23.10.2020 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


প্রশ্নঃ -
ভবিষ্যতে দেবতা হওয়ার জন্য বাচ্চাদেরকে কোন্ বিষয়ের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে ?

উত্তরঃ -
কখনো কোনো ব্যাপারে রেগে যাওয়া কিংবা মুখ ভার করা যাবে না। কাউকে দুঃখ দেওয়া যাবে না। দেবতা হতে চাইলে মুখ দিয়ে যেন সর্বদাই ফুল ঝরে। যদি কাঁটা কিংবা পাথর বের হয়, তাহলে বোঝা যাবে যে পাথরের মতোই রয়েছে। খুব ভালো ভালো গুণ ধারণ করতে হবে। এখানেই সর্বগুণ সম্পন্ন হতে হবে। শাস্তি পেলে ভালো পদ পাবে না ।

ওম্ শান্তি ।
আগামী নতুন বিশ্ব বা নতুন দুনিয়ার মালিক আত্মিক সন্তানদেরকে আত্মিক পিতা স্বয়ং বসে থেকে বোঝাচ্ছেন। এটা তো বাচ্চারা বুঝেছে যে, বাবা এসেছেন সীমাহীন উত্তরাধিকার দিতে। আমরা আগে এর যোগ্য ছিলাম না। মানুষ বলে - হে প্রভু, আমার কোনো যোগ্যতাই নেই, আমাকে যোগ্য বানিয়ে দাও। বাবা এখন বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন - তোমরাও মানুষ, আর এই দেবতারাও মানুষ। কিন্তু এনাদের মধ্যে দিব্যগুণ আছে। তাই এনাদেরকেই সত্যিকারের মানুষ বলা যাবে। মানুষের মধ্যে আসুরিক গুণ থাকার জন্য তাদের আচার আচরণ পাশবিক হয়ে যায়। যদি দিব্যগুণ না থাকে, তাহলে বলা যাবে যে তার মধ্যে আসুরিক গুণ রয়েছে। এখন পুনরায় বাবা এসে তোমাদেরকে শ্রেষ্ঠ দেবতা বানাচ্ছেন। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ হলো সত্যভূমির নিবাসী সত্যিকারের মানুষ। এনাদেরকেই দেবতা বলা হয়। এনাদের মধ্যে দিব্যগুণ রয়েছে। হয়তো মানুষ গান করে - হে পতিত পাবন, তুমি এসো। কিন্তু আগে পবিত্র রাজারা কেমন ছিল এবং তারপর সেই রাজারা কিভাবে পতিত হলো - এইসব রহস্য কেউই জানে না। ওটা হলো ভক্তির পথ। জ্ঞানমার্গের ব্যাপারে কেউই জানে না। বাচ্চারা, তোমাদেরকেই এখন বাবা বোঝাচ্ছেন এবং এইরকম বানাচ্ছেন। এই দেবতারাও সত্যযুগে কর্ম করত কিন্তু পতিত কর্ম করত না। তাদের মধ্যে দিব্যগুণ ছিল। যারা কোনো পতিত কর্ম করবে না, তারাই স্বর্গবাসী হবে। নরকবাসীদের দ্বারা মায়া পতিত কর্ম করায়। এখন স্বয়ং ভগবান বসে থেকে শ্রেষ্ঠ কর্ম করাচ্ছেন এবং শ্রেষ্ঠ মত দিচ্ছেন যে এইরকম পতিত কর্ম করো না। সর্বশ্রেষ্ঠ হওয়ার জন্য সর্বশ্রেষ্ট মত দিচ্ছেন। দেবতারা তো শ্রেষ্ঠ ছিল, তাই না ? নুতন দুনিয়া বা স্বর্গে থাকত। তোমরা পুরুষার্থের ক্রম অনুসারে এইসব কথা জেনেছ। তাই অষ্টরত্নের কিংবা ১০৮-এর মালা বলা হয়। খুব বেশি হলে ১৬ হাজার ১০৮-এর মালা বলা হয়। কিন্তু তাতে কি ? এত কোটি কোটি মানুষ রয়েছে। তার মধ্যে থেকে মাত্র ১৬ হাজার জন বেরিয়ে আসবে। চার ভাগের এক ভাগও নয়। বাবা বাচ্চাদেরকে কতো শ্রেষ্ঠ বানিয়ে দেন। তিনি রোজ বাচ্চাদেরকে বোঝান যে কোনো বিকর্ম ক'রো না। তোমরা এইরকম বাবাকে পেয়েছ, তাই কতো খুশি হওয়া উচিত। তোমরা বুঝেছ যে স্বয়ং অসীম জগতের পিতা আমাদেরকে দত্তক নিয়েছেন। আমরা তাঁর সন্তান হয়েছি। বাবা হলেন স্বর্গের রচয়িতা। সুতরাং, এইরকম স্বর্গের মালিক হওয়ার জন্য সর্বগুণে পূর্ণ হতে হবে। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ সর্বগুণে পূর্ণ ছিলেন। তাদের সেই যোগ্যতার গুণগান করা হয়। তারপর ৮৪ জন্ম পরে আবার অযোগ্য হয়ে যায়। এক জন্ম নীচে নামলেও একটু কলা কমে যায়। যেভাবে ড্রামা উকুনের মতো চলতে থাকে, সেইরকম ধীরে ধীরে কলা কম হতে থাকে। তোমরাও ধীরে ধীরে নীচে নামতে নামতে ১২৫০ বছরে ২ কলা কম হয়ে যায়। তারপর রাবণের রাজত্বে খুব তাড়াতাড়ি অধঃপতন হতে থাকে। সূর্য কিংবা চন্দ্রের যেমন গ্রহণ লাগে, সেইরকম গ্রহণ লেগে যায়। এমন তো নয় যে চন্দ্র কিংবা তারাদের গ্রহণ লাগে না। সকলেরই সম্পূর্ণ গ্রহণ হয়েছে। এখন বাবা বলছেন, স্মরণের দ্বারাই গ্রহণ কাটবে। কোনো পাপ করো না। এক নম্বর পাপ হলো দেহের অভিমান আসা। এটা খুব কড়া পাপ। বাচ্চাদেরকে কেবল এই একটা জন্মের জন্যই শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। কারণ এই সময়েই দুনিয়ার পরিবর্তন হচ্ছে। এরপর আর এইরকম শিক্ষা কখনো পাওয়া যাবে না। ব্যারিস্টার ইত্যাদির শিক্ষা তো তোমরা জন্ম জন্ম ধরে নিয়েছ। স্কুল তো চিরকাল ছিল। এই জ্ঞান কেবল একবারই পাওয়া যায়। জ্ঞানের সাগর বাবা কেবল একবারই আসেন। তিনি নিজের এবং নিজের রচনার আদি, মধ্য, অন্তিমের পুরো জ্ঞান শোনান। বাবা কতো সহজ ভাবে বোঝাচ্ছেন যে তোমরা আত্মারা ভূমিকা পালন করছ। আত্মারা নিজের বাড়ি থেকে এখানে এসে অভিনয় করে। ওই ঘরকে বলা হয় মুক্তিধাম। আর স্বর্গকে বলা হয় জীবনমুক্তি। এখানে রয়েছে জীবনের বন্ধন। এইসব কথাগুলো সঠিকভাবে মনে রাখতে হবে। মোক্ষ কখনোই পাওয়া যায় না। মানুষ বলে যে মোক্ষলাভ হোক অর্থাৎ এই আসা যাওয়ার চক্র থেকেই বেরোতে চায়। কিন্তু কেউই নিজের ভূমিকা ছেড়ে বেরোতে পারে না। এই খেলা অনাদি এবং পূর্ব নির্মিত। বিশ্বের ইতিহাস এবং ভূগোল হুবহু পুনরাবৃত্ত হয়। সত্যযুগে ওই দেবতারাই আবার আসবে। তারপর ধীরে ধীরে ইসলাম এবং বৌদ্ধরা আসবে। এইভাবে মানব-বৃক্ষ তৈরি হবে। এই বৃক্ষের বীজ রয়েছে ওপরের দিকে। বাবা হলেন এই মনুষ্য সৃষ্টিরূপী বৃক্ষের বীজ। মনুষ্য সৃষ্টি তো চিরকাল রয়েছে কিন্তু সত্যযুগে এটা খুব ছোটো থাকে। ধীরে ধীরে অনেক বড়ো হয়ে যায়। আচ্ছা, এরপর কিভাবে আবার ছোট হবে ? বাবা এসে পতিত থেকে পবিত্র বানান। কত কমজন পবিত্র হয়। কয়েক কোটির মধ্যে মাত্র কয়েকজন বেরিয়ে আসে। অর্ধেক কল্প জনসংখ্যা খুব কম থাকে। পরের অর্ধেক কল্পে কত বৃদ্ধি হয়ে যায়। সুতরাং দেবী দেবতা সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা সর্বাধিক হওয়া উচিত কারণ ওরাই সবার আগে আসে। কিন্তু বাবাকে ভুলে গিয়ে অন্যান্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে যায়। এটাই হলো ‛একটি ভুলের খেলা’। ভুলে যাওয়ার জন্যই কাঙাল হয়ে যাও। ভুলতে ভুলতে একেবারে ভুলে যাও। প্রথমে কেবল একজনের ভক্তি করা হত কারন সকলের সদগতি দাতা তো একজনই। তাহলে অন্য কারোর ভক্তি কেন করতে হবে ? শিববাবাই এই লক্ষ্মী নারায়ণকে এইরকম বানিয়েছেন। কৃষ্ণ কিভাবে এইরকম বানাবেন। এটা তো অসম্ভব। কৃষ্ণের পক্ষে কীভাবে রাজযোগ শেখানো সম্ভব। তিনি তো সত্যযুগের রাজকুমার। কত বড় ভুল করে দিয়েছে। কারোর বোধগম্য হয় না। বাবা এখন বলছেন, আমাকে স্মরণ করো এবং দিব্যগুণ ধারণ করো। জায়গা জমি নিয়ে কারোর সাথে ঝগড়া থাকলে সেগুলো মিটিয়ে নাও। ঝগড়া করতে করতেই তো একদিন প্রাণ চলে যাবে। বাবা বোঝাচ্ছেন, ইনি যখন সবকিছু ছেড়ে দিয়েছিলেন, তখন কি কোনো ঝগড়াঝাটি করেছিলেন ? একটু কম পেলেও ক্ষতি নেই। তার পরিবর্তে তো কতো রাজত্ব প্রাপ্তি হয়েছে। বাবা বোঝাচ্ছেন, আমার যখন বিনাশ এবং রাজত্বের দিব্য দর্শন হয়েছিল, তখন আমি খুব খুশি হয়েছিলাম। আমি তো বিশ্বের মালিকানা পেয়ে যাব। তার কাছে এইসব আর এমন কি ? কেউ কি না খেতে পেয়ে মারা যাবে ? যার কাছে টাকা পয়সা নেই, সেও তো খেতে পায়। মাম্মা কি কিছু নিয়ে এসেছিলেন ? কতজন মাম্মাকে স্মরণ করে। বাবা বলছেন - স্মরণ করছ ঠিক আছে, কিন্তু মাম্মার নাম-রূপকে মনে করা যাবে না। আমাদেরকেও ওনার মতো অর্জন করতে হবে। আমরাও মাম্মার মতো শ্রেষ্ঠ হয়ে সিংহাসনে বসার যোগ্য হব। কেবল মাম্মার গুণগান করলেই কি হয়ে যাবে ? বাবা বলছেন - কেবল আমাকেই স্মরণ করো। স্মরণের যাত্রায় থাকতে হবে। মাম্মার মতো জ্ঞান শোনাতে হবে। তোমরা নিজেরা গুণগানের যোগ্য হয়ে দেখালেই মাম্মার গুণগান সঠিক প্রমাণিত হবে। কেবল ‛মাম্মা মাম্মা’ - বললেই পেট ভরবে না। আরও বেশি করে পেট ভেতরে ঢুকে যাবে। শিববাবাকে স্মরণ করলেই পেট ভর্তি হবে। এই ঠাকুরদাদাকে স্মরণ করলেও পেট ভরবে না। একজনকেই স্মরণ করতে হবে। দাতা তো একজনই। সেবা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের উপায় ভাবতে হবে। মুখ দিয়ে যেন সবসময় ফুল ঝরে। যদি কাঁটা কিংবা পাথর বের হয়, তাহলে বোঝা যাবে যে পাথরের মতোই রয়েছে। খুব ভালোভাবে গুণ ধারণ করতে হবে। এখানেই তোমাদেরকে সর্বগুণে সম্পন্ন হতে হবে। শাস্তি খেতে হলে ভালো পদ পাবে না। বাবার কাছ থেকে সরাসরি শোনার জন্য এখানে বাচ্চারা আসে। এখানে বাবা টাটকা নেশা ধরিয়ে দেন। সেন্টারেও নেশা হয়, কিন্তু বাড়িতে গিয়ে প্রিয়জনের মুখ দেখলে সেই নেশা কেটে যায়। এখানে তোমরা জানো যে আমরা বাবার পরিবারের মধ্যে বসে আছি। ওখানে তো আসুরিক পরিবার রয়েছে। কত ঝগড়াঝাটি চলে। ওখানে গেলেই আবর্জনার মধ্যে গিয়ে পড়ে যাও। এখানে থাকার সময়ে তো বাবার কথা একটুও ভোলা উচিত নয়। দুনিয়ায় কেউই সত্যিকারের শান্তি পেতে পারে না। কেবল বাবা ছাড়া অন্য কেউই পবিত্রতা, সুখ, শান্তি, সম্পত্ত্বি দিতে পারবে না। তবে এমন নয় যে বাবা আশীর্বাদ করেন - আয়ুষ্মান ভব, পুত্রবান ভব। না, আশীর্বাদ থেকে কিছুই পাওয়া যায় না। মানুষ তো এটাই ভুল ভেবেছে। কোনো সন্ন্যাসীও আশীর্বাদ করতে পারে না। আজকে আশীর্বাদ করল, তারপর কালকে নিজেই মারা গেল। সেইরকম দেখ, কতজনেই না পোপ হয়েছে। একজনের পর আরেকজন এইভাবে গুরুর পদের অধিকারী হয়। কম বয়সেই যদি গুরু মারা যায় তাহলে অন্য কারোর শিষ্যত্ব গ্রহণ করে অথবা তার কোনো শিষ্যকে গুরুর পদে বসিয়ে দেয়। এখানে তো স্বয়ং বাপদাদাই দাতা। ইনি কিছু নিয়ে কি করবেন ? বাবা তো নিরাকার। নিলে তো শরীরধারীকেই নিতে হবে। এটাও বোঝার ব্যাপার। *কখনোই এইরকম বলা উচিত নয় যে আমি শিববাবাকে কিছু দিয়েছি। না, আমরা তো শিববাবার কাছ থেকে কোটি কোটি সম্পত্তি নিয়েছি, কিছুই দিইনি।* বাবা তোমাদেরকে অসীম সম্পত্তি দেন। শিববাবা হলেন দাতা। তোমরা তাঁকে কিভাবে দেবে ? ‛আমি দিয়েছি’ - ভাবলেই দেহের অভিমান এসে যায়। আমরা শিববাবার কাছ থেকে নিচ্ছি। বাবার কাছে এত এত সন্তান আসেন, এসে থাকেন। এর জন্য তো ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থাৎ তোমরা নিজেদের জন্যই দাও। তিনি কি নিজের জন্য কিছু করবেন ? তোমাদেরকেই রাজধানী দেন, তাই তোমরাই করছ। তোমাদেরকে নিজের থেকেও শ্রেষ্ঠ বানিয়ে দিই। এইরকম বাবাকেই তোমরা ভুলে যাও। অর্ধেক কল্পের জন্য পূজনীয়, তারপর অর্ধেক কল্পের জন্য পূজারী। পূজনীয় হয়ে গেলে তোমরা সুখধামের মালিক হয়ে যাও। এটাও কেউ জানে না যে বাবা কবে এসে স্বর্গ স্থাপন করেন। তোমরা, সঙ্গমযুগবাসী ব্রাহ্মণরাই এইসব বিষয়গুলো জানো। বাবা কতো ভালোভাবে বোঝাচ্ছেন। তারপরেও কারোর কারোর বোধগম্য হয় না। বাবা যেমন কতো যুক্তি করে বলেন, সেইরকম যুক্তি করে বলতে হবে। পুরুষার্থ করে এইরকম শ্রেষ্ঠ হতে হবে। বাবা বোঝাচ্ছেন - বাচ্চাদের মধ্যে অনেক দিব্যগুণ থাকতে হবে। কোনো ব্যাপারেই রেগে যাওয়া কিংবা মুখ ভার করা যাবে না। বাবা বলছেন, এখন আর এইরকম কোনো কাজ করো না। চন্ডীদেবীর পূজা উপলক্ষ্যেও মেলা হয়। যে বাবার মতামত অনুসরণ করে না, তাকেই চন্ডিকা দেবী বলা হয়। এইরকম চন্ডিকা, যে কিনা অন্যকে দুঃখ দেয়, তার পূজা উপলক্ষ্যেও মেলার আয়োজন হয়। মানুষের মধ্যে কোনো জ্ঞান নেই, তাই কোনো কিছুর অৰ্থ বোঝে না। আজকাল অনেকের মধ্যেই একটুও শক্তি নেই, একেবারে ফাঁপা। তোমরা যখন বাবাকে ভালোভাবে স্মরণ করো, তখন তোমরা শক্তি পেয়ে যাও। কিন্তু এখানে থাকার সময়েও অনেকের বুদ্ধি বাইরের দিকে চলে যায়। তাই বাবা বলেন, এখানে ছবির সামনে এসে বসো, তাহলে তোমাদের বুদ্ধি ওতেই ব্যস্ত থাকবে। যখন সৃষ্টিচক্র কিংবা সিঁড়ির বিষয়ে কাউকে বোঝাবে, তখন বলো যে সত্যযুগে অনেক কম সংখ্যক মানুষ থাকবে। এখন অনেক মানুষ আছে। বাবা বলছেন - আমি ব্রহ্মার দ্বারা নতুন দুনিয়া স্থাপন করাই আর তারপর পুরাতন দুনিয়ার বিনাশ করাই। এইভাবে বসে বসে কথা বলার অভ্যাস করতে হবে। নিজেই নিজের মুখ খুলতে পারো। মনের অন্তরের কথাগুলো বাইরেও বেরিয়ে আসা উচিত। বোবা তো নয়। ঘরে চিৎকার করার সময়ে মুখ খুলে যায়, আর জ্ঞান শোনানোর সময়ে খোলে না ! ছবি তো সকলেই পেয়ে যাবে। নিজের বাড়ির কল্যাণ করার জন্য সাহস রাখতে হবে। নিজের রুমকে ছবি দিয়ে সাজিয়ে দাও। তাহলে তুমি ব্যস্ত থাকবে। সেটা তোমার লাইব্রেরির মতো হয়ে যাবে। অন্যের কল্যাণ করার জন্য অনেক ছবি লাগিয়ে দিতে হবে। যে আসবে, তাকে বোঝাও। তোমরা এইভাবে অনেক সেবা করতে পারবে। একটু শুনলেও প্রজা হয়ে যাবে। উন্নতি করার জন্য বাবা অনেক রকমের উপায় বলছেন। বাবাকে স্মরণ করলে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে। এছাড়া গঙ্গায় গিয়ে একেবারে ডুবে আসলেও বিকর্মের বিনাশ হবে না। এগুলো সব অন্ধবিশ্বাস। হরিদ্বারে গোটা শহরের আবর্জনা গঙ্গায় এসে পড়ে। সমুদ্রেও কতো আবর্জনা ফেলা হয়। নদীতেই যখন এত আবর্জনা পড়ে, তাহলে তার দ্বারা কিভাবে পবিত্র হওয়া যাবে ? মায়া সবাইকে অবুঝ বানিয়ে দিয়েছে। বাবা কেবল বাচ্চাদেরকেই বলেন - ‛আমাকে স্মরণ করো’। তোমরা আত্মারাই তো ডেকেছিলে - হে পতিত পাবন, তুমি এসো। তোমাদের শরীরের লৌকিক পিতা তো একজন আছেই। কেবল বাবা-ই হলেন পতিত পাবন। এখন আমরা সেই বাবাকেই স্মরণ করছি যিনি পবিত্র বানিয়ে দেন। তিনিই হলেন জীবনমুক্তির দাতা, অন্য কেউ নয়। এত সহজ কথাটার অর্থও কেউ বুঝতে পারে না। আচ্ছা !

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) মুখ থেকে জ্ঞান রত্ন বার করার অভ্যাস করতে হবে। কখনোই মুখ থেকে কাঁটা কিংবা পাথর যেন না নির্গত হয়। নিজের এবং ঘরের কল্যাণের জন্য ঘরেই ছবি সাজিয়ে রাখতে হবে এবং সেই ছবি নিয়ে বিচার সাগর মন্থন করে অন্যকেও বোঝাতে হবে। ব্যস্ত থাকতে হবে।

২ ) বাবার কাছ থেকে আশীর্বাদ চাওয়ার বদলে, তাঁর শ্রেষ্ঠ মত অনুসারে চলতে হবে। শিববাবা-ই হলেন দাতা, তাই তাঁকে স্মরণ করতে হবে। কখনোই যেন অভিমান না আসে যে আমি বাবাকে এতকিছু দিয়েছি।

বরদান:-
বিশ্ব কল্যাণের উঁচু স্থিতিতে অবস্থান করে বিনাশ লীলা দর্শনকারী সাক্ষী দর্শক ভব

অন্তিমের বিনাশ লীলা দেখার জন্য বিশ্ব কল্যাণকারী নামক উঁচু অবস্থার প্রয়োজন। এই অবস্থায় অবস্থান করলে দেহের সকল আকর্ষণ অর্থাৎ সম্বন্ধ, পদার্থ, সংস্কার, প্রকৃতির অশান্ত অবস্থার আকর্ষণ সমাপ্ত হয়ে যায়। এই রকম অবস্থা প্রাপ্ত হলেই সাক্ষী দর্শক হয়ে উঁচু অবস্থায় স্থিত হয়ে সকল আত্মাকে শান্তি, শক্তির কিরণ দিতে পারবে।

স্লোগান:-
ঈশ্বরীয় শক্তিতে শক্তিশালী হলেই মায়ার প্রভাব সমাপ্ত হয়ে যাবে।