27-12-2020 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
31-12-86 মধুবন
"পাস্ট, প্রেজেন্ট আর ফিউচারকে শ্রেষ্ঠ বানানোর বিধি"
আজ গ্রেট গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদার আর গড্ ফাদার তাঁদের অতি
মিষ্টি, অতি প্রিয় বাচ্চাদের হৃদয়ের আশীর্বাদের গ্রিটিংস দিচ্ছেন l বাপদাদা জানেন,
প্রত্যেক হারানিধি বাচ্চা কতো শ্রেষ্ঠ, মহান আত্মা ! প্রত্যেক বাচ্চার
মহত্ত্ব-পবিত্রতা বাবার কাছে নম্বর অনুক্রমে পৌঁছাতে থাকে l আজকের দিনে সবাই নতুন
বছর উদযাপন করতে উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে বিশেষভাবে এসেছে l দুনিয়ার লোকে নিভে থাকা
দীপ বা মোমবাতি জ্বালায়, তারা জ্বালিয়ে উদযাপন করে আর বাপদাদা অগণিত প্রদীপ্ত
দীপকের সাথে নববর্ষ উদযাপন করছেন l যা নিভে গেছে তা' প্রজ্জ্বলিত করা যায় না আর
প্রদীপ্ত করার পর তাকে আর নিভানো যায় না l এমন প্রায় লাখ খানেক প্রজ্জ্বলিত রূহানী
জ্যোতির সংগঠনের এভাবে নববর্ষ উদযাপন করা - এটা বাবা আর তোমরা ব্যতীত অন্য কেউ
উদযাপন করতে পারে না l কতো সুন্দর ঝলমলে সব দীপকের আত্মিক সংগঠনের দৃশ্য ! সবার
রূহানী জ্যোতি একভাবে, একরস দীপ্যমান l সবার মনে 'এক বাবা' - এই আন্তরিক একাগ্রতা
অধ্যাত্ম দীপক গুলির ঔজ্জ্বল্য প্রদান করছে l এক সংসার, এক সঙ্কল্প, একরস স্থিতি -
এটাই তোমাদের উদযাপন করতে হবে, এইরকম হয়ে এবং অন্যকে এইরকম বানাতে হবে l এই সময়
বিদায় আর উৎসব দুইয়ের সঙ্গম l 'পুরাতনের বিদায় আর নূতনকে অভিনন্দন l' এই সঙ্গম সময়ে
সবাই পৌঁছে গেছে, সেইজন্য পুরানো সঙ্কল্প আর সংস্কারের বিদায়েরও অভিনন্দন আর নতুন
উৎসাহ-উদ্দীপনায় ওড়ারও অভিনন্দন l
যা প্রেজেন্ট, তা' কিছু সময় পরে পাস্ট হয়ে যাবে l যে বছর চলছে, তা' ১২টার পরে পাস্ট
হয়ে যাবে l এই সময়কে প্রেজেন্ট বলবে আর আগামী সময়কে ফিউচার (ভবিষ্যৎ) বলে l পাস্ট,
প্রেজেন্ট আর ফিউচার - এই তিনেরই খেলা চলতে থাকে l এই তিন শব্দকে এই নতুন বছরে নতুন
বিধিতে প্রয়োগ করো l কীভাবে ? পাস্টকে সদা পাস উইথ অনার হয়ে পাস করো l "পাস্ট ইজ
পাস্ট" তো হতেই হবে, কিন্তু তোমরা কীভাবে পাস করবে ? তোমরা বলো না যে সময় পাস হয়ে
গেছে, এই দৃশ্য পাস হয়ে গেছে, কিন্তু পাস উইথ অনার পাস করেছ ? অতীতকে অতীত করেছ,
কিন্তু অতীতকে এমন শ্রেষ্ঠ বিধিতে গত হতে দিয়েছ যাতে অতীত স্মরণে আসার সাথে সাথে
'বাঃ ! বাঃ !' শব্দ হৃদয় থেকে বেরিয়ে আসে ? অতীতকে কি এমনভাবে গত হতে দিয়েছ যে
তোমার অতীত স্টোরি থেকে অন্যেরা পাঠ পড়তে পারে ? তোমাদের উত্তীর্ণ-কাল যেন
স্মারক-স্বরূপ হয়ে যায়, কীর্তন অর্থাৎ কীর্তি গাওয়ার যোগ্য হয়ে ওঠে, ঠিক যেমন
ভক্তিমার্গে তোমাদেরই কর্মের কীর্তন গাইতে থাকে l তোমাদের কর্মের কীর্তন দ্বারা
অনেক আত্মার এখনও জীবন নির্বাহ হচ্ছে l এই নতুন বছরে প্রতিটা পাস্ট সঙ্কল্প এবং
সময়কে এইভাবে বিধি দ্বারা পাস হতে দাও l বুঝেছ, কি করতে হবে ?
এখন প্রেজেন্টে (বর্তমান) এসো, প্রেজেন্টকে এমনভাবে প্র্যাকটিক্যালে আনো যাতে
প্রতিটা প্রেজেন্ট মুহূর্ত এবং সঙ্কল্প দ্বারা তোমরা সব বিশেষ আত্মার থেকে সবার কোন
না কোনও প্রেজেন্ট (উপহার ) প্রাপ্ত হয় l সবচেয়ে বেশি খুশি কোন সময় হয় ? যখন তারা
কারও থেকে প্রেজেন্ট (উপহার ) পায় l তারা যতই অশান্ত, দুঃখী বা পীড়িত হোক না কেন ,
কিন্তু যখন কেউ ভালোবেসে প্রেজেন্ট দেয় তখন সেই মুহূর্তে খুশির তরঙ্গ ওঠে l লোক
দেখানো প্রেজেন্ট নয়, হৃদয় থেকে দেওয়া প্রেজেন্ট l সবাই প্রেজেন্টকে (উপহার ) সদা
স্নেহের সূচক মনে করে l প্রেজেন্ট হিসেবে দেওয়া কোনকিছুর ভ্যাল্যু হয় 'স্নেহে', 'বস্তু'র
নয় l সুতরাং প্রেজেন্ট দেওয়ার বিধি দ্বারা বৃদ্ধি করতে থাকো l বুঝেছ ? সহজ নাকি
কঠিন ? তোমার ভান্ডার তো পরিপূর্ণ, নাকি প্রেজেন্ট দিতে দিতে তোমার ভান্ডার কম হয়ে
যাবে ? স্টক জমা করেছ, করেছ না ? শুধু এক সেকেন্ডের স্নেহের দৃষ্টি, স্নেহের সহযোগ,
স্নেহের ভাবনা, মিষ্টি বোল, হৃদয়ের শ্রেষ্ঠ সঙ্কল্পের সাথ - এই সব প্রেজেন্টই অনেক
l আজকাল, হয় তোমাদের নিজেদের মধ্যে ব্রাহ্মণ আত্মাদের, অথবা তোমাদের ভক্ত আত্মাদের,
অথবা তোমাদের সম্বন্ধ-সম্পর্কে আসা আত্মাদের, বা পীড়িত আত্মাদের - সকলের এই
প্রেজেন্টের আবশ্যকতা আছে, অন্য প্রেজেন্টের নয় l এই সবকিছুর স্টক তোমাদের আছে, তাই
না ? প্রতিটা প্রেজেন্ট (বর্তমান) মুহূর্তের দাতা হয়ে প্রেজেন্টকে পাস্টে পরিবর্তন
করো, তবেই সর্বপ্রকারের আত্মারা হৃদয় থেকে তোমাদের কীর্তন গাইতে থাকবে l আচ্ছা l
ফিউচারে তোমরা কী করবে ? সবাই তোমাদের জিজ্ঞাসা তো করে, পরিণামে ভবিষ্যৎ কী ?
ফিউচারকে নিজেদের ফিচার্স দ্বারা প্রত্যক্ষ করাও l তোমাদের ফিচার্স যেন ফিউচারকে
প্রকাশ করে l ফিউচার কি হবে ? ফিউচারে নয়ন কেমন হবে, ফিউচারের হাসি কেমন হবে,
ফিউচারের সম্বন্ধ কিরকম হবে, ফিউচারের জীবন কিরকম হবে - তোমাদের ফিচার্সে এই সমস্ত
বিষয় দৃশ্যগোচর হতে দাও l ফিউচারের সৃষ্টি তোমাদের দৃষ্টিতে যেন স্পষ্টভাবে
প্রত্যক্ষ হয় l 'কি হবে' এই কোশ্চেন সমাপ্ত হোক আর তার পরিবর্তন হোক 'এইভাবে হবে'
এই শব্দে l 'কীরকম' শব্দ 'এইরকম' শব্দে যেন বদলে যায় l ফিউচারেই দেবতা l দেবতাভাবের
সংস্কার অর্থাৎ দাতাভাবের সংস্কার, দেবতাভাবের সংস্কার অর্থাৎ মুকুট, আসনধারী হওয়ার
সংস্কার l যে-ই দেখবে, সে যেন তোমাদের মুকুট আর সিংহাসন অনুভব করতে পারে l কোন
মুকুট ? সদা লাইট (হালকা) থাকার লাইটের (প্রকাশিত) মুকুট l আর সদা তোমাদের কর্মে,
বোলে অধ্যাত্ম নেশা ও নিশ্চিন্ত ভাবের চিহ্ন অনুভূত হোক l আসনধারীর লক্ষণই হলো 'নিশ্চিন্ত'
আর 'নেশা' l নিশ্চিত বিজয়ীর নেশা আর নিশ্চিত স্থিতি - এ হলো বাবার হৃদয় সিংহাসনাসীন
আত্মার লক্ষণ l যে কেউই আসলে তারা যেন তোমাদের সিংহাসনাসীন এবং মুকুটধারী স্থিতির
অনুভব করে, এটা ফিচার্স দ্বারা ফিউচারকে প্রত্যক্ষ করানো l এইভাবে নতুন বছর উদযাপন
করো অর্থাৎ এইরকম হয়ে অন্যদেরও সেইরকম বানাও l বুঝেছ, নতুন বছরে কি করতে হবে
তোমাদের ? তিন শব্দে মাস্টার ত্রিমূর্তি, মাস্টার ত্রিকালদর্শী এবং ত্রিলোকিনাথ হয়ে
যাও l সবাই ভাবছে, এখন কী করতে হবে ? তোমাদের প্রতিটা পদক্ষেপে - হয় স্মরণের দ্বারা
অথবা সেবার, প্রতি পদে এই তিন বিধিতে সিদ্ধি প্রাপ্ত করতে থাকো l
নতুন বছরের জন্য তোমাদের অনেক উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে, তাই না ? ডবল বিদেশিদের তো ডবল
উদ্যম, তাইতো ! নিউ-ইয়ার উদযাপনে কতো সাধন ব্যবহার করবে ? তারা বিনাশী সাধন ব্যবহার
করে আর অল্পকালীন মনোরঞ্জন হয় l তারা এক মুহূর্তে জ্বালাবে, পরমুহূর্তে নিভিয়ে দেবে
l কিন্তু বাপদাদা অবিনাশী বিধিতে অবিনাশী সিদ্ধি প্রাপ্তকারী বাচ্চাদের সাথে পালন
করছেন l তোমরা কি করবে ? কেক কাটবে, মোমবাতি জ্বালাবে, গীত গাইবে আর করতালি দেবে l
এটা খুব করো, করলেও কিন্তু বাপদাদা সদা অবিনাশী বাচ্চাদের অবিনাশী অভিনন্দন জানান
এবং অবিনাশী বানানোর বিধি বলে দেন l সাকার দুনিয়ায় সাকারী উৎসব পালন করতে দেখে
বাপদাদাও খুশি হন, কারণ এমন এক সুন্দর পরিবার যেখানে পরিবারের সংখ্যা লক্ষাধিক,
প্রত্যেকে মুকুটধারী, সিংহাসনাসীন l এইরকম পরিবার সারা কল্পে একবারই মিলিত হয়,
সেইজন্য খুব নাচো, গাও, মিষ্টি খাও l বাবা তো বাচ্চাদের দেখে, তাদের খুশির সুবাস
নিয়েই খুশি হন l সবার মনে কোন গীত বাজে ? খুশির গীত বাজছে l সদা 'বাঃ ! বাঃ !' গীত
গাও l "বাঃ বাবা ! বাঃ আমার ভাগ্য ! বাঃ আমার মিষ্টি পরিবার ! বাঃ শ্রেষ্ঠ যুগের
আনন্দময় সময় !" সব কর্ম বাহ্ বাঃ ! বাঃ বাঃ-এর গীত গাইতে থাকো l বাপদাদা আজ মৃদু
মৃদু হাসছিলেন - কোন কোন বাচ্চা 'বাহ্ !'-এর গীত গাওয়ার পরিবর্তে অন্য গীত গাইছিল l
সেটাও আবার দুই শব্দের গীত, সেটা তোমরা জানো তারা কি গাইছিল ? এই বছর, সেই দুই
শব্দের গীত গেও না l সেই দুই শব্দ হলো - 'হোয়াই' এবং 'আই' (কি এবং 'আমি'), প্রায়শঃই
বাপদাদা যখন বাচ্চাদের টি.ভি. দেখেন তো বাচ্চারা 'বাহ্ বাহ্'-এর পরিবর্তে হোয়াই
হোয়াই করে l সুতরাং হোয়াই-এর পরিবর্তে বলো 'বাঃ ! বাঃ !' এবং 'আমি'র পরিবর্তে 'বাবা'
'বাবা' l বুঝেছ ?
তোমরা যাই হও, আর যেমনই হও, তোমরা বাপদাদার প্রিয়, তবেই তো সবাই ভালোবেসে মিলনের
জন্য ছুটতে ছুটতে আসো l অমৃতবেলায় সব বাচ্চা এই গীত গায় - 'প্রিয় বাবা', 'মিষ্টি
বাবা' আর রিটার্ণে সদা বাপদাদা গান - 'প্রিয় বাচ্চারা, প্রিয় বাচ্চারা' l আচ্ছা l
কার্যতঃ, এই বছর তো স্বতন্ত্র হয়েও প্রিয় হওয়ার অনুভব করার পাঠ, তবুও বাচ্চাদের
স্নেহের আহ্বান বাবাকেও স্বতন্ত্র দুনিয়া থেকে প্রিয় দুনিয়ায় নিয়ে আসে l আকারী
বিধিতে এইসব দেখার আবশ্যকতা নেই l আকার রূপে মিলনের বিধিতে একই সময়ে অসীম জগতের
অনেক বাচ্চাকে অসীম মিলনের অনুভূতি করান l সাকারী বিধিতে তবুও সীমিত সময়ে আসতে হয় l
সর্বোপরি বাচ্চাদের চাইই বা কি - মুরলী আর দৃষ্টি l বাবা যখন মুরলী বলেন, সেটাও তো
মিলন l হয় তা' আলাদাভাবে বলুন, বা সবাইকে একসাথে বলুন, বলবেন তো একই বিষয় l যা
সংগঠনে বলেন আলাদাভাবে সেটাই তো বলবেন l তবুও দেখ, প্রথম চান্স বিদেশিদের প্রাপ্ত
হয়েছে l ভারতের বাচ্চারা ১৮ তারিখের (১৮ জানুয়ারির) জন্য অপেক্ষা করছে আর তোমরা
প্রথম চান্স নিচ্ছ l আচ্ছা l ৩৫-৩৬টা দেশ থেকে বাচ্চারা এসেছে l এটাও ৩৬ রকমের ভোগ,
৩৬-এর গায়ন আছে, তাই না ! তাহলে ৩৬ ভ্যারাইটি তো হয়েই গেল l
বাপদাদা সব বাচ্চার সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে খুশি হন l তোমরা সবাই তন, মন, ধন,
সময়, যে স্নেহ আর সাহস দ্বারা সেবাতে নিয়োজিত করেছ, বাপদাদা তার পদমগুণ (লক্ষ-কোটি)
অভিনন্দন জানাচ্ছেন l এই সময় তোমরা বাবার সমুখেই হও বা আকার রূপে উপস্থিত হও, বাবা
কিন্তু সেবায় একাগ্রতার সাথে মগ্ন থাকার জন্য অভিনন্দিত করছেন l তোমরা সহযোগী হয়েছ
এবং অন্যদের সহযোগী বানিয়েছ l তাইতো সহযোগী হওয়ারও এবং সহযোগী বানানোর জন্য ডবল
অভিনন্দন l কোন কোনও বাচ্চার সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনার সমাচার এবং সেইসঙ্গে নতুন বছরের
উৎসাহ-উদ্দীপনায় ভরা কার্ডের মালা বাপদাদার গলায় পরানো হয়েছে l যারাই কার্ড পাঠিয়েছে,
কার্ডের রিটার্ণে বাপদাদা রিগার্ড আর লাভ্ প্রদান করেন l বাবা সব সমাচার শুনতে শুনতে
উৎফুল্ল হন l হয় তোমরা গুপ্ত রূপে সেবা করেছ, অথবা প্রত্যক্ষ রূপে করেছ, বাবাকে
প্রত্যক্ষ করানোর সেবায় সদাই সফলতা l স্নেহের সাথে রেজাল্ট - সহযোগী আত্মা হওয়া আর
বাবার কার্যে কাছে আসা, এটাই সফলতার লক্ষণ l সহযোগী আজ সহযোগী, কাল যোগীও হয়ে যাবে
l
সুতরাং সহযোগী বানানোর যে সেবা চারিদিকে তোমরা সবাই করেছ, তার জন্য বাপদাদা 'অবিনাশী
সফলতা স্বরূপ ভব' - এই বরদান দিচ্ছেন l আচ্ছা l
যখন তোমাদের প্রজা, সহযোগী, সম্বন্ধী বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হবে তখন বৃদ্ধি অনুযায়ী বিধিকেও
তো পরিবর্তন করতে হবে, তাই না ! বৃদ্ধি হলেও তো তোমরা খুশি, তাই তো ? আচ্ছা l
যারা সদা স্নেহী, সহযোগী হয়ে সবাইকে সহযোগী বানায়, সদা অভিনন্দন প্রাপ্ত হয়, সদা
প্রতি সেকেন্ড, প্রতিটা সঙ্কল্প সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ বানায়, গায়নযোগ্য বানায়, সদা
দাতা হয়ে সবাইকে স্নেহ আর সহযোগ দেয় - এইরকম শ্রেষ্ঠ, মহান ভাগ্যবান আত্মাদের
বাপদাদার স্মরণ-স্নেহ আর সঙ্গমের গুড নাইট ও গুড মর্নিং l
বিদেশ সেবায় উপস্থিত টিচারদের প্রতি - অব্যক্ত বাপদাদা :
নিমিত্ত সেবাধারী বাচ্চাদের বাপদাদা সদা 'সমান ভব' -এই বরদান দ্বারা অগ্রচালিত করতে
থাকেন l বাপদাদা পাণ্ডব বা শক্তি সবাইকে, যারাই সেবার জন্য নিমিত্ত, তাদের সবাইকে
বিশেষ পদ্মাপদম ভাগ্যবান শ্রেষ্ঠ আত্মা মনে করেন l সেবার প্রত্যক্ষ ফল খুশি আর শক্তি,
এই বিশেষ অনুভব তো তোমরা নিশ্চয়ই করো ! এখন তোমরা নিজেরা যতটা শক্তিশালী লাইটহাউস,
মাইটহাউস হয়ে সেবা করবে, ততই তাড়াতাড়ি প্রত্যক্ষতার পতাকা চারিদিকে উড়বে l প্রত্যেক
নিমিত্ত সেবাধারীকে সেবায় সফলতার জন্য দু'টো বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে l একটা
বিষয় হলো সদা সংস্কার মিলানোর ইউনিটির, সব জায়গা থেকে এই বিশেষত্ব যেন দেখা যায় l
দ্বিতীয় হলো, সদা প্রত্যেক নিমিত্ত সেবাধারীকে নিজেকে প্রথমে এই দুই সার্টিফিকেট
দিতে হবে - এক, 'একতা' দুই, 'সন্তুষ্টতা'l সংস্কার বিভিন্ন ধরনের হয়ই আর হবেও,
কিন্তু সংস্কারের সংঘাত করবে নাকি সেটা এড়িয়ে নিজেকে সেফ রাখবে - সেটা তোমাদের
নিজেদের উপরে নির্ভর করে l যা কিছুই হয়ে যাক না কেন, কারও সংস্কার যদি সেইরকম হয়ই
তাহলে তো অন্যের তালি দেওয়া উচিত নয় অর্থাৎ প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত নয় l সে বদলাবে
বা বদলাবে না, কিন্তু তুমি তো বদলাতে পারো, তাই না ! যদি প্রত্যেকে নিজেকে চেঞ্জ করে,
অন্তর্লীন করার শক্তি ধারণ করো তাহলে অন্যের সংস্কারও অবশ্যই শীতল হয়ে যাবে l সুতরাং
সদা পরস্পর পরস্পরের প্রতি স্নেহের ভাবনাতে, শ্রেষ্ঠত্বের ভাবনাতে সম্পর্কে এসো,
কারণ নিমিত্ত সেবাধারী - বাবার ভাবমূর্তির দর্পণ l অতএব, তোমাদের যেটা
প্র্যাকটিক্যাল জীবন সেটাই বাবার রূপ-দর্পণ হয়ে যায়, সেইজন্য সদা এমন জীবনের দর্পণ
হও যাতে বাবা যেমন যে'রকম, সে'রকমই প্রতীয়মান হন l আর বাকি তো তোমরা পরিশ্রম ভালোই
করো, তোমাদের মনোবলও ভালো আছে l সেবার বৃদ্ধিতেও তোমাদের উদ্যম-উৎসাহ প্রবল,
সেইজন্য বিস্তার বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হচ্ছে l সেবা তো ভালো, এখন শুধু বাবাকে প্রত্যক্ষ
করানোর জন্য তোমাদের প্রত্যক্ষ জীবনের প্রমাণ প্রদর্শন করো l যাতে সবাই একই রকম বলে
যে জ্ঞানের ধারণায় তোমরা এক, আবার সংস্কার মেলানোতেও নম্বর ওয়ান l এমনও নয় যে
ইন্ডিয়ার টিচার আলাদা, ফরেনের টিচার আলাদা l সবাই এক l এটা তো শুধু তোমরা সেবার
নিমিত্ত হয়েছ, স্থাপনের কার্যে সহযোগী হয়েছ, আর এখনও সহযোগ দিয়ে যাচ্ছ, সেইজন্য আপনা
থেকেই সবকিছুতে তোমাদের বিশেষ ভূমিকা (পার্ট ) পালন করতে হবে l কার্যতঃ, বাপদাদা এবং
নিমিত্ত আত্মাদের কাছে বিদেশ থেকে আগত এবং এখানে থাকা টিচারদের (বিদেশি ও দেশিয়দের)
মধ্যে কোনরকম পার্থক্য নেই l সেবার ক্ষেত্রে যেখানে যার বিশেষত্বের প্রয়োজন, সে যে
কেউই হোক, সেখানে তার বিশেষত্বই ফলপ্রদ l এমনিতে পরস্পরকে রিগার্ড দেওয়া ব্রাহ্মণ
কুলের মর্যাদা l স্নেহ নেওয়া আর রিগার্ড দেওয়া l বিশেষত্বকে মর্যাদা দেওয়া হয় নাকি
ব্যক্তিকে ! আচ্ছা l
বরদান:-
প্রতিটা সেকেন্ড আর সঙ্কল্পকে অমূল্য রীতিতে ব্যয় করে
অমূল্য রত্ন ভব
সঙ্গমযুগের এক সেকেন্ডের ভ্যাল্যুও অনেক মহান l
যেভাবে একের লক্ষগুণ হয়, সেই ভাবে যদি এক সেকেন্ডও ব্যর্থ যায় তাহলে লক্ষগুণ ব্যর্থ
হয়ে যায়, সেইজন্য এতটাই অ্যাটেনশন যদি রাখ তাহলে সব অসাবধানতা সমাপ্ত হয়ে যাবে l
এখন তো কারও কোনকিছুর জন্য হিসেব নেই, কিন্তু অল্প সময় পরেই অনুশোচনা হবে, কারণ এই
সময়ের ভ্যাল্যু অনেক l যে নিজের প্রতিটা সেকেন্ড, প্রতিটা সঙ্কল্প অমূল্য রীতিতে
ব্যয় করে সেই অমূল্য রত্ন হয় l
স্লোগান:-
যে সদা যোগযুক্ত থাকে সে সহযোগের অনুভব করতে করতে বিজয়ী হয়ে যায় l