17.10.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
প্রশ্নঃ -
বাবার কোন্
নামটি সাধারণ হলেও, কর্তব্য খুবই মহান ?
উত্তরঃ -
বাবাকে বলা হয় বাগিচার মালিক, নৌকার মাঝি। এই নাম কতো সাধারণ, কিন্তু যারা ডুবে
যাচ্ছে তাদের পারে নিয়ে যাওয়া, এটা কতো মহান কর্তব্য হলো। যে রকম সাঁতারুরা সাঁতরে
এক দুই জনকে হাতে হাত ধরে তীরে নিয়ে যায়, এরকমই বাবার হাত প্রাপ্ত হয়ে যাওয়াতে
তোমরা স্বর্গবাসী হয়ে যাও। এখন তোমরাও হলে মাস্টার পাটনী বা মাঝি। তোমরা প্রত্যেকের
নৌকাকে তীরে তোলার রাস্তা বলে দাও।
ওম্ শান্তি ।
স্মরণে তো
বাচ্চারা বসেই থাকো। নিজেকে আত্মা মনে করতে হবে, দেহও আছে। এমন না যে দেহ ছাড়া বসে
আছো। কিন্তু বাবা বলেন দেহ অভিমান ছেড়ে দেহী- অভিমানী হয়ে বসো। দেহী - অভিমান হলো
শুদ্ধ, দেহ অভিমান হলো অশুদ্ধ। তোমরা জানো যে দেহ- অভিমানী হওয়ার কারণে অশুদ্ধ,
অপবিত্র হয়ে গিয়েছিলাম। ডাকতেও থাকে পতিত-পাবন এসো। পবিত্র দুনিয়া ছিলো। এখন হলো
পতিত, আবার অবশ্যই পবিত্র দুনিয়া হবে। সৃষ্টির চক্র আবর্তিত হবে। যারা এই সৃষ্টি
চক্রকে জানে তাদেরকে বলা হয় স্বদর্শন চক্রধারী। তোমরা প্রত্যেকে হলে স্বদর্শন
চক্রধারী। স্ব-আত্মার সৃষ্টি চক্রের জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছে। জ্ঞান কে দিয়েছেন ? তিনিও
অবশ্যই স্বদর্শন চক্রধারী হবেন । বাবা ব্যাতীত দ্বিতীয় কোনো মানুষ শেখাতে পারে না।
বাবা অর্থাৎ সুপ্রিম আত্মাই বাচ্চাদের শেখান। তিনি বলেন বাচ্চারা, তোমরা দেহী -
অভিমানী হও। সত্যযুগে এই জ্ঞান বা শিক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। না, সেখানে
ভক্তি নেই। জ্ঞানের দ্বারা উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। বাবা শ্রীমত দেন, এই ভাবে তোমরা
শ্রেষ্ঠ হয়ে উঠবে। তোমরা জানো যে আমরা কবরস্থানের বসবাসকারী ছিলাম, এখন বাবা
শ্রেষ্ঠ পরিস্তানী(পরীদের দেশের উপযুক্ত) করে তোলেন। এই পুরানো দুনিয়া হলো কবরখানা
। মৃত্যুলোককে কবরখানাই বলা হবে। পরীস্থান নূতন দুনিয়াকে বলা হবে। ড্রামার রহস্য
বাবা বোঝান। এই সমগ্র সৃষ্টিকে খড়ের গাদা বলা হয়।
বাবা বুঝিয়েছেন, সমগ্র সৃষ্টির উপর এই সময় হলো রাবণে রাজ্য। দশহরাও পালিত হয়, কতো
খুশী হয়। বাবা বলেন সব বাচ্চাদের দুঃখ থেকে ছাড়ানোর জন্য আমাকেও পুরানো রাবণের
দুনিয়াতে আসতে হয়। একটা কথা শোনানো হয়। কেউ প্রথমে জিজ্ঞাসা করে যে তোমার সুখ চাই
না দুঃখ ? তখন বলবে সুখ চাই। সুখের দিকে গেলে সেখানে কোনো যমদূত ইত্যাদি আসতে পারে
না। এটাও একটা গল্প । বাবা বলে দেন, সুখধামে কখনো মৃত্যু আসে না, অমরপুরী হয়ে যায়।
তোমরা মৃত্যুর উপর বিজয় প্রাপ্ত করো। তোমরা সর্বশক্তিমান হয়ে ওঠো। সেখানে (সত্যযুগে)
কখনো এমন বলবে না যে, অমুকে মরে গেছে, মরণের নামও নেই। এক পোশাক পরিবর্তন করে
দ্বিতীয় ধারণ করে। সাপ যেমন খোলস পরিবর্তন করে, তোমরাও পুরানো খোলস ত্যাগ করে নূতন
খোলস অর্থাৎ শরীরে প্রবেশ করবে। সেখানে ৫ তত্ত্বও সতোপ্রধান হয়ে যাবে। সব কিছু
সতোপ্রধান হয়ে যাবে। প্রতিটা জিনিস ফল ইত্যাদি দ্যা বেস্ট (খুব ভালো) হয়ে যায়।
সত্যযুগকে বলা হয় স্বর্গ। সেখানে অনেক ধনবান ছিলো। এইরকম ধরনের সুখী বিশ্বের মালিক
কেউ হতে পারে না। এখন তোমরা জানো যে আমরাই এমনটা ছিলাম, তো কতো খুশী হওয়া উচিত।
একেক জনকে পরীর দেশের বাসিন্দা করে তুলতে হবে, অনেকের কল্যাণ করতে হবে। তোমরা খুবই
বিত্তশালী হয়ে উঠবে। তারা সকলে হলো গরীব। যতোক্ষণ না তোমাদের হাতে হাত মিলবে
ততক্ষণ স্বর্গবাসী হতে পারবে না। বাবার হাত তো সকলের প্রাপ্ত হয় না। বাবার হাত
প্রাপ্তি হয় তোমাদের। তোমাদের হাত আবার প্রাপ্তি হয় অন্যান্যদের। অন্যান্যদের হাত
আবার প্রাপ্ত হয় আরো কারোর। যেমন কোনো সাঁতারু একেক জনকে অন্য পারে নিয়ে যায়।
তোমরাও হলে মাস্টার মাঝি। অনেক মাঝি তৈরী হচ্ছে। তোমাদের ধান্ধাই হলো এটা। আমরা
প্রত্যেকের নৌকাকে তটে ভিড়িয়ে দেওয়ার রাস্তা বলে দিই। মাঝির সন্তান মাঝি হয়। নাম
কতো হালকা- মালী, মাঝি। এখন তোমরা প্র্যাকটিক্যালে দেখো। তোমরা পরীস্তানের (স্বর্গের)
স্থাপনা করছো। তোমাদের স্মৃতি সামনে দাঁড়িয়ে আছে। নীচে রাজযোগের তপস্যা, উপরে
রাজত্ব দাঁড়ানো। নামও দিলওয়ারা খুব সুন্দর। বাবা সকলের হৃদয় অধিকার করেন। সকলের
সদ্গতি করেন। হৃদয় নিতে পারার মতো কে আছে, এটা কি আর কারোর জানা আছে ! ব্রহ্মার
বাবাও হলেন শিববাবা। সকলের হৃদয় অধিকার করার অসীম জগতের বাবা। তত্ত্ব ইত্যাদি
সকলের কল্যাণ করেন, এটাও বাচ্চাদের বুঝিয়েছেন। বিভিন্ন ধর্মের লোকেদের শাস্ত্র
ইত্যাদি চলছে। তোমাদের জ্ঞান প্রাপ্ত হয়ই সঙ্গমে, আবার বিনাশ হলে তো কোনো শাস্ত্র
থাকবে না। শাস্ত্র হলো ভক্তি মার্গের চিহ্ন। এটা হলো জ্ঞান। পার্থক্য দেখলে তো !
ভক্তি হলো অপার, দেবদেবীদের পূজাতে কতো খরচা করে। বাবা বলেন, অল্প সময়ের সুখ থাকে।
যেমন-যেমন ভাবনা রাখে সেটা সম্পূর্ণ হয়। দেবীদের সাজাতে সাজাতে কারোর সাক্ষাৎকার হলে,
ব্যাস্ - খুব খুশী হয়ে যায়। লাভ কিছুই নেই। মীরারও নাম করা হয়। ভক্ত মালা হয় ।
ফিমেলদের মধ্যে মীরা, মেলদের মধ্যে নারদকে ভক্ত শিরোমণি মান্য করা হয়। বাচ্চারা,
তোমাদের মধ্যেও নম্বর অনুযায়ী হয়। মালার দানা গুলিও খুব সুন্দর । উপরে বাবা হলেন
ফুল, তারপর হলো যুগল মেরু । ফুলকে সবাই নমস্কার করে। এক-এক দানাকে নমস্কার করে।
রুদ্র যজ্ঞ রচনা করলে তখন ওখানেও বেশী রকম পূজা শিবের করে। শালিগ্রামকে এতো করে না।
সমস্ত ভাবনা শিবের দিকে থাকে, কারণ শিববাবার দ্বারাই শালিগ্রাম এই রকম তীক্ষ্মতা
পেয়েছে, যেরকম এখন তোমরা পবিত্র হচ্ছো। পতিত পাবন বাবার বাচ্চারা তোমরাও হলে
মাস্টার পতিত পাবন। যদি কাউকে রাস্তা না বলো, তবে পাই পয়সার পদ প্রাপ্ত হবে। তবুও
অন্তত বাবার সাথে মিলিত হবে ! সকলের ফাদার হলেন সেই এক। কৃষ্ণের জন্য কী আর এ'কথা
বলবে ! কৃষ্ণ কার ফাদার হবে ? কৃষ্ণকে ফাদার বলা হবে না। বাচ্চাকে কি আর ফাদার বলা
যায় ? ফাদার তখন বলা যাবে, যখন যুগল হবে, বাচ্চার জন্ম দেবে। সেই বাচ্চা ফাদার বলবে।
দ্বিতীয় কেউ বলতে পারে না। এছাড়া তো যে কোনোই বৃদ্ধকে বাপুজী বলে দেয়। এই শিববাবা
তো হলেন সকলের বাবা। গাওয়াও হয় ব্রাদরহুড (ভাতৃত্ব বোধ)। ঈশ্বরকে সর্বব্যাপী বললে
তো ফাদারহুড হয়ে যায়। বাচ্চারা, তোমাদের বড়-বড় সভাতে বোঝাতে হবে। সবসময়ই যেখানেই
বক্তৃতার জন্য যাও না কেন, যেই টপিকের উপর বক্তৃতা করতে হবে, তার উপর বিচার সাগর
মন্থন করে লেখা উচিত। বাবাকে তো বিচার সাগর মন্থন করতে হয় না, পূর্ব-কল্পে যা
শুনিয়েছিলেন, সেইটাই শুনিয়ে দেবেন। তোমাদের তো টপিকের উপর বোঝাতে হবে। প্রথমে লিখে
নিয়ে তারপর পড়তে হবে। বক্তৃতা করার পরে আবার মনে পড়ে, এই-এই পয়েন্টস্ বলা হয়নি।
এটা বোঝাতাম তো ভালো হতো। এইরকম হয়ে থাকে, কোনো না কোনো পয়েন্টস্ ভুলে যায়।
সর্বপ্রথমে তো বলা উচিত-যে ভাই - বোন আত্ম - অভিমানী হয়ে বসো। এটা তো কখনো ভুলে
যাওয়া উচিত নয়। এরকম কোনো সংবাদ লেখে না। সবার প্রথমে সবাইকে বলতে হবে আত্ম- অভিমানী
হয়ে বসো। তোমরা আত্মারা হলে অবিনাশী। এখন বাবা এসে জ্ঞান প্রদান করছেন। বাবা বলেন
আমাকে স্মরণ করলে বিকর্ম বিনাশ হবে। কোনো দেহধারীকেই স্মরণ ক'রো না। নিজেকে আত্মা
মনে করো, আমি হলাম সেখানকার বাসিন্দা। আমাদের পিতা হলেন কল্যাণকারী শিব, আমরা অর্থাৎ
আত্মারা হলাম ওঁনার সন্তান । বাবা বলেন, আত্ম - অভিমানী হও। আমি হলাম আত্মা। বাবার
স্মরণে বিকর্ম বিনাশ হবে। গঙ্গায় স্নান ইত্যাদিতে বিকর্ম বিনাশ হবে না। বাবার
ডায়রেক্শন হলো তোমরা আমাকে স্মরণ করো। মানুষ গীতা পড়ে - "যদা যদাহি ধর্মস্য..."
বলে, কিন্তু অর্থ কিছুই জানে না। তাই বাবা সার্ভিসের রায় দেন- শিববাবা বলেন, নিজেকে
আত্মা মনে করে শিববাবাকে স্মরণ করো। মানুষ সেটাকে মনে করে কৃষ্ণ বলেছে। তোমরা বলবে
যে, শিববাবা আমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের বলেন- আমাকে স্মরণ করো। যত আমাকে স্মরণ করবে
ততই সতোপ্রধান হয়ে উচ্চ পদ প্রাপ্ত করবে। এইম্- অবজেক্টও সামনেই। পুরুষার্থের
দ্বারা উচ্চ পদ প্রাপ্ত করতে হবে। বিভিন্ন ধর্মালম্বীরা নিজেদের ধর্মের মধ্যে উচ্চ
পদ প্রাপ্ত করবে, আমরা অন্য ধর্মে যাই না (পরমধামে প্রত্যেক ধর্মের আলাদা সারি) ।
তারা তো আসেই পরবর্তী সময়ে। তারা সেটাও জানে, এর পূর্বে প্যারাডাইস ছিলো। ভারত হল
সবচেয়ে প্রাচীন। কিন্তু কবে ছিলো, সেটা কেউ জানে না। তাঁদেরকে ভগবান ভগবতীও বলে।
কিন্তু বাবা বলেন, ভগবান ভগবতী বলতে পারবে না। ভগবান তো হলাম একমাত্র আমি। আমরা
হলাম ব্রাহ্মণ। বাবাকে তো ব্রাহ্মণ বলা হবে না। তিনি হলেন উচ্চতমের চেয়েও উচ্চ,
ওঁনার শরীরের নাম নেই। তোমাদের সবার শরীরের নাম হয়। আত্মা তো হলো আত্মাই। তিনিও
হলেন পরমাত্মা। সেই আত্মার নাম হলো শিব, তিনি হলেন নিরাকার। না সূক্ষ্ম না স্থূল
শরীর আছে। এমন না যে তাঁর আকার নেই। যার নাম আছে, আকারও অবশ্যই আছে। নাম-রূপ
ব্যাতীত কোনো জিনিস হয়ই না। পরমাত্মা বাবাকে নাম রূপের থেকে পৃথক বলা কত বড়
অজ্ঞানতা। বাবাও নাম- রূপের থেকে পৃথক, বাচ্চারাও নাম রূপ থেকে পৃথক - তবে তো কোনো
সৃষ্টি হবে না। তোমরা এখন ভালো ভাবে বোঝাতে পারো। যারা গুরু, তারা পরে বুঝবে। এখন
হলো তাদের বাদশাহী (রাজত্ব) । তোমরা এখন ডবল অহিংস হয়েছো। অহিংসা পরম দেবী- দেবতা
ধর্ম, ডবল অহিংসক গাওয়া হয়েছে। কারোর উপর হাত তোলা, দুঃখ দেওয়া সেটাও সেটাও হিংসা
হয়ে গেল। বাবা প্রতিদিন বোঝাতে থাকেন- মনসা-বাচা-কর্মণা কাউকেই দুঃখ দিতে নেই।
মনসাতে আসবে অবশ্যই। সত্যযুগে মনসাতেও আসে না। এখানে তো মন্সা - বাচা - কর্মণা আসে।
এই শব্দ তোমরা সেখানে শুনবেও না। না সেখানে কোনো সৎসঙ্গ ইত্যাদি হয়। সৎসঙ্গ হয়ই সৎ
দ্বারা, সৎ হওয়ার জন্য। সত্য হলেন একমাত্র বাবা। বাবা বসে নর থেকে নারায়ণ হওয়ার কথা
শোনান, যার দ্বারা তোমরা নারায়ণ হয়ে ওঠো। আবার ভক্তি মার্গে সত্য নারায়ণের কথা
খুবই প্রেম পূর্বক শোনে। তোমাদের স্মরণিক রূপে দিলওয়ারা মন্দির দেখো কতো সুন্দর।
অবশ্যই সঙ্গমযুগে দিল অর্থাৎ হৃদয় নিয়ে থাকবে। আদি দেব আর দেবী আর বাচ্চারা বসে
আছে। এটা হলো রিয়েল( সত্যিকারের) স্মৃতি চিহ্ন। তাদের হিস্ট্রি - জিওগ্রাফী কেউ
জানে না তোমরা ছাড়া। তোমাদেরই স্মৃতি চিহ্ন। এটাও হলো ওয়ান্ডার (বিস্ময়কর)।
লক্ষ্মী-নারায়ণের মন্দিরে গেলে তোমরা বলবে, এরূপ আমরা হতে চলেছি। ক্রাইস্টও (ক্রাইস্টের
আত্মা) এখানে আছে। অনেকে বলে ক্রাইস্ট বেগর (ভিক্ষুক) রূপে আছে। তমোপ্রধান অর্থাৎ
বেগারই হল তাই না! পুনর্জন্ম তো অবশ্যই ধারণ করবে ! শ্রীকৃষ্ণ প্রিন্স, তিনিই হলেন
এখন বেগর। সুন্দর আর অসুন্দর। তোমরাও জানো - ভারত কি ছিলো, এখন কি হয়েছে। বাবা তো
হলেন দীন-দয়াল। মানুষ গরীবকে দান-পূণ্যও করে ঈশ্বরের নামে। অনেকেরই চাল-ডাল পাওয়া
হয় না। তোমরা ক্রমশ দেখবে বড়-বড় বিত্তশালীদেরও চাল-ডাল-আটা-ময়দা ইত্যাদির
প্রাপ্তি হবে না। গ্রামে-গ্রামেও বিত্তশালী লোক থাকে ! যাদের আবার ডাকাতরা লুটে নেয়।
লক্ষ্যে পার্থক্য তো থাকে। বাবা বলেন, পুরুষার্থ এমন করো যেন নম্বর ওয়ানে যেতে পারো।
টিচারের কাজ হলো সাবধান করা। পাশ উইথ অনার হতে হবে। এটা হলো অসীম জগতের পাঠশালা। এটা
হলোই রাজত্ব স্থাপন করার জন্য রাজযোগ। তবুও পুরানো দুনিয়ার বিনাশ হতে হবে। তা না হলে
রাজত্ব কোথায় করবে! এটা তো হলোই পতিত ধরনী। মানুষ বলে- গঙ্গা হলো পতিত- পাবনী। বাবা
বলেন এই সময় ৫ তত্ত্ব সব হলো তমোপ্রধান পতিত। সমস্ত নোংরা আবর্জনা ইত্যাদি সেখানে
গিয়ে পড়ে। মাছ ইত্যাদি সেখানে থাকে। জলেরও এক ধরনের যেন দুনিয়া আছে। জলে কতো জীব
থাকে। বড়-বড় সাগর থেকেও কতো খাদ্য পাওয়া যায়। গ্রামই বলা যায় ! গ্রামকে আবার
পতিত-পাবন কি করে বলবে! বাবা বোঝান, মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, পতিত-পাবন হলেন
একমাত্র বাবা। তোমাদের আত্মা আর শরীর পতিত হয়ে গেছে, এখন আমাকে স্মরণ করলে পবিত্র
হয়ে যাবে। তোমরা বিশ্বের মালিক-দেখতে খুব সুন্দর হয়ে যাও। সেখানে আর দ্বিতীয় কোনো
ভূ-খন্ড নেই। ভারতেরই অলরাউন্ডার পার্ট আছে। তোমরা সবাই হলে অলরাউন্ডার। নাটকে
নম্বর অনুযায়ী অ্যাক্টর্স আসতে-যেতে থাকে। এটাও সেই রকম। বাবা বলেন, তোমরা মনে করো
ভগবান আমাদের পড়াচ্ছেন। আমরা হলাম পতিত - পাবন গড ফাদারলী স্টুডেন্ট, এর মধ্যে সব
এসে গেল। পতিত - পাবনও হয়ে গেল, গুরু - টিচারও হয়ে গেল। ফাদারও হয়ে গেল। তাও আবার
হলো নিরাকার। এটা হলো ইন-কর্পোরিয়াল গড ফাদারলী ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি। কতো
সুন্দর নাম । ঈশ্বরের মহিমার কতো সুখ্যাতি করে। যখন বিন্দু শোনে, তখন অবাক হয়ে যায়
। ঈশ্বরের মহিমা এতো করে আর তিনি কিনা "বিন্দু" ! বিন্দুর মধ্যে কতো পার্ট ভরা হয়ে
আছে। এখন বাবা বলেন, দেহ থাকা সত্ত্বেও, গার্হস্থ্য জীবন শৈলীর মধ্যে থেকেও মামেকম্
(শুধুমাত্র আমাকে) স্মরণ করো। ভক্তি মার্গে যারা নৌধা ভক্তি (নয়টি পর্যায়ে
সম্পূর্ণ ভক্তি) করে, সেটাকে বলা হয়- সতোপ্রধান নৌধা ভক্তি। কতো জোরালো ভক্তি হয়।
এখন আবার জোরালো গতি-বেগ চাই - স্মরণের। জোরালো স্মরণ করে যারা, তাদেরই নাম উচ্চ
পর্যায়ের হবে। বিজয় মালার দানা হবে। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) নর
থেকে নারায়ণ হওয়ার জন্য প্রতিদিন সত্য বাবার থেকে শুনতে হবে। সৎসঙ্গ করতে হবে।
কখনো মনসা-বাচা-কর্মণা কাউকে দুঃখ দিতে নেই।
২ ) বিজয় মালার দানা হতে গেলে বা পাশ উইথ অনার হতে গেলে স্মরণের গতি-বেগ জোরালো
করতে হবে। মাস্টার পতিত-পাবন হয়ে সবাইকে পবিত্র করে তোলার সেবা করতে হবে।
বরদান:-
মরজীবা (পার্থিব জগতের প্রতি মৃত্যু) জন্মের স্মৃতির দ্বারা সর্ব কর্ম বন্ধনকে
সমাপ্তকারী কর্মযোগী ভব
এই মরজীবা দিব্য জন্ম
কর্ম বন্ধনের জন্ম নয়, এটা হলো কর্মযোগী জন্ম। এই অলৌকিক দিব্য জন্মে ব্রাহ্মণ
আত্মা পরতন্ত্র নয়, স্বতন্ত্র । এই দেহ লোনে (ধার নেওয়া হয়েছে) প্রাপ্ত হয়েছে,
সমগ্র বিশ্বের সেবার জন্য। পুরানো শরীরে বাবা শক্তি ভরে নিয়ে চলছেন, দায়িত্ব বাবার,
নাকি তোমাদের ? বাবা ডায়রেক্শন দিয়েছেন কর্ম করো, তোমরা হলে স্বতন্ত্র, চালানোর
যিনি তিনিই চালাচ্ছেন। এই বিশেষ ধারণার দ্বারা কর্ম বন্ধনকে সমাপ্ত করে কর্মযোগী হয়ে
ওঠো।
স্লোগান:-
সময়ের সমীপতার ফাউন্ডেশন হল - অসীম জগতের বৈরাগ্য বৃত্তি।