25-10-2020 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
31-03-86 মধুবন
*প্রকৃত সেবাধারীর লক্ষণ*
আজ জ্ঞান সূর্য, জ্ঞান চন্দ্রমা ধরিত্রীর তারামন্ডলে নিজের সব নক্ষত্রকে দেখছেন l
ঝলমলে সব নক্ষত্র তাদের আলোক-আভা-উদ্গিরণকরছে l বিভিন্ন নক্ষত্র রয়েছে l কিছু আছে
জ্ঞানের বিশেষ নক্ষত্র, কিছু নক্ষত্র সহজ যোগী, কিছু গুণদান মূর্ত নক্ষত্র l কেউ
কেউ আবার নিরন্তর সেবাধারী নক্ষত্র l কেউ সদা সম্পন্ন নক্ষত্র l সর্বাপেক্ষা
শ্রেষ্ঠ সে, যে প্রতি সেকেন্ডে সফল নক্ষত্র l সেইসঙ্গে কেউ কেউ আছে শুধুই আশার
নক্ষত্র l একদিকে আশার নক্ষত্র আরেকদিকে সফলতার নক্ষত্র, দুইয়ের মধ্যে বিশাল ফারাক
আছে l তৎসত্ত্বেও, বিশ্বের আত্মাদের উপরে, প্রকৃতির উপরে বিভিন্ন সব নক্ষত্রের নিজ
নিজ প্রভাব পড়ছে l সফলতার নক্ষত্র সকলে চারিদিকে নিজেদের উৎসাহ-উদ্দীপনার প্রভাব
বিস্তার করছে l আশার নক্ষত্ররা নিজেরাও কখনো ভালোবাসার, কখনো পরিশ্রমের অনুভব করে l
সেইজন্য এই দুই প্রভাবে প্রভাবিত হওয়ার কারণে অন্যদের প্রতি কখনো ভালবাসা কখনো
পরিশ্রমের প্রভাব ফেলে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রেখে এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা করে
যাচ্ছে l সুতরাং তোমরা প্রত্যেকে নিজেরাই নিজেদের জিজ্ঞাসা করো, "আমি কোন্ নক্ষত্র
?" সবার মধ্যে জ্ঞান, যোগ, গুণের ধারণা আর সেবার ভাব আছে ঠিকই, কিন্তু সব কিছু থাকা
সত্ত্বেও কারও মধ্যে জ্ঞানের ঔজ্জ্বল্য তো কারও মধ্যে স্মরণের ও যোগের বিশেষত্ব থাকে
l আর কেউ কেউ নিজ গুণ-মূর্তের ঝলকানি দ্বারা অন্যদের আকর্ষণ করছে l চার বিষয়ের ধারণা
থাকা সত্ত্বেও ধারণের পার্সেন্টেজে তারতম্য আছে, সেইজন্য ঝলমলে নক্ষত্রদের মধ্যে
বিভিন্নতা প্রতীয়মান হচ্ছে l এটা আধ্যাত্মিক বিচিত্র তারামন্ডল l তোমরা সব অধ্যাত্ম
নক্ষত্রের প্রভাব বিশ্বের উপর পড়ছে, ঠিক যেমন বিশ্বের উপর স্থূল নক্ষত্রদের প্রভাব
পড়ে l তোমরা নিজেরা যত শক্তিশালী নক্ষত্র হও, বিশ্বের আত্মাদের উপর ততই প্রভাব পড়ে
l যেমন ঘনঘোর অন্ধকারে নক্ষত্রদের ঝলকানি স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয়, ঠিক তেমনই
অপ্রাপ্তির অন্ধকার যত ঘনিয়ে আসছে এবং আরও যত বাড়ছে আর যত বাড়তে থাকবে ততই তোমরা সব
অধ্যাত্ম নক্ষত্রের বিশেষ প্রভাব তারা অনুভব করতে থাকবে l ধরিত্রীর ঝিকিমিকি
নক্ষত্রের জ্যোতিবিন্দু রূপ, প্রকাশময় কায়ায় ফরিস্তা রূপে সবাইকে দেখা যাবে l যেমন,
এখন আকাশে নক্ষত্রের অনুসন্ধানে তারা নিজেদের সময়, এনার্জি আর ধন খরচ করছে l
সেইরকমই অধ্যাত্ম নক্ষত্রদের দেখে তারা আশ্চর্যান্বিত হবে l যেমন, এখন আকাশে
নক্ষত্রদের দেখে, ঠিক সেইরকমই ধরিত্রীর নক্ষত্র মন্ডলে চারিদিকে ফরিস্তাদের ঝলক আর
জ্যোতির্ময় নক্ষত্রের ঝলক দেখবে, অনুভব করবে - এঁরা কারা ? কোথা থেকে এই ধরিত্রীতে
নিজেদের চমৎকার দেখাতে এসেছেন ! যেমন, স্থাপনের আদিতে লোকে চারিদিকে ব্রহ্মা আর
কৃষ্ণের সাক্ষাৎকারের তরঙ্গ অনুভব করতো l ইঁনি কে ? আমি কি দেখছি ? - এটা বোঝার
জন্য অনেকের অ্যাটেনশন টেনেছে l এইরকম এখন অন্তে চারিদিকে "জ্যোতি আর ফরিস্তা" এই
দুই রূপে বাপদাদা আর বাচ্চারা, সকলের ঝলক দেখা যাবে l এক থেকে অনেকের মধ্যে তা'
ছড়িয়ে পড়বে, নিজে থেকেই সকলের অ্যাটেনশন এই দিকে আসবে l এখন এই দিব্য দৃশ্য তোমাদের
সবার সম্পন্ন হওয়ার জন্য প্রতীক্ষা করছে l যখন তোমরা ফরিস্তা ভাবের স্থিতি সহজভাবে
আর নিজে থেকেই অনুভব করবে, তখনই প্রকৃত রূপে ফরিস্তার সাক্ষাৎকার হবে l এই বছর
বিশেষভাবে দেওয়া হয়েছে যাতে তোমরা ফরিস্তা স্থিতির তৈরি করতে পারো l অনেক বাচ্চা মনে
করে, আমরা কি শুধুই স্মরণের অভ্যাস করব নাকি সেবাও করব, নাকি সেবা করা থেকে মুক্ত
হয়ে তপস্যায় রত হবো ? বাপদাদা সেবার যথার্থ অর্থ শোনাচ্ছেন :-
*সেবাভাব অর্থাৎ সদা সকল আত্মার প্রতি শুভ ভাবনা, শ্রেষ্ঠ কামনার ভাব l সেবাভাব
অর্থাৎ সকল আত্মার ভাবনা অনুযায়ী তাদের ফল দেওয়া l সীমিত পরিসরের ভাবনা নয়, বরং
শ্রেষ্ঠ ভাবনা থাকা l তোমরা সব সেবাধারীর থেকে যদি কেউ আত্মিক স্নেহের ভাবনা রাখে,
শক্তি-সহযোগের ভাবনা রাখে, খুশির ভাবনা রাখে, শক্তি-প্রাপ্তির ভাবনা রাখে,
উৎসাহ-উদ্দীপনার ভাবনা রাখে, তখন সেবার অর্থ হয় তাদেরকে সেই বিভিন্ন ভাবনার ফল দেওয়া
অর্থাৎ সহযোগ দ্বারা অনুভব করানো - একেই বলে সেবা ভাব l শুধুমাত্র স্পীচ দিয়ে চলে
এলে, অথবা গ্রুপে ব্যাখ্যা দিয়ে চলে এলে, কোর্স সম্পূৰ্ণ করে এলে, অথবা সেন্টার খুলে
দিয়ে এলে, এটাকে সেবাভাব বলা যায় না l সেবা অর্থাৎ আত্মাদের প্রাপ্তির মেওয়া অনুভব
করানো, এইরকম সেবার মধ্যেই তপস্যা আছে l*
তপস্যার অর্থ তোমাদের শোনানো হয়েছে - দৃঢ় সঙ্কল্পের দ্বারা কোনও কার্য করা l যেখানে
যথার্থ সেবাভাব আছে, সেখানে তপস্যার ভাব আলাদা নয় l ত্যাগ, তপস্যা, সেবা এই তিনের
কম্বাইন্ড রূপ প্রকৃত সেবা, আর নামধারী সেবার ফল অল্পকালীন l যেখানেই সেবা সেখানেই
অল্পকালের প্রভাবের ফল প্রাপ্ত হয় আর সমাপ্ত হয়ে যায় l অর্থাৎ যত্র আয় তত্র ব্যয় l
অল্পকালীন প্রভাবের ফলপ্রাপ্তির মহিমা অল্পকালের - তারা বলবে খুব ভালো ভাষণ হয়েছে,
খুব ভালো করে কোর্স করানো হয়েছে, সেবার কাজ খুব ভালো হয়েছে l সুতরাং কারও 'ভালো-ভালো'
বলায় অল্পকালের ফল লাভ হলো এবং যে বললো তারও অল্পকালের ফল লাভ হলো মহিমা শোনার জন্য
l কিন্তু অনুভূতি করানো অর্থাৎ বাবার সঙ্গে সম্বন্ধ জুড়ে দেওয়া, শক্তিশালী বানানো -
এটাই প্রকৃত সেবা l প্রকৃত সেবায় ত্যাগ তপস্যা যদি না হয় তাহলে তা' শতকরা ৫০ ভাগ
সেবাও হয় না, ২৫% সেবা হয় l
প্রকৃত সেবাধারীর লক্ষণ - ত্যাগ অর্থাৎ নম্রতা এবং তপস্যা অর্থাৎ এক বাবাতে
নিশ্চয়ের এবং নেশার দৃঢ়তা থাকা l যথার্থ সেবা একেই বলে l বাপদাদা নিরন্তর প্রকৃত
সেবাধারী হওয়ার জন্য বলেন l নামে সেবা অথচ নিজেই যদি ডিস্টার্ব হবে, অন্যকে
ডিস্টার্ব করবে, তাহলে এমন ধরণের সেবা থেকে নিজেকে মুক্ত করার জন্য বাপদাদা বলছেন l
এইরকম সেবা না করা ভালো, কারণ সেবার বিশেষ গুণ *'সন্তুষ্টতা l'* যেখানে সন্তুষ্টতা
নেই, না নিজের প্রতি না সম্পর্কে থাকা কারও প্রতি, সেই সেবা না নিজেকে ফলের প্রাপ্তি
করাবে, না অন্যদের l তার থেকে বরং প্রথমে নিজেকে সন্তুষ্টমণি বানিয়ে তারপরে সেবাতে
আসবে, সেটাই ভালো l তা' নয়তো সূক্ষ্ম বোঝা অবশ্যই থাকবে l অনেক রকম বোঝা উড়তি কলায়
বিঘ্নরূপ হয়ে যায় l বোঝা তোমরা বাড়াতে চাও না, নামাতে চাও - এইরকম যখন তোমাদের মনে
হয়, তখন একান্তবাসী হওয়া বরং এর থেকে ভালো l কারণ একান্তবাসী হওয়াতে তোমরা স্ব
পরিবর্তনে অ্যাটেনশন দেবে l সুতরাং বাপদাদা তপস্যা বিষয়ে যা বলছেন, তা' শুধু বসে বসে
তপস্যা করার জন্য বলছেন না l তপস্যায় বসাও সেবাই l লাইট হাউজ, মাইট হাউজ হয়ে
শান্তির শক্তির কিরণ দ্বারা বায়ুমন্ডল বানাও l তপস্যার সাথে মন্সা সেবা জুড়ে আছে,
আলাদা নয় l নয়তো তোমরা কি রকম তপস্যা করবে ! তোমরা তো শ্রেষ্ঠ আত্মা, ব্রাহ্মণ আত্মা
হয়েই গেছ l এখন তপস্যা অর্থাৎ নিজে সর্বশক্তিতে সম্পন্ন হয়ে দৃঢ় স্থিতি, দৃঢ়
সঙ্কল্প দ্বারা বিশ্বের সেবা করা l শুধু বাণী দ্বারা সেবা, সেবা নয় l যেরকম
সুখ-শান্তি পবিত্রতা একটার সঙ্গে আরেকটা সম্পর্কিত, ঠিক তেমনই ত্যাগ, তপস্যা, সেবা
পারস্পরিকভাবে সম্বন্ধযুক্ত l বাপদাদা, তপস্বী রূপ অর্থাৎ শক্তিশালী সেবাধারী রূপ
হতে বলেন অর্থাৎ তপস্বী রূপের দৃষ্টিও সেবা করে l তার শান্তস্বরূপ চেহারাও সেবা করে,
তপস্বী মূর্তের দর্শন মাত্রেই প্রাপ্তির অনুভূতি হয়, সেইজন্য আজকাল দেখ যারা
হঠ-তপস্যা করে তাদের দর্শনের জন্যও কতো ভিড় হয় ! এটা তোমাদের তপস্যার প্রভাবের
স্মরণিক, যা এখনও এই অন্ত পর্যন্ত চলে আসছে l সুতরাং বুঝেছ সেবা ভাব কাকে বলে ! *সেবা
ভাব অর্থাৎ সবার দুর্বলতা অন্তর্লীন করার ভাব l অন্যদের দুর্বলতার মোকাবিলা করার
ভাব নয়, অন্তর্লীন করার ভাব l নিজে সহন করে অন্যকে শক্তি দেওয়ার ভাব, সেইজন্য
সহনশক্তি বলা হয় l সহন করার অর্থ শক্তি দিয়ে কাউকে পূর্ণ করা, অন্যকে শক্তি দেওয়া l
সহন করা মরণ নয় l কেউ কেউ ভাবে সহন করতে করতে তারা মরেই যাবে l তারা বলে, "আমাকে কি
মরতে হবে নাকি !" কিন্তু এতো মরে যাওয়া নয় l এটা সবার হৃদয়ে সস্নেহে বেঁচে থাকা l
বিরোধী যেমনই হোক, রাবণের থেকেও তেজিয়ান হোক, একবার নয় দশবারও যদি সহন করতেও হয়,
তবুও সহনশক্তির ফল অবিনাশী আর মধুর হবে l তারাও অবশ্যই বদলে যাবে l তোমরা শুধু এই
ভাবনা রেখো না যে আমি এত সহন করেছি, এও তো কিছু করবে ! অল্পকালের ফলের ভাবনা রেখো
না তোমরা l দয়াভাব রাখো - একেই বলে, 'সেবাভাব l'* সুতরাং এই বছর এইরকম প্রকৃত সেবার
প্রমাণ দিয়ে সুপুত্রের অর্থাৎ সুযোগ্য হওয়ার লিস্টে আসার গোল্ডেন চান্স দিচ্ছেন l
এই বছর বাবা এটা দেখবেন না যে মেলা বা ফাংশন খুব ভালো করেছ l কিন্তু সন্তুষ্টমণি হয়ে
সন্তুষ্টতার সেবায় সামনের দিকে নম্বর নিতে হবে l "বিঘ্ন বিনাশক" টাইটেলের বিজয়
সেরিমনিতে পুরস্কার নিতে হবে l বুঝেছ ! একেই বলা হয়ে থাকে "নষ্টমোহ স্মৃতিস্বরূপ l"
সুতরাং এই ১৮ বছরের সমাপ্তিতে বিশেষ সম্পন্ন হওয়ার অধ্যায় স্ব-রূপে দেখাও l একেই বলা
হয় "বাবা সমান হওয়া l" আচ্ছা !
যারা সদা ঝলমলে আধ্যাত্মিক নক্ষত্রের সন্তুষ্টতার তরঙ্গ ছড়ায়, সেই সন্তুষ্টমণি
আত্মাদের, যারা সদা একই সময়ে নিজেদের ত্যাগ, তপস্যা, সেবা দ্বারা অন্যকে প্রভাবিত
করে সেই প্রভাবশালী আত্মাদের, যারা সদা সর্ব আত্মাদের আধ্যাত্মিক ভাবনার আধ্যাত্মিক
ফল দেয় সেই বীজ স্বরূপ বাবা সমান শ্রেষ্ঠ বাচ্চাদের সম্পন্ন হওয়ার জন্য বাপদাদার
স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l
*পাঞ্জাব তথা হরিয়ানা জোনের ভাই-বোনেদের সাথে অব্যক্ত
বাপদাদার সাক্ষাৎকার*
সদা নিজেদের অনড়, অটল আত্মা মনে করো ? যে কোন ধরনের চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতিতে অনড় থাকা
শ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণ আত্মাদের লক্ষণ l দুনিয়া অস্থিরতায় হবে, কিন্তু তোমরা সব শ্রেষ্ঠ
আত্মা অস্থিরতায় আসতে পারো না l কেন ? ড্রামার প্রতিটা সীন তোমরা জানো l নলেজফুল
আত্মারা, পাওয়ারফুল আত্মারা সদা নিজে থেকেই অনড় থাকে l সুতরাং বায়ুমন্ডল তো কখনো
তোমাদের ভীত বানায় না ! তোমরা সব নির্ভীক তো ! শক্তিরা, তোমরা সবাই নির্ভীক ? নাকি
অল্প অল্প ভয় লাগে ? কারণ এতো তোমরা প্রথমেই, স্থাপনার সময় থেকে জানো যে ভারতে
সিভিল ওয়ার হওয়ারই আছে ! এটা শুরুর চিত্রেই তোমাদের দেখানো হয়েছে l সুতরাং যা দেখানো
হয়েছে সেটা তো হতেই হবে, তাই না ! সিভিল ওয়ার হওয়াই ভারতের পার্ট, সেইজন্য নাথিং
নিউ l সুতরাং নাথিং নিউ নাকি ঘাবড়ে যাও ? কি হলো, কীভাবে হলো, এটা হলো ... শক্তিশালী
হয়ে সমাচার দেখলে এবং শুনলে ড্রামার পূর্ব নির্ধারিত ভবিতব্য বোধগম্য হবে এবং
অন্যদেরও শক্তি দেবে l এটাই তো তোমাদের সবার কাজ, তাই না ! দুনিয়ার লোকে ভীত হয় আর
তোমরা সেই আত্মাদের শক্তি দিয়ে ভরিয়ে দাও l যে-ই সম্পর্কে আসবে, তাকে নিরন্তর
শক্তির দান দাও l
এখন অশান্তির সময়তেই শান্তি দেওয়ার সময় l তোমরা তো শান্তির মেসেঞ্জার l "শান্তি দূত"
গাওয়া হয়েছে, তাই না ! সুতরাং তোমরা যখন যেখানেই থাকো, যেখানেই যাও, সদা নিজেদের
শান্তির দূত মনে করে চলো l তোমরা শান্তির দূত, শান্তির সন্দেশ দাও, সেইজন্য নিজেরাও
শান্তস্বরূপ শক্তিশালী হবে আর অন্যদেরও দিতে থাকবে l তারা অশান্তি দেবে তোমরা শান্তি
দাও l তারা আগুন দেবে তোমরা জল দাও l এটাই তোমাদের কাজ, তাই না ! একেই বলে, প্রকৃত
সেবাধারী l সুতরাং এইরকম সময়ে এই সেবার আবশ্যকতা আছে l শরীর তো বিনাশী, কিন্তু আত্মা
শক্তিশালী, সুতরাং এক শরীর ছেড়ে দিলেও পরবর্তী শরীরে স্মরণের প্রালব্ধ চলতে থাকে,
সেইজন্য অন্যদের নিরন্তর অবিনাশী প্রাপ্তি করাতে থাক l তাহলে, তোমরা কারা ? শান্তির
দূত l শান্তির মেসেঞ্জার, মাস্টার শান্তিদাতা, মাস্টার শক্তি দাতা l এই স্মৃতি সদা
তোমাদের থাকে, তাই না ! সদা নিজেকে এই স্মৃতিতে এগিয়ে নিয়ে চলো l অন্যদেরও এগিয়ে
নিয়ে চলো, এটাই সেবা l গভর্নমেন্টের কোনও নিয়ম যদি হয়, তাহলে সেটা পালন করতেই হয়,
কিন্তু তোমরা সামান্য সময় পেলেও মন্সা দ্বারা, বাণী দ্বারা সেবা অবশ্যই করতে থাকো l
এখন মন্সা সেবার তো খুবই প্রয়োজন, কিন্তু যখন তোমরা নিজেরাই শক্তিতে ভরপুর আছ, তখন
তো তোমরা অন্যকে শক্তি দিতে পারবে l সুতরাং সদা শান্তি দাতার বাচ্চা শান্তি দাতা হও
l তোমাদের দাতাও হতে হবে, বিধাতাও l চলতে -ফিরতে যেন স্মরণে থাকে - আমি মাস্টার
শান্তি দাতা, মাস্টার শক্তি দাতা - এই স্মৃতিতে অনেক আত্মাকে ভাইব্রেশন দিতে থাকো l
তখনই তাদের অনুভব হবে যে তারা তোমাদের সম্পর্কে আসায় শান্তি অনুভূত হচ্ছে l সেইজন্য
এই বরদান মনে রাখো, বাবা সমান মাস্টার শান্তি দাতা, শক্তি দাতা হতে হবে l তোমরা তো
সবাই বাহাদুর, তাই না ! অস্থির পরিস্থিতিতেও ব্যর্থ সঙ্কল্প হতে দিও না, কারণ
ব্যর্থ সঙ্কল্প শক্তিশালী হতে দেবে না l কি হবে ! এইরকম হবে না তো ... এগুলো সব
ব্যর্থ l যা হবে তা' শক্তিশালী হয়ে দেখ আর অন্যদেরও শক্তি দাও l এই সব সাইড সীনও
আসবে l এটাও এক বাই প্লট, যা চলছে l বাইপ্লট মনে করে দেখ, তাহলে ঘাবড়ে যাবে না l
আচ্ছা !
*বিদায়ের সময়* (অমৃতবেলা)
এই সঙ্গমযুগ 'অমৃতবেলা' l পুরো সঙ্গমযুগই অমৃতবেলা হওয়ার কারণে সদা এই সময়ের
মাহাত্ম্য গাওয়া হয়ে থাকে l সুতরাং পুরো সঙ্গমযুগই অর্থাৎ অমৃতবেলা অর্থাৎ ডায়মন্ড
মর্নিং l বাবা সদা বাচ্চাদের সাথে আছেন আর বাচ্চারা বাবার সাথে, সেইজন্য অসীম
ডায়মন্ড মর্নিং l বাপদাদা সদা বলতেই থাকেন, ব্যক্ত স্বরূপে ব্যক্ত দেশের হিসেবে আজও
সব বাচ্চাকে সদা সাথে থাকার গুড মর্নিং বলো বা গোল্ডেন মর্নিং, অথবা ডায়মন্ড মর্নিং
যা-ই বলো, তার সবই কিন্তু বাপদাদা সব বাচ্চাকে দিচ্ছেন l তোমরা নিজেরাও ডায়মন্ড আর
মর্নিংও ডায়মন্ড, তোমাদের আরও ডায়মন্ড বানাতে হবে, সেইজন্য সদা বাবার সাথে হওয়ার
গুড মর্নিং l আচ্ছা l
বরদান:-
পাঁচ তত্ত্ব আর পাঁচ বিকারকে নিজের সেবাধারী বানিয়ে
মায়াজিত স্বরাজ্য অধিকারী ভব
সত্যযুগে যেমন বিশ্ব মহারাজা এবং বিশ্ব মহারাণীর রাজ
পোশাক (রাজ-ড্রেস) পিছন থেকে দাস-দাসীরা উঠিয়ে ধরে, সেইভাবেই সঙ্গমযুগে তোমরা সব
বাচ্চা যখন মায়াজিত স্বরাজ্য অধিকারী হয়ে টাইটেলস রূপী ড্রেসে সুসজ্জিত থাকবে তখন
এই পাঁচ তত্ত্ব আর পাঁচ বিকার তোমাদের ড্রেস পিছন থেকে বহন করবে অর্থাৎ অধীন হয়ে
চলবে। সেইজন্য দৃঢ় সঙ্কল্পের বেল্ট দ্বারা সব টাইটেলের ড্রেস টাইট করো, বিভিন্ন
ড্রেস আর শৃঙ্গারের সেট দ্বারা সাজগোজ করে বাবার সাথে থাকো, তাহলে এই বিকার বা
তত্ত্ব পরিবর্তিত হয়ে সহযোগী সেবাধারী হয়ে যাবে l
স্লোগান:-
যে গুণ বা শক্তির বর্ণন করো তার অনুভবে হারিয়ে যাও l
অনুভবই হল সবচেয়ে বড় অথরিটি l