23.12.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
এই পুরাতন দুনিয়াটা একটা গ্রাম, যা তোমাদের থাকার অযোগ্য, তোমাদেরকে এখন নতুন,
পবিত্র দুনিয়ায় যেতে হবে”
প্রশ্নঃ -
বাবা তাঁর
সন্তানদের উন্নতির জন্য কোন্ উপায় বলে দেন ?
উত্তরঃ -
বাচ্চারা, তোমরা বাধ্য হও এবং বাপদাদার শ্রীমৎ অনুসারে জীবনযাপন করো। বাপদাদা দুজনে
একসঙ্গেই আছেন, তাই এনার কোনো নির্দেশ পালন করে যদি কোনো ক্ষতিও হয়, তাহলে বাবা-ই
রেস্পন্সিবল থাকবেন এবং সবকিছু ঠিক করে দেবেন। তোমরা নিজের মতামত না খাটিয়ে,
শিববাবার শ্রীমৎ অনুসারে জীবনযাপন করলে অনেক উন্নতি করবে।
ওম্ শান্তি ।
আত্মাদের পিতা
তাঁর আত্মা রূপী সন্তানদেরকে যে প্রাথমিক মুখ্য বিষয়টা বোঝাচ্ছেন সেটা হলো - নিজেকে
আত্মা রূপে অনুভব করে বাবাকে স্মরণ করলেই তোমাদের সকল দুঃখ দূর হয়ে যাবে। ওরা তো
আশীর্বাদ করে। এই বাবাও বলছেন - বাচ্চারা, তোমাদের সকল দুঃখ দূর হয়ে যাবে। কেবল
নিজেকে আত্মা রূপে অনুভব করে বাবাকে স্মরণ করো। এটা তো খুবই সহজ কাজ। এটাই ভারতের
প্রাচীন সহজ রাজযোগ। প্রাচীনকালেরও একটা সময়সীমা তো অবশ্যই থাকবে। বহুপ্রাচীন হলেও
ঠিক কতদিনের প্রাচীন ? বাবা বলছেন, পুরো ৫০০০ বছর আগে তোমাদেরকে রাজযোগ শিখিয়েছিলাম।
এগুলো বাবা ছাড়া কেউ বোঝাতে পারবেন না আর বাচ্চারা ছাড়া কেউ বুঝতেও পারবে না। গানে
বলা আছে - আত্মা রূপী সন্তান এবং পরমাত্মা পিতা অনেকদিন আলাদা থেকেছে। বাবা নিজেই
বলছেন - সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে পতিত হয়ে গেছ। এখন তোমরা স্মৃতি ফিরে পেয়েছ। সকলেই
পতিত-পাবনকে ডাকছে। কলিযুগে তো পতিতরাই থাকে। যারা পবিত্র, তারা সত্যযুগে থাকে। ওটা
পবিত্র দুনিয়া। এই পুরাতন পতিত দুনিয়াটা বসবাসের অযোগ্য। কিন্তু মায়ার প্রভাবও কম
নয়। এখানে ১০০ থেকে ১২৫ তলার বড় বড় বাড়ি বানাচ্ছে। এগুলোকেই মায়াবী প্রদর্শন বলা হয়।
এই মায়া এতই জাঁকজমকপূর্ণ যে যদি কাউকে স্বর্গে যাওয়ার জন্য বলা হয় তবে সে বলবে যে
আমার কাছে তো এটাই স্বর্গ। এগুলোকেই মায়াবী জৌলুস বলা হয়। কিন্তু বাচ্চারা, তোমরা
জানো যে এটা তো একটা পুরাতন গ্রাম যাকে নরক বলা হয়। একেই পুরাতন, তার ওপর চরম পতিত
নরক। সত্যযুগকে স্বর্গ বলা হয়। স্বর্গ নামটা প্রচলিত রয়েছে। এই দুনিয়াকে সকলেই
বিকারগ্রস্থ দুনিয়া বলবে। ওই স্বর্গ ছিল নির্বিকার দুনিয়া। স্বর্গকে নির্বিকার এবং
নরককে বিকৃত বা বিকারগ্রস্থ দুনিয়া বলা হয়। এত সহজ বিষয়গুলোও কেন কারোর বুদ্ধিতে আসে
না ! মানুষ কতো দুঃখী হয়ে গেছে। কতো লড়াই ঝগড়া হচ্ছে। দিনে দিনে এমন এমন বোমা
বানাচ্ছে যেগুলো একটা ফেললেই অনেক মানুষ মারা যায়। কিন্তু নীচ বুদ্ধি সম্পন্ন
মানুষরা বুঝতেই পারছে না যে ভবিষ্যতে কি ঘটবে। ভবিষ্যতে কি হবে, সেটা কেবল বাবা ছাড়া
অন্য কেউ বোঝাতে পারবে না। এই পুরাতন দুনিয়ার বিনাশ হবে, আর গুপ্ত ভাবে নুতন দুনিয়া
স্থাপন হচ্ছে। বাচ্চারা, তোমাদের নামই হলো গুপ্ত যোদ্ধা। কেউ কেউ ভাবে যে তোমরা হয়তো
লড়াই করছো। তোমাদের যুদ্ধ তো পাঁচ বিকারের বিরুদ্ধে। সবাইকে পবিত্র হতে বলছ। সকলেই
সেই এক এবং অদ্বিতীয় পিতার সন্তান। যেহেতু আমরা প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তান, তাই আমরা
ভাই ভাই। বোঝানোর জন্য খুব ভালো ভালো যুক্তি উপস্থাপন করতে হবে। প্রজাপিতা ব্রহ্মার
অনেক সন্তান, একজন তো নয়। তাঁর নামই হলো প্রজাপিতা। লৌকিক পিতাকে কখনো প্রজাপিতা বলা
যাবে না। প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তানরা পরস্পরের ভাই-বোন অর্থাৎ ব্রহ্মাকুমার-কুমারী।
কিন্তু এটা কেউই বোঝে না। বুদ্ধি যেন পাথর হয়ে গেছে, বোঝার চেষ্টাও করে না।
প্রজাপিতার সন্তান মানে তো পরস্পরের ভাই বোন। কখনোই বিকারের বশীভূত হবে না। তোমাদের
বোর্ডেও প্রজাপিতা শব্দ অবশ্যই থাকা উচিত। এই শব্দটা অবশ্যই লিখতে হবে। কেবল ব্রহ্মা
লিখলে অতটা ওজনদার শোনায় না। তাই বোর্ডেও সংশোধন করে সঠিক শব্দ লিখতে হবে। এটা
অত্যন্ত জরুরী। অনেক স্ত্রীলোকের নামও ব্রহ্মা রাখা হয়। নামগুলো অর্থহীন হয়ে যাওয়ার
জন্য আজকাল ছেলেদের নামও মেয়েদেরকে দেওয়া হয়। এতো নাম কোথা থেকেই বা পাবে ? সবকিছুই
ড্রামার প্ল্যান অনুসারে হচ্ছে। বাবার কাছে বিশ্বাসী এবং বাধ্য হওয়া মোটেই মুখের কথা
নয়। বাবা এবং ঠাকুরদাদা দুজনেই একসঙ্গে রয়েছেন। মানুষ বুঝতে পারে না যে ইনি আসলে কে
? তাই শিববাবা বলছেন - আমার নির্দেশকেও বুঝতে পারে না। ইনি উল্টো কিংবা সোজা যাই
বলুন না কেন, তুমি মনে করো যে শিববাবা-ই বলছেন। তাহলে শিববাবা-ই রেস্পন্সিবল থাকবেন।
এনার কথা শুনলে যদি কোনো ক্ষতিও হয়, তাহলেও শিববাবা রেস্পন্সিবল থাকবেন। তিনি সব
ঠিক করে দেবেন। যদি বুঝতে পারো যে এগুলো স্বয়ং শিববাবার নির্দেশ, তবে তোমাদের অনেক
উন্নতি হবে। কিন্তু অতি কষ্টে কয়েকজন বুঝতে পারে। কেউ কেউ আবার নিজের মতামত অনুসারে
জীবনযাপন করে। বাবা কতো দূর থেকে তোমাদেরকে বোঝানোর জন্য, নির্দেশ দেওয়ার জন্য আসেন।
অন্য কারোর কাছে এই আধ্যাত্মিক জ্ঞান নেই। সারাদিন কেবল এটাই ভাবতে হবে যে কিভাবে
লিখলে মানুষ বুঝতে পারবে। এমন সোজাসাপ্টা ভাবে লিখতে হবে যাতে মানুষের নজর যায়।
তোমরা এমন ভাবে বোঝাও যাতে আর কোনো প্রশ্ন করার দরকার-ই না হয়। বলো - বাবা বলছেন,
নিজেকে আত্মা মনে করে আমাকে স্মরণ করলেই সকল দুঃখ ঘুঁচে যাবে। যে ভালোভাবে স্মরণে
থাকবে, সে-ই ভালো পদ পাবে। এটা তো এক সেকেন্ডের ব্যাপার। মানুষ অনেক রকমের প্রশ্ন
করে। তোমরা ওইসব বিষয়ে কিছুই বলবে না। বলে দাও - বেশি কিছু জিজ্ঞেস করবেন না। আগে
একটা বিষয়ে নিশ্চিত হন। প্রশ্নের গভীর অরণ্যে হারিয়ে গেলে আর রাস্তাই খুঁজে পাবেন
না। যেমন কুয়াশায় রাস্তা হারিয়ে গেলে মানুষ আর বেরোনোর রাস্তা পায় না। এটাও অনেকটা
সেইরকম - মানুষ কোথা থেকে কিভাবে মায়ার পথে চলে যায়। তাই আগে সবাইকে একটা বিষয়ে বলো
যে আপনি হলেন অবিনাশী আত্মা। বাবাও অবিনাশী, পতিত-পাবন। আমরা পতিত হয়ে গেছি। এখন হয়
ঘরে ফিরতে হবে, অথবা নতুন দুনিয়ায় আসতে হবে। অন্তিম পর্যন্ত এই পুরাতন দুনিয়ায় জন্ম
নিতেই থাকবে। যারা ঠিকঠাক পড়াশুনা করবে না, তারা পরের দিকে আসবে। অনেকরকম হিসাব
রয়েছে। পড়াশুনার অবস্থা দেখেও বোঝা যায় যে প্রথমে কারা আসবে। স্কুলেও এইরকম
প্রতিযোগিতা হয়। ছুটে গিয়ে কিছু একটা ছুঁয়ে আবার ফিরে আসতে হয়। যে প্রথম হয়, তাকে
পুরস্কার দেওয়া হয়। এগুলো তো অসীম জগতের ব্যাপার। সীমাহীন পুরস্কার পাওয়া যায়। বাবা
বলছেন - স্মরণের যাত্রা করতে থাকো। দিব্যগুণও ধারণ করতে হবে। এখানেই সকল গুণে
সম্পন্ন হতে হবে। তাই বাবা চার্ট (দিনলিপি) লিখতে বলেন। স্মরণের যাত্রার চার্ট লিখলে
বুঝতে পারবে যে আমি লাভ করছি, নাকি লোকসান করছি। কিন্তু বাচ্চারা চার্ট লেখে না।
বাবা বলা সত্ত্বেও লেখে না। খুব কমজনই লেখে। তাই মালাও কতো কমজনকে নিয়ে তৈরি হয়। ৮
জন বড় স্কলারশিপ পায় আর ১০৮ জন প্লাস গ্রেড পায়। কারা প্লাস গ্রেড পায় ? বাদশা আর
রানী। খুব সামান্যই পার্থক্য থাকে। বাবা বলছেন, আগে নিজেকে আত্মা রূপে অনুভব করো,
তারপর বাবাকে স্মরণ করো। এটাই হলো স্মরণের যাত্রা। বাবার এই বার্তাটাই সকলের কাছে
পৌঁছাতে হবে। বেশি কথা বলার প্রয়োজন নেই, মনে মনে স্মরণ করতে হবে। সবাইকে এখন অশরীরী
হয়ে ফেরত যেতে হবে, তাই সকল দৈহিক সম্পর্ক পরিত্যাগ করে, পুরাতন দুনিয়ার সবকিছুকে
বুদ্ধি থেকে ত্যাগ করতে হবে। এখানে বাবা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু তারপর সারাদিন
একটুও স্মরণ করে না, শ্রীমৎ অনুসারে চলে না। বুদ্ধিতে ধারণ হয় না। বাবা বলছেন, নতুন
দুনিয়ায় যাওয়ার জন্য তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান হতে হবে। বাবা আমাদেরকে রাজ্যভাগ্য
প্রদান করেন। তারপর আমরা আবার এইভাবে হারিয়ে ফেলি, ৮৪ বার জন্ম নিই। এটা কোনো লক্ষ
লক্ষ বছরের কথা নয়। অনেক বাচ্চাই বাবাকে সঠিকভাবে চিনতে না পেরে অনেক প্রশ্ন করতে
থাকে। বাবা বলছেন - মামেকং (কেবল আমাকে) স্মরণ করলেই পাপ নাশ হবে এবং দিব্যগুণ ধারণ
করলে দেবতা হয়ে যাবে। এছাড়া আর কিছু জিজ্ঞেস করার দরকার নেই। বাবাকে চিনতে না পেরে
শুধু শুধু প্রশ্ন করতে থাকলে প্রথমে সংশয় প্রকাশ করবে, তারপর নিজেই বিরক্ত হয়ে যাবে।
বাবা বলছেন, বাবাকে চিনতে পারলেই সবকিছু জেনে যাবে। আমার মাধ্যমে আমাকে চিনতে
পারলেই তোমরা সবকিছু জেনে যাবে। জানার আর কিছুই বাকি থাকবে না। সেইজন্যই সাত দিনের
কোর্স করানো হয়। ওই সাতদিনেই অনেক কিছু বুঝতে পারো। কিন্তু বিভিন্ন ক্রমানুসারে
বুঝতে পারে। অনেকে কিছুই বোঝে না। ওরা কিভাবে রাজা - রানী হবে ? একজনের ওপরে কি
রাজত্ব করবে ? প্রত্যেককেই নিজ নিজ প্রজা তৈরি করতে হবে। অনেক টাইম ওয়েস্ট করো। বাবা
বলেন এগুলো নির্বুদ্ধিতা। কেউ যত বড় পদেই থাকুক না কেন, বাবা তো জানেন যে এগুলো সব
মাটিতে মিশে যাবে। আর সামান্য সময় অবশিষ্ট আছে। এই বিনাশের সময়ে যাদের বুদ্ধি
বিপথগামী, তাদের অবশ্যই বিনাশ হবে। আমি আত্মা কতোটা প্রীত বুদ্ধি সম্পন্ন, সেটা তো
নিজেই বুঝতে পারবে। কেউ বলে, এক-দুই ঘন্টা স্মরণে থাকে। আচ্ছা, লৌকিক বাবার সঙ্গে
কি তুমি এক-দুই ঘন্টা ভালোবাসা রাখো ? সারাদিনই তো বাবা-বাবা করতে থাকো। এখানেও হয়তো
বাবা-বাবা করো, কিন্তু ঐরকম আন্তরিক ভালোবাসা নেই। বারবার বলা হয় - শিববাবাকে স্মরণ
করো। সত্যিকারের স্মরণ করতে হবে। কোনো চালাকি চলবে না। অনেকে বলে যে আমি তো
শিববাবাকে অনেক স্মরণ করি। কিন্তু তাহলে তো তার সর্বদা উড়তে থাকা উচিত - বাবা, আমরা
সেবা করতে যাচ্ছি, অনেকের কল্যাণ করব। যতবেশি মানুষকে বাবার বার্তা শোনাবে, ততই
স্মরণ থাকবে। অনেক কন্যা বলে যে বন্ধন আছে। আরে, গোটা দুনিয়াটাই বন্ধনে রয়েছে।
যুক্তি সহকারে বন্ধনকে ছিন্ন করতে হবে। অনেক রকমের যুক্তি রয়েছে। ধরো, কালকেই কারোর
মৃত্যু হলো, তাহলে তার সন্তানদের কে সামলাবে ? নিশ্চয়ই কেউ না কেউ সামলানোর জন্য
এগিয়ে আসবে। জ্ঞানহীন অবস্থায় তো দ্বিতীয়বার বিয়ে করে নেয়। আজকাল তো বিয়েটাও একটা
ঝঞ্ঝাট। কাউকে কিছু অর্থ দিয়ে বাচ্চাদেরকে দেখাশোনা করতে বলে দাও। এটা তোমাদের
জীবন্মৃত (জীবিত অথচ মৃত) জন্ম। জীবিত থেকেও মারা গেছ। তাহলে এরপরে কে সামলাবে ?
তাই অবশ্যই কোনো নার্সকে রাখতে হবে। পয়সা দিলে কি না হয় ? অবশ্যই বন্ধনমুক্ত হতে হবে।
যাদের সেবাতে রুচি থাকবে, তারা নিজের থেকেই ছুটে ছুটে আসবে। কারণ তারা তো এই দুনিয়া
থেকেই মরে গেছে। এখানে বাবা বলছেন - আত্মীয় এবং বন্ধুদেরকেও উদ্ধার করতে হবে। সবার
কাছে বার্তা পৌঁছাতে হবে - "মন্মনা ভব", মনে মনে স্মরণ করলেই তমোপ্রধান থেকে
সতোপ্রধান হয়ে যাবে। কেবল বাবা-ই এটা বলেন। অন্যরা তো সদ্য ওপর থেকে আসে। তাদের
পেছনে পেছনে তাদের প্রজারাও আসে। যেমন যীশুখ্রিস্ট সবাইকে নীচে নিয়ে আসে। নীচে এসে
অভিনয় করতে করতে যখন অশান্ত হয়ে যায়, তখন বলে যে আমি শান্তি চাই। আগে শান্তিতেই ছিল।
তারপর ধর্ম স্থাপকের পেছনে পেছনে আসতে হয়। তারপর পতিত-পাবনকে আহ্বান করে। কি অদ্ভুত
ভাবে এই খেলা তৈরি হয়ে আছে। ওরা (ধর্মস্থাপকরা) অন্তিম সময়ে এসে নিজের লক্ষ্য স্থির
করবে। বাচ্চারা দিব্যদৃষ্টির সাহায্যে দেখতেও পেয়েছে। তোমরা এখন ভিখারি থেকে
রাজকুমার হচ্ছ। আর এখন যারা অনেক ধনী, ওরা ভিখারি হবে। কতো আশ্চর্যের ব্যাপার। কেউই
এই খেলাটাকে বিন্দুমাত্রও জানে না। সমগ্র রাজধানী স্থাপন হচ্ছে। সেখানে কেউ কেউ
গরিবও হবে। এটা অতি দূরদর্শীতা সম্পন্ন বুদ্ধি দিয়ে বুঝতে হবে। অন্তিমে সবকিছুই
দিব্যদৃষ্টির সাহায্যে দেখতে পাবে যে আমরা কিভাবে ট্রান্সফার হই। তোমরা নতুন
দুনিয়ার জন্য পড়াশোনা করছো। এখন সঙ্গমযুগে রয়েছো। পড়াশোনা করে উত্তীর্ণ হলে দৈব বংশে
যেতে পারবে। এখন ব্রাহ্মণ বংশে আছো। এই কথাগুলো কেউই বুঝতে পারে না। স্বয়ং ভগবান
এখানে শিক্ষা দিচ্ছেন - এই কথাটা কেউই বুদ্ধিতে ধারণ করতে পারে না। নিরাকার ভগবানকে
তো আসতেই হবে। খুবই বিস্ময়কর ভাবে এই ড্রামা তৈরি হয়ে আছে। তোমরা এই ড্রামাকে জেনেছো
এবং ভূমিকা পালন করছো। ত্রিমূর্তির ছবি দিয়েও বোঝাতে হবে যে ব্রহ্মার দ্বারা স্থাপন
হয়। বিনাশ তো অটোমেটিক্যালি হতেই হবে। কেবল একটা নাম রেখে দিয়েছে। ড্রামা এইরকম
ভাবেই বানানো আছে। প্রধান বিষয় হলো - নিজেকে আত্মা রূপে অনুভব করে বাবাকে স্মরণ
করলেই মরচে পরিষ্কার হয়ে যাবে। স্কুলে যে যত ভালো করে পড়ে, তার তত ভালো রোজগার হয়।
তোমরা ২১ জন্মের জন্য সুস্বাস্থ্য এবং সম্পদ পেয়ে যাও - এটা কি কম কথা ? এখানে হয়তো
কারোর অনেক সম্পত্তি আছে, কিন্তু এখন আর এতো সময়ই নেই যে তার ছেলে কিংবা নাতি ভোগ
করবে। বাবা তাঁর সমস্ত কিছুই এই সেবার জন্য দিয়ে দিয়েছেন। তাই তাঁর কতোই না জমা হয়ে
গেছে। সকলের তো জমা হয় না। অনেক লাখপতি আছে। কিন্তু তাদের সম্পত্তি কোনো কাজেই আসবে
না। বাবা তাদের থেকে নেবেন না, তাই বিনিময়ে দিতেও হবে না। আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর
সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বন্ধন ছিন্ন করার জন্য যুক্তি বার করতে হবে। সর্বোত্তম বাবার সাথেই ভালোবাসা রাখতে
হবে। সবার কাছে বাবার বার্তা পৌঁছে দিয়ে সকলের কল্যাণ করতে হবে।
২ ) দূরদর্শীতা সম্পন্ন বুদ্ধি দিয়ে এই সীমাহীন খেলাটাকে বুঝতে হবে। ভিখারি থেকে
রাজকুমার হওয়ার এই পড়াশোনাতে মনোযোগ দিতে হবে। স্মরণের সত্যিকারের দিনলিপি (চার্ট)
রাখতে হবে।
বরদান:-
সততার
ভিত্তিতে বাবার প্রদর্শন করতে পারা নির্ভীক অথরিটি স্বরূপ ভব
সততাই হলো প্রদর্শনের
ভিত্তি। বাবার প্রদর্শন (প্রত্যক্ষ) করার জন্য নির্ভীক এবং অথরিটি স্বরূপ হয়ে কথা
বলো, সঙ্কোচ করে নয়। যখন অনেক মতামতের মানুষ কেবল এই একটা বিষয়ে সহমত হবে যে সকলের
পিতা একজনই এবং এখনই তিনি তাঁর কার্য করছেন, আমরা সবাই সেই একজনেরই সন্তান এবং কেবল
তিনিই সত্য - তখনই জয়ধ্বজা উড়বে। এই সঙ্কল্প নিয়েই মুক্তিধামে যাবে এবং যখন নিজ নিজ
ভূমিকা পালন করতে আসবে, তখন প্রথমে যে সংস্কার প্রকট হবে তা হলো - গড ইজ ওয়ান। এটাই
হলো স্বর্ণযুগের স্মৃতি।
স্লোগান:-
সহ্য
করার অর্থই হলো নিজের শক্তিরূপ প্রদর্শন করা।