26.09.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
প্রশ্নঃ -
মানুষ থেকে
দেবতা হওয়ার অধ্যয়ণে পাশ করতে পারার মুখ্য আধার কি ?
উত্তরঃ -
বিশ্বাস। নিশ্চয় বুদ্ধি সম্পন্ন হওয়ার জন্য সাহস থাকা চাই। মায়া এই সাহসকে ভেঙে
দেয়। সংশয় বুদ্ধি সম্পন্ন করে তোলে। চলতে চলতে যদি অধ্যয়ণের উপর বা অধ্যয়ণ করান
যিনি সেই সুপ্রিম টিচারের প্রতি সংশয় জাগে তবে নিজের আর অপরের অনেক লোকসান করবে।
গীতঃ-
তুমি হলে
ভালবাসার সাগর (তু প্যার কা সাগর হ্যায়) ...
ওম্ শান্তি ।
আত্মা রূপী
বাচ্চাদের প্রতি শিববাবা বোঝাচ্ছেন, তোমরা বাচ্চারা বাবার মহিমা করছো- "তুমি হলে
প্রেমের সাগর" । ওঁনাকে জ্ঞানের সাগরও বলা হয়। যখন জ্ঞানের সাগর হলেন একজনই, তবে
বাকিদের বলা হবে অজ্ঞান, কারণ জ্ঞান আর অজ্ঞানেরই হল খেলা। জ্ঞান থাকেই পরমপিতা
পরমাত্মার কাছে। *এই জ্ঞানের দ্বারা নূতন দুনিয়া স্থাপন হয়। এইরকম না যে নূতন দুনিয়া
তৈরী করা হয়। দুনিয়া তো হলোই অবিনাশী। শুধু পুরানো দুনিয়াকে পরিবর্তন করে নূতন করা
হয়। এমন না যে প্রলয় হয়ে যায়। সমগ্র দুনিয়ার কখনো বিনাশ হয় না। পুরানো যেটা আছে
সেটাই পরিবর্তিত হয়ে নূতন হয়ে উঠছে* । বাবা বুঝিয়েছেন, এটা হলো পুরানো গৃহ, যেখানে
তোমরা বসে আছো। জানো যে আমরা নূতন গৃহে যাবো। যেমন পুরানো দিল্লী। এখন পুরানো দিল্লী
বিলুপ্ত হবে, তার পরিবর্তে এখন নূতন তৈরী হচ্ছে। এখন নূতন হয় কীভাবে ? প্রথমে তো
ওখানে থাকার মতো যোগ্যতা থাকা উচিত। নূতন দুনিয়াতে তো হয় সর্বগুণ সম্পন্ন ...
বাচ্চারা, তোমাদের এইম্-অবজেক্টও হলো এটা। পাঠশালাতে তো এইম্-অবজেক্ট থাকে, তাই না
! অধ্যয়ণ যারা করে, তারা জানে- আমি সার্জেন হবো, ব্যারিস্টার হবো...। এক্ষেত্রে
তোমরা জানো যে, আমরা এসেছি মানুষ থেকে দেবতা হতে। পাঠশালাতে তো এইম্-অবজেক্ট ব্যতীত
কেউ বসতে পারে না। কিন্তু এটা হলো এইরকম পাঠশালা যে এইম্ অবজেক্ট বুঝতে পেরে,
পড়াশুনা করে, তবুও পড়াশুনা ছেড়ে দেয়। মনে করে এই পড়াশুনা হলো রঙ্(ভুল)। এই এইম্
অবজেক্ট হয় না, এইরকম কখনো হতে পারে না। পড়ান যিনি তাঁর উপরেও সংশয় এসে যায়। ঐ
পড়াশুনাতে (পার্থিব জগতের অধ্যয়ণে) তো পড়তে পারে না অথবা পয়সা থাকে না, ক্ষমতা
না থাকলে পড়াশুনা ছেড়ে দেয়। এই রকম তো বলে না যে, ব্যারিস্টারীর নলেজ হলো রঙ্, যারা
পড়ায় তারাও হলো রঙ্। এখানেই তো হলো মানুষের ওয়ান্ডারফুল বুদ্ধি। পড়াশুনার উপর
সংশয় এসে গেলে বলে দেয় এই পড়াশুনা হলো রঙ্(ভুল)। ভগবান পড়ানই না, বাদশাহী
ইত্যাদি কিছু পাওয়া যায় না... এই সব হলো গল্প-কথা। এই রকমই অনেক বাচ্চারা
পড়তে-পড়তে আবার ছেড়ে দেয়। সবাই জিজ্ঞাসা করবে তুমি তো বলতে আমাদের ভগবান পড়ান,
যার ফলে মানুষ থেকে দেবতা হয়ে ওঠে, এটা আবার কি হলো ? না, না সেই সব ছিলো গল্প- কথা।
বলে এই এইম্-অবজেক্ট আমাদের বোধগম্য নয়। এমনই কেউ কেউ বিশ্বাসের সাথে অধ্যয়ণ করতো,
সংশয় হওয়াতে পড়াশুনা ছেড়ে দিয়েছে। নিশ্চয় কীভাবে হলো, আবার সংশয় বুদ্ধি কে করে
তুলছে ? তোমারা বলবে এটা যদি পড়তাম তো অনেক উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে পারতাম। অনেক
পড়াশুনা করতে থাকে। ব্যারিস্টারী পড়তে-পড়তে অর্ধেক পড়ে ছেড়ে দেয়, অন্য কেউ তো
পড়াশুনা করে ব্যারিস্টার হয়ে যায়। পড়াশুনা করে কেউ পাশ করে যায়, কেউ ফেল করে যায়।
তারপর কিছু না কিছু নীচু পদ প্রাপ্ত করে। এটা তো হলো বড় পরীক্ষা। এতে খুবই সাহস
থাকা চাই। এক তো সুনিশ্চিত বুদ্ধির সাহস থাকা চাই। মায়া এমনই যে এই নিশ্চয় বুদ্ধি
সম্পন্ন তো এই আবার সংশয় বুদ্ধি সম্পন্ন করে তোলে। পড়তে অনেকেই আসে, কিন্তু কেউ
কেউ ডালও (স্থূল বুদ্ধি সম্পন্ন) হয়, নম্বর অনুযায়ী পাশ হয় যে ! সংবাদপত্রেও লিস্ট
বের হয়। এটাও সেই রকম, আসে অনেকেই পড়াশুনা করার জন্য। কেউ সুবুদ্ধি সম্পন্ন, কেউ
ডাল বুদ্ধি সম্পন্ন। ডাল বুদ্ধি হতে-হতে আবার কোনো না কোনো সংশয়ে এসে ছেড়ে চলে যায়।
আবার অন্যদেরও লোকসান করিয়ে দেয়। সংশয় বুদ্ধি বা সন্দিগ্ধ বুদ্ধি বিনাশন্তি বলা
হয়। তারা উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে পারে না। বিশ্বাসও থাকে, কিন্তু সম্পূর্ণ পড়াশুনা
না করলে কি আর পাশ করবে! কারণ বুদ্ধি কোনো কাজের নয়। ধারণা হয় না। আমরা হলাম আত্মা-
এটা ভুলে যায়। বাবা বলেন, আমি হলাম তোমাদের অর্থাৎ আত্মাদের পরমপিতা। বাচ্চারা,
তোমরা জানো যে বাবা এসেছেন। কারোর অনেক বিঘ্ন আসে বলে সংশয় এসে যায়, বলে দেয় আমার
অমুক ব্রাহ্মণীর উপর বিশ্বাস হয় না। আরে, ব্রাহ্মণী যেমনই হোক না কেন তোমাদের তো
পড়াশুনা করা উচিত, তাই না ! টিচার ভালো না পড়ালে তো ভাবো যে একে পড়ানোর থেকে
ছাড়িয়ে দেবো। কিন্তু তোমাদের তো পড়তে হবে যে না! এই পড়াশুনা হলো বাবার। পড়ান
যিনি, তিনি হলেন সেই সুপ্রিম টিচার। ব্রাহ্মণীও যখন ওঁনার নলেজ শোনায় তখন
অ্যাটেনশন পড়াশুনার উপর হওয়া উচিত। পড়াশুনা ব্যাতীত পরীক্ষায় পাশ করতে পারবে না।
কিন্তু বাবার উপর বিশ্বাসই ভঙ্গ হয়ে যায় তো আবার পড়াশুনা ছেড়ে দেয়। পড়তে-পড়তে
টিচারের উপর সংশয় এসে যায় যে এর থেকে এই পদ পাওয়া যাবে কি যাবে না, তাই আবার ছেড়ে
দেয়। অপরকেও খারাপ করে দেয়, গ্লানি করার জন্য আরোই লোকসান করে দেয়। অনেক ক্ষতি হয়ে
যায়। বাবা বলেন, এখানে পাপ করলে তার শত গুণ দন্ড হয়। অনেককে খারাপ করার জন্য একজন
নিমিত্ত হয়। তাই যা কিছু পুণ্য আত্মা করেছে আবার পাপ আত্মা হয়ে যায়। পূণ্য আত্মা
হয়ে ওঠে এই অধ্যয়ণ করে আর পূণ্য আত্মা তৈরী করতে পারেন শুধুমাত্র বাবা। যদি কেউ
পড়াশুনা করতে না পারে তো অবশ্যই কোনো খারাপ কিছু থাকে। ব্যাস্, বলে দেয় ভাগ্য, আমি
কি করব। যেন হার্টফেল হয়ে যায়। তাই যারা এখানে এসে মরজীবা(জীবন্মৃত) হয়, তারা আবার
রাবণ রাজ্যতে গিয়ে মরজীবা হয়। হীরে তুল্য জীবন গড়ে তুলতে পারে না। মানুষ হার্টফেল
করলে গিয়ে দ্বিতীয় জন্ম নেয়। এখানে হার্টফেল করলে তবে আসুরিক সম্প্রদায়ের হয়ে যায়।
এটা হলো মরজীবা বা জীবন্মৃত জন্ম। নূতন দুনিয়াতে চলার জন্য বাবার হয়। আত্মারাও যাবে,
তাই না ! আমি আত্মা এই শরীরের ভাবকে ত্যাগ করলে তবে বুঝবে এই হলো দেহী-অভিমানী। আমি
এক জিনিস, শরীর আরেক জিনিস। এক শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করে যখন, তাহলে তো
অবশ্যই আলাদা জিনিস হলো, তাই না। তোমরা মনে করো আমরা আত্মারা শ্রীমত অনুযায়ী এই
ভারতে স্বর্গের স্থাপনা করছি। মানুষকে দেবতা করে তোলার নিয়ম শিখতে হয়। এটাও
বাচ্চাদের বুঝিয়েছি, সৎসঙ্গ বলতে আর কিছুই নেই। সত্য তো একমাত্র পরমাত্মাকে বলা হয়।
ওঁনার নাম হলো শিব, তিনিই সত্যযুগের স্থাপনা করেন। কলিযুগের আয়ু অবশ্যই সম্পূর্ণ
হবে। সমগ্র দুনিয়ার চক্র কীভাবে আবর্তিত হয়, এটা গোলার (সৃষ্টি চক্রের) চিত্রতে
ক্লীয়ার আছে। দেবতা হওয়ার জন্য সঙ্গমযুগে বাবার হয়ে যায়। বাবাকে ছাড়লে তো আবার
কলিযুগে চলে যাবে। ব্রাহ্মণের আচরণে সংশয় এলে তখন গিয়ে শূদ্র ঘরানায় পড়বে। তখন
দেবতা হতে পারবে না। বাবা এটাও বোঝান- কীভাবে এখন স্বর্গের স্থাপনার ফাউন্ডেশন হয়েছে।
ফাউন্ডেশনের সেরিমনি (স্থাপনার অনুষ্ঠান) আবার ওপেনিং এরও সেরিমনি (উদ্বোধন
অনুষ্ঠান) হয়। এক্ষেত্রে তো হলো গুপ্ত। এটা তোমরা জানো যে, আমরা স্বর্গের জন্য তৈরী
হচ্ছি। তখন নরকের নাম থাকবে না। শেষ পর্যন্ত এখানে বাঁচতে হবে, অবশ্যই পড়াশুনা করতে
হবে। পতিত-পাবন হলেন একই বাবা, যিনি পবিত্র করে তোলেন। এখন তোমরা বাচ্চারা বুঝতে
পারো এটা হলো সঙ্গমযুগ, যখন বাবা পবিত্র করে তুলতে আসেন। লিখতেও হবে পুরুষোত্তম
সঙ্গমযুগে মানুষ নর থেকে নারায়ণ হয়। এটাও লিখে দেওয়া আছে - এটা হলো তোমাদের
ঈশ্বরীয় জন্মসিদ্ধ অধিকার। বাবা এখন তোমাদের দিব্য দৃষ্টি প্রদান করেন। আত্মা জানে
যে আমাদের ৮৪ জন্মের চক্র এখন সম্পূর্ণ হয়েছে। আত্মাদের পিতা বসে বোঝাচ্ছেন। আত্মা
অধ্যয়ণ করে, যদিও দেহ অভিমান প্রতি ক্ষণে এসে যায় - কারণ অর্ধ-কল্প ধরে থাকা দেহ-
অভিমান । তাই দেহী - অভিমানী হতে টাইম লেগে যায়। বাবা বসেছেন, টাইম পাওয়া গেছে।
যদিও ব্রহ্মার আয়ু ১০০ বছর বলে অথবা কিছুটা কমও । মনে করো, ব্রহ্মা চলে গেল, এমন
তো নয় যে স্থাপনা হবে না। তোমরা এই সেনা তো বসে আছো। বাবা তো মন্ত্র দিয়ে দিয়েছেন,
পড়তে হবে। সৃষ্টির চক্র কীভাবে আবর্তিত হয়, এটাও বুদ্ধিতে আছে। স্মরণের যাত্রার
উপর থাকতে হবে। স্মরণের দ্বারাই বিকর্ম বিনাশ হবে। ভক্তি মার্গে সবচেয়ে বেশী বিকর্ম
হয়েছে। পুরানো দুনিয়া আর নূতন দুনিয়া দুই এর গোলা তোমাদের সামনে আছে। তাই তোমরা
লিখতে পারো পুরানো দুনিয়া রাবণ রাজ্য মুর্দাবাদ, নূতন দুনিয়া জ্ঞান মার্গ রামরাজ্য
জিন্দাবাদ। যারা পূজ্য ছিলো তারাই পূজারী হয়েছে। কৃষ্ণও পূজ্য সুন্দর (ফর্সা) ছিলো
আবার রাবণ রাজ্যে পূজারী শ্যাম-বর্ণ বা অসুন্দর হয়ে যায়। এটা বোঝানো তো খুব সহজ।
প্রথম দিকে যখন পূজা শুরু হয় তো বড়-বড় হীরের লিঙ্গ তৈরী করে, মোস্ট ভ্যালুয়েবেল
হয়, কারণ বাবা এতো বিত্তশালী করেছেন। তিনি নিজেই হলেন হীরা অর্থাৎ অতি মূল্যবান, তো
আত্মাদেরও হীরের মতন তৈরী করেন, তাই তাঁকে হীরে দিয়ে তৈরী করে রাখা উচিত, তাই না !
হীরা সর্বদা মধ্যস্থলে রাখা হয়। পোখরাজ ইত্যাদির সাথে তো ওর ভ্যালু থাকে না,
সেইজন্য হীরেকে মধ্যবর্তী স্থানে রাখা হয়। এঁর দ্বারা ৮ রত্ন বিজয় মালার দানা হয়ে
ওঠে, সবচেয়ে বেশী ভ্যালু বা মূল্য হয় হীরের। এছাড়া নম্বর অনুযায়ী হয়। এটা করেন
শিববাবা, এই সব কথা বাবা ব্যাতীত তো কেউ বোঝাতে পারে না।পড়তে-পড়তে আশ্চর্যবৎ
বাবা-বাবা কহন্তী(বলে), আবার চলে যায়। শিববাবাকে বাবা বলে, তো তাঁকে কখনো ছেড়ে দেওয়া
উচিত নয়। আবার বলা হয় ভাগ্য। কারোর ভাগ্যে বেশী রকম না থাকলে তবে আবার কর্মই এমন করে
যে শত গুণ দন্ড চেপে যায়। পূণ্য আত্মা হয়ে ওঠার পুরুষার্থ করে আর তারপর পাপ করলে
পাপ শত গুণ হয়ে যায় আবার বামন থেকে যায়, বৃদ্ধি হয় না। শতগুণ দন্ড অ্যাড হওয়ার জন্য
অবস্থা জোরদার হয় না। বাবা, যিনি তোমাদের হীরে তুল্য করে তুলছেন, তাঁর প্রতি সংশয়
কেন থাকবে ! কোনো কারণে বাবাকে ছাড়লে দুর্ভাগ্যশালী আত্মা বলবে। যে কোনো জায়গায়
থেকে বাবাকে স্মরণ করতে হবে, তবে শাস্তির হাত থেকে মুক্তি পাবে। এখানে তোমরা আসোই
পতিত থেকে পবিত্র হতে। পাস্টেও (অতীতে) এই রকম কর্ম করে থাকলে তবে শরীরেরও কর্মভোগ
কতো চলতে থাকে। এখন তোমরা তো অর্ধ-কল্পের জন্য এর থেকে মুক্ত হয়ে যাও। নিজেকে দেখতে
হবে আমি কতখানি নিজের উন্নতি করছি, অন্যদের সার্ভিস করি ? লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্রের
উপরেও লিখতে পারো যে, এই হলো বিশ্বের শান্তির রাজত্ব, যা এখন স্থাপন হচ্ছে। এটাই হলো
এইম্ অবজেক্ট। সেখানে ১০০ পারসেন্ট পবিত্রতা, সুখ-শান্তি আছে। এঁনাদের রাজ্যে
দ্বিতীয় কোনো ধর্ম হয় না। তাই এখন যে এতো ধর্ম আছে অবশ্যই সেই গুলোর বিনাশ হবে !
বোঝাতে গেলে অনেক বেশী বুদ্ধির দরকার। না হলে নিজের অবস্থা অনুযায়ীই বোঝায়।
চিত্রের সামনে বসে ধারণা করা উচিত। কীভাবে বোঝাতে হবে তা তো তোমাদের বলাই হয়েছে ।
যারা বুঝতে পারে তারা বোঝে যে বোঝাতে হবে। সেইজন্য বাবা মিউজিয়াম খোলাতে থাকেন। গেট
ওয়ে টু হেভেন, এই নামও ভালো। সেটা হলো দিল্লী গেট, ইন্ডিয়া গেট। এটা হলো আবার
স্বর্গের গেট।তোমরা এখন স্বর্গের গেট খুলছো। ভক্তি মার্গে এমন বিভ্রান্ত হয়ে যায়
যেমন গোলক ধাঁধায় (ভুলভুলাইয়া) বিভ্রান্ত হয়ে যায়। কারোরই পথ খুঁজে পায় না। সকলে
ভিতরে আটকে পড়ে, মায়ার রাজ্যে। তারপর বাবা এসে বের করেন। কারো কারো বের হতে মন না
চাইলে বাবা কি-ই বা আর করবেন। সেইজন্য বাবা বলেন, সবচেয়ে দুর্ভাগ্যশালীও এখানেই দেখো,
যারা পড়াশুনা ছেড়ে দেয়। সংশয় বুদ্ধি সম্পন্ন হয়ে জন্ম-জন্মান্তরের জন্য নিজেই
নিজেকে খুন করে দেয়। ভাগ্য খারাপ হতে থাকলে তখন এরকম হয়। গ্রহের ফের থাকলে
সুন্দরের পরিবর্তে কুৎসিত হয়ে যায়। গুপ্ত আত্মা অধ্যয়ণ করে, আত্মাই শরীর দ্বারা সব
কিছু করে, আত্মা শরীর ব্যাতীত তো কিছু করতে পারে না। *আত্মা মনে করার মধ্যেই হলো
পরিশ্রম* । নিজেকে আত্মা নিশ্চয় না আবার দেহ-অভিমান এসে যায়। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
সুপ্রীম টিচারের পঠন-পাঠন আমাদের নর থেকে নারায়ণ করে তোলে, এই বিশ্বাসের সাথে
অ্যাটেনশন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। কে পড়াচ্ছেন (সেন্টারের টিচার), সেটা দেখতে নেই।
২ ) দেহী- অভিমানী হওয়ার পুরুষার্থ করতে হবে, মরজীবা (এই পার্থিব দুনিয়ায় থেকেও
জীবন্মৃত) হয়েছো তো এই শরীরের ভাব ত্যাগ করতে হবে।
পুণ্য আত্মা হতে হবে, কোনো পাপ কর্ম করতে নেই।
বরদান:-
স্ব-স্থিতির সীটে স্থিত থেকে পরিস্থিতির উপর বিজয় প্রাপ্তকারী মাস্টার রচয়িতা ভব
যে কোনো পরিস্থিতি,
প্রকৃতি দ্বারা আসে। সেইজন্য পরিস্থিতি হলো রচনা আর স্ব-স্থিতি যাদের থাকে তারা হলো
রচয়িতা। মাস্টার রচয়িতা বা মাস্টার সর্বশক্তিমান কখনো পরাজিত হয় না। অসম্ভব। যদি
কেউ নিজের সেট ছেড়ে দেয় তখন পরাজিত হয়। সীট ছেড়ে দেওয়া অর্থাৎ শক্তিহীন হওয়া।
সীটের আধারে শক্তি সমূহ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই এসে যায়। যারা সিটের নীচে নেমে যায়,
তাদের মায়ার ধূলো লেগে যায়। বাপদাদার অতি আদরের, মরজীবা জন্মধারী ব্রাহ্মণ কখনো
দেহ-অভিমানের মাটিতে খেলা করতে পারে না।
স্লোগান:-
দৃঢ়তা কড়া সংস্কারকেও মোমের মতো গলিয়ে দেয় (সমাপ্ত করে দেয়) ।