21.10.2020 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


প্রশ্নঃ -
কল্প পূর্বের ভাগ্যশালী বাচ্চাদের, বাবার কোন্ কথাটি দ্রুত টাচ্ হবে ?

উত্তরঃ -
বাবা প্রতিদিন বাচ্চাদেরকে স্মরণ করার যে যুক্তি বলেন, সেটা ভাগ্যশালী বাচ্চাদেরই টাচ্ হতে থাকবে। সেটা তারা অতিদ্রুত বাস্তবে করে দেখাবে। বাবা বলছেন বাচ্চারা, কিছু সময় একান্তে বাগানে গিয়ে বসো। বাবার সাথে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলো, নিজের চার্ট রাখো তো উন্নতি হতে থাকবে।

ওম্ শান্তি ।
মেলেটারিদেরকে প্রথমে সাবধান করে দেওয়া হয় - অ্যাটেনশন প্লিজ। বাবাও বাচ্চাদেরকে বলছেন যে নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করতে থাকো ? বাচ্চাদেরকে বোঝানো হয়েছে যে, এই জ্ঞান বাবা এই সময়ই দিতে পারেন। বাবা-ই পড়াচ্ছেন। ভগবানুবাচ, তাই না - মূল কথা হয়ে যায় যে ভগবান কে ? কে পড়াচ্ছেন ? এই কথাটি প্রথমে বুঝতে এবং নিশ্চয় করতে হয়। তারপর তো অতীন্দ্রিয় সুখেই থাকতে হবে। আত্মাকে অনেক খুশিতে থাকতে হবে। আমরা অসীম জগতের বাবাকে প্রাপ্ত করেছি। বাবা একইবার এসে আমাদের সাথে মিলন করেন এবং অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রদান করেন। কিসের উত্তরাধিকার ? বিশ্বের রাজত্বের উত্তরাধিকার প্রদান করেন, ৫ হাজার বছর পূর্বের ন্যায়। এটা তো পাক্কা নিশ্চয় আছে যে - বাবা এসে গেছেন। পুনরায় সহজ রাজযোগ শেখাচ্ছেন, শেখাতেও হয়। বাচ্চাদেরকে কিছু জিনিস শেখাতে হয় না। আপনা হতেই মুখ থেকে বাবা-মাম্মা বেরোতে থাকবে, কেননা এই শব্দটা তো শুনে আসছে, তাই না। ইনি হলেন আত্মিক বাবা। আত্মার মধ্যে আন্তরিকভাবে গুপ্ত নেশা থাকে। আত্মাকেই পড়তে হয়। পরমপিতা পরমাত্মা তো হলেনই নলেজ ফুল। তিনি কারো থেকে পড়েননি। তাঁর মধ্যে জ্ঞান আছেই, কিসের জ্ঞান আছে ? এটাও তোমাদের আত্মা বুঝতে পারে। বাবার মধ্যে সমগ্র সৃষ্টির আদি মধ্য অন্তের জ্ঞান আছে। কিভাবে এক ধর্মের স্থাপনা আর অন্যান্য ধর্মের বিনাশ হয়, এইসব জানেন - এই জন্য তাকে জানি জাননহার বলে দেয়। জানি জাননহারের অর্থ কি ? এটা একদমই কেউই জানে না। বাচ্চারা, এখন তোমাদেরকে বাবা বোঝাচ্ছেন যে - এই স্লোগানও অবশ্যই দাও যে, মানুষ হয়ে যদি রচয়িতা আর রচনার আদি-মধ্য-অন্তের সময়কাল, পুনরাবৃত্তিকে না জানো, তাে কি বলা যাবে... এই পুনরাবৃত্তি - শব্দটিও অত্যন্ত জরুরী। কারেকশন তো হতেই থাকবে, তাই না। গীতার ভগবান কে... এই চিত্র খুবই সুন্দর, ফার্স্ট ক্লাস। সমগ্র বিশ্বে এটাই হল সবথেকে নম্বর ওয়ান ভুল। পরমপিতা পরমাত্মাকে না জানার কারণে, বলে দেয় যে সবাই হল ভগবানের রূপ।যেরকম ছোট বাচ্চাকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় যে তুমি কার সন্তান ? বলবে যে অমুকের। অমুক কার বাচ্চা ? অমুকের। তারপর বলে দেয় - ও আমার বাচ্চা। সেই রকম এরাও ভগবানকে জানে না, তাই বলে দেয় যে আমিই হলাম ভগবান। এত পূজা আদিও করতে থাকে, কিন্তু বুঝতে কিছুই পারে না। গাওয়া হয় যে, ব্রহ্মার রাত তো অবশ্যই ব্রাহ্মণ ব্রাহ্মণীদেরও রাত হবে। এইসব হল ধারণ করার কথা। এই ধারণা তাদেরই হবে যে, যোগযুক্ত হয়ে থাকে। স্মরণকেই শক্তি বলা যায়। জ্ঞান তো হল সোর্স অফ ইনকাম। স্মরণের দ্বারাই শক্তি প্রাপ্ত হয়। যার দ্বারা বিকর্ম বিনাশ হয়ে থাকে। তোমাদেরকে বুদ্ধির যোগ বাবার সাথে রাখতে হবে। এই জ্ঞান বাবা এখনই প্রদান করছেন। কল্পের মধ্যে পুনরায় আর প্রাপ্ত হয় না। এক বাবা ছাড়া কেউ দিতে পারবে না। বাকি সবই হল ভক্তি মার্গে শাস্ত্র, কর্মকাণ্ডের ক্রিয়াকলাপ। তাকে জ্ঞান বলা যাবে না। আধ্যাত্মিক জ্ঞান এক বাবার কাছেই আছে আর তিনি ব্রাহ্মণদেরই তা প্রদান করেন। আর কারোর কাছে আধ্যাত্মিক জ্ঞান হয় না। সমগ্র দুনিয়াতে অনেক ধর্ম মঠ পন্থ আছে, অনেক মত আছে। বাচ্চাদেরকে বোঝাতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। অনেক তুফান আসে। গাইতেও থাকে যে - আমার নৌকা ওপারে নিয়ে চলো। প্রত্যেকের নৌকা তো ওপারে যেতে পারে না। কিছু ডুবেও যায়, কিছু দাঁড়িয়ে যায়। দুই-তিন বছর হয়ে যায়, কারো কোনও খবরই থাকে না। কেউ তো আবার টুকরো টুকরো হয়ে যায়। কেউ তো সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকে, এখানেতেই অনেক পরিশ্রম আছে। আর্টিফিশিয়াল যোগও অনেক বেরিয়ে গেছে। অনেক যোগ আশ্রম আছে। আধ্যাত্মিক যোগ আশ্রম কোথাও হতে পারে না। বাবা-ই এসে আত্মাদেরকে আধ্যাত্মিক যোগ শেখাচ্ছেন। বাবা বলছেন যে এটাই হল খুব সহজ যোগ। এর থেকে সহজ আর কিছু হয়না। আত্মাই শরীরে এসে নিজের পার্ট অভিনয় করে। ৮৪ জন্ম হল ম্যাক্সিমাম, তারপর কমতে থাকে। এইসব কথাও বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে আছে। বুদ্ধিতে ধারণাও খুব মুশকিল ভাবে হয়ে থাকে। প্রথম কথা বাবা বোঝাচ্ছেন যে - যেখানেই যাও তো সর্ব প্রথমে বাবার পরিচয় দাও। বাবার পরিচয় কিভাবে দেবে, এর জন্য যুক্তি রচনা কর। এটা যখন নিশ্চয় হয়ে যাবে তখন বুঝতে পারবে যে বাবা তো সত্যই আছেন। অবশ্যই বাবা সত্য কথাই বলবেন। এর মধ্যে সংশয় নিয়ে এসো না। স্মরণের মধ্যেই পরিশ্রম করতে হয়, এখানেই মায়া বিপরীত পরিস্থিতি নিয়ে আসে। বারে বারে স্মরণ ভুলিয়ে দেয়, এইজন্য বাবা বলছেন যে - চার্ট লেখ। তাে বাবাও দেখবেন যে কে কতক্ষণ স্মরণ করে। কোয়ার্টার পার্সেন্টও (একের তিন ভাগও রাখে না) চার্ট রাখে না। কেউ বলে যে আমি তো সারাদিনই স্মরণে থাকি। বাবা বলছেন, এটা তো বড়ই মুশকিল। সারাদিন-রাত সাংসারিক বন্ধনে আবদ্ধ মায়েরা যে মার খেতে থাকে, তো তারা নিশ্চই স্মরণে থাকে, শিব বাবা কবে এই সম্বন্ধীদের থেকে আমি মুক্তি পাবো ? আত্মা আহ্বান করে - বাবা আমরা বন্ধন থেকে কিভাবে মুক্ত পাবো ? যদি কেউ অনেকক্ষণ স্মরণে থাকে, তাহলে বাবাকে চার্ট লিখে পাঠাও। নির্দেশ প্রাপ্ত হয় যে- রোজ রাতে নিজের দৈনন্দিন চার্ট বের করো, ডায়রী রাখো। ডায়রী রাখলে ভয় থাকবে, আমার কোনও ভুল যেন না হয়ে যায়। বাবা দেখে কি বলবেন - এত অতি প্রিয় মিষ্টি বাবাকে এইটুকু সময় স্মরণ কর! লৌকিক বাবাকে, স্ত্রীকে তোমরা স্মরণ করে থাকো, আমাকে এত অল্প সময়ও স্মরণ করতে পারো না। চার্ট লেখো তো নিজেরই লজ্জা আসবে। এই অবস্থাতে আমি কোনও পদ প্রাপ্ত করতে পারবো না। এইজন্য বাবা চার্টের উপর বিশেষ জোর দিচ্ছেন। বাবাকে আর ৮৪র চক্রকে স্মরণ করতে হবে তাহলে চক্রবর্তী রাজা হয়ে যাবে। নিজের সমান তৈরি করলে তবে তো প্রজার উপর রাজ্য করতে পারবে। এটা হলই রাজযোগ, নর থেকে নারায়ণ হওয়ার জন্য। এম্-অবজেক্ট হল এটাই। যেরকম আত্মাকে দেখা যায় না, বোঝা যায়। এর মধ্যে আত্মা আছে, এটাও বোঝা যায়। এই লক্ষ্মী-নারায়ণের অবশ্যই রাজধানী ছিল। এঁনারাই সবথেকে বেশি পরিশ্রম করেছিলেন, তবে এই স্কলারশিপ পেয়েছেন। অবশ্যই এঁনাদের অনেক প্রজা হবে। উঁচুর থেকেও উঁচু পদ পেয়েছেন, অবশ্যই অনেক যোগ লাগিয়েছিলেন, তবেই তো পাস উইথ অনার হয়েছেন। এটারও কারণ বের করতে হবে, আমার যোগ কেন লাগছে না ? কাজ কর্ম ব্যবসা ইত্যাদির ঝঞ্ঝাটে বুদ্ধি চলে যায়। তার থেকে সময় বের করে এইদিকে বেশি ধ্যান দিতে হবে। কিছু সময় বের করে বাগানে গিয়ে একান্তে বসতে হবে। মহিলারা তো যেতে পারবে না। তাদের তো ঘর সামলাতে হয়। পুরুষদের ক্ষেত্রে তো সহজ। কল্পপূর্বেও যারা ভাগ্যশালী হয়েছিল তাদেরই এই টাচ্ হবে। পড়া তো হল খুবই ভালো। বাকি প্রত্যেকের বুদ্ধি নিজের নিজের হয়ে থাকে। যে করেই হোক বাবার থেকে অবিনাশী উত্তরাধিকারী নিতে হবে। বাবা সব রকমের নির্দেশ দিচ্ছেন। কিন্তু বাচ্চাদেরকেই তো করতে হবে। বাবা নির্দেশ দিচ্ছেন সকলের জন্যই। এক-এক জন ব্যক্তিগতভাবেও এসে যদি জিজ্ঞাসা করে তো রায় দিতে পারবে। তীর্থযাত্রায় বড় বড় পাহাড়ের উপর যায়, তো পান্ডারা সাবধান করতে থাকে। অনেক সমস্যার সাথে যায়। বাচ্চারা তোমাদেরকে তো বাবা অনেক সহজ যুক্তি বলে দিচ্ছেন। বাবাকে স্মরণ করতে হবে। শরীরের ভাব (আমি শরীর নই, আমি হলাম আত্মা) সমাপ্ত করতে হবে। বাবা বলছেন - "আমাকে স্মরণ করো" । বাবা এসে জ্ঞান শুনিয়ে চলে যান। আত্মার মতো তেজোময় রকেট আর কিছু হয়না। বিজ্ঞানীরা তো চাঁদ ইত্যাদির দিকে যেতে কতো সময় ব্যর্থ নষ্ট করতে থাকে। এটাও ড্রামাতে পূর্ব নির্দিষ্ট আছে। বিজ্ঞানের এই অহংকারও বিনাশের ক্ষেত্রে সহায়তা করবে। সেটা হল সায়েন্স, তোমাদের হল সাইলেন্স। নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করতে হবে - এটাই হলো ডেড সাইলেন্স। আমি হলাম আত্মা, শরীর থেকে আলাদা। এই শরীর হল পুরানো জুতো। সাপ কচ্ছপের উদাহরণও তোমাদের জন্য। তোমরাই কীট পতঙ্গের মতো মানুষদেরকে ভুঁ-ভুঁ করে মানুষ থেকে দেবতা বানাচ্ছো। বিষয়ে সাগর থেকে ক্ষীর সাগরে নিয়ে যাওয়া হল তোমাদের কাজ। সন্ন্যাসীদেরকে এই যজ্ঞ তপস্যা আদি কিছুই করতে হয় না। ভক্তি আর জ্ঞান হলই গৃহস্থের জন্য। তাদের তো সত্যযুগে আসার সুযোগই নেই। তারা এসব কথা কি জানবে ? নিবৃত্তি মার্গের জন্য এটাও ড্রামাতে পূর্বনির্দিষ্ট হয়ে আছে। যারা সম্পূর্ণ ৮৪ জন্ম নিয়েছে, তারাই ড্রামা অনুসারে আসতে থাকবে। এরমধ্যেও নম্বরের ক্রমানুসারে বের হতে থাকবে। মায়া হলে অত্যন্ত প্রবল। চোখ হলো সবথেকে বড় ক্রিমিনাল। জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র প্রাপ্ত হলে চোখ সিভিল হয়ে যায়, তারপর অর্ধেক কল্প আর কখনও ক্রিমিনাল হয়না। এটা হলো সবথেকে বড় ধোঁকা প্রদানকারী। তোমরা যত যত বাবাকে স্মরণ করবে, ততই কর্মেন্দ্রিয় শীতল হতে থাকবে। তারপর ২১ জন্ম কর্মেন্দ্রিয়গুলিতে চঞ্চলতা আসবে না। সেখানে কর্মেন্দ্রিয়গুলিতে চঞ্চলতা থাকে না। সমস্ত কর্মেন্দ্রিয় শান্ত এবং সতোগুণী থাকে। দেহ-অভিমানে পরেই সব শয়তান আসে। বাবা তোমাদেরকে দেহী-অভিমানী বানাচ্ছেন। অর্ধেক কল্পের জন্য তোমাদের অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়ে যায়। যে যত বেশী পরিশ্রম করবে ততই উঁচু পথ প্রাপ্ত করবে। পরিশ্রম করতে হয় - দেহী-অভিমানী হওয়ার। তাহলে কর্মেন্দ্রিয়গুলি আর ধোকা দেবে না। অন্তিম সময় পর্যন্ত যুদ্ধ চলতেই থাকবে। যখন তোমরা কর্মাতীত অবস্থাকে প্রাপ্ত করবে, তখন সেই লড়াইও শুরু হবে। দিন প্রতিদিন আওয়াজ বৃদ্ধি হতে থাকবে, মৃত্যু থেকে ভয় পাবে।

বাবা বলছেন যে - এই জ্ঞান হল সবার জন্য। কেবলমাত্র বাবার পরিচয় দিতে হবে। আমরা আত্মারা হলাম সবাই ভাই-ভাই। সবাই এক বাবাকে স্মরণ করে। গডফাদার বলে ডাকে। গডকে কেউ প্রকৃতি বলেও মানে। কিন্তু গড তো আছেই, তাই না! তাঁকে স্মরণ করতে থাকে মুক্তি-জীবন মুক্তির জন্য। মোক্ষ তো হয়না। ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফিকে রিপিট করতে হয়। বুদ্ধিও বলে যে যখন সত্যযুগ ছিল তখন এক ভারতই ছিল। মানুষ তো কিছুই জানেনা। এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজত্ব ছিল, তাই না! লক্ষ বছরের কথা হতে পারেনা। লক্ষ বছর হলে তো অনেক বেশি সংখ্যা হয়ে যেত। বাবা বলছেন যে এখন কলিযুগ সম্পূর্ণ হয়ে সত্যযুগের স্থাপনা হচ্ছে। তারা মনে করে যে কলিযুগ এখনও বাচ্চা আছে, এখনো অনেক হাজার বছর আয়ু বাকি আছে। বাচ্চারা, তোমরা জানো যে এই কল্প হলই ৫ হাজার বছরের। ভারতেই এই স্বর্গের স্থাপনা হচ্ছে। ভারতই এখন স্বর্গ হচ্ছে। এখন আমরা শ্রীমতে চলে এই রাজ্য স্থাপন করছি। এখন বাবা বলছেন যে- এক আমাকে স্মরণ করো। প্রথম-প্রথম শব্দই হল এই দুটি। যতক্ষণ বাবার প্রতি নিশ্চয় না হবে, ততক্ষণ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে থাকবে। তারপর যদি কোনও কথার উত্তর না পায় তাহলে মনে করবে যে এরা কিছুই জানেনা আর বলে যে ভগবান আমাদেরকে পড়াচ্ছেন, এইজন্য সবার প্রথমে তো একটাই কথার উপর স্থির হয়ে যাও। প্রথমে বাবার প্রতি নিশ্চয় করে যে, বরাবর সকল আত্মার বাবা হলেন একই, আর তিনিই হলেন রচয়িতা। তাই তিনি অবশ্যই সঙ্গম যুগেই আসবেন। বাবা বলছেন যে আমি যুগে যুগে নয়, কল্পের সঙ্গম যুগে আসি। আমি হলামই নতুন সৃষ্টির রচয়িতা। তাই মাঝখানে কী করে আসবো। আমি আসিই পুরানো আর নতুনের মধ্যবরতী সময়ে। একেই পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ বলা যায়। তোমরা পুরুষোত্তমও এখানেই তৈরি হও। লক্ষ্মী-নারায়ণ হলেন সবথেকে পুরুষোত্তম। এম্-অবজেক্ট কতো সহজ। সবাইকে বল যে এখন এই স্থাপনা হচ্ছে। বাবা বলছেন যে পুরুষোত্তম শব্দটি অবশ্যই বলো কেননা এখানে তোমরা কনিষ্ঠ থেকে পুরুষোত্তম তৈরি হও। এইরকম এইরকম মুখ্য কথাগুলি ভুলে গেলে চলবে না। আর সংবতের তারিখও অবশ্যই লিখতে হবে। এখানে তোমাদের প্রথম থেকেই রাজত্ব শুরু হয়ে যায়, অন্যদের রাজত্ব প্রথম থেকে শুরু হয় না। সেটা তো ধর্ম স্থাপক এলে তখন তার পিছনে অনেক ধর্মের বৃদ্ধি হয়। অনুগামীর সংখ্যা কোটি হলে তখন রাজত্ব চলে। তোমাদের তো শুরু থেকেই সত্যযুগে রাজত্ব হবে। এসব কথা কারোরই বুদ্ধিতে আসেনা যে, সত্য যুগে এত রাজত্ব কোথা থেকে এলো। কলিযুগের অন্তে এতো অনেক ধর্ম আছে, কিন্তু সত্যযুগে এক ধর্ম, এক রাজ্য কিভাবে হল? কতো হিরে জহরের মহল আছে। ভারত এইরকম ছিল, যাকে স্বর্গোদ্যান বলতে। ৫ হাজার বছরের কথা। লক্ষ বছরের হিসাব কোথা থেকে এলো। মানুষ কত দুর্বুদ্ধি সম্পন্ন হয়ে গেছে। এখন তাদেরকে কে বোঝাবে? তারা তো বুঝতেই পারে না যে আমরা আসুরিক রাজ্যে আছি। এঁনাদের (দেবতাদের) তো মহিমা হল সর্ব্বগুণসম্পন্ন..., এঁনাদের মধ্যে ৫ বিকার নেই, কেননা দেহী-অভিমানী হয়ে আছেন, তাই বাবা বলছেন যে মুখ্য কথাই হল স্মরণের। ৮৪ জন্ম নিতে নিতে তোমরা পতিত হয়ে গেছ, এখন পুনরায় পবিত্র হতে হবে। এটাই হল ড্রামার চক্র। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) জ্ঞানের দ্বারা তৃতীয় নেত্রকে ধারণ করে নিজের ধোঁকা প্রদীনকারী চোখকে সিভিল বানাতে হবে। স্মরণের দ্বারাই কর্মেন্দ্রিয় শীতল, সতোগুণী হবে, এইজন্য এই পরিশ্রম করতে হবে।

২ ) কাজকর্ম ব্যবসা ইত্যাদির থেকে সময় বের করে একান্তে গিয়ে স্মরণে বসতে হবে। কারণ খুঁজতে হবে যে, কেন আমার যোগ লাগছে না। অবশ্যই নিজের চার্ট রাখতে হবে।

বরদান:-
নির্ণয় শক্তি আর কন্ট্রোলিং পাওয়ার দ্বারা সদা সফলতা মূর্তি ভব

*ব্যাখ্যা :-* যেকোনও লৌকিক বা অলৌকিক কার্যে সফলতা প্রাপ্ত করার জন্য বিশেষ কন্ট্রোলিং পাওয়ার আর জাজ্মেন্ট পাওয়ারের অাবশ্যকতা হয়ে থাকে । কেননা যখন কোনও আত্মা তোমাদের সম্পর্কে আসে তখন প্রথমে জাজ্ করতে হয় যে, এই আত্মার কোন্ জিনিসের প্রয়োজনীয়তা আছে, নাড়ী দেখে যাচাই করে, তার চাহিদা অনুযায়ী তাকে তৃপ্ত করা এবং নিজের কন্ট্রোলিং পাওয়ারের দ্বারা অন্যের উপর নিজের অনড় স্থিতির প্রভাব বিস্তার করা - এই দুটি শক্তি সেবার ক্ষেত্রে সফলতা মূর্তি বানিয়ে দেয়।

স্লোগান:-
সর্বশক্তিবান বাবাকে সাথী বানিয়ে নাও, তাহলে মায়া পেপার-টাইগার হয়ে যাবে।