30.12.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা —
সঙ্গম যুগে তোমরা সত্য পিতার কাছ থেকে সত্য উত্তরাধিকার গ্রহণ করছ,সেইজন্য কখনোই
তোমাদের মিথ্যা বলা উচিত নয়"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা
তোমাদের নির্বিকারী হওয়ার জন্য কোন্ পরিশ্রম (পুরুষার্থ)করতে হবে?
উত্তরঃ -
তোমাদের অবশ্যই দেহী-অভিমানী হয়ে থাকার পুরুষার্থ করতে হবে। ভ্রুকুটির মাঝখানে
আত্মাকে দেখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। নিজেকে আত্মা মনে করে আত্মার সাথে কথা বলতে হবে,
এবং আত্মা মনে করে শুনতে হবে। তোমাদের দৃষ্টি যেন দেহের উপর না পড়ে এটাই প্রধান
পুরুষার্থ আর এতেই বিঘ্ন আসে। যতটা সম্ভব এটাই অভ্যাস কর — "আমি আত্মা, আমি আত্মা "
গীতঃ-
ওম্ নমঃ শিবায়
.....
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি
বাচ্চাদের বাবা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে সৃষ্টিচক্র কিভাবে ঘুরছে। বাচ্চারা তোমরা
এখন জানো আমরা বাবার কাছ থেকে যা কিছু জেনেছি, বাবা যে পথ বলে দিয়েছেন তা দুনিয়ার
আর কেউ জানেনা। নিজেই পূজ্য, নিজেই পূজারীর অর্থও তোমাদের বুঝিয়েছেন । যে পূজনীয়রা
বিশ্বের মালিক ছিল, তারাই আবার পূজারী হয়। পরমাত্মার জন্য একথা বলা হয় না। এখন
তোমাদের স্মৃতিতে এসেছে যে একথা তো সত্যি। সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান বাবাই এসে
শোনান আর কাউকেই জ্ঞানের সাগর বলা যায় না। এই মহিমা শ্রী কৃষ্ণের জন্যও করা হয় না।
কৃষ্ণ নাম তো শরীরের, সে তো শরীরধারী, তার মধ্যে সম্পূর্ণ জ্ঞান থাকতে পারে না। এখন
তোমরা বুঝেছ, কৃষ্ণের আত্মাও জ্ঞান প্রাপ্ত করছে। অতি চমকপ্রদ বিষয়, বাবা ছাড়া আর
কেউ বোঝাতে পারবে না। এমন অনেক সাধু-সন্ত আছে যারা ভিন্ন-ভিন্ন প্রকারের হঠযোগ
ইত্যাদি শিখিয়ে থাকে। ওসবই হলো ভক্তি মার্গের কথা। সত্যযুগে তোমরা কোনো পূজা করো
না। ওখানে তোমরা পূজারী হও না। সত্যযুগের জন্য বলাই হয় — পূজ্য দেবী-দেবতা ছিল, এখন
নেই। ওরাই পূজ্য থেকে এখন পূজারী হয়েছে। বাবা বলেন এও তো (ব্রহ্মা বাবা) পূজা করত,
তাইনা। সম্পূর্ণ দুনিয়া এখন পূজারী। নতুন দুনিয়াতে একটাই পূজ্য দেবী-দেবতা ধর্ম।
বাচ্চাদের স্মৃতিতে এসেছে পূর্বের মতোই ড্রামার প্ল্যান অনুসারে এসবই সত্য। এটাই
প্রকৃতপক্ষে গীতা পর্ব। শুধুমাত্র গীতায় নাম বদলে দেওয়া হয়েছে, যা সবাইকে বোঝানোর
জন্য তোমরা পরিশ্রম করে চলেছ। ২৫০০ বছর ধরে ওরা গীতা কৃষ্ণ দ্বারা বলা হয়েছে, এটাই
বুঝেছে। এখন এই একটা জন্মে বুঝতে সময় তো লাগবে যে গীতার কথা বলেছেন নিরাকার ভগবান।
ভক্তি মার্গের কথাও বুঝিয়েছেন, কত লম্বা এবং জটিল এই ভক্তির গাছ। তোমরা লিখতে পার
বাবা আমাদের রাজযোগ শেখাচ্ছেন। যে বাচ্চাদের দৃঢ় বিশ্বাস হয়ে যায় তারা নিশ্চিতরূপে
বোঝাতেও পারে। নিশ্চয় না থাকলে নিজেই মুষড়ে পড়ে বলবে — কিভাবে বোঝাব, যদি কোনো
হাঙ্গামা হয়! নির্ভীক তো এখনও হয়ে ওঠোনি না ! নির্ভীক তখনই হবে যখন সম্পূর্ণ
দেহী-অভিমানী হতে পারবে। ভয় তো পায় ভক্তি মার্গে, তোমরা সবাই হয়ে উঠছ মহাবীর।
দুনিয়াতে তো কেউ জানেই না যে মায়ার উপর কিভাবে জয়লাভ করা যায়। বাচ্চারা, তোমাদের
এখন স্মৃতিতে এসেছে, পূর্বেও বাবা বলেছিলেন "মন্মনাভব" । পতিত-পাবন বাবাই এসে এ
বিষয়ে বোঝান, যদিও গীতাতে শব্দটি আছে কিন্তু কেউ বোঝেনি। বাবা বলেন — বাচ্চারা
দেহী-অভিমানী ভব। গীতায় তো আছে না - আটায় লবণ মেশানোর দৃষ্টান্ত। প্রতিটি বিষয়েই
বাবা তোমাদের বিশ্বাস জাগিয়ে তোলেন। নিশ্চয় বুদ্ধি বিজয়ন্তী (নিশ্চয় বুদ্ধি বিজয়
প্রাপ্ত করে) ।
তোমরা এখন বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার গ্রহণ করতে চলেছ। বাবা বলেন ঘর-পরিবারে
অবশ্যই থাকতে হবে। সবারই এখানে এসে বসার (মধুবন) প্রয়োজন নেই। সার্ভিস করতে হবে,
সেন্টার খুলতে হবে। তোমরা হলে স্যালভেশন সেনা( মুক্তি সেনা দল), ঈশ্বরীয় মিশন (দূত)
। প্রথমে শূদ্র মায়াবী মিশনের ছিলে, এখন তোমরা ঈশ্বরীয় মিশনের হয়েছ। তোমরা ভীষণ
গুরুত্বপূর্ণ। এই লক্ষ্মী-নারায়ণের সত্যযুগে কী মহিমা আছে ? রাজা যেভাবে শাসন করে
তারাও সেভাবেই শাসন করে তবে তারা সমস্ত গুণাবলী দ্বারা পূর্ণ বলে, তাদের সর্বগুণ
সম্পন্ন এবং বিশ্বের মালিক বলা হয়। কেননা ঐ সময় আর কোনো রাজ্য থাকে না। এখন বাচ্চারা
বুঝেছে — তারা বিশ্বের মালিক কিভাবে হয়েছে। আমরা এখন দেবতা হয়ে উঠছি সুতরাং কীভাবে
আমরা (মায়ার) তাদের কাছে নতজানু হতে পারি ? তোমরা এখন নলেজফুল হয়ে গেছ , যাদের
নলেজ নেই তারাই মাথা নত করতে থাকে। তোমরা এখন সবার সম্পর্কে জেনেছ। সঠিকভাবে
ব্যাখ্যা করতে পার কোন চিত্রটা ঠিক এবং কোনটা ভুল। রাবণ রাজ্য সম্পর্কেও বুঝিয়ে থাকো
। এটা রাবণ রাজ্য এবং এতে আগুন লাগার কথা। খড়ে আগুন লাগাতে হবে। সমগ্র বিশ্বকে বলা
হয় খড়ের গাদা । শব্দ যা বলা হয় সে বিষয়েই বোঝান হয়। ভক্তি মার্গে অনেক চিত্র তৈরি
করেছে। বাস্তবে পূজা হয় শিববাবার, তারপর ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শঙ্করের । ত্রিমূর্তি যা
তৈরি করেছে ঠিক। তারপর এই লক্ষ্মী-নারায়ণ । ত্রিমূর্তির মধ্যে ব্রহ্মা-সরস্বতীও আসে।
ভক্তি মার্গে কত চিত্র তৈরি করে, হনুমানেরও পূজা করে।
তোমরা মহাবীর হয়ে উঠছ তাইনা। মন্দিরেও কাউকে হাতির উপর সওয়ার, কাউকে ঘোড়ার উপর
সওয়ার দেখানো হয়েছে। এমন সওয়ারি হয় না। বাবা বলেন মহারথী অর্থাত্ যিনি হাতিতে চড়ে
সওয়ার করেন । ওরাই সেটা হাতির উপর সওয়ারি চিত্র তৈরি করেছে। কুমির কিভাবে হাতিটাকে
খেয়েছিল তার অর্থও বাবা তোমাদের কাছে ব্যাখ্যা করেছেন। বাবা বুঝিয়েছেন যে মহারথীকেও
কখনও-কখনও মায়া রূপী গ্রহ গ্রাস করে নেয়। তোমরা এখন জ্ঞান বুঝতে পেরেছ। ভালো -ভালো
মহারথীদেরও মায়া গ্রাস করে নেয়। এটা হলো জ্ঞানের কথা, যার বর্ণনা আর কেউ করতে পারবে
না। বাবা বলেন নির্বিকারী হতে হবে, দৈবীগুণ ধারণ করতে হবে । কল্পে-কল্পে বাবা বলে
আসছেন — কাম হলো মহাশত্রু, এর উপরেই পরিশ্রম করতে হবে, আর এর উপরেই তোমরা বিজয়
প্রাপ্ত করে থাক। প্রজাপিতার সন্তান তোমরা সুতরাং ভাই-বোন। বাস্তবে তোমরা হলে আত্মা।
আত্মা, আত্মার সাথে কথা বলে। আত্মাই কান দিয়ে শোনে , এটাই মনে রাখতে হবে। আমরা
আত্মাকে শোনাই দেহকে নয় । দৃষ্টি আত্মার প্রতি থাকা উচিত। আমি আত্মা ভাইকে শোনাচ্ছি।
বলছি ভাই শুনছ ? উত্তরে বলে হ্যাঁ, আমি আত্মা শুনছি। বিকানিরে এক বাচ্চা ছিল যে
সবসময় আত্মা-আত্মা লিখত। আমার আত্মা এই শরীর দ্বারা লিখছে, আমি আত্মার মধ্যে এই
বিচার চলছে, আমার আত্মা এটা করছে । এমন আত্ম-অভিমানী হওয়া মেহনতের বিষয় তাইনা। আমার
আত্মা নমস্কার জানাচ্ছে। যেমন বাবা বলেন — আত্মিক বাচ্চারা, সুতরাং ভ্রুকুটির দিকে
দৃষ্টি দিতে হয়। আত্মাই শোনে, আত্মাকেই শোনাই ।তোমাদের দৃষ্টিও আত্মার প্রতি থাকা
উচিত। আত্মা ভ্রুকুটির মাঝখানে বিরাজ করে। শরীরের দিকে দৃষ্টি দিলে তাতে বিঘ্ন
সৃষ্টি হয়। আত্মার সাথে কথা বলতে হবে, আত্মাকে দেখতে হবে। দেহ-অভিমান ত্যাগ কর ।
আত্মা জানে-বাবাও এখানে ভ্রুকুটির মাঝখানে বসে আছেন। তাঁকে আমরা নমস্কার জানাই।
বুদ্ধিতে এই জ্ঞান আছে যে আমরা আত্মা, আত্মাই শোনে। এই জ্ঞান আগে ছিল না। এই শরীর
পেয়েছি ভূমিকা পালন করার জন্য সেইজন্যই শরীরের নামকরণ করা হয়। এই সময় তোমাদের
দেহী-অভিমানী হয়ে ফিরে যেতে হবে। শরীরের নাম রাখা হয় ভূমিকা পালন করার জন্য। নাম
ছাড়া তো কাজ-কারবার কিছুই করতে পারবে না। সত্যযুগেও কাজ-কারবার চলবে কিন্তু তোমরা
সতোপ্রধান হওয়ার কারণে কোনো বিকর্ম হবে না। এমন কোনও কাজ তোমরা করবে না যাতে বিকর্ম
হয়। সেখানে মায়ার রাজ্যই নেই। বাবা বলছেন-আত্মারা তোমাদের ফিরে যেতে হবে। এই শরীর
তো পুরানো হয়ে গেছে এরপর যাবে সত্যযুগ-ত্রেতায়। ওখানে জ্ঞানের কোনও প্রয়োজন নেই।
এখানে কেন তোমাদের জ্ঞান প্রদান করা হচ্ছে ? কেননা তোমরা সবাই দুর্গতিতে আছ। কর্ম
তো ওখানেও করতে হবে কিন্তু সেসবই অকর্ম। বাবা বলেন-তোমাদের হাত কাজ করবে কিন্তু
স্মরণ যেন বাবার প্রতি থাকে। সত্যযুগে তোমরা পবিত্র সেইজন্য তোমাদের কাজ-কারবারও সব
পবিত্র হয়। রাবণ রাজ্য তমোপ্রধান হওয়ার কারণে তোমাদের কাজকর্মও মিথ্যা হয়ে যায়,
সেইজন্যই মানুষ তীর্থযাত্রা ইত্যাদিতে যায়। সত্যযুগে কোনও পাপ কর্ম করে না যে তীর্থে
যেতে হবে। ওখানে তোমরা যে কাজই কর সত্যের আধারে কর। তোমরা সত্যের বরদান প্রাপ্ত
করেছ,বিকারের কোনও প্রশ্নই নেই। কাজ-কারবার করতে মিথ্যার প্রয়োজনই পড়ে না। এখানে তো
লোভের বশীভূত হয়ে মানুষ চুরি করে, প্রতারণা করে । ওখানে এসব কিছুই হয়না। ড্রামা
অনুসারে তোমরা এমনই ফুল হয়ে ওঠো। ওটা হলো নির্বিকারী দুনিয়া আর এটা বিকারগ্রস্ত
দুনিয়া। বুদ্ধিতে সম্পূর্ণ খেলা আছে। এই সময়ই পবিত্র হওয়ার জন্য পরিশ্রম করতে হয়।
যোগাবল দ্বারা তোমরা বিশ্বের মালিক হয়ে ওঠো, যোগবলই হলো প্রধান। বাবা বলেন ভক্তি
মার্গে যজ্ঞ, তপ ইত্যাদি করে কেউ-ই আমাকে পেতে পারে না।
সতো-রজো-তমোর মধ্য দিয়ে সবাইকেই যেতে হবে। জ্ঞান অতি সহজ এবং রমণীয়, কিন্তু পরিশ্রম
আছে। এই যোগেরই মহিমা আছে যার দ্বারা তোমাদের সতোপ্রধান হতে হবে। তমোপ্রধান থেকে
সতোপ্রধান হওয়ার পথও বাবা বলে দেন। আর কেউ এই জ্ঞান দিতে পারে না। যতই কেউ চাঁদে
যাক, জলের মধ্য দিয়ে যাক, সেটা কিন্তু কোনো রাজযোগ নয়, নর থেকে নারায়ণ হতে পারে না।
তোমরা জেনেছ আমরাই আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের ছিলাম আবারও হতে চলেছি। স্মৃতি ফিরে
এসেছে। বাবা কল্প পূর্বেও এসব বুঝিয়েছিলেন। বাবা বলেন যার মধ্যে নিশ্চয়তা থাকবে সেই
বিজয়ী হবে। নিশ্চয় (বিশ্বাস) যার থাকবে না সে শুনতে আসবে না। নিশ্চয় বুদ্ধি থেকে
কখনও-কখনও সংশয় বুদ্ধিও হয়ে যায়। অনেক ভালো-ভালো মহারথীও সংশয়াতীত হয়ে পড়ে। মায়ার
সামান্য তুফান এলেই দেহ-অভিমান এসে যায়। বাপদাদা দু'জনেই কম্বাইন্ড, তাইনা। শিববাবা
তোমাদের জ্ঞান প্রদান করেন তারপর চলে যান বা কি হয় ? কে জানে। বাবাকে কি জিজ্ঞেস করা
উচিত যে তুমি এখানে থাকো নাকি চলে যাও ? বাবাকে তো এটা জিজ্ঞাসা করতে পারোনা তাইনা।
বাবা বলেন আমি তোমাদের পতিত থেকে পাবন হওয়ার রাস্তা বলে দিই। আমি আসি এবং চলে যাই
আমাকে অনেক কাজ করতে হয়। আমি বাচ্চাদের কাছে আসি তাদের দিয়ে কাজ করিয়ে থাকি। এতে
সংশয়ের কোনও প্রশ্নই নেই। নিজেদের কাজ হলো বাবাকে স্মরণ করা, সংশয় এলেই পড়ে যাবে।
মায়া এসে সজোরে চড় কষিয়ে দেবে। বাবা বলেন আমি অনেক জন্মের অন্তিমেরও অন্তিমে এসে এর
(ব্রহ্মা) শরীরে প্রবেশ করি।
বাচ্চাদের এই দৃঢ় বিশ্বাস আছে যে পূর্বের মতোই বাবা আমাদের জ্ঞান প্রদান করছেন, যা
আর কেউ দিতে পারে না। দৃঢ় বিশ্বাস থাকার পরেও অনেকেই নিচে পড়ে যায়, বাবা এটা জানেন।
পবিত্র হওয়ার জন্য বাবা তোমাদের বলেন মামেকম্ স্মরণ করো, অন্য কোনও ব্যাপারে যেও
না। তোমরা এখানে এমনই সব কথা বল যে, বোঝা যায় পাক্কা নিশ্চয় হয়নি। প্রথমে একটা
বিষয় বোঝো যার দ্বারা তোমাদের পাপ বিনাশ হবে, নিরর্থক কথা বলার কোনো দরকার নেই।
বাবার স্মরণ দ্বারাই বিকর্ম বিনাশ হবে তবে আর অন্য বিষয়ে কেন যাও ? দেখ যদি কেউ
প্রশ্ন-উত্তরের মধ্যে মুষড়ে পড়ে তবে তাকে বল যে এইসব বিষয় ছেড়ে শুধু এক বাবাকে
স্মরণ করার পুরুষার্থ কর। সংশয়ের কারণে পড়াশোনা ছেড়ে দিলে কল্যাণ কিছু হবে না। নাড়ি
দেখে বোঝাতে হবে। সংশয় থাকলে একটা পয়েন্টের উপরেই যুক্তি সহকারে বোঝাতে হবে।
বাচ্চাদের প্রথমে দৃঢ় নিশ্চয় হতে হবে — বাবা এসেছেন, আমাদের পবিত্র করে তুলছেন। খুশি
থাকে না!পড়াশোনা না করলে পাশ করতে পারবে না, খুশি কিভাবে আসবে। স্কুলে ওরা তো
একইরকম পড়ে ,কিন্তু কেউ পড়াশোনা করে লক্ষ টাকা উপার্জন করে ,কেউবা ৫-১০ টাকা রোজগার
করে। তোমাদের এইম অবজেক্টই হলো নর থেকে নারায়ণ হওয়া । রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। তোমরা
মানুষ থেকে দেবতা হতে যাচ্ছ। দেবতাদের রাজধানী কত বড়, সেখানে উচ্চ পদ পাওয়া পড়াশোনা
আর ক্রিয়াকলাপের উপরেই নির্ভর করে। তোমাদের ক্রিয়াকলাপ খুব ভালো হওয়া উচিত। বাবা (ব্রহ্মা
বাবা) নিজের জন্যও বলেন — এখনও কর্মাতীত অবস্থা হয়নি। আমাকেও সম্পূর্ণ হতে হবে,
এখনও হইনি। জ্ঞান তো অতি সহজ। বাবাকে স্মরণ করাও অতি সহজ কিন্তু স্মরণ করব তবেই না
! আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
কোনও বিষয়ে সংশয় বুদ্ধি হয়ে, পড়া ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। পবিত্র হওয়ার জন্য এক বাবাকেই
স্মরণ করতে হবে, অন্য কোনও ব্যাপারে যাওয়া উচিত নয়।
২ ) শরীরের প্রতি দৃষ্টি গেলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়, সেইজন্য ভ্রুকুটির দিকে দৃষ্টি দিতে
হবে, আত্মা মনে করে, আত্মার সাথে কথা বলতে হবে। আত্ম-অভিমানী হতে হবে। নির্ভীক হয়ে
সেবা করতে হবে।
বরদান:-
দৃঢ় সঙ্কল্পের দ্বারা দুর্বলতা রূপী কলিযুগের পর্বতকে সমাপ্তকারী সমর্থী স্বরূপ ভব
হতাশ হওয়া, কোনও
সংস্কার বা পরিস্থিতির বশীভূত হওয়া, ব্যক্তি বা বৈভবের প্রতি আকৃষ্ট হওয়া- এইসব
দুর্বলতাকে কলিযুগের পর্বতের দৃঢ় সঙ্কল্পের আঙুল দিয়ে সদাকালের জন্য সমাপ্ত কর
অর্থাত্ বিজয়ী হও। বিজয় আমাদের গলার মালা — সবসময় এই স্মৃতি দ্বারা সমর্থ স্বরূপ হও।
এটাই হল স্নেহের রিটার্ন। যেমন সাকার বাবা স্থিতির (স্ব-স্থিতি) স্তম্ভ হয়ে
দেখিয়েছেন, ঠিক সেভাবেই বাবাকে ফলো করে সর্বগুণের স্তম্ভ হয়ে ওঠো।
স্লোগান:-
সুযোগ
সুবিধার উপকরণ গুলি (সাধন) হলো সেবার জন্য, বিলাসিতা বা স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য নয় ।