25.11.2020 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


প্রশ্নঃ -
যার বুদ্ধিতে জ্ঞান ধারণ হবে না, তার লক্ষণ কেমন হবে ?

উত্তরঃ -
সে ছোট ছোট ব্যাপারে নারাজ হয়ে যাবে। যার বুদ্ধিতে যত জ্ঞানের ধারণা হবে, সে তত খুশিতে থাকবে। বুদ্ধিতে যদি জ্ঞান থাকে যে এখন এই দুনিয়ার অধঃপতন হবেই এবং এতে কারোর ক্ষতি হবে না, তাহলে কখনোই নারাজ হবে না। সর্বদাই খুশিতে থাকবে।

ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের পিতা স্বয়ং বসে থেকে মিষ্টি মিষ্টি আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন। বাচ্চারা জানে যে তাঁকে সর্বোচ্চ ভগবান বলা হয়। ঘরের সাথেই আত্মার বুদ্ধির যোগ থাকা উচিত। কিন্তু এই দুনিয়ায় এমন একজন মানুষও নেই যার বুদ্ধিতে এইসব কথা আসে। সন্ন্যাসীরাও ব্রহ্মকে ঘর বলে মনে করে না। ওরা তো ব্রহ্মে লীন হয়ে যাওয়ার কথা বলে, অর্থাৎ ঘর বলে মানে না। ঘরে তো কেউ বাস করে। বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধি যেন ওখানেই টিকে থাকে। যেমন কেউ ফাঁসিতে ঝুলে যায়, সেইরকম তোমরা এখন আধ্যাত্মিক ফাঁসিতে ঝুলে আছো। তোমরা অন্তর থেকে জানো যে সর্বোচ্চ বাবা এসে আমাদেরকে সর্বোচ্চ ঘরে নিয়ে যান। এখন আমাদেরকে ঘরে ফিরতে হবে। তারপরে সর্বোচ্চ বাবা আমাদেরকে সর্বোচ্চ পদ পাইয়ে দেন। রাবণের রাজত্বে এখন সকলেই অধম। ওরা উত্তম, এরা অধম। উত্তম কাদের বলে সেটা ওরা জানেই না। যারা উত্তম, তারাও জানে না যে অধম কাদের বলা হয়। এখন তোমরা বুঝেছ যে শিববাবাকেই সর্বোচ্চ বলা হয়। বুদ্ধি ওপরের দিকেই চলে যায়। তিনি পরমধাম নিবাসী। কেউই জানে না যে আমরা আত্মারাও ওখানেই থাকি। এখানে তো কেবল ভূমিকা পালন করতে আসি। এগুলো কারোর চিন্তাতেই আসে না। নিজের কাজেই ব্যস্ত থাকে। বাবা এখন বোঝাচ্ছেন, স্মরণের যাত্রার মস্তিতে থাকলেই সর্বোচ্চ হয়ে যাবে। স্মরণের দ্বারাই উঁচু পদ পেতে হবে। তোমাদের যেসব জ্ঞান শেখানো হয়, সেগুলো ভুলে গেলে চলবে না। ছোট বাচ্চাও বর্ণনা করতে পারবে। কিন্তু যোগের বিষয়টাই বাচ্চারা বুঝতে পারে না। অনেক বাচ্চাই আছে যারা সঠিকভাবে স্মরণের যাত্রার বিষয়টা বুঝতে পারে না। আমরা কতো উঁচুতে চলে যাই। মূলবতন, সূক্ষ্মবতন এবং স্থূলবতন …। এখানেই ৫ তত্ত্ব রয়েছে। সূক্ষ্মবতন এবং মূলবতনে এগুলো থাকে না। বাবা এসেই এই জ্ঞান দেন। তাই তাঁকে জ্ঞানের সাগর বলা হয়। মানুষ মনে করে, অনেক শাস্ত্র পড়লেই জ্ঞান অর্জন করা যায়। অনেক পয়সাও উপার্জন করে। যারা শাস্ত্র পাঠ করে, তারা কত সম্মান পায়। কিন্তু তোমরা এখন বুঝেছ যে এর মধ্যে কোনো মহত্ত্ব নেই। কেবল ভগবানই হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। তাঁর দ্বারাই আমরা সর্বশ্রেষ্ট স্বর্গে রাজত্ব করার যোগ্য হয়ে যাই। স্বর্গ এবং নরক কাকে বলে ? ৮৪ চক্র কিভাবে আবর্তিত হয় ? এইসব কথা কেবল তোমরা ছাড়া, এই দুনিয়ায় আর কেউই জানে না। অনেকেই বলে যে এগুলো সব কল্পনা। এক্ষেত্রে বোঝা যায় যে ওরা আমাদের বংশের নয়। তবে হতাশ হয়ে গেলে চলবে না। বোঝা যায় যে ওই ব্যক্তির কোনো ভূমিকাই নেই, তাই কিছুই বুঝবে না। বাচ্চারা, এখন তোমাদের মাথা অনেক উঁচু হয়ে গেছে। তোমরা যখন উত্তম দুনিয়ায় থাকবে, তখন এই অধম দুনিয়ার কোনো জ্ঞান থাকবে না। অধম দুনিয়ার মানুষেরাও উত্তম দুনিয়াকে জানে না। ওই দুনিয়াকে স্বর্গ বলা হয়। হয়তো বিদেশের মানুষরা স্বর্গে যায় না, কিন্তু মুখে তো বলে যে একসময় হেভেন, প্যারাডাইস ছিল। মুসলিমরাও বেহেস্ত বলে। কিন্তু ওখানে কিভাবে যাওয়া যায়, সেটা ওরা জানে না। তোমরা এখন কতো কিছু বুঝেছ। সর্বোচ্চ বাবা এসে অনেক জ্ঞান দিয়েছেন। এই ড্রামা খুবই ওয়ান্ডারফুল ভাবে বানানো আছে। যারা এই ড্রামার রহস্য জানে না, তারা এগুলোকে কল্পনা বলে দেয়। তোমরা বাচ্চারা জানো যে এই দুনিয়াটাই পতিত। তাই এখানে সবাই আর্তনাদ করছে - হে পতিত-পাবন, তুমি এসে আমাদেরকে পবিত্র করে দাও। বাবা বলছেন, প্রতি ৫ হাজার বছর অন্তর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়। এই পুরাতন দুনিয়াটাই আবার নতুন হয়ে যায় এবং সেইজন্যই আমাকে আসতে হয়। বাচ্চারা, আমি প্রতি কল্পেই এসে তোমাদেরকে সর্বশ্রেষ্ট বানিয়ে দিই। পবিত্রকে উত্তম এবং পতিতকে অধম বলা হয়। এই দুনিয়াটাই একসময়ে নুতন এবং পবিত্র ছিল। এখন পতিত হয়ে গেছে। তোমরাও ক্রমানুসারে এই বিষয়গুলো বুঝতে পারো। যার বুদ্ধিতে এই বিষয়গুলো থাকে, সে সর্বদাই খুশিতে থাকবে। যদি বুদ্ধিতে না থাকে, তাহলে কেউ কিছু বলে দিলে কিংবা কিছু লোকসান হয়ে গেলে মেনে নিতে পারে না। বাবা বলছেন, এখন এই অধম দুনিয়ার অন্তিম সময় উপস্থিত। এটা পুরাতন দুনিয়া। মানুষ কতো পতিত হয়ে গেছে। কিন্তু কেউই বুঝতে পারে না যে আমরা পতিত হয়ে গেছি। ভক্তরা সর্বদা মাথা ঝুঁকিয়ে প্রণাম করে। পতিত ব্যক্তির সামনে কেউ মাথা ঝোঁকায় না। পবিত্র ব্যক্তির সামনেই মাথা ঠেকায়। সত্যযুগে কখনোই এইরকম হয় না। ভক্তরাই এইরকম করে। বাবা কখনোই বলেন না যে মাথা নামিয়ে হাঁটো। না, এটা তো পড়াশুনা। গড ফাদারের ইউনিভার্সিটিতে তোমরা লেখাপড়া করছো। তাই কতো নেশা থাকা উচিত। এমন যেন না হয় যে কেবল ইউনিভার্সিটিতেই নেশা থাকলো আর বাড়িতে যেতেই নেশা কেটে গেল। ঘরেও যেন নেশা থাকে। এখানে তোমরা বাচ্চারা জানো যে শিববাবা আমাদেরকে পড়াচ্ছেন। ইনি বলেন যে আমি তো জ্ঞানের সাগর নয়। এই বাবাও (ব্রহ্মা) জ্ঞানের সাগর নন। সাগর থেকে নদী বেরিয়ে আসে। একটাই সাগর আছে। সবথেকে বড় নদী হলো এই ব্রহ্মপুত্র নদী। অনেক বড় বড় স্টিমার আসে। বাইরের দেশেও অনেক নদী আছে। তবে কেবল এখানেই গঙ্গাকে পতিত-পাবনী বলা হয়। বাইরের দেশে কোনো নদীকে এইরকম বলা হয় না। যদি কোনো নদী পতিত-পাবন হত, তাহলে তো গুরুর কোনো দরকার থাকতো না। মানুষ নদী কিংবা সরোবরে ভ্রমন করে। কোনো কোনো সরোবর এতো নোংরা হয় যে বলে বোঝানো যাবে না। ওখান থেকেই মাটি তুলে মাখতে থাকে। এখন তোমাদের বুদ্ধিতে এসেছে যে এগুলো নীচে নামার রাস্তা। ওরা কতো ভালোবাসা নিয়ে ওখানে যায়। তোমরা এখন বুঝতে পারছো যে এই জ্ঞানের দ্বারা আমাদের চোখ খুলে গেছে। তোমাদের জ্ঞানের ত্রিনয়ন খুলে গেছে। আত্মাই ত্রিনয়ন পেয়ে যায়। তাই ত্রিকালদর্শী বলা হয়। আত্মার মধ্যে তিন কালের জ্ঞান এসে যায়। আত্মা তো বিন্দুমাত্র। তার মধ্যে চোখ থাকবে কিভাবে ? এগুলো বোঝার বিষয়। জ্ঞানের ত্রিনয়ন দ্বারা তোমরা ত্রিকালদর্শী, ত্রিলোকনাথ হয়ে যাও। নাস্তিক থেকে আস্তিক হয়ে যাও। আগে তোমরা রচয়িতা এবং রচনার আদি, মধ্য এবং অন্তকে জানতে না। এখন বাবার কাছ থেকে রচনার আদি, মধ্য এবং অন্তের কাহিনী জেনে যাওয়ার কারণে তোমরা উত্তরাধিকার পেয়ে যাও। এগুলো হলো জ্ঞান। ইতিহাস-ভূগোলও আছে, হিসাব-নিকাশও আছে। ভালো, বুদ্ধিমান বাচ্চা হলে হিসাব করবে যে আমরা মোট কতবার জন্মগ্রহণ করি এবং সেই হিসাব অনুসারে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের কতবার জন্ম হয়। কিন্তু বাবা বলেন, এইসব ব্যাপারে বেশি মাথা ঘামানোর দরকার নেই, সময় নষ্ট হবে। এখানে তো সবকিছু ভুলে যেতে হবে। এগুলো শোনানোর দরকার নেই। তোমরা সবাইকে রচয়িতা বাবার পরিচয় দাও, যাঁকে কেউ জানে না। শিববাবা এই ভারতেই আসেন। নিশ্চয়ই কিছু কর্ম করেন, তাই তো তাঁর জন্ম-জয়ন্তী পালন করা হয়। গান্ধীজী কিংবা কোনো সাধু-সন্তের স্ট্যাম্প বানানো হয়। ফ্যামিলি প্ল্যানিং নিয়েও স্ট্যাম্প তৈরি করা হয়। তোমরা এখন নেশায় আছো যে আমরা হলাম পাণ্ডব গভর্নমেন্ট। সর্বশক্তিমান বাবার গভর্নমেন্ট। এটা তোমাদের জাতীয় প্রতীক (কোট অফ আর্মস)। এই কোট অফ আর্মস-কে কেউই জানে না। তোমরা বুঝতে পারো যে বিনাশের সময়ে আমরা প্রীতবুদ্ধি সম্পন্ন হয়েছি। বাবাকে আমরা অনেক স্মরণ করি। বাবাকে স্মরণ করতে করতে প্রেমের অশ্রু চলে আসে। বাবা, তুমি আমাদেরকে অর্ধেক কল্পের জন্য সব রকম দুঃখ থেকে মুক্ত করে দাও। অন্য কোনো গুরু কিংবা আত্মীয়-বন্ধুর কথা মনে করার কোনো প্রয়োজন নেই। কেবল বাবাকেই স্মরণ করো। ভোরবেলার সময় খুবই ভালো। বাবা, তোমার জবাব নেই। প্রত্যেক ৫ হাজার বছর অন্তর তুমি আমাদের জাগিয়ে দাও। সকল মানুষই কুম্ভকর্ণের মতো আসুরিক নিদ্রায় মগ্ন আছে, অর্থাৎ অজ্ঞানতার অন্ধকারে রয়েছে। তোমরা এখন বুঝেছ যে এটাই হলো ভারতের প্রাচীন যোগ। এছাড়া যেসব অনেক রকম হঠযোগ ইত্যাদি শেখানো হয়, সেগুলো শরীর ভালো রাখার ব্যায়াম। তোমাদের বুদ্ধিতে এখন সমস্ত জ্ঞান আছে, তাই খুশিও হয়। এখানে আসার সময়ে মনে করো যে বাবা আমাদের রিফ্রেশ করে দেবেন। কেউ কেউ এখানে রিফ্রেশ হওয়ার পর বাইরে গেলেই সেই নেশা কেটে যায়। ক্রম তো আছেই। বাবা বোঝাচ্ছেন যে এটা পতিত দুনিয়া। যদিও মানুষ পতিত-পাবনকে আহ্বান করে, কিন্তু নিজেকে পতিত বলে মনে করে না। তাই পাপ ধোয়ার জন্য ভ্রমন করে। কিন্তু শরীরে তো পাপ লাগে না। বাবা এসে তোমাদেরকে পবিত্র বানিয়ে দেন এবং বলেন - কেবল আমাকে (মামেকম্) স্মরণ করলেই বিকর্মের বিনাশ হবে। এই সময়েই তোমরা এই জ্ঞান পেয়েছ। ভারত স্বর্গ ছিল, এখন নরক হয়ে গেছে। তোমরা বাচ্চারা এখন সঙ্গমযুগে আছ। কেউ বিকারে পড়ে গেলে ফেল হয়ে যায় অর্থাৎ নরকে গিয়ে পড়ে যায়। তারপর ১০০ গুণ শাস্তি ভোগ করতে হয়। তাই বাবা বোঝাচ্ছেন যে ভারত কতো শ্রেষ্ঠ ছিল, এখন কতো পতিত হয়ে গেছে। এখন তোমরা কতো বুঝদার হচ্ছ। মানুষ তো একেবারে অবোধ হয়ে গেছে। বাবা এখানে তোমাদের মধ্যে অনেক নেশা নিয়ে আসেন। তারপর বাইরে গেলেই নেশা কমে যায়। খুশি আর থাকে না। স্টুডেন্ট যদি কোনো বড় পরীক্ষায় পাশ করে, তাহলে কি তার খুশি কমে যায় ? পড়াশুনা করে পাশ করার পর কতকিছু হয়ে যায়। এখন দেখ, এই দুনিয়ার কি অবস্থা ! সর্বোচ্চ বাবা এসে তোমাদেরকে পড়াচ্ছেন। তিনি নিরাকার। তোমরা আত্মারাও নিরাকার। এখানে অভিনয় করতে এসেছ। বাবা এসেই এই ড্রামার রহস্য বুঝিয়েছেন। এই সৃষ্টিচক্রকে ড্রামাও বলা হয়। ওই ড্রামাতে কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে বেরিয়ে যায়। এটা অসীম জগতের নাটক যেটা তোমাদের বুদ্ধিতে যথাযথ ভাবে রয়েছে। তোমরা জানো যে আমরা এখানে ভূমিকা পালন করতে আসি। আমরা হলাম সীমাহীন অভিনেতা। এখানে শরীর ধারণ করে অভিনয় করি। এখন বাবা এসেছেন। এইসব কথা বুদ্ধিতে রাখতে হবে। সীমাহীন এই ড্রামাকেও বুদ্ধিতে রাখতে হবে। অসীম জগতের বাদশাহী পাওয়া যায়, তাই তার জন্য সেইরকম পুরুষার্থও করতে হবে। ঘর গৃহস্থে থেকেও পবিত্র হও। বিদেশে এমন অনেকেই আছে যারা বৃদ্ধ বয়সে একজন সঙ্গী পাওয়ার জন্য বিয়ে করে। তারপর দেখাশোনা করার জন্য তার নামে উইলও করে দেয়। কিছু তার নামে আর কিছু চ্যারিটির নামে লিখে দেয়। বিকারের কোনো ব্যাপারই নেই। যারা প্রকৃত প্রেমিক-প্রেমিকা, তারা কারোর প্রতি বিকারের জন্য প্রভাবিত (মুগ্ধ) হয় না। কেবল শরীরের প্রতি ভালোবাসা থাকে। তোমরা হলে আত্মিক প্রেমিকা, সকলেই এক প্রেমিককে স্মরণ করছো। সকল প্রেমিকার প্রেমিক তো একজনই। সকলে একজনকেই স্মরণ করছে। তিনি কতোই না সুন্দর, গৌর বর্ণের আত্মা। তিনি সর্বদাই গৌর বর্ণের থাকেন। তোমরা এখন শ্যাম হয়ে গেছ। তিনি তোমাদেরকে শ্যাম থেকে গোরা বানাচ্ছেন। কেবল তোমরাই জানো যে বাবা আমাদেরকে সুন্দর (গোরা) বানিয়ে দিচ্ছেন। এখানে এমন অনেকে আছে যারা এখানে বসে বসে কি ভাবে কে জানে ? স্কুলেও এইরকম হয়। বসে থাকতে থাকতে সিনেমা কিংবা বন্ধুদের কথা বুদ্ধিতে এসে যায়। সৎসঙ্গেও এইরকম হয়। এখানেও ঐরকম হয়। বুদ্ধিতে সঠিকভাবে না বসলে নেশাও হয় না আর ধারণাও হয় না। ফলে অন্যকেও ধারণা করাতে পারে না। এখানে এমন অনেক কন্যা আসে যারা যেকোনো স্থানে সেবাতে লেগে যেতে চায়, কিন্তু ঘরে ছোট ছোট সন্তান আছে। বাবা বলেন, বাচ্চাদের দেখাশুনার জন্য একজনকে কাজে রেখে দাও। এরা অনেকের কল্যাণ করবে। যদি হুঁশিয়ার হয়, তবে কেন না এই আধ্যাত্মিক সেবাতে লেগে যাবে। ৫-৬ জন সন্তানকে দেখাশুনার জন্য কাউকে কাজে রেখে দাও। এখন তো এই মাতাদেরই দান (চাল)। খুব নেশা থাকা উচিত। ভবিষ্যতে পুরুষেরা দেখবে যে আমার স্ত্রী তো সন্ন্যাসীদেরকেও পরাজিত করেছে। এই মাতারা একদিন লৌকিক এবং পারলৌকিকের নাম উজ্জ্বল করবে। আচ্ছা !

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্নেহ-সুমন স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী সন্তানদের জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) তোমাদেরকে বুদ্ধির দ্বারা সবকিছু ভুলে যেতে হবে। যেসব বিষয়ে সময় নষ্ট হয়, সেগুলো শোনার এবং শোনানোর দরকার নেই।

২ ) পড়াশুনার সময়ে বুদ্ধি যেন কেবল বাবার সাথেই যুক্ত থাকে, অন্য কোনো দিকে বুদ্ধি নিয়ে যাওয়া উচিত নয়। সর্বদা যেন নেশা থাকে যে নিরাকার বাবা আমাদেরকে পড়াচ্ছেন।

বরদান:-
সীমাহীন মঞ্চে অবস্থান করে, সেবার আসক্তি থেকে মুক্ত, নির্লিপ্ত অথচ প্রিয় বিশ্বসেবক ভব

বিশ্বসেবক মানে যে সীমাহীন মঞ্চে অবস্থান করে। এইরকম সেবক সেবা করতে করতেও নির্লিপ্ত এবং বাবার কাছে সর্বদা প্রিয় থাকে। সেবাতে আসক্ত হয় না, কারণ সেবার আসক্তিও একরকম সোনার শিকল। এই বন্ধন সীমাহীন ক্ষেত্র থেকে সীমিত পরিসরে নিয়ে আসে। তাই শরীরের স্মৃতি, ঈশ্বরীয় সম্বন্ধ কিংবা সেবার জন্য প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধার আসক্তি থেকে নির্লিপ্ত এবং বাবার কাছে প্রিয় হলেই বিশ্বসেবক হওয়ার বর পেয়ে যাবে এবং সর্বদাই সাফল্য অর্জন করবে।

স্লোগান:-
নিষ্ফলা সংকল্পগুলোকে এক সেকেন্ডের মধ্যে স্টপ করার রিহার্সাল করলেই শক্তিশালী হয়ে যাবে।