27-09-2020 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 27-03-86 মধুবন


*সব সময়ের স্নেহী হও*


আজ স্নেহের সাগর বাবা তাঁর স্নেহী বাচ্চাদের সাথে মিলিত হতে এসেছেন। এই আত্মিক স্নেহ সকল বাচ্চাদেরকে সহযোগী বানিয়ে দেয়। এই স্নেহ সমস্ত পুরোনো সংস্কারকে ভুলিয়ে দেওয়ার সহজ উপায়। এই স্নেহ হল প্রতিটি আত্মার বাবার হয়ে যাওয়ার একমাত্র শক্তিশালী উপায়। স্নেহ হল ব্রাহ্মণ জীবনের ফাউন্ডেশন। স্নেহ - শক্তিশালী জীবন বানানোর, পালনার আধার। সকলে অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ আত্মা যারা বাবার কাছে সম্মুখে পৌঁছেছে, তাদের সকলের পৌঁছানোর আধারও হল "স্নেহ" । স্নেহের ডানায় ভর করে উড়ে উড়ে এসে মধুবন নিবাসী হয়েছ। বাপদাদা সকল স্নেহী বাচ্চাদেরকে দেখছিলেন যে, স্নেহী তো সকল বাচ্চারাই, কিন্তু প্রভেদ কোন্ কোন্ স্থানে ? নম্বর অনুক্রমে কেন ? এর কারণ কি ? স্নেহী সকলেই, কিন্তু কেউ হল "সদাস্নেহী" আর কেউ হল "স্নেহী" এবং তৃতীয় হল সময় অনুসারে তারা স্নেহ বজায় রাখে। বাপদাদা তিন প্রকারের স্নেহী দেখেছেন।

যারা সদাস্নেহী, তারা লভলীন হওয়ার কারণে তাদের পরিশ্রম আর কঠিন অনুভব হয়। কেননা সদাস্নেহী হওয়ার কারণে তাদের সামনে প্রকৃতি আর মায়া দুই'ই এখন থেকে দাসী হয়ে যায় অর্থাৎ সদাস্নেহী আত্মা মালিক হয়ে যায়। তখন প্রকৃতি, মায়া স্বতঃতই দাসী রূপ হয়ে যায়। প্রকৃতি, মায়ার সাহস নেই যে সদাস্নেহীর সময় বা সংকল্প নিজের দিকে নিয়োজিত করবে। সদাস্নেহী আত্মাদের সকল সময় প্রতিটি সংকল্পই বাবার স্মরণ আর সেবার প্রতি। সেইজন্য প্রকৃতি আর মায়াও জানে যে, এই সদাস্নেহী বাচ্চারা সংকল্পেও কখনোই আমার অধীন হবে না। তারা হল সর্বশক্তির অধিকারী আত্মা। সদাস্নেহী আত্মার স্থিতির গায়ন রয়েছে - "এক বাবা দ্বিতীয় আর কেউ নেই"। বাবাই হল সংসার। দ্বিতীয় নম্বরে - স্নেহী আত্মারা, স্নেহতে অবশ্যই থাকে, কিন্তু সব সময় না থাকার কারণে কখনো কখনো মনের সংকল্পের দ্বারাও কখনো কখনো অন্যদিকে স্নেহ চলে যায়। খুব কমই মাঝে মাঝে নিজেকে পরিবর্তন করে নেওয়ার কারণে কখনো পরিশ্রমের, কখনো কঠিনতার অনুভব করে থাকে। খুব অল্পই যখনই কোনো প্রাকৃতিক কিংবা মায়ার সূক্ষ্ম আঘাত নেমে আসে, সেই সময়ে স্নেহের কারণে বাবার স্মরণ দ্রুত চলে আসে আর তখন স্মরণের শক্তির দ্বারা নিজেকে খুব দ্রুততার সাথে পরিবর্তনও করে নেয়। কিন্তু সামান্য সময়ের জন্য হলেও কিছুটা সময় সংকল্প কঠিনতার এবং পরিশ্রমের মধ্যে চলে যায়। কখনো কখনো স্নেহ সাধারণ হয়ে যায়। কখনো কখনো স্নেহে লভলীন থাকে। স্টেজে (স্থিতিতে) পার্থক্য পড়তে থাকে। কিন্তু তবুও বেশী সময় বা সংকল্প ব্যর্থ যায় না। সেই জন্য তারা স্নেহী, কিন্তু সদাস্নেহী না হওয়ার কারণে সেকেন্ড নম্বরে চলে আসে।

তৃতীয় নম্বরে - সময় অনুযায়ী স্নেহ রাখা। এইরূপ আত্মারা মনে করে যে, সত্যিকারের স্নেহ বাবা ব্যতীত আর কারও কাছ থেকে প্রাপ্ত হতে পারে না। আর এই আত্মিক স্নেহ সব সময়ের জন্য শ্রেষ্ঠ বানিয়ে দেবে। জ্ঞান অর্থাৎ বোধ বুদ্ধি সম্পূর্ণ মাত্রায় রয়েছে এবং এই রকম স্নেহী জীবন অনুভূত হয়। কিন্তু কোনো প্রকারের নিজের দেহের আকর্ষণের সংস্কার বা কোনরূপ বিশেষ পুরোনো সংস্কার কিম্বা কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর অথবা ব্যর্থ সংকল্পের সংস্কার বশতঃ কন্ট্রোলিং পাওয়ার না থাকার কারণে ব্যর্থ সংকল্পের বোঝা রয়েছে। কিম্বা সংগঠনের শক্তির অভাব হওয়ার কারণে সংগঠনে সফল হতে পারে না । সংগঠনের পরিস্থিতি স্নেহকে সমাপ্ত করে নিজের দিকে আকৃষ্ট করে নেয় আর তাতে কেউ কেউ সব সময়ই খুব তাড়াতাড়িই হতাশও হয়ে পড়ে । এখনই এখনই খুব উড়ছে আবার পরক্ষণেই দেখা যাবে যে, নিজে নিজেই হতাশায় ডুবে গেল। নিজের প্রতি নিজের হতাশ হওয়ার কারণে সংস্কারও সব সময়ের স্নেহী হতে দেয না। কোনো না কোনো প্রকারের সংস্কার পরিস্থিতির দিকে, প্রকৃতির দিকে আকৃষ্ট করে ফেলে। আর যখন অস্থিরতার মধ্যে পড়ে যায়, তখন স্নেহের অনুভব হওয়ার কারণে, স্নেহী জীবন তখন প্রিয় অনুভূত হওয়ার জন্য পুনরায় বাবার স্মরণ এসে যায় । চেষ্টা করে যাতে এখন আবার বাবার স্নেহে ডুবে যাই। অতএব সময় অনুযায়ী, পরিস্থিতি অনুযায়ী অস্থিরতার মধ্যে এসে যাওয়ায় কারণে কখনো স্মরণ করে, কখনো যুদ্ধ করে। যুদ্ধের জীবন বেশী থাকে। আর স্নেহে ডুবে যাওয়ার জীবন সেই তুলনায় কম থাকে। সেইজন্য তৃতীয় স্থানে এসে যায়। তবুও বিশ্বের সকল আত্মাদের মধ্যে তৃতীয় স্থানকেও অত্যন্ত শ্রেষ্ঠই বলা হবে। কেননা সে বাবাকে চিনেছে। বাবার হয়েছে, ব্রাহ্মণ পরিবারের হয়েছে। উচ্চ থেকে উচ্চ ব্রাহ্মণ আত্মাদেরকেই ব্রহ্মাকুমার, ব্রহ্মাকুমারী বলা হয়। সেইজন্য দুনিয়ার তুলনায় তারাও হল শ্রেষ্ঠ আত্মা। কিন্তু সম্পূর্ণতার তুলনায় দেখতে গেলে তৃতীয় স্থানে। তো স্নেহী সকলেই। কিন্তু নম্বর অনুক্রমে। নম্বর ওয়ান সদা স্নেহী আত্মারা সদা কমল পুষ্প সম সকলের থেকে পৃথক আর বাবার কাছে অতি প্রিয়। স্নেহী আত্মারা সকলের থেকে পৃথক হয়েও প্রিয়, কিন্তু বাবা সম শক্তিশালী বিজয়ী নয়, লভলীন নয়, কিন্তু স্নেহী। তাদের বিশেষতঃ এই স্লোগান থাকে - 'বাবা, আমরা হলাম তোমার, তোমারই থাকব'। সদা এই গীত গাইতে থাকে। তথাপি স্নেহ রয়েছে, সেইজন্য ৮০% সেফ থাকে। কিন্তু তবুও 'কখনো কখনো' শব্দটি এসে যায়। 'সর্বদা' শব্দটি আসে না। আর তৃতীয় নম্বরের আত্মারা বার বার স্নেহের কারণে প্রতিজ্ঞাও স্নেহের সাথেই করতে থাকে। ব্যস্ এখন থেকে এইরকমই হতে হবে। এখন থেকে এই রকমই করব। কারণ প্রভেদটা তো তাদের জানা। প্রতিজ্ঞাও তারা করে, পুরুষার্থও করতে থাকে, কিন্তু কোনো না কোনো বিশেষ পুরোনো সংস্কার ভালবাসায় নিমগ্ন হয়ে থাকতে দেয় না। বিঘ্ন মগ্ন অবস্থার কারণে নীচে চলে যায়। সেইজন্য 'সদা' শব্দটি আসতে পারে না। কিন্তু কখনো এইভাবে, কখনো এইভাবে হওয়ার কারণে কোনো কোনো বিশেষ দুর্বলতা থেকে যায়। এখন আত্মারা বাপদাদার কাছে আন্তরিক বার্তালাপও (রুহু-রুহান) খুব মিষ্টি মিষ্টি কথায় করতে থাকে। সম্মান খুবই দেখায়। বলে - ডাইরেকশন তো তোমারই, কিন্তু আমার হয়ে তুমিই করো আর পাবো আমি। সম্মান দিয়ে, স্নেহের সাথে বলে - তুমি যখন নিজের করেছ, তখন তুমিই জান। বাবা বলেন, বাবা তো জানেন কিন্তু বাচ্চারা মানলে তবে তো ! কিন্তু বাচ্চারা সম্মানের সাথে এটাই বলে - আমরা মানি বা না মানি, তোমাকে মানতেই হবে। তখন বাবারও বাচ্চাদের প্রতি করুণা হয় যে, ব্রাহ্মণ বাচ্চাই তো ! সেইজন্য নিজেও নিমিত্ত হওয়া কোনো আত্মাদের দ্বারা বিশেষ শক্তি দিতে থাকেন। কিন্তু কেউ শক্তি নিয়ে বদলেও যায় আবার কেউ শক্তি পাওয়ার পরেও নিজ সংস্কারে মজে থাকার কারণে শক্তিকে ধারণ করতে পারে না। যেমন শক্তিবর্ধক কোনো জিনিস যদি খাওয়াতে চাও, কিন্তু সে যদি খেতে না চায়, তবে কী করবে ! বাবা বিশেষ শক্তিও দেন। আর কেউ কেউ ধীরে ধীরে শক্তিশালী হতে হতে তৃতীয় নম্বর থেকে দ্বিতীয় নম্বরেও চলে যায়। আবার কেউ কেউ অনেক অবহেলার কারণে যতটা নেওয়া উচিত, ততটা নিতে পারে না। তিন প্রকারেরই স্নেহী বাচ্চা রয়েছে। টাইটেল সকলেরই হল 'স্নেহী বাচ্চা', কিন্তু নম্বর অনুক্রমে।

আজ হল জার্মানির টার্ন। সম্পূর্ণ গ্রুপই নম্বর ওয়ান, তাই না ! নম্বর ওয়ান সমীপ রত্ন। কেননা যারা সমান হবে, তারা সমীপে থাকবে। শারীরিক ভাবে তা সে যত দূরেই থাকুক না কেন, অন্তর থেকে এতটাই কাছে যে, হৃদয়েই তারা থাকে। নিজেরা বাবার হৃদয় সিংহাসনে থাকে, তাদের অন্তরে স্বতঃতই বাবা ছাড়া আর কেউ নেই। কেননা সেখানে ব্রাহ্মণ জীবনে বাবা তাদের সাথে হৃদয়েরই সওদা করেছেন। হৃদয় নাও, হৃদয় দাও। হৃদয়ের সওদা করেছেন, তাই না ! অন্তর থেকে বাবার সাথে থাকো তোমরা। শারীরিক ভাবে তো কেউ ওখানে থাকে না। সবাইকে যদি এখানেই বসাই, তবে কোথায় বসবে ! সেবার জন্য মধুবনে যারা থাকে, তাদেরকেও বাইরে পাঠাতে হয় নইলে বিশ্বের সেবা কীভাবে হবে ? বাবার প্রতি ভালোবাসা তো সেবার প্রতিও ভালোবাসা রয়েছে। সেইজন্য ড্রামা অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে তোমরা পৌঁছে গেছ আর সেখানকার সেবার নিমিত্ত হয়ে গেছ। তো এটাও ড্রামাতে পার্ট রচিত হয়েই রয়েছে। নিজের নিজের হমজিন্সদের অর্থাৎ সমবয়সীদের সেবায় নিমিত্ত হয়ে গেছ।জার্মানির ভাই বোনেরা সব সময় আনন্দে থাকতে ভালোবাসে, তাই না ! যখন বাবার কাছ থেকে সদাকালের উত্তরাধিকার (অবিনাশী) এত সহজে প্রাপ্ত হচ্ছে, তখন সদাকালেরকে ছেড়ে স্বল্প বা কখনো কখনোরটা কেন নেবে ? দাতা দিচ্ছেন, যারা নিচ্ছে, তারাই বা কম কেন নেবে ? সেইজন্য সদা আনন্দের দোলায় দুলতে থাকো। সদা মায়াজিৎ প্রকৃতিজিৎ, বিজয়ী হয়ে বিজয়ের নাগারা বিশ্বের সামনে জোরে জোরে বাজাতে থাকো।

আজকালকার আত্মারা বিনাশী সাধনের মধ্যে একেবারে নেশার মতো ডুবে বুঁদ হয়ে রয়েছে আর নয়ত দুঃখ অশান্তিতে শ্রান্ত হয়ে এমন গভীর নিদ্রায় নিদ্রিত রয়েছে যে, ছোটখাটো আওয়াজ তারা শুনতে পাবে না। নেশায় যারা চুরচুর হয়ে থাকে, তাদেরকে ধরে নাড়া দিতে হয়। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন যে, তাকেও নাড়া দিয়ে দিয়ে ওঠাতে হয়। তো হ্যামবুর্গের ভাইবোনেরা কী করছ ? খুব ভালো শক্তিশালী গ্রুপ এটি। সকলের বাবা আর বাবার পাঠের প্রতি প্রীতি ভালোই রয়েছে। ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠনের প্রতি প্রীতি, মুরলীর প্রতি প্রীতি আছে যাদের, তারা বিঘ্নকে সহজেই অতিক্রম করে যেতে পারে। উড়তি কলায় দ্বারা নিজেরা উঁচুতে পৌঁছে যায়, আর বিঘ্ন নীচে রয়ে যায়। উড়তি কলায় যারা থাকে, তারা কোনো অজুহাত খাড়া করে না। প্রীতি কঠিন বিষয়কেও সহজ করে দেয়। এক মুরলীর প্রতি ভালোবাসা, ঈশ্বরীয় পাঠের প্রতি ভালোবাসা এবং পরিবারের ভালোবাসা, কেল্লাতে থাকলে সুরক্ষিত। এই গ্রুপকে এই বিশেষত্ব এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আর ঈশ্বরীয় পঠন-পাঠন আর পরিবারের ভালোবাসার কারণে পারস্পরিক ভালোবাসার প্রভাব একে অপরকে সমীপে নিয়ে আসে। তারপর নিমিত্ত আত্মার (পুষ্পল দাদী) ভালোবাসাও প্রাপ্ত হয়েছে। স্নেহ ভাষাকেও দেখে না। স্নেহের ভাষা হল সকল ভাষার থেকে শ্রেষ্ঠ। সকলে ওনাকে স্মরণ করছে। বাপদাদারও ওনার কথা মনে আছে। ভালোই প্রত্যক্ষ প্রমাণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। সেবার বৃদ্ধি হচ্ছে। যত বৃদ্ধি করতে থাকবে, ততই মহান পুণ্য আত্মা হওয়ার ফল, সকলের আশীর্বাদ প্রাপ্ত হতে থাকবে। পুণ্য আত্মাই পূজ্য আত্মা হয়ে ওঠে। এখন যদি পুণ্য আত্মা না হও, তবে ভবিষ্যতেও পূজ্য আত্মা হতে পারবে না। পুণ্য আত্মা হওয়াও জরুরী। আচ্ছা !

*অব্যক্ত মুরলী থেকে নির্বাচিত প্রশ্নোত্তর :-*

*প্রশ্নঃ -* ব্রাহ্মণ জীবনের বিশেষ গুণ, শৃঙ্গার বা সম্পদ (খাজানা) কোনটি ?

*উত্তরঃ-* "সন্তুষ্টতা" । যেমন কারো কোনো প্রিয় বস্তু থাকে, সেই প্রিয় বস্তু কে সে কিছুতেই ছাড়ে না। সন্তুষ্টতা হল বিশেষত্ব, ব্রাহ্মণ জীবনের পরিবর্তনের বিশেষ দর্পণ এটি । যেখানে সন্তুষ্টতা থাকে, সেখানে খুশী অবশ্যই থাকে । যদি ব্রাহ্মণ জীবনে সন্তুষ্টতা নেই, তবে সেটি হল সাধারণ জীবন।

*প্রশ্নঃ-*  সন্তুষ্টমণিদের বিশেষত্ব কী থাকবে ?

*উত্তরঃ-* সন্তুষ্টমণি কখনোই কোনো কারণেই নিজের প্রতি অন্য আত্মাদের প্রতি, নিজের সংস্কারের প্রতি বায়ুমন্ডলের প্রভাবের প্রতি অসন্তুষ্ট হতে পারে না। তারা এমন কখনোই বলবে না যে, আমি তো সন্তুষ্ট, কিন্তু অন্যরা অসন্তুষ্ট করে দেয়। যা কিছুই হয়ে যাক না কেন, সন্তুষ্টমণিরা নিজেদের সন্তুষ্টতার বিশেষত্বকে কখনোই ছাড়তে পারে না।

*প্রশ্নঃ-* যে সদা সন্তুষ্ট থাকে, তার লক্ষণাবলি কী হবে ?

*উত্তরঃ-* ১.* যে সদা সন্তুষ্ট থাকে, তার প্রতি স্বতঃতই সকলের স্নেহ থাকে, কেননা সন্তুষ্টতা ব্রাহ্মণ পরিবারের স্নেহী বানিয়ে দেয় ।

*২.* সন্তুষ্ট আত্মাকে সকলে আপনিই সমীপে নিয়ে আসার বা সকল শ্রেষ্ঠ কার্যে সহযোগী বানানোর প্রচেষ্টা করে থাকে।

*৩.* সন্তুষ্টতার বিশেষত্ব আপনিই সকল কার্যে গোল্ডেন চ্যান্সেলর বানিয়ে দেয়।তাদেরকে বলতে বা ভাবতে হয় না।

*৪.* সন্তুষ্টতা সদা সকলের সংস্কারকে মিলিত করে থাকে। তারা কখনো কারো স্বভাব - সংস্কারকে দেখে ঘাবড়ে যাবে, এমন নয়।

*৫.* তার প্রতি সকলের স্বতঃতই অন্তরের ভালোবাসা থাকে। তারা ভালবাসা পাওয়ার পাত্র হয়। সন্তুষ্টতাই সেই আত্মার পরিচয় প্রদান করে থাকে। প্রত্যেকের ইচ্ছা হবে তার সাথে কথা বলতে, তার কাছে বসতে।

*৬.* সন্তুষ্ট আত্মারা সদা মায়াজিৎ হবেই, কেননা তারা হলেন আজ্ঞাকারী, সদা মর্যাদার গন্ডীর ভিতরেই তারা থাকেন। মায়াকে দূর থেকেই তারা চিনে যান।

*প্রশ্নঃ- * যদি সময় মতো মায়াকে চিনতে না পারে, বারে বারে ধোঁকা খেয়ে যায়, তার কারণ কী ?

*উত্তরঃ-* চিনতে না পারার অক্ষমতার কারণ হল - সর্বদা বাবার শ্রেষ্ঠ মতে না চলা। কখনো চলে, কোনো কোনো সময় চলে না। কখনো স্মরণ করে বাবাকে, কখনো করে না । কোনো সময় উৎসাহ উদ্দীপনায় থাকে, কখনো থাকে না। সর্বদা আজ্ঞার গন্ডীর ভিতরে থাকে না, সেইজন্য মায়া সময় মতো ধোঁকা দিয়ে দেয়। মায়ার মধ্যে পরখ করবার শক্তি তীব্র। মায়া দেখে এই সময় এ দুর্বল, তো এই দুর্বলতা দ্বারাই সে নিজের করে ফেলে। মায়ার প্রবেশের রাস্তাই হল দুর্বলতা।

*প্রশ্নঃ-* * মায়াজিৎ হওয়ার সহজ উপায় কোনটি ?

*উত্তরঃ-* * সর্বদা বাবার সাথে থাকো। অর্থাৎ স্বতঃতই মর্যাদার গন্ডীর মধ্যে থাকা। তখন একটি বিকারের পিছনে বিজয়ী হওয়ার জন্য পরিশ্রম থেকে মুক্ত হয়ে যাবে। বাবার সাথে থাকো। তখন যেমন বাবা তেমনই তুমি। সঙ্গের রং স্বতঃতই লেগে যায়। সেইজন্য বীজকে ছেড়ে কেবল শাখা গুলিকে কাটার পরিশ্রম ক'রো না। আজ কামজিৎ হয়ে গেলে, কাল ক্রোধজিৎ হয়ে গেলে। না। সদা বিজয়ী। শুধুমাত্র বীজরূপকে সাথে রাখো, তবে মায়ার বীজ এমন ভাবে ভস্ম হয়ে যাবে, আর কখনোই সেই বীজের অংশ বের হতে পারবে না।

বরদান:-
সকল আত্মাদেরকে মনোবল (সাহস), উদ্দীপনা সঞ্চারকারী, দয়াবান, বিশ্ব কল্যাণকারী ভব

কখনোই ব্রাহ্মণ পরিবারে কোনো দুর্বল আত্মাকে, তুমি দুর্বল - এমন বলবে না। তোমরা হলে দয়াশীল বিশ্ব কল্যাণকারী বাচ্চা। তোমাদের মুখ থেকে সর্বদা সকল আত্মাদের প্রতি শুভ বোল নির্গত হতে হবে, নিরুৎসাহিত করে দেওয়ার মতো বোল নয়। সে যত দুর্বলই হোক না কেন, তাকে ইশারা কিম্বা শিক্ষা প্রদানও যদি করতে হয়, প্রথমে তাকে সমর্থ বানিয়ে তাকে শিক্ষা প্রদান করো। প্রথমে ধরনীতে মনোবল আর উৎসাহের হল্ চালাও, তার পর বীজ ছড়াও। তখন সহজেই প্রতিটি বীজ থেকে ফল নির্গত হবে। এর ফলে বিশ্ব কল্যাণের সেবা তীব্র হয়ে যাবে।

স্লোগান:-
বাবার আশীর্বাদ নিতে থাকো আর সদা পূর্ণতার অনুভব করো।