09.11.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
প্রশ্নঃ -
গুণের ধারণাও
হতে থাকবে আর চাল-চলনও সংশোধিত হতে থাকবে, তার সহজ বিধি কী ?
উত্তরঃ -
বাবা যা বুঝিয়েছেন -- তা অন্যদের বোঝাও। জ্ঞান-ধন দান করো, তবেই গুণের ধারণাও সহজ
হতে থাকবে। চাল-চলনও শুধরে যেতে থাকবে। যাদের বুদ্ধিতে এই জ্ঞান থাকে না, জ্ঞান-ধন
দান করে না, তারা হলো অপয়া। তারা শুধু-শুধুই নিজেদের ক্ষতি করে।
গীতঃ-
শৈশবের দিন
ভুলে যেও না / আজ হাসি কাল রোদন কোরো না .......
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি
বাচ্চারা এই গান শুনেছে, অর্থও সঠিকভাবে বুঝেছে। আমরা হলাম আত্মা আর অসীম জগতের
পিতার সন্তান -- এটা ভুলে যেও না। এখনই বাবার স্মরণে প্রফুল্লিত হয়, এখনই আবার
স্মরণ ভুলে গিয়ে দুঃখী হয়ে পড়ে। এখনই জীবিত হয়ে যাও, আবার এখনই মৃত-প্রায় হয়ে পড়ো
অর্থাৎ এখনই অসীম জগতের পিতার হয়ে যাও, আবার এখনই লৌকিক পরিবারের দিকে চলে যাও। তাই
বাবা বলেন -- আজ হাসছো কাল ক্রন্দন কোরো না। এটাই হলো গানের অর্থ। বাচ্চারা, তোমরা
জানো যে -- অনেক মানুষ শান্তির জন্য ধাক্কা খেতে থাকে। তীর্থযাত্রায় যায়। এমনও নয়
যে, ধাক্কা খেলে কিছু শান্তি পাওয়া যায়। এ হলো একটিই সঙ্গমযুগ যখন বাবা এসে বোঝান।
সর্বপ্রথমে নিজেকে চেনো। আত্মাই হলো শান্ত-স্বরূপ। নিবাসস্থলও হলো শান্তিধাম। এখানে
এলে অবশ্যই তখন কর্ম করতে হয়। যখন শান্তিধামে রয়েছে তখন শান্ত। সত্যযুগেও শান্তি
থাকে। সুখও রয়েছে, শান্তিও রয়েছে। শান্তিধামকে সুখধাম বলবে না। যেখানে সুখ আছে তাকে
সুখধাম, যেখানে দুঃখ আছে তাকে দুঃখধাম বলা হবে। এসব কথা তোমরা বুঝতে পারছো। এসব
জানানোর জন্য কাউকে সামনা-সামনিই বোঝাতে হবে। প্রদর্শনীতে যখন ভিতরে প্রবেশ করে তখন
সর্বপ্রথমে বাবার পরিচয় দেওয়া উচিত। তাদের বোঝানো হয় যে, আত্মাদের পিতা একজনই।
তিনিই গীতার ভগবান। বাকি সব হলো আত্মা। আত্মা শরীর পরিত্যাগ এবং ধারণ করে। শরীরের
নামও বদল হয়ে যায়। আত্মার নাম পরিবর্তন হয় না। বাচ্চারা, তাই তোমরা বোঝাতে পারো --
অসীম জগতের পিতার কাছ থেকে সুখের অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। বাবা সুখের
দুনিয়া(সৃষ্টি) স্থাপন করেন। বাবা দুঃখের দুনিয়া রচনা করবেন এমন তো হতে পারে না।
ভারতে লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য ছিল, তাই না! চিত্রও রয়েছে -- তোমরা বলো যে, এরকম
সুখের উত্তরাধিকার পাওয়া যায়। যদি কেউ বলে এটা তোমাদের কল্পনা তখন তাদের একদম ছেড়ে
দেওয়া উচিত। কল্পনা মনে করা মানুষ কিছুই বুঝবে না। তোমাদের সময় অতি মূল্যবান। সমগ্র
এই দুনিয়ায় তোমাদের মতন মহা মূল্যবান সময় আর কারোর-ই নেই। বড়-বড়(গন্যমান্য)
ব্যক্তিদের সময়ের মূল্য অনেক। বাবারও সময়ের মূল্য অনেক। বাবা বুঝিয়ে-বুঝিয়ে কি থেকে
কি বানিয়ে দেন। বাচ্চারা, তাই বাবা তোমাদেরকেই বলেন -- তোমরা নিজেদের মূল্যবান সময়
নষ্ট কোরো না। জ্ঞান পাত্র দেখেই দিতে হবে। পাত্রকে বোঝানো উচিত -- সব বাচ্চারা তো
বুঝতে পারবে না, এত বুদ্ধি নেই যে বুঝবে। সর্বপ্রথমে বাবার পরিচয় দিতে হবে। যতক্ষণ
পর্যন্ত এটা না বুঝবে যে আমাদের অর্থাৎ আত্মাদের পিতা হলেন শিব ততক্ষণ পর্যন্ত আগের
কিছুই বুঝতে পারবে না। অতি প্রেম-পূর্বক, নম্রভাবে বুঝিয়ে রওনা করে দেওয়া উচিত,
কারণ আসুরীয় সম্প্রদায় ঝগড়া করতে দেরী করবে না। গভর্নমেন্ট স্টুডেন্টদের কত মহিমা
করে। তাদের জন্য কত কিছুর প্রবন্ধ করে। কলেজের স্টুডেন্টরাই সর্বপ্রথমে পাথর মারতে
শুরু করে। উদ্দীপনা থাকে, তাই না! বৃদ্ধরা অথবা মায়েরা তো এতটা জোরপূর্বক পাথর ছুড়তে
পারে না। বেশীরভাগ সময় স্টুডেন্টদেরই কলরোল হয়। তাদেরই লড়াই-এর জন্য তৈরী করা হয়।
এখন বাবা আত্মাদের বোঝান যে --- তোমরা উল্টো হয়ে গেছো। নিজেদের আত্মার পরিবর্তে
শরীর মনে করে নাও। এখন বাবা তোমাদের সিধা করছেন। রাত-দিনের কত পার্থক্য হয়ে যায়।
সোজা হওয়ার জন্য তোমরা বিশ্বের মালিক হয়ে যাও। এখন তোমরা বোঝ যে -- অর্ধেক কল্প আমরা
উল্টো ছিলাম। এখন বাবা আমাদের অর্ধেক কল্পের জন্য সিধা করছেন। আল্লাহ'র (ঈশ্বরের)
সন্তান হয়ে গেলে বিশ্বের অবিনাশী রাজত্বের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। রাবণ উল্টো অর্থাৎ
বিকারী করে দিলে কলা, কায়া(শরীর) সব নষ্ট হয়ে যায় তখন অধঃপতনে যেতে থাকে। বাচ্চারা,
তোমরা রাম-রাজ্য আর রাবণ-রাজ্যকে জেনেছো। তোমাদের বাবার স্মরণে থাকতে হবে। যদিও
শরীর নির্বাহের জন্য কর্মও করতে হবে তথাপি সময় তো অনেক পাও। কেউ জিজ্ঞাসা করার মতো
নেই, কাজ না থাকলে বাবার স্মরণে বসে পড়া উচিত। ওসব হলো স্বল্পকালের উপার্জন আর এ হলো
তোমাদের সদাকালের জন্য উপার্জন। এখানে অনেক বেশী করে অ্যাটেনশন দিতে হবে। মায়া প্রতি
মুহূর্তে মনকে অন্যদিকে নিয়ে যায়। এ তো হবেই। মায়া ভুলিয়ে দিতে থাকবে। এর উপর একটি
নাটকও দেখানো হয় -- প্রভু এরকম বলে আবার মায়াও এরকম বলে। বাবা বাচ্চাদের বোঝান যে,
"মামেকম্ স্মরণ করো", এতেই বিঘ্ন ঘটে। আর কোনো বিষয়ে এত বাধাবিঘ্ন আসে না। পবিত্রতা
রক্ষার জন্য কত মার খায়। ভগবত্ ইত্যাদিতে এইসময়ের গায়নই রয়েছে। পুতনা সূর্পনখাও
রয়েছে, এসব হলো এ'সময়ের কথা, যখন বাবা এসে পবিত্র করেন। উৎসবাদিও যাকিছু পালন করা
হয়, যা পাস্ট(অতীতে) হয়ে গেছে, সেগুলোর উৎসবই পুনরায় পালিত হয়। অতীতের মহিমাই করতে
থাকে। রামরাজ্যের মহিমা করে, কারণ তা অতিবাহিত হয়ে গেছে। যেমন যীশুখ্রীস্ট প্রমুখেরা
এসেছিল, তারা ধর্মস্থাপন করে চলে গেছে। তিথি-তারিখও লিখে দেয়, পুনরায় তাদের জন্মদিন
পালিত হয়। ভক্তিমার্গেও এই রীতিনীতি(কাজকর্ম) অর্ধেক কল্প চলে। সত্যযুগে এ'সব হয়
না। এই দুনিয়াই সমাপ্ত হয়ে যাবে। এ'কথাও তোমাদের মধ্যে অতি অল্পজনই রয়েছে যারা বোঝে।
বাবা বুঝিয়েছেন -- সমস্ত আত্মাদের শেষে ফিরে যেতে হবে। সব আত্মারাই শরীর পরিত্যাগ
করে চলে যাবে। বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে যে -- আর বাকি অল্পদিন রয়েছে। এখন
পুনরায় এ'সব বিনাশপ্রাপ্ত হয়ে যাবে। সত্যযুগে কেবল আমরাই আসব। সব আত্মারা তো আসবে
না। যারা কল্প-পূর্বে এসেছিল তারাই নম্বরের ক্রমানুযায়ী আসবে। তারাই ভালভাবে পড়েও
আর পড়ায়ও। যারা ভালভাবে পড়ে তারাই নম্বরের ক্রমানুযায়ী ট্রান্সফার হয়। তোমরাও
ট্রান্সফার হয়ে যাও। তোমাদের বুদ্ধি জানে যে, আত্মারা সব নম্বরের ক্রমানুসারে ওখানে
শান্তিধামে গিয়ে বসবে, পুনরায় নম্বরের ক্রমানুসারেই আসতে থাকবে। তবুও বাবা বলেন,
মূলকথা হলো বাবার পরিচয় দেওয়া। বাবার নাম সদাই মুখে যেন থাকে। আত্মা কি ? পরমাত্মা
কি ? দুনিয়ায় কেউ জানে না। যদিও গায় যে, ভ্রুকুটির মধ্যস্থলে জ্বল-জ্বল করছে আজব
নক্ষত্র...... এরচেয়ে বেশী কিছু জানে না। তাও আবার এই জ্ঞান অতি অল্পসংখ্যকের
বুদ্ধিতেই রয়েছে। প্রতিমুহূর্তে ভুলে যায়। সর্বপ্রথমে বোঝাতে হবে যে, বাবা-ই
পতিত-পাবন। উত্তরাধিকারও দেন, রাজার-রাজাও(শাহেনশাহ্) বানিয়ে দেন। তোমাদের কাছে
গানও রয়েছে -- অবশেষে সেই দিন এসেছে আজ..... ভক্তিমার্গে যে রাস্তার দিকে সকলে
তাকিয়ে থাকতো। দ্বাপর থেকে ভক্তি শুরু হয় অবশেষে বাবা এসে রাস্তা বলে দেন। একে
বিনাশের সময়ও বলা হয়। আসুরীয় বন্ধনের সমস্ত হিসেব-নিকেশ চুক্ত করে অবশেষে ফিরে চলে
যায়। ৮৪ জন্মের ভূমিকা তোমরা জানো। এই ভূমিকা পালন চলতেই থাকে। শিব-জয়ন্তী যখন
পালন করা হয় তখন অবশ্যই তিনি এসেছিলেন। অবশ্যই কিছু করেছিলেন। তিনি নতুন দুনিয়া
তৈরী করেন। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ মালিক ছিলেন, এখন আর নেই। একথা তোমরাই বোঝাতে পারো।
বাবা পুনরায় রাজযোগ শেখাচ্ছেন। এই রাজযোগই শিখিয়েছিলেন। তোমরা ছাড়া আর কারোর মুখ
থেকেই এ'কথা শুনতে পারা যাবে না। তোমরাই বোঝাতে পারো। শিববাবা আমাদের রাজযোগ
শেখাচ্ছেন। 'শিবোহম্'-এর উচ্চারণ(জপ) যে করা হয়, সেও ভুল। বাবা এখন তোমাদের
বুঝিয়েছেন -- তোমরাই আবর্তন করে এখন ব্রাহ্মণকুল থেকে দেবকুলে আসো। 'আমরাই ব্রাহ্মণ
তথা আমরাই দেবতা' -- এর অর্থও তোমরাই বোঝাতে পারো। এখন আমরা ব্রাহ্মণ, এ হলো ৮৪-র
চক্র। এ কোনো মন্ত্র জপ করা নয়। বুদ্ধিতে এর অর্থ থাকা উচিত। এও সেকেন্ডের কথা।
যেমন বীজ আর বৃক্ষ -- সেকেন্ডে সমস্তকিছু মনে পড়ে যায়। তেমনই 'আমরাই তথা...' -- এই
রহস্যও সেকেন্ডে স্মরণে চলে আসে। আমরা এমনভাবে আবর্তন করি যাকে স্বদর্শন-চক্রও বলা
হয়ে থাকে। তোমরা কাউকে বলো আমরা স্বদর্শন-চক্রধারী তখন কেউই মানবে না। তারা বলবে,
এ'সব তো এরা নিজেদের পদবী রাখে। পরে তোমরা বোঝাবে যে, আমরা ৮৪ জন্ম কিভাবে নিই। এই
চক্র আবর্তিত হয়। আত্মা ৮৪ জন্মের দর্শনলাভ করে, একেই স্বদর্শন-চক্রধারী বলা হয়।
প্রথমে তো শুনে আশ্চর্য (চমক লাগা) হয়ে যায়। এরা এ'সব কি গল্প বলছে ! যখন তোমরা
বাবার পরিচয় দেবে তখন তাদের আর গল্প মনে হবে না। বাবাকে স্মরণ করে। গায়নও করে --
বাবা, তুমি এলে আমরা তোমার হয়ে যাবো(সমর্পিত)। কেবলমাত্র তোমায় স্মরণ করবো। বাবা
বলেন -- তোমরা বলতে তাই না! এখন পুনরায় তোমাদের স্মরণ করাই। নষ্টমোহ হয়ে যাও। এই
দেহ থেকেও নষ্টমোহ হয়ে যাও। নিজেকে আত্মা মনে করে আমাকে স্মরণ করো, তাহলেই তোমাদের
বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে। এমন মধুর বচন সকলেরই পছন্দ হবে। বাবার পরিচয় না পেলে তখন
কোনো না কোনো বিষয়ে সংশয় ওঠাতে থাকবে, তাই প্রথমে তো ২-৩টি চিত্র সম্মুখে রাখো,
যারমধ্যে বাবার পরিচয় রয়েছে। বাবার পরিচয় পেলে উত্তরাধিকারও পেয়ে যাবে। বাবা বলেন
-- আমি তোমাদের রাজার-রাজা বানাই। এই চিত্র তৈরী করো। দ্বিমুকুটধারী রাজাদের সম্মুখে
সিঙ্গেল মুকুটধারী মাথা নত করে। 'আমরাই পূজ্য আমরাই পূজারী'-র রহস্য বুদ্ধিতে এসে
যায়। প্রথমে বাবার পূজা করে তারপর নিজেরই চিত্রকে বসে পূজা করে। যারা পবিত্র হয়ে চলে
গেছে তাদের চিত্র তৈরী করে বসে পূজা করে। এই জ্ঞানও তোমরা এখনই পেয়েছো। পূর্বে তো
ভগবানের উদ্দেশ্যেই বলে দিত যে, 'আমরাই পূজ্য আমরাই পূজারী'। এখন তোমাদের বোঝানো
হয়েছে -- তোমরাই এই চক্রতে আসো। বুদ্ধিতে যেন এই জ্ঞান সদাই থাকে আর পরে তা বোঝাতেও
হবে। ধনদান করলে তা শেষ হয়ে যায় না..... যারা ধনদান করে না তাদের অপয়া বলা হয়। বাবা
যা বুঝিয়েছেন তা পুনরায় অন্যদেরকেও বোঝাতে হবে। যদি না বোঝাও তবে শুধু-শুধুই নিজের
ক্ষতি করে দেবে। গুণও ধারণ হবে না। চাল-চলনও এমন হয়ে যাবে। প্রত্যেকেই তো নিজেকে
বুঝতে পারে, তাই না! তোমরা এখন বোধ-বুদ্ধি প্রাপ্ত করেছো। বাকি সকলেই বোধ-বুদ্ধিহীন।
তোমরা সবকিছু জানো। বাবা বলেন, এইদিকে দৈবী-সম্প্রদায়, ওইদিকে আসুরীয় সম্প্রদায়।
বুদ্ধি দ্বারা তোমরা জেনেছো যে, আমরা সঙ্গমযুগে রয়েছি। একই ঘরে একজন সঙ্গমযুগের, এক
কলিযুগের, দুজনেই একসঙ্গে থাকে। যখন দেখা যায় যে, হংস মৎস্য হওয়ার যোগ্য নয় তখন
যুক্তি রচনা করা হয়। তা নাহলে বিঘ্ন ঘটাতে থাকবে। নিজ-সম তৈরী করার প্রচেষ্টা করতে
হবে। তা নাহলে বিরক্ত করতে থাকবে তখন যুক্তি-যুক্তভাবে কিনারা করে নিতে হবে অর্থাৎ
সরে যেতে হবে। বিঘ্ন তো ঘটবেই। এমন জ্ঞান তো তোমরাই দাও। মিষ্টিও হতে হবে। নষ্টমোহও
হতে হবে। এক বিকার পরিত্যাগ করলে আবার আরেক বিকার অশান্তি করে। তখন মনে করা যে,
যাকিছু হচ্ছে তা পূর্ব কল্পের মতোই। এমন মনে করে শান্ত থাকতে হবে। ভবিতব্য মনে করা
হয়। ভাল-ভাল সমঝদার বাচ্চাদেরও পতন ঘটে। সজোরে থাপ্পড় খায়। তখন বলা হয় যে,
কল্প-পূর্বেও নিশ্চয়ই এমন চড় খেয়েছিল। প্রত্যেকেই নিজের অন্তরকে বুঝতে পারে। লেখেও
যে, বাবা আমরা ক্রোধ করে ফেলেছি। অমুককে মেরেছি, এটা ভুল হয়েছে। বাবা বুঝিয়ে বলেন
-- যতটা সম্ভব নিজেকে কন্ট্রোল করো। কেমন-কেমন মানুষ আছে, অবলাদের উপর কত অত্যাচার
করে। পুরুষ বলবান হয়, স্ত্রী অবলা হয়। বাবা পুনরায় তোমাদের এই গুপ্ত লড়াই
শেখাচ্ছেন, যার দ্বারা তোমরা রাবণের উপর বিজয়প্রাপ্ত করো। এই লড়াই কারোর বুদ্ধিতে
নেই। তোমাদের মধ্যেও নম্বরের ক্রমানুসারেই বুঝতে পারে। এ হলো সম্পূর্ণ নতুন কথা।
তোমরা এখন অধ্যয়ন করছো -- সুখধামের জন্য। এটাও এখনই স্মরণে রয়েছে পরে ভুলে যাবে।
মূল কথাই হলো স্মরণের যাত্রা। স্মরণের দ্বারাই আমরা পবিত্র হয়ে যাব। আচ্ছা।
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
কিছু হলেও তা ভবিতব্য মনে করে শান্ত থাকতে হবে। ক্রোধ করা উচিত নয়। যতখানি সম্ভব
নিজেই নিজেকে কন্ট্রোল করতে হবে। যুক্তি রচনা করে নিজ-সম তৈরী করার প্রচেষ্টা করতে
হবে।
২ ) অত্যন্ত
প্রেমপূর্বক এবং নম্রভাবে বাবার পরিচয় দিতে হবে। সকলকে এমন মিষ্টি-মধুর কথা শোনাও
যে বাবা বলেছেন, নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করো। এই দেহ থেকে (আকর্ষণ
থেকে) নষ্টমোহ হয়ে যাও।
বরদান:-
নম্রতা-রূপী কবচ দ্বারা ব্যর্থতার রাবণকে দহনকারী সত্যিকারের স্নেহী, সহযোগী ভব
কেউ যতই তোমাদের
সংগঠনের দুর্বলতা খোঁজার প্রচেষ্টা করুক, কিন্তু এতটুকুও যেন স্বভাব-সংস্কারের
সংঘর্ষ দেখা না যায়। যদি কেউ গালিও দেয়, অপমানও করে, তোমরা সেন্ট অর্থাৎ সন্ত হয়ে
যাও। যদি কেউ ভুলও করে তোমরা সঠিক পথে থাকো। কেউ যদি প্রতিযোগিতা করেও তোমরা তাকে
স্নেহের জল দাও। এটা কেন, এমন কেন -- এ'সব সঙ্কল্প করে আগুনে তেল ঢেলো না। নম্রতার
কবচ পড়ে থাকো। যেখানে নম্রতা থাকবে, সেখানে স্নেহ আর সহযোগও অবশ্যই থাকবে।
স্লোগান:-
আমিত্বভাবের অসংখ্য পার্থিব জগতের ভাবনাকে এক 'আমার বাবা'- শব্দের মধ্যে সমাহিত করো।