30.11.2020 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


প্রশ্নঃ -
ড্রামানুসারে বাবা যে সার্ভিস করাচ্ছেন তাতে আরও তীব্রতা নিয়ে আসার বিধি কি ?

উত্তরঃ -
পরস্পরের মধ্যে মতৈক্য থাকলেও কখনও যেন মনোমালিন্য (খিট-খিট) না হয়। যদি মনোমালিন্য হয়, তবে আর সার্ভিস করবে কিভাবে ! তাই পরস্পর মিলিত হয়ে সংগঠন তৈরী করে পরামর্শ করো, পরস্পরের সহযোগী হও। বাবা তো সহযোগীই কিন্তু "সাহস বাচ্চাদের সহায়তা বাবার...." এর অর্থ যথার্থভাবে বুঝে বড় কার্যে সহযোগী হও।

ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা এখানে আধ্যাত্মিক পিতার কাছে আসে রিফ্রেশ হতে। যখন রিফ্রেশ হয়ে ফিরে যায় তখন অবশ্যই ফিরে গিয়ে কিছু করে দেখাতে হবে। প্রতিটি বাচ্চাকে সার্ভিসের প্রমাণ দিতে হবে। যেমন কোনো কোন বাচ্চা বলে, আমার সেন্টার খোলার ইচ্ছা(মন) রয়েছে। গ্রামে-গ্রামে গিয়েও সার্ভিস করে, তাই না! তাই বাচ্চাদের সদা এই খেয়াল থাকা উচিত যে, আমরা মন-বাণী-কর্মে, তন-মন-ধন দ্বারা যেন এমন সেবা করি যাতে ভবিষ্য ২১ জন্মের প্রালব্ধ বাবার থেকে প্রাপ্ত হয়। এটা হলো উৎসাহ। আমরা কি কিছু করি ? কাউকে কি জ্ঞান দান করি ? সারাদিন এই খেয়ালই আসা উচিত। সেন্টার খুললেও ঘরে নারী-পুরুষের মধ্যে মনোমালিন্য হওয়া উচিত নয়। কোনো অশান্তি হওয়া উচিত নয়। সন্ন্যাসীরা ঘরের অশান্তির জন্যই বেরিয়ে যায়। ডোন্ট কেয়ার করে চলে যায়। তখন গভর্নমেন্ট কি তাকে আটকায় ? ওখানে কেবল পুরুষেরাই বেরিয়ে পড়ে। এখন কোনো কোনো মাতা'রাও বেরোয়। যাদের কোনো অভিভাবক নেই বা যাদের বৈরাগ্য চলে আসে তাদেরকেও ওই পুরুষ সন্ন্যাসীরা বসে থেকে শেখায়। তাদের দ্বারা নিজেদের ব্যবসা চলায়। পয়সাদি সব ওদের(সন্ন্যাসী) কাছেই থাকে। বাস্তবে ঘর-সংসার পরিত্যাগ করলে, পয়সা রাখার আর প্রয়োজন থাকে না। বাচ্চারা, তাহলে বাবা এখন তোমাদের বোঝাচ্ছেন। প্রত্যেকের বুদ্ধিতে আসা উচিত যে --- আমাদের বাবার পরিচয় দিতে হবে। মানুষ তো কিছুই জানে না, অবুঝ। বাচ্চারা, তোমাদের জন্য বাবা আদেশ হলো -- মিষ্টি-মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা নিজেদের আত্মা মনে করো, শুধু পন্ডিত হলেই হবে না। নিজেদের কল্যাণও করতে হবে। স্মরণের মাধ্যমেই সতোপ্রধান হতে হবে। অনেক পুরুষার্থ করতে হবে। তা নাহলে অনেক অনুতাপ করতে হবে। বাচ্চারা বলেও যে, আমরা প্রতিমুহূর্তে ভুলে যাই। সঙ্কল্প চলে আসে। বাবা বলেন, সে তো আসবেই। তোমাদের বাবার স্মরণে থেকেই সতোপ্রধান হতে হবে। যে আত্মা অপবিত্র হয়েছে তাকে পরমপিতা পরমাত্মাকে স্মরণ করেই পবিত্র হতে হবে। বাবা-ই বাচ্চাদের ডায়রেক্শন দেন -- হে আজ্ঞাকারী বাচ্চারা, তোমাদের আদেশ করছি যে আমাকে স্মরণ করো তবেই তোমাদের পাপ খন্ডন হবে। এই কথাই সর্বপ্রথমে শোনাও যে নিরাকার শিববাবা বলেন, আমায় স্মরণ করো -- আমিই পতিত-পাবন। আমায় স্মরণ করলেই বিকর্ম বিনাশ হবে এছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আর না কেউ বলতে পারে। অসংখ্য সন্ন্যাসী ইত্যাদিরা রয়েছে, তাদের নিমন্ত্রণ জানানো হয় -- যোগ কনফারেন্সে এসে শামিল হও। এখন ওনাদের হঠযোগের দ্বারা কারোর কল্যাণ তো হয় না। যোগাশ্রম অসংখ্য রয়েছে, যারা এই রাজযোগের বিষয়ে একদম কিছুই জানে না। বাবাকেই জানে না। অসীম জগতের পিতাই এসে সত্যিকারের যোগ শেখান। বাবা তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের নিজ-সম তৈরী করেন। যেমন আমি নিরাকার। এই শরীরে অস্থায়ীভাবে আসি। ভাগ্যশালী রথ তো অবশ্যই মানুষেরই হবে। ষাঁড়কে তো বলা যাবে না। বাকি ঘোড়ার গাড়ি ইত্যাদির কোনও কথা নেই। না লড়াই-এর কোনো কথা রয়েছে। তোমরা জানো যে, আমাদের মায়ার সঙ্গেই লড়তে হবে। গাওয়াও হয় যে, মায়ার কাছে পরাজিত হলে পরাজয়.... তোমরা অত্যন্ত ভালভাবে বোঝাতে পারো -- কিন্তু এখন শিখছো। কেউ আবার শিখতে-শিখতেই একদম মাটিতে পড়ে যায়। কেউ খিটখিটে হয়ে যায়। দু'বোনেরও পরস্পরের মধ্যে তালমিল থাকে না, বিরোধিতা করে। তোমাদের পরস্পরের মধ্যে কোনও মনোমালিন্য হওয়া উচিত নয়। মনোমালিন্য হলে তখন বাবা বলবেন, এরা কি সার্ভিস করবে ? অনেক ভাল-ভালদেরও (বাচ্চাদের) এমন হাল হয়ে যায়। এখন যদি মালা তৈরী করা হয় তাহলে বলা হবে যে, এই মালা ডিফেক্টেড। এরমধ্যে এই-এই অবগুণ রয়েছে। ড্রামা প্ল্যান অনুসারে বাবা সার্ভিসও করাতে থাকেন। ডায়রেক্শন দিতে থাকেন। দিল্লীর চতুর্দিকে সেবার জন্য সমাবেশ করো(জড়ো হও)। এ কি শুধু একজনই করবে, না তা করবে না, পরস্পর মিলে পরামর্শ করতে হবে। সকলেরই এক মত হওয়া উচিত। বাবা এক কিন্তু সহযোগী বাচ্চারা ছাড়া কাজ কি করবেন ? না করবেন না। তোমরা সেন্টার খোলো, মত নাও। বাবা জিজ্ঞাসা করেন, সহায়তা করবে তো? তারা বলে -- হ্যাঁ বাবা, যদি সহযোগী না হই তাহলে কিছুই করতে পারবো না। ঘরেও মিত্র-পরিজনাদিরা আসে, তাই না! যদি গালিও দেয়, তারা বিরোধিতাও করে। তোমরা সে'সবের পরোয়া করবে না। বাচ্চারা, তোমাদের পরস্পর বসে পরামর্শ করা উচিত। যেমন সেন্টার খোলার সময়েও সকলে মিলে লেখে -- বাবা, আমি ব্রাহ্মণীর পরামর্শ মতন এই কার্য করছি। সিন্ধি ভাষায় বলা হয় -- ১-এর সঙ্গে ২ মিললে ১২ হয় অর্থাৎ ১২ জন (ব ত বারহা) হলে আরও ভাল রায়(যুক্তি) বেরোবে। কোথাও-কোথাও একে অপরের থেকে পরামর্শ নেয় না। এখন এভাবে কোনো কাজ হতে পারে কী ? বাবা বলবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা পরস্পর সংগঠিত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা এত বড় কার্য করবে কিভাবে। ছোট দোকান, বড় দোকানও তো হয়, তাই না! পরস্পর মিলিত হয়ে সংগঠন তৈরী করে। এভাবে কেউই বলে না যে, তুমি সাহায্য করো। প্রথমে তো সহযোগী তৈরী করা উচিত,তাই না! তারপর বাবা বলেন -- 'সাহস বাচ্চাদের সহায়তা বাবার'। প্রথমে তো নিজের সহযোগী করো। বাবা, আমরা এতখানি করছি, বাকি তুমি সহায়তা করো। এরকম নয় যে, প্রথমে তুমি(বাবা) সাহায্য করো। যে পুরুষের অর্থাৎ মানুষের সাহস আছে....(ঈশ্বর তাকেই সাহায্য করেন).....এর অর্থও বোঝে না। প্রথমে তো বাচ্চাদের সাহস চাই। কে-কে কি সাহায্য করে ? সমস্ত পোতামেল লিখবে -- অমুকে-অমুকে এই সাহায্য করে। নিয়মানুসারে লিখে দেবে। এছাড়া এভাবে এক-এক করে কি বলবে যে, আমরা সেন্টার খুলছি সাহায্য করো, না তা বলবে না। এরকমভাবে কি বাবা খুলতে পারেন না ? কিন্তু এভাবে তো হতে পারে না। কমিটিতে পরস্পরকে মিলতে হয়। তোমাদের মধ্যেও নম্বর অনুক্রমে রয়েছে, তাই না! কেউ-কেউ তো একদমই কিছু বোঝে না। কেউ আবার সদা প্রফুল্লিত থাকে। বাবা মনে করেন, এই জ্ঞানে অত্যন্ত খুশীতে থাকা উচিত। একজনকেই পিতা, শিক্ষক, গুরু-রূপে পাওয়া যায়, তবে তো খুশী হওয়া উচিত, তাই না! দুনিয়ায় এ'কথা কেউ-ই জানে না। শিববাবাই হলেন জ্ঞানের সাগর, পতিত-পাবন, সকলের সদ্গতিদাতা। সকলের বাবাও এক। এ'সব আর কারোর বুদ্ধিতে নেই। বাচ্চারা, তোমরা এখন জানো যে তিনিই হলেন নলেজফুল, লিবারেটর, গাইড। তাই বাবার মতানুসারে চলতে হবে। পরস্পর মিলিত হয়ে পরামর্শ করতে হবে। খরচা করতে হবে। একের মত তো চলতে পারে না। সহযোগী হিসেবে সকলকেই চাই। এও তো বুদ্ধিতে থাকা উচিত, তাই না! বাচ্চারা, তোমাদের ঘরে-ঘরে ম্যাসেজ পৌঁছে দিতে হবে। কেউ জিজ্ঞাসাও করে -- বিয়ের নিমন্ত্রণ পাই, যাব কি ? বাবা বলেন -- কেন যাবে না, যাও, গিয়ে নিজের সার্ভিস করো। অনেকের কল্যাণ করো। ভাষণও দিতে পারো। মৃত্যু সম্মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে, বাবা বলেন -- মামেকম্ স্মরণ করো। এখানে সব পাপাত্মারা রয়েছে। বাবাকেই গালি দিতে থাকে। বাবার থেকে তোমাদের বিমুখ করে দেয়। গায়নও রয়েছে যে, বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি। কে বলেছেন ? স্বয়ং বাবা বলেছেন -- আমার সঙ্গে প্রীত-বুদ্ধি নেই। বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি হয়। আমায় জানেই না। যাদের প্রীত-বুদ্ধি, যারা আমায় স্মরণ করে, তারা বিজয়প্রাপ্ত করবে। যদিও প্রীত-বুদ্ধি রয়েছে কিন্তু স্মরণ করে না তাই পদও কম প্রাপ্ত করবে। বাবা বাচ্চাদের ডায়রেক্শন দেন। মূলকথা হলো সকলকে ম্যাসেজ দেওয়া। বাবাকে স্মরণ করে পবিত্র হয়ে, পবিত্র দুনিয়ার মালিক হও। ড্রামানুসারে বাবাকেও বৃদ্ধ শরীর ধার নিতে হয়। বাণপ্রস্থ অবস্থায় প্রবেশ করতে হয়। মানুষ বাণপ্রস্থ অবস্থাতেই ঈশ্বর-মিলনের জন্য পরিশ্রম করে। ভক্তিতে মনে করা হয় -- জপ, তপাদি করা, এ'সব হলো ভগবানের সঙ্গে মিলিত হওয়ার পথ। কবে প্রাপ্ত হবে তা কিছু জানা নেই। জন্ম-জন্মান্তর ধরে ভক্তি করে এসেছে। ভগবানকে তো কেউই পায় নি। এ'কথা বোঝেই না যে, বাবা তখনই আসবেন, যখন পুরোনো দুনিয়াকে নতুন করতে হবে। রচয়িতা হলেন বাবা-ই, চিত্রও রয়েছে, কিন্তু ত্রিমূর্তিতে শিবকে দেখানো হয় না। শিববাবা ব্যতীত ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকরকে দেখায়, যেন গলা কাটা হয়েছে। বাবাকে ছাড়া অনাথ হয়ে গেছে। বাবা বলেন -- আমি এসে তোমাদের ধনী(সনাথ) করি। ২১ জন্মের জন্য তোমরা সনাথ(ধনী) হয়ে যাও। কোনও কষ্ট থাকে না। তোমরাও বলবে যে -- যতদিন পর্যন্ত না বাবাকে পেয়েছি ততদিন পর্যন্ত আমরাও সম্পূর্ণ অনাথ, তুচ্ছ বুদ্ধিসম্পন্ন ছিলাম। পতিত-পাবন বলে কিন্তু তিনি কখন আসবেন, তা জানে না। পবিত্র দুনিয়াই হলো নতুন দুনিয়া। বাবা কত সহজভাবে বোঝান। তোমরাও বুঝতে পারো যে, আমরা বাবার হয়ে গেছি, স্বর্গের মালিক অবশ্যই হবো। শিববাবা হলেন অসীম জগতের পিতা। বাবা-ই এসে সুখ-শান্তির উত্তরাধিকার প্রদান করেছিলেন। সত্যযুগে সুখ ছিল, বাকি সব আত্মারা শান্তিধামে ছিল। এখন এ'কথা শুধু তোমরাই বোঝ। শিববাবা কেন এসেছেন ? অবশ্যই নতুন দুনিয়া রচনা করতে। পতিতকে পবিত্র করতে এসেছেন। অবশ্যই উচ্চ কার্য করেছেন, মানুষ সম্পূর্ণরূপে গভীর অন্ধকারে রয়েছে। বাবা বলেন -- এও ড্রামায় নির্ধারিত। বাচ্চারা, বাবা বসে থেকে তোমাদের জাগিয়ে তোলেন। তোমরা এখন সমগ্র এই ড্রামাকে জানো -- কিভাবে এই নতুন দুনিয়া পুনরায় পুরোনো হয়। বাবা বলেন -- আর সবকিছু পরিত্যাগ করে অদ্বিতীয় পিতাকে স্মরণ করো। আমার কারোর প্রতি ঘৃণা আসে না। এসব বোঝাতে হয়। ড্রামানুসারে মায়ার রাজ্যও হবে। পুনরায় এখন বাবা বলছেন -- মিষ্টি-মিষ্টি বাচ্চারা, এখন এই চক্র সম্পূর্ণ হতে চলেছে। এখন তোমরা ঈশ্বরীয় মত পাও, সে অনুসারেই চলতে হবে। এখন ৫ বিকারের মতে আর চলো না। অর্ধেককল্প তোমরা মায়ার মতানুসারে চলে তমোপ্রধান হয়ে গেছো। এখন আমি তোমাদেরকে সতোপ্রধান বানাতে এসেছি। এই খেলা হলো সতোপ্রধান আর তমোপ্রধানের। গ্লানির কোনো কথা নেই। বলা হয়, ভগবান এই যাতায়াতের খেলা কেন রচনা করেছেন ? কেন-র প্রশ্নই উঠবে না। এ হলো ড্রামার চক্র, যা পুনরাবৃত হতেই থাকে। ড্রামা অনাদি। এখন কলিযুগ। সত্যযুগ গত হয়ে গেছে। পুনরায় এখন বাবা এসেছেন। বাবা-বাবা বলতে থাকো তবেই কল্যাণ হতে থাকবে। বাবা বলেন -- এ হলো অতি গুপ্ত রমনীয় কথা। কথিত আছে যে, বাঘিনীর দুধের জন্য সোনার পাত্র চাই। সোনার মতন বুদ্ধি হবে কিভাবে ? আত্মাতেই তো বুদ্ধি রয়েছে, তাই না! আত্মা বলে -- আমার বুদ্ধি এখন বাবার দিকে রয়েছে। আমি বাবাকে খুব স্মরণ করি। কিন্তু বসে-বসে বুদ্ধি অন্যদিকে চলে যায়, তাই না! অন্যান্য কাজ-কর্ম(ধান্দা) বুদ্ধিতে আসতে থাকে। তাহলে তারা তোমাদের কথা শুনবেই না। তাই পরিশ্রম আছে। মৃত্যু যত নিকটে আসতে থাকবে -- তোমরাও তত বেশী করে স্মরণে থাকবে। মৃত্যুর সময় সকলেই বলে, ভগবানকে স্মরণ করো। বাবা এখন নিজেই বলেন -- আমায় স্মরণ করো। তোমাদের সকলের এখন বাণপ্রস্থ অবস্থা। ফিরে যেতে হবে তাই এখন আমায় স্মরণ করো। অন্য কোনও কথা শুনো না। জন্ম-জন্মান্তরের পাপের বোঝা তোমাদের মাথায় রয়েছে। শিববাবা বলেন -- এইসময় সকলেই অজামিল। মূলকথাই হলো স্মরণের যাত্রা যার দ্বারা তোমরা পবিত্র হবে আবার পরস্পরের মধ্যে প্রেমও থাকা উচিত। পরস্পরের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বাবা তো প্রেমের সাগর, তাই না! তাই তোমাদেরও পরস্পরের মধ্যে অত্যন্ত ভালবাসা থাকা চাই। দেহী-অভিমানী হয়ে বাবাকে স্মরণ করতে হবে। ভাই-বোনের সম্পর্কও ভেঙে ফেলতে হয়। ভাই-বোনের সঙ্গেও যোগ রেখো না। একমাত্র বাবার সঙ্গেই যোগ রাখো। বাবা আত্মাদের বলেন -- আমায় স্মরণ করো তবেই তোমাদের বিকারী দৃষ্টি সমাপ্ত হয়ে যাবে। কর্মেন্দ্রিয়গুলির দ্বারা কোনো বিকর্ম করা উচিত নয়। মন্সায়(মনে) ঝড় অবশ্যই আসবে। এ অতি বড় মঞ্জিল(গন্তব্য)। বাবা বলেন -- দেখো, কর্মেন্দ্রিয় ধোঁকা দেয়, তাই সতর্ক হয়ে যাও। যদি উল্টোপাল্টা কার্য করে ফেলো তাহলেই শেষ। 'চড়লে তবেই চাখবে ...বৈকুন্ঠের মালিক..... পরিশ্রম ব্যতীত কিছু হয় নাকি, না হয় না। অনেক পরিশ্রম আছে। দেহ-সহ দেহের....... কারো-কারোর কোনও বন্ধন নেই তবুও আটকে থাকে। বাবার শ্রীমতে চলে না। লাখ দুই(অর্থ) হোক, বা যদি বড় কোনো কুটুম্বও হয় তথাপি বাবা বলবে, কাজকর্মে (ব্যবসাদিতে) বেশী আটকে পড়ো না। বাণপ্রস্থী হয়ে যাও। খরচপত্রাদি সংকোচিত করে ফেলো। দরিদ্ররা কত সাধারণভাবে চলে। এখন কি-কি সব জিনিস বেরিয়েছে, তা আর জিজ্ঞাসা কোরো না। ধনবানদের খরচার উপর খরচা হতেই থাকে। তা নাহলে পেটের জন্য বিশেষ আর কি চাই ? আড়াইশো গ্রাম আটা ব্যস। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) পরস্পরের মধ্যে অনেক অনেক প্রেমময় হতে হবে কিন্তু ভাই-বোনের দৃষ্টিতে যোগ রাখবে না (আত্মা ভাই রূপে) । কর্মেন্দ্রিয়ের দ্বারা কোনো বিকর্ম করা উচিত নয়।

২ ) এক ঈশ্বরের মতানুসারে চলে সতোপ্রধান হতে হবে। মায়ার মতকে পরিত্যাগ করতে হবে। পরস্পর মিলিত হয়ে সংগঠনকে মজবুত করতে হবে, পরস্পরের সহযোগী হতে হবে।

বরদান:-
অমৃতবেলার মাহাত্ম্য জেনে উন্মুক্ত ভান্ডার থেকে নিজের ঝুলি পরিপূর্ণ করে নেওয়া সৌভাগ্যশালী ভব

অমৃতবেলায় বরদাতা, ভাগ্যবিধাতার থেকে সৌভাগ্যের যে রেখা আঁকতে চাও এঁকে নাও ।কারণ সেইসময় তিনি ভোলা ভগবান-রূপে প্রেমময় (লাভফুল), তাই মালিক হয়ে যাও আর অধিকার নিয়ে নাও। এই ভান্ডারে কোনো তালা-চাবি নেই। সে'সময় কেবল মায়ার বাহানা ছেড়ে এক সঙ্কল্পে স্থিত হও যে, আমি যাই হই, যেমনই হই, আমি তোমার। মন-বুদ্ধিকে বাবার কাছে অর্পণ করে সিংহাসনের অধিকারী হয়ে যাও। তবেই বাবার সর্ব ধনভান্ডারকে নিজের ভান্ডার-রূপে অনুভব করবে।

স্লোগান:-
সেবায় যদি স্বার্থ মিশ্রিত থাকে তবে সফলতাও মিশ্র প্রকারের হবে, তাই নিঃস্বার্থ সেবাধারী হও।