31.12.2020
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
এই হল তোমাদের ঈশ্বরীয় মিশন, তোমরা সবাইকে ঈশ্বরের আপন করে তাদের অসীম জগতের
উত্তরাধিকার প্রাপ্তি করিয়ে দাও”
প্রশ্নঃ -
কর্মেন্দ্রিয়
গুলির চঞ্চল ভাব কখন সমাপ্ত হবে ?
উত্তরঃ -
যখন তোমাদের আত্মিক স্থিতি সিলভার এজ অর্থাৎ রৌপ্যযুগী বুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে যাবে অর্থাৎ
যখন আত্মা ত্রেতাযুগের সতো স্টেজ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে তখন কর্মেন্দ্রিয় গুলির
চঞ্চলভাব সমাপ্ত হয়ে যাবে। এখন তোমাদের হল রিটার্ন জার্নি, তাই কর্মেন্দ্রিয় গুলিকে
বশে রাখতে হবে। লুকিয়ে এমন কোনো কাজ করবে না যার দ্বারা আত্মা পতিত হয়ে যায়। অবিনাশী
সার্জেন তোমাদের যা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, সেই মতন চলতে থাকো।
গীতঃ-
নিজের চেহারাকে
দেখেনে রে প্রাণী (আত্মা), মন রূপী দর্শনে....
ওম্ শান্তি ।
আত্মা রূপী
বাচ্চাদেরকে আত্মিক পিতা বোঝাচ্ছেন। বাচ্চারা, শুধুমাত্র তোমাদের নয়, যারা আত্মা
রূপী বাচ্চারা প্রজাপিতা ব্রহ্মা মুখবংশীরা আছে, তারা সবাই জানে। আমরা ব্রাহ্মণ,
আমাদেরকেই বাবা বোঝান। প্রথমে তোমরা শূদ্র ছিলে পরে এসে ব্রাহ্মণ হয়েছো। বাবা
বর্ণের হিসেবও বুঝিয়ে দিয়েছেন। দুনিয়ায় বর্ণ বিষয়টি মানুষ বোঝে না। শুধ গায়ন আছে।
এখন তোমরা হলে ব্রাহ্মণ বর্ণের পরে দেবতা বর্ণের হবে। ভেবে দেখো যে, এই কথাটি কি
সঠিক ? জাজ ইওর-সেল্ফ অর্থাৎ নিজেই নির্ণয় করো। আমার কথা শোনো এবং তুলনা করো।
শাস্ত্র যা জন্ম-জন্মান্তর শুনেছো এবং জ্ঞান সাগর বাবা যা বোঝান সেসব তুলনা করো -
কোনটা সঠিক ? ব্রাহ্মণ ধর্ম অথবা কুল বা বংশ একেবারেই ভুলে গেছে। তোমাদের কাছে
বিরাট রূপের চিত্র সঠিক বানানো হয়েছে, এই বিষয়টি বোঝানো হয়। যদিও অসংখ্য ভূজধারী যে
চিত্রটি বানানো হয়েছে এবং দেবীদের অস্ত্র শস্ত্র ইত্যাদি দেওয়া হয়েছে, সেসবই হল ভুল।
এই হল ভক্তি মার্গের চিত্র। এই চোখ দিয়ে সব দেখছে কিন্তু কিছু বোঝে না। কারো
অক্যুপেশনের কথা জানা নেই। এখন তোমরা বাচ্চারা নিজের আত্মার বিষয়ে জ্ঞান প্রাপ্ত
করেছো। আর ৮৪ জন্মের কথাও জানা নেই। যেমন বাবা তোমাদের বোঝান, অন্যদেরকে গিয়ে
তোমাদেরই বোঝাতে হবে। শিববাবা তো সবার কাছে যাবেন না। বাবার সাহায্যকারী নিশ্চয়ই
চাই, তাইনা, তোমাদের হল ঈশ্বরীয় মিশন। তোমরা সবাইকে ঈশ্বরের আপন করে দাও। তোমরা
তাদের বোঝাও যে তিনি হলেন আত্মাদের অর্থাৎ আমাদের অসীম জগতের পিতা। তাঁর কাছে অসীম
জগতের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবে। যেমন লৌকিক পিতাকে স্মরণ করো, তার চেয়ে বেশি
পারলৌকিক পিতাকে স্মরণ করতে হয়। লৌকিক পিতা তো অল্পকালের জন্য সুখ প্রদান করেন।
অসীমের পিতা অসীমের সুখ দেন। এই জ্ঞান আত্মাদের এই সময়েই প্রাপ্ত হয়। এখন তোমরা জানো
তিনজন পিতা আছেন। লৌকিক, পারলৌকিক এবং অলৌকিক। অসীম জগতের পিতা (শিববাবা) অলৌকিক
পিতা (ব্রহ্মা বাবা) দ্বারা তোমাদেরকে বোঝাচ্ছেন। এই পিতার কথা কেউ জানে না।
ব্রহ্মার বায়োগ্রাফি কারো জানা নেই। তার অক্যুপেশনও জানা উচিত, তাইনা। শিবের,
শ্রীকৃষ্ণের মহিমা বর্ণনা করে কিন্তু ব্রহ্মার মহিমা কোথায় হয় ? নিরাকার পিতার
নিশ্চয়ই জ্ঞান-অমৃত প্রদান করার জন্য মুখ চাই, তাইনা। ভক্তিমার্গে বাবাকে যথার্থ
রীতিতে কেউ স্মরণ করতে পারেনা। এখন তোমরা জানো, তোমরা বুঝেছো এই হল শিববাবার রথ।
রথেরও তো শৃঙ্গার করা হয় । যেমন মহম্মদের ঘোড়া সাজানো হয়। তোমরা বাচ্চারা কত সহজ করে
মানুষকে বোঝাও। তোমরা তো তাদের প্রশংসাই করে থাকো । তোমরা বলো, তোমরা দেবতা ছিলে,
পরে ৮৪ জন্ম ভোগ করে তমোপ্রধান হয়েছো। এখন পুনরায় সতোপ্রধান হতে হবে, তো তার জন্য
যোগ চাই। কিন্তু অনেকের এই কথা বুঝতে খুব কঠিন অনুভব হয়। বুঝে গেলে তো খুশীর পারদ
ঊর্ধ্বে থাকবে। যে বোঝাবে তার খুশীর অনুভূতির পারদ আরও ঊর্ধ্বে থাকবে। অসীম জগতের
পিতার পরিচয় দেওয়া কোনও কম কথা নয়। তারা বুঝতে পারে না। বলে এ কীভাবে সম্ভব ? অসীম
জগতের পিতার জীবন কাহিনী শোনানো হয়।
এখন বাবা বলেন - বাচ্চারা, পবিত্র হও। তোমরা আহবান করেছিলে, পতিত-পাবন এসো। গীতায়ও
"মন্মনাভব" শব্দটি লেখা আছে কিন্তু কেউ বোঝাতে পারে না। বাবা আত্মার জ্ঞানও খুব
স্পষ্ট করে বোঝান। এই কথাগুলি কোনও শাস্ত্রে নেই। যদিও বলে আত্মা হল বিন্দু,
ভ্রুকুটির মাঝখানে স্টার রূপে অবস্থিত। কিন্তু যথার্থ রীতিতে কারো বুদ্ধিতে এই
জ্ঞান নেই। সেটাও জানতে হবে। কলিযুগে সবই হল আনরাইটিয়াস। সত্যযুগে সবই হয় রাইটিয়াস।
ভক্তি মার্গে মানুষ বোঝে - সেই সব পথ হল ঈশ্বরের সঙ্গে মিলিত হওয়ার পথ। তাই তোমরা
প্রথমে ফর্মে লেখাও - এখানে কেন এসেছো ? এর উত্তরেও তোমাদের অসীম জগতের পিতার পরিচয়
দিতে হবে। তোমরা জিজ্ঞাসা করো আত্মার পিতা কে ? সর্বব্যাপী বললে কোনও অর্থ থাকে না।সবার
পিতা কে ? এটাই হল মুখ্য কথা। তোমরা নিজের নিজের বাড়িতে বসেও বোঝাতে পারো। দুই একটি
মুখ্য চিত্র - সিঁড়ি, ত্রিমূর্তি, কল্পবৃক্ষ এই চিত্র গুলি থাকা খুব জরুরী।
কল্পবৃক্ষের চিত্র দ্বারা সব ধর্মের মানুষ বুঝতে পারবে যে আমাদের ধর্ম কবে শুরু
হয়েছিল ! আমরা সেই হিসাবে স্বর্গে যেতে পারবো ? যারা পরে আসবে তারা তো স্বর্গে যেতে
পারবে না। কিন্তু শান্তিধামে যেতে পারবে। কল্পবৃক্ষের চিত্র দ্বারা অনেক কিছু
ক্লিয়ার হয়। যে-যে ধর্ম গুলি পরে আসে তাদের আত্মা অবশ্যই উপরে গিয়ে বিরাজিত থাকবে।
তোমাদের বুদ্ধিতে সম্পূর্ণ ফাউন্ডেশন বসানো হয়। বাবা বলেন আদি সনাতন দেবী-দেবতা
ধর্মের চারা তো রোপণ হচ্ছে তার থেকে তোমাদের এই বৃক্ষটিকে বড় করতে হবে, পাতাবিহীন
বৃক্ষ তো হয় না, তাই বাবা পুরুষার্থ করান - নিজ সম তৈরি করতে। অন্য ধর্মের বৃদ্ধি
করতে হয় না। তারা তো উপর থেকে নীচে এসে, ফাউন্ডেশন লাগায়। অন্য আত্মারা পরে উপর থেকে
আসতে থাকে। তোমরা এই বৃক্ষের বৃদ্ধির জন্য এই প্রদর্শনী ইত্যাদি করাও। এই বৃক্ষে
ছোট ছোট পাতা বের হয়, সেই পাতা ঝড়ে পড়ে যায়, নিস্তেজ হয়ে যায়। এই আদি সনাতন
দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা হচ্ছে। এতে লড়াই ইত্যাদির কোনও কথা নেই। শুধুমাত্র বাবাকে
স্মরণ করা ও করানো। তোমরা সবাইকে বলো অন্য সব রচনা গুলি ত্যাগ করো। রচনা দ্বারা
কখনও উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় না। রচয়িতা পিতাকেই স্মরণ করতে হবে। অন্য কারো স্মরণ
যেন না আসে। বাবার আপন হয়ে, জ্ঞানে এসে কেউ যদি কুকর্ম করে তাহলে সেই কর্মের ভার
বৃদ্ধি পায়। বাবা পবিত্র করতে আসেন তা সত্ত্বেও কুকর্ম করলে আরও পতিত হয়ে যায় তাই
বাবা বলেন এমন কোনও কাজ করবে না যাতে ক্ষতি হয়। বাবার অপমান হয় তাইনা। এমন কোনো
কর্ম করবে না যাতে বিকর্ম বেশি হয়। নিষেধাজ্ঞা পালন করতে হবে। ঔষধপত্র সেবন করার
সময়েও অনেক কিছু পরিহার্য করতে বলা থাকে। যখন ডাক্তার বলে টক জাতীয় খাবার খাওয়া
নিষেধ তখন পালন তো করা উচিত। কর্মেন্দ্রিয় গুলিকে বশ করতে হয়। যদি লুকিয়ে খাবে তাহলে
ওষুধের প্রভাব পড়বে না। একেই বলা হয় আসক্তি। বাবাও শিক্ষা দেন - এমন কর্ম করবে না।
তিনি হলেন সার্জেন তাইনা। অনেকে লেখে বাবা মনে বিভিন্ন রকমের সঙ্কল্প আসে। সর্তক
থাকবে। খারাপ স্বপ্ন, মনে কু সঙ্কল্প অনেক আসবে, এইসবে ভয় পাবে না, সত্যযুগ-ত্রেতায়
এইসব কথা থাকে না। তোমরা যত এগিয়ে যাবে কাছে যেতে থাকবে, রৌপ্যযুগী বুদ্ধিসম্পন্ন
যুগে পৌঁছে যাবে তখন কর্মেন্দ্রিয় গুলি শান্ত হয়ে যাবে। কর্মেন্দ্রিয় গুলি বশে থাকবে।
সত্যযুগ - ত্রেতায় বশে ছিল তাইনা। যখন ত্রেতা যুগের অবস্থায় পৌঁছাবে তখন বশ হবে।
তারপরে যখন সত্যযুগের অবস্থায় আসবে তখন সতোপ্রধান হয়ে যাবে সেই অবস্থায় সর্ব
কর্মেন্দ্রিয়গুলি বশে থাকবে। কর্মেন্দ্রিয় তো বশে ছিল তাইনা। নতুন কথা নয়। আত্মা আজ
কর্মেন্দ্রিয় গুলির অধীনে স্থিত, পুরুষার্থ করে আগামীকাল কর্মেন্দ্রিয় গুলিকে বশ করে
রাখবে। আত্মা তো ৮৪ জন্মে নীচে নেমেছে। এখন রিটার্ন জার্নি, সবাইকে সতোপ্রধান
অবস্থায় যেতে হবে। নিজের চার্ট দেখতে হবে - আমরা কত পাপ করেছি, কত পুণ্য করেছি।
বাবাকে স্মরণ করতে করতে লৌহযুগী বুদ্ধিসম্পন্ন যুগ থেকে রৌপ্যযুগী বুদ্ধিসম্পন্ন
যুগ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। তখন কর্মেন্দ্রিয় গুলি বশে থাকবে। তখন তোমরা অনুভব করবে -
এখন আর কোনও ঝড় আসেনা। সেই অবস্থাও আসবে। তারপরে স্বর্ণযুগী বুদ্ধিসম্পন্ন যুগে চলে
যাবে। পরিশ্রম করে পবিত্র হলে খুশীর পারদও ঊর্ধ্বে থাকবে। যারা আসে তাদেরকে বোঝাতে
হবে - কীভাবে তোমরা ৮৪ জন্ম নিয়েছো ? যারা ৮৪ জন্ম নিয়েছে, তারা ই বুঝবে। তারা বলবে
এবারে এক বাবাকে স্মরণ করে মালিক হতে হবে। ৮৪ জন্ম না বুঝলে রাজত্বের মালিক হওয়ার
অনুভবও হয়তো থাকবে না। আমরা তো সাহস প্রদান করি, ভালো কথা বলি। তোমরা নীচে নেমেছো।
যারা ৮৪ জন্ম নিয়েছে তাদের অবিলম্বে স্মৃতিতে আসবে। বাবা বলেন তোমরা শান্তিধামে তো
পবিত্র ছিলে তাইনা। এখন পুনরায় তোমাদের শান্তিধাম, সুখধামে যাওয়ার পথ বলছি। অন্য
কেউ পথ বলতে পারে না। শান্তিধামেও পবিত্র আত্মারাই যেতে পারবে। যত খাদ বেরতে থাকবে
ততই উঁচু পদ মর্যাদা প্রাপ্ত হবে, যে যতখানি পুরুষার্থ করতে পারে। প্রত্যেকের
পুরুষার্থকে তো তোমরা দেখছো, বাবাও খুব সাহায্য করেন। ইনি তো প্রবীণ সন্তান।
প্রত্যেকের নাড়ি দেখে বুঝতে পারো তাইনা। যারা প্রবীণ হবে তারা তো বুঝতে পারবে। অসীম
জগতের পিতা, তাঁর কাছে অবশ্যই স্বর্গের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হওয়া উচিত। প্রাপ্ত
হয়েছিল, যা এখন নেই, পুনরায় প্রাপ্ত হচ্ছে। মুখ্য লক্ষ্য টি সামনেই আছে। বাবা যখন
স্বর্গের স্থাপনা করেছিলেন, তোমরা স্বর্গের মালিক ছিলে। পরে ৮৪ জন্ম নিয়ে নীচে নেমে
এসেছো। বর্তমানে হল তোমাদের অন্তিম জন্ম। হিস্ট্রি তো নিশ্চয়ই রিপিট হবে তাইনা।
তোমরা সম্পূর্ণ ৮৪-র হিসেব বলে দাও। যত জন বুঝবে বৃক্ষটি তত পাতায় ভরে যাবে। তোমরাও
তো অনেককে নিজ সম তৈরি করো। তোমরা বলবে আমরা এসেছি - সারা বিশ্বকে মায়ার বন্ধন থেকে
মুক্ত করতে। বাবা বলেন আমি সবাইকে রাবণের হাত থেকে মুক্তি দিতে আসি। তোমরা
বাচ্চারাও বুঝেছো বাবা হলেন জ্ঞানের সাগর। তোমরাও জ্ঞান প্রাপ্ত করে মাস্টার
জ্ঞানের সাগর হও তাইনা। জ্ঞান আলাদা, ভক্তিও আলাদা। তোমরা জানো ভারতের প্রাচীন
রাজযোগ স্বয়ং বাবা শেখান। কোনও মানুষ শেখাতে পারে না। কিন্তু এই কথাটি সবাইকে বলবে
কীভাবে ? এখানে তো অসুরদের বিঘ্ন অনেক। আগে তোমরা ভাবতে হয়তো কেউ আবর্জনা ঢেলে দেয়।
এখন বুঝেছো এই বিঘ্ন কীভাবে সৃষ্টি হয়। নাথিং নিউ। কল্প পূর্বেও এমন হয়েছিল।
তোমাদের বুদ্ধিতে এই সম্পূর্ণ চক্র আবর্তিত হয়। বাবা আমাদের সৃষ্টির
আদি-মধ্য-অন্তের রহস্য বোঝাচ্ছেন, বাবা আমাদের লাইট হাউসের টাইটেলও দিচ্ছেন। একটি
চোখে মুক্তিধাম, অন্য চোখে জীবন-মুক্তিধাম। তোমাদেরকে শান্তিধামে গিয়ে তারপরে
সুখধামে আসতে হবে। এইটি হল দুঃখধাম। বাবা বলেন এই চোখ দিয়ে যা কিছু তোমরা দেখছো,
সেসব ভুলে যাও। নিজের শান্তিধামকে স্মরণ করো। আত্মার নিজ পিতাকে স্মরণ করতে হবে,
একেই অব্যভিচারী যোগ বলা হয়। জ্ঞানও একের কাছে শুনতে হবে। ওই হল অব্যভিচারী জ্ঞান।
স্মরণও একমাত্র বাবাকেই করো। আমার এক বাবা, দ্বিতীয় কেউ নয়। যতক্ষণ নিজেকে আত্মা
নিশ্চয় করবে না ততক্ষণ একের স্মরণে থাকতে পারবে না। আত্মা বলে আমি একমাত্র বাবার
আপন হবো। আমাকে বাবার কাছে যেতে হবে। এই পুরানো জর্জরিত শরীরের প্রতি কোনও মোহ রাখবে
না। এই হল জ্ঞানের কথা। এমন নয় যে এই শরীরের রক্ষণাবেক্ষণ করবে না। অন্তরে বুঝতে হবে
- এই হল পুরানো খোলস, এই খোলস তো এখন ত্যাগ করতে হবে। তোমাদের হল অসীম জগতের
সন্ন্যাস। তারা তো জঙ্গলে চলে যায়। তোমাদের তো ঘরে থেকে স্মরণ করতে হবে। স্মরণে থেকে
তোমরাও শরীর ত্যাগ করতে পারো। যেখানেই থাকো বাবাকে স্মরণ করো। স্মরণে থাকবে,
স্বদর্শন চক্রধারী হবে তাহলে তো যেখানেই থাকো তোমরা উচ্চ পদের অধিকারী হতে পারবে।
যত ইন্ডিভিজুয়াল পরিশ্রম করবে ততই পদ মর্যাদা প্রাপ্ত করবে। ঘরে থেকেও স্মরণের
যাত্রা করতে হবে। এখন ফাইনাল রেজাল্ট আসতে আর একটু সময় আছে। তখন নতুন দুনিয়াও তো
রেডি থাকা চাই তাইনা। এখনই কর্মাতীত অবস্থা হয়ে গেলে তো সূক্ষ্মবতনে থাকতে হবে।
সূক্ষ্মবতনে থেকে তারপরে জন্ম নিতে হয়। ভবিষ্যতে তোমাদের সবকিছু সাক্ষাৎকার হবে।
আচ্ছা!
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা ওঁনার আত্মারূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন
নমস্কার ।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এক
বাবার কথা শুনতে হবে। একের অব্যভিচারী স্মরণে থাকতে হবে। এই শরীরের রক্ষণাবেক্ষণও
করতে হবে, কিন্তু মোহ রাখবে না।
২ ) বাবা যে নিষেধাজ্ঞা গুলি বলে দিয়েছেন সেসব পুরোপুরি পালন করতে হবে। এমন কোনো
কর্ম করবে না যাতে বাবার অসম্মান হয়, পাপ কর্মের খাতা বাড়ে। নিজের ক্ষতি করবে না।
বরদান:-
নিজের বিশাল বুদ্ধিরূপী সিন্দুক দ্বারা জ্ঞান রত্নের দান করতে সক্ষম মহাদানী ভব
বুদ্ধি হল সর্ব
কর্মেন্দ্রিয়ের মধ্যে শিরোমণি, এমনই বলা হয় । যারা বিশাল বুদ্ধির হয় অর্থাৎ যাদের
বুদ্ধি শক্তিশালী (সমর্থ) হয়, তাদের ললাটে সদা উজ্জ্বল আলোর চ্ছটা দেখতে পাওয়া যায়।
কারণ বুদ্ধি রূপী সিন্দুকটি সম্পূর্ণ জ্ঞানে ভরপুর থাকে। তারা নিজের বুদ্ধি রূপী
সিন্দুক থেকে জ্ঞান রত্নের দান করে মহাদানী হয়ে যায়। তোমরা বুদ্ধিকে সদা জ্ঞান রূপী
ভোজন দিতে থাকো, বুদ্ধি যদি জ্ঞান শক্তিতে ভরপুর থাকে তাহলে প্রকৃতিকেও যোগবলের
দ্বারা ঠিক করে নেয়। সর্বোত্তম বুদ্ধির অধিকারী সর্বোত্তম জ্ঞানের দ্বারা সর্বোত্তম
উপার্জন করে বৈকুণ্ঠের বাদশাহী প্রাপ্ত করে নেয়।
স্লোগান:-
শক্তি
স্বরূপ স্থিতির অনুভব করতে হলে সংকল্পের গতিকে ধীর গতির বানাও।