01.12.2020 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


প্রশ্নঃ -
বাবা বাচ্চাদের পুরুষার্থ করান, কিন্তু বাচ্চাদের কোন্ বিষয়ে খুব স্ট্রিক্ট থাকা উচিত ?

উত্তরঃ -
পুরানো দুনিয়াতে আগুন লাগার পূর্বে তৈরী হও, নিজেকে আত্মা মনে করে বাবার স্মরণে থাকো, বাবার থেকে সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার নেওয়াতে খুব স্ট্রিক্ট থাকতে হবে । ফেল করলে চলবে না, যেমন অনেক স্টুডেন্ট পাস করতে পারে না, তখন অনুতাপ করে, তারা মনে করে আমাদের বছর বিফলে গেলো । অনেকে আবার বলে, না পড়লাম তো কি হলো - কিন্তু তোমাদের খুব স্ট্রিক্ট থাকতে হবে । টিচার যেন এমন না বলে যে --- টু লেট ( খুব দেরী হয়ে গেলো )।

ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের বাবা তাঁর আত্মা রূপী সন্তানদের এই আধ্যাত্মিক পাঠশালায় নির্দেশ দেন বা এমন বলা হবে যে, বাচ্চাদের ড্রিল শেখান । তিনি কি বলেন ? "মন্মনাভব" । ওরা যেমন বলেন - 'অ্যাটেনশন প্লিজ' । বাবা বলেন - "মনমনাভব* । এ যেন তোমরা প্রত্যেকেই নিজেদের উপর দয়া করো । বাবা বলেন - বাচ্চারা, মামেকম্ (একমাত্র আমাকে ) স্মরণ করো, অশরীরী হয়ে যাও । এই আত্মিক ড্রিল আত্মাদের তাদের পিতাই শেখান । তিনি হলেন সুপ্রীম টিচার । তোমরা হলে নায়েব টিচার । তোমরাও সকলকে বলো, নিজেকে আত্মা মনে করো, বাবাকে স্মরণ করো, দেহী - অভিমানী ভব । মনমনাভবের অর্থও এই । তিনি বাচ্চাদের কল্যাণের জন্য নির্দেশ দেন । তিনি নিজে কারোর থেকেই শেখেননি । আর সব টিচার তো আগে নিজেরা শিখে তারপর শেখান । ইনি তো কোনো স্কুল ইত্যাদিতে পড়ে শেখেননি । ইনি কেবল শেখানই । তিনি বলেন - আমি তোমাদের মতো আত্মাদের আত্মিক ড্রিল শেখাই । ওরা সব দেহধারী বাচ্চাদের দেহের ড্রিল শেখায় । ওদের ড্রিল ইত্যাদিও শরীরের দ্বারাই করতে হয় । এখানে তো শরীরের কোনো কথাই নেই । বাবা বলেন যে - আমার কোনো শরীর নেই । আমি তো ড্রিল শেখাই, নির্দেশ দিই । তাঁর থেকে এই ড্রিল শেখার ড্রামার পার্ট নিয়ম অনুসারে লিপিবদ্ধ আছে । এই সেবা লিপিবদ্ধ করা আছে । তিনি এই ড্রিল শেখাতেই আসেন । তোমাদের তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হতে হবে । এ তো খুবই সহজ । এই সিঁড়ির জ্ঞান বুদ্ধিতে আছে । তোমরা কিভাবে ৮৪ জন্মের চক্র লাগিয়ে নীচে নেমে এসেছো । বাবা এখন বলছেন - তোমাদের ঘরে ফিরে যেতে হবে । এমনভাবে আর কেউই তার অনুসরণকারী বা স্টুডেন্টদের বলবেন না যে - আত্মা রূপী সন্তানরা,এখন ঘরে ফিরে যেতে হবে । আত্মাদের পিতা ছাড়া একথা কেউই বোঝাতে পারেন না । বাচ্চারা বুঝতে পারে যে, এখন আমাদের ফিরে যেতে হবে । এই দুনিয়াই এখন তমোপ্রধান । আমরা সতোপ্রধান দুনিয়ার মালিক ছিলাম, তারপর ৮৪ জন্মের চক্র আবর্তন করে তমোপ্রধান দুনিয়ার মালিক হয়েছি । এখানে কেবল দুঃখই দুঃখ । বাবাকে বলা হয় দুঃখহর্তা, সুখকর্তা অর্থাৎ তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান একমাত্র বাবাই বানান । বাচ্চারা, তোমরা বুঝতে পারো যে, আমরা অনেক সুখ দেখেছি । কিভাবে রাজত্ব করেছি, সেকথা স্মরণে নেই কিন্তু সেই এইম অবজেক্ট এখন সামনে । সে হলো ফুলের বাগান । এখন আমরা কাঁটা থেকে ফুলে পরিণত হচ্ছি ।

তোমরা এমন বলবে না যে, কিভাবে নিশ্চিত করবো । সংশয় যদি থাকে তাহলেই বিনশ্যন্তী । স্কুল থেকে কদম তুলে নিলেই পড়া বন্ধ হয়ে যাবে । পদও বিনশ্যন্তী হয়ে যাবে । তখন অনেক ঘাটতি হয়ে যায় । প্রজাতেও তখন পদ কম হয়ে যাবে। মূল বিষয়ই হলো সতোপ্রধান পূজ্য দেবী - দেবতা হওয়া । এখন তো তোমরা দেবতা নয়, তাই না । তোমরা ব্রাহ্মণরা এখন বুঝতে পেরেছো । ব্রাহ্মণরা এসেই বাবার কাছে এই ড্রিল শেখে । অন্দরে অনেক খুশীও হয় । এই পাঠ তো ভালো লাগে, তাই না । ভগবান উবাচঃ হলো - যদিও ওরা কৃষ্ণের নাম দিয়ে দিয়েছে, তবুও তোমরা বুঝতে পারো যে, কৃষ্ণ এই ড্রিল শেখান নি, এ তো বাবা শেখান । কৃষ্ণের আত্মা, যে ভিন্ন নাম রূপ ধারণ করে তমোপ্রধান হয়েছে, তাঁকেও তিনিই শেখান । তিনি নিজে শেখেন না, আর সকলেই কোথাও না কোথাও থেকে অবশ্যই শেখে । ইনি হলেন এই জ্ঞান শেখানো, আত্মাদের পিতা । তিনি তোমাদের শেখান, তোমরা আবার অন্যদেরও শেখাও । তোমরা ৮৪ জন্মগ্রহণ করে পতিত হয়েছো, এখন আবার তোমাদের পবিত্র হতে হবে । এরজন্য তোমরা তোমাদের আত্মিক পিতাকে স্মরণ করো । ভক্তিমার্গে তোমরা এই গান গেয়ে এসেছো - হে পতিত পাবন, এখনো তোমরা কোথাও গিয়ে দেখো । তোমরা তো রাজঋষি, তাই না । তোমরা যেকোনো জায়গায় ঘুরতে - ফিরতে পারো । তোমাদের কোনো বন্ধন নেই । বাচ্চারা, তোমাদের এই নিশ্চয়তা আছে যে - অসীম জগতের পিতা এই সেবাতে এসেছেন । বাবা বাচ্চাদের থেকে এই পড়ার পারিশ্রমিক কিভাবে নেবেন । টিচারের সন্তান যদি হয়, তাহলে তো ফ্রিতেই পড়াবেন, তাই না । ইনিও বিনামূল্যেই পড়ান । এমন মনে করো না যে, আমরা কিছু দিই । এখানে কোনো ফিস নেই । তোমরা কিছুই দাও না, এখানে তো তোমরা বিনিময়ে অনেককিছু নাও । মানুষ দান - পুণ্য করে, মনে করে, বিনিময়ে আমরা পরের জন্মে অনেককিছু পাবো । ওইসব অল্পকালের ক্ষণভঙ্গুর সুখ প্রাপ্ত হয় । যদিও পরের জন্মে পাওয়া যায়, কিন্তু তা অবতরণের জন্মে মেলে । তোমরা তো সিঁড়ি দিয়ে নেমেই এসেছো, তাই না । এখন তোমরা যা কিছুই করো, তা উত্তরণের কলাতে যাওয়ার জন্য । কর্মের ফল তো বলা হয়, তাই না । আত্মা তার কর্মের ফল পায় । এই লক্ষ্মী - নারায়ণও তো কর্মের ফলই পেয়েছে, তাই না । অসীম জগতের বাবার কাছ থেকে অসীম জগতের ফল পাওয়া যায় । ও পাওয়া যায় অপ্রত্যক্ষভাবে । এও ড্রামাতে লিপিবদ্ধ । এও এক বানানো ড্রামা । তোমরা জানো যে, আমরা আবার পরের কল্পে এসে বাবার থেকে অসীম জগতের উত্তরাধিকার গ্রহণ করবো । বাবা বসে আমাদের জন্য স্কুল তৈরী করেন । ওই গভর্নমেন্টের হলো শরীরধারীদের স্কুল । যা তোমরা ভিন্ন - ভিন্ন প্রকারে অর্ধেক কল্প ধরে পড়ে এসেছো । বাবা এখন ২১ জন্মের জন্য সব দুঃখ দূর করার জন্য পড়াচ্ছেন । ওখানে তো হলো রাজত্ব । ওখানে নম্বরের ক্রমানুসারে তো আসেই । এখানেও যেমন রাজা - রানী, উজির, প্রজা ইত্যাদি সবাই নম্বরের ক্রমানুসারে আছে । এ হলো পুরানো দুনিয়াতে আর নতুন দুনিয়াতে খুব অল্পই থাকবে । ওখানে অনেক সুখ থাকবে, তোমরা এই বিশ্বের মালিক তৈরী হও । রাজা - মহারাজারা সবাই হয়ে চলে গেছে । তারা কতো খুশীতে থাকে । বাবা কিন্তু বলেন, ওদেরও আবার নীচে নামতেই হবে । সবাই তো নীচে নামে, তাই না । দেবতাদের কলাও ধীরে ধীরে নীচে নামতে থাকে । ওখানে কিন্তু রাবণ রাজ্য নেই তাই সুখই সুখ । এখানে হলো রাবণ রাজ্য । তোমরা যেমন উপরে ওঠো, তেমনি নেমেও যাও । আত্মারা নাম রূপ ধারণ করতে করতে নীচে নেমে এসেছে । এই ড্রামার নিয়ম অনুসারে পূর্ব কল্পের মতো নীচে নেমে তমোপ্রধান হয়ে গেছে । কাম চিতায় বসলেই দুঃখ শুরু হয়ে যায় । এখন হলো অতি দুঃখ । ওখানে আবার অতি সুখ হবে । তোমরা হলে রাজঋষি । ওদের হলো হঠযোগ । তোমরা যে কাউকেই জিজ্ঞেস করো, এই রচনার আদি - মধ্য, অন্তকে জানো কি ? তখন তারা না বলে দেবে । যারা জানবে তারাই জিজ্ঞেস করবে । নিজেই যদি না জানে, তাহলে কি জিজ্ঞেস করবে ? তোমরা জানো যে, ঋষি - মুনি ইত্যাদি কেউই ত্রিকালদর্শী ছিলেন না । বাবা আমাদের ত্রিকালদর্শী তৈরী করছেন । এই বাবা, যিনি বিশ্বের মালিক ছিলেন, তাঁর এই জ্ঞান ছিলো না । এই জন্মেও ৬০ বছর পর্যন্ত এই জ্ঞান ছিলো না । বাবা যখন এসেছিলেন, তখন ধীরে ধীরে এই জ্ঞান শুনিয়েছিলেন । যদিও নিশ্চয়বুদ্ধির হয়ে যায়, তবুও মায়া অনেককেই নামিয়ে দিতে থাকে । নাম বলা যাবে না, তাহলে আশাহত হয়ে যাবে । খবর তো আসেই, তাই না । সঙ্গ খারাপ মনে হলো, নতুন বিয়ে করে তার সঙ্গ হলো, তখন চলে গেলো । বলে যে, আমরা বিয়ে না করে থাকতে পারবো না । খুব ভালো মহারথী, যে রোজ আসে, এখান থেকে অনেকবার ঘুরেও গেছে, তাকেও মায়া রূপী কুমীর এসে ধরে ফেলেছে । এমন অনেক ঘটনা হতে থাকে । এখনো বিয়ে করে নি এমনকে মায়া মুখে ঢুকিয়ে গিলে ফেলে । স্ত্রী রূপী মায়া আকর্ষণ করতে থাকে । কুমীরের মুখে এসে পড়েছে তারপর ধীরে ধীরে গিলে ফেলবে । কেউ আবার ভুল করে, আর তা দেখে ফেললে চলে যায় । মনে করে, আমি উপর থেকে একদম নীচে গর্তে পড়ে যাবো । তখন বলবে, বাচ্চা খুব ভালো ছিলো, এখন বেচারা চলে গেলো । বিয়ের পাকা কথা হলো তো মরে গেলো । বাবা তো বাচ্চাদের সর্বদাই বলেন, বেঁচে থাকো । মায়ার আঘাত যেন কোথাও জোরে লেগে না যায় । শাস্ত্রেও তো এই কথা কিছুটা আছে, তাই না । এখনকার এই কথার পরবর্তীকালে গায়ন হবে । তাই তোমরা তো পুরুষার্থ করাও । এমন যেন না হয় যে, কোথাও মায়া রূপী কুমীর তোমাদের গিলে ফেলে । নানা দিক দিয়ে মায়া গ্রাস করে । মূল হলো কাম মহাশত্রু, এর থেকে খুব সাবধানে রক্ষা পেতে হবে । পতিত দুনিয়া কিভাবে পবিত্র দুনিয়া তৈরী হচ্ছে, তোমরা তা দেখছো । এখানে দ্বিধাগ্রস্ত হওয়ার কোনো কথাই নেই । কেবল নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করলে সব দুঃখ দূর হয়ে যায় । বাবাই হলেন পতিত পাবন । এ হলো যোগবল । ভারতের প্রাচীন রাজযোগ খুব বিখ্যাত । মনে করা হয় যে, ক্রাইস্টের তিন হাজার বছর পূর্বে ভারতে স্বর্গ ছিলো । তাহলে অবশ্যই আর কোনো ধর্ম সেখানে থাকবে না । এ কতো সহজ কথা, কিন্তু মানুষ বুঝতে পারে না । এখন তোমরা বুঝতে পারো, সেই রাজ্য আবার স্থাপনা করার জন্য বাবা এসেছেন । পাঁচ হাজার বছর পূর্বেও শিববাবা এসেছিলেন । অবশ্যই তিনি এই জ্ঞান দিয়েছিলেন, যেমন এখন দিচ্ছেন । বাবা নিজেই বলেন, আমি কল্পে - কল্পে এই সঙ্গম যুগে সাধারণের শরীরে এসে রাজযোগ শেখাই । তোমরা হলে রাজঋষি । আগে এমন ছিলে না । যখন থেকে বাবা এসেছেন, তোমরা বাবার কাছেই আছো । তোমরা পড়াও করো, আবার সেবাও করো - স্থূল সেবা আর সূক্ষ্ম সেবা । ভক্তিমার্গেও সেবা করে আবার গৃহস্থ জীবনেরও দেখাশোনা করে । বাবা বলেন, ভক্তি এখন সম্পূর্ণ হয়েছে, এখন জ্ঞান শুরু হয় । আমি আসি জ্ঞানের দ্বারা সদগতি করাতে । তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে, বাবা আমাদের পবিত্র বানাচ্ছেন । বাবা বলেন যে - ড্রামা অনুসারে আমি তোমাদের রাস্তা বলে দিতে এসেছি । টিচার আমাদের পড়ায়, লক্ষ্য সামনে । এ হলো উঁচুর থেকেও উঁচু পড়া । পূর্ব কল্পেও যেমন বুঝিয়েছিলেন, তাই এখন বোঝাতে থাকেন । ড্রামার টিক - টিক চলতেই থাকে । সেকেণ্ড বাই সেকেণ্ড যা পার হয়েছে, তা আবার পাঁচ হাজার বছর পরে রিপিট হবে । তাই অতীত হয়েছে যা পূর্ব কল্পেও অতীত হয়েছিলো । খুব অল্প দিন বাকি আছে । ওরা লাখ বছর বলে দেয়, তার তুলনায় তোমরা বলবে, কিছু ঘণ্টা বাকি আছে । এও ড্রামাতেই লিপিবদ্ধ । এখন যখন আগুন লেগে যাবে, তখন সবাই জাগবে । তখন তো টু লেট (খুব দেরী ) হয়ে যায় । বাবা তাই পুরুষার্থ করাতে থাকেন । তোমরা তৈরী হয়ে বসো । টিচারকে যেন এমন বলতে হয় না যে, টু লেট, যারা পাস করতে পারে না, তারা খুব অনুতাপ করে । তারা মনে করে, আমাদের বছর বিফলে চলে যাবে । কেউ কেউ আবার বলবে, না পড়লাম তো কি হলো ! বাচ্চারা, তোমাদের স্ট্রিক্ট থাকা উচিত । আমরা তো বাবার কাছ থেকে সম্পূর্ণ উত্তরাধিকার নেবো, নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করতে হবে । এতে যদি কোনো সমস্যা হয়, তাহলে বাবাকে জিজ্ঞেস করতে পারো । এই হলো মুখ্য কথা । বাবা আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে বলেছিলেন - মামেকম্ (একমাত্র আমাকে ) স্মরণ করো । আমিই পতিত পাবন, আমিই সকলের বাবা । কৃষ্ণ তো সকলের বাবা নন । তোমরা শিবের, কৃষ্ণের পূজারীদের এই জ্ঞান শোনাতে পারো । আত্মা যদি পূজ্য না হয়, তাহলে তোমরা যতই মাথা ঠোকো, বুঝতে পারবে না । এখন নাস্তিক, সম্ভবত, পরের দিকে আস্তিক হয়ে যাবে । মনে করো, বিয়ে করে নীচে নেমে গেলো, তারপর এসে জ্ঞান শুনলো, কিন্তু তখন উত্তরাধিকার অনেক কম হয়ে যাবে, কেননা বুদ্ধিতে অন্যের কথা এসে বসেছে । তা বের করতে খুব মুশকিল হয় । প্রথমে স্ত্রীর কথা, তারপর বাচ্চাদের কথা মনে আসবে । বাচ্চাদের থেকেও স্ত্রী বেশী আকর্ষণ করবে। কেননা অনেক দিনের স্মৃতি, তাই না । বাচ্চারা তো পরে হয়, তারপর মিত্র - সম্বন্ধী, শ্বশুরবাড়ীর কথাও মনে আসে । প্রথমে স্ত্রী, যে অনেক সময় সাথ দিয়েছে, এও এমন । তোমরা বলবে যে, আমরা দেবতাদের সঙ্গে অনেক সময় ছিলাম । এমন তো বলবে যে, শিববাবার সঙ্গে অনেকদিনের ভালোবাসা, যিনি পাঁচ হাজার বছর পূর্বেও আমাদের পবিত্র বানিয়েছিলেন । তিনি কল্পে - কল্পে এসে আমাদের রক্ষা করেন, তাই তো তাঁকে দুঃখহর্তা, সুখকর্তা বলা হয় । তোমাদের লাইন খুব স্বচ্ছ হতে হবে । বাবা বলেন যে, এই চোখে তোমরা যা কিছুই দেখো, তা কবরে চলে যায় । এখন তোমরা সঙ্গম যুগে আছো । অমরলোক এখন আসছে । তোমরা এখন পুরুষোত্তম হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছো । এ হলো কল্যাণকারী পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগ । এই দুনিয়াতে দেখছো, কি কি হচ্ছে । বাবা এখন এসেছেন, পুরানো দুনিয়া এখন শেষ হওয়ার সময় । এর পরের দিকে অনেকেই এই কথা খেয়াল করবে যে, অবশ্যই কেউ এসেছেন যিনি এই দুনিয়াকে পরিবর্তন করছেন । এ হলো সেই মহাভারতের লড়াই । তোমরাও কতো বুদ্ধিমান হয়েছো । এ হলো অনেক মন্থন করার মতো কথা । নিজেদের শ্বাস ব্যর্থ ক'রো না । তোমরা জানো যে, জ্ঞানের দ্বারা শ্বাস সফল হয় । আচ্ছা ।

মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) মায়ার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সঙ্গ দোষ থেকে নিজেকে অনেক রক্ষা করতে হবে । নিজের লাইন স্বচ্ছ রাখতে হবে । শ্বাস ব্যর্থ করবে না । জ্ঞানের দ্বারা সফল করতে হবে ।

২ ) যখনই সময় পাবে - যোগবল জমা করার জন্য আত্মিক ড্রিলের অভ্যাস করতে হবে । এখন কোনো নতুন বন্ধন তৈরী ক'রো না ।

বরদান:-
বাবার ছত্রছায়ার নীচে অস্থির পরিস্থিতিতেও কমল পুষ্প সম পৃথক আর প্রিয় ভব

সঙ্গমযুগে বাবা যখন সেবাধারী হয়ে আসেন, তখন ছত্রছায়ার রূপে সদা বাচ্চাদের সেবা করেন । স্মরণ করলেই সেকেণ্ডে সাথের অনুভব হয় । এই স্মরণের ছত্রছায়া যে কোনো নমনীয় পরিস্থিতিতে কমল পুষ্প সম পৃথক এবং প্রিয় বানিয়ে দেয় । তখন পরিশ্রম মনে হয় না । বাবাকে সামনে আনলে, স্ব - স্থিতিতে স্থিত হলে যে কোনো পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়ে যায় ।

স্লোগান:-
কোনো বিষয় বা পরিস্থিতির পর্দা মাঝে আসতে না দিলে বাবার সাথের অনুভব হতে থাকবে ।