29-11-2020 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
23-01-87 মধুবন
"সফলতার নক্ষত্রের বিশেষত্ব গুলি"
আজ জ্ঞান - সূর্য, জ্ঞান - চন্দ্রমা তাঁদের ঝিলমিল তারামন্ডলকে দেখছিলেন। ওখানে হল
আকাশের তারার আর এরা হল ধরিত্রীর তারা। ওগুলি হল প্রকৃতির সত্তা, এরা হল
পরমাত্ম-তারা, আধ্যাত্মিক নক্ষত্র। আকাশের তারাও রাতেই প্রকাশমান হয়, এই
আধ্যাত্মিক নক্ষত্ররা, জ্ঞান - নক্ষত্ররা, উজ্জ্বল নক্ষত্ররাও ব্রহ্মার রাতে প্রকট
হয়। আকাশের তারারা রাতকে দিন বানায় না, সূর্যই কেবল রাতকে দিন বানায়। কিন্তু
তোমরা তারারা জ্ঞান - সূর্য, জ্ঞান - চন্দ্রমার সাথে সাথী হয়ে রাতকে দিন বানিয়ে
থাকো। যেমন প্রকৃতির বায়ুমন্ডলে অনেক প্রকারের নক্ষত্র ঝিলমিল করতে দেখা যায়,
তেমনি পরমাত্ম - তারামন্ডলেও নানান প্রকারের নক্ষত্র ঝলমল করতে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
কেউ কেউ হল সমীপ নক্ষত্র আবার কেউ দূরের নক্ষত্রও আছে। কেউ হল সফলতার নক্ষত্র তো
কেউ হল আশাব্যাঞ্জক নক্ষত্র। কেউ এক স্থিতিতে স্থিত, কেউ কেউ আবার স্থিতি বদলকারী।
আকাশের তারা স্থান বদলায়, এখানে স্থিতি বদলায়। যেমন প্রকৃতির তারামন্ডলে ধূমকেতু
বা লেজ যুক্ত তারাও রয়েছে। অর্থাৎ সব বিষয়ে, সব কাজে "এটা কেন" , "ওটা কেন" - এই
রকম প্রশ্ন করবার লেজ অর্থাৎ কোশ্চেন মার্ক করতে থাকা লেজ বিশিষ্ট তারাও রয়েছে।
যেমন প্রকৃতির লেজ বিশিষ্ট তারা অর্থাৎ ধূমকেতুর পৃথিবীর উপরে ক্ষতিকর প্রভাব ঘটার
সম্ভাবনা থাকে, তেমনি বারে বারে প্রশ্ন করতে থাকা আত্মারা ব্রাহ্মণ পরিবারের
বায়ুমন্ডলকে খারাপ করে দেয়। সকলের এই বিষয়ে অনুভব রয়েছে। যখন নিজের প্রতিও
সংকল্পেও 'কী' এবং 'কেন' র লেজ যুক্ত হয়ে যায়, তখন মন আর বুদ্ধির স্থিতি নিজের
জন্যও ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। তার সাথে সাথে কোনো সংগঠনের মাঝে বা সেবা কার্যে 'কেন',
'কী', 'কেমন'... এই সব কোশ্চেন মার্ক এর ক্যু'র লেজ জুড়ে যায়। তাতে সংগঠনের
পরিবেশ বা সেবার ক্ষেত্রের পরিবেশ সাথে সাথে ভারী হয়ে যায়। অতএব নিজের উপরে,
সংগঠন বা সেবার উপরে প্রভাব পড়তে থাকে। কোনো প্রাকৃতিক তারা যদি আকাশ থেকে নীচে খসে
পড়ে, তখন কী হয়ে যায় ? পাথর। পরমাত্ম - নক্ষত্রদের মধ্যেও যখন নিশ্চয়, সম্বন্ধ
বা নিজের ধারণার উচ্চ স্থিতির থেকে নীচে নেমে যায়, তাতে পাথর বুদ্ধি হয়ে যায়।
কীভাবে পাথর বুদ্ধি হয়ে যায় ? যেমন পাথরকে যতই জল ঢালো পাথর গলবে না, রূপ বদলে
যাবে কিন্তু গলবে না। পাথর কোনো কিছুই ধারণ করে না। এইরকম যখন পাথর বুদ্ধি হয়ে যায়
সেই সময় যত ভালো ভালো কথা দিয়ে তাকে অনুভব করাতে চাও, তার অনুভব হবে না। যতই
জ্ঞান - বারি ঢালো না কেন তারা বদলাবে না। বিষয় বা পরিস্থিতি বদলে যাবে কিন্তু সে
নিজে বদলাবে না। একেই বলা হয় পাথর বুদ্ধি হয়ে যায়। তাই নিজেকে নিজে প্রশ্ন করো -
এই পরমাত্ম - তারামন্ডলের নক্ষত্রদের মাঝে আমি কোন্ নক্ষত্র ?
সব থেকে শ্রেষ্ঠ নক্ষত্র হল সফলতার নক্ষত্র অর্থাৎ যে সদা নিজের প্রগতিতে সফলতার
অনুভব করতে থাকে অর্থাৎ নিজের পুরুষার্থের বিধিতে সর্বদা সহজে সফলতার অনুভব করতে
থাকে। সফলতার নক্ষত্র সংকল্পেও নিজের পুরুষার্থের বিষয়েও কখনোই 'কী জানি এটা হবে
কিনা', 'করতে পারব কি নাকি পারব না' এই অসফলতার অংশ মাত্রও থাকবে না। যেমন স্লোগান
রয়েছে - সফলতা হল জন্মসিদ্ধ অধিকার, তেমনই তারা নিজের প্রতি সদা সফলতাকে অধিকারের
রূপে অনুভব করবে। অধিকারের পরিভাষাই হল, বিনা পরিশ্রমে, না চাইতেই পেয়ে যাওয়া।
সহজেই স্বাভাবিক ভাবেই পেয়ে যাওয়া - একেই বলা হয় অধিকার। এইরকম ভাবে এক হল -
নিজের প্রতি সফলতা, দ্বিতীয় হল - নিজেদের মধ্যে সম্বন্ধ সম্পর্কে, তা সে ব্রাহ্মণ
আত্মাই হোক কিম্বা লৌকিক পরিবার বা লৌকিক কার্য সম্বন্ধের ক্ষেত্রে, সকল সম্বন্ধ -
সম্পর্কে, সম্বন্ধে বা সম্পর্কে এলে যত কঠিন বিষয়ই হোক না কেন সফলতার অধিকারের আধারে
তাকে সহজ অনুভব করবে। অর্থাৎ সফলতার প্রগতিতে এগিয়ে যেতে থাকবে। সময় লাগতে পারে,
কিন্তু সফলতার অধিকার প্রাপ্ত হবেই হবে। এইরূপ স্থূল কার্য বা অলৌকিক সেবার কার্য
অর্থাৎ উভয় ক্ষেত্রের কর্মে সফলতার নিশ্চয়বুদ্ধি বিজয়ী হয়ে থাকবে। কখনো কখনো
পরিস্থিতির সম্মুখীনও হতে হতে পারে, ব্যক্তিদের কারণেও হয়ত সহ্য করতে হতে পারে,
কিন্তু সেই সহন করা উন্নতির রাস্তা তৈরী করে দেবে। পরিস্থিতির সম্মুখীন করা,
পরিস্থিতি, স্বস্থিতির উড়ন্ত কলার সাধন হয়ে যাবে। অর্থাৎ সকল বিষয়ে সফলতা স্বতঃতই
সহজে আর অবশ্যই প্রাপ্ত হবে।
সফলতার নক্ষত্র, তার বিশেষ লক্ষণ হল - কখনোই নিজের সফলতার অহংকার (অভিমান) হবে না,
অন্যদের কাছে বর্ণন করবে না, নিজের গীত নিজে গাইবে না (নিজের পিঠ চাপরাবে না), বরং
যত বেশী সফলতা ততই নম্র চিত্ত, নির্মান (নিরহংকারী), নির্মল স্বভাব হবে। আর অন্যরা
তাদের গীত গাইবে, কিন্তু সে নিজে সর্বদা বাবার গুণ গাইবে। সফলতার নক্ষত্র কখনোই
কোশ্চেন মার্ক করবে না। সদা বিন্দু রূপে স্থিত থেকে সকল কার্যে অন্যদেরকেও "ড্রামার
বিন্দু" স্মরণ করাবে, বিঘ্ন বিনাশক বানিয়ে, সমর্থ বানিয়ে সফলতার লক্ষ্যের দিকে নিয়ে
আসতে থাকবে। সফলতার নক্ষত্র কখনোই সীমিত সফলতার প্রাপ্তিকে দেখে প্রাপ্তির স্থিতিতে
অত্যন্ত খুশী আর পরিস্থিতি সামনে এলে বা প্রাপ্তি কিছু কম হল তো খুশী কমে গেল - এই
রকম স্থিতি পরিবর্তনকারী হবে না। সদা অসীম সফলতার প্রতিমূর্তি হবে। একরস, এক
শ্রেষ্ঠ স্থিতিতে স্থিত থাকবে। বাইরের পরিস্থিতি বা কার্যে বাইরে থেকে অন্যদের কাছে
অসফলতার অনুভব হলেও সফলতার নক্ষত্র অসফলতার স্থিতির প্রভাবে না এসে সফলতার
স্ব-স্থিতির দ্বারা অসফলতাকেও পরিবর্তিত করে নেবে। এই হল সফলতার নক্ষত্রের বিশেষত্ব
। এখন নিজেকে প্রশ্ন করো - 'আমি কে' ? কেবলই আশাব্যঞ্জনকারী নাকি আমি হলাম সফলতা
স্বরূপ ? আশাব্যঞ্জক হওয়াও ভালো, কিন্তু কেবল আশাব্যঞ্জক হয়ে চলা, প্রত্যক্ষ
সফলতার অনুভব না করতে পারা, তার ফলে কখনো শক্তিশালী, কখনো নিরাশ.... এই রকম উত্থান
- পতন বেশী রকম অনুভব করতে থাকে। যেমন কোনো বিষয়ে যদি বেশী ওঠা - নামার অবস্থা হতে
থাকে, তখন ক্লান্তি এসে যায় না ! তখন এতেও চলতে - চলতে ক্লান্তির অনুভব হতাশা নিয়ে
আসে। তো আশাহীন হওয়ার চেয়ে আশাবাদী হওয়া ভালো। কিন্তু সফলতার স্বরূপের অনুভবকারী হল
সদা শ্রেষ্ঠ। আচ্ছা। তাহলে শুনলে তো তারামন্ডলের কাহিনী ? মধুবনের হল্ কেবল
তারামন্ডল নয়, অসীম ব্রাহ্মণ সংসার হল তারামন্ডল। আচ্ছা।
আগত সকল নতুন বাচ্চারা, নতুনও আছে আর পুরানোরাও, খুব ভালো। কেননা তোমরা হলে অনেক
কল্পের। তাই অতি পুরানোও তোমরা । তো নতুন বাচ্চাদের নতুন উৎসাহ - উদ্দীপনা বাবার
সাথে মিলিত হওয়া ড্রামাতেই ছিল। সেই অনুসারেই হয়েছে। খুব উৎসাহ ছিল, তাই না ? যাব
- যাব... এতো উৎসাহ ছিল যে, কী ডায়রেক্শন রয়েছে, সেটাও শোনেনি। মিলনের আমোদে মজে
ছিল, তাই না ! কত করে বলা হল - কম এসো, কম এসো, কেউ কী শুনেছে ? বাপদাদা ড্রামার
প্রতিটি দৃশ্যকে দেখে খুব আনন্দ পান যে, এত এত বাচ্চার তো আসারই ছিল। সেইজন্যই এসেছে।
সব কিছুই সহজেই পাওয়া যাচ্ছে তো ? অসুবিধা হচ্ছে না তো ? এও ড্রামা অনুসারে,
সময়ানুসারে রিহার্সাল হচ্ছে। সকলে খুশী তো ? কঠিনকে তোমরা সহজ বানিয়ে দিয়ে থাকো,
তাই না ? সব কাজেই সহযোগিতা করা, যে ডায়রেক্শন দেওয়া হচ্ছে তাতে সহযোগী হওয়ার
অর্থই হল সহজ বানানো। সহযোগী যদি হও, তবে ৫ হাজারও ধরে যাবে আর সহযোগী না হলে অর্থাৎ
বিধিসম্মতভাবে না চললে তখন ৫ হাজারকেও জায়গা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। সেইজন্য
দাদীদেরকে এমন রেকর্ড দেখিয়েই যেও যে, যাতে সকলের অন্তর থেকে এটাই নির্গত হয়, ৫
হাজার যেন পাঁচশ'র মতোই ধরে গেল ! একেই বলা হয় 'কঠিনকে সহজ বানানো' । তো সকলে
নিজের নিজের রেকর্ড খুব ভালো সেট করেছো তো ? সার্টিফিকেট ( প্রমাণ - পত্র) ভালোই
পেয়েছ। এই রকম ভাবেই সব সময় খুশীতে থাকবে আর সকলকে খুশী করবে, তবে সদাই তালি
বাজাতে থাকবে। রেকর্ড ভালোই। সেইজন্যই দেখো, ড্রামা অনুসারে দুই বার মিলন হল, তাই
না ? এই নতুনদেরকে আদর আর আপ্যায়ণ করা, এ তো ড্রামা অনুসারেই হয়ে গেল। আচ্ছা।
সদা আত্মিক সফলতার শ্রেষ্ঠ নক্ষত্রদেরকে, সদা একরস স্থিতির দ্বারা বিশ্বকে আলোকিত
করা, জ্ঞান - সূর্য, জ্ঞান - চন্দ্রমার সদা সাথে থাকা, সদা অধিকারের নিশ্চয়ের নেশা
এবং নম্র চিত্ত স্থিতিতে স্থিত থাকা, এই রূপ পরমাত্ম - তারামন্ডলের সকল ঝলমলে
উজ্জ্বল নক্ষত্রদেরকে জ্ঞান - সূর্য, জ্ঞান - চন্দ্রমা বাপদাদার আত্মিক স্নেহ
সম্পন্ন স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার ।
পার্টিদের সাথে সাক্ষাৎ :
১
) নিজেদেরকে সদা নির্বিঘ্ন, বিজয়ী রত্ন মনে করো ? বিঘ্ন আসা এ তো ভালো কথা, কিন্তু
বিঘ্ন যেন হারিয়ে দিতে না পারে। বিঘ্নের আসা অর্থাৎ সদাকালের জন্য মজবুত বানানো।
বিঘ্নকেও একটি মনোরঞ্জনের খেলা মনে করে পার করা - তাকেই বলা হয় 'নির্বিঘ্ন বিজয়ী'
। তো বিঘ্ন দেখে ঘাবড়ে যাও না তো ? যখন বাবা সাথে আছেন তখন ঘাবড়ানোর কোনো ব্যাপারই
নেই। কেউ একলা থাকলে তখন ঘাবড়ে যাবে। কিন্তু কেউ যদি সাথে থাকে, তখন ঘাবড়ে যাবে না।
বাহাদুর হয়ে যায়। সুতরাং যেখানে বাবা সাথে আছেন, সেখানে বিঘ্নে ঘাবড়ে যাবে নাকি
তোমরা ? সর্বশক্তিমানের সামনে বিঘ্ন কী জিনিস ! কিছুই না। সেইজন্য বিঘ্নকে খেলা মনে
হয় সমস্যা নয়। বিঘ্ন অনুভাবী আর শক্তিশালী বানিয়ে দেয়। যে সদা বাবার স্মরণে আর
সেবাতে নিযুক্ত থাকে, বিজি থাকে, সে নির্বিঘ্ন থাকে। যদি বুদ্ধি বিজি না থাকে, তবে
মায়া চলে আসে। কিন্তু যদি বিজি থাকো, তবে মায়াও দূরে সরে যাবে। আসবে না চলে যাবে।
মায়াও জানে যে, এ আমার সাথী নয়, এখন সে পরমাত্মার সাথী। তখন দূরে সরে যাবে।
অগণিতবার বিজয়ী হয়েছ, সেইজন্য বিজয় প্রাপ্ত করা কোনো বড় ব্যাপার নয়। যে কাজ অনেক
বার করা হয়ে থাকে, সেটা তো সহজ লাগে। তো তোমরা তো অনেক বারের বিজয়ী। সদা খুশীতে
থাকো তোমরা, তাই না ? মাতা'রা সদা খুশীতে থাকো ? কখনো কাঁদো না তো ? কখনো এমন
পরিস্থিতি যদি এসে যায়, তবে কাঁদবে কী ? বাহাদুর তোমরা। পান্ডব ভিতরে ভিতরে কাঁদো
না তো ? বাবার হয়েও যদি সদা খুশীতে না থাকো, তবে কবে থাকবে ? বাবার হওয়া অর্থাৎ
সর্বদা খুশিতে থাকা । না থাকবে দুঃখ, না কাঁদবে দুঃখে। সব দুঃখ দূর হয়ে গেছে। অতএব
তোমাদের এই বরদানকে সর্বদা স্মরণে রাখবে। আচ্ছা।
২
) নিজেকে এই আধ্যাত্মিক উদ্যানের আধ্যাত্মিক আত্মিক গোলাপ (রুহে গোলাপ) মনে করো ?
সকল ফুলের মধ্যে যেমন গোলাপ ফুল সুগন্ধের কারণে খুব ভালো লাগে, তো সেটা হল গোলাপ আর
তোমরা হলে আত্মিক গোলাপ। আত্মিক গোলাপ অর্থাৎ যাতে সর্বদা আধ্যাত্মিক সৌরভ থাকবে।
আধ্যাত্মিক সৌরভ সম্পন্ন যিনি, তিনি যাকেই দেখবেন, আত্মাকেই দেখবেন, শরীরকে দেখবেন
না। নিজেও সর্বদা আত্মিক স্থিতিতে থাকবেন এবং অন্যদেরও আত্মাকেই দেখবেন। তাকেই বলা
হয় - "আত্মিক গোলাপ" । এ হল বাবার উদ্যান। বাবা যেমন উচ্চ থেকে উচ্চ, তেমনই তাঁর
উদ্যান হল উচ্চ থেকেও উচ্চ। যে উদ্যানের বিশেষ শৃঙ্গার আত্মিক গোলাপ হলে তোমরা সবাই।
আর আত্মিক সৌরভ অনেক আত্মাদের কল্যাণ করবে।
আজকের বিশ্বেও যা কিছু সমস্যা আছে, তার কারণই হল একে অপরকে আত্মা রূপে না দেখা ।
দেহ - অভিমানের কারণেই সকল সমস্যা। দেহী - অভিমানী হয়ে গেলে, তখন সব সমস্যা সমাপ্ত
হয়ে যায়। সুতরাং তোমরা আত্মিক গোলাপ, বিশ্বে আধ্যাত্মিক সৌরভ ছড়িয়ে দেওয়ার
তোমরা হলে নিমিত্ত, এই রকম সর্বদা নেশা থাকে ? কখনো এক, কখনো দ্বিতীয়, তা নয়। সদা
একরস স্থিতিতেই শক্তি থাকে। স্থিতি বদলে গেলেই শক্তি কম হয়ে যায়। সদা বাবার স্মরণে
থেকে যেখানেই সেবার সাধন রয়েছে, চান্স নিয়ে এগিয়ে যাও। পরমাত্ম - উদ্যানের আত্মিক
গোলাপ ভেবে আত্মিক সৌরভ ছড়িয়ে দিতে থাকো । কতো মধূর আত্মিক সৌরভ, যে সুগন্ধকে সকলে
চায় ! এই আত্মিক সৌরভ অনেক আত্মাদের সাথে সাথে নিজেরও কল্যাণ করে ফেলে। বাপদাদা
দেখেন যে, কতো আত্মিক সৌরভ কোথায় কোথায় ছড়িয়ে পড়েছে ? কোথায় যদি এতটুকুও দেহ
- অভিমান মিক্স হয়ে যায়, তবে আত্মিক সৌরভ আর অরিজিনাল থাকে না। সর্বদা এই আত্মিক
সৌরভের দ্বারা অন্যদেরকেও সুগন্ধিত বানাতে থাকো। সদা অবিচল থাকো ? কোনো অস্থিরতা
তোমাদেরকে বিচলিত করে দেয় না তো ? যা কিছুই হোক না কেন, শুনে, দেখে, এতটুকুও
বিচলিত হয়ে যাও না তো ? যখন 'নাথিং নিউ', তবে বিচলিত হও কেন ? কোনো নতুন কিছু হলে
তবে তো বিচলিত হবে ! এই 'কী' , 'কেন' অনেক কল্পে হয়েছে....একেই বলা হয় ' ড্রামার
উপরে নিশ্চয়বুদ্ধি' । সর্বশক্তিমানের সাথী তোমরা, সেইজন্য তোমরা হলে নিশ্চিন্ত
বাদশাহ (বেফিকর) । সব চিন্তা বাবাকে দিয়ে দিয়ে তুমি হয়ে গেলে সদা নিশ্চিন্ত
বাদশাহ। সদা আত্মিক সৌরভ ছড়াতে থাকো, তবে সব বিঘ্ন সমাপ্ত হয়ে যাবে ।
বরদান:-
প্রত্যক্ষতার সময়কে সমীপে নিয়ে আসা সদা শুভ চিন্তক
এবং স্ব চিন্তক ভব
সেবায় সফলতার আধার হল শুভ চিন্তক বৃত্তি, কেননা
তোমাদের এই বৃত্তি আত্মাদের গ্রহণ শক্তি বা জিজ্ঞাসাকে বৃদ্ধি করে, এর দ্বারা বাণীর
সেবা সহজেই সফল হয়ে যায়। আর স্ব এর প্রতি স্ব চিন্তনকারী স্ব চিন্তক আত্মা সদা
মায়া প্রুফ।কারো কোনো ত্রুটিকে গ্রহণ করার থেকে, ব্যক্তি বা বৈভবের আকর্ষণ থেকে
প্রুফ হয়ে যায়। তো যখন এই দুটি বরদান প্র্যাকটিক্যালে জীবনে নিয়ে আসবে, তখন
প্রত্যক্ষতার সময় সমীপে আসবে।
স্লোগান:-
তোমার সংকল্পকেও অর্পণ করে দাও, তবে সকল দুর্বলতা (ত্রুটি)
স্বতঃতই দূর হয়ে যায়।