02.09.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
তোমাদের মধ্যে কি এমন নেশা থাকে, সেই নেশার আধারে কোন্ নিশ্চয়ের কথা তোমরা বলতে
থাকো ?
উত্তরঃ -
বাচ্চারা, তোমাদের এই নেশা থাকে যে, আমরা বাবাকে স্মরণ করে জন্ম-জন্মান্তরের জন্য
পবিত্র হচ্ছি। তোমরা নিশ্চয়ের সাথে এটা বলো যে, বিঘ্ন যতই আসুক না কেন, স্বর্গের
স্থাপনা তো অবশ্যই হবে। নতুন দুনিয়ার স্থাপনা আর পুরানো দুনিয়ার বিনাশ হতেই হবে।
এটাই হলো পূর্ব-নির্ধারিত ড্রামা, এখানে সংশয়ের কোনও কথাই নেই।
ওম্ শান্তি ।
আত্মিক
বাচ্চাদের প্রতি আত্মিক বাবা বোঝাচ্ছেন। তোমরা জানো যে, আমরা হলাম আত্মা। এই সময়
আমরা আধ্যাত্মিক পান্ডা হয়েছি। নিজেও হয়েছো, অন্যদেরকেও তৈরী করছো। এই কথাটি
ভালোভাবে ধারণ করো। মায়ার তুফান তোমাদেরকে ভুলিয়ে দেয়। তাই প্রতিদিন সকালে এবং
সন্ধ্যায় এই বিষয়ে চিন্তন করতে হবে - অমূল্য জীবনের জন্য এই অমূল্য রত্ন, আত্মিক
বাবার থেকে প্রাপ্ত হচ্ছে। তাই আত্মিক বাবা বোঝাচ্ছেন যে - বাচ্চারা, মুক্তিধামের
রাস্তা বলে দেওয়ার জন্য তোমরা এখন আধ্যাত্মিক পান্ডা বা গাইডস্ হয়েছো। এটাই হলো
সত্যিকারের অমরকথা, অমরপুরীতে যাওয়ার জন্য। অমরপুরীতে যাওয়ার জন্য তোমরা পবিত্র
তৈরি হচ্ছো। অপবিত্র ভ্রষ্টাচারী আত্মা অমরপুরীতে কিভাবে যেতে পারে ? সাধারণ মানুষ
অমরনাথ যাত্রা করে, স্বর্গকেও অমরনাথ পুরী বলা হয়। একটা অমরনাথের কথা নয়। তোমরা,
সমস্ত আত্মারা এখন অমরপুরীতে যাচ্ছো। সেটা হল আত্মাদের অমরপুরী - পরমধাম, পুনরায়
অমরপুরীতে আসো শরীরের সাথে। সেখানে কে নিয়ে যান? পরমপিতা পরমাত্মা সমস্ত আত্মাদেরকে
নিয়ে যান। তাকে অমরপুরীও বলা যায়। কিন্তু সঠিক নাম হল শান্তিধাম। সেখানে তো সবাইকে
যেতেই হবে। ড্রামার ভবিতব্য অপরিবর্তনীয়। এটা ভালোভাবে বুদ্ধিতে ধারণ করে নাও।
প্রথমে তো নিজেকে আত্মা মনে করো। পরমপিতা পরমাত্মাও হলেন আত্মা। কেবলমাত্র তাঁকে
পরমপিতা পরমাত্মা বলা হয়। তিনি এখন আমাদেরকে বোঝাচ্ছেন। তিনিই হলেন জ্ঞানের সাগর,
পবিত্রতার সাগর। এখন বাচ্চাদেরকে পবিত্র বানানোর জন্য শ্রীমত দিচ্ছেন যে, *মামেকম্
স্মরণ করো*, তাহলে তোমাদের জন্ম-জন্মান্তরের পাপ বিনাশ হয়ে যাবে। স্মরণকেই যোগ বলা
হয়। তোমরা তো হলে বাচ্চা, তাই না। বাবাকে স্মরণ করতে হবে। স্মরণের দ্বারাই তরী পার
হয়ে যাবে। এই বিষয় নগরী থেকে তোমরা শিব নগরীতে যাবে, পুনরায় বিষ্ণুপুরীতে আসবে।
আমরা এখন পড়াশোনা করছি সেখানে যাওয়ার জন্য, এখানকার জন্য নয়। এখানে যারা রাজা হয়,
তারা পূর্ব জন্মে ধন দান করার জন্য রাজা হয়ে জন্ম নেয়। কেউ কেউ আছে, যারা গরীবদেরকে
দেখাশোনা করে, অনেক হাসপাতাল, ধর্মশালা আদি তৈরি করে, অনেক ধন দান করে। যেরকম
সিন্ধুপ্রদেশে মূলচন্দ ছিলেন, গরিবদের কাছে গিয়ে দান করতেন। গরিবদেরকে দেখাশোনা
করতেন। এরকম অনেকেই দানী হয়। সকালে উঠেই অন্নের পুটুলী বের করে, গরীবদেরকে দান
করার জন্য। আজকাল তো ভিক্ষুকরাও অনেক অসৎ হয়ে গেছে। তাই পাত্র বুঝে দান করতে হবে।
প্রকৃত গরীব তো এখন কেউই নেই। বাইরে যারা ভিক্ষা নেওয়ার জন্য বসে আছে, তাদেরকে
দেওয়াও কোনও দান দেওয়া নয়। তাদের তো এটাই হল ধান্দা। যারা গরীবদেরকে দান করে,
তারাই ভালো পদ প্রাপ্ত করবে।
এখন তোমরা সবাই হলে আধ্যাত্মিক পান্ডা। তোমরা প্রদর্শনী বা মিউজিয়াম করো তাে এইরকম
নাম লেখো যেটা সিদ্ধ হয় যে ‘গাইড টু হেভেন’ বা ‘নতুন বিশ্বের রাজধানীর জন্য গাইডস্’।
কিন্তু মানুষ কিছুই বুঝতে পারে না। এটা হলই কাঁটার জঙ্গল। স্বর্গ হলো ফুলের বাগান,
যেখানে দেবতারা থাকেন। বাচ্চারা, তোমাদেরকে এই নেশায় থাকতে হবে যে, আমরা বাবাকে
স্মরণ করে জন্ম-জন্মান্তরের জন্য পবিত্র হচ্ছি। তোমরা জানো যে, যতই বিঘ্ন আসুক না
কেন, স্বর্গের স্থাপনা তো অবশ্যই হবে। নতুন দুনিয়ার স্থাপনা আর পুরানো দুনিয়ার
বিনাশ তো হতেই হবে। এটাই হলো পূর্ব-নির্ধারিত ড্রামা, এখানে সংশয়ের কোনও কথাই নেই।
মনের মধ্যে অল্প একটুও সংশয় নিয়ে এসো না। এঁনাকে তো সবাই পতিত-পাবন বলে ডেকেছিলে।
ইংরেজরাও বলে যে, এসে আমাদেরকে দুঃখ থেকে মুক্ত করো। দুঃখ হলোই ৫ বিকারের। সেটা হলই
নির্বিকারী দুনিয়া, সুখধাম। এখন বাচ্চারা, তোমাদেরকে স্বর্গে যেতে হবে। সাধারণ
মানুষ মনে করে যে স্বর্গ উপরে আছে, তাদের এটা জানাও নেই যে, মুক্তিধাম উপরে থাকে।
জীবনমুক্তিতে তো এখানেই আসতে হয়। এটা বাবা তোমাদেরকে বোঝাচ্ছেন, এগুলিকে ভালোভাবে
ধারণ করে এই জ্ঞানেরই মন্থন করতে হবে। লৌকিক স্টুডেন্টরাও ঘরেতে এটাই চিন্তা করে যে
- এই কাগজ লিখে জমা দিতে হবে..., আজ এটা করতে হবে...। তাই বাচ্চারা, তোমাদের
নিজেদের কল্যাণের জন্য আত্মাকে সতোপ্রধান বানাতে হবে। পবিত্র হয়ে মুক্তিধামে যেতে
হবে, আর নলেজের আধারে পুনরায় দেবতা হতে হবে। আত্মাই তো বলে যে, আমি মানুষ থেকে
ব্যারিস্টার হই, আমি আত্মা মানুষ থেকে গভর্নর হই। আত্মাই শরীরের সাথে এইসব হয়। শরীর
শেষ হয়ে গেলে তো পুনরায় নতুন শরীরে পড়াশোনা করতে হয়। আত্মাই বিশ্বের মালিক হওয়ার
জন্য পুরুষার্থ করে। বাবা বলছেন যে - এটাই পাকাপোক্ত ভাবে মনে রাখ যে - আমি হলাম
আত্মা, দেবতাদেরকে এইরকম বলতে হয়না, তাদেরকে স্মরণের পুরুষার্থ করতে হয় না, কেননা
তারা তো হলোই পবিত্র। প্রালব্ধ ভোগ করছে, তারা কি পতিত নাকি, যে বাবাকে স্মরণ করবে!
তোমরা আত্মারা পতিত হয়ে গেছো, এই জন্য বাবাকে স্মরণ করতে হবে। তাদের তো স্মরণ করার
দরকারই নেই। এটাই হলো ড্রামা, তাই না ! একটা দিনও এক সমান হয় না। এই ড্রামাই
নিরন্তর চলতে থাকে। সারাদিনের পার্ট সেকেন্ডের অনুসারে পরিবর্তন হতে থাকে। শুটিং
চলতে থাকে। তাই বাবা বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন যে, কোনও কথাতে হার্টফেল (হতাশ) হয়ে
যেও না। এটা হলো জ্ঞানের কথা। যদিও নিজের ব্যবসা আদি করো, কিন্তু ভবিষ্যতের উঁচু পদ
প্রাপ্ত করার জন্য সম্পূর্ণ পুরুষার্থ করো। গৃহস্থ ব্যবহারেও থাকতে হবে। কুমারীরা
তো গৃহস্থে যেতেই পারে না। গৃহস্থী তাদেরকেই বলা যায়, যাদের সন্তান-সন্ততি আছে। *বাবা
তো অধর-কুমারী আর কুমারী, সবাইকেই পড়াচ্ছেন। অধর-কুমারীর অর্থও তারা বুঝতে পারেনা।
তারা মনে করে, অর্ধেক শরীর ? এখন তোমরা জানো যে, কন্যা হল পবিত্র আর অধর কন্যা
তাদেরকে বলা যায়, যারা অপবিত্র হওয়ার পর পুনরায় পবিত্র হয়। তোমাদেরই স্মরণিক
মন্দিরে রয়েছে (অধর দেবী মন্দির/অর্বুদা দেবী শক্তিপিঠ, মাউন্ট আবু) । বাচ্চারা,
বাবা-ই তোমাদেরকে বোঝাচ্ছেন। বাবা তোমাদেরকে পড়াচ্ছেন। তোমরা জানো যে, আমরা আত্মারা
মূলবতনকেও জানি, পুনরায় সূর্যবংশী, চন্দ্র বংশী, কিভাবে রাজত্ব করতে হয়,
ক্ষত্রিয়ভাবের লক্ষণ হিসেবে হাতে বাণ কেন দেওয়া হয়েছে, সেটাও তোমরা জেনে গেছ।
সেখানে লড়াই আদির তো কোনও কথাই নেই। না অসুরের কথা আছে, না চুরির কথা প্রমাণিত (সিদ্ধ)
হয়। এইরকম তো কোনও রাবণ হয় না, যে সীতাকে নিয়ে যাবে। তাই বাবা বোঝাচ্ছেন যে -
মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা ! তোমরা বুঝতে পারো যে আমরা হলাম স্বর্গের,
মুক্তি-জীবনমুক্তির পান্ডা। তারা তো হল লৌকিক জগতের পান্ডা। আমরা হলাম আধ্যাত্মিক
পান্ডা। তারা হলো কলিযুগের ব্রাহ্মণ। পুরুষোত্তম হওয়ার জন্য পড়াশোনা করছে। আমরা
পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে আছি। বাবা অনেক রকম ভাবে বোঝাচ্ছেন। তবুও বাচ্চারা দেহ
অভিমানে এসে ভুলে যায়। আমি হলাম আত্মা, বাবার সন্তান, এই নেশা সদা থাকে না। যত যত
স্মরণ করতে থাকবে, ততই দেহ অভিমান কাটতে থাকবে। নিজেকে দেখো, আমার দেহ অভিমান
সমাপ্ত হয়েছে ? আমরা সবাই এখন যাচ্ছি, পুনরায় আমরা বিশ্বের মালিক হব। আমাদের
পার্টই হল হিরো-হিরোইনের। হিরো-হিরোইন নাম তখন দেওয়া হয় যখন কেউ বিজয় প্রাপ্ত করে।
তোমরা বিজয় প্রাপ্ত করো, তাই এই সময় তোমাদের হিরো-হিরোইনের নাম দেওয়া হয়, এর আগে
তো ছিল না। পরাজিত হওয়া আত্মাকে হিরো-হিরোইন বলা যায় না। বাচ্চারা, তোমরা জানো
যে, আমরা এখন গিয়ে হিরো-হিরোইন তৈরী হচ্ছি। তোমাদের পার্টই হল উঁচুর থেকেও উঁচু।
কড়ি আর হীরার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। যদিও কেউ লাখপতি বা কোটিপতি হয়, কিন্তু
তোমরা জানো যে এইসব বিনাশ হয়ে যাবে।
আত্মারা, তোমরা ধনবান হতে চলেছো। বাকিরা সবাই দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। এই সমস্ত কথা
ধারণ করতে হবে। নিশ্চয় রাখতে হবে। এখানে নেশা চড়তে থাকে, কিন্তু বাইরে গেলে সেই
নেশা শেষ হয়ে যায়। এখানকার কথা এখানেই থেকে যায়। বাবা বলেন যে, বুদ্ধিতে যেন থাকে
যে, বাবা আমাদেরকে পড়াচ্ছেন। যে পড়াশোনার দ্বারা আমরা মানুষ থেকে দেবতা হতে চলেছি।
এখানে পরিশ্রমের কোনও কথাই নেই। ব্যবসা আদি করেও কিছু সময় বের করে স্মরণ করতে থাকো।
এটাও নিজের জন্য এক প্রকার ধান্দা, তাইনা! ছুটি নিয়ে বাবাকে স্মরণ করো। ইনি কোনও
মিথ্যা কথা বলছেন না। সারাদিন এই ভাবেই কি সময় ব্যর্থ নষ্ট করে দেবে? নিজেদের
ভবিষ্যতের কথা তো কিছু চিন্তা করো। যুক্তি তো অনেক আছে, যতটা সম্ভব হয়, সময় বের
করে বাবাকে স্মরণ করো। শরীর নির্বাহের জন্য ধান্দা আদি যদিও করো। আমি তোমাদেরকে
বিশ্বের মালিক হওয়ার জন্য খুব ভালো ভালো শ্রীমৎ দিচ্ছি। বাচ্চারা, তোমরাও সবাইকে
এই শ্রীমত শোনাতে পারো। মন্ত্রী তো পরামর্শ দেওয়ার জন্যই হয়ে থাকে, তাই না! তোমরা
হলে পরামর্শ দাতা। সবাইকে, মুক্তি জীবন মুক্তি কিভাবে প্রাপ্ত করা যায়, এই জন্মে
সেই রাস্তা বলতে থাকো। মানুষ স্লোগান আদি তৈরি করে তারপর দেওয়ালের উপর লাগিয়ে দেয়।
যেরকম তোমরা লিখতে থাকো যে *“Be Holy and Raj yogi”*। কিন্তু এতে তারা কিছুই বুঝতে
পারেনা। এখন তোমরা বুঝে গেছো যে, আমরা এখন বাবার থেকে এই উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছি,
মুক্তিধামেরও অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হচ্ছে। আমাকে তোমরা পতিত-পাবন বলে
ডেকেছিলে, তাই আমি এসেছি তোমাদেরকে শ্রীমৎ দিয়ে পবিত্র বানাতে। তোমরাও হলে পরামর্শ
দাতা। মুক্তিধামে কেউই যেতে পারে না, যতক্ষণ না বাবা উপদেশ না দেন, শ্রীমৎ না দেন।
শ্রী অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ মত হলোই শিব বাবার। আত্মারা শিব বাবার শ্রীমৎ প্রাপ্ত করে। পাপ
আত্মা, পুণ্যাত্মা বলা হয়ে থাকে। পাপ শরীর বলা হয় না। আত্মা শরীরের দ্বারা পাপ
করতে থাকে, এজন্য পাপ আত্মা বলা হয়ে থাকে। শরীর ছাড়া আত্মা না পাপ, না পূণ্য করতে
পারে। তাই যখনই সময় পাবে বিচার সাগর মন্থন করতে থাকো। সময় তো অনেক আছে। টিচার বা
প্রফেশরকে যুক্তি দিয়ে এই আধ্যাত্মিক জ্ঞান শোনাতে হবে, যার দ্বারা তারও কল্যাণ হয়ে
যায়। অন্যথায় এই দুনিয়ার পড়াশোনা করে কি হবে। আমি এটা পড়াচ্ছি। আর অবশিষ্ট কিছু
দিন পড়ে আছে, বিনাশ সামনেই দাঁড়িয়ে আছে। অন্তরের মধ্যে এই উদ্যমতা যেন থাকে যে,
কিভাবে মানুষকে রাস্তা বলে দেবো।
এক কন্যার লৌকিক পরীক্ষা ছিল, যেখানে গীতার ভগবানের কথা জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তো
সে লিখে দিয়েছিল যে গীতার ভগবান হলেন শিব, তো তাকে ফেল করিয়ে দেওয়া হয়। সে
ভেবেছিল যে আমি তো বাবারই মহিমা লিখেছি - গীতার ভগবান হলেন শিব। তিনি হলেন জ্ঞানের
সাগর, প্রেমের সাগর। কৃষ্ণের আত্মাও এখন জ্ঞানপ্রাপ্ত করছে। এসব লেখার কারণে সে ফেল
হয়ে গিয়েছিলো। মা-বাবাকে বললো যে, আমি এই পড়াশোনা করবো না। আমি এখন থেকে এই
আধ্যাত্মিক পড়াশোনার সাথে যুক্ত হব। সেই বাচ্চাও খুব ফার্স্ট ক্লাস ছিল। প্রথমেই
বলেছিল যে, আমি এমনই লিখবো যে আমি ফেল হয়ে যাব। তবুও সত্য কথাই তো লিখতে হবে, তাই
না! তারা পরবর্তী সময়ে বুঝতে পারবে যে, এই মেয়েটি সত্য কথাই লিখেছিল। যখন প্রভাব
পড়বে, প্রদর্শনী অথবা মিউজিয়ামে তাদেরকে ডাকা হবে, তখন তারা জানতে পারবে আর
বুদ্ধিতেও আসবে যে এটাই হল সঠিক। অনেক অনেক মানুষ আসতে থাকবে, তাই বিচার করতে হবে
যে - এমনভাবে বোঝাতে হবে যে মানুষ খুব শীঘ্রই বুঝতে পেরে যায় যে এটা হল নতুন কথা।
কেউ না কেউ তো অবশ্যই বুঝবে, যে এখানকার হবে। তোমরা সবাইকে আধ্যাত্মিক রাস্তা বলতে
থাকো। বেচারা অনেক দুঃখী হয়ে গেছে, তাদের সবাইকে দুঃখ থেকে কিভাবে দূর করবে।
অশান্তি তো অনেক হয়, তাই না। এক পরস্পরের শত্রু হয়ে যায়, কিভাবে তারা একে অপরকে
শেষ করে দেয়। এখন বাবা বাচ্চাদেরকে ভালোভাবে বোঝাচ্ছেন। মাতা-রা তো অবোধ হয়। তারা
বলে যে আমি তো পড়ালেখা জানিনা। বাবা বলেন যে পড়াশোনা জানো না, এ তো খুবই ভালো কথা।
বেদ শাস্ত্র যা কিছু পড়ে, সেসব এখানে ভুলে যেতে হয়। এখন আমি যা কিছু শোনাচ্ছি,
সেটাই শোনো। বোঝাতে হবে যে - সদ্গতি, এক নিরাকার পরমপিতা পরমাত্মা ছাড়া আর কেউই
করতে পারে না। মানুষের মধ্যে এই জ্ঞানই তো নেই, তাহলে তারা সদ্গতি কিভাবে করবে?
সদ্গতি দাতা, জ্ঞানের সাগর হলেন এক বাবা। সাধারণ মানুষ এরকম কথা কি বলতে পারে! যে
এখানকার হবে সেই বোঝার জন্য চেষ্টা করবে। কোনও একজন যদি লৌকিক পদ মর্যাদা প্রাপ্ত
ব্যক্তি বাবার বাচ্চা হয়, তাহলে চারিদিকে সেই কথা ছড়িয়ে পড়বে। গায়ন আছে যে,
তুলসীদাস গরিবের কথা কেউ শোনে না। সেবার যুক্তি তো বাবা অনেকই বলে দেন, বাচ্চাদেরকে
সেই যুক্তিগুলিকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
ব্যবসা আদি করেও ভবিষ্যতের উঁচু পদ প্রাপ্ত করার জন্য স্মরণে থাকার সম্পূর্ণ
পুরুষার্থ করতে হবে। এই ড্রামা সেকেন্ড-এর অনুসারে পরিবর্তন হতে থাকবে, এই জন্য
কখনও কোনও সিন (দৃশ্য) দেখে হার্টফেল হয়ে যেও না।
২ ) এই আধ্যাত্মিক পড়া পড়ে অন্যদেরকেও পড়াতে হবে, সকলের কল্যাণ করতে হবে। অন্তরে
এই উদ্যম যেন আসে যে, কিভাবে সবাইকে পবিত্র বানানোর পরামর্শ দেব। ঘরে ফেরার রাস্তা
বলবো।
বরদান:-
ডবল সেবার দ্বারা অলৌকিক শক্তির সাক্ষাৎকার করিয়ে বিশ্ব সেবাধারী ভব
ব্যাখ্যা :- যেরকম
বাবার স্বরূপ-ই হলো বিশ্ব সেবক, এই রকম তোমরাও বাবার সমান বিশ্ব-সেবাধারী হও। শরীর
দ্বারা স্থুল সেবা করেও, মনের দ্বারা বিশ্ব পরিবর্তনের সেবাতে তৎপর থাকো। একই সময়ে
শরীর আর মনের দ্বারা একসাথে সেবা করো। যে মন আর কর্মের দ্বারা একসাথে সেবা করে, তাকে
যারা দেখে তাদের এই অনুভব বা সাক্ষাৎকার হয়ে যায় যে এর মধ্যে কোনও অলৌকিক শক্তি আছে,
এইজন্য এই অভ্যাসকে নিরন্তর আর ন্যাচারাল বানাও। মনসা সেবার জন্য বিশেষ একাগ্রতার
অভ্যাস বৃদ্ধি করো।
স্লোগান:-
সকলের প্রতি গুণগ্রাহক হও, কিন্তু অনুসরণ করাে এক ব্রহ্মা বাবাকেই।