27.10.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
প্রশ্নঃ -
কোন্ অ্যাক্ট
বা পুরুষার্থ এখনই চলে, সারা কল্পে নয় ?
উত্তরঃ -
স্মরণের যাত্রায় থেকে প্রত্যেক আত্মাকে পাবন বানানোর পুরুষার্থ, সম্পূর্ণ দুনিয়াকে
পতিত থেকে পবিত্র বানানোর অ্যাক্ট সম্পূর্ণ কল্পে এই সঙ্গম সময়েই চলে । এই অ্যাক্ট
প্রতি কল্পে রিপিট হয় । বাচ্চারা, তোমরা এই অনাদি অবিনাশী ড্রামার আশ্চর্য রহস্যকে
বুঝতে পারো ।
ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের বাবা
বসে তাঁর আত্মারূপী বাচ্চাদের বোঝান, তাই আত্মারূপী বাচ্চাদের দেহী অভিমানী বা
আত্মিক অবস্থাতে নিশ্চয়বুদ্ধি হয়ে বসতে বা শুনতে হবে । বাবা বুঝিয়েছেন যে - আত্মাই
এই অঙ্গপ্রত্যঙ্গের দ্বারা শোনে, এইকথা দৃঢ়ভাবে স্মরণে রেখো । সদগতি আর দুর্গতির এই
চক্র তো প্রত্যেকের বুদ্ধিতে থাকাই উচিত, যাতে জ্ঞান আর ভক্তি সব এসে যায় । চলতে -
ফিরতে একথা যেন বুদ্ধিতে থাকে যে, জ্ঞান আর ভক্তি, সুখ আর দুঃখ, দিন আর রাতের খেলা
কিভাবে চলতে থাকে । আমরা ৮৪ জন্মের জন্য অভিনয় করি । বাবার স্মরণ থাকে, তাই
বাচ্চাদেরও স্মরণে থাকার পুরুষার্থ করান, এতে তোমাদের বিকর্মও বিনাশ হয়, আর তোমরা
রাজ্যও পাও । তোমরা জানো যে, এই পুরানো দুনিয়া এখন শেষ হয়ে যাবে । কেউ যেমন পুরানো
বাড়ীতে থাকলে, নতুন বাড়ী তৈরী করলে মন থেকে নিশ্চিন্ত হয় যে - এখন আমরা নতুন বাড়ীতে
যাবো । তবুও বাড়ী বানানোতে দু' বছরও লেগে যায় । নতুন দিল্লীতে যেমন গভর্নমেন্ট
হাউস ইত্যাদি তৈরী হয়, তখন অবশ্যই গভর্নমেন্ট বলবে আমরা ট্রান্সফার হয়ে নতুন
দিল্লীতে যাবো । বাচ্চারা, তোমরা জানো যে, অসীম জগতের এই সম্পূর্ণ দুনিয়া এখন পুরানো
। এখন নতুন দুনিয়াতে যেতে হবে । বাবা যুক্তি বলে দেন - তেমন তেমন যুক্তিতে বুদ্ধিকে
স্মরণের যাত্রায় লাগাতে হবে । আমাদের এখন ঘরে ফিরে যেতে হবে তাই সুইট হোমকে স্মরণ
করতে হবে, যার জন্য মানুষ মাথা খুঁটে মরে । এও বাচ্চাদের বোঝানো হয়েছে যে, এই
দুঃখধাম এখন শেষ হয়ে যাবে । যদিও তোমরা এখন এখানে আছো, তবুও তোমাদের এই পুরানো
দুনিয়া পছন্দ নয় । আমাদের আবার নতুন দুনিয়াতে যেতে হবে । যদিও সামনে কিছুই চিত্র
নেই, তবুও তোমরা বুঝতে পারো যে, এখন পুরানো দুনিয়ার অন্তিম সময় । এখন আমরা নতুন
দুনিয়াতে যাবো । ভক্তিমার্গের তো কতো চিত্র আছে । তার তুলনায় তোমাদের তো কতো অল্প ।
তোমাদের এ হলো জ্ঞান মার্গের চিত্র, আর ওইসব হলো ভক্তিমার্গের । চিত্রের উপরই
সম্পূর্ণ ভক্তি হয় । তোমাদের তো এখন আসল চিত্র, তাই তোমরা বোঝাতে পারো - ভুল কি আর
ঠিক কি । বাবাকে বলা হয় নলেজফুল । তোমাদের এই জ্ঞান আছে । তোমরা জানো যে, আমরা
সম্পূর্ণ কল্পে কতবার জন্ম নিয়েছি । এই চক্র কিভাবে ঘুরতে থাকে । তোমাদের নিরন্তর
বাবার স্মরণ আর এই জ্ঞানে থাকতে হবে । বাবা তোমাদের সম্পূর্ণ রচনা আর রচয়িতার জ্ঞান
দান করেন । তাই বাবারও স্মরণ থাকে । বাবা বুঝিয়েছেন যে - আমি তোমাদের বাবা, টিচার
এবং সদ্গুরু । তোমরা কেবল এই বোঝাও যে - বাবা বলেন, তোমরা আমাকে পতিত পাবন,
উদ্ধারকর্তা, গাইড বলো, তাই না । কোথাকার গাইড ? শান্তিধাম, মুক্তিধামের । ওখান
পর্যন্ত বাবা নিয়েই যাবেন । বাবা বাচ্চাদের পড়িয়ে, শিখিয়ে, ফুল বানিয়ে ঘরে নিয়ে
গিয়ে ছাড়বেন । বাবা ছাড়া তো আর কেউই নিয়ে যেতে পারবে না, যতই যেই তত্ব জ্ঞানী বা
ব্রহ্ম জ্ঞানী হোক না কেন । ওরা মনে করে আমরা ব্রহ্মতে লীন হয়ে যাবো । তোমাদের
বুদ্ধিতে আছে যে, শান্তিধামে হলো আমাদের ঘর । ওখানে গিয়ে আমরা প্রথম দিকে নতুন
দুনিয়াতে আসবো । ওরা সব পরের দিকে আসবে । তোমরা জানো যে, কিভাবে নম্বর অনুযায়ী সব
ধর্ম আসে । সত্যযুগ আর ত্রেতাযুগে কাদের রাজ্য । তাদের ধর্ম, শাস্ত্র কি ? সূর্যবংশী
আর চন্দ্রবংশীদের তো একটাই শাস্ত্র, কিন্তু ওই গীতা কোনো প্রকৃত গীতা নয়, কারণ
তোমরা যে জ্ঞান পাও তা এখানেই শেষ হয়ে যায় । ওখানে কোনো শাস্ত্র থাকে না । দ্বাপর
থেকে যে ধর্ম আসে, তাদের শাস্ত্র চলতে থাকে । তাই চলে আসছে । এখন আবার যখন এক
ধর্মের স্থাপনা হয়, তখন বাকি সব বিনাশ হয়ে যাবে । মানুষ বলতে থাকে, এক রাজ্য, এক
ধর্ম, এক ভাষা, এক মত হোক । তা তো একের দ্বারাই স্থাপন হতে পারে । বাচ্চারা,
তোমাদের বুদ্ধিতে সত্যযুগ থেকে শুরু করে কলিযুগের অন্ত পর্যন্ত সমস্ত জ্ঞান আছে ।
বাবা বলেন যে, এখন তোমরা পবিত্র হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করো । তোমাদের পতিত হতে
অর্ধেক কল্প সময় লেগেছে । বাস্তবে সম্পূর্ণ কল্পে এই স্মরণের যাত্রা তোমরা এখনই শেখো
। ওখানে এইসব নেই । দেবতারা পতিত থেকে পবিত্র হওয়ার পুরুষার্থ করে না । ওরা প্রথমে
এখান থেকে রাজযোগ শিখে পবিত্র হয়ে যায় । ওকে বলা হয় সুখধাম । তোমরা জানো যে,
সম্পূর্ণ কল্পে আমরা কেবল এখনই স্মরণের যাত্রার পুরুষার্থ করি । তারপর পতিত দুনিয়াকে
পবিত্র বানানোর জন্য এই পুরুষার্থ অথবা যেই অভিনয় চলে - আবার পরের কল্পে রিপিট হবে
। চক্র তো তোমরা ঘুরবেই, তাই না । তোমাদের বুদ্ধিতে এইসব কথা আছে যে - এ হলো নাটক,
সমস্ত আত্মারয় পার্টধারী, যাদের মধ্যে অবিনাশী পার্ট ভরা আছে । ওই ড্রামা যেমন চলতে
থাকে কিন্তু ওই ফিল্ম ঘষে পুরানো হয়ে যায় । এ হলো অবিনাশী ড্রামা । এও আশ্চর্যের ।
কতো ছোটো আত্মার মধ্যে সমস্ত পার্ট ভরা আছে । বাবা তোমাদের কতো গুহ্য - গুহ্য,
সূক্ষ্ম কথা বোঝাতে থাকেন । এখনো যদি কেউ শোনে তাহলে বলবে, তোমরা এ তো খুব
আশ্চর্যের কথা বোঝাও । আত্মা কি, তা এখন বুঝেছো । শরীরকে তো সবাই বুঝতে পারে ।
ডাক্তাররা তো মানুষের হার্ট বের করে বাইরে রাখে, আবার জায়গা মতো লাগিয়ে দেয়, কিন্তু
আত্মার কথা কেউই জানে না । আত্মা কিভাবে পতিত থেকে পাবন হয়, একথাও কেউ জানে না ।
পতিত আত্মা, পবিত্র আত্মা, মহান আত্মা, বলা হয়, তাই না । সবাই ডাকতে থাকে যে, হে
পতিত পাবন, তুমি এসে আমাকে পবিত্র বানাও, কিন্তু আত্মা কিভাবে পবিত্র হবে -- তার
জন্য চাই অবিনাশী সার্জন । আত্মা তাঁকেই ডাকে, যিনি পুনর্জন্ম রহিত । আত্মাকে
পবিত্র বানানোর ওষুধ একমাত্র তাঁর কাছেই আছে । তাই বাচ্চারা, তোমাদের খুশীতে
রোমাঞ্চিত হয়ে যাওয়া উচিত -- ভগবান তোমাদের পড়ান, অবশ্যই তিনি তোমাদের ভগবান -
ভগবতী তৈরী করবেন । ভক্তিমার্গে এই লক্ষ্মী - নারায়ণকে ভগবান - ভগবতী বলা হয় । তাই
যথা রাজা - রানী তথা প্রজা থাকবে, তাই না । বাবা তোমাদের নিজের সমান পবিত্র বানান ।
তিনি জ্ঞানের সাগরও বানান, তারপর নিজের থেকেও বেশী, বিশ্বের মালিক বানান । পবিত্র,
অপবিত্রের সম্পূর্ণ অ্যাক্ট তোমাদেরই করতে হয় । তোমরা জানো যে, বাবা এসেছেন আবার
নতুন করে আদি সনাতন দেবী দেবতা ধর্ম স্থাপনা করতে । যার জন্য বলা হয়, এই ধর্ম
প্রায় লোপ হয়ে গিয়েছে । এর উদাহরণ বটের বৃক্ষের সঙ্গে দেওয়া হয়েছে । শাখা অনেক
বের হয়, কিন্তু কাণ্ড নেই । এও কতো ধর্মের শাখা বের হয়েছে, ফাউণ্ডেশন দেবতা ধর্ম
আর নেই । প্রায় লোপ হয়ে গেছে । বাবা বলেন যে, সেই ধর্ম আছে কিন্তু ধর্মের নাম
ঘুরিয়ে দিয়েছে । পবিত্র না হওয়ার কারণে নিজেদের দেবতা বলে পরিচয় দিতে পারে না । আর
এই না থাকার কারণেই বাবা এসে আবার রচনা করেন । এখন তোমরা বুঝতে পারো যে, আমরা
পবিত্র দেবতা ছিলাম । এখন পতিত হয়ে গেছি । প্রতিটা জিনিসই এভাবে হয় । বাচ্চারা,
তোমাদের এই কথা ভুলে যাওয়া উচিত নয় । প্রথম মুখ্য লক্ষ্য হলো বাবাকে স্মরণ করার,
যেই স্মরণে তোমাদের পবিত্র হতে হবে । সবাই এমন কথা বলে যে, আমাকে পবিত্র করো । এমন
বলবে না যে, আমাকে রাজা - রানী করো বাচ্চারা, তোমাদের তাই অত্যন্ত নেশা থাকা উচিত
তোমরা তো জানো যে, আমরা ভগবানের সন্তান । এখন তোমাদের অবশ্যই উত্তরাধিকার পাওয়া
উচিত । কল্প - কল্প তোমরা এই অভিনয় করে এসেছো । এই বৃক্ষ বৃদ্ধি পেতেই থাকবে বাবা
চিত্র দেখিয়েও বুঝিয়েছেন যে, এ হলো সদগতির চিত্র । তোমরা মুখেও বোঝাও আবার চিত্র
দেখিয়েও বোঝাও । তোমাদের এই চিত্রের মধ্যে সৃষ্টির আদি - মধ্য এবং অন্তের রহস্য এসে
যায় । বাচ্চারা, যারা সেবা করে, তারা নিজের সমান বানাতে থাকে । নিজে পড়ে অন্যকে
পড়ানোর চেষ্টা করা উচিত । যতো বেশী পড়বে, তত উঁচু পদ পাবে । বাবা বলেন যে, আমি তো
চেষ্টা করাই কিন্তু ভাগ্যেও তো থাকা চাই, তাই না । প্রত্যেকেই ড্রামা অনুসারে
পুরুষার্থ করতে থাকে । এই ড্রামার রহস্যও বাবাই বুঝিয়ে বলেছেন । বাবা যেমন বাবাও,
তেমনই টিচারও । সাথে করে নিয়ে যাওয়ার মতো প্রকৃত সদগুরুও তিনিই । বাবা হলেন
অকালমূর্ত । আত্মার এ হলো আসন, যার দ্বারা আত্মা অভিনয় করে । তাই বাবারও তো অভিনয়
করার জন্য, সদগতি করার জন্য আসন চাই, তাই না । বাবা বলেন, আমাকে সাধারণ শরীরেই আসতে
হবে । আড়ম্বর কিছুই রাখতে পারি না । ওই গুরুদের অনুসরণকারীরা গুরুদের জন্য সোনার
সিংহাসন, মহল ইত্যাদি বানায় । তোমরা কি বানাবে ? তোমরা তো বাচ্চাও, আবার স্টুডেন্টও
। তাহলে তোমরা তাঁর জন্য কি করবে ? কোথায় বানাবে ? ইনি তো সাধারণ, তাই না । বাবা
বাচ্চাদের এও বোঝান যে - তোমরা পতিতাদেরও সেবা করো । গরীবদেরও তো উদ্ধার করতে হবে ।
বাচ্চারা চেষ্টাও করে, তারা বেনারসেও গিয়েছে । ওদের যদি তোমরা উদ্ধার করো, তাহলে
বলবে যে - বাহ বিকেরা তো জাদু করে, পতিতাদেরও জ্ঞান দান করে । তাদেরও বোঝাতে হবে
যে, তোমরা এখন এই কাজ ছেড়ে শিবালয়ের মালিক হও । এই জ্ঞান শিখে তারপর অন্যদেরও শেখাও
। পতিতারাও তখন অন্যদের শেখাতে পারে । শিখে যখন বুদ্ধিমান হয়ে যাবে তখন নিজের
অফিসারদেরও বোঝাবে । হলে চিত্র আদি রেখে বসে যদি বোঝাও, তখন সবাই বলবে যে - বাঃ,
পতিতাদেরও শিবালয়বাসী বানানোর জন্য বি. কে'রা নিমিত্ত হয়েছে । বাচ্চাদের এই সেবার
জন্য ইচ্ছা থাকা উচিত । তোমাদের উপর অনেক দায়িত্ব । অহল্যা, কুব্জা, ভিলনী, গণিকা,
এদের সকলকে উদ্ধার করতে হবে । এমন মহিমাও আছে যে, সাধুদেরও উদ্ধার করা হয়েছিলো । এ
তো বুঝতেই পারো যে, সাধুদের উদ্ধার হবে পরের দিকে । এখনই যদি তাঁরা তোমাদের হয়ে
যায়, তাহলে তো ভক্তিমার্গ সমাপ্ত হয়ে যাবে । তখন আমূল পরিবর্তন হয়ে যাবে ।
সন্ন্যাসীরাও তাঁদের আশ্রম ছেড়ে দেবে এই বলে যে - ব্যস্, আমরা হেরে গেছি । এ পরের
দিকে হবে । বাবা নির্দেশ দেন - তোমরা এমন এমন করো । বাবা তো বাইরে কোথাও যেতে পারেন
না । বাবা বলবেন, বাচ্চাদের কাছে গিয়ে শেখো । বোঝানোর যুক্তি তো তিনি সব বাচ্চাদের
বলতেই থাকেন । তোমরা এমন কাজ করে দেখাও যে, মানুষের মুখ থেকে বাহ বাঃ শব্দ বের হয়
। এমন গায়নও আছে যে, শক্তিদের মধ্যে ভগবানই জ্ঞান বাণ ভরেছিলেন । এ হলো জ্ঞান বাণ ।
তোমরা জানো যে, এই বাণ তোমাদের এই দুনিয়া থেকে ওই দুনিয়ায় নিয়ে যায় । তাই বাচ্চারা,
তোমাদের অনেক বিশাল বুদ্ধির হতে হবে । এক জায়গায় যদি তোমাদের নাম হয়, গভর্নমেন্ট
যদি জানতে পারে তাহলে অনেক প্রভাব পড়বে । এক জায়গা থেকেই যদি পাঁচ - সাতজন ভালো
অফিসার্স বের হয় তাহলে খবরের কাগজে দিতে শুরু করবে । তখন বলবে, এই বিকেরা
পতিতাদেরও এই পতিতা বৃত্তি ছাড়িয়ে শিবালয়ের মালিক বানায় । তখন অনেক বাহ - বাহ হবে ।
তারা তখন ধন ইত্যাদি নিয়ে আসবে । তোমরা অর্থ নিয়ে কি করবে ? তোমরা বড় বড় সেন্টার
খুলবে । অর্থ দিয়ে চিত্র ইত্যাদি বানানো হয় । মানুষ দেখে খুব আশ্চর্য হয়ে যাবে ।
তখন বলবে, প্রথমে তো তোমাদের প্রাইজ দেওয়া উচিত । গভর্নমেন্ট হাউসেও তোমাদের চিত্র
নিয়ে যাবে । তখন অনেক ভালোবাসার মানুষ তৈরী হবে । মনেও এই চাহিদা থাকা উচিত -
কিভাবে মানুষকে দেবতা বানানো যায় এ তো জানোই, যারা পূর্ব কল্পে নিয়েছিলো, তারাই
নেবে । এতো অর্থ ইত্যাদি সবকিছু ছেড়ে দেয়, এ অনেক পরিশ্রম । বাবা বলেছেন - আমার
নিজের ঘর - পরিবার, মিত্র - সম্বন্ধী আদি কিছুই নেই, আমার কি স্মরণে আসবে, বাবা আর
তোমরা বাচ্চারা ছাড়া আমার কেউই নেই । সব এক্সচেঞ্জ করে দিয়েছি । বাকি বুদ্ধি আর
কোথায় যাবে । বাবাকে রথ (শরীর ) দিয়েছি । যেমন তোমরা তেমন আমিও পড়ছি । কেবল এই রথ
বাবাকে ধার দিয়েছি । তোমরা জানো যে, আমরা পুরুষার্থ করছি প্রথম প্রথম সূর্যবংশী
পরিবারে আসার জন্য । এই হলো নর থেকে নারায়ণ হওয়ার কথা । আত্মাই তৃতীয় নেত্র পায় ।
আমরা আত্মারা এই পাঠ গ্রহণ করে, এই জ্ঞান শুনে দেবতা তৈরী হচ্ছি । এরপর আবার রাজার
রাজা হবো । শিববাবা বলেন যে, আমি তোমাদের ডবল মুকুটধারী তৈরী করি । ড্রামা অনুসারে,
পূর্ব কল্পের মতো তোমাদের বুদ্ধি এখন কতো উন্মুক্ত হয়েছে । এখন স্মরণের যাত্রায়
থাকতে হবে । এই সৃষ্টিচক্রকেও স্মরণ করতে হবে । পুরানো দুনিয়াকে বুদ্ধির দ্বারা
ভুলতে হবে । আচ্ছা ।
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন
নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বুদ্ধিতে যেন থাকে যে, এখন আমাদের জন্য নতুন দুনিয়া স্থাপন হচ্ছে, এই দুঃখের দুনিয়া
শেষ হলো বলে । এই দুনিয়া একদম পছন্দ হওয়া উচিত নয় ।
২ ) বাবা যেমন নিজের সবকিছুই এক্সচেঞ্জ করে দিয়েছিলেন, তাই বুদ্ধি অন্য কোথাও যেত
না । এমনই বাবাকে অনুসরণ করতে হবে । মনে যেন এই ইচ্ছাই থাকে যে, আমরা মানুষকে দেবতা
বানানোর সেবা করবো, এই পতিতালয়কে শিবালয় তৈরী করবো ।
বরদান:-
মুরলীর সুরের দ্বারা মায়াকে সমর্পণ করিয়ে মাস্টার মুরলীধর ভব
মুরলী তো অনেক শুনেছো,
এখন এমন মুরলীধর হও, যাতে মায়া মুরলীর সুরের সামনে সমর্পিত হয়ে যায় । মুরলীর
রহস্যময় সুর যদি সর্বদা বাজাতে থাকো, তাহলে মায়া সর্বদার জন্য সমর্পিত হয়ে যাবে ।
মায়ার মুখ্য স্বরূপ কারণের রূপে আসে । মুরলীর দ্বারা যখন কারণের নিবারণ হয়ে যাবে,
তখন মায়া সর্বদার জন্য সমাপ্ত হয়ে যাবে । কারণ সমাপ্ত অর্থাৎ মায়াও সমাপ্ত ।
স্লোগান:-
অনুভাবী স্বরূপ হও, তাহলে চেহারায় খুশীর ঝলক দেখা যাবে ।