26-12-2020 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - বাবা এসেছেন তোমাদের অসীম সম্পদ (বেহদের জাগির) দিতে, এরকম মধুর বাবাকে তোমরা প্রেম পূর্বক স্মরণ করলে পবিত্র হয়ে যাবে"

*প্রশ্নঃ -

বিনাশের সময় যতো নিকটবর্তী হতে থাকবে - তার চিহ্ন গুলি কি হবে ?

*উত্তরঃ -

বিনাশের সময় নিকটবর্তী হলে তখন- ১ ) সবাই টের পাবে যে আমাদের বাবা এসেছেন। ২ ) এখন নূতন দুনিয়ার স্থাপনা, পুরানোর বিনাশ হবে। অনেকের সাক্ষাৎকারও হবে। ৩ ) সন্ন্যাসী, রাজা প্রমুখরা জ্ঞান প্রাপ্ত করবে। ৪ ) যখন শুনবে যে অসীম জগতের পিতা এসেছেন, তিনিই একমাত্র সদ্গতি দিতে সক্ষম তখন অনেকে আসবে। ৫ ) সংবাদ পত্রের দ্বারা অনেকের সংবাদ প্রাপ্ত হবে। ৬ ) তোমরা বাচ্চারা আত্ম-অভিমানী হতে থাকবে, এক বাবার স্মরণেই অতীন্দ্রিয় সুখে থাকবে।

*গীতঃ-

এই পাপের দুনিয়া থেকে এসে অন্য কোথাও নিয়ে চলো...

ওম্ শান্তি । এটা কে বলে আর কাকে বলে - আত্মা রূপী বাচ্চারা ! বাবা বারে-বারে আত্মা রূপী কেন বলেন ? কারণ এখন আত্মাদের যেতে হবে। তারপর যখন এই দুনিয়াতে আসবে তখন সুখ হবে। আত্মারা এই শান্তি আর সুখের উত্তরাধিকার পূর্ব কল্পেও প্রাপ্ত করেছিলো। এখন আবার এই উত্তরাধিকার রিপিট হচ্ছে। রিপিট হলে তবে সৃষ্টি চক্রও আবার রিপিট হবে। রিপিট তো সব হয় না, তাই না ! যা কিছু পাস্ট হয়ে গেছে সেটাই রিপিট হবে। এমনিতে তো এই নাটকও তো রিপিট হয় কিন্তু তাকে চেঞ্জও করতে পারা যায়। কেউ শব্দ ভুলে গেলে তখন মন থেকে তৈরী করে বলে দেয়। তাকে তখন বায়োস্কোপ বলা যায়। কিন্তু এতে (সৃষ্টি নাটকে) চেঞ্জ করা যায় না। এটা হলো অনাদি হয়ে থাকা বা পূর্ব রচিত, ওই নাটককে পূর্ব-রচিত বলা হবে না। এই ড্রামাকে বুঝতে পারলে তখন তাদের পক্ষেও বোঝা সহজে হয়ে যাবে । বাচ্চারা বুঝতে পারে যে নাটক ইত্যাদি এখন দেখছে, সেই সব হলো মিথ্যা। কলিযুগে যে জিনিস দেখা যায় সেইটা সত্যযুগে থাকে না। সত্যযুগে যা হয়েছিলো সেটাই আবার সত্যযুগে হবে। এই পার্থিব জগতের নাটক ইত্যাদি আবার ভক্তি মার্গেই হবে। যে জিনিস ভক্তি মার্গে হয় সেটা জ্ঞান মার্গ অর্থাৎ সত্যযুগে হয় না। তাই এখন অসীম জগতের পিতার থেকে তোমরা অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছো। বাবা বুঝিয়েছেন- এক লৌকিক পিতার থেকে আর দ্বিতীয় পারলৌকিক পিতার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়,এছাড়া যে অলৌকিক পিতা আছেন তার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় না। ইনি নিজেই ওঁনার থেকে অর্থাৎ পারলৌকিক পিতার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করেন। এই যে নূতন দুনিয়ার প্রপার্টি, সেটা অসীম জগতের পিতাই প্রদান করেন - শুধুমাত্র এঁনার (ব্রহ্মা) দ্বারা। এঁনার দ্বারা অ্যাডপ্ট করান, তাই ওনাকে বাবা বলা হয় । ভক্তি মার্গেও লৌকিক আর পারলৌকিক দুই-ই স্মরণে আসে। ইনি (অলৌকিক ) স্মরণে আসেন না। কারণ এঁনার থেকে কোনো উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় না। 'বাবা' শব্দটি তো ঠিকই আছে, কিন্তু এই ব্রহ্মাও তো হলেন রচনা ! রচনার রচয়িতার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। তোমাদেরও শিববাবা ক্রিয়েট করেছেন। ব্রহ্মাকেও উনি ক্রিয়েট করেছেন। উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় ক্রিয়েটারের থেকে, তিনি হলেন অসীম জগতের পিতা। ব্রহ্মার কাছে কী অসীম জগতের উত্তরাধিকার আছে নাকি ! বাবা এঁনার দ্বারা বসে বোঝাচ্ছেন- এঁনারও উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। এমন নয় যে তিনি উত্তরাধিকার নিয়ে তোমাদের দেন। বাবা বলেন, তোমরা এঁনাকেও স্মরণ ক'রো না। এই অসীম জগতের পিতার থেকে তোমাদের প্রপার্টি প্রাপ্ত হয়। লৌকিক পিতার থেকে পার্থিব জগতের, পারলৌকিক পিতার থেকে অসীম জগতের উত্তরাধিকার, দুটোই রিজার্ভ হয়ে গেছে । শিববাবার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় - তোমাদের বুদ্ধিতে এটা আসে। তাহলে ব্রহ্মা বাবার উত্তরাধিকার বলবে কেন ! বুদ্ধিতে জাগীর অর্থাৎ সম্পত্তির কথাই আসে, তাই না ! এই অসীম জগতের বাদশাহী তোমাদের ওঁনার থেকে প্রাপ্ত হয়। তিনি হলেন বড় বাবা। ইনি(ব্রহ্মা) তো বলেন আমাকে স্মরণ ক'রো না, আমার তো কোনো প্রপার্টি নেই, যা তোমাদের প্রাপ্ত হবে। যাঁর থেকে প্রপার্টি প্রাপ্ত হবে তাঁকে স্মরণ করো। তিনিই বলেন শুধুমাত্র আমাকে স্মরণ করো। লৌকিক পিতার প্রপার্টি নিয়ে কতো ঝগড়া চলে। এখানে তো ঝগড়ার ব্যাপার নেই। বাবাকে স্মরণ না করলে তবে অটোম্যাটিক্যালি অসীম জগতের উত্তরাধিকার প্রাপ্তি হবে না। বাবা বলেন নিজেকে আত্মা মনে করো। এই রথকেও বলেন তুমি নিজেকে আত্মা মনে করে আমাকে স্মরণ করলে তবে বিশ্বের বাদশাহী প্রাপ্ত হবে। একে বলা হয় স্মরণের যাত্রা। দেহের সব সম্বন্ধ ত্যাগ করে নিজেকে অশরীরী আত্মা মনে করতে হবে। এতেই পরিশ্রম আছে। পড়াশুনার জন্য তো পরিশ্রম চাই, তাই না ! এই স্মরণের যাত্রার দ্বারা তোমরা পতিত থেকে পবিত্র হয়ে ওঠো। তারা যাত্রা করে শরীর দ্বারা। এটা তো হলো আত্মাদের যাত্রা। তোমাদের এই যাত্রা হলো পরমধামে যাওয়ার। এই পুরুষার্থীরা ব্যতীত আর কেউ পরমধামে বা মুক্তিধামে যেতে পারে না। যারা ভালো ভাবে স্মরণ করে তারাই যেতে পারে আর তারপর উচ্চ পদও তারা প্রাপ্ত করতে পারে। যাবে তো সকলেই। কিন্তু তারা তো হলো পতিত - তাই ডাকতে থাকে। আত্মা স্মরণ করে। খাওয়া দাওয়া তো আত্মাই করে, তাই না ! এই সময় তোমাদের দেহী-অভিমানী হতে হবে, এটাই হল পরিশ্রমের। বিনা পরিশ্রমে তো কিছুই প্রাপ্ত হয় না। হলোও খুবই সহজ। কিন্তু মায়ার বিরোধিতা হতে থাকে। কারোর ভাগ্য ভালো হলে তাড়াতাড়ি করে এর সাথে(স্মরণের যাত্রাতে) জুড়ে যায়। কেউ দেরীতেও আসে। যদি বুদ্ধিতে সঠিক নিয়মে বসে যায় তো বলবে ব্যাস্, আমি এই আত্মিক যাত্রাতে লেগে পড়ি। এ'রকম তীব্র গতিতে লেগে পড়লে ভালো রকম প্রতিযোগিতা হতে থাকে। বাড়ীতে থেকেও বুদ্ধিতে এসে যাবে এটা তো খুবই ভালো রাইট (সঠিক)কথা। আমরা নিজেদের আত্মা মনে করে পতিত-পাবন বাবাকে স্মরণ করি। বাবার অদেশ অনুযায়ী চললে তবে পবিত্র হতে পারবো। হবো তো অবশ্যই। পুরুষার্থের ব্যাপার। এটা হলো খুবই সহজ। ভক্তি মার্গে তো খুবই ডিফিকাল্টি হয়। এখানে তোমাদের বুদ্ধিতে আছে এখন আমাদের ফিরে যেতে হবে বাবার কাছে। আবার এখানে এসে বিষ্ণুর মালাতে জপের দ্বারা আবর্তিত হতে হবে। মালার হিসাব করো। মালা তো ব্রহ্মারও আছে, বিষ্ণুরও আছে, রুদ্ররও আছে। সর্বপ্রথম তো নূতন সৃষ্টির হবে ! বাকি সব পরে আসে। যদিও পরেই জপের মাধ্যমে আবর্তিত হয়। বলবে তোমাদের উঁচু কুল কি? তোমরা বলবে বিষ্ণু কুল। আমরা আসলে বিষ্ণু কুলের ছিলাম, তারপর ক্ষত্রিয় কুলের হয়েছি। আবার তার থেকে জ্ঞাতি-বর্গ বের হয়। এই নলেজ থেকে তোমরা বুঝতে পারো জ্ঞাতি-বর্গ তৈরী হয় কি করে। সর্বপ্রথম রুদ্র মালা তৈরী হয়। সর্বোচ্চ জ্ঞাতি- বর্গ। বাবা বুঝিয়েছেন- এটা হলো তোমাদের খুবই উঁচু কুল এটাও বুঝতে পারা যায় যে অবশ্যই সমগ্র দুনিয়ারই ঈশ্বরীয় সংবাদ প্রাপ্ত হবে। যেমন কেউ-কেউ বলে যে ভগবান অবশ্যই কোথাও এসেছেন কিন্তু জানতে পারা যাচ্ছে না। পরিশেষে জানতে তো পারবে সকলেই। সংবাদ পত্রে পড়বে, এখন তো অল্প দেয়। এমন নয় যে একটা সংবাদপত্রই সবাই পড়ে। লাইব্রেরিতেও পড়তে পারে। কেউ ২--৪টে সংবাদপত্রও পড়তে পারে। কেউ একদমই পড়ে না। এটা সকলেই জানতে পারে যে বাবা এসে গেছেন, বিনাশের সময় নিকটবর্তী হলে তখন বুঝতে পারবে। নূতন দুনিয়া স্থাপন, পুরানো দুনিয়ার বিনাশ হয়। অনেকের সাক্ষাৎকারও হবে। সন্ন্যাসীদের, রাজাদের জ্ঞান প্রদান করতে হবে তোমাদের। অনেকের ঈশ্বরীয় সংবাদ প্রাপ্ত হবে। যখন শুনবে অসীম জগতের পিতা এসেছেন, তিনিই একমাত্র সদ্গতি দাতা, তখন অনেকেই আসবে। এখনো সংবাদপত্রে তেমন আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু প্রকাশিত হচ্ছে না । তার মধ্যেও কেউ-কেউ বেরিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। বাচ্চারা বুঝতে পারে আমরাই শ্রীমত অনুযায়ী সত্যযুগের স্থাপনা করছি। এটা হলো তোমাদের নূতন মিশন (প্রচার সমিতি)। তোমরা হলে ঈশ্বরীয় মিশনের ঈশ্বরীয় সদস্য। যেমন খ্রিষ্টান মিশনের খ্রিষ্টান সদস্য হয়ে যায়। তোমরা হলে ঈশ্বরীয় সদস্য, সেইজন্য গায়ন আছে অতীন্দ্রিয় সুখ কী তা গোপ- গোপিনীদেরকে জিজ্ঞাসা করো, যারা আত্ম-অভিমানী হয়েছে। এক বাবাকে স্মরণ করতে হবে, দ্বিতীয় কাউকে নয় । এই রাজযোগ একমাত্র বাবা শেখান, তিনিই হলেন গীতার ভগবান। সবাইকে এই বাবারই নিমন্ত্রণ বা ঈশ্বরীয় সংবাদ দিতে হবে, এছাড়া সব ব্যাপার হলো জ্ঞানের শৃঙ্গার। এই সব চিত্র হলো জ্ঞানের শৃঙ্গার, ভক্তির নয় । এটা বাবা বসে তৈরী করেছেন- মানুষকে বোঝানোর জন্য। এই চিত্র ইত্যাদি তো প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বাকি এই জ্ঞান আত্মাতে থেকে যায়। বাবারও এই জ্ঞান আছে, ড্রামাতে স্থির হয়ে আছে।

তোমরা এখন ভক্তি মার্গ পাশ করে জ্ঞান মার্গে এসেছো। তোমরা জানো যে আমাদের আত্মাতে এই পার্ট আছে যেটা চলছে। স্থির হয়েই ছিলো যা আবার আমরা রাজযোগ শিখছি বাবার কাছ থেকে। বাবাকে এসেই এই নলেজ দেওয়ার ছিলো। আত্মাতে নির্ধারিত হয়ে আছে।

তোমরা এখন ভক্তি মার্গে পাশ করে জ্ঞান মার্গে এসেছো। তোমরা জানো, আমাদের আত্মাতে এই পার্ট নথিভুক্ত আছে, যা চলছে। নথিভুক্ত ছিলো, তাইতো আবার আমরা রাজযোগ শিখছি বাবার কাছে। বাবারই এসে এই নলেজ দেওয়ার ছিলো। আত্মাতে নথিভুক্ত হয়ে আছে। সেখানে গেলে আবার নূতন দুনিয়ার পার্ট রিপিট হবে। শুরু থেকে নিয়ে আত্মার সমস্ত রেকর্ডকে তোমরা বুঝতে পেরে গেছো। আবার এই সব বন্ধ হয়ে যাবে। ভক্তি মার্গের পার্টও বন্ধ হয়ে যাবে। তারপর তোমাদের যে অ্যাক্ট সত্যযুগে চলে ছিলো সেটাই চলবে। কি হবে, সেটা বাবা বলেন না। যা কিছু হয়েছিলো সেটাই হবে। বোঝা যায় যে সত্যযুগ হলো নূতন দুনিয়া। সেখানে অবশ্যই সব কিছু নূতন সতোপ্রধান আর সস্তা হবে, পূর্ব কল্পে যা হয়েছিলো সেটাই হবে। দেখলে মনেও হয় যে- এই লক্ষ্মী- নারায়ণের কতো সুখ। হীরে- জহরত ধন খুবই থাকে। ধন থাকলে সুখও থাকে। এখানে তোমরা তুলনা করতে পারো। ওখানে পারো না। এখানকার কথা ওখানে সব ভুলে যাবে। এটা হলো নূতন কথা যা একমাত্র বাবা বাচ্চাদেরকে বোঝান। আত্মাদের সেইখানে যেতে হবে যেখানে সমস্ত কার্যকলাপ থেমে যায় । হিসাব-নিকাশ চুকে যায়। রেকর্ড সম্পূর্ণ হয়। একটা রেকর্ডই অনেক বড়। তখন বলতে পারো আত্মাও তাহলে এতো বড় হওয়া উচিত। কিন্তু না। এতো ছোটো আত্মাতে ৮৪ জন্মের পার্ট আছে। আত্মাও হলো অবিনাশী। এটাকে শুধু বিস্ময়করই বলা যাবে। এর থেকে আশ্চর্য রকম আর কিছু হতে পারে না। বাবার ক্ষেত্রে তো বলে সত্যযুগ-ত্রেতার সময় বিশ্রামে থাকেন তিনি । আমাদের তো অলরাউন্ডার পার্ট হয়। সব থেকে বেশী হলো আমাদের পার্ট। বাবা তেমন উত্তরাধিকারও বেশী দেন। বলেন, ৮৪ জন্মও তোমরাই নাও। আমাদের তো পার্ট এমনই যে আর কেউ সেটা করতে পারবে না। ওয়ান্ডারফুল ব্যাপার, তাই না ! এটাও বিস্ময়ের যে আত্মাদের বাবা বসে বোঝান। আত্মা মেল- ফিমেল হয় না। যখন শরীর ধারণ করে তখন মেল- ফিমেল বলা হয়। আত্মারা সকলে বাচ্চা হলে তো ভাই-ভাই হয়ে যায়। ভাই-ভাই হলো অবশ্যই উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করার জন্য। আত্মা তো হলো বাবার বাচ্চা, তাই না ! বাবার থেকে উত্তরাধিকার গ্রহণ করে, সেইজন্য মেল-ই বলা হবে। সব আত্মাদের অধিকার আছে, বাবার থেকে উত্তরাধিকার গ্রহণ করার। তার জন্য বাবাকে স্মরণ করতে হবে। নিজেকে আত্মা মনে করতে হবে। আমরা সবাই হলাম ব্রাদার্স। আত্মা, হলোই আত্মা। সেটা কখনো পরিবর্তিত হয় না। এছাড়া শরীর কখনো মেল এর কখনো ফিমেল এর ধারণ করা হয়। এটা বেশ গোলমেলে ব্যাপার বুঝতে পারার পক্ষে, (বাবা ছাড়া) আর কেউ শোনাতে পারে না। বাবার থেকে অথবা তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের থেকেই শুনতে পারা যায়। বাচ্চারা, বাবা তো তোমাদের সাথে কথা বলেন। আগে তো সকলের সাথে মিলতেন, সকলের সাথে কথা বলতেন। এখন এই রকম করতে করতে আর কারোর সাথে কথাই বলবেন না। সন্ শোজ ফাদার, তাই না ! বাচ্চাদেরকেই পড়াতে হবে।বাচ্চারা, তোমরাই অনেককে সার্ভিস করে নিয়ে আসতে পারো। বাবা বুঝতে পারেন এই বাচ্চা অনেককে নিজ সম বানিয়ে নিয়ে আসছে। এরা বড় রাজা হবে, এরা ছোটো রাজা হবে। তোমরা হলে আত্মা রূপী সেনা, যারা সবাইকে রাবণের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে নিজের মিশনে(সমিতিতে) নিয়ে আসো। যে যতো সার্ভিস করে ততই ফল প্রাপ্ত হয় । যারা বেশী ভক্তি করেছে তারাই বেশী সুবুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে যায় আর উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করে নেয়। এটা হলো পড়াশুনা, ভালো করে পড়াশুনা না করলে ফেল করে যাবে। পাঠ খুবই সহজ।বুঝতে পারা আর বোঝাতে পারাও হলো সহজ। ডিফিকাল্টির কিছু নেই, কিন্তু রাজধানী স্থাপন হতে হবে, তাতে তো সব চাই ! পুরুষার্থ করতে হবে। তার দ্বারাই আমরা উচ্চ পদ প্রাপ্ত করবো। মৃত্যুলোক থেকে ট্র্যান্সফার হয়ে অমরলোকে যেতে হবে। যতো পড়াশুনা করবে অমরপুরীতে ততোই উচ্চ পদ প্রাপ্ত করবে।

বাবাকে ভালোবাসতেও হয়, কারণ উনি হলেন অত্যন্ত ভালোবাসার জিনিস । প্রেমের সাগরও তিনি, তোমাদের সকলের ভালোবাসা এক রকম (একরস) নয় । কেউ স্মরণ করে, কেউ করে না। কারোর বোঝানোর নেশাও থাকে ! এটা বড় টেমটেশন (অন্যকে বোঝানোর জন্য মন ছটফট করতে থাকে) । কেউ এলে তাকে বলতে হবে- এটা হলো ইউনিভার্সিটি। এটা হলো স্প্রিরিচুয়াল অধ্যয়ণ। এইরকম চিত্র আর কোনো স্কুলে দেখা যায় না। দিনে দিনে আরো চিত্র বেরোতে থাকবে। সে সব মানুষ দেখলেই বুঝে যাবে। সিঁড়ি হলো খুবই সুন্দর। কিন্তু দেবতা ধর্মের না হলে তবে সেটা বোধগম্য হবে না। যারা এই কুলের হবে তাদের তীর বিঁধবে। যারা আমাদের দেবতা ধর্মের পাতা হবে, তারাই আসবে। তোমাদের ফিল (অনুভব) হবে এ তো খুবই আগ্রহ নিয়ে শুনছে। কেউ তো এমনিই চলে যাবে। বাবা প্রত্যেক দিন নূতন-নূতন কথাও বাচ্চাদের বোঝাতে থাকেন । সার্ভিসের খুব বড় শখ থাকা চাই। যারা সার্ভিসে তৎপর থাকবে তারাই বাবার হৃদয়েও স্থান পাবে আর সিংহাসনেও বসতে পারবে। যত এগোবে তোমাদের সব সাক্ষাৎকার হতে থাকবে। সেই খুশীতে থাকবে তোমরা। দুনিয়াতে তো হাহাকার খুবই হবে। রক্তের নদীও বইবে। বাহাদুর বাচ্চারা যারা সার্ভিসে সদা তৎপর, তারা কখনও ক্ষুধায় মরবে না। কিন্তু এখানে তো তোমাদের বনবাসে (অতি সাধারণ ভাবে) থাকতে হবে। সুখও সেখানেই তোমাদের প্রাপ্ত হবে। কন্যাদেরও তো অত্যন্ত সাধারণ ভাবে রাখা হয়, তাই না (বনবাসের মতো) ! শ্বশুর বাড়ী গিয়ে শাড়ি গহনে পরে খুব সুসজ্জিত থাকুক। তোমরাও শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছ, তাই তোমাদেরও সেই নেশা থাকে। সেটা হলোই সুখধাম। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

*ধারণার জন্যে মুখ্য সারঃ-*

১ ) মালাতে গ্রন্থিত হওয়ার জন্য দেহী-অভিমানী হয়ে তীব্র গতিতে স্মরণের যাত্রা করতে হবে। বাবার আদেশ অনুযায়ী চলে পবিত্র হতে হবে।

২ ) বাবার পরিচয় দিয়ে অনেককে নিজ সম বানানোর সার্ভিস করতে হবে। এখানে বনবাসে থাকতে হবে। অন্তিম হাহাকারের সীন দেখবার জন্য মহাবীর হতে হবে।

*বরদানঃ-*

প্রতিটি কর্মে ফলো ফাদার করে স্নেহের রেসপন্স দিতে সক্ষম তীব্র পুরুষার্থী ভব

যার মধ্যে স্নেহ থাকে সে অটোম্যাটিক্যালি ফলো করতে পারে। সর্বদা স্মরণে থাকে যে এখন যে কর্ম করছি এটা ফলো ফাদার হলো তো ? যদি না হয় তো স্টপ করে দাও। বাবাকে কপি করে বাবার সমান হও। কপি করার জন্য যেমন কার্বন পেপার রাখা হয়, সেইরকম অ্যাটেনশনের পেপার রাখো, তবে কপি হয়ে যাবে। কারণ এখনই তীব্র পুরুষার্থী হয়ে নিজেকে প্রত্যেকটি শক্তি দ্বারা সম্পন্ন করে তোলার সময়। যদি নিজে নিজেকে সম্পন্ন করতে না পারো তবে সহযোগিতা নাও। নইলে এর পরে টু লেট হয়ে যাবে।

*স্লোগানঃ-*

সন্তুষ্টতার ফল হলো প্রসন্নতা, প্রসন্ন চিত্ত হলে প্রশ্ন সমাপ্ত হয়ে যায়।