04.11.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
প্রশ্নঃ -
কোন্ বল
ক্রিমিনাল চোখকে সাথে সাথেই বদলে দেয় ?
উত্তরঃ -
জ্ঞানের তৃতীয় নেত্রের বল আত্মাতে এসে গেলে ক্রিমিনাল ভাব সমাপ্ত হয়ে যায়। বাবার
শ্রীমৎ হল - তোমরা নিজেরা হলে ভাই - ভাই, ভাই - বোন, তোমাদের চোখ কখনো ক্রিমিনাল হতে
পারে না। তোমরা সর্বদা স্মরণের আনন্দে থাকো । বাঃ আমার ভাগ্য বাঃ ! আমাদেরকে ভগবান
পড়ান। এইরকম চিন্তন করো, তবে আনন্দে মজে থাকবে।
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি
আত্মিক বাচ্চাদেরকে বাবা বোঝাচ্ছেন।বাচ্চারা জানে যে, আত্মিক পিতা, তিনিও হলেন আত্মা,
তিনি হলেন পারফেক্ট, তাঁর মধ্যে কোনও জং লাগে না। শিববাবা বলবেন আমার মধ্যে জং আছে
? একেবারেই নেই। এই দাদার মধ্যে (ব্রহ্মা বাবা) তো পুরো জং ছিল। এনার মধ্যে (শিববাবা)
বাবা প্রবেশ করায় সহায়তাও মেলে (জং ওঠানোর) ।মূল বিষয় হল ৫ বিকারের কারণে আত্মার
উপরে জং লেগে যাওয়ায় ইম্পিওর (অপবিত্র) হয়ে গেছে। তাই যত বেশি বাবাকে স্মরণ করবে,
জং সরে যেতে থাকবে। ভক্তি মার্গের (শাস্ত্র /ব্রত কথা) কথা তো জন্মজন্মান্তর ধরে
শুনে আসছো আসছো। এ সব তো অদ্ভুত সব বিষয়। জ্ঞান সাগরের কাছ থেকে এখন তোমরা জ্ঞান
প্রাপ্ত করছো।তোমাদের বুদ্ধিতে এইম অবজেক্ট রয়েছে, আর কোনো সৎসঙ্গ ইত্যাদিতে এইম
অবজেক্ট নেই। ঈশ্বর সর্বব্যাপী বলে আমার গ্লানি করতে থাকে, ড্রামা প্ল্যান অনুযায়ী।
মানুষ এও জানে না যে এ হল ড্রামা। এতে ক্রিয়েটর, ডাইরেক্টরও ড্রামার অধীন। যদিও বলা
হয় সর্বশক্তিমান - কিন্তু তোমরা জানো যে, তিনিও ড্রামার ট্র্যাকে চলছেন। বাবা নিজে
এসে বাচ্চাদেরকে বোঝান, বলেন - আমার মধ্যে অবিনাশী পার্ট নথিভুক্ত করা আছে, সেই
অনুসারেই আমি পড়াই। যা কিছু আমি বোঝাই, সবই ড্রামাতে নথিভুক্ত রয়েছে। এখন
তোমাদেরকে এই পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে পুরুষোত্তম হতে হবে। এ যে হল ভগবানুবাচ। বাবা
বলেন - বাচ্চারা, তোমাদেরকে পুরুষার্থ করে এই লক্ষ্মী - নারায়ণ হতে হবে। এই রকম ভাবে
কোনো মানুষের পক্ষেই বলা সম্ভব নয় যে, তোমাকে বিশ্বের মালিক হতে হবে। তোমরা জানো
যে, আমরা এসেছি বিশ্বের মালিক, লক্ষ্মী - নারায়ণ হতে। ভক্তি মার্গে তো জন্ম -
জন্মান্তর ধরে কত কথকতা শুনতে, কোনো বোধই ছিল না তোমাদের। এখন তোমরা বোঝো যে -
যথার্থই এই লক্ষ্মী - নারায়ণের রাজত্ব স্বর্গে ছিল, এখন নেই। ত্রিমূর্তির বিষয়েও
বাবা বাচ্চাদেরকে বুঝিয়েছেন। ব্রহ্মার দ্বারা আদি সনাতন দেবী - দেবতা ধর্মের
স্থাপনা হয়। বাবা বলেন, কল্প কল্পের সঙ্গমযুগে এসে বাচ্চারা, তোমাদেরকে আমি পড়াই।
এটা তো পাঠশালা। এখানে বাচ্চাদের ক্যারেক্টার সংশোধন করতে হয়। ৫ বিকারকেও দূর করতে
হয়। তোমরাও দেবতাদের সামনে গিয়ে কীর্তন করতে - তুমি তো সর্ব গুণ সম্পন্ন.... আমি
তো পাপী তাপি। ভারতবাসীই দেবতা ছিল। সত্যযুগে এই লক্ষ্মী - নারায়ণ পূজ্য ছিলেন
তারপর কলিযুগে পুজারী হয়ে গেছে। এখন আবার পূজ্য হয়ে উঠছে। পূজ্য সতোপ্রধান আত্মারা
ছিল। তাদের শরীরও সতোপ্রধান ছিল। যেমন আত্ম তেমন গহনা। শোনায় খাদ মেশানো হলে তার
দাম কত কম হয়ে যায়। তোমাদের মূল্যও অনেক উচ্চ ছিল। এখন মূল্য কত কম হয়ে গেছে।
তোমরা পূজ্য ছিলে এখন পূজারী হয়ে গেছ। এখন যত যোগে থাকবে ততোই মরিচা উঠে যেতে থাকবে
এবং বাবার সঙ্গে ভালোবাসা বাড়বে, খুশীর অনুভব হবে। বাবা স্পষ্ট করে বলেন - বাচ্চারা,
চার্ট রাখো যে সারা দিন আমরা বাবাকে কতক্ষণ স্মরণ করি ? স্মরণের যাত্রা, এই শব্দটি
সঠিক। স্মরণ করতে করতে মরিচা উঠতে থাকবে আর অন্ত সময়ে যেমন মতি তেমন গতি হয়ে যাবে।
দৈহিক জগতের পান্ডারা তীর্থ যাত্রায় নিয়ে যায়। এখানে তো আত্মা নিজেই যাত্রা করে।
নিজ নিবাস পরমধাম যেতে হবে কারণ ড্রামার চক্র এখন পূর্ণ হয়েছে। এই কথাও তোমরা জানো
যে এই দুনিয়া হলো খুবই খারাপ, নোংরা। পরমাত্মাকে তো কেউ জানে না, আর জানবেও না, তাই
বলা হয় বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি। তাদের জন্য তো এই নরক ই স্বর্গের সমান। তাদের
বুদ্ধিতে এইসব কথা ঢুকবে না। বাচ্চারা এইরূপ বিচার সাগর মন্থন করার জন্য তোমাদের
খুব একাকী থাকা প্রয়োজন। এখানে তো একাকী থাকার স্থান সহজলভ্য তাই মধুবনের অনেক মহিমা
আছে। বাচ্চাদের অনেক খুশী হওয়া উচিত। আমরা জীব আত্মা, আমাদেরকে পরমাত্মা পড়াচ্ছেন।
কল্প পূর্বেও এমন ভাবে পড়িয়ে ছিলেন। কৃষ্ণের কথা নয়। কৃষ্ণ তো শিশু। কৃষ্ণ আত্মা,
ইনি হলেন পরম আত্মা। প্রথম নম্বরের আত্মা শ্রীকৃষ্ণ তিনি এখন লাস্ট নম্বরে এসেছেন।
তাই নামটিও বদলে গেছে। অনেক জন্মের শেষে নাম তো ভিন্ন হবেই। নাম তো দাদা লেখরাজ। এই
হল অনেক জন্মের শেষ জন্ম। বাবা বলেন আমি এনার মধ্যে প্রবেশ করে তোমাদেরকে রাজযোগের
শিক্ষা প্রদান করছি। বাবা কারো মধ্যে তো আসবেন তাইনা। শাস্ত্রে এইসব কথা লেখা নেই।
বাচ্চারা, বাবা তোমাদের পড়ান, তোমরাই পড়াশোনা করো। তারপরে সত্যযুগে এই জ্ঞান থাকবে
না। সেখানে হয় প্রালব্ধ। বাবা সঙ্গমে এসে এই নলেজ প্রদান করেন ফলে তোমরা পদ মর্যাদা
প্রাপ্ত করো। এই টাইম হলো অসীম জগতের পিতার কাছে অসীমের অবিনাশী উত্তরাধিকার
প্রাপ্ত করার তাই বাচ্চাদের অমনোযোগী হওয়া উচিত নয়। মায়া মনোযোগ সরিয়ে দেয় তখন ধরে
নেওয়া হয় তাদের ভাগ্যে নেই। বাবা তো সবরকমের উপায় বলে দেন। ভাগ্যে তবুও তফাৎ রয়ে
যায়। কেউ পাস, কেউ ফেল হয়ে যায়। ডবল মুকুটধারী হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করতে হয়।
বাবা বলেন গৃহস্থ ব্যবহারে থাকো। লৌকিক পিতার ঋণও তো বাচ্চাদের মেটাতে হবে। নিয়ম
অনুযায়ী চলতে হবে। এখানে তো সবই হল অনিয়মিত। তোমরা জানো আমরাই কতখানি উঁচু পবিত্র
ছিলাম, তারপরে নীচে নেমেছি। এখন পুনরায় পবিত্র হতে হবে। প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান
তোমরা সবাই বি.কে. তাই তোমাদের কুদৃষ্টি হতে পারে না কারণ তোমরা হলে ভাই-বোন তাইনা।
বাবা এই যুক্তি বলে দেন। তোমরা সবাই বাবা-বাবা বলো তাই ভাই-বোন হলে। ভগবানকে সবাই
বাবা বলে তাইনা। আত্মারা বলে আমরা শিববাবার সন্তান। পরে শরীরধারী রূপে ভাই-বোন হই।
তাহলে আমাদের কুদৃষ্টি কেন হবে। তোমরা বড় বড় সভায় গিয়ে এই কথা বোঝাতে পারো। তোমরা
সবাই হলে ভাই-ভাই পরে প্রজাপিতা ব্রহ্মা দ্বারা রচিত রচনা হও তোমরা, তখন ভাই-বোন হয়ে
যাও, অন্য কোনও সম্বন্ধ নয়। আমরা সবাই এক পিতার সন্তান। এক পিতার সন্তান হয়ে
বিকারগ্রস্ত হবে কীভাবে। ভাই-ভাইও হও, ভাই-বোনও হও তোমরা। বাবা বুঝিয়েছেন এই দৃষ্টি
খুব ধোঁকা দেয়। চোখ ভালো কিছু দেখে তখন মনে ইচ্ছে হয়। যদি চোখ দেখবে না তো তৃষ্ণাও
জাগবে না। এই কুদৃষ্টি-কে পরিবর্তন করতে হয়। ভাই-বোন বিকার গ্রস্ত হতে পারে না।
কুদৃষ্টি দূর করা উচিত। জ্ঞানের তৃতীয় নেত্রের শক্তি চাই। অর্ধকল্প এই চোখ দিয়েই
কাজ করেছ, এখন বাবা বলেন এই সমস্ত কাট বা মরিচা উঠবে কীভাবে ? আমরা আত্মারা তো
পবিত্র ছিলাম, তাতে মরিচা লেগেছে। বাবাকে যত স্মরণ করবে ততই বাবার সঙ্গে ভালোবাসা
বৃদ্ধি পাবে। পড়াশোনা দ্বারা নয়, স্মরণের দ্বারা ভালোবাসা বাড়বে। ভারতের হল প্রাচীন
যোগ, যার দ্বারা আত্মা পবিত্র হয়ে নিজ ধাম চলে যাবে। সব ভাইদের নিজ পিতার পরিচয় দিতে
হবে। ঈশ্বর হলেন সর্বব্যাপী এই জ্ঞানের পরিণাম হল এইরূপ অধঃপতন। এখন বাবা বলেন -
ড্রামা অনুসারে তোমাদের পার্ট আছে। রাজধানী অবশ্যই স্থাপন হবে। কল্প পূর্বে যে যত
পুরুষার্থ করেছে, ততখানি করবে নিশ্চয়ই। তোমরা সাক্ষী হয়ে দেখতে থাকো। এই প্রদর্শনী
ইত্যাদি তো অনেক দেখবে। এই হল তোমাদের ঈশ্বরীয় মিশন। এই হল ইনকরপরিয়াল গড ফাদারলী
মিশন। তাদের হয় খ্রিস্টান মিশন, বৌদ্ধ মিশন। এই হল ইনকরপরিয়াল গড ফাদারলী মিশন।
নিরাকার তো নিশ্চয়ই কোনো দেহে আসবেন, তাইনা। তোমরাও নিরাকার আত্মারা আমার সঙ্গেই
বাস করতে তাইনা। এই ড্রামা কেমন, এই কথা কারো বুদ্ধিতে নেই। রাবণের রাজ্যে সবাই
বিপরীত বুদ্ধি হয়ে গেছে। এখন বাবার সঙ্গে প্রীতিযুক্ত হতে হবে। তোমরা কথা দিয়েছিলে
আমার তো একমাত্র বাবা আর কেউ নয়। নষ্টমোহ হতে হবে। খুব পরিশ্রমের কাজ। এমন যেন
ফাঁসিতে ঝুলে থাকার মতন। বাবাকে স্মরণ করা অর্থাৎ ফাঁসিতে ঝুলে থাকা। শরীরের ভান
ভুলে আত্মাকে যেতে হবে বাবার স্মরণে। বাবার স্মরণ খুব জরুরী। তা নাহলে মরিচা উঠবে
কীভাবে ? বাচ্চাদের মনে খুশী থাকা উচিত - শিববাবা আমাদের পড়ান। কেউ শুনলে বলবে এরা
কি বলে ! কারণ তারা তো কৃষ্ণকে ভগবান ভাবে।
বাচ্চারা তোমাদের তো এখন খুব খুশী অনুভব হয় যে, আমরা এখন কৃষ্ণের রাজধানীতে যাই।
আমরাও প্রিন্স-প্রিন্সেস হতে পারি। কৃষ্ণ হলেন ফার্স্ট প্রিন্স। নতুন বাড়িতে থাকে।
পরে যে বাচ্চারা জন্ম নেবে তারা তো দেরিতে আসে, তাইনা। জন্ম স্বর্গেই হবে। তোমরাও
স্বর্গে প্রিন্স হতে পারো। সবাই তো প্রথম নম্বরে আসবে না। নম্বর অনুযায়ী মালা তৈরি
হবে, তাইনা। বাবা বলেন - বাচ্চারা, খুব পুরুষার্থ করো। এখানে তোমরা এসেছো নর থেকে
নারায়ণ হতে। এই কাহিনীও হল সত্যনারায়ণের। সত্যলক্ষ্মীর কাহিনী কখনও শোনোনি হয়তো।
ভালোবাসা সবার কিন্তু কৃষ্ণের প্রতি আছে। কৃষ্ণকেই দোলনায দোলায়। রাধেকে কেন নয় ?
ড্রামা প্ল্যান অনুযায়ী কৃষ্ণের নামই চলে আসছে। তোমাদের সমজিন্স হল রাধে তবুও
ভালোবাসা কৃষ্ণের প্রতি থাকে। ড্রামায় এমনই পার্ট রয়েছে। বাচ্চারা সবসময় সবার খুব
প্রিয় হয়। পিতা, পুত্রসন্তান দেখে খুব খুশী হবে। পুত্র হলে খুশীর অনুভব তো হবেই,
শিশু কন্যা হলে অত খুশীর অনুভূতি হবে না। অনেকে তো কন্যা সন্তানকে মেরে ফেলে।
রাবণের রাজ্যে চরিত্রের অনেক তফাৎ হয়ে যায়। গানও গায় - তুমি সর্বগুণ সম্পন্ন ....।
আমরা হলাম নির্গুণ বা গুণহীন। এখন বাবা বলেন পুনরায় গুণযুক্ত হও। এখন তোমরা বুঝেছো
আমরা অনেকবার এই বিশ্বের মালিক হয়েছি। এখন আবার হতে হবে। বাচ্চাদের অনেক খুশীতে থাকা
উচিত। অহো ! শিববাবা আমাদের পড়ান। বসে এই চিন্তন করো। ভগবান আমাদের পড়ান, বাঃ ভাগ্য
বাঃ! এমন এমন চিন্তন করে আনন্দে বিভোর হয়ে যাওয়া উচিত। বাঃ ভাগ্য বাঃ! অসীম জগতের
বাবাকে আমরা পেয়েছি, আমরা বাবাকেই স্মরণ করি। পবিত্রতা ধারণ করতে হবে। আমরা এই
স্বরূপে পরিণত হই, দিব্য গুণ ধারণ করি। এও হল "মন্মনাভব" । বাবা আমাদের এমন রূপ
প্রদান করেন। এ সব হল প্রাক্টিক্যালে অনুভব করার কথা।
বাবা মিষ্টি-মিষ্টি বাচ্চাদের পরামর্শ দেন - চার্ট লেখো এবং একাকী স্থানে বসে নিজের
সঙ্গে কথা বলো। এই ব্যাজ নিজে ধারণ করে রাখো। ভগবানের শ্রীমৎ অনুসারে আমরা এমন
স্বরূপে পরিণত হচ্ছি। এনাকে (ব্রহ্মা বাবা) দেখে ওঁনাকে ভালোবাসো। বাবার স্মরণে আমরা
এমন স্বরূপ ধারণ করি। বাবা এইসব আপনারই চমৎকার, বাবা আমরা আগে তো জানতাম না যে আপনি
আমাদের বিশ্বের মালিক বানাবেন। নবধা ভক্তি অর্থাৎ কঠোর ভক্তিতে দর্শন করার জন্য গলা
কাটতে, প্রাণ ত্যাগ করতেও ভয় থাকে না, তখন দর্শন প্রাপ্ত হয়। এমন ভক্তদের মালা আছে।
ভক্তদের অনেক মানও আছে। কলিযুগের ভক্ত মানেই তো বাদশাহ। এখন বাচ্চারা তোমাদের অসীম
জগতের বাবার সঙ্গে প্রীতি আছে। এক বাবা ব্যতীত অন্য কেউ যেন স্মরণে না থাকে। লাইন
একদম ক্লিয়ার থাকা উচিত। এখন আমাদের ৮৪ জন্ম পূর্ণ হচ্ছে। এখন আমরা বাবার আদেশ
অনুযায়ী পুরোপুরি চলবো। কাম হল মহাশত্রু, এই বিকারের কাছে হারলে চলবে না। হার
স্বীকার করে পরে অনুশোচনা করে কি লাভ ? একদম হাড়গোর ভেঙে যায়। খুব কঠিন দন্ড ভোগ
করতে হয়। মরিচা পরিষ্কার না হয়ে আরও জমা হয়ে যায়। যোগ লাগবেই না। স্মরণে থাকা খুব
পরিশ্রমের কাজ। অনেকে গল্প হেঁকে দেয় - আমরা তো বাবার স্মরণে থাকি। বাবা জানেন,
থাকতে পারে না। এতে মায়ার বড় বড় ঝড় আসে। স্বপ্ন ইত্যাদি এমন আসবে যে, অস্থির করে
দেবে। জ্ঞান তো খুব সহজ। ছোট বাচ্চারাও বুঝিয়ে দেবে। যদিও স্মরণের যাত্রাতেই অনেক
সমস্যা । এতো খুশী হয়ো না যে - আমরা তো অনেক সার্ভিস করি। গুপ্তরূপে (স্মরণ করার)
নিজের সার্ভিস করতে থাকো। এনার তো খুব নেশা থাকে - আমি শিববাবার একমাত্র সন্তান।
বাবা হলেন বিশ্বের রচয়িতা সুতরাং অবশ্যই আমরাও স্বর্গের মালিক হবো। প্রিন্স হবো, এই
অনুভবের আন্তরিক খুশী থাকা উচিত। কিন্তু তোমরা বাচ্চারা যত স্মরণে থাকতে পারো,
ততখানি আমি থাকি না। বাবার তো অনেক চিন্তা আছে। বাচ্চাদের কখনও ঈর্ষান্বিতও হওয়া
উচিত নয় যে, বাবা ধনী মানুষের খাতির যত্ন কেন করেন। বাবা প্রতিটি বাচ্চার নাড়ি দেখে
তার কল্যাণ অর্থে প্রত্যেককে সেই অনুযায়ী চালনা করেন। টিচার জানেন একটি স্টুডেন্টকে
কীভাবে পরিচালনা করতে হবে। বাচ্চাদের এই বিষয়ে কোনোরকম সংশয় আসা উচিত নয়। আচ্ছা!
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
একান্তে বসে নিজের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আত্মার উপরে যে মরিচা পড়েছে তা পরিষ্কার
করার জন্য স্মরণের যাত্রায় থাকতে হবে।
২ ) কোনও কথায় সংশয় করবে না, ঈর্ষা করবে না। আন্তরিক খুশীর অনুভূতিতে থাকতে হবে।
নিজের গুপ্ত সেবা করতে হবে।
বরদান:-
সেবা
করাকালীন উপরাম স্থিতিতে থেকে যোগযুক্ত, যুক্তিযুক্ত সেবাধারী ভব
যে সেবাধারী যোগযুক্ত,
যুক্তিযুক্ত হয়, সে সেবা করাকালীন সদা উপরাম থাকে। এমন নয় অনেক বেশি সেবা থাকার
জন্য অশরীরী হওয়া যায় না। কিন্তু মনে রাখবে যে আমার সেবা নয়, বাবা দিয়েছেন। তাহলে
নির্বন্ধন থাকবে। আমি ট্রাস্টি, আমি বন্ধনমুক্ত, মাঝে মাঝে এমন প্র্যাক্টিস করো। এই
সময়ে সব কিছুই হল অতি, এইরূপ অতি-র সময়ে অন্তিম স্টেজ, কর্মাতীত অবস্থার
প্র্যাক্টিস করো। যেমন মাঝে-মাঝে সংকল্পের ট্রাফিক কন্ট্রোল করো তেমন ভাবেই অতি'র
সময় অন্তিম স্টেজের অনুভব করো, তবে অন্তিম সময়ে পাস উইথ অনার হতে পারবে।
স্লোগান:-
শুভ ভাবনা কারণকে নিবারণে পরিবর্তন করে দেয়।