29.12.2020 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


''মিষ্টি বাচ্চারা - সঙ্গম যুগে তোমরা ব্রাহ্মণ সম্প্রদায় হয়েছো, তোমাদের এখন মৃত্যুলোকের মনুষ্য থেকে অমরলোকের দেবতা হতে হবে"

প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা, তোমরা কোন্ জ্ঞানকে বোঝার কারণে অসীম জগতের সন্ন্যাস নাও ?

উত্তরঃ -
তোমাদের এই ড্রামার যথার্থ জ্ঞান আছে, তোমরা জানো যে, ড্রামা অনুসারে এখন এই সম্পূর্ণ মৃত্যুলোককে ভস্মীভূত হতে হবে । এখন এই দুনিয়া পাই পয়সার হয়ে গেছে, আমাদের তাকে অনেক মূল্যবান করতে হবে । এখানে যা কিছুই হয়, তা হুবহু পরের কল্পে রিপিট হবে, তাই তোমরা এই সম্পূর্ণ দুনিয়া থেকে অসীম জগতের সন্ন্যাস করেছো ।

গীতঃ-
আগামী দিনের তোমরা হলে এমন চিত্র, গর্ব করবে দুনিয়া এমন তোমাদের ভাগ্য.....

ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা গানের লাইন শুনেছে । আগামী দিন হলো অমরলোক । এ হলো মৃত্যুলোক । অমরলোক আর মৃত্যুলোকের এ হলো পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ । বাবা সঙ্গম যুগেই পড়ান, তিনি আত্মাদের পড়ান, তাই তিনি বাচ্চাদের বলেন - তোমরা আত্ম অভিমানী হয়ে বসো । তোমাদের একথা নিশ্চিত করতে হবে যে - অসীম জগতের পিতা আমাদের পড়ান । আমাদের এইম অবজেক্ট এই হলো - লক্ষ্মী - নারায়ণ বা মৃত্যুলোকের মনুষ্য থেকে অমরলোকের দেবতা হওয়া । এমন পড়া তো কখনো কানেই শোনো নি, না কাউকে বলতে দেখেছো যে - বাচ্চারা, তোমরা আত্ম - অভিমানী হয়ে বসো । একথা নিশ্চিত করো যে, অসীম জগতের পিতা আমাদের পড়ান । কোন পিতা ? অসীম জগতের বাবা নিরাকার শিব । তোমরা এখন বুঝতে পারো যে, আমরা পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে আছি । এখন তোমরা ব্রাহ্মণ সম্প্রদায় হয়েছো, এরপর তোমাদের দেবতা হতে হবে । প্রথমে তোমরা শূদ্র সম্প্রদায়ের ছিলে । বাবা এসে তোমাদের পাথর বুদ্ধি থেকে পরশ পাথর তুল্য বুদ্ধির বানান । প্রথমে তোমরা সতোপ্রধান পরশ পাথর বুদ্ধির ছিলে, এখন আবার তেমন হচ্ছো । এমন বলা উচিত নয় যে, তোমরা সত্যযুগের মালিক ছিলে । তোমরা সত্যযুগে বিশ্বের মালিক ছিলে । তারপর ৮৪ জন্মগ্রহণ করে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে সতোপ্রধান থেকে সতো, রজঃ, তমঃতে এসেছো । প্রথমে তোমরা সতোপ্রধান ছিলে, তাই তোমাদের পরশ পাথর তুল্য বুদ্ধি ছিলো, তারপর আত্মার মধ্যে খাদ জমা হয় । মানুষ কিছুই বোঝে না । বাবা বলেন - তোমরা কিছুই জানতে না । তোমাদের অন্ধ বিশ্বাস ছিলো । না জেনে কারোর পুজো করা বা স্মরণ করা, একে অন্ধবিশ্বাস বলা হয় । আর নিজের শ্রেষ্ঠ ধর্ম, শ্রেষ্ঠ কর্মকে ভুলে যাওয়ার কারণে কর্মভ্রষ্ট, ধর্মভ্রষ্ট হয়ে যায় । ভারতবাসী এই সময় দৈবী ধর্ম থেকেও ভ্রষ্ট । বাবা বোঝান যে - বাস্তবে তোমরা হলে প্রবৃত্তি মার্গের । সেই দেবতারাই যখন অপবিত্র হন, তখন তাঁদের দেবী - দেবতা বলা যায় না, তাই নাম পরিবর্তন করে হিন্দু ধর্ম রেখে দিয়েছে । তাও ড্রামার নিয়ম অনুসারেই হয় । সবাই এক বাবাকেই ডাকে - হে পতিত পাবন, এসো । তিনিই হলেন এক গড ফাদার, যিনি জন্ম - মৃত্যু রহিত । এমন নয় যে, নাম - রূপ থেকে পৃথক কোনো জিনিস আছে । আত্মা বা পরমাত্মার রূপ খুবই সূক্ষ্ম, যাকে স্টার বা বিন্দু বলা হয় । মানুষ শিবের পুজো করে, কিন্তু তাঁর তো কোনো শরীর নেই । এখন বিন্দু আত্মার তো কোনো পুজো হতে পারে না, তাই তাঁকে পুজো করার জন্য বড় বানানো হয় । মানুষ মনে করে, মানুষ শিবের পুজো করছে, কিন্তু তাঁর রূপ কি, তা জানে না । এইসব কথা বাবা এখন এসেই বুঝিয়ে বলেন । বাবা বলেন যে, তোমরা তোমাদের জন্মকে জানো না । ৮৪ লাখ যোনির তো এক গল্প বানিয়ে দিয়েছে । বাচ্চারা, বাবা এখন তোমাদের বসে বোঝান । তোমরা এখন ব্রাহ্মণ হয়েছো, এরপর তোমাদের দেবতা হতে হবে । কলিযুগী মনুষ্য হলো শূদ্র । তোমাদের মতো ব্রাহ্মণদের এইম অবজেক্ট হলো মানুষ থেকে দেবতা হওয়া । এই মৃত্যুলোক হলো পতিত দুনিয়া । সেই দুনিয়া ছিলো নতুন দুনিয়া, যেখানে দেবী - দেবতারা রাজত্ব করতেন । তাঁদের একই রাজ্য ছিলো । এঁরা সম্পূর্ণ বিশ্বের মালিক ছিলেন । এখন তো তমোপ্রধান দুনিয়া । এখানে অনেক ধর্ম । সেই দেবী - দেবতা ধর্ম এখন প্রায় লোপ হয়ে গেছে । দেবী - দেবতাদের রাজ্য কবে ছিলো, কতো সময় চলেছিলো, এই পৃথিবীর সেই হিস্ট্রি - জিওগ্রাফি কেউই জানে না । বাবা এসেই তোমাদের বোঝান । এ হলো গড ফাদারলি ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি, যার এইম অবজেক্ট হলো অমরলোকের দেবতা তৈরী করা । একে অমর কথাও বলা হয় । তোমরা এই জ্ঞানের দ্বারা দেবতা হয়ে কালের উপর জয়লাভ করো । ওখানে কখনোই কাল গ্রাস করতে পারে না । ওখানে মৃত্যুর কোনো নাম নেই । এখন তোমরা ড্রামার নিয়ম অনুসারে কালের উপর জয়লাভ করছো । ভারতবাসীরাও তো পাঁচ বছর বা দশ বছরের প্ল্যান তৈরী করে, তাই না । তারা মনে করে আমরা রামরাজ্য স্থাপন করছি । অসীম জগতের পিতারও এই রামরাজ্য স্থাপনের প্ল্যান রয়েছে । ওরা তো সব হলো মনুষ্য । মানুষ তো আর রামরাজ্য স্থাপন করতে পারে না । রামরাজ্য সত্যযুগকেই বলা হয় । এই কথা কেউই জানে না । মানুষ কতো ভক্তি করে, শরীরের যাত্রা করে । দিন অর্থাৎ সত্য এবং ত্রেতাযুগে এই দেবতাদের রাজ্য ছিলো । তারপর রাতে ভক্তিমার্গ শুরু হয় । সত্যযুগে ভক্তি থাকে না । জ্ঞান, ভক্তি এবং বৈরাগ্য -- একথা বাবাই বুঝিয়ে বলেন । বৈরাগ্য হলো দুই প্রকারের - এক হলো হঠযোগী নিবৃত্তি মার্গদের, ওরা ঘরবাড়ি ছেড়ে জঙ্গলে চলে যায় । তোমাদের এখন তো অসীম জগতের সন্ন্যাস করতে হবে, সম্পূর্ণ মৃত্যুলোকের । বাবা বলেন যে, এই সম্পূর্ণ দুনিয়া ভস্মীভূত হয়ে যাবে । এই ড্রামাকে খুব ভালোভাবে বুঝতে হবে । উঁকুনের মতো ধীরে ধীরে টিক - টিক হতেই থাকে । যা কিছুই হচ্ছে, তা আবার কল্প পাঁচ হাজার বছর পরে হুবহু রিপিট হবে । একে খুব ভালোভাবে বুঝে অসীম জগতের সন্ন্যাস করতে হবে । মনে করো, কেউ যদি বিলেতে যায়, তখন বলবে ওখানে আমরা এই জ্ঞান পড়তে পারবো ? বাবা বলেন - হ্যাঁ, যেখানে খুশী বসে তোমরা পড়তে পারো । এতে প্রথমে সাত দিনের কোর্স করতে হয় । এ খুবই সহজ, আত্মাকে কেবল এইকথা বুঝতে হয় । আমরা যখন এই সতোপ্রধান বিশ্বের মালিক ছিলাম, তখন আমরা সতোপ্রধান ছিলাম । এখন আমরা তমোপ্রধান হয়ে গেছি । ৮৪ জন্মে সম্পূর্ণ পাই পয়সার হয়ে গেছি । এখন আমরা পাউন্ড ( মূল্যবান ) কিভাবে হবো ? এখন কলিযুগ, এরপর অবশ্যই সত্যযুগ হতে হবে, বাবা কতো সহজভাবে বোঝান, তোমাদের সাত দিনের কোর্স বুঝতে হবে । আমরা কিভাবে সতোপ্রধান থেকে তমোপ্রধান হয়েছি । কাম চিতায় বসে তমোপ্রধান হয়ে গেছি । এখন আবার জ্ঞান চিতায় বসে সতোপ্রধান হতে হবে । এই পৃথিবীর হিস্ট্রি - জিওগ্রাফি রিপিট হয়, এই চক্র ঘুরতেই থাকে, তাই না । এখন হলো সঙ্গম যুগ, এরপর হবে সত্যযুগ । এখন আমরা কলিযুগের বিকারী হয়েছি । তাহলে এখন আবার সত্যযুগী নির্বিকারী কিভাবে হবো ? এরজন্য বাবা পথ বলে দেন । মানুষ ডাকতেও থাকে যে - আমাদের মধ্যে কোনো গুণ নেই । এখন আমাদের এমন গুণবান বানাও । যারা পূর্ব কল্পে হয়েছিলো, তাদেরই আবার হতে হবে । বাবা বোঝান যে - প্রথম প্রথম নিজেকে তো আত্মা মনে করো । আত্মাই এক শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করে । তোমাদের এখন দেহী অভিমানী হতে হবে । তোমরা এখনই দেহী অভিমানী হওয়ার শিক্ষা পাও এমন নয় যে, তোমরা সর্বদা দেহী অভিমানী থাকবে । তা নয়, সত্যযুগে তো শরীরের নাম থাকে । লক্ষ্মী - নারায়ণের নামেই সমস্ত কারবার চলে । এখন এ হলো সঙ্গম যুগ, যখন বাবা এসে বোঝান । তোমরা অশরীরী এসেছিলে, আবার অশরীরী হয়েই ফিরে যেতে হবে । তোমরা নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো । এ হলো আধ্যাত্মিক যাত্রা । আত্মা তার আধ্যাত্মিক পিতাকে স্মরণ করে । বাবাকে স্মরণ করলেই তোমাদের পাপ ভস্ম হয়ে যাবে, একে যোগ অগ্নি বলা হয় । এই স্মরণ তো তোমরা যেখানে খুশী করতে পারো । তোমাদের সাত দিনে বুঝতে হয় । এই সৃষ্টিচক্র কিভাবে ঘোরে, কিভাবে আমরা সিঁড়ি দিয়ে নামি ? এরপর এই এক জন্মেই আমাদের উত্তরণের কলা হয় বিলেতে বাচ্চারা থাকে, ওখানেও মুরলী যায় । এ তো স্কুল, তাই না । বাস্তবে এ হলো গড ফাদারলী ইউনিভার্সিটি । এ হলো গীতার রাজযোগ ।

কিন্তু কৃষ্ণকে ঈশ্বর বলা হয় না। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শংকরকেও দেবতা বলা হয়। এখন তোমরা পুরুষার্থ করে এরকমই দেবতা হও। প্রজাপিতা ব্রহ্মাও তো এখানেই থাকবে, তাই না! প্রজাপিতা তো মানুষ, তাই না! প্রজার রচনা অবশ্যই এখানে হয়ে থাকে। 'হম্ সো' (আমরা মানব থেকে দেবতা হই) - এই শব্দের অর্থ বাবা অতি সহজভাবে বুঝিয়েছেন। ভক্তিমার্গে তো বলে থাকে যে, আমরাই আত্মা তথা পরমাত্মা, সে'জন্য পরমাত্মাকে সর্বব্যাপী বলে থাকে। বাবা বলেন -- সর্বব্যাপী হলো আত্মা। আমি কিভাবে সর্বব্যাপী হবো ? তোমরা আমায় আহ্বানও করো -- হে পতিত-পাবন এসো, আমাদের পবিত্র করো। সমস্ত নিরাকার আত্মারা এসে আপন-আপন রথ(শরীর) ধারণ করে। এটা হলো প্রত্যেক অকাল-মূর্তি আত্মার আসন। আসন বলো অথবা রথ বলো। বাবার তো কোনো রথ থাকে না। নিরাকার-রূপেই তাঁর গায়ন করা হয়ে থাকে। না সূক্ষ্ম শরীর আছে, না স্থূল শরীর আছে। নিরাকার স্বয়ং রথে যখন বসেন তখন বলতে পারে। রথ ব্যতীত পতিতকে পবিত্র কিভাবে করবে ? বাবা বলেন -- আমি নিরাকার এসে এঁনার লোন নিই। টেম্পরারিভাবে লোন নিয়েছি, এঁনাকে ভাগ্যশালী রথ বলা হয়। বাচ্চারা, বাবা-ই সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বলে তোমাদেরকে ত্রিকালদর্শী করে দেন। আর কোনো মানুষ এই জ্ঞানকে জানতে পারে না। এইসময় সকলেই নাস্তিক। বাবা এসে আস্তিক করে দেন। রচয়িতা-রচনার রহস্য বাবা তোমাদের বলেছেন। এখন তোমরা ব্যতীত আর কেউ বোঝাতে পারে না। তোমরাই এই জ্ঞানের দ্বারা পুনরায় এত উচ্চপদ প্রাপ্ত করো। এই জ্ঞান এখনই কেবল তোমরা ব্রাহ্মণরাই পাও। বাবা সঙ্গমেই এসে এই জ্ঞান প্রদান করেন। সদ্গতি প্রদান করেন একমাত্র বাবা-ই। মানুষ মানুষকে সদ্গতি প্রদান করতে পারে না। ওইসকল গুরুরা হলো ভক্তিমার্গের। সদ্গুরু একজনই আছে, ওঁনাকে বলা হয় বাঃ সতগুরু বাঃ! একে পাঠশালাও বলা হয়ে থাকে। এইম অবজেক্ট হলো নর থেকে নারায়ণ হওয়ার। ওসব হলো ভক্তিমার্গের কাহিনী। গীতার থেকেও কোনো প্রাপ্তি হয় না। বাবা বলেন -- বাচ্চারা, আমি তোমাদের সম্মুখে এসে পড়াই, যার ফলস্বরূপ তোমরা এই পদ প্রাপ্ত করো। এখানে মুখ্য কথাই হলো পবিত্র হওয়ার। বাবার স্মরণে থাকতে হবে। এতেই মায়া বিঘ্ন ঘটায়। তোমরা বাবাকে স্মরণ করো নিজের উত্তরাধিকার পাওয়ার জন্য। এইসমস্ত জ্ঞান বাচ্চাদের কাছেই যায়। কখনোই যেন মুরলী মিস্ না হয়। মুরলী মিস্ হওয়া অর্থাৎ অ্যাবসেন্ট হয়ে যাওয়া। মুরলীর দ্বারা যেকোনো কোথাও বসে রিফ্রেশ হতে থাকবে। শ্রীমতে চলতে হবে। বাইরে গেলে বাবা বোঝান যে -- পবিত্র অবশ্যই হতে হবে, বৈষ্ণব হয়ে থাকতে হবে। বৈষ্ণবও দুইপ্রকারের হয়, বৈষ্ণব, বল্লভাচারীও হয় কিন্তু তারা বিকার যায়। পবিত্র তো হয়না। তোমরা পবিত্র হয়ে বিষ্ণুবংশীয় হও। ওখানে তোমরা বৈষ্ণব হবে, বিকারে যাবে না। ওটা হলো অমরলোক, এটা হলো মৃত্যুলোক, এখানে বিকারে যায়। এখন তোমরা বিষ্ণুপুরীতে যাও। ওখানে বিকার থাকে না। ওটা হলো নির্বিকারী দুনিয়া। যোগবলের দ্বারা তোমরা বিশ্বের রাজত্ব নাও। ওরা দুইপক্ষ পরস্পর লড়াই করে, আর মাঝখানে মাখন তোমরা প্রাপ্ত করো। তোমরা নিজেদের রাজধানী স্থাপন করো। সকলকে এই সমাচারই দিতে হবে। ছোট বাচ্চাদেরও অধিকার রয়েছে। শিববাবার সন্তান তো, তাই না! তাই সকলের অধিকার রয়েছে। সকলকে বলতে হবে নিজেকে আত্মা মনে করো। মাতা-পিতার মধ্যে জ্ঞান থাকলে তারা বাচ্চাদেরকেও শেখাবে যে -- শিববাবাকে স্মরণ করো। শিববাবা ব্যতীত আর কেউ নয়। একের স্মরণেই তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে যাবে। এখানে অধ্যয়ন অত্যন্ত ভালভাবে করা চাই। বিদেশে থাকলেও তোমরা পড়তে পারো। এখানে বইপত্রাদি কিছুই চাই না। যেকোন কোথাও বসে তোমরা পড়তে পারো। বুদ্ধির দ্বারা স্মরণ করতে পারো। এই পড়া এত সহজ। যোগ অথবা স্মরণে বল প্রাপ্ত হয়। তোমরা এখন বিশ্বের মালিক হতে চলেছো। বাবা রাজযোগ শিখিয়ে পবিত্র বানিয় দেন। ওটা হলো হঠযোগ, আর এটা হলো রাজযোগ। এখানে অতি ভালভাবে সংযম করা উচিত। এই লক্ষ্মী-নারায়ণের মতন সর্বগুণসম্পন্ন হতে হবে, তাই না! ভোজনাদির উপরেও সংযম রাখা উচিত আর দ্বিতীয় কথা হলো বাবাকে স্মরণ করা তবেই জন্ম-জন্মান্তরের পাপ খন্ডিত হয়ে যাবে। একেই বলা হয় সহজ রাজযোগ, রাজত্ব প্রাপ্ত করার জন্য। যদি রাজত্ব না নাও তাহলে গরীব হয়ে যাবে। সম্পূর্ণ শ্রীমতানুসারে চলে শ্রেষ্ঠ হতে হবে। তার জন্য বাবাকে স্মরণ করতে হবে। কল্প-পূর্বেও তোমরাই এই জ্ঞান গ্রহণ করেছিলে, এখন তাই পুনরায় গ্রহণ করছো। সত্যযুগে আর কোনো রাজ্য ছিল না। তাকে বলা হয় সুখধাম। এখন এ হলো দুঃখধাম আর যেখান থেকে আমরা অর্থাৎ আত্মারা এসেছি তা হলো শান্তিধাম। শিববাবাও আশ্চর্যান্বিত হয়ে যান যে -- দুনিয়ায় মানুষ কি-কি করে! সন্তানের জন্ম নিয়ন্ত্রিত হোক তারজন্য কত মাথা কুটতে থাকে। তারা বোঝে না যে, এ তো বাবার-ই কাজ। বাবা মুহূর্তে এক ধর্ম স্থাপন করে, এক ধাক্কায় বাকি সব অন্যান্য ধর্মের বিনাশ করে দেন। ওরা (লৌকিকে) কত ওষুধপত্রাদি বের করে জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য। বাবার কাছে তো একটিই ওষুধ আছে। এক ধর্মের স্থাপনা হবে। সেইসময় আসবে যখন সকলেই বলবে যে এরা তো পবিত্র হচ্ছে। তবে আবার ওষুধপত্রাদিরও আর কি প্রয়োজন। তোমাদের বাবা "মন্মনাভব"-র এমন ওষুধ দিয়েছেন যার ফলে তোমরা ২১ জন্মের জন্য পবিত্র হয়ে যাও। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) পবিত্র হয়ে সম্পূর্ণরূপে বৈষ্ণব হতে হবে। ভোজন-পানাদির উপরেও সম্পূর্ণরূপে সংযম রাখতে হবে। শ্রেষ্ঠ হওয়ার জন্য অবশ্যই শ্রীমতানুসারে চলতে হবে।

২ ) মুরলীর দ্বারা নিজেকে রিফ্রেশ করতে হবে, অন্য কোথাও থাকলেও সতোপ্রধান হওয়ার পুরুষার্থ করতে হবে। মুরলী একদিনও মিস করবে না।

বরদান:-
বিচ্ছেদকে সদাকালের জন্য বিদায় দানকারী স্নেহী-স্বরূপ ভব

যা স্নেহীর পছন্দ তাই-ই যেন যে স্নেহ করে তার পছন্দ হয় -- এটাই হলো স্নেহের স্বরূপ। চলা-ফেরা, ভোজন-পানাদি, জীবন যাপন যেন স্নেহীর মনের মতন হয় । তারজন্য যেকোনো সঙ্কল্প বা কর্মই করো তখন প্রথমেই ভাবো যে এটা বাবার মনের মতন ? এরকমভাবে সত্যিকারের স্নেহী হও, তবেই নিরন্তরযোগী, সহজযোগী হতে পারবে। যদি স্নেহী-স্বরূপকে সমান স্বরূপে পরিবর্তন করে দাও, তাহলে অমর ভব-র বরদান প্রাপ্ত হবে আর সদাকালের জন্য বিচ্ছেদের বিদায় হয়ে যাবে।

স্লোগান:-
স্বভাব ইজি (সরল) আর পুরুষার্থ অ্যাটেনশন যুক্ত করো।