23.09.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অপরকে কোন্ বিষয়ে অভিনন্দন জানাও ? সাধারণ মানুষ কখন
অভিনন্দন জানায় ?
উত্তরঃ -
সাধারণ মানুষ তখন অভিনন্দন জানায়, যখন কেউ জন্ম নেয় বা কেউ বিজয়ী হয় অথবা বিবাহ
করে কিম্বা কোনও বড় দিন হলে। কিন্তু সেটা কোনো সত্যিকারের শুভেচ্ছা জানানো হয় না।
বাচ্চারা, তোমরা একে অপরকে বাবার বাচ্চা হওয়ার জন্য অভিনন্দন দিতে থাকো। তোমরা বল
যে, আমরা কতই না সৌভাগ্যশালী, কারণ আমরা সমস্ত দুঃখ থেকে মুক্ত হয়ে সুখধামে যাচ্ছি।
এইজন্য তোমাদের হৃদয়ে অনেক খুশি হতে থাকে ।
ওম্ শান্তি ।
অসীম জগতের
বাবা বসে অসীম জগতের বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন। এখন প্রশ্ন ওঠে যে, অসীম জগতের বাবা কে
? এটা তো জানো যে সকলের বাবা হলেন এক, যাকে পরমপিতা বলা হয়ে থাকে। লৌকিক বাবাকে
পরম পিতা বলা যায় না। পরমপিতা তো হল এক, তাঁকে সমস্ত বাচ্চারা ভুলে গেছে, এইজন্য
পরমপিতা পরমাত্মা, যিনি হলেন দুঃখ হর্তা সুখকর্তা, বাচ্চারা তোমরা তাঁকে জানো যে,
বাবা আমাদের দুঃখ কিভাবে হরণ করছেন, পুনরায় আমরা সুখ-শান্তিতে চলে যাবো। সবাই তো
সুখধামে যেতে পারবে না। কিছু আত্মা সুখধামে, কিছু আত্মা শান্তিধামে চলে যাবে। কেউ
কেউ সত্যযুগে নিজের পার্ট অভিনয় করবে, কেউ ত্রেতাতে, কেউ দ্বাপরে। তোমরা সত্যযুগে
থাকবে, বাকিরা সবাই থাকবে মুক্তিধামে। সেই স্থানকে ‘ঈশ্বরের ঘর’ বলা হয়ে থাকে।
মুসলমানরা যখন নামাজ পড়ে, তখন তারা সবাই মিলে খোদার কাছে প্রার্থনা করে। কিসের
জন্য ? স্বর্গে যাওয়ার জন্য নাকি আল্লাহর কাছে যাওয়ার জন্য। আল্লাহর ঘরকে স্বর্গ
বলা যাবে না। সেখানে (আল্লাহর ঘরে) তো আত্মারা শান্তিতে থাকে। শরীর থাকে না। এটাও
তোমরা জানো যে, আল্লাহর কাছে শরীরের সাথে নয়, শুধুমাত্র আমরা আত্মারাই যাব। এখন
শুধু আল্লাহকে স্মরণ করলে তো কেউ পবিত্র হয়ে যাবে না। কারণ আল্লাহকে তো তারা সঠিক
রূপে জানেই না। এখন এই মানুষকে কিভাবে বোঝানো যাবে যে, বাবা সুখ-শান্তির অবিনাশী
উত্তরাধিকার দিতে এসেছেন। বিশ্বে শান্তি কিভাবে হবে, বিশ্বে শান্তি কবে ছিল -- এটা
তাদেরকে কিভাবে বোঝাবে ? যারা সেবাধারী বাচ্চা হবে, নম্বরের ক্রমে পুরুষার্থ অনুসারে
তাদের মনে এই চিন্তন চলতে থাকবে। তোমাদের ব্রহ্মা মুখ বংশাবলী ব্রাহ্মণদেরই বাবা
নিজের পরিচয় দিয়েছেন, সমগ্র দুনিয়ার মানুষমাত্রের পার্টেরও পরিচয় দিয়েছেন। এখন
আমরা সাধারণ মানুষদেরকে বাবার আর রচনার পরিচয় কিভাবে দেব ? বাবা সবাইকে বলছেন যে -
নিজেকে আত্মা মনে করে আমাকে স্মরণ করো তাহলে খোদার ঘরে চলে যাবে। গোল্ডেন এজ বা
স্বর্গে তো সবাই যেতে পারবে না। সেখানে তো হলই এক ধর্ম। বাকি সব শান্তিধামে থাকে,
এতে কারোর দুঃখী হওয়ার কথাই নেই। সাধারণ মানুষ শান্তি প্রার্থনা করে, সেটা পাওয়াই
যায় আল্লাহ্ অথবা গডফাদারের ঘরে। সমস্ত আত্মারা শান্তিধাম থেকে এখানে আসে, সেখানে
পুনরায় তখনই ফিরে যেতে পারবে, যখন নাটক সম্পূর্ণ হবে। বাবা আসেনই পতিত দুনিয়া থেকে
সবাইকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
এখন বাচ্চারা তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে, আমরা এখন শান্তিধামে যাচ্ছি, পুনরায় সুখধামে
আসবো। এটা হল পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগ। পুরুষোত্তম অর্থাৎ উত্তমের থেকেও উত্তম পুরুষ।
যতক্ষণ না আত্মা পবিত্র হয়, ততক্ষণ উত্তম পুরুষ হতে পারবে না। এখন বাবা তোমাদেরকে
বলছেন যে - আমাকে স্মরণ করো আর সৃষ্টিচক্রকে জানো আর সাথে সাথে দৈবগুণও ধারণ করো।
এই সময় প্রত্যেক মানুষের চরিত্র খারাপ হয়ে গেছে। নতুন দুনিয়াতে তো প্রত্যেকের
চরিত্র একদম ফার্স্ট ক্লাস হয়ে থাকে। ভারতবাসীরাই শ্রেষ্ঠ চরিত্রবান হয়। সেই
শ্রেষ্ঠ চরিত্রবানের সামনে তুলনামূলক ভাবে কম শ্রেষ্ঠ চরিত্রবানেরা মাথা নত করে।
তাঁদের চরিত্রের বর্ণনা করতে থাকে। এই সমস্ত কথা বাচ্চারা তোমরাই বুঝতে পারো। এখন
অন্যদেরকেও কিভাবে বোঝাবে ? কি এমন সহজ যুক্তি রচনা করবে ? এটাই হল আত্মাদের তৃতীয়
নেত্র উন্মোচন করা। বাবার আত্মার মধ্যে জ্ঞান আছে। সাধারণ মানুষ বলে যে আমার মধ্যেও
জ্ঞান আছে। এটা হলো দেহ-অভিমান, এতেই তো আত্ম-অভিমানী হতে হবে। সন্ন্যাসীদের কাছে
শাস্ত্রের জ্ঞান থাকে। বাবার জ্ঞান তখনই পাওয়া যায় যখন বাবা এসে শোনাবেন। যুক্তি
দিয়ে বোঝাতে হবে। তারা তো কৃষ্ণকে ভগবান মনে করে নেয়। ভগবানকে তো জানেই না। ঋষি
মুনি আদি বলে যে, আমরা জানি না। মনে করে যে, মানুষ ভগবান হতে পারে না। নিরাকার
ভগবানই হলেন রচয়িতা। কিন্তু তিনি কীভাবে রচনা করেন, তাঁর নাম, রূপ, দেশ, কাল কি ?
তারা বলে দেয় যে - ভগবানের নাম রূপ নেই। তাদের এতটাও বোধ নেই যে, নাম-রূপ ছাড়া
কোনও বস্তু হতেই পারে না, অসম্ভব। যদি বলে যে নুড়ি-পাথর, কচ্ছপ-মৎস্য সকলের মধ্যে
ভগবান আছেন, তাহলেও তো তাঁর নাম রূপ হয়ে যায়। কখন এটা, কখনও সেটা বলতে থাকে।
দিন-রাত বাচ্চাদের মধ্যে এই চিন্তনই যেন চলতে থাকে যে - সাধারণ মানুষকে আমরা কিভাবে
বোঝাব ? এটাই হল মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার জন্য পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ। সাধারণ মানুষ
দেবতাদেরকে নমস্কার করে। মানুষ মানুষকে নমস্কার করে না, মানুষকে ভগবান অথবা
দেবতাদেরকেই নমস্কার করতে হয়। মুসলমানরাও প্রার্থনা করে, আল্লাহ্কে স্মরণ করে।
তোমরা জানো যে, তারা তো আল্লাহর কাছে পৌঁছাতে পারবে না। মুখ্য কথা হল - আল্লাহর কাছে
কিভাবে পৌঁছাবে ? পুনরায় আল্লাহ্ কিভাবে নতুন সৃষ্টি রচনা করেন। এই সমস্ত কথা
কিভাবে বোঝাবে, এর জন্য বাচ্চাদেরকে বিচার সাগর মন্থন করতে হবে, বাবাকে তো বিচার
সাগর মন্থন করতে হয় না। বাবা বাচ্চাদেরকে বিচার সাগর মন্থন করার যুক্তি শিখিয়ে
দেন। এই সময় সবাই আয়রন এজ্ড তমোপ্রধান হয়ে গেছে। অবশ্যই কোনও একসময় গোল্ডেন এজও
ছিল। গোল্ডেন-এজকে পিওর (পবিত্র) বলা যায়। পিওরিটি আর ইমপিওরিটি। সোনাতে খাদ পরে
যায়, তাই না। আত্মাও প্রথমে পিওর সতেপ্রধান ছিল, পুনরায় তার মধ্যে খাদ পরতে থাকে।
যখন তমোপ্রধান হয়ে যায়, তখন বাবাকে আসতে হয়। বাবা-ই এসে সতোপ্রধান সুখধাম বানান।
সুখধামে কেবল ভারতবাসীরাই হয়ে থাকে। বাকিরা সবাই শান্তিধামে থাকে। শান্তিধামে সবাই
পিওর থাকে, পুনরায় এখানে এসে আস্তে আস্তে ইমপিওর হয়ে যায়। প্রত্যেক মানুষকে সতো,
রজো, তমো অবশ্যই হতে হয়। এখন তাদেরকে কিভাবে বলবে যে, তোমরা সবাই আল্লাহর ঘরে
পৌঁছাতে পারবে। দেহের সকল সম্বন্ধকে ছেড়ে নিজেকে আত্মা মনে করো। ভগবানুবাচ তো আছেই।
আমাকে স্মরণ করলে এই যে ৫ ভূত আছে, সেগুলো বেরিয়ে যাবে। বাচ্চারা তোমাদেরকে দিনরাত
এই চিন্তাই করতে হবে। বাবারও চিন্তা হয় তবেই তো খেয়াল আসে যে - যাই, গিয়ে সবাইকে
সুখী বানাই। সাথে সাথে বাচ্চাদেরকেও সাহায্যকারী হতে হবে। একা বাবা কি করতে পারবেন!
তাই এই বিচার সাগর মন্থন করো। কি এমন উপায় বের করবে যাতে মানুষ ঝট করেই বুঝে যাবে
যে এটাই হল পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ। এই সময়েই মানুষ পুরুষোত্তম হতে পারে। প্রথমে
শ্রেষ্ঠ হয় তারপর আস্তে আস্তে নিচের দিকে নামতে থাকে। প্রথম থেকেই তো নিম্নাভিমুখী
হবে না, তাই না! আসার সাথে সাথেই তমোপ্রধান হয়ে যাবে না। প্রত্যেকটা জিনিসই প্রথমে
সতোপ্রধান তারপর সতো, তারপর রজো এবং শেষে তমোগুণী হয়ে যায়। বাচ্চারা এতো প্রদর্শনী
ইত্যাদি করে, তবুও মানুষ যদি কিছুই বুঝতে না পারে তো আর কি উপায় আছে যেটা করা যায়।
ভিন্ন ভিন্ন উপায় তো বের করতে হবে, তাই না! তার জন্য সময়ও প্রাপ্ত হয়ে থাকে।
একবারেই তো কেউ সম্পূর্ণ হয়ে যেতে পারে না। চন্দ্রমা ধীরে ধীরে নিজের সম্পূর্ণতাকে
প্রাপ্ত করে। আমরাও তমোপ্রধান হয়ে গেছি, পুনরায় সতোপ্রধান হওয়ার জন্য সময় তো
লাগবেই, তাই না ! সেটা তো হল জড় আর এটা হল চৈতন্য। তাই আমরা কিভাবে বোঝাবো ?
মুসলমানদের মৌলবীকে কীভাবে বোঝাবে যে, তোমরা এই নামাজ কেন পড়, কার স্মরণে থেকে পড়
? এই বিষয়ে বিচার সাগর মন্থন করতে হবে। বড় বড় দিনে প্রেসিডেন্ট আদিও মসজিদে যায়।
প্রধান প্রধান ব্যক্তিদের সাথে মিলিত হয় । সমস্ত মসজিদ গুলির একটি বড় মসজিদ থাকে -
সেখানে যায় ঈদ মোবারক জানাতে। এখন মোবারক তো এটাই যে - যখন আমরা সবাই দুঃখ থেকে
মুক্ত হয়ে সুখধামে যাব, তখন বলা যাবে ‘মোবারক হো’ অর্থাৎ অভিনন্দন। আমরা খুশির খবর
শোনাচ্ছি। কেউ বিজয় প্রাপ্ত করলে তাকেও অভিনন্দন জানানো হয়। কেউ বিবাহ করতে গেলেও
তাকে অভিনন্দন জানানো হয়। সর্বদা সুখে থাকো। এখন তোমাদেরকে তো বাবা বুঝিয়েছেন যে,
আমরা এক-পরস্পরকে অভিনন্দন কিভাবে জানাবো। এই সময় আমরা অসীম জগতের বাবার থেকে
মুক্তি জীবন্মুক্তির অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছি। তোমাদেরও তো অভিনন্দন
প্রাপ্ত হতে পারে। বাবা বোঝাচ্ছেন যে, তোমাদেরকে অভিনন্দন জানাই। তোমরা ২১ জন্মের
জন্য পদমপতি হচ্ছ। এখন সমস্ত মানুষ কিভাবে বাবার থেকে এই উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করবে,
যার জন্য সবাইকে অভিনন্দন দেবে! তোমরাও এখনই জানতে পেরেছ কিন্তু তোমাদেরকে সাধারণ
মানুষ অভিনন্দন জানাবে না, কারণ তোমাদেরকে তো তারা জানেই না। অভিনন্দন জানালে তো
অবশ্যই অভিনন্দন প্রাপ্ত করারও যোগ্য হতে হবে। তোমরা তো হলে গুপ্ত, তাই না!
এক-পরস্পরকে অভিনন্দন দিতে থাকো। অভিনন্দন জানাই, আমরা অসীম জগতের বাবার হয়েছি।
তোমরা হলে অত্যন্ত সৌভাগ্যশালী, কেউ লটারি পেলে বা বাচ্চা জন্মগ্রহণ করলে তো বলা হয়
যে - অভিনন্দন। বাচ্চারা পরীক্ষায় পাশ করলে তখনও তাকে অভিনন্দন জানায়। তোমাদেরকে
তো মনে মনেই অনেক খুশি হয়, নিজেকে অভিনন্দন জানাও যে আমি বাবাকে পেয়েছি, যাঁর থেকে
আমরা অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছি।
বাবা বোঝাচ্ছেন যে - তোমাদের আত্মাদেরই দুর্গতি হয়েছিলো, তোমরাই এখন সদ্গতি প্রাপ্ত
করছো। সবাই তো একই অভিনন্দন প্রাপ্ত করো। অন্তিম সময়ে সবাই জানতে পারবে, যে আত্মা
উঁচুর থেকেও উঁচু হবে, তাকে নিচের সবাই অভিনন্দন জানাবে। তোমরাই সূর্যবংশী কুলের
মহারাজা মহারানী হয়ে থাকো। নিচু কুলের আত্মারা তাদেরকেই অভিনন্দন জানাবে, যারা বিজয়
মালার দানা হবে। যে পাস হবে, সেই অভিনন্দন প্রাপ্ত করবে, তারই পূজা হয়ে থাকে।
আত্মাকেও অভিনন্দন জানানো হচ্ছে, যে উঁচু পদ প্রাপ্ত করে। পুনরায় ভক্তি মার্গে
তাদেরই পূজা হয়ে থাকে। সাধারণ মানুষ এটা জানেই না যে পূজা কেন করে থাকে। তাই
বাচ্চাদের এটাই চিন্তা থাকে যে, কিভাবে তাদেরকে বোঝাব ? আমরা পবিত্র হয়েছি,
অন্যদেরকেও কীভাবে পবিত্র বানাবো ? দুনিয়াতে অনেক বড়, তাই না! কি করা গেলে ঘরে ঘরে
এই সংবাদ পৌঁছে যাবে ? ওপর থেকে পর্চা (প্রচার পত্র) ছড়িয়ে দিলে সবাই তো পাবে না।
এই পর্চা তো প্রত্যেকের হাতে হাতে হওয়া চাই, কেননা তাদের তো একদমই জানা নেই যে,
কিভাবে বাবার কাছে পৌঁছাবে ? *মানুষ বলে দেয় যে - সব রাস্তাই গিয়ে পরমাত্মার সাথে
মিলছে। কিন্তু বাবা বলেন যে - এই ভক্তি, দান-পূণ্য তো জন্ম-জন্মান্তর ধরে করে এসেছো,
কিন্তু রাস্তা কোথায় পেয়েছ ? বলে দেয় যে, এইসব অনাদি চলে আসছে, কিন্তু কবে থেকে
শুরু হয়েছে ? অনাদির অর্থও বুঝতে পারে না। তোমাদের মধ্যেও নম্বরের ক্রমে পুরুষার্থ
অনুসারে বুঝতে পারে*। জ্ঞানের প্রালব্ধ ২১ জন্ম, সেটা হল সুখ, তারপর হল দুঃখ।
বাচ্চারা, তোমাদেরকে হিসাব বোঝানো হয় - কে বেশি ভক্তি করেছে! এই সমস্ত ছোট ছোট কথা
তো প্রত্যেককে বোঝানো সম্ভব নয়। কি করা যায়, কোনও সংবাদপত্রে দেওয়া হবে কি ? সময়
তো লাগবে। সবাই তো এত তাড়াতাড়ি বাবার পরিচয় প্রাপ্ত করতে পারবে না। সবাই যদি
পুরুষার্থ করতে লেগে যায়, তাহলে তো স্বর্গে এসে যাবে। এটাও হতে পারে না। এখন তোমরা
পুরুষার্থ করছো স্বর্গের জন্য। এখন আমাদের যে ধর্মাত্মারা আছে, তাদের কিভাবে বের
করবো ? কিভাবে জানতে পারবো যে কে কে ট্রান্সফার হয়েছে ? হিন্দু ধর্মের আত্মারা
আসলে দেবী দেবতা ধর্মের ছিল, এটাও কেউ জানে না। পাক্কা হিন্দু যে হবে, সে-ই নিজেকে
আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্মের বলে মানবে। এই সময় তো সবাই পতিত হয়ে গেছে। তারা বলে
যে - হে পতিতপাবন এসো। নিরাকারকেই স্মরণ করে যে আমাকে এসে পবিত্র দুনিয়াতে নিয়ে
চলো। এঁনারা (লক্ষ্মী-নারায়ণ) এত বড় রাজ্য কিভাবে প্রাপ্ত করেছেন ? ভারতে তো এই
সময় কোনও রাজাই নেই, যার উপর বিজয় লাভ করে রাজ্য প্রাপ্ত করে। তারা তো কোনও লড়াই
করে রাজত্ব পায় না। মানুষ থেকে দেবতা কিভাবে বানানো হয়, কেউই তা জানেনা। তোমরা
এখন বাবার থেকে জানতে পেরেছো। অন্যদেরকে কিভাবে বলবে, যার দ্বারা তারা মুক্তি জীবন
মুক্তি প্রাপ্ত করবে। পুরুষার্থ করানোর জন্য কাউকে চাই, তাই না! যে নিজেকে জেনে
আল্লাহ্কে স্মরণ করবে। বলো তোমরা ঈদের মোবারক কাকে বলে থাকো ! তোমরা এখন আল্লাহর
কাছে যাচ্ছ, এ বিষয়ে পাক্কা নিশ্চয় আছে ? যার জন্য তোমরা এত খুশিতে থাকো ! এসব তো
অনেক বছর ধরে তোমরা করে আসছ। কখনো খোদার কাছে যেতে চাও নাকি চাও না? মর্মাহত হয়ে
পড়বে। বরাবর আমরা যা কিছু পড়ে এসেছি, কি করার জন্য ? উঁচুর থেকেও উঁচু হলেনই এক
আল্লাহ্। বলো - আল্লাহর বাচ্চা তুমিও হলে আত্মা। আত্মা চায় যে - আমরা আল্লাহর কাছে
যাবো। আত্মা যে প্রথমে পবিত্র ছিল, এখন পতিত হয়ে গেছে। এখন একে স্বর্গ তো বলা যায়
না। সমস্ত আত্মারাই পতিত হয়ে গেছে। পবিত্র কিভাবে হবে যে আল্লাহর ঘরে যাবে ? সেখানে
বিকারী আত্মা তো হয়ই না। নির্বিকারী হতে হবে। আত্মা হঠাৎ করে সতোপ্রধান হতে পারে
না। এই সবকিছু বিচার সাগর মন্থন করা হয়ে থাকে। বাবার বিচার সাগর মন্থন চলতে থাকে,
তবেই তো বোঝাচ্ছেন, তাই না! যুক্তি বের করতে হবে, কাকে কিভাবে বোঝাবে। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
যেরকম বাবার খেয়াল আসে যে, আমি গিয়ে বাচ্চাদেরকে দুঃখ থেকে মুক্ত করবো, সুখি
বানাবো, এইরকম বাবার সাহায্যকারী হতে হবে, ঘরে ঘরে বাবার পরিচয় পৌঁছে দেওয়ার জন্য
যুক্তি রচনা করতে হবে।
২ ) সকলের অভিনন্দন প্রাপ্ত করার জন্য বিজয়মালার দানা হওয়ার পুরুষার্থ করতে হবে।
পূজ্য হতে হবে।
বরদান:-
নম্রতা আর কর্তৃত্বের ব্যালেন্স দ্বারা বাবাকে প্রত্যক্ষ করে বিশেষ সেবাধারী ভব
ব্যাখ্যা :- যেখানে
ব্যালেন্স থাকে, সেখানে বিস্ময়কর কিছু দেখা যায়। যখন তোমরা নম্রতা আর সত্যতার
কর্তৃত্বের ব্যালেন্স দ্বারা কাউকে যদি বাবার পরিচয় দাও তবে বিষ্ময়কর কিছু করে
দেখাবে। এই রূপের দ্বারাই বাবাকে প্রত্যক্ষ করতে হবে। তোমাদের বাণী স্পষ্ট হবে, তার
মধ্যে স্নেহও থাকবে, নম্রতা আর মধুরতাও থাকবে, তাহলে মহানতা আর সত্যতাও তখন
প্রত্যক্ষতা হবে। বলার সময় মাঝে মাঝে অনুভব করাতে থাকো, যার দ্বারা ভালোবাসায় (লগনে)
মগ্নমূর্তি অনুভব হবে। এইরকম স্বরূপের দ্বারা যারা সেবা করে, তারাই হল বিশেষ
সেবাধারী।
স্লোগান:-
সময়ের অনুসারে কোনও সাধন না থাকলেও সাধনাতে যেন বিঘ্ন না পরে।