21.09.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
প্রশ্নঃ -
নিজেদের
রেজিস্টার সঠিক রাখবার জন্য বাবা তোমাদের কোন্ পথ বলে দিয়েছেন ?
উত্তরঃ -
প্রেমের পথই বলে দেন। তিনি শ্রীমত দেন -- বাছা, প্রত্যেকের সঙ্গে প্রেম-পূর্বক
যোগসূত্র স্থাপন করে চলো। কাউকে দুঃখ দিও না। কর্মেন্দ্রিয়ের দ্বারা কখনও কোনো
উল্টোপাল্টা কার্য অর্থাৎ বিকর্ম করো না। সদা এটাই যাচাই করো যে, আমার মধ্যে কোন
আসুরীয়-গুণ নেই তো ? আমি মুডী (মেজাজী) নই তো ? কোনো কথায় ক্রোধান্বিত হয়ে যাই না
তো ?
গীতঃ-
এই সময় চলে
যাচ্ছে.....
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি-মিষ্টি
আত্মা-রূপী বাচ্চারা গান শুনেছে। দিন দিন নিজেদের ঘর বা লক্ষ্য (মঞ্জিল) নিকটে আসতে
থাকে। এখন শ্রীমত যাকিছু বলে, তাতে গাফিলতি কোরো না। বাবার ডায়রেক্শন পেয়েছো যে,
সকলকে বার্তা(ম্যাসেজ) পৌঁছাও। বাচ্চারা জানে যে, লক্ষ-লক্ষ কোটি-কোটিদের কাছে এই
ম্যাসেজ পৌঁছে দিতে হবে। আবার কেউ কোনো সময়ে চলেও আসবে। যখন অনেক হয়ে যাবে তখন
অনেককে ম্যাসেজ পৌঁছে দিতে হবে। বাবার ম্যাসেজ সকলেই পাবে। ম্যাসেজ অতি সহজ। শুধু
বলো, নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করো আর কোন কর্মেন্দ্রিয়ের দ্বারা
মন-বাণী-কর্মে কোন খারাপ কর্ম কোরো না। প্রথমে মন্সা অর্থাৎ মনে আসে পরে বাণীতে আসে।
তোমাদের এখন সঠিক-বেঠিক বোঝার মতন বুদ্ধি চাই, এ হলো পূণ্য-কর্ম, এটা করা উচিত। মনে
সঙ্কল্প আসে যে ক্রোধ করি, এখন বুদ্ধি পেয়েছো তো -- যদি ক্রোধ করবে তাহলে পাপ হয়ে
যাবে। বাবাকে স্মরণ করলে পূণ্যাত্মা হয়ে যাবে। এমনও নয় যে, আচ্ছা করে ফেলেছি পুনরায়
আর করবো না। এভাবে বার-বার বলতে-বলতে অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে। মানুষ এরকম কর্ম করে
মনে করে, এ পাপ নয়। বিকারকে পাপ মনে করে না। এখন বাবা বলেছেন -- এ হলো সর্বাপেক্ষা
বড় পাপ, এর উপর বিজয়প্রাপ্ত করতে হবে আর সকলকে বাবার ম্যাসেজ দিতে হবে যে, বাবা
বলেছেন -- আমায় স্মরণ করো, মৃত্যু সম্মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। যখন কেউ মৃত্যুকালে উপনীত
হয় তখন তাকে বলা হয় -- গডফাদারকে স্মরণ করো। রিমেম্বার গডফাদার। তারা মনে করে যে, এ
গডফাদারের কাছে চলে যাবে। কিন্তু সেই গডফাদারের কাছে তো কেউ যেতে পারে না। বাচ্চারা,
তাই এখন তোমাদের অবিনাশী পিতার অবিনাশী স্মরণ চাই। যখন তমোপ্রধান দুঃখী হয়ে পড়ে
তখনই তো পরস্পরকে বলে যে, গডফাদারকে স্মরণ করো, সকল আত্মারাই পরস্পরকে বলে, বলে তো
আত্মাই, তাই না! এমন নয় যে পরমাত্মা বলেন। আত্মাই আত্মাকে বলে -- বাবাকে স্মরণ করো।
এ এক সাধারণ নিয়ম। মৃত্যুকালে ঈশ্বরকে স্মরণ করে, ঈশ্বরের ভয় থাকে। তারা মনে করে
যে, ভাল বা খারাপ কর্মের ফল ঈশ্বরই দেন। খারাপ কর্ম করলে ঈশ্বর ধর্মরাজের দ্বারা
অতিব শাস্তি প্রদান করবেন তাই ভয় থাকে। কর্মভোগ তো অবশ্যই করতে হবে, তাই না!
বাচ্চারা, তোমরা এখন কর্ম-অকর্ম-বিকর্মের গতিকে বোঝো। তোমরা জানো যে, এই কর্ম অকর্ম।
স্মরণে থেকে যে কর্ম করা হয় তা সঠিকভাবে করা হয়। রাবণ-রাজ্যে মানুষ খারাপ কর্মই করে।
রাম-রাজ্যে কখনো খারাপ কর্ম হয়েই না। এখন শ্রীমত তো পেতে থাকো। কোথাও ডাকা হলে, এটা
কি করা উচিত বা করা উচিত নয় -- প্রতিটি কথা জিজ্ঞাসা করতে থাকো। মনে করো কেউ যদি
পুলিশের চাকরি করে, তাদেরকেও বলা হয় -- প্রথমে তোমরা প্রেম-পূর্বক বোঝাও। যদি
সত্যকথা না বলে তখন মারো। ভালবেসে বোঝালে হাতে(বশে) আসতে পারে কিন্তু সেই প্রেমেও
যদি যোগবল ভরা থাকে তবে সেই প্রেমের শক্তিতে কোনকিছু বোঝালে তা বুঝবে যে, এ তো যেন
ঈশ্বর বোঝাচ্ছেন। তোমরা তো যোগী, ঈশ্বরের সন্তান, তাই না! তোমাদের মধ্যেও ঈশ্বরীয়
শক্তি রয়েছে। ঈশ্বর প্রেমের সাগর, ওঁনার মধ্যে শক্তি নিহিত রয়েছে, তাই না! তিনি
সকলকে উত্তরাধিকার দেন। তোমরা জানো যে, স্বর্গে প্রেম অতিমাত্রায় রয়েছে। এখন তোমরা
প্রেমের সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার গ্রহণ করছো। গ্রহণ করতে-করতে, নম্বরের ক্রমানুসারে
পুরুষার্থ করতে-করতে প্রিয় হয়ে যাবে।
বাবা বলেন -- কাউকে দুঃখ দিও না, তা নাহলে দুঃখী হয়ে মৃত্যুবরণ করবে। বাবা প্রেমের
পথ বলে দেন। মন্সা অর্থাৎ মনে এলে তা চেহারাতেও প্রতিফলিত হয়। কর্মেন্দ্রিয়ের দ্বারা
কার্যসম্পন্ন করে ফেললে তখন রেজিস্টার খারাপ হয়ে যাবে। দেবতাদের আচার-আচরণের গায়ন
করা হয়, তাই না! সে'জন্য বাবা বলেন -- দেব-পুরোহিতদের বোঝাও। তারা মহিমা-কীর্তন করে
যে, আপনি সর্বগুণসম্পন্ন, এখননি কলা সম্পূর্ণ আর নিজেদের চাল-চলনের কথাও শোনায়। তখন
তাদের বোঝাও যে, তোমরাও এরকম ছিলে, এ নেই পুনরায় অবশ্যই হবে। তোমাদের এরকম দেবতা
হতে হবে তাই নিজেদের চাল-চলন এরকম (দেবতাদের মতন) রাখো তবেই তোমরা এমন হয়ে যাবে।
নিজেকে যাচাই করতে হবে -- আমরা কি সম্পূর্ণ নির্বিকারী হয়েছি ? আমাদের মধ্যে কোনো
আসুরীয়-গুণ নেই তো ? কোনো কথায় ক্রোধান্বিত হয়ে যাই না তো, মেজাজী হয়ে পড়ি না তো ?
অনেকবার তোমরা পুরুষার্থ করেছো। বাবা বলেন, তোমাদের এরকম হতে হবে। রচনাকারও হাজির।
তিনি বলেন, প্রতি কল্পে তোমাদের এমনভাবে রচনা করি। কল্প-পূর্বে যারা এই জ্ঞান গ্রহণ
করেছিল তারা অবশ্যই এসে নেবে। তাদের পুরুষার্থও করানো হয় আবার তারা
দুঃশ্চিন্তামুক্তও থাকে। ড্রামা এভাবেই নির্ধারিত হয়ে রয়েছে। কেউ বলে -- ড্রামায় যদি
নির্ধারিত করা থাকে তাহলে অবশ্যই করবে। চার্ট ভাল হলে ড্রামা করাবে। বোঝা যায় যে --
এদের ভাগ্যে নেই। শুরু-শুরুতেও এমনই একজন বিগড়ে গিয়েছিল, ভাগ্যে ছিল না -- বলেছিল
ড্রামায় নির্ধারিত থাকলে ড্রামা আমাকে দিয়ে পুরুষার্থ করিয়ে নেবে। ব্যস, ছেড়ে দেয়।
এরকম তোমরাও অনেক পাও। তোমাদের এইম অবজেক্ট এখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে, ব্যাজও তোমাদের
কাছে রয়েছে, যেমন নিজেদের পোতামেল দেখো তেমনই ব্যাজও দেখো, নিজেদের চাল-চলনও দেখো।
কখনো দৃষ্টি যেন খারাপ (ক্রিমিনাল) না হয়। মুখ থেকে যেন কোন খারাপ কথা নির্গত না হয়।
মন্দ-কথা বলার মানুষই যখন থাকবে না তখন কান শুনবে কেমন করে ? সত্যযুগে সকলে
দৈবী-গুণসম্পন্ন হয়। খারাপের কোনো কথাই নেই। এঁনারাও বাবার মাধ্যমেই প্রালব্ধ(ফল)
প্রাপ্ত করেছেন। একথা সকলকে বলো যে বাবাকে স্মরণ করো তবেই বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে।
এরমধ্যে লোকসানের কোন কথা নেই। আত্মাই সংস্কার নিয়ে যায়। সন্ন্যাসী হলে তখন আবার
সন্ন্যাস ধর্মে চলে আসবে। তাদের বৃক্ষ বৃদ্ধি পেতেই থাকে, তাই না। এ'সময় তোমরা
পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছো। মানুষই দেবতায় পরিনত হয়। সকলেই কি একসঙ্গে আসবে! না তা আসবে
না। আসবে তো নম্বরের ক্রমানুসারেই। ড্রামায় কোনো অভিনেতা সময় না হলে স্টেজে চলে আসবে
কি, না আসবে না। ভিতরে বসে থাকবে। যখন সময় হয় তখন বাইরে স্টেজে আসে (নিজ) ভূমিকা
পালনের জন্য। ওটা হলো পার্থিব জগতের নাটক, এ হলো অসীম জগতের। বুদ্ধিতে থাকে যে
আমাদের অর্থাৎ অভিনেতাদের নিজেদের সময়ানুসারে এসে নিজ-নিজ ভূমিকা পালন করতে হবে। এ
হলো অসীম জগতের বৃহত্তম (কল্প) বৃক্ষ। নম্বরের ক্রমানুসারে আসে-যায়। সর্বপ্রথমে
একটিই ধর্ম ছিল, সব ধর্মই তো সর্বপ্রথমে আসতে পারে না।
প্রথমে তো দেবী-দেবতা ধর্মাবলম্বীরাই আসবে (নিজেদের) ভূমিকা পালন করতে, তাও আবার
নম্বরের ক্রমানুসারে। (কল্প) বৃক্ষের রহস্যকেও বুঝতে হবে। বাবা-ই এসে সমগ্র
কল্প-বৃক্ষের জ্ঞান শোনান। এর তুলনা আবার নিরাকারী বৃক্ষের সঙ্গে করা হয়। একমাত্র
বাবা-ই বলেন -- আমি মনুষ্য সৃষ্টি-রূপী বৃক্ষের বীজরূপ। বীজের মধ্যে বৃক্ষ সমাহিত
নেই কিন্তু বৃক্ষের জ্ঞান সমাহিত রয়েছে। প্রত্যেকের নিজ-নিজ ভূমিকা রয়েছে, চৈতন্য
বৃক্ষ, তাই না! নম্বরের ক্রমানুসারে বৃক্ষের থেকে পত্রও নির্গত হবে। এই বৃক্ষকে কেউ-ই
বুঝতে পারে না, এর বীজ উপরে থাকার জন্য একে উল্টো-বৃক্ষও বলা হয়। রচয়িতা বাবা থাকেন
উপরে। তোমরা জানো যে, আমাদের ঘরে ফিরে যেতে হবে, যেখানে আত্মারা নিবাস করে। এখন
আমাদের পবিত্র হয়ে ফিরে যেতে হবে। তোমাদের যোগবলের দ্বারা সমগ্র বিশ্ব পবিত্র হয়ে
যায়। তোমাদের জন্যও তো পবিত্র সৃষ্টি অর্থাৎ দুনিয়া চাই, তাই না! তোমরা পবিত্র হয়ে
যাও তখন দুনিয়াকেও পবিত্র করতে হয়। সবকিছুই পবিত্র হয়ে যায়। তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে
যে, আত্মায় মন-বুদ্ধি রয়েছে, তাই না! সে চৈতন্য। আত্মাই জ্ঞানকে ধারণ করতে পারে।
তাই মিষ্টি-মিষ্টি বাচ্চাদের বুদ্ধিতে সমগ্র এই রহস্য থাকা উচিত যে -- কিভাবে আমরা
পুনর্জন্ম নিই। তোমাদের ৮৪-র চক্র যখন সম্পূর্ণ হয় তখন সকলেরই সম্পূর্ণ হয়। সকলেই
পবিত্র হয়ে যায়। এ অনাদি পূর্ব-নির্ধারিত ড্রামা। এক সেকেন্ডও থামে না। প্রতি
সেকেন্ডে যাকিছু ঘটে, তা পর-কল্পে পুনরাবৃত হবে। প্রত্যেক অবিনাশী আত্মায় অবিনাশী
পার্ট ভরা রয়েছে। ওই(লৌকিক) অভিনেতারা ২-৪ ঘন্টা অভিনয় করে। এখানে তো আত্মা
ন্যাচারালী পার্ট পায়, তাহলে বাচ্চাদের কত খুশী থাকা উচিত। এই সঙ্গমেরই অতীন্দ্রিয়
সুখের গায়ন রয়েছে। বাবা আসেন, ২১ জন্মের জন্য সদা সুখী হয়ে যায়। খুশীর কথা, তাই না!
যারা সঠিকভাবে বোঝে এবং বোঝায় তারা সেবায় মগ্ন হয়ে থাকে। কোন বাচ্চা যদি নিজেই
ক্রোধী হয় তবে অন্যদের মধ্যেও তা প্রবেশ করে। তালি দুহাতে বাজে। ওখানে এরকম হয় না।
বাচ্চারা, এখন তোমরা শিক্ষা পাও -- কেউ ক্রোধ করলে তখন তার উপর পুষ্পবর্ষণ করো।
ভালবেসে বোঝাও। এও(ক্রোধ) এক ভূত যা অত্যন্ত লোকসান করে দেবে। কখনো ক্রোধ করা উচিত
নয়। যিনি শিক্ষাদান করেন তার মধ্যে তো ক্রোধ আসা একদমই উচিত নয়। নম্বরের
ক্রমানুসারে পুরুষার্থ করতে থাকে। কারোর পুরুষার্থ তীব্র হয়, কারোর শীতল। যারা শীতল
পুরুষার্থী তারা অবশ্যই নিজেদের বদনাম করে ফেলে। যাদের মধ্যে ক্রোধ থাকে তারা
যেখানেই যায়, সেখান থেকে তাদের দূর করে দেয়। কোনো চাল-চলন খারাপ তারা থাকতে পারে
না। পরীক্ষা যখন সমাপ্ত হবে তখন সকলে জানতে পারবে। কে-কে কি হয়, সকলেরই সাক্ষাৎকার
হবে। যে যেমন কর্ম করে তার তেমনই মহিমা-কীর্তন হয়ে থাকে।
বাচ্চারা, তোমরা ড্রামার আদি-মধ্য-অন্তকে জেনেছো। তোমরা সকলে অন্তর্যামী। আত্মা
অন্তর থেকে জানে যে -- এই সৃষ্টি-চক্র কীভাবে আবর্তিত হয়। সমগ্র সৃষ্টির মানুষের
চাল-চলনের, সর্ব ধর্মের জ্ঞান তোমাদের রয়েছে। ওঁনাকে বলা হয় -- অন্তর্যামী। আত্মা
সব জেনে গেছে। এমনও নয় যে, ঈশ্বর প্রতি ঘটে বসবাস করে অর্থাৎ প্রত্যেক আত্মার
মধ্যেই বর্তমান, তবে আর ওঁনাকে জানার কি প্রয়োজন ? তিনি তো এখনও বলেন, যে যেমন
পুরুষার্থ করবে সে তেমনই ফল প্রাপ্ত করবে, তাহলে আমাকে জানার প্রয়োজন কি ? যে যেমন
করবে সে সাজাও স্বয়ংই তেমন ভোগ করবে। এমন চাল-চলন হলে অধঃগতি প্রাপ্ত করবে।
পদপ্রাপ্তিও অত্যন্ত কম হয়ে যাবে। লৌকিক স্কুলে অনুত্তীর্ণ হলে তখন পরের বছর (একই
ক্লাসে) আবার পড়তে হয়। এই পঠন-পাঠন করা হয় কল্প-কল্পান্তরের জন্য। এখন না পড়লে আর
কল্প-কল্পান্তর পড়বে না। ঈশ্বরীয় লটারী পুরোপুরি নেওয়া উচিত, তাই না! বাচ্চারা,
এ'কথা তোমরা বুঝতে পারো। যখন ভারত সুখধাম হবে তখন সকলে শান্তিধামে থাকবে। বাচ্চাদের
খুশী হওয়া উচিত -- এখন আমাদের সুখের দিন আসছে। দীপাবলীর দিন নিকটে এলে তখন বলা হয়,
তাই না! যে, এখনও এতদিন বাকি রয়েছে, তখন নতুন পোশাক পড়বে। তোমরাও বলো যে -- স্বর্গ
আগত,আমরা এখন নিজেদের শৃঙ্গার করি তবেই স্বর্গে উত্তম সুখ প্রাপ্ত করবো। ধনবানের তো
ধন-সম্পদের নেশা থাকে। মানুষ সম্পূর্ণ গভীর নিদ্রায় নিমগ্ন হয়ে রয়েছে, পুনরায় হঠাৎ
জানতে পারবে যে -- এরা তো সত্য বলতো। সত্যতাকে তখনই বুঝবে যখন সত্যের সঙ্গ(সৎসঙ্গ)
হবে। তোমরা এখন সত্যের সঙ্গে রয়েছো। তোমরা সত্য হও সত্য-পিতার দ্বারা। ওরা সকলে অসৎ
হয় অসত্যের দ্বারা। এখন কন্ট্রাস্টও ছাপানো হচ্ছে যে, ভগবান কি বলেন আর মানুষ কি বলে।
ম্যাগাজিনেও প্রকাশ করতে পারো। পরিশেষে বিজয় তোমাদেরই হবে, যারা কল্প-পূর্বে পদ
প্রাপ্ত করেছিল তারাই পাবে। এ অবশ্যম্ভাবী। ওখানে অকালে মৃত্যু হয় না। আয়ুও দীর্ঘ
হয়। যখন পবিত্রতা ছিল তখন আয়ুও দীর্ঘ ছিল। যখন পিতা-পরমাত্মা হলেন পতিত-পাবন তখন
অবশ্যই তিনিই পবিত্র করেছেন। এখানে কৃষ্ণের কথা সঠিক নয়। পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে আবার
কৃষ্ণ কোথা থেকে আসবে ? সেই একই চিত্রসম্পন্ন(ফিচার্স) মানুষ পুনরায় আসতে পারে না।
৮৪ জন্ম, ৮৪ ফিচার্স, ৮৪ অ্যাক্টিভিটি -- এ পূর্ব-নির্ধারিত খেলা। এরমাঝে কোনো
পার্থক্য থাকতে পারে না। ড্রামা কেমন বিস্ময়করভাবে নির্ধারিত হয়ে রয়েছে। আত্মা ছোট
বিন্দু, তাতে অনাদি পার্ট ভরা রয়েছে -- একে স্বাভাবিক(ন্যাচারাল) বলা হয়। মানুষ শুনে
আশ্চর্য হয়ে যাবে। কিন্তু প্রথমে তো এই বার্তা পৌঁছে দিতে হবে যে, বাবাকে স্মরণ করো।
তিনিই পতিত-পাবন, তিনিই সদ্গতিদাতা। সত্যযুগে দুঃখের কোন কথাই নেই। কলিযুগে কত দুঃখ।
কিন্তু একথা বোঝে নম্বরের ক্রমানুসারে। বাবা রহস্য বোঝান। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে
শিববাবা এসেছেন, আমাদের পড়িয়ে পুনরায় সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন। সঙ্গে যারা রয়েছে,
তাদের থেকে বন্ধনে আবদ্ধ যারা, তারা অধিক স্মরণ করে। তারা উচ্চপদ লাভ করতে পারবে।
এও তো বুঝবার মতন বিষয়, তাই না! বাবার স্মরণে অত্যন্ত ব্যাকুল(অস্থির) হয়ে যায়। বাবা
বলেন -- বাছা, স্মরণের যাত্রায় থাকো, দৈবী-গুণও ধারণ করো তবেই বন্ধনমুক্ত হয়ে যাবে।
পাপের কলস সমাপ্ত হয়ে যাবে। আচ্ছা।
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
নিজের আচার-আচরণ দেবতাদের মতন করতে হবে। মুখে কোনও খারাপ কথা বলা উচিত নয়। এ'নয়ন
যেন কখনও কুদৃষ্টিসম্পন্ন (ক্রিমিনাল) না হয়।
২ ) ক্রোধের ভূত অত্যন্ত ক্ষতি করে। তালি দু'হাতে বাজে, তাই কেউ ক্রোধ করলে সেখান
থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে হবে, তাদের প্রেম-পূর্বক বোঝাতে হবে।
বরদান:-
অব্যক্ত স্বরূপের সাধনার দ্বারা শক্তিশালী বায়ুমন্ডল রচনাকারী অব্যক্ত ফরিস্তা ভব
ব্যাখা :- বায়ুমন্ডলকে
শক্তিশালী করার সাধন হলো নিজের অব্যক্ত-স্বরূপের সাধনা। বার-বার এরপ্রতি সতর্কতা
যেন বজায় থাকে কারণ যে বিষয়ে সাধনা করা হয় সে'বিষয়ে ধ্যান (মনোযোগ) থাকে। তাই
অব্যক্ত-স্বরূপের সাধনা অর্থাৎ বার-বার সতর্কতার তপস্যা চাই সে'জন্য অব্যক্ত ফরিস্তা
ভব-র বরদানকে স্মৃতিতে রেখে শক্তিশালী বায়ুমন্ডল নির্মাণের তপস্যা করো তাহলে তোমার
সম্মুখে যে-ই আসবে সে ব্যক্ত এবং ব্যর্থ কথা থেকে দূরে চলে যাবে।
স্লোগান:-
সর্বশক্তিমান বাবাকে প্রত্যক্ষ করার জন্য একাগ্রতার শক্তিকে বৃদ্ধি করো।