না।
তোমাদের জন্যই এই রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। এখানে সবাইকেই দরকার। তবে ওখানে কোনো
মন্ত্রী থাকবে না। রাজার কোনো মতামত নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। পতিত রাজাদেরও একজন
মন্ত্রী থাকে। আর এখানে দেখ কতজন মিনিস্টার। ওরা নিজেরাই লড়াই করে। বাবা এইসব ঝামেলা
থেকে মুক্ত করে দেন। এরপর ৩ হাজার বছর আর কোনো ঝামেলা হবে না। কোনো কারাগার থাকবে
না। কোর্ট ইত্যাদি কিছুই থাকবে না। ওখানে তো কেবল সুখ আর সুখ। কিন্তু তার জন্য তো
পুরুষার্থ করতে হবে। মৃত্যু অতি নিকটে। স্মরণের যাত্রার দ্বারা বিকর্মের ওপর বিজয়ী
হতে হবে। তোমরাই দূত হয়ে সবাইকে বাবার বার্তা শোনাও যে মন্মনা ভব। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
জ্ঞানের ধারণা করার জন্য পবিত্র হয়ে বুদ্ধি রূপী পাত্রকে স্বচ্ছ বানাতে হবে। কেবল
মোরগের মতো জ্ঞানী হলে চলবে না।
২ ) ডাইরেক্ট বাবার কাছে নিজের সবকিছু অর্পণ করে শ্রীমৎ অনুসারে চলে ২১ জন্মের জন্য
রাজত্ব প্রাপ্ত করতে হবে।
বরদান:-
শুদ্ধিকরণের নিয়ম দ্বারা দুর্গকে মজবুত বানিয়ে সর্বদা বিজয়ী এবং নির্বিঘ্ন ভব
এই দুর্গে যাতে
প্রত্যেক আত্মা সর্বদা বিজয়ী এবং নির্বিঘ্ন হয়ে যায়, তার জন্য বিশেষ সময় দিয়ে
চতুর্দিকে একসঙ্গে যোগের প্রোগ্রাম রাখো। তখন কেউই এই তারকে কাটতে পারবে না। কারন
যত সেবার বৃদ্ধি করবে, তত মায়া আপন বানানোর চেষ্টা করবে। তাই কোনো কর্ম শুরুর আগে
যেমন শুদ্ধিকরণের নিয়ম পালন করো, সেইরকম তোমাদের মতো শ্রেষ্ঠ আত্মাদের সংগঠিত রূপে
শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্প হওয়া উচিত - বিজয়ী। এটাই হলো শুদ্ধিকরণের নিয়ম। এর দ্বারা-ই দুর্গ
মজবুত হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
যুক্তিপূর্ণ এবং যথাযথ সেবার প্রত্যক্ষ ফল হলো খুশি।
মোরগের মতো জ্ঞানী (কুক্কড় জ্ঞানী) = মোরগ ভোর বেলায় সবার ঘুম ভাঙিয়ে দিয়ে নিজে
ঘুমিয়ে পড়ে।
মাতেশ্বরীজীর অমূল্য মহাবাক্য -
“এখন আর বিকর্ম করার প্রতিযোগিতা করা উচিত নয়”
সর্বপ্রথম নিজের সামনে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যে, আমাকে যেকোনো উপায়ে নিজের
বিকারগুলোকে নিজের বশে আনতে হবে এবং তাহলেই ঈশ্বরীয় সুখ-শান্তিতে থাকতে পারবে।
আমাদের প্রধান পুরুষার্থ হলো নিজে শান্তিতে থেকে অন্যকেও শান্তি প্রদান করা। তবে
এক্ষেত্রে সহ্যশক্তি অবশ্যই প্রয়োজন। সবকিছুই নিজের ওপর নির্ভর করছে। এমন নয় যে,
কেউ কিছু বলল বলে আমি অশান্ত হয়ে যাব। না, জ্ঞানমার্গের প্রথম গুণ হলো সহ্যশক্তি
ধারণ করা। দেখো, অজ্ঞানতার সময়েও মানুষ বলে - কেউ যতই গালাগালি দিক, তুমি সর্বদা মনে
করো যে এগুলো তো আমাকে স্পর্শই করেনি। যে গালাগালি দিয়েছে, সে নিজে তো অবশ্যই
অশান্ত হয়েছে এবং তার নিজের হিসাব-পত্রও তৈরি হয়েছে। কিন্তু আমিও যদি অশান্ত হয়ে
গিয়ে কিছু বলে দিই, তবে আমারও বিকর্ম হয়ে যাবে। এভাবে বিকর্ম করার প্রতিযোগিতা করা
উচিত নয়। নিজের বিকর্মগুলো তো নাশ করতে হবে, নাকি তৈরি করতে হবে ? এভাবে জন্ম-জন্ম
ধরে বিকর্ম করেছ আর দুঃখ পেয়েছ। কিন্তু এখন তো জ্ঞান পাচ্ছ, তাই এখন এই পাঁচ বিকারকে
পরাজিত করো। বিকারগুলোর বিস্তার অনেক বেশি, খুব সূক্ষ্ম রূপে আসে। কখনো ঈর্ষা এসে
গেলে ভাবে যে, ও ঐরকম বলছিল তাই আমার কিছু করার ছিল না। কিন্তু এটা খুব বড় ভুল।
নিজেকে তো ত্রুটিমুক্ত করো। যদি কেউ কিছু বলে দেয়, তাহলে তুমি মনে করো যে আমার মধ্যে
কতটা সহ্যশক্তি আছে, এটা তার পরীক্ষা। যদি কেউ বলে যে আমি তো অনেক সহ্য করেছি কিন্তু
শেষে কেবল একবার রেগে গেছিলাম, তাহলেও তো ফেল হয়ে গেল। যে ঐরকম বলেছে সে তো নিজের
ক্ষতি করেছে, কিন্তু আমাকে তো আমারটা ঠিক রাখতে হবে নাকি খারাপ করতে হবে। তাই ভালো
করে পুরুষার্থ করে অনেক জন্মের জন্য ভালো প্রাপ্তি (পুরস্কার) নিতে হবে। আর যে
বিকারের বশীভূত হয়ে আছে, তার মধ্যে ভূত ঢুকেছে। ভূতের মুখ দিয়ে তো এইরকম ভাষাই
বেরোবে কিন্তু যারা দেব আত্মা তাদের মুখ থেকে দৈববাণী বেরোবে। অতএব, নিজেকে দেবতা
বানাতে চাও, নাকি অসুর। আচ্ছা - ওম্ শান্তি।