04.09.2020 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


প্রশ্নঃ -
মন্দিরের যোগ্য হওয়ার জন্য কোন্ কোন্ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে ?

উত্তরঃ -
মন্দিরের যোগ্য হওয়ার জন্য নিজের আচার-আচরণের (চাল চলনের) ওপরে বিশেষ মনোযোগ দাও। আচরণ খুব মিষ্টি এবং রাজকীয় হতে হবে। এতো মিষ্টি হতে হবে যাতে অপর ব্যক্তি সেটা অনুভব করতে পারে। অনেককে বাবার পরিচয় দাও। নিজের কল্যাণ করার জন্য ভালো ভাবে পুরুষার্থ করো এবং সেবা করতে থাকো।

গীতঃ-
দুনিয়া বদলে গেলেও আমরা বদলাব না…

ওম্ শান্তি ।
আত্মিক বাচ্চারা জানে যে, বাবা আমাদেরকে ব্রহ্মাবাবার দ্বারা বোঝাচ্ছেন। ব্রহ্মাবাবার এই রথের দ্বারা-ই বাবা আমাদেরকে বোঝান। আমরাও প্রতিজ্ঞা করি যে, শ্রীমৎ অনুসারে আমরা এই ভারত ভূমিকে পতিত থেকে পবিত্র করবই। সমগ্র বিশ্বকে এবং বিশেষ করে ভারতকে আমরা পতিত থেকে পবিত্র হওয়ার উপায় বলছি। প্রত্যেকের বুদ্ধিতেই যেন এইরকম খেয়াল আসে। বাবা বলছেন, ড্রামা অনুসারে যখন তোমরা ফুলের মতো হয়ে যাবে তখন সময় হলেই গোটা বাগান সুসজ্জিত হয়ে যাবে। নিরাকারকেই বাগানের মালিক এবং মালি বলা হয়, সাকারকে নয়। যিনি মালি, তিনিও তো নিরাকার, নাকি শরীরধারী ? বাগানের মালিকও আত্মা। বাবা তো শরীরের দ্বারা-ই বোঝাবেন। শরীরের সঙ্গেই ওনাকে মালি এবং বাগানের মালিক বলা হয়। তিনি এই বিশ্বকে ফুলের বাগান বানিয়ে দেন। সেই বাগানে এই দেবতারা থাকতেন। সেখানে কোনো দুঃখ ছিল না। এখানে এই কাঁটার জঙ্গলে তো অনেক দুঃখ। এটা হলো রাবণের রাজত্ব বা কাঁটার জঙ্গল। ঝট করে তো কেউ ফুলের মতো হয়ে যাবে না। দেবতাদের সামনে গিয়ে গান করে - আমরা জন্ম-জন্মান্তরের পাপী, অজামিল (ঘোর পাপী) । এইভাবে প্রার্থনা করে আর বলে যে, তুমি এসে আমাদেরকে পুণ্য আত্মা বানিয়ে দাও। মানুষ বোঝে যে, এখন আমরা পাপাত্মা। আগে কখনো পুণ্যাত্মা ছিলাম। এখন তো এই দুনিয়াতে কেবল পুণ্য আত্মাদের ছবিটুকু রয়েছে। রাজধানীর যিনি প্রধান ছিলেন, তার ছবি আছে। শিববাবা ওনাকে এইরকম বানিয়েছিলেন। তাঁর ছবিও আছে। কিন্তু আর কোনো ছবি নেই। তবে শিববাবার ক্ষেত্রেও আবার বড় লিঙ্গ বানিয়ে দেয়। বলা হয় - আত্মার আকার তারার মতো। তাহলে তো বাবাও ঐরকম হবেন। কিন্তু তাঁকে সঠিকভাবে জানে না। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ সমগ্র বিশ্বের মালিক ছিলেন। কোথাও এনাদের সম্বন্ধে কোনো খারাপ কথা লেখা নেই। তবে কৃষ্ণকে কখনো দ্বাপর যুগে, কখনো বা অন্য কোথাও নিয়ে যায়। লক্ষ্মী-নারায়ণের জন্য কিন্তু সবাই বলবে যে এনারা স্বর্গের মালিক ছিলেন। এইরকম হওয়াই তোমাদের লক্ষ্য। রাধা-কৃষ্ণ কে ছিল সেই বিষয়ে তো দুনিয়ার মানুষ ঘোর সংশয়ে রয়েছে। কিছুই বোঝে না। যারা এখন বাবার কাছ থেকে বুঝছে, তারাই অন্যকে বোঝাতে পারবে। নয়তো অন্যকে বোঝাতে পারবে না। দিব্যগুণ ধারণ করতে পারে না। যতই বোঝাও না কেন, ড্রামা অনুসারে তো এইরকম হবেই। তোমরা এখন বুঝতে পারছ যে আমরা বাবার শ্রীমৎ অনুসারে নিজেদের শরীর, মন এবং সম্পত্তির দ্বারা এই ভারতের আধ্যাত্মিক সেবা করছি। প্রদর্শনী কিংবা মিউজিয়ামে অনেকেই জিজ্ঞেস করে যে আপনারা কিভাবে ভারতের সেবা করেন ? তোমরা জানো যে, আমরা ভারতের অনেক বড় সেবা করছি। জঙ্গল থেকে বাগান বানাচ্ছি। সত্যযুগ হলো বাগান। এটা কাঁটার জঙ্গল। একে অন্যকে কেবল দুঃখই দেয়। এইসব তোমরা ভালোভাবে বোঝাতে পারো। লক্ষ্মী-নারায়ণের ছবিও খুব ভালো করে বানাতে হবে। মন্দিরে খুব ভালো করে ছবি বানায়। কোথাও গোরা চিত্র বানায়, আবার কোথাও শ্যামবর্ণের চিত্রও বানায়। এটার মধ্যেও যে অনেক রহস্য আছে সেটা মানুষ জানে না। বাচ্চারা, তোমাদের মধ্যে এখন এইসব জ্ঞান রয়েছে। বাবা বলছেন, আমি এসে সবাইকে মন্দিরের যোগ্য বানাই, কিন্তু সবাই তো মন্দিরের যোগ্য হয় না। প্রজাকে মন্দিরের যোগ্য বলা যাবে না। যে ভালো পুরুষার্থ করবে এবং অনেক সেবা করবে, তার অনেক প্রজা হবে। বাচ্চারা, তোমাদেরকে আধ্যাত্মিক সমাজ সেবা করতে হবে। এই সেবা করে নিজের জীবন সফল করতে হবে। চাল চলনও খুব সুন্দর এবং মিষ্টি হতে হবে যাতে অন্যদেরকেও মিষ্টি ভাবে বোঝাতে পারো। যদি নিজেই কাঁটা হও তবে অন্যকে ফুলের মতো কিভাবে বানাবে ? ওরা কাউকে সম্পূর্ণ তীরবিদ্ধ করতে পারে না। বাবাকে স্মরণ না করলে কিভাবে তীরবিদ্ধ হবে ? নিজের কল্যাণের জন্য ভালো করে পুরুষার্থ করো এবং সেবা করতে থাকো। বাবাও তো সেবা করছেন। তোমরা বাচ্চারাও দিন-রাত সেবা করছ।

দ্বিতীয়তঃ, বাবা বোঝাচ্ছেন, শিব জয়ন্তী উপলক্ষ্যে অনেক বাচ্চা চিঠি পাঠায়। সেইসব চিঠির উত্তর এমন ভাবে লেখা উচিত যাতে যেকোনো ব্যক্তি সেটা খুব সহজেই বুঝতে পারে। ভবিষ্যতের জন্য পুরুষার্থ করা হচ্ছে। সেই উদ্দেশ্যে সেমিনারও করা হয় যে কিভাবে সেবা করলে অনেক মানুষ বাবার পরিচয় পাবে। অনেক চিঠি রাখা আছে। ওগুলো দ্বারাও সেবা করতে পারো। ঠিকানায় লেখে - শিববাবা কেয়ার অফ (প্রযত্নে) ব্রহ্মা বাবা। প্রজাপিতা ব্রহ্মাও রয়েছেন। ইনি হলেন আত্মিক পিতা আর ওই পিতা তো শরীরধারী। তিনি শরীরের রচনা করেন। বাবা হলেন মনুষ্য সৃষ্টির রচয়িতা। তিনি কিভাবে রচনা করেন, সেটা গোটা দুনিয়ার কেউই জানে না। বাবা এখন ব্রহ্মার দ্বারা নুতন দুনিয়ার রচনা করছেন। ব্রাহ্মণরা হলো সর্বোত্তম। আগে ব্রাহ্মণদের দরকার। বিরাট রূপের চিত্রে সর্বোত্তম হলো এই ব্রাহ্মণ কুল। ব্রাহ্মণ, দেবতা, বৈশ্য এবং শূদ্র। আগে তো নিশ্চয়ই শূদ্র হবে না। ব্রহ্মার দ্বারা বাবা ব্রাহ্মণদের রচনা করেন। শূদ্রদেরকে কিভাবে আর কার দ্বারা রচনা করবেন ? তোমরা বাচ্চারা জানো যে কিভাবে নুতন সৃষ্টির রচনা হয়। এইভাবে বাবা দত্তক নেন। প্রতি কল্পেই বাবা এসে শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ বানান এবং তারপর ব্রাহ্মণ থেকে দেবতা বানান। ব্রাহ্মণদের সেবা হলো সর্বোত্তম সেবা। ওই ব্রাহ্মণরা তো নিজেরাই পবিত্র থাকে না। তাহলে অন্যকে কিভাবে পবিত্র বানাবে। কোনো ব্রাহ্মণ কখনো কোনো সন্ন্যাসীকে রাখি পরাবে না। সন্ন্যাসীরা বলবে, আমরা তো পবিত্রই আছি, তুমি আগে নিজের মুখটা দেখ। *তোমরা বাচ্চারাও কারোর থেকে রাখি পরতে পারো না*। দুনিয়ায় সকলেই একে অন্যকে রাখি পরায়। আজকাল আবার নিয়ম হয়েছে বোন ভাইকে রাখি পরাবে। তোমরা এখন শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছ। অনেক বোঝাতে হয়। স্ত্রী পুরুষ উভয়েই পবিত্রতার প্রতিজ্ঞা করে। ওরা দুজনেই বলতে পারে যে আমরা কিভাবে বাবার শ্রীমতের দ্বারা পবিত্র আছি। অন্তিম সময় পর্যন্ত যদি এই কাম বিকারের ওপরে বিজয়ী হতে পারো, তাহলেই পবিত্র জগতের মালিক হতে পারবে। সত্যযুগকে পবিত্র দুনিয়া বলা হয়। সেটা এখন তৈরি হচ্ছে। তোমরা সবাই পবিত্র। তাই যারা বিকারের মধ্যে পড়ে আছে, তাদেরকে রাখি পরাতে পারো। প্রতিজ্ঞা করার পরেও যদি কেউ পতিত হয়ে যায়, তখন তাকে বলবে যে তুমি তো রাখি পরতে এসেছিলে, তারপর কি হলো ? তখন সে বলবে - মায়ার কাছে পরাজিত হয়েছি। *এটা হলো যুদ্ধক্ষেত্র, যেখানে বিকার খুব শক্তিশালী শত্রু। এগুলোকে পরাজিত করেই জগৎজিৎ বা রাজা-রানী হতে হবে। প্রজাদেরকে জগৎজিৎ বলা যাবে না। রাজা রানীরাই পরিশ্রম করে। তোমরা বলো, আমরা তো লক্ষ্মী-নারায়ণ হব। ওরা তারপরে রাম-সীতা হবে। লক্ষ্মী-নারায়ণের পরে তাদের সন্তান সেই সিংহাসনের অধিকারী হয়। লক্ষ্মী-নারায়ণ তখন পরের জন্মে একটু নীচে নেমে যায়। অন্য নাম এবং অন্য রূপধারী সন্তান যখন সিংহাসনে বসে, তখন তাদেরকেই শ্রেষ্ঠ বলে মানা হয়। পুনর্জন্ম তো নেবে, তাই না ? সন্তান যখন সিংহাসনে বসবে, তখন ওরা সেকেন্ড গ্রেড হয়ে যাবে। উপরের জন নীচে আর নীচের জন ওপরে চলে যাবে। বাচ্চারা, তোমরা যদি এইরকম উঁচু হতে চাও, তাহলে সেবাতে লেগে যাও। পবিত্র অবশ্যই হতে হবে। বাবা বলছেন, আমি পবিত্র দুনিয়ার রচনা করি। খুব কমজন ভালোভাবে পুরুষার্থ করে। গোটা দুনিয়াটাই পবিত্র হয়ে যায়। তোমাদের জন্য স্বর্গ স্থাপন হচ্ছে। ড্রামা অনুসারে তো এটা অবশ্যই হবে। এইরকম ভাবেই খেলাটা তৈরি করা আছে। তোমরা পবিত্র হয়ে গেলে বিনাশ শুরু হয়ে যাবে। সত্যযুগ স্থাপন হয়ে যায়। তোমরা এখন এই ড্রামার জ্ঞান বুঝতে পারো। সত্যযুগে দেবী-দেবতাদের রাজত্ব ছিল। এখন সেইসব নেই, পুনরায় হবে।

তোমরা হলে আধ্যাত্মিক মিলিটারি, পাঁচ বিকারকে পরাজিত করে জগৎজিৎ হয়ে যাও। জন্ম জন্মান্তরের পাপ নাশ করার জন্য বাবা অনেক উপায় বলছেন। বাবা কেবল একবার এসেই উপায় বলে দেন। যতক্ষণ না রাজধানী স্থাপন হচ্ছে, ততক্ষণ বিনাশ হবে না। তোমরা হলে অতি গুপ্ত যোদ্ধা। কলিযুগের পরেই সত্যযুগ শুরু হবে। তারপর সত্যযুগে আর কখনো লড়াই হবে না। তোমরা বাচ্চারা জানো যে, যত আত্মা অভিনয় করছে, সেইসব অভিনয় আগে থেকেই ড্রামাতে রয়েছে। যেভাবে কাঠের পুতুল নাচতে থাকে, সেইরকম নাচছে। এটাও ড্রামা। এই ড্রামাতে প্রত্যেকের ভূমিকা আছে। অভিনয় করতে করতে তোমরা তমোপ্রধান হয়ে গেছ। এরপর আবার ওপরে উঠছ, সতোপ্রধান হচ্ছ। জ্ঞান তো এক সেকেন্ডের ব্যাপার। সতোপ্রধান হয়, তারপর আবার অবনতি হতে হতে তমোপ্রধান হয়ে যায়। তারপর বাবা এসে উপরে নিয়ে যান। *বাচ্চাদের একটা খেলনা আছে যেখানে সুতোয় মাছ ঝুলতে থাকে। বাস্তবে ওই সুতোয় মানুষকে ঝোলানো উচিত। একবার ওপরে ওঠে, তারপর আবার নীচে নামে। তোমরাও এইরকম একবার ওপরে ওঠো, তারপর নামতে নামতে একেবারে নীচে এসে যাও। এইরকম ওপরে গিয়ে তারপর নীচে নামতে ৫ হাজার বছর সময় লাগে* । তোমাদের বুদ্ধিতে এই ৮৪ চক্র রয়েছে। বাবা এসেই এই উন্নতি আর অবনতির জ্ঞান শুনিয়েছেন। তোমরা ক্রমানুসারে এটা জেনেছ এবং সেই অনুসারে পুরুষার্থ করছ। যারা বাবাকে স্মরণ করবে, ওরা তাড়াতাড়ি ওপরে উঠে যাবে। এটা প্রবৃত্তি মার্গ। যুগলদের প্রতিযোগিতা হলে তাদের একটা করে পা বেঁধে দেওয়া হয়, তারপর তারা দৌড়ায়। এটাও তোমাদের একটা প্রতিযোগিতা। যার ভালো প্র্যাক্টিস থাকে না, সে পড়ে যায়। এখানেও এইরকম হয়। একজন এগিয়ে গেলে অন্যজন তাকে বাঁধা দেয়। কখনো আবার দুজনেই পড়ে যায়। বাবা তো আশ্চর্য হয়ে যান যে অনেক বৃদ্ধও কাম বিকারের আগুন লাগার ফলে পড়ে যায়। *অন্য কারোর পক্ষে তো ফেলে দেওয়া সম্ভব নয়। পতিত হওয়া কিংবা না হওয়া সম্পূর্ণ নিজের হাতে। কেউ তো ধাক্কা দেয় না। তাহলে আমি পড়ে যাই কেন ? যাই হোক না কেন, আমি কখনোই পড়ব না।* পড়ে গেলে পুরো খাবারটাই খারাপ হয়ে যাবে। খুব জোরে আঘাত লাগে। তারপর আফসোস করে। হাড়গোড় চুরমার হয়ে যায়। প্রচন্ড আঘাত লাগে। বাবা অনেক রকম ভাবে বোঝাচ্ছেন। এটাও বুঝিয়েছেন যে শিব জয়ন্তী উপলক্ষ্যে এমনভাবে চিঠি লিখতে হবে, যাতে মানুষ পড়লেই বুঝতে পারে। বিচার সাগর মন্থনের জন্য বাবা সময়ও দিচ্ছেন। কেউ দেখে আশ্চর্য হয়ে যাবে, কত চিঠি আসে। সব বাপদাদা লেখেন। তোমরা বোঝাতে পারো যে শিববাবাকে বাবা আর ব্রহ্মাবাবাকে দাদা (ঠাকুরদাদা) বলা হয়। একজনকে কি কেউ কখনো বাপদাদা বলে ? এগুলো সব ওয়ান্ডারফুল বিষয়। এখানেই সত্যিকারের জ্ঞান রয়েছে। কিন্তু স্মরণ করলেই কাউকে তীরবিদ্ধ করতে পারবে। প্রতি মুহূর্তে দেহ অভিমান এসে যায়। বাবা বলছেন, আত্ম-অভিমানী হও। আত্মাই শরীর ধারণ করে ভূমিকা পালন করে। কারোর মৃত্যুতেও যেন বিচলিত না হই। আত্মার মধ্যে যে পার্ট ভরা আছে, সেটা আমরা সাক্ষী হয়ে দেখছি। ওই আত্মাকে এখন একটা শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর নিয়ে অভিনয় করতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা কি করতে পারি। এই জ্ঞানটাও তোমাদের বুদ্ধিতে আছে। তবে ক্রম অনুসারে। অনেকের বুদ্ধিতে এগুলো ধারণ হয় না এবং যার ফলে কাউকে বোঝাতেও পারে না। আত্মা একেবারে গরম তাওয়া অর্থাৎ তমোপ্রধান হয়ে গেছে। সেখানে জ্ঞানামৃত ঢালা হলে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। যে অনেক ভক্তি করেছে, সে-ই তিরবিদ্ধ হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে ধারণ করবে। কত সুন্দর হিসাব। যে এক নম্বর পবিত্র, সে-ই পরে পতিত হয়ে যায়। এই বিষয়গুলো ভালো করে বুঝতে হবে। কারোর ভাগ্যে না থাকলে পড়াশুনা ছেড়ে দেয়। ছোটবেলা থেকেই জ্ঞান মার্গে চলতে থাকলে ভালোভাবে ধারণ হতে থাকবে। বোঝা যায় যে এই আত্মা আগে অনেক ভক্তি করেছে। শরীর যত বড় হবে তত সবকিছু বুঝতে শিখবে, আত্মিক এবং শারীরিক দুদিকেই মনোযোগ যাবে। তখন সেই প্রভাব আর থাকে না। *এটা ঈশ্বরীয় পড়াশুনা। তাই তফাৎ তো আছেই। কিন্তু যদি আগ্রহ (রুচি) থাকে তবেই না।*
আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) আধ্যাত্মিক মিলিটারি হয়ে ৫ বিকারের ওপর বিজয়ী হতে হবে, অবশ্যই পবিত্র হতে হবে। শ্রীমৎ অনুসারে ভারতকে পবিত্র বানানোর সেবা করতে হবে।

২ ) এই সীমাহীন নাটকে আত্ম-অভিমানী হয়ে অভিনয় করতে হবে। কখনো দেহ-অভিমানের বশবর্তী হওয়া যাবে না। প্রত্যেক অভিনেতার অভিনয়কে সাক্ষী হয়ে দেখতে হবে।

বরদান:-
স্বমানের দ্বারা অভিমানকে সমাপ্ত করে সর্বদা নির্মান ভব

যে বাচ্চা সর্বদা স্বমানে থাকে, তার মধ্যে কখনো অভিমান আসতে পারে না। সে সর্বদা নির্মান হয়। যে যত উঁচু স্বমানে থাকবে, ‛আচ্ছা ঠিক আছে’ বলার ক্ষেত্রেও সে তত নির্মান (নিরহংকারী) হবে। ছোট-বড়, জ্ঞানী-অজ্ঞানী, মায়াজিৎ হোক কিংবা মায়ার বশ, গুণী হোক কিংবা কিছু অবগুণ রয়েছে অর্থাৎ গুণী হওয়ার পুরুষার্থী -- যে স্বমানে থাকবে, সে দাতা হয়ে সবাইকে সম্মান দেবে। অর্থাৎ নিজে সম্মৃদ্ধ হওয়ার কারণে সর্বদা দয়ালু হবে।

স্লোগান:-
স্মরণের সহজ উপায় হলো স্নেহ, তাই সর্বদা স্নেহের পাত্র হয়ে থাকো এবং অন্যকেও সেইরকম বানাও।