10.09.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
প্রশ্নঃ -
তোমাদের
সত্যের নৌকো ঝড়ের সম্মুখীন হয় কেন ?
উত্তরঃ -
কারণ এই সময় আর্টিফিশিয়াল অনেক আছে। কেউ নিজেকে ভগবান বলে, কেউ ঋদ্ধি সিদ্ধি করে
দেখায়, তাই মানুষ সত্যকে পরখ করতে পারে না। সত্যের নৌকোকে দোলাবার চেষ্টা করে।
কিন্তু তোমরা জানো যে, আমাদের সত্যের নৌকো কখনও ডুবতে পারে না। আজ যারা বিঘ্ন সৃষ্টি
করছে, তারা-ই কাল বুঝবে সদগতির পথ এখানেই প্রাপ্ত হবে। সকলের এটাই হলো একটি মাত্র
হাট ।
ওম্ শান্তি ।
আত্মা রূপী
বাচ্চাদের প্রতি অথবা আত্মাদের প্রতি কারণ আত্মা-ই শোনে কান দিয়ে। আত্মাতেই ধারণ হয়।
বাবার আত্মায়ও জ্ঞান ভরা আছে। বাচ্চাদের এই জন্মেই আত্ম অভিমানী হতে হবে। ভক্তি
মার্গের ৬৩ জন্ম, দ্বাপর যুগ থেকে তোমরা দেহ-অভিমানে থাকো। আত্মা কি, সে কথা জানা
থাকে না। আত্মা আছে নিশ্চয়ই। আত্মা-ই শরীরে প্রবেশ করে। দুঃখও হয় আত্মার। বলাও হয়
পতিত আত্মা, পবিত্র আত্মা। পতিত পরমাত্মা কখনও শোনো নি। সর্বজনের মধ্যে যদি
পরমাত্মার বাস হয় তবে তো পতিত পরমাত্মা হয়ে যাবে। অতএব মুখ্য কথা হলো আত্ম-অভিমানী
হওয়া। আত্মা খুব সূক্ষ্ম, তাতে কীভাবে পার্ট ভরা আছে, এই কথা কেউ জানেনা। তোমরা তো
নতুন কথা শুনছো। এই স্মরণের যাত্রাও বাবা নিজে শেখান, আর কেউ শেখাতে পারে না।
পরিশ্রমও আছে এতে অনেক। ক্ষণে ক্ষণে নিজেকে আত্মা অনুভব করতে হবে। যেমন দেখো এই
ইমার্জেন্সি লাইট এসেছে, যা ব্যাটারি দিয়ে জ্বলে। যাকে চার্জ করতে হয়। বাবা হলেন
সবচেয়ে বড় পাওয়ার। আত্মা তো অনেক আছে। সবাইকে ওই পাওয়ার দিয়ে ভরপুর করতে হবে। বাবা
হলেন সর্বশক্তিমান। আমরা আত্মা, আমরা তাঁর সঙ্গে যোগ যুক্ত না হলে ব্যাটারি চার্জ
হবে কীভাবে ? সম্পূর্ণ কল্প লাগে ডিসচার্জ হতে। এখন আবার ব্যাটারি চার্জ করতে হবে।
বাচ্চারা বুঝেছে আমাদের ব্যাটারি ডিসচার্জ হয়ে গেছে, এখন আবার চার্জ করতে হবে।
কীভাবে ? বাবা বলেন আমার সাথে যোগযুক্ত হও। এ হলো খুবই সহজ বোধগম্য কথা। বাবা বলেন,
আমার সঙ্গে বুদ্ধি যোগ লাগাও তাহলে তোমাদের আত্মায় পাওয়ার ভরে সতোপ্রধান হয়ে যাবে।
পড়াশোনা হলো উপার্জন। স্মরণের দ্বারা তোমরা পবিত্র হও। আয়ু বৃদ্ধি পায়। ব্যাটারি
চার্জ হয়। প্রত্যেককে দেখতে হবে - বাবাকে কতখানি স্মরণ করি। বাবাকে ভুলে গেলেই
ব্যাটারি ডিসচার্জ হয়, কারো প্রকৃত সত্য কানেকশন নেই। প্রকৃত কানেকশন একমাত্র
বাচ্চারা তোমাদেরই আছে। বাবাকে স্মরণ না করলে জ্যোতি জাগ্রত হবে কীভাবে ? জ্ঞানও
একমাত্র বাবা-ই প্রদান করেন।
তোমরা জানো জ্ঞান হল দিন, ভক্তি হল রাত। রাত থেকে হয় বৈরাগ্য, তারপরে দিন শুরু হয়।
বাবা বলেন রাত-কে ভুলে যাও, এখন দিন-কে স্মরণ করো। স্বর্গ হল দিন, নরক হল রাত। তোমরা
বাচ্চারা এখন চৈতন্য রূপে আছো, এই শরীর তো হল বিনাশী। মাটির তৈরি, মাটিতে মিশে যায়।
আত্মা তো হল অবিনাশী, তাইনা। যদিও ব্যাটারি ডিসচার্জ হয়। এখন তোমরা অত্যন্ত
বোধযুক্ত, বুদ্ধিমান হয়েছো। তোমাদের বুদ্ধি চলে যায় আত্মাদের ঘরে অর্থাৎ পরমধামে।
সেখান থেকে আমরা এসেছি। এখানে সূক্ষ্ম বতনের কথা তো জেনেছো। সেখানে চতুর্ভূজ
বিষ্ণুকে দেখানো হয়। এখানে তো ৪ ভুজ হয় না। এই কথাটি কারো বুদ্ধিতে থাকবে না যে
ব্রহ্মা-সরস্বতী পরে লক্ষ্মী-নারায়ণে পরিণত হন, তাই ৪ টি ভুজ প্রদান করা হয়েছে। বাবা
ব্যতীত কেউ বোঝাতে পারে না। আত্মার মধ্যেই সংস্কার ভরা থাকে। আত্মা তমোপ্রধান থেকে
সতোপ্রধান হয়। আত্মারা বাবাকে আহবান করে - ও বাবা আমাদের আত্মা রূপী ব্যাটারি
ডিসচার্জ হয়েছে এখন এসো, আমাদের চার্জ হতে হবে। এখন বাবা বলেন - যত স্মরণ করবে ততই
শক্তি বৃদ্ধি হবে। বাবার সঙ্গে গভীর ভালোবাসা থাকা উচিত। বাবা আমরা তোমার, তোমার
সঙ্গে ঘরে অর্থাৎ পরমধাম ফিরে যাব। যেমন পিতৃগৃহ থেকে শ্বশুরগৃহের আত্মীয়স্বজনরা এসে
নিয়ে যায়, তাইনা। এখানে তোমরা দুই জন পিতাকে পেয়েছো, তোমাদের শৃঙ্গার (জ্ঞান আর গুণে
সুসজ্জিত করানো) করান । শৃঙ্গার ভালো হওয়া উচিত অর্থাৎ সর্বগুণ সম্পন্ন হতে হবে।
নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে হবে, আমার মধ্যে কোনো অবগুণ নেই তো। মনে যতই ঝড় উঠুক, কর্মে
সেরকম কিছু করি না তো ? কাউকে দুঃখ দিচ্ছি না তো? বাবা হলেন দুঃখ হর্তা, সুখ কর্তা।
আমরাও সবাইকে সুখের পথ বলি। বাবা অনেক যুক্তি বলে দেন। তোমরা তো হলে সৈন্য। তোমাদের
নাম-ই হলো প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমার - কুমারী, যে ভিতরে আসবে তাকেই প্রথমে জিজ্ঞাসা
করো কোথা থেকে আসছো ? কার কাছে এসেছো ? তারা বলবে আমরা বি.কে.দের কাছে এসেছি। আচ্ছা,
ব্রহ্মা কে ? প্রজাপিতা ব্রহ্মার নাম কখনও শুনেছো ? হ্যাঁ তোমরা তো হলে অবশ্যই
প্রজাপিতার সন্তান। প্রজা তো সবাই, তাইনা। তোমাদের প্রকৃত পিতা আছেন, সেই কথাটি শুধু
তোমরা জানো না। ব্রহ্মাও হলেন কারো সন্তান, তাইনা। চিত্রে ওনার পিতার কোনো দেহরূপ
তো দেখা যায় না। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শঙ্কর এই তিন দেবের উপরে হলেন শিববাবা। ত্রিমূর্তি
শিব বলা হয় তিনজনের রচয়িতা। উপরে হলেন একমাত্র শিববাবা, তারপরে হলেন তিন। যেমন
বংশলতা হয় না ! ব্রহ্মার পিতা অবশ্যই ভগবান হবেন। উনি হলেন আত্মাদের পিতা। আচ্ছা,
তাহলে ব্রহ্মা কোথা থেকে এসেছেন। বাবা বলেন আমি এনার মধ্যে প্রবেশ করে, এনার নাম
রাখি ব্রহ্মা। তোমরা বাচ্চারা, তোমাদের নাম রেখেছি, তেমন এনারও নাম রাখি ব্রহ্মা।
তিনি বলেন আমার এই জন্ম হলো দিব্য অলৌকিক জন্ম। বাচ্চারা, তোমাদের তো অ্যাডপ্ট করি।
কিন্তু এনার মধ্যে প্রবেশ করি তারপরে তোমাদের জ্ঞান শোনাই, তাই ইনি হলেন বাপ-দাদা (শিববাবা
ও ব্রহ্মাবাবা একত্রে)। যার মধ্যে প্রবেশ করি তার আত্মাও তো আছে, তাইনা। তার পাশে
এসে বসি। দুই আত্মার পার্ট তো এখানে খুবই সচল। *আত্মাকে আমন্ত্রণ করা হয় তো আত্মা
এসে কোথায় বসবে। নিশ্চয়ই ব্রাহ্মণের পাশে এসে বসবে*। ইনিও হলেন একত্রে দুই আত্মা
শিববাবা ও ব্রহ্মাবাবা (বাপ এবং দাদা) । ব্রহ্মাবাবার উদ্দেশ্যে শিববাবা বলেন -
নিজের জন্ম কাহিনী জানো না। তোমাদেরও বলেন তোমরাও নিজের জন্মের কাহিনী জানতে না।
এখন স্মরণে এসেছে কল্প-কল্প ৮৪-র চক্র পরিক্রমা করেছি, তারপরে ফিরে যাই। এ হল
সঙ্গমযুগ। এখন ট্রান্সফার হচ্ছি। যোগের দ্বারা তোমরা সতোপ্রধান হয়ে যাবে, ব্যাটারি
চার্জ হয়ে যাবে। তারপরে সত্যযুগে আসবে। বুদ্ধিতে সম্পূর্ণ চক্র আবর্তিত হয়। ডিটেলে
তো যাওয়া সম্ভব নয়। বৃক্ষেরও আয়ু হয়, যা পরে শুকিয়ে যায়। এখানেও সব মানুষ যেন শুকিয়ে
গেছে। সবাই একে অপরকে দুঃখ দিতেই থাকে। এখন সবার শরীর শেষ হয়ে যাবে। বাকি আত্মারা
চলে যাবে। এই জ্ঞান বাবা ব্যতীত অন্য কেউ প্রদান করতে পারে না। বাবা স্বয়ং বিশ্বের
বাদশাহী প্রদান করেন, তাঁকে কতখানি স্মরণ করা উচিত। স্মরণে না থাকলে মায়ার চড় লাগে।
সবচেয়ে কঠিন চড় হল বিকারের। তোমরা ব্রাহ্মণরাই তো যুদ্ধের ময়দানে আছো, তাই তোমাদের
সামনেই ঝড় আসবে। কিন্তু কোনও বিকর্ম করবে না। কোনোরকম বিকর্ম করেছো মানে পরাজিত
হয়েছো। বাবাকে জিজ্ঞাসা করে কাজ করতে হয়। সন্তানেরা বিরক্ত করলে লৌকিক বাবাদের রাগ
অনুভূত হয়। বাচ্চাদের ভালো ভাবে মানুষ না করলে খারাপ হয়ে যাবে। চেষ্টা করো যাতে চড়
না মারতে হয়। কৃষ্ণের জন্যে দেখানো হয় হামাল দিয়ে বেঁধে রেখেছে। দড়ি দিয়ে বাঁধো,
খাবার দিও না। কান্না কাটি করে শেষে বলবে আর করবনা। কিন্তু বাচ্চা তো, আবার করবেই,
ভালো শিক্ষা দিতে হবে। বাবাও বাচ্চাদের শিক্ষা দেন - বাচ্চারা, কখনও বিকারগ্রস্ত হবে
না, কুল কলঙ্কিত করবে না। লৌকিকেও কুপুত্র হলে মা-বাবা বলে - এইসব কি কুকর্ম করছো।
কুল কলঙ্কিত করছো। হার-জিত, জিত-হার, এই রকম হতে-হতে শেষে জিত হবেই। সত্যের নৌকো,
ঝড় তো অনেক আসবে কারণ আর্টিফিশিয়াল অনেক কিছু বেরিয়েছে। কেউ নিজেকে ভগবান বলছে, কেউ
অন্য কিছু। ঋদ্ধি-সিদ্ধি করে অনেক কিছু দেখায়। সাক্ষাৎকারও করায়। বাবা তো আসেন কেবল
সর্বজনের সদগতি করতে। তারপরে এই জঙ্গলও থাকবে না, আর জঙ্গলের বাসিন্দাও থাকবে না।
এখন তোমরা হলে সঙ্গম যুগে, তোমরা জানো যে এই পুরানো দুনিয়া কবরখানায় পরিণত হয়েছে।
কেউ মৃতদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে না, এই দুনিয়া তো শেষ হয়ে যাবে। বিনাশ তো হবেই।
বাবা তখনই আসেন যখন নতুন দুনিয়াটি পুরানো হয়। বাবাকে ভালো ভাবে স্মরণ করলে ব্যাটারি
চার্জ হবে। অনেকেই যদিও ক্লাস খুব ভালো করায়। কিন্তু স্মরণের তীব্রতা না থাকলে তেমন
শক্তি থাকে না। ধার যুক্ত তলোয়ার নয়। বাবা বলেন, এই কথা নতুন নয়। ৫ হাজার বছর
পূর্বেও এসেছিলাম। বাবা জিজ্ঞাসা করেন এর আগে কবে দেখা হয়েছিলো ? বাচ্চারা তখন বলে
কল্প পূর্বেও দেখা হয়েছিলো। কেউ বলে ড্রামা নিজেই সব পুরুষার্থ করিয়ে নেবে। আচ্ছা,
এখন ড্রামা পুরুষার্থ করাচ্ছে তাইনা, তাহলে করো। এক জায়গায় বসলে চলবে না। যারা কল্প
পূর্বে পুরুষার্থ করেছিলো, তারা-ই করবে। এখনও পর্যন্ত যারা আসেনি তারা আসবে। যারা
জ্ঞানে চলতে চলতে পালিয়ে গেছে, বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে, তাদেরও ড্রামাতে পার্ট
থাকলে আবার পুরুষার্থ করবে, যাবে আর কোথায়। বাবার কাছেই সবাইকে আসতে হবে। লেখা আছে
ভীষ্ম পিতামহ ইত্যাদিকেও শেষ কালে আসতে হয়। এখন তো অনেক অহংকার, তাদের সব অহংকার
পুরো হবে। তোমরাও প্রতি ৫ হাজার বছর পরে এসে পার্ট প্লে করো, রাজত্ব নাও, তারপরে
হারাও। প্রতিদিন সেন্টারের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ভারতবাসী যারা বিশেষ করে
দেবী-দেবতাদের পূজারী, তাদের বোঝাতে হবে সত্যযুগে দেবী-দেবতাদের ধর্ম ছিলো তাই
তাঁদের পুজা করে। খ্রিস্টানরা ক্রাইষ্টের মহিমা করে, আমরা আদি সনাতন দেবী-দেবতা
ধর্মের মহিমা করি। সেই ধর্ম কে স্থাপন করেছে। তারা ভাবে কৃষ্ণ করেছে তাই কৃষ্ণের
পূজা করতে থাকে। তোমাদের মধ্যেও নম্বর অনুযায়ী আছে। অনেকে অনেক রকম ভাবে পরিশ্রম করে।
দেখানো হয় গোবর্ধন পর্বত আঙুলে তুলেছে। এখন এই দুনিয়া হলো পুরানো, প্রতিটি বস্তু
শক্তিহীন হয়েছে। খনি থেকে সোনা বের হয় না, স্বর্গে তো সোনার মহল থাকে, এখন তো
গভর্নমেন্টও বিরক্ত হয়। কারণ ঋণ দিতে হয়। স্বর্গে তো অপার ধনরাশি থাকে। দেওয়ালগুলি
হীরে জহরত দিয়ে তৈরি থাকে। হীরে জড়িত দেওয়ালের শখ থাকে। সেখানে অপার ধন থাকে।
কারুনের খাজানা থাকে। আল্লাহ অবলদীনের (আলিবাাবা আর আশ্চর্য প্রদীপ) একটি নাটক
দেখানো হয়। তুড়ি দিলেই মহল তৈরি হয়ে যায়। এখানে দিব্য-দৃষ্টি প্রাপ্ত হলে স্বর্গে
চলে যায়। সেখানে প্রিন্স - প্রিন্সেসদের কাছে মুরলী ইত্যাদি সবই হীরে দিয়ে তৈরি থাকে।
এখানে এমন দামী জিনিষ পরে বসে থাকলে লুটে নেবে। ছুরি দিয়ে আঘাত করে নিয়ে যাবে।
স্বর্গে সে'রকম কোনো কিছুই নেই। এই দুনিয়া হল খুবই পুরানো এবং নোংরা। এই
লক্ষ্মী-নারায়ণের দুনিয়া তো বাঃ বাঃ দুনিয়া ছিলো। হীরে-জহরতের মহল ছিলো। একার তো
থাকবে না, তাইনা। তারই নাম ছিলো স্বর্গ, তোমরা জানো আমরা যথাযথভাবে স্বর্গের মালিক
ছিলাম। আমরাই এই সোমনাথের মন্দির নির্মাণ করেছিলাম। এই কথা তো বুঝেছো - আমরা কেমন
ছিলাম তারপরে ভক্তি মার্গে কীভাবে মন্দির বানিয়ে পূজা করেছি। নিজের ৮৪ জন্মের
কাহিনীর জ্ঞান প্রতিটি আত্মার আছে। অনেক হীরে-জহরত ছিল, সেসব কোথায়। ধীরে-ধীরে সব
শেষ হয়েছে। মুসলমান এসে যা কিছু লুটে নিয়ে গেছে সব হীরে নিয়ে গিয়ে কবরে লাগিয়েছে,
তাজ মহল ইত্যাদি বানিয়েছে। তারপরে ব্রিটিশ গভর্নমেন্ট সেখান থেকে খোদাই করে নিয়ে
গেছে। এখন তো কিছুই নেই। ভারত এখন বেগার, ঋণ নিতেই থাকে। আনাজ, চিনি ইত্যাদি কিছু
পাওয়া যায় না। এখন বিশ্বকে বদলাতে হবে। কিন্তু তার আগে আত্মার ব্যাটারি সতোপ্রধান
করার জন্য চার্জ করতে হবে। বাবাকে অবশ্যই স্মরণ করতে হবে। বুদ্ধির যোগ যেন বাবার
সঙ্গে যুক্ত থাকে, কারণ তাঁর কাছেই অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। এতেই মায়ার
যুদ্ধ হয়। পূর্বে তোমরা এইসব কথা বুঝতে না। অন্যরা যেমন তোমরাও তেমন ছিলে। তোমরা
এখন হলে সঙ্গমযুগী অন্যরা সবাই হলো কলিযুগী। মানুষ বলবে এরা যা ইচ্ছে তাই বলে।
কিন্তু বোঝানোর যুক্তি চাই। ধীরে-ধীরে তোমাদের বৃদ্ধি হবে। এখন বাবা বিশাল
ইউনিভার্সিটি খুলছেন। এখানে বোঝানোর জন্য চিত্র ইত্যাদি তো চাই, তাইনা। ভবিষ্যতে
তোমাদের কাছে এই সব চিত্র গুলি ট্রান্সলাইটের হয়ে যাবে তখন তোমাদের বোঝাতে সহজ বোধ
হবে।
তোমরা জানো আমরা নিজের বাদশাহী পুনরায় স্থাপন করছি, বাবার স্মরণ এবং জ্ঞানের দ্বারা।
মায়া মাঝখানে এসে খুব ধোঁকা দেয়। বাবা বলেন ধোঁকা থেকে সাবধান থাকবে। যুক্তি অনেক
বলে দেন। মুখে শুধু এইটুকু বলো যে, বাবাকে স্মরণ করো, তাহলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ
হবে এবং তোমরা এমন লক্ষ্মী-নারায়ণ হয়ে যাবে। এই ব্যাজ ইত্যাদি ভগবান নিজে তৈরি
করেছেন, সুতরাং এর প্রতি অনেক সম্মান থাকা উচিত। আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
সর্ব গুণ দিয়ে নিজের শৃঙ্গার করতে হবে, কখনও কাউকে দুঃখ দেবে না। সবাইকে সুখের পথ
বলে দিতে হবে।
২ ) সম্পূর্ণ দুনিয়া কবরখানায় পরিণত হয়েছে, তাই দুনিয়ার প্রতি আকৃষ্ট হবে না। যেন
স্মরণে থাকে যে, এখন আমরা ট্রান্সফার হচ্ছি, আমাদের তো নতুন দুনিয়ায় যেতে হবে।
বরদান:-
প্রবৃত্তি অর্থাৎ গৃহস্থে থেকে "আমার" ভাবকে ত্যাগ করে প্রকৃত সত্য ট্রাস্টি,
মায়াজিত ভব
ব্যাখা: যেমন
আবর্জনায় পোকা মাকড় উৎপন্ন হয়, তেমনই যখন "আমার" ভাব উৎপন্ন হয় তখন মায়ার জন্ম হয়।
মায়াজিত হওয়ার সহজ পদ্ধতি হলো - নিজেকে সর্বদা ট্রাস্টি ভাবো। ব্রহ্মাকুমার অর্থাৎ
ট্রাস্টি, ট্রাস্টির কোনো কিছুতে আসক্তি থাকে না। কারণ "আমার আমার" ভাব থাকে না।
নিজেকে গৃহস্থ ভাবলে মায়া আসবে এবং ট্রাস্টি ভাবলে মায়া দূরে চলে যাবে । তাই
নির্লিপ্ত হয়ে প্রবৃত্তি বা গৃহস্থের সকল কর্তব্য পালন করো, তাহলে মায়াপ্রুফ থাকবে।
স্লোগান:-
যেখানে অভিমানের ভাব থাকে, সেখানে অপমানের অনুভূতি অবশ্যই থাকে ।