27.11.2020 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


প্রশ্নঃ -
সার্ভিসেবেল বাচ্চাদের কোন্ অভ্যাস থাকা একদমই উচিত নয় ?

উত্তরঃ -
চাওয়ার । তোমাদের বাবার থেকে আশীর্ব্বাদ বা কৃপাদি চাওয়ার প্রয়োজন নেই। তোমরা কারোর থেকে পয়সাও চাইতে পারো না। চাওয়ার চাইতে মরা ভাল। তোমরা জানো যে, ড্রামানুসারে কল্প-পূর্বে যারা বীজ রোপণ করেছিল তারাই পুনরায় রোপন করবে, যাদের নিজেদের ভবিষ্য-পদ উচ্চ করতে হবে তারা অবশ্যই সহযোগী হবে। তোমাদের কাজ হলো সার্ভিস করা। তোমরা কারোর থেকে কিছু চাইতে পারো না। চাওয়া হয় ভক্তিতে, জ্ঞানে নয়।

গীতঃ-
আমায় আশ্রয় প্রদানকারী তোমাকে কোটি কোটি ধন্যবাদ....

ওম্ শান্তি ।
বাচ্চাদের অন্তর থেকে এই ধন্যবাদ শব্দটি বাবা, শিক্ষক, গুরুর উদ্দেশ্যে নির্গত হতে পারে না। কারণ বাচ্চারা জানে যে, এই খেলা(ড্রামা) পূর্ব-নির্ধারিত। ধন্যবাদাদির কোনো কথাই নেই। ড্রামানুযায়ী বাচ্চারা এটাও জানে। বাচ্চারা, ড্রামা শব্দটিও তোমাদের বুদ্ধিতে আসে। 'খেলা' শব্দটি বললেই সমগ্র খেলা অর্থাৎ ড্রামা তোমাদের বুদ্ধিতে চলে আসে। অবশ্যই তোমরা নিজে-নিজেই স্বদর্শন-চক্রধারী হয়ে যাও। ত্রিলোকও তোমাদের বুদ্ধিতে চলে আসে। মূললোক, সূক্ষ্মলোকে, স্থূললোক। তোমরা এও জানো যে, এখন খেলা সম্পূর্ণ হচ্ছে। বাবা এসে তোমাদের ত্রিকালদর্শী বানান। ত্রিকালের, ত্রিলোকের, আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বোঝান। কাল সময়কে বলা হয়। এ'সমস্ত কথা নোট করা ব্যতীত স্মরণে থাকতে পারে না। বাচ্চারা, তোমরা তো অনেক পয়েন্টস্ ভুলে যাও। ড্রামার সময়কালও (ডিউরেশন) তোমরা জানো। তোমরা ত্রিনেত্রী, ত্রিকালদর্শী হয়ে যাও, জ্ঞানের তৃতীয় নেত্র প্রাপ্ত হয়। সর্বাপেক্ষা বড় কথা হলো তোমরা আস্তিক হয়ে যাও, তা নাহলে তোমরা নির্ধনী(অনাথ) ছিলে। বাচ্চারা, এই জ্ঞান তোমরা প্রাপ্ত করছো। স্টুডেন্টদের বুদ্ধিতে সর্বদা জ্ঞান মন্থন চলতে থাকে। এও তো জ্ঞান, তাই না! ড্রামানুসারে সর্বোচ্চ পিতাই নলেজ দেন। ড্রামা শব্দটিও তোমাদের মুখ থেকে নির্গত হতে পারে, তাও তা সে-ই বাচ্চাদেরই যারা সেবায় তৎপর থাকে। এখন তোমরা জেনেছো যে -- আমরা অনাথ ছিলাম। এখন অসীম জগতের পিতা নাথকে(ধণী) পেয়েছো, তাই সনাথ(ধণী) হয়ে গেছো। প্রথমে তোমরা অসীম জগতের অনাথ ছিলে, অসীম জগতের পিতা অসীম জগতের সুখ প্রদান করেন, আর কোনও পিতা নেই যিনি এমন সুখ প্রদান করেন। বাচ্চারা, নতুন দুনিয়া আর পুরানো দুনিয়া এ'সব তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে। কিন্তু অন্যান্যদেরও সঠিকভাবে বোঝাও, এই ঈশ্বরীয় কার্যে সামিল হয়ে যাও। প্রত্যেকের পরিস্থিতি নিজের নিজের মতো হয়। এটা বুঝতেও পারবে সে-ই, যে স্মরণের যাত্রায় থাকবে। স্মরণের দ্বারাই বলপ্রাপ্ত হয়, তাই না! বাবা হলেনই -- তীক্ষ্ণ তরবারী। বাচ্চারা, তোমাদের ধার(তীক্ষ্ণ) করে নিতে হবে। যোগবলের দ্বারা তোমরা বিশ্বের রাজত্ব পাও। যোগের দ্বারা বলপ্রাপ্ত হয়, জ্ঞানে নয়। বাচ্চাদের বোঝানো হয় -- নলেজ হলো উপার্জনের উৎস (সোর্স অফ ইনকাম)। যোগকে বল বলা হয়। রাত-দিনের পার্থক্য। এখন যোগ ভাল না কি জ্ঞান ভাল। যোগই বিখ্যাত। যোগ অর্থাৎ বাবাকে স্মরণ করা। বাবা বলেন -- এই স্মরণের দ্বারাই তোমাদের পাপমোচন হবে। এর উপরেই বাবা জোর দেন। জ্ঞান তো সহজ। ভগবানুবাচ -- আমি তোমাদের সহজ জ্ঞান শোনাই। ৮৪ চক্রের জ্ঞান শোনাই। তার মধ্যেই সবকিছু চলে আসে। হিস্ট্রি-জিওগ্রাফী তো, তাই না! জ্ঞান আর যোগ দুই-ই সেকেন্ডের কাজ। ব্যস, আমরা আত্মা, আর আমাদের বাবাকে স্মরণ করতে হবে। এতেই পরিশ্রম। স্মরণের যাত্রায় থাকলে শরীর যেন বিস্মৃত হয়ে যায়। ঘন্টাখানেকও যদি এভাবে অশরীরী হয়ে বসো তাহলে কত পবিত্র হয়ে যাবে। কোনও মানুষ রাতে ৬ ঘন্টা, কেউ ৮ ঘন্টা ঘুমায়, তখন তো তারা অশরীরী হয়ে যায়, তাই না! সেইসময় কোনো বিকর্ম হয় না। না ঘুমোলে পাপ করতেই থাকবে। তাই নিদ্রাও একপ্রকারের সুরক্ষা। সারাদিন সার্ভিস করে আত্মা বলে -- এখন আমি শুয়ে পড়ছি, অশরীরী হয়ে যাচ্ছি। শরীর থাকতেও তোমাদের অশরীরী হতে হবে। আত্মা-রূপী আমরা হলাম এই শরীর থেকে পৃথক, শান্ত-স্বরূপ। আত্মার মহিমা হয়তো কখনও শোনো নি। আত্মা হলো সৎ-চিত্ত-আনন্দ স্বরূপ। পরমাত্মার মহিমা-কীর্তন করা হয় তিনি সত্য, তিনি চৈতন্য-স্বরূপ। তিনি সুখ-শান্তির সাগর। পুনরায় এখন তোমাদের বলা হবে মাস্টার, বাচ্চাকে মাস্টারও বলা হয়। বাবা যুক্তি বলতে থাকেন। এমনও নয় যে, সারাদিন নিদ্রামগ্ন থাকবে। না, তোমাদের তো স্মরণে থেকে পাপমোচন করতে হবে। যতখানি সম্ভব বাবাকে স্মরণ করতে হবে। এমনও নয় যে, বাবা আমাদের উপর দয়া বা কৃপা করেন। না, এ হলো ওঁনার মহিমা কীর্তন -- দয়াল-রাজা। এও ওঁনার ভূমিকা(পার্ট), তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান করা। ভক্তরা মহিমা-কীর্তন করে -- তোমরা শুধুই মহিমা-কীর্তন করবে না। এই গীতাদিও কালেদিনে বন্ধ হয়ে যাবে। স্কুলে কখনও গান গাওয়া হয় কী ? বাচ্চারা শান্তি-পূর্বক বসে থাকে। টিচার এলে উঠে দাঁড়ায় আবার বসে পড়ে। এই বাবা বলেন -- আমি তো পড়ানোর পার্ট পেয়েছি, তাই পড়াতে তো হবেই। বাচ্চারা তোমাদের ওঠার দরকার নেই। আত্মাকে বসে শুনতে হবে। তোমাদের কথাই হল সমগ্র দুনিয়া থেকে পৃথক। বাচ্চাদেরকে বলব কি যে, তোমরা ওঠো। না, সেসব তো ভক্তি মার্গে করতে, এখানে নয়। বাবা তো নিজে উঠে নমস্কার করেন। স্কুলে যদি বাচ্চারা দেরী করে আসে তাহলে শিক্ষক মহাশয় হয় বেত্রাঘাত করবেন নয়তো বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখবেন, এইজন্য সঠিক সময়ে পৌঁছানোর ভয় থাকে। এখানে তো ভয়ের কথা নেই। বাবা বোঝাতে থাকেন - মুরলী প্রাপ্ত হতে থাকে। সেটা প্রতিদিন পড়তে হবে। মুরলী পড় তো তোমাদের উপস্থিতির সংখ্যাও বৃদ্ধি হবে। নাহলে তো অনুপস্থিত থেকে যাবে কেননা বাবা বলছেন যে - আমি তোমাদের গুপ্ত কথাগুলি শোনাচ্ছি। যদি তোমরা মুরলী মিস করো তাহলে সেই পয়েন্টস্ গুলিও মিস হয়ে যাবে। এটা হল নতুন কথা, যেটা সমগ্র দুনিয়াতে আর কেউ জানে না। তোমাদের চিত্র দেখেই চক্কর খেয়ে যায়। এসব কথা কোনও শাস্ত্রতেও নেই। ভগবান স্বয়ং চিত্র বানিয়েছিলেন। তোমাদের এই চিত্রশালা হল নতুন। ব্রাহ্মণ কুলে যারা দেবতা হওয়ার হবে, কেবলমাত্র তাদের বুদ্ধিতেই বসবে। তারা বলবে যে, এটাই হল ঠিক। কল্প পূর্বেও আমরা পড়েছিলাম, অবশ্যই ভগবান পড়ান।

ভক্তিমার্গের শাস্ত্রগুলিতে প্রথম নম্বরে গীতাই আছে কেননা প্রথম ধর্মই হল এটা। পুনরায় অর্ধেক কল্প পরে, তারও অনেক পরে অন্য শাস্ত্র তৈরী হয়। প্রথমে যখন ইব্রাহিম এসেছিল তখন একাই ছিল। তারপর এক থেকে দুই, দুই থেকে চার হয়। যখন ধর্মের বৃদ্ধি হতে হতে লক্ষাধিক হয়ে যায়, তখন শাস্ত্র ইত্যাদি তৈরী হয়। তারও অর্ধেক সময় পর তৈরী হয়, হিসাব করা যায়, তাই না। বাচ্চাদের তো অনেক খুশীতে থাকতে হবে। বাবার থেকে আমাদের অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হচ্ছে। তোমরা জানো যে বাবা আমাদেরকে সৃষ্টিচক্রের সমগ্র জ্ঞান বুঝিয়েদেন। এটাই হল অসীম জগতের ইতিহাস ভূগোল। সবাইকে বলো যে এখানে সমগ্র বিশ্বের ইতিহাস ভূগোল বোঝানো হয়, যেটা অন্য কেউ বোঝাতে পারবে না। যদিও বিশ্বের নকশা আঁকা হয়। কিন্তু সেখানে এটা দেখায় কি, যে লক্ষ্মী নারায়ণ কবে রাজত্ব করেছিলেন, কত সময় ধরে সেই রাজত্ব চলেছিলো। বিশ্ব তো একটাই। ভারতের মধ্যেই রাজত্ব করে গেছেন, এখন নেই। এসব কথা কারোরই বুদ্ধিতে নেই। তারা তো কল্পের আয়ুই লম্বা - লক্ষ বছর বলে দিয়েছে। তোমাদের মতো মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চাদেরকে কেউ বেশী কষ্ট দেয় না। বাবা বলছেন - পবিত্র হতে হবে। পবিত্র হওয়ার জন্য তোমরা ভক্তি মার্গে অনেক ধাক্কা খেয়েছো। এখন বুঝতে পারো যে ধাক্কা খেতে খেতে ২৫০০ বছর পেরিয়ে গেছে। এখন বাবা এসেছেন পুনরায় রাজ্য-ভাগ্য দেওয়ার জন্য। তোমাদের এটাই স্মরণে আছে। পুরানো থেকে নতুন আর নতুন থেকে পুরানো অবশ্যই হয়। এখন তোমরা হলে পুরানো দুনিয়ার মালিক তাই না। পুনরায় নতুন দুনিয়ার মালিক হবে। একদিকে ভারতের অনেক মহিমা করতে থাকে, অন্যদিকে অনেক গ্লানিও করতে থাকে। সেই গানও তোমাদের কাছে আছে। তোমরা বুঝতে পারো যে - এখন কি কি হচ্ছে। এই দুরকমের গানই শােনাতে হবে। তোমরা বলতে পারো যে - কোথায় রামরাজ্য, কোথায় এই...!

বাবা হলেন গরীবের ভগবান। গরীবদেরই বাচ্চা প্রাপ্ত হয়। ধনীরা তো আপন নেশায় মত্ত থাকে। কল্প পূর্বে যারা এসেছিল, তারাই আসবে। চিন্তা করার দরকার নেই। শিববাবার কখনও কোনও বিষয়ে চিন্তা হয় না, দাদার হয়। এনার নিজেরই চিন্তা থাকে যে, আমাকে প্রথম নম্বরের পবিত্র হতে হবে। এরমধ্যে আছে গুপ্ত পুরুষার্থ। চার্ট রাখলে বোঝা যায়, এর পুরুষার্থ অনেক বেশী। বাবা সর্বদা বোঝাতে থাকেন, ডায়রী রাখো। অনেক বাচ্চা লেখেও, চার্ট রাখার কারণে অনেক বাচ্চার মধ্যেই পরিবর্তন এসেছে। এই যুক্তিটি খুব ভালো, তাই সবাইকেই করতে হবে। ডায়রী রাখলে তোমাদের অনেক লাভ হবে। ডায়রী রাখা অর্থাৎ বাবাকে স্মরণ করা। ডায়রীতে বাবাকে স্মরণের সময়- লিখতে হবে। ডায়রীও সহায়তাকারী হবে, পুরুষার্থ হবে। ডায়রী অনেক লক্ষ-কোটি তৈরী হয়, পয়েন্টস্ নোট করে রাখার জন্য। সবথেকে মুখ্য কথা তো হল এটা, নোট করে রাখা। এটা কখনও ভুলে যেও না। সেই সময়ই ডায়রীতে লিখতে হবে। রাতে শোয়ার আগে হিসেব-নিকেশ লিখতে হবে। তাহলে বুঝতে পারবে, এইভাবে চললে তো আমার ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে কেননা জন্ম-জন্মান্তরের বিকর্ম বিনাশ করতে হবে।

বাবা রাস্তা বলে দিচ্ছেন - নিজের উপর করুণা বা কৃপা করতে হবে। শিক্ষক তো পড়াচ্ছেন, আশীর্বাদ তো করেন না। আশীর্বাদ, কৃপা, করুণা ইত্যাদি চাওয়ার থেকে মরা ভালো। কারো থেকে টাকা-পয়সাও চাইবে না। বাচ্চাদেরকে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। বাবা বলছেন যে, ড্রামা অনুসারে যারা কল্প পূর্বে বীজ বপন করেছিল, উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করেছিল তারা নিজে থেকেই করবে। তোমরা কোনও কাজের জন্য কাউকে কাকুতি-মিনতি করবে না। সে করবে না তো পাবে না। মানুষ যখন দান-পূণ্য করে তখন রিটার্নেও কিছু পায়, তাই না। রাজার ঘরে বা ধনীর ঘরে জন্ম হয়। যার করার থাকবে, সে নিজে থেকেই করবে, তোমাদেরকে কাকুতি-মিনতি করতে হবে না। কল্প পূর্বে যে যতটা করেছিলো, ড্রামা তাকেই করাবে। প্রার্থনা জানানোর কোনও দরকার নেই। বাবা তো সর্বদা বলতে থাকেন, ধন-ভান্ডার ভরপুর হতে থাকবে, সেবার জন্য। বাচ্চাদেরকে কি বলা যাবে যে টাকা দাও! ভক্তি মার্গের কথা জ্ঞান মার্গে হয় না। যারা কল্প পূর্বে সাহায্য করেছিলো, তারা করতে থাকবে, তাদের কাছে কখনও কিছু প্রার্থনা করো না। বাবা বলছেন, বাচ্চারা তোমরা কখনও চাঁদা একত্রিত করো না। এটা তো সন্ন্যাসীরা করে থাকে। ভক্তিমার্গে অল্প একটু দান করে, তার রিটার্ণে এক জন্মের জন্য প্রাপ্ত হয়। অন্যদিকে এটা হল জন্ম-জন্মান্তরের জন্য। তো জন্ম-জন্মান্তরের জন্য সবকিছু দান করে দেওয়াই ভালো তাই না। এঁনার নামই হল ভোলা ভান্ডারী। তোমরা পুরুষার্থ করো তাহলে বিজয় মালার দানা হতে পারবে, ভান্ডার ভরপুর হলে কাল-কন্টক সব দূর হয়ে যাবে। সেখানে কখনও অকালে মৃত্যু হয় না। এখানে মানুষ ‘কাল’অর্থাৎ মৃত্যুকে অনেক ভয় পায়। অল্প কিছু হলেই মৃত্যুর কথা মনে পড়ে যায়। সেখানে এই চিন্তাই মনের মধ্যে আসবে না, তোমরা এখন অমরপুরীতে যাচ্ছ। এটা হল নোংরা মৃত্যুলোক। ভারতই অমরলোক ছিল, এখন মৃত্যুলোক হয়ে গেছে।

তোমাদের অর্ধেক কল্প অনেক খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে কেটেছে। নিচে নামতে থেকেছো। জগন্নাথ পুরীতে অনেক নোংরা নোংরা চিত্র আছে। বাবা তো হলেন অনুভাবী, তাই না! চারিদিকেই তিনি ঘুরেছেন। গোরা থেকে শ্যামলা হয়েছেন। গ্রামে বসবাস করতেন। বাস্তবে এখন সমগ্র ভারতই হল গ্রাম। তোমরা হলে গ্রামের ছোকরা। এখন তোমরা বুঝে গেছো যে আমরা বিশ্বের মালিক হচ্ছি। এরকম ভেবো না যে, আমি তো বম্বে-তে থাকি। বম্বেও স্বর্গের কাছে কিছুই নয়। একটা পাথরের সমানও নয়। আমরা গ্রামের ছোকরা-রা অনাথ হয়ে গিয়েছিলাম, এখন পুনরায় আমরা স্বর্গের মালিক তৈরী হচ্ছি, তাই খুশীতে থাকতে হবে। নামই হল স্বর্গ। অনেক হিরে জহর, মহলের মধ্যে লাগানো থাকে। সোমনাথের মন্দিরও অনেক হিরে জহর দিয়ে ভরপুর ছিল। প্রথম প্রথম শিবেরই মন্দির তৈরী হয়। অনেক ধনী ছিল। এখন তো ভারত গ্রাম হয়ে গেছে। সত্যযুগে ভারত ধনসম্পদে ভরপুর ছিল। এসব কথা তোমরা ছাড়া এই দুনিয়ায় আর কেউই জানেনা। তোমরা বলবে কাল আমরা রাজা ছিলাম, আজ ভিখারী হয়ে গেছি। পুনরায় বিশ্বের মালিক হতে চলেছি। বাচ্চারা, তোমাদের তো নিজেদের ভাগ্যকে ধন্যবাদ জানানো উচিত । আমরা হলাম পদ্মাপদম ভাগ্যশালী। আচ্ছা !

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আধ্যাত্মিক পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) বিকর্ম থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য এই শরীরে থেকেও অশরীরী হওয়ার পুরুষার্থ করতে হবে। স্মরণের যাত্রা যেন এমন হয় যাতে শরীরেরও বিস্মৃতি ঘটে।

২ ) জ্ঞানের মন্থন করে আস্তিক হতে হবে। মুরলী কখনও মিস করা উচিত নয়। নিজের উন্নতির জন্য ডায়রীতে স্মরণের চার্ট নোট করতে হবে।

বরদান:-
জ্ঞান-রূপী চাবি দ্বারা ভাগ্যের অসীম ধনভান্ডার প্রাপ্ত করে মালামাল(ভরপুর) ভব

সঙ্গমযুগে সমস্ত বাচ্চারাই ভাগ্য গঠনের জন্য জ্ঞান-রূপী চাবি পায়। এই চাবি লাগাও আর যত চাও তত ভাগ্য গঠনের খাজানা নিয়ে নাও। চাবি পাওয়া অর্থাৎ মালামাল(ভরপুর) হয়ে যাওয়া। যে যত মালামাল হয়, তার খুশীও স্বততঃ-ই তত থাকে। এমন অনুভূত হয় যেন খুশীর ঝর্না ধারা অবিরত অবিনাশী বইতেই থাকে। তারা সর্ব ধনভান্ডারে পরিপূর্ণ মালামাল দৃশ্যমান হয়। তাদের কাছে কোনকিছুই অপ্রাপ্ত নয়।

স্লোগান:-
বাবা সঙ্গে যোগসূত্র সঠিকভাবে রাখো, তাহলে সর্বশক্তির স্রোত(কারেন্ট) আসতেই থাকবে।