07.10.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
প্রশ্নঃ -
অসীম জগতের
নাটককে বুঝতে পারা বাচ্চা কোন্ একটি ল' (নিয়মকে) ভালো রীতিতে বুঝতে পারে ?
উত্তরঃ -
এটা হল অবিনাশী নাটক, এখানে প্রত্যেক পার্টধারীকে অভিনয় করার জন্য নির্ধারিত সময়ে
আসতেই হয়। কেউ কেউ বলে যে - আমি সর্বদা শান্তিধামেই বসে থাকব - তো এটা নিয়ম নয়।
তাকে তো পার্টধারীই বলা যাবে না। এটা হল অসীম জগতের কথা, অসীম জগতের বাবা-ই
তোমাদেরকে শোনাচ্ছেন।
ওম্ শান্তি ।
নিজেকে আত্মা
মনে করে বসো। দেহ-অভিমানকে ত্যাগ করে বসো। অসীম জগতের বাবা বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন।
তাদেরকেই বোঝানো যায় যারা অবুঝ হয়। আত্মা বুঝতে পারে যে, বাবা সত্য কথাই বলছেন -
আমরা আত্মারা অবুঝ হয়ে গেছি। আমি হলাম অবিনাশী আত্মা, শরীর হল বিনাশী। আমি
আত্ম-অভিমান ছেড়ে দেহ-অভিমানে ফেঁসে গেছি, তাে অবুঝ হয়ে গেছি, তাই না! বাবা বলছেন
যে, দেহ-অভিমানে এসে সমস্ত বাচ্চারাই অবুঝ হয়ে গেছে। পুনরায় তোমরা বাবার দ্বারা
দেহী-অভিমানী হও, তাই একদম বুঝদার হয়ে যাও। কেউ তো হয়ে গেছে, কেউ এখনো পুরুষার্থ
করছে। অর্ধেক কল্প লেগে গেছে অবুঝ হতে। এই অন্তিম জন্মে পুনরায় বুঝদার হতে হবে।
অর্ধেক কল্প থেকে অবুঝ হতে হতে ১০০% ই অবুঝ হয়ে যাও। দেহ-অভিমানে এসে ড্রামার
প্ল্যান অনুসারে তোমরা নিচে নেমে এসেছো। এখন তোমাদের বোধগম্য হয়েছে, তবুও
পুরুষার্থ অনেক করতে হবে, কেননা বাচ্চাদের মধ্যে দৈব্যগুণও চাই। বাচ্চারা জানে যে,
আমরা সর্বগুণ সম্পন্ন, ষোলো-কলা সম্পূর্ণ.... ছিলাম। পুনরায় এই সময় নির্গুণ হয়ে
গেছি। এখন কোনো গুণ নেই। বাচ্চারা, তোমাদের মধ্যেও নম্বরের ক্রমে পুরুষার্থ অনুসারে
এই খেলাকে বুঝতে পারো। বুঝতে বুঝতেও তোমাদের অনেক বছর কেটে গেছে। কিন্তু যারা নতুন
এসেছে, তারা ভালো বুঝদার হয়ে যায়। অন্যদেরকেও নিজের সমান বানানোর পুরুষার্থ করতে
থাকে। আবার কেউ কেউ তো একদম কিছুই বুঝতে পারেনা। অবুঝের অবুঝই থেকে যায়। বাবা
এসেইছেন বুঝদার বানাতে। বাচ্চারা বুঝতে পারে যে, মায়ার কারণে আমরা অবুঝ হয়ে গেছি।
আমরা পূজ্য ছিলাম তো বুঝদার ছিলাম, পুনরায় আমরাই পূজারী হয়ে অবুঝ হয়ে গেছি। আদি
সনাতন দেবী দেবতা ধর্ম প্রায়ঃলোপ হয়ে গেছে। এর কথা দুনিয়াতে কারোরই জানা নেই। এই
লক্ষ্মী-নারায়ণ অনেক বুঝদার ছিলেন, তাঁরা রাজত্ব করেছিলেন। বাবা বলছেন - ‘তৎ ত্বম’।
তোমরাও নিজেদেরকে এইরকম মনে করো। এটা অনেক বোঝার বিষয়। এক বাবা ছাড়া আর কেউই এই
কথা বোঝাতে পারবে না। এখন অনুভব হয় যে - বাবা-ই উঁচুর থেকে উঁচু, বুঝদারের থেকেও
বেশি বুঝদার হবেন, তাই না! তিনি একদিকে তো হলেন জ্ঞানের সাগর আবার অন্যদিকে সকলের
সদ্গতি দাতাও আছেন। পতিত-পাবন আছেন। এইসব হল একের-ই মহিমা। এত উঁচুর থেকেও উঁচু বাবা
এসে বাচ্চা-বাচ্চা বলে কিভাবে ভালো রীতিতে বোঝাচ্ছেন। বাচ্চারা, এখন পবিত্র হতে হবে।
তার জন্য বাবা একটাই ওষুধ দেন, বলেন যে - যোগের দ্বারাই তোমরা ভবিষ্যতের ২১ জন্ম
নিরোগী হয়ে যাবে। তোমাদের সব রোগ, দুঃখ সমাপ্ত হয়ে যাবে। তোমরা মুক্তিধামে চলে
যাবে। অবিনাশী সার্জনের কাছে একটাই ওষুধ আছে। একটাই ইঞ্জেকশন আত্মাদেরকে এসে
প্রয়োগ করেন। এমন নয় যে কোনও মানুষ ব্যারিস্টারিও করে আবার ইঞ্জিনিয়ারিংও করে।
না। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের ব্যবসাতেই লেগে যায়। বাবাকে বলে যে - এসে পতিত থেকে
পবিত্র বানাও, কেননা পতিত হওয়াতে অনেক দুঃখ আছে। শান্তিধামকে পবিত্র দুনিয়া বলা
যায়না। স্বর্গকেই পবিত্র দুনিয়া বলা হয়। এটাও বুঝিয়েছেন যে - মানুষ শান্তি আর
সুখ চায়। সত্যিকারের শান্তি তো সেখানেই আছে, যেখানে শরীর নেই, তাকে বলা যায়
শান্তিধাম। অনেকেই বলে যে - শান্তিধামেই থেকে যাবে, কিন্তু নিয়ম তো সেটা নেই।
তাদেরকে তো পার্টধারী বলা যাবে না। বাচ্চারা নাটককেও বুঝে গেছে। যখন এক্টার্সদের
পার্ট আসবে, তখন বাইরে স্টেজে এসে পার্ট অভিনয় করবে। এই অসীম জগতের কথা অসীম জগতের
বাবা-ই এসে বোঝাচ্ছেন। জ্ঞান সাগরও তাঁকেই বলা যায়। তিনি হলেন সকলের সদ্গতি দাতা,
পতিত-পাবন। তত্ব কখনও সকলকে পবিত্র বানাতে পারেনা। জল আদি সবই হল তত্ত্ব, সে কিভাবে
সদ্গতি করতে পারে! আত্মাই পার্ট অভিনয় করে। হঠযোগেরও পার্ট আত্মাই অভিনয় করে। এই
কথাও যে বুঝদার হবে, সেই বুঝতে পারবে। বাবা তো অনেক বুঝিয়ে দেন - *এমন কিছু যুক্তি
রচনা করো যে মানুষ বুঝতে পারবে - কিভাবে তারা পূজ্য থেকে পুনরায় পূজারী হয়ে যায়।*
পূজ্য হয় নতুন দুনিয়াতে, পূজারী হয় পুরানো দুনিয়াতে। পবিত্রকে পূজ্য, পতিতকে
পূজারী বলা যায়। এখানে তো সবাই হল পতিত, কেননা বিকারের দ্বারা জন্ম হয়। সেখানে হল
শ্রেষ্ঠ। গাওয়াও হয় - সম্পূর্ণ শ্রেষ্ঠাচারী। এখন বাচ্চারা, তোমাদেরকে এইরকম হতে
হবে। পরিশ্রম আছে। মুখ্য কথা হল স্মরণ। সবাই বলে যে স্মরণে থাকা খুব মুশকিল। আমরা
যতটা চাই, ততটা স্মরণে থাকতে পারিনা। যদি কেউ সততার সাথে চার্ট লেখে তাহলে অনেক
অভিজ্ঞতা লাভ হতে পারে। বাবা বাচ্চাদেরকে এই জ্ঞান দিচ্ছেন যে - মন্মনা ভব। তোমরা
অর্থ সহকারে বলতে থাকো, বাবা তোমাদেরকে প্রত্যেক কথা যথার্থরীতি অর্থ সহকারে বুঝিয়ে
দেন। বাবার কাছে বাচ্চারা অনেক প্রকারের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে, বাবা বাবা করে মন জয়
করার জন্য, কিছু বলে দেয়। কিন্তু বাবা বলেন যে, আমার কাজই হল পতিত থেকে পবিত্র
বানানো। এই জন্যই তো তোমরা আমাকে ডেকেছিলে। তোমরা জানো যে, আমরা আত্মারা শরীর সহকারে
পবিত্র ছিলাম। এখন সেই আত্মারাই শরীর সহকারে পতিত হয়ে গেছি। ৮৪ জন্মের হিসাব আছে,
তাই না!
তোমরা জানো যে - এখন এই দুনিয়া কাঁটার জঙ্গল হয়ে গেছে। এই লক্ষ্মী নারায়ণ তো
হলেন ফুল, তাই না! তাঁদের সামনে কাঁটা গিয়ে বলে যে - আপনি হলেন সর্ব্বগুণসম্পন্ন....
আমরা হলাম পাপী, ছল-কপট। সব থেকে বড় কাঁটা হল - কাম বিকারের। বাবা বলেন যে, এর ওপর
জয় প্রাপ্ত করে জগৎজিত হও। মানুষ বলে যে - ভগবানকে কোনো না কোনো রূপে আসতে হয়,
ভাগীরথের উপর বিরাজমান হয়ে আসতে হয়। ভগবানকে আসতেই হয় পুরানো দুনিয়াকে নতুন
বানানোর জন্য। নতুন দুনিয়াকে সতোপ্রধান, পুরানো দুনিয়াকে তমোপ্রধান বলা হয়। এখনই
হল সেই পুরানো দুনিয়া, তাই অবশ্যই এইসময়েই বাবাকে আসতে হয়। বাবাকেই রচয়িতা বলা
যায়। বাচ্চারা, বাবা তোমাদেরকে কত সহজ ভাবে বুঝিয়ে দেন। তাই অনেক খুশি হওয়া উচিত।
*আর যদি কারোর কর্মভোগের হিসাব-নিকাশ থাকে, বা যা কিছু থাকে, সেটা তো ভুগতেই হবে,
এক্ষেত্রে বাবা আশীর্বাদ করেন না।* আমাকে তোমরা ডেকেইছো - বাবা এসে আমাদেরকে অবিনাশী
উত্তরাধিকার প্রদান করো। বাবার থেকে কিসের উত্তরাধিকার পেতে চাও?
মুক্তি-জীবনমুক্তির। মুক্তি-জীবনমুক্তির দাতা হলেন এক জ্ঞানের সাগর বাবা, এইজন্য
তাঁকে জ্ঞানদাতা বলা যায়। ভগবান জ্ঞান দিয়েছিলেন, কিন্তু কবে দিয়েছিলেন, কার
দ্বারা দিয়েছিলেন, এসব কারোরই জানা নেই। সমস্ত কিছু জট পাকিয়ে দিয়েছে। কাকে জ্ঞান
শুনিয়েছিলেন, এটাও কারো জানা নেই। এখন এই ব্রহ্মা বসে আছেন - উনি এখন বুঝতে
পেরেছেন যে - আমিই নারায়ণ ছিলাম পুনরায় ৮৪ জন্ম ভোগ করেছি। ইনি হলেন প্রথম নম্বরে।
বাবা (ব্রহ্মা) বলেন যে - আমার তো চোখই খুলে গেছে। তোমরাও বলবে যে - আমাদের তো চোখই
খুলে গেছে। তৃতীয় নেত্র তো খুলে যায়, তাই না! তোমরা বলবে যে, আমাদের এখন বাবার,
সৃষ্টির চক্রের সম্পূর্ণ জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছে। আমি যা আছি, যেরকম আছি - আমার চোখ
খুলে গেছে। কত আশ্চর্যের বিষয়, তাই না! আমি আত্মা হলাম প্রথম, আবার পুনরায় আমি
নিজেকে দেহ মনে করে বসি। আত্মা বলছে যে - আমি এক শরীর ছেড়ে দ্বিতীয় শরীর গ্রহণ করি।
তবুও আমরা নিজেকে আত্মা ভুলে দেহ-অভিমানী হয়ে যাই। এজন্য এখন তোমাদেরকে
প্রথম-প্রথম এই জ্ঞান দিচ্ছি যে - নিজেকে আত্মা মনে করে বসো। অন্তরে এটা ঘুটতে থাক
যে - আমি হলাম আত্মা। আত্মা না মনে করার কারণে বাবাকে ভুলে যাও। অনুভব করতে পারো যে
- বারে বারে আমরা কিছু সময়ের জন্য দেহ-অভিমানে এসে যাচ্ছি। পরিশ্রম করতে হবে। এখানে
বসো, তো আত্ম-অভিমানী হয়েই বসো। বাবা বলছেন যে - বাচ্চারা, আমি তোমাদেরকে রাজত্ব
দিতে এসেছি। অর্ধেক কল্প তোমরা আমাকে স্মরণ করেছো। কোনও কথা সামনে আসলে তখন বলতে
যে, হায় রাম, কিন্তু ঈশ্বর বা রাম কে? এটা কারো জানা নেই। তোমাদেরকেই প্রমাণ করতে
হবে যে - জ্ঞানের সাগর, পতিত-পাবন, সকলের সদগতি দাতা হলেন ত্রিমূর্তি পরমপিতা
পরমাত্মা শিব। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকর এই তিনেরই জন্ম একসাথে হয়। শুধু শিবজয়ন্তী নয়,
ত্রিমূর্তি শিবজয়ন্তী। অবশ্যই যখন শিবের জয়ন্তী হবে তখন ব্রহ্মারও জয়ন্তী হবে।
শিবের জয়ন্তী মানায় কিন্তু ব্রহ্মা কি করেছেন! লৌকিক, পারলৌকিক আর ইনি হলেন
অলৌকিক বাবা। ইনি হলেন প্রজাপিতা ব্রহ্মা। বাবা বলছেন যে - নতুন দুনিয়ার জন্য এই
নতুন জ্ঞান এখন তোমাদের প্রাপ্ত হচ্ছে, পুনরায় এই জ্ঞান প্রায়ঃলোপ হয়ে যায়। যার
মধ্যে - রচয়িতা আর রচনার জ্ঞান নেই তো সে অজ্ঞানী হয়ে গেল, তাই না! অজ্ঞান নিদ্রাতে
ঘুমিয়ে আছে। জ্ঞানের দ্বারা হয় দিন, ভক্তির দ্বারা হয় রাত। শিবরাত্রির অর্থও জানে
না, এই জন্য শিবরাত্রিতে হলি ডে উড়িয়ে দিয়েছে।
এখন তোমরা জেনে গেছ যে - বাবা আসেনই সকলের জ্যোতি জাগরিত করতে। তোমরা এই বাতি আদি
জাগরিত করলে, তারা বুঝবে যে এদের কোনও বড়দিন পালিত হচ্ছে। এখন তোমরা জাগরিত করো
অর্থ সহকারে। তারা কি বুঝতে পারবে এসব বিষয়! তোমাদের ভাষণের দ্বারা সম্পূর্ণ বুঝতে
পারে না। এখন সমগ্র বিশ্বে রাবণের রাজত্ব চলছে, এখানে তো মানুষ কত দুঃখী হয়ে গেছে।
ঋদ্ধি সিদ্ধি যারা করে, তারাও অনেক কষ্ট দেয়। সংবাদপত্রেও পড়ে যে - এর মধ্যে
প্রেতাত্মার প্রবেশ হয়েছে। খুব দুঃখ দেয়। বাবা বলছেন যে - এই সব বিষয়ের সাথে
তোমাদের কোনও যোগসূত্র নেই। *বাবা তো সোজা কথা বলছেন - বাচ্চারা, তোমরা আমাকে স্মরণ
করো তো তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে। তোমাদের সমস্ত দুঃখ দূর হয়ে যাবে।* আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
যথার্থ রীতি বাবাকে স্মরণ করার বা আত্ম-অভিমানী হওয়ার পরিশ্রম করতে হবে, সততার সাথে
নিজের চার্ট রাখতে হবে, এতেই অনেক অভিজ্ঞতা লাভ হবে।
২ ) সবথেকে বড় দুঃখদায়ী কাঁটা হল কাম বিকার, এর উপরেই যোগবলের দ্বারা বিজয়
প্রাপ্ত করে পতিত থেকে পবিত্র হতে হবে। এছাড়ার অন্য কোনও কথার সাথে তোমাদের কোনো
যোগসূত্র নেই।
বরদান:-
বিঘ্ন প্রূফ ঝলমলে উজ্জ্বল ফরিস্তা ড্রেস ধারণ করে সর্বদা বিঘ্ন-বিনাশক ভব
*ব্যাখ্যা :-* নিজের
প্রতি আর সকলের প্রতি সর্বদা বিঘ্ন-বিনাশক হওয়ার জন্য প্রশ্নসূচক চিহ্নকে বিদায়
দেওয়া আর পূর্ণচ্ছেদ (ফুল-স্টপ) দ্বারা সকল শক্তিকে ফুল স্টক করা। সর্বদা উজ্জ্বল
ঝলমলে ফরিস্তা ড্রেস পরিধান করে থাকো, মাটির ড্রেস পরিধান করো না। সাথে-সাথে সকল
গুনের গহনা দিয়ে সজ্জিত থাকো। সর্বদা অষ্ট শক্তির শস্ত্রধারী হয়ে থাকো আর কমল
পুষ্পের আসনে নিজের শ্রেষ্ট জীবনের পা রাখো।
স্লোগান:-
অভ্যাসের উপর সম্পূর্ণ অ্যাটেনশন দাও, তাহলে ফার্স্ট ডিভিসনে নম্বর এসে যাবে।
*মাতেশ্বরী জীর
অমূল্য মহাবাক্য*
*“এই ঈশ্বরীয়
জ্ঞান সকল মনুষ্যাত্মাদের জন্য”*
সর্ব প্রথমে তো নিজের জন্য একটি মুখ্য পয়েন্ট অবশ্যই খেয়ালে রাখতে হবে, যখন এই
মনুষ্য সৃষ্টির ঝাড়ের বীজরূপ পরমাত্মা আছেন, তখন সেই পরমাত্মার দ্বারা যে জ্ঞান
প্রাপ্ত হচ্ছে, সেই জ্ঞান সকল মানুষের জন্য অত্যন্ত জরুরী। সকল ধর্মের আত্মাদের এই
জ্ঞান নেওয়ার অধিকার আছে। যদিও প্রত্যেক ধর্মের নিজস্ব জ্ঞান আছে, প্রত্যেকের
নিজ-নিজ শাস্ত্র আছে, প্রত্যেকের নিজ নিজ মত আছে, প্রত্যেকের নিজ-নিজ সংস্কার আছে,
কিন্তু এই জ্ঞান হল সকলের জন্যই। যদি তারা এই জ্ঞানকে ধারণ নাও করতে পারে, আমাদের
পরিবারে যদি নাও আসতে পারে, তবুও সকলের পিতা হওয়ার কারণে তাঁর সাথে যোগ লাগানোর
দ্বারা পবিত্র অবশ্যই হবে। এই পবিত্রতার কারণে নিজেরই সেকশনে পদ অবশ্যই পাবে, কেননা
যোগকে তো সকল মানুষ মান্যতা দেয়, অনেক মানুষ এইরকম বলে যে আমারও মুক্তি চাই, বিনা
শাস্তি ভোগ করে মুক্ত হওয়ার শক্তিও এই যোগের দ্বারা প্রাপ্ত হয়।
*“অজপাজপ অর্থাৎ
নিরন্তর ঈশ্বরীয় স্মরণ”*
এই যে কথা প্রচলিত আছে যে প্রত্যেক শ্বাস-প্রশ্বাসে অজপাজপ জপতে থাকো - এর যথার্থ
অর্থ কী ?
যখন আমরা বলি যে - "অজপাজপ", তো এর যথার্থ অর্থ হল - জপ ছাড়া প্রত্যেক
শ্বাস-প্রশ্বাসে নিজের বুদ্ধির যোগ, নিজের পরম পিতা পরমাত্মার সাথে নিরন্তর লাগানো
আর এই ঈশ্বরীয় স্মরণ প্রত্যেক শ্বাস-প্রশ্বাসে চলতে থাকে, সেই নিরন্তর ঈশ্বরীয়
স্মরণকে অজপাজপ বলা হয়। এছাড়া, কোনও মুখ দিয়ে জপ জপতে থাকা অর্থাৎ রাম রাম বলা,
মনে মনে কোনো মন্ত্র উচ্চারণ করা, এটাতো নিরন্তর চলতে পারে না। তারা মনে করে যে,
আমরা মুখ দিয়ে মন্ত্র উচ্চারণ না করলেও হৃদয় দিয়ে উচ্চারণ করি - এটাই হলো অজপাজপ।
কিন্তু এখানে সহজ একটি বিচার করার বিষয় হল - যেখানে নিজের শব্দই হল অজপাজপ, যাকে জপ
করারও প্রয়োজন নেই। আন্তরিকভাবে বসে কোনো মূর্তিকে ধ্যানও করতে হবে না, না কিছু
স্মরণ করতে হবে কেননা সেও নিরন্তর খেতে বা পান করতে থাকে না, কিন্তু আমরা যে
ঈশ্বরীয় স্মরণ করি, সেটাই নিরন্তর চলতে পারে, কেননা এটা হল খুবই সহজ। যেরকম মনে কর,
বাচ্চারা নিজের বাবাকে স্মরণ করে, তো সেই সময় বাবার ছবি সামনে নিয়ে আসার প্রয়োজন
থাকে না, কিন্তু মনের দ্বারা, বাণীর দ্বারা, কর্মের দ্বারা বাবার সমস্ত অ্যাকুপেশন,
অ্যাক্টিভিটি, গুণ সহকারে স্মরণে এসে যায়, সেই স্মরণ আসার সাথে সাথে বাচ্চার
মধ্যেও সেই এক্ট চলতে থাকে, তবেই সন শোস্ ফাদার করতে পারে। সেইরকম নিজেরও আর সকলের
স্মরণও হৃদয়ের ভিতর থেকে করতে হবে, সেই একই আসল পারলৌকিক পরমপিতা পরমাত্মার স্মরণে
থাকতে হবে, এতে উঠতে-বসতে, খেতে-পান করতে, নিরন্তর স্মরণে থাকতে পারবে। সেই স্মরণের
দ্বারাই কর্মাতীত হওয়া যায়। তাই এই ন্যাচারাল স্মরণকেই অজপাজপ বলা হয়। আচ্ছা -
ওম্ শান্তি।