28.09.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
প্রশ্নঃ -
তোমরা হলে
আত্মা-রূপী (রুহানী) সেনা, তোমরা বাবার কোন ডায়রেক্শন পেয়েছো, যাকে গুরুত্ব দিতে হবে
?
উত্তরঃ -
তোমাদের ডায়রেক্শন দেওয়া হয় যে, সদা ব্যাজ পড়ে থাকো। কেউ যদি প্রশ্ন করে যে, এটা কি
? তুমি কে ? তখন বলো, আমরা সমগ্র দুনিয়ার কাম-বিকারের অগ্নি প্রশমনকারী
ফায়ার-ব্রিগেড। এই সময় সমগ্র দুনিয়া কাম-বিকারের আগুনে জ্বলছে। আমরা সকলকে সমাচার
দিই যে, এখন পবিত্র হও, দৈবী-গুণ ধারণ করো তবেই তরী পার হয়ে যাবে।
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি-মিষ্টি
আত্মা-রূপী বাচ্চারা সহজ স্মরণে বসেছে। কারো-কারোর অসুবিধা বোধ হয়। অনেকে বিভ্রান্ত
হয়ে পড়ে -- আমরা কি টানটান হয়ে এবং কঠোর নিয়মানুবর্ত অবস্থায় বসবো ! বাবা বলেন --
এমন কোন কথা নেই, যেকোনভাবেই বসতে পারো। কেবল বাবাকে স্মরণ করতে হবে। এতে কোনো
অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। হঠযোগীরা টানটান হয়ে কঠোর নিয়মানুবর্তীতার সঙ্গে বসে। পায়ের
উপর পা তুলে বসে। এখানে বাবা বলেন, আরাম করে বসো। বাবাকে আর ৮৪ চক্রকে স্মরণ করো। এ
হলো সহজ স্মরণ। যা উঠতে-বসতে বুদ্ধিতে থাকে। যেমন দেখো, এই ছোট বাচ্চাটি বাবার পাশে
বসে রয়েছে, এর বুদ্ধিতে (নিশ্চয়ই) মা-বাবার কথাই থাকবে। তোমরাও তো বাচ্চা, তাই না!
বাবাকে স্মরণ করা অতি সহজ। আমরা বাবার সন্তান। বাবার থেকেই উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করতে
হবে। শরীর নির্বাহের জন্য অবশ্যই গৃহস্থাদিতে থাকো। কেবল অন্যান্যদের স্মরণ বুদ্ধি
থেকে নিষ্কাশিত করো। কেউ হনুমানকে, কেউ অন্য কাউকে, সাধু ইত্যাদিদের স্মরণ করতো,
সেসব স্মরণ এখন পরিত্যাগ করতে হবে। স্মরণ তো করে তাই না! পূজার জন্য পুজারীকে
মন্দিরে যেতে হয়, এখানে কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কাউকে পেলে বলো, শিববাবা বলেন --
আমাকে অর্থাৎ একমাত্র পিতাকেই স্মরণ করো। শিববাবা হলেন নিরাকার। অবশ্যই তিনি সাকারে
এসে বলেন --- "মামেকম্ (একমাত্র আমায়) স্মরণ করো" । আমি পতিত-পাবন। এ তো সঠিক শব্দ,
তাই না ! বাবা বলেন, আমাকে স্মরণ করো। তোমরা সকলেই পতিত। এ হলো পতিত, তমোপ্রধান
দুনিয়া, তাই না! সে'জন্য বাবা বলেন, কোন দেহধারীকে স্মরণ করো না। এ তো ভালকথাই, তাই
না ! কেউ গুরুদের মহিমা করে না। বাবা শুধু বলেন -- আমায় স্মরণ করলে তোমাদের
পাপস্খলন হবে। এ হলো যোগবল অথবা যোগ-অগ্নি। অসীম জগতের পিতা সত্যই বলেন, তাই না!
--- নিরাকারই গীতার ভগবান। এ কৃষ্ণের কথা নয়। ঈশ্বর বলেন, শুধু আমায় স্মরণ করো, আর
কোনো উপায় নেই। পবিত্র হয়ে গেলে উচ্চপদ লাভ করবে। তা নাহলে পদ কম হয়ে যাবে। আমরা
তোমাদের কাছে বাবার সমাচার দিই। আমি সন্দেশী (বার্তাবাহক)। এমনভাবে বোঝানোয় কোন
অসুবিধা নেই। মাতা'রা, অহল্যারা(অবলা শ্রেনী), কুব্জারাও(পিঠ যার বাঁকা অর্থাৎ
বিকলাঙ্গ) উচ্চপদ লাভ করতে পারে। তা সে এখানকার নিবাসীরাই (মধুবন) হোক্, অথবা
গৃহস্থীই হোক্, এমন নয় এখানকার বাসিন্দারা অধিক স্মরণ করে। বাবা বলেন -- যারা বাইরে
থাকে(গৃহস্থী) তারাও অনেক বেশী স্মরণ করতে পারে। অনেক সার্ভিস করতে পারে। এখানে
বাবার কাছ থেকে পুনরায় যখন রিফ্রেশ হয়ে ফিরে যায় তখন অন্তরে কত খুশী থাকা উচিত। এই
খারাপ (ছিঃ ছিঃ) দুনিয়ায় আর অল্পদিন বাকি রয়েছে। পুনরায় চলে যাব কৃষ্ণ-পুরীতে।
কৃষ্ণের মন্দিরকেও সুখধাম বলা হয়। বাচ্চাদের অপার খুশী থাকা উচিত। যেহেতু তোমরা
বাবার হয়ে(সমর্পিত) গেছো। তোমাদেরই স্বর্গের মালিক করেছিলেন। তোমরাও বলো --- বাবা,
৫ হাজার বছর পূর্বেও আমরা তোমার সঙ্গে মিলিত হয়েছিলাম এবং এখন পুনরায় মিলিত হবো।
এখন বাবাকে স্মরণ করে মায়ার উপর বিজয়প্রাপ্ত করতে হবে। এখন এই দুঃখধামে তে থাকবো
না। তোমরা তো পড়োই সুখধামে যাওয়ার জন্য। সকলকে হিসেব-নিকেশ মিটিয়ে দিয়ে ফিরে যেতে
হবে। আমি এসেছিই নতুন দুনিয়া স্থাপন করতে। বাকি আর সকল আত্মারা চলে যাবে মুক্তিধামে।
বাবা বলেন -- আমি কালেরও কাল (মহাকাল)। আর সকলের শরীরকে পরিত্যাগ করিয়ে আত্মাদের
নিয়ে যাবো। সকলেই বলে আমরা যেন শীঘ্রই যেতে পারি। এখানে আর থাকতে হবে না। এ হলো
পুরানো দুনিয়া, পুরানো শরীর। এখন বাবা বলেন -- আমি সকলকে নিয়ে যাবো, কাউকে ছাড়বো
না। তোমরা সকলে আবাহন করেছো -- হে পতিত-পাবন এসো। অবশ্যই স্মরণ করতে থাকে কিন্তু
অর্থ কিছুই বোঝে না। পতিত-পাবনে একাত্ম বা নিমগ্ন হয়ে থাকে। পুনরায় তারা বলে, রঘুপতি
রাঘব রাজা রাম। এখন শিববাবা তো রাজা হন না, রাজত্ব করেন না। ওঁনাকে রাজা রাম বলা
ভুল। যখন মালা জপে তখন রাজা রাম বলে। তাতে ঈশ্বরের কথা স্মরণে আসে। শিবই হলেন ভগবান।
মানুষেরা অনেকেই (নিজেদের) এই নাম রাখে। কৃষ্ণকেও শ্যাম-সুন্দর, বৈকুন্ঠনাথ,
মাখনচোর ইত্যাদি অনেক-অনেক নাম দিয়েছে। তোমরা কি এখন কৃষ্ণকে মাখনচোর বলবে ? একদমই
নয়। এখন তোমরা বুঝেছো যে, ঈশ্বর অদ্বিতীয়, নিরাকার, কোনও দেহধারীকে ঈশ্বর বলতে পারা
যায় না। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শঙ্করকেও বলতে পারা যায় না তাহলে মানুষ নিজেকে ভগবান কিভাবে
বলতে পারে ? শুধুমাত্র ১০৮ বৈজয়ন্তী মালারই গায়ন (স্মরণ) হয়। শিববাবা স্বর্গ স্থাপন
করেছেন, ওনারা হলেন তার(স্বর্গ) মালিক। অবশ্যই তার পূর্বে ওনারা এই রকম পুরুষার্থ
করেছিলেন। একে বলা হয় কলিযুগের অন্ত-সত্যযুগের আদির সঙ্গমযুগ। এ হলো কল্পের
সঙ্গমযুগ। মানুষ আবার যুগে-যুগে বলেছে, অবতার নামও ভুল পুনরায় তাকে মাটির
টুকরো-নুড়িপাথরে, কণায়-কণায় বলেছে। এও ড্রামা। যে কথা অতীত হয়ে যায় তাকেই বলা হয়
ড্রামা। কারোর সঙ্গে ঝগড়াদি হলে, তা অতীত হয়ে গেলে সেটা নিয়ে আর চিন্তা করো না।
আচ্ছা, কেউ একটু কম-বেশী বলেছে, তোমরা সেসবগুলো ভুলে যাও। কল্প-পূর্বেও এরকম বলেছিল।
স্মরণে রাখলে পুনরায় ক্রোধান্বিত হতে থাকবে। সেসব কথা আর কখনো বলোও না। বাচ্চারা
তোমাদের সার্ভিস তো করতেই হবে, তাই না! সেবায় কোনো বিঘ্ন ঘটা উচিত নয়। সেবায়
দুর্বলতা দেখানো উচিত নয়। শিববাবার সেবা, তাই না! সেখানে কখনো এতটুকুও না বলা উচিত
নয়। তা নাহলে নিজের পদ ভ্রষ্ট করে দেবে। বাবার সহায়তাকারী হয়েছো তাই সম্পূর্ণরূপে
সহায়তা করতে হবে। বাবার সেবায় এতটুকুও প্রবঞ্চনা করা উচিত নয়। সকলকে বার্তা
পৌঁছতেই হবে। বাবা বলতে থাকেন -- মিউজিয়ামের এমন নাম রাখো যে মানুষ দেখে ভিতরে
প্রবেশ করে আর এসে জানে, এ তো নতুন জিনিস, তাই না! মানুষ নতুন জিনিস দেখে ভিতরে
প্রবেশ করে। আজকাল বিদেশ থেকে আসে ভারতের প্রাচীন রাজযোগ শিখতে। যখন প্রাচীন অর্থাৎ
সর্বাপেক্ষা পুরোনো তখন সে তো ঈশ্বরেরই শেখানো যার ৫ হাজার বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে।
সত্যযুগ-ত্রেতায় যোগ করা হয় না, যিনি শিখিয়েছেন তিনি তো চলে গেছেন পুনরায় যখন ৫
হাজার বছর পরে আসবেন তখন এসে রাজযোগ শেখাবেন। প্রাচীন অর্থাৎ ৫ হাজার বছর পূর্বে
ঈশ্বর শিখিয়েছিলেন। সেই ঈশ্বরই পুনরায় সঙ্গমে এসে রাজযোগ শেখাবেন, যারফলে তোমরা
পবিত্র হয়ে যেতে পারো। এ'সময় (পাঁচ) তত্বও তমোপ্রধান। জলও কত ক্ষতি করে দেয়। পুরানো
দুনিয়ায় উপদ্রব হতেই থাকে। সত্যযুগে উপদ্রবের কোনো কথাই নেই। ওখানে প্রকৃতি দাসী হয়ে
যায়। এখানে প্রকৃতি শত্রু-রূপে দুঃখ দেয়। এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্যে দুঃখের কোনো
কথাই ছিল না। ওটা ছিল সত্যযুগ। এখন পুনরায় তা স্থাপিত হচ্ছে। বাবা প্রাচীন রাজযোগ
শেখাচ্ছেন। পুনরায় ৫ হাজার বছর পর শেখাবেন, যার পার্ট রয়েছে সে তার পার্ট অর্থাৎ
ভূমিকা পালন করবে। অসীম জগতের পিতাও তাঁর ভূমিকা পালন করছেন। এঁনার ভিতর প্রবেশ করে,
স্থাপনা করে চলে যাই। হাহাকারের পর পুনরায় জয়-জয়কার হয়। পুরানো দুনিয়া সমাপ্ত হয়ে
যাবে। এই লক্ষ্মী-নারায়ণেরা যখন ছিলেন তখন পুরানো দুনিয়া ছিল না। এ ৫ হাজার বছরের
কথা। লক্ষ-লক্ষ বছরের কথা হতে পারে না। তাই বাবা বলেন -- আর সব কথা ছেড়ে দিয়ে
নিজেদের কল্যাণার্থে এই সেবায় রত হও। অভিমান বশতঃ সেবার প্রতি প্রবঞ্চনা করা উচিত
নয়। এ হলো ঈশ্বরীয় সেবা। অতি মাত্রায় মায়ার তুফান আসবে। কিন্তু বাবার ঈশ্বরীয়
সেবায় প্রবঞ্চনা করবে না। সেবার জন্য বাবা ডায়রেক্শন দিতে থাকেন। মিত্র-সম্বন্ধীয়
যারাই আসবে, সকলের সত্যিকারের বন্ধু হলে তোমরাই। তোমরা ব্রহ্মাকুমার-কুমারীরা হলে
সমগ্র দুনিয়ার মিত্র কারণ তোমরা বাবা সহায়তাকারী। বন্ধুদের মধ্যে কোন শত্রুতা থাকা
উচিত নয়। কোনো কথা উঠলে বলো, বাবাকে স্মরণ করো। বাবার শ্রীমতানুসারেই চলতে হবে। তা
নাহলে নিজের ক্ষতি করে দেবে। তোমরা ট্রেনে করে আসো, ওখানে তো সব ফ্রী। সেখানে
সার্ভিসের অত্যন্ত ভাল সুযোগ রয়েছে। ব্যাজ অতি ভাল (সেবার) জিনিস । প্রত্যেকের পড়ে
থাকা উচিত। কেউ যদি প্রশ্ন করে যে, তোমরা কারা ? তখন বলো যে, আমরা হলাম
ফায়ার-ব্রিগেড, যেমন অগ্নি-নির্বাপনের জন্য ওই ফায়ার-ব্রিগেড রয়েছে তেমনই। এইসময়
সমগ্র সৃষ্টির সকলেই কাম-বিকারের আগুনে দগ্ধ হয়ে রয়েছে। বাবা এখন বলেন, মহাশত্রু
কাম-বিকারের উপর বিজয়প্রাপ্ত করো। বাবাকে স্মরণ করো, পবিত্র হও, দৈবী-গুণ ধারণ করো
তাহলেই তরী পার হয়ে যাবে। এই ব্যাজ শ্রীমতানুসারেই নির্মিত হয়েছে। অতি অল্পসংখ্যক
বাচ্চাই রয়েছে যারা ব্যাজের দ্বারা সার্ভিস করে। বাবা মুরলীর মাধ্যমে কত বোঝাতে
থাকেন। প্রত্যেক ব্রাহ্মণের কাছেই এই ব্যাজ থাকা উচিত, কাউকে পেলে, তাকে এর(ব্যাজ)
মাধ্যমে বোঝাতে হবে -- ইনি হলেন বাবা, এঁনাকে স্মরণ করতে হবে। আমরা সাকারের (শরীরধারীর)
মহিমা করি না। সকলের সদ্গতিদাতা একমাত্র নিরাকার বাবা, ওঁনাকে স্মরণ করতে হবে।
স্মরণের শক্তির দ্বারাই তোমাদের পাপমোচন হবে। তখন অন্তিম মনোস্থিতি অনুযায়ী তেমনই
গতি হবে(অন্ত মতি সো গতি)। দুঃখধাম থেকে মুক্ত হয়ে যাবে। আর তখন তোমরা বিষ্ণুপুরীতে
চলে যাবে। কত বড় খুশীর খবর। লিটারেচরও (বইপত্র) দিতে পারো। বলো, তোমরা দরিদ্র তাই
তোমাদের ফ্রী-তে দিতে পারি। বিত্তশালীদের তো অর্থ দিয়ে দেওয়াই উচিত কারণ এসব অনেক
ছাপাতে হয়। এ হলো এমন বস্তু যার দ্বারা তোমরা কাঙ্গাল থেকে বিশ্বের মালিক হয়ে যাবে।
শিক্ষা তো পেতেই থাকো। যেকোন ধর্মাবলম্বীই হোক্, বলো যে, বাস্তবে তোমরা হলে আত্মা,
নিজেদের আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো। এখন বিনাশ সম্মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে, এই
দুনিয়া পরিবর্তিত হয়ে যাবে। শিববাবাকে স্মরণ করলে বিষ্ণুপুরীতে চলে যাবে। বলো যে,
ইনি তোমাদের কোটি-কোটি, পদ্মগুণের জিনিস দেন। বাবা কত বুঝিয়েছেন -- ব্যাজের মাধ্যমে
সার্ভিস করতে হবে কিন্তু ব্যাজ পড়ে না। লজ্জা পায়। যে ব্রাহ্মণীরা পার্টি নিয়ে যায়
অথবা কোথাও অফিসাদিতে একলা গেলে তখন এই ব্যাজ অবশ্যই পড়ে যাওয়া উচিত, যাদের তোমরা
এ'বিষয়ের উপর বোঝাবে তারা অত্যন্ত খুশী হবে। তাদের বলো যে -- আমরা অদ্বিতীয়
পিতাকেই মান্যতা দিই, তিনিই সকলকে সুখ-শান্তি প্রদান করবেন, ওঁনাকেই স্মরণ করো।
অপবিত্র আত্মারা তো যেতে পারবে না। এখন এই পুরানো দুনিয়া পরিবর্তিত হচ্ছে। এমন-এমন
মার্গে সার্ভিস করতে থাকা উচিত। তোমাদের অনেক নাম হবে, বাবা বুঝে যান যে -- মনে হয়
লজ্জা পায় তাই ব্যাজ পড়ে সার্ভিস করে না। এক হলো ব্যাজ, সিড়ির চিত্র অথবা ত্রিমূর্তি,
গোলক এবং (কল্প) বৃক্ষের চিত্র যেন সঙ্গে থাকে, একসঙ্গে বসে পরস্পরকে বোঝাও তবেই
সকলে একত্রিত হবে। তারা জিজ্ঞাসা করবে যে, ইনি কে ? বলো, শিববাবা এঁনার মাধ্যমে এই
নতুন দুনিয়া স্থাপন করছেন। বাবা এখন বলেন -- আমায় স্মরণ করো, পবিত্র হও। অপবিত্রেরা
তো সেখানে ফিরে যেতে পারবে না। এমন মিষ্টি-মিষ্টি কথা শোনানো উচিত। সকলে তাহলে
খুশীতে শুনবে। কিন্তু কারোর বুদ্ধিতে (একথা) বসে না। সেন্টারে ক্লাসে যখন যাও তখনও
যেন ব্যাজ পড়া থাকে। মিলিটারিদের এখানে (ব্যাজ) লাগানো থাকে। তাদের কখনো লজ্জা লাগে
কী ? তোমরাও হলে আধ্যাত্মিক (রুহানী) মিলিটারি, তাই না! বাবা ডায়রেক্শন দেন তাহলে
সে বিষয়ে ধ্যান দাও না কেন। ব্যাজ পড়া থাকলে শিববাবার স্মরণও থাকবে যে -- আমরা
শিববাবার সন্তান। দিনে-দিনে সেন্টার্স খুলতে থাকবে। কেউ না কেউ বেরিয়ে আসবে। তারা
বলবে -- অমুক শহরে তোমাদের ব্রাঞ্চ নেই। তাদের বলো -- কেউ যদি ঘর-বাড়ী ইত্যাদির
প্রবন্ধ করে, আমন্ত্রণ জানায় তবে আমরা গিয়ে সার্ভিস করতে পারি। সাহস বাচ্চাদের, আর
সহায়তা বাবার, বাবা বাচ্চাদের বলবেন যে -- সেন্টার্স খোলো, সার্ভিস করো। এ'সব হলো
শিববাবার দোকান, তাই না! তিনি বাচ্চাদের দ্বারা পরিচালনা করছেন। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
কখনও পরস্পর অভিমান করে সেবার প্রতি প্রবঞ্চনা করা উচিত নয়। বিঘ্ন-স্বরূপ হয়ো না।
নিজের দুর্বলতা প্রকাশ ক'রো না। সম্পূর্ণরূপে বাবার সহায়তাকারী হয়ে উঠতে হবে।
২ ) যদি কখনো কারোর সঙ্গে ঝগড়া মনোমালিন্য হয়, সেটা অতীত হয়ে গেছে। তা নিয়ে আর
চিন্তা ক'রো না। কেউ কিছু বলল কি বলল না, তুমি সেসব ভুলে যাও। কল্প-পূর্বেও সে এমন
বলেছিল। সুতরাং সেকথা পুনরায় আর উত্থাপন কোরো না।
বরদান:-
অতীত কথনকে দয়াশীল হয়ে সমায়িত করা শুভচিন্তক ভব
ব্যাখা :- যদি কারোর
অতীতের দুর্বলতার কথা কেউ শোনায়, তবে শুভ-ভাবনার দ্বারা তা পার করে দাও।
ব্যর্থচিন্তন বা দুর্বলতার কথা পরস্পরের মধ্যে আদান-প্রদান করা উচিত নয়। বিগত কথাকে
দয়াশীল হয়ে (নিজের মধ্যে) সমাহিত করে নাও। সমাহিত করে সেই আত্মার প্রতি শুভ-ভাবনা
দিয়ে মন্সা-সেবা করতে থাকো। যদি সংস্কার-বশতঃ কেউ ব্যর্থ(উল্টো) কথা বলে, উল্টোকর্ম
করে বা শোনে, তবে তাকে পরিবর্তন করো। এক থেকে দুই, দুই থেকে তিন কথা গড়াতে গড়াতে
ব্যর্থ কথার মালা যেন তৈরী না হয়ে যায়। এই রকম সতর্কতা রাখা অর্থাৎ শুভ-চিন্তক হওয়া।
স্লোগান:-
সন্তুষ্টমণি হও, তবেই প্রভুপ্রিয়, লোকপ্রিয় এবং স্বয়ংপ্রিয় হয়ে যাবে।