24.12.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
এই শরীর রূপী খেলনা আত্মা রূপী চৈতন্য চাবি দিয়ে চলে, তোমরা নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো
তাহলে নির্ভয় স্বরূপ হয়ে যাবে”
প্রশ্নঃ -
আত্মা শরীরের
সঙ্গে খেলা খেলেই নীচে এসেছে তাই তাদের কি নাম দেবে?
উত্তরঃ -
কাঠের পুতুল। যেমন ড্রামাতে কাঠের পুতুলের খেলা দেখানো হয়, ঠিক তেমনই তোমরা আত্মারা
কাঠের পুতুলের মতন ৫ হাজার বছরের খেলা খেলতে খেলতে নীচে পৌঁছে গেছ। বাবা এসেছেন
কাঠের পুতুলদের অর্থাৎ তোমাদের উপরে ওঠার পথ বলে দিতে। এখন তোমরা শ্রীমতের চাবি
লাগাও তাহলে উপরে উঠে যাবে।
গীতঃ-
আসরে জ্বলে
উঠলো দীপশিখা....
ওম্ শান্তি ।
আত্মিক পিতা
আত্মা রূপী বাচ্চাদের শ্রীমৎ প্রদান করেন - কখনও কারো আচরণ সঠিক না থাকলে মাতা পিতা
বলে - ঈশ্বর যেন তোমাকে সুমত দেন। তারা জানেই না যে ঈশ্বর সত্যিই সুমত দেন। এখন
তোমরা বাচ্চারা ঈশ্বরীয় মতামত প্রাপ্ত করছো অর্থাৎ আত্মিক পিতা বাচ্চাদের (আত্মাদের)
শ্রেষ্ঠ মত দিচ্ছেন শ্রেষ্ঠ হওয়ার জন্য। এখন তোমরা বুঝেছো আমরা শ্রেষ্ঠ থেকে
শ্রেষ্ঠ স্বরূপে পরিণত হচ্ছি। বাবা আমাদের সর্বোচ্চ সুমত দিচ্ছেন। আমরা তাঁর
মতানুযায়ী চলে মানুষ থেকে দেবতা হচ্ছি। অতএব প্রমাণিত হয় যে মানুষ থেকে দেবতায়
পরিণত করেন একমাত্র পিতা। শিখ ধর্মের মানুষও গান গায় মানুষ থেকে দেবতা হতে লাগে না
বেশী সময়....। সুতরাং নিশ্চয়ই তিনি মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার মতামত দেন। তাঁরই মহিমা
গায়ন হয়েছে - এক ওঙ্কার...কর্তা পুরুষ, নির্ভয় ....তোমরা সবাই নির্ভয় হয়ে যাও।
নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো তো, তাইনা। আত্মার কোনও ভয় থাকে না। বাবা বলেন নির্ভয় হও।
ভয় কীসের। তোমাদের কোনও ভয় নেই। তোমরা নিজের ঘরে বসে বাবার শ্রীমৎ প্রাপ্ত করতে থাকো।
এখন শ্রীমৎ কাঁর ? কে প্রদান করেন ? এই কথা তো গীতায় নেই। বাচ্চারা, এখন তোমরা
বুঝেছো। বাবা বলেন তোমরা পতিত হয়েছো, এখন পবিত্র হওয়ার জন্য মামেকম্ স্মরণ করো। এই
পুরুষোত্তম স্বরূপে পরিণত হওয়ার মেলা সঙ্গমযুগেই হয়। অনেকে এসে শ্রীমৎ প্রাপ্ত করে।
একেই বলে ঈশ্বরের সাথে বাচ্চাদের মেলা। ঈশ্বরও হলেন নিরাকার। বাচ্চারা অর্থাৎ
আত্মারাও হল নিরাকার। আমরা হলাম আত্মা, এই অভ্যাসে খুব পাকা হতে হবে। যেমন খেলনা
চাবি দিলেই ডান্স করতে থাকে। সেই রকম আত্মাও হল এই শরীর রূপী খেলনার চাবি। এর ভিতরে
আত্মা না থাকলে কিছুই করতে পারবে না। তোমরা হলে চৈতন্য খেলনা। খেলনায় চাবি না দিলে
কোনও কাজ করবে না। স্থির হয়ে যাবে। আত্মাও হল চৈতন্য চাবি এবং এই চাবি হল অবিনাশী,
অমর চাবি। বাবা বোঝান আমি কেবল আত্মাকেই দেখি। আত্মাই শোনে - এই অভ্যাসটি পাকা করতে
হবে। এই চাবি ছাড়া শরীর চলবে না। ইনি অবিনাশী চাবি পেয়েছেন। ৫ হাজার বছর এই চাবি চলে।
চৈতন্য চাবি হওয়ার জন্য চক্র আবর্তিত হতে থাকে। এই হল চৈতন্য খেলনা। বাবাও হলেন
চৈতন্য আত্মা। যখন চাবি পূর্ণ হয়ে যায় তখন নতুন করে যুক্তি বলে দেন যে আমাকে স্মরণ
করো তো পুনরায় চাবি কানেক্ট হয়ে যাবে অর্থাৎ আত্মা তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হয়ে
যাবে। যেমন মোটর গাড়িতে পেট্রোল শেষ হয়ে গেলে আবার পেট্রোল ভরা হয় । এখন তোমাদের
আত্মা বুঝেছে - আমাদের পেট্রোল কীভাবে ভরবে! ব্যাটারি খালি হয় তারপরে তাতে পাওয়ার
ভরা হয় তাইনা। ব্যাটারি খালি হলে লাইট শেষ হয়ে যায়। এখন তোমাদের আত্মারূপী ব্যাটারি
ভরপুর হয়। যত স্মরণ করবে ততই পাওয়ার ভরতে থাকবে। ৮৪ জন্মের এতখানি চক্র পরিক্রম করে
ব্যাটারি খালি হয়ে গেছে। সতো, রজো, তমোতে এসেছে। এখন আবার বাবা এসেছেন চাবি দিতে
অথবা ব্যাটারি ভরতে। পাওয়ার নেই তাই মানুষ কেমন হয়ে গেছে। অতএব এখন স্মরণের দ্বারা
ই ব্যাটারি ভরতে হবে, একে হিউম্যান ব্যাটারি বলা হবে। বাবা বলেন আমার সঙ্গে যোগ
যুক্ত হও। এই জ্ঞান প্রদান করেন একমাত্র বাবা । একমাত্র বাবা হলেন সদগতি দাতা। এখন
তোমাদের ব্যাটারি সম্পূর্ণ ভরপুর হয়, যার দ্বারা পুনরায় ৮৪ জন্ম পার্ট প্লে করো।
যেমন ড্রামাতে কাঠের পুতুল নাচ হয় না ! তোমরা আত্মারাও হলে ঠিক তেমনই কাঠের পুতুলের
মতন। উপর থেকে নেমে ৫ হাজার বছরে একেবারে নীচে এসে পড়ো তারপর বাবা উপরে তোলেন। সে
হল একটি খেলনা। বাবা অর্থ বুঝিয়ে দেন উত্তরণ কলা এবং অবতরণ কলা, এই হল ৫ হাজার
বছরের কথা। তোমরা বুঝেছো শ্রীমৎ দ্বারা আমরা চাবি প্রাপ্ত করি। আমরা ফুল সতোপ্রধান
হয়ে যাবো তারপরে সম্পূর্ণ পার্ট রিপিট করবো। কতখানি সহজ কথা - বুঝবার জন্য এবং
বোঝাবার জন্য। তবুও বাবা বলেন বুঝবে তারা-ই যারা কল্প পূর্বে বুঝেছিল। তোমরা যতই
চেষ্টা করো বুঝবে না। বাবা বোধশক্তি তো সবাইকে সমান দিয়েছেন। যেখানে খুশী বসে বাবাকে
স্মরণ করতে হবে। সম্মুখে যদি ব্রাহ্মণী নাও থাকে তবুও তোমরা স্মরণে বসতে পারো। জানো
যে বাবার স্মরণ দ্বারা আমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে। তাই তাঁর স্মরণে বসতে হবে। কাউকে
বসানোর দরকার নেই। খাবার খেতে, স্নান করতে বাবাকে স্মরণ করো। কিছু ক্ষণের জন্য অন্য
কেউ সামনে বসে যায়। এমন নয় যে সে সাহায্য করে তোমাদের, না। প্রত্যেককে নিজেকে
সাহায্য করতে হবে। ঈশ্বর তো সুমত দিয়েছেন এমন এমন করো তাহলে তোমাদের বুদ্ধি দিব্য
বুদ্ধি হয়ে যাবে। এই প্রলোভন দেওয়া হয়। শ্রীমৎ তো সবাইকে দিতেই থাকেন। অবশ্য কারো
বুদ্ধি ঠান্ডা, কারো বুদ্ধি তীক্ষ্ণ হয়। পবিত্রের সঙ্গে যোগ যুক্ত না হলে ব্যাটারি
চার্জ হয় না। বাবার শ্রীমৎ পালন করে না। যোগও লাগে না। তোমরা ফীল করো যে আমাদের
ব্যাটারি ভরপুর হয়। তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান তো নিশ্চয়ই হতে হবে। এই সময় তোমরা
পরমাত্মার শ্রীমৎ প্রাপ্ত করছো। এই কথা দুনিয়া একটুও বোঝে না। বাবা বলেন আমার এই মত
দ্বারা তোমরা দেবতায় পরিণত হয়ে যাও, এর চেয়ে উঁচু কিছু হয় না। সেখানে এই জ্ঞান থাকে
না। এও ড্রামায় পূর্ব নির্দিষ্ট আছে। তোমাদেরকে পুরুষোত্তম করতে বাবা সঙ্গমে আসেন,
যাঁর স্মরণিকা ভক্তি মার্গে পালন হয়, দশহরা উৎসবও পালন হয় তাইনা। যখন বাবা আসেন তখন
হয় দশহরা। ৫ হাজার বছর পর প্রতিটি কথা রিপিট হয়।
তোমরা বাচ্চারাই এই ঈশ্বরীয় মত অর্থাৎ শ্রীমৎ প্রাপ্ত করো, যার দ্বারা তোমরা
শ্রেষ্ঠ হও। তোমাদের আত্মা সতোপ্রধান ছিল, সে নীচে নামতে-নামতে এসে তমো প্রধান
ভ্রষ্ট হয়ে যায়। তারপরে বাবা বসে জ্ঞান এবং যোগের শিক্ষা প্রদান করে সতোপ্রধান
শ্রেষ্ঠ করেন। তিনি বলে দেন তোমরা কীভাবে সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমেছো। ড্রামা চলতেই থাকে।
এই ড্রামার আদি-মধ্য-অন্তের কথা কেউ জানেনা। বাবা বুঝিয়েছেন এখন তোমাদের মনে পড়েছে
তাইনা। প্রত্যেকের জন্ম কাহিনী তো বলা সম্ভব নয়। লেখা তো হয় না যে পড়ে শোনানো হবে।
এই কথা বাবা বসে বোঝান। এখন তোমরা সেই ব্রাহ্মণ হয়েছো পুনরায় দেবতা স্বরূপে পরিণত
হতে হবে। বাবা বুঝিয়েছেন - ব্রাহ্মণ, দেবতা, ক্ষত্রিয় তিনটি ধর্ম আমি স্থাপনা করি।
এখন তোমাদের বুদ্ধিতে আছে - আমরা বাবার দ্বারা ব্রাহ্মণ বংশী হই তারপরে সূর্যবংশী,
চন্দ্রবংশী হবো। যারা ফেল হয় তারা চন্দ্রবংশী হয়। কোন্ বিষয়ে ফেল হয় ? যোগে। জ্ঞান
তো খুবই সহজ বোঝানো হয়। কীভাবে তোমরা ৮৪-র চক্র পরিক্রম করো। মানুষ তো ৮৪ লক্ষ বলে
দেয় ফলে বিষয়টা অনেক দূরে চলে যায়। এখন তোমরা প্রাপ্ত করো ঈশ্বরীয় মতামত। ঈশ্বর তো
আসেন কেবল একবার। সুতরাং তাঁর মতামত প্রাপ্তও হবে একবার। এক দেবী-দেবতা ধর্ম ছিল।
অবশ্যই তারা ঈশ্বরীয় মতামত প্রাপ্ত করেছিল, এর আগে তো সঙ্গমযুগ ছিল। বাবা এসে দুনিয়া
পরিবর্তন করেন। তোমরা এখন পরিবর্তিত হচ্ছো। এই সময় বাবা তোমাদের বদলাচ্ছেন। তোমরা
বলবে আমরা কল্প-কল্প পরিবর্তিত হয়ে এসেছি, হতেই থাকবো। এই হল চৈতন্য ব্যাটারি তাই
না। ওই হল জড়। বাচ্চারা জেনেছে ৫ হাজার বছর পরে বাবা এসেছেন। শ্রেষ্ঠ থেকে শ্রেষ্ঠ
মত প্রদান করেন। উঁচু থেকে উঁচু ভগবানের উচ্চ মতামত প্রাপ্ত হয় - যার দ্বারা তোমরা
উচ্চ পদ মর্যাদা প্রাপ্ত কর। তোমাদের কাছে যখন কেউ আসে তখন বলো তোমরা হলে ঈশ্বরের
সন্তান । ঈশ্বর হলেন শিববাবা, শিব জয়ন্তীও পালন করা হয়। তিনি হলেন সদগতি দাতা। তাঁর
নিজস্ব শরীর তো নেই। তাহলে কীভাবে মত প্রদান করেন ? তোমরাও হলে আত্মা, এই শরীর
দ্বারা কথা বলো, তাইনা। শরীর ব্যতীত আত্মা কিছু করতে পারে না। নিরাকার পিতাও আসবেন
কীভাবে? গায়নও আছে রথে আসেন। তাই কেউ কিছু, কেউ কিছু তৈরি করে দিয়েছে। ত্রিমূর্তিও
সূক্ষ্মবতনে বসে দেখানো হয়েছে। বাবা বোঝান - এই সব হল সাক্ষাৎকারের কথা। যদিও
সম্পূর্ণ রচনা তো এখানেই আছে। অতএব রচয়িতা বাবাকেও এখানে আসতে হয়। পতিত দুনিয়ায়
এসেই পবিত্র করতে হয়। এখানে বাচ্চাদেরকে ডাইরেক্ট পবিত্র স্বরূপে পরিণত করছেন। যদিও
সবই বোধগম্য তবুও জ্ঞান বুদ্ধিতে স্থির থাকে না। কাউকে বোঝাতেও পারেনা। শ্রীমৎ ধারণ
না করলে শ্রেষ্ঠতম হতে পারে না। যারা বোঝেই না তারা কি পদ পাবে। যত সার্ভিস করবে -
ততই উঁচু পদ প্রাপ্ত করবে। বাবা বলেছেন - সার্ভিসে নিজের প্রতিটি হাড় দান করতে হবে।
অলরাউন্ড সার্ভিস করতে হবে। বাবার সার্ভিসে আমরা হাড় দান করতে প্রস্তুত। অনেক
কন্যারা ব্যাকুল হয়ে থাকে - সার্ভিসের জন্য। বাবা আমাদের মুক্ত করো যাতে সার্ভিস
করতে পারি, অনেকের যাতে কল্যাণ হয়। সম্পূর্ণ দুনিয়া তো দৈহিক সেবা করে, তার ফলে
সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে আসে। এখন এই আত্মিক সেবা দ্বারা উত্তরণ কলা হয়। প্রত্যেকে
বুঝতে পারে - অমুক আমার চেয়ে বেশি সার্ভিস করে। ভালো সার্ভিসেবল কন্যারা আছে, সুতরাং
তারা সেন্টারের রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারে। ক্লাসে নম্বর অনুসারে বসে। এখানে তো নম্বর
অনুযায়ী বসানো হয় না, তাহলে তো সত্যিটা ফাঁস হয়ে যাবে। বুঝতে তো পারে তাইনা।
সার্ভিস না করলে নিশ্চয়ই পদও কম হয়ে যাবে।নম্বর অনুযায়ী পদ মর্যাদা অনেক আছে। কিন্তু
ওই হল সুখধাম, এই হল দুঃখধাম। সেখানে অসুখ ইত্যাদি কিছু থাকে না। বুদ্ধি দ্বারা কাজ
করতে হয়। বোঝা উচিত যে আমরা তো খুব কম পদ প্রাপ্ত করবো কারণ সার্ভিস তো করি না।
সার্ভিস করেই পদ প্রাপ্ত হবে। নিজের পরীক্ষা করা উচিত। প্রত্যেকে নিজের অবস্থা ভালো
করে জানে। মাম্মা-বাবাও সার্ভিস করতে এসেছেন। ভালো বাচ্চারাও আছে। যদিও চাকুরিজীবী,
তাদেরকেও বলা হয় হাফ পেমেন্টের ছুটি নিয়ে গিয়ে সার্ভিস করো, কোনো অসুবিধে নেই। যারা
বাবা হৃদয়াসনে বসে তারা ই রাজ সিংহাসনে বসে, তাও নম্বর অনুযায়ী পুরুষার্থ অনুসারে।
এই ভাবেই বিজয়মালায় স্থান অর্জন করে। সমর্পণ করে, সার্ভিসও করে। কেউ তো যদিও সমর্পণ
করে, সার্ভিস করে না তাহলে পদ মর্যাদা কম হয়ে যাবে তাইনা। এই রাজধানী স্থাপন হচ্ছে
শ্রীমৎ দ্বারা। এমন কখনো শুনেছো ? অথবা পড়াশোনা দ্বারা রাজত্ব স্থাপন হয় এই কথা
শুনেছো, কখনও দেখেছো ? হ্যাঁ, দান-পুণ্য করলে রাজার ঘরে জন্ম হতে পারে। কিন্তু
পড়াশোনা দ্বারা রাজত্ব প্রাপ্তি, হয়তো এমন কথা কখনও শোনোনি। কেউ জানেও না। বাবা
বোঝান তোমরাই পুরো ৮৪ জন্ম গ্রহণ কর। তোমাদের এখন উপরে যেতে হবে। খুবই সহজ। তোমরা
কল্প কল্প বুঝতে পারো নম্বর অনুযায়ী পুরুষার্থ অনুসারে। বাবা স্মরণ-স্নেহও নম্বর
অনুযায়ী পুরুষার্থ অনুসারে দেন, স্মরণ-স্নেহ বেশি করে তাদের দেবেন যারা সার্ভিসে আছে।
অতএব নিজের পরীক্ষণ করা উচিত যে আমি কি হৃদয়াসনে স্থান অর্জন করেছি ? আমি কি মালার
মুক্তোদানা হতে পারি? অশিক্ষিতরা অবশ্য শিক্ষিতদের সম্মুখে ভার বহন করবে। বাবা তো
বোঝান বাচ্চারা পুরুষার্থ করো, কিন্তু ড্রামাতে পার্ট না থাকলে যতই চেষ্টা করো, উপরে
উঠবে না। বিভিন্ন রকমের বাধা লেগে থাকবে। দেহ-অভিমানের আধার নিয়েই অন্য বিকার আসে।
মুখ্য কঠিন রোগ হল দেহ-অভিমানের। সত্যযুগে দেহ-অভিমানের নামচিহ্ন থাকবে না। সেখানে
তো কেবল থাকে তোমাদের প্রালব্ধ (পুরুষার্থের ফল)। এই কথা এখানে একমাত্র বাবা বোঝান।
অন্য কেউ এমন শ্রীমৎ প্রদান করেন না যে নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে মামেকম্ স্মরণ করো।
এই হল মুখ্য কথা। লেখা উচিত - নিরাকার ভগবান বলেন একমাত্র আমাকে স্মরণ করো। নিজেকে
আত্মা নিশ্চয় করো। নিজের দেহের কথাও স্মরণ করবে না। যেমন ভক্তিতে একমাত্র শিবের ই
পূজা করে। এখন জ্ঞান একমাত্র আমিই প্রদান করি। বাকি সবই হল ভক্তি, অব্যভিচারী জ্ঞান
একমাত্র শিববাবার কাছে তোমরা প্রাপ্ত কর। জ্ঞান সাগর থেকে এই রত্ন প্রাপ্ত হয়। ওই
স্থূল সাগরের কথা নয়। এই জ্ঞানের সাগর বাচ্চাদের অর্থাৎ তোমাদের জ্ঞান রত্ন প্রদান
করেন, যার দ্বারা তোমরা দেবতায় পরিণত হও। শাস্ত্রে ভিন্ন ভিন্ন কথা লিখে দিয়েছে।
সাগর থেকে দেবতা বেরিয়ে রত্ন প্রদান করে। তোমরা জ্ঞান রত্ন প্রাপ্ত করছো। এর আগে
পাথর কুড়িয়ে পাথরবুদ্ধি হয়েছো। এখন রত্ন প্রাপ্ত করে স্পর্শবুদ্ধি হয়ে যাও। পারসনাথ
হয়ে যাও তাইনা। এই পারসনাথ (লক্ষ্মী-নারায়ণ) বিশ্বের মালিক ছিলেন। ভক্তি মার্গে তো
অনেক নাম, অনেক চিত্র বানিয়েছে। বাস্তবে লক্ষ্মী-নারায়ণ বা পারসনাথ হলেন এক। নেপালে
পশুপতি নাথের মেলা আয়োজিত হয়, তিনিও হলেন পারসনাথ। আচ্ছা!
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন
নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বাবা যে রত্ন প্রদান করেছেন, সেই রত্নই জমা করতে হবে। পাথর নয়। দেহ-অভিমানের কঠিন
অসুখ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে।
২ ) নিজের ব্যাটারি ফুল চার্জ করার জন্য পাওয়ার হাউস বাবার সঙ্গে যোগ যুক্ত হতে হবে।
আত্ম-অভিমানী থাকার পুরুষার্থ করতে হবে। নির্ভয় হতে হবে।
বরদান:-
সর্ব
সম্বন্ধ এবং সর্ব গুণের অনুভূতিতে সম্পন্ন হওয়া সম্পূর্ণ মূর্তি ভব
সঙ্গম যুগে বিশেষ
সর্ব প্রাপ্তিতে নিজেকে সম্পন্ন বানাতে হবে তাই সর্ব খাজানা, সর্ব সম্বন্ধ, সর্বগুণ
এবং কর্তব্য গুলি সামনে রেখে চেক করো যে সর্ব বিষয়ে অনুভাবী হয়েছো ? যদি কোনও বিষয়ে
অনুভব কম আছে তো তাতে নিজেকে সম্পন্ন বানাও। একটিও সম্বন্ধ বা গুণে কম হলে সম্পূর্ণ
স্টেজ বা সম্পূর্ণ মূর্ত বলা হবে না । তাই বাবার গুণ বা নিজের আদি স্বরূপের গুণের
অনুভব করো, তবেই সম্পূর্ণ মূর্তি হবে।
স্লোগান:-
উত্তেজিত হয়ে পড়াও একরকমের মনের রোদন - এখন এই রোদনের ফাইল সমাপ্ত করো।