13-12-2020 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 18-03-87 মধুবন


"প্রকৃত আধ্যাত্মিক প্রিয়তমার লক্ষণ"


আজ অধ্যাত্ম (রুহানী) প্রিয়তম তাঁর অধ্যাত্ম অনুরাগী আত্মাদের সাথে মিলনের জন্য এসেছেন l সারা কল্পে এই সময়ই আধ্যাত্মিক প্রিয়তম আর প্রিয়াদের মিলন হয় l বাপদাদা নিজের প্রত্যেক প্রিয়াকে দেখে উৎফুল্ল হন - কীভাবে আধ্যাত্মিক আকর্ষণে আকৃষ্ট হয়ে প্রকৃত আপন প্রিয়তমকে জেনে নিয়েছে, প্রাপ্ত করেছে ! হারিয়ে যাওয়া প্রিয়াদের দেখে প্রিয়তমও খুশি হন, আবারও নিজেদের যথার্থ ঠিকানায় তারা পৌঁছে গেছে l সর্বপ্রাপ্তি করানোর এমন প্রিয়তম আর অন্য কাউকে খুঁজে পাবে না l আধ্যাত্মিক প্রিয়তম সদা আপন প্রিয়াদের সাথে মিলনের জন্য কোথায় আসেন ? যেমন শ্রেষ্ঠ প্রিয়তম এবং প্রিয়া, এইরকম শ্রেষ্ঠ স্থানেই তোমাদের সাথে মিলিত হতে আসেন l এটা কোন্ স্থান যেখানে তোমরা মিলনোৎসব পালন করছ ? এই স্থানকে যেটাই বলো, যে নামে তোমরা চাও সেই সব নাম এই স্থানের জন্য দিতে পারো l সাধারণতঃ, মিলনের স্থান যা সবার অতি প্রিয় লাগে সেটা কোন্ স্থান ? মিলন হয় ফুলের বাগিচায় অথবা সাগরের কিনারে, যাকে তোমরা বীচ (সমুদ্রের কিনারা ) বলো l তাহলে এখন তোমরা কোথায় বসে আছ ? জ্ঞান সাগরের কিনারে আত্মিক মিলন-স্থানে বসে আছ l এ হল আধ্যাত্মিক ও গডলি গার্ডেন (আল্লার বাগিচা) l তোমরা অনেক রকমের গার্ডেন দেখেছ, কিন্তু এমন বাগিচা যেখানে প্রত্যেকে পরস্পর পরস্পরের থেকে অধিক প্রস্ফুটিত ফুল, প্রত্যেকে নিজের পরম (শ্রেষ্ঠ) সৌন্দর্যের সুগন্ধি দিচ্ছে - এমন বাগিচা l এই বাগিচায় বাপদাদা তথা প্রিয়তম মিলিত হতে আসেন l সে'সব বীচ তো তোমরা অনেক দেখেছ, কিন্তু এমন বীচ কবে দেখেছ যেখানে জ্ঞান সাগরের স্নেহের তরঙ্গ, শক্তির তরঙ্গ এবং অন্যান্য বিভিন্ন তরঙ্গ তরঙ্গিত হয়, সদাসর্বদা তোমাদের রিফ্রেশ করে দেয় ! এই স্থান তোমাদের পছন্দ, তাই না ? স্বচ্ছতাও আছে, মধুরতাও আছে l আর সত্য বিকাশের সৌন্দর্যও আছে l অনেক প্রাপ্তিও আছে l মনোরঞ্জনের এমন বিশেষ স্থান তোমরা সব প্রিয়ার জন্য প্রিয়তম বানিয়েছেন, যেখানে চিরানুরাগ-সীমায় পৌঁছানোর সাথে সাথেই তোমরা অনেক রকম পরিশ্রম থেকে রেহাই পেয়ে যাও l সবচাইতে বড় - ন্যাচারাল স্মরণের পরিশ্রম তোমরা সহজ অনুভব করো আর কোনো পরিশ্রম থেকে তোমরা অব্যাহতি পাও ? লৌকিক জব (চাকরি ) থেকেও নিষ্কৃতি পেয়ে যাও l ভোজন বানানো থেকেও নিস্তার পাও l সবকিছু তৈরি করা পেয়ে যাও, তাই না ! স্মরণও আপনা থেকেই অনুভব হয় l জ্ঞান রত্নের ঝুলিও ভরতে থাকে l এমন স্থানে তোমরা আসো যেখানে পরিশ্রম থেকে তোমাদের অব্যাহতি মেলে আর অনুরাগে লীন হয়ে যাও l

সাধারণতঃ, স্নেহের বিশেষ লক্ষণ এটাই - দুই, দুই হয়ে না থেকে বরং দুইয়ে মিলে এক হও l একেই বলে, সমাহিত হওয়া l ভক্তরা স্নেহের এই স্থিতিকে সমাহিত হওয়া বা লীন হওয়া বলে দিয়েছে l তারা লীন হওয়ার অর্থ বোঝে না l ভালোবাসায় লীন হওয়া - এটা স্থিতি, কিন্তু স্থিতির পরিবর্তে তারা আত্মার অস্তিত্বকে সবসময়ের জন্য সমাপ্ত করা বোঝে l সমাহিত হওয়া অর্থাৎ সমান হয়ে যাওয়া l যখন বাবার, রূহানী প্রিয়তমের মিলনে মগ্ন হয়ে যাও, তখন সমান অথবা সমাহিত হওয়ার অর্থাৎ বাবার সমান হওয়ার অনুভব করো তোমরা l এই স্থিতিকে ভক্তরা সমাহিত হয়ে যাওয়া বলেছে l তোমরা লীনও হয়ে যাও, সমাহিতও হয়ে যাও l যেমনই হোক, এটা হলো প্রীতি-মিলনের স্থিতির অনুভূতি l বুঝেছ ! সেইজন্য বাপদাদা আপন প্রিয়াদের দেখছেন l

প্রকৃত প্রিয়া অর্থাৎ যে সদাসর্বদা প্রিয়া, ন্যাচারাল (স্বতঃ) প্রিয়তমা l প্রকৃত প্রিয়তমার বিশেষত্বও তোমরা জানো, তবুও তার মুখ্য লক্ষণ হলোঃ-

প্রথম লক্ষণ - সময় অনুসারে এক প্রিয়তমের সাথে সর্ব সম্বন্ধের অনুভূতি করা l প্রিয়তম এক, কিন্তু একের সাথেই সর্ব সম্বন্ধ l যে সম্বন্ধ তুমি চাও, আর যে সময়ে যে সম্বন্ধের আবশ্যকতা সেই সময় সেই সম্বন্ধকে প্রীতির পরিপূর্ণতার দ্বারা অনুভূতি করতে পারো l সুতরাং প্রথম লক্ষণ, সর্ব সম্বন্ধের অনুভূতি l 'সর্ব' শব্দকে আন্ডারলাইন করো l শুধু সম্বন্ধ নয়, এমন অনেক তরলমতি প্রিয়া আছে যারা ভাবে তাদের সম্বন্ধ তো জুড়ে গেছে ! কিন্তু 'সর্ব' সম্বন্ধ কি জুড়েছে ? আর দ্বিতীয়তঃ, সময়মতো সম্বন্ধের অনুভূতি হয় ? নলেজের আধারে সম্বন্ধ নাকি হৃদয়ের অনুভূতিতে ? বাপদাদা সত্যিকার সরল হৃদয়ের সাথেই খুশি হন l শুধু অত্যন্ত তেজ মস্তিষ্কের সাথে তিনি খুশি হন না, কিন্তু হৃদয়নিধি তাদের হৃদয়ের প্রতি খুশি l সেইজন্য হৃদয়ের অনুভব হৃদয় জানে, হৃদয়নিধি জানে l সমাহিত হওয়ার স্থান হৃদয়কে বলা হয়, মস্তিস্ককে নয় l নলেজের সমাহিত হওয়ার স্থান মস্তিস্ক তথা বুদ্ধি, যতই হোক, প্রিয়তমকে সমাহিত করতে হয় হৃদয়-স্থলে l প্রিয়তম তাঁর প্রিয়াদের বিষয়েই তো শোনাবেন, তাই না ! কোন কোন প্রিয়া বেশি মাথা খাটায়, কিন্তু যখন হৃদয় দিয়ে করছ, সেই পরিশ্রম মাথার পরিশ্রমের থেকে অর্ধেক হয়ে যায় l যে হৃদয় দিয়ে সেবা করে বা স্মরণ করে, তার পরিশ্রম কম ও সন্তুষ্টতা বেশি হয় এবং যে হৃদয়ের স্নেহে স্মরণ করে না ও সেবা করে না, তার বেশি পরিশ্রম করতে হয়, সন্তুষ্টতা কম হয় l সফলতা যদিও বা হয়, তথাপি হৃদয়ের সন্তুষ্টতা কম হবে l এটাই ভাবতে থাকবে - 'যা হয়েছে ভালো, কিন্তু তবু, তবুও ...' করতে থাকবে আর যারা হৃদয়ের পরিশ্রম করে তারা নিরন্তর সন্তুষ্টতার গীত গাইতে থাকবে l হৃদয়ের সন্তুষ্টতার গীত, মুখের সন্তুষ্টতার গীত নয় l সত্যিকারের প্রিয়তমা সময় অনুযায়ী হৃদয়ে সর্ব সম্বন্ধের অনুভূতি করে l

দ্বিতীয় লক্ষণ - সত্যিকারের প্রিয়া সব পরিস্থিতিতে, সব কর্মে সদা প্রাপ্তির খুশিতে থাকবে l এক হয় অনুভূতি, আরেক হয় তার থেকে প্রাপ্তি l কেউ কেউ অনুভূতি করে, হ্যাঁ, তিনি আমার বাবা, প্রিয়তম এবং বাচ্চাও, কিন্তু আমি যতটা প্রাপ্তি চাই ততটা হয় না l তিনি বাবা, অথচ অবিনাশী উত্তরাধিকারের প্রাপ্তির খুশি থাকে না l অনুভূতির সাথে সর্ব সম্বন্ধ দ্বারা প্রাপ্তিরও অনুভব হোক l যেমন, বাবার সম্বন্ধ দ্বারা সদা উত্তরাধিকারের প্রাপ্তির অনুভব হোক, পরিপূর্ণতার উপলব্ধি হোক l সদ্গুরু দ্বারা বরদান থেকে সদা সম্পন্ন স্থিতির এবং সদা সম্পন্ন স্বরূপের অনুভব হতে দাও l সেইজন্য প্রাপ্তির অনুভবও আবশ্যক l একটা হলো সম্বন্ধের অনুভব, আরেকটা হলো প্রাপ্তির অনুভব l কারও কারও সর্বপ্রাপ্তির অনুভব হয় না l তোমরা মাস্টার সর্বশক্তিমান, কিন্তু সময়মতো শক্তির প্রাপ্তি হয় না l যদি প্রাপ্তির অনুভূতি না হয় তাহলে প্রাপ্তিতেও ঘাটতি হয় l সুতরাং অনুভূতির সাথে সাথে প্রয়োজন প্রাপ্তিস্বরূপ হওয়া, এটা প্রকৃত প্রিয়তমার লক্ষণ l

তৃতীয় লক্ষণ - যে প্রিয়ার অনুভূতিও আছে, প্রাপ্তিও আছে, সে সদা তৃপ্ত থাকবে, কোনও পরিস্থিতিতে সে নিজেকে অপ্রাপ্ত আত্মা অনুভব করবে না l সুতরাং, 'তৃপ্তি' - এটা প্রিয়তমার বিশেষত্ব l যেখানে প্রাপ্তি, সেখানে তৃপ্তি অবশ্যই আছে l যদি তোমরা তৃপ্ত না হও, তাহলে প্রাপ্তিতে অবশ্যই ঘাটতি আছে আর যেখানে প্রাপ্তি নেই সেখানে সর্ব সম্বন্ধের অনুভূতিতে কিছু অভাব রয়েছে l সুতরাং তিন লক্ষণ হলো, অনুভূতি, প্রাপ্তি আর তৃপ্তি, সদা তৃপ্ত আত্মা l যেমনই সময় হোক, যেমনই বায়ুমন্ডল হোক, যেমনই সেবার সাধন হোক, সেবার সংগঠনের সাথী যেমনই হোক, কিন্তু প্রতিটা পরিস্থিতিতে, প্রতিটা কর্ম-আচরণে তোমরা অবশ্যই তৃপ্ত থাকো l এইরকম সত্যিকারের প্রিয়তম-অনুরাগী তোমরা, তাই না ? তৃপ্ত আত্মার মধ্যে সীমিত পরিসরের কোনরকম ইচ্ছা থাকবে না l যদি তোমরা দেখ, তাহলে দেখবে তৃপ্ত আত্মারা মাইনরিটি l যাদের কোন না কোনও পরিস্থিতিতে, হয় মানের জন্য, নতুবা মর্যাদার জন্য চাহিদা বা খিদে থাকে তারা কখনও তৃপ্ত হয় না l সদা যাদের পেট ভরা হয় তারা তৃপ্ত থাকে l সুতরাং ঠিক যেমন শরীরের খিদে ভোজনের জন্য, তেমনই মন ক্ষুধার্ত হয় মান, যশ, স্যালভেশন, সাধনের জন্য l এই সব মনের খিদে l অতএব, যেভাবে শরীরগতভাবে তৃপ্ত যারা সবসময় সন্তুষ্ট হবে, ঠিক তেমনই ভাবে যাদের মন তৃপ্ত তারা সদাসর্বদা সন্তুষ্ট হবে l সন্তুষ্টতা তৃপ্তির লক্ষণ l আত্মা তৃপ্ত না হলে, যদি শরীরের জন্য, মনের জন্য খিদে থাকে তাহলে তারা যতই পেয়ে যাক, এমনকি যদি বেশিও পায় তারা তৃপ্ত আত্মা না হওয়ার কারণে সদাই অতৃপ্ত থাকবে, অসন্তুষ্টি থাকবে l যে রয়্যাল হয় সে অল্পেই তৃপ্ত হয় l রয়্যাল আত্মাদের লক্ষণ হলো - তারা সদা পরিপূর্ণ হবে l তারা একটা রুটিতেও তৃপ্ত তো ৩৬ রকম খাবারেও তৃপ্ত হবে l আর যারা অতৃপ্ত হবে, তাদের ৩৬ রকম খাবার দিলেও তারা তৃপ্ত হবে না, কারণ খিদে মনের l প্রকৃত প্রিয়তমার লক্ষণ - সে সদা তৃপ্ত আত্মা হবে l সুতরাং তিনটে লক্ষণই চেক করো l সদা এটা ভাবো - 'আমরা কার প্রিয়া ! যিঁনি সদা সম্পন্ন, তেমনই প্রিয়তমের প্রিয়তমা !' অতএব, সন্তুষ্টতা কখনও ছেড়ে দিও না l সেবা হয়তো ছেড়ে দিলে, কিন্তু সন্তুষ্টতা ছেড়ে দিওনা l যে সেবা তোমায় অসন্তুষ্ট বানায়, সেই সেবা, সেবা নয় l সেবার অর্থ এটাই - সেবা মেওয়া প্রদানকারী l সুতরাং যে সত্যিকারের প্রিয়তম-অনুরাগী সে সীমিত পরিসরের সবরকম আকাঙ্ক্ষার ঊর্ধ্বে, সদাই সম্পন্ন আর সমান হবে l আজ বাবা প্রেমপ্রিয়াদের কাহিনী শোনাচ্ছেন l তোমরাও অনেক আবদার- বাহানা করো l সে'সব দেখে প্রিয়তমও হাসতে থাকেন l আবদার-বাহানা যাই করো, কিন্তু প্রিয়তমকে প্রিয়তম মনে করে তাঁর সামনে করো, অন্যদের সামনে নয় l সীমিত পরিসরের বিভিন্নরকম স্বভাব সংস্কারের নাটকীয় হাব-ভাব করো l যেখানে 'আমার স্বভাব' 'আমার সংস্কার' এই শব্দের সূচনা হয়, সেখানেই চপলতা শুরু হয়ে যায় l বাবার স্বভাব 'আমার' হতে হবে l আমার স্বভাব বাবার স্বভাব থেকে আলাদা হতে পারে না l সেটা মায়ার স্বভাব, পরের স্বভাব l তাকে কীভাবে আমার বলবে ? মায়া বিদেশি, স্বজন নয় l বাবা আপন l আমার স্বভাব অর্থাৎ বাবার স্বভাব l মায়ার স্বভাবকে আমার স্বভাব বলাও রং l 'আমার' শব্দই ঘুরপাক খাওয়ায় অর্থাৎ চক্রে নিয়ে আসে l প্রিয়তমা প্রিয়তমের সামনে এমন মন ভোলানো কথাও বলে। যা বাবার তাই আমার l সব বিষয়ে ভক্তিতে এটাই বলা হয়, যা তোমার তা' আমার, কিছু আর আমার নেই l কিন্তু যা কিছু তোমার সে'সবই আমার l যা বাবার সঙ্কল্প, তা' আমার সঙ্কল্প l সেবার ভূমিকা (পার্ট ) পালনে, বাবার সংস্কার-স্বভাব আমার l তাহলে এতে কি হবে ? সীমিত পরিসরের যা কিছু 'আমার', 'তোমার' হয়ে যাবে l যা কিছু তোমার, তাই আমার, আলাদাভাবে আমার কিছু নেই l যা কিছু বাবার থেকে ভিন্ন, তা' আমার নয়ই, সেটা মায়ার ঘুরপাক খাওয়ানো l সেইজন্য সীমিত পরিসরের এইসব মন ভোলানো কথার থেকে বেরিয়ে আত্মগৌরব বজায় রাখো - "আমি তোমার, তুমি আমার l" বিভিন্ন সম্বন্ধের অনুভূতির আধ্যাত্মিক আবদার যদিও বা করো, কিন্তু যা বাবার নয় তাকে আপন ক'র না l সম্বন্ধের দায়িত্ব পালনেও আত্মিক আবদার করতে পারো l ভালোবাসার প্রীতিভাব ভালো l কখনো কখনো সখা সম্বন্ধে ভালোবাসার ভাবের অনুভব করো l সেটা তখন চপলতা নয় বরং অনুভূতির গভীরতা (অনন্য ভাব) l স্নেহের ভাব প্রিয় হয়, যেমন ছোট বাচ্চারা খুব স্নেহী আর পিওর (পবিত্র) হওয়ার কারণে তাদের আবদার সবার খুব ভালো লাগে l বাচ্চাদের মধ্যে শুদ্ধতা আর পবিত্রতা থাকে l আর বড় কেউ যদি আবদার করে তাহলে সেটা খারাপ মনে করা হয়, সুতরাং বাবার সঙ্গে বিভিন্ন সম্বন্ধের - স্নেহের, পবিত্রতার আবদার-বায়না করতে পারো, যদি করতেই হয় তবে !

'সদা হাত আর সাথ' প্রকৃত প্রিয়া আর প্রিয়তমের লক্ষণ l কখনো সাথ আর হাত আলাদা হতে দিও না l সদা বুদ্ধি সহায় হোক, আর সব কার্যে বাবার সহযোগের হাত হোক l একে অপরকে সহযোগের লক্ষণ হিসেবে হাতে হাত ধরে দেখানো হয়, তাই না ! সুতরাং বাবার সহযোগী হওয়া - সদা বাবার হাতে হাত আর সদা বুদ্ধি দ্বারা বাবার সাথে থাকা l মনের একাগ্রতা আর বুদ্ধির সাথ, এই স্থিতিতে থাকা অর্থাৎ প্রকৃত প্রিয়া এবং প্রিয়তমের পোজে (উপযুক্ত ভাব নিয়ে) থাকা l বুঝেছ ? প্রতিজ্ঞাই এটা যে সদা সাথে থাকবে l কখনো কখনো তাঁর সাথে থাকবে, এই প্রতিজ্ঞা তোমরা করনি l প্রিয়তমের প্রতি মনের টান কখনো হয় আর কখনো হয় না, তাহলে সেটা সদা সাথে হওয়া তো হলো না, তাই না ! অতএব প্রকৃত প্রিয়ার পজিশনে থাকো l তোমার দৃষ্টিতে প্রিয়তম, মনের বৃত্তিতে প্রিয়তম এবং প্রিয়তমই হন তোমার জগত l

সুতরাং এটা হলো প্রিয়তম আর প্রিয়াদের খুশির সমারোহ l বাগিচাও আছে এবং সাগরের কিনারাও আছে l এটা এমনই ওয়ান্ডারফুল প্রাইভেট বীচ (সাগরের কিনারা ), যা হাজার হাজার বীচের মধ্যেও প্রাইভেট l প্রত্যেকে তোমরা প্রিয়তমের সাথে পার্সোনাল প্রীতি অনুভব করো l প্রত্যেকের পার্সোনাল প্রীতির ফিলিং প্রাপ্ত হওয়া- সেটাই হলো ওয়ান্ডারফুল প্রিয়তম আর প্রিয়তমা হওয়া l শুধু তিনিই এক প্রিয়তম, কিন্তু তিনি সকলের l প্রত্যেকের অধিকার প্রত্যেকের থেকে বেশি l সকলের অধিকার আছে l অধিকারে নম্বর নেই, কিন্তু অধিকার প্রাপ্ত করার ক্ষেত্রে নম্বর অনুক্রম হয়ে যায় l সদা এই স্মৃতি বজায় রাখ যে 'গডলি গার্ডেনে তোমরা তাঁর হাতে হাত রেখে তার সঙ্গে চলছ অথবা বসে আছ ! তাঁকে তোমাদের হাত আর সাথ দিয়ে আত্মিক বীচে খুশি উদযাপন করছ l' তাহলে সদাই মনের আনন্দে থাকবে, সদা খুশি থাকবে সদা সম্পন্ন থাকবে l আচ্ছা l

এই ডবল বিদেশিও ডবল লাকি l ভালো হয়েছে যে ইতিমধ্যে তোমরা এখানে পৌঁছে গেছ l ভবিষ্যতে কী পরিবর্তন হয়, সেটা তো ড্রামা l কিন্তু তোমরা লাকি যে সময় অনুসারে এখানে পৌঁছে গেছ l আচ্ছা l

সদা অবিনাশী প্রিয়তম-অনুরাগী হয়ে প্রিয়তমের প্রতি প্রীতির দায়িত্ব পালন করে, সদা নিজেদের সর্বপ্রাপ্তিতে সম্পন্ন অনুভব করে, সদা সব পরিস্থিতিতে তৃপ্ত থেকে, সদা সন্তুষ্টতার ভাণ্ডারে নিজেরা পরিপূর্ণ হয়ে অন্যদেরও পরিপূর্ণ করে, সদা সাথী আর হাতে হাত দিয়ে থাকে, এইরকম সত্যিকারের প্রিয়তম-অনুরাগী সকলকে আধ্যাত্মিক প্রিয়তমের হৃদয়ের স্মরণ-স্নেহ আর নমস্কার l

বরদান:-
সদা শ্রেষ্ঠ আর নতুন রকম সেবা দ্বারা বৃদ্ধি করে সহজ সেবাধারী ভব*

সঙ্কল্প দ্বারা ঈশ্বরীয় সেবা করা - এও সেবার শ্রেষ্ঠ আর নতুন উপায় l যেমন, জহুরী রোজ সকালে নিজের রত্নরাজি চেক করে যে সে'সব পরিষ্কার আছে কিনা, দ্যুতি ঠিক আছে কিনা, ঠিক জায়গায় আছে কিনা ... এইভাবে প্রতিদিন অমৃতবেলায় তোমার নিজের সম্পর্কে আসা আত্মাদের উপরে সঙ্কল্পের দ্বারা তাদের এক ঝলক দেখো, সঙ্কল্প দ্বারা তুমি যত তাদের মনে করবে, ততই সেই সঙ্কল্প তাদের কাছে পৌঁছাবে ... সেবার এইরকম নতুন উপায় গ্রহণ করে নিরন্তর বৃদ্ধি করতে থাকো l তোমার সহযোগের সূক্ষ্ম শক্তি আত্মাদের তোমার দিকে আপনা থেকেই আকর্ষণ করবে l

স্লোগান:-
অজুহাত দেখানোকে মার্জ করো আর অসীম জগতের বৈরাগ্যবৃত্তিকে ইমার্জ করো l